\id EZK - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h যিহিষ্কেল \toc1 যিহিষ্কেল \toc2 যিহিষ্কেল \toc3 যিহি \mt1 যিহিষ্কেল \c 1 \s1 যিহিষ্কেলের প্রথম দর্শন \p \v 1 ত্রিশতম বছরের চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিনে আমি যখন কবার নদীর ধারে বন্দিদের মধ্যে ছিলাম তখন আকাশ খুলে গেল আর আমি ঈশ্বরের দর্শন পেলাম। \p \v 2 সেই মাসের পঞ্চম দিনে, সেটি রাজা যিহোয়াখীনের নির্বাসনের পঞ্চম বছর ছিল, \v 3 ব্যাবিলনীয়দের দেশে কবার নদীর ধারে বুষির ছেলে যাজক যিহিষ্কেলের কাছে সদাপ্রভুর বাক্য উপস্থিত হল। সেখানে সদাপ্রভুর হাত তাঁর উপর ছিল। \p \v 4 আমি তাকিয়ে দেখলাম উত্তর দিক থেকে ঝড় আসছে—একটি বিরাট মেঘের সঙ্গে বিদ্যুৎ আর উজ্জ্বল আলো। আগুনের মাঝখানে উজ্জ্বল ধাতুর মতো কিছু ঝকমক করছিল, \v 5 আর আগুনে মধ্যে চারটি জীবন্ত প্রাণীর মতো কিছু দেখা গেল। তাদের চেহারা দেখতে ছিল মানুষের মতো \v 6 কিন্তু তাদের প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল। \v 7 তাদের পা সোজা; তাদের পায়ের পাতা বাছুরের খুরের মতো; আর সেগুলি পালিশ করা ব্রোঞ্জের মতো চকচক করছিল। \v 8 তাদের চারপাশের ডানার নিচে মানুষের মতো হাত ছিল। তাদের প্রত্যেকের মুখ ও ডানা ছিল, \v 9 এবং তাদের ডানাগুলি একটির সঙ্গে অন্যটি ছুঁয়েছিল। তারা প্রত্যেকে সোজা এগিয়ে যেতেন; যাবার সময় ফিরতেন না। \p \v 10 তাদের মুখগুলি এইরকম দেখতে ছিল: চারজনের প্রত্যেকের একটি করে মানুষের মুখ ছিল এবং প্রত্যেকের ডানদিকের মুখ সিংহের ও বাঁদিকের ষাঁড়ের; প্রত্যেকের আবার একটি করে ঈগলের মুখও ছিল। \v 11 তাদের মুখগুলি এরকম ছিল। তাদের ডানাগুলি উপরদিকে মেলে দেওয়া ছিল; প্রত্যেকের দুই ডানা তাঁর দুই পাশের প্রাণীর দেহ ছুঁয়েছিল, আর দুই ডানা দিয়ে সেই দেহ ঢাকা ছিল। \v 12 তারা প্রত্যেকে সামনের দিকে যেতেন। আত্মা যেদিকে যেতেন তারাও না ঘুরে সেদিকে যেতেন। \v 13 এই জীবন্ত প্রাণীদের মধ্যে জ্বলন্ত কয়লা কিংবা মশালের মতো আগুন জ্বলছিল এবং তা সেই প্রাণীদের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছিল; সেই আগুন উজ্জ্বল এবং তার মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ বেরিয়ে আসছিল। \v 14 প্রাণীগুলি বিদ্যুৎ চমকাবার মতো যাতায়াত করছিলেন। \p \v 15 আমি যখন ওই জীবন্ত প্রাণীগুলির দিকে তাকালাম তখন দেখলাম প্রত্যেক প্রাণী যাদের চারটে করে মুখ ছিল তাদের পাশে মাটিতে একটি করে চাকা পড়ে আছে। \v 16 সেই চাকাগুলির আকার ও গঠন এইরকম সেগুলি বৈদূর্যমণির মতো ঝকমক করছিল এবং চারটে চাকাই এক রকম দেখতে ছিল। একটি চাকার ভিতরে যেন আর একটি চাকা এইভাবে প্রত্যেকটি চাকা তৈরি ছিল। \v 17 চাকাগুলি চারিদিকের একদিকে চলত যেদিকে প্রাণীগুলির মুখ থাকত; প্রাণীগুলি চলবার সময় চাকাগুলি দিক পরিবর্তন করত না। \v 18 সেগুলির বেড় ছিল উঁচু ও ভয়ংকর এবং চারটে বেড়ের চারিদিকে চোখে ভরা ছিল। \p \v 19 জীবন্ত প্রাণীগুলি যখন চলত তাদের পাশের চাকাগুলিও চলত; আর যখন জীবন্ত প্রাণীগুলি মাটি থেকে উঠত, চাকাগুলিও উঠত। \v 20 আত্মা যখন যেদিকে যেতেন, তারাও সেদিকে যেত, এবং চাকাগুলি তাদের সঙ্গে উঠত, কারণ জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা সেই চাকার মধ্যে ছিল। \v 21 প্রাণীরা যখন চলতেন চাকাগুলিও চলত; প্রাণীগুলি স্থির হয়ে দাঁড়ালে চাকাগুলিও স্থির হয়ে দাঁড়াত, আর যখন প্রাণীরা মাটি থেকে উঠতেন, চাকাগুলি তাদের সঙ্গে উঠত, কারণ জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা সেই চাকার মধ্যে ছিল। \p \v 22 সেই জীবন্ত প্রাণীদের মাথার উপরে উন্মুক্ত এলাকার মতো কিছু একটি বিছানো ছিল, সেটি স্ফটিকের মতো ঝকমক করছিল এবং ভয়ংকর ছিল। \v 23 সেই খিলানের নিচে তাদের ডানাগুলি ছড়ানো ছিল এবং একজনের ডানা অন্যজনের ছুঁয়েছিল, আর প্রত্যেকের দেহ দুই ডানা দিয়ে ঢাকা ছিল। \v 24 প্রাণীগুলি চললে আমি তাদের ডানার শব্দ শুনতে পেলাম, যেন জলস্রোতের শব্দের মতো, যেন সর্বশক্তিমানের গলার স্বরের মতো, যেন সৈন্যবাহিনীর শোরগোলের মতো। তারা স্থির হয়ে দাঁড়ালে তাদের ডানা নামিয়ে নিতেন। \p \v 25 তারা যখন ডানা নামিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তখন তাদের মাথার উপরকার সেই উন্মুক্ত এলাকার উপর থেকে একটি গলার স্বর শোনা গেল। \v 26 তাদের মাথার উপরকার সেই উন্মুক্ত এলাকার উপরে নীলকান্তমণির সিংহাসনের মতো কিছু একটি ছিল এবং তার উপরে মানুষের আকারের একজনকে দেখা গেল। \v 27 আমি দেখলাম কোমর থেকে উপর পর্যন্ত তিনি দেখতে ছিলেন উজ্জ্বল ধাতুর মতো, যেন সেটি আগুনে পূর্ণ, আর কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত তাঁকে আগুনের মতো দেখতে লাগছিল; তাঁর চারপাশে ছিল উজ্জ্বল আলো। \v 28 বৃষ্টির দিনে মেঘের মধ্যে মেঘধনুকের মতোই তাঁর চারপাশে সেই আলো দেখা যাচ্ছিল। \p যা দেখা গেল তা ছিল সদাপ্রভুর মহিমার মতো। আমি যখন তা দেখলাম, আমি মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লাম, এবং আমি একজনের রব শুনতে পেলাম। \c 2 \s1 ভাববাদী হবার জন্য যিহিষ্কেলকে আহ্বান \p \v 1 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব।” \v 2 তিনি যখন কথা বলছিলেন তখন ঈশ্বরের আত্মা আমার মধ্যে এসে আমাকে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালেন আর আমি শুনলাম তিনি আমার সঙ্গে কথা বলছেন। \p \v 3 তিনি বললেন “হে মানবসন্তান, আমি তোমাকে ইস্রায়েলীদের কাছে পাঠাচ্ছি, সেই বিদ্রোহী জাতি যারা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে; তারা ও তাদের পূর্বপুরুষেরা আজ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে। \v 4 যে লোকদের কাছে আমি তোমাকে পাঠাচ্ছি তারা একগুঁয়ে ও জেদি। তাদের বলবে, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ \v 5 আর তারা শুনুক বা না শুনুক—কারণ তারা বিদ্রোহীকুল—তারা জানতে পারবে যে একজন ভাববাদী তাদের মধ্যে আছেন। \v 6 আর তুমি, মানবসন্তান, তুমি তাদের ও তাদের কথায় ভয় পেয়ো না। যদিও তারা শিয়ালকাঁটা ও কাঁটাঝোপের মতো তোমার চারপাশে থাকবে এবং তুমি কাঁকড়াবিছের মধ্যে বাস করবে। তাদের কথা শুনে বা তাদের দেখে ভয় পেয়ো না, যদিও তারা বিদ্রোহীকুল। \v 7 তুমি তাদের কাছে আমার কথা বলবে, তারা শুনুক বা না শুনুক, কারণ তারা বিদ্রোহী। \v 8 কিন্তু তুমি, মানবসন্তান, আমি যা বলছি তা শোনো। সেই বিদ্রোহীকুলের মতন বিদ্রোহী হোয়ো না; তোমার মুখ খোলো আর আমি যা তোমাকে দিচ্ছি তা খাও।” \p \v 9 তখন আমি তাকিয়ে দেখলাম আমার দিকে একটি হাত বাড়ানো রয়েছে। তাতে রয়েছে একটি গুটিয়ে রাখা বই, \v 10 যেটি তিনি আমার সামনে খুলে ধরলেন। তার দুদিকেই লেখা ছিল বিলাপ, শোক ও দুঃখের কথা। \c 3 \p \v 1 আর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তোমার সামনে যা রয়েছে তা খাও, এই গুটানো বইটি খাও; তারপর ইস্রায়েল কুলের কাছে গিয়ে কথা বলো।” \v 2 তখন আমি মুখ খুললাম, আর তিনি আমাকে সেই গুটানো বইটি খেতে দিলেন। \p \v 3 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, আমি তোমাকে যে গুটানো বই দিচ্ছি তা খেয়ে তোমার পেট ভর।” কাজেই আমি তা খেলাম, আর তা আমার মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগল। \p \v 4 তিনি তারপর আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি এখন ইস্রায়েলীদের কাছে যাও আর আমার বাক্য তাদের বলো। \v 5 তোমাকে তো এমন লোকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে না যাদের ভাষা তোমার অজানা ও কঠিন, কিন্তু পাঠানো হচ্ছে ইস্রায়েল কুলের কাছে \v 6 যাদের কথা তুমি বোঝো না সেইরকম অজানা ও কঠিন ভাষা বলা অনেক জাতির কাছে তোমাকে পাঠানো হচ্ছে না। যদি তাদের কাছে আমি তোমাকে পাঠাতাম তাহলে নিশ্চয় তারা তোমার কথা শুনত। \v 7 কিন্তু ইস্রায়েলীরা তোমার কথা শুনতে চাইবে না, যেহেতু তারা আমার কথা শুনতে চায় না, কারণ ইস্রায়েল কুল কঠিন-মনা ও একগুঁয়ে। \v 8 কিন্তু আমি তোমাকে তাদেরই মতো জেদি ও একগুঁয়ে করব। \v 9 আমি তোমার কপাল সব থেকে চকমকি পাথরের চেয়েও শক্ত, হিরের থেকেও শক্ত করব। যদিও তারা এক বিদ্রোহী জাতি তবুও তুমি তাদের ভয় পেয়ো না বা তাদের দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হোয়ো না।” \p \v 10 তিনি আমাকে আরও বললেন, “হে মানবসন্তান, আমি তোমাকে যে সকল কথা বলব তা তুমি মন দিয়ে শোনো ও অন্তরে গ্রহণ করো। \v 11 এখন তুমি বন্দিদশায় থাকা তোমার দেশের লোকদের কাছে গিয়ে কথা বলো। তারা শুনুক বা না শুনুক, তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \p \v 12 তারপর ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিলেন, আর আমার পিছনে আমি মহা-গজরানির শব্দ শুনতে পেলাম যখন আমি যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম সেখান থেকে সদাপ্রভুর মহিমা উঠল। \v 13 সেই জীবন্ত প্রাণীদের ডানা একে অন্যের সঙ্গে ঘসার শব্দ ও তাদের পাশের চাকার শব্দ, এক গজরানির শব্দ। \v 14 তারপর ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিয়ে গেলে আমি মনে দুঃখ ও আমার আত্মায় রাগ নিয়ে গেলাম, আর সদাপ্রভুর শক্তিশালী হাত আমার উপর ছিল। \v 15 যে বন্দিরা কবার নদীর কাছে তেল-আবীবে ছিল তাদের কাছে গেলাম। আর সেখানে, যেখানে তারা বাস করছিল, আমি তাদের মধ্যে—বিহ্বল হয়ে—সাত দিন বসে থাকলাম। \s1 যিহিষ্কেলের পাহারাদার হিসেবে কাজ \p \v 16 সাত দিন কেটে গেলে পর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল \v 17 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুলের জন্য আমি তোমাকে পাহারাদার নিযুক্ত করেছি; সুতরাং আমি যা বলছি তা শোনো এবং আমার হয়ে তাদের সতর্ক করো। \v 18 আমি যখন একজন দুষ্ট লোককে বলি, ‘তুমি নিশ্চয় মরবে,’ তখন তুমি যদি তাকে সাবধান না করো, কিংবা তার প্রাণ বাঁচাতে মন্দ পথ থেকে ফিরবার জন্য কিছু না বলো, তবে সেই দুষ্টলোক তার পাপের জন্য মরবে, কিন্তু তার রক্তের জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব। \v 19 কিন্তু সেই দুষ্ট লোককে তুমি সাবধান করার পরেও যদি সে তার দুষ্টতা থেকে কিংবা তার মন্দ পথ থেকে না ফেরে, তবে তার পাপের জন্য সে মরবে, কিন্তু তুমি নিজে রক্ষা পাবে। \p \v 20 “আবার, যখন কোনও ধার্মিক লোক তার ধার্মিকতা থেকে ফিরে মন্দ কাজ করে, আর আমি তার সামনে বিঘ্ন