\id MAT - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h মথি \toc1 মথি লিখিত সুসমাচার \toc2 মথি \toc3 মথি \mt1 মথি লিখিত সুসমাচার \c 1 \s1 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বংশতালিকা \li4 \v 1 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বংশতালিকা, তিনি ছিলেন দাউদের বংশধর ও অব্রাহামের বংশধর।\f + \fr 1:1 \fr*\ft ঈশ্বর ইহুদিদের আদিপুরুষ অব্রাহামকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তাঁরই মাধ্যমে আশীর্বাদ লাভ করবে (\+xt আদি পুস্তক 12:3\+xt*)।\ft*\f* \b \li1 \v 2 অব্রাহামের পুত্র ইস্‌হাক, \li1 ইস্‌হাকের পুত্র যাকোব, \li1 যাকোবের পুত্র যিহূদা ও তাঁর ভাইয়েরা, \li1 \v 3 যিহূদার পুত্র পেরস ও সেরহ, \li1 যাঁদের মা ছিলেন তামর, পেরসের পুত্র হিষ্রোণ, \li1 হিষ্রোণের পুত্র রাম। \li1 \v 4 রামের পুত্র অম্মীনাদব, \li1 অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন, \li1 নহশোনের পুত্র সলমন। \li1 \v 5 সলমনের পুত্র বোয়স, তাঁর মা ছিলেন রাহব, \li1 বোয়সের পুত্র ওবেদ, \li1 তাঁর মা ছিলেন রূত। ওবেদের পুত্র যিশয়, \li1 \v 6 ও যিশয়ের পুত্র রাজা দাউদ। \b \li1 দাউদের পুত্র শলোমন, তাঁর মা ছিলেন ঊরিয়ের বিধবা স্ত্রী। \li1 \v 7 শলোমনের পুত্র রহবিয়াম, \li1 রহবিয়ামের পুত্র অবিয়, \li1 অবিয়ের পুত্র আসা। \li1 \v 8 আসার পুত্র যিহোশাফট, \li1 যিহোশাফটের পুত্র যিহোরাম, \li1 যিহোরামের পুত্র উষিয়। \li1 \v 9 উষিয়ের পুত্র যোথম, \li1 যোথমের পুত্র আহস, \li1 আহসের পুত্র হিষ্কিয়। \li1 \v 10 হিষ্কিয়ের পুত্র মনঃশি, \li1 মনঃশির পুত্র আমোন, \li1 আমোনের পুত্র যোশিয়, \li1 \v 11 আর যোশিয়ের পুত্র যিকনিয়\f + \fr 1:11 \fr*\ft যিকনিয়ের অপর নাম যিহোয়াখীন; 12 পদেও।\ft*\f* ও তাঁর ভাইয়েরা, ব্যাবিলনে নির্বাসনকালে\f + \fr 1:11 \fr*\ft বা, নির্বাসনের পূর্বে।\ft*\f* এঁদের জন্ম হয়। \b \li4 \v 12 ব্যাবিলনে নির্বাসনের পরে জাত: \li1 যিকনিয়ের পুত্র শল্টীয়েল, \li1 শল্টীয়েলের পুত্র সরুব্বাবিল। \li1 \v 13 সরুব্বাবিলের পুত্র অবীহূদ, \li1 অবীহূদের পুত্র ইলিয়াকীম, \li1 ইলিয়াকীমের পুত্র আসোর। \li1 \v 14 আসোরের পুত্র সাদোক, \li1 সাদোকের পুত্র আখীম, \li1 আখীমের পুত্র ইলিহূদ। \li1 \v 15 ইলিহূদের পুত্র ইলিয়াসর, \li1 ইলিয়াসরের পুত্র মত্তন, \li1 মত্তনের পুত্র যাকোব, \li1 \v 16 যাকোবের পুত্র যোষেফ যিনি মরিয়মের স্বামী, এই মরিয়মের গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, যাঁকে খ্রীষ্ট\f + \fr 1:16 \fr*\ft বা, মশীহ। খ্রীষ্ট (গ্রিক) ও মশীহ (হিব্রু) উভয়েরই অর্থ, “সেই অভিষিক্ত জন।”\ft*\f* বলে। \b \li4 \v 17 এভাবে অব্রাহাম থেকে দাউদ পর্যন্ত মোট চোদ্দো পুরুষ; দাউদ থেকে ব্যাবিলনে নির্বাসন যাওয়া পর্যন্ত চোদ্দো পুরুষ এবং ব্যাবিলনে নির্বাসন থেকে খ্রীষ্ট পর্যন্ত চোদ্দো পুরুষ। \s1 যীশু খ্রীষ্টের জন্ম \p \v 18 যীশু খ্রীষ্টের জন্ম এভাবে হয়েছিল। তাঁর মা মরিয়ম যোষেফের সঙ্গে বিবাহের জন্য বাগদত্তা হলে, তাঁদের সহবাসের পূর্বে জানা গেল, তিনি পবিত্র আত্মার মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। \v 19 যেহেতু তাঁর স্বামী যোষেফ একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন এবং প্রকাশ্যে তাঁকে কলঙ্কের পাত্র করতে না চাওয়াতে, তিনি গোপনে বাগদান ভেঙে দেওয়া স্থির করলেন। \p \v 20 কিন্তু একথা বিবেচনার পরে, স্বপ্নে প্রভুর এক দূত তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “দাউদ-সন্তান যোষেফ, মরিয়মকে তোমার স্ত্রীরূপে ঘরে নিতে ভয় পেয়ো না, কারণ তাঁর গর্ভধারণ পবিত্র আত্মা থেকে হয়েছে। \v 21 তিনি এক পুত্রের জন্ম দেবেন ও তুমি তাঁর নাম যীশু\f + \fr 1:21 \fr*\ft যিহোশূয় শব্দের গ্রিক রূপ হল যীশু। এর অর্থ, য়েহোভা (হিব্রু: ইয়াহ্ওয়াহ্); বা ঈশ্বর রক্ষা করেন।\ft*\f* রাখবে, কারণ তিনিই তাঁর প্রজাদের তাদের সব পাপ থেকে পরিত্রাণ দেবেন।” \p \v 22 এই সমস্ত ঘটনা ঘটল, যেন ভাববাদীর মুখ দিয়ে প্রভু যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়: \v 23 “সেই কুমারী-কন্যা গর্ভবতী হবে ও এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে, এবং তারা তাঁকে ইম্মানুয়েল”\f + \fr 1:23 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 7:14\+xt*\ft*\f* বলে ডাকবে, যার অর্থ, “ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন।” \p \v 24 প্রভুর দূত যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, ঘুম থেকে উঠে যোষেফ সেইমতো মরিয়মকে ঘরে তাঁর স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলেন। \v 25 কিন্তু পুত্র প্রসব না করা পর্যন্ত তিনি মরিয়মের সঙ্গে মিলিত হলেন না। আর তিনি পুত্রের নাম রাখলেন যীশু। \c 2 \s1 জ্যোতির্বিদদের আগমন \p \v 1 হেরোদ রাজার সময় যিহূদিয়া প্রদেশের বেথলেহেমে যীশুর জন্ম হলে পর, পূর্বদেশ থেকে কয়েকজন পণ্ডিত\f + \fr 2:1 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, প্রাজ্ঞ ব্যক্তিবৃন্দ\ft*\f* ব্যক্তি জেরুশালেমে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, \v 2 “ইহুদিদের যে রাজা জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি কোথায়? আমরা পূর্বদেশে তাঁর তারা দেখতে পেয়ে তাঁকে প্রণাম করতে এসেছি।” \p \v 3 একথা শুনে রাজা হেরোদ সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলেন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত জেরুশালেমের মানুষেরাও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল। \v 4 তিনি সমগ্র জনসাধারণের প্রধান যাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদদের একত্রে ডেকে তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, খ্রীষ্ট কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন? \v 5 তাঁরা উত্তর দিলেন, “যিহূদিয়ার বেথলেহেমে, কারণ ভাববাদী এরকম লিখেছেন: \q1 \v 6 “কিন্তু তুমি, যিহূদা দেশের বেথলেহেম, \q2 যিহূদার শাসকদের মধ্যে তুমি কোনো অংশে ক্ষুদ্র নও; \q1 কারণ তোমার মধ্য থেকেই আসবেন এক শাসক, \q2 যিনি হবেন আমার প্রজা ইস্রায়েলের পালক।”\f + \fr 2:6 \fr*\ft \+xt মীখা 5:2\+xt*\ft*\f* \p \v 7 এরপর হেরোদ সেই পণ্ডিতদের গোপনে ডেকে, সেই তারাটি সঠিক কখন উদিত হয়েছিল, তা তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন। \v 8 তিনি তাঁদের এই বলে বেথলেহেমে পাঠিয়ে দিলেন, “যাও, গিয়ে সযত্নে শিশুটির অনুসন্ধান করো। তাঁর সন্ধান পাওয়া মাত্র আমাকে সংবাদ দিয়ো, যেন আমিও গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি।” \p \v 9 রাজার এই কথা শুনে তাঁরা তাঁদের পথে চলে গেলেন। আর তাঁরা যে তারাটিকে পূর্বদেশে দেখেছিলেন, সেটি তাঁদের আগে আগে চলতে লাগল এবং শিশুটি যেখানে ছিলেন, সেই স্থানের উপরে স্থির হয়ে রইল। \v 10 তারাটি দেখতে পেয়ে তাঁরা মহা আনন্দে উল্লসিত হলেন। \v 11 ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে তাঁরা শিশুটিকে তাঁর মা মরিয়মের সঙ্গে দেখতে পেলেন। তাঁরা সকলে ভূমিষ্ঠ হয়ে শিশুটিকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন।\f + \fr 2:11 \fr*\ft বা, ভূমিষ্ঠ হয়ে তাঁকে দণ্ডবৎ করলেন\ft*\f* তারপর তাঁরা তাদের রত্নপেটিকা খুলে তাঁকে সোনা, কুন্দুরু\f + \fr 2:11 \fr*\fq কুন্দুরু\fq*\ft —সুগন্ধি ধূপচূর্ণ\ft*\f* ও গন্ধরস উপহার দিলেন। \v 12 তাঁরা যেন হেরোদের কাছে ফিরে না যান, স্বপ্নে এই সতর্কবাণী পেয়ে তাঁরা অন্য এক পথ ধরে তাঁদের দেশে ফিরে গেলেন। \s1 মিশরে পালিয়ে যাওয়া \p \v 13 তাঁরা চলে যাওয়ার পরে প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফের কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “ওঠো, শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও। আমি যতক্ষণ না বলি, সেখানেই থেকো, কারণ শিশুটিকে হত্যা করার জন্য হেরোদ তাঁর অনুসন্ধান করবে।” \p \v 14 অতএব, যোষেফ উঠে শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে সেই রাত্রিতেই মিশরের উদ্দেশে রওনা হলেন। \v 15 হেরোদের মৃত্যু পর্যন্ত তিনি সেখানেই থাকলেন। আর এভাবেই, ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভু যা ব্যক্ত করেছিলেন, তা পূর্ণ হল: “মিশর থেকে আমি আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম।”\f + \fr 2:15 \fr*\ft \+xt হোশেয় 11:1\+xt*\ft*\f* \p \v 16 পণ্ডিতেরা তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন উপলব্ধি করে হেরোদ ক্রোধে উন্মত্ত হলেন। পণ্ডিতদের কাছে জেনে নেওয়া সময় হিসেব করে, তিনি বেথলেহেম ও তার সন্নিহিত অঞ্চলের দু-বছর ও তার কমবয়সি সমস্ত শিশুকে হত্যা করার আদেশ দিলেন। \v 17 তখন ভাববাদী যিরমিয়ের দ্বারা কথিত এই বচন পূর্ণ হল। \q1 \v 18 “রামা-নগরে\f + \fr 2:18 \fr*\fq রামা\fq*\ft —জেরুশালেমের প্রায় আট কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এক সদরাঞ্চল। নগরটি ছিল বিন্যামীন গোষ্ঠীর অধিকারভুক্ত।\ft*\f* এক স্বর শোনা যাচ্ছে, \q2 এক ক্রন্দন ও মহাবিলাপের রব, \q1 রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন, \q2 তিনি সান্ত্বনা পেতে চান না, \q2 কারণ তারা আর বেঁচে নেই।”\f + \fr 2:18 \fr*\ft \+xt যিরমিয় 31:15\+xt*\ft*\f* \s1 নাসরতে প্রত্যাবর্তন \p \v 19 হেরোদের মৃত্যুর পর, মিশরে প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফের কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, \v 20 “ওঠো, শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে তুমি ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও। কারণ, যারা শিশুটির প্রাণ নিতে চাইছিল, তাদের মৃত্যু হয়েছে।” \p \v 21 তাই তিনি উঠে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন। \v 22 কিন্তু যখন তিনি শুনলেন, আর্খিলায় তাঁর পিতা হেরোদের পদে যিহূদিয়ায় রাজত্ব করছেন, তিনি সেখানে যেতে ভয় পেলেন। তিনি স্বপ্নে এক সতর্কবাণী পেয়ে গালীল প্রদেশে চলে গেলেন। \v 23 তিনি বসবাস করার জন্য নাসরৎ নামের এক নগরে গেলেন। এভাবেই ভাববাদীদের দ্বারা কথিত বাণী পূর্ণ হল, “তিনি নাসরতীয় বলে আখ্যাত হবেন।” \c 3 \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহন দ্বারা পথ প্রস্তুতিকরণ \p \v 1 ওইসব দিনগুলিতে বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, যিহূদিয়ার মরুপ্রান্তরে উপস্থিত হয়ে প্রচার করতে লাগলেন, \v 2 “মন পরিবর্তন করো, কারণ স্বর্গরাজ্য এসে পড়ল।” \v 3 ইনিই সেই মানুষ, যাঁর সম্পর্কে ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন: \q1 “মরুপ্রান্তরে একজনের কণ্ঠস্বর আহ্বান করছে, \q1 ‘তোমরা প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত করো, \q2 তাঁর জন্য রাজপথগুলি সরল করো।’ ”\f + \fr 3:3 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 40:3\+xt*\ft*\f* \p \v 4 যোহনের পোশাক ছিল উটের লোমে তৈরি এবং তার কোমরে এক চামড়ার বেল্ট জড়ানো থাকত। তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু খেতেন। \v 5 লোকেরা জেরুশালেম, সমস্ত যিহূদিয়া ও জর্ডনের সমগ্র অঞ্চল থেকে তাঁর কাছে যেতে লাগল। \v 6 তারা নিজের নিজের পাপস্বীকার করে জর্ডন নদীতে তাঁর কাছে বাপ্তিষ্ম নিতে লাগল। \p \v 7 তিনি যেখানে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন, সেখানে যখন বহু ফরিশী ও সদ্দূকীদের আসতে দেখলেন, তিনি তাদের বললেন, “তোমরা বিষধর সাপের বংশ! সন্নিকট ক্রোধ থেকে পালিয়ে যেতে কে তোমাদের চেতনা দিল? \v 8 তোমরা এমন সব কাজ করো যেন তার দ্বারা বোঝা যায় যে তোমাদের মন পরিবর্তন হয়েছে। \v 9 আর ভেবো না, মনে মনে নিজেদের বলতে পারবে, ‘অব্রাহাম আমাদের পিতা।’ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এই পাথরগুলি থেকেও অব্রাহামের জন্য সন্তান সৃষ্টি করতে পারেন। \v 10 গাছগুলির শিকড়ে ইতিমধ্যেই কুড়ুল লাগানো আছে। যে গাছে উৎকৃষ্ট ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। \p \v 11 “তোমরা মন পরিবর্তন করেছ বলে আমি তোমাদের জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু আমার পরে একজন আসবেন, তিনি আমার চেয়েও পরাক্রমশালী; আমি তাঁর চটিজুতো বওয়ারও যোগ্য নই।\f + \fr 3:11 \fr*\ft এ ছিল কোনো ক্রীতদাসের কাজ\ft*\f* তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মায় ও আগুনে বাপ্তিষ্ম দেবেন। \v 12 শস্য ঝাড়াই করার কুলো তাঁর হাতেই আছে এবং তিনি তাঁর খামার পরিষ্কার করবেন। তিনি তাঁর গম গোলাঘরে সংগ্রহ করবেন এবং তুষ অনির্বাণ আগুনে পুড়িয়ে দেবেন।” \s1 প্রভু যীশুর বাপ্তিষ্ম \p \v 13 এরপর যীশু যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম গ্রহণের জন্য গালীল প্রদেশ থেকে জর্ডনে এলেন। \v 14 কিন্তু যোহন তাঁকে বারণ করার চেষ্টা করে বললেন, “আপনার কাছে আমারই বাপ্তিষ্ম নেওয়া প্রয়োজন, আর আপনি কি না আমার কাছে আসছেন?” \p \v 15 উত্তরে যীশু বললেন, “এখন সেইরকমই হোক; সমস্ত ধার্মিকতা পূরণের জন্য আমাদের এরকম করা উপযুক্ত।” তখন যোহন সম্মত হলেন। \p \v 16 বাপ্তাইজিত হওয়ার পরে পরেই যীশু জল থেকে উঠে এলেন। সেই মুহূর্তে স্বর্গলোক\f + \fr 3:16 \fr*\ft বা, আকাশ\ft*\f* উন্মুক্ত হল, আর তিনি দেখলেন, ঈশ্বরের আত্মা কপোতের আকারে তাঁর উপরে নেমে এসে অধিষ্ঠান করছেন। \v 17 তখন স্বর্গ থেকে এক কণ্ঠস্বর শোনা গেল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, যাঁর উপরে আমি পরম প্রসন্ন।” \c 4 \s1 যীশু প্রলোভনের সম্মুখীন \p \v 1 এরপর যীশু পবিত্র আত্মার দ্বারা চালিত হয়ে মরুপ্রান্তরে গেলেন, যেন দিয়াবলের\f + \fr 4:1 \fr*\ft খ্রীষ্টের সমকালীন প্যালেষ্টাইন-নিবাসী ইহুদিদের কথ্য অরামীয় ভাষা থেকে উদ্ভূত এই শব্দটির অর্থ, অপবাদকারী (গ্রিক: ডায়াবলস্)\ft*\f* দ্বারা প্রলোভিত হতে পারেন। \v 2 চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত উপোস করার পর তিনি ক্ষুধার্ত হলেন। \v 3 তখন প্রলুব্ধকারী তাঁর কাছে এসে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, এই পাথরগুলিকে রুটি হয়ে যেতে বলো।” \p \v 4 যীশু উত্তর দিলেন, “এরকম লেখা আছে, ‘মানুষ কেবলমাত্র রুটিতে বাঁচে না, বরং ঈশ্বরের মুখ থেকে নির্গত প্রত্যেকটি বাক্য দ্বারাই জীবনধারণ করবে।’ ”\f + \fr 4:4 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 8:3\+xt*\ft*\f* \p \v 5 তখন দিয়াবল তাঁকে পবিত্র নগরে\f + \fr 4:5 \fr*\ft অর্থাৎ জেরুশালেমে। এখানে ইহুদিদের মন্দির থাকায় নগরটি পবিত্র বলে বিবেচিত হত।\ft*\f* নিয়ে গেল এবং মন্দিরের শীর্ষদেশে তাঁকে দাঁড় করালো। \v 6 সে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এখান থেকে নিচে ঝাঁপ দাও, কারণ এরকম লেখা আছে: \q1 “ ‘তিনি তাঁর দূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন, \q2 আর তাঁরা তোমাকে তাঁদের হাতে তুলে নেবেন, \q2 যেন তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।’ ”\f + \fr 4:6 \fr*\ft \+xt গীত 91:11,12\+xt*\ft*\f* \p \v 7 যীশু তাকে উত্তর দিলেন, “আবার একথাও লেখা আছে, ‘তোমার ঈশ্বর প্রভুকে পরীক্ষা কোরো না।’ ”\f + \fr 4:7 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:16\+xt*\ft*\f* \p \v 8 দিয়াবল পুনরায় তাঁকে অতি উচ্চ এক পর্বতে নিয়ে গেল এবং জগতের সমস্ত রাজ্য ও সেগুলির সমারোহ তাঁকে দেখিয়ে বলল, \v 9 “তুমি যদি ভূমিষ্ঠ হয়ে আমার উপাসনা করো, এ সমস্ত আমি তোমাকে দেব।” \p \v 10 যীশু তাকে বললেন, “আমার কাছ থেকে দূর হও শয়তান! কারণ এরকম লেখা আছে, ‘তুমি তোমার ঈশ্বর প্রভুরই আরাধনা করবে, কেবলমাত্র তাঁরই সেবা করবে।’\f + \fr 4:10 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:13\+xt*\ft*\f*” \p \v 11 তখন দিয়াবল তাঁকে ছেড়ে চলে গেল, আর স্বর্গদূতেরা এসে তাঁর পরিচর্যা করতে লাগলেন। \s1 যীশুর প্রচারকাজের সূচনা \p \v 12 যীশু যখন শুনলেন যে যোহনকে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে, তিনি গালীলে ফিরে গেলেন। \v 13 তিনি নাসরৎ ত্যাগ করে কফরনাহূমে গিয়ে বসবাস করতে লাগলেন। সেই স্থানটি ছিল সবূলূন ও নপ্তালি অঞ্চলে, হ্রদের উপকূলে। \v 14 এরকম ঘটল, যেন ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে কথিত বচন পূর্ণ হয়: \q1 \v 15 “সমুদ্রের অভিমুখে, জর্ডনের অপর পারে, \q2 সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশ, \q2 গালীলের অইহুদি জাতিবৃন্দের— \q1 \v 16 যে জাতি অন্ধকারে বসবাস করত, \q2 তারা এক মহাজ্যোতি দেখতে পেল; \q1 মৃত্যুচ্ছায়ার দেশে যাদের বসবাস ছিল, \q2 তাদের উপরে এক জ্যোতির উদয় হল।”\f + \fr 4:16 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 9:1,2\+xt*\ft*\f* \p \v 17 সেই সময় থেকে যীশু প্রচার করা শুরু করলেন, “মন পরিবর্তন করো, কারণ স্বর্গরাজ্য সন্নিকট।” \s1 প্রথম শিষ্যদের আহ্বান \p \v 18 গালীল সাগরের তীর ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় যীশু দুই ভাইকে দেখতে পেলেন, শিমোন যাঁকে পিতর নামে ডাকা হত ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়। তাঁরা সাগরের জলে জাল ফেলছিলেন, কারণ তাঁরা ছিলেন মৎস্যজীবী। \v 19 যীশু বললেন, “এসো, আমাকে অনুসরণ করো, আমি তোমাদের মানুষ-ধরা জেলে করব।”\f + \fr 4:19 \fr*\ft অর্থাৎ তারা মানুষকে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসবেন ও তাদের জীবনে পরিবর্তন সাধন করবেন।\ft*\f* \v 20 সেই মুহূর্তেই তাঁরা জাল ফেলে তাঁকে অনুসরণ করলেন। \p \v 21 সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তিনি অপর দুই ভাইকে, সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাই যোহনকে দেখতে পেলেন। তাঁরা তাঁদের বাবা সিবদিয়ের সঙ্গে একটি নৌকায় তাঁদের জাল মেরামত করছিলেন। যীশু তাঁদের আহ্বান করলেন। \v 22 সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা নৌকা ও তাঁদের বাবাকে পরিত্যাগ করে তাঁর অনুসারী হলেন। \s1 যীশু অসুস্থদের সুস্থ করলেন \p \v 23 যীশু সমস্ত গালীল পরিক্রমা করে তাদের সমাজভবনগুলিতে\f + \fr 4:23 \fr*\fq সমাজভবন \fq*\ft এই গ্রিক শব্দটির অর্থ, সমাবেশ বা সমাগম। এ ছিল ইহুদিদের স্থানীয় সমাজগৃহ, যেখানে তারা উপাসনা, ধর্মীয় আলোচনা, বা বিচারসভার জন্য সমবেত হত।\ft*\f* শিক্ষা দিলেন ও স্বর্গরাজ্যের সুসমাচার প্রচার করলেন। তিনি লোকদের সমস্ত রকমের রোগব্যাধি ও পীড়া থেকে সুস্থ করলেন। \v 24 তাঁর সংবাদ সমস্ত সিরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ল। লোকেরা তাঁর কাছে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত অসুস্থদের, যারা প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিল তাদের, ভূতগ্রস্তদের, মৃগী-রোগীদের ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিয়ে এল। তিনি তাদের সুস্থ করলেন। \v 25 গালীল, ডেকাপলি\f + \fr 4:25 \fr*\fq ডেকাপলি \fq*\ft গ্রিক ভাষায় এই শব্দটির অর্থ, দশটি নগর। জর্ডন নদীর পূর্বদিকে ছিল এই অঞ্চল, বা প্রদেশ।\ft*\f*, জেরুশালেম, যিহূদিয়া ও জর্ডন নদীর অপর পারের অঞ্চল থেকে আগত বিস্তর লোক তাঁকে অনুসরণ করল। \c 5 \s1 পর্বতের উপরে দেওয়া শিক্ষা \p \v 1 যীশু অনেক লোক দেখে একটি পর্বতের উপরে উঠে বসলেন। তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এলেন। \v 2 আর তিনি তাঁদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। \m তিনি বললেন: \q1 \v 3 “ধন্য তারা, যারা আত্মায় দীনহীন, \q2 কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই। \q1 \v 4 ধন্য তারা, যারা শোক করে, \q2 কারণ তারা সান্ত্বনা পাবে। \q1 \v 5 ধন্য তারা, যারা নতনম্র, \q2 কারণ তারা পৃথিবীর অধিকার লাভ করবে। \q1 \v 6 ধন্য তারা, যারা ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত, \q2 কারণ তারা পরিতৃপ্ত হবে। \q1 \v 7 ধন্য তারা, যারা দয়াবান, \q2 কারণ তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শিত হবে। \q1 \v 8 ধন্য তারা, যাদের অন্তঃকরণ নির্মল, \q2 কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে। \q1 \v 9 ধন্য তারা, যারা মিলন করিয়ে দেয়, \q2 কারণ তাদের ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে। \q1 \v 10 ধন্য তারা, যারা ধার্মিকতার কারণে তাড়িত, \q2 কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই। \p \v 11 “ধন্য তোমরা, যখন লোকে আমার জন্য তোমাদের অপমান করে, নির্যাতন করে ও মিথ্যা অভিযোগে তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার মন্দ কথা বলে। \v 12 উল্লসিত হোয়ো, আনন্দ কোরো; কারণ স্বর্গে তোমাদের পুরস্কার প্রচুর। কারণ পূর্বে ভাববাদীদেরও তারা একই উপায়ে নির্যাতন করত। \s1 লবণ ও জ্যোতি \p \v 13 “তোমরা পৃথিবীর লবণ। কিন্তু লবণ যদি তার লবণত্ব হারায়, তাহলে কীভাবে তা পুনরায় লবণের স্বাদযুক্ত করা যাবে? তা আর কোনো কাজেরই উপযুক্ত থাকে না, কেবলমাত্র তা বাইরে নিক্ষেপ করার ও লোকদের পদদলিত হওয়ার যোগ্য হয়। \p \v 14 “তোমরা জগতের জ্যোতি। পাহাড়ের উপরে অবস্থিত নগর কখনও গুপ্ত থাকতে পারে না। \v 15 আবার লোকে কোনো প্রদীপ জ্বেলে তা গামলা দিয়ে ঢেকে রাখে না, বরং তা বাতিদানের উপরেই রাখে। তখন তা ঘরে উপস্থিত সকলকেই আলো দান করে। \v 16 একইভাবে, তোমাদের দীপ্তি মানুষের সাক্ষাতে উদ্দীপ্ত হোক, যেন তারা তোমাদের সৎ কাজগুলি দেখে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার প্রশংসা কীর্তন করে। \s1 বিধানের পূর্ণতা \p \v 17 “এরকম মনে কোরো না যে, বিধান বা ভাববাদীদের গ্রন্থগুলি আমি লোপ করতে এসেছি; সেগুলি লোপ করার জন্য আমি আসিনি, কিন্তু পূর্ণ করার জন্যই এসেছি। \v 18 আমি তোমাদের প্রকৃতই বলছি, যতদিন পর্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হয়, ততদিন পর্যন্ত বিধানের ক্ষুদ্রতম একটি বর্ণ, বা কলমের সামান্যতম কোনো আঁচড়ও\f + \fr 5:18 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণ: \ft*\fqa বিধানের একটি বিন্দু বা মাত্রা\fqa*\ft ।\ft*\f* লুপ্ত হবে না, সমস্ত কিছু পূর্ণরূপে সফল হবে। \v 19 যে কেউ এইসব আদেশের ক্ষুদ্রতম কোনো আদেশ লঙ্ঘন করে ও অপর মানুষদের সেইমতো শিক্ষা দেয়, সে স্বর্গরাজ্যে ক্ষুদ্রতম বলে গণ্য হবে; কিন্তু যে কেউ এই আদেশগুলি অনুশীলন করে ও সেইরূপ শিক্ষা দেয়, সে স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গণ্য হবে। \v 20 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের ধার্মিকতা যদি ফরিশী ও শাস্ত্রবিদদের থেকে অধিক না হয়, তোমরা নিশ্চিতরূপে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। \s1 নরহত্যা \p \v 21 “তোমরা শুনেছ, পূর্বেকার মানুষদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা নরহত্যা কোরো না,\f + \fr 5:21 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:13\+xt*\ft*\f* আর যে নরহত্যা করবে, সে বিচারের দায়ে পড়বে।’ \v 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে তার ভাইয়ের উপরে ক্রোধ করে, সে বিচারের দায়ে পড়বে। এছাড়াও, কেউ যদি তার ভাইকে বলে, ‘ওরে অপদার্থ,’\f + \fr 5:22 \fr*\ft অরামীয় ভাষায় রাকা\ft*\f* তাকে মহাসভায় জবাবদিহি করতে হবে। আবার, কেউ যদি বলে, ‘তুই মূর্খ,’ সে নরকের আগুনের দায়ে পড়বে। \p \v 23 “সুতরাং, তুমি যখন তোমার নৈবেদ্য বেদিতে উৎসর্গ করতে যাচ্ছ, সেই সময় যদি তোমার মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোনো অভিযোগ আছে, \v 24 তোমার নৈবেদ্য সেই বেদির সামনে রেখে চলে যাও। প্রথমে গিয়ে তোমার ভাইয়ের সঙ্গে পুনর্মিলিত হও, তারপর এসে তোমার নৈবেদ্য উৎসর্গ করো। \p \v 25 “তোমার যে প্রতিপক্ষ তোমাকে আদালতে নিয়ে যায়, তার সঙ্গে দ্রুত বিবাদের মীমাংসা কোরো। পথে থাকতে থাকতেই তার সঙ্গে এ কাজ কোরো, না হলে সে হয়তো তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেবে, বিচারক তোমাকে পেয়াদার হাতে তুলে দেবেন ও তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হবে। \v 26 আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, তোমার দেনা সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তুমি বাইরে আসতে পারবে না। \s1 ব্যভিচার \p \v 27 “তোমরা শুনেছ, এরকম বলা হয়েছিল, ‘তোমরা ব্যভিচার কোরো না।’\f + \fr 5:27 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:14\+xt*\ft*\f* \v 28 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি যে, কেউ যদি কোনো নারীর প্রতি কামলালসা নিয়ে দৃষ্টিপাত করে, সে তক্ষুনি মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করে। \v 29 তোমার ডান চোখ যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তা উপড়ে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং শরীরের একটি অঙ্গহানি হওয়া তোমার পক্ষে ভালো। \v 30 আর যদি তোমার ডান হাত তোমার পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং শরীরের একটি অঙ্গহানি হওয়া তোমার পক্ষে ভালো। \s1 বিবাহবিচ্ছেদ \p \v 31 “এরকম বলা হয়েছে, ‘কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে, তাহলে সে যেন অবশ্যই তাকে বিচ্ছেদের ত্যাগপত্র লিখে দেয়।’\f + \fr 5:31 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 24:1\+xt*\ft*\f* \v 32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, বৈবাহিক জীবনে অবিশ্বস্ততার\f + \fr 5:32 \fr*\ft বা, ব্যভিচারের\ft*\f* কারণ ছাড়া কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে, সে তাকে ব্যভিচারিণী করে তোলে এবং পরিত্যক্ত সেই নারীকে যে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে। \s1 শপথ করা \p \v 33 “আবার তোমরা শুনেছ, বহুকাল পূর্বে লোকদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা প্রভুর সাক্ষাতে যে শপথ করেছ, তা ভঙ্গ কোরো না, বরং শপথগুলি পালন কোরো।’\f + \fr 5:33 \fr*\ft \+xt গণনা পুস্তক 30:2\+xt*\ft*\f* \v 34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা আদৌ কোনো শপথ কোরো না; স্বর্গের নামে নয়, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন; \v 35 কিংবা পৃথিবীর নামে নয়, কারণ তা ঈশ্বরের পাদপীঠ; আবার জেরুশালেমের নামেও নয়, কারণ তা মহান রাজার নগরী। \v 36 আর নিজের মাথারও শপথ কোরো না, কারণ তুমি একটিও চুল সাদা বা কালো করতে পারো না। \v 37 সাধারণভাবেই তোমাদের ‘হ্যাঁ’ যেন ‘হ্যাঁ’ হয় ও ‘না’ যেন ‘না’ হয়। যা এর অতিরিক্ত, তা সেই পাপাত্মা থেকে আসে। \s1 চোখের বিনিময়ে চোখ \p \v 38 “তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, ‘চোখের পরিবর্তে চোখ, দাঁতের পরিবর্তে দাঁত।’\f + \fr 5:38 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 21:24; লেবীয় পুস্তক 24:20; দ্বিতীয় বিবরণ 19:21\+xt*।\ft*\f* \v 39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, কোনো দুষ্ট ব্যক্তির প্রতিরোধ কোরো না। কেউ যদি তোমার ডান গালে চড় মারে, তোমার অন্য গালও তার দিকে বাড়িয়ে দাও। \v 40 আর কেউ যদি তোমার জামা নিয়ে নেওয়ার জন্য তোমার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায়, তাকে তোমার চাদরও নিতে দিয়ো। \v 41 কেউ যদি তোমাকে এক কিলোমিটার যাওয়ার জন্য জোর করে, তুমি তার সঙ্গে দুই কিলোমিটার যাও। \v 42 কেউ যদি তোমার কাছে কিছু চায়, তাকে তা দাও; যে তোমার কাছে ঋণ চায়, তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। \s1 শত্রুদের জন্য ভালোবাসা \p \v 43 “তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, ‘তোমার প্রতিবেশীকে প্রেম কোরো’ ও ‘তোমার শত্রুকে ঘৃণা কোরো।’\f + \fr 5:43 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 19:18\+xt*\ft*\f* \v 44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালোবেসো এবং যারা তোমাদের অত্যাচার করে, তোমরা তাদের জন্য প্রার্থনা কোরো,\f + \fr 5:44 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর লেখা আছে: যারা তোমাদের অভিশাপ দেয়, তাদের আশীর্বাদ কোরো ও যারা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কোরো।\ft*\f* \v 45 যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হও। কারণ তিনি ভালোমন্দ, সব মানুষের উপরে সূর্য উদিত করেন এবং ধার্মিক অধার্মিক নির্বিশেষে সকলের উপরে বৃষ্টি দেন। \v 46 যারা তোমাদের ভালোবাসে, তোমরা যদি তাদেরই ভালোবাসো, তাহলে তোমরা কী পুরস্কার পাবে? কর আদায়কারীরাও কি সেরকম করে না? \v 47 আর তোমরা যদি কেবলমাত্র তোমাদের ভাইদেরই নমস্কার করো, তাহলে অন্যদের চেয়ে বেশি আর কী করছ? পরজাতীয়েরাও কি সেরকম করে না? \v 48 অতএব, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা যেমন সিদ্ধ,\f + \fr 5:48 \fr*\ft সিদ্ধ, অর্থাৎ নিখুঁত, ত্রুটিহীন বা সম্পূর্ণ\ft*\f* তোমরাও সেইরূপ সিদ্ধ হও। \c 6 \s1 দানের বিষয়ে শিক্ষা \p \v 1 “সতর্ক থেকো তোমরা যেন প্রকাশ্যে কোনো লোক-দেখানো ধর্মকর্ম না করো। যদি করো, তাহলে তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছ থেকে কোনো পুরস্কারই পাবে না। \p \v 2 “তাই তোমরা যখন কোনো দরিদ্র মানুষকে দান করো, তখন ভণ্ডেরা যেমন সমাজভবনগুলিতে বা পথে পথে মানুষদের কাছে প্রশংসা পাওয়ার জন্য তূরী বাজিয়ে ঘোষণা করে, তোমরা তেমন কোরো না। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। \v 3 কিন্তু যখন তুমি দরিদ্রদের দান করো, তোমার ডান হাত কী করছে, তা যেন তোমার বাঁ হাত জানতে না পায়, যেন তোমার দান গোপনে হয়। \v 4 তাহলে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সবকিছু দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কার দেবেন। \s1 প্রার্থনা \p \v 5 “আর তোমরা যখন প্রার্থনা করো, তখন ভণ্ডদের মতো কোরো না, কারণ তারা সমাজভবনগুলিতে বা পথের কোণে কোণে দাঁড়িয়ে লোক-দেখানো প্রার্থনা করতে ভালোবাসে। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। \v 6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা করো তখন ঘরে যাও, দরজা বন্ধ করো ও তোমার পিতা যিনি অদৃশ্য হলেও উপস্থিত—তাঁর কাছে প্রার্থনা করো। এতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সবকিছু দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কৃত করবেন। \v 7 আর তুমি প্রার্থনা করার সময় পরজাতীয়দের মতো অর্থহীন পুনরাবৃত্তি কোরো না, কারণ তারা মনে করে, বাগবাহুল্যের জন্যই তারা প্রার্থনার উত্তর পাবে। \v 8 তাদের মতো হোয়ো না, কারণ তোমাদের কী প্রয়োজন তা চাওয়ার পূর্বেই তোমাদের পিতা জানেন। \p \v 9 “অতএব, তোমরা এভাবে প্রার্থনা কোরো: \q1 “ ‘হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, \q2 তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক, \q1 \v 10 তোমার রাজ্য আসুক, \q1 তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে, \q2 তেমন পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক। \q1 \v 11 আমাদের দৈনিক আহার আজ আমাদের দাও। \q1 \v 12 আমরা যেমন আমাদের বিরুদ্ধে অপরাধীদের\f + \fr 6:12 \fr*\ft বা, ঋণ\ft*\f* \q2 ক্ষমা করেছি, তেমন তুমিও আমাদের অপরাধসকল\f + \fr 6:12 \fr*\ft বা, ঋণ\ft*\f* ক্ষমা করো। \q1 \v 13 আর আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিয়ো না, \q2 কিন্তু সেই পাপাত্মা\f + \fr 6:13 \fr*\fq পাপাত্মা\fq*\ft —বা, মন্দ থেকে\ft*\f* থেকে রক্ষা করো।’\f + \fr 6:13 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপরে আছে: কারণ রাজ্য, পরাক্রম ও মহিমা যুগে যুগে তোমার। আমেন।\ft*\f* \m \v 14 কারণ তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা করো, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। \v 15 কিন্তু তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা না করো, তোমাদের পিতাও তোমাদের অপরাধসকল ক্ষমা করবেন না। \s1 উপোস করা \p \v 16 “তোমরা যখন উপোস করো, তখন ভণ্ডদের মতো নিজেদের গুরুগম্ভীর দেখিয়ো না, কারণ তারা নিজেদের মুখমণ্ডল মলিন করে লোকদের দেখায় যে তারা উপোস করছে। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। \v 17 কিন্তু তুমি যখন উপোস করো, তোমার মাথায় তেল দিয়ো ও মুখ ধুয়ো, \v 18 ফলে তুমি যে উপোস করছ, তা যেন লোকদের কাছে স্পষ্ট না হয়, কেবলমাত্র তোমার পিতার কাছেই স্পষ্ট হয় যিনি অদৃশ্য। এতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সব দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কৃত করবেন। \s1 স্বর্গে সঞ্চিত ধন \p \v 19 “তোমরা নিজেদের জন্য পৃথিবীতে ধন সঞ্চয় কোরো না। এখানে কীটপতঙ্গ ও মরচে তা নষ্ট করে এবং চোর সিঁধ কেটে চুরি করে। \v 20 কিন্তু নিজেদের জন্য স্বর্গে ধন সঞ্চয় করো, যেখানে কীটপতঙ্গ ও মরচে তা নষ্ট করতে পারে না এবং চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করতে পারে না। \v 21 কারণ যেখানে তোমাদের ধন থাকবে, সেখানেই তোমাদের মন পড়ে থাকবে। \p \v 22 “চোখ শরীরের প্রদীপ। তোমার দুই চোখ যদি নির্মল হয়, তাহলে তোমার সমস্ত শরীর আলোময় হয়ে উঠবে। \v 23 কিন্তু তোমার চোখ যদি মন্দ হয়, তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। তোমার ভিতরের আলো যদি অন্ধকারময় হয়ে ওঠে, তবে সেই অন্ধকার কতই না ভয়ংকর! \p \v 24 “কেউই দুজন মনিবের সেবা করতে পারে না। সে হয় একজনকে ঘৃণা করে অপরজনকে ভালোবাসবে, নয়তো সে একজনের অনুগত হয়ে অপরজনকে অবজ্ঞা করবে। তোমরা ঈশ্বর ও অর্থ, এই দুয়ের সেবা করতে পারো না। \s1 দুশ্চিন্তা কোরো না \p \v 25 “এই কারণে আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জীবনের বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না, তোমরা কী খাবে বা পান করবে; বা শরীরের বিষয়ে, কী পোশাক পড়বে। খাবারের চেয়ে জীবন কি বড়ো বিষয় নয় এবং পোশাকের চেয়ে শরীর কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়? \v 26 আকাশের পাখিদের দিকে তাকিয়ে দেখো; তারা বীজবপন করে না, ফসল কাটে না, বা গোলায় সঞ্চয়ও করে না; তবুও তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তাদের খাবার জুগিয়ে দেন। তোমরা কি তাদের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান নও? \v 27 দুশ্চিন্তা করে তোমাদের কেউ কি নিজের আয়ু এক ঘণ্টাও বৃদ্ধি করতে পারে?\f + \fr 6:27 \fr*\ft বা, নিজের উচ্চতা এক হাতও\ft*\f* \p \v 28 “আর পোশাকের বিষয়ে তোমরা কেন দুশ্চিন্তা করো? দেখো, মাঠের লিলি ফুল কীভাবে বিকশিত হয়। তারা পরিশ্রম করে না, সুতোও কাটে না। \v 29 তবুও আমি তোমাদের বলছি, রাজা শলোমনও তার সমস্ত মহিমায় এদের একটিরও মতো সুশোভিত ছিলেন না। \v 30 মাঠের যে ঘাস আজ আছে, অথচ আগামীকাল আগুনে নিক্ষিপ্ত করা হবে, ঈশ্বর যদি সেগুলিকে এত সুশোভিত করে থাকেন, তাহলে ওহে অল্পবিশ্বাসীরা, তিনি কি তোমাদের আরও বেশি সুশোভিত করবেন না? \v 31 সেই কারণে, ‘আমরা কী খাব?’ বা ‘আমরা কী পান করব?’ বা ‘আমরা কী পরব?’ এসব নিয়ে তোমরা দুশ্চিন্তা কোরো না। \v 32 কারণ পরজাতীয়রাই এই সমস্ত বিষয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকে, অথচ তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা জানেন যে এগুলো তোমাদের প্রয়োজন। \v 33 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্য ও ধার্মিকতার অন্বেষণ করো, তাহলে এই সমস্ত বিষয়ও তোমাদের দেওয়া হবে। \v 34 অতএব, কালকের বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না, কারণ কাল স্বয়ং নিজের বিষয়ে দুশ্চিন্তা করবে। প্রত্যেকটি দিনের কষ্ট প্রতিটি দিনের জন্য যথেষ্ট। \c 7 \s1 অপরকে বিচার করা \p \v 1 “তোমরা অপরকে বিচার কোরো না, নইলে তোমাদেরও বিচার করা হবে। \v 2 কারণ যেভাবে তোমরা অপরের বিচার করবে, সেভাবেই তোমাদের বিচার করা হবে এবং যে মানদণ্ডে তোমরা পরিমাপ করবে, সেই একই মানদণ্ডে তোমাদের পরিমাপ করা হবে। \p \v 3 “তোমার ভাইয়ের চোখে যে কাঠের গুঁড়ো রয়েছে, কেবলমাত্র সেটিই দেখছ, অথচ তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ রয়েছে, তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছ না কেন? \v 4 তুমি কী করে তোমার ভাইকে বলতে পারো, ‘এসো, তোমার চোখ থেকে কাঠের গুঁড়োটি বের করে দিই,’ যখন তোমার নিজের চোখেই সবসময় কড়িকাঠ রয়েছে? \v 5 ওহে ভণ্ড, প্রথমে নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠটি বের করো, তাহলেই তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কাঠের গুঁড়োটি বের করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে। \p \v 6 “পবিত্র বস্তু কুকুরদের দিয়ো না; তোমাদের মুক্তো শূকরদের সামনে ছড়িয়ো না, যদি তা করো, তারা হয়তো সেগুলি পদদলিত করবে ও ফিরে তোমাদের ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করবে। \s1 চাও, খোঁজ করো, কড়া নাড়ো \p \v 7 “চাও, তোমাদের দেওয়া হবে; খোঁজ করো, তোমরা পাবে; কড়া নাড়ো, তোমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হবে। \v 8 কারণ যে চায়, সে গ্রহণ করে; যে খোঁজ করে, সে সন্ধান পায়; আর যে কড়া নাড়ে, তার জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হয়। \p \v 9 “তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার ছেলে রুটি চাইলে, তাকে পাথর দেবে? \v 10 অথবা, মাছ চাইলে তাকে সাপ দেবে? \v 11 তোমরা মন্দ প্রকৃতির হয়েও যদি নিজেদের সন্তানদের ভালো ভালো উপহার দিতে জানো, তাহলে যারা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছে চায়, তাদের তিনি আরও কত না উৎকৃষ্ট সব উপহার নিশ্চিতরূপে দান করবেন? \v 12 তাই সব বিষয়ে, তোমরা অপরের কাছ থেকে যেরূপ ব্যবহার পেতে চাও, তাদের প্রতি তোমরাও সেরূপ ব্যবহার কোরো। কারণ এই হল বিধান ও ভাববাদীদের শিক্ষার মূল বিষয়। \s1 সংকীর্ণ ও প্রশস্ত দ্বার \p \v 13 “সংকীর্ণ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করো, কারণ প্রশস্ত দ্বার ও সুবিস্তৃত পথ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় এবং বহু মানুষ তা দিয়ে প্রবেশ করে। \v 14 কিন্তু জীবনে প্রবেশ করার দ্বার সংকীর্ণ ও পথ দুর্গম, আর খুব কম লোকই তার সন্ধান পায়। \s1 প্রকৃত ও ভণ্ড ভাববাদী \p \v 15 “ভণ্ড ভাববাদীদের থেকে সাবধান। তারা মেষের ছদ্মবেশে তোমাদের কাছে আসে, কিন্তু অন্তরে তারা হিংস্র নেকড়ের মতো। \v 16 তাদের ফল দ্বারাই তোমরা তাদের চিনতে পারবে। লোকে কি কাঁটাঝোপ থেকে আঙুর, বা শিয়ালকাঁটা থেকে ডুমুরফল পায়? \v 17 একইভাবে, প্রত্যেক ভালো গাছে ভালো ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে। \v 18 কোনো ভালো গাছে মন্দ ফল ধরতে পারে না এবং কোনো মন্দ গাছে ভালো ফল ধরতে পারে না। \v 19 যে গাছে ভালো ফল ধরে না, সেই গাছ কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়। \v 20 এভাবে, তাদের ফল দ্বারাই তোমরা তাদের চিনতে পারবে। \s1 প্রকৃত ও ভণ্ড শিষ্য \p \v 21 “যারা আমাকে ‘প্রভু, প্রভু’ বলে, তারা সবাই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না; কিন্তু যে আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করবে, সেই প্রবেশ করতে পারবে। \v 22 সেদিন,\f + \fr 7:22 \fr*\ft অর্থাৎ, শেষ বিচারের দিন।\ft*\f* অনেকে আমাকে বলবে, ‘প্রভু, প্রভু; আমরা কি আপনার নামে ভবিষ্যদ্‌বাণী করিনি? আপনার নামে কি ভূত তাড়াইনি ও বহু অলৌকিক কাজ করিনি?’ \v 23 তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব, ‘আমি তোমাদের কোনোকালেও জানতাম না। দুষ্টের দল, আমার সামনে থেকে দূর হও!’ \s1 বুদ্ধিমান ও মূর্খ স্থপতি \p \v 24 “অতএব, যে আমার এসব বাক্য শুনে পালন করে, সে এমন এক বুদ্ধিমান লোকের মতো, যে পাথরের উপরে তার বাড়ি নির্মাণ করল। \v 25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, ঝড় বইল ও সেই বাড়িতে আঘাত করল; তবুও তার পতন হল না, কারণ পাথরের উপরে তার ভিত্তিমূল প্রতিষ্ঠিত ছিল। \v 26 কিন্তু যে কেউ আমার এসব বাক্য শুনেও পালন করে না, সে এমন এক মূর্খ মানুষের মতো, যে বালির উপরে তার বাড়ি নির্মাণ করল। \v 27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, ঝড় বইল ও সেই বাড়িতে আঘাত করল, আর তার ভয়ংকর পতন হল।” \p \v 28 যীশু যখন এসব বিষয় বলা শেষ করলেন তখন লোকেরা তাঁর শিক্ষায় আশ্চর্য হয়ে গেল। \v 29 কারণ তিনি শাস্ত্রবিদদের মতো নয়, কিন্তু একজন ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির মতোই শিক্ষা দিলেন। \c 8 \s1 যীশু এক কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করলেন \p \v 1 যীশু যখন পর্বতের উপর থেকে নেমে এলেন তখন অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করতে লাগল। \v 2 তখন একজন কুষ্ঠরোগী এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছা করলেই আমাকে শুচিশুদ্ধ করতে পারেন।” \p \v 3 যীশু তাঁর হাত বাড়িয়ে সেই ব্যক্তিকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, “আমার ইচ্ছা, তুমি শুচিশুদ্ধ হও!” তৎক্ষণাৎ তার কুষ্ঠরোগ দূর হয়ে গেল। \v 4 তখন যীশু তাকে বললেন, “দেখো, তুমি একথা কাউকে বোলো না, কিন্তু যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও এবং মোশির আদেশমতো তাদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নৈবেদ্য উৎসর্গ করো।” \s1 শত-সেনাপতির বিশ্বাস \p \v 5 যীশু কফরনাহূমে প্রবেশ করলে একজন শত-সেনাপতি তাঁর কাছে এসে সাহায্যের নিবেদন করলেন। \v 6 তিনি বললেন, “প্রভু, আমার দাস পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে, ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে।” \p \v 7 যীশু তাকে বললেন, “আমি গিয়ে তাকে সুস্থ করব।” \p \v 8 সেই শত-সেনাপতি উত্তরে বললেন, “প্রভু, আপনি আমার বাড়িতে\f + \fr 8:8 \fr*\ft গ্রিক: ছাদের নিচে।\ft*\f* আসবেন আমি এমন যোগ্য নই। কেবলমাত্র মুখে বলুন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হবে। \v 9 কারণ আমিও কর্তৃত্বের অধীন একজন মানুষ এবং সৈন্যরা আমার অধীন। আমি তাদের একজনকে ‘যাও’ বললে সে যায়, অপরজনকে ‘এসো’ বললে সে আসে, আবার আমার দাসকে ‘এই কাজটি করো,’ বললে সে তা করে।” \p \v 10 একথা শুনে যীশু বিস্মিত হয়ে তাঁর অনুসরণকারীদের উদ্দেশে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, ইস্রায়েলে আমি এমন কারও সন্ধান পাইনি, যার মধ্যে এত গভীর বিশ্বাস আছে। \v 11 আমি তোমাদের বলে রাখছি, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দেশ থেকে বহু মানুষই আসবে এবং এসে অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে তাদের আসন গ্রহণ করবে। \v 12 কিন্তু সেই রাজ্যের প্রজাদের বাইরের অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে, যেখানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে।” \p \v 13 পরে যীশু সেই শত-সেনাপতিকে বললেন, “যাও! তুমি যেমন বিশ্বাস করেছ, তেমনই হবে।” আর সেই মুহূর্তেই তার দাস সুস্থ হয়ে গেল। \s1 যীশু অনেক মানুষকে সুস্থ করলেন \p \v 14 যীশু যখন পিতরের বাড়িতে এলেন, তিনি দেখলেন, পিতরের শাশুড়ি জ্বরে বিছানায় শুয়ে আছেন। \v 15 তিনি তাঁর হাত স্পর্শ করলেন, এবং তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল। তিনি উঠে তাঁর পরিচর্যা করতে লাগলেন। \p \v 16 যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, বহু ভূতগ্রস্ত মানুষকে যীশুর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি মুখের কথাতেই ভূতদের তাড়িয়ে দিলেন ও সব অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করলেন। \v 17 এভাবে ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে কথিত বচন পূর্ণ হল: \q1 “তিনি আমাদের সমস্ত দুর্বলতা গ্রহণ \q2 ও আমাদের সকল রোগ বহন করলেন।”\f + \fr 8:17 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 53:4\+xt*\ft*\f* \s1 যীশুকে অনুসরণের মূল্য \p \v 18 যীশু যখন তাঁর চারপাশে অনেক লোকের ভিড় দেখলেন, তিনি সাগরের অপর পারে যাওয়ার জন্য শিষ্যদের আদেশ দিলেন। \v 19 তখন একজন শাস্ত্রবিদ তাঁর কাছে এসে বললেন, “গুরুমহাশয়, আপনি যেখানে যাবেন আমিও আপনার সঙ্গে সেখানে যাব।” \p \v 20 উত্তরে যীশু বললেন, “শিয়ালদের গর্ত আছে, আকাশের পাখিদের বাসা আছে, কিন্তু মনুষ্যপুত্রের\f + \fr 8:20 \fr*\ft অর্থাৎ মরিয়মের পুত্র ও সমস্ত মানবস্বভাববিশিষ্ট পূর্ণ মানুষ\ft*\f* মাথা রাখার কোনও স্থান\f + \fr 8:20 \fr*\ft অর্থাৎ, বিশ্রামস্থান।\ft*\f* নেই।” \p \v 21 অন্য একজন শিষ্য তাঁকে বললেন, “প্রভু, প্রথমে আমাকে গিয়ে আমার পিতাকে সমাধি দিয়ে আসার অনুমতি দিন।” \p \v 22 কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো। মৃতেরাই তাদের মৃতজনদের সমাধি দিক।” \s1 যীশু ঝড় থামালেন \p \v 23 এরপর যীশু নৌকায় উঠলেন ও শিষ্যরাও তাঁর সঙ্গ নিলেন। \v 24 হঠাৎ সমুদ্রে এক ভয়ংকর ঝড় উঠল ও নৌকার উপরে ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল। কিন্তু যীশু তখন ঘুমাচ্ছিলেন। \v 25 শিষ্যেরা গিয়ে তাঁকে জাগিয়ে তুলে বললেন, “প্রভু, আমাদের রক্ষা করুন! আমরা যে ডুবতে বসেছি!” \p \v 26 তিনি উত্তর দিলেন, “অল্পবিশ্বাসীর দল, তোমরা এত ভয় পাচ্ছ কেন?” তারপর তিনি উঠে ঝড় ও ঢেউকে ধমক দিলেন, তাতে সবকিছু সম্পূর্ণ শান্ত হয়ে গেল। \p \v 27 এতে শিষ্যেরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “ইনি কেমন মানুষ? ঝড় ও সমুদ্র তাঁর আদেশ পালন করে!” \s1 যীশু দুজন ভূতগ্রস্ত লোককে সুস্থ করলেন \p \v 28 পরে যীশু যখন সমুদ্রের অপর পারে গাদারীয়দের\f + \fr 8:28 \fr*\ft কয়েকটি পাণ্ডুলিপিতে: গির্গাসেনীদের; অন্য কয়েকটিতে, গেরাসেনীদের।\ft*\f* অঞ্চলে পৌঁছালেন, দুজন ভূতগ্রস্ত লোক সমাধিস্থল থেকে বের হয়ে তাঁর সামনে এসে উপস্থিত হল। তারা এতই হিংস্র ছিল যে, সেই পথ দিয়ে কেউই যাওয়া-আসা করতে পারত না। \v 29 তারা চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের পুত্র,\f + \fr 8:29 \fr*\ft এর অর্থ, ঈশ্বর। অদৃশ্য, আত্মারূপী ঈশ্বরের রক্তমাংসে মূর্ত রূপ। মানবরূপে জন্মগ্রহণ করেও যাঁর মধ্যে ছিল ঐশ্বরিক সমস্ত গুণের সমাহার।\ft*\f* আপনি আমাদের নিয়ে কী করতে চান? নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কি আপনি আমাদের যন্ত্রণা দিতে এসেছেন?” \p \v 30 তাদের কাছ থেকে কিছুটা দূরে একপাল শূকর চরে বেড়াচ্ছিল। \v 31 সেই ভূতেরা যীশুর কাছে বিনতি করল, “আপনি যদি আমাদের তাড়াতে চান, তাহলে ওই শূকরদের মধ্যে আমাদের পাঠিয়ে দিন।” \p \v 32 তিনি তাদের বললেন, “যাও!” তখন তারা বেরিয়ে এসে সেই শূকরপালের মধ্যে প্রবেশ করল। তাতে সেই শূকরের পাল ঢালু তীর বেয়ে তীব্র গতিতে ছুটে এসে সমুদ্রে পড়ল ও জলে ডুবে মারা গেল। \v 33 যারা সেই শূকরদের চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালিয়ে নগরের মধ্যে গেল ও এসব বিষয়ের সংবাদ দিল; ওই ভূতগ্রস্ত লোকদের কী ঘটেছিল, সেকথাও তারা বলল। \v 34 তখন নগরের সমস্ত লোক যীশুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য বেরিয়ে এল। তারা তাঁকে দেখতে পেয়ে অনুরোধ করল, যেন তিনি তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান। \c 9 \s1 একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে আরোগ্য দান \p \v 1 এরপর যীশু একটি নৌকায় উঠে সাগর পার করে তাঁর নিজের নগরে এলেন। \v 2 কয়েকজন মানুষ একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে খাটে শুইয়ে তাঁর কাছে নিয়ে এল। তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, “বৎস, সাহস করো, তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হল।” \p \v 3 এতে কয়েকজন শাস্ত্রবিদ মনে মনে বলল, “এই লোকটি তো ঈশ্বরনিন্দা করছে!” \p \v 4 যীশু তাদের মনের কথা বুঝতে পেরে বললেন, “তোমরা মনে মনে মন্দ চিন্তা করছ কেন? \v 5 কোন কথাটি বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ বলা না, ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও’ বলা? \v 6 কিন্তু আমি চাই যেন তোমরা জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার অধিকার মনুষ্যপুত্রের আছে” এই বলে তিনি সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, “ওঠো, তোমার খাট তুলে বাড়ি চলে যাও।” \v 7 তখন ব্যক্তিটি উঠে বাড়ি চলে গেল। \v 8 এই দেখে সমস্ত লোক ভীত হয়ে উঠল এবং ঈশ্বর মানুষকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন বলে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। \s1 মথিকে আহ্বান \p \v 9 সেই স্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় যীশু দেখলেন, মথি নামে এক ব্যক্তি কর আদায়কারীর চালাঘরে বসে আছেন। তিনি তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো!” মথি তখনই উঠে পড়লেন ও তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। \p \v 10 মথির বাড়িতে যীশু যখন রাতের খাওয়া খেতে বসেছিলেন, তখন বহু কর আদায়কারী ও পাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল। \v 11 ফরিশীরা তা লক্ষ্য করে তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করল, “কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে বসে তোমাদের গুরুমহাশয় কেন খাওয়াদাওয়া করেন?” \p \v 12 একথা শুনে যীশু বললেন, “পীড়িত ব্যক্তিরই চিকিৎসকের প্রয়োজন, সুস্থ ব্যক্তির নয়। \v 13 কিন্তু তোমরা যাও এবং এই বাক্যের মর্ম কি তা শিক্ষা নাও: ‘আমি দয়া চাই, বলিদান নয়।’\f + \fr 9:13 \fr*\ft \+xt হোশেয় 6:6\+xt*\ft*\f* কারণ আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের আহ্বান করতে এসেছি।” \s1 উপোস করা সম্পর্কে যীশুকে প্রশ্ন \p \v 14 এরপর যোহনের শিষ্যেরা এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “এ কী রকম যে, ফরিশীরা ও আমরা উপোস করি, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা উপোস করে না?” \p \v 15 যীশু উত্তর দিলেন, “বর সঙ্গে থাকতে তার অতিথিরা কীভাবে দুঃখ করতে পারে? সময় আসবে, যখন বরকে তাদের মধ্য থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে; তখন তারা উপোস করবে। \p \v 16 “পুরোনো পোশাকে কেউ নতুন কাপড়ের তালি লাগায় না, কারণ তা করলে সেই কাপড়ের টুকরোটি পুরোনো পোশাক থেকে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে ও সেই ছিদ্র আরও বড়ো হয়ে উঠবে। \v 17 আবার পুরোনো চামড়ার সুরাধারে কেউই টাটকা আঙুরের রস ঢালে না। যদি ঢালে, তাহলে চামড়ার সুরাধার ফেটে যাবে, আঙুরের রস গড়িয়ে পড়বে এবং সুরাধারটিও নষ্ট হবে। না, তারা নতুন আঙুরের রস নতুন সুরাধারেই রাখে, এতে উভয়ই সংরক্ষিত থাকে।” \s1 যীশু এক মৃত বালিকা ও এক অসুস্থ নারীকে সুস্থ করলেন \p \v 18 যীশু যখন এই কথাগুলি বলছিলেন, এমন সময়ে একজন সমাজভবনের অধ্যক্ষ এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বললেন, “আমার মেয়েটি সবেমাত্র মারা গেছে। কিন্তু আপনি এসে তার উপরে হাত রাখুন, তাহলে সে বেঁচে উঠবে।” \v 19 যীশু উঠে তাঁর সঙ্গ নিলেন, তাঁর শিষ্যেরাও তাই করলেন। \p \v 20 ঠিক সেই মুহূর্তে, এক নারী, যে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবের ব্যাধিতে ভুগছিল, তাঁর পিছন দিক থেকে এসে তাঁর পোশাকের আঁচল স্পর্শ করল। \v 21 সে মনে মনে ভেবেছিল, “কেবলমাত্র তাঁর পোশাকটুকু যদি আমি স্পর্শ করতে পারি, তাহলেই আমি সুস্থ হব।” \p \v 22 যীশু পিছন ফিরে তাকে দেখতে পেয়ে বললেন, “সাহস করো, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে।” সেই মুহূর্ত থেকেই সেই নারী সুস্থ হল। \p \v 23 যীশু সেই সমাজভবনের অধ্যক্ষের বাড়িতে প্রবেশ করে দেখলেন বাঁশি-বাদকেরা রয়েছে ও লোকেরা শোরগোল করছে।\f + \fr 9:23 \fr*\ft এরা ছিল পেশাদার বিলাপকারী (দ্রঃ \+xt 2 বংশাবলি 35:25\+xt*)\ft*\f* \v 24 তিনি বললেন, “তোমরা চলে যাও। মেয়েটি মারা যায়নি, সে ঘুমিয়ে আছে।” তারা কিন্তু তাঁকে উপহাস করতে লাগল। \v 25 লোকের ভিড় এক পাশে সরিয়ে দেওয়ার পর, যীশু ভিতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন। এতে সে উঠে বসল। \v 26 এই ঘটনার সংবাদ সেই সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ল। \s1 অন্ধ ও বোবাকে যীশু সুস্থ করলেন \p \v 27 যীশু সেখান থেকে চলে যাওয়ার সময় দুজন অন্ধ মানুষ তাঁকে অনুসরণ করে চিৎকার করতে লাগল, “দাউদ-সন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন।” \p \v 28 তিনি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে সেই দুজন অন্ধ মানুষ তাঁর কাছে এল। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি বিশ্বাস করো যে, আমি এ কাজ করতে পারি?” \p তারা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, প্রভু।” \p \v 29 তখন তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন ও বললেন, “তোমাদের বিশ্বাস অনুযায়ীই তোমাদের প্রতি হোক।” \v 30 আর তারা দৃষ্টিশক্তি পুনরায় ফিরে পেল। যীশু তাদের কঠোরভাবে সাবধান করে দিয়ে বললেন, “দেখো, কেউ যেন একথা জানতে না পারে।” \v 31 কিন্তু তারা বাইরে গিয়ে সেই অঞ্চলের সর্বত্র তাঁর সংবাদ ছড়িয়ে দিল। \p \v 32 সেই দুজন যখন বেরিয়ে চলে যাচ্ছিল, তখন একজন ভূতগ্রস্ত মানুষকে যীশুর কাছে নিয়ে আসা হল। সে কথা বলতে পারত না। \v 33 যখন সেই ভূতকে তাড়ানো হল তখন বোবা মানুষটি কথা বলতে লাগল। সকলে বিস্ময়ে আশ্চর্য হয়ে বলল, “ইস্রায়েলে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও দেখা যায়নি।” \p \v 34 কিন্তু ফরিশীরা বলল, “ও তো ভূতদের অধিপতির\f + \fr 9:34 \fr*\ft অর্থাৎ, শয়তান।\ft*\f* দ্বারাই ভূত ছাড়ায়।” \s1 কর্মী সংখ্যা অল্প \p \v 35 যীশু বিভিন্ন নগর ও গ্রাম পরিক্রমা করতে লাগলেন। তিনি তাদের সমাজভবনগুলিতে শিক্ষা দিতে ও স্বর্গরাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন। তিনি সব ধরনের রোগ ও ব্যাধি দূর করলেন। \v 36 যখন তিনি লোকের ভিড় দেখলেন তিনি তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেন, কারণ তারা পালকহীন মেষপালের মতো বিপর্যস্ত ও দিশেহারা ছিল। \v 37 তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “ফসল প্রচুর, কিন্তু কর্মী সংখ্যা অল্প। \v 38 তোমরা ফসলের মালিকের কাছে প্রার্থনা করো, যেন তিনি তাঁর শস্যক্ষেত্রে কর্মচারীদের পাঠান।” \c 10 \s1 যীশু বারোজন শিষ্যকে পাঠালেন \p \v 1 যীশু তাঁর বারোজন শিষ্যকে নিজের কাছে ডাকলেন। তিনি তাঁদের অশুচি আত্মা তাড়ানোর, সমস্ত রকম রোগ ও পীড়া ভালো করার ক্ষমতা দিলেন। \b \li4 \v 2 সেই বারোজন প্রেরিতের\f + \fr 10:2 \fr*\fqa প্রেরিতশিষ্য\fqa*\ft —অর্থাৎ দূত, বা শুভবার্তা ঘোষণার উদ্দেশ্যে প্রেরিত শিষ্যজনেরা। প্রেরিত\ft*\f* নাম হল: \b \li1 প্রথমে, শিমোন যাকে পিতর\f + \fr 10:2 \fr*\fq পিতর \fq*\ft অরামীয় কেফা (অর্থ, পাথর) \+xt যোহন 1:42\+xt*\ft*\f* নামে ডাকা হত ও তার ভাই আন্দ্রিয়; \li1 সিবদিয়ের পুত্র যাকোব ও তার ভাই যোহন; \li1 \v 3 ফিলিপ ও বর্থলময়; \li1 থোমা ও কর আদায়কারী মথি; \li1 আলফেয়ের পুত্র যাকোব ও থদ্দেয়; \li1 \v 4 উদ্যোগী\f + \fr 10:4 \fr*\fq উদ্যোগী\fq*\ft —কানানী। এই শিমোন প্রথমে একজন উগ্রপন্থী ছিলেন।\ft*\f* শিমোন ও যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ, যে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। \b \p \v 5 যীশু বারোজনকে এসব আদেশ দিয়ে পাঠালেন: “তোমরা অইহুদিদের মধ্যে যেয়ো না বা শমরীয়দের কোনো নগরে প্রবেশ কোরো না। \v 6 বরং তোমরা ইস্রায়েলের হারিয়ে যাওয়া মেষদের কাছে যাও। \v 7 তোমরা যেতে যেতে এই বার্তা প্রচার কোরো: ‘স্বর্গরাজ্য সন্নিকট।’ \v 8 তোমরা পীড়িতদের সুস্থ করো, মৃতদের উত্থাপন করো, যাদের কুষ্ঠরোগ আছে, তাদের শুচিশুদ্ধ করো, ভূতদের তাড়িও। তোমরা বিনামূল্যে পেয়েছ, সেইরূপ বিনামূল্যেই দান করো। \p \v 9 “তোমাদের কোমরের বেল্টে সোনা, বা রুপো, বা তামার মুদ্রা নিয়ো না; \v 10 যাত্রার উদ্দেশ্যে কোনো থলি, বা অতিরিক্ত পোশাক, বা চটিজুতো বা কোনো ছড়ি নিয়ো না; কর্মচারী তার বেতন পাওয়ার যোগ্য। \v 11 আর তোমরা যে নগরে বা গ্রামে প্রবেশ করবে, সেখানকার কোনো উপযুক্ত লোকের সন্ধান করে সেই স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার বাড়িতেই থেকো। \v 12 সেই বাড়িতে প্রবেশ করার সময়, তোমরা তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ো। \v 13 যদি সেই বাড়ি যোগ্য হয়, তোমাদের শান্তি তার উপরে বিরাজ করুক; যদি যোগ্য না হয়, তাহলে তোমাদের শান্তি তোমাদেরই কাছে ফিরে আসুক। \v 14 কেউ যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, বা তোমাদের কথা না শোনে, সেই বাড়ি বা নগর ত্যাগ করার সময় তোমাদের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলো। \v 15 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, বিচারদিনে সদোম ও ঘমোরার দশা, বরং সেই নগরের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে। \p \v 16 “আমি নেকড়েদের মধ্যে তোমাদের মেষের মতো পাঠাচ্ছি। সেই কারণে, তোমরা সাপের মতো চতুর ও কপোতের মতো সরল\f + \fr 10:16 \fr*\ft অমায়িক বা নিরীহ।\ft*\f* হও। \v 17 লোকেদের ব্যাপারে তোমরা সাবধান থেকো। তারা তোমাদের স্থানীয় বিচার-পরিষদের হাতে তুলে দেবে এবং তাদের সমাজভবনে তোমাদের চাবুক মারবে। \v 18 আমারই কারণে প্রদেশপালদের ও রাজাদের কাছে এবং অইহুদিদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তোমাদের নিয়ে যাওয়া হবে। \v 19 কিন্তু, তারা যখন তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, কী বলবে বা কীভাবে তা বলবে, সে বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না। সেই সময়ে, তোমরা কী বলবে, তা তোমাদের বলে দেওয়া হবে। \v 20 কারণ তোমরা যে কথা বলবে, তা নয়, কিন্তু তোমাদের পিতার আত্মাই তোমাদের মাধ্যমে কথা বলবেন। \p \v 21 “ভাই ভাইকে ও পিতা সন্তানকে প্রতারিত করবে; ছেলেমেয়েরা বাবা-মার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে তাদের মৃত্যুর উদ্দেশে সমর্পণ করবে। \v 22 আমার কারণে সব মানুষ তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত অবিচল থাকবে, সেই পরিত্রাণ পাবে। \v 23 কোনো এক স্থানে তোমরা নির্যাতিত হলে অন্য স্থানে পালিয়ে যেয়ো। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, মনুষ্যপুত্রের আগমনের পূর্বে ইস্রায়েলের নগরগুলির পরিক্রমা তোমরা শেষ করতে পারবে না। \p \v 24 “কোনো শিষ্য তার গুরু থেকে বড়ো নয়, কোনো দাস তার মনিব থেকেও নয়। \v 25 শিষ্য যদি গুরুর সদৃশ হয় এবং দাস তার মনিবের সদৃশ, তাহলেই যথেষ্ট। বাড়ির কর্তাকেই যদি বেলসবুল\f + \fr 10:25 \fr*\ft হিব্রু: বা-আল-জাবুব; গ্রিক: বিলজেবুল। শব্দটি নির্দেশ করত শেম-গোষ্ঠীর এমন এক ইষ্ট-দেবতার প্রতি, যে ছিল পাতালের সপ্ত-প্রধানের অন্যতম।\ft*\f* বলা হয়, তার পরিজনদের আরও কত নাকি বলা হবে। \p \v 26 “সুতরাং, তোমরা তাদের ভয় পেয়ো না। এমন কিছুই লুকোনো নেই যা প্রকাশ পাবে না, বা এমন কিছুই গোপন নেই যা জানা যাবে না। \v 27 আমি তোমাদের অন্ধকারে যা কিছু বলি, দিনের আলোয় তোমরা তা বোলো; তোমাদের কানে কানে যা বলা হয়, তা ছাদের উপর থেকে ঘোষণা কোরো। \v 28 যারা কেবলমাত্র শরীর বধ করতে পারে, কিন্তু আত্মাকে বধ করতে পারে না, তাদের ভয় কোরো না। বরং, যিনি আত্মা ও শরীর, উভয়কেই নরকে ধ্বংস করতে পারেন, তোমরা তাঁকেই ভয় কোরো। \v 29 দুটি চড়ুইপাখি কি এক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবুও, তোমাদের পিতার ইচ্ছা ব্যতিরেকে তাদের একটিও মাটিতে পড়ে না। \v 30 এমনকি, তোমাদের মাথার চুলগুলিরও সংখ্যা গোনা আছে। \v 31 তাই ভয় পেয়ো না কারণ চড়ুইপাখি থেকেও তোমরা অনেক বেশি মূল্যবান। \p \v 32 “যে কেউ মানুষের সাক্ষাতে আমাকে স্বীকার করে, আমিও স্বর্গে আমার পিতার কাছে তাকে স্বীকার করব। \v 33 কিন্তু কেউ যদি মানুষের সাক্ষাতে আমাকে অস্বীকার করে, আমিও স্বর্গে আমার পিতার কাছে তাকে অস্বীকার করব। \p \v 34 “মনে কোরো না যে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি। আমি শান্তি দিতে নয়, কিন্তু এক খড়্গ\f + \fr 10:34 \fr*\ft রূপকার্থে, বিভেদ বা পৃথকতা।\ft*\f* দিতে এসেছি। \v 35 কারণ আমি এসেছি, \q1 “পুত্রকে তার পিতার বিরুদ্ধে বিচ্ছেদ করাতে \q2 ‘কন্যাকে তার মাতার বিরুদ্ধে, \q1 পুত্রবধূকে তার শাশুড়ির বিরুদ্ধে— \q2 \v 36 একজন মানুষের শত্রু তার নিজ পরিবারের সদস্যই হবে।’\f + \fr 10:36 \fr*\ft \+xt মীখা 7:6\+xt*\ft*\f* \p \v 37 “যে তার বাবা অথবা মাকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সে আমার যোগ্য নয়। যে তার ছেলে বা মেয়েকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সে আমার যোগ্য নয়। \v 38 আর যে আমার অনুগামী হতে চায় অথচ নিজের ক্রুশ বহন করে না, সে আমার যোগ্য নয়। \v 39 যে তার প্রাণরক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে এবং কেউ যদি আমার কারণে তার প্রাণ হারায় সে তা লাভ করবে। \p \v 40 “যে তোমাদের গ্রহণ করে সে আমাকেই গ্রহণ করে; যে আমাকে গ্রহণ করে সে তাঁকেই গ্রহণ করে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। \v 41 কেউ যদি কোনো ভাববাদীকে ভাববাদী জেনে গ্রহণ করে, সে এক ভাববাদীরই পুরস্কার লাভ করবে। আবার যে এক ধার্মিক ব্যক্তিকে ধার্মিক ব্যক্তি বলে গ্রহণ করে, সেও ধার্মিকের পুরস্কার পাবে। \v 42 আবার এই ক্ষুদ্রজনেদের মধ্যে কোনো একজনকে কেউ যদি আমার শিষ্য জেনে এক পেয়ালা ঠান্ডা জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি সে কোনোমতেই তার প্রাপ্য পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না।” \c 11 \s1 যীশু ও বাপ্তিষ্মদাতা যোহন \p \v 1 যীশু তাঁর বারোজন শিষ্যকে আদেশ দেওয়া শেষ করে সেখান থেকে গালীলের বিভিন্ন নগরে শিক্ষা দিতে ও প্রচার করতে চলে গেলেন। \p \v 2 সেই সময়ে, যোহন কারাগার থেকে মশীহের কার্যাবলি শুনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করার জন্য তাঁর শিষ্যদের এই বলে পাঠালেন, \v 3 “যাঁর আসার কথা ছিল আপনিই কি তিনি না আমরা অন্য কারও প্রতীক্ষায় থাকব?” \p \v 4 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমরা যা শুনছ ও দেখছ, ফিরে গিয়ে যোহনকে সেই কথা বলো। \v 5 যারা অন্ধ তারা দৃষ্টি পাচ্ছে, যারা খোঁড়া তারা চলতে পারছে, যারা কুষ্ঠরোগী তারা শুচিশুদ্ধ হচ্ছে, যারা কালা তারা শুনতে পাচ্ছে, যারা মৃত তারা উত্থাপিত হচ্ছে ও যারা দরিদ্র তাদের কাছে সুসমাচার প্রচারিত হচ্ছে। \v 6 আর ধন্য সেই ব্যক্তি যে আমার কারণে বাধা পায় না।” \p \v 7 যখন যোহনের শিষ্যেরা চলে যাচ্ছিল, তখন যীশু সকলের কাছে যোহনের সম্পর্কে বলতে লাগলেন, “তোমরা মরুপ্রান্তরে কী দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দুলছে এমন কোনো নলখাগড়া? \v 8 তা যদি না হয়, তাহলে তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? মোলায়েম পোশাক পরা কোনো মানুষকে? তা নয়, যারা মোলায়েম পোশাকে পরিচ্ছন্ন তারা তো রাজপ্রাসাদে থাকে। \v 9 তাহলে তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? কোনো ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলি, ভাববাদীর চেয়েও মহত্তর একজনকে। \v 10 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে লেখা আছে: \q1 “ ‘আমি আমার বার্তাবাহককে তোমার আগে পাঠাব, \q2 যে তোমার আগে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে।’\f + \fr 11:10 \fr*\ft \+xt মালাখি 3:1\+xt*\ft*\f* \m \v 11 আমি তোমাদের সত্যি বলছি: নারীর গর্ভে জন্মেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে, বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের চেয়ে মহান আর কেউই নেই; তবুও স্বর্গরাজ্যে যে নগণ্যতম সেও যোহনের চেয়ে মহান। \v 12 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত, স্বর্গরাজ্য সবলে অগ্রসর হচ্ছে ও পরাক্রমী ব্যক্তিরা তা অধিকার করছে। \v 13 কারণ সমস্ত ভাববাদী ও বিধান যোহনের সময় পর্যন্ত ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছে। \v 14 আর তোমরা যদি স্বীকার করতে আগ্রহী হও তাহলে জেনে নাও, ইনিই সেই এলিয় যার আগমনের কথা ছিল। \v 15 যার কান আছে, সে শুনুক। \p \v 16 “এই প্রজন্মকে আমি কার সঙ্গে তুলনা করব? তারা সেই ছেলেমেয়েদের মতো, যারা হাটেবাজারে বসে অন্য লোকদের আহ্বান করে বলে, \q1 \v 17 “ ‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, \q2 তোমরা তো নৃত্য করলে না; \q1 আমরা শোকগাথা গাইলাম, \q2 তোমরা তো বিলাপ করলে না!’\f + \fr 11:17 \fr*\ft বাঁশি বাজানো হত বিয়ের সময়, শোকগাথা গাওয়া হত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়। প্রথমটি যীশুর, শেষেরটি যোহনের পরিচর্যার প্রতীক। ইহুদিরা সেইসব ছেলেমেয়ের মতো, যারা কোনো উপলক্ষেই সাড়া দেয়নি।\ft*\f* \m \v 18 কারণ যোহন এসে আহার করলেন না, দ্রাক্ষারসও পান করলেন না, অথচ তারা বলল, ‘সে ভূতগ্রস্ত।’ \v 19 মনুষ্যপুত্র এলেন, খাওয়াদাওয়া করলেন, কিন্তু তারা বলল, ‘এই দেখো একজন পেটুক ও মদ্যপ, কর আদায়কারী ও “পাপীদের” বন্ধু।’ কিন্তু প্রজ্ঞা তার অনুসরণকারীদের আচরণের দ্বারাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়।” \s1 অনুতাপহীন নগরগুলিকে ধিক্কার \p \v 20 এরপর যীশু সেই সমস্ত নগরকে ধিক্কার দিতে লাগলেন, যেখানে তাঁর অধিকাংশ অলৌকিক কাজ সম্পাদিত হয়েছিল, কারণ তারা মন পরিবর্তন করেনি। তিনি বললেন, \v 21 “কোরাসীন, ধিক্ তোমাকে! বেথসৈদা, ধিক্ তোমাকে! তোমাদের মধ্যে যেসব অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, সেসব যদি টায়ার\f + \fr 11:21 \fr*\ft বা, সোর\ft*\f* ও সীদোনে করা হত, তারা অনেক আগেই চটবস্ত্র পরে ভস্মে বসে অনুতাপ করত। \v 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, বিচারদিনে টায়ার ও সীদোনের দশা, বরং তোমাদের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে। \v 23 আর তুমি কফরনাহূম, তুমি কি না স্বর্গ পর্যন্ত উঁচুতে উঠবে? তা নয়, তুমি অধোলোক\f + \fr 11:23 \fr*\ft গ্রিক, পাতাল\ft*\f* পর্যন্ত তলিয়ে যাবে। তোমার মধ্যে যেসব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে, সেগুলি যদি সদোমে করা হত, তাহলে আজও সেই নগরের অস্তিত্ব থাকত। \v 24 কিন্তু আমি তোমাকে বলছি যে, বিচারদিনে টায়ার ও সদোমের দশা, বরং তোমাদের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে।” \s1 পরিশ্রান্তজনেদের জন্য বিশ্রাম \p \v 25 সেই সময় যীশু বললেন, “হে পিতা, তুমি স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ তুমি এই সমস্ত বিষয় বিজ্ঞ ও শিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে গোপন রেখে ছোটো শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ। \v 26 হ্যাঁ পিতা, কারণ এই ছিল তোমার ঈপ্সিত ইচ্ছা। \p \v 27 “আমার পিতা সবকিছুই আমার হাতে সমর্পণ করেছেন। পুত্রকে কেউ জানে না, কেবলমাত্র পিতা জানেন এবং পিতাকে কেউ জানে না, কেবলমাত্র পুত্র জানেন ও পুত্র যার কাছে তাঁকে প্রকাশ করেন, সেই জানে। \p \v 28 “ওহে, তোমরা যারা পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত, আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব। \v 29 আমার জোয়াল তোমরা নিজেদের উপরে তুলে নাও ও আমার কাছে শিক্ষা নাও, কারণ আমার স্বভাব কোমল ও নম্র। এতে তোমরা নিজেদের অন্তরে বিশ্রাম পাবে। \v 30 কারণ আমার জোয়াল সহজ ও আমার বোঝা হালকা।” \c 12 \s1 বিশ্রামদিনের প্রভু \p \v 1 সেই সময়ে যীশু বিশ্রামদিনে শস্যক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর শিষ্যেরা ক্ষুধার্ত ছিলেন। তাঁরা শস্যের শিষ ছিঁড়ে খেতে লাগলেন। \v 2 এ দেখে ফরিশীরা তাঁকে বলল, “দেখুন! বিশ্রামদিনে যা করা বিধিসংগত নয়, আপনার শিষ্যেরা তাই করছে।” \p \v 3 তিনি উত্তর দিলেন, “দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা যখন ক্ষুধার্ত ছিলেন, তখন তাঁরা কী করেছিলেন, তা কি তোমরা পাঠ করোনি?\f + \fr 12:3 \fr*\ft \+xt 1 শমূয়েল 21:6\+xt*\ft*\f* \v 4 তিনি ঈশ্বরের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন এবং তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন, যা করা তাঁদের পক্ষে বিধিসংগত ছিল না, কিন্তু কেবলমাত্র যাজকদেরই ছিল। \v 5 কিংবা, তোমরা কি মোশির বিধানে (বিধিগ্রন্থে\f + \fr 12:5 \fr*\ft \+xt গণনা পুস্তক 28:9,10\+xt*\ft*\f*) পড়োনি যে, বিশ্রামদিনে যাজকেরা মন্দির অপবিত্র করলেও তাঁরা নির্দোষ থাকতেন? \v 6 আমি তোমাদের বলছি, মন্দির থেকেও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। \v 7 ‘আমি দয়া চাই, বলিদান নয়,’\f + \fr 12:7 \fr*\ft \+xt হোশেয় 6:6\+xt*\ft*\f* এই বাক্যের মর্ম যদি তোমরা বুঝতে, তাহলে নির্দোষদের তোমরা দোষী সাব্যস্ত করতে না। \v 8 কারণ, মনুষ্যপুত্রই হলেন বিশ্রামদিনের প্রভু।” \p \v 9 সেই স্থান থেকে চলে গিয়ে, তিনি তাদের সমাজভবনে প্রবেশ করলেন। \v 10 সেখানে একটি লোক ছিল, যার একটি হাত শুকিয়ে গিয়েছিল। যীশুকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো সূত্র পাওয়ার সন্ধানে তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “বিশ্রামদিনে সুস্থ করা কি বিধিসংগত?” \p \v 11 তিনি তাদের বললেন, “তোমাদের মধ্যে কারও যদি একটি মেষ থাকে ও সেটি বিশ্রামদিনে গর্তে পড়ে যায়, তাহলে তোমরা কি সেটিকে ধরে তুলবে না? \v 12 একটি মেষের চেয়ে একজন মানুষ আরও কত না মূল্যবান! সেই কারণে, বিশ্রামদিনে ভালো কাজ করা ন্যায়সংগত।” \p \v 13 তারপর তিনি সেই লোকটিকে বললেন, “তোমার হাতটি বাড়িয়ে দাও।” তাই সে হাতটি বাড়িয়ে দিল এবং সেটি অন্য হাতটির মতোই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। \v 14 কিন্তু ফরিশীরা বাইরে গিয়ে কীভাবে যীশুকে হত্যা করতে পারে, তার ষড়যন্ত্র করতে লাগল। \s1 ঈশ্বরের মনোনীত দাস \p \v 15 সেকথা জানতে পেরে, যীশু সেই স্থান থেকে চলে গেলেন। বহু মানুষ তাঁকে অনুসরণ করল এবং তিনি তাদের সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করলেন। \v 16 তিনি তাদের সতর্ক করলেন তারা যেন কাউকে না বলে যে, আসলে তিনি কে। \v 17 এরকম হল যেন ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে কথিত বচন পূর্ণ হয়: \q1 \v 18 “এই দেখো আমার দাস, \q2 আমার মনোনীত, \q1 যাঁকে আমি প্রেম করি, যাঁর প্রতি আমি পরম প্রসন্ন; \q2 আমি তাঁর উপরে আমার আত্মাকে স্থাপন করব, \q2 আর তিনি সর্বজাতির কাছে ন্যায়ের বাণী প্রচার করবেন। \q1 \v 19 তিনি কলহবিবাদ করবেন না, \q2 উচ্চরবে চিৎকার করবেন না, \q2 পথে পথে কেউ তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পাবে না। \q1 \v 20 তিনি দলিত নলখাগড়া ভেঙে ফেলবেন না, \q2 এবং ধূমায়িত সলতে নির্বাপিত করবেন না, \q2 যতক্ষণ না ন্যায়বিচারকে প্রবলরূপে বলবৎ করেন।\f + \fr 12:20 \fr*\ft গ্রিক: জয়ের পথে চালিত করেন।\ft*\f* \q1 \v 21 আর সর্বজাতি তাঁরই নামে তাদের প্রত্যাশা রাখবে।”\f + \fr 12:21 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 42:1-4\+xt*\ft*\f* \s1 যীশু ও বেলসবুল \p \v 22 তারপর তারা একজন ভূতগ্রস্ত ব্যক্তিকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। সে ছিল অন্ধ ও বোবা। যীশু তাকে সুস্থ করলেন, আর সে দৃষ্টি ও বাক্ শক্তি, উভয়ই ফিরে পেল। \v 23 সব মানুষ চমৎকৃত হয়ে বলল, “ইনি কি সেই দাউদের সন্তান?” \p \v 24 কিন্তু ফরিশীরা একথা শুনে বলল, “এই লোকটি তো ভূতদের অধিপতি, বেলসবুলের দ্বারা ভূত তাড়ায়।” \p \v 25 যীশু তাদের মনের কথা বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “যে কোনো রাজ্য অন্তর্বিরোধের ফলে বিভাজিত হলে, তা ধ্বংস হয়, আর যে কোনো নগর বা পরিবার অন্তর্বিরোধের কারণে বিভাজিত হলে, তা স্থির থাকতে পারে না। \v 26 শয়তান যদি শয়তানকে বিতাড়িত করে, সে তার নিজের বিপক্ষেই বিভাজিত হবে। তাহলে কীভাবে তার রাজ্য স্থির থাকবে? \v 27 আর আমি যদি বেলসবুলের দ্বারা ভূত তাড়িয়ে থাকি, তাহলে তোমাদের লোকেরা কার সাহায্যে তাদের তাড়ায়? সেই কারণে, তারাই তোমাদের বিচারক হবে। \v 28 কিন্তু যদি আমি ঈশ্বরের আত্মার সাহায্যে ভূতদের বিতাড়িত করি, তাহলে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের উপরে এসে পড়েছে। \p \v 29 “আবার, কীভাবে কেউ কোনো শক্তিশালী ব্যক্তির বাড়িতে প্রবেশ করে তার ধনসম্পত্তি লুট করতে পারে, যতক্ষণ না সেই শক্তিশালী ব্যক্তিকে বেঁধে ফেলে? কেবলমাত্র তখনই সে তার বাড়ি লুট করতে পারবে। \p \v 30 “যে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষে, আর যে আমার সঙ্গে সংগ্রহ করে না, সে ছড়িয়ে ফেলে। \v 31 আর তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ ও ঈশ্বরনিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দা ক্ষমা করা হবে না। \v 32 কোনো ব্যক্তি মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কিছু বললে তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু কেউ যদি পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বলে, তাকে ইহকাল বা পরকাল, কোনো কালেই ক্ষমা করা হবে না। \p \v 33 “গাছ ভালো হলে তার ফলও ভালো হবে, আবার গাছ মন্দ হলে তার ফলও মন্দ হবে, কারণ ফল দেখেই গাছ চেনা যায়। \v 34 তোমরা বিষধর সাপের বংশধর! তোমাদের মতো মন্দ মানুষ কীভাবে কোনও ভালো কথা বলতে পারে? কারণ হৃদয় থেকে যা উপচে পড়ে মুখ সেকথাই ব্যক্ত করে। \v 35 ভালো মানুষ তার অন্তরের সঞ্চিত ভালো ভাণ্ডার থেকে ভালো বিষয়ই বের করে এবং মন্দ মানুষ তার অন্তরের সঞ্চিত মন্দ ভাণ্ডার থেকে মন্দ বিষয়ই বের করে। \v 36 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, মানুষ যত অনর্থক কথা বলে, বিচারদিনে তাকে তার প্রত্যেকটির জবাবদিহি করতে হবে। \v 37 কারণ তোমাদের কথার দ্বারাই তোমরা অব্যাহতি পাবে, আর তোমাদের কথার দ্বারাই তোমরা অপরাধী সাব্যস্ত হবে।” \s1 যোনার চিহ্ন \p \v 38 এরপরে কয়েকজন ফরিশী ও শাস্ত্রবিদ তাঁকে বলল, “গুরুমহাশয়, আমরা আপনার কাছ থেকে কোনও অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চাই।” \p \v 39 তিনি উত্তর দিলেন, “দুষ্ট ও ব্যভিচারী প্রজন্মই অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চায়! কিন্তু ভাববাদী যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোনো চিহ্নই কাউকে দেওয়া হবে না। \v 40 কারণ যোনা যেমন এক বিশাল মাছের\f + \fr 12:40 \fr*\ft গ্রিক: গ্রাসকারী অতিকায় সামুদ্রিক দানব, যা তিমি-কে নির্দেশ করে।\ft*\f* পেটে তিন দিন ও তিনরাত ছিলেন, মনুষ্যপুত্রও তেমনই তিন দিন ও তিনরাত মাটির নিচে থাকবেন। \v 41 বিচারের দিনে নীনবী নগরের লোকেরা এই প্রজন্মের লোকদের সঙ্গে উঠে দাঁড়াবে ও এদের অভিযুক্ত করবে; কারণ তারা যোনার প্রচারে মন পরিবর্তন করেছিল,\f + \fr 12:41 \fr*\ft \+xt যোনা 2:1,2; 3:5\+xt*\ft*\f* আর এখন যোনার চেয়েও মহান একজন এখানে উপস্থিত আছেন। \v 42 বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রানি\f + \fr 12:42 \fr*\ft \+xt 10:1-10\+xt*দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও প্রাচীন দেশ, যার নাম ছিল, শিবা।\ft*\f* এই প্রজন্মের লোকেদের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের অভিযুক্ত করবেন, কারণ শলোমনের প্রজ্ঞার বাণী শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর সুদূর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন। কিন্তু শলোমনের চেয়েও মহান একজন এখানে উপস্থিত আছেন। \p \v 43 “কোনো মানুষের ভিতর থেকে যখন কোনও দুষ্ট-আত্মা বের হয়ে যায় সে তখন বিশ্রামের খোঁজে শুষ্ক-ভূমিতে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু তার সন্ধান পায় না। \v 44 তখন সে বলে, ‘আমি যে বাড়ি ছেড়ে এসেছি সেখানেই ফিরে যাব।’ যখন সে ফিরে আসে তখন সেই বাড়ি শূন্য, পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল দেখতে পায়। \v 45 তখন সে গিয়ে তার থেকেও দুষ্ট আরও সাতটি আত্মাকে নিজের সঙ্গে নিয়ে আসে, আর তারা ভিতরে প্রবেশ করে সেখানে বাস করতে থাকে। তখন সেই মানুষটির অন্তিমদশা আগের থেকে আরও বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ে। এই দুষ্ট প্রজন্মের দশা সেরকমই হবে।” \s1 যীশুর মা ও ভাইয়েরা \p \v 46 যীশু যখন লোকেদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর মা ও ভাইয়েরা তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 47 এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, “আপনার মা ও ভাইয়েরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন।” \p \v 48 তিনি তাঁকে উত্তর দিলেন, “কে আমার মা আর কারাই বা আমার ভাই?” \v 49 তাঁর শিষ্যদের দিকে ইশারা করে তিনি বললেন, “এই যে আমার মা ও ভাইয়েরা। \v 50 কারণ যে কেউ আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, তারাই আমার ভাই, বোন ও মা।” \c 13 \s1 বীজবপকের রূপক \p \v 1 সেইদিনই যীশু বাড়ি থেকে বের হয়ে সাগরের তীরে গিয়ে বসলেন। \v 2 তাঁর চারপাশে এত লোক সমবেত হল যে তিনি একটি নৌকায় উঠলেন ও তার উপরে বসলেন। সব লোক তীরে দাঁড়িয়ে রইল। \v 3 তখন তিনি রূপকের মাধ্যমে তাদের অনেক কথা বলতে লাগলেন। তিনি বললেন, “একজন কৃষক তার বীজবপন করতে গেল। \v 4 সে যখন বীজ ছড়াচ্ছিল, কিছু বীজ পথের ধারে পড়ল, আর পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল। \v 5 কিছু বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, যেখানে মাটি গভীর ছিল না। মাটি অগভীর থাকাতে সেগুলো দ্রুত অঙ্কুরিত হল, \v 6 কিন্তু যখন সূর্য উঠল চারাগুলি ঝলসে গেল এবং মূল না থাকাতে সেগুলি শুকিয়ে গেল। \v 7 অন্য কিছু বীজ পড়ল কাঁটাঝোপের মধ্যে। সেগুলি বৃদ্ধি পেলে কাঁটাঝোপ তাদের চেপে রাখল। \v 8 তবুও কিছু বীজ উৎকৃষ্ট জমিতে পড়ল ও ফসল উৎপন্ন করল—যা বপন করা হয়েছিল তার শতগুণ, ষাটগুণ বা ত্রিশগুণ পর্যন্ত। \v 9 যাদের কান আছে, তারা শুনুক।” \p \v 10 শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি লোকদের কাছে রূপকের মাধ্যমে কথা বলছেন কেন?” \p \v 11 উত্তরে তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের গুপ্তরহস্য\f + \fr 13:11 \fr*\ft গোপন রহস্য, বা গুপ্ত জ্ঞান\ft*\f* তোমাদের জানতে দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে নয়। \v 12 যার কাছে আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে ও তার অনেক হবে। যার কাছে নেই, তার কাছে যা আছে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। \v 13 এই কারণে আমি তাদের কাছে রূপকের মাধ্যমে কথা বলছি: \q1 “ ‘যেন দেখেও তারা দেখতে না পায়, \q2 শুনেও তারা শুনতে বা বুঝতে না পায়।’ \m \v 14 তাদের মধ্যেই যিশাইয়ের এই ভবিষ্যদ্‌বাণী পূর্ণ হয়েছে: \q1 “ ‘তোমরা সবসময়ই শুনতে থাকবে, \q2 কিন্তু কখনও বুঝতে পারবে না; \q1 তোমরা সবসময়ই দেখতে থাকবে, \q2 কিন্তু কখনও উপলব্ধি করবে না। \q1 \v 15 কারণ এই লোকেদের হৃদয় অনুভূতিহীন হয়েছে, \q2 তারা কদাচিৎ তাদের কান দিয়ে শোনে এবং \q3 তারা তাদের চোখ বন্ধ করেছে। \q1 অন্যথায়, তারা হয়তো তাদের চোখ দিয়ে দেখবে, \q2 তাদের কান দিয়ে শুনবে, \q2 তাদের মন দিয়ে বুঝবে ও ফিরে আসবে, \q1 যেন আমি তাদের আরোগ্য দান করি।’\f + \fr 13:15 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 6:9,10\+xt*\ft*\f* \m \v 16 কিন্তু ধন্য তোমাদের চোখ কারণ সেগুলি দেখতে পায় ও তোমাদের কান কারণ সেগুলি শুনতে পায়। \v 17 কারণ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যা দেখছ, বহু ভাববাদী ও ধার্মিক ব্যক্তি, তা দেখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা তা দেখতে পাননি এবং তোমরা যা শুনছ, তাঁরা তা শুনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শুনতে পাননি। \p \v 18 “তাহলে শোনো, বীজবপকের রূপকের তাৎপর্য কী: \v 19 যখন কেউ স্বর্গরাজ্যের বার্তা শোনে অথচ বোঝে না, তখন সেই পাপাত্মা এসে তার হৃদয়ে যা বপন করা হয়েছিল, তা হরণ করে নেয়। এ সেই বীজ, যা পথের ধারে বপন করা হয়েছিল। \v 20 আর পাথুরে জমিতে বপন করা বীজের সম্বন্ধে বলা হয়েছে, যে বাক্য শোনামাত্র তা সানন্দে গ্রহণ করে, \v 21 কিন্তু যেহেতু তার অন্তরে মূল নেই, সে অল্পকালমাত্র স্থির থাকে। আর বাক্যের কারণে যখন কষ্ট বা অত্যাচার আসে, সে দ্রুত পিছিয়ে যায়। \v 22 আর যে বীজ কাঁটাঝোপে বপন করা হয়েছিল, সে সেই মানুষ যে বাক্য শোনে কিন্তু এই জীবনের সব দুশ্চিন্তা ও ধনসম্পদের প্রতারণা তা চেপে রাখে, এতে তা ফলহীন হয়। \v 23 কিন্তু উৎকৃষ্ট জমিতে যে বীজবপন করা হয়েছিল, সে সেই ব্যক্তি যে বাক্য শোনে ও তা বোঝে। যা বপন করা হয়েছিল সে তার শতগুণ, ষাটগুণ বা ত্রিশগুণ ফসল উৎপন্ন করে।” \s1 শ্যামাঘাসের রূপক \p \v 24 যীশু তাদের আর একটি রূপকের কথা বললেন: “স্বর্গরাজ্য এমন একজন মানুষের মতো, যিনি তার মাঠে উৎকৃষ্ট বীজবপন করলেন। \v 25 কিন্তু সবাই যখন নিদ্রাচ্ছন্ন, তার শত্রুরা এসে গমের সঙ্গে শ্যামাঘাসেরও\f + \fr 13:25 \fr*\ft বা, আগাছা\ft*\f* বীজবপন করে চলে গেল। \v 26 পরে গম অঙ্কুরিত হয়ে যখন শিষ দেখা দিল, তখন শ্যামাঘাসও দেখা গেল। \p \v 27 “এতে সেই মনিবের দাসেরা তার কাছে এসে বলল, ‘মহাশয়, আপনি কি আপনার ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট বীজবপন করেননি? তাহলে এই শ্যামাঘাসগুলি কোথা থেকে এল?’ \p \v 28 “ ‘কোনো শত্রু এরকম করেছে,’ তিনি উত্তর দিলেন। \p “দাসেরা তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আপনি কি চান, আমরা গিয়ে শ্যামাঘাসগুলি উপড়ে ফেলি?’ \p \v 29 “ ‘না,’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘কারণ শ্যামাঘাস উপড়ানোর সময়, তোমরা হয়তো তার সঙ্গে গমও শিকড়শুদ্ধ তুলে ফেলবে। \v 30 শস্য কাটার দিন পর্যন্ত উভয়কে একসঙ্গে বাড়তে দাও। সেই সময়ে, আমি শস্যচয়নকারীদের বলে দেব: প্রথমে শ্যামাঘাস সংগ্রহ করে পোড়াবার জন্য আঁটি বাঁধো; তারপরে গম সংগ্রহ করে আমার গোলাঘরে এনে মজুত করো।’ ” \s1 সর্ষে বীজ ও খামিরের রূপক \p \v 31 তিনি তাদের অন্য একটি রূপক বললেন: “স্বর্গরাজ্য এমন একটি সর্ষে বীজের মতো, যা একজন ব্যক্তি নিয়ে তার মাঠে রোপণ করল। \v 32 যদিও সব বীজের মধ্যে ওই বীজ ক্ষুদ্রতম, তবুও তা যখন বৃদ্ধি পেল তা অন্য সব গাছপালাকে ছাড়িয়ে গেল ও একটি গাছে পরিণত হল। ফলে আকাশের পাখিরা এসে তার শাখাপ্রশাখায় বাসা বাঁধল।” \p \v 33 তিনি তাদের আরও একটি রূপক বললেন: “স্বর্গরাজ্য এমন খামিরের মতো, যা একজন স্ত্রীলোক তিন পাল্লা\f + \fr 13:33 \fr*\fq পাল্লা\fq*\ft —গ্রিক সাটা, প্রায় 18 কেজি (দ্রঃ \+xt আদি পুস্তক 18:6\+xt*)\ft*\f* ময়দার সঙ্গে মেশালো, ফলে সমস্ত তালটিই ফেঁপে উঠল।” \p \v 34 লোকেদের কাছে যীশু এই সমস্ত বিষয় রূপকের মাধ্যমে বললেন; রূপক ব্যবহার না করে তিনি তাদের কাছে কোনো কথাই বললেন না। \v 35 এভাবেই ভাববাদীর মাধ্যমে কথিত বচন পূর্ণ হল: \q1 “আমি রূপকের মাধ্যমে আমার মুখ খুলব, \q2 জগৎ সৃষ্টির লগ্ন থেকে গুপ্ত বিষয়গুলি \q2 আমি উচ্চারণ করব।”\f + \fr 13:35 \fr*\ft \+xt গীত 78:2\+xt*\ft*\f* \s1 শ্যামাঘাসের রূপকটির ব্যাখ্যা \p \v 36 এরপর তিনি সকলকে বিদায় দিয়ে ঘরে ঢুকলেন। তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “মাঠের শ্যামাঘাসের রূপকটি আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করুন।” \p \v 37 তিনি উত্তর দিলেন, “যিনি উৎকৃষ্ট বীজবপন করেন তিনি মনুষ্যপুত্র। \v 38 মাঠ হল জগৎ এবং উৎকৃষ্ট বীজ হল স্বর্গরাজ্যের সন্তানেরা। শ্যামাঘাস হল সেই পাপাত্মার সন্তানেরা। \v 39 আর যে শত্রু তাদের বপন করেছিল সে হল দিয়াবল। শস্য কাটার সময় হচ্ছে যুগের শেষ সময় এবং যাঁরা শস্য কাটবেন তাঁরা হলেন সব স্বর্গদূত। \p \v 40 “যেমনভাবে শ্যামাঘাস উপড়ে ফেলে আগুনে পোড়ানো হয়েছিল যুগের শেষ সময়েও সেরকমই হবে। \v 41 মনুষ্যপুত্র তাঁর দূতদের পাঠাবেন। তাঁরা তাঁর রাজত্ব থেকে যা কিছু পাপের কারণস্বরূপ ও যারা অন্যায় আচরণ করে তাদের উৎখাত করবেন। \v 42 তাঁরা তাদের জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করবেন, যেখানে হবে কেবলই রোদন ও দন্তঘর্ষণ। \v 43 তখন ধার্মিকেরা তাদের পিতার রাজ্যে সূর্যের মতো দীপ্যমান হবে। যার কান আছে, সে শুনুক। \s1 গুপ্তধন ও মুক্তার রূপক \p \v 44 “স্বর্গরাজ্য হল মাঠে লুকোনো ধনসম্পদের মতো। যখন কোনো মানুষ তার সন্ধান পায় সে পুনরায় তা লুকিয়ে রাখে। পরে আনন্দে সে গিয়ে সর্বস্ব বিক্রি করে ও মাঠটি কিনে নিল। \p \v 45 “আবার স্বর্গরাজ্য এমন এক বণিকের মতো, যে উৎকৃষ্ট সব মুক্তার অন্বেষণ করছিল। \v 46 যখন সে অমূল্য এক মুক্তার সন্ধান পেল সে ফিরে গিয়ে সর্বস্ব বিক্রি করে তা কিনে নিল। \s1 টানা-জালের রূপক \p \v 47 “আবার স্বর্গরাজ্য এমন এক টানা-জালের মতো যা সাগরে নিক্ষেপ করা হলে সব ধরনের মাছ ধরা পড়ল। \v 48 জালটি পূর্ণ হলে জেলেরা তা টেনে তীরে তুলল। তারপর তারা বসে ভালো মাছগুলি ঝুড়িতে সংগ্রহ করল, কিন্তু মন্দগুলিকে ফেলে দিল। \v 49 যুগের শেষ সময়ে এরকমই ঘটনা ঘটবে। স্বর্গদূতেরা এসে ধার্মিকদের মধ্যে থেকে দুষ্টদের পৃথক করবেন এবং \v 50 জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে তাদের নিক্ষেপ করবেন, যেখানে হবে কেবলই রোদন ও দন্তঘর্ষণ।” \p \v 51 যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এসব বিষয় বুঝতে পেরেছ?” \p তারা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ।” \p \v 52 তিনি তাদের বললেন, “এই কারণে স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত প্রত্যেক শাস্ত্রবিদ এমন এক গৃহস্থের মতো যিনি তার ভাণ্ডার থেকে নতুন ও পুরোনো, উভয় প্রকার সম্পদই বের করে থাকেন।” \s1 সম্মানহীন ভাববাদী \p \v 53 যীশু যখন এসব রূপক বলা শেষ করলেন, তিনি সেখান থেকে অন্যত্র চলে গেলেন। \v 54 নিজ নগরে ফিরে এসে তিনি সমাজভবনে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। এতে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা প্রশ্ন করল, “এই লোকটি কোথা থেকে এমন জ্ঞান ও এই অলৌকিক ক্ষমতা পেল? \v 55 এ কি সেই কাঠ মিস্ত্রির পুত্র নয়? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম নয়? আর যাকোব, যোষেফ, শিমোন ও যিহূদা কি এর ভাই নয়? \v 56 এর বোনেরা কি আমাদের মধ্যে নেই? তাহলে ও কোথা থেকে এসব পেল?” \p \v 57 এভাবে তারা তাঁর প্রতি বিরূপ হয়ে উঠল। কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “কেবলমাত্র নিজের দেশ ও নিজের পরিবারেই কোনো ভাববাদী সম্মান পান না।” \p \v 58 তাদের বিশ্বাসের অভাবে তিনি সেখানে বিশেষ আর অলৌকিক কাজ করলেন না। \c 14 \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনকে হত্যা করা হল \p \v 1 সেই সময়ে শাসনকর্তা হেরোদ যীশুর সম্মন্ধে শুনে \v 2 তাঁর পরিচারকদের বললেন, “ইনি সেই বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, যিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছেন! সেই কারণে এইসব অলৌকিক ক্ষমতা তাঁর মধ্যে রয়েছে।” \p \v 3 কারণ হেরোদ, তাঁর ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্য যোহনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন ও তাঁকে কারাগারে বন্দি করেছিলেন। \v 4 কারণ যোহন তাঁকে ক্রমাগত বলতেন, “আপনার পক্ষে হেরোদিয়াকে রাখা ন্যায়সংগত নয়।”\f + \fr 14:4 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 18:16; 20:21\+xt*\ft*\f* \v 5 হেরোদ যোহনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় পেতেন কারণ তারা তাকে ভাববাদী বলে মনে করত। \p \v 6 হেরোদের জন্মদিনে হেরোদিয়ার মেয়ে সকলের জন্য নৃত্য করে হেরোদকে এমন সন্তুষ্ট করল যে, \v 7 তিনি শপথ করে বললেন সেই মেয়ে যা চাইবে, তাই তিনি তাকে দেবেন। \v 8 তার মায়ের প্ররোচনায়, সে তখন বলল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা আমাকে থালায় করে এনে দিন।” \v 9 এতে রাজা হেরোদ মর্মাহত হলেন, কিন্তু তাঁর নিজের শপথের জন্য ও যাঁরা তাঁর সঙ্গে ভোজসভায় বসেছিলেন তাঁদের জন্য\f + \fr 14:9 \fr*\ft অর্থাৎ নিজের সম্মান রক্ষা করার জন্য।\ft*\f* তিনি তাঁর অনুরোধ রক্ষার আদেশ দিলেন। \v 10 তিনি কারাগারে লোক পাঠিয়ে যোহনের মাথা কাটালেন। \v 11 তাঁর মাথা একটি থালায় করে এনে সেই মেয়েকে দেওয়া হল। সে তার মায়ের কাছে তা নিয়ে গেল। \v 12 পরে যোহনের শিষ্যেরা এসে তাঁর শরীর নিয়ে গেল ও কবর দিল। তারপর তারা গিয়ে যীশুকে সেই সংবাদ দিল। \s1 পাঁচ হাজার মানুষকে যীশু খাওয়ালেন \p \v 13 সেই ঘটনার সংবাদ শুনে যীশু নৌকায় একান্তে এক নির্জন স্থানে গেলেন। একথা শুনতে পেয়ে অনেক লোক বিভিন্ন নগর থেকে পায়ে হেঁটে তাঁকে অনুসরণ করল। \v 14 তীরে নেমে যীশু যখন অনেক লোককে দেখতে পেলেন, তিনি তাদের প্রতি করুণায় পূর্ণ হলেন ও তাদের মধ্যে অসুস্থ লোকদের সুস্থ করলেন। \p \v 15 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “এ এক নির্জন স্থান, আর ইতিমধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আপনি সবাইকে বিদায় দিন, যেন তারা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য কিছু খাবার কিনতে পারে।” \p \v 16 যীশু উত্তর দিলেন, “ওদের যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরাই ওদের কিছু খেতে দাও।” \p \v 17 তারা উত্তর দিলেন, “এখানে আমাদের কাছে কেবলমাত্র পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ আছে।” \p \v 18 তিনি বললেন, “ওগুলি আমার কাছে নিয়ে এসো।” \v 19 আর তিনি লোকদের ঘাসের উপরে বসার জন্য নির্দেশ দিলেন। সেই পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ নিয়ে যীশু স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ধন্যবাদ দিলেন ও রুটিগুলিকে ভাঙলেন। তারপর তিনি সেগুলি শিষ্যদের দিলেন ও শিষ্যেরা লোকদের দিলেন। \v 20 তারা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। আর শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে বারো ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \v 21 যারা খাবার খেয়েছিল, তাদের সংখ্যা ছিল নারী ও শিশু বাদ দিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ। \s1 যীশু জলের উপরে হাঁটলেন \p \v 22 পর মুহূর্তেই যীশু শিষ্যদের নৌকায় তুলে দিয়ে তাঁর যাওয়ার আগেই সাগরের অপর পারে তাঁদের চলে যেতে বললেন, ইতিমধ্যে তিনি সকলকে বিদায় দিলেন। \v 23 তাদের বিদায় করার পর তিনি একা প্রার্থনা করার জন্য এক পর্বতের উপরে উঠলেন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তিনি সেখানে একাই ছিলেন। \v 24 কিন্তু নৌকাখানি তখন তীর থেকে বেশ খানিকটা দূরে চলে গিয়েছিল। বাতাস প্রতিকূলে বইছিল তাই নৌকা ঢেউয়ে টলোমলো করছিল। \p \v 25 রাত্রির চতুর্থ প্রহরে\f + \fr 14:25 \fr*\ft রোমীয় সময় অনুযায়ী, ভোর 3 টে থেকে সকাল 6 টা পর্যন্ত সময়কাল।\ft*\f* যীশু সাগরের উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে শিষ্যদের কাছে গেলেন। \v 26 শিষ্যেরা তাঁকে সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে দেখে ভীষণ ভয় পেলেন। তাঁরা বললেন, “এ এক ভূত!” আর তাঁরা ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন। \p \v 27 কিন্তু যীশু তক্ষুনি তাঁদের বললেন, “সাহস করো! এ আমি। ভয় পেয়ো না।” \p \v 28 পিতর উত্তর দিলেন, “প্রভু, যদি আপনিই হন, তাহলে আমাকেও জলের উপর দিয়ে আপনার কাছে হেঁটে আসতে বলুন।” \p \v 29 তিনি বললেন, “এসো।” \p তখন পিতর নৌকা থেকে নেমে জলের উপর দিয়ে হেঁটে যীশুর দিকে চললেন। \v 30 কিন্তু যখন তিনি বাতাসের দিকে দৃষ্টি দিলেন, তিনি ভয় পেলেন ও ডুবতে লাগলেন। তিনি চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, আমাকে রক্ষা করুন!” \p \v 31 সঙ্গে সঙ্গে যীশু তাঁর হাত বাড়িয়ে তাঁকে ধরে ফেললেন ও বললেন, “অল্পবিশ্বাসী তুমি, কেন তুমি সন্দেহ করলে?” \p \v 32 আর তাঁরা যখন নৌকায় উঠলেন তখন বাতাস থেমে গেল। \v 33 তখন যাঁরা নৌকায় ছিলেন, তাঁরা তাঁকে প্রণাম করলেন, বললেন, “সত্যি, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র।” \p \v 34 তাঁরা সাগরের অপর পারে গিয়ে গিনেষরৎ প্রদেশে নৌকা থেকে নামলেন। \v 35 সেখানকার লোকেরা যখন তাঁকে চিনতে পারল তারা চতুর্দিকে খবর পাঠাল। লোকেরা সব অসুস্থ ব্যক্তিদের তাঁর কাছে নিয়ে এল, \v 36 আর তাঁর কাছে মিনতি করল, যেন অসুস্থরা কেবলমাত্র তাঁর পোশাকের আঁচলটুকু স্পর্শ করতে পারে। আর যারাই তাঁকে স্পর্শ করল তারা সকলে সুস্থ হল। \c 15 \s1 শুচিশুদ্ধ ও অশুচি \p \v 1 তখন জেরুশালেম থেকে কয়েকজন ফরিশী ও শাস্ত্রবিদ যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, \v 2 “আপনার শিষ্যেরা কেন প্রাচীনদের পরম্পরাগত নিয়ম ভঙ্গ করে? তারা খাবার আগে কেন তাদের হাত ধোয় না?” \p \v 3 যীশু উত্তর দিলেন, “আর তোমরা কেন তোমাদের পরম্পরাগত নিয়মের দোহাই দিয়ে ঈশ্বরের আদেশ ভঙ্গ করো? \v 4 কারণ ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমার বাবা ও তোমার মাকে সম্মান কোরো,’ এবং ‘যে কেউ তার বাবা অথবা মাকে অভিশাপ দেয়, তার অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে।’\f + \fr 15:4 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:12; দ্বিতীয় বিবরণ 5:16; যাত্রা পুস্তক 21:17; 20:9\+xt*\ft*\f* \v 5 কিন্তু তোমরা বলো, কেউ যদি তার বাবা বা মাকে বলে, ‘আমার কাছ থেকে তোমরা যে সাহায্য পেতে তা ঈশ্বরের কাছে উপহারস্বরূপ দেওয়া হয়েছে,’ \v 6 তাহলে সে তার বাবাকে বা মাকে আর তা দিয়ে সম্মান করবে না। এভাবে তোমরা পরম্পরাগত ঐতিহ্যের নামে ঈশ্বরের বাক্যকে অমান্য করে থাকো। \v 7 ভণ্ডের দল! যিশাইয় তোমাদের সম্পর্কে সঠিক ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছেন: \q1 \v 8 “ ‘এই লোকেরা তাদের ওষ্ঠাধরে আমাকে সম্মান করে, \q2 কিন্তু তাদের হৃদয় থাকে আমার থেকে বহুদূরে। \q1 \v 9 বৃথাই তারা আমার উপাসনা করে; \q2 তাদের শিক্ষামালা বিভিন্ন মানুষের শেখানো নিয়মবিধি মাত্র।’ ”\f + \fr 15:9 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 29:13\+xt*\ft*\f* \p \v 10 যীশু সকলকে কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা শোনো ও বোঝো। \v 11 মানুষের মুখ দিয়ে যা প্রবেশ করে তা তাকে অশুচি করে না, কিন্তু যা তার মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে তাই তাকে ‘অশুচি’ করে।” \p \v 12 তখন শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “আপনি কি জানেন, ফরিশীরা একথা শুনে মনে আঘাত পেয়েছে?” \p \v 13 তিনি উত্তর দিলেন, “যে চারাগাছ আমার স্বর্গস্থ পিতা রোপণ করেননি, তা উপড়ে ফেলা হবে। \v 14 ওদের ছেড়ে দাও, ওরা অন্ধ পথপ্রদর্শক। কোনো অন্ধ ব্যক্তি যদি অপর ব্যক্তিকে পথ প্রদর্শন করে তবে উভয়েই গর্তে পড়বে।” \p \v 15 পিতর বললেন, “এই রূপকটি আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করুন।” \p \v 16 যীশু তাদের প্রশ্ন করলেন, “তোমরা কি এখনও এত অবুঝ রয়েছ? \v 17 তোমরা কি দেখতে পাও না, যা কিছু মুখের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে তা পাকস্থলীতে যায় ও তারপর শরীর থেকে বের হয়ে যায়? \v 18 কিন্তু যেসব বিষয় মুখ থেকে বার হয়ে আসে, তা হৃদয় থেকে আসে এবং সেগুলিই কোনো মানুষকে অশুচি করে তোলে। \v 19 কারণ মানুষের হৃদয় থেকে উৎপন্ন হয় কুচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, বিবাহ-বহির্ভূত যৌনাচার, চুরি, মিথ্যা সাক্ষ্য, পরনিন্দা। \v 20 এগুলিই কোনো মানুষকে অশুচি করে, কিন্তু হাত না ধুয়ে খাবার খেলে সে ‘অশুচি’ হয় না।” \s1 কনানীয় নারীর বিশ্বাস \p \v 21 সেই স্থান ত্যাগ করে, যীশু টায়ার ও সীদোন অঞ্চলে চলে গেলেন। \v 22 তারই কাছাকাছি কোনো স্থান থেকে এক কনানীয় নারী তাঁর কাছে এসে চিৎকার করতে লাগল, “প্রভু, দাউদের সন্তান, আমার প্রতি দয়া করুন! আমার মেয়েটি ভূতগ্রস্ত হয়ে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে।” \p \v 23 যীশু তাকে কোনও উত্তর দিলেন না। তাই তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে তাঁকে অনুরোধ জানালেন, “ওকে বিদায় দিন কারণ ও চিৎকার করতে করতে আমাদের পিছনে আসছে।” \p \v 24 তিনি উত্তর দিলেন, “আমাকে কেবলমাত্র ইস্রায়েলের হারানো মেষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।” \p \v 25 সেই নারী এসে তাঁর কাছে নতজানু হয়ে বলল, “প্রভু, আমার উপকার করুন!” \p \v 26 তিনি উত্তর দিলেন, “ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরদের দেওয়া সংগত নয়।” \p \v 27 সে বলল, “হ্যাঁ প্রভু, কিন্তু কুকুরও তো মনিবের টেবিল থেকে খাবারের যেসব টুকরো পড়ে তা খায়!” \p \v 28 তখন যীশু উত্তর দিলেন, “নারী, তোমার বড়োই বিশ্বাস! তোমার অনুরোধ রক্ষা করা হল।” সেই মুহূর্ত থেকে তার মেয়ে সুস্থ হয়ে গেল। \s1 যীশু চার হাজার ব্যক্তিকে খাওয়ালেন \p \v 29 যীশু সেই স্থান ত্যাগ করে গালীল সাগরের তীরে উপস্থিত হলেন। তারপর তিনি এক পাহাড়ের উপরে উঠে বসলেন। \v 30 অসংখ্য লোক খোঁড়া, অন্ধ, পঙ্গু, বোবা ও অন্য অনেক অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এসে তাঁর পায়ের কাছে ফেলে রাখল। তিনি তাদের সুস্থ করলেন। \v 31 লোকেরা যখন দেখল, বোবারা কথা বলছে, পঙ্গুরা সুস্থ হচ্ছে, যারা খোঁড়া তারা চলতে পারছে ও অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছে, তারা বিস্ময়ে হতবাক হল। আর তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। \p \v 32 যীশু তাঁর শিষ্যদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন, “এই লোকদের প্রতি আমার করুণা হচ্ছে; এরা তিন দিন ধরে আমার সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাওয়ার জন্য কিছুই নেই। আমি এদের ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফেরত পাঠাতে চাই না, হয়তো এরা পথেই অজ্ঞান হয়ে পড়বে।” \p \v 33 তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “এত লোককে খাওয়ানোর জন্য এই প্রত্যন্ত স্থানে আমরা কোথায় যথেষ্ট খাবার পাব?” \p \v 34 যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কাছে কতগুলি রুটি আছে?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “সাতটি, আর কয়েকটি ছোটো মাছ।” \p \v 35 তিনি সবাইকে মাটির উপরে বসার আদেশ দিলেন। \v 36 তারপর তিনি সেই সাতটি রুটি ও মাছগুলি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর সেগুলি ভেঙে শিষ্যদের দিলেন ও তারা লোকদের দিলেন। \v 37 সবাই খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। পরে শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে সাতটি ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \v 38 যারা খাবার খেয়েছিল, নারী ও শিশু ছাড়া তাদের সংখ্যা ছিল চার হাজার। \v 39 যীশু সকলকে বিদায় করার পর নৌকাতে উঠলেন ও মগদনের\f + \fr 15:39 \fr*\fq মগদনের \fq*\ft স্থানটি মাগ্দালা নামেও পরিচিত, যেখানে মগ্দলিনী মরিয়মের বাসস্থান ছিল। মার্ক স্থানটি দলমনুথা প্রদেশ বলে উল্লেখ করেছেন (\+xt মার্ক 8:10\+xt*)\ft*\f* সীমানায় চলে গেলেন। \c 16 \s1 অলৌকিক চিহ্নের দাবি \p \v 1 ফরিশী ও সদ্দূকীরা যীশুর কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে বলল যেন তিনি আকাশ থেকে তাদের কোনো চিহ্ন দেখান। \p \v 2 তিনি উত্তর দিলেন, “যখন সন্ধ্যা আসে, তোমরা বলো, ‘আবহাওয়া মনোরম হবে, কারণ আকাশ লাল হয়েছে,’ আবার সকালবেলায় বলো, \v 3 ‘আজ ঝড় হবে, কারণ আকাশ লাল ও মেঘাচ্ছন্ন হয়েছে।’ তোমরা আকাশের অবস্থা দেখে আবহাওয়ার ব্যাখ্যা করতে পারো, কিন্তু সময়ের চিহ্ন ব্যাখ্যা করতে পারো না। \v 4 এক দুষ্ট ও ব্যভিচারী প্রজন্ম অলৌকিক চিহ্ন খোঁজে কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কিছুই তাদের দেওয়া হবে না।” তখন যীশু তাদের ছেড়ে চলে গেলেন। \s1 ফরিশী ও সদ্দূকীদের খামির \p \v 5 তারা যখন সাগরের অপর পারে গেলেন, শিষ্যেরা রুটি সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। \v 6 যীশু তাদের বললেন, “সতর্ক হও, ফরিশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে তোমরা সাবধান থেকো।” \p \v 7 তারা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে বললেন, “আমরা রুটি আনিনি বলেই তিনি এরকম বলছেন।” \p \v 8 তাদের আলোচনা বুঝতে পেরে যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “অল্পবিশ্বাসী তোমরা, রুটি নেই বলে কেন নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছ? \v 9 তোমরা কি এখনও বুঝতে পারোনি? তোমাদের কি পাঁচটি রুটি ও পাঁচ হাজার মানুষের কথা মনে পড়ে না, তখন কত ঝুড়ি উদ্বৃত্ত তোমরা তুলে নিয়েছিলে? \v 10 কিংবা সেই সাতটি রুটি ও চার হাজার মানুষ, কত ঝুড়ি তোমরা সংগ্রহ করেছিলে? \v 11 আমি যে তোমাদের রুটির কথা বলিনি তা তোমরা বুঝতে পারোনি? তোমরা ফরিশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সাবধান থেকো।” \v 12 তখন তারা বুঝতে পারলেন যে, তিনি তাদের রুটিতে ব্যবহৃত খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেননি, কিন্তু ফরিশী ও সদ্দূকীদের দেওয়া শিক্ষা থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। \s1 খ্রীষ্ট সম্পর্কে পিতরের স্বীকারোক্তি \p \v 13 যীশু যখন কৈসরিয়া-ফিলিপী অঞ্চলে এলেন, তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “মনুষ্যপুত্র কে, এ সম্বন্ধে লোকে কী বলে?” \p \v 14 তাঁরা উত্তর দিলেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন; অন্যেরা বলে এলিয়; আর কেউ কেউ বলে, যিরমিয় বা ভাববাদীদের মধ্যে কোনও একজন।” \p \v 15 “কিন্তু তোমরা কী বলো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী বলো, আমি কে?” \p \v 16 শিমোন পিতর উত্তর দিলেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।” \p \v 17 যীশু উত্তর দিলেন, “যোনার পুত্র শিমোন ধন্য তুমি, কারণ রক্তমাংসের কোনো মানুষ এ তোমার কাছে প্রকাশ করেনি, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতাই প্রকাশ করেছেন। \v 18 আর আমি তোমাকে বলি, তুমি পিতর, আর আমি এই পাথরের উপরে আমার মণ্ডলী নির্মাণ করব। আর পাতালের দ্বারসকল\f + \fr 16:18 \fr*\ft প্রাচীনকালে উঁচু প্রাচীর-ঘেরা নগরগুলির প্রবেশ ও প্রস্থানের বিশাল দ্বার (তোরণদ্বার) বা ফটকগুলির ভিতরে সেনা সমাবেশ করা হত শত্রু-অনুপ্রবেশ রোধ করতে। বাইরে শত্রুপক্ষ সেনা সমাবেশ করত ফটক ভেঙে নগর দখল করার জন্য। এই রূপকটিই যীশু ব্যবহার করেছেন শয়তানের প্রতিরক্ষা বলকে ইঙ্গিত করতে। এছাড়া পাতাল বলতে কবর, বা নরকও বোঝায়।\ft*\f* এর বিপক্ষে জয়ী হতে পারবে না। \v 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবি দেব; তোমরা পৃথিবীতে যা আবদ্ধ করবে তা স্বর্গেও আবদ্ধ হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু মুক্ত করবে তা স্বর্গেও মুক্ত হবে।” \v 20 তারপর তিনি তাঁর শিষ্যদের সতর্ক করে বলে দিলেন, তিনি যে খ্রীষ্ট একথা তাঁরা যেন কাউকে না বলেন। \s1 যীশু নিজের মৃত্যু পূর্বঘোষণা করলেন \p \v 21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের কাছে স্পষ্টরূপে বলতে লাগলেন যে, তাঁকে অবশ্যই জেরুশালেমে যেতে হবে। সেখানে তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে দুঃখভোগ করতে হবে; প্রাচীনবর্গ, মহাযাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে। তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তৃতীয় দিনে তাঁর পুনরুত্থান হবে। \p \v 22 পিতর তাঁকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে অনুযোগ করে বললেন, “প্রভু, তা নয়! এরকম আপনার প্রতি কখনও ঘটবে না!” \p \v 23 যীশু ফিরে পিতরকে বললেন, “দূর হও শয়তান! তুমি আমার কাছে এক বাধাস্বরূপ; তোমার মনে ঈশ্বরের বিষয়গুলি নেই কেবল মানুষের বিষয়গুলিই আছে।” \p \v 24 তারপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে। \v 25 কারণ যে কেউ তার প্রাণরক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু কেউ যদি আমার কারণে তার প্রাণ হারায় সে তা লাভ করবে। \v 26 কেউ যদি সমস্ত জগতের অধিকার লাভ করে ও তার নিজের প্রাণ হারায়, তাহলে তার কী লাভ হবে? কিংবা কোনো মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে আর কী দিতে পারে? \v 27 কারণ মনুষ্যপুত্র তাঁর দূতদের সঙ্গে নিয়ে নিজ পিতার মহিমায় ফিরে আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কাজ অনুসারে ফল দেবেন। \p \v 28 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ, যতদিন না মনুষ্যপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে দেখবে ততদিন পর্যন্ত মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না।” \c 17 \s1 যীশুর রূপান্তর \p \v 1 ছয় দিন পর, যীশু তাঁর সঙ্গে পিতর, যাকোব ও তাঁর ভাই যোহনকে নিয়ে অতি উচ্চ এক পর্বতে উঠলেন। \v 2 সেখানে তিনি তাঁদের সামনে রূপান্তরিত হলেন। তাঁর মুখ সূর্যের মতো জ্যোতির্ময় হয়ে উঠল এবং তাঁর পোশাক আলোর মতো ধবধবে সাদা হয়ে উঠল। \v 3 ঠিক সেই সময়, তাঁদের সামনে মোশি ও এলিয় আবির্ভূত হয়ে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। \p \v 4 পিতর যীশুকে বললেন, “প্রভু, এখানে থাকা আমাদের পক্ষে ভালোই হবে। আপনি যদি চান, আমি তিনটি তাঁবু নির্মাণ করি, একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য ও একটি এলিয়ের জন্য।” \p \v 5 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় একটি উজ্জ্বল মেঘ তাঁদের ঢেকে ফেলল। আর মেঘ থেকে এক কণ্ঠস্বর ধ্বনিত হল, “ইনিই আমার পুত্র, যাঁকে আমি প্রেম করি; এঁর প্রতি আমি পরম প্রসন্ন। তোমরা এঁর কথা শোনো।” \p \v 6 শিষ্যেরা একথা শুনে ভূমিতে উবুড় হয়ে পড়লেন এবং অত্যন্ত ভীত হলেন। \v 7 কিন্তু যীশু এসে তাঁদের স্পর্শ করে বললেন, “ওঠো, ভয় কোরো না।” \v 8 তাঁরা যখন চোখ তুলে তাকালেন, তাঁরা আর কোনো মানুষকে দেখতে পেলেন না, কেবলমাত্র যীশু একা সেখানে ছিলেন। \p \v 9 পর্বত থেকে নেমে আসার সময়, যীশু তাঁদের এই আদেশ দিলেন, “মনুষ্যপুত্র মৃতলোক থেকে উত্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত, তোমরা যা দেখলে সেকথা কাউকে বোলো না।” \p \v 10 শিষ্যেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “শাস্ত্রবিদরা তাহলে কেন বলেন যে, এলিয়কে অবশ্যই প্রথমে আসতে হবে?” \p \v 11 যীশু উত্তর দিলেন, “একথা নিশ্চিত যে, এলিয় এসে সব বিষয় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবেন। \v 12 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয় ইতিমধ্যে এসে গেছেন, আর তারা তাঁকে চিনতে পারেনি। তারা তাঁর প্রতি যেমন ইচ্ছা, তেমনই ব্যবহার করেছে। একইভাবে, মনুষ্যপুত্রও তাদের হাতে কষ্টভোগ করতে চলেছেন।” \v 13 শিষ্যেরা তখন বুঝতে পারলেন যে, তিনি তাঁদের বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের কথা বলছেন। \s1 যীশু মৃগীরোগগ্রস্ত একটি ছেলেকে সুস্থ করলেন \p \v 14 তাঁরা যখন অনেক লোকের মাঝে এলেন, একজন লোক যীশুর সামনে এসে নতজানু হয়ে বলল, \v 15 “প্রভু, আমার পুত্রের প্রতি দয়া করুন, সে মৃগীরোগগ্রস্ত এবং অত্যন্ত যন্ত্রণাভোগ করছে। সে প্রায়ই আগুনে বা জলে লাফ দিয়ে পড়ে। \v 16 আপনার শিষ্যদের কাছে আমি তাকে এনেছিলাম, কিন্তু তাঁরা তাকে সুস্থ করতে পারেননি।” \p \v 17 যীশু উত্তর দিলেন, “ওহে অবিশ্বাসী ও পথভ্রষ্ট প্রজন্ম, আমি কত কাল তোমাদের সঙ্গে থাকব? আমি কত কাল তোমাদের সহ্য করব? ছেলেটিকে এখানে আমার কাছে নিয়ে এসো।” \v 18 যীশু সেই ভূতকে ধমক দিলেন, এতে ছেলেটির মধ্য থেকে সে বের হয়ে এল, আর সেই মুহূর্ত থেকে সে সুস্থ হয়ে উঠল। \p \v 19 তারপর শিষ্যেরা গোপনে যীশুর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কেন ওটি ছাড়াতে পারলাম না?” \p \v 20 তিনি উত্তর দিলেন, “কারণ তোমাদের বিশ্বাস অতি অল্প। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের বিশ্বাস যদি সর্ষের দানা যেমন ক্ষুদ্র তেমনই হয়, তোমরা এই পর্বতটিকে বলবে, ‘এখান থেকে ওখানে সরে যাও,’ আর সেটি সরে যাবে। তোমাদের পক্ষে কোনো কিছুই অসম্ভব থাকবে না।” \v 21 কিন্তু প্রার্থনা ও উপোস ছাড়া এই জাতি কোনো কিছুতেই বের হয় না।\f + \fr 17:21 \fr*\ft প্রাচীন কয়েকটি পাণ্ডুলিপিতে এই পদের কথাগুলি যুক্ত করা হয়নি\ft*\f* \p \v 22 পরে তারা যখন গালীলে একত্র হলেন, তিনি তাদের বললেন, “মনুষ্যপুত্রকে লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। \v 23 তারা তাঁকে হত্যা করবে, কিন্তু তৃতীয় দিনে তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন।” এতে শিষ্যেরা খুব দুঃখিত হলেন। \s1 মন্দিরের কর \p \v 24 যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা কফরনাহূমে উপস্থিত হলে পর মন্দিরের দুই-দ্রাকমা কর আদায়কারীরা এসে পিতরকে জিজ্ঞাসা করল, “তোমাদের গুরুমহাশয় কি মন্দিরের কর\f + \fr 17:24 \fr*\ft গ্রিক: ড্রাকমা, অর্থাৎ দু-দিনের পারিশ্রমিকের সমান মূল্যের রুপোর মুদ্রা। বিধি অনুসারে দুই ড্রাকমা ছিল মন্দির-ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য ধার্য প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দেয় দক্ষিণা, বা ধর্মীয় কর।\ft*\f* দেন না?” \p \v 25 তিনি উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, তিনি দেন।” \p পিতর যখন বাড়িতে ফিরে এলেন, যীশুই প্রথমে জিজ্ঞাসা করলেন, “শিমোন, তুমি কী মনে করো, পৃথিবীর রাজারা কার কাছ থেকে শুল্ক ও কর আদায় করে থাকেন—তাঁর নিজের সন্তানদের কাছে, না অন্যদের কাছ থেকে?” \p \v 26 পিতর উত্তর দিলেন, “অন্যদের কাছ থেকে।” \p যীশু তাকে বললেন, “তাহলে তো সন্তানেরা দায়মুক্ত! \v 27 কিন্তু আমরা যেন তাদের মনে আঘাত না দিই, এই কারণে তুমি সাগরে গিয়ে তোমার বড়শি ফেলো। প্রথমে যে মাছটি তুমি ধরবে, সেটি নিয়ে তার মুখ খুললে তুমি চারদিনের পারিশ্রমিকের সমান একটি মুদ্রা পাবে। সেটি নিয়ে তোমার ও আমার কর-বাবদ ওদের দিয়ে দাও।” \c 18 \s1 স্বর্গরাজ্যের মহত্তম মানুষ \p \v 1 সেই সময়ে, শিষ্যেরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “স্বর্গরাজ্যে কে শ্রেষ্ঠ?” \p \v 2 তিনি একটি ছোটো শিশুকে তাঁর কাছে ডেকে সবার মাঝে দাঁড় করালেন। \v 3 তিনি বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা মন পরিবর্তন করে যদি এই ছোটো শিশুদের মতো না হও তবে কোনোমতেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। \v 4 অতএব, যে কেউ এই শিশুর মতো নিজেকে নম্র করে, সেই স্বর্গরাজ্যে সব থেকে মহান। \v 5 আবার যে কেউ এর মতো এক ছোটো শিশুকে স্বাগত জানায়, সে আমাকেই স্বাগত জানায়। \p \v 6 “কিন্তু এই ছোটো শিশুদের যারা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কোনো একজনকে কেউ যদি পাপ করতে বাধ্য করে, তাহলে তার গলায় বড়ো একটি জাঁতা বেঁধে সমুদ্রের অথৈ জলে ডুবিয়ে দেওয়া তার পক্ষে ভালো হবে। \v 7 ধিক্কার সেই জগৎকে কারণ জগতের বিভিন্ন প্রলোভন মানুষকে পাপের মুখে ফেলে। এসব বিষয় অবশ্যই উপস্থিত হবে, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে যার দ্বারা তা উপস্থিত হবে! \v 8 যদি তোমার হাত বা পা যদি পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। কারণ দু-হাত ও দুই পা নিয়ে নরকের অনির্বাণ আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং বিকলাঙ্গ বা পঙ্গু হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভালো। \v 9 আর তোমার চোখ যদি পাপের কারণ হয়, তাহলে তা উপড়ে ফেলো ও ছুঁড়ে ফেলে দাও। দুই চোখ নিয়ে নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং এক চোখ নিয়ে জীবনে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভালো। \p \v 10-11 “দেখো, এই ছোটো শিশুদের একজনকেও যেন কেউ তুচ্ছজ্ঞান না করে। কারণ আমি তোমাদের বলছি, স্বর্গে তাদের দূতেরা প্রতিনিয়ত আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখদর্শন করে থাকেন।\f + \fr 18:10-11 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর আছে, \ft*\fqa কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল, তা উদ্ধার করার জন্য মনুষ্যপুত্র এসেছেন।\fqa*\f* \s1 হারানো মেষের রূপক \p \v 12 “তোমরা কী মনে করো? কোনো মানুষের যদি একশোটি মেষ থাকে এবং তাদের মধ্যে কোনো একটি যদি ভুল পথে যায়, তাহলে সে কি নিরানব্বইটি মেষ পাহাড়ের উপরে ছেড়ে ভুল পথে যাওয়া সেই মেষটি খুঁজতে যাবে না? \v 13 আর যদি সে সেটি খুঁজে পায়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে নিরানব্বইটি মেষ ভুল পথে যায়নি, সেগুলির চেয়ে সে ওই একটি মেষের জন্য বেশি আনন্দিত হবে। \v 14 একইভাবে, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার এমন ইচ্ছা নয় যে এই ক্ষুদ্রজনেদের মধ্যে একজনও হারিয়ে যায়। \s1 ভাইয়ের করা অপরাধ \p \v 15 “তোমার ভাই অথবা বোন যদি তোমার বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ\f + \fr 18:15 \fr*\ft বা, পাপ।\ft*\f* করে, তাহলে যাও, যখন তোমরা দুজন থাকো, তার দোষ তাকে দেখিয়ে দাও। যদি সে তোমার কথা শোনে, তাহলে তুমি তোমার ভাইকে জয় করলে। \v 16 কিন্তু সে যদি কথা না শোনে, তাহলে আরও দুই একজনকে সঙ্গে নিয়ে যাও, যেন ‘দুই বা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে কোনো বিষয় সত্যি বলে প্রমাণিত হবে।’\f + \fr 18:16 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 19:15\+xt*\ft*\f* \v 17 যদি সে তাদের কথাও শুনতে না চায়, তাহলে মণ্ডলীকে বলো; আর সে যদি মণ্ডলীর কথাও শুনতে না চায়, তাহলে পরজাতীয় বা কর আদায়কারীদের সঙ্গে তুমি যে রকম ব্যবহার করো, তার সঙ্গে তেমনই করো। \p \v 18 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা পৃথিবীতে যা আবদ্ধ করবে তা স্বর্গেও আবদ্ধ হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু মুক্ত করবে তা স্বর্গেও মুক্ত হবে। \p \v 19 “আবার, আমি সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে দুজন এই পৃথিবীতে একমত হয়ে যা কিছু চাইবে, আমার স্বর্গস্থ পিতা তোমাদের জন্য তাই করবেন। \v 20 কারণ যেখানে দুই কিংবা তিনজন আমার নামে একত্র হয়, সেখানে আমি তাদের মধ্যে উপস্থিত।” \s1 নির্দয় দাসের রূপক \p \v 21 তখন পিতর যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আমার ভাই কতবার আমার বিরুদ্ধে অপরাধ করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাতবার পর্যন্ত?” \p \v 22 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে বলছি, সাতবার নয়, কিন্তু সত্তর গুণ সাতবার পর্যন্ত। \p \v 23 “এই কারণে স্বর্গরাজ্য এমন এক রাজার মতো, যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসেব চাইলেন। \v 24 হিসেব নিকেশ করার সময় একজন দাস, যে তাঁর কাছে দশ হাজার তালন্তের\f + \fr 18:24 \fr*\ft অর্থাৎ, কয়েক কোটি টাকা।\ft*\f* ঋণী ছিল, তাকে নিয়ে আসা হল। \v 25 যেহেতু সে ঋণ শোধ করতে অক্ষম ছিল, তাঁর মনিব আদেশ দিলেন যেন তাকে, তার স্ত্রী ও সন্তানদের ও তার সর্বস্ব বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা হয়। \p \v 26 “এতে সেই দাস তাঁর সামনে নতজানু হয়ে পড়ল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য ধরুন,’ সে মিনতি জানাল, ‘আমি সব দেনা শোধ করে দেব।’ \v 27 সেই দাসের মনিব তাঁকে দয়া করে তার ঋণ মকুব করলেন ও তাকে চলে যেতে দিলেন। \p \v 28 “কিন্তু সেই দাস বাইরে গিয়ে তার এক সহদাসকে দেখতে পেল। সে তার কাছে মাত্র একশো দিনার\f + \fr 18:28 \fr*\ft মাত্র কয়েকশো টাকা।\ft*\f* ঋণ করেছিল। সে তাকে ধরে তার গলা টিপে দাবি করল, ‘আমার কাছে যে ঋণ করেছিস তা শোধ কর।’ \p \v 29 “তার সহদাস তার পায়ে পড়ে মিনতি করল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য ধরুন, আমি আপনার ঋণ শোধ করে দেব!’ \p \v 30 “সে কিন্তু শুনতে চাইল না। পরিবর্তে, সে চলে গিয়ে ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখল। \v 31 অন্য সব সহদাস যখন এসব ঘটতে দেখল, তারা অত্যন্ত রেগে গিয়ে তাদের মনিবকে যা ঘটেছিল সব বলল। \p \v 32 “তখন মনিব সেই দাসকে ভিতরে ডাকলেন। তিনি বললেন, ‘দুষ্ট দাস তুমি, আমার কাছে তুমি মিনতি করায় আমি তোমার সব ঋণ মকুব করেছিলাম। \v 33 আমি যেমন তোমাকে দয়া করেছিলাম, তোমারও কি উচিত ছিল না তোমার সহদাসকে দয়া করা?’ \v 34 ক্রুদ্ধ হয়ে তার মনিব তাকে কারাধ্যক্ষদের হাতে নিপীড়িত হওয়ার জন্য সমর্পণ করলেন, যতদিন না পর্যন্ত সে তার সমস্ত ঋণ শোধ করে। \p \v 35 “তোমরা যদি প্রত্যেকে তোমাদের ভাইকে মনেপ্রাণে ক্ষমা না করো, তাহলে আমার স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের প্রতি এরকমই আচরণ করবেন।” \c 19 \s1 বিবাহবিচ্ছেদ \p \v 1 যীশু এসব কথা বলা শেষ করে গালীল প্রদেশ ত্যাগ করলেন এবং জর্ডন নদীর অপর পারে যিহূদিয়ার অঞ্চলে উপস্থিত হলেন। \v 2 অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল, আর তিনি সেখানে অসুস্থ মানুষদের সুস্থ করলেন। \p \v 3 কয়েকজন ফরিশী তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে এসে প্রশ্ন করল, “কোনো পুরুষের পক্ষে তার স্ত্রীকে যে কোনো কারণে পরিত্যাগ করা কি বিধিসংগত?” \p \v 4 তিনি উত্তর দিলেন, “তোমরা কি পাঠ করোনি যে, প্রথমে সৃষ্টিকর্তা ‘তাদের পুরুষ ও স্ত্রীলোক করে সৃষ্টি করেছিলেন?’ \v 5 তিনি বললেন, ‘এই কারণে একজন পুরুষ তার পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করবে, তার স্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হবে ও সেই দুজন একাঙ্গ হবে।’\f + \fr 19:5 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 1:27; 2:24\+xt*\ft*\f* \v 6 তাই, তারা আর দুজন নয়, কিন্তু অভিন্নসত্তা। সেই কারণে, ঈশ্বর যা সংযুক্ত করেছেন, কোনো মানুষ তা বিচ্ছিন্ন না করুক।” \p \v 7 তারা জিজ্ঞাসা করল, “তাহলে মোশি কেন ত্যাগপত্র লিখে দিয়ে স্ত্রীকে বিদায় দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন?” \p \v 8 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমাদের মন কঠোর বলেই মোশি তোমাদের স্ত্রীকে ত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রথম থেকে এরকম বিধান ছিল না। \v 9 আমি তোমাদের বলছি, বৈবাহিক জীবনে অবিশ্বস্ততার\f + \fr 19:9 \fr*\ft বা, ব্যভিচার।\ft*\f* কারণ ছাড়া কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে অপর কোনো নারীকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।” \p \v 10 শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, “স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক যদি এরকম হয়, তাহলে বিবাহ না করাই ভালো।” \p \v 11 যীশু উত্তর দিলেন, “সবাই একথা গ্রহণ করতে পারে না, কিন্তু যাদের এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই পারে। \v 12 কারণ কেউ কেউ নপুংসক, যেহেতু তারা সেইরকম হয়েই জন্মগ্রহণ করেছে; অন্যদের মানুষেরা নপুংসক করেছে; এছাড়াও আরও কিছু মানুষ স্বর্গরাজ্যের কারণে বিবাহ করতে অস্বীকার করেছে। যে এ বিষয় গ্রহণ করতে পারে সে গ্রহণ করুক।” \s1 ছোটো শিশুরা ও যীশু \p \v 13 এরপর ছোটো শিশুদের যীশুর কাছে নিয়ে আসা হল, যেন তিনি তাদের উপরে হাত রেখে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যারা তাদের এনেছিল শিষ্যেরা তাদের বকুনি দিলেন। \p \v 14 যীশু বললেন, “ছোটো শিশুদের আমার কাছে আসতে দাও, ওদের বাধা দিয়ো না। কারণ স্বর্গরাজ্য এদের মতো মানুষদেরই।” \v 15 তিনি তাদের উপরে হাত রেখে প্রার্থনা করে সেখান থেকে চলে গেলেন। \s1 ধনী যুবক ও ঈশ্বরের রাজ্য \p \v 16 সেই সময় একজন লোক এসে যীশুকে জিজ্ঞাসা করল, “গুরুমহাশয়, অনন্ত জীবন লাভের জন্য আমাকে কী ধরনের সৎকর্ম করতে হবে?” \p \v 17 যীশু উত্তর দিলেন, “আমাকে সৎ-এর বিষয়ে কেন জিজ্ঞাসা করো? সৎ কেবলমাত্র একজনই আছেন। তুমি যদি জীবনে প্রবেশ করতে চাও, তাহলে অনুশাসনগুলি\f + \fr 19:17 \fr*\ft অর্থাৎ, দশাজ্ঞা।\ft*\f* পালন করো।” \p \v 18 লোকটি জিজ্ঞাসা করল, “কোন কোন অনুশাসন?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না, \v 19 তোমার পিতামাতাকে সম্মান কোরো ও তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতোই প্রেম কোরো।”\f + \fr 19:19 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:12-16; দ্বিতীয় বিবরণ 5:16-20; লেবীয় পুস্তক 19:18\+xt*\ft*\f* \p \v 20 যুবকটি বলল, “এ সমস্ত আমি পালন করেছি। আমার আর কী ত্রুটি আছে?” \p \v 21 যীশু উত্তর দিলেন, “তুমি যদি সিদ্ধ হতে চাও, তাহলে যাও, গিয়ে তোমার সব সম্পত্তি বিক্রি করে দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে তুমি স্বর্গে ধন লাভ করবে। তারপর এসে আমাকে অনুসরণ করো।” \p \v 22 এই কথা শুনে যুবকটি দুঃখিত হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর ধনসম্পত্তি ছিল। \p \v 23 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, স্বর্গরাজ্যে ধনী মানুষের প্রবেশ করা কঠিন। \v 24 আবার আমি তোমাদের বলছি, ধনী মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সুচের ছিদ্রপথ দিয়ে উটের পার হওয়া সহজ।” \p \v 25 শিষ্যেরা একথা শুনে অত্যন্ত আশ্চর্য হলেন ও জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে কে পরিত্রাণ পেতে পারে?” \p \v 26 যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে এটা অসম্ভব, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব।” \p \v 27 পিতর উত্তরে তাঁকে বললেন, “আপনাকে অনুসরণ করার জন্য আমরা সবকিছু ত্যাগ করেছি। আমরা তাহলে কী পাব?” \p \v 28 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, সব বিষয়ের নতুন সৃষ্টিতে যখন মনুষ্যপুত্র মহিমার সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা, যারা আমার অনুগামী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের বারো বংশের বিচার করবে। \v 29 আর যে কেউ আমার কারণে তার বাড়ি বা ভাইদের বা বোনেদের বা বাবাকে বা মাকে বা সন্তানদের বা স্থাবর সম্পত্তি ত্যাগ করেছে, সে তার শতগুণ লাভ করবে ও অনন্ত জীবনের অধিকারী হবে। \v 30 কিন্তু যারা প্রথম, এমন অনেকে শেষে পড়বে, আর যারা শেষে তারা প্রথমে আসবে।” \c 20 \s1 দ্রাক্ষাক্ষেতের কর্মীদের রূপক \p \v 1 “কারণ স্বর্গরাজ্য এমন এক গৃহকর্তার মতো, যিনি তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেতে কর্মী নিয়োগের জন্য ভোরবেলা বাইরে গেলেন। \v 2 কর্মীদের দৈনিক এক দিনার\f + \fr 20:2 \fr*\fq দিনার\fq*\ft —একদিনের স্বাভাবিক মজুরি। রোমীয় সৈনিকেরা প্রতিদিন এক দিনার করে মজুরি পেত।\ft*\f* পারিশ্রমিক দিতে সম্মত হয়ে তাদের তিনি নিজের দ্রাক্ষাক্ষেতে পাঠিয়ে দিলেন। \p \v 3 “সকাল নয়টার সময়\f + \fr 20:3 \fr*\ft গ্রিক: তৃতীয় ঘণ্টায়।\ft*\f* তিনি বাইরে গিয়ে দেখলেন, আরও কিছু মানুষ বাজারে নিষ্কর্মা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। \v 4 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরাও গিয়ে আমার দ্রাক্ষাক্ষেতে কাজ করো, যা ন্যায়সংগত তা আমি তোমাদের দেব।’ \v 5 তাতে তারাও গেল। \p “বেলা বারোটার\f + \fr 20:5 \fr*\ft গ্রিক: ষষ্ঠ ঘণ্টায়।\ft*\f* সময় ও বিকেল তিনটের\f + \fr 20:5 \fr*\ft গ্রিক: নবম ঘণ্টায়।\ft*\f* সময় তিনি আবার বাইরে গিয়ে সেরকম করলেন। \v 6 বিকেল প্রায় পাঁচটার সময়\f + \fr 20:6 \fr*\ft গ্রিক: একাদশ ঘণ্টায়।\ft*\f* তিনি বাইরে গিয়ে দেখলেন, আরও কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কেন এখানে সমস্ত দিন নিষ্কর্মা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছ?’ \p \v 7 “তারা উত্তর দিল, ‘কারণ কেউই আমাদের কাজে লাগায়নি।’ \p “তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরাও গিয়ে আমার দ্রাক্ষাক্ষেতে কাজ করো।’ \p \v 8 “পরে সন্ধ্যা হলে, দ্রাক্ষাক্ষেতের মালিক তাঁর নায়েবকে ডেকে বললেন, ‘সব কর্মীকে ডেকে শেষের জন থেকে শুরু করে প্রথমজন পর্যন্ত প্রত্যেককে তাদের মজুরি দিয়ে দাও।’ \p \v 9 “বিকেল পাঁচটায় যাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তারা এসে সকলে এক দিনার করে পেল। \v 10 তখন যাদের সর্বপ্রথমে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তারা এসে আরও বেশি পারিশ্রমিক আশা করল। কিন্তু তারা প্রত্যেকে এক দিনার করেই পেল। \v 11 তারা তা পেয়ে গৃহকর্তার বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল। \v 12 তারা বলল, ‘এই লোকেরা, যাদের বিকেল পাঁচটায় নিয়োগ করা হয়েছিল, তারা তো কেবলমাত্র এক ঘণ্টা কাজ করেছে। আর আমরা যারা সমস্ত দিনের কাজের ভারবহন করে রোদের তাপে পুড়েছি, আপনি কি না আমাদের সমান মজুরি তাদের দিলেন।’ \p \v 13 “কিন্তু তিনি তাদের একজনকে উত্তর দিলেন, ‘বন্ধু, আমি তোমার প্রতি কোনও অবিচার করিনি। তুমি কি এক দিনারের বিনিময়ে কাজ করতে সম্মত হওনি? \v 14 তোমার পাওনা নিয়ে চলে যাও। আমার ইচ্ছা আমি শেষে নিয়োগ করা লোকটিকেও তোমার সমানই মজুরি দেব। \v 15 আমার অর্থ নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করার কি অধিকার আমার নেই? না, আমি সদয় বলে তুমি ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েছ?’ \p \v 16 “এভাবেই শেষের জন প্রথম হবে ও প্রথমের জন শেষে পড়বে।” \s1 যীশু তৃতীয়বার নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন \p \v 17 এসময় যীশু যখন জেরুশালেমের পথে যাচ্ছিলেন, তিনি সেই বারোজন শিষ্যকে এক পাশে ডেকে বললেন, \v 18 “আমরা জেরুশালেম পর্যন্ত যাচ্ছি, আর মনুষ্যপুত্রকে প্রধান যাজকদের ও শাস্ত্রবিদদের হাতে সমর্পণ করা হবে। তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করবে \v 19 ও অইহুদিদের হাতে তুলে দেবে। তারা তাঁকে বিদ্রুপ করবে ও চাবুক দিয়ে মারার এবং ক্রুশার্পিত হওয়ার জন্য তাঁকে সমর্পণ করবে। কিন্তু তৃতীয় দিনে তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবেন।” \s1 এক মায়ের অনুরোধ \p \v 20 পরে সিবদিয়ের দুই পুত্রের মা তাদের নিয়ে যীশুর কাছে এলেন এবং নতজানু হয়ে তাঁর কাছে এক প্রার্থনা চাইলেন। \p \v 21 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কী চাও?” \p তিনি বললেন, “অনুমতি দিন যেন আপনার রাজ্যে আমার এক ছেলে আপনার ডানদিকে ও অন্যজন বাঁদিকে বসতে পায়।” \p \v 22 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কী চাইছ, তা তোমরা বোঝো না। আমি যে পানপাত্রে পান করি, তাতে কি তোমরা পান করতে পারো?”\f + \fr 20:22 \fr*\ft ভাষালংকার, এর তাৎপর্য, কষ্টভোগের মধ্য দিয়ে যাওয়া (\+xt 26:39; যিরমিয় 25:15\+xt*)\ft*\f* \p তারা উত্তর দিলেন, “আমরা পারি।” \p \v 23 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সত্যিই আমার পানপাত্র থেকে পান করবে, কিন্তু আমার ডানদিকে বা বাঁদিকে বসার অনুমতি আমি দিতে পারি না। আমার পিতা যাদের জন্য তা নির্ধারিত করেছেন, এই স্থানগুলিতে কেবলমাত্র তারাই বসতে পারবে।” \p \v 24 অন্য দশজন একথা শুনে সেই দুই ভাইয়ের প্রতি রুষ্ট হলেন। \v 25 যীশু তাদের সকলকে কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা জানো, পরজাতীয়দের শাসকেরা তাদের উপরে প্রভুত্ব করে, আবার তাদের উচ্চপদাধিকারীরাও তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে। \v 26 তোমাদের ক্ষেত্রে সেরকম হবে না। বরং, কেউ যদি তোমাদের মধ্যে মহান হতে চায়, তাকে অবশ্যই তোমাদের দাস হতে হবে। \v 27 আর কেউ যদি প্রধান হতে চায়, তাকে অবশ্যই তোমাদের ক্রীতদাস হতে হবে। \v 28 যেমন মনুষ্যপুত্রও সেবা পেতে আসেননি, কিন্তু সেবা করতে ও অনেকের পরিবর্তে নিজের প্রাণ মুক্তিপণস্বরূপ দিতে এসেছেন।” \s1 দুজন অন্ধ ব্যক্তির দৃষ্টিলাভ \p \v 29 যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা যখন যিরীহো ছেড়ে যাচ্ছিলেন, অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল। \v 30 দুজন অন্ধ মানুষ পথের পাশে বসেছিল। তারা যখন শুনল, যীশু সেই পথ দিয়ে যাচ্ছেন, তারা চিৎকার করে বলল, “প্রভু, দাউদ-সন্তান, আমাদের প্রতি কৃপা করুন!” \p \v 31 লোকেরা তাদের ধমক দিয়ে শান্ত থাকতে বলল, কিন্তু তারা আরও জোরে চিৎকার করতে লাগল, “প্রভু, দাউদ-সন্তান, আমাদের প্রতি কৃপা করুন!” \p \v 32 যীশু পথ চলা থামিয়ে তাদের ডাকলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী চাও, আমি তোমাদের জন্য কী করব?” \p \v 33 তারা উত্তর দিল, “প্রভু, আমরা দৃষ্টিশক্তি পেতে চাই।” \p \v 34 যীশু তাদের প্রতি করুণায় পূর্ণ হয়ে তাদের চোখ স্পর্শ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা দৃষ্টিশক্তি লাভ করল ও তাঁকে অনুসরণ করতে লাগল। \c 21 \s1 যীশু জেরুশালেমে রাজার মতো প্রবেশ করলেন \p \v 1 তাঁরা জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে যখন জলপাই পর্বতের ধারে বেথফাগ গ্রামে উপস্থিত হলেন, তখন যীশু দুজন শিষ্যকে এই বলে পাঠালেন, \v 2 “তোমরা সামনের ওই গ্রামে যাও। সেখানে গিয়ে তোমরা দেখতে পাবে একটি গর্দভী তার শাবকের সঙ্গে বাঁধা আছে। তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এসো। \v 3 কেউ যদি তোমাদের কিছু বলে, তাকে বোলো যে, প্রভুর তাদের প্রয়োজন আছে। এতে সে তখনই তাদের পাঠিয়ে দেবে।” \p \v 4 এরকম ঘটল যেন ভাববাদীর দ্বারা কথিত বচন পূর্ণ হয়: \q1 \v 5 “তোমরা সিয়োন-কন্যাকে\f + \fr 21:5 \fr*\ft এর অর্থ, সিয়োন বা, জেরুশালেমের অধিবাসী।\ft*\f* বলো, \q2 ‘দেখো, তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন, \q1 তিনি নম্র কোমল প্রাণ, গর্দভের উপরে উপবিষ্ট, \q2 এক শাবকের, গর্দভ শাবকের উপরে উপবিষ্ট।’ ”\f + \fr 21:5 \fr*\ft \+xt সখরিয় 9:9\+xt*\ft*\f* \p \v 6 শিষ্যেরা গেলেন ও যীশু যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন, তেমনই করলেন। \v 7 তারা গর্দভী ও সেই শাবকটিকে নিয়ে এসে, তাদের উপরে নিজেদের পোশাক পেতে দিলেন। যীশু তার উপরে বসলেন। \v 8 আর ভিড়ের মধ্যে অনেক লোক নিজেদের পোশাক রাস্তায় বিছিয়ে দিল, অন্যেরা গাছ থেকে ডালপালা কেটে পথে ছড়িয়ে দিল।\f + \fr 21:8 \fr*\ft রাজাকে সম্মান প্রদর্শনের একটি প্রথা (\+xt 2 রাজাবলি 9:13\+xt*)\ft*\f* \v 9 যেসব লোক তাঁর সামনে যাচ্ছিল ও পিছনে অনুসরণ করছিল, তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, \q1 “হোশান্না, দাউদ-সন্তান!”\f + \fr 21:9 \fr*\fq হোশান্না \fq*\ft এক হিব্রু অভিব্যক্তি, যার অর্থ, রক্ষা করো বা, মুক্তি দাও, যা এক প্রশংসাসূচক অভিব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। শব্দটি মূল অরামীয় ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে।\ft*\f* \b \q1 “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন!”\f + \fr 21:9 \fr*\ft \+xt গীত 118:26\+xt*\ft*\f* \b \q1 “ঊর্ধ্বতমলোকে হোশান্না!” \p \v 10 যীশু যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন, সমস্ত নগরে আলোড়ন পড়ে গেল ও তারা জিজ্ঞাসা করল, “ইনি কে?” \p \v 11 তাতে লোকেরা উত্তর দিল, “ইনি যীশু, গালীলের নাসরতের সেই ভাববাদী।” \s1 মন্দিরে যীশু \p \v 12 যীশু মন্দির চত্বরে প্রবেশ করে তাদের তাড়িয়ে দিলেন যারা সেখানে কেনাবেচা করছিল। তিনি মুদ্রা-বিনিময়কারীদের টেবিল ও যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের আসন উল্টে দিলেন। \v 13 তিনি তাদের বললেন, “এরকম লেখা আছে, ‘আমার গৃহ প্রার্থনা-গৃহ বলে আখ্যাত হবে,’ কিন্তু তোমরা একে ‘দস্যুদের গহ্বরে’ পরিণত করেছ।”\f + \fr 21:13 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 56:7; যিরমিয় 7:11\+xt*\ft*\f* \p \v 14 পরে অন্ধ ও খোঁড়া সকলে মন্দিরে তাঁর কাছে এলে তিনি তাদের সুস্থ করলেন। \v 15 কিন্তু প্রধান যাজকবর্গ ও শাস্ত্রবিদরা যখন দেখল, তিনি আশ্চর্য সব কাজ করে চলেছেন ও ছেলেমেয়েরা মন্দির চত্বরে “হোশান্না, দাউদ-সন্তান,” বলে চিৎকার করছে, তারা রুষ্ট হল। \p \v 16 তারা তাঁকে বলল, “এই ছেলেমেয়েরা কী সব বলছে, তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ?” তোমরা কি কখনও পাঠ করোনি, \q1 “ ‘ছেলেমেয়েদের ও শিশুদের মুখ দিয়ে \q2 তুমি স্তব ও প্রশংসার ব্যবস্থা করেছ’?”\f + \fr 21:16 \fr*\ft \+xt গীত 8:2\+xt*\ft*\f* \p \v 17 পরে তিনি তাদের ছেড়ে দিয়ে নগরের বাইরে বেথানি গ্রামে চলে গেলেন। সেখানেই তিনি রাত্রিযাপন করলেন। \s1 যীশু ডুমুর গাছকে অভিশাপ দিলেন \p \v 18 খুব ভোরবেলায়, নগরে আসার পথে যীশুর খিদে পেল। \v 19 পথের ধারে একটি ডুমুর গাছ দেখে, তিনি তার কাছে গেলেন, কিন্তু পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তখন তিনি গাছটিকে বললেন, “তোমার মধ্যে আর কখনও যেন ফল না ধরে!” সঙ্গে সঙ্গে গাছটি শুকিয়ে গেল। \p \v 20 শিষ্যেরা এই দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তারা জিজ্ঞাসা করলেন, “ডুমুর গাছটি এত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে গেল কীভাবে?” \p \v 21 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের যদি বিশ্বাস থাকে আর তোমরা সন্দেহ না করো, তাহলে এই ডুমুর গাছটির প্রতি যা করা হয়েছে, তোমরা যে কেবলমাত্র তাই করতে পারবে, তা নয়, কিন্তু যদি এই পর্বতটিকে বলো, ‘যাও, সমুদ্রে গিয়ে পড়ো,’ তবে সেরকমই হবে। \v 22 আর তোমরা প্রার্থনায় যা কিছু চাইবে, বিশ্বাস করলে সে সমস্তই পাবে।” \s1 যীশুর ক্ষমতা সম্পর্কে প্রশ্ন \p \v 23 যীশু মন্দির চত্বরে প্রবেশ করলেন। তিনি যখন শিক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনবর্গ তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কোন অধিকারে এসব কাজ করছ? আর এসব করার অধিকারই বা কে তোমাকে দিল?” \p \v 24 যীশু উত্তর দিলেন, “আমিও তোমাদের একটি প্রশ্ন করব। তোমরা যদি উত্তর দিতে পারো, তাহলে আমিও তোমাদের বলব, আমি কোন অধিকারে এসব করছি। \v 25 যোহনের বাপ্তিষ্ম কোথা থেকে হয়েছিল? স্বর্গ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে?” \p তারা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে বলল, “যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ ও জিজ্ঞাসা করবে, ‘তাহলে তোমরা তাকে বিশ্বাস করোনি কেন?’ \v 26 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ আমরা জনসাধারণকে ভয় করি; কারণ তারা প্রত্যেকে যোহনকে ভাববাদী বলেই মনে করত।” \p \v 27 তাই তারা যীশুকে উত্তর দিল, “আমরা জানি না।” \p তখন তিনি বললেন, “তাহলে, আমিও কোন অধিকারে এসব কাজ করছি, তোমাদের বলব না। \s1 দুই পুত্রের রূপক \p \v 28 “তোমরা কী মনে করো? এক ব্যক্তির দুই পুত্র ছিল। তিনি প্রথমজনের কাছে গিয়ে বললেন, ‘বৎস, তুমি গিয়ে দ্রাক্ষাক্ষেতে কাজ করো।’ \p \v 29 “সে উত্তর দিল, ‘আমি যাব না,’ কিন্তু পরে সে মত পরিবর্তন করে কাজ করতে গেল। \p \v 30 “পরে সেই পিতা অপর পুত্রের কাছে গেলেন এবং একই কথা তাকেও বললেন। সে উত্তর দিল, ‘হ্যাঁ মহাশয়, যাচ্ছি,’ কিন্তু সে গেল না। \p \v 31 “এই দুজনের মধ্যে কে তার পিতার ইচ্ছা পালন করল?” \p তারা উত্তর দিলেন, “প্রথমজন।” \p যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, কর আদায়কারী ও বেশ্যারা তোমাদের আগেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করছে। \v 32 কারণ যোহন তোমাদের কাছে এসে ধার্মিকতার পথ দেখালেন আর তোমরা তাকে বিশ্বাস করলে না, কিন্তু কর আদায়কারী ও বেশ্যারা বিশ্বাস করল। আর তোমরা তা দেখা সত্ত্বেও অনুতাপ করলে না এবং বিশ্বাস করলে না। \s1 ভাগচাষিদের রূপক \p \v 33 “অন্য একটি রূপক শোনো: একজন জমিদার এক দ্রাক্ষাক্ষেত প্রস্তুত করলেন। তিনি তাঁর চারপাশে বেড়া দিলেন, তার মধ্যে এক দ্রাক্ষাকুণ্ড খুঁড়লেন ও পাহারা দেওয়ার জন্য এক উঁচু মিনার নির্মাণ করলেন। তারপর তিনি সেই দ্রাক্ষাক্ষেত কয়েকজন ভাগচাষিকে ভাড়া দিয়ে বিদেশ ভ্রমণে চলে গেলেন। \v 34 ফল কাটার সময় উপস্থিত হল তিনি তাঁর দাসদের ফল সংগ্রহের জন্য ভাগচাষিদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \p \v 35 “ভাগচাষিরা সেই দাসদের বন্দি করে একজনকে মারধর করল, অন্যজনকে হত্যা করল, তৃতীয় জনকে পাথর ছুঁড়ে মারল। \v 36 আবার তিনি তাদের কাছে অন্য দাসদের পাঠালেন, এদের সংখ্যা আগের চেয়েও বেশি ছিল। ভাগচাষিরা এদের প্রতিও সেই একইরকম ব্যবহার করল। \v 37 সবশেষে তিনি তাদের কাছে তাঁর পুত্রকে পাঠালেন, বললেন, ‘তারা আমার পুত্রকে সম্মান করবে।’ \p \v 38 “কিন্তু ভাগচাষিরা যখন সেই পুত্রকে দেখল, তারা পরস্পরকে বলল, ‘এই হচ্ছে উত্তরাধিকারী। এসো, আমরা একে হত্যা করে এর মালিকানা হস্তগত করি।’ \v 39 এভাবে তারা তাঁকে ধরে, দ্রাক্ষাক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করল। \p \v 40 “অতএব, দ্রাক্ষাক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তিনি ওইসব ভাগচাষিদের নিয়ে কী করবেন?” \p \v 41 তারা উত্তর দিল, “তিনি ওই দুর্জনদের শোচনীয় পরিণতি ঘটাবেন ও সেই দ্রাক্ষাক্ষেত অন্য ভাগচাষিদের ভাড়া দেবেন, যারা ফল সংগ্রহের সময় তাকে তার উপযুক্ত অংশ দেবে।” \p \v 42 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রে কখনও পাঠ করোনি: \q1 “ ‘গাঁথকেরা যে পাথর অগ্রাহ্য করেছিল, \q2 তাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর\f + \fr 21:42 \fr*\ft শব্দটির ব্যাখ্যায় মতান্তর থাকলেও অনুমিত হয়, কোনো ভবনের শীর্ষে যে পাথরটি বসানো হত, তা ভবনটিকে সম্পূর্ণতা দান করত। এই পাথরটি সেই উদ্দেশ্যেই বিশেষভাবে নির্মিত হত।\ft*\f*; \q1 প্রভুই এরকম করেছেন, \q2 আর তা আমাদের দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য’?\f + \fr 21:42 \fr*\ft \+xt গীত 118:22,23\+xt*\ft*\f* \p \v 43 “এই কারণে আমি তোমাদের বলছি যে, স্বর্গরাজ্য তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে এমন এক জাতিকে দেওয়া হবে, যারা এর জন্য ফল উৎপন্ন করবে। \v 44 যে এই পাথরের উপরে পড়বে, সে খানখান হবে, কিন্তু যার উপরে এই পাথর পড়বে, সে চূর্ণবিচূর্ণ হবে।” \p \v 45 যখন প্রধান যাজকেরা ও ফরিশীরা যীশুর কথিত রূপকগুলি শুনল, তারা বুঝতে পারল, তিনি তাদের সম্পর্কেই সেগুলি বলছেন। \v 46 তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করার কোনো উপায় খুঁজল, কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পেত কারণ তারা তাঁকে ভাববাদী বলে মানত। \c 22 \s1 বিবাহভোজের রূপক \p \v 1 যীশু পুনরায় তাদের সঙ্গে রূপকের মাধ্যমে কথা বলতে লাগলেন। তিনি বললেন, \v 2 “স্বর্গরাজ্য এমন এক রাজার মতো যিনি তাঁর পুত্রের বিবাহভোজের আয়োজন করলেন। \v 3 তিনি আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের বিবাহভোজে আসার জন্য আহ্বান করতে তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না। \p \v 4 “তারপর তিনি আরও অনেক দাসকে পাঠিয়ে বললেন, ‘আমন্ত্রিত লোকদের গিয়ে বলো, আমি আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি: আমার বলদ ও মোটাসোটা বাছুরদের জবাই করা হয়েছে এবং সবকিছুই প্রস্তুত আছে। তোমরা সবাই বিবাহভোজে এসো।’ \p \v 5 “কিন্তু তারা কোনও আগ্রহ না দেখিয়ে নিজের নিজের কাজে চলে গেল—একজন তার মাঠে, অন্যজন তার ব্যবসায়। \v 6 অবশিষ্ট লোকেরা তার দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের হত্যা করল। \v 7 রাজা ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি তাঁর সৈন্যদল পাঠিয়ে সেইসব হত্যাকারীদের ধ্বংস করলেন ও তাদের নগর পুড়িয়ে দিলেন। \p \v 8 “তারপর তিনি তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিবাহভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু যাদের আমি নিমন্ত্রণ করেছিলাম, তারা এর যোগ্য ছিল না। \v 9 তোমরা পথের কোণে কোণে যাও এবং যারই সন্ধান পাও, তাকে বিবাহভোজে আমন্ত্রণ করো।’ \v 10 অতএব দাসেরা পথের কোণে কোণে গেল ও তারা যত লোকের সন্ধান পেল, ভালোমন্দ সবাইকে ডেকে একত্র করল। এইভাবে বিবাহের আসর অতিথিতে ভরে গেল। \p \v 11 “কিন্তু রাজা যখন অতিথিদের দেখতে এলেন, তিনি লক্ষ্য করলেন, একজন বিবাহ-পোশাক\f + \fr 22:11 \fr*\ft নিমন্ত্রণকর্তা অতিথিদের বিবাহভোজে অংশগ্রহণের জন্য বিশেষ পোশাক সরবরাহ করতেন। উপরোক্ত ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক ছিল, কারণ অতিথিদের সরাসরি পথ থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই ব্যক্তির বিবাহ-পোশাক সংগ্রহ করার ব্যর্থতা রাজার পক্ষে অপমানজনক ছিল, কারণ তিনিই সেগুলির ব্যবস্থাপনা করেছিলেন।\ft*\f* না পরেই সেখানে উপস্থিত ছিল। \v 12 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বন্ধু, বিবাহ-পোশাক ছাড়াই তুমি কীভাবে এখানে প্রবেশ করলে?’ লোকটি নিরুত্তর রইল। \p \v 13 “রাজা তখন পরিচারকদের বললেন, ‘ওর হাত পা বেঁধে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও। সেখানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে।’ \p \v 14 “কারণ বহু জন আমন্ত্রিত, কিন্তু অল্প কয়েকজনই মনোনীত।” \s1 কৈসরকে কর প্রদান \p \v 15 তখন ফরিশীরা বাইরে গিয়ে ষড়যন্ত্র করল, কীভাবে যীশুকে কথার ফাঁদে ফেলতে পারে। \v 16 তারা কয়েকজন হেরোদীয়ের\f + \fr 22:16 \fr*\ft হেরোদপন্থী বা হেরোদের সমর্থনকারী লোকেরা।\ft*\f* সঙ্গে তাদের শিষ্যদের তাঁর কাছে পাঠাল। তারা বলল, “গুরুমহাশয়, আমরা জানি, আপনি একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং আপনি সত্য অনুযায়ী ঈশ্বরের পথের বিষয়ে শিক্ষা দেন। আপনি কারও দ্বারা প্রভাবিত হন না, কারণ তাদের কারও বিষয়ে আপনি কোনো ভ্রূক্ষেপ করেন না। \v 17 বেশ, আমাদের বলুন, আপনার অভিমত কী, কৈসরকে কর দেওয়া কি উচিত?” \p \v 18 কিন্তু যীশু তাদের মন্দ অভিসন্ধি বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডেরা, তোমরা কেন আমাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছ? \v 19 সেই কর প্রদানের মুদ্রা আমাকে দেখাও।” তারা তাঁর কাছে একটি দিনার নিয়ে এল। \v 20 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এই মূর্তি কার? এই নামই বা কার?” \p \v 21 তারা উত্তর দিল, “কৈসরের।” \p তখন তিনি তাদের বললেন, “কৈসরের যা, তা কৈসরকে দাও, এবং যা ঈশ্বরের, তা ঈশ্বরকে দাও।” \p \v 22 একথা শুনে তারা আশ্চর্য হল। তাই তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেল। \s1 পুনরুত্থানের পরে বিবাহ \p \v 23 সেদিনই সদ্দূকীরা, যারা বলে পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, তাঁর কাছে এক প্রশ্ন নিয়ে এল। \v 24 তারা বলল, “গুরুমহাশয়, মোশি আমাদের বলেছেন, কোনো মানুষ যদি অপুত্রক মারা যায়, তাহলে তার ভাই সেই বিধবাকে বিবাহ করবে ও তার বড়ো ছেলের জন্য সন্তানের জন্ম দেবে।\f + \fr 22:24 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 25:5,6\+xt*\ft*\f* \v 25 এখন, আমাদের মধ্যে সাত ভাই ছিল। প্রথমজন বিবাহ করে মারা গেল, আর যেহেতু সে অপুত্রক ছিল, সে তার ভাইয়ের জন্য স্ত্রীকে রেখে গেল। \v 26 একই ঘটনা দ্বিতীয়, তৃতীয়, এমনকি সপ্তমজন পর্যন্ত ঘটল। \v 27 শেষে সেই নারীও মারা গেল। \v 28 তাহলে পুনরুত্থানে সে সাতজনের মধ্যে কার স্ত্রী হবে, কারণ তারা সবাই তো তাকে বিবাহ করেছিল?” \p \v 29 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা শাস্ত্র জানো না, ঈশ্বরের পরাক্রমও জানো না। \v 30 পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিবাহ করে না, বা তাদের বিবাহ দেওয়াও হয় না। তারা স্বর্গলোকের দূতদের মতো থাকে। \v 31 কিন্তু মৃতদের পুনরুত্থান সম্পর্কে বলি, ঈশ্বর তোমাদের কী বলেছেন, তা কি তোমরা পাঠ করোনি? \v 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।’\f + \fr 22:32 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 3:6\+xt*\ft*\f* তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিতদের ঈশ্বর।” \p \v 33 সকলে যখন একথা শুনল, তারা তাঁর উপদেশে চমৎকৃত হল। \s1 মহত্তম আদেশ \p \v 34 যীশু সদ্দূকীদের নিরুত্তর করেছেন শুনে ফরিশীরা একত্র হল। \v 35 তাদের মধ্যে অন্যতম, একজন বিধানবিশারদ,\f + \fr 22:35 \fr*\ft বা, শাস্ত্রবিদ।\ft*\f* এই প্রশ্ন করে তাঁকে পরীক্ষা করল: \v 36 “গুরুমহাশয়, বিধানের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মহৎ আজ্ঞা কোনটি?” \p \v 37 যীশু উত্তর দিলেন: “ ‘তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে।’\f + \fr 22:37 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:5;\+xt*\ft*\f* \v 38 এটিই প্রথম ও মহত্তম আজ্ঞা। \v 39 আর দ্বিতীয়টি এরই সমতুল্য: ‘তোমার প্রতিবেশীকে তোমার নিজের মতোই প্রেম করবে।’\f + \fr 22:39 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 19:18\+xt*\ft*\f* \v 40 এই দুটি আজ্ঞার উপরেই সমস্ত বিধান ও ভাববাদীদের গ্রন্থ প্রতিষ্ঠিত।” \s1 খ্রীষ্ট কার সন্তান? \p \v 41 ফরিশীরা যখন সমবেত হয়েছিল, যীশু তাদের প্রশ্ন করলেন, \v 42 “খ্রীষ্ট সম্পর্কে তোমাদের কী মনে হয়? তিনি কার সন্তান?” \p তারা উত্তর দিল, “তিনি দাউদের সন্তান।” \p \v 43 তিনি তাদের বললেন, “তাহলে দাউদ কীভাবে আত্মার আবেশে তাঁকে ‘প্রভু’ বলেন? কারণ তিনি বলেছেন, \q1 \v 44 “ ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, \q2 আমার ডানদিকে এসে বসো, \q1 যে পর্যন্ত তোমার শত্রুদের আমি তোমার পদতলে না রাখি।’\f + \fr 22:44 \fr*\ft \+xt গীত 110:1\+xt*\ft*\f* \m \v 45 যদি দাউদ তাঁকে ‘প্রভু’ বলে অভিহিত করেছেন, তাহলে কীভাবে তিনি তাঁর সন্তান হতে পারেন?” \v 46 প্রত্যুত্তরে তারা কেউ একটি কথাও বলতে পারল না। সেদিন থেকে আর কেউ তাঁকে কোনও প্রশ্ন করতে সাহস পেল না। \c 23 \s1 সাতটি ধিক্কারবাণী \p \v 1 তারপর যীশু সকল লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন, \v 2 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা মোশির আসনে বসে। \v 3 সেই কারণে, তোমরা অবশ্যই তাদের কথা শুনবে ও তারা যা বলে তা পালন করবে। কিন্তু তারা যে কাজ করে, তোমরা সেই কাজ করবে না, কারণ তারা যা প্রচার করে, তা নিজেরা অনুশীলন করে না। \v 4 তারা দুর্বহ বোঝা বেঁধে সেগুলি মানুষদের কাঁধে চাপায়, কিন্তু তারা একটি আঙুল দিয়েও তা সরাতে ইচ্ছুক হয় না। \p \v 5 “তারা যা কিছুই করে, তা লোক-দেখানো মাত্র। তারা তাদের কবচ\f + \fr 23:5 \fr*\ft এগুলি ছিল চৌকোণবিশিষ্ট ছোটো বাক্সবিশেষ, যার মধ্যে লেখা থাকত শাস্ত্রের বিভিন্ন পদ। তারা কপালে, বা বাহুতে সেগুলি পরে থাকত।\ft*\f* প্রশস্ত ও আলখাল্লার ঝালর লম্বা করে। \v 6 তারা ভোজসভায় সব থেকে সম্মানজনক আসন ও সমাজভবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলি পেতে ভালোবাসে। \v 7 তারা হাটেবাজারে সম্ভাষিত হতে ভালোবাসে ও চায় যেন লোকেরা তাদের ‘রব্বি’ বলে ডাকে। \p \v 8 “কিন্তু তোমরা ‘রব্বি’ বলে সম্ভাষিত হোয়ো না, কারণ তোমাদের গুরুমহাশয় কেবলমাত্র একজন ও তোমরা পরস্পর ভাই ভাই। \v 9 আবার পৃথিবীতে কাউকে ‘পিতা’ বলে সম্বোধন কোরো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই, তিনি স্বর্গে থাকেন। \v 10 আবার কেউ তোমাদের ‘আচার্য’ বলে যেন না ডাকে, কারণ তোমাদের আচার্য একজনই তিনি খ্রীষ্ট। \v 11 তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের পরিচারক হবে। \v 12 কারণ যে কেউ নিজেকে উন্নত করে, তাকে নত করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে তাকে উন্নত করা হবে। \p \v 13 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা লোকদের মুখের সামনে স্বর্গরাজ্য রুদ্ধ করে থাকো। \v 14 তোমরা নিজেরা তার মধ্যে তো প্রবেশ করো না অথচ যারা প্রবেশ করতে চেষ্টা করে তাদেরও প্রবেশ করতে দাও না। শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা বিধবাদের বাড়িশুদ্ধ গ্রাস করো, আর লোক-দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করো। সেই কারণে তোমাদের শাস্তি কঠোরতম হবে।\f + \fr 23:14 \fr*\ft কোনও কোনও পাণ্ডুলিপিতে \+xt মার্ক 12:40\+xt* এবং \+xt লূক 20:47\+xt* অনুসারে ব্যবহৃত হয়েছে।\ft*\f* \p \v 15 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা একজনকে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য স্থলে ও সমুদ্রে পরিভ্রমণ করে থাকো। আর সে যখন রাজি হয়, তখন তোমরা যেমন নারকীয়,\f + \fr 23:15 \fr*\ft গ্রিক: নরকের সন্তান।\ft*\f* তাকেও তেমনই তোমাদের দ্বিগুণ নরকের উপযুক্ত করে তোলো। \p \v 16 “অন্ধ পথপ্রদর্শকেরা, ধিক্ তোমাদের! তোমরা বলো, ‘কেউ যদি মন্দিরের নামে শপথ করে সেটা বড়ো কিছুই নয়, কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের সোনার শপথ করে তাহলে সে তার শপথে আবদ্ধ হল।’ \v 17 মূর্খ অন্ধের দল! কোনটা মহত্তর: সেই সোনা, না সেই মন্দির, যা সোনাকে পবিত্র করে? \v 18 তোমরা আরও বলো, ‘কেউ যদি যজ্ঞবেদির শপথ করে সেটা কিছুই নয়; কিন্তু কেউ যদি তার উপরে স্থিত নৈবেদ্যের শপথ করে তাহলে সে তার শপথে আবদ্ধ হল।’ \v 19 অন্ধ মানুষ তোমরা! কোনটা মহত্তর: সেই নৈবেদ্য, না যজ্ঞবেদি, যা নৈবেদ্যকে পবিত্র করে? \v 20 সেই কারণে, যে যজ্ঞবেদির শপথ করে সে বেদির ও তার উপরে স্থিত সবকিছুরই শপথ করে। \v 21 আর যে মন্দিরের শপথ করে সে মন্দিরের ও যিনি তার মধ্যে অধিষ্ঠান করেন, তাঁরও শপথ করে। \v 22 আর যে স্বর্গের শপথ করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসন ও যিনি তার উপরে উপবেশন করেন তাঁরও শপথ করে। \p \v 23 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা তোমাদের মশলাপাতি—পুদিনা, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়ে থাকো কিন্তু বিধানের আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ন্যায়বিচার, করুণা, বিশ্বস্ততা—এগুলি উপেক্ষা করে থাকো। ভালো হত, তোমরা আগের বিষয়গুলি উপেক্ষা না করে যদি এগুলিও পালন করতে। \v 24 অন্ধ পথপ্রদর্শক তোমরা! তোমরা মশা ছাঁকো, কিন্তু উট গিলে ফেলো। \p \v 25 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা থালাবাটির বাইরেটা পরিষ্কার করে থাকো কিন্তু ভিতরের দিকটা লোভ-লালসা ও আত্ম-অসংযমে পূর্ণ। \v 26 অন্ধ ফরিশী! প্রথমে থালাবাটির ভিতরটা পরিষ্কার করো তারপরে বাইরের দিকটিও পরিষ্কার হবে। \p \v 27 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো! সেগুলি বাইরে থেকে দেখতে তো সুন্দর কিন্তু ভিতরে মরা মানুষের হাড় ও সব ধরনের অশুচি বিষয়ে পরিপূর্ণ। \v 28 একইভাবে, লোকেদের কাছে বাহ্যিকভাবে তোমরা নিজেদের ধার্মিক দেখাও কিন্তু অন্তরে তোমরা ভণ্ডামি ও দুষ্টতায় পূর্ণ। \p \v 29 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল তোমরা! তোমরা ভাববাদীদের সমাধি নির্মাণ করে থাকো এবং ধার্মিকদের কবর সুশোভিত করো। \v 30 আর তোমরা বলো, ‘আমরা যদি পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম তাহলে ভাববাদীদের রক্তপাত করায় তাদের সঙ্গ দিতাম না।’ \v 31 এভাবে তোমরা নিজেরাই নিজেদের বিষয়ে সাক্ষ্য দাও যে যারা ভাববাদীদের হত্যা করেছিল তোমরা তাদেরই বংশধর। \v 32 তাহলে, তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যে পাপ শুরু করেছিল তোমরা তারই মাত্রা পূর্ণ করো! \p \v 33 “সাপেরা! কালসাপের বংশেরা! তোমরা ন্যায়বিচারের দিন কীভাবে নরকদণ্ড এড়াতে পারবে? \v 34 সেই কারণে আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, বিজ্ঞ মানুষ ও শিক্ষাগুরুদের পাঠিয়ে চলেছি। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে তোমরা হত্যা করবে, কয়েকজনকে ক্রুশার্পিত করবে। অপরদের তোমরা সমাজভবনে নিয়ে গিয়ে চাবুক দিয়ে মারবে ও এক নগর থেকে অন্য নগরে তাদের তাড়া করবে। \v 35 এভাবে পৃথিবীতে যত ধার্মিক মানুষের রক্তপাত হয়ে আসছে, সেই ধার্মিক হেবলের\f + \fr 23:35 \fr*\fq হেবল\fq*\ft —\+xt আদি পুস্তক 4:8; ইব্রীয় 11:4\+xt*\ft*\f* রক্তপাত থেকে শুরু করে, বরখিয়ের পুত্র সখরিয়ের\f + \fr 23:35 \fr*\fq সখরিয়\fq*\ft —\+xt সখরিয় 1:1; 2 বংশাবলি 24:21\+xt*\ft*\f* রক্তপাত পর্যন্ত, যাকে তোমরা মন্দির ও যজ্ঞবেদির মাঝখানে হত্যা করেছিলে, এদের সকলের রক্তপাতের ফল তোমাদের উপরেই বর্তাবে। \v 36 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এসবই এই প্রজন্মের লোকেদের উপরে এসে পড়বে। \p \v 37 “হায়! জেরুশালেম, জেরুশালেম, তুমি ভাববাদীদের হত্যা করো ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের পাথরের আঘাত করে থাকো। কতবার আমি তোমার সন্তানদের একত্র করতে চেয়েছি, যেমন মুরগি তার শাবকদের নিজের ডানার তলায় একত্র করে, কিন্তু তোমরা ইচ্ছুক হওনি। \v 38 দেখো, তোমাদের গৃহ তোমাদের জন্য পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রইল। \v 39 কারণ আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন’\f + \fr 23:39 \fr*\ft \+xt গীত 118:26\+xt*\ft*\f* ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না।” \c 24 \s1 যুগের অন্তিমলগ্নের চিহ্ন \p \v 1 যীশু মন্দির ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, এমন সময়ে তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের গঠনের প্রতি তাঁর মনোযোগ আকৃষ্ট করলেন। \v 2 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এসব জিনিস দেখছ? আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এদের একটি পাথরও অন্যটির উপরে থাকবে না, সবকটিকেই ভূমিসাৎ করা হবে।”\f + \fr 24:2 \fr*\ft 70 খ্রীষ্টাব্দে এই ভবিষ্যদ্‌বাণী আক্ষরিক অর্থে পূর্ণ হয়। রোম সম্রাট টাইটাস জেরুশালেম নগর ও মন্দির ভবন পুড়িয়ে দেন। ছাদ থেকে গলিত সোনা পাথরের খাঁজে ঢুকে যাওয়ায়, সেই সোনার পাত সংগ্রহের জন্য পাথরগুলির প্রত্যেকটিকে উপড়ে ফেলা হয়।\ft*\f* \p \v 3 যীশু যখন জলপাই পর্বতের উপরে বসেছিলেন, শিষ্যেরা এক প্রকার গোপনে তাঁর কাছে এসে বললেন, “আমাদের বলুন, কখন এসব ঘটনা ঘটবে এবং আপনার আগমনের, বা যুগান্তের চিহ্নই বা কী কী হবে?” \p \v 4 যীশু উত্তর দিলেন, “সতর্ক থেকো, কেউ যেন তোমাদের সঙ্গে প্রতারণা না করে। \v 5 কারণ অনেকে এসে আমার নামে দাবি করবে, ‘আমিই সেই খ্রীষ্ট’ আর এভাবে বহু মানুষকে ঠকাবে। \v 6 তোমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের সব জনরব শুনবে। কিন্তু দেখো, তোমরা যেন ব্যাকুল না হও। এ সমস্ত বিষয় অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও অন্তিমলগ্ন উপস্থিত হয়নি। \v 7 এক জাতি অন্য জাতির বিপক্ষে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিপক্ষে অভিযান করবে। বিভিন্ন স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে। \v 8 এসব প্রসব যন্ত্রণার সূচনা মাত্র। \p \v 9 “তখন তোমাদেরকে অত্যাচার করার ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য সমর্পণ করা হবে। আমার কারণে সমস্ত জাতির মানুষেরা তোমাদের ঘৃণা করবে। \v 10 সেই সময়ে অনেকেই বিশ্বাস হারাবে, বিশ্বাসঘাতকতা করবে ও পরস্পরকে ঘৃণা করবে। \v 11 বহু ভণ্ড ভাববাদী উপস্থিত হয়ে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করবে। \v 12 আর দুষ্টতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অধিকাংশ মানুষেরই প্রেম শীতল হয়ে যাবে, \v 13 কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত অবিচল থাকবে, সেই পরিত্রাণ পাবে। \v 14 আর সকল জাতির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য স্বর্গরাজ্যের এই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচারিত হবে, আর তখনই অন্তিমলগ্ন উপস্থিত হবে। \p \v 15 “আর তাই, যখন তোমরা দেখবে, ‘ধ্বংস-আনয়নকারী সেই ঘৃণ্য বস্তু’ পবিত্রস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, যা ভাববাদী দানিয়েল উল্লেখ করেছেন\f + \fr 24:15 \fr*\ft \+xt দানিয়েল 9:27; 11:31; 12:11\+xt*\ft*\f*—পাঠক বুঝে নিক— \v 16 তখন যারা যিহূদিয়া প্রদেশে বসবাস করে, তারা পার্বত্য অঞ্চলে পালিয়ে যাক। \v 17 তখন ছাদের উপরে যে থাকবে, সে যেন কোনো জিনিসপত্র ঘর থেকে নেওয়ার জন্য নিচে নেমে না আসে। \v 18 মাঠে যে থাকবে, সে যেন জামাকাপড় নেওয়ার জন্য ঘরে ফিরে না যায়। \v 19 সেই সময় গর্ভবতী নারীদের ও স্তন্যদাত্রী মায়েদের কতই না ভয়ংকর কষ্ট হবে! \v 20 প্রার্থনা কোরো, যেন তোমাদের পালিয়ে যাওয়া শীতকালে বা বিশ্রামদিনে না হয়। \v 21 কারণ সেই সময় এমন চরম বিপর্যয় এসে উপস্থিত হবে, যা পৃথিবী সৃষ্টির সময় থেকে এ পর্যন্ত কখনও হয়নি, আর কখনও হবেও না। \p \v 22 “সেই সমস্ত দিনের সংখ্যা যদি কমিয়ে না দেওয়া হত, তাহলে কোনো মানুষই রক্ষা পেত না, কিন্তু যাদের তিনি মনোনীত করেছেন, তাঁদের জন্য সেইসব দিনের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। \v 23 সেই সময়, কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখো, খ্রীষ্ট এখানে!’ অথবা, ‘তিনি ওখানে!’ তোমরা বিশ্বাস কোরো না। \v 24 কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা ও ভণ্ড ভাববাদীরা উপস্থিত হয়ে বহু বড়ো বড়ো চিহ্ন ও অলৌকিক কাজ করে দেখাবে, যেন সম্ভব হলে মনোনীতদেরও প্রতারিত করতে পারে। \v 25 দেখো, ঘটনা ঘটবার পূর্বেই আমি তোমাদের একথা বলে দিলাম। \p \v 26 “তাই, কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখো, তিনি মরুপ্রান্তরে আছেন,’ তোমরা বেরিয়ে যেয়ো না; কিংবা, ‘তিনি এখানে ভিতরের ঘরে আছেন,’ তা বিশ্বাস কোরো না। \v 27 কারণ বিদ্যুতের ঝলক যেমন পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়, মনুষ্যপুত্রের আগমনও সেইরূপ হবে। \v 28 যেখানেই মৃতদেহ, সেখানেই শকুনের ঝাঁক জড়ো হবে।\f + \fr 24:28 \fr*\ft অর্থাৎ শবদেহের চারপাশে যেমন শকুনেরা জড়ো হয়, খ্রীষ্টের আগমনকালেও তাঁর অনুগতদের সমাবেশ সুস্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষ হবে।\ft*\f* \p \v 29 “আর সেই সময়কালীন বিপর্যয়ের অব্যবহিত পরেই, \q1 “ ‘সূর্য অন্ধকারে ঢেকে যাবে, \q2 চাঁদ তার আলো দেবে না, \q1 আকাশ থেকে নক্ষত্রসমূহের পতন হবে, \q2 আর জ্যোতিষ্কমণ্ডলী প্রকম্পিত হবে।’\f + \fr 24:29 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 13:10; 34:4\+xt*\ft*\f* \p \v 30 “সে সময়ে মনুষ্যপুত্রের আগমনের চিহ্ন আকাশে ফুটে উঠবে, আর পৃথিবীর সমস্ত জাতি শোকবিলাপ করবে। তারা মনুষ্যপুত্রকে স্বর্গের মেঘে করে আসতে দেখবে, তিনি পরাক্রমে ও মহামহিমায় আবির্ভূত হবেন। \v 31 তিনি তাঁর দূতদের মহা তূরীধ্বনির সঙ্গে পাঠাবেন। তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চারদিক\f + \fr 24:31 \fr*\ft আক্ষরিক, চার বায়ু।\ft*\f* থেকে তাঁর মনোনীতদের সংগ্রহ করবেন। \p \v 32 “এখন ডুমুর গাছ থেকে এই শিক্ষাগ্রহণ করো: যখনই এর শাখায় কোমল পল্লব ও পাতা বের হয়ে আসে, তোমরা বুঝতে পারো যে, গ্রীষ্মকাল কাছে এসেছে। \v 33 একইভাবে, তোমরা যখন এসব বিষয় ঘটতে দেখবে, তোমরা জানবে যে, সময় হয়ে এসেছে, এমনকি, তিনি দুয়ারে উপস্থিত হয়েছেন। \v 34 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই সমস্ত ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত বর্তমান প্রজন্ম লুপ্ত হবে না। \v 35 আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত হবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লুপ্ত হবে না। \s1 অজ্ঞাত দিনক্ষণ \p \v 36 “কিন্তু সেই দিন বা ক্ষণের কথা কেউই জানে না, এমনকি স্বর্গদূতেরা বা পুত্রও জানেন না, কেবলমাত্র পিতা জানেন। \v 37 নোহের সময়ে যে রকম হয়েছিল, মনুষ্যপুত্রের আগমনকালেও তেমনই হবে। \v 38 কারণ মহাপ্লাবনের আগে নোহ জাহাজে প্রবেশ করা পর্যন্ত, লোকেরা খাওয়াদাওয়া করত, পান করত, বিবাহ করত ও তাদের বিবাহ দেওয়া হত। \v 39 কী ঘটতে চলেছে, তারা তার কিছুই বুঝতে পারেনি, যতক্ষণ না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। মনুষ্যপুত্রের আগমনকালেও ঠিক একই ঘটনা ঘটবে। \v 40 দুজন মানুষ মাঠে কর্মরত থাকবে; একজনকে গ্রহণ করা হবে, অন্যজন পরিত্যক্ত হবে। \v 41 দুজন মহিলা একটি জাঁতা পেষণ করবে; একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে। \p \v 42 “সেই কারণে সতর্ক থেকো, কারণ তোমরা জানো না, কোন দিন তোমাদের প্রভু এসে পড়বেন। \v 43 কিন্তু এ বিষয় বুঝে নাও; বাড়ির কর্তা যদি জানতে পারত, রাতের কোন প্রহরে চোর আসছে, তাহলে সে সজাগ থাকত এবং তার বাড়িতে সিঁধ কাটতে দিত না। \v 44 তাই তোমরাও প্রস্তুত থেকো, কারণ যখন তোমরা প্রত্যাশা করবে না, সেই মুহূর্তেই মনুষ্যপুত্র আসবেন। \p \v 45 “তাহলে সেই বিশ্বস্ত ও বিজ্ঞ দাস কে, যাকে প্রভু তাঁর পরিজনবর্গের উপরে নিযুক্ত করেছেন, যেন সে তার দাসদের যথাসময়ে খাদ্য পরিবেশন করে? \v 46 তার প্রভু ফিরে এসে তাকে সেই কাজ করতে দেখলে সেই দাসের পক্ষে তা মঙ্গলজনক হবে। \v 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি তাকে তাঁর বিষয়সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক করবেন। \v 48 কিন্তু মনে করো, সেই দুষ্ট দাস মনে মনে ভাবল, ‘দীর্ঘদিন হল আমার প্রভু দূরে বাস করছেন,’ \v 49 আর সে তার সহদাসদের মারতে শুরু করল ও মদ্যপদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া ও সুরাপান করে মত্ত হতে লাগল। \v 50 সেই দাসের প্রভু এমন এক সময়ে ফিরে আসবেন, যখন সে তাঁর আগমনের প্রত্যাশা করেনি, বা এমন এক ক্ষণে, যা সে জানতেও পারেনি। \v 51 তিনি তাকে খণ্ডবিখণ্ড করবেন এবং ভণ্ডদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন,\f + \fr 24:51 \fr*\ft অর্থাৎ ভণ্ডদের মতোই তার গুরুতর দণ্ডবিধান করবেন।\ft*\f* যেখানে কেবলমাত্র রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে। \c 25 \s1 দশ কুমারীর রূপক \p \v 1 “সেই সময়ে স্বর্গরাজ্য হবে এমন দশজন কুমারীর মতো, যারা তাদের প্রদীপ হাতে নিয়ে বরের সঙ্গে মিলিত হতে গেল। \v 2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ ও পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী। \v 3 নির্বোধ কুমারীরা তাদের প্রদীপ নিল, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো তেল নিল না। \v 4 কিন্তু বুদ্ধিমতী কুমারীরা প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে করে তেলও নিল। \v 5 বর আসতে দেরি করল, ফলে তারা সকলে ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়ল। \p \v 6 “মধ্যরাত্রে এক উচ্চ রব শোনা গেল: ‘দেখো, বর এসেছেন! তোমরা তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য বেরিয়ে এসো!’ \p \v 7 “তখন সব কুমারী উঠে তাদের প্রদীপ সাজিয়ে নিল। \v 8 নির্বোধ কুমারীরা বুদ্ধিমতীদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু দাও; আমাদের প্রদীপগুলি নিভে যাচ্ছে।’ \p \v 9 “তারা উত্তর দিল, ‘না, তোমাদের ও আমাদের জন্য হয়তো পর্যাপ্ত হবে না। বরং যারা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে তোমরা নিজেদের জন্য কিছু তেল কিনে আনো।’ \p \v 10 “তারা তেল কেনার জন্য যখন পথে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে পৌঁছালেন। যে কুমারীরা প্রস্তুত ছিল, তারা তাঁর সঙ্গে বিবাহ আসরে প্রবেশ করল। আর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল। \p \v 11 “পরে অন্য কুমারীরাও এসে পৌঁছাল। তারা বলল, ‘প্রভু! প্রভু! আমাদের জন্যও দরজা খুলে দিন!’ \p \v 12 “কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।’ \p \v 13 “সেই কারণে সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সে দিন বা ক্ষণ জানো না। \s1 তালন্তের রূপক \p \v 14 “আবার, এ হবে এমন এক ব্যক্তির মতো, যিনি বিদেশ ভ্রমণে বের হলেন। তিনি তার দাসদের ডেকে তাদের হাতে তার সম্পত্তির ভার দিলেন। \v 15 একজনকে তিনি পাঁচ তালন্ত\f + \fr 25:15 \fr*\fq তালন্ত \fq*\ft এক প্রাচীন মুদ্রা, যার মূল্য লক্ষ টাকারও বেশি।\ft*\f* অর্থ দিলেন, অপর একজনকে দুই তালন্ত ও আরও একজনকে এক তালন্ত, যার যেমন ক্ষমতা, সেই অনুযায়ী দিলেন। তারপর তিনি ভ্রমণে চলে গেলেন। \v 16 যে মানুষটি পাঁচ তালন্ত নিয়েছিল, সে তক্ষুনি গিয়ে তার অর্থ বিনিয়োগ করল ও আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করল। \v 17 একইভাবে, যে দুই তালন্ত নিয়েছিল, সে আরও দুই তালন্ত লাভ করল। \v 18 কিন্তু যে এক তালন্ত নিয়েছিল, সে ফিরে গেল, মাটিতে গর্ত খুঁড়ল ও তার মনিবের অর্থ লুকিয়ে রাখল। \p \v 19 “দীর্ঘ সময় পরে, ওই দাসদের মনিব ফিরে এলেন ও তাদের সঙ্গে হিসেব নিকেশ করতে চাইলেন। \v 20 যে পাঁচ তালন্ত নিয়েছিল, সে আরও পাঁচ তালন্ত নিয়ে এসে বলল, ‘প্রভু, আপনি আমার হাতে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন। দেখুন, আমি আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করেছি।’ \p \v 21 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘বেশ করেছ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস! তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত থেকেছ; আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করব। এসো, তোমার মনিবের আনন্দের অংশীদার হও!’ \p \v 22 “যে দুই তালন্ত নিয়েছিল, সেও এসে বলল, ‘প্রভু, আপনি আমাকে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন; দেখুন, আমি আরও দুই তালন্ত লাভ করেছি।’ \p \v 23 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘বেশ করেছ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস! তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত থেকেছ; আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করব। এসো, তোমার মনিবের আনন্দের অংশীদার হও!’ \p \v 24 “তখন যে এক তালন্ত অর্থ নিয়েছিল, সে এসে উপস্থিত হল। সে বলল, ‘প্রভু, আমি জানি, আপনি এক কঠোর প্রকৃতির মানুষ, যেখানে বীজ বোনেননি, সেখানে কাটেন এবং যেখানে বীজ ছড়াননি, সেখানেই সংগ্রহ করেন। \v 25 তাই আমি ভীত হয়ে, আপনার তালন্ত মাটিতে লুকিয়ে রেখেছিলাম। এই দেখুন, আপনার যা, তা ফিরে পেলেন।’ \p \v 26 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে যে, আমি যেখানে বুনিনি, সেখানেই কাটি ও যেখানে বীজ ছড়াইনি, সেখানেই সংগ্রহ করি? \v 27 তাহলে মহাজনদের কাছে তুমি আমার অর্থ গচ্ছিত রাখতে পারতে, যেন আমি ফিরে এসে তা সুদসমেত ফেরত পেতাম। \p \v 28 “ ‘অতএব, তোমরা ওই তালন্তটি তার কাছ থেকে নিয়ে নাও এবং যার দশ তালন্ত আছে তাকে দিয়ে দাও। \v 29 কারণ যার কাছে আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে ও তার অনেক হবে। যার কাছে নেই, তার কাছে যা আছে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। \v 30 আর তোমরা সেই অকর্মণ্য দাসকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও, যেখানে কেবলই রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে।’ \s1 মেষপাল ও ছাগলেরা \p \v 31 “মনুষ্যপুত্র যখন তাঁর মহিমায়, তাঁর সমস্ত দূতদের সঙ্গে নিয়ে আসবেন, তিনি স্বর্গীয় মহিমায় তাঁর সিংহাসনে উপবেশন করবেন। \v 32 সমস্ত জাতিকে তাঁর সামনে উপস্থিত করা হবে। তিনি লোকেদের, একজন থেকে অপরজনকে পৃথক করবেন, যেভাবে মেষপালক ছাগদের মধ্য থেকে মেষদের পৃথক করে। \v 33 তিনি মেষদের তাঁর ডানদিকে ও ছাগদের তাঁর বাঁদিকে রাখবেন। \p \v 34 “তখন রাজা তাঁর ডানদিকের লোকদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশিস ধন্য তোমরা এসো; জগৎ সৃষ্টির সময় থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তোমরা তার অধিকারী হও। \v 35 কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে খাবার দিয়েছিলে; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে পান করতে দিয়েছিলে; আমি অপরিচিত ছিলাম, তোমরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলে; \v 36 আমার পোশাকের প্রয়োজন ছিল, তোমরা পোশাক দিয়েছিলে; আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার দেখাশোনা করেছিলে; আমি কারাগারে ছিলাম, তোমরা আমাকে দেখতে গিয়েছিলে।’ \p \v 37 “ধার্মিক ব্যক্তিরা তখন তাঁকে উত্তর দেবে, ‘প্রভু, আমরা কখন আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে আহার দিয়েছিলাম, বা তৃষ্ণার্ত দেখে পান করতে দিয়েছিলাম? \v 38 কখনই-বা আপনাকে অপরিচিত দেখে ভিতরে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দিয়েছিলাম, বা পোশাকহীন দেখে পোশাক দিয়েছিলাম? \v 39 কখনই-বা আপনাকে অসুস্থ বা কারাগারে দেখে আপনার কাছে গিয়েছিলাম?’ \p \v 40 “রাজা উত্তর দেবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যখন তোমরা আমার এই ভাইবোনদের মধ্যে নগণ্যতম কারও প্রতি এরকম করেছিলে, তখন তা আমারই প্রতি করেছিলে।’ \p \v 41 “তারপরে তিনি তাঁর বাঁদিকের লোকদের বলবেন, ‘অভিশপ্ত তোমরা, আমার কাছ থেকে দূর হয়ে অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হও, যা দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। \v 42 কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে কিছুই খেতে দাওনি; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে পান করার জন্য কিছু দাওনি; \v 43 আমি অপরিচিত ছিলাম, তোমরা আমাকে আশ্রয় দাওনি; আমার পোশাকের প্রয়োজন দেখেও আমাকে পোশাক দাওনি; আমি অসুস্থ ও কারাগারে ছিলাম, তোমরা আমার দেখাশোনা করোনি।’ \p \v 44 “তারাও উত্তর দেবে, ‘প্রভু, আমরা কখন আপনাকে ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত, অপরিচিত বা পোশাকহীন, অসুস্থ বা কারাগারে দেখে সাহায্য করিনি?’ \p \v 45 “তিনি উত্তর দেবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই নগণ্যতম জনেদের কোনো একজনের প্রতি যখন তা করোনি তখন তা তোমরা আমার প্রতিই করোনি।’ \p \v 46 “তারপর তারা চিরন্তন শাস্তির উদ্দেশ্যে যাবে, কিন্তু ধার্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।” \c 26 \s1 যীশুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র \p \v 1 এসব বিষয় বলা শেষ করার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, \v 2 “তোমরা জানো, আর দু-দিন পরে নিস্তারপর্ব\f + \fr 26:2 \fr*\ft ইহুদিদের প্রধান তিনটি পর্বের মধ্যে এটি একটি (\+xt দ্বিতীয় বিবরণ 16:1,16; যাত্রা পুস্তক 12:1-28\+xt*)। এই পর্বের মূল মর্মটি ছিল খ্রীষ্টের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ মৃত্যুর পূর্বছায়া।\ft*\f* আসছে, তখন মনুষ্যপুত্রকে ক্রুশার্পিত করার জন্য সমর্পণ করা হবে।” \p \v 3 সেই সময় প্রধান যাজকেরা ও লোকেদের প্রাচীনবর্গ কায়াফা নামক মহাযাজকের প্রাসাদে সমবেত হল। \v 4 আর তারা কোনও ছলে যীশুকে গ্রেপ্তার করে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করল। \v 5 তারা বলল, “কিন্তু পর্বের সময়ে নয়, তাতে লোকদের মধ্যে দাঙ্গা বেধে যেতে পারে।” \s1 বেথানিতে যীশুর অভিষেক \p \v 6 যীশু যখন বেথানিতে কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন, \v 7 তখন একজন নারী একটি শ্বেতস্ফটিকের পাত্রে বহুমূল্য সুগন্ধি তেল\f + \fr 26:7 \fr*\ft মহার্ঘ আতর (পারফিউম)\ft*\f* নিয়ে তাঁর কাছে এল। যীশু যখন টেবিলে হেলান দিয়ে বসেছিলেন, সেই নারী তাঁর মাথায় তা উপুড় করে ঢেলে দিল। \p \v 8 শিষ্যেরা এই দেখে ভীষণ রুষ্ট হলেন। তাঁরা বললেন, “এই অপচয় কেন? \v 9 এই সুগন্ধি তেল তো অনেক টাকায় বিক্রি করে দরিদ্রদের দান করা যেত!” \p \v 10 একথা শুনে যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা কেন এই মহিলাকে বিরক্ত করছ? সে তো আমার জন্য এক ভালো কাজই করেছে। \v 11 দরিদ্রেরা তোমাদের সঙ্গে সবসময়ই থাকবে, কিন্তু আমাকে তোমরা সবসময় পাবে না। \v 12 সে আমার শরীরে এই সুগন্ধি তেল ঢেলে আমাকে সমাধির উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করল। \v 13 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, সমস্ত জগতে যেখানেই এই সুসমাচার প্রচারিত হবে, সে যা করেছে, স্মৃতির উদ্দেশে তার সেই কাজের কথাও বলা হবে।” \s1 যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে যিহূদার সম্মতি \p \v 14 তখন সেই বারোজনের মধ্যে একজন, যে যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ নামে আখ্যাত, সে প্রধান যাজকদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, \v 15 “যীশুকে আপনাদের হাতে সমর্পণ করলে, আপনারা আমাকে কী দেবেন?” তারা তাকে ত্রিশটি রুপোর মুদ্রা গুনে দিল। \v 16 সেই সময় থেকে যিহূদা তাঁকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ খুঁজতে লাগল। \s1 প্রভুর ভোজ \p \v 17 খামিরবিহীন রুটির\f + \fr 26:17 \fr*\ft তাড়ীশূন্য রুটির\ft*\f* পর্বের প্রথম দিনে, শিষ্যেরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণের প্রস্তুতি আমরা কোথায় করব?” \p \v 18 তিনি উত্তর দিলেন, “তোমরা নগরে জনৈক ব্যক্তির কাছে যাও ও তাকে বলো, ‘গুরুমহাশয় বলছেন, আমার জন্য নির্ধারিত সময় এসে গেছে। আমি তোমার গৃহে আমার শিষ্যদের নিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণ করতে চাই।’ ” \v 19 তাই শিষ্যেরা যীশুর নির্দেশমতো কাজ করলেন ও গিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন। \p \v 20 সন্ধ্যা হলে, যীশু সেই বারোজনের সঙ্গে ভোজের টেবিলে হেলান দিয়ে বসলেন।\f + \fr 26:20 \fr*\ft ইহুদিরা খাদ্য গ্রহণের সময় কম-উচ্চতার চৌকির চারপাশে বসত ও ছোটো ছোটো বালিশে কনুই ঠেকিয়ে আধশোয়া অবস্থায় থাকত, দুই পা থাকত বাইরের দিকে।\ft*\f* \v 21 তারা খাওয়াদাওয়া করছেন, এমন সময়ে যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।” \p \v 22 তাঁরা ভীষণ দুঃখিত হলেন ও একের পর এক তাঁকে বললেন, “প্রভু, সে নিশ্চয়ই আমি নই?” \p \v 23 যীশু উত্তর দিলেন, “যে আমার সঙ্গে খাবারের পাত্রে হাত ডুবালো, সেই আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। \v 24 মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে যে রকম লেখা আছে, তেমনই তিনি চলে যাবেন, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যে মনুষ্যপুত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে! তার জন্ম না হলেই বরং তার পক্ষে ভালো হত।” \p \v 25 তখন, যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, সেই যিহূদা বলল, “রব্বি, সে নিশ্চয়ই আমি নই?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, তুমিই সে।”\f + \fr 26:25 \fr*\ft বা, তুমি নিজেই একথা বলছ।\ft*\f* \p \v 26 তাঁরা যখন আহার করছিলেন, যীশু রুটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভাঙলেন। আর তিনি তাঁর শিষ্যদের দিলেন ও বললেন, “তোমরা নাও, এবং ভোজন করো; এ আমার শরীর।” \p \v 27 তারপর তিনি পানপাত্র নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও শিষ্যদের তা দিয়ে বললেন, “তোমরা সবাই এর থেকে পান করো। \v 28 এ আমার রক্ত, সেই নতুন নিয়মের\f + \fr 26:28 \fr*\fq নিয়ম\fq*\ft —অর্থাৎ চুক্তি।\ft*\f* রক্ত, যা পাপক্ষমার উদ্দেশ্যে অনেকের জন্য পাতিত হচ্ছে। \v 29 আমি তোমাদের বলছি, এখন থেকে আমি এই দ্রাক্ষারস আর কখনও পান করব না, যতদিন না আমি আমার পিতার রাজ্যে তোমাদের সঙ্গে নতুন দ্রাক্ষারস পান করি।” \p \v 30 পরে তাঁরা একটি গান করে সেখান থেকে বের হয়ে জলপাই পর্বতে গেলেন। \s1 পিতরের অস্বীকার নিয়ে যীশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 31 তারপর যীশু তাঁদের বললেন, “এই রাত্রিতে তোমরা সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যাবে, কারণ এরকম লেখা আছে, \q1 “ ‘আমি পালরক্ষককে আঘাত করব, \q2 তাতে পালের মেষেরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।’\f + \fr 26:31 \fr*\ft \+xt সখরিয় 13:7\+xt*\ft*\f* \m \v 32 কিন্তু আমি উত্থিত হলে পর, আমি তোমাদের আগেই গালীলে পৌঁছাব।” \p \v 33 পিতর উত্তর দিলেন, “সবাই আপনাকে ছেড়ে চলে গেলেও, আমি কিন্তু কখনও যাব না।” \p \v 34 প্রত্যুত্তরে যীশু বললেন, “আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, আজ রাত্রে, মোরগ ডাকার আগেই, তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে।” \p \v 35 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, “আপনার সঙ্গে যদি আমাকে মৃত্যুবরণও করতে হয়, তাহলেও আমি আপনাকে কখনোই অস্বীকার করব না।” অন্য সব শিষ্যও একই কথা বললেন। \s1 গেৎশিমানি \p \v 36 তারপর যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে গেৎশিমানি নামে এক স্থানে গেলেন। তিনি তাদের বললেন, “আমি যতক্ষণ ওখানে প্রার্থনা করি তোমরা ততক্ষণ এখানে বসে থাকো।” \v 37 তিনি পিতর ও সিবদিয়ের দুই পুত্রকে তাঁর সঙ্গে নিলেন। তিনি ক্রমেই দুঃখার্ত ও ব্যাকুল হতে লাগলেন। \v 38 তারপর তিনি তাঁদের বললেন, “আমার প্রাণ মৃত্যু পর্যন্ত দুঃখার্ত হয়েছে। তোমরা এখানে থাকো, এবং আমার সঙ্গে জেগে থাকো।” \p \v 39 আরও কিছু দূর এগিয়ে, তিনি ভূমিতে উবুড় হয়ে প্রার্থনা করলেন, “পিতা, যদি সম্ভব হয়, এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূর করে দাও। তবুও আমার ইচ্ছামতো নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছামতো হোক।” \p \v 40 তারপর তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে এসে দেখলেন, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি পিতরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এক ঘণ্টাও আমার সঙ্গে জেগে থাকতে পারলে না? \v 41 জেগে থাকো ও প্রার্থনা করো, যেন তোমরা প্রলোভনে না পড়ো। আত্মা ইচ্ছুক, কিন্তু শরীর দুর্বল।” \p \v 42 তিনি দ্বিতীয়বার গিয়ে প্রার্থনা করলেন, “পিতা আমার, আমি পান না করলে যদি এই পাত্র দূর না হয়, তাহলে তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক।” \p \v 43 যখন তিনি ফিরে এলেন, তিনি আবার তাঁদের ঘুমাতে দেখলেন, কারণ তাঁদের চোখের পাতা ভারী হয়ে উঠেছিল। \v 44 তাই তিনি পুনরায় তাদের ছেড়ে এগিয়ে গেলেন ও একই কথা বলে তৃতীয়বার প্রার্থনা করলেন। \p \v 45 তারপর তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “তোমরা কি এখনও ঘুমিয়ে আছ ও বিশ্রাম করছ? দেখো, সময় হয়েছে। মনুষ্যপুত্রকে পাপীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। \v 46 ওঠো, চলো আমরা যাই! দেখো, আমার বিশ্বাসঘাতক এসে পড়েছে!” \s1 যীশুকে গ্রেপ্তার \p \v 47 তিনি তখনও কথা বলছেন সেই সময় বারোজনের অন্যতম যিহূদা সেখানে এসে উপস্থিত হল। তার সঙ্গে ছিল একদল সশস্ত্র লোক, তাদের হাতে ছিল তরোয়াল ও লাঠিসোঁটা। প্রধান যাজকেরা ও লোকসমূহের প্রাচীনবর্গ তাদের পাঠিয়েছিল। \v 48 সেই বিশ্বাসঘাতক তাদের এই সংকেত দিয়ে রেখেছিল, “যাকে আমি চুম্বন করব, সেই ওই ব্যক্তি; তাকে গ্রেপ্তার কোরো।” \v 49 সেই মুহূর্তেই যীশুর কাছে গিয়ে যিহূদা বলল, “রব্বি, নমস্কার!” আর তাঁকে চুম্বন করল। \p \v 50 যীশু উত্তর দিলেন, “বন্ধু, যা করতে এসেছ, তুমি তাই করো।” \p তখন সেই লোকেরা এগিয়ে এসে যীশুকে ধরল ও তাঁকে গ্রেপ্তার করল। \v 51 তাই দেখে যীশুর সঙ্গীদের একজন তাঁর তরোয়াল বের করে মহাযাজকের দাসকে আঘাত করে তার কান কেটে ফেললেন। \p \v 52 যীশু তাঁকে বললেন, “তোমার তরোয়াল পুনরায় স্বস্থানে রাখো, কারণ যারাই তরোয়াল ধারণ করে তারাই তরোয়ালের দ্বারা মৃত্যুবরণ করবে। \v 53 তুমি কি মনে করো? আমি কি আমার পিতাকে ডাকতে পারি না, আর তিনি সঙ্গে সঙ্গে কি আমার অধীনে বারোটি বাহিনীরও\f + \fr 26:53 \fr*\ft এক বাহিনীতে রোমীয় 6,000 সৈন্য থাকত।\ft*\f* বেশি দূত পাঠিয়ে দেবেন না? \v 54 তাহলে শাস্ত্রবাণী কীভাবে পূর্ণ হবে, যা বলে যে, এসব এভাবেই ঘটবে?”\f + \fr 26:54 \fr*\ft সম্ভবত \+xt সখরিয় 13:7\+xt* পদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।\ft*\f* \p \v 55 সেই সময় যীশু লোকদের বললেন, “আমি কি কোনও বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছি যে, তোমরা তরোয়াল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ? প্রতিদিন আমি মন্দির চত্বরে বসে শিক্ষা দিয়েছি, তখন তো তোমরা আমাকে গ্রেপ্তার করোনি। \v 56 কিন্তু এ সমস্ত এজন্যই ঘটছে, যেন ভাববাদীদের লিখিত বচনগুলি পূর্ণ হয়।” তখন সব শিষ্য তাঁকে ত্যাগ করে পালিয়ে গেলেন। \s1 মহাসভার সামনে \p \v 57 যারা যীশুকে গ্রেপ্তার করেছিল, তারা তাঁকে মহাযাজক কায়াফার কাছে নিয়ে গেল। সেখানে সব শাস্ত্রবিদ ও লোকদের প্রাচীনবর্গ সমবেত হয়েছিল। \v 58 কিন্তু পিতর দূর থেকে, মহাযাজকের উঠান পর্যন্ত যীশুকে অনুসরণ করলেন। তিনি প্রবেশ করে শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা দেখার জন্য রক্ষীদের কাছে গিয়ে বসলেন। \p \v 59 প্রধান যাজকেরা ও সমস্ত মহাসভা যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য-প্রমাণ খুঁজছিল। \v 60 বহু মিথ্যাসাক্ষী এগিয়ে এলেও তারা সেরকম কিছুই পেল না। \p শেষে দুজন এগিয়ে \v 61 এসে বলল, “এই লোকটি বলেছিল, ‘আমি ঈশ্বরের মন্দির ভেঙে ফেলতে ও তিনদিনের মধ্যে তা পুনর্নির্মাণ করতে পারি।’ ” \p \v 62 তখন মহাযাজক উঠে দাঁড়িয়ে যীশুকে বললেন, “তুমি কি উত্তর দেবে না? এই লোকেরা তোমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ নিয়ে এসেছে, এগুলি কী?” \v 63 যীশু তবুও নীরব রইলেন। \p মহাযাজক তাঁকে বললেন, “আমি জীবন্ত ঈশ্বরের নামে শপথ করে তোমাকে অভিযুক্ত করছি: আমাদের বলো দেখি, তুমিই কি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র?” \p \v 64 যীশু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, ঠিক তাই, যেমন তুমি বলেছ। কিন্তু আমি তোমাদের সবাইকে বলছি: ভাবীকালে তোমরা মনুষ্যপুত্রকে সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডানদিকে বসে থাকতে ও স্বর্গের মেঘে করে আসতে দেখবে।” \p \v 65 তখন মহাযাজক তাঁর কাপড় ছিঁড়ে ফেলে বললেন, “ও ঈশ্বরনিন্দা করেছে! আমাদের আর সাক্ষ্য-প্রমাণের কী প্রয়োজন? দেখো, এখন তোমরা ঈশ্বরনিন্দা শুনলে। \v 66 তোমাদের অভিমত কী?” \p তারা উত্তর দিল, “ও মৃত্যুরই যোগ্য।” \p \v 67 তারা তখন তাঁর মুখে থুতু দিল ও তাঁকে ঘুসি মারল। \v 68 অন্যেরা তাঁকে চড় মেরে বলতে লাগল, “ওরে খ্রীষ্ট, আমাদের কাছে ভাববাণী বল দেখি, কে তোকে মারল?” \s1 পিতর যীশুকে অস্বীকার করলেন \p \v 69 সেই সময় পিতর বাইরের উঠানে বসেছিলেন। একজন দাসী তাঁর কাছে এসে বলল, “তুমিও সেই গালীলীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে।” \p \v 70 কিন্তু তিনি তাদের সবার সামনে সেকথা অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, “আমি জানি না, তুমি কী বলছ।” \p \v 71 তখন তিনি ফটকের কাছে গেলেন। সেখানে অন্য একজন দাসী তাঁকে দেখে, সেখানকার লোকজনকে বলল, “এই লোকটিও নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল।” \p \v 72 তিনি শপথ করে আবার তা অস্বীকার করলেন, বললেন, “আমি ওই মানুষটিকে চিনি না!” \p \v 73 আরও কিছুক্ষণ পরে, যারা সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তারা পিতরের কাছে গিয়ে বলল, “নিশ্চিতরূপে তুমি তাদেরই একজন, কারণ তোমার উচ্চারণভঙ্গিই তা প্রকাশ করছে।” \p \v 74 তখন তিনি নিজের উপরে অভিশাপ ডেকে এনে তাদের কাছে শপথ করে বললেন, “আমি ওই মানুষটিকে চিনিই না!” \p সেই মুহূর্তে একটি মোরগ ডেকে উঠল। \v 75 তখন যীশু যে কথা বলেছিলেন, তা পিতরের মনে পড়ল, “মোরগ ডাকার পূর্বে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে।” আর তিনি বাইরে গিয়ে খুব কাঁদতে লাগলেন। \c 27 \s1 যিহূদার আত্মহত্যা \p \v 1 ভোরবেলায়, সমস্ত প্রধান যাজক ও লোকদের প্রাচীনবর্গ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে, যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। \v 2 তারা তাঁকে বেঁধে প্রদেশপাল পীলাতের কাছে গেল ও তাঁর হাতে তাঁকে সমর্পণ করল। \p \v 3 যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেই যিহূদা যখন দেখল যে যীশুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সে তীব্র বিবেক দংশনে বিদ্ধ হল। সে প্রধান যাজকদের ও প্রাচীনদের কাছে গিয়ে সেই ত্রিশটি রুপোর মুদ্রা ফিরিয়ে দিল। \p \v 4 সে বলল, “নির্দোষ মানুষের রক্ত সমর্পণ করে আমি পাপ করেছি।” তারা উত্তরে বলল, “তাতে আমাদের কী? সে তোমার দায়।” \p \v 5 তাই যিহূদা সেই অর্থ মন্দিরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেল। তারপর গিয়ে নিজেকে ফাঁসি দিল। \p \v 6 প্রধান যাজকেরা মুদ্রাগুলি তুলে নিয়ে বলল, “এই অর্থ ভাণ্ডারে রাখা বিধানবিরুদ্ধ, কারণ এটি রক্তের মূল্য।” \v 7 তাই তারা স্থির করল, ওই অর্থ দিয়ে কুমোরের জমি কেনা হবে, যেন বিদেশিদের কবর দেওয়া যেতে পারে। \v 8 এই কারণে একে আজও পর্যন্ত রক্তক্ষেত্র বলা হয়। \v 9 তখন ভাববাদী যিরমিয়ের দ্বারা কথিত এই বচন পূর্ণ হল: “তারা সেই ত্রিশটি রুপোর মুদ্রা নিল, ইস্রায়েল-সন্তানেরা যা তাঁর মূল্য নির্ধারণ করেছিল, \v 10 আর তারা সেই অর্থ কুমোরের জমি কেনার জন্য ব্যয় করল, যেমন প্রভু আমাকে আদেশ দিয়েছিলেন।”\f + \fr 27:10 \fr*\ft \+xt সখরিয় 11:12,13; যিরমিয় 19:1-13; 32:6-9\+xt*\ft*\f* \s1 পীলাতের সামনে যীশু \p \v 11 ইতিমধ্যে যীশুকে প্রদেশপালের সামনে দাঁড় করানো হল। প্রদেশপাল তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ইহুদিদের রাজা?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, ঠিক তাই, যেমন তুমি বললে।” \p \v 12 প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনবর্গ যখন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে লাগল, তিনি কোনও উত্তর দিলেন না। \v 13 তখন পীলাত তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার বিরুদ্ধে ওরা যে সাক্ষ্য এনেছে তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না?” \v 14 তবুও যীশু কোনো উত্তর দিলেন না, একটি অভিযোগেরও না। এতে প্রদেশপাল অত্যন্ত বিস্মিত হলেন। \p \v 15 সেই সময়ে, পর্ব উপলক্ষে প্রদেশপালের একটি প্রথা ছিল, লোকসাধারণ যে কারাবন্দিকে চাইত, তিনি তাকে মুক্তি দিতেন। \v 16 তখন যীশু-বারাব্বা নামে তাদের এক কুখ্যাত বন্দি ছিল। \v 17 তাই লোকেরা সমবেত হলে পীলাত তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের জন্য আমি কাকে মুক্তি দেব, বারাব্বাকে না যীশুকে, যাকে খ্রীষ্ট বলে?” \v 18 কারণ তিনি জানতেন, তারা\f + \fr 27:18 \fr*\ft অর্থাৎ, ইহুদি নেতারা।\ft*\f* ঈর্ষাবশত যীশুকে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল। \p \v 19 পীলাত যখন বিচারাসনে বসেছিলেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে এই বার্তা পাঠালেন, “ওই নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি তুমি কিছু কোরো না, কারণ আজ আমি স্বপ্নে তাঁর কারণে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।” \p \v 20 কিন্তু প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনবর্গ লোকদের প্ররোচিত করে বলল, তারা যেন বারাব্বাকে মুক্তির জন্য চেয়ে নেয়, কিন্তু যীশুকে যেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। \p \v 21 প্রদেশপাল জিজ্ঞাসা করলেন, “এই দুজনের মধ্যে তোমরা কাকে চাও যে আমি মুক্ত করি?” \p তারা উত্তর দিল, “বারাব্বাকে।” \p \v 22 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে, আমি তাকে নিয়ে কী করব?” \p তারা সকলে মিলে উত্তর দিল, “ওকে ক্রুশে দিন!” \p \v 23 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন? ও কী অপরাধ করেছে?” \p কিন্তু তারা আরও জোরে চিৎকার করে বলতে লাগল, “ওকে ক্রুশে দিন!” \p \v 24 পীলাত যখন দেখলেন, তাঁর সব প্রচেষ্টা নিষ্ফল হচ্ছে, বরং এক হট্টগোলের সৃষ্টি হচ্ছে, তিনি জল নিয়ে লোকদের সামনে তাঁর হাত ধুয়ে বললেন, “আমি এই মানুষটির রক্তপাত সম্পর্কে নির্দোষ। এই দায় তোমাদের!” \p \v 25 লোকেরা সবাই উত্তর দিল, “ওর রক্ত আমাদের উপরে ও আমাদের সন্তানের উপরে বর্তাক।” \p \v 26 তখন তিনি তাদের কাছে বারাব্বাকে মুক্ত করে দিলেন, কিন্তু যীশুকে চাবুক দিয়ে প্রহার করিয়ে ক্রুশার্পিত করার জন্য সমর্পণ করলেন। \s1 যীশুকে সৈন্যদের ব্যঙ্গবিদ্রুপ \p \v 27 এরপর প্রদেশপালের সৈন্যরা যীশুকে তাঁর প্রাসাদে নিয়ে গেল ও তাঁর চারপাশে সমস্ত সৈন্যদলকে একত্র করল। \v 28 তারা তাঁর পোশাক খুলে একটি লাল রংয়ের পোশাক পরিয়ে দিল। \v 29 তারপর কাঁটালতা দিয়ে পাকানো একটি মুকুট তৈরি করে তাঁর মাথায় স্থাপন করল। তারা তাঁর ডান হাতে নলখাগড়ার একটি ছড়ি দিল ও তাঁর সামনে নতজানু হয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করল, বলল, “ইহুদিদের রাজা, নমস্কার!” \v 30 তারা তাঁর গায়ে থুতু দিল, ছড়িটি নিয়ে নিল এবং তা দিয়ে বারবার তাঁর মাথায় আঘাত করতে লাগল। \v 31 তাঁকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করার পর, তারা তাঁর পোশাকটি খুলে নিল ও তাঁর নিজের পোশাক তাঁকে পরিয়ে দিল। তারপর তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্য নিয়ে গেল। \s1 যীশুকে ক্রুশার্পিত করা হল \p \v 32 তারা যখন বেরিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা কুরীণ থেকে আগত শিমোন নামে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ পেল। তারা ক্রুশ বয়ে নিয়ে যেতে তাকে বাধ্য করল। \v 33 তারা গলগথা নামক এক স্থানে এল (নামটির অর্থ, “মাথার খুলির স্থান”)। \v 34 তারা সেখানে যীশুকে পিত্তরসে মেশানো দ্রাক্ষারস\f + \fr 27:34 \fr*\ft সংস্কারগত ধারণা হল, জেরুশালেমের মহিলারা এই ধরনের ব্যথা-হরণকারী পানীয় প্রস্তুত করে, ক্রুশবিদ্ধ বন্দিদের পান করতে দিত। যীশু তা পান করতে চাননি, কারণ তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সম্পূর্ণ সজ্ঞানে থাকতে চেয়েছিলেন (50 পদ)\ft*\f* পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তার স্বাদ নিয়ে তা পান করতে চাইলেন না। \v 35 তারা যখন তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করল, তারা গুটিকাপাত করে তাঁর পোশাকগুলি ভাগ করে নিল।\f + \fr 27:35 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর আছে: “যেন ভাববাদীদের দ্বারা কথিত বচন পূর্ণ হয়, ‘তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করল ও আমার পরিচ্ছদের জন্য গুটিকাপাত করল।’ ” (\+xt গীত 22:18\+xt*)\ft*\f* \v 36 আর সেখানে বসে, তারা তাঁকে পাহারা দিতে লাগল। \v 37 তাঁর মাথার উপরে তারা তাঁর বিরুদ্ধে এই লিখিত অভিযোগপত্র টাঙিয়ে দিল: \pc এই ব্যক্তি যীশু, ইহুদিদের রাজা। \p \v 38 দুজন দস্যুকে তাঁর সঙ্গে ক্রুশার্পিত করা হল, একজনকে তাঁর ডানদিকে, অন্যজনকে তাঁর বাঁদিকে। \v 39 যারা ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, তারা তাদের মাথা নাড়তে নাড়তে তাঁকে অপমান করে বলতে লাগল, \v 40 “তুমি নাকি মন্দির ধ্বংস করে তিনদিনের মধ্যে পুনর্নির্মাণ করতে চলেছিলে, এবার নিজেকে রক্ষা করো! তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, ক্রুশ থেকে নেমে এসো!” \v 41 একইভাবে প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদরা ও প্রাচীনবর্গ তাঁকে বিদ্রুপ করল। \v 42 তারা বলল, “ও অন্যদের বাঁচাত, কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে পারে না! ও তো ইস্রায়েলের রাজা! এখন ও ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরাও ওকে বিশ্বাস করব। \v 43 ও ঈশ্বরে নির্ভর করে। ঈশ্বরই ওকে নিস্তার করুন, যদি তিনি ওকে চান, কারণ ও বলেছে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র।’ ” \v 44 একইভাবে, তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ দুই দস্যুও তাঁকে বিভিন্নভাবে অপমান করল। \s1 যীশুর মৃত্যু \p \v 45 দুপুর বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশে অন্ধকার ছেয়ে গেল। \v 46 প্রায় তিনটের সময় যীশু উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে উঠলেন, \tl “এলী, এলী,\tl*\f + \fr 27:46 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে, \ft*\fqa এলি, এলি!\fqa*\f* \tl লামা শবক্তানী?”\tl* যার অর্থ, “ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ?”\f + \fr 27:46 \fr*\ft \+xt গীত 22:1\+xt*\ft*\f* \p \v 47 সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন এমন কয়েকজন যখন একথা শুনল, তারা বলল, “ও এলিয়কে ডাকছে।” \p \v 48 সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে একজন দৌড়ে গিয়ে একটি স্পঞ্জ নিয়ে এল। সে তা সিরকা মিশ্রিত দ্রাক্ষারসে পূর্ণ করে একটি নলের\f + \fr 27:48 \fr*\ft নলখাগড়ার লম্বা ডাঁটি।\ft*\f* সাহায্যে যীশুকে পান করতে দিল। \v 49 অন্যেরা সকলে বলল, “এখন ওকে একা ছেড়ে দাও। দেখি, এলিয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না।” \p \v 50 পরে যীশু আবার উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে তাঁর আত্মাকে সমর্পণ করলেন। \p \v 51 আর সেই মুহূর্তে মন্দিরের পর্দাটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত চিরে দু-টুকরো হল। ভূমিকম্প হল ও পাথর শিলাগুলি বিদীর্ণ হল। \v 52 কবরসকল উন্মুক্ত হল ও বহু পুণ্যজনের শরীর, যাঁরা পূর্বে নিদ্রাগত হয়েছিলেন, তাদের জীবনে উত্থাপিত করা হল। \v 53 তাঁরা কবর থেকে বের হয়ে এলেন ও যীশুর পুনরুত্থানের পর পবিত্র নগরে প্রবেশ করলেন এবং বহু মানুষকে দর্শন দিলেন। \p \v 54 তখন সেই শত-সেনাপতি ও যারা তার সঙ্গে যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, সেই ভূমিকম্প ও অন্য সব ঘটনা ঘটতে দেখে, তারা আতঙ্কগ্রস্ত হল ও বিস্ময়ে চিৎকার করে উঠল, “নিশ্চিতরূপেই ইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন!” \p \v 55 সেখানে বহু মহিলাও উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা দূর থেকে সব লক্ষ্য করছিলেন। তাঁরা যীশুর পরিচর্যার জন্য গালীল থেকে তাঁকে অনুসরণ করে আসছিলেন। \v 56 তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাগ্দালাবাসী মরিয়ম, যাকোব ও যোষির মা মরিয়ম এবং সিবদিয়ের পুত্রদের মা। \s1 যীশুর সমাধি \p \v 57 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, সেখানে যোষেফ নামে আরিমাথিয়ার এক ধনী ব্যক্তি উপস্থিত হলেন। তিনি নিজেও যীশুর শিষ্য হয়েছিলেন। \v 58 পীলাতের কাছে গিয়ে তিনি যীশুর দেহটি চাইলেন, পীলাত তা তাঁকে দেওয়ার আদেশ দিলেন। \v 59 যোষেফ সেই দেহটি নিয়ে পরিষ্কার লিনেন কাপড়ে\f + \fr 27:59 \fr*\ft শণের বা রেশমি কাপড়।\ft*\f* জড়ালেন \v 60 ও পাথরে খোদাই করা তাঁর নিজের নতুন সমাধি গৃহে তা রাখলেন। তিনি সমাধির প্রবেশপথে একটি বড়ো পাথর গড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। \v 61 সেখানে মাগ্দালাবাসী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম কবরের উল্টোদিকে বসেছিলেন। \s1 সমাধির পাহারা \p \v 62 পরের দিন, অর্থাৎ প্রস্তুতি-দিনের\f + \fr 27:62 \fr*\ft নিস্তারপর্বের প্রাক্কালে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক ও ঔপচারিক শুদ্ধকরণের জন্য নির্ধারিত দিন।\ft*\f* পরদিন, প্রধান যাজকেরা ও ফরিশীরা পীলাতের কাছে গেল। \v 63 তারা বলল, “মহাশয়, আমাদের মনে পড়ছে, সেই প্রবঞ্চক জীবিত থাকাকালীন বলেছিল, ‘তিন দিন পরে আমি আবার উত্থিত হব।’ \v 64 সেই কারণে, তিন দিন পর্যন্ত সমাধিটি পাহারা দিতে আদেশ দিন, তা না হলে, তাঁর শিষ্যেরা এসে সেই দেহ চুরি করে নিয়ে যাবে ও লোকদের বলবে যে তিনি মৃতলোক থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন। তাহলে শেষের এই প্রতারণা প্রথমের থেকে আরও গুরুতর হবে।” \p \v 65 পীলাত উত্তর দিলেন, “তোমরা পাহারা দাও। গিয়ে সমাধি যতটা সুরক্ষিত রাখতে পারো, তোমরা তাই করো।” \v 66 তাই তারা গেল, সেই পাথরটি মোহরাঙ্কিত করে সমাধি সুরক্ষিত করল ও প্রহরীদের নিযুক্ত করল। \c 28 \s1 যীশুর পুনরুত্থান \p \v 1 বিশ্রামদিনের অবসান হলে, সপ্তাহের প্রথম দিনে অতি প্রত্যূষকালে, মাগ্দালাবাসী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম সমাধি দেখতে গেলেন। \p \v 2 সেখানে এক প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর এক দূত স্বর্গ থেকে নেমে এলেন। তিনি সমাধির কাছে গিয়ে সেই পাথরটি গড়িয়ে দিলেন ও তাঁর উপরে বসলেন। \v 3 তাঁর বস্ত্র ছিল বিদ্যুতের মতো\f + \fr 28:3 \fr*\ft উজ্জ্বল\ft*\f* এবং তাঁর পোশাক ছিল তুষারের মতো ধবধবে সাদা। \v 4 তাঁকে দেখে প্রহরীরা এত ভয়ভীত হয়েছিল, যে তারা কাঁপতে লাগল ও মরার মতো পড়ে রইল। \p \v 5 স্বর্গদূত সেই মহিলাদের বললেন, “তোমরা ভয় পেয়ো না, কারণ আমি জানি, তোমরা যীশুর অন্বেষণ করছ, যিনি ক্রুশার্পিত হয়েছিলেন। \v 6 তিনি এখানে নেই, তিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছেন, যেমন তিনি বলেছিলেন। এসো, তিনি যেখানে শায়িত ছিলেন, সেই স্থানটি দেখবে। \v 7 তারপর দ্রুত গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বলো, ‘তিনি মৃতলোক থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন এবং তোমাদের আগেই গালীলে যাচ্ছেন। সেখানে তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে।’ মনে রাখবে, যে কথা আমি তোমাদের বললাম।” \p \v 8 তাই সেই মহিলারা ভীত, অথচ আনন্দে পূর্ণ হয়ে দ্রুত সমাধি ছেড়ে চলে গেলেন ও তাঁর শিষ্যদের সংবাদ দেওয়ার জন্য দৌড়ে গেলেন। \v 9 হঠাৎ যীশু তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, “তোমাদের কল্যাণ হোক।” তারা এগিয়ে এসে তাঁর পা-দুখানি জড়িয়ে ধরলেন ও তাঁকে প্রণাম করলেন। \v 10 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা ভয় পেয়ো না। যাও, আমার ভাইদের গালীলে যেতে বলো; সেখানে তারা আমার দর্শন পাবে।” \s1 প্রহরীদের প্রতিবেদন \p \v 11 সেই মহিলারা যখন পথে যাচ্ছেন, প্রহরীদের কয়েকজন নগরে প্রবেশ করে প্রধান যাজকদের সমস্ত ঘটনার বিবরণ দিল। \v 12 প্রধান যাজকেরা প্রাচীনবর্গের সঙ্গে মিলিত হয়ে এক কুমন্ত্রণা করল। তারা সেই সৈন্যদের প্রচুর পরিমাণে অর্থ দিল, \v 13 তাদের বলল, “তোমাদের বলতে হবে, ‘রাত্রে আমরা যখন ঘুমিয়েছিলাম, তখন তার শিষ্যেরা এসে তাকে চুরি করে নিয়ে গেছে।’ \v 14 আর এই সংবাদ যদি প্রদেশপালের কাছে যায়, আমরাই তাঁকে বুঝিয়ে তোমাদের সংকটের সমাধান করব।” অতএব, সৈন্যরা সেই অর্থ নিয়ে তাদের নির্দেশমতো কাজ করল। \v 15 আর এই কাহিনি ব্যাপকরূপে ইহুদিদের মধ্যে রটিয়ে দেওয়া হল, যা আজও পর্যন্ত প্রচলিত আছে। \s1 মহান নিযুক্তি \p \v 16 তারপর সেই এগারোজন শিষ্য গালীলের সেই পর্বতে গেলেন, যেখানে যীশু তাদের যেতে বলেছিলেন। \v 17 তাঁরা তাঁকে দেখে প্রণাম করলেন, কিন্তু কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করলেন। \v 18 তখন যীশু তাঁদের কাছে এসে বললেন, “স্বর্গে ও পৃথিবীতে সমস্ত কর্তৃত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে। \v 19 অতএব, তোমরা যাও ও সমস্ত জাতিকে শিষ্য করো, পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিষ্ম\f + \fr 28:19 \fr*\fq বাপ্তিষ্ম\fq*\ft —খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযুক্তি ও তাঁর প্রতি তাদের অঙ্গীকারের চিহ্নস্বরূপ।\ft*\f* দাও। \v 20 আর আমি তোমাদের যে সমস্ত আদেশ দিয়েছি, সেগুলি পালন করার জন্য তাদের শিক্ষা দাও। আর আমি নিশ্চিতরূপে, যুগান্ত পর্যন্ত নিত্য তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।”\f + \fr 28:20 \fr*\ft ইম্মানুয়েল (ঈশ্বর আমাদের সঙ্গী), এই বাণীর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ও পুনরায় আশ্বাস-প্রদানকারী প্রতিশ্রুতিস্বরূপ।\ft*\f*