\id JOB - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h ইয়োব \toc1 ইয়োব \toc2 ইয়োব \toc3 ইয়ো \mt1 ইয়োব \c 1 \s1 প্রস্তাবনা \p \v 1 ঊষ দেশে একজন লোক বসবাস করতেন, যাঁর নাম ইয়োব। তিনি ছিলেন অনিন্দনীয় ও ন্যায়পরায়ণ; তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন এবং কুকর্ম এড়িয়ে চলতেন। \v 2 তাঁর সাত ছেলে ও তিন মেয়ে ছিল, \v 3 এবং 7,000 মেষ, 3,000 উট, 500 জোড়া বলদ, 500 গাধি ও প্রচুর সংখ্যক দাস-দাসী তাঁর মালিকানাধীন ছিল। প্রাচ্যদেশীয় সব লোকজনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ধনী মানুষ। \p \v 4 তাঁর ছেলেরা পালা করে তাদের জন্মদিনে নিজেদের বাড়িতে ভোজের আয়োজন করত, এবং তাদের তিন বোনকেও তারা তাদের সঙ্গে ভোজনপান করার জন্য নিমন্ত্রণ করত। \v 5 ভোজপর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর, ইয়োব তাদের শুচিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা করতেন। ভোরবেলায় তাদের প্রত্যেকের জন্য তিনি এই ভেবে হোমবলি উৎসর্গ করতেন যে, “হয়তো আমার সন্তানেরা পাপ করেছে ও মনে মনে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়ে বসেছে।” এই ছিল ইয়োবের বহুদিনের নিয়মিত অভ্যাস। \p \v 6 একদিন স্বর্গদূতেরা\f + \fr 1:6 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, ঈশ্বরের পুত্রেরা\ft*\f* সদাপ্রভুর সামনে নিজেদের উপস্থিত করার জন্য এলেন, এবং শয়তানও\f + \fr 1:6 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, শয়তান শব্দের অর্থ প্রতিপক্ষ\ft*\f* তাদের সঙ্গে এল। \v 7 সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথা থেকে এলে?” \p শয়তান সদাপ্রভুকে উত্তর দিল, “পৃথিবীর সর্বত্র এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করে এলাম।” \p \v 8 পরে সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “আমার দাস ইয়োবের দিকে কি তোমার নজর পড়েছে? পৃথিবীতে তার মতো আর কেউ নেই; সে অনিন্দনীয় ও ন্যায়পরায়ণ এমন এক মানুষ, যে ঈশ্বরকে ভয় করে এবং কুকর্ম এড়িয়ে চলে।” \p \v 9 “ইয়োব কি বিনা স্বার্থে ঈশ্বরকে ভয় করে?” শয়তান উত্তর দিল \v 10 “তুমি কি তার চারপাশে এবং তার পরিবারের ও তার সবকিছুর চারপাশে বেড়া দিয়ে রাখোনি? তুমি তার হাতের কাজে আশীর্বাদ করেছ, যেন তার মেষপাল ও পশুপাল দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। \v 11 কিন্তু এখন তোমার হাত বাড়াও এবং তার কাছে থাকা সবকিছুকে আঘাত করো, আর সে নিশ্চয় তোমার মুখের উপরেই তোমাকে অভিশাপ দেবে।” \p \v 12 সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, তবে তার সবকিছুর উপরে তোমার অধিকার থাকল, কিন্তু স্বয়ং সেই লোকটির উপরে তুমি হস্তক্ষেপ কোরো না।” \p পরে শয়তান সদাপ্রভুর কাছ থেকে চলে গেল। \p \v 13 একদিন ইয়োবের ছেলেমেয়েরা যখন তাদের বড়দাদার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করছিল ও দ্রাক্ষারস পান করছিল, \v 14 তখন ইয়োবের কাছে এক দূত এসে বলল, “বলদেরা জমি চাষ করছিল ও পাশেই গাধারা চরছিল, \v 15 আর শিবায়ীয়েরা এসে আক্রমণ করে সেগুলি নিয়ে চলে গেল। তারা তরোয়াল চালিয়ে দাসদের মেরে ফেলল, এবং একমাত্র আমিই আপনাকে এই খবর দেওয়ার জন্য পালিয়ে আসতে পেরেছি!” \p \v 16 সে তখনও কথা বলছিল, ইতিমধ্যে আর এক দূত এসে বলল, “আকাশ থেকে ঈশ্বরের আগুন নেমে এসে মেষপাল ও দাসদের পুড়িয়ে ছারখার করে দিল, আর একমাত্র আমিই আপনাকে এই খবর দেওয়ার জন্য পালিয়ে আসতে পেরেছি!” \p \v 17 সে তখনও কথা বলছিল, ইতিমধ্যে আর এক দূত এসে বলল, “কলদীয়রা তিনটি হানাদার দল গড়ে এসে আপনার উটগুলির উপর আক্রমণ চালাল ও সেগুলি নিয়ে চলে গেল। তারা তরোয়াল চালিয়ে দাসদের মেরে ফেলল, আর একমাত্র আমিই আপনাকে এই খবর দেওয়ার জন্য পালিয়ে আসতে পেরেছি!” \p \v 18 সে তখনও কথা বলছিল, ইতিমধ্যে আর এক দূত এসে বলল, “আপনার ছেলেমেয়েরা তাদের বড়দাদার বাড়িতে বসে খাওয়াদাওয়া করছিল ও দ্রাক্ষারস পান করছিল, \v 19 এমন সময় হঠাৎ করে মরুভূমি থেকে প্রচণ্ড এক ঝড় এসে আছড়ে পড়ল এবং সেই বাড়ির চার কোনায় আঘাত হানল। সেই বাড়িটি তাদের উপরে ভেঙে পড়ল ও তারা মারা গেল, আর একমাত্র আমিই আপনাকে এই খবর দেওয়ার জন্য পালিয়ে আসতে পেরেছি!” \p \v 20 একথা শুনে, ইয়োব উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন ও তাঁর মাথা কামিয়ে ফেললেন। পরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তিনি আরাধনা করে \v 21 বললেন: \q1 “মায়ের গর্ভ থেকে আমি উলঙ্গ হয়ে এসেছি, \q2 আর উলঙ্গ অবস্থাতেই আমি চলে যাব।\f + \fr 1:21 \fr*\ft অথবা, সেখানে ফিরে যাব\ft*\f* \q1 সদাপ্রভু দিয়েছেন আর সদাপ্রভুই ফিরিয়ে নিয়েছেন; \q2 সদাপ্রভুর নাম প্রশংসিত হোক।” \p \v 22 এসব কিছুতে, ইয়োব অন্যায়াচরণের দোষে ঈশ্বরকে দোষী সাব্যস্ত করে পাপ করলেন না। \b \c 2 \p \v 1 অন্য আর একদিন স্বর্গদূতেরা\f + \fr 2:1 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, ঈশ্বরের পুত্রেরা\ft*\f* সদাপ্রভুর সামনে নিজেদের উপস্থিত করার জন্য এলেন, এবং শয়তানও তাদের সঙ্গে নিজেকে তাঁর সামনে উপস্থিত করার জন্য এল। \v 2 আর সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথা থেকে এলে?” \p শয়তান সদাপ্রভুকে উত্তর দিল, “পৃথিবীর সর্বত্র এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করে এলাম।” \p \v 3 পরে সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “আমার দাস ইয়োবের দিকে কি তোমার নজর পড়েছে? পৃথিবীতে তার মতো আর কেউ নেই; সে অনিন্দনীয় ও ন্যায়পরায়ণ এমন এক মানুষ, যে সদাপ্রভুকে ভয় করে ও কুকর্ম এড়িয়ে চলে। আর সে এখনও তার সততা বজায় রেখেছে, যদিও বিনা কারণে তার সর্বনাশ করার জন্য তুমি তার বিরুদ্ধে আমাকে প্রণোদিত করেছ।” \p \v 4 “চামড়ার জন্য চামড়া!” শয়তান উত্তর দিল। “একজন মানুষ তার নিজের জীবনের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে পারে। \v 5 কিন্তু এখন তোমার হাত বাড়াও ও তার মাংসে ও হাড়ে আঘাত হানো, আর সে নিশ্চয় তোমার মুখের উপরেই তোমাকে অভিশাপ দেবে।” \p \v 6 সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, সে তোমারই হাতে রইল; কিন্তু তোমাকে তার প্রাণটি অব্যাহতি দিতে হবে।” \p \v 7 অতএব শয়তান সদাপ্রভুর কাছ থেকে চলে গেল এবং ইয়োবের পায়ের তলা থেকে তার মাথার তালু পর্যন্ত বেদনাদায়ক ঘা উৎপন্ন করে তাঁকে পীড়িত করল। \v 8 তখন ইয়োব এক টুকরো খাপরা তুলে নিলেন এবং ছাই-গাদায় বসে নিজের গা চুলকাতে লাগলেন। \p \v 9 তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, “এখনও কি তুমি তোমার সততা বজায় রাখার চেষ্টা করছ? ঈশ্বরকে অভিশাপ দাও ও মরে যাও!” \p \v 10 তিনি উত্তর দিলেন, “তুমি একজন মূর্খ\f + \fr 2:10 \fr*\ft হিব্রু শব্দটি নৈতিক ত্রুটির অর্থ বহনকারী\ft*\f* মহিলার মতো কথা বলছ। আমরা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে মঙ্গলই গ্রহণ করব আর দুঃখকষ্ট গ্রহণ করব না?” \p এসব কিছুতে, ইয়োব তাঁর কথাবার্তার মাধ্যমে পাপ করেননি। \b \p \v 11 ইয়োবের তিন বন্ধু, তৈমনীয় ইলীফস, শূহীয় বিল্‌দদ ও নামাথীয় সোফর যখন তাঁর উপর এসে পড়া সব বিপত্তির কথা শুনতে পেলেন, তখন তারা ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে সহানুভূতি জানানোর ও সান্তনা দেওয়ার জন্য সহমত প্রকাশ করে একত্রিত হলেন। \v 12 দূর থেকে ইয়োবকে দেখে তাদের তাঁকে চিনতে খুব কষ্ট হল; তারা জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন, এবং তাদের আলখাল্লাগুলি ছিঁড়ে ফেললেন ও মাথায় ধুলো ছড়ালেন। \v 13 পরে তাঁর সাথে তারা সাত দিন, সাত রাত মাটিতে বসে থাকলেন। কেউ তাঁকে কোনও কথা বললেন না, কারণ তারা দেখলেন যে তাঁর পীড়া খুবই কষ্টদায়ক। \c 3 \s1 ইয়োব কথা বলেন \p \v 1 তারপর, ইয়োব মুখ খুললেন ও নিজের জন্মদিনকে অভিশাপ দিলেন। \v 2 তিনি বললেন: \q1 \v 3 “আমার জন্মদিনটি বিলুপ্ত হোক, \q2 আর সে রাত যা বলেছিল, ‘একটি ছেলে এসেছে গর্ভে!’ \q1 \v 4 সেদিনটি—অন্ধকারাচ্ছন্ন হোক; \q2 ঊর্ধ্বস্থ ঈশ্বর যেন সেদিনের বিষয়ে চিন্তিত না হন; \q2 কোনও আলো যেন তাকে আলোকিত না করে। \q1 \v 5 আরও একবার আঁধার ও ঘন তমসা তাকে অধিকার করুক; \q2 এক মেঘ তাকে ঢেকে দিক; \q2 কালিমা তাকে আচ্ছন্ন করুক। \q1 \v 6 সেরাতটি—ঘন অন্ধকারে কবলিত হোক; \q2 বছরের দিনগুলিতে সেটি সংযুক্ত না হোক \q2 তা অন্য কোনও মাসে গণিত না হোক। \q1 \v 7 সেরাতটি বন্ধ্যা হোক; \q2 কোনও আনন্দধ্বনি তাতে শোনা না যাক। \q1 \v 8 যারা দিনগুলিকে\f + \fr 3:8 \fr*\ft অথবা, সমুদ্রকে\ft*\f* শাপ দেয়, তারা সেদিনটিকে শাপ দিক, \q2 যারা লিবিয়াথনকে জাগাতে প্রস্তুত হয়ে আছে। \q1 \v 9 সেদিনের প্রভাতি তারা অন্ধকারময় হোক; \q2 বৃথাই তা দিবালোকের জন্য অপেক্ষা করুক \q2 আর ভোরের প্রথম আলোকরশ্মি না দেখুক, \q1 \v 10 কারণ আমার দু-চোখ থেকে কষ্ট লুকাতে \q2 তারা আমার জন্য গর্ভের দুয়ার বন্ধ করেনি। \b \q1 \v 11 “জন্মের সময় আমি মরলাম না কেন, \q2 আর গর্ভ থেকে বেরোনোর সময়ই বা আমি মরলাম না কেন? \q1 \v 12 জানুগুলি কেন আমাকে গ্রহণ করল \q2 আর স্তনগুলিই বা কেন আমার যত্ন নিল? \q1 \v 13 তবে তো এখন আমি শান্তিতে শায়িত থাকতাম; \q2 ঘুমিয়ে থাকতাম ও নিতাম বিশ্রাম \q1 \v 14 সেই রাজা ও শাসকদের সাথে, \q2 যারা নিজেদের জন্য সেই স্থানগুলি নির্মাণ করেছিলেন যা ধ্বংসস্তূপ হয়ে পড়ে আছে, \q1 \v 15 সেই অধিপতিদের সাথে, যাদের কাছে সোনা ছিল, \q2 যারা তাদের বাড়িগুলি রুপোয় পরিপূর্ণ করেছিলেন। \q1 \v 16 অথবা কেন আমাকে জমিতে লুকানো হয়নি অজাত এক শিশুর মতো, \q2 এক সদ্যজাত শিশুর মতো যে কখনও দিনের আলো দেখেনি? \q1 \v 17 সেখানে দুষ্টেরা আন্দোলন থেকে ক্ষান্ত হয়, \q2 আর সেখানে শ্রান্তজনেরা বিশ্রাম পায়। \q1 \v 18 বন্দিরাও তাদের স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করে; \q2 তারা আর ক্রীতদাস-চালকের চিৎকার শোনে না। \q1 \v 19 ছোটো ও বড়ো—সবাই সেখানে আছে, \q2 আর ক্রীতদাসেরা তাদের প্রভুদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। \b \q1 \v 20 “কেন দুর্দশাগ্রস্তকে আলো দেওয়া হল, \q2 আর কেন তিক্তপ্রাণকে জীবন দেওয়া হল, \q1 \v 21 যারা কামনা করে সেই মৃত্যু যা তাদের কাছে আসে না, \q2 যারা তা গুপ্তধনের চেয়েও বেশি করে খোঁজে, \q1 \v 22 কবরে গিয়ে যারা আহ্লাদিত হয় \q2 আর যারা মহানন্দে উল্লসিত হয়? \q1 \v 23 কেন সেই মানুষকে যার পথ গুপ্ত \q2 জীবন দেওয়া হয়, \q2 যাকে ঈশ্বর ঘেরাটোপের মধ্যে রেখেছেন? \q1 \v 24 কারণ দীর্ঘশ্বাস আমার দৈনিক খাদ্য হয়েছে; \q2 আমার গভীর আর্তনাদ জলের মতো ঝরে পড়ে। \q1 \v 25 আমি যে ভয় করেছিলাম তাই হয়েছে; \q2 যে আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঘটেছে। \q1 \v 26 আমার শান্তি নেই, বিরাম নেই; \q2 বিশ্রাম নেই, শুধু অশান্তি আছে।” \c 4 \s1 ইলীফস \p \v 1 পরে তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “যদি কেউ তোমার সাথে কথা বলতে চায়, তুমি কি অধৈর্য হবে? \q2 কিন্তু কে কথা না বলে থাকতে পারে? \q1 \v 3 ভাবো দেখি, তুমি কীভাবে অনেককে শিক্ষা দিয়েছ, \q2 দুর্বল হাত তুমি কীভাবে শক্ত করেছ। \q1 \v 4 তোমার কথা হোঁচট খাওয়া লোকদের সাহায্য করেছে; \q2 কম্পমান জানুগুলি তুমি শক্ত করেছ। \q1 \v 5 কিন্তু এখন দুঃখকষ্ট তোমার কাছে এসেছে, আর তুমি হতাশ হয়েছ; \q2 তা তোমায় আঘাত করেছে, আর তুমি আতঙ্কিত হয়েছ। \q1 \v 6 তোমার ধর্মনিষ্ঠা কি তোমার প্রত্যয় নয় \q2 আর তোমার অনিন্দনীয় পথই কি তোমার প্রত্যাশা নয়? \b \q1 \v 7 “এখন বিবেচনা করো: কে নির্দোষ হয়েও বিনষ্ট হয়েছে? \q2 কোথাও কি কোনও ন্যায়পরায়ণ লোক ধ্বংস হয়েছে? \q1 \v 8 আমি লক্ষ্য করেছি, যারা অনিষ্ট চাষ করে \q2 আর যারা অস্থিরতা বোনে, তারা তাই কাটে। \q1 \v 9 ঈশ্বরের নিঃশ্বাসে তারা বিনষ্ট হয়; \q2 তাঁর ক্রোধের বিস্ফোরণে তারা বিলীন হয়ে যায়। \q1 \v 10 সিংহেরা গর্জন ও হুঙ্কার করতে পারে, \q2 তবুও মহাশক্তিশালী সিংহদেরও দাঁত ভেঙে যায়। \q1 \v 11 শিকারের অভাবে সিংহ বিনষ্ট হয়, \q2 সিংহী শাবকেরা ছত্রভঙ্গ হয়। \b \q1 \v 12 “গোপনে একটি কথা আমার কাছে পৌঁছাল, \q2 সেকথার ফিস্‌ফিসানি আমার কানে বাজল। \q1 \v 13 রাতের অশান্তিকর স্বপ্নের মধ্যে, \q2 যখন মানুষ গভীর নিদ্রায় মগ্ন থাকে, \q1 \v 14 ভয় ও কাঁপুনি আমায় গ্রাস করল \q2 আমার সব অস্থি কেঁপে উঠল। \q1 \v 15 এক আত্মা\f + \fr 4:15 \fr*\ft অথবা, বাতাস\ft*\f* আমার সামনে দিয়ে ধীরে বয়ে গেল, \q2 আর আমার শরীরের লোম খাড়া হল। \q1 \v 16 তা থেমে গেল, \q2 কিন্তু আমি বলতে পারিনি সেটি কী। \q1 আমার চোখের সামনে দাঁড়িয়েছিল এক অবয়ব, \q2 আর আমি মৃদু এক স্বর শুনলাম: \q1 \v 17 ‘মরণশীল মানুষ কি ঈশ্বরের চেয়েও বেশি ধার্মিক হতে পারে? \q2 এক সবল মানুষও কি তার নির্মাতার চেয়েও বেশি পবিত্র হতে পারে? \q1 \v 18 ঈশ্বর যদি তাঁর দাসেদের বিশ্বাস না করেন, \q2 তিনি যদি তাঁর স্বর্গদূতদেরও দোষারোপ করেন, \q1 \v 19 তবে মাটির বাড়িতে বসবাসকারী সেই মানুষদের, \q2 যাদের উৎপত্তি সেই ধুলোতে, \q2 এক পতঙ্গের চেয়েও সহজে যারা নিষ্পিষ্ট হয়! তাদের কী হবে? \q1 \v 20 ভোর থেকে গোধূলি বেলা পর্যন্ত তারা চূর্ণবিচূর্ণ হয়; \q2 লোকচক্ষুর অন্তরালে, তারা চিরতরে বিনষ্ট হয়। \q1 \v 21 তাদের তাঁবুর দড়াদড়ি কি উপড়ে ফেলা হয় না, \q2 যেন বিনা বিজ্ঞতায় তারা মারা যায়?’ \b \c 5 \q1 \v 1 “ডাকতে চাইলে ডাকো, কিন্তু কে তোমায় উত্তর দেবে? \q2 পবিত্রজনেদের মধ্যে তুমি কার শরণাপন্ন হবে? \q1 \v 2 বিরক্তিভাব মূর্খকে হত্যা করে, \q2 আর হিংসা সরল লোককে বধ করে। \q1 \v 3 আমি স্বয়ং এক মূর্খকে মূল বিস্তার করতে দেখেছি, \q2 কিন্তু হঠাৎ তার বাড়ি অভিশপ্ত হয়ে গেল। \q1 \v 4 তার সন্তানেরা নিরাপত্তাহীন হল, \q2 রক্ষক বিনা কাছারিতে নিষ্পেষিত হল। \q1 \v 5 ক্ষুধার্ত লোক তার ফসল খেয়ে ফেলে, \q2 কাঁটাঝোপ থেকেও সেগুলি তুলে নেয়, \q2 আর তৃষ্ণার্তরা তার সম্পত্তির জন্য আকাঙ্ক্ষিত হয়। \q1 \v 6 কারণ মাটি থেকে কষ্ট উৎপন্ন হয় না, \q2 জমি থেকেও অনিষ্ট অঙ্কুরিত হয় না। \q1 \v 7 তবুও মানুষ অসুবিধা ভোগ করার জন্যই জন্মায়, \q2 ঠিক যেভাবে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ উপরের দিকে উঠে যায়। \b \q1 \v 8 “কিন্তু আমি যদি তোমার জায়গায় থাকতাম, আমি ঈশ্বরের কাছে আবেদন জানাতাম; \q2 তাঁর কাছেই আমার উদ্দেশ্য ব্যক্ত করতাম। \q1 \v 9 তিনি এমন সব আশ্চর্য কাজ করেন যা অনুভব করা যায় না, \q2 এমন সব অলৌকিক কাজ করেন যা গুনে রাখা যায় না। \q1 \v 10 তিনি ধরণীতে বৃষ্টির জোগান দেন; \q2 তিনি গ্রামাঞ্চলে জল পাঠান। \q1 \v 11 সহজসরল লোককে তিনি উন্নত করেন, \q2 আর শোকার্তদের নিরাপত্তা দেন। \q1 \v 12 ধূর্তদের পরিকল্পনা তিনি ব্যর্থ করেন, \q2 যেন তাদের হাত কোনও সাফল্য লাভ না করে। \q1 \v 13 জ্ঞানীদের তিনি তাদের ধূর্ততায় ধরে ফেলেন, \q2 আর শঠের ফন্দি দ্রুত নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। \q1 \v 14 দিনের বেলাতেই তাদের উপর অন্ধকার নেমে আসে, \q2 মধ্যাহ্নে তারা রাতের মতো হাতড়ে বেড়ায়। \q1 \v 15 অভাবগ্রস্তকে তিনি শব্দবাণ থেকে রক্ষা করেন; \q2 তিনি তাদের শক্তিশালীদের খপ্পর থেকে রক্ষা করেন। \q1 \v 16 তাই দরিদ্র আশায় বুক বাঁধে, \q2 আর অবিচার নিজের মুখে কুলুপ আঁটে। \b \q1 \v 17 “ধন্য সেই জন যাকে ঈশ্বর সংশোধন করেন; \q2 তাই সর্বশক্তিমানের\f + \fr 5:17 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, শাদ্দাই-এর; এখানে ও ইয়োবের পুস্তকের সর্বত্রই একই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে\ft*\f* শাস্তি তুচ্ছজ্ঞান কোরো না। \q1 \v 18 কারণ তিনি আঘাত দেন, কিন্তু শুশ্রুষাও করেন; \q2 তিনি ক্ষতিগ্রস্ত করেন, কিন্তু তাঁর হাত সুস্থও করে তোলে। \q1 \v 19 ছয়টি বিপর্যয় থেকে তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন; \q2 সপ্তমটিতেও কোনও অনিষ্ট তোমাকে স্পর্শ করবে না। \q1 \v 20 দুর্ভিক্ষের সময় তিনি তোমাকে মৃত্যু থেকে, \q2 আর যুদ্ধের সময় তরোয়ালের আঘাত থেকে রক্ষা করবেন। \q1 \v 21 জিভের কশাঘাত থেকে তুমি সুরক্ষিত থাকবে, \q2 আর বিনাশকালেও ভয় পাবে না। \q1 \v 22 ধ্বংস ও দুর্ভিক্ষ দেখে তুমি হাসবে, \q2 আর বুনো পশুদেরও ভয় পাবে না। \q1 \v 23 কারণ জমির পাথরগুলির সঙ্গে তুমি চুক্তিবদ্ধ হবে, \q2 আর বুনো পশুরাও তোমার সঙ্গে শান্তিতে থাকবে। \q1 \v 24 তুমি জানবে যে তোমার তাঁবু নিরাপদ; \q2 তুমি তোমার সম্পত্তির পরিমাণ যাচাই করবে ও দেখবে একটিও হারায়নি। \q1 \v 25 তুমি জানবে যে তোমার সন্তানেরা অসংখ্য হবে, \q2 ও তোমার বংশধরেরা মাটির ঘাসের মতো হবে। \q1 \v 26 পূর্ণ প্রাণশক্তি নিয়ে তুমি কবরে যাবে, \q2 যেভাবে শস্যের আঁটিগুলি যথাসময়ে সংগৃহীত হয়। \b \q1 \v 27 “আমরা এর পরীক্ষা করেছি, আর তা সত্যি। \q2 তাই একথা শোনো ও নিজের জীবনে প্রয়োগ করো।” \c 6 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “শুধু যদি আমার মনস্তাপ মাপা যেত \q2 আর আমার সব দুর্দশা দাঁড়িপাল্লায় তোলা যেত! \q1 \v 3 তবে তা নিঃসন্দেহে সমুদ্রের বালুকণাকেও ছাপিয়ে যেত— \q2 এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে আমার কথাগুলি দুর্দমনীয় হয়েছে। \q1 \v 4 সর্বশক্তিমানের তিরগুলি আমাকে বিদ্ধ করেছে, \q2 আমার আত্মা সেগুলির বিষে জর্জরিত; \q2 ঈশ্বরের আতঙ্ক আমার বিরুদ্ধে শ্রেণীবদ্ধ হয়েছে। \q1 \v 5 বুনো গাধা ঘাস পেয়ে কি ডাক ছাড়ে? \q2 বা বলদ জাব পেয়ে কি গর্জন করে? \q1 \v 6 বিস্বাদ খাদ্য কি বিনা লবণে খাওয়া যায়? \q2 বা ম্যালোর\f + \fr 6:6 \fr*\ft রোমশ ডাঁটা ও পাতা এবং বেগুনী-লাল রংয়ের ফুলবিশিষ্ট এক ধরনের বুনো উদ্ভিদ\ft*\f* রসে কি কোনও স্বাদ আছে? \q1 \v 7 আমি তা স্পর্শ করতে চাই না; \q2 এ ধরনের খাদ্য আমাকে অসুস্থ করে তোলে। \b \q1 \v 8 “আহা, আমি যদি অনুরোধ জানাতে পারতাম, \q2 যেন আমার আশা ঈশ্বর পূরণ করেন, \q1 \v 9 যেন ঈশ্বর আমাকে চূর্ণ করতে ইচ্ছুক হয়ে, \q2 তাঁর হাত বাড়িয়ে আমার প্রাণ ধ্বংস করেন! \q1 \v 10 তবে তখনও আমি এই সান্ত্বনা পেতাম— \q2 নির্মম যন্ত্রণার মধ্যেও আনন্দিত হতাম— \q2 যে আমি সেই পবিত্রজনের কথা অগ্রাহ্য করিনি। \b \q1 \v 11 “আমার কী শক্তি আছে, যে এখনও আমি আশা রাখব? \q2 কী সম্ভাবনা আছে, যে আমি ধৈর্যশীল থাকব? \q1 \v 12 পাথরের মতো শক্তি কি আমার আছে? \q2 আমার দেহ কি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি? \q1 \v 13 নিজেকে সাহায্য করার কোনও শক্তি কি আমার আছে, \q2 যেহেতু সাফল্য আমার কাছ থেকে অপবাহিত হয়েছে? \b \q1 \v 14 “যে কেউ বন্ধুর প্রতি দয়া দেখাতে কার্পণ্য বোধ করে \q2 সে সর্বশক্তিমানের ভয় ত্যাগ করে। \q1 \v 15 কিন্তু আমার ভাইরা সবিরাম জলপ্রবাহের মতো অনির্ভরযোগ্য, \q2 সেই জলপ্রবাহের মতো যা তখনই উপচে পড়ে \q1 \v 16 যখন গলা বরফের দ্বারা তা কালো হয়ে যায় \q2 আর তরল তুষারে ফুলেফেঁপে ওঠে, \q1 \v 17 কিন্তু সুখা মরশুমে তা আর প্রবাহিত হয় না, \q2 আর গ্রীষ্মকালে খাত থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। \q1 \v 18 বণিক দল তাদের গতিপথ ছেড়ে অন্য পথে সরে যায়; \q2 তারা পতিত জমিতে গিয়ে বিনষ্ট হয়। \q1 \v 19 টেমার বণিক দল জলের খোঁজ করে, \q2 শিবার ভ্রমণকারী বণিকেরা আশা নিয়ে তাকায়। \q1 \v 20 তারা আকুল হয়, কারণ তারা আত্মবিশ্বাসী হয়েছিল; \q2 তারা সেখানে পৌঁছায়, শুধু নিরাশ হওয়ার জন্য। \q1 \v 21 এখন তোমরাও প্রমাণ দিয়েছ যে তোমরা কোনও কাজের নও; \q2 তোমরা ভয়ংকর কিছু দেখে ভয় পেয়েছ। \q1 \v 22 আমি কি কখনও বলেছি, ‘আমাকে কিছু দাও, \q2 তোমাদের ধনসম্পত্তি থেকে আমার জন্য এক মুক্তিপণ দাও, \q1 \v 23 শত্রুর হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করো, \q2 নিষ্ঠুর লোকের খপ্পর থেকে আমাকে মুক্ত করো’? \b \q1 \v 24 “আমাকে শিক্ষা দাও, ও আমি শান্ত থাকব; \q2 আমায় দেখিয়ে দাও কোথায় আমি ভুল করেছি। \q1 \v 25 সরল কথাবার্তা কতই না যন্ত্রণাদায়ক! \q2 কিন্তু তোমাদের যুক্তিতর্ক কী প্রমাণ করে? \q1 \v 26 আমি যা বলেছি তা কি তোমরা শুধরে দিতে চাও, \q2 আর আমার মরিয়া কথাবার্তাকে কি বাতাসের মতো গণ্য করতে চাও? \q1 \v 27 পিতৃহীনের জন্য তোমরা এমনকি গুটিকাপাতের দান চালবে \q2 আর তোমাদের বন্ধুকে বিক্রি করে দেবে। \b \q1 \v 28 “কিন্তু এখন দয়া করে আমার দিকে তাকাও। \q2 আমি কি তোমাদের মুখের উপরে মিথ্যা কথা বলব? \q1 \v 29 কঠোরতা কমাও, অন্যায় কোরো না; \q2 পুনর্বিবেচনা করো, কারণ আমার সততা বিপন্নতার সম্মুখীন।