\id SNG - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h পরমগীত \toc1 পরমগীত \toc2 পরমগীত \toc3 পর \mt1 পরমগীত \c 1 \p \v 1 শলোমনের পরমগীত। \b \sp প্রেমিকা \q1 \v 2 তাঁর মুখের চুম্বনে তিনি আমাকে চুম্বন করুন, \q2 কেননা তোমার প্রেম দ্রাক্ষারসের চেয়েও বেশি চিত্তাকর্ষক ও মধুর। \q1 \v 3 তোমার সুগন্ধির ছড়ানো সুবাস প্রফুল্লদায়ক; \q2 তোমার নামটিও যেন ঢেলে দেওয়া আতর। \q2 ফলে কুমারী মেয়েরা যে তোমাকে প্রেম করবে, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই! \q1 \v 4 আমাকে নিয়ে চলো তোমার সঙ্গে দূরে—চলো, আমরা শীঘ্র যাই! \q2 আমার রাজা আমাকে নিয়ে যাবেন তাঁর অন্তঃপুরে। \sp বান্ধবীদের দল \q1 আমরা তোমাতে আনন্দিত ও উল্লসিত হব; \q2 দ্রাক্ষারসের চেয়েও আমরা তোমার প্রেমের বেশি বন্দনা করব। \sp প্রেমিকা \q1 তোমার প্রতি লোকদের ভক্তি ভালোবাসা একেবারে ন্যায্য! \b \q1 \v 5 হে জেরুশালেমের কন্যারা, \q2 আমি ঘন কালো হলেও সুন্দরী, \q1 ঠিক যেন কেদরের তাঁবু আমি, \q2 যেন শলোমনের তাঁবুর যবনিকা। \q1 \v 6 আমি ঘন কালো বলে ওভাবে তাকিও না আমার দিকে, \q2 কেননা রোদে পুড়েই আজ আমি ঘন কালো। \q1 আমার মাতৃপুত্রগণ আমার প্রতি ক্রুদ্ধ ছিল \q2 এবং তারা আমাকে দ্রাক্ষাক্ষেত্র দেখভাল করতে পাঠাত; \q2 ফলে আমার নিজের দ্রাক্ষাক্ষেত্রকে আমায় উপেক্ষা করতে হয়েছে। \q1 \v 7 ওগো প্রেমিক আমার, এবার বলত, \q2 তোমার মেষপালকে তুমি কোথায় চরাও \q2 এবং দ্বিপ্রহরকালে তোমার মেষদের কোথায় বিশ্রাম করাও। \q1 তোমার বন্ধুদের পালের পাশে আমাকে কেন \q2 ঘোমটা দেওয়া মহিলার মতো হতে হবে? \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 8 হে, নারীদের মধ্যে সেরা সুন্দরী, তা যদি তুমি না-জানো, \q2 তবে মেষদের পদচিহ্ন ধরে যাও, \q1 এবং পালকদের তাঁবুগুলির কাছে \q2 তোমার ছাগবৎসদের চরাও। \sp প্রেমিক \q1 \v 9 প্রিয়তমা আমার, আমি তোমাকে তুলনা করেছি \q2 ফরৌণের অন্যতম এক রথের সঙ্গে যুক্ত এক অশ্বিনীর সঙ্গে। \q1 \v 10 কানের দুলগুলি তোমার দুই গালকে \q2 আর রত্নখচিত মালা তোমার গলাকে করে তুলেছে অপূর্ব। \q1 \v 11 আমরা তোমাকে করে তুলব যেন সোনার তৈরি কানের দুল, \q2 যা হবে রৌপ্যখচিত। \sp প্রেমিকা \q1 \v 12 রাজা যখন তাঁর মেজের নিকটে উপস্থিত, \q2 তখন আমার সুগন্ধি তার সৌরভ ছড়াল। \q1 \v 13 আমার প্রেমিক আমার কাছে এক থলি গন্ধরসের মতো \q2 যা আমার স্তনযুগলের উপত্যকায় মিশে থাকে। \q1 \v 14 আমার প্রেমিক আমার কাছে মেহেদি গুল্মের একগুচ্ছ কুঁড়ির মতো, \q2 যা জন্মায় ঐন-গদীর দ্রাক্ষাক্ষেত্রে। \sp প্রেমিক \q1 \v 15 প্রিয়তমা আমার, অনিন্দ্যসুন্দরী তুমি! \q2 আহা, কি অপরূপ তুমি! \q2 তোমার দু-নয়ন কপোতের মতো। \sp