\id JON - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h যোনা \toc1 যোনা \toc2 যোনা \toc3 যোনা \mt1 যোনা \c 1 \s1 যোনা সদাপ্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন \p \v 1 সদাপ্রভুর বাণী অমিত্তয়ের পুত্র যোনার কাছে এসে উপস্থিত হল: \v 2 “ওঠো ও নীনবী মহানগরে যাও এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রচার করো, কারণ তাদের দুষ্টতার কথা আমার কান পর্যন্ত পৌঁছেছে।” \p \v 3 কিন্তু যোনা সদাপ্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন এবং তর্শীশের পথ ধরলেন। তিনি জোপ্পা\f + \fr 1:3 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণ: \ft*\fqa যাফো\fqa*\f* বন্দর-নগরে গেলেন এবং সেখান থেকে তর্শীশে যাবে, এমন একটি জাহাজের সন্ধান পেলেন। তিনি জাহাজের ভাড়া দিয়ে তাতে চড়লেন এবং সদাপ্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তর্শীশের পথে সমুদ্রযাত্রা করলেন। \p \v 4 তারপর সদাপ্রভু সমুদ্রে এক প্রচণ্ড বাতাস পাঠালেন, এমনই প্রবল এক ঝড় উঠল যে, জাহাজ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হল। \v 5 সমস্ত নাবিক ভয়ভীত হয়ে উঠল ও নিজের নিজের দেবতার কাছে কাঁদতে লাগল। এবং জাহাজ হালকা করার জন্য তারা জাহাজের মালপত্র সমুদ্রে ফেলে দিল। \p কিন্তু যোনা জাহাজের খোলে নেমে গেলেন। সেখানে শুয়ে পড়ে তিনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলেন। \v 6 তখন নাবিকদের কর্মকর্তা তার কাছে গিয়ে বললেন, “ওহে, তুমি কি করে ঘুমিয়ে আছ? উঠে পড়ো ও তোমার দেবতাকে ডাকো! হয়তো তিনি আমাদের প্রতি দৃষ্টি দেবেন এবং আমরা ধ্বংস হব না।” \p \v 7 এরপর নাবিকেরা পরস্পরকে বলল, “এসো, আমরা গুটিকাপাত করে দেখি, এই দুর্যোগের জন্য আমাদের মধ্যে কে দায়ী।” তারা যখন গুটিকাপাত করল, যোনার নামে গুটি উঠল। \v 8 তাই তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “আমাদের বলো, আমাদের উপর এই সমস্ত সংকট আনার জন্য কে দায়ী? তুমি কী করো? তুমি এসেছই বা কোথা থেকে? তোমার দেশের নাম কী? তোমার জাতি কী?” \p \v 9 যোনা উত্তর দিলেন, “আমি একজন হিব্রু এবং আমি সদাপ্রভুর উপাসনা করি। তিনি স্বর্গের ঈশ্বর, যিনি সমুদ্র ও ভূমি নির্মাণ করেছেন।” \p \v 10 এতে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হল ও জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কী করেছ?” কারণ তারা জানতে পেরেছিল যে তিনি সদাপ্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন এবং যোনা ইতিমধ্যে সেকথা তাদের বলেছিলেন। \p \v 11 সমুদ্র ক্রমেই উত্তাল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। তাই, তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “সমুদ্রকে শান্ত করার জন্য তোমার প্রতি আমাদের কী করা উচিত?” \p \v 12 তিনি উত্তর দিলেন, “আমাকে তুলে তোমরা সমুদ্রে ফেলে দাও। তখন তা শান্ত হয়ে যাবে। আমি জানি যে, আমার দোষের জন্যই এই মহা ঝড় তোমাদের উপরে এসে পড়েছে।” \p \v 13 তা না করে সেই লোকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করল, যেন তারা জাহাজটিকে ডাঙায় নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু তারা পেরে উঠল না, বরং সমুদ্র আগের থেকেও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল। \v 14 তারা তখন সদাপ্রভুর কাছে কাঁদতে লাগল