\f + \fr 6:29 \fr*\ft অথবা, আমার ধার্মিকতা এখনও স্থির আছে\ft*\f* \q1 \v 30 আমার ঠোঁটে কি কোনও দুষ্টতা আছে? \q2 আমার মুখ কি বিদ্বেষ ঠাহর করতে পারে না? \b \c 7 \q1 \v 1 “পৃথিবীতে কি নশ্বর মানুষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না? \q2 ভাড়াটে মানুষের মতো তার দিনগুলি কি নয়? \q1 \v 2 ক্রীতদাস যেমন সান্ধ্য ছায়ার জন্য ব্যাকুল হয়, \q2 বা দিনমজুর বেতনের অপেক্ষায় থাকে, \q1 \v 3 সেভাবে ব্যর্থতাযুক্ত মাস আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, \q2 আর দুর্দশাযুক্ত রাত আমার জন্য নিরূপিত হয়েছে। \q1 \v 4 শুয়ে শুয়ে আমি ভাবি, ‘কখন উঠব?’ \q2 রাত বেড়েই গেল, আর আমি ভোর পর্যন্ত বিছানায় ছটফট করে গেলাম। \q1 \v 5 আমার শরীর পোকা ও খোস-পাঁচড়ায় ভরে উঠেছে, \q2 আমার গায়ের চামড়ায় ফাটল ধরেছে ও তা পেকে গিয়েছে। \b \q1 \v 6 “আমার দিনগুলি তাঁতির মাকুর চেয়েও দ্রুতগামী, \q2 আর কোনও আশা ছাড়াই সেগুলি শেষ হয়ে যায়। \q1 \v 7 হে ঈশ্বর, মনে রেখো, যে আমার জীবন এক শ্বাসমাত্র; \q2 আমার দু-চোখ আর কখনও আনন্দ দেখতে পাবে না। \q1 \v 8 যে চোখ আজ আমায় দেখতে পাচ্ছে তা আর কখনও আমায় দেখতে পাবে না; \q2 তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না। \q1 \v 9 মেঘ যেমন মুহূর্তে মিলিয়ে যায়, \q2 সেভাবে যে কবরে\f + \fr 7:9 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, সিয়োলে, বা পাতালে\ft*\f* যায় সে আর ফিরে আসে না। \q1 \v 10 সে আর তার বাড়িতে ফিরে আসবে না; \q2 তার স্থান তাকে আর চিনতেও পারবে না। \b \q1 \v 11 “তাই আমি আর নীরব থাকব না; \q2 আমার আত্মার যন্ত্রণায় আমি কথা বলব, \q2 আমার প্রাণের তিক্ততায় আমি অভিযোগ জানাব। \q1 \v 12 আমি কি সমুদ্র না সমুদ্রদানব \q2 যে তুমি আমাকে পাহারা দিয়ে রেখেছ? \q1 \v 13 যখন আমি ভাবি যে আমার বিছানা আমাকে সান্ত্বনা দেবে \q2 আর আমার শয্যা আমার অসুখ দূর করবে, \q1 \v 14 তখনও তুমি বিভিন্ন স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাও \q2 আর বিভিন্ন দর্শন দিয়ে আমাকে আতঙ্কিত করো, \q1 \v 15 তাতে আমার এই শরীরের চেয়েও \q2 শ্বাসরোধ ও মৃত্যুও আমার কাছে বেশি পছন্দসই হয়। \q1 \v 16 আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি; আমি চিরকাল বাঁচতে চাই না। \q2 আমায় একা থাকতে দাও; আমার জীবনের দিনগুলি অর্থহীন। \b \q1 \v 17 “মানবজাতি কী যে তুমি তাদের এত বিরাট কিছু মনে করো, \q2 যে তুমি তাদের প্রতি এত মনোযোগ দাও, \q1 \v 18 যে প্রতিদিন সকালে তুমি তাদের পরখ করো \q2 আর প্রতি মুহূর্তে তাদের পরীক্ষা করো? \q1 \v 19 তুমি কি কখনও আমার দিক থেকে তোমার দৃষ্টি ফেরাবে না, \q2 বা ক্ষণিকের জন্যও কি আমায় একা থাকতে দেবে না? \q1 \v 20 আমি যদি পাপ করেই থাকি, আমাদের সব কাজ যাঁর দৃষ্টিগোচর, \q2 সেই তোমার প্রতি আমি কী করেছি? \q1 তুমি আমাকে কেন তোমার লক্ষ্যবস্তু করেছ? \q2 আমি কি তোমার কাছে বোঝা হয়েছি?\f + \fr 7:20 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, আমি নিজের কাছেই এক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি\ft*\f* \q1 \v 21 তুমি কেন আমার অপরাধ মার্জনা করছ না \q2 ও আমার পাপ ক্ষমা করছ না? \q1 কারণ অচিরেই আমি ধুলোয় মিশে যাব; \q2 তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।” \c 8 \s1 বিল্‌দদ \p \v 1 পরে শূহীয় বিল্‌দদ উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “তুমি আর কতক্ষণ এসব কথা বলবে? \q2 তোমার কথাবার্তা তো প্রচণ্ড ঝড়ের মতো। \q1 \v 3 ঈশ্বর কি ন্যায়বিচার বিকৃত করেন? \q2 সর্বশক্তিমান কি যা ন্যায্য তা বিকৃত করেন? \q1 \v 4 তোমার সন্তানেরা যখন তাঁর বিরুদ্ধে পাপ করেছিল, \q2 তখন তিনি তাদের পাপের উপযুক্ত শাস্তি তাদের দিয়েছিলেন। \q1 \v 5 কিন্তু তুমি যদি আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের অন্বেষণ করো, \q2 ও সর্বশক্তিমানের কাছে সনির্বন্ধ মিনতি জানাও, \q1 \v 6 তুমি যদি পবিত্র ও সৎ হও, \q2 এখনও তিনি তোমার হয়ে উঠে দাঁড়াবেন \q2 ও তোমাকে তোমার সমৃদ্ধশালী দশায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। \q1 \v 7 তোমার সূত্রপাত নিরহঙ্কার বলে মনে হবে, \q2 তোমার ভবিষ্যতও খুব সমৃদ্ধশালী হবে। \b \q1 \v 8 “সাবেক প্রজন্মকে জিজ্ঞাসা করো \q2 ও খুঁজে বের করো তাদের পূর্বপুরুষেরা কী শিখেছিলেন, \q1 \v 9 কারণ আমরা তো মাত্র কালই জন্মেছি ও কিছুই জানি না, \q2 ও পৃথিবীতে আমাদের দিনগুলি তো এক ছায়ামাত্র। \q1 \v 10 তারা কি তোমাদের শিক্ষা দেবেন না ও বলবেন না? \q2 তারা কি তাদের বুদ্ধিভাণ্ডার থেকে বাণী বের করে আনবেন না? \q1 \v 11 যেখানে কোনও জলাভূমি নেই সেখানে কি নলখাগড়া বেড়ে ওঠে? \q2 জল ছাড়া কি নলবন মাথা চাড়া দেয়? \q1 \v 12 বাড়তে বাড়তেই ও আকাটা অবস্থাতেই, \q2 সেগুলি ঘাসের চেয়েও দ্রুত শুকিয়ে যায়। \q1 \v 13 যারা ঈশ্বরকে ভুলে যায়, তাদেরও এই গতি হয়; \q2 অধার্মিকদের আশাও এভাবে বিনষ্ট হয়। \q1 \v 14 তারা যার উপরে নির্ভর করে তা ভঙ্গুর; \q2 যার উপরে তারা ভরসা করে তা মাকড়সার এক জাল। \q1 \v 15 তারা জালের উপরে হেলান দেয়, কিন্তু তা সরে যায়; \q2 তারা তা জড়িয়ে ধরে থাকে, কিন্তু তা ধরে রাখতে পারে না। \q1 \v 16 তারা রোদ পাওয়া জলসেচিত এক চারাগাছের মতো, \q2 যা বাগানের সর্বত্র শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে; \q1 \v 17 সেটির মূল পাষাণ-পাথরের গাদায় জড়িয়ে যায় \q2 ও তা পাথরের মধ্যে এক স্থান খুঁজে নেয়। \q1 \v 18 কিন্তু যখন সেটিকে তার অকুস্থল থেকে উপড়ে ফেলা হয়, \q2 তখন সেই স্থানটিই তাকে অস্বীকার করে বলে, ‘আমি তোমাকে কখনও দেখিনি।’ \q1 \v 19 নিঃসন্দেহে তার প্রাণ শুকিয়ে যায়, \q2 ও\f + \fr 8:19 \fr*\ft অথবা, নিঃসন্দেহে তার সব আনন্দ হল এই যে\ft*\f* সেই মাটি থেকে অন্যান্য চারাগাছ উৎপন্ন হয়। \b \q1 \v 20 “নিঃসন্দেহে ঈশ্বর তাকে কখনও প্রত্যাখ্যান করেন না যে অনিন্দনীয়, \q2 বা অনিষ্টকারীদের হাতও শক্তিশালী করেন না। \q1 \v 21 তিনি এখনও তোমার মুখ হাসিতে \q2 ও তোমার ঠোঁট আনন্দধ্বনিতে পূর্ণ করতে পারেন। \q1 \v 22 তোমার শত্রুরা লজ্জায় আচ্ছন্ন হবে, \q2 ও দুষ্টদের তাঁবু আর থাকবে না।” \c 9 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “বাস্তবিক, আমি জানি যে তা সত্যি। \q2 কিন্তু ঈশ্বরের সামনে নিছক নশ্বর মানুষ কীভাবে তাদের নির্দোষিতা প্রমাণ করবে? \q1 \v 3 যদিও তারা তাঁর সাথে বাদানুবাদ করতে চায়, \q2 তবুও হাজার বারের মধ্যে একবারও তারা তাঁর কথার জবাব দিতে পারে না। \q1 \v 4 তাঁর জ্ঞান অগাধ, তাঁর শক্তি অসীম। \q2 তাঁর বিরোধিতা করে কে অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছে? \q1 \v 5 পর্বতগুলির অজান্তে তিনি তাদের স্থানান্তরিত করেন \q2 ও তাঁর ক্রোধে সেগুলি উচ্ছেদ করেন। \q1 \v 6 তিনি পৃথিবীকে স্বস্থান থেকে নাড়িয়ে দেন, \q2 ও তার স্তম্ভগুলিকে টলিয়ে দেন। \q1 \v 7 তিনি সূর্যকে বারণ করেন ও তা দীপ্তি দেয় না; \q2 তিনি নক্ষত্রদের আলো নিভিয়ে দেন। \q1 \v 8 তিনি একাই আকাশমণ্ডলের বিস্তার ঘটান, \q2 ও সমুদ্রের ঢেউগুলিকে পদদলিত করেন। \q1 \v 9 তিনি সপ্তর্ষি\f + \fr 9:9 \fr*\ft অথবা, সিংহরাশি\ft*\f* ও কালপুরুষ, \q2 কৃত্তিকা ও দক্ষিণের নক্ষত্রপুঞ্জের নির্মাতা। \q1 \v 10 তিনি এমন সব আশ্চর্য কাজ করেন যা অনুধাবন করা যায় না, \q2 এমন সব অলৌকিক কাজ করেন যা গুনে রাখা যায় না। \q1 \v 11 তিনি যখন আমাকে পার করে চলে যান, আমি তাঁকে দেখতে পাই না; \q2 তিনি যখন কাছ দিয়ে যান, আমি তাঁকে চিনতে পারি না। \q1 \v 12 তিনি যদি কেড়ে নেন, কে তাঁকে থামাতে পারবে? \q2 কে তাঁকে বলতে পারবে, ‘তুমি কী করছ?’ \q1 \v 13 ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রাখেন না; \q2 রহবের\f + \fr 9:13 \fr*\ft রহব হল সেই পৌরাণিক সমুদ্রদানবের নাম, যা প্রাচীন সাহিত্যে বিশৃঙ্খলার প্রতিনিধিত্বকারী\ft*\f* বাহিনীও তাঁর পদতলে ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকে। \b \q1 \v 14 “কীভাবে তবে আমি তাঁর সাথে বাদানুবাদ করব? \q2 কীভাবে আমি তাঁর সঙ্গে তর্ক করার জন্য শব্দ খুঁজে পাব? \q1 \v 15 আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও, তাঁকে জবাব দিতে পারিনি; \q2 আমার বিচারকের কাছে শুধু আমি দয়াভিক্ষাই করতে পেরেছি। \q1 \v 16 আমি যদিও তাঁকে ডেকেছি ও তিনি সাড়া দিয়েছেন, \q2 তাও আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করবেন। \q1 \v 17 এক ঝড় পাঠিয়ে তিনি আমাকে চূর্ণ করবেন, \q2 ও অকারণেই আমার ক্ষতস্থানগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। \q1 \v 18 তিনি আমাকে দম নেওয়ার সুযোগ দেবেন না \q2 কিন্তু দুর্দশা দিয়ে আমাকে আচ্ছন্ন করে তুলবেন। \q1 \v 19 এটি যদি শক্তির বিষয় হয়, তবে তিনি শক্তিমান! \q2 ও এটি যদি বিচার্য বিষয় হয়, তবে কে তাঁর\f + \fr 9:19 \fr*\ft অথবা, আমার\ft*\f* বিরুদ্ধ আপত্তি তুলবে? \q1 \v 20 আমি যদি নির্দোষও হতাম, তাও আমার মুখই আমাকে দোষারোপ করত। \q2 আমি যদি অনিন্দনীয় হতাম, তাও তা আমায় দোষী সাব্যস্ত করত। \b \q1 \v 21 “যদিও আমি অনিন্দনীয়, \q2 আমি নিজের বিষয়ে চিন্তিত নই; \q2 আমার নিজের জীবনকেই আমি ঘৃণা করি। \q1 \v 22 এসবই সমান; তাই আমি বলি, \q2 ‘অনিন্দনীয় ও দুষ্ট উভয়কেই তিনি ধ্বংস করেন।’ \q1 \v 23 এক কশা যখন আকস্মিক মৃত্যু ডেকে আনে, \q2 তিনি তখন নির্দোষের হতাশা দেখে বিদ্রুপ করেন। \q1 \v 24 দেশ\f + \fr 9:24 \fr*\ft অথবা, পৃথিবী\ft*\f* যখন দুষ্টের হাতে গিয়ে পড়ে, \q2 তখন তিনি সেখানকার বিচারকদের চোখ বেঁধে দেন। \q2 যদি তিনি এ কাজ না করেন, তবে কে তা করে? \b \q1 \v 25 “আমার দিনগুলি একজন ডাকহরকরার চেয়েও দ্রুতগামী; \q2 সেগুলি আনন্দের কোনও আভাস ছাড়াই উড়ে যায়। \q1 \v 26 নলখাগড়ার নৌকার মতো সেগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়, \q2 যেভাবে ঈগল পাখি তার শিকারের উপরে নেমে আসে। \q1 \v 27 আমি যদি বলি, ‘আমি আমার অভিযোগ ভুলে যাব, \q2 আমি আমার অভিব্যক্তি পালটে ফেলব, ও হাসব,’ \q1 \v 28 তাও আমি এখনও আমার সব দুঃখকষ্টকে ভয় করি, \q2 কারণ আমি জানি তুমি আমাকে নির্দোষ গণ্য করবে না। \q1 \v 29 যেহেতু আমি ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছি, \q2 তবে কেন আমি অনর্থক সংগ্রাম করব? \q1 \v 30 আমি যদিও সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেলি \q2 ও পরিষ্কার করার সোডা দিয়ে আমার হাত পরিষ্কার করি, \q1 \v 31 তাও তুমি আমাকে পাঁকে ভরা খন্দে ডোবাবে \q2 যেন আমার পোশাকও আমায় ঘৃণা করে। \b \q1 \v 32 “তিনি আমার মতো নিছক এক নশ্বর মানুষ নন যে আমি তাঁকে উত্তর দেব, \q2 ও আদালতে আমরা পরস্পরের সম্মুখীন হব। \q1 \v 33 শুধু যদি আমাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার মতো কেউ থাকত, \q2 যদি আমাদের একসঙ্গে মিলিত করার মতো কেউ থাকত, \q1 \v 34 যদি আমার কাছ থেকে ঈশ্বরের লাঠি দূর করার মতো কেউ থাকত, \q2 যেন তাঁর আতঙ্ক আমাকে আর আতঙ্কিত করতে না পারে। \q1 \v 35 তবে তাঁকে ভয় না করে আমি কথা বলতে পারতাম, \q2 কিন্তু এখন আমার যা অবস্থা, আমি তা পারব না। \b \c 10 \q1 \v 1 “আমি আমার এই জীবনকে ঘৃণা করি; \q2 তাই আমি আমার অভিযোগকে লাগামছাড়া হতে দেব \q2 ও আমার প্রাণের তিক্ততায় কথা বলব। \q1 \v 2 আমি ঈশ্বরকে বলব: আমাকে দোষী সাব্যস্ত কোরো না, \q2 কিন্তু আমাকে বলে দাও আমার বিরুদ্ধে তোমার কী অভিযোগ আছে। \q1 \v 3 আমার উপরে জুলুম চালাতে, \q2 তোমার হাতের কাজকে পদদলিত করতে কি তোমার আনন্দ হয়, \q2 যদিও দুষ্টদের পরিকল্পনা দেখে তোমার হাসি পায়? \q1 \v 4 তোমার কি মানুষের মতো চোখ আছে? \q2 তুমি কি নশ্বর মানুষের মতো দেখতে পাও? \q1 \v 5 তোমার আয়ু কি নশ্বর মানুষের মতো \q2 বা তোমার জীবনকাল কি বলশালী এক মানুষের মতো \q1 \v 6 যে তোমাকে আমার দোষ খুঁজে বেড়াতে হবে \q2 ও আমার পাপ প্রমাণ করতে হবে— \q1 \v 7 যদিও তুমি জানো যে আমি দোষী নই \q2 ও কেউই তোমার হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করতে পারবে না? \b \q1 \v 8 “তোমার হাত আমাকে গড়ে তুলেছে ও আমাকে নির্মাণ করেছে। \q2 এখন কি তুমি ঘুরে দাঁড়িয়ে আমাকে ধ্বংস করবে? \q1 \v 9 মনে রেখো যে তুমি মাটির মতো করে আমাকে গড়ে তুলেছ। \q2 এখন কি তুমি আবার আমাকে মাটিতে মিশিয়ে দেবে? \q1 \v 10 তুমি কি আমাকে দুধের মতো ঢেলে দাওনি \q2 ও পনিরের মতো আমাকে ঘন করোনি, \q1 \v 11 চর্ম-মাংস দিয়ে আমাকে আচ্ছাদিত করোনি \q2 এবং অস্থি ও মাংসপেশী দিয়ে আমাকে একসঙ্গে সংযুক্ত করোনি? \q1 \v 12 তুমি আমাকে জীবন দিয়েছ ও আমার প্রতি দয়া দেখিয়েছ, \q2 ও তোমার দূরদর্শিতায় আমার আত্মাকে পাহারা দিয়েছ। \b \q1 \v 13 “কিন্তু তোমার অন্তরে তুমি এসব গুপ্ত রেখেছিলে, \q2 ও আমি জানি যে তোমার মনে এই ছিল: \q1 \v 14 আমি যদি পাপ করি, তবে তুমি আমার প্রতি লক্ষ্য রাখবে \q2 ও আমার অপরাধ ক্ষমা করবে না। \q1 \v 15 আমি যদি দোষী—তবে আমার প্রতি হায়! \q2 আমি যদি নির্দোষও হয়ে থাকি, তাও আমি মাথা তুলতে পারব না, \q1 যেহেতু আমি লজ্জায় পরিপূর্ণ \q2 ও আমার দুঃখদুর্দশায় ডুবে আছি।\f + \fr 10:15 \fr*\ft অথবা, আমি ডুবে আছি ও আমার দুঃখদুর্দশার বিষয়ে অবহিত আছি\ft*\f* \q1 \v 16 আমি যদি আমার মাথা তুলি, তবে তুমি এক সিংহের মতো চুপিসাড়ে আমাকে অনুসরণ করবে \q2 ও আবার আমার বিরুদ্ধে তোমার অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করবে। \q1 \v 17 তুমি আমার বিরুদ্ধে নতুন নতুন সাক্ষী এনেছ \q2 ও আমার প্রতি তোমার ক্রোধ বৃদ্ধি পেয়েছে; \q2 তোমার সৈন্যবাহিনী আমার বিরুদ্ধে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়েছে। \b \q1 \v 18 “তুমি কেন তবে আমাকে গর্ভ থেকে বের করে আনলে? \q2 কোনও চোখ আমাকে দেখার আগে আমার মৃত্যু হলেই ভালো হত। \q1 \v 19 আমি অজাত অবস্থায় থাকলেই ভালো হত, \q2 বা গর্ভ থেকে সোজা কবরে চলে যেতে পারলেই ভালো হত! \q1 \v 20-21 আমার জীবনের অল্প কয়েকটি দিন কি প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে না? \q2 আমার কাছ থেকে সরে যাও যেন সেই স্থানে যাওয়ার আগে, \q1 আমি এক মুহূর্তের আনন্দ উপভোগ করতে পারি \q2 যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না, \q1 বিষাদ ও নিরেট অন্ধকারের সেই দেশ, \q2 \v 22 গভীর রাতের সেই দেশ, \q1 নিরেট অন্ধকারের ও বিশৃঙ্খলার সেই দেশ, \q2 যেখানে আলোও অন্ধকারের সমান।” \c 11 \s1 সোফর \p \v 1 পরে নামাথীয় সোফর উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “এসব কথা কি উত্তর ছাড়াই থেকে যাবে? \q2 এই বাচাল লোকটি কি সমর্থন পেয়েই যাবে? \q1 \v 3 তোমার বাজে কথা কি অন্যান্য লোকদের চুপ করিয়ে রাখবে? \q2 তুমি যখন বিদ্রুপ করছ তখন কি কেউ তোমাকে তিরস্কার করবে না? \q1 \v 4 তুমি ঈশ্বরকে বলেছ, ‘আমার বিশ্বাস অটুট \q2 ও তোমার দৃষ্টিতে আমি নির্মল।’ \q1 \v 5 আহা, আমি চাই ঈশ্বর কথা বলুন, \q2 তিনি তোমার বিরুদ্ধে তাঁর ঠোঁট খুলুন \q1 \v 6 ও তোমার কাছে জ্ঞানের রহস্য উন্মোচন করুন, \q2 যেহেতু প্রকৃত জ্ঞানের দুটি দিক আছে। \q2 জেনে রাখো: ঈশ্বর তোমার কয়েকটি পাপ ভুলেও গিয়েছেন। \b \q1 \v 7 “তুমি কি ঈশ্বরের রহস্যগুলির গভীরতা মাপতে পারো? \q2 সর্বশক্তিমানের সীমানার রহস্যভেদ করতে পারো? \q1 \v 8 সেগুলি ঊর্ধ্বস্থ আকাশের চেয়েও উঁচু—তুমি কী করতে পারো? \q2 সেগুলি নিম্নস্থ পাতালের চেয়েও গভীর—তুমি কী জানতে পারো? \q1 \v 9 তাদের মাপ পৃথিবীর চেয়েও দীর্ঘ \q2 ও সমুদ্রের চেয়েও প্রশস্ত। \b \q1 \v 10 “তিনি এসে যদি তোমায় জেলখানায় বন্দি করেন \q2 ও বিচারসভা বসান, তবে কে তাঁর বিরোধিতা করবে? \q1 \v 11 নিশ্চয় তিনি প্রতারকদের চিনতে পারেন; \q2 ও তিনি যখন অনিষ্ট দেখেন, তখন কি তিনি তার হিসেব রাখেন না? \q1 \v 12 কিন্তু হীনবুদ্ধি কখনোই জ্ঞানী হতে পারবে না \q2 যেভাবে বুনো গর্দভশাবক মানুষ হয়ে জন্মাতে পারে না।\f + \fr 11:12 \fr*\ft অথবা, বুনো গাধা পোষ-মানা অবস্থায় জন্ম নেয় না\ft*\f* \b \q1 \v 13 “তবুও তুমি যদি তাঁর প্রতি তোমার অন্তর উৎসর্গ করো \q2 ও তাঁর দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, \q1 \v 14 তুমি যদি তোমার হাতে লেগে থাকা পাপ ঝেড়ে ফেলো \q2 ও তোমার তাঁবুতে কোনও অমঙ্গল বসবাস করতে না দাও, \q1 \v 15 তবে, দোষমুক্ত হয়ে, তুমি তোমার মুখ তুলবে; \q2 তুমি সুস্থির থাকবে ও ভয় করবে না। \q1 \v 16 নিশ্চয় তুমি তোমার দুর্দশা ভুলে যাবে, \q2 প্রবাহিত জলের মতো শুধু তা স্মরণ করবে। \q1 \v 17 জীবন মধ্যাহ্নের চেয়েও উজ্জ্বল হবে, \q2 ও অন্ধকার সকালের মতো হয়ে যাবে। \q1 \v 18 তুমি নিশ্চিন্ত হবে, যেহেতু আশা আছে; \q2 তুমি সুরক্ষিত থাকবে ও নিরাপদে বিশ্রাম ভোগ করবে। \q1 \v 19 তুমি শুয়ে পড়বে, ও কেউ তোমাকে ভয় দেখাবে না, \q2 ও অনেকেই তোমার সাহায্যপ্রার্থী হবে। \q1 \v 20 কিন্তু দুর্জনদের চোখ নিস্তেজ হবে, \q2 ও পরিত্রাণ তাদের কাছ থেকে দূরে পালাবে; \q2 তাদের আশা মৃত্যুকালীন খাবিতে পরিণত হবে।” \c 12 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “নিঃসন্দেহে একমাত্র তোমরাই জনসাধারণ, \q2 ও প্রজ্ঞা তোমাদের সাথেই লুপ্ত হয়ে যাবে! \q1 \v 3 কিন্তু আমারও তোমাদের মতো এক মন আছে; \q2 আমি তোমাদের চেয়ে নিকৃষ্ট নই। \q2 এসব কথা কে না জানে? \b \q1 \v 4 “আমি আমার বন্ধুদের কাছে উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছি, \q2 যদিও আমি ঈশ্বরকে ডাকতাম ও তিনি আমায় উত্তর দিতেন— \q2 ধার্মিক ও অনিন্দনীয় হওয়া সত্ত্বেও নিছক উপহাসের এক পাত্রে পরিণত হয়েছি! \q1 \v 5 যারা অরামে আছে, তারা দুর্ভাগ্য-পীড়িত লোকদের এত অবজ্ঞা করে \q2 যেন পা পিছলে পড়ে যাওয়াই তাদের পরিণতি। \q1 \v 6 লুঠেরাদের তাঁবু নিরুপদ্রুত থাকে, \q2 ও যারা ঈশ্বরকে জ্বালাতন করে তারা নিরাপদে থাকে— \q2 তারা ঈশ্বরের হাতেই থাকে।