প্রেমিকা \q1 \v 16 ওগো আমার প্রিয়তম, সুদর্শন তুমি! \q2 আহা, কী মনোহর তুমি! \q2 আমাদের শয্যাও কেমন শ্যামল। \sp প্রেমিক \q1 \v 17 আমাদের ঘরের কড়িকাঠ তৈরি সিডার গাছের কাঠ দিয়ে, \q2 আর বরগা দেবদারু দিয়ে। \c 2 \sp প্রেমিকা \q1 \v 1 আমি শারোণের গোলাপ, \q2 উপত্যকায় ফুটে থাকা লিলি। \sp প্রেমিক \q1 \v 2 তরুণীদের মধ্যে আমার \q2 প্রেমিকা ঠিক যেন কাঁটাগাছের মধ্যে ফুটে থাকা লিলি ফুল। \sp প্রেমিকা \q1 \v 3 তরুণদের মধ্যে আমার প্রেমিক ঠিক \q2 যেন অরণ্যের বৃক্ষরাজির মধ্যে একটি আপেল গাছ। \q1 তাঁর ছায়ায় বসলে আমার আনন্দ হয়, \q2 তাঁর ফলের স্বাদ আমার মুখে মিষ্টি লাগে। \q1 \v 4 তিনি আমাকে ভোজসভায় নিয়ে গেলেন, \q2 তখন যেন তাঁর পতাকাই হয়ে উঠল প্রেম। \q1 \v 5 তোমরা আমাকে কিশমিশ দিয়ে সবল করো, \q2 আপেল দিয়ে চনমনে করে তোল, \q2 কেননা প্রেম আমাকে মূর্চ্ছিত করেছে। \q1 \v 6 তাঁর বাম বাহু আমার মস্তকের নিচে, \q2 আর তাঁর ডান বাহু আমাকে আলিঙ্গন করে। \q1 \v 7 জেরুশালেমের কন্যারা, মাঠের গজলা হরিণীদের এবং \q2 হরিণশাবকদের দিব্যি দিয়ে আমি তোমাদের বলছি, \q1 যতক্ষণ না বাসনা জেগে উঠছে, \q2 ততক্ষণ প্রেমকে জাগিও না বা তাকে উত্তেজিত কোরো না। \b \q1 \v 8 ওই শোনো! এ যে আমার প্রেমিক! \q2 ওই দেখো, \q1 পর্বতমালা পেরিয়ে, \q2 লম্ফঝম্প সহকারে পাহাড় টপকে তিনি আসছেন। \q1 \v 9 আমার প্রেমিক গজলা হরিণের বা হরিণশাবকের মতো। \q2 ওই দেখো! \q1 উনি দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের প্রাচীরের পশ্চাতে, গবাক্ষ দিয়ে অপলকে দেখছেন, \q2 জাফরির মধ্যে দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। \q1 \v 10 আমার প্রেমিক মুখ খুললেন এবং আমাকে বললেন, \q2 “প্রিয়তমা আমার, \q2 ওগো আমার সুন্দরীশ্রেষ্ঠা, উঠে পড়ো এবং আমার সঙ্গে চলো। \q1 \v 11 চেয়ে দেখো! শীতকাল চলে গেছে; \q2 বারিধারাও সমাপ্ত হয়েছে এবং বিদায় নিয়েছে। \q1 \v 12 মাঠে মাঠে ফুল ফুটেছে; \q2 গান গাওয়ার ঋতু এসেছে, \q1 আমাদের দেশে এখন \q2 ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে। \q1 \v 13 ডুমুর গাছের ফল পুষ্ট হয়েছে; \q2 মুকুলিত দ্রাক্ষালতা বাতাসে তার সৌরভ ছড়াচ্ছে। \q1 উঠে এসো, চলো, প্রিয়া আমার। \q2 আমার সুন্দরীশ্রেষ্ঠা, চলে এসো আমার সঙ্গে।” \sp প্রেমিক \q1 \v 14 আমার কপোতের অবস্থান যেন শৈলের ফাটলে, \q2 যেন পাহাড়ি এলাকার গুপ্ত স্থানে, \q1 আমাকে দেখতে দাও তোমার মুখশ্রী, \q2 আমাকে শুনতে দাও তোমার কণ্ঠস্বর; \q1 কেননা তোমার মুখশ্রী লাবণ্যময়, \q2 তোমার কণ্ঠস্বর মধুর। \q1 \v 15 তোমরা আমাদের জন্য সেইসব শিয়ালদের ধরো, \q2 সেইসব ক্ষুদ্র শিয়ালদের, \q1 যারা দ্রাক্ষাক্ষেত্রকে, \q2 আমাদের