রাখি, তবে সে মরবে। যেহেতু তুমি তাকে সাবধান করোনি বলে সে তার পাপের জন্য মরবে। তার ধর্মের কাজ মনে রাখা হবে না, এবং তার রক্তের জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব। \v 21 কিন্তু তুমি যদি কোনও ধার্মিক ব্যক্তিকে পাপ না করার জন্য সতর্ক করো এবং তারা পাপ না করে, তারা নিশ্চয় বাঁচবে কেননা তারা সাবধানবাণী গ্রহণ করেছে, এবং তুমি নিজেকে বাঁচাবে।” \p \v 22 সেখানে সদাপ্রভুর হাত আমার উপর ছিল, আর তিনি আমাকে বললেন, “তুমি উঠে সমতলভূমিতে যাও, সেখানে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব।” \v 23 কাজেই আমি উঠে সমতলভূমিতে গেলাম। কবার নদীর ধারে সদাপ্রভুর যে মহিমা দেখেছিলাম সেইরকম মহিমাই সেখানে দেখলাম, আর আমি উবুড় হয়ে পড়লাম। \p \v 24 তখন ঈশ্বরের আত্মা আমার মধ্যে প্রবেশ করে আমায় দাড় করালেন। তিনি আমাকে বললেন, “তুমি তোমার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ভিতরে থাকো। \v 25 আর হে মানবসন্তান, তারা তোমাকে দড়ি দিয়ে বাঁধবে; তাতে তুমি বাইরে লোকজনের মধ্যে যেতে পারবে না। \v 26 তুমি যাতে চুপ করে থাকো ও তাদের বকাবকি করতে না পার সেইজন্য আমি তোমার জিভ মুখের তালুতে আটকে দেব, যদিও তারা বিদ্রোহীকুল। \v 27 কিন্তু যখন আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব, আমি তোমার মুখ খুলে দেব এবং তুমি তাদের বলবে, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ যে শোনে সে শুনুক, আর যে না শোনে সে না শুনুক; কেননা তারা বিদ্রোহীকুল। \c 4 \s1 জেরুশালেম অবরোধের প্রতীক \p \v 1 “এখন, হে মানবসন্তান, একটি মাটির ফলক নাও, সেটি তোমার সামনে রাখো এবং তার উপর জেরুশালেম নগরের ছবি আঁকো। \v 2 আর সেটি সৈন্য দিয়ে ঘিরে ফেলো; তার বিরুদ্ধে একটি উঁচু ঢিবি বানাও, তার বিরুদ্ধে শিবির তৈরি করো এবং দেয়ালের চারপাশে দেয়াল ভাঙার যন্ত্র বসাও। \v 3 একটি লোহার তাওয়া নিয়ে সেটি তোমার এবং নগরের মাঝখানে লোহার দেওয়ালের মতো রাখো এবং তোমার মুখ সেই দিকে ফিরিয়ে রাখো। তাতে নগর অবরুদ্ধ হবে, ও তুমি তা অবরোধ করবে। এটি ইস্রায়েল কুলের কাছে চিহ্ন হবে। \p \v 4 “তারপর তুমি বাঁ পাশ ফিরে শোবে এবং ইস্রায়েলের পাপের শাস্তি তোমার নিজের উপরে নেবে। যে কয়দিন তুমি পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে সেই কয়দিন তাদের শাস্তি তুমি বহন করবে। \v 5 তাদের শাস্তি পাবার বছরের সংখ্যা হিসেব করে ততদিন আমি তোমাকে তা বহন করতে দিলাম। কাজেই 390 দিন ইস্রায়েল কুলের শাস্তি তুমি বহন করবে। \p \v 6 “এটি শেষ হলে, তুমি আবার শোবে, এবারে ডান পাশ ফিরে শোবে এবং যিহূদা কুলের শাস্তি বহন করবে। আমি তোমার জন্য 40 দিন নির্ধারণ করলাম, প্রত্যেক বছরের জন্য একদিন। \v 7 তোমার মুখ জেরুশালেমের অবরোধের দিকে রাখবে আঢাকা হাতে তার বিরুদ্ধে ভাববাণী বলবে। \v 8 আমি তোমাকে দড়ি দিয়ে বাঁধব যেন তোমার অবরোধের দিন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি এক পাশ থেকে অন্য পাশে ফিরতে না পারো। \p \v 9 “তুমি গম ও যব, শিম ও মশুর ডাল, বাজরা ও জনরা নিয়ে একটি পাত্রে রাখবে এবং সেগুলি দিয়ে তোমার জন্য রুটি তৈরি করবে। যে 390 দিন তুমি পাশ ফিরে থাকবে তখন তা খাবে। \v 10 কুড়ি শেকল খাবার প্রত্যেক দিনের জন্য ওজন করবে এবং নির্ধারিত সময় তা খাবে। \v 11 এছাড়াও এক হিনের ছয় ভাগের এক ভাগ জল পরিমাপ করবে এবং নির্ধারিত সময় তা খাবে। \v 12 যবের পিঠের মতো করে সেই খাবার খাবে; লোকদের চোখের সামনে তা তৈরি করবে এবং মানুষের বিষ্ঠা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করবে।” \v 13 সদাপ্রভু বললেন, “এরকম করে ইস্রায়েলীরা সেইসব জাতির মধ্যে অশুচি খাবার খাবে যেখানে আমি তাদের তাড়িয়ে দেব।” \p \v 14 আমি তখন বললাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, এমন না হোক! আমি কখনও অশুচি হইনি। ছেলেবেলা থেকে এই পর্যন্ত আমি মরা বা বুনো পশুর মেরে ফেলা কোনও কিছু খাইনি। কোনও অশুচি মাংস আমার মুখে কখনও ঢোকেনি।” \p \v 15 তিনি বললেন, “খুব ভালো, আমি তোমাকে মানুষের বিষ্ঠার পরিবর্তে গোবরের ঘুঁটে পুড়িয়ে তোমার রুটি সেঁকবার অনুমতি দিলাম।” \p \v 16 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, আমি জেরুশালেমে খাবারের যোগান বন্ধ করে দেব। লোকেরা দুশ্চিন্তা নিয়ে মেপে খাবার খাবে এবং হতাশা নিয়ে মেপে জল খাবে, \v 17 কারণ খাবার ও জলের অভাব হবে। তারা একে অন্যকে দেখে হতভম্ব হবে এবং তাদের পাপের জন্য তারা ক্ষয় হয়ে যেতে থাকবে।” \c 5 \s1 ঈশ্বরের ক্ষুরধার বিচার \p \v 1 “এখন, হে মানবসন্তান, তোমার চুল ও দাড়ি কামাবার জন্য তুমি একটি ধারালো তরবার নিয়ে তা নাপিতের ক্ষুরের মতো ব্যবহার করবে। তারপর দাঁড়িপাল্লা নিয়ে চুলগুলি ভাগ করবে। \v 2 যখন অবরোধ দিন শেষ হবে তখন সেই চুলের তিন ভাগের এক ভাগ নিয়ে নগরের মধ্যে পুড়িয়ে দেবে। তিন ভাগের এক ভাগ চুল তরোয়াল দিয়ে নগরের চারিদিকে তা কুচি কুচি করে কাটবে। আর তিন ভাগের এক ভাগ চুল নিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দেবে। কারণ আমি তাদের খোলা তরোয়াল নিয়ে তাড়া করব। \v 3 তবে কিছু চুল রেখে দিয়ে তা তোমার পোশাকের ভাঁজে গুঁজে রাখবে। \v 4 পরে আরও কিছু চুল নিয়ে আগুনে ফেলে পুড়িয়ে দেবে। সেখান থেকে আগুন সমস্ত ইস্রায়েল কুলের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে। \p \v 5 “অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, এই হল জেরুশালেম, যাকে আমি জাতিদের মাঝে স্থাপন করেছি, এবং বিভিন্ন দেশ তার চারিদিকে রয়েছে। \v 6 কিন্তু সে তার মন্দতার জন্য আমার আইনকানুন ও নিয়মের বিরুদ্ধে তার চারপাশের বিভিন্ন জাতি ও দেশের চেয়েও বেশি বিদ্রোহ করেছে। সে আমার আইনকানুন অগ্রাহ্য করেছে এবং আমার নিয়ম মেনে চলেনি। \p \v 7 “অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমার চারপাশের জাতিদের চেয়ে তুমি আরও বেশি অবাধ্য হয়েছ। তুমি আমার নিয়ম মেনে চলোনি ও আমার আইনকানুন পালন করোনি। এমনকি, তোমার চারপাশের জাতিদের শাসন অনুসারে চলোনি। \p \v 8 “এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, জেরুশালেম, আমি নিজেই তোমার বিরুদ্ধে, আর আমি জাতিদের চোখের সামনেই তোমাকে শাস্তি দেব। \v 9 তোমার সব ঘৃণিত প্রতিমাগুলির জন্য আমি তোমার প্রতি যা করব তা আমি আগে কখনও করিনি এবং কখনও আবার করব না। \v 10 এই জন্য তোমার মধ্যে মা-বাবারা সন্তানদের মাংস খাবে আর সন্তানেরা মা-বাবার মাংস খাবে। আমি তোমাকে শাস্তি দেব এবং তোমার বেঁচে থাকা লোকদের চারিদিকে বাতাসে উড়িয়ে দেব। \v 11 অতএব, সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, তোমার সব ঘৃণ্য মূর্তি ও ঘৃণিত কাজকর্মের দ্বারা তুমি আমার উপাসনার স্থান অশুচি করেছ বলে আমি নিজেই তোমাদের ধ্বংস করব; আমি তোমার উপর মমতা করে তাকাব না কিংবা তোমাকে রেহাই দেব না। \v 12 তোমার এক-তৃতীয়াংশ লোক হয় মহামারিতে নয়তো দুর্ভিক্ষে মরবে; এক-তৃতীয়াংশ প্রাচীরের বাইরে তরোয়ালে মারা পড়বে; এবং এক-তৃতীয়াংশকে আমি বাতাসে চারিদিকে ছড়িয়ে দেব ও খোলা তরোয়াল নিয়ে তাদের তাড়া করব। \p \v 13 “এসব করবার পর তাদের উপর আমার ভীষণ ক্রোধ প্রশমিত হবে, আর আমি সন্তুষ্ট হব। তাদের উপর আমার ভীষণ ক্রোধ ঢেলে দেবার পর তারা জানতে পারবে যে, আমার অন্তরের জ্বালায় আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি। \p \v 14 “তোমার চারপাশের জাতিদের মধ্যে যারা তোমার পাশ দিয়ে যায় আমি তাদের চোখের সামনে তোমাকে একটি ধ্বংসস্থান ও ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র করব। \v 15 আমি যখন ভীষণ অসন্তোষ, ক্রোধ ও ভীষণ বকুনি দ্বারা তোমাকে শাস্তি দেব তখন তোমার চারপাশের জাতিদের কাছে ভয়ের বস্তু হবে; তুমি তাদের কাছে ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র এবং সাবধানবাণীর মতো। আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম। \v 16 আমি যখন তোমার প্রতি মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক দুর্ভিক্ষের তির ছুড়ব, আমি ছুড়ব তোমাকে ধ্বংস করার জন্য। আমি তোমার প্রতি আরও দুর্ভিক্ষ আনব এবং তোমার খাবারের যোগান বন্ধ করে দেব। \v 17 আমি তোমার বিরুদ্ধে দুর্ভিক্ষ ও হিংস্র পশু পাঠিয়ে দেব, তারা তোমাকে নিঃসন্তান করবে। মহামারি ও রক্তপাত তোমার মধ্যে দিয়ে যাবে, আর আমি তোমার বিরুদ্ধে তরোয়াল নিয়ে আসব। আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম।” \c 6 \s1 ইস্রায়েলের পর্বতের বিরুদ্ধে শাস্তিদান \p \v 1 সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি ইস্রায়েলের পর্বতের দিকে মুখ করে তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো \v 3 এবং বলো: ‘হে ইস্রায়েলের পর্বত, সার্বভৌম সদাপ্রভুর বাক্য শোনো। পাহাড় ও পর্বত, খাদ ও উপত্যকার প্রতি সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমার বিরুদ্ধে তরোয়াল নিয়ে আসব এবং তোমাদের উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেব। \v 4 তোমাদের বেদি সব ধ্বংস করা হবে এবং তোমাদের ধূপবেদিগুলি ভেঙে ফেলা হবে; আর তোমাদের প্রতিমাগুলির সামনে তোমাদের লোকদের আমি মেরে ফেলব। \v 5 আমি ইস্রায়েলীদের মৃতদেহগুলি তাদের প্রতিমাদের সামনে রাখব এবং তোমাদের বেদির চারপাশে তোমাদের হাড়গুলি ছড়িয়ে দেব। \v 6 তোমরা যেখানেই বসবাস করো না কেন সেখানকার নগরগুলি খালি পড়ে থাকবে এবং পূজার্চনার উঁচু স্থানগুলি ধ্বংস হবে, তার ফলে তোমাদের বেদিগুলি জনশূন্য ও বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে থাকবে, তোমাদের প্রতিমাগুলি চুরমার ও ধ্বংস হবে, তোমাদের ধূপবেদিগুলি ভেঙে পড়ে যাবে এবং তোমাদের তৈরি সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। \v 7 তোমাদের মধ্যে তোমাদের লোকেরা মরে পড়ে থাকবে, আর তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 8 “ ‘কিন্তু আমি কিছু লোককে বাঁচিয়ে রাখব, তোমাদের কিছু যখন বিভিন্ন দেশে ও জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে তখন সেই লোকেরা তরোয়াল থেকে মৃত্যুর হাত এড়াতে পারবে। \v 9 আর যে সকল জাতির মধ্যে তাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে, যারা রক্ষা পাবে তারা আমায় মনে রাখবে—তাদের ব্যভিচারী হৃদয় আমাকে কেমন দুঃখ দিয়েছে, যার কারণে আমাকে ত্যাগ করেছে, এবং তাদের চোখ, যা তাদের প্রতিমাদের প্রতি কামনা করেছ। তাদের সব মন্দ ও জঘন্য কাজের জন্য তারা নিজেরাই নিজেদের ঘৃণা করবে। \v 10 আর তারা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু; তাদের উপর এই বিপদ আনতে আমি অনর্থক বলিনি। \p \v 11 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তুমি করাঘাত ও মাটিতে পদাঘাত করো আর চেঁচিয়ে বলো “হায়!” কারণ ইস্রায়েল কুল তাদের মন্দ ও জঘন্য কাজের জন্য যুদ্ধে, দুর্ভিক্ষে ও মহামারিতে মারা পড়বে। \v 12 যে দূরে আছে সে মহামারিতে মরবে, এবং যে কাছে আছে সে যুদ্ধে মারা পড়বে, আর যে বেঁচে যাবে সে দুর্ভিক্ষে মরবে। এইভাবে আমার ক্রোধ আমি তাদের উপর সম্পূর্ণভাবে ঢেলে দেব। \v 13 আর তারা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু, তাদের লোকেরা যখন বেদির চারপাশে প্রতিমাগুলির মধ্যে, সমস্ত বড়ো বড়ো পাহাড়ের উপরে, ডালপালা ছড়ানো প্রত্যেকটি গাছের নিচে এবং পাতাভরা এলা গাছের তলায়—যেখানে তারা তাদের প্রতিমাগুলি উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত সেইসব জায়গায় তারা মরে পড়ে থাকবে। \v 14 আর আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার হাত বাড়াব এবং মরুএলাকা থেকে দিব্‌লা পর্যন্ত জনশূন্য ও ধ্বংসস্থান করব—তারা যেখানেই থাকুক। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \c 7 \s1 শেষ সময় উপস্থিত \p \v 1 সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল দেশের প্রতি সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘শেষ সময়! দেশের চার কোনায় \q2 শেষ সময় উপস্থিত হয়েছে! \q1 \v 3 এখন সেই সময় তোমার উপর এসে পড়েছে \q2 এবং তোমার বিরুদ্ধে আমি আমার ক্রোধ ঢেলে দেব। \q1 তোমার আচরণ অনুসারে আমি তোমার বিচার করব \q2 এবং তোমার সমস্ত জঘন্য কাজের জন্য তোমাকে শাস্তি দেব। \q1 \v 4 আমি তোমার প্রতি করুণা দেখাব না; \q2 ক্ষমা করব না। \q1 আমি নিশ্চয়ই তোমার আচরণ \q2 ও তোমার মধ্যেকার জঘন্য কাজের জন্য তোমাকে শাস্তি দেব। \m “ ‘তখন তুমি জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ \b \p \v 5 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: \q1 “ ‘বিপর্যয়! যে বিপর্যয়ের কথা শোনা যায়নি! \q2 দেখো, তা আসছে! \q1 \v 6 শেষ সময় এসে পড়েছে! \q2 শেষ সময় এসে পড়েছে! \q1 তোমাদের বিরুদ্ধে তা জেগে উঠেছে। \q2 দেখো, তা আসছে! \q1 \v 7 তোমাদের উপর সর্বনাশ এসে পড়েছে, \q2 তোমরা যারা এই দেশে বসবাস করো। \q1 সময় উপস্থিত! সেদিন কাছে এসেছে! \q2 পর্বতের উপরে আনন্দ নেই, আছে আতঙ্ক। \q1 \v 8 আমি তোমার উপর আমার ক্রোধ ঢালতে যাচ্ছি \q2 ও আমার রাগ তোমার উপর ব্যয় করব; \q1 তোমার আচরণ অনুসারে আমি তোমার বিচার করব \q2 এবং তোমার সমস্ত জঘন্য কাজের জন্য তোমাকে শাস্তি দেব। \q1 \v 9 আমি তোমার প্রতি করুণা দেখাব না; \q2 আমি ক্ষমা করব না। \q1 আমি তোমার আচরণ \q2 ও তোমার মধ্যেকার জঘন্য কাজের পাওনা তোমাকে দেব। \b \m “ ‘তখন তুমি জানবে যে আমি সদাপ্রভুই তোমাকে আঘাত করি। \q1 \v 10 “ ‘দেখো, দিন এসেছে! \q2 তা এসে পড়েছে! \q1 সর্বনাশ ফেটে বেরিয়েছে, \q2 লাঠিতে কুঁড়ি ধরেছে, \q2 অহংকারের ফুল ফুটেছে! \q1 \v 11 হিংস্রতা উঠে এসেছে \q2 অন্যায়কারীদের লাঠি দ্বারা শাস্তি দেওয়া হবে; \q1 কোনও মানুষ বাদ যাবে না, \q2 কোনও জনসাধারণও না, \q1 তাদের কোনও ধনসম্পদ, \q2 মূল্যবান কিছুই না। \q1 \v 12 সময় হয়েছে! \q2 সেদিন এসে গেছে! \q1 ক্রেতা আনন্দ না করুক \q2 বা বিক্রেতা শোক না করুক, \q2 কারণ আমার ক্রোধ সমস্ত জনসাধারণের উপরে। \q1 \v 13 বিক্রেতা ফেরত পাবে না \q2 যে জমি বিক্রি হয়েছে, \q2 যতক্ষণ বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়েই বেঁচে থাকে। \q1 কারণ সমস্ত লোকের জন্য এই দর্শনে \q2 পরিবর্তন হবে না। \q1 তাদের পাপের জন্য একজনও \q2 তার জীবন রক্ষা করতে পারবে না। \b \q1 \v 14 “ ‘যদিও তারা তূরী বাজিয়ে \q2 সবকিছু প্রস্তুত করেছে, \q1 কিন্তু কেউ যুদ্ধে যাবে না, \q2 কারণ সমস্ত জনসাধারণের উপরে আমার ক্রোধ আছে। \q1 \v 15 বাইরে তরোয়াল; \q2 ভিতরে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি, \q1 যারা দেশের ভিতরে থাকবে \q2 তারা তরোয়াল দ্বারা মারা পড়বে, \q1 যারা নগরের ভিতরে থাকবে \q2 তাদের দুর্ভিক্ষ ও মহামারি গ্রাস করবে। \q1 \v 16 যারা পালাতে পারবে \q2 তারা পাহাড়ে পালাবে। \q1 উপত্যকার ঘুঘুর মতো, \q2 তারা বিলাপ করবে, \q2 প্রত্যেকে নিজেদের পাপের জন্য। \q1 \v 17 প্রত্যেকের হাত অবশ হয়ে যাবে; \q2 প্রত্যেকের হাঁটু জলের মতো দুর্বল হয়ে পড়বে। \q1 \v 18 তারা চট পরবে \q2 ও ভীষণ ভয়ে কাঁপবে। \q1 লজ্জায় তাদের প্রত্যেকের মুখ ঢাকা পড়বে \q2 ও তাদের প্রত্যেকের মাথা কামানো হবে। \b \q1 \v 19 “ ‘তারা রাস্তায় তাদের রুপো ফেলে দেবে \q2 এবং তাদের সোনা অশুচি জিনিস হবে। \q1 সদাপ্রভুর ক্রোধের দিন \q2 তাদের রুপো ও সোনা \q2 তাদের রক্ষা করতে পারবে না। \q1 তা দিয়ে তাদের খিদে মিটবে না \q2 বা পেট ভরবে না, \q2 কারণ সেগুলিই তাদের পাপের মধ্যে ফেলেছে। \q1 \v 20 তাদের সুন্দর গহনার জন্য তারা গর্ববোধ করত \q2 এবং সেগুলি ব্যবহার করে ঘৃণ্য প্রতিমা। \q1 তারা সেগুলি দিয়ে জঘন্য মূর্তি তৈরি করত; \q2 সুতরাং আমি তাদের জন্য সেগুলি অশুচি করে দেব। \q1 \v 21 আমি তাদের সম্পদ লুট হিসেবে বিদেশিদের হাতে দেব \q2 এবং লুটের জিনিস হিসেবে পৃথিবীর দুষ্ট লোকদের হাতে তুলে দেব, \q2 তারা সেগুলি অপবিত্র করবে। \q1 \v 22 আমি তাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেব, \q2 এবং যে স্থান আমি ধন বলে মনে করি চোরেরা তা অপবিত্র করবে, \q1 তারা সেখানে ঢুকবে \q2 এবং তা অপবিত্র করবে। \b \q1 \v 23 “ ‘শিকল প্রস্তুত করো! \q2 কেননা দেশ রক্তপাতে পূর্ণ \q2 এবং নগর হিংস্রতায় পরিপূর্ণ। \q1 \v 24 তাদের ঘরবাড়ি দখল করার জন্য \q2 আমি জাতিদের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্ট জাতিকে নিয়ে আসব; \q1 আমি শক্তিশালীদের অহংকার ভেঙে দেব, \q2 আর তাদের পবিত্র জায়গাগুলি অপবিত্র হবে। \q1 \v 25 সন্ত্রাস আসলে, \q2 তারা বৃথা শান্তির খোঁজ করবে। \q1 \v 26 বিপদের উপর বিপদ আসবে, \q2 এবং গুজবের উপর গুজব। \q1 তারা ভাববাদীর কাছ থেকে দর্শন পাবার জন্য যাবে; \q2 প্রাচীন লোকদের উপদেশের মতন \q2 যাজকদের বিধান সম্বন্ধে শিক্ষা হারিয়ে যাবে। \q1 \v 27 রাজা বিলাপ করবে, \q2 রাজকুমার হতাশাগ্রস্ত হবে, \q2 আর দেশের লোকদের হাত কাঁপবে। \q1 আমি তাদের আচরণ অনুযায়ী তাদের সঙ্গে ব্যবহার করব, \q2 আর তাদের মানদণ্ড অনুযায়ী আমি তাদের বিচার করব। \b \m “ ‘তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \c 8 \s1 মন্দিরে প্রতিমাপূজা \p \v 1 ষষ্ঠ বছরের ষষ্ঠ মাসের পঞ্চম দিনে, আমি যখন আমার বাড়িতে বসেছিলাম আর যিহূদার বৃদ্ধ নেতারা আমার সামনে বসেছিলেন তখন সেখানে সার্বভৌম সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে আসল। \v 2 আমি তাকিয়ে মানুষের মতো একজনকে দেখতে পেলাম। তাঁর কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত আগুনের মতো লাগছিল, আর কোমর থেকে উপর পর্যন্ত চকচকে ধাতুর মতো উজ্জ্বল ছিল। \v 3 তিনি হাতের মতো কিছু বাড়ালেন ও আমার মাথার চুল ধরলেন। তখন ঈশ্বরের আত্মা আমাকে পৃথিবী ও স্বর্গের মাঝে নিয়ে গেলেন এবং ঈশ্বরীয় দর্শনে আমাকে জেরুশালেমের ভিতরের প্রাঙ্গণের উত্তর দিকের দরজার ভিতরে ঢুকবার পথে নিয়ে গেলেন যেখানে সেই প্রতিমা ছিল যে ঈর্ষায় প্ররোচনা দিত। \v 4 আর সেখানে আমার সামনে ছিল ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা, যা আমি সমভূমিতে দর্শনের মধ্যে দেখেছিলাম। \p \v 5 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, উত্তর দিকে তাকাও।” সুতরাং আমি তাকালাম, আর ঈর্ষার প্রতিমাকে বেদির দরজার উত্তরের ভিতরে ঢুকবার জায়গায় দেখলাম। \p \v 6 আর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তারা কি করছে তা কি তুমি দেখতে পাচ্ছ—ইস্রায়েল কুল এখানে কি ভীষণ ঘৃণ্য কাজ করছে, যার ফলে আমাকে আমার উপাসনার জায়গা থেকে দূরে সরিয়ে দেবে? কিন্তু এর পরেও তুমি আরও ঘৃণ্য কাজ দেখতে পাবে।” \p \v 7 তারপর তিনি আমাকে প্রাঙ্গণের ঢুকবার পথে নিয়ে গেলেন। আমি তাকিয়ে দেয়ালে একটি গর্ত দেখতে পেলাম। \v 8 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, দেয়ালের ওই গর্তটি আরও বড়ো করো।” সেইজন্য আমি গর্তটি আরও বড়ো করলাম আর সেখানে একটি দরজা দেখতে পেলাম। \p \v 9 আর তিনি আমাকে বললেন, “ভিতরে যাও এবং দেখো তারা এখানে কি মন্দ ও ঘৃণ্য কাজ করছে।” \v 10 সুতরাং আমি ভিতরে গিয়ে তাকালাম, আর দেয়ালের সমস্ত জায়গায় সব রকম বুকে হাঁটা প্রাণী ও ঘৃণ্য জীবজন্তু এবং ইস্রায়েল কুলের সমস্ত প্রতিমা। \v 11 তাদের সামনে ইস্রায়েল কুলের সত্তরজন প্রাচীন লোক দাড়িয়ে রয়েছে এবং তাদের মধ্যে দাড়িয়ে আছে শাফনের ছেলে যাসনিয়। তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে ধুনুচি ছিল এবং তা থেকে ধূপের ধূমমেঘ উপরদিকে উঠছিল। \p \v 12 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি কি দেখেছ ইস্রায়েল কুলের প্রাচীন লোকেরা অন্ধকারে নিজের নিজের ঘরে প্রতিমার সামনে কি করছে? তারা বলছে, ‘সদাপ্রভু আমাদের দেখেন না; সদাপ্রভু আমাদের দেশ ত্যাগ করেছেন।’ ” \v 13 তিনি আবার বললেন, “এর চেয়েও বেশি ঘৃণ্য কাজ তুমি তাদের করতে দেখবে।” \p \v 14 তারপর তিনি আমাকে সদাপ্রভুর গৃহের উত্তর দিকের দরজার ঢুকবার পথে আনলেন, আর আমি দেখলাম স্ত্রীলোকেরা সেখানে বসে তম্মুষ দেবতার জন্য কাঁদছে। \v 15 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি কি দেখলে? এর চেয়েও বেশি ঘৃণ্য কাজ তুমি দেখতে পাবে।” \p \v 16 তারপর তিনি আমাকে সদাপ্রভুর গৃহের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেলেন, আর মন্দিরের ঢুকবার পথে, বারান্দা ও বেদির মাঝখানে প্রায় পঁচিশজন লোক ছিল। সদাপ্রভুর মন্দিরের দিকে পিছন ফিরে পূর্বদিকে মুখ করে তারা সূর্যের কাছে প্রণাম করছিল। \p \v 17 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি এটি দেখলে? যিহূদার লোকেরা যে ঘৃণ্য কাজ এখানে করছে তা করা তাদের পক্ষে কি সামান্য ব্যাপার? সারা দেশ হিংস্রতায় পরিপূর্ণ করা এবং অবিরত আমার অসন্তোষ বাড়িয়ে তোলা তাদের কি উচিত? দেখো, তারা নিজেদের নাকের কাছে গাছের শাখা ধরছে! \v 18 অতএব তাদের প্রতি আমার আচরণ হবে রাগের; আমি তাদের প্রতি করুণা দেখাব না অথবা ক্ষমা করব না। যদিও তারা আমার কানের কাছে চেঁচায়, আমি তাদের কথা শুনব না।” \c 9 \s1 প্রতিমাপূজকদের উপরে বিচার \p \v 1 তারপর উঁচু স্বরে তাঁকে বলতে শুনলাম, “নগরের বিচার করার জন্য যারা নিযুক্ত তাদের কাছে নিয়ে এসো, প্রত্যেকে হাতে অস্ত্র নিয়ে আসুক।” \v 2 আর আমি ছ-জন লোককে উপরের দরজার দিক দিয়ে আসতে দেখলাম, যেটির মুখ উত্তর দিকে ছিল, প্রত্যেকের হাতে মারাত্মক অস্ত্র ছিল। তাদের সঙ্গে ছিলেন মসিনা কাপড় পরা একজন লোক আর তাঁর কোমরের পাশে ছিল লেখালেখির সরঞ্জাম। তারা এসে ব্রোঞ্জের বেদির পাশে দাঁড়ালেন। \p \v 3 তখন ইস্রায়েলের ঈশ্বরের যে মহিমা করূবের উপর ছিল তা সেখান থেকে উঠে উপাসনা গৃহের চৌকাঠের কাছে গেল। সদাপ্রভু মসিনার কাপড় পরা সেই লোকটিকে ডাকলেন, যাঁর কোমরের পাশে লেখালেখির সরঞ্জাম ছিল \v 4 আর তাঁকে বললেন, “তুমি জেরুশালেম নগরের মধ্যে দিয়ে যাও এবং তার মধ্যে যেসব ঘৃণ্য কাজ হচ্ছে সেইজন্য যারা শোক ও বিলাপ করছে তাদের কপালে একটি করে চিহ্ন দাও।” \p \v 5 আমি যখন শুনছিলাম, তিনি অন্যদের বললেন, “তোমরা নগরের মধ্যে ওর পিছনে পিছনে যাও এবং কোনও মায়ামমতা না দেখিয়ে লোকদের মেরে ফেলতে থাকো, কাউকে রেহাই দিয়ো না। \v 6 বুড়ো, যুবক, যুবতী, স্ত্রীলোকদের ও ছোটো ছেলেমেয়েদের মেরে ফেলো, কিন্তু যাদের চিহ্ন আছে তাদের ছুঁয়ো না। আমার উপাসনা গৃহ থেকে শুরু করো।” তাতে তারা মন্দিরের সামনে প্রাচীন লোকদের দিয়ে শুরু করল। \p \v 7 তারপর তিনি তাদের বললেন, “যাও! মন্দির অশুচি করো এবং নিহত লোকদের দিয়ে প্রাঙ্গণ ভরে ফেলো।” তাতে তারা নগরের মধ্যে গিয়ে লোকদের মেরে ফেলতে লাগলেন। \v 8 তারা যখন হত্যা করছিলেন আর আমি একা ছিলাম তখন আমি উপুড় হয়ে পড়ে কাঁদলাম আর বললাম, “হায়, সার্বভৌম সদাপ্রভু! জেরুশালেমের উপরে তোমার ক্রোধ ঢেলে দিয়ে তুমি কি ইস্রায়েলের বাকি সবাইকে ধ্বংস করে ফেলবে?” \p \v 9 তিনি উত্তরে আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল ও যিহূদা কুলের পাপ অত্যন্ত ভয়ানক; দেশ রক্তপাতে ভরা এবং নগরটি অবিচারে ডুবে গেছে। তারা বলে, ‘সদাপ্রভু দেশ ত্যাগ করেছেন; সদাপ্রভু আমাদের দেখেন না।’ \v 10 সেইজন্য আমি তাদের প্রতি করুণা দেখাব না অথবা ক্ষমা করব না, কিন্তু তারা যা করেছে তার ফল আমি তাদের উপর ঢেলে দেব।” \p \v 11 তখন মসিনা কাপড় পরা সেই লোকটি যার কোমরের কাছে লেখালেখির সরঞ্জাম ছিল তিনি এই খবর দিলেন, “আপনি যেমন আদেশ দিয়েছিলেন আমি সেই অনুসারে কাজ করেছি।” \c 10 \s1 ঈশ্বরের মহিমা মন্দির থেকে চলে গেল \p \v 1 তারপর আমি চেয়ে দেখলাম আর করূবদের মাথার উপর দিকে সেই উন্মুক্ত এলাকা ছিল তার উপরে নীলকান্তমণির সিংহাসনের মতো কিছু একটি দেখতে পেলাম। \v 2 সদাপ্রভু মসিনা কাপড় পরা লোকটিকে বললেন, “করূবদের নিচে যে চাকাগুলি আছে তুমি সেগুলির মধ্যে যাও। সেই করূবদের মাঝখান থেকে তুমি দু-হাত ভরে জ্বলন্ত কয়লা নিয়ে নগরের উপর ছড়িয়ে দাও।” আমার চোখের সামনে লোকটি সেখানে ঢুকলেন। \p \v 3 যখন সেই লোকটি ভিতরে ঢুকলেন, তখন করূবেরা মন্দিরের দক্ষিণ দিকে দাঁড়িয়েছিলেন, এবং ভিতরের প্রাঙ্গণ মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। \v 4 সেই সময় সদাপ্রভুর মহিমা করূবদের উপর থেকে উঠে মন্দিরের গোবরাটের উপর দাড়াল। মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গেল, এবং প্রাঙ্গণ সদাপ্রভুর মহিমার ঔজ্জ্বল্যে ভরা ছিল। \v 5 করূবদের ডানার আওয়াজ বাইরের প্রাঙ্গণ পর্যন্ত শোনা যাচ্ছিল, সেই আওয়াজ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কথা বলার আওয়াজের মতো। \p \v 6 সদাপ্রভু যখন মসিনা কাপড় পরা লোকটিকে এই আদেশ দিয়েছিলেন, “তুমি করূবদের মাঝখানে চাকার মধ্য থেকে আগুন নাও,” তখন লোকটি ভিতরে গিয়ে একটি চাকার পাশে দাঁড়ালেন। \v 7 তখন করূবদের মধ্যে একজন তাদের মধ্যকার আগুনের দিকে হাত বাড়ালেন। তিনি কিছু আগুন নিয়ে সেই মসিনা কাপড় পরা লোকটির হাতে দিলেন, যিনি তা নিয়ে বের হয়ে গেলেন। \v 8 (করূবদের ডানার নিচে মানুষের হাতের মতো কিছু দেখা গেল।) \p \v 9 পরে আমি তাকিয়ে করূবদের প্রত্যেকের পাশে একটি করে মোট চারটি চাকা দেখতে পেলাম; চাকাগুলি বৈদূর্যমণির মতো চকমক করছিল। \v 10 সেগুলির আকৃতি এইরকম, সেই চারটি চাকা দেখতে একইরকম ছিল; একটি চাকার মধ্যচ্ছেদ করে যেন আর একটি চাকা। \v 11 চলবার সময় সেই চাকাগুলি চারদিকের যে কোনও দিকে সোজা চলত, অন্য কোনও দিকে ফিরত না। করূবদের মাথা যেদিকে থাকত তারা সেদিকেই চলতেন, চলবার সময় ফিরতেন না। \v 12 তাদের চারটি চাকাতে, গোটা দেহে, পিঠে, হাতে এবং ডানার চারপাশে চোখে ভরা ছিল। \v 13 আমি শুনলাম চাকাগুলিকে “ঘুরন্ত চাকা” বলে ডাকা হচ্ছে। \v 14 প্রত্যেকটি করূবের চারটি করে মুখ ছিল; প্রথমটি করূবের, দ্বিতীয়টি মানুষের, তৃতীয়টি সিংহের, চতুর্থটি ঈগল পাখির। \p \v 15 তখন করূবেরা উপরের দিকে উঠলেন। এরাই সেই জীবন্ত প্রাণী যাদের আমি কবার নদীর ধারে দেখতে পেয়েছিলাম। \v 16 করূবেরা চললে তাদের পাশে চাকাগুলি চলত; আর করূবেরা মাটি ছেড়ে উঠবার জন্য ডানা মেললে চাকাগুলি তাদের পাশ ছাড়ত না। \v 17 করূবেরা থামলে সেগুলিও থামত আর করূবেরা উঠলে তাদের সঙ্গে তারা উঠত, কারণ সেই জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা সেগুলির মধ্যেই ছিল। \p \v 18 তারপর সদাপ্রভুর মহিমা মন্দিরের গোবরাটের উপর থেকে চলে গিয়ে করূবদের উপরে থামল। \v 19 আমি যখন দেখছিলাম, করূবেরা তাদের ডানা মেলে মাটি ছেড়ে উপরে উঠতে লাগলেন, আর তারা যখন যাচ্ছিলেন চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে চলল। তারা সদাপ্রভুর গৃহের পূর্বদিকের দ্বারে ঢুকবার পথে গিয়ে থামল, আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের উপরে ছিল। \p \v 20 এই জীবন্ত প্রাণীদেরই আমি কবার নদীর ধারে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নিচে দেখেছিলাম, আর আমি বুঝতে পারলাম যে তারা ছিলেন করূব। \v 21 প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল এবং তাদের ডানার নিচে মানুষের হাতের মতো দেখতে কিছু ছিল। \v 22 কবার নদীর ধারে আমি যেমন দেখেছিলাম তাদের মুখের চেহারা তেমনই ছিল। তারা প্রত্যেকেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতেন। \c 11 \s1 জেরুশালেমের উপর ঈশ্বরের নিশ্চিত বিচার \p \v 1 তারপর ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহের পূর্বদিকের দ্বারের কাছে আনলেন। সেখানে দ্বারে ঢুকবার জায়গায় পঁচিশজন পুরুষ ছিল আর তাদের মধ্যে লোকদের নেতা অসূরের ছেলে যাসনিয় ও বনায়ের ছেলে প্লটিয়কে দেখলাম। \v 2 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই নগরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনা এবং খারাপ পরামর্শ দিচ্ছে। \v 3 তারা বলছে, ‘ঘরবাড়ি তৈরি করবার সময় কি হয়নি? এই নগরটি যেন রান্নার হাঁড়ি আর আমরা হচ্ছি মাংস।’ \v 4 অতএব হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো; সুতরাং এদের বিরুদ্ধে ভাববাণী বলো।” \p \v 5 তারপর সদাপ্রভুর আত্মা আমার উপরে আসলেন, আর তিনি আমাকে বলতে বললেন, “সদাপ্রভুর এই কথা বলেন, তোমরা এই কথা বলছ, তোমরা ইস্রায়েলের নেতারা, কিন্তু আমি জানি তোমাদের মনে কি আছে। \v 6 তোমরা এই নগরে অনেক লোককে মেরে ফেলেছ এবং মরা মানুষ দিয়ে রাস্তাগুলি ভরেছ। \p \v 7 “সেইজন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমাদের যে মরা লোকদের তোমরা নগরে ফেলেছ সেগুলিই মাংস এবং এই নগরটি হাঁড়ি, কিন্তু সেখান থেকে তোমাদের তাড়িয়ে দেব। \v 8 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন; তোমরা তরোয়ালকে ভয় করো, আর আমি তোমাদের বিরুদ্ধে তরোয়ালই আনব। \v 9 আমি নগর থেকে তোমাদের তাড়িয়ে বের করে বিদেশিদের হাতে তুলে দেব এবং তোমাদের শাস্তি দেব। \v 10 তোমরা তরোয়াল দ্বারা মারা পড়বে, আর ইস্রায়েলের সীমানায় আমি তোমাদের বিচার করব। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 11 এই নগর তোমাদের জন্য হাঁড়ি হবে না, আর তোমরা তার মধ্যেকার মাংস হবে না; ইস্রায়েলের সীমানায় আমি তোমাদের বিচার করব। \v 12 আর তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু, কারণ তোমরা আমার নিয়ম ও শাসন পালন করোনি বরং তোমাদের চারপাশের জাতিদের অনুরূপ হয়েছ।” \p \v 13 এখন আমি যখন ভাববাণী বলছিলাম, বনায়ের ছেলে প্লটিয় মারা গেল। আমি তখন উবুড় হয়ে পড়ে উঁচু স্বরে কেঁদে কেঁদে বললাম, “হায়, সার্বভৌম সদাপ্রভু! তুমি কি ইস্রায়েলের বাকি লোকদের সবাইকে শেষ করে দেবে?” \s1 ইস্রায়েলের ফিরে আসার প্রতিজ্ঞা \p \v 14 সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে প্রকাশ পেল, \v 15 “হে মানবসন্তান, জেরুশালেমের লোকেরা তোমার নির্বাসিত ভাইদের এবং অন্যান্য ইস্রায়েলীদের সম্বন্ধে বলছে, ‘তারা সদাপ্রভু থেকে অনেক দূরে চলে গেছে; এই দেশ তো আমাদের অধিকারের জন্য দেওয়া হয়েছে।’ \p \v 16 “সুতরাং বলো ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যদিও আমি তাদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি, তবুও কিছু সময়ের জন্য সেই সমস্ত দেশে আমি তাদের পবিত্রস্থান হয়েছি।’ \p \v 17 “সুতরাং বলো ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন আমি যদিও তোমাদের অন্যান্য জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি, আমি সেখান থেকে তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসব, আর আবার আমি তোমাদের ইস্রায়েল দেশ ফিরিয়ে দেব।’ \p \v 18 “তারা সেখানে ফিরে গিয়ে সব জঘন্য মূর্তি ও ঘৃণ্য প্রতিমাগুলি দূর করে দেবে। \v 19 আমি তাদের একই হৃদয় দেব ও সেখানে এক নতুন আত্মা স্থাপন করব; আমি তাদের মধ্যে থেকে কঠিন হৃদয় সরিয়ে এক মাংসময় হৃদয় দেব। \v 20 তখন তারা আমার নিয়ম সকল অনুসরণ করবে এবং আমার শাসন পালন করতে যত্নবান হবে। তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব। \v 21 কিন্তু যাদের হৃদয় জঘন্য মূর্তি ও ঘৃণ্য প্রতিমার প্রতি অনুগত, তাদের কাজের ফল আমি তাদেরই মাথায় ঢেলে দেব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।” \p \v 22 এরপর করূবেরা তাদের ডানা মেলে দিলেন, তাদের পাশে সেই চাকাগুলি ছিল, আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের উপরে ছিলেন। \v 23 সদাপ্রভুর মহিমা নগরের মধ্য থেকে উঠে তার পূর্বদিকের পাহাড়ের উপরে গিয়ে থামল। \v 24 ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিলেন এবং তাঁর দেওয়া দর্শনের মধ্য দিয়ে আবার ব্যাবিলনে নির্বাসিতদের কাছে নিয়ে গেলেন। \p তখন যে দর্শন আমি দেখেছিলাম তা আমার কাছ থেকে উপরে উঠে গেল, \v 25 আর সদাপ্রভু আমাকে যে সকল বিষয় দেখিয়েছিলেন, সে সমস্তই আমি নির্বাসিত লোকদের বললাম। \c 12 \s1 চিহ্নের মধ্য দিয়ে নির্বাসিতদের বর্ণনা \p \v 1 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি বিদ্রোহী জাতির মধ্যে বাস করছ। তাদের দেখার চোখ আছে কিন্তু দেখে না আর শোনার কান আছে কিন্তু শোনে না, কারণ তারা বিদ্রোহী জাতি। \p \v 3 “অতএব, হে মানবসন্তান, তুমি যেন নির্বাসনে যাচ্ছ সেইভাবে তোমার জিনিসপত্র বেঁধে নাও এবং তাদের চোখের সামনে দিনের বেলাতেই তুমি যেখানে আছ সেখান থেকে আরেকটি জায়গায় রওনা হও। হয়তো তারা বুঝতে পারবে, যদিও তারা বিদ্রোহীকুল। \v 4 দিনের বেলা যখন তারা দেখবে, নির্বাসনে যাবার জন্য তোমার জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসবে। তারপর সন্ধ্যায় নির্বাসনে যাবার মতন করে তাদের চোখের সামনে দিয়ে যাবে। \v 5 তারা যখন দেখবে, দেয়ালে গর্ত করে তোমার জিনিসপত্র তার মধ্যে দিয়ে বাইরে বের করবে। \v 6 তাদের চোখের সামনেই জিনিসপত্র তোমার কাঁধে তুলে নেবে এবং অন্ধকারের মধ্যে সেগুলি বের করে নিয়ে যাবে। তোমার মুখ ঢাকবে যেন তুমি তোমার দেশের মাটি দেখতে না পাও, কারণ ইস্রায়েল কুলের কাছে আমি তোমাকে চিহ্নস্বরূপ করেছি।” \p \v 7 আমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছিল আমি তেমনই করলাম। নির্বাসনে যাবার জিনিসপত্রের মতন আমি আমার জিনিসপত্র দিনের বেলাতেই বের করে নিয়ে আসলাম। তারপর সন্ধ্যায় আমি হাত দিয়ে দেয়ালে গর্ত করলাম। তাদের চোখের সামনেই অন্ধকারের মধ্যে আমার জিনিসপত্র কাঁধে তুলে রওনা দিলাম। \p \v 8 সকালবেলায় সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 9 “হে মানবসন্তান, বিদ্রোহী ইস্রায়েল কুল কি তোমায় জিজ্ঞাসা করেনি, ‘তুমি কি করছ?’ \p \v 10 “তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, এই চিহ্ন জেরুশালেমের শাসনকর্তা এবং ইস্রায়েল কুলের জন্য যারা সেখানে আছে।’ \v 11 তাদের বলো, ‘আমি তোমাদের কাছে চিহ্ন।’ \p “আমি যেমন করেছি, তেমনই তাদের প্রতি করা হবে। তারা বন্দি হয়ে নির্বাসনে যাবে। \p \v 12 “তাদের শাসনকর্তা সন্ধ্যায় তার জিনিসপত্র কাঁধে নিয়ে বের হবে এবং দেয়ালে গর্ত খোঁড়া হবে যেন সে তার মধ্যে দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে। সে তার মুখ ঢেকে রাখবে যেন দেশের মাটি দেখতে না পায়। \v 13 আমি তার জন্য জাল পাতব আর সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে; আমি তাকে কলদীয়দের দেশ, ব্যাবিলনে নিয়ে আসব, কিন্তু সে তা দেখতে পাবে না, আর সেখানেই সে মারা যাবে। \v 14 আমি তার চারিদিকে যারা আছে—তার কর্মচারী ও সৈন্যদল—তাদের সকলকে চারদিকে ছড়িয়ে দেব এবং খোলা তরোয়াল নিয়ে আমি তাদের তাড়া করব। \p \v 15 “যখন আমি তাদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব, তখন তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 16 কিন্তু আমি তাদের মধ্যে কিছু লোককে তরোয়াল, দুর্ভিক্ষ ও মহামারি থেকে রক্ষা করব, যেন তারা যেখানেই যাক না কেন সেখানকার সমস্ত জাতির মধ্যে তাদের সব ঘৃণ্য অভ্যাসের কথা স্বীকার করে। তখন তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।” \p \v 17 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 18 “হে মানবসন্তান, তুমি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তোমার খাবার খাবে, আর উদ্বেগ ও চিন্তায় তোমার জলপান করবে। \v 19 তুমি দেশের লোকদের এই কথা বলো: ‘ইস্রায়েল দেশের জেরুশালেমে বসবাসকারীদের বিষয় সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তারা উদ্বেগের সঙ্গে খাবার খাবে আর হতাশায় জলপান করবে, কারণ সেখানকার লোকদের দৌরাত্ম্যের জন্য তাদের দেশের ও তার মধ্যের সবকিছু ধ্বংস হবে। \v 20 লোকজন ভরা নগরগুলি ধ্বংসস্থান হয়ে থাকবে এবং জনশূন্য হবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ” \s1 কোনো দেরি হবে না \p \v 21 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 22 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল দেশে এ কেমন প্রবাদ ‘দিন চলে যায় আর প্রত্যেক দর্শনই বিফল হয়’? \v 23 তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন আমি এই প্রবাদ লোপ করব, আর তারা ইস্রায়েলের মধ্যে সেই প্রবাদ কখনও বলবে না।’ তাদের বলো, ‘দিন এসে গেছে যখন প্রত্যেকটি দর্শন ফলবে। \v 24 কারণ ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে মিথ্যা দর্শন ও খুশি করার ভবিষ্যদ্‌বাণী আর বলবে না। \v 25 কেননা আমি সদাপ্রভু যা বলার তাই বলব আর তা সফল হবে, দেরি হবে না। হে বিদ্রোহীকুল, আমি যা বলছি তা তোমাদের সময়ই সফল হবে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ ” \p \v 26 আবার সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 27 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুল বলছে, ‘তুমি যে দর্শন দেখছ তা এখন থেকে অনেক বছর পরের কথা, আর যে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলছ তা দূর ভবিষ্যতের বিষয়ে।’ \p \v 28 “এই জন্য তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আমার কোনো কথা সফল হতে আর দেরি হবে না; আমি যা বলব তা সফল হবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা ঘোষণা করেন।’ ” \c 13 \s1 ভণ্ড ভাববাদীরা নিন্দিত \p \v 1 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েলের যে ভাববাদীরা ভাববাণী বলে, তুমি তাদের বিরুদ্ধে ভাববাণী বলো। যারা নিজেদের মনগড়া কথা বলছে তুমি তাদের বলো যে: ‘সদাপ্রভুর বাক্য শোনো! \v 3 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন ধিক্ সেই নির্বোধ ভাববাদীরা যারা কোনও দর্শন না পেয়ে তাদের মনগড়া কথা বলে! \v 4 হে ইস্রায়েল, তোমার ভাববাদীরা ধ্বংসস্থানের শিয়ালদের মতো। \v 5 তোমরা ইস্রায়েল কুলের দেয়ালের ফাটল মেরামত করতে ওঠোনি যেন সদাপ্রভুর দিনে যুদ্ধের সময়ে সেটি দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। \v 6 তাদের দর্শন অলীক ও তাদের ভবিষ্যৎ-কথন মিথ্যা। তারা বলে, “সদাপ্রভু বলেন,” অথচ সদাপ্রভু তাদের পাঠাননি; তবুও তারা আশা করে যে তাদের কথা সফল হবে। \v 7 তোমরা কি অলীক দর্শন দেখোনি এবং মিথ্যা ভবিষ্যদ্‌বাণী উচ্চারণ করোনি যখন তোমরা বলো, “সদাপ্রভু বলেন,” যদিও আমি বলিনি? \p \v 8 “ ‘সুতরাং সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমাদের অলীক কথা ও মিথ্যা দর্শনের জন্য, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 9 আমার হাত সেই ভাববাদীদের বিরুদ্ধে যারা অলীক দর্শন দেখে এবং মিথ্যা ভবিষ্যদ্‌বাণী উচ্চারণ করে। তারা আমার প্রজাদের সভায় থাকবে না এবং ইস্রায়েল কুলের বংশতালিকায় তাদের নাম থাকবে না আর তারা ইস্রায়েল দেশে ঢুকবে না। তখন তারা জানবে যে, আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু। \p \v 10 “ ‘কারণ যখন কোনও শান্তি নেই তখন তারা “শান্তি” বলে আমার প্রজাদের বিপথে চালায় এবং তারা যেন লোকদের গাঁথা এমন দেয়ালের উপর চুনকাম করে যা শক্ত নয়, \v 11 সেইজন্য, যারা চুনকাম করছে তুমি তাদের বলো যে, সেই দেয়াল পড়ে যাবে। প্রবল বৃষ্টি পড়বে ও আমি বড়ো বড়ো শিলা পাঠাব এবং ঝোড়ো বাতাস সজোরে বইবে। \v 12 দেয়াল যখন ভেঙে পড়বে তখন লোকেরা কি তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে না, “তোমরা যে চুনকাম করেছিলে তার কি হল?” \p \v 13 “ ‘এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার ভীষণ ক্রোধে ঝোড়ো বাতাস মুক্ত করব, আমার অসন্তোষে আমি বড়ো বড়ো শিলা ও প্রবল বৃষ্টি ধ্বংসাত্মক উন্মত্ততায় পড়বে। \v 14 যে দেয়াল তোমরা চুনকাম করেছিলে তা আমি ধ্বংস করব ও মাটিতে মিশিয়ে দেব যেন তার ভিত্তি খোলা পড়ে থাকবে। সেটি যখন পড়বে তখন তোমরাও তার সঙ্গে ধ্বংস হবে, এবং তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \v 15 সুতরাং আমি আমার ভীষণ ক্রোধ দেয়ালের ও যারা সেটি চুনকাম করেছিল তাদের উপর ব্যয় করব। আমি তোমাদের বলব, “দেয়াল ও যারা সেটি চুনকাম করেছিল তারা কেউ আর নেই, \v 16 যে ইস্রায়েলের ভাববাদীরা জেরুশালেমকে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিল ও শান্তি না থাকলে তারা শান্তির দর্শন দেখেছিল তারাও নেই, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।” ’ \p \v 17 “এখন, হে মানবসন্তান, তোমার জাতির যে মেয়েরা ভাববাদিনী হিসেবে নিজেদের কল্পনার কথা বলে এখন তুমি তাদের বিরুদ্ধে দাড়াও। তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো, \v 18 আর বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন ধিক্ সেই মহিলারা যারা লোকদের হাতের জন্য তাবিজ এবং মাথা ঢাকবার জন্য বিভিন্ন মাপের কাপড় তৈরি করো যাতে তোমরা সেই লোকদের ফাঁদে ফেলতে পারো। তোমরা কি আমার লোকদের প্রাণ শিকার করে নিজেদের প্রাণরক্ষা করবে? \v 19 কয়েক মুঠো যব আর কয়েক টুকরো রুটির জন্য তোমরা আমার লোকদের সামনে আমাকে অসম্মানিত করেছ। আমার লোকেরা, যারা মিথ্যা কথা শোনে, তোমরা তাদের কাছে মিথ্যা কথা বলে যারা মরবার উপযুক্ত নয় তাদের মেরে ফেলেছ এবং যারা বাঁচবার উপযুক্ত নয় তাদের বাঁচিয়ে রেখেছ। \p \v 20 “ ‘এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমরা যে তাবিজ দিয়ে পাখির মতো করে লোকদের ধরো আমি তার বিপক্ষে আর আমি তোমাদের হাত থেকে সেগুলি ছিঁড়ে ফেলে দেব; পাখির মতো করে যে লোকদের তোমরা ধরো তাদের আমি মুক্ত করব। \v 21 তোমাদের মাথা ঢাকবার কাপড়গুলি ছিঁড়ে ফেলে আমি তোমাদের হাত থেকে আমার লোকদের উদ্ধার করব, তারা আর তোমাদের হাতে শিকারের মতো ধরা পড়বে না। তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \v 22 যেহেতু ধার্মিকদের তোমরা তোমাদের মিথ্যা কথা দিয়ে দুঃখ দিয়েছ, যখন আমি তাদের জন্য কোনও দুর্দশা আনিনি, এবং দুষ্ট লোকদের তোমরা অনুপ্রাণিত করেছ যাতে তারা প্রাণ বাঁচাবার জন্য কুপথ থেকে না ফেরে, \v 23 সেইজন্য তোমরা আর অলীক দর্শন দেখবে না ও ভবিষ্যৎ-কথনের চর্চা করবে না। তোমাদের হাত থেকে আমি আমার লোকদের উদ্ধার করব। আর তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \c 14 \s1 প্রতিমাপূজকেরা নিন্দিত \p \v 1 ইস্রায়েলের কয়েকজন প্রাচীন আমার কাছে এসে আমার সামনে বসলেন। \v 2 তখন সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 3 “হে মানবসন্তান, এই লোকেরা তাদের অন্তরের মধ্যে প্রতিমা স্থাপন করে নিজেদের সামনে মন্দ প্রতিবন্ধক রেখেছে। আমি কি তাদের কখনও আমার কাছে অনুসন্ধান করতে দেব? \v 4 অতএব তুমি তাদের সঙ্গে কথা বলে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যখন কোনও ইস্রায়েলী তার অন্তরের মধ্যে প্রতিমা স্থাপন করে নিজেদের সামনে মন্দ প্রতিবন্ধক রাখে এবং ভাববাদীর কাছে যায়, আমি সদাপ্রভু নিজেই তার অনেক প্রতিমাপূজা অনুসারে তাকে উত্তর দেব। \v 5 ইস্রায়েলীদের অন্তর আবার জয় করার জন্যই আমি এটা করব, কারণ তারা সবাই তাদের প্রতিমাগুলির জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে।’ \p \v 6 “অতএব ইস্রায়েল কুলকে তুমি বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা মন ফিরাও! তোমাদের প্রতিমাগুলি থেকে ফেরো এবং সকল ঘৃণ্য কাজ ত্যাগ করো! \p \v 7 “ ‘কোনও ইস্রায়েলী কিংবা ইস্রায়েল দেশে বাসকারী কোনও বিদেশি যদি আমার কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং তার অন্তরের মধ্যে প্রতিমা স্থাপন করে নিজেদের সামনে মন্দ প্রতিবন্ধক রাখে এবং আমার কাছে জিজ্ঞাসা করার জন্য ভাববাদীর কাছে যায়, আমি সদাপ্রভু নিজেই তাকে উত্তর দেব। \v 8 আমি সেই লোকের বিপক্ষে দাঁড়াব এবং তাকে একটি দৃষ্টান্ত ও একটি চলতি কথার মতো করব। আমার লোকদের মধ্য থেকে আমি তাকে ছেঁটে ফেলব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 9 “ ‘আর যে ভাববাদী প্ররোচিত হয়ে ভাববাণী বলে, আমি, সদাপ্রভুই সেই ভাববাদীকে প্ররোচিত করেছি, এবং আমি আমার হাত তার বিরুদ্ধে বাড়াব এবং আমার লোক ইস্রায়েলীদের মধ্য থেকে তাকে ধ্বংস করব। \v 10 তারা তাদের অন্যায়ের শাস্তি পাবে—সেই ভাববাদী এবং যে তার সঙ্গে পরামর্শ করবে সেও দোষী হবে। \v 11 তখন ইস্রায়েল কুল আর আমার কাছ থেকে বিপথে যাবে না, এবং তাদের সব পাপ দিয়ে নিজেদের আর অশুচি করবে না। তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ ” \s1 জেরুশালেমের যে বিচার এড়ানো যায় না \p \v 12 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 13 “হে মানবসন্তান, যদি কোনও দেশ আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে পাপ করে আমি তাদের বিরুদ্ধে হাত বিস্তার করে তাদের খাবারের যোগান বন্ধ করে দিই এবং দুর্ভিক্ষ পাঠিয়ে সেখানকার মানুষ ও তাদের পশুদের মেরে ফেলি, \v 14 এমনকি এই তিনজন লোক—নোহ, দানিয়েল ও ইয়োব—যদি সেখানে থাকত, তারা তাদের ধার্মিকতার জন্য কেবল নিজেদের রক্ষা করতে পারত, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 15 “আমি যদি দেশে বুনো পশু পাঠাই আর তারা লোকদের নিঃসন্তান করে এবং দেশকে জনশূন্য করে যেন সেই পশুদের ভয়ে কেউ দেশের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত না করতে পারে, \v 16 সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, যদি তিনজন লোক সেখানে থাকত, তারা তাদের নিজেদের ছেলে অথবা মেয়েদেরও রক্ষা করতে পারত না। তারা শুধু নিজেদের বাঁচাতে পারত, কিন্তু দেশ জনশূন্য হত। \p \v 17 “অথবা আমি যদি সেই দেশের বিরুদ্ধে তরোয়াল এনে বলি, ‘দেশের মধ্যে দিয়ে তরোয়াল যাক,’ এবং আমি সেখানকার মানুষ ও তাদের পশুদের মেরে ফেলি, \v 18 সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, যদি তিনজন লোক সেখানে থাকত, তারা তাদের নিজেদের ছেলে অথবা মেয়েদেরও রক্ষা করতে পারত না। তারা শুধু নিজেদের বাঁচাতে পারত। \p \v 19 “অথবা আমি যদি দেশের মধ্যে মহামারি পাঠাই এবং সেখানকার মানুষ ও তাদের পশুদের মেরে ফেলার জন্য আমার ক্রোধ ঢেলে রক্ত বহাই, \v 20 সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, এমনকি যদি সেখানে নোহ, দানিয়েল ও ইয়োব থাকত, তারা তাদের ছেলে অথবা মেয়েদেরও রক্ষা করতে পারত না। তারা তাদের ধার্মিকতার জন্য কেবল নিজেদের রক্ষা করতে পারত। \p \v 21 “কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন এমন যদি হয় তবে আমি মানুষ ও পশুদের মেরে ফেলার জন্য জেরুশালেমের বিরুদ্ধে আমার চারটে ভয়ংকর শাস্তি পাঠাই—তরোয়াল ও দুর্ভিক্ষ ও বুনো পশু ও মহামারি! \v 22 তবুও সেখানকার কয়েকজন বেঁচে যাবে—ছেলে ও মেয়ে যাদের সেখান থাকে বের করে আনা হবে। তারা তোমাদের কাছে আসবে, এবং যখন তোমরা তাদের কাজ ও আচরণ দেখবে, জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যে বিপর্যয় আমি নিয়ে এসেছি সে বিষয় তোমরা সান্ত্বনা পাবে—প্রত্যেক বিপর্যয় যা আমি তার উপরে নিয়ে এসেছি। \v 23 তাদের কাজ ও আচরণ দেখে তোমরা সান্ত্বনা পাবে, কারণ তোমরা জানতে পারবে যে অকারণে আমি কিছুই করিনি, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।” \c 15 \s1 জেরুশালেম যেন এক অকার্যকর দ্রাক্ষালতা \p \v 1 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, কেমন করে দ্রাক্ষালতার ডাল অন্য সকল বনের গাছের ডালের থেকে আলাদা? \v 3 দরকারি কোনও কিছু তৈরি করবার জন্য কি তা থেকে কাঠ নেওয়া হয়? জিনিসপত্র ঝুলিয়ে রাখার জন্য কি তা দিয়ে গোঁজ তৈরি করে? \v 4 আর যখন সেটি জ্বালানি হিসেবে আগুনে ফেলা হয় এবং কাঠের দুই দিক পুড়ে যায় ও মাঝখানটা কালো হয়ে যায় তখন কি সেটি কোনও কাজে লাগে? \v 5 আগুনে ফেলার আগে অক্ষত অবস্থায় যদি সেটি কোনো কাজে না লেগে থাকে তবে আগুনে পুড়ে কালো হয়ে গেলে কি তা দিয়ে কোনো দরকারি কিছু তৈরি করা যেতে পারে? \p \v 6 “অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন বনের গাছপালার মধ্যে দ্রাক্ষালতার কাঠকে আমি যেমন জ্বালানি কাঠ হিসেবে আগুনে দিয়েছি, তেমনি জেরুশালেমে বসবাসকারী লোকদেরও আগুনে দেব। \v 7 আমি তাদের বিরুদ্ধে মুখ রাখব। আগুন থেকে তারা বের হয়ে আসলেও আগুনই তাদের পুড়িয়ে ফেলবে। আমি যখন তাদের বিরুদ্ধে মুখ রাখব, তোমরা তখন জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \v 8 আমি দেশকে জনশূন্য করব কারণ তারা অবিশ্বস্ত হয়েছে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।” \c 16 \s1 অবিশ্বস্ত স্ত্রীরূপে জেরুশালেম \p \v 1 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, জেরুশালেমের ঘৃণ্য কাজ সকলের বিষয় তার কাছে ঘোষণা করো \v 3 আর বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু জেরুশালেমকে এই কথা বলেন, তোমার পিতৃপুরুষগণ ও জন্মস্থান কনানীয়দের দেশে; তোমার বাবা ইমোরীয় এবং তোমার মা হিত্তীয়। \v 4 তুমি যেদিন জন্মেছিলে তোমার নাড়ি কাটা হয়নি, তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য ধোয়া হয়নি, তোমার গায়ে নুন মাখানো হয়নি কিংবা তোমাকে কাপড় দিয়ে জড়ানো হয়নি। \v 5 কেউ তোমাকে মমতার চোখে দেখেনি কিংবা এসব করার জন্য সহানুভূতি দেখায়নি। তোমাকে বরং খোলা মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিল, কারণ যেদিন তুমি জন্মেছিলে সেদিন তোমাকে ঘৃণা করা হয়েছিল। \p \v 6 “ ‘আর আমি কাছ দিয়ে যাবার সময় তোমাকে তোমার রক্তের মধ্যে শুয়ে ছটফট করতে দেখলাম এবং আমি তোমাকে বললাম, “জীবিত হও!” \v 7 আমি তোমাকে ক্ষেত্রের চারার মতো বড়ো করে তুললাম। তুমি বৃদ্ধি পেয়ে বড়ো হয়ে উঠে সব থেকে সুন্দর রত্ন হলে। তোমার বুক গড়ে উঠল, লোম গজাল, কিন্তু তুমি উলঙ্গিনী ও কাপড় ছাড়াই ছিলে। \p \v 8 “ ‘পরে আমি তোমার পাশ দিয়ে যাবার সময় তোমার দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে তোমার এখন প্রেম করবার সময় হয়েছে। আমি আমার পোশাকের কোনা তোমার উপরে ছড়িয়ে দিলাম ও তোমার উলঙ্গ শরীর ঢাকলাম। আমি শপথ করে তোমার সঙ্গে নিয়ম স্থির করলাম, আর তুমি আমার হলে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 9 “ ‘আমি তোমাকে জলে স্নান করালাম, তোমার গা থেকে সমস্ত রক্ত ধুয়ে দিলাম এবং গায়ে তেল লাগিয়ে দিলাম। \v 10 আমি তোমার গায়ে নকশা তোলা কাপড় দিলাম, ও পায়ে সূক্ষ্ম চামড়ার চটি পরালাম। আমি মিহি মসিনার কাপড় তোমাকে পরালাম এবং দামি কাপড় দিয়ে তোমাকে ঢাকলাম। \v 11 আমি তোমাকে গহনা দিয়ে সাজালাম তোমার হাতে চুড়ি ও গলায় হার, \v 12 নাকে নোলক, কানে দুল ও মাথায় একটি সুন্দর মুকুট দিলাম। \v 13 এইভাবে সোনা ও রুপো দিয়ে তোমাকে সাজানো হল; তোমার কাপড় ছিল মিহি মসিনার, ব্যয়বহুল বস্ত্র ও নকশা তোলা কাপড়ের। তোমার খাবার ছিল মধু, জলপাই তেল ও মিহি ময়দা। তুমি খুব সুন্দরী হয়ে অবশেষে রানি হলে। \v 14 আর তোমার সৌন্দর্যের জন্য তোমার খ্যাতি জাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তোমাকে আমি যে শোভা দিয়েছিলাম তা তোমার সৌন্দর্য নিখুঁত হয়েছিল, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 15 “ ‘কিন্তু তুমি তোমার সৌন্দর্যের উপর নির্ভরশীল হয়েছ ও বেশ্যা হওয়ার জন্য তোমার সুনাম ব্যবহার করেছ। যে কেউ তোমার পাশ দিয়ে যেত তার সঙ্গে তুমি ব্যভিচার করতে এবং সে তোমাকে ভোগ করত। \v 16 তুমি তোমার কোনও কোনও কাপড় নিয়ে পূজার উঁচু জায়গায় সাজিয়ে সেখানে তোমার বেশ্যার কাজ করতে। তুমি তার কাছে যেতে এবং সে তোমার সৌন্দর্য অধিকার করত। \v 17 আমার সোনা ও রুপো দিয়ে তৈরি গয়না, যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, সেই সুন্দর গয়না নিয়ে তুমি নিজের জন্য পুরুষ প্রতিমা করে সেগুলির সঙ্গে ব্যভিচার করতে। \v 18 আর তুমি তোমার নকশা তোলা কাপড় নিয়ে সেগুলিকে পরাতে এবং তাদের সামনে আমার তেল ও ধূপ রাখতে। \v 19 আর যে খাবার আমি তোমাকে দিয়েছিলাম—মিহি ময়দা, জলপাই তেল ও মধু যা আমি তোমাকে খেতে দিয়েছিলাম—তুমি সেগুলি তাদের সামনে সুগন্ধি হিসেবে রাখতে। এসবই ঘটেছে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 20 “ ‘আর তোমার