\f + \fr 12:6 \fr*\ft অথবা, তাদের ঈশ্বর (দেবতা) তাদের হাতের মুঠোয় থাকে\ft*\f* \b \q1 \v 7 “কিন্তু পশুদের জিজ্ঞাসা করো, ও তারা তোমাকে শিক্ষা দেবে, \q2 বা আকাশের পাখিদের জিজ্ঞাসা করো, ও তারাও তোমায় বলে দেবে; \q1 \v 8 বা পৃথিবীকে বলো, ও তা তোমাকে শিক্ষা দেবে, \q2 বা সমুদ্রের মাছই তোমাকে খবর দিক। \q1 \v 9 এদের মধ্যে কে জানে না \q2 যে সদাপ্রভুর হাতই এসব গড়ে তুলেছে? \q1 \v 10 তাঁর হাতেই প্রত্যেকটি প্রাণীর জীবন \q2 ও সমগ্র মানবজাতির শ্বাস গচ্ছিত আছে। \q1 \v 11 কান কি শব্দ পরখ করে না \q2 যেভাবে জিভ খাদ্যের স্বাদ চাখে? \q1 \v 12 প্রবীণেরা কি প্রজ্ঞার অধিকারী নন? \q2 সুদীর্ঘ জীবন কি বুদ্ধি নিয়ে আসে না? \b \q1 \v 13 “প্রজ্ঞা ও পরাক্রম ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত বিষয়; \q2 পরামর্শ ও বুদ্ধি তাঁরই। \q1 \v 14 তিনি যা ভাঙেন তা পুনর্নির্মাণ করা যায় না; \q2 তিনি যাদের বন্দি করেন তাদের কেউ মুক্ত করতে পারে না। \q1 \v 15 তিনি যদি জলধারা আটকে রাখেন, তবে খরা\f + \fr 12:15 \fr*\ft দেশে খরা\ft*\f* হয়; \q2 তিনি যদি তা বাঁধনছাড়া হতে দেন, তবে তা দেশ প্লাবিত করে। \q1 \v 16 পরাক্রম ও অন্তর্দৃষ্টি তাঁর অধিকারভুক্ত বিষয়; \q2 প্রতারিত ও প্রতারক উভয়ই তাঁর। \q1 \v 17 তিনি শাসকদের আভরণহীন করে চালান \q2 ও বিচারকদের মূর্খে পরিণত করেন। \q1 \v 18 তিনি রাজাদের পরিধেয় বেড়ি অপসৃত করেন \q2 ও তাদের কোমরের চারপাশে কৌপিন\f + \fr 12:18 \fr*\ft অথবা, তাদের বেড়ি খুলে তাদের কোমরবন্ধ (বেল্ট) বেঁধে দেন\ft*\f* বেঁধে দেন। \q1 \v 19 তিনি যাজকদের আভরণহীন করে চালান \q2 ও দীর্ঘকাল যাবৎ ক্ষমতায় থাকা কর্মকর্তাদের উৎখাত করেন। \q1 \v 20 তিনি বিশ্বস্ত উপদেশকদের ঠোঁট শব্দহীন করে দেন। \q2 ও প্রাচীনদের বুদ্ধিবৃত্তি হরণ করেন। \q1 \v 21 তিনি অভিজাতদের হেনস্থা করেন \q2 ও বলশালীদের নিরস্ত্র করেন। \q1 \v 22 তিনি অন্ধকারের জটিল বিষয়গুলি প্রকাশিত করেন \q2 ও নিরেট অন্ধকারকে আলোয় নিয়ে আসেন। \q1 \v 23 তিনি জাতিদের মহান করেন, ও তাদের ধ্বংসও করেন; \q2 তিনি জাতিদের সম্প্রসারিত করেন, ও তাদের বিক্ষিপ্তও করেন। \q1 \v 24 তিনি পার্থিব নেতাদের বুদ্ধি-বঞ্চিত করেন; \q2 তিনি তাদের পথহীন এক প্রান্তরে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য করেন। \q1 \v 25 আলো ছাড়াই তারা অন্ধকারে পথ হাতড়ে বেড়ায়; \q2 তিনি মাতালদের মতো তাদের টলতে বাধ্য করেন। \b \c 13 \q1 \v 1 “আমি নিজের চোখে এসব কিছু দেখেছি, \q2 আমি তা নিজের কানে শুনেছি ও বুঝেছি। \q1 \v 2 তোমরা যা জানো, আমিও তা জানি, \q2 আমি তোমাদের চেয়ে নিকৃষ্ট নই। \q1 \v 3 কিন্তু আমি সর্বশক্তিমানের সঙ্গে কথা বলতে চাই \q2 ও ঈশ্বরের কাছে আমার মামলার স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে চাই। \q1 \v 4 তোমরা, অবশ্য, আমার গায়ে মিথ্যা লেপন করেছ; \q2 তোমরা, তোমরা সবাই অপদার্থ চিকিৎসক। \q1 \v 5 তোমরা যদি শুধু পুরোপুরি নীরব থাকতে! \q2 তোমাদের পক্ষে, তবে তা প্রজ্ঞা হত। \q1 \v 6 এখন আমার যুক্তি শোনো; \q2 আমার ঠোঁটের আবেদনে কর্ণপাত করো। \q1 \v 7 ঈশ্বরের হয়ে কি তোমরা গর্হিত কথাবার্তা বলবে? \q2 তাঁর হয়ে কি তোমরা প্রতারণামূলক কথাবার্তা বলবে? \q1 \v 8 তোমরা কি তাঁর প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাবে? \q2 তোমরা কি ঈশ্বরের হয়ে মামলা লড়বে? \q1 \v 9 তিনি যদি তোমাদের পরীক্ষা করেন, তবে কি ভালো কিছু হবে? \q2 নশ্বর এক মানুষকে যেভাবে তোমরা প্রতারিত \q2 করো সেভাবে কি তাঁকেও প্রতারিত করতে পারবে? \q1 \v 10 তিনি নিশ্চয় তোমাদের ভর্ৎসনা করবেন \q2 যদি তোমরা গোপনে পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছিলে। \q1 \v 11 তাঁর প্রভা কি তোমাদের আতঙ্কিত করবে না? \q2 তাঁর শঙ্কা কি তোমাদের উপরে নেমে আসবে না? \q1 \v 12 তোমাদের প্রবচন ভস্মের প্রবাদ; \q2 তোমাদের দুর্গ মাটির কেল্লা। \b \q1 \v 13 “নীরব হও ও আমাকে কথা বলতে দাও; \q2 পরে যা হওয়ার হবে। \q1 \v 14 আমি কেন নিজের জীবন বিপন্ন করব \q2 ও আমার প্রাণ হাতে তুলে নেব? \q1 \v 15 তিনি যদি আমাকে হত্যা করেন, তবুও আমি তাঁর উপরে আশা রাখব; \q2 আমি নিশ্চয়\f + \fr 13:15 \fr*\ft অথবা, তিনি নিশ্চয় আমাকে হত্যা করবেন; আমার কোনও আশা নেই—তাও আমি\ft*\f* তাঁর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমার মামলাটি লড়ব। \q1 \v 16 সত্যিই, এটি আমার মুক্তিতে পরিণত হবে, \q2 যেহেতু কোনও অধার্মিক তাঁর সামনে আসতে সাহস পায় না! \q1 \v 17 আমি যা বলি তা মন দিয়ে শোনো; \q2 আমার বক্তব্য তোমাদের কানে বাজুক। \q1 \v 18 এখন আমি যখন আমার মামলাটি সাজিয়েছি, \q2 তখন আমি জানি যে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হব। \q1 \v 19 কেউ কি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে? \q2 যদি পারে, তবে আমি নীরব থাকব ও মৃত্যুবরণ করব। \b \q1 \v 20 “হে ঈশ্বর, আমাকে শুধু এই দুটি জিনিস দাও, \q2 ও তখন আর আমি নিজেকে তোমার কাছে লুকিয়ে রাখব না: \q1 \v 21 তোমার হাত আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নাও, \q2 ও তোমার আতঙ্ক দিয়ে আমাকে আর ভয় দেখিয়ো না। \q1 \v 22 তখন আমাকে ডেকো ও আমি উত্তর দেব, \q2 বা আমাকে কথা বলতে দিয়ো ও তুমি আমাকে উত্তর দিয়ো। \q1 \v 23 আমি কতগুলি অন্যায় ও পাপ করেছি? \q2 আমার অপরাধ ও আমার পাপ আমায় দেখিয়ে দাও। \q1 \v 24 তুমি কেন তোমার মুখ লুকিয়েছ \q2 ও আমাকে তোমার শত্রু বলে মনে করছ? \q1 \v 25 তুমি কি বায়ুতাড়িত একটি পাতাকে যন্ত্রণা দেবে? \q2 শুকনো তুষের পিছু ধাওয়া করবে? \q1 \v 26 কারণ তুমি আমার বিরুদ্ধে তিক্ত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেছ \q2 ও আমাকে আমার যৌবনকালীন পাপের ফলভোগ করাচ্ছ। \q1 \v 27 তুমি আমার পায়ে বেড়ি পরিয়েছ; \q2 আমার পায়ের তলায় চিহ্ন এঁকে দিয়ে \q2 তুমি আমার সব পথে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছ। \b \q1 \v 28 “তাই মানুষ পচাগলা বস্তুর মতো, \q2 পোকায় কাটা পোশাকের মতো ক্ষয়ে যায়। \b \c 14 \q1 \v 1 “স্ত্রী-জাত নশ্বর মানুষ, \q2 তাদের জীবনকাল সংক্ষিপ্ত ও ঝামেলায় পরিপূর্ণ। \q1 \v 2 ফুলের মতো তারা ফোটে ও শুকিয়েও যায়; \q2 দ্রুতগামী ছায়ার মতো, তারা মিলিয়ে যায়। \q1 \v 3 তাদের উপরে তুমি কি তোমার চোখ স্থির করবে? \q2 বিচারের জন্য তুমি কি তাদের\f + \fr 14:3 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, আমাকে\ft*\f* তোমার সামনে নিয়ে আসবে? \q1 \v 4 অশুদ্ধ থেকে শুদ্ধের উৎপত্তি কে করতে পারে? \q2 কেউ করতে পারে না! \q1 \v 5 একজন মানুষের আয়ুর দিনগুলি নির্ধারিত হয়ে আছে; \q2 তার মাসের সংখ্যা তুমি স্থির করে রেখেছ \q2 ও এমন এক সীমা স্থাপন করেছ যা সে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। \q1 \v 6 তাই তার উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নাও ও তাকে ছেড়ে দাও, \q2 যতক্ষণ না সে এক দিনমজুরের মতো তার সময় দিচ্ছে। \b \q1 \v 7 “এমনকি একটি গাছেরও আশা আছে: \q2 সেটিকে কেটে ফেলা হলেও, তা আবার অঙ্কুরিত হয়, \q2 ও তার নতুন শাখার অভাব হয় না। \q1 \v 8 সেটির মূল জমির নিচে পুরোনো হয়ে যেতে পারে \q2 ও তার গুঁড়ি মাটিতে মরে যেতে পারে, \q1 \v 9 তবুও জলের গন্ধ পেলেই তা মুকুলিত হবে \q2 ও এক চারাগাছের মতো শাখাপ্রশাখা বিস্তার করবে। \q1 \v 10 কিন্তু মানুষ মরে যায় ও কবরে শায়িত হয়; \q2 সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করে ও তার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। \q1 \v 11 যেভাবে হ্রদের জল শুকিয়ে যায় \q2 বা নদীর খাত রোদে পোড়ে ও শুকিয়ে যায়, \q1 \v 12 সেভাবে সে শায়িত হয় ও আর ওঠে না; \q2 আকাশমণ্ডল বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, মানুষজন আর জাগবে না \q2 বা তাদের ঘুম আর ভাঙানো যাবে না। \b \q1 \v 13 “তুমি যদি শুধু আমাকে কবরে লুকিয়ে রাখতে \q2 ও তোমার ক্রোধ শান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাকে আড়াল করে রাখতে! \q1 তুমি যদি শুধু আমার জন্য একটি সময় স্থির করে দিতে \q2 ও তারপর আমায় স্মরণ করতে! \q1 \v 14 যদি কেউ মারা যায়, সে কি আবার বেঁচে উঠবে? \q2 আমার কঠোর সেবাকাজের সবকটি দিন \q2 আমি আমার নবীকরণের\f + \fr 14:14 \fr*\ft অথবা, দায়িত্বমুক্তির\ft*\f* জন্য অপেক্ষা করে থাকব। \q1 \v 15 তুমি ডাকবে ও আমি তোমাকে উত্তর দেব; \q2 তোমার হাত যে প্রাণীকে সৃষ্টি করেছে, তুমি তার আকাঙ্ক্ষা করবে। \q1 \v 16 নিশ্চয় তুমি তখন আমার পদক্ষেপ গুনবে, \q2 কিন্তু আমার পাপের উপর নজর দেবে না। \q1 \v 17 আমার অপরাধগুলি থলিতে কষে বন্ধ করা হবে; \q2 তুমি আমার পাপ ঢেকে দেবে। \b \q1 \v 18 “কিন্তু পর্বত যেভাবে ক্ষয়ে যায় ও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় \q2 ও পাষাণ-পাথর যেভাবে নিজের জায়গা থেকে সরে যায়, \q1 \v 19 জল যেভাবে পাথরকে ক্ষয় করে \q2 ও তীব্র স্রোত যেভাবে মাটি ধুয়ে নিয়ে যায়, \q2 সেভাবে তুমি একজন লোকের আশা ধ্বংস করছ। \q1 \v 20 তুমি চিরকালের জন্য তাদের দমন করেছ, ও তারা বিলুপ্ত হয়েছে; \q2 তুমি তাদের মুখের চেহারা পরিবর্তিত করেছ ও তাদের পাঠিয়ে দিয়েছ। \q1 \v 21 তাদের সন্তানেরা যদি সম্মানিত হয়, তারা তা জানতে পারে না; \q2 তাদের সন্তানেরা যদি অবনত হয়, তারা তা দেখতে পায় না। \q1 \v 22 তারা শুধু নিজেদের শরীরের ব্যথাবেদনা অনুভব করে \q2 ও শুধু নিজেদের জন্যই শোক পালন করে।” \c 15 \s1 ইলীফস \p \v 1 পরে তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “কোনও জ্ঞানবান কি ফাঁপা ধারণা সমেত উত্তর দেবেন \q2 বা গরম পূর্বীয় বাতাস দিয়ে তিনি পেট ভরাবেন? \q1 \v 3 অনর্থক কথা বলে, \q2 মূল্যহীন বক্তৃতা দিয়ে কি তিনি তর্ক করবেন? \q1 \v 4 কিন্তু তুমি এমনকি চুপিচুপি ভক্তিরও হানি ঘটাচ্ছ \q2 ও ঈশ্বরনিষ্ঠায় বাধা দিচ্ছ। \q1 \v 5 তোমার পাপ তোমার মুখকে উত্তেজিত করছে; \q2 তুমি ধূর্ততার জিভ অবলম্বন করছ। \q1 \v 6 আমার নয়, তোমার নিজের মুখই তোমাকে দোষী সাব্যস্ত করছে; \q2 তোমার নিজের ঠোঁটই তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিচ্ছে। \b \q1 \v 7 “মানুষের মধ্যে তুমি কি প্রথমজাত? \q2 পাহাড়ের জন্মের আগেই কি তোমার জন্ম হয়েছিল? \q1 \v 8 তুমি কি ঈশ্বরের পরামর্শ শুনেছ? \q2 প্রজ্ঞার উপরে কি তোমারই একচেটিয়া অধিকার আছে? \q1 \v 9 তুমি এমনকি জানো যা আমরা জানি না? \q2 তোমার এমন কি অন্তর্দৃষ্টি আছে যা আমাদের নেই? \q1 \v 10 পাকা চুলবিশিষ্ট লোকেরা ও বৃদ্ধেরা আমাদের পক্ষে আছেন, \q2 যারা তোমার বাবার চেয়েও বয়স্ক। \q1 \v 11 ঈশ্বরের সান্তনা কি তোমার জন্যে যথেষ্ট নয়, \q2 মৃদুভাবে বলা কথাও কি কিছুই নয়? \q1 \v 12 তোমার অন্তর কেন তোমাকে বিপথে পরিচলিত করেছে, \q2 ও তোমার চোখ কেন মিট্‌মিট্ করছে, \q1 \v 13 যার ফলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তুমি তোমার উগ্র রোষ প্রকাশ করছ \q2 ও তোমার মুখ থেকে এ ধরনের কথা উগরে দিচ্ছ। \b \q1 \v 14 “নশ্বর মানুষ কী, যে তারা শুচিশুদ্ধ হবে, \q2 বা স্ত্রী-জাত মানুষও কী, যে তারা ধার্মিক হবে? \q1 \v 15 ঈশ্বর যদি তাঁর পবিত্রজনদেরই বিশ্বাস করেন না, \q2 আকাশমণ্ডলও যদি তাঁর দৃষ্টিতে অকলুষিত না হয়, \q1 \v 16 তবে সেই নশ্বর মানুষ কী, যারা নীচ ও দুর্নীতিগ্রস্ত, \q2 যারা জলের মতো করে অনিষ্ট পান করে! \b \q1 \v 17 “আমার কথা শোনো ও আমি তোমার কাছে ব্যাখ্যা করে দেব; \q2 আমি যা দেখেছি তা তোমাকে বলতে দাও, \q1 \v 18 জ্ঞানবানেরা যা ঘোষণা করেছিলেন, \q2 তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া কোনো কিছুই লুকিয়ে রাখেননি: \q1 \v 19 (শুধু তাদেরই দেশটি দেওয়া হয়েছিল \q2 যখন কোনও বিদেশি তাদের মধ্যে ঘোরাফেরা করত না) \q1 \v 20 দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ আজীবন যন্ত্রণাভোগ করে, \q2 নিষ্ঠুর মানুষ ক্লেশে পরিপূর্ণ বছরগুলি নিজের জন্য সঞ্চয় করে রাখে। \q1 \v 21 আতঙ্কজনক শব্দে তার কান ভরে ওঠে; \q2 যখন সবকিছু ঠিক আছে বলে মনে হয়, তখনই লুঠেরারা তাকে আক্রমণ করে। \q1 \v 22 সে অন্ধকার জগৎ থেকে পালানোর মরিয়া চেষ্টা করে; \q2 সে তরোয়ালের জন্য চিহ্নিত হয়ে যায়। \q1 \v 23 সে শকুনের মতো হন্যে হয়ে খাদ্য খুঁজে বেড়ায়; \q2 সে জানে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন এসে পড়েছে। \q1 \v 24 চরম দুর্দশা ও মনস্তাপ তাকে আতঙ্কিত করে তোলে; \q2 অস্থিরতা তাকে আচ্ছন্ন করে, যেভাবে একজন রাজা আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হন, \q1 \v 25 যেহেতু সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তার হাত মুষ্টিবদ্ধ করেছে \q2 ও সর্বশক্তিমানের বিরুদ্ধে নিজেকে আস্ফালিত করেছে, \q1 \v 26 বেপরোয়াভাবে এক পুরু, শক্ত ঢাল নিয়ে \q2 তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছে। \b \q1 \v 27 “যদিও তার মুখমণ্ডল চর্বিতে ঢাকা পড়েছে \q2 ও তার কোমর মাংস দিয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছে, \q1 \v 28 সে ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরে \q2 ও সেইসব বাড়িতে বসবাস করবে যেখানে কেউ বসবাস করে না, \q2 যেসব বাড়ি ভেঙে গিয়ে নুড়ি-পাথরের স্তূপে পরিণত হয়েছে। \q1 \v 29 সে আর ধনী হয়ে থাকতে পারবে না ও তার ধনসম্পদও স্থায়ী হবে না, \q2 তার সম্পত্তিও দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে না। \q1 \v 30 সে অন্ধকারের হাত থেকে রেহাই পাবে না; \q2 আগুনের শিখা তার মুকুলগুলি শুকিয়ে দেবে, \q2 ও ঈশ্বরের মুখনির্গত শ্বাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। \q1 \v 31 মূল্যহীন কোনো কিছুতে আস্থা স্থাপন করে সে নিজেকে প্রতারিত না করুক, \q2 যেহেতু তার পরিবর্তে সে কিছুই পাবে না। \q1 \v 32 সময়ের আগেই সে শুকিয়ে যাবে, \q2 ও তার শাখাপ্রশাখাগুলি আর সতেজ থাকবে না। \q1 \v 33 সে এমন এক দ্রাক্ষালতার মতো হয়ে যাবে যেখান থেকে কাঁচা আঙুর ঝরে পড়ে, \q2 এমন এক জলপাই গাছের মতো হয়ে যাবে যেখান থেকে ফুলের কুঁড়ি খসে পড়ে। \q1 \v 34 কারণ ভক্তিহীনদের সমবেত জনসমষ্টি নির্বংশ হবে, \q2 ও যারা ঘুস নিতে ভালোবাসে তাদের তাঁবু আগুন গ্রাস করে ফেলবে। \q1 \v 35 তারা সংকট গর্ভে ধারণ করে ও অমঙ্গলের জন্ম দেয়; \q2 তাদের গর্ভ প্রতারণা তৈরি করে।” \c 16 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আমি এই ধরনের অনেক কথা শুনেছি; \q2 তোমরা শোচনীয় সান্ত্বনাকারী, তোমরা সবাই! \q1 \v 3 তোমাদের এইসব দীর্ঘ এলোমেলো বক্তৃতা কি কখনও শেষ হবে না? \q2 তোমাদের কী এমন কষ্ট যে তোমরা তর্ক করেই যাচ্ছ? \q1 \v 4 আমিও তোমাদের মতো কথা বলতে পারতাম, \q2 যদি তোমরা আমার জায়গায় থাকতে; \q1 আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা দিতে পারতাম \q2 ও তোমাদের দেখে মাথা নাড়াতে পারতাম। \q1 \v 5 কিন্তু আমার মুখ তোমাদের উৎসাহ দেবে; \q2 আমার ঠোঁট থেকে সান্ত্বনা বের হয়ে তোমাদের যন্ত্রণার উপশম করবে। \b \q1 \v 6 “তবুও আমি যদি কথা বলি, আমার ব্যথার উপশম হয় না; \q2 ও আমি যদি নীরব থাকি, তাও তা যায় না। \q1 \v 7 হে ঈশ্বর, নিশ্চয় তুমি আমাকে নিঃশেষিত করে দিয়েছ; \q2 তুমি আমার সমগ্র পরিবারকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছ। \q1 \v 8 তুমি আমাকে কুঁকড়ে দিয়েছ—ও তা এক সাক্ষী হয়েছে; \q2 আমার শীর্ণতা উঠে দাঁড়িয়ে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে। \q1 \v 9 ঈশ্বর আমাকে আক্রমণ করে তাঁর ক্রোধে আমাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন \q2 ও আমার প্রতি দাঁত কড়মড় করেছেন; \q2 আমার প্রতিপক্ষ তাঁর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে আমাকে আক্রমণ করেছেন। \q1 \v 10 আমাকে বিদ্রুপ করার জন্য লোকেরা তাদের মুখ খুলেছে; \q2 অবজ্ঞাভরে তারা আমার গালে চড় মেরেছে \q2 ও আমার বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। \q1 \v 11 ঈশ্বর আমাকে অধার্মিক লোকদের হাতে সমর্পণ করেছেন \q2 ও দুর্জনদের খপ্পরে ছুঁড়ে দিয়েছেন। \q1 \v 12 আমার সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু তিনি আমাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন; \q2 তিনি আমার ঘাড় ধরে আমাকে আছাড় মেরেছেন। \q1 তিনি আমাকে তাঁর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন; \q2 \v 13 তাঁর তিরন্দাজরা আমাকে ঘিরে ধরেছে। \q1 দয়া না দেখিয়ে, তিনি আমার কিডনি বিদ্ধ করেছেন \q2 ও আমার পিত্ত মাটিতে ফেলে দিয়েছেন। \q1 \v 14 বারবার তিনি আমার উপরে ফেটে পড়েছেন; \q2 একজন যোদ্ধার মতো তিনি আমার দিকে ধেয়ে এসেছেন। \b \q1 \v 15 “আমি আমার চামড়ার উপরে চটের কাপড় বুনে নিয়েছি \q2 ও আমার ললাটটি ধুলোতে সমাধিস্থ করেছি। \q1 \v 16 কেঁদে কেঁদে আমার মুখমণ্ডল লাল হয়ে গিয়েছে, \q2 আমার চোখের চারপাশে কালি পড়েছে; \q1 \v 17 তাও আমার হাতে হিংস্রতা নেই \q2 ও আমার প্রার্থনা বিশুদ্ধ। \b \q1 \v 18 “হে পৃথিবী, আমার রক্ত ঢেকে রেখো না; \q2 আমার কান্না যেন কখনও বিশ্রামে শায়িত না হয়! \q1 \v 19 এখনও আমার সাক্ষী স্বর্গেই আছেন; \q2 আমার উকিল ঊর্ধ্বেই আছেন। \q1 \v 20 আমার মধ্যস্থতাকারীই আমার বন্ধু\f + \fr 16:20 \fr*\ft অথবা, আমার বন্ধুরা আমাকে অবজ্ঞা করে\ft*\f* হন \q2 যখন আমার চোখ ঈশ্বরের কাছে অশ্রুপাত করে; \q1 \v 21 একজন লোকের হয়ে তিনি ঈশ্বরের কাছে ওকালতি করেন \q2 যেভাবে এক বন্ধুর জন্য একজন ওকালতি করে। \b \q1 \v 22 “যে পথে গিয়ে আর ফিরে আসা যায় না, আমি সেই পথটি ধরার আগে \q2 শুধু কয়েকটি বছর পার হয়ে যাবে। \c 17 \q1 \v 1 আমার আত্মা ভেঙে খানখান হয়ে গিয়েছে, \q2 আমার আয়ুর দিনগুলি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, \q2 কবর আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে। \q1 \v 2 বিদ্রুপকারীরা নিশ্চয় আমাকে ঘিরে ধরেছে; \q2 তাদের বিরোধিতা আমি চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছি। \b \q1 \v 3 “হে ঈশ্বর, আমার কাছে অঙ্গীকার করো। \q2 আর কে-ই বা আমার জন্য জামিনদার হবে? \q1 \v 4 তুমি তাদের বুদ্ধি-বিবেচনা লোপ পেতে দিয়েছ; \q2 তাই তুমি তাদের জয়লাভ করতে দেবে না। \q1 \v 5 যদি কেউ পুরস্কার লাভের আশায় তাদের বন্ধুদের নিন্দা করে, \q2 তবে তাদের সন্তানদের চোখ নিষ্প্রভ হয়ে যাবে। \b \q1 \v 6 “ঈশ্বর সকলের কাছে আমাকে নিন্দার এক পাত্রে পরিণত করেছেন, \q2 আমি এমন এক মানুষ যার মুখে সবাই থুতু দেয়। \q1 \v 7 বিষাদে আমার চোখ অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে; \q2 আমার সমগ্র শরীর নিছক এক ছায়ামাত্র। \q1 \v 8 ন্যায়পরায়ণ লোকেরা তা দেখে হতভম্ব হয়ে যায়; \q2 নিরীহ লোকেরা অধার্মিকদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। \q1 \v 9 তা সত্ত্বেও, ধার্মিকেরা নিজেদের পথ ধরে এগিয়ে যাবে, \q2 ও যাদের হাত শুচিশুদ্ধ, তারা ক্রমাগত শক্তিশালী হয়েই যাবে। \b \q1 \v 10 “কিন্তু তোমরা সবাই এসো, আবার চেষ্টা করো! \q2 আমি তোমাদের মধ্যে কাউকেই জ্ঞানবান দেখছি না। \q1 \v 11 আমার দিন শেষ হয়েছে, আমার পরিকল্পনাগুলি ভেঙে খানখান হয়ে গিয়েছে। \q2 তবুও আমার হৃদয়ের বাসনাগুলি \q1 \v 12 রাতকে দিনে পরিণত করে; \q2 অন্ধকার সরাসরি আলোর কাছে চলে আসে। \q1 \v 13 যদি কবরকেই আমি আমার একমাত্র ঘর বলে ধরে নিই, \q2 যদি অন্ধকারের রাজত্বেই আমি আমার বিছানা পাতি, \q1 \v 14 যদি দুর্নীতিকে আমি বলি, ‘তুমি আমার বাবা,’ \q2 ও পোকামাকড়কে বলি, ‘তুমি আমার মা’ বা ‘আমার বোন,’ \q1 \v 15 তবে কোথায় আমার আশা— \q2 আমার আশা কে দেখতে পাবে? \q1 \v 16 তা কি মৃত্যুদুয়ারে নেমে যাবে? \q2 আমরা সবাই কি একসাথে ধুলোয় মিশে যাব?” \c 18 \s1 বিল্‌দদ \p \v 1 পরে শূহীয় বিল্‌দদ উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “তোমাদের এই বক্তৃতা কখন শেষ হবে? \q2 বিচক্ষণ হও, ও পরে আমরা কিছু বলব। \q1 \v 3 আমাদের কেন গবাদি পশুর মতো মনে করা হচ্ছে \q2 ও তোমাদের নজরে নির্বুদ্ধি বলে গণ্য করা হচ্ছে? \q1 \v 4 রাগের বশে তুমি তো নিজেকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলছ, \q2 তোমার জন্য কি এই পৃথিবীকে পরিত্যক্ত হতে হবে? \q2 বা পাষাণ-পাথরগুলিকে কি স্বস্থান থেকে সরে যেতে হবে? \b \q1 \v 5 “দুষ্টদের প্রদীপ তো নিবে যায়; \q2 তার আগুনের শিখা নিস্তেজ হয়। \q1 \v 6 তার তাঁবুর আলো অন্ধকার হয়ে যায়; \q2 তার পাশে থাকা প্রদীপ নিভে যায়। \q1 \v 7 তার পদধ্বনির শব্দ দুর্বল হয়; \q2 তার নিজের ফন্দি তাকে পেড়ে ফেলে। \q1 \v 8 তার পা তাকে ধাক্কা মেরে জালে ফেলে দেয়; \q2 সে রাস্তা ভুলে গিয়ে নিজেই ফাঁদে পড়ে যায়। \q1 \v 9 গোড়ালি ধরে ফাঁদ তাকে আটক করে; \q2 পাশ তাকে জোর করে ধরে রাখে। \q1 \v 10 মাটিতে তার জন্য ফাঁস লুকানো থাকে; \q2 তার পথে ফাঁদ পড়ে থাকে। \q1 \v 11 সবদিক থেকে আতঙ্ক তাকে ভয় দেখায় \q2 ও তার পায়ে পায়ে চলতে থাকে। \q1 \v 12 চরম দুর্দশা তার জন্য বুভুক্ষিত হয়; \q2 সে কখন পড়বে তার জন্য বিপর্যয় ওৎ পেতে থাকে। \q1 \v 13 তা তার ত্বকের অংশবিশেষে পচন ধরায়; \q2 মৃত্যুর প্রথমজাত সন্তান তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গ্রাস করে। \q1 \v 14 সে তার তাঁবুর নিরাপদ আশ্রয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয় \q2 ও আতঙ্ক-রাজের দিকে তাকে মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হয়। \q1 \v 15 তার তাঁবুতে আগুন বসবাস করে;\f + \fr 18:15 \fr*\ft অথবা, তার তাঁবুতে তার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না\ft*\f* \q2 তার বাসস্থানের উপরে জ্বলন্ত গন্ধক ছড়ানো হয়। \q1 \v 16 মাটির নিচে তার মূল শুকিয়ে যায় \q2 ও উপরে তার শাখাপ্রশাখা নির্জীব হয়। \q1 \v 17 পৃথিবী থেকে তার স্মৃতি বিলুপ্ত হয়; \q2 দেশে কেউ তার নাম করে না। \q1 \v 18 সে আলো থেকে অন্ধকারের রাজত্বে বিতাড়িত হয় \q2 ও জগৎ থেকেও নির্বাসিত হয়। \q1 \v 19 তার স্বজাতীয়দের মধ্যে তার আর কোনও সন্তানসন্ততি বা বংশধর থাকবে না, \q2 ও এক সময় যেখানে সে বসবাস করত, সেখানেও কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। \q1 \v 20 পাশ্চাত্যের মানুষজন তার এই পরিণতি দেখে হতভম্ব হয়ে যাবে; \q2 প্রাচ্যের লোকজনও ভয়গ্রস্ত হয়ে পড়বে। \q1 \v 21 নিঃসন্দেহে এই হল দুষ্টলোকের বসতি; \q2 যারা ঈশ্বরকে জানে না, এই হল তাদের অবস্থানস্থল।” \c 19 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “তোমরা আর কতক্ষণ আমাকে যন্ত্রণা দেবে \q2 ও কথার আঘাত দিয়ে আমাকে পিষে মারবে? \q1 \v 3 এই নিয়ে দশবার তোমরা আমাকে গঞ্জনা দিয়েছ; \q2 নির্লজ্জভাবে আমাকে আক্রমণ করেছ। \q1 \v 4 যদি সত্যিই আমি বিপথে গিয়েছি, \q2 তবে আমার ভুলভ্রান্তি শুধু আমারই উদ্বেগের বিষয়। \q1 \v 5 তোমরা যদি সত্যিই আমার উপরে নিজেদের উন্নত করবে \q2 ও আমার বিরুদ্ধে আমার এই মানহানিকে ব্যবহার করবে, \q1 \v 6 তবে জেনে রেখো যে ঈশ্বরই আমার প্রতি অন্যায় করেছেন \q2 ও আমাকে তাঁর জালে বন্দি করেছেন। \b \q1 \v 7 “যদিও আমি আর্তনাদ করে বলি, ‘হিংস্রতা!’ তাও আমি কোনও সাড়া পাই না; \q2 যদিও আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করি, তাও কোথাও ন্যায়বিচার নেই। \q1 \v 8 তিনি আমার পথ অবরুদ্ধ করেছেন যেন আমি পার হতে না পারি; \q2 তিনি আমার পথ অন্ধকারাবৃত করে দিয়েছেন। \q1 \v 9 তিনি আমার সম্মান হরণ করেছেন \q2 ও আমার মাথা থেকে মুকুট অপসারিত করেছেন। \q1 \v 10 আমি সর্বস্বান্ত না হওয়া পর্যন্ত চতুর্দিকে তিনি আমাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন; \q2 তিনি আমার আশা এক গাছের মতো উপড়ে ফেলেছেন। \q1 \v 11 তাঁর ক্রোধ আমার বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছে; \q2 তিনি আমাকে তাঁর শত্রুদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করেছেন। \q1 \v 12 তাঁর সৈন্যবাহিনী বেগে ধেয়ে আসছে; \q2 আমার বিরুদ্ধে তারা এক অবরোধ-পথ নির্মাণ করেছে \q2 ও আমার তাঁবুর চারপাশে শিবির স্থাপন করেছে। \b \q1 \v 13 “তিনি আমার কাছ থেকে আমার পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন; \q2 আমার পরিচিত লোকজনও আমার কাছে পুরোপুরি অপরিচিত হয়ে গিয়েছে। \q1 \v 14 আমার আত্মীয়স্বজন দূরে সরে গিয়েছে; \q2 আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও আমাকে ভুলে গিয়েছে। \q1 \v 15 আমার অতিথিরা ও আমার ক্রীতদাসীরা আমাকে এক বিদেশি বলে গণ্য করছে; \q2 তারা এমনভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছে যেন আমি এক আগন্তুক। \q1 \v 16 আমি আমার দাসকে ডাকছি, কিন্তু সে উত্তর দিচ্ছে না, \q2 যদিও নিজের মুখেই আমি তাকে অনুরোধ জানাচ্ছি। \q1 \v 17 আমার নিশ্বাস আমার স্ত্রীর কাছে বিরক্তিকর; \q2 আমার নিজের পরিবারের কাছেও আমি ঘৃণিত। \q1 \v 18 ছোটো ছোটো ছেলেরাও আমাকে অবজ্ঞা করে; \q2 আমি যখন হাজির হই, তারা আমাকে বিদ্রুপ করে। \q1 \v 19 আমার সব অন্তরঙ্গ বন্ধু আমাকে ঘৃণা করে; \q2 যাদের আমি ভালোবাসি তারাও আমার প্রতি বিমুখ হয়েছে। \q1 \v 20 অস্থিচর্ম ছাড়া আমি আর কিছুই নই; \q2 শুধু দাঁতের চর্মবিশিষ্ট\f + \fr 19:20 \fr*\ft অথবা, শুধু মাড়িবিশিষ্ট\ft*\f* হয়েই আমি বেঁচে আছি। \b \q1 \v 21 “আমার প্রতি দয়া করো, হে আমার বন্ধুরা, দয়া করো, \q2 যেহেতু ঈশ্বর হাত দিয়ে আমায় আঘাত করেছেন। \q1 \v 22 ঈশ্বরের মতো তোমরাও কেন আমার পশ্চাদ্ধাবন করছ? \q2 আমার মাংস কি তোমরা যথেষ্ট পরিমাণে খেয়ে ফেলোনি? \b \q1 \v 23 “হায়, আমার কথাগুলি যদি নথিভুক্ত করে রাখা যেত, \q2 যদি সেগুলি এক গোটানো কাগজে লিখে রাখা যেত, \q1 \v 24 যদি সেগুলি লোহার এক যন্ত্র দিয়ে সীসায়\f + \fr 19:24 \fr*\ft অথবা, ও সীসা দিয়ে\ft*\f* খোদাই করে রাখা যেত, \q2 বা পাষাণ-পাথরে চিরতরে অন্তর্লিখিত করে রাখা যেত! \q1 \v 25 আমি জানি যে আমার মুক্তিদাতা\f + \fr 19:25 \fr*\ft অথবা, সত্যতা প্রমাণকারী\ft*\f* জীবিত আছেন, \q2 ও শেষে তিনি পৃথিবীতে\f + \fr 19:25 \fr*\ft অথবা, আমার কবরের উপরে\ft*\f* উঠে দাঁড়াবেন। \q1 \v 26 আর আমার ত্বক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও,\f + \fr 19:26 \fr*\ft অথবা, ও আমি জেগে ওঠার পর, আমার শরীর নষ্ট হয়ে গেলেও\ft*\f* \q2 আমার এই মরদেহেই\f + \fr 19:26 \fr*\ft অথবা, নষ্ট হয়ে গেলেও, আমার এই মরদেহ ছাড়াও\ft*\f* আমি ঈশ্বরের দর্শন পাব; \q1 \v 27 আমি স্বয়ং তাঁকে দেখব \q2 স্বচক্ষে দেখব—আমিই দেখব, আর কেউ নয়। \q2 মনে মনে আমার হৃদয় কত আকুলভাবে কামনা করছে! \b \q1 \v 28 “তোমরা যদি বলো, ‘আমরা কীভাবে তাকে জ্বালাতন করব, \q2 যেহেতু সমস্যার মূল তার\f + \fr 19:28 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, আমার\ft*\f* মধ্যেই অবস্থান করছে,’ \q1 \v 29 তরোয়ালের ভয়ে তোমাদেরই ভীত হওয়া উচিত; \q2 যেহেতু ক্রোধ তরোয়াল দ্বারাই দণ্ড নিয়ে আসবে, \q2 ও তখনই তোমরা জানতে পারবে যে বিচার আছে।\f + \fr 19:29 \fr*\ft অথবা, দণ্ড নিয়ে আসবে, ও তোমরা যেন সর্বশক্তিমানকে জানতে পারো\ft*\f*” \c 20 \s1 সোফর \p \v 1 পরে নামাথীয় সোফর উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আমার বিক্ষুব্ধ চিন্তাভাবনা আমাকে উত্তর দিতে উত্তেজিত করছে \q2 যেহেতু আমি খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়েছি। \q1 \v 3 আমি এমন তিরস্কার শুনেছি যা আমাকে অসম্মানিত করেছে, \q2 ও আমার বুদ্ধি-বিবেচনা আমাকে উত্তর দিতে অনুপ্রাণিত করছে। \b \q1 \v 4 “তুমি নিশ্চয় জানো যে প্রাচীনকাল থেকে, \q2 পৃথিবীতে যখন মানবজাতিকে\f + \fr 20:4 \fr*\ft অথবা, আদমকে\ft*\f* স্থাপন করা হয়েছিল তখন থেকেই কীভাবে, \q1 \v 5 দুষ্টদের হাসিখুশি ভাব ক্ষণস্থায়ী হয়ে আসছে, \q2 অধার্মিকদের আনন্দ শুধু এক মুহূর্তের জন্য স্থায়ী হয়ে আসছে। \q1 \v 6 অধার্মিকের গর্ব যদিও আকাশমণ্ডল পর্যন্ত পৌঁছায় \q2 ও তার মাথা মেঘ স্পর্শ করে, \q1 \v 7 তাও সে তার নিজের মলের মতো চিরতরে বিনষ্ট হবে; \q2 যারা তাকে চিনত, তারা বলবে, ‘সে কোথায় গেল?’ \q1 \v 8 স্বপ্নের মতো সে অদৃশ্য হয়ে যাবে, আর কখনও তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, \q2 রাতের দর্শনের মতো তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। \q1 \v 9 যে চোখ তাকে দেখেছিল তা আর তাকে দেখতে পাবে না; \q2 তার বাসস্থানও আর তার দিকে তাকাবে না। \q1 \v 10 তার সন্তানেরা দরিদ্রদের ক্ষতিপূরণ করবে; \q2 তার নিজের হাতই তার সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবে। \q1 \v 11 তারুণ্যে ভরপুর যে প্রাণশক্তিতে তার অস্থি পরিপূর্ণ ছিল \q2 তা তারই সাথে ধুলোয় মিশে যাবে। \b \q1 \v 12 “দুষ্টতা যদিও তার মুখে মিষ্টি লাগে \q2 ও তা সে তার জিভের নিচে লুকিয়ে রাখে, \q1 \v 13 সে যদিও তা বাইরে বেরিয়ে যেতে দিতে চায় না \q2 ও তার মুখেই তা দীর্ঘ সময় ধরে রেখে দেয়, \q1 \v 14 তবুও তার খাদ্যদ্রব্য তার পেটে গিয়ে টকে যাবে; \q2 তার দেহের মধ্যে তা সাপের বিষে পরিণত হবে। \q1 \v 15 সে যে ঐশ্বর্য কবলিত করেছিল তা সে থু থু করে ফেলবে; \q2 ঈশ্বর তার পেট থেকে সেসব বমি করিয়ে বের করবেন। \q1 \v 16 সে সাপের\f + \fr 20:16 \fr*\ft অথবা, বিষলতার\ft*\f* বিষ চুষবে; \q2 বিষধর সাপের বিষদাঁত তাকে হত্যা করবে। \q1 \v 17 সে জলপ্রবাহ উপভোগ করবে না, \q2 মধু ও ননী-প্রবাহিত নদীও উপভোগ করবে না। \q1 \v 18 তার পরিশ্রমের ফল তাকে না খেয়ে ফিরিয়ে দিতে হবে; \q2 তার বেচাকেনার লাভ সে ভোগ করবে না। \q1 \v 19 যেহেতু সে দরিদ্রদের উপর অত্যাচার করে তাদের নিঃস্ব করে ছেড়েছে; \q2 সে সেই বাড়িগুলি দখল করেছে যেগুলি সে নির্মাণ করেনি। \b \q1 \v 20 “সে নিশ্চয় তার তীব্র আকাঙ্ক্ষার হাত থেকে রেহাই পাবে না; \q2 সে তার ধন দিয়ে নিজেকে বাঁচাতে পারবে না। \q1 \v 21 গ্রাস করার জন্য তার কাছে আর কিছু অবশিষ্ট নেই; \q2 তার সমৃদ্ধি স্থায়ী হবে না। \q1 \v 22 তার প্রাচুর্যের মধ্যেই, চরম দুর্দশা তাকে ধরে ফেলবে; \q2 দুর্বিপাক সবলে তার উপরে এসে পড়বে। \q1 \v 23 তার পেট ভরে যাওয়ার পর, \q2 ঈশ্বর তাঁর জ্বলন্ত ক্রোধ তার উপর ঢেলে দেবেন \q2 ও তার উপর তাঁর আঘাত বর্ষণ করবেন। \q1 \v 24 যদিও সে লৌহাস্ত্র থেকে পালাবে, \q2 ব্রোঞ্জের ফলাযুক্ত তির তাকে বিদ্ধ করবে। \q1 \v 25 সে তার পিঠ থেকে সেটি টেনে বের করবে, \q2 তার যকৃৎ থেকে সেই চক্‌মকে ফলাটি বের করবে। \q1 আতঙ্ক তার উপরে নেমে আসবে; \q2 \v 26 তার ধনসম্পদের জন্য সর্বাত্মক অন্ধকার অপেক্ষা করে আছে। \q1 দাবানল তাকে গ্রাস করবে \q2 ও তার তাঁবুর অবশিষ্ট সবকিছু গিলে খাবে। \q1 \v 27 আকাশমণ্ডল তার দোষ প্রকাশ করে দেবে; \q2 পৃথিবী তার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে। \q1 \v 28 বন্যা এসে তার বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে, \q2 ঈশ্বরের ক্রোধের দিনে বেগে ধাবমান জলস্রোত নেমে আসবে।\f + \fr 20:28 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের ক্রোধের দিনে তার বাড়ির ধনসম্পত্তি গুম হয়ে যাবে, ভেসে যাবে\ft*\f* \q1 \v 29 দুষ্ট লোকেদের এই হল ঈশ্বর-নিরূপিত পরিণতি, \q2 ঈশ্বর দ্বারা এই উত্তরাধিকারই তাদের জন্য নিরূপিত হয়ে আছে।” \c 21 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আমার কথা মন দিয়ে শোনো; \q2 এই হোক সেই সান্ত্বনা যা তোমরা আমাকে দিতে পারো। \q1 \v 3 আমি কথা বলার সময় তোমরা একটু সহ্য করো, \q2 ও আমি কথা বলার পর, তোমরা আমাকে বিদ্রুপ কোরো। \b \q1 \v 4 “আমার অভিযোগ কি কোনও মানুষের বিরুদ্ধে? \q2 আমি কেন অধৈর্য হব না? \q1 \v 5 আমার দিকে তাকাও ও তোমরা অবাক হয়ে যাবে; \q2 তোমাদের মুখে হাত চাপা দাও। \q1 \v 6 একথা চিন্তা করে আমি আতঙ্কিত হয়ে যাই; \q2 আমার শরীর কেঁপে ওঠে। \q1 \v 7 দুষ্টেরা কেন বেঁচে থাকে, \q2 কেন তারা বৃদ্ধ হয় ও তাদের ক্ষমতা বাড়ে? \q1 \v 8 তাদের চারপাশে তারা তাদের সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত হতে দেখে, \q2 তাদের চোখের সামনেই তাদের বংশধরেরা প্রতিষ্ঠিত হয়। \q1 \v 9 তাদের ঘরগুলি নিরাপদ ও ভয়মুক্ত; \q2 ঈশ্বরের লাঠি তাদের উপরে পড়ে না। \q1 \v 10 তাদের ষাঁড়গুলি বংশবৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হয় না; \q2 তাদের গাভীগুলি বাছুরের জন্ম দেয় ও তাদের গর্ভস্রাব হয় না। \q1 \v 11 তারা তাদের সন্তানদের মেষপালের মতো বাইরে পাঠায়; \q2 তাদের শিশুসন্তানেরা নেচে বেড়ায়। \q1 \v 12 তারা খঞ্জনি ও বীণা বাজিয়ে গান গায়; \q2 তারা বাঁশির সুরে মাতোয়ারা হয়। \q1 \v 13 সমৃদ্ধশালী হয়ে দিনযাপন করে \q2 ও শান্তিতে\f + \fr 21:13 \fr*\ft অথবা, এক পলকেই\ft*\f* কবরে চলে যায়। \q1 \v 14 তবুও তারা ঈশ্বরকে বলে, ‘আমাদের ছেড়ে দাও! \q2 তোমার পথ জানার কোনো ইচ্ছাই আমাদের নেই। \q1 \v 15 সর্বশক্তিমান কে, যে আমাদের তাঁর সেবা করতে হবে? \q2 তাঁর কাছে প্রার্থনা করে আমাদের কী লাভ হবে?’ \q1 \v 16 কিন্তু তাদের শ্রীবৃদ্ধি তাদের নিজেদের হাতে নেই, \q2 তাই দুষ্টদের পরিকল্পনা থেকে আমি দূরে সরে দাঁড়াই। \b \q1 \v 17 “তবুও দুষ্টদের প্রদীপ কতবার নিভে যায়? \q2 কতবার তাদের উপরে চরম দুর্দশা নেমে আসে, \q2 ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ঈশ্বর তাদের এই পরিণতি ঘটান? \q1 \v 18 কতবার তারা বাতাসের সামনে পড়া খড়ের মতো, \q2 ও প্রবল বাতাস দ্বারা তুষের মতো উড়ে যায়? \q1 \v 19 বলা হয়, ‘দুষ্টদের প্রাপ্য শাস্তি ঈশ্বর তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত করে রাখেন।’ \q2 তিনিই দুষ্টদের পাপের প্রতিফল দেন, যেন তারা নিজেরাই তা ভোগ করে! \q1 \v 20 তাদের নিজেদের চোখই তাদের সর্বনাশ দেখুক; \q2 তারা সর্বশক্তিমানের ক্রোধ পান করুক। \q1 \v 21 কারণ তাদের জন্য নির্ধারিত মাসগুলি শেষ হয়ে যাওয়ার পর \q2 তাদের ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলির কী হবে সে বিষয়ে তারা কি আদৌ চিন্তা করে? \b \q1 \v 22 “কেউ কি ঈশ্বরকে জ্ঞান শিক্ষা দিতে পারে, \q2 যেহেতু তিনি উচ্চতমেরও বিচার করেন? \q1 \v 23 কেউ কেউ পূর্ণ প্রাণশক্তি থাকাকালীনই মারা যায়, \q2 যখন সে পুরোপুরি নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে থাকে, \q1 \v 24 তার শরীর যথেষ্ট পুষ্ট থাকে, \q2 অস্থিও মজ্জা-সমৃদ্ধ অবস্থায় থাকে। \q1 \v 25 অন্য কেউ আবার প্রাণের তিক্ততা নিয়েই মারা যায়, \q2 কখনও ভালো কোনো কিছুর স্বাদ না পেয়েই মারা যায়। \q1 \v 26 পাশাপাশিই তারা ধুলোয় পড়ে থাকে, \q2 ও কীটপতঙ্গ তাদের উভয়কেই ঢেকে রাখে। \b \q1 \v 27 “আমি বেশ ভালোই জানি তোমরা কী ভাবছ, \q2 যেসব ফন্দি এঁটে তোমরা আমার প্রতি অন্যায় করবে, আমি সেগুলিও জানি। \q1 \v 28 তোমরা বলছ, ‘সেই মহামান্যের বাড়িটি কোথায়, \q2 সেই তাঁবুগুলি কোথায়, যেখানে দুষ্টেরা বসবাস করত?’ \q1 \v 29 তোমরা কি কখনও পথিকদের জিজ্ঞাসা করোনি? \q2 তোমরা কি তাদের বিবরণ বিবেচনা করোনি— \q1 \v 30 যে দুষ্টেরা চরম দুর্দশাময় দিনের হাত থেকে নিষ্কৃতি পায়, \q2 ক্রোধের দিনের হাত থেকেও তারা মুক্তি পায়?\f + \fr 21:30 \fr*\ft অথবা, দুষ্টেরা চরম দুর্দশার দিনের জন্য সংরক্ষিত হয়ে থাকে, ক্রোধের দিনেই তাদের সামনে আনা হয়\ft*\f* \q1 \v 31 কে তাদের মুখের উপরে তাদের আচরণের নিন্দা করবে? \q2 কে তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল তাদের দেবে? \q1 \v 32 তাদের কবরে বয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, \q2 ও তাদের সমাধিতে পাহারা বসানো হয়। \q1 \v 33 উপত্যকার মাটি তাদের কাছে মিষ্টি লাগে; \q2 প্রত্যেকে তাদের অনুগামী হয়, \q2 ও অসংখ্য জনতা তাদের আগে আগে যায়।