\id MRK - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h মার্ক \toc1 মার্ক লিখিত সুসমাচার \toc2 মার্ক \toc3 মার্ক \mt1 মার্ক লিখিত সুসমাচার \c 1 \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের দ্বারা পথ প্রস্তুতির আহ্বান \p \v 1 ঈশ্বরের পুত্র\f + \fr 1:1 \fr*\ft মার্ক অত্যন্ত স্পষ্টরূপে তাঁর এই সুসমাচারে বলেছেন যে, প্রভু যীশু স্বয়ং ঈশ্বরের পুত্র।\ft*\f* যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের সূচনা। \v 2 ভাববাদী যিশাইয়ের গ্রন্থে লেখা আছে: \q1 “আমি আমার বার্তাবাহককে তোমার আগে পাঠাব, \q2 যে তোমার পথ প্রস্তুত করবে”\f + \fr 1:2 \fr*\ft \+xt মালাখি 3:1\+xt*\ft*\f*— \q1 \v 3 “মরুপ্রান্তরে একজনের কণ্ঠস্বর আহ্বান করছে, \q1 তোমরা প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত করো, \q2 তাঁর জন্য রাজপথগুলি সরল করো।”\f + \fr 1:3 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 40:3\+xt*\ft*\f* \m \v 4 আর তাই যোহন মরুপ্রান্তরে এসে জলে বাপ্তিষ্ম দিতে এবং মন পরিবর্তন,\f + \fr 1:4 \fr*\ft অর্থাৎ পাপের পথ ছেড়ে ঈশ্বরের পথে ফিরে আসা।\ft*\f* অর্থাৎ পাপক্ষমার জন্য বাপ্তিষ্ম বিষয়ক বাণী প্রচার করতে লাগলেন। \v 5 সমগ্র যিহূদিয়ার গ্রামাঞ্চল ও জেরুশালেম নগরের সমস্ত লোক তাঁর কাছে যেতে লাগল। তারা নিজের নিজের পাপস্বীকার করে জর্ডন নদীতে তাঁর কাছে বাপ্তিষ্ম নিতে লাগল। \v 6 যোহন উটের লোমে তৈরি পোশাক এবং কোমরে এক চামড়ার বেল্ট পরতেন। তাঁর খাদ্য ছিল পঙ্গপাল ও বনমধু। \v 7 আর তিনি প্রচার করতেন: “যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার চেয়েও পরাক্রমশালী, নত হয়ে যাঁর চটিজুতোর ফিতেটুকু খোলারও যোগ্যতা আমার নেই। \v 8 আমি তোমাদের জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি, কিন্তু তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম দেবেন।” \s1 যীশুর বাপ্তিষ্ম ও তাঁকে প্রলুব্ধ করার প্রয়াস \p \v 9 সেই সময় যীশু গালীল প্রদেশের অন্তর্গত নাসরৎ নগর থেকে এলেন এবং যোহনের কাছে জর্ডন নদীতে বাপ্তিষ্ম নিলেন। \v 10 যীশু জলের মধ্য থেকে উঠে আসা মাত্র দেখলেন, আকাশ উন্মুক্ত হয়ে গেছে এবং পবিত্র আত্মা কপোতের মতো তাঁর উপরে অবতরণ করছেন। \v 11 আর সেই মুহূর্তে স্বর্গ থেকে এক স্বর ধ্বনিত হল: “তুমি আমার পুত্র, আমি তোমাকে প্রেম করি, তোমারই উপর আমি পরম প্রসন্ন।” \p \v 12 ঠিক এর পরেই পবিত্র আত্মা তাঁকে মরুপ্রান্তরে পাঠিয়ে দিলেন \v 13 এবং সেই মরুপ্রান্তরে চল্লিশ দিন থাকার সময় যীশু শয়তানের দ্বারা প্রলোভিত হলেন। তখন তাঁর চারপাশে ছিল বন্যপশু; আর স্বর্গদূতেরা তাঁর পরিচর্যা করলেন। \s1 শিষ্যদের প্রতি যীশুর প্রথম আহ্বান \p \v 14 যোহন কারাগারে বন্দি হওয়ার পর, যীশু গালীলে গিয়ে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন এবং বললেন: \v 15 “কাল পূর্ণ হয়েছে, তাই ঈশ্বরের রাজ্য সন্নিকট।\f + \fr 1:15 \fr*\ft অর্থাৎ ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হতে আর দেরি নেই, কারণ যীশু স্বয়ং সেই ঐশ-রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।\ft*\f* তোমরা মন পরিবর্তন করো ও সুসমাচারে বিশ্বাস করো।” \p \v 16 পরে গালীল সাগরের তীর ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় যীশু, শিমোন ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়কে দেখতে পেলেন। তাঁরা সাগরের জলে জাল ফেলছিলেন, কারণ তাঁরা ছিলেন মৎস্যজীবী। \v 17 যীশু বললেন, “এসো, আমাকে অনুসরণ করো, আমি তোমাদের মানুষ-ধরা জেলে করব।” \v 18 সেই মুহূর্তেই তাঁরা জাল ফেলে তাঁকে অনুসরণ করলেন। \p \v 19 আরও কিছুটা পথ অতিক্রম করার পর যীশু সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাই যোহনকে দেখতে পেলেন। তাঁরা দুজন নৌকায় বসে জাল মেরামত করছিলেন। \v 20 যীশু তখনই তাঁদের ডাক দিলেন এবং তাঁরা মজুরদের সঙ্গে তাঁদের বাবা সিবদিয়কে নৌকায় পরিত্যাগ করে যীশুকে অনুসরণ করলেন।\f + \fr 1:20 \fr*\ft শিষ্যদের আহ্বান করার এই ঘটনা প্রভু যীশুর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার একটি বিশেষ লক্ষণীয় দিক। এই চারজন এক কথায় তাদের ঘর-সংসার-পরিজন সব ছেড়ে যীশুর অনুগামী হয়েছিলেন।\ft*\f* \s1 মন্দ-আত্মা তাড়ানো \p \v 21 এরপর তাঁরা সবাই কফরনাহূমে গেলেন। পরবর্তী সাব্বাথ অর্থাৎ বিশ্রামদিনে\f + \fr 1:21 \fr*\ft অর্থাৎ শনিবার। ইহুদিদের শাস্ত্রমতে এই দিনটি হল কর্মবিরতির দিন।\ft*\f* যীশু সমাজভবনে\f + \fr 1:21 \fr*\ft সমাজভবন, অর্থাৎ ইহুদিদের সমাজভবন, যেখানে তারা নিয়মিতরূপে ঐশ-আরাধনা, শাস্ত্র-আলোচনা ও সামাজিক বিচার নিষ্পন্ন করার জন্য সম্মিলিত হত।\ft*\f* গিয়ে লোকদের শিক্ষা দিতে শুরু করলেন। \v 22 তাঁর শিক্ষায় লোকেরা বিস্মিত হল, কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির মতো শিক্ষা দিতেন, প্রথাগত শাস্ত্রবিদদের মতো নয়। \v 23 সেই সময় সমাজভবনে উপস্থিত মন্দ-আত্মাগ্রস্ত\f + \fr 1:23 \fr*\ft এখানে ব্যবহৃত গ্রিক শব্দটির আক্ষরিক অর্থ, অশুচি-আত্মাগ্রস্ত।\ft*\f* এক ব্যক্তি চিৎকার করে উঠল, \v 24 “নাসরতের যীশু, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে—ঈশ্বরের সেই পবিত্রজন!” \p \v 25 যীশু তাকে কঠোরভাবে ধমক দিয়ে বললেন, “চুপ করো! ওর ভিতর থেকে বেরিয়ে এসো।” \v 26 তখন সেই মন্দ-আত্মা চিৎকার করে লোকটির মধ্য থেকে বেরিয়ে গেল। \p \v 27 এই ঘটনায় লোকেরা এমনই অবাক হল যে, তারা পরস্পর বলাবলি করল, “এ কী? এ তো এক নতুন ধরনের শিক্ষা—আর কী কর্তৃত্বপূর্ণ! এমনকি, ইনি কেমন কর্তৃত্ব সহকারে মন্দ-আত্মাদের আদেশ দেন, আর তারাও তাঁর আজ্ঞা পালন করে!” \v 28 অচিরেই যীশুর এসব কীর্তি ও বাণী সমগ্র গালীল অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। \s1 যীশু বহু মানুষকে সুস্থ করলেন \p \v 29 যীশু সমাজভবন ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে নিয়ে শিমোন ও আন্দ্রিয়ের বাড়িতে গেলেন। \v 30 সেই সময় শিমোনের শাশুড়ি জ্বরে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন, যাঁর বিষয়ে যীশুকে তাঁরা জানালেন। \v 31 তাই তিনি প্রথমেই শিমোনের শাশুড়ির কাছে গেলেন, তাঁর হাত ধরলেন ও তাঁকে উঠে বসতে সাহায্য করলেন। তক্ষুনি শিমোনের শাশুড়ির জ্বর ছেড়ে গেল এবং তিনি তাঁদের আপ্যায়ন করতে লাগলেন। \p \v 32 সেদিন সন্ধ্যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার পর, স্থানীয় লোকেরা সমস্ত পীড়িত ও ভূতগ্রস্তদের যীশুর কাছে নিয়ে এল। \v 33 ফলে শিমোনের বাড়ির দরজায় সমস্ত নগরের লোক এসে জড়ো হল \v 34 এবং যীশু বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত অসংখ্য মানুষকে সুস্থ করলেন। বহু ভূতকেও তিনি তাড়ালেন, কিন্তু ভূতদের তিনি কোনো কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা জানত যে তিনি কে। \s1 যীশুর নিভৃত প্রার্থনা \p \v 35 পরদিন খুব ভোরে, রাত পোহাবার অনেক আগে, যীশু উঠে পড়লেন এবং বাড়ি ছেড়ে এক নির্জন স্থানে গিয়ে প্রার্থনা করতে শুরু করলেন। \v 36 এদিকে শিমোন ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা তাঁকে খুঁজতে বের হলেন। \v 37 তাঁকে দেখতে পেয়ে তাঁরা উৎফুল্ল কণ্ঠে চিৎকার করে উঠলেন, “সবাই আপনার খোঁজ করছে।” \p \v 38 যীশু উত্তর দিলেন, “চলো, আমরা অন্য কোথাও—কাছের গ্রামগুলিতে যাই, যেন ওইসব জায়গাতেও আমি বাণী প্রচার করতে পারি, কারণ সেজন্যই আমি এসেছি।” \v 39 অতএব তিনি গালীলের সর্বত্র বিভিন্ন সমাজভবনে গিয়ে বাণী প্রচার করলেন ও ভূতে ধরা লোকদের সুস্থ করে তুললেন। \s1 যীশু কুষ্ঠরোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করলেন \p \v 40 একবার একজন কুষ্ঠরোগী যীশুর কাছে এসে নতজানু হয়ে মিনতি করল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছা করলেই আমাকে শুচিশুদ্ধ করতে পারেন।” \p \v 41 করুণায় পূর্ণ হয়ে যীশু তাঁর হাত বাড়িয়ে সেই ব্যক্তিকে স্পর্শ করলেন। বললেন, “আমার ইচ্ছা, তুমি শুচিশুদ্ধ হও।” \v 42 সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ মিলিয়ে গেল, সে শুচিশুদ্ধ হয়ে উঠল। \p \v 43 যীশু তাকে তক্ষুনি অন্যত্র পাঠিয়ে এই বলে দৃঢ়ভাবে সতর্ক করে দিলেন, \v 44 “দেখো, তুমি একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও এবং তোমার শুচিশুদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তাদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য মোশির আদেশমতো নৈবেদ্য উৎসর্গ করো।” \v 45 কিন্তু সে তা না করে, ফিরে গিয়ে মুক্তকণ্ঠে ঘটনাটির কথা সবাইকে বলে বেড়াতে লাগল, ফলে এই সংবাদ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। এর ফলে যীশু আর কোনো নগরে প্রকাশ্যে প্রবেশ করতে পারলেন না; নগরের বাইরে নির্জন স্থানেই তিনি থাকতে লাগলেন। তবুও বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে মানুষ তাঁর কাছে আসতে লাগল। \c 2 \s1 যীশু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করলেন \p \v 1 কয়েক দিন পরে যীশু যখন আবার কফরনাহূমে প্রবেশ করলেন, তখন সেখানকার লোকজনেরা জানতে পারল যে, তিনি বাড়িতে এসেছেন। \v 2 ফলে সেই বাড়িতে অসংখ্য লোক জড়ো হল; এমনকি, দরজার বাইরেও তিল ধারণের স্থান রইল না। যীশু তাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করলেন। \v 3 সেই সময় একদল লোক চারজন বাহকের সাহায্যে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে যীশুর কাছে নিয়ে আসতে চাইছিল। \v 4 কিন্তু ভিড়ের জন্য তারা কিছুতেই যীশুর কাছে পৌঁছাতে পারছিল না; ফলে, যীশুর ঠিক মাথার উপরের ছাদ খুলে তারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে খাটে শুইয়ে ঘরের মধ্যে নামিয়ে দিল। \v 5 তাদের এই ধরনের বিশ্বাস দেখে যীশু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, “বৎস, তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হল।” \p \v 6 সেখানে কয়েকজন শাস্ত্রবিদ বসেছিল। তারা মনে মনে ভাবল, \v 7 “লোকটা এভাবে কথা বলছে কেন? এ তো ঈশ্বরনিন্দা! কেবলমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?” \p \v 8 তাদের মনের এই কথা যীশু তক্ষুনি তাঁর অন্তরে বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “তোমরা এসব কথা চিন্তা করছ কেন? \v 9 পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীকে কোন কথাটি বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ বলা, নাকি ‘ওঠো, তোমার বিছানা তুলে নিয়ে ঘরে চলে যাও’ বলা? \v 10 কিন্তু আমি চাই যেন তোমরা জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার অধিকার মনুষ্যপুত্রের আছে” এই বলে তিনি সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, \v 11 “ওঠো, তোমার খাট তুলে বাড়ি চলে যাও।” \v 12 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে উঠে তার খাট তুলে নিয়ে সকলের চোখের সামনে দিয়ে ঘরের বাইরে হেঁটে চলে গেল। এই দৃশ্য দেখে সবাই বিস্ময়ে অভিভূত হল এবং তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলতে লাগল, “এরকম ঘটনা আমরা কখনও দেখিনি।” \s1 লেবিকে আহ্বান \p \v 13 যীশু আবার গালীল সাগরের তীরে চলে গেলেন। সেখানে অনেক লোক তাঁর কাছে এসে উপস্থিত হল এবং তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। \v 14 এরপর সেখান থেকে ফেরার পথে যীশু দেখলেন, আলফেয়ের পুত্র লেবি কর আদায়ের চালাঘরে বসে আছেন। যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” লেবি\f + \fr 2:14 \fr*\fq লেবি \fq*\ft অর্থাৎ মথি।\ft*\f* তখনই উঠে পড়লেন ও তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। \p \v 15 লেবির বাড়িতে যীশু যখন রাতের খাওয়া খেতে বসেছিলেন, তখন বহু কর আদায়কারী ও পাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুর অনুগামী ছিল। \v 16 পাপী ও কর আদায়কারীদের সঙ্গে ওইভাবে পাশাপাশি বসে যীশুকে খাওয়াদাওয়া করতে দেখে, কয়েকজন শাস্ত্রবিদ ফরিশী যীশুর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করল, “তিনি এইসব কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে বসে কেন খাওয়াদাওয়া করেন?” \p \v 17 একথা শুনে যীশু তাদের বললেন, “পীড়িত ব্যক্তিরই চিকিৎসকের প্রয়োজন, সুস্থ ব্যক্তির নয়। আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের আহ্বান করতে এসেছি।” \s1 উপোস সম্বন্ধে যীশুর প্রশ্ন \p \v 18 একদিন বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের শিষ্যেরা ও ফরিশীরা উপোস করছিল। তখন কয়েকজন ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করল, “যোহন আর ফরিশীদের শিষ্যেরা উপোস করে, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা করে না, এ কেমন কথা?” \p \v 19 যীশু উত্তর দিলেন, “বর সঙ্গে থাকতে তার অতিথিরা কীভাবে উপোস করতে পারে? যতদিন বর তাদের সঙ্গে থাকবে ততদিন তারা তা করতে পারবে না। \v 20 কিন্তু সময় আসবে, যেদিন বরকে তাদের মধ্য থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে; এবং সেদিনই তারা উপোস করবে। \p \v 21 “পুরোনো পোশাকে কেউ নতুন কাপড়ের তালি লাগায় না। তা করলে নতুন কাপড়ের টুকরোটি পুরোনো পোশাক থেকে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে ও সেই ছিদ্র আরও বড়ো হয়ে উঠবে। \v 22 তেমনই পুরোনো চামড়ার সুরাধারে কেউ নতুন সুরা রাখে না। তা করলে সুরাধারের চামড়া ফেটে যাবে। তাতে সুরা এবং সুরাধার দুটিই নষ্ট হবে—তাই নতুন সুরা নতুন সুরাধারেই রাখতে হবে।” \s1 বিশ্রামদিনের প্রভু \p \v 23 এক বিশ্রামদিনে যীশু শস্যক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর শিষ্যেরা শস্যের শিষ ছিঁড়তে লাগলেন। \v 24 তা দেখে ফরিশীরা যীশুকে বলল, “আচ্ছা, বিশ্রামদিনে যা করা বিধিসংগত নয়, তা আপনার শিষ্যেরা করছে কেন?” \p \v 25 তিনি উত্তর দিলেন, “যখন দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা ক্ষুধার্ত ছিলেন, তখন খাদ্যের প্রয়োজনে তাঁরা কী করেছিলেন, তা কি তোমরা কখনও পাঠ করোনি? \v 26 মহাযাজক অবিয়াথরের সময়ে তিনি ঈশ্বরের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন যা করা একমাত্র যাজকদের পক্ষেই বিধিসংগত ছিল। এমনকি তিনি তাঁর সঙ্গীদেরও দিয়েছিলেন।” \p \v 27 তারপর তিনি তাদের বললেন, “বিশ্রামদিন সৃষ্ট হয়েছে মানুষের জন্য, মানুষ বিশ্রামদিনের জন্য সৃষ্ট হয়নি। \v 28 অতএব, মনুষ্যপুত্রই হলেন বিশ্রামদিনের প্রভু।” \c 3 \s1 যীশু বিশ্রামদিনে সুস্থ করলেন \p \v 1 অন্য এক সময়ে যীশু সমাজভবনে গেলেন। সেখানে এক লোক ছিল, যার একটি হাত শুকিয়ে গিয়েছিল। \v 2 কয়েকজন ফরিশী যীশুকে অভিযুক্ত করার সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছিল। যীশু বিশ্রামদিনে লোকটিকে সুস্থ করেন কি না, দেখার জন্য তারা তাঁর উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখল। \v 3 যার হাত শুকিয়ে গিয়েছিল, তাকে যীশু বললেন, “তুমি সবার সামনে এসে দাঁড়াও।” \p \v 4 এরপর যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “বিশ্রামদিনে কী করা ন্যায়সংগত, ভালো কাজ করা, না মন্দ কাজ করা; জীবন রক্ষা করা, না হত্যা করা?” কিন্তু তারা নীরব হয়ে রইল। \p \v 5 যীশু ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাদের সকলের দিকে তাকালেন এবং তাদের হৃদয়ের তীব্র কাঠিন্যের\f + \fr 3:5 \fr*\ft বিশ্রামদিনে একজন পঙ্গুকে সারিয়ে তোলা যে ভালো, বা নিয়মসংগত কাজ, সেই সত্যকে কঠিন হৃদয়ের ফরিশীরা মানতে পারেনি।