আর বলল, “হে সদাপ্রভু, এই লোকটির প্রাণ নেওয়ার জন্য তুমি আমাদের মরতে দিয়ো না। এক নির্দোষ মানুষকে হত্যা করার জন্য আমাদের দোষী সাব্যস্ত কোরো না। কারণ হে সদাপ্রভু, তোমার যেমন ইচ্ছা, তুমি তেমনই করেছ।” \v 15 তারপর তারা যোনাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দিল; এতে উত্তাল সমুদ্র শান্ত হল। \v 16 এর ফলে জাহাজের লোকেরা সদাপ্রভুকে অত্যন্ত ভয় করল এবং তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ ও বিভিন্ন প্রকার মানত করল। \s1 যোনার প্রার্থনা \p \v 17 এদিকে সদাপ্রভু যোনাকে গিলে ফেলার জন্য একটি বিশাল মাছ পাঠালেন এবং যোনা তিন দিন ও তিনরাত সেই মাছের পেটে রইলেন। \c 2 \nb \v 1 সেই মাছের পেটের মধ্যে থেকে যোনা, তার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন। \v 2 তিনি বললেন: \q1 “আমার দুর্দশার সময়ে আমি সদাপ্রভুকে ডাকলাম, \q2 আর তিনি আমাকে উত্তর দিলেন। \q1 পাতালের গভীরতম স্থান থেকে আমি সাহায্য চাইলাম, \q2 আর তুমি আমার কান্না শুনলে। \q1 \v 3 তুমি আমাকে গভীর জলে, \q2 সমুদ্রের গর্ভে নিক্ষেপ করলে, \q2 আর প্রকাণ্ড জলস্রোত আমাকে ঘিরে ধরল; \q1 তোমার সকল ঢেউ, তোমার সমস্ত তরঙ্গ, \q2 আমাকে বয়ে নিয়ে গেল। \q1 \v 4 আমি বললাম, ‘আমাকে তোমার দৃষ্টি থেকে \q2 দূর করা হয়েছে; \q1 তবুও আমি আবার \q2 তোমার পবিত্র মন্দিরের দিকে তাকাব।’ \q1 \v 5 আমার চারপাশের জলরাশি আমাকে ভীত করল, \q2 অগাধ জলরাশি আমাকে ঘিরে ধরল; \q2 সাগরের আগাছা আমার মাথায় জড়িয়ে গেল। \q1 \v 6 আমি সমুদ্রে পর্বতসমূহের তলদেশ পর্যন্ত ডুবে গেলাম; \q2 নিচের পৃথিবী চিরতরে আমাকে বন্দি করল। \q1 কিন্তু হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, \q2 তুমি গভীর গর্ত থেকে আমার প্রাণকে তুলে ধরলে। \b \q1 \v 7 “আমার প্রাণ যখন আমার মধ্যে ক্ষীণ হচ্ছিল, \q2 সদাপ্রভু, আমি তোমাকে স্মরণ করলাম, \q1 আর আমার প্রার্থনা তোমার কাছে গেল \q2 তোমার পবিত্র মন্দিরে উপস্থিত হল। \b \q1 \v 8 “যারা অসার প্রতিমাদের প্রতি আসক্ত থাকে, \q2 নিজেদের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম তারা পরিত্যাগ করে। \q1 \v 9 কিন্তু আমি, ধন্যবাদের গান গেয়ে, \q2 তোমার কাছে নৈবেদ্য উৎসর্গ করব। \q1 আমি যা মানত করেছি, তা আমি পূর্ণ করব। \q2 আমি বলব, পরিত্রাণ সদাপ্রভুর কাছ থেকেই আসে।” \p \v 10 পরে সদাপ্রভু সেই মাছকে আদেশ দিলে, তা যোনাকে বমি করে শুকনো ভূমিতে ফেলে দিল। \c 3 \s1 যোনার নীনবী যাত্রা \p \v 1 তারপর, সদাপ্রভুর বাণী দ্বিতীয়বার যোনার কাছে উপস্থিত হল: \v 2 “তুমি মহানগরী নীনবীতে যাও ও আমি যে বার্তা তোমাকে দেব, তা গিয়ে তুমি ঘোষণা করো।” \p \v 3 যোনা সদাপ্রভুর কথার বাধ্য হয়ে নীনবীতে গেলেন। সেই সময়, নীনবী ছিল একটি অত্যন্ত বৃহৎ নগর যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে তিন দিন সময় লাগত। \v 4 যোনা নগরে প্রবেশ করে একদিনের পথ গেলেন এবং ঘোষণা করলেন, “আজ থেকে চল্লিশ দিন পার হলে নীনবী ধ্বংস হবে।” \v 5 নীনবীবাসীরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করল। তারা উপবাস ঘোষণা করল এবং সকলে তাদের মহত্তম জন থেকে শুরু করে নগণ্যতম জন পর্যন্ত, প্রত্যেকে চট\f + \fr 3:5 \fr*\ft শোকের বস্ত্র\ft*\f* পরল। \p \v 6 যোনার সতর্কবাণী যখন নীনবীর রাজার কাছে পৌঁছাল, তিনি তার সিংহাসন থেকে উঠলেন, তার