\id GEN - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h আদি পুস্তক \toc1 আদি পুস্তক \toc2 আদি পুস্তক \toc3 আদি \mt1 আদি পুস্তক \c 1 \s1 শুরুর বিবরণ \p \v 1 শুরুতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। \v 2 এমতাবস্থায় পৃথিবী নিরবয়ব ও ফাঁকা ছিল, গভীরের উপরের স্তরে অন্ধকার ছেয়ে ছিল, এবং ঈশ্বরের আত্মা জলের উপর ভেসে বেড়াচ্ছিলেন। \b \p \v 3 আর ঈশ্বর বললেন, “আলো হোক,” এবং আলো হল। \v 4 ঈশ্বর দেখলেন যে সেই আলো ভালো হয়েছে, এবং তিনি অন্ধকার থেকে আলোকে বিচ্ছিন্ন করলেন। \v 5 ঈশ্বর আলোকে “দিন” নাম দিলেন এবং অন্ধকারকে “রাত” নাম দিলেন। সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল—এই হল প্রথম দিন। \b \p \v 6 আর ঈশ্বর বললেন, “পৃথিবীর জল থেকে আকাশের জলকে আলাদা করার জন্য এই দুই ধরনের জলের মাঝখানে উন্মুক্ত এলাকা তৈরি হোক।” \v 7 অতএব ঈশ্বর উন্মুক্ত এলাকা তৈরি করলেন এবং সেই এলাকার উপরের ও নিচের জলকে আলাদা করে দিলেন। আর তা সেইমতোই হল। \v 8 ঈশ্বর সেই উন্মুক্ত এলাকাকে “আকাশ” নাম দিলেন। আর সন্ধ্যা হল ও সকাল হল—এই হল দ্বিতীয় দিন। \b \p \v 9 আর ঈশ্বর বললেন, “আকাশের নিচের সব জল এক স্থানে জমা হোক, এবং শুকনো জমি দৃষ্টিগোচর হোক।” আর তা সেইমতোই হল। \v 10 ঈশ্বর সেই শুকনো জমির নাম দিলেন “ভূমি” এবং জমা জলকে তিনি “সমুদ্র” নাম দিলেন। আর ঈশ্বর দেখলেন যে সেটি ভালো হয়েছে। \p \v 11 পরে ঈশ্বর বললেন, “ভূমি গাছপালা উৎপন্ন করুক: সেগুলির বিভিন্ন ধরন অনুসারে ভূমিতে উৎপন্ন সবীজ লতাগুল্ম ও বীজ সমেত ফল উৎপাদনকারী গাছ উৎপন্ন হোক।” আর তা সেইমতোই হল। \v 12 ভূমি গাছপালা উৎপন্ন করল: নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে বীজ উৎপাদনকারী লতাগুল্ম এবং নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে বীজ সমেত ফল উৎপাদনকারী গাছ উৎপন্ন হল। এবং ঈশ্বর দেখলেন যে সেগুলি ভালো হয়েছে। \v 13 আর সন্ধ্যা হল ও সকাল হল—এই হল তৃতীয় দিন। \b \p \v 14 আর ঈশ্বর বললেন, “রাত থেকে দিনকে আলাদা করার জন্য আকাশের উন্মুক্ত এলাকায় জ্যোতি হোক, এবং বিভিন্ন ঋতু, দিন ও বছর চিহ্নিত করার জন্য এগুলি নিদর্শনরূপে কাজ করুক, \v 15 আর পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এগুলি আকাশের উন্মুক্ত এলাকায় আলোর উৎস হয়ে যাক।” আর তা সেরকমই হল। \v 16 ঈশ্বর দুটি বড়ো জ্যোতি তৈরি করলেন—দিন নিয়ন্ত্রিত করার জন্য অপেক্ষাকৃত বড়ো জ্যোতি এবং রাত নিয়ন্ত্রিত করার জন্য অপেক্ষাকৃত ছোটো জ্যোতি। তিনি তারকামালাও তৈরি করলেন। \v 17 পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর সেগুলিকে আকাশের উন্মুক্ত এলাকায় বসিয়ে দিলেন, \v 18 যেন সেগুলি দিন ও রাতের উপরে প্রভুত্ব করতে পারে, এবং অন্ধকার থেকে আলোকে আলাদা করতে পারে। আর ঈশ্বর দেখলেন যে তা ভালো হয়েছে। \v 19 আর সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল—এই হল চতুর্থ দিন। \b \p \v 20 আর ঈশ্বর বললেন, “জলে জীবিত প্রাণীর ঝাঁক দেখা যাক এবং আকাশে পৃথিবীর উপর পাখিরা উড়ে বেড়াক।” \v 21 তাই ঈশ্বর সমুদ্রের বড়ো বড়ো প্রাণীদের এবং জলে থাকা প্রত্যেকটি জীবিত ও গতিশীল জীবকে তাদের প্রজাতি অনুসারে, এবং প্রত্যেকটি ডানাযুক্ত পাখিকে তাদের প্রজাতি অনুসারে সৃষ্টি করলেন। আর ঈশ্বর দেখলেন যে তা ভালো হয়েছে। \v 22 ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “ফলবান হও ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে সমুদ্রের জল ভরিয়ে তোলো, এবং পৃথিবীর বুকে পাখিরাও সংখ্যায় বৃদ্ধি পাক।” \v 23 আর সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল—এই হল পঞ্চম দিন। \b \p \v 24 আর ঈশ্বর বললেন, “ভূমি নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে জীবিত প্রাণী উৎপন্ন করুক: গৃহপালিত পশু, জমির সরীসৃপ প্রাণী, এবং বন্যপশু, প্রত্যেকে নিজস্ব প্রজাতি অনুসারেই হোক।” আর তা সেইমতোই হল। \v 25 বন্যপশুদের তাদের নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে, গৃহপালিত পশুদের তাদের নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে, এবং জমির সরীসৃপ প্রাণীদের তাদের নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে ঈশ্বর তৈরি করলেন। আর ঈশ্বর দেখলেন যে তা ভালো হয়েছে। \p \v 26 তখন ঈশ্বর বললেন, “এসো, আমরা আমাদের প্রতিমূর্তিতে ও আমাদের সাদৃশ্যে মানুষ তৈরি করি, যেন তারা সমুদ্রের মাছেদের উপরে এবং আকাশের পাখিদের উপরে, গৃহপালিত পশুদের ও সব বন্যপশুর উপরে,\f + \fr 1:26 \fr*\ft মূল ভাষায়, অর্থাৎ হিব্রু ভাষায় সম্ভবত পৃথিবীর উপরে\ft*\f* এবং জমির সব সরীসৃপ প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ব করে।” \q1 \v 27 অতএব ঈশ্বর তাঁর নিজস্ব প্রতিমূর্তিতে মানুষ সৃষ্টি করলেন, \q2 ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তিনি তাকে সৃষ্টি করলেন; \q2 পুরুষ ও স্ত্রী করে তিনি তাদের সৃষ্টি করলেন। \p \v 28 ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমরা ফলবান হও ও সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করো; পৃথিবী ভরিয়ে তোলো ও এটি বশে রেখো। সমুদ্রের মাছগুলির উপরে ও আকাশের পাখিদের উপরে এবং প্রত্যেকটি সরীসৃপ প্রাণীর উপরে তোমরা কর্তৃত্ব কোরো।” \p \v 29 পরে ঈশ্বর বললেন, “প্রত্যেকটি সবীজ লতাগুল্ম, যা সমগ্র পৃথিবীর বুকে উৎপন্ন হয় ও বীজ সমেত ফল উৎপাদনকারী প্রত্যেকটি গাছপালা আমি তোমাদের দিলাম। সেগুলি তোমাদের খাদ্যদ্রব্য হবে। \v 30 আর পৃথিবীর সব পশুর ও আকাশের সব পাখির এবং সব সরীসৃপ প্রাণীর কাছে—যে সবকিছুর মধ্যে জীবন আছে—খাদ্যদ্রব্যরূপে আমি প্রত্যেকটি সবুজ চারাগাছ দিলাম।” আর তা সেইমতোই হল। \p \v 31 ঈশ্বর যা যা তৈরি করলেন, তা তিনি দেখলেন, এবং তা খুবই ভালো হল। আর সন্ধ্যা হল ও সকাল হল—এই হল ষষ্ঠ দিন। \b \c 2 \p \v 1 এইভাবে আকাশমণ্ডল এবং পৃথিবী ও সেখানকার সবকিছু সৃষ্টির কাজ সম্পূর্ণ হল। \b \p \v 2 সপ্তম দিনে এসে ঈশ্বর তাঁর সব কাজকর্ম সমাপ্ত করলেন; তাই সপ্তম দিনে তিনি তাঁর সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন। \v 3 আর ঈশ্বর সপ্তম দিনকে আশীর্বাদ করে সেটিকে পবিত্র করলেন, কারণ এই দিনেই তিনি তাঁর সব সৃষ্টিকর্ম সম্পূর্ণ করে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। \s1 আদম এবং হবা \p \v 4 আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী যখন সৃষ্টি হল, সদাপ্রভু ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল তৈরি করলেন তখন তার বর্ণনা এইরকম হল। \b \p \v 5 আর তখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে\f + \fr 2:5 \fr*\ft অথবা, ভূমিতে; 5 ও 6 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।\ft*\f* কোনও গাছপালা উৎপন্ন হয়নি এবং কোনও চারাগাছ তখনও গজিয়ে ওঠেনি, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠাননি, এবং জমিতে চাষ করার জন্য সেখানে কোনও মানুষও ছিল না, \v 6 কিন্তু পৃথিবী থেকে জলধারা\f + \fr 2:6 \fr*\ft অথবা, জলীয় বাষ্প\ft*\f* উঠে এল ও জমির সমগ্র বহির্ভাগ জলসিক্ত করে তুলল। \v 7 সদাপ্রভু ঈশ্বর জমির ধুলো থেকে মানুষকে\f + \fr 2:7 \fr*\ft অথবা, আদমকে\ft*\f* গড়ে তুললেন এবং তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু ভরে দিলেন, এবং সেই মানুষ এক জীবিত প্রাণী হয়ে গেল। \p \v 8 এমতাবস্থায় সদাপ্রভু ঈশ্বর এদনে, পূর্বদিকে একটি বাগান তৈরি করলেন; এবং সেখানে তিনি তাঁর হাতে গড়া মানুষটিকে রাখলেন। \v 9 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর ভূমিতে সব ধরনের গাছপালা জন্মাতে দিলেন—যেসব গাছপালা দেখতে ভালো লাগে এবং খাদ্যরূপেও যেগুলি ভালো। বাগানের মাঝখানে জীবনদায়ী গাছ এবং ভালোমন্দের জ্ঞানদায়ী গাছ ছিল। \p \v 10 এদন থেকে একটি নদী প্রবাহিত হয়ে বাগানটি জলসেচিত করে তুলল; সেখান থেকে এটি চার ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। \v 11 প্রথমটির নাম পীশোন; এটি সমগ্র সেই হবীলা দেশ জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে, যেখানে সোনা পাওয়া যায়। \v 12 (সেই দেশের সোনা খুব উন্নত মানের; আর সেখানে সুগন্ধি ধুনো\f + \fr 2:12 \fr*\ft অথবা, ভালো মুক্তো\ft*\f* এবং স্ফটিকমণিও পাওয়া যায়) \v 13 দ্বিতীয় নদীটির নাম গীহোন, এটি সমগ্র কূশ\f + \fr 2:13 \fr*\ft খুব সম্ভবত, দক্ষিণ-পূর্ব মেসোপটেমিয়া\ft*\f* দেশ জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে। \v 14 তৃতীয় নদীটির নাম টাইগ্রিস; এটি আসিরিয়ার পূর্বদিক ঘেঁসে বয়ে গিয়েছে। চতুর্থ নদীটি হল ইউফ্রেটিস। \p \v 15 সদাপ্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে নিয়ে এদন বাগানে কাজ করার এবং সেটির যত্ন নেওয়ার জন্য তাকে সেখানে রাখলেন। \v 16 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে আদেশ দিলেন, “বাগানের যে কোনো গাছের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে তুমি স্বাধীন; \v 17 কিন্তু ভালোমন্দের জ্ঞানদায়ী গাছের ফল তুমি অবশ্যই খেয়ো না। যদি সেই গাছের ফল খাও, তবে তুমি নিশ্চয় মারা যাবে।” \p \v 18 সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের একা থাকা ভালো নয়। আমি তার উপযুক্ত এক সহকারিণী তৈরি করব।” \p \v 19 এখন সদাপ্রভু ঈশ্বর সব বন্যপশুকে ও আকাশের সব পাখিকে মাটি দিয়ে তৈরি করলেন। সেই মানুষটি তাদের কী নাম দেয় তা দেখার জন্য ঈশ্বর তাদের তাঁর কাছে আনলেন; আর সেই মানুষটি প্রত্যেকটি জীবন্ত প্রাণীকে যে যে নাম দিলেন, তার নাম ঠিক তাই হল। \v 20 অতএব সেই মানুষটি সব গৃহপালিত পশুর, আকাশের পাখিদের এবং সব বন্যপশুর নামকরণ করলেন। \p কিন্তু আদমের\f + \fr 2:20 \fr*\ft অথবা, মানুষের\ft*\f* জন্য উপযুক্ত কোনও সহকারিণী পাওয়া যায়নি। \v 21 অতএব সদাপ্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়তে দিলেন; এবং যখন তিনি ঘুমাচ্ছিলেন, তখন ঈশ্বর সেই মানুষটির পাঁজরের একটি হাড় বের করে নিয়ে\f + \fr 2:21 \fr*\ft অথবা, সেই মানুষটির বুকের অংশবিশেষ নিয়ে\ft*\f* তাঁর সেই স্থানটি মাংস দিয়ে ভরাট করে দিলেন। \v 22 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটির পাঁজরের যে হাড়টি বের করলেন, তা দিয়ে এক নারী তৈরি করলেন, এবং ঈশ্বর তাঁকে সেই মানুষটির কাছে আনলেন। \p \v 23 মানুষটি বললেন, \q1 “এখন এই আমার অস্থির অস্থি \q2 ও আমার মাংসের মাংস; \q1 এর নাম হবে ‘নারী,’ \q2 কারণ একে নর থেকে নেওয়া হয়েছে।” \m \v 24 এই কারণে একজন পুরুষ তার পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করে, তার স্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হবে ও সেই দুজন একাঙ্গ হবে। \p \v 25 সেই পুরুষ ও তাঁর স্ত্রী, দুজনেই নগ্ন ছিলেন, আর তাদের কোনো লজ্জাবোধও ছিল না। \c 3 \s1 মানুষের পাপে পতন \p \v 1 এখন সদাপ্রভু ঈশ্বরের নির্মিত যে কোনো বন্যপশুর মধ্যে সাপই ছিল সবচেয়ে ধূর্ত। সে নারীকে বলল, “সত্যিই কি ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই বাগানের কোনও গাছের ফল খেয়ো না’?” \p \v 2 নারী সাপকে বললেন, “আমরা বাগানের গাছগুলি থেকে ফল খেতে পারি, \v 3 কিন্তু ঈশ্বর বলেছেন, ‘বাগানের মাঝখানে যে গাছটি আছে, তার ফল তোমরা অবশ্যই খাবে না, আর এটি তোমরা ছোঁবেও না, এমনটি করলে তোমরা মারা যাবে।’ ” \p \v 4 “অবশ্যই তোমরা মরবে না,” সাপ নারীকে বলল। \v 5 “কারণ ঈশ্বর জানেন যে, যখন তোমরা এটি খাবে, তখন তোমাদের চোখ খুলে যাবে, ও তোমরা ভালোমন্দ জানার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের মতো হয়ে যাবে।” \p \v 6 নারী যখন দেখলেন যে সেই গাছের ফলটি খাদ্য হিসেবে ভালো ও চোখের পক্ষে আনন্দদায়ক, এবং জ্ঞানার্জনের পক্ষেও কাম্য, তখন তিনি কয়েকটি ফল পেড়ে তা খেলেন। তিনি তাঁর সেই স্বামীকেও কয়েকটি ফল দিলেন, যিনি তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ও তিনিও তা খেলেন। \v 7 তখন তাদের দুজনেরই চোখ খুলে গেল, এবং তারা অনুভব করলেন যে তারা উলঙ্গ; তাই তারা ডুমুর গাছের পাতা একসাথে সেলাই করে নিজেদের জন্য আচ্ছাদন তৈরি করলেন। \p \v 8 তখন সেই মানুষটি ও তাঁর স্ত্রী সেই সদাপ্রভু ঈশ্বরের হাঁটার আওয়াজ শুনতে পেলেন, যিনি দিনের পড়ন্ত বেলায় বাগানে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছিলেন, এবং তারা সদাপ্রভু ঈশ্বরকে এড়িয়ে বাগানের গাছগুলির আড়ালে লুকিয়ে পড়লেন। \v 9 কিন্তু সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে ডেকে বললেন, “তুমি কোথায়?” \p \v 10 তিনি উত্তর দিলেন, “বাগানে আমি তোমার হাঁটার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম, আর আমি ভয় পেয়েছিলাম কারণ আমি যে উলঙ্গ; তাই আমি লুকিয়ে পড়েছি।” \p \v 11 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “কে তোমাকে বলেছে যে তুমি উলঙ্গ? যে গাছের ফল না খাওয়ার আদেশ আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, সেই গাছের ফল তুমি কি খেয়েছ?” \p \v 12 মানুষটি বললেন, “আমার সঙ্গে তুমি যে নারীকে এখানে রেখেছ—সেই গাছটি থেকে কয়েকটি ফল আমায় দিয়েছিল এবং আমি তা খেয়ে ফেলেছি।” \p \v 13 তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন, “তুমি এ কী করলে?” \p নারী বললেন, “সাপ আমাকে প্রতারিত করেছে, ও আমি খেয়ে ফেলেছি।” \p \v 14 অতএব সদাপ্রভু ঈশ্বর সাপকে বললেন, “যেহেতু তুমি এমনটি করেছ, তাই, \q1 “সব গবাদি পশুর মধ্যে \q2 ও সব বন্যপশুর মধ্যে তুমিই হলে অভিশপ্ত! \q1 তুমি বুকে ভর দিয়ে চলবে \q2 আর সারা জীবনভর \q2 ধুলো খেয়ে যাবে। \q1 \v 15 তোমার ও নারীর মধ্যে \q2 আর তোমার ও তার সন্তানসন্ততির\f + \fr 3:15 \fr*\ft অথবা, “বংশের”\ft*\f* মধ্যে \q2 আমি শত্রুতা জন্মাব; \q1 সে তোমার মাথা গুঁড়িয়ে দেবে\f + \fr 3:15 \fr*\ft অথবা, “মাথায় আঘাত করবে”\ft*\f* \q2 আর তুমি তার পায়ের গোড়ালিতে আঘাত হানবে।” \p \v 16 সদাপ্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন, \q1 “আমি তোমার সন্তান প্রসবের ব্যথা খুব বাড়িয়ে দেব; \q2 প্রচণ্ড প্রসববেদনা সহ্য করে তুমি সন্তানের জন্ম দেবে। \q1 তোমার স্বামীর প্রতি তোমার আকুল বাসনা থাকবে, \q2 আর সে তোমার উপর কর্তৃত্ব করবে।” \p \v 17 আদমকে তিনি বললেন, “যেহেতু তুমি তোমার স্ত্রীর কথা শুনে সেই গাছের ফল খেয়েছ, যেটির বিষয়ে আমি তোমাকে আদেশ দিয়েছিলাম, ‘তুমি এর ফল অবশ্যই খাবে না,’ তাই \q1 “তোমার জন্য ভূমি অভিশপ্ত হল; \q2 আজীবন তুমি \q2 কঠোর পরিশ্রম করে তা থেকে খাবার খাবে। \q1 \v 18 তা তোমার জন্য কাঁটাগাছ ও শিয়ালকাঁটা ফলাবে, \q2 আর তুমি ক্ষেতের লতাগুল্ম খাবে, \q1 \v 19 যতদিন না তুমি মাটিতে ফিরে যাচ্ছ, \q2 ততদিন তুমি কপালের ঘাম ঝরিয়ে তোমার খাবার খাবে, \q1 যেহেতু সেখান থেকেই তোমাকে আনা হয়েছে; \q2 কারণ তুমি তো ধুলো, \q1 আর ধুলোতেই তুমি যাবে ফিরে।” \p \v 20 আদম\f + \fr 3:20 \fr*\ft অথবা, “মানুষটি”\ft*\f* তাঁর স্ত্রীর নাম দিলেন হবা\f + \fr 3:20 \fr*\ft “হবা” শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত “জীবন্ত”\ft*\f*, কারণ তিনি হবেন সব জীবন্ত মানুষের মা। \p \v 21 সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম ও তাঁর স্ত্রীর জন্য চামড়ার পোশাক বানিয়ে দিলেন এবং তাদের কাপড় পরিয়ে দিলেন। \v 22 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষ এখন ভালোমন্দের জ্ঞান পেয়ে আমাদের একজনের মতো হয়ে গিয়েছে। তাকে এই সুযোগ দেওয়া যাবে না, যেন সে তার হাত বাড়িয়ে আবার জীবনদায়ী গাছের ফল খেয়ে অমর হয়ে যায়।” \v 23 তাই সদাপ্রভু ঈশ্বর তাঁকে এদন বাগান থেকে নির্বাসিত করে সেই ভূমিতে কাজ করার জন্য পাঠিয়ে দিলেন, যেখান থেকে তাঁকে তুলে আনা হয়েছিল। \v 24 সেই মানুষটিকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর, এদন বাগানের পূর্বদিকে\f + \fr 3:24 \fr*\ft অথবা, “সামনের দিকে”\ft*\f* তিনি করূবদের\f + \fr 3:24 \fr*\ft অর্থাৎ, “পরাক্রমী স্বর্গদূতদের”\ft*\f* মোতায়েন করে দিলেন এবং জীবনদায়ী গাছের কাছে পৌঁছানোর পথ রক্ষা করার জন্য ঘূর্ণায়মান জ্বলন্ত এক তরোয়ালও বসিয়ে দিলেন। \c 4 \s1 কয়িন ও হেবল \p \v 1 আদম\f + \fr 4:1 \fr*\ft অথবা, “সেই মানুষটি”\ft*\f* তাঁর স্ত্রী হবার সঙ্গে সহবাস করলেন, এবং হবা গর্ভবতী হয়ে কয়িনের\f + \fr 4:1 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “কয়িন” শব্দটি শোনায় “অর্জন করা” বা “উৎপন্ন করা” রূপে।\ft*\f* জন্ম দিলেন। হবা বললেন, “সদাপ্রভুর সাহায্য নিয়ে আমি একটি পুরুষমানুষ উৎপন্ন করেছি।”\f + \fr 4:1 \fr*\ft অথবা, “অর্জন করেছি”\ft*\f* \v 2 পরে তিনি কয়িনের ভাই হেবলের জন্ম দিলেন। \p হেবল মেষপাল দেখাশোনা করত, এবং কয়িন জমি চাষ-আবাদ করত। \v 3 অবশেষে কয়িন তার জমির কিছু ফল সদাপ্রভুর কাছে এক উপহার রূপে নিয়ে এল। \v 4 কিন্তু হেবল উপহার রূপে তার মেষপালের প্রথমজাত কয়েকটি মেষের চর্বিদার অংশ আনল। সদাপ্রভু হেবল ও তার উপহারের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, \v 5 কিন্তু কয়িন ও তার উপহারের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট হননি। তাই কয়িন খুব ক্রুদ্ধ হল এবং সে বিষণ্ণবদন হয়ে পড়ল। \p \v 6 তখন সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, “তুমি ক্রুদ্ধ হলে কেন? কেন তুমি বিষণ্ণবদন হয়ে পড়েছ? \v 7 যদি তুমি ঠিক কাজ করতে, তবে কি গ্রাহ্য হতে না? কিন্তু যদি ঠিক কাজ না করে থাকো, তবে পাপ তোমার দরজায় গুটিসুটি মেরে আছে; পাপ তোমাকে গ্রাস করতে চাইছে, কিন্তু তোমাকেই পাপকে বশে রাখতে হবে।” \p \v 8 এদিকে কয়িন তার ভাই হেবলকে বলল, “চলো, আমরা জমিতে যাই।”\f + \fr 4:8 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপিতে “চলো, আমরা জমিতে যাই” এই কথাগুলি অনুপস্থিত।\ft*\f* আর তারা যখন জমিতে ছিল, তখন কয়িন তার ভাই হেবলকে আক্রমণ করে তাকে হত্যা করল। \p \v 9 তখন সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, “তোমার ভাই হেবল কোথায়?” \p “আমি জানি না,” সে উত্তর দিল, “আমি কি আমার ভাইয়ের তত্ত্বাবধায়ক?” \p \v 10 সদাপ্রভু বললেন, “তুমি এ কী করলে? শোনো! জমি থেকে তোমার ভাইয়ের রক্তের কান্না আমার কানে ভেসে আসছে। \v 11 এখন তুমি অভিশাপগ্রস্ত হলে এবং সেই জমি থেকে বিতাড়িতও হলে, যা তোমার হাত থেকে তোমার ভাইয়ের রক্ত গ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। \v 12 যখন তুমি এই জমিতে কাজ করবে, তখন আর তা তোমার জন্য ফসল উৎপন্ন করবে না। এ জগতে তুমি অশান্ত এক ভ্রমণকারী হয়েই থাকবে।” \p \v 13 কয়িন সদাপ্রভুকে বলল, “আমার শাস্তিটি, আমার শক্তির অতিরিক্ত হয়ে গেল। \v 14 আজ তুমি আমাকে কৃষিভূমি থেকে তাড়িয়ে দিলে, আর আমি তোমার উপস্থিতি থেকে লুকিয়ে পড়ব; পৃথিবীতে আমি অশান্ত এক ভ্রমণকারী হয়েই থাকব, এবং যে কেউ আমার দেখা পাবে সে আমাকে হত্যা করবে।” \p \v 15 কিন্তু সদাপ্রভু তাকে বললেন, “তা নয়;\f + \fr 4:15 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, “ঠিক আছে”\ft*\f* কেউ যদি কয়িনকে হত্যা করে, তবে তার প্রতিশোধে তাকে সাতগুণ বেশি নির্যাতন সহ্য করতে হবে।” পরে সদাপ্রভু কয়িনের গায়ে একটি চিহ্ন লাগিয়ে দিলেন, যেন যে কেউ কয়িনের খোঁজ পেয়ে তাকে হত্যা করতে না পারে। \v 16 অতএব কয়িন সদাপ্রভুর উপস্থিতি থেকে সরে গিয়ে এদনের পূর্বদিকে নোদ\f + \fr 4:16 \fr*\ft “নোদ” শব্দের অর্থ “বিচরণ”\ft*\f* দেশে গিয়ে বসবাস করতে লাগল। \p \v 17 কয়িন তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করল, ও তার স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে হনোকের জন্ম দিল। পরে কয়িন একটি নগর গড়ে তার ছেলে হনোকের নামানুসারে সেটির নাম রাখল হনোক। \v 18 হনোক ঈরদের জন্ম দিল, এবং ঈরদ মহূয়ায়েলের বাবা হল, এবং মহূয়ায়েল মথূশায়েলের বাবা হল, এবং মথূশায়েল লেমকের বাবা হল। \p \v 19 লেমক দুজন মহিলাকে বিয়ে করল, একজনের নাম আদা ও অন্যজনের নাম সিল্লা। \v 20 আদা যাবলের জন্ম দিল; যারা তাঁবুতে বসবাস করে ও গৃহপালিত পশুপাল পালন করে, সে তাদের পূর্বপুরুষ। \v 21 তার ভাইয়ের নাম যুবল; যারা বীণা ও বাঁশি বাজায়, সে তাদের পূর্বপুরুষ। \v 22 সিল্লারও এক ছেলে ছিল, যে তূবল-কয়িন, ব্রোঞ্জ ও লোহা দিয়ে সেসব ধরনের যন্ত্রপাতি গড়ে তুলত।\f + \fr 4:22 \fr*\ft অথবা, “যারা ব্রোঞ্জ ও লোহার যন্ত্রপাতি তৈরি করত, সে তাদের প্রশিক্ষণ দিত”\ft*\f* তূবল-কয়িনের বোনের নাম নয়মা। \p \v 23 লেমক তার স্ত্রীদের বলল, \q1 “আদা ও সিল্লা; আমার কথা শোনো; \q2 ওহে লেমকের স্ত্রীরা, আমার কথায় কান দাও। \q1 আমায় যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য একটি লোককে আমি হত্যা করেছি, \q2 আমায় আহত করার জন্য একটি যুবককে আমি হত্যা করেছি। \q1 \v 24 কয়িনের হত্যার প্রতিশোধ যদি সাতগুণ হয়, \q2 তবে লেমকের হত্যার প্রতিশোধ হবে 77 গুণ।” \p \v 25 আদম আবার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলেন, এবং হবা এক ছেলের জন্ম দিয়ে এই বলে তার নাম দিলেন শেথ,\f + \fr 4:25 \fr*\ft খুব সম্ভবত “শেথ” শব্দের অর্থ “মঞ্জুর”\ft*\f* যে “কয়িন হেবলকে হত্যা করেছে বলে ঈশ্বর তার স্থানে আমাকে আর এক ছেলে মঞ্জুর করেছেন।” \v 26 শেথেরও একটি ছেলে হল, এবং তিনি তার নাম দিলেন ইনোশ। \p তখন থেকেই লোকেরা সদাপ্রভুর নামে ডাকতে\f + \fr 4:26 \fr*\ft অথবা, “সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করতে”\ft*\f* শুরু করল। \c 5 \s1 আদম থেকে নোহ \p \v 1 এই হল আদমের বংশাবলির লিখিত নথি। \b \p ঈশ্বর যখন মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন, তখন তিনি তাদের ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তৈরি করলেন। \v 2 তিনি তাদের পুরুষ ও স্ত্রী করে সৃষ্টি করলেন এবং তাদের আশীর্বাদও করলেন। আর তারা যখন সৃষ্ট হলেন তখন তিনি তাদের “মানবজাতি”\f + \fr 5:2 \fr*\ft অথবা, “আদম”\ft*\f* নাম দিলেন। \b \li1 \v 3 130 বছর বয়সে আদম তাঁর নিজের সাদৃশ্যে, তাঁর নিজের প্রতিমূর্তিতে এক ছেলে লাভ করলেন; আর তিনি তাঁর নাম দিলেন শেথ। \v 4 শেথের জন্ম হওয়ার পর, আদম 800 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 5 সব মিলিয়ে, আদম মোট 930 বছর বেঁচেছিলেন, আর পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 6 105 বছর বয়সে শেথ ইনোশের বাবা\f + \fr 5:6 \fr*\ft বাবা শব্দের অর্থ পূর্বপুরুষও হতে পারে। \+xt 7-26 |link-href="GEN 5:7-26"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।\ft*\f* হলেন। \v 7 ইনোশের বাবা হওয়ার পর শেথ 807 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 8 সব মিলিয়ে, শেথ মোট 912 বছর বেঁচেছিলেন, আর পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 9 90 বছর বয়সে ইনোশ কৈননের বাবা হলেন। \v 10 কৈননের বাবা হওয়ার পর ইনোশ 815 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 11 সব মিলিয়ে, ইনোশ মোট 905 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 12 70 বছর বয়সে, কৈনন মহললেলের বাবা হলেন। \v 13 মহললেলের বাবা হওয়ার পর কৈনন 840 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 14 সব মিলিয়ে, কৈনন মোট 910 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 15 65 বছর বয়সে, মহললেল যেরদের বাবা হলেন। \v 16 যেরদের বাবা হওয়ার পর মহললেল 830 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 17 সব মিলিয়ে, মহললেল মোট 895 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 18 162 বছর বয়সে, যেরদ হনোকের বাবা হলেন। \v 19 হনোকের বাবা হওয়ার পর যেরদ 800 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 20 সব মিলিয়ে, যেরদ মোট 962 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 21 65 বছর বয়সে হনোক, মথূশেলহের বাবা হলেন। \v 22 মথূশেলহের বাবা হওয়ার পর হনোক 300 বছর ধরে বিশ্বস্ততাপূর্বক ঈশ্বরের সাথে চলাফেরা করলেন, এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 23 সব মিলিয়ে, হনোক মোট 365 বছর বেঁচেছিলেন। \v 24 হনোক বিশ্বস্ততাপূর্বক ঈশ্বরের সাথে চলাফেরা করলেন; পরে তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন, কারণ ঈশ্বর তাঁকে তুলে নিলেন। \li1 \v 25 187 বছর বয়সে মথূশেলহ, লেমকের বাবা হলেন। \v 26 লেমকের বাবা হওয়ার পর মথূশেলহ 782 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 27 সব মিলিয়ে, মথূশেলহ মোট 969 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 28 182 বছর বয়সে লেমকের এক ছেলে হল। \v 29 তিনি তার নাম দিলেন নোহ\f + \fr 5:29 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “নোহ” শব্দটি শোনায় স্বস্তির মতো।\ft*\f* এবং বললেন, “সদাপ্রভুর দ্বারা জমি অভিশপ্ত হওয়ার কারণে হাতে কাজ করতে গিয়ে আমাদের যে ব্যথা ও কষ্টকর পরিশ্রম ভোগ করতে হচ্ছে, তা থেকে এই ছেলেটি আমাদের স্বস্তি দেবে।” \v 30 নোহের জন্ম হওয়ার পর, লেমক 595 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \v 31 সব মিলিয়ে, লেমক মোট 777 বছর বেঁচেছিলেন, পরে তিনি মারা যান। \li1 \v 32 500 বছর বয়সে নোহ, শেম, হাম ও যেফতের বাবা হলেন। \c 6 \s1 জগতের দুষ্টতা \p \v 1 পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা যখন বাড়তে শুরু করল ও তাদের ঔরসে কন্যাসন্তানেরা জন্মাল, \v 2 তখন ঈশ্বরের ছেলেরা দেখল যে মানুষের মেয়েরা বেশ সুন্দরী, এবং তাদের মধ্যে থেকে তারা নিজেদের পছন্দমতো মেয়েকে বিয়ে করল। \v 3 তখন সদাপ্রভু বললেন, “আমার আত্মা অনন্তকাল ধরে মানুষের সাথে বিবাদ করবেন\f + \fr 6:3 \fr*\ft অথবা, আমার আত্মা অনন্তকাল ধরে মানুষের মধ্যে থাকবেন না\ft*\f* না, কারণ তারা নশ্বর;\f + \fr 6:3 \fr*\ft অথবা, নীতিভ্রষ্ট\ft*\f* তাদের আয়ু হবে 120 বছর।” \p \v 4 সে যুগে পৃথিবীতে নেফিলীমরা\f + \fr 6:4 \fr*\ft শব্দটির সঠিক অর্থ অস্পষ্ট, অবশ্য এর অর্থ হতে পারে দানবেরা; \+xt গণনা পুস্তক 13:33\+xt* পদও দেখুন\ft*\f* বসবাস করত—এবং পরবর্তীকালেও করত—যখন ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষের মেয়েদের সঙ্গে সহবাস করল এবং তাদের মাধ্যমে সন্তানসন্ততি লাভ করল। তারাই প্রাচীনকালের বীরপুরুষ, বিখ্যাত মানুষ হল। \p \v 5 সদাপ্রভু দেখলেন পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা কত বেড়ে গিয়েছে, এবং তাদের অন্তরের চিন্তাভাবনার প্রত্যেকটি প্রবণতা সবসময় শুধু মন্দই থেকে গেল। \v 6 পৃথিবীতে মানবজাতিকে তৈরি করেছেন বলে সদাপ্রভু মর্মাহত হলেন, এবং তাঁর অন্তর গভীর মর্মবেদনায় ভরে উঠল। \v 7 তাই সদাপ্রভু বললেন, “যে মানবজাতিকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের—এবং তাদের সাথে সাথে পশুদের, পাখিদের ও সরীসৃপ প্রাণীদেরও—আমি এই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলব, কারণ তাদের তৈরি করেছি বলে আমার অনুতাপ হচ্ছে।” \v 8 কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করলেন। \s1 নোহ এবং জলপ্লাবন \p \v 9 এই হল নোহ ও তাঁর পরিবারের বিবরণ। \b \p নোহ তাঁর সমকালীন লোকদের মধ্যে এক ধার্মিক, অনিন্দনীয় লোক ছিলেন, আর তিনি বিশ্বস্ততাপূর্বক ঈশ্বরের সাথে চলাফেরা করতেন। \v 10 নোহের তিন ছেলে ছিল: শেম, হাম ও যেফৎ। \p \v 11 এমতাবস্থায় পৃথিবী ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নীতিভ্রষ্ট ছিল এবং হিংস্রতাতেও পরিপূর্ণ হয়েছিল। \v 12 ঈশ্বর দেখলেন পৃথিবী কত নীতিভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে, কারণ পৃথিবীর সব মানুষজন তাদের জীবনযাপন নীতিভ্রষ্ট করে তুলেছিল। \v 13 অতএব ঈশ্বর নোহকে বললেন, “আমি সব মানুষের জীবন শেষ করে দিতে চলেছি, কারণ এদের জন্যই পৃথিবী হিংস্রতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমি নির্ঘাৎ তাদের ও পৃথিবীকে একসাথে ধ্বংস করে দিতে চলেছি। \v 14 তাই তুমি নিজেই দেবদারু কাঠ দিয়ে একটি জাহাজ তৈরি করো; তার মধ্যে কয়েকটি ঘর তৈরি কোরো এবং তার ভিতরের ও বাইরের দিকে আলকাতরা মাখিয়ে দিয়ো। \v 15 এভাবেই তোমাকে এটি তৈরি করতে হবে: জাহাজটি 135 মিটার লম্বা, 23 মিটার চওড়া ও 14 মিটার উঁচু\f + \fr 6:15 \fr*\ft মূল ভাষায়, 300 হাত লম্বা, পঞ্চাশ হাত চওড়া ও ত্রিশ হাত উঁচু\ft*\f* হবে। \v 16 এর একটি ছাদ তৈরি কোরো এবং ছাদের নিচে চারদিকে 45 সেন্টিমিটার\f + \fr 6:16 \fr*\ft মূল ভাষায় এক হাত\ft*\f* উঁচু একটি জানালা তৈরি কোরো। জাহাজটির একদিকে একটি দরজা তৈরি কোরো এবং জাহাজে নিম্ন, মধ্যম ও উপর তলা তৈরি কোরো। \v 17 পৃথিবীতে বন্যার জল পাঠিয়ে আমি আকাশমণ্ডলের নিচে থাকা সব প্রাণকে, প্রাণবায়ুবিশিষ্ট প্রত্যেকটি প্রাণীকে ধ্বংস করে দিতে চলেছি। পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হবে। \v 18 কিন্তু তোমার সাথে আমি আমার নিয়ম প্রতিষ্ঠিত করব, এবং তুমি সেই জাহাজে প্রবেশ করবে—তুমি ও তোমার সাথে তোমার ছেলেরা, ও তোমার স্ত্রী এবং তোমার পুত্রবধূরাও। \v 19 সব জীবিত প্রাণীর মধ্যে থেকে এক এক জোড়া করে মদ্দা ও মাদি প্রাণীকে তোমার সাথে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তোমাকে জাহাজে এনে রাখতে হবে। \v 20 জীবিত থাকার জন্য সব ধরনের পাখি, সব ধরনের পশু এবং সব ধরনের সরীসৃপ প্রাণী দুটি দুটি করে তোমার কাছে আসবে। \v 21 তোমাদের ও তাদের সকলের খাদ্যরূপে তোমাকে সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য মজুত করতে হবে।” \p \v 22 ঈশ্বর যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, নোহ সবকিছু ঠিক সেভাবেই করলেন। \c 7 \p \v 1 সদাপ্রভু পরে নোহকে বললেন, “তুমি ও তোমার সম্পূর্ণ পরিবার জাহাজে প্রবেশ করো, কারণ এই প্রজন্মে আমি তোমাকেই ধার্মিকরূপে খুঁজে পেয়েছি। \v 2 তুমি সব ধরনের শুচিশুদ্ধ পশুর মধ্যে সাত জোড়া করে, একটি মদ্দা ও তার সহচরীকে, সব ধরনের অশুচি পশুর মধ্যে এক জোড়া করে, একটি মদ্দা ও তার সহচরীকে, \v 3 আর সব ধরনের পাখির মধ্যে সাত জোড়া করে, মদ্দা ও মাদিকেও সাথে নিয়ো, যেন পৃথিবীর সর্বত্র তাদের বিভিন্ন প্রজাতি রক্ষা পায়। \v 4 আর সাত দিন পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পর্যন্ত চলতে থাকা বৃষ্টি পাঠাব, এবং আমার তৈরি করা প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীকে আমি পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলব।” \p \v 5 আর সদাপ্রভু নোহকে যা যা আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি সেসবকিছু করলেন। \p \v 6 নোহের 600 বছর বয়সকালে বন্যার জল পৃথিবীতে ধেয়ে এল। \v 7 আর বন্যার জলের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নোহ এবং তাঁর ছেলেরা ও তাঁর স্ত্রী ও পুত্রবধূরা সবাই সেই জাহাজে প্রবেশ করলেন। \v 8 শুচিশুদ্ধ ও অশুচি পশুদের, পাখিদের ও সরীসৃপ সব প্রাণীর মদ্দা ও মাদিরা জোড়ায় জোড়ায়, \v 9 নোহকে দেওয়া ঈশ্বরের আদেশানুসারে নোহের কাছে এল এবং জাহাজে প্রবেশ করল। \v 10 আর সেই সাত দিন পর পৃথিবীতে বন্যার জল ধেয়ে এল। \p \v 11 নোহের জীবনকালের 600 তম বছরের, দ্বিতীয় মাসের সপ্তদশতম দিনে—সেদিন ভূগর্ভস্থ জলের সব উৎস বিস্ফোরিত হল, এবং আকাশের জলনিকাশের সব পথ খুলে গেল। \v 12 আর চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পৃথিবীতে বৃষ্টি পড়ল। \p \v 13 সেদিনই নোহ ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর ছেলেরা—শেম, হাম ও যেফৎ, ও তিন পুত্রবধূ সেই জাহাজে প্রবেশ করলেন। \v 14 তাদের সাথে তারা নিজ নিজ প্রজাতি অনুসারে সব ধরনের বন্যপশু, সব ধরনের গৃহপালিত পশু, সব ধরনের সরীসৃপ প্রাণী এবং ডানাওয়ালা সব ধরনের পাখি রাখলেন। \v 15 প্রাণবায়ুবিশিষ্ট সব প্রাণী জোড়ায় জোড়ায় নোহের কাছে এল এবং জাহাজে প্রবেশ করল। \v 16 যেসব পশু ভিতরে ঢুকল, তারা ছিল প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীর মদ্দা ও মাদি পশু, ঠিক যেভাবে ঈশ্বর নোহকে আদেশ দিয়েছিলেন। পরে সদাপ্রভু তাঁকে ভিতর থেকে বন্ধ করে দিলেন। \p \v 17 চল্লিশ দিন ধরে পৃথিবীতে বন্যা হল, আর যেমন যেমন জল বেড়েছিল, তেমন তেমন জাহাজটিকে সেই জল ভূতল থেকে উঁচুতে তুলে ধরেছিল। \v 18 জল উপরে উঠে পৃথিবীর উপর অত্যন্ত বেড়ে গেল, এবং সেই জাহাজটি জলের উপর ভেসে উঠল। \v 19 জল পৃথিবীর উপর খুব বেড়ে গেল, ও সমগ্র আকাশমণ্ডলের নিচে অবস্থিত সব উঁচু উঁচু পাহাড়-পর্বত ঢাকা পড়ে গেল। \v 20 জলস্তর 6.8 মিটারেরও\f + \fr 7:20 \fr*\ft অথবা, পনেরো হাত\ft*\f* বেশি উচ্চতায় উঠে গেল ও পাহাড়-পর্বতগুলি ঢাকা পড়ে গেল। \v 21 পাখি, গৃহপালিত ও বন্যপশু, পৃথিবীতে উড়ে বেড়ানো সব কীটপতঙ্গ, ও সমগ্র মানবজাতি—পৃথিবীতে বিচরণকারী প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণী ধ্বংস হল। \v 22 শুকনো জমির উপরে থাকা প্রত্যেকটি শ্বাসবিশিষ্ট প্রাণী মারা গেল। \v 23 পৃথিবীর বুকে যত জীবিত প্রাণী ছিল, সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল; মানুষজন ও পশু এবং সরীসৃপ জীব ও আকাশের পাখি, সবাই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। শুধুমাত্র নোহ এবং জাহাজে যারা তাঁর সাথে ছিল, তারাই বাদ পড়ল। \p \v 24 150 দিন ধরে জল পৃথিবীকে প্লাবিত করে রাখল। \c 8 \p \v 1 কিন্তু ঈশ্বর নোহকে এবং জাহাজে তাঁর সাথে থাকা সব বন্য ও গৃহপালিত পশুকে স্মরণ করলেন, এবং পৃথিবীতে তিনি বাতাস পাঠালেন, ও জল সরে গেল। \v 2 এদিকে মাটির নিচে থাকা জলের উৎসগুলি, ও আকাশমণ্ডলের জানালাগুলি বন্ধ হয়ে গেল, এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়াও বন্ধ হল। \v 3 পৃথিবী থেকে জল সরার প্রক্রিয়া অব্যাহত রইল। 150 দিন পর জল নিচে নামল, \v 4 এবং সপ্তম মাসের সপ্তদশতম দিনে জাহাজটি আরারট পর্বতের চূড়ায় এসে স্থির হল। \v 5 দশম মাস পর্যন্ত জল অনবরত সরে এল, এবং দশম মাসের প্রথম দিনে পাহাড়-পর্বতের চূড়াগুলি দৃষ্টিগোচর হল। \p \v 6 চল্লিশ দিন পর নোহ সেই জানালাটি খুলে দিলেন, যেটি তিনি সেই জাহাজে তৈরি করেছিলেন \v 7 এবং একটি দাঁড়কাক বাইরে পাঠালেন, আর পৃথিবীতে জল না শুকানো পর্যন্ত সেটি ইতস্তত বাইরে যাচ্ছিল ও ফিরে আসছিল। \v 8 পরে স্থলভূমির উপরে জল শুকিয়েছে কি না, তা দেখার জন্য তিনি একটি পায়রা বাইরে পাঠালেন। \v 9 কিন্তু পায়রাটি তার পা রাখার জায়গা পায়নি, কারণ পৃথিবীর উপরে সর্বত্র তখনও জল জমে ছিল; তাই সেটি জাহাজে নোহের কাছে ফিরে এল। তখন তিনি তাঁর হাত বাড়িয়ে পায়রাটিকে ধরে জাহাজে তাঁর নিজের কাছে ফিরিয়ে আনলেন। \v 10 তিনি আরও সাত দিন অপেক্ষা করলেন এবং আবার জাহাজ থেকে সেই পায়রাটিকে বাইরে পাঠালেন। \v 11 সন্ধ্যাবেলায় যখন সেই পায়রাটি তাঁর কাছে ফিরে এল, তখন সেটির চঞ্চুতে\f + \fr 8:11 \fr*\ft অথবা, “ঠোঁটে”\ft*\f* ছিল জলপাই গাছের একটি টাটকা পাতা! তখন নোহ জানতে পারলেন যে পৃথিবী থেকে জল সরে গিয়েছে। \v 12 তিনি আরও সাত দিন অপেক্ষা করলেন এবং আবার সেই পায়রাটিকে বাইরে পাঠালেন, এবার কিন্তু সেটি আর তাঁর কাছে ফিরে এল না। \p \v 13 নোহের জীবনকালের 601 তম বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে, পৃথিবীর উপরে জল শুকিয়ে গেল। নোহ তখন জাহাজ থেকে আচ্ছাদনটি সরিয়ে দিলেন এবং দেখতে পেলেন যে স্থলভূমির উপরদিকটি শুকিয়ে গিয়েছে। \v 14 দ্বিতীয় মাসের সাতাশতম দিনে পৃথিবী পুরোপুরি শুকিয়ে গেল। \p \v 15 ঈশ্বর তখন নোহকে বললেন, \v 16 “তুমি ও তোমার স্ত্রী ও তোমার ছেলেরা ও তাদের স্ত্রীরা—তোমরা জাহাজ থেকে বাইরে বেরিয়ে এসো। \v 17 যেসব জীবিত প্রাণী তোমার সাথে আছে—পাখিরা, পশুরা, ও সব সরীসৃপ প্রাণী—সবাইকে বাইরে বের করে আনো, যেন সেগুলি পৃথিবীতে বংশবৃদ্ধি করে এখানে ফলবান হয় ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়।” \p \v 18 অতএব নোহ তাঁর স্ত্রীকে, ছেলেদের, এবং তাঁর পুত্রবধূদের সাথে নিয়ে বাইরে বের হয়ে এলেন। \v 19 সব পশু এবং সরীসৃপ প্রাণী ও পাখি—পৃথিবীতে বিচরণকারী সবকিছু, তাদের প্রজাতি অনুসারে এক এক করে জাহাজ থেকে বাইরে বের হয়ে এল। \p \v 20 পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন এবং, সব শুচিশুদ্ধ পশু ও শুচিশুদ্ধ পাখির মধ্যে থেকে কয়েকটি নিলেন, ও সেই বেদিতে হোমবলি উৎসর্গ করলেন। \v 21 সদাপ্রভু সেই প্রীতিকর সৌরভের ঘ্রাণ নিয়ে মনে মনে বললেন: “মানুষের জন্য আমি আর কখনোই ভূমিকে অভিশাপ দেব না, যদিও\f + \fr 8:21 \fr*\ft অথবা, “কারণ”\ft*\f* শিশুকাল থেকেই মানুষের অন্তরের সব প্রবণতা মন্দ। যেভাবে আমি সব জীবিত প্রাণীকে ধ্বংস করেছি, আমি আর তা করব না। \q1 \v 22 “যতদিন এই পৃথিবী টিকে থাকবে, \q1 বীজবপনকাল ও ফসল গোলাজাত করার সময়, \q1 শৈত্য ও উত্তাপ, \q1 গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল, \q1 দিন ও রাত \q1 কখনোই শেষ হবে না।” \c 9 \s1 নোহের সঙ্গে ঈশ্বরের নিয়ম স্থাপন \p \v 1 পরে ঈশ্বর নোহ ও তাঁর ছেলেদের আশীর্বাদ করে বললেন, “ফলবান হও ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবী ভরিয়ে তোলো। \v 2 পৃথিবীর সব জন্তু ও আকাশের সব পাখি, সব সরীসৃপ প্রাণী, ও সমুদ্রের সব মাছ তোমাদের দেখে ভীত ও আতঙ্কিত হবে; তোমাদের হাতে এদের তুলে দেওয়া হল। \v 3 যা যা জীবন্ত ও চলেফিরে বেড়ায়, সেসব তোমাদের খাদ্য হবে। ঠিক যেভাবে আমি তোমাদের সবুজ গাছপালা দিয়েছি, সেভাবে এখন সবকিছু আমি তোমাদের দিচ্ছি। \p \v 4 “কিন্তু যে মাংসে প্রাণ-রক্ত অবশিষ্ট আছে, তোমরা সেই মাংস কখনোই খেয়ো না। \v 5 আর তোমাদের প্রাণ-রক্তের হিসেবও আমি নিশ্চিতভাবেই চাইব। প্রত্যেকটি পশুর কাছে আমি হিসেব চাইব। আর প্রত্যেকটি মানুষের কাছেও, আমি অন্যান্য মানুষের প্রাণের হিসেব চাইব। \q1 \v 6 “যে কেউ মানুষের রক্ত ঝরাবে, \q2 মানুষের দ্বারাই তার রক্ত ঝরবে; \q1 কারণ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে \q2 ঈশ্বর মানুষকে তৈরি করেছেন। \m \v 7 আর তোমরা ফলবান হয়ে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করো; পৃথিবীতে বংশবৃদ্ধি করো ও এখানে বর্ধিষ্ণু হও।” \p \v 8 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর সাথে থাকা তাঁর ছেলেদের বললেন, \v 9 “আমার নিয়মটি আমি এখন তোমাদের সঙ্গে ও তোমাদের ভাবী বংশধরদের সঙ্গে \v 10 এবং তোমাদের সাথে থাকা সব জীবিত প্রাণীর—পাখিদের, গৃহপালিত পশুদের ও সব বন্যপশুর, যারা তোমাদের সাথে জাহাজের বাইরে বের হয়ে এসেছিল—পৃথিবীর সব জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপন করছি। \v 11 আমি তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থাপন করছি: আর কখনও সব প্রাণী বন্যার জলে উচ্ছিন্ন হবে না; আর কখনও এই পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য কোনও বন্যা হবে না।” \p \v 12 আর ঈশ্বর বললেন, “এই হল সেই নিয়মের চিহ্ন, যা আমি আমার ও তোমাদের মধ্যে তথা তোমাদের সঙ্গে থাকা প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপন করেছি, পরবর্তী সব প্রজন্মের জন্যও এ এক নিয়ম হবে: \v 13 মেঘের মধ্যে আমি আমার মেঘধনু বসিয়ে দিয়েছি, আর এটিই হবে আমার ও পৃথিবীর মধ্যে স্থাপিত সেই চিহ্ন। \v 14 পৃথিবীর উপর যখনই আমি মেঘ বিস্তার করব ও সেই মেঘে মেঘধনু আবির্ভূত হবে, \v 15 তখনই আমি তোমাদের এবং তোমাদের সঙ্গে থাকা সব জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপিত আমার সেই নিয়মটি স্মরণ করব। আর কখনও জল বন্যায় পরিণত হয়ে সব প্রাণীকে ধ্বংস করবে না। \v 16 যখনই মেঘে মেঘধনু আবির্ভূত হবে, আমি তা দেখব ও অনন্তকালস্থায়ী সেই নিয়মটি স্মরণ করব, যা ঈশ্বর ও পৃথিবীর সব ধরনের জীবিত প্রাণীর মধ্যে স্থাপিত হয়েছে।” \p \v 17 অতএব ঈশ্বর নোহকে বললেন, “এই সেই নিয়মের চিহ্ন, যা আমি আমার ও পৃথিবীর সব প্রাণীর মধ্যে স্থাপন করেছি।” \s1 নোহের ছেলেরা \p \v 18 নোহের যে ছেলেরা জাহাজ থেকে বেরিয়ে এলেন, তারা হলেন শেম, হাম ও যেফৎ। (হাম কনানের বাবা) \v 19 এরাই হলেন নোহের সেই তিন ছেলে, এবং তাঁদের থেকে যেসব লোকজন উৎপন্ন হল, তারা সমগ্র জগতে ছড়িয়ে পড়ল। \p \v 20 চাষিগৃহস্থ মানুষ নোহ, একটি দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরি করার জন্য এগিয়ে গেলেন\f + \fr 9:20 \fr*\ft অথবা, “প্রথম সেই ব্যক্তি, যিনি দ্রাক্ষাকুঞ্জ তৈরি করলেন”\ft*\f*। \v 21 যখন তিনি সেখানকার খানিকটা দ্রাক্ষারস পান করলেন, তখন তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন এবং তাঁর তাঁবুর ভিতরে তিনি বিবস্ত্র হয়ে শুয়ে পড়লেন। \v 22 কনানের বাবা হাম তাঁর বাবাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে তাঁর দুই দাদাকে তা বললেন। \v 23 কিন্তু শেম ও যেফৎ একটি কাপড় নিয়ে সেটি তাঁদের কাঁধের উপর ফেলে রাখলেন; পরে তাঁরা পিছনের দিকে পিছিয়ে গিয়ে তাঁদের বাবার উলঙ্গতা ঢেকে দিলেন। তাঁদের মুখমণ্ডল অন্যদিকে ঘোরানো ছিল, যেন তাঁরা তাঁদের বাবার উলঙ্গতা দেখতে না পান। \p \v 24 নোহ যখন তাঁর নেশার ঘোর কাটিয়ে উঠলেন ও জানতে পারলেন তাঁর ছোটো ছেলে তাঁর প্রতি ঠিক কী আচরণ করেছেন, \v 25 তখন তিনি বললেন, \q1 “কনান অভিশপ্ত হোক! \q2 তার দাদা-ভাইদের মধ্যে \q2 সে অত্যন্ত নীচ দাস হবে।” \p \v 26 তিনি আরও বললেন, \q1 “শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য হোন! \q2 কনান শেমের দাস হোক। \q1 \v 27 ঈশ্বর যেফতের এলাকা প্রসারিত করুন\f + \fr 9:27 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “যেফৎ” শব্দটি শুনতে “প্রসারিত করার” মতো লাগে।