\id JHN - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h যোহন \toc1 যোহন লিখিত সুসমাচার \toc2 যোহন \toc3 যোহ \mt1 যোহন লিখিত সুসমাচার \c 1 \p \v 1 আদিতে বাক্য ছিলেন, সেই বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন এবং বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন। \v 2 আদিতে তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। \v 3 তাঁর মাধ্যমে সবকিছু সৃষ্ট হয়েছিল; সৃষ্ট কোনো বস্তুই তিনি ব্যতিরেকে সৃষ্ট হয়নি। \v 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল। সেই জীবন ছিল মানবজাতির জ্যোতি। \v 5 সেই জ্যোতি অন্ধকারে আলো বিকিরণ করে, কিন্তু অন্ধকার তা উপলব্ধি\f + \fr 1:5 \fr*\ft অথবা, অন্ধকার তাঁকে জয় করতে পারেনি।\ft*\f* করতে পারেনি। \p \v 6 ঈশ্বর থেকে প্রেরিত এক ব্যক্তির আবির্ভাব হল, তাঁর নাম যোহন। \v 7 সেই জ্যোতির সাক্ষ্য দিতেই সাক্ষীরূপে তাঁর আগমন ঘটেছিল, যেন তাঁর মাধ্যমে মানুষ বিশ্বাস করে। \v 8 তিনি স্বয়ং সেই জ্যোতি ছিলেন না, কিন্তু সেই জ্যোতির সাক্ষ্য দিতেই তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। \p \v 9 সেই প্রকৃত জ্যোতি, যিনি প্রত্যেক মানুষকে আলো দান করেন, জগতে তাঁর আবির্ভাব হচ্ছিল।\f + \fr 1:9 \fr*\ft অথবা, তিনিই ছিলেন প্রকৃত জ্যোতি, যিনি জগতে আগত প্রত্যেক মানুষের উপরে আলো দেন।\ft*\f* \v 10 তিনি জগতে ছিলেন, জগৎ তাঁর দ্বারা সৃষ্ট হলেও জগৎ তাঁকে চিনল না। \v 11 তিনি তাঁর আপনজনদের মধ্যে এলেন, কিন্তু যারা তাঁর আপন, তারা তাঁকে গ্রহণ করল না। \v 12 তবু যতজন তাঁকে গ্রহণ করল, যারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল, তাদের তিনি ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার অধিকার দিলেন। \v 13 তারা স্বাভাবিকভাবে জাত নয়,\f + \fr 1:13 \fr*\ft গ্রিক: রক্তজাত।\ft*\f* মানবিক ইচ্ছা বা পুরুষের ইচ্ছায় নয়, কিন্তু ঈশ্বর থেকে জাত। \p \v 14 সেই বাক্য দেহ ধারণ করলেন এবং আমাদেরই মধ্যে বসবাস করলেন। আমরা তাঁর মহিমা দেখেছি, ঠিক যেমন পিতার নিকট থেকে আগত এক ও অদ্বিতীয়\f + \fr 1:14 \fr*\ft অথবা, একমাত্র জাত।\ft*\f* পুত্রের মহিমা। তিনি অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ। \p \v 15 যোহন তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন। তিনি উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন, “ইনিই সেই ব্যক্তি যাঁর সম্পর্কে আমি বলেছিলাম, ‘আমার পরে যিনি আসছেন তিনি আমার অগ্রগণ্য, কারণ আমার আগে থেকেই তিনি বিদ্যমান।’ ” \v 16 তাঁর অনুগ্রহের পূর্ণতা থেকে আমরা সকলেই একের পর এক আশীর্বাদ লাভ করেছি। \v 17 মোশির মাধ্যমে বিধান দেওয়া হয়েছিল; যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে অনুগ্রহ ও সত্য উপস্থিত হয়েছে। \v 18 ঈশ্বরকে কেউ কোনোদিন দেখেনি; কিন্তু এক ও অদ্বিতীয়\f + \fr 1:18 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে, \ft*\fqa একমাত্র বা একজাত পুত্র।\fqa*\f* ঈশ্বর, যিনি পিতার পাশে বিরাজ করেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন। \s1 বাপ্তিষ্মদাতা যোহন অস্বীকার করলেন যে তিনি খ্রীষ্ট \p \v 19 জেরুশালেমে ইহুদিরা যখন কয়েকজন যাজক ও লেবীয়কে\f + \fr 1:19 \fr*\ft লেবীয়েরা হল ইস্রায়েলীদের পিতৃপুরুষ, যাকোবের সন্তান লেবির বংশধর।\ft*\f* পাঠিয়ে তাঁর পরিচয় জানতে চাইল, তখন যোহন এভাবে সাক্ষ্য দিলেন। \v 20 তিনি স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করলেন না বরং মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করলেন, “আমি সেই খ্রীষ্ট\f + \fr 1:20 \fr*\ft হিব্রু: মশীহ। খ্রীষ্ট (গ্রিক) ও মশীহ (হিব্রু) দুয়েরই অর্থ, অভিষিক্ত পুরুষ।\ft*\f* নই।” \p \v 21 তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, “তাহলে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?” \p তিনি বললেন, “না, আমি নই।” \p “আপনি কি সেই ভাববাদী?” \p তিনি বললেন, “না।” \p \v 22 শেষে তারা বলল, “তাহলে, কে আপনি? আমাদের বলুন। যারা আমাদের পাঠিয়েছেন, তাদের কাছে উত্তর নিয়ে যেতে হবে। নিজের সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?” \p \v 23 ভাববাদী যিশাইয়ের ভাষায় যোহন উত্তর দিলেন, “আমি মরুপ্রান্তরে এক কণ্ঠস্বর যা আহ্বান করছে, ‘তোমরা প্রভুর জন্য রাজপথগুলি সরল করো।’ ”\f + \fr 1:23 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 40:3\+xt*\ft*\f* \p \v 24 তখন ফরিশীদের প্রেরিত কয়েকজন লোক \v 25 তাঁকে প্রশ্ন করল, “আপনি যদি খ্রীষ্ট, এলিয়, বা সেই ভাববাদী না হন, তাহলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন কেন?” \p \v 26 যোহন উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু তোমাদেরই মধ্যে এমন একজন দাঁড়িয়ে আছেন, যাঁকে তোমরা জানো না। \v 27 তিনি আমার পরে আসছেন। তাঁর চটিজুতোর বাঁধন খোলারও যোগ্যতা আমার নেই।” \p \v 28 এই সমস্ত ঘটল জর্ডন নদীর অপর পারে বেথানিতে, যেখানে যোহন লোকেদের বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন। \s1 যোহন যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন \p \v 29 পরের দিন যোহন যীশুকে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে বললেন, “ওই দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের সমস্ত পাপ দূর করেন। \v 30 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে আমি বলেছিলাম ‘আমার পরে যিনি আসছেন তিনি আমার চেয়েও মহান, কারণ আমার আগে থেকেই তিনি বিদ্যমান আছেন।’ \v 31 আমি নিজে তাঁকে জানতাম না, কিন্তু তিনি যেন ইস্রায়েলের কাছে প্রকাশিত হন সেজন্যই আমি জলে বাপ্তিষ্ম দিতে এসেছি।” \p \v 32 তারপর যোহন এই সাক্ষ্য দিলেন: “আমি পবিত্র আত্মাকে কপোতের মতো স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম, তিনি তাঁর উপরে অধিষ্ঠান করলেন। \v 33 আমি তাঁকে চিনতাম না কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিষ্ম দিতে পাঠিয়েছেন তিনি বলেছিলেন, ‘আত্মাকে যাঁর উপরে নেমে এসে অধিষ্ঠান করতে দেখবে তিনিই পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম দেবেন।’ \v 34 আমি দেখেছি ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ইনিই ঈশ্বরের পুত্র।” \s1 যীশুর প্রথম শিষ্যদল \p \v 35 পরের দিন যোহন তাঁর দুজন শিষ্যের সঙ্গে আবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। \v 36 সেখান দিয়ে যীশুকে যেতে দেখে তিনি বললেন, “ওই দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক।” \p \v 37 তাঁর একথা শুনে শিষ্য দুজন যীশুকে অনুসরণ করলেন। \v 38 তাঁদের অনুসরণ করতে দেখে যীশু ঘুরে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী চাও?” \p তাঁরা বললেন, “রব্বি, (এর অর্থ, গুরুমহাশয়) আপনি কোথায় থাকেন?” \p \v 39 “এসো,” তিনি উত্তর দিলেন, “আর তোমরা দেখতে পাবে।” \p অতএব, তাঁরা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন এবং তাঁরা সেদিন তাঁর সঙ্গেই থাকলেন। তখন সময় ছিল বেলা প্রায় চারটা। \p \v 40 যোহনের কথা শুনে যে দুজন যীশুকে অনুসরণ করেছিলেন, শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয় ছিলেন তাদের অন্যতম। \v 41 আন্দ্রিয় প্রথমে তাঁর ভাই শিমোনের খোঁজ করলেন এবং তাঁকে বললেন, “আমরা মশীহের (অর্থাৎ খ্রীষ্টের) সন্ধান পেয়েছি।” \v 42 তিনি তাঁকে যীশুর কাছে নিয়ে এলেন। \p যীশু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি যোহনের পুত্র শিমোন। তোমাকে কৈফা বলে ডাকা হবে।” (যার অনূদিত অর্থ, পিতর\f + \fr 1:42 \fr*\fq কৈফা \fq*\ft কেফাস্ (অরামীয়) ও পিতর, এই উভয়ের অর্থ, পাথর।\ft*\f*)। \s1 ফিলিপ ও নথনেলকে যীশুর আহ্বান \p \v 43 পরের দিন যীশু গালীলের উদ্দেশে যাত্রার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফিলিপকে দেখতে পেয়ে তিনি বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” \p \v 44 আন্দ্রিয় ও পিতরের মতো ফিলিপও ছিলেন বেথসৈদা নগরের অধিবাসী। \v 45 ফিলিপ নথনেলকে দেখতে পেয়ে বললেন, “মোশি তার বিধানপুস্তকে ও ভাববাদীরাও যাঁর বিষয়ে লিখেছেন, আমরা তাঁর সন্ধান পেয়েছি। তিনি নাসরতের যীশু, যোষেফের পুত্র।” \p \v 46 নথনেল জিজ্ঞাসা করলেন, “নাসরৎ থেকে কি ভালো কিছু আসতে পারে?” \p ফিলিপ বললেন, “এসে দেখে যাও।” \p \v 47 যীশু নথনেলকে আসতে দেখে তাঁর সম্পর্কে বললেন, “ওই দেখো একজন প্রকৃত ইস্রায়েলী, যার মধ্যে কোনও ছলনা নেই।” \p \v 48 নথনেল জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কী করে আমাকে চিনলেন।” \p যীশু বললেন, “ফিলিপ তোমাকে ডাকার আগে তুমি যখন ডুমুর গাছের নিচে ছিলে, তখনই আমি তোমাকে দেখেছিলাম।” \p \v 49 তখন নথনেল বললেন, “রব্বি, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা।” \p \v 50 যীশু বললেন, “তোমাকে ডুমুর গাছের তলায় দেখেছি একথা বলার জন্য কি তুমি বিশ্বাস করলে! তুমি এর চেয়েও অনেক মহৎ বিষয় দেখতে পাবে।” \v 51 তিনি আরও বললেন, “আমি তোমাকে সত্যি বলছি, তুমি\f + \fr 1:51 \fr*\ft বা, তোমরা।\ft*\f* দেখবে স্বর্গলোক উন্মুক্ত হয়েছে, আর ঈশ্বরের দূতেরা\f + \fr 1:51 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 28:12\+xt*\ft*\f* মনুষ্যপুত্রের উপর ওঠানামা করছেন।” \c 2 \s1 যীশু জলকে দ্রাক্ষারসে পরিণত করলেন \p \v 1 তৃতীয় দিনে গালীলের কানা নগরে এক বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। যীশুর মা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। \v 2 যীশু এবং তাঁর শিষ্যেরাও সেই বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন। \v 3 দ্রাক্ষারস শেয হয়ে গেলে, যীশুর মা তাঁকে বললেন, “ওদের দ্রাক্ষারস আর নেই।” \p \v 4 যীশু বললেন, “নারী! কেন তুমি এর সঙ্গে আমাকে জড়াচ্ছ? এখনও আমার সময় উপস্থিত হয়নি।” \p \v 5 তাঁর মা পরিচারকদের বললেন, “উনি যা বলেন, তোমরা সেইমতো করো।” \p \v 6 কাছেই জল রাখার জন্য ছয়টি পাথরের জালা ছিল। ইহুদিদের শুচিকরণ রীতি অনুযায়ী সেগুলিতে জল রাখা হত। প্রতিটি জালায় কুড়ি থেকে তিরিশ গ্যালন\f + \fr 2:6 \fr*\ft প্রায় 75–115 লিটার।\ft*\f* জল ধরত। \p \v 7 যীশু দাসদের বললেন, “জালাগুলি জলে পূর্ণ করো।” তারা কানায় কানায় সেগুলি ভর্তি করল। \p \v 8 তখন তিনি তাদের বললেন, “এবার এখান থেকে কিছুটা তুলে ভোজের কর্তার কাছে নিয়ে যাও।” \p তারা তাই করল। \v 9 ভোজের কর্তা দ্রাক্ষারসে রূপান্তরিত জলের স্বাদ গ্রহণ করলেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারলেন না কোথা থেকে এই দ্রাক্ষারস এল। সেকথা দাসেরা জানত। তখন তিনি বরকে এক পাশে ডেকে বললেন, \v 10 “সবাই প্রথমে উৎকৃষ্ট দ্রাক্ষারসই পরিবেশন করে। অতিথিরা যথেষ্ট পান করার পর কমদামি দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়। কিন্তু তুমি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো জিনিসই বাঁচিয়ে রেখেছ!” \p \v 11 এ ছিল গালীলের কানা নগরে করা যীশুর প্রথম চিহ্নকাজ। এইভাবে তিনি তাঁর মহিমা প্রকাশ করলেন এবং তাঁর শিষ্যেরা তাঁর উপর বিশ্বাস করলেন। \s1 যীশু মন্দির শুদ্ধকরণ করলেন \p \v 12 এরপর তিনি তাঁর মা, ভাইদের ও শিষ্যদের নিয়ে কফরনাহূমে গেলেন। তাঁরা সেখানে কিছুদিন থাকলেন। \p \v 13 ইহুদিদের নিস্তারপর্ব প্রায় এসে গেলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন। \v 14 তিনি দেখলেন মন্দির-প্রাঙ্গণে লোকেরা গবাদি পশু, মেষ ও পায়রা বিক্রি করছে আর অন্যেরা টেবিল সাজিয়ে মুদ্রা বিনিময় করছে। \v 15 তিনি দড়ি দিয়ে একটি চাবুক তৈরি করে গবাদি পশু ও মেষপালসহ সবাইকে মন্দির চত্বর থেকে তাড়িয়ে দিলেন। তিনি মুদ্রা-বিনিময়কারীদের মুদ্রা ছড়িয়ে দিয়ে তাদের টেবিল উল্টে দিলেন। \v 16 যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের তিনি বললেন, “এখান থেকে এসব বের করে নিয়ে যাও! আমার পিতার গৃহকে ব্যবসার গৃহে পরিণত কোরো না!” \v 17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল, শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার গৃহের জন্য আবেগ আমাকে গ্রাস করবে।”\f + \fr 2:17 \fr*\ft \+xt গীত 69:9\+xt*\ft*\f* \p \v 18 ইহুদিরা তখন তাঁর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “এই সমস্ত কাজ করার অধিকার যে তোমার আছে, তার প্রমাণস্বরূপ তুমি আমাদের কোন চিহ্ন দেখাতে পারো?” \p \v 19 প্রত্যুত্তরে তিনি তাদের বললেন, “তোমরা এই মন্দির ধ্বংস করে ফেলো, আমি তিনদিনে আবার এটি গড়ে তুলব।” \p \v 20 ইহুদিরা বলল, “এই মন্দির নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছে, আর তুমি কি না সেটি তিনদিনে গড়ে তুলবে?” \v 21 কিন্তু যীশু মন্দির বলতে নিজের দেহের কথা বলেছিলেন। \v 22 তিনি মৃতলোক থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার পর তাঁর শিষ্যদের মনে পড়েছিল, তিনি কী বলেছিলেন। তখন তাঁরা শাস্ত্র ও যীশুর কথিত বাক্যে বিশ্বাস করলেন। \p \v 23 নিস্তারপর্বের উৎসবের সময় জেরুশালেমে থাকাকালীন তিনি যে সমস্ত চিহ্নকাজ করছিলেন, তা দেখে তারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল।\f + \fr 2:23 \fr*\ft অথবা, তাঁকে বিশ্বাস করল।\ft*\f* \v 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের বিশ্বাস করতেন না, কারণ তিনি সব মানুষকেই জানতেন। \v 25 মানুষের সম্পর্কে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন তাঁর ছিল না, কারণ মানুষের অন্তরে কী আছে তা তিনি জানতেন। \c 3 \s1 যীশু নীকদীমকে শিক্ষা দিলেন \p \v 1 নীকদীম নামে ফরিশী সম্প্রদায়ভুক্ত এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন ইহুদি মহাসভার\f + \fr 3:1 \fr*\ft বা মন্ত্রণা-পরিষদের।\ft*\f* এক সদস্য। \v 2 তিনি রাত্রিবেলা যীশুর কাছে এসে বললেন, “রব্বি, আমরা জানি আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে আগত একজন শিক্ষাগুরু কারণ ঈশ্বরের সহায়তা ব্যতীত কোনো মানুষ আপনার মতো চিহ্নকাজ সম্পাদন করতে পারে না।” \p \v 3 উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাকে সত্যি বলছি, নতুন জন্ম লাভ না করলে কেউ ঈশ্বরের রাজ্যের দর্শন পায় না।”\f + \fr 3:3 \fr*\ft অথবা, ঊর্ধ্ব থেকে জাত।\ft*\f* \p \v 4 নীকদীম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বয়স্ক মানুষ কীভাবে জন্মগ্রহণ করতে পারে? জন্মগ্রহণের জন্য সে নিশ্চয়ই দ্বিতীয়বার তার মাতৃগর্ভে প্রবেশ করতে পারে না!” \p \v 5 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, জল ও পবিত্র আত্মা থেকে জন্মগ্রহণ না করলে কেউ ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। \v 6 মাংস থেকে মাংসই জন্ম নেয়, আর আত্মা থেকে আত্মাই জন্ম নেয়। \v 7 ‘তোমাদের অবশ্যই নতুন জন্ম লাভ করতে হবে,’ আমার একথায় তুমি বিস্মিত হোয়ো না। \v 8 বাতাস আপন খেয়ালে যেদিকে খুশি বয়ে চলে। তোমরা তার শব্দ শুনতে পাও, কিন্তু তার উৎস কোথায়, কোথায়ই বা সে যায়, তা তোমরা বলতে পারো না। পবিত্র আত্মা থেকে জাত প্রত্যেক ব্যক্তিও সেরূপ।” \p \v 9 নীকদীম জিজ্ঞাসা করলেন, “কীভাবে তা সম্ভব?” \p \v 10 যীশু বললেন, “তুমি ইস্রায়েলের শিক্ষাগুরু, আর এই সমস্ত তুমি উপলব্ধি করতে পারছ না? \v 11 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, আমরা যা জানি, তার কথাই বলি; আর যা দেখেছি, তারই সাক্ষ্য দিই। তা সত্ত্বেও তোমরা আমাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না। \v 12 আমি তোমাদের পার্থিব বিষয়ের কথা বললেও তোমরা তা বিশ্বাস করোনি, তাহলে স্বর্গীয় বিষয়ের কথা কিছু বললে, তোমরা কী করে বিশ্বাস করবে? \v 13 স্বর্গলোক থেকে আগত সেই একজন, অর্থাৎ, মনুষ্যপুত্র\f + \fr 3:13 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে আছে, \ft*\fqa সেই মানব, যিনি স্বর্গে আছেন।\fqa*\f* ব্যতীত আর কেউ কখনও স্বর্গে প্রবেশ করেননি। \v 14 মরুপ্রান্তরে মোশি যেমন সেই সাপকে উঁচুতে স্থাপন করেছিলেন, মনুষ্যপুত্রকেও তেমনই উন্নত হতে হবে, \v 15 যেন যারা তাঁকে বিশ্বাস করে তারা প্রত্যেকেই অনন্ত জীবন পায়।\f + \fr 3:15 \fr*\ft অথবা, তাঁর মধ্যে পেতে পারে শাশ্বত জীবন।\ft*\f* \p \v 16 “কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করলেন যে, তিনি তাঁর একজাত পুত্রকে দান করলেন, যেন যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। \v 17 কারণ জগতের বিচার করতে ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে জগতে পাঠাননি, কিন্তু তাঁর মাধ্যমে জগৎকে উদ্ধার করতেই পাঠিয়েছিলেন। \v 18 যে ব্যক্তি তাঁকে বিশ্বাস করে না, তার বিচার ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে, কারণ ঈশ্বরের একজাত পুত্রের নামে সে বিশ্বাস করেনি। \v 19 এই হল দণ্ডাদেশ: জগতে জ্যোতির আগমন হয়েছে, কিন্তু মানুষ জ্যোতির পরিবর্তে অন্ধকারকে ভালোবাসলো কারণ তাদের সব কাজ ছিল মন্দ। \v 20 যে দুষ্কর্ম করে, সে জ্যোতিকে ঘৃণা করে ও জ্যোতির সান্নিধ্যে আসতে ভয় পায়, পাছে তার দুষ্কর্মগুলি প্রকাশ হয়ে পড়ে। \v 21 কিন্তু যে সত্যে জীবনযাপন করে সে জ্যোতির সান্নিধ্যে আসে, যেন তার সমস্ত কাজই ঈশ্বরে সাধিত বলে প্রকাশ পায়।” \s1 যোহন আবার যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন \p \v 22 এরপর যীশু শিষ্যদের সঙ্গে যিহূদিয়ার গ্রামাঞ্চলে গেলেন। সেখানে তিনি শিষ্যদের সঙ্গে কিছু সময় কাটালেন ও বাপ্তিষ্ম দিলেন। \v 23 শালীমের নিকটবর্তী ঐনোনে যোহন বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন, কারণ সেখানে প্রচুর পরিমাণে জল ছিল এবং লোকেরা অনবরত এসে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করছিল। \v 24 (যোহন কারাগারে বন্দি হওয়ার আগে এই ঘটনা ঘটেছিল।) \v 25 তখন আনুষ্ঠানিক শুদ্ধকরণ নিয়ে যোহনের কয়েকজন শিষ্য ও কয়েকজন ইহুদির মধ্যে বিতর্ক দেখা দিল। \v 26 তারা যোহনের কাছে এসে বলল, “রব্বি, জর্ডনের অপর পারে, যিনি আপনার সঙ্গে ছিলেন—যাঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন—তিনি বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন, আর সকলেই তাঁর কাছে যাচ্ছে।” \p \v 27 উত্তরে যোহন বললেন, “ঊর্ধ্বলোক থেকে যা দেওয়া হয়েছে একজন মানুষ কেবল তাই গ্রহণ করতে পারে। \v 28 তোমরা নিজেরাই সাক্ষ্য দিতে পারো যে, আমি বলেছিলাম, ‘আমি সেই খ্রীষ্ট\f + \fr 3:28 \fr*\ft হিব্রু: মশীহ।\ft*\f* নই, কিন্তু আমি তাঁর আগে প্রেরিত হয়েছি।’ \v 29 যে বধূকে পেয়েছে সেই তো বর। যে বন্ধু বরের সঙ্গে থাকে, সে তার কথা শোনার প্রতীক্ষায় থাকে ও বরের কণ্ঠস্বর শুনে আনন্দে পূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই আনন্দই আমার, তা এখন পূর্ণ হয়েছে। \v 30 তাঁকে অবশ্যই বৃদ্ধি পেতে হবে, আর আমাকে ক্ষুদ্র হতে হবে। \p \v 31 “ঊর্ধ্বলোক থেকে যাঁর আগমন তিনি সবার উপরে। যিনি মর্ত্য থেকে আসেন তিনি মর্ত্যেরই, আর তিনি মর্ত্যের কথাই বলেন। স্বর্গলোক থেকে যাঁর আগমন তিনি সবার ঊর্ধ্বে। \v 32 তিনি যা দেখেছেন ও শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন, কিন্তু তাঁর সাক্ষ্য কেউ গ্রহণ করে না। \v 33 যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে সে বিবৃতি দিয়েছে যে ঈশ্বর সত্য। \v 34 ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করেন, কারণ ঈশ্বর সীমা ছাড়িয়ে পবিত্র আত্মা দান করেন। \v 35 পিতা পুত্রকে প্রেম করেন এবং সবকিছু তাঁরই হাতে সমর্পণ করেছেন। \v 36 পুত্রকে যে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে; কিন্তু পুত্রকে যে অমান্য করে, সে জীবন দেখতে পাবে না, কারণ ঈশ্বরের ত্রুোধ তার উপর নেমে আসে।” \c 4 \s1 শমরীয় নারীকে যীশুর শিক্ষা \p \v 1 যীশু জানতে পারলেন যে ফরিশীরা শুনেছে, যীশুর শিষ্যসংখ্যা যোহনের চেয়েও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তিনি তাদের বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন— \v 2 অবশ্য যীশু নিজে বাপ্তিষ্ম দিতেন না, তাঁর শিষ্যেরাই দিতেন। \v 3 তিনি যিহূদিয়া ত্যাগ করে আর একবার গালীলে ফিরে গেলেন। \p \v 4 কিন্তু শমরিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছিল। \v 5 যেতে যেতে তিনি শমরিয়ার শুখর নামক একটি গ্রামে এসে উপস্থিত হলেন। যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমি দান করেছিলেন, সেই স্থানটি তারই নিকটবর্তী। \v 6 সেই স্থানে যাকোবের কুয়ো ছিল। পথশ্রান্ত যীশু কুয়োর পাশে বসলেন। তখন প্রায় দুপুরবেলা।\f + \fr 4:6 \fr*\ft অর্থাৎ, দুপুর বারোটা।\ft*\f* \p \v 7 এক শমরীয় নারী জল তুলতে এলে, যীশু তাকে বললেন, “আমাকে একটু জল খেতে করতে দেবে?” \v 8 (তাঁর শিষ্যেরা তখন খাবার কিনতে নগরে গিয়েছিলেন।) \p \v 9 শমরীয় নারী তাঁকে বলল, “আপনি একজন ইহুদি, আর আমি এক শমরীয় নারী। আপনি কী করে আমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন?” (কারণ ইহুদিদের সঙ্গে শমরীয়দের সামাজিক সম্পর্ক ছিল না।\f + \fr 4:9 \fr*\ft ইহুদিরা শমরীয়দের ব্যবহৃত পাত্র ব্যবহার করত না।\ft*\f*) \p \v 10 উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “তুমি যদি ঈশ্বরের দানের কথা জানতে, আর জানতে, কে তোমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন, তাহলে তুমিই তাঁর কাছে চাইতে আর তিনি তোমাকে জীবন্ত জল দিতেন।” \p \v 11 সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আপনার কাছে জল তোলার কোনো পাত্র নেই, কুয়োটিও গভীর। এই জীবন্ত জল আপনি কোথায় পাবেন? \v 12 আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়েও কি আপনি মহান? তিনি আমাদের এই কুয়ো দান করেছিলেন। তিনি নিজেও এর থেকে জল খেতেন, আর তার পুত্রেরা ও তার পশুপাল এই জলই খেতো।” \p \v 13 যীশু উত্তর দিলেন, “যে এই জল খাবে, সে আবার তৃষ্ণার্ত হবে, \v 14 কিন্তু আমি যে জল দান করি, তা যে খাবে, সে কোনোদিনই তৃষ্ণার্ত হবে না। প্রকৃতপক্ষে, আমার দেওয়া জল তার অন্তরে এক জলের উৎসে পরিণত হবে, যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলে উঠবে।” \p \v 15 সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আমাকে সেই জল দিন, যেন আমার পিপাসা না পায় এবং জল তোলার জন্য আমাকে এখানে আর আসতে না হয়।” \p \v 16 তিনি তাকে বললেন, “যাও, তোমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এসো।” \p \v 17 সে উত্তর দিল, “আমার স্বামী নেই।” \p যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিকই বলেছ যে, তোমার স্বামী নেই। \v 18 প্রকৃত সত্য হল, তোমার পাঁচজন স্বামী ছিল আর এখন যে পুরুষটি তোমার সঙ্গে আছে, সে তোমার স্বামী নয়। তুমি যা বলেছ তা সম্পূর্ণ সত্য।” \p \v 19 সেই নারী বলল, “মহাশয়, আমি দেখছি, আপনি একজন ভাববাদী। \v 20 আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতে উপাসনা করতেন, কিন্তু আপনারা, যাঁরা ইহুদি, দাবি করেন যে, জেরুশালেমেই আমাদের উপাসনা করতে হবে।” \p \v 21 যীশু তাকে বললেন, “নারী, আমার কথায় বিশ্বাস করো, এমন সময় আসছে যখন তোমরা এই পর্বতে অথবা জেরুশালেমে পিতার উপাসনা করবে না। \v 22 তোমরা শমরীয়েরা জানো না, তোমরা কী উপাসনা করছ; আমরা জানি, আমরা কী উপাসনা করি, কারণ ইহুদিদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ উপলব্ধ হবে। \v 23 কিন্তু এখন সময় আসছে বরং এসে পড়েছে, যখন প্রকৃত উপাসকেরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে, কারণ পিতা এরকম উপাসকদেরই খোঁজ করেন। \v 24 ঈশ্বর আত্মা, তাই যারা তাঁর উপাসনা করে, তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে।” \p \v 25 তখন সেই নারী তাঁকে বলল, “আমি জানি মশীহ” (যাঁকে খ্রীষ্ট বলা হয়), “আসছেন। তিনি এসে আমাদের কাছে সবকিছু ব্যাখ্যা করবেন।” \p \v 26 যীশু তাকে বললেন, “তোমার সঙ্গে কথা বলছি যে আমি, আমিই সেই খ্রীষ্ট।” \s1 শিষ্যরা ফিরে এলেন \p \v 27 ঠিক এসময় শিষ্যেরা ফিরে এসে যীশুকে এক নারীর সঙ্গে কথা বলতে দেখে বিস্মিত হলেন। কিন্তু একথা কেউ জিজ্ঞাসা করলেন না, “আপনি কী চাইছেন?” বা “আপনি ওর সঙ্গে কেন কথা বলছেন?” \p \v 28 তখন জলের পাত্র ফেলে রেখে সেই নারী নগরে ফিরে গিয়ে লোকদের বলল, \v 29 “একজন মানুষকে দেখবে এসো। আমি এতদিন যা করেছি, তিনি সবকিছু বলে দিয়েছেন। তিনিই কি সেই খ্রীষ্ট নন?” \v 30 নগর থেকে বেরিয়ে তারা যীশুর কাছে আসতে লাগল। \p \v 31 এই অবসরে তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে মিনতি করলেন, “রব্বি, কিছু খেয়ে নিন।” \p \v 32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমার এমন খাবার আছে, যার কথা তোমরা কিছুই জানো না।” \p \v 33 তাঁর শিষ্যেরা তখন পরস্পর বলাবলি করলেন, “কেউ কি তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?” \p \v 34 যীশু বললেন, “যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর কাজ শেষ করাই আমার খাবার। \v 35 তোমরা কি বলো না, ‘আর চার মাস পরেই ফসল কাটার সময় আসবে?’ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চোখ মেলে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখো। ফসল কাটার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। \v 36 এমনকি, যে ফসল কাটছে, সে এখনই তার পারিশ্রমিক পাচ্ছে এবং এখনই সে অনন্ত জীবনের ফসল সংগ্রহ করছে, যেন যে কাটছে, আর যে বুনছে—দুজনেই উল্লসিত হতে পারে। \v 37 তাই ‘একজন বোনে, অপরজন কাটে,’ এই কথাটি সত্য। \v 38 আমি তোমাদের এমন ফসল সংগ্রহ করতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা পরিশ্রম করোনি। অন্যেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, আর তোমরা তাদের শ্রমের ফসল সংগ্রহ করেছ।” \s1 বহু শমরীয়রা বিশ্বাস করল \p \v 39 “আমি এতদিন যা করেছি, তিনি তার সবকিছু বলে দিয়েছেন,” নারীটির এই সাক্ষ্যের ফলে সেই নগরের বহু শমরীয় যীশুকে বিশ্বাস করল। \v 40 তাই শমরীয়েরা তাঁর কাছে এসে তাদের সঙ্গে থাকার জন্য তাঁকে মিনতি করলে, তিনি সেখানে দু-দিন থাকলেন। \v 41 তাঁর বাণী শুনে আরও অনেকেই তাঁকে বিশ্বাস করল। \p \v 42 তারা সেই নারীকে বলল, “শুধু তোমার কথা শুনে এখন আর আমরা বিশ্বাস করছি না, আমরা এখন নিজেরা শুনেছি এবং আমরা জানি যে, এই ব্যক্তিই প্রকৃতপক্ষে জগতের উদ্ধারকর্তা।” \s1 যীশু রাজকর্মচারীর পুত্রকে সুস্থ করলেন \p \v 43 দু-দিন পরে তিনি গালীলের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। \v 44 (যীশু স্বয়ং উল্লেখ করেছিলেন যে, ভাববাদী তার নিজের নগরে সম্মানিত হন না।) \v 45 তিনি গালীলে উপস্থিত হলে গালীলীয়রা তাঁকে স্বাগত জানাল। নিস্তারপর্বের সময় তিনি জেরুশালেমে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন, তারা তা দেখেছিল, কারণ তারাও সেখানে গিয়েছিল। \p \v 46 গালীলের যে কানা নগরে তিনি জলকে দ্রাক্ষারসে রূপান্তরিত করেছিলেন, তিনি আর একবার সেখানে গেলেন। সেখানে এক উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী ছিলেন, যাঁর পুত্র কফরনাহূমে অসুস্থ ছিল। \v 47 তিনি যখন শুনতে পেলেন, যীশু যিহূদিয়া থেকে গালীলে এসেছেন, তিনি যীশুর কাছে গিয়ে অনুনয় করলেন, যেন তিনি এসে তার মৃতপ্রায় পুত্রকে সুস্থ করেন। \p \v 48 যীশু তাকে বললেন, “তোমরা চিহ্ন ও বিস্ময়কর কিছু না দেখলে কি কখনোই বিশ্বাস করবে না।” \p \v 49 রাজকর্মচারী বললেন, “মহাশয়, আমার ছেলেটির মৃত্যুর পূর্বে আসুন।” \p \v 50 যীশু উত্তর দিলেন, “যাও, তোমার ছেলে বেঁচে থাকবে।” \p সেই ব্যক্তি যীশুর কথা বিশ্বাস করে চলে গেলেন। \v 51 তিনি তখনও পথে, এমন সময় তার পরিচারকেরা এসে তাকে সংবাদ দিল যে, তার ছেলেটি বেঁচে আছে। \v 52 “কখন থেকে ছেলেটির অবস্থার উন্নতি ঘটল,” তার এই প্রশ্নের উত্তরে তারা বলল, “গতকাল বেলা একটায় তার জ্বর ছেড়েছে।” \p \v 53 বালকটির পিতা তখন বুঝতে পারলেন, ঠিক ওই সময়েই যীশু তাকে বলেছিলেন, “তোমার ছেলে বেঁচে থাকবে।” এর ফলে তিনি ও তার সমস্ত পরিজন বিশ্বাস করলেন। \p \v 54 যিহূদিয়া থেকে গালীলে আগমনের পর যীশু এই দ্বিতীয় চিহ্নকাজটি সম্পন্ন করলেন। \c 5 \s1 যীশু সরোবরের ধারে রোগীকে সুস্থ করলেন \p \v 1 যীশু কিছুদিন পর ইহুদিদের একটি পর্ব উপলক্ষে জেরুশালেমে গেলেন। \v 2 সেখানে মেষদ্বারের কাছে একটি সরোবর আছে। অরামীয় ভাষায় একে বলা হয় বেথেসদা। পাঁচটি আচ্ছাদিত ঘাট সরোবরটিকে ঘিরে রেখেছিল। \v 3 সেখানে বহু প্রতিবন্ধী—অন্ধ, খোঁড়া, পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোকেরা শুয়ে থাকত।\f + \fr 5:3 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে, \ft*\fqa তারা জল সঞ্চলনের অপেক্ষায় থাকত।\fqa*\f* \v 4 সময়ে সময়ে প্রভুর এক দূত সেখানে নেমে আসতেন এবং জল কাঁপাতেন। সেই সময় প্রথম যে ব্যক্তি প্রথমে সরোবরের জলে নামত, সে যে কোনো রকমের রোগ থেকে মুক্ত হত।\f + \fr 5:4 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে এই অংশটির উল্লেখ নেই।\ft*\f* \v 5 সেখানে আটত্রিশ বছরের এক পঙ্গু ব্যক্তি ছিল। \v 6 যীশু তাকে সেখানে শুয়ে থাকতে দেখে এবং দীর্ঘদিন ধরেই তার এরকম অবস্থা জেনে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি সুস্থ হতে চাও?” \p \v 7 পঙ্গু লোকটি উত্তর দিল, “মহাশয়, জল কেঁপে ওঠার সময় সরোবরের জলে নামতে আমাকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই। আমি জলে নামার চেষ্টা করতে করতেই অন্য কেউ আমার আগে নেমে পড়ে।” \p \v 8 যীশু তখন তাকে বললেন, “ওঠো, তোমার খাট তুলে নিয়ে চলে যাও।” \v 9 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে গেল। সে তার খাট তুলে নিয়ে হাঁটতে লাগল। \p যেদিন এই ঘটনা ঘটে, সেদিন ছিল বিশ্রামদিন।\f + \fr 5:9 \fr*\ft ইহুদিদের বিশ্রামদিন ছিল শনিবার।\ft*\f* \v 10 তাই, যে লোকটি রোগ থেকে সুস্থ হয়েছিল, ইহুদিরা তাকে বলল, “আজ বিশ্রামদিন। বিধান অনুসারে আজ শয্যা বয়ে নেওয়া তোমার পক্ষে অনুচিত।” \p \v 11 কিন্তু সে উত্তর দিল, “যে ব্যক্তি আমাকে সুস্থ করেছেন, তিনিই আমাকে বললেন, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে চলে যাও।’ ” \p \v 12 অতএব, তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “যে তোমাকে বিছানা তুলে নিয়ে চলে যেতে বলেছে, সে কে?” \p \v 13 যে লোকটি সুস্থ হয়েছিল, যীশুর বিষয়ে তার কোনো ধারণাই ছিল না, কারণ যীশু সেখানে উপস্থিত সকলের মধ্যে মিশে গিয়েছিলেন। \p \v 14 পরে যীশু তাকে মন্দিরে দেখতে পেয়ে বললেন, “দেখো, তুমি এবার সুস্থ হয়ে উঠেছ। আর পাপ কোরো না, না হলে তোমার জীবনে এর থেকেও বেশি অমঙ্গল ঘটতে পারে।” \v 15 লোকটি ফিরে গিয়ে ইহুদিদের বলল যে, যীশু তাকে সুস্থ করেছেন। \s1 পুত্রের কর্তৃত্ব \p \v 16 যীশু বিশ্রামদিনে এই সমস্ত কাজ করছিলেন বলে ইহুদিরা তাঁকে তাড়না করল এবং হত্যা করারও চেষ্টা করল। \v 17 যীশু তাদের বললেন, “আমার পিতা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন, আর আমিও কাজ করে চলেছি।” \v 18 এই কারণে ইহুদিরা তাঁকে হত্যা করার আপ্রাণ চেষ্টা করল, কারণ তিনি যে শুধু বিশ্রামদিন লঙ্ঘন করছিলেন, তা নয়, তিনি ঈশ্বরকে তাঁর পিতা বলেও সম্বোধন করে নিজেকে ঈশ্বরের সমতুল্য করেছিলেন। \p \v 19 যীশু তাদের এই উত্তর দিলেন: “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, পুত্র নিজে থেকে কিছুই করেন না, কিন্তু পিতাকে যা করতে দেখেন, তিনি কেবল তাই করতে পারেন, কারণ পিতা যা করেন, পুত্রও তাই করেন। \v 20 পিতা পুত্রকে প্রেম করেন এবং তিনি যা করেন, তা পুত্রকে দেখান। হ্যাঁ, তোমরা অবাক বিস্ময়ে দেখবে, তিনি এর চেয়েও মহৎ মহৎ বিষয় তাঁকে দেখাচ্ছেন। \v 21 পিতা যেমন মৃতদের উত্থাপিত করে জীবন দান করেন, পুত্রও তেমনই যাকে ইচ্ছা তাকে জীবন দান করেন। \v 22 আর পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার পুত্রের উপর দিয়েছেন, \v 23 যেন তারা যেমন পিতাকে সম্মান করে, তেমনই সকলে পুত্রকেও সম্মান করে। যে ব্যক্তি পুত্রকে সম্মান করে না, সে সেই পিতাকেও সম্মান করে না, যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন। \p \v 24 “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যে আমার বাক্য শোনে এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁকে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে। সে বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে না, কারণ সে মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়েছে। \v 25 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, সময় আসছে, বরং তা এসে গেছে, যখন মৃতেরা ঈশ্বর পুত্রের রব শুনতে পাবে; আর যারা শুনবে, তারা জীবিত হবে। \v 26 কারণ পিতার মধ্যে যেমন জীবন আছে, তেমনই তিনি পুত্রকেও তাঁর মধ্যে জীবন রাখার অধিকার দিয়েছেন। \v 27 পিতা পুত্রকে বিচার করার অধিকার দিয়েছেন, কারণ তিনি মনুষ্যপুত্র। \p \v 28 “তোমরা একথায় বিস্মিত হোয়ো না, কারণ এমন এক সময় আসছে, যখন কবরস্থ লোকেরা সকলে তাঁর কণ্ঠস্বর শুনবে এবং \v 29 যারা সৎকাজ করেছে, তারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য, আর যারা দুষ্কর্ম করেছে, তারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বের হয়ে আসবে। \v 30 আমি আমার ইচ্ছামতো কিছুই করতে পারি না। আমি যেমন শুনি, কেবল তেমনই বিচার করি। আর আমার বিচার ন্যায্য কারণ আমি নিজের নয়, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁরই ইচ্ছা পালনের চেষ্টা করি। \s1 যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য \p \v 31 “আমি যদি নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিই, তাহলে আমার এই সাক্ষ্য সত্য নয়। \v 32 আর একজন আছেন, যিনি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেন। আমি জানি, আমার বিষয়ে তাঁর সাক্ষ্য সত্য। \p \v 33 “তোমরা যোহনের কাছে লোক পাঠিয়েছিলে। তিনি সত্যের পক্ষেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। \v 34 আমি যে মানুষের সাক্ষ্য গ্রহণ করি তা নয়, কিন্তু তোমরা যেন পরিত্রাণ লাভ করতে পারো, সেজন্য এর উল্লেখ করছি। \v 35 যোহন ছিলেন এক প্রদীপ যিনি জ্যোতি প্রদান করেছিলেন এবং কিছু সময় তোমরা তার জ্যোতি উপভোগ করতে চেয়েছিলে। \p \v 36 “সেই যোহনের সাক্ষ্যের চেয়েও এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য আমার আছে। পিতা আমাকে যে কাজ সম্পাদন করতে দিয়েছেন এবং যে কাজ সম্পূর্ণ করতে আমি নিয়োজিত, সেই কাজই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন। \v 37 পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি স্বয়ং আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তোমরা কখনও তাঁর স্বর শোনোনি, তাঁর রূপও দেখোনি। \v 38 তোমাদের মধ্যে তাঁর বাক্য বিরাজ করে না। কারণ তিনি যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো না। \v 39 তোমরা মনোযোগ সহকারে শাস্ত্র পাঠ করে থাকো, কারণ তোমরা মনে করো যে, তার মাধ্যমেই তোমরা অনন্ত জীবন লাভ করেছ। সেই শাস্ত্র আমারই সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছে। \v 40 তবু তোমরা জীবন পাওয়ার জন্য আমার কাছে আসতে চাও না। \p \v 41 “মানুষের প্রশংসা আমি গ্রহণ করি না। \v 42 কিন্তু আমি তোমাদের চিনি। আমি জানি, তোমাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের প্রেম নেই। \v 43 আমি আমার পিতার নামে এসেছি, কিন্তু তোমরা আমাকে গ্রহণ করলে না। অন্য কেউ যদি তার নিজের নামে আসে, তোমরা তাকে গ্রহণ করবে। \v 44 তোমরা যদি পরস্পরের কাছ থেকে গৌরবলাভের জন্য সচেষ্ট হও অথচ যে গৌরব কেবলমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া যায়, তা পাওয়ার জন্য যদি কোনো প্রয়াস না করো, তাহলে কীভাবে তোমরা বিশ্বাস করতে পারো? \p \v 45 “তোমরা মনে কোরো না যে, পিতার সামনে আমি তোমাদের অভিযুক্ত করব। যার উপর তোমাদের প্রত্যাশা, সেই মোশিই তোমাদের অভিযুক্ত করবেন। \v 46 তোমরা যদি মোশিকে বিশ্বাস করতে, তাহলে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ তিনি আমারই বিষয়ে লিখেছেন। \v 47 তার লিখিত বাণী তোমরা বিশ্বাস না করলে, আমার মুখের কথা তোমরা কীভাবে বিশ্বাস করবে?” \c 6 \s1 যীশু পাঁচ হাজার লোককে খাবার দিলেন \p \v 1 এর কিছুদিন পর, যীশু গালীল সাগরের\f + \fr 6:1 \fr*\fq গালীল সাগর \fq*\ft এটিকে সাগর বলা হলেও, আসলে এটি একটি বিশালাকারের হ্রদ।\ft*\f* (অর্থাৎ, টাইবেরিয়াস সাগরের) দূরবর্তী তীরে, লম্বালম্বি ভাবে পার হলেন। \v 2 অসুস্থদের ক্ষেত্রে তিনি যে চিহ্নকাজ সাধন করেছিলেন, তার পরিচয় পেয়ে অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল। \v 3 যীশু তখন শিষ্যদের নিয়ে এক পর্বতে উঠলেন ও তাঁদের নিয়ে সেখানে বসলেন। \v 4 তখন ইহুদিদের নিস্তারপর্ব উৎসবের সময় এসে গিয়েছিল। \p \v 5 যীশু চোখ তুলে অনেক লোককে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ফিলিপকে বললেন, “এসব লোককে খাওয়াবার জন্য আমরা কোথা থেকে রুটি কিনব।” \v 6 তিনি তাঁকে শুধু পরীক্ষা করার জন্যই একথা জিজ্ঞাসা করলেন, কারণ তিনি যে কি করবেন সে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই মনস্থির করে ফেলেছিলেন। \p \v 7 ফিলিপ তাঁকে উত্তর দিলেন, “প্রত্যেকের মুখে কিছু খাবার দেওয়ার জন্য আট মাসের বেতনের\f + \fr 6:7 \fr*\ft গ্রিক: দুশো দিনার।\ft*\f* বিনিময়ে কেনা রুটিও পর্যাপ্ত হবে না।” \p \v 8 তাঁর অপর একজন শিষ্য, শিমোন পিতরের ভাই, আন্দ্রিয়কে বললেন, \v 9 “এখানে একটি ছেলের কাছে যবের পাঁচটি ছোটো রুটি ও দুটি ছোটো মাছ আছে। কিন্তু এত লোকের মধ্যে ওতে কী হবে?” \p \v 10 যীশু বললেন, “লোকদের বসিয়ে দাও।” সেখানে প্রচুর ঘাস ছিল এবং প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ বসে পড়ল। \v 11 তখন যীশু রুটিগুলি নিয়ে ধন্যবাদ দিলেন এবং যারা বসেছিলেন তাদের মধ্যে চাহিদামতো ভাগ করে দিলেন। মাছগুলি নিয়েও তিনি তাই করলেন। \p \v 12 সকলে তৃপ্তি করে খাওয়ার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “অবশিষ্ট রুটির টুকরোগুলি এক জায়গায় জড়ো করো। কোনো কিছুই যেন নষ্ট না হয়।” \v 13 তাই তাঁরা সেই পাঁচটি যবের রুটির অবশিষ্ট অংশ সংগ্রহ করলেন। লোকদের খাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া রুটির টুকরোগুলি দিয়ে তাঁরা বারোটি ঝুড়ি পূর্ণ করলেন। \p \v 14 যীশুর করা এই চিহ্নকাজ দেখে লোকেরা বলতে লাগল, “পৃথিবীতে যাঁর আসার কথা, ইনি নিশ্চয়ই সেই ভাববাদী।” \v 15 যীশু বুঝতে পারলেন যে লোকেরা তাঁকে জোর করে রাজা করতে চায়, তখন তিনি নিজে একটি পাহাড়ে চলে গেলেন। \s1 যীশু জলের উপরে হাঁটলেন \p \v 16 সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তাঁর শিষ্যেরা সাগরের তীরে নেমে গেলেন। \v 17 সেখানে একটি নৌকায় উঠে তাঁরা সাগর পার হয়ে কফরনাহূমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। সেই সময় অন্ধকার নেমে এলেও যীশু তখনও তাঁদের কাছে ফিরে আসেননি। \v 18 প্রবল বাতাস বইছিল এবং জলরাশি উত্তাল হয়ে উঠেছিল। \v 19 তাঁরা নৌকা বেয়ে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার\f + \fr 6:19 \fr*\ft গ্রিক: পঁচিশ কি তিরিশ স্টাডিয়া।