\f + \fr 21:33 \fr*\ft অথবা, অসংখ্য জনতা যেভাবে তাদের আগে চলে গিয়েছে\ft*\f* \b \q1 \v 34 “অতএব তোমরা কীভাবে তোমাদের আবোল-তাবোল কথা দিয়ে আমাকে সান্ত্বনা দেবে? \q2 তোমাদের উত্তরে মিথ্যাভাষণ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই!” \c 22 \s1 ইলীফস \p \v 1 পরে তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “কোনও মানুষ কি ঈশ্বরের পক্ষে লাভজনক হবে? \q2 একজন জ্ঞানবানও কি তাঁর উপকার করতে পারবে? \q1 \v 3 তুমি ধার্মিক হলেও তা সর্বশক্তিমানকে কী আনন্দ দেবে? \q2 তোমার আচরণ অনিন্দনীয় হলেও তাতে তাঁর কী লাভ? \b \q1 \v 4 “তোমার ভক্তি দেখেই কি তিনি তোমাকে তিরস্কার করেন \q2 ও তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন? \q1 \v 5 তোমার দুষ্টতা কি অত্যধিক নয়? \q2 তোমার পাপগুলিও কি অপার নয়? \q1 \v 6 অকারণে তুমি তোমার আত্মীয়দের কাছ থেকে জামানত চেয়েছ; \q2 তুমি লোকদের পরনের পোশাক কেড়ে নিয়েছ, তাদের উলঙ্গ করে ছেড়েছ। \q1 \v 7 তুমি ক্লান্ত মানুষকে জল দাওনি \q2 ও ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্য দিতে অসম্মত হয়েছ, \q1 \v 8 যদিও তুমি এক ক্ষমতাপরায়ণ লোক, দেশের অধিকারী ছিলে— \q2 এমন এক সম্মানিত লোক ছিলে, যে সেখানেই বসবাস করত। \q1 \v 9 আর তুমি বিধবাদের খালি হাতে বিদায় করতে, \q2 ও পিতৃহীনদের শক্তি চূর্ণ করতে। \q1 \v 10 সেইজন্যই তোমার চারপাশে ফাঁদ পাতা আছে, \q2 আকস্মিক বিপদ তোমাকে আতঙ্কিত করে, \q1 \v 11 এত অন্ধকার হয়েছে যে তুমি দেখতে পাচ্ছ না, \q2 ও জলের বন্যা তোমাকে ঢেকে ফেলেছে। \b \q1 \v 12 “ঈশ্বর কি স্বর্গের উচ্চতায় বিরাজমান নন? \q2 আর দেখো অতি উচ্চে অবস্থিত তারাগুলি কত উঁচু! \q1 \v 13 তবুও তুমি বলো, ‘ঈশ্বর কী-ই বা জানেন? \q2 এ ধরনের অন্ধকার দিয়ে তিনি কি বিচার করেন? \q1 \v 14 ঘন মেঘ তাঁকে আড়াল করে রাখে, তাই তিনি আমাদের দেখতে পান না \q2 যেহেতু তিনি খিলানযুক্ত আকাশমণ্ডলে বিচরণ করেন।’ \q1 \v 15 তুমি কি সেই পুরানো পথই ধরবে \q2 যে পথে দুষ্টেরা পা ফেলেছিল? \q1 \v 16 তাদের তো অকালেই উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল, \q2 তাদের ভিত্তিমূল বন্যায় ভেসে গিয়েছে। \q1 \v 17 তারা ঈশ্বরকে বলেছিল, ‘আমাদের ছেড়ে দাও! \q2 সর্বশক্তিমান আমাদের কী করবেন?’ \q1 \v 18 অথচ তিনিই তাদের বাড়িঘর ভালো ভালো জিনিসপত্রে ভরিয়ে দিয়েছিলেন, \q2 তাই আমি দুষ্টদের পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে দাঁড়াই। \q1 \v 19 ধার্মিকেরা তাদের বিনাশ দেখে ও আনন্দ করে; \q2 নির্দোষেরা তাদের বিদ্রুপ করে বলে, \q1 \v 20 ‘আমাদের শত্রুরা নিশ্চয় ধ্বংস হয়েছে, \q2 ও আগুন তাদের ধনসম্পদ গ্রাস করেছে।’ \b \q1 \v 21 “ঈশ্বরের হাতে নিজেকে সমর্পণ করো ও শান্তি পাও; \q2 এভাবেই তুমি সমৃদ্ধিলাভ করবে। \q1 \v 22 তাঁর মুখ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করো \q2 ও তোমার হৃদয়ে তাঁর বাক্য সঞ্চয় করে রাখো। \q1 \v 23 তুমি যদি সর্বশক্তিমানের দিকে ফেরো, তবে তুমি পুনঃস্থাপিত হবে: \q2 তুমি যদি তোমার তাঁবু থেকে দুষ্টতা দূর করো \q1 \v 24 ও তোমার সোনার তাল ধুলোতে রাখো, \q2 তোমার ওফীরের সোনা গিরিখাতের পাষাণ-পাথরের মধ্যে রাখো, \q1 \v 25 তবে সর্বশক্তিমানই তোমার সোনা হবেন, \q2 তোমার জন্য অসাধারণ রুপো হবেন। \q1 \v 26 তখন নিশ্চয় তুমি সর্বশক্তিমানে আনন্দ খুঁজে পাবে \q2 ও তোমার মুখ ঈশ্বরের দিকে তুলে ধরবে। \q1 \v 27 তুমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে, এবং তিনি তোমার প্রার্থনা শুনবেন, \q2 ও তুমি তোমার মানতগুলি পূরণ করবে। \q1 \v 28 তুমি যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই সফল হবে, \q2 ও তোমার পথগুলি আলোয় উজ্জ্বল হবে। \q1 \v 29 মানুষকে যখন অবনত করা হয় ও তুমি বলো, ‘ওদের তুলে ধরো!’ \q2 তখন তিনি হতোদ্যমকে উদ্ধার করবেন। \q1 \v 30 যে নির্দোষ নয় তিনি তাকেও উদ্ধার করবেন, \q2 তোমার হাতের পরিচ্ছন্নতায় সে উদ্ধার পাবে।” \c 23 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আজও আমার বিলাপ তীব্র; \q2 আমি গোঙানো সত্ত্বেও\f + \fr 23:2 \fr*\ft অথবা, আমার গোঙানির মধ্যেও\ft*\f* তাঁর হাত\f + \fr 23:2 \fr*\ft অথবা, তাঁর হাত আমার উপর\ft*\f* ভারী হয়েছে। \q1 \v 3 কোথায় তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে তা যদি শুধু আমি জানতে পারি; \q2 তাঁর আবাসের কাছে যদি শুধু যেতে পারি! \q1 \v 4 তবে তাঁর সামনে আমি আমার দশা বর্ণনা করব \q2 ও আমার মুখ যুক্তিতর্কে ভরিয়ে তুলব। \q1 \v 5 তিনি আমাকে কী উত্তর দেবেন, তা আমি খুঁজে বের করব, \q2 ও তিনি আমাকে কী বলবেন, তা বিবেচনা করব। \q1 \v 6 তিনি কি সবলে আমার বিরোধিতা করবেন? \q2 না, তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন না। \q1 \v 7 সেখানে তাঁর সামনে ন্যায়পরায়ণ লোকেরা তাদের সরলতা প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, \q2 ও সেখানেই আমি চিরতরে আমার বিচারকের হাত থেকে মুক্ত হব। \b \q1 \v 8 “কিন্তু আমি যদি পূর্বদিকে যাই, তিনি সেখানে নেই; \q2 আমি যদি পশ্চিমদিকে যাই, সেখানেও তাঁকে খুঁজে পাই না। \q1 \v 9 তিনি যখন উত্তর দিকে কাজ করেন, আমি তাঁর দেখা পাই না; \q2 তিনি যখন দক্ষিণ দিকে ফেরেন, আমি তাঁর কোনও ঝলক দেখতে পাই না। \q1 \v 10 কিন্তু আমি যে পথ ধরি, তিনি তা জানেন; \q2 তিনি যখন আমার পরীক্ষা করবেন, আমি তখন সোনার মতো বের হয়ে আসব। \q1 \v 11 আমার পা ঘনিষ্ঠভাবে তাঁর পদচিহ্নের অনুসরণ করেছে, \q2 বিপথগামী না হয়ে আমি তাঁর পথেই চলেছি। \q1 \v 12 আমি তাঁর ঠোঁটের আদেশ অমান্য করিনি; \q2 তাঁর মুখের কথা আমি আমার দৈনিক আহারের চেয়েও বেশি যত্নসহকারে সঞ্চয় করে রেখেছি। \b \q1 \v 13 “কিন্তু তিনি অনুপম, ও কে তাঁর বিরোধিতা করবে? \q2 তাঁর যা খুশি তিনি তাই করেন। \q1 \v 14 আমার বিরুদ্ধে তিনি তাঁর রায়দান সম্পন্ন করেছেন, \q2 ও এ ধরনের আরও অনেক পরিকল্পনা তাঁর কাছে আছে। \q1 \v 15 সেইজন্য তাঁর সামনে আমি আতঙ্কিত হই; \q2 আমি যখন এসব কথা ভাবি, তখন আমি তাঁকে ভয় পাই। \q1 \v 16 ঈশ্বর আমার হৃদয় মূর্ছিত করেছেন; \q2 সর্বশক্তিমান আমাকে আতঙ্কিত করেছেন। \q1 \v 17 তবুও অন্ধকার দ্বারা আমি নীরব হইনি, \q2 সেই ঘন অন্ধকার দ্বারাও হইনি যা আমার মুখ ঢেকে রাখে। \b \c 24 \q1 \v 1 “সর্বশক্তিমান কেন বিচারের সময় স্থির করেন না? \q2 যারা তাঁকে জানে তাদের কেন এ ধরনের দিনের জন্য অনর্থক অপেক্ষা করতে হবে? \q1 \v 2 এমন অনেক মানুষ আছে যারা সীমানার পাথর সরায়; \q2 তারা চুরি করা মেষপাল চরায়। \q1 \v 3 তারা অনাথদের গাধা খেদায় \q2 ও বিধবাদের বলদ বন্ধক রাখে। \q1 \v 4 তারা পথ থেকে অভাবগ্রস্তদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় \q2 ও দেশের সব দরিদ্রকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য করে। \q1 \v 5 মরুভূমির বুনো গাধাদের মতো, \q2 দরিদ্রেরা তন্নতন্ন করে খাদ্য খুঁজে বেড়ায়; \q2 পতিত জমি তাদের সন্তানদের জন্য খাদ্য জোগায়। \q1 \v 6 তারা ক্ষেতে গবাদি পশুর জাব সংগ্রহ করে \q2 ও দুষ্টদের দ্রাক্ষাক্ষেতে খুঁটে খুঁটে ফল কুড়ায়। \q1 \v 7 পোশাকের অভাবে, তারা খালি গায়ে রাত কাটায়; \q2 শীতকালে নিজেদের গা ঢাকার জন্য তাদের কাছে কিছুই থাকে না। \q1 \v 8 পাহাড়ি বর্ষায় তারা প্লাবিত হয় \q2 ও আশ্রয়ের অভাবে তারা পাষাণ-পাথরকে বুকে জড়িয়ে ধরে। \q1 \v 9 পিতৃহীন শিশুকে মায়ের বুক থেকে কেড়ে নেওয়া হয়; \q2 দরিদ্রদের শিশুসন্তানকে দেনার দায়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়। \q1 \v 10 পোশাকের অভাবে, তারা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়; \q2 তারা শস্যের আঁটি বহন করে, কিন্তু তাও ক্ষুধার্ত থেকে যায়। \q1 \v 11 তারা চত্বরের মধ্যে জলপাই নিংড়ানোর কাজ করে; \q2 তারা পা দিয়ে দ্রাক্ষাফল পেষাই করে, তবুও তৃষ্ণার্তই থেকে যায়। \q1 \v 12 মৃত্যুপথযাত্রীদের গোঙানি নগর থেকে ভেসে আসে, \q2 ও আহতদের প্রাণ সাহায্যের আশায় আর্তনাদ করে। \q2 কিন্তু ঈশ্বর কাউকে অন্যায়াচরণের দোষে অভিযুক্ত করেন না। \b \q1 \v 13 “এমনও অনেকে আছে যারা আলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, \q2 যারা তার পথ জানে না \q2 বা তার পথে থাকে না। \q1 \v 14 দিনের আলো যখন ফুরিয়ে যায়, তখন হত্যাকারীরা উঠে দাঁড়ায়, \q2 দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের হত্যা করে, \q2 ও রাতের বেলায় চোরের মতো চুরি করে। \q1 \v 15 ব্যভিচারীদের চোখ গোধূলি লগ্নের জন্য অপেক্ষা করে থাকে; \q2 সে ভাবে, ‘কেউ আমাকে দেখতে পাবে না,’ \q2 ও সে তার মুখ ঢেকে রাখে। \q1 \v 16 অন্ধকারে, চোরেরা বাড়িতে সিঁধ কাটে; \q2 কিন্তু দিনের বেলায় তারা ঘরে নিজেদের বন্দি করে রাখে। \q1 \v 17 তাদের সকলের জন্য, মাঝরাতই তাদের সকাল; \q2 অন্ধকারের সন্ত্রাসের সাথেই তারা বন্ধুত্ব করে। \b \q1 \v 18 “তবুও তারা জলের উপরে ভেসে থাকা ফেনা; \q2 দেশে তাদের বরাদ্দ অধিকার শাপগ্রস্ত হয়, \q2 তাই কেউ দ্রাক্ষাক্ষেতে যায় না। \q1 \v 19 যেভাবে উত্তাপ ও খরা গলা বরফ ছিনিয়ে নিয়ে যায়, \q2 সেভাবে কবরও যারা পাপ করেছে তাদের ছিনিয়ে নেয়। \q1 \v 20 গর্ভ তাদের ভুলে যায়, \q2 কীটপতঙ্গ তাদের দেহগুলি নিয়ে ভোজে মাতে; \q1 দুষ্টদের আর কেউ মনে রাখবে না \q2 কিন্তু তারা গাছের মতো ভেঙে যাবে। \q1 \v 21 তারা বন্ধ্যা ও নিঃসন্তান মহিলাদের শিকারে পরিণত করে, \q2 ও বিধবাদের প্রতি তারা কোনও দয়া দেখায় না। \q1 \v 22 কিন্তু ঈশ্বর তাঁর পরাক্রমে শক্তিমানদের দূরে টেনে নিয়ে যান; \q2 যদিও তারা প্রতিষ্ঠিত হয়, তাদের জীবনের কোনও নিশ্চয়তা নেই। \q1 \v 23 তিনি নিরাপত্তার অনুভূতি নিয়ে তাদের হয়তো বিশ্রাম নিতে দেন, \q2 কিন্তু তাদের পথের দিকে তাঁর দৃষ্টি থাকে। \q1 \v 24 অল্প কিছুকালের জন্য তারা উন্নত হয়, ও পরে তারা সর্বস্বান্ত হয়; \q2 তাদের অবনত করা হয় ও অন্য সকলের মতো সংগ্রহ করা হয়; \q2 শস্যের শিষের মতো তাদের কেটে ফেলা হয়। \b \q1 \v 25 “যদি এরকম না হয়, তবে কে আমাকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করতে পারে \q2 ও আমার কথা নিরর্থক করে দিতে পারে?” \c 25 \s1 বিল্‌দদ \p \v 1 পরে শূহীয় বিল্‌দদ উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আধিপত্য ও সম্ভ্রম ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত বিষয়; \q2 স্বর্গের উচ্চতায় তিনি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করেন। \q1 \v 3 তাঁর বাহিনীর সংখ্যা কি গুনে রাখা যায়? \q2 এমন কে আছে যার উপর তাঁর আলো উদিত হয় না? \q1 \v 4 ঈশ্বরের সামনে নশ্বর মানুষ তবে কীভাবে ধার্মিক গণিত হবে? \q2 স্ত্রী-জাত মানুষ কীভাবে শুচিশুদ্ধ হবে? \q1 \v 5 যদি তাঁর দৃষ্টিতে চাঁদও উজ্জ্বল নয় \q2 ও তারাগুলিও বিশুদ্ধ নয়, \q1 \v 6 তবে সেই নশ্বর মানুষ কী, যে এক শূককীটমাত্র— \q2 সেই মানুষই বা কী, যে এক কীটমাত্র!” \c 26 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “তুমি কীভাবে অক্ষম মানুষকে সাহায্য করেছ! \q2 তুমি কীভাবে দুর্বল হাতকে রক্ষা করেছ! \q1 \v 3 প্রজ্ঞাবিহীন মানুষকে তুমি কী পরামর্শ দিয়েছ! \q2 আর তুমি কী মহা পরিজ্ঞান দেখিয়েছ! \q1 \v 4 এসব কথা বলতে কে তোমাকে সাহায্য করেছে? \q2 আর তোমার মুখ থেকে কার অন্তরাত্মা কথা বলেছে? \b \q1 \v 5 “মৃতেরা গভীর মনস্তাপ ভোগ করে, \q2 যারা জলের তলদেশে থাকে ও যারা জলের মধ্যে থাকে, তারাও করে। \q1 \v 6 পাতাল ঈশ্বরের সামনে উলঙ্গ; \q2 বিনাশস্থান\f + \fr 26:6 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, আবাদ্দোন\ft*\f* অনাবৃত হয়ে আছে। \q1 \v 7 শূন্য স্থানের উপরে তিনি উত্তর অন্তরিক্ষকে প্রসারিত করেছেন; \q2 শূন্যের উপরে তিনি পৃথিবীকে ঝুলিয়ে রেখেছেন। \q1 \v 8 তাঁর মেঘে তিনি জলরাশি মুড়ে রাখেন, \q2 তবুও মেঘরাশি তাদের ভারে বিস্ফোরিত হয় না। \q1 \v 9 তিনি পূর্ণিমার চাঁদের মুখ\f + \fr 26:9 \fr*\ft অথবা, তাঁর সিংহাসন\ft*\f* ঢেকে রাখেন, \q2 তাঁর মেঘরাশি তার উপর প্রসারিত করেন। \q1 \v 10 আলো ও অন্ধকারের মধ্যে এক সীমানারূপে \q2 জলরাশির উপরে তিনি দিগন্তের চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। \q1 \v 11 আকাশমণ্ডলের স্তম্ভগুলি কেঁপে ওঠে, \q2 তাঁর ভর্ৎসনায় বিস্ময়বিমূঢ় হয়ে যায়। \q1 \v 12 তাঁর পরাক্রম দ্বারা তিনি সমুদ্র মন্থন করেন; \q2 তাঁর প্রজ্ঞা দ্বারা তিনি রাহবকে\f + \fr 26:12 \fr*\ft রাহব হল সেই পৌরাণিক সমুদ্রদানব, যা প্রাচীন সাহিত্যের বর্ণনানুসারে বিশৃঙ্খলার প্রতিনিধিত্বকারী\ft*\f* কেটে টুকরো টুকরো করে দেন। \q1 \v 13 তাঁর নিশ্বাস দ্বারা আকাশ পরিষ্কার হয়; \q2 তাঁরই হাত পিচ্ছিল সাপকে বিদ্ধ করেছে। \q1 \v 14 আর এসবই তাঁর কর্মের বাইরের দিকের ঝালর মাত্র; \q2 তাঁর বিষয়ে আমরা যা শুনি তা যদি এত ক্ষীণ ফিস্‌ফিসানি! \q2 তবে তাঁর পরাক্রমের বজ্রধ্বনি কে-ই বা বুঝতে পারে?” \c 27 \s1 বন্ধুদের কাছে ইয়োবের শেষ বক্তৃতা \p \v 1 আর ইয়োব তাঁর বক্তৃতা চালিয়ে গেলেন: \q1 \v 2 “যিনি আমাকে ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছেন, সেই জীবন্ত ঈশ্বরের দিব্যি, \q2 যিনি আমার প্রাণ তিক্ত করে দিয়েছেন, সেই সর্বশক্তিমানের দিব্যি, \q1 \v 3 যতদিন আমার শরীরে প্রাণ আছে, \q2 আমার নাকে ঈশ্বরের প্রাণবায়ু আছে, \q1 \v 4 ততদিন আমার ঠোঁট খারাপ কোনও কথা বলবে না, \q2 ও আমার জিভ মিথ্যা কথা উচ্চারণ করবে না। \q1 \v 5 আমি কখনোই স্বীকার করব না যে তোমরা নির্ভুল; \q2 আমৃত্যু আমি আমার সততা অস্বীকার করব না। \q1 \v 6 আমি আমার সরলতা বজায় রাখব ও কখনোই তা ত্যাগ করব না; \q2 যতদিন আমি বেঁচে থাকব, আমার বিবেক আমাকে অনুযোগ করবে না। \b \q1 \v 7 “আমার শত্রু দুষ্টের মতো হোক, \q2 আমার বিপক্ষ অধার্মিকের মতো হোক। \q1 \v 8 যেহেতু অনীশ্বররা যখন বিচ্ছিন্ন হয়, \q2 যখন ঈশ্বর তাদের প্রাণ কেড়ে নেন, \q2 তখন তাদের কাছে কী প্রত্যাশা থাকে? \q1 \v 9 ঈশ্বর কি তখন তাদের আর্তনাদ শোনেন \q2 যখন তাদের উপরে চরম দুর্দশা নেমে আসে? \q1 \v 10 তারা কি সর্বশক্তিমানে আনন্দ খুঁজে পাবে? \q2 তারা কি সবসময় ঈশ্বরকে ডাকবে? \b \q1 \v 11 “ঈশ্বরের পরাক্রমের বিষয়ে আমি তোমাদের শিক্ষা দেব; \q2 সর্বশক্তিমানের কোনো কিছুই আমি লুকিয়ে রাখব না। \q1 \v 12 তোমরা নিজেরাই তো তা দেখেছ। \q2 তবে কেন এই অনর্থক কথা বলছ? \b \q1 \v 13 “ঈশ্বর দুষ্টদের এই পরিণতিই বরাদ্দ করে দিয়েছেন, \q2 নিষ্ঠুর মানুষ সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে এই উত্তরাধিকারই লাভ করে: \q1 \v 14 তাদের সন্তানদের সংখ্যা যতই বেশি হোক না কেন, তাদের পরিণতি তরোয়ালই\f + \fr 27:14 \fr*\ft অথবা, মৃত্যু\ft*\f*; \q2 তাদের সন্তানসন্ততি কখনোই পর্যাপ্ত খাদ্য পাবে না। \q1 \v 15 যারা বেঁচে থাকবে মহামারি তাদের কবর দেবে, \q2 ও তাদের বিধবারাও তাদের জন্য কাঁদবে না। \q1 \v 16 যদিও সে ধুলোর মতো করে গাদা গাদা রুপো \q2 ও কাদার পাঁজার মতো করে পোশাক-পরিচ্ছদ জমাবে, \q1 \v 17 তবুও সে যা জমাবে ধার্মিকেরা তা গায়ে দেবে, \q2 ও নির্দোষ মানুষেরা তার রুপো ভাগাভাগি করে নেবে। \q1 \v 18 যে বাড়ি সে তৈরি করে তা পতঙ্গের গুটির মতো, \q2 চৌকিদারের তৈরি করা কুঁড়েঘরের মতো। \q1 \v 19 সে ধনবান অবস্থায় শুতে যায়, কিন্তু আর কখনও সে এরকম করতে পারবে না; \q2 সে যখন চোখ খোলে, তখন সব শেষ। \q1 \v 20 আতঙ্ক বন্যার মতো তার নাগাল ধরে ফেলে; \q2 রাতের বেলায় প্রচণ্ড ঝড় তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। \q1 \v 21 পূর্বীয় বাতাস তাকে তুলে নিয়ে যায়, ও সে সর্বস্বান্ত হয়; \q2 সেই বাতাস তাকে স্বস্থান থেকে উড়িয়ে দেয়। \q1 \v 22 সে যত সেই বাতাসের প্রকোপ থেকে পালায় \q2 তা নির্দয়ভাবে তাকে সজোরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। \q1 \v 23 সেই বাতাস উপহাসভরে হাততালি দেয় \q2 ও শিস দিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয়।” \c 28 \s1 প্রজ্ঞা কোথায় পাওয়া যায় \q1 \v 1 রুপোর জন্য খনি আছে \q2 ও একটি স্থান আছে যেখানে সোনা শোধন করা হয়। \q1 \v 2 ভূগর্ভ থেকে লোহা উত্তোলন করা হয়, \q2 ও আকরিক থেকে তামা বিগলিত করা হয়। \q1 \v 3 নশ্বর মানুষ অন্ধকার নিকাশ করে; \q2 তারা সবচেয়ে অন্ধকারে থাকা আকরিক পাওয়ার জন্য \q2 সর্বাধিক দূরবর্তী গর্তের খোঁজ করে। \q1 \v 4 লোকালয় থেকে বহুদূরে অবস্থিত এমন স্থানে তারা খাদ কাটে, \q2 যেখানে মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি; \q2 অন্যান্য মানুষজনের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে তারা দুলতে ও ঝুলতে থাকে। \q1 \v 5 যে মাটি থেকে খাদ্য উৎপন্ন হয়, \q2 তার তলদেশ আগুন দ্বারা রূপান্তরিত হয়ে যায়; \q1 \v 6 সেখানকার পাষাণ-পাথরগুলিতে নীলকান্তমণি পাওয়া যায়, \q2 ও সেখানকার ধুলোয় দলা দলা সোনা মিশে থাকে। \q1 \v 7 কোনও শিকারি পাখি সেই গুপ্ত পথ চেনে না, \q2 কোনও বাজপাখির চোখ তা দেখেনি। \q1 \v 8 উদ্ধত পশুরা তার উপরে পা ফেলে না, \q2 ও কোনও সিংহ সেখানে শিকারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় না। \q1 \v 9 মানুষজন তাদের হাত দিয়ে সেই অতি কঠিন পাষাণ-পাথরে হামলা চালায় \q2 ও পর্বত-মূল উন্মুক্ত করে দেয়। \q1 \v 10 তারা পাষাণ-পাথর খুঁড়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে; \q2 সেখানকার সব মণিরত্ন তাদের চোখে পড়ে। \q1 \v 11 তারা নদীর উৎসস্থলের খোঁজ করে\f + \fr 28:11 \fr*\ft অথবা, উৎসস্থলে বাঁধ দেয়\ft*\f* \q2 ও লুকানো বস্তুগুলি প্রকাশ্যে আনে। \b \q1 \v 12 কিন্তু প্রজ্ঞা কোথায় পাওয়া যাবে? \q2 বুদ্ধি-বিবেচনা কোথায় থাকে? \q1 \v 13 কোনও নশ্বর মানুষ তার মূল্য হৃদয়ঙ্গম করতে পারে না; \q2 জীবিতদের দেশে তা পাওয়া যায় না। \q1 \v 14 অগাধ জলরাশি বলে, “আমাতে তা নেই” \q2 সমুদ্র বলে, “আমার কাছেও তা নেই।” \q1 \v 15 খাঁটি সোনা দিয়ে তা কেনা যায় না, \q2 তার মূল্য রুপো দিয়েও মেপে দেওয়া যায় না। \q1 \v 16 ওফীরের সোনা দিয়ে, \q2 মূল্যবান গোমেদক বা নীলকান্তমণি দিয়েও তা কেনা যায় না। \q1 \v 17 তার সাথে সোনা বা স্ফটিকের তুলনা করা যায় না, \q2 সোনা-মানিকের বিনিময়ে তা পাওয়া যায় না। \q1 \v 18 প্রবাল ও জ্যাসপারের\f + \fr 28:18 \fr*\ft অথবা, লাল, হলুদ, বাদামি বা সবুজ রংয়ের মূল্যবান পাথর বা মণি\ft*\f* কথাই ওঠে না; \q2 প্রজ্ঞার মূল্য পদ্মরাগমণির চেয়েও বেশি। \q1 \v 19 তার সাথে কূশ দেশের পোখরাজের তুলনা করা যায় না; \q2 খাঁটি সোনা দিয়েও তা কেনা যায় না। \b \q1 \v 20 তবে প্রজ্ঞা কোথা থেকে আসে? \q2 বুদ্ধি-বিবেচনা কোথায় থাকে? \q1 \v 21 প্রত্যেক সজীব প্রাণীর চোখে তা অজ্ঞাত থাকে, \q2 আকাশের পাখিদের কাছেও তা অদৃশ্য থাকে। \q1 \v 22 বিনাশ\f + \fr 28:22 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, আবাদ্দোন\ft*\f* ও মৃত্যু বলে, \q2 “আমাদের কানে শুধু এক গুজব পৌঁছেছে।” \q1 \v 23 ঈশ্বরই প্রজ্ঞার কাছে পৌঁছানোর রাস্তা জানেন \q2 ও একমাত্র তিনিই জানেন তা কোথায় থাকে, \q1 \v 24 যেহেতু তিনি পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত দেখেন \q2 ও আকাশমণ্ডলের নিচে যা যা আছে, তিনি সবকিছু দেখেন। \q1 \v 25 যখন তিনি বাতাসের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন \q2 ও জলরাশির মাপ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, \q1 \v 26 যখন তিনি বর্ষার জন্য এক আদেশ জারি করেছিলেন \q2 ও বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝোড়ো বৃষ্টির জন্য এক পথ স্থির করেছিলেন, \q1 \v 27 তখন তিনি প্রজ্ঞার দিকে তাকিয়েছিলেন ও তার মূল্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন; \q2 তিনি তাকে অনুমোদন দিয়েছিলেন ও তার পরীক্ষা নিয়েছিলেন। \q1 \v 28 আর তিনি মানবজাতিকে বললেন, \q2 “সদাপ্রভুর ভয়—সেটিই হল প্রজ্ঞা, \q2 ও মন্দকে এড়িয়ে চলাই হল বুদ্ধি-বিবেচনা।” \c 29 \s1 ইয়োবের চূড়ান্ত আত্মপক্ষ সমর্থন \p \v 1 ইয়োব তাঁর বক্তৃতা চালিয়ে গেলেন: \q1 \v 2 “পার হয়ে যাওয়া মাসগুলির জন্য আমি কতই না আকাঙ্ক্ষিত, \q2 সেই দিনগুলির জন্যও আকাঙ্ক্ষিত, যখন ঈশ্বর আমার উপরে লক্ষ্য রাখতেন, \q1 \v 3 যখন তাঁর প্রদীপ আমার মাথার উপরে আলো দিত \q2 ও তাঁর আলোতে আমি অন্ধকারেও চলাফেরা করতাম! \q1 \v 4 আহা সেই দিনগুলি, যখন আমি উন্নতির শিখরে ছিলাম, \q2 ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব আমার বাড়িকে আশীর্বাদ করেছিল, \q1 \v 5 যখন সেই সর্বশক্তিমান আমার সাথেই ছিলেন \q2 ও আমার সন্তানেরা আমার চারপাশে ছিল, \q1 \v 6 আমার পথ যখন ননি প্লাবিত হত \q2 ও পাষাণ-পাথর আমার জন্য জলপাই তেলের ধারা ঢেলে দিত। \b \q1 \v 7 “আমি যখন নগরদ্বারে পৌঁছাতাম \q2 ও সার্বজনীন চকে আসন গ্রহণ করতাম, \q1 \v 8 যুবকেরা আমাকে দেখে সরে যেত \q2 ও প্রাচীনেরা উঠে দাঁড়াতেন; \q1 \v 9 শীর্ষস্থানীয় লোকেরা কথা বলা বন্ধ করে দিতেন \q2 ও হাত দিয়ে নিজেদের মুখ ঢেকে নিতেন; \q1 \v 10 অভিজাতদের কণ্ঠস্বর ধামাচাপা পড়ে যেত, \q2 ও তাদের জিভ তালুতে সংলগ্ন হত। \q1 \v 11 আমার কথা শুনে সবাই সাধুবাদ জানাত, \q2 ও আমাকে দেখে সবাই আমার প্রশংসা করত, \q1 \v 12 যেহেতু আমি সাহায্যের আশায় আর্তনাদ করা দরিদ্রকে, \q2 ও অসহায় পিতৃহীনকে উদ্ধার করতাম। \q1 \v 13 মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করত; \q2 বিধবার অন্তরে আমি গানের সঞ্চার করতাম। \q1 \v 14 আমি আমার ধার্মিকতা পোশাকরূপে গায়ে দিতাম; \q2 ন্যায়বিচার ছিল আমার আলখাল্লা ও আমার পাগড়ি। \q1 \v 15 অন্ধের কাছে আমি ছিলাম চোখ \q2 ও খঞ্জের কাছে পা। \q1 \v 16 অভাবগ্রস্তের কাছে আমি ছিলাম একজন বাবা; \q2 অপরিচিত লোকের মামলা আমি হাতে তুলে নিতাম। \q1 \v 17 দুষ্টদের বিষদাঁত আমি ভেঙে দিতাম \q2 ও তাদের দাঁত থেকে শিকারদের ছিনিয়ে আনতাম। \b \q1 \v 18 “আমি ভাবলাম, ‘নিজের বাড়িতেই আমি মারা যাব, \q2 আমার দিনগুলি হবে বালুকণার মতো অসংখ্য। \q1 \v 19 আমার মূল জলের কাছে গিয়ে পৌঁছাবে, \q2 ও আমার শাখাপ্রশাখায় গোটা রাত শিশির পড়বে। \q1 \v 20 আমার গরিমা ম্লান হবে না; \q2 ধনুক আমার হাতে চিরনতুন হয়ে থাকবে।’ \b \q1 \v 21 “মানুষজন প্রত্যাশা নিয়ে আমার কথা শুনত, \q2 আমার পরামর্শ লাভের জন্য নীরবে অপেক্ষা করত। \q1 \v 22 আমি কথা বলার পর, তারা আর কিছুই বলত না; \q2 আমার কথাবার্তা মৃদুভাবে তাদের কানে গিয়ে পড়ত। \q1 \v 23 তারা যেমন বৃষ্টির, তেমনি আমার অপেক্ষায় থাকত \q2 ও শেষ বর্ষার মতো আমার কথাবার্তা পান করত। \q1 \v 24 আমি যখন তাদের দিকে তাকিয়ে হাসতাম, তারা পুরোপুরি বিশ্বাস করত না; \q2 আমার মুখের আলো তাদের চমৎকার লাগত। \q1 \v 25 আমি তাদের জন্য পথ মনোনীত করতাম ও তাদের নেতা হয়ে বসতাম; \q2 সৈন্যদলের মধ্যে যেমন রাজা, তেমনি থাকতাম; \q2 বিলাপকারীদের যে সান্ত্বনা দেয়, তারই মতো থাকতাম। \b \c 30 \q1 \v 1 “কিন্তু এখন তারাই আমাকে বিদ্রুপ করে, \q2 যারা আমার থেকে বয়সে ছোটো, \q1 যাদের বাবাদের আমি আমার মেষপাল-রক্ষক কুকুরদের সাথে \q2 রাখতেও অবজ্ঞা করতাম। \q1 \v 2 তাদের হাতের শক্তি আমার কী কাজে লাগত, \q2 যেহেতু তাদের প্রাণশক্তি তো তাদের কাছ থেকে চলে গিয়েছে? \q1 \v 3 অভাব ও খিদের জ্বালায় জীর্ণশীর্ণ হয়ে \q2 তারা রাতের বেলায় রৌদ্রদগ্ধ জমিতে \q2 ও জনশূন্য পতিত জমিতে ঘুরে বেড়াত।\f + \fr 30:3 \fr*\ft অথবা, তারা রাতের বেলায় রৌদ্রদগ্ধ জমি ও জনশূন্য পতিত জমি কামড়ে খেতো\ft*\f* \q1 \v 4 ঝাড়-জঙ্গলে তারা লবণাক্ত শাক সংগ্রহ করত, \q2 ও খেংরা ঝোপের মূল তাদের খাদ্য\f + \fr 30:4 \fr*\ft অথবা, জ্বালানি\ft*\f* হয়েছিল। \q1 \v 5 মানবসমাজ থেকে তারা বিতাড়িত হয়েছিল, \q2 লোকজন যেভাবে চোরের পিছনে চিৎকার করে, সেভাবে তাদেরও পিছনেও চিৎকার করত। \q1 \v 6 তারা শুকনো নদীখাতে, পাষাণ-পাথরের খাঁজে \q2 ও জমির ফাটলে বসবাস করতে বাধ্য হত। \q1 \v 7 ঝোপঝাড়ে তারা পশুদের মতো ডাক দিয়ে বেড়াত \q2 ও লতাগুল্মের জঙ্গলে গাদাগাদি করে থাকত। \q1 \v 8 এক হীন ও অখ্যাত কুল হয়ে, \q2 তারা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। \b \q1 \v 9 “আর এখন সেই যুবকেরা গান গেয়ে গেয়ে আমাকে বিদ্রুপ করে; \q2 আমি তাদের মাঝে এক জনশ্রুতিতে পরিণত হয়েছি। \q1 \v 10 তারা আমাকে ঘৃণা করে ও আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকে; \q2 আমার মুখে থুতু ছিটাতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না। \q1 \v 11 এখন যেহেতু ঈশ্বর আমার ধনুক বিতন্ত্রিত করেছেন ও আমাকে দুর্দশাগ্রস্ত করেছেন, \q2 তাই আমার সামনে তারা সংযম ঝেড়ে ফেলেছে। \q1 \v 12 আমার ডানদিকে উপজাতিরা আক্রমণ করে; \q2 তারা আমার পায়ের জন্য ফাঁদ বিছায়, \q2 আমার বিরুদ্ধে তারা তাদের অবরোধ-পথ নির্মাণ করে। \q1 \v 13 তারা আমার পথ অবরুদ্ধ করে; \q2 তারা আমাকে ধ্বংস করতে সফল হয়। \q2 ‘কেউ তাকে সাহায্য করতে পারবে না,’ তারা বলে। \q1 \v 14 তারা যেন এক প্রশস্ত ফাটলের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে আসে; \q2 ধ্বংসাবশেষের মাঝখান দিয়ে তারা ঘূর্ণিবেগে আসে। \q1 \v 15 আতঙ্ক আমাকে অভিভূত করে; \q2 আমার সম্মান যেন বাতাসে উড়ে গিয়েছে, \q2 আমার নিরাপত্তা মেঘের মতো অদৃশ্য হয়ে যায়। \b \q1 \v 16 “আর এখন আমার জীবনে ভাটার টান এসেছে; \q2 কষ্টভোগের দিন আমাকে গ্রাস করেছে। \q1 \v 17 রাতের বেলায় আমার অস্থি বিদ্ধ হয়; \q2 আমার বিরক্তিকর যন্ত্রণা কখনও বিশ্রাম নেয় না। \q1 \v 18 ঈশ্বর তাঁর মহাপরাক্রমে আমার কাছে পোশাকের মতো হয়ে গিয়েছেন\f + \fr 30:18 \fr*\ft অথবা, আমার পোশাক আঁকড়ে ধরেন\ft*\f*; \q2 আমার জামার গলবন্ধের মতো তিনি আমাকে বেঁধে রেখেছেন। \q1 \v 19 তিনি আমাকে কাদায় ছুঁড়ে ফেলেছেন, \q2 ও আমি ধুলো ও ভস্মের মতো হয়ে গিয়েছি। \b \q1 \v 20 “হে ঈশ্বর, আমি তোমার কাছে আর্তনাদ করেছি, কিন্তু তুমি উত্তর দাওনি; \q2 আমি উঠে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু তুমি শুধু আমার দিকে তাকিয়েছ। \q1 \v 21 নির্মমভাবে তুমি আমার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছ; \q2 তোমার হাতের শক্তি দিয়ে তুমি আমাকে আক্রমণ করেছ। \q1 \v 22 আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে তুমি আমাকে বাতাসের সামনে চালান করেছ; \q2 তুমি আমাকে ঝড়ের মধ্যে ছুঁড়ে দিয়েছ। \q1 \v 23 আমি জানি তুমি আমাকে মৃত্যুর কাছে নিয়ে যাবে, \q2 সেই স্থানে নিয়ে যাবে, যা সব জীবিতজনের জন্য নিরূপিত হয়ে আছে। \b \q1 \v 24 “একজন বিদীর্ণ মানুষ যখন তার চরম দুর্দশায় সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করে \q2 তখন নিশ্চয় তার উপরে কেউ হস্তক্ষেপ করে না। \q1 \v 25 আমি কি বিপদগ্রস্তদের জন্য কাঁদিনি? \q2 দরিদ্রদের জন্য আমার প্রাণ কি ব্যথিত হয়নি? \q1 \v 26 অথচ আমি যখন মঙ্গলের প্রত্যাশা করেছি, তখন অমঙ্গল এসেছে; \q2 আমি যখন আলোর খোঁজ করেছি, তখন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। \q1 \v 27 আমার ভিতরের মন্থন কখনও থামেনি; \q2 দিনের পর দিন আমাকে যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়েছে। \q1 \v 28 আমি কলঙ্কিত হয়েছি, কিন্তু সূর্যের দ্বারা নয়; \q2 জনসমাবেশে দাঁড়িয়ে আমি সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করেছি। \q1 \v 29 আমি শিয়ালদের ভাই হয়েছি, \q2 প্যাঁচাদের সঙ্গী হয়েছি। \q1 \v 30 আমার চামড়া কালো হয়ে গিয়ে তাতে খোসা ছাড়ছে; \q2 আমার শরীর জ্বরে পুড়ছে। \q1 \v 31 আমার বীণা শোকের সুর তুলছে, \q2 ও আমার বাঁশি হাহাকারের শব্দ করছে। \b \c 31 \q1 \v 1 “আমি আমার চোখের সাথে এক চুক্তি করেছি \q2 যেন যুবতী মেয়ের দিকে কামুক দৃষ্টি নিয়ে না তাকাই। \q1 \v 2 তবে ঊর্ধ্ববাসী ঈশ্বরের কাছে আমাদের কী প্রাপ্য, \q2 উচ্চে অবস্থিত সর্বশক্তিমানের কাছে আমাদের কী উত্তরাধিকার আছে? \q1 \v 3 দুষ্টদের জন্য কি সর্বনাশ নয়, \q2 যারা অন্যায় করে তাদের জন্য কি বিপর্যয় নয়? \q1 \v 4 তিনি কি আমার পথগুলি দেখেন না \q2 ও আমার প্রতিটি পদক্ষেপ গুনে রাখেন না? \b \q1 \v 5 “আমি যদি অসাধুতা নিয়ে চলেছি \q2 বা আমার পা প্রতারণার পথে চলতে ব্যতিব্যস্ত হয়েছে— \q1 \v 6 তবে ঈশ্বরই আমাকে সরল দাঁড়িপাল্লায় ওজন করুন \q2 ও তিনি জানতে পারবেন যে আমি অনিন্দনীয়— \q1 \v 7 আমার পদক্ষেপ যদি পথ থেকে বিপথে গিয়েছে, \q2 আমার হৃদয় যদি আমার চোখ দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, \q2 বা আমার হাত যদি কলঙ্কিত হয়েছে, \q1 \v 8 তবে আমি যা বুনেছি তা যেন অন্যেরা খায়, \q2 ও আমার ফসল যেন নির্মূল হয়। \b \q1 \v 9 “আমার অন্তর যদি রমণীতে আকৃষ্ট হয়, \q2 বা আমি যদি আমার প্রতিবেশীর দরজায় ওৎ পেতে থাকি, \q1 \v 10 তবে আমার স্ত্রী যেন অন্য লোকের শস্য পেষাই করে, \q2 ও অন্য পুরুষ যেন তার সাথে শোয়। \q1 \v 11 কারণ তা হবে জঘন্য অপরাধ, \q2 এমন এক পাপ যা দণ্ডনীয়। \q1 \v 12 এটি এমন এক আগুন যা পুড়িয়ে বিনাশে\f + \fr 31:12 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, আবাদ্দোনে\ft*\f* পৌঁছে দেয়; \q2 তা আমার পাকা ফসল নির্মূল করে দিতে পারত। \b \q1 \v 13 “আমার দাসেরা যখন আমার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে, \q2 তখন সে দাসই হোক বা দাসী, \q2 আমি যদি তাদের মধ্যে কোনও একজনের প্রতি ন্যায়বিচার না করেছি, \q1 \v 14 তবে আমি যখন ঈশ্বরের সম্মুখীন হব তখন কী করব? \q2 যখন তিনি হিসেব নেবেন তখন কী উত্তর দেব? \q1 \v 15 যিনি আমাকে গর্ভের মধ্যে তৈরি করেছেন তিনি কি তাদেরও তৈরি করেননি? \q2 একই জন কি আমাদের মাতৃগর্ভে আমাদের উভয়কে গঠন করেননি? \b \q1 \v 16 “আমি যদি দরিদ্রদের বাসনা অস্বীকার করেছি \q2 বা বিধবাদের চোখ নিস্তেজ হতে দিয়েছি, \q1 \v 17 আমি যদি আমার খাদ্য নিজের জন্যই জমিয়ে রেখেছি, \q2 পিতৃহীনদের তা থেকে কিছু দিইনি— \q1 \v 18 কিন্তু যৌবনকাল থেকে আমি এক বাবার মতো তাদের যত্ন নিয়েছি, \q2 ও জন্ম থেকেই আমি বিধবাদের উপকার করেছি— \q1 \v 19 আমি যদি কাউকে পোশাকের অভাবে বিনষ্ট হতে দেখেছি, \q2 বা অভাবগ্রস্তদের বস্ত্রহীন অবস্থায় দেখেছি, \q1 \v 20 ও তাদের অন্তর আমাকে আশীর্বাদ করেনি \q2 কারণ আমি আমার মেষের লোম দিয়ে তাদের উষ্ণতা দিইনি, \q1 \v 21 দরবারে আমার প্রভাব-প্রতিপত্তি আছে জেনেও, \q2 আমি যদি পিতৃহীনদের বিরুদ্ধে আমার হাত উঠিয়েছি, \q1 \v 22 তবে আমার হাত যেন কাঁধ থেকে খসে পড়ে, \q2 তা যেন সন্ধি থেকে খুলে যায়। \q1 \v 23 যেহেতু আমি ঐশ্বরিক বিনাশকে ভয় পেয়েছি, \q2 ও তাঁর প্রভার ভয়ে আমি এ ধরনের কাজকর্ম করতে পারিনি। \b \q1 \v 24 “আমি যদি সোনার উপরে আস্থা স্থাপন করেছি \q2 বা খাঁটি সোনাকে বলেছি, ‘তুমিই আমার জামানত,’ \q1 \v 25 আমি যদি আমার সম্পদের প্রাচুর্যের বিষয়ে, \q2 আমার হাত যে প্রচুর ধন অর্জন করেছে, সেই ধনের বিষয়ে আনন্দ করেছি, \q1 \v 26 আমি যদি প্রভাকর সূর্যকে \q2 বা উজ্জ্বল দীপ্তি ছড়িয়ে যাওয়া চাঁদকে দেখেছি, \q1 \v 27 যেন আমার অন্তর গোপনে আকৃষ্ট হয় \q2 ও আমার হাত তাদের উদ্দেশে সম্মানের চুম্বন উৎসর্গ করে, \q1 \v 28 তবে এসবও দণ্ডনীয় পাপ হবে, \q2 যেহেতু আমি ঊর্ধ্ববাসী ঈশ্বরের কাছে অবিশ্বস্ত হয়েছি। \b \q1 \v 29 “আমি যদি আমার শত্রুর দুর্ভাগ্য দেখে আনন্দ করেছি, \q2 বা তার আকস্মিক দুর্দশার দিকে উল্লসিত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়েছি— \q1 \v 30 আমি তাদের জীবনের উদ্দেশে অভিশাপ আবাহন করার মাধ্যমে \q2 আমার মুখকে পাপ করতে দিইনি— \q1 \v 31 আমার পরিবারভুক্ত সবাই যদি কখনও না বলত, \q2 ‘ইয়োবের দেওয়া মাংস খেয়ে কে না তৃপ্ত হয়েছে?’ \q1 \v 32 কিন্তু কোনও আগন্তুককে পথে রাত কাটাতে হয়নি, \q2 যেহেতু আমার দরজা সবসময় পথিকদের জন্য খোলা ছিল— \q1 \v 33 মানুষ যেভাবে পাপ ধামাচাপা দেয়\f + \fr 31:33 \fr*\ft অথবা, আদম যেভাবে পাপ ধামাচাপা দিয়েছিলেন\ft*\f*, আমিও যদি সেভাবে তা ধামাচাপা দিয়েছি, \q2 মনে মনে আমার অপরাধ লুকিয়েছি \q1 \v 34 যেহেতু আমি জনতাকে ভয় পেয়েছিলাম \q2 ও গোষ্ঠীদের অবজ্ঞা দেখে এত আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম \q2 যে আমি নীরবতা বজায় রেখেছিলাম ও বাইরেও যাইনি— \b \q1 \v 35 (“হায়! আমার কথা শোনার জন্য যদি কেউ থাকত! \q2 আমার আত্মপক্ষ সমর্থনে আমি এখন সই করছি, সর্বশক্তিমানই আমাকে উত্তর দিন; \q2 আমার ফরিয়াদি লিখিত আকারে তাঁর অভিযোগপত্র লিখুন। \q1 \v 36 আমি নিশ্চয় তা আমার কাঁধে তুলে বহন করব, \q2 আমি তা মুকুটের মতো করে মাথায় দেব। \q1 \v 37 আমার প্রত্যেকটি পদক্ষেপের বিবরণ আমি তাঁকে দেব; \q2 একজন শাসককে যেভাবে উপহার দেওয়া হয়, সেভাবেই আমি তা তাঁকে উপহার দেব।) \b \q1 \v 38 “আমার দেশ যদি আমার বিরুদ্ধে আর্তনাদ করে ওঠে \q2 ও তার সব সীতা\f + \fr 31:38 \fr*\ft অথবা, হলকর্ষণে সৃষ্ট খাত\ft*\f* যদি অশ্রুজলে সিক্ত হয়ে যায়, \q1 \v 39 আমি যদি দাম না দিয়েই সেই জমিতে উৎপন্ন ফসল গ্রাস করেছি \q2 বা তার ভাড়াটিয়াদের অন্তরাত্মা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছি, \q1 \v 40 তবে গমের পরিবর্তে কাঁটাঝোপ \q2 ও যবের পরিবর্তে দুর্গন্ধযুক্ত আগাছা উৎপন্ন হোক।” \p ইয়োবের কথাবার্তা শেষ হল। \c 32 \s1 ইলীহূ \p \v 1 অতএব এই তিনজন ইয়োবকে আর কোনও উত্তর দিলেন না, যেহেতু তিনি নিজের দৃষ্টিতে নিজেকে ধার্মিক বলে মনে করেছিলেন। \v 2 কিন্তু রামের পরিবারভুক্ত বূষীয় বারখেলের ছেলে ইলীহূ ইয়োবের উপরে খুব ক্রুদ্ধ হলেন, যেহেতু ইয়োব ঈশ্বরের তুলনায় নিজেকে বেশি ধার্মিক বলে মনে করেছিলেন। \v 3 তিনি ইয়োবের তিন বন্ধুর উপরেও ক্রুদ্ধ হলেন, যেহেতু তারা কোনোভাবেই ইয়োবকে মিথ্যা প্রমাণিত করতে পারেননি, তবুও তাঁর\f + \fr 32:3 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের\ft*\f* উপরে দোষারোপ করেছিলেন। \v 4 এদিকে ইলীহূ ইয়োবের সাথে কথা বলার আগে অপেক্ষা করছিলেন, যেহেতু তারা সবাই বয়সে তাঁর চেয়ে বড়ো ছিলেন। \v 5 কিন্তু তিনি যখন দেখলেন যে সেই তিনজনের বলার আর কিছুই নেই, তখন তিনি ক্রোধে ফেটে পড়লেন। \p \v 6 অতএব বূষীয় বারখেলের ছেলে ইলীহূ বললেন: \q1 “আমি বয়সে তরুণ, \q2 ও আপনারা প্রবীণ; \q1 তাই আমার ভয় হয়েছিল, \q2 আমি যা জানি তা আপনাদের বলার সাহস পাইনি। \q1 \v 7 আমি ভেবেছিলাম, ‘বয়সই কথা বলুক; \q2 পরিণত বছরগুলিই প্রজ্ঞা শিক্ষা দিক।’ \q1 \v 8 কিন্তু একজন ব্যক্তির মধ্যে উপস্থিত আত্মা\f + \fr 32:8 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বররূপী আত্মা\ft*\f*, \q2 সর্বশক্তিমানের শ্বাসই তাদের বুদ্ধি-বিবেচনা দান করে। \q1 \v 9 যারা বয়সে প্রাচীন\f + \fr 32:9 \fr*\ft অথবা, সংখ্যায় বেশি; বা, বিশিষ্টজন\ft*\f* তারাই যে শুধু জ্ঞানবান, তা নয়, \q2 বয়স্করাই যে শুধু যা সমুচিত তা বোঝেন, এরকম নয়। \b \q1 \v 10 “তাই আমি বলছি: আমার কথা শুনুন; \q2 আমি যা জানি তা আমিও আপনাদের বলব। \q1 \v 11 আপনারা যখন কথা বলছিলেন, আমি তখন অপেক্ষা করেছিলাম, \q2 আমি আপনাদের যুক্তি শুনছিলাম; \q1 আপনারা যখন শব্দ খুঁজছিলেন, \q2 \v 12 আমি তখন গভীর মনোযোগ দিয়ে আপনাদের কথা শুনছিলাম। \q1 কিন্তু আপনাদের মধ্যে একজনও ইয়োবকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে পারেননি; \q2 আপনাদের মধ্যে কেউই তাঁর যুক্তির উত্তর দিতে পারেননি। \q1 \v 13 বলবেন না, ‘আমরা প্রজ্ঞা খুঁজে পেয়েছি; \q2 মানুষ নয়, ঈশ্বরই তাঁকে মিথ্যা প্রমাণিত করুন।’ \q1 \v 14 কিন্তু ইয়োব আমার বিরুদ্ধে তাঁর শব্দগুলি বিন্যাস সহকারে সাজাননি, \q2 ও আপনাদের যুক্তি দিয়ে আমিও তাঁকে উত্তর দেব না। \b \q1 \v 15 “তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেন ও তাদের আর কিছুই বলার ছিল না; \q2 তাদের শব্দ হারিয়ে গিয়েছিল। \q1 \v 16 আমি কি অপেক্ষা করব, এখন তারা যখন নীরব হয়ে আছেন, \q2 এখন তারা যখন সেখানে নিরুত্তর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন? \q1 \v 17 আমারও কিছু বলার আছে; \q2 আমি যা জানি তা আমিও বলব। \q1 \v 18 যেহেতু আমি কথায় পরিপূর্ণ, \q2 ও আমার অন্তরাত্মা আমাকে বাধ্য করছে; \q1 \v 19 ভিতর থেকে আমি বোতলে ভরা দ্রাক্ষারস, \q2 দ্রাক্ষারসে ভরা নতুন মশকের মতো, যা ফেটে পড়তে চলেছে। \q1 \v 20 আমাকে কথা বলতে ও উপশম পেতে হবে; \q2 ঠোঁট খুলে আমাকে উত্তর দিতে হবে। \q1 \v 21 আমি কোনও পক্ষপাতিত্ব দেখাব না, \q2 কাউকে তোষামোদও করব না; \q1 \v 22 যেহেতু আমি যদি তোষামোদিতে পারদর্শী হতাম, \q2 তবে আমার নির্মাতা অচিরেই আমাকে নিয়ে চলে যেতেন। \b \c 33 \q1 \v 1 “কিন্তু এখন, হে ইয়োব, আমার কথা শুনুন; \q2 আমি যা কিছু বলি, তাতে মনোযোগ দিন। \q1 \v 2 আমি আমার মুখ খুলতে যাচ্ছি; \q2 আমার কথা আমার জিভের ডগায় লেগে আছে। \q1 \v 3 আমার কথা এক ন্যায়পরায়ণ অন্তর থেকে বেরিয়ে আসে; \q2 আমি যা জানি আমার ঠোঁট সততাপূর্বক তাই বলে। \q1 \v 4 ঈশ্বরের আত্মা আমাকে সৃষ্টি করেছেন; \q2 সর্বশক্তিমানের শ্বাস আমায় জীবন দান করেছে। \q1 \v 5 যদি পারেন তবে আমার কথার উত্তর দিন; \q2 উঠে দাঁড়ান ও আমার সামনে আপনার মামলার যুক্তি সাজান। \q1 \v 6 ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আপনি যেমন আমিও তেমনই; \q2 আমিও মাটির এক টুকরো। \q1 \v 7 আমাকে ভয় করতে হবে না, \q2 বা আমার হাতও আপনার উপরে ভারী হবে না। \b \q1 \v 8 “কিন্তু আপনি আমার কানে কানে বলেছেন— \q2 সেকথা আমি শুনেছি— \q1 \v 9 ‘আমি শুচিশুদ্ধ, আমি কোনও অন্যায় করিনি; \q2 আমি নির্মল ও পাপমুক্ত। \q1 \v 10 তবুও ঈশ্বর আমার মধ্যে দোষ খুঁজে পেয়েছেন; \q2 তিনি আমাকে তাঁর শত্রু বলে গণ্য করেছেন। \q1 \v 11 তিনি আমার পায়ে বেড়ি পড়িয়েছেন; \q2 তিনি আমার সব পথের উপরে সজাগ দৃষ্টি রাখেন।’ \b \q1 \v 12 “কিন্তু আমি আপনাকে বলছি, এ বিষয়ে আপনি নির্ভুল নন, \q2 যেহেতু ঈশ্বর যে কোনো নশ্বর মানুষের চেয়ে মহান। \q1 \v 13 আপনি কেন তাঁর কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন \q2 যে তিনি কারোর কথার উত্তর দেন না\f + \fr 33:13 \fr*\ft অথবা, তাঁর কোনও কাজের জন্য তিনি জবাবদিহি করেন না\ft*\f*? \q1 \v 14 যেহেতু ঈশ্বর তো কথা বলেন—এখন একভাবে, তো তখন অন্যভাবে— \q2 যদিও কেউই তা হৃদয়ঙ্গম করে না। \q1 \v 15 স্বপ্নে, রাতে আসা দর্শনে, \q2 যখন মানুষ গভীর ঘুমে মগ্ন থাকে \q2 তাদের বিছানায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে থাকে, \q1 \v 16 তখন হয়তো তিনি তাদের কানে কানে কথা বলেন \q2 ও সতর্কবার্তা দিয়ে তাদের আতঙ্কিত করে তোলেন, \q1 \v 17 যেন তিনি তাদের অন্যায়াচরণ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন \q2 ও অহংকার থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন, \q1 \v 18 যেন খাত থেকে তাদের প্রাণ, \q2 তরোয়ালের আঘাত থেকে\f + \fr 33:18 \fr*\ft অথবা, নদী পার হওয়া থেকে\ft*\f* তাদের জীবন রক্ষা করতে পারেন। \b \q1 \v 19 “অথবা কেউ হয়তো অস্থিতে অবিরত যন্ত্রণা নিয়ে \q2 বিছানায় ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে শাস্তি পায়, \q1 \v 20 তাদের কাছে খাবার বিরক্তিকর বলে মনে হয় \q2 ও তাদের প্রাণ সুস্বাদু আহারও ঘৃণা করে। \q1 \v 21 তাদের শরীর ক্ষয়ে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়, \q2 ও তাদের অস্থি, যা এক সময় অদৃশ্য ছিল, তা এখন বেরিয়ে পড়েছে। \q1 \v 22 তারা খাতের কাছে এগিয়ে যায়, \q2 ও তাদের জীবন মৃত্যুদূতদের\f + \fr 33:22 \fr*\ft অথবা, মৃতদের স্থানের\ft*\f* নিকটবর্তী হয়। \q1 \v 23 তবুও যদি তাদের পাশে থেকে একথা বলার জন্য এক স্বর্গদূতকে, \q2 হাজার জনের মধ্যে থেকে একজন দূতকে পাঠানো হয়, \q2 যে কীভাবে ন্যায়পরায়ণ হওয়া যায়, \q1 \v 24 ও তিনি সেই লোকটির প্রতি অনুগ্রহকারী হয়ে ঈশ্বরকে বলেন, \q2 ‘খাদে নেমে যাওয়ার হাত থেকে তাদের রেহাই দাও; \q2 আমি তাদের জন্য মুক্তিপণ খুঁজে পেয়েছি— \q1 \v 25 তাদের শরীর এক শিশুর মতো সতেজ হয়ে যাক; \q2 তারা তাদের যৌবনের দিনগুলিতে ফিরে যাক।’ \q1 \v 26 তখন সেই লোকটি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারবে ও তাঁর অনুগ্রহ লাভ করবে, \q2 তারা ঈশ্বরের মুখদর্শন করবে ও আনন্দে চিৎকার করবে; \q2 তিনি তাদের আবার পূর্ণ মঙ্গলের দশায় ফিরিয়ে আনবেন। \q1 \v 27 আর তারা অন্যদের কাছে গিয়ে বলবে, \q2 ‘আমি পাপ করেছি, আমি সত্য বিকৃত করেছি, \q2 কিন্তু আমার যা প্রাপ্য আমি তা পাইনি। \q1 \v 28 ঈশ্বর আমাকে খাদে যাওয়া থেকে রক্ষা করেছেন, \q2 ও আমি জীবনের আলো উপভোগ করার জন্য বেঁচে থাকব।’ \b \q1 \v 29 “ঈশ্বর একজন লোকের সঙ্গে এসব কিছু করেন— \q2 দু-বার, এমনকি তিনবারও করেন— \q1 \v 30 খাত থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য, \q2 যেন তাদের উপরে জীবনের আলো উদ্ভাসিত হয়। \b \q1 \v 31 “হে ইয়োব, মনোযোগ দিন, ও আমার কথা শুনুন; \q2 নীরব থাকুন, ও আমাকে বলতে দিন। \q1 \v 32 আপনার যদি কিছু বলার থাকে, তবে আমাকে উত্তর দিন; \q2 কথা বলুন, কারণ আমি আপনাকে সমর্থন করতে চাই। \q1 \v 33 কিন্তু যদি না থাকে, তবে আমার কথা শুনুন; \q2 নীরব থাকুন, ও আমি আপনাকে জ্ঞান শিক্ষা দেব।” \c 34 \p \v 1 পরে ইলীহূ বললেন: \q1 \v 2 “হে জ্ঞানীগুণীরা, আমার কথা শুনুন; \q2 হে পণ্ডিত ব্যক্তিরা, আমার কথায় কর্ণপাত করুন। \q1 \v 3 জিভ যেভাবে খাদ্যের স্বাদ যাচাই করে \q2 কানও সেভাবে কথার পরীক্ষা করে। \q1 \v 4 আসুন, যা ন্যায্য আমরা তা আমাদের জন্য ঠিক করে নিই; \q2 আসুন, যা ভালো আমরা তা একসাথে শিখে নিই। \b \q1 \v 5 “ইয়োব বলছেন, ‘আমি নির্দোষ, \q2 কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি ন্যায়বিচার করেননি। \q1 \v 6 আমি যদিও ন্যায়বান, \q2 তাও আমাকে মিথ্যাবাদীরূপে গণ্য করা হয়েছে; \q1 আমি যদিও নিরপরাধ, \q2 তাও তাঁর তির এক দুরারোগ্য আঘাত দিয়েছে।’ \q1 \v 7 ইয়োবের মতো আর কেউ কি আছেন, \q2 যিনি জলের মতো অবজ্ঞা পান করেন? \q1 \v 8 তিনি দুর্বৃত্তদের সঙ্গ দেন; \q2 তিনি দুর্জনদের সহযোগী হন। \q1 \v 9 কারণ তিনি বলেছেন, ‘ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে \q2 কোনও লাভ নেই।’ \b \q1 \v 10 “তাই হে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা, আমার কথা শুনুন। \q2 এ হতেই পারে না যে ঈশ্বর অমঙ্গল করবেন, \q2 সর্বশক্তিমান অন্যায় করবেন। \q1 \v 11 মানুষের কর্মের ফলই তিনি প্রত্যেককে দেন; \q2 তাদের আচরণ অনুসারে তাদের যা প্রাপ্য তিনি তাদের তাই দেন। \q1 \v 12 চিন্তাও করা যায় না যে ঈশ্বর অন্যায় করবেন, \q2 সর্বশক্তিমান ন্যায়বিচার বিকৃত করবেন। \q1 \v 13 পৃথিবীর উপরে কে তাঁকে নিযুক্ত করেছে? \q2 সমগ্র জগতের দায়িত্ব কে তাঁর হাতে সঁপে দিয়েছে? \q1 \v 14 যদি তাঁর ইচ্ছা হত \q2 এবং তিনি তাঁর আত্মা ও শ্বাসবায়ু ফিরিয়ে নিতেন, \q1 \v 15 তবে সমগ্র মানবজাতি একসাথে ধ্বংস হয়ে যেত \q2 ও মানবসমাজ ধুলোতে ফিরে যেত। \b \q1 \v 16 “আপনার যদি বোধশক্তি থাকে, তবে শুনুন; \q2 আমি যা বলছি তাতে কর্ণপাত করুন। \q1 \v 17 যে ন্যায়বিচার ঘৃণা করে সে কি শাসন করবে? \q2 আপনি কি ন্যায়পরায়ণ ও পরাক্রমী ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করবেন? \q1 \v 18 তিনিই কি সেই ব্যক্তি নন, যিনি রাজাদের বলেন, ‘তোমরা অপদার্থ,’ \q2 ও অভিজাত লোকজনকে বলেন, ‘তোমরা দুষ্ট,’ \q1 \v 19 যিনি রাজপুরুষদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখান না \q2 এবং দরিদ্রদের তুলনায় ধনীদের বেশি প্রশ্রয় দেন না, \q2 কারণ তারা সবাই তাঁরই হাতের কর্ম? \q1 \v 20 এক পলকে, মাঝরাতেই তাদের মৃত্যু হয়; \q2 মানুষজন প্রকম্পিত হয় ও তারা মারা যায়; \q2 পরাক্রমীরা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই অপসারিত হয়। \b \q1 \v 21 “নশ্বর মানুষের পথের প্রতি তাঁর দৃষ্টি আছে; \q2 তিনি তাদের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন। \q1 \v 22 এমন কোনও গভীর অন্ধকার, গাঢ় ছায়া নেই, \q2 যেখানে দুর্বৃত্তেরা গিয়ে লুকাতে পারে। \q1 \v 23 ঈশ্বরকে আর মানুষের পরীক্ষা করতে হবে না, \q2 যেন বিচারিত হওয়ার জন্য তাদের তাঁর সামনে আসতে হয়। \q1 \v 24 বিনা তদন্তে তিনি পরাক্রমীদের চূর্ণবিচূর্ণ করেন \q2 ও তাদের স্থানে তিনি অন্যদের নিযুক্ত করেন। \q1 \v 25 কারণ তিনি তাদের কাজকর্ম লক্ষ্য করেন, \q2 রাতারাতি তিনি তাদের উৎখাত করেন ও তারা চূর্ণ হয়। \q1 \v 26 তাদের দুষ্টতার জন্য তিনি এমন এক স্থানে তাদের দণ্ড দেন \q2 যেখানে সবাই তাদের দেখতে পায়, \q1 \v 27 কারণ তারা তাঁর অনুগমন করা থেকে ফিরে গিয়েছে \q2 ও তাঁর কোনো পথের প্রতি তাদের মনে কোনো কদর নেই। \q1 \v 28 তাদের কারণে দরিদ্রদের আর্তনাদ তাঁর কাছে পৌঁছেছে, \q2 ও অভাবগ্রস্তদের কান্না তিনি শুনে ফেলেছেন। \q1 \v 29 কিন্তু তিনি যদি নীরব থাকেন, কে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করবে? \q2 তিনি যদি তাঁর মুখ ঢেকে রাখেন, কে তাঁকে দেখতে পাবে? \q1 তবুও তিনি ব্যক্তিবিশেষ ও জাতি উভয়ের উপরেই বিরাজমান, \q2 \v 30 যেন অধার্মিকেরা শাসন করতে না পারে, \q2 ও প্রজাদের জন্য ফাঁদ বিছাতে না পারে। \b \q1 \v 31 “ধরুন কেউ ঈশ্বরকে বলছে, \q2 ‘আমি দোষী কিন্তু আমি আর অপরাধ করব না। \q1 \v 32 আমি যা দেখতে পাই না তা আমাকে শিক্ষা দাও; \q2 আমি যদি অন্যায় করে থাকি, তবে আমি আর তা করব না।’ \q1 \v 33 যখন আপনি অনুতাপ করতে রাজি হচ্ছেন না \q2 তখন ঈশ্বর কি আপনার শর্তে আপনাকে পুরস্কৃত করবেন? \q1 আমাকে নয়, আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে; \q2 তাই বলুন আপনি কী জানেন। \b \q1 \v 34 “বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা ঘোষণা করবেন, \q2 যারা আমার কথা শুনেছেন সেই জ্ঞানবানেরা আমায় বলবেন, \q1 \v 35 ‘ইয়োব অজ্ঞের মতো কথা বলছেন; \q2 তাঁর কথায় অন্তর্দৃষ্টির অভাব আছে।’ \q1 \v 36 ওহো, একজন দুষ্টলোকের মতো উত্তর দেওয়ার জন্য \q2 যদি ইয়োবের চরম পরীক্ষা নেওয়া যেত! \q1 \v 37 তাঁর পাপে তিনি বিদ্রোহও যোগ করেছেন; \q2 ঘৃণাপূর্ণভাবে তিনি আমাদের মধ্যে হাততালি দিয়েছেন \q2 ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন।” \c 35 \p \v 1 পরে ইলীহূ বললেন: \q1 \v 2 “আপনার কি মনে হয় এটি যথাযথ? \q2 আপনি বলছেন, ‘ঈশ্বর নন, আমিই ঠিক।’ \q1 \v 3 তাও আপনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘এতে আমার\f + \fr 35:3 \fr*\ft অথবা, তোমার\ft*\f* কী লাভ হবে, \q2 ও পাপ না করেই বা আমি কী পাব?’ \b \q1 \v 4 “আমি আপনাকে এবং আপনার সঙ্গে থাকা বন্ধুদের \q2 উত্তর দিতে চাই। \q1 \v 5 আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখুন; \q2 আপনার এত উপরে অবস্থিত মেঘরাশির দিকে একদৃষ্টিতে তাকান। \q1 \v 6 আপনি যদি পাপ করেন, তবে তা কীভাবে তাঁকে প্রভাবিত করে? \q2 আপনার পাপ যদি অসংখ্যও হয় তাতেও বা তাঁর কী আসে-যায়? \q1 \v 7 আপনি ধার্মিক হয়ে তাঁকে কী দিতে পারবেন, \q2 অথবা আপনার হাত থেকে তিনি কী গ্রহণ করবেন? \q1 \v 8 আপনার দুষ্টতা শুধু আপনার মতো মানুষদেরই প্রভাবিত করে, \q2 ও আপনার ধার্মিকতাও শুধু অন্যান্য লোকজনকেই প্রভাবিত করে। \b \q1 \v 9 “অত্যাচারের ভার দুঃসহ হলে লোকজন আর্তনাদ করে; \q2 শক্তিশালীর হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তারা সনির্বন্ধ মিনতি জানায়। \q1 \v 10 কিন্তু কেউ বলে না, ‘আমার সৃষ্টিকর্তা সেই ঈশ্বর কোথায়, \q2 যিনি রাতের বেলায় গান দান করেন, \q1 \v 11 যিনি পার্থিব পশুদের যত না শিক্ষা দেন, তার চেয়েও বেশি আমাদের শিক্ষা দেন\f + \fr 35:11 \fr*\ft অথবা, মর্ত্যের পশুদের দ্বারা আমাদের শিক্ষা দেন\ft*\f* \q2 ও আকাশের পাখিদের চেয়েও আমাদের বেশি জ্ঞানী করে তোলেন\f + \fr 35:11 \fr*\ft অথবা, আকাশের পাখিদের দ্বারা আমাদের জ্ঞানী করে তোলেন\ft*\f*?’ \q1 \v 12 দুষ্টদের দাম্ভিকতার কারণে \q2 লোকজন যখন আর্তনাদ করে তখন তিনি উত্তর দেন না। \q1 \v 13 বাস্তবিক, ঈশ্বর তাদের শূন্যগর্ভ অজুহাত শোনেন না; \q2 সর্বশক্তিমান তাতে মনোযোগ দেন না। \q1 \v 14 তাঁর পক্ষে কি শোনা সম্ভব \q2 যখন আপনি বলছেন যে আপনি তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না, \q1 এই যে আপনার মামলাটি তাঁর সামনে আছে \q2 ও আপনাকে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে হবে, \q1 \v 15 আর এছাড়াও, এই যে তাঁর ক্রোধ কখনও শাস্তি দেয় না \q2 ও তিনি আদৌ দুষ্টতার প্রতি মনোযোগ দেন না। \q1 \v 16 তাই ইয়োব শূন্যগর্ভ কথায় তাঁর মুখ খুলেছেন; \q2 জ্ঞান ছাড়াই তিনি অনেক কথা বলেছেন।” \c 36 \p \v 1 ইলীহূ আরও বললেন; \q1 \v 2 “আপনি আমার প্রতি আরও একটু ধৈর্য ধরুন ও আমি আপনাকে দেখিয়ে দেব \q2 যে ঈশ্বরের হয়ে আরও অনেক কিছু বলার আছে। \q1 \v 3 আমি বহুদূর থেকে আমার জ্ঞান লাভ করেছি; \q2 আমি আমার সৃষ্টিকর্তার উপরে ন্যায়পরায়ণতা আরোপ করব। \q1 \v 4 নিশ্চিত হতে পারেন যে আমার কথা মিথ্যা নয়; \q2 নিখুঁত জ্ঞানবিশিষ্ট একজন আপনার সহবর্তী। \b \q1 \v 5 “ঈশ্বর পরাক্রমী, কিন্তু তিনি কাউকে অবজ্ঞা করেন না; \q2 তিনি পরাক্রমী, ও তাঁর অভীষ্টে অটল। \q1 \v 6 তিনি দুষ্টদের বাঁচিয়ে রাখেন না \q2 কিন্তু নিপীড়িতদের তাদের অধিকার দান করেন। \q1 \v 7 তিনি ধার্মিকদের উপর থেকে তাঁর দৃষ্টি সরিয়ে নেন না; \q2 রাজাদের সঙ্গে তিনি তাদের সিংহাসনে বসান \q2 ও চিরকাল তাদের মহিমান্বিত করেন। \q1 \v 8 কিন্তু লোকেরা যদি শিকলে বাঁধা পড়ে, \q2 দুঃখের দড়ি দিয়ে তাদের কষে বাঁধা হয়, \q1 \v 9 ঈশ্বর তখন তাদের বলে দেন যে তারা কী করেছে— \q2 যে তারা অহংকারভরে পাপ করেছে। \q1 \v 10 তিনি তাদের সংশোধনমূলক কথা শুনতে বাধ্য করেন \q2 ও তাদের দুষ্টতার বিষয়ে তাদের মন ফিরানোর আদেশ দেন। \q1 \v 11 তারা যদি তাঁর বাধ্য হয়ে তাঁর সেবা করে, \q2 তবে তারা তাদের জীবনের বাকি দিনগুলি সমৃদ্ধিতে \q2 ও তাদের বছরগুলি সন্তোষযুক্ত হয়ে কাটাবে। \q1 \v 12 কিন্তু যদি তারা তাঁর কথা না শোনে, \q2 তবে তারা তরোয়ালের আঘাতে ধ্বংস হবে\f + \fr 36:12 \fr*\ft অথবা, নদী পার হয়ে যাবে\ft*\f* \q2 ও জ্ঞানের অভাবে মারা যাবে। \b \q1 \v 13 “অধার্মিকেরা অন্তরে অসন্তোষ পুষে রাখে; \q2 এমনকি যখন তিনি তাদের শিকলে বাঁধেন, তখনও তারা সাহায্যের আশায় আর্তনাদ করে না। \q1 \v 14 যৌবনকালেই তারা মারা যায় \q2 মন্দিরের দেবদাসদের মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়। \q1 \v 15 কিন্তু যারা কষ্টভোগ করে, কষ্ট চলাকালীনই তিনি তাদের উদ্ধার করেন; \q2 তাদের দুঃখের মধ্যেই তিনি তাদের সাথে কথা বলেন। \b \q1 \v 16 “ঈশ্বর আপনাকে যন্ত্রণার মুখ থেকে বের করে \q2 বিধিনিষেধ-মুক্ত এক প্রশস্ত স্থানে, \q2 পছন্দসই খাদ্যদ্রব্যে সুসজ্জিত আপনার টেবিলের স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশে এনেছেন। \q1 \v 17 কিন্তু এখন আপনি দুষ্টদের উপযুক্ত বিচারে বিচারিত হতে যাচ্ছেন; \q2 বিচার ও ন্যায় আপনাকে ধরে ফেলেছে। \q1 \v 18 সাবধান, কেউ যেন ধন দ্বারা আপনাকে প্রলুব্ধ করতে না পারে; \q2 বিপুল পরিমাণ ঘুস যেন আপনাকে বিপথগামী করে না তোলে। \q1 \v 19 আপনার ধনসম্পদ বা আপনার সব মহৎ প্রচেষ্টাও কি \q2 আপনাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে, যেন আপনি যন্ত্রণাভোগ না করেন? \q1 \v 20 সেরাতের জন্য অপেক্ষা করবেন না, \q2 যখন লোকজনকে তাদের ঘর থেকে টেনে বের করা হয়। \q1 \v 21 সাবধান, অনিষ্টের দিকে ফিরে যাবেন না, \q2 আপনি তো দুঃখের পরিবর্তে সেটিকেই মনোনীত করেছেন। \b \q1 \v 22 “ঈশ্বর তাঁর পরাক্রমে উন্নত। \q2 তাঁর মতো শিক্ষক আর কে আছে? \q1 \v 23 কে তাঁর গন্তব্যপথ নিরূপিত করেছে, \q2 বা তাঁকে বলেছে, ‘তুমি অন্যায় করেছ’? \q1 \v 24 মনে রাখবেন, তাঁর সেই কাজের উচ্চপ্রশংসা করতে হবে, \q2 যাঁর প্রশংসা লোকেরা গানের মাধ্যমে করেছিল। \q1 \v 25 সমগ্র মানবজাতি তা দেখেছে; \q2 নশ্বর মানুষও দূর থেকে সেদিকে স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছে। \q1 \v 26 ঈশ্বর কত মহান—আমাদের বোধশক্তির ঊর্ধ্বে! \q2 তাঁর বছর-সংখ্যার খোঁজ পাওয়া যায় না। \b \q1 \v 27 “তিনি জলবিন্দু টেনে নেন, \q2 ও তা বৃষ্টিরূপে পরিশুদ্ধ করে জলধারায় ফিরিয়ে দেন\f + \fr 36:27 \fr*\ft অথবা, বৃষ্টিরূপে কুয়াশা থেকে পরিশুদ্ধ করে ফিরিয়ে দেন\ft*\f*; \q1 \v 28 মেঘরাশি তাদের আর্দ্রতা ঢেলে দেয় \q2 ও প্রচুর বৃষ্টি মানবজাতির উপরে বর্ষিত হয়। \q1 \v 29 কে বুঝতে পারে কীভাবে তিনি মেঘরাশি ছড়িয়ে দেন, \q2 কীভাবে তিনি তাঁর শামিয়ানা থেকে বজ্রধ্বনি করেন? \q1 \v 30 দেখুন কীভাবে তিনি তাঁর চারপাশে বিজলি নিক্ষেপ করেন, \q2 সমুদ্রগর্ভকে স্নান করান। \q1 \v 31 এভাবেই তিনি জাতিদের নিয়ন্ত্রণ\f + \fr 36:31 \fr*\ft অথবা, পুষ্টিসাধন\ft*\f* করেন \q2 ও প্রচুর পরিমাণে খাদ্যদ্রব্য জোগান। \q1 \v 32 তাঁর হাত তিনি বিজলিতে পরিপূর্ণ করেন \q2 ও তাকে লক্ষ্যে আঘাত হানার আদেশ দেন। \q1 \v 33 তাঁর বজ্রধ্বনি আসন্ন ঝড়ের সংকেত দেয়; \q2 এমনকি পশুপালও সেটির আগমনবার্তা দেয়।\f + \fr 36:33 \fr*\ft অথবা, এমনকি পশুপালও তাঁর আগমনবার্তা দেয়, যিনি মন্দের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আগ্রহশীল\ft*\f* \b \c 37 \q1 \v 1 “এতে আমার হৃদয় চূর্ণ হচ্ছে \q2 ও স্বস্থান থেকে লাফিয়ে উঠছে। \q1 \v 2 শুনুন! তাঁর কণ্ঠস্বরের গর্জন শুনুন, \q2 সেই হুংকার শুনুন যা তাঁর মুখ থেকে বের হয়। \q1 \v 3 সমগ্র আকাশের নিচে তিনি তাঁর বিজলি ছেড়ে দেন \q2 ও পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত তা পাঠিয়ে দেন। \q1 \v 4 তারপরে আসে তাঁর গর্জনের শব্দ; \q2 তাঁর সৌম্য স্বর দিয়ে তিনি বজ্রধ্বনি করেন। \q1 তাঁর স্বর যখন প্রতিধ্বনিত হয়, \q2 তখন তিনি কিছুই আটকে রাখেন না। \q1 \v 5 ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর অবিশ্বাস্যভাবে বজ্রধ্বনি করে; \q2 তিনি এমন সব মহৎ কাজ করেন যা আমাদের বোধের অগম্য। \q1 \v 6 তিনি তুষারকে বলেন, ‘পৃথিবীতে পতিত হও,’ \q2 ও বৃষ্টিধারাকে বলেন, ‘প্রবল বর্ষণে পরিণত হও।’ \q1 \v 7 যেন তাঁর নির্মিত সবাই তাঁর কাজকর্ম জানতে পারে, \q2 তিনি সব মানুষজনকে তাদের পরিশ্রম থেকে অব্যাহতি দেন।\f + \fr 37:7 \fr*\ft অথবা, তাঁর পরাক্রম দিয়ে তিনি সব মানুষজনকে ভয়ে পরিপূর্ণ করে তোলেন\ft*\f* \q1 \v 8 পশুরা আশ্রয়স্থলে প্রবেশ করে; \q2 তারা নিজেদের গুহার মধ্যে থেকে যায়। \q1 \v 9 প্রবল ঝড় তার কক্ষ থেকে ধেয়ে আসে, \q2 শীত আসে ঝোড়ো হাওয়ার প্রভাবে। \q1 \v 10 ঈশ্বরের শ্বাস বরফ উৎপন্ন করে, \q2 ও প্রশস্ত জলরাশি হিমায়িত হয়ে যায়। \q1 \v 11 মেঘরাশিতে তিনি আর্দ্রতা ভরে দেন; \q2 তাদের মাধ্যমে তিনি তাঁর বিজলি ছড়িয়ে দেন। \q1 \v 12 তাঁরই পরিচালনায় তারা \q2 সমগ্র পৃথিবীর বুকে ঘুরপাক খেতে খেতে \q2 তাঁর দেওয়া নির্দেশ পালন করে। \q1 \v 13 তিনি মেঘরাশি সঞ্চার করে লোকজনকে শাস্তি দেন, \q2 বা তাঁর পৃথিবীকে জলসিক্ত করেন ও তাঁর প্রেম দেখান। \b \q1 \v 14 “হে ইয়োব, আপনি একথা শুনুন; \q2 একটু থেমে ঈশ্বরের আশ্চর্য কাজকর্ম বিবেচনা করুন। \q1 \v 15 আপনি কি জানেন কীভাবে ঈশ্বর মেঘরাশি নিয়ন্ত্রণ করেন \q2 ও তাঁর বিজলি চমকান? \q1 \v 16 আপনি কি জানেন কীভাবে মেঘরাশি শূন্যে ঝুলে থাকে, \q2 যিনি নিখুঁত জ্ঞানবিশিষ্ট, তাঁর আশ্চর্য কাজগুলি জানেন কি? \q1 \v 17 দখিনা বাতাসের চাপে জমি যখন ধামাচাপা পড়ে যায় \q2 তখন তো আপনি পোশাক গায়ে দিয়েও গরমে হাঁসফাঁস করেন, \q1 \v 18 আপনি কি তাঁর সঙ্গে মিলে সেই আকাশমণ্ডলের প্রসার ঘটাতে পারেন, \q2 যা ঢালাই করা ব্রোঞ্জের আয়নার মতো নিরেট? \b \q1 \v 19 “আমাদের বলে দিন আমরা তাঁকে কী বলব; \q2 আমাদের অজ্ঞতার কারণে আমরা আমাদের মামলাটি সাজাতে পারছি না। \q1 \v 20 তাঁকে কি বলতে হবে যে আমি কথা বলতে চাই? \q2 কেউ কি কবলিত হতে চাইবে? \q1 \v 21 এখন কেউ সূর্যের দিকে তাকাতে পারে না, \q2 যেহেতু তখনই তা আকাশে উজ্জ্বল হয় \q2 যখন বাতাস বয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। \q1 \v 22 উত্তর দিক থেকে তিনি সোনালি ঔজ্জ্বল্য নিয়ে আসেন; \q2 ঈশ্বর অসাধারণ মহিমা নিয়ে আসেন। \q1 \v 23 সেই সর্বশক্তিমান আমাদের নাগালের বাইরে ও তিনি পরাক্রমে উন্নত; \q2 তাঁর ন্যায়ে ও মহা ধার্মিকতায়, তিনি অত্যাচার করেন না। \q1 \v 24 তাই, লোকজন তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করে, \q2 কারণ যারা অন্তরে জ্ঞানী, তাদের জন্য কি তাঁর মনে কদর নেই?