\id LUK - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h লূক \toc1 লূক লিখিত সুসমাচার \toc2 লূক \toc3 লূক \mt1 লূক লিখিত সুসমাচার \c 1 \s1 প্রস্তাবনা \p \v 1 যা কিছু ঘটে গেছে, আমাদের মধ্যে অনেকেই তার একটি বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। \v 2 যাঁরা প্রথম থেকেই সবকিছু চাক্ষুষ দেখেছেন ও বাক্যের পরিচর্যা করেছেন, তাঁরাই সে সমস্ত আমাদের কাছে সমর্পণ করেছেন। \v 3 মহামান্য থিয়ফিল, সেইজন্য আমি প্রথম থেকে সবকিছু সযত্নে অনুসন্ধান করে আপনার জন্য একটি সুবিন্যস্ত বিবরণ রচনা করা সংগত বিবেচনা করলাম, \v 4 যেন আপনি যে শিক্ষা লাভ করেছেন, সে বিষয়ে আপনার জ্ঞান সুনিশ্চিত হয়। \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের জন্মের পূর্বাভাস \p \v 5 যিহূদিয়ার রাজা হেরোদের রাজত্বকালে সখরিয় নামে একজন যাজক ছিলেন। তিনি ছিলেন অবিয়ের পুরোহিত অধীনস্থ যাজক-সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর স্ত্রী ইলিশাবেতও ছিলেন হারোণ বংশীয়। \v 6 তাঁরা উভয়েই ছিলেন ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক। তাঁরা প্রভুর সমস্ত আজ্ঞা ও বিধিনিয়ম নির্দোষরূপে পালন করতেন। \v 7 কিন্তু তাঁরা ছিলেন নিঃসন্তান, কারণ ইলিশাবেত বন্ধ্যা ছিলেন এবং তাঁদের দুজনেরই বেশ বয়স হয়েছিল। \p \v 8 একদিন সখরিয়ের দলের পালা ছিল এবং তিনি ঈশ্বরের সামনে যাজকীয় পরিচর্যা করছিলেন। \v 9 যাজকীয় কাজের রীতি অনুসারে, প্রভুর মন্দিরে গিয়ে ধূপ জ্বালাবার জন্য তিনিই গুটিকাপাতের দ্বারা মনোনীত হয়েছিলেন। \v 10 সেই ধূপ জ্বালাবার সময় যখন উপস্থিত হল, সমবেত উপাসকেরা তখন বাইরে প্রার্থনা করছিলেন। \p \v 11 সেই সময় প্রভুর এক দূত ধূপ জ্বালাবার বেদির ডানদিকে দাঁড়িয়ে তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন। \v 12 তাঁকে দেখে সখরিয় বিস্ময়ে বিহ্বল ও ভীত হলেন। \v 13 কিন্তু দূত তাঁকে বললেন, “সখরিয়, ভয় পেয়ো না, ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছেন। তোমার স্ত্রী ইলিশাবেত তোমার জন্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবেন। তুমি তার নাম রাখবে, যোহন। \v 14 সে তোমার আনন্দ ও উল্লাসের কারণ হবে এবং তার জন্মে অনেক মানুষ উল্লসিত হবে, \v 15 কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে সে হবে মহান। সে কখনও দ্রাক্ষারস, বা অন্য কোনো উত্তেজক পানীয় গ্রহণ করবে না এবং জন্মমুহূর্ত\f + \fr 1:15 \fr*\ft বা, মায়ের গর্ভ থেকেই।\ft*\f* থেকেই সে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে। \v 16 ইস্রায়েলের বহু মানুষকে সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে আনবে। \v 17 ভাববাদী এলিয়ের আত্মা ও পরাক্রমে সে প্রভুর অগ্রগামী হবে; সকল পিতৃহৃদয়কে তাদের সন্তানের দিকে ফিরিয়ে আনবে, অবাধ্যদের ধার্মিকদের প্রজ্ঞাপথে নিয়ে আসবে—প্রভুর জন্য এক প্রজাসমাজকে প্রস্তুত করে তুলবে।”\f + \fr 1:17 \fr*\ft \+xt মালাখি 4:5,6\+xt*\ft*\f* \p \v 18 সখরিয় দূতকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কী করে এ বিষয়ে সুনিশ্চিত হব? কারণ আমি বৃদ্ধ, আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়েছে।” \p \v 19 দূত উত্তর দিলেন, “আমি গ্যাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। এই শুভবার্তা ব্যক্ত করার জন্য ও তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে। \v 20 কিন্তু তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, যদিও সেকথা যথাসময়ে সত্য হয়ে উঠবে। এজন্য তুমি বোবা হয়ে যাবে এবং যতদিন না এই ঘটনা ঘটে, তুমি কথা বলতে পারবে না।” \p \v 21 এদিকে সখরিয়ের জন্য অপেক্ষায় লোকেরা অবাক হয়ে ভাবছিল, তিনি মন্দিরে কেন এত দেরি করছেন। \v 22 বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারলেন না। তারা উপলব্ধি করল, তিনি মন্দিরে কোনো দর্শন লাভ করেছেন, কারণ তিনি ক্রমাগত ইঙ্গিতে তাদের বোঝাচ্ছিলেন, কিন্তু কথা বলতে পারছিলেন না। \p \v 23 তাঁর পরিচর্যার কাজ সম্পূর্ণ হলে তিনি ঘরে ফিরে গেলেন। \v 24 এরপরে তাঁর স্ত্রী ইলিশাবেত অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং পাঁচ মাস গোপনে অবস্থান করলেন। \v 25 তিনি বললেন, “প্রভু আমার জন্য এ কাজ করেছেন। এই সময়ে তিনি আমার প্রতি করুণা প্রদর্শন করেছেন, লোকসমাজ থেকে আমার অপবাদ দূর করেছেন।” \s1 যীশুর জন্মের পূর্বাভাস \p \v 26 ছয় মাস\f + \fr 1:26 \fr*\ft অর্থাৎ, ইলিশাবেতের গর্ভে যোহনের আসার সময় থেকে।\ft*\f* পরে ঈশ্বর তাঁর দূত গ্যাব্রিয়েলকে গালীল প্রদেশের নাসরৎ-নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন। \v 27 তিনি দাউদ বংশের যোষেফ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বাগদত্তা হয়েছিলেন। সেই কুমারী কন্যার নাম ছিল মরিয়ম। \v 28 দূত তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “মহান অনুগ্রহের অধিকারিণী\f + \fr 1:28 \fr*\ft কোনো কোনো সংস্করণে, “নারীগণের মধ্যে তুমি ধন্য”\ft*\f*, তোমাকে অভিনন্দন! প্রভু তোমার সঙ্গে আছেন।” \p \v 29 তাঁর কথা শুনে মরিয়ম অত্যন্ত বিচলিত হলেন এবং অবাক হয়ে ভাবলেন, এ কী ধরনের অভিবাদন হতে পারে! \v 30 কিন্তু দূত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় পেয়ো না। তুমি ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করেছ। \v 31 তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এক পুত্রের জন্ম দেবে, আর তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু। \v 32 তিনি মহান হবেন ও পরাৎপরের পুত্র নামে আখ্যাত হবেন। প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতা দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন \v 33 এবং তিনি যাকোব বংশে চিরকাল রাজত্ব করবেন। তাঁর রাজত্বের কখনও অবসান হবে না।” \p \v 34 মরিয়ম দূতকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তা কী করে হবে? আমি যে কুমারী!” \p \v 35 উত্তর দিয়ে দূত তাঁকে বললেন, “পবিত্র আত্মা তোমার উপরে অবতরণ করবেন ও পরাৎপরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে। তাই যে পবিত্র পুরুষ জন্মগ্রহণ করবেন, তিনি ঈশ্বরের পুত্র\f + \fr 1:35 \fr*\ft অথবা, তাই যে শিশু জন্মগ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্ররূপে আখ্যাত হবেন।\ft*\f* বলে আখ্যাত হবেন। \v 36 আর তোমার আত্মীয় ইলিশাবেতও বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের মা হতে চলেছেন। যাকে সকলে বন্ধ্যা বলে জানত, এখন তাঁর ছয় মাস চলছে। \v 37 কারণ ঈশ্বর যা বলেন তা সবসময় সত্যি হয়।” \p \v 38 মরিয়ম উত্তর দিলেন, “আমি প্রভুর দাসী। আপনি যে রকম বললেন, আমার প্রতি সেরকমই হোক।” এরপর দূত তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন। \s1 ইলিশাবেতের কাছে মরিয়ম \p \v 39 তখন মরিয়ম যিহূদিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের এক নগরের দিকে দ্রুত বেরিয়ে পড়লেন। \v 40 সেখানে এসে তিনি সখরিয়ের বাড়িতে প্রবেশ করে ইলিশাবেতকে অভিনন্দন জানালেন। \v 41 ইলিশাবেত যখন মরিয়মের অভিনন্দন শুনলেন, তাঁর গর্ভে শিশুটি লাফ দিয়ে উঠল এবং ইলিশাবেত পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন। \v 42 উচ্ছ্বসিত স্বরে তিনি বলে উঠলেন, “নারীকুলে তুমি ধন্য, আর যে শিশুকে তুমি গর্ভে ধারণ করবে, সেও ধন্য। \v 43 আর আমার প্রতিই বা এত অনুগ্রহের কারণ কী যে, আমার প্রভুর মা আমার কাছে এসেছেন? \v 44 তোমার অভিনন্দন আমার কানে প্রবেশ করা মাত্র, আমার গর্ভের শিশুটি আনন্দে নেচে উঠল। \v 45 ধন্য সেই নারী, যে বিশ্বাস করেছে, প্রভুর প্রতিশ্রুতি তাঁর জীবনে সার্থক হয়ে উঠবে।” \s1 মরিয়মের প্রশংসাগীত \p \v 46 তখন মরিয়ম বললেন, \q1 “আমার প্রাণ প্রভুর মহিমাকীর্তন করে, \q2 \v 47 আমার পরিত্রাতা ঈশ্বরে আমার আত্মা উল্লাস করে। \q1 \v 48 কারণ তিনি তাঁর এই দীনদরিদ্র দাসীর প্রতি \q2 দৃষ্টিপাত করেছেন। \q1 এখন থেকে পুরুষ-পরম্পরা \q2 আমাকে ধন্য বলে অভিহিত করবে। \q2 \v 49 কারণ যিনি পরাক্রমী, যিনি আমার জন্য কত মহৎ কাজ সাধন করেছেন— \q2 তাঁর নাম পবিত্র। \q1 \v 50 যারা তাঁকে ভয় করে, তাদেরই জন্য \q2 পুরুষ-পরম্পরায় তাঁর করুণার হাত প্রসারিত। \q1 \v 51 তাঁর বাহু সব পরাক্রম কাজ সাধন করেছে; \q2 যারা অন্তরের গভীরতম ভাবনায় গর্বিত, তিনি তাদের ছত্রভঙ্গ করেছেন। \q1 \v 52 শাসকদের তিনি সিংহাসনচ্যূত করেছেন, \q2 কিন্তু বিনম্রদের উন্নত করেছেন। \q1 \v 53 তিনি উত্তম দ্রব্যে ক্ষুধার্তদের তৃপ্ত করেছেন, \q2 কিন্তু ধনীদের রিক্ত হাতে বিদায় করেছেন। \q1 \v 54 আপন করুণার কথা স্মরণ করে, \q2 তিনি তাঁর সেবক ইস্রায়েলকে সহায়তা দান করেছেন। \q1 \v 55 যেমন আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে বলেছিলেন, \q2 অব্রাহাম ও তাঁর বংশধরদের প্রতি চিরতরে করুণা প্রদান করেছেন।” \p \v 56 মরিয়ম প্রায় তিন মাস ইলিশাবেতের কাছে রইলেন, তারপর তিনি বাড়িতে ফিরে এলেন। \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের জন্ম \p \v 57 প্রসবের সময় পূর্ণ হলে, ইলিশাবেত এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। \v 58 তাঁর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়পরিজনেরা শুনল যে, প্রভু তাঁর প্রতি মহৎ করুণা প্রদর্শন করেছেন, আর তারাও তাঁর আনন্দের অংশীদার হল। \p \v 59 অষ্টম দিনে তারা শিশুটিকে সুন্নত করার জন্য এসে তার পিতার নাম অনুসারে শিশুটির নাম সখরিয় রাখতে চাইল। \v 60 কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, “না, ওর নাম হবে যোহন।” \p \v 61 তারা তাঁকে বলল, “কেন? আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কারও তো এই নাম নেই!” \p \v 62 তখন তারা তার পিতার কাছে ইশারায় জানতে চাইল, তিনি শিশুটির কী নাম রাখতে চান। \v 63 তিনি একটি লিপিফলক চেয়ে নিলেন এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিখলেন, “ওর নাম যোহন।” \v 64 সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মুখ খুলে গেল, জিভের জড়তা চলে গেল, আর তিনি কথা বলতে লাগলেন ও ঈশ্বরের প্রশংসায় মুখর হলেন। \v 65 প্রতিবেশীরা সবাই ভীত হল এবং যিহূদিয়ার সমস্ত পার্বত্য অঞ্চলের লোকেরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে লাগল। \v 66 যারা শুনল, তারা প্রত্যেকেই বিস্মিত হয়ে বলাবলি করল, “এই শিশুটি তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে?” কারণ প্রভুর হাত\f + \fr 1:66 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রভুর সান্নিধ্য।\ft*\f* ছিল তার সহায়। \s1 সখরিয়ের বন্দনাগীত \p \v 67 তখন তার পিতা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে ভাববাণী করলেন। তিনি বললেন: \q1 \v 68 “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নাম প্রশংসিত হোক, \q2 কারণ তিনি এসে তাঁর প্রজাদের মুক্ত করেছেন। \q1 \v 69 তিনি তাঁর দাস দাউদের বংশে আমাদের জন্য \q2 এক ত্রাণশৃঙ্গ\f + \fr 1:69 \fr*\fq শৃঙ্গ \fq*\ft এখানে শক্তির প্রতীক।\ft*\f* তুলে ধরেছেন, \q1 \v 70 (বহুকাল আগে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মাধ্যমে তিনি যেমন বলেছিলেন), \q1 \v 71 যেন আমরা আমাদের সব শত্রুর কবল থেকে উদ্ধার পাই, \q2 যারা আমাদের ঘৃণা করে, \q2 তাদের হাত থেকে রক্ষা পাই, \q1 \v 72 আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি করুণা প্রদর্শন \q2 এবং তাঁর পবিত্র নিয়ম স্মরণ করার জন্য, \q2 \v 73 আমাদের পিতা অব্রাহামের কাছে তিনি যা শপথ করেছিলেন: \q1 \v 74 তিনি আমাদের সব শত্রুর হাত থেকে \q2 আমাদের নিস্তার করবেন, \q2 যেন নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে আমাদের সক্ষম করেন, \q1 \v 75 যেন তাঁর সামনে পবিত্রতায় ও ধার্মিকতায় আমরা তাঁর সেবা করে যাই। \b \b \q1 \v 76 “আর তুমি, আমার শিশুসন্তান, \q2 তুমি পরাৎপরের ভাববাদী বলে আখ্যাত হবে, \q2 কারণ প্রভুর পথ প্রস্তুতির জন্য \q2 তুমি তাঁর অগ্রগামী হবে; \q1 \v 77 তাঁর প্রজাবৃন্দকে, তাদের পাপসমূহ ক্ষমার মাধ্যমে \q2 পরিত্রাণের জ্ঞান দেওয়ার জন্য। \q1 \v 78 আমাদের ঈশ্বরের স্নেহময় করুণার গুণে, \q2 স্বর্গ থেকে আমাদের মাঝে স্বর্গীয় জ্যোতির উদয় হবে। \q1 \v 79 যারা অন্ধকারে, মৃত্যুচ্ছায়ায় বসবাস করছে, \q2 তাদের উপর আলো বিকীর্ণ করতে, \q2 আমাদের পা শান্তির পথে চালিত করতে।” \p \v 80 আর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই শিশু আত্মাতে বলীয়ান হয়ে উঠলেন এবং ইস্রায়েলের জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ না করা পর্যন্ত, তিনি মরুপ্রান্তরে বসবাস করলেন। \c 2 \s1 যীশুর জন্ম \p \v 1 সেই সময়, সম্রাট\f + \fr 2:1 \fr*\ft ল্যাটিন: কৈসর।\ft*\f* অগাস্টাস, এক হুকুম জারি করলেন যে, সমগ্র রোমীয় জগতে লোকগণনা করা হবে। \v 2 সিরিয়ার শাসনকর্তা কুরিণিয়ের সময় এটিই ছিল প্রথম জনগণনা। \v 3 আর নাম তালিকাভুক্তির জন্য প্রত্যেকেই নিজের নিজের নগরে গেল। \p \v 4 যোষেফও দাউদের কুল ও বংশজাত পুরুষ হিসেবে, গালীলের নাসরৎ নগর থেকে যিহূদিয়ার অন্তর্গত দাউদের নগর বেথলেহেমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। \v 5 তিনি তাঁর বাগদত্তা স্ত্রী মরিয়মকে নিয়ে সেখানে নাম তালিকাভুক্তির জন্য গেলেন। মরিয়ম তখন সন্তানের জন্মের প্রতীক্ষায় ছিলেন। \v 6 তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ঘনিয়ে এল। \v 7 মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান, এক পুত্রের জন্ম দিলেন এবং শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাদের জন্য কোনো স্থান ছিল না। \s1 মেষপালকদের কাছে স্বর্গদূতবাহিনী \p \v 8 আশেপাশের মাঠে কয়েকজন মেষপালক অবস্থিতি করছিল। তারা রাত্রিবেলা তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল। \v 9 প্রভুর এক দূত তাদের সামনে আবির্ভূত হলেন, ও প্রভুর প্রতাপ তাদের চারপাশে উজ্জ্বল হওয়ায় তারা ভীতচকিত হয়ে উঠল। \v 10 কিন্তু দূত তাদের বললেন, “ভয় কোরো না, আমি তোমাদের কাছে এক মহা আনন্দের সুসমাচার নিয়ে এসেছি—এই আনন্দ হবে সব মানুষেরই জন্য। \v 11 আজ দাউদের নগরে তোমাদের জন্য এক উদ্ধারকর্তা জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনি খ্রীষ্ট\f + \fr 2:11 \fr*\ft হিব্রু মশীহ ও গ্রিক খ্রীষ্ট, উভয়ের অর্থ, অভিষিক্ত জন। 26 পদেও তাই।\ft*\f* প্রভু। \v 12 তোমাদের কাছে এই হবে চিহ্ন: তোমরা কাপড়ে জড়ানো এক শিশুকে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পাবে।” \p \v 13 হঠাৎই বিশাল এক স্বর্গীয় দূতবাহিনী ওই দূতের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে ঈশ্বরের বন্দনা করে বলতে লাগলেন, \q1 \v 14 “ঊর্ধ্বতমলোকে ঈশ্বরের মহিমা, \q2 আর পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র সব মানুষের মাঝে শান্তি।” \p \v 15 স্বর্গদূতেরা তাদের ছেড়ে স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পরে মেষপালকেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “চলো, প্রভু আমাদের যে ঘটনার কথা জানালেন, আমরা বেথলেহেমে গিয়ে তা দেখে আসি।” \p \v 16 তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে মরিয়ম, যোষেফ ও জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা শিশুটিকে দেখতে পেল। \v 17 তারা শিশুটিকে দর্শন করার পর তাঁর সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছিল, সেই কথা চারদিকে ছড়িয়ে দিল। \v 18 যারা মেষপালকদের এই কথা শুনল, তারা সবাই হতচকিত হল। \v 19 কিন্তু মরিয়ম এসব বিষয় তাঁর হৃদয়ের মধ্যে সঞ্চয় করে রাখলেন, আর এ নিয়ে চিন্তা করে গেলেন। \v 20 যেমন তাদের বলা হয়েছিল, তেমনই সব দেখেশুনে মেষপালকেরা ঈশ্বরের গৌরব ও বন্দনা করতে করতে ফিরে গেল। \s1 মন্দিরে শিশু যীশু \p \v 21 আট দিন পরে, শিশুটির সুন্নত অনুষ্ঠানের সময়ে, তাঁর নাম রাখা হল যীশু। শিশুটি মায়ের গর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত তাঁর এই নাম দিয়েছিলেন। \p \v 22 মোশির বিধান অনুসারে তাঁদের শুদ্ধকরণের সময় পূর্ণ হওয়ার পর, যোষেফ ও মরিয়ম যীশুকে জেরুশালেমের মন্দিরে প্রভুর সান্নিধ্যে উপস্থিত করার জন্য নিয়ে গেলেন, যেমন \v 23 প্রভুর বিধান লেখা আছে, “প্রত্যেক প্রথমজাত পুরুষসন্তান প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত হবে,”\f + \fr 2:23 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 13:2,12\+xt*\ft*\f* এবং \v 24 প্রভুর বিধান অনুযায়ী তারা যেন “এক জোড়া ঘুঘু পাখি বা দুটি কপোতশাবক”\f + \fr 2:24 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 12:8\+xt*\ft*\f* বলির জন্য উৎসর্গ করেন। \p \v 25 সেই সময় জেরুশালেমে শিমিয়োন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন ধার্মিক ও ভক্তিপরায়ণ। তিনি ইস্রায়েলের সান্ত্বনাপ্রাপ্তির প্রতীক্ষায় ছিলেন এবং পবিত্র আত্মা তাঁর উপর অধিষ্ঠিত ছিলেন। \v 26 পবিত্র আত্মা তাঁর কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, প্রভুর মশীহকে দর্শন না করা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না। \v 27 আত্মার চালনায় তিনি মন্দির-প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হলেন। বিধানের প্রথা অনুযায়ী সেই শিশু যীশুর বাবা-মা যখন তাঁকে নিয়ে এলেন, \v 28 শিমিয়োন তাঁকে দু-হাতে তুলে নিয়ে ঈশ্বরের স্তুতি করতে লাগলেন এবং বললেন, \q1 \v 29 “সার্বভৌম প্রভু, \q2 তোমার প্রতিশ্রুতিমতো এবার তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও। \q1 \v 30 কারণ আমার দুই চোখ তোমার পরিত্রাণ দেখেছে, \q2 \v 31 যা তুমি সমস্ত জাতির দৃষ্টিগোচরে প্রস্তুত করেছ, \q1 \v 32 পরজাতিদের কাছে প্রকাশিত হওয়ার জন্য \q2 ইনিই সেই জ্যোতি এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েল জাতির জন্য গৌরব।” \p \v 33 যীশুর সম্পর্কে যে কথা বলা হল, তা শুনে তাঁর বাবা-মা চমৎকৃত হলেন। \v 34 তখন শিমিয়োন তাঁদের আশীর্বাদ করলেন এবং যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, “এই শিশু হবেন ইস্রায়েলের অনেকের পতন ও উত্থানের কারণ এবং ইনি হবেন এক চিহ্নস্বরূপ, যার বিরুদ্ধতা করবে অনেকে, \v 35 ফলে অনেকের হৃদয় হবে উদ্‌ঘাটিত; আর একটি তরোয়াল তোমারও প্রাণকে বিদ্ধ করবে।” \s1 হান্নার ভাববাণী \p \v 36 সেখানে হান্না নামে এক মহিলা ভাববাদী ছিলেন। তিনি ছিলেন আশের বংশীয় পনূয়েলের মেয়ে। তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। বিবাহের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে সাত বছর জীবনযাপন করেছিলেন। \v 37 পরে চুরাশি বছর পর্যন্ত তিনি বিধবার জীবনযাপন করেন।\f + \fr 2:37 \fr*\ft অথবা, চুরাশি বছর ধরে বিধবা হয়ে ছিলেন।\ft*\f* তিনি কখনও মন্দির পরিত্যাগ করে যাননি, বরং তিনি উপোস ও প্রার্থনার সঙ্গে দিনরাত আরাধনা করতেন। \v 38 তিনি সেই মুহূর্তে তাদের কাছে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। আর যারা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল, তাদের সকলের কাছে শিশুটির বিষয়ে বলতে লাগলেন। \p \v 39 প্রভুর বিধান অনুযায়ী সমস্ত কাজ সম্পাদন করে যোষেফ ও মরিয়ম নিজেদের নগর গালীল প্রদেশের নাসরতে ফিরে গেলেন। \v 40 আর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই শিশু বলীয়ান হয়ে উঠলেন; তিনি বিজ্ঞতায় পূর্ণ হলেন এবং তাঁর উপরে ঈশ্বরের অনুগ্রহ রইল। \s1 মন্দিরে কিশোর যীশু \p \v 41 যীশুর বাবা-মা প্রতি বছর নিস্তারপর্ব পালন করতে জেরুশালেমে যেতেন। \v 42 তাঁর যখন বারো বছর বয়স, প্রথানুসারে তাঁরা পর্বে যোগ দিতে গেলেন। \v 43 পর্ব শেষে তাঁর বাবা-মা যখন ঘরে ফিরে আসছিলেন, কিশোর যীশু জেরুশালেমে রয়ে গেলেন, কিন্তু এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতে পারলেন না। \v 44 যীশু তাঁদের দলের সঙ্গেই আছেন, ভেবে নিয়ে তাঁরা একদিনের পথ অতিক্রম করলেন। তারপর তাঁরা তাদের আত্মীয়পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন। \v 45 যীশুর সন্ধান না পেয়ে, তাঁকে খুঁজতে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। \v 46 তিন দিন পর তাঁরা তাঁকে মন্দির-প্রাঙ্গণে খুঁজে পেলেন এবং দেখলেন, যীশু শাস্ত্রগুরুদের মাঝে বসে তাঁদের কথা শুনছেন, আর বহু প্রশ্ন করছেন। \v 47 তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও উত্তর দেওয়ার ক্ষমতায় প্রত্যেক শ্রোতাই বিস্মিত হচ্ছিলেন। \v 48 তাঁর বাবা-মা তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হলেন। তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বৎস, তুমি আমাদের সঙ্গে এরকম আচরণ করলে কেন? তোমার বাবা আর আমি কত ব্যাকুল হয়ে তোমাকে খুঁজছিলাম!” \p \v 49 তিনি বললেন, “তোমরা আমার সন্ধান করছিলে কেন? তোমরা কি জানতে না যে, আমাকে আমার পিতার গৃহে থাকতে হবে?” \v 50 যীশু তাঁদের যে কী বলছিলেন, তা কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারলেন না। \p \v 51 এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন ও তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন। তাঁর মা কিন্তু এই সমস্ত কথা হৃদয়ে সঞ্চয় করে রাখলেন। \v 52 আর যীশু জ্ঞানে ও বয়সে বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং ঈশ্বর ও মানুষের অনুগ্রহে সমৃদ্ধ হতে থাকলেন। \c 3 \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের কাজ শুরু \p \v 1 রোমান সম্রাট তিবিরীয় কৈসরের রাজত্বের পনেরোতম বছরে, যখন পন্তীয় পীলাত ছিলেন যিহূদিয়ার শাসনকর্তা, হেরোদ\f + \fr 3:1 \fr*\ft ইনি ছিলেন মহান হেরোদের পুত্র, হেরোদ আন্তিপাস।\ft*\f* ছিলেন গালীল প্রদেশের সামন্ত-নৃপতি, তাঁর ভাই ফিলিপ ছিলেন ইতুরিয়া ও ত্রাখোনীতিয়া প্রদেশের সামন্ত-নৃপতি ও লুসানিয় ছিলেন অবিলিনীর সামন্ত-নৃপতি \v 2 এবং হানন ও কায়াফা ছিলেন মহাযাজক, সেই সময় সখরিয়ের পুত্র যোহনের কাছে মরুপ্রান্তরে ঈশ্বরের বাক্য উপস্থিত হল। \v 3 তিনি জর্ডন অঞ্চলের চতুর্দিক পরিভ্রমণ করে পাপক্ষমার জন্য মন পরিবর্তনের বাপ্তিষ্মের কথা প্রচার করলেন। \v 4 ভাববাদী যিশাইয়ের বাক্য যেমন গ্রন্থে লেখা আছে: \q1 “মরুপ্রান্তরে একজনের কণ্ঠস্বর আহ্বান করছে, \q1 ‘তোমরা প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত করো, \q2 তাঁর জন্য রাজপথগুলি সরল করো। \q1 \v 5 প্রত্যেক উপত্যকা ভরিয়ে তোলা হবে, \q2 প্রত্যেক পর্বত ও উপপর্বতকে নিচু করা হবে। \q1 বক্র পথগুলি সরল হবে, \q2 অমসৃণ স্থানগুলি সমতল হবে। \q1 \v 6 আর সমস্ত মানুষ ঈশ্বরের পরিত্রাণ প্রত্যক্ষ করবে।’ ”\f + \fr 3:6 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 40:3-5\+xt*\ft*\f* \p \v 7 যে লোকেরা যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম নিতে এসেছিল, তিনি তাদের বললেন, “তোমরা বিষধর সাপের বংশ! সন্নিকট ক্রোধ থেকে পালিয়ে যেতে কে তোমাদের চেতনা দিল? \v 8 তোমরা এমন সব কাজ করো যেন তার দ্বারা বোঝা যায় যে তোমাদের মন পরিবর্তন হয়েছে। তোমরা মনে মনে এরকম বোলো না, ‘অব্রাহাম আমাদের পিতা।’ কারণ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এই পাথরগুলি থেকেও অব্রাহামের জন্য সন্তান সৃষ্টি করতে পারেন। \v 9 গাছগুলির শিকড়ে ইতিমধ্যেই কুড়ুল লাগানো আছে। যে গাছে উৎকৃষ্ট ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।” \p \v 10 লোকেরা প্রশ্ন করল, “আমরা তাহলে কী করব?” \p \v 11 যোহন উত্তর দিলেন, “যার দুটি পোশাক আছে সে, যার একটিও নেই, তার সঙ্গে ভাগ করে নিক; আর যার কাছে কিছু খাদ্যসামগ্রী আছে, সেও তাই করুক।” \p \v 12 কর আদায়কারীরাও এল বাপ্তিষ্ম নিতে। তারা বলল, “গুরুমহাশয়, আমরা কী করব?” \p \v 13 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা ন্যায্য পরিমাণের অতিরিক্ত কর আদায় কোরো না।” \p \v 14 তখন কয়েকজন সৈন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “আর আমরা কী করব?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “তোমরা বলপ্রয়োগ করে লোকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় কোরো না, মিথ্যা অভিযোগে কাউকে অভিযুক্ত কোরো না; যা বেতন পাও, তাতে সন্তুষ্ট থেকো।” \p \v 15 সকলে অধীর প্রতীক্ষায় ছিল এবং সবারই মনে প্রশ্ন জাগছিল, যোহনই হয়তো সেই খ্রীষ্ট। \v 16 যোহন তাদের সবাইকে উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের জলে বাপ্তিষ্ম দিই; কিন্তু আমার চেয়েও পরাক্রমী একজন আসছেন। তাঁর চটিজুতোর বাঁধন খোলারও যোগ্যতা আমার নেই।\f + \fr 3:16 \fr*\ft চটিজুতোর বাঁধন খোলা ছিল কোনো ক্রীতদাসের কাজ। যোহন প্রকৃত অর্থেই সেকথা ব্যক্ত করেছেন।