\ft*\f*; \q2 যেফৎ শেমের তাঁবুতে বসবাস করুক, \q2 আর কনান তার ক্রীতদাস হোক।” \p \v 28 বন্যার পর নোহ 350 বছর বেঁচেছিলেন। \v 29 নোহ মোট 950 বছর বেঁচেছিলেন, ও পরে তিনি মারা যান। \c 10 \s1 জাতিসমূহের তালিকা \li4 \v 1 এই হল নোহের ছেলে শেম, হাম ও যেফতের বিবরণ, যারা স্বয়ং বন্যার পর সন্তান লাভ করলেন। \s2 যেফতীয়রা \li1 \v 2 যেফতের ছেলেরা\f + \fr 10:2 \fr*\ft ছেলেরা শব্দটির অর্থ হতে পারে বংশধরেরা, বা উত্তরসূরিরা, বা জাতিরা; কথাটি \+xt 3|link-href="GEN 10:3"\+xt*, \+xt 4|link-href="GEN 10:4"\+xt*, \+xt 6|link-href="GEN 10:6"\+xt*, \+xt 7|link-href="GEN 10:7"\+xt*, \+xt 20-23|link-href="GEN 10:20-23"\+xt*, \+xt 29|link-href="GEN 10:29"\+xt* ও \+xt 31|link-href="GEN 10:31"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।\ft*\f*: \li2 গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তূবল, মেশক ও তীরস। \li1 \v 3 গোমরের ছেলেরা: \li2 অস্কিনস, রীফৎ, এবং তোগর্ম। \li1 \v 4 যবনের ছেলেরা: \li2 ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম এবং রোদানীম।\f + \fr 10:4 \fr*\ft কয়েকটি প্রাচীন পাণ্ডুলিপি অনুসারে শব্দটি হল দোদানীম\ft*\f* \v 5 (এদের থেকেই সমুদ্র-উপকূল নিবাসী লোকেরা, প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব ভাষা সমেত নিজেদের বংশানুসারে, তাদের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল।) \s2 হামাতীয়রা \li1 \v 6 হামের ছেলেরা: \li2 কূশ, মিশর, পূট ও কনান। \li1 \v 7 কূশের ছেলেরা: \li2 সবা, হবীলা, সব্‌তা, রয়মা ও সব্‌তেকা। \li1 রয়মার ছেলেরা: \li2 শিবা ও দদান। \li4 \v 8 কূশ সেই নিম্রোদের বাবা\f + \fr 10:8 \fr*\ft বাবা শব্দটির অর্থ হতে পারে পূর্বপুরুষ বা পূর্বসূরি বা প্রতিষ্ঠাতা; \+xt verses 13|link-href="GEN 10:13"\+xt*, \+xt 15|link-href="GEN 10:15"\+xt*, \+xt 24|link-href="GEN 10:24"\+xt* ও \+xt 26|link-href="GEN 10:26"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও কথাটি প্রযোজ্য।\ft*\f*, যিনি পৃথিবীতে এক বলশালী যোদ্ধা হয়ে উঠলেন। \v 9 সদাপ্রভুর সামনে তিনি বলশালী এক শিকারি হলেন; তাই বলা হয়ে থাকে, “সদাপ্রভুর সামনে নিম্রোদের মতো বলশালী এক শিকারি।” \v 10 শিনারে\f + \fr 10:10 \fr*\ft অর্থাৎ, ব্যাবিলনিয়ায়\ft*\f* অবস্থিত ব্যাবিলন, এরক, অক্কদ, ও কল্‌নী\f + \fr 10:10 \fr*\ft অথবা, এরক ও অক্কদ—এসবই\ft*\f* তাঁর রাজ্যের মূলকেন্দ্র হল। \v 11 সেই দেশ থেকে তিনি সেই আসিরিয়া দেশে গেলেন, যেখানে তিনি নীনবী, রহোবোৎ ঈর\f + \fr 10:11 \fr*\ft অথবা, নীনবী ও তার সাথে সেই নগরের চকগুলি\ft*\f*, কেলহ \v 12 ও সেই রেষণ নগরটি গড়ে তুললেন যা নীনবী ও কেলহের মাঝখানে অবস্থিত; সেটিই সেই মহানগর। \li1 \v 13 মিশর ছিলেন \li2 সেই লূদীয়, অনামীয়, লহাবীয়, নপ্তুহীয়, \v 14 পথ্রোষীয়, কস্‌লূহীয় (যাদের থেকে ফিলিস্তিনীরা উৎপন্ন হয়েছে) ও কপ্তোরীয়দের বাবা। \li1 \v 15 কনান ছিলেন \li2 তাঁর বড়ো ছেলে সীদোনের\f + \fr 10:15 \fr*\ft অথবা, শীর্ষস্থানীয় সীদোনীয়দের\ft*\f*, ও হিত্তীয়, \v 16 যিবূষীয়, ইমোরীয়, গির্গাশীয়, \v 17 হিব্বীয়, অর্কীয়, সীনীয়, \v 18 অর্বদীয়, সমারীয় ও হমাতীয়দের বাবা। \li2 (পরবর্তীকালে কনানীয় বংশ ইতস্তত ছড়িয়ে পড়ল \v 19 এবং কনানের সীমানা সীদোন থেকে গরারের দিকে গাজা পর্যন্ত, ও পরে লাশার দিকে সদোম, ঘমোরা, অদ্‌মা, ও সবোয়ীম পর্যন্ত বিস্তৃত হল) \li4 \v 20 তাদের এলাকা ও জাতি ধরে এরাই হল বংশ ও ভাষা অনুসারে হামের সন্তান। \s2 শেমাতীয়রা \li4 \v 21 সেই শেমেরও কয়েকটি ছেলে জন্মাল, যাঁর দাদা ছিলেন যেফৎ\f + \fr 10:21 \fr*\ft অথবা, সেই শেম, যিনি যেফতের দাদা ছিলেন\ft*\f*; শেম হলেন এবরের সব সন্তানের পূর্বপুরুষ। \li1 \v 22 শেমের ছেলেরা: \li2 এলম, অশূর, অর্ফক্‌ষদ, লূদ ও অরাম। \li1 \v 23 অরামের ছেলেরা: \li2 ঊষ, হূল, গেথর, ও মেশক\f + \fr 10:23 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 1:17\+xt* পদ দেখুন; হিব্রু ভাষায় শব্দটি হল মশ\ft*\f*। \li1 \v 24 অর্ফক্‌ষদ হলেন শেলহের বাবা\f + \fr 10:24 \fr*\ft অথবা, কৈননের বাবা, এবং কৈনন শেলহের বাবা\ft*\f*, \li2 এবং শেলহ এবরের বাবা। \li1 \v 25 এবরের দুটি ছেলের জন্ম হল: \li2 একজনের নাম দেওয়া হল পেলগ\f + \fr 10:25 \fr*\ft পেলগ শব্দের অর্থ বিভাজন\ft*\f*, কারণ তাঁর সময়কালেই পৃথিবী বিভিন্ন ভাষাবাদী জাতির আধারে বিভক্ত হল; তাঁর ভাইয়ের নাম দেওয়া হল যক্তন। \li1 \v 26 যক্তন হলেন \li2 অলমোদদ, শেলফ, হৎসর্মাবৎ, যেরহ, \v 27 হদোরাম, ঊষল, দিক্ল, \v 28 ওবল, অবীমায়েল, শিবা, \v 29 ওফীর, হবীলা ও যোববের বাবা। তারা সবাই যক্তনের বংশধর ছিলেন। \li2 \v 30 (পূর্বদিকের পার্বত্য দেশের যে এলাকায় তারা বসবাস করতেন, সেটি মেষা থেকে সফার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল) \li4 \v 31 তাদের এলাকা ও জাতি ধরে বংশ ও ভাষা অনুসারে এরাই শেমের সন্তান। \b \li4 \v 32 তাদের জাতিগুলির মধ্যে, বংশানুক্রমিকভাবে এরাই নোহের ছেলেদের বংশধর। বন্যার পর এদের থেকেই বিভিন্ন জাতি সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। \c 11 \s1 ব্যাবিলনের মিনার \p \v 1 এমতাবস্থায় সমগ্র জগতে এক ভাষা ও এক সাধারণ বাচনভঙ্গি ছিল। \v 2 মানুষজন যেমন যেমন পূর্বদিকে\f + \fr 11:2 \fr*\ft অথবা, পূর্বদিক থেকে\ft*\f* সরে গেল, তারা শিনারে\f + \fr 11:2 \fr*\ft অর্থাৎ, ব্যাবিলনিয়ায়\ft*\f* এক সমভূমি খুঁজে পেল এবং সেখানেই বসতি স্থাপন করল। \p \v 3 তারা পরস্পরকে বলল, “এসো, আমরা ইট তৈরি করি ও সেগুলি পুরোদস্তুর আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করে নিই।” তারা পাথরের পরিবর্তে ইট, ও চুনসুরকির পরিবর্তে আলকাতরা ব্যবহার করল। \v 4 পরে তারা বলল, “এসো, আমরা নিজেদের জন্য গগনস্পর্শী এক মিনার সমেত এক নগর নির্মাণ করি, যেন আমাদের নামডাক হয় ও সমগ্র পৃথিবীতে আমাদের ছড়িয়ে পড়তে না হয়।” \p \v 5 কিন্তু সদাপ্রভু সেই নগর ও মিনারটি দেখার জন্য নেমে এলেন, যেগুলি সেই মানুষেরা তখন নির্মাণ করছিল। \v 6 সদাপ্রভু বললেন, “এক ভাষাবাদী মানুষ হয়ে যদি তারা এরকম করতে শুরু করে দিয়েছে, তবে তারা যাই করার পরিকল্পনা করুক না কেন, তা তাদের অসাধ্য হবে না। \v 7 এসো, আমরা নিচে নেমে যাই ও তাদের ভাষা গুলিয়ে দিই, যেন তারা পরস্পরের কথা বুঝতে না পারে।” \p \v 8 অতএব সদাপ্রভু সেখান থেকে তাদের পৃথিবীর সর্বত্র ইতস্তত ছড়িয়ে দিলেন, আর তারা নগর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিল। \v 9 সেজন্যই সেই স্থানটির নাম দেওয়া হল ব্যাবিলন\f + \fr 11:9 \fr*\ft অর্থাৎ, ব্যাবিলন; হিব্রু ভাষায় ব্যাবিলন শব্দটি শুনলে মনে হয় বিভ্রান্ত\ft*\f*—যেহেতু সেখানেই সদাপ্রভু সমগ্র জগতের ভাষা গুলিয়ে দিলেন। সেখান থেকে সদাপ্রভু তাদের পৃথিবীর সর্বত্র ইতস্তত ছড়িয়ে দিলেন। \s1 শেম থেকে অব্রাম \p \v 10 এই হল শেমের বংশবৃত্তান্ত। \b \li1 বন্যার দুই বছর পর, শেমের বয়স যখন একশো বছর, তখন তিনি অর্ফক্‌ষদের বাবা\f + \fr 11:10 \fr*\ft বাবা শব্দের অর্থ পূর্বপুরুষ হতে পারে; \+xt 11-25|link-href="GEN 11:11-25"\+xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।\ft*\f* হলেন। \v 11 আর অর্ফক্‌ষদের বাবা হওয়ার পর শেম 500 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 12 অর্ফক্‌ষদ পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে শেলহের বাবা হলেন। \v 13 আর শেলহের বাবা হওয়ার পর অর্ফক্‌ষদ 403 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল।\f + \fr 11:13 \fr*\ft \+xt লূক 3:35,36\+xt* পদ দুটি দেখুন এবং \+xt আদি পুস্তক 10:24\+xt* পদটিও লক্ষ্য করুন; 35 বছর বয়সে অর্ফক্‌ষদ কৈননের বাবা হলেন। আর কৈননের বাবা হওয়ার পর অর্ফক্‌ষদ 430 বছর বেঁচেছিলেন ও তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল, ও পরে তিনি মারা যান। 130 বছর বয়সে কৈনন শেলহের বাবা হলেন। শেলহের বাবা হওয়ার পর কৈনন 330 বছর বেঁচেছিলেন ও তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল।\ft*\f* \li1 \v 14 শেলহ ত্রিশ বছর বয়সে এবরের বাবা হলেন। \v 15 আর এবরের বাবা হওয়ার পর শেলহ 403 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 16 এবর চৌত্রিশ বছর বয়সে পেলগের বাবা হলেন। \v 17 আর পেলগের বাবা হওয়ার পর এবর 430 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 18 পেলগ ত্রিশ বছর বয়সে রিয়ূর বাবা হলেন। \v 19 আর রিয়ূর বাবা হওয়ার পর পেলগ 209 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 20 রিয়ূ বত্রিশ বছর বয়সে সরূগের বাবা হলেন। \v 21 আর সরূগের বাবা হওয়ার পর রিয়ূ 207 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 22 সরূগ ত্রিশ বছর বয়সে নাহোরের বাবা হলেন। \v 23 আর নাহোরের বাবা হওয়ার পর সরূগ 200 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 24 নাহোর উনত্রিশ বছর বয়সে তেরহের বাবা হলেন। \v 25 আর তেরহের বাবা হওয়ার পর নাহোর 119 বছর বেঁচেছিলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ে হল। \li1 \v 26 তেরহ সত্তর বছর বয়সে অব্রাম, নাহোর, ও হারণের বাবা হলেন। \s1 অব্রামের পরিবার \p \v 27 এই হল তেরহের বংশবৃত্তান্ত। \b \p তেরহ অব্রাম, নাহোর, ও হারণের বাবা হলেন। আর হারণ লোটের বাবা হলেন। \v 28 হারণ তাঁর জন্মস্থান, কলদীয় দেশের ঊরেই তাঁর বাবা তেরহের জীবদ্দশায় মারা যান। \v 29 অব্রাম ও নাহোর, দুজনেই বিয়ে করলেন। অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী, এবং নাহোরের স্ত্রীর নাম মিল্কা; মিল্কা সেই হারণের মেয়ে, যিনি মিল্কা ও যিষ্কা, দুজনেরই বাবা। \v 30 সারী নিঃসন্তান ছিলেন যেহেতু তাঁর গর্ভধারণের ক্ষমতা ছিল না। \p \v 31 তেরহ তাঁর ছেলে অব্রাম, তাঁর নাতি তথা হারণের ছেলে লোট এবং তাঁর পুত্রবধূ তথা তাঁর ছেলে অব্রামের স্ত্রী সারীকে সঙ্গে নিয়ে একসাথে কলদীয় দেশের ঊর ত্যাগ করে কনানে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করলেন। কিন্তু হারণ নামাঙ্কিত স্থানে পৌঁছে তারা সেখানে বসতি স্থাপন করলেন। \p \v 32 তেরহ 205 বছর বেঁচেছিলেন, এবং হারণেই তিনি মারা যান। \c 12 \s1 অব্রামের আহ্বান \p \v 1 সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, “তোমার দেশ, তোমার আত্মীয়স্বজন ও তোমার পৈত্রিক পরিবার ছেড়ে সেই দেশে চলে যাও, যা আমি তোমাকে দেখাতে চলেছি। \q1 \v 2 “আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব, \q2 আর আমি তোমাকে আশীর্বাদ করব; \q1 আমি তোমার নাম মহান করে তুলব, \q2 আর তুমি এক আশীর্বাদ হবে।\f + \fr 12:2 \fr*\ft অথবা, “তুমি আশীর্বাদ ধন্যরূপে গণ্য হবে”\ft*\f* \q1 \v 3 যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, আমি তাদের আশীর্বাদ করব, \q2 আর যারা তোমাকে অভিশাপ দেবে, আমি তাদের অভিশাপ দেব; \q1 আর পৃথিবীর সব লোকজন \q2 তোমার মাধ্যমে আশীর্বাদ লাভ করবে।”\f + \fr 12:3 \fr*\ft অথবা, “আশীর্বাদ দানকালে তোমার নাম ব্যবহার করবে”\ft*\f* \p \v 4 অতএব সদাপ্রভুর কথামতো অব্রাম চলে গেলেন; এবং লোট তাঁর সাথে গেলেন। 75 বছর বয়সে অব্রাম হারণ ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। \v 5 তিনি তাঁর স্ত্রী সারী, ভাইপো লোট, ও হারণে উপার্জিত সব বিষয়সম্পত্তি ও অর্জিত লোকজন সাথে নিয়ে কনান দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সেখানে পৌঁছে গেলেন। \p \v 6 অব্রাম সেই দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে শিখিমে মোরির সেই বিশাল\f + \fr 12:6 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “ওক”\ft*\f* গাছটির কাছে পৌঁছে গেলেন। সেই সময় কনানীয়েরা সেই দেশে বসবাস করত। \v 7 সদাপ্রভু অব্রামকে দর্শন দিয়ে বললেন, “তোমার সন্তানসন্ততিকে\f + \fr 12:7 \fr*\ft অথবা, “বংশকে”\ft*\f* আমি এই দেশ দেব।” তাই তিনি সেখানে সেই সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন, যিনি তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন। \p \v 8 সেখান থেকে তিনি বেথেলের পূর্বদিকে অবস্থিত পাহাড়ের দিকে চলে গেলেন এবং বেথেলকে পশ্চিমদিকে ও অয়কে পূর্বদিকে রেখে তিনি তাঁর তাঁবু খাটালেন। সেখানে তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। \p \v 9 পরে অব্রাম যাত্রা শুরু করে নেগেভের\f + \fr 12:9 \fr*\ft অথবা, “দক্ষিণাঞ্চলের”\ft*\f* দিকে এগিয়ে গেলেন। \s1 অব্রাম মিশরে উপস্থিত হন \p \v 10 এদিকে সেই দেশে এক দুর্ভিক্ষ হল, এবং অব্রাম মিশরে কিছুদিন বসবাস করার জন্য সেখানে নেমে গেলেন, কারণ দুর্ভিক্ষটি বেশ দুঃসহ হল। \v 11 মিশরে প্রবেশ করার ঠিক আগে তিনি তাঁর স্ত্রী সারীকে বললেন, “আমি জানি তুমি খুব সুন্দরী। \v 12 মিশরীয়রা যখন তোমায় দেখে বলবে, ‘এ তো এই লোকটির স্ত্রী।’ তখন তারা আমায় হত্যা করবে কিন্তু তোমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। \v 13 তুমি বোলো, তুমি আমার বোন, যেন তোমার খাতিরে আমি ভালো ব্যবহার পাই ও তোমার জন্য আমার প্রাণরক্ষা হয়।” \p \v 14 অব্রাম যখন মিশরে এলেন, তখন মিশরীয়রা দেখল যে সারী পরম সুন্দরী। \v 15 আর ফরৌণের\f + \fr 12:15 \fr*\ft ফরৌণ শব্দটি মিশররাজের আনুষ্ঠানিক উপাধিরূপে ব্যবহৃত হত\ft*\f* কর্মকর্তারা সারীকে দেখে ফরৌণের কাছে তাঁর প্রশংসা করলেন, এবং সারীকে ফরৌণের রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হল। \v 16 সারীর খাতিরে তিনি অব্রামের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করলেন, এবং অব্রাম প্রচুর মেষ ও গবাদি পশু, গাধা ও গাধি, দাস-দাসী ও উট অর্জন করলেন। \p \v 17 কিন্তু অব্রামের স্ত্রী সারীর কারণে সদাপ্রভু ফরৌণ ও তাঁর পরিবারের উপর সংকটজনক রোগব্যাধি চাপিয়ে দিলেন। \v 18 তাই ফরৌণ অব্রামকে ডেকে পাঠালেন, “আপনি আমার প্রতি এ কী করলেন?” তিনি বললেন, “আপনি কেন আমায় বলেননি যে ইনি আপনার স্ত্রী? \v 19 আপনি কেন বললেন, ‘এ আমার বোন,’ তাইতো আমি তাঁকে আমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ করেছি? তবে এখন, এই রইল আপনার স্ত্রী। তাঁকে নিন আর চলে যান!” \v 20 পরে ফরৌণ তাঁর লোকজনকে অব্রামের বিষয়ে আদেশ দিলেন, এবং তারা তাঁর স্ত্রী ও তাঁর অধিকারে থাকা সবকিছু সমেত তাঁকে বিদায় করে দিলেন। \c 13 \s1 অব্রাম এবং লোট পৃথক হলেন \p \v 1 অতএব অব্রাম তাঁর স্ত্রী ও নিজের সবকিছু নিয়ে মিশর থেকে নেগেভের দিকে চলে গেলেন, এবং লোটও তাঁর সাথে গেলেন। \v 2 অব্রাম তাঁর গৃহপালিত পশুপাল এবং রুপো ও সোনার নিরিখে খুবই ধনী হয়ে গেলেন। \p \v 3 নেগেভ থেকে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করে তিনি সেই বেথেলে পৌঁছালেন, যা বেথেল ও অয়ের মাঝখানে অবস্থিত এমন এক স্থান, যেখানে এর আগেও তাঁর তাঁবু খাটানো ছিল \v 4 এবং যেখানে তিনি প্রথমবার এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করেছিলেন। সেখানেই অব্রাম সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। \p \v 5 এদিকে, যিনি অব্রামের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সেই লোটেরও প্রচুর মেষপাল ও পশুপাল ও তাঁবু ছিল। \v 6 কিন্তু একসাথে থাকার সময় সেখানে তাঁদের জায়গার অকুলান হচ্ছিল, কারণ তাঁদের বিষয়সম্পত্তি এত বেশি ছিল যে তাঁরা একসাথে থাকতে পারছিলেন না। \v 7 আর অব্রামের ও লোটের রাখালদের মধ্যে ঝগড়া বেধে গেল। সেই সময় কনানীয় এবং পরিষীয়রাও সেদেশে বসবাস করছিল। \p \v 8 তাই অব্রাম লোটকে বললেন, “তোমার ও আমার মধ্যে অথবা তোমার ও আমার রাখালদের মধ্যে যেন ঝগড়া না হয়, কারণ আমরা পরস্পরের খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। \v 9 তোমার সামনে কি গোটা দেশ পড়ে নেই? এসো, আমরা পৃথক হয়ে যাই। তুমি যদি বাঁদিকে যাও, আমি তবে ডানদিকে যাব; তুমি যদি ডানদিকে যাও, আমি তবে বাঁদিকে যাব।” \p \v 10 লোট চারিদিকে তাকালেন এবং দেখলেন যে সোয়রের দিকে জর্ডনের সমগ্র সমভূমি বেশ জলসিক্ত, ঠিক যেন সদাপ্রভুর বাগানের মতো, মিশর দেশের মতো। (সদাপ্রভু সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করার আগে সেখানকার দশা এরকমই ছিল) \v 11 অতএব লোট তাঁর নিজের জন্য জর্ডনের সমগ্র সমভূমিটি মনোনীত করলেন এবং পূর্বদিকে এগিয়ে গেলেন। দুজন পরস্পরের সঙ্গ ত্যাগ করলেন: \v 12 অব্রাম কনান দেশে থেকে গেলেন, অন্যদিকে লোট সেই সমভূমির নগরগুলিতে থেকে গিয়ে সদোমের কাছে তাঁর তাঁবু খাটালেন। \v 13 সদোমের মানুষজন খুব দুষ্ট ছিল ও সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তারা মহাপাপ করে যাচ্ছিল। \p \v 14 লোট অব্রামের সঙ্গ ত্যাগ করে যাওয়ার পর সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, “তুমি যেখানে আছ, সেখানে থেকেই তোমার চারপাশে—উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমদিকে তাকিয়ে দেখো। \v 15 তুমি যে দেশটি দেখতে পাচ্ছ, সম্পূর্ণ সেই দেশটিই আমি চিরতরে তোমাকে ও তোমার বংশধরদের\f + \fr 13:15 \fr*\ft অথবা, বীজকে; 16 পদের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য।\ft*\f* দেব। \v 16 তোমার বংশধরদের আমি পৃথিবীর ধূলিকণার মতো করে তুলব, যেন কেউ যদি ধূলিকণার সংখ্যা গুনতে পারে, তবে তোমার বংশধরদেরও গোনা যাবে। \v 17 যাও, দেশটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ধরে ঘুরে এসো, কারণ আমি এটি তোমাকেই দিচ্ছি।” \p \v 18 অতএব অব্রাম হিব্রোণে মম্রির সেই বিশাল গাছগুলির কাছে থাকতে চলে গেলেন, যেখানে তিনি তাঁর তাঁবুগুলি খাটিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন। \c 14 \s1 অব্রাম লোটকে উদ্ধার করেন \p \v 1 সেই সময় যখন অম্রাফল শিনারের\f + \fr 14:1 \fr*\ft অর্থাৎ, ব্যাবিলনিয়া; 9 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।\ft*\f* রাজা, অরিয়োক ইল্লাসরের রাজা, কদর্লায়োমর এলমের রাজা এবং তিদিয়ল গোয়ীমের রাজা, \v 2 তখন এই রাজারা সদোমের রাজা বিরা, ঘমোরার রাজা বির্শা, অদ্‌মার রাজা শিনাব, সবোয়িমের রাজা শিমেবর ও বিলার (অর্থাৎ, সোয়রের) রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। \v 3 শেষোক্ত এসব রাজা সিদ্দীম উপত্যকায় (অর্থাৎ, মরুসাগরের উপত্যকায়) একজোট হয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করলেন। \v 4 বারো বছর তাঁরা কদর্লায়োমরের শাসনাধীন হয়ে ছিলেন, কিন্তু ত্রয়োদশতম বছরে তাঁরা বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন। \p \v 5 চতুর্দশতম বছরে, এমীয়দের রাজা কদর্লায়োমর এবং তাঁর সঙ্গী রাজারা মরুভূমির কাছাকাছি অবস্থিত এল-পারণ পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে অস্তরোৎ-কর্ণয়িমে রফায়ীয়দের, হমে সুষীয়দের, শাবি-কিরিয়াথয়িমে এমীয়দের \v 6 এবং সেয়ীরের পার্বত্য এলাকায় হোরীয়দের পরাজিত করলেন। \v 7 পরে সেখান থেকে ফিরে এসে তারা ঐনমিস্পটে (অর্থাৎ, কাদেশে) গেলেন, এবং সেই অমালেকীয়দের ও ইমোরীয়দেরও সমগ্র এলাকা তারা জোর করে দখল করে নিলেন, যারা হৎসসোন-তামরে বসবাস করছিল। \p \v 8 পরে সদোমের রাজা, ঘমোরার রাজা, অদ্‌মার রাজা, সবোয়িমের রাজা এবং বিলার (অর্থাৎ সোয়রের) রাজা কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গিয়ে সিদ্দীম উপত্যকায় \v 9 সেই এলমের রাজা কদর্লায়োমর, গোয়ীমের রাজা তিদিয়ল, শিনারের রাজা অম্রাফল ও ইল্লাসরের রাজা অরিয়োকের বিরুদ্ধে সৈন্যশিবির স্থাপন করলেন—যে চারজন রাজা পাঁচজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। \v 10 ওই সিদ্দীম উপত্যকায় প্রচুর আলকাতরার খনি ছিল, এবং সদোম ও ঘমোরার রাজারা যখন পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কয়েকটি লোক সেইসব খনিতে গিয়ে পড়ল ও বাকিরা পাহাড়ে পালিয়ে গেল। \v 11 সেই চারজন রাজা সদোম ও ঘমোরার সব জিনিসপত্র ও তাদের সব খাবারদাবার বাজেয়াপ্ত করলেন এবং তাঁরা চলে গেলেন। \v 12 তাঁরা অব্রামের ভাইপো লোটকে ও তাঁর বিষয়সম্পত্তিও তুলে নিয়ে গেলেন, যেহেতু লোট সদোমেই বসবাস করছিলেন। \p \v 13 একজন লোক পালিয়ে গিয়ে হিব্রু অব্রামের কাছে এসে খবর দিল। অব্রাম তখন সেই ইষ্কোলের ও আনেরের এক ভাই\f + \fr 14:13 \fr*\ft অথবা, একজন আত্মীয়; বা বন্ধু\ft*\f* ইমোরীয় মম্রির বিশাল গাছগুলির কাছে বসবাস করছিলেন, যারা সবাই অব্রামের বন্ধু ছিলেন। \v 14 অব্রাম যখন শুনলেন যে তাঁর আত্মীয়কে বন্দি করা হয়েছে, তখন তিনি তাঁর ঘরে জন্মানো 318 জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোককে ডাক দিলেন ও দান পর্যন্ত তাঁদের পশ্চাদ্ধাবন করে গেলেন, যাঁরা লোটকে বন্দি করেছিলেন। \v 15 রাতের বেলায় তাঁদের আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার জন্য অব্রাম তাঁর লোকজনকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে দিলেন, ও দামাস্কাসের উত্তরে অবস্থিত হোবা পর্যন্ত তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলেন। \v 16 তিনি সব জিনিসপত্র পুনরুদ্ধার করলেন এবং তাঁর আত্মীয় লোটকে ও তাঁর বিষয়সম্পত্তি, তথা মহিলাদের ও অন্যান্য লোকজনকেও ফিরিয়ে আনলেন। \p \v 17 অব্রাম কদর্লায়োমর ও তাঁর সঙ্গে জোট বাঁধা রাজাদের পরাজিত করে ফিরে আসার পর শাবী উপত্যকায় (অর্থাৎ, রাজার উপত্যকায়) সদোমের রাজা তাঁর সাথে দেখা করার জন্য বেরিয়ে এলেন। \p \v 18 তখন শালেমের রাজা মল্কীষেদক রুটি ও দ্রাক্ষারস বের করে নিয়ে এলেন। তিনি পরাৎপর ঈশ্বরের যাজক ছিলেন। \v 19 তিনি অব্রামকে আশীর্বাদ করে বললেন, \q1 “অব্রাম, স্বর্গ-মর্ত্যের সৃষ্টিকর্তা \q2 পরাৎপর ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য হোন, \q1 \v 20 আর সেই পরাৎপর ঈশ্বরের প্রশংসা হোক, \q2 যিনি আপনার শত্রুদের আপনার হাতে সঁপে দিয়েছেন।” \m পরে অব্রাম তাঁকে নিজের সবকিছুর দশমাংশ দিলেন। \p \v 21 সদোমের রাজা অব্রামকে বললেন, “লোকজন আমাকে দিন ও সব জিনিসপত্র আপনি নিজের কাছে রেখে দিন।” \p \v 22 কিন্তু অব্রাম সদোমের রাজাকে বললেন, “স্বর্গ-মর্ত্যের সৃষ্টিকর্তা পরাৎপর ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর উদ্দেশে হাত তুলে আমি শপথ করছি \v 23 যে আপনার অধিকারে থাকা কোনো কিছুই আমি গ্রহণ করব না, এমনকি একটি সুতো বা চটিজুতোর একটি ফিতেও নয়, যেন আপনি কখনও বলতে না পারেন, ‘আমি অব্রামকে ধনবান করে তুলেছি।’ \v 24 আমার লোকজন যা খেয়েছে ও যারা আমার সাথে গিয়েছিল—সেই আনের, ইষ্কোল ও মম্রির ভাগে যা পড়ে, সেটুকু ছাড়া আমি আর কিছুই গ্রহণ করব না। তারা তাদের ভাগ বুঝে নিক।” \c 15 \s1 অব্রামের সঙ্গে সদাপ্রভুর স্থাপিত নিয়ম \p \v 1 পরে, এক দর্শনের মাধ্যমে সদাপ্রভুর বাক্য অব্রামের কাছে এল: \q1 “অব্রাম, ভয় কোরো না। \q2 আমি তোমার ঢাল,\f + \fr 15:1 \fr*\ft অথবা, “সার্বভৌম”\ft*\f* \q2 তোমার মহা পুরস্কার।”\f + \fr 15:1 \fr*\ft অথবা, “তোমার পুরস্কার হবে অতি মহান”\ft*\f* \p \v 2 কিন্তু অব্রাম বললেন, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমি আর আমাকে কী দেবে? আমি যে নিঃসন্তান ও দামাস্কাসের ইলীয়েষরই যে আমার ভূসম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।” \v 3 আর অব্রাম বললেন, “তুমি তো আমাকে কোনও সন্তান দাওনি; তাই আমার ঘরের এক দাসই আমার উত্তরাধিকারী হবে।” \p \v 4 তখন তাঁর কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য এল: “এই লোকটি তোমার উত্তরাধিকারী হবে না, কিন্তু যে ছেলে তোমার নিজের রক্তমাংস, সেই হবে তোমার উত্তরাধিকারী।” \v 5 তিনি অব্রামকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বললেন, “আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখো ও যদি সম্ভব হয় তবে তারাগুলি গোনো।” পরে তিনি তাঁকে বললেন, “তোমার সন্তানসন্ততিরা\f + \fr 15:5 \fr*\ft অথবা, “বীজ বা বংশ”\ft*\f* এরকমই হবে।” \p \v 6 অব্রাম সদাপ্রভুকে বিশ্বাস করলেন, এবং তিনি তা অব্রামের পক্ষে ধার্মিকতা বলে গণ্য করলেন। \p \v 7 এছাড়াও তিনি অব্রামকে বললেন, “আমি সেই সদাপ্রভু, যিনি তোমাকে এই দেশের অধিকার দেওয়ার জন্য কলদীয় দেশের ঊর থেকে এদেশে বের করে এনেছি।” \p \v 8 কিন্তু অব্রাম বললেন, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, আমি কীভাবে জানব যে আমি এদেশের অধিকার লাভ করব?” \p \v 9 তাই সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তুমি আমার কাছে তিন বছর বয়স্ক এক-একটি বকনা-বাছুর, ছাগল, ও মেষ, ও একইসাথে একটি ঘুঘু, ও একটি কপোতশাবক নিয়ে এসো।” \p \v 10 অব্রাম এসব কিছু তাঁর কাছে আনলেন, সেগুলি দু-টুকরো করে কেটে অর্ধেক অর্ধেক অংশ পরস্পরের উল্টোদিকে সাজিয়ে রাখলেন; পাখিটিকে, অবশ্য তিনি দু-টুকরো করেননি। \v 11 পরে পশুপাখির শবগুলির উপর শিকারি পাখিরা নেমে এল, কিন্তু অব্রাম তাদের তাড়িয়ে দিলেন। \p \v 12 সূর্য যখন অস্ত যাচ্ছিল, অব্রাম তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন, এবং ত্রাসজনক অন্ধকার তাঁর উপর নেমে এল। \v 13 সদাপ্রভু তখন তাঁকে বললেন, “নিশ্চিত জেনে রাখো যে তোমার বংশধরেরা 400 বছর এমন একটি দেশে অপরিচিত মানুষ হয়ে বসবাস করবে, যা তাদের নিজস্ব নয়, এবং তারা সেখানে ক্রীতদাসে পরিণত হবে এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হবে। \v 14 কিন্তু যে দেশে তারা ক্রীতদাস হয়ে থাকবে, সেই দেশটিকে আমি শাস্তি দেব, এবং শেষ পর্যন্ত তারা প্রচুর বিষয়সম্পত্তি নিয়ে বেরিয়ে আসবে। \v 15 তুমি অবশ্য, শান্তিতে মারা গিয়ে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে, এবং বেশ বৃদ্ধ অবস্থায় কবরস্থ হবে। \v 16 চতুর্থ প্রজন্মে তোমার বংশধরেরা এখানে ফিরে আসবে, কারণ ইমোরীয়দের পাপ এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায়নি।” \p \v 17 সূর্য অস্ত যাওয়ার ও অন্ধকার নেমে আসার পর, জ্বলন্ত এক মশাল সমেত ধোঁয়ায় ভরা একটি উনুন আবির্ভূত হল এবং সেই টুকরোগুলির মাঝখান দিয়ে চলে গেল। \v 18 সেদিন সদাপ্রভু অব্রামের সঙ্গে একটি নিয়ম স্থাপন করে বললেন, “আমি মিশরের ওয়াদি\f + \fr 15:18 \fr*\ft অথবা, “নির্ঝরিণী”\ft*\f* থেকে সেই মহানদী ইউফ্রেটিস পর্যন্ত এই দেশটি— \v 19 কেনীয়, কনিষীয়, কদমোনীয়, \v 20 হিত্তীয়, পরিষীয়, রফায়ীয়, \v 21 ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গাশীয় ও যিবূষীয়দের দেশটি তোমার বংশধরদের দিয়েছি।” \c 16 \s1 হাগার এবং ইশ্মায়েল \p \v 1 অব্রামের স্ত্রী সারী, তাঁর জন্য কোনও সন্তানের জন্ম দেননি। কিন্তু সারীর এক মিশরীয় ক্রীতদাসী ছিল, যার নাম হাগার; \v 2 তাই সারী অব্রামকে বললেন, “সদাপ্রভু আমাকে নিঃসন্তান করে রেখেছেন। যাও, আমার ক্রীতদাসীর সঙ্গে গিয়ে শোও; হয়তো তার মাধ্যমে আমি এক পরিবার গড়ে তুলতে পারব।” \p সারীর কথায় অব্রাম সম্মত হলেন। \v 3 অতএব অব্রাম কনানে দশ বছর বসবাস করার পর, তাঁর স্ত্রী সারী মিশরীয় ক্রীতদাসী হাগারকে নিয়ে তাকে নিজের স্বামীর স্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁর হাতে তুলে দিলেন। \v 4 অব্রাম হাগারের সঙ্গে সহবাস করলেন, এবং সে গর্ভবতী হল। \p হাগার যখন জানতে পারল যে সে গর্ভবতী হয়েছে, তখন সে তার মালকিনকে অবজ্ঞা করতে লাগল। \v 5 তখন সারী অব্রামকে বললেন, “আমি যে অন্যায় ভোগ করছি, তার জন্য তুমিই দায়ী। আমি আমার ক্রীতদাসীকে তোমার হাতে তুলে দিয়েছি, আর এখন সে যখন জানতে পেরেছে যে সে গর্ভবতী হয়েছে, সে আমাকেই অবজ্ঞা করছে। সদাপ্রভুই তোমার ও আমার মধ্যে বিচারক হোন।” \p \v 6 “তোমার ক্রীতদাসী তোমারই হাতে আছে,” অব্রাম বললেন, “তোমার যা ভালো মনে হয়, তুমি তার সাথে তাই করো।” তখন সারী হাগারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলেন; তাই সে তাঁর কাছ থেকে পালিয়ে গেল। \p \v 7 মরুভূমিতে একটি জলের উৎসের কাছে সদাপ্রভুর দূত হাগারকে খুঁজে পেলেন; এটি সেই জলের উৎস, যা শূরের দিকে যাওয়ার পথের ধারে অবস্থিত। \v 8 আর দূত হাগারকে বললেন, “হে সারীর ক্রীতদাসী হাগার, তুমি কোথা থেকে এসেছ, ও কোথায় যাচ্ছ?” \p “আমি আমার মালকিন সারীর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছি,” সে উত্তর দিল। \p \v 9 তখন সদাপ্রভুর দূত তাকে বললেন, “তোমার মালকিনের কাছে ফিরে যাও ও তার বশ্যতাস্বীকার করো।” \v 10 সদাপ্রভুর দূত আরও বললেন, “আমি তোমার বংশধরদের সংখ্যা এত বৃদ্ধি করব যে গোনার পক্ষে তারা বহুসংখ্যক হয়ে উঠবে।” \p \v 11 সদাপ্রভুর দূত তাকে আরও বললেন: \q1 “এখন তুমি গর্ভবতী হয়েছ \q2 আর তুমি এক ছেলের জন্ম দেবে। \q1 তুমি তার নাম দেবে ইশ্মায়েল,\f + \fr 16:11 \fr*\ft “ইশ্মায়েল” শব্দের অর্থ “ঈশ্বর শোনেন”\ft*\f* \q2 কারণ সদাপ্রভু তোমার দুর্দশার কথা শুনেছেন। \q1 \v 12 সে বন্য গাধার মতো এক মানুষ হবে; \q2 প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তার হাত উঠবে \q2 আর প্রত্যেকের হাত তার বিরুদ্ধে উঠবে, \q1 আর তার সব ভাইয়ের প্রতি\f + \fr 16:12 \fr*\ft অথবা, “পূর্বদিকে”\ft*\f* \q2 শত্রুতা বজায় রেখে সে বসবাস করবে।” \p \v 13 যে সদাপ্রভু হাগারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সে তাঁর এই নাম দিল: “তুমি দর্শনকারী ঈশ্বর\f + \fr 16:13 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “এল-রোয়ী”\ft*\f*,” কারণ সে বলল, “আমি এখন এমন একজনকে দেখেছি,\f + \fr 16:13 \fr*\ft অথবা, “এমন একজনের পিঠ দেখেছি”\ft*\f* যিনি আমাকে দেখেছেন।” \v 14 সেইজন্য সেই কুয়োর নাম হল বের-লহয়-রোয়ী\f + \fr 16:14 \fr*\ft “বের-লহয়-রোয়ী” শব্দসমষ্টিটির অর্থ “সেই জীবন্ত জনের কুয়ো, যিনি আমায় দেখেছেন”\ft*\f*; কাদেশ ও বেরদের মাঝখানে এটি এখনও আছে। \p \v 15 অতএব হাগার অব্রামের জন্য এক ছেলের জন্ম দিল, এবং সে যে ছেলের জন্ম দিল, অব্রাম তার নাম দিলেন ইশ্মায়েল। \v 16 হাগার যখন অব্রামের জন্য ইশ্মায়েলের জন্ম দিল, তখন অব্রামের বয়স ছিয়াশি বছর। \c 17 \s1 সুন্নতের নিয়ম \p \v 1 অব্রামের বয়স যখন 99 বছর, তখন সদাপ্রভু তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর\f + \fr 17:1 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “এল-শাদ্দাই”\ft*\f*; বিশ্বস্ত ও অনিন্দনীয় হয়ে আমার সামনে চলাফেরা করো। \v 2 তবেই আমি আমার ও তোমার মধ্যে আমার নিয়ম স্থাপন করব এবং প্রচুর পরিমাণে তোমার বংশবৃদ্ধি করব।” \p \v 3 অব্রাম মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে গেলেন, এবং ঈশ্বর তাঁকে বললেন, \v 4 “দেখো, তোমার সঙ্গে এই হল আমার নিয়ম: তুমি বহু জাতির পিতা হবে। \v 5 তোমাকে আর অব্রাম\f + \fr 17:5 \fr*\ft “অব্রাম” শব্দের অর্থ “মর্যাদাসম্পন্ন বাবা”\ft*\f* বলে ডাকা হবে না; তোমার নাম হবে অব্রাহাম,\f + \fr 17:5 \fr*\ft “অব্রাহাম” শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত “অনেকের বাবা”\ft*\f* কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করেছি। \v 6 আমি তোমাকে অত্যন্ত ফলবান করব; আমি তোমার মধ্যে থেকে বহু জাতি উৎপন্ন করব, এবং রাজারা তোমার মধ্যে থেকেই উৎপন্ন হবে। \v 7 তোমার ঈশ্বর ও তোমার আগামী বংশধরদের ঈশ্বর হওয়ার জন্য আমার এবং তোমার মধ্যে ও তোমার আগামী বংশধরদের মধ্যে কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত স্থায়ী এক চিরস্থায়ী নিয়মরূপে আমি আমার নিয়মটি স্থাপন করব। \v 8 এখন যেখানে তুমি এক বিদেশিরূপে বসবাস করছ, সমগ্র সেই কনান দেশটি আমি তোমাকে ও তোমার বংশধরদের এক চিরস্থায়ী অধিকাররূপে দেব; আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।” \p \v 9 পরে ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “দেখো, তোমাকে অবশ্যই আমার নিয়মটি পালন করতে হবে, তোমাকে ও তোমার বংশধরদের আগামী বংশপরম্পরায় তা পালন করতে হবে। \v 10 এই হল তোমার ও তোমার পরবর্তী বংশধরদের জন্য আমার সেই নিয়ম, যা তোমাদের পালন করতে হবে: তোমাদের মধ্যে প্রত্যেক পুরুষকে সুন্নত\f + \fr 17:10 \fr*\ft অথবা, “লিঙ্গাগ্রের ত্বকচ্ছেদ”\ft*\f* করা হবে। \v 11 তোমাকে সুন্নত করাতে হবে, আর এটিই হবে আমার ও তোমার মধ্যে স্থাপিত নিয়মের চিহ্ন। \v 12 পুরুষানুক্রমে তোমাদের মধ্যে আট দিন বয়স্ক প্রত্যেকটি পুরুষকে সুন্নত করাতে হবে, যারা তোমার পরিবারে জন্মেছে, তাদের বা কোনও বিদেশির কাছ থেকে যাদের অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে—যারা তোমার নিজের সন্তান নয়, তাদেরও করাতে হবে। \v 13 যারা তোমার পরিবারে জন্মেছে বা তোমার অর্থ দিয়ে যাদের কেনা হয়েছে, তাদের সবাইকে সুন্নত করাতেই হবে। তোমার শরীরে স্থাপিত আমার এই নিয়মই চিরস্থায়ী এক নিয়ম হবে। \v 14 সুন্নত না হওয়া যে কোনো পুরুষ, যার শরীরে সুন্নত করা হয়নি, সে তার লোকজনের মধ্যে থেকে উৎখাত হবে; সে আমার নিয়ম ভঙ্গ করেছে।” \p \v 15 ঈশ্বর অব্রাহামকে আরও বললেন, “তোমার স্ত্রী সারীকে, তুমি আর সারী বলে ডাকবে না; তার নাম হবে সারা। \v 16 আমি তাকে আশীর্বাদ করব, আর অবশ্যই তাকে তার নিজের এক পুত্রসন্তান দেব। আমি তাকে আশীর্বাদ করব, যেন সে বহু জাতির মা হয়; তার মধ্যে থেকে লোকসমূহের রাজারা উৎপন্ন হবে।” \p \v 17 অব্রাহাম মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে গেলেন; তিনি হেসে আপনমনে বললেন, “একশো বছর বয়স্ক লোকের কি পুত্রসন্তান হবে? সারা কি নব্বই বছর বয়সে সন্তানের জন্ম দেবে?” \v 18 আর অব্রাহাম ঈশ্বরকে বললেন, “ইশ্মায়েলই শুধু তোমার আশীর্বাদের অধীনে বেঁচে থাকুক!” \p \v 19 তখন ঈশ্বর বললেন, “হ্যাঁ, কিন্তু তোমার স্ত্রী সারা তোমার জন্য এক ছেলের জন্ম দেবে, এবং তুমি তার নাম দেবে ইস্‌হাক।\f + \fr 17:19 \fr*\ft “ইস্‌হাক” শব্দের অর্থ “সে হাসে”\ft*\f* তার আগামী বংশধরদের জন্য এক চিরস্থায়ী নিয়মরূপে আমি তার সঙ্গে আমার নিয়ম স্থাপন করব। \v 20 আর ইশ্মায়েলের সম্বন্ধেও তোমার করা প্রার্থনাটি আমি শুনেছি: আমি তাকে অবশ্যই আশীর্বাদ করব; আমি তাকে ফলবান করব ও তার প্রচুর বংশবৃদ্ধি করব। সে বারোজন শাসনকর্তার বাবা হবে এবং আমি তাকে এক বড়ো জাতিতে পরিণত করব। \v 21 কিন্তু আমার নিয়ম আমি সেই ইস্‌হাকের সঙ্গেই স্থাপন করব, যাকে আগামী বছর এইসময় সারা তোমার জন্য জন্ম দেবে।” \v 22 অব্রাহামের সঙ্গে কথা বলা শেষ করে ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে উঠে চলে গেলেন। \p \v 23 সেদিনই অব্রাহাম তাঁর ছেলে ইশ্মায়েলকে ও তাঁর পরিবারে জন্মানো বা তাঁর অর্থ দিয়ে কেনা সবাইকে, তাঁর পরিবারের প্রত্যেকটি পুরুষ সদস্যকে নিয়ে ঈশ্বরের কথানুসারে সুন্নত করালেন। \v 24 অব্রাহাম যখন সুন্নত করালেন তখন তাঁর বয়স 99 বছর, \v 25 এবং তাঁর ছেলে ইশ্মায়েলের বয়স তেরো বছর; \v 26 অব্রাহাম এবং তাঁর ছেলে ইশ্মায়েল দুজনে একই দিনে সুন্নত করালেন। \v 27 আর অব্রাহামের পরিবারের প্রত্যেকটি পুরুষ সদস্যকে তথা তাঁর পরিবারে জন্মানো বা কোনও বিদেশির কাছ থেকে অর্থ দিয়ে কেনা প্রত্যেককে তাঁর সাথে সুন্নত করানো হল। \c 18 \s1 তিনজন অতিথি \p \v 1 অব্রাহাম যখন একদিন ভর-দুপুরে মম্রির বিশাল গাছগুলির কাছে তাঁর তাঁবুর প্রবেশদ্বারে বসেছিলেন, তখন সদাপ্রভু তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন। \v 2 অব্রাহাম চোখ তুলে চেয়ে দেখলেন তিনজন লোক তাঁর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের দেখতে পেয়ে তিনি তাঁদের সাথে দেখা করার জন্য তাড়াতাড়ি তাঁবুর প্রবেশদ্বার ছেড়ে এগিয়ে গেলেন ও মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করলেন। \p \v 3 তিনি বললেন, “হে আমার প্রভু\f + \fr 18:3 \fr*\ft অথবা, সদাপ্রভু\ft*\f*, আপনার দৃষ্টিতে আমি যদি অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আপনার এই দাসকে পার করে যাবেন না। \v 4 একটু জল এনে দিই, যেন আপনারা পা-টা ধুয়ে নিয়ে এই গাছের তলায় বিশ্রাম করে নিতে পারেন। \v 5 আপনারা যখন আপনাদের এই দাসের কাছে এসেই পড়েছেন—আপনাদের জন্য আমি কিছু খাবার এনে দিই, যেন আপনারা তরতাজা হয়ে আপনাদের যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে পারেন।” \p “তা বেশ,” তাঁরা উত্তর দিলেন, “যা বললে তাই করো।” \p \v 6 অতএব অব্রাহাম চট্ করে তাঁবুতে সারার কাছে চলে গেলেন। তিনি বললেন, “তাড়াতাড়ি করো, তিন মান\f + \fr 18:6 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 16 কিলোগ্রাম\ft*\f* মিহি আটা নাও ও তা মেখে কয়েকটি রুটি সেঁকে দাও।” \p \v 7 পরে তিনি দৌড়ে গোয়ালঘরে গেলেন এবং বাছাই করা একটি কচি বাছুর নিয়ে সেটি তাঁর এক দাসকে দিলেন, যে চট্ করে সেটি রান্না করতে গেল। \v 8 পরে অব্রাহাম খানিকটা দই ও দুধ এবং রান্না করা বাছুরের মাংস এনে তাঁদের সামনে পরিবেশন করলেন। তাঁরা যখন ভোজনপান করছিলেন, তিনি তখন তাঁদের কাছে, একটি গাছের তলায় দাঁড়িয়েছিলেন। \p \v 9 “তোমার স্ত্রী সারা কোথায়?” তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। \p “ওখানে, তাঁবুর মধ্যে আছে,” তিনি বললেন। \p \v 10 তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, “আগামী বছর মোটামুটি এইসময় আমি অবশ্যই তোমাদের কাছে ফিরে আসব, এবং তোমার স্ত্রী সারা এক পুত্রসন্তান লাভ করবে।” \p ইত্যবসরে সারা তাঁবুর প্রবেশদ্বারে সেই অতিথির পিছন দিকে দাঁড়িয়ে সেকথা শুনছিলেন। \v 11 অব্রাহাম ও সারা দুজনেরই খুব বয়স হয়েছিল এবং সারার সন্তান প্রসবের বয়স পেরিয়ে গিয়েছিল। \v 12 তাই একথা ভেবে সারা মনে মনে হেসেছিলেন, “আমি জরাগ্রস্ত ও আমার স্বামী বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও কি এখন আমি এই সুখ পাব?” \p \v 13 তখন সদাপ্রভু অব্রাহামকে বললেন, “সারা কেন হেসে বলল, ‘সত্যিই কি আমি এক সন্তান লাভ করব, আমি যে এখন বৃদ্ধা হয়ে গিয়েছি?’ \v 14 সদাপ্রভুর কাছে কোনো কিছু কি খুব কঠিন? আগামী বছর নিরূপিত সময়ে আমি তোমার কাছে ফিরে আসব, এবং সারার কাছে তখন এক পুত্রসন্তান থাকবে।” \p \v 15 সারা ভয় পেয়েছিলেন, তাই তিনি মিথ্যামিথ্যি বললেন, “আমি হাসিনি।” \p কিন্তু তিনি বললেন, “হ্যাঁ, তুমি অবশ্যই হেসেছিলে।” \s1 অব্রাহাম সদোমের জন্য আবেদন জানালেন \p \v 16 সেই লোকেরা চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে নিচে সদোমের দিকে তাকালেন, এবং অব্রাহাম তাঁদের বিদায় জানানোর জন্য তাঁদের সঙ্গে কিছুটা পথ হাঁটলেন। \v 17 তখন সদাপ্রভু বললেন, “আমি যা করতে যাচ্ছি তা কি আমি অব্রাহামের কাছে লুকাব?” \v 18 অব্রাহাম নিঃসন্দেহে মহান ও শক্তিশালী এক জাতিতে পরিণত হবে, এবং পৃথিবীর সব জাতি তার মাধ্যমে আশীর্বাদ লাভ করবে।\f + \fr 18:18 \fr*\ft অথবা, সব জাতি আর্শীবাদ দানকালে তার নাম ব্যবহার করবে\ft*\f* \v 19 কারণ আমি তাকে মনোনীত করেছি, যেন যা উপযুক্ত ও ন্যায্য, তা করার মাধ্যমে সদাপ্রভুর পথে চলার ক্ষেত্রে সে তারপরে তার সন্তানদের ও তার পরিবারকে পথ দেখায়, ও যেন সদাপ্রভু অব্রাহামের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছেন তা তিনি সফল করেন। \p \v 20 পরে সদাপ্রভু বললেন, “সদোম ও ঘমোরার বিরুদ্ধে ওঠা কোলাহল এত তীব্র ও তাদের পাপ এত অসহ্য \v 21 যে আমি নিচে নেমে যাব এবং দেখব তারা যা করেছে, তা সত্যিই আমার কানে পৌঁছানো কোলাহলের মতো মন্দ কি না। যদি তা না হয়, আমি তা জানতে পারব।” \p \v 22 সেই লোকেরা পিছনে ফিরে সদোমের দিকে চলে গেলেন, কিন্তু অব্রাহাম সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন।\f + \fr 18:22 \fr*\ft কিছু কিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি অনুসারে “সদাপ্রভু অব্রাহামের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন”\ft*\f* \v 23 পরে অব্রাহাম তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন: “তুমি কি দুষ্টদের সাথে ধার্মিকদেরও দ্রুত নিশ্চিহ্ন করে ফেলবে? \v 24 নগরে যদি পঞ্চাশ জন ধার্মিক লোক থাকে তবে কী হবে? তুমি কি সত্যিই নগরটি নিশ্চিহ্ন করে ফেলবে এবং সেখানকার পঞ্চাশ জন ধার্মিক লোকের খাতিরে সেই স্থানটিকে অব্যাহতি দেবে\f + \fr 18:24 \fr*\ft অথবা, ক্ষমা করবে; 26 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* না? \v 25 এমন কাজ করা থেকে তুমি বিরত থাকো—দুষ্টদের সাথে ধার্মিকদের হত্যা করা, ধার্মিকদের ও দুষ্টদের প্রতি একইরকম আচরণ করা—এমন কাজ করা থেকে তুমি বিরত থাকো! সমগ্র পৃথিবীর বিচারক কি ন্যায়বিচার করবেন না?” \p \v 26 সদাপ্রভু বললেন, “সদোম নগরে আমি যদি পঞ্চাশ জন ধার্মিক লোক পাই, তবে তাদের খাতিরে সমগ্র স্থানটিকে আমি অব্যাহতি দেব।” \p \v 27 তখন অব্রাহাম আরেকবার বলে উঠলেন: “যদিও আমি ধুলো ও ভস্ম ছাড়া আর কিছুই নই, তাও যখন আমি প্রভুর সাথে কথা বলার সাহস পেয়েই গিয়েছি, \v 28 তখন বলি কি, ধার্মিকদের সংখ্যা যদি পঞ্চাশ জনের থেকে পাঁচজন কম হয়, তাতে কী? পাঁচজন লোক কম থাকার জন্য কি তুমি সমগ্র নগরটিকে ধ্বংস করে দেবে?” \p “আমি যদি সেখানে পঁয়তাল্লিশ জন পাই,” তিনি বললেন, “আমি তা ধ্বংস করব না।” \p \v 29 আরেকবার অব্রাহাম তাঁকে বললেন, “সেখানে যদি শুধু চল্লিশ জন পাওয়া যায়, তবে কী হবে?” \p তিনি বললেন, “চল্লিশ জনের খাতিরে, আমি এরকম করব না।” \p \v 30 তখন অব্রাহাম বললেন, “প্রভু, রাগ করবেন না, কিন্তু আমায় বলতে দিন। সেখানে যদি শুধু ত্রিশজন পাওয়া যায়, তবে কী হবে?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “সেখানে আমি যদি ত্রিশজন পাই, তাও আমি এরকম করব না।” \p \v 31 অব্রাহাম বললেন, “প্রভুর সাথে কথা বলার জন্য আমি যখন এতটাই সাহসী হয়েছি, তখন বলি কি, সেখানে যদি শুধু কুড়ি জন পাওয়া যায় তবে কী হবে?” \p তিনি বললেন, “কুড়ি জনের খাতিরে, আমি তা ধ্বংস করব না।” \p \v 32 তখন অব্রাহাম বললেন, “প্রভু রাগ করবেন না, আমাকে শুধু আর একটিবার বলতে দিন। সেখানে যদি শুধু দশজন পাওয়া যায়, তবে কী হবে?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “দশজনের খাতিরে, আমি তা ধ্বংস করব না।” \p \v 33 অব্রাহামের সাথে কথোপকথন শেষ করে সদাপ্রভু চলে গেলেন, এবং অব্রাহাম ঘরে ফিরে গেলেন। \c 19 \s1 সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস হয় \p \v 1 সন্ধ্যাবেলায় সেই দুজন দূত সদোমে উপস্থিত হলেন। লোট নগরের প্রবেশদ্বারে বসেছিলেন। তাঁদের দেখতে পেয়ে তিনি তাঁদের সাথে দেখা করার জন্য উঠে গেলেন ও মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করলেন। \v 2 “হে আমার প্রভুরা,” তিনি বললেন, “দয়া করে আপনাদের এই দাসের বাড়ির দিকে আসুন। আপনারা পা ধুয়ে এখানে রাত কাটাতে পারেন ও তারপর ভোরবেলায় আপনাদের যাত্রাপথে এগিয়ে যান।” \p “না,” তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা চকেই রাত কাটাব।” \p \v 3 কিন্তু তিনি এত পীড়াপীড়ি করলেন যে তাঁরা তাঁর সাথে গেলেন ও তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করলেন। তিনি তাঁদের জন্য কিছু খাবারদাবার রান্না করলেন ও খামিরবিহীন রুটি সেঁকে দিলেন, ও তাঁরা তা খেলেন। \v 4 তাঁরা শুতে যাওয়ার আগে, সদোম নগরের সবদিক থেকে লোকজন এসে—যুবকেরা ও বৃদ্ধেরা—সবাই বাড়িটি ঘিরে ধরল। \v 5 তারা লোটকে ডেকে বলল, “আজ রাতে যে লোকেরা তোমার কাছে এসেছে, তারা কোথায়? তাদের আমাদের কাছে বের করে নিয়ে এসো, যেন আমরা তাদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করতে পারি।” \p \v 6 তাদের সাথে দেখা করার জন্য লোট বাইরে গেলেন ও পিছন থেকে দরজাটি বন্ধ করে দিলেন \v 7 এবং বললেন, “হে আমার বন্ধুরা, না। এরকম মন্দ কাজ কোরো না। \v 8 দেখো, আমার এমন দুই মেয়ে আছে যারা কখনও কোনো পুরুষের সাথে সহবাস করেনি। আমি তাদের তোমাদের কাছে বের করে আনি, আর তোমরা তাদের সাথে যা ইচ্ছা তা করতে পারো। কিন্তু এই লোকদের প্রতি কিছু কোরো না, কারণ তাঁরা আমার ঘরে আশ্রয় নিতে এসেছেন।” \p \v 9 “আমাদের পথ থেকে সরে দাঁড়া।” তারা উত্তর দিল। “এ তো এক বিদেশি হয়ে এখানে এসেছিল, আর এখন কি না বিচারক হওয়ার চেষ্টা করছে! আমরা তোর প্রতি ওদের চেয়েও মন্দ আচরণ করব।” তারা লোটের উপর চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছিল ও দরজা ভেঙে ফেলার জন্য সামনে এগিয়ে গেল। \p \v 10 কিন্তু ভিতরে থাকা ব্যক্তিরা হাত বাড়িয়ে লোটকে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন। \v 11 পরে তাঁরা সেই বাড়ির দরজায় যারা দাঁড়িয়েছিল—যুবকদের ও বৃদ্ধদের—এমন অন্ধতায় আছন্ন করলেন, যে তারা আর দরজাই খুঁজে পেল না। \p \v 12 সেই দুই ব্যক্তি লোটকে বললেন, “এখানে তোমার আর কেউ কি আছে—জামাই, ছেলে বা মেয়ে, অথবা এই নগরের এমন কেউ, যারা তোমার আপনজন? এখান থেকে তাদের বের করে নিয়ে যাও, \v 13 কারণ আমরা এই স্থানটি ধ্বংস করতে যাচ্ছি। এখানকার লোকজনের বিরুদ্ধে ওঠা কোলাহল সদাপ্রভুর কানে এত জোরে বেজেছে, যে এটি ধ্বংস করার জন্যই তিনি আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন।” \p \v 14 অতএব লোট বাইরে গিয়ে তাঁর সেই জামাইদের সাথে কথা বললেন, যারা তাঁর মেয়েদের বিয়ে করার জন্য বাগ্‌দান করেছিল।\f + \fr 19:14 \fr*\ft অথবা, বিয়ে করেছিল\ft*\f* তিনি বললেন, “তাড়াতাড়ি করো ও এখান থেকে বেরিয়ে যাও, কারণ সদাপ্রভু এই নগরটি ধ্বংস করতে চলেছেন!” কিন্তু তাঁর জামাইরা ভেবেছিল যে তিনি বুঝি ঠাট্টা করছেন। \p \v 15 ভোর হতে না হতেই, দূতেরা লোটকে অনুরোধ জানিয়ে বললেন, “তাড়াতাড়ি করো! যারা এখানে আছে, তোমার সেই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে সাথে নাও, তা না হলে এই নগরটিকে যখন দণ্ড দেওয়া হবে, তখন তোমরাও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” \p \v 16 তিনি যখন ইতস্তত বোধ করছিলেন, তখন সেই ব্যক্তিরা তাঁর হাত, তাঁর স্ত্রীর হাত ও তাঁর দুই মেয়ের হাত চেপে ধরে নিরাপদে তাঁদের নগরের বাইরে নিয়ে গেলেন, কারণ সদাপ্রভু তাঁদের প্রতি দয়াবান ছিলেন। \v 17 তাঁদের বাইরে বের করে আনার পরেই সেই ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বললেন, “প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালিয়ে যাও! পিছনে ফিরে তাকিয়ো না, আর সমভূমিতে কোথাও দাঁড়িয়ো না! পাহাড়-পর্বতে পালিয়ে যাও, তা না হলে তোমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে!” \p \v 18 কিন্তু লোট তাঁদের বললেন, “হে আমার প্রভুরা,\f + \fr 19:18 \fr*\ft অথবা, না, প্রভু; অথবা না, আমার প্রভু\ft*\f* না, দয়া করুন! \v 19 আপনাদের\f + \fr 19:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় শব্দটি একবচনে ব্যবহৃত, অর্থাৎ, আপনার\ft*\f* এই দাস আপনাদের\f + \fr 19:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় শব্দটি একবচনে ব্যবহৃত, অর্থাৎ, আপনার\ft*\f* দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করেছে, এবং আপনারা\f + \fr 19:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় শব্দটি একবচনে ব্যবহৃত, অর্থাৎ, আপনি\ft*\f* আমার প্রাণরক্ষার জন্য অশেষ দয়া দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি পাহাড়-পর্বতে পালিয়ে যেতে পারব না; এই দুর্যোগ আমাকে গ্রাস করবে ও আমি মারা যাব। \v 20 দেখুন, এখানে কাছাকাছি পালিয়ে যাওয়ার উপযোগী একটি নগর আছে, আর তা ছোটও। আমাকে সেখানে পালিয়ে যেতে দিন—সেটি খুবই ছোটো, তাই না? তবেই তো আমার প্রাণরক্ষা হবে।” \p \v 21 তিনি তাঁকে বললেন, “তা বেশ, এই অনুরোধটিও আমি রাখব; যে নগরটির কথা তুমি বললে, আমি সেটি উৎখাত করব না। \v 22 কিন্তু তাড়াতাড়ি সেখানে পালিয়ে যাও, কারণ যতক্ষণ না তুমি সেখানে পৌঁছে যাচ্ছ, আমি কিছুই করতে পারব না।” (সেজন্যই নগরটিকে সোয়র\f + \fr 19:22 \fr*\ft সোয়র শব্দের অর্থ ছোটো\ft*\f* নাম দেওয়া হল।) \p \v 23 লোট সোয়রে পৌঁছালে, দেশে সূর্যোদয় হল। \v 24 তখন সদাপ্রভু সদোম ও ঘমোরার উপর—সদাপ্রভুর কাছ থেকে, আকাশ থেকে—জ্বলন্ত গন্ধক বর্ষণ করলেন। \v 25 এভাবে তিনি সেই নগরগুলি ও সমগ্র সমতল এলাকা উৎখাত করলেন, ও নগরগুলিতে যত প্রাণী ছিল, সেসব—আর দেশের গাছপালাও ধ্বংস করে দিলেন। \v 26 কিন্তু লোটের স্ত্রী পিছনে ফিরে তাকাল, ও সে এক লবণস্তম্ভে পরিণত হল। \p \v 27 পরদিন ভোরবেলায় অব্রাহাম উঠে সেই স্থানে ফিরে গেলেন, যেখানে তিনি সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 28 তিনি নিচে সদোম ও ঘমোরার দিকে, এবং সমগ্র সমতল এলাকার দিকে তাকালেন, ও তিনি দেখলেন যে এক চুল্লি থেকে ওঠা ধোঁয়ার মতো ঘন ধোঁয়া সেই দেশ থেকে উঠে আসছে। \p \v 29 তাই ঈশ্বর যখন সমতল এলাকার নগরগুলি ধ্বংস করে দিলেন, তখন তিনি অব্রাহামকে স্মরণ করলেন, এবং লোটকে তিনি সেই সর্বনাশ থেকে বের করে আনলেন, যা সেই নগরগুলিকে উৎখাত করে ছেড়েছিল, যেখানে লোট বসবাস করছিলেন। \s1 লোট ও তাঁর মেয়েরা \p \v 30 লোট ও তাঁর দুই মেয়ে সোয়র ছেড়ে পাহাড়-পর্বতের উপর বসতি স্থাপন করলেন, কারণ সোয়রে থাকতে তিনি ভয় পেয়েছিলেন। তিনি ও তাঁর দুই মেয়ে একটি গুহাতে বসবাস করছিলেন। \v 31 একদিন তাঁর বড়ো মেয়ে ছোটো মেয়েকে বলল, “আমাদের বাবা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন, আর সমগ্র পৃথিবীর প্রচলিত প্রথানুসারে—এখানে এমন কোনো পুরুষও নেই, যে আমাদের সন্তান দিতে পারে। \v 32 আয়, আমাদের বাবাকে দ্রাক্ষারস পান করাই ও পরে তাঁর সাথে সহবাস করি এবং আমাদের বাবার মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক বংশধারা এগিয়ে নিয়ে যাই।” \p \v 33 সেরাতে তারা তাদের বাবাকে দ্রাক্ষারস পান করালো, এবং বড়ো মেয়ে ভিতরে গিয়ে তাঁর সাথে সহবাস করল। লোট জানতেই পারেননি কখন সে শুতে এসেছিল আর কখনোই বা সে উঠে পড়েছিল। \p \v 34 পরদিন বড়ো মেয়ে ছোটো মেয়েকে বলল, “গতকাল রাতে আমি আমার বাবার সাথে সহবাস করেছিলাম। আয়, আজ রাতেও আমরা তাঁকে দ্রাক্ষারস পান করাই আর তুই ভিতরে গিয়ে তাঁর সাথে সহবাস কর, যেন আমরা আমাদের বাবার মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক বংশধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।” \v 35 তাই সেরাতেও তারা তাদের বাবাকে দ্রাক্ষারস পান করালো, আর ছোটো মেয়ে ভিতরে গিয়ে তাঁর সাথে সহবাস করল। এবারও তিনি জানতেই পারেননি কখন সে শুতে এসেছিল আর কখনোই বা সে উঠে পড়েছিল। \p \v 36 অতএব লোটের দুই মেয়েই তাদের বাবার মাধ্যমে গর্ভবতী হল। \v 37 বড়ো মেয়ে এক পুত্রসন্তান লাভ করল, আর সে তার নাম দিল মোয়াব\f + \fr 19:37 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় মোয়াব শব্দটি শোনায় বাবা থেকে\ft*\f*; সে বর্তমানকালের মোয়াবীয়দের পূর্বপুরুষ। \v 38 ছোটো মেয়েও এক পুত্রসন্তান লাভ করল, ও সে তার নাম দিল বিন-অম্মি\f + \fr 19:38 \fr*\ft বিন-অম্মি শব্দের অর্থ আমার বাবার লোকজনেরর ছেলে\ft*\f*; সে বর্তমানকালের অম্মোনীয়দের\f + \fr 19:38 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, বিনি-অম্মোন\ft*\f* পূর্বপুরুষ। \c 20 \s1 অব্রাহাম ও অবীমেলক \p \v 1 এমতাবস্থায় অব্রাহাম সেখান থেকে নেগেভ অঞ্চলের দিকে এগিয়ে গিয়ে কাদেশ ও শূরের মাঝখানে বসবাস করলেন। কিছুকাল তিনি গরারে থেকে গেলেন, \v 2 আর সেখানে অব্রাহাম তাঁর স্ত্রী সারার বিষয়ে বললেন, “এ আমার বোন।” তখন গরারের রাজা অবীমেলক লোক পাঠিয়ে সারাকে তুলে আনলেন। \p \v 3 কিন্তু একদিন রাতে ঈশ্বর স্বপ্নে অবীমেলককে দর্শন দিয়ে তাঁকে বললেন, “যে মহিলাটিকে তুমি নিয়ে এসেছ, তার জন্য তুমি মৃত্যুর পাত্র হয়ে গিয়েছ; সে এক বিবাহিত মহিলা।” \p \v 4 অবীমেলক তখনও সারার কাছাকাছি যাননি, তাই তিনি বললেন, “প্রভু, তুমি কি নির্দোষ এক জাতিকে ধ্বংস করবে? \v 5 সেই লোকটি কি আমাকে বলেননি, ‘এ আমার বোন’ আর মহিলাটিও কি বলেননি, ‘উনি আমার দাদা?’ বিশুদ্ধ এক বিবেক সমেত ও শুচিশুদ্ধ হাতেই আমি এ কাজ করেছি।” \p \v 6 তখন ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি যে তুমি বিশুদ্ধ বিবেক সমেত এ কাজ করেছ, আর তাই আমি তোমাকে আমার বিরুদ্ধে পাপ করা থেকে বিরত রেখেছি। এজন্যই আমি তাকে ছুঁতে দিইনি। \v 7 এখন সেই লোকটির স্ত্রীকে ফিরিয়ে দাও, কারণ সে একজন ভাববাদী এবং সে তোমার জন্য প্রার্থনা করবে ও তুমি বেঁচে যাবে। কিন্তু যদি তুমি মহিলাটিকে ফিরিয়ে না দাও, তবে নিশ্চিত থাকতে পারো যে তুমি ও তোমার সব লোকজন মারা যাবে।” \p \v 8 পরদিন ভোরবেলায় অবীমেলক তাঁর সব কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠালেন এবং যা যা ঘটেছে সেসব যখন তিনি তাঁদের বলে শোনালেন, তখন তাঁরা খুব ভয় পেয়ে গেলেন। \v 9 পরে অবীমেলক অব্রাহামকে নিজের কাছে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমাদের প্রতি আপনি এ কী করলেন? আমি আপনার প্রতি কী এমন অন্যায় করেছি যে আপনি আমার ও আমার রাজ্যের উপর এত বড়ো দোষ লাগিয়ে দিলেন? আপনি আমার প্রতি যা করলেন, তা করা আপনার উচিত হয়নি।” \v 10 আর অবীমেলক অব্রাহামকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন আপনি এরকম করতে গেলেন?” \p \v 11 অব্রাহাম উত্তর দিলেন, “আমি মনে করেছিলাম, ‘নিঃসন্দেহে এখানে মানুষের মনে ঈশ্বরভয় নেই, আর তারা আমার স্ত্রীর কারণে আমাকে হত্যা করবে।’ \v 12 এছাড়াও, এ সত্যিই আমার বোন, আমার বাবার মেয়ে হলেও সে আমার মায়ের মেয়ে নয়; পরে সে আমার স্ত্রী হয়েছে। \v 13 আর ঈশ্বর যখন আমার পিতৃগৃহ ছাড়তে আমাকে বাধ্য করেছিলেন, তখন আমি একে বলেছিলাম, ‘এভাবেই তুমি আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারবে: আমরা যেখানে যেখানে যাব, আমার বিষয়ে তুমি বলবে, “উনি আমার দাদা।” ’ ” \p \v 14 তখন অবীমেলক মেষ ও গবাদি পশুপাল এবং ক্রীতদাস ও দাসীদের এনে অব্রাহামকে দিলেন, আর তাঁর স্ত্রী সারাকেও তিনি তাঁর কাছে ফিরিয়ে দিলেন। \v 15 আর অবীমেলক বললেন, “আমার দেশটি আপনার সামনেই আছে; আপনার যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসবাস করুন।” \p \v 16 সারাকে তিনি বললেন, “আমি আপনার দাদাকে 1,000 শেকল\f + \fr 20:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 12 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো দিচ্ছি। যারা আপনার সাথে আছে, তাদের সামনেই আপনার বিরুদ্ধে করা অন্যায়ের ক্ষতিপূরণস্বরূপ আমি এটি দিচ্ছি; আপনার সব দোষ খণ্ডন হল।” \p \v 17 তখন অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং ঈশ্বর অবীমেলককে, তাঁর স্ত্রীকে ও তাঁর ক্রীতদাসীদের সুস্থ করে দিলেন যেন তারা আবার সন্তান লাভ করতে পারে, \v 18 কারণ অব্রাহামের স্ত্রী সারার জন্য সদাপ্রভু অবীমেলকের পরিবারের সব মহিলাকে গর্ভধারণ করা থেকে বিরত রেখেছিলেন। \c 21 \s1 ইস্‌হাকের জন্ম \p \v 1 সদাপ্রভু তাঁর বলা কথানুসারে সারার প্রতি অনুগ্রহকারী হলেন, এবং সদাপ্রভু যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সারার প্রতি তাই করলেন। \v 2 সারা গর্ভবতী হলেন এবং অব্রাহামের বৃদ্ধাবস্থায়, ঈশ্বর যে সময়ের প্রতিজ্ঞা তাঁর কাছে করেছিলেন, ঠিক সেই সময়ে অব্রাহামের জন্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। \v 3 অব্রাহামের জন্য সারা যে পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন, অব্রাহাম তার নাম দিলেন ইস্‌হাক।\f + \fr 21:3 \fr*\ft ইস্‌হাক শব্দের অর্থ “সে হাসে”\ft*\f* \v 4 তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের বয়স যখন আট দিন, তখন ঈশ্বরের আদেশানুসারে অব্রাহাম তার সুন্নত করালেন। \v 5 অব্রাহামের ছেলে ইস্‌হাকের যখন জন্ম হয় তখন তাঁর বয়স একশো বছর। \p \v 6 সারা বললেন, “ঈশ্বর আমাকে হাসির পাত্রী করে তুলেছেন, আর যে কেউ একথা শুনবে সেও আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।” \v 7 পরে তিনি এও বললেন, “কে অব্রাহামকে বলতে পেরেছিল যে সারা শিশুসন্তানকে স্তন্যদান করবে? তা সত্ত্বেও তাঁর বৃদ্ধাবস্থায় আমি তাঁর জন্য এক ছেলের জন্ম দিয়েছি।” \s1 হাগার ও ইশ্মায়েল বিতাড়িত হয় \p \v 8 শিশুটি বেড়ে উঠল ও তার স্তন্য-ত্যাগ করানো হল,\f + \fr 21:8 \fr*\ft অর্থাৎ, মাই ছাড়ানো হল বা মায়ের দুধ ছাড়ানো হল\ft*\f* এবং যেদিন ইস্‌হাকের স্তন্য-ত্যাগ করানো হল, সেদিন অব্রাহাম এক মহাভোজের আয়োজন করলেন। \v 9 কিন্তু সারা দেখতে পেলেন যে, যে ছেলেটিকে মিশরীয় হাগার অব্রাহামের জন্য জন্ম দিয়েছিল, সে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছে, \v 10 আর তাই তিনি অব্রাহামকে বললেন, “ওই ক্রীতদাসী ও তার ছেলেকে তাড়িয়ে দাও, কারণ আমার ছেলে ইস্‌হাকের সম্পত্তির অধিকারে ওই মহিলার ছেলে কখনোই ভাগ বসাবে না।” \p \v 11 বিষয়টি অব্রাহামকে খুবই ব্যথিত করে তুলেছিল, কারণ এতে তাঁর ছেলের স্বার্থ জড়িত ছিল। \v 12 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “ছেলেটির ও তোমার ক্রীতদাসীর বিষয়ে তুমি এত ব্যথিত হোয়ো না। সারা তোমাকে যা বলছে, তা শোনো, কারণ ইস্‌হাকের মাধ্যমেই তোমার সন্তানসন্ততি\f + \fr 21:12 \fr*\ft অথবা, বীজ বা বংশ\ft*\f* পরিচিত হবে। \v 13 আমি ওই ক্রীতদাসীর ছেলেকেও এক জাতিতে পরিণত করব, কারণ সেও তোমার সন্তান।” \p \v 14 পরদিন ভোরবেলায় অব্রাহাম কিছু খাবার ও এক মশক\f + \fr 21:14 \fr*\ft অথবা, “চামড়ার তৈরি তরল পদার্থ বহনের পাত্র”\ft*\f* জল নিয়ে সেগুলি হাগারকে দিলেন। তিনি সেগুলি হাগারের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে তাকে সেই ছেলেটি সমেত বিদায় করে দিলেন। হাগার প্রস্থান করল এবং বের-শেবার মরুভূমিতে ইতস্তত ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছিল। \p \v 15 মশকের জল যখন শেষ হয়ে গেল, তখন সে ছেলেটিকে একটি ঝোপের তলায় নিয়ে গিয়ে রাখল। \v 16 পরে সে একটু দূরে, প্রায় 100 মিটার\f + \fr 21:16 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “এক তির”\ft*\f* দূরে গিয়ে বসে পড়ল, কারণ সে ভাবল, “আমি নিজের চোখে ছেলেটির মৃত্যুদৃশ্য দেখতে পারব না।” আর সেখানে বসে সে\f + \fr 21:16 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন পাণ্ডুলিপি অনুসারে “ছেলেটি”\ft*\f* ফোঁপাতে শুরু করল। \p \v 17 ঈশ্বর সেই ছেলেটির কান্না শুনতে পেলেন, এবং ঈশ্বরের দূত স্বর্গ থেকে হাগারকে ডেকে বললেন, “কী হল, হাগার? ভয় পেয়ো না; সেখানে শুয়ে ছেলেটি যখন কাঁদছে, তখন তার কান্না ঈশ্বর শুনেছেন। \v 18 ছেলেটিকে তুলে তার হাত ধরো, কারণ আমি তাকে এক মহাজাতিরূপে গড়ে তুলব।” \p \v 19 তখন ঈশ্বর হাগারের চোখ খুলে দিলেন আর সে জলের এক কুয়ো দেখতে পেল। তাই সে গিয়ে মশকে জল ভরে ছেলেটিকে পানীয় জল এনে দিল। \p \v 20 ছেলেটি যখন বেড়ে উঠছিল তখন ঈশ্বর তার সাথেই ছিলেন। সে মরুভূমিতে বসবাস করছিল ও এক তিরন্দাজ হয়ে উঠল। \v 21 সে যখন পারণ মরুভূমিতে বসবাস করছিল তখন তার মা, মিশর থেকে এক মহিলাকে তার স্ত্রী হওয়ার জন্য নিয়ে এল। \s1 বের-শেবার সন্ধিচুক্তি \p \v 22 সেই সময় অবীমেলক তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতি ফীকোলকে সাথে নিয়ে অব্রাহামের কাছে এসে বললেন, “আপনি যা যা করেন, সবেতেই ঈশ্বর আপনার সহায় হন। \v 23 এখন ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে আমার কাছে শপথ করুন যে আপনি আমার বা আমার সন্তানসন্ততির বা আমার বংশধরদের সঙ্গে প্রতারণা করবেন না। আমি আপনার প্রতি যে দয়া দেখিয়েছিলাম, সেই একইরকম দয়া আপনি আমার প্রতি ও যে দেশে এখন আপনি এক বিদেশিরূপে বসবাস করছেন, সেই দেশের প্রতিও দেখান।” \p \v 24 অব্রাহাম বললেন, “আমি শপথ করছি।” \p \v 25 তখন অব্রাহাম অবীমেলকের কাছে সেই সজল কুয়োটির বিষয়ে অভিযোগ জানালেন, যেটি অবীমেলকের দাসেরা জোর করে দখল করে নিয়েছিল। \v 26 কিন্তু অবীমেলক বললেন, “আমি জানি না কে এই কাজটি করেছে। আপনিও আমাকে কিছু বলেননি, আর আজই আমি এই বিষয়ে শুনলাম।” \p \v 27 অতএব অব্রাহাম মেষ ও গবাদি পশুপাল আনিয়ে সেগুলি অবীমেলককে দিলেন এবং দুজনে এক সন্ধিচুক্তি করলেন। \v 28 অব্রাহাম তাঁর মেষপাল থেকে মেষের সাতটি মাদি শাবক পৃথক করলেন, \v 29 এবং অবীমেলক অব্রাহামকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি যে মেষের এই সাতটি মাদি শাবক পৃথক করলেন, এর অর্থ কী?” \p \v 30 তিনি উত্তর দিলেন, “আমিই যে এই কুয়োটি খুঁড়েছি, তার প্রমাণস্বরূপ আপনি আমার হাত থেকে মেষের এই সাতটি শাবক গ্রহণ করুন।” \p \v 31 অতএব সেই স্থানটির নাম হল বের-শেবা,\f + \fr 21:31 \fr*\ft বের-শেবার অর্থ হতে পারে “সাতের কুয়ো,” বা “শপথের কুয়ো”\ft*\f* কারণ সেই দুজন লোক সেখানে এক শপথ নিয়েছিলেন। \p \v 32 বের-শেবায় সন্ধিচুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর অবীমেলক ও তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতি ফীকোল ফিলিস্তিনীদের দেশে ফিরে গেলেন। \v 33 অব্রাহাম বের-শেবায় একটি ঝাউ গাছ লাগালেন, ও সেখানে তিনি অনন্তজীবী ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। \v 34 আর অব্রাহাম দীর্ঘকাল ফিলিস্তিনীদের দেশে থেকে গেলেন। \c 22 \s1 অব্রাহাম পরীক্ষিত হন \p \v 1 কিছুকাল পর ঈশ্বর অব্রাহামকে পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “অব্রাহাম!” \p “আমি এখানে,” অব্রাহাম উত্তর দিলেন। \p \v 2 তখন ঈশ্বর বললেন, “তোমার ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালোবাসো তাকে—সেই ইস্‌হাককে—নাও ও মোরিয়া প্রদেশে যাও। সেখানে এমন একটি পর্বতের উপর তাকে হোমবলিরূপে উৎসর্গ করো, যেটি আমি তোমাকে দেখিয়ে দেব।” \p \v 3 পরদিন ভোরবেলায় অব্রাহাম উঠে তাঁর গাধায় জিন চাপালেন। তিনি তাঁর দাসদের মধ্যে দুজনকে ও তাঁর ছেলে ইস্‌হাককে সাথে নিলেন। হোমবলির জন্য যথেষ্ট পরিমাণ কাঠ কাটার পর তিনি সেই স্থানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন, যেটির বিষয়ে ঈশ্বর তাঁকে আগেই বলে দিয়েছিলেন। \v 4 তৃতীয় দিনে অব্রাহাম চোখ তুলে তাকিয়ে দূর থেকে সেই স্থানটি দেখলেন। \v 5 তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “ছেলেটিকে সাথে নিয়ে আমি যখন সেখানে যাচ্ছি, তখন তোমরা গাধাটির সঙ্গে এখানেই থাকো। আমরা আরাধনা করব ও পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব।” \p \v 6 অব্রাহাম হোমবলির কাঠ নিয়ে সেগুলি তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের কাঁধে চাপিয়ে দিলেন, এবং তিনি স্বয়ং আগুন ও ছুরি নিলেন। তাঁরা দুজন যখন একসাথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, \v 7 ইস্‌হাক মুখ খুলে তাঁর বাবা অব্রাহামকে বললেন, “বাবা?” \p “বলো বাছা?” অব্রাহাম উত্তর দিলেন। \p “আগুন ও কাঠ তো এখানে আছে,” ইস্‌হাক বললেন, “কিন্তু হোমবলির জন্য মেষশাবক কোথায়?” \p \v 8 অব্রাহাম উত্তর দিলেন, “বাছা, ঈশ্বর স্বয়ং হোমবলির জন্য মেষশাবকের জোগান দেবেন।” আর তাঁরা দুজন একসাথে এগিয়ে গেলেন। \p \v 9 ঈশ্বর যে স্থানটির কথা বলেছিলেন, তারা যখন সেখানে পৌঁছালেন, তখন অব্রাহাম সেখানে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন ও সেটির উপর কাঠ বিছিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর ছেলে ইস্‌হাককে বেঁধে সেই বেদিতে, কাঠের উপর শুইয়ে দিলেন। \v 10 পরে তিনি হাত বাড়িয়ে ছুরিটি ধরে তাঁর ছেলেকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন। \v 11 কিন্তু সদাপ্রভুর দূত স্বর্গ থেকে তাঁকে ডেকে বললেন, “অব্রাহাম, অব্রাহাম!” \p “আমি এখানে,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 12 “ছেলেটির গায়ে হাত দিয়ো না,” দূত বললেন। “ওর কোনও ক্ষতি কোরো না। এখন আমি বুঝেছি যে তুমি ঈশ্বরকে ভয় করো, কারণ আমাকে তুমি তোমার ছেলেটি, তোমার একমাত্র ছেলেটি দিতে অসম্মত হওনি।” \p \v 13 অব্রাহাম চোখ তুলে তাকিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে ঝোপঝাড়ের মধ্যে একটি মদ্দা মেষ\f + \fr 22:13 \fr*\ft বেশ কিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি অনুসারে “তাঁর পিছনে একটি মদ্দা মেষ”\ft*\f* শিং আটকানো অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি সেখানে গিয়ে মদ্দা মেষটিকে এনে তাঁর ছেলের পরিবর্তে সেটিকে এক হোমবলিরূপে উৎসর্গ করলেন। \v 14 অতএব অব্রাহাম সেই স্থানটির নাম দিলেন সদাপ্রভু জোগাবেন। আর আজও পর্যন্ত একথা বলা হয়ে থাকে, “সদাপ্রভুর পর্বতে তা জোগানো হবে।” \p \v 15 সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয়বার স্বর্গ থেকে অব্রাহামকে ডাক দিলেন \v 16 এবং বললেন, “সদাপ্রভু ঘোষণা করছেন, আমি নিজের নামে শপথ করছি, যেহেতু তুমি এই কাজটি করেছ এবং আমাকে তোমার ছেলেটি, তোমার একমাত্র ছেলেটি দিতে অসম্মত হওনি, \v 17 তাই অবশ্যই আমি তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশধরদের আকাশের তারাগুলির মতো ও সমুদ্রের বালুকণার মতো বিপুল সংখ্যক করে তুলব। তোমার বংশধররা তাদের শত্রুদের নগরগুলি দখল করে নেবে, \v 18 এবং তোমার সন্তানসন্ততির\f + \fr 22:18 \fr*\ft অথবা, বীজের বা বংশের\ft*\f* মাধ্যমে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে,\f + \fr 22:18 \fr*\ft অথবা, “পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ দানকালে তোমার সন্তানসন্ততির নাম ব্যবহার করবে”\ft*\f* কারণ তুমি আমার বাধ্য হয়েছ।” \p \v 19 পরে অব্রাহাম তাঁর দাসদের কাছে ফিরে এলেন, এবং তাঁরা সবাই মিলে বের-শেবার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন। আর অব্রাহাম বের-শেবাতেই থেকে গেলেন। \s1 নাহোরের ছেলেরা \li1 \v 20 কিছুকাল পর অব্রাহামকে বলা হল, “মিল্কাও মা হয়েছেন; তিনি আপনার ভাই নাহোরের জন্য এই ছেলেদের জন্ম দিয়েছেন: \li2 \v 21 প্রথমজাত ঊষ, তার ভাই বূষ, \li2 কমূয়েল (অরামের বাবা), \li2 \v 22 কেষদ, হসো, পিলদশ, যিদলফ ও বথূয়েল।” \li3 \v 23 বথূয়েল রিবিকার বাবা। \li4 মিল্কা অব্রাহামের ভাই নাহোরের জন্য এই আটটি ছেলের জন্ম দিলেন। \b \li1 \v 24 যার নাম রূমা, নাহোরের সেই উপপত্নীও এই ছেলেদের জন্ম দিল: \li2 টেবহ, গহম, তহশ ও মাখা। \c 23 \s1 সারার মৃত্যু \p \v 1 সারা 127 বছর বেঁচেছিলেন। \v 2 কনান দেশের অন্তর্গত কিরিয়ৎ-অর্বে (অথবা, হিব্রোণে) তিনি মারা গেলেন, এবং অব্রাহাম সারার জন্য শোকপ্রকাশ ও কান্নাকাটি করার জন্য (সেখানে) গেলেন। \p \v 3 পরে অব্রাহাম তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহের পাশ থেকে উঠে এসে হিত্তীয়দের\f + \fr 23:3 \fr*\ft অথবা, হেতের বংশধরদের; 5, 7, 10, 16, 18 ও 20 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* সাথে কথা বললেন। তিনি বললেন, \v 4 “আপনাদের মাঝখানে আমি একজন বিদেশি ও অপরিচিত ব্যক্তি। কবরস্থান বানানোর জন্য এখানে আমাকে কিছুটা জমি বিক্রি করে দিন, যেন আমি আমার স্ত্রীর মৃতদেহ কবর দিতে পারি।” \p \v 5 হিত্তীয়েরা অব্রাহামকে উত্তর দিল, \v 6 “মশাই, আমাদের কথা শুনুন। আমাদের মাঝখানে আপনি তো এক মহান রাজপুরুষ। আমাদের কবরগুলির মধ্যে আপনার পছন্দসই সেরা কবরটিতেই আপনার মৃত পরিজনকে কবর দিন। আমাদের মধ্যে কেউই আপনার মৃত পরিজনকে কবর দেওয়ার জন্য নিজের কবরটি দিতে অস্বীকার করব না।” \p \v 7 তখন অব্রাহাম উঠে দাঁড়িয়ে সেই দেশের লোকদের অর্থাৎ, হিত্তীয়দের সামনে প্রণত হলেন। \v 8 তিনি তাদের বললেন, “আপনারা যদি চান যে আমি আমার মৃত পরিজনকে এখানে কবর দিই, তবে আমার কথা শুনুন এবং আপনারা আমার হয়ে আমার ও সোহরের ছেলে ইফ্রোণের মাঝে মধ্যস্থতা করুন, \v 9 যেন তিনি তাঁর অধিকারে থাকা সেই মক্‌পেলা গুহাটি আমায় বিক্রি করেন, যেটি তাঁর জমির শেষ প্রান্তে আছে। তাঁকে বলুন, তিনি যেন সেটি সম্পূর্ণ দাম নিয়ে আপনাদের মাঝে অবস্থিত এক কবরস্থানরূপে আমায় বিক্রি করে দেন।” \p \v 10 হিত্তীয় ইফ্রোণ তাঁর লোকজনের মাঝখানে বসেছিলেন এবং যে হিত্তীয়েরা তাঁর নগরের প্রবেশদ্বারের কাছে সমবেত হল, তাদের সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে তিনি অব্রাহামকে উত্তর দিলেন। \v 11 “হে আমার প্রভু, না,” তিনি বললেন। “আমার কথা শুনুন; আমি আপনাকে সেই জমিটি দিলাম,\f + \fr 23:11 \fr*\ft অথবা, বিক্রি করলাম\ft*\f* ও সেখানে অবস্থিত গুহাটিও দিলাম। আমার লোকজনের উপস্থিতিতেই আমি এগুলি আপনাকে দিলাম। আপনার মৃত পরিজনকে আপনি কবর দিন।” \p \v 12 অব্রাহাম আরও একবার সেই দেশের লোকদের সামনে প্রণত হলেন \v 13 এবং তাদের শুনিয়ে শুনিয়ে তিনি ইফ্রোণকে বললেন, “আমার কথা শুনতে চাইলে, শুনুন। আমি জমিটির দাম দেব। আমার কাছ থেকে তা গ্রহণ করুন, যেন সেখানে আমি আমার মৃত পরিজনকে কবর দিতে পারি।” \p \v 14 ইফ্রোণ অব্রাহামকে উত্তর দিলেন, \v 15 “হে আমার প্রভু, আমার কথা শুনুন; জমিটির দাম 400 শেকল\f + \fr 23:15 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 4.6 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো, কিন্তু আপনার ও আমার মধ্যে তাতে কী আসে-যায়? আপনার মৃত পরিজনকে আপনি কবর দিন।” \p \v 16 ইফ্রোণের শর্তে অব্রাহাম রাজি হলেন এবং হিত্তীয়দের কর্ণগোচরে ইফ্রোণ যে দাম ধার্য করলেন, ততখানি পরিমাণ রুপো: বণিকদের মধ্যে প্রচলিত বর্তমান ওজন অনুসারে 400 শেকল রুপো তিনি তাঁকে ওজন করে দিলেন। \p \v 17 অতএব মম্রির কাছাকাছি অবস্থিত মক্‌পেলায় ইফ্রোণের সেই জমিটি—সেখানকার জমি ও গুহা, দুটিই এবং সেই জমির সীমানার অন্তর্গত সব গাছপালা—হস্তান্তরের দলিল \v 18 অব্রাহামের নামে তাঁর সম্পত্তিরূপে সেই নগরের প্রবেশদ্বারের কাছে সমবেত সব হিত্তীয়ের উপস্থিতিতে পাকা করা হল। \v 19 পরে অব্রাহাম তাঁর স্ত্রী সারাকে কনান দেশে মম্রির (অর্থাৎ, হিব্রোণের) পার্শ্ববর্তী মক্‌পেলার জমিতে অবস্থিত গুহায় কবর দিলেন। \v 20 অতএব সেই জমি ও সেখানকার গুহাটি হিত্তীয়েরা দলিল করে এক কবরস্থানরূপে অব্রাহামের অধিকারভুক্ত করে দিল। \c 24 \s1 ইস্‌হাক ও রিবিকা \p \v 1 অব্রাহাম খুব বৃদ্ধ হয়ে গেলেন এবং সদাপ্রভু তাঁকে সবদিক থেকেই আশীর্বাদ করলেন। \v 2 যিনি তাঁর সব সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন, তাঁর ঘরের সেই প্রবীণ দাসকে তিনি বললেন, “তুমি আমার ঊরুর তলায় হাত রাখো। \v 3 যিনি স্বর্গের ঈশ্বর ও পৃথিবীরও ঈশ্বর, আমি চাই তুমি সেই সদাপ্রভুর নামে এই শপথ করো, যে আমি যাদের মধ্যে বসবাস করছি, সেই কনানীয়দের কোনো মেয়েকে তুমি আমার ছেলের স্ত্রী করে আনবে না, \v 4 কিন্তু তুমি আমার দেশে ও আমার আপন আত্মীয়স্বজনদের কাছে যাবে এবং আমার ছেলে ইস্‌হাকের জন্য এক স্ত্রী নিয়ে আসবে।” \p \v 5 সেই দাস তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই মেয়েটি যদি এই দেশে আসতে অনিচ্ছুক হয় তবে কী হবে? তবে কি যে দেশ থেকে আপনি এসেছেন, সেই দেশে আমি আপনার ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব?” \p \v 6 “তুমি কোনোমতেই আমার ছেলেকে সেই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে না,” অব্রাহাম বললেন। \v 7 “স্বর্গের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি আমাকে আমার পিতৃগৃহ থেকে ও আমার মাতৃভূমি থেকে বের করে এনেছেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং এক শপথের মাধ্যমে প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন, ‘এই স্থানটি আমি তোমার সন্তানসন্ততিকে\f + \fr 24:7 \fr*\ft অথবা, “বংশকে”\ft*\f* দেব,’ তিনিই তোমার অগ্রগামী করে তাঁর দূতকে পাঠিয়ে দেবেন, যেন তুমি সেখান থেকে আমার ছেলের জন্য এক স্ত্রী আনতে পারো। \v 8 যদি সেই মেয়েটি তোমার সঙ্গে আসতে না চায়, তবে তুমি আমার এই শপথ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। শুধু তুমি আমার ছেলেকে সেখানে ফিরিয়ে নিয়ে যেয়ো না।” \v 9 অতএব সেই দাস তাঁর প্রভু অব্রাহামের ঊরুর তলায় হাত রেখে এই বিষয়ে তাঁর কাছে শপথ করলেন। \p \v 10 পরে সেই দাস তাঁর প্রভুর উটগুলির মধ্যে থেকে দশটি উটের পিঠে তাঁর প্রভুর কাছ থেকে পাওয়া সব ধরনের ভালো ভালো জিনিসপত্র চাপিয়ে নিয়ে রওনা হয়ে গেলেন। তিনি অরাম-নহরয়িমের\f + \fr 24:10 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলেন এবং নাহোরের নগরে পৌঁছালেন। \v 11 তিনি নগরের বাইরে অবস্থিত একটি কুয়োর কাছে উটগুলিকে নতজানু করে বসালেন; তখন প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল, যে সময় মহিলারা কুয়ো থেকে জল তুলতে যায়। \p \v 12 তখন তিনি প্রার্থনা করলেন, “হে সদাপ্রভু, আমার প্রভু অব্রাহামের ঈশ্বর, আজ তুমি আমাকে সফল করে তোলো, এবং আমার প্রভু অব্রাহামের প্রতি দয়া দেখাও। \v 13 দেখো, আমি এই জলের উৎসের ধারে দাঁড়িয়ে আছি, এবং নগরবাসীদের মেয়েরা জল তুলতে আসছে। \v 14 এরকমই হোক যেন আমি যখন একটি যুবতী মেয়েকে বলব, ‘দয়া করে তোমার কলশিটি নামিয়ে রাখো যেন আমি জলপান করতে পারি,’ এবং সে যখন বলবে, ‘আপনি পান করুন এবং আপনার উটগুলির জন্যও আমি পানীয় জল দেব, ’ তখন সেই যেন সেই মেয়ে হয়, যাকে তুমি তোমার দাস ইস্‌হাকের জন্য মনোনীত করেছ। এর দ্বারাই আমি জানতে পারব যে তুমি আমার প্রভুর প্রতি দয়া দেখিয়েছ।” \p \v 15 ঈশ্বরের কাছে করা তাঁর প্রার্থনাটি শেষ হওয়ার আগেই রিবিকা তার কলশি কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে এলেন। তিনি অব্রাহামের ভাই নাহোরের স্ত্রী মিল্কার ছেলে বথূয়েলের মেয়ে। \v 16 সেই মেয়েটি অপরূপ সুন্দরী, ও এক কুমারী ছিলেন; কোনও পুরুষ কখনও তাঁর সাথে শোয়নি। তিনি জলের উৎসের কাছে নেমে গিয়ে, তাঁর কলশিতে জল ভরে আবার উপরে উঠে আসছিলেন। \p \v 17 সেই দাস তাড়াতাড়ি তাঁর সাথে দেখা করে বললেন, “দয়া করে তোমার কলশি থেকে আমায় একটু জল দাও।” \p \v 18 “হে আমার প্রভু, পান করুন,” এই বলে রিবিকা চট্ করে কলশিটি হাতে নামিয়ে এনে তাঁকে পানীয় জল দিলেন। \p \v 19 তাঁকে পানীয় জল দেওয়ার পর রিবিকা বললেন, “আমি আপনার উটগুলির জন্যও ততক্ষণ জল তুলতে থাকব, যতক্ষণ না তারা যথেষ্ট পরিমাণ জলপান করে ফেলছে।” \v 20 অতএব তিনি তাড়াতাড়ি সেই জাবপাত্রে কলশির জল খালি করে দিলেন, আরও জল তোলার জন্য কুয়োর কাছে দৌড়ে ফিরে গেলেন, এবং সেই দাসের সব উটের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ জল তুলে আনলেন। \v 21 কোনও কথা না বলে সেই লোকটি এই বিষয়টি বোঝার জন্য তাঁকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করছিলেন, যে সদাপ্রভু তাঁর যাত্রা আদৌ সফল করেছেন কি না। \p \v 22 উটগুলি জলপান করে ফেলার পর, সেই লোকটি এক বেকা\f + \fr 24:22 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 5.7 গ্রাম\ft*\f* ওজনের একটি সোনার নথ এবং দশ শেকল\f + \fr 24:22 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 115 গ্রাম\ft*\f* ওজনের সোনার দুটি বালা বের করলেন। \v 23 পরে তিনি প্রশ্ন করলেন, “তুমি কার মেয়ে? দয়া করে আমায় বলো তো, তোমার পিতৃগৃহে আমাদের রাত কাটানোর জন্য ঘর আছে কি?” \p \v 24 রিবিকা তাঁকে উত্তর দিলেন, “আমি সেই বথূয়েলের মেয়ে, যিনি নাহোরের ছেলে, ও যাঁকে মিল্কা নাহোরের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন।” \v 25 তিনি আরও বললেন, “আমাদের কাছে প্রচুর খড়-বিচালি ও জাব\f + \fr 24:25 \fr*\ft অথবা, গবাদি পশুর শুকনো খাদ্য\ft*\f* আছে, তা ছাড়া আপনাদের রাত কাটানোর জন্য ঘরও আছে।” \p \v 26 তখন সেই লোকটি মাথা নত করে সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন, \v 27 এবং বললেন, “আমার প্রভু অব্রাহামের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, যিনি আমার প্রভুর প্রতি তাঁর দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখাতে ক্ষান্ত হননি। আমার ক্ষেত্রেও, সদাপ্রভু আমার প্রভুর আত্মীয়স্বজনের বাড়ি পর্যন্ত যাত্রাপথে আমাকে পথ দেখালেন।” \p \v 28 যুবতী মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে তাঁর মায়ের পরিজনদের এইসব বিষয় জানালেন। \v 29 রিবিকার এক দাদা ছিলেন, যাঁর নাম লাবন, আর তিনি চট্ করে জলের উৎসের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটির কাছে চলে গেলেন। \v 30 সেই নথটি এবং তাঁর বোনের হাতের বালা দেখামাত্রই এবং রিবিকাকে সেই লোকটি যা যা বলেছিলেন, সেসব কথা তাঁর কাছ থেকে শোনামাত্রই তিনি সেই লোকটির কাছে চলে গেলেন এবং দেখতে পেলেন, তিনি সেই জলের উৎসের কাছে উটগুলি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। \v 31 “হে সদাপ্রভুর আশীর্বাদধন্য ব্যক্তি, আসুন,” তিনি বললেন। “আপনি এখানে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আমি আপনার জন্য বাড়িঘর ঠিকঠাক করে রেখেছি এবং উটগুলির জন্যও জায়গা করে রেখেছি।” \p \v 32 অতএব সেই লোকটি বাড়িতে গেলেন এবং উটগুলিকেও ভারমুক্ত করা হল। উটগুলির জন্য খড়-বিচালি ও জাব আনা হল এবং তাঁর ও তাঁর লোকজনের পা ধোয়ার জন্য জল আনা হল। \v 33 পরে তাঁর সামনে খাবার পরিবেশন করা হল, কিন্তু তিনি বললেন, “আমার যা বলার আছে তা যতক্ষণ না আমি আপনাদের বলে শুনাচ্ছি, ততক্ষণ আমি কিছু খাব না।” \p “তবে আমাদের তা বলে ফেলুন।” লাবন বললেন। \p \v 34 অতএব তিনি বললেন, “আমি অব্রাহামের দাস। \v 35 সদাপ্রভু আমার প্রভুকে প্রচুর পরিমাণে আশীর্বাদ করেছেন, এবং তিনি ধনী হয়ে গিয়েছেন। সদাপ্রভু তাঁকে মেষ ও গবাদি পশুপাল, রুপো ও সোনা, দাস ও দাসী, এবং উট ও গাধা দিয়েছেন। \v 36 আমার প্রভুর স্ত্রী সারা বৃদ্ধাবস্থায় তাঁর জন্য এক ছেলের জন্ম দিয়েছেন, এবং আমার প্রভুর নিজস্ব সবকিছু তিনি তাঁকেই দিয়েছেন। \v 37 আর আমার প্রভু আমাকে দিয়ে এক শপথ করিয়ে নিয়েছেন, ও বলেছেন, ‘যাদের দেশে আমরা বসবাস করছি, সেই কনানীয়দের মেয়েদের মধ্যে থেকে কাউকে তুমি আমার ছেলের স্ত্রী করে আনবে না, \v 38 কিন্তু তুমি আমার পিতৃপরিজনদের এবং আমার নিজের গোত্রভুক্ত লোকজনের কাছে যাবে, ও আমার ছেলের জন্য এক স্ত্রী নিয়ে আসবে।’ \p \v 39 “তখন আমি আমার প্রভুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘সেই মেয়েটি যদি আমার সঙ্গে আসতে না চায় তবে কী হবে?’ \p \v 40 “তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘যাঁর সাক্ষাতে আমি বিশ্বস্ততাপূর্বক চলেছি, সেই সদাপ্রভুই তাঁর দূতকে তোমার সঙ্গে পাঠাবেন এবং তোমার যাত্রা সফল করবেন, যেন তুমি আমার নিজের গোত্রভুক্ত লোকজনের ও আমার পিতৃপরিজনদের মধ্য থেকেই আমার ছেলের জন্য এক স্ত্রী আনতে পারো। \v 41 আমার শপথ থেকে তুমি মুক্ত হয়ে যাবে যদি, তুমি যখন আমার গোত্রভুক্ত লোকজনের কাছে যাবে, ও তারা যদি মেয়েটিকে তোমার হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করে—তখন তুমি আমার শপথ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।’ \p \v 42 “আজ যখন আমি জলের উৎসের কাছে এলাম, তখন আমি বললাম, ‘হে সদাপ্রভু, আমার প্রভু অব্রাহামের ঈশ্বর, যদি তোমার ইচ্ছা হয়, তবে দয়া করে তুমি আমার এই যাত্রা সফল করো, যে যাত্রায় আমি বের হয়ে এসেছি। \v 43 দেখো, আমি এই জলের উৎসের পাশে দাঁড়িয়ে আছি। একটি যুবতী মেয়ে যদি এখানে জল তুলতে আসে এবং আমি যদি তাকে বলি, “দয়া করে তোমার কলশি থেকে আমাকে একটু জলপান করতে দাও,” \v 44 আর সে যদি আমাকে বলে, “পান করুন, এবং আমি আপনার উটগুলির জন্যও জল তুলে দেব,” তবে সেই যেন এমন একজন হয়, যাকে সদাপ্রভু আমার প্রভুর ছেলের জন্য মনোনীত করে রেখেছেন।’ \p \v 45 “মনে মনে আমি এই প্রার্থনা শেষ করার আগেই, রিবিকা বেরিয়ে এল, ও তার কাঁধে কলশি ছিল। সে জলের উৎসের কাছে নেমে গেল ও জল তুলছিল, আর আমি তাকে বললাম, ‘দয়া করে আমাকে পান করার জল দাও।’ \p \v 46 “সে তাড়াতাড়ি কাঁধ থেকে তার কলশিটি নামিয়ে এনে বলল, ‘পান করুন, এবং আমি আপনার উটগুলির জন্যও জল দেব।’ অতএব আমি জলপান করলাম, এবং সে উটগুলিকেও জল দিল। \p \v 47 “আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুমি কার মেয়ে?’ \p “সে বলল, ‘আমি সেই বথূয়েলের মেয়ে, যিনি নাহোরের ছেলে, ও যাঁকে মিল্কা নাহোরের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন।’ \p “তখন আমি তার নাকে নথ ও হাতে বালা পরিয়ে দিলাম, \v 48 এবং আমি নতমস্তকে সদাপ্রভুর আরাধনা করলাম। আমি আমার প্রভু অব্রাহামের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর প্রশংসা করলাম, যিনি সঠিক পথে আমাকে পরিচালিত করলেন, যেন আমার প্রভুর ছেলের জন্য তাঁর ভাইয়ের নাতনীকে আমি খুঁজে পাই। \v 49 এখন আপনারা যদি আমার প্রভুর প্রতি দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখাতে চান, তবে বলুন; আর যদি তা না চান, তাও বলুন, যেন আমি জানতে পারি কোন দিকে আমাকে ফিরতে হবে।” \p \v 50 লাবন ও বথূয়েল উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভুর দিক থেকেই এই ঘটনাটি ঘটেছে; এই ব্যাপারে আমরা আপনাকে ভালোমন্দ কিছুই বলতে পারব না। \v 51 রিবিকা এখানেই আছে; তাকে নিয়ে চলে যান, আর সে আপনার প্রভুর ছেলের স্ত্রী হয়ে যাক, যেমনটি সদাপ্রভু নির্দেশ দিয়েছেন।” \p \v 52 তাঁরা যা বললেন, অব্রাহামের দাস যখন তা শুনলেন, তখন তিনি সদাপ্রভুর সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লেন। \v 53 পরে সেই দাস সোনা ও রুপোর গয়না এবং বিভিন্ন ধরনের পোশাক-পরিচ্ছদ বের করে সেগুলি রিবিকাকে দিলেন; তিনি তাঁর দাদা ও মাকেও মূল্যবান উপহারসামগ্রী দিলেন। \v 54 পরে তিনি এবং তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন ভোজনপান করলেন এবং সেখানেই রাত কাটালেন। \p পরদিন সকালে ওঠার পর তিনি বললেন, “আমার প্রভুর কাছে যাওয়ার জন্য আমায় বিদায় দিন।” \p \v 55 কিন্তু রিবিকার দাদা ও মা উত্তর দিলেন, “মেয়েটি আমাদের কাছে দিন দশেক থাকুক; পরে আপনারা যেতে পারেন।”\f + \fr 24:55 \fr*\ft অথবা, “সে যেতে পারে”\ft*\f* \p \v 56 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমাকে আটকে রাখবেন না, যেহেতু সদাপ্রভু আমার যাত্রা সফল করেছেন। আমাকে বিদায় দিন, যেন আমি আমার প্রভুর কাছে যেতে পারি।” \p \v 57 তখন তাঁরা বললেন, “মেয়েটিকে ডাকা হোক এবং তাকেই এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা যাক।” \v 58 অতএব তাঁরা রিবিকাকে ডেকে এনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি এই লোকটির সঙ্গে যাবে?” \p “আমি যাব,” তিনি বললেন। \p \v 59 অতএব তাঁরা তাঁদের বোন রিবিকাকে ও তাঁর ধাত্রীকে এবং অব্রাহামের দাস ও তাঁর লোকজনকে বিদায় জানালেন। \v 60 আর তাঁরা রিবিকাকে আশীর্বাদ করে তাঁকে বললেন, \q1 “হে আমাদের বোন, তুমি বৃদ্ধি পাও \q2 হাজার হাজার গুণ; \q1 তোমার সন্তানসন্ততি অধিকার করুক \q2 তাদের শত্রুদের নগরগুলি।” \p \v 61 পরে রিবিকা ও তাঁর সেবিকারা প্রস্তুত হয়ে উটের পিঠে চড়ে সেই লোকটির সাথে চলে গেলেন। অতএব সেই দাস রিবিকাকে সাথে নিয়ে প্রস্থান করলেন। \p \v 62 এদিকে ইস্‌হাক বের-লহয়-রোয়ী থেকে ফিরে আসছিলেন, কারণ তিনি তখন নেগেভে বসবাস করতেন। \v 63 এক সন্ধ্যায় তিনি ধ্যান করতে ক্ষেতে গেলেন, এবং যেই তিনি উপর দিকে তাকালেন, তিনি দেখতে পেলেন কয়েকটি উট এগিয়ে আসছে। \v 64 রিবিকাও উপর দিকে তাকালেন এবং ইস্‌হাককে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর উটের পিঠ থেকে নেমে \v 65 সেই দাসকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ক্ষেত থেকে যিনি আমাদের সাথে দেখা করতে এগিয়ে আসছেন, তিনি কে?” \p “তিনি আমার প্রভু,” সেই দাস উত্তর দিলেন। অতএব রিবিকা তাঁর ঘোমটা টেনে এনে নিজের মুখ ঢাকলেন। \p \v 66 পরে সেই দাস নিজে যা যা করেছিলেন সেসব তিনি ইস্‌হাককে বলে শোনালেন। \v 67 ইস্‌হাক রিবিকাকে তাঁর মা সারার তাঁবুতে নিয়ে এলেন, এবং তাঁকে বিয়ে করলেন। অতএব রিবিকা তাঁর স্ত্রী হয়ে গেলেন, এবং ইস্‌হাক তাঁকে ভালোবাসলেন; আর ইস্‌হাক তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর সান্ত্বনা লাভ করলেন। \c 25 \s1 অব্রাহামের মৃত্যু \p \v 1 অব্রাহাম অন্য আর এক স্ত্রীকে বিয়ে করে আনলেন, যাঁর নাম কটুরা। \v 2 তাঁর জন্য কটুরা সিম্রণ, যকষণ, মদান, মিদিয়ন, যিষবক ও শূহের জন্ম দিলেন। \v 3 যক্‌ষণ শিবা এবং দদানের বাবা; অশূরীয়, লটূশীয় ও লিয়ূম্মীয়রা হল দদানের বংশধর। \v 4 মিদিয়নের ছেলেরা হল ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ও ইলদায়া। এরা সবাই কটূরার বংশধর। \p \v 5 অব্রাহাম তাঁর অধিকারে থাকা সবকিছু ইস্‌হাককে দিলেন। \v 6 কিন্তু বেঁচে থাকাকালীনই অব্রাহাম তাঁর উপপত্নীদের ছেলেদের উপহারসামগ্রী দিলেন এবং তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের কাছ থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দিয়ে পূর্বদেশে পাঠিয়ে দিলেন। \p \v 7 অব্রাহাম 175 বছর বেঁচেছিলেন। \v 8 পরে অব্রাহাম শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন এবং যথেষ্ট বৃদ্ধাবস্থায়, বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ূ মানুষরূপে মারা গেলেন; এবং তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে মিলিত হলেন। \v 9 তাঁর ছেলে ইস্‌হাক ও ইশ্মায়েল তাঁকে হিত্তীয় সোহরের ছেলে ইফ্রোণের ক্ষেতে অবস্থিত মম্রির নিকটবর্তী মক্‌পেলা গুহাতে কবর দিলেন। \v 10 সেই ক্ষেতটি অব্রাহাম হিত্তীয়দের\f + \fr 25:10 \fr*\ft অথবা, হেতের বংশধরদের\ft*\f* কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন। সেখানেই অব্রাহাম ও তাঁর স্ত্রী সারা সমাধিস্থ হলেন। \v 11 অব্রাহামের মৃত্যুর পর, ঈশ্বর তাঁর সেই ছেলে ইস্‌হাককে আশীর্বাদ করলেন, যিনি তখন বের-লহয়-রোয়ীর কাছে বসবাস করছিলেন। \s1 ইশ্মায়েলের ছেলেরা \p \v 12 এই হল অব্রাহামের ছেলে সেই ইশ্মায়েলের বংশবৃত্তান্ত, যাঁকে সারার ক্রীতদাসী, মিশরীয়া হাগার, অব্রাহামের জন্য জন্ম দিয়েছিল। \b \li4 \v 13 এই হল ইশ্মায়েলের ছেলেদের নাম, যা তাদের জন্মের ক্রমানুসারে নথিভুক্ত করা হয়েছে: \b \li1 ইশ্মায়েলের বড়ো ছেলে নবায়োৎ, \li1 পরে কেদর, অদবেল, মিবসম, \li1 \v 14 মিশমা, দুমা, মসা, \li1 \v 15 হদদ, তেমা, যিটূর, \li1 নাফীশ ও কেদমা। \b \li4 \v 16 এরাই ইশ্মায়েলের সন্তান, এবং তাদের উপনিবেশ ও শিবির অনুসারে এই হল বারোজন গোষ্ঠী-শাসকদের নাম। \b \p \v 17 ইশ্মায়েল 137 বছর বেঁচেছিলেন। তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করে মারা গেলেন, এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে মিলিত হলেন। \v 18 তাঁর বংশধরেরা আসিরিয়ার দিকে মিশরের পূর্বসীমার কাছাকাছি অবস্থিত হবীলা থেকে শূর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসতি স্থাপন করল। তারা তাদের দূর-সম্পর্কের আত্মীয়-গোষ্ঠীদের প্রতি শত্রুতাভাব বজায় রেখে বসবাস করে যাচ্ছিল।\f + \fr 25:18 \fr*\ft অথবা, তারা তাদের দূর-সম্পর্কের আত্মীয়-গোষ্ঠীদের পূর্বদিকে থেকে বসবাস করে যাচ্ছিল\ft*\f* \s1 যাকোব ও এষৌ \p \v 19 এই হল অব্রাহামের ছেলে ইস্‌হাকের পারিবারিক বংশবৃত্তান্ত। \b \p অব্রাহাম ইস্‌হাকের বাবা হলেন, \v 20 এবং ইস্‌হাক চল্লিশ বছর বয়সে সেই রিবিকাকে বিয়ে করলেন, যিনি পদ্দন-আরামের\f + \fr 25:20 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়ার\ft*\f* বাসিন্দা অরামীয় বথূয়েলের মেয়ে এবং অরামীয় লাবনের বোন। \p \v 21 ইস্‌হাক তাঁর স্ত্রীর হয়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, কারণ রিবিকা নিঃসন্তান ছিলেন। সদাপ্রভু তাঁর প্রার্থনার উত্তর দিলেন, এবং তাঁর স্ত্রী রিবিকা গর্ভবতী হলেন। \v 22 শিশুরা রিবিকার গর্ভে একে অপরকে ধাক্কা দিচ্ছিল, এবং তিনি বললেন, “আমার ক্ষেত্রে কেন এমন ঘটছে?” অতএব তিনি সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিতে গেলেন। \p \v 23 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, \q1 “তোমার গর্ভে দুই জাতি আছে, \q2 এবং তোমার মধ্য থেকেই দুই বংশ পৃথক হবে; \q1 এক বংশ অন্য বংশ থেকে বেশি শক্তিশালী হবে, \q2 এবং বড়ো ছেলে ছোটো ছেলের সেবা করবে।” \p \v 24 সন্তান প্রসবের সময়কাল ঘনিয়ে এলে দেখা গেল তাঁর গর্ভে যমজ সন্তান। \v 25 প্রথমে যে ভূমিষ্ঠ হল, তার গায়ের রং ছিল লাল, এবং তার সারা শরীর ছিল লোমশ পোশাকের মতো; তাই তাঁরা তার নাম দিলেন এষৌ\f + \fr 25:25 \fr*\ft এষৌ শব্দের অর্থ হতে পারে “লোমশ”\ft*\f*। \v 26 পরে, তার সেই ভাই বেরিয়ে এল, যার হাত এষৌর গোড়ালি ধরে রেখেছিল; তাই তার নাম দেওয়া হল যাকোব\f + \fr 25:26 \fr*\ft যাকোব শব্দের অর্থ সে গোড়ালি ধরে রেখেছে। এটি সে প্রতারণা করে, এরকম এক হিব্রু বাগধারার সমতুল্য\ft*\f*। রিবিকা যখন তাদের জন্ম দেন তখন ইস্‌হাকের বয়স 60 বছর। \p \v 27 ছেলেরা বেড়ে উঠেছিল, এবং এষৌ এমন এক নিপুণ শিকারি হয়ে উঠছিল, যিনি বাড়ির বাইরে ঘুরে বেড়াতেন, অন্যদিকে যাকোব ঘরের ভিতরে তাঁবুর মধ্যেই থাকতে পছন্দ করতেন। \v 28 যিনি শিকার করা পশুর মাংস খেতে পছন্দ করতেন, সেই ইস্‌হাক এষৌকে ভালোবাসতেন, কিন্তু রিবিকা যাকোবকে ভালোবাসতেন। \p \v 29 একবার যাকোব যখন খানিকটা ঝোল-তরকারী রান্না করছিলেন, এষৌ তখন মাঠ থেকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফিরে এলেন। \v 30 তিনি যাকোবকে বললেন, “তাড়াতাড়ি আমাকে লাল রংয়ের ওই ঝোল-তরকারী থেকে কিছুটা খেতে দাও! আমি ক্ষুধার্ত!” (এই জন্য তাঁকে ইদোম\f + \fr 25:30 \fr*\ft ইদোম শব্দের অর্থ লাল\ft*\f* নামেও ডাকা হয়।) \p \v 31 যাকোব উত্তর দিলেন, “প্রথমে তুমি আমার কাছে তোমার জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রি করো।” \p \v 32 দেখো, আমি প্রায় মরতে চলেছি, “এষৌ বললেন। জ্যেষ্ঠাধিকার আমার কী কাজে লাগবে?” \p \v 33 কিন্তু যাকোব বললেন, “প্রথমে আমার কাছে শপথ করো।” অতএব এষৌ তাঁর কাছে শপথ করলেন, তাঁর জ্যেষ্ঠাধিকার যাকোবের কাছে বিক্রি করে দিলেন। \p \v 34 পরে যাকোব এষৌকে কয়েকটি রুটি ও মশুরি দিয়ে তৈরি কিছুটা ঝোল-তরকারী দিলেন। তিনি ভোজনপান করলেন, ও পরে উঠে চলে গেলেন। \p অতএব এষৌ তাঁর জ্যেষ্ঠাধিকার হেয় জ্ঞান করলেন। \c 26 \s1 ইস্‌হাক ও অবীমেলক \p \v 1 এদিকে দেশে এক দুর্ভিক্ষ হল—যা অব্রাহামের সময়কালে হওয়া সাবেক দুর্ভিক্ষের অতিরিক্ত—এবং ইস্‌হাক গরারে ফিলিস্তিনীদের রাজা অবীমেলকের কাছে গেলেন। \v 2 সদাপ্রভু ইস্‌হাককে দর্শন দিয়ে বললেন, “তুমি মিশরে যেয়ো না; সেই দেশেই বসবাস করো, যেখানে আমি তোমাকে বসবাস করতে বলছি। \v 3 এদেশেই কিছুকাল থেকে যাও, আর আমি তোমার সহবর্তী হব ও তোমাকে আশীর্বাদ করব। কারণ তোমাকে ও তোমার বংশধরদের আমি এইসব দেশ দেব এবং তোমার বাবা অব্রাহামের কাছে করা আমার সেই শপথ বলবৎ করব। \v 4 আমি তোমার বংশধরদের সংখ্যা আকাশের তারাগুলির মতো বিপুল সংখ্যক করব এবং তাদের এইসব দেশ দেব, এবং তোমার সন্তানসন্ততির\f + \fr 26:4 \fr*\ft অথবা, বীজের বা বংশের\ft*\f* মাধ্যমে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে\f + \fr 26:4 \fr*\ft অথবা, আর পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ দানকালে তোমার সন্তানসন্ততির নাম ব্যবহার করবে\ft*\f*, \v 5 কারণ অব্রাহাম আমার বাধ্য হয়েছিল এবং আমার আদেশ, আমার হুকুম ও আমার নির্দেশনা পালনের ক্ষেত্রে আমি তার কাছে যা কিছু চেয়েছিলাম, সে সবকিছু করেছিল।” \v 6 অতএব ইস্‌হাক গরারেই থেকে গেলেন। \p \v 7 সেখানকার লোকজন যখন তাঁকে তাঁর স্ত্রীর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল, তখন তিনি বললেন, “সে আমার বোন,” কারণ “সে আমার স্ত্রী” একথা বলতে তাঁর ভয় হল। তিনি ভাবলেন, “এখানকার লোকজন রিবিকার জন্য আমাকে হয়তো মেরে ফেলবে, কারণ সে সুন্দরী।” \p \v 8 বেশ কিছুকাল ইস্‌হাক সেখানে থেকে যাওয়ার পর, ফিলিস্তিনীদের রাজা অবীমেলক জানালা থেকে নিচে তাকালেন এবং দেখতে পেলেন যে ইস্‌হাক তাঁর স্ত্রী রিবিকাকে আদর-সোহাগ করছেন। \v 9 অতএব অবীমেলক ইস্‌হাককে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “উনি সত্যিই আপনার স্ত্রী! আপনি কেন তবে বললেন, ‘সে আমার বোন’?” \p ইস্‌হাক তাঁকে উত্তর দিলেন, “কারণ আমি ভেবেছিলাম, তার জন্য আমাকে হয়তো প্রাণ হারাতে হবে।” \p \v 10 তখন অবীমেলক বললেন, “আপনি আমাদের প্রতি এ কী ব্যবহার করলেন? যে কোনো লোক অনায়াসে আপনার স্ত্রীর সঙ্গে শুয়ে পড়তে পারত, আর আপনি আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে দিতেন।” \p \v 11 অতএব অবীমেলক প্রজাদের সবাইকে আদেশ দিলেন: “যে কোনো লোক এই লোকটির বা তাঁর স্ত্রীর ক্ষতিসাধন করবে, তার অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে।” \p \v 12 ইস্‌হাক সেই দেশে চাষাবাদ করলেন এবং সেবছর একশো গুণ ফসল পেলেন, কারণ সদাপ্রভু তাঁকে আশীর্বাদ করলেন। \v 13 তিনি ধনী হয়ে গেলেন এবং যতদিন না তিনি অত্যন্ত ধনী হতে পেরেছিলেন, তাঁর ধনসম্পদ ক্রমাগত বেড়েই যাচ্ছিল। \v 14 তাঁর এত মেষপাল ও গবাদি পশুপাল এবং দাস-দাসী হল যে ফিলিস্তিনীরা তাঁকে হিংসা করতে লাগল। \v 15 অতএব তাঁর বাবা অব্রাহামের সময় তাঁর বাবার দাসেরা যে কুয়োগুলি খুঁড়েছিল, ফিলিস্তিনীরা মাটি ফেলে সেগুলি ভরাট করে দিল। \p \v 16 তখন অবীমেলক ইস্‌হাককে বললেন, “আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যান; আমাদের তুলনায় আপনি খুব বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন।” \p \v 17 অতএব ইস্‌হাক সেখান থেকে দূরে সরে গিয়ে গরার উপত্যকায় শিবির স্থাপন করলেন। \v 18 তাঁর বাবা অব্রাহামের সময় যে কুয়োগুলি খোঁড়া হয়েছিল, ও অব্রাহামের মৃত্যুর পর যেগুলি ফিলিস্তিনীরা ভরাট করে দিয়েছিল, ইস্‌হাক আর একবার সেগুলি খুঁড়িয়েছিলেন, এবং তাঁর বাবা সেগুলির যে যে নাম দিয়েছিলেন, তিনিও সেগুলির সেই সেই নাম বজায় রাখলেন। \p \v 19 ইস্‌হাকের দাসেরা সেই উপত্যকায় মাটি খুঁড়ে সেখানে টাটকা জলের একটি কুয়ো খুঁজে পেয়েছিল। \v 20 কিন্তু গরারের রাখালেরা ইস্‌হাকের রাখালদের সঙ্গে ঝগড়া করে বলল, “এই জল আমাদের!” তাই তিনি সেই কুয়োর নাম দিলেন এষক\f + \fr 26:20 \fr*\ft এষক শব্দের অর্থ সংঘাত\ft*\f*, কারণ তারা তাঁর সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। \v 21 পরে তারা আরও একটি কুয়ো খুঁড়েছিল, কিন্তু তারা সেটির জন্যও ঝগড়া করল; তাই তিনি সেটির নাম দিলেন সিটনা।\f + \fr 26:21 \fr*\ft সিটনা শব্দের অর্থ বিরোধিতা\ft*\f* \v 22 সেখান থেকে দূরে সরে গিয়ে তিনি আরও একটি কুয়ো খোঁড়ালেন, এবং সেটির জন্য কেউই ঝগড়া করেনি। এই বলে তিনি সেটির নাম দিলেন রহোবোৎ\f + \fr 26:22 \fr*\ft রহোবোৎ শব্দের অর্থ স্থান\ft*\f*, যে “সদাপ্রভু এখন আমাদের স্থান করে দিয়েছেন এবং আমরা এই দেশে সমৃদ্ধিলাভ করব।” \p \v 23 সেখান থেকে তিনি বের-শেবার দিকে উঠে গেলেন। \v 24 সেরাতে সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, “আমি তোমার বাবা অব্রাহামের ঈশ্বর। ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমার সাথে আছি; আমি তোমাকে আশীর্বাদ করব এবং আমার দাস অব্রাহামের খাতিরে আমি তোমার বংশধরদের সংখ্যা বৃদ্ধি করব।” \p \v 25 ইস্‌হাক সেখানে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। সেখানে তিনি তাঁবু খাটালেন, এবং সেখানে তাঁর দাসেরা একটি কুয়ো খুঁড়ল। \p \v 26 ইত্যবসরে, অবীমেলক গরার থেকে তাঁর কাছে আসলেন, ও তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা অহূষৎ ও তাঁর সেনাবাহিনীর সেনাপতি ফীকোল। \v 27 ইস্‌হাক তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কেন আমার কাছে এসেছেন, যেহেতু আপনারা তো আমার প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ছিলেন এবং আমাকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন?” \p \v 28 তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা স্পষ্টই দেখেছি যে, সদাপ্রভু আপনার সাথে ছিলেন; তাই আমরা বলছি, ‘আমাদের মধ্যে এক শপথ-চুক্তি হওয়া উচিত—আমাদের এবং আপনার মধ্যে।’ আসুন, আপনার সঙ্গে আমরা এমন এক সন্ধি করি \v 29 যে আপনি আমাদের কোনও ক্ষতি করবেন না, ঠিক যেভাবে আমরা আপনার ক্ষতি করিনি, কিন্তু সবসময় আপনার সাথে ভালো ব্যবহার করেছি এবং শান্তিপূর্বক আপনাকে বিদায় দিয়েছিলাম। আর এখন আপনি সদাপ্রভুর আশীর্বাদধন্য হয়েছেন।” \p \v 30 ইস্‌হাক তখন তাঁদের জন্য এক ভোজসভার আয়োজন করলেন, এবং তাঁরা ভোজনপান করলেন। \v 31 পরদিন ভোরবেলায় তাঁরা পরস্পরের উদ্দেশে শপথ করলেন। পরে ইস্‌হাক তাঁদের বিদায় দিলেন, এবং তাঁরাও শান্তিপূর্বক প্রস্থান করলেন। \p \v 32 সেইদিনই ইস্‌হাকের দাসেরা তাঁর কাছে এসে যে কুয়োটি তারা খুঁড়েছিল, সেটির কথা তাঁকে বলে শুনিয়েছিল। তারা বলল, “আমরা জল পেয়েছি!” \v 33 তিনি সেটির নাম দিলেন শেবা\f + \fr 26:33 \fr*\ft শিবিয়া শব্দের অর্থ হতে পারে শপথ বা সাত\ft*\f*, আর আজও পর্যন্ত সেই নগরটি বের-শেবা\f + \fr 26:33 \fr*\ft বের-শেবা শব্দের অর্থ হতে পারে শপথের কুয়ো ও সাতটি কুয়ো\ft*\f* নামাঙ্কিত হয়ে আছে। \s1 যাকোব এষৌর আশীর্বাদ আত্মসাৎ করেন \p \v 34 এষৌর বয়স যখন চল্লিশ বছর, তখন তিনি হিত্তীয় বেরির মেয়ে যিহূদীৎকে, এবং হিত্তীয় এলোনের মেয়ে বাসমৎকেও বিয়ে করলেন। \v 35 ইস্‌হাক ও রিবিকার কাছে তারা মর্মযন্ত্রণার উৎস হল। \c 27 \p \v 1 ইস্‌হাক যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন ও তাঁর চোখদুটি যখন এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে তিনি আর দেখতেই পারতেন না, তখন তিনি তাঁর বড়ো ছেলে এষৌকে ডেকে তাঁকে বললেন, “বাছা।” \p “এই তো আমি এখানে,” এষৌ উত্তর দিলেন। \p \v 2 ইস্‌হাক বললেন, “আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছি আর এও জানি না কবে আমার মৃত্যু হবে। \v 3 তাই এখন, তোমার সাজসরঞ্জাম—তোমার তূণীর ও ধনুক হাতে তুলে নাও—এবং মরুপ্রান্তরে গিয়ে আমার জন্য পশু শিকার করে আনো। \v 4 আমি যে ধরনের সুস্বাদু খাবার পছন্দ করি, সেরকম পদ রান্না করে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তা খাব; যেন মারা যাওয়ার আগে আমি আমার আশীর্বাদ তোমাকে দিয়ে যেতে পারি।” \p \v 5 ইস্‌হাক যখন এষৌর সাথে কথা বলছিলেন তখন রিবিকা তা শুনে ফেলেছিলেন। এষৌ যখন শিকার করে আনার জন্য মরুপ্রান্তরের উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়লেন, \v 6 তখন রিবিকা তাঁর ছেলে যাকোবকে বললেন, “দেখো, আমি আড়ি পেতে শুনে ফেলেছি, তোমার বাবা তোমার দাদা এষৌকে বলেছেন, \v 7 ‘আমার কাছে শিকার করা পশুর মাংস নিয়ে এসো এবং আমার জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করো, যেন মারা যাওয়ার আগে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে আমি তোমায় আশীর্বাদ দিয়ে যেতে পারি।’ \v 8 এখন বাছা, আমি তোমাকে যা বলছি তা ভালো করে শোনো এবং আমি যা বলছি, তাই করো: \v 9 পশুপালের কাছে চলে যাও এবং বাছাই করা দুটি কচি পাঁঠা নিয়ে এসো, যেন আমি তোমার বাবার জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করে দিতে পারি, ঠিক যেমনটি তিনি পছন্দ করেন। \v 10 পরে তুমি তা নিয়ে গিয়ে তোমার বাবাকে খেতে দিয়ো, যেন মারা যাওয়ার আগে তিনি তোমাকে তাঁর আশীর্বাদ দিয়ে যেতে পারেন।” \p \v 11 যাকোব তাঁর মা রিবিকাকে বললেন, “কিন্তু আমার দাদা এষৌ যে এক লোমশ মানুষ, অথচ আমার ত্বক তো মসৃণ। \v 12 আমার বাবা যদি আমাকে স্পর্শ করেন তবে কী হবে? আমি যে তাঁর সাথে ছলচাতুরি করছি তা প্রমাণ হয়ে যাবে এবং আমার উপর আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ নেমে আসবে।” \p \v 13 তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বাছা, সেই অভিশাপ আমার উপরেই নেমে আসুক। আমি যা বলছি তুমি শুধু তাই করো; যাও ও আমার জন্য সেগুলি নিয়ে এসো।” \p \v 14 অতএব তিনি চলে গেলেন ও সেগুলি সংগ্রহ করে তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে এলেন, এবং তাঁর বাবা যেমনটি পছন্দ করতেন, রিবিকা ঠিক তেমনই সুস্বাদু খাবার রান্না করে দিলেন। \v 15 পরে রিবিকা তাঁর বড়ো ছেলে এষৌর সবচেয়ে ভালো সেই পোশাকগুলি বের করলেন, যা সেই বাড়িতেই রাখা ছিল, এবং সেগুলি তাঁর ছোটো ছেলে যাকোবের গায়ে পরিয়ে দিলেন। \v 16 তিনি যাকোবের দুটি হাত ও ঘাড়ের মসৃণ অংশগুলি ছাগচর্ম দিয়ে আচ্ছাদিত করে দিলেন। \v 17 পরে তিনি তাঁর ছেলে যাকোবের হাতে তাঁর নিজের হাতে তৈরি করা সেই সুস্বাদু খাবার ও রুটি তুলে দিলেন। \p \v 18 যাকোব তাঁর বাবার কাছে গিয়ে বললেন, “বাবা।” \p “হ্যাঁ বাছা,” তিনি উত্তর দিলেন, “তুমি কে?” \p \v 19 যাকোব তাঁর বাবাকে বললেন, “আমি আপনার বড়ো ছেলে এষৌ। আপনি আমায় যা বলেছিলেন, আমি তাই করেছি। দয়া করে উঠে বসুন এবং আমার শিকার করা পশুর মাংসের খানিকটা অংশ খান, যেন আপনি আমাকে আপনার আশীর্বাদ দিতে পারেন।” \p \v 20 ইস্‌হাক তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বাছা, এত তাড়াতাড়ি তুমি কীভাবে তা খুঁজে পেলে?” \p “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে সফলতা দিয়েছেন,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 21 তখন ইস্‌হাক যাকোবকে বললেন, “বাছা, আমার কাছে এসো, যেন আমি তোমাকে স্পর্শ করে বুঝতে পারি তুমি সত্যিই আমার ছেলে এষৌ কি না।” \p \v 22 যাকোব তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে গেলেন, ও তিনি যাকোবকে স্পর্শ করে বললেন, “কণ্ঠস্বর তো যাকোবের কণ্ঠস্বরের মতো, কিন্তু হাত দুটি এষৌর হাতের মতো।” \v 23 তিনি যাকোবকে চিনতে পারেননি, কারণ তাঁর হাত দুটি তাঁর দাদা এষৌর হাতের মতোই লোমশ ছিল; তাই তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করার জন্য এগিয়ে গেলেন। \v 24 “তুমি কি সত্যিই আমার ছেলে এষৌ?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p “হ্যাঁ,” যাকোব উত্তর দিলেন। \p \v 25 তখন তিনি বললেন, “বাছা, শিকার করা পশুর মাংস খাওয়ার জন্য খানিকটা আমার কাছে নিয়ে এসো, যেন আমি তোমাকে আমার আশীর্বাদ দিতে পারি।” \p যাকোব তাঁর কাছে তা নিয়ে এলেন ও তিনি তা খেলেন; এবং যাকোব তাঁকে কিছুটা দ্রাক্ষারসও এনে দিলেন ও তিনি তা পান করলেন। \v 26 তখন তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে বললেন, “বাছা, এখানে এসো, ও আমাকে চুমু দাও।” \p \v 27 অতএব যাকোব তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে চুমু দিলেন। ইস্‌হাক যখন তাঁর পোশাকের গন্ধ শুঁকলেন, তখন তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন, \q1 “আহা, আমার ছেলের সুগন্ধ \q2 তা যেন এমন এক ক্ষেতের সুগন্ধ \q2 যা সদাপ্রভুর আশীর্বাদধন্য। \q1 \v 28 ঈশ্বর তোমাকে আকাশের শিশির \q2 আর ভূমির প্রাচুর্য— \q2 শস্যপ্রাচুর্য ও নতুন দ্রাক্ষারস দান করুন। \q1 \v 29 জাতিরা তোমার সেবা করুক \q2 এবং মানুষজন তোমার কাছে মাথা নত করুক। \q1 তোমার ভাইদের উপর তুমি প্রভুত্ব করো, \q2 আর তোমার মায়ের ছেলেরা তোমার কাছে মাথা নত করুক। \q1 যারা তোমাকে অভিশাপ দেয় তারা শাপগ্রস্ত হোক \q2 আর যারা তোমাকে আশীর্বাদ দেয় তারা আশীর্বাদধন্য হোক।” \p \v 30 ইস্‌হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করার পর, ও তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে প্রস্থান করতে না করতেই, তাঁর দাদা এষৌ শিকার করে ফিরে এলেন। \v 31 তিনিও খানিকটা সুস্বাদু খাবার রান্না করে সেটি তাঁর বাবার কাছে আনলেন। পরে তিনি তাঁকে বললেন, “বাবা, দয়া করে উঠে বসুন ও আমার শিকার করা পশুর মাংসের তরকারি খানিকটা খেয়ে নিন, যেন আপনি আমাকে আপনার আশীর্বাদ দিতে পারেন।” \p \v 32 তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে?” \p “আমি তো আপনার ছেলে,” তিনি উত্তর দিলেন, “আপনার বড়ো ছেলে এষৌ।” \p \v 33 ইস্‌হাক প্রবলভাবে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, “তবে, সে কে ছিল, যে পশু শিকার করেছিল ও আমার কাছে তা নিয়ে এসেছিল? তুমি আসার খানিকক্ষণ আগেই আমি তা খেয়ে ফেলেছি ও তাকে আশীর্বাদ দিয়েছি—আর সে অবশ্যই আশীর্বাদধন্য হবে!” \p \v 34 তাঁর বাবার কথা শুনে এষৌ জোর গলায় চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলেন এবং তাঁর বাবাকে বললেন, “বাবা, আমাকে—আমাকেও আশীর্বাদ করুন!” \p \v 35 কিন্তু তিনি বললেন, “তোমার ভাই ছলনা করে এসেছিল ও তোমার আশীর্বাদ আত্মসাৎ করে নিয়ে গিয়েছে।” \p \v 36 এষৌ বললেন, “তার নাম যাকোব\f + \fr 27:36 \fr*\ft যাকোব শব্দের অর্থ “সে গোড়ালি জাপটে ধরেছে,” এ এমন এক হিব্রু বাগ্‌ধারা, যার মানে “সে সুবিধা করে নেয়” বা “সে প্রতারণা করে”\ft*\f* রাখাই কি উচিত হয়নি? সে এই দ্বিতীয়বার আমার সাথে প্রতারণা করল: সে আমার জ্যেষ্ঠাধিকার আত্মসাৎ করেছিল আর এখন সে আমার আশীর্বাদও আত্মসাৎ করে নিল!” পরে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার জন্য আর কোনও আশীর্বাদ কি আপনি রাখেননি?” \p \v 37 ইস্‌হাক এষৌকে উত্তর দিলেন, “তোমার উপর আমি তাকে প্রভু করে দিয়েছি ও তার সব আত্মীয়স্বজনকে আমি তার দাস করে দিয়েছি, এবং খাদ্যশস্য ও নতুন দ্রাক্ষারস দিয়ে আমি তাকে সবল করেছি। তাই, বাছা, তোমার জন্য এখন আমি আর কী করতে পারি?” \p \v 38 এষৌ তাঁর বাবাকে বললেন, “বাবা, আপনার কাছে কি শুধু একটিই আশীর্বাদ আছে? বাবা, আমাকেও আশীর্বাদ করুন না!” পরে এষৌ জোর গলায় কেঁদে ফেলেছিলেন। \p \v 39 তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে উত্তর দিলেন, \q1 “তোমার বাসস্থান হবে \q2 ভূমির প্রাচুর্য থেকে দূরবর্তী, \q2 ঊর্ধ্বস্থ আকাশের শিশির থেকে দূরবর্তী। \q1 \v 40 তরোয়ালের সাহায্যেই তুমি বেঁচে থাকবে \q2 আর তুমি তোমার ভাইয়ের সেবা করবে। \q1 কিন্তু তুমি যখন অস্থির হয়ে পড়বে, \q2 তখন তোমার কাঁধ থেকে \q2 তুমি তার জোয়াল ঝেড়ে ফেলবে।” \p \v 41 যাকোবের বিরুদ্ধে এষৌ মনে আক্রোশ পুষে রাখলেন, কারণ তাঁর বাবা যাকোবকে আশীর্বাদ দিয়েছিলেন। তিনি মনে মনে বললেন, “আমার বাবার জন্য শোকপ্রকাশের সময় আসন্ন; তারপরেই আমি আমার ভাই যাকোবকে হত্যা করব।” \p \v 42 রিবিকার বড়ো ছেলে কী বলেছেন, তা যখন তাঁকে বলা হল, তখন রিবিকা লোক পাঠিয়ে তাঁর ছোটো ছেলে যাকোবকে ডেকে পাঠালেন ও তাঁকে বললেন, “তোমার দাদা এষৌ তোমাকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। \v 43 এখন তবে, বাছা, আমি যা বলছি তুমি তাই করো: এখনই তুমি হারণে আমার দাদা লাবনের কাছে পালিয়ে যাও। \v 44 সেখানে অল্প কিছুদিন তাঁর কাছে গিয়ে থাকো, যতদিন না তোমার দাদার রাগ কমছে। \v 45 যখন তোমার উপর তোমার দাদার রাগ শান্ত হয়ে যাবে ও তুমি যা যা করেছ, সে যখন সেসব কথা ভুলে যাবে, তখন আমি সেখান থেকে ফিরে আসার জন্য তোমাকে খবর পাঠাব। একই দিনে কেন আমি তোমাদের দুজনকেই হারাব?” \p \v 46 পরে রিবিকা ইস্‌হাককে বললেন, “এই হিত্তীয় মেয়েদের সাথে বসবাস করতে করতে আমি বিতৃষ্ণ হয়ে পড়েছি। এদের মতো যাকোবও যদি এই দেশের মেয়েদের মধ্যে থেকে, অর্থাৎ হিত্তীয় মেয়েদের মধ্যে থেকে কাউকে তার স্ত্রী করে আনে, তবে আমার বেঁচে থাকাই অর্থহীন হয়ে যাবে।” \c 28 \p \v 1 অতএব ইস্‌হাক যাকোবকে ডেকে পাঠালেন ও তাঁকে আশীর্বাদ করলেন। পরে তিনি তাঁকে আদেশ দিলেন: “কনানীয় কোনো মেয়েকে তুমি বিয়ে কোরো না। \v 2 এখনই তুমি পদ্দন-আরামে,\f + \fr 28:2 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়ায়; 5, 6 ও 7 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* তোমার দাদু বথূয়েলের বাড়িতে যাও। সেখান থেকেই, তোমার মামা লাবনের মেয়েদের মধ্যে থেকেই কাউকে তোমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ কোরো। \v 3 সর্বশক্তিমান ঈশ্বর\f + \fr 28:3 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, এল্-শাদ্দাই\ft*\f* তোমাকে আশীর্বাদ করুন ও তোমাকে ফলবান করুন এবং যতদিন না তুমি এক জনসমাজ হয়ে উঠছ, ততদিন তোমার সংখ্যা বৃদ্ধি করে যান। \v 4 অব্রাহামকে যে আশীর্বাদ দেওয়া হয়েছিল, তিনি যেন তোমাকে ও তোমার বংশধরদের সেই আশীর্বাদই দেন, যার বলে তুমি সেই দেশের দখল নিতে পারো, যেখানে এখন তুমি এক বিদেশিরূপে বসবাস করছ, তা সেই দেশ, যেটি ঈশ্বর অব্রাহামকে দিয়েছিলেন।” \v 5 পরে ইস্‌হাক যাকোবকে বিদায় করে দিলেন, এবং তিনি পদ্দন-আরামে, অরামীয় বথূয়েলের ছেলে সেই লাবনের কাছে গেলেন, যিনি সেই রিবিকার দাদা, যিনি যাকোব ও এষৌর মা। \p \v 6 এদিকে এষৌ জানতে পারলেন যে ইস্‌হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করে পদ্দন-আরাম থেকে এক স্ত্রী আনার জন্য তাঁকে সেখানে পাঠিয়েছেন, এবং আশীর্বাদ দেওয়ার সময় তিনি তাঁকে এই আদেশও দিয়েছেন, “কনানীয় কোনো মেয়েকে বিয়ে কোরো না,” \v 7 এবং যাকোবও তাঁর বাবা-মায়ের আদেশ পালন করে পদ্দন-আরামে চলে গিয়েছেন। \v 8 এষৌ তখন অনুভব করলেন কনানীয় মেয়েরা তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে কত অপছন্দসই; \v 9 তাই তাঁর একাধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তিনি ইশ্মায়েলের কাছে গেলেন এবং সেই মহলৎকে বিয়ে করলেন, যিনি অব্রাহামের ছেলে ইশ্মায়েলের মেয়ে নবায়োতের বোন। \s1 বেথেলে যাকোবের স্বপ্নদর্শন \p \v 10 যাকোব বের-শেবা ত্যাগ করে হারণের দিকে যাত্রা শুরু করলেন। \v 11 নির্দিষ্ট এক স্থানে পৌঁছে, তিনি রাত্রিবাসের জন্য থামলেন, কারণ সূর্যাস্ত হয়ে গিয়েছিল। সেখানকার একটি পাথর নিয়ে, সেটি তিনি তাঁর মাথার নিচে রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। \v 12 তিনি একটি স্বপ্ন দেখলেন এবং সেই স্বপ্নে তিনি দেখলেন যে একটি সিঁড়ি পৃথিবীর উপর দাঁড়িয়ে আছে, ও সেটির মাথা আকাশ ছুঁয়েছে, এবং ঈশ্বরের দূতেরা সেটির উপর দিয়ে ওঠানামা করছেন। \v 13 সেটির মাথায়\f + \fr 28:13 \fr*\ft অথবা, সেখানে তাঁর পাশে\ft*\f* সদাপ্রভু দাঁড়িয়েছিলেন, এবং তিনি বললেন: “আমি সেই সদাপ্রভু, তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহামের ঈশ্বর ও ইস্‌হাকের ঈশ্বর। তুমি যে জমিতে শুয়ে আছ সেটি আমি তোমাকে ও তোমার বংশধরদের দেব। \v 14 তোমার বংশধরেরা পৃথিবীর ধূলিকণার মতো হয়ে যাবে, এবং তুমি পশ্চিমে ও পূর্বে, উত্তরে ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে। তোমার ও তোমার সন্তানসন্ততির\f + \fr 28:14 \fr*\ft অথবা, বীজ বা বংশের\ft*\f* মাধ্যমেই পৃথিবীর সব লোকজন আশীর্বাদধন্য হবে।