\ft*\f* জন্য তিনি গভীর বেদনায় লোকটিকে বললেন, “তোমার হাত বাড়িয়ে দাও।” লোকটি হাত বাড়িয়ে দিল, সঙ্গে সঙ্গে তার হাত আগের মতো সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। \v 6 এরপর ফরিশীরা বেরিয়ে গেল এবং হেরোদীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করতে শুরু করল যে, কীভাবে যীশুকে হত্যা করা যায়। \s1 অনেক লোক যীশুকে অনুসরণ করল \p \v 7 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে গালীল সাগরের দিকে চলে গেলেন। গালীল থেকে অনেক লোক তাঁকে সেখানে অনুসরণ করল। \v 8 তারা যখন যীশুর সমস্ত কীর্তির কথা শুনল, তখন যিহূদিয়া, জেরুশালেম, ইদুমিয়া, জর্ডনের অপর পারের অঞ্চল এমনকি টায়ার ও সীদোনের চারদিক থেকে অসংখ্য মানুষ তাঁর কাছে এসে জড়ো হল। \v 9 এই বিপুল সংখ্যক লোক দেখে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, তাঁর জন্য একটি ছোটো নৌকা প্রস্তুত রাখতে, যেন এত ভিড়ের চাপ তাঁর উপরে এসে না পড়ে। \v 10 যেহেতু যীশু এর আগে বহু লোককে সুস্থ করেছিলেন, তাই অসংখ্য রোগী তাঁকে একবার স্পর্শ করার জন্য ঠেলাঠেলি করে সামনে এগোতে চাইছিল। \v 11 তাদের মধ্যে মন্দ-আত্মাগ্রস্ত\f + \fr 3:11 \fr*\ft এখানে ব্যবহৃত মূল গ্রিক শব্দটির অর্থ, অশুচি।\ft*\f* ব্যক্তিরা তাঁকে দেখে তাঁর সামনে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করে বলছিল, “আপনিই সেই ঈশ্বরের পুত্র।” \v 12 যীশু কিন্তু তাদের কঠোর নির্দেশ দিলেন, তারা যেন কাউকে না বলে যে, আসলে তিনি কে। \s1 যীশু বারোজন প্রেরিতশিষ্যকে মনোনীত করলেন \p \v 13 পরে যীশু এক পাহাড়ে উঠলেন ও তিনি যাদের ইচ্ছা করলেন তাঁদের কাছে আহ্বান করলেন, এবং তারা তাঁর কাছে এগিয়ে এলেন। \v 14 তিনি বারোজন শিষ্যকে নিয়োগ করলেন ও তাঁদের “প্রেরিতশিষ্য”\f + \fr 3:14 \fr*\ft প্রভু যীশু তাঁর এই বারোজন শিষ্যের হাতে তাঁর ঐশ-রাজ্য এবং মণ্ডলীর প্রচার ও প্রসারের দায়িত্বভার অর্পণ করেছিলেন। তাঁর কাছ থেকেই এই বারোজন প্রেরিতশিষ্য খ্রীষ্টীয় জীবন ও খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসের শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করেছিলেন। যীশু চেয়েছিলেন যে, এরা একদিন তাঁর প্রেরিত দূত হিসেবে তাঁর জীবন, কাজ, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের সাক্ষী হয়ে ঈশ্বরের রাজ্যের বাণী প্রচার করবেন।\ft*\f* বলে ডাকলেন যেন তাঁরা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকেন ও তিনি যেন তাঁদের প্রচারের কাজে চারদিকে পাঠাতে পারেন \v 15 এবং তাঁরা যেন ভূত তাড়ানোর ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন। \b \li4 \v 16 যে বারোজনকে তিনি প্রেরিতশিষ্য পদে নিয়োগ করলেন, তাঁরা হলেন: \b \li1 শিমোন (যাঁকে তিনি নাম দিয়েছিলেন পিতর), \li1 \v 17 সিবদিয়ের পুত্র যাকোব ও তাঁর ভাই যোহন (তিনি যাঁদের নাম দিয়েছিলেন বোনেরগশ, এর অর্থ, বজ্রতনয়); \li1 \v 18 আন্দ্রিয়, \li1 ফিলিপ, \li1 বর্থলময়, \li1 মথি, \li1 থোমা, \li1 আলফেয়ের পুত্র যাকোব, \li1 থদ্দেয়, \li1 জিলট দলভুক্ত শিমোন, \li1 \v 19 এবং যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ, যে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। \s1 আত্মীয়পরিজন ও শাস্ত্রবিদদের দ্বারা যীশু অভিযুক্ত হলেন \p \v 20 এরপর যীশু এক বাড়িতে প্রবেশ করলেন, কিন্তু সেখানেও আবার এত লোক ভিড় জমালো যে, তিনি ও তাঁর শিষ্যেরা খাওয়াদাওয়া করার সময়ই পেলেন না। \v 21 এসব ঘটনার কথা শুনে যীশুর আত্মীয়পরিজনেরা বলল, “ওর বুদ্ধিভ্রম হয়েছে।” এই বলে তারা তাঁকে ধরে আনতে গেল। \p \v 22 আর জেরুশালেম থেকে যেসব শাস্ত্রবিদ এসেছিল, তারা বলল, “ওর উপর বেলসবুল ভর করেছে। ভূতদের অধিপতির সাহায্যেই ও ভূতদের দূর করছে।” \p \v 23 যীশু তখন তাদের ডাকলেন ও রূপকের আশ্রয়ে তাদের বললেন, “শয়তান কীভাবে শয়তানকে দূর করতে পারে? \v 24 কোনো রাজ্য যদি নিজের বিপক্ষে বিভক্ত হয়, তাহলে সেই রাজ্য টিকে থাকতে পারে না। \v 25 আবার একটি পরিবার যদি নিজেরই বিরোধিতা করে, তাহলে সেই পরিবারও টিকে থাকতে পারে না। \v 26 এভাবে শয়তান যদি নিজেরই বিরুদ্ধে যায় ও বিভক্ত হয়, তাহলে সেও আর টিকে থাকতে পারে না। অর্থাৎ তার সমাপ্তি সন্নিকট। \v 27 বস্তুত, শক্তিশালী ব্যক্তির ধনসম্পত্তি লুট করতে হলে, প্রথমেই তাকে বেঁধে ফেলতে হয়, তা না হলে তার ঘরে ঢুকে তার সম্পত্তি লুট করা অসম্ভব। \v 28 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, মানুষের সব পাপ ও ঈশ্বরনিন্দা ক্ষমা করা হবে, \v 29 কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দা যে করবে, তাকে কোনো কালেই ক্ষমা করা হবে না, বরং সে হবে অনন্ত পাপের অপরাধী।” \p \v 30 তাঁর একথা বলার কারণ হল, শাস্ত্রবিদরা বলেছিল, “ওর মধ্যে মন্দ-আত্মা ভর করেছে।” \p \v 31 তখন যীশুর মা ও ভাইয়েরা সেখানে এসে পৌঁছালেন। তাঁরা ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে যীশুকে ডেকে আনার জন্য একজনকে ভিতরে পাঠালেন। \v 32 সেই সময় যীশুর চারপাশে বহু মানুষ ভিড় করে বসেছিল। তারা তাঁকে বলল, “আপনার মা ও ভাইয়েরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং আপনার খোঁজ করছেন।” \p \v 33 তিনি প্রশ্ন করলেন, “কে আমার মা? আর আমার ভাইয়েরাই বা কারা?” \p \v 34 তারপর, যারা তাঁর চারপাশে গোল করে বসেছিল, তাদের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, “এরাই হল আমার মা ও ভাইয়েরা! \v 35 কারণ যে কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার ভাই ও বোন এবং মা।” \c 4 \s1 বীজবপকের রূপক \p \v 1 যীশু আবার সাগরের তীরে গিয়ে শিক্ষা দেওয়া শুরু করলেন। সেখানে তাঁর চারপাশে এত লোক এসে ভিড় করল যে, তিনি সাগরের উপরে একটি নৌকায় উঠলেন ও তার উপরে বসলেন, লোকেরা রইল সাগরের তীরে, জলের কিনারায়। \v 2 তিনি রূপকের মাধ্যমে বহু বিষয়ে তাদের শিক্ষা দিলেন। তাঁর উপদেশে তিনি বললেন, \v 3 “শোনো! একজন কৃষক তার বীজবপন করতে গেল। \v 4 সে যখন বীজ ছড়াচ্ছিল, কিছু বীজ পথের ধারে পড়ল। আর পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল। \v 5 কিছু বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, যেখানে মাটি গভীর ছিল না। মাটি অগভীর থাকাতে সেগুলো দ্রুত অঙ্কুরিত হল। \v 6 কিন্তু যখন সূর্য উঠল চারাগুলি ঝলসে গেল এবং মূল না থাকাতে সেগুলি শুকিয়ে গেল। \v 7 অন্য কিছু বীজ পড়ল কাঁটাঝোপের মধ্যে। সেগুলি বৃদ্ধি পেলে কাঁটাঝোপ তাদের চেপে রাখল, ফলে সেগুলিতে কোনও দানা হল না। \v 8 আরও কিছু বীজ পড়ল উৎকৃষ্ট জমিতে। সেগুলির অঙ্কুরোদ্গম হল, বৃদ্ধি পেল এবং ত্রিশগুণ, ষাটগুণ, এমনকি, শতগুণ পর্যন্ত শস্য উৎপন্ন হল।” \p \v 9 এরপর যীশু বললেন, “যার শোনবার মতো কান আছে, সে শুনুক।” \p \v 10 যীশু যখন একা ছিলেন, তখন সেই বারোজনের সঙ্গে তাঁর চারপাশে থাকা মানুষেরা এই রূপকটি সম্বন্ধে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। \v 11 তিনি তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের নিগুঢ়তত্ত্বগুলি তোমাদের জানতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা বাইরের মানুষ, তাদের কাছে সবকিছুই রূপকের আশ্রয়ে বলা হবে, \v 12 যেন, \q1 “ ‘তারা ক্রমেই দেখে যায়, \q2 কিন্তু কিছুই বুঝতে পারে না, \q1 আর সবসময় শুনতে থাকে, \q2 কিন্তু কখনও উপলব্ধি করে না, \q1 অন্যথায় তারা হয়তো ফিরে আসত ও পাপের ক্ষমা লাভ করত।’ ”\f + \fr 4:12 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 6:9,10\+xt*\ft*\f* \p \v 13 তারপর যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি এই রূপকটি বুঝতে পারছ না? তাহলে অন্য কোনো রূপক তোমরা কীভাবে বুঝবে? \v 14 কৃষক বাক্য-বীজ বপন করে। \v 15 কিছু মানুষ পথের ধারে থাকা লোকের মতো, যেখানে বীজবপন করা হয়েছিল। তারা তা শোনামাত্র, শয়তান এসে তাদের মধ্যে বপন করা বাক্য হরণ করে নেয়। \v 16 অন্য কিছু লোক পাথুরে জমিতে ছড়ানো বীজের মতো। তারা বাক্য শুনে তক্ষুনি তা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করে। \v 17 কিন্তু যেহেতু সেগুলির মধ্যে শিকড় নেই, সেগুলি ক্ষণস্থায়ী হয়। বাক্যের কারণে যখন কষ্টসমস্যা বা নির্যাতন ঘটে, তারা দ্রুত পতিত হয়। \v 18 আরও কিছু লোক, কাঁটাঝোপে ছড়ানো বীজের মতো। তারা বাক্য শ্রবণ করে, \v 19 কিন্তু এই জীবনের বিভিন্ন দুশ্চিন্তা, ধনসম্পত্তি, ছলনা ও অন্য সব বিষয়ের কামনাবাসনা এসে উপস্থিত হলে, তা সেই বাক্যকে চেপে রাখে, ফলে তা ফলহীন হয়। \v 20 আর, যারা উৎকৃষ্ট জমিতে বপন করা বীজের মতো, তারা বাক্য শুনে তা গ্রহণ করে এবং যা বপন করা হয়েছিল, তার ত্রিশগুণ, ষাটগুণ, এমনকি, শতগুণ পর্যন্ত ফল উৎপন্ন করে।” \s1 দীপাধারের উপরে প্রদীপ \p \v 21 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি কোনো প্রদীপ এনে, তা কোনও গামলা বা খাটের নিচে রাখো? বরং তোমরা কি তা বাতিদানের উপরেই রাখো না? \v 22 এতে যা কিছু গুপ্ত থাকে, তা প্রকাশ পায় এবং যা কিছু লুকোনো থাকে, তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়। \v 23 যদি কারও শোনবার মতো কান থাকে, সে শুনুক।” \p \v 24 তিনি বলে চললেন, “তোমরা যা শুনছ, তা সতর্কভাবে বিবেচনা করে দেখো। যে মানদণ্ডে তোমরা পরিমাপ করবে, সেই একই মানদণ্ডে, কিংবা আরও কঠোর মানদণ্ডে তোমাদের পরিমাপ করা হবে। \v 25 যার আছে, তাকে আরও বেশি দেওয়া হবে, যার নেই, তার যেটুকু আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে।” \s1 অঙ্কুরিত বীজের রূপক \p \v 26 তিনি আরও বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য এরকম। কোনো ব্যক্তি জমিতে বীজ ছড়ায়। \v 27 দিনরাত সে জেগে বা ঘুমিয়ে কাটালেও, বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয় ও তা বেড়ে ওঠে। অথচ, কেমন করে তা হল, তার সে কিছুই বুঝতে পারে না। \v 28 মাটি নিজে থেকেই শস্য উৎপন্ন করে—প্রথমে অঙ্কুর, পরে শিষ, তারপর শিষের মধ্যে পরিণত দানা। \v 29 দানা পরিপক্ব হলে, সে তক্ষুনি তাতে কাস্তে চালায়, কারণ শস্য কাটার সময় উপস্থিত হয়েছে।” \s1 সর্ষে বীজের রূপক \p \v 30 তিনি আবার বললেন, “আমরা কী বলব, ঈশ্বরের রাজ্য কীসের মতো? অথবা তা বর্ণনা করার জন্য আমরা কোন রূপক ব্যবহার করব? \v 31 এ যেন এক সর্ষে বীজের মতো; তোমরা যতরকম বীজ জমিতে বোনো, তা সেগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম। \v 32 তবুও বোনা হলে তা বৃদ্ধি পায় ও বাগানের অন্য সব গাছপালা থেকে বড়ো হয়ে ওঠে। এর শাখাগুলি এত বিশাল হয় যে, আকাশের পাখিরা এসে এর ছায়ায় বাসা বাঁধতে পারে।” \p \v 33 এ ধরনের আরও অনেক রূপকের মাধ্যমে, যীশু তাদের বুঝবার সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের কাছে বাক্য প্রচার করলেন। \v 34 রূপক ব্যবহার না করে তিনি তাদের কাছে কোনো কথাই বললেন না। কিন্তু তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে একান্তে থাকার সময়, তাঁদের কাছে সবকিছুই ব্যাখ্যা করতেন। \s1 যীশু ঝড় শান্ত করলেন \p \v 35 সেদিন সন্ধ্যা হলে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “চলো আমরা ওপারে যাই।” \v 36 সকলকে পিছনে রেখে, যীশু যেভাবে নৌকায় ছিলেন, সেভাবেই তাঁকে নিয়ে শিষ্যেরা নৌকায় যাত্রা করলেন। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকটি নৌকা ছিল। \v 37 ভয়ংকর এক ঝড় এসে উপস্থিত হল। ঢেউ নৌকার উপরে এমনভাবে আছড়ে পড়তে লাগল যে, নৌকা প্রায় জলে পূর্ণ হতে লাগল। \v 38 যীশু নৌকার পিছন দিকে একটি বালিশে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। শিষ্যেরা তাঁকে জাগিয়ে তুলে বললেন, “গুরুমহাশয়, আমরা ডুবে যাচ্ছি, আপনার কি কোনও চিন্তা নেই?” \p \v 39 তিনি উঠে ঝড়কে থেমে যাওয়ার আদেশ দিলেন ও ঢেউগুলিকে বললেন, “শান্ত হও! স্থির হও!” তখন ঝড় থেমে গেল ও সবকিছু সম্পূর্ণ শান্ত হল। \p \v 40 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “তোমরা এত ভয় পেলে কেন? তোমাদের কি এখনও কোনো বিশ্বাস নেই?” \p \v 41 আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগলেন, “ইনি তাহলে কে? ঝড় ও ঢেউ যে এঁর আদেশ পালন করে!” \c 5 \s1 যীশু মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করলেন \p \v 1 তারা গালীল সাগর আড়াআড়ি পার হয়ে গেরাসেনী অঞ্চলে পৌঁছালেন। \v 2 যীশু নৌকা থেকে নেমে এলে এক মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তি কবরস্থান থেকে বের হয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এল। \v 3 এই মানুষটি কবরস্থানে বাস করত। কেউ তাকে আর বেঁধে রাখতে পারত না, এমনকি, শিকল দিয়েও নয়। \v 4 কারণ তার হাত পা প্রায়ই শিকল দিয়ে বাঁধা হত, কিন্তু সে ওই শিকল ছিঁড়ে ফেলত এবং পায়ের লোহার বেড়িও ভেঙে ফেলত। তাকে বশ করার মতো শক্তি কারও ছিল না। \v 5 সে দিনরাত কবরস্থানে ও পাহাড়ে পাহাড়ে চিৎকার করে বেড়াত এবং পাথর দিয়ে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করত। \p \v 6 সে দূর থেকে যীশুকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে প্রণাম করল। \v 7 তারপর সে উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে বলে উঠল, “হে পরাৎপর ঈশ্বরের পুত্র যীশু! আমাকে নিয়ে আপনি কী করতে চান? আমি আপনাকে ঈশ্বরের দিব্যি দিয়ে বলছি, আমাকে যন্ত্রণা দেবেন না।” \v 8 কারণ যীশু তাকে ইতিমধ্যে বলেছিলেন, “ওহে মন্দ-আত্মা, এই মানুষটির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসো!” \p \v 9 তারপর যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কী?” \p সে উত্তর দিল, “আমার নাম বাহিনী, কারণ আমাদের সংখ্যা অনেক।” \v 10 আর সে বারবার যীশুর কাছে অনুনয়-বিনয় করতে লাগল, যেন সেই এলাকা থেকে তিনি তাদের তাড়িয়ে না দেন। \p \v 11 অদূরে পাহাড়ের ঢালে বিশাল একপাল শূকর চরে বেড়াচ্ছিল। \v 12 ওই ভূতেরা যীশুর কাছে মিনতি করতে লাগল, “আমাদের ওই শূকরদের মধ্যে পাঠিয়ে দিন; ওদের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি আমাদের দিন।” \v 13 তিনি তাদের যাওয়ার অনুমতি দিলেন। তখন মন্দ-আত্মারা বের হয়ে সেই শূকরদের মধ্যে প্রবেশ করল। পালে প্রায় দুই হাজার শূকর ছিল। সেই শূকরের পাল হ্রদের ঢালু পাড় বেয়ে ছুটে গেল এবং হ্রদে ডুবে মরল। \p \v 14 যারা ওই শূকরদের চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে নগরে ও গ্রামে-গঞ্জে এই বিষয়ের সংবাদ দিল। আর কী ঘটেছে, তা দেখার জন্য লোকেরা বেরিয়ে এল। \v 15 তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, যে ব্যক্তির উপরে ভূত বাহিনী ভর করেছিল, সে পোশাক পরে সুবোধ হয়ে সেখানে বসে আছে। তারা সবাই ভয় পেয়ে গেল। \v 16 প্রত্যক্ষদর্শীরা সেই ভূতগ্রস্ত ব্যক্তিটির ও সেই শূকরপালের পরিণতির কথা সকলকে বলতে লাগল। \v 17 তখন সেই লোকেরা তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য যীশুকে অনুরোধ করল। \p \v 18 যীশু নৌকায় উঠতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় সেই ব্যক্তি, যে ভূতগ্রস্ত ছিল, তাঁর সঙ্গে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করল। \v 19 যীশু তাকে সেই অনুমতি দিলেন না, কিন্তু বললেন, “তুমি বাড়িতে তোমার পরিবারের কাছে যাও ও তাদের বলো, প্রভু তোমার জন্য যে যে মহান কাজ করেছেন এবং কেমন করে তিনি তোমার প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছেন।” \v 20 তখন সে চলে গেল এবং যীশু তার জন্য যা করেছেন, সেকথা ডেকাপলিতে প্রচার করতে লাগল। আর সব মানুষই এতে চমৎকৃত হল। \s1 মৃত মেয়ে ও অসুস্থ নারী \p \v 21 যীশু যখন আবার নৌকায় উঠে আড়াআড়ি সাগরের