\ft*\f* তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মায় ও আগুনে বাপ্তিষ্ম দেবেন। \v 17 শস্য ঝাড়াই করার কুলো তাঁর হাতেই আছে, তিনি তা দিয়ে খামার পরিষ্কার করবেন ও তাঁর গম গোলাঘরে সংগ্রহ করবেন এবং তুষ অনির্বাণ আগুনে পুড়িয়ে দেবেন।” \v 18 যোহন লোকসমূহকে আরও অনেক শিক্ষা দিয়ে সতর্ক করলেন এবং তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করলেন। \p \v 19 কিন্তু যোহন যখন সামন্তরাজ হেরোদকে নিজের ভাইয়ের স্ত্রী হেরোদিয়াকে বিবাহ করার বিষয়ে এবং তাঁর সমস্ত দুষ্কর্মের জন্য তিরস্কার করলেন, \v 20 তখন হেরোদ আরও একটি দুষ্কর্ম করলেন: তিনি যোহনকে কারাগারে বন্দি করলেন। \s1 যীশুর বাপ্তিষ্ম ও বংশতালিকা \p \v 21 অন্য সকলে যখন বাপ্তিষ্ম নিচ্ছিল, তখন যীশুও বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করলেন। তিনি যখন প্রার্থনা করছিলেন, সেই সময়ে স্বর্গলোক খুলে গেল \v 22 এবং পবিত্র আত্মা কপোতের রূপ ধারণ করে তাঁর উপর অবতীর্ণ হলেন। আর স্বর্গ থেকে একটি কণ্ঠস্বর ধ্বনিত হল, “তুমি আমার প্রিয় পুত্র, যাঁকে আমি প্রেম করি, তোমার উপরে আমি পরম প্রসন্ন।” \p \v 23 পরে যীশুর বয়স যখন প্রায় ত্রিশ বছর, তিনি তাঁর পরিচর্যা কাজ শুরু করলেন। লোকেরা যেমন মনে করত, যীশু ছিলেন যোষেফের পুত্র, যোষেফ ছিলেন, \b \li1 এলির পুত্র, \v 24 এলি মত্ততের পুত্র, \li1 মত্তত লেবির পুত্র, লেবি মল্কির পুত্র, \li1 মল্কি যান্নায়ের পুত্র, যান্নায় যোষেফের পুত্র, \li1 \v 25 যোষেফ মত্তথিয়ের পুত্র, মত্তথিয় আমোষের পুত্র, \li1 আমোষ নহূমের পুত্র, নহূম ইষলির পুত্র, \li1 ইষলি নগির পুত্র, \v 26 নগি মাটের পুত্র, \li1 মাট মত্তথিয়ের পুত্র, মত্তথিয় শিমিয়ির পুত্র, \li1 শিমিয়ি যোষেফের পুত্র, যোষেফ জোদার পুত্র, \li1 \v 27 জোদা যোহানার পুত্র, যোহানা রীষার পুত্র, \li1 রীষা সরুব্বাবিলের পুত্র, সরুব্বাবিল শল্টীয়েলের পুত্র, \li1 শল্টীয়েল নেরির পুত্র, \v 28 নেরি মল্কির পুত্র, \li1 মল্কি অদ্দীর পুত্র, অদ্দী কোষণের পুত্র, \li1 কোষণ ইলমাদমের পুত্র, ইলমাদম এরের পুত্র, \li1 \v 29 এর যিহোশূয়ের পুত্র, যিহোশূয় ইলীয়েষরের পুত্র, \li1 ইলীয়েষর যোরীমের পুত্র, যোরীম মত্ততের পুত্র, \li1 মত্তত লেবির পুত্র, \v 30 লেবি শিমিয়োনের পুত্র, \li1 শিমিয়োন যিহূদার পুত্র, যিহূদা যোষেফের পুত্র, \li1 যোষেফ যোনমের পুত্র, যোনম ইলিয়াকীমের পুত্র, \li1 \v 31 ইলিয়াকীম মিলেয়ার পুত্র, মিলেয়া মিন্নার পুত্র, \li1 মিন্না মত্তথের পুত্র, মত্তথ নাথনের পুত্র, \li1 নাথন দাউদের পুত্র, \v 32 দাউদ যিশয়ের পুত্র, \li1 যিশয় ওবেদের পুত্র, ওবেদ বোয়সের পুত্র, \li1 বোয়স সলমনের পুত্র, সলমন নহশোনের পুত্র, \li1 \v 33 নহশোন অম্মীনাদবের পুত্র, অম্মীনাদব রামের\f + \fr 3:33 \fr*\ft কয়েকটি পাণ্ডুলিপিতে, অম্মীনাদব অদমিনের পুত্র, অদমিন অর্নির পুত্র।\ft*\f* পুত্র, \li1 রাম হিষ্রোণের পুত্র, হিষ্রোণ পেরসের পুত্র, \li1 পেরস যিহূদার পুত্র, \v 34 যিহূদা যাকোবের পুত্র, \li1 যাকোব ইস্‌হাকের পুত্র, ইস্‌হাক অব্রাহামের পুত্র, \li1 অব্রাহাম তেরহের পুত্র, তেরহ নাহোরের পুত্র, \li1 \v 35 নাহোর সরূগের পুত্র, সরূগ রিয়ূর পুত্র, \li1 রিয়ূ পেলগের পুত্র, পেলগ এবরের পুত্র, \li1 এবর শেলহের পুত্র, \v 36 শেলহ কৈননের পুত্র, \li1 কৈনন অর্ফকষদের পুত্র, অর্ফকষদ শেমের পুত্র, \li1 শেম নোহের পুত্র, নোহ লেমকের পুত্র, \li1 \v 37 লেমক মথূশেলহের পুত্র, মথূশেলহ হনোকের পুত্র, \li1 হনোক যেরদের পুত্র, যেরদ মহললেলের পুত্র, \li1 মহললেল কৈননের পুত্র, \v 38 কৈনন ইনোশের পুত্র, \li1 ইনোশ শেথের পুত্র, শেথ আদমের পুত্র, \li1 আদম ঈশ্বরের পুত্র। \c 4 \s1 যীশু প্রলোভিত হলেন \p \v 1 যীশু পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে জর্ডন নদী থেকে ফিরে এলেন এবং পবিত্র আত্মার দ্বারা চালিত হয়ে মরুপ্রান্তরে গেলেন। \v 2 সেখানে চল্লিশ দিন দিয়াবলের দ্বারা প্রলোভিত হলেন। এই সমস্ত দিন তিনি কিছুই আহার করেননি। সেইসব দিন শেষ হলে তিনি ক্ষুধার্ত হলেন। \p \v 3 দিয়াবল তাঁকে বলল, “যদি তুমি ঈশ্বরের পুত্রই হও, তবে পাথরগুলিকে রুটিতে পরিণত হতে বলো।” \p \v 4 যীশু উত্তর দিলেন, “এরকম লেখা আছে: ‘মানুষ কেবলমাত্র রুটিতে বাঁচে না।’\f + \fr 4:4 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 8:3\+xt*\ft*\f*” \p \v 5 তখন দিয়াবল তাঁকে নিয়ে গেল এক উচ্চ স্থানে; এক লহমায় সে তাঁকে বিশ্বের সমস্ত রাজ্য দর্শন করাল। \v 6 আর সে তাঁকে বলল, “এসবই আমাকে দেওয়া হয়েছে; আমি যাকে চাই, তাকে এগুলি দিতে পারি। এসব অধিকার ও সমারোহ, আমি তোমাকে দিতে চাই। \v 7 তাই, যদি তুমি আমার উপাসনা করো, তাহলে তুমিই এ সবকিছুর অধিকারী হবে।” \p \v 8 যীশু উত্তর দিলেন, “এরকম লেখা আছে, ‘তুমি তোমার ঈশ্বর প্রভুরই আরাধনা করবে, কেবলমাত্র তাঁরই সেবা করবে।’ ”\f + \fr 4:8 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:13\+xt*\ft*\f* \p \v 9 দিয়াবল তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে মন্দিরের শীর্ষদেশে তাঁকে দাঁড় করালো। সে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এখান থেকে নিচে ঝাঁপ দাও। \v 10 কারণ এরকম লেখা আছে: \q1 “ ‘তিনি তাঁর দূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন, \q2 যেন তাঁরা যত্নসহকারে তোমাকে রক্ষা করেন, \q1 \v 11 তাঁরা তোমাকে তাঁদের হাতে তুলে নেবেন, \q2 যেন তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।’ ”\f + \fr 4:11 \fr*\ft \+xt গীত 91:11,12\+xt*\ft*\f* \p \v 12 যীশু উত্তর দিলেন, “একথাও লেখা আছে, ‘তোমার ঈশ্বর প্রভুকে পরীক্ষা কোরো না।’ ”\f + \fr 4:12 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:16\+xt*\ft*\f* \p \v 13 প্রলোভনের সমস্ত কৌশল ব্যর্থ হলে দিয়াবল কিছুকালের জন্য যীশুকে ছেড়ে চলে গেল, এবং পরবর্তী সুযোগের অপেক্ষায় রইল। \s1 নাসরতে যীশু প্রত্যাখ্যাত \p \v 14 পরে আত্মার পরাক্রমে যীশু গালীলে প্রত্যাবর্তন করলেন। সমস্ত গ্রামাঞ্চলে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল। \v 15 তিনি তাদের সমাজভবনগুলিতে শিক্ষা দিলেন এবং সবাই তাঁর প্রশংসা করল। \p \v 16 আর তিনি যেখানে বড়ো হয়েছিলেন, সেই নাসরতে উপস্থিত হলেন। তাঁর রীতি অনুসারে তিনি বিশ্রামদিনে সমাজভবনে গেলেন এবং শাস্ত্র থেকে পাঠ করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। \v 17 ভাববাদী যিশাইয়ের পুঁথি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হল। পুঁথিটি খুলে তিনি সেই অংশটি দেখতে পেলেন, যেখানে লেখা আছে, \q1 \v 18 “প্রভুর আত্মা আমার উপর অধিষ্ঠিত, \q2 কারণ দীনহীনদের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য \q2 তিনি আমাকে অভিষিক্ত করেছেন। \q1 তিনি আমাকে বন্দিদের কাছে মুক্তি প্রচার করবার জন্য পাঠালেন, \q2 অন্ধদের কাছে দৃষ্টিপ্রাপ্তি প্রচার করার জন্য, \q1 নিপীড়িতদের নিস্তার করে বিদায় করার জন্য, \q2 \v 19 প্রভুর প্রসন্নতার বছর ঘোষণা করার জন্য।”\f + \fr 4:19 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 61:1,2\+xt*\ft*\f* \p \v 20 তারপর তিনি পুঁথিটি গুটিয়ে পরিচারকের হাতে ফেরত দিয়ে আসন গ্রহণ করলেন। সমাজভবনে সকলের দৃষ্টি তাঁর উপরে নিবদ্ধ হল। \v 21 তিনি তাদের প্রতি এই কথা বললেন, “যে শাস্ত্রীয় বাণী তোমরা শুনলে আজ তা পূর্ণ হল।” \p \v 22 সকলেই তাঁর প্রশংসা করল। তাঁর মুখ থেকে বেরোনো অমৃতবাণী শুনে তারা চমৎকৃত হল। তারা প্রশ্ন করল, “এ কি যোষেফের পুত্র নয়?” \p \v 23 যীশু তাদের বললেন, “আমি নিশ্চিত যে, তোমরা আমাকে এই প্রবাদ উল্লেখ করে বলবে, ‘চিকিৎসক, তুমি নিজেকে সুস্থ করো। কফরনাহূমে যে কাজ তুমি করেছ বলে শুনেছি, এখন তোমার নিজের নগরে তা করে দেখাও।’ ” \p \v 24 তিনি আরও বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কোনো ভাববাদীই স্বদেশে স্বীকৃতি পান না। \v 25 আমি তোমাদের নিশ্চিতরূপে বলছি, এলিয়ের সময়ে ইস্রায়েলে বহু বিধবা ছিল। সেই সময় সাড়ে তিন বছর ধরে আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়নি। ফলে সারা দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। \v 26 তবুও এলিয় তাদের কারও কাছে প্রেরিত হননি, কিন্তু সীদোন অঞ্চলে সারিফত-নিবাসী এক বিধবার কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন। \v 27 আর ভাববাদী ইলীশায়ের কালে ইস্রায়েলে বহু কুষ্ঠরোগী ছিল, তবুও সিরিয়া-নিবাসী নামান ছাড়া একজনও শুচিশুদ্ধ হয়নি।” \p \v 28 একথা শুনে সমাজভবনের লোকেরা ক্রুদ্ধ হয়ে উঠল। \v 29 তারা উঠে এসে তাঁকে নগরের বাইরে তাড়িয়ে নিয়ে গেল। যে পাহাড়ের উপরে নগরটি স্থাপিত ছিল, তারা তাঁকে সেই পাহাড়ের কিনারায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চাইল। \v 30 কিন্তু তিনি সকলের মধ্য দিয়ে নিজের পথ করে সোজা হেঁটে চলে গেলেন। \s1 মন্দ-আত্মা তাড়ানো \p \v 31 তারপর তিনি গালীল প্রদেশের একটি নগর কফরনাহূমে ফিরে গেলেন। বিশ্রামদিনে তিনি লোকসকলকে শিক্ষা দিতে লাগলেন। \v 32 তাঁর শিক্ষা শুনে সকলে চমৎকৃত হল, কারণ তিনি ক্ষমতার সঙ্গে বাক্য প্রচার করতেন। \p \v 33 সেই সমাজভবনে ছিল একটি ভূতগ্রস্ত, অশুচি আত্মাবিষ্ট লোক। \v 34 সে উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে বলল, “আহা, নাসরতের যীশু, আপনি আমাদের নিয়ে কী করতে চান? আপনি কি আমাদের বিনাশ করতে এসেছেন? আমি জানি, আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি!” \p \v 35 যীশু কঠোর স্বরে তাকে বললেন, “চুপ করো! ওর ভিতর থেকে বেরিয়ে এসো!” তখন সেই ভূত সেই লোকটির কোনও ক্ষতি না করে, সকলের সামনে তাকে আছড়ে ফেলে দিয়ে বেরিয়ে এল। \p \v 36 লোকেরা চমৎকৃত হয়ে পরস্পর বলাবলি করল, “এ কেমন শিক্ষা! কর্তৃত্ব ও পরাক্রমের সঙ্গে ইনি মন্দ-আত্মাদের আদেশ দেন, আর তারা বেরিয়ে আসে!” \v 37 তখন সেই অঞ্চলের চারদিকে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল। \s1 বহুজনকে আরোগ্য দান \p \v 38 সমাজভবন ত্যাগ করে যীশু শিমোনের বাড়িতে গেলেন। শিমোনের শাশুড়ি তখন প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁর নিরাময়ের জন্য তাঁরা যীশুর কাছে অনুনয় করলেন। \v 39 যীশু তাই তাঁর উপরে ঝুঁকে পড়ে জ্বরকে ধমক দিলেন, এবং তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল। তিনি তখনই উঠে তাঁদের পরিচর্যা করতে লাগলেন। \p \v 40 পরে সূর্য যখন অস্ত গেল, লোকেরা যীশুর কাছে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে এল। তিনি তাদের প্রত্যেকের উপরে হাত রেখে আরোগ্য দান করলেন। \v 41 এছাড়াও বহু জনের মধ্য থেকে দুষ্টাত্মারা বেরিয়ে এসে চিৎকার করতে লাগল, “আপনিই সেই ঈশ্বরের পুত্র!” কিন্তু তিনি তাদের ধমক দিলেন, তাদের কথা বলার অনুমতি দিলেন না, কারণ তিনি যে মশীহ, তা তারা জানত। \p \v 42 প্রত্যুষে যীশু এক নির্জন স্থানে গেলেন। লোকেরা তাঁর সন্ধান করছিল। তিনি যেখানে ছিলেন, তারা সেখানে এসে উপস্থিত হল। তারা তাঁকে নিরস্ত করতে চেষ্টা করল, যেন তিনি তাদের ছেড়ে না যান। \v 43 কিন্তু তিনি বললেন, “আমাকে অন্যান্য নগরেও ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে হবে, কারণ এই জন্যই আমি প্রেরিত হয়েছি।” \v 44 আর তিনি যিহূদিয়ার সমাজভবনগুলিতে প্রচার করতে লাগলেন। \c 5 \s1 শিষ্যদের আহ্বান \p \v 1 একদিন যখন লোকসমূহ তাঁর উপরে চাপাচাপি করে ঈশ্বরের বাক্য শুনছিল, তখন তিনি গিনেষরৎ হ্রদের\f + \fr 5:1 \fr*\ft এর অন্য নাম ছিল গালীল সাগর।\ft*\f* তীরে দাঁড়িয়েছিলেন, আর তিনি দেখলেন। \v 2 মৎস্যজীবীরা জলের কিনারায় দুটি নৌকা রেখে দিয়ে তাদের জাল পরিষ্কার করছিল। \v 3 তিনি দুটি নৌকার একটিতে, শিমোনের নৌকায় উঠে তাঁকে কূল থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে যেতে বললেন। তারপর তিনি নৌকায় বসে সকলকে শিক্ষা দিতে লাগলেন। \p \v 4 কথা শেষ করে তিনি শিমোনকে বললেন, “নৌকা গভীর জলে নিয়ে গিয়ে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলো।” \p \v 5 শিমোন উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা সারারাত কঠোর পরিশ্রম করেও কিছু ধরতে পারিনি, কিন্তু আপনার কথানুসারে আমি জাল ফেলব।” \p \v 6 তাঁরা সেইমতো করলে এত মাছ ধরা পড়ল যে, তাঁদের জাল ছেঁড়ার উপক্রম হল। \v 7 তখন অন্য নৌকায় তাঁদের যে সহযোগীরা ছিলেন, তিনি তাঁদের ইশারা করলেন, যেন তাঁরা এসে তাঁদের সাহায্য করেন। তাঁরা এলেন। দুটি নৌকায় মাছে এমনভাবে ভর্তি হল যে, সেগুলি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হল। \p \v 8 তা দেখে শিমোন পিতর যীশুর দুই পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ে বললেন, “প্রভু, আমার কাছ থেকে চলে যান, আমি পাপী!” \v 9 কারণ এত মাছ ধরা পড়তে দেখে তিনি ও তাঁর সহযোগীরা আশ্চর্য হয়ে পড়েছিলেন। \v 10 শিমোনের সঙ্গী সিবদিয়ের দুই পুত্র যাকোব ও যোহনও একইভাবে আশ্চর্য হয়েছিলেন। \p যীশু তখন শিমোনকে বললেন, “ভয় কোরো না, এখন থেকে তুমি মানুষ ধরবে।” \v 11 তখন তাঁরা তাঁদের নৌকা দুটি তীরে টেনে নিয়ে এসে, সবকিছু পরিত্যাগ করে তাঁকে অনুসরণ করলেন। \s1 এক কুষ্ঠরোগীর নিরাময় \p \v 12 যীশু তখন কোনো এক নগরে ছিলেন। সেই সময়, এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এল, যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ছিল। যীশুকে দেখে সে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছা করলেই আমাকে শুচিশুদ্ধ করতে পারেন।” \p \v 13 যীশু তাঁর হাত বাড়িয়ে সেই ব্যক্তিকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, “আমার ইচ্ছা, তুমি শুচিশুদ্ধ হও।” সেই মুহূর্তে সে কুষ্ঠরোগ থেকে মুক্ত হল। \p \v 14 যীশু তাকে আদেশ দিলেন, “কাউকে একথা বোলো না। কিন্তু যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও এবং তোমার শুচিশুদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তাদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য মোশির আদেশমতো নৈবেদ্য উৎসর্গ করো।” \p \v 15 তবুও তাঁর কীর্তিকলাপের কথা আরও বেশি করে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ল যে, দলে দলে বিস্তর লোক তাঁর শিক্ষা শুনতে ও অসুস্থতা নিরাময়ের জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল। \v 16 কিন্তু যীশু কোনও না কোনও নির্জন স্থানে গিয়ে প্রার্থনা করতেন। \s1 পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীর নিরাময় \p \v 17 একদিন যীশু শিক্ষা দিচ্ছিলেন। গালীলের প্রতিটি গ্রাম থেকে এবং যিহূদিয়া ও জেরুশালেম থেকে আগত ফরিশী ও শাস্ত্রবিদরা সেখানে বসেছিল। এবং রোগীদের সুস্থ করবার জন্য প্রভুর শক্তি যীশুর মধ্যে ছিল। \v 18 কয়েকজন লোক এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীকে খাটে করে ঘরের ভিতরে যীশুর কাছে রাখার চেষ্টা করল। \v 19 ভিড়ের জন্য ভিতরে প্রবেশের পথ না পেয়ে তারা ছাদে উঠল ও টালি সরিয়ে খাটশুদ্ধ লোকটিকে ভিড়ের মধ্যে যীশুর সামনে নামিয়ে দিল। \p \v 20 তাদের এই ধরনের বিশ্বাস দেখে যীশু বললেন, “বন্ধু, তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হল।” \p \v 21 ফরিশী ও শাস্ত্রবিদরা মনে মনে চিন্তা করতে লাগল, “এই লোকটি কে, যে ঈশ্বরের নিন্দা করছে! ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?” \p \v 22 যীশু তাদের মনের কথা বুঝতে পেরে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা মনে মনে এসব কথা চিন্তা করছ কেন? \v 23 কোন কথাটি বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ বলা না, ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও’ বলা? \v 24 কিন্তু আমি চাই যেন তোমরা জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার অধিকার মনুষ্যপুত্রের আছে” এই বলে তিনি সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, “ওঠো, তোমার খাট তুলে নিয়ে বাড়ি চলে যাও।” \v 25 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে তাদের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে, তার খাট তুলে নিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বাড়ি ফিরে গেল। \v 26 সবাই চমৎকৃত হয়ে ঈশ্বরের প্রশংসায় মুখর হয়ে উঠল। তারা ভয়ে ও ভক্তিতে অভিভূত হয়ে বলল, “আজ আমরা এক অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম।” \s1 লেবিকে আহ্বান \p \v 27 এরপর যীশু বেরিয়ে লেবি নামে এক কর আদায়কারীকে তাঁর নিজের কর আদায়ের চালাঘরে বসে থাকতে দেখলেন। যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” \v 28 লেবি তখনই উঠে পড়লেন, সবকিছু ত্যাগ করলেন ও তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। \p \v 29 পরে লেবি তাঁর বাড়িতে যীশুর সম্মানে এক বিরাট ভোজসভার আয়োজন করলেন। বহু কর আদায়কারী এবং আরও অনেকে তাঁদের সঙ্গে আহার করছিল। \v 30 কিন্তু ফরিশীরা ও তাঁদের দলভুক্ত শাস্ত্রবিদরা যীশুর শিষ্যদের কাছে অভিযোগ করল, “কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে তোমরা কেন খাওয়াদাওয়া করছ?” \p \v 31 যীশু তাদের উত্তর দিলেন, “পীড়িত ব্যক্তিরই চিকিৎসকের প্রয়োজন, সুস্থ ব্যক্তির নয়। \v 32 আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের আহ্বান করতে এসেছি, যেন তারা মন পরিবর্তন করে।” \s1 উপোস করা সম্পর্কে যীশুকে প্রশ্ন \p \v 33 তাঁরা যীশুকে বললেন, “যোহনের শিষ্যেরা প্রায়ই উপোস ও প্রার্থনা করে, ফরিশীদের শিষ্যেরাও তাই করে, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা নিয়মিত খাওয়াদাওয়া করে যায়।” \p \v 34 যীশু উত্তর দিলেন, “বর সঙ্গে থাকতে তোমরা কি বরের অতিথিদের উপোস করাতে পারো? \v 35 কিন্তু সময় আসবে, যখন বরকে তাদের মধ্য থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে, তখন তারা উপোস করবে।” \p \v 36 তিনি তাদের এই রূপকটি বললেন, “নতুন কাপড় থেকে টুকরো কেটে নিয়ে কেউ পুরোনো কাপড়ে তালি দেয় না। কেউ তা করলে, নতুন কাপড়টিও ছিঁড়বে, আর নতুন কাপড়ের তালিটিও পুরোনো কাপড়ের সঙ্গে মিলবে না। \v 37 আবার পুরোনো চামড়ার সুরাধারে কেউ নতুন দ্রাক্ষারস ঢালে না। তা করলে, নতুন দ্রাক্ষারস চামড়ার সুরাধারটিকে ফাটিয়ে দেবে; ফলে দ্রাক্ষারস পড়ে যাবে এবং চামড়ার সুরাধারটিও নষ্ট হয়ে যাবে। \v 38 তাই, নতুন চামড়ার সুরাধারেই নতুন দ্রাক্ষারস ঢালতে হবে। \v 39 আর পুরোনো দ্রাক্ষারস পান করার পর কেউ নতুন দ্রাক্ষারস পান করতে চায় না, কারণ সে বলে, ‘পুরোনোটিই ভালো।’ ” \c 6 \s1 বিশ্রামদিনের প্রভু \p \v 1 এক বিশ্রামদিনে যীশু শস্যক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর শিষ্যেরা শস্যের শিষ ছিঁড়ে দু-হাতে ঘষে দানা বের করে খেতে লাগলেন। \v 2 কয়েকজন ফরিশী জিজ্ঞাসা করল, “বিশ্রামদিনে যা করা বিধিসংগত নয়, এমন কাজ তোমরা করছ কেন?” \p \v 3 যীশু তাদের উত্তর দিলেন, “দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা যখন ক্ষুধার্ত ছিলেন, তখন তাঁরা কী করেছিলেন, তা কি তোমরা কখনও পাঠ করোনি? \v 4 তিনি ঈশ্বরের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন, এবং পবিত্র রুটি নিয়ে নিজে খেয়েছিলেন যা করা একমাত্র যাজকদের পক্ষেই বিধিসংগত ছিল। এমনকি তিনি তাঁর সঙ্গীদেরও দিয়েছিলেন।” \v 5 তারপর যীশু তাদের বললেন, “মনুষ্যপুত্রই হলেন বিশ্রামদিনের প্রভু।” \p \v 6 আর এক বিশ্রামদিনে তিনি সমাজভবনে গিয়ে শিক্ষাদান করছিলেন। সেখানে একটি লোক ছিল, তার ডান হাত শুকিয়ে গিয়েছিল। \v 7 ফরিশী ও শাস্ত্রবিদরা যীশুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্য কোনো সূত্রের সন্ধানে ছিল। সেইজন্য যীশু বিশ্রামদিনে সুস্থ করেন কি না, সেদিকে ছিল তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। \v 8 কিন্তু যীশু তাদের চিন্তার কথা জেনে হাত শুকিয়ে যাওয়া লোকটিকে বললেন, “তুমি সকলের সামনে উঠে দাঁড়াও।” তাই সে সেখানে উঠে দাঁড়াল। \p \v 9 যীশু তখন তাদের বললেন, “আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করি, বিশ্রামদিনে কী করা ন্যায়সংগত, ভালো কাজ করা, না মন্দ কাজ করা; জীবন রক্ষা করা, না তা ধ্বংস করা?” \p \v 10 তিনি তাদের সকলের প্রতি চারদিকে তাকালেন। তারপর লোকটিকে বললেন, “তোমার হাতটি বাড়িয়ে দাও।” সে তাই করল। তার হাত একেবারে সুস্থ হল। \v 11 তারা কিন্তু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল এবং যীশুর বিরুদ্ধে আর কী করা যায়, তা নিয়ে পরস্পর আলোচনা শুরু করল। \s1 বারোজন প্রেরিতশিষ্য \p \v 12 সেই সময়, একদিন যীশু প্রার্থনা করার জন্য একটি পাহাড়ের ধারে গেলেন। সেখানে তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে সারারাত কাটালেন। \v 13 ভোরবেলায় তিনি তাঁর শিষ্যদের কাছে ডাকলেন এবং তাঁদের মধ্য থেকে বারোজনকে মনোনীত করলেন। তিনি তাঁদের প্রেরিতশিষ্য নামে অভিহিত করলেন: \b \li1 \v 14 শিমোন (তিনি যাঁর নাম দিয়েছিলেন পিতর), তাঁর ভাই আন্দ্রিয়, \li1 যাকোব, \li1 যোহন, \li1 ফিলিপ, \li1 বর্থলময়, \li1 \v 15 মথি, \li1 থোমা, \li1 আলফেয়ের পুত্র যাকোব, \li1 জিলট\f + \fr 6:15 \fr*\fq জিলট\fq*\ft —উদ্যমী, বা কনানী। ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দল।\ft*\f* নামে পরিচিত শিমোন, \li1 \v 16 যাকোবের পুত্র যিহূদা এবং যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ, \li1 যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। \s1 যীশুর দ্বারা রোগনিরাময় \p \v 17 তিনি তাঁদের সঙ্গে নেমে এসে এক সমভূমিতে দাঁড়ালেন। সেখানে তাঁর অনেক শিষ্য এবং যিহূদিয়া, জেরুশালেম, টায়ার ও সীদোনের উপকূল অঞ্চল থেকে আগত অনেক লোক সমবেত হয়েছিল। \v 18 তারা তাঁর শিক্ষা শুনতে ও তাদের সব রোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এসেছিল। মন্দ-আত্মার\f + \fr 6:18 \fr*\ft গ্রিক: অশুচি আত্মার।