\ft*\f* এগিয়ে যাওয়ার পর যীশুকে জলের উপর দিয়ে হেঁটে নৌকার দিকে আসতে দেখলেন। তাঁরা ভয় পেলেন। \v 20 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “এ আমি, ভয় পেয়ো না।” \v 21 তখন তাঁরা যীশুকে নৌকায় তুলতে আগ্রহী হলেন এবং তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তাঁদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেল। \p \v 22 পরদিন, সাগরের অপর তীরে যারা থেকে গিয়েছিল, তারা বুঝতে পারল যে, আগের দিন সেখানে একটি নৌকা ছাড়া আর অন্য নৌকা ছিল না। যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই নৌকায় ওঠেননি, বরং শিষ্যেরা নিজেরাই চলে গিয়েছিলেন। \v 23 প্রভুর ধন্যবাদ দেওয়ার পর লোকেরা যেখানে রুটি খেয়েছিল, টাইবেরিয়াস থেকে কয়েকটি নৌকা তখন সেই স্থানে এসে পৌঁছাল। \v 24 যীশু বা তাঁর শিষ্যদের কেউই সেখানে নেই বুঝতে পেরে সকলে নৌকায় উঠে যীশুর সন্ধানে কফরনাহূমে গেল। \s1 যীশুই জীবনদায়ী খাদ্য \p \v 25 সাগরের অপর পারে যীশুকে দেখতে পেয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “রব্বি, আপনি কখন এখানে এলেন?” \p \v 26 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা চিহ্নকাজ দেখেছিলে বলে যে আমার অন্বেষণ করছ, তা নয়, কিন্তু রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলে বলেই তোমরা আমার অন্বেষণ করছ। \v 27 যে খাদ্য নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য নয়, বরং অনন্ত জীবনব্যাপী স্থায়ী খাদ্যের জন্য তোমরা পরিশ্রম করো। মনুষ্যপুত্রই তোমাদের সেই খাদ্য দান করবেন। পিতা ঈশ্বর তাঁকেই মুদ্রাঙ্কিত করেছেন।” \p \v 28 তারা তখন জিজ্ঞাসা করল, “ঈশ্বরের কাজ করতে হলে আমাদের কী করতে হবে?” \p \v 29 যীশু উত্তর দিলেন, “ঈশ্বরের কাজ হল এই: তিনি যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো।” \p \v 30 অতএব, তারা জিজ্ঞাসা করল, “আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি, এমন কী অলৌকিক চিহ্নকাজ আপনি আমাদের দেখাবেন? আপনি কী করবেন? \v 31 ‘তিনি খাবারের জন্য স্বর্গ থেকে তাদের খাদ্য দিয়েছিলেন,’ শাস্ত্রে লিখিত এই বচন অনুসারে, আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না আহার করেছিলেন।”\f + \fr 6:31 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 16:4\+xt*; \+xt নহিমিয় 9:15\+xt*\ft*\f* \p \v 32 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, মোশি স্বর্গ থেকে তোমাদের সেই খাদ্য দেননি, বরং আমার পিতাই স্বর্গ থেকে প্রকৃত খাদ্য দান করেন। \v 33 কারণ যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসে জগৎকে জীবন দান করেন, তিনিই ঈশ্বরীয় খাদ্য।” \p \v 34 তারা বলল, “প্রভু, এখন থেকে সেই খাদ্যই আমাদের দিন।” \p \v 35 যীশু তখন ঘোষণা করলেন, “আমিই সেই জীবন-খাদ্য। যে আমার কাছে আসে, সে কখনও ক্ষুধার্ত হবে না এবং যে আমাকে বিশ্বাস করে, সে কোনোদিনই পিপাসিত হবে না। \v 36 কিন্তু আমি যেমন তোমাদের বলেছি, তোমরা আমাকে দেখেছ অথচ এখনও পর্যন্ত আমাকে বিশ্বাস করোনি। \v 37 পিতা যাদের আমাকে দেন, তাদের সবাই আমার কাছে আসবে, আর যে আমার কাছে আসে, তাকে আমি কখনও তাড়িয়ে দেব না। \v 38 কারণ আমার ইচ্ছা পূরণের জন্য আমি স্বর্গ থেকে আসিনি, আমি এসেছি যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা পূরণের জন্য। \v 39 আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা এই যে, তিনি যাদের আমাকে দিয়েছেন, আমি যেন তাদের একজনকেও না হারাই, কিন্তু শেষের দিনে তাদের মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করি। \v 40 কারণ আমার পিতার ইচ্ছা এই, পুত্রের দিকে যে দৃষ্টিপাত করে তাঁকে বিশ্বাস করে, সে যেন অনন্ত জীবন লাভ করে। আর শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব।” \p \v 41 একথায় ইহুদিরা তাঁর বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল, কারণ তিনি বলেছিলেন, “আমিই সেই খাদ্য, যা স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছে।” \v 42 তারা বলল, “এ কি যোষেফের পুত্র যীশু নয়, যার বাবা-মা আমাদের পরিচিত? তাহলে কী করে ও এখন বলছে, ‘আমি স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছি’?” \p \v 43 প্রত্যুত্তরে যীশু বললেন, “তোমরা নিজেদের মধ্যে অসন্তোষ দেখিয়ো না। \v 44 পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আকর্ষণ না করলে কেউ আমার কাছে আসতে পারে না, আর শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব। \v 45 ভাববাদীদের গ্রন্থে লেখা আছে, ‘তারা সবাই ঈশ্বরের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করবে।’\f + \fr 6:45 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 54:13\+xt*\ft*\f* পিতার কথায় যে কর্ণপাত করে এবং তাঁর কাছে শিক্ষা লাভ করে, সে আমার কাছে আসে। \v 46 ঈশ্বরের কাছ থেকে যিনি এসেছেন, তিনি ব্যতীত আর কেউ পিতার দর্শন লাভ করেনি, একমাত্র তিনিই পিতাকে দর্শন করেছেন। \v 47 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে। \v 48 আমিই সেই জীবন-খাদ্য। \v 49 তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না আহার করেছিল, তবুও তাদের মৃত্যু হয়েছিল। \v 50 কিন্তু এখানে স্বর্গ থেকে আগত সেই খাদ্য রয়েছে, কোনো মানুষ তা গ্রহণ করলে তার মৃত্যু হবে না। \v 51 আমিই স্বর্গ থেকে নেমে আসা সেই জীবন-খাদ্য। যদি কেউ এই খাদ্যগ্রহণ করে, সে চিরজীবী হবে। আমার মাংসই এই খাদ্য, যা জগতের জীবন লাভের জন্য আমি দান করব।” \p \v 52 তখন ইহুদিরা নিজেদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু করল, “এই লোকটি কীভাবে আমাদের খাওয়ার জন্য তাঁর মাংস দান করতে পারে?” \p \v 53 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা যদি মনুষ্যপুত্রের মাংস ভোজন এবং তাঁর রক্ত পান না করো, তোমাদের মধ্যে জীবন নেই। \v 54 যে আমার মাংস ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে এবং শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব। \v 55 কারণ আমার মাংসই প্রকৃত খাদ্য এবং আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়। \v 56 যে আমার মাংস ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে আমার মধ্যে থাকে, আর আমি তার মধ্যে থাকি। \v 57 জীবন্ত পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন এবং আমি যেমন পিতারই জন্য জীবনধারণ করি, আমাকে যে ভোজন করে, সেও তেমনই আমার জন্য জীবনধারণ করবে। \v 58 এই সেই খাদ্য যা স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছে। তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মান্না ভোজন করেছিল, তাদের মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু যে এই খাদ্য ভোজন করে, সে চিরকাল জীবিত থাকবে।” \v 59 কফরনাহূমের সমাজভবনে\f + \fr 6:59 \fr*\fq সমাজভবন \fq*\ft ইহুদিদের সমাজভবন, যেখানে তারা নিয়মিত উপাসনা, শাস্ত্রালোচনা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক বিচারাদির জন্য মিলিত হত।\ft*\f* শিক্ষা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বললেন। \s1 বহু শিষ্য যীশুকে ছেড়ে গেলেন \p \v 60 একথা শুনে তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে বললেন, “এ এক কঠিন শিক্ষা। এই শিক্ষা কে গ্রহণ করতে পারে?” \p \v 61 শিষ্যেরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে, জানতে পেরে যীশু তাদের বললেন, “একথায় কি তোমরা আঘাত পেলে? \v 62 তাহলে, মনুষ্যপুত্র আগে যে স্থানে ছিলেন সেই স্থানে উন্নীত হতে দেখলে কী বলবে? \v 63 পবিত্র আত্মাই জীবন দান করেন, মাংস কিছু উপকারী নয়। তোমাদের কাছে আমি যেসব কথা বলেছি সেই বাক্যই আত্মা এবং জীবন। \v 64 কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে, যারা বিশ্বাস করে না।” কারণ প্রথম থেকেই যীশু জানতেন, তাদের মধ্যে কে তাঁকে বিশ্বাস করবে না এবং কে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। \v 65 তিনি বলে চললেন, “এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, পিতার কাছ থেকে সামর্থ্য লাভ না করলে, কেউ আমার কাছে আসতে পারে না।” \p \v 66 সেই সময় থেকে বহু শিষ্য ফিরে গেল এবং তারা আর তাঁকে অনুসরণ করল না। \p \v 67 তখন যীশু সেই বারোজন শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরাও কি আমাকে ছেড়ে যেতে চাও?” \p \v 68 শিমোন পিতর তাঁকে উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা কার কাছে যাব? আপনার কাছেই আছে অনন্ত জীবনের বাক্য। \v 69 আমরা বিশ্বাস করি এবং জানি যে, আপনিই ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি।” \p \v 70 যীশু তখন বললেন, “তোমাদের এই বারোজনকে কি আমি মনোনীত করিনি? তবুও তোমাদের মধ্যে একজন হচ্ছে এক দিয়াবল\f + \fr 6:70 \fr*\ft গ্রিক: ডায়াবলস্, শয়তান বা তার অনুচর। শব্দটির অর্থ, অপবাদকারী বা নিন্দুক।\ft*\f*।” \v 71 (একথার দ্বারা তিনি শিমোন ইষ্কারিয়োৎ-এর পুত্র যিহূদার বিষয়ে ইঙ্গিত করলেন। সে বারোজন শিষ্যের অন্যতম হলেও পরবর্তীকালে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।) \c 7 \s1 যীশু কুটিরবাস-পর্বে গেলেন \p \v 1 এরপর যীশু গালীল প্রদেশের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন, ইচ্ছাপূর্বক তিনি যিহূদিয়া থেকে দূরে রইলেন, কারণ সেখানে ইহুদিরা তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টায় ছিল। \v 2 কিন্তু ইহুদিদের কুটিরবাস-পর্ব সন্নিকট হলে, \v 3 যীশুর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, “এ স্থান ছেড়ে তোমার যিহূদিয়ায় যাওয়া উচিত, যেন তোমার শিষ্যেরা তোমার অলৌকিক কাজ দেখতে পায়। \v 4 প্রকাশ্যে পরিচিতি লাভ করতে চাইলে কেউ গোপনে কাজ করে না। তুমি যখন এই সমস্ত কাজ করছই, তখন নিজেকে জগতের সামনে প্রকাশ করো।” \v 5 এরকম বলার কারণ হল, এমনকি যীশুর নিজের ভাইরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না। \p \v 6 তখন যীশু তাদের বললেন, “আমার নিরূপিত সময় এখনও আসেনি, তোমাদের পক্ষে যে কোনো সময়ই উপযুক্ত। \v 7 জগৎ তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে। কারণ জগৎ যা করে, তা যে মন্দ, তা আমি প্রকাশ করে দিই। \v 8 তোমরাই পর্বে যোগদান করতে যাও। আমি এখনই পর্বে যাচ্ছি না, কারণ আমার উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি।” \v 9 একথা বলে তিনি গালীলেই থেকে গেলেন। \p \v 10 কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা পর্বে চলে গেলে, তিনিও সেখানে গেলেন, তবে প্রকাশ্যে নয়, কিন্তু গোপনে। \v 11 পর্বের সময় ইহুদিরা যীশুর সন্ধান করছিল এবং জিজ্ঞাসা করছিল, “সেই ব্যক্তি কোথায়?” \p \v 12 ভিড়ের মধ্যে তাঁকে নিয়ে প্রচুর গুঞ্জন চলছিল। কেউ কেউ বলল, “তিনি একজন সৎ মানুষ।” \p অন্যেরা বলল, “না, সে মানুষকে ভুল পথে চালনা করছে।” \v 13 কিন্তু ইহুদিদের ভয়ে কেউ তাঁর সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলল না। \s1 পর্বের সময় যীশুর শিক্ষা \p \v 14 পর্বের মাঝামাঝি সময়, যীশু মন্দির-প্রাঙ্গণে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন। \v 15 ইহুদিরা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “শিক্ষালাভ না করেও এই মানুষটি কী করে এত শাস্ত্রজ্ঞ হয়ে উঠল?” \p \v 16 যীশু উত্তর দিলেন, “এই শিক্ষা আমার নিজস্ব নয়। যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছ থেকেই আমি এই শিক্ষা পেয়েছি। \v 17 কেউ যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে মনস্থির করে, তাহলে সে উপলব্ধি করতে পারবে, আমার এই শিক্ষা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজে থেকে বলেছি। \v 18 যে নিজের জ্ঞানের কথা বলে, সে তার গৌরবপ্রাপ্তির জন্যই তা করে, কিন্তু যে তার প্রেরণকর্তার গৌরবের জন্য কাজ করে, সে সত্যবাদী পুরুষ। তার মধ্যে কোনো মিথ্যাচার নেই। \v 19 মোশি কি তোমাদের বিধান দেননি? তবু তোমরা একজনও সেই বিধান পালন করো না। তোমরা কেন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ?” \p \v 20 সব লোক উত্তর দিল, “তোমাকে ভূতে পেয়েছে। কে তোমাকে হত্যার চেষ্টা করছে?” \p \v 21 যীশু তাদের বললেন, “আমি মাত্র একটি অলৌকিক কাজ করেছি, আর তা দেখেই তোমরা চমৎকৃত হয়েছিলে। \v 22 মোশি তোমাদের সুন্নত প্রথা দিয়েছিলেন বলে (যদিও প্রকৃতপক্ষে মোশি তা দেননি, কিন্তু পিতৃপুরুষদের সময় থেকে এই প্রথার প্রচলন ছিল), তোমরা বিশ্রামদিনে শিশুকে সুন্নত করে থাকো। \v 23 এখন, বিশ্রামদিনে কোনো শিশুকে সুন্নত করলে যদি মোশির বিধান ভাঙা না হয়, তাহলে বিশ্রামদিনে একটি মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার উপর ক্রুদ্ধ হচ্ছো কেন? \v 24 শুধু বাহ্যিক বিষয় দেখে বিচার কোরো না, ন্যায়সংগত বিচার করো।” \s1 যীশুই কি সেই খ্রীষ্ট? \p \v 25 সেই সময় জেরুশালেমের কিছু লোক জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “এই লোকটিকেই কি তারা হত্যা করার চেষ্টা করছেন না? \v 26 ইনি তো এখানে প্রকাশ্যে কথা বলছেন, অথচ তারা তাঁকে একটিও কথা বলছেন না। কর্তৃপক্ষ কি সত্যিসত্যিই মেনে নিয়েছেন যে, উনিই সেই খ্রীষ্ট? \v 27 যাই হোক, এই ব্যক্তি কোথা থেকে এসেছেন তা আমরা জানি, কিন্তু খ্রীষ্ট এলে কেউ জানবে না যে কোথা থেকে তাঁর আগমন হয়েছে।” \p \v 28 তারপর মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু উচ্চকণ্ঠে বললেন, “এটা ঠিক যে, তোমরা আমাকে জানো এবং আমি কোথা থেকে এসেছি, তাও তোমরা জানো। আমি নিজের ইচ্ছানুসারে এখানে আসিনি, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্যময়। তোমরা তাঁকে জানো না। \v 29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।” \p \v 30 একথায় তারা তাঁকে বন্দি করতে চেষ্টা করল, কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না, কারণ তাঁর সময় তখনও উপস্থিত হয়নি। \v 31 কিন্তু লোকদের মধ্যে অনেকেই তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। তারা বলল, “খ্রীষ্টের আগমন হলে তিনি কি এই লোকটির চেয়ে আরও বেশি চিহ্নকাজ করে দেখাবেন?” \p \v 32 ফরিশীরা লোকদিগকে তাঁর সম্পর্কে এসব বিষয়ে কানাকানি করতে শুনল। তখন প্রধান যাজকবর্গ এবং ফরিশীরা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য মন্দিরের রক্ষীদের পাঠাল। \p \v 33 যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে আর অল্পকাল আছি, তারপর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আমি তাঁর কাছে ফিরে যাব। \v 34 তোমরা আমার সন্ধান করবে, কিন্তু পাবে না। আর আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না।” \p \v 35 তখন ইহুদিরা পরস্পর বলাবলি করল, “এই লোকটি এমন কোথায় যেতে চায় যে আমরা তাঁর সন্ধান পাব না? যেখানে গ্রিকদের মধ্যে আমাদের লোকরা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে, ও কি সেখানে গিয়ে গ্রিকদের শিক্ষা দিতে চায়? \v 36 ‘তোমরা আমাকে খুঁজবে, কিন্তু পাবে না,’ আর, ‘আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না,’ একথার দ্বারা ও কী বলতে চায়?” \p \v 37 পর্বের শেষ ও প্রধান দিনটিতে যীশু দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন, “কেউ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, সে আমার কাছে এসে পান করুক। \v 38 আমাকে যে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রের বচন অনুসারে, তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের স্রোতোধারা প্রবাহিত হবে।” \v 39 একথার দ্বারা তিনি সেই পবিত্র আত্মার কথাই বললেন। যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, পরবর্তীকালে তারা সেই আত্মা লাভ করবে। যীশু তখনও মহিমান্বিত হননি, তাই সেই সময় পর্যন্ত পবিত্র আত্মা প্রদান করা হয়নি। \p \v 40 তাঁর একথা শুনে কিছু লোক বলল, “নিশ্চয়ই, এই লোকটিই সেই ভাববাদী।” \p \v 41 অন্যেরা বলল, “ইনিই সেই খ্রীষ্ট।” \p আবার অনেকে জিজ্ঞাসা করল, “গালীল থেকে কি খ্রীষ্টের আগমন হতে পারে? \v 42 শাস্ত্র কি একথা বলে না যে, দাউদ যেখানে বসবাস করতেন, সেই বেথলেহেম নগরে, দাউদের বংশে খ্রীষ্টের আগমন হবে?” \v 43 এভাবে যীশুকে নিয়ে লোকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। \v 44 কয়েকজন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইলেও কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না। \s1 ইহুদি নেতাদের অবিশ্বাস \p \v 45 মন্দিরের রক্ষীরা অবশেষে প্রধান যাজকদের ও ফরিশীদের কাছে ফিরে গেল। তারা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা তাকে ধরে নিয়ে এলে না কেন?” \p \v 46 রক্ষীরা বলল, “এই লোকটি যেভাবে কথা বলেন, এ পর্যন্ত আর কেউ সেভাবে কথা বলেননি।” \p \v 47 প্রত্যুত্তরে ফরিশীরা ব্যঙ্গ করে বলল, “তোমরা বলতে চাইছ, লোকটি তোমাদেরও বিভ্রান্ত করেছে। \v 48 কোনো নেতা বা কোনো ফরিশী কি তাকে বিশ্বাস করেছে? \v 49 না! কিন্তু এই যেসব লোক, যারা বিধানের কিছুই জানে না, এরা সকলে অভিশপ্ত।” \p \v 50 তখন নীকদীম, যিনি আগে যীশুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন এবং যিনি ছিলেন তাদেরই একজন, জিজ্ঞাসা করলেন, \v 51 “কোনো ব্যক্তির কথা প্রথমে না শুনে ও সে কী করে তা না জেনে, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা কি আমাদের পক্ষে বিধানসংগত?” \p \v 52 তারা উত্তর দিল, “তুমিও কি গালীলের লোক? শাস্ত্র খুঁজে দেখো, দেখতে পাবে যে, গালীল থেকে কোনো ভাববাদীই আসতে পারেন না।” \p \v 53 \f + \fr 7:53 \fr*\ft কয়েকটি প্রাচীন পুঁথিতে \+xt যোহন 7:53–8:11\+xt* পাওয়া যায় না। অবশ্য প্রায় 900-টি পাণ্ডুলিপিতে এই অংশের উল্লেখ করা হয়েছে।