মুকুলিত দ্রাক্ষাক্ষেত্রকে তছনছ করে দেয়। \sp প্রেমিকা \q1 \v 16 আমার প্রেমিক শুধু আমার এবং আমিও শুধু তাঁর; \q2 লিলিফুলের মাঝে তাঁর পদচারণ। \q1 \v 17 দিন শেষ হওয়ার আগে \q2 এবং ছায়া মুছে যাওয়ার আগে, \q1 ওগো আমার প্রিয়তম, ফিরে এসো এবং \q2 রুক্ষ পর্বতের গজলা হরিণ বা হরিণশাবকের মতো হয়ে ওঠো। \b \c 3 \q1 \v 1 সারারাত আমার শয্যায় আমি একজনের প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে বসেছিলাম, \q2 যাঁকে আমার হৃদয় ভালোবাসে; \q2 তাঁর জন্য পথ চেয়ে বসে থাকলাম কিন্তু তাঁর দেখা পেলাম না। \q1 \v 2 আমি এখন উঠব এবং নগরে যাব, \q2 সেখানকার পথে-ঘাটে ও উন্মুক্ত চত্বরে তাঁকে অন্বেষণ করব, \q1 যাঁকে আমার হৃদয় ভালোবাসে। \q2 এইভাবে আমি তাঁকে অন্বেষণ করলাম কিন্তু তাঁর দেখা পেলাম না। \q1 \v 3 নগররক্ষীরা রাতপাহারা দেবার সময় আমাকে দেখতে পেল। \q2 “তোমরা কি তাঁকে দেখেছ, \q2 যাঁকে আমার হৃদয় ভালোবাসে?” \q1 \v 4 তাদের ছেড়ে আমি যখন এগিয়ে গেলাম \q2 ঠিক তখনই তাঁর দেখা পেলাম, যাঁকে আমার হৃদয় ভালোবাসে। \q1 আমি তাঁকে আঁকড়ে ধরলাম, তাঁকে কিছুতেই ছাড়লাম না, \q2 যতক্ষণ না তাঁকে আমার মায়ের বাড়িতে, \q2 আমার জন্মদাত্রীর বাড়িতে নিয়ে গেলাম। \q1 \v 5 জেরুশালেমের কন্যারা, মাঠের গজলা হরিণীদের \q2 এবং হরিণশাবকদের দিব্যি দিয়ে আমি তোমাদের বলছি, \q1 যতক্ষণ না বাসনা জেগে উঠছে, \q2 ততক্ষণ প্রেমকে জাগিও না বা তাকে উত্তেজিত কোরো না। \b \q1 \v 6 বণিকদের বিভিন্ন মশলাপাতি সহযোগে \q2 তৈরি গন্ধরস ও কুন্দুরুর সুবাস ছড়িয়ে, \q1 মরুপ্রান্তর পেরিয়ে \q2 ধোঁয়ার স্তম্ভের মতো কে আসে ওই? \q1 \v 7 ও মা! দেখো, দেখো! এ যে শলোমনের ঘোড়ার গাড়ী, \q2 যাকে ষাটজন যোদ্ধা পাহারা দিচ্ছে, \q2 যারা ইস্রায়েলের সর্বোত্তম বীর, \q1 \v 8 এরা প্রত্যেকেই সশস্ত্র, প্রত্যেকেই রণাঙ্গনের অভিজ্ঞতালব্ধ, \q2 এদের প্রত্যেকের কটিদেশে \q1 নিজ নিজ তরবারি সংলগ্ন, \q2 রাত্রিকালীন সন্ত্রাসের মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত। \q1 \v 9 রাজা শলোমন তাঁর নিজের জন্য এই ঘোড়ার গাড়ীটি তৈরি করেছেন, \q2 লেবাননের কাঠ দিয়ে তিনি এটি নির্মাণ করেছেন। \q1 \v 10 তিনি এর স্তম্ভগুলি রুপো দিয়ে, \q2 আর তলার অংশ সোনা দিয়ে তৈরি করেছেন, \q1 এর বসার গদিটি বেগুনিয়া বস্ত্রে সুসজ্জিত, \q2 এর অন্দরসজ্জায় জেরুশালেমের কন্যাদের \q1 প্রীতিপূর্ণ কারুকাজ। \v 11 ওগো সিয়োন-কন্যারা, \q2 তোমরা বাইরে বেরিয়ে এসো, \q1 দেখো, রাজা শলোমনকে, \q2 তিনি মাথায় মুকুট পরছেন, \q1 সেই মুকুট যা তাঁর বিবাহের দিন তাঁর মা মাথায় পরিয়ে দিয়েছিলেন, \q2 যেদিন তাঁর হৃদয় আনন্দিত হয়ে উঠেছিল। \c 4 \sp প্রেমিক \q1 \v 1 প্রিয়তমা