\f + \fr 37:24 \fr*\ft অথবা, কারণ যারা মনে করেন তারা জ্ঞানী, তিনি তাদের মুখাপেক্ষা করেন না\ft*\f*” \c 38 \s1 সদাপ্রভু কথা বলেন \p \v 1 পরে সদাপ্রভু ঝড়ের মধ্যে থেকে ইয়োবের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন: \q1 \v 2 “এ কে যে অজ্ঞানের মতো কথা বলে \q2 আমার পরিকল্পনাগুলি ম্লান করে দিচ্ছে? \q1 \v 3 পুরুষমানুষের মতো নিজেকে মজবুত করো; \q2 আমি তোমাকে প্রশ্ন করব, \q2 ও তুমি আমাকে উত্তর দেবে। \b \q1 \v 4 “আমি যখন পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছিলাম তুমি তখন কোথায় ছিলে? \q2 যদি বুঝেছো, তবে আমায় বলো। \q1 \v 5 পৃথিবীর মাত্রা কে চিহ্নিত করল? তুমি নিশ্চয় তা জানো! \q2 তার উপরে কে সীমারেখা টানলো? \q1 \v 6 কীসের উপরে তার অবস্থান খাড়া হল, \q2 বা কে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলো— \q1 \v 7 যখন শুকতারারা একসাথে গেয়ে উঠল \q2 ও স্বর্গদূতেরা\f + \fr 38:7 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, ঈশ্বরের পুত্রেরা\ft*\f* সবাই আনন্দে চিৎকার করে উঠল? \b \q1 \v 8 “কে দরজার আড়ালে সমুদ্রকে অবরুদ্ধ করল \q2 যখন তা গর্ভ থেকে বের হয়ে এল, \q1 \v 9 যখন আমি মেঘরাশিকে তার পোশাক বানালাম \q2 ও তা ঘন অন্ধকারে ঢেকে দিলাম, \q1 \v 10 যখন আমি তার জন্য সীমা নির্দিষ্ট করলাম \q2 এবং তার দরজা ও খিল যথাস্থানে লাগালাম। \q1 \v 11 যখন আমি বললাম, ‘এই পর্যন্তই তুমি আসতে পারবে, আর নয়; \q2 এখানেই তোমার তরঙ্গের গর্ব থেমে যাবে’? \b \q1 \v 12 “তুমি কি কখনও সকালকে আদেশ দিয়েছ, \q2 বা ভোরবেলাকে তার স্থান দেখিয়ে দিয়েছ \q1 \v 13 যেন তা পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে \q2 ও সেখান থেকে দুষ্টদের ঝেড়ে ফেলে? \q1 \v 14 পৃথিবী সিলমোহরের তলায় লেগে থাকা মাটির মতো আকার নেয়; \q2 তার বৈশিষ্ট্য এক পোশাকের মতো ফুটে ওঠে। \q1 \v 15 দুষ্টদের আলো দেওয়া হয় না, \q2 ও তারা যে হাত উঁচুতে তুলে ধরে তা ভেঙে যায়। \b \q1 \v 16 “তুমি কি সমুদ্রের উৎসে যাত্রা করেছ \q2 বা সমুদ্রতলবর্তী গর্তে হাঁটাহাঁটি করেছ? \q1 \v 17 মৃত্যুর দরজা কি তোমার কাছে প্রকাশিত হয়েছে? \q2 তুমি কি গাঢ় অন্ধকারের দরজা দেখেছ? \q1 \v 18 পৃথিবীর সুবিশাল বিস্তারের বিষয়টি কি তুমি বুঝে ফেলেছ? \q2 এসব কিছু যদি তুমি জানো, তবে আমায় বলো। \b \q1 \v 19 “আলোর বাসস্থানে যাওয়ার পথ কোনটি? \q2 আর অন্ধকার কোথায় বসবাস করে? \q1 \v 20 তুমি কি তাদের স্বস্থানে নিয়ে যেতে পারো? \q2 তুমি কি তাদের ঘরের পথ জান? \q1 \v 21 নিশ্চয় জানো, কারণ তখন তো তোমার জন্ম হয়ে গিয়েছিল! \q2 তুমি তো বহু বছর ধরে বেঁচে আছ! \b \q1 \v 22 “তুমি কি তুষারের আড়তে প্রবেশ করেছ \q2 বা শিলাবৃষ্টির গুদাম দেখেছ, \q1 \v 23 যা আমি সংকটকালের জন্য, \q2 যুদ্ধবিগ্রহের দিনের জন্য সংরক্ষিত করে রেখেছি? \q1 \v 24 কোনও পথ ধরে সেখানে যাওয়া যায়, যেখান থেকে বিজলি বিচ্ছুরিত হয়, \q2 বা যেখান থেকে পূর্বীয় বাতাস সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে? \q1 \v 25 প্রবল বৃষ্টিপাতের জন্য কে খাল খুঁড়েছে, \q2 ও বজ্রঝড়ের জন্য কে পথ তৈরি করে দিয়েছে, \q1 \v 26 যেন জনমানবহীন দেশ, \q2 বসতিহীন মরুভূমি জলসিক্ত হয়, \q1 \v 27 যেন ঊষর পতিত জমি তৃপ্ত হয় \q2 ও সেখানে কচি ঘাস অঙ্কুরিত হয়? \q1 \v 28 বৃষ্টির কি বাবা আছে? \q2 কে শিশিরকণার জন্ম দিয়েছে? \q1 \v 29 কার গর্ভ থেকে বরফ বের হয়েছে? \q2 আকাশ থেকে ঝড়ে পড়া তুষারের জন্মই বা কে দিয়েছে \q1 \v 30 যখন জল জমে পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়, \q2 যখন জলরাশির উপরের স্তর জমাট বেঁধে যায়? \b \q1 \v 31 “তুমি কি কৃত্তিকার হার\f + \fr 38:31 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, সৌন্দর্যকে\ft*\f* গাঁথতে পারো? \q2 তুমি কি কালপুরুষের বাঁধন আলগা করতে পারো? \q1 \v 32 তুমি কি নক্ষত্রপুঞ্জকে তাদের নিজস্ব ঋতুতে চালাতে পার\f + \fr 38:32 \fr*\ft অথবা, শুকতারাকে তার নিজস্ব ঋতুতে চালাতে পারো\ft*\f* \q2 বা শাবকসুদ্ধ ভালুককে\f + \fr 38:32 \fr*\ft অথবা, সিংহরাশিকে\ft*\f* তার পথ দেখাতে পারো? \q1 \v 33 তুমি কি আকাশমণ্ডলের বিধান জানো? \q2 তুমি কি পৃথিবীতে ঈশ্বরের\f + \fr 38:33 \fr*\ft অথবা, তাদের\ft*\f* কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে পারো? \b \q1 \v 34 “তুমি কি মেঘ পর্যন্ত তোমার আওয়াজ তুলতে পারো \q2 ও নিজেকে জলপ্লাবন দিয়ে ঢেকে ফেলতে পারো? \q1 \v 35 তুমি কি বজ্রবিদ্যুৎ ঝলসাতে পারবে? \q2 সেগুলি কি জবাবে তোমাকে বলবে, ‘আমরা এখানে’? \q1 \v 36 কে দোচরাকে\f + \fr 38:36 \fr*\ft সারস জাতীয় পাখি\ft*\f* বিজ্ঞতা\f + \fr 38:36 \fr*\ft অর্থাৎ, নীলনদের বন্যাসংক্রান্ত বিজ্ঞতা\ft*\f* দিয়েছে \q2 বা মোরগকে বোধশক্তি\f + \fr 38:36 \fr*\ft অর্থাৎ, কখন ডাকতে হবে সেই বোধশক্তি\ft*\f* দিয়েছে? \q1 \v 37 কার কাছে মেঘরাশি গণনা করার বিজ্ঞতা আছে? \q2 কে তখন আকাশের জলে ভরা ঘড়াগুলি উল্টাতে পারে \q1 \v 38 যখন ধুলো শক্ত হয়ে যায় \q2 ও মাটির ঢেলা একসঙ্গে জুড়ে যায়? \b \q1 \v 39 “তুমি কি সিংহীর জন্য শিকারের খোঁজ করবে \q2 ও সিংহদের খিদে মিটাবে \q1 \v 40 যখন তারা গুহায় গুড়ি মেরে পড়ে থাকে \q2 বা ঘন ঝোপে অপেক্ষা করে বসে থাকে? \q1 \v 41 কে দাঁড়কাকের জন্য খাবার জোগায় \q2 যখন তার শাবকেরা ঈশ্বরের কাছে আর্তনাদ করে \q2 ও খাবারের অভাবে উদ্‌ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়? \b \c 39 \q1 \v 1 “তুমি কি জানো পাহাড়ি ছাগলেরা কখন শাবকের জন্ম দেয়? \q2 তুমি কি দেখেছ হরিণী কখন তার হরিণশিশু প্রসব করে? \q1 \v 2 তুমি কি গুনে দেখেছ কয় মাস ধরে তারা গর্ভধারণ করে? \q2 তুমি কি তাদের প্রসবকাল জান? \q1 \v 3 তারা হেঁট হয় ও শাবকের জন্ম দেয়; \q2 তাদের প্রসববেদনার অবসান হয়। \q1 \v 4 তাদের শাবকেরা বেড়ে ওঠে ও ঊষর মরুভূমিতে বলবান হয়ে উঠতে থাকে; \q2 তারা সেখান থেকে চলে যায় ও আর ফিরে আসে না। \b \q1 \v 5 “বুনো গাধাকে কে স্বাধীন হয়ে যেতে দিয়েছে? \q2 কে তাদের দড়ি খুলে দিয়েছে? \q1 \v 6 পতিত জমিকে আমি তার ঘর বানিয়েছি, \q2 লবণাক্ত সমতল ভূমিকে তার আবাস করেছি। \q1 \v 7 সে নগরের গোলমাল দেখে উপহাস করে; \q2 সে চালকের শব্দ শোনে না। \q1 \v 8 সে পাহাড়-পর্বতকে চারণভূমি করে সেখানে চরে \q2 ও সবুজ ঘাসপাতা খুঁজে বেড়ায়। \b \q1 \v 9 “বুনো বলদ কি তোমার সেবা করতে রাজি হবে? \q2 সে কি রাতের বেলায় তোমার জাবপাত্রের পাশে থাকবে? \q1 \v 10 তুমি কি জিন পরিয়ে তাকে সীতায় আটকে রাখতে পারবে? \q2 সে কি তোমার পিছু পিছু উপত্যকায় চাষ করবে? \q1 \v 11 তুমি কি তার মহাশক্তির উপর নির্ভর করবে? \q2 তুমি কি তোমার কাজের ভার তার উপর চাপিয়ে দেবে? \q1 \v 12 তুমি কি তোমার শস্য টেনে আনার \q2 ও তা খামারে একত্রিত করার জন্য তার উপরে ভরসা রাখতে পারবে? \b \q1 \v 13 “উটপাখি আনন্দের সঙ্গে তার ডানা ঝাপটায়, \q2 যদিও সারসের ডানা ও পালকের সাথে \q2 সেগুলির তুলনা করা যায় না। \q1 \v 14 সে মাটিতে ডিম পাড়ে \q2 ও বালির তলায় সেগুলি গরম হতে দেয়। \q1 \v 15 তার মনে থাকে না যে পায়ের চাপে হয়তো সেগুলি ভেঙে যাবে, \q2 বা কোনো বুনো পশু সেগুলি পদদলিত করে ফেলবে। \q1 \v 16 সে তার শাবকদের সঙ্গে এমন রূঢ় ব্যবহার করে, যেন সেগুলি তার আপন নয়; \q2 তার পরিশ্রম ব্যর্থ হলেও তার কিছু যায় আসে না, \q1 \v 17 কারণ ঈশ্বর তাকে বিজ্ঞতা দ্বারা ভূষিত করেননি \q2 বা তাকে এক ফোঁটা সৎ জ্ঞানও দেননি। \q1 \v 18 তাও সে যখন দৌড়ানোর জন্য পাখা মেলে দেয়, \q2 তখন ঘোড়া ও সওয়ারকেও উপহাস করে। \b \q1 \v 19 “তুমি কি ঘোড়াকে বল দান করেছ \q2 বা তার ঘাড়ে সাবলীল কেশর বিছিয়েছ? \q1 \v 20 তুমি কি তাকে পঙ্গপালের মতো লাফানোর, \q2 সদর্প হ্রেষাধ্বনি সমেত আকর্ষণীয় সন্ত্রাস উৎপন্ন করার ক্ষমতা দিয়েছ? \q1 \v 21 সে হিংস্রভাবে মাটিতে ক্ষুর ঘষে, নিজের শক্তিতে আনন্দ প্রকাশ করে, \q2 ও সংঘর্ষে ঝাঁপিয়ে পড়ে। \q1 \v 22 সে ভয়কে উপহাস করে, কিছুতেই ভয় পায় না; \q2 সে তরোয়ালের সামনে থেকে পালিয়ে যায় না। \q1 \v 23 তূণীর তার বিরুদ্ধে ঝংকার তোলে, \q2 বর্শা ও বল্লমও ঝলসে ওঠে। \q1 \v 24 প্রমত্ত উত্তেজনায় সে মাটি খেয়ে ফেলে; \q2 যখন শিঙা বাজে তখন সে আর স্থির থাকতে পারে না। \q1 \v 25 শিঙার ঝঙ্কারে সে হ্রেষাধ্বনি করে, ‘আহা!’ \q2 সে দূর থেকে যুদ্ধের গন্ধ পায়, \q2 সেনাপতিদের ও যুদ্ধরবের হুঙ্কার শোনে। \b \q1 \v 26 “তোমার বিজ্ঞতা অনুসারেই কি বাজপাখি উড়ে যায় \q2 ও দক্ষিণ দিকে তার ডানা মেলে দেয়? \q1 \v 27 তোমার আদেশানুসারেই কি ঈগল পাখি উঁচুতে ওড়ে \q2 ও উঁচুতে বাসা বাঁধে? \q1 \v 28 সে খাড়া উঁচু পাহাড়ে বসবাস করে ও সেখানেই রাত কাটায়; \q2 পাথরে ভরা এবড়োখেবড়ো খাড়া এক পাহাড় তার সুরক্ষিত আশ্রয়। \q1 \v 29 সেখান থেকে সে খাবারের খোঁজ করে; \q2 তার চোখ বহুদূর থেকে তা খুঁজে নেয়। \q1 \v 30 তার শাবকেরা রক্ত পান করে তৃপ্ত হয়, \q2 ও যেখানে মৃতদেহ, সেও সেখানেই থাকে।” \c 40 \p \v 1 সদাপ্রভু ইয়োবকে আরও বললেন: \q1 \v 2 “যে সর্বশক্তিমানের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করে সে কি তাঁকে সংশোধন করবে? \q2 যে ঈশ্বরকে অভিযুক্ত করেছে সেই তাঁকে জবাব দিক!” \p \v 3 পরে ইয়োব সদাপ্রভুকে উত্তর দিলেন: \q1 \v 4 “আমি অযোগ্য—আমি কীভাবে তোমাকে জবাব দেব? \q2 এই আমি আমার মুখে হাত দিলাম। \q1 \v 5 আমি একবার কথা বলেছি, কিন্তু আমার কাছে কোনও উত্তর নেই— \q2 দু-বার বলেছি, কিন্তু আমি আর কিছু বলব না।” \p \v 6 পরে ঝড়ের মধ্যে থেকে সদাপ্রভু ইয়োবের সঙ্গে কথা বললেন: \q1 \v 7 “পুরুষমানুষের মতো নিজেকে মজবুত করো; \q2 আমি তোমাকে প্রশ্ন করব, \q2 ও তুমি আমাকে উত্তর দেবে। \b \q1 \v 8 “তুমি কি আমার ন্যায়বিচার অগ্রাহ্য করবে? \q2 নিজেকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার জন্য কি তুমি আমাকে দোষী সাব্যস্ত করবে? \q1 \v 9 ঈশ্বরের মতো তোমারও কি হাত আছে, \q2 ও তাঁর মতো তুমিও কি বজ্রধ্বনি করতে পারো? \q1 \v 10 তবে নিজেকে প্রতাপ ও উজ্জ্বল দীপ্তি দিয়ে ঢেলে সাজাও, \q2 এবং সম্মান ও মর্যাদার পোশাক গায়ে দিয়ে নাও। \q1 \v 11 তোমার ক্রোধের উন্মত্ততা নিয়ন্ত্রণমুক্ত করো, \q2 যারা অহংকারী তাদের দিকে তাকাও ও তাদের নিচে টেনে নামাও, \q1 \v 12 যারা অহংকারী তাদের দিকে তাকাও ও তাদের নত করো, \q2 দুষ্টেরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানেই তাদের দমন করো। \q1 \v 13 তাদের সবাইকে একসাথে ধুলোয় পুঁতে ফেলো; \q2 কবরে তাদের মুখ আবৃত করো। \q1 \v 14 তখনই আমি তোমার কাছে স্বীকার করব \q2 যে তোমার নিজের ডান হাত তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে। \b \q1 \v 15 “বহেমোতের\f + \fr 40:15 \fr*\ft বহেমোতের আসল পরিচয় এক বিতর্কিত বিষয়; প্রাচীন সাহিত্যে এটিকে পৌরাণিক এক সমুদ্র-দানবরূপে দেখা হয়েছে\ft*\f* দিকে তাকাও, \q2 তাকে আমি তোমার সাথেই তৈরি করেছি \q2 ও বলদের মতো সেও তৃণভোজী। \q1 \v 16 তার কোমরে কত শক্তি আছে, \q2 তার পেটের পেশিতে কত ক্ষমতা আছে! \q1 \v 17 তার লেজ দেবদারু গাছের মতো দোলে; \q2 তার ঊরুর পেশিতন্তু আঁটোসাঁটোভাবে সংলগ্ন। \q1 \v 18 তার অস্থি ব্রোঞ্জের নলের মতো, \q2 তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ লোহার ছড়ের মতো। \q1 \v 19 ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্মের মধ্যে সেই প্রথম স্থান পেয়েছে, \q2 তবুও তার সৃষ্টিকর্তা তাঁর তরোয়াল নিয়ে তার কাছে যেতে পারেন। \q1 \v 20 পাহাড়গুলি তার কাছে তাদের উৎপন্ন দ্রব্য আনে, \q2 ও সব বুনো পশু তার কাছাকাছি খেলে বেড়ায়। \q1 \v 21 পদ্মবনের তলায় সে শুয়ে থাকে, \q2 জলাভূমির নলবনের মধ্যে সে লুকিয়ে থাকে। \q1 \v 22 পদ্মবন তার ছায়ায় তাকে আড়াল করে রাখে; \q2 জলস্রোতের ধারে থাকা ঝাউ গাছ তাকে ঘিরে রাখে। \q1 \v 23 ফুলেফেঁপে ওঠা নদী তাকে ভয় দেখাতে পারে না; \q2 জর্ডন নদীর ঢেউ তার মুখের উপর আছড়ে পড়লেও সে সুরক্ষিত থাকে। \q1 \v 24 কেউ কি চোখ দিয়ে তাকে ধরতে পারে, \q2 বা তাকে ফাঁদে ফেলে তার নাক ফুঁড়তে পারে? \b \c 41 \q1 \v 1 “তুমি কি বড়শি দিয়ে লিবিয়াথনকে\f + \fr 41:1 \fr*\ft লিবিয়াথনের আসল পরিচয় এক বিতর্কিত বিষয়; প্রাচীন সাহিত্যে এটিকে পৌরাণিক এক সমুদ্র-দানবরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে\ft*\f* টেনে তুলতে পারো \q2 বা দড়ি দিয়ে তার জিভ বাঁধতে পারো? \q1 \v 2 তুমি তার নাকে কি দড়ি পরাতে পারো \q2 বা বড়শি দিয়ে তার চোয়াল বিঁধতে পারো? \q1 \v 3 সে কি তোমার কাছে অনবরত দয়া ভিক্ষা করবে? \q2 সে কি কোমল স্বরে তোমার সঙ্গে কথা বলবে? \q1 \v 4 জীবনভোর তোমার দাসত্ব করার জন্য \q2 সে কি তোমার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে? \q1 \v 5 তুমি কি পাখির মতো তাকে পোষ মানাবে \q2 বা তোমার বাড়ির যুবতীদের জন্য তাকে শিকলে বেঁধে রাখবে? \q1 \v 6 ব্যবসায়ীরা কি তাকে নিয়ে ব্যবসা করবে? \q2 তারা কি সওদাগরদের মধ্যে তাকে ভাগ করে দেবে? \q1 \v 7 তুমি কি হারপুন\f + \fr 41:7 \fr*\ft তিমি বা বড়ো বড়ো সামুদ্রিক মাছ শিকারের অস্ত্রবিশেষ\ft*\f* দিয়ে তার চামড়া \q2 বা মাছ ধরার বর্শা দিয়ে তার মাথা বিঁধতে পারো? \q1 \v 8 তুমি যদি তার গায়ে হাত দাও, \q2 তবে সেই সংগ্রাম তোমার মনে থাকবে ও তুমি আর কখনও তা করবে না! \q1 \v 9 তাকে বশে আনার যে কোনো আশা মিথ্যা; \q2 তাকে দেখামাত্রই মানুষ কাহিল হয়ে যায়। \q1 \v 10 কেউ সাহস করে তাকে জাগাতে যায় না। \q2 তবে আমার সামনে কে দাঁড়াতে পারবে? \q1 \v 11 কে দাবি করে বলতে পারে যে আমাকেই দিতে হবে? \q2 আকাশের নিচে যা যা আছে, সবই তো আমার। \b \q1 \v 12 “লিবিয়াথনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিষয়ে, তার শক্তি \q2 ও তার শ্রীমণ্ডিত গঠনের বিষয়ে আমি কথা না বলে থাকতে পারব না। \q1 \v 13 কে তার বাইরের আচ্ছাদন খুলে নিতে পারে? \q2 কে তার বর্মের জোড়া আচ্ছাদন\f + \fr 41:13 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, জোড়া লাগাম\ft*\f* ভেদ করতে পারে? \q1 \v 14 কে তার সেই মুখের দরজা খোলার সাহস করতে পারে, \q2 যা ভয়ংকর দাঁতের সারি দিয়ে সাজানো? \q1 \v 15 তার পিঠে সারি সারি ঢাল আছে\f + \fr 41:15 \fr*\ft অথবা, তার অহংকার যেন তার ঢালের সারি\ft*\f* \q2 যা একসাথে আঁটোসাঁটোভাবে বাঁধা থাকে; \q1 \v 16 প্রত্যেকটি ঢাল পরবর্তীটির সাথে এমন ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত \q2 যে মাঝখান দিয়ে একটুও বাতাস বইতে পারে না। \q1 \v 17 সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে অটলভাবে জুড়ে আছে; \q2 সেগুলি একসাথে আটকে আছে ও সেগুলি আলাদা করা যায় না। \q1 \v 18 সে হ্রেষাধ্বনি করলে আলোর ঝলক বের হয়; \q2 তার চোখদুটি ভোরের আলোকরশ্মির মতো। \q1 \v 19 তার মুখ থেকে আগুনের শিখা প্রবাহিত হয়; \q2 সবেগে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিক্ষিপ্ত হয়। \q1 \v 20 তার নাক থেকে ধোঁয়া বের হয় \q2 যেভাবে ফুটন্ত পাত্র থেকে তা জ্বলন্ত নলখাগড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। \q1 \v 21 তার নিঃশ্বাসে কয়লা জ্বলে ওঠে, \q2 ও তার মুখ থেকে আগুনের শিখা উড়ে আসে। \q1 \v 22 তার ঘাড়ে শক্তির বাস; \q2 আতঙ্ক তার সামনে সামনে যায়। \q1 \v 23 তার শরীরের ভাঁজ আঁটোসাঁটোভাবে যুক্ত; \q2 সেগুলি মজবুত ও অনড়। \q1 \v 24 তার বুক পাষাণ-পাথরের মতো কঠিন, \q2 জাঁতার নিচের পাটের মতো নিরেট। \q1 \v 25 যখন সে জেগে ওঠে, তখন শক্তিমানেরাও ভয় পায়; \q2 তারা আতঙ্কিত হয়ে তার সামনে থেকে পশ্চাদপসরণ করে। \q1 \v 26 তার দিকে এগিয়ে আসা তরোয়াল কোনও প্রভাব বিস্তার করতে পারে না, \q2 বর্শা বা বাণ বা বল্লমও করতে পারে না। \q1 \v 27 সে লোহাকে খড়ের মতো \q2 ও ব্রোঞ্জকে পচা কাঠের মতো মনে করে। \q1 \v 28 তির ছুঁড়ে তাকে তাড়ানো যায় না; \q2 গুল্‌তির নুড়ি-পাথর তার কাছে তুষের সমান। \q1 \v 29 গদা তার কাছে নিছক এক টুকরো খড়মাত্র; \q2 বর্শার ঝন্‌ঝনানিকে সে উপহাস করে। \q1 \v 30 তার বগলগুলি খাঁজকাটা খাপরাবিশেষ, \q2 শস্য ঝাড়ার হাতুড়ির মতো সে কাদায় লম্বা সারি টেনে দেয়। \q1 \v 31 অগাধ জলকে সে ফুটন্ত কড়ায় রাখা জলের মতো মন্থন করে \q2 ও এক পাত্রে রাখা মলমের মতো করে সমুদ্রকে নাড়ায়। \q1 \v 32 সে তার পিছনে এক ঝকঝকে ছাপ ছেড়ে যায়; \q2 যে কেউ দেখে ভাববে যে অগাধ সমুদ্রের বুঝি পাকা চুল আছে। \q1 \v 33 পৃথিবীর কোনো কিছুই তার সমতুল্য নয়— \q2 সে এক নির্ভীক প্রাণী। \q1 \v 34 সব উদ্ধত প্রাণীকে সে অবজ্ঞার চোখে দেখে; \q2 সব অহংকারী প্রাণীর উপরে সে রাজত্ব করে।” \c 42 \s1 ইয়োব \p \v 1 পরে ইয়োব সদাপ্রভুকে উত্তর দিলেন: \q1 \v 2 “আমি জানি যে তুমি সবকিছু করতে পার; \q2 তোমার কোনও অভিষ্ট খর্ব করা যায় না। \q1 \v 3 তুমি জিজ্ঞাসা করলে, ‘এ কে যে জ্ঞান ছাড়াই আমার পরিকল্পনাগুলি ম্লান করে দিচ্ছে?’ \q2 নিশ্চয় আমি যা বুঝিনি, \q2 আমার জানার পক্ষে যা খুবই অদ্ভুত, তাই বলেছি। \b \q1 \v 4 “তুমি বললে, ‘এখন শোনো, আমি কথা বলব; \q2 আমি তোমাকে প্রশ্ন করব, \q2 ও তুমি আমাকে উত্তর দেবে।’ \q1 \v 5 তোমার কথা আমি কানে শুনেছিলাম \q2 কিন্তু এখন আমি স্বচক্ষে তোমাকে দেখলাম। \q1 \v 6 তাই নিজেকে আমি ঘৃণা করছি \q2 এবং ধুলোয় ও ছাইভস্মে বসে অনুতাপ করছি।” \s1 উপসংহার \p \v 7 ইয়োবকে এসব কথা বলার পর, সদাপ্রভু তৈমনীয় ইলীফসকে বললেন, “তোমার উপরে এবং তোমার দুই বন্ধুর উপরে আমি ক্রুদ্ধ হয়েছি, কারণ আমার দাস ইয়োবের মতো তোমরা আমার সম্পর্কে সত্যিকথা বলোনি। \v 8 অতএব এখন তোমরা সাতটি বলদ ও সাতটি মেষ নিয়ে আমার দাস ইয়োবের কাছে যাও এবং নিজেদের জন্য হোমবলি উৎসর্গ করো। আমার দাস ইয়োব তোমাদের জন্য প্রার্থনা করবে, ও আমি তার প্রার্থনা স্বীকার করব এবং তোমাদের মূর্খতা অনুসারে তোমাদের প্রতি আচরণ করব না। আমার দাস ইয়োবের মতো তোমরা আমার সম্পর্কে সত্যিকথা বলোনি।” \v 9 তাই তৈমনীয় ইলীফস, শূহীয় বিল্‌দদ এবং নামাথীয় সোফর তাই করলেন, যা সদাপ্রভু তাদের করার আদেশ দিয়েছিলেন; এবং সদাপ্রভু ইয়োবের প্রার্থনা স্বীকার করলেন। \p \v 10 ইয়োব তাঁর বন্ধুদের জন্য প্রার্থনা করার পর, সদাপ্রভু তাঁর অবস্থা ফিরিয়ে দিলেন এবং আগে তাঁর যে পরিমাণ ধনসম্পত্তি ছিল, তাঁকে তার দ্বিগুণ সম্পত্তি দিলেন। \v 11 ইয়োবের সব ভাইবোন এবং পূর্বপরিচিত সবাই তাঁর বাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করলেন। সদাপ্রভু তাঁর জীবনে যেসব দুঃখদুর্দশা এনেছিলেন সেগুলির বিষয়ে তারা তাঁকে সান্ত্বনা দিলেন ও সহানুভূতি জানালেন, এবং তারা প্রত্যেকে তাঁকে একটি করে রুপোর টুকরো\f + \fr 42:11 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, কসিতা; সে যুগে কসিতা অজ্ঞাত ওজন ও মূল্যবিশিষ্ট এক মুদ্রাবিশেষরূপে গণ্য হত\ft*\f* ও সোনার আংটি দিলেন। \p \v 12 সদাপ্রভু ইয়োবের জীবনের প্রথম অবস্থার চেয়ে শেষ অবস্থাকে আরও বেশি আশীর্বাদযুক্ত করলেন। ইয়োব 14,000 মেষ, 6,000 উট, 1,000 জোড়া বলদ এবং 1,000 গাধির মালিক হলেন। \v 13 তার আরও সাত ছেলে ও তিন মেয়ে জন্মাল। \v 14 তিনি তার প্রথম মেয়ের নাম দিলেন যিমীমা, দ্বিতীয়জনের নাম দিলেন কৎসীয়া এবং তৃতীয় জনের নাম দিলেন কেরণহপ্পূক। \v 15 সারা দেশে কোথাও ইয়োবের মেয়েদের মতো সুন্দরী মেয়ে খুঁজে পাওয়া যেত না, এবং তাদের বাবা তাদের দাদাদের সঙ্গে তাদেরও উত্তরাধিকার দিলেন। \p \v 16 এরপর, ইয়োব আরও 140 বছর বেঁচেছিলেন; চার পুরুষ পর্যন্ত তিনি তাঁর সন্তানদের ও তাদের সন্তানদেরও দেখলেন। \v 17 এইভাবে ইয়োব বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ূ মানুষরূপে মারা গেলেন।