\id RUT - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h রূত \toc1 রূত \toc2 রূত \toc3 রূত \mt1 রূত \c 1 \s1 নয়মী তার স্বামী ও পুত্রদের হারায় \p \v 1 বিচারকরা যখন দেশ শাসন করছিলেন সেই সময় দেশে দুর্ভিক্ষ হয়। যিহূদিয়ার বেথলেহেম থেকে একটি লোক তার স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে কিছুদিনের জন্য মোয়াব দেশে থাকবে বলে সেখানে যায়। \v 2 সেই লোকটির নাম ছিল ইলীমেলক, তার স্ত্রীর নাম নয়মী এবং তাঁর দুই পুত্রের নাম মহলোন ও কিলিয়োন। তারা যিহূদিয়ার বেথলেহেমের অধিবাসী ইফ্রাথীয় ছিল। তারা মোয়াব দেশে গিয়া বসবাস করতে লাগল। \p \v 3 কিন্তু ঘটনাক্রমে নয়মীর স্বামী ইলীমেলক মারা গেল। তাই সে দুই ছেলে নিয়ে একা বসবাস করতে লাগল। \v 4 নয়মীর দুই ছেলে মোয়াবের মেয়েদের বিয়ে করল। সেই দুই মোয়াবীয় মহিলার নাম ছিল অর্পা ও রূত। মোয়াব দেশে এরা দশ বছর থাকার পর, \v 5 নয়মীর দুই ছেলে মহলোন ও কিলিয়োনও মারা গেল। তাই নয়মী স্বামী ও দুই ছেলে হারিয়ে একা হয়ে গেল। \s1 নয়মী ও রূত বেথলেহেমে ফিরে আসে \p \v 6 এরপর নয়মী তার দুই ছেলের স্ত্রীদের নিয়ে মোয়াব দেশ থেকে ফিরে আসার জন্য তৈরি হল। মোয়াব দেশে থাকার সময় সে শুনেছিল যে সদাপ্রভু দুর্ভিক্ষের সময় তাঁর লোকদের খাবার জুগিয়েছেন। \v 7 তাই নয়মী তার দুই পুত্রবধূকে নিয়ে যিহূদা দেশের রাস্তার দিকে গেল। \p \v 8 কিন্তু নয়মী তার দুই পুত্রবধূকে বলল, “তোমরা যে যার মায়ের বাড়িতে ফিরে যাও। সদাপ্রভু তোমাদের দয়া দেখান, যেমন তোমরা যারা মারা গেছে তাদের উপর ও আমার উপর দয়া দেখিয়েছ। \v 9 সদাপ্রভু তোমাদের দুজনকে নিজের নিজের স্বামীর ঘর পেতে সাহায্য করুন!” \p তারপর সে তাদের চুমু খেল আর তারা জোরে জোরে কাঁদতে লাগল \v 10 এবং তারা নয়মীকে বলল, “না, আমরা তোমার সঙ্গে তোমার লোকদের কাছে ফিরে যাব।” \p \v 11 কিন্তু নয়মী বলল, “বাছা তোমরা ফিরে যাও। কেন তোমরা আমার সঙ্গে যাবে? আমার সঙ্গে আর কি কোনও ছেলে আছে যে তোমাদের স্বামী হতে পারবে? \v 12 বাছা, ফিরে যাও। কারণ আমি যে বৃদ্ধা, বিয়ে করে আরেকটি স্বামী পাওয়ার বয়স আর নেই। যদি আমার আশাও থাকে, যদি আজ রাতেই আমি বিয়ে করে স্বামী পাই এবং ছেলেদের জন্ম দিই, \v 13 তারা যতদিন পর্যন্ত না বড়ো হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত তোমরা কি তাদের জন্য বিয়ে না করে অপেক্ষা করবে? না বাছা, এরকম করা তোমাদের থেকে আমার জন্য খুবই শক্ত কাজ। কারণ সদাপ্রভু আমার বিরোধী হয়েছেন!” \p \v 14 নয়মীর কথা শুনে, আবার তারা জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। তারপর অর্পা তার শাশুড়িকে চুমু দিয়ে তার পথে চলে গেল, কিন্তু রূত তাকে ধরে থাকল। \p \v 15 নয়মী তাকে বলল, “দেখো, তোমার জা তার লোকজনের ও তার দেবতাদের কাছে ফিরে গেল। তাই তুমিও তার সঙ্গে ফিরে যাও।” \p \v 16 কিন্তু রূত বলল, “আপনার কাছ থেকে ফিরে যেতে বা আপনাকে ছেড়ে যেতে আর আমাকে অনুরোধ করবেন না। আপনি যেখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব। আপনি যেখানে থাকবেন আমিও সেখানে থাকব। আপনার লোকেরা আমার লোক এবং আপনার ঈশ্বর হবেন আমার ঈশ্বর। \v 17 আপনি যেখানে মরবেন আমিও সেখানে মরব, এবং সেখানেই আমার কবর হবে। তাই সদাপ্রভুই এই বিষয়ে আমার বিচার করে শাস্তি দিন। আর যাই হোক শুধু মৃত্যুই যেন আমাকে আপনার থেকে আলাদা করে।” \v 18 যখন নয়মী দেখলো যে, রূত কোনোমতেই তাকে ছেড়ে যাবে না, তাই সে আর কিছু বলল না। \p \v 19 তাই তারা দুজন চলতে লাগল, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা বেথলেহেমে পৌঁছাল। তারা যখন বেথলেহেমে পৌঁছাল, তখন তাদের কারণে সমগ্র নগর আলোড়িত হল, এবং মহিলারা বলল, “এ মহিলাটি কি নয়মী?” \p \v 20 নয়মী তাদের বলল, “আমাকে নয়মী\f + \fr 1:20 \fr*\ft মনোরমা বা সুন্দরী\ft*\f* বোলো না। আমাকে মারা\f + \fr 1:20 \fr*\ft তিক্তা\ft*\f* বলে ডাকো। কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবনে অনেক সমস্যা নিয়ে এসেছেন। \v 21 আমি পরিপূর্ণা হয়ে মোয়াবে গিয়েছিলাম, কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে শূন্য করে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। কেন আমাকে নয়মী বলছ? সদাপ্রভু আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। সর্বশক্তিমান আমাকে দুঃখভোগ করতে অনুমতি দিয়েছেন।” \p \v 22 তাই নয়মী তার বউমা মোয়াবীয় রূতের সঙ্গে মোয়াব দেশ থেকে বেথলেহেমে ফিরে এল। যব কাটা শুরু হওয়ার সময় তারা বেথলেহেমে এসে পৌঁছাল। \c 2 \s1 যবের ক্ষেতে রূতের সঙ্গে বোয়সের দেখা হয় \p \v 1 নয়মীর স্বামী ইলীমেলকের পরিবারের একজন সম্ভ্রান্ত লোক ছিলেন, যাঁর নাম বোয়স। \p \v 2 আর মোয়াবীয় রূত তার শাশুড়িকে বলল, “দয়া করে আমাকে যে কোনো জমিতে শিষ কুড়াতে অনুমতি দিন। যাতে জমিতে পড়ে থাকা শিষ কুড়ানোর জন্য আমি যার পিছনে যাই তার কাছেই দয়া পাই।” \p নয়মী তাকে বলল, “বাছা আমার, যাও।” \v 3 তাই রূত বাইরে গেল, যেখানে মজুরেরা যব কেটে জমা করছিল, এবং তাদের পিছনে পিছনে গিয়ে জমিতে পড়ে থাকা যবের শিষ কুড়াতে লাগল। সেদিন ঘটনাক্রমে, সে জানতে পারল, যে জমির অংশটিতে সে কুড়াচ্ছে, সেই জমিটি বোয়সের ছিল, যিনি নয়মীর স্বামী ইলীমেলকের পরিবারের একজন। \p \v 4 ঠিক সেই সময় বোয়স বেথলেহেম থেকে আসলেন। যে মজুরেরা শস্য কেটে জমা করছিল, তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে থাকুন!” \p আর তারাও উত্তরে বলল, “সদাপ্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করুন!” \p \v 5 তখন বোয়স মজুরদের উপরে নিযুক্ত প্রধানকে বললেন, “কে এই যুবতী মহিলা?” \p \v 6 মজুরদের উপরে নিযুক্ত প্রধান বলল, “এই যুবতী সেই মোয়াবীয় মহিলা যে নয়মীর সঙ্গে মোয়াব দেশ থেকে এসেছে।” \v 7 সে বলেছিল, “দয়া করে আমাকে মজুরদের পিছনে পিছনে গিয়ে জমিতে পড়ে থাকা যবের শিষ কুড়াতে দিন। সে জমিতে গেছে এবং ঘরে খুব কম সময় আরাম করা