\ft*\f*তখন তারা প্রত্যেকেই নিজের নিজের ঘরে ফিরে গেল, \c 8 \nb \v 1 কিন্তু যীশু জলপাই পর্বতে চলে গেলেন। \p \v 2 ভোরবেলায় যীশু আবার মন্দির-প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলেন। সেখানে সমস্ত লোক তাঁর চারপাশে সমবেত হলে তিনি বসলেন ও তাদের শিক্ষাদান করলেন। \v 3 তখন শাস্ত্রবিদ এবং ফরিশীরা ব্যভিচারের দায়ে অভিযুক্ত এক নারীকে নিয়ে এল। তারা সকলের সামনে তাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে \v 4 তারা যীশুকে বলল, “গুরুমহাশয়, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার মুহূর্তে ধরা পড়েছে। \v 5 মোশি তাঁর বিধানে এই ধরনের স্ত্রীলোককে পাথর মারার আদেশ দিয়েছেন। এখন এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?” \v 6 তারা এই প্রশ্নটি ফাঁদ হিসেবে প্রয়োগ করল, যেন যীশুকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো সূত্র পেতে পারে। \p কিন্তু যীশু নত হয়ে তাঁর আঙুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন। \v 7 কিন্তু তারা যখন তাঁকে বারবার প্রশ্ন করল, তিনি সোজা হয়ে তাদের বললেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিষ্পাপ থাকে, তাহলে প্রথমে সেই তাকে পাথর মারুক,” \v 8 বলে তিনি আবার নত হয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন। \p \v 9 যারা একথা শুনল তারা, প্রবীণ থেকে শুরু করে শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত একে একে সরে পড়তে লাগল। সেখানে শুধু যীশু রইলেন, আর দাঁড়িয়ে থাকল সেই নারী। \v 10 যীশু সোজা হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “নারী, ওরা সব গেল কোথায়? কেউ কি তোমাকে দোষী সাব্যস্ত করেনি?” \p \v 11 সে বলল, “একজনও নয়, প্রভু।” \p যীশু বললেন, “তাহলে আমিও তোমাকে দোষী সাব্যস্ত করি না। এখন যাও, আর কখনও পাপ কোরো না।” \s1 যীশুর সাক্ষ্যের বৈধতা \p \v 12 লোকদের আবার শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু বললেন, “আমি জগতের জ্যোতি। যে আমাকে অনুসরণ করে, সে কখনও অন্ধকারে পথ চলবে না, বরং সে জীবনের জ্যোতি লাভ করবে।” \p \v 13 ফরিশীরা তাঁর প্রতিবাদ করে বলল, “তুমি তো নিজের হয়ে নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছ, তোমার সাক্ষ্য বৈধ নয়।” \p \v 14 যীশু উত্তর দিলেন, “নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিলেও আমার সাক্ষ্য বৈধ, কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায় যাচ্ছি, তা আমি জানি। কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি বা কোথায় যাচ্ছি, সে বিষয়ে তোমাদের কোনো ধারণা নেই। \v 15 তোমরা মানুষের মানদণ্ডে বিচার করো; আমি কারও বিচার করি না। \v 16 কিন্তু যদি আমি বিচার করি, আমার রায় যথার্থ, কারণ আমি একা নই। যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আমার সেই পিতা স্বয়ং আমার সঙ্গে আছেন। \v 17 তোমাদের নিজেদের বিধানশাস্ত্রে লেখা আছে যে, দুজন লোকের সাক্ষ্য বৈধ। \v 18 আমার সাক্ষী আমি স্বয়ং, অপর সাক্ষী হলেন পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।” \p \v 19 তারা তখন যীশুকে জিজ্ঞাসা করল, “তোমার পিতা কোথায়?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “তোমরা আমাকে বা আমার পিতাকে জানো না। যদি তোমরা আমাকে জানতে, তাহলে আমার পিতাকেও জানতে।” \v 20 যেখানে দান উৎসর্গ করা হত, সেই স্থানের কাছে মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দেওয়ার সময়, যীশু এই সমস্ত কথা বললেন। তবুও কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করল না, কারণ তাঁর সময় তখনও আসেনি। \p \v 21 যীশু আর একবার তাদের বললেন, “আমি চলে যাচ্ছি, আর তোমরা আমাকে খুঁজে বেড়াবে, কিন্তু তোমাদের পাপেই তোমাদের মৃত্যু হবে। আমি যেখানে যাচ্ছি, তোমরা সেখানে আসতে পারো না?” \p \v 22 এর ফলে ইহুদিরা বাধ্য হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “ও কি আত্মহত্যা করবে? সেই কারণেই ও কি বলছে, ‘আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পারো না’?” \p \v 23 তিনি কিন্তু বলে চললেন, “তোমরা মর্তের মানুষ কিন্তু আমি ঊর্ধ্বলোকের। তোমরা এই জগতের, আমি এই জগতের নই। \v 24 সেই কারণেই আমি তোমাদের বলেছি, তোমাদের পাপেই তোমাদের মৃত্যু হবে; আমি নিজের বিষয়ে যা দাবি করেছি, যে আমিই তিনি, তোমরা তা বিশ্বাস না করলে অবশ্যই তোমাদের পাপে তোমাদের মৃত্যু হবে।” \p \v 25 তারা জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কে?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “আমি প্রথম থেকে যা দাবি করে আসছি, আমিই সেই। \v 26 তোমাদের বিষয়ে বিচার করে আমার অনেক কিছু বলার আছে। কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্য। তাঁর কাছ থেকে আমি যা শুনেছি, জগৎকে সেকথাই বলি।” \p \v 27 তারা বুঝতে পারল না যে, যীশু তাদের কাছে তাঁর পিতার বিষয়ে বলছেন। \v 28 তাই যীশু বললেন, “যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রকে উঁচুতে স্থাপন করবে, তখন জানতে পারবে যে, আমি নিজেকে যা বলে দাবি করি, আমিই সেই। আর আমি নিজে থেকে কিছুই করি না, কিন্তু পিতা আমাকে যা শিক্ষা দেন, আমি শুধু তাই বলি। \v 29 যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গেই আছেন। তিনি আমাকে একা ছেড়ে দেননি, কারণ আমি সর্বদা তাই করি যা তাঁকে সন্তুষ্ট করে।” \v 30 তিনি যখন এসব কথা বললেন তখন অনেকেই তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। \s1 অব্রাহামের সন্তান \p \v 31 যে ইহুদিরা তাঁকে বিশ্বাস করেছিল, যীশু তাদের বললেন, “যদি তোমরা আমার বাক্যে অবিচল থাকো, তাহলে তোমরা প্রকৃতই আমার শিষ্য। \v 32 তখন তোমরা সত্যকে জানবে, আর সেই সত্য তোমাদের মুক্ত করবে।” \p \v 33 তারা তাঁকে বলল, “আমরা অব্রাহামের বংশধর, আমরা কখনও কারও দাসত্ব করিনি। তাহলে আপনি কী করে বলছেন, আমরা মুক্ত হব?” \p \v 34 যীশু তাদের উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে ব্যক্তি পাপ করে, সে পাপেরই দাসত্ব করে। \v 35 কোনও দাস পরিবারে স্থায়ী জায়গা পায় না, কিন্তু পরিবারে পুত্রের স্থান চিরদিনের। \v 36 তাই পুত্র যদি তোমাদের মুক্ত করেন, তাহলেই তোমরা প্রকৃত মুক্ত হবে। \v 37 আমি জানি, তোমরা অব্রাহামের বংশধর, তবু আমার বাক্য তোমাদের অন্তরে স্থান পায় না বলে তোমরা আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছ। \v 38 পিতার সান্নিধ্যে আমি যা দেখেছি, তোমাদের তাই বলছি। আর তোমাদের পিতার কাছে তোমরা যা শুনেছ, তোমরা তাই করে থাকো।” \p \v 39 তারা উত্তর দিল, “অব্রাহাম আমাদের পিতা।” \p যীশু তাদের বললেন, “তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হতে, তাহলে অব্রাহাম যা করেছিলেন, তোমরাও তাই করতে। \v 40 অথচ, ঈশ্বরের কাছ থেকে আমি যে সত্য শুনেছি, তা তোমাদের কাছে প্রকাশ করেছি বলে তোমরা আমাকে হত্যা করার জন্য উদ্যত হয়েছ। অব্রাহাম এমন সব কাজ করেননি। \v 41 তোমাদের পিতা যা করে, তোমরা সেসব কাজই করছ।” \p তারা প্রতিবাদ করে বলল, “আমরা অবৈধ সন্তান নই। আমাদের একমাত্র পিতা স্বয়ং ঈশ্বর।” \p \v 42 যীশু তাদের বললেন, “ঈশ্বর যদি তোমাদের পিতা হন তবে তোমরা আমাকে ভালোবাসতে, কারণ আমি ঈশ্বরের কাছ থেকেই এখানে এসেছি। আমি নিজের ইচ্ছানুসারে আসিনি, কিন্তু তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। \v 43 আমার ভাষা তোমাদের বোধগম্য হচ্ছে না কেন? কারণ তোমরা আমার কথা শুনতে অক্ষম। \v 44 তোমরা তোমাদের পিতা দিয়াবলের আর তোমাদের পিতার সব অভিলাষ পূর্ণ করাই তোমাদের ইচ্ছা। প্রথম থেকেই সে এক হত্যাকারী। তার মধ্যে সত্যের লেশমাত্র নেই, কারণ সে সত্যনিষ্ঠ নয়। সে তার নিজস্ব স্বভাববশেই মিথ্যা বলে, কারণ সে এক মিথ্যাবাদী এবং সব মিথ্যার জন্মদাতা। \v 45 কিন্তু আমি সত্যিকথা বললেও তোমরা আমাকে বিশ্বাস করো না। \v 46 তোমরা কি কেউ আমাকে পাপের দোষী বলে প্রমাণ করতে পারো? আমি যদি সত্যি বলি, তাহলে কেন তোমরা আমাকে বিশ্বাস করো না? \v 47 যে ঈশ্বরের আপনজন, সে ঈশ্বরের সব কথা শোনে। তোমরা যে শোনো না তার কারণ হল, তোমরা ঈশ্বরের আপনজন নও।” \s1 নিজের সম্পর্কে যীশুর দাবি \p \v 48 উত্তরে ইহুদিরা যীশুকে বলল, “আমরা যে বলি, তুমি শমরীয় এবং একজন ভূতগ্রস্ত, তা কি যথার্থ নয়?” \p \v 49 যীশু বললেন, “আমি ভূতগ্রস্ত নই, কিন্তু আমি আমার পিতাকে সমাদর করি, আর তোমরা আমার অনাদর করো। \v 50 আমি নিজের গৌরবের খোঁজ করি না, কিন্তু একজন আছেন, যিনি তা খোঁজ করেন, তিনিই বিচার করবেন। \v 51 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি আমার বাক্য পালন করে, সে কখনও মৃত্যু দেখবে না।” \p \v 52 কিন্তু একথা শুনে ইহুদিরা বলে উঠল, “এখন আমরা জানতে পারলাম যে, তুমি ভূতগ্রস্ত! অব্রাহাম এবং ভাববাদীদেরও মৃত্যু হয়েছে, তবু তুমি বলছ যে তোমার বাক্য পালন করে সে কখনও মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না। \v 53 তুমি কি আমাদের পিতা অব্রাহামের চেয়েও মহান? তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, ভাববাদীরাও তাই। তুমি নিজের সম্পর্কে কী মনে করো?” \p \v 54 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি যদি নিজের গৌরব নিজেই করতাম, তবে আমার গৌরব মূল্যহীন। আমার পিতা, যাঁকে তোমরা নিজেদের ঈশ্বর বলে দাবি করছ, তিনিই আমাকে গৌরব দান করেন। \v 55 তোমরা তাঁকে না জানলেও আমি তাঁকে জানি। আমি যদি বলতাম, আমি তাঁকে জানি না, তাহলে তোমাদেরই মতো আমি মিথ্যাবাদী হতাম। কিন্তু আমি তাঁকে জানি, আর তাঁর বাক্য পালন করি। \v 56 আমার দিন দেখার প্রত্যাশায় তোমাদের পিতা অব্রাহাম উল্লসিত হয়ে উঠেছিলেন এবং তা দর্শন করে তিনি আনন্দিত হয়েছেন।” \p \v 57 ইহুদিরা তাঁকে বলল, “তোমার বয়স পঞ্চাশ বছরও হয়নি, আর তুমি কি না অব্রাহামকে দেখেছ!” \p \v 58 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্ব থেকেই আমি আছি।” \v 59 একথা শুনে তারা তাঁকে আঘাত করার জন্য পাথর তুলে নিল। কিন্তু যীশু লুকিয়ে পড়লেন এবং সবার অলক্ষ্যে মন্দির-প্রাঙ্গণ থেকে চলে গেলেন। \c 9 \s1 যীশু এক জন্মান্ধকে সুস্থ করলেন \p \v 1 পথ চলতে চলতে যীশু এক জন্মান্ধ ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। \v 2 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “রব্বি, কার পাপের কারণে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে, নিজের না এর বাবা-মার?” \p \v 3 যীশু বললেন, “এই ব্যক্তি বা এর বাবা-মা যে পাপ করেছে, তা নয়, কিন্তু এর জীবনে যেন ঈশ্বরের কাজ প্রকাশ পায়, তাই এরকম ঘটেছে। \v 4 যতক্ষণ দিনের আলো আছে, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁরই কাজ আমাদের করতে হবে। রাত্রি ঘনিয়ে আসছে, তখন কেউ আর কাজ করতে পারে না। \v 5 যতক্ষণ আমি জগতে আছি, আমিই এই জগতের জ্যোতি হয়ে আছি।” \p \v 6 একথা বলে, তিনি মাটিতে থুতু ফেললেন এবং সেই লালা দিয়ে কাদা তৈরি করে সেই ব্যক্তির চোখে মাখিয়ে দিলেন। \v 7 তারপর তিনি তাকে বললেন, “যাও, সিলোয়াম সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেলো” (সিলোয়াম শব্দের অর্থ, প্রেরিত)। তখন সেই ব্যক্তি সেখানে গিয়ে (চোখ) ধুয়ে ফেলল এবং দৃষ্টিশক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে গেল। \p \v 8 তার প্রতিবেশীরা এবং যারা তাকে আগে ভিক্ষা করতে দেখেছিল, তারা বলল, “যে ব্যক্তি বসে ভিক্ষা করত, এ কি সেই একই ব্যক্তি নয়?” \v 9 কেউ কেউ বলল যে, সেই ব্যক্তিই তো! \p অন্যেরা বলল, “না, সে তার মতো দেখতে।” \p সে বলল, “আমিই সেই ব্যক্তি।” \p \v 10 তারা জানতে চাইল, “তাহলে তোমার চোখ কীভাবে খুলে গেল?” \p \v 11 উত্তরে সে বলল, “লোকে যাকে যীশু বলে, তিনি কিছু কাদা তৈরি করে আমার দু-চোখে মাখিয়ে দিলেন এবং আমাকে বললেন, ‘যাও, সিলোয়াম সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেলো।’ তাঁর নির্দেশমতো গিয়ে আমি তাই ধুয়ে ফেললাম, আর তারপর থেকে আমি দেখতে পাচ্ছি।” \p \v 12 তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “সেই ব্যক্তি কোথায়?” \p সে বলল, “আমি জানি না।” \s1 সুস্থ হওয়া নিয়ে ফরিশীদের তদন্ত \p \v 13 যে অন্ধ ছিল, সেই ব্যক্তিকে তারা ফরিশীদের কাছে নিয়ে গেল। \v 14 যেদিন যীশু কাদা তৈরি করে ব্যক্তির চোখ খুলে দিয়েছিলেন, সেই দিনটি ছিল বিশ্রামদিন। \v 15 তাই ফরিশীরাও তাকে জিজ্ঞাসা করল, কীভাবে সে দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে। সে উত্তর দিল, “তিনি আমার চোখদুটিতে কাদা মাখিয়ে দিলেন। আমি ধুয়ে ফেললাম, আর এখন আমি দেখতে পাচ্ছি।” \p \v 16 ফরিশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “এই লোকটি ঈশ্বরের কাছ থেকে আসেনি, কারণ সে বিশ্রামদিন পালন করে না।” \p অন্য ফরিশীরা বলল, “যে পাপী, সে কী করে এমন চিহ্নকাজ করতে পারে?” এইভাবে তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিল। \p \v 17 অবশেষে তারা অন্ধ ব্যক্তির দিকে ফিরে তাকে আবার জিজ্ঞাসা করল, “যে তোমার চোখ খুলে দিয়েছে তার বিষয়ে তোমার কী বলার আছে?” \p সে উত্তর দিল, “তিনি একজন ভাববাদী।” \p \v 18 তার বাবা-মাকে ডেকে না আনা পর্যন্ত ইহুদিরা বিশ্বাসই করতে পারল না যে, সে অন্ধ ছিল এবং সে দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে। \v 19 তারা জিজ্ঞাসা করল, “এ কি তোমাদেরই ছেলে? এর বিষয়েই কি তোমরা বলো যে, এ অন্ধ হয়েই জন্মগ্রহণ করেছিল? তাহলে এখন কী করে ও দেখতে পাচ্ছে?” \p \v 20 তার বাবা-মা উত্তর দিল, “আমরা জানি ও আমাদের ছেলে, আর আমরা এও জানি যে, ও অন্ধ হয়েই জন্মগ্রহণ করেছিল। \v 21 কিন্তু এখন ও কীভাবে দেখতে পাচ্ছে বা কে ওর চোখ খুলে দিয়েছে, আমরা তা জানি না। আপনারা ওকেই জিজ্ঞাসা করুন। ও সাবালক, তাই ওর কথা ও নিজেই বলবে।” \v 22 তার বাবা-মা ইহুদিদের ভয়ে একথা বলল, কারণ ইহুদিরা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যীশুকে যে খ্রীষ্ট বলে স্বীকার করবে, সমাজভবন থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। \v 23 সেইজন্য তার বাবা-মা বলল, “ও সাবালক, তাই ওকেই জিজ্ঞাসা করুন।” \p \v 24 যে আগে অন্ধ ছিল, সেই ব্যক্তিকে তারা দ্বিতীয়বার ডেকে এনে বলল, “ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করো।\f + \fr 9:24 \fr*\ft অর্থাৎ, ঈশ্বরের নামে শপথ করে সত্য কথা বলা। (দ্রঃ \+xt যিহোশূয় 7:19\+xt*)\ft*\f* আমরা জানি, সেই ব্যক্তি একজন পাপী।” \p \v 25 সে উত্তর দিল, “তিনি পাপী, কি পাপী নন, তা আমি জানি না। আমি একটি বিষয় জানি, আমি আগে অন্ধ ছিলাম, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি।” \p \v 26 তারা তখন তাকে জিজ্ঞাসা করল, “সে তোমার প্রতি কী করেছিল? সে কী করে তোমার চোখ খুলে দিল?” \p \v 27 সে উত্তর দিল, “আমি এর আগেই সেকথা আপনাদের বলেছি, কিন্তু আপনারা তা শোনেননি। আপনারা আবার তা শুনতে চাইছেন কেন? আপনারাও কি তাঁর শিষ্য হতে চান?” \p \v 28 তারা তাকে গালাগাল দিয়ে অপমান করে বলল, “তুই ওই লোকটির শিষ্য! আমরা মোশির শিষ্য। \v 29 আমরা জানি, ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কিন্তু এই লোকটির আগমন কোথা থেকে হল তা আমরা জানি না।” \p \v 30 সে উত্তর দিল, “সেটাই তো আশ্চর্যের কথা! আপনারা জানেন না তিনি কোথা থেকে এলেন, অথচ তিনিই আমার দু-চোখ খুলে দিলেন। \v 31 আমরা জানি, ঈশ্বর পাপীদের কথা শোনেন না। যারা ঈশ্বরভক্ত ও তাঁর ইচ্ছা পালন করে, তিনি তাদেরই কথা শোনেন। \v 32 জন্মান্ধ ব্যক্তির চোখ কেউ খুলে দিয়েছে, একথা কেউ কখনও শোনেনি। \v 33 সেই ব্যক্তির আগমন ঈশ্বরের কাছ থেকে না হলে, কোনো কিছুই তিনি করতে পারতেন না।” \p \v 34 একথা শুনে তারা বলল, “তোর জন্ম পাপেই হয়েছে, তুই কী করে আমাদের শিক্ষা দেওয়ার সাহস পেলি?” আর তারা তাকে সমাজ থেকে বের করে দিল। \s1 আধ্যাত্মিক দৃষ্টিহীনতা \p \v 35 যীশু শুনতে পেলেন তারা লোকটিকে বের করে দিয়েছে। তিনি তাকে যখন দেখতে পেলেন, তিনি বললেন, “তুমি কি মনুষ্যপুত্রে বিশ্বাস করো?” \p \v 36 সেই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, “প্রভু তিনি কে? আমাকে বলুন, আমি যেন তাঁকে বিশ্বাস করতে পারি।” \p \v 37 যীশু বললেন, “তুমি তাঁকে দেখেছ। প্রকৃতপক্ষে, তিনিই তোমার সঙ্গে কথা বলছেন।” \p \v 38 “প্রভু, আমি বিশ্বাস করি,” একথা বলে সে তাঁকে প্রণাম করল। \p \v 39 যীশু বললেন, “বিচার করতেই আমি এ জগতে এসেছি, যেন দৃষ্টিহীনরা দেখতে পায় এবং যারা দেখতে পায়, তারা দৃষ্টিহীন হয়।” \p \v 40 তাঁর সঙ্গী কয়েকজন ফরিশী তাঁকে একথা বলতে শুনে জিজ্ঞাসা করল, “কী হল? আমরাও অন্ধ নাকি?” \p \v 41 যীশু বললেন, “তোমরা অন্ধ হলে তোমাদের পাপের জন্য অপরাধী হতে না; কিন্তু তোমরা নিজেদের দেখতে পাও বলে দাবি করছ, তাই তোমাদের অপরাধ রয়ে গেল।” \c 10 \s1 উৎকৃষ্ট মেষপালক ও তাঁর মেষ \p \v 1 পরে যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে ব্যক্তি সদর দরজা দিয়ে মেষদের খোঁয়াড়ে প্রবেশ না করে অন্য কোনো দিক দিয়ে ডিঙিয়ে আসে, সে চোর ও দস্যু। \v 2 যে সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করে, সেই তার মেষদের পালক। \v 3 পাহারাদার তার জন্য দরজা খুলে দেয় এবং মেষ তার গলার স্বর শোনে। সে নিজের মেষদের নাম ধরে ডেকে তাদের বাইরে নিয়ে যায়। \v 4 নিজের সব মেষকে বাইরে নিয়ে এসে সে তাদের সামনে সামনে এগিয়ে চলে। তার মেষেরা তাকে অনুসরণ করে, কারণ তারা তার কণ্ঠস্বর চেনে। \v 5 কিন্তু তারা কখনও কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে অনুসরণ করবে না; বরং, তারা তার কাছ থেকে ছুটে পালাবে, কারণ অপরিচিত লোকের গলার স্বর তারা চেনে না।” \v 6 যীশু এই রূপকটি ব্যবহার করলেন, কিন্তু তিনি তাদের কী বললেন, তারা তা বুঝতে পারল না। \p \v 7 তাই যীশু তাদের আবার বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমিই মেষদের দ্বার। \v 8 যারা আমার আগে এসেছিল, তারা সবাই ছিল চোর ও দস্যু, তাই মেষেরা তাদের ডাকে কান দেয়নি। \v 9 আমিই দ্বার, আমার মধ্য দিয়ে যে প্রবেশ করবে, সে রক্ষা\f + \fr 10:9 \fr*\ft অথবা, নিরাপদে থাকবে।\ft*\f* পাবে। সে ভিতরে আসবে ও বাইরে যাবে, আর চারণভূমির সন্ধান পাবে। \v 10 চোর আসে কেবল চুরি, হত্যা ও ধ্বংস করতে, কিন্তু আমি এসেছি যেন তারা জীবন পায় এবং তা পূর্ণরূপেই পায়। \p \v 11 “আমিই উৎকৃষ্ট মেষপালক। উৎকৃষ্ট মেষপালক মেষদের জন্য তাঁর প্রাণ সমর্পণ করেন। \v 12 বেতনজীবী লোক মেষপালক নয়, সে মেষপালের মালিকও নয়। তাই সে নেকড়ে বাঘকে আসতে দেখে, মেষদের ছেড়ে পালিয়ে যায়। নেকড়ে তখন মেষপালকে আক্রমণ করে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। \v 13 বেতনজীবী বলেই সে পালিয়ে যায়, মেষপালের জন্য কোনো চিন্তা করে না। \p \v 14 “আমিই উৎকৃষ্ট মেষপালক, আমার মেষদের আমি জানি ও আমার নিজেরা আমাকে জানে— \v 15 যেমন পিতা আমাকে জানেন ও আমি পিতাকে জানি—আর মেষদের জন্য আমি আমার প্রাণ সমর্পণ করি। \v 16 এই খোঁয়াড়ের বাইরেও আমার অন্য মেষ আছে। তারা আমার কণ্ঠস্বর শুনবে। তখন একটি পাল এবং একজন পালক হবে। \v 17 আমার পিতা এজন্য আমাকে প্রেম করেন, কারণ আমি আমার প্রাণ সমর্পণ করি, যেন আবার তা পুনরায় গ্রহণ করি। \v 18 কেউ আমার কাছ থেকে তা কেড়ে নিতে পারে না। আমি স্বেচ্ছায় আমার প্রাণ সমর্পণ করি। সমর্পণ করার অধিকার এবং তা ফিরে পাওয়ারও অধিকার আমার আছে। আমার পিতার কাছ থেকে আমি এই আদেশ\f + \fr 10:18 \fr*\ft অথবা, কর্তৃত্ব।