রাজকীয় পোশাক খুলে ফেলে চট পরলেন ও ভস্মের উপরে বসলেন। \v 7 রাজা নীনবীতে ঘোষণা করলেন: \pmo “রাজা ও তাঁর বিশিষ্ট ব্যক্তি সকলের আদেশ হল এই: \pm “মানুষ অথবা পশু, গোপাল বা মেষপাল, কেউই যেন কোনও কিছুর স্বাদ গ্রহণ না করে; তারা যেন কেউ কিছু ভোজন বা পান না করে। \v 8 কিন্তু মানুষ বা পশু, সকলকেই চট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হোক। সকলেই আগ্রহভরে ঈশ্বরকে ডাকুক। তারা তাদের মন্দ আচরণ ও তাদের হিংস্রতা ত্যাগ করুক। \v 9 কে জানে? ঈশ্বর হয়তো নরমচিত্ত হবেন এবং করুণাবিশিষ্ট হয়ে তাঁর প্রচণ্ড ক্রোধ থেকে মন পরিবর্তন করবেন, যেন আমরা বিনষ্ট না হই।” \p \v 10 ঈশ্বর যখন দেখলেন যে তারা কী করেছে এবং কীভাবে তারা তাদের মন্দ আচরণ থেকে মন ফিরিয়েছে, ঈশ্বর মন পরিবর্তন করলেন এবং যে ধ্বংস করার ভয় তাদের দেখিয়েছিলেন তা করলেন না। \c 4 \s1 ঈশ্বরের করুণার প্রতি যোনার ক্রোধ প্রকাশ \p \v 1 কিন্তু যোনার কাছে এটি খুব অন্যায় মনে হল এবং তাঁর ক্রোধ উৎপন্ন হল। \v 2 তিনি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে সদাপ্রভু, আমি যখন বাড়িতে ছিলাম তখনই কি আমি একথা বলিনি? সেই কারণেই তর্শীশে পালিয়ে গিয়ে আমি এটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলাম। আমি জানতাম যে, তুমি এক কৃপাময় ও স্নেহশীল ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর ও প্রেমে মহান। তুমি এমন ঈশ্বর, যে শাস্তি দিতে উদ্যত হয়েও মন পরিবর্তন করো। \v 3 এখন, হে সদাপ্রভু, তুমি আমার প্রাণ নিয়ে নাও, কারণ বেঁচে থাকার চেয়ে আমার মরে যাওয়া ভালো।” \p \v 4 কিন্তু সদাপ্রভু উত্তরে বললেন, “তোমার রাগ করা কি ঠিক হচ্ছে?” \p \v 5 যোনা তখন বাইরে গেলেন ও নগরের পূর্বদিকে এক স্থানে বসলেন। সেখানে তিনি নিজের জন্য একটি ছাউনি নির্মাণ করে, তার ছায়ায় বসলেন এবং নগরের প্রতি কী ঘটবে, তা দেখার অপেক্ষায় রইলেন। \v 6 তারপর সদাপ্রভু ঈশ্বর সেখানে একটি দ্রাক্ষালতা\f + \fr 4:6 \fr*\ft কোনো কোনো সংস্করণে, \ft*\fqa এরণ্ড বা রেড়ি গাছ\fqa*\f* উৎপন্ন করলেন এবং সেটিকে যোনার মাথার উপর পর্যন্ত বৃদ্ধি করালেন, যেন সেটি তার মাথায় ছায়া দেয় ও তার অস্বস্তির আরাম হয়। দ্রাক্ষালতাটির জন্য যোনা ভীষণ আনন্দিত হলেন। \v 7 কিন্তু পরের দিন ভোরবেলায়, ঈশ্বর একটি কীট পাঠালেন যা দ্রাক্ষালতাটিকে দংশন করলে সেটি শুকিয়ে গেল। \v 8 সূর্য ওঠার পরে, ঈশ্বর এক উষ্ণ পূবের বাতাস পাঠালেন এবং সূর্য যোনার মাথায় এমন প্রখর তাপ দিতে লাগল যে, যোনা বিবর্ণ হয়ে নিজের মৃত্যু কামনা করে বললেন, “বেঁচে থাকার চেয়ে আমার মরে যাওয়া ভালো।” \p \v 9 কিন্তু ঈশ্বর যোনাকে বললেন, “দ্রাক্ষালতাটির জন্য তোমার রাগ করা কি ঠিক হচ্ছে?” \p যোনা বললেন, “হ্যাঁ ঠিক হচ্ছে, আমি এত রেগে আছি যে, আমি মরে গেলেই ভালো হত।” \p \v 10 কিন্তু সদাপ্রভু বললেন, “তুমি এই দ্রাক্ষালতাটি সম্পর্কে চিন্তিত হয়েছ, যদিও তুমি এটি রোপণ করোনি বা তা বেড়ে উঠতে সাহায্য করোনি। এক রাত্রির মধ্যে এটি অঙ্কুরিত হল ও এক রাত্রির মধ্যেই এটি শুকিয়ে গেল। \v 11 কিন্তু নীনবীতে 1,20,000 এরও বেশি মানুষ আছে, যারা জানে না কোনটা ডান হাত ও কোনটা বাঁ হাত\f + \fr 4:11 \fr*\ft এর মানে নীনবীর লোকেরা আত্মিক অন্ধকারে বাস করছিল\ft*\f*। তেমনই অনেক পশুও আছে। তাহলে, আমিও কি সেই নীনবী মহানগরীর জন্য চিন্তিত হব না?”