ছাড়া, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত অনবরত কাজ করে চলেছে।” \p \v 8 তাই বোয়স রূতকে বললেন, “বাছা আমার, খুব মন দিয়ে আমার কথা শোনো, এই জমি ছেড়ে আর অন্য কোনো লোকের জমিতে শিষ কুড়াতে যেয়ো না। এখানে আমার দাসীদের সঙ্গে থাকো। \v 9 তারা যে জমিতে শস্য জমা করছে, সেই জমির উপর তোমার চোখ রেখে, তাদের পিছনে পিছনে শিষ কুড়াও। আমি আমার দাসদের বলে দিয়েছি, যেন তারা তোমার গায়ে হাত না দেয়। আর যখন তোমার পিপাসা পাবে তখন আমার দাসেরা যে জল ভরে রেখেছে সেই জলের পাত্রের কাছে গিয়ে জল পান করবে।” \p \v 10 বোয়সের সব কথা শোনার পর রূত মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করল। সে জিজ্ঞাসা করল, “কেন আমি আপনার চোখে এত দয়া পেয়েছি? কেনই বা আপনি আমার এত যত্ন নিচ্ছেন? আমি তো অন্য দেশের লোক, আপনার কাছে বিদেশিনী।” \p \v 11 বোয়স উত্তরে বললেন, “তোমার স্বামীর মৃত্যুর পর তুমি তোমার শাশুড়ির জন্য যা কিছু করেছ, এবং কীভাবে তুমি তোমার জন্মভূমি, তোমার বাবা ও মাকে ছেড়ে, যে লোকদের তুমি আগে জানতে না, তাদের সঙ্গে বসবাস করতে এসেছ, সেই বিষয়ে তোমার সব কথা আমি লোকের মুখে শুনেছি। \v 12 সদাপ্রভু তোমার কাজের পুরস্কার দিন। সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাকে তোমার কাজের পুরো দাম দিন, যাঁর কাছে আশ্রয় নিয়ে সুরক্ষা পেতে তুমি এখানে এসেছ।” \p \v 13 তখন রূত বোয়সকে বলল, “হে আমার প্রভু, এখন আমি যেমন আপনার কাছে দয়া পেয়েছি, তেমনি দয়া যেন এর পরেও পেতে পারি। আপনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন এবং আপনার এই দাসীর সঙ্গে দয়ালু ভাব দেখিয়েছেন—যদিও আমি আপনার যত দাসী আছে তাদের একজনেরও যোগ্য নই।” \p \v 14 দুপুরবেলায় খাবার সময় বোয়স রূতকে ডেকে বললেন, “এখানে উঠে এসো, কিছু রুটি নিয়ে সিরকায় ডুবিয়ে নাও।” \p যখন সে শস্যচ্ছেদকদের কাছে গিয়ে বসল, তখন বোয়স তাকে কিছুটা ভাজা শস্য দিলেন। মনের ইচ্ছামতো পেট পুরে সে খেল এবং কিছু রেখে দিল। \v 15 যখন সে আবার শস্য কুড়াতে উঠল, তখন বোয়স তার দাসদের আদেশ দিয়ে বললেন, “বরং একে তোমাদের আঁটির মধ্যে থেকে কুড়াতে দিয়ো, তার বিরুদ্ধে কিছু কথা বলবে না। \v 16 বরং আঁটির মধ্যে থেকে কিছু শিষ বের করে তার জন্য ফেলে দিয়ো যেন সে কুড়াতে পারে এবং তাকে বকাবকি করবে না।” \p \v 17 তাই রূত সন্ধ্যা পর্যন্ত বোয়সের জমিতে শিষ কুড়ালো। পরে সে কুড়ানো যব ঝাড়াই করলে তার পরিমাণ প্রায় এক ঐফা\f + \fr 2:17 \fr*\ft প্রায় 13 কিলোগ্রাম\ft*\f* হল। \v 18 এরপর সে সেগুলি নিয়ে নগরে গেল আর তার শাশুড়ি দেখল যে সে কত কুড়িয়েছে। রূত যথেষ্ট খাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া খাবার বের করে তার শাশুড়িকে দিল। \p \v 19 তার শাশুড়ি তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি আজ কোথায় শিষ কুড়াতে গিয়েছিলে? আজ তুমি কোথায় কাজ করলে? যিনি তোমার উপর দয়া দেখিয়েছেন তাঁর মঙ্গল হোক!” \p তাই সে তার শাশুড়িকে