\ft*\f* লাভ করেছি।” \p \v 19 একথায় ইহুদিদের মধ্যে আবার মতভেদ দেখা দিল। \v 20 তাদের অনেকেই বলল, “ওকে ভূতে পেয়েছে; তাই ও পাগলের মতো কথা বলছে। ওর কথা শুনছ কেন?” \p \v 21 কিন্তু অন্যেরা বলল, “এসব কথা তো ভূতের পাওয়া লোকের নয়! ভূত কি অন্ধদের চোখ খুলে দিতে পারে?” \s1 ইহুদিদের অবিশ্বাস \p \v 22 এরপর জেরুশালেমে মন্দির-উৎসর্গের পর্ব\f + \fr 10:22 \fr*\ft হিব্রু: হানুক্-কাহ\ft*\f* এসে গেল। তখন শীতকাল। \v 23 যীশু মন্দির চত্বরে শলোমনের বারান্দায় হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন। \v 24 ইহুদিরা তাঁকে ঘিরে ধরে বলল, “আর কত দিন তুমি আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবে? তুমি যদি খ্রীষ্ট হও, সেকথা আমাদের স্পষ্ট করে বলো!” \p \v 25 উত্তরে যীশু বললেন, “আমি বলা সত্ত্বেও তোমরা বিশ্বাস করোনি। আমার পিতার নামে সম্পাদিত অলৌকিক কাজই আমার পরিচয় বহন করে। \v 26 কিন্তু তোমরা তা বিশ্বাস করো না, কারণ তোমরা আমার পালের মেষ নও। \v 27 আমার মেষেরা আমার কণ্ঠস্বর শোনে, আমি তাদের জানি, আর তারা আমাকে অনুসরণ করে। \v 28 আমি তাদের অনন্ত জীবন দান করি; তারা কোনোদিনই বিনষ্ট হবে না। আর কেউ তাদের আমার হাত থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। \v 29 আমার পিতা, যিনি তাদের আমাকে দিয়েছেন, তিনি সবার চেয়ে মহান।\f + \fr 10:29 \fr*\ft বহু প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে আছে, \ft*\fqa আমার পিতা আমাকে যা দিয়েছেন, তা সব থেকে মহান।\fqa*\f* আমার পিতার হাত থেকে কেউ তাদের কেড়ে নিতে পারে না। \v 30 আমি ও পিতা, আমরা এক।” \p \v 31 ইহুদিরা তাঁকে আবার পাথর ছুঁড়ে মারার জন্য পাথর তুলে নিল। \v 32 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “পিতার দেওয়া শক্তিতে আমি তোমাদের অনেক মহৎ অলৌকিক কাজ দেখিয়েছি। সেগুলির মধ্যে কোনটির জন্য তোমরা আমাকে পাথর মারতে চাইছ?” \p \v 33 ইহুদিরা বলল, “এসব কোনো কারণের জন্যই নয়, কিন্তু ঈশ্বরনিন্দার জন্য আমরা তোমাকে পাথর মারতে উদ্যত হয়েছি, কারণ তুমি একজন সামান্য মানুষ হয়েও নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করছ।” \p \v 34 যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের বিধানপুস্তকে কি লেখা নেই, ‘আমি বলেছি, তোমরা “ঈশ্বর”\f + \fr 10:34 \fr*\ft \+xt গীত 82:6\+xt*\ft*\f*’? \v 35 যাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি যদি তাদের ‘ঈশ্বর’ নামে অভিহিত করে থাকেন—এবং শাস্ত্রের তো পরিবর্তন হতে পারে না— \v 36 তাহলে পিতা যাকে তাঁর আপনজনরূপে পৃথক করে জগতে পাঠিয়েছেন, তাঁর বিষয়ে কী বলবে? তবে ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র,’ একথা বলার জন্য কেন তোমরা আমাকে ঈশ্বরনিন্দার অভিযোগে অভিযুক্ত করছ? \v 37 আমার পিতা যা করেন, আমি যদি সে কাজ না করি, তাহলে তোমরা আমাকে বিশ্বাস কোরো না। \v 38 কিন্তু আমি যদি তা করি, তোমরা আমাকে বিশ্বাস না করলেও, সেই অলৌকিক কাজগুলিকে বিশ্বাস করো, যেন তোমরা জানতে ও বুঝতে পারো যে, পিতা আমার মধ্যে ও আমি পিতার মধ্যে আছি।” \v 39 তারা আবার তাঁকে বন্দি করার চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের কবল এড়িয়ে গেলেন। \p \v 40 এরপর যীশু জর্ডন নদীর অপর পারে ফিরে গেলেন, যেখানে যোহন আগে লোকেদের বাপ্তিষ্ম দিতেন। তিনি সেখানে থেকে গেলেন এবং বহু লোক তাঁর কাছে এল। \v 41 তারা বলল, “যোহন কখনও চিহ্নকাজ সম্পাদন না করলেও, এই মানুষটির বিষয়ে তিনি যথার্থ কথাই বলেছেন।” \v 42 সেখানে বহু মানুষ যীশুতে বিশ্বাস স্থাপন করল। \c 11 \s1 লাসারের মৃত্যু \p \v 1 লাসার নামে এক ব্যক্তি পীড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন বেথানি গ্রামের অধিবাসী, যেখানে মরিয়ম ও তার বোন মার্থা বসবাস করতেন। \v 2 এই মরিয়মই প্রভুর উপরে সুগন্ধিদ্রব্য ঢেলে তাঁর চুল দিয়ে প্রভুর পা-দুটি মুছিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরই ভাই লাসার সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। \v 3 দুই বোন তাই যীশুর কাছে সংবাদ পাঠালেন, “প্রভু আপনি যাকে প্রেম করেন, সে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।” \p \v 4 একথা শুনে যীশু বললেন, “এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয়নি, কিন্তু ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশের জন্য এরকম হয়েছে, যেন ঈশ্বরের পুত্র এর মাধ্যমে গৌরবান্বিত হন।” \v 5 মার্থা, তাঁর বোন ও লাসারকে যীশু প্রেম করতেন। \v 6 তবুও লাসারের অসুস্থতার কথা শুনে তিনি যেখানে ছিলেন, সেখানেই আরও দু-দিন রইলেন। \v 7 এরপর তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “চলো, আমরা যিহূদিয়ায় ফিরে যাই।” \p \v 8 তাঁর শিষ্যেরা বললেন, “কিন্তু রব্বি, কিছু সময় আগেই তো ইহুদিরা আপনাকে পাথর মারার চেষ্টা করেছিল, তবুও আপনি সেখানে ফিরে যেতে চাইছেন?” \p \v 9 যীশু উত্তর দিলেন, “দিনের আলোর স্থায়িত্ব কি বারো ঘণ্টা নয়? যে মানুষ দিনের আলোয় পথ চলে, সে হোঁচট খাবে না। কারণ এই জগতের আলোতেই সে দেখতে পায়। \v 10 কিন্তু রাতে যখন সে পথ চলে, তখন সে হোঁচট খায়, কারণ তার কাছে আলো থাকে না।” \p \v 11 একথা বলার পর তিনি তাঁদের বললেন, “আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু তাকে জাগিয়ে তুলতে আমি সেখানে যাচ্ছি।” \p \v 12 তাঁর শিষ্যেরা বললেন, “প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে পড়েছে, তাহলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে।” \v 13 যীশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে বলছিলেন, কিন্তু তাঁর শিষ্যেরা ভাবলেন, তিনি স্বাভাবিক ঘুমের কথা বলছেন। \p \v 14 তাই তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন, “লাসারের মৃত্যু হয়েছে। \v 15 তোমাদের কথা ভেবে আমি আনন্দিত যে, আমি তখন সেখানে ছিলাম না, যেন তোমরা বিশ্বাস করতে পারো। চলো, আমরা তার কাছে যাই।” \p \v 16 তখন থোমা, যিনি দিদুমঃ (যমজ) নামে আখ্যাত, অন্যান্য শিষ্যদের বললেন, “চলো, আমরাও যাই, যেন তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারি।” \s1 যীশু দুই বোনকে সান্ত্বনা দিলেন \p \v 17 সেখানে এসে যীশু দেখলেন যে, চারদিন যাবৎ লাসার সমাধির মধ্যে আছেন। \v 18 বেথানি থেকে জেরুশালেমের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার।\f + \fr 11:18 \fr*\ft গ্রিক: পনেরো স্টাডিয়া।\ft*\f* \v 19 আর মার্থা ও মরিয়মের ভাইয়ের মৃত্যু হওয়ায় তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য জেরুশালেম থেকে অনেক ইহুদি তাঁদের কাছে এসেছিল। \v 20 যীশুর আসার কথা শুনতে পেয়ে মার্থা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, কিন্তু মরিয়ম ঘরেই রইলেন। \p \v 21 মার্থা যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি এখানে উপস্থিত থাকলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হত না। \v 22 কিন্তু আমি জানি, আপনি ঈশ্বরের কাছে যা চাইবেন, তিনি আপনাকে এখনও তাই দেবেন।” \p \v 23 যীশু তাঁকে বললেন, “তোমার ভাই আবার জীবিত হবে।” \p \v 24 মার্থা উত্তর দিলেন, “আমি জানি, শেষের দিনে, পুনরুত্থানের সময়, সে আবার জীবিত হবে।” \p \v 25 যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পুনরুত্থান ও জীবন। যে আমাকে বিশ্বাস করে, তার মৃত্যু হলেও সে জীবিত থাকবে। \v 26 আর যে জীবিত এবং আমাকে বিশ্বাস করে, তার মৃত্যু কখনও হবে না। তুমি কি একথা বিশ্বাস করো?” \p \v 27 তিনি তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ প্রভু, আমি বিশ্বাস করি যে, জগতে যাঁর আগমনের সময় হয়েছিল, আপনিই সেই মশীহ, ঈশ্বরের পুত্র।” \p \v 28 একথা বলে তিনি ফিরে গিয়ে তাঁর বোন মরিয়মকে একান্তে ডেকে বললেন, “গুরুমহাশয় এখানে এসেছেন, তিনি তোমাকে ডাকছেন।” \v 29 একথা শুনে মরিয়ম তাড়াতাড়ি উঠে তাঁর কাছে গেলেন। \v 30 যীশু তখনও গ্রামে প্রবেশ করেননি, মার্থার সঙ্গে তাঁর যেখানে দেখা হয়েছিল, তিনি তখনও সেখানেই ছিলেন। \v 31 যে ইহুদিরা মরিয়মকে তাঁর বাড়িতে এসে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তাঁকে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে যেতে দেখে তারা মনে করল, তিনি বোধহয় সমাধিস্থানে দুঃখে কাঁদতে যাচ্ছেন। তাই তারা তাকে অনুসরণ করল। \p \v 32 যীশু যেখানে ছিলেন, মরিয়ম সেখানে পৌঁছে তাঁকে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে বললেন, “প্রভু, আপনি এখানে উপস্থিত থাকলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হত না।” \p \v 33 মরিয়মকে এবং তাঁর অনুসরণকারী ইহুদিদের কাঁদতে দেখে, যীশু আত্মায় গভীরভাবে বিচলিত ও উদ্বিগ্ন হলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, \v 34 “তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?” \p তাঁরা উত্তর দিল, “প্রভু, দেখবেন আসুন।” \p \v 35 যীশু কাঁদলেন। \p \v 36 তখন ইহুদিরা বলল, “দেখো, তিনি তাঁকে কত ভালোবাসতেন!” \p \v 37 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “যিনি সেই অন্ধ ব্যক্তির চোখ খুলে দিয়েছিলেন, তিনি কি সেই ব্যক্তিকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারতেন না?” \s1 মৃত লাসারকে জীবন দান \p \v 38 যীশু আবার গভীরভাবে বিচলিত হয়ে সমাধির কাছে উপস্থিত হলেন। সেটি ছিল একটি গুহা, তার প্রবেশপথে একটি পাথর রাখা ছিল। \v 39 তিনি বললেন, “পাথরটি সরিয়ে দাও।” \p মৃত ব্যক্তির বোন মার্থা বললেন, “কিন্তু প্রভু, চারদিন হল সে সেখানে আছে। এখন সেখানে দুর্গন্ধ হবে।” \p \v 40 যীশু তখন বললেন, “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যদি তুমি বিশ্বাস করো, তাহলে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?” \p \v 41 তারা তখন পাথরটি সরিয়ে দিল। যীশু তারপর আকাশের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললেন, “পিতা, আমার প্রার্থনা শুনেছ বলে তোমায় ধন্যবাদ দিই। \v 42 আমি জানতাম, তুমি নিয়ত আমার কথা শোনো, কিন্তু এখানে যারা দাঁড়িয়ে আছে, তাদের উপকারের জন্য একথা বলছি। তারা যেন বিশ্বাস করে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছ,” \p \v 43 একথা বলে যীশু উচ্চকণ্ঠে ডাক দিলেন, “লাসার, বেরিয়ে এসো!” \v 44 সেই মৃত ব্যক্তি বেরিয়ে এলেন। তাঁর হাত ও পা লিনেন কাপড়ের ফালিতে জড়ানো ছিল, তার মুখ ছিল কাপড়ে ঢাকা। \p যীশু তাদের বললেন, “ওর বাঁধন খুলে ওকে যেতে দাও।” \s1 যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্র \p \v 45 তখন ইহুদিদের অনেকে যারা মরিয়মের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, তারা যীশুকে এই কাজ করতে দেখে তাঁকে বিশ্বাস করল। \v 46 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন ফরিশীদের কাছে গিয়ে যীশুর সেই অলৌকিক কাজের কথা জানাল। \v 47 তখন প্রধান যাজকবর্গ ও ফরিশীরা মহাসভার\f + \fr 11:47 \fr*\ft সানহেড্রিন বা ইহুদিদের মন্ত্রণা পরিষদ।\ft*\f* এক অধিবেশন আহ্বান করল। তারা জিজ্ঞাসা করল, \p “আমরা কী করছি? এই লোকটি তো বহু চিহ্নকাজ করে যাচ্ছে। \v 48 আমরা যদি ওকে এভাবে চলতে দিই, তাহলে প্রত্যেকেই ওকে বিশ্বাস করবে। তখন রোমীয়রা এসে আমাদের স্থান\f + \fr 11:48 \fr*\ft বা মন্দির।\ft*\f* ও জাতি উভয়ই ধ্বংস করবে।” \p \v 49 তখন তাদের মধ্যে কায়াফা নামে এক ব্যক্তি, যিনি সে বছরের মহাযাজক ছিলেন, বললেন, “তোমরা কিছুই জানো না, \v 50 তোমরা বুঝতে পারছ না যে, সমগ্র জাতি বিনষ্ট হওয়ার চেয়ে বরং প্রজাদের মধ্যে একজন মানুষের মৃত্যু শ্রেয়।” \p \v 51 তিনি নিজের থেকে একথা বলেননি, কিন্তু সেই বছরের মহাযাজকরূপে ভবিষ্যদ্‌বাণী করলেন যে, ইহুদি জাতির জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করবেন \v 52 এবং শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয়, কিন্তু ঈশ্বরের যেসব সন্তান ছিন্নভিন্ন হয়েছিল, তাদের সংগ্রহ করে এক করার জন্যও তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। \v 53 তাই সেদিন থেকে তারা যীশুকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগল। \p \v 54 সেই কারণে যীশু এরপর ইহুদিদের মধ্যে আর প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেন না। পরিবর্তে, তিনি মরু-অঞ্চলের নিকটবর্তী ইফ্রয়িম নামক এক গ্রামে চলে গেলেন। সেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন। \p \v 55 ইহুদিদের নিস্তারপর্বের সময় প্রায় এসে গেল; নিস্তারপর্বের আগে আনুষ্ঠানিক শুদ্ধকরণের জন্য বহু লোক গ্রামাঞ্চল থেকে জেরুশালেমে গেল। \v 56 তারা যীশুর সন্ধান করতে লাগল এবং মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “তোমাদের কী মনে হয়, তিনি কি পর্বে আসবেন না?” \v 57 কিন্তু প্রধান যাজকবর্গ ও ফরিশীরা আদেশ জারি করেছিল যে, কেউ যদি কোথাও যীশুর সন্ধান পায়, তাহলে যেন সেই সংবাদ জানায়, যেন তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে পারে। \c 12 \s1 বেথানিতে যীশু অভিষিক্ত হলেন \p \v 1 নিস্তারপর্বের ছয় দিন আগে যীশু বেথানিতে উপস্থিত হলেন। যীশু যাকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছিলেন, সেই লাসারের বাড়ি সেখানে ছিল। \v 2 সেখানে যীশুর সম্মানে এক ভোজসভার আয়োজন করা হয়েছিল। মার্থা পরিবেশন করছিলেন, আর লাসার ভোজের আসনে হেলান দিয়ে অনেকের সঙ্গে যীশুর কাছে বসেছিলেন। \v 3 তখন মরিয়ম আধলিটার বিশুদ্ধ বহুমূল্য জটামাংসীর সুগন্ধি তেল নিয়ে যীশুর চরণে ঢেলে দিলেন এবং তাঁর চুল দিয়ে তাঁর পা-দুখানি মুছিয়ে দিলেন। তেলের সুগন্ধে সেই ঘর ভরে গেল। \p \v 4 কিন্তু তাঁর এক শিষ্য যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ, যে পরবর্তীকালে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, আপত্তি করল, \v 5 “এই সুগন্ধিদ্রব্য বিক্রি করে সেই অর্থ দরিদ্রদের দেওয়া হল না কেন? এর মূল্য তো এক বছরের বেতনের সমান!”\f + \fr 12:5 \fr*\ft গ্রিক: তিনশো দিনার।\ft*\f* \v 6 দরিদ্রদের জন্য চিন্তা ছিল বলে যে সে একথা বলেছিল, তা নয়; প্রকৃতপক্ষে সে ছিল চোর। টাকার থলি তার কাছে থাকায়, সেই অর্থ থেকে সে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করত। \p \v 7 যীশু উত্তর দিলেন, “ওকে ছেড়ে দাও। আমার সমাধি দিনের জন্য সে এই সুগন্ধিদ্রব্য বাঁচিয়ে রেখেছিল। \v 8 তোমরা তো তোমাদের মধ্যে দরিদ্রদের সবসময়ই পাবে, কিন্তু আমাকে তোমরা সবসময় পাবে না।” \p \v 9 ইতিমধ্যে ইহুদি সমাজের অনেক লোক যীশু সেখানে আছেন জানতে পেরে, শুধু যীশুকে নয়, লাসারকেও দেখতে এল, যাঁকে যীশু মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করেছিলেন। \v 10 প্রধান যাজকেরা তখন লাসারকেও হত্যা করার পরিকল্পনা করল, \v 11 কারণ তাঁর জন্য অনেক ইহুদি যীশুর কাছে যাচ্ছিল এবং তাঁকে বিশ্বাস করছিল। \s1 যীশু জেরুশালেমে রাজার মতো প্রবেশ করলেন \p \v 12 পর্বের জন্য যে বিস্তর লোকের সমাগম ঘটেছিল, পরদিন তারা শুনতে পেল যে, যীশু জেরুশালেমের পথে এগিয়ে চলেছেন। \v 13 তারা খেজুর গাছের ডাল নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেল, আর উচ্চকণ্ঠে বলতে লাগল, \q1 “হোশান্না!\f + \fr 12:13 \fr*\fq হোশান্না\fq*\ft —এক হিব্রু অভিব্যক্তি, যার অর্থ, পরিত্রাণ করো, বা মুক্তি দাও। কালক্রমে এটি একটি প্রশংসাসূচক উক্তিতে পরিণত হয়েছে।\ft*\f*” \b \q1 “প্রভুর নামে যিনি আসছেন, তিনি ধন্য!”\f + \fr 12:13 \fr*\ft \+xt গীত 118:25,26\+xt*।\ft*\f* \b \q1 “ধন্য ইস্রায়েলের সেই রাজাধিরাজ!” \m \v 14 তখন একটি গর্দভশাবক দেখতে পেয়ে যীশু তার উপরে বসলেন, যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে, \q1 \v 15 “হে সিয়োন-কন্যা, তুমি ভীত হোয়ো না, \q2 দেখো, তোমার রাজাধিরাজ আসছেন, \q2 গর্দভশাবকে চড়ে আসছেন।”\f + \fr 12:15 \fr*\ft \+xt সখরিয় 9:9\+xt*\ft*\f* \p \v 16 তাঁর শিষ্যেরা প্রথমে এ সমস্ত বুঝতে পারেননি। যীশু মহিমান্বিত হওয়ার পর তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন যে, যীশুর সম্পর্কে শাস্ত্রে উল্লিখিত ঘটনা অনুসারেই তাঁরা তাঁর প্রতি এরূপ আচরণ করেছেন। \p \v 17 যীশু লাসারকে সমাধি থেকে ডেকে মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করার সময় যে সকল লোক তাঁর সঙ্গে ছিল, তারা এসব কথা প্রচার করে চলেছিল। \v 18 বহু মানুষ যীশুর করা এই চিহ্নকাজের কথা শুনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেল। \v 19 তাই ফরিশীরা পরস্পর বলাবলি করল, “দেখো, আমরা কিছুই করতে পারছি না। চেয়ে দেখো, সমস্ত জগৎ কেমন তাঁর পিছনে ছুটে চলেছে!” \s1 নিজের মৃত্যু সম্পর্কে যীশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 20 পর্বের সময় যারা উপাসনা করতে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রিক ছিল। \v 21 তারা গালীলের বেথসৈদার অধিবাসী ফিলিপের কাছে এসে নিবেদন করল, “মহাশয়, আমরা যীশুকে দেখতে চাই!” \v 22 ফিলিপ আন্দ্রিয়র কাছে বলতে গেলেন। আন্দ্রিয় ও ফিলিপ গিয়ে সেকথা যীশুকে জানালেন। \p \v 23 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “মনুষ্যপুত্রের মহিমান্বিত হওয়ার মুহূর্ত এসে পড়েছে। \v 24 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, গমের দানা যদি মাটিতে পড়ে না মরে, তবে তা শুধু একটি বীজ হয়েই থাকে। কিন্তু যদি মরে, তাহলে বহু বীজের উৎপন্ন হয়। \v 25 যে মানুষ নিজের প্রাণকে ভালোবাসে, সে তা হারাবে; কিন্তু এ জগতে যে নিজের প্রাণকে ঘৃণা করে, সে অনন্ত জীবনের জন্য তা রক্ষা করবে। \v 26 যে আমার সেবা করতে চায়, তাকে অবশ্যই আমার অনুগামী হতে হবে, যেন আমি যেখানে থাকব, আমার সেবকও সেখানে থাকে। যে আমার সেবা করবে, আমার পিতা তাকে সমাদর করবেন। \p \v 27 “আমার হৃদয় এখন উৎকণ্ঠায় ভরে উঠেছে? আমি কি বলব, ‘পিতা এই মুহূর্ত থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করো?’ না! সেজন্যই তো আমি এই মুহূর্ত পর্যন্ত এসেছি। \v 28 পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত করো।” \p তখন স্বর্গ থেকে এক বাণী উপস্থিত হল, “আমি তা মহিমান্বিত করেছি এবং আবার মহিমান্বিত করব।” \v 29 উপস্থিত সকলে সেই বাণী শুনে বলল, “এ বজ্রের ধ্বনি!” অন্যেরা বলল, “কোনো স্বর্গদূত এঁর সঙ্গে কথা বললেন।” \p \v 30 যীশু বললেন, “এই বাণী ছিল তোমাদের উপকারের জন্য, আমার জন্য নয়। \v 31 এখন এ জগতের বিচারের সময়। এ জগতের অধিপতিকে এখন তাড়িয়ে দেওয়া হবে। \v 32 কিন্তু, যখন আমি পৃথিবী থেকে আকাশে উত্তোলিত হব, তখন সব মানুষকে আমার দিকে আকর্ষণ করব।” \v 33 তিনি কীভাবে মৃত্যুবরণ করবেন, তা বোঝাবার জন্য তিনি একথা বললেন। \p \v 34 লোকেরা বলে উঠল, “আমরা বিধানশাস্ত্র থেকে শুনেছি যে, খ্রীষ্ট চিরকাল থাকবেন। তাহলে আপনি কী করে বলতে পারেন, ‘মনুষ্যপুত্রকে অবশ্যই উত্তোলিত হতে হবে?’ এই ‘মনুষ্যপুত্র’ কে?” \p \v 35 তখন যীশু তাদের বললেন, “আর অল্পকালমাত্র জ্যোতি তোমাদের মধ্যে আছেন। অন্ধকার তোমাদের গ্রাস করার আগেই জ্যোতির প্রভায় তোমরা পথ চলো। যে অন্ধকারে পথ চলে, সে জানে না, কোথায় চলেছে। \v 36 তোমরা যতক্ষণ জ্যোতির সহচর্যে আছ, তোমরা সেই জ্যোতির উপরেই বিশ্বাস রেখো, যেন তোমরাও জ্যোতির সন্তান হতে পারো।” কথা বলা শেষ করে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন এবং তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রইলেন। \s1 ইহুদিদের ক্রমাগত অবিশ্বাস \p \v 37 যীশু ইহুদিদের সামনে এই সমস্ত চিহ্নকাজ সম্পাদন করলেন। তবুও তারা তাঁকে বিশ্বাস করল না। \v 38 ভাববাদী যিশাইয়ের বাণী এভাবেই সম্পূর্ণ হল: \q1 “প্রভু, আমাদের দেওয়া সংবাদ কে বিশ্বাস করেছে? \q2 কার কাছেই বা প্রভুর পরাক্রম\f + \fr 12:38 \fr*\ft হিব্রু: বাহু।\ft*\f* প্রকাশিত হয়েছে?”\f + \fr 12:38 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 53:1\+xt*\ft*\f* \p \v 39 এই কারণেই তারা বিশ্বাস করতে পারেনি, যেমন যিশাইয় অন্যত্র বলেছেন: \q1 \v 40 “তিনি তাদের চক্ষু দৃষ্টিহীন করেছেন, \q2 তাদের হৃদয়কে কঠিন করেছেন। \q1 তাই তারা নয়নে দেখতে পায় না, \q2 হৃদয়ে উপলব্ধি করে না, \q2 অথবা ফিরে আসে না—যেন আমি তাদের সুস্থ করি।”\f + \fr 12:40 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 6:10\+xt*\ft*\f* \m \v 41 যিশাইয় একথা বলেছিলেন, কারণ তিনি যীশুর মহিমা দর্শন করেছিলেন ও তাঁরই কথা বলেছিলেন। \p \v 42 তবু, সেই একই সময়ে, নেতাদের মধ্যেও অনেকেই তাঁকে বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু ফরিশীদের ভয়ে তারা তাদের বিশ্বাসের কথা স্বীকার করতে পারল না, কারণ আশঙ্কা ছিল যে সমাজভবন থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে; \v 43 কেননা ঈশ্বরের প্রশংসার চেয়ে তারা মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে বেশি ভালোবাসতো। \p \v 44 যীশু তখন উচ্চকণ্ঠে বললেন, “কোনো মানুষ যখন আমাকে বিশ্বাস করে তখন সে শুধু আমাকেই নয়, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেও বিশ্বাস করে। \v 45 আমাকে দেখলে সে তাঁকেই দেখে, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। \v 46 এ জগতে আমি জ্যোতিরূপে এসেছি, যেন আমাকে যে বিশ্বাস করে, সে আর অন্ধকারে না থাকে। \p \v 47 “যে আমার বাণী শুনেও তা পালন করে না, আমি তার বিচার করি না। কারণ আমি জগতের বিচার করতে আসিনি, আমি এসেছি জগৎকে উদ্ধার করতে। \v 48 যে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং আমার বাক্য গ্রহণ করে না, তার জন্য এক বিচারক আছেন। আমার বলা বাক্যই শেষের দিনে তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে। \v 49 কারণ আমি নিজের ইচ্ছানুসারে বাক্য প্রকাশ করিনি, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আমার সেই পিতাই, কী বলতে হবে বা কেমনভাবে বলতে হবে, আমাকে তার নির্দেশ দিয়েছেন। \v 50 আমি জানি, তাঁর নির্দেশ অনন্ত জীবনের দিকে নিয়ে যায়। তাই আমার পিতা আমাকে যা বলতে বলেছেন, আমি শুধু সেকথাই বলি।” \c 13 \s1 যীশু শিষ্যদের পা ধুয়ে দিলেন \p \v 1 নিস্তারপর্বের আগের ঘটনা। যীশু বুঝতে পেরেছিলেন যে এই পৃথিবী থেকে তাঁর বিদায় নিয়ে পিতার কাছে যাওয়ার সময় উপস্থিত হয়েছে। জগতে তাঁর আপনজন যাঁদের তিনি প্রেম করতেন, এখন তিনি তাঁদের শেষ পর্যন্ত প্রেম করলেন।\f + \fr 13:1 \fr*\ft বা তিনি তাদের শেষ পর্যন্ত প্রেম করলেন।\ft*\f* \p \v 2 সান্ধ্যভোজ পরিবেশন করা হচ্ছিল। দিয়াবল ইতিমধ্যেই যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য শিমোনের পুত্র যিহূদা ইষ্কারিয়োৎকে প্ররোচিত করেছিল। \v 3 যীশু জানতেন যে, পিতা সবকিছু তাঁর ক্ষমতার অধীন করেছেন এবং ঈশ্বরের কাছ থেকেই তিনি এসেছেন ও তিনি ঈশ্বরের কাছেই ফিরে যাচ্ছেন। \v 4 তাই তিনি ভোজ থেকে উঠে তাঁর উপরের পোশাক খুলে কোমরে একটি তোয়ালে জড়ালেন। \v 5 এরপর তিনি একটি গামলায় জল নিয়ে তাঁর শিষ্যদের পা ধুয়ে, ও তাঁর কোমরে জড়ানো তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে দিতে লাগলেন। \p \v 6 তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলে পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কি আমার পা ধুয়ে দেবেন?” \p \v 7 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি কী করছি তা তুমি এখন বুঝতে পারছ না, কিন্তু পরে বুঝবে।” \p \v 8 পিতর বললেন, “না, আপনি কখনোই আমার পা ধুয়ে দেবেন না।” \p প্রত্যুত্তরে যীশু বললেন, “আমি তোমার পা ধুয়ে না দিলে, আমার সাথে তোমার কোনো অংশই থাকবে না।” \p \v 9 শিমোন পিতর বললেন, “তাহলে প্রভু, শুধু আমার পা নয়, আমার হাত ও মাথাও ধুয়ে দিন।” \p \v 10 যীশু উত্তর দিলেন, “যে স্নান করেছে, তার শুধু পা ধোয়ার প্রয়োজন, কারণ তার সমস্ত শরীরই শুচিশুদ্ধ। তুমিও শুচিশুদ্ধ, তবে তোমাদের প্রত্যেকে নও।” \v 11 কারণ কে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তা তিনি জানতেন। সেই কারণেই তিনি বললেন যে, সবাই শুচিশুদ্ধ নয়। \p \v 12 তাঁদের পা ধুয়ে দেওয়া শেষ হলে যীশু তাঁর পোশাক পরে নিজের আসনে ফিরে গেলেন। তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি তোমাদের প্রতি কী করলাম, তা কি তোমরা বুঝতে পেরেছ? \v 13 তোমরা আমাকে ‘গুরুমহাশয়’ ও ‘প্রভু’ বলে থাকো এবং তা যথার্থই, কারণ আমি সেই। \v 14 এখন তোমাদের প্রভু ও গুরুমহাশয় হয়েও আমি তোমাদের পা ধুয়ে দিলাম, সুতরাং, তোমাদেরও একে অপরের পা ধুয়ে দেওয়া উচিত। \v 15 আমি তোমাদের কাছে এক আদর্শ স্থাপন করেছি, যেন আমি তোমাদের প্রতি যা করলাম, তোমরাও তাই করো। \v 16 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কোনো দাস তার প্রভুর চেয়ে মহান নয়, কিংবা প্রেরিত ব্যক্তি তার প্রেরণকারীর চেয়ে মহান নয়। \v 17 তোমরা যেহেতু এখন এসব জেনেছ, তা পালন করলে তোমরা ধন্য হবে। \s1 বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে যীশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 18 “আমি তোমাদের সকলের কথা বলছি না, কিন্তু যাদের আমি মনোনীত করেছি, তাদের আমি জানি। কিন্তু, ‘যে আমার রুটি ভাগ করে খেয়েছে, সে আমারই বিপক্ষে গেছে’\f + \fr 13:18 \fr*\ft \+xt গীত 41:9\+xt*\ft*\f* শাস্ত্রের এই বচন পূর্ণ হতে হবে। \p \v 19 “এরকম ঘটার আগেই আমি তোমাদের জানাচ্ছি, যখন তা ঘটবে, তোমরা যেন বিশ্বাস করতে পারো যে, আমিই তিনি। \v 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার প্রেরিত কোনো মানুষকে যে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে এবং যে আমাকে গ্রহণ করে, সে তাঁকেই গ্রহণ করে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।” \p \v 21 একথা বলার পর যীশু আত্মায় উদ্বিগ্ন হয়ে সাক্ষ্য দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।” \p \v 22 শিষ্যরা বিস্ময়ের দৃষ্টিতে একে অপরের দিকে তাকালেন, তাঁরা বুঝতে পারলেন না যে যীশু তাঁদের মধ্যে কার সম্পর্কে এই ইঙ্গিত করলেন। \v 23 তাঁদের মধ্যে এক শিষ্য, যীশু যাঁকে প্রেম করতেন, তিনি যীশুর বুকে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। \v 24 শিমোন পিতর সেই শিষ্যকে ইশারায় বললেন, “ওঁকে জিজ্ঞাসা করো, কার সম্পর্কে তিনি একথা বলছেন।” \p \v 25 যীশুর বুকের দিকে পিছন ফিরে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, সে কে?” \p \v 26 যীশু উত্তর দিলেন, “পাত্রে ডুবিয়ে রুটির টুকরোটি আমি যার হাতে তুলে দেব, সেই তা করবে।” এরপর, রুটির টুকরোটি ডুবিয়ে তিনি শিমোনের পুত্র যিহূদা ইষ্কারিয়োৎকে দিলেন। \v 27 যিহূদা রুটি গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান তার মধ্যে প্রবেশ করল। \p যীশু তাকে বললেন, “তুমি যা করতে উদ্যত, তা তাড়াতাড়ি করে ফেলো।” \v 28 কিন্তু যাঁরা খাবার খাচ্ছিলেন তাঁদের কেউই বুঝতে পারলেন না যে, যীশু একথা তাকে কেন বললেন। \v 29 যিহূদার হাতে টাকাপয়সার দায়িত্ব ছিল বলে কেউ কেউ মনে করলেন যে, যীশু তাকে পর্বের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার কথা, অথবা দরিদ্রদের কিছু দান করার বিষয়ে বলছেন। \v 30 রুটির টুকরোটি গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে যিহূদা বাইরে বেরিয়ে গেল। বাইরে তখন ঘোর অন্ধকার। \s1 পিতরের অস্বীকার করা নিয়ে যীশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 31 যিহূদা বেরিয়ে গেলে যীশু বললেন, “এখন মনুষ্যপুত্র মহিমান্বিত হলেন এবং ঈশ্বর তাঁর মধ্যে মহিমান্বিত হলেন। \v 32 ঈশ্বর যখন তাঁর মধ্যে মহিমান্বিত হলেন,\f + \fr 13:32 \fr*\ft বহু প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে, “ঈশ্বর যখন তাঁর মধ্যে মহিমান্বিত হলেন,” অনুপস্থিত।\ft*\f* তিনিও পুত্রকে নিজের মধ্যেই মহিমান্বিত করবেন এবং তাঁকে শীঘ্রই মহিমান্বিত করবেন। \p \v 33 “বৎসেরা, আমি আর কিছুকাল তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমরা আমার সন্ধান করবে, আর ইহুদিদের যেমন বলেছি, এখন তোমাদেরও বলছি, আমি যেখানে যাচ্ছি, তোমরা সেখানে আসতে পারো না। \p \v 34 “আমি তোমাদের এক নতুন আজ্ঞা দিচ্ছি, তোমরা পরস্পরকে প্রেম করো। আমি যেমন তোমাদের প্রেম করেছি, তোমাদেরও তেমন পরস্পরকে প্রেম করতে হবে। \v 35 তোমাদের এই পারস্পরিক প্রেমের দ্বারাই সব মানুষ জানতে পারবে যে, তোমরা আমার শিষ্য।” \p \v 36 শিমোন পিতর তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?” \p যীশু উত্তর দিলেন, “আমি যেখানে যাচ্ছি, তুমি এখন সেখানে আমার সঙ্গে আসতে পারো না, কিন্তু পরে আমার সঙ্গে আসতে পারো।” \p \v 37 পিতর বললেন, “প্রভু, কেন এখন আপনার সঙ্গে যেতে পারি না? আপনার জন্য আমি আমার প্রাণও দেব।” \p \v 38 তখন যীশু উত্তর দিলেন, “তুমি কি সত্যিই আমার জন্য প্রাণ দেবে? আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।” \c 14 \s1 যীশু শিষ্যদের সান্ত্বনা দিলেন \p \v 1 “তোমাদের হৃদয় যেন উদ্বিগ্ন না হয়। ঈশ্বরকে বিশ্বাস করো,\f + \fr 14:1 \fr*\ft বা, তোমরা ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস করো।\ft*\f* আমাকেও বিশ্বাস করো। \v 2 আমার পিতার গৃহে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকত, আমি তোমাদের বলতাম। তোমাদের জন্য আমি সেখানে স্থান প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। \v 3 আর যখন আমি সেখানে যাই ও তোমাদের জন্য স্থানের ব্যবস্থা করি, আমি আবার ফিরে আসব এবং আমি যেখানে থাকি, সেখানে আমার সঙ্গে থাকার জন্য তোমাদের নিয়ে যাব। \v 4 আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে যাওয়ার পথ তোমরা জানো।” \s1 যীশু পিতার কাছে যাওয়ার একমাত্র পথ \p \v 5 থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন, আমরা জানি না, তাহলে সেই পথ আমরা জানব কী করে?” \p \v 6 যীশু উত্তর দিলেন, “আমিই পথ ও সত্য ও জীবন। আমার মাধ্যমে না এলে, কোনো মানুষই পিতার কাছে আসতে পারে না। \v 7 তোমরা যদি আমাকে প্রকৃতই জানো, তাহলে আমার পিতাকেও জানবে। এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ এবং দেখেছ।” \p \v 8 ফিলিপ বললেন, “প্রভু, পিতাকে আমাদের দেখান, তাই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট হবে।” \p \v 9 যীশু বললেন, “ফিলিপ, এত কাল আমি তোমাদের মধ্যে আছি, তবুও কি তুমি আমাকে চেনো না? যে আমাকে দেখেছে, সে পিতাকেও দেখেছে। তাহলে ‘পিতাকে আমাদের দেখান,’ একথা তুমি কী করে বলছ? \v 10 তোমরা কি বিশ্বাস করো না যে, আমি পিতার মধ্যে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদের যা কিছু বলি, তা শুধু আমার নিজের কথা নয়, বরং পিতা, যিনি আমার মধ্যে আছেন, তিনি তাঁর কাজ সম্পাদন করছেন। \v 11 তোমরা আমাকে বিশ্বাস করো যে, আমি পিতার মধ্যে আমি আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন, না হলে অন্তত অলৌকিক সব কাজ দেখে বিশ্বাস করো। \v 12 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার উপর যার বিশ্বাস আছে, আমি যে কাজ করছি, সেও সেরকম কাজ করবে, এমনকি, এর চেয়েও মহৎ সব কাজ করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি। \v 13 আর আমার নামে তোমরা যা কিছু চাইবে, আমি তাই পূরণ করব, যেন পুত্র পিতাকে মহিমান্বিত করেন। \v 14 আমার নামে তোমরা যা কিছু চাইবে, আমি তা পূরণ করব। \s1 যীশু পবিত্র আত্মা দানের প্রতিশ্রুতি দিলেন \p \v 15 “তোমরা যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে আমার সব আদেশ পালন করবে। \v 16 আমি পিতার কাছে নিবেদন করব এবং তোমাদের সঙ্গে চিরকাল থাকার জন্য তিনি আর এক সহায়\f + \fr 14:16 \fr*\ft অথবা, পক্ষসমর্থনকারী, বা উকিল।\ft*\f* তোমাদের দান করবেন। \v 17 তিনি সত্যের আত্মা। জগৎ তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না। কারণ জগৎ তাঁকে দেখে না, তাঁকে জানেও না। কিন্তু তোমরা তাঁকে জানো, কারণ তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন এবং তিনি তোমাদের অন্তরে থাকবেন।\f + \fr 14:17 \fr*\ft কতগুলি পাণ্ডুলিপিতে আছে, থাকেন।\ft*\f* \v 18 আমি তোমাদের অনাথ রেখে যাব না, আমি তোমাদের কাছে আসব। \v 19 অল্পকাল পরে জগৎ আর আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমাকে দেখতে পাবে। কারণ আমি জীবিত আছি, এই জন্য তোমরাও জীবিত থাকবে। \v 20 সেদিন তোমরা উপলব্ধি করবে যে, আমি পিতার মধ্যে আছি, আর তোমরা আমার মধ্যে এবং আমি তোমাদের মধ্যে আছি। \v 21 যে আমার আদেশ লাভ করে সেগুলি পালন করে, সেই আমাকে প্রেম করে। আমাকে যে প্রেম করে, আমার পিতাও তাকে প্রেম করবেন, আর আমিও তাকে প্রেম করব এবং নিজেকে তারই কাছে প্রকাশ করব।” \p \v 22 তখন যিহূদা (যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ নয়) বললেন, “কিন্তু প্রভু, আপনি জগতের কাছে নিজেকে প্রকাশ না করে, শুধুমাত্র আমাদের কাছে প্রকাশ করতে চান কেন?” \p \v 23 যীশু উত্তর দিলেন, “কেউ যদি আমাকে প্রেম করে, সে আমার বাক্য পালন করবে। আমার পিতা তাকে প্রেম করবেন। আমরা তার কাছে আসব এবং তারই সঙ্গে বাস করব। \v 24 যে আমাকে প্রেম করে না, সে আমার শিক্ষাও পালন করে না। তোমরা আমার যেসব বাণী শুনছ, তা আমার নিজের নয়, সেগুলি পিতার, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। \p \v 25 “তোমাদের মধ্যে থাকার সময়ে আমি এ সমস্ত কথা বললাম, \v 26 কিন্তু সেই সহায়, সেই পবিত্র আত্মা, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠাবেন, তিনি সমস্ত বিষয়ে তোমাদের শিক্ষা দেবেন এবং তোমাদের কাছে আমার বলা সমস্ত বাক্য তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন। \v 27 আমি তোমাদের মধ্যে শান্তি রেখে যাচ্ছি, আমারই শান্তি তোমাদের দিয়ে যাচ্ছি। জগৎ যেভাবে দেয়, আমি সেভাবে তোমাদের দান করি না। তোমাদের হৃদয় যেন উদ্বিগ্ন না হয় এবং তোমরা ভীত হোয়ো না। \p \v 28 “তোমরা আমার কাছে শুনেছ, ‘আমি চলে যাচ্ছি, কিন্তু তোমাদের কাছে আবার ফিরে আসছি।’ তোমরা যদি আমাকে প্রেম করতে, আমি পিতার কাছে যাচ্ছি বলে তোমরা উল্লসিত হতে, কারণ পিতা আমার চেয়ে মহান। \v 29 এসব ঘটবার আগেই আমি এখন তোমাদের সেসব বলে দিলাম, যেন তা ঘটলে তোমরা বিশ্বাস করতে পারো। \v 30 আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশিক্ষণ কথা বলব না, কারণ এই জগতের অধিকর্তা আসছে। আমার উপর তার কোনো অধিকার নেই। \v 31 কিন্তু জগৎ যেন শিক্ষাগ্রহণ করে যে, আমি পিতাকে প্রেম করি এবং পিতা আমাকে যা আদেশ করেন, আমি ঠিক তাই পালন করি। \p “এখন চলো, আমরা এখান থেকে যাই। \c 15 \s1 দ্রাক্ষালতা ও শাখা \p \v 1 “আমিই প্রকৃত দ্রাক্ষালতা এবং আমার পিতা কৃষক। \v 2 আমার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি শাখায় ফল না ধরলে, তিনি তা কেটে ফেলেন, কিন্তু যে শাখায় ফল ধরে তাদের প্রত্যেকটিকে তিনি পরিষ্কার\f + \fr 15:2 \fr*\ft গ্রিক: ছাঁটেন, বা ছেঁটে ফেলেন।\ft*\f* করেন, যেন সেই শাখায় আরও বেশি ফল ধরে। \v 3 আমার বলা বাক্যের দ্বারা তোমরা ইতিমধ্যেই শুচিশুদ্ধ হয়েছ। \v 4 তোমরা আমার মধ্যে থাকলে, আমিও তোমাদের মধ্যে থাকব। নিজে থেকে কোনো শাখা ফলধারণ করতে পারে না, দ্রাক্ষালতার সঙ্গে অবশ্যই সেটিকে যুক্ত থাকতে হবে। আমার সঙ্গে যুক্ত না থাকলে, তোমরাও ফলবান হতে পারো না। \p \v 5 “আমি দ্রাক্ষালতা, তোমরা সবাই শাখা। যে আমার মধ্যে থাকে এবং আমি যার মধ্যে থাকি, সে প্রচুর ফলে ফলবান হবে; আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পারো না। \v 6 কেউ যদি আমার মধ্যে না থাকে, সে সেই শাখার মতো, যেটিকে বাইরে ফেলে দেওয়া হয় ও সেটি শুকিয়ে যায়। সেই শাখাগুলিকে তুলে নিয়ে আগুনে ফেলা হয় ও সেগুলি পুড়ে যায়। \v 7 তোমরা যদি আমার মধ্যে থাকো এবং আমার বাক্য তোমাদের মধ্যে থাকে, তোমরা যা কিছুই প্রার্থনা করো, তা তোমাদের দেওয়া হবে। \v 8 এতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হন যে, তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হও, আর এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে তোমরা আমার শিষ্য। \p \v 9 “পিতা যেমন আমাকে ভালোবেসেছেন, আমিও তেমন তোমাদের ভালোবেসেছি। তোমরা এখন আমার প্রেমে অবস্থিতি করো। \v 10 তোমরা যদি আমার আদেশ পালন করো, তাহলে আমার প্রেমে অবস্থিতি করবে, যেমন আমি আমার পিতার আদেশ পালন করে তাঁর প্রেমে অবস্থিতি করছি। \v 11 আমি তোমাদের একথা বললাম, যেন আমার আনন্দ তোমাদের মধ্যে থাকে এবং তোমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়। \v 12 আমি যেমন তোমাদের ভালোবেসেছি, তোমরা তেমনই পরস্পরকে ভালোবেসো, এই আমার আদেশ। \v 13 বন্ধুদের জন্য যে নিজের প্রাণ সমর্পণ করে, তার চেয়ে মহত্তর প্রেম আর কিছু নেই। \v 14 তোমরা যদি আমার আদেশ পালন করো, তাহলে তোমরা আমার বন্ধু। \v 15 আমি তোমাদের আর দাস বলে ডাকি না, কারণ একজন প্রভু কী করেন, দাস তা জানে না। বরং, আমি তোমাদের বন্ধু বলে ডাকি, কারণ আমার পিতার কাছ থেকে আমি যা কিছু জেনেছি, তা তোমাদের জানিয়েছি। \v 16 তোমরা আমাকে মনোনীত করোনি, আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি এবং ফলধারণ করবার জন্য নিযুক্ত করেছি—সেই ফল যেন স্থায়ী হয়—তাতে আমার নামে পিতার কাছে তোমরা যা কিছু প্রার্থনা করবে, তা তিনি তোমাদের দান করবেন। \v 17 আমার আদেশ এই: তোমরা পরস্পরকে প্রেম করো। \s1 জগৎ শিষ্যদের ঘৃণা করে \p \v 18 “জগৎ যদি তোমাদের ঘৃণা করে, তাহলে মনে রেখো যে, জগৎ প্রথমে আমাকেই ঘৃণা করেছে। \v 19 তোমরা যদি জগতের হতে, তাহলে জগৎ তোমাদের তার আপনজনের মতো ভালোবাসতো। তোমরা এ জগতের নও, বরং এ জগতের মধ্য থেকে আমি তোমাদের মনোনীত করেছি। তাই জগৎ তোমাদের ঘৃণা করে। \v 20 আমি তোমাদের কাছে যেসব কথা বলেছি, তা মনে রাখো: ‘কোনো দাস তার প্রভুর চেয়ে মহান নয়।’