অপর পারে গেলেন, সাগরের তীরে তখন তাঁর চারপাশে অনেক লোকের সমাবেশ হল। \v 22 সেই সময় যায়ীর নামে সমাজভবনের একজন অধ্যক্ষ সেখানে এলেন। যীশুকে দেখে তিনি তাঁর চরণে পতিত হলেন। \v 23 তিনি আকুলভাবে তাঁর কাছে অনুনয় করলেন, “আমার ছোটো মেয়েটি মরণাপন্ন। আপনি দয়া করে আসুন ও তার উপরে হাত রাখুন, যেন সে আরোগ্য লাভ করে বাঁচতে পারে।” \v 24 তাই যীশু তাঁর সঙ্গে চললেন। \p অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল ও তারা চারপাশ থেকে ঠেলাঠেলি করে তাঁর উপরে প্রায় চেপে পড়তে লাগল। \v 25 সেখানে এক নারী ছিল, যে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবের ব্যাধিতে ভুগছিল। \v 26 বহু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে সে অনেক কষ্টভোগ করেছিল। সে তার সর্বস্ব ব্যয় করেছিল, কিন্তু ভালো হওয়ার পরিবর্তে তার অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছিল। \v 27 যীশুর কথা শুনে ভিড়ের মধ্যে সে পিছন দিকে এল এবং তাঁর পোশাক স্পর্শ করল। \v 28 কারণ সে ভেবেছিল, “আমি যদি কেবলমাত্র তাঁর পোশাকটি স্পর্শ করতে পারি, তাহলেই আমি সুস্থ হয়ে যাব।” \v 29 আর তক্ষুনি তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে গেল এবং সে শরীরে অনুভব করল যে, সে তার কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছে। \p \v 30 সেই মুহূর্তে যীশু উপলব্ধি করলেন যে, তাঁর মধ্য থেকে শক্তি নির্গত হয়েছে। তিনি পিছনে লোকদের দিকে ঘুরে বললেন, “কে আমার পোশাক স্পর্শ করেছে?” \p \v 31 তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “আপনি দেখতে পাচ্ছেন, লোকেরা আপনার উপর চাপাচাপি করে পড়ছে, তবুও আপনি জিজ্ঞাসা করছেন, ‘কে আমাকে স্পর্শ করল’?” \p \v 32 কিন্তু যীশু চারদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলেন, কে এই কাজ করেছে। \v 33 তখন সেই নারী, তার প্রতি কী ঘটেছে জেনে, যীশুর কাছে এসে তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়ল। সে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সমস্ত সত্য তাঁকে জানাল। \v 34 যীশু তাকে বললেন, “কন্যা, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে। শান্তিতে ফিরে যাও ও তোমার কষ্ট থেকে মুক্তি পাও।” \p \v 35 যীশু তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সমাজভবনের অধ্যক্ষ যায়ীরের বাড়ি থেকে কয়েকজন লোক এসে উপস্থিত হল। তারা বলল, “আপনার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আর কেন গুরুমহাশয়কে বিব্রত করছেন?” \p \v 36 তাদের কথা অগ্রাহ্য করে যীশু সেই অধ্যক্ষকে বললেন, “ভয় পেয়ো না, শুধু বিশ্বাস করো।” \p \v 37 তিনি পিতর, যাকোব ও যাকোবের ভাই যোহন, এই তিনজন ছাড়া আর কাউকে তাঁর সঙ্গে যেতে দিলেন না। \v 38 তাঁরা সেই অধ্যক্ষের বাড়িতে এলে যীশু দেখলেন, সেখানে প্রচণ্ড হৈ হট্টগোল হচ্ছে, লোকেরা কাঁদছে ও তারস্বরে বিলাপ করছে। \v 39 তিনি ভিতরে প্রবেশ করে তাদের বললেন, “তোমরা এত হৈ হট্টগোল ও বিলাপ করছ কেন? মেয়েটি মরেনি, ও ঘুমিয়ে আছে।” \v 40 তারা কিন্তু তাঁকে উপহাস করল। \p তাদের সবাইকে বের করে দিয়ে তিনি মেয়েটির বাবা-মা ও তাঁর সঙ্গী শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে মেয়েটি ভিতরে যেখানে ছিল, সেখানে গেলেন। \v 41 তিনি তার হাত ধরে তাকে বললেন, \tl “টালিথা কওম্!”\tl* (এর অর্থ, “খুকুমণি, আমি তোমাকে বলছি, ওঠো”) \v 42 সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি উঠে দাঁড়াল ও চারদিকে ঘুরে বেড়াতে লাগল (তার বয়স ছিল বারো বছর)। এতে তারা সম্পূর্ণরূপে বিস্ময়-বিহ্বল হয়ে পড়ল। \v 43 তিনি তাদের দৃঢ় আদেশ দিলেন, কেউ যেন এ বিষয়ে জানতে না পারে। তারপর তিনি মেয়েটিকে কিছু খাবার খেতে দিতে বললেন। \c 6 \s1 অসম্মানিত ভাববাদী \p \v 1 যীশু সেই স্থান ত্যাগ করে তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে নিজের নগরে গেলেন। \v 2 বিশ্রামদিন উপস্থিত হলে তিনি সমাজভবনে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তাঁর শ্রোতাদের অনেকেই এতে বিস্মিত হল। \p তারা প্রশ্ন করল, “এই লোকটি কোথা থেকে এমন জ্ঞান পেল? সে এসব অলৌকিক কাজ কীভাবে করছে? \v 3 এ কি সেই ছুতোরমিস্ত্রি নয়? এ কি মরিয়মের পুত্র নয় এবং যাকোব, যোষি, যিহূদা ও শিমোনের দাদা নয়? ওর বোনেরাও কি এখানে আমাদের মধ্যে নেই?” তারা তাঁর উপরে বিরূপ হয়ে উঠল। \p \v 4 যীশু তাদের বললেন, “নিজের নগরে আপনজনদের মধ্যে ও নিজের গৃহে ভাববাদী অসম্মানিত হন।” \v 5 তিনি সেখানে আর কোনো অলৌকিক কাজ করতে পারলেন না, কেবলমাত্র কয়েকজন অসুস্থ ব্যক্তির উপরে হাত রাখলেন ও তাদের সুস্থ করলেন। \v 6 তাদের বিশ্বাসের অভাব দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন। \s1 যীশু বারোজন শিষ্যকে পাঠালেন \p তারপর যীশু গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে ঘুরে শিক্ষা দিতে লাগলেন। \v 7 তিনি সেই বারোজনকে তাঁর কাছে ডেকে, দুজন দুজন করে তাঁদের পাঠালেন। তিনি তাঁদের অশুচি আত্মার উপরে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতাও প্রদান করলেন। \p \v 8 তাঁর নির্দেশগুলি ছিল এরকম: “যাত্রার উদ্দেশে একটি ছড়ি ছাড়া আর কিছুই সঙ্গে নিয়ো না—কোনো খাবার, কোনো থলি বা কোমরের বেল্টে কোনো অর্থও নয়। \v 9 চটিজুতো পরো, কিন্তু কোনো অতিরিক্ত পোশাক নিয়ো না। \v 10 কোনো বাড়িতে প্রবেশ করলে, সেই নগর পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তোমরা সেখানেই থেকো। \v 11 আর কোনো স্থানের মানুষ যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, বা তোমাদের বাক্যে কর্ণপাত না করে, সেই স্থান ছেড়ে যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যস্বরূপ তোমাদের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলো।” \p \v 12 তাঁরা বেরিয়ে পড়লেন ও প্রচার করতে লাগলেন, যেন লোকেরা মন পরিবর্তন করে। \v 13 তাঁরা বহু ভূত বিতাড়িত করলেন ও অনেক অসুস্থ মানুষকে তেল দিয়ে অভিষেক করে তাদের রোগনিরাময় করলেন। \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা কেটে ফেলা হল \p \v 14 রাজা হেরোদ এ সম্পর্কে শুনতে পেলেন, কারণ যীশুর নাম সুপরিচিত হয়ে উঠেছিল। কেউ কেউ বলছিল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহন মৃতলোক থেকে উত্থাপিত হয়েছেন, সেই কারণে এইসব অলৌকিক ক্ষমতা তাঁর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে।” \p \v 15 অন্যেরা বলল, “তিনি এলিয়।” \p কিন্তু আরও অন্যেরা দাবি করল, “উনি একজন ভাববাদী, বা পুরাকালের ভাববাদীদের মতোই একজন।” \p \v 16 কিন্তু হেরোদ একথা শুনে বললেন, “যে যোহনের আমি মাথা কেটেছিলাম, তিনি মৃতলোক থেকে উত্থাপিত হয়েছেন!” \p \v 17 কারণ হেরোদ স্বয়ং যোহনকে গ্রেপ্তার করার আদেশ দিয়েছিলেন এবং তাঁকে শিকলে বেঁধে কারাগারে বন্দি করেছিলেন। তাঁর ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্য তিনি এ কাজ করেছিলেন, কারণ তিনি তাকে বিবাহ করেছিলেন। \v 18 এর কারণ হল, যোহন ক্রমাগত হেরোদকে বলতেন, “ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করা আপনার পক্ষে ন্যায়সংগত নয়।” \v 19 সেই কারণে, হেরোদিয়া যোহনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ পোষণ করছিল ও তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তার পক্ষে তা করা সম্ভব ছিল না। \v 20 কারণ, হেরোদ যোহনকে ভয় করতেন এবং তিনি একজন ধার্মিক ও পবিত্র মানুষ জেনে তাঁকে সুরক্ষা দিতেন। হেরোদ যখন যোহনের কথা শুনলেন, তখন তিনি অত্যন্ত হতবুদ্ধি হয়ে পড়লেন, তবুও তিনি তাঁর কথা শুনতে ভালোবাসতেন। \p \v 21 অবশেষে এক সুযোগ এসে গেল। হেরোদ তাঁর জন্মদিনে তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারী, সেনাধক্ষ্য ও গালীলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের জন্য এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। \v 22 সেখানে হেরোদিয়ার মেয়ে এসে নৃত্য পরিবেশন করে হেরোদ ও ভোজে আগত অতিথিদের সন্তুষ্ট করল। \p রাজা সেই মেয়েকে বললেন, “তুমি যা খুশি আমার কাছে চাইতে পারো, আমি তা তোমাকে দেব।” \v 23 তিনি শপথ করে তাকে প্রতিশ্রুতি দিলেন, “তুমি যা চাইবে, অর্ধেক রাজত্ব হলেও আমি তোমাকে তাই দেব।” \p \v 24 সে বাইরে গিয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কী চাইব?” \p তার মা উত্তর দিল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা।” \p \v 25 মেয়েটি তখনই ভিতরে প্রবেশ করে রাজাকে তার অনুরোধ জানাল, “আমি চাই, আপনি একটি থালায় বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা এনে এখনই আমাকে দিন।” \p \v 26 রাজা অত্যন্ত মর্মাহত হলেন, কিন্তু তাঁর নিজের শপথের জন্য ও যাঁরা তাঁর সঙ্গে ভোজসভায় বসেছিলেন, তাঁদের জন্য তিনি তাকে প্রত্যাখ্যান করতে চাইলেন না। \v 27 তিনি তক্ষুনি যোহনের মাথা কেটে নিয়ে আসার আদেশ দিয়ে একজন ঘাতককে পাঠালেন। লোকটি কারাগারে গিয়ে যোহনের মাথা কাটল। \v 28 সে থালায় করে তাঁর কাঁটা মাথা নিয়ে এল। তিনি তা নিয়ে সেই মেয়েটিকে দিলেন ও সে তা নিয়ে তার মাকে দিল। \v 29 একথা শুনে যোহনের শিষ্যেরা এসে তাঁর শরীর নিয়ে গেল ও কবরে শুইয়ে দিল। \s1 পাঁচ হাজার মানুষকে খাওয়ানো \p \v 30 প্রেরিতশিষ্যেরা যীশুর চারপাশে জড়ো হয়ে তাঁদের সমস্ত কাজ ও শিক্ষাদানের বিবরণ দিলেন। \v 31 সেই সময় এত বেশি লোক সেখানে যাওয়া-আসা করছিল যে, তাঁরা খাবার খাওয়ারও সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা আমার সঙ্গে কোনো নির্জন স্থানে চলো ও সেখানেই কিছু সময় বিশ্রাম করো।” \p \v 32 তাই তাঁরা নিজেরাই নৌকায় করে এক নির্জন স্থানে গেলেন। \v 33 কিন্তু সেই স্থান ত্যাগ করার সময় বহু মানুষ তাঁদের চিনতে পারল। লোকেরা সব নগর থেকে দৌড়ে গিয়ে তাঁদের আগেই সেখানে উপস্থিত হল। \v 34 তীরে নেমে যীশু যখন অনেক লোককে দেখতে পেলেন, তিনি তাদের প্রতি করুণায় পূর্ণ হলেন। কারণ তারা ছিল পালকহীন মেষপালের মতো। তাই তিনি তাদের বহু বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন। \p \v 35 এসময় দিনের প্রায় অবসান হয়ে এল। তাই শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “এ এক নির্জন এলাকা, আর ইতিমধ্যে অনেক দেরিও হয়ে গেছে। \v 36 লোকদের বিদায় দিন, যেন তারা কাছাকাছি গ্রাম বা পল্লিতে যেতে পারে ও নিজেদের জন্য কিছু খাবার কিনতে পারে।” \p \v 37 কিন্তু প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন, “তোমরা তাদের কিছু খেতে দাও।” \p তাঁরা তাঁকে বললেন, “এর জন্য ছয় মাসের বেতনের সমান পরিমাণ অর্থের\f + \fr 6:37 \fr*\ft গ্রিক: দুশো দিনার।\ft*\f* প্রয়োজন হবে। আমরা কি গিয়ে অত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে রুটি কিনে লোকদের খেতে দেব?” \p \v 38 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কাছে কতগুলি রুটি আছে? যাও গিয়ে দেখো।” \p তারা খুঁজে দেখে বললেন, “পাঁচটি রুটি, আর দুটি মাছও আছে।” \p \v 39 তখন যীশু লোকদের সবুজ ঘাসে দলে দলে বসাবার জন্য শিষ্যদের নির্দেশ দিলেন। \v 40 তারা এক-একটা সারিতে একশো জন ও পঞ্চাশ জন করে বসে গেল। \v 41 সেই পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ নিয়ে যীশু স্বর্গের দিকে দৃষ্টি দিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও রুটিগুলিকে ভাঙলেন। তারপর তিনি সেগুলি লোকদের পরিবেশন করার জন্য তাঁর শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন। তিনি সেই মাছ দুটিও সবার মধ্যে ভাগ করে দিলেন। \v 42 তারা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। \v 43 আর শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটি ও মাছের টুকরো সংগ্রহ করে বারো ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \v 44 যতজন পুরুষ খাবার খেয়েছিল, তাদের সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার। \s1 যীশু জলের উপরে হাঁটলেন \p \v 45 পর মুহূর্তেই যীশু তাঁর শিষ্যদের নৌকায় তুলে দিয়ে তাঁর যাওয়ার আগেই তাঁদের বেথসৈদায় যেতে বললেন, ইতিমধ্যে তিনি সকলকে বিদায় দিলেন। \v 46 তাঁদের বিদায় করে তিনি প্রার্থনা করার জন্য একটি পাহাড়ে উঠে গেলেন। \p \v 47 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে। নৌকা ছিল সাগরের মাঝখানে, কেবলমাত্র তিনি একা স্থলে ছিলেন। \v 48 তিনি দেখলেন, প্রতিকূল বাতাসে শিষ্যেরা অতিকষ্টে নৌকা বইছিল। রাত্রি চতুর্থ প্রহরে তিনি সাগরে, জলের উপরে হেঁটে শিষ্যদের কাছে চললেন। তিনি তাঁদের পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলেন। \v 49 কিন্তু তাঁকে সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে দেখে তাঁরা তাঁকে কোনও ভূত মনে করলেন। \v 50 তাঁরা চিৎকার করে উঠলেন, কারণ তাঁরা সবাই তাঁকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। \p তিনি তক্ষুনি তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন, “সাহস করো! এ আমি! ভয় পেয়ো না।” \v 51 তারপর তিনি তাঁদের কাছে নৌকায় উঠলেন। বাতাস থেমে গেল। তাঁরা সম্পূর্ণরূপে বিস্মিত হলেন, \v 52 কারণ তাঁরা সেই রুটির বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারেননি, তাঁদের হৃদয় কঠিন হয়ে পড়েছিল। \p \v 53 তাঁরা সাগরের অপর পারে গিয়ে গিনেষরৎ প্রদেশে নৌকা থেকে নামলেন ও নৌকা নোঙর করলেন। \v 54 তাঁরা নৌকা থেকে নামা মাত্রই লোকেরা যীশুকে চিনতে পারল। \v 55 তারা সেখানকার সমগ্র অঞ্চলে ছুটে গেল এবং যেখানেই যীশু আছেন শুনতে পেল, তারা সেখানেই খাটে করে পীড়িতদের বয়ে নিয়ে এল। \v 56 আর যেখানেই তিনি গেলেন—গ্রামে, নগরে বা পল্লি-অঞ্চলে—সেখানেই তারা পীড়িতদের বাজারের মধ্যে এনে রাখল। তারা মিনতি করল, তিনি যেন তাঁর পোশাকের আঁচলও তাদের স্পর্শ করতে দেন। আর যারাই তাঁকে স্পর্শ করল, তারা সবাই সুস্থ হল। \c 7 \s1 শুচিশুদ্ধ ও অশুচি \p \v 1 জেরুশালেম থেকে কয়েকজন ফরিশী ও শাস্ত্রবিদ এসে যীশুর চারপাশে জড়ো হল। \v 2 তারা দেখল, তাঁর কয়েকজন শিষ্য অশুচি হাতে, অর্থাৎ হাত না ধুয়ে খাবার গ্রহণ করছে। \v 3 (ফরিশীরা ও সমগ্র ইহুদি সমাজ প্রাচীনদের নিয়ম অনুসারে সংস্কারগতভাবে হাত না ধুয়ে খাবার গ্রহণ করত না। \v 4 হাটবাজার থেকে ফিরে এসে তারা স্নান না করে খাবার খেতো না। আরও বহু প্রথা তারা পালন করত, যেমন ঘটি, কলশি ও বিভিন্ন পাত্র পরিষ্কার করা।) \p \v 5 সেই কারণে ফরিশীরা ও শাস্ত্রবিদরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করল, “আপনার শিষ্যেরা প্রাচীনদের প্রথা অনুসরণ না করে অশুচি হাতেই খাবার খাচ্ছে কেন?” \p \v 6 তিনি উত্তর দিলেন, “ভণ্ডের দল! যিশাইয় তোমাদের সম্পর্কে সঠিক ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছেন: যেমন লেখা আছে: \q1 “ ‘এই লোকেরা তাদের ওষ্ঠাধরে আমাকে সম্মান করে, \q2 কিন্তু তাদের হৃদয় থাকে আমার থেকে বহুদূরে। \q1 \v 7 বৃথাই তারা আমার উপাসনা করে, \q2 তাদের শিক্ষামালা বিভিন্ন মানুষের শেখানো নিয়মবিধি মাত্র।’\f + \fr 7:7 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 29:13\+xt*\ft*\f* \m \v 8 তোমরা ঈশ্বরের আদেশ উপেক্ষা করে মানুষের প্রথা আঁকড়ে আছ।” \p \v 9 তিনি তাদের আরও বললেন, “তোমাদের নিজস্ব প্রথা পালন করার উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের আদেশ এক পাশে সরিয়ে রাখার এক সুন্দর উপায় তোমাদের আছে। \v 10 মোশি বলেছেন, তোমার বাবা ও তোমার মাকে সম্মান কোরো, এবং ‘যে কেউ তার বাবা অথবা মাকে অভিশাপ দেয়, তার অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে।’