\ft*\f* দ্বারা উৎপীড়িতেরা সুস্থ হল। \v 19 লোকেরা তাঁকে স্পর্শ করার চেষ্টা করল, কারণ তাঁর ভিতর থেকে শক্তি নির্গত হয়ে সবাইকে রোগমুক্ত করছিল। \s1 আশীর্বাদ ও অভিশাপ \p \v 20 যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে তাকিয়ে বললেন, \q1 “ধন্য তোমরা, যারা দীনহীন \q2 কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদেরই। \q1 \v 21 ধন্য তোমরা, যারা এখন ক্ষুধার্ত, \q2 কারণ তোমরা পরিতৃপ্ত হবে। \q1 ধন্য তোমরা, যারা এখন কান্নাকাটি করছ, \q2 কারণ তোমাদের মুখে হাসি ফুটবে। \q1 \v 22 ধন্য তোমরা, যখন মনুষ্যপুত্রের জন্য মানুষ তোমাদের ঘৃণা করে, \q2 তোমাদের বহিষ্কার করে ও তোমাদের অপমান করে, \q2 আবার মন্দ অপবাদ দিয়ে তোমাদের নাম অগ্রাহ্য করে। \p \v 23 “তখন তোমরা উল্লসিত হোয়ো, আনন্দে নাচ কোরো, কারণ স্বর্গে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর পুরস্কার। তাদের পূর্বপুরুষেরা ভাববাদীদের সঙ্গেও এরকম আচরণ করেছিল। \q1 \v 24 “কিন্তু তোমরা যারা ধনী, ধিক্ তোমাদের \q2 কারণ স্বাচ্ছন্দ্য তোমরা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছ। \q1 \v 25 খাদ্য প্রাচুর্যে পরিতৃপ্ত যারা, ধিক্ তোমাদের, \q2 কারণ তোমরা ক্ষুধার্ত হবে। \q1 যারা এখন হাসছ, ধিক্ তোমাদের, \q2 কারণ তোমরা বিলাপ ও কান্নাকাটি করবে। \q1 \v 26 যখন মানুষ তোমাদের প্রশংসা করে, ধিক্ তোমাদের, \q2 কারণ তাদের পূর্বপুরুষেরা ভণ্ড ভাববাদীদের সঙ্গে এরকমই আচরণ করত। \s1 শত্রুকে ভালোবাসা \p \v 27 “কিন্তু তোমরা, যারা আমার কথা শুনছ, তাদের আমি বলছি, তোমরা শত্রুদের ভালোবেসো; যারা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কোরো। \v 28 যারা তোমাদের অভিশাপ দেয়, তাদের আশীর্বাদ দিয়ো; যারা তোমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, তাদের জন্য প্রার্থনা কোরো। \v 29 কেউ যদি তোমার এক গালে চড় মারে, অন্য গালও তার দিকে ফিরিয়ে দিয়ো। কেউ যদি তোমার গায়ের চাদর নিয়ে নেয়, তাকে তোমার জামাও নিতে বাধা দিয়ো না। \v 30 যারা তোমার কাছে চায়, তাদের তুমি দাও। আর কেউ যদি তোমার কাছ থেকে তোমার কোনো জিনিস নিয়ে নেয়, তা ফেরত চেয়ো না। \v 31 তোমরা অপরের কাছ থেকে যেরূপ ব্যবহার পেতে চাও, তাদের প্রতি তোমরাও সেরূপ ব্যবহার কোরো। \p \v 32 “যারা তোমাদের ভালোবাসে, তোমরা যদি তাদেরই ভালোবাসো, তাহলে তোমাদের কৃতিত্ব কোথায়? এমনকি, পাপীদের যারা ভালোবাসে, পাপীরা তাদেরই ভালোবাসে। \v 33 যারা তোমাদের উপকার করে, তোমরা যদি তাদেরই উপকার করো, তাহলে তোমাদের কৃতিত্ব কোথায়? পাপীরাও তো তাই করে। \v 34 যাদের কাছে ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা আছে, শুধুমাত্র তাদেরই যদি তোমরা ঋণ দাও, তাহলে তোমাদের কৃতিত্ব কোথায়? পাপীরাও তো তাদের সমস্ত ঋণ ফেরত পাওয়ার আশায় পাপীদের ঋণ দেয়। \v 35 কিন্তু তোমরা শত্রুদেরও ভালোবেসো, তাদের মঙ্গল কোরো এবং কোনো কিছু ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা না করে, তাদের ঋণ দিয়ো। তাহলে তোমাদের পুরস্কার হবে প্রচুর। আর তোমরা হবে পরাৎপরের সন্তান, কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ ও দুর্জনদের প্রতিও কৃপাবান। \v 36 অতএব, তোমাদের পিতা যেমন দয়ালু, তোমরাও তেমনই দয়ালু হও। \s1 অপরের বিচার প্রসঙ্গে \p \v 37 “বিচার কোরো না, তাহলে তোমাদের বিচার করা হবে না। কাউকে দোষী কোরো না, তাহলে তোমাদেরও দোষী সাব্যস্ত করা হবে না। ক্ষমা কোরো, তাহলে তোমাদেরও ক্ষমা করা হবে। \v 38 দান কোরো, তোমাদেরও দেওয়া হবে। প্রচুর পরিমাণে, ঠেসে, ঝাঁকিয়ে তোমাদের পাত্র এমনভাবে তোমাদের কোলে ভরিয়ে দেওয়া হবে, যেন তা উপচে পড়ে। কারণ যে মানদণ্ডে তোমরা পরিমাপ করবে, সেই একই মানদণ্ডে পরিমাপ করে তোমাদের ফেরত দেওয়া হবে।” \p \v 39 পরে তিনি তাদের এই রূপকটি বললেন, “একজন অন্ধ কি আর একজন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? তারা দুজনেই কি কোনো গর্তে পড়বে না? \v 40 শিষ্য তার গুরুর ঊর্ধ্বে নয়, কিন্তু সম্পূর্ণ শিক্ষালাভ করলে প্রত্যেক শিষ্যও তার গুরুর সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে। \p \v 41 “তোমার ভাইয়ের চোখে যে কাঠের গুঁড়ো রয়েছে, কেবলমাত্র সেটিই দেখছ? অথচ তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ রয়েছে, তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছ না কেন? \v 42 তুমি কী করে তোমার ভাইকে বলতে পারো, ‘এসো, তোমার চোখ থেকে কাঠের গুঁড়োটি বের করে দিই,’ যখন তোমার নিজের চোখের কড়িকাঠ দেখতে পাচ্ছ না? ওহে ভণ্ড, প্রথমে নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠটি বের করো, তাহলেই তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কাঠের গুঁড়োটি বের করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে। \s1 গাছ ও তার ফল \p \v 43 “কোনো ভালো গাছে মন্দ ফল ধরে না, আবার মন্দ গাছেও ভালো ফল ধরে না। \v 44 তার ফলের দ্বারাই প্রত্যেক গাছের পরিচয় পাওয়া যায়। লোকে কাঁটাঝোপ থেকে ডুমুর বা শেয়ালকাঁটা থেকে আঙুর সংগ্রহ করে না। \v 45 ভালো মানুষ তার অন্তরের সঞ্চিত ভালো ভাণ্ডার থেকে ভালো বিষয়ই বের করে, এবং মন্দ মানুষ তার অন্তরের সঞ্চিত মন্দ ভাণ্ডার থেকে মন্দ বিষয়ই বের করে। কারণ হৃদয় থেকে যা উপচে পড়ে মুখ সেকথাই ব্যক্ত করে। \s1 বিজ্ঞ ও মূর্খ স্থপতি \p \v 46 “কেন তোমরা আমাকে ‘প্রভু, প্রভু,’ বলে সম্বোধন করো, অথচ আমি যা বলি, তা তোমরা করো না? \v 47 যে আমার কাছে এসে আমার কথা শুনে কাজ করে, সে যে কেমন লোক, তা আমি তোমাদের বলি। \v 48 সে এমন একজন লোক, যে বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে গভীর গর্ত খুঁড়ে শক্ত পাথরের উপর তার ভিত্তিমূল স্থাপন করল। যখন বন্যা এল, প্রবল স্রোত বাড়িতে এসে আঘাত করল, তাকে টলাতে পারল না, কারণ তা দৃঢ়ভাবে নির্মিত হয়েছিল। \v 49 কিন্তু যে আমার কথা শুনেও সেই অনুযায়ী কাজ করে না, সে এমন একজনের মতো, যে ভিত ছাড়াই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করল। প্রবল স্রোত যে মুহূর্তে সেই বাড়িতে আঘাত হানল, বাড়িটি পড়ে গেল, আর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেল।” \c 7 \s1 শত-সেনাপতির বিশ্বাস \p \v 1 যীশু সকলের সামনে এই সমস্ত কথা বলার পর কফরনাহূমে ফিরে গেলেন। \v 2 সেখানে এক শত-সেনাপতির দাস, যে ছিল তাঁর প্রিয়পাত্র, রোগে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল। \v 3 শত-সেনাপতি যীশুর কথা শুনেছিলেন। তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের কয়েকজন প্রাচীনকে যীশুর কাছে পাঠিয়ে অনুরোধ জানালেন, তিনি যেন এসে তাঁর দাসকে সুস্থ করেন। \v 4 তাঁরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে কাতর মিনতি জানালেন, “এই ব্যক্তি আপনার সাহায্য পাওয়ার যোগ্য, \v 5 কারণ তিনি আমাদের জাতিকে ভালোবাসেন, আর আমাদের সমাজভবনটি নির্মাণ করে দিয়েছেন।” \v 6 তাই যীশু তাঁদের সঙ্গে গেলেন। \p যীশু শত-সেনাপতির বাড়ির কাছাকাছি এলে, তিনি তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে যীশুর কাছে বলে পাঠালেন, “প্রভু, আপনি নিজে কষ্ট করবেন না। আপনি আমার বাড়িতে আসবেন আমি এমন যোগ্য নই। \v 7 তাই আমি নিজেকেও আপনার কাছে যাওয়ার যোগ্য মনে করিনি। আপনি কেবলমাত্র মুখে বলুন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হবে। \v 8 কারণ আমিও কর্তৃত্বের অধীন একজন মানুষ এবং সৈন্যরা আমার অধীন। আমি তাদের একজনকে ‘যাও’ বললে সে যায়, অপরজনকে ‘এসো’ বললে সে আসে, আবার আমার দাসকে ‘এই কাজটি করো,’ বললে সে তা করে।” \p \v 9 একথা শুনে যীশু তার সম্পর্কে চমৎকৃত হলেন। তাঁকে যারা অনুসরণ করছিলেন তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “আমি তোমাদের বলছি, ইস্রায়েলের মধ্যেও আমি এমন প্রগাঢ় বিশ্বাস দেখতে পাইনি।” \v 10 তখন যে লোকদের তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখলেন, দাসটি সুস্থ হয়ে উঠেছে। \s1 বিধবার পুত্রকে পুনর্জীবন দান \p \v 11 এর কিছুকাল পরেই যীশু নায়িন নামে এক নগরে গেলেন। তাঁর শিষ্যেরা ও বিস্তর লোক তাঁর সঙ্গী হল। \v 12 তিনি নগরদ্বারের কাছে এসে পৌঁছালেন। তখন দেখলেন, লোকেরা এক মৃত ব্যক্তিকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার মা ছিল বিধবা এবং সে ছিল তার একমাত্র পুত্র। নগরের বিস্তর লোক তাদের সঙ্গে ছিল। \v 13 তাকে দেখে প্রভুর হৃদয় তার প্রতি করুণায় ভরে উঠল। তিনি তাকে বললেন, “কেঁদো না।” \p \v 14 তারপর তিনি এগিয়ে গিয়ে শবদেহ রাখা খাট স্পর্শ করলেন। আর যারা বাহক তারা দাঁড়িয়ে পড়ল। তিনি বললেন, “ওহে যুবক, আমি তোমাকে বলছি, তুমি ওঠো!” \v 15 মৃত মানুষটি উঠে বসে কথা বলতে লাগল। যীশু তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন। \p \v 16 এই দেখে তারা সকলে ভয়ে ও ভক্তিতে অভিভূত হল, ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল এবং তারা বলতে লাগল, “আমাদের মধ্যে এক মহান ভাববাদীর উদয় হয়েছে। ঈশ্বর তাঁর প্রজাদের সাহায্য করতে এসেছেন।” \v 17 যীশুর এই কীর্তির কথা যিহূদিয়ার সর্বত্র এবং সন্নিহিত অঞ্চলগুলিতে ছড়িয়ে পড়ল। \s1 যীশু ও বাপ্তিষ্মদাতা যোহন \p \v 18 যোহনের শিষ্যেরা এই সমস্ত কথা তাঁকে জানাল। \v 19 তিনি তাদের দুজনকে ডেকে প্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করতে পাঠালেন, “যাঁর আসার কথা ছিল আপনিই কি তিনি না আমরা অন্য কারও প্রতীক্ষায় থাকব?” \p \v 20 তারা যখন যীশুর কাছে এল, তারা বলল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহন আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছেন, ‘যে মশীহের আবির্ভাবের কথা ছিল, সে কি আপনি, না আমরা অন্য কারও প্রতীক্ষায় থাকব?’ ” \p \v 21 ঠিক সেই সময়ে যীশু বহু রোগগ্রস্ত, পীড়িত ও মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করছিলেন; বহু অন্ধকেও দৃষ্টিশক্তি দান করছিলেন। \v 22 তাই তিনি সেই বার্তাবহদের উত্তর দিলেন, “তোমরা যা দেখলে, যা শুনলে, ফিরে গিয়ে সেসব যোহনকে জানাও। যারা অন্ধ তারা দৃষ্টি পাচ্ছে, যারা খোঁড়া তারা চলতে পারছে, যারা কুষ্ঠরোগী তারা শুচিশুদ্ধ হচ্ছে, যারা কালা তারা শুনতে পাচ্ছে, যারা মৃত তারা উত্থাপিত হচ্ছে ও যারা দরিদ্র তাদের কাছে সুসমাচার প্রচারিত হচ্ছে। \v 23 আর ধন্য সেই ব্যক্তি যে আমার কারণে বাধা পায় না।” \p \v 24 যোহনের বার্তাবাহকেরা চলে গেলে, যীশু সকলের কাছে যোহনের সম্পর্কে বলতে লাগলেন, “তোমরা মরুপ্রান্তরে কী দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দুলছে এমন কোনো নলখাগড়া? \v 25 তা না হলে, তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? মোলায়েম পোশাক পরা কোনো মানুষকে? তা নয়, যারা মূল্যবান পোশাক পরে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করে, তারা তো রাজপ্রাসাদে থাকে। \v 26 কিন্তু তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? কোনো ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলি, ভাববাদীর চেয়েও মহত্তর একজনকে। \v 27 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে লেখা আছে: \q1 “ ‘আমি আমার বার্তাবাহককে তোমার আগে পাঠাব, \q2 যে তোমার আগে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে।’\f + \fr 7:27 \fr*\ft \+xt মালাখি 3:1\+xt*\ft*\f* \m \v 28 আমি তোমাদের বলছি, নারীর গর্ভে জন্মেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে যোহনের চেয়ে মহান আর কেউই নেই; তবুও ঈশ্বরের রাজ্যে যে নগণ্যতম সেও তাঁর চেয়ে মহান।” \p \v 29 সব লোক, এমনকি, কর আদায়কারীরাও, যীশুর শিক্ষা শুনে ঈশ্বরের পথকে সঠিক বলে স্বীকার করল, কারণ তারা বুঝতে পারল, যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম নিয়ে তারা ভুল করেনি। \v 30 কিন্তু ফরিশীরা ও শাস্ত্রবিদরা তাদের বিষয়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনা অগ্রাহ্য করল, কারণ তারা যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করেনি। \p \v 31 “তাহলে, কার সঙ্গে আমি এই প্রজন্মের লোকদের তুলনা করতে পারি? তারা কাদের মতো? \v 32 তারা সেইসব ছেলেমেয়ের মতো, যারা হাটেবাজারে বসে পরস্পরকে সম্বোধন করে বলে, \q1 “ ‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, \q2 কিন্তু তোমরা নৃত্য করলে না; \q1 আমরা শোকগাথা গাইলাম, \q2 কিন্তু তোমরা বিলাপ করলে না।’ \m \v 33 বাপ্তিষ্মদাতা যোহন এসে রুটি খেলেন না বা দ্রাক্ষারস পান করলেন না, কিন্তু তোমরা বললে, ‘তিনি ভূতগ্রস্ত।’ \v 34 মনুষ্যপুত্র এলেন, খাওয়াদাওয়া করলেন, কিন্তু তোমরা বললে, ‘এই দেখো একজন পেটুক ও মদ্যপ, কর আদায়কারী ও পাপীদের বন্ধু।’ \v 35 কিন্তু প্রজ্ঞা তার অনুসরণকারীদের আচরণের দ্বারাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়।” \s1 পাপীষ্ঠা নারী যীশুকে অভিষিক্ত করল \p \v 36 আর একজন ফরিশী আহার করার জন্য যীশুকে নিমন্ত্রণ করল। যীশু তার বাড়িতে গেলেন এবং খাবারের সময় আসনে হেলান দিয়ে বসলেন। \v 37 সেই নগরে একজন পাপীষ্ঠা নারী ছিল। যীশু ফরিশীর বাড়িতে খাবার খাচ্ছেন শুনে, সে একটি শ্বেতস্ফটিকের পাত্রে সুগন্ধি তেল নিয়ে এল। \v 38 সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে চোখের জলে তাঁর পা-দুটি ভিজিয়ে দিতে লাগল। তারপর সে তার চুল দিয়ে তাঁর পা দুটিকে মুছিয়ে দিয়ে চুম্বন করল এবং সেই সুগন্ধি তেল ঢেলে দিল। \p \v 39 এই ঘটনা দেখে আমন্ত্রণকর্তা ফরিশী মনে মনে ভাবল, “এই লোকটি যদি ভাববাদী হত, তাহলে বুঝতে পারত, কে তাঁকে স্পর্শ করছে এবং সে কী প্রকৃতির নারী! সে তো এক পাপীষ্ঠা!” \p \v 40 যীশু তাকে উত্তর দিলেন, “শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।” \p শিমোন বলল, “গুরুমহাশয়, বলুন।” \p \v 41 “এক মহাজনের কাছে দুজন ব্যক্তি ঋণ নিয়েছিল। একজন নিয়েছিল পাঁচশো দিনার,\f + \fr 7:41 \fr*\ft এক দিনারের মূল্য সেই সময়ের একদিনের মজুরি, বা বেতনের সমান।\ft*\f* অন্যজন পঞ্চাশ দিনার। \v 42 তাদের কারোরই সেই পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না, তাই তিনি দুজনেরই ঋণ মকুব করে দিলেন। এখন তাদের মধ্যে কে তাঁকে বেশি ভালোবাসবে?” \p \v 43 শিমোন উত্তর দিল, “আমার মনে হয়, যার বেশি ঋণ মকুব করা হয়েছিল, সেই।” \p যীশু বললেন, “তুমি যথার্থ বিচার করেছ।” \p \v 44 তারপর তিনি সেই নারীর দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, “তুমি এই স্ত্রীলোককে দেখতে পাচ্ছ, আমি তোমার বাড়িতে প্রবেশ করলাম, অথচ তুমি আমাকে পা-ধোওয়ার জল দিলে না। কিন্তু ও তার চোখের জলে আমার পা ভিজিয়ে দিল, আর তার চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল। \v 45 তুমি আমাকে একবারও চুম্বন\f + \fr 7:45 \fr*\ft এই চুম্বন স্বাগত জানানোর জন্য।\ft*\f* করলে না, কিন্তু আমি এই বাড়িতে প্রবেশ করার সময় থেকেই এই নারী আমার পা-দুখানি চুম্বন করা থেকে বিরত হয়নি। \v 46 তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না, কিন্তু ও আমার পায়ে সুগন্ধি তেল ঢেলে অভিষেক করল। \v 47 তাই আমি তোমাকে বলছি, যেহেতু তার অজস্র পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, সে আমাকে বেশি ভালোবেসেছে। কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্পই ভালোবাসে।” \p \v 48 তারপর যীশু সেই নারীকে বললেন, “তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হয়েছে।” \p \v 49 অন্য অতিথিরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল “ইনি কে, যে পাপও ক্ষমা করেন?” \p \v 50 যীশু সেই নারীকে বললেন, “তোমার বিশ্বাসই তোমাকে পরিত্রাণ দিয়েছে, শান্তিতে চলে যাও।” \c 8 \s1 বীজবপকের রূপক \p \v 1 এরপর যীশু ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার ঘোষণা করতে করতে বিভিন্ন গ্রাম ও নগর পরিক্রমা করতে লাগলেন। সেই বারোজন প্রেরিতশিষ্যও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। \v 2 মন্দ-আত্মা ও বিভিন্ন রোগ থেকে সুস্থতা লাভ করেছিলেন, এমন আরও কয়েকজন মহিলা তাদের সহযাত্রী হয়েছিলেন। তারা হলেন সেই মরিয়ম (মাগ্দালাবাসী নামে আখ্যাত), যার মধ্যে থেকে যীশু সাতটি ভূত তাড়িয়ে ছিলেন, \v 3 হেরোদের গৃহস্থালীর প্রধান ব্যবস্থাপক কূষের স্ত্রী যোহান্না, শোশন্না এবং আরও অনেকে। এই মহিলারা আপন আপন সম্পত্তি থেকে তাঁদের পরিচর্যা করতেন। \p \v 4 যখন অনেক লোক সমবেত হচ্ছিল এবং বিভিন্ন নগর থেকে লোকেরা যীশুর কাছে আসছিল, তিনি তাদের এই রূপক কাহিনিটি বললেন: \v 5 “একজন কৃষক তার বীজবপন করতে গেল। সে যখন বীজ ছড়াচ্ছিল, কিছু বীজ পথের ধারে পড়ল; সেগুলি পায়ের তলায় মাড়িয়ে গেল, আর পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল। \v 6 কতগুলি বীজ পড়ল পাথুরে জমিতে। সেগুলির অঙ্কুরোদ্গম হল, কিন্তু রস না থাকায় চারাগুলি শুকিয়ে গেল। \v 7 কিছু বীজ পড়ল কাঁটাঝোপের মধ্যে। কাঁটাঝোপ চারাগাছের সঙ্গেই বেড়ে উঠে তাদের ঢেকে ফেলল। \v 8 আবার কিছু বীজ পড়ল উৎকৃষ্ট জমিতে, সেখানে গাছগুলি বেড়ে উঠে যা বপন করা হয়েছিল, তার শতগুণ ফসল উৎপন্ন করল।” \p একথা বলার পর তিনি উচ্চকণ্ঠে বললেন, “যার শোনবার কান আছে, সে শুনুক।” \p \v 9 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে এই রূপকের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন। \v 10 তিনি বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ়তত্ত্ব তোমাদেরই কাছে ব্যক্ত হয়েছে, কিন্তু অন্যদের কাছে আমি রূপকের আশ্রয়ে কথা বলি যেন, \q1 “ ‘দেখেও তারা দেখতে না পায়, \q2 আর শুনেও তারা বুঝতে না পায়।’\f + \fr 8:10 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 6:9\+xt*\ft*\f* \p \v 11 “এই রূপকের অর্থ হল এরকম: সেই বীজ ঈশ্বরের বাক্য। \v 12 পথের উপর পতিত বীজ হল এমন কিছু লোক, যারা বাক্য শোনে, আর পরে দিয়াবল এসে তাদের অন্তর থেকে বাক্য হরণ করে, যেন তারা বিশ্বাস করতে না পারে ও পরিত্রাণ না পায়। \v 13 পাথুরে জমির উপরে পতিত বীজ হল তারাই, যারা ঈশ্বরের বাক্য শোনামাত্র সানন্দে গ্রহণ করে, কিন্তু মূল না থাকায় তাদের বিশ্বাস ক্ষণস্থায়ী হয়, কিন্তু পরীক্ষার সময় তারা বিপথগামী হয়। \v 14 কাঁটাঝোপের মধ্যে পতিত বীজ তারা, যারা বাক্য শোনে, কিন্তু জীবনে চলার পথে বিভিন্ন দুশ্চিন্তা, ধনসম্পত্তি ও বিলাসিতায় ব্যাহত হয়ে পরিপক্ব হতে পারে না। \v 15 কিন্তু উৎকৃষ্ট জমিতে পতিত বীজ তারাই, যারা উদার ও শুদ্ধচিত্ত, তারা বাক্য শুনে তা আঁকড়ে থাকে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে প্রচুর শস্য উৎপন্ন করে। \s1 দীপাধারের উপরে প্রদীপ \p \v 16 “প্রদীপ জ্বেলে কেউ পাত্রের মধ্যে লুকিয়ে রাখে না, বা খাটের নিচেও রেখে দেয় না। বরং প্রদীপটিকে সে একটি বাতিদানের উপরেই রেখে দেয়, যেন যারা ভিতরে প্রবেশ করে, তারা আলো দেখতে পায়। \v 17 কারণ গুপ্ত এমন কিছুই নেই, যা জানা যাবে না, বা প্রকাশ্যে উদ্‌ঘাটিত হবে না। \v 18 কাজেই কীভাবে শুনছ, সে বিষয়ে সতর্ক থেকো। যার আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে; যার নেই, এমনকি, কিছু আছে বলে যদি সে মনে করে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে।” \s1 যীশুর মা ও ভাইয়েরা \p \v 19 এরপর যীশুর মা ও ভাইয়েরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন, কিন্তু ভিড়ের জন্য তাঁরা তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারলেন না। \v 20 এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, “আপনার মা ও ভাইয়েরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান।” \p \v 21 তিনি উত্তর দিলেন, “যারা ঈশ্বরের বাক্য শুনে সেইমতো কাজ করে, তারাই আমার মা ও ভাই।” \s1 প্রকৃতির উপরে যীশুর নিয়ন্ত্রণ \p \v 22 একদিন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “চলো আমরা সাগরের ওপারে যাই।” এতে তারা একটি নৌকায় উঠে বসে যাত্রা করলেন। \v 23 তাঁরা নৌকা চালানো শুরু করলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। এমন সময় সাগরে প্রচণ্ড ঝড় উঠল, নৌকা জলে ভর্তি হতে লাগল। তাঁরা এক ভয়ংকর বিপদের সম্মুখীন হলেন। \p \v 24 শিষ্যেরা কাছে গিয়ে তাঁকে জাগালেন, “প্রভু, প্রভু, আমরা যে ডুবতে বসেছি!” \p তিনি উঠে বাতাস ও উত্তাল জলরাশিকে ধমক দিলেন, ঝড় থেমে গেল। সবকিছু শান্ত হল। \v 25 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “তোমাদের বিশ্বাস কোথায় গেল?” \p ভয়ে ও বিস্ময়ে তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, “ইনি তাহলে কে, যিনি বাতাস ও জলকে আদেশ দেন, ও তারা তাঁর কথা মেনে চলে?” \s1 মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তি সুস্থ হল \p \v 26 পরে তাঁরা গেরাসেনী অঞ্চলে পৌঁছালেন। সেই স্থানটি গালীল সাগরের অপর পারে অবস্থিত। \v 27 যীশু তীরে নামবার সঙ্গে সঙ্গেই নগরের এক মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তির সাক্ষাৎ পেলেন। বহুদিন ধরে এই লোকটি বিনা কাপড়ে উলঙ্গ হয়ে থাকত, বাড়িতে বসবাস করত না। সে থাকত কবরস্থানে। \v 28 সে যীশুকে দেখে চিৎকার করে উঠল এবং তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে উচ্চস্বরে বলল, “পরাৎপর ঈশ্বরের পুত্র যীশু, আপনি আমাকে নিয়ে কী করতে চান? আমি আপনার কাছে মিনতি করি, আমাকে যন্ত্রণা দেবেন না!” \v 29 কারণ লোকটির মধ্য থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যীশু সেই অশুচি আত্মাকে আদেশ দিয়েছিলেন। বারবার সে তার উপর ভর করত। লোকটির হাতে-পায়ে শিকল দিয়ে সতর্ক পাহারা রাখা হলেও, সে তার শিকল ছিঁড়ে ফেলত, আর ভূত তাকে তাড়িয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যেত। \p \v 30 যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কী?” \p “বাহিনী,” সে উত্তর দিল, কারণ বহু ভূত তার মধ্যে প্রবেশ করেছিল। \v 31 তারা তাঁর কাছে বারবার অনুরোধ করতে লাগল, তিনি যেন তাদের রসাতলে না পাঠান। \p \v 32 সেখানে পাহাড়ের গায়ে বিশাল একপাল শূকর চরে বেড়াচ্ছিল। ভূতেরা শূকরদের মধ্যে প্রবেশ করার অনুমতি প্রার্থনা করে যীশুকে অনুনয় করল। তিনি তাদের অনুমতি দিলেন। \v 33 ভূতেরা লোকটির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে সেই শূকরপালের মধ্যে প্রবেশ করল। শূকরের পাল পাহাড়ের খাড়া ঢাল বেয়ে ছুটে গিয়ে হ্রদে পড়ে ডুবে গেল। \p \v 34 যারা শূকর চরাচ্ছিল, তারা এই ঘটনাটি দেখে দৌড়ে পালিয়ে গেল ও নগরে ও গ্রামাঞ্চলে গিয়ে এই সংবাদ দিল। \v 35 কী ঘটেছে দেখবার জন্য লোকেরা বাইরে এল। যীশুর কাছে উপস্থিত হয়ে তারা দেখতে পেল, সেই লোকটি ভূতের কবলমুক্ত হয়ে পোশাক পরে সুস্থ মনে যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে। এই দেখে তারা ভয় পেয়ে গেল। \v 36 প্রত্যক্ষদর্শীরা সেই ভূতগ্রস্ত ব্যক্তিটি কীভাবে সুস্থ হয়েছে, তা সকলকে বলতে লাগল। \v 37 তখন গেরাসেনী অঞ্চলের লোকেরা ভয় পেয়ে তাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য যীশুকে অনুরোধ করল। যীশু তখন নৌকায় উঠে চলে গেলেন। \p \v 38 যে লোকটির মধ্য থেকে ভূতেরা বেরিয়ে এসেছিল, সে তাঁর সঙ্গী হওয়ার জন্য যীশুকে অনুনয় করতে লাগল। কিন্তু যীশু তাকে ফিরিয়ে দিলেন, \v 39 বললেন, “তুমি বাড়ি ফিরে যাও, আর লোকদের গিয়ে বলো, ঈশ্বর তোমার জন্য কী করেছেন।” তাই লোকটি চলে গেল, আর যীশু তার জন্য যা করেছেন, সেকথা নগরের সর্বত্র বলে বেড়াতে লাগল। \s1 মৃত মেয়ে ও পীড়িত নারী \p \v 40 যীশু ফিরে আসার পর লোকেরা তাঁকে স্বাগত জানাল, কারণ তারা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল। \v 41 সেই সময়, যায়ীর নামে এক ব্যক্তি এসে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়লেন; তিনি ছিলেন সমাজভবনের একজন অধ্যক্ষ। তাঁর বাড়িতে আসার জন্য তিনি তাঁকে মিনতি করলেন। \v 42 কারণ তাঁর একমাত্র মেয়ে তখন ছিল মৃত্যুশয্যায়, যার বয়স ছিল প্রায় বারো বছর। \p যীশু যখন পথ চলছিলেন, মানুষের ভিড়ে তাঁর চাপা পড়ার উপক্রম হল। \v 43 সেখানে এক নারী ছিল, যে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবের ব্যাধিতে ভুগছিল। সে চিকিৎসকদের পিছনে তার সর্বস্ব ব্যয় করেছিল, কিন্তু কেউ তাকে সুস্থ করতে পারেনি। \v 44 নারী ভিড়ের মধ্যে যীশুর পিছনে এসে তাঁর পোশাকের আঁচল স্পর্শ করল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে গেল। \p \v 45 যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “কে আমাকে স্পর্শ করল?” \p তারা সবাই অস্বীকার করলে, পিতর বললেন, “প্রভু, লোকেরা ভিড় করে যে আপনার উপরে চেপে পড়ছে!” \p \v 46 কিন্তু যীশু বললেন, “কেউ একজন আমাকে স্পর্শ করেছে, কারণ আমি বুঝতে পেরেছি যে, আমার ভিতর থেকে শক্তি নির্গত হয়েছে।” \p \v 47 সেই নারী যখন দেখল যে এই বিষয়টি গোপন রাখা সম্ভব নয়, তখন সে কাঁপতে কাঁপতে এগিয়ে এসে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ল। সে সমস্ত লোকের সাক্ষাতে বলল, কেন সে তাঁকে স্পর্শ করেছিল এবং কীভাবে, সেই মুহূর্তেই সে সুস্থ হয়েছিল। \v 48 তখন তিনি তাকে বললেন, “কন্যা, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে। শান্তিতে ফিরে যাও।” \p \v 49 যীশু তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সমাজভবনের অধ্যক্ষ যায়ীরের বাড়ি থেকে একজন এসে উপস্থিত হল। সে বলল, “আপনার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আর গুরুমহাশয়কে বিব্রত করবেন না।” \p \v 50 একথা শুনে যীশু যায়ীরকে বললেন, “ভয় পেয়ো না, শুধু বিশ্বাস করো, সে সুস্থ হয়ে যাবে।” \p \v 51 তিনি যায়ীরের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে পিতর, যোহন ও যাকোব এবং মেয়েটির বাবা-মা ছাড়া আর কাউকে তাঁর সঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতে দিলেন না। \v 52 সেই সময়, সমস্ত লোক মেয়েটির জন্য শোক ও বিলাপ করছিল। যীশু বললেন, “তোমাদের বিলাপ বন্ধ করো। সে মারা যায়নি, ঘুমিয়ে আছে মাত্র।” \p \v 53 তারা জানত, মেয়েটি মারা গেছে, তাই তারা যীশুকে উপহাস করল। \v 54 কিন্তু যীশু মেয়েটির হাত ধরে বললেন, “খুকুমণি, ওঠো!” \v 55 তখন তার আত্মা ফিরে এল এবং সে তখনই উঠে দাঁড়াল। তখন যীশু তাদের বললেন মেয়েটিকে কিছু খেতে দিতে। \v 56 তার বাবা-মা ভীষণ অবাক হয়ে গেল। কিন্তু তিনি এই ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে তাদের নিষেধ করে দিলেন। \c 9 \s1 যীশু বারোজন শিষ্যকে পাঠালেন \p \v 1 যীশু সেই বারোজনকে আহ্বান করে মন্দ-আত্মা তাড়ানোর এবং রোগনিরাময় করার ক্ষমতা ও অধিকার তাদের দিলেন। \v 2 তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে প্রচার ও পীড়িতদের আরোগ্য দান করার জন্য তাঁদের পাঠালেন। \v 3 তিনি তাঁদের বললেন, “যাত্রার উদ্দেশে তোমরা সঙ্গে কিছুই নিয়ো না; ছড়ি, থলি, কোনো খাবার, টাকাপয়সা, অতিরিক্ত পোশাক, কোনো কিছুই না। \v 4 যে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে, সেই নগর পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তোমরা সেখানেই থেকো। \v 5 লোকে তোমাদের স্বাগত না জানালে, তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণস্বরূপ, তাদের নগর পরিত্যাগ করার সময় তোমাদের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলো।” \v 6 সেইমতো তাঁরা যাত্রা করলেন এবং গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে সুসমাচার প্রচার করলেন, সর্বত্র লোকদের রোগনিরাময় করলেন। \p \v 7 সামন্তরাজ হেরোদ এসব ঘটনার কথা শুনতে পেলেন। তিনি খুব বিচলিত হয়ে পড়লেন, কারণ কেউ কেউ বলছিল যে, যোহন মৃত্যুলোক থেকে উত্থিত হয়েছেন। \v 8 অন্যেরা বলছিল, এলিয় আবির্ভূত হয়েছেন; আবার কেউ কেউ বলছিল, প্রাচীনকালের কোনো ভাববাদী পুনর্জীবিত হয়েছেন। \v 9 কিন্তু হেরোদ বললেন, “আমিই তো যোহনের মাথা কেটেছিলাম, তাহলে কে এই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে আমি এত কথা শুনছি?” তিনি যীশুকে দেখার চেষ্টা করতে লাগলেন। \s1 যীশু পাঁচ হাজার লোককে খাওয়ালেন \p \v 10 প্রেরিতশিষ্যেরা ফিরে এসে যীশুকে তাঁদের কাজের বিবরণ দিলেন। তিনি তখন তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বেথসৈদা নগরের দিকে একান্তে যাত্রা করলেন। \v 11 কিন্তু লোকেরা সেকথা জানতে পেরে তাঁকে অনুসরণ করল। তিনি তাদের স্বাগত জানিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে কথা বললেন এবং যাদের সুস্থতা লাভের প্রয়োজন ছিল, তাদের সুস্থ করলেন। \p \v 12 পড়ন্ত বিকেলে সেই বারোজন তাঁর কাছে এসে বললেন, “লোকদের চলে যেতে বলুন, তারা যেন চারদিকের গ্রামে এবং পল্লিতে গিয়ে খাবার ও রাত্রিবাসের সন্ধান করতে পারে, কারণ আমরা এখানে এক প্রত্যন্ত স্থানে আছি।” \p \v 13 তিনি উত্তর দিলেন, “তোমরাই ওদের কিছু খেতে দাও।” \p তাঁরা বললেন, “আমাদের কাছে কেবলমাত্র পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ আছে—সব লোককে খাওয়াতে হলে আমাদের গিয়ে