\f + \fr 28:14 \fr*\ft অথবা, পৃথিবীর সব লোকজন আশীর্বাদ দানকালে তোমার ও তোমার সন্তানসন্ততিদের নাম ব্যবহার করবে\ft*\f* \v 15 আমি তোমার সাথেই আছি ও তুমি যেখানেই যাও না কেন, আমি তোমার উপর নজর রাখব, এবং তোমাকে এই দেশেই ফিরিয়ে আনব। যতদিন না আমি তোমার কাছে আমার করা প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করছি, ততদিন আমি তোমাকে ত্যাগ করব না।” \p \v 16 ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর, যাকোব ভাবলেন, “সদাপ্রভু নিশ্চয় এখানে আছেন, এবং আমি তা বুঝতে পারিনি।” \v 17 তিনি ভয় পেয়ে গিয়ে বললেন, “এই স্থানটি কি ভয়ংকর! এটি ঈশ্বরের গৃহ ছাড়া আর অন্য কিছু নয়; এটিই স্বর্গদ্বার।” \p \v 18 পরদিন ভোরবেলায় যাকোব তাঁর মাথার নিচে রাখা পাথরটি নিয়ে সেটি এক স্তম্ভরূপে স্থাপন করলেন এবং সেটির উপর তেল ঢেলে দিলেন। \v 19 তিনি সেই স্থানটির নাম বেথেল\f + \fr 28:19 \fr*\ft বেথেল শব্দের অর্থ ঈশ্বরের গৃহ\ft*\f* রাখলেন, যদিও সেই নগরটিকে আগে লূস নামে ডাকা হত। \p \v 20 পরে যাকোব এই বলে এক শপথ নিলেন যে, “আমার এই যাত্রাপথে ঈশ্বর যদি আমার সাথে থাকেন ও আমার উপর নজর রাখেন এবং আমাকে খাওয়ার জন্য খাদ্য ও গায়ে পরার জন্য বস্ত্র জোগান, \v 21 যেন আমি আমার বাবার ঘরে নিরাপদে ফিরে যেতে পারি, তবে সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর হবেন \v 22 এবং এই যে পাথরটি আমি স্তম্ভরূপে স্থাপন করেছি, সেটিই ঈশ্বরের গৃহ হবে, এবং তুমি আমাকে যা কিছু দেবে, আমি অবশ্যই তোমাকে তার দশমাংশ দেব।” \c 29 \s1 যাকোব পদ্দন-আরামে পৌঁছান \p \v 1 পরে যাকোব তাঁর যাত্রাপথে এগিয়ে গেলেন এবং প্রাচ্যদেশীয় লোকদের দেশে পৌঁছালেন। \v 2 সেখানে খোলা মাঠের মধ্যে তিনি একটি কুয়ো দেখতে পেলেন, যার কাছে মেষের তিনটি পাল শুয়েছিল, কারণ সেই কুয়ো থেকে পালগুলিকে জলপান করানো হত। কুয়োর মুখের উপর রাখা পাথরটি খুব বড়ো ছিল। \v 3 সবকটি পাল যখন সেখানে একত্রিত হত, তখন মেষপালকেরা কুয়োর মুখ থেকে সেই পাথরটি সরিয়ে মেষদের জলপান করাতো। পরে তারা আবার কুয়োর মুখে যথাস্থানে পাথরটি বসিয়ে দিত। \p \v 4 যাকোব মেষপালকদের জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আমার ভাইসকল, তোমরা কোথাকার লোক?” \p “আমরা হারণের অধিবাসী,” তারা উত্তর দিল। \p \v 5 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি সেই লাবনকে চেন, যিনি নাহোরের নাতি?” \p “হ্যাঁ, আমরা তাঁকে চিনি,” তারা উত্তর দিল। \p \v 6 তখন যাকোব জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি ভালো আছেন তো?” \p “হ্যাঁ, তিনি ভালো আছেন,” তারা বলল, “আর দেখুন, তাঁর মেয়ে রাহেল মেষপাল নিয়ে এদিকেই আসছে।” \p \v 7 “দেখো,” তিনি বললেন, “সূর্য এখনও মাথার উপরেই আছে; পালগুলি একত্রিত করার সময় এখনও হয়নি। মেষদের জলপান করিয়ে তাদের আবার চরাতে নিয়ে যাও।” \p \v 8 “আমরা তা পারবো না,” তারা উত্তর দিল, “আগে সব পাল একসঙ্গে একত্রিত হোক এবং কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরানো হোক। পরে আমরা মেষদের জলপান করাব।” \p \v 9 তিনি তখনও তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, ইতিমধ্যে রাহেল তাঁর বাবার মেষপাল নিয়ে উপস্থিত হলেন, কারণ তিনি এক মেষপালিকা ছিলেন। \v 10 যাকোব যখন তাঁর মামা লাবনের মেয়ে রাহেলকে, ও লাবনের মেষদের দেখতে পেলেন, তখন তিনি এগিয়ে গিয়ে কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দিলেন ও তাঁর মামার মেষদের জলপান করালেন। \v 11 পরে যাকোব রাহেলকে চুমু দিলেন এবং জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন। \v 12 তিনি রাহেলকে বলে দিয়েছিলেন যে তিনি রাহেলের বাবার এক আত্মীয় ও রিবিকার এক ছেলে। তাই রাহেল দৌড়ে গিয়ে তাঁর বাবাকে সেকথা জানালেন। \p \v 13 যে মুহূর্তে লাবন তাঁর বোনের ছেলে যাকোবের খবর পেলেন, তিনি তাড়াতাড়ি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন ও তাঁকে চুমু দিলেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে নিয়ে এলেন, ও যাকোব সেখানে তাঁকে সবকিছু বলে শোনালেন। \v 14 তখন লাবন তাঁকে বললেন, “তুমি আমার আপন রক্তমাংসের আত্মীয়।” \s1 যাকোব লেয়া ও রাহেলকে বিয়ে করেন \p যাকোব সম্পূর্ণ এক মাস লাবনের সঙ্গে থাকার পর, \v 15 লাবন যাকোবকে বললেন, “তুমি আমার এক আত্মীয় বলে কি কিছু না নিয়েই আমার জন্য কাজ করবে? তোমার বেতন কত হওয়া উচিত তা তুমিই বলে দাও।” \p \v 16 লাবনের দুই মেয়ে ছিল; বড়টির নাম লেয়া ও ছোটোটির নাম রাহেল। \v 17 লেয়ার চোখদুটি দুর্বল\f + \fr 29:17 \fr*\ft অথবা, কমনীয়\ft*\f* ছিল, কিন্তু রাহেল স্বাস্থ্যবতী ও সুন্দরী ছিলেন। \v 18 যাকোব রাহেলের প্রেমে পড়ে গেলেন এবং তিনি বললেন, “আপনার ছোটো মেয়ে রাহেলের জন্য আমি সাত বছর আপনার কাছে কাজ করব।” \p \v 19 লাবন বললেন, “তাকে অন্য কোনও পুরুষের হাতে তুলে দেওয়ার পরিবর্তে বরং তোমাকে দেওয়াই ভালো। আমার সঙ্গে তুমি এখানেই থাকো।” \v 20 অতএব যাকোব রাহেলকে পাওয়ার জন্য সাত বছর দাসত্ব করলেন, কিন্তু যেহেতু তিনি রাহেলকে ভালোবেসেছিলেন তাই এতগুলি বছর তাঁর কাছে মাত্র কয়েক দিন বলে মনে হল। \p \v 21 পরে যাকোব লাবনকে বললেন, “আমার স্ত্রীকে আমার হাতে তুলে দিন। আমার সময় সম্পূর্ণ হয়েছে, আর আমি তাকে প্রণয়জ্ঞাপন করতে চাই।\f + \fr 29:21 \fr*\ft অথবা, তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই; 23 ও 30 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f*” \p \v 22 অতএব লাবন সেখানকার সব লোকজনকে একত্রিত করে এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। \v 23 কিন্তু সন্ধ্যাবেলায়, তিনি তাঁর মেয়ে লেয়াকে এনে তাঁকে যাকোবের কাছে পৌঁছে দিলেন এবং যাকোব তাঁকে প্রণয়জ্ঞাপন করলেন। \v 24 আর লাবন তাঁর দাসী সিল্পাকে তাঁর মেয়ে লেয়ার সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন। \p \v 25 যখন সকাল হল, দেখা গেল তিনি লেয়া! অতএব যাকোব লাবনকে বললেন, “আপনি আমার সঙ্গে এ কী করলেন? আমি রাহেলের জন্যই তো আপনার দাসত্ব করেছি, তাই না? তবে কেন আপনি আমাকে ঠকালেন?” \p \v 26 লাবন উত্তর দিলেন, “আমাদের এখানে বড়ো মেয়ের আগে ছোটো মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্রথা নেই। \v 27 এই মেয়েটির দাম্পত্য-সপ্তাহ সম্পূর্ণ করো; আরও সাত বছর কাজ করার পরিবর্তে পরে আমরা ছোটো মেয়েটিকেও তোমার হাতে তুলে দেব।” \p \v 28 আর যাকোব তেমনই করলেন। তিনি লেয়ার সপ্তাহ সম্পূর্ণ করলেন, এবং পরে লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকে যাকোবের স্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁর হাতে তুলে দিলেন। \v 29 লাবন তাঁর দাসী বিলহাকে রাহেলের সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন। \v 30 যাকোব রাহেলকেও প্রণয়জ্ঞাপন করলেন, এবং লেয়াকে তিনি যত না ভালোবাসতেন, রাহেলকে সে তুলনায় অনেক বেশি ভালোবাসতেন। আর তিনি লাবনের জন্য আরও সাত বছর কাজ করলেন। \s1 যাকোবের সন্তানেরা \p \v 31 সদাপ্রভু যখন দেখলেন যে লেয়া ভালোবাসা পাচ্ছেন না, তখন তিনি তাঁকে গর্ভধারণের ক্ষমতা দিলেন, কিন্তু রাহেল নিঃসন্তান রয়ে গেলেন। \v 32 লেয়া অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং একটি ছেলের জন্ম দিলেন। তিনি তাঁর নাম রাখলেন রূবেণ\f + \fr 29:32 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় রূবেণ শব্দটি শোনায় এইরকম: তিনি আমার দুর্দশা দেখেছেন; এই নামের অর্থ, দেখো, এক ছেলে\ft*\f*, কারণ তিনি বললেন, “সদাপ্রভু আমার দুর্দশা দেখেছেন বলেই এমনটি ঘটেছে। এখন নিশ্চয় আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসবেন।” \p \v 33 তিনি আবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “যেহেতু সদাপ্রভু শুনেছেন যে আমি ভালোবাসা পাইনি, তাই তিনি আমাকে এই একটি ছেলেও দিলেন।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন শিমিয়োন।\f + \fr 29:33 \fr*\ft শিমিয়োন শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত, যিনি শোনেন\ft*\f* \p \v 34 আবার তিনি গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এখন অবশেষে আমার স্বামী আমার প্রতি সংলগ্ন হবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য তিন ছেলের জন্ম দিয়েছি।” অতএব তার নাম রাখা হল লেবি।\f + \fr 29:34 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় লেবি শব্দটি শুনলে মনে হয় সংলগ্ন এবং হয়তো সংলগ্ন, এই হিব্রু শব্দ থেকেই এটি উৎপন্ন হয়েছে\ft*\f* \p \v 35 তিনি আর একবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এবার আমি সদাপ্রভুর প্রশংসা করব।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন যিহূদা।\f + \fr 29:35 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় যিহূদা শব্দটি শুনলে মনে হয় প্রশংসা এবং হয়তো প্রশংসা, এই হিব্রু শব্দ থেকেই এটি উৎপন্ন হয়েছে\ft*\f* পরে তিনি আর কোনও সন্তানের জন্ম দেননি। \c 30 \p \v 1 রাহেল যখন দেখলেন যে তিনি যাকোবের জন্য কোনও সন্তানধারণ করতে পারছেন না, তখন তিনি তাঁর দিদির প্রতি ঈর্ষাকাতর হলেন। তাই তিনি যাকোবকে বললেন, “আমাকে সন্তান দাও, তা না হলে আমি মারা যাব!” \p \v 2 যাকোব তাঁর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “আমি কি সেই ঈশ্বরের স্থান নিতে পারি, যিনি তোমাকে সন্তানধারণ করা থেকে বিরত রেখেছেন?” \p \v 3 তখন রাহেল বললেন, “আমার দাসী বিলহা তো আছে। এর সাথে শুয়ে পড়ো, যেন সে আমার জন্য সন্তানধারণ করতে পারে এবং আমিও তার মাধ্যমে এক পরিবার গড়ে তুলতে পারি।” \p \v 4 অতএব তিনি তাঁর দাসী বিলহাকে স্ত্রীরূপে যাকোবকে দিলেন। যাকোব তার সাথে শুলেন, \v 5 এবং সে গর্ভবতী হল ও তাঁর জন্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিল। \v 6 তখন রাহেল বললেন, “ঈশ্বর আমার পক্ষসমর্থন করেছেন; তিনি আমার অনুরোধ শুনেছেন ও আমাকে এক ছেলে দিয়েছেন।” এই জন্য তিনি তাঁর নাম রাখলেন দান।\f + \fr 30:6 \fr*\ft এখানে দানের অর্থ “তিনি সত্যতা প্রতিপাদন করেছেন”\ft*\f* \p \v 7 রাহেলের দাসী বিলহা আবার গর্ভধারণ করল ও যাকোবের জন্য দ্বিতীয় এক ছেলের জন্ম দিল। \v 8 তখন রাহেল বললেন, “আমার দিদির সঙ্গে আমার এক মহাসংগ্রাম হয়েছে, এবং আমিই জয়লাভ করেছি।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন নপ্তালি।\f + \fr 30:8 \fr*\ft নপ্তালি শব্দের অর্থ “আমার সংগ্রাম”\ft*\f* \p \v 9 লেয়া যখন দেখলেন যে তিনি সন্তানধারণ করতে অপারক, তখন তিনি তাঁর দাসী সিল্পাকে এক স্ত্রীরূপে যাকোবকে দিলেন। \v 10 লেয়ার দাসী সিল্পা যাকোবের জন্য এক ছেলের জন্ম দিল। \v 11 তখন লেয়া বললেন, “আমার কী মহাসৌভাগ্য!” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন গাদ।\f + \fr 30:11 \fr*\ft গাদ শব্দের অর্থ হতে পারে “মহাসৌভাগ্য” বা “সৈন্যদল”\ft*\f* \p \v 12 লেয়ার দাসী সিল্পা যাকোবের জন্য দ্বিতীয় এক ছেলের জন্ম দিল। \v 13 তখন লেয়া বললেন, “আমি কতই না সুখী! মহিলারা আমাকে সুখী বলে ডাকবে।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন আশের।\f + \fr 30:13 \fr*\ft আশের শব্দের অর্থ “সুখী”\ft*\f* \p \v 14 গম গোলাজাত করার সময়, রূবেণ ক্ষেতে গেল ও কিছু দূদা\f + \fr 30:14 \fr*\ft দূদা হল এক ধরনের মাংসল মূলবিশিষ্ট লতাগুল্ম, যা দেখতে অনেকটা মানুষের মতো এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে প্রাচীনকালে যা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ভেষজ ওষুধরূপে ব্যবহৃত হত\ft*\f* লতাগুল্ম খুঁজে পেল, যা সে তার মা লেয়ার কাছে এনেছিল। রাহেল লেয়াকে বললেন, “তোমার ছেলের আনা দূদাগুলি থেকে আমাকে দয়া করে কিছুটা দাও।” \p \v 15 কিন্তু লেয়া তাঁকে বললেন, “এই কি যথেষ্ট নয় যে তুমি আমার স্বামীকে ছিনিয়ে নিয়েছ? তুমি আমার ছেলের দূদাগুলিও নেবে নাকি?” \p “ঠিক আছে,” রাহেল বললেন, “তোমার ছেলের দূদাগুলির পরিবর্তে যাকোব আজ রাতে তোমার সাথে শুতে পারেন।” \p \v 16 অতএব সেদিন সন্ধ্যাবেলায় যাকোব যখন ক্ষেত থেকে ফিরে এলেন, লেয়া তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে গেলেন। “তোমাকে আমার সাথে শুতে হবে,” তিনি বললেন। “আমি আমার ছেলের দূদাগুলি দিয়ে তোমাকে ভাড়া করেছি।” অতএব সেরাতে তিনি লেয়ার সাথে শুলেন। \p \v 17 ঈশ্বর লেয়ার প্রার্থনা শুনলেন ও তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং যাকোবের জন্য পঞ্চম এক ছেলের জন্ম দিলেন। \v 18 পরে লেয়া বললেন, “আমার স্বামীকে আমার দাসী দিয়েছি বলে ঈশ্বর আমাকে পুরস্কৃত করেছেন।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন ইষাখর।\f + \fr 30:18 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় ইষাখর শব্দটি শুনতে “পুরস্কারের” মতো লাগে\ft*\f* \p \v 19 লেয়া আবার গর্ভধারণ করলেন এবং যাকোবের জন্য ষষ্ঠ এক ছেলের জন্ম দিলেন। \v 20 পরে লেয়া বললেন, “ঈশ্বর আমাকে এক মূল্যবান উপহার দিয়েছেন। এবার আমার স্বামী আমাকে সম্মান দেবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য ছয় ছেলের জন্ম দিয়েছি।” অতএব তিনি তাঁর নাম রাখলেন সবূলূন।\f + \fr 30:20 \fr*\ft সবূলূন শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত “সম্মান”\ft*\f* \p \v 21 আরও কিছুকাল পরে তিনি এক মেয়ের জন্ম দিলেন এবং তার নাম রাখলেন দীণা। \p \v 22 পরে ঈশ্বর রাহেলকে স্মরণ করলেন; তিনি তাঁর প্রার্থনা শুনলেন ও তাঁকে গর্ভধারণের ক্ষমতা দিলেন। \v 23 তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং এক ছেলের জন্ম দিলেন ও বললেন, “ঈশ্বর আমার লাঞ্ছনা দূর করেছেন।” \v 24 তিনি তার নাম রাখলেন যোষেফ,\f + \fr 30:24 \fr*\ft যোষেফ শব্দের অর্থ “তিনি যোগ করুন”\ft*\f* এবং বললেন, “সদাপ্রভু আমার জীবনে আরও এক ছেলে যোগ করুন।” \s1 যাকোবের পশুপাল বৃদ্ধি পায় \p \v 25 রাহেল যোষেফের জন্ম দেওয়ার পর যাকোব লাবনকে বললেন, “আমাকে এবার যেতে দিন, যেন আমি নিজের স্বদেশে ফিরে যেতে পারি। \v 26 আমার সেই স্ত্রীদের ও সন্তানদেরও দিন, যাদের জন্য আমি আপনার দাসত্ব করেছি, এবং আমি দেশে ফিরে যাব। আপনি তো জানেন, আপনার জন্য আমি কত পরিশ্রম করেছি।” \p \v 27 কিন্তু লাবন তাঁকে বললেন, “আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে দাক্ষিণ্য পেয়ে থাকি, তবে দয়া করে এখানে থেকে যাও। আমি অলৌকিক উপায়ে জানতে পেরেছি যে তোমার কারণেই সদাপ্রভু আমাকে আশীর্বাদ করেছেন।” \v 28 তিনি আরও বললেন, “তুমি কত পারিশ্রমিক চাও তা বলো, ও আমি তোমাকে তা দিয়ে দেব।” \p \v 29 যাকোব তাঁকে বললেন, “আপনি জানেন আপনার জন্য আমি কীভাবে পরিশ্রম করেছি ও আমার যত্নআত্তিতে আপনার গবাদি পশুপাল কীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। \v 30 আমি আসার আগে আপনার অল্পসল্প যা কিছু ছিল তা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং আমি যেখানে থেকেছি সদাপ্রভু সেখানেই আপনাকে আশীর্বাদ করেছেন। কিন্তু এখন, আমার নিজের পরিবারের জন্য আমি কখন কী করব?” \p \v 31 “আমি তোমাকে কী দেব?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p “আমাকে কিছু দিতে হবে না,” যাকোব উত্তর দিলেন। “কিন্তু আপনি যদি আমার জন্য এই একটি কাজ করেন, তবে আমি আপনার পশুপালের তত্ত্বাবধান করে যাব ও তাদের উপর নজরদারিও চালিয়ে যাব: \v 32 আজ আমাকে আপনার পশুপালের মধ্যে দিয়ে যেতে দিন এবং সেগুলির মধ্যে থেকে প্রত্যেকটি দাগযুক্ত বা তিলকিত মেষ, প্রত্যেকটি শ্যামবর্ণ মেষশাবক ও প্রত্যেকটি তিলকিত বা দাগযুক্ত ছাগল আলাদা করতে দিন। সেগুলিই হবে আমার পারিশ্রমিক। \v 33 আর ভবিষ্যতে যখনই আপনি আমাকে দেওয়া পারিশ্রমিকের হিসেব কষবেন, তখন আমার সততাই আমার হয়ে সাক্ষ্য দেবে। আমার অধিকারে থাকা যে কোনো ছাগল যদি দাগযুক্ত বা তিলকিত না হয়, অথবা যে কোনো মেষশাবক যদি শ্যামবর্ণ না হয়, তবে তা চুরি করা হয়েছে বলে গণ্য হবে।” \p \v 34 “আমি রাজি,” লাবন বললেন। “তোমার কথামতোই তা হোক।” \v 35 সেদিনই তিনি সেইসব মদ্দা ছাগল আলাদা করলেন, যেগুলি ডোরাকাটা বা তিলকিত, ও সেইসব মাদি ছাগলও আলাদা করলেন, যেগুলি দাগযুক্ত ও তিলকিত (যেগুলির গায়ে সাদা দাগ ছিল) এবং সব শ্যামবর্ণ মেষশাবকও আলাদা করলেন, ও সেগুলি তাঁর ছেলেদের তত্ত্বাবধানে রাখলেন। \v 36 পরে তিনি তাঁর নিজের ও যাকোবের মধ্যে তিনদিনের যাত্রার ব্যবধান রাখলেন, অন্যদিকে যাকোব লাবনের বাদবাকি পশুপালের তত্ত্বাবধান করে গেলেন। \p \v 37 যাকোব অবশ্য, চিনার, কাঠবাদাম ও প্লেইন গাছের সদ্য কাটা ডালপালা নিয়ে সেগুলির ছাল ছাড়িয়ে ও ডালপালার ভিতরদিকের সাদা কাঠ বের করে সেগুলির উপর সাদা লম্বা লম্বা দাগ বানিয়ে দিলেন। \v 38 পরে তিনি সেইসব ছালছাড়ানো ডালপালা পশুদের জলপানের সব জাবপাত্রে রেখে দিলেন, যেন সেগুলি তখন সরাসরি সেইসব পশুর সামনে থাকে, যারা তখন জলপান করার জন্য সেখানে এসেছিল। পশুপাল যৌন আবেগে গরম হয়ে জলপান করতে এসে, \v 39 সেইসব ডালপালার সামনে যৌনমিলন করল। আর তারা সেইসব শাবকের জন্ম দিল, যারা ডোরাকাটা বা দাগযুক্ত বা তিলকিত। \v 40 যাকোব পশুপালের সেইসব শাবক আলাদা করে দিলেন, কিন্তু বাদবাকি পশুদের সেইসব ডোরাকাটা ও শ্যামবর্ণ পশুদের দিকে মুখ করিয়ে রাখলেন, যেগুলি লাবনের অধিকারভুক্ত ছিল। এইভাবে তিনি নিজের জন্য আলাদা পশুপাল তৈরি করলেন এবং সেগুলিকে লাবনের পশুপালের সঙ্গে রাখেননি। \v 41 যখনই সবল মাদিগুলি যৌন আবেগে উত্তেজিত হত, যাকোব সেইসব ডালপালা পশুপালের জলপানের জাবপাত্রের মধ্যে পশুপালের সামনে রেখে দিতেন, যেন তারা সেইসব ডালপালার সামনে যৌনমিলন করতে পারে, \v 42 কিন্তু পশুগুলি যদি দুর্বল হত, তবে তিনি সেগুলিকে সেখানে রাখতেন না। অতএব দুর্বল পশুগুলি লাবনের ও সবল পশুগুলি যাকোবের অধিকারভুক্ত হল। \v 43 এইভাবে সেই মানুষটি খুব সমৃদ্ধিশালী হয়ে উঠলেন এবং অনেক পশুপাল, ও দাস-দাসী, এবং উট ও গাধার মালিক হয়ে গেলেন। \c 31 \s1 যাকোব লাবনের কাছ থেকে পালিয়ে যান \p \v 1 যাকোব শুনতে পেলেন যে লাবনের ছেলেরা বলাবলি করছে, “আমাদের বাবার অধিকারভুক্ত সবকিছু যাকোব ছিনিয়ে নিয়েছে এবং আমাদের বাবার যেসব ধনসম্পদ ছিল তা নিয়েই তার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।” \v 2 আর যাকোব লক্ষ্য করলেন যে তার প্রতি লাবনের আচরণ আর আগের মতো নেই। \p \v 3 তখন সদাপ্রভু যাকোবকে বললেন, “তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের ও আত্মীয়স্বজনের দেশে ফিরে যাও, আর আমি তোমার সঙ্গে থাকব।” \p \v 4 অতএব যাকোব রাহেল ও লেয়াকে খবর পাঠিয়ে সেই মাঠে ডেকে পাঠালেন, যেখানে তাঁর পশুপাল রাখা ছিল। \v 5 তিনি তাঁদের বললেন, “আমি দেখছি যে আমার প্রতি তোমাদের বাবার আচরণ আর আগের মতো নেই, কিন্তু আমার পৈত্রিক ঈশ্বর আমার সঙ্গে আছেন। \v 6 তোমরা তো জানো যে তোমাদের বাবার জন্য আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে পরিশ্রম করেছি, \v 7 তবুও তোমাদের বাবা দশবার আমার পারিশ্রমিক পরিবর্তন করে আমাকে ঠকিয়েছেন। অবশ্য, ঈশ্বর তাঁকে আমার কোনও ক্ষতি করার অনুমতি দেননি। \v 8 তিনি যদি বলেছেন, ‘দাগযুক্ত পশুগুলি তোমার পারিশ্রমিক হবে,’ তবে সব পশুপালই দাগযুক্ত শাবকের জন্ম দিয়েছিল; আর তিনি যদি বলেছেন, ‘ডোরাকাটা পশুগুলি তোমার পারিশ্রমিক হবে,’ তবে সব পশুপালই ডোরাকাটা শাবকের জন্ম দিয়েছিল। \v 9 অতএব ঈশ্বরই তোমাদের বাবার গবাদি পশুপাল তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন ও সেগুলি আমাকে দিয়ে দিয়েছেন। \p \v 10 “পশুদের প্রজননের মরশুমে আমি একবার এক স্বপ্ন দেখেছিলাম যে আমি উপরের দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছিলাম আর দেখেছিলাম যে, যে মদ্দা ছাগলগুলি মাদিগুলির সাথে যৌনমিলন করছে, সেগুলি ডোরাকাটা, দাগযুক্ত বা তিলকিত। \v 11 ঈশ্বরের দূত স্বপ্নে আমাকে বলেছিলেন, ‘যাকোব।’ আমি উত্তর দিয়েছিলাম, ‘আমি এখানে।’ \v 12 আর তিনি বলেছিলেন, ‘উপরের দিকে চোখ তুলে তাকাও ও দেখো মাদিগুলির সাথে যেসব মদ্দা ছাগল যৌনমিলন করছে সেগুলি ডোরাকাটা, দাগযুক্ত বা তিলকিত, কারণ লাবন তোমার সঙ্গে যা যা করে চলেছে, আমি সেসব দেখেছি। \v 13 আমি সেই বেথেলের ঈশ্বর, যেখানে তুমি এক স্তম্ভকে অভিষিক্ত করেছিলে এবং আমার কাছে এক শপথ নিয়েছিলে। এখন তুমি এই মুহূর্তেই এই স্থান ত্যাগ করো এবং তোমার স্বদেশে ফিরে যাও।’ ” \p \v 14 তখন রাহেল ও লেয়া উত্তর দিলেন, “আমাদের বাবার ভূসম্পত্তিতে এখনও কি আমাদের আর কোনও অংশ ও অধিকার আছে? \v 15 তিনি কি আমাদের বিদেশি বলে গণ্য করেন না? তিনি যে শুধু আমাদের বিক্রি করে দিয়েছেন তা নয়, কিন্তু আমাদের জন্য যা দেওয়া হয়েছিল, তাও তিনি নিঃশেষ করে ফেলেছেন। \v 16 নিঃসন্দেহে যেসব ধনসম্পদ ঈশ্বর আমাদের বাবার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন, তা আমাদের ও আমাদের সন্তানদেরই। অতএব ঈশ্বর তোমাকে যা যা বলেছেন, তাই করো।” \p \v 17 তখন যাকোব তার সন্তানদের ও তাঁর স্ত্রীদের উটের পিঠে চাপিয়ে দিলেন, \v 18 এবং কনান দেশে তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে যাবার জন্য তিনি পদ্দন-আরামে\f + \fr 31:18 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* থাকাকালীন যেসব জিনিসপত্র জমিয়েছিলেন, সেগুলি সাথে নিয়ে তাঁর আগে আগে তাঁর সব গবাদি পশুপালও তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন। \p \v 19 লাবন যখন তাঁর মেষের লোম ছাঁটতে গিয়েছিলেন, রাহেল তখন তাঁর বাবার গৃহদেবতাদের মূর্তিগুলি চুরি করে নিলেন। \v 20 এছাড়াও, তিনি যে পালিয়ে যাচ্ছেন একথা অরামীয় লাবনকে না বলে যাকোব তাঁকে প্রতারিত করলেন। \v 21 অতএব তিনি তাঁর সবকিছু সাথে নিয়ে, ইউফ্রেটিস নদী পার করে পালিয়ে গেলেন, এবং গিলিয়দের পার্বত্য এলাকার দিকে এগিয়ে গেলেন। \s1 লাবন যাকোবের পশ্চাদ্ধাবন করেন \p \v 22 তৃতীয় দিনে লাবনকে বলা হল যে যাকোব পালিয়ে গিয়েছেন। \v 23 তাঁর আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে, তিনি সাত দিন ধরে যাকোবের পশ্চাদ্ধাবন করলেন এবং গিলিয়দের পার্বত্য এলাকায় তাঁকে ধরে ফেললেন। \v 24 তখন রাতের বেলায় ঈশ্বর স্বপ্নে অরামীয় লাবনের কাছে এলেন ও তাঁকে বললেন, “যাকোবকে ভালো বা মন্দ কোনো কিছু বলার বিষয়ে তুমি সাবধান থেকো।” \p \v 25 লাবন যখন যাকোবের নাগাল ধরে ফেললেন, তখন যাকোব গিলিয়দের পার্বত্য এলাকায় তাঁর তাঁবু খাটিয়েছিলেন, এবং লাবন ও তাঁর আত্মীয়স্বজনরাও সেখানেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন। \v 26 তখন লাবন যাকোবকে বললেন, “তুমি এ কী করলে? তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছ এবং তুমি আমার মেয়েদের যুদ্ধবন্দিদের মতো করে নিয়ে এসেছ। \v 27 তুমি কেন গোপনে পালিয়ে এসেছ ও আমাকে ঠকিয়েছ? তুমি কেন আমায় বলোনি, আমি তো আনন্দের সঙ্গে এবং খঞ্জনি ও বীণার বাজনা সহযোগে গান গেয়ে তোমাদের বিদায় জানাতে পারতাম? \v 28 এমনকি তুমি আমাকে আমার নাতি-নাতনিদের ও মেয়েদের চুমু দিয়ে বিদায় জানাতেও দাওনি। তুমি এক মূর্খের মতো কাজ করেছ। \v 29 তোমার ক্ষতিসাধন করার শক্তি আমার আছে; কিন্তু গতকাল রাতে তোমার পৈত্রিক ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘যাকোবকে ভালো বা মন্দ কোনো কিছু বলার বিষয়ে তুমি সাবধান থেকো।’ \v 30 তুমি প্রস্থান করেছ, কারণ তুমি তোমার বাবার ঘরে ফিরে যেতে চেয়েছিলে। কিন্তু আমার দেবতাদের তুমি চুরি করলে কেন?” \p \v 31 যাকোব লাবনকে উত্তর দিলেন, “আমি ভয় পেয়েছিলাম, কারণ আমি ভেবেছিলাম আপনি আপনার মেয়েদের জোর করে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবেন। \v 32 কিন্তু এমন কাউকে যদি আপনি খুঁজে পান যার কাছে আপনার দেবতারা আছে, তবে সে আর বেঁচে থাকবে না। আমাদের আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতে, আপনি নিজেই দেখে নিন আপনার কোনও জিনিস আমার সাথে আছে কি না; এবং যদি তা থাকে, তবে তা নিয়ে নিন।” যাকোব জানতেনই না যে রাহেল দেবতাদের চুরি করেছেন। \p \v 33 অতএব লাবন যাকোবের তাঁবুতে ও লেয়ার তাঁবুতে এবং দুই দাসীর তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, কিন্তু তিনি কিছুই খুঁজে পেলেন না। আর লেয়ার তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসার পর, তিনি রাহেলের তাঁবুতে প্রবেশ করলেন। \v 34 রাহেল গৃহদেবতাদের নিয়ে সেগুলি তাঁর উটের জিনের মধ্যে রেখে দিয়েছিলেন এবং সেটির উপরে বসেছিলেন। লাবন সেই তাঁবুর প্রত্যেকটি জিনিসপত্র খানাতল্লাশি করলেন কিন্তু কিছুই খুঁজে পেলেন না। \p \v 35 রাহেল তাঁর বাবাকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আমি যে আপনার সামনে উঠে দাঁড়াতে পারছি না, সেজন্য আমার উপর রাগ করবেন না; আমার মাসিক চলছে।” তাই লাবন খানাতল্লাশি করেও গৃহদেবতাদের খুঁজে পাননি। \p \v 36 যাকোব রেগে গিয়ে লাবনকে তিরস্কার করলেন। “আমি কী অপরাধ করেছি?” তিনি লাবনকে জিজ্ঞাসা করলেন। “আমি আপনার কী এমন ক্ষতি করেছি যে আপনি আমাকে তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়াচ্ছেন? \v 37 এখন আপনি যে আমার সব জিনিসপত্র খানাতল্লাশি করলেন, তাতে এমন কিছু কি পেয়েছেন যা আপনার গৃহস্থালিভুক্ত? আপনার ও আমার আত্মীয়স্বজনদের সামনে তা এখানে এনে রাখুন, এবং তাদেরকেই আমাদের উভয়ের মধ্যে বিচার করতে দিন। \p \v 38 “আমি আপনার কাছে এখন কুড়ি বছর ধরে আছি। না আপনার মেষ ও ছাগপালের গর্ভপাত হয়েছে, না আমি আপনার পশুপাল থেকে মদ্দা মেষগুলি ধরে ধরে খেয়েছি। \v 39 বন্যজন্তুরা যেসব পশুকে বিদীর্ণ করেছিল আমি সেগুলি আপনার কাছে নিয়ে আসিনি; সেই ক্ষতি আমি নিজেই বহন করেছি। আর দিনে বা রাতে যখনই কিছু চুরি গিয়েছিল, আপনি আমার কাছ থেকে তার দাম দাবি করেছিলেন। \v 40 এই ছিল আমার অবস্থা: দিনের বেলায় উত্তাপ ও রাতের বেলায় শৈত্য আমাকে গ্রাস করেছিল, এবং আমার চোখ থেকে নিদ্রা পালিয়ে গিয়েছিল। \v 41 এভাবেই আমি কুড়িটি বছর আপনার ঘর-পরিবারে কাটিয়ে দিয়েছি। আপনার দুই মেয়ের জন্য চোদ্দো বছর এবং আপনার পশুপালের জন্য ছয় বছর আমি আপনার কাছে কাজ করেছি, আর দশবার আপনি আমার পারিশ্রমিকের পরিবর্তন করেছেন। \v 42 আমার পৈত্রিক ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর এবং ইস্‌হাকের সেই আশঙ্কা যদি আমার সাথে না থাকতেন, তবে আপনি নিঃসন্দেহে আমাকে শূন্য হাতেই পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু ঈশ্বর আমার কষ্ট ও আমার হাতের পরিশ্রম দেখেছেন, আর তাই গতকাল রাতে তিনি আপনাকে ভর্ৎসনা করেছেন।” \p \v 43 লাবন যাকোবকে উত্তর দিলেন, “এই মহিলারা আমার মেয়ে, এই সন্তানেরা আমার সন্তানসন্ততি ও এই পশুপাল আমারই পশুপাল। তুমি যা কিছু দেখছ এসবই আমার। তবুও আজ আমি আমার এই মেয়েদের বিষয়ে বা তারা যেসব সন্তানের জন্ম দিয়েছে, তাদের বিষয়ে কী-ই বা করতে পারি? \v 44 এখন তবে এসো, তুমি ও আমি, আমরা এক নিয়ম তৈরি করি, এবং এটি আমাদের মধ্যে এক সাক্ষী হয়ে থাকুক।” \p \v 45 অতএব যাকোব একটি পাথর নিয়ে সেটি এক স্তম্ভরূপে স্থাপন করলেন। \v 46 তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজনদের বললেন, “কিছু পাথর সংগ্রহ করো।” অতএব তাঁরা বেশ কিছু পাথর নিয়ে সেগুলি একটি স্তূপে পাঁজা করে রাখলেন, এবং সেই স্তূপের পাশে বসে ভোজনপান করলেন। \v 47 লাবন সেটির নাম রাখলেন যিগর সাহদূথা, এবং যাকোব সেটির নাম রাখলেন গল্-এদ।\f + \fr 31:47 \fr*\ft অরামিক ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ যিগর সাহদূথা এবং হিব্রু ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ গল্-এদ—দুটিরই অর্থ সাক্ষী-স্তুপ\ft*\f* \p \v 48 লাবন বললেন, “এই স্তূপ আজ তোমার ও আমার মধ্যে এক সাক্ষী হয়ে রইল।” এজন্য সেটির নাম রাখা হল গল্-এদ। \v 49 সেটির নাম মিস্‌পা\f + \fr 31:49 \fr*\ft মিস্‌পার অর্থ নজরমিনার\ft*\f* রাখা হল, কারণ তিনি বললেন, “আমরা যখন পরস্পরের থেকে দূরে সরে থাকব তখনও সদাপ্রভু যেন আমাদের দুজনের উপর নজর রাখেন। \v 50 তুমি যদি আমার মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করো বা আমার মেয়েদের পাশাপাশি অন্য কোনও স্ত্রীকে গ্রহণ করো, তবে যদিও আমাদের সঙ্গে কেউ নাও থাকে, তবু মনে রেখো যে তোমার ও আমার মাঝখানে ঈশ্বর এক সাক্ষী হয়ে আছেন।” \p \v 51 লাবন যাকোবকে এও বললেন, “এই সেই স্তূপ, ও এই সেই স্তম্ভ যা আমি তোমার ও আমার মাঝখানে স্থাপন করেছি। \v 52 এই স্তূপ এক সাক্ষী, এবং এই স্তম্ভ এক সাক্ষী হয়ে থাকল, যে এই স্তূপ পার হয়ে আমি তোমার ক্ষতিসাধন করার জন্য তোমার দিকে যাব না এবং তুমিও এই স্তূপ ও স্তম্ভ পার হয়ে আমার ক্ষতিসাধন করার জন্য আমার দিকে আসবে না। \v 53 অব্রাহামের ঈশ্বর এবং নাহোরের ঈশ্বর, তাঁদের পৈত্রিক ঈশ্বরই, আমাদের দুজনের মধ্যে বিচারক হয়ে থাকুন।” \p অতএব যাকোব তাঁর বাবা ইস্‌হাকের আশঙ্কার নামে শপথ নিলেন। \v 54 সেই পার্বত্য এলাকায় তিনি এক বলি উৎসর্গ করলেন ও তাঁর আত্মীয়স্বজনদের এক ভোজসভায় নিমন্ত্রণ করলেন। ভোজনপান করার পর, তাঁরা সেখানে রাত কাটালেন। \p \v 55 পরদিন ভোরবেলায় লাবন তাঁর নাতি-নাতনিদের ও তাঁর মেয়েদের চুমু দিলেন এবং তাদের আশীর্বাদ করলেন। পরে তিনি বিদায় নিয়ে তাঁর স্বদেশে ফিরে গেলেন। \c 32 \s1 যাকোব এষৌর সঙ্গে দেখা করার প্রস্তুতি নেন \p \v 1 যাকোবও তাঁর পথে রওনা দিলেন, এবং ঈশ্বরের দূতেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন। \v 2 যাকোব যখন তাঁদের দেখলেন, তিনি তখন বললেন, “এ হল ঈশ্বরের শিবির!” অতএব তিনি সেই স্থানটির নাম রাখলেন মহনয়িম।\f + \fr 32:2 \fr*\ft মহনয়িম শব্দের অর্থ দুটি শিবির\ft*\f* \p \v 3 যাকোব নিজে যাওয়ার আগেই সেয়ীর দেশে, ইদোম অঞ্চলে তাঁর দাদা এষৌর কাছে তাঁর দূতদের পাঠিয়ে দিলেন। \v 4 তিনি তাদের নির্দেশ দিলেন: “আমার প্রভু এষৌকে তোমাদের একথাই বলতে হবে: ‘আপনার দাস যাকোব বলেছেন, আমি লাবনের সঙ্গে বসবাস করছিলাম এবং এতদিন সেখানেই ছিলাম। \v 5 আমার কাছে গবাদি পশুপাল ও গাধা, মেষ ও ছাগল, এবং দাস-দাসী আছে। এখন আমি আমার প্রভুকে এই খবর পাঠাচ্ছি, যেন আমি আপনার দৃষ্টিতে দয়া পাই।’ ” \p \v 6 দূতেরা যাকোবের কাছে ফিরে এসে বলল, “আমরা আপনার দাদা এষৌর কাছে গেলাম, আর এখন তিনি আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন, ও তাঁর সাথে 400 লোক আছে।” \p \v 7 খুব ভীত ও উদ্বিগ্ন হয়ে যাকোব তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজনকে দুই দলে\f + \fr 32:7 \fr*\ft অথবা, শিবিরে\ft*\f* বিভক্ত করে দিলেন, এবং মেষ ও গোরুর পাল ও উটদেরও তেমনটিই করলেন। \v 8 তিনি ভাবলেন, “এষৌ যদি এসে একটি দলকে\f + \fr 32:8 \fr*\ft অথবা, শিবিরকে\ft*\f* আক্রমণ করেন, তবে অন্য দলটি\f + \fr 32:8 \fr*\ft অথবা, শিবিরটি\ft*\f* পালিয়ে যেতে পারবে।” \p \v 9 পরে যাকোব প্রার্থনা করলেন, “হে সদাপ্রভু, আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহামের ঈশ্বর, আমার বাবা ইস্‌হাকের ঈশ্বর, তুমিই তো আমাকে বলেছ, ‘তোমার দেশে ও তোমার আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফিরে যাও, এবং আমি তোমাকে সমৃদ্ধিশালী করব,’ \v 10 তোমার দাসের প্রতি তুমি যে দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখিয়েছ, আমি সেসব পাওয়ার যোগ্য নই। আমি যখন এই জর্ডন নদী পার হলাম, তখন আমার হাতে শুধু আমার লাঠিটিই ছিল, কিন্তু এখন আমি দুটি শিবিরে পরিণত হয়েছি। \v 11 প্রার্থনা করি, আমার দাদা এষৌর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করো, কারণ আমার ভয় হচ্ছে যে তিনি এসে আমাকে, এবং সন্তানসন্ততিসহ মায়েদের আক্রমণ করবেন। \v 12 কিন্তু তুমিই তো বলেছ, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে সমৃদ্ধিশালী করব এবং তোমার বংশধরদের সমুদ্রের এমন বালুকণার মতো করব, যা গোনা যায় না।’ ” \p \v 13 সেই রাতটি তিনি সেখানেই কাটালেন, এবং তাঁর কাছে যা কিছু ছিল তার মধ্যে থেকে তিনি তাঁর দাদা এষৌর জন্য এক উপহার বেছে নিলেন: \v 14 200-টি মাদি ছাগল ও কুড়িটি মদ্দা ছাগল, 200-টি মেষী ও কুড়িটি মদ্দা মেষ, \v 15 শাবকসহ ত্রিশটি মাদি উট, চল্লিশটি গরু ও দশটি বলদ, এবং কুড়িটি গাধি ও দশটি গাধা। \v 16 আলাদা আলাদা করে প্রত্যেকটি পশুপাল তিনি তাঁর দাসদের তত্ত্বাবধানে রাখলেন, এবং তাঁর দাসদের বললেন, “আমার আগে আগে যাও, এবং পশুপালগুলির মধ্যে তোমরা কিছুটা ব্যবধান রেখো।” \p \v 17 নেতৃত্বে থাকা একজনকে তিনি নির্দেশ দিলেন: “আমার দাদা এষৌ যখন তোমার সঙ্গে দেখা করবেন ও জিজ্ঞাসা করবেন, ‘তুমি কার লোক ও তুমি কোথায় যাচ্ছ, এবং তোমার সামনে থাকা এইসব পশুর মালিক কে?’ \v 18 তখন তোমাকে বলতে হবে, ‘এগুলির মালিক আপনার দাস যাকোব। আমার প্রভু এষৌর কাছে এগুলি উপহারস্বরূপ পাঠানো হয়েছে, এবং আমাদের পিছু পিছু তিনিও আসছেন।’ ” \p \v 19 সেই পশুপালের অনুগামী দ্বিতীয়জনকে, তৃতীয় জনকে ও অন্যান্য সবাইকেও তিনি নির্দেশ দিলেন: “তোমরা যখন এষৌর সঙ্গে দেখা করবে, তখন তোমাদেরও তাঁকে একই কথা বলতে হবে। \v 20 আর অবশ্যই বলবে, ‘আপনার দাস যাকোব আমাদের পিছু পিছু আসছেন।’ ” কারণ তিনি ভেবেছিলেন, “আগেভাগেই আমি এই যেসব উপহার পাঠিয়ে দিচ্ছি, সেগুলি দিয়েই আমি তাঁকে শান্ত করব; পরে, আমার সঙ্গে যখন তাঁর দেখা হবে, হয়তো তিনি আমাকে গ্রহণ করবেন।” \v 21 অতএব যাকোবের উপহারগুলি তাঁর যাওয়ার আগেই পৌঁছে গেল, কিন্তু তিনি স্বয়ং সেই রাতটি শিবিরেই কাটালেন। \s1 যাকোব ঈশ্বরের সঙ্গে কুস্তি করেন \p \v 22 সেরাতে যাকোব উঠে পড়লেন ও তাঁর দুই স্ত্রীকে, তাঁর দুই দাসীকে এবং তাঁর এগারোজন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যব্বোক নদীর অগভীর অংশটি পার হয়ে গেলেন। \v 23 তাদের নদী পার করে পাঠিয়ে দেওয়ার পর, তিনি তাঁর সব জিনিসপত্রও পাঠিয়ে দিলেন। \v 24 অতএব যাকোব একাই থেকে গেলেন, এবং একজন লোক ভোর হয়ে ওঠা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কুস্তি লড়লেন। \v 25 যখন সেই লোকটি দেখলেন যে তিনি তাঁকে হারাতে পারছেন না, তখন তিনি যাকোবের ঊরুর কোটর স্পর্শ করলেন যেন সেই লোকটির সঙ্গে কুস্তি করতে করতে তাঁর ঊরু মচকে যায়। \v 26 পরে সেই লোকটি বললেন, “আমাকে যেতে দাও, কারণ ভোর হয়ে আসছে।” \p কিন্তু যাকোব উত্তর দিলেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি আমাকে আশীর্বাদ করছেন, আমি আপনাকে যেতে দেব না।” \p \v 27 সেই লোকটি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কী?” \p “যাকোব,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 28 তখন সেই লোকটি বললেন, “তোমার নাম আর যাকোব থাকবে না, কিন্তু তা হবে ইস্রায়েল,\f + \fr 32:28 \fr*\ft ইস্রায়েল শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত সে ঈশ্বরের সাথে যুদ্ধ করেছে\ft*\f* কারণ তুমি ঈশ্বরের ও মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয় পেয়েছ।” \p \v 29 যাকোব বললেন, “দয়া করে আপনার নাম বলুন।” \p কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন, “তুমি আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ কেন?” পরে তিনি সেখানেই তাঁকে আশীর্বাদ করলেন। \p \v 30 অতএব যাকোব এই বলে সেই স্থানটির নাম রাখলেন পনূয়েল,\f + \fr 32:30 \fr*\ft পনূয়েল শব্দের অর্থ ঈশ্বরের মুখমণ্ডল\ft*\f* “আমি ঈশ্বরকে সামনাসামনি দেখেছি, আর তাও আমার প্রাণরক্ষা হয়েছে।” \p \v 31 তিনি যখন পনূয়েল পার হচ্ছিলেন তখন সূর্য তাঁর মাথার উপর উদিত হল, এবং তাঁর ঊরুর জন্য তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। \v 32 তাই আজও পর্যন্ত ইস্রায়েলীরা ঊরুর কোটরের সঙ্গে সংলগ্ন কণ্ডরা\f + \fr 32:32 \fr*\ft অর্থাৎ, মোটা, শক্ত যে তন্তুরজ্জু পেশিকে হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে রাখে\ft*\f* খায় না, যেহেতু কণ্ডরার কাছেই যাকোবের ঊরুর কোটর স্পর্শ করা হয়েছিল। \c 33 \s1 যাকোব এষৌর সঙ্গে দেখা করেন \p \v 1 যাকোব চোখ তুলে তাকিয়ে সেই এষৌকে দেখতে পেলেন, যিনি 400 জন লোক নিয়ে এগিয়ে আসছিলেন; অতএব তিনি লেয়া, রাহেল ও দুই দাসীর মধ্যে সন্তানদের ভাগাভাগি করে দিলেন। \v 2 সামনের দিকে তিনি দাসীদের ও তাদের সন্তানদের, পরে লেয়া ও তাঁর সন্তানদের এবং পিছন দিকে রাহেল ও যোষেফকে রাখলেন। \v 3 তিনি স্বয়ং সবার আগে এগিয়ে গেলেন এবং তাঁর দাদার কাছাকাছি পৌঁছে সাতবার মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে অভিবাদন জানালেন। \p \v 4 কিন্তু এষৌ যাকোবের সঙ্গে দেখা করার জন্য ছুটে এলেন এবং তাঁকে আলিঙ্গন করলেন; তিনি দু-হাতে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরে তাঁকে চুমু দিলেন। আর তাঁরা কান্নাকাটি করলেন। \v 5 পরে এষৌ মুখ তুলে তাকালেন এবং সব মহিলা ও সন্তানকে দেখতে পেলেন। “তোমার সঙ্গে এরা কারা?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p যাকোব উত্তর দিলেন, “এরা সেইসব সন্তানসন্ততি যাদের ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আপনার এই দাসকে দিয়েছেন।” \p \v 6 তখন দাসীরা ও তাদের সন্তানেরা এগিয়ে এসে অভিবাদন জানাল। \v 7 পরে, লেয়া ও তাঁর সন্তানেরা এসে অভিবাদন জানালেন। সবশেষে যোষেফ ও রাহেল এলেন, এবং তাঁরাও অভিবাদন জানালেন। \p \v 8 এষৌ জিজ্ঞাসা করলেন, “যেসব মেষ ও পশুপালের সঙ্গে আমার দেখা হল, সেগুলির অর্থ কী?” \p “হে আমার প্রভু, আপনার দৃষ্টিতে দয়া পাওয়ার জন্য,” তিনি বললেন। \p \v 9 কিন্তু এষৌ বললেন, “হে আমার ভাই, আমার কাছে তো যথেষ্ট আছে। তোমার কাছে যা আছে, তা নিজের জন্যই রেখে দাও।” \p \v 10 যাকোব বললেন, “আপনার দৃষ্টিতে আমি যদি দয়া পেয়েছি, তবে দয়া করে আমার কাছ থেকে এই উপহারটি গ্রহণ করুন। কারণ আপনার মুখ দেখার অর্থ হল ঈশ্বরেরই মুখ দেখা, যেহেতু এখন আপনি দয়া দেখিয়ে আমাকে গ্রহণ করেছেন। \v 11 আপনার কাছে যে উপহারটি আনা হয়েছে তা দয়া করে গ্রহণ করুন, কারণ ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহশীল হয়েছেন এবং আমার যা যা প্রয়োজন তা আমার কাছে আছে।” আর যেহেতু যাকোব পীড়াপীড়ি করলেন, তাই এষৌ তা গ্রহণ করলেন। \p \v 12 পরে এষৌ বললেন, “চলো আমরা রওনা দিই; আমিও তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাব।” \p \v 13 কিন্তু যাকোব তাঁকে বললেন, “আমার প্রভু তো জানেন যে শিশুসন্তানেরা সুকুমার এবং আমাকে সেইসব মেষীর ও গরুর যত্ন নিতে হবে, যারা তাদের শাবকদের শুশ্রুষা করছে। একদিনেই যদি তাদের জোরে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে সব পশু মারা যাবে। \v 14 অতএব আমার প্রভুই তাঁর দাসের আগে আগে চলে যান, আর যতক্ষণ না আমি আমার প্রভুর কাছে সেয়ীরে উপস্থিত হতে পারছি, ততক্ষণ আমি আমার আগে আগে যাওয়া মেষ ও পশুপালের এবং শিশু সন্তানদের গতির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।” \p \v 15 এষৌ বললেন, “তবে আমার কিছু লোকজন তোমাদের কাছে ছেড়ে যাই!” \p “কিন্তু তা কেন করবেন?” যাকোব জিজ্ঞাসা করলেন। “আমার প্রভুর দৃষ্টিতে শুধু আমাকে দয়া পেতে দিন।” \p \v 16 অতএব সেদিন এষৌ সেয়ীরের দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করলেন। \v 17 যাকোব, অবশ্য, সেই সুক্কোতে চলে গেলেন, যেখানে তিনি নিজের জন্য এক বাড়ি ও তাঁর গৃহপালিত পশুপালের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করলেন। সেই কারণে সেই স্থানটিকে সুক্কোৎ\f + \fr 33:17 \fr*\ft সুক্কোৎ শব্দের অর্থ নিরাপদ আশ্রয়স্থান\ft*\f* বলে ডাকা হয়। \p \v 18 পদ্দন-আরাম\f + \fr 33:18 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* থেকে চলে আসার পর যাকোব নিরাপদে কনান দেশের শিখিম নগরে পৌঁছে গেলেন এবং সেই নগরের কাছেই নিজের শিবির স্থাপন করলেন। \v 19 100 রৌপমুদ্রা\f + \fr 33:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় 100 কেসিতা; এক কেসিতা অজ্ঞাত ওজন ও মূল্যের অর্থ-এককরূপে গণ্য হত\ft*\f* দিয়ে, তিনি শিখিমের বাবা হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে সেই জমিখণ্ডটি কিনলেন, যেখানে তিনি তাঁবু খাটিয়েছিলেন। \v 20 সেখানে তিনি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে সেটির নাম রাখলেন এল্-এলোহে-ইস্রায়েল।\f + \fr 33:20 \fr*\ft এল্-এলোহে-ইস্রায়েল কথাটির অর্থ হতে পারে এল্-ই ইস্রায়েলের ঈশ্বর, অথবা, ইস্রায়েলের ঈশ্বর পরাক্রমশালী\ft*\f* \c 34 \s1 দীণা ও শিখিমীয়রা \p \v 1 যে মেয়েটিকে লেয়া যাকোবের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন, সেই দীণা সেদেশের মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে গেল। \v 2 সেই অঞ্চলের শাসনকর্তা হিব্বীয় হমোরের ছেলে শিখিম যখন তাকে দেখতে পেল, তখন সে তাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল। \v 3 যাকোবের মেয়ে দীণার প্রতি তার মন আকর্ষিত হল; সে সেই যুবতী মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলল ও তার সঙ্গে কোমলভাবে কথা বলল। \v 4 আর শিখিম তার বাবা হমোরকে বলল, “এই মেয়েটিকে আমার স্ত্রী করে এনে দাও।” \p \v 5 যাকোব যখন শুনতে পেলেন যে তাঁর মেয়ে দীণাকে কলুষিত করা হয়েছে, তখন তাঁর ছেলেরা তাঁর গৃহপালিত পশুপাল নিয়ে মাঠেই ছিল; তাই তারা বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি সে বিষয়ে কিছুই করলেন না। \p \v 6 পরে শিখিমের বাবা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। \v 7 এদিকে, যে ঘটনা ঘটেছিল তা শুনে যাকোবের ছেলেরা মাঠ থেকে ফিরে এসেছিল। তারা মর্মাহত ও অগ্নিশর্মা হয়ে উঠল, কারণ যাকোবের মেয়ের সাথে শুয়ে শিখিম ইস্রায়েলে\f + \fr 34:7 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে\ft*\f* এমন এক নির্লজ্জ কাজ করেছিল—যা করা একদম উচিত হয়নি। \p \v 8 কিন্তু হমোর তাঁদের বললেন, “আমার ছেলে শিখিম আপনার মেয়েকে তার মন দিয়ে বসেছে। দয়া করে তাকে স্ত্রীরূপে তার হাতে তুলে দিন। \v 9 আমাদের সাথে অসবর্ণমতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হোন; আপনাদের মেয়েদের আমাদের হাতে তুলে দিন ও আমাদের মেয়েদের আপনারা গ্রহণ করুন। \v 10 আমাদের মধ্যে আপনারা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেন; দেশটি আপনাদের কাছে খোলা পড়ে আছে। এখানে বসবাস করুন, এখানে ব্যবসাবাণিজ্য করুন,\f + \fr 34:10 \fr*\ft অথবা, স্বাধীনভাবে ঘুরেফিরে বেড়ান; 21 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* এবং এখানে বিষয়সম্পত্তি অর্জন করুন।” \p \v 11 তখন শিখিম দীণার বাবাকে ও দাদাদের বলল, “আপনাদের দৃষ্টিতে আমাকে দয়া পেতে দিন, এবং আপনারা যা চান আমি আপনাদের তাই দেব। \v 12 যে স্ত্রী-পণ ও উপহার আমাকে দিতে হবে, তা যতই বেশি হোক না কেন, আপনাদের ইচ্ছানুসারে তা আপনারাই ঠিক করুন, আর আপনারা আমার কাছে যা চাইবেন, আমি আপনাদের তাই দেব। শুধু যুবতী মেয়েটিকে আমার স্ত্রীরূপে আমায় দিন।” \p \v 13 যেহেতু তাদের বোন দীণাকে কলুষিত করা হয়েছিল, তাই যাকোবের ছেলেরা শিখিম ও তার বাবা হমোরের সঙ্গে কথা বলার সময় ছলনা করে উত্তর দিয়েছিল। \v 14 তারা তাদের বলল, “আমরা এরকম কাজ করতে পারব না; আমরা এমন কোনও পুরুষের হাতে আমাদের বোনকে তুলে দিতে পারব না, যার সুন্নত হয়নি। তা আমাদের পক্ষে মর্যাদাহানিকর হবে। \v 15 একটিমাত্র শর্তে শুধু আমরা তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারি: তোমাদের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করিয়ে যদি আমাদের মতো হয়ে যাও, তবেই তা সম্ভব। \v 16 তখনই আমাদের মেয়েদের আমরা তোমাদের হাতে তুলে দেব ও তোমাদের মেয়েদের আমরা নিজেদের জন্য গ্রহণ করব। আমরা তোমাদের মধ্যেই স্থায়ীভাবে বসবাস করব এবং তোমাদের সঙ্গে মিলেমিশে এক জাতি হয়ে যাব। \v 17 কিন্তু তোমরা যদি সুন্নত করাতে রাজি না হও, তবে আমরা আমাদের বোনকে নিয়ে চলে যাব।” \p \v 18 তাদের প্রস্তাবটি হমোর ও তার ছেলে শিখিমের ভালোই লেগেছিল। \v 19 সেই যুবকটি, যে তার বাবার পরিবারে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত ছিল, সে তাদের কথামতো কাজ করতে একটুও সময় নষ্ট করেনি, কারণ যাকোবের মেয়েকে পেয়ে সে খুশি হয়েছিল। \v 20 অতএব হমোর ও তার ছেলে শিখিম তাদের নগরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদের নগরের ফটকে চলে গেল। \v 21 “এই লোকেরা আমাদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন,” তারা বলল। “তারা আমাদের দেশেই বসবাস করুক ও এখানেই ব্যবসাবাণিজ্য করুক; এদেশে তাদের জন্য প্রচুর স্থান আছে। আমরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারি ও তারাও আমাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে। \v 22 কিন্তু সেই লোকেরা একটিই মাত্র শর্তে আমাদের সঙ্গে এক জাতি হয়ে বসবাস করবে, যে আমাদের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করাবে, যেমনটি তারা নিজেরাও করিয়েছে। \v 23 তাদের গবাদি পশুপাল, তাদের বিষয়সম্পত্তি ও তাদের বাকি সব পশু কি আমাদের হয়ে যাবে না? তাই এসো, আমরা তাদের শর্তে রাজি হয়ে যাই, এবং তারা আমাদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করুক।” \p \v 24 যেসব লোকজন নগরের ফটকের বাইরে গিয়েছিল, তারা হমোর ও তার ছেলে শিখিমের কথায় রাজি হল, এবং সেই নগরের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করাল। \p \v 25 তিন দিন পর, যখন তারা সবাই তখনও ব্যথায় কাতরাচ্ছিল, তখন যাকোবের ছেলেদের মধ্যে দুজন—দীণার দাদা শিমিয়োন ও লেবি, তাদের তরোয়াল হাতে তুলে নিয়ে সেই অসন্দিগ্ধ নগরটি আক্রমণ করল, ও প্রত্যেকটি পুরুষমানুষকে হত্যা করল। \v 26 তারা হমোর ও তার ছেলে শিখিমকেও তরোয়াল দিয়ে হত্যা করল এবং দীণাকে শিখিমের বাড়ি থেকে নিয়ে চলে এল। \v 27 যাকোবের ছেলেরা মৃতদেহগুলির কাছে গিয়ে সেই নগরে লুটপাট চালাল, যেখানে\f + \fr 34:27 \fr*\ft অথবা, যেহেতু\ft*\f* তাদের বোনকে কলুষিত করা হয়েছিল। \v 28 তারা তাদের মেষপাল ও পশুপাল ও গাধাগুলি এবং সেই নগরে ও মাঠেঘাটে তাদের আরও যা যা ছিল, সেসবকিছু দখল করে নিল। \v 29 তারা তাদের ধনসম্পদ ও তাদের সব স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিকে তুলে এনে, তাদের বাড়িঘরের সর্বস্ব লুট করল। \p \v 30 তখন যাকোব শিমিয়োন ও লেবিকে বললেন, “তোমরা সেই কনানীয় ও পরিষীয়দের কাছে, এই দেশে বসবাসকারী জাতিদের কাছে আমাকে আপত্তিকর করে তুলে আমার উপর সমস্যার বোঝা চাপিয়ে দিলে। আমরা সংখ্যায় কয়েকজন মাত্র, এবং তারা যদি আমার বিরুদ্ধে দল বেঁধে আমাকে আক্রমণ করে, তবে আমি ও আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাব।” \p \v 31 কিন্তু তারা উত্তর দিল, “আমাদের বোনের সাথে এক বেশ্যার মতো ব্যবহার করা কি তার উচিত হয়েছে?” \c 35 \s1 যাকোব বেথেলে ফিরে এলেন \p \v 1 তখন ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “বেথেলে চলে যাও ও সেখানেই বসবাস করো, এবং সেখানে সেই ঈশ্বরের উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করো, যিনি তোমার কাছে সেই সময় আবির্ভূত হলেন, যখন তুমি তোমার দাদা এষৌর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলে।” \p \v 2 অতএব যাকোব তাঁর পরিবারের লোকজনদের ও তাঁর সঙ্গে আরও যারা ছিলেন, তাদের বললেন, “তোমাদের কাছে যে বিজাতীয় দেবতারা আছে, তাদের থেকে নিষ্কৃতি লাভ করো এবং নিজেদের শুচিশুদ্ধ করো ও তোমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ বদলে ফেলো। \v 3 পরে এসো, আমরা সবাই মিলে সেই বেথেলে উঠে যাই, যেখানে সেই ঈশ্বরের উদ্দেশে আমি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করব, যিনি আমার দুঃখের দিনে আমাকে উত্তর দিয়েছিলেন ও আমি যেখানেই গিয়েছি, তিনি আমার সহায় হয়েছেন।” \v 4 অতএব তারা, তাদের কাছে যেসব বিজাতীয় দেবতাগুলি ছিল, সেগুলি ও তাদের কানের দুলগুলি যাকোবকে দিলেন, এবং যাকোব সেগুলি শিখিমে ওক গাছের\f + \fr 35:4 \fr*\ft পুরোনো বাংলা বাইবেলে এলা বৃক্ষের\ft*\f* তলায় পুঁতে দিলেন। \v 5 পরে তাঁরা রওনা দিলেন, এবং ঈশ্বরের আতঙ্ক এমনভাবে তাঁদের চারপাশের ছোটোখাটো সব নগরের উপর নেমে এল যে কেউই তাঁদের পশ্চাদ্ধাবন করেনি। \p \v 6 যাকোব ও তাঁর সব সঙ্গীসাথী কনান দেশের লূসে (অথবা, বেথেলে) এলেন। \v 7 সেখানে তিনি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করেছিলেন, এবং তিনি সেই স্থানটির নাম রাখলেন এল্-বেথেল\f + \fr 35:7 \fr*\ft এল্-বেথেল শব্দের অর্থ বেথেলের ঈশ্বর\ft*\f*, কারণ যখন তিনি তাঁর দাদার কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানেই ঈশ্বর নিজেকে তাঁর কাছে প্রকাশিত করলেন। \p \v 8 তখন রিবিকার সেবিকা দবোরা মারা গেল এবং তাকে বেথেলের বাইরের দিকে একটি ওক গাছের তলায় কবর দেওয়া হল। তাই সেই স্থানটির নাম রাখা হল অলোন্-বাখুৎ।\f + \fr 35:8 \fr*\ft অলোন্-বাখুৎ শব্দের অর্থ ক্রন্দনের ওক\ft*\f* \p \v 9 পদ্দন-আরাম\f + \fr 35:9 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* থেকে ফিরে আসার পর, ঈশ্বর আবার যাকোবের কাছে আবির্ভূত হলেন ও তাঁকে আশীর্বাদ করলেন। \v 10 ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমার নাম যাকোব,\f + \fr 35:10 \fr*\ft যাকোব শব্দের অর্থ সে গোড়ালি জাপটে ধরে, সে প্রতারণা করে—এই অর্থে ব্যবহৃত এক হিব্রু বাগ্‌ধারা\ft*\f* কিন্তু তোমাকে আর যাকোব বলে ডাকা হবে না; তোমার নাম হবে ইস্রায়েল।\f + \fr 35:10 \fr*\ft ইস্রায়েল শব্দের অর্থ খুব সম্ভবত সে ঈশ্বরের সঙ্গে লড়াই করে\ft*\f*” অতএব তিনি তাঁর নাম রাখলেন ইস্রায়েল। \p \v 11 আর ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর;\f + \fr 35:11 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এল-শাদ্দাই\ft*\f* ফলপ্রসূ হও এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি পাও। তোমার মধ্যে থেকে এক জাতি ও এক জাতি-সমাজ উৎপন্ন হবে, এবং তোমার বংশধরদের মধ্যে অনেকেই রাজা হবে। \v 12 যে দেশটি আমি অব্রাহাম ও ইস্‌হাককে দিয়েছিলাম তা আমি তোমাকেও দেব, এবং তোমার পরে এই দেশটি আমি তোমার বংশধরদেরও দেব।” \v 13 পরে ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে সেই স্থানে উঠে গেলেন, যেখানে তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। \p \v 14 ঈশ্বর যে স্থানটিতে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন, সেখানে তিনি পাথরের একটি স্তম্ভ খাড়া করলেন এবং সেটির উপর তিনি এক পেয়-নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন; তিনি সেটির উপর তেলও ঢেলে দিলেন। \v 15 যে স্থানটিতে ঈশ্বর যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন, তিনি সেটির নাম রাখলেন বেথেল।\f + \fr 35:15 \fr*\ft বেথেল শব্দের অর্থ ঈশ্বরের গৃহ\ft*\f* \s1 রাহেল ও ইস্‌হাকের মৃত্যু \p \v 16 পরে তাঁরা বেথেল ছেড়ে এগিয়ে গেলেন। যখন তাঁরা ইফ্রাথ থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন, তখন রাহেলের প্রসবযন্ত্রণা শুরু হল ও তিনি খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। \v 17 আর সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে যখন তাঁর খুব অসুবিধা হচ্ছিল তখন তাঁর ধাত্রী তাঁকে বলল, “আপনি নিরাশ হবেন না, আপনি আরও এক ছেলের জন্ম দিয়েছেন।” \v 18 শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে করতে তিনি তাঁর ছেলের নাম রাখলেন বিনোনী\f + \fr 35:18 \fr*\ft বিনোনী শব্দের অর্থ আমার কষ্টের ছেলে\ft*\f*—কারণ তিনি মারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু তার বাবা তার নাম রাখলেন বিন্যামীন।\f + \fr 35:18 \fr*\ft বিন্যামীন শব্দের অর্থ আমার ডান হাতের ছেলে\ft*\f* \p \v 19 অতএব রাহেল মারা গেলেন ও তাঁকে ইফ্রাথে (অথবা, বেথলেহেমে) যাওয়ার পথেই কবর দেওয়া হল। \v 20 তাঁর সমাধির উপর যাকোব একটি স্তম্ভ খাড়া করলেন, এবং আজও পর্যন্ত সেই স্তম্ভটি রাহেলের কবররূপে চিহ্নিত হয়ে আছে। \p \v 21 ইস্রায়েল আরও আগে এগিয়ে গেলেন এবং মিগদল-এদোর পার করে তাঁর তাঁবু খাটালেন। \v 22 ইস্রায়েল যখন সেই অঞ্চলে বসবাস করছিলেন, রূবেণ তাঁর বাবার উপপত্নী বিলহার কাছে গিয়ে তাঁর সাথে শুয়েছিলেন, এবং ইস্রায়েল তা শুনতে পেলেন। \b \li4 যাকোবের বারোটি ছেলে ছিল: \b \li1 \v 23 লেয়ার ছেলেরা: \li2 যাকোবের বড়ো ছেলে রূবেণ, \li2 শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন। \li1 \v 24 রাহেলের ছেলেরা: \li2 যোষেফ ও বিন্যামীন, \li1 \v 25 রাহেলের দাসী বিলহার ছেলেরা: \li2 দান ও নপ্তালি। \li1 \v 26 লেয়ার দাসী সিল্পার ছেলেরা: \li2 গাদ ও আশের। \b \li4 এরাই যাকোবের সেই ছেলেরা, পদ্দন-আরামে যারা তাঁর ঔরসে জন্মেছিল। \b \p \v 27 কিরিয়ৎ-অর্বের (অথবা, হিব্রোণের) কাছাকাছি অবস্থিত সেই মম্রিতে যাকোব ঘরে তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে এলেন, যেখানে অব্রাহাম ও ইস্‌হাক বসবাস করতেন। \v 28 ইস্‌হাক 180 বছর বেঁচেছিলেন। \v 29 পরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন ও মারা গেলেন এবং তিনি বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ূ অবস্থায় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে মিলিত হলেন। আর তাঁর ছেলে এষৌ ও যাকোব তাঁকে কবর দিলেন। \c 36 \s1 এষৌর বংশধরেরা \p \v 1 এই হল এষৌর (অথবা, ইদোমের) বংশপরম্পরার বৃত্তান্ত। \b \p \v 2 এষৌ কনানীয় মহিলাদের মধ্যে থেকেই তাঁর স্ত্রীদের গ্রহণ করলেন: হিত্তীয় এলোনের মেয়ে আদা এবং হিব্বীয় সিবিয়োনের নাতনি তথা অনার মেয়ে অহলীবামা— \v 3 এছাড়াও ইশ্মায়েলের মেয়ে ও নবায়োতের বোন বাসমৎ। \p \v 4 এষৌর জন্য আদা ইলীফসের, বাসমৎ রূয়েলের, \v 5 এবং অহলীবামা যিয়ূশ, যালম ও কোরহের জন্ম দিলেন। এরাই হল এষৌর সেই ছেলেরা, যাদের জন্ম কনান দেশে হয়েছিল। \p \v 6 এষৌ তাঁর স্ত্রীদের ও ছেলেমেয়েদের এবং তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে, এছাড়াও তাঁর গবাদি পশুপাল ও অন্যান্য পশুপাল তথা কনান দেশে তিনি যেসব জিনিসপত্র অর্জন করেছিলেন, সেসবকিছু নিয়ে তাঁর ভাই যাকোবের কাছ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে এগিয়ে গেলেন। \v 7 তাঁদের বিষয়সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে একত্রে বসবাস করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না; যে দেশে তাঁরা বসবাস করছিলেন, তা তাঁদের গবাদি পশুপালের জন্য তাঁদের ভারবহন করতে পারছিল না। \v 8 অতএব এষৌ (অথবা, ইদোম) সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন করলেন। \b \li4 \v 9 সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ইদোমীয়দের পূর্বপুরুষ এষৌর বংশপরম্পরা এইরকম: \b \li1 \v 10 এষৌর ছেলেদের নাম এইরকম: \li2 এষৌর স্ত্রী আদার ছেলে ইলীফস, এবং এষৌর স্ত্রী বাসমতের ছেলে রূয়েল। \li1 \v 11 ইলীফসের ছেলেরা: \li2 তৈমন, ওমার, সফো, গয়িতম ও কনস। \v 12 এষৌর ছেলে ইলীফসের তিম্না নামের এক উপপত্নীও ছিল, যে ইলীফসের জন্য অমালেককে জন্ম দিয়েছিল। এরাই হল এষৌর স্ত্রী আদার সব নাতিপুতি। \li1 \v 13 রূয়েলের ছেলেরা: \li2 নহৎ, সেরহ, শম্ম ও মিসা। এরাই হল এষৌর স্ত্রী বাসমতের সব নাতিপুতি। \li1 \v 14 এষৌর স্ত্রী তথা সিবিয়োনের নাতনি ও অনার মেয়ে অহলীবামা এষৌর জন্য যেসব ছেলের জন্ম দিলেন তারা হল: \li2 যিয়ূশ, যালম ও কোরহ। \b \li4 \v 15 এষৌর বংশধরদের মধ্যে এরাই হলেন বিভাগীয় প্রধান: \li1 এষৌর বড়ো ছেলে ইলীফসের ছেলেরা: \li2 দল প্রধান তৈমন, ওমার, সফো, কনস, \v 16 কোরহ\f + \fr 36:16 \fr*\ft কিছু কিছু প্রাচীন অনুলিপিতে কোরহ শব্দটি অনুপস্থিত\ft*\f*, গয়িতম ও অমালেক। ইদোমে এই বিভাগীয় প্রধানেরাই ইলীফসের বংশে জন্মগ্রহণ করলেন; তাঁরা আদার সব নাতিপুতি। \li1 \v 17 এষৌর ছেলে রূয়েলের ছেলেরা: \li2 বিভাগীয় প্রধান নহৎ, সেরহ, শম্ম ও মিসা। ইদোমে এই বিভাগীয় প্রধানেরাই রূয়েলের বংশে জন্মগ্রহণ করলেন; তাঁরা এষৌর স্ত্রী বাসমতের সব নাতিপুতি। \li1 \v 18 এষৌর স্ত্রী অহলীবামার ছেলেরা: \li2 বিভাগীয় প্রধান যিয়ূশ, যালম ও কোরহ। এই বিভাগীয় প্রধানেরাই এষৌর স্ত্রী তথা অনার মেয়ে অহলীবামার গর্ভজাত হলেন। \li4 \v 19 এরাই হলেন এষৌর (অথবা, ইদোমের) সব ছেলে, এবং এরাই হলেন তাদের বিভাগীয় প্রধান। \b \li1 \v 20 এরাই হলেন হোরীয় সেয়ীরের সেইসব ছেলে, যারা সেই অঞ্চলে বসবাস করতেন: \li2 লোটন, শোবল, শিবিয়োন, অনা, \v 21 দিশোন, এৎসর ও দীশন। ইদোমে সেয়ীরের এই ছেলেরা ছিলেন হোরীয় বিভাগীয় প্রধান। \li1 \v 22 লোটনের ছেলেরা: \li2 হোরি ও হোমম।\f + \fr 36:22 \fr*\ft অথবা হেমম, \+xt 1 বংশাবলি 1:39\+xt* পদও দেখুন\ft*\f* তিম্না ছিলেন লোটনের বোন। \li1 \v 23 শোবলের ছেলেরা: \li2 অলবন, মানহৎ, এবল, শফী ও ওনম। \li1 \v 24 সিবিয়োনের ছেলেরা: \li2 অয়া ও অনা। (এই অনাই মরুভূমিতে তাঁর বাবা সিবিয়োনের গাধাগুলি চরানোর সময় উষ্ণ জলের উৎসগুলি\f + \fr 36:24 \fr*\ft অথবা, জল\ft*\f* খুঁজে পেয়েছিলেন) \li1 \v 25 অনার সন্তানেরা: \li2 অনার মেয়ে দিশোন ও অহলীবামা। \li1 \v 26 দিশোনের\f + \fr 36:26 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় বিকল্প বানান অনুসারে দিশান\ft*\f* ছেলেরা: \li2 হিমদন, ইশ্‌বন, যিত্রণ ও করাণ। \li1 \v 27 এৎসরের ছেলেরা: \li2 বিলহন, সাবন ও আকন। \li1 \v 28 দীশনের ছেলেরা: \li2 ঊষ ও অরাণ। \li1 \v 29 এরাই ছিলেন হোরীয় বিভাগীয় প্রধান: \li2 লোটন, শোবল, শিবিয়োন, অনা, \v 30 দিশোন, এৎসর ও দীশন। \li4 সেয়ীর দেশে তাদের বিভাগ অনুসারে এরাই হলেন হোরীয় বিভাগীয় প্রধান। \s1 ইদোমের শাসনকর্তারা \li4 \v 31 কোনো ইস্রায়েলী রাজা রাজত্ব করার আগে এরাই ইদোমে রাজা হয়ে রাজত্ব করলেন: \li1 \v 32 বিয়োরের ছেলে বেলা ইদোমের রাজা হলেন। তাঁর রাজধানীর নাম দেওয়া হল দিনহাবা। \li1 \v 33 বেলা যখন মারা যান, বস্রানিবাসী সেরহের ছেলে যোবব তখন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \li1 \v 34 যোবব যখন মারা যান, তৈমন দেশ থেকে আগত হূশম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \li1 \v 35 হূশম যখন মারা যান, বেদদের ছেলে সেই হদদ তখন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন, যিনি মোয়াব দেশে মিদিয়নীয়দের পরাজিত করলেন। তাঁর নগরের নাম দেওয়া হল অবীৎ। \li1 \v 36 হদদ যখন মারা যান, মস্রেকানিবাসী সম্ল তখন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \li1 \v 37 সম্ল যখন মারা যান, সেই নদীর নিকটবর্তী রহোবোৎ নিবাসী শৌল তখন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \li1 \v 38 শৌল যখন মারা যান, অকবোরের ছেলে বায়াল-হানন তখন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \li1 \v 39 অকবোরের ছেলে বায়াল-হানন যখন মারা যান, হদদ\f + \fr 36:39 \fr*\ft বেশ কিছু প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে হদর, \+xt 1 বংশাবলি 1:50\+xt* পদও দেখুন\ft*\f* রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। তাঁর নগরের নাম দেওয়া হল পায়ূ এবং তাঁর স্ত্রীর নাম মহেটবেল, যিনি মট্রেদের মেয়ে, ও মেষাহবের নাতনি ছিলেন। \b \li4 \v 40 নামানুসারে, এবং তাদের বংশ ও অঞ্চল অনুসারে এরাই হলেন এষৌর বংশে জন্মানো বিভাগীয় প্রধান: \li1 তিম্ন, অলবা, যিথেৎ, \li1 \v 41 অহলীবামা, এলা, পীনোন, \li1 \v 42 কনস, তৈমন, মিবসর, \li1 \v 43 মগ্‌দীয়েল ও ঈরম। \li4 তাদের অধিকৃত দেশে তাঁরা যে বসতি স্থাপন করলেন, তা অনুসারে এরাই ইদোমের দলপতি ছিলেন। \b \li4 এই হল ইদোমীয়দের পূর্বপুরুষ এষৌর বংশপরম্পরা। \c 37 \s1 যোষেফের স্বপ্ন \p \v 1 যাকোব সেই কনান দেশে, যেখানে তাঁর বাবা বসবাস করতেন, সেখানেই বসবাস করছিলেন। \b \p \v 2 এই হল যাকোবের বংশপরম্পরার বৃত্তান্ত। \b \p সতেরো বছর বয়স্ক এক যুবক যোষেফ, তাঁর সেই দাদাদের সঙ্গে পশুপাল চরাচ্ছিলেন, যাঁরা ছিলেন তাঁদের বাবার স্ত্রী বিলহা ও সিল্পার ছেলে, এবং তাঁদের কুকর্মের খবর যোষেফ তাঁদের বাবার কাছে পৌঁছে দিলেন। \p \v 3 ইস্রায়েল যোষেফকে তাঁর অন্য ছেলেদের থেকে বেশি ভালোবাসতেন, কারণ ইস্রায়েলের বৃদ্ধাবস্থায় যোষেফের জন্ম হয়েছিল; এবং ইস্রায়েল তাঁর জন্য একটি রংচঙে আলখাল্লা বানিয়ে দিয়েছিলেন। \v 4 তাঁর দাদারা যখন দেখলেন যে তাঁদের বাবা যোষেফকে তাঁদের যে কোনো একজনের তুলনায় বেশি ভালোবাসেন, তখন তাঁরা তাঁকে ঘৃণা করলেন, এবং তাঁর উদ্দেশে তাঁরা কোনও প্রীতিকর কথা বলতে পারতেন না। \p \v 5 যোষেফ একটি স্বপ্ন দেখলেন এবং যখন তিনি সেটি তাঁর দাদাদের বললেন, তখন তাঁরা তাঁকে আরও বেশি ঘৃণা করলেন। \v 6 তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যে স্বপ্নটি দেখেছি তা শোনো: \v 7 আমরা যখন জমিতে শস্যের আঁটি বাঁধছিলাম তখন হঠাৎই আমার আঁটিটি উঠে দাঁড়াল, আর তোমাদের আঁটিগুলি আমার আঁটিটির চারপাশ ঘিরে সেটিকে প্রণাম জানাল।” \p \v 8 তাঁর দাদারা তাঁকে বললেন, “তুমি কি আমাদের উপর রাজত্ব করতে চাও? তুমি কি সত্যিই আমাদের শাসন করবে?” তাঁর এই স্বপ্নের জন্য ও তিনি যা যা বললেন, সেজন্য তাঁরা তাঁকে আরও বেশি ঘৃণা করলেন। \p \v 9 পরে তিনি আরও একটি স্বপ্ন দেখলেন, এবং সেটি তিনি তাঁর দাদাদের বললেন। “শোনো,” তিনি বললেন, “আমি আরও একটি স্বপ্ন দেখেছি, এবং এবার সূর্য ও চন্দ্র ও এগারোটি তারা আমাকে প্রণাম করছে।” \p \v 10 তিনি যখন তাঁর বাবাকে ও একইসাথে তাঁর দাদাদেরও তা বললেন, তখন তাঁর বাবা তাঁকে ভর্ৎসনা করে বললেন, “তুমি এ কী ধরনের স্বপ্ন দেখলে? তোমার মা, আমি ও তোমার দাদারা কি সত্যিই তোমার কাছে এসে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তোমাকে প্রণাম করব?” \v 11 তাঁর দাদারা তাঁর প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হলেন, কিন্তু তাঁর বাবা এই বিষয়টি মনে রাখলেন। \s1 যোষেফের দাদারা তাঁকে বিক্রি করে দেন \p \v 12 তাঁর দাদারা শিখিমের কাছে তাঁদের বাবার পশুপাল চরাতে গেলেন, \v 13 এবং ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “তুমি তো জানো, তোমার দাদারা শিখিমের কাছে পশুপাল চরাচ্ছে। এসো, আমি তোমাকে তাদের কাছে পাঠাতে যাচ্ছি।” \p “খুব ভালো,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 14 অতএব তিনি যোষেফকে বললেন, “যাও ও দেখো পশুপালের সাথে সাথে তোমার দাদারাও সব ঠিকঠাক আছে কি না, এবং আমার কাছে খবর নিয়ে এসো।” পরে তিনি তাঁকে হিব্রোণ উপত্যকা থেকে পাঠিয়ে দিলেন। \p যোষেফ যখন শিখিমে পৌঁছালেন, \v 15 তখন একজন লোক তাঁকে মাঠেঘাটে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কার খোঁজ করছ?” \p \v 16 তিনি উত্তর দিলেন, “আমি আমার দাদাদের খুঁজছি। তুমি কি বলতে পারবে কোথায় তাঁরা তাঁদের পশুপাল চরাচ্ছেন?” \p \v 17 “তাঁরা এখান থেকে সামনে এগিয়ে গিয়েছেন,” লোকটি উত্তর দিল। “আমি তাঁদের বলতে শুনেছি, ‘চলো, দোথনে যাই।’ ” \p অতএব যোষেফ তাঁর দাদাদের অনুসরণ করলেন ও দোথনের কাছে তাঁদের খুঁজে পেলেন। \v 18 কিন্তু তাঁরা দূর থেকেই তাঁকে দেখতে পেলেন, এবং তিনি তাঁদের কাছে পৌঁছানোর আগেই, তাঁরা তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করলেন। \p \v 19 “সেই স্বপ্নদর্শী আসছে!” তাঁরা একে অপরকে বললেন। \v 20 “এখন এসো, আমরা তাকে হত্যা করি ও এখানে যে জলাশয়গুলি আছে তার মধ্যে একটিতে তাকে ফেলে দিই এবং বলি যে হিংস্র কোনো পশু তাকে গিলে ফেলেছে। পরে আমরা দেখব তার স্বপ্নের কী হয়।” \p \v 21 রূবেণ যখন তা শুনলেন, তখন তিনি তাঁদের হাত থেকে যোষেফকে রক্ষা করতে চাইলেন। “আমরা যেন তাকে হত্যা না করি,” তিনি বললেন। \v 22 “কোনও রক্তপাত কোরো না। এই মরুপ্রান্তরে তাকে এই জলাশয়ের মধ্যে ফেলে দাও, কিন্তু তার গায়ে হাত দিয়ো না।” যোষেফকে তাঁদের হাত থেকে রক্ষা করার ও তাঁকে তাঁর বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই রূবেণ তা বললেন। \p \v 23 অতএব যোষেফ যখন তাঁর দাদাদের কাছে এলেন, তখন তাঁরা তাঁর সেই আলখাল্লাটি—তাঁর পরনের সেই রংচঙে আলখাল্লাটি—খুলে নিলেন \v 24 এবং তাঁরা তাঁকে ধরে সেই জলাশয়ের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। জলাশয়টি খালি ছিল; তাতে জল ছিল না। \p \v 25 খাবার খেতে বসামাত্রই তারা মুখ তুলে তাকালেন এবং দেখতে পেলেন গিলিয়দ থেকে ইশ্মায়েলীয়দের একটি কাফেলা\f + \fr 37:25 \fr*\ft অথবা, ভ্রমণকারী মরুযাত্রীদল\ft*\f* এগিয়ে আসছে। তাদের উটগুলি মশলাপাতি, সুগন্ধি মলম ও গন্ধরসে বোঝাই ছিল এবং তারা সেগুলি মিশরের উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল। \p \v 26 যিহূদা তাঁর দাদা-ভাইদের বললেন, “আমাদের ভাইকে হত্যা করে ও তার রক্ত লুকিয়ে রেখে আমাদের কী লাভ হবে? \v 27 এসো, আমরা বরং তাকে ইশ্মায়েলীয়দের কাছে বিক্রি করে দিই ও তার গায়ে হাত না দিই; যতই হোক, সে তো আমাদেরই ভাই, আমাদের নিজেদের রক্ত ও মাংস।” তাঁর দাদা-ভাইরাও একমত হলেন। \p \v 28 অতএব মিদিয়নীয় ব্যবসায়ীরা যখন সেখানে পৌঁছাল, যোষেফের দাদারা তাঁকে সেই জলাশয় থেকে টেনে তুললেন এবং সেই ইশ্মায়েলীয়দের কাছে কুড়ি শেকল\f + \fr 37:28 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 230 গ্রাম\ft*\f* রুপোর বিনিময়ে তাঁকে বিক্রি করে দিলেন, যারা তাঁকে মিশরে নিয়ে গেল। \p \v 29 রূবেণ যখন সেই জলাশয়ের কাছে ফিরে এসে দেখতে পেলেন যে যোষেফ সেখানে নেই, তখন তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। \v 30 তিনি তাঁর ভাইদের কাছে গিয়ে বললেন, “ছেলেটি তো সেখানে নেই! আমি এখন কোথায় যাব?” \p \v 31 তখন তাঁরা যোষেফের আলখাল্লাটি নিয়ে, একটি ছাগল জবাই করলেন এবং সেই আলখাল্লাটি রক্তে চুবিয়ে নিলেন। \v 32 তাঁরা সেই রংচঙে আলখাল্লাটি তাঁদের বাবার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে বললেন, “আমরা এটি খুঁজে পেয়েছি। পরীক্ষা করে দেখুন এটি আপনার ছেলেরই আলখাল্লা কি না।” \p \v 33 তিনি সেটি চিনতে পেরে বললেন, “এটি আমার ছেলেরই আলখাল্লা! কোনো হিংস্র জন্তু তাকে গিলে ফেলেছে। যোষেফকে নিশ্চয় টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে।” \p \v 34 তখন যাকোব তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে দিলেন, গুনচট গায়ে দিলেন ও তাঁর ছেলের জন্য অনেক দিন ধরে শোক পালন করলেন। \v 35 তাঁর সব ছেলেমেয়ে তাঁকে সান্তনা দিতে এলেন, কিন্তু তিনি সান্তনা পেতে চাননি। “না,” তিনি বললেন, “যতদিন না পর্যন্ত আমি কবরে গিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে মিলিত হচ্ছি, আমি শোক পালন করেই যাব।” অতএব তাঁর বাবা তাঁর জন্য কান্নাকাটি করলেন। \p \v 36 ইতিমধ্যে, মিদিয়নীয়রা\f + \fr 37:36 \fr*\ft কিছু কিছু প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে মেদানীয়রা\ft*\f* যোষেফকে মিশরে ফরৌণের রাজকর্মকর্তা, পাহারাদারদের দলপতি পোটিফরের কাছে বিক্রি করে দিল। \c 38 \s1 যিহূদা ও তামর \p \v 1 সেই সময় যিহূদা তাঁর দাদা-ভাইদের ছেড়ে হীরা নামক অদুল্লম নিবাসী একজন লোকের সঙ্গে থাকতে চলে গেলেন। \v 2 সেখানে যিহূদা শূয় নামক কনানীয় একজন লোকের মেয়ের দেখা পেলেন। তিনি তাকে বিয়ে করলেন ও তাকে প্রণয়জ্ঞাপনও করলেন; \v 3 সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ল ও এক ছেলের জন্ম দিল, যার নাম রাখা হল এর। \v 4 সে আবার গর্ভবতী হল ও এক ছেলের জন্ম দিল, ও তার নাম রাখল ওনন। \v 5 সে আরও এক ছেলের জন্ম দিল ও তার নাম রাখল শেলা। শেলার জন্মের সময় তাঁরা কষীবেই বসবাস করতেন। \p \v 6 যিহূদা তাঁর বড়ো ছেলে এরের জন্যে এক স্ত্রী এনেছিলেন, তার নাম তামর। \v 7 কিন্তু যিহূদার বড়ো ছেলে এর, সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে দুষ্ট ছিল; তাই সদাপ্রভু তাকে মেরে ফেললেন। \p \v 8 পরে যিহূদা ওননকে বললেন, “তোমার দাদার স্ত্রীর সঙ্গে শুয়ে পড়ো এবং তোমার দাদার হয়ে সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তার\f + \fr 38:8 \fr*\ft অর্থাৎ, তোমার বৌদির\ft*\f* প্রতি তোমার দায়িত্ব পালন করো।” \v 9 কিন্তু ওনন জানত যে সেই সন্তানটি তার নিজের হবে না, তাই যখনই সে তার দাদার স্ত্রীর সাথে শুতো, সে তার বীর্য মাটিতে ফেলে দিত, যেন তাকে তার দাদার হয়ে কোনও সন্তানের জন্ম দিতে না হয়। \v 10 সে যা করল তা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অপকর্মরূপে গণ্য হল; তাই সদাপ্রভু তাকেও মেরে ফেললেন। \p \v 11 যিহূদা তখন তাঁর পুত্রবধূ তামরকে বললেন, “আমার ছেলে শেলা যতদিন না বড়ো হচ্ছে, ততদিন তুমি তোমার বাবার ঘরে গিয়ে বিধবার মতো হয়ে থাকো।” কারণ তিনি ভাবলেন, “সেও হয়তো তার দাদাদের মতো মারা যাবে।” অতএব তামর তার বাবার ঘরে থাকতে চলে গেল। \p \v 12 বেশ কিছুকাল পর শূয়ের সেই মেয়ে, যিহূদার স্ত্রী মারা গেল। যিহূদা যখন তাঁর মর্মযন্ত্রণা কাটিয়ে উঠলেন, তখন তিনি তিম্নায় সেই লোকজনের কাছে উঠে গেলেন, যারা তাঁর মেষগুলির লোম ছাঁটছিল, এবং তাঁর বন্ধু অদুল্লমীয় হীরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন। \p \v 13 যখন তামরকে বলা হল, “তোমার শ্বশুরমশাই তাঁর মেষগুলির লোম ছাঁটার জন্য তিম্নার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন,” \v 14 তখন সে তার বৈধব্য-বস্ত্রটি খুলে ফেলল, ছদ্মবেশ ধারণের জন্য ঘোমটায় মুখ ঢাকল, এবং পরে সেই ঐনয়িমের প্রবেশদ্বারে গিয়ে বসল, যা তিম্নায় যাওয়ার পথেই পড়ে। কারণ সে দেখল যে, যদিও শেলা এখন বেড়ে উঠেছে, তবুও তার স্ত্রীরূপে তাকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। \p \v 15 যিহূদা যখন তাকে দেখলেন, তখন তিনি ভাবলেন যে সে একজন বেশ্যা, কারণ সে তার মুখ ঢেকে রেখেছিল। \v 16 সে যে তাঁর পুত্রবধূ, একথা না বুঝেই তিনি রাস্তার ধারে তার কাছে গিয়ে বললেন, “এবার এসো, আমি তোমার সঙ্গে শুয়ে পড়ি।” \p “আর আপনার সঙ্গে শোয়ার জন্য আপনি আমাকে কী দেবেন?” সে জিজ্ঞাসা করল। \p \v 17 “আমার পশুপাল থেকে একটি ছাগশাবক আমি তোমার কাছে পাঠিয়ে দেব,” তিনি বললেন। \p “যতদিন না আপনি আমার কাছে সেটি পাঠাচ্ছেন, ততদিন আপনি কি জামানতরূপে আমাকে কিছু দেবেন?” সে জিজ্ঞাসা করল। \p \v 18 তিনি বললেন, “জামানতরূপে তোমাকে আমি কী দেব?” \p “আপনার সিলমোহর ও সেটির সুতো, ও আপনার হাতের লাঠিটি,” সে উত্তর দিল। অতএব তিনি তাকে সেগুলি দিলেন ও তাঁর সঙ্গে শুলেন, এবং সে তাঁর দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ল। \v 19 সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর, সে তার ওড়নাটি খুলে ফেলল এবং আবার তার বৈধব্য-বস্ত্রটি পরে নিল। \p \v 20 ইতিমধ্যে যিহূদা সেই মহিলাটির কাছ থেকে তাঁর জামানতটি ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে তাঁর সেই অদুল্লমীয় বন্ধুর মাধ্যমে সেই ছাগশাবকটি পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু তিনি তাকে খুঁজে পাননি। \v 21 সেখানে বসবাসকারী লোকজনকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “ঐনয়িমের রাস্তার ধারে যে দেবদাসীটি ছিল, সে কোথায়?” \p তারা বলল, “এখানে কোনও দেবদাসী থাকে না।” \p \v 22 অতএব তিনি যিহূদার কাছে ফিরে গেলেন ও বললেন, “আমি তাকে খুঁজে পাইনি। এছাড়াও, সেখানে বসবাসকারী লোকজনও বলল, ‘এখানে কোনও দেবদাসী থাকে না।’ ” \p \v 23 তখন যিহূদা বললেন, “তার কাছে যা আছে তা সে রেখে দিক, তা না হলে আমাদের এক হাসির খোরাক হতে হবে। যাই হোক না কেন, আমি তো এই ছাগশাবকটি তার কাছে পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি তাকে খুঁজে পাওনি।” \p \v 24 প্রায় তিন মাস পর যিহূদাকে বলা হল, “আপনার পুত্রবধূ তামর বেশ্যাবৃত্তির অপরাধ করেছে, এবং পরিণামস্বরূপ এখন সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।” \p যিহূদা বললেন, “তাকে বের করে আনো ও আগুনে পুড়িয়ে মারো!” \p \v 25 তাকে যখন বের করে আনা হচ্ছিল, সে তখন তার শ্বশুরের কাছে একটি খবর পাঠিয়েছিল। “যিনি এগুলির মালিক, তাঁর দ্বারাই আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি,” সে বলল। আর সে এও বলল, “দেখুন তো, এই সিলমোহর ও সুতো এবং লাঠিটি কার তা আপনি চিনতে পারেন কি না।” \p \v 26 যিহূদা সেগুলি চিনতে পেরে বললেন, “সে আমার থেকে বেশি ধার্মিক, যেহেতু আমি তাকে আমার ছেলে শেলার হাতে তুলে দিইনি।” তিনি আর কখনও তামরের সঙ্গে শয়ন করেননি। \p \v 27 যখন তামরের প্রসবকাল এসে উপস্থিত হল, তখন দেখা গেল তার গর্ভে যমজ ছেলে। \v 28 যখন সে সন্তান প্রসব করছিল, তাদের মধ্যে একজন তার হাত বাইরে বের করল; অতএব ধাত্রী টকটকে লাল রংয়ের সুতো নিয়ে সেটি তার কব্জিতে বেঁধে দিল ও বলল, “এই প্রথমে বের হয়েছে।” \v 29 কিন্তু সে যখন তার হাতটি টেনে নিল, তখন তার ভাই বের হয়ে এল, ও ধাত্রী বলল, “অতএব তুমি এভাবেই আবির্ভূত হয়েছ!” আর তার নাম রাখা হল পেরস।\f + \fr 38:29 \fr*\ft পেরস শব্দের অর্থ আবির্ভূত হওয়া\ft*\f* \v 30 পরে তার সেই ভাই বের হয়ে এল, যার কব্জিতে টকটকে লাল রংয়ের সুতো বাঁধা ছিল। আর তার নাম রাখা হল সেরহ।