\f + \fr 7:10 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:12–21:17\+xt*; \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 5:16\+xt*\ft*\f* \v 11 কিন্তু তোমরা বলে থাকো, কেউ যদি তার বাবা অথবা মাকে বলে, ‘আমার কাছ থেকে যে সাহায্য তোমরা পেতে পারতে, তা কর্বান,’ (অর্থাৎ ঈশ্বরকে দেওয়া হয়েছে)— \v 12 তাহলে তাকে তার বাবা অথবা মার জন্য আর কিছুই করতে দাও না। \v 13 এইভাবে প্রথা অনুসরণ করতে গিয়ে তোমরা ঈশ্বরের বাক্য নিষ্ফল করছ। এই ধরনের আরও অনেক কাজ তোমরা করে থাকো।” \p \v 14 যীশু আবার সব লোককে তাঁর কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা সকলে শোনো আর একথা বুঝে নাও, \v 15 বাইরে থেকে কোনো কিছু মানুষের ভিতরে প্রবেশ করে তাকে অশুচি করতে পারে না। \v 16 বরং মানুষের ভিতর থেকে যা বের হয়ে আসে, তাই তাকে অশুচি করে। যদি কারোর শোনার কান থাকে, তবে সে শুনুক।”\f + \fr 7:16 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে \+xt 4:23\+xt* অংশের কথা ব্যবহার করা হয়েছে।\ft*\f* \p \v 17 লোকদের ছেড়ে দিয়ে যীশু এসে ঘরে প্রবেশ করলে তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে এই রূপকটি সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। \v 18 তিনি প্রশ্ন করলেন, “তোমরা কি এতই অবোধ? তোমরা কি বোঝো না যে, বাইরে থেকে যা মানুষের ভিতরে প্রবেশ করে, তা তাকে অশুচি করতে পারে না? \v 19 কারণ সেটা তার অন্তরে প্রবেশ করে না, কিন্তু পাকস্থলীতে প্রবেশ করে, তারপর তার শরীর থেকে বের হয়ে যায়।” (একথা বলে যীশু ঘোষণা করলেন যে, সব খাদ্যদ্রব্যই শুচিশুদ্ধ।) \p \v 20 তিনি আরও বললেন, “মানুষের ভিতর থেকে যা বের হয়ে আসে, তাই তাকে অশুচি করে। \v 21 কারণ ভিতর থেকে, সব মানুষের হৃদয় থেকে নির্গত হয় কুচিন্তা, বিবাহ-বহির্ভূত যৌনাচার, চুরি, নরহত্যা, ব্যভিচার, \v 22 লোভ-লালসা, অপরের অনিষ্ট কামনা, প্রতারণা, অশ্লীলতা, ঈর্ষা, কুৎসা-রটনা, ঔদ্ধত্য ও কাণ্ডজ্ঞানহীনতা। \v 23 এই সমস্ত মন্দ বিষয় ভিতর থেকে আসে ও মানুষকে অশুচি করে।” \s1 সাইরো-ফিনিশীয় নারীর বিশ্বাস \p \v 24 যীশু সেই অঞ্চল ত্যাগ করে টায়ার ও সীদোনের কাছাকাছি স্থানে গেলেন। তিনি একটি বাড়িতে প্রবেশ করলেন, কিন্তু চাইলেন, কেউ যেন সেকথা জানতে না পারে। তবুও তিনি তাঁর উপস্থিতি গোপন রাখতে পারলেন না। \v 25 প্রকৃতপক্ষে একজন নারী, যেই তাঁর কথা শুনতে পেল, এসে তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়ল। তার মেয়ে ছিল ছোটো অথচ অশুচি-আত্মাগ্রস্ত ছিল। \v 26 সেই নারী ছিল জাতিতে গ্রিক, তার জন্ম সাইরো-ফিনিশিয়া অঞ্চলে। সে তার মেয়ের ভিতর থেকে ভূত বের করার জন্য যীশুর কাছে মিনতি করল। \p \v 27 তিনি তাকে বললেন, “প্রথমে ছেলেমেয়েরা পরিতৃপ্ত হোক, কারণ ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরদের দেওয়া সংগত নয়।” \p \v 28 সে উত্তর দিল, “হ্যাঁ প্রভু, কিন্তু কুকুরও তো টেবিলের নিচে থেকে ছেলেমেয়েদের রুটির টুকরো খেতে পায়!” \p \v 29 তখন তিনি তাকে বললেন, “এ ধরনের উত্তর দিয়েছ বলে, তুমি চলে যাও, ভূত তোমার মেয়েকে ছেড়ে চলে গেছে।” \p \v 30 সে বাড়ি গিয়ে দেখল, তার মেয়ে বিছানায় শুয়ে আছে ও ভূত তাকে ছেড়ে চলে গেছে। \s1 একজন কালা ও বোবাকে যীশু সুস্থ করলেন \p \v 31 এরপর যীশু টায়ারের সন্নিহিত সেই অঞ্চল ত্যাগ করে সীদোনের মধ্য দিয়ে গালীল সাগরের কাছে গেলেন। যাওয়ার সময় তিনি ডেকাপলি হয়েই গেলেন। \v 32 সেখানে কয়েকজন লোক এক কালা ও তোৎলা ব্যক্তিকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। সে ভালো করে কথা বলতে পারত না। তারা তার উপর হাত রেখে প্রার্থনা করার জন্য যীশুকে মিনতি করল। \p \v 33 তখন তিনি সকলের মধ্য থেকে সেই ব্যক্তিকে এক পাশে নিয়ে গেলেন। তিনি তার দুই কানে আঙুল রাখলেন, থুতু ফেললেন ও তার জিভ স্পর্শ করলেন। \v 34 আর তিনি স্বর্গের দিকে ঊর্ধ্বদৃষ্টি করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “ইপফাথা!” (যার অর্থ, “খুলে যাক!”)। \v 35 এতে সেই লোকটির দুই কান খুলে গেল, তার জিভ জড়তামুক্ত হল এবং সে স্পষ্টভাবে কথা বলতে লাগল। \p \v 36 সেকথা কাউকে না বলার জন্য যীশু তাদের আদেশ দিলেন। কিন্তু তিনি যতই নিষেধ করলেন, তারা ততই সেকথা প্রচার করতে লাগল। \v 37 লোকে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে বলতে লাগল, “তিনি সবকিছুই সুন্দররূপে সম্পন্ন করেছেন, এমনকি, কালাকে শোনার শক্তি ও বোবাকে কথা বলার শক্তি দান করেছেন।” \c 8 \s1 যীশু চার হাজার লোককে আহার দিলেন \p \v 1 সেই দিনগুলিতে আবার অনেক লোকের ভিড় হল। কিন্তু তাদের কাছে খাওয়ার কিছু ছিল না। যীশু তাই তাঁর শিষ্যদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন, \v 2 “এই লোকদের প্রতি আমার করুণা হচ্ছে; এরা তিন দিন ধরে আমার সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাওয়ার জন্য কিছুই নেই। \v 3 আমি যদি এদের ক্ষুধার্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠিয়ে দিই, তাহলে এরা পথেই অজ্ঞান হয়ে পড়বে। কারণ এদের মধ্যে কেউ কেউ বহুদূর থেকে এসেছে।” \p \v 4 তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “কিন্তু এই জনহীন প্রান্তরে ওদের তৃপ্ত করার মতো কে এত রুটি জোগাড় করবে?” \p \v 5 যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কাছে কতগুলি রুটি আছে?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “সাতটি।” \p \v 6 তিনি সবাইকে মাটির উপরে বসার আদেশ দিলেন। তিনি সেই সাতটি রুটি নিলেন ও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেগুলি ভাঙলেন ও লোকদের পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের দিতে লাগলেন। তাঁরা তাই করলেন। \v 7 তাঁদের কাছে কয়েকটি ছোটো মাছও ছিল। তিনি সেগুলির জন্যও ধন্যবাদ দিয়ে পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের বললেন। \v 8 লোকেরা খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। পরে শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে সাতটি ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \v 9 সেখানে উপস্থিত পুরুষদের সংখ্যা ছিল প্রায় চার হাজার। পরে তিনি তাঁদের বিদায় দিয়ে \v 10 তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নৌকায় বসলেন ও দলমনুথা প্রদেশে চলে গেলেন। \p \v 11 ফরিশীরা এসে যীশুকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে লাগল। তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য তারা এক স্বর্গীয় নিদর্শন দেখতে চাইল। \v 12 তিনি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে বললেন, “এই প্রজন্মের লোকেরা কেন অলৌকিক নিদর্শন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, ওদের কোনো নিদর্শন দেখানো হবে না।” \v 13 তারপর তিনি তাদের ত্যাগ করে নৌকায় উঠলেন ও অপর পারে চলে গেলেন। \s1 হেরোদ ও ফরিশীদের খামির \p \v 14 শিষ্যেরা রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। নৌকায় তাঁদের সঙ্গে কেবলমাত্র একটি রুটি ছাড়া আর কোনো রুটি ছিল না। \v 15 যীশু তাঁদের সতর্ক করে দিলেন, “সাবধান, হেরোদ ও ফরিশীদের খামির\f + \fr 8:15 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণে তাড়ি\ft*\f* থেকে সতর্ক থেকো।” \p \v 16 এ বিষয়ে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে বললেন, “এর কারণ হল, আমাদের কাছে কোনো রুটি নেই।” \p \v 17 তাঁদের আলোচনার বিষয় অবহিত ছিলেন বলে যীশু তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “রুটি নেই বলে তোমরা তর্কবিতর্ক করছ কেন? তোমরা কি এখনও কিছু দেখতে বা বুঝতে পারছ না? তোমাদের মন কি কঠোর হয়ে গেছে? \v 18 তোমরা কি চোখ থাকতেও দেখতে পাচ্ছ না, কান থাকতেও শুনতে পাচ্ছ না? \v 19 আমি যখন পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচটি রুটি ভেঙেছিলাম, তোমরা কত ঝুড়ি রুটির টুকরো তুলে নিয়েছিলে?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “বারো ঝুড়ি।” \p \v 20 “আর যখন আমি চার হাজার লোকের জন্য সাতটি রুটি ভেঙেছিলাম, তোমরা কত ঝুড়ি রুটির টুকরো তুলে নিয়েছিলে?” \p উত্তরে তাঁরা বললেন, “সাত ঝুড়ি।” \p \v 21 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?” \s1 যীশু বেথসৈদায় এক অন্ধকে দৃষ্টি দান করলেন \p \v 22 তাঁরা বেথসৈদায় উপস্থিত হলে কয়েকজন লোক এক দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকে নিয়ে এল ও তাকে স্পর্শ করার জন্য যীশুকে অনুরোধ করল। \v 23 তিনি সেই দৃষ্টিহীন ব্যক্তির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন। যীশু তার দুই চোখে থুতু দিয়ে তার উপর হাত রাখলেন। যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কিছু দেখতে পাচ্ছ কি?” \p \v 24 সে চোখ তুলে চাইল ও বলল, “আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি, তারা দেখতে গাছের মতো, ঘুরে বেড়াচ্ছে।” \p \v 25 যীশু আর একবার তার চোখে হাত রাখলেন। তখন তার দৃষ্টি স্থির হল। আরোগ্য লাভ করে সে সবকিছু স্পষ্ট দেখতে লাগল। \v 26 যীশু তাকে সোজা বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন ও বললেন, “তুমি এই গ্রামে যেয়ো না।” \s1 খ্রীষ্ট সম্পর্কে পিতরের স্বীকারোক্তি \p \v 27 যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা কৈসরিয়া-ফিলিপী অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে পরিভ্রমণ করতে লাগলেন। পথে তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, লোকেরা এ সম্পর্কে কী বলে?” \p \v 28 তাঁরা উত্তর দিলেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, অন্যেরা বলে এলিয়, আর কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে কোনও একজন।” \p \v 29 “কিন্তু তোমরা কী বলো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী বলো, আমি কে?” \p পিতর উত্তর দিলেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট।” \p \v 30 যীশু তাঁর সম্পর্কে কাউকে কিছু না বলার জন্য তাঁদের সতর্ক করে দিলেন। \s1 যীশু নিজের মৃত্যু সম্পর্কে ভবিষ্যদ্‌বাণী করলেন \p \v 31 তারপর তিনি তাঁদের শিক্ষা দিতে গিয়ে একথা বললেন যে, মনুষ্যপুত্রকে বিভিন্ন বিষয়ে দুঃখভোগ করতে হবে; প্রাচীনবর্গ, মহাযাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবেন। তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তিন দিন পরে তাঁর পুনরুত্থান হবে। \v 32 তিনি এ বিষয়ে স্পষ্টরূপে কথা বললেন, কিন্তু পিতর তাঁকে এক পাশে নিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন। \p \v 33 কিন্তু যীশু যখন ফিরে শিষ্যদের দিকে তাকালেন, তিনি পিতরকে তিরস্কার করলেন। তিনি বললেন, “দূর হও শয়তান! তোমার মনে ঈশ্বরের বিষয়গুলি নেই, কেবল মানুষের বিষয়ই আছে।” \p \v 34 তারপর তিনি শিষ্যদের সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও তাঁর কাছে ডাকলেন ও বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে। \v 35 কারণ যে তার জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে, কিন্তু যে তার জীবন আমার ও সুসমাচারের জন্য হারায়, সে তা রক্ষা করবে। \v 36 বস্তুত, কোনো মানুষ যদি সমস্ত জগতের অধিকার লাভ করে ও তার প্রাণ হারায়, তাহলে তার কী লাভ হবে? \v 37 কিংবা, নিজের প্রাণের পরিবর্তে মানুষ আর কী দিতে পারে? \v 38 এই ব্যভিচারী ও পাপিষ্ঠ প্রজন্মের মধ্যে কেউ যদি আমাকে ও আমার বাক্যকে লজ্জার বিষয় বলে মনে করে, মনুষ্যপুত্রও যখন পবিত্র দূতবাহিনীর সঙ্গে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনিও তাকে লজ্জার পাত্র বলে মনে করবেন।” \c 9 \p \v 1 আবার তিনি তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের কেউ কেউ সপরাক্রমে ঈশ্বরের রাজ্যের আগমন না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর আস্বাদ লাভ করবে না।” \s1 যীশুর রূপান্তর \p \v 2 ছয় দিন পরে যীশু কেবলমাত্র পিতর, যাকোব ও যোহনকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে এক অতি উচ্চ পর্বতে গেলেন। সেখানে কেবলমাত্র তাঁরাই একান্তে ছিলেন। সেখানে তিনি তাঁদের সামনে রূপান্তরিত হলেন। \v 3 তাঁর পরনের পোশাক উজ্জ্বল ও ধবধবে সাদা হয়ে উঠল। পৃথিবীর কোনও রজক পোশাককে সেরকম সাদা করতে পারে না। \v 4 আর সেখানে এলিয় ও মোশি তাঁদের সামনে আবির্ভূত হয়ে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। \p \v 5 পিতর যীশুকে বললেন, “রব্বি,\f + \fr 9:5 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় রব্বি কথার অর্থ গুরুমশাই।\ft*\f* এখানে থাকা আমাদের পক্ষে ভালোই হবে। এখানে আমরা তিনটি তাঁবু স্থাপন করি, একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য ও একটি এলিয়ের জন্য।” \v 6 (তাঁরা এত ভয় পেয়েছিলেন যে, কী বলতে হবে, তিনি তা বুঝতে পারেননি।) \p \v 7 তখন এক টুকরো মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল। সেই মেঘের ভিতর থেকে একটি স্বর ভেসে এল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, তোমরা এঁর কথা শোনো।” \p \v 8 হঠাৎই তাঁরা চারদিকে তাকিয়ে আর কোনো মানুষকে দেখতে পেলেন না। কেবলমাত্র যীশু তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। \p \v 9 পর্বত থেকে নেমে আসার সময় যীশু তাঁদের আদেশ দিলেন, মনুষ্যপুত্র মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত, তাঁদের এই দর্শন লাভের কথা তাঁরা যেন কাউকে না বলেন। \v 10 তাঁরা বিষয়টি নিজেদেরই মধ্যে গোপন রাখলেন, আলোচনা করতে লাগলেন, “মৃতদের মধ্য থেকে উত্থান” এর তাৎপর্য কী! \p \v 11 তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “শাস্ত্রবিদরা কেন বলেন যে, এলিয়কে অবশ্যই প্রথমে আসতে হবে?” \p \v 12 যীশু উত্তর দিলেন, “একথা ঠিক, এলিয় প্রথমে এসে সব বিষয় পুনঃস্থাপিত করবেন। তাহলে, একথাও কেন লেখা আছে যে, মনুষ্যপুত্রকেও অনেক কষ্টভোগ করতে ও অগ্রাহ্য হতে হবে? \v 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয় এসে গেছেন। আর তাঁর বিষয়ে যেমন লেখা আছে, তেমনই লোকেরা তাঁর প্রতি তাদের ইচ্ছামতো দুর্ব্যবহার করেছে।” \s1 যীশু ভূতগ্রস্ত ছেলেকে সুস্থ করলেন \p \v 14 তাঁরা যখন অন্য শিষ্যদের কাছে ফিরে এলেন তখন দেখলেন, অনেক লোক তাঁদের ঘিরে আছে ও শাস্ত্রবিদরা তাঁদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করছেন। \v 15 সমস্ত লোক যেই যীশুকে দেখতে পেল, তারা বিস্ময়ে অভিভূত হল ও দৌড়ে গিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানাল। \p \v 16 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী নিয়ে ওদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করছ?” \p \v 17 লোকেদের মধ্য থেকে একজন উত্তর দিল, “গুরুমহাশয়, আমি আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম, ওকে এক অশুচি আত্মা ভর করেছে, তাই ও কথা বলতে পারে না। \v 18 সে যখনই তাকে ধরে, তাকে মাটিতে ফেলে দেয়। তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে, আর আড়ষ্ট হয়ে যায়। আত্মাটিকে দূর করার জন্য আমি আপনার শিষ্যদের অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তাঁরা তা করতে পারেননি।” \p \v 19 যীশু উত্তর দিলেন, “ওহে অবিশ্বাসী প্রজন্ম, আমি আর কত কাল তোমাদের সঙ্গে থাকব? কত কাল তোমাদের জন্য ধৈর্য রাখতে হবে? ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে এসো।” \p \v 20 তারা তাকে নিয়ে এল। অশুচি আত্মাটি যীশুকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটিকে খুব জোরে মুচড়ে ধরল। সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, ও তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে লাগল। \p \v 21 যীশু ছেলেটির বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কত দিন থেকে ওর এরকম হচ্ছে?” \p সে উত্তর দিল, “ছোটোবেলা থেকেই। \v 22 এ তাকে মেরে ফেলার জন্য বহুবার জলে ও আগুনে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু আপনি যদি কিছু করতে পারেন, আমাদের প্রতি সদয় হোন ও আমাদের সাহায্য করুন।” \p \v 23 যীশু বললেন, “যদি আপনি পারেন? যে বিশ্বাস করে, তার পক্ষে সবকিছুই সম্ভব।” \p \v 24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা আর্তনাদ করে উঠল, “আমি বিশ্বাস করি, অবিশ্বাস কাটিয়ে উঠতে আমাকে সাহায্য করুন।” \p \v 25 যীশু যখন দেখলেন, অনেক লোক ঘটনাস্থলের দিকে একসঙ্গে দৌড়ে আসছে, তিনি সেই অশুচি আত্মাকে ধমক দিলেন। তিনি বললেন, “ওহে কালা ও বোবা আত্মা, আমি তোমাকে আদেশ দিচ্ছি, ওর ভিতর থেকে বেরিয়ে এসো এবং আর কখনও ওর মধ্যে প্রবেশ কোরো না।” \p \v 26 আত্মাটি তীক্ষ্ণ চিৎকার করে তাকে প্রচণ্ডভাবে মুচড়ে দিয়ে তার মধ্যে থেকে বের হয়ে গেল। ছেলেটিকে মড়ার মতো পড়ে থাকতে দেখে অনেকে বলল, “ও মরে গেছে।” \v 27 কিন্তু যীশু তাকে হাত দিয়ে ধরলেন ও তার পায়ে ভর দিয়ে তাকে দাঁড় করালেন। এতে সে উঠে দাঁড়াল। \p \v 28 যীশু বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলে, তাঁর শিষ্যেরা একান্তে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কেন ওটিকে তাড়াতে পারলাম না?” \p \v 29 তিনি উত্তর দিলেন, “প্রার্থনা ছাড়া এই ধরনের আত্মা বের হতে চায় না।”\f + \fr 9:29 \fr*\ft কতগুলি পাণ্ডুলিপিতে, “প্রার্থনা ও উপোস ছাড়া।”\ft*\f* \p \v 30 তাঁরা সেই স্থান ত্যাগ করে গালীলের মধ্য দিয়ে যাত্রা করলেন। যীশু চাইলেন না, যে তাঁরা কোথায় আছেন, কেউ সেকথা জানুক। \v 31 কারণ যীশু সেই সময় তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “মনুষ্যপুত্র মানুষের হাতে সমর্পিত হতে চলেছেন। তারা তাঁকে হত্যা করবে, আর তিন দিন পর তিনি উত্থাপিত হবেন।” \v 32 কিন্তু শিষ্যেরা তাঁর একথার অর্থ বুঝতে পারলেন না, আবার এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেও তাঁরা ভয় পেলেন। \s1 শ্রেষ্ঠ কে? \p \v 33 পরে তাঁরা কফরনাহূমে এলেন। বাড়ির মধ্যে গিয়ে তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “পথে তোমরা কী নিয়ে তর্কবিতর্ক করছিলে?” \v 34 তাঁরা চুপ করে রইলেন, কারণ তাঁদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ, তাঁরা এই নিয়ে পথে তর্কবিতর্ক করছিলেন। \p \v 35 সেখানে বসে, যীশু সেই বারোজনকে ডেকে বললেন, “কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তাকে থাকতে হবে সকলের পিছনে, আর তাকে সকলের দাস হতে হবে।” \p \v 36 পরে তিনি একটি শিশুকে তাঁদের মাঝে দাঁড় করালেন। তাকে নিজের কোলে নিয়ে তিনি তাঁদের বললেন, \v 37 “আমার নামে যে এই শিশুদের একজনকেও গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে। আর যে আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁকেই গ্রহণ করে।” \s1 বিপক্ষ ও সপক্ষ \p \v 38 যোহন বললেন, “গুরুমহাশয়, আমরা একজনকে আপনার নামে ভূত তাড়াতে দেখে, তাকে সে কাজ করতে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের দলের কেউ ছিল না।” \p \v 39 যীশু বললেন, “তাকে নিষেধ কোরো না। কেউ যদি আমার নামে কোনো অলৌকিক কাজ করে, পর মুহূর্তেই সে আমার নামে কোনও নিন্দা করতে পারবে না।” \v 40 কারণ যে আমাদের বিপক্ষে নয়, সে আমাদের সপক্ষে। \v 41 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদের এক পেয়ালা জল খেতে দেয়, সে কোনোভাবেই তার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না। \p \v 42 “কিন্তু এই ছোটো শিশুরা যারা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কোনো একজনকে কেউ যদি পাপ করতে বাধ্য করে, তাহলে তার গলায় বড়ো একটি জাঁতা বেঁধে সমুদ্রের জলে ডুবিয়ে দেওয়া তার পক্ষে ভালো হবে। \v 43 যদি তোমার হাত পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। দু-হাত নিয়ে নরকের অনির্বাণ আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে অঙ্গহীন হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভালো। \v 44 সেখানে, ‘তাদের কীট মরে না, আর আগুন নির্বাপিত হয় না।’\f + \fr 9:44 \fr*\ft প্রাচীন কিছু পাণ্ডুলিপি অনুসারে, 48 পদের কিছু অংশ এই পদে সংযুক্ত রয়েছে।\ft*\f* \v 45 যদি আর তোমার পা পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। দুই পা নিয়ে নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে পঙ্গু হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভালো। \v 46 সেখানে, ‘তাদের কীট মরে না, আর আগুন নির্বাপিত হয় না।’\f + \fr 9:46 \fr*\ft প্রাচীন কিছু পাণ্ডুলিপি অনুসারে, 48 পদের কিছু অংশ এই পদে সংযুক্ত রয়েছে।\ft*\f* \v 47 আর তোমার চোখ যদি পাপের কারণ হয়, তা উপড়ে ফেলে দাও। কারণ দুই চোখ নিয়ে নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে, বরং এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা ভালো। \v 48 সেখানে, \q1 “ ‘তাদের কীট মরে না, \q2 আর আগুন নির্বাপিত হয় না।’\f + \fr 9:48 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 66:24\+xt*\ft*\f* \m \v 49 প্রত্যেক ব্যক্তিকে আগুনে লবণাক্ত করা হবে। \p \v 50 “লবণ ভালো, কিন্তু লবণ যদি তার লবণত্ব হারায়, তাহলে তোমরা কীভাবে তা আবার লবণাক্ত করবে? তোমরা নিজেদের মধ্যে লবণের গুণ বজায় রাখো ও পরস্পরের সঙ্গে শান্তিতে সহাবস্থান করো।” \c 10 \s1 বিবাহবিচ্ছেদ \p \v 1 যীশু এরপর সেই স্থান ত্যাগ করে যিহূদিয়া অঞ্চলে ও জর্ডন নদীর অপর পারে গেলেন। আবার তাঁর কাছে লোকেরা ভিড় করতে লাগল, আর তিনি তাঁর রীতি অনুযায়ী তাদের শিক্ষা দিলেন। \p \v 2 কয়েকজন ফরিশী এসে তাঁকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করল, “কোনো পুরুষের পক্ষে তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করা কি বিধিসংগত?” \p \v 3 তিনি উত্তর দিলেন, “মোশি তোমাদের কি আদেশ দিয়েছেন?” \p \v 4 তারা বলল, “মোশি পুরুষকে একটি ত্যাগপত্র লিখে দিয়ে তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছেন।” \p \v 5 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমাদের হৃদয় কঠোর বলেই মোশি এই বিধানের কথা লিখে গিয়েছেন। \v 6 কিন্তু সৃষ্টির সূচনায় ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও নারী—এভাবেই সৃষ্টি করেছিলেন।\f + \fr 10:6 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 1:27\+xt*\ft*\f* \v 7 আর এই কারণে একজন পুরুষ তার পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করবে, তার স্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হবে \v 8 ও সেই দুজন একাঙ্গ হবে।\f + \fr 10:8 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 2:24\+xt*\ft*\f* তাই, তারা আর দুজন নয়, কিন্তু অভিন্নসত্তা। \v 9 সেই কারণে, ঈশ্বর যা সংযুক্ত করেছেন, কোনো মানুষ তা বিচ্ছিন্ন না করুক।” \p \v 10 তাঁরা আবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে তাঁর শিষ্যেরা যীশুকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন। \v 11 তিনি উত্তর দিলেন, “যে নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে অন্য নারীকে বিবাহ করে, সে তার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করে। \v 12 আর নারী যদি তার স্বামীকে পরিত্যাগ করে অন্য পুরুষকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে।” \s1 ছোটো শিশুরা ও যীশু \p \v 13 লোকেরা ছোটো শিশুদের যীশুর কাছে নিয়ে আসছিল, যেন তিনি তাদের স্পর্শ করেন। কিন্তু শিষ্যেরা তাদের ধমক দিলেন। \v 14 যীশু তা দেখে রুষ্ট হলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ছোটো শিশুদের আমার কাছে আসতে দাও, ওদের বাধা দিয়ো না। কারণ ঈশ্বরের রাজ্য এদের মতো মানুষদেরই। \v 15 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, ছোটো শিশুর মতো যে ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ করতে পারে না, সে কখনও তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” \v 16 পরে তিনি সেই শিশুদের কোলে নিয়ে তাদের উপরে হাত রাখলেন ও তাদের আশীর্বাদ করলেন। \s1 ধনী যুবক \p \v 17 যীশু তাঁর পথ চলা শুরু করলে, একজন যুবক দৌড়ে তাঁর কাছে এল। সে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “সৎ গুরু, অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে?” \p \v 18 যীশু উত্তর দিলেন, “তুমি আমাকে সৎ বলছ কেন? একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সৎ নয়। \v 19 তুমি আজ্ঞাগুলি নিশ্চয় জানো, ‘নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না, প্রতারণা কোরো না, তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো।’ ”\f + \fr 10:19 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:12\+xt*; \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 5:16\+xt*\ft*\f* \p \v 20 সে ঘোষণা করল, “গুরুমহাশয়, এসবই আমি বাল্যকাল থেকে পালন করে আসছি।” \p \v 21 যীশু তার দিকে তাকালেন ও তাকে প্রেম করলেন। তিনি বললেন, “একটি বিষয়ে তোমার ঘাটতি আছে। তুমি যাও, গিয়ে তোমার যা কিছু আছে, সর্বস্ব বিক্রি করে দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে তুমি স্বর্গে ধনসম্পত্তি লাভ করবে। তারপর এসে আমাকে অনুসরণ করো।” \p \v 22 এতে সেই লোকটির মুখ ম্লান হয়ে গেল। সে দুঃখিত মনে চলে গেল, কারণ তার বিপুল ধনসম্পত্তি ছিল। \p \v 23 যীশু চারদিকে তাকিয়ে তাঁর শিষ্যদের বললেন, “ধনী মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন!” \p \v 24 শিষ্যেরা তাঁর কথা শুনে বিস্মিত হলেন। কিন্তু যীশু আবার বললেন, “বৎসেরা, যারা ধনসম্পদে নির্ভর করে, তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন কঠিন! \v 25 ধনী মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সুচের ছিদ্রপথ দিয়ে উটের পার হওয়া সহজ।” \p \v 26 শিষ্যেরা তখন আরও বেশি বিস্মিত হয়ে পরস্পরকে বললেন, “তাহলে কে পরিত্রাণ পেতে পারে?” \p \v 27 যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে এ অসম্ভব, কিন্তু ঈশ্বরের কাছে নয়। ঈশ্বরের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব।” \p \v 28 পিতর তাঁকে বললেন, “আপনাকে অনুসরণ করার জন্য আমরা সবকিছু ত্যাগ করেছি।” \p \v 29 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এমন কেউ নেই, যে আমার ও সুসমাচারের জন্য নিজের বাড়িঘর, ভাইবোন, মা-বাবা, সন্তানসন্ততি, কি জমিজায়গা ত্যাগ করেছে, অথচ বর্তমান কালে তার শতগুণ ফিরে পাবে না। \v 30 সে এই জীবনেই বাড়িঘর, ভাইবোন, মা-বাবা, সন্তানসন্ততি ও জমিজায়গা লাভ করবে ও সেই সঙ্গে নির্যাতন ভোগ করবে। কিন্তু ভাবীকালে অনন্ত জীবন লাভ করবে। \v 31 কিন্তু অনেকেই, যারা প্রথমে আছে, তারা শেষে হবে, আর যারা পিছনে আছে, তারা প্রথমে হবে।” \s1 মৃত্যু সম্পর্কে যীশুর তৃতীয়বার ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 32 তাঁরা জেরুশালেমের পথে যাচ্ছিলেন। যীশু ছিলেন সবার সামনে। শিষ্যেরা এতে বিস্মিত হলেন ও যারা অনুসরণ করছিল, তারা ভয় পেল। তিনি আবার সেই বারোজনকে এক পাশে ডেকে নিয়ে, তাঁর প্রতি কী ঘটতে চলেছে তা বললেন। \v 33 তিনি বললেন, “আমরা জেরুশালেম পর্যন্ত যাচ্ছি। আর মনুষ্যপুত্রকে প্রধান যাজকদের ও শাস্ত্রবিদদের হাতে সমর্পণ করা হবে। তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করবে ও অইহুদিদের হাতে তুলে দেবে। \v 34 তারা তাঁকে বিদ্রুপ করবে, তাঁর গায়ে থুতু দেবে, চাবুক দিয়ে মারবে ও তাঁকে হত্যা করবে। তিন দিন পরে, তিনি আবার মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবেন।” \s1 যাকোব ও যোহনের অনুরোধ \p \v 35 তারপর, সিবদিয়ের পুত্র যাকোব ও যোহন তাঁর কাছে এলেন। তাঁরা বললেন, “গুরুমহাশয়, আমরা যা চাই, আপনি আমাদের জন্য তা করুন।” \p \v 36 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী চাও? আমি তোমাদের জন্য কী করব?” \p \v 37 তাঁরা উত্তর দিলেন, “আপনি মহিমা লাভ করলে আমাদের একজনকে আপনার ডানদিকে, আর একজনকে আপনার বাঁদিকে বসতে দেবেন।” \p \v 38 যীশু বললেন, “তোমরা কী চাইছ, তা তোমরা জানো না। আমি যে পেয়ালায় পান করি, তাতে তোমরা কি পান করতে পারো?\f + \fr 10:38 \fr*\fq পেয়ালায় পান\fq*\ft —অন্য কারও নিয়তি স্থির করার এক ইহুদি অভিব্যক্তি। পুরোনো নিয়মে, দ্রাক্ষারসে পূর্ণ পেয়ালা ছিল মানুষের পাপ ও বিদ্রোহের কারণে ঐশ-ক্রোধের প্রতিরূপ (\+xt গীত 75:8; যিশাইয় 51:17-23; যিরমিয় 25:15-28; 49:12; 51:7\+xt*)। সেই কারণে যে পেয়ালা যীশুকে পান করতে হয়েছিল, তা ছিল পাপিষ্ঠ মানবজাতির হয়ে ঐশ্বরিক দণ্ডভোগ সহ্য করা। যাকোব ও যোহন, পরে এই স্বীকারোক্তির মাশুল দিয়েছিলেন (\+xt প্রেরিত 11:2\+xt*; \+xt প্রকাশিত বাক্য 1:9\+xt*)।\ft*\f* অথবা যে বাপ্তিষ্মে আমি বাপ্তিষ্ম লাভ করি, তাতে কি তোমরা বাপ্তিষ্ম নিতে পারো?” \p \v 39 তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা পারি।” \p যীশু তাঁদের বললেন, “আমি যে পেয়ালায় পান করি, তাতে তোমরা পান করবে এবং আমি যে বাপ্তিষ্মে বাপ্তিষ্ম লাভ করি, তোমরাও সেই বাপ্তিষ্মে বাপ্তিষ্ম লাভ করবে। \v 40 কিন্তু, আমার ডানদিকে বা বাঁদিকে বসতে দেওয়ার অধিকার আমার নেই। এই স্থান তাদের জন্য, যাদের জন্য সেগুলি প্রস্তুত করা হয়েছে।” \p \v 41 অন্য দশজন একথা শুনে যাকোব ও যোহনের প্রতি রুষ্ট হলেন। \v 42 যীশু তাঁদের কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা জানো যে, যারা অন্য জাতির শাসক বলে পরিচিত, তারা তাদের উপরে প্রভুত্ব করে। আবার তাদের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা সেই শাসকদের উপরে কর্তৃত্ব করে। \v 43 তোমাদের ক্ষেত্রে সেরকম হবে না। বরং, কেউ যদি তোমাদের মধ্যে মহান হতে চায়, তাকে অবশ্যই তোমাদের দাস হতে হবে। \v 44 আর যে প্রধান হতে চায়, সে অবশ্যই সকলের ক্রীতদাস হবে। \v 45 কারণ, এমনকি, মনুষ্যপুত্রও সেবা পেতে আসেননি, কিন্তু সেবা করতে ও অনেকের পরিবর্তে নিজের প্রাণ মুক্তিপণস্বরূপ দিতে এসেছেন।” \s1 অন্ধ বরতীময়ের দৃষ্টিলাভ \p \v 46 এরপর তাঁরা যিরীহোতে এলেন। যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা যখন অনেক লোকের সঙ্গে নগর ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন, তখন বরতীময় নামে এক ব্যক্তি পথের ধারে বসে ভিক্ষা করছিল। সে ছিল তীময়ের পুত্র। \v 47 যখন সে শুনতে পেল, তিনি নাসরতের যীশু, সে চিৎকার করে বলতে লাগল, “দাউদ-সন্তান যীশু, আমার প্রতি কৃপা করুন।” \p \v 48 অনেকে তাকে ধমক দিল ও চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও বেশি চিৎকার করে বলতে লাগল, “হে দাউদের সন্তান, আমার প্রতি কৃপা করুন।” \p \v 49 যীশু থেমে বললেন, “ওকে ডাকো।” \p তাই তারা সেই অন্ধ লোকটিকে ডেকে বলল, “ওহে, সাহস করো, ওঠো, তিনি তোমাকে ডাকছেন!” \v 50 সে তার নিজের পোশাক একদিকে ছুঁড়ে ফেলে তার পায়ে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল ও যীশুর কাছে এল। \p \v 51 যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কী চাও, আমি তোমার জন্য কী করব?” \p অন্ধ লোকটি বলল, “রব্বি, আমি যেন দেখতে পাই।” \p \v 52 যীশু বললেন, “যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে।” তখনই সে তার দৃষ্টিশক্তি লাভ করল ও সেই পথে যীশুকে অনুসরণ করল। \c 11 \s1 যীশু জেরুশালেমে রাজার মতো প্রবেশ করলেন \p \v 1 তাঁরা জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে যখন জলপাই পর্বতের ধারে বেথফাগ ও বেথানি গ্রামে উপস্থিত হলেন, তখন যীশু তাঁর দুজন শিষ্যকে এই বলে পাঠালেন, \v 2 “তোমরা সামনের ওই গ্রামে যাও। সেখানে প্রবেশ করা মাত্র দেখতে পাবে যে একটি গর্দভশাবক বাঁধা আছে, যার উপরে কেউ কখনও বসেনি। সেটির বাঁধন খুলে এখানে নিয়ে এসো। \v 3 কেউ যদি তোমাদের জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমরা কেন এরকম করছ?’ তাকে বোলো, ‘প্রভুর প্রয়োজন আছে, শীঘ্রই তিনি এটি ফেরত পাঠিয়ে দেবেন।’ ” \p \v 4 তাঁরা গিয়ে দেখলেন, একটি দরজার কাছে, বাইরের রাস্তায় একটি গর্দভশাবক বাঁধা আছে। তাঁরা সেটি খোলা মাত্র, \v 5 সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন লোক জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কী করছ? শাবকটির বাঁধন খুলছ কেন?” \v 6 এতে যীশু যেমন বলেছিলেন, তাঁরা সেভাবেই উত্তর দিলেন। আর সেই লোকেরা সেটিকে নিয়ে যেতে দিল। \v 7 তাঁরা গর্দভশাবকটি যীশুর কাছে নিয়ে এসে তার উপর তাদের পোশাক বিছিয়ে দিলেন। তিনি তার উপরে বসলেন। \v 8 বহু মানুষ পথের উপরে তাদের পোশাক বিছিয়ে দিল, অন্যেরা মাঠ থেকে গাছের ডালপালা কেটে এনে রাস্তার উপরে ছড়িয়ে দিল। \v 9 যারা সামনে যাচ্ছিল ও যারা পিছনে ছিল, তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, \q1 “হোশান্না!\f + \fr 11:9 \fr*\fq হোশান্না\fq*\ft —এক হিব্রু অভিব্যক্তি, যার অর্থ, রক্ষা করো। পরে এটি একটি প্রশংসাসূচক ধ্বনিতে পরিণত হয়েছে।\ft*\f*” \b \q1 “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন!”\f + \fr 11:9 \fr*\ft \+xt গীত 118:26,27\+xt*\ft*\f* \b \q1 \v 10 “ধন্য আমাদের পিতা দাউদের সন্নিকট রাজ্য!” \b \q1 “ঊর্ধ্বলোকে হোশান্না!” \p \v 11 যীশু জেরুশালেমে প্রবেশ করে মন্দিরে গেলেন। তিনি চারপাশের সবকিছু লক্ষ্য করতে লাগলেন। কিন্তু ইতিমধ্যে অনেক দেরি হওয়াতে, তিনি সেই বারোজনের সঙ্গে বেথানিতে চলে গেলেন। \s1 যীশু মন্দির পরিষ্কার করলেন \p \v 12 পরদিন, তাঁরা বেথানি পরিত্যাগ করে যাওয়ার সময়, যীশু ক্ষুধার্ত হলেন। \v 13 দূরে একটি পাতায় ভরা ডুমুর গাছ দেখে, তাতে কোনো ফল আছে কি না, তিনি তা খুঁজতে গেলেন। তিনি গাছটির কাছে গিয়ে পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না, কারণ তখন ডুমুরের মরশুম ছিল না। \v 14 তখন তিনি সেই গাছটিকে বললেন, “তোমার ফল কেউ যেন আর কখনও না খায়।” শিষ্যেরা তাঁকে একথা বলতে শুনলেন। \p \v 15 জেরুশালেমে পৌঁছে যীশু মন্দির চত্বরে প্রবেশ করলেন এবং যারা সেখানে কেনাবেচা করছিল, তাদের তাড়িয়ে দিতে লাগলেন। তিনি মুদ্রা-বিনিময়কারীদের টেবিল ও পায়রা-বিক্রেতাদের বেঞ্চি উল্টে দিলেন। \v 16 মন্দির-প্রাঙ্গণ দিয়ে তিনি কাউকে বিক্রি করার কোনো কিছু নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেন না। \v 17 তিনি তাদের বললেন, “একথা কি লেখা নেই, ‘আমার গৃহ সর্বজাতির প্রার্থনা-গৃহরূপে আখ্যাত হবে’?\f + \fr 11:17 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 56:7\+xt*\ft*\f* কিন্তু তোমরা একে ‘দস্যুদের গহ্বরে পরিণত করেছ।’\f + \fr 11:17 \fr*\ft \+xt যিরমিয় 7:11\+xt*\ft*\f*” \p \v 18 প্রধান যাজকেরা ও শাস্ত্রবিদরা একথা শুনতে পেয়ে, তাঁকে হত্যা করার পথ খুঁজতে লাগল। কিন্তু তারা তাঁকে ভয় করত, কারণ লোকসকল তার উপদেশে চমৎকৃত হয়েছিল। \p \v 19 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, যীশু ও তাঁর শিষ্যরা নগরের বাইরে চলে গেলেন। \s1 শুকিয়ে যাওয়া ডুমুর গাছ \p \v 20 সকালবেলা, পথে যাওয়ার সময় তাঁরা দেখলেন, সেই ডুমুর গাছটি সমূলে শুকিয়ে গেছে। \v 21 সব কথা তখন পিতরের মনে পড়ল, আর তিনি যীশুকে বললেন, “রব্বি দেখুন, যে ডুমুর গাছটিকে আপনি অভিশাপ দিয়েছিলেন, সেটি শুকিয়ে গেছে।” \p \v 22 যীশু উত্তর দিলেন, “ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখো। \v 23 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, কেউ যদি এই পর্বতটিকে বলে, ‘যাও, উপড়ে গিয়ে সমুদ্রে পড়ো,’ কিন্তু তার মনে কোনো সন্দেহ পোষণ না করে বিশ্বাস করে যে, সে যা বলেছে, তাই ঘটবে, তার জন্য সেরকমই করা হবে। \v 24 সেই কারণে আমি তোমাদের বলছি, তোমরা প্রার্থনায় যা কিছু চাও, বিশ্বাস করো যে তোমরা তা পেয়ে গিয়েছ, তবে তোমাদের জন্য সেরকমই হবে। \v 25 আর তোমরা যখন প্রার্থনা করার জন্য দাঁড়াও, যদি কারও বিরুদ্ধে তোমাদের কোনও ক্ষোভ থাকে, তাকে ক্ষমা করো, \v 26 যেন তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের সকল পাপ ক্ষমা করেন।”\f + \fr 11:26 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর এই কথাগুলি পাওয়া যায়: তোমরা যদি ক্ষমা না করো, তবে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের সকল পাপ ক্ষমা করবেন না।\ft*\f* \s1 যীশুর অধিকার সম্পর্কে প্রশ্ন \p \v 27 তাঁরা পুনরায় জেরুশালেমে এলেন। যীশু যখন মন্দির চত্বরে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদরা ও লোকদের প্রাচীনবর্গ তাঁর কাছে এল। \v 28 তারা প্রশ্ন করল, “তুমি কোন অধিকারে এসব কাজ করছ? আর এসব করার অধিকারই বা কে তোমাকে দিল?” \p \v 29 যীশু উত্তর দিলেন, “আমিও তোমাদের একটি প্রশ্ন করব। আমাকে উত্তর দাও, তাহলে আমিও তোমাদের বলব, আমি কোন অধিকারে এসব করছি। \v 30 আমাকে বলো, যোহনের বাপ্তিষ্ম স্বর্গ থেকে হয়েছিল, না মানুষের কাছ থেকে?” \p \v 31 তারা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে বলল, “যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ ও জিজ্ঞাসা করবে, ‘তাহলে তোমরা তাকে বিশ্বাস করোনি কেন?’ \v 32 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে’…” (তারা জনসাধারণকে ভয় করত, কারণ প্রত্যেকে যোহনকে প্রকৃত ভাববাদী বলেই মনে করত।) \p \v 33 তাই তারা যীশুকে উত্তর দিল, “আমরা জানি না।” \p যীশু বললেন, “তাহলে, আমিও কোন অধিকারে এসব কাজ করছি, তা তোমাদের বলব না।” \c 12 \s1 ভাগচাষিদের রূপক \p \v 1 যীশু তখন বিভিন্ন রূপকের আশ্রয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন: “এক ব্যক্তি একটি দ্রাক্ষাক্ষেত স্থাপন করলেন। তিনি তাঁর চারপাশে একটি প্রাচীর নির্মাণ করলেন; দ্রাক্ষা পেষাই করার জন্য গর্ত খুঁড়লেন এবং পাহারা দেওয়ার জন্য এক উঁচু মিনার নির্মাণ করলেন। তারপর কয়েকজন ভাগচাষিকে দ্রাক্ষাক্ষেতটি ভাড়া দিয়ে তিনি এক যাত্রাপথে চলে গেলেন। \v 2 পরে ফল কাটার সময় উপস্থিত হলে, তিনি তাঁর এক দাসকে ফলের অংশ সংগ্রহের জন্য দ্রাক্ষাক্ষেতে ভাগচাষিদের কাছে পাঠালেন। \v 3 কিন্তু তারা তাকে মারধর করল ও শূন্য হাতে তাকে ফিরিয়ে দিল। \v 4 তারপর তিনি অন্য এক দাসকে তাদের কাছে পাঠালেন; তারা সেই দাসের মাথায় আঘাত করল ও তার সঙ্গে নির্লজ্জ আচরণ করল। \v 5 তিনি তবুও আর একজনকে পাঠালেন, তারা তাকে হত্যা করল। তিনি আরও অনেকজনকে পাঠালেন, তাদের কাউকে কাউকে তারা মারধর করল, অন্যদের হত্যা করল। \p \v 6 “তখন তাঁর কাছে অবশিষ্ট ছিলেন আর একজন মাত্র ব্যক্তি, তিনি তাঁর প্রিয়তম পুত্র। সকলের শেষে তিনি একথা বলে তাঁকেই পাঠালেন, ‘তারা আমার পুত্রকে সম্মান করবে।’ \p \v 7 “কিন্তু ভাগচাষিরা পরস্পরকে বলল, ‘এই হচ্ছে উত্তরাধিকারী! এসো, আমরা একে হত্যা করি, তাহলে মালিকানা আমাদের হবে।’ \v 8 তাই তারা তাঁকে ধরে হত্যা করল ও দ্রাক্ষাক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল। \p \v 9 “দ্রাক্ষাক্ষেতের মালিক তখন কী করবেন? তিনি এসে ওইসব ভাগচাষিদের হত্যা করবেন এবং দ্রাক্ষাক্ষেতটি অন্যদের দেবেন। \v 10 তোমরা কি শাস্ত্রে পাঠ করোনি, \q1 “ ‘গাঁথকেরা যে পাথর অগ্রাহ্য করেছিল, \q2 তাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর; \q1 \v 11 প্রভুই এরকম করেছেন, \q2 আর তা আমাদের দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য।’ ”\f + \fr 12:11 \fr*\ft \+xt গীত 118:22,23\+xt*\ft*\f* \p \v 12 তখন প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদরা ও প্রাচীনবর্গ যীশুকে গ্রেপ্তার করার কোনো উপায় খুঁজতে লাগল, কারণ তারা জানত, রূপক কাহিনিটি তিনি তাদের বিরুদ্ধেই বলেছেন। কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পেত; তাই তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেল। \s1 কৈসরকে কর দেওয়ার প্রসঙ্গে \p \v 13 এরপর তারা কয়েকজন ফরিশী ও হেরোদীয়কে যীশুর কাছে পাঠাল, যেন তাঁর কথাতেই তারা তাঁকে ধরার সূত্র খুঁজে পায়। \v 14 তারা তাঁর কাছে এসে বলল, “গুরুমহাশয়, আমরা জানি, আপনি একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ। কোনো মানুষের দ্বারা আপনি প্রভাবিত হন না, তাদের কারও বিষয়ে আপনি কোনো ভ্রূক্ষেপ করেন না। বরং আপনি সত্য অনুযায়ী ঈশ্বরের পথের বিষয়ে শিক্ষা দেন। আপনার অভিমত কী, কৈসরকে কর দেওয়া কি উচিত? \v 15 আমরা কি কর দেব না দেব না?” \p যীশু কিন্তু তাদের ভণ্ডামির কথা বুঝতে পারলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন আমাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছ? তোমরা আমার কাছে এক দিনার মুদ্রা নিয়ে এসো ও আমাকে তা দেখতে দাও।” \v 16 তারা সেই মুদ্রা নিয়ে এল। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এটি কার প্রতিকৃতি? খোদাই করা এই নাম কার?” \p তারা উত্তর দিল, “কৈসরের।” \p \v 17 তখন যীশু তাদের বললেন, “যা কৈসরের, তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের, তা ঈশ্বরকে দাও।” \p এতে তারা তাঁর সম্পর্কে অত্যন্ত বিস্মিত হল। \s1 পুনরুত্থানের পর বিবাহ সম্পর্কে \p \v 18 তখন সদ্দূকীরা, যারা বলে পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, একটি প্রশ্ন নিয়ে তাঁর কাছে এল। \v 19 তারা বলল, “গুরুমহাশয়, মোশি আমাদের জন্য লিখে গেছেন, কোনো ব্যক্তি\f + \fr 12:19 \fr*\ft বড়ো ভাই, বা দাদা।\ft*\f* যদি স্ত্রীকে সন্তানহীন রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই, তার বিধবা পত্নীকে বিবাহ করবে এবং সে তার বড়ো ভাইয়ের জন্য সন্তানের জন্ম দেবে। \v 20 মনে করুন, সাতজন ভাই ছিল। প্রথমজন বিবাহ করল ও নিঃসন্তান অবস্থায় তার স্ত্রীকে রেখে মারা গেল। \v 21 দ্বিতীয়জন সেই বিধবাকে বিবাহ করল, কিন্তু সেও নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। তৃতীয় জনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল। \v 22 প্রকৃতপক্ষে, সেই সাতজনের কেউই কোনো সন্তান রেখে যেতে পারল না। অবশেষে সেই স্ত্রীরও মৃত্যু হল। \v 23 তাহলে, পুনরুত্থানে সে কার স্ত্রী হবে, কারণ সাতজনই তো তাকে বিবাহ করেছিল?” \p \v 24 যীশু উত্তর দিলেন, “এই কি তোমাদের ভ্রান্তির কারণ নয়, কারণ তোমরা শাস্ত্র জানো না, ঈশ্বরের পরাক্রমও জানো না? \v 25 মৃতেরা যখন উত্থিত হয়, তখন তারা বিবাহ করে না, বা তাদের বিবাহ দেওয়াও হয় না। তারা স্বর্গলোকের দূতগণের মতো হয়। \v 26 কিন্তু মৃতদের উত্থান সম্পর্কে মোশির গ্রন্থে জ্বলন্ত ঝোপের বৃত্তান্তে কী লেখা আছে, তা কি তোমরা পাঠ করোনি? ঈশ্বর কীভাবে তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর?’\f + \fr 12:26 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 3:6\+xt*\ft*\f* \v 27 তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিতদের ঈশ্বর। তোমরা চরম বিভ্রান্তিতে আছ।” \s1 মহত্তম আজ্ঞা \p \v 28 শাস্ত্রবিদদের মধ্যে একজন এসে তাদের তর্কবিতর্ক করতে শুনলেন। যীশু তাদের ভালো উত্তর দিয়েছেন লক্ষ্য করে তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সব আজ্ঞার মধ্যে কোনটি সর্বাপেক্ষা মহৎ?” \p \v 29 যীশু উত্তর দিলেন, “সব থেকে মহৎ আজ্ঞাটি হল এই, ‘হে ইস্রায়েল শোনো, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একই প্রভু। \v 30 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত মন ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে।’\f + \fr 12:30 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:4,5\+xt*\ft*\f* \v 31 দ্বিতীয়টি হল, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতোই প্রেম করবে।’\f + \fr 12:31 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 19:18\+xt*\ft*\f* এগুলির থেকে আর বড়ো কোনও আজ্ঞা নেই।” \p \v 32 “গুরুমহাশয়, আপনি বেশ বলেছেন,” শাস্ত্রবিদ উত্তর দিলেন। “আপনি যথার্থই বলেছেন যে, ঈশ্বর একই প্রভু এবং তিনি ছাড়া আর অন্য কেউ নেই। \v 33 সমস্ত হৃদয়, সমস্ত উপলব্ধি ও সমস্ত শক্তি দিয়ে ঈশ্বরকে ভালোবাসা এবং তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো প্রেম করা, সমস্ত হোম ও বলিদানের চেয়েও বেশি মহত্ত্বপূর্ণ।” \p \v 34 যীশু দেখলেন, তিনি বিজ্ঞতার সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন, তাই তিনি তাকে বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য থেকে তুমি দূরে নও।” সেই সময় থেকে কেউ তাঁকে আর কোনো প্রশ্ন করতে সাহস পেল না। \s1 খ্রীষ্ট কার সন্তান? \p \v 35 মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “শাস্ত্রবিদরা কী করে বলে যে, খ্রীষ্ট দাউদের পুত্র? \v 36 দাউদ স্বয়ং পবিত্র আত্মার আবেশে একথা ঘোষণা করেছেন, \q1 “ ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, \q2 “তুমি আমার ডানদিকে বসো, \q1 যতক্ষণ না তোমার শত্রুদের \q2 আমি তোমার পদানত করি।” ’\f + \fr 12:36 \fr*\ft \+xt গীত 110:1\+xt*\ft*\f* \m \v 37 স্বয়ং দাউদ তাঁকে ‘প্রভু’ বলে অভিহিত করেছেন, তাহলে কীভাবে তিনি তাঁর সন্তান হতে পারেন?” \p বিস্তর লোক আনন্দের সঙ্গে তাঁর কথা শুনছিল। \p \v 38 শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু তাদের বললেন, “শাস্ত্রবিদদের সম্পর্কে সতর্ক থেকো। তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতে ও হাটেবাজারে সম্ভাষিত হতে ভালোবাসে। \v 39 তারা সমাজভবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ও ভোজসভায় সব থেকে সম্মানজনক আসন লাভ করতে ভালোবাসে। \v 40 তারা বিধবাদের বাড়িশুদ্ধ গ্রাস করে এবং লোক-দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে। এই ধরনের লোকেরা কঠোর শাস্তি ভোগ করবে।” \s1 বিধবার দান \p \v 41 যেখানে দান সংগ্রহ করা হচ্ছিল, যীশু তার উল্টোদিকে বসে দেখছিলেন, লোকেরা কীভাবে মন্দিরের ভাণ্ডারে অর্থ দান করছে। বহু ধনী ব্যক্তি প্রচুর সব মুদ্রা সেখানে রাখছিল। \v 42 কিন্তু একজন দরিদ্র বিধবা এসে তার মধ্যে খুব ছোটো দুটি তামার পয়সা রাখল, যার মূল্য সিকি পয়সা মাত্র। \p \v 43 যীশু তাঁর শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই দরিদ্র বিধবা, অন্য সবার চেয়ে বেশি অর্থ ভাণ্ডারে দিয়েছে। \v 44 তারা সবাই তাদের প্রাচুর্য থেকে দান করেছে, কিন্তু সে তার দরিদ্রতা সত্ত্বেও, তার বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু ছিল, তা থেকে সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছে।” \c 13 \s1 অন্তিমলগ্নের চিহ্নাবলি \p \v 1 তিনি যখন মন্দির ছেড়ে যাচ্ছেন, তাঁর শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁকে বললেন, “গুরুমহাশয়, দেখুন! পাথরগুলি কেমন বিশাল!\f + \fr 13:1 \fr*\ft যোষিফাসের তথ্য অনুযায়ী (অ্যান্টিকিটিস 15; 11; 3) পাথরগুলি ছিল সাদা, তাদের কোনো কোনোটি ছিল 37 ফুট লম্বা, 18 ফুট চওড়া ও 12 ফুট উঁচু।