খাবার কিনতে হবে।” \v 14 (সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল।) \p তিনি কিন্তু শিষ্যদের বললেন, “প্রত্যেক সারিতে কমবেশি পঞ্চাশ জন করে ওদের বসিয়ে দাও।” \v 15 শিষ্যেরা তাই করলেন, এবং প্রত্যেকে বসে পড়ল। \v 16 সেই পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ নিয়ে যীশু স্বর্গের দিকে দৃষ্টি দিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও রুটিগুলিকে ভাঙলেন। তারপর তিনি সেগুলি লোকদের পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন। \v 17 তারা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। আর শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে বারো ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \s1 খ্রীষ্টের বিষয়ে পিতরের স্বীকারোক্তি \p \v 18 একদিন যীশু একান্তে প্রার্থনা করছিলেন। তাঁর শিষ্যেরাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, এ বিষয়ে লোকেরা কী বলে?” \p \v 19 তাঁরা উত্তর দিলেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, অন্যেরা বলে এলিয়, আর কেউ কেউ বলে, প্রাচীনকালের কোনও একজন ভাববাদী যিনি পুনর্জীবিত হয়েছেন।” \p \v 20 “কিন্তু তোমরা কী বলো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী বলো, আমি কে?” \p পিতর উত্তর দিলেন, “আপনি ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট।” \p \v 21 একথা কারও কাছে প্রকাশ না করার জন্য যীশু দৃঢ়ভাবে তাঁদের সতর্ক করে দিলেন। \v 22 তিনি বললেন, “মনুষ্যপুত্রকে বিভিন্ন বিষয়ে দুঃখভোগ করতে হবে; প্রাচীনবর্গ, মহাযাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে। তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তৃতীয় দিনে তাঁর পুনরুত্থান হবে।” \p \v 23 তারপর তিনি তাঁদের সবাইকে বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, প্রতিদিন তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে। \v 24 কারণ কেউ যদি তার প্রাণরক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে, কিন্তু কেউ যদি আমার কারণে তার প্রাণ হারায়, সে তা লাভ করবে। \v 25 মানুষ যদি সমস্ত জগতের অধিকার লাভ করে ও তার নিজের প্রাণ হারায়, বা জীবন থেকে বঞ্চিত হয়, তাতে তার কী লাভ হবে? \v 26 কেউ যদি আমার ও আমার বাক্যের জন্য লজ্জাবোধ করে, মনুষ্যপুত্র যখন তাঁর নিজের মহিমায় ও তাঁর পিতা এবং পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন, তিনিও তার জন্য লজ্জাবোধ করবেন। \p \v 27 “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এখানে যারা দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈশ্বরের রাজ্যের দর্শন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর আস্বাদ লাভ করবে না।” \s1 যীশুর রূপান্তর \p \v 28 একথা বলার প্রায় আট দিন পরে যীশু পিতর, যোহন ও যাকোবকে সঙ্গে নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য এক পর্বতে উঠলেন। \v 29 প্রার্থনাকালে তাঁর মুখের রূপের পরিবর্তন হল এবং তাঁর পোশাক বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। \v 30 দুজন পুরুষ, মোশি ও এলিয়, হঠাৎই আবির্ভূত হয়ে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। \v 31 তাঁরা মহিমাময় রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়ে যীশুর সঙ্গে তাঁর আসন্ন প্রস্থানের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন, যা তিনি জেরুশালেমে সম্পন্ন করতে চলেছিলেন। \v 32 পিতর ও তাঁর সঙ্গীরা ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু যখন তাঁরা সম্পূর্ণ জেগে উঠলেন, তাঁরা যীশুর মহিমান্বিত রূপ এবং তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। \v 33 যখন তাঁরা যীশুকে ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হলেন, তখন পিতর যীশুকে বললেন, “প্রভু, এখানে থাকা আমাদের পক্ষে ভালোই হবে। এখানে আমরা তিনটি তাঁবু নির্মাণ করি, একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য, ও একটি এলিয়ের জন্য।” (তিনি কী বলছেন, তা নিজেই বুঝতে পারলেন না।) \p \v 34 তিনি একথা বলছেন, এমন সময় একখণ্ড মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল। যখন তাঁরা মেঘে ঢাকা পড়লেন, তখন তাঁরা অত্যন্ত ভয়ভীত হলেন। \v 35 তখন মেঘের ভিতর থেকে একটি স্বর ধ্বনিত হল, “ইনিই আমার পুত্র, আমার মনোনীত, তোমরা এঁর কথা শোনো।” \v 36 সেই স্বর ধ্বনিত হওয়ার পর, তাঁরা দেখলেন যীশু একা দাঁড়িয়ে আছেন। শিষ্যেরা নিজেদের মধ্যেই সেকথা গোপন করে রাখলেন, তাঁরা কী দেখেছেন, সে সম্বন্ধে তাঁরা কারও কাছেই প্রকাশ করলেন না। \s1 যীশু মন্দ-আত্মাগ্রস্ত একটি ছেলেকে সুস্থ করলেন \p \v 37 পরদিন তাঁরা পর্বত থেকে নেমে আসার পর একদল লোক তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। \v 38 সকলের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি তাঁকে উচ্চকণ্ঠে বলল, “গুরুমহাশয়, মিনতি করছি, আপনি আমার ছেলেটির দিকে দয়া করে একবার দেখুন, সে আমার একমাত্র সন্তান। \v 39 একটি আত্মা তার উপর ভর করেছে। সে হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে। সেই আত্মা তাকে আছড়ে ফেলে এবং এমনভাবে মোচড় দেয় যে, তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। সে তাকে যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে, কিছুতেই তাকে ছেড়ে যায় না। \v 40 আমি আপনার শিষ্যদের কাছে মিনতি করেছিলাম যেন তাঁরা সেই আত্মাকে তাড়িয়ে দেন, কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।” \p \v 41 যীশু উত্তর দিলেন, “ওহে অবিশ্বাসী ও বিপথগামী প্রজন্ম, আমি আর কত কাল তোমাদের সঙ্গে থাকব ও তোমাদের সহ্য করব? তোমার ছেলেটিকে এখানে নিয়ে এসো।” \p \v 42 ছেলেটি যখন আসছিল, এমন সময় সেই ভূত তাকে মাটিতে আছাড় দিয়ে মুচড়ে ধরল। কিন্তু যীশু মন্দ-আত্মাটিকে ধমক দিলেন, ছেলেটিকে সুস্থ করলেন এবং তাকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। \v 43 ঈশ্বরের এই মহিমা দেখে তারা সকলে অভিভূত হয়ে পড়ল। \s1 যীশু দ্বিতীয়বার নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন \p যীশুর কার্যকলাপ যখন সবাইকে বিস্মিত করে দিল, তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, \v 44 “আমি তোমাদের যা বলতে চলেছি, তা মন দিয়ে শোনো। মনুষ্যপুত্র মানুষদের হাতে বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হতে চলেছেন।” \v 45 তাঁরা কিন্তু একথার অর্থ বুঝতে পারলেন না। বিষয়টি তাঁদের কাছে গুপ্ত রাখা হয়েছিল বলে, তাঁরা তা উপলব্ধি করতে পারলেন না। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেও তাঁরা ভয় পেলেন। \p \v 46 পরে শিষ্যদের মধ্যে এক বিতর্কের সূচনা হল, তাদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ? \v 47 যীশু তাঁদের মনোভাব জানতে পেরে একটি শিশুকে কাছে টেনে নিয়ে নিজের পাশে দাঁড় করালেন। \v 48 তারপর তিনি তাঁদের বললেন, “যে আমার নামে এই শিশুটিকে স্বাগত জানায়, সে আমাকেই স্বাগত জানায়। যে আমাকে গ্রহণ করে, সে তাঁকেই গ্রহণ করে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। কারণ তোমাদের সকলের মধ্যে যে নগণ্য, সেই হল শ্রেষ্ঠ।” \p \v 49 যোহন বললেন, “প্রভু, আমরা একজনকে আপনার নামে ভূত তাড়াতে দেখে, তাকে সে কাজ করতে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের কেউ নয়।” \p \v 50 যীশু বললেন, “তাকে নিষেধ কোরো না, কারণ যে তোমাদের বিপক্ষে নয়, সে তোমাদের সপক্ষে।” \s1 শমরীয়দের বিরুদ্ধাচরণ \p \v 51 স্বর্গে যাওয়ার কাল সন্নিকট হলে, যীশু স্থিরসংকল্প হয়ে জেরুশালেমের দিকে যাত্রা করলেন। \v 52 তিনি তাঁর বার্তাবহদের আগেই পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা যীশুর জন্য সবকিছুর আয়োজন সম্পূর্ণ করতে শমরীয়দের এক গ্রামে প্রবেশ করলেন। \v 53 কিন্তু তিনি জেরুশালেম দিকে যাচ্ছিলেন বলে সেখানকার অধিবাসীরা কেউ তাঁকে স্বাগত জানাল না। \v 54 এই দেখে তাঁর দুজন শিষ্য, যাকোব ও যোহন জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি কি চান যে, আমরা ওদের ধ্বংস করার জন্য আকাশ থেকে আগুন নেমে আসতে বলি, যেমন এলিয় করেছিলেন?” \v 55 কিন্তু যীশু তাঁদের দিকে ফিরে তিরস্কার করলেন।\f + \fr 9:55 \fr*\ft কতগুলি পাণ্ডুলিপিতে এরপর আছে: তিনি বললেন, “তোমরা জানো না, তোমাদের প্রকৃতি কেমন, কারণ মনুষ্যপুত্র মানুষের জীবন ধ্বংস করতে আসেননি, তিনি এসেছেন তাদের উদ্ধার করতে।”\ft*\f* \v 56 এরপর তাঁরা অন্য গ্রামে চলে গেলেন। \s1 যীশুকে অনুসরণের মূল্য \p \v 57 তাঁরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, সেই সময় একজন তাঁকে বলল, “আপনি যেখানে যাবেন আমিও আপনার সঙ্গে সেখানে যাব।” \p \v 58 উত্তরে যীশু বললেন, “শিয়ালদের গর্ত আছে, আকাশের পাখিদের বাসা আছে, কিন্তু মনুষ্যপুত্রের মাথা রাখার কোনও স্থান নেই।” \p \v 59 তারপর তিনি অন্য একজনকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” \p কিন্তু সে উত্তর দিল, “প্রভু, প্রথমে আমাকে গিয়ে আমার পিতাকে সমাধি দিয়ে আসার অনুমতি দিন।” \p \v 60 যীশু তাকে বললেন, “মৃতরাই তাদের মৃতদের সমাধি দিক। কিন্তু তুমি গিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যের কথা ঘোষণা করো।” \p \v 61 আরও একজন বলল, “প্রভু, আমি আপনাকে অনুসরণ করব। কিন্তু আমাকে ফিরে গিয়ে প্রথমে পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিতে অনুমতি দিন।” \p \v 62 যীশু উত্তর দিলেন, “লাঙ্গলে হাত দিয়ে যে পিছনে ফিরে তাকায়, সে ঈশ্বরের রাজ্যের সেবাকাজের উপযুক্ত নয়।” \c 10 \s1 যীশু বাহাত্তর জন শিষ্যকে পাঠালেন \p \v 1 এরপর প্রভু আরও বাহাত্তর জনকে\f + \fr 10:1 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে, \ft*\fqa সত্তরজন\fqa*\ft । 17 পদেও।\ft*\f* নিযুক্ত করলেন এবং যে সমস্ত নগরে ও স্থানে নিজে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, তার আগেই তিনি দুজন দুজন করে তাঁদের সেইসব স্থানে পাঠিয়ে দিলেন। \v 2 তিনি তাঁদের বললেন, “ফসল প্রচুর, কিন্তু কর্মী সংখ্যা অল্প। তোমরা ফসলের মালিকের কাছে প্রার্থনা করো, যেন তিনি তাঁর শস্যক্ষেত্রে কর্মচারীদের পাঠান।” \v 3 তোমরা যাও! আমি নেকড়েদের মধ্যে তোমাদের মেষের মতো পাঠাচ্ছি। \v 4 তোমাদের সঙ্গে টাকার থলি, ঝুলি, অথবা চটিজুতো নিয়ো না; পথে কাউকে অভিবাদন জানিয়ো না। \p \v 5 “কোনো বাড়িতে প্রবেশ করার সময়, প্রথমে তোমরা বোলো, ‘এই বাড়িতে শান্তি বিরাজ করুক।’ \v 6 সেখানে কোনো শান্তিপ্রিয় মানুষ থাকলে, তোমাদের শান্তি তার উপর বিরাজ করবে, না থাকলে তোমাদের কাছেই তা ফিরে আসবে। \v 7 তোমরা সেই বাড়িতে থেকো, তারা যা দেবেন, তাই খেয়ো ও পান কোরো, কারণ কর্মচারী তার বেতন পাওয়ার যোগ্য। তোমরা এক বাড়ি ছেড়ে অন্য কোনো বাড়িতে আশ্রয় নিয়ো না। \p \v 8 “তোমরা কোনো নগরে প্রবেশ করলে সেখানকার লোক যদি তোমাদের স্বাগত জানিয়ে কিছু খাবার খেতে দেয়, তবে সেই খাবার গ্রহণ কোরো। \v 9 সেখানকার পীড়িতদের সুস্থ কোরো। তাদের বোলো, ‘ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের সন্নিকট।’ \v 10 কিন্তু কোনো নগরে প্রবেশ করার পর লোকে যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে পথে বেরিয়ে পড়ে বোলো, \v 11 ‘তোমাদের নগরের যে ধুলো আমাদের পায়ে লেগেছিল, তাও আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে ঝেড়ে ফেললাম। তবুও তোমরা এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জেনো, ঈশ্বরের রাজ্য সন্নিকট।’ \v 12 আমি তোমাদের বলছি, বিচারদিনে সদোমের দশা, বরং সেই নগরের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে। \p \v 13 “কোরাসীন, ধিক্ তোমাকে! বেথসৈদা, ধিক্ তোমাকে! তোমাদের মধ্যে যেসব অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, সেসব যদি টায়ার ও সীদোনে করা হত, তারা অনেক আগেই চটবস্ত্র পরে ভস্মে বসে অনুতাপ করত। \v 14 কিন্তু বিচারদিনে টায়ার ও সীদোনের দশা, বরং তোমাদের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে। \v 15 আর তুমি কফরনাহূম, তুমি কি না স্বর্গ পর্যন্ত উঁচুতে উঠবে? তা নয়, তুমি অধোলোক\f + \fr 10:15 \fr*\ft গ্রিক: পাতাল।\ft*\f* পর্যন্ত তলিয়ে যাবে। \p \v 16 “যারা তোমাদের কথা শোনে, তারা আমারই কথা শোনে; যারা তোমাদের প্রত্যাখ্যান করে, তারা আমাকেই প্রত্যাখ্যান করে; কিন্তু যে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে, সে প্রত্যাখ্যান করে তাঁকেই, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।” \p \v 17 সেই বাহাত্তর জন শিষ্য সানন্দে ফিরে এসে বললেন, “প্রভু, আপনার নামে ভূতেরাও আমাদের অধীনতা স্বীকার করে।” \p \v 18 তিনি উত্তর দিলেন, “আমি আকাশ থেকে বিদ্যুতের মতো শয়তানকে পতিত হতে দেখেছি। \v 19 আমি তোমাদের সাপ ও কাঁকড়াবিছে পায়ের তলায় পিষে মারার এবং শত্রুর সমস্ত ক্ষমতার উপর কর্তৃত্ব করার অধিকার দান করেছি। কোনো কিছুই তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। \v 20 কিন্তু আত্মারা তোমাদের বশীভূত হয় বলে উল্লসিত হোয়ো না, বরং স্বর্গে তোমাদের নাম লেখা হয়েছে বলে উল্লসিত হও।” \p \v 21 সেই সময় যীশু পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে বললেন, “হে পিতা, তুমি স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ তুমি এই সমস্ত বিষয় বিজ্ঞ ও শিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে গোপন রেখে ছোটো শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ। হ্যাঁ পিতা, কারণ এই ছিল তোমার ঈপ্সিত ইচ্ছা। \p \v 22 “আমার পিতা সবকিছুই আমার হাতে সমর্পণ করেছেন। পুত্রকে কেউ জানে না, কেবলমাত্র পিতা জানেন এবং পিতাকে কেউ জানে না, কেবলমাত্র পুত্র জানেন ও পুত্র যার কাছে তাঁকে প্রকাশ করে, সেই জানে।” \p \v 23 তারপর তিনি শিষ্যদের দিকে ফিরে একান্তে বললেন, “তোমরা যা দেখছ, যারা তা দেখতে পায় ধন্য তাদের চোখ। \v 24 কারণ আমি তোমাদের বলছি, বহু ভাববাদী ও রাজা তা দেখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা তা দেখতে পাননি এবং তোমরা যা শুনছ, তাঁরা তা শুনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শুনতে পাননি।” \s1 উত্তম শমরীয়ের রূপক \p \v 25 একদিন এক শাস্ত্রবিদ যীশুকে পরীক্ষা করার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, “গুরুমহাশয়, অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে?” \p \v 26 তিনি উত্তর দিলেন, “বিধানশাস্ত্রে কী লেখা আছে? তুমি কি পাঠ করছ?” \p \v 27 সে উত্তরে বলল, “ ‘তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, সমস্ত প্রাণ, সমস্ত শক্তি ও সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে’\f + \fr 10:27 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 6:5\+xt*\ft*\f*; এবং, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো প্রেম করবে।’\f + \fr 10:27 \fr*\ft \+xt লেবীয় পুস্তক 19:18\+xt*\ft*\f*” \p \v 28 যীশু উত্তরে বললেন, “তুমি যথার্থ উত্তর দিয়েছ। তাই করো এবং এতেই তুমি জীবন লাভ করবে।” \p \v 29 কিন্তু সে নিজের সততা প্রতিপন্ন করতে যীশুকে প্রশ্ন করল, “বেশ, আমার প্রতিবেশী কে?” \p \v 30 প্রত্যুত্তরে যীশু বললেন, “এক ইহুদি ব্যক্তি জেরুশালেম থেকে যিরীহোতে নেমে যাচ্ছিল। পথে সে দস্যুদের কবলে পড়ল। তারা তার পোশাক খুলে নিয়ে এবং তাকে মেরে আধমরা করে ফেলে রেখে চলে গেল। \v 31 ঘটনাক্রমে একজন যাজক সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। লোকটিকে দেখে সে রাস্তার অন্য প্রান্ত দিয়ে চলে গেল। \v 32 সেভাবে একজন লেবীয়ও সেখানে এসে তাকে দেখে অন্য দিক দিয়ে চলে গেল। \v 33 কিন্তু একজন শমরীয় পথ চলতে চলতে, সেই ব্যক্তি যেখানে ছিল, সেখানে এসে পৌঁছাল; তাকে দেখে সে তার প্রতি করুণাবিষ্ট হল। \v 34 সে তার কাছে গিয়ে ক্ষতস্থানে তেল ও দ্রাক্ষারস লাগিয়ে বেঁধে দিল। তারপর সেই ব্যক্তিকে তার নিজের গাধায় চাপিয়ে একটি পান্থশালায় নিয়ে এসে তার সেবাযত্ন করল। \v 35 পরদিন পান্থশালার মালিককে সে দুটি রুপোর মুদ্রা\f + \fr 10:35 \fr*\ft গ্রিক: দুই দিনার।\ft*\f* দিল। সে বলল, ‘ওই ব্যক্তির সেবাযত্ন কোরো। এর অতিরিক্ত কিছু ব্যয় হলে, ফেরার পথে আমি পরিশোধ করে দেব।’ \p \v 36 “এই তিনজনের মধ্যে কে দস্যুদের হাতে পড়া ওই লোকটির কাছে প্রতিবেশী হয়ে উঠল? তোমার কী মনে হয়?” \p \v 37 সেই শাস্ত্রবিদ উত্তর দিল, “লোকটির প্রতি যে করুণা দেখিয়েছিল, সেই।” \p যীশু তাকে বললেন, “যাও, ফিরে গিয়ে তুমিও সেরকম করো।” \s1 মার্থা ও মরিয়মের বাড়িতে যীশু \p \v 38 যীশু শিষ্যদের নিয়ে পথ চলতে চলতে একটি গ্রামে এসে পৌঁছালেন। সেখানে মার্থা নামে এক স্ত্রীলোক তাঁর বাড়িতে তাঁকে স্বাগত জানালেন। \v 39 মরিয়ম নামে তাঁর এক বোন ছিলেন। প্রভুর মুখের বাক্য শোনার জন্য তিনি তাঁর পায়ের কাছে বসলেন। \v 40 কিন্তু মার্থা আপ্যায়নের আয়োজন করতে গিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, “প্রভু, আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না, আমার বোন আমার একার উপর সমস্ত কাজের ভার ছেড়ে দিয়েছে? আপনি ওকে বলুন, আমাকে সাহায্য করতে।” \p \v 41 প্রভু উত্তর দিলেন, “মার্থা, মার্থা, তুমি অনেক বিষয়ে উদ্বিগ্ন, আর বিচলিত হয়ে পড়েছ। \v 42 কিন্তু প্রয়োজন একটিমাত্র বিষয়ের। মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টিই মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে না।” \c 11 \s1 প্রার্থনা সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা \p \v 1 একদিন যীশু কোনো এক স্থানে প্রার্থনা করছিলেন। যখন শেষ করলেন, তাঁর একজন শিষ্য তাঁকে বললেন, “প্রভু, যোহন যেমন তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিয়েছিলেন, তেমন আপনিও আমাদের প্রার্থনা করতে শিখিয়ে দিন।” \p \v 2 তিনি তাঁদের বললেন, “প্রার্থনা করার সময়, তোমরা বোলো: \q1 “ ‘হে পিতা, \q1 তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক, \q1 তোমার রাজ্য আসুক। \q1 \v 3 প্রতিদিন আমাদের দৈনিক আহার আমাদের দাও। \q1 \v 4 আর আমাদের সব পাপ ক্ষমা করো, \q2 যেমন আমরাও নিজেদের সব অপরাধীকে ক্ষমা করি।\f + \fr 11:4 \fr*\ft গ্রিক: আমাদের সব ঋণীকে\ft*\f* \q1 আর আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিয়ো না।\f + \fr 11:4 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর আছে, স্বর্গের মতো মর্ত্যেও তোমার ইচ্ছা সাধিত হোক।\ft*\f*’ ” \p \v 5 তারপর তিনি তাঁদের বললেন, “মনে করো, তোমাদের কোনও একজনের বন্ধু যদি মাঝরাতে তার কাছে গিয়ে বলে, \v 6 ‘বন্ধু, আমাকে তিনটি রুটি ধার দাও। আমার এক বন্ধু এক জায়গায় যাওয়ার পথে আমার কাছে এসেছে। কিন্তু তাকে খেতে দেওয়ার মতো আমার কিছুই নেই।’ \v 7 তখন ভিতর থেকে সে উত্তর দিল, ‘আমাকে বিরক্ত কোরো না। দরজা বন্ধ করা হয়েছে, ছেলেমেয়েরা আমার সঙ্গে শুয়ে আছে। আমি উঠে তোমাকে কিছু দিতে পারছি না।’ \v 8 আমি তোমাদের বলছি, যদিও তার বন্ধু বলে সে উঠে তাকে রুটি দিতে পারবে না, কিন্তু লোকটির আকুলতার\f + \fr 11:8 \fr*\ft অথবা, পীড়াপীড়ির।\ft*\f* জন্য সে উঠে তার চাহিদামতো রুটি তাকে দেবে। \p \v 9 “তাই আমি তোমাদের বলছি, চাও, তোমাদের দেওয়া হবে; খোঁজ করো, তোমরা পাবে; কড়া নাড়ো, তোমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হবে। \v 10 কারণ যে চায়, সে গ্রহণ করে; যে খোঁজ করে, সে সন্ধান পায়; আর যে কড়া নাড়ে, তার জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হয়। \p \v 11 “তোমাদের মধ্যে এমন বাবা কে আছে, ছেলে রুটি চাইলে যে তাকে পাথর দেবে, অথবা মাছ চাইলে তার পরিবর্তে সাপ দেবে? \v 12 অথবা সে ডিম চাইলে তাকে কাঁকড়াবিছে দেবে? \v 13 তোমরা মন্দ প্রকৃতির হয়েও যদি নিজেদের সন্তানদের ভালো ভালো উপহার দিতে জানো, তাহলে যারা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছে চায়, তাদের তিনি আরও কত না নিশ্চিতরূপে পবিত্র আত্মা দান করবেন!” \s1 যীশু ও বেলসবুল \p \v 14 যীশু ভূতগ্রস্ত এক বোবা ব্যক্তির মধ্য থেকে ভূত তাড়ালেন। ভূতটি চলে গেলে বোবা মানুষটি কথা বলতে লাগল। এ দেখে লোকেরা ভীষণ চমৎকৃত হয়ে গেল। \v 15 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “ও ভূতদের অধিপতি বেলসবুলের সহায়তায় ভূতদের দূর করে।” \v 16 অন্যেরা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য কোনও স্বর্গীয় চিহ্ন দেখতে চাইল। \p \v 17 যীশু তাদের মনের কথা জানতে পেরে তাদের বললেন, “কোনো রাজ্য যদি নিজেরই বিরুদ্ধে বিভাজিত হয়, তাহলে তার পতন হবে। কোনো পরিবার যদি নিজের বিরুদ্ধে বিভাজিত হয়, তাহলে তার পতন হবে। \v 18 শয়তান যদি নিজের বিরুদ্ধে বিভাজিত হয়ে পড়ে, কেমনভাবে তার সাম্রাজ্য টিকে থাকতে পারে? আমার একথা বলার কারণ, তোমরা বলে থাকো যে, আমি বেলসবুলের সহায়তায় ভূতদের তাড়িয়ে থাকি। \v 19 আমি যদি বেলসবুলের দ্বারা ভূত তাড়িয়ে থাকি, তাহলে তোমাদের অনুগামীরা কার সাহায্যে তাদের তাড়ায়? সেই কারণে, তারাই তোমাদের বিচারক হবে। \v 20 কিন্তু যদি আমি ঈশ্বরের শক্তির\f + \fr 11:20 \fr*\ft গ্রিক: অঙ্গুলি\ft*\f* দ্বারা ভূত তাড়াই, তাহলে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের উপরে এসে পড়েছে। \p \v 21 “কোনো শক্তিশালী ব্যক্তি যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিজের প্রাসাদ পাহারা দেয়, তখন তার সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকে। \v 22 কিন্তু তার চেয়েও বলিষ্ঠ কেউ যখন আক্রমণ করে তাকে পরাস্ত করেন, পরাজিত লোকটি যে অস্ত্রশস্ত্রের উপর নির্ভর করেছিল, সেসব তিনি কেড়ে নেন এবং সমস্ত লুন্ঠিত দ্রব্য নিয়ে চলে যান। \p \v 23 “যে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষে, আর যে আমার সঙ্গে সংগ্রহ করে না, সে ছড়িয়ে ফেলে। \p \v 24 “কোনো মানুষের ভিতর থেকে যখন কোনও দুষ্ট-আত্মা বের হয়ে যায় সে তখন বিশ্রামের খোঁজে শুষ্ক-ভূমিতে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু তার সন্ধান পায় না। তখন সে বলে, ‘আমি যে বাড়ি ছেড়ে এসেছি সেখানেই ফিরে যাব।’ \v 25 যখন সে ফিরে আসে, তখন সেই বাড়ি পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল দেখতে পায়। \v 26 তখন সে গিয়ে তার থেকেও দুষ্ট আরও সাতটি আত্মাকে নিয়ে আসে, আর তারা ভিতরে প্রবেশ করে সেখানে বাস করতে থাকে। তখন সেই মানুষটির অন্তিমদশা আগের থেকে আরও বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ে।” \p \v 27 যীশু যখন এসব কথা বলছিলেন, লোকদের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক চিৎকার করে বলে উঠল, “ধন্য সেই গর্ভ, যা আপনাকে ধারণ করেছিল এবং সেই স্তন, যার দুধ আপনি পান করেছিলেন।” \p \v 28 তিনি উত্তর দিলেন, “বরং তারাই ধন্য, যারা ঈশ্বরের বাক্য শোনে ও তা পালন করে।” \s1 যোনার নিদর্শন \p \v 29 লোকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে লাগল। যীশু বললেন, “বর্তমান প্রজন্মের লোকেরা দুষ্ট প্রকৃতির। তারা অলৌকিক নিদর্শন দেখতে চায়, কিন্তু যোনার নিদর্শন ছাড়া আর কিছুই তাদের দেওয়া হবে না। \v 30 যোনা নীনবীবাসীদের কাছে যেমন নিদর্শনস্বরূপ ছিলেন, মনুষ্যপুত্রও তেমনই এই প্রজন্মের কাছে নিদর্শনস্বরূপ হবেন। \v 31 বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রানি এই প্রজন্মের লোকেদের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের অভিযুক্ত করবেন, কারণ শলোমনের প্রজ্ঞার বাণী শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর সুদূর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন। কিন্তু শলোমনের চেয়েও মহান একজন এখানে উপস্থিত আছেন। \v 32 বিচারের দিনে নীনবী নগরের লোকেরা এই প্রজন্মের লোকদের সঙ্গে উঠে দাঁড়াবে ও এদের অভিযুক্ত করবে, কারণ তারা যোনার প্রচারে মন পরিবর্তন করেছিল; আর এখন যোনার চেয়েও মহান একজন এখানে উপস্থিত আছেন। \s1 শরীরের প্রদীপ \p \v 33 “প্রদীপ জ্বেলে কেউ গোপন স্থানে, বা পাত্রের নিচে রাখে না, বরং সে দীপাধারের উপরে রাখে, যেন যারা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে, তারা আলো দেখতে পায়। \v 34 তোমার চোখই তোমার শরীরের প্রদীপ। তোমার চোখ যদি সরল হয়, তাহলে তোমার সমস্ত শরীর আলোকময় হয়ে উঠবে। কিন্তু চোখদুটি যদি মন্দ হয়, তোমার শরীরও হয়ে উঠবে অন্ধকারময়। \v 35 সেই কারণে দেখো, তোমার মধ্যে যে আলো রয়েছে বলে তুমি মনে করছ, তা আসলে অন্ধকার যেন না হয়। \v 36 তাই তোমার সারা শরীর যদি আলোকময় হয়ে ওঠে ও তার কোনো অংশ যদি অন্ধকারময় না হয়, প্রদীপের আলো যেমন তোমার উপরে আলো দেয় তেমনই তোমার শরীরও সম্পূর্ণ আলোময় হয়ে উঠবে।” \s1 ছয়টি ধিক্কারবাণী \p \v 37 যীশুর কথা বলা শেষ হওয়ার পর একজন ফরিশী তাঁকে তার সঙ্গে খাবারের জন্য নিমন্ত্রণ করল। তাই তিনি ভিতরে গিয়ে খেতে বসলেন। \v 38 কিন্তু খাওয়ার আগে যীশুকে প্রথামতো হাত পা ধুতে না দেখে, সেই ফরিশী অবাক হয়ে গেল। \p \v 39 তখন প্রভু তাকে বললেন, “তোমরা ফরিশীরা, থালাবাটির বাইরের অংশ পরিষ্কার করে থাকো, কিন্তু তোমাদের অন্তর লালসা ও দুষ্টতায় ভর্তি থাকে। \v 40 মূর্খের দল! বাইরের দিক যিনি তৈরি করেছেন, তিনি কি ভিতরের দিকও তৈরি করেননি? \v 41 কিন্তু পাত্রের ভিতরে\f + \fr 11:41 \fr*\ft অথবা, তোমাদের যা আছে।\ft*\f* যা আছে, তা দরিদ্রদের বিলিয়ে দাও, দেখবে, তোমাদের কাছে সবকিছুই শুচিশুদ্ধ হয়ে উঠবে। \p \v 42 “ফরিশীরা, ধিক্ তোমাদের! কারণ তোমরা খেতের পুদিনা, তেজপাতা ও অন্যান্য শাকের এক-দশমাংশ ঈশ্বরকে দিয়ে থাকো, কিন্তু ন্যায়বিচার ও ঈশ্বরের প্রেম অবহেলা করে থাকো। এক-দশমাংশ দান করেও, আরও গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলি তোমাদের পালন করা উচিত ছিল। \p \v 43 “ফরিশীরা, ধিক্ তোমাদের! কারণ তোমরা সমাজভবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসতে এবং হাটেবাজারে লোকদের অভিবাদন পেতে ভালোবাসো। \p \v 44 “ধিক্ তোমাদের! কারণ তোমরা চিহ্নহীন কবরের মতো, যার উপর দিয়ে মানুষ অজান্তে হেঁটে যায়।” \p \v 45 একজন শাস্ত্রবিদ তাঁকে উত্তর দিল, “গুরুমহাশয়, এ সমস্ত কথায় আপনি আমাদেরও অপমান করছেন।” \p \v 46 যীশু প্রত্যুত্তরে বললেন, “শাস্ত্রবিদরা, ধিক্ তোমাদের! তোমরা সব মানুষের উপর এমন বোঝা চাপিয়ে দাও, যা তারা বইতে অক্ষম, কিন্তু তোমরা নিজেরা একটি আঙুল তুলেও তাদের সাহায্য করো না। \p \v 47 “ধিক্ তোমাদের! কারণ তোমরা ভাববাদীদের সমাধি নির্মাণ করে থাকো, কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষেরাই তাদের হত্যা করেছিল। \v 48 তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাজ যে তোমরা সমর্থন করছ, তোমাদের কাজই তার প্রমাণ। তারা হত্যা করেছিল সেই ভাববাদীদের, আর তোমরা তাদের সমাধি নির্মাণ করছ! \v 49 এজন্য ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞায় বলেন, ‘আমি তাদের কাছে ভাববাদীদের ও প্রেরিতশিষ্যদের পাঠাব; তাদের কয়েকজনকে তারা হত্যা করবে এবং অন্যদের নিপীড়ন করবে।’ \v 50 তাই জগতের উৎপত্তিকাল থেকে সব ভাববাদীর রক্তপাতের জন্য এই প্রজন্মের মানুষেরাই দায়ী হবে। \v 51 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, হেবল থেকে শুরু করে বেদি ও মন্দিরের মাঝখানে নিহত সখরিয় পর্যন্ত, সকলেরই রক্তপাতের জন্য বর্তমান প্রজন্ম দায়ী হবে। \p \v 52 “শাস্ত্রবিদরা, ধিক্ তোমাদের! কারণ তোমরা জ্ঞান-ভাণ্ডারের চাবি কেড়ে নিয়েছ। তোমরা নিজেরা তো প্রবেশ করোইনি, যারা প্রবেশ করতে চেয়েছে, তাদেরও বাধা দিয়েছ।” \p \v 53 যীশু সেই স্থান ছেড়ে যাওয়ার সময় ফরিশী ও শাস্ত্রবিদরা তাঁর তীব্র বিরোধিতা করতে লাগল এবং তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে তুলল। \v 54 যীশুর কথা দিয়েই তাঁকে ফাঁদে ফেলার জন্য তারা সুযোগের অপেক্ষায় রইল। \c 12 \s1 সতর্কতা এবং অনুপ্রেরণা দান \p \v 1 ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ সেখানে সমবেত হলে এমন অবস্থা হল যে, একে অন্যের পা-মাড়াতে লাগল। যীশু প্রথমে তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিতে লাগলেন, বললেন, “ফরিশীদের খামির, অর্থাৎ ভণ্ডামি থেকে তোমরা নিজেদের সাবধানে রেখো। \v 2 গোপন এমন কিছুই নেই, যা প্রকাশিত হবে না, লুকোনো এমন কিছুই নেই, যা অজানা থেকে যাবে। \v 3 অন্ধকারে তোমরা যা উচ্চারণ করেছ তা প্রকাশ্য দিবালোকে শোনা যাবে। আর ভিতরের ঘরে যে কথা তুমি চুপিচুপি বলেছ, তা ছাদের উপর থেকে ঘোষণা করা হবে। \p \v 4 “আমার বন্ধু সব, আমি তোমাদের বলছি, শরীরকে হত্যা করার বেশি আর কিছু করার সাধ্য যাদের নেই, তাদের তোমরা ভয় কোরো না। \v 5 কিন্তু কাকে ভয় করতে হবে, তা আমি তোমাদের বলছি: শরীরকে হত্যা করার পর যাঁর ক্ষমতা আছে তোমাদের নরকে নিক্ষেপ করার তোমরা তাঁকেই ভয় কোরো। হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তাঁকেই ভয় কোরো। \v 6 দুই পয়সায় কি পাঁচটি চড়ুইপাখি বিক্রি হয় না? তবুও তাদের একটিকেও ঈশ্বর ভোলেন না। \v 7 প্রকৃতপক্ষে, তোমাদের মাথার চুলগুলিরও সংখ্যা গোনা আছে। ভয় পেয়ো না কারণ চড়ুইপাখি থেকেও তোমরা অনেক বেশি মূল্যবান। \p \v 8 “আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ মানুষের সাক্ষাতে আমাকে স্বীকার করে, মনুষ্যপুত্রও তাকে ঈশ্বরের দূতদের সাক্ষাতে স্বীকার করবেন। \v 9 কিন্তু কেউ যদি মানুষের সাক্ষাতে আমাকে অস্বীকার করে, ঈশ্বরের দূতদের সাক্ষাতে তাকেও অস্বীকার করা হবে। \v 10 মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কেউ যদি নিন্দা করে, তার ক্ষমা হবে না। \p \v 11 “যখন সমাজভবনের শাসনকর্তা ও কর্তৃপক্ষের সামনে তোমাদের টেনে আনা হয়, তখন তোমরা কীভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে, অথবা কী বলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না। \v 12 কারণ সে সময়ে তোমাদের কী বলতে হবে, পবিত্র আত্মা তা শিখিয়ে দেবেন।” \s1 মূর্খ ধনীর রূপক \p \v 13 লোকদের মধ্য থেকে কেউ একজন বলল, “গুরুমহাশয়, আমার ভাইকে বলুন, সে যেন পৈত্রিক সম্পত্তি আমার সঙ্গে ভাগ করে নেয়।” \p \v 14 যীশু উত্তর দিলেন, “ওহে, কে আমাকে তোমাদের বিচার, অথবা মধ্যস্থতা করার জন্য নিযুক্ত করেছে?” \v 15 তারপর তিনি তাদের বললেন, “সজাগ থেকো! সমস্ত রকম লোভ থেকে নিজেদের রক্ষা কোরো; সম্পদের প্রাচুর্যের উপরে মানুষের জীবনের অস্তিত্ব নির্ভর করে না।” \p \v 16 আর তিনি তাদের এই রূপকটি বললেন: “এক ধনবান ব্যক্তির জমিতে প্রচুর ফসল হয়েছিল। \v 17 সে চিন্তা করল, ‘আমি কী করব? এত ফসল মজুত করার মতো কোনো জায়গা আমার নেই।’ \p \v 18 “তারপর সে বলল, ‘আমি এক কাজ করব, আমার গোলাঘরগুলি ভেঙে আমি বড়ো বড়ো গোলাঘর নির্মাণ করব। সেখানে আমার সমস্ত ফসল আর অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী মজুত করব। \v 19 তারপর নিজেকে বলব, “তুমি বহু বছরের জন্য অনেক ভালো ভালো জিনিস মজুত করেছ। এবার জীবনকে সহজভাবে নাও; খাওয়াদাওয়া ও আমোদ স্ফূর্তি করো।” ’ \p \v 20 “কিন্তু ঈশ্বর তাকে বললেন, ‘মূর্খ! আজ রাতেই তোমার প্রাণ তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। তাহলে, তোমার নিজের জন্য যে আয়োজন করে রেখেছ, তখন কে তা ভোগ করবে?’ \p \v 21 “যে নিজের জন্য ধন সঞ্চয় করে, অথচ ঈশ্বরের উদ্দেশে ধনী নয়, তার পরিণতি এরকমই হবে।” \s1 দুশ্চিন্তা কোরো না \p \v 22 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এই কারণে আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জীবনের বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না, তোমরা কী খাবে; বা শরীরের বিষয়ে, কী পোশাক পড়বে। \v 23 কারণ খাবারের চেয়ে জীবন বড়ো বিষয় এবং পোশাকের চেয়ে শরীর বেশি গুরুত্বপূর্ণ। \v 24 কাকদের কথা ভেবে দেখো, তারা বীজবপন করে না, ফসল কাটে না, তাদের কোনও গুদাম, বা গোলাঘরও নেই, তবুও ঈশ্বর তাদের খাবার জুগিয়ে দেন। পাখিদের চেয়ে তোমাদের মূল্য আরও কত না বেশি! \v 25 দুশ্চিন্তা করে কে তার আয়ু এক ঘণ্টাও বৃদ্ধি করতে পারে? \v 26 অতএব, তোমরা যখন এই সামান্য কাজটুকু করতে পারো না, তখন অন্য সব বিষয়ে দুশ্চিন্তা করো কেন? \p \v 27 “লিলি ফুল কেমন বেড়ে ওঠে, ভেবে দেখো। তারা পরিশ্রম করে না, সুতোও কাটে না। তবুও আমি তোমাদের বলছি, রাজা শলোমনও তাঁর সমস্ত মহিমায় এদের একটিরও মতো সুশোভিত ছিলেন না। \v 28 মাঠের যে ঘাস আজ আছে, অথচ আগামীকাল আগুনে নিক্ষিপ্ত করা হবে, ঈশ্বর যদি সেগুলিকে এত সুশোভিত করে থাকেন, তাহলে ওহে অল্পবিশ্বাসীরা, তিনি তোমাদের আরও কত বেশি সুশোভিত করবেন! \v 29 আর কী খাবার খাবে বা কী পান করবে, তা নিয়ে তোমাদের হৃদয়কে ব্যাকুল কোরো না; এজন্য তোমরা দুশ্চিন্তা কোরো না। \v 30 কারণ জগতে ঈশ্বরে অবিশ্বাসীরা এসব জিনিসের পিছনে ছুটে বেড়ায়; কিন্তু তোমাদের পিতা জানেন, তোমাদের এগুলির প্রয়োজন আছে। \v 31 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্যের অন্বেষণ করো, তাহলে এই সমস্ত বিষয়ও তোমাদের দেওয়া হবে। \p \v 32 “ক্ষুদ্র মেষপাল, তোমরা ভয় পেয়ো না, কারণ তোমাদের পিতা এই রাজ্য তোমাদের দান করেই প্রীত হয়েছেন। \v 33 তোমাদের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দীনদরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দাও। নিজেদের জন্য এমন টাকার থলি তৈরি করো, যা কোনোদিন জীর্ণ হবে না; স্বর্গে এমন ঐশ্বর্য সংগ্রহ করো, যা কোনোদিন নিঃশেষ হবে না, সেখানে কোনো চোর কাছে আসে না, কোনো কীটপতঙ্গ তা নষ্ট করে না। \v 34 কারণ যেখানে তোমাদের ধন থাকবে, সেখানেই তোমাদের মন পড়ে থাকবে। \s1 সজাগ থাকা \p \v 35 “সেবাকাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকো ও তোমাদের প্রদীপ জ্বেলে রাখো \v 36 যেন তোমরা তোমাদের প্রভুর প্রতীক্ষায় রয়েছ যে কখন তিনি বিবাহ আসর থেকে ফিরে আসবেন। যে মুহূর্তে তিনি ফিরে আসবেন ও দরজায় কড়া নাড়বেন সেই মুহূর্তেই যেন দরজা খুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারো। \v 37 ফিরে এসে প্রভু যাদের সজাগ দেখবেন, সেই দাসদের কাছে তা মঙ্গলজনক হয়ে উঠবে। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি নিজে পরিবেশন করার জন্য পোশাক পরে প্রস্তুত হবেন, তাদের খাওয়াদাওয়া করতে টেবিলে বসাবেন, এবং তাদের কাছে এসে তাদের পরিচর্যা করবেন। \v 38 রাতের দ্বিতীয়, বা তৃতীয় প্রহরে এসেও তিনি যাদের প্রস্তুত থাকতে দেখবেন, তাদের পক্ষে তা হবে মঙ্গলজনক। \v 39 কিন্তু এ বিষয় বুঝে নাও; বাড়ির কর্তা যদি জানতে পারত, কোন প্রহরে চোর আসছে, তাহলে সে তার বাড়িতে সিঁধ কাটতে দিত না। \v 40 সেরকম, তোমরাও প্রস্তুত থেকো, কারণ যখন তোমরা প্রত্যাশা করবে না, সেই মুহূর্তেই মনুষ্যপুত্র আসবেন।” \p \v 41 পিতর জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি এই রূপকটি শুধুমাত্র আমাদেরই বলছেন, না সবাইকেই বলছেন?” \p \v 42 প্রভু উত্তর দিলেন, “তাহলে সেই বিশ্বস্ত ও বিজ্ঞ দেওয়ান কে, যাকে তার প্রভু বাড়ির অন্যান্য সকল দাসকে যথাসময়ে খাবার দেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করবেন? \v 43 তার প্রভু ফিরে এসে তাকে সেই কাজ করতে দেখলে সেই দাসের পক্ষে তা মঙ্গলজনক হবে। \v 44 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি তাকে তাঁর বিষয়সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক করবেন। \v 45 কিন্তু মনে করো, সেই দাস মনে মনে ভাবল, ‘আমার প্রভুর ফিরে আসতে এখনও অনেক দেরি আছে,’ তাই সে অন্য দাস-দাসীদের মারতে শুরু করল, খাওয়াদাওয়া ও সুরাপান করে মত্ত হতে লাগল। \v 46 সেই দাসের প্রভু এমন এক সময়ে ফিরে আসবেন, যখন সে তাঁর আগমনের প্রত্যাশা করেনি, বা এমন এক ক্ষণে, যা সে জানতেও পারেনি। তিনি তাকে খণ্ডবিখণ্ড করবেন এবং অবিশ্বাসীদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন। \p \v 47 “যে দাস তার প্রভুর ইচ্ছা জেনেও প্রস্তুত হয়ে থাকে না বা প্রভুর ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে না, তাকে কঠোর দণ্ড দেওয়া হবে। \v 48 কিন্তু যে না জেনেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে, তাকে কম দণ্ড দেওয়া হবে। যাকে অনেক দেওয়া হয়েছে, তার কাছে দাবিও করা হবে অনেক; যার উপর বহু বিষয়ের ভার অর্পণ করা হয়েছে, তার কাছে আরও বেশি প্রত্যাশা করা হবে। \s1 শান্তি নয়, বিভেদ \p \v 49 “আমি পৃথিবীতে আগুন জ্বালাতে এসেছি; আর আমার একান্ত ইচ্ছা এই যে, সেই আগুন ইতিমধ্যে জ্বলে উঠছে! \v 50 কিন্তু আমাকে এক বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করতে হবে। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কতই না যন্ত্রণাবিদ্ধ হচ্ছি! \v 51 তোমরা কি মনে করো যে, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি? তা নয়, আমি তোমাদের বলছি, আমি দিতে এসেছি বিভেদ। \v 52 এখন থেকে পরিবারের পাঁচজনের মধ্যে পারস্পরিক বিভেদ দেখা যাবে; তিনজন যাবে দুজনের বিপক্ষে, আর দুজন যাবে তিনজনের বিপক্ষে। \v 53 তারা বিচ্ছিন্ন হবে; পিতা সন্তানের বিরুদ্ধে এবং সন্তান পিতার বিরুদ্ধে, মা মেয়ের বিরুদ্ধে এবং মেয়ে মায়ের বিরুদ্ধে, শাশুড়ি বউমার বিরুদ্ধে এবং বউমা শাশুড়ির বিরুদ্ধে।” \s1 কালের মর্মব্যাখ্যা \p \v 54 তিনি সকলকে বললেন, “পশ্চিম আকাশে মেঘের উদয় হলে তোমরা সঙ্গে সঙ্গে বলো, ‘বৃষ্টি আসছে,’ আর তাই হয়। \v 55 যখন দক্ষিণ দিক থেকে বাতাস বইতে থাকে, তোমরা বলো, ‘এবার গরম পড়বে’ এবং সত্যিই গরম পড়ে। \v 56 ভণ্ডের দল! তোমরা পৃথিবী ও আকাশের অবস্থা দেখে তার মর্মব্যাখ্যা করতে পারো, অথচ এই বর্তমানকালের মর্মব্যাখ্যা করতে পারো না, এ কেমন কথা? \p \v 57 “কোনটি ন্যায্য, তা তোমরা নিজেরাই বিচার করো না কেন? \v 58 প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিচারকের কাছে যাওয়ার সময় পথেই তার সঙ্গে বিবাদের মীমাংসা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করো, না হলে সে তোমাকে বিচারকের কাছে টেনে নিয়ে যাবে; বিচারক তোমাকে আধিকারিকের হাতে তুলে দেবে, আর আধিকারিক তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করবে। \v 59 আমি তোমাকে বলছি, তোমার দেনা সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তুমি বাইরে আসতে পারবে না।” \c 13 \s1 মন ফেরাও নইলে ধ্বংস অনিবার্য \p \v 1 সেই সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন যীশুকে সেই গালীলীয়দের সম্পর্কে সংবাদ দিল, যাদের রক্ত পীলাত তাদের বলির সঙ্গে মিশিয়ে ছিলেন।\f + \fr 13:1 \fr*\ft অর্থাৎ, বলিদানের সময় তাদের হত্যা করেছিলেন।\ft*\f* \v 2 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমরা কি মনে করো যে, এইভাবে তাড়িত হয়েছিল বলে তারা অন্যান্য গালীলীয়দের তুলনায় বেশি পাপী ছিল? \v 3 আমি তোমাদের বলছি, না! কিন্তু মন পরিবর্তন না করলে তোমরা সবাই সেরকমই বিনষ্ট হবে। \v 4 অথবা, সিলোয়ামের মিনার চাপা পড়ে যে আঠারো জনের মৃত্যু হয়েছিল, তোমরা কি মনে করো, অন্যান্য জেরুশালেমবাসীদের চেয়ে তারা বেশি অপরাধী ছিল? \v 5 আমি তোমাদের বলছি, না! কিন্তু মন পরিবর্তন না করলে তোমরা সেরকমই বিনষ্ট হবে।” \p \v 6 তারপর তিনি এই রূপকটি বললেন: “এক ব্যক্তি তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেতে একটি ডুমুর গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি ফলের আশায় গাছটির কাছে গেলেন কিন্তু একটি ফলও খুঁজে পেলেন না। \v 7 তাই দ্রাক্ষাক্ষেতের রক্ষককে তিনি বললেন, ‘গত তিন বছর ধরে আমি এই গাছে ফলের আশায় আসছি, কিন্তু কোনো ফলই পাইনি। এটাকে কেটে ফেলো। কেন শুধু শুধু এ জমি জুড়ে থাকবে?’ \p \v 8 “লোকটি উত্তর দিল, ‘মহাশয়, আর শুধু এক বছর এটাকে থাকতে দিন। আমি এর চারপাশে গর্ত খুঁড়ে সার দেব। \v 9 এতে পরের বছর যদি ফল ধরে, ভালো! না হলে, এটাকে কেটে ফেলবেন।’ ” \s1 যীশু বিশ্রামদিনে এক পঙ্গু-নারীকে সুস্থ করলেন \p \v 10 বিশ্রামদিনে যীশু কোনও এক সমাজভবনে শিক্ষা দিচ্ছিলেন। \v 11 সেখানে এক নারী মন্দ-আত্মার প্রভাবে আঠারো বছর ধরে পঙ্গু হয়েছিল। সে কুঁজো হয়ে পড়েছিল, কিছুতেই সোজা হতে পারত না। \v 12 যীশু তাকে দেখে সামনে ডেকে বললেন, “নারী, তুমি তোমার দুর্বলতা থেকে মুক্ত হলে।” \v 13 তারপর তিনি তাকে স্পর্শ করলে সে সঙ্গে সঙ্গে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। \p \v 14 বিশ্রামদিনে যীশু সুস্থ করেছেন দেখে সমাজভবনের অধ্যক্ষ ঘৃণামিশ্রিত ক্রোধে অন্যান্য লোকদের লক্ষ্য করে বলল, “কাজ করার জন্য অন্য ছয় দিন আছে। তাই, ওই দিনগুলিতে তোমরা সুস্থ হতে এসো, বিশ্রামদিনে নয়।” \p \v 15 প্রভু তাকে উত্তর দিলেন, “ওহে ভণ্ডের দল! তোমরা প্রত্যেক বিশ্রামদিনে বলদ অথবা গর্দভকে গোয়ালঘর থেকে বাঁধন খুলে জল খাওয়ানোর জন্য কি বাইরে নিয়ে যাও না? \v 16 তাহলে, অব্রাহামের কন্যা এই নারী, শয়তান যাকে দীর্ঘ আঠারো বছর বেঁধে রেখেছিল, বিশ্রামদিনে তাকে বাঁধন থেকে মুক্ত করা কি উচিত নয়?” \p \v 17 একথা শুনে তাঁর সমস্ত বিরোধী লজ্জিত হল। কিন্তু তাঁর বিস্ময়কর কাজগুলি দেখে সাধারণ লোকেরা আনন্দিত হল। \s1 সর্ষে বীজ ও খামিরের রূপক \p \v 18 এরপর যীশু প্রশ্ন করলেন, “ঈশ্বরের রাজ্য কীসের মতো? কার সঙ্গে আমি এর তুলনা দেব? \v 19 এ হল এক সর্ষে বীজের মতো যা এক ব্যক্তি সেটাকে তার বাগানে রোপণ করল। তারপর সেটি বেড়ে উঠে গাছে পরিণত হল, আর আকাশের পাখিরা এসে তার শাখায় আশ্রয় নিল।” \p \v 20 তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “ঈশ্বরের রাজ্যকে আমি কীসের সঙ্গে তুলনা করব? \v 21 এ এমন খামিরের মতো যা একজন স্ত্রীলোক তিন পাল্লা\f + \fr 13:21 \fr*\ft গ্রিক: তিন সাটাস (প্রায় আঠারো কিলোগ্রাম)\ft*\f* ময়দার সঙ্গে মেশালো, ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল।” \s1 সংকীর্ণ দ্বার \p \v 22 তারপর যীশু নগরে ও গ্রামে শিক্ষা দিতে দিতে জেরুশালেমের দিকে চললেন। \p \v 23 তখন এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “প্রভু, শুধু কি অল্প সংখ্যক লোকই পরিত্রাণ পাবে?” \v 24 তিনি তাকে বললেন, “সংকীর্ণ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করো, কারণ আমি তোমাদের বলছি, বহু মানুষই প্রবেশ করার চেষ্টা করবে, কিন্তু সফল হবে না। \v 25 বাড়ির কর্তা একবার উঠে দ্বার বন্ধ করে দিলে তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়িয়ে মিনতি করতে থাকবে, ‘মহাশয়, আমাদের জন্য দ্বার খুলে দিন।’ কিন্তু তিনি উত্তর দেবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না।’ \p \v 26 “তখন তোমরা বলবে, ‘আমরা আপনার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি, আমাদের পথে পথে আপনি শিক্ষা দিয়েছেন।’ \p \v 27 “কিন্তু তিনি উত্তর দেবেন, ‘তোমরা কে বা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না। হে অন্যায়কারীরা, আমার কাছ থেকে তোমরা দূর হও!’ \p \v 28 “সেখানে হবে রোদন ও দন্তঘর্ষণ; তখন তোমরা দেখবে, ঈশ্বরের রাজ্যে রয়েছেন অব্রাহাম, ইস্‌হাক, যাকোব ও সব ভাববাদী, কিন্তু তোমরা নিজেরা বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়েছ। \v 29 আর পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ থেকে লোকেরা এসে ঈশ্বরের রাজ্যের ভোজসভায় আসন গ্রহণ করবে। \v 30 বাস্তবিক, যারা আছে, তারা কেউ কেউ প্রথমে স্থান পাবে এবং যারা প্রথমে আছে, তাদের কারোর কারোর স্থান সকলের শেষে হবে।” \s1 জেরুশালেমের জন্য যীশুর বিলাপ \p \v 31 সেই সময় কয়েকজন ফরিশী যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, “এই স্থান ত্যাগ করে অন্য কোথাও চলে যান। হেরোদ আপনাকে হত্যা করতে চাইছেন।” \p \v 32 তিনি উত্তর দিলেন, “সেই শিয়ালকে গিয়ে বলো, ‘আজ ও আগামীকাল, আমি ভূতদের তাড়াব, অসুস্থ মানুষদের সুস্থ করব এবং তৃতীয় দিনে আমি আমার লক্ষ্যে উপনীত হব।’ \v 33 যেভাবেই হোক, আজ, কাল ও তার পরের দিন আমাকে এগিয়ে চলতেই হবে—কারণ নিঃসন্দেহে, কোনো ভাববাদীই জেরুশালেমের বাইরে মৃত্যুবরণ করবেন না। \p \v 34 “হায়! জেরুশালেম, জেরুশালেম, তুমি ভাববাদীদের হত্যা করো ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের পাথরের আঘাত করে থাকো। কতবার আমি তোমার সন্তানদের একত্র করতে চেয়েছি, যেমন মুরগি তার শাবকদের নিজের ডানার তলায় একত্র করে, কিন্তু তোমরা ইচ্ছুক হওনি! \v 35 দেখো, তোমাদের গৃহ তোমাদের জন্য পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রইল। আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন’ ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না।\f + \fr 13:35 \fr*\ft \+xt গীত 118:26\+xt*\ft*\f*” \c 14 \s1 এক ফরিশীর বাড়িতে যীশু \p \v 1 এক বিশ্রামদিনে যীশু এক বিশিষ্ট ফরিশীর বাড়িতে খাবার খেতে গেলেন। লোকেরা তাঁর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছিল। \v 2 সেখানে তাঁর সামনে ছিল এক ব্যক্তি যার শরীর রোগের কারণে অস্বাভাবিক ফুলে উঠেছিল। \v 3 যীশু ফরিশী ও শাস্ত্রবিদদের প্রশ্ন করলেন, “বিশ্রামদিনে রোগনিরাময় করা বৈধ, না অবৈধ?” \v 4 তারা কিন্তু নিরুত্তর রইল। তাই যীশু তাকে ধরে সুস্থ করলেন ও তাকে বিদায় দিলেন। \p \v 5 তারপর তিনি তাদের প্রশ্ন করলেন, “তোমাদের কারও ছেলে বা বলদ যদি বিশ্রামদিনে কুয়োতে পড়ে যায়, তোমরা কি তখনই তাকে তুলবে না?” \v 6 প্রত্যুত্তরে তাদের কিছু বলার ছিল না। \p \v 7 আর নিমন্ত্রিত লোকেরা কীভাবে বিশিষ্ট আসন দখল করছিল তা লক্ষ্য করে তিনি তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে পরামর্শ দিলেন: \v 8 “কেউ যখন তোমাকে বিবাহভোজে নিমন্ত্রণ করে, তখন তুমি সম্মানিত ব্যক্তির আসন গ্রহণ কোরো না। কারণ তোমার চেয়ে বেশি সম্মানিত কোনো ব্যক্তি হয়তো নিমন্ত্রিত হয়ে থাকতে পারেন। \v 9 যদি তাই হয়, তাহলে যিনি তোমাদের দুজনকেই নিমন্ত্রণ করেছেন, তিনি এসে তোমাকে বলবেন, ‘এই ভদ্রলোককে আপনার আসনটি ছেড়ে দিন।’ তখন লজ্জিত হয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ আসনে তোমাকে বসতে হবে। \v 10 কিন্তু তুমি নিমন্ত্রিত হলে, নিকৃষ্টতম আসনে গিয়ে বোসো, তাহলে তোমার নিমন্ত্রণকর্তা তোমাকে বলবেন, ‘বন্ধু, এর চেয়ে ভালো আসনে উঠে বসো।’ তখন অন্যান্য সহ নিমন্ত্রিতদের সামনে তুমি সম্মানিত হবে। \v 11 কারণ যে কেউ নিজেকে উন্নত করে, তাকে নত করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে তাকে উন্নত করা হবে।” \p \v 12 যীশু তখন তাঁর নিমন্ত্রণকর্তাকে বললেন, “তুমি যখন দুপুরের, বা রাতের ভোজ আয়োজন করবে, তোমার বন্ধুবান্ধব, ভাইবোন অথবা আত্মীয়স্বজন, বা তোমার ধনী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করবে না; তাহলে তারা তার প্রতিদানে আবার তোমাকে নিমন্ত্রণ করবে। আর তাই হবে তোমার কেবলমাত্র পুরস্কার। \v 13 পরিবর্তে, দীনদরিদ্র, পঙ্গু, খোঁড়া ও দৃষ্টিহীনদের নিমন্ত্রণ করো। \v 14 তখনই তুমি আশীর্বাদধন্য হবে। তারা তোমাকে প্রতিদান কিছু দিতে না পারলেও, ধার্মিকদের পুনরুত্থানকালে তুমি প্রতিদান লাভ করবে।” \s1 মহাভোজসভার রূপক \p \v 15 তাঁর সঙ্গে ভোজে খাচ্ছিলেন এমন এক ব্যক্তি একথা শুনে যীশুকে বলল, “ধন্য সেই মানুষ, যে ঈশ্বরের রাজ্যের ভোজে আহার করবে।” \p \v 16 যীশু উত্তর দিলেন, “কোনো ব্যক্তি এক বিশাল ভোজের আয়োজন করে বহু অতিথিকে নিমন্ত্রণ করলেন। \v 17 ভোজের সময় তিনি তাঁর দাসের মারফত নিমন্ত্রিতদের বলে পাঠালেন, ‘সব আয়োজনই এখন সম্পূর্ণ, তোমরা এসো।’ \p \v 18 “কিন্তু তারা সবাই একইভাবে অজুহাত দেখাতে লাগল। প্রথম ব্যক্তি বলল, ‘আমি সবেমাত্র একটি জমি কিনেছি, আমাকে গিয়ে সেটি দেখতেই হবে। আমাকে মার্জনা করো।’ \p \v 19 “আর একজন বলল, ‘আমি এইমাত্র পাঁচজোড়া বলদ কিনেছি। সেগুলি পরখ করে দেখার জন্য আমি পথে বেরিয়ে পড়েছি। আমাকে মার্জনা করো।’ \p \v 20 “আর এক ব্যক্তি বলল, ‘আমি সবেমাত্র বিবাহ করেছি, তাই আমি যেতে পারছি না।’ \p \v 21 “পরে সেই দাস ফিরে এসে তার প্রভুকে এসব কথা জানাল। তখন সেই বাড়ির কর্তা ক্রুদ্ধ হয়ে তার দাসকে আদেশ দিলেন, ‘নগরের পথে পথে ও অলিগলিতে শীঘ্র বেরিয়ে পড়ো এবং কাঙাল, পঙ্গু, অন্ধ ও খোঁড়া—সবাইকে নিয়ে এসো।’ \p \v 22 “সেই দাস বলল, ‘প্রভু, আপনার আদেশমতোই কাজ হয়েছে, কিন্তু এখনও অনেক জায়গা খালি আছে।’ \p \v 23 “প্রভু তখন তার দাসকে বললেন, ‘বড়ো রাস্তায় ও গ্রামের অলিগলিতে যাও এবং যাদের পাও তাদের জোর করে নিয়ে এসো যেন আমার বাসভবন ভর্তি হয়ে ওঠে। \v 24 আমি তোমাকে বলছি, যাদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল তাদের কেউই আমার ভোজের স্বাদ পাবে না।’ ” \s1 শিষ্য হওয়ার মূল্য \p \v 25 অনেক লোক যীশুর সঙ্গে সঙ্গে চলছিল। তিনি তাদের দিকে ফিরে বললেন, \v 26 “কেউ যদি আমার কাছে আসে এবং তার বাবা ও মা, স্ত্রী ও সন্তান, ভাই ও বোন, এমনকি, নিজের প্রাণকেও অপ্রিয় জ্ঞান\f + \fr 14:26 \fr*\ft মূল: ঘৃণা (হিব্রু প্রয়োগ)\ft*\f* না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না। \v 27 যে আমার অনুগামী হতে চায় অথচ নিজের ক্রুশ বহন করে না, সে আমার শিষ্য হতে পারে না। \p \v 28 “মনে করো, তোমাদের মধ্যে একজন একটি মিনার তৈরি করতে চাইল। সে কি প্রথমেই খরচের হিসেব করে দেখে নেবে না, যে তা শেষ করার মতো তার যথেষ্ট আর্থিক সংগতি আছে, কি না? \v 29 কারণ ভিত স্থাপন করে তা শেষ করতে না পারলে, যে দেখবে, সেই তাকে বিদ্রুপ করে বলবে, \v 30 ‘এই লোকটি নির্মাণ করতে শুরু করেছিল, কিন্তু শেষ করতে পারেনি।’ \p \v 31 “অথবা, মনে করো, এক রাজা অন্য এক রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের অভিযান চালাতে উদ্যত হলেন। তিনি কি প্রথমেই বসে বিবেচনা করে দেখবেন না, কুড়ি হাজার সৈন্য নিয়ে যে রাজা তার বিরুদ্ধে এগিয়ে আসছেন, দশ হাজার সৈন্য নিয়ে তিনি তার প্রতিরোধ করতে পারবেন, কি না? \v 32 তিনি সক্ষম না হলে, প্রতিপক্ষ অনেক দূরে থাকতে থাকতেই তিনি এক প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে সন্ধির শর্ত জেনে নেবেন। \v 33 একইভাবে, তোমাদের মধ্যে কেউ তার সর্বস্ব পরিত্যাগ না করলে আমার শিষ্য হতে পারে না। \p \v 34 “লবণ তো উত্তম, কিন্তু লবণ যদি তার লবণত্ব হারায়, তাহলে কেমনভাবে আবার তা লবণাক্ত করা যাবে? \v 35 সেগুলি জমি, অথবা সারঢিবি, কোনো কিছুরই যোগ্য নয় বলে বাইরে ফেলে দেওয়া হবে। \p “শোনবার মতো কান যার আছে, সে শুনুক।” \c 15 \s1 হারানো মেষের রূপক \p \v 1 আর কর আদায়কারী ও পাপীরা, তাঁর কথা শোনার জন্য তাঁর চারপাশে সমবেত হয়েছিল। \v 2 কিন্তু ফরিশী ও শাস্ত্রবিদরা ফিসফিস করে বলতে লাগল, “এই মানুষটি পাপীদের গ্রহণ করে, তাদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে।” \p \v 3 যীশু তখন তাদের এই রূপকটি বললেন, \v 4 “মনে করো, তোমাদের কারও একশোটি মেষ আছে। তার মধ্যে একটি হারিয়ে গেল। সে কি নিরানব্বইটি মেষকে মাঠে রেখে হারানো মেষটি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তার সন্ধান করবে না? \v 5 সেটি খুঁজে পেলে সে সানন্দে তাকে কাঁধে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবে। \v 6 পরে বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে সে বলবে, ‘আমার সঙ্গে আনন্দ করো; আমি আমার হারানো মেষটি খুঁজে পেয়েছি।’ \v 7 আমি তোমাদের বলছি, একইভাবে নিরানব্বইজন ধার্মিক ব্যক্তি, যাদের মন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই, তাদের চেয়ে একজন পাপী মন পরিবর্তন করলে স্বর্গে অনেক বেশি আনন্দ হবে। \s1 হারানো মুদ্রার রূপক \p \v 8 “আবার মনে করো, কোনো স্ত্রীলোকের দশটি রুপোর মুদ্রা\f + \fr 15:8 \fr*\ft গ্রিক: ড্রাকমা। প্রত্যেকটির মূল্যের পরিমাণ সেই সময়কার প্রায় একদিনের বেতনের সমান।\ft*\f* আছে, কিন্তু তার একটি হারিয়ে গেল। সেটাকে না পাওয়া পর্যন্ত, সে কি প্রদীপ জ্বেলে, ঘর ঝাঁট দিয়ে, তন্নতন্ন করে খুঁজবে না? \v 9 মুদ্রাটি খুঁজে পেলে, সে তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের একসঙ্গে ডেকে বলবে, ‘আমার সঙ্গে আনন্দ করো, আমার হারিয়ে যাওয়া মুদ্রাটি আমি খুঁজে পেয়েছি।’ \v 10 একইভাবে, আমি তোমাদের বলছি, একজন পাপী মন পরিবর্তন করলে ঈশ্বরের দূতগণের সাক্ষাতে আনন্দ হয়।” \s1 হারানো ছেলের রূপক কাহিনি \p \v 11 যীশু আরও বললেন, “এক ব্যক্তির দুই ছেলে ছিল। \v 12 ছোটো পুত্র তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, সম্পত্তির যে অংশ আমার, তা আমাকে দিয়ে দাও।’ তাই তিনি ছেলেদের মধ্যে তাঁর সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন। \p \v 13 “অল্পদিন পরেই, ছোটো ছেলে তার সবকিছু নিয়ে এক দূরবর্তী দেশের উদ্দেশে যাত্রা করল। সেখানে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে, তার নিজস্ব সম্পত্তি অপচয় করল। \v 14 তার সর্বস্ব শেষ হলে পর, সেই দেশের সর্বত্র ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল; তাতে সে অত্যন্ত অভাবের মধ্যে পড়ল। \v 15 তখন সে গিয়ে সেই দেশের এক ব্যক্তির কাছে তার অধীনে কাজে নিযুক্ত হল। সে তাকে শূকর চরানোর কাজে মাঠে পাঠিয়ে দিল। \v 16 সে এতটাই ক্ষুধার্ত হয়ে উঠল যে শূকরেরা যে শুঁটি খেত তা খেয়েই পেট ভরানো তার কাছে ভালো মনে হল, কিন্তু কেউ তাকে কিছুই খেতে দিত না। \p \v 17 “কিন্তু যখন তার চেতনার উদয় হল, সে মনে মনে বলল, ‘আমার বাবার কত মজুরই তো প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার পাচ্ছে, আর আমি এখানে অনাহারে মৃত্যুর মুখে পড়ে আছি! \v 18 আমি বাড়ি ফিরে আমার বাবার কাছে যাব; তাঁকে বলব, “বাবা, আমি স্বর্গের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, \v 19 তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেওয়ার যোগ্যতা আর আমার নেই; আমাকে তোমার এক মজুরের মতো করে নাও।” ’ \v 20 তাই সে উঠে তার বাবার কাছে ফিরে গেল। \p “সে তখনও অনেক দূরে, তার বাবা তাকে দেখতে পেলেন। ছেলের জন্য তাঁর অন্তর করুণায় ভরে উঠল। তিনি দৌড়ে তাঁর ছেলের কাছে গেলেন, তার গলা জড়িয়ে ধরলেন ও তাকে চুম্বন করলেন। \p \v 21 “সেই ছেলে তাঁকে বলল, ‘বাবা, আমি স্বর্গের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি। তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেওয়ার কোনো যোগ্যতা আমার নেই।’ \p \v 22 “কিন্তু তার বাবা তাঁর দাসদের বললেন, ‘শীঘ্র, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পোশাক এনে ওকে পরিয়ে দাও। ওর আঙুলে আংটি পরিয়ে দাও, পায়ে চটিজুতো দাও। \v 23 আর ভোজের জন্য একটি হৃষ্টপুষ্ট বাছুর এনে মারো। এসো আমরা ভোজ ও আনন্দ উৎসবের আয়োজন করি। \v 24 কারণ আমার এই ছেলেটি মারা গিয়েছিল, কিন্তু এখন সে আবার বেঁচে উঠেছে। সে হারিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এখন তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’ তাই তারা আনন্দ উৎসবে মেতে উঠল। \p \v 25 “এদিকে বড়ো ছেলেটি মাঠে ছিল। সে বাড়ির কাছে এসে নাচ-গানের শব্দ শুনতে পেল। \v 26 তখন সে একজন দাসকে ডেকে কি হচ্ছে জানতে চাইল? \v 27 সে উত্তর দিল, ‘আপনার ভাই ফিরে এসেছে এবং আপনার বাবা তাকে নিরাপদে, সুস্থ শরীরে ফিরে পেয়েছেন বলে একটি হৃষ্টপুষ্ট বাছুর মেরেছেন।’ \p \v 28 “বড়ো ছেলে খুব রেগে গেল ও ভিতরে প্রবেশ করতে রাজি হল না। তাই তার বাবা বাইরে গিয়ে তাকে অনুনয়-বিনয় করলেন। \v 29 কিন্তু সে তার বাবাকে উত্তর দিল, ‘দেখুন, এত বছর ধরে আমি আপনার সেবা করছি, কখনও আপনার আদেশের অবাধ্য হইনি। তবুও আমার বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ উৎসব করার জন্য আপনি আমাকে কখনও একটি ছাগলছানাও দেননি। \v 30 কিন্তু আপনার এই ছেলে, যে বেশ্যাদের পিছনে আপনার সম্পত্তি উড়িয়ে দিয়েছে, সে যখন বাড়ি ফিরে এলে, আপনি তারই জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুরটি মারলেন!’ \p \v 31 “বাবা বললেন, ‘ছেলে আমার, তুমি সবসময়ই আমার সঙ্গে আছ। আর আমার যা কিছু আছে, সবই তো তোমার। \v 32 কিন্তু তোমার এই ভাই মরে গিয়েছিল, এখন সে আবার বেঁচে উঠেছে; সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন খুঁজে পাওয়া গেছে। তাই আমাদের উচিত আনন্দ উৎসব করা ও খুশি হওয়া।’ ” \c 16 \s1 কূট দেওয়ানের রূপক \p \v 1 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এক ধনী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর দেওয়ান তাঁর ধনসম্পত্তি অপচয় করার অপরাধে অভিযুক্ত হল। \v 2 তাই তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আমি তোমার সম্পর্কে এ কী কথা শুনছি? তোমার হিসেব পত্র দাখিল করো, কারণ তুমি আর কখনোই দেওয়ান থাকতে পারো না।’ \p \v 3 “সেই দেওয়ান মনে মনে ভাবল, ‘আমি এখন কী করব? আমার মনিব আমার কাজ কেড়ে নিয়েছেন। মাটি কাটার মতো শারীরিক সামর্থ্য আমার নেই, ভিক্ষা করতেও আমার লজ্জা হয়— \v 4 আমি এখানে কাজ হারালে লোকেরা যেন আমাকে তাদের বাড়িতে স্বাগত জানায়, এজন্য আমি জানি আমাকে কী করতে হবে।’ \p \v 5 “তখন যারা যারা তার মনিবের ঋণী তাদের প্রত্যেককে সে ডেকে পাঠাল। সে প্রথমজনকে বলল, ‘আমার মনিবের কাছে তোমার ঋণ কত?’ \p \v 6 “সে উত্তর দিল, ‘তিন হাজার লিটার\f + \fr 16:6 \fr*\ft গ্রিক: একশো ব্যাটোয়াস (হিব্রু: বাত)\ft*\f* জলপাই তেল।’ \p “দেওয়ান তাকে বলল, ‘তোমার ঋণপত্র নাও, তাড়াতাড়ি বসো আর এখানে এক হাজার পাঁচশো লিটার লেখো।’ \p \v 7 “তারপর সে দ্বিতীয়জনকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আর তোমার ঋণ কত?’ \p “ ‘এক হাজার বস্তা\f + \fr 16:7 \fr*\ft 1,000 কোরেস (বুশেল)\ft*\f* গম,’ সে উত্তর দিল। \p “সে তাকে বলল, ‘তোমার ঋণপত্র নাও আর আটশো বস্তা লেখো।’ \p \v 8 “সেই অসাধু দেওয়ান বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করেছিল বলে তাঁর মনিব তার প্রশংসা করলেন। কারণ, এই যুগের জাগতিক মনোভাব সম্পন্ন লোকেরা তাদের সমকালীন আলোকপ্রাপ্ত লোকেদের থেকে বেশি বিচক্ষণ। \v 9 আমি তোমাদের বলছি, নিজেদের জন্য বন্ধুত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশে জাগতিক সম্পদ ব্যবহার করো, যেন সব ধন নিঃশেষ হয়ে গেলে তোমাদের অনন্ত আবাসে স্বাগত জানানো হয়। \p \v 10 “অল্প বিষয়ে যার উপরে নির্ভর করা যায়, বহু বিষয়েও তার উপর নির্ভর করা যায়। আবার অতি অল্প বিষয়ে যে অসৎ, বহু বিষয়েও সে অসৎ। \v 11 তাই, জাগতিক ধনসম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তোমরা যদি বিশ্বাসযোগ্য না হও, তাহলে কে বিশ্বাস করে তোমাদের হাতে প্রকৃত সম্পদ গচ্ছিত রাখবে? \v 12 আর অন্যের সম্পত্তি সম্পর্কে যদি তোমরা বিশ্বস্ত না হও, তবে তোমাদের নিজেদের সম্পত্তির দায়িত্ব তোমাদের হাতে কে ছেড়ে দেবে? \p \v 13 “কেউই দুজন মনিবের সেবা করতে পারে না। সে হয় একজনকে ঘৃণা করে অপরজনকে ভালোবাসবে, নয়তো সে একজনের অনুগত হয়ে অপরজনকে অবজ্ঞা করবে। তোমরা ঈশ্বর ও অর্থ, এই দুয়ের সেবা করতে পারো না।” \p \v 14 এই সমস্ত কথা শুনে অর্থলোভী ফরিশীরা যীশুকে ব্যঙ্গ করতে লাগল। \v 15 তিনি তাদের বললেন, “তোমরাই সেই লোক, যারা মানুষের চোখে নিজেদের ন্যায়পরায়ণ বলে প্রতিপন্ন করতে চাও, কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের হৃদয় জানেন। মানুষের কাছে যার মূল্য অপরিসীম, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা ঘৃণ্য। \s1 আরও কিছু শিক্ষা \p \v 16 “যোহনের আমল পর্যন্ত বিধিবিধান ও ভাববাদীদের বাণী ঘোষিত হয়েছিল। সেই সময় থেকে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচারিত হয়ে আসছে এবং প্রত্যেকেই সেখানে সবলে প্রবেশ করছে। \v 17 কিন্তু বিধানের একটি আঁচড়ও লোপ হওয়ার চেয়ে বরং আকাশ ও পৃথিবী বিলুপ্ত হওয়া সহজ। \p \v 18 “যে নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে অন্য নারীকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে এবং যে পুরুষ কোনও বিবাহবিচ্ছিন্ন নারীকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে। \s1 ধনী ব্যক্তি ও লাসার \p \v 19 “এক ধনী ব্যক্তি ছিল। সে বেগুনি রংয়ের মিহি মসিনার পোশাক পরত। প্রতিদিন সে বিলাসবহুল জীবনযাপন করত। \v 20 তার বাড়ির প্রবেশপথে এক ভিখারি সর্বাঙ্গে ক্ষত নিয়ে শুয়ে থাকত। তার নাম ছিল লাসার। \v 21 ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে যা কিছু উচ্ছিষ্ট পড়ত, তাই সে খেতে চাইত। এমনকি, কুকুরেরা এসেও তার ঘা চাটতো। \p \v 22 “কালক্রমে ভিখারিটির মৃত্যু হল। স্বর্গদূতেরা তাকে নিয়ে এল অব্রাহামের পাশে। পরে ধনী ব্যক্তির মৃত্যু হলে, তাকেও সমাধি দেওয়া হল। \v 23 সে পাতালে নিদারুণ যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছিল। সেখান থেকে সে দৃষ্টি ঊর্ধ্বে তুলে দূরে অব্রাহামের পাশে লাসারকে দেখতে পেল। \v 24 তাই সে তাঁকে ডাকল, ‘পিতা অব্রাহাম, আমার প্রতি কৃপা করুন; লাসারকে পাঠিয়ে দিন, সে যেন আঙুলের ডগায় জল নিয়ে আমার জিভ ঠান্ডা করে দেয়। কারণ এই আগুনে আমি ভীষণ যন্ত্রণা পাচ্ছি।’ \p \v 25 “কিন্তু অব্রাহাম উত্তর দিলেন, ‘বৎস, স্মরণ করে দেখো, তোমার জীবনকালে তুমি সব উৎকৃষ্ট জিনিস পেয়েছ, লাসার পেয়েছে সব মন্দ জিনিস। কিন্তু এখন সে এখানে লাভ করছে সান্ত্বনা, আর তুমি পাচ্ছ যন্ত্রণা। \v 26 আর তা ছাড়া, তোমার ও আমাদের মধ্যে রয়েছে বিরাট এক ব্যবধান যাতে কেউ এখান থেকে তোমাদের কাছে যেতে চাইলেও যেতে পারে না বা কেউ ওখান থেকে পার হয়ে আমাদের কাছেও আসতে পারে না।’ \p \v 27 “সে উত্তর দিল, ‘তাহলে পিতা, আপনার কাছে অনুনয় করছি, লাসারকে আমার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিন, \v 28 কারণ আমার পাঁচ ভাই আছে। সে গিয়ে তাদের সতর্ক করে দিক, যেন তারাও এই যন্ত্রণাময় স্থানে না এসে পড়ে।’ \p \v 29 “অব্রাহাম উত্তর দিলেন, ‘তাদের জন্য আছেন মোশি ও ভাববাদীরা। তাদেরই কথায় তারা কর্ণপাত করুক।’ \p \v 30 “সে বলল, ‘না, পিতা অব্রাহাম, মৃতলোক থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তাহলেই তারা মন পরিবর্তন করবে।’ \p \v 31 “তিনি তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথায় কর্ণপাত না করে, তাহলে মৃত্যুলোক থেকে উঠে কেউ গেলেও তারা তাকে বিশ্বাস করবে না।’ ” \c 17 \s1 পাপ, বিশ্বাস ও কর্তব্য প্রসঙ্গে শিক্ষা \p \v 1 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “পাপের প্রলোভন নিশ্চিতভাবে আসবে, কিন্তু ধিক্ তাকে, যার মাধ্যমে সেসব আসবে। \v 2 যে এই ক্ষুদ্রজনেদের একজনকেও পাপে প্রলোভিত করে, তার গলায় জাঁতা বেঁধে তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করাই বরং তার পক্ষে ভালো। \v 3 তাই নিজেদের সম্পর্কে সতর্ক থেকো। \p “তোমার ভাই পাপ করলে তাকে তিরস্কার কোরো এবং সে অনুতপ্ত হলে, তাকে ক্ষমা কোরো। \v 4 সে যদি দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে এবং সাতবারই ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তাহলেও তাকে ক্ষমা কোরো।” \p \v 5 প্রেরিতশিষ্যেরা প্রভুকে বললেন, “আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করুন।” \p \v 6 তিনি বললেন, “যদি তোমাদের সর্ষে বীজের মতো অতি সামান্য বিশ্বাস থাকে, তাহলে এই তুঁত গাছটিকে তোমরা বলতে পারো, ‘যাও, সমূলে উপড়ে দিয়ে সমুদ্রে রোপিত হও,’ তাহলে সেরকমই হবে। \p \v 7 “মনে করো, তোমাদের কোনো একজনের এক দাস আছে। সে চাষবাস বা মেষপালের তত্ত্বাবধান করে। সে মাঠ থেকে ফিরে এলে তার মনিব কি তাকে বলবে, ‘এখন এসে খেতে বসো’? \v 8 বরং, সে কি তাকে বলবেন না, ‘আমার খাবারের আয়োজন করো; আমি যতক্ষণ খাওয়াদাওয়া করব, আমার সেবাযত্ন করার জন্য প্রস্তুত থাকো, তারপর তুমি খাওয়াদাওয়া করতে পারো’? \v 9 তার কথামতো কাজ করার জন্য তিনি কি সেই দাসকে ধন্যবাদ দেবেন? \v 10 সেরকমই, তোমাদের যা করতে বলা হয়েছিল, তার সবকিছু পালন করার পর তোমরাও বোলো, ‘আমরা অযোগ্য দাস, যা করতে বাধ্য ছিলাম শুধুমাত্র তাই করেছি।’ ” \s1 দশজন কুষ্ঠরোগীর আরোগ্য লাভ \p \v 11 জেরুশালেমের দিকে যাওয়ার সময় যীশু শমরিয়া ও গালীল প্রদেশের মধ্যবর্তী সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিলেন। \v 12 তিনি যখন একটি গ্রামে প্রবেশ করছেন, দশজন কুষ্ঠরোগী তাঁর কাছে এল। তারা দূরে দাঁড়িয়ে রইল \v 13 এবং উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে বলল, “যীশু, প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া করুন!” \p \v 14 তাদের দেখে তিনি বললেন, “যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও।” আর যেতে যেতেই তারা শুচিশুদ্ধ হয়ে গেল। \p \v 15 তাদের মধ্যে একজন যখন দেখল, সে সুস্থ হয়ে গেছে, সে ফিরে এসে উচ্চকণ্ঠে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। \v 16 সে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাল। সে ছিল একজন শমরীয়। \p \v 17 যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “দশজনই কি শুচিশুদ্ধ হয়নি? অন্য নয়জন কোথায়? \v 18 ফিরে এসে ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এই বিদেশি ছাড়া আর কাউকে কি পাওয়া গেল না?” \v 19 তারপর তিনি তাকে বললেন, “ওঠো, চলে যাও। তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে।” \s1 ঈশ্বরের রাজ্যের আগমন \p \v 20 এক সময় ফরিশীরা ঈশ্বরের রাজ্যের আগমনকাল সম্বন্ধে জানতে চাইল। যীশু উত্তর দিলেন, “সতর্ক দৃষ্টি রাখলেই যে ঈশ্বরের রাজ্যের আগমন দেখতে পাওয়া যাবে, তেমন নয়। \v 21 লোকেরা বলবেও না, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এখানে’ বা ‘ওখানে,’ কারণ ঈশ্বরের রাজ্য বিরাজ করছে তোমাদের মধ্যেই।” \p \v 22 তারপর তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এমন এক সময় আসছে, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রের রাজত্বের একটি দিন দেখার আকাঙ্ক্ষা করবে, কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাবে না। \v 23 লোকেরা তোমাদের বলবে, ‘ওই যে, তিনি ওখানে’ অথবা ‘এখানে!’ তোমরা তাদের পিছনে ছুটে বেড়িয়ো না। \v 24 কারণ বিদ্যুৎ রেখা যেমন আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে উদ্ভাসিত হয়ে আকাশকে আলোকিত করে, তেমনই মনুষ্যপুত্রও তাঁর দিনে\f + \fr 17:24 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রভু যীশুর দ্বিতীয় আগমনের দিনে, যখন তিনি জলপাই পর্বতে তাঁর পা রাখবেন ও এই পৃথিবীতে তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করবেন।\ft*\f* হবেন। \v 25 কিন্তু প্রথমে তাঁকে অবশ্যই বহু যন্ত্রণাভোগ করতে হবে এবং এই প্রজন্মের মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে হবে। \p \v 26 “নোহের সময় যেমন ঘটেছিল, মনুষ্যপুত্রের সময়েও সেরকম হবে। \v 27 নোহ জাহাজে প্রবেশ করা পর্যন্ত লোকেরা খাওয়াদাওয়া করত, বিবাহ করত ও তাদের বিবাহ দেওয়া হত। তারপর মহাপ্লাবন এসে তাদের সবাইকে ধ্বংস করে দিল। \p \v 28 “লোটের সময়েও একই ঘটনা ঘটেছিল। লোকেরা খাওয়াদাওয়া করছিল, কেনাবেচা, কৃষিকাজ ও গৃহ নির্মাণে ব্যস্ত ছিল। \v 29 কিন্তু লোট যেদিন সদোম ত্যাগ করলেন, সেদিন আকাশ থেকে আগুন ও গন্ধকের বৃষ্টি নেমে তাদের সবাইকে ধ্বংস করে দিল। \p \v 30 “মনুষ্যপুত্র যেদিন প্রকাশিত হবেন, সেদিনও ঠিক এরকমই হবে। \v 31 সেদিন ছাদের উপরে যে থাকবে, সে যেন ঘরের ভিতরে জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য নিচে নেমে না আসে। সেরকমই, মাঠে যে থাকবে, সে যেন কোনোকিছু নেওয়ার জন্য ফিরে না যায়। \v 32 লোটের স্ত্রীর কথা মনে করো! \v 33 যে নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে; আবার যে তার জীবন হারায়, সে তা রক্ষা করবে। \v 34 আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রে একই বিছানায় দুজন শুয়ে থাকবে; তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে। \v 35 দুজন মহিলা একসঙ্গে জাঁতা পেষণ করবে; একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে। \v 36 দুজন মাঠে থাকবে; একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।”\f + \fr 17:36 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে 36 পদটি অনুপস্থিত।\ft*\f* \p \v 37 তারা জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় প্রভু?” \p তিনি বললেন, “যেখানে মৃতদেহ, শকুনের ঝাঁক সেখানেই জড়ো হবে।” \c 18 \s1 বারবার অনুনয়কারী বিধবার রূপক \p \v 1 তারপর যীশু এক রূপক কাহিনির মাধ্যমে তাঁর শিষ্যদের বোঝাতে চাইলেন, তাঁরা যেন সব সবময়ই প্রার্থনা করে, নিরাশ না হয়। \v 2 তিনি বললেন, “কোনো এক নগরে একজন বিচারক ছিলেন। তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, কোনো মানুষকেও গ্রাহ্য করতেন না। \v 3 সেই নগরে একজন বিধবা ছিল। সে বারবার এসে তাঁর কাছে মিনতি করত, ‘আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমার প্রতি ন্যায়বিচার করুন।’ \p \v 4 “কিছুদিন তিনি সম্মত হলেন না। কিন্তু শেষে চিন্তা করলেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না, \v 5 তবুও, এই বিধবা যেহেতু আমাকে বারবার জ্বালাতন করে চলেছে, তাই সে যেন ন্যায়বিচার পায়, তা আমি দেখব যেন সে বারবার এসে আমাকে আর বিরক্ত না করে।’ ” \p \v 6 প্রভু বললেন, “শোনো তোমরা, ওই ন্যায়হীন বিচারক কী বলে। \v 7 তাহলে ঈশ্বরের যে মনোনীত জনেরা তাঁর কাছে দিবারাত্রি কান্নাকাটি করে, তাদের বিষয়ে তিনি কি ন্যায়বিচার করবেন না? তিনি কি তাদের দূরে সরিয়ে রাখবেন? \v 8 আমি তোমাদের বলছি, তিনি দ্রুত তাদের ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু মনুষ্যপুত্র যখন আসবেন, তিনি কি পৃথিবীতে বিশ্বাস খুঁজে পাবেন?” \s1 ফরিশী ও কর আদায়কারীর রূপক \p \v 9 নিজেদের ধার্মিকতার প্রতি যাদের আস্থা ছিল ও অন্যদের যারা হীনদৃষ্টিতে দেখত, যীশু এই রূপক কাহিনিটি তাদের বললেন: \v 10 “দুই ব্যক্তি প্রার্থনার জন্য মন্দিরে গেল; একজন ফরিশী ও অন্যজন কর আদায়কারী। \v 11 ফরিশী দাঁড়িয়ে নিজের বিষয়ে প্রার্থনা করল, ‘হে ঈশ্বর, আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ আমি কোনো দস্যু, দুর্বৃত্ত, ব্যভিচারী, এমনকি, ওই কর আদায়কারী, বা অন্য লোকের মতো নই। \v 12 আমি সপ্তাহে দু-দিন উপোস করি এবং যা আয় করি, তার এক-দশমাংশ দান করি।’ \p \v 13 “কিন্তু কর আদায়কারী দূরে দাঁড়িয়ে রইল। এমনকি, সে স্বর্গের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারল না। সে তার বুক চাপড়ে বলতে লাগল, ‘হে ঈশ্বর, আমার প্রতি, এই পাপীর প্রতি কৃপা করো।’ \p \v 14 “আমি তোমাদের বলছি, এই ব্যক্তি ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক গণ্য হয়ে ঘরে ফিরে গেল, কিন্তু অন্যজন নয়। কারণ যে কেউ নিজেকে উন্নত করে, তাকে নত করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে তাকে উন্নত করা হবে।” \s1 শিশুদের মাঝে যীশু \p \v 15 যীশুকে স্পর্শ করার জন্য লোকেরা শিশু সন্তানদের তাঁর কাছে নিয়ে আসছিল। এই দেখে শিষ্যেরা তাদের তিরস্কার করলেন। \v 16 কিন্তু যীশু শিষ্যদের তাঁর কাছে ডাকলেন ও বললেন, “ছোটো শিশুদের আমার কাছে আসতে দাও, ওদের বাধা দিয়ো না। কারণ ঈশ্বরের রাজ্য এদের মতো মানুষদেরই। \v 17 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, ছোটো শিশুর মতো যে ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ করতে পারে না, সে কখনও তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” \s1 ধনাসক্তি সম্পর্কে শিক্ষা \p \v 18 একজন সমাজভবনের অধ্যক্ষ তাঁকে প্রশ্ন করল, “সৎ গুরু, অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে?” \p \v 19 যীশু উত্তর দিলেন, “আমাকে সৎ বলছ কেন? ঈশ্বর ছাড়া তো আর কেউ সৎ নেই! \v 20 ঈশ্বরের আজ্ঞা তুমি নিশ্চয় জানো: ‘ব্যভিচার কোরো না, নরহত্যা কোরো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না, তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো।’ ”\f + \fr 18:20 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:12-16\+xt*; \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 5:16-20\+xt*\ft*\f* \p \v 21 তিনি বললেন, “আমি ছোটোবেলা থেকে এসব পালন করে আসছি।” \p \v 22 একথা শুনে যীশু তাকে বললেন, “এখনও একটি বিষয়ে তোমার ঘাটতি আছে। তুমি তোমার সর্বস্ব বিক্রি করে দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে স্বর্গে ঐশ্বর্য লাভ করবে। তারপর এসো, আমাকে অনুসরণ করো।” \p \v 23 একথা শুনে সে অত্যন্ত বিষণ্ণ হয়ে উঠল, কারণ সে প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী ছিল। \v 24 যীশু তার দিকে দৃষ্টিপাত করে বললেন, “ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন কষ্টসাধ্য! \v 25 প্রকৃতপক্ষে, ধনী মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সুচের ছিদ্রপথ দিয়ে উটের পার হওয়া সহজ।” \p \v 26 একথা শুনে শ্রোতারা জিজ্ঞাসা করল, “তাহলে কে পরিত্রাণ পেতে পারে?” \p \v 27 যীশু উত্তর দিলেন, “মানুষের পক্ষে যা অসম্ভব, ঈশ্বরের কাছে তা সম্ভবপর।” \p \v 28 পিতর তাঁকে বললেন, “আপনাকে অনুসরণ করার জন্য আমরা আমাদের সর্বস্ব ত্যাগ করেছি।” \p \v 29 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এমন কেউ নেই, যে ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য নিজের ঘরবাড়ি, অথবা স্ত্রী, ভাই, বাবা-মা, বা সন্তানসন্ততি ত্যাগ করেছে, \v 30 সে এই জীবনে তার বহুগুণ এবং আগামী যুগে অনন্ত জীবন লাভ করবে না।” \s1 নিজের মৃত্যু সম্পর্কে পুনরায় যীশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 31 যীশু সেই বারোজনকে একান্তে ডেকে বললেন, “আমরা জেরুশালেম পর্যন্ত যাচ্ছি; আর মনুষ্যপুত্র সম্পর্কে ভাববাদীদের সমস্ত ভবিষ্যদ্‌বাণী বাস্তবায়িত হবে। \v 32 তাঁকে অইহুদিদের হাতে সমর্পণ করা হবে। তারা তাঁকে বিদ্রুপ করবে, অপমান করবে, তাঁর গায়ে থুতু দেবে, তাঁকে চাবুক দিয়ে মারবে ও হত্যা করবে। \v 33 কিন্তু তৃতীয় দিনে তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবেন।” \p \v 34 শিষ্যেরা এসব কথার কিছুই উপলব্ধি করতে পারলেন না। তাদের কাছে এর অর্থ গুপ্ত ছিল এবং তিনি কোন বিষয়ে আলোচনা করছেন, তা তারা বুঝতে পারলেন না। \s1 অন্ধ ভিক্ষুকের দৃষ্টিশক্তি লাভ \p \v 35 যীশু যখন যিরীহোর নিকটবর্তী হলেন, একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তি পথের পাশে বসে ভিক্ষা করছিল। \v 36 পথে চলা লোকদের কলরোল শুনে সে তার কারণ জানতে চাইল। \v 37 তারা তাকে বলল, “নাসরতের যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন।” \p \v 38 সে চিৎকার করে উঠল, “যীশু, দাউদ-সন্তান, আমার প্রতি দয়া করুন।” \p \v 39 সামনের লোকেরা তাকে ধমক দিল ও চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও বেশি চিৎকার করে বলতে লাগল, “হে দাউদের সন্তান, আমার প্রতি কৃপা করুন।” \p \v 40 যীশু থেমে সেই মানুষটিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসার জন্য আদেশ দিলেন। সে কাছে এলে যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, \p \v 41 “আমার কাছে তুমি কী চাও? তোমার জন্য আমি কী করব?” সে উত্তর দিল, “প্রভু, আমি যেন দেখতে পাই।” \p \v 42 যীশু তাকে বললেন, “তুমি দৃষ্টি লাভ করো; তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে।” \v 43 তখনই সে তার দৃষ্টিশক্তি লাভ করল ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুকে অনুসরণ করল। এই দেখে সমস্ত লোকও ঈশ্বরের বন্দনা করতে লাগল। \c 19 \s1 কর আদায়কারী সক্কেয় \p \v 1 যীশু যিরীহোয় প্রবেশ করে তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। \v 2 সেখানে সক্কেয় নামে এক ব্যক্তি ছিল, সে ছিল প্রধান কর আদায়কারী ও একজন ধনী ব্যক্তি। \v 3 কে যীশু, সে তা দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু সে খাটো প্রকৃতির হওয়ার দরুন ও ভিড়ের জন্য, তাঁকে দেখতে পেল না। \v 4 তাই তাঁকে দেখার জন্য সে দৌড়ে গিয়ে সামনের একটি সিকামোর-ডুমুর গাছে উঠল। কারণ যীশু সেই পথ ধরেই আসছিলেন। \p \v 5 যীশু সেই স্থানে উপস্থিত হয়ে উপর দিকে তাকালেন ও তাকে বললেন, “সক্কেয়, এখনই নেমে এসো, আজ আমাকে অবশ্যই তোমার ঘরে থাকতে হবে।” \v 6 তাই সে তখনই নেমে এসে সানন্দে তাঁকে স্বাগত জানাল। \p \v 7 এই দেখে লোকেরা গুঞ্জন করতে লাগল, “ইনি একজন ‘পাপীর’ ঘরে অতিথি হতে যাচ্ছেন।” \p \v 8 কিন্তু সক্কেয় দাঁড়িয়ে প্রভুকে বলল, “প্রভু দেখুন, আমি এখনই আমার সম্পত্তির অর্ধেক দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দিচ্ছি। আর কাউকে প্রতারণা করে যদি কিছু নিয়েছি, তাহলে তার চারগুণ অর্থ আমি তাকে ফিরিয়ে দেব।” \p \v 9 যীশু তাকে বললেন, “আজই এই পরিবারে পরিত্রাণ উপস্থিত হল, কারণ এই ব্যক্তিও অব্রাহামের সন্তান। \v 10 বস্তুত, যা হারিয়ে গিয়েছিল, তার অন্বেষণ ও পরিত্রাণ করতে মনুষ্যপুত্র উপস্থিত হয়েছেন।” \s1 দশটি মুদ্রার রূপক \p \v 11 তারা যখন একথা শুনছিল, তিনি তাদের একটি রূপক কাহিনি বললেন, কারণ তিনি জেরুশালেমের নিকটে এসে পড়েছিলেন এবং লোকেরা মনে করছিল, ঈশ্বরের রাজ্যের আবির্ভাব তখনই হবে। \v 12 তিনি বললেন, “সম্ভ্রান্ত বংশের এক ব্যক্তি এই উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো এক সুদূর দেশে গেলেন যে রাজপদ লাভের পর স্বদেশে ফিরে আসবেন। \v 13 তাই তিনি তাঁর দশজন দাসকে ডেকে তাদের দশটি মিনা\f + \fr 19:13 \fr*\fq মিনা\fq*\ft —একটি প্রাচীন মুদ্রা, যার মূল্য সেই সময়ের তিন মাসের বেতনের সমান।\ft*\f* দিয়ে বললেন, ‘আমি যতদিন ফিরে না-আসি, এই অর্থ ব্যবসায়ে নিয়োগ করো।’ \p \v 14 “কিন্তু তার প্রজারা তাকে ঘৃণা করত। তারা তাই তার পিছনে এক প্রতিনিধি মারফত বলে পাঠাল, ‘আমরা চাই না, এই লোকটি আমাদের উপর রাজত্ব করুক।’ \p \v 15 “যাই হোক, তিনি রাজপদ লাভ করে স্বদেশে ফিরে এলেন। তারপর তিনি যে দাসদের অর্থ দিয়ে গিয়েছিলেন, তারা কী লাভ করেছে, জানবার জন্য তাদের ডেকে পাঠালেন। \p \v 16 “প্রথমজন এসে বলল, ‘হুজুর, আপনার মুদ্রা দিয়ে আমি আরও দশটি মুদ্রা অর্জন করেছি।’ \p \v 17 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘উত্তম দাস আমার, তুমি ভালোই করেছ। যেহেতু অত্যন্ত সামান্য বিষয়ে তুমি বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়েছ, সেজন্য তুমি দশটি নগরের দায়িত্ব গ্রহণ করো।’ \p \v 18 “দ্বিতীয়জন এসে বলল, ‘হুজুর, আপনার মুদ্রা দিয়ে আমি আরও পাঁচটি মুদ্রা অর্জন করেছি।’ \p \v 19 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘তুমি পাঁচটি নগরের দায়িত্ব গ্রহণ করো।’ \p \v 20 “তখন অন্য একজন দাস এসে বলল, ‘হুজুর, এই নিন আপনার মুদ্রা, আমি এটাকে কাপড়ে জড়িয়ে রেখে দিয়েছিলাম। \v 21 আমি আপনাকে ভয় করেছিলাম, কারণ আপনি কঠোর প্রকৃতির মানুষ। আপনি যা রাখেননি, তাই নিয়ে নেন, যা বোনেননি, তাও কাটেন।’ \p \v 22 “তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘দুষ্ট দাস, তোমার নিজের কথা দিয়েই আমি তোমার বিচার করব! তুমি না জানতে, আমি কঠোর প্রকৃতির মানুষ, যা আমি রাখিনি, তা নিয়ে থাকি, আর যা বুনিনি, তা কেটে থাকি? \v 23 আমার অর্থ তুমি কেন মহাজনের কাছে রাখোনি, তাহলে ফিরে এসে আমি তা সুদসমেত আদায় করতে পারতাম?’ \p \v 24 “তারপর তিনি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সকলের উদ্দেশে বললেন, ‘ওর কাছ থেকে মুদ্রাটি নিয়ে নাও, আর যার দশটি মুদ্রা আছে, তাকে দাও।’ \p \v 25 “তারা বলল, ‘মহাশয়, ওর তো দশটি মুদ্রা আছেই!’ \p \v 26 “তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, যার আছে, তাকে আরও বেশি দেওয়া হবে; কিন্তু যার কিছু নেই, তার যেটুকু আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে। \v 27 আর যারা চায়নি যে, আমি তাদের উপরে রাজত্ব করি, আমার সেইসব শত্রুকে এখানে নিয়ে এসে আমার সামনে বধ করো।’ ” \s1 যীশু জেরুশালেমে রাজার মতো প্রবেশ করলেন \p \v 28 এসব কথা বলার পর যীশু সামনে, জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন। \v 29 জলপাই পর্বত নামের পাহাড়ে, বেথফাগে ও বেথানি গ্রামের কাছে এসে তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এই কথা বলে পাঠালেন, \v 30 “তোমরা সামনের ওই গ্রামে যাও। সেখানে প্রবেশ করা মাত্র দেখতে পাবে যে একটি গর্দভশাবক বাঁধা আছে, যার উপরে কেউ কখনও বসেনি। সেটির বাঁধন খুলে এখানে নিয়ে এসো। \v 31 কেউ যদি তোমাদের জিজ্ঞাসা করে, ‘এর বাঁধন খুলছ কেন?’ তাহলে তাকে বোলো, ‘এতে প্রভুর প্রয়োজন আছে।’ ” \p \v 32 যাদের আগে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা গিয়ে যীশু যেমন বলেছিলেন, ঠিক তেমনই দেখতে পেলেন। \v 33 তাঁরা যখন গর্দভ শাবকটির বাঁধন খুলছিলেন, শাবকটির মালিকেরা তাঁদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কেন এর বাঁধন খুলছ?” \p \v 34 তাঁরা উত্তর দিলেন, “এতে প্রভুর প্রয়োজন আছে।” \p \v 35 তাঁরা শাবকটিকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে তার উপর তাঁদের পোশাক বিছিয়ে দিলেন, আর তার উপর যীশুকে বসালেন। \v 36 তাঁর যাওয়ার পথের উপর জনসাধারণ তাদের পোশাক বিছিয়ে দিতে লাগল। \p \v 37 পথ যেখানে জলপাই পর্বতের দিকে নেমে গেছে, যীশু সেখানে উপস্থিত হলে তাঁর সমস্ত শিষ্যদল, যীশুর মাধ্যমে যেসব অলৌকিক কাজ দেখেছিলেন, সেগুলিকে উল্লেখ করে উচ্চকণ্ঠে ঈশ্বরের মহিমাকীর্তন করে বলতে লাগলেন: \q1 \v 38 “ধন্য সেই রাজাধিরাজ, যিনি আসছেন প্রভুরই নামে।”\f + \fr 19:38 \fr*\ft \+xt গীত 118:26\+xt*\ft*\f* \b \q1 “স্বর্গলোকে শান্তি, আর ঊর্ধ্বতমলোকে মহিমা হোক!” \p \v 39 লোকদের মধ্য থেকে কয়েকজন ফরিশী যীশুকে বলল, “গুরুমহাশয়, আপনার শিষ্যদের ধমক দিন!” \p \v 40 তিনি উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের বলছি, ওরা যদি চুপ করে থাকে, তাহলে এই পাথরগুলি চিৎকার করে উঠবে।” \p \v 41 জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে নগরটিকে দেখে তিনি কেঁদে ফেললেন, আর বললেন, \v 42 “তুমি, শুধুমাত্র তুমি যদি জানতে, আজকের দিনে শান্তির জন্য তোমার কী প্রয়োজন! কিন্তু এখন তা তোমার দৃষ্টির অগোচর হয়ে রইল। \v 43 তোমার উপরে এমন একদিন ঘনিয়ে আসবে, যেদিন তোমার শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে অবরোধের প্রাচীর তুলবে, তোমাকে বেষ্টন করে সবদিক থেকে তোমাকে ঘিরে ধরবে। \v 44 তারা তোমাকে ও তোমার চার দেওয়ালের মধ্যবর্তী সন্তানদের ভূমিসাৎ করবে। তারা একটি পাথরের উপর অন্য পাথর রাখবে না। কারণ তোমার কাছে ঈশ্বরের আগমনকালকে তুমি চিনতে পারোনি।” \s1 জেরুশালেমের মন্দিরে যীশু \p \v 45 তারপর তিনি মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে যারা বিক্রি\f + \fr 19:45 \fr*\ft বলিদানের পশু\ft*\f* করছিল তাদের তিনি তাড়িয়ে দিতে লাগলেন। \v 46 তিনি তাদের বললেন, “এরকম লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনার গৃহ,’\f + \fr 19:46 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 56:7\+xt*\ft*\f* কিন্তু তোমরা একে দস্যুদের গহ্বরে পরিণত করেছ।”\f + \fr 19:46 \fr*\ft \+xt যিরমিয় 7:11\+xt*\ft*\f* \p \v 47 প্রতিদিন তিনি মন্দিরে শিক্ষা দিতেন। কিন্তু প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদরা ও জননেতারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল। \v 48 তবুও তা কাজে পরিণত করার পথ তারা খুঁজে পাচ্ছিল না, কারণ জনসাধারণ মুগ্ধ হয়ে তাঁর বাক্য শুনত। \c 20 \s1 যীশুর অধিকার সম্পর্কে সংশয় \p \v 1 একদিন যীশু মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং সুসমাচার প্রচার করছিলেন। সেই সময় প্রধান যাজকেরা ও শাস্ত্রবিদরা, প্রাচীনদের সঙ্গে একযোগে তাঁর কাছে এল। \v 2 তারা বলল, “আমাদের বলো, কোন অধিকারে তুমি এসব কাজ করছ? কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?” \p \v 3 তিনি উত্তর দিলেন, “আমিও তোমাদের একটি প্রশ্ন করব। তোমরা আমাকে বলো, \v 4 যোহনের বাপ্তিষ্ম কোথা থেকে হয়েছিল? স্বর্গ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে?” \p \v 5 তারা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে বলল, “যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ ও জিজ্ঞাসা করবে, ‘তাহলে তোমরা তাকে বিশ্বাস করোনি কেন?’ \v 6 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর ছুঁড়ে মারবে, কারণ তারা নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করে যে, যোহন ছিলেন একজন ভাববাদী।” \p \v 7 তাই তারা উত্তর দিল, “কোথা থেকে, আমরা তা জানি না।” \p \v 8 যীশু বললেন, “আমিও কোন অধিকারে এসব কাজ করছি, তোমাদের বলব না।” \s1 ভাগচাষিদের রূপক \p \v 9 তিনি সকলকে এই রূপক আখ্যানটি বলতে লাগলেন: “এক ব্যক্তি একটি দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরি করে কয়েকজন ভাগচাষিকে ভাড়া দিয়ে অনেক দিনের জন্য অন্যত্র চলে গেলেন। \v 10 ফল সংগ্রহের সময় তিনি এক দাসকে ভাগচাষিদের কাছে পাঠালেন, যেন তারা তাকে দ্রাক্ষাক্ষেতের ফলের কিছু অংশ দেয়। কিন্তু ভাগচাষিরা তাকে মারধর করে খালি হাতে তাড়িয়ে দিল। \v 11 তিনি আর একজন দাসকে পাঠালেন, কিন্তু তাকেও তারা মারধর করল এবং অপমানজনক ব্যবহার করে তাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিল। \v 12 এবার তিনি তৃতীয় জনকে পাঠালেন। তারা তাকে ক্ষতবিক্ষত করল এবং ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিল। \p \v 13 “তখন দ্রাক্ষাক্ষেতের মালিক বললেন, ‘আমি কী করি? আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব, তারা হয়তো তাঁকে সম্মান করবে।’ \p \v 14 “কিন্তু ভাগচাষিরা তাঁকে দেখে বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল। তারা বলল, ‘এই হচ্ছে উত্তরাধিকারী। এসো আমরা একে হত্যা করি, তাহলে মালিকানা আমাদের হবে।’ \v 15 তাই তারা তাঁকে দ্রাক্ষাক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করল। \p “দ্রাক্ষাক্ষেতের মালিক তখন তাদের প্রতি কী করবেন? \v 16 তিনি এসে ওইসব ভাগচাষিদের হত্যা করবেন এবং দ্রাক্ষাক্ষেতটি অন্যদের দেবেন।” \p লোকেরা এই কাহিনি শুনে বলল, “এরকম যেন কখনও না হয়।” \p \v 17 যীশু তাদের দিকে সরাসরি তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন, “তাহলে, এই লিখিত বাক্যের অর্থ কী? \q1 “ ‘গাঁথকেরা যে পাথর অগ্রাহ্য করেছিল, \q2 তাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর!’\f + \fr 20:17 \fr*\ft \+xt গীত 118:22\+xt*\ft*\f* \m \v 18 সেই পাথরের উপরে যে পড়বে, সে খানখান হবে, কিন্তু যার উপরে এই পাথর পড়বে, সে চূর্ণবিচূর্ণ হবে।” \p \v 19 শাস্ত্রবিদরা ও প্রধান যাজকবর্গ আর দেরি না করে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পথ খুঁজতে লাগল। কারণ তারা জানত, এই রূপক কাহিনিটি তিনি তাদের বিরুদ্ধেই বলেছেন, কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পেত। \s1 কৈসরের প্রাপ্য কর \p \v 20 যীশুর উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখে তারা কয়েকজন গুপ্তচর পাঠাল যারা যীশুর সঙ্গে সততার ভান করল। তারা আশা করছিল, যীশুর কথায় খুঁত ধরে তাঁকে দেশাধ্যক্ষের ক্ষমতা ও বিচারাধীনে আনতে পারবে। \v 21 তাই গুপ্তচরেরা তাঁকে প্রশ্ন করল, “গুরুমহাশয়, আমরা জানি, আপনি ন্যায়সংগত কথা বলেন ও শিক্ষা দেন, আপনি পক্ষপাতিত্ব করেন না, কিন্তু ঈশ্বরের পথ সম্বন্ধে যথার্থ শিক্ষা দেন। \v 22 আপনার অভিমত কী, কৈসরকে কর দেওয়া কি উচিত?” \p \v 23 তিনি তাদের দুমুখো আচরণ বুঝতে পেরে বললেন, \v 24 “আমাকে একটি দিনার দেখাও। এর উপরে কার মূর্তি আর কার নাম আছে?” \p তারা উত্তর দিল, “কৈসরের।” \p \v 25 তিনি তাদের বললেন, “তাহলে, যা কৈসরের প্রাপ্য, তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা প্রাপ্য, তা ঈশ্বরকে দাও।” \p \v 26 তিনি সেখানে যে কথা প্রকাশ্যে বললেন, সেই কথায় তারা তাঁকে ফাঁদে ফেলতে পারল না। তাঁর উত্তরে তারা চমৎকৃত হয়ে নির্বাক হয়ে গেল। \s1 পুনরুত্থান ও বিবাহ-প্রসঙ্গে \p \v 27 যে সদ্দূকীরা বলে, পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, তাদের কয়েকজন একটি প্রশ্ন নিয়ে যীশুর কাছে এল। \v 28 তারা বলল, “গুরুমহাশয়, মোশি আমাদের জন্য লিখে গেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি স্ত্রীকে সন্তানহীন রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই, তার বিধবা পত্নীকে বিবাহ করবে এবং সে তার বড়ো ভাইয়ের জন্য সন্তানের জন্ম দেবে। \v 29 মনে করুন, সাত ভাই ছিল। প্রথমজন, এক নারীকে বিবাহ করে নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। \v 30 দ্বিতীয়জন ও তৃতীয়জন তাকে বিবাহ করল এবং \v 31 একইভাবে নিঃসন্তান অবস্থায় সেই সাতজনই মারা গেল। \v 32 সবশেষে, সেই নারীরও মৃত্যু হল। \v 33 তাহলে, পুনরুত্থানে সে কার স্ত্রী হবে, কারণ সাতজনই তো তাকে বিবাহ করেছিল?” \p \v 34 যীশু উত্তর দিলেন, “এই জগতের সন্তানেরা বিবাহ করে এবং তাদের বিবাহ দেওয়া হয়। \v 35 কিন্তু যারা সেই জগতের ও মৃতলোক থেকে পুনরুত্থানে অংশীদার হওয়ার যোগ্যরূপে বিবেচিত হয়েছে, তারা বিবাহ করবে না বা তাদের বিবাহও দেওয়া হবে না। \v 36 তাদের কখনও মৃত্যু হবে না, কারণ তারা হবে স্বর্গদূতের মতো। তাদের পুনরুত্থান বলে তারা ঈশ্বরের সন্তান। \v 37 কিন্তু জ্বলন্ত ঝোপের বর্ণনায় মোশিও দেখিয়েছেন যে মৃতেরা উত্থাপিত হয়, কারণ তিনি প্রভুকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর,’\f + \fr 20:37 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 3:6\+xt*\ft*\f* বলে অভিহিত করেছেন। \v 38 তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিতদের ঈশ্বর। কারণ তাঁর কাছে সকলেই জীবিত।” \p \v 39 তখন কয়েকজন শাস্ত্রবিদ উত্তর দিল, “গুরুমহাশয়, আপনি বেশ ভালোই বলেছেন।” \v 40 সেই থেকে কেউ তাঁকে আর কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে সাহস পেল না। \s1 খ্রীষ্ট কার সন্তান? \p \v 41 এরপর যীশু তাদের বললেন, “লোকে বলে, ‘খ্রীষ্ট হল দাউদের পুত্র,’ এ কেমন কথা? \v 42 গীতসংহিতা পুস্তকে দাউদ স্বয়ং ঘোষণা করেছেন: \q1 “ ‘প্রভু আমার প্রভুকে বলেন, \q2 “তুমি আমার ডানদিকে বসো, \q1 \v 43 যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদের \q2 তোমার পাদপীঠে পরিণত করি।” ’\f + \fr 20:43 \fr*\ft \+xt গীত 110:1\+xt*\ft*\f* \m \v 44 সুতরাং, দাউদ তাঁকে ‘প্রভু’ বলে অভিহিত করেছেন, তাহলে কীভাবে তিনি তাঁর সন্তান হতে পারেন?” \p \v 45 সমস্ত লোকেরা যখন শুনছিল, যীশু তখন তাঁর শিষ্যদের বললেন, \v 46 “শাস্ত্রবিদদের সম্পর্কে সতর্ক থেকো, তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতে ও হাটেবাজারে সম্ভাষিত হতে ভালোবাসে; সমাজভবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ও ভোজসভায় সব থেকে সম্মানজনক আসন লাভ করতে ভালোবাসে। \v 47 তারা বিধবাদের বাড়িশুদ্ধ গ্রাস করে এবং লোক-দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে। এই ধরনের লোকেরা কঠোর শাস্তি ভোগ করবে।” \c 21 \s1 বিধবার দান \p \v 1 যীশু চোখ তুলে দেখলেন ধনী ব্যক্তিরা মন্দিরের ভাণ্ডারে উপহার দান করছে। \v 2 তিনি এক দরিদ্র বিধবাকেও খুব ছোটো দুটি তামার পয়সা\f + \fr 21:2 \fr*\ft গ্রিক: দুই লেপ্টা (ভীষণ কম মূল্যের ইহুদি মুদ্রা)\ft*\f* রাখতে দেখলেন। \v 3 তিনি বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই দরিদ্র বিধবা অন্য সবার চেয়ে বেশি দান করেছে। \v 4 কারণ এসব লোক তাদের প্রাচুর্য থেকে দান করেছে, কিন্তু সে তার দরিদ্রতা সত্ত্বেও, তার বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু ছিল, তা থেকে সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছে।” \s1 যুগের অন্তিমলগ্নের চিহ্ন \p \v 5 তাঁর কয়েকজন শিষ্য আলোচনা করে বলছিল যে, সুন্দর সুন্দর পাথর ও ঈশ্বরের কাছে নিবেদিত সব বস্তুতে মন্দিরটি কেমন সুশোভিত! কিন্তু যীশু বললেন, \v 6 “তোমরা এখানে যা দেখছ, এমন এক সময় আসবে, যখন এদের একটি পাথরও অন্যটির উপরে থাকবে না, সবকটিকেই ভূমিসাৎ করা হবে।” \p \v 7 তাঁরা জানতে চাইলেন, “গুরুমহাশয়, এ সমস্ত কখন ঘটবে? তার লক্ষণই বা কী, যা দেখে আমরা বুঝব যে, সে সমস্ত ঘটতে চলেছে?” \p \v 8 তিনি উত্তর দিলেন, “সতর্ক থেকো, তোমরা যেন প্রতারিত না হও। কারণ আমার নাম নিয়ে অনেকেই আসবে। তারা দাবি করে বলবে, ‘আমিই তিনি,’ আর ‘সেই কাল সন্নিকট।’ তোমরা তাদের অনুগামী হোয়ো না। \v 9 যুদ্ধ ও বিপ্লবের কথা শুনে তোমরা আতঙ্কিত হোয়ো না। প্রথমে এসব অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনই সমাপ্তি হবে না।” \p \v 10 এরপর তিনি তাঁদের বললেন, “এক জাতি অন্য জাতির বিপক্ষে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিপক্ষে অভিযান করবে। \v 11 বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ ও মহামারি হবে, মহাকাশে দেখা যাবে বহু ভীতিকর দৃশ্য ও বড়ো বড়ো নিদর্শন। \p \v 12 “কিন্তু এসব ঘটার আগে তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করবে ও নির্যাতন করবে। তারা তোমাদের সমাজভবনের কর্তৃপক্ষের হাতে সমর্পণ করবে ও কারাগারে নিক্ষেপ করবে। রাজা ও প্রদেশপালদের দরবারে তোমাদের হাজির করানো হবে, আর আমার নাম স্বীকার করার কারণেই সে সমস্ত ঘটবে। \v 13 এর পরিণামে, তোমরা তাদের কাছে সাক্ষ্যদানের সুযোগ লাভ করবে। \v 14 কিন্তু কীভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে, সে বিষয়ে আগেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হওয়ার জন্য মনস্থির করবে। \v 15 কারণ আমি তোমাদের এমন বাক্য ও জ্ঞান দান করব, যা তোমাদের প্রতিপক্ষ প্রতিরোধ ও খণ্ডন করতে ব্যর্থ হবে। \v 16 এমনকি, তোমাদের বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়পরিজন ও বন্ধুবান্ধব তোমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। তারা তোমাদের কাউকে কাউকে মৃত্যুমুখে সমর্পণ করবে। \v 17 আর আমার কারণে তোমরা সকলের কাছে ঘৃণিত হবে। \v 18 কিন্তু তোমাদের মাথার একটি চুলও বিনষ্ট হবে না। \v 19 তোমরা যদি অবিচলিত থাকো, তাহলে জীবন লাভ করবে। \p \v 20 “যখন তোমরা দেখবে সৈন্যসামন্ত জেরুশালেম নগরীকে অবরোধ করেছে, তখন জানবে যে তার ধ্বংসের দিন এগিয়ে এসেছে। \v 21 তখন যারা যিহূদিয়ায় থাকবে, তারা যেন পার্বত্য অঞ্চলে পালিয়ে যায়, যারা নগরে থাকে, তারা যেন বাইরে চলে যায়; আর যারা গ্রামাঞ্চলে থাকবে, তারা যেন নগরের ভিতরে প্রবেশ না করে। \v 22 কারণ সেসময় হবে প্রতিশোধের সময়, শাস্ত্রের সমস্ত বাক্য পূর্ণ হওয়ার সময়। \v 23 সেই সময় গর্ভবতী নারীদের ও স্তন্যদাত্রী মায়েদের কতই না ভয়ংকর কষ্ট হবে! দেশের উপর ঘনিয়ে আসবে চরম দুর্গতি, এই জাতির উপরে নেমে আসবে ঈশ্বরের ক্রোধ। \v 24 তরোয়ালের আঘাতে তাদের মৃত্যু হবে, বন্দিরূপে অন্য সব জাতির কাছে নির্বাসিত হবে। অইহুদিদের জন্য নিরূপিত সময় সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত জেরুশালেম অইহুদিদের দ্বারা পদদলিত হবে। \p \v 25 “আর সূর্য, চাঁদ ও তারার মধ্যে বিভিন্ন অদ্ভুত চিহ্ন দেখা যাবে। উত্তাল সমুদ্রের গর্জনে ও অদ্ভুত ঢেউয়ের সামনে পৃথিবীর সমস্ত জাতি যন্ত্রণাগ্রস্ত ও হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে। \v 26 পৃথিবীতে যা কিছু ঘটবে, সেই কথা ভেবে মানুষ আতঙ্কে মৃতপ্রায় হয়ে পড়বে, কারণ জ্যোতিষ্কমণ্ডল তখন প্রকম্পিত হবে। \v 27 সেই সময়ে তারা দেখতে পাবে, মনুষ্যপুত্র পরাক্রমে ও মহামহিমায় মেঘে করে আবির্ভূত হবেন। \v 28 এই সমস্ত ঘটনা যখন ঘটতে শুরু হবে, তখন তোমরা ঊর্ধ্বদৃষ্টি কোরো ও মাথা উঁচু কোরো, কারণ তোমাদের মুক্তি সন্নিকট।” \p \v 29 তিনি তাদের এই রূপকটিও বললেন: “ডুমুর গাছ ও অন্য সব গাছের দিকে তাকিয়ে দেখো। \v 30 সেগুলি যখন নতুন পাতায় সজ্জিত হয়ে ওঠে, তা দেখে তোমরা নিজেরাই বুঝতে পারো, গ্রীষ্মকাল সন্নিকট। \v 31 সেরকম, তোমরা যখন এই সমস্ত ঘটতে দেখবে, তখন জেনো যে, ঈশ্বরের রাজ্য সন্নিকট। \p \v 32 “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এসব না ঘটা পর্যন্ত এই প্রজন্মের অবলুপ্তি কিছুতেই হবে না। \v 33 আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত হবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লুপ্ত হবে না। \p \v 34 “সতর্ক থেকো, নইলে উচ্ছৃঙ্খলতা, মত্ততা ও জীবনের দুশ্চিন্তা তোমাদের হৃদয়কে ভারাক্রান্ত করে তুলবে। \v 35 আর সেদিনটি ফাঁদের মতো অপ্রত্যাশিতভাবে সমগ্র পৃথিবীর প্রত্যেক অধিবাসীর উপরেই ঘনিয়ে আসবে। \v 36 সবসময় সতর্ক দৃষ্টি রেখো ও প্রার্থনা কোরো, যেন সন্নিকট সব ঘটনা থেকে তোমরা অব্যাহতি পাও এবং মনুষ্যপুত্রের সামনে দাঁড়াবার সামর্থ্য লাভ করো।” \p \v 37 যীশু প্রতিদিন মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা দিতেন এবং প্রতি সন্ধ্যায় রাত্রি কাটানোর জন্য জলপাই নামের পর্বতের অভিমুখে বেরিয়ে পড়তেন। \v 38 তাঁর বাণী শোনার জন্য লোকেরা খুব ভোরবেলাতেই মন্দিরে এসে উপস্থিত হত। \c 22 \s1 যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে যিহূদার সম্মতি \p \v 1 তখন, নিস্তারপর্ব নামে পরিচিত খামিরবিহীন রুটির পর্ব\f + \fr 22:1 \fr*\ft বা “তাড়ীশূন্য” রুটির পর্ব।\ft*\f* ক্রমশ এগিয়ে আসছিল। \v 2 আর প্রধান যাজকেরা ও শাস্ত্রবিদরা যীশুর হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পথ খুঁজছিল, কারণ তারা জনসাধারণকে ভয় করত। \v 3 শয়তান তখন সেই বারোজনের অন্যতম, ইষ্কারিয়োৎ নামে পরিচিত যিহূদার অন্তরে প্রবেশ করল। \v 4 যিহূদা প্রধান যাজকবর্গ ও মন্দিরের পাহারায় নিযুক্ত পদস্থ কর্মচারীদের কাছে গিয়ে, কীভাবে যীশুকে ধরিয়ে দেবে, তা নিয়ে আলোচনা করল। \v 5 তারা আনন্দিত হয়ে তাকে টাকা দিতে সম্মত হল। \v 6 সেও তাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়ে জনসাধারণের অগোচরে যীশুকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ খুঁজতে লাগল। \s1 প্রভুর ভোজ \p \v 7 অবশেষে খামিরবিহীন রুটির পর্বের দিন উপস্থিত হল। সেদিন নিস্তারপর্বের মেষ বলি দিতে হত। \v 8 যীশু পিতর ও যোহনকে পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “যাও, আমাদের জন্য নিস্তারপর্বের ভোজের আয়োজন করো।” \p \v 9 তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কী চান? আমরা কোথায় এর আয়োজন করব?” \p \v 10 তিনি উত্তর দিলেন, “তোমরা নগরে প্রবেশ করেই দেখতে পাবে, এক ব্যক্তি জলের একটি কলশি নিয়ে যাচ্ছে। তোমরা তাকে অনুসরণ করে যে বাড়িতে সে প্রবেশ করবে, সেখানে যেয়ো। \v 11 তোমরা সেই বাড়ির কর্তাকে বোলো, ‘গুরুমহাশয় জানতে চান, অতিথিদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরটি কোথায়, যেখানে আমি আমার শিষ্যদের নিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণ করতে পারি?’ \v 12 সে তোমাদের উপরতলার একটি সুসজ্জিত বড়ো ঘর দেখাবে। সেখানেই সব আয়োজন কোরো।” \p \v 13 তাঁরা বেরিয়ে পড়ে যীশুর কথামতো সবকিছুই দেখতে পেলেন এবং নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন। \p \v 14 পরে সময় উপস্থিত হলে যীশু ও প্রেরিতশিষ্যেরা আসনে হেলান দিয়ে বসলেন। \v 15 আর তিনি তাঁদের বললেন, “যন্ত্রণাভোগের আগে আমি তোমাদের সঙ্গে নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণ করার জন্য সাগ্রহে প্রতীক্ষা করেছি। \v 16 কারণ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্যে এই ভোজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত, আমি আর এই ভোজ গ্রহণ করব না।” \p \v 17 পরে তিনি পানপাত্র তুলে নিয়ে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর বললেন, “এটি নাও ও তোমাদের মধ্যে ভাগ করো। \v 18 আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্যের আগমন না হওয়া পর্যন্ত আমি আর দ্রাক্ষারস পান করব না।” \p \v 19 তাপর তিনি রুটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন ও ভেঙে তাঁদের দিলেন, আর বললেন, “এই হল আমার শরীর যা তোমাদের জন্য উৎসর্গীকৃত; আমার স্মরণার্থে তোমরা এরকম কোরো।” \p \v 20 একইভাবে, খাবারের পরে তিনি পানপাত্র নিয়ে বললেন, “এই পানপাত্র আমার রক্তে নতুন নিয়ম, যা তোমাদেরই জন্য পাতিত হয়েছে। \v 21 কিন্তু যে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তার হাত আমারই সঙ্গে টেবিলের উপরে আছে। \v 22 মনুষ্যপুত্র তাঁর নির্ধারিত পথেই এগিয়ে যাবেন, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যে মনুষ্যপুত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে!” \v 23 তাঁরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন যে, তাদের মধ্যে কে এমন কাজ করতে পারে! \p \v 24 আর তাঁদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ, এ নিয়েও একটি বিতর্ক দেখা দিল। \v 25 যীশু তাঁদের বললেন, “অন্য অন্য জাতির রাজা তাদের প্রজাদের উপরে প্রভুত্ব করে; আর যারা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে, তারা নিজেদের হিতার্থী বলে অভিহিত করে। \v 26 কিন্তু তোমরা সেরকম হোয়ো না। বরং, তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, তাকে হতে হবে যে সবচেয়ে ছোটো তার মতো, আর প্রশাসককে হতে হবে সেবকের মতো। \v 27 কারণ শ্রেষ্ঠ কে? যে খাবার খেতে বসে সে, না, যে পরিবেশন করে, সে? যে খাবার খেতে বসে, সেই নয় কি? কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে সেবকের মতো আছি। \v 28 আমার পরীক্ষার দিনগুলিতে তোমরা বরাবর আমার সঙ্গে আছ। \v 29 আমার পিতা যেমন আমাকে একটি রাজ্য অর্পণ করেছেন, আমিও তেমনই তোমাদের জন্য একটি রাজ্য নিরূপণ করছি, \v 30 যেন তোমরা আমার রাজ্যে আমারই সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া করতে ও সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করতে পারো। \p \v 31 “শিমোন, শিমোন, শয়তান তোমাদেরকে গমের মতো ঝাড়াই করার জন্য অনুমতি চেয়েছে। \v 32 কিন্তু শিমোন, আমি তোমার জন্য প্রার্থনা করেছি, যেন তোমার বিশ্বাস ব্যর্থ না হয়। আর তুমি যখন ফিরে আসবে, তখন তোমার ভাইদের মধ্যে শক্তি সঞ্চার কোরো।” \p \v 33 কিন্তু পিতর উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কারাগারে যেতে ও মৃত্যুবরণ করতেও প্রস্তুত আছি।” \p \v 34 যীশু উত্তর দিলেন, “পিতর, আমি তোমাকে বলছি, আজ মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে চেনো না বলে তিনবার অস্বীকার করবে।” \p \v 35 যীশু তারপর তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি যখন তোমাদের টাকার থলি, ঝুলি, বা চটিজুতো ছাড়াই পাঠিয়েছিলাম, তখন তোমরা কি কোনো কিছুর অভাববোধ করেছিলে?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “না, কোনো কিছুরই নয়।” \p \v 36 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু এখন তোমাদের কাছে টাকার থলি থাকলে সঙ্গে নিয়ো, একটি ঝুলিও নিয়ো; যদি তোমাদের তরোয়াল না থাকে, তাহলে পোশাক বিক্রি করে তা কিনে নিয়ো। \v 37 কারণ লেখা আছে: ‘আর তিনি অপরাধীদের সঙ্গে গণিত হলেন’\f + \fr 22:37 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 53:12\+xt* পদ দেখুন\ft*\f*; আর আমি তোমাদের বলছি, যে লেখা আছে তা আমার জীবনে অবশ্যই পূর্ণ হবে। হ্যাঁ, আমার সম্পর্কে যা লেখা আছে, তার পূর্ণ হতে চলেছে।” \p \v 38 শিষ্যেরা বললেন, “প্রভু দেখুন, এখানে দুটি তরোয়াল আছে।” \p তিনি উত্তর দিলেন, “তাই যথেষ্ট।” \s1 জলপাই পর্বতে যীশুর প্রার্থনা \p \v 39 পরে যীশু সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁর অভ্যাসমতো জলপাই পর্বতে গেলেন এবং তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে অনুসরণ করলেন। \v 40 সেই স্থানে উপস্থিত হয়ে তিনি তাঁদের বললেন, “প্রার্থনা করো, যেন তোমরা প্রলোভনে না পড়ো।” \v 41 তিনি তাঁদের কাছ থেকে এক-ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করলেন, \v 42 “পিতা, তোমার ইচ্ছা হলে আমার কাছ থেকে এই পানপাত্র সরিয়ে নাও। তবুও আমার ইচ্ছা নয়, তোমারই ইচ্ছা পূর্ণ হোক।” \v 43 তখন স্বর্গের এক দূত তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়ে তাঁকে শক্তি জোগালেন। \v 44 নিদারুণ যন্ত্রণায়, তিনি প্রার্থনায় আরও একাগ্র হলেন; তাঁর ঘাম রক্তের বড়ো বড়ো ফোঁটার মতো মাটিতে ঝরে পড়ছিল। \p \v 45 প্রার্থনা থেকে উঠে তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে গিয়ে দেখলেন, তাঁরা দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। \v 46 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা ঘুমাচ্ছ কেন? ওঠো, প্রার্থনা করো, যেন তোমরা প্রলোভনে না পড়ো।” \s1 যীশুকে গ্রেপ্তার \p \v 47 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় একদল লোক উঠে এল আর তাদের সঙ্গে এল সেই বারোজনের অন্যতম যিহূদা। সে তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল। সে চুম্বন করার জন্য যীশুর কাছে এগিয়ে এল। \v 48 কিন্তু যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যিহূদা, তুমি কি চুম্বন করে মনুষ্যপুত্রকে শত্রুদের হাতে সমর্পণ করছ?” \p \v 49 যীশুর অনুগামীরা যখন দেখলেন কী ঘটতে যাচ্ছে, তাঁরা বললেন, “প্রভু, আমাদের তরোয়াল দিয়ে কি আঘাত করব?” \v 50 তাঁদের মধ্যে একজন মহাযাজকের দাসকে আঘাত করে তার ডানদিকের কান কেটে ফেললেন। \p \v 51 কিন্তু যীশু উত্তর দিলেন, “এমন যেন আর না ঘটে!” আর তিনি সেই লোকটির কান স্পর্শ করে তাকে সুস্থ করে দিলেন। \p \v 52 আর যে প্রধান যাজকবর্গ, মন্দিরের প্রহরীদলের অধ্যক্ষেরা ও প্রাচীনবর্গ যীশুর উদ্দেশে এসেছিল, তিনি তাদের বললেন, “আমি কি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছি যে, তোমরা তরোয়াল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে এসেছ? \v 53 আমি মন্দির চত্বরে প্রতিদিনই তোমাদের মধ্যে ছিলাম। তখন তোমরা আমার উপরে হস্তক্ষেপ করোনি। কিন্তু এই হল তোমাদের সুসময়, কারণ এখন অন্ধকারেরই রাজত্ব।” \s1 পিতর যীশুকে অস্বীকার করলেন \p \v 54 তারা তখন যীশুকে বন্দি করল ও তাঁকে মহাযাজকের বাড়িতে নিয়ে গেল। পিতর দূরত্ব বজায় রেখে অনুসরণ করলেন। \v 55 কিন্তু উঠানের মাঝখানে তারা যখন আগুন জ্বেলে একসঙ্গে বসল, পিতরও তাদের সঙ্গে বসলেন। \v 56 একজন দাসী আগুনের আলোয় তাঁকে সেখানে বসে থাকতে দেখল। সে তাঁর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে বলল, “এই লোকটিও ওর সঙ্গে ছিল।” \p \v 57 কিন্তু তিনি অস্বীকার করে বললেন, “নারী, আমি ওঁকে চিনি না।” \p \v 58 অল্প কিছুক্ষণ পরে আর একজন তাকে দেখে বলল, “তুমিও ওদের একজন।” \p পিতর বললেন, “ওহে, আমি নই।” \p \v 59 প্রায় এক ঘণ্টা পরে আরও একজন দৃঢ়ভাবে বলল, “নিঃসন্দেহে, এই লোকটিও তাঁর সঙ্গে ছিল, কারণ এ একজন গালীলীয়।” \p \v 60 পিতর উত্তর দিলেন, “ওহে, তুমি কী বলছ, আমি বুঝতে পারছি না।” তিনি কথা বলছিলেন, এমন সময় মোরগ ডেকে উঠল। \v 61 প্রভু মুখ ফিরালেন ও সোজা পিতরের দিকে তাকালেন। তখন প্রভু তাঁকে যে কথা বলেছিলেন, পিতরের তা মনে পড়ল: “আজ মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।” \v 62 তখন পিতর বাইরে গিয়ে তীব্র কান্নায় ভেঙে পড়লেন। \s1 যীশুকে প্রহরীদের ব্যঙ্গবিদ্রুপ \p \v 63 যারা যীশুর পাহারায় নিযুক্ত ছিল, তারা তাঁকে বিদ্রুপ ও মারধর করতে লাগল। \v 64 তাঁর চোখ বেঁধে দিয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “ভাববাণী বল দেখি! কে তোকে মারল?” \v 65 তারা তাঁকে আরও অনেক অপমানসূচক কথা বলল। \p \v 66 সকাল হলে সেই জাতির প্রাচীনবর্গ, দুই প্রধান যাজক ও শাস্ত্রবিদদের মন্ত্রণা পরিষদ সমবেত হল। যীশুকে তাদের সামনে হাজির করা হল। \v 67 তারা বলল, “তুমি যদি সেই খ্রীষ্ট হও, তাহলে আমাদের বলো।” \p যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের বললে তোমরা আমাকে বিশ্বাস করবে না। \v 68 আর আমি যদি তোমাদের প্রশ্ন করি, তোমরাও উত্তর দেবে না। \v 69 কিন্তু এখন থেকে, মনুষ্যপুত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডানদিকে উপবিষ্ট থাকবেন।” \p \v 70 তারা সবাই প্রশ্ন করল, “তাহলে, তুমিই কি ঈশ্বরের পুত্র?” \p তিনি বললেন, “তোমরা ঠিক কথাই বলছ, আমিই তিনি।” \p \v 71 তখন তারা বলল, “আমাদের আর সাক্ষ্য-প্রমাণের কী প্রয়োজন? আমরা নিজেরাই তো ওর মুখ থেকে একথা শুনলাম।” \c 23 \s1 পীলাত ও হেরোদের দরবারে যীশু \p \v 1 তখন সকলে দল বেঁধে উঠে তাঁকে পীলাতের কাছে নিয়ে গেল। \v 2 তারা যীশুকে অভিযুক্ত করে বলল, “আমরা দেখেছি, এই লোকটি আমাদের জাতিকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। সে কৈসরকে কর দিতে নিষেধ করে, আর নিজেকে খ্রীষ্ট, একজন রাজা বলে দাবি করে।” \p \v 3 পীলাত তাই যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ইহুদিদের রাজা?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, ঠিক তাই, যেমন তুমি বললে।” \p \v 4 পীলাত তখন প্রধান যাজকবর্গ ও লোকদের কাছে ঘোষণা করলেন, “এই মানুষটিকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো দোষ আমি খুঁজে পেলাম না।” \p \v 5 কিন্তু তারা জোর দিয়ে বলল, “ও তার শিক্ষায় সমগ্র যিহূদিয়ার\f + \fr 23:5 \fr*\ft বা, ইহুদিদের দেশের সর্বত্র।\ft*\f* লোকদের উত্তেজিত করে তুলেছে। গালীল থেকে শুরু করে ও এখানেও এসে পৌঁছেছে।” \p \v 6 একথা শুনে পীলাত জানতে চাইলেন, লোকটি গালীলীয় কি না। \v 7 তিনি যখন জানতে পারলেন যে, যীশু হেরোদের শাসনাধীন, তিনি তাঁকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। সেই সময় হেরোদও জেরুশালেমে ছিলেন। \p \v 8 যীশুকে দেখে হেরোদ অত্যন্ত খুশি হলেন, কারণ দীর্ঘকাল যাবৎ তিনি তাঁকে দেখতে চাইছিলেন। তিনি যীশুর সম্পর্কে যা শুনেছিলেন, সেইমতো আশা করছিলেন, তাঁকে কোনো অলৌকিক চিহ্নকাজ করতে দেখবেন। \v 9 তিনি তাঁকে বহু প্রশ্ন করলেন, কিন্তু যীশু তাঁকে কোনও উত্তর দিলেন না। \v 10 প্রধান যাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা সেখানে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ডভাবে তাঁর বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে লাগল। \v 11 তখন হেরোদ ও তাঁর সেনারা তাঁকে তুচ্ছ ও ব্যঙ্গবিদ্রুপ করলেন। এক জমকালো পোশাক পরিয়ে যীশুকে তারা পীলাতের কাছে ফেরত পাঠালেন। \v 12 সেদিন হেরোদ ও পীলাত বন্ধু হয়ে উঠলেন; কারণ এর আগে তাঁরা পরস্পরের শত্রু ছিলেন। \p \v 13 পীলাত প্রধান যাজকদের, সমাজভবনের অধ্যক্ষদের ও জনসাধারণকে একসঙ্গে ডেকে তাদের বললেন, \v 14 “বিদ্রোহের জন্য লোকদের উত্তেজিত করার অভিযোগে তোমরা এই লোকটিকে আমার কাছে নিয়ে এসেছ। তোমাদের সাক্ষাতে আমি তাকে পরীক্ষা করেছি, কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে তোমাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি আমি খুঁজে পাইনি। \v 15 আর হেরোদও কোনো দোষ পাননি, কারণ তিনি তাঁকে আমার কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন। তোমরা দেখতেই পাচ্ছ, মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য কোনো অপরাধই সে করেনি। \v 16 তাই, আমি তাকে শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেব।” \v 17 সেই পর্বের সময়ে একজন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার প্রথা ছিল।\f + \fr 23:17 \fr*\ft কিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে এই পদের কথাগুলি অনুপস্থিত\ft*\f* \p \v 18 কিন্তু তারা সকলে চিৎকার করে উঠল, “এই লোকটিকে দূর করুন। আমরা বারাব্বার মুক্তি চাই।” \v 19 (নগরে বিদ্রোহের চেষ্টা ও হত্যার অপরাধে বারাব্বাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল।) \p \v 20 যীশুকে মুক্ত করার অভিপ্রায়ে পীলাত তাদের কাছে আবার অনুরোধ করলেন। \v 21 কিন্তু তারা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে ক্রুশে দিন! ওকে ক্রুশে দিন!” \p \v 22 তিনি তৃতীয়বার তাদের কাছে বললেন, “কেন? এই মানুষটি কী অপরাধ করেছে? মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার মতো কোনো কারণই আমি এর মধ্যে খুঁজে পাইনি। সেইজন্য আমি ওকে শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেব।” \p \v 23 কিন্তু তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার অনড় দাবিতে তারা উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত তাদের চিৎকারেরই জয় হল। \v 24 তাই পীলাত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। \v 25 বিদ্রোহ ও হত্যার অভিযোগে যে লোকটি কারাগারে বন্দি ছিল ও যাকে তারা চেয়েছিল, তিনি তাকে মুক্তি দিলেন এবং তাদের ইচ্ছার কাছে তিনি যীশুকে সমর্পণ করলেন। \s1 যীশুকে ক্রুশার্পিত করা হল \p \v 26 যীশুকে নিয়ে এগিয়ে চলার পথে কুরীণের\f + \fr 23:26 \fr*\fq কুরীণ\fq*\ft —উত্তর আফ্রিকার একটি নগর।\ft*\f* অধিবাসী শিমোনকে তারা ধরল। সে গ্রাম থেকে শহরে আসছিল। তারা ক্রুশটি তার উপরে চাপিয়ে দিয়ে যীশুর পিছন পিছন সেটি বয়ে নিয়ে যেতে তাকে বাধ্য করল। \v 27 বিস্তর লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল। সেই সঙ্গে ছিল অনেক নারী, যারা তাঁর জন্য শোক ও বিলাপ করছিল। \v 28 যীশু ফিরে তাদের উদ্দেশে বললেন, “ওগো জেরুশালেমের কন্যারা, আমার জন্য তোমরা কেঁদো না, কিন্তু নিজেদের জন্য ও তোমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য কাঁদো। \v 29 কারণ এমন সময় আসবে, যখন তোমরা বলবে, ‘ধন্য সেই বন্ধ্যা নারীরা, যাদের গর্ভ কোনোদিন সন্তানধারণ করেনি, যারা কোনোদিন বুকের দুধ পান করায়নি।’ \v 30 তখন \q1 “ ‘তারা পর্বতসকলের উদ্দেশে বলবে, “আমাদের উপরে পতিত হও!” \q2 আর পাহাড়গুলিকে বলবে, “আমাদের ঢেকে ফেলো!” ’\f + \fr 23:30 \fr*\ft \+xt হোশেয় 10:8\+xt*\ft*\f* \m \v 31 গাছ সতেজ থাকার সময়ই মানুষ যদি এরকম আচরণ করে, তাহলে গাছ যখন শুকিয়ে যাবে, তখন আরও কি না ঘটবে!” \p \v 32 আরও দুজন দুষ্কৃতীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। \v 33 মাথার খুলি নামক স্থানে উপস্থিত হয়ে তারা তাঁকে সেই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ করল, একজনকে তাঁর ডানদিকে, অন্যজনকে তাঁর বাঁদিকে। \v 34 তখন যীশু বললেন, “পিতা, এদের ক্ষমা করো, কারণ এরা জানে না, এরা কী করছে।” আর গুটিকাপাত করে তারা তাঁর পোশাকগুলি ভাগ করে নিল। \p \v 35 লোকেরা দাঁড়িয়ে সবকিছু লক্ষ্য করছিল। এমনকি, সমাজভবনের অধ্যক্ষরাও তাঁকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করল। তারা বলল, “ও অন্যদের বাঁচাত; ও যদি ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট, সেই মনোনীত জন হয়, তাহলে এখন নিজেকে বাঁচাক!” \p \v 36 সৈন্যেরাও উঠে এসে তাঁকে বিদ্রুপ করল। তারা তাঁকে সিরকা দিয়ে বলল, \v 37 “তুমি যদি ইহুদিদের রাজা হও, তাহলে নিজেকে বাঁচাও।” \p \v 38 তাঁর মাথার উপরে একটি লিখিত বিজ্ঞপ্তি ছিল। তাতে লেখা ছিল, \pc “এই ব্যক্তি ইহুদিদের রাজা।” \p \v 39 ক্রুশার্পিত দুষ্কৃতীদের একজন তাঁকে কটূক্তি করে বলল, “তুমিই কি সেই খ্রীষ্ট নও? নিজেকে আর আমাদের বাঁচাও!” \p \v 40 কিন্তু অপর দুষ্কৃতী তাকে তিরস্কার করে বলল, “তুমি কি ঈশ্বরকেও ভয় করো না? তুমিও তো সেই একই দণ্ডভোগ করছ। \v 41 আমরা ন্যায়সংগত দণ্ডভোগ করছি, আমরা যা করেছি, তারই সমুচিত ফলভোগ করছি। কিন্তু এই মানুষটি কোনও অন্যায় করেননি।” \p \v 42 তারপর সে বলল, “যীশু, আপনি যখন নিজের রাজ্যে আসবেন, তখন আমাকে স্মরণ করবেন।” \p \v 43 যীশু তাকে উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, আজই তুমি আমার সঙ্গে পরমদেশে\f + \fr 23:43 \fr*\ft অনুমিত হয়, বিশ্বাসীদের আত্মা, শেষ বিচারের পূর্ব পর্যন্ত, এখানেই বিশ্রাম লাভ করে।\ft*\f* উপস্থিত হবে।” \s1 যীশুর মৃত্যু \p \v 44 তখন দুপুর প্রায় বারোটা। সেই সময় থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশের উপরে অন্ধকার ছেয়ে রইল। \v 45 সূর্যের আলো নিভে গেল। আর মন্দিরের পর্দাটি চিরে দু-টুকরো হল। \v 46 যীশু উচ্চকণ্ঠে বলে উঠলেন, “পিতা, তোমার হাতে আমি আমার আত্মা সমর্পণ করি।” একথা বলে তিনি তাঁর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। \p \v 47 এই সমস্ত ঘটনা প্রত্যক্ষ করে শত-সেনাপতি ঈশ্বরের প্রশংসা করে বললেন, “এই মানুষটি নিঃসন্দেহে ধার্মিক ছিলেন।” \v 48 এই দৃশ্য দেখার জন্য যারা সমবেত হয়েছিল, তারা তা দেখে বুকে আঘাত করতে করতে ফিরে গেল। \v 49 কিন্তু তাঁর পরিচিতজনেরা এবং গালীলের যে মহিলারা তাঁকে অনুসরণ করছিলেন, তাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত ঘটনা লক্ষ্য করলেন। \s1 যীশুর সমাধি \p \v 50 এখন যোষেফ নামে মহাসভার এক সদস্য সেখানে ছিলেন। তিনি ছিলেন সৎ ও ন্যায়পরায়ণ। \v 51 তিনি তাদের সিদ্ধান্তে ও কাজকর্মে সহমত ছিলেন না। তিনি ছিলেন যিহূদিয়ার আরিমাথিয়া নগরের অধিবাসী। তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের আগমনের প্রতীক্ষায় ছিলেন। \v 52 তিনি পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর দেহটি চেয়ে নিলেন। \v 53 তিনি তাঁর দেহটি ক্রুশ থেকে নামিয়ে একখণ্ড লিনেন কাপড়ে জড়িয়ে, পাহাড় কেটে তৈরি করা একটি সমাধিতে রাখলেন। আগে কখনও কাউকে সেখানে সমাধি দেওয়া হয়নি। \v 54 সেদিনটি ছিল প্রস্তুতির দিন, বিশ্রামদিন শুরু হতে অল্প কিছুক্ষণ বাকি ছিল। \p \v 55 গালীল থেকে যীশুর সঙ্গে আগত মহিলারা যোষেফকে অনুসরণ করে সমাধি স্থানটি ও কীভাবে তাঁর দেহটি রাখা হল, তা দেখলেন। \v 56 তারপর তাঁরা বাড়ি ফিরে বিভিন্ন রকম মশলা ও সুগন্ধিদ্রব্য প্রস্তুত করলেন। কিন্তু বিধানের প্রতি বাধ্য হয়ে তাঁরা বিশ্রামদিনে বিশ্রাম করলেন। \c 24 \s1 যীশুর পুনরুত্থান \p \v 1 সপ্তাহের প্রথম দিনে খুব ভোরবেলায়, সেই মহিলারা তাঁদের প্রস্তুত করা মশলা নিয়ে সমাধিস্থানে গেলেন। \v 2 তাঁরা দেখলেন, সমাধির মুখ থেকে পাথরখানি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। \v 3 কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে তাঁরা প্রভু যীশুর দেহটি দেখতে পেলেন না। \v 4 তাঁরা এ বিষয়ে যখন অবাক বিস্ময়ে ভাবছিলেন, তখন বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল পোশাক পরা দুজন পুরুষ হঠাৎ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। \v 5 আতঙ্কে মহিলারা মাটির দিকে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলেন। কিন্তু পুরুষ দুজন তাঁদের বললেন, “তোমরা মৃতদের মধ্যে জীবিতের সন্ধান করছ কেন? \v 6 তিনি এখানে নেই, কিন্তু উত্থাপিত হয়েছেন। তোমাদের সঙ্গে গালীলে থাকার সময়ে তিনি কী বলেছিলেন, মনে করে দেখো। \v 7 তিনি বলেছিলেন, ‘মনুষ্যপুত্রকে পাপী মানুষদের হাতে অবশ্যই সমর্পিত হতে হবে, তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ ও তৃতীয় দিনে পুনরুত্থিত হতে হবে।’ ” \v 8 তখন তাঁর কথাগুলি তাঁদের মনে পড়ে গেল। \p \v 9 সমাধিস্থান থেকে ফিরে এসে তাঁরা এ সমস্ত বিষয় সেই এগারোজন ও অন্য সবাইকে বললেন। \v 10 এরা হলেন মাগ্দালাবাসী মরিয়ম, যোহান্না ও যাকোবের মা মরিয়ম। তাঁদের সঙ্গে আরও অনেকে এই ঘটনার কথা প্রেরিতশিষ্যদের জানালেন। \v 11 কিন্তু তাঁরা মহিলাদের কথা বিশ্বাস করলেন না। কারণ তাঁদের এই সমস্ত কথা তাঁরা আজগুবি বলে মনে করলেন। \v 12 কিন্তু পিতর উঠে সমাধিস্থানের দিকে দৌড়ে গেলেন। তিনি নিচু হয়ে দেখলেন, লিনেন কাপড়ের খণ্ডগুলি পড়ে রয়েছে। বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে কী ঘটেছে ভাবতে ভাবতে তিনি ফিরে গেলেন। \s1 ইম্মায়ুসের পথে \p \v 13 সেদিন, তাঁদের মধ্যে দুজন জেরুশালেম থেকে এগারো কিলোমিটার\f + \fr 24:13 \fr*\ft গ্রিক: ষাট স্টাডিয়া, প্রায় সাত মাইল।\ft*\f* দূরের ইম্মায়ুস নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন। \v 14 তাঁরা পরস্পর বিগত ঘটনাবলি সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করছিলেন। \v 15 তাঁরা যখন পরস্পরের মধ্যে এ সমস্ত আলোচনা করছিলেন, তখন যীশু স্বয়ং উপস্থিত হয়ে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে পথ চলতে লাগলেন; \v 16 কিন্তু দৃষ্টি রুদ্ধ থাকায় তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন না। \p \v 17 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “পথ চলতে চলতে তোমরা পরস্পর কী আলোচনা করছিলে?” \p তাঁরা বিষণ্ণ মুখে থমকে দাঁড়ালেন। \v 18 তাঁদের মধ্যে যাঁর নাম ক্লিয়োপা তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি জেরুশালেমে একমাত্র প্রবাসী যে, এই কয় দিনে সেখানে যা ঘটেছে তার কিছুই আপনি জানেন না?” \p \v 19 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “কী সব ঘটেছে?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “নাসরতের যীশু সম্পর্কিত ঘটনা। তিনি ছিলেন একজন ভাববাদী, ঈশ্বর ও সব মানুষের সাক্ষাতে বাক্যে ও কাজে এক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি। \v 20 প্রধান যাজকেরা ও আমাদের সমাজভবনের অধ্যক্ষরা তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার উদ্দেশে সমর্পিত করল এবং তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করল। \v 21 কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম যে, তিনিই সেই ব্যক্তি, যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করতে চলেছেন। আর তিন দিন হল এই সমস্ত ঘটনা ঘটেছে। \v 22 এছাড়াও, আমাদের কয়েকজন মহিলা আমাদের হতবাক করে দিয়েছেন। তাঁরা আজ খুব ভোরবেলা সমাধিস্থলে গিয়েছিলেন, \v 23 কিন্তু তাঁর দেহের সন্ধান পাননি। তাঁরা এসে আমাদের বললেন যে, তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন লাভ করেছেন। তাঁরা আরও বললেন যে, যীশু জীবিত আছেন। \v 24 তারপর আমাদের কয়েকজন সঙ্গী সমাধিস্থলে গিয়ে মহিলারা যেমন বলেছিলেন, ঠিক সেইমতো দেখলেন, কিন্তু তাঁকে তাঁরা দেখতে পাননি।” \p \v 25 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা কত অবোধ! আর ভাববাদীরা যেসব কথা বলে গেছেন, সেগুলি বিশ্বাস করতে তোমাদের মন কেমন শিথিল! \v 26 এই প্রকার দুঃখ বরণ করার পরই কি খ্রীষ্ট স্বমহিমায় প্রবেশ করতেন না?” \v 27 এরপর মোশি ও সমস্ত ভাববাদী গ্রন্থ থেকে শুরু করে সমগ্র শাস্ত্রে তাঁর সম্পর্কে যা লেখা আছে, সে সমস্তই তিনি তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করলেন। \p \v 28 যে গ্রামে তারা যাচ্ছিলেন, সেখানে উপস্থিত হলে যীশু আরও দূরে এগিয়ে যাওয়ার ভাব দেখালেন। \v 29 কিন্তু তাঁরা তাঁকে সাধাসাধি করে বললেন, “সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, দিনও প্রায় শেষ হয়ে এল, আপনি আমাদের সঙ্গে থাকুন।” তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকার জন্য ভিতরে গেলেন। \p \v 30 তাঁদের সঙ্গে আহারে বসে তিনি রুটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন এবং তা ভেঙে তাঁদের হাতে দিলেন। \v 31 সেই মুহূর্তে তাঁদের চোখ খুলে গেল, আর তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন। কিন্তু যীশু তাঁদের চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। \v 32 তাঁরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাদের সঙ্গে পথ চলতে চলতে তিনি যখন আমাদের কাছে শাস্ত্রের ব্যাখ্যা করছিলেন, তখন কি আমাদের অন্তরে এক আবেগের উত্তাপ অনুভব হচ্ছিল না?” \p \v 33 সেই মুহূর্তে তাঁরা উঠে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। সেখানে সেই এগারোজন এবং তাঁদের সঙ্গীদের তাঁরা দেখতে পেলেন। \v 34 তাঁরা এক স্থানে মিলিত হয়ে বলাবলি করছিলেন, “সত্যিই, প্রভু পুনরুত্থিত হয়েছেন এবং শিমোনকে দর্শন দিয়েছেন।” \v 35 তখন সেই দুজন, পথে কী ঘটেছিল এবং যীশু রুটি ভেঙে দেওয়ার পর তাঁরা কেমনভাবে তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন, সেইসব কথা জানালেন। \s1 শিষ্যদের সামনে যীশুর আবির্ভাব \p \v 36 তাঁরা তখনও এ বিষয়ে আলোচনা করছিলেন, সেই সময় যীশু তাঁদের মধ্যে এসে দাঁড়ালেন এবং তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।” \p \v 37 কোনও ভূত দেখছেন ভেবে তাঁরা ভয়ভীত হলেন ও বিহ্বল হয়ে পড়লেন। \v 38 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হচ্ছো কেন? তোমাদের মনে সংশয়ই বা জাগছে কেন? \v 39 আমার হাত ও পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখো! এ স্বয়ং আমি! আমাকে স্পর্শ করো, দেখো! ভূতের এরকম হাড় মাংস নেই; তোমরা দেখতে পাচ্ছ, আমার তা আছে।” \p \v 40 এই কথা বলার পর তিনি তাঁর দু-হাত ও পা তাঁদের দেখালেন। \v 41 আনন্দে ও বিস্ময়ে তাঁরা তখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না দেখে, যীশু তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে?” \v 42 তাঁরা তাঁকে আগুনে ঝলসানো এক টুকরো মাছ দিলেন। \v 43 তিনি সেটি নিয়ে তাঁদের সামনেই আহার করলেন। \p \v 44 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমাদের সঙ্গে থাকার সময়েই আমি এই কথা বলেছিলাম, মোশির বিধানে, ভাববাদীদের গ্রন্থে ও গীতসংহিতায় আমার সম্পর্কে যা লেখা আছে, তার সবকিছুই পূর্ণ হবে।” \p \v 45 তারপর তিনি তাঁদের মনের দ্বার খুলে দিলেন, যেন তাঁরা শাস্ত্র বুঝতে পারেন। \v 46 তিনি তাঁদের বললেন, “একথা লেখা আছে, খ্রীষ্ট কষ্টভোগ করবেন ও তৃতীয় দিনে মৃতলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন \v 47 এবং জেরুশালেম থেকে শুরু করে সমস্ত জাতির কাছে তাঁরই নামে মন পরিবর্তন ও পাপক্ষমার কথা প্রচার করা হবে। \v 48 আর তোমরাই এ সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী। \v 49 আর দেখো, পিতার প্রতিশ্রুত দান আমি তোমাদের জন্য পাঠিয়ে দিতে যাচ্ছি; কিন্তু ঊর্ধ্বলোক থেকে আগত শক্তি লাভ না করা পর্যন্ত তোমরা এই নগরেই অবস্থান করো।” \s1 যীশুর স্বর্গারোহণ \p \v 50 তারপর তিনি তাঁদের বেথানির কাছাকাছি নিয়ে গিয়ে, তাঁদের দিকে হাত তুলে আশীর্বাদ করলেন। \v 51 আশীর্বাদরত অবস্থাতেই তিনি তাঁদের ছেড়ে গেলেন ও স্বর্গে নীত হলেন। \v 52 তাঁরা তখন তাঁকে প্রণাম জানিয়ে মহা আনন্দে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন \v 53 এবং মন্দিরে নিরন্তর ঈশ্বরের বন্দনা করতে থাকলেন।