\f + \fr 38:30 \fr*\ft সেরহ শব্দের অর্থ হতে পারে টকটকে লাল বা উজ্জ্বলতা\ft*\f* \c 39 \s1 যোষেফ ও পোটিফরের স্ত্রী \p \v 1 যোষেফকে মিশরে নিয়ে যাওয়া হল। পোটিফর বলে একজন মিশরীয়, যিনি ফরৌণের রাজকর্মকর্তাদের মধ্যে একজন তথা পাহারাদারদের দলপতি ছিলেন, তিনি তাঁকে সেই ইশ্মায়েলীয়দের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন, যারা তাঁকে মিশরে নিয়ে গেল। \p \v 2 সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন তাই তিনি সাফল্য পেলেন, এবং তিনি তাঁর মিশরীয় প্রভুর বাড়িতে বসবাস করতেন। \v 3 তাঁর প্রভু যখন দেখলেন যে সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন এবং তিনি যা যা করেন সবেতেই সদাপ্রভু তাঁকে সফলতা দেন, \v 4 তখন যোষেফ তাঁর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করলেন ও তাঁর সেবক হয়ে গেলেন। পোটিফর তাঁকে নিজের পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন, এবং তাঁর মালিকানাধীন সবকিছু দেখাশোনার দায়িত্বও তাঁকে দিলেন। \v 5 যে সময় থেকে তিনি যোষেফকে তাঁর পরিবারের ও তাঁর মালিকানাধীন সবকিছুর দায়িত্ব দিলেন, সদাপ্রভু যোষেফের জন্য সেই মিশরীয়ের পরিবারকে আশীর্বাদ করলেন। বাড়িতে ও জমিতে, পোটিফরের যা যা ছিল, সে সবকিছুর উপর সদাপ্রভুর আশীর্বাদ বর্তে ছিল। \v 6 অতএব পোটিফর তাঁর সবকিছু দেখাশোনার দায়িত্ব যোষেফের উপর ছেড়ে দিলেন; যোষেফ সেই দায়িত্ব সামলানোর সময়, তিনি যে যে খাবারদাবার খেতেন সেগুলি ছাড়া তিনি আর কোনো বিষয়ে চিন্তা করতেন না। \p যোষেফ শক্তপোক্ত ও সুদর্শন পুরুষ ছিলেন, \v 7 এবং কিছুকাল পর তার প্রভু-পত্নীর দৃষ্টি যোষেফের উপর গিয়ে পড়ল ও সে বলল, “আমার সাথে বিছানায় এসো!” \p \v 8 কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। “আমাকে দায়িত্ব দিয়ে,” তিনি তাকে বললেন, “আমার প্রভু বাড়ির কোনও বিষয়েই আর মাথা ঘামান না; তাঁর মালিকানাধীন সবকিছুই তিনি আমার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়েছেন। \v 9 এই বাড়িতে আমার চেয়ে বড়ো আর কেউ নেই। আপনাকে ছাড়া আর কোনো কিছুই আমার প্রভু আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেননি, কারণ আপনি যে তাঁর স্ত্রী। তবে কীভাবে আমি এ ধরনের জঘন্য কাজ এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করব?” \v 10 আর যদিও সেই মহিলা দিনের পর দিন যোষেফকে একই কথা বলে যাচ্ছিল, তবুও তিনি তাঁর সাথে বিছানায় যেতে অস্বীকার করলেন; এমনকি তিনি তাঁর সঙ্গে থাকতেও চাইলেন না। \p \v 11 একদিন তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য বাড়ির ভিতরে গেলেন, এবং পারিবারিক দাস-দাসীদের মধ্যে কেউই তখন ভিতরে ছিল না। \v 12 তাঁর প্রভু-পত্নী তাঁর আলখাল্লা টেনে ধরে বলল, “আমার সাথে বিছানায় এসো!” কিন্তু তিনি তার হাতে নিজের আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেন। \p \v 13 যখন সে দেখল যে যোষেফ তার হাতে নিজের আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন, \v 14 তখন সে তার পারিবারিক দাস-দাসীদের ডাক দিল। “দেখো,” সে তাদের বলল, “এই হিব্রুটিকে আমাদের সঙ্গে ফুর্তি করার জন্য আনা হয়েছে! সে এখানে ভিতরে এসে আমার সঙ্গে শুতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম। \v 15 যখন সে শুনল আমি সাহায্য পাওয়ার জন্য চিৎকার করছি, তখন সে আমার পাশে তার আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল।” \p \v 16 তাঁর প্রভু ঘরে না ফেরা পর্যন্ত সেই মহিলাটি তাঁর আলখাল্লাটি নিজের পাশে রেখে দিয়েছিল। \v 17 পরে সে পোটিফরকে এই গল্পটি বলে শোনাল: “যে হিব্রু ক্রীতদাসটিকে তুমি এনেছিলে, সে আমার সঙ্গে ফুর্তি করার জন্য আমার কাছে এসেছিল। \v 18 কিন্তু যেই না আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠেছিলাম, সে আমার পাশে তার আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছিল।” \p \v 19 “তোমার ক্রীতদাসটি আমার সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করেছে,” এই গল্পটি যখন যোষেফের প্রভু-পত্নী তাঁর প্রভুকে বলে শোনাল, তখন তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন। \v 20 যোষেফের প্রভু যোষেফকে ধরে সেই জেলখানায় পুরে দিলেন, যেখানে রাজার কয়েদিদের বন্দি করে রাখা হত। \p কিন্তু যোষেফ যখন সেই জেলখানায় ছিলেন, \v 21 সদাপ্রভু তখন তাঁর সঙ্গেই ছিলেন; তিনি তাঁকে দয়া দেখালেন ও সেই জেল-রক্ষকের দৃষ্টিতে তাঁকে অনুগ্রহ পেতেও দিলেন। \v 22 অতএব সেই জেল-রক্ষক যোষেফকে জেলের সব বন্দির তত্ত্বাবধায়ক করে দিলেন, এবং সেখানে যা যা কাজকর্ম হত, সেসবের দায়িত্বও তাঁকে দিলেন। \v 23 যোষেফের তত্ত্বাবধানে যা কিছু ছিল, তার কোনোটির প্রতিই সেই রক্ষক মনোযোগ দিতেন না, কারণ সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন ও তিনি যা কিছু করতেন, সবেতেই তিনি তাঁকে সাফল্য দিলেন। \c 40 \s1 পানপাত্র বহনকারী ও রুটিওয়ালা \p \v 1 কিছুকাল পর, মিশরের রাজার পানপাত্র বহনকারী ও রুটিওয়ালা তাদের প্রভুকে, মিশরের রাজাকে অসন্তুষ্ট করল। \v 2 ফরৌণ তাঁর সেই দুই কর্মকর্তার, প্রধান পানপাত্র বহনকারী ও প্রধান রুটিওয়ালার প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন, \v 3 এবং যে জেলখানায় যোষেফ বন্দি ছিলেন, সেখানে পাহারাদারদের দলপতির হেফাজতেই তাদের রেখে দিলেন। \v 4 পাহারাদারদের দলপতি তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব যোষেফকে দিলেন, এবং তিনি তাদের পরিচর্যা করলেন। \p তারা কিছুকাল সেখানে বন্দি থাকার পর, \v 5 দুজনের প্রত্যেকেই—যাদের জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল, মিশরের রাজার সেই পানপাত্র বহনকারী ও রুটিওয়ালা—একই রাতে একটি করে স্বপ্ন দেখল, এবং প্রত্যেকটি স্বপ্নেরই নিজস্ব অর্থ ছিল। \p \v 6 পরদিন সকালে যোষেফ যখন তাদের কাছে এলেন, তখন তিনি দেখলেন যে তারা দুজনেই বিমর্ষ হয়ে আছে। \v 7 অতএব ফরৌণের যে কর্মকর্তারা তাঁর প্রভুর বাড়িতে তাঁর সঙ্গে বন্দি অবস্থায় ছিল, তাদের তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আজ আপনাদের এত দুঃখিত দেখাচ্ছে কেন?” \p \v 8 “আমরা দুজনেই স্বপ্ন দেখেছি,” তারা উত্তর দিল, “কিন্তু সেগুলি ব্যাখ্যা করে দেওয়ার কেউ নেই।” \p তখন যোষেফ তাদের বললেন, “ব্যাখ্যা করার মালিক কি ঈশ্বর নন? আপনাদের স্বপ্নগুলি আমায় বলুন।” \p \v 9 অতএব প্রধান পানপাত্র বহনকারী যোষেফকে তার স্বপ্নটি বলল। সে তাঁকে বলল, “আমার স্বপ্নে আমার সামনে আমি একটি দ্রাক্ষালতা দেখলাম, \v 10 এবং সেই দ্রাক্ষালতায় তিনটি শাখা ছিল। সেটিতে কুঁড়ি ফোটামাত্র ফুলও ফুটে উঠল, এবং সেটির গুচ্ছগুলি পাকা দ্রাক্ষাফলে পরিণত হল। \v 11 ফরৌণের পানপাত্রটি আমার হাতে ছিল, এবং আমি সেই দ্রাক্ষাফলগুলি নিয়ে সেগুলি ফরৌণের পানপাত্রে নিংড়ে দিলাম এবং পানপাত্রটি তাঁর হাতে তুলে দিলাম।” \p \v 12 “এই হল এর অর্থ,” যোষেফ তাকে বললেন। “তিনটি শাখা হল তিন দিন। \v 13 তিনদিনের মধ্যে ফরৌণ আপনার মাথা উন্নত করবেন ও আপনাকে আপনার পদে পুনর্বহাল করবেন, এবং আপনি ফরৌণের হাতে তাঁর পানপাত্রটি তুলে দেবেন, ঠিক যেভাবে আপনি তাঁর পানপাত্র বহনকারী থাকার সময় করতেন। \v 14 কিন্তু সবকিছু যখন আপনার ক্ষেত্রে ঠিকঠাক হয়ে যাবে, তখন আপনি আমায় মনে রাখবেন ও আমার প্রতি দয়া দেখাবেন; ফরৌণের কাছে আমার কথা বলবেন এবং আমাকে এই জেলখানা থেকে মুক্ত করবেন। \v 15 হিব্রুদের দেশ থেকে আমাকে জোর করে ধরে আনা হয়েছে এবং এমনকি এখানেও আমি এমন কোনও কিছু করিনি যে কারণে আমাকে অন্ধকূপে থাকতে হবে।” \p \v 16 যখন প্রধান রুটিওয়ালা দেখল যে যোষেফ এক যথাযথ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তখন তিনি যোষেফকে বললেন, “আমিও একটি স্বপ্ন দেখেছি: আমার মাথায় তিন ঝুড়ি রুটি\f + \fr 40:16 \fr*\ft অথবা, কঞ্চির তৈরি তিন ঝুড়ি রুটি\ft*\f* রাখা ছিল। \v 17 একদম উপরের ঝুড়িটিতে ফরৌণের জন্য সব ধরনের সেঁকা খাবারদাবার ছিল, কিন্তু পাখিরা আমার মাথায় রাখা সেই ঝুড়ি থেকে সেগুলি খেয়ে নিচ্ছিল।” \p \v 18 “এই হল এর অর্থ,” যোষেফ বললেন। “সেই তিনটি ঝুড়ি হল তিন দিন। \v 19 তিনদিনের মধ্যে ফরৌণ আপনার মাথা কেটে ফেলবেন ও আপনার দেহটি শূলে চড়াবেন। আর পাখিরা আপনার মাংস খুবলে খুবলে খাবে।” \p \v 20 তৃতীয় দিনটি ছিল ফরৌণের জন্মদিন, এবং তিনি তাঁর সব কর্মকর্তার জন্য এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। তাঁর সব কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তিনি তাঁর প্রধান পানপাত্র বহনকারী ও প্রধান রুটিওয়ালার মাথা উন্নত করলেন: \v 21 প্রধান পানপাত্র বহনকারীকে তিনি তাঁর পদে পুনর্বহাল করলেন, যেন তিনি আরও একবার ফরৌণের হাতে পানপাত্রটি তুলে দিতে পারেন— \v 22 কিন্তু প্রধান রুটিওয়ালাকে তিনি শূলে চড়ালেন, ঠিক যেমনটি যোষেফ তাঁর ব্যাখ্যায় তাদের বলেছিলেন। \p \v 23 প্রধান পানপাত্র বহনকারী, অবশ্য, যোষেফকে মনে রাখেনি; সে তাঁকে ভুলে গেল। \c 41 \s1 ফরৌণের স্বপ্ন \p \v 1 সম্পূর্ণ দুই বছর যখন পার হয়ে গেল, তখন ফরৌণ একটি স্বপ্ন দেখলেন: তিনি নীলনদের কূলে দাঁড়িয়েছিলেন, \v 2 পরে নদী থেকে সাতটি মসৃণ ও হৃষ্টপুষ্ট গরু উঠে এল, এবং সেগুলি নলখাগড়ার বনে চরছিল। \v 3 এগুলির পরে অন্য আরও সাতটি কুৎসিতদর্শন ও অস্থিচর্মসার গরু, নীলনদ থেকে উঠে এল ও নদীর কূলে চরা সেই গরুগুলির পাশে এসে দাঁড়াল। \v 4 আর যে গরুগুলি কুৎসিত ও অস্থিচর্মসার ছিল, সেগুলি মসৃণ ও হৃষ্টপুষ্ট গরুগুলিকে গিলে ফেলল। পরে ফরৌণ জেগে উঠলেন। \p \v 5 তিনি আবার ঘুমিয়ে পড়লেন ও দ্বিতীয় একটি স্বপ্ন দেখলেন: সাতটি স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর শস্যদানার শিষ একটিমাত্র বৃন্তে বেড়ে উঠছিল। \v 6 সেগুলির পরে, আরও সাতটি শস্যদানার শিষ—কৃষকায় ও পূর্বীয় বায়ু দ্বারা ঝলসিত শিষ অঙ্কুরিত হল। \v 7 সেই সাতটি কৃষকায় শিষ সাতটি স্বাস্থ্যকর, পূর্ণ শিষকে গিলে ফেলল। পরে ফরৌণ জেগে উঠলেন; তা এক স্বপ্ন ছিল। \p \v 8 সকালবেলায় তাঁর মন অস্থির হয়ে পড়ল, তাই তিনি মিশরের সব জাদুকর ও জ্ঞানীগুণী মানুষজনকে ডেকে পাঠালেন। ফরৌণ তাঁর স্বপ্নের কথা তাঁদের বললেন, কিন্তু কেউই সেগুলি তাঁর জন্য ব্যাখ্যা করে দিতে পারলেন না। \p \v 9 তখন সেই প্রধান পানপাত্র বহনকারী ফরৌণকে বলল, “আমার ত্রুটি-বিচ্যূতির কথা আজ আমার মনে পড়ছে। \v 10 ফরৌণ একবার তাঁর দাসদের উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, এবং তিনি আমাকে ও প্রধান রুটিওয়ালাকে পাহারাদারদের দলপতির বাড়িতে বন্দি করে রেখেছিলেন। \v 11 একই রাতে আমরা দুজনেই একটি করে স্বপ্ন দেখেছিলাম, এবং প্রত্যেকটি স্বপ্নেরই নিজস্ব এক অর্থ ছিল। \v 12 সেখানে পাহারাদারদের দলপতির দাস, এক হিব্রু যুবক আমাদের সঙ্গেই ছিল। আমরা তাকে আমাদের স্বপ্নগুলি বলেছিলাম, এবং সে আমাদের জন্য সেগুলি ব্যাখ্যা করে দিয়েছিল, প্রত্যেককে তার স্বপ্নের অর্থ জানিয়েছিল। \v 13 আর যেভাবে সে আমাদের কাছে সেগুলি ব্যাখ্যা করে দিয়েছিল, ঠিক সেভাবেই তা ঘটল: আমি আমার পদে পুনর্বহাল হলাম, এবং অন্যজনকে শূলে চড়ানো হল।” \p \v 14 অতএব ফরৌণ যোষেফকে ডেকে পাঠালেন, এবং তাঁকে তাড়াতাড়ি অন্ধকূপ থেকে নিয়ে আসা হল। চুল-দাড়ি কামিয়ে ও পোশাক পরিবর্তন করে তিনি ফরৌণের সামনে এলেন। \p \v 15 ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি, এবং কেউই সেটির ব্যাখ্যা করতে পারছে না। কিন্তু আমি তোমার বিষয়ে শুনেছি যে তুমি যখন কোনও স্বপ্নের কথা শোনো, তখন তা ব্যাখ্যা করে দিতে পারো।” \p \v 16 “আমি তা করতে পারি না,” যোষেফ ফরৌণকে উত্তর দিলেন, “কিন্তু ফরৌণের ইচ্ছানুসারে ঈশ্বরই তাঁকে উত্তর দেবেন।” \p \v 17 তখন ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “আমার স্বপ্নে আমি যখন নীলনদের কূলে দাঁড়িয়েছিলাম, \v 18 তখন নদী থেকে সাতটি হৃষ্টপুষ্ট ও মসৃণ গরু উঠে এল, এবং সেগুলি নলখাগড়ার বনে চরছিল। \v 19 সেগুলির পিছু পিছু, অন্য সাতটি গরু উঠে এল—অস্থিসার ও খুব কুৎসিত এবং কৃষকায়। সমগ্র মিশর দেশে আমি এরকম কুৎসিত গরু কখনও দেখিনি। \v 20 সেই কৃষকায়, কুৎসিত গরুগুলি সেই সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গরুকে খেয়ে ফেলল। \v 21 কিন্তু সেগুলি খেয়ে ফেলার পরও, কেউই বলতে পারেনি যে তারাই এ কাজ করেছিল; আগের মতো তখনও সেগুলিকে কুৎসিতই দেখাচ্ছিল। পরে আমি জেগে উঠলাম। \p \v 22 “আমার স্বপ্নে আমি একই বৃন্তে বেড়ে ওঠা শস্যদানার সাতটি পূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর শিষ দেখেছিলাম। \v 23 সেগুলির পিছু পিছু, আরও সাতটি শিষ অঙ্কুরিত হল—শুকনো ও কৃষকায় ও পূর্বীয় বায়ু দ্বারা ঝলসিত। \v 24 শস্যদানার সেই কৃষকায় শিষগুলি সেই সাতটি সুন্দর শিষকে গিলে ফেলল। আমি একথা জাদুকরদের বললাম, কিন্তু তাদের মধ্যে কেউই আমার কাছে তা ব্যাখ্যা করে দিতে পারেনি।” \p \v 25 তখন যোষেফ ফরৌণকে বললেন, “ফরৌণের স্বপ্নগুলি এক ও অনুরূপ। ঈশ্বর ফরৌণের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন তিনি কী করতে চলেছেন। \v 26 সাতটি সুন্দর গরু হল সাত বছর এবং সাতটি সুন্দর শস্যদানার শিষ হল সাত বছর; এ হল এক ও অনুরূপ স্বপ্ন। \v 27 যে সাতটি কৃষকায়, কুৎসিত গরু পরে উঠে এল সেগুলি সাত বছর, এবং পূর্বীয় বায়ু দ্বারা ঝলসিত শস্যদানার সাতটি রুগ্ন অখাদ্য শিষও তাই: সেগুলি হল সাত বছরের দুর্ভিক্ষ। \p \v 28 “আমি ফরৌণকে যেমনটি বললাম তা ঠিক এরকম: ঈশ্বর যা করতে চলেছেন তা তিনি ফরৌণকে দেখিয়েছেন। \v 29 মিশর দেশে অতিপ্রাচুর্যময় সাতটি বছর আসতে চলেছে, \v 30 কিন্তু তার পিছু পিছু দুর্ভিক্ষকবলিত সাতটি বছর আসবে। তখন মিশরের সব প্রাচুর্য মানুষ ভুলে যাবে, এবং দুর্ভিক্ষ দেশটিকে ধ্বংস করে দেবে। \v 31 দেশের প্রাচুর্যকে কেউ মনে রাখবে না, কারণ যে দুর্ভিক্ষ সেটির পিছু পিছু আসতে চলেছে তা খুব ভয়াবহ হবে। \v 32 ফরৌণকে দুটি আকারে স্বপ্নটি দেওয়ার কারণ হল এই যে বিষয়টি ঈশ্বর দ্বারা অটলভাবে নিশ্চিত হয়ে আছে, এবং অচিরেই ঈশ্বর তা বাস্তবায়িত করবেন। \p \v 33 “আর এখন ফরৌণ একজন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান লোক খুঁজে বের করুন এবং তার হাতে মিশর দেশের দায়িত্ব তুলে দিন। \v 34 প্রাচুর্যময় সাত বছর ধরে মিশরে উৎপন্ন শস্যের এক-পঞ্চমাংশ আদায় করার জন্য ফরৌণ সারা দেশে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ করুন। \v 35 তাঁরা আগামী এই সুন্দর বছরগুলিতে যেন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করেন এবং ফরৌণের কতৃর্ত্বের অধীনে সেই শস্য মজুত করে যেন নগরগুলিতে খাদ্যভাণ্ডার গড়ে রাখেন। \v 36 মিশরের উপর দুর্ভিক্ষকবলিত যে সাতটি বছর নেমে আসতে চলেছে, সেই সময় ব্যবহারের উপযোগী করে দেশের জন্য এই খাদ্যশস্য মজুত করে রাখতে হবে, যেন দেশটি সেই দুর্ভিক্ষ দ্বারা ধ্বংস হয়ে না যায়।” \p \v 37 ফরৌণের ও তাঁর সব কর্মকর্তার কাছে সেই পরিকল্পনাটি বেশ ভালো বলে মনে হল। \v 38 অতএব ফরৌণ তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এই লোকটির মতো কাউকে কি আমরা খুঁজে পাব, যার অন্তরে ঈশ্বরের\f + \fr 41:38 \fr*\ft অথবা, দেবতাদের\ft*\f* আত্মা আছে?” \p \v 39 পরে ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “যেহেতু ঈশ্বর এসব কিছু তোমাকেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাই তোমার মতো এত বিচক্ষণ ও জ্ঞানীগুণী আর কেউ নেই। \v 40 তুমিই আমার প্রাসাদের দায়িত্ব সামলাবে, এবং আমার সব প্রজাকে তোমার আদেশের অধীন হতে হবে। শুধুমাত্র সিংহাসনের ক্ষেত্রে আমি তোমার চেয়ে মহত্তর হব।” \s1 যোষেফ মিশরের দায়িত্ব পান \p \v 41 অতএব ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “আমি এতদ্বারা তোমার হাতে সম্পূর্ণ মিশর দেশের দায়িত্ব সমর্পণ করে দিলাম।” \v 42 পরে ফরৌণ নিজের আঙুল থেকে তাঁর সিলমোহরের আংটিটি খুলে যোষেফের আঙুলে পরিয়ে দিলেন। তিনি তাঁকে মিহি মসিনার আলখাল্লা দিয়ে সুসজ্জিত করলেন এবং তাঁর গলায় সোনার এক হার পরিয়ে দিলেন। \v 43 তিনি তাঁকে পদমর্যাদায় তাঁর দ্বিতীয় প্রধান করে একটি রথে\f + \fr 41:43 \fr*\ft অথবা, পদমর্যাদায় তাঁর দ্বিতীয় প্রধানের রথে; বা, তাঁর দ্বিতীয় রথে\ft*\f* চড়িয়ে দিলেন এবং লোকজন তাঁর সামনে চিৎকার করতে লাগল, “রাস্তা করে দাও\f + \fr 41:43 \fr*\ft অথবা, মাথা নত করো\ft*\f*!” এভাবে তিনি যোষেফের হাতে সম্পূর্ণ মিশর দেশের দায়িত্ব তুলে দিলেন। \p \v 44 পরে ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “আমি ফরৌণ, কিন্তু তোমার আদেশ ছাড়া সমগ্র মিশরে কেউ হাত বা পা ওঠাবে না।” \v 45 ফরৌণ যোষেফের নাম রাখলেন সাফনৎ-পানেহ এবং তাঁর স্ত্রী হওয়ার জন্য তিনি ওনের\f + \fr 41:45 \fr*\ft অর্থাৎ, হেলিওপোলিস; 50 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* যাজক পোটীফেরের মেয়ে আসনৎকে দান করলেন। আর যোষেফ সমগ্র মিশর দেশ জুড়ে ঘুরে বেড়ালেন। \p \v 46 ত্রিশ বছর বয়সে যোষেফ মিশরের রাজা ফরৌণের কাজে যোগ দিলেন। আর যোষেফ ফরৌণের সামনে থেকে চলে গেলেন এবং সমগ্র মিশর জুড়ে ঘুরে বেড়ালেন। \v 47 প্রাচুর্যময় সাত বছর জমিতে প্রচুর ফসল উৎপন্ন হল। \v 48 প্রাচুর্যময় সেই সাত বছর ধরে মিশরে যত খাদ্যশস্য উৎপন্ন হল, যোষেফ সেসব সংগ্রহ করলেন ও নগরগুলিতে মজুত করে রাখলেন। প্রত্যেকটি নগরের চারপাশের জমিতে উৎপন্ন খাদ্যশস্য তিনি সেইসব নগরেই রেখে দিলেন। \v 49 প্রচুর খাদ্যশস্য, সমুদ্রের বালুকণার মতো করে যোষেফ মজুত করে ফেললেন; তা পরিমাণে এত বেশি ছিল যে তিনি হিসেব রাখা বন্ধ করে দিলেন, কারণ তা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। \p \v 50 দুর্ভিক্ষকবলিত বছরগুলি এসে পড়ার আগেই, ওনের যাজক পোটীফেরের মেয়ে আসনতের মাধ্যমে যোষেফের দুই ছেলে জন্মেছিল। \v 51 যোষেফ তাঁর বড়ো ছেলের নাম রাখলেন মনঃশি\f + \fr 41:51 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় মনঃশি শব্দটি, ভুলে যাওয়ার সমার্থক\ft*\f* এবং বললেন, “যেহেতু ঈশ্বর আমাকে আমার সব দুঃখকষ্ট ও আমার বাবার পুরো পরিবারকেই ভুলিয়ে দিয়েছেন।” \v 52 দ্বিতীয় ছেলের নাম তিনি রাখলেন ইফ্রয়িম\f + \fr 41:52 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় ইফ্রয়িম শব্দটি শুনলে মনে হয় দ্বিগুণ ফলপ্রসূ\ft*\f* এবং বললেন “যেহেতু ঈশ্বর আমাকে আমার দুঃখের দেশে ফলপ্রসূ করেছেন।” \p \v 53 মিশরে প্রাচুর্যময় সাত বছর সমাপ্ত হল, \v 54 এবং দুর্ভিক্ষকবলিত সাত বছর শুরু হল, যোষেফ ঠিক যেমনটি বলেছিলেন। অন্যান্য দেশেও দুর্ভিক্ষ হল, কিন্তু সমগ্র মিশর দেশে খাদ্যদ্রব্য ছিল। \v 55 সমগ্র মিশরে যখন দুর্ভিক্ষের অনুভূতি শুরু হল, তখন প্রজারা ফরৌণের কাছে খাদ্যদ্রব্যের জন্য কান্নাকাটি করল। তখন ফরৌণ সব মিশরবাসীকে বললেন, “যোষেফের কাছে যাও ও সে যা বলবে তাই করো।” \p \v 56 দুর্ভিক্ষ যখন সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ল, তখন যোষেফ সব আড়ত খুলে দিলেন ও মিশরীয়দের কাছে খাদ্যশস্য বিক্রি করলেন, কারণ সমগ্র মিশর জুড়ে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ ধারণ করল। \v 57 সমগ্র জগৎ মিশরে যোষেফের কাছে খাদ্যশস্য কিনতে এল, কারণ দুর্ভিক্ষ সর্বত্র ভয়াবহ রূপ ধারণ করল। \c 42 \s1 যোষেফের দাদারা মিশরে যান \p \v 1 যাকোব যখন জানতে পারলেন যে মিশর দেশে খাদ্যশস্য আছে, তখন তিনি তাঁর ছেলেদের বললেন, “তোমরা কেন শুধু পরস্পরের মুখ দেখাদেখি করছ?” \v 2 তিনি আরও বললেন, “আমি শুনেছি যে মিশরে খাদ্যশস্য আছে। সেখানে যাও ও আমাদের জন্য কিছুটা খাদ্যশস্য কিনে আনো, যেন আমরা বাঁচতে পারি ও মরে না যাই।” \p \v 3 তখন যোষেফের দাদা-ভাইদের মধ্যে দশজন মিশর থেকে খাদ্যশস্য কিনে আনার জন্য সেখানে গেলেন। \v 4 কিন্তু যাকোব যোষেফের ছোটো ভাই বিন্যামীনকে, অন্যদের সঙ্গে পাঠাননি, কারণ তিনি ভয় পেয়েছিলেন, পাছে তার কোনও ক্ষতি হয়। \v 5 অতএব যারা খাদ্যশস্য কেনার জন্য মিশরে গেল তাদের মধ্যে ইস্রায়েলের ছেলেরাও ছিলেন, কারণ কনান দেশেও দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। \p \v 6 যোষেফ ছিলেন সেদেশের সেই শাসনকর্তা, যিনি সেখানকার সব প্রজার কাছে খাদ্যশস্য বিক্রি করছিলেন। অতএব যোষেফের দাদারা যখন সেখানে পৌঁছালেন, তাঁরা মাটিতে মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন। \v 7 যোষেফ তাঁর দাদাদের দেখামাত্রই, তাঁদের চিনতে পারলেন, কিন্তু তিনি এক অপরিচিত লোক হওয়ার ভান করলেন ও তাঁদের সঙ্গে কর্কশভাবে কথা বললেন। “তোমরা কোথা থেকে এসেছ?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p “কনান দেশ থেকে,” তাঁরা উত্তর দিলেন, “খাদ্যশস্য কেনার জন্য।” \p \v 8 যোষেফ যদিও তাঁর দাদাদের চিনতে পেরেছিলেন, তাঁরা তাঁকে চিনতে পারেননি। \v 9 তখন তাঁর সেই স্বপ্নের কথা মনে পড়ল, যা তিনি তাঁদের সম্বন্ধে দেখেছিলেন এবং তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা গুপ্তচর! তোমরা দেখতে এসেছ কোথায় আমাদের দেশ অসুরক্ষিত হয়ে আছে।” \p \v 10 “হে আমার প্রভু, না,” তাঁরা উত্তর দিলেন। “আপনার দাসেরা খাদ্যশস্য কিনতে এসেছে। \v 11 আমরা সবাই এক ব্যক্তিরই ছেলে। আপনার দাসেরা সৎলোক, তারা গুপ্তচর নয়।” \p \v 12 “না!” তিনি তাঁদের বললেন। “তোমরা দেখতে এসেছ কোথায় আমাদের দেশ অসুরক্ষিত হয়ে আছে।” \p \v 13 কিন্তু তাঁরা উত্তর দিলেন, “আপনার দাসেরা মোট বারোজন ভাই ছিল, সবাই সেই একজনেরই ছেলে, যিনি কনান দেশে বসবাস করেন। ছোটো ছেলেটি এখন আমাদের বাবার সঙ্গে আছে, এবং অন্যজন আর বেঁচে নেই।” \p \v 14 যোষেফ তাদের বললেন, “আমি যা বলেছি তাই ঠিক: তোমরা গুপ্তচর! \v 15 আর এভাবেই তোমাদের পরীক্ষা করা হবে: ফরৌণের প্রাণের দিব্যি, যতক্ষণ না তোমাদের ছোটো ভাই এখানে আসছে, তোমরা এই স্থান ছেড়ে যেতে পারবে না। \v 16 তোমাদের ভাইকে নিয়ে আসার জন্য তোমাদের মধ্যে থেকে একজনকে পাঠাও; তোমাদের মধ্যে অবশিষ্টজনেদের জেলখানায় পুরে রাখা হবে, যেন তোমাদের কথা পরীক্ষা করে দেখা যায় যে আদৌ তোমরা সত্যিকথা বলছ কি না। যদি তা না হয়, তবে ফরৌণের প্রাণের দিব্যি, তোমরা গুপ্তচরই!” \v 17 আর তিনদিনের জন্য তিনি তাঁদের জেলে বন্দি করে রাখলেন। \p \v 18 তৃতীয় দিনে, যোষেফ তাঁদের বললেন “এরকম করো ও তোমরা বেঁচে যাবে, কারণ আমি ঈশ্বরকে ভয় করি: \v 19 যদি তোমরা সৎলোক হও, তবে তোমাদের ভাইদের মধ্যে একজন এখানে জেলখানায় থাকো, ততক্ষণ তোমাদের মধ্যে অন্যেরা চলে যাও ও তোমাদের নিরন্ন পরিবার-পরিজনেদের জন্য খাদ্যশস্যও নিয়ে যাও। \v 20 কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের ছোটো ভাইকে আমার কাছে নিয়ে আসবে, যেন তোমাদের বলা কথা যাচাই করা যায় ও তোমরা মারা না যাও।” তাঁরা তাই করতে উদ্যত হলেন। \p \v 21 তাঁরা পরস্পরকে বললেন, “আমাদের ভাইয়ের কারণেই আমরা শাস্তি পাচ্ছি। সে যখন আমাদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইছিল, আমরা দেখেছিলাম সে কত আকুল হয়ে পড়েছিল, কিন্তু আমরা তার কথা শুনিনি; সেজন্যই আমাদের উপর এই চরম বিপদ ঘনিয়েছে।” \p \v 22 রূবেণ উত্তর দিলেন, “আমি কি তোমাদের বলিনি যে বালকটির বিরুদ্ধে কোনও পাপ কোরো না? কিন্তু তোমরা তা শোনোনি! এখন তার রক্তের হিসেব আমাদের দিতেই হবে।” \v 23 তাঁরা অনুভবই করতে পারেননি যে যোষেফ তাঁদের কথা বুঝতে পারছিলেন, কারণ তিনি একজন অনুবাদক ব্যবহার করছিলেন। \p \v 24 তিনি তাঁদের কাছ থেকে দূরে সরে গেলেন ও কাঁদতে শুরু করলেন, কিন্তু পরে আবার ফিরে এলেন ও তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি তাঁদের মধ্যে থেকে শিমিয়োনকে নিয়ে তাঁদের চোখের সামনেই তাকে বেঁধে ফেললেন। \p \v 25 যোষেফ তাঁদের বস্তাগুলি খাদ্যশস্য দিয়ে ভর্তি করার, প্রত্যেকের রুপো তাঁদের বস্তায় আবার রেখে দেওয়ার, ও তাঁদের যাত্রাপথের জন্য প্রয়োজনীয় রসদপত্র তাঁদের দেওয়ার আদেশ দিলেন। তাঁদের জন্য এসব কিছু সম্পন্ন হওয়ার পর, \v 26 তাঁরা তাঁদের গাধাগুলির পিঠে তাঁদের খাদ্যশস্য চাপিয়ে রওনা হয়ে গেলেন। \p \v 27 রাত্রিযাপনের জন্য একটি স্থানে তাঁরা দাঁড়ানোর পর তাঁদের মধ্যে একজন তাঁর গাধার জাবনা নেওয়ার জন্য নিজের বস্তাটি খুললেন, আর তিনি বস্তার মুখে তাঁর রুপো দেখতে পেলেন। \v 28 “আমার রুপো ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে,” তিনি তাঁর ভাইদের বললেন। “এখানে আমার বস্তার মধ্যে তা রাখা আছে।” \p তাঁদের মনে কাঁপুনি ধরে গেল এবং তাঁরা কাঁপতে কাঁপতে পরস্পরের দিকে ফিরে বললেন, “ঈশ্বর আমাদের প্রতি এ কী করলেন?” \p \v 29 কনান দেশে তাঁরা যখন তাঁদের বাবা যাকোবের কাছে এলেন, তখন তাঁরা তাঁদের প্রতি যা যা ঘটেছিল সেসব কথা তাঁকে বললেন। তাঁরা বললেন, \v 30 “যে লোকটি সে দেশের প্রভু, তিনি আমাদের সঙ্গে কর্কশভাবে কথা বললেন এবং আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করলেন যে আমরা বুঝি সেই দেশে গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়েছি। \v 31 কিন্তু আমরা তাঁকে বললাম, ‘আমরা সৎলোক; আমরা গুপ্তচর নই। \v 32 আমরা বারোটি ভাই, সবাই একই বাবার ছেলে। একজন আর বেঁচে নেই, এবং ছোটো ভাই এখন কনানে আমাদের বাবার সাথে আছে।’ \p \v 33 “তখন সেদেশের প্রভু সেই লোকটি আমাদের বললেন, ‘এভাবেই আমি জানতে পারব তোমরা সৎলোক কি না: তোমাদের ভাইদের মধ্যে একজনকে এখানে আমার কাছে ছেড়ে যাও, এবং তোমাদের নিরন্ন পরিবার-পরিজনেদের জন্য খাদ্যশস্য নাও ও চলে যাও। \v 34 কিন্তু তোমাদের ছোটো ভাইকে আমার কাছে নিয়ে এসো যেন আমি জানতে পারি যে তোমরা গুপ্তচর নও কিন্তু সৎলোক। পরে আমি তোমাদের ভাইকে তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব, এবং তোমরা এই দেশে ব্যবসাবাণিজ্য\f + \fr 42:34 \fr*\ft অথবা, স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা\ft*\f* করতে পারো।’ ” \p \v 35 তাঁরা যখন তাঁদের বস্তাগুলি খালি করছিলেন, প্রত্যেকের বস্তাতেই তাঁদের রুপো ভর্তি বটুয়া পাওয়া গেল! যখন তাঁরা এবং তাঁদের বাবা টাকার বটুয়াগুলি দেখলেন, তখন তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। \v 36 তাঁদের বাবা যাকোব তাঁদের বললেন, “তোমরা আমাকে সন্তানহীন করেছ, যোষেফ আর বেঁচে নেই ও শিমিয়োনও আর নেই, এবং এখন তোমরা বিন্যামীনকে নিয়ে যেতে চাইছ। সবকিছুই আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে!” \p \v 37 তখন রূবেণ তাঁর বাবাকে বললেন, “আমি যদি তাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে আনতে না পারি তবে আপনি আমার দুই ছেলেকে মেরে ফেলতে পারেন। তার দায়িত্ব আমার হাতে তুলে দিন, আর আমি তাকে ফিরিয়ে আনব।” \p \v 38 কিন্তু যাকোব বললেন, “আমার ছেলে তোমাদের সাথে সেখানে যাবে না; তার দাদা মারা গিয়েছে এবং একমাত্র ওই বেঁচে আছে। তোমাদের যাত্রাপথে ওর যদি কোনও ক্ষতি হয়, তবে শোকার্ত অবস্থায় পাকাচুলে তোমরা আমাকে কবরে পাঠিয়ে দেবে।” \c 43 \s1 মিশরের উদ্দেশে দ্বিতীয় যাত্রা \p \v 1 তখনও পর্যন্ত সেদেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ চলছিল। \v 2 অতএব যখন তাঁরা মিশর থেকে আনা সব খাদ্যশস্য খেয়ে ফেললেন, তখন তাঁদের বাবা তাঁদের বললেন, “তোমরা ফিরে যাও ও আমাদের জন্য আরও কিছু খাদ্যশস্য কিনে আনো।” \p \v 3 কিন্তু যিহূদা তাঁকে বললেন, “সেই লোকটি শপথপূর্বক আমাদের সাবধান করে দিয়েছিলেন, ‘তোমাদের ভাই যদি তোমাদের সঙ্গে না থাকে তবে তোমরা আর আমার মুখদর্শন করবে না।’ \v 4 আপনি যদি আমাদের সঙ্গে আমাদের ভাইকে পাঠান, তবেই আমরা সেখানে যাব ও আপনার জন্য খাদ্যশস্য কিনে আনব। \v 5 কিন্তু আপনি যদি তাকে না পাঠান, আমরা সেখানে যাব না, কারণ সেই লোকটি আমাদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের ভাই যদি তোমাদের সঙ্গে না থাকে তবে তোমরা আর আমার মুখদর্শন করবে না।’ ” \p \v 6 ইস্রায়েল জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই লোকটিকে একথা বলে কেন তোমরা আমার উপর এই বিপত্তি ডেকে এনেছ যে তোমাদের অন্য একটি ভাই আছে?” \p \v 7 তাঁরা উত্তর দিলেন, “সেই লোকটি আমাদের বিষয়ে ও আমাদের পরিবারের বিষয়ে পুঙ্খনাপুঙ্খভাবে আমাদের প্রশ্ন করেছিলেন। ‘তোমাদের বাবা কি এখনও জীবিত আছেন?’ তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন। ‘তোমাদের কি অন্য কোনও ভাই আছে?’ আমরা শুধু তাঁর প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়েছিলাম। আমরা কীভাবে জানব যে তিনি বলবেন, ‘তোমাদের ভাইকে এখানে নিয়ে এসো’?” \p \v 8 তখন যিহূদা তাঁর বাবা ইস্রায়েলকে বললেন, “বালকটিকে আমার সঙ্গে পাঠিয়ে দিন এবং আমরা এখনই রওনা দেব, যেন আমরা ও আপনি এবং আমাদের সন্তানেরা বাঁচতে পারি এবং না মরি। \v 9 আমি নিজে তার নিরাপত্তার মুচলেকা দেব; তার জন্য আপনি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে দায়ী করতে পারেন। আমি যদি তাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে আনতে না পারি ও আপনার সামনে তাকে দাঁড় করাতে না পারি, তবে সারা জীবন আমি এই দোষ বয়ে বেড়াব। \v 10 তবে ঘটনা হল এই যে, আমরা যদি দেরি না করতাম, তবে এতক্ষণে আমরা দু-দুবার সেখানে গিয়ে ফিরে আসতে পারতাম।” \p \v 11 তখন তাঁদের বাবা ইস্রায়েল তাঁদের বললেন, “যদি তা আবশ্যক হয়, তবে এরকম করো: তোমাদের বস্তাগুলিতে এদেশের শ্রেষ্ঠ দ্রব্যগুলির মধ্যে কিছু কিছু নিয়ে রাখো ও এক উপহারসামগ্রীরূপে সেগুলি সেই লোকটির কাছে নিয়ে যাও—যেমন সামান্য কিছু গুগ্‌গুল ও সামান্য কিছু মধু, কিছু মশলাপাতি ও গন্ধরস, কিছু পেস্তাবাদাম ও কাঠবাদাম। \v 12 তোমরা নিজেদের সঙ্গে দ্বিগুণ পরিমাণ রুপো নাও, কারণ সেই রুপোগুলি তোমাদের ফেরত দিতে হবে যা তোমাদের বস্তার মুখে রেখে দেওয়া হয়েছিল। হয়তো ভুলবশতই তা হয়েছিল। \v 13 তোমাদের ভাইকেও সঙ্গে নাও এবং এখনই সেই লোকটির কাছে চলে যাও। \v 14 আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বর\f + \fr 43:14 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, এল-শাদ্দাই\ft*\f* সেই লোকটির দৃষ্টিতে তোমাদের দয়া পেতে দিন, যেন তিনি তোমাদের অন্য ভাইকে ও বিন্যামীনকে তোমাদের সঙ্গে ফিরে আসতে দেন। আমার আর কি, আমাকে যদি সন্তানহারা হতে হয় তবে তাই হোক।” \p \v 15 অতএব তাঁরা উপহারসামগ্রী ও দ্বিগুণ পরিমাণ রুপো, এবং বিন্যামীনকেও সঙ্গে নিলেন। তাঁরা তাড়াতাড়ি করে মিশরে গেলেন ও যোষেফের কাছে নিজেদের উপস্থিত করলেন। \v 16 যোষেফ যখন বিন্যামীনকে তাঁদের সঙ্গে দেখতে পেলেন, তখন তিনি তাঁর বাড়ির গোমস্তাকে বললেন, “এদের আমার বাড়িতে নিয়ে যাও, একটি পশু বধ করো এবং ভোজের আয়োজন করো, দুপুরবেলায় এরা আমাদের সঙ্গে ভোজনপান করবে।” \p \v 17 যোষেফ যেমনটি করতে বললেন, সেই লোকটি ঠিক সেরকমই করলেন এবং তাঁদের যোষেফের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। \v 18 যখন তাঁদের তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হল তখন তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। তাঁরা ভাবলেন, “প্রথমবার আমাদের বস্তায় যে রুপো রেখে দেওয়া হয়েছিল সেজন্যই আমাদের এখানে আনা হয়েছে। তিনি আমাদের উপর হামলা করতে ও ক্রীতদাসরূপে আমাদের গ্রেপ্তার করতে এবং আমাদের গাধাগুলি দখল করে নিতে চাইছেন।” \p \v 19 অতএব তাঁরা যোষেফের গোমস্তার কাছে চলে গেলেন ও বাড়ির প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন। \v 20 “হে আমাদের প্রভু, আমরা আপনার দয়া ভিক্ষা করছি,” তাঁরা বললেন, “প্রথমবার আমরা এখানে খাদ্যশস্য কেনার জন্যই এসেছিলাম। \v 21 কিন্তু রাত্রিযাপনের জন্য আমরা একটি স্থানে থেমে আমাদের বস্তাগুলি খুলেছিলাম এবং আমাদের প্রত্যেকেই বস্তার মুখে নিজের নিজের রুপো—একেবারে নির্ভুল ওজনের রুপো—খুঁজে পেয়েছিলাম। তাই আমরা তা নিজেদের সঙ্গে করে ফিরিয়ে এনেছি। \v 22 খাদ্যশস্য কেনার জন্য আমরা আরও কিছু রুপো আমাদের সঙ্গে করে এনেছি। আমরা জানি না কে আমাদের বস্তাগুলিতে আমাদের রুপোগুলি রেখে দিয়েছিল।” \p \v 23 “ঠিক আছে,” তিনি বললেন। “ভয় পেয়ো না। তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পৈত্রিক ঈশ্বর, তোমাদের বস্তাগুলিতে পুরে তোমাদের ধনসম্পদ দিয়েছেন; আমি তোমাদের রুপো পেয়েছি।” পরে তিনি শিমিয়োনকে তাঁদের কাছে আনলেন। \p \v 24 সেই গোমস্তা তাঁদের যোষেফের বাড়িতে নিয়ে গেলেন, তাঁদের পা ধোয়ার জন্য তাঁদের জল দিলেন এবং তাঁদের গাধাগুলির জন্য জাবনার জোগান দিলেন। \v 25 দুপুরে যোষেফ আসবেন বলে তাঁরা তাঁদের উপহারসামগ্রী প্রস্তুত করে রাখলেন, কারণ তাঁরা শুনেছিলেন যে সেখানে তাঁদের ভোজনপান করতে হবে। \p \v 26 যোষেফ যখন ঘরে এলেন, তখন সেই বাড়িতে তাঁরা যেসব উপহারসামগ্রী নিয়ে এসেছিলেন, সেগুলি তাঁরা তাঁকে দিলেন, এবং মাটিতে নতমস্তক হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। \v 27 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন তারা কেমন আছেন, এবং পরে তিনি বললেন, “তোমাদের যে বৃদ্ধ বাবার কথা তোমরা বলেছিলে, তিনি কেমন আছেন? তিনি কি এখনও বেঁচে আছেন?” \p \v 28 তাঁরা উত্তর দিলেন, “আপনার দাস আমাদের বাবা এখনও বেঁচে আছেন ও ভালোই আছেন।” এবং তাঁরা তাঁর সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন। \p \v 29 তিনি চোখ তুলে তাকিয়ে যেই না তাঁর ভাই বিন্যামীনকে, তাঁর সহোদর ভাইকে দেখতে পেলেন, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “এই কি তোমাদের সেই ছোটো ভাই, যার কথা তোমরা আমাকে বলেছিলে?” আর তিনি বললেন, “বাছা, ঈশ্বর তোমার প্রতি মঙ্গলময় হোন।” \v 30 ভাইকে দেখতে পেয়ে যোষেফ দারুণ আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন, তাই তিনি তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে গেলেন ও কাঁদার জন্য একটি স্থান খুঁজলেন। তিনি নিজের খাস কামরায় ঢুকে গেলেন ও সেখানে কেঁদে নিলেন। \p \v 31 নিজের মুখ ধুয়ে নেওয়ার পর, নিজেকে সংযত করে তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে বললেন, “খাবার পরিবেশন করো।” \p \v 32 তারা আলাদা আলাদা করে তাঁর জন্য, তাঁর ভাইদের জন্য এবং তাঁর সাথে যে মিশরীয়রা খেতে বসেছিল, তাদের জন্য খাবার পরিবেশন করল, কারণ মিশরীয়রা হিব্রুদের সাথে ভোজনপান করত না, যেহেতু মিশরীয়দের কাছে তা ঘৃণ্য বলে গণ্য হত। \v 33 বড়ো থেকে শুরু করে ছোটো পর্যন্ত, তাঁদের বয়সানুসারেই তাঁদের তাঁর সামনে বসানো হল; এবং তাঁরা অবাক হয়ে পরস্পরের দিকে তাকালেন। \v 34 যোষেফের টেবিল থেকে যখন তাঁদের খাবার পরিবেশন করা হল, বিন্যামীনের অংশটি অন্য যে কারোর অংশের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি হল। অতএব তাঁরা তাঁর সাথে বসে অবাধে পেট পুরে ভোজনপান করলেন। \c 44 \s1 একটি বস্তায় রুপোর বাটি পাওয়া যায় \p \v 1 যোষেফ তাঁর ঘরের গোমস্তাকে এই নির্দেশগুলি দিলেন: “এই লোকেরা যতখানি খাদ্যশস্য বয়ে নিয়ে যেতে পারে, ততখানি করে দিয়ে ওদের বস্তাগুলি ভরে দাও, এবং প্রত্যেকের বস্তার মুখে তাদের রুপো রেখে দাও। \v 2 পরে খাদ্যশস্যের জন্য আনা রুপোর পাশাপাশি আমার পানপাত্রটি, সেই রুপোর পানপাত্রটিও সেই ছোটো ছেলেটির বস্তার মুখে রেখে দাও।” আর যোষেফ যেমনটি বললেন, তিনি তেমনটিই করলেন। \p \v 3 সকাল হওয়ামাত্র, তাঁদের গাধাগুলির সঙ্গে তাঁদের বিদায় করে দেওয়া হল। \v 4 তাঁরা নগর থেকে তখন খুব বেশি দূরে যাননি, এমন সময় যোষেফ তাঁর গোমস্তাকে বললেন, “এখনই ওই লোকদের পশ্চাদ্ধাবন করো, এবং তাদের নাগাল পেয়ে, তুমি তাদের বোলো, ‘ভালোর পরিবর্তে তোমরা কেন মন্দ প্রতিদান দিলে? \v 5 এটি কি সেই পানপাত্র নয় যেটি থেকে আমার প্রভু পান করেন এবং ভবিষ্যৎ-কথনের জন্য যেটি ব্যবহার করেন? তোমরা এ এক মন্দ কাজ করে বসলে।’ ” \p \v 6 তাঁদের নাগাল পেয়ে তিনি তাঁদের কাছে এই কথাগুলি বলে শোনালেন। \v 7 কিন্তু তাঁরা তাঁকে বললেন, “আমার প্রভু কেন এরকম কথা বলছেন? এরকম কোনও কাজ আপনার দাসেরা করতেই পারে না! \v 8 এমনকি আমরা সেই কনান দেশ থেকে সেই রুপোও তো ফেরত এনেছিলাম, যা আমাদের বস্তার মুখে পাওয়া গিয়েছিল। তাই আপনার প্রভুর বাড়ি থেকে কেনই বা আমরা রুপো বা সোনা চুরি করব? \v 9 যদি আপনার এই দাসেদের মধ্যে কারও কাছে তা পাওয়া যায়, তবে সে মরবে; এবং আমাদের মধ্যে বাকি সবাই আমার প্রভুর ক্রীতদাস হবে।” \p \v 10 “তবে ঠিক আছে,” তিনি বললেন, “তোমাদের কথানুসারেই তা হোক। যার কাছে সেটি পাওয়া যাবে সে আমার ক্রীতদাস হয়ে যাবে; তোমাদের মধ্যে বাদবাকি সবাই দোষমুক্ত হবে।” \p \v 11 তাঁদের প্রত্যেকেই তাড়াতাড়ি মাটিতে বস্তা নামালেন ও তা খুলে ধরলেন। \v 12 পরে সেই গোমস্তা খানাতল্লাশি করার জন্য এগিয়ে গেলেন, বড়ো থেকে শুরু করে ছোটো জনের কাছে গিয়ে খানাতল্লাশি শেষ করলেন। আর সেই পানপাত্রটি বিন্যামীনের বস্তাতে পাওয়া গেল। \v 13 তা দেখে, তাঁরা তাঁদের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। পরে তাঁরা সবাই তাঁদের গাধার পিঠে বোঝা চাপিয়ে নগরে ফিরে গেলেন। \p \v 14 যিহূদা ও তাঁর ভাইয়েরা যখন ফিরে এলেন, যোষেফ তখনও বাড়ির মধ্যেই ছিলেন, এবং তাঁরা তাঁর সামনে গিয়ে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লেন। \v 15 যোষেফ তাঁদের বললেন, “তোমরা এ কী কাজ করলে? তোমরা কি জানো না যে আমার মতো একজন লোকগণনা করে সবকিছু খুঁজে বের করতে পারে?” \p \v 16 “আমার প্রভুর কাছে আমরা কী আর বলব?” যিহূদা উত্তর দিলেন। “আমরা কী আর বলব? আমরা কীভাবেই বা আমাদের নির্দোষিতার প্রমাণ দেব? ঈশ্বর আপনার দাসদের দোষ উন্মোচন করে দিয়েছেন। আমরা এখন আমার প্রভুর ক্রীতদাস হয়ে গিয়েছি—আমরা নিজেরা এবং সেই জন, যার কাছে সেই পানপাত্রটি পাওয়া গিয়েছে।” \p \v 17 কিন্তু যোষেফ বললেন, “এরকম কাজ যেন আমি না করি! শুধু যার কাছে সেই পানপাত্রটি পাওয়া গিয়েছে, সেই লোকটিই আমার ক্রীতদাস হবে। তোমাদের মধ্যে বাদবাকি সবাই শান্তিতে তোমাদের বাবার কাছে ফিরে যাও।” \p \v 18 তখন যিহূদা তাঁর কাছে গিয়ে বললেন: “হে আমার প্রভু, আপনার এই দাসকে ক্ষমা করুন, আমার প্রভুর কাছে আমাকে একটি কথা বলতে দিন। আপনার এই দাসের প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন না, যদিও বা আপনি স্বয়ং ফরৌণের সমতুল্য। \v 19 আমার প্রভু তাঁর দাসদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তোমাদের কি বাবা অথবা ভাই আছে? ’ \v 20 আর আমরা তাঁকে উত্তর দিয়েছিলাম, ‘আমাদের বৃদ্ধ বাবা আছেন, এবং তাঁর বৃদ্ধাবস্থায় জন্মানো তাঁর এক ছোটো ছেলেও আছে। তার দাদা মারা গিয়েছে, এবং তার মায়ের একমাত্র সন্তানরূপে সেই বেঁচে আছে, এবং তার বাবা তাকে ভালোবাসেন।’ \p \v 21 “পরে আপনি আপনার দাসদের বলেছিলেন, ‘তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো, যেন আমি তাকে স্বচক্ষে দেখতে পারি।’ \v 22 আর আমরা আমার প্রভুকে বলেছিলাম, ‘সেই বালকটি তার বাবার কাছছাড়া হতে পারবে না; যদি সে তাঁকে ছেড়ে আসে, তবে তার বাবা মারা যাবেন।’ \v 23 কিন্তু আপনি আপনার দাসদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের ছোটো ভাই যতক্ষণ না তোমাদের সঙ্গে আসছে, তোমরা আর আমার মুখদর্শন করবে না।’ \v 24 আমরা যখন আপনার দাস আমার বাবার কাছে ফিরে গেলাম, তখন আমার প্রভু যা যা বলেছিলেন, সেসব আমরা তাঁকে বলেছিলাম। \p \v 25 “তখন আমাদের বাবা বললেন, ‘তোমরা ফিরে যাও এবং আরও অল্প কিছু খাদ্যশস্য কিনে আনো।’ \v 26 কিন্তু আমরা বললাম, ‘আমরা যেতে পারব না। আমাদের ছোটো ভাই যদি আমাদের সঙ্গে থাকে তবেই আমরা যাব। আমাদের ছোটো ভাই যদি আমাদের সঙ্গে না থাকে তবে আমরা সেই লোকটির মুখদর্শন করতে পারব না।’ \p \v 27 “আপনার দাস আমার বাবা আমাদের বললেন, ‘তোমরা তো জানো যে আমার স্ত্রী আমার জন্য দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। \v 28 তাদের মধ্যে একজন আমার কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছে, এবং আমি বলেছিলাম, “নিশ্চিতভাবে তাকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।” তখন থেকে আমি আর তাকে দেখতে পাইনি। \v 29 তোমরা যদি একেও আবার আমার কাছ থেকে নিয়ে যাও এবং এর যদি কোনও ক্ষতি হয়, তবে এই পাকাচুলে মর্মপীড়ায় তোমরা আমাকে কবরে পাঠাবে।’ \p \v 30 “অতএব এখন, আমি যখন আপনার দাস আমার বাবার কাছে ফিরে যাব, তখন যদি বালকটি আমাদের সঙ্গে না থাকে এবং আমার সেই বাবা, যাঁর জীবন সেই বালকটির জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, \v 31 তিনি যদি দেখেন যে বালকটি সেখানে নেই, তবে তিনি মারা যাবেন। আপনার দাসেরা আমার বাবাকে এই পাকাচুলে মর্মপীড়ায় কবরে পাঠাবে। \v 32 আপনার এই দাস আমি আমার বাবার কাছে সেই বালকটির নিরাপত্তার মুচলেকা দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, ‘আমি যদি তাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে আনতে না পারি, তবে হে আমার বাবা, আজীবন আমি আপনার সামনে দোষ বয়ে বেড়াব!’ \p \v 33 “এখন তবে, প্রভু দয়া করে এই বালকটির স্থানে আপনার এই দাসকেই এখানে আপনার ক্রীতদাস হয়ে থাকতে দিন, এবং এই বালকটিকে তার দাদাদের সঙ্গে ফিরে যেতে দিন। \v 34 বালকটি যদি আমার সঙ্গে না থাকে তবে আমি কীভাবে আমার বাবার কাছে ফিরে যাব? না! আমার বাবার উপর যে মর্মপীড়া নেমে আসবে, তা যেন আমাকে দেখতে না হয়।” \c 45 \s1 যোষেফ নিজের পরিচয় দেন \p \v 1 তখন যোষেফ তাঁর সব সেবকের সামনে নিজেকে আর সংযত করে রাখতে পারলেন না, এবং তিনি চিৎকার করে উঠলেন, “সবাই আমার সামনে থেকে সরে যাও!” অতএব যোষেফ যখন তাঁর দাদা-ভাইদের কাছে নিজের পরিচয় প্রকাশ করলেন তখন তাঁর কাছে আর কেউ ছিল না। \v 2 আর তিনি এত জোরে কাঁদলেন যে মিশরীয়রা তা শুনতে পেল, এবং ফরৌণের পরিবার-পরিজনও তা শুনতে পেল। \p \v 3 যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের বললেন, “আমি যোষেফ! আমার বাবা কি এখনও বেঁচে আছেন?” কিন্তু তাঁর দাদারা তাঁকে উত্তর দিতে পারলেন না, কারণ তাঁর উপস্থিতিতে তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। \p \v 4 পরে যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের বললেন, “আমার কাছে এসো।” যখন তাঁরা এলেন, তখন তিনি বললেন, “আমিই তোমাদের সেই ভাই যোষেফ, যাকে তোমরা মিশরে বিক্রি করে দিয়েছিলে! \v 5 আর এখন, আমাকে এখানে বিক্রি করে দিয়েছ বলে আকুল হোয়ো না ও নিজেদের উপর রাগ কোরো না, কারণ মানুষের প্রাণরক্ষা করার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের আগে আগে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। \v 6 দুই বছর ধরে এখন এদেশে দুর্ভিক্ষ চলছে, এবং পরবর্তী পাঁচ বছর কোনও হলকর্ষণ ও শস্যচ্ছেদন হবে না। \v 7 কিন্তু এই পৃথিবীতে তোমাদের বংশরক্ষা করার জন্য ও এক মহামুক্তির মাধ্যমে তোমাদের প্রাণরক্ষা করার জন্য\f + \fr 45:7 \fr*\ft অথবা, উত্তরজীবীদের বড়ো এক দলরূপে তোমাদের রক্ষা করার জন্য\ft*\f* ঈশ্বর তোমাদের আগে আগে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। \p \v 8 “অতএব, এমনটি নয় যে তোমরা আমাকে এখানে পাঠিয়েছ, কিন্তু ঈশ্বরই পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে ফরৌণের বাবা, তাঁর সমস্ত পরিবারের মালিক এবং সমগ্র মিশরের শাসনকর্তা করেছেন। \v 9 এখন তাড়াতাড়ি করে আমার বাবার কাছে ফিরে যাও এবং তাঁকে বলো, ‘তোমার ছেলে যোষেফ একথা বলেছে: ঈশ্বর আমাকে সমগ্র মিশরের মালিক করে তুলেছেন। আমার কাছে নেমে এসো; দেরি কোরো না। \v 10 তোমরা গোশন অঞ্চলে বসবাস করবে এবং আমার কাছেই থাকবে—তোমরা, তোমাদের সন্তানেরা, এবং তোমাদের নাতিপুতিরা, তোমাদের গোমেষাদি পশুপাল, এবং তোমাদের যা যা আছে সেসবকিছু। \v 11 আমি সেখানে তোমাদের জন্য সবকিছুর জোগান দেব, কারণ পাঁচ বছরের দুর্ভিক্ষ এখনও বাকি আছে। তা না হলে তোমরা ও তোমাদের পরিবার-পরিজন এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত সবাই নিঃস্ব হয়ে যাবে।’ \p \v 12 “তোমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছ, এবং আমার ভাই বিন্যামীনও দেখতে পাচ্ছে, যে তোমাদের সঙ্গে যে কথা বলছে সে আসলে আমিই। \v 13 মিশরে আমাকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে ও তোমরা যা যা দেখেছ সেসব আমার বাবাকে গিয়ে বলো। আর আমার বাবাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।” \p \v 14 পরে তিনি তাঁর দু-হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাঁর ভাই বিন্যামীনকে আলিঙ্গন করলেন এবং কাঁদলেন, এবং বিন্যামীনও তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন। \v 15 আর তিনি তাঁর দাদাদের সবাইকে চুমু দিলেন, ও তাঁদের ধরে কাঁদলেন। পরে তাঁর দাদারা তাঁর সঙ্গে কথা বললেন। \p \v 16 যোষেফের দাদা-ভাইরা এসেছে, এই খবর যখন ফরৌণের প্রাসাদে এসে পৌঁছাল, তখন ফরৌণ ও তাঁর সব কর্মকর্তা খুশি হলেন। \v 17 ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “তোমার দাদা-ভাইদের বলো, ‘এরকম করো: তোমাদের পশুদের পিঠে বোঝা চাপাও ও কনান দেশে ফিরে যাও, \v 18 এবং তোমাদের বাবাকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে নিয়ে আমার কাছে ফিরে এসো। মিশর দেশের সেরা জিনিসগুলি আমি তোমাদের দেব এবং তোমরা দেশের বাছাই করা জিনিসগুলি উপভোগ করবে।’ \p \v 19 “তোমাকে আরও নির্দেশ দেওয়া হল যেন তুমি তাদের বলো, ‘এরকম করো: তোমাদের সন্তানদের ও তোমাদের স্ত্রীদের জন্য মিশর থেকে কয়েকটি দুই চাকার গাড়ি নাও, এবং তোমাদের বাবাকে নিয়ে চলে এসো। \v 20 তোমাদের বিষয়সম্পত্তির জন্য কোনও চিন্তা কোরো না, কারণ সমগ্র মিশরের সেরা জিনিসগুলি তোমাদেরই হবে।’ ” \p \v 21 অতএব ইস্রায়েলের ছেলেরা এমনটিই করলেন। ফরৌণ যেমনটি আদেশ দিলেন, সেই অনুসারে যোষেফ তাঁদের দু-চাকার গাড়িগুলি দিলেন, এবং তিনি তাঁদের যাত্রাপথের জন্য রসদপত্রও জোগালেন। \v 22 তাঁদের প্রত্যেককে তিনি নতুন নতুন পোশাক দিলেন, কিন্তু তিনি বিন্যামীনকে তিনশো শেকল\f + \fr 45:22 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 3.5 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো ও পাঁচজোড়া পোশাক দিলেন। \v 23 আর তাঁর বাবার কাছে তিনি যা যা পাঠালেন তা হল এই: দশটি মদ্দা গাধার পিঠে বোঝাই করা মিশরের সেরা জিনিসপত্র, এবং দশটি গাধির পিঠে বোঝাই করা তাঁর যাত্রাপথের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য এবং রুটি ও অন্যান্য রসদপত্র। \v 24 পরে তিনি তাঁর দাদা-ভাইদের পাঠিয়ে দিলেন, এবং তাঁরা যখন প্রস্থান করলেন, তিনি তাঁদের বললেন, “রাস্তায় ঝগড়াঝাটি কোরো না!” \p \v 25 অতএব তাঁরা মিশর থেকে চলে গেলেন এবং কনান দেশে তাঁদের বাবা যাকোবের কাছে এলেন। \v 26 তাঁরা তাঁকে বললেন, “যোষেফ এখনও বেঁচে আছে! আসলে, সে সমগ্র মিশরের শাসনকর্তা হয়ে গিয়েছে।” যাকোব স্তব্ধ হয়ে গেলেন; তাঁদের কথা তিনি বিশ্বাস করলেন না। \v 27 কিন্তু তাঁরা যখন যোষেফ তাঁদের যা যা বলেছিলেন সেসব কথা তাঁকে বললেন, এবং তিনি যখন তাঁকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যোষেফের পাঠানো দুই চাকার গাড়িগুলি দেখলেন, তখন তাঁদের বাবা যাকোবের অন্তরাত্মা পুনরুজ্জীবিত হল। \v 28 আর ইস্রায়েল বললেন, “আমি নিশ্চিত! আমার ছেলে যোষেফ এখনও বেঁচে আছে। মরার আগে আমি যাব এবং তাকে দেখব।” \c 46 \s1 যাকোব মিশরে যান \p \v 1 অতএব ইস্রায়েল তাঁর যথাসর্বস্য নিয়ে রওনা দিলেন, এবং তিনি যখন বের-শেবাতে পৌঁছালেন, তখন তিনি তাঁর বাবা ইস্‌হাকের ঈশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করলেন। \p \v 2 আর রাতের বেলায় এক দর্শনের মাধ্যমে ঈশ্বর ইস্রায়েলের সঙ্গে কথা বললেন, এবং তিনি বললেন, “যাকোব, যাকোব!” \p “আমি এখানে,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 3 “আমি ঈশ্বর, তোমার বাবার সেই ঈশ্বর,” তিনি বললেন। “মিশরে যেতে ভয় পেয়ো না, কারণ সেখানে আমি তোমাকে এক বড়ো জাতি করে তুলব, \v 4 তোমার সঙ্গে আমিও মিশরে যাব, এবং আমি আবার সেখান থেকে তোমাকে অবশ্যই বের করে আনব। আর যোষেফ নিজের হাতে তোমার চোখ বন্ধ করবে।” \p \v 5 পরে যাকোব বের-শেবা ছেড়ে এলেন, এবং ইস্রায়েলের ছেলেরা, তাঁদের বাবা যাকোবকে ও তাঁদের সন্তানদের এবং তাঁদের স্ত্রীদের সেই দুই চাকার গাড়িগুলিতে করে আনলেন, যেগুলি ফরৌণ তাঁকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। \v 6 অতএব যাকোব ও তাঁর সব বংশধর নিজেদের সাথে কনানে অর্জিত তাঁদের গৃহপালিত পশুপাল ও বিষয়সম্পত্তি নিয়ে মিশরে গেলেন। \v 7 যাকোব নিজের সাথে তাঁর ছেলেদের ও নাতিদের এবং তাঁর মেয়েদের ও নাতনীদের—তাঁর সব বংশধরকে মিশরে আনলেন। \b \li4 \v 8 এই হল ইস্রায়েলের সেই ছেলেদের নাম (যাকোব এবং তাঁর বংশধররা) যারা মিশরে গিয়েছিলেন: \b \li1 যাকোবের প্রথমজাত রূবেণ। \li1 \v 9 রূবেণের ছেলেরা: \li2 হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মি। \li1 \v 10 শিমিয়োনের ছেলেরা: \li2 যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর ও এক কনানীয় মহিলার সেই ছেলে শৌল। \li1 \v 11 লেবির ছেলেরা: \li2 গের্শোন, কহাৎ, ও মরারি। \li1 \v 12 যিহূদার ছেলেরা: \li2 এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ। (কিন্তু এর ও ওনন কনান দেশে মারা গিয়েছিল) \li2 পেরসের ছেলেরা: \li3 হিষ্রোণ ও হামূল। \li1 \v 13 ইষাখরের ছেলেরা: \li2 তোলয়, পূয়\f + \fr 46:13 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ অনুসারে, পূভা\ft*\f*, যাশূব\f + \fr 46:13 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ অনুসারে, যোব\ft*\f* ও শিম্রোণ। \li1 \v 14 সবূলূনের ছেলেরা: \li2 সেরদ, এলোন, ও যহলেল। \li4 \v 15 এরা হলেন লেয়ার সেই ছেলেরা, যাদের ও তা ছাড়াও যাকোবের মেয়ে দীণাকে যিনি পদ্দন-আরামে\f + \fr 46:15 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* যাকোবের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন। তাঁর এইসব ছেলে ও মেয়ে মোট তেত্রিশজন। \b \li1 \v 16 গাদের ছেলেরা: \li2 সেফোন\f + \fr 46:16 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ অনুসারে, সিফিয়োন\ft*\f*, হগি, শূনী, ইষবোন, এরি, অরোদী ও অরেলী। \li1 \v 17 আশেরের ছেলেরা: \li2 যিম্না, যিশ্‌বা, যিশ্‌বি, বরিয়। তাদের বোন সেরহ। \li2 বরিয়ের ছেলেরা: \li3 হেবর ও মল্কীয়েল। \li4 \v 18 এরা হলেন যাকোবের সেই ছেলেমেয়ে, যারা লেয়ার সেই দাসী সিল্পা দ্বারা জাত হয়েছিল, যাকে লাবন তাঁর মেয়ে লেয়াকে দিয়েছিলেন—মোট ষোলোজন। \b \li1 \v 19 যাকোবের স্ত্রী রাহেলের ছেলেরা: \li2 যোষেফ ও বিন্যামীন। \li3 \v 20 মিশরে, যোষেফের ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িম ওনের\f + \fr 46:20 \fr*\ft অর্থাৎ, হেলিওপোলিসের\ft*\f* যাজক পোটীফেরের মেয়ে আসনতের দ্বারা জন্মেছিলেন। \li1 \v 21 বিন্যামীনের ছেলেরা: \li2 বেলা, বেখর, অস্‌বেল, গেরা, নামান, এহী, রোশ, মূপপীম, হুপপীম ও অর্দ। \li4 \v 22 এরা হলেন যাকোবের সেই ছেলেরা, যারা রাহেলের দ্বারা জন্মেছিলেন—মোট চোদ্দোজন। \b \li1 \v 23 দানের ছেলে: \li2 হূশীম। \li1 \v 24 নপ্তালির ছেলেরা: \li2 যহসিয়েল, গূনি, যেৎসর ও শিল্লেম। \li4 \v 25 এরা হলেন যাকোবের সেই ছেলেরা, যারা রাহেলের সেই দাসী বিলহা দ্বারা জাত হলেন, যাকে লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকে দিয়েছিলেন—মোট সাতজন। \b \li4 \v 26 যাকোবের সঙ্গে যারা মিশরে গেলেন—যারা তাঁর অব্যবহিত বংশধর নন, তাঁর সেই পুত্রবধূদের সংখ্যা না ধরে—তাদের সংখ্যা হয়েছিল ছেষট্টি জন। \v 27 মিশরে যোষেফের যে দুই ছেলের\f + \fr 46:27 \fr*\ft অথবা, সেই নয়জন সন্তানের\ft*\f* জন্ম হয়েছিল তাদের সংখ্যা ধরে, যাকোবের পরিবারের যে সদস্যেরা মিশরে গেলেন তাদের সংখ্যা মোট সত্তর\f + \fr 46:27 \fr*\ft অথবা, 75; \+xt প্রেরিত 7:14\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* জন। \b \p \v 28 ইত্যবসরে গোশনে যাওয়ার পথনির্দেশনা লাভের জন্য যাকোব তাঁর আগে আগে যিহূদাকে যোষেফের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা যখন সেই গোশন অঞ্চলে পৌঁছালেন, \v 29 যোষেফ তখন তাঁর রথ সাজিয়েগুছিয়ে নিলেন ও তাঁর বাবা ইস্রায়েলের সঙ্গে দেখা করার জন্য গোশনে চলে গেলেন। যোষেফ তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই তিনি তাঁর বাবার দিকে দু-হাত বাড়িয়ে দিলেন\f + \fr 46:29 \fr*\ft অথবা, তাঁকে জড়িয়ে ধরে\ft*\f* ও অনেকক্ষণ ধরে কাঁদলেন। \p \v 30 ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি এখন মরার জন্য প্রস্তুত, যেহেতু আমি নিজের চোখেই দেখলাম যে তুমি এখনও জীবিত আছ।” \p \v 31 পরে যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের ও তাঁর পৈত্রিক পরিবার-পরিজনদের বললেন, “আমি ফরৌণের কাছে গিয়ে তাঁর সাথে কথা বলব ও তাঁকে বলব, ‘যারা সেই কনান দেশে বসবাস করছিলেন, আমার সেই দাদা-ভাইয়েরা ও আমার পৈত্রিক পরিবার-পরিজনেরা আমার কাছে এসেছেন। \v 32 তারা মেষপালক; তারা গৃহপালিত পশুপাল চরান, এবং তাদের মেষপাল ও পশুপাল ও তাদের অধিকারভুক্ত সবকিছু সাথে নিয়ে তারা এখানে এসেছেন।’ \v 33 ফরৌণ যখন তোমাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করবেন যে, ‘তোমাদের পেশা কী?’ \v 34 তোমাদের তখন এই উত্তর দিতে হবে, ‘আমাদের ছেলেবেলা থেকেই আপনার এই দাসেরা গৃহপালিত পশুপাল চরিয়ে আসছে, ঠিক যেভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরাও চরাতেন।’ তখন তোমাদের গোশন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করার অনুমতি দেওয়া হবে, কারণ সব মেষপালকই মিশরীয়দের কাছে ঘৃণ্য।” \c 47 \p \v 1 যোষেফ চলে গেলেন এবং ফরৌণকে বললেন, “আমার বাবা ও দাদা-ভাইয়েরা তাদের মেষপাল ও পশুপাল এবং তাদের অধিকারভুক্ত সবকিছু সাথে নিয়ে কনান দেশ থেকে চলে এসেছেন এবং এখন গোশনে আছেন।” \v 2 তিনি তাঁর দাদা-ভাইদের মধ্যে পাঁচ জনকে মনোনীত করে তাঁদের ফরৌণের সামনে উপস্থিত করলেন। \p \v 3 ফরৌণ সেই দাদা-ভাইদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের পেশা কী?” \p “আপনার এই দাসেরা মেষপালক,” তাঁরা ফরৌণকে উত্তর দিলেন, “ঠিক যেমনটি আমাদের পূর্বপুরুষেরাও ছিলেন।” \v 4 তাঁরা তাঁকে আরও বললেন, “আমরা এখানে অল্প কিছুকালের জন্য বসবাস করতে এসেছি, কারণ কনানে দুর্ভিক্ষ দুঃসহ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আপনার এই দাসেদের মেষপালের জন্য কোনও চারণভূমি নেই। অতএব এখন, দয়া করে আপনার এই দাসেদের গোশনে বসতি স্থাপন করতে দিন।” \p \v 5 ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “তোমার বাবা ও দাদা-ভাইয়েরা তোমার কাছে এসেছেন, \v 6 এবং এই মিশর দেশটি তোমার সামনেই আছে; দেশের সব থেকে ভালো জায়গায় তোমার বাবা ও দাদা-ভাইদের বসতি স্থাপন করিয়ে দাও। তারা গোশনেই বসবাস করুন। আর যদি তুমি জানো যে তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিশেষ দক্ষতাবিশিষ্ট, তবে তাদের তুমি আমার নিজের গৃহপালিত পশুপাল দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ো।” \p \v 7 তখন যোষেফ তাঁর বাবা যাকোবকে নিয়ে গিয়ে ফরৌণের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন। যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ\f + \fr 47:7 \fr*\ft অথবা, অভিবাদন\ft*\f* করার পর, \v 8 ফরৌণ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার বয়স কত?” \p \v 9 আর যাকোব ফরৌণকে বললেন, “আমার জীবনপরিক্রমার কাল 130 বছর হয়েছে। আমার আয়ুর বছরগুলি অল্প সংখ্যক ও কষ্টকর হয়েছে, এবং সেগুলি আমার পূর্বপুরুষদের জীবনপরিক্রমার বছরগুলির সমান নয়।” \v 10 পরে যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করলেন\f + \fr 47:10 \fr*\ft অথবা, বিদায়সম্ভাষণ জানিয়েছিলেন\ft*\f* এবং তাঁর সামনে থেকে চলে গেলেন। \p \v 11 অতএব যোষেফ তাঁর বাবা ও দাদা-ভাইদের মিশরে বসতি স্থাপন করিয়ে দিলেন এবং ফরৌণের নির্দেশানুসারে, দেশের সব থেকে ভালো জায়গায়, সেই রামিষেষ জেলায় তাঁদের বিষয়সম্পত্তি দিলেন। \v 12 এছাড়াও যোষেফ তাঁর বাবার ও দাদা-ভাইদের এবং তাঁর পৈত্রিক সব পরিবার-পরিজনের সন্তানসন্ততির সংখ্যা অনুসারে তাঁদের খাদ্যদ্রব্য জোগান দিলেন। \s1 যোষেফ ও সেই দুর্ভিক্ষ \p \v 13 সমগ্র এলাকায় অবশ্য খাদ্যদ্রব্য ছিল না, কারণ দুর্ভিক্ষ দুঃসহ হয়ে পড়েছিল; দুর্ভিক্ষের কারণে মিশর ও কনান, দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। \v 14 মিশর ও কনানে যে অর্থ পাওয়া গেল যোষেফ সেসব তাদের কেনা খাদ্যশস্যের মূল্যরূপে সংগ্রহ করে তা ফরৌণের প্রাসাদে নিয়ে এলেন। \v 15 মিশর ও কনানের প্রজাদের অর্থ যখন শেষ হয়ে গেল, তখন মিশরের সব লোকজন যোষেফের কাছে এসে বলল, “আমাদের খাদ্যদ্রব্য দিন। আপনার চোখের সামনে আমরা কেন মারা পড়ব? আমাদের সব অর্থ ফুরিয়ে গিয়েছে।” \p \v 16 “তবে তোমাদের গৃহপালিত পশুপাল নিয়ে এসো,” যোষেফ বললেন। “যেহেতু তোমাদের অর্থ ফুরিয়ে গিয়েছে তাই তোমাদের গৃহপালিত পশুপালের বিনিময়ে আমি তোমাদের খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করব।” \v 17 অতএব তারা যোষেফের কাছে তাদের গৃহপালিত পশুপাল নিয়ে এল, এবং তিনি তাদের ঘোড়া, তাদের মেষ ও ছাগল, তাদের গবাদি পশুপাল ও গাধাগুলির বিনিময়ে তাদের খাদ্যদ্রব্য দিলেন। আর তাদের সব গৃহপালিত পশুর বিনিময়ে তাদের খাদ্যদ্রব্য দিয়ে তিনি সে বছরটি পার করে দিলেন। \p \v 18 যখন সেই বছরটি শেষ হল, পরের বছরও তারা তাঁর কাছে এসে বলল, “আমরা এই তথ্যটি আমাদের প্রভুর কাছে লুকিয়ে রাখতে পারছি না যে যেহেতু আমাদের অর্থ ফুরিয়ে গিয়েছে এবং আমাদের গৃহপালিত পশুপালও আপনারই হয়ে গিয়েছে, এখন আমাদের প্রভুর জন্য আমাদের শরীর ও আমাদের জমিজায়গা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। \v 19 আপনার চোখের সামনে আমরা কেন ধ্বংস হব—আমরা ও আমাদের জমিজায়গাও? খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আপনি আমাদের ও আমাদের জমিজায়গা কিনে নিন, এবং আমাদের জমিজায়গা সমেত আমরা ফরৌণের কাছে দাসত্ববন্ধনে আবদ্ধ হব। আমাদের বীজ দিন যেন আমরা বাঁচতে পারি ও মারা না যাই, এবং এই দেশ যেন জনশূন্য হয়ে না যায়।” \p \v 20 অতএব যোষেফ মিশরে সব জমিজায়গা ফরৌণের জন্য কিনে নিলেন। মিশরীয়রা, এক এক করে, সবাই তাদের জমিজায়গা বিক্রি করে দিল, কারণ তাদের পক্ষে দুর্ভিক্ষ অত্যন্ত দুঃসহ হয়েছিল। সেই জমিজায়গা ফরৌণের হয়ে গেল, \v 21 এবং যোষেফ মিশরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত প্রজাদের ক্রীতদাসে পরিণত করলেন।\f + \fr 47:21 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ অনুসারে, তিনি প্রজাদের নগরগুলিতে পাঠিয়ে দিলেন\ft*\f* \v 22 অবশ্য, তিনি যাজকদের জমিজায়গা কেনেননি, কারণ তাঁরা ফরৌণের কাছ থেকে নিয়মিত এক ভাতা পেতেন এবং ফরৌণের দেওয়া সেই ভাতা থেকে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য জোগাড় হয়ে যেত। সেজন্যই তাঁরা তাঁদের জমিজায়গা বিক্রি করেননি। \p \v 23 যোষেফ প্রজাদের বললেন, “আজ যখন আমি তোমাদেরকে ও তোমাদের জমিজায়গা ফরৌণের জন্য কিনে নিয়েছি, এই রইল তোমাদের বীজ, যেন তোমরা জমিতে তা বপন করতে পারো। \v 24 কিন্তু যখন শস্য উৎপন্ন হবে, তখন তার এক-পঞ্চমাংশ তোমরা ফরৌণকে দিয়ো। অন্য চার-পঞ্চমাংশ তোমরা জমির জন্য বীজরূপে, এবং তোমাদের নিজেদের, তোমাদের পরিবার-পরিজনেদের এবং তোমাদের সন্তানদের জন্য খাদ্যদ্রব্যরূপে রাখতে পারো।” \p \v 25 “আপনি আমাদের প্রাণরক্ষা করেছেন,” তারা বলল। “আমরা যেন আমাদের প্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাই; আমরা ফরৌণের ক্রীতদাস হয়ে থাকব।” \p \v 26 অতএব যোষেফ সেটি মিশরে জমি সংক্রান্ত এক আইনরূপে প্রতিষ্ঠিত করে দিলেন—যা আজও বলবৎ আছে—যে উৎপন্ন শস্যের এক-পঞ্চমাংশ ফরৌণের অধিকারভুক্ত। শুধুমাত্র যাজকদের জমিজায়গাই ফরৌণের অধিকারভুক্ত হয়নি। \p \v 27 ইস্রায়েলীরা মিশরে গোশন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করল। তারা সেখানে বিষয়সম্পত্তি অর্জন করল এবং ফলবান হল ও সংখ্যায় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল। \p \v 28 যাকোব মিশরে সতেরো বছর বেঁচেছিলেন, এবং তাঁর জীবনকাল হল 147 বছর। \v 29 ইস্রায়েলের মৃত্যুর সময় যখন ঘনিয়ে এল, তিনি তখন তাঁর ছেলে যোষেফকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁকে বললেন, “আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমার ঊরুর নিচে তোমার হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করো যে তুমি আমার প্রতি দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখাবে। আমাকে মিশরে কবর দিয়ো না, \v 30 কিন্তু আমি যখন আমার পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হব, তখন মিশর থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যেয়ো এবং সেখানেই কবর দিয়ো যেখানে তাঁদের কবর দেওয়া হয়েছে।” \p “আপনি যেমনটি বললেন, আমি তেমনটিই করব,” তিনি বললেন। \p \v 31 “আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করো,” তিনি বললেন। তখন যোষেফ তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন, এবং ইস্রায়েল তাঁর লাঠির ডগার উপর হেলান দিয়ে উপাসনা করলেন।\f + \fr 47:31 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েল তাঁর বিছানার শিয়রের দিকে মাথা নত করলেন\ft*\f* \c 48 \s1 মনঃশি ও ইফ্রয়িম \p \v 1 কিছুকাল পর যোষেফকে বলা হল, “আপনার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।” অতএব তিনি তাঁর দুই ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন। \v 2 যাকোবকে যখন বলা হল, “আপনার ছেলে যোষেফ আপনার কাছে এসেছেন,” তখন ইস্রায়েল শক্তি সঞ্চয় করে বিছানায় উঠে বসলেন। \p \v 3 যাকোব যোষেফকে বললেন, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর\f + \fr 48:3 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এল-শাদ্দাই\ft*\f* কনান দেশের লূসে আমাকে দর্শন দিয়েছিলেন, এবং সেখানে তিনি আমাকে আশীর্বাদ করেছিলেন \v 4 ও আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে ফলবান করতে ও তোমার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চলেছি। আমি তোমাকে এক জনসমাজে পরিণত করব, এবং আমি তোমার পরে তোমার বংশধরদের এই দেশটি চিরস্থায়ী এক অধিকাররূপে দেব।’ \p \v 5 “এখন তবে, আমি তোমার কাছে এখানে আসার আগে মিশরে তোমার যে দুই ছেলে জন্মেছিল, তারা আমারই বলে গণ্য হবে; ইফ্রয়িম ও মনঃশি আমারই হবে, ঠিক যেমন রূবেণ ও শিমিয়োনও আমার। \v 6 এদের পরে তোমার যে কোনো সন্তান জন্মাবে, তারা তোমারই হবে; উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সেই অঞ্চলে তারা তাদের দাদাদের নামেই পরিচিত হবে। \v 7 আমি যখন পদ্দন\f + \fr 48:7 \fr*\ft অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়া\ft*\f* থেকে ফিরছিলাম, তখন আমাদের যাত্রাপথেই ইফ্রাথ থেকে খানিকটা দূরে সেই কনান দেশে রাহেল মারা গিয়েছিল। তাই ইফ্রাথে (অথবা, বেথলেহেমে) যাওয়ার পথের পাশে আমি তাকে কবর দিয়েছিলাম।” \p \v 8 ইস্রায়েল যখন যোষেফের ছেলেদের দেখলেন, তখন তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এরা কারা?” \p \v 9 “এরা সেই ছেলেরা, ঈশ্বর যাদের এখানে আমাকে দিয়েছেন,” যোষেফ তাঁর বাবাকে বললেন। \p তখন ইস্রায়েল বললেন, “তাদের আমার কাছে নিয়ে এসো, যেন আমি তাদের আশীর্বাদ করতে পারি।” \p \v 10 বার্ধক্যের কারণে ইস্রায়েলের চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে এসেছিল, এবং দেখতে তাঁর খুব অসুবিধা হত। তাই যোষেফ নিজের ছেলেদের তাঁর খুব কাছে নিয়ে এলেন, এবং তাঁর বাবা তাদের চুমু দিলেন ও তাদের আলিঙ্গন করলেন। \p \v 11 ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি কখনও আশা করিনি যে তোমার মুখ আবার দেখতে পাব, আর ঈশ্বর এখন আমাকে তোমার সন্তানদেরও দেখার সুযোগ করে দিলেন।” \p \v 12 পরে যোষেফ ইস্রায়েলের দুই হাঁটুর মাঝখান থেকে তাদের সরিয়ে দিলেন এবং মাটিতে মুখ ঠেকিয়ে নতজানু হলেন \v 13 আর যোষেফ তাদের দুজনকে নিয়ে, ইফ্রয়িমকে নিজের ডানদিকে রেখে ইস্রায়েলের বাঁ হাতের দিকে এবং মনঃশিকে নিজের বাঁদিকে রেখে ইস্রায়েলের ডান হাতের দিকে এগিয়ে দিলেন, এবং তাঁর খুব কাছাকাছি নিয়ে এলেন। \v 14 কিন্তু ইস্রায়েল তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং তা ইফ্রয়িমের মাথায় রাখলেন, যদিও সেই ছিল ছোটো, এবং তাঁর হাত দুটি আড়াআড়িভাবে বাড়িয়ে দিয়ে, তিনি তাঁর বাঁ হাত মনঃশির মাথায় রাখলেন, যদিও মনঃশিই ছিল প্রথমজাত সন্তান। \p \v 15 পরে তিনি যোষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন, \q1 “আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইস্‌হাক যে ঈশ্বরের সামনে \q2 বিশ্বস্ততাপূর্বক চলাফেরা করতেন, \q1 আজও পর্যন্ত আমার সমগ্র জীবনভোর \q2 যে ঈশ্বর আমার মেষপালক হয়ে থেকেছেন, \q1 \v 16 যে দূত আমাকে সব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেছেন, \q2 তিনিই এই বালকদের আশীর্বাদ করুন। \q1 তারা আমার এবং আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম \q2 ও ইস্‌হাকের নাম দ্বারাই পরিচিত হোক, \q1 আর তারা এই পৃথিবীর বুকে \q2 ব্যাপকভাবে বৃদ্ধিলাভ করুক।” \p \v 17 যোষেফ যখন দেখলেন যে তাঁর বাবা তাঁর ডান হাত ইফ্রয়িমের মাথায় রেখেছেন তখন তিনি অসন্তুষ্ট হলেন; তাই তিনি তাঁর বাবার হাতটি মনঃশির মাথার উপর রাখার জন্য সেটি ধরে ইফ্রয়িমের মাথার উপর থেকে সরিয়ে দিলেন। \v 18 যোষেফ তাঁকে বললেন, “হে আমার বাবা, না না, এই প্রথমজাত, এরই মাথার উপর আপনার ডান হাতটি রাখুন।” \p \v 19 কিন্তু তাঁর বাবা তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, “আমি জানি, বাছা, আমি জানি। সেও এক জাতিতে পরিণত হবে, এবং সেও মহান হবে। তা সত্ত্বেও, তার ছোটো ভাই তার থেকেও মহান হবে এবং তার বংশধরেরা এক জাতিপুঞ্জ হবে।” \v 20 সেদিন তিনি তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, \q1 “তোমার নামেই ইস্রায়েল এই আশীর্বাদ উচ্চারণ করবে: \q2 ‘ঈশ্বর তোমাকে ইফ্রয়িম ও মনঃশির মতো করুন।’ ” \m অতএব তিনি ইফ্রয়িমকে মনঃশির আগে রাখলেন। \p \v 21 পরে ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি মরতে চলেছি, কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের সহবর্তী থাকবেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেশে তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। \v 22 আর আমি তোমার দাদা-ভাইদের যা দেব তা থেকেও তোমাকে দেশের আরও একটি বেশি শৈলশিরা\f + \fr 48:22 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, দেশের শৈলশিরাটি শিখিম নামক স্থানের সমতুল্য\ft*\f* দেব, যে শৈলশিরাটি আমি আমার তরোয়াল ও আমার ধনুক দিয়ে ইমোরীয়দের কাছ থেকে অধিকার করেছিলাম।” \c 49 \s1 যাকোব তাঁর ছেলেদের আশীর্বাদ করেন \p \v 1 পরে যাকোব তাঁর ছেলেদের ডেকে বললেন: “তোমরা একত্রিত হও যেন আমি তোমাদের বলে দিতে পারি আগামী দিনগুলিতে তোমাদের প্রতি কী ঘটবে। \q1 \v 2 “হে যাকোবের সন্তানেরা, জমায়েত হও ও শোনো; \q2 তোমাদের বাবা ইস্রায়েলের কথা শোনো। \b \q1 \v 3 “হে রূবেণ, তুমি আমার প্রথমজাত, \q2 আমার বল, আমার শক্তির প্রথম চিহ্ন, \q2 সম্মানে উত্তম, পরাক্রমে উত্তম। \q1 \v 4 জলের মতো অদম্য বলে, তুমি আর শ্রেষ্ঠতর হবে না, \q2 কারণ তুমি তোমার বাবার বিছানায়, \q2 আমার শয্যায় গেলে ও সেটি কলুষিত করলে। \b \q1 \v 5 “শিমিয়োন ও লেবি দুই ভাই— \q2 তাদের তরোয়ালগুলি\f + \fr 49:5 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই শব্দটির অর্থ অনিশ্চিত\ft*\f* হিংস্রতার অস্ত্রশস্ত্র। \q1 \v 6 তাদের মন্ত্রণা-সভায় আমি যেন না ঢুকি, \q2 তাদের সমাবেশে যেন যোগ না দিই, \q1 কারণ তাদের ক্রোধে তারা মানুষজনকে হত্যা করেছিল \q2 এবং তাদের খেয়ালখুশি মতো তারা বলদদের পায়ের শিরা কেটে দিয়েছিল। \q1 \v 7 অভিশপ্ত হোক তাদের ক্রোধ, যা এত প্রচণ্ড, \q2 আর তাদের উন্মত্ততা, যা এত নিষ্ঠুর! \q1 যাকোবের মধ্যে আমি তাদের ইতস্তত ছড়িয়ে দেব \q2 এবং ইস্রায়েলের মধ্যে তাদের বিক্ষিপ্ত করে দেব। \b \q1 \v 8 “হে যিহূদা\f + \fr 49:8 \fr*\ft অথবা, প্রশংসা\ft*\f*, তোমার দাদা-ভাইয়েরা তোমার প্রশংসা করবে; \q2 তোমার শত্রুদের ঘাড়ে তোমার হাত থাকবে; \q2 তোমার বাবার ছেলেরা তোমার কাছে মাথা নত করবে। \q1 \v 9 তুমি এক সিংহশাবক, হে যিহূদা; \q2 বাছা, তুমি শিকার করে ফিরে এলে। \q1 এক সিংহের মতো সে গুড়ি মারে ও শুয়ে থাকে, \q2 এক সিংহীর মতো—কে তাকে জাগাতে সাহস করে? \q1 \v 10 যিহূদা থেকে রাজদণ্ড বিদায় নেবে না, \q2 তার দুই পায়ের ফাঁক থেকে\f + \fr 49:10 \fr*\ft অথবা, তার বংশধরদের কাছ থেকে\ft*\f* শাসকের ছড়িও সরে যাবে না, \q1 যতদিন না তিনি আসছেন সেটি যাঁর অধিকারভুক্ত\f + \fr 49:10 \fr*\ft অথবা, রাজস্ব যাঁর অধিকারভুক্ত; বা, শীলো\ft*\f* \q2 আর জাতিদের সেই আনুগত্য তাঁরই হবে। \q1 \v 11 সে এক দ্রাক্ষালতায় তার গাধা বেঁধে রাখবে, \q2 তার অশ্বশাবক সেই পছন্দসই ডালে বেঁধে রাখবে; \q1 দ্রাক্ষারসে সে তার জামাকাপড় ধোবে, \q2 তার আলখাল্লাগুলি ধোবে দ্রাক্ষারসের রক্তে। \q1 \v 12 তার চোখদুটি দ্রাক্ষারসের থেকেও বেশি রক্তবর্ণ হবে, \q2 তার দাঁতগুলি দুধের থেকেও বেশি সাদা হবে।\f + \fr 49:12 \fr*\ft অথবা, দ্রাক্ষারসের গুণে নিষ্প্রতিভ হবে, তার দাঁতগুলি দুধের গুণে সাদা হবে\ft*\f* \b \q1 \v 13 “সবূলূন সমুদ্রতীরে বসবাস করবে \q2 আর জাহাজগুলির জন্য এক পোতাশ্রয় হবে; \q2 তার সীমানা সীদোনের দিকে প্রসারিত হবে। \b \q1 \v 14 “ইষাখর এক কঙ্কালসার\f + \fr 49:14 \fr*\ft অথবা, বলবান\ft*\f* গাধা \q2 মেষ-খোঁয়াড়ের\f + \fr 49:14 \fr*\ft অথবা, ঘোড়ার জিনের পিছন দিকে ঝোলানো ভারী থলির\ft*\f* মধ্যে যে পড়ে আছে। \q1 \v 15 যখন সে দেখবে তার বিশ্রামস্থান কত সুন্দর \q2 ও তার দেশ কত সুখকর, \q1 তখন ভারবহনের জন্য সে তার কাঁধ নত করবে \q2 ও কষ্টকল্পিত পরিশ্রমের প্রতি সমর্পিত হবে। \b \q1 \v 16 “ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে এক গোষ্ঠীরূপে \q2 দান\f + \fr 49:16 \fr*\ft এখানে দান শব্দের অর্থ, সে ন্যায় প্রদান করে\ft*\f* তার লোকজনের জন্য ন্যায় প্রদান করবে। \q1 \v 17 দান পথের পাশে পড়ে থাকা এক সাপ, \q2 সেই পথ বরাবর এমন এক বিষধর সাপ হবে, \q1 যে ঘোড়ার গোড়ালিতে ছোবল মারে \q2 যেন সেটির সওয়ার পিছন-পানে ডিগবাজি খায়। \b \q1 \v 18 “হে সদাপ্রভু, আমি তোমার উদ্ধারের প্রত্যাশা করছি। \b \q1 \v 19 “গাদ\f + \fr 49:19 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় গাদ শব্দটি, আক্রমণের ও এছাড়াও আক্রমণকারী দলের মতো শোনায়\ft*\f* এক আক্রমণকারী দল দ্বারা আক্রান্ত হবে, \q2 কিন্তু সে তাদের গোড়ালি লক্ষ্য করে তাদের আক্রমণ করবে। \b \q1 \v 20 “আশেরের খাদ্যদ্রব্য হবে সমৃদ্ধ; \q2 সে এমন সুস্বাদু খাদ্য জোগাবে যা এক রাজার পক্ষে মানানসই। \b \q1 \v 21 “নপ্তালি এমন এক বাঁধনমুক্ত হরিণী \q2 যা সুন্দর সুন্দর হরিণশিশু গর্ভে ধারণ করে।\f + \fr 49:21 \fr*\ft অথবা, সে সুন্দর সুন্দর কথা বলে\ft*\f* \b \q1 \v 22 “যোষেফ এক ফলবান দ্রাক্ষালতা, \q2 এক নির্ঝরিণীর কাছে স্থিত এক ফলবান দ্রাক্ষালতা, \q2 যার শাখাপ্রশাখাগুলি এক দেয়াল বেয়ে ওঠে।\f + \fr 49:22 \fr*\ft অথবা, যোষেফ এক বন্য অনভিজ্ঞ তরুণ, এক ঝরনার কাছে থাকা এক বন্য অনভিজ্ঞ তরুণ, এক প্রাঙ্গণবিশিষ্ট পাহাড়ের উপর চরা এক বন্য গাধা\ft*\f* \q1 \v 23 তিক্ততা সমেত তিরন্দাজরা তাকে আক্রমণ করেছিল; \q2 শত্রুতা দেখিয়ে তারা তার দিকে তির ছুঁড়েছিল। \q1 \v 24 কিন্তু তার ধনুক অবিচলিত থেকেছিল, \q2 তার শক্তিশালী হাত দুটি নমনীয় হয়েই ছিল\f + \fr 49:24 \fr*\ft অথবা, তিরন্দাজরা আক্রমণ করবে, তির ছুঁড়বে, স্থির থাকবে, অপেক্ষা করবে\ft*\f*, \q1 যাকোবের সেই শক্তিমান-জনের সেই হাতের কারণে, \q2 ইস্রায়েলের সেই মেষপালকের, সেই শৈলের কারণে, \q1 \v 25 তোমার পৈত্রিক সেই ঈশ্বরের কারণে, যিনি তোমাকে সাহায্য করবেন, \q2 সেই সর্বশক্তিমানের\f + \fr 49:25 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, শাদ্দাই\ft*\f* কারণে, যিনি তোমাকে আশীর্বাদ করবেন \q1 ঊর্ধ্বস্থিত আকাশের আশীর্বাদসহ, \q2 নিচস্থ গভীর নির্ঝরিণীর আশীর্বাদসহ, \q2 স্তন ও গর্ভের আশীর্বাদসহ। \q1 \v 26 তোমার পৈত্রিক আশীর্বাদগুলি \q2 সেই প্রাচীন পাহাড়-পর্বতের আশীর্বাদগুলির চেয়েও মহত্তর, \q2 শতাব্দী-প্রাচীন পাহাড়গুলির দানশীলতার চেয়েও\f + \fr 49:26 \fr*\ft অথবা, আমার পূর্বপুরুষদের, মতো মহান\ft*\f* মহত্তর। \q1 এসব কিছু যোষেফের মাথায় স্থির হোক, \q2 তার দাদা-ভাইদের মধ্যে যে নায়ক,\f + \fr 49:26 \fr*\ft অথবা, যে তাদের থেকে পৃথক হয়েছে\ft*\f* তার ললাটে গিয়ে পড়ুক। \b \q1 \v 27 “বিন্যামীন এক বুভুক্ষু নেকড়ে; \q2 সকালবেলায় সে শিকার গ্রাস করে, \q2 সন্ধ্যাবেলায় সে লুন্ঠিত জিনিসপত্র ভাগবাঁটোয়ারা করে।” \p \v 28 এরা সবাই ইস্রায়েলের সেই বারো বংশ, এবং তাঁদের বাবা প্রত্যেককে যথাযথ আশীর্বাদ দিয়ে তাঁদের আশীর্বাদ করার সময় তাঁদের এই কথাগুলিই বললেন। \s1 যাকোবের মৃত্যু \p \v 29 পরে তিনি তাঁদের এইসব নির্দেশ দিলেন: “আমি আমার পরিজনবর্গের সঙ্গে একত্রিত হতে যাচ্ছি। আমাকে আমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে হিত্তীয় ইফ্রোণের ক্ষেতের সেই গুহায় কবর দিয়ো, \v 30 যে গুহাটি কনানে মম্রির পার্শ্ববর্তী মক্‌পেলার ক্ষেতে অবস্থিত, যেটি অব্রাহাম হিত্তীয় ইফ্রোণের কাছ থেকে ক্ষেতসহ এক কবরস্থানরূপে কিনেছিলেন। \v 31 সেখানে অব্রাহাম এবং তাঁর স্ত্রী সারাকে কবর দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ইস্‌হাক ও তাঁর স্ত্রী রিবিকাকে কবর দেওয়া হয়েছিল, এবং সেখানেই আমি লেয়াকে কবর দিয়েছি। \v 32 সেই ক্ষেত ও সেই গুহাটি হিত্তীয়দের\f + \fr 49:32 \fr*\ft অথবা, হেতের বংশধরদের\ft*\f* কাছ থেকে কেনা হয়েছিল।” \p \v 33 যাকোব তাঁর ছেলেদের নির্দেশদান সমাপ্ত করার পর, তিনি তাঁর পা-দুটি বিছানায় টেনে আনলেন, শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন এবং তাঁর পরিজনবর্গের সঙ্গে একত্রিত হলেন। \c 50 \p \v 1 যোষেফ তাঁর বাবার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে চুমু দিলেন। \v 2 পরে যোষেফ তাঁর সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের তাঁর বাবা ইস্রায়েলের দেহটি সুগন্ধি বস্তু দ্বারা রক্ষা করার নির্দেশ দিলেন। অতএব চিকিৎসকরা তাঁর দেহটি সুগন্ধি বস্তু দ্বারা সংরক্ষণ করলেন, \v 3 তাঁরা পুরো চল্লিশ দিন সময় নিলেন, কারণ সুগন্ধি বস্তু দ্বারা শবদেহ সংরক্ষণ করার জন্য এতখানিই সময় লাগত। আর মিশরীয়রা তাঁর জন্য সত্তর দিন শোক পালন করল। \p \v 4 যখন শোকপালনকাল অতিবাহিত হয়ে গেল, তখন যোষেফ ফরৌণের রাজসভাসদদের কাছে গিয়ে বললেন, “আমি যদি আপনাদের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমার হয়ে ফরৌণের কাছে একথা বলুন। তাঁকে বলুন, \v 5 ‘আমার বাবা আমাকে দিয়ে এক প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমি মরতে চলেছি; কনান দেশে আমি নিজের জন্য যে কবর খুঁড়ে রেখেছি সেখানেই আমাকে কবর দিয়ো।” এখন আমাকে গিয়ে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসতে দিন; পরে আমি ফিরে আসব।’ ” \p \v 6 ফরৌণ বললেন, “যাও ও তোমার বাবাকে কবর দাও, যেমনটি করার জন্য তিনি তোমাকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছেন।” \p \v 7 অতএব যোষেফ তাঁর বাবাকে কবর দিতে গেলেন। ফরৌণের সব কর্মকর্তা যোষেফের সাথী হলেন—তাঁর দরবারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও মিশরের সব বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ— \v 8 এছাড়াও যোষেফের পরিবারের সব সদস্য ও তাঁর দাদা-ভাইয়েরা এবং তাঁর পৈত্রিক পরিবারের অন্তর্গত সকলে তাঁর সঙ্গে গেলেন। শুধুমাত্র তাঁদের সন্তানেরা, এবং তাঁদের মেষপাল ও পশুপাল গোশনে থেকে গেল। \v 9 রথ ও অশ্বারোহীরাও\f + \fr 50:9 \fr*\ft অথবা, সারথিরা\ft*\f* তাঁর সঙ্গে গেল। সে ছিল বিশাল এক সমবেত জনসমষ্টি। \p \v 10 তাঁরা যখন জর্ডনের কাছে আটদের খামারে পৌঁছালেন, তখন তাঁরা তারস্বরে ও তীব্রভাবে কান্নাকাটি করলেন; এবং যোষেফ সেখানে তাঁর বাবার জন্য সাত দিন ধরে শোক পালন করলেন। \v 11 যে কনানীয়রা সেখানে বসবাস করত, তারা যখন আটদের খামারে তাদের শোক পালন করতে দেখল, তখন তারা বলল, “মিশরীয়রা শোকের এক গুরুগম্ভীর অনুষ্ঠান পালন করছে।” সেজন্যই জর্ডনের কাছে অবস্থিত সেই স্থানটি আবেল-মিস্রয়ীম\f + \fr 50:11 \fr*\ft আবেল-মিস্রয়ীম শব্দের অর্থ মিশরীয়দের শোক\ft*\f* নামে আখ্যাত হল। \p \v 12 অতএব যাকোবের ছেলেরা তাই করলেন, যা তিনি তাঁদের আদেশ দিয়েছিলেন: \v 13 তাঁরা তাঁকে কনান দেশে বয়ে নিয়ে গেলেন এবং তাঁকে মম্রির কাছে, মক্‌পেলার সেই ক্ষেতে অবস্থিত গুহায় কবর দিলেন, যেটি অব্রাহাম হিত্তীয় ইফ্রোণের কাছ থেকে ক্ষেতজমিসহ এক কবরস্থানরূপে কিনে নিয়েছিলেন। \v 14 তাঁর বাবাকে কবর দেওয়ার পর, যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের ও অন্যান্য সেইসব লোকজনের সাথে মিশরে ফিরে এলেন, যারা তাঁর বাবাকে কবর দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। \s1 যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের পুনরায় আশ্বস্ত করেন \p \v 15 যোষেফের দাদা-ভাইয়েরা যখন দেখলেন যে তাঁদের বাবা মারা গিয়েছেন, তখন তাঁরা বললেন, “যোষেফ যদি আমাদের বিরুদ্ধে আক্রোশ পুষে রাখে ও তার প্রতি আমরা যেসব অন্যায় করেছি সে যদি তার প্রতিশোধ নেয়, তবে কী হবে?” \v 16 অতএব তাঁরা যোষেফের কাছে খবর পাঠিয়ে, বললেন, “তোমার বাবা মারা যাওয়ার আগে এসব নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন: \v 17 ‘যোষেফকে তোমাদের এই কথাটি বলতে হবে: তোমার দাদারা তোমার প্রতি এত খারাপ ব্যবহার করে যে পাপ ও অন্যায় করেছে আমি চাই তুমি যেন তা ক্ষমা করে দাও।’ এখন দয়া করে তোমার পৈত্রিক ঈশ্বরের দাসদের পাপগুলি ক্ষমা করে দাও।” তাঁদের এই খবর যখন যোষেফের কাছে এসে পৌঁছাল, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। \p \v 18 তাঁর দাদা-ভাইয়েরা পরে তাঁর কাছে এলেন এবং তাঁর সামনে নতমস্তক হয়ে প্রণাম করলেন। “আমরা তোমার ক্রীতদাস,” তাঁরা বললেন। \p \v 19 কিন্তু যোষেফ তাঁদের বললেন, “ভয় পেয়ো না। আমি কি ঈশ্বরের স্থলাভিষিক্ত? \v 20 তোমরা আমার ক্ষতি করার সংকল্প করলে, কিন্তু এখন যা কিছু হয়েছে তা ভালোর জন্যই, প্রচুর প্রাণরক্ষা করার জন্য ঈশ্বরই মনস্থ করে রেখেছিলেন। \v 21 তাই এখন, ভয় পেয়ো না। আমি তোমাদের ও তোমাদের সন্তানদের জন্য রসদপত্র জোগাব।” আর তিনি আবার তাঁদের আশ্বস্ত করলেন এবং তাঁদের সাথে সদয় কথাবার্তা বললেন। \s1 যোষেফের মৃত্যু \p \v 22 যোষেফ তাঁর পৈত্রিক পরিবারের সব লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে মিশরে থেকে গেলেন। তিনি 110 বছর বেঁচেছিলেন \v 23 এবং ইফ্রয়িমের সন্তানদের তৃতীয় প্রজন্মকে স্বচক্ষে দেখলেন। এছাড়াও মনঃশির ছেলে মাখীরের সন্তানদেরও জন্মের সময় যোষেফের কোলেই রাখা হল।\f + \fr 50:23 \fr*\ft অর্থাৎ, তাঁর বলে গণ্য করা হল\ft*\f* \p \v 24 পরে যোষেফ তাঁর দাদা-ভাইদের বললেন, “আমি মরতে চলেছি। কিন্তু ঈশ্বর নিঃসন্দেহে তোমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন এবং তোমাদের এই দেশ থেকে বের করে সেই দেশে নিয়ে যাবেন, যেটি তিনি অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।” \v 25 আর যোষেফ ইস্রায়েলীদের দিয়ে একটি প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিলেন ও বললেন, “ঈশ্বর নিঃসন্দেহে তোমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন, এবং তখন তোমাদের অবশ্যই আমার অস্থি এই স্থান থেকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে।” \p \v 26 অতএব যোষেফ 110 বছর বয়সে মারা গেলেন। আর তাঁরা তাঁকে সুগন্ধি বস্তু দ্বারা সংরক্ষণ করার পর তাঁর মৃতদেহ মিশরে একটি শবাধারের মধ্যে রেখে দেওয়া হল।