\ft*\f* কেমন অপরূপ সব ভবন!” \p \v 2 উত্তরে যীশু বললেন, “তোমরা কি বিশাল এসব ভবন দেখছ? এদের একটি পাথরও অন্যটির উপরে থাকবে না, সবকটিকেই ভূমিসাৎ করা হবে।” \p \v 3 মন্দিরের বিপরীত দিকে যীশু যখন জলপাই পর্বতে বসেছিলেন, পিতর, যাকোব, যোহন ও আন্দ্রিয় তাঁকে একান্তে জিজ্ঞাসা করলেন, \v 4 “কখন এই সমস্ত ঘটনা ঘটবে, আমাদের বলুন। আর এগুলি পূর্ণ হওয়ার চিহ্নই বা কী হবে?” \p \v 5 যীশু তাঁদের বললেন, “সতর্ক থেকো, কেউ যেন তোমাদের সঙ্গে প্রতারণা না করে। \v 6 অনেকে এসে আমার নামে দাবি করবে, ‘আমিই সেই,’ আর এভাবে বহু মানুষকে ঠকাবে। \v 7 তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের সব জনরব শুনবে, তখন আতঙ্কগ্রস্ত হোয়ো না। এ সমস্ত বিষয় অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও অন্তিমলগ্ন উপস্থিত হয়নি। \v 8 এক জাতি অন্য জাতির বিপক্ষে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিপক্ষে অভিযান করবে। বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প হবে ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। কিন্তু এসব প্রসব যন্ত্রণার সূচনা মাত্র। \p \v 9 “তোমরা অবশ্যই নিজেদের সম্পর্কে সতর্ক থাকবে। তোমাদেরকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে ও সমাজভবনগুলিতে চাবুক মারা হবে। আমার কারণে তোমাদের বিভিন্ন প্রদেশপাল ও রাজাদের কাছে দাঁড়াতে হবে, তাদের কাছে তোমরা আমার সাক্ষীস্বরূপ হবে। \v 10 আর প্রথমে সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচারিত হবে। \v 11 যখনই তোমাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হবে, কী বলবে, তা নিয়ে আগে থেকেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হোয়ো না। সেই সময়ে তোমাদের যা দেওয়া হবে, কেবলমাত্র তাই বোলো, কারণ তোমরা যে কথা বলবে, এমন নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই বলবেন। \p \v 12 “ভাই ভাইকে ও পিতা সন্তানকে প্রতারিত করবে; ছেলেমেয়েরা বাবা-মার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে তাদের মৃত্যুর উদ্দেশে সমর্পণ করবে। \v 13 আমার কারণে সব মানুষ তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত অবিচল থাকবে, সেই পরিত্রাণ পাবে। \p \v 14 “যখন তোমরা দেখবে, ‘ধ্বংসের কারণস্বরূপ সেই ঘৃণ্য বস্তু’\f + \fr 13:14 \fr*\ft \+xt দানিয়েল 9:27; 11:31; 12:11\+xt*\ft*\f* যেখানে তার দাঁড়াবার অধিকার নেই, সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে,\f + \fr 13:14 \fr*\ft পাঠক এর অর্থ বুঝে নিন\ft*\f* তখন যারা যিহূদিয়ায় থাকে, তারা পার্বত্য অঞ্চলে পালিয়ে যাক। \v 15 তখন ছাদের উপরে যে থাকবে, সে যেন কোনো জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য নিচে নেমে না আসে, বা ঘরে প্রবেশ না করে। \v 16 মাঠে যে থাকবে, সে যেন জামাকাপড় নেওয়ার জন্য ঘরে ফিরে না যায়। \v 17 সেই সময় গর্ভবতী নারীদের ও স্তন্যদাত্রী মায়েদের কতই না ভয়ংকর কষ্ট হবে! \v 18 প্রার্থনা কোরো, যেন এই ঘটনা শীতকালে না ঘটে। \v 19 কারণ সেইসব দিনের দুঃসহ যন্ত্রণার কোনও তুলনা হবে না, ঈশ্বরের জগৎ সৃষ্টির সময় থেকে সেরকম কখনও হয়নি, বা আর কখনও হবেও না। \p \v 20 “প্রভু যদি সেই সমস্ত দিনের সংখ্যা কমিয়ে না দিতেন, তাহলে কোনো মানুষই রক্ষা পেত না। কিন্তু যাদের তিনি মনোনীত করেছেন ও বেছে নিয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি সেইসব দিনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন। \v 21 সেই সময় কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখো, খ্রীষ্ট এখানে,’ বা ‘দেখো, তিনি ওখানে,’ সেকথা তোমরা বিশ্বাস কোরো না। \v 22 কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা ও ভণ্ড ভাববাদীরা উপস্থিত হয়ে বহু চিহ্ন ও অলৌকিক কাজ করে দেখাবে, যেন সম্ভব হলে মনোনীতদেরও প্রতারিত করতে পারে। \v 23 তাই, সতর্ক থেকো, সময়ের আগেই আমি তোমাদের সবকিছু জানালাম। \p \v 24 “কিন্তু সেই সমস্ত দিনে, সেই বিপর্যয়ের শেষে, \q1 “ ‘সূর্য অন্ধকারে ঢেকে যাবে, \q2 চাঁদ তার আলো দেবে না; \q1 \v 25 আকাশ থেকে নক্ষত্রসমূহের পতন হবে, \q2 আর জ্যোতিষ্কমণ্ডলী প্রকম্পিত হবে।’\f + \fr 13:25 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 13:10; 34:4\+xt*\ft*\f* \p \v 26 “সেই সময়ে লোকেরা মনুষ্যপুত্রকে মহাপরাক্রমে ও মহিমায় মেঘে করে আসতে দেখবে। \v 27 তিনি তাঁর দূতদের পাঠাবেন এবং তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চারদিক থেকে তাঁর মনোনীতদের সংগ্রহ করবেন। \p \v 28 “এখন ডুমুর গাছ থেকে এই শিক্ষাগ্রহণ করো: যখনই এর শাখায় কোমল পল্লব ও পাতা বের হয়ে আসে, তোমরা বুঝতে পারো যে, গ্রীষ্মকাল কাছে এসেছে। \v 29 সেভাবে, তোমরা যখন এসব বিষয় ঘটতে দেখবে, তোমরা জানবে যে, সময় হয়ে এসেছে, এমনকি, তিনি দুয়ারে উপস্থিত হয়েছেন। \v 30 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই সমস্ত ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত বর্তমান প্রজন্ম লুপ্ত হবে না। \v 31 আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত হবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লুপ্ত হবে না। \s1 অজানা দিনক্ষণ \p \v 32 “কিন্তু সেই দিন বা ক্ষণের কথা কেউই জানে না, এমনকি স্বর্গদূতেরা বা পুত্রও জানেন না, কেবলমাত্র পিতা জানেন। \v 33 সতর্ক হও! তোমরা সজাগ থেকো! কারণ তোমরা জানো না সেই সময় কখন আসবে। \v 34 এ যেন কোনো ব্যক্তি বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন; তিনি তাঁর বাড়ি ত্যাগ করে তাঁর দাসদের উপরে সমস্ত দায়িত্ব দিলেন। তিনি প্রত্যেককে তার নির্দিষ্ট কাজ দিলেন এবং দ্বাররক্ষীকে সতর্ক পাহারা দিতে বললেন। \p \v 35 “সেই কারণে, সজাগ থেকো, কারণ তোমরা জানো না, বাড়ির কর্তা কখন ফিরে আসবেন—সন্ধ্যায়, না মধ্যরাত্রে, মোরগ ডাকার সময়, নাকি সকালবেলায়। \v 36 তিনি যদি হঠাৎ এসে উপস্থিত হন, তোমাদের যেন ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে না পান। \v 37 আমি তোমাদের যা কিছু বলি, তা সবাইকেই বলি: ‘তোমরা সজাগ থেকো।’ ” \c 14 \s1 বেথানিতে যীশুর অভিষেক \p \v 1 নিস্তারপর্ব ও খামিরবিহীন রুটির পর্ব শুরু হতে আর মাত্র দু-দিন বাকি ছিল। প্রধান যাজকেরা ও শাস্ত্রবিদরা সুকৌশলে যীশুকে গ্রেপ্তার ও হত্যা করার জন্য সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছিল। \v 2 তারা বলল, “কিন্তু পর্বের সময়ে নয়, তাতে লোকদের মধ্যে দাঙ্গা বেধে যেতে পারে।” \p \v 3 যীশু যখন বেথানিতে কুষ্ঠরোগী শিমোন নামে পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে আসনে হেলান দিয়ে বসেছিলেন, তখন একজন নারী, একটি শ্বেতস্ফটিকের পাত্রে বিশুদ্ধ জটামাংসীর নির্যাসে তৈরি বহুমূল্য সুগন্ধি তেল নিয়ে এল। সে পাত্রটি ভেঙে তাঁর মাথায় সেই সুগন্ধি তেল ঢেলে দিল। \p \v 4 উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ বিরক্তির স্বরে বলল, “সুগন্ধিদ্রব্যের এই অপচয় কেন? \v 5 এটি বিক্রি করে তো তিনশো দিনারেরও\f + \fr 14:5 \fr*\ft তিনশো দিনার হল সেই সময়ের প্রায় এক বছরের মজুরির সমান।\ft*\f* বেশি অর্থ পাওয়া যেত ও দরিদ্রদের দান করা যেত।” তারা রূঢ়ভাবে তাকে তিরস্কার করল। \p \v 6 যীশু বললেন, “ওকে ছেড়ে দাও। তোমরা কেন ওকে উত্যক্ত করছ? ও আমার প্রতি এক অপূর্ব কাজ করেছে। \v 7 দরিদ্রদের তোমরা সবসময়ই সঙ্গে পাবে, আর তোমরা চাইলে যে কোনো সময় তাদের সাহায্য করতে পারো। কিন্তু আমাকে তোমরা সবসময় পাবে না। \v 8 সে তার সাধ্যমতোই কাজ করেছে। সে আগে থেকেই আমার শরীরে সুগন্ধিদ্রব্য ঢেলে দিয়ে আমার দেহকে সমাধির জন্য প্রস্তুত করেছে। \v 9 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, সমস্ত জগতে, যেখানেই সুসমাচার প্রচারিত হবে, সে যা করেছে, স্মৃতির উদ্দেশে তার সেই কাজের কথাও বলা হবে।” \p \v 10 তখন সেই বারোজনের একজন, যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ যীশুকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধান যাজকদের কাছে গেল। \v 11 তারা একথা শুনে আনন্দিত হয়ে তাকে টাকা দিতে প্রতিশ্রুতি দিল। তাই সে তাঁকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ খুঁজতে লাগল। \s1 প্রভুর ভোজ \p \v 12 খামিরবিহীন রুটির পর্বের প্রথম দিনে, যখন নিস্তারপর্বের মেষশাবক বলিদান করার প্রথা ছিল, যীশুর শিষ্যেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কোথায় গিয়ে আপনার জন্য নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করব? আপনার ইচ্ছা কী?” \p \v 13 তাই তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এই বলে পাঠালেন, “তোমরা ওই নগরে যাও। সেখানে দেখবে, এক ব্যক্তি জলের একটি কলশি নিয়ে যাচ্ছে। তোমরা তাকে অনুসরণ কোরো। \v 14 যে বাড়িতে সে প্রবেশ করবে, সেই গৃহকর্তাকে তোমরা বোলো, ‘গুরুমহাশয় জানতে চান, অতিথিদের জন্য আমার সেই নির্দিষ্ট ঘরটি কোথায়, যেখানে আমি আমার শিষ্যদের নিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণ করতে পারি?’ \v 15 সে তোমাদের উপরতলায় একটি বড়ো ঘর দেখাবে। তা সুসজ্জিত ও প্রস্তুত অবস্থায় আছে। আমাদের জন্য সেখানেই সব আয়োজন কোরো।” \p \v 16 সেই শিষ্যেরা বেরিয়ে পড়লেন। নগরে প্রবেশ করে যীশু তাঁদের যেমন বলেছিলেন, ঠিক তেমনই তাঁরা সবকিছু দেখতে পেলেন। তাই তাঁরা সেখানেই নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন। \p \v 17 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, যীশু সেই বারোজনের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হলেন। \v 18 আসনে হেলান দিয়ে তাঁরা যখন আহার করছিলেন, তিনি বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে—সে আমারই সঙ্গে আহার করছে।” \p \v 19 তাঁরা দুঃখিত হলেন এবং এক এক করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সে নিশ্চয়ই আমি নই?” \p \v 20 তিনি উত্তর দিলেন, “সে এই বারোজনের মধ্যেই একজন, যে আমার সঙ্গে খাবারের পাত্রে রুটি ডুবালো। \v 21 মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে যে রকম লেখা আছে, তেমনই তিনি চলে যাবেন, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যে মনুষ্যপুত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে! তার জন্ম না হলেই বরং তার পক্ষে ভালো হত।” \p \v 22 তাঁরা যখন আহার করছিলেন, যীশু রুটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভাঙলেন। আর তিনি তাঁর শিষ্যদের দিলেন ও বললেন, “তোমরা নাও; এ আমার শরীর।” \p \v 23 তারপর তিনি পানপাত্রটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও তাঁদের সেটি দিলেন। তাঁরা সবাই তা থেকে পান করলেন। \p \v 24 তিনি তাঁদের বললেন, “এ আমার রক্ত, নতুন নিয়মের\f + \fr 14:24 \fr*\fq নিয়মের\fq*\ft —অর্থাৎ চুক্তির।\ft*\f* রক্ত, যা অনেকের জন্য পাতিত হয়েছে। \v 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ঈশ্বরের রাজ্যে আমি নতুন করে পান না করা পর্যন্ত দ্রাক্ষারস আর কখনও পান করব না।” \p \v 26 পরে তাঁরা একটি গান করে সেখান থেকে বের হয়ে জলপাই পর্বতে গেলেন। \s1 পিতরের যীশুকে অস্বীকার করা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 27 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সবাই আমাকে ছেড়ে যাবে, কারণ এরকম লেখা আছে: \q1 “ ‘আমি মেষপালককে আঘাত করব, \q2 এতে মেষেরা ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়বে।’\f + \fr 14:27 \fr*\ft \+xt সখরিয় 13:7\+xt*\ft*\f* \m \v 28 কিন্তু আমি উত্থিত হলে পর, আমি তোমাদের আগেই গালীলে পৌঁছাব।” \p \v 29 পিতর তাঁকে বললেন, “সবাই আপনাকে ছেড়ে গেলেও, আমি যাব না।” \p \v 30 যীশু উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, আজই—হ্যাঁ, আজ রাত্রিবেলায়—দু-বার মোরগ ডাকার আগেই, তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।” \p \v 31 কিন্তু পিতর আরও জোরের সঙ্গে বললেন, “আপনার সঙ্গে যদি আমাকে মৃত্যুবরণও করতে হয়, তাহলেও আমি আপনাকে কখনোই অস্বীকার করব না।” আর বাকি সকলেও একই কথা বললেন। \s1 গেৎশিমানি \p \v 32 পরে তাঁরা গেৎশিমানি নামে পরিচিত একটি স্থানে গেলেন। আর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি যখন প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাকো।” \v 33 তিনি পিতর, যাকোব ও যোহনকে তাঁর সঙ্গে নিলেন এবং গভীর মর্মবেদনাগ্রস্ত ও উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠলেন। \v 34 তিনি তাঁদের বললেন, “আমার প্রাণ মৃত্যু পর্যন্ত দুঃখার্ত হয়েছে। তোমরা এখানে থাকো, এবং জেগে থাকো।” \p \v 35 আরও কিছু দূর এগিয়ে গিয়ে, তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রার্থনা করলেন, যেন সম্ভব হলে সেই লগ্ন তাঁর কাছ থেকে দূর করা হয়। \v 36 তিনি বললেন, \tl “আব্বা\tl*,\f + \fr 14:36 \fr*\fq আব্বা\fq*\ft —পিতা শব্দের অরামীয় প্রতিশব্দ।\ft*\f* পিতা, তোমার পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও। তবুও আমার ইচ্ছা অনুযায়ী নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছা অনুযায়ী হোক।” \p \v 37 তারপর তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে এসে দেখলেন, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি পিতরকে বললেন, “শিমোন, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ? তুমি এক ঘণ্টাও জেগে থাকতে পারলে না? \v 38 জেগে থাকো ও প্রার্থনা করো, যেন প্রলোভনে না পড়ো। আত্মা ইচ্ছুক, কিন্তু শরীর দুর্বল।” \p \v 39 আর একবার তিনি দূরে গিয়ে সেই একই প্রার্থনা করলেন। \v 40 যখন তিনি ফিরে এলেন, তিনি আবার তাঁদের ঘুমাতে দেখলেন, কারণ তাঁদের চোখের পাতা ভারী হয়ে উঠেছিল। তাঁরা তাঁকে কী বলবেন, বুঝতে পারলেন না। \p \v 41 তৃতীয়বার তিনি ফিরে এসে তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও ঘুমিয়ে আছ ও বিশ্রাম করছ? যথেষ্ট হয়েছে! সময় হয়েছে। দেখো, মনুষ্যপুত্রকে পাপীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। \v 42 ওঠো! চলো আমরা যাই! দেখো, আমার বিশ্বাসঘাতক এসে পড়েছে।” \s1 যীশুকে গ্রেপ্তার \p \v 43 তিনি তখনও কথা বলছেন, সেই সময় বারোজনের অন্যতম যিহূদা এসে উপস্থিত হল। তার সঙ্গে ছিল একদল সশস্ত্র লোক, তাদের হাতে ছিল তরোয়াল ও লাঠিসোঁটা। প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদরা ও লোকসমূহের প্রাচীনবর্গ তাদের পাঠিয়েছিল। \p \v 44 সেই বিশ্বাসঘাতক তাদের এই সংকেত দিয়ে রেখেছিল, “যাকে আমি চুম্বন করব, সেই ওই ব্যক্তি; তাকে গ্রেপ্তার কোরো ও সতর্ক পাহারা দিয়ে নিয়ে যেয়ো।” \v 45 সেই মুহূর্তেই যীশুর কাছে গিয়ে যিহূদা বলল, “রব্বি!” আর তাঁকে চুম্বন করল। \v 46 সেই লোকেরা যীশুকে ধরল ও তাঁকে গ্রেপ্তার করল। \v 47 যারা আশেপাশে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের মধ্যে একজন তার তরোয়াল বের করে মহাযাজকের দাসকে আঘাত করে তার একটি কান কেটে ফেলল। \p \v 48 যীশু বললেন, “আমি কি কোনও বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছি যে, তোমরা তরোয়াল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ? \v 49 প্রতিদিন আমি তোমাদের সঙ্গে থেকে মন্দির চত্বরে বসে শিক্ষা দিয়েছি, তখন তো তোমরা আমাকে গ্রেপ্তার করোনি। কিন্তু শাস্ত্রবাণী অবশ্যই পূর্ণ হতে হবে।” \v 50 তখন সকলে তাঁকে ত্যাগ করে পালিয়ে গেলেন। \p \v 51 আর একজন যুবক, কোনো কিছু না-পরে, কেবলমাত্র একটি মসিনার কাপড় গায়ে জড়িয়ে যীশুকে অনুসরণ করছিল। \v 52 তারা তাকে ধরলে, সে তার পোশাক ফেলে নগ্ন অবস্থাতেই পালিয়ে গেল। \s1 মহাসভার সামনে যীশু \p \v 53 তারা যীশুকে মহাযাজকের কাছে নিয়ে গেল। আর সব প্রধান যাজকেরা, লোকদের প্রাচীনবর্গ ও শাস্ত্রবিদরা সমবেত হয়েছিল। \v 54 পিতর দূর থেকে তাঁকে অনুসরণ করে মহাযাজকের উঠান পর্যন্ত চলে গেলেন। সেখানে তিনি প্রহরীদের সঙ্গে বসে আগুন পোহাতে লাগলেন। \p \v 55 প্রধান যাজকেরা ও সমস্ত মহাসভা যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ খুঁজছিল, কিন্তু তারা সেরকম কিছুই পেল না। \v 56 অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিল ঠিকই, কিন্তু তাদের সাক্ষ্যের মধ্যে কোনও মিল ছিল না। \p \v 57 তখন কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এই মিথ্যা সাক্ষ্য দিল: \v 58 “আমরা একে বলতে শুনেছি, ‘মানুষের তৈরি এই মন্দির আমি ধ্বংস করতে ও তিনদিনের মধ্যে আর একটি মন্দির নির্মাণ করতে পারি, যা মানুষের তৈরি নয়।’ ” \v 59 তবুও, এই সাক্ষ্যের মধ্যেও কোনো মিল খুঁজে পাওয়া গেল না। \p \v 60 তখন মহাযাজক তাদের সামনে উঠে দাঁড়ালেন ও যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি উত্তর দেবে না? তোমার বিরুদ্ধে এরা যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ এনেছে, সেগুলি কী?” \v 61 যীশু তবুও নীরব রইলেন, কোনও উত্তর দিলেন না। \p মহাযাজক তাঁকে আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমিই কি সেই খ্রীষ্ট, পরমধন্য ঈশ্বরের পুত্র?” \p \v 62 যীশু বললেন, “আমিই তিনি। আর তোমরা মনুষ্যপুত্রকে সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডানদিকে বসে থাকতে ও স্বর্গের মেঘে করে আসতে দেখবে।” \p \v 63 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। তিনি বললেন, “আমাদের আর সাক্ষ্য-প্রমাণের কী প্রয়োজন? \v 64 তোমরা তো ঈশ্বরনিন্দা শুনলে। তোমাদের অভিমত কী?” \p তারা সবাই যীশুকে অপরাধী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য বলে রায় দিল। \v 65 তখন কেউ কেউ তাঁর গায়ে থুতু দিল, তারা তাঁর চোখ বেঁধে তাঁকে ঘুসি মারল ও বলল, “ভাববাণী বল!” আর প্রহরীরা তাঁকে নিয়ে গিয়ে প্রহার করতে লাগল। \s1 পিতর যীশুকে অস্বীকার করলেন \p \v 66 পিতর যখন নিচে উঠানে ছিলেন, মহাযাজকের একজন দাসী তাঁর কাছে এল। \v 67 পিতরকে আগুন পোহাতে দেখে সে তাঁকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগল। সে বলল, \p “তুমিও ওই নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে।” \p \v 68 কিন্তু তিনি সেই কথা অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, “তুমি কী বলছ, তা আমি জানি না, বুঝতেও পারছি না।” এরপর তিনি প্রবেশদ্বারের দিকে চলে গেলেন, আর তক্ষুনি মোরগ ডেকে উঠল। \p \v 69 সেই দাসী তাঁকে সেখানে দেখে তাঁর চারপাশের লোকদের আবার বলল, “এই লোকটিও ওদেরই একজন!” \v 70 তিনি আবার তা অস্বীকার করলেন। \p এর কিছুক্ষণ পরে, যারা পিতরের কাছে দাঁড়িয়েছিল, তারা বলল, “তুমি নিশ্চয় ওদেরই একজন, কারণ তুমি একজন গালীলীয়।” \p \v 71 তিনি নিজেকে অভিশাপ দিতে লাগলেন ও তাদের কাছে শপথ করে বললেন, “যাঁর সম্পর্কে আপনারা বলছেন, তাঁকে আমি চিনি না।” \p \v 72 সঙ্গে সঙ্গে মোরগ দ্বিতীয়বার ডেকে উঠল। তখন যীশু পিতরকে যে কথা বলেছিলেন, তাঁর তা মনে পড়ল: “মোরগ দু-বার ডাকার পূর্বে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে।” তখন তিনি অত্যন্ত কান্নায় ভেঙে পড়লেন। \c 15 \s1 পীলাতের সামনে যীশু \p \v 1 খুব ভোরবেলায়, প্রধান যাজকেরা, লোকদের প্রাচীনবর্গ ও শাস্ত্রবিদরা সমস্ত মহাসভার সঙ্গে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হল। তারা যীশুকে বেঁধে পীলাতের কাছে নিয়ে গেল ও তাঁর হাতে তাঁকে সমর্পণ করল। \p \v 2 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমিই কি ইহুদিদের রাজা?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, ঠিক তাই, যেমন তুমি বললে।” \p \v 3 প্রধান যাজকেরা তাঁকে অনেক বিষয়ে অভিযুক্ত করল। \v 4 তাই পীলাত আবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি উত্তর দেবে না? দেখো, ওরা তোমার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ করছে।” \p \v 5 যীশু তবুও কোনো উত্তর দিলেন না দেখে পীলাত বিস্মিত হলেন। \p \v 6 লোকেদের পর্বের সময় সকলের অনুরোধে এক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। \v 7 তখন বারাব্বা নামে এক ব্যক্তি অন্য কয়েকজন বিদ্রোহীর সঙ্গে কারারুদ্ধ ছিল। তারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সময় নরহত্যাও করেছিল। \v 8 লোকেরা সামনে এসে পীলাতকে অনুরোধ করল, তিনি সাধারণত যা করে থাকেন, তাদের জন্য যেন তাই করেন। \p \v 9 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি চাও যে, ‘ইহুদিদের রাজাকে’ আমি তোমাদের জন্য মুক্ত করে দিই?” \v 10 কারণ তিনি জানতেন, প্রধান যাজকেরা ঈর্ষাবশত যীশুকে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল। \v 11 কিন্তু প্রধান যাজকেরা সকলকে উত্তেজিত করে পীলাতকে বলতে বলল যে তারা যেন বারাব্বার মুক্তি চায়। \p \v 12 পীলাত তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে, তোমরা যাকে ইহুদিদের রাজা বলো, তাকে নিয়ে আমি কী করব?” \p \v 13 তারা চিৎকার করে বলল, “ওকে ক্রুশে দিন!” \p \v 14 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন, ও কী অপরাধ করেছে?” \p কিন্তু তারা আরও জোরে চিৎকার করে বলতে লাগল, “ওকে ক্রুশে দিন!” \p \v 15 লোকসকলকে সন্তুষ্ট করার জন্য পীলাত তাদের কাছে বারাব্বাকে মুক্ত করে দিলেন। তিনি যীশুকে চাবুক দিয়ে প্রহার করিয়ে ক্রুশার্পিত করার জন্য সমর্পণ করলেন। \s1 যীশুকে সৈন্যদের উপহাস \p \v 16 সৈন্যরা যীশুকে প্রাঙ্গণে, অর্থাৎ শাসক-ভবনের\f + \fr 15:16 \fr*\ft শাসক-ভবন, অর্থাৎ প্রিটোরিয়াম। মূল শব্দটি সৈন্যাধ্যক্ষের শিবিরকে, বা কোনও সৈন্যশিবিরের সদর দপ্তরকে বোঝাত।\ft*\f* ভিতরে নিয়ে গেল। তারা সৈন্যবাহিনীর সবাইকে ডেকে একত্র করল। \v 17 তারা তাঁর গায়ে বেগুনি রংয়ের এক পোশাক পরিয়ে দিল। তারপর পাক দিয়ে একটি কাঁটার মুকুট গেঁথে তাঁর মাথায় পরিয়ে দিল। \v 18 তারা তাঁকে অভিবাদন করে বলতে লাগল, “ইহুদি-রাজ, নমস্কার!” \v 19 একটি নলখাগড়া দিয়ে বারবার তারা তাঁর মাথায় আঘাত করল ও তাঁর গায়ে থুতু দিল। তারপর তারা নতজানু হয়ে তাঁকে প্রণাম করল। \v 20 তাঁকে নিয়ে বিদ্রুপের পর্ব এভাবে শেষ হলে, তারা বেগুনি রংয়ের পোশাকটি খুলে নিল ও তাঁর নিজের পোশাক তাঁকে পরিয়ে দিল। তারপর তারা তাঁকে ক্রুশার্পিত করার জন্য নিয়ে গেল। \s1 যীশুকে ক্রুশার্পিত করা হল \p \v 21 কুরীণ থেকে আগত শিমোন নামে জনৈক ব্যক্তি গ্রামাঞ্চল থেকে সেই পথে আসছিল। সে আলেকজান্ডার ও রূফের পিতা। তারা ক্রুশ বয়ে নিয়ে যেতে তাকে বাধ্য করল। \v 22 তারা যীশুকে গলগথা নামে একটি স্থানে নিয়ে এল (নামটির অর্থ, “মাথার খুলির স্থান”)। \v 23 সেখানে তারা যীশুকে গন্ধরস মেশানো দ্রাক্ষারস পান করতে দিল, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করলেন না। \v 24 এরপর তারা তাঁকে ক্রুশে দিল। তাঁর পোশাকগুলি ভাগ করে নিয়ে কে কোন অংশ নেবে, তার জন্য তারা গুটিকাপাত করল। \p \v 25 সকাল নয়টার\f + \fr 15:25 \fr*\ft গ্রিক: তৃতীয় ঘটিকা।\ft*\f* সময় তারা তাঁকে ক্রুশে দিল। \v 26 তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগপত্র টাঙিয়ে দেওয়া হল: \pc ইহুদিদের রাজা। \p \v 27 তারা তাঁর সঙ্গে আরও দুজন দস্যুকে ক্রুশার্পিত করল, একজনকে তাঁর ডানদিকে, অন্যজনকে তাঁর বাঁদিকে। \v 28 তখন এই শাস্ত্রীয় বাণী পূর্ণ হল, “তিনি অধর্মীদের সঙ্গে গণিত হলেন।”\f + \fr 15:28 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে \+xt লূক 22:37\+xt* অংশের অনুরূপ কথা ব্যবহার করা হয়েছে।\ft*\f* \v 29 যারা সেই পথ দিয়ে যাতায়াত করছিল, তারা মাথা নাড়তে নাড়তে তাঁকে অপমান করে বলতে লাগল, “তাহলে তুমিই সেই লোক, যে মন্দির ধ্বংস করে তিনদিনে তা পুনর্নির্মাণ করতে পারো! \v 30 এখন ক্রুশ থেকে নেমে এসো ও নিজেকে রক্ষা করো।” \v 31 একইভাবে প্রধান যাজকেরা ও শাস্ত্রবিদরাও তাঁকে বিদ্রুপ করে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল; তারা বলল, “ও অন্যদের বাঁচাত, কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে পারে না। \v 32 এখন এই খ্রীষ্ট, ইস্রায়েলের রাজা, ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, যেন আমরাও তা দেখে বিশ্বাস করতে পারি।” যারা তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিল, তারাও তাঁকে অনেক অপমান করল। \s1 যীশুর মৃত্যু \p \v 33 বেলা বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশে অন্ধকার ছেয়ে গেল। \v 34 আর বেলা তিনটের সময়, যীশু উচ্চকণ্ঠে বলে উঠলেন, \tl “এলী, এলী, লামা শবক্তানী?”\tl* যার অর্থ, “ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ?”\f + \fr 15:34 \fr*\ft \+xt গীত 22:1\+xt*\ft*\f* \p \v 35 সেখানে দাঁড়িয়েছিল এমন কয়েকজন যখন একথা শুনল, তারা বলল, “শোনো, ও এলিয়কে ডাকছে।” \p \v 36 আর একজন লোক দৌড়ে গিয়ে একটি স্পঞ্জ সিরকায় পূর্ণ করে, একটি নলখাগড়ার সাহায্যে যীশুকে পান করতে দিল। সে বলল, “ওকে ছেড়ে দাও, এসো দেখি, এলিয় ওকে নামাতে আসেন কি না।” \p \v 37 এরপর যীশু উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে তাঁর শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন। \p \v 38 মন্দিরের পর্দাটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত চিরে দু-টুকরো হল। \v 39 আর যে শত-সেনাপতি সেখানে যীশুর সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁর চিৎকার শুনে এবং তিনি কীভাবে মৃত্যুবরণ করলেন, তা দেখে বলে উঠলেন, “নিশ্চিতরূপেই ইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন।” \p \v 40 কয়েকজন নারী দূর থেকে সব লক্ষ্য করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাগ্দালাবাসী মরিয়ম, কনিষ্ঠ যাকোব ও যোষির মা মরিয়ম ও শালোমি। \v 41 গালীলে এসব নারী তাঁকে অনুসরণ করে তাঁর পরিচর্যা করতেন। আরও অনেক নারী, যারা তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমে এসেছিলেন, তাঁরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। \s1 যীশুর সমাধি \p \v 42 সেদিন ছিল প্রস্তুতির দিন (অর্থাৎ, বিশ্রামদিনের আগের দিন)। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, \v 43 আরিমাথিয়ার যোষেফ, যিনি বিচার-পরিষদের একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন, তিনি সাহসের সঙ্গে পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর দেহটি চাইলেন। ইনি নিজেও ঈশ্বরের রাজ্যের প্রতীক্ষায় ছিলেন। \v 44 যীশু ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন শুনে পীলাত বিস্মিত হলেন। শত-সেনাপতিকে তলব করে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, সত্যিই এর মধ্যে যীশুর মৃত্যু হয়েছে কি না। \v 45 শত-সেনাপতির কাছে সেকথার সত্যতা জেনে তিনি যীশুর দেহটি যোষেফের হাতে তুলে দিলেন। \v 46 তাই যোষেফ কিছু লিনেন কাপড় কিনে আনলেন, দেহটি নামিয়ে লিনেন কাপড়ে আবৃত করলেন। তারপরে বড়ো পাথরে খোদিত এক সমাধিতে তা রাখলেন। পরে তিনি সমাধির প্রবেশপথে বড়ো একটি পাথর গড়িয়ে দিলেন। \v 47 কোথায় তাঁকে রাখা হল, তা মগ্দলিনী মরিয়ম ও যোষির মা মরিয়ম দেখতে পেলেন। \c 16 \s1 যীশুর পুনরুত্থান \p \v 1 বিশ্রামদিন অতিক্রান্ত হলে, মাগ্দালাবাসী মরিয়ম, যাকোবের মা মরিয়ম ও শালোমি কিছু সুগন্ধিদ্রব্য কিনে নিয়ে এলেন, যেন যীশুর দেহে তা লেপন\f + \fr 16:1 \fr*\ft গ্রিক: অভিষেক।\ft*\f* করতে পারেন। \v 2 সপ্তাহের প্রথম দিন, খুব ভোরবেলায়, সূর্যোদয়ের অব্যবহিত পরেই তাঁরা সমাধির কাছে এলেন। \v 3 তাঁরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সমাধির প্রবেশমুখ থেকে কে পাথরখানা সরাবে?” \p \v 4 কিন্তু তাঁরা যখন চোখ তুলে তাকালেন, তাঁরা দেখলেন যে, অতি বিশাল সেই পাথরটিকে সরানো হয়েছে। \v 5 সমাধির মধ্যে প্রবেশ করা মাত্র, তাঁরা দেখলেন, সাদা পোশাক পরে এক যুবক ডানদিকে বসে আছেন। এতে তাঁরা অত্যন্ত বিস্মিত হলেন। \p \v 6 তিনি বললেন, “তোমরা ভয় পেয়ো না। তোমরা তো নাসরতীয় যীশুর অন্বেষণ করছ, যিনি ক্রুশার্পিত হয়েছিলেন। তিনি উত্থিত হয়েছেন! তিনি এখানে নেই। এই দেখো সেই স্থান, যেখানে তাঁর দেহ রাখা হয়েছিল। \v 7 কিন্তু তোমরা যাও, গিয়ে তাঁর শিষ্যদের ও পিতরকেও বলো, ‘তিনি তোমাদের আগেই গালীলে যাচ্ছেন। সেখানে তোমরা তাঁর দর্শন পাবে, যেমন তিনি তোমাদের বলেছিলেন।’ ” \p \v 8 ভীতকম্পিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সেই মহিলারা বাইরে গিয়ে সেই সমাধিস্থল থেকে পালিয়ে গেলেন। তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন বলে কাউকেই তাঁরা কিছু বললেন না। \p \v 9 \f + \fr 16:9 \fr*\ft \+xt মার্ক 16:9-20\+xt* পদগুলি বহু প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে পাওয়া যায় না। সুসমাচারটি হয় 16:8 পদে শেষ হয়েছে, কিংবা এর অবশিষ্ট অংশটুকু হারিয়ে গেছে।\ft*\f*সপ্তাহের প্রথম দিনে ভোরবেলায় যীশু উত্থিত\f + \fr 16:9 \fr*\ft সমাধি থেকে\ft*\f* হয়ে প্রথমে মাগ্দালাবাসী মরিয়মকে দর্শন দেন, যার মধ্য থেকে তিনি সাতটি ভূত দূর করেছিলেন। \v 10 তিনি গিয়ে যারা যীশুর সঙ্গে ছিলেন ও কান্নাকাটি এবং বিলাপ করছিলেন, তাঁদের কাছে সেই সংবাদ দিলেন। \v 11 তাঁরা যখন শুনলেন যে, যীশু জীবিত আছেন ও মরিয়ম তাঁকে দর্শন করেছেন, তাঁরা সেকথা বিশ্বাস করলেন না। \p \v 12 এরপর যীশু ভিন্ন রূপে অপর দুজন শিষ্যকে দর্শন দিলেন। তাঁরা পায়ে হেঁটে একটি গ্রামের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। \v 13 তাঁরাও ফিরে এসে অন্য সবার কাছে সেকথা বললেন, কিন্তু তাঁরা তাদের কথাও বিশ্বাস করলেন না। \p \v 14 পরে এগারোজন শিষ্য যখন আহার করছিলেন, যীশু তাঁদের কাছে আবির্ভূত হলেন, তাঁদের বিশ্বাসের অভাব দেখে ও পুনরুত্থানের পরে যারা তাঁকে দেখেছিলেন, তাদের কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে রাজি না-হওয়াতে তিনি তাদের তিরস্কার করলেন। \p \v 15 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা সমস্ত জগতে যাও ও সমস্ত সৃষ্টির কাছে সুসমাচার প্রচার করো। \v 16 যে বিশ্বাস করে ও বাপ্তাইজিত হয়, সে পরিত্রাণ পাবে, কিন্তু যে বিশ্বাস করে না, তার শাস্তি হবে। \v 17 আর যারা বিশ্বাস করে, এই চিহ্নগুলি তাদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যাবে: তারা আমার নামে ভূত তাড়াবে, তারা নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে, \v 18 তারা হাতে করে সাপ তুলে ধরবে, আর তারা প্রাণনাশক বিষ পান করলেও তাদের কোনো ক্ষতি হবে না; তারা পীড়িত ব্যক্তিদের উপরে হাত রেখে প্রার্থনা করবে, আর তারা সুস্থ হবে।” \p \v 19 তাদের সঙ্গে প্রভু যীশুর কথা বলা শেষ হওয়ার পর, তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, আর তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে গিয়ে উপবিষ্ট হলেন। \v 20 তারপর শিষ্যেরা বেরিয়ে পড়ে সর্বত্র সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন। আর প্রভু তাঁদের সঙ্গী হয়ে কাজ করতে লাগলেন এবং সেই সঙ্গে বহু চিহ্নকর্মের মাধ্যমে তাঁর বাক্যের সত্যতা সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন।