\id JDG - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h বিচারকর্তৃগণ \toc1 বিচারকর্তৃগণ \toc2 বিচারকর্তৃগণ \toc3 বিচা \mt1 বিচারকর্তৃগণ \c 1 \s1 অবশিষ্ট কনানীয়দের সঙ্গে ইস্রায়েলীদের যুদ্ধ \p \v 1 যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের মধ্যে থেকে কোন গোষ্ঠী প্রথমে যাবে?” \p \v 2 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যিহূদা গোষ্ঠী যাবে; আমি তাদেরই হাতে এই দেশটি সমর্পণ করেছি।” \p \v 3 তখন যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সহ-ইস্রায়েলী শিমিয়োনীয়দের বলল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সাথে আমাদের জন্য বরাদ্দ অঞ্চলে এসো। পরে আমরাও তোমাদের সঙ্গে তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট অঞ্চলে যাব।” সুতরাং শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকেরাও তাদের সঙ্গে গেল। \p \v 4 যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা যখন আক্রমণ করল, সদাপ্রভু তাদের হাতে কনানীয় ও পরিষীয়দের সমর্পণ করলেন, এবং তারা বেষকে 10,000 লোককে হত্যা করল। \v 5 সেখানে তারা অদোনী-বেষকের সন্ধান পেল ও তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল এবং কনানীয় ও পরিষীয়দের ছত্রভঙ্গ করে দিল। \v 6 অদোনী-বেষক পালিয়ে গেলেন; কিন্তু তারা তাড়া করে তাঁকে ধরে ফেলল এবং তাঁর হাত-পায়ের বুড়ো আঙুল কেটে দিল। \p \v 7 তখন অদোনী-বেষক বললেন, “হাত-পায়ের বুড়ো আঙুল কাটা সত্তরজন রাজা আমার টেবিলের নিচে পড়ে থাকা এঁটোকাটা কুড়িয়ে খেতেন। আমি তাঁদের প্রতি যা করেছিলাম, ঈশ্বর আমাকে তার উপযুক্ত প্রতিফল দিয়েছেন।” যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাঁকে জেরুশালেম নিয়ে এল এবং সেখানেই তিনি মারা গেলেন। \p \v 8 তারা জেরুশালেমও আক্রমণ করল এবং নগরটি অধিকার করল। তারা নগরের অধিবাসীদের তরোয়াল দ্বারা হত্যা করল এবং নগরটিতে আগুন ধরিয়ে দিল। \p \v 9 তারপর, যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা পাহাড়ি অঞ্চলে, নেগেভে এবং পশ্চিমী পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে গেল। \v 10 তারা হিব্রোণ নিবাসী কনানীয়দের বিরুদ্ধেও অগ্রসর হল এবং শেশয়, অহীমান ও তল্‌ময়কে পরাজিত করল। (হিব্রোণের পূর্বতন নাম ছিল কিরিয়ৎ-অর্ব) \v 11 সেখান থেকে তারা দবীরে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হল (দবীরের পূর্বতন নাম ছিল কিরিয়ৎ-সেফর)। \p \v 12 আর কালেব বললেন, “যে ব্যক্তি কিরিয়ৎ-সেফর আক্রমণ করে তা নিয়ন্ত্রণে আনবে, আমি তার সঙ্গে আমার মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দেব।” \v 13 কালেবের ছোটো ভাই, কনসের ছেলে অৎনীয়েল সেটি দখল করলেন; অতএব কালেব তাঁর মেয়ে অক্‌ষার সঙ্গে অৎনীয়েলের বিয়ে দিলেন। \p \v 14 একদিন অক্‌ষা অৎনীয়েলের কাছে এসে তাঁকে প্ররোচিত করলেন যেন তিনি তাঁর বাবার কাছে একটি ক্ষেতজমি চেয়ে নেন। অক্‌ষা তাঁর গাধার পিঠ থেকে নামার পর, কালেব তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি তোমার জন্য কী করতে পারি?” \p \v 15 তিনি উত্তর দিলেন, “আমার প্রতি বিশেষ এক অনুগ্রহ দেখান। আপনি যেহেতু নেগেভে আমাকে জমি দিয়েছেন, জলের উৎসগুলিও আমাকে দিন।” অতএব কালেব উচ্চতর ও নিম্নতর জলের উৎসগুলি তাঁকে দিলেন। \p \v 16 মোশির শ্বশুরমশাই-এর বংশধরেরা, অর্থাৎ কেনীয়েরা যিহূদা গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে খর্জুরপুর\f + \fr 1:16 \fr*\ft অর্থাৎ, যিরীহো\ft*\f* থেকে অরাদের নিকটবর্তী নেগেভে, যিহূদার মরুভূমি নিবাসী লোকদের মধ্যে বসবাস করার জন্য চলে গেল। \p \v 17 তখন যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সহ-ইস্রায়েলী আত্মীয় শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে গিয়ে সফাৎ নিবাসী কনানীয়দের আক্রমণ করল এবং নগরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিল। এজন্য নগরটির নাম হল হর্মা।\f + \fr 1:17 \fr*\ft হর্মা শব্দের অর্থ ধ্বংস বা বিনাশ\ft*\f* \v 18 যিহূদা গাজা, অস্কিলোন ও ইক্রোণ—প্রত্যেকটি নগর এবং সেগুলির সন্নিহিত অঞ্চলগুলিও অধিকার করল। \p \v 19 সদাপ্রভু যিহূদা গোষ্ঠীর লোকদের সহায় ছিলেন। তারা পার্বত্য অঞ্চলটি অধিকার করে নিল, কিন্তু সমভূমির অধিবাসীদের তারা বিতাড়িত করতে পারল না, কারণ তাদের কাছে লৌহরথ ছিল। \v 20 মোশির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হিব্রোণ কালেবকে দেওয়া হল। তিনি সেখান থেকে অনাকের তিন ছেলেকে বিতাড়িত করলেন। \v 21 বিন্যামীনীয়েরা অবশ্য জেরুশালেম নিবাসী সেই যিবূষীয়দের বিতাড়িত করেনি, যারা জেরুশালেমে বসবাস করত; আজও পর্যন্ত সেই যিবূষীয়েরা বিন্যামিনীয়দের সঙ্গে সেখানে বসবাস করছে। \p \v 22 এবার যোষেফ গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বেথেল আক্রমণ করল, এবং সদাপ্রভু তাদের সহবর্তী ছিলেন। \v 23 তারা যখন বেথেলে (সেই নগরের পূর্বতন নাম লূস) গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য লোক পাঠাল, \v 24 গুপ্তচরেরা একটি লোককে নগর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে তাকে বলল, “এই নগরে প্রবেশ করার পথ আমাদের দেখিয়ে দাও ও আমরা দেখব যেন তোমার প্রতি সদয় ব্যবহার করা হয়।” \v 25 তাই সে তাদের তা দেখিয়ে দিল এবং তারা নগরে প্রবেশ করে তরোয়াল দ্বারা নগরবাসীদের হত্যা করল কিন্তু সেই লোকটিকে ও তার সমগ্র পরিবারকে অব্যাহতি দিল। \v 26 লোকটি পরে হিত্তীয়দের দেশে গিয়ে সেখানে একটি নগর পত্তন করল এবং তার নাম দিল লূস, যা আজও এই নামেই পরিচিত। \p \v 27 কিন্তু মনঃশি গোষ্ঠীর লোকেরা বেথ-শান বা তানক বা দোর বা যিব্‌লিয়ম বা মগিদ্দো প্রভৃতি নগর-নিবাসী ও সেগুলির সন্নিহিত অঞ্চল-নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করেনি, কারণ কনানীয়েরা সেদেশেই বসবাস করতে দৃঢ়সংকল্প হয়েছিল। \v 28 ইস্রায়েল যখন শক্তিশালী হয়ে উঠল, তখন কনানীয়দের সম্পূর্ণরূপে বিতাড়িত করার পরিবর্তে তারা জোর করে তাদের বেগার শ্রমিকে পরিণত করল। \v 29 ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকেরাও গেষর নিবাসী কনানীয়দের বিতাড়িত করল না, কিন্তু কনানীয়েরা গেষরে তাদের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল। \v 30 সবূলূন গোষ্ঠীর লোকেরাও কিট্‌রোণ ও নহলাল নিবাসী কনানীয়দের বিতাড়িত করল না, তাই সেই কনানীয়রা তাদের মধ্যেই বসবাস করল, কিন্তু সবূলূন তাদেরও জোর করে বেগার শ্রমিকে পরিণত করল। \v 31 আশের গোষ্ঠীর লোকেরাও অক্কো বা সীদোন বা অহলব বা অক্‌ষীব বা হেল্‌বা বা অফীক বা রহোব নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করল না। \v 32 আশেরীয়রা সেই দেশের অধিবাসী কনানীয়দের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল কারণ তারা কনানীয়দের বিতাড়িত করেনি। \v 33 নপ্তালি গোষ্ঠীর লোকেরাও বেত-শেমশ বা বেথ-অনাৎ নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করল না; কিন্তু নপ্তালীয়েরা সেদেশের অধিবাসী কনানীয়দের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল, এবং বেত-শেমশ ও বেথ-অনাৎ নিবাসী লোকজন তাদের জন্য বেগার শ্রমিকে পরিণত হল। \v 34 ইমোরীয়রা দান বংশীয় লোকজনকে পার্বত্য অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ করে রাখল, তাদের সমভূমিতে নেমে আসতে দিল না। \v 35 আর ইমোরীয়রা হেরস পর্বতে, অয়ালোনে ও শাল্‌বীমে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হল, কিন্তু যোষেফ-গোষ্ঠীর যখন শক্তিবৃদ্ধি হল, তখন ইমোরীয়দেরও জোর করে বেগার শ্রমিকে পরিণত করা হল। \v 36 ইমোরীয়দের সীমানা বিস্তৃত হল বৃশ্চিক-গিরিপথ\f + \fr 1:36 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, অক্রব্বীম\ft*\f* থেকে সেলা ও তা অতিক্রম করে আরও বহুদূর পর্যন্ত। \c 2 \s1 বোখীমে সদাপ্রভুর দূতের আগমন \p \v 1 সদাপ্রভুর দূত গিল্‌গল থেকে বোখীমে উঠে গিয়ে বললেন, “আমি মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছি এবং যে দেশ দেওয়ার শপথ আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলাম, সেই দেশে তোমাদের নিয়ে এসেছি। আমি বলেছিলাম, ‘আমি তোমাদের কাছে আমার নিয়মটি কখনোই ভঙ্গ করব না, \v 2 আর তোমরাও এই দেশের অধিবাসীদের সঙ্গে কোনও নিয়ম স্থির করবে না, কিন্তু তোমরা তাদের যজ্ঞবেদিগুলি ভেঙে ফেলবে।’ অথচ তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ। তোমরা কেন এরকম করলে? \v 3 আর আমি এও বলেছি, ‘আমি তোমাদের সামনে থেকে তাদের বিতাড়িত করব না; তারা তোমাদের জন্য জালে পরিণত হবে, এবং তাদের দেবতারা তোমাদের কাছে ফাঁদে পরিণত হবে।’ ” \p \v 4 সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েলীদের কাছে এসব কথা বলাতে, তারা তারস্বরে কেঁদে ফেলল, \v 5 এবং তারা সেই স্থানটির নাম রাখল বোখীম।\f + \fr 2:5 \fr*\ft বোখীম শব্দের অর্থ ক্রন্দনকারীরা\ft*\f* সেখানে তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করল। \s1 অবাধ্যতা ও পরাজয় \p \v 6 যিহোশূয় ইস্রায়েলীদের বিদায় করে দেওয়ার পর, তারা প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব অধিকার অনুসারে, দেশ দখল করতে গেল। \v 7 লোকজন যিহোশূয়ের জীবনকালে ও সেইসব প্রাচীনের জীবনকালে আগাগোড়াই সদাপ্রভুর সেবা করল, যারা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরও জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভু যেসব মহান কাজ করেছিলেন, সেগুলি দেখেছিলেন। \p \v 8 নূনের ছেলে, সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় 110 বছর বয়সে মারা গেলেন। \v 9 আর তারা তাঁকে গাশ পর্বতের উত্তরে, ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের তিম্নৎ-হেরসে\f + \fr 2:9 \fr*\ft তিম্নৎ-সেরহ নামেও পরিচিত; \+xt যিহোশূয়ের পুস্তক 19:50 ও 24:30\+xt* পদও দেখুন\ft*\f*, তাঁর নিজস্ব অধিকার-ভূমিতে কবর দিল। \p \v 10 সেই প্রজন্মের সমস্ত লোকজন তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার পর, অপর এক প্রজন্ম বেড়ে উঠল, যারা না চিনত সদাপ্রভুকে, না জানত তিনি ইস্রায়েলের জন্য কী কী করেছিলেন। \v 11 পরে ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল এবং বায়াল-দেবতাদের সেবা করল। \v 12 তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, সেই সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করল, যিনি মিশর থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন। তারা তাদের চারপাশে বসবাসকারী লোকদের আরাধ্য বিভিন্ন দেবতাদের অনুগামী হল এবং তাদের আরাধনা করতে লাগল। তারা সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলল \v 13 কারণ তারা তাঁকে পরিত্যাগ করল এবং বায়াল-দেবতার ও অষ্টারোৎ দেবীদের সেবা করল। \v 14 ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে সদাপ্রভু তাদের সেই আক্রমণকারীদের হাতে সমর্পণ করলেন, যারা তাদের উপরে লুঠতরাজ চালিয়েছিল। তিনি তাদের চারপাশের সেই শত্রুদের হাতে তাদের বিক্রি করে দিলেন, যাদের প্রতিরোধ তারা আর করে উঠতে পারেনি। \v 15 যখনই ইস্রায়েল যুদ্ধযাত্রা করতে যেত, তাদের পরাজিত করার জন্য সদাপ্রভুর হাত তাদের বিরুদ্ধাচারী হত, ঠিক যেভাবে তিনি তাদের কাছে শপথ করেছিলেন। তাদের উপরে চরম দুর্দশা নেমে এল। \p \v 16 তখন সদাপ্রভু সেই বিচারকদের\f + \fr 2:16 \fr*\ft অথবা, নেতাদের; \+xt 17-19|link-href="JDG 2:17-19"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* উত্থাপিত করলেন, যারা আক্রমণকারীদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছিলেন। \v 17 তবুও তারা তাদের বিচারকদের কথায় কর্ণপাত করত না কিন্তু অন্যান্য দেবতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বেশ্যাবৃত্তিতে নেমে তাদের আরাধনা করত। তারা দ্রুত তাদের সেই পূর্বপুরুষদের পথ থেকে ফিরে গেল, যারা সদাপ্রভুর আদেশগুলির প্রতি বাধ্য হয়ে চলতেন। \v 18 সদাপ্রভু যখনই তাদের জন্য কোনও বিচারক উত্থাপিত করতেন, তিনি সেই বিচারকের সহায় হতেন এবং যতদিন সেই বিচারক জীবিত থাকতেন ততদিন সদাপ্রভু তাদের শত্রুদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতেন; যেহেতু তাদের শোষণের কারণে ও নির্যাতনকারীদের অধীনে তাদের জীবনে উৎপন্ন কাতরোক্তির কারণে সদাপ্রভু করুণাবিষ্ট হতেন। \v 19 কিন্তু সেই বিচারক মারা গেলেই, লোকেরা আবার অন্যান্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে, তাদের সেবা ও আরাধনা করার মাধ্যমে তাদের পূর্বপুরুষদের থেকেও বেশি পরিমাণে কলুষিত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়ত। তারা তাদের মন্দ অভ্যাস ও অনমনীয় স্বভাব ত্যাগ করতে চাইত না। \p \v 20 অতএব সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “যেহেতু এই জাতি সেই নিয়মটি ভঙ্গ করেছে, যা আমি তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য নিরূপিত করেছিলাম এবং যেহেতু আমার কথায় তারা কর্ণপাত করেনি, \v 21 তাই আমি আর সেইসব জাতির মধ্যে কোনো জাতিকেই তাদের সামনে থেকে বিতাড়িত করব না, যিহোশূয় মারা যাওয়ার সময় যাদের অবশিষ্ট রেখে গিয়েছিল। \v 22 ইস্রায়েলকে পরীক্ষা করার জন্য ও তাদের পূর্বপুরুষদের মতো তারা সদাপ্রভুর পথে চলে তাঁর আজ্ঞা পালন করছে কি না তা দেখার জন্য আমি এই জাতিকে ব্যবহার করব।” \v 23 সদাপ্রভু সেইসব জাতিকে সেখানে থাকতে দিলেন; তিনি যিহোশূয়ের হাতে তাদের সমর্পণ করার দ্বারা অবিলম্বে তাদের বিতাড়িত করলেন না। \c 3 \p \v 1 যেসব ইস্রায়েলী কনানে কোনও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা লাভ করেনি, তাদের পরীক্ষা করার জন্য সদাপ্রভু এসব জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছিলেন: \v 2 (ইস্রায়েলীদের সেই বংশধরদের যুদ্ধবিগ্রহ শিক্ষা দেওয়ার জন্যই শুধুমাত্র তিনি এরকম করলেন, ইতিপূর্বে যাদের যুদ্ধের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না) \v 3 ফিলিস্তিনীদের পাঁচজন শাসনকর্তা, বায়াল-হর্মোণ পর্বত থেকে লেবো-হমাৎ পর্যন্ত বিস্তৃত লেবাননের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী সমস্ত কনানীয়, সীদোনীয় এবং হিব্বীয় জাতি। \v 4 মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলীদের পূর্বপুরুষদের সদাপ্রভু যে আদেশগুলি দিয়েছিলেন, সেগুলি তারা পালন করে কি না, তা জানার জন্যই এই জাতিদের অবশিষ্ট রাখা হল। \p \v 5 ইস্রায়েলীরা কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের মধ্যে বসবাস করল। \v 6 ইস্রায়েলীরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করে আনত ও নিজেদের মেয়েদের সঙ্গে তাদের ছেলেদের বিয়ে দিত, এবং তাদের দেবতাদের সেবা করত। \s1 অৎনীয়েল \p \v 7 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ ইস্রায়েলীরা তাই করল; তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গিয়ে বায়াল-দেবতাদের ও আশেরা-দেবীদের সেবা করল। \v 8 সদাপ্রভুর ক্রোধ ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত হল, আর তিনি তাদের অরাম-নহরয়িমের\f + \fr 3:8 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়ার\ft*\f* রাজা সেই কূশন-রিশিয়াথয়িমের হাতে বিক্রি করে দিলেন, ইস্রায়েলীরা আট বছর যাঁর শাসনাধীন হয়ে থাকল। \v 9 কিন্তু তারা যখন সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল, তিনি তাদের জন্য এক রক্ষাকর্তাকে—কালেবের ছোটো ভাই কনসের ছেলে অৎনীয়েলকে—উত্থাপিত করলেন, যিনি তাদের রক্ষা করলেন। \v 10 সদাপ্রভুর আত্মা অৎনীয়েলের উপর নেমে এলেন, আর তিনি ইস্রায়েলীদের বিচারক\f + \fr 3:10 \fr*\ft অথবা, নেতা\ft*\f* হলেন এবং যুদ্ধযাত্রা করলেন। সদাপ্রভু অরামের রাজা কূশন-রিশিয়াথয়িমকে সেই অৎনীয়েলের হাতে সমর্পণ করলেন, যিনি তাঁকে পরাজিত করলেন। \v 11 অতএব কনসের ছেলে অৎনীয়েলের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত চল্লিশ বছরের জন্য দেশে শান্তি বজায় থাকল। \s1 এহূদ \p \v 12 আবার ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল, এবং যেহেতু তারা এরকম মন্দ কাজ করল, তাই সদাপ্রভু মোয়াবের রাজা ইগ্লোনকে ইস্রায়েলের উপর শক্তিপ্রদর্শন করতে দিলেন। \v 13 অম্মোনীয় ও অমালেকীয়দের সঙ্গে নিয়ে এসে ইগ্লোন ইস্রায়েলকে আক্রমণ করলেন, এবং খর্জুরপুর\f + \fr 3:13 \fr*\ft অর্থাৎ, যিরীহো\ft*\f* অধিকার করে নিলেন। \v 14 ইস্রায়েলীরা আঠারো বছর যাবৎ মোয়াবের রাজা ইগ্লোনের শাসনাধীন হয়ে থাকল। \p \v 15 ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল, এবং তিনি তাদের এক রক্ষাকর্তা দিলেন—যিনি হলেন বিন্যামীনীয় গেরার ছেলে ন্যাটা\f + \fr 3:15 \fr*\ft অর্থাৎ, বাঁ-হাতি\ft*\f* এহূদ। ইস্রায়েলীরা তাঁকে রাজস্ব-অর্থ সমেত মোয়াবরাজ ইগ্লোনের কাছে পাঠাল। \v 16 এহূদ প্রায় 45 সেন্টিমিটার\f + \fr 3:16 \fr*\ft অর্থাৎ, এক হাত\ft*\f* লম্বা এবং উভয় দিকে ধারবিশিষ্ট একটি ছোরা তৈরি করলেন, ও সেটি তিনি তাঁর পোশাকের নিচে তাঁর ডান ঊরুতে বেঁধে রাখলেন। \v 17 তিনি মোয়াবের রাজা সেই ইগ্লোনের কাছে সেই রাজস্ব-অর্থ পেশ করলেন, যিনি অত্যন্ত স্থূলকায় এক ব্যক্তি ছিলেন। \v 18 সেই রাজস্ব-অর্থ পেশ করার পর এহূদ তাদের বিদায় করে দিলেন, যারা তা বহন করে এনেছিল। \v 19 কিন্তু গিল্‌গলের নিকটবর্তী সেই পাথর-প্রতিমাগুলির কাছে পৌঁছানোর পর আবার তিনি ইগ্লোনের কাছে ফিরে এসে বললেন, “হে মহারাজ, আপনার জন্য আমার কাছে এক গোপন সংবাদ আছে।” \p রাজামশাই তাঁর সেবকদের বললেন, “আমাদের একা ছেড়ে দাও!” আর তারা সবাই বাইরে চলে গেল। \p \v 20 রাজামশাই যখন তাঁর প্রাসাদের উপরতলার ঘরে একা বসেছিলেন, তখন এহূদ তাঁর কাছে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “আপনার জন্য আমার কাছে ঈশ্বরের এক বাণী আছে।” রাজামশাই যেই না তাঁর আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, \v 21 এহূদ তাঁর বাঁ হাত বাড়িয়ে ডান ঊরু থেকে সেই ছোরাটি টেনে বের করে সোজা রাজামশাই-এর পেটে ঢুকিয়ে দিলেন। \v 22 এমনকি ছোরার সঙ্গে বাঁটটিও ভিতরে ঢুকে গেল, এবং তাঁর নাড়িভুঁড়ি বাইরে বেরিয়ে এল। এহূদ ছোরাটি টেনে বের করলেন না, এবং সেটি চর্বিতে আটকে থাকল। \v 23 পরে এহূদ বাইরে বারান্দায় বেরিয়ে এলেন; তিনি উপরতলার ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে তাতে তালা লাগিয়ে দিলেন। \p \v 24 তিনি চলে যাওয়ার পর দাসেরা এসে দেখল যে উপরতলার ঘরের দরজা তালাবন্ধ। তারা বলল, “রাজামশাই নিশ্চয় প্রাসাদের শৌচাগারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছেন।” \v 25 তারা বিব্রত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে গেল, কিন্তু রাজামশাই দরজা খুলছেন না দেখে তারা একটি চাবি নিয়ে দরজাটি খুলে ফেলল। সেখানে তারা দেখল যে তাদের মনিব মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। \p \v 26 তারা যখন অপেক্ষা করছিল, তখন এহূদ পালিয়ে গেলেন। তিনি পাথর-প্রতিমাগুলি পার করে গেলেন ও পালিয়ে সিয়ীরাতে গিয়ে পৌঁছালেন। \v 27 সেখানে পৌঁছে তিনি ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে শিঙা বাজালেন, এবং ইস্রায়েলীরা তাঁর সঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে গেল, ও এহূদ তাদের নেতৃত্ব দিলেন। \p \v 28 “আমার অনুগামী হও,” তিনি আদেশ দিলেন, “কারণ সদাপ্রভু তোমাদের শত্রু মোয়াবকে তোমাদের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন।” অতএব তারা এহূদের অনুগামী হল এবং জর্ডনের হাঁটুজলবিশিষ্ট সেই স্থানগুলি অধিকার করে নিল, যেগুলি মোয়াবের দিকে উঠে যায়; তারা কাউকেই ওপারে যেতে দিল না। \v 29 সেই সময় তারা প্রায় 10,000 মোয়াবীয়কে আঘাত করল, যারা সবাই ছিল সবল ও শক্তিশালী; একজনও পালাতে পারল না। \v 30 সেদিন মোয়াবকে ইস্রায়েলের শাসনাধীন করা হল, এবং আশি বছরের জন্য দেশে শান্তি বজায় থাকল। \s1 শম্‌গর \p \v 31 এহূদের পর এলেন অনাতের ছেলে শম্‌গর, যিনি বলদের অঙ্কুশ দিয়ে 600 ফিলিস্তিনীকে আঘাত করলেন। তিনিও ইস্রায়েলকে রক্ষা করলেন। \c 4 \s1 দবোরা \p \v 1 এহূদ মারা যাওয়ার পর ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করল। \v 2 তাই সদাপ্রভু তাদের কনানের রাজা সেই যাবীনের হাতে সমর্পণ করে দিলেন, যিনি হাৎসোরে রাজত্ব করতেন। তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতি সীষরা হরোশৎ-হগ্গোয়ীমের অধিবাসী ছিলেন। \v 3 যেহেতু তাঁর কাছে 900-টি লৌহরথ ছিল এবং তিনি কুড়ি বছর ধরে ইস্রায়েলীদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালিয়েছিলেন, তাই ইস্রায়েলীরা সাহায্য পাওয়ার আশায় সদাপ্রভুর কাছে কেঁদেছিল। \p \v 4 সেই সময় লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা—একজন মহিলা ভাববাদী, ইস্রায়েলীদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।\f + \fr 4:4 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচার করছিলেন\ft*\f* \v 5 ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে রামা ও বেথেলের মাঝখানে অবস্থিত দবোরার খেজুর গাছের তলায় বসে তিনি বিচারকাজ চালাতেন, এবং ইস্রায়েলীরা তাদের দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তির জন্য সেখানে তাঁর কাছে যেত। \v 6 তিনি কেদশ-নপ্তালি থেকে অবীনোয়মের ছেলে বারককে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমাকে এই আদেশ দিয়েছেন: ‘যাও, নপ্তালি ও সবূলূন গোষ্ঠীভুক্ত 10,000 লোক সঙ্গে নাও এবং তাবোর পর্বত পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব দিয়ে যাও। \v 7 আমি যাবীনের সৈন্যদলের সেনাপতি সীষরাকে এবং তার রথ ও তার সৈন্যবাহিনীকে কীশোন নদীর কাছে পরিচালনা দিয়ে নিয়ে যাব এবং তাকে তোমার হাতে সমর্পণ করব।’ ” \p \v 8 বারক তাঁকে বললেন, “আপনি যদি আমার সঙ্গে যান, তবেই আমি যাব; কিন্তু আপনি যদি আমার সঙ্গে না যান, তবে আমি যাব না।” \p \v 9 “আমি নিশ্চয় তোমার সঙ্গে যাব,” দবোরা বললেন। “কিন্তু এ যাত্রায় তুমি সম্মান লাভ করবে না, কারণ সদাপ্রভু সীষরাকে একজন স্ত্রীলোকের হাতে সমর্পণ করবেন।” অতএব দবোরা বারকের সঙ্গে কেদশে চলে গেলেন। \v 10 বারক সেখানে সবূলূন ও নপ্তালি গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের ডেকে পাঠালেন, এবং 10,000 লোক তাঁর নেতৃত্বাধীন হয়ে তাঁর সঙ্গে গেল। দবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন। \p \v 11 ইত্যবসরে মোশির শ্যালক\f + \fr 4:11 \fr*\ft অথবা, শ্বশুরমশাই\ft*\f*, কেনীয় হেবর হোববের বংশধর অন্যান্য কেনীয়দের থেকে পৃথক হয়ে কেদশের নিকটবর্তী সানন্নীমের বিশাল সেই গাছটির কাছে তাঁর তাঁবু খাটিয়েছিলেন। \p \v 12 সীষরাকে যখন বলা হল যে অবীনোয়মের ছেলে বারক তাবোর পর্বতে উঠেছে, \v 13 তখন সীষরা হরোশৎ-হাগ্গোয়ীম থেকে তাঁর সব লোকজনকে ও তাঁর 900-টি লৌহরথ কীশোন নদীতীরে ডেকে আনালেন। \p \v 14 তখন দবোরা বারককে বললেন, “যাও! সদাপ্রভু আজই তোমার হাতে সীষরাকে সমর্পণ করেছেন। সদাপ্রভু কি তোমার অগ্রগামী হননি?” অতএব বারক তাঁর 10,000 জন অনুচরকে সঙ্গে নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এলেন। \v 15 বারক এগিয়ে যেতে না যেতেই সদাপ্রভু সীষরাকে এবং তাঁর সব রথ ও সৈন্যবাহিনীকে তরোয়ালের আঘাতে ছত্রভঙ্গ করে দিলেন, এবং সীষরা তাঁর রথ থেকে নেমে পায়ে হেঁটে পালিয়ে গেলেন। \p \v 16 বারক হরোশৎ-হাগ্গোয়ীম পর্যন্ত সেইসব রথ ও সৈন্যদলের পশ্চাদ্ধাবন করলেন এবং সীষরার সৈন্যবাহিনী তরোয়াল দ্বারা পতিত হল; একজনও অবশিষ্ট রইল না। \v 17 এদিকে, সীষরা পায়ে হেঁটে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাঁবুর কাছে পালিয়ে গেলেন, কারণ হাৎসোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে কেনীয় হেবরের পরিবারের এক মৈত্রীর সম্পর্ক ছিল। \p \v 18 যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে এসে তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, ভিতরে আসুন। ভয় পাবেন না।” অতএব সীষরা যায়েলের তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, এবং তিনি একটি কম্বল দিয়ে সীষরাকে ঢেকে দিলেন। \p \v 19 “আমার পিপাসা পেয়েছে,” সীষরা বললেন। “দয়া করে আমাকে একটু জল দাও।” যায়েল তখন দুধ-ভর্তি একটি মশক খুলে তাঁকে খানিকটা দুধ পান করতে দিলেন, এবং আবার তাঁকে ঢেকে দিলেন। \p \v 20 “তুমি তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকো,” তিনি যায়েলকে বললেন। “কেউ যদি এসে তোমায় জিজ্ঞাসা করে, ‘এখানে কি কেউ আছে?’ তবে বোলো, ‘না, কেউ নেই।’ ” \p \v 21 কিন্তু হেবরের স্ত্রী যায়েল একটি তাঁবু-খুটা ও একটি হাতুড়ি তুলে নিয়ে নিঃশব্দে তাঁর কাছে গেলেন। ক্লান্ত সীষরা গভীর ঘুমে নিদ্রাগত হয়ে পড়েছিলেন। যায়েল সেই খুঁটিটি সীষরার রগে এমনভাবে বিঁধিয়ে দিলেন যে সেটি মাটিতে গেঁথে গেল, ও তিনি মারা গেলেন। \p \v 22 ঠিক তখনই বারক সীষরার পশ্চাদ্ধাবন করতে করতে সেখানে উপস্থিত হলেন এবং যায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে গেলেন। “আসুন,” যায়েল বললেন, “আপনি যে লোকটির খোঁজ করছেন, তাকে আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।” অতএব বারক তাঁর সঙ্গে তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, এবং সেখানে সীষরা রগে তাঁবু-খুটা বিদ্ধ অবস্থায় মরে পড়েছিলেন। \p \v 23 সেদিন ঈশ্বর কনানের রাজা যাবীনকে ইস্রায়েলীদের সামনে অবনমিত করলেন। \v 24 আর ইস্রায়েলীরা কনানের রাজা যাবীনকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত তাদের হাত তাঁর বিরুদ্ধে ক্রমাগত কঠোর থেকে কঠোরতর হতেই থাকল। \c 5 \s1 দবোরার সংগীত \p \v 1 সেদিন দবোরা এবং অবীনোয়মের ছেলে বারক এই গানটি গাইলেন: \q1 \v 2 “ইস্রায়েলের নেতারা যখন নেতৃত্বভার হাতে নিলেন, \q2 প্রজারা যখন স্বেচ্ছায় নিজেদের উৎসর্গ করল— \q2 সদাপ্রভুর প্রশংসা করো! \b \q1 \v 3 “হে রাজারা, একথা শোনো! হে শাসকেরা, কর্ণপাত করো! \q2 আমি, আমিই সদাপ্রভুর উদ্দেশে\f + \fr 5:3 \fr*\ft অথবা, সদাপ্রভুর\ft*\f* গান গাইব; \q2 গানে গানে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করব। \b \b \q1 \v 4 “হে সদাপ্রভু, তুমি যখন সেয়ীর থেকে চলে গেলে, \q2 ইদোমের দেশ থেকে কুচকাওয়াজ করলে, \q1 পৃথিবী কম্পিত হল, আকাশমণ্ডলও বর্ষণ করল, \q2 মেঘমালা জলধারা ঢেলে দিল। \q1 \v 5 পর্বতগুলি সীনয়ের সেই সদাপ্রভুর সামনে কম্পিত হল, \q2 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর সামনেই হল। \b \q1 \v 6 “অনাতের পুত্র শম্‌গরের সময়ে, \q2 রাজপথগুলি যায়েলের সময়ে পরিত্যক্ত হল; \q2 ভ্রমণকারীরা ঘুরপথে যেত। \q1 \v 7 ইস্রায়েলের গ্রামবাসীরা যুদ্ধ করতে চায়নি; \q2 তারা ক্ষান্ত ছিল, যতদিন না আমি, দবোরা উঠে দাঁড়ালাম, \q2 যতদিন না আমি, ইস্রায়েলের এক মাতৃস্থানীয়া উঠে দাঁড়ালাম। \q1 \v 8 ঈশ্বর নতুন নেতৃবৃন্দ\f + \fr 5:8 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েল যখন করল মনোনীত নতুন দেবতাদের\ft*\f* মনোনীত করলেন \q2 যুদ্ধ যখন নগর-প্রবেশদ্বারে ঘনিয়ে এল, \q1 কিন্তু একটিও ঢাল অথবা বর্শা দেখা গেল না, \q2 ইস্রায়েলে হাজার চল্লিশ সেই সেনানীর হাতে। \q1 \v 9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলী নেতৃবৃন্দের প্রতি আসক্ত হল, \q2 জনতার মধ্যে ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি। \q2 সদাপ্রভুর প্রশংসা করো! \b \q1 \v 10 “তোমরা যারা সাদা গাধার পিঠে চেপে যাও, \q2 জিন কম্বলের উপর বসে থাকো, \q2 আর তোমরা যারা পথযাত্রা করো, \q1 বিবেচনা করো \v 11 জলসেচনের স্থানে সেই গায়কদের রব। \q2 তারা সদাপ্রভুর বিজয় বর্ণনা করে, \q2 ইস্রায়েলের গ্রামবাসীদের বিজয়। \b \q1 “তখন সদাপ্রভুর প্রজাসকল \q2 নগরদ্বারে নেমে গেল। \q1 \v 12 ‘জাগো, জাগো হে দবোরা! \q2 জাগো, জাগো, গানে মুখরিত হও! \q1 হে বারক, ওঠো! \q2 হে অবীনোয়মের পুত্র, বন্দি করো তোমার বন্দিদের।’ \b \q1 \v 13 “পরিষদবর্গের অবশিষ্টাংশ নেমে এল; \q2 সদাপ্রভুর প্রজারা আমার কাছে বিক্রমীদের বিরুদ্ধাচারী হয়ে নেমে এল। \q1 \v 14 কেউ ইফ্রয়িম থেকে এল, যাদের মূল অমালেকেতে ছিল; \q2 বিন্যামীন তোমার অনুগামীদের সহবর্তী ছিল। \q1 অধিনায়কেরা মাখীর থেকে নেমে এলেন, \q2 সেই রণ-দণ্ডধারীরা সবূলূন থেকে এলেন। \q1 \v 15 ইষাখরের নেতারা দবোরার সঙ্গী ছিলেন; \q2 হ্যাঁ, ইষাখর বারকেরও সঙ্গী ছিল, \q2 তাঁর আদেশে তাঁরা উপত্যকায় সবেগে ছুটে গেলেন। \q1 রূবেণের জেলাগুলিতে \q2 খুব অন্তর অনুসন্ধান হল। \q1 \v 16 কেন তোমরা মেষ-খোঁয়াড়ের\f + \fr 5:16 \fr*\ft অথবা, শিবিরের; বা রসদ-ভাণ্ডারের\ft*\f* মাঝে বসে রইলে \q2 শুধু মেষপালকদের বাঁশির সুর শুনবে বলে? \q1 রূবেণের জেলাগুলিতে \q2 খুব অন্তর অনুসন্ধান হল। \q1 \v 17 গিলিয়দ জর্ডনের ওপারে থেকে গেল। \q2 আর দান, কেনই বা সে জাহাজের পাশে গড়িমসি করল? \q1 আশের সমুদ্র উপকূলে থেকে গেল \q2 আর তার সেই উপসাগরে বসবাস করল। \q1 \v 18 সবূলূন-প্রজারা নিজ জীবনের ঝুঁকি নিল; \q2 নপ্তালিও তাদের দেখাদেখি সোপানক্ষেত্রে তা করল। \b \q1 \v 19 “রাজারা এলেন, যুদ্ধ করলেন, \q2 কনানের রাজারা যুদ্ধ করলেন। \q1 তানকে, মগিদ্দোর নদীতীরে, \q2 তারা রুপোর কোনো লুন্ঠিত জিনিসপত্র নেয়নি। \q1 \v 20 আকাশমণ্ডল থেকে নক্ষত্রেরা যুদ্ধ করল, \q2 তাদের কক্ষপথ থেকে সীষরার বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করল। \q1 \v 21 কীশোন নদী তাদের ভাসিয়ে দিল, \q2 যুগবাহিত সেই নদী, সেই কীশোন নদী। \q2 হে আমার প্রাণ, এগিয়ে যাও; বলীয়ান হও! \q1 \v 22 তখন অশ্ব-ক্ষুরের বজ্রনিনাদ হল— \q2 তাঁর সবল ঘোড়ার জোরে ছোটার শব্দ। \q1 \v 23 সদাপ্রভুর দূত বললেন ‘মেরোসকে অভিশাপ দাও।’ \q2 ‘তার প্রজাদের দারুণ অভিশাপ দাও, \q1 কারণ তারা সদাপ্রভুকে সাহায্য করতে আসেনি, \q2 সদাপ্রভুকে বলশালীদের বিরুদ্ধে সাহায্য করতে।’ \b \b \q1 \v 24 “নারীকুলে যায়েল পরমধন্যা, \q2 কেনীয় হেবরের স্ত্রী, \q2 তাঁবু-নিবাসী নারীকুলে পরমধন্যা। \q1 \v 25 সীষরা জল চেয়েছিলেন, আর তিনি তাঁকে দুধ দিলেন; \q2 অভিজাতদের জন্য উপযুক্ত পাত্রে তিনি দধি এনে দিলেন। \q1 \v 26 তিনি তাঁবু-খুটা হাতে তুলে নিলেন, \q2 ডান হাতে শ্রমিকদের হাতুড়ি নিলেন। \q1 তিনি সীষরাকে আঘাত করলেন, তাঁর মাথা চূর্ণ করলেন, \q2 তিনি তাঁর রগ চুরমার ও বিদ্ধ করলেন। \q1 \v 27 তিনি যায়েলের পদাবনত হলেন, \q2 পতিত হলেন; \q1 যেখানে তিনি পদাবনত হলেন, \q2 সেখানেই মরে পতিত হয়ে রইলেন। \b \q1 \v 28 “খোলা জানালা দিয়ে সীষরার মা তাকিয়েছিলেন; \q2 জাফরির পিছন থেকে তিনি চিৎকার করেছিলেন, \q1 ‘তার রথ আসতে কেন এত দেরি হচ্ছে? \q2 কেন তার রথের ঘর্ঘর-ধ্বনি বিলম্বিত?’ \q1 \v 29 তাঁর জ্ঞানবতী সহচরীরা তাঁকে উত্তর দিল; \q2 তিনি নিজেও আপনমনে কথা বললেন, \q1 \v 30 ‘ওরা কি লুন্ঠিত জিনিসপত্র পায়নি? ভাগাভাগি কি করেনি? \q2 প্রত্যেক পুরুষের জন্য একটি বা দুটি করে রমণী, \q1 সীষরার জন্য লুন্ঠিত রঙিন পোশাক, \q2 দোরোখা রঙিন পোশাক, \q1 আমার গ্রীবার জন্য উচ্চমানের দোরোখা পোশাক— \q2 লুন্ঠিত জিনিসপত্ররূপে এসবই?’ \b \b \q1 \v 31 “হে সদাপ্রভু, তোমার সব শত্রু এভাবেই বিনষ্ট হোক! \q2 কিন্তু যারা তোমায় ভালোবাসে তারা সব সেই সূর্যের মতো হোক \q2 যখন তা সপ্রতাপে উদিত হয়।” \p পরে চল্লিশ বছর দেশে শান্তি বজায় ছিল। \c 6 \s1 গিদিয়োন \p \v 1 ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল, এবং সাত বছরের জন্য তিনি তাদের মিদিয়নীয়দের হাতে সমর্পণ করলেন। \v 2 মিদিয়নীয়রা এত নিষ্ঠুর ছিল যে ইস্রায়েলীরা নিজেদের জন্য পর্বত-গহ্বরে, গুহায় ও দুর্গম স্থানে আশ্রয়স্থল তৈরি করল। \v 3 যখনই ইস্রায়েলীরা শষ্য-বীজ বপন করত, মিদিয়নীয়, অমালেকীয় এবং প্রাচ্যদেশীয় অন্যান্য জাতিরা এসে দেশ আক্রমণ করত। \v 4 তারা দেশে শিবির স্থাপন করত এবং গাজা পর্যন্ত বিস্তৃত ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে দিত। তারা ইস্রায়েলীদের জন্য কোনো জীবিত প্রাণী অবশিষ্ট রাখত না, তা সে মেষ, গবাদি পশুপাল বা গাধা, যাই হোক না কেন। \v 5 পঙ্গপালের ঝাঁকের মতো তারা তাদের পশুপাল ও তাঁবু সঙ্গে নিয়ে আসত। তাদের সংখ্যা বা তাদের উটদের সংখ্যা গোনা অসম্ভব হত; তারা দেশ ছারখার করে দেওয়ার জন্যই সেখানে আক্রমণ চালাত। \v 6 মিদিয়ন ইস্রায়েলীদের এমনভাবে নিঃস্ব করে তুলেছিল যে তারা সাহায্য লাভের আশায় সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল। \p \v 7 মিদিয়নের কারণে ইস্রায়েলীরা যখন সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল, \v 8 তখন তিনি তাদের কাছে একজন ভাববাদীকে পাঠিয়ে দিলেন, যিনি বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের দেশ থেকে তোমাদের বের করে এনেছি। \v 9 মিশরীয়দের হাত থেকে আমি তোমাদের উদ্ধার করেছি। আর আমি তোমাদের সব উপদ্রবকারীর হাত থেকে তোমাদের মুক্ত করেছি; তোমাদের সামনে থেকে আমি তাদের বিতাড়িত করেছি ও তাদের দেশটি তোমাদের দিয়েছি। \v 10 আমি তোমাদের বলেছি, ‘আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; যাদের দেশে তোমরা বসবাস করছ, সেই ইমোরীয়দের দেবতাদের আরাধনা তোমরা কোরো না।’ কিন্তু তোমরা আমার কথা শোনোনি।” \p \v 11 সদাপ্রভুর দূত অবীয়েষ্রীয় যোয়াশের অধিকারভুক্ত অফ্রায় এক ওক গাছের\f + \fr 6:11 \fr*\ft অথবা, বিশাল গাছের\ft*\f* তলায় এসে বসলেন। যোয়াশের ছেলে গিদিয়োন তখন সেখানে মিদিয়নীয়দের দৃষ্টির আড়ালে সরিয়ে রাখার জন্য এক আঙুর মাড়াই-কলে\f + \fr 6:11 \fr*\ft অথবা, পাথুরে জমিতে খোঁড়া এমন এক ধরনের গর্ত যেখানে দাঁড়িয়ে মানুষজন আঙুর মাড়াই করত\ft*\f* দাঁড়িয়ে গম মাড়াই করছিলেন। \v 12 সদাপ্রভুর দূত গিদিয়োনের কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “হে বলবান যোদ্ধা, সদাপ্রভু তোমার সহবর্তী।” \p \v 13 “হে আমার প্রভু, আমাকে ক্ষমা করুন,” গিদিয়োন উত্তর দিলেন, “কিন্তু সদাপ্রভু যদি আমাদের সহবর্তী হন, তবে আমাদের প্রতি কেন এসব কিছু ঘটল? তাঁর সেইসব অলৌকিক কাজকর্ম কোথায় গেল, যেগুলির বিষয়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের বলে শোনাতেন, ‘সদাপ্রভু কি আমাদের মিশর থেকে বের করে আনেননি?’ কিন্তু এখন সদাপ্রভু আমাদের পরিত্যাগ করেছেন এবং মিদিয়নের হাতে আমাদের সমর্পণ করে দিয়েছেন।” \p \v 14 সদাপ্রভু তাঁর দিকে ফিরে বললেন, “তোমার নিজস্ব শক্তিতেই তুমি যাও এবং মিদিয়নের হাত থেকে ইস্রায়েলকে রক্ষা করো। আমিই কি তোমাকে পাঠাচ্ছি না?” \p \v 15 “হে আমার প্রভু, আমায় ক্ষমা করুন,” গিদিয়োন উত্তর দিলেন, “আমি কীভাবে ইস্রায়েলকে রক্ষা করব? আমার বংশই মনঃশি গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল, এবং আমার পরিবারে আমিই সবচেয়ে নগণ্য।” \p \v 16 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “আমি তোমার সহবর্তী হব, এবং তুমি মিদিয়নীয়দের সবাইকে আঘাত করবে, একজনকেও জীবিত রাখবে না।” \p \v 17 গিদিয়োন উত্তর দিলেন, “এখন আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করেছি, তবে আমাকে এমন এক চিহ্ন দেখান যে সত্যি আপনিই আমার সঙ্গে কথা বলছেন। \v 18 আমি যতক্ষণ না ফিরে আসছি ও আমার নৈবেদ্য এনে আপনার কাছে উৎসর্গ করছি, ততক্ষণ দয়া করে এখান থেকে চলে যাবেন না।” \p আর সদাপ্রভু বললেন, “তুমি ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব।” \p \v 19 গিদিয়োন তাঁবুর ভিতরে গিয়ে একটি কচি পাঁঠার মাংস রান্না করলেন, এবং এক ঐফা\f + \fr 6:19 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 16 কিলোগ্রাম\ft*\f* ময়দা দিয়ে খামিরবিহীন রুটি তৈরি করলেন। একটি ডালিতে মাংস ও একটি পাত্রে ঝোল রেখে, তিনি সেগুলি বাইরে এনে ওক গাছের তলায় সেগুলি তাঁর উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন। \p \v 20 ঈশ্বরের দূত তাঁকে বললেন, “মাংস ও খামিরবিহীন রুটিগুলি নিয়ে সেগুলি এই পাষাণ-পাথরের উপরে রাখো, এবং ঝোল ঢেলে দাও।” আর গিদিয়োন সেরকমই করলেন। \v 21 পরে সদাপ্রভুর দূত তাঁর হাতে ধরা লাঠিটির ডগা দিয়ে সেই মাংস ও খামিরবিহীন রুটি স্পর্শ করলেন। পাষাণ-পাথর থেকে আগুন বের হয়ে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল এবং সেই মাংস ও রুটি গ্রাস করল। আর সদাপ্রভুর দূত অদৃশ্য হয়ে গেলেন। \v 22 গিদিয়োন যখন উপলব্ধি করলেন যে উনি সদাপ্রভুর দূত, তখন তিনি চিৎকার করে বললেন, “হায়, সার্বভৌম সদাপ্রভু! আমি যে মুখোমুখি সদাপ্রভুর দূতকে দেখলাম!” \p \v 23 কিন্তু সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “শান্তি বজায় রাখো! ভয় পেয়ো না। তুমি মরবে না।” \p \v 24 অতএব গিদিয়োন সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সেটির নাম দিলেন “সদাপ্রভু শান্তি।\f + \fr 6:24 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, যিহোবা শালোম\ft*\f*” আজও পর্যন্ত অবীয়েষ্রীয়দের অফ্রায় সেটি দাঁড়িয়ে আছে। \p \v 25 সেরাতেই সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তোমার বাবার পশুপাল থেকে সেই দ্বিতীয় বলদটি নাও, যেটির বয়স সাত বছর।\f + \fr 6:25 \fr*\ft অথবা, তোমার বাবার পশুপাল থেকে একটি পূর্ণবর্ধিত, পূর্ণবয়স্ক বলদ নাও\ft*\f* বায়ালদেবের উদ্দেশে তোমার বাবার দ্বারা নির্মিত বেদিটি ভেঙে ফেলো এবং সেটির পাশে অবস্থিত আশেরা-খুঁটিটি\f + \fr 6:25 \fr*\ft অর্থাৎ, আশেরা দেবীর কাঠের এক প্রতিমা; 26, 28 ও 30 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* কেটে নামাও। \v 26 তারপর পাহাড়-চূড়ায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে সঠিক ধরনের\f + \fr 6:26 \fr*\ft অথবা, থরে থরে সাজানো পাথরের\ft*\f* এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করো। কেটে ফেলা আশেরা-খুঁটির কাঠ ব্যবহার করে, দ্বিতীয়\f + \fr 6:26 \fr*\ft অথবা, পূর্ণবর্ধিত; 28 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* বলদটিকে এক হোমবলিরূপে উৎসর্গ করো।” \p \v 27 গিদিয়োন তাঁর দাসদের মধ্যে থেকে দশজনকে সঙ্গে নিলেন এবং সদাপ্রভুর বলা কথা অনুসারে সবকিছু করলেন। কিন্তু পরিবারকে এবং নগরবাসী অন্যান্য লোকদের ভয় করার কারণে তিনি সে কাজটি দিনে না করে রাতে করলেন। \p \v 28 সকালবেলায় নগরবাসীরা উঠে দেখল যে বায়ালদেবের বেদিটি ভেঙে ফেলা হয়েছে ও সেটির পাশে অবস্থিত আশেরা-খুঁটিটিও কেটে নামানো হয়েছে এবং সেই নবনির্মিত বেদির উপর দ্বিতীয় বলদটি উৎসর্গ করা হয়েছে! \p \v 29 তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করল, “কে এ কাজ করেছে?” \p ভালো করে যখন তারা তদন্ত করল, তখন তাদের বলা হল, “যোয়াশের ছেলে গিদিয়োন এ কাজ করেছে।” \p \v 30 নগরবাসীরা যোয়াশের কাছে দাবি জানাল, “তোমার ছেলেকে বের করে আনো। তাকে মরতে হবে, কারণ সে বায়ালদেবের বেদি ভেঙে ফেলেছে এবং সেটির পাশে অবস্থিত আশেরা-খুঁটিটিও কেটে নামিয়েছে।” \p \v 31 কিন্তু যোয়াশ তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা বৈরিতাবিশিষ্ট জনতাকে বললেন, “তোমরা কি বায়ালদেবের পক্ষে দাঁড়িয়ে ওকালতি করতে এসেছ? তোমরা কি তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করছ? যে কেউ বায়ালদেবের হয়ে লড়াই করবে, কাল সকালে তাদের মেরে ফেলা হবে! বায়াল যদি সত্যিই দেবতা হয়, তবে কেউ তার বেদি ভেঙে ফেললে সে নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।” \v 32 তাই যেহেতু গিদিয়োন বায়ালদেবের বেদি ভেঙে ফেললেন, তাই সেদিন তারা এই বলে তাঁর নাম দিল “যিরুব্বায়াল,” যে “বায়ালদেবই তার সঙ্গে বিবাদ করুন।” \p \v 33 ইত্যবসরে মিদিয়নীয়, অমালেকীয় এবং অন্যান্য প্রাচ্যদেশীয় লোকেরা সবাই সৈন্যবাহিনী একত্রিত করল এবং জর্ডন নদী পার হয়ে যিষ্রিয়েলের উপত্যকায় শিবির স্থাপন করল। \v 34 তখন সদাপ্রভুর আত্মা গিদিয়োনের উপর নেমে এলেন, এবং শিঙা বাজিয়ে তিনি অবীয়েষ্রীয়দের তাঁর অনুগামী হওয়ার জন্য ডাক দিলেন। \v 35 মনঃশি গোষ্ঠীভুক্ত এলাকার সর্বত্র তিনি দূত পাঠালেন, অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হওয়ার আহ্বান জানালেন, এবং আশের, সবূলূন ও নপ্তালি গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের কাছেও পাঠালেন, আর তারাও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেল। \p \v 36 গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, “তোমার প্রতিজ্ঞানুসারে, তুমি যদি আমার হাত দিয়েই ইস্রায়েলকে রক্ষা করতে চাও— \v 37 তবে দেখো, আমি খামারে পশমের একটি টুকরো রাখব। সেই পশমের টুকরোতেই যদি শিশির পড়ে এবং সমগ্র মাঠ শুকনো থাকে, তবেই আমি বুঝব যে আমার হাত দিয়ে তুমি ইস্রায়েলকে রক্ষা করবে, যেমনটি কি না তুমি বলেছিলে।” \v 38 আর ঠিক তাই ঘটল। পরদিন ভোরবেলায় গিদিয়োন ঘুম থেকে উঠলেন; তিনি সেই পশমের টুকরোটি নিংড়ালেন এবং নিংড়ে সেই শিশিরটুকু বের করলেন—তাতে একবাটি জল হল। \p \v 39 তখন গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, “আমার উপর ক্রুদ্ধ হোয়ো না। আমাকে আর একটিমাত্র অনুরোধ জানাতে দাও। পশম নিয়ে আমাকে আর একটি পরীক্ষা করার অনুমতি দাও, কিন্তু এবার পশমের টুকরোটিকে শুকনো করে রাখো এবং মাঠে যেন শিশির ছড়িয়ে থাকে।” \v 40 সেরাতে ঈশ্বর সেরকমই করলেন। শুধু পশমের টুকরোটি শুকনো ছিল; সমগ্র মাঠ শিশিরে ছেয়ে ছিল। \c 7 \s1 গিদিয়োন মিদিয়নীয়দের পরাজিত করেন \p \v 1 যিরুব্বায়াল (অর্থাৎ, গিদিয়োন) ও তাঁর লোকজন ভোরবেলায় উঠে হারোদ নামক জলের উৎসের কাছে শিবির স্থাপন করলেন। মিদিয়ন-শিবির স্থাপিত হল তাদের উত্তর দিকে, মোরি পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত উপত্যকায়। \v 2 সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তোমার লোকজনের সংখ্যা খুব বেশি হয়ে গিয়েছে। আমি তাদের হাতে মিদিয়নকে সমর্পণ করতে পারব না, পাছে ইস্রায়েল আমার বিরুদ্ধে অহংকার করে বলে যে, ‘আমার নিজস্ব শক্তিতেই আমি রক্ষা পেলাম।’ \v 3 এখন সৈন্যদলের কাছে ঘোষণা করে দাও, ‘যে কেউ ভয়ে কম্পিত হচ্ছে, সে পিছু ফিরে গিলিয়দ পর্বত থেকে প্রস্থান করুক।’ ” অতএব 22,000 লোক চলে গেল, আর 10,000 লোক অবশিষ্ট থাকল। \p \v 4 কিন্তু সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “এখনও অনেক বেশি লোক আছে। তাদের নিয়ে তুমি জলের উৎসের কাছে নেমে যাও, এবং সেখানে আমি পরীক্ষা করার মাধ্যমে তোমার জন্য তাদের সংখ্যা হ্রাস করব। আমি যদি বলি, ‘এই লোকটি তোমার সঙ্গে যাবে,’ তবে সে যাবে; কিন্তু যদি বলি, ‘এই লোকটি তোমার সঙ্গে যাবে না,’ তবে সে যাবে না।” \p \v 5 অতএব গিদিয়োন লোকদের নিয়ে জলের উৎসের কাছে নেমে গেলেন। সেখানে সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “যারা তাদের জিভ দিয়ে কুকুরের মতো চেটে চেটে জলপান করে, তাদের কাছ থেকে যারা নতজানু হয়ে জলপান করে, তাদের পৃথক করে দাও।” \v 6 তাদের মধ্যে 300 জন কুকুরের মতো চেটে চেটে অঞ্জলি ভরে জলপান করল। বাকি সবাই জলপান করার জন্য নতজানু হল। \p \v 7 সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “যে 300 জন লোক চেটে চেটে জলপান করেছে, তাদের দ্বারাই আমি তোমাদের রক্ষা করব এবং মিদিয়নীয়দের তোমাদের হাতে সমর্পণ করব। অন্য সবাই ঘরে ফিরে যাক।” \v 8 অতএব গিদিয়োন অন্য সব ইস্রায়েলীকে ঘরে পাঠিয়ে দিলেন কিন্তু 300 জনকে রেখে দিলেন, যারা অন্যান্য লোকদের রসদপত্র ও শিঙাগুলি হস্তগত করল। \p ইত্যবসরে মিদিয়ন তাঁর নিচের দিকে অবস্থিত উপত্যকায় শিবির স্থাপন করেছিল। \v 9 সেরাতে সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “ওঠো, শিবিরের দিকে নেমে যাও, কারণ আমি সেটি তোমার হাতেই সমর্পণ করতে যাচ্ছি। \v 10 আক্রমণ করতে যদি তোমার ভয় হয়, তবে তোমার দাস ফুরাকে সঙ্গে নিয়ে শিবিরের দিকে নেমে যাও \v 11 এবং তারা কী বলছে তা শোনো। তারপর, শিবির আক্রমণ করার জন্য তুমি উৎসাহিত হবে।” অতএব গিদিয়োন ও তাঁর দাস ফুরা শিবিরের উপকন্ঠে নেমে গেলেন। \v 12 মিদিয়নীয়, অমালেকীয় ও প্রাচ্যদেশীয় অন্যান্য সব জাতি পঙ্গপালের ঘন ঝাঁকের মতো উপত্যকা জুড়ে শিবির স্থাপন করে বসেছিল। তাদের উটগুলিও সমুদ্রতীরের বালুকণার মতো অসংখ্য ছিল। \p \v 13 একজন লোক তার বন্ধুকে যখন তার স্বপ্নের কথা বলে শোনাচ্ছিল, ঠিক তখনই গিদিয়োন সেখানে পৌঁছালেন। “আমি এক স্বপ্ন দেখেছি,” সে বলছিল। “মিদিয়নীয় শিবিরের মধ্যে গোলাকার যবের একটি রুটি গড়িয়ে এসে পড়ল। সেটি তাঁবুর গায়ে এত জোরে আঘাত করল যে তাঁবুটি উল্টে গিয়ে ধসে পড়ল।” \p \v 14 তার বন্ধু উত্তরে বলল, “এ আর কিছুই নয়, কিন্তু ইস্রায়েলী যোয়াশের ছেলে গিদিয়োনের তরোয়াল। ঈশ্বর মিদিয়নীয়দের এবং সমগ্র শিবিরকে তার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন।” \p \v 15 গিদিয়োন যখন সেই স্বপ্নের ও সেটির ব্যাখ্যা শুনলেন, তখন তিনি নতজানু হয়ে আরাধনা করলেন। তিনি ইস্রায়েল-শিবিরে ফিরে গিয়ে সবাইকে ডেকে বললেন, “ওঠো! সদাপ্রভু মিদিয়নীয় শিবির তোমাদের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন।” \v 16 সেই 300 জন লোককে তিনটি দলে বিভক্ত করে তিনি তাদের সবার হাতে শিঙা ও খালি ঘট তুলে দিলেন; আর ঘটের মধ্যে মশাল দিলেন। \p \v 17 “আমার দিকে লক্ষ্য রাখো,” তিনি তাদের বললেন। “আমি যা যা করি, তোমরাও তাই কোরো। আমি যখন শিবিরের কিনারায় যাব, তোমরাও হুবহু আমার মতো কোরো। \v 18 আমি ও যারা আমার সঙ্গে আছে—আমরা যখন আমাদের শিঙাগুলি বাজাব, তখন তোমরাও শিবিরের চারিদিক থেকে শিঙা বাজিয়ো এবং চিৎকার করে বোলো, ‘সদাপ্রভুর জন্য এবং গিদিয়োনের জন্য।’ ” \p \v 19 রাতের মধ্যম প্রহরের শুরুতে, ঠিক যখন পাহারাদারদের পালা-বদল হল, তারপরেই গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গে থাকা একশো জন লোক শিবিরের কিনারায় পৌঁছে গেলেন। তাঁরা শিঙা বাজালেন এবং তাঁদের হাতে ধরা ঘটগুলি ভেঙে ফেললেন। \v 20 তিনটি দলই শিঙা বাজালো ও ঘট ভেঙে ফেলল। তারা তাদের বাঁ হাতে মশাল নিয়ে ও ডান হাতে বাজানোর উপযোগী শিঙা ধরে, চিৎকার করে উঠল, “সদাপ্রভুর ও গিদিয়োনের তরোয়াল!” \v 21 প্রত্যেকে যখন শিবির ঘিরে ধরে নিজের নিজের অবস্থান নিল, তখন মিদিয়নীয়রা ভয়ে চিৎকার করতে করতে ছুটে পালালো। \p \v 22 300-টি শিঙা যখন বেজে উঠল, তখন সদাপ্রভু শিবিরের সর্বত্র লোকদের পরস্পরের বিরুদ্ধে তরোয়াল নিয়ে যুদ্ধ করতে উসকানি দিলেন। সৈন্যদল টব্বতের কাছাকাছি অবস্থিত আবেল-মহোলার সীমানা পর্যন্ত গিয়ে, সরোরার দিকে বেথ-শিট্টায় পালিয়ে গেল। \v 23 নপ্তালি, আশের ও মনঃশি গোষ্ঠীভুক্ত এলাকা থেকে ইস্রায়েলীদের ডেকে আনা হল, এবং তারা মিদিয়নীয়দের পশ্চাদ্ধাবন করল। \v 24 গিদিয়োন এই বলে ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের সর্বত্র দূত পাঠালেন, “মিদিয়নীয়দের বিরুদ্ধে নেমে এসো এবং তাদের সামনের দিকে বেথ-বারা পর্যন্ত বিস্তৃত জর্ডন নদীর জলসেচিত এলাকাটি দখল করো।” \p তখন ইফ্রয়িমের সব লোকজনকে ডেকে আনা হল এবং তারা বেথ-বারা পর্যন্ত বিস্তৃত জর্ডন নদীর জলসেচিত এলাকাটি দখল করল। \v 25 তারা ওরেব ও সেব, এই দুই মিদিয়নীয় নেতাকে বন্দি করল। তারা ওরেবকে ওরেব নামক পর্বতে ও সেবকে সেব নামক আঙুর মাড়াই-কলের কাছে হত্যা করল। তারা মিদিয়নীয়দের পশ্চাদ্ধাবন করল এবং ওরেবের ও সেবের মুণ্ডু দুটি গিদিয়োনের কাছে নিয়ে এল; তিনি তখন জর্ডন নদীতীরে দাঁড়িয়েছিলেন। \c 8 \s1 সেবহ এবং সল্‌মুন্ন \p \v 1 ইত্যবসরে ইফ্রয়িমীয়েরা গিদিয়োনকে জিজ্ঞাসা করল, “আপনি আমাদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করলেন কেন? মিদিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাওয়ার সময় আপনি আমাদের ডাকলেন না কেন?” আর তারা গিদিয়োনের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ করল। \p \v 2 কিন্তু গিদিয়োন তাদের উত্তর দিলেন, “তোমাদের তুলনায় আমি এমন কী-ই বা পেয়েছি? অবীয়েষরের দ্রাক্ষাফল-চয়নের পূর্ণ শস্যচ্ছেদনের তুলনায় ইফ্রয়িমের বাগানে পরিত্যক্ত দ্রাক্ষাফল কুড়ানোই কি ভালো নয়? \v 3 মিদিয়নীয় দুই নেতা ওরেব ও সেবকে ঈশ্বর তোমাদের হাতে সমর্পণ করেছেন। তোমাদের তুলনায় আমি এমন কী-ই বা করতে পেরেছি?” এতে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা তাদের অসন্তোষ প্রশমিত হল। \p \v 4 গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গে থাকা 300 জন লোক ক্লান্ত অবস্থাতেও মিদিয়নীয়দের পশ্চাদ্ধাবন করতে করতে জর্ডন নদীর কাছে এসে তা পার হয়ে গেলেন। \v 5 তিনি সুক্কোতের লোকদের বললেন, “আমার সৈন্যবাহিনীর লোকদের কিছু রুটি দাও; তারা শ্রান্ত-ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, এবং এখনও আমি মিদিয়নের দুই রাজা, সেবহ ও সল্‌মুন্নার পশ্চাদ্ধাবন করে যাচ্ছি।” \p \v 6 কিন্তু সুক্কোতের কর্মকর্তারা বললেন, “সেবহ ও সল্‌মুন্নাকে আপনি কি বন্দি করতে পেরেছেন? আমরা কেন আপনার সৈন্যবাহিনীর লোকদের রুটি দেব?” \p \v 7 তখন গিদিয়োন উত্তর দিলেন, “ঠিক আছে, যখন সদাপ্রভু সেবহ ও সল্‌মুন্নাকে আমার হাতে সমর্পণ করবেন, আমি তখন মরুভূমির কাঁটাগাছ ও শিয়ালকাঁটা দিয়ে তোমাদের শরীর ছিন্নভিন্ন করে দেব।” \p \v 8 সেখান থেকে তিনি পনূয়েলে\f + \fr 8:8 \fr*\ft অথবা, পেনীয়েল; 9 ও 17 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* গেলেন এবং সেখানকার লোকদের কাছেও একই অনুরোধ জানালেন, কিন্তু তারাও সুক্কোতের লোকদের মতোই উত্তর দিল। \v 9 তাই গিদিয়োন পনূয়েলের লোকদের বললেন, “আমি যখন বিজয়ী হয়ে ফিরে আসব, তখন আমি এই মিনারটি চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলব।” \p \v 10 ইত্যবসরে সেবহ ও সল্‌মুন্না প্রায় 15,000 সৈন্য নিয়ে কর্কোরে ছিলেন। প্রাচ্যদেশীয় লোকদের সৈন্যবাহিনীতে এতজনই অবশিষ্ট ছিল। 1,20,000 তরোয়ালধারী যোদ্ধা নিহত হল। \v 11 গিদিয়োন নোবহের ও যগ্‌বিহের পূর্বদিকে যাযাবরদের পথ ধরে উঠে গিয়ে সেই অসন্দিগ্ধ সৈন্যবাহিনীকে আক্রমণ করলেন। \v 12 মিদিয়নের দুই রাজা, সেবহ ও সল্‌মুন্না পালিয়ে গেলেন, কিন্তু গিদিয়োন তাঁদের পশ্চাদ্ধাবন করে তাঁদের ধরে ফেললেন এবং তাঁদের সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দিলেন। \p \v 13 পরে যোয়াশের ছেলে গিদিয়োন যুদ্ধ সাঙ্গ করে হেরসের গিরিপথ ধরে ফিরে এলেন। \v 14 সুক্কোতের এক যুবককে ধরে তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, এবং সেই যুবকটি তাঁর কাছে সুক্কোতের সাতাত্তর জন কর্মকর্তার, নগরের প্রাচীনদের নাম লিখে দিল। \v 15 পরে গিদিয়োন এসে সুক্কোতের লোকদের বললেন, “এই দেখো সেই সেবহ ও সল্‌মুন্না, যাদের বিষয়ে তোমরা আমাকে বিদ্রুপ করে বলেছিলে, ‘সেবহ ও সল্‌মুন্নকে আপনি কি বন্দি করতে পেরেছেন? আমরা কেন আপনার শ্রান্ত-ক্লান্ত লোকদের রুটি দেব?’ ” \v 16 তিনি সেই নগরের প্রাচীনদের ধরলেন এবং মরুভূমির কাঁটাগাছ ও শিয়ালকাঁটা দিয়ে তিনি সুক্কোতের লোকজনকে শাস্তি দেওয়ার দ্বারা তাদের উচিত শিক্ষা দিলেন। \v 17 এছাড়াও তিনি পনূয়েলের মিনারটি চূর্ণবিচূর্ণ করে দিলেন এবং সেই নগরবাসীদের হত্যা করলেন। \p \v 18 পরে তিনি সেবহ ও সল্‌মুন্নাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তাবোরে আপনারা যাদের হত্যা করেছিলেন, তাঁরা কী ধরনের লোক?” \p “আপনারই মতো লোক,” তারা উত্তর দিলেন, “প্রত্যেকের চেহারা রাজপুত্রের মতো।” \p \v 19 গিদিয়োন উত্তর দিলেন, “তারা আমার ভাই, আমারই সহোদর। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আপনারা যদি তাদের জীবিত রাখতেন, তবে আমি আপনাদের হত্যা করতাম না।” \v 20 তাঁর বড়ো ছেলে যেথরকে তিনি বললেন, “এদের হত্যা করো।” কিন্তু যেথর তার খাপ থেকে তরোয়াল বের করল না, কারণ সে ছেলেমানুষ ছিল, তাই ভয় পেয়েছিল। \p \v 21 সেবহ ও সল্‌মুন্না বললেন, “আসুন, আপনি নিজেই তা করুন, ‘যে যেমন, তার তেমনই শক্তি।’ ” অতএব গিদিয়োন এগিয়ে গিয়ে তাঁদের হত্যা করলেন, এবং তাঁদের উটগুলির গলা থেকে অলংকারগুলি খুলে নিলেন। \s1 গিদিয়োনের এফোদ \p \v 22 ইস্রায়েলীরা গিদিয়োনকে বলল, “আপনি, আপনার ছেলে, এবং নাতি—আপনারা আমাদের উপর রাজত্ব করুন, কারণ আপনিই মিদিয়নের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।” \p \v 23 কিন্তু গিদিয়োন তাদের বললেন, “আমি তোমাদের উপর রাজত্ব করব না, আমার ছেলেও করবে না। সদাপ্রভুই তোমাদের উপর রাজত্ব করবেন।” \v 24 তিনি আরও বললেন, “আমার একটি অনুরোধ আছে, তোমাদের প্রাপ্য লুন্ঠিত জিনিসপত্রের মধ্যে থেকে প্রত্যেকে আমাকে একটি করে কানের দুল এনে দাও।” (ইশ্মায়েলীদের মধ্যে সোনার দুল পরার প্রথা ছিল।) \p \v 25 তারা উত্তর দিল, “সেগুলি দিলে আমাদের ভালোই লাগবে।” অতএব তারা একটি কাপড় পেতে দিল, এবং প্রত্যেকে তাতে তাদের লুট করা এক-একটি দুল ছুঁড়ে দিল। \v 26 যেসব সোনার দুল তিনি চেয়েছিলেন, তার ওজন হল 1,700 শেকল।