আমার, অপূর্ব সুন্দরী তুমি! \q2 আহা, কী অপরূপ তুমি! \q2 তোমার ঘোমটার আড়ালে তোমার দুটি চোখ কপোতের মতো। \q1 তোমার কেশরাশি একপাল ছাগলের মতো, \q2 যারা গিলিয়দ পর্বতের ঢাল বেয়ে নেমে আসে। \q1 \v 2 তোমার দন্তপঙক্তি যেন সদ্য পশম ছাঁটা মেষপালের মতো, \q2 যাদের সদ্য ধৌত করা হয়েছে, \q1 ওরা কেউ একা নয়, \q2 প্রত্যেকের সঙ্গে তার যমজ শাবক রয়েছে। \q1 \v 3 তোমার ওষ্ঠাধর রক্তিম ফিতের মতো; \q2 তোমার মুখশ্রী চমৎকার। \q1 ঘোমটা আবৃত তোমার কপোল \q2 অর্ধ কর্তিত ডালিম ফলের মতো। \q1 \v 4 তোমার গলা দাউদের দুর্গের মতো, \q2 অসামান্য সুষমামণ্ডিত যার পাথরের নির্মাণসৌকর্য, \q1 যার উপরে টাঙানো থাকে এক হাজার ঢাল, \q2 যেগুলির প্রত্যেকটি যোদ্ধাদের ঢাল। \q1 \v 5 তোমার দুটি স্তন যেন দুটি হরিণশাবক, \q2 যেন গজলা হরিণীর যমজ শাবক, \q2 যারা লিলি ফুলে ভরা মাঠে নেচে বেড়ায়। \q1 \v 6 বেলা শেষ হওয়ার আগে \q2 এবং ছায়া মুছে যাওয়ার আগে \q1 আমি গন্ধরসের পর্বতে \q2 এবং কুন্দুরুর পাহাড়ে যাব। \q1 \v 7 আমার প্রিয়া, সর্বাঙ্গ সুন্দরী তুমি; \q2 তোমাতে কোনও খুঁত নেই। \b \q1 \v 8 ও আমার বধূ লেবানন ছেড়ে আমার সঙ্গে চলো, \q2 লেবানন ছেড়ে আমার সঙ্গে চলো। \q1 অমানার শৃঙ্গ থেকে, শনীর চূড়া থেকে, হর্মোণের শীর্ষদেশ থেকে, \q1 সিংহদের গুহা থেকে \q2 এবং পর্বতে বাসা বাঁধা চিতাবাঘদের আস্তানা থেকে অবতরণ করো। \q1 \v 9 তুমি আমার হৃদয় হরণ করেছ, মম ভগিনী, মম বধূ; \q2 তোমার এক মুহূর্তের চাহনি, \q1 তোমার জড়োয়ার একটিমাত্র \q2 রত্ন আমার হৃদয় হরণ করেছে। \q1 \v 10 কী মধুর তোমার প্রেম, মম ভগিনী, মম বধূ! \q2 তোমার প্রেম সুরার চেয়েও এবং তোমার সুগন্ধির সৌরভ \q1 যে কোনও সুগন্ধি মশলার চেয়েও \q2 কত বেশি আনন্দদায়ক! \q1 \v 11 ওগো মোর বধূ, তোমার ওষ্ঠাধর থেকে মৌচাকের মতো মধু ঝরে পড়ে, \q2 তোমার জিহ্বার নিচে দুধ ও মধু আছে। \q1 তোমার পোশাকের \q2 সুবাস লেবাননের মতো। \q1 \v 12 মম ভগিনী, মম বধূ, তুমি অর্গলবদ্ধ এক বাগিচা; \q2 এক মুদ্রাঙ্কিত, অবরুদ্ধ ঝরনা। \q1 \v 13 তোমার চারাগাছগুলি ডালিমের উপবন, \q2 যেখানে আছে উৎকৃষ্ট ফল, \q2 আছে মেহেদি ও জটামাংসী \q1 \v 14 জটামাংসী আর জাফরান, বচ, \q2 দারুচিনি ও সর্বপ্রকার সুগন্ধি ধুনোর গাছ, \q2 আছে গন্ধরস, \q2 অগুরু ও উৎকৃষ্ট মশলার গাছ। \q1 \v 15 তুমি বাগিচায় ঘেরা এক ঝরনা, \q2 প্রবাহিত জলের এক উৎস, \q2 যার স্রোত সেই লেবানন থেকে বইছে। \sp প্রেমিকা \q1 \v 16 জাগো, হে উত্তুরে বায়ু, \q2 এসো হে দখিনা বাতাস! \q1 বয়ে যাও আমার এই বাগিচায়, \q2 যাতে এর সৌরভ চারদিকে ছড়িয়ে যায়। \q1 আমার প্রেমিককে আসতে দাও তাঁর আপন বাগিচায় \q2 এবং তাঁর পছন্দসই ফলের স্বাদ গ্রহণ করতে দাও। \c 5 \sp প্রেমিক \q1 \v 1 মম ভগিনী, মম বধূ, আমি এসেছি আমার কাননে; \q2 আমার গন্ধরস ও আমার সুগন্ধি সঙ্গে এনেছি। \q1 আমি আমার মধু ও আমার মধুর চাক চুষেছি, \q2 আমার দ্রাক্ষারস এবং আমার দুধ পান করেছি। \sp বান্ধবীদের দল \q1 হে বন্ধুরা, আহার করো এবং পান করো; \q2 আকণ্ঠ তোমাদের প্রেমসুধা পান করো। \sp প্রেমিকা \q1 \v 2 আমি ঘুমাচ্ছিলাম কিন্তু আমার হৃদয় জেগে ছিল। \q2 ওই শোনো! আমার প্রেমিক দরজায় করাঘাত করছেন: \q1 “দরজা খোলো, আমার ভগিনী, আমার প্রিয়া, \q2 আমার কপোত, আমার নিখুঁত সৌন্দর্য। \q1 আমার মস্তক শিশিরে ভিজে গেছে, \q2 রাতের আর্দ্রতায় সিক্ত হয়েছে আমার কেশরাশি।” \q1 \v 3 আমি তো আমার অঙ্গাবরণ খুলে ফেলেছি— \q2 তা কি আবার আমায় পরিধান করতে হবে? \q1 আমার দুই পা ধুয়েছি— \q2 তা কি আবার ধূলিমলিন করব? \q1 \v 4 আমার প্রেমিক দুয়ারের ছিদ্র দিয়ে অর্গল খোলার জন্য তাঁর হাত বাড়ালেন; \q2 তাঁর জন্য আমার হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়তে শুরু করল। \q1 \v 5 আমার প্রেমিকের জন্য দরজা খোলার জন্য আমি উঠলাম, \q2 আর দরজার অর্গলে লেগে থাকা গন্ধরসে আমার দু-হাত ভিজে গেল, \q2 তরল গন্ধরসে আমার আঙুলগুলি সিক্ত হল। \q1 \v 6 আমার প্রেমিকের জন্য আমি দরজা খুললাম, কিন্তু আমার প্রেমিক ফিরে গেছেন, \q2 চলে গেছেন তিনি। \q2 তাঁর প্রস্থানে আমার হৃদয় ম্রিয়মাণ হয়ে গেল। \q1 তাঁকে কত খুঁজলাম, \q2 কিন্তু কোথাও তাঁর দেখা পেলাম না, \q1 তাঁকে কত ডাকলাম, \q2 কিন্তু তিনি সাড়া দিলেন না। \q1 \v 7 নগররক্ষীরা পাহারা দেবার সময় দেখতে আমাকে পেল। \q2 ওরা আমাকে প্রহার করল, \q1 ক্ষতবিক্ষত করল; \q2 পাঁচিলের ধারের ওই নগররক্ষীগুলি আমার কাপড়জামাও ছিনিয়ে নিল! \q1 \v 8 হে জেরুশালেমের কন্যারা, আমি তোমাদের দিব্যি দিয়ে বলছি, \q2 তোমরা যদি আমার প্রেমিকের দেখা পাও, তাহলে, \q1 কী বলবে তাঁকে? বলবে যে, \q2 তাঁর প্রেমে আমি অচৈতন্যপ্রায়। \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 9 হে পরমাসুন্দরী, \q2 অন্য প্রেমিকদের তুলনায় তোমার প্রেমিক কী কারণে অনন্য? \q1 আমাদের যে তুমি এত দিব্যি দিচ্ছ, \q2 অন্য প্রেমিকদের তুলনায় তোমার প্রেমিক কী কারণে অসাধারণ? \sp প্রেমিকা \q1 \v 10 আমার প্রেমিক দীপ্যমান ও রক্তিম, \q2 দশ হাজার জনের মধ্যেও সেরা। \q1 \v 11 তাঁর মস্তক খাঁটি সোনার মতো; \q2 তাঁর কেশ কোঁকড়ানো ও দাঁড়কাকের মতো কুচকুচে কালো। \q1 \v 12 তাঁর নয়নযুগল যেন জলস্রোতের তীরের কপোত, \q2 যারা দুগ্ধস্নাত ও অলংকারখচিত মণির মতো। \q1 \v 13 তাঁর কপোল সুগন্ধি মশলার কেয়ারির মতো সুবাসিত। \q2 তাঁর ওষ্ঠাধর লিলিফুলের মতো, যা গন্ধরসের সৌরভ ছড়ায়। \q1 \v 14 তাঁর বাহুযুগল বৈদূর্যমণিতে