বলল, “আমি আজ যার জমিতে কাজ করেছি সেই ব্যক্তির নাম বোয়স।” \p \v 20 তখন নয়মী রূতকে বলল, “ধন্য সদাপ্রভু যিনি তাঁর দয়া জীবিত ও মৃতদের উপর দেখিয়েছেন।” নয়মী রূতকে আরও বলল, “সে আমাদের পরিবারের এক নিকট আত্মীয় এবং আমাদের একজন মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি।” \p \v 21 পরে মোয়াবীয় রূত বলল, “তিনি আমাকে আরও বললেন, তুমি আমার দাসদের সঙ্গে থেকো যতক্ষণ না তারা শস্য জমা করার কাজ শেষ করছে।” \p \v 22 নয়মী তার বউমা রূতকে বলল, “বাছা, তোমার পক্ষে এই ভালো যে তুমি তাঁর দাসীদের সঙ্গে ছিলে কারণ অন্যের জমি হলে তোমার ক্ষতি হত।” \p \v 23 তাই যব ও গম কুড়ানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত রূত বোয়সের দাসীদের সঙ্গেই ছিল। এইভাবে সে তার শাশুড়ির সঙ্গে থাকতে লাগল। \c 3 \s1 রূত এবং বোয়স যব ঝাড়ার খামারে \p \v 1 একদিন রূতের শাশুড়ি নয়মী তাকে বলল, “বাছা আমার, আমি কি তোমার জন্য এমন একটি ঘর দেখব না যেখানে তোমার জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবকিছুই তুমি পেতে পারবে? \v 2 বোয়স আমাদেরই পরিবারের লোক যাঁর দাসীদের সঙ্গে তুমি সারাদিন ছিলে। আজ রাতে তিনি খামারে যব ঝাড়াই করবেন। \v 3 তাই তেল মেখে চান করো ও গায়ে আতর লাগাও এবং তোমার সব থেকে সুন্দর কাপড়টি পরে নাও। তারপর খামারে নেমে যাও, কিন্তু সাবধান, যতক্ষণ না বোয়স খাবার খেয়ে জলপান করছেন, ততক্ষণ তিনি যেন জানতে না পারেন যে তুমি সেখানে আছ। \v 4 যখন তিনি শুতে যাবেন, ভালো করে দেখবে তিনি কোথায় শুয়েছেন। ভিতরে গিয়ে তাঁর পায়ের চাদর সরিয়ে, তুমি তাঁর পায়ের তলায় শোবে। তখন তিনি তোমাকে কী করতে হবে তা বলে দেবেন।” \p \v 5 রূত তার শাশুড়িকে উত্তর দিল, “আপনি আমাকে যা কিছু বললেন আমি তাই করব।” \v 6 তাই রূত খামারে নেমে গেল এবং তার শাশুড়ির কথামতো সবকিছু করল। \p \v 7 যখন বোয়স খাওয়াদাওয়া শেষ করে খামারের এক পাশে কোনাতে শুতে গেলেন, তাঁর মন খুব খুশি ছিল। পরে রূত চুপিচুপি খামারের ভিতরে এল। তারপর বোয়সের পায়ের চাদর সরিয়ে, তাঁর পায়ের তলায় শুয়ে পড়ল। \v 8 গভীর রাতে যখন বোয়স পাশ ফিরলেন তিনি ভয়ে চমকে উঠলেন, তিনি দেখলেন যে একজন মহিলা তাঁর পায়ের তলায় শুয়ে আছে। \p \v 9 বোয়স তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কে তুমি?” \p সে উত্তর দিল, “আমি আপনার দাসী রূত, আপনার দাসীর উপর আপনার চাদর ঢেকে দিন। কারণ আপনি আমাদের পরিবারের একজন মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি।” \p \v 10 বোয়স বললেন, “বাছা আমার, সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করুন। ধনী বা দরিদ্র কোনও যুবকের পিছনে না গিয়ে তুমি প্রথমে যে দয়া দেখিয়েছিলে তার থেকে এই দয়াটি মহৎ। \v 11 এখন বাছা আমার, ভয় কোরো না। তুমি যা বলবে আমি তোমার জন্য তাই করব। কারণ এই নগরের সবাই জানে যে তুমি আদর্শ চরিত্রবিশিষ্ট এক মহিলা। \v 12 একথা সত্যি যে আমি তোমার মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি কিন্তু আমার থেকেও একজন আরও খুব কাছের মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি এই নগরে আছেন। \v 13 আজ রাতটি এখানে কাটাও। সকালে আমি তাঁকে বলবো, যদি তিনি তোমাকে তাঁর নিজের করে গ্রহণ করেন তবে ভালো, কিন্তু তিনি যদি গ্রহণ না করেন তবে জীবিত সদাপ্রভুর নামে আমি তোমাকে আমার নিজের করে গ্রহণ করব! তাই সকাল পর্যন্ত এখানে শুয়ে থাকো।” \p \v 14 তাই রূত সকাল পর্যন্ত বোয়সের পায়ের তলায় শুয়ে থাকল, কিন্তু যখন লোকে একে অপরকে চিনতে পারে সেই সময় খুব অন্ধকার থাকতে সে উঠল; কারণ বোয়স তাকে বলেছিলেন, “দেখো কেউ যেন জানতে না পারে যে একজন মহিলা খামারে এসেছিল।” \p \v 15 তিনি আরও বললেন, “তোমার গায়ের শালটি আমার কাছে এনে মেলে ধরো।” সে তাই করল, বোয়স তাকে ছয় মান\f + \fr 3:15 \fr*\ft অথবা, ছয় কাঠা; 17 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* যব দিলেন। এরপর সে নগরে চলে গেল। \p \v 16 যখন রূত তার শাশুড়ির কাছে ফিরে এল, নয়মী তাকে জিজ্ঞাসা করল, “বাছা আমার, তোমার কী হল?” \p তখন রূত তার প্রতি যা কিছু ঘটেছিল, সব তার শাশুড়িকে বলল। \v 17 রূত আরও বলল, “তিনি এই ছয় মান যব আমাকে দিয়ে বললেন, ‘তোমার শাশুড়ির কাছে খালি হাতে যেয়ো না।’ ” \p \v 18 এরপর নয়মী তাকে বলল, “বাছা আমার, এবার তুমি অপেক্ষা করো আর দেখো কী হয়। কারণ যতক্ষণ না আজ কিছু স্থির হয়, তিনি আরাম করবেন না।” \c 4 \s1 বোয়স রূতকে বিয়ে করলেন \p \v 1 ইত্যবসরে বোয়স নগরের ফটকের কাছে গেলেন এবং সেখানে বসলেন। যে মুক্তিকর্তা জ্ঞাতির কথা তিনি রূতকে বলেছিলেন, তাঁকে যখন তিনি রাস্তা দিয়ে যেতে দেখলেন, তখন বোয়স তাঁকে ডেকে বললেন, “বন্ধু আমার কাছে এখানে এসে বসো।” তাই তিনি বোয়সের কাছে এসে বসলেন। \p \v 2 বোয়স নগরের আরও দশজন প্রাচীনকে ডেকে বললেন, “এখানে আমার কাছে এসে বসুন।” তাঁরাও তাঁর কাছে এসে বসলেন। \v 3 তখন বোয়স সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতিকে বললেন, “যে নয়মী মোয়াব দেশ থেকে ফিরে এসেছে, সে তার স্বামী ইলীমেলকের জমিটি বিক্রি করতে চায়। \v 4 আমি ভাবলাম যে এই বিষয়টি তোমার নজরে আমার আনা উচিত এবং এখানে যাঁরা বসে আছেন ও আমার স্বজাতীয় প্রাচীনদের সামনে আমি এই জমিটি মুক্ত করার প্রস্তাব রাখছি। যদি তুমি সেই জমিটি মুক্ত করতে চাও, মুক্ত করতে পারো। কিন্তু যদি না করতে চাও, আমাকে বলো, যেন আমি তা জানতে পারি। কারণ সেই জমিটি মুক্ত করার প্রথম অধিকার তোমার ছাড়া আর কারোর নেই এবং তারপর সেই অধিকার আছে আমার।” \p সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বললেন, “আমি এটি মুক্ত করব।” \p \v 5 তারপর বোয়স বললেন, “যেদিন তুমি নয়মী ও রূতের কাছ থেকে সেই জমি কিনবে, সেদিন তাদের মরা লোকের সম্পত্তির সঙ্গে মরা লোকটির নাম উদ্ধার করার জন্য তার বিধবা মোয়াবীয় মহিলা রূতকে নিজের স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে হবে।” \p \v 6 তখন সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বললেন, “আমি মুক্ত করতে পারব না, কারণ পরে এমন হলে আমি আমার নিজের সম্পত্তিও হারাব। তুমি নিজেই এই সম্পত্তি মুক্ত করো। আমি করতে পারব না।” \p \v 7 (প্রাচীনকালে ইস্রায়েল জাতির মধ্যে সম্পত্তি মুক্ত করার ও তার মালিকানা হস্তান্তর করে তা চূড়ান্ত করার জন্য এক পক্ষ তার পায়ের চটি খুলে তা অন্য পক্ষকে দিয়ে দিত। ইস্রায়েলে এই প্রথা বিনিময়ের ক্ষেত্রে বৈধতা পেত।) \p \v 8 তাই সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বোয়সকে বললেন, “তুমিই কিনে নাও।” আর তিনি নিজের চটি খুলে ফেললেন। \p \v 9 তখন বোয়স, যারা সেখানে বসেছিল সেই লোকদের ও প্রাচীনদের উদ্দেশে ঘোষণা করে বললেন, “আজ আমি আপনাদের সকলকে সাক্ষী রেখে ইলীমেলক, কিলিয়োন এবং মহলোনের সমস্ত সম্পত্তি নয়মীর কাছ থেকে কিনে নিলাম। \v 10 আর আমি মহলোনের স্ত্রী মোয়াবীয় রূতকে নিজের স্ত্রীরূপে সেই মৃত ব্যক্তির নাম রক্ষা করার জন্য গ্রহণ করলাম, যেন সেই ব্যক্তির নাম নগরের পারিবারিক নামের তালিকা থেকে বাদ না যায়। আজ আপনারা তার সাক্ষী হলেন!” \p \v 11 নগরের ফটকের কাছে যত লোক ছিল এবং প্রাচীনেরা সবাই বললেন, “আমরা এর সাক্ষী রইলাম। যে মহিলা তোমার ঘরে আসছে তাকে সদাপ্রভু রাহেল ও লেয়ার মতো তৈরি করুন, যাঁরা দুজন ইস্রায়েল পরিবারকে তৈরি করেছিলেন। ইফ্রাথায় তুমি ধনবান হও এবং বেথলেহেমে তোমার নাম বিখ্যাত হোক। \v 12 এই যুবতী মহিলার মাধ্যমে সদাপ্রভু তোমাকে যে সন্তানদের দেন, তারা যেন যিহূদা ও তামরের পুত্র পেরসের মতো হয়।” \s1 নয়মী একটি পুত্র লাভ করে \p \v 13 তাই বোয়স রূতকে গ্রহণ করলেন এবং সে তাঁর স্ত্রী হল। এরপর বোয়স তার কাছে গেলে, সদাপ্রভু রূতকে গর্ভধারণ করার শক্তি দিলেন এবং সে এক ছেলের জন্ম দিল। \v 14 সেই দেশের মহিলারা নয়মীকে বলল, “সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, কারণ তিনি তোমাকে মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি থেকে আলাদা করেননি। সমগ্র ইস্রায়েল জাতির মধ্যে সে বিখ্যাত হোক! \v 15 এই পুত্র তোমার জীবন আবার নতুন করে দিক এবং বৃদ্ধাবস্থায় তোমার যত্ন করুক। কারণ তুমি যাকে সাত ছেলের থেকেও বেশি ভালোবাসো সেই এর জন্ম দিয়েছে।” \p \v 16 এরপর নয়মী ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে ধরল এবং তার যত্ন নিল। \v 17 সেখানে বসবাসকারী মহিলারা বলল, “নয়মীর এক ছেলে জন্মেছে!” এই বলে তারা সেই ছেলেটির নাম রাখল ওবেদ। ইনি যিশয়ের বাবা, যিনি দাউদের বাবা। \s1 দাউদের বংশপরিচয় \li4 \v 18 আর এই হল পেরসের পরিবারের সন্তানদের বংশতালিকা: \b \li1 পেরসের ছেলে হিষ্রোণ, \li1 \v 19 হিষ্রোণের ছেলে রাম, \li1 রামের ছেলে অম্মীনাদব, \li1 \v 20 অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন, \li1 নহশোনের ছেলে সলমন, \li1 \v 21 সল্‌মোনের ছেলে বোয়স, \li1 বোয়সের ছেলে ওবেদ, \li1 \v 22 ওবেদের ছেলে যিশয়, \li1 এবং যিশয়ের ছেলে দাউদ।