\f + \fr 15:20 \fr*\ft \+xt যোহন 13:16\+xt*\ft*\f* তারা যখন আমাকে তাড়না করেছে, তখন তোমাদেরও তাড়না করবে। তারা আমার শিক্ষা মান্য করলে, তোমাদের শিক্ষাও মান্য করবে। \v 21 আমার নামের জন্য তোমাদের সঙ্গে তারা এরকম আচরণ করবে, কারণ আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন, তারা তাঁকে জানে না। \v 22 আমি যদি না আসতাম এবং তাদের সঙ্গে কথা না বলতাম, তাহলে তাদের পাপ হত না। কিন্তু এখন পাপের জন্য তাদের অজুহাত দেওয়ার উপায় নেই। \v 23 যে আমাকে ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে। \v 24 যা কেউ করেনি, সেইসব কাজ যদি আমি তাদের মধ্যে না করতাম, তবে তাদের পাপ হত না। কিন্তু তারা এখন এসব অলৌকিক ঘটনা নিজেদের চোখে দেখেছে। তবুও তারা আমাকে, ও আমার পিতাকে ঘৃণা করেছে। \v 25 ‘কিন্তু তারা বিনা কারণে আমাকে ঘৃণা করেছে,’\f + \fr 15:25 \fr*\ft \+xt গীত 35:19; 69:4\+xt*\ft*\f* তাদের বিধানশাস্ত্রে লিখিত এই বচন সফল করার জন্যই এসব ঘটেছে। \p \v 26 “যাঁকে আমি পিতার কাছ থেকে পাঠাব, সেই সহায় যখন আসবেন, পিতার কাছ থেকে নির্গত সেই সত্যের আত্মা, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন। \v 27 আর তোমরাও আমার সাক্ষ্য হবে, কারণ প্রথম থেকেই তোমরা আমার সঙ্গে আছ। \c 16 \p \v 1 “আমি তোমাদের এ সমস্ত কথা বললাম, যেন তোমরা বিপথে না যাও। \v 2 ওরা সমাজভবন থেকে তোমাদের বহিষ্কার করবে; এমনকি সময় আসছে, যখন তোমাদের যারা হত্যা করবে তারা ভাববে যে তারা ঈশ্বরের উদ্দেশে এক নৈবেদ্য উৎসর্গ করছে। \v 3 ওরা পিতাকে বা আমাকে জানে না বলেই, এই সমস্ত কাজ করবে। \v 4 একথা আমি তোমাদের এজন্য বললাম যে, সময় উপস্থিত হলে তোমরা মনে করতে পারো যে, আমি আগেই তোমাদের সতর্ক করেছিলাম। আমি প্রথমে তোমাদের একথা বলিনি, কারণ আমি এতদিন তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম। \s1 পবিত্র আত্মার কাজ \p \v 5 “যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এখন আমি তাঁরই কাছে যাচ্ছি, অথচ তোমরা কেউই আমাকে জিজ্ঞাসা করছ না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’ \v 6 এ সমস্ত কথা আমি বলেছি বলেই তোমাদের হৃদয় দুঃখে ভরে গেছে। \v 7 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের মঙ্গলের জন্যই আমি চলে যাচ্ছি। আমি না গেলে সেই সহায় তোমাদের কাছে আসবেন না। আমি গিয়ে তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব। \v 8 তিনি এসে পাপ, ধার্মিকতা এবং বিচার সম্বন্ধে জগৎকে অভিযুক্ত করবেন:\f + \fr 16:8 \fr*\ft অথবা, জগতের অপরাধ প্রকাশ করবেন।\ft*\f* \v 9 পাপের সম্বন্ধে করবেন, কারণ মানুষ আমাকে বিশ্বাস করে না; \v 10 ধার্মিকতার সম্বন্ধে করবেন, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি এবং তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; \v 11 আর বিচার সম্বন্ধে করবেন, কারণ এই জগতের অধিপতি এখন দোষী প্রমাণিত হয়েছে। \p \v 12 “তোমাদেরকে আমার আরও অনেক কিছু বলার আছে, যা এখন তোমরা সহ্য করতে পারবে না। \v 13 কিন্তু যখন তিনি, সেই সত্যের আত্মা আসবেন, তিনি তোমাদের সমস্ত সত্যের পথে নিয়ে যাবেন। তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, তিনি যা শুনবেন, তিনি শুধু তাই বলবেন। আর তিনি আগামী দিনের ঘটনার কথাও তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। \v 14 তিনি আমাকেই মহিমান্বিত করবেন, কারণ তিনি আমার কাছ থেকে যা গ্রহণ করবেন তা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। \v 15 যা কিছু পিতার অধিকারভুক্ত, তা আমারই। সেজন্যই আমি বলছি পবিত্র আত্মা আমার কাছ থেকে সেইসব গ্রহণ করে তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। \p \v 16 “কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে আবার দেখতে পাবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।” \p \v 17 তখন তাঁর কয়েকজন শিষ্য পরস্পর বলাবলি করলেন, “ ‘আর কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে আবার দেখতে পাবে,’ আবার বলছেন, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি,’ এসব কথার মাধ্যমে তিনি কী বলতে চাইছেন?” \v 18 তাঁরা আরও বললেন, “ ‘অল্পকাল পরে’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন? আমরা তাঁর কথার মানে বুঝতে পারছি না।” \p \v 19 যীশু বুঝতে পারলেন, তাঁরা এ সম্পর্কে তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চান। তাই তিনি বললেন, “ ‘আর কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,’ আমার একথার অর্থ কি তোমরা পরস্পরের কাছে জানতে চাইছ? \v 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন কাঁদবে ও শোক করবে, জগৎ তখন আনন্দ করবে। তোমরা শোক করবে, কিন্তু তোমাদের শোক আনন্দে রূপান্তরিত হবে। \v 21 সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় নারী যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ওঠে, কারণ তার সময় পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু সন্তানের জন্ম হলে, আনন্দে সে তার যন্ত্রণা ভুলে যায়, কারণ জগতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। \v 22 তোমাদের ক্ষেত্রেও তাই। এখন তোমাদের শোকের সময়, কিন্তু আমি তোমাদের সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ করব এবং তোমরা আনন্দ করবে। তোমাদের সেই আনন্দ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। \v 23 সেদিন তোমরা আমার কাছে আর কিছু চাইবে না। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার নামে, আমার পিতার কাছে, তোমরা যা কিছু প্রার্থনা করবে, তা তিনি তোমাদের দান করবেন। \v 24 এখনও পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কোনো কিছুই চাওনি। চাও, তোমরা পাবে এবং তখন তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হবে। \p \v 25 “আমি রূপকের মাধ্যমে কথা বললেও এমন এক সময় আসছে, যখন আমি আর এমন ভাষা প্রয়োগ করব না। আমার পিতার সম্পর্কে আমি স্পষ্টভাবে কথা বলব। \v 26 সেদিন তোমরা আমার নামে চাইবে। আমি বলছি না যে, তোমাদের পক্ষে আমি পিতার কাছে অনুরোধ করব, \v 27 কিন্তু পিতা স্বয়ং তোমাদের প্রেম করেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালোবেসেছ এবং বিশ্বাস করেছ যে, আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি। \v 28 আমি পিতার কাছ থেকে এসে এই জগতে প্রবেশ করেছি। এখন আমি জগৎ থেকে বিদায় নিয়ে পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছি।” \p \v 29 তাঁর শিষ্যেরা তখন বললেন, “এখন আপনি রূপকের সাহায্য না নিয়েই স্পষ্টভাবে কথা বলছেন। \v 30 এখন আমরা জানতে পারলাম যে, আপনি সবই জানেন এবং আপনাকে প্রশ্ন করার কারও কোনো প্রয়োজন নেই। এর দ্বারাই আমরা বিশ্বাস করছি যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনি এসেছেন।” \p \v 31 যীশু উত্তর দিলেন, “অবশেষে তোমরা বিশ্বাস করলে!\f + \fr 16:31 \fr*\ft অথবা, “তোমরা কি এখন বিশ্বাস করলে?”\ft*\f* \v 32 কিন্তু সময় আসছে, বরং এসে পড়েছে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে প্রত্যেকে আপন আপন ঘরের কোণে ফিরে যাবে। তোমরা আমাকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় পরিত্যাগ করবে। তবুও আমি নিঃসঙ্গ নই, কারণ আমার পিতা আমার সঙ্গে আছেন। \p \v 33 “আমি তোমাদের এসব কথা জানালাম, যেন আমার মধ্যে তোমরা শান্তি লাভ করো। এই জগতে তোমরা সংকটের সম্মুখীন হবে, কিন্তু সাহস করো! আমি এই জগৎকে জয় করেছি।” \c 17 \s1 যীশু প্রার্থনা করলেন \p \v 1 একথা বলে যীশু স্বর্গের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করলেন, \pm “পিতা, সময় উপস্থিত হয়েছে, তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত করো, যেন তোমার পুত্র তোমাকে মহিমান্বিত করতে পারেন। \v 2 কারণ সব মানুষের উপর তুমি তাঁকে কর্তৃত্ব দান করেছ, যেন তুমি তাঁর হাতে যাদের অর্পণ করেছ, তিনি তাদের অনন্ত জীবন দিতে পারেন। \v 3 আর এই হল অনন্ত জীবন যে, তারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁকে পাঠিয়েছ, সেই যীশু খ্রীষ্টকে জানতে পারে। \v 4 তোমার দেওয়া কাজ সম্পূর্ণ করে, আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি। \v 5 তাই এখন পিতা, জগৎ সৃষ্টির আগে তোমার কাছে আমার যে মহিমা ছিল, তোমার সান্নিধ্যে আমাকে সেই মহিমায় ভূষিত করো। \s1 শিষ্যদের জন্য যীশুর প্রার্থনা \pm \v 6 “এই জগতের মধ্য থেকে যাদের তুমি আমায় দিয়েছিলে, তাদের কাছে আমি তোমাকে\f + \fr 17:6 \fr*\ft গ্রিক: তোমার নাম; 26 পদেও।\ft*\f* প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল, তুমি তাদের আমাকে দিয়েছ। তারা তোমার বাক্য পালন করেছে। \v 7 এখন তারা জানে, যা কিছু তুমি আমাকে দিয়েছ, তা তোমারই দেওয়া। \v 8 আমাকে দেওয়া তোমার সব বাণী আমি তাদের দান করেছি। তারা তা গ্রহণ করেছে। তারা সত্যিই জানে যে, আমি তোমারই কাছ থেকে এসেছি, আর তারা বিশ্বাস করেছে যে, তুমি আমাকে পাঠিয়েছ। \v 9 তাদেরই জন্য আমি নিবেদন করছি। আমি জগতের জন্য নিবেদন করছি না, কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, তাদেরই জন্য করছি, কারণ তারা তোমারই। \v 10 আমার যা কিছু আছে সবই তোমার, আর তোমার সবকিছুই আমার। তাদেরই মধ্যে আমি মহিমান্বিত হয়েছি। \v 11 আমি জগতে আর থাকব না, কিন্তু ওরা এখনও জগতে আছে। আমি তোমার কাছে যাচ্ছি। পবিত্র পিতা, যে নাম তুমি আমাকে দিয়েছ, তোমার সেই নামের শক্তিতে তাদের রক্ষা করো। আমরা যেমন এক, তারাও যেন তেমনই এক হতে পারে। \v 12 তাদের সঙ্গে থাকার সময় যে নাম তুমি আমাকে দিয়েছ, সেই নামে আমি তাদের রক্ষা করে নিরাপদে রেখেছি। তাদের মধ্যে আর কেউই বিনষ্ট হয়নি কেবলমাত্র সেই বিনাশ-সন্তান\f + \fr 17:12 \fr*\ft অর্থাৎ, যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ\ft*\f* ছাড়া, যেন শাস্ত্রবাক্য পূর্ণ হয়। \pm \v 13 “আমি এখন তোমার কাছে আসছি, কিন্তু জগতে থাকার সময়েই আমি এ সমস্ত বিষয়ে বলছি, যেন আমার আনন্দ তাদের হৃদয়ে সম্পূর্ণ হয়। \v 14 তোমার বাণী তাদের কাছে আমি প্রকাশ করেছি, কিন্তু জগৎ তাদের ঘৃণা করেছে, কারণ তারা আর জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই। \v 15 আমি এই নিবেদন করছি না যে তুমি তাদের জগৎ থেকে নিয়ে নাও কিন্তু সেই পাপাত্মা থেকে তাদের রক্ষা করো। \v 16 তারা জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই। \v 17 সত্যের দ্বারা তুমি তাদের পবিত্র\f + \fr 17:17 \fr*\fqa পবিত্র করা\fqa*\ft —অর্থাৎ, পৃথক করা, মূলত, ঈশ্বরের সেবার উদ্দেশে।\ft*\f* করো, তোমার বাক্যই সত্য। \v 18 তুমি যেমন আমাকে জগতে পাঠিয়েছ, আমিও তেমনই তাদের জগতে পাঠাচ্ছি। \v 19 তাদেরই জন্য আমি নিজেকে পবিত্র করি, যেন তারাও সত্যের দ্বারা পবিত্র হতে পারে। \s1 সব বিশ্বাসীর জন্য যীশুর প্রার্থনা \pm \v 20 “শুধু তাদেরই জন্য আমি নিবেদন করছি না। তাদের বাক্য প্রচারের মাধ্যমে যারা আমাকে বিশ্বাস করবে, আমি তাদের জন্যও নিবেদন করছি, যেন তারাও সকলে এক হয়। \v 21 যেমন পিতা, তুমি আমার মধ্যে এবং আমি তোমার মধ্যে আছি, যেন তারাও আমাদের মধ্যে এক হয়, যেন জগৎ বিশ্বাস করে যে, তুমি আমাকে পাঠিয়েছ। \v 22 তুমি আমাকে যে মহিমা দিয়েছিলে, তাদের আমি তা দিয়েছি, যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক। \v 23 আমি তাদের মধ্যে এবং তুমি আমার মধ্যে আছ। তারা যেন সম্পূর্ণ এক হয় এবং জগৎ যেন জানতে পারে যে, তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ এবং তুমি যেমন আমাকে ভালোবেসেছ, তেমনই তাদেরও ভালোবেসেছ। \pm \v 24 “পিতা, তুমি যাদের আমাকে দিয়েছ, আমি চাই, আমি যেখানে থাকি, তারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে এবং তারাও যেন সেই মহিমা দেখতে পায় যে মহিমা তুমি আমাকে দিয়েছ, কারণ জগৎ সৃষ্টির আগে থেকেই তুমি আমাকে ভালোবেসেছ। \pm \v 25 “ধর্মময় পিতা, জগৎ তোমাকে না জানলেও আমি তোমাকে জানি, আর তারা জানে যে, তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ। \v 26 তোমাকে আমি তাদের কাছে প্রকাশ করেছি এবং তা প্রকাশ করতেই থাকব, যেন আমার প্রতি তোমার যে প্রেম, তা তাদের মধ্যে থাকে এবং আমি স্বয়ং যেন তাদের মধ্যে থাকি।” \c 18 \s1 যীশুকে গ্রেপ্তার \p \v 1 প্রার্থনা শেষ করে যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই স্থান ত্যাগ করলেন এবং কিদ্রোণ উপত্যকা পার হয়ে গেলেন। অন্য পারে একটি বাগান ছিল। যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখানে প্রবেশ করলেন। \p \v 2 যিহূদা, যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেই স্থানটি সম্বন্ধে জানত, কারণ যীশু প্রায়ই সেখানে তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে মিলিত হতেন। \v 3 তাই যিহূদা সৈন্যদল, প্রধান যাজকদের ও ফরিশীদের প্রেরিত কিছু কর্মচারীকে পথ দেখিয়ে সেই বাগানে প্রবেশ করল। তাদের সঙ্গে ছিল মশাল, লণ্ঠন এবং অস্ত্রশস্ত্র। \p \v 4 তাঁর প্রতি যা কিছু ঘটতে চলেছে জানতে পেরে, যীশু এগিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কাকে খুঁজছ?” \p \v 5 তারা উত্তর দিল, “নাসরতের যীশুকে।” \p যীশু বললেন, “আমিই তিনি।” বিশ্বাসঘাতক যিহূদাও তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল। \v 6 “আমিই তিনি,” যীশুর এই কথা শুনে তারা পিছিয়ে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল। \p \v 7 তিনি তাদের আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কাকে চাও?” \p তারা বলল, “নাসরতের যীশুকে।” \p \v 8 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তো তোমাদের বললাম, আমিই তিনি। যদি তোমরা আমারই সন্ধান করছ, তাহলে এদের যেতে দাও।” \v 9 এরকম ঘটল, যেন তিনি যে কথা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়, “যাদের তুমি আমাকে দান করেছ, তাদের একজনকেও আমি হারাইনি।”\f + \fr 18:9 \fr*\ft \+xt যোহন 6:39\+xt*\ft*\f* \p \v 10 তখন শিমোন পিতর তার তরোয়াল বের করে মহাযাজকের দাসকে আঘাত করলেন এবং তার ডানদিকের কান কেটে ফেললেন। সেই দাসের নাম ছিল মল্ক। \p \v 11 যীশু পিতরকে আদেশ দিলেন, “তোমার তরোয়াল কোষে রেখে দাও। পিতা আমাকে যে পানপাত্র দিয়েছেন, আমি কি তা থেকে পান করব না?” \p \v 12 তখন সৈন্যদল, সেনাপতি এবং ইহুদি কর্মচারীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করে বেঁধে ফেলল। \v 13 প্রথমে তারা তাঁকে হাননের কাছে নিয়ে এল। তিনি ছিলেন সেই বছরের মহাযাজক, কায়াফার শ্বশুর। \v 14 এই কায়াফাই ইহুদিদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, সমগ্র জাতির জন্য বরং একজনের মৃত্যুই ভালো। \s1 পিতর যীশুকে প্রথমবার অস্বীকার করলেন \p \v 15 শিমোন পিতর এবং আর এক শিষ্য যীশুকে অনুসরণ করছিলেন। সেই শিষ্য মহাযাজকের পরিচিত ছিলেন। তাই তিনি যীশুর সঙ্গে মহাযাজকের উঠানে প্রবেশ করলেন। \v 16 কিন্তু পিতরকে দরজার বাইরে অপেক্ষা করতে হল। মহাযাজকের পরিচিত অপর শিষ্যটি ফিরে এলেন এবং সেখানে কর্তব্যরত দাসীকে বলে পিতরকে ভিতরে নিয়ে গেলেন। \p \v 17 দ্বাররক্ষী সেই দাসী পিতরকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি তাঁর শিষ্যদেরই একজন নও?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “না, আমি নই।” \p \v 18 তখন ছিল শীতকাল। নিজেদের উষ্ণ করার জন্য পরিচারক এবং কর্মচারীরা আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে দাঁড়িয়েছিল। পিতরও তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আগুন পোহাচ্ছিলেন। \s1 যীশুকে জিজ্ঞাসাবাদ \p \v 19 মহাযাজক ইতিমধ্যে যীশুকে তাঁর শিষ্যদের এবং তাঁর শিক্ষা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। \p \v 20 যীশু উত্তর দিলেন, “জগতের সামনে আমি প্রকাশ্যে প্রচার করেছি। ইহুদিরা সকলে যেখানে সমবেত হয়, সেই সমাজভবনে, অথবা মন্দিরে, আমি সবসময়ই শিক্ষা দিয়েছি, গোপনে কিছুই বলিনি। \v 21 আমাকে প্রশ্ন করছ কেন? আমার শিক্ষা যারা শুনেছে, তাদের জিজ্ঞাসা করো। আমি যা বলেছি, তারা নিশ্চয়ই তা জানে।” \p \v 22 যীশুর একথা শুনে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক কর্মচারী তাঁর মুখে চড় মারল। সে বলল, “মহাযাজকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কি এই রীতি?” \p \v 23 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি, তাহলে সেই অন্যায়ের বিপক্ষে সাক্ষ্য দাও। কিন্তু যদি আমি সত্যিকথা বলে থাকি, তাহলে তুমি আমাকে কেন আঘাত করলে?” \v 24 হানন তখনই তাঁকে বাঁধন সমেত মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠালেন। \s1 দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বার পিতর যীশুকে অস্বীকার করলেন \p \v 25 শিমোন পিতর যখন দাঁড়িয়ে আগুন পোহাচ্ছিলেন, একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিও কি তাঁর শিষ্যদের একজন নও?” \p তিনি অস্বীকার করলেন, বললেন, “আমি নই।” \p \v 26 মহাযাজকের দাসেদের মধ্যে একজন, পিতর যার কান কেটে দিয়েছিলেন, তার এক আত্মীয় দৃঢ়তার সঙ্গে বলল, “আমি কি বাগানে তোমাকে তাঁর সঙ্গে দেখিনি?” \v 27 পিতর আবার সেকথা অস্বীকার করলেন, আর সেই মুহূর্তে একটি মোরগ ডাকতে শুরু করল। \s1 পীলাতের সামনে যীশু \p \v 28 পরে ইহুদি নেতারা যীশুকে কায়াফার কাছ থেকে নিয়ে রোমীয় প্রদেশপালের প্রাসাদে গেল। তখন ভোর হয়ে আসছিল। ইহুদি নেতারা নিজেদের কলুষিত করতে চায়নি। তারা যেন নিস্তারপর্বের ভোজ গ্রহণ করতে পারে, এজন্য তারা প্রাসাদে প্রবেশ করল না। \v 29 তাই পীলাত তাদের কাছে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই মানুষটির বিরুদ্ধে তোমাদের অভিযোগ কী?” \p \v 30 তারা উত্তর দিল, “সে অপরাধী না হলে, আমরা তাকে আপনার হাতে তুলে দিতাম না।” \p \v 31 পীলাত বললেন, “তোমরা নিজেরাই ওকে নিয়ে গিয়ে তোমাদের নিজস্ব বিধান অনুসারে ওর বিচার করো।” \p ইহুদিরা আপত্তি জানিয়ে বলল, “কিন্তু কাউকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই।” \v 32 তাঁর কীভাবে মৃত্যু হবে, সে সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়ে যীশু যে কথা বলেছিলেন, তা সফল হয়ে ওঠার জন্যই এরকম ঘটল। \p \v 33 পীলাত তখন প্রাসাদের অভ্যন্তরে ফিরে গিয়ে যীশুকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমিই কি ইহুদিদের রাজা?” \p \v 34 উত্তরে যীশু বললেন, “এ কি তোমার নিজের ধারণা, না অন্যেরা আমার সম্পর্কে তোমাকে বলেছে?” \p \v 35 পীলাত উত্তর দিলেন, “আমি কি ইহুদি? তোমারই স্বজাতিয়েরা এবং প্রধান যাজকেরা তোমাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছে। কী করেছ তুমি?” \p \v 36 যীশু বললেন, “আমার রাজ্য এ জগতের নয়। তা যদি হত, ইহুদিদের দ্বারা আমার গ্রেপ্তার আটকানোর জন্য আমার অনুচররা প্রাণপণ সংগ্রাম করত। কিন্তু আমার রাজ্য তো এখানকার নয়।” \p \v 37 পীলাত বললেন, “তাহলে, তুমি তো একজন রাজাই!” \p যীশু উত্তর দিলেন, “তুমি সংগত কথাই বলছ যে, আমি একজন রাজা। প্রকৃতপক্ষে, এজন্যই আমি জন্মগ্রহণ করেছি, আর এই কারণেই, সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আমি জগতে এসেছি। যে সত্যের পক্ষে, সে আমার কথা শোনে।” \p \v 38 পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “সত্য কী?” একথা বলে তিনি বাইরে ইহুদিদের কাছে আবার গেলেন। তিনি বললেন, “ওকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো কারণই আমি খুঁজে পাচ্ছি না। \v 39 কিন্তু তোমাদের প্রথা অনুসারে নিস্তারপর্বের সময় একজন বন্দিকে আমি কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে থাকি। তোমরা কি চাও যে, ‘ইহুদিদের রাজাকে’ আমি তোমাদের জন্য মুক্ত করে দিই?” \p \v 40 তারা চিৎকার করে উঠল, “না, ওকে নয়! বারাব্বাকে আমাদের দিন।” সেই বারাব্বা এক বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিল। \c 19 \s1 যীশুকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার আদেশ \p \v 1 পীলাত তখন যীশুকে নিয়ে গিয়ে চাবুক দিয়ে প্রহার করালেন। \v 2 সৈন্যরা একটি কাঁটার মুকুট তৈরি করে তাঁর মাথায় পরালো। তারা তাঁকে বেগুনি রংয়ের পোশাক পরিয়ে দিল। \v 3 বারবার তাঁর কাছে গিয়ে তারা বলতে লাগল, “ইহুদি-রাজ নমস্কার!” আর তাঁর মুখে তারা চড় মারতে লাগল। \p \v 4 পীলাত আর একবার বাইরে এসে ইহুদিদের বললেন, “দেখো, ওকে অভিযুক্ত করার মতো আমি কোনো অপরাধ খুঁজে পাইনি, একথা জানানোর জন্য ওকে আমি তোমাদের কাছে বের করে নিয়ে এসেছি।” \v 5 কাঁটার মুকুট এবং বেগুনি পোশাক পরে যীশু বেরিয়ে এলে পীলাত তাদের বললেন, “এই দেখো, সেই ব্যক্তি!” \p \v 6 প্রধান যাজকবৃন্দ ও তাদের কর্মচারীরা তাঁকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠল, “ওকে ক্রুশে দিন, ক্রুশে দিন!” \p পীলাত বললেন, “তোমরাই ওকে নিয়ে ক্রুশে দাও। যদি আমার কথা বলো, ওকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো অপরাধ আমি পাইনি।” \p \v 7 ইহুদিরা জোর করতে লাগল, “আমাদের একটি বিধান আছে এবং সেই বিধান অনুসারে লোকটিকে মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হবে, কারণ সে নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবি করেছে।” \p \v 8 একথা শুনে পীলাত আরও বেশি ভীত হয়ে পড়লেন \v 9 এবং প্রাসাদের ভিতরে ফিরে গিয়ে তিনি যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” কিন্তু যীশু তাঁকে কোনও উত্তর দিলেন না। \v 10 পীলাত বললেন, “তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি বুঝতে পারছ না, তোমাকে মুক্তি দেওয়ার বা ক্রুশবিদ্ধ করার ক্ষমতা আমার আছে?” \p \v 11 যীশু উত্তর দিলেন, “ঈশ্বর তোমাকে এ ক্ষমতা না দিলে আমার উপর তোমার কোনো অধিকার থাকত না, তাই যে আমাকে তোমার হাতে সমর্পণ করেছে, তার অপরাধ আরও বেশি।” \p \v 12 সেই সময় থেকে পীলাত যীশুকে মুক্ত করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদিরা চিৎকার করে বলতে লাগল, “এই লোকটিকে মুক্তি দিলে আপনি কৈসরের বন্ধু নন। যে নিজেকে রাজা বলে দাবি করে, সে কৈসরের বিরুদ্ধাচরণ করে।” \p \v 13 একথা শুনে পীলাত যীশুকে বাইরে নিয়ে এলেন এবং পাষাণ-বেদি\f + \fr 19:13 \fr*\fqa পুরোনো সংস্করণ \fqa*\ft শিলাস্তরণ।\ft*\f* নামে পরিচিত এক স্থানে বিচারের আসনে বসলেন (অরামীয় ভাষায় স্থানটির নাম, গব্বথা)। \v 14 সেদিন ছিল নিস্তারপর্বের প্রস্তুতির দিন। তখন প্রায় দুপুর। \p “এই দেখো, তোমাদের রাজা,” পীলাত ইহুদিদের বললেন। \p \v 15 কিন্তু তারা চিৎকার করে উঠল, “ওকে দূর করুন, দূর করুন, ওকে ক্রুশে দিন!” \p পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের রাজাকে কি আমি ক্রুশে দেব?” \p প্রধান যাজকেরা উত্তর দিলেন, “কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোনও রাজা নেই।” \p \v 16 অবশেষে পীলাত যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্য তাদের হাতে সমর্পণ করলেন। \s1 যীশুকে ক্রুশার্পিত করা হল \p তখন সৈন্যরা যীশুর দায়িত্ব গ্রহণ করল। \v 17 যীশু নিজের ক্রুশ বহন করে করোটি নামক স্থানে গেলেন (অরামীয় ভাষায় স্থানটির নাম গলগথা)। \v 18 তারা সেখানে অন্য দুজনের সঙ্গে তাঁকে ক্রুশার্পিত করল। দুই পাশে দুজন এবং মাঝখানে যীশু। \p \v 19 একটি বিজ্ঞপ্তি লিখিয়ে পীলাত ক্রুশে ঝুলিয়ে দিলেন। তাতে লেখা ছিল: \pc নাসরতের যীশু, ইহুদিদের রাজা। \m \v 20 যীশুকে যেখানে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই স্থানটি ছিল নগরের কাছেই। অনেক ইহুদি এই বিজ্ঞপ্তিটি পড়ল। এটি লেখা হয়েছিল অরামীয়, লাতিন ও গ্রিক ভাষায়। \v 21 ইহুদিদের প্রধান যাজকেরা পীলাতের কাছে প্রতিবাদ জানাল, “ ‘ইহুদিদের রাজা,’ একথা লিখবেন না, বরং লিখুন যে এই লোকটি নিজেকে ইহুদিদের রাজা বলে দাবি করেছিল।” \p \v 22 পীলাত উত্তর দিলেন, “আমি যা লিখেছি, তা লিখেছি।” \p \v 23 সৈন্যরা যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার পর তাঁর পোশাক চার ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে একটি করে অংশ নিল। রইল শুধু অন্তর্বাসটি। সেই পোশাকে কোনো সেলাই ছিল না, উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বোনা একটি অখণ্ড কাপড়ে সেটি তৈরি করা হয়েছিল। \p \v 24 তারা পরস্পরকে বলল, “এটা আমরা ছিঁড়ব না, এসো, এটা কার ভাগে পড়ে, তা নির্ধারণ করার জন্য গুটিকাপাত করি।” \p শাস্ত্রের এই বাণী যেন পূর্ণ হয় তাঁর জন্য এ ঘটনা ঘটল: \q1 “আমার পোশাক তারা তাদের মধ্যে ভাগ করে নিল, \q2 আর আমার আচ্ছাদনের জন্য গুটিকাপাতের দান ফেলল।”\f + \fr 19:24 \fr*\ft \+xt গীত 22:18\+xt*\ft*\f* \m সুতরাং, সৈন্যরা তাই করল। \p \v 25 যীশুর ক্রুশের কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর মা, তাঁর মাসিমা, ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম এবং মাগ্দালাবাসী মরিয়ম। \v 26 যীশু সেখানে তাঁর মা এবং কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা শিষ্যকে, যাঁকে তিনি প্রেম করতেন, তাঁকে দেখে, তাঁর মাকে বললেন, “নারী, ওই দেখো, তোমার পুত্র!” \v 27 এবং সেই শিষ্যকে বললেন, “ওই দেখো, তোমার মা!” সেই সময় থেকে, সেই শিষ্য তাঁর মাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন। \s1 যীশুর মৃত্যু \p \v 28 এরপর, সবকিছুই সম্পূর্ণ হয়েছে জেনে, শাস্ত্রের বচন যেন পূর্ণ হয় সেইজন্য যীশু বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে।” \v 29 সেখানে রাখা ছিল এক পাত্র অম্লরস। তারা সেই অম্লরসে এক টুকরো স্পঞ্জ ভিজিয়ে, সেটিকে এসোব\f + \fr 19:29 \fr*\ft \+xt গীত 69:21\+xt*\ft*\f* গাছের ডাঁটায় লাগিয়ে যীশুর মুখের কাছে তুলে ধরল। \v 30 সেই পানীয় গ্রহণ করে যীশু বললেন, “সমাপ্ত হল।” এই কথা বলে তিনি তাঁর মাথা নত করে তাঁর আত্মা সমর্পণ করলেন। \p \v 31 সেদিন ছিল প্রস্তুতির দিন এবং পরদিন ছিল বিশেষ এক বিশ্রামদিন। ইহুদিরা চায়নি যে বিশ্রামদিনের সময় ওই দেহগুলি ক্রুশের উপর থাকে, তাই পা ভেঙে দিয়ে দেহগুলি ক্রুশের উপর থেকে নামাবার জন্য তারা পীলাতকে অনুরোধ করল। \v 32 সৈন্যরা সেই কারণে এসে যীশুর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ প্রথম ব্যক্তির এবং তারপর অন্য ব্যক্তির পা ভেঙে দিল। \v 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, ইতিমধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাই তারা তাঁর পা ভাঙল না। \v 34 বরং, সৈন্যদের একজন বর্শা দিয়ে যীশুর বুকে বিদ্ধ করলে রক্ত ও জলের ধারা নেমে এল। \v 35 যে এ বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী, সেই সাক্ষ্যদান করেছে এবং তার সাক্ষ্য সত্য। সে জানে যে, সে সত্য কথা বলেছে এবং সে সাক্ষ্য দিচ্ছে যেন তোমরাও বিশ্বাস করতে পারো। \v 36 শাস্ত্রের বচন পূর্ণ হওয়ার জন্য এই সমস্ত ঘটল, “তাঁর একটিও হাড় ভাঙা হবে না”\f + \fr 19:36 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 12:46\+xt*; \+xt গণনা পুস্তক 9:12\+xt*; \+xt গীত 34:20\+xt*\ft*\f* এবং \v 37 শাস্ত্রের অন্যত্র যেমন বলা হয়েছে, “তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে, তাঁরই উপরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে তারা।”\f + \fr 19:37 \fr*\ft \+xt সখরিয় 12:10\+xt*\ft*\f* \s1 যীশুর সমাধি \p \v 38 পরে, আরিমাথিয়ার যোষেফ যীশুর দেহের জন্য পীলাতের কাছে নিবেদন জানালেন। যোষেফ ছিলেন যীশুর একজন শিষ্য, কিন্তু ইহুদি নেতাদের ভয়ে তাঁকে গোপনে অনুসরণ করতেন। পীলাতের অনুমতি নিয়ে, তিনি এসে যীশুর দেহ নিয়ে গেলেন। \v 39 তার সঙ্গে ছিলেন নীকদীম, যিনি রাত্রিবেলা যীশুর সঙ্গে পূর্বে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। নীকদীম প্রায় চৌত্রিশ কিলোগ্রাম\f + \fr 19:39 \fr*\ft গ্রিক: 100 লিট্রাই।\ft*\f* গন্ধরস মিশ্রিত অগুরু নিয়ে এলেন। \v 40 যীশুর দেহ নিয়ে তারা দুজনে সুগন্ধি মশলা মাখিয়ে লিনেন কাপড়ের ফালি দিয়ে জড়ালেন। ইহুদিদের সমাধিদানের প্রথা অনুসারে তারা এ কাজ করলেন। \v 41 যীশু যেখানে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, সেখানে একটি বাগান ছিল। সেই বাগানে ছিল একটি নতুন সমাধি, কাউকে কখনও তার মধ্যে কবর দেওয়া হয়নি। \v 42 সেদিন ছিল ইহুদিদের প্রস্তুতির দিন এবং সমাধিটি কাছেই ছিল বলে তারা সেখানেই যীশুর দেহ শুইয়ে রাখলেন।\f + \fr 19:42 \fr*\ft পরদিন ইহুদিদের উৎসব ছিল বলে, সন্ধ্যা ছয় টার পূর্বে তাঁর দেহ সমাহিত করা আবশ্যক হয়ে পড়েছিল।\ft*\f* \c 20 \s1 শূন্য সমাধি \p \v 1 সপ্তাহের প্রথম দিন ভোরবেলায়, অন্ধকার থাকতে থাকতেই, মাগ্দালাবাসী মরিয়ম সমাধির কাছে গিয়ে দেখলেন যে, প্রবেশমুখ থেকে পাথরটিকে সরানো হয়েছে। \v 2 তাই তিনি শিমোন পিতর এবং সেই অন্য শিষ্য, যীশু যাঁকে প্রেম করতেন, তাঁদের কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, “ওরা সমাধি থেকে প্রভুকে নিয়ে গেছে, ওরা তাঁকে কোথায় রেখেছে, আমরা জানি না!” \p \v 3 তাই পিতর এবং সেই অন্য শিষ্য সমাধিস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। \v 4 তাঁরা দুজনেই ছুটে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অন্য শিষ্যটি পিতরকে অতিক্রম করে প্রথমে সমাধির কাছে পৌঁছালেন। \v 5 তিনি নত হয়ে ভিতরে পড়ে থাকা লিনেন কাপড়ের খণ্ডগুলি দেখতে পেলেন, কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করলেন না। \v 6 তাঁর পিছনে পিছনে শিমোন পিতর উপস্থিত হয়ে সমাধির ভিতরে প্রবেশ করলেন। তিনি দেখলেন লিনেন কাপড়ের খণ্ডগুলি \v 7 এবং যীশুর মাথার চারপাশে যে সমাধিবস্ত্র জড়ানো ছিল, সেগুলি সেখানে পড়ে আছে। সমাধিবস্ত্রটি লিনেন কাপড় থেকে পৃথকভাবে গুটানো অবস্থায় রাখা ছিল। \v 8 অবশেষে, অপর যে শিষ্যটি প্রথমে সমাধিতে পৌঁছেছিলেন, তিনিও ভিতরে প্রবেশ করলেন। তিনি দেখলেন ও বিশ্বাস করলেন। \v 9 (তখনও তাঁরা শাস্ত্রের বাণী উপলব্ধি করতে পারেননি যে, যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হতে হবে।) \v 10 এরপর শিষ্যেরা তাঁদের ঘরে ফিরে গেলেন। \s1 মাগ্দালাবাসী মরিয়মের কাছে যীশুর আবির্ভাব \p \v 11 কিন্তু মরিয়ম সমাধির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলেন। কাঁদতে কাঁদতে সমাধির ভিতরে দেখার জন্য তিনি নিচু হলেন। \v 12 যীশুর দেহ যেখানে শোয়ানো ছিল, সেখানে তিনি সাদা পোশাক পরে দুজন স্বর্গদূতকে দেখতে পেলেন, একজন মাথার দিকে এবং অন্যজন পায়ের দিকে বসে আছেন। \p \v 13 তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “নারী, তুমি কাঁদছ কেন?” \p তিনি বললেন, “ওরা আমার প্রভুকে নিয়ে গেছে, তাঁকে কোথায় রেখেছে, আমি জানি না।” \v 14 এই বলে পিছনে ফিরতেই তিনি যীশুকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন, কিন্তু তিনি যে যীশু, মরিয়ম তা বুঝতে পারলেন না। \p \v 15 যীশু তাঁকে বললেন, “নারী, তুমি কাঁদছ কেন? কার সন্ধান করছ?” \p তাঁকে বাগানের মালি মনে করে মরিয়ম বললেন, “মহাশয়, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন, আমাকে বলুন, কোথায় তাঁকে রেখেছেন, আমি তাঁকে নিয়ে যাব।” \p \v 16 যীশু তাঁকে বললেন, “মরিয়ম!” \p তাঁর দিকে ঘুরে তিনি চিৎকার করে উঠলেন, \tl “রব্বুনি!”\tl* (শব্দটি অরামীয়, যার অর্থ, “গুরুমহাশয়”)। \p \v 17 যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে ধরে রেখো না, কারণ আমি এখনও পিতার কাছে ফিরে যাইনি। বরং, আমার ভাইদের কাছে গিয়ে তাঁদের বলো, ‘যিনি আমার পিতা ও তোমাদের পিতা, যিনি আমার ঈশ্বর এবং তোমাদের ঈশ্বর, আমি তাঁর কাছে ফিরে যাচ্ছি।’ ” \p \v 18 মাগ্দালাবাসী মরিয়ম শিষ্যদের কাছে গিয়ে এই সংবাদ দিলেন, “আমি প্রভুকে দেখেছি!” আর যে সমস্ত বিষয়ের কথা যীশু তাঁকে বলেছিলেন, তিনি তাঁদের সেসব কথা বললেন। \s1 শিষ্যদের কাছে যীশুর আবির্ভাব \p \v 19 সপ্তাহের প্রথম দিন, সন্ধ্যা হলে, শিষ্যেরা ইহুদিদের ভয়ে দরজা বন্ধ করে একত্র হয়েছিলেন। সেই সময় যীশু তাঁদের মধ্যে এসে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।” \v 20 একথা বলার পর তিনি তাঁর দু-হাত ও বুকের পাঁজর তাঁদের দেখালেন। প্রভুকে দেখে শিষ্যেরা আনন্দিত হয়ে উঠলেন। \p \v 21 যীশু আবার বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক! পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমন তোমাদের পাঠাচ্ছি।” \v 22 একথা বলে তিনি তাদের উপর ফুঁ দিয়ে বললেন, “পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করো। \v 23 তোমরা যাদের পাপ ক্ষমা করবে, তাদের ক্ষমা হবে, যাদের ক্ষমা করবে না, তাদের ক্ষমা হবে না।” \s1 থোমার কাছে যীশুর আবির্ভাব \p \v 24 যীশু যখন এসেছিলেন, তখন বারোজন শিষ্যের অন্যতম, দিদুমঃ নামে আখ্যাত থোমা সেখানে ছিলেন না। \v 25 তাই অন্য শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুকে দেখেছি।” \p কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যতক্ষণ না তাঁর হাতে পেরেকের চিহ্ন দেখছি এবং যেখানে পেরেকের চিহ্ন ছিল, সেখানে আঙুল রাখছি, আর তাঁর বুকের পাশে আমার হাত রাখছি, ততক্ষণ আমি বিশ্বাস করব না।” \p \v 26 এক সপ্তাহ পরে শিষ্যেরা আবার ঘরের মধ্যে ছিলেন। থোমা তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। দরজা বন্ধ করা থাকলেও যীশু এসে তাঁদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক!” \v 27 তারপর তিনি থোমাকে বললেন, “এখানে তোমার আঙুল রাখো। আমার হাত দুটি দেখো। তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, আমার বুকের পাশে রাখো। সন্দেহ কোরো না ও বিশ্বাস করো।” \p \v 28 থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার!” \p \v 29 যীশু তখন তাঁকে বললেন, “তুমি আমাকে দেখেছ বলে বিশ্বাস করেছ, কিন্তু ধন্য তারা, যারা আমাকে না দেখেও বিশ্বাস করেছে।” \p \v 30 যীশু শিষ্যদের সাক্ষাতে আরও অনেক চিহ্নকাজ করেছিলেন, সে সমস্ত এই বইতে লিপিবদ্ধ হয়নি। \v 31 কিন্তু এ সমস্ত এজন্য লিখে রাখা হয়েছে, যেন তোমরা বিশ্বাস করো\f + \fr 20:31 \fr*\ft কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে, \ft*\fqa বিশ্বাস করতে থাকো যে \fqa*\ft বা \ft*\fqa ক্রমাগত বিশ্বাস করে যাও।\fqa*\f* যে, যীশুই মশীহ, ঈশ্বরের পুত্র এবং বিশ্বাস করে তোমরা তাঁর নামে জীবন লাভ করো। \c 21 \s1 যীশু এবং অলৌকিকরূপে মাছ ধরা \p \v 1 পরে, টাইবেরিয়াস\f + \fr 21:1 \fr*\ft অর্থাৎ, গালীল-হ্রদ; পুরোনো সংস্করণ: তিবিরীয় সাগর।\ft*\f* সাগরের তীরে যীশু শিষ্যদের সামনে আবার আবির্ভূত হলেন। এভাবে তিনি নিজেকে প্রকাশ করছিলেন: \v 2 শিমোন পিতর, থোমা (দিদুমঃ নামে আখ্যাত), গালীলের কানা নগরের নথনেল, সিবদিয়ের দুই পুত্র এবং অন্য দুজন শিষ্য সমবেত হয়েছিলেন। \v 3 শিমোন পিতর তাঁদের বললেন, “আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।” তাঁরা বললেন, “আমরাও তোমার সঙ্গে যাব।” তাই তাঁরা বের হয়ে নৌকায় উঠলেন, কিন্তু সেই রাত্রে তাঁরা কিছুই ধরতে পারলেন না। \p \v 4 ভোরবেলা যীশু তীরে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু শিষ্যেরা বুঝতে পারলেন না যে, তিনিই যীশু। \p \v 5 যীশু তাঁদের বললেন, “বৎসেরা, তোমাদের কাছে কি কোনো মাছ নেই?” \p তাঁরা উত্তর দিলেন, “না।” \p \v 6 তিনি বললেন, “নৌকার ডানদিকে তোমাদের জাল ফেলো, পাবে।” তাঁর নির্দেশমতো জাল ফেললে এত অসংখ্য মাছ ধরা পড়ল যে, তাঁরা জাল টেনে তুলতে পারলেন না। \p \v 7 তখন যীশুর সেই শিষ্য, যাঁকে তিনি প্রেম করতেন, তিনি পিতরকে বললেন, “উনি প্রভু!” যেই না শিমোন পিতর শুনলেন যে “উনি প্রভু,” তিনি তাঁর উপরের পোশাক শরীরে জড়িয়ে নিয়ে জলে ঝাঁপ দিলেন (কারণ তিনি তা খুলে রেখেছিলেন)। \v 8 অন্য শিষ্যেরা মাছ ভর্তি সেই জাল টানতে টানতে নৌকায় করে এলেন, কারণ তাঁরা তীর থেকে খুব একটি দূরে ছিলেন না, নব্বই মিটার মাত্র দূরে ছিলেন। \v 9 তীরে নেমে তাঁরা দেখলেন, কয়লার আগুন জ্বলছে এবং তাঁর উপরে মাছ ও কিছু রুটি রাখা আছে। \p \v 10 যীশু তাঁদের বললেন, “এইমাত্র যে মাছ তোমরা ধরেছ, তা থেকে কিছু নিয়ে এসো।” \v 11 শিমোন পিতর নৌকায় উঠে জালটিকে টেনে তীরে নিয়ে এলেন। সেটি একশো তিপ্পান্নটি বড়ো মাছে ভর্তি ছিল, কিন্তু অত মাছেও জাল ছিঁড়ল না। \v 12 যীশু তাঁদের বললেন, “এসো, খেয়ে নাও।” একজন শিষ্যও সাহস করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পারলেন না, “আপনি কে,” কারণ তাঁরা জানতেন, তিনিই প্রভু। \v 13 যীশু এসে রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, সেভাবে মাছও দিলেন। \v 14 মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানের পর শিষ্যদের কাছে যীশুর এই ছিল তৃতীয় আবির্ভাব। \s1 পিতরকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করলেন \p \v 15 খাবার শেষে যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, “যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি কি আমাকে এদের চেয়েও বেশি প্রেম করো?” \p তিনি বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভালোবাসি।” \p যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষশাবকদের চরাও।” \p \v 16 যীশু দ্বিতীয়বার তাঁকে বললেন, “যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি কি আমাকে প্রেম করো?” \p তিনি তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু। আপনি জানেন যে, আমি আপনাকে ভালোবাসি।” \p যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষদের যত্ন করো।” \p \v 17 তৃতীয়বার তিনি তাঁকে বললেন, “যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি কি আমাকে প্রেম করো?” \p পিতর দুঃখিত হলেন, কারণ তৃতীয়বার যীশু তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমাকে প্রেম করো?” তখন তিনি তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি সবই জানেন। আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভালোবাসি।” \p যীশু বললেন, “আমার মেষদের চরাও। \v 18 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে তখন নিজেই নিজের পোশাক পরতে, যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে, কিন্তু বৃদ্ধ হলে তুমি তোমার হাত দুটিকে বাড়িয়ে দেবে, আর অন্য কেউ তোমাকে পোশাক পরিয়ে দেবে এবং যেখানে যেতে চাও না, সেখানে তোমাকে নিয়ে যাবে।” \v 19 একথার দ্বারা যীশু ইঙ্গিত দিলেন পিতর কীভাবে মৃত্যুবরণ করে ঈশ্বরের গৌরব করবেন। এরপর তিনি তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” \p \v 20 পিতর ফিরে দেখলেন, যে শিষ্যকে যীশু প্রেম করতেন, তিনি তাঁদের অনুসরণ করছেন (ইনিই সেই শিষ্য, যিনি সান্ধ্যভোজের সময় যীশুর বুকের দিকে ঝুঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “প্রভু, কে আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে?”) \v 21 পিতর তাঁকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, ওর কী হবে?” \p \v 22 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি যদি চাই যে আমার ফিরে আসা পর্যন্ত সে জীবিত থাকবে, তাতে তোমার কী? তুমি শুধু আমাকে অনুসরণ করো।” \v 23 এই কারণে শিষ্যদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে সেই শিষ্যের মৃত্যু হবে না, যদিও যীশু বলেননি যে তাঁর মৃত্যু হবে না। তিনি শুধু বলেছিলেন, “আমি যদি চাই যে আমার ফিরে আসা পর্যন্ত সে জীবিত থাকবে, তাতে তোমার কী?” \p \v 24 সেই শিষ্যই এই সমস্ত বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং তিনিই এ সমস্ত লিপিবদ্ধ করেছেন। আমরা জানি যে, তাঁর সাক্ষ্য সত্যি। \p \v 25 যীশু আরও অনেক কাজ করেছিলেন। সেগুলির প্রত্যেকটি যদি এক এক করে লেখা হত, আমার মনে হয়, এত বই লেখা হত যে, সমগ্র বিশ্বেও সেগুলির জন্য স্থান যথেষ্ট হত না।