খচিত সোনার আংটির মতো; \q2 তাঁর দেহ নীলকান্তমণিতে খচিত মসৃণ গজদন্তের মতো। \q1 \v 15 তাঁর ঊরুদ্বয় খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি \q2 তলদেশের উপরে বসানো মার্বেল পাথরের স্তম্ভ। \q1 তাঁর আকৃতি লেবাননের মতো, \q2 উৎকৃষ্ট সিডার গাছের মতো। \q1 \v 16 তাঁর মুখের নিজস্ব মাধুর্য আছে; \q2 সব মিলিয়ে তিনি ভারী সুন্দর। \q1 হে জেরুশালেমের কন্যারা, \q2 ইনিই আমার প্রেমিক, ইনিই আমার বন্ধু। \c 6 \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 1 হে পরমাসুন্দরী, তোমার প্রেমিক \q2 কোথায় চলে গেছেন? \q1 তোমার প্রেমিক কোনও দিকে গেছেন, তোমার সঙ্গে আমরাও \q2 তো তাঁকে সেখানে খুঁজতে যেতে পারি? \sp প্রেমিকা \q1 \v 2 আমার প্রেমিক তাঁর বাগানে, \q2 সুগন্ধি মশলার কেয়ারিতে নেমে গেছেন, \q1 বাগানগুলিতে পদচারণা করতে \q2 আর লিলি ফুল চয়ন করতে। \q1 \v 3 আমি আমার প্রেমিকের এবং আমার প্রেমিক আমারই; \q2 তিনি লিলিফুলের বাগিচায় পদচারণা করেন। \sp প্রেমিক \q1 \v 4 ওগো মোর প্রিয়া, তুমি তির্সার মতো রূপসী, \q2 জেরুশালেমের মতো লাবণ্যময়, \q2 পতাকাবাহী সেনাবাহিনীর মতো জমকালো। \q1 \v 5 আমার দিক থেকে তোমার দুই নয়ন সরাও; \q2 ওরা আমাকে বিহ্বল করে দেয়; \q1 তোমার কেশরাশি এমন ছাগপালের মতো, \q2 যারা গিলিয়দের ঢাল বেয়ে নেমে আসে \q1 \v 6 তোমার দন্তপঙক্তি যেন একপাল মেষ, \q2 যাদের সদ্য ধৌত করা হয়েছে, \q1 ওরা কেউ একা নয়, \q2 প্রত্যেকের সঙ্গে রয়েছে তার যমজ শাবক। \q1 \v 7 ঘোমটায় আবৃত তোমার কপোল \q2 অর্ধ কর্তিত ডালিম ফলের মতো। \q1 \v 8 রানি সম্ভবত ষাটজন, \q2 আর উপপত্নী আশি জন, \q2 আর কুমারীর সংখ্যা অগণ্য; \q1 \v 9 কিন্তু আমার কবুতর, আমার নিখুঁত প্রিয়া অনন্যা, সে তাঁর মায়ের একমাত্র দুহিতা, \q2 তাঁর জন্মদাত্রীর প্রিয়পাত্রী। কুমারীরা তাঁকে দেখে ধন্যা বলে সম্বোধন করেছে; \q2 রানি ও উপপত্নীরা তাঁর প্রশংসা করেছে। \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 10 উনি কে, যিনি ভোরের আলোর মতো আবির্ভূত হচ্ছেন, \q2 যিনি চন্দ্রের মতো শুভ্র, সূর্যের মতো উজ্জ্বল, \q2 নক্ষত্রদের শোভাযাত্রার মতো ঐশ্বর্যময়? \sp প্রেমিক \q1 \v 11 আমি আখরোটের বাগিচায় নেমে গেছিলাম দেখতে যে, \q2 উপত্যকায় নবীন কোনও তরু অঙ্কুরিত হল কি না, \q1 দ্রাক্ষালতা কতটা কুঁড়ি হল \q2 কিংবা ডালিম গাছে ফুল এল কি না। \q1 \v 12 বিষয়টি ভালো করে বোঝার আগেই \q2 আমার বাসনা আমাকে বসিয়ে দিল আমার জাতির রাজকীয় রথরাজির মধ্যে। \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 13 ফিরে এসো, ফিরে এসো, হে শূলম্মীয়ে; ফিরে এসো, \q2 ফিরে এসো, যাতে আমরা অপলকে তোমাকে দেখতে পাই। \sp প্রেমিক \q1 মহনয়িমের নৃত্যের মতো করে তোমরা কেন \q2 শূলম্মীয়েকে অপলকে দেখতে চাইছ? \b \c 7 \q1 \v 1 হে রাজদুহিতা! পাদুকা পরিহিত \q2 তোমার দুটি চরণ কী মনোহর! \q1 তোমার রম্য ঊরুদ্বয় রত্ন সদৃশ, \q2 যেন এক দক্ষ কারিগরের উত্তম শিল্পসৌকর্য। \q1 \v 2 তোমার নাভিদেশ সুডৌল পানপাত্রের মতো, \q2 যার মিশ্রিত সুরা কখনও ফুরায় না। \q1 তোমার কটিদেশ \q2 যেন লিলি ফুলে ঘেরা স্বর্ণ নির্মিত গমের স্তূপ। \q1 \v 3 তোমার দুটি স্তন যেন দুটি হরিণশাবক, \q2 যেন গজলা হরিণীর যমজ শাবক। \q1 \v 4 তোমার গলা হাতির দাঁতের নির্মিত মিনার। \q1 তোমার দুই নয়ন বৎ-রব্বীম দ্বারের \q2 পাশে অবস্থিত হিষ্‌বোনের সরোবরগুলির মতো। \q1 তোমার নাক \q2 যেন দামাস্কাসের দিকে চেয়ে থাকা লেবাননের মিনার। \q1 \v 5 তোমার মস্তক যেন কর্মিল পাহাড়ের মুকুট। \q2 তোমার কেশরাশি যেন জমকালো নকশা খচিত রাজকীয় পর্দা, \q2 যে অসামান্য অলকগুচ্ছে রাজাও বন্দি হয়ে যান। \q1 \v 6 হে মোর প্রেম, তুমি কত সুন্দর এবং \q2 তোমার মাধুর্যের কারণে কী মনোহর তোমার ব্যক্তিত্ব! \q1 \v 7 তোমার দীর্ঘাঙ্গী চেহারা খেজুর গাছের মতো \q2 আর তোমার দুটি স্তন একগুচ্ছ ফলের মতো। \q1 \v 8 আমি বললাম, “আমি এই খেজুর গাছে আরোহণ করব; \q2 এর ফল আমি শক্ত হাতে অধিকার করব।” \q1 তোমার স্তনদ্বয় হয়ে \q1 উঠুক দ্রাক্ষাগুচ্ছস্বরূপ, \q2 তোমার নিঃশ্বাস ভরে উঠুক আপেলের গন্ধে, \q2 \v 9 আর তোমার মুখ হয়ে উঠুক উৎকৃষ্ট সুরাসম। \sp প্রেমিকা \q1 এই সুরা কেবলমাত্র আমার প্রেমিকের কাছে পৌঁছাক, \q1 যা তাঁর দন্তশ্রেণী ও ওষ্ঠাধর \q2 বেয়ে ধীরে প্রবাহিত হবে। \q1 \v 10 আমি কেবলমাত্র আমার প্রেমিকের \q2 এবং আমার প্রতি তিনি আসক্ত। \q1 \v 11 ওগো মোর প্রেমিক, এসো, আমরা পল্লীগ্রামের দিকে যাই, \q2 চলো আমরা গ্রামদেশে গিয়ে নিশিযাপন করি। \q1 \v 12 ভোরবেলা চলো আমরা দ্রাক্ষাক্ষেত্রে যাই, \q2 দেখি দ্রাক্ষালতায় কুঁড়ি এল কি না, \q1 তা মঞ্জরিত হল কি না, \q2 আর ডালিম গাছে ফুল ফুটল কি না—ওখানেই \q2 আমি তোমায় আমার প্রেম নিবেদন করব। \q1 \v 13 চারপাশে এখন দূদাফলের সৌরভ, \q2 আর আমাদের দোরগোড়াতেই আছে \q1 নতুন ও পুরোনো বিভিন্ন উপাদেয় খাদ্যদ্রব্য, \q2 হে প্রিয়, যেগুলি আমি তোমার জন্য সংরক্ষণ করেছি। \b \c 8 \q1 \v 1 তুমি যদি আমার মায়ের স্তন্যপান করা হতে \q2 আমার সহোদর ভাইয়ের মতো! \q1 তাহলে তোমাকে ঘরের বাইরে দেখতে পেলে, \q2 আমি তোমাকে চুম্বন করতাম, \q2 তখন আর কেউ আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে পারত না। \q1 \v 2 আমি তোমাকে পথ দেখাতাম \q2 আর নিয়ে যেতাম \q1 আমার মায়ের ঘরে— \q2 যে মা আমার শিক্ষাদাত্রী। \q1 আমি তোমাকে পান করার জন্য সুগন্ধি মশলা মিশ্রিত সুরা দিতাম, \q2 