\f + \fr 8:26 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 20 কিলোগ্রাম\ft*\f* অলংকারাদি, ঝুমকো ও মিদিয়নীয় রাজাদের পরিধেয় বেগুনি রংয়ের পোশাক অথবা তাঁদের উটগুলির গলার হারগুলি এর মধ্যে গণ্য হয়নি। \v 27 সেই সোনা দিয়ে গিদিয়োন একটি এফোদ তৈরি করলেন, এবং সেটি তিনি তাঁর নিজের নগর অফ্রাতে নিয়ে গিয়ে রাখলেন। সমগ্র ইস্রায়েল সেখানে সেই এফোদের আরাধনা করার দ্বারা বেশ্যাবৃত্তি করল, এবং সেটি গিদিয়োন ও তাঁর পরিবারের কাছে ফাঁদ হয়ে দাঁড়াল। \s1 গিদিয়োনের মৃত্যু \p \v 28 এইভাবে মিদিয়ন ইস্রায়েলীদের কাছে বশীভূত হল এবং আর কখনও তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। গিদিয়োনের জীবনকালে দেশে চল্লিশ বছর শান্তি বজায় ছিল। \p \v 29 যোয়াশের ছেলে যিরুব্বায়াল ঘরে বসবাস করতে চলে গেলেন। \v 30 তাঁর নিজের সত্তরটি ছেলে ছিল, কারণ তাঁর অনেক স্ত্রী ছিল। \v 31 শিখিমে বসবাসকারী গিদিয়োনের এক উপপত্নীও তাঁর জন্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিল, যার নাম তিনি রেখেছিলেন অবীমেলক। \v 32 যোয়াশের ছেলে গিদিয়োন যথেষ্ট বৃদ্ধাবস্থায় মারা গেলেন এবং অবীয়েষ্রীয়দের অফ্রাতে তাঁর বাবা যোয়াশের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল। \p \v 33 গিদিয়োন মারা যেতে না যেতেই ইস্রায়েলীরা আবার বায়ালের উদ্দেশে বেশ্যাবৃত্তি করল। তারা বায়াল-বরীৎকে তাদের দেবতারূপে প্রতিষ্ঠিত করল \v 34 এবং তাদের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুকে মনে রাখল না, যিনি তাদের চারপাশের সব শত্রুর হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছিলেন। \v 35 যিরুব্বায়াল (অর্থাৎ, গিদিয়োন) তাদের জন্য এত মঙ্গলজনক কাজ করা সত্ত্বেও, তারা তাঁর পরিবারের প্রতি কোনও আনুগত্য দেখায়নি। \c 9 \s1 অবীমেলক \p \v 1 যিরুব্বায়ালের ছেলে অবীমেলক শিখিমে তার মামাদের কাছে গিয়ে তাদের এবং তার মায়ের গোষ্ঠীভুক্ত সব লোকজনকে বলল, \v 2 “তোমরা শিখিমের সব নাগরিককে জিজ্ঞাসা করো, ‘তোমাদের পক্ষে কোনটি ভালো: তোমাদের উপরে যিরুব্বায়ালের সত্তরজন ছেলের কর্তৃত্ব করা, না শুধু একজনের?’ মনে রেখো, আমি তোমাদের রক্তমাংসের আত্মীয়।” \p \v 3 তার মায়ের আত্মীয়েরা তার এই কথাগুলি শিখিমের লোকদের কাছে বলাতে তারা অবীমেলকের অনুগামী হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল, কারণ তারা বলল, “উনি তো আমাদের আত্মীয়।” \v 4 তারা বায়াল-বরীতের মন্দির থেকে সত্তর শেকল\f + \fr 9:4 \fr*\ft অথবা, প্রায় 800 গ্রাম\ft*\f* রুপো এনে অবীমেলককে উপহার দিল, এবং অবীমেলক বেপরোয়া ও নীচমনা কিছু লোককে ভাড়া করার জন্য সেই রুপো ব্যবহার করল, ও তারা তার অনুগামী হল। \v 5 সে অফ্রায় তার বাবার ঘরে গিয়ে যিরুব্বায়ালের ছেলেদের, তার সত্তরজন ভাইকে একটি পাষাণ-পাথরের উপরে হত্যা করল। কিন্তু যিরুব্বায়ালের ছোটো ছেলে যোথম লুকিয়ে পালিয়েছিলেন। \v 6 পরে শিখিম ও বেথ-মিল্লোর সব নাগরিক শিখিমের সেই বিশাল গাছটির পাশে অবস্থিত স্তম্ভের কাছে একত্রিত হয়ে অবীমেলককে রাজপদে অভিষিক্ত করল। \p \v 7 যোথম একথা শুনতে পেয়ে গরিষীম পর্বতের চূড়ায় গিয়ে উঠলেন এবং চিৎকার করে তাদের বললেন, “হে শিখিমের নাগরিকেরা, তোমরা আমার কথা শোনো, যেন ঈশ্বরও তোমাদের কথা শোনেন। \v 8 একদিন গাছেরা তাদের জন্য একজন রাজাকে অভিষিক্ত করতে গেল। তারা জলপাই গাছকে বলল, ‘তুমি আমাদের রাজা হও।’ \p \v 9 “কিন্তু জলপাই গাছ তাদের বলল, ‘আমার যে তেল দ্বারা দেবতা ও মানুষেরা সম্মানিত হয়, তা ত্যাগ করে আমি কি গাছদের উপর দুলতে থাকব?’ \p \v 10 “তারপর, গাছেরা ডুমুর গাছকে বলল, ‘এসো, তুমি আমাদের রাজা হও।’ \p \v 11 “কিন্তু ডুমুর গাছ উত্তর দিল, ‘আমি কি গাছেদের উপর দুলবার জন্য আমার ভালো ও মিষ্টি ফল উৎপন্ন করা ছেড়ে দেব?’ \p \v 12 “গাছেরা তখন দ্রাক্ষালতাকে বলল, ‘তুমি এসে আমাদের উপর রাজত্ব করো।’ \p \v 13 “কিন্তু দ্রাক্ষালতা বলল, ‘আমার যে দ্রাক্ষারস মানুষ ও দেবতাদের আমোদিত করে, তা উৎপন্ন না করে, আমি কি গাছেদের উপর দুলবো?’ \p \v 14 “শেষে সব গাছ কাঁটাঝোপকে বলল, ‘তুমি এসো, আমাদের রাজা হও।’ \p \v 15 “কাঁটাঝোপ গাছেদের বলল, ‘তোমরা যদি সত্যিই আমাকে তোমাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করতে চাও, তবে এসো ও আমার ছায়ায় আশ্রয় নাও; কিন্তু যদি না নাও, তবে এই কাঁটাঝোপ থেকে আগুন বের হয়ে এসে লেবাননের দেবদারু গাছগুলিকে গ্রাস করুক।’ \p \v 16 “অবীমেলককে রাজা করে তোমরা কি সম্মানজনক ও যথার্থ আচরণ করেছ? তোমরা কি যিরুব্বায়াল ও তাঁর পরিবারের প্রতি সদাচরণ করেছ? তোমাদের এই ব্যবহার কি তাঁর প্রাপ্য ছিল? \v 17 মনে রেখো যে আমার বাবা তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মিদিয়নীয়দের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করেছিলেন। \v 18 কিন্তু আজ তোমরা আমার বাবার পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছো। একটিই পাথরের উপরে তোমরা তাঁর সত্তরজন ছেলেকে হত্যা করেছ এবং তাঁর ক্রীতদাসীর ছেলে অবীমেলককে শিখিমের নাগরিকদের উপরে রাজা করেছ, যেহেতু সে তোমাদের আত্মীয়। \v 19 অতএব তোমরা কি আজ যিরুব্বায়াল ও তাঁর পরিবারের প্রতি সম্মানজনক ও যথার্থ আচরণ করেছ? যদি তা করে থাকো, তবে অবীমেলককে নিয়ে তোমরা আনন্দ করো, এবং সেও তোমাদের নিয়ে আনন্দ করুক! \v 20 কিন্তু যদি তা না করে থাকো, তবে অবীমেলকের কাছ থেকে আগুন বের হয়ে আসুক এবং তোমাদের, ও শিখিম ও বেথ-মিল্লোর নাগরিকদের গ্রাস করুক, এবং তোমাদের ও শিখিম ও বেথ-মিল্লোর নাগরিকদের কাছ থেকেও আগুন বের হয়ে আসুক ও অবীমেলককে গ্রাস করুক!” \p \v 21 পরে যোথম পালিয়ে গেলেন ও বেরে পৌঁছালেন এবং সেখানেই বসবাস করতে লাগলেন যেহেতু তিনি তাঁর ভাই অবীমেলককে ভয় পেয়েছিলেন। \p \v 22 অবীমেলক ইস্রায়েলীদের উপর তিন বছর রাজত্ব করার পর, \v 23 ঈশ্বর অবীমেলক ও শিখিমের নাগরিকদের মধ্যে এমন শত্রুতা উৎপন্ন করলেন যে তারা অবীমেলকের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করল। \v 24 ঈশ্বর এরকমটি করলেন যেন যিরুব্বায়ালের সত্তরজন ছেলের বিরুদ্ধে সম্পন্ন অপরাধের, তাদের রক্তপাতের দায় তাদের ভাই অবীমেলক এবং শিখিমের সেই নাগরিকদের উপর বর্তায়, যারা তার ভাইদের হত্যা করার সময় তাকে সাহায্য করেছিল। \v 25 অবীমেলকের বিরুদ্ধাচরণ করে শিখিমের নাগরিকরা পর্বতের চূড়ায় চূড়ায় গোপনে লোকদের ঘাঁটি গেড়ে বসিয়ে দিল এবং সেখান দিয়ে যাওয়া প্রত্যেকের সবকিছু তারা লুট করতে লাগল। আর এই খবরটি অবীমেলককে জানানো হল। \p \v 26 এদিকে এবদের ছেলে গাল তার আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে শিখিমের দিকে এগিয়ে গেল, এবং সেখানকার নাগরিকরা তার উপর আস্থা স্থাপন করল। \v 27 ক্ষেতে গিয়ে দ্রাক্ষাফল সংগ্রহ করার ও সেগুলি মাড়াই করার পরে তারা তাদের দেবতার মন্দিরে উৎসব উদ্‌যাপন করল। ভোজনপান করতে করতে তারা অবীমেলককে অভিশাপ দিল। \v 28 পরে এবদের ছেলে গাল বলল, “অবীমেলক কে, আর আমরা শিখিমীয়রা কেন তার বশ্যতাস্বীকার করব? সে কি যিরুব্বায়ালের ছেলে নয় ও সবূল কি তার সহকারী নয়? শিখিমের বাবা হমোরের পরিবারের সেবা করো! আমরা কেন অবীমেলকের সেবা করব? \v 29 যদি শুধু এই লোকেরা আমার নিয়ন্ত্রণাধীন থাকত! তবে আমি তার হাত থেকে রেহাই পেতাম। আমি অবীমেলককে বলতাম, ‘তোমার সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে ডেকে আনো!’ ”\f + \fr 9:29 \fr*\ft অথবা, পরে সে অবীমেলককে বলল, “তোমার সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে ডেকে আনো।”\ft*\f* \p \v 30 এবদের ছেলে গাল কী বলেছিল, তা যখন নগরাধ্যক্ষ সবূল শুনতে পেল, তখন সে ভীষণ ক্রুদ্ধ হল। \v 31 গোপনে সে অবীমেলকের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, “এবদের ছেলে গাল ও তার আত্মীয়েরা শিখিমে এসেছে এবং তারা আপনার বিরুদ্ধে নগরের লোকদের উত্তেজিত করে তুলছে। \v 32 তাই এখন, রাতের বেলায় আপনাকে ও আপনার লোকজনদের আসতে হবে ও ক্ষেতে লুকিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। \v 33 সকালে সূর্যোদয়ের সময় নগরের বিরুদ্ধে আপনারা এগিয়ে যাবেন। যখন গাল ও তার লোকজন আপনাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে আসবে, তখন তাদের আক্রমণ করার যে সুযোগ পাবেন তার সদব্যবহার করবেন।” \p \v 34 অতএব অবীমেলক ও তার সব সৈন্যসামন্ত রাতের বেলায় উঠে চার দলে বিভক্ত হয়ে শিখিমের কাছে লুকিয়ে থাকল। \v 35 এদিকে অবীমেলক ও তার সৈন্যসামন্ত যখন তাদের গোপন আস্তানা থেকে বের হয়ে আসছিল ঠিক তখনই এবদের ছেলে গাল বাইরে বেরিয়ে নগরের প্রবেশদ্বারে এসে দাঁড়িয়ে গেল। \p \v 36 গাল যখন তাদের দেখল, তখন সে সবূলকে বলল, “দেখো, পর্বত-চূড়াগুলি থেকে লোকেরা নেমে আসছে!” \p সবূল উত্তর দিল, “তুমি পর্বতের ছায়াকে মানুষ বলে মনে করে ভুল করছ।” \p \v 37 কিন্তু গাল আবার বলে উঠল: “দেখো, পাহাড়ের মাঝখান থেকে লোকেরা নিচে নেমে আসছে,\f + \fr 9:37 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই বাগ্‌ধারার অর্থ হল পৃথিবীর নাভিকুণ্ডলী\ft*\f* এবং গণকদের গাছের দিক থেকেও একদল লোক চলে আসছে।” \p \v 38 তখন সবূল তাকে বলল, “তোমার হামবড়াইমার্কা কথাবার্তা এখন কোথায় গেল, তুমিই তো বলেছিলে, ‘অবীমেলক কে যে আমাদের তার নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে?’ এই লোকদেরই কি তুমি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করোনি? যাও, ও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো!” \p \v 39 অতএব গাল শিখিমের নাগরিকদের নেতৃত্ব দিল\f + \fr 9:39 \fr*\ft অথবা, গাল শিখিমের নাগরিকদের দৃষ্টিগোচরে বাইরে গেল\ft*\f* এবং অবীমেলকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। \v 40 অবীমেলক নগরের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত তাকে তাড়া করে গেল, এবং পালানোর সময় তাদের মধ্যে অনেকেই নিহত হল। \v 41 পরে অবীমেলক অরূমায় গিয়ে বসবাস করল, এবং সবূল গাল ও তার দলবলকে শিখিম থেকে তাড়িয়ে দিল। \p \v 42 পরদিন শিখিমের লোকেরা ক্ষেতে বের হয়ে গেল, ও এই খবরটি অবীমেলকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল। \v 43 অতএব সে তার লোকজনদের নিয়ে, তাদের তিনটি দলে বিভক্ত করে ক্ষেতে গোপনে ঘাঁটি গেড়ে থাকল। সে যখন দেখল যে লোকেরা নগর থেকে বেরিয়ে আসছে, তখন সে তাদের আক্রমণ করার জন্য উঠে পড়ল। \v 44 অবীমেলক এবং তার সঙ্গে থাকা দলবল, তাড়াতাড়ি সামনে এগিয়ে গিয়ে নগরের প্রবেশদ্বারের কাছে নিজেদের অবস্থান নিল। তখন দুটি দল ক্ষেতে থাকা লোকদের আক্রমণ করে তাদের হত্যা করল। \v 45 সারাটি দিন ধরে ততক্ষণ অবীমেলক সেই নগরের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে গেল যতক্ষণ না সে সেটি দখল করে সেখানকার সব লোককে বধ করল। পরে সে নগরটি ধ্বংস করে সেটির উপর লবণ ছড়িয়ে দিল। \p \v 46 এই খবর শুনে, শিখিমের মিনারের নাগরিকেরা এল্-বরীতের মন্দিরের দুর্গে প্রবেশ করল। \v 47 অবীমেলক যখন শুনল যে তারা সেখানে সমবেত হয়েছে, \v 48 তখন সে এবং তার সব লোকজন সল্‌মন পর্বতে উঠে গেল। সে একটি কুড়ুল নিয়ে গাছের কয়েকটি ডালপালা কেটে, সেগুলি তার কাঁধে তুলে নিল। তার সঙ্গে থাকা লোকদের সে আদেশ দিল, “তাড়াতাড়ি করো! আমাকে যা করতে দেখছ, তোমরাও তাই করো!” \v 49 অতএব সব লোকজন গাছের ডালপালাগুলি কেটে নিয়ে অবীমেলকের অনুগামী হল। দুর্গের চারপাশে তারা সেই ডালপালাগুলি স্তূপাকারে রেখে তাতে আগুন ধরিয়ে দিল আর লোকজন তখনও সেই দুর্গের ভিতরেই ছিল। অতএব শিখিমের দুর্গের ভিতরে থাকা সব লোকজন, প্রায় 1,000 জন নারী-পুরুষও মারা গেল। \p \v 50 এরপর অবীমেলক তেবেসে গেল এবং সেটি অবরুদ্ধ করে তা দখল করে নিল। \v 51 সেই নগরের মধ্যে, অবশ্য, একটি মজবুত দুর্গ ছিল। সব নারী-পুরুষ—নগরের সব লোকজন—পালিয়ে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নিল। তারা ভিতর থেকে নিজেদের তালাবন্ধ করে দুর্গের ছাদে উঠে গেল। \v 52 অবীমেলক দুর্গের কাছে গিয়ে সেটি আক্রমণ করল। কিন্তু যেই না সে দুর্গে আগুন লাগানোর জন্য দুর্গ-দুয়ারের দিকে গেল, \v 53 একজন স্ত্রীলোক তার মাথায় জাঁতা-পাথরের উপরের এক পাটি ফেলে দিল এবং তার মাথার খুলি ফাটিয়ে দিল। \p \v 54 তখন অবীমেলক তাড়াতাড়ি তার অস্ত্র-বহনকারীকে ডেকে বলল, “তুমি তরোয়াল টেনে বের করো ও আমাকে হত্যা করো, যেন তারা বলতে না পারে যে, ‘একজন স্ত্রীলোক তাকে হত্যা করেছে।’ ” অতএব তার দাস তাকে বিদ্ধ করল, ও সে মারা গেল। \v 55 ইস্রায়েলীরা যখন দেখল যে অবীমেলক মারা গিয়েছে, তখন তারা স্বদেশে ফিরে গেল। \p \v 56 এইভাবে ঈশ্বর অবীমেলকের সেই দুষ্টতার প্রতিফল তাকে দিলেন, যা সে তার সত্তরজন ভাইকে হত্যা করার মাধ্যমে তার বাবার প্রতি করেছিল। \v 57 আবার শিখিমের লোকদের সব দুষ্টতার প্রতিফলও ঈশ্বর তাদের দিলেন। যিরুব্বায়ালের ছেলে যোথমের অভিশাপ তাদের উপরে বর্তালো। \c 10 \s1 তোলয় \p \v 1 অবীমেলকের পরে ইস্রায়েলকে রক্ষা করার জন্য ইষাখর গোষ্ঠীভুক্ত তোলয় নামক একজন লোক উত্থাপিত হলেন; তিনি দোদয়ের নাতি ও পূয়ার ছেলে। তিনি ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের শামীরে বসবাস করতেন। \v 2 তেইশ বছর তিনি ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন;\f + \fr 10:2 \fr*\ft ঐতিহ্যসম্মতরূপে, বিচার করলেন\ft*\f* পরে তিনি মারা গেলেন, এবং শামীরেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। \s1 যায়ীর \p \v 3 তাঁর পরে এলেন গিলিয়দীয় যায়ীর, যিনি বাইশ বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 4 তাঁর ত্রিশজন ছেলে ছিল, যারা ত্রিশটি গাধার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াত। গিলিয়দে ত্রিশটি নগর তারা নিয়ন্ত্রণ করত, যেগুলি আজও হবোৎ-যায়ীর\f + \fr 10:4 \fr*\ft অথবা, যায়ীরের উপনিবেশ\ft*\f* নামে পরিচিত। \v 5 যায়ীর মারা যাওয়ার পর তাঁকে কমোনে কবর দেওয়া হল। \s1 যিপ্তহ \p \v 6 ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল। তারা বায়াল-দেবতাদের, অষ্টারোৎ দেবীদের, এবং অরামের দেবতাদের, সীদোনের দেবতাদের, মোয়াবের দেবতাদের, অম্মোনীয়দের দেবতাদের ও ফিলিস্তিনীদের দেবতাদের সেবা করতে লাগল। আর যেহেতু ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করল এবং আর তাঁর সেবা করল না, \v 7 তাই তাদের বিরুদ্ধে তিনি ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি সেই ফিলিস্তিনী ও অম্মোনীয়দের হাতে তাদের বিক্রি করে দিলেন, \v 8 যারা সেই বছর তাদের চূর্ণবিচূর্ণ ও সর্বনাশ করে ছাড়লো। ইমোরীয়দের দেশ গিলিয়দে, জর্ডন নদীর পূর্বপারে বসবাসকারী সব ইস্রায়েলীর উপরে তারা আঠারো বছর ধরে দমনপীড়ন চালাল। \v 9 অম্মোনীয়রাও যিহূদা, বিন্যামীন ও ইফ্রয়িমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জর্ডন নদী পার হয়ে আসত; ইস্রায়েল চরম দুর্দশাগ্রস্ত হল। \v 10 তখন ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে বলল, “আমরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, আমাদের ঈশ্বরকে ত্যাগ করেছি ও বায়াল-দেবতাদের সেবা করেছি।” \p \v 11 সদাপ্রভু তাদের উত্তর দিলেন, “যখন মিশরীয়, ইমোরীয়, অম্মোনীয়, ফিলিস্তিনী, \v 12 সীদোনীয়, অমালেকীয় ও মায়োনীয়রা\f + \fr 10:12 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, মিদিয়নীয়রা\ft*\f* তোমাদের উপর দমনপীড়ন চালাচ্ছিল এবং তোমরা আমার কাছে সাহায্য চেয়ে কেঁদেছিলে, তখন কি আমি তাদের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করিনি? \v 13 কিন্তু তোমরা আমাকে ত্যাগ করে অন্যান্য দেবতাদের সেবা করলে, তাই আমি আর তোমাদের রক্ষা করব না। \v 14 যাও ও সেই দেবতাদের কাছে গিয়ে কাঁদো যাদের তোমরা মনোনীত করেছিলে। সংকটের সময় তারাই তোমাদের রক্ষা করুক!” \p \v 15 কিন্তু ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুকে বলল, “আমরা পাপ করেছি। তোমার যা ভালো বলে মনে হয়, আমাদের প্রতি তাই করো, কিন্তু দয়া করে এখন আমাদের রক্ষা করো।” \v 16 পরে তারা তাদের মধ্যে থাকা বিজাতীয় দেবতাদের দূর করে দিল ও সদাপ্রভুর সেবা করল। ইস্রায়েলের এই দুর্দশা আর তিনি সহ্য করতে পারলেন না। \p \v 17 অম্মোনীয়রা যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গিলিয়দে শিবির স্থাপন করার জন্য আহূত হল, তখন ইস্রায়েলীরাও মিস্‌পাতে সমবেত হয়ে শিবির স্থাপন করল। \v 18 গিলিয়দের অধিবাসীদের নেতারা পরস্পর বলাবলি করল, “যে কেউ অম্মোনীয়দের আক্রমণ করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে, সেই হবে সেইসব লোকজনের সর্দার, যারা গিলিয়দে বসবাস করে।” \c 11 \p \v 1 গিলিয়দীয় যিপ্তহ ছিলেন এক শক্তিমান যোদ্ধা। তাঁর বাবার নাম গিলিয়দ; তাঁর মা ছিল এক বেশ্যা। \v 2 গিলিয়দের স্ত্রীও তাঁর জন্য কয়েকটি ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন, এবং তারা যখন বেড়ে উঠল, তখন তারা যিপ্তহকে তাড়িয়ে দিল। “আমাদের পরিবারে তুমি কোনও উত্তরাধিকার পাবে না,” তারা বলল, “কারণ তুমি অন্য এক মহিলার ছেলে।” \v 3 অতএব যিপ্তহ তাঁর ভাইদের কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন ও সেই টোব দেশে বসতি স্থাপন করলেন, যেখানে একদল ইতর দুর্বৃত্ত লোক তাঁর চারপাশে সমবেত হয়ে তাঁর অনুগামী হল। \p \v 4 কিছুকাল পর, অম্মোনীয়রা যখন ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল, \v 5 তখন অম্মোনীয়দের সাথে যুদ্ধ করার জন্য গিলিয়দের প্রাচীনেরা টোব দেশ থেকে যিপ্তহকে আনতে গেলেন। \v 6 “এসো,” তাঁরা যিপ্তহকে বললেন, “তুমি আমাদের সেনাপতি হও, যেন আমরা অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারি।” \p \v 7 যিপ্তহ তাঁদের বললেন, “আপনারা কি আমাকে ঘৃণা করে আমার বাবার বাড়ি থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেননি? এখন যখন অসুবিধায় পড়েছেন, তখন কেন আমার কাছে এসেছেন?” \p \v 8 গিলিয়দের প্রাচীনেরা তাঁকে বললেন, “তা সত্ত্বেও, আমরা এখন তোমার কাছে ফিরে এসেছি; অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে এসো, এবং আমরা যারা গিলিয়দে বসবাস করি, তুমি আমাদের সকলের সর্দার হবে।” \p \v 9 যিপ্তহ উত্তর দিলেন, “ধরে নিন আপনারা অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন এবং সদাপ্রভু আমার হাতে তাদের সমর্পণ করলেন—সেক্ষেত্রে আমি কি সত্যিই আপনাদের সর্দার হব?” \p \v 10 গিলিয়দের প্রাচীনেরা তাঁকে উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু আমাদের সাক্ষী; আমরা নিশ্চয় তোমার কথামতোই কাজ করব।” \v 11 অতএব যিপ্তহ গিলিয়দের প্রাচীনদের সঙ্গে গেলেন, এবং লোকেরা তাঁকে তাদের সর্দার ও সেনাপতি করল। আর তিনি মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর সামনে তাঁর সব কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। \p \v 12 পরে যিপ্তহ এই প্রশ্ন সমেত অম্মোনীয় রাজার কাছে দূত পাঠালেন: “আমার বিরুদ্ধে আপনার কী অভিযোগ আছে যে আপনি আমার দেশ আক্রমণ করেছেন?” \p \v 13 অম্মোনীয়দের রাজা যিপ্তহের দূতদের উত্তর দিলেন, “ইস্রায়েল যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল, তখন তারা অর্ণোন থেকে যব্বোক হয়ে, জর্ডন নদী পর্যন্ত আমার দেশটি দখল করে নিয়েছিল। এখন শান্তিপূর্বক আমার দেশটি ফিরিয়ে দাও।” \p \v 14 যিপ্তহ অম্মোনীয় রাজার কাছে আবার দূত পাঠিয়ে, \v 15 বললেন: \pm “যিপ্তহ একথাই বলেন: ইস্রায়েল মোয়াবের দেশ বা অম্মোনীয়দের দেশ দখল করেনি। \v 16 কিন্তু তারা যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল, ইস্রায়েল তখন মরুপ্রান্তরের মধ্যে দিয়ে লোহিত সাগর\f + \fr 11:16 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগর\ft*\f* হয়ে কাদেশে এসে পৌঁছেছিল। \v 17 পরে ইস্রায়েল ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠিয়ে বলেছিল, ‘আপনার দেশের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অনুমতি আমাদের দিন,’ কিন্তু ইদোমের রাজা তা শোনেননি। তারা মোয়াবের রাজার কাছেও দূত পাঠিয়েছিল, এবং তিনিও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অতএব ইস্রায়েল কাদেশেই থেকে গিয়েছিল। \pm \v 18 “এরপর তারা মরুপ্রান্তরের মধ্যে দিয়ে যাত্রা করল, এবং ইদোম ও মোয়াব দেশকে পাশে রেখে, মোয়াব দেশের পূর্বদিক ধরে এগিয়ে গিয়ে অর্ণোন নদীর অপর পারে শিবির স্থাপন করল। তারা মোয়াবের এলাকায় প্রবেশ করেনি, কারণ অর্ণোনই ছিল মোয়াবের সীমারেখা। \pm \v 19 “পরে ইস্রায়েল ইমোরীয়দের রাজা সেই সীহোনের কাছে দূত পাঠাল, যিনি হিষ্‌বোনে রাজত্ব করতেন এবং তাঁকে বলল, ‘আপনার দেশের মধ্যে দিয়ে আমাদের নিজেদের স্থানে যাওয়ার অনুমতি আপনি আমাদের দিন।’ \v 20 সীহোন অবশ্য, তাঁর এলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কথায় ইস্রায়েলকে বিশ্বাস করেননি।\f + \fr 11:20 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েলের জন্য কোনও চুক্তি তৈরি করেননি\ft*\f* তিনি তাঁর সব সৈন্যসামন্ত একত্রিত করে যহসে শিবির স্থাপন করলেন ও ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। \pm \v 21 “তখন ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু সীহোন ও তাঁর সমগ্র সৈন্যদলকে ইস্রায়েলের হাতে সমর্পণ করে দিলেন, এবং ইস্রায়েল তাদের পরাজিত করল। সেই দেশে বসবাসকারী ইমোরীয়দের সব জমিজায়গা ইস্রায়েল দখল করে নিল। \v 22 অর্ণোন নদী থেকে যব্বোক নদী পর্যন্ত এবং মরুভূমি থেকে জর্ডন নদী পর্যন্ত সেখানকার সব এলাকা তাদের দখলে এল। \pm \v 23 “এখন যেহেতু ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের সামনে থেকে ইমোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছেন, তাই তা ফেরত পাওয়ার কোনও অধিকার কি আপনার আছে? \v 24 আপনার দেবতা কমোশ আপনাকে যা দেন, তা কি আপনি গ্রহণ করবেন না? সেভাবে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের যা দিয়েছেন, আমরা তা অধিকার করব। \v 25 আপনি কি সিপ্পোরের ছেলে মোয়াবের রাজা বালাকের থেকেও শ্রেষ্ঠ? তিনি কি কখনও ইস্রায়েলের সঙ্গে বিবাদ বা যুদ্ধ করেছিলেন? \v 26 300 বছর ধরে ইস্রায়েল হিষ্‌বোন, অরোয়ের, তাদের পার্শ্ববর্তী উপনিবেশগুলি ও অর্ণোনের পার বরাবর অবস্থিত নগরগুলি অধিকার করে রেখেছে। সেসময় আপনারা কেন সেগুলি পুনর্দখল করেননি? \v 27 আমি আপনাদের প্রতি কোনও অন্যায় করিনি, কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আপনিই আমার প্রতি অন্যায় করছেন। বিচারকর্তা সদাপ্রভুই আজ ইস্রায়েলী ও অম্মোনীয়দের মধ্যে উৎপন্ন বিতর্কের নিষ্পত্তি করুন।” \m \v 28 অম্মোনীয়দের রাজা অবশ্য যিপ্তহের পাঠানো বার্তায় কর্ণপাত করেননি। \p \v 29 পরে সদাপ্রভুর আত্মা যিপ্তহের উপরে এলেন। যিপ্তহ গিলিয়দ ও মনঃশি প্রদেশ পার করে, গিলিয়দের মিস্‌পাতে এলেন, এবং সেখান থেকে তিনি অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলেন। \v 30 আর তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশে মানত করে বললেন: “তুমি যদি আমার হাতে অম্মোনীয়দের সমর্পণ করো, \v 31 তবে অম্মোনীয়দের উপরে জয়লাভ করে ফিরে আসার সময় যা কিছু আমার বাড়ির দরজা দিয়ে বেরিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবে, তা সদাপ্রভুরই হবে, এবং আমি সেটি এক হোমবলিরূপে উৎসর্গ করব।” \p \v 32 পরে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন, এবং সদাপ্রভু তাদের তাঁর হাতে সমর্পণ করলেন। \v 33 তিনি অরোয়ের থেকে মিন্নীতের পার্শ্ববর্তী এলাকার কুড়িটি নগর এবং আবেল-করামীম পর্যন্ত বিস্তৃত সমগ্র অঞ্চলটি বিধ্বস্ত করলেন। এইভাবে ইস্রায়েল অম্মোনকে শায়েস্তা করল। \p \v 34 যিপ্তহ যখন মিস্‌পায় তাঁর ঘরে ফিরে এলেন, তখন যে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বের হয়ে এল সে ছিল তাঁর মেয়ে, এবং সে খঞ্জনি বাজিয়ে নাচতে নাচতে আসছিল! সে তাঁর একমাত্র সন্তান। সে ছাড়া তাঁর আর কোনও ছেলে বা মেয়ে ছিল না। \v 35 তাকে দেখামাত্রই যিপ্তহ তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে চিৎকার করে উঠলেন, “হায় হায়, বাছা! তুমি আমাকে শোকাকুল করে দিলে এবং আমি বিধ্বস্ত হয়ে গেলাম। আমি সদাপ্রভুর কাছে মানত করেছি, যা আমি ভঙ্গ করতে পারব না।” \p \v 36 “বাবা,” সে উত্তর দিল, “তুমি সদাপ্রভুকে কথা দিয়েছ। তুমি যেমন প্রতিজ্ঞা করেছ, আমার প্রতি তাই করো, কারণ সদাপ্রভু তোমার হয়ে তোমার শত্রুদের, অম্মোনীয়দের উপরে প্রতিশোধ নিয়েছেন। \v 37 কিন্তু আমার এই একটি অনুরোধ রাখো,” সে বলল। “পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর ও আমার বান্ধবীদের সঙ্গে কান্নাকাটি করার জন্য আমাকে দুই মাস সময় দাও, কারণ আমার কখনও বিয়ে হবে না।” \p \v 38 “তুমি যেতে পার,” তিনি বললেন। আর তিনি তাকে দুই মাসের জন্য যেতে দিলেন। সে ও তার বান্ধবীরা পাহাড়ে গেল এবং শোক পালন করল যেহেতু সে কখনও বিয়ে করবে না। \v 39 দুই মাস পর, সে তার বাবার কাছে ফিরে এল, এবং যিপ্তহ তাঁর করা মানত অনুসারে তার প্রতি তা করলেন। সে কুমারীই থেকে গেল। \p এ থেকে ইস্রায়েলীদের মধ্যে এই প্রথা প্রচলিত হল \v 40 যে প্রত্যেক বছর ইস্রায়েলের কুমারী মেয়েরা চারদিনের জন্য গিলিয়দীয় যিপ্তহের মেয়ের স্মরণার্থে বাইরে যাবে। \c 12 \s1 যিপ্তহ ও ইফ্রয়িম \p \v 1 ইফ্রয়িমীয় বাহিনীকে আহ্বান করা হল, এবং তারা জর্ডন নদী পার হয়ে সাফোনে গেল। তারা যিপ্তহকে বলল, “তোমার সঙ্গে যাওয়ার জন্য আমাদের না ডেকে তুমি কেন অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলে? আমরা তোমাকে সুদ্ধ তোমার বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেব।” \p \v 2 যিপ্তহ উত্তর দিলেন, “আমি ও আমার লোকজন অম্মোনীয়দের সঙ্গে মহাযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলাম, আর যদিও আমি তোমাদের ডেকেছিলাম, তোমরা তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করোনি। \v 3 আমি যখন দেখলাম যে তোমরা সাহায্য করবে না, তখন আমি প্রাণ হাতে করে অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ওপারে গেলাম, এবং সদাপ্রভু তাদের উপরে আমাকে বিজয়ী করেছেন। তাই আজ কেন তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?” \p \v 4 পরে যিপ্তহ গিলিয়দীয় লোকজনদের সমবেত করে ইফ্রয়িমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন। গিলিয়দীয়রা তাদের আঘাত করল কারণ ইফ্রয়িমীয়রা বলেছিল, “ওহে গিলিয়দীয়রা, তোমরা ইফ্রয়িম ও মনঃশি গোষ্ঠীর দলত্যাগী লোক।” \v 5 গিলিয়দীয়রা ইফ্রয়িম অভিমুখী জর্ডন নদীর পারঘাটগুলি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনল, এবং যখনই ইফ্রয়িমের কোনো পলাতক লোক এসে বলত, “আমাকে ওপারে যেতে দাও,” গিলিয়দীয়রা তাকে জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কি ইফ্রয়িমীয়?” সে যদি উত্তর দিত, “না,” \v 6 তখন তারা বলত “ঠিক আছে, বলো ‘শিব্বোলেৎ।’ ” সে যদি বলত, “সিব্বোলেৎ,” যেহেতু সেই শব্দটি সে ঠিকঠাক উচ্চারণ করতে পারত না, তখন তারা তাকে ধরে জর্ডন নদীর পারঘাটেই হত্যা করত। সেই সময় 42,000 ইফ্রয়িমীয়কে হত্যা করা হল। \p \v 7 যিপ্তহ ছয় বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন।\f + \fr 12:7 \fr*\ft ঐতিহ্যসম্মতরূপে, ইস্রায়েলের বিচার করলেন; \+xt 8-14|link-href="JDG 12:8-14"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* পরে গিলিয়দীয় যিপ্তহ মারা গেলেন এবং গিলিয়দের একটি নগরে তাঁকে কবর দেওয়া হল। \s1 ইব্‌সন, এলোন ও অব্দোন \p \v 8 যিপ্তহের পরে, বেথলেহেম নিবাসী ইব্‌সন ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 9 তাঁর ত্রিশজন ছেলে ও ত্রিশজন মেয়ে ছিল। তাঁর মেয়েদের বিয়ে তিনি তাঁর গোষ্ঠী বহির্ভূত ছেলেদের সঙ্গে দিলেন, এবং তাঁর ছেলেদের স্ত্রী হওয়ার জন্য তিনি তাঁর গোষ্ঠী বহির্ভূত ত্রিশজন যুবতী মেয়েকে নিয়ে এলেন। ইব্‌সন সাত বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 10 পরে ইব্‌সন মারা গেলেন এবং বেথলেহেমেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। \p \v 11 তাঁর পরে, সবূলূনীয় এলোন দশ বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 12 পরে এলোন মারা গেলেন এবং সবূলূন দেশের অয়ালোনে তাঁকে কবর দেওয়া হল। \p \v 13 তাঁর পরে, পিরিয়াথোনীয় হিল্লেলের ছেলে অব্দোন ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 14 তাঁর চল্লিশ জন ছেলে ও ত্রিশজন নাতি ছিল, যারা সত্তরটি গাধার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াত। তিনি আট বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিলেন। \v 15 পরে হিল্লেলের ছেলে অব্দোন মারা গেলেন এবং ইফ্রয়িম দেশে, অমালেকীয়দের পার্বত্য প্রদেশের পিরিয়াথোনে তাঁকে কবর দেওয়া হল। \c 13 \s1 শিম্‌শোনের জন্ম \p \v 1 ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজকর্ম করল, তাই সদাপ্রভু চল্লিশ বছরের জন্য ফিলিস্তিনীদের হাতে তাদের সমর্পণ করলেন। \p \v 2 দানীয় গোষ্ঠীভুক্ত, সরা নিবাসী মানোহ বলে একজন ব্যক্তির স্ত্রী বন্ধ্যা ছিলেন। তিনি সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। \v 3 সদাপ্রভুর দূত সেই স্ত্রীকে দর্শন দিয়ে বললেন, “তুমি তো বন্ধ্যা ও সন্তানহীনা, কিন্তু তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এক ছেলের জন্ম দিতে যাচ্ছ। \v 4 এখন দেখো, তুমি যেন দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনও গাঁজানো পানীয় পান কোরো না এবং অশুচি কোনো কিছু খেয়ো না। \v 5 তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এমন এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে যার মাথায় কখনও ক্ষুর ছোঁয়ানো যাবে না কারণ ছেলেটি হবে একজন নাসরীয়, গর্ভে থাকার সময় থেকেই সে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত হবে। ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে ইস্রায়েলকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সেই নেতৃত্ব দেবে।” \p \v 6 তখন সেই মহিলাটি তাঁর স্বামীর কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “ঈশ্বরের একজন লোক আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁকে দেখতে লাগছিল ঈশ্বরের এক দূতের মতো, খুবই ভয়ংকর। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিনি তিনি কোথা থেকে এসেছেন, এবং তিনিও আমাকে তাঁর নাম বলেননি। \v 7 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি অন্তঃসত্ত্বা হবে এবং এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে। তাই এখন থেকে, তুমি দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনও গাঁজানো পানীয় পান কোরো না এবং অশুচি কোনো কিছু খেয়ো না, কারণ সেই ছেলেটি গর্ভ থেকে তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশে এক নাসরীয় হয়ে থাকবে।’ ” \p \v 8 তখন মানোহ সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন: “হে প্রভু, আপনার এই দাসকে ক্ষমা করবেন। আমি আপনার কাছে মিনতি করছি, ঈশ্বরের যে লোকটিকে আপনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, তিনি যেন আবার ফিরে এসে আমাদের শিক্ষা দেন কীভাবে আমরা সেই ছেলেটিকে বড়ো করে তুলব, যার জন্ম হতে চলেছে।” \p \v 9 ঈশ্বর মানোহের প্রার্থনা শুনলেন, এবং ঈশ্বরের দূত আবার সেই মহিলাটির কাছে এলেন, যখন তিনি ক্ষেতে ছিলেন; কিন্তু তাঁর স্বামী মানোহ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। \v 10 মহিলাটি দৌড়ে গিয়ে তাঁর স্বামীকে বললেন, “সেদিন যে লোকটি আমাকে দর্শন দিয়েছিলেন, তিনি এখানে এসেছেন!” \p \v 11 মানোহ উঠে তাঁর স্ত্রীকে অনুসরণ করলেন। সেই লোকটির কাছে পৌঁছে তিনি বললেন, “আপনিই কি সেই ব্যক্তি যিনি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন?” \p “আমিই সেই ব্যক্তি,” তিনি বললেন। \p \v 12 অতএব মানোহ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার কথা যখন পূর্ণ হবে, তখন সেই ছেলেটির জীবন ও কর্ম নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মটি কী হবে?” \p \v 13 সদাপ্রভুর দূত তাঁকে উত্তর দিলেন, “তোমার স্ত্রীকে আমি যা যা করতে বলেছি, সে যেন অবশ্যই তা করে। \v 14 সে যেন এমন কিছু না খায় যা দ্রাক্ষালতা থেকে উৎপন্ন, অথবা যেন দ্রাক্ষারস বা গাঁজানো অন্য কোনও পানীয় পান না করে বা অশুচি কোনো কিছু না খায়। আমি তাকে যেসব আদেশ দিয়েছি, সে যেন অবশ্যই তা পালন করে।” \p \v 15 মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “আমরা চাই আপনি ততক্ষণ অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না আমরা আপনার জন্য একটি কচি পাঁঠার মাংস রান্না করে আনছি।” \p \v 16 সদাপ্রভুর দূত উত্তর দিলেন, “তুমি আমাকে অপেক্ষা করালেও, আমি তোমার আনা কোনও খাবার খাব না। কিন্তু তুমি যদি হোমবলি উৎসর্গ করো, তবে তা সদাপ্রভুর উদ্দেশেই করো।” (মানোহ বুঝতে পারেননি যে তিনি সদাপ্রভুর দূত।) \p \v 17 পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতের কাছে জানতে চাইলেন, “আপনার নাম কী, যেন আপনার কথা যখন পূর্ণ হবে, তখন আমরা আপনাকে সম্মান জানাতে পারি?” \p \v 18 তিনি উত্তর দিলেন, “আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ কেন? তা তোমার বোধের অগম্য।\f + \fr 13:18 \fr*\ft অথবা, তা তো আশ্চর্য\ft*\f*” \v 19 তখন মানোহ একটি কচি পাঁঠা নিলেন ও সঙ্গে নিলেন শস্য-নৈবেদ্য, এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশে তা একটি পাষাণ-পাথরের উপরে উৎসর্গ করলেন। আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রীর চোখের সামনেই সদাপ্রভু এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটালেন: \v 20 বেদি থেকে যখন আগুনের শিখা আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছিল, তখন সদাপ্রভুর দূত ওই শিখা ধরে উঠে গেলেন। তা দেখে, মানোহ ও তাঁর স্ত্রী মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লেন। \v 21 সদাপ্রভুর দূত যখন আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রীকে দর্শন দিলেন না, তখন মানোহ বুঝতে পারলেন যে তিনি ছিলেন সদাপ্রভুর দূত। \p \v 22 “আমাদের মৃত্যু অনিবার্য!” তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন। “আমরা ঈশ্বরকে দেখেছি!” \p \v 23 কিন্তু তাঁর স্ত্রী উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু যদি আমাদের হত্যা করতে চাইতেন, তবে তিনি আমাদের হাত থেকে হোমবলি ও শস্য-নৈবেদ্য গ্রহণ করতেন না, বা এসব কিছু আমাদের দেখাতেন না বা এখন এসব কথাও আমাদের বলতেন না।” \p \v 24 পরে সেই মহিলাটি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন এবং তার নাম রাখলেন শিম্‌শোন। ছেলেটি বেড়ে উঠল এবং সদাপ্রভু তাকে আশীর্বাদ করলেন, \v 25 এবং সে যখন সরা ও ইষ্টায়োলের মাঝখানে অবস্থিত মহনেদানে ছিল, তখন থেকেই সদাপ্রভুর আত্মা তাকে চালাতে শুরু করলেন। \c 14 \s1 শিম্‌শোনের বিবাহ \p \v 1 শিম্‌শোন তিম্নায় নেমে গেলেন ও সেখানে এক যুবতী ফিলিস্তিনী মহিলাকে দেখতে পেলেন। \v 2 ফিরে এসে, তিনি তাঁর বাবা-মাকে বললেন, “তিম্নায় আমি এক ফিলিস্তিনী মহিলাকে দেখেছি; এখন তোমরা তাকে আমার স্ত্রী করে এনে দাও।” \p \v 3 তাঁর বাবা-মা উত্তর দিলেন, “তোমার আত্মীয়দের মধ্যে বা আমাদের সব আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কি উপযুক্ত কোনও মেয়ে নেই? স্ত্রী পাওয়ার জন্য তোমাকে কি সেই সুন্নত না করানো ফিলিস্তিনীদের কাছেই যেতে হবে?” \p কিন্তু শিম্‌শোন তাঁর বাবাকে বললেন, “আমার জন্য তাকেই এনে দাও। সেই আমার জন্য উপযুক্ত।” \v 4 (তাঁর বাবা-মা জানতেন না যে এই ঘটনা সেই সদাপ্রভুর ইচ্ছাতেই ঘটছে, যিনি ফিলিস্তিনীদের শায়েস্তা করার এক সুযোগ খুঁজছিলেন; কারণ সেই সময় তারা ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করছিল।) \p \v 5 শিম্‌শোন তাঁর বাবা-মার সঙ্গে তিম্নায় নেমে গেলেন। তারা তিম্নার দ্রাক্ষাক্ষেতের কাছাকাছি পৌঁছানোমাত্রই, আচমকা এক যুবা সিংহ গর্জন করতে করতে শিম্‌শোনের দিকে তেড়ে এল। \v 6 সদাপ্রভুর আত্মা এমন সপরাক্রমে শিম্‌শোনের উপর নেমে এসেছিলেন যে শিম্‌শোন খালি হাতে ছাগশাবক ছিঁড়ে ফেলার মতো করে ওই সিংহটিকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেললেন। কিন্তু তিনি কী করলেন, তা তিনি তাঁর বাবা বা মা কাউকেই জানালেন না। \v 7 পরে তিনি সেই মহিলাটির কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা বললেন, এবং মেয়েটিকে তাঁর খুব পছন্দ হল। \p \v 8 কিছুকাল পর, শিম্‌শোন যখন তাকে বিয়ে করার জন্য সেখানে ফিরে গেলেন, তখন তিনি সেই সিংহের শবটি দেখার জন্য পথের অন্য পাশে গেলেন, ও গিয়ে দেখলেন যে সেই শবটিতে এক ঝাঁক মৌমাছি ও কিছু মধু লেগে আছে। \v 9 তিনি হাত দিয়ে কিছুটা মধু বের করলেন ও পথে যেতে যেতে তা খেতে থাকলেন। তিনি যখন তাঁর বাবা-মার সঙ্গে আবার মিলিত হলেন, তখন তিনি তাঁদেরও খানিকটা মধু দিলেন ও তাঁরাও তা খেলেন। কিন্তু তিনি তাঁদের বলেননি যে সেই মধু তিনি সিংহের মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করেছেন। \p \v 10 এমতাবস্থায় তাঁর বাবা সেই মহিলাটিকে দেখতে গেলেন। আর যুবা পুরুষেরা প্রথাগতভাবে যেমন করত, সেই প্রথানুসারে শিম্‌শোনও সেখানে এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। \v 11 লোকেরা যখন তাঁকে দেখল, তখন তারা তাঁর সহচর হওয়ার জন্য ত্রিশজন লোককে মনোনীত করল। \p \v 12 “আমি তোমাদের কাছে একটি ধাঁধা বলছি,” শিম্‌শোন তাদের বললেন। “তোমরা যদি উৎসব চলাকালীন এই সাত দিনের মধ্যে এর অর্থ আমায় ব্যাখ্যা করে দিতে পারো, তবে আমি তোমাদের ত্রিশটি মসিনার পোশাক এবং ত্রিশ জোড়া কাপড়চোপড় দেব। \v 13 কিন্তু তোমরা যদি এর অর্থ আমাকে বলতে না পারো, তবে তোমরাই আমাকে ত্রিশটি মসিনার পোশাক এবং ত্রিশ জোড়া কাপড়চোপড় দেবে।” \p “তোমার ধাঁধাটি আমাদের বলো,” তারা বলল। “তা শোনা যাক।” \p \v 14 শিম্‌শোন উত্তর দিলেন, \q1 “ভক্ষকের মধ্যে থেকে কিছু খাদ্যদ্রব্য বেরিয়ে এল; \q2 শক্তিধরের মধ্যে থেকে কিছু মিষ্টদ্রব্য বেরিয়ে এল।” \m তিনদিনে তারা এই ধাঁধার অর্থোদ্ধার করতে পারেনি। \p \v 15 চতুর্থ\f + \fr 14:15 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, সপ্তম\ft*\f* দিনে, তারা শিম্‌শোনের স্ত্রীকে বলল, “তোমার স্বামীকে তোষামোদ করে ভুলিয়েভালিয়ে আমাদের জন্য ধাঁধার অর্থটি জেনে নাও, তা না হলে আমরা তোমাকে এবং তোমার বাবার পরিবার-পরিজনদের আগুনে পুড়িয়ে মারব। আমাদের সম্পত্তি হরণ করার জন্যই কি তোমরা এখানে আমাদের নিমন্ত্রণ করেছ?” \p \v 16 তখন শিম্‌শোনের স্ত্রী তাঁর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ককাতে ককাতে বলল, “তুমি আমাকে ঘৃণাই করো! তুমি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো না। তুমি আমার লোকজনদের কাছে একটি ধাঁধা বলেছ, কিন্তু আমাকে তার অর্থ ব্যাখ্যা করে দাওনি।” \p “আমার মা-বাবাকেই আমি এর অর্থ বলিনি,” তিনি উত্তর দিলেন, “অতএব তোমাকে কেন আমি এর অর্থ বলতে যাব?” \v 17 উৎসব চলাকালীন সেই সাত দিন যাবৎ সে কান্নাকাটি করল। অতএব সপ্তম দিনে শেষ পর্যন্ত শিম্‌শোন তাকে ধাঁধাটির অর্থ বলে দিলেন, কারণ সেই স্ত্রী অনবরত তাঁকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিল। সেও তখন তার লোকজনদের সেই ধাঁধাটির অর্থ বলে দিল। \p \v 18 সপ্তম দিনে সূর্যাস্তের আগেই সেই নগরের লোকেরা এসে শিম্‌শোনকে বলল, \q1 “মধুর থেকে বেশি মিষ্টি আর কী হতে পারে? \q2 সিংহের থেকে বেশি শক্তিশালী আর কে হতে পারে?” \p শিম্‌শোন তাদের বললেন, \q1 “আমার বকনা-বাছুর দিয়ে যদি চাষ না করতে, \q2 আমার ধাঁধার নিষ্পত্তি করতে তোমাদের নাভিশ্বাস উঠে যেত।” \p \v 19 পরে সদাপ্রভুর আত্মা সপরাক্রমে তাঁর উপরে এলেন। শিম্‌শোন অস্কিলোনে নেমে গেলেন, সেখানকার ত্রিশজন লোককে আঘাত করে, তাদের সব পোশাক-আশাক খুলে নিলেন ও তাদের পোশাকগুলি তাদের দিয়ে দিলেন, যারা তাঁর ধাঁধার অর্থ ব্যাখ্যা করে দিয়েছিল। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে, শিম্‌শোন তাঁর বাবার ঘরে ফিরে গেলেন। \v 20 আর শিম্‌শোনের স্ত্রীকে তাঁর সহচরদের মধ্যে এমন একজনের হাতে তুলে দেওয়া হল, যে সেই উৎসব চলাকালীন তাঁর পরিচর্যা করেছিল। \c 15 \s1 শিম্‌শোন ফিলিস্তিনীদের উপর প্রতিশোধ নেন \p \v 1 কিছুকাল পর, গম কাটার মরশুমে, শিম্‌শোন একটি ছাগশাবক নিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি বললেন, “আমি আমার স্ত্রীর ঘরে যাচ্ছি।” কিন্তু তাঁর স্ত্রীর বাবা শিম্‌শোনকে ভিতরে ঢুকতে দিলেন না। \p \v 2 “আমি এত নিশ্চিত ছিলাম যে তুমি তাকে ঘৃণা করো,” তিনি বললেন, “আমি তাকে তোমার সহচরের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছি। তার ছোটো বোন কি তার চেয়েও বেশি সুন্দরী নয়? তার পরিবর্তে বরং তুমি তার বোনকেই বিয়ে করো।” \p \v 3 শিম্‌শোন তাদের বললেন, “এবার আমি ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি; আমি সত্যিই তাদের ক্ষতি করব।” \v 4 অতএব তিনি বাইরে গিয়ে 300-টি শিয়াল ধরলেন এবং জোড়ায় জোড়ায় সেগুলির লেজ বেঁধে দিলেন। এরপর তিনি প্রত্যেক জোড়া লেজে একটি করে মশাল বেঁধে দিলেন, \v 5 মশালগুলি জ্বালিয়ে দিলেন এবং শিয়ালগুলিকে ফিলিস্তিনীদের ফসলের ক্ষেতে ছেড়ে দিলেন। তিনি দ্রাক্ষাক্ষেত ও জলপাই বাগান সুদ্ধ আঁটি বাঁধা ফসল এবং না কাটা ফসল, সব পুড়িয়ে দিলেন। \p \v 6 ফিলিস্তিনীরা যখন জিজ্ঞাসা করল, “কে এই কাজ করেছে?” তখন তাদের বলা হল, “সেই তিম্নীয় লোকটির জামাই শিম্‌শোন এ কাজ করেছে, কারণ তার স্ত্রীকে তার সহচরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” \p তখন ফিলিস্তিনীরা গিয়ে সেই মহিলা ও তার বাবাকে আগুনে পুড়িয়ে মারল। \v 7 শিম্‌শোন তাদের বললেন, “যেহেতু তোমরা এরকম কাজ করেছ, তাই আমি শপথ নিচ্ছি যে তোমাদের উপর প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত আমি ক্ষান্ত হব না।” \v 8 তিনি তাদের উপর ভয়ংকর আক্রমণ শানালেন এবং বহু মানুষজনকে হত্যা করলেন। পরে তিনি সেখান থেকে চলে গিয়ে ঐটম পাষাণ-পাথরের একটি গুহায় বসবাস করতে লাগলেন। \p \v 9 ফিলিস্তিনীরা গিয়ে যিহূদা দেশে শিবির স্থাপন করল এবং লিহীর কাছে ছড়িয়ে পড়ল। \v 10 যিহূদা গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কেন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?” \p “আমরা শিম্‌শোনকে বন্দি করে নিয়ে যেতে এসেছি,” তারা উত্তর দিল, “সে আমাদের প্রতি যা করেছে, আমরাও তার প্রতি তেমনই করব।” \p \v 11 পরে যিহূদা দেশ থেকে 3,000 লোক এসে ঐটমের পাষাণ-পাথরের গুহায় নেমে গিয়ে শিম্‌শোনকে বলল, “তুমি কি বুঝতে পারছ না যে ফিলিস্তিনীরা আমাদের উপরে রাজত্ব করছে? আমাদের প্রতি তুমি এ কী করলে?” \p শিম্‌শোন উত্তর দিলেন, “তারা আমার প্রতি যা করেছে, আমিও তাদের প্রতি শুধু সেরকমই করেছি।” \p \v 12 তারা তাঁকে বলল, “আমরা তোমাকে বেঁধে ফিলিস্তিনীদের হাতে সমর্পণ করে দিতে এসেছি।” \p শিম্‌শোন বললেন, “আমার কাছে শপথ করো যে তোমরা নিজেরাই আমাকে হত্যা করবে না?” \p \v 13 “ঠিক আছে,” তারা উত্তর দিল, “আমরা শুধু তোমাকে বেঁধে নিয়ে গিয়ে তাদের হাতে সমর্পণ করে দেব। আমরা তোমাকে হত্যা করব না।” অতএব তারা দুই গাছা নতুন দড়ি দিয়ে শিম্‌শোনকে বাঁধল এবং সেই পাষাণ-পাথর থেকে তাঁকে নিয়ে গেল। \v 14 তিনি লিহীর কাছাকাছি আসতে না আসতেই, ফিলিস্তিনীরা চিৎকার করতে করতে তাঁর দিকে ছুটে এল। সদাপ্রভুর আত্মা সপরাক্রমে তাঁর উপরে নেমে এলেন। তাঁর হাতের দড়ি পোড়া শণের মতো হয়ে গেল, এবং হাত দুটি থেকে বাঁধনগুলি খসে পড়ল। \v 15 গাধার চোয়ালের একটি টাটকা হাড় পেয়ে, তিনি সেটি হাতে তুলে নিলেন এবং সেটি দিয়ে 1,000 লোককে আঘাত করে হত্যা করলেন। \p \v 16 পরে শিম্‌শোন বললেন, \q1 “গাধার চোয়ালের হাড় দিয়ে \q2 আমি তাদের গাধা বানালাম।\f + \fr 15:16 \fr*\ft অথবা, একটি বা দুটি স্তূপ বানালাম; হিব্রু ভাষায় গাধা ও স্তূপ শব্দ দুটি শুনতে একইরকম লাগে\ft*\f* \q1 গাধার চোয়ালের হাড় দিয়ে \q2 আমি 1,000 লোক মারলাম।” \m \v 17 কথা বলা শেষ করে, তিনি গাধার চোয়ালের হাড়টি ছুঁড়ে ফেলে দিলেন; এবং সেই স্থানটির নাম রাখা হল রামৎ-লিহী।\f + \fr 15:17 \fr*\ft রামৎ-লিহী শব্দের অর্থ চোয়ালের হাড়ের পাহাড়\ft*\f* \p \v 18 যেহেতু তিনি খুব তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছিলেন, তাই তিনি সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “তুমি তোমার দাসকে এই মহাবিজয় দান করেছ। এখন কি আমাকে পিপাসায় মরতে হবে এবং ওই সুন্নতবিহীন লোকদের হাতে গিয়ে পড়তে হবে?” \v 19 তখন ঈশ্বর লিহীতে একটি গর্ত খুঁড়ে দিলেন, এবং সেখান থেকে জল বের হয়ে এল। শিম্‌শোন যখন সেই জলপান করলেন, তখন তাঁর শক্তি ফিরে এল এবং তিনি চাঙ্গা হয়ে গেলেন।\f + \fr 15:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, তাঁর আত্মা সঞ্জীবিত হল, বা তিনি প্রাণ ফিরে পেলেন\ft*\f* তাই সেই জলের উৎসের নাম রাখা হল ঐন-হক্কোরী,\f + \fr 15:19 \fr*\ft ঐন্-হক্কোরী শব্দের অর্থ আহ্বানকারীর জলের উৎস\ft*\f* এবং আজও পর্যন্ত লিহীতে সেটি অবস্থিত আছে। \p \v 20 ফিলিস্তিনীদের সময়কালে শিম্‌শোন কুড়ি বছর ইস্রায়েলীদের নেতৃত্ব দিলেন।\f + \fr 15:20 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচার করলেন\ft*\f* \c 16 \s1 শিম্‌শোন এবং দলীলা \p \v 1 একদিন শিম্‌শোন গাজাতে গিয়ে সেখানে এক বেশ্যাকে দেখতে পেয়ে তার সঙ্গে রাত কাটালেন। \v 2 গাজার লোকজনকে বলা হল, “শিম্‌শোন এখানে এসেছে!” অতএব তারা সেই স্থানটি চারদিক থেকে ঘিরে ধরল এবং নগরের প্রবেশদ্বারে সারারাত ধরে তাঁর জন্য অপেক্ষা করে থাকল। তারা এই কথা বলে সারারাত নিশ্চল হয়ে থাকল যে, “ভোর হওয়ামাত্রই আমরা তাকে হত্যা করব।” \p \v 3 কিন্তু শিম্‌শোন সেখানে শুধু মাঝরাত পর্যন্ত শুয়ে থাকলেন। পরে তিনি উঠে পড়লেন ও নগরের প্রবেশদ্বারের পাল্লা এবং দুটি থাম ও খিল—সবকিছু ধরে উপড়ে ফেললেন। তিনি সেগুলি কাঁধে চাপিয়ে সেই পাহাড়ের চূড়ায় বয়ে নিয়ে গেলেন, যেটি হিব্রোণের মুখোমুখি অবস্থিত ছিল। \p \v 4 কিছুকাল পর, শিম্‌শোন সোরেক উপত্যকার এক মহিলার প্রেমে পড়লেন, যার নাম দলীলা। \v 5 ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা সেই মহিলাটির কাছে গিয়ে বললেন, “দেখো, যদি তুমি ছলে-বলে-কৌশলে তার কাছ থেকে তার মহাশক্তির রহস্যটি এবং কীভাবে আমরা তাকে বশে আনতে পারব, তা জেনে নিতে পারো, যেন আমরা তাকে বেঁধে ফেলতে ও জব্দ করতে পারি, তবে আমাদের মধ্যে প্রত্যেকে তোমাকে 1,100 শেকল\f + \fr 16:5 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 13 কিলোগ্রাম\ft*\f* করে রুপো দেব।” \p \v 6 অতএব দলীলা শিম্‌শোনকে বলল, “তোমার মহাশক্তির রহস্যটি এবং কীভাবে তোমাকে বেঁধে বশে আনা যায়, তা আমাকে বলে দাও।” \p \v 7 শিম্‌শোন তাকে উত্তর দিলেন, “কেউ যদি ধনুকের এমন তাজা সাত-গাছি ছিলা দিয়ে আমাকে বাঁধে, যেগুলি শুকনো হয়নি, তবে আমি অন্য যে কোনো লোকের মতো দুর্বল হয়ে পড়ব।” \p \v 8 তখন ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা দলীলাকে ধনুকের এমন তাজা সাত-গাছি ছিলা এনে দিলেন, যেগুলি শুকনো হয়নি, এবং সে সেগুলি দিয়ে শিম্‌শোনকে বেঁধে ফেলল। \v 9 সেই ঘরে তখন কয়েকজন লোক লুকিয়ে ছিল। দলীলা তাঁকে ডাক দিয়ে বলল, “শিম্‌শোন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে!” কিন্তু যেভাবে আগুনের সংস্পর্শে এসে এক টুকরো দড়ি ছিঁড়ে যায়, ঠিক সেভাবে তিনি খুব সহজেই ধনুকের ছিলাগুলি দুম করে ছিঁড়ে ফেললেন। অতএব তাঁর শক্তির রহস্যটি জানা গেল না। \p \v 10 পরে দলীলা শিম্‌শোনকে বলল, “তুমি আমাকে বোকা বানিয়েছ; তুমি আমাকে মিথ্যা কথা বলেছ। এখন এসো, আমাকে বলে দাও কীভাবে তোমাকে বাঁধা যাবে?” \p \v 11 শিম্‌শোন বললেন, “যদি কেউ এমন নতুন দড়ি দিয়ে আমাকে শক্ত করে বাঁধে, যা আগে কখনও ব্যবহার করা হয়নি, তবে আমি অন্য যে কোনো লোকের মতো দুর্বল হয়ে পড়ব।” \p \v 12 অতএব দলীলা কয়েকগাছি নতুন দড়ি নিয়ে সেগুলি দিয়ে শিম্‌শোনকে বেঁধে ফেলল। পরে, ঘরে লুকিয়ে থাকা লোকজনের সঙ্গে মিলে সে তাকে ডাক দিয়ে বলল, “শিম্‌শোন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে!” কিন্তু শিম্‌শোন তাঁর হাত দুটি থেকে দড়িগুলি এমনভাবে দুম করে ছিঁড়ে ফেললেন যেন সেগুলি বুঝি নেহাতই সুতোমাত্র। \p \v 13 দলীলা তখন শিম্‌শোনকে বলল, “সবসময় তুমি আমাকে বোকা বানিয়েই আসছ এবং আমাকে মিথ্যা কথাই বলেছ। এখন বলো দেখি, কীভাবে তোমাকে বাঁধা যাবে?” \p শিম্‌শোন উত্তর দিলেন, “তুমি যদি আমার মাথার সাত-গাছি চুল তাঁতের বুননের সাথে বুনে সেগুলি গোঁজের সঙ্গে শক্ত করে আটকে দাও, তবে আমি অন্য যে কোনো লোকের মতো দুর্বল হয়ে পড়ব।” অতএব শিম্‌শোন যখন ঘুমিয়েছিলেন, দলীলা তখন তাঁর মাথার সাত-গাছি চুল নিয়ে সেগুলি তাঁতের বুননের সাথে বুনলো \v 14 এবং গোঁজের সঙ্গে শক্ত করে আটকে দিল। \p আবার সে শিম্‌শোনকে ডেকে বলল, “শিম্‌শোন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে!” শিম্‌শোন ঘুম থেকে জেগে উঠেই টান মেরে গোঁজসমেত তাঁতযন্ত্র ও বুনন—সবকিছু উপড়ে ফেললেন। \p \v 15 তখন দলীলা তাঁকে বলল, “তুমি কীভাবে বলতে পারো, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি,’ যখন তুমি আমাকে বিশ্বাস করে কিছু বলতেই চাইছ না? এই নিয়ে তিনবার তুমি আমাকে বোকা বানালে এবং তোমার মহাশক্তির রহস্য আমাকে বললে না।” \v 16 এভাবে দিনের পর দিন বিরক্তিকরভাবে সে শিম্‌শোনকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলছিল। \p \v 17 অতএব তিনি দলীলাকে সবকিছু বলে দিলেন। “আমার মাথায় কখনও ক্ষুর ব্যবহৃত হয়নি,” তিনি বললেন, “কারণ মায়ের গর্ভ থেকেই আমি এক নাসরীয়রূপে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত হয়ে আছি। আমার মাথা যদি কামানো হয়, তবে আমার শক্তি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে, এবং আমি অন্য যে কোনো লোকের মতো দুর্বল হয়ে পড়ব।” \p \v 18 দলীলা যখন দেখল যে শিম্‌শোন তাকে সবকিছু বলে দিয়েছে, তখন সে ফিলিস্তিনী শাসনকর্তাদের কাছে খবর পাঠাল, “আপনারা আর একবার চলে আসুন; সে আমাকে সবকিছু বলে দিয়েছে।” অতএব ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা রুপো হাতে নিয়ে ফিরে এলেন। \v 19 শিম্‌শোনকে কোলে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে, সে একজন লোককে ডেকে তাকে দিয়ে শিম্‌শোনের মাথার সাত-গাছি চুল কামিয়ে দিল, এবং এভাবেই তাকে জব্দ করতে শুরু করলো।\f + \fr 16:19 \fr*\ft অথবা, তিনি দুর্বল হতে শুরু করলেন\ft*\f* আর শিম্‌শোনের শক্তি তাঁকে ছেড়ে গেল। \p \v 20 তখন দলীলা তাঁকে ডেকে বলল, “শিম্‌শোন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে!” \p শিম্‌শোন ঘুম থেকে জেগে উঠে ভাবলেন, “আমি আগের মতোই বাইরে গিয়ে গা ঝাড়া দিয়ে মুক্ত হয়ে যাব।” কিন্তু তিনি বোঝেননি যে সদাপ্রভু তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। \p \v 21 পরে ফিলিস্তিনীরা তাঁকে ধরে তাঁর চোখদুটি উপড়ে ফেলল ও এবং তাঁকে গাজায় নিয়ে গেল। ব্রোঞ্জের বেড়ি দিয়ে তাঁকে বেঁধে, তারা জেলখানায় তাঁকে জাঁতা পেষাই-এর কাজে লাগিয়ে দিল। \v 22 কিন্তু মাথা কামানোর পরেও তাঁর মাথার চুল আবার বাড়তে শুরু করল। \s1 শিম্‌শোনের মৃত্যু \p \v 23 ইত্যবসরে ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা তাদের দেবতা দাগোনের উদ্দেশে এক মহাবলি উৎসর্গ করার ও উৎসব পালন করার জন্য সমবেত হয়ে বললেন, “আমাদের দেবতা আমাদের শত্রু শিম্‌শোনকে আমাদের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন।” \p \v 24 শিম্‌শোনকে দেখে লোকেরা তাদের আরাধ্য দেবতার প্রশংসা করে বলল, \q1 “আমাদের দেবতা আমাদের শত্রুকে \q2 সঁপে দিয়েছেন আমাদের হাতে, \q1 এ সেই, যে আমাদের দেশটি করেছে ধ্বংস \q2 আর অসংখ্য লোককে করেছে হত্যা।” \p \v 25 খোশমেজাজে তারা চিৎকার করে বলল, “আমাদের চিত্ত-বিনোদনের জন্য শিম্‌শোনকে নিয়ে এসো।” অতএব তারা জেলখানা থেকে তাঁকে ডেকে আনালো, এবং তিনি তাদের সামনে কসরত দেখাতে লাগলেন। \p যখন তারা তাঁকে স্তম্ভগুলির মাঝখানে দাঁড় করিয়ে দিল, \v 26 তখন যে দাসটি তাঁর হাত ধরে রেখেছিল, তাকে শিম্‌শোন বললেন, “আমাকে এমন জায়গায় দাঁড় করিয়ে দাও, যেখানে আমি এই মন্দিরের ভারবহনকারী স্তম্ভগুলি যেন অনুভব করতে পারি ও যেন সেগুলির গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়াতে পারি।” \v 27 মন্দিরটি পুরুষ ও মহিলার ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়েছিল; ফিলিস্তিনীদের সব শাসনকর্তাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, এবং ছাদের উপর থেকে প্রায় 3,000 নরনারী শিম্‌শোনের কসরত দেখছিল। \v 28 তখন শিম্‌শোন সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, আমাকে স্মরণ করো। দয়া করে ঈশ্বর আর একবার শুধু আমাকে শক্তি জোগাও, এবং একটিমাত্র ঘুষিতেই আমার দুই চোখ উপড়ে নেওয়ার প্রতিশোধ ফিলিস্তিনীদের উপর আমায় নিতে দাও।” \v 29 পরে শিম্‌শোন মাঝখানের সেই দুটি স্তম্ভের কাছে পৌঁছে গেলেন, যেগুলির উপর ভর দিয়ে মন্দিরটি দাঁড়িয়েছিল। ডান হাত একটির ও বাঁ হাত অন্যটির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে সেগুলি জড়িয়ে ধরে, \v 30 শিম্‌শোন বললেন, “ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে আমারও মৃত্যু হোক!” পরে তিনি সর্বশক্তি দিয়ে সেগুলিকে ধাক্কা দিলেন, এবং মন্দিরটির ভিতরে থাকা শাসনকর্তাদের ও সব লোকজনের উপরে সেটি ভেঙে পড়ল। এভাবে শিম্‌শোন বেঁচে থাকার সময় যত না লোককে হত্যা করেছিলেন, মরার সময় তার চেয়েও বেশি লোককে হত্যা করলেন। \p \v 31 পরে তাঁর ভাইরা এবং তাঁর বাবার সমগ্র পরিবার তাঁকে আনতে গেলেন। তারা তাঁকে ফিরিয়ে এনে সরা ও ইষ্টায়োলের মাঝখানে অবস্থিত তাঁর বাবা মানোহের সমাধিতে তাঁকে কবর দিলেন। শিম্‌শোন কুড়ি বছর ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।\f + \fr 16:31 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচার করলেন\ft*\f* \c 17 \s1 মীখার প্রতিমাগুলি \p \v 1 ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে বসবাসকারী মীখা নামক একজন লোক \v 2 তার মাকে বলল, “তোমার যে 1,100 শেকল রুপো\f + \fr 17:2 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 13 কিলোগ্রাম\ft*\f* চুরি হয়েছিল এবং যার জন্য আমি তোমাকে অভিশাপ দিতে শুনেছিলাম—সেই রুপো আমার কাছেই আছে; আমিই তা নিয়েছিলাম।” \p তখন তার মা বললেন, “বাছা, সদাপ্রভু তোমায় আশীর্বাদ করুন!” \p \v 3 সে যখন তার মাকে সেই 1,100 শেকল রুপো ফিরিয়ে দিল, তখন তার মা বললেন, “আমার এই রুপো আমি শপথ নিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করছি, যেন আমার ছেলে রুপো দিয়ে মোড়া একটি মূর্তি তৈরি করে। এই রুপো আমি তোমাকেই ফিরিয়ে দেব।” \p \v 4 অতএব মীখা সেই রুপো তার মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর, তিনি তা থেকে 200 শেকল\f + \fr 17:4 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 2.3 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো নিয়ে সেগুলি এমন একজন রৌপ্যকারকে দিলেন, যে প্রতিমা নির্মাণ করার জন্য সেগুলি ব্যবহার করল। আর সেটি মীখার বাড়িতেই রাখা হল। \p \v 5 সেই মীখার একটি মন্দির ছিল, এবং সে একটি এফোদ ও কয়েকটি গৃহদেবতা তৈরি করল ও তার এক ছেলেকে নিজের যাজকরূপে অভিষিক্ত করল। \v 6 সেই সময় ইস্রায়েলে কোনও রাজা ছিলেন না; প্রত্যেকে, তাদের যা ভালো বলে মনে হত, তাই করত। \p \v 7 যিহূদার বেথলেহেমে এক তরুণ লেবীয় ছিল, যে যিহূদা গোষ্ঠীভুক্ত লোকজনের সঙ্গে বসবাস করত। \v 8 সে সেই নগর ছেড়ে বসবাসের উপযোগী অন্য কোনো স্থানের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল। পথে যেতে যেতে\f + \fr 17:8 \fr*\ft অথবা, তার জীবিকার খোঁজে\ft*\f* সে ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে মীখার বাড়িতে এসে পৌঁছাল। \p \v 9 মীখা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কোথাকার লোক?” \p “আমি যিহূদার বেথলেহেম নিবাসী এক লেবীয়,” সে বলল, “আর আমি থাকার জন্য একটি স্থান খুঁজছি।” \p \v 10 পরে মীখা সেই লেবীয়কে বলল, “আমার সঙ্গে থাকো এবং আমার পিতৃস্থানীয় এক যাজক হয়ে যাও, এবং আমি তোমাকে বছরে দশ শেকল\f + \fr 17:10 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 115 গ্রাম\ft*\f* করে রুপো, তোমার জামাকাপড় ও তোমার খাদ্যদ্রব্য দেব।” \v 11 অতএব সেই লেবীয় তরুণ তার সঙ্গে থাকতে রাজি হয়ে গেল, এবং সে মীখার কাছে তার পুত্রস্থানীয় হয়ে গেল। \v 12 পরে মীখা সেই লেবীয়কে অভিষিক্ত করল, এবং সেই তরুণ তার যাজক হয়ে গেল ও তার বাড়িতেই বসবাস করতে লাগল। \v 13 আর মীখা বলল, “এখন আমি বুঝতে পারছি যে সদাপ্রভু আমার প্রতি মঙ্গলময় হবেন, যেহেতু এই লেবীয় আমার যাজক হয়েছে।” \c 18 \s1 দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকজন লয়িশে বসতি স্থাপন করে \p \v 1 সেই সময় ইস্রায়েলে কোনও রাজা ছিলেন না। \p আর সেই সময় দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকজন নিজস্ব এমন এক স্থান খুঁজছিল যেখানে তারা বসতি স্থাপন করতে পারে, কারণ তখনও পর্যন্ত তারা ইস্রায়েলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও উত্তরাধিকার লাভ করেনি। \v 2 অতএব দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের মধ্যে পাঁচজন মুখ্য লোককে সরা ও ইষ্টায়োল থেকে দেশ পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান করার জন্য পাঠাল। এই লোকেরা সমগ্র দান গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছিল। তারা তাদের বলল, “যাও, দেশটি অনুসন্ধান করো।” \p অতএব তারা ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে প্রবেশ করে মীখার বাড়িতে এল, এবং সেখানেই রাত কাটাল। \v 3 মীখার বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে, তারা সেই লেবীয় তরুণের কণ্ঠস্বর শুনে তাকে চিনতে পারল; তাই তারা সেখানে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “কে তোমাকে এখানে এনেছে? তুমি এখানে কী করছ? তুমি এখানে কেন এসেছ?” \p \v 4 মীখা তার জন্য যা যা করেছিল, সে তা তাদের বলে শোনাল এবং বলল, “তিনি আমাকে ভাড়া করেছেন ও আমি তাঁর যাজক হয়েছি।” \p \v 5 তখন তারা তাকে বলল, “দয়া করে ঈশ্বরের কাছ থেকে জেনে নাও যে আমাদের যাত্রা সফল হবে কি না।” \p \v 6 যাজকটি তাদের উত্তর দিল, “শান্তিপূর্বক এগিয়ে যাও। তোমাদের যাত্রায় সদাপ্রভুর অনুমোদন আছে।” \p \v 7 অতএব সেই পাঁচজন লোক সেই স্থানটি ত্যাগ করে লয়িশে এল। সেখানে তারা দেখল যে লোকজন সীদোনীয়দের মতো নিরাপদে, শান্তিতে ও নিশ্চিন্ত-নির্ভয়ভাবে জীবনযাপন করছে। আর যেহেতু তাদের দেশে কোনো কিছুরই অভাব ছিল না, তাই তারা সমৃদ্ধিশালীও হল। এছাড়াও, তারা সীদোনীয়দের কাছ থেকে বহুদূরে বসবাস করত এবং অন্য কারোর\f + \fr 18:7 \fr*\ft অথবা, অরামীয়দের\ft*\f* সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না। \p \v 8 সেই পাঁচজন যখন সরা ও ইষ্টায়োলে ফিরে এল, তখন দান গোষ্ঠীভুক্ত তাদের আত্মীয়স্বজনেরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “অবস্থা কেমন দেখলে?” \p \v 9 তারা উত্তর দিল, “চলো, তাদের আক্রমণ করা যাক! আমরা সেই দেশটি দেখলাম, এবং সেটি খুব সুন্দর। তোমরা কি কিছু করবে না? সেখানে গিয়ে সেটি দখল করে নিতে দ্বিধাবোধ কোরো না। \v 10 তোমরা যখন সেখানে যাবে, তখন দেখতে পাবে যে অসন্দিগ্ধচরিত্র মানুষজনদের ও খুব সুন্দর এমন এক দেশ ঈশ্বর তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, যেখানে কোনো কিছুরই অভাব নেই।” \p \v 11 পরে দান গোষ্ঠীভুক্ত 600 জন লোক, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে ও অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে, সরা ও ইষ্টায়োল থেকে যাত্রা শুরু করল। \v 12 পথে যেতে যেতে তারা যিহূদার কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের কাছে শিবির স্থাপন করল। এই জন্য আজও কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের পশ্চিমে অবস্থিত স্থানটিকে মহনেদান\f + \fr 18:12 \fr*\ft মহনেদান শব্দটির অর্থ দানের শিবির\ft*\f* বলে ডাকা হয়। \v 13 সেখান থেকে যাত্রা করে তারা ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে গেল এবং মীখার বাড়ি পর্যন্ত এল। \p \v 14 তখন যে পাঁচজন লোক লয়িশে দেশ পর্যবেক্ষণ করেছিল, তারা দান গোষ্ঠীভুক্ত তাদের আত্মীয়স্বজনদের বলল, “তোমরা কি জানো যে এই বাড়িগুলির মধ্যে কোনো একটিতে একটি এফোদ, কয়েকটি গৃহদেবতা এবং রুপো দিয়ে মোড়া একটি মূর্তি আছে? এখন তোমরা তো জানো, তোমাদের কী করণীয়।” \v 15 অতএব তারা সেদিকে মুখ ফিরিয়ে মীখার বাড়িতে গেল, যেখানে সেই লেবীয় তরুণটি বসবাস করত এবং তারা তাকে অভিবাদন জানাল। \v 16 যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত দান গোষ্ঠীভুক্ত সেই 600 জন লোক প্রবেশদ্বারের কাছে দাঁড়িয়েছিল। \v 17 দেশ পর্যবেক্ষণকারী সেই পাঁচজন লোক ভিতরে প্রবেশ করল এবং সেই প্রতিমা, এফোদ ও গৃহদেবতাদের তুলে নিল, আর সেই যাজক এবং অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত 600 জন লোক প্রবেশদ্বারের কাছে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 18 সেই পাঁচজন লোক যখন মীখার বাড়িতে গিয়ে সেই প্রতিমা, এফোদ ও গৃহদেবতাদের তুলে নিল, তখন সেই যাজক তাদের বলল, “তোমরা এ কী করছ?” \p \v 19 তারা তাকে উত্তর দিল, “চুপ করে থাকো! কোনও কথা বোলো না। আমাদের সঙ্গে চলো, এবং আমাদের পিতৃস্থানীয় এক যাজক হয়ে যাও। একটিমাত্র লোকের পরিবারের সেবা করার চেয়ে ইস্রায়েলের একটি বংশ ও গোষ্ঠীর সেবা করা কি তোমার পক্ষে ভালো নয়?” \v 20 সেই যাজক খুব খুশি হল। সে সেই এফোদ, গৃহদেবতাদের এবং সেই প্রতিমাটি নিয়ে সেই লোকদের সঙ্গে চলে গেল। \v 21 তাদের ছোটো ছোটো শিশুদের, তাদের গবাদি পশুপাল ও তাদের বিষয়সম্পত্তি সামনে রেখে তারা মুখ ফিরিয়ে চলে গেল। \p \v 22 মীখার বাড়ি থেকে তারা কিছু দূর যেতে না যেতেই, মীখার বাড়ির কাছে বসবাসকারী লোকদের ডাকা হল এবং তারা দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নাগাল ধরে ফেলল। \v 23 দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের লক্ষ্য করে তারা যখন চিৎকার করছিল, তখন দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা মুখ ফিরিয়ে মীখাকে বলল, “তোমার কী হয়েছে যে তুমি যুদ্ধ করার জন্য তোমার লোকদের ডেকে আনলে?” \p \v 24 সে উত্তর দিল, “তোমরা আমার তৈরি করা দেবতাদের, ও আমার যাজককে নিয়ে চলে গিয়েছ। আমার কাছে আর কী রইল? তোমরা কীভাবে প্রশ্ন করতে পারো, ‘তোমার কী হয়েছে?’ ” \p \v 25 দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা উত্তর দিল, “আমাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি কোরো না, তা না হলে কয়েকজন লোক ক্রুদ্ধ হয়ে তোমাদের আক্রমণ করে ফেলতে পারে, এবং তুমি ও তোমার পরিবার-পরিজন প্রাণ হারাবে।” \v 26 অতএব দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা নিজেদের পথ ধরে চলে গেল, এবং তারা যে তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, তা বুঝতে পেরে মীখা মুখ ফিরিয়ে ঘরে ফিরে গেল। \p \v 27 পরে তারা মীখার তৈরি করা বস্তুগুলি ও তার যাজককে নিয়ে সেই লয়িশে গেল, যেখানকার লোকেরা শান্তিতে ও নিশ্চিন্ত-নির্ভয় অবস্থায় ছিল। তারা তরোয়াল চালিয়ে তাদের আক্রমণ করল এবং তাদের নগরটি আগুনে পুড়িয়ে দিল। \v 28 তাদের রক্ষা করার কেউ ছিল না, কারণ তারা সীদোন থেকে বহুদূরে বসবাস করছিল এবং অন্য কারোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল না। সেই নগরটি বেথ-রহোবের নিকটবর্তী এক উপত্যকায় অবস্থিত ছিল। \p দান গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা সেই নগরটি পুনর্নির্মাণ করে সেখানে বসতি স্থাপন করল। \v 29 তারা তাদের পূর্বপুরুষ সেই দানের নামানুসারে সেই নগরটির নাম দিল দান, যিনি ইস্রায়েলের ছেলে ছিলেন—যদিও সেই নগরটিকে আগে লয়িশ বলে ডাকা হত। \v 30 তারা নিজেদের জন্য সেখানে সেই প্রতিমাটি প্রতিষ্ঠিত করল, এবং মোশির\f + \fr 18:30 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, মনঃশির\ft*\f* ছেলে গের্শোমের সন্তান যোনাথন ও তার ছেলেরা দেশের বন্দিদশার সময়কাল পর্যন্ত দান গোষ্ঠীর যাজক হয়ে রইল। \v 31 যতদিন শীলোতে ঈশ্বরের মন্দির ছিল, ততদিন তারা মীখার তৈরি করা প্রতিমাটি ব্যবহার করে যাচ্ছিল। \c 19 \s1 একজন লেবীয় এবং তার উপপত্নী \p \v 1 সেই সময় ইস্রায়েলে কোনও রাজা ছিলেন না। \p ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় একজন লেবীয় বসবাস করত। সে যিহূদার বেথলেহেম থেকে এক উপপত্নী এনেছিল। \v 2 কিন্তু সেই মহিলাটি তার প্রতি অবিশ্বস্ত হল। সে তাকে ত্যাগ করে যিহূদার বেথলেহেমে তার বাবা-মার ঘরে ফিরে গেল। সেখানে চার মাস থাকার পর, \v 3 তার স্বামী তাকে ফিরে আসার জন্য রাজি করাতে তার কাছে গেল। তার সাথে ছিল তার দাস ও দুটি গাধা। সেই লোকটির উপপত্নী তাকে নিজের বাবা-মার ঘরে নিয়ে গেল, এবং তার বাবা যখন সেই লেবীয়কে দেখল, তখন সে সানন্দে তাকে অভ্যর্থনা জানাল। \v 4 তার শ্বশুরমশাই, সেই মেয়েটির বাবা, তাকে সেখানে থেকে যেতে অনুরোধ করায় সে তিন দিন তার সঙ্গে থাকল এবং ভোজনপান করল ও সেখানে রাত কাটাল। \p \v 5 চতুর্থ দিন ভোরবেলায় উঠে সে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হল, কিন্তু সেই মেয়েটির বাবা তার জামাইকে বলল, “কিছু খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা করে নাও; পরে যেতে পারো।” \v 6 অতএব তারা দুজনে একসঙ্গে বসে ভোজনপান করল। তারপর সেই মেয়েটির বাবা বলল, “দয়া করে আজকের রাতটিও থেকে যাও ও একটু আরাম করে নাও।” \v 7 আর সেই লোকটি যখন যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল, তখন তার শ্বশুরমশাই তাকে অনুরোধ জানাল, তাই সে সেই রাতটিও সেখানে থেকে গেল। \v 8 পঞ্চম দিন সকালবেলায়, সে যখন যাওয়ার জন্য উঠল, তখন সেই মেয়েটির বাবা বলল, “জলখাবার খেয়ে নাও। দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করো!” অতএব তারা দুজনে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করল। \p \v 9 পরে যখন সেই লোকটি তার উপপত্নী ও তার দাসকে সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য উঠল, তখন তার শ্বশুরমশাই—সেই মেয়েটির বাবা বলল, “দেখো, সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। রাতটুকু এখানেই কাটিয়ে যাও; দিন প্রায় ফুরিয়েই এল। এখানে থেকে একটু আরাম করে নাও। আগামীকাল ভোরবেলায় উঠে তোমরা ঘরের দিকে রওনা হয়ে যেতে পারো।” \v 10 কিন্তু, আর একটি রাত সেখানে কাটাতে রাজি না হয়ে, সেই লোকটি উঠে জিন পরানো দুটি গাধা ও তার উপপত্নীকে সঙ্গে নিয়ে যিবূষের (অর্থাৎ, জেরুশালেমের) দিকে চলে গেল। \p \v 11 তারা যিবূষের কাছে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই বেলা প্রায় গড়িয়ে গেল ও দাস তার মনিবকে বলল, “আসুন, যিবূষীয়দের এই নগরে থেমে রাত কাটানো যাক।” \p \v 12 তার মনিব উত্তর দিল, “না। আমরা এমন কোনো নগরে প্রবেশ করব না, যেখানকার লোকেরা ইস্রায়েলী নয়। আমরা গিবিয়ার দিকে এগিয়ে যাব।” \v 13 সে আরও বলল, “এসো, গিবিয়ায় বা রামায় পৌঁছে, সেগুলির মধ্যে কোনো একটি স্থানে রাত কাটানো যাক।” \v 14 অতএব তারা এগিয়ে গেল, এবং বিন্যামীনের অন্তর্গত গিবিয়ার কাছে তারা পৌঁছানোমাত্রই সূর্য অস্ত গেল। \v 15 রাত কাটানোর জন্য তারা সেখানে থামল। তারা নগরের চকে গিয়ে বসল, কিন্তু রাতে থাকার জন্য কেউই তাদের ঘরে নিয়ে গেল না। \p \v 16 সেই সন্ধ্যায় ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের অধিবাসী, গিবিয়ায় বসবাসকারী একজন বৃদ্ধ ভদ্রলোক ক্ষেতে কাজ করে ফিরে আসছিলেন। (সেই স্থানের অধিবাসীরা বিন্যামীনীয় ছিল) \v 17 যখন সেই বৃদ্ধ ভদ্রলোক চোখ তুলে নগরের চকে সেই পথিককে দেখতে পেলেন, তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় যাচ্ছ? তুমি আসছই বা কোথা থেকে?” \p \v 18 সে উত্তর দিল, “আমরা যিহূদার অন্তর্গত বেথলেহেম থেকে ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের এক প্রত্যন্ত এলাকায় যাচ্ছি, যা আমার বাসস্থান। আমি যিহূদার অন্তর্গত বেথলেহেমে গিয়েছিলাম, আর এখন আমি সদাপ্রভুর মন্দিরে যাচ্ছি।\f + \fr 19:18 \fr*\ft অথবা, ঘরে ফিরে যাচ্ছি\ft*\f* রাতে থাকার জন্য কেউ আমাকে ঘরে নিয়ে যায়নি। \v 19 আমাদের গাধাগুলির জন্য আমাদের কাছে খড় ও পশুখাদ্য আছে এবং আপনার দাসেদের—আমার, স্ত্রীলোকটির ও আমাদের সঙ্গী এই যুবকটির জন্যও রুটি ও দ্রাক্ষারস আছে। আমাদের কোনো কিছুরই অভাব নেই।” \p \v 20 “আমার বাড়িতে তোমাদের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি,” সেই বৃদ্ধ ভদ্রলোক বললেন। “তোমাদের যা যা প্রয়োজন সেসব আমাকেই সরবরাহ করতে দাও। তোমরা শুধু চকে রাত কাটিয়ো না।” \v 21 অতএব তিনি তাদের তাঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন এবং গাধাগুলিকে খাবার দিলেন। পা ধোয়ার পর, তারাও ভোজনপান করল। \p \v 22 তারা যখন একটু আরাম করছিল, তখন নগরের কয়েকজন দুষ্টলোক সেই বাড়িটি ঘিরে ধরল। দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে, তারা চিৎকার করে সেই গৃহকর্তা বৃদ্ধ ভদ্রলোককে বলল, “তোমার বাড়িতে যে লোকটি এসেছে, তাকে বের করে আনো, যেন আমরা তার সঙ্গে যৌন সহবাস করতে পারি।” \p \v 23 সেই গৃহকর্তা বাইরে বের হয়ে তাদের বললেন, “ওহে বন্ধুরা, না, না, এত নীচ হোয়ো না। যেহেতু এই লোকটি আমার অতিথি, তাই এরকম জঘন্য কাজ কোরো না। \v 24 দেখো, এই আমার কুমারী মেয়ে, ও সেই লোকটির উপপত্নী। আমি এখনই তাদের তোমাদের কাছে বের করে আনব, তোমরা তাদের ভোগ করতে পারো এবং তাদের নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করো। কিন্তু এই লোকটির প্রতি এ ধরনের কোনও জঘন্য কাজ কোরো না।” \p \v 25 কিন্তু সেই লোকেরা তাঁর কথা শুনতে চাইল না। তাই সেই লেবীয় লোকটি তার উপপত্নীকে নিয়ে তাকে বাইরে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিল, আর তারা সারারাত ধরে তাকে ধর্ষণ করল ও তার উপর নির্যাতন চালাল, এবং ভোরবেলায় তাকে ছেড়ে দিল। \v 26 ভোরবেলায় সেই মহিলাটি উঠে যে বাড়িতে তার স্বামী ছিল সেখানে ফিরে গেল, ও দিনের আলো না ফোটা পর্যন্ত দোরগোড়ায় পড়ে রইল। \p \v 27 তার স্বামী সকালবেলায় উঠে বাড়ির দরজা খুলল এবং যাওয়ার জন্য বাইরে এসে দেখল, তার উপপত্নী সেই বাড়ির দরজায় পড়ে আছে ও গোবরাটে তার হাত ছড়িয়ে রেখেছে। \v 28 সে তাকে বলল, “ওঠো; যাওয়া যাক।” কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া গেল না। তখন সেই লোকটি তাকে গাধার পিঠে চাপিয়ে ঘরের দিকে রওনা হল। \p \v 29 ঘরে ফিরে এসে, সে একটি ছুরি নিয়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধরে ধরে তার উপপত্নীর দেহটি বারো টুকরো করে, সেগুলি ইস্রায়েলের সব এলাকায় পাঠিয়ে দিল। \v 30 যারা যারা তা দেখল, তারা প্রত্যেকে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “ইস্রায়েলীরা মিশর থেকে বের হয়ে আসার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনা কখনও দেখা যায়নি বা ঘটেওনি। ভাবা যায়! আমাদের কিছু একটা করতেই হবে! তাই চিৎকার করে ওঠো!” \c 20 \s1 ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের শাস্তি দেয় \p \v 1 পরে দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা থেকে এবং গিলিয়দ দেশ থেকে এসে সমগ্র ইস্রায়েল একজন মানুষের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর সামনে সমবেত হল। \v 2 ইস্রায়েলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সব লোকজনের নেতারা ঈশ্বরের প্রজাদের জনসমাবেশে 4,00,000 তরোয়ালধারী লোকের মধ্যে তাঁদের স্থান গ্রহণ করলেন। \v 3 (বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকজন শুনেছিল যে ইস্রায়েলীরা মিস্‌পাতে গিয়েছে) পরে ইস্রায়েলীরা বলল, “আমাদের বলো কীভাবে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটল।” \p \v 4 অতএব সেই নিহত মহিলাটির স্বামী—সেই লেবীয় লোকটি বলল, “আমি ও আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অন্তর্গত গিবিয়াতে গিয়েছিলাম। \v 5 রাতের বেলায় গিবিয়ার লোকজন আমাকে ধরার জন্য এসেছিল এবং আমাকে হত্যা করার মতলবে, সেই বাড়িটি ঘিরে ধরেছিল। তারা আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করল, ও সে মরে গেল। \v 6 আমি আমার উপপত্নীকে নিয়ে, তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে ইস্রায়েলের অধিকারভুক্ত প্রত্যেকটি এলাকায় একটি করে টুকরো পাঠিয়ে দিলাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে এই নীচ ও জঘন্য কাজটি করেছে। \v 7 এখন তোমরা, ইস্রায়েলীরা সবাই, চিৎকার করে ওঠো ও আমায় বলো তোমরা কী করার সিদ্ধান্ত নিলে।” \p \v 8 সব লোকজন উঠে দাঁড়িয়ে একযোগে বলে উঠল, “আমরা কেউ ঘরে যাব না। না, আমাদের মধ্যে একজনও তার বাড়িতে ফিরে যাবে না। \v 9 কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি আমরা যা করব তা হল এই: গুটিকাপাতের মাধ্যমে ক্রম স্থির করে আমরা গিবিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাব। \v 10 ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠী থেকে প্রতি একশো জনের মধ্যে দশজন, প্রতি 1,000 জনের মধ্যে একশো জন এবং প্রতি 10,000 জনের মধ্যে 1,000 জনকে নিয়ে আমরা তাদের সৈন্যবাহিনীর খাদ্য সরবরাহের জন্য নিযুক্ত করব। পরে, সৈন্যবাহিনী যখন বিন্যামীনের অন্তর্গত গিবিয়াতে\f + \fr 20:10 \fr*\ft অথবা, গেবাতে\ft*\f* পৌঁছাবে, তখন ইস্রায়েলের মধ্যে করা এই জঘন্য কাজের জন্য তারা তাদের উপযুক্ত দণ্ড দেবে।” \v 11 অতএব ইস্রায়েলীরা সবাই একত্রিত হয়ে সেই নগরটির বিরুদ্ধে একজন মানুষের মতো সংঘবদ্ধ হল। \p \v 12 ইস্রায়েলের বিভিন্ন গোষ্ঠী বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত এলাকার সর্বত্র লোক মারফত বলে পাঠাল, “তোমাদের মধ্যে এসব কী ভয়াবহ অপকর্ম হয়েছে? \v 13 এখন গিবিয়ার সেইসব দুর্জন লোককে তোমরা আমাদের হাতে তুলে দাও যেন আমরা তাদের হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার লোপ করতে পারি।” \p কিন্তু বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের স্বজাতীয় ইস্রায়েলীদের কথা শুনতে চাইল না। \v 14 তাদের নগরগুলি থেকে বেরিয়ে এসে তারা ইস্রায়েলীদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য গিবিয়ায় সমবেত হল। \v 15 অবিলম্বে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের নগরগুলি থেকে 26,000 তরোয়ালধারী লোক সংগ্রহ করল। এর পাশাপাশি গিবিয়াতে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে থেকেও 700 জন দক্ষ যুবক সংগ্রহ করা হল। \v 16 এইসব সৈনিকের মধ্যে বাছাই করা 700 জন সৈনিক ছিল ন্যাটা,\f + \fr 20:16 \fr*\ft অথবা, বাঁ-হাতি\ft*\f* যাদের প্রত্যেকেই চুলের মতো সূক্ষ্ম নিশানায় গুলতি দিয়ে পাথর ছুঁড়তে পারত ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হত না। \p \v 17 বিন্যামীনকে বাদ দিয়ে ইস্রায়েল তরোয়ালধারী এমন 4,00,000 লোক জোগাড় করল, যারা সবাই যুদ্ধের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন ছিল। \p \v 18 ইস্রায়েলীরা বেথেলে\f + \fr 20:18 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের গৃহে; 26 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জানতে চাইল। তারা বলল, “বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের মধ্যে থেকে কারা আগে যাবে?” \p সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যিহূদা গোষ্ঠী আগে যাবে।” \p \v 19 পরদিন সকালে ইস্রায়েলীরা উঠে গিবিয়ার কাছে শিবির স্থাপন করল। \v 20 ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বাইরে গেল এবং গিবিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবস্থান নিল। \v 21 বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে সেদিন যুদ্ধক্ষেত্রে 22,000 ইস্রায়েলীকে হত্যা করল। \v 22 কিন্তু ইস্রায়েলীরা পরস্পরকে উৎসাহিত করল এবং প্রথম দিন যেখানে তারা নিজেদের মোতায়েন করেছিল, সেখানেই আবার তাদের অবস্থান গ্রহণ করল। \v 23 ইস্রায়েলীরা গিয়ে সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করল, এবং তাঁর কাছে জানতে চাইল। তারা বলল, “আমরা কি আবার আমাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব?” \p সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “তাদের বিরুদ্ধে চলে যাও।” \p \v 24 পরে ইস্রায়েলীরা দ্বিতীয় দিনে বিন্যামীনের দিকে এগিয়ে গেল। \v 25 এবার, বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে এমন আরও 18,000 ইস্রায়েলীকে হত্যা করল, যারা সবাই ছিল তরোয়ালধারী সৈনিক। \p \v 26 পরে ইস্রায়েলীরা সবাই—সমগ্র সৈন্যবাহিনী বেথেলে গেল, এবং সেখানে বসে তারা সদাপ্রভুর সামনে কান্নাকাটি করতে লাগল। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা উপবাস করল এবং সদাপ্রভুর কাছে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। \v 27 আর ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর কাছে জানতে চাইল। (সেই সময় ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি সেখানে ছিল, \v 28 এবং হারোণের নাতি, তথা ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস সেটির সামনে থেকে পরিচর্যা করতেন) তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা কি আবার আমাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, কি যাব না?” \p সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যাও, কারণ আগামীকাল আমি তাদের তোমাদের হাতে সমর্পণ করে দেব।” \p \v 29 পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারপাশে ওৎ পেতে বসে থাকল। \v 30 তৃতীয় দিনে তারা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে উঠে গেল এবং গিবিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিল, যেভাবে আগেও তারা নিয়েছিল। \v 31 বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের সম্মুখীন হওয়ার জন্য বেরিয়ে এল এবং তাদের নগর থেকে দূরে আকৃষ্ট করা হল। আগের মতোই তারা ইস্রায়েলীদের হত্যা করতে শুরু করল, তাতে খোলা মাঠে এবং পথের উপরে—একটি বেথেলের অভিমুখে ও অন্যটি গিবিয়ার অভিমুখে, প্রায় ত্রিশজন মরে পড়ে থাকল। \v 32 একদিকে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বলছিল, “আগের মতোই আমরা ওদের পরাজিত করছি,” অন্যদিকে ইস্রায়েলীরা বলছিল, “এসো আমরা পিছিয়ে যাই এবং নগর থেকে ওদের পথের দিকে আকর্ষণ করি।” \p \v 33 ইস্রায়েলের লোকজন সবাই তাদের স্থান থেকে সরে এসে বায়াল-তামরে অবস্থান গ্রহণ করল, এবং ওৎ পেতে বসে থাকা ইস্রায়েলীরা গিবিয়ার\f + \fr 20:33 \fr*\ft অথবা, গেবার\ft*\f* পশ্চিমদিকে অবস্থিত তাদের গুপ্ত স্থান ছেড়ে বেরিয়ে এল। \v 34 পরে ইস্রায়েলের 10,000 জন যোগ্যতাসম্পন্ন যুবক সামনে থেকে গিবিয়ার উপর আক্রমণ চালাল। সেই যুদ্ধ এত ধুন্ধুমার হল যে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বুঝতেই পারেনি যে বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছে। \v 35 সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে পরাজিত করলেন, এবং সেদিন ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 25,100 জন লোককে হত্যা করল। তারা সবাই ছিল তরোয়ালধারী সৈনিক। \v 36 তখন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা দেখল যে তারা পরাজিত হয়েছে। \p ইত্যবসরে ইস্রায়েলের লোকজন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল, কারণ তারা সেইসব লোকের উপরে নির্ভর করছিল, যারা গিবিয়ার কাছে ওৎ পেতে বসেছিল। \v 37 যারা ওৎ পেতে বসেছিল, তারা আচমকাই গিবিয়াতে ঢুকে পড়ল, এবং চারপাশে ছড়িয়ে গিয়ে তরোয়াল চালিয়ে নগরবাসী সবাইকে আঘাত করল। \v 38 ইস্রায়েলীরা ওৎ পেতে থাকা লোকদের বলে দিয়েছিল, যেন তারা নগর থেকে ধোঁয়াযুক্ত বিশাল মেঘ ছড়িয়ে দেয়, \v 39 এবং তখনই ইস্রায়েলীরা পালটা আক্রমণ করবে। \p বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের (প্রায় ত্রিশ জনকে) হত্যা করতে শুরু করল, এবং তারা বলল, “প্রথমবারের যুদ্ধের মতোই আমরা তাদের পরাজিত করছি।” \v 40 কিন্তু নগর থেকে যখন ধোঁয়ার স্তম্ভ উপরে উঠতে শুরু করল, তখন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা মুখ ফিরিয়ে দেখল যে সমগ্র নগর থেকে গলগল করে ধোঁয়া আকাশে উঠে যাচ্ছে। \v 41 তখন ইস্রায়েলীরাও তাদের পালটা আক্রমণ করল, এবং বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল, কারণ তারা বুঝতে পারল যে তাদের উপরে বিপর্যয় নেমে এসেছে। \v 42 অতএব তারা ইস্রায়েলীদের কাছ থেকে মরুপ্রান্তরের দিকে পালিয়ে গেল, কিন্তু তারা যুদ্ধ এড়িয়ে পালাতে পারল না। আর যেসব ইস্রায়েলী লোকজন নগর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তারা সেখানেই তাদের হত্যা করল। \v 43 ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের ঘিরে ধরল, তাড়া করল এবং খুব সহজেই পূর্বদিকে গিবিয়ার কাছে গিয়ে তাদের ছারখার করে দিল। \v 44 বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 18,000 লোক নিহত হল। তারা সবাই ছিল বীর যোদ্ধা। \v 45 তারা যখন মরুপ্রান্তরের দিকে পিছু ফিরে রিম্মোণ পাষাণ-পাথরের দিকে পালিয়ে গেল, তখন ইস্রায়েলীরা পথেই 5,000 জন লোককে হত্যা করল। গিদোম পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে তারা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের পশ্চাদ্ধাবন করে গেল এবং আরও 2,000 লোককে হত্যা করল। \p \v 46 সেদিন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 25,000 তরোয়ালধারী লোক নিহত হল। তারা সবাই ছিল বীর যোদ্ধা। \v 47 কিন্তু তাদের মধ্যে 600 জন লোক মরুপ্রান্তরের দিকে পিছু ফিরে রিম্মোণ পাষাণ-পাথরের দিকে পালিয়ে গেল এবং চার মাস তারা সেখানেই থাকল। \v 48 ইস্রায়েলী লোকজন বিন্যামীন গোষ্ঠীর অধিকারভুক্ত এলাকায় ফিরে গেল এবং সব নগরে তরোয়াল চালিয়ে মানুষ, পশুপাল ও আরও যা যা পাওয়া গেল, সেসব ছারখার করে দিল। তারা যত নগর পেল, সেগুলিতে আগুন জ্বালিয়ে দিল। \c 21 \s1 বিন্যামিনীয়দের স্ত্রীরা \p \v 1 ইস্রায়েলী লোকজন মিস্‌পাতে এক শপথ নিয়েছিল: “আমাদের মধ্যে কেউই তার মেয়ের সঙ্গে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত কোনও ছেলের বিয়ে দেবে না।” \p \v 2 লোকেরা বেথেলে\f + \fr 21:2 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের গৃহে\ft*\f* গেল, এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের সামনে বসে জোর গলায় প্রচণ্ড কান্নাকাটি করল। \v 3 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, হে সদাপ্রভু,” তারা চিৎকার করে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্যে এমন ঘটনা কেন ঘটল? আজ কেন ইস্রায়েল থেকে একটি গোষ্ঠী বিলুপ্ত হতে চলেছে?” \p \v 4 পরদিন ভোরবেলায় লোকেরা এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করল এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। \p \v 5 পরে ইস্রায়েলীরা জিজ্ঞাসা করল, “ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর মধ্যে কারা সদাপ্রভুর সামনে সমবেত হয়নি?” কারণ তারা এক আনুষ্ঠানিক শপথ নিয়েছিল যে মিস্‌পাতে যদি কেউ সদাপ্রভুর সামনে না আসে তবে তাকে মেরে ফেলা হবে। \p \v 6 ইত্যবসরে ইস্রায়েলীরা তাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীর জন্য শোকসন্তপ্ত হল। “আজ ইস্রায়েল থেকে একটি গোষ্ঠী বিচ্ছিন্ন হল,” তারা বলল। \v 7 “আমরা কীভাবে তবে যারা এখনও অবশিষ্ট আছে তাদের জন্য স্ত্রীর বিধান করব, যেহেতু আমরা তো সদাপ্রভুর নামে শপথ নিয়েছি যে তাদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দেব না।” \v 8 পরে তারা জিজ্ঞাসা করল, “ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে কোন গোষ্ঠী মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর সামনে আসেনি?” তারা জানতে পারল যে যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউ সেই সভায় যোগ দেওয়ার জন্য শিবিরে আসেনি। \v 9 কারণ তারা যখন লোকগণনা করল, তখন দেখা গেল যে যাবেশ-গিলিয়দের লোকদের মধ্যে কেউ সেখানে নেই। \p \v 10 অতএব জনসমাজ 12,000 যোদ্ধাকে নির্দেশ দিয়ে পাঠাল যেন তারা যাবেশ-গিলিয়দে যায় এবং মহিলা ও শিশুসহ সেখানে বসবাসকারী সব লোককে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করে। \v 11 “তোমাদের এরকম করতে হবে,” তারা বলল। “প্রত্যেক পুরুষমানুষকে এবং যে কুমারী নয়, এমন প্রত্যেক মহিলাকে হত্যা কোরো।” \v 12 যাবেশ-গিলিয়দে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে তারা এমন 400 জন তরুণীর খোঁজ পেল, যারা কোনো পুরুষমানুষের সঙ্গে কখনও শোয়নি, এবং তারা তাদের কনান দেশের শীলোতে অবস্থিত শিবিরে নিয়ে এল। \p \v 13 পরে সমগ্র জনসমাজ রিম্মোণ পাষাণ-পাথরে বসবাসকারী বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের কাছে এক শান্তি-প্রস্তাব দিয়ে পাঠাল। \v 14 অতএব বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা সেই সময় ফিরে এল এবং যাবেশ-গিলিয়দের যে মেয়েদের বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে সেই লোকদের বিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু তাদের সবার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মেয়ে পাওয়া গেল না। \p \v 15 লোকেরা বিন্যামীনের জন্য মনঃক্ষুণ্ণ হল, কারণ সদাপ্রভু ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে এক ফাঁক তৈরি করলেন। \v 16 আর জনসমাজের প্রাচীনেরা বললেন, “বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত মহিলারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, এখন অবশিষ্ট পুরুষমানুষদের জন্য আমরা কীভাবে স্ত্রীর ব্যবস্থা করব? \v 17 বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকদের বংশরক্ষাও তো করতে হবে,” তাঁরা বললেন, “যেন ইস্রায়েলের একটি গোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন হয়ে না যায়। \v 18 আমরা তো আমাদের মেয়েদের সঙ্গে তাদের বিয়ে দিতে পারব না, যেহেতু আমরা, ইস্রায়েলীরা এই শপথ নিয়েছি: ‘যে কেউ বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত কাউকে কন্যাদান করবে, সে অভিশপ্ত হোক।’ \v 19 কিন্তু দেখো, সেই শীলোতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রতি বছর এক উৎসব হয়, যা বেথেলের উত্তরে, এবং বেথেল থেকে শিখিমের দিকে চলে যাওয়া পথের পূর্বদিকে, এবং লবোনার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।” \p \v 20 অতএব তাঁরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “যাও ও দ্রাক্ষাক্ষেতে লুকিয়ে থাকো \v 21 এবং লক্ষ্য রাখো। শীলোর তরুণীরা যখন দল বেঁধে নাচ করতে করতে বেরিয়ে আসবে, তখন দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে তোমরা প্রত্যেকে তাদের মধ্যে এক একজনকে নিজেদের স্ত্রী করে নিয়ো। পরে বিন্যামীন দেশে ফিরে যেয়ো। \v 22 তাদের বাবারা বা ভাইরা যখন আমাদের কাছে অভিযোগ জানাবে, তখন আমরা তাদের বলব, ‘তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে আমাদের একটু উপকার করো, কারণ যুদ্ধের সময় আমরা তাদের জন্য স্ত্রী পাইনি। তোমরা তোমাদের শপথ ভাঙার দোষে দোষী হবে না, কারণ তোমরা তো তোমাদের মেয়েদের তাদের হাতে তুলে দাওনি।’ ” \p \v 23 অতএব বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা সেরকমই করল। সেই তরুণীরা যখন নাচছিল, তখন প্রত্যেকজন পুরুষমানুষ এক একজনকে ধরে তার স্ত্রী হওয়ার জন্য তাকে তুলে নিয়ে গেল। পরে তারা তাদের অধিকারভুক্ত এলাকায় ফিরে গেল এবং নগরগুলি পুনর্নির্মাণ করে সেগুলিতে বসতি স্থাপন করল। \p \v 24 সেই সময় ইস্রায়েলীরা সেই স্থান ত্যাগ করে প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব অধিকার অনুসারে তাদের গোষ্ঠী ও বংশভুক্ত এলাকায়, নিজেদের ঘরে ফিরে গেল। \p \v 25 সেই সময় ইস্রায়েলে কোনও রাজা ছিলেন না; প্রত্যেকে, তাদের যা ভালো বলে মনে হত, তাই করত।