দিতাম আমার ডালিম ফলের নির্যাস। \q1 \v 3 তাঁর বাম বাহু আমার মস্তকের নিচে, \q2 আর তাঁর ডান বাহু আমাকে আলিঙ্গন করে। \q1 \v 4 জেরুশালেমের কন্যারা, আমি তোমাদের দিব্যি দিয়ে বলছি, \q2 যতক্ষণ না বাসনা জেগে উঠছে, \q2 ততক্ষণ প্রেমকে জাগিও না বা তাকে উত্তেজিত কোরো না। \sp বান্ধবীদের দল \q1 \v 5 মরুপ্রান্তর পার হয়ে আপন প্রেমিকার কাঁধে মাথা রেখে ওই কে আসে? \sp প্রেমিকা \q1 যেখানে তোমার মা তোমাকে প্রসব করেছিলেন \q2 সেই আপেল গাছের তলায় আমি \q2 তোমাকে জাগালাম; ওখানে \q2 তোমার মা তোমার জন্মকালীন প্রসববেদনা সয়েছিলেন। \q1 \v 6 তোমার হৃদয়ে আমাকে অভিজ্ঞানস্বরূপ করে রাখো, \q2 তোমার বাহুর উপরে আমাকে অভিজ্ঞানস্বরূপ করে রাখো; \q1 কেননা প্রেম মৃত্যুর মতোই শক্তিশালী, \q2 এর অর্ন্তজ্বালা কবরের মতো নিষ্ঠুর সত্য। \q1 এ যেন এক জ্বলন্ত আগুন, \q2 এক লেলিহান আগুনের শিখা। \q1 \v 7 অজস্র জলও প্রেমের তৃষ্ণা মিটাতে পারে না; \q2 নদীরাও তাকে মুছে দিতে পারে না। \q1 কেউ যদি প্রেমের বিনিময়ে \q2 তাঁর ঘরের যাবতীয় ধনসম্পদ দিয়ে দেয়, \q2 তবে তা ধিক্কারজনক হবে। \q1 \v 8 আমাদের একটি অল্পবয়সি বোন আছে, \q2 তার বক্ষদেশ এখনও প্রস্ফুটিত হয়নি। \q1 আমাদের এই বোনটির জন্য আমরা কী যে করি, \q2 কারণ একদিন তো তাকে সর্বসমক্ষে তার কথা বলতে হবে? \q1 \v 9 সে যদি প্রাচীরস্বরূপা হয়, \q2 তাহলে আমরা তার উপরে রুপোর মিনার নির্মাণ করব, \q1 সে যদি দুয়ারস্বরূপা হয়, \q2 তাহলে আমরা সিডার কাঠ দিয়ে তার ভিত্তিমূলকে ঘিরে দেব। \q1 \v 10 আমি প্রাচীরস্বরূপা \q2 এবং আমার দুটি স্তন গম্বুজের মতো। \q1 এভাবেই আমি তাঁর চোখে \q2 পরম তৃপ্তিদায়ক হয়ে উঠলাম। \q1 \v 11 বায়াল-হামনে শলোমনের এক দ্রাক্ষাক্ষেত্র ছিল; \q2 যা তিনি তার ভাগচাষিদের চাষ করতে দিয়েছেন। \q1 এর ফলের জন্য তাদের মাথাপিছু \q2 দিতে হবে এক সহস্র রৌপ্যমুদ্রা। \q1 \v 12 কিন্তু আমার নিজের দ্রাক্ষাকুঞ্জ দিতে পারি শুধু আমিই; \q2 হে শলোমন, এই 1,000 শেকল রৌপ্যমুদ্রা\f + \fr 8:12 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 12 কিলোগ্রাম; 12 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* তোমার জন্য, \q2 আর আমার দ্রাক্ষাকুঞ্জের উৎপাদিত ফলের পরিচর্যাকারী কৃষকেরা পাবে মাথাপিছু \q2 200 শেকল\f + \fr 8:12 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 2.3 কিলোগ্রাম\ft*\f* রৌপ্যমুদ্রা। \sp প্রেমিক \q1 \v 13 প্রতীক্ষারত বন্ধুদের নিয়ে \q2 ওগো কাননচারিনী, \q2 তোমার কণ্ঠস্বর আমাকে শুনতে দাও! \sp প্রেমিকা \q1 \v 14 ওগো মোর প্রেমিক, চলে এসো, \q2 এবং সুগন্ধি মশলায় ছেয়ে \q1 যাওয়া পর্বতমালায় বিচরণরত হরিণী \q2 কিংবা হরিণশাবক সদৃশ হও।