যে ছেলে এবং মেয়েদের আমার জন্য গর্ভে ধরেছিলে তাদের মূর্তিদের কাছে তুমি খাবার হিসেবে বলিদান করেছিলে। তোমার বেশ্যাবৃত্তি কি যথেষ্ট ছিল না? \v 21 তুমি আমার সন্তানদের হত্যা করে মূর্তিদের কাছে উৎসর্গ করেছিলে। \v 22 তোমার সব ঘৃণ্য অভ্যাস এবং তোমার বেশ্যাবৃত্তিতে তুমি তোমার যৌবন স্মরণ করোনি, যখন তুমি উলঙ্গিনী ও খালি গায়ে নিজের রক্তের মধ্যে ছটফট করছিলে। \p \v 23 “ ‘ধিক্! ধিক্ তোমাকে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। তোমার অন্য সব দুষ্টতার পরেও, \v 24 তুমি নিজের জন্য ঢিবি তৈরি করেছ ও প্রত্যেকটি খোলা জায়গায় উঁচু প্রতিমার আসন প্রস্তুত করেছ। \v 25 রাস্তার মোড়ে মোড়েও প্রতিমার আসন তৈরি করে তোমার সৌন্দর্যকে তুমি অপমান করেছ, বাছবিচারহীনভাবে যে কেউ তোমার পাশ দিয়ে গেছে তুমি তাদের সঙ্গে ব্যভিচার করেছ। \v 26 তোমার কামুক প্রতিবেশী মিশরীয়দের সঙ্গে তুমি ব্যভিচার করেছ, এবং আমাকে অসন্তুষ্ট করার জন্য তোমার ব্যভিচারের কাজ আরও বাড়িয়েছ। \v 27 সেইজন্য আমি তোমার বিরুদ্ধে হাত বাড়িয়ে তোমার এলাকা কমিয়ে দিয়েছি; ফিলিস্তিয়ার মেয়েরা, যারা তোমার শত্রু তারা তোমার কামুক স্বভাবের জন্য লজ্জা পেয়েছে, আমি তাদের হাতে তোমাকে তুলে দিয়েছি। \v 28 আসিরীয়দের সঙ্গেও তুমি ব্যভিচার করেছ, কারণ তুমি অতৃপ্ত ছিলে, কিন্তু তারপরেও তোমার তৃপ্তি হয়নি। \v 29 তারপরে তুমি তোমার ব্যভিচারের কাজ বাড়িয়ে বণিকদের দেশ ব্যাবিলনের সঙ্গেও ব্যভিচার করেছ, কিন্তু এতেও তোমার তৃপ্তি হয়নি। \p \v 30 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, যখন তুমি এই সমস্ত করো, নির্লজ্জ বেশ্যার মতো ব্যবহার করো তখন তোমার বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ পূর্ণ হয়েছে! \v 31 যখন তুমি নিজের জন্য রাস্তার কোণে ঢিবি তৈরি করেছ ও প্রত্যেকটি খোলা জায়গায় উঁচু প্রতিমার আসন প্রস্তুত করেছ, তখন বেশ্যার মতো কাজ করোনি কারণ তুমি তোমার পাওনা টাকে অগ্রাহ্য করেছ। \p \v 32 “ ‘তুমি ব্যভিচারিণী স্ত্রী! তুমি তোমার স্বামীর চেয়ে অপরিচিতদের পছন্দ করেছ! \v 33 প্রত্যেক বেশ্যা পারিশ্রমিক পায়, কিন্তু তুমি তোমার সব প্রেমিকদের উপহার দিয়ে থাকো, তোমার কাছ থেকে অবৈধ অনুগ্রহ পাবার জন্য যাতে তারা সব জায়গা থেকে তোমার কাছে আসে সেইজন্য তুমি তাদের ঘুস দিয়ে থাকো। \v 34 অন্যান্য স্ত্রীদের থেকে তোমার বেশ্যাবৃত্তি ঠিক উল্টো; তোমার অনুগ্রহ পাবার জন্য কেউ তোমার পিছনে দৌড়ায় না। তুমি একেবারে আলাদা, কারণ তুমি টাকা নাও না বরং টাকা দিয়ে থাকো। \p \v 35 “ ‘অতএব, হে বেশ্যা, সদাপ্রভুর বাক্য শোনো! \v 36 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যেহেতু তুমি তোমার লালসা ঢেলে দিয়েছ ও বাছবিচার না করে তোমার প্রেমিকদের কাছে তোমার নিজের উলঙ্গতা প্রকাশ করেছ, এবং তোমার ঘৃণ্য মূর্তির কারণে ও তোমার সন্তানদের রক্ত তাদের দেওয়ার জন্য, \v 37 সেই কারণে আমি তোমার প্রেমিকদের জড়ো করব, যাদের সঙ্গে তুমি আনন্দ উপভোগ করেছ, যাদের তুমি প্রেম করেছ ও যাদের তুমি ঘৃণা করেছ। আমি চারিদিক থেকে তোমার বিরুদ্ধে তাদের জড়ো করব ও তাদের সামনেই তোমার সব কাপড় খুলে ফেলব যাতে তারা তোমার উলঙ্গতা দেখতে পায়। \v 38 যে স্ত্রীলোকেরা ব্যভিচার করে এবং যারা রক্তপাত করে তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয় সেই শাস্তিই আমি তোমাকে দেব; আমার ক্রোধ ও অন্তর্জ্বলনের জন্য আমি তোমার উপরে রক্তের প্রতিহিংসা নিয়ে আসব। \v 39 তারপর আমি তোমাকে তোমার প্রেমিকদের হাতে তুলে দেব, আর তারা তোমার ঢিবি ও উঁচু প্রতিমার আসনগুলি ধ্বংস করবে। তারা তোমাকে বিবস্ত্রা করবে ও তোমার সুন্দর গহনাগুলি নিয়ে নেবে আর তোমাকে একেবারে উলঙ্গ করে রেখে যাবে। \v 40 তারা তোমার বিরুদ্ধে একদল লোককে উত্তেজিত করবে, যারা তোমাকে পাথর মারবে এবং তরোয়াল দিয়ে তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাটবে। \v 41 তারা তোমার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেবে এবং অনেক স্ত্রীলোকের চোখের সামনে তোমাকে শাস্তি দেবে। আমি তোমার বেশ্যাবৃত্তি বন্ধ করে দেব, তোমার প্রেমিকদের তুমি আর অর্থ দেবে না। \v 42 তারপর তোমার উপর আমার ক্রোধ ও অন্তরের জ্বালা থেমে যাবে; আমি শান্ত হব, আর অসন্তুষ্ট হব না। \p \v 43 “ ‘যেহেতু তুমি তোমার যৌবনের কথা মনে রাখোনি, কিন্তু এসব বিষয় দিয়ে আমাকে ক্রুদ্ধ করেছ, সেইজন্য আমিও তোমার কাজের ফল তোমাকে দেব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। তোমার অন্য সমস্ত কুকর্মের সঙ্গে কি তুমি এই ঘৃণ্য কাজও যোগ করোনি? \p \v 44 “ ‘যে কেউ প্রবাদ ব্যবহার করে, সে তোমার বিরুদ্ধে এই প্রবাদ ব্যবহার করবে, “যেমন মা, তেমনি মেয়ে।” \v 45 তুমি তোমার মায়ের উপযুক্ত মেয়ে, যে তার স্বামী ও ছেলেমেয়েদের ঘৃণা করত; এবং তুমি তোমার বোনদের উপযুক্ত বোন, যারা তাদের স্বামী ও সন্তানদের ঘৃণা করত। তোমার মা হিত্তীয়া আর বাবা ইমোরীয়। \v 46 তোমার দিদি শমরিয়া, যে তার মেয়েদের নিয়ে তোমার উত্তর দিকে বাস করে; আর তোমার বোন, যে তার মেয়েদের নিয়ে তোমার দক্ষিণে বাস করে, সে সদোম। \v 47 তুমি যে কেবল তাদের পথে চলেছ ও তাদের ঘৃণ্য কাজ অনুসরণ করেছ তাই নয়, কিন্তু বরং তোমার সমস্ত আচার-ব্যবহারে তুমি অল্প সময়ের মধ্যে তাদের চেয়ে আরও চরিত্রহীন হয়েছ। \v 48 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য, তোমার মেয়েরা ও তুমি যা করেছ তোমার বোন সদোম ও তার মেয়েরা কখনও তা করেনি। \p \v 49 “ ‘তোমার বোন সদোমের এই পাপ ছিল: সে ও তার মেয়েরা ছিল অহংকারী, প্রচুর খেতো ও নিশ্চিন্তে বাস করত; তারা গরিব ও অভাবীদের সাহায্য করত না। \v 50 তারা অহংকারী ছিল ও আমার সামনে ঘৃণ্য কাজ করত। অতএব তুমি যেমন দেখেছ সেইভাবেই আমি তাদের দূর করে দিয়েছি। \v 51 তুমি যেসব পাপ করেছ তার অর্ধেক শমরিয়া করেনি। তুমি তাদের চেয়ে আরও ঘৃণ্য কাজ করেছ। তুমি এই যেসব কাজ করেছ তা দেখে তোমার বোনদের বরং ধার্মিক মনে হয়েছে। \v 52 তোমার অপমান তোমাকেই বহন করতে হবে, কারণ তোমার কাজগুলি তোমার বোনদের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। যেহেতু তোমার পাপ তাদের থেকে জঘন্য, তাদের দেখায় যে তারা তোমার থেকে ধার্মিক। সেইজন্য, লজ্জিত হও ও তোমার অপমান বহন করো, কারণ তোমার কাজগুলি তাদের তোমার থেকে বেশি ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছে। \p \v 53 “ ‘যাহোক, আমি সদোম ও তার মেয়েদের, শমরিয়া ও তার মেয়েদের এবং তাদের সঙ্গে তোমারও অবস্থা ফিরাব, \v 54 যেন তুমি তোমার অপমান বহন করো এবং তাদের সান্ত্বনা দিতে যা করেছ তার জন্য লজ্জিত হও। \v 55 আর তোমার বোনেরা, সদোম তার মেয়েদের ও শমরিয়া তার মেয়েদের সঙ্গে আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় ফিরে যাবে; এবং তুমি তোমার মেয়েদের নিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। \v 56 তোমার অহংকারের দিনে তুমি তোমার বোন সদোমের নাম মুখে আনতে না, \v 57 যখন তোমার দুষ্টতা প্রকাশ পায়নি। তবুও অরামের মেয়েরা ও তার প্রতিবেশীরা, ফিলিস্তিনীদের মেয়েরা তোমাকে অবজ্ঞা করে—তোমার চারিদিকে যারা আছে তারা তোমাকে ঘৃণা করে। \v 58 তুমি তোমার কুকর্ম ও ঘৃণ্য কাজের ফলভোগ করবে, সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 59 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমার কাজ অনুসারে আমি তোমার সঙ্গে ব্যবহার করব, কারণ তুমি আমার শপথ অবজ্ঞা করে বিধান ভেঙেছ। \v 60 তবুও তোমার যৌবনকালে তোমার সঙ্গে আমার যে বিধান ছিল, তা আমি মনে করব এবং তোমার জন্য একটি চিরস্থায়ী বিধান স্থাপন করব। \v 61 তখন তুমি নিজের আচার-ব্যবহার স্মরণ করে লজ্জিতা হবে, যখন তুমি তোমার বোনদের, বড়ো ও ছোটো, তাদের তুমি গ্রহণ করবে। তোমার মেয়ে হিসেবে আমি তাদেরকে তোমাকে দেব, যদিও তারা তোমার সঙ্গে আমার বিধানের মধ্যে নেই। \v 62 অতএব আমি তোমার জন্য আমার বিধান স্থাপন করব, আর তুমি জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 63 আমি যখন তোমার সব অন্যায় ক্ষমা করব তখন তুমি সেইসব অন্যায় কাজের জন্য লজ্জিত হবে এবং তোমার অপমানের জন্য আর কখনও মুখ খুলবে না, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ ” \c 17 \s1 দুটো ঈগল পাখি ও একটি দ্রাক্ষালতা \p \v 1 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি ইস্রায়েল কুলের সামনে একটি ধাঁধা রেখে দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে বলো। \v 3 তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন বিভিন্ন রংয়ের লম্বা পালকে ভরা খুব শক্তিশালী ডানাযুক্ত একটি বিশাল ঈগল লেবাননে এসে সিডার গাছের উপরের ডাল ধরে \v 4 সেটি ভাঙল ও ব্যবসায়ীদের দেশে বয়ে নিয়ে গিয়ে ব্যবসায়ীদের নগরে লাগিয়ে দিল। \p \v 5 “ ‘সে তোমার দেশের কিছু চারাগাছ নিল ও উর্বর মাটিতে লাগিয়ে দিল। প্রচুর জলের ধারে উইলো গাছের মতো করে সে তা লাগিয়ে দিল, \v 6 সেটি মাটিতে ছড়িয়ে পড়া একটি দ্রাক্ষালতা হল। তার ডালগুলি ওই ঈগলের দিকে ফিরল আর তার শিকড়গুলি পাখির নিচে রইল। এইভাবে সেই দ্রাক্ষালতা বড়ো হল এবং তাতে পাতাভরা অনেক ডাল বের হল। \p \v 7 “ ‘কিন্তু সেখানে পালকে ঢাকা বড়ো ডানাযুক্ত আর একটি প্রকাণ্ড ঈগল ছিল। সেই দ্রাক্ষালতা জল পাবার জন্য যেখানে সেটি লাগানো হয়েছিল সেখান থেকে তার শিকড় ও ডালগুলি সেই ঈগলের দিকে বাড়িয়ে দিল। \v 8 প্রচুর জলের পাশে ভালো মাটিতে তাকে লাগানো হয়েছিল যাতে সে অনেক ডাল বের করতে পারে, ফল ধরাতে পারে ও সুন্দর দ্রাক্ষালতা হয়ে উঠতে পারে।’ \p \v 9 “তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সে কি বেড়ে উঠবে? সে যাতে শুকিয়ে যায় সেইজন্য কি তাকে উপড়ে ফেলে তার ফল ছিড়ে নেওয়া হবে না? সব নতুন গজানো ডগা শুকিয়ে যাবে। তার শিকড় ধরে তুলে ফেলার জন্য কোনও শক্তিশালী হাত বা অনেক লোক লাগবে না। \v 10 তাকে লাগানো হয়েছে, কিন্তু সে কি বাঁচবে? সে কি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাবে না যখন পূর্বদিকের বাতাস তাকে আঘাত করবে—যেখানে তাকে লাগানো হয়েছিল সেখানেই সে কি শুকিয়ে যাবে না?’ ” \p \v 11 আর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 12 “তুমি এই বিদ্রোহী কুলকে বলো, ‘তোমরা কি জানো না এই সবের অর্থ কি?’ তাদের বলো, ‘ব্যাবিলনের রাজা জেরুশালেমে এসে তার রাজা ও গণ্যমান্য লোকদের ধরে তাঁর সঙ্গে ব্যাবিলনে নিয়ে গেল। \v 13 তারপর সে রাজপরিবারের একজনের সঙ্গে চুক্তি করে তাকে তার বাধ্য থাকবার শপথ করাল। সে দেশের প্রধান প্রধান লোকদেরও ধরে নিয়ে গেল, \v 14 যেন সেই রাজ্যকে অধীনে রাখা যায় এবং তা শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে কিন্তু চুক্তি রক্ষা করে টিকে থাকতে পারে। \v 15 কিন্তু সেই রাজা ঘোড়া ও সৈন্যদল পাবার জন্য মিশরে দূত পাঠিয়ে ব্যাবিলনের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। সে কি সফল হবে? এমন কাজ যে করে সে কি রক্ষা পাবে? চুক্তি ভেঙে ফেললে কি সে রক্ষা পাবে? \p \v 16 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য, তাকে যে রাজা সিংহাসনে বসাল, যার শপথ সে অবজ্ঞা করল, আর যার চুক্তি সে ভেঙে ফেলল সে সেই রাজার দেশ ব্যাবিলনে মারা যাবে। \v 17 যুদ্ধের সময় যখন অনেক জীবন ধ্বংস করার জন্য উঁচু ঢিবি ও ঢালু পথ তৈরি করা হবে তখন ফরৌণের শক্তিশালী মস্ত বড়ো সৈন্যদল তাকে সাহায্য করবে না। \v 18 সে শপথ অবজ্ঞা করে চুক্তি ভেঙেছে। সে অধীনতার চুক্তি করেও এসব কাজ করেছে বলে রক্ষা পাবে না। \p \v 19 “ ‘অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য, সে আমার শপথ অবজ্ঞা করেছে ও আমার চুক্তি ভেঙেছে, অতএব তার ফল তাকে দেব। \v 20 আমি তার জন্য আমার জাল পাতব এবং সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে। সে আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছে বলে আমি তাকে ব্যাবিলনে নিয়ে যাব আর সেখানে তার বিচার আমি করব। \v 21 তার সব সৈন্যরা তরোয়ালে মারা যাবে আর বাদবাকি সৈন্যরা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তখন তোমরা জানবে যে আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি। \p \v 22 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি নিজেই সিডার গাছের মাথা থেকে একটি কচি ডাল নিয়ে সেটি লাগাব; আমি তার সব থেকে উঁচু ডালের একটি কচি অংশ ভেঙে পাহাড়ের উঁচু চুড়ার উপরে লাগিয়ে দেব। \v 23 ইস্রায়েলের উঁচু পাহাড়ের উপরে তা থেকে ডালপালা বের হয়ে ফল ধরবে এবং সেটি একটি বিশাল সিডার গাছ হয়ে উঠবে। সব রকমের পাখি তার ডালপালার মধ্যে বাসা করবে; তারা আশ্রয় পাবে এবং তার ছায়ায় বাস করবে। \v 24 এতে মাঠের সব গাছপালা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু উঁচু গাছকে নিচু করি এবং নিচু গাছকে উঁচু করি। আমি সবুজ গাছকে শুকনো করি এবং শুকনো গাছকে জীবিত করি। \p “ ‘আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি, এবং আমি তা করব।’ ” \c 18 \s1 যে পাপ করে সে মরবে \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল: \v 2 “ইস্রায়েল দেশ সম্বন্ধে প্রচলিত প্রবাদটি উদ্ধৃত করার দ্বারা লোকেরা কী অর্থ প্রকাশ করে: \q1 “ ‘বাবারা টক আঙুর খেয়েছিলেন, \q2 আর সন্তানদের দাঁত টকে গেছে’? \p \v 3 “আমার জীবনের দিব্য, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এই প্রবাদ ইস্রায়েলে আর বলবে না। \v 4 জীবিত সব লোকই আমার, বাবা ও সন্তান উভয়ই আমার। যে পাপ করবে সেই মরবে। \q1 \v 5 “মনে করো, একজন ধার্মিক লোক আছে \q2 যে ন্যায় ও ঠিক কাজ করে। \q1 \v 6 সে পাহাড়ের উপরের কোনো পূজার স্থানে খাওয়াদাওয়া করে না \q2 কিংবা ইস্রায়েলীদের কোনো প্রতিমার পূজা করে না। \q1 সে তার প্রতিবেশীর স্ত্রীকে কলুষিত করে না \q2 কিংবা ঋতুমতী স্ত্রীলোকের সঙ্গে মিলিত হয় না। \q1 \v 7 সে কারও উপরে অত্যাচার করে না, বরং \q2 ঋণীকে বন্ধকি জিনিস ফিরিয়ে দেয়। \q1 সে চুরি করে না \q2 কিন্তু যাদের খিদে পেয়েছে তাদের খাবার দেয় \q2 এবং উলঙ্গদের কাপড় দেয়। \q1 \v 8 সে সুদে টাকা ধার দেয় না \q2 কিংবা বাড়তি সুদ নেয় না। \q1 সে অন্যায় করা থেকে হাত সরিয়ে রাখে \q2 ও লোকদের মধ্যে ন্যায়ভাবে বিচার করে। \q1 \v 9 সে আমার নিয়মকানুন মেনে চলে \q2 ও বিশ্বস্তভাবে আমার বিধান পালন করে। \q1 সেই লোক ধার্মিক; \q2 সে নিশ্চয় বাঁচবে, \q2 এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 10 “মনে করো যদি সেই লোকের এক হিংস্র ছেলে আছে, যে রক্তপাত করে অথবা এগুলির মধ্যে যে কোনও একটি করে \v 11 (যদিও তার বাবা এর কোনোটিই করেনি), \q1 “সে পাহাড়ের উপরের পূজার স্থানগুলিতে খাওয়াদাওয়া করে। \q1 সে তার প্রতিবেশীর স্ত্রীকে কলুষিত করে। \q1 \v 12 সে গরিব ও অভাবীদের উপর অত্যাচার করে। \q1 সে চুরি করে। \q1 সে বন্ধকি জিনিস ফিরিয়ে দেয় না। \q1 সে মূর্তির প্রতি দৃষ্টিপাত করে। \q1 সে ঘৃণ্য কাজ করে। \q1 \v 13 সে সুদে টাকা ধার দেয় ও বাড়তি সুদ নেয়। \m সেই লোক কি বাঁচবে? সে বাঁচবে না! কারণ সে এসব ঘৃণ্য কাজ করেছে, সে মরবেই মরবে এবং তার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী হবে। \p \v 14 “কিন্তু মনে করো এই ছেলের একটি ছেলে আছে যে তার বাবাকে এসব পাপ করতে দেখেছে, এবং যদিও সেসব দেখেও সে তা করে না: \q1 \v 15 “সে পাহাড়ের উপরের পূজার স্থানগুলিতে খাওয়াদাওয়া করে না \q2 কিংবা ইস্রায়েলীদের কোনও প্রতিমার পূজা করে না। \q1 সে তার প্রতিবেশীর স্ত্রীকে কলুষিত করে না। \q1 \v 16 সে কারও উপরে অত্যাচার করে না \q2 কিংবা ঋণীকে বন্ধকি জিনিস ফিরিয়ে দেয়। \q1 সে চুরি করে না \q2 কিন্তু যাদের খিদে পেয়েছে তাদের খাবার দেয় \q2 এবং উলঙ্গদের কাপড় দেয়। \q1 \v 17 সে গরিবদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে \q2 এবং সে সুদে টাকা ধার দেয় না কিংবা বাড়তি সুদ নেয় না। \q1 সে আমার নিয়মকানুন মেনে চলে ও আমার বিধান পালন করে। \m সে তার বাবার পাপের জন্য মরবে না; সে নিশ্চয় বাঁচবে। \v 18 কিন্তু তার বাবা নিজের পাপের জন্য মরবে, কারণ সে জোর করে টাকা আদায় করত, ভাইয়ের জিনিস চুরি করত এবং তার লোকদের মধ্যে অন্যায় কাজ করত। \p \v 19 “তবুও তোমরা বলছ, ‘বাবার দোষের জন্য কেন ছেলে শাস্তি পাবে না?’ যেহেতু সেই ছেলে তো ন্যায় ও ঠিক কাজ করেছে এবং যত্নের সঙ্গে আমার নিয়ম পালন করেছে, তাই সে নিশ্চয় বাঁচবে। \v 20 যে পাপ করবে সেই মরবে। ছেলে বাবার দোষের জন্য শাস্তি পাবে না আর বাবাও ছেলের দোষের জন্য শাস্তি পাবে না। ধার্মিক ধার্মিকতার ফল পাবে আর দুষ্ট দুষ্টতার ফল পাবে। \p \v 21 “কিন্তু যদি একজন দুষ্টলোক তার সব পাপ থেকে ফিরে আমার নিয়ম সকল পালন করে আর ন্যায় ও ঠিক কাজ করে তবে সে নিশ্চয়ই বাঁচবে; সে মরবে না। \v 22 যে সকল অপরাধ সে আগে করেছে তার কোনটাই মনে রাখা হবে না। তার ধার্মিক আচরণের জন্য, সে বাঁচবে। \v 23 দুষ্টলোকের মরণে কি আমি খুশি হই? এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। বরং তারা তাদের কুপথ থেকে ফিরে বাঁচে, এতে কি আমি খুশি হই না? \p \v 24 “কিন্তু যদি একজন ধার্মিক লোক নিজের ধার্মিকতা থেকে ফিরে পাপ করে এবং সেই একই ঘৃণ্য কাজ করে যা দুষ্টলোক করে, তবে সে কি বাঁচবে? তার সব ধার্মিকতার কাজ যা সে আগে করেছে তা মনে রাখা হবে না। কারণ তার অবিশ্বস্ততার জন্য সে দোষী এবং যে পাপ সে করেছে, তার জন্য সে মরবে। \p \v 25 “তবুও তোমরা বলছ, ‘প্রভুর পথ ঠিক নয়।’ হে ইস্রায়েল কুল, শোনো, আমার পথ কি অন্যায়ের? তোমাদের পথ কি অন্যায়ের না? \v 26 যদি একজন ধার্মিক লোক নিজের ধার্মিকতা থেকে ফিরে পাপ করে, সে তার জন্য মরবে; কারণ যে পাপ সে করেছে, সে মরবে। \v 27 কিন্তু যদি একজন দুষ্টলোক তার দুষ্টতা থেকে ফেরে এবং যা ন্যায্য ও সঠিক তাই করে, সে তার জীবন রক্ষা করবে। \v 28 যেহেতু সে তার অপরাধের বিষয় বিবেচনা করে তার থেকে ফিরেছে, সে নিশ্চয়ই বাঁচবে; সে মরবে না। \v 29 অথচ ইস্রায়েল কুল বলছে, ‘প্রভুর পথ ঠিক নয়।’ হে ইস্রায়েল কুল, আমার পথ কি সঠিক নয়? তোমাদের পথ কি অন্যায়ের নয়? \p \v 30 “অতএব, হে ইস্রায়েল কুল, আমি তোমাদের প্রত্যেকের আচার-ব্যবহার অনুসারে বিচার করব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। মন ফেরাও! তোমাদের অপরাধ থেকে ফেরো; তাহলে পাপ তোমাদের পতনের কারণ হবে না। \v 31 তোমাদের সমস্ত অন্যায় তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে দূর করো এবং তোমাদের অন্তর ও মন নতুন করে গড়ে তোলো। হে ইস্রায়েল কুল, তুমি কেন মরবে? \v 32 কারণ আমি কারোর মৃত্যুতে খুশি হই না, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। মন ফেরাও এবং বাঁচো! \c 19 \s1 ইস্রায়েলের শাসনকর্তাদের জন্য বিলাপ \p \v 1 “তুমি ইস্রায়েলের শাসনকর্তাদের জন্য বিলাপ \v 2 করে বলো, \q1 “ ‘সিংহদের মধ্যে \q2 তোমার মা ছিল সেরা সিংহী! \q1 সে যুবসিংহদের মধ্যে শুয়ে থাকত; \q2 তার শাবকদের সে লালনপালন করত। \q1 \v 3 তার একটি শাবক বড়ো হয়ে \q2 শক্তিশালী সিংহ হয়ে উঠল। \q1 সে পশু শিকার করতে শিখল \q2 আর মানুষ খেতে লাগল। \q1 \v 4 জাতিরা তার বিষয় শুনতে পেল, \q2 আর সে তাদের গর্তে ধরা পড়ল। \q1 তারা তার নাকে বড়শি পরিয়ে \q2 মিশর দেশে নিয়ে গেল। \b \q1 \v 5 “ ‘যখন সে দেখল তার আশা পূর্ণ হল না, \q2 তার প্রত্যাশা চলে গেছে, \q1 সে আর তার একটি শাবক নিয়ে তাকে \q2 শক্তিশালী সিংহ করে তুলল। \q1 \v 6 সেই শাবক সিংহদের মধ্যে ঘোরাঘুরি করে \q2 কারণ সে একটি শক্তিশালী সিংহ হয়ে উঠেছিল। \q1 সে পশু শিকার করতে শিখল \q2 আর মানুষ খেতে লাগল। \q1 \v 7 সে তাদের দুর্গগুলি ভাঙল \q2 আর নগর সব ধ্বংস করে ফেলল। \q1 সেই দেশ ও সেখানে যারা বাস করত \q2 তারা তার গর্জনে ভয় পেল। \q1 \v 8 তখন তার চারপাশের জাতিরা \q2 তার বিরুদ্ধে দাড়াল। \q1 তার উপরে তাদের জাল পাতল, \q2 আর সে তাদের গর্তে ধরা পড়ল। \q1 \v 9 তাকে বড়শি পরিয়ে খাঁচায় পুরল \q2 আর তাকে ব্যাবিলনের রাজার কাছে নিয়ে গেল। \q1 তাকে কারাগারে রাখল \q2 যেন তার গর্জন আর শোনা না যায় \q2 ইস্রায়েলের কোনও পাহাড়ে। \b \q1 \v 10 “ ‘তোমার দ্রাক্ষাক্ষেত্রে তোমার মা জলের ধারে লাগানো \q2 একটি দ্রাক্ষালতার মতো ছিল, \q1 প্রচুর জল পাবার দরুন \q2 তা ছিল ফল ও ডালপালায় ভরা। \q1 \v 11 তার ডালগুলি ছিল শক্ত \q2 শাসনকর্তার রাজদণ্ড হওয়ার উপযুক্ত। \q1 সে খুব উঁচু \q2 এবং ডালপালায় ভরা \q1 সেইজন্য তাকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় \q2 তার বহু শাখার জন্য। \q1 \v 12 কিন্তু ক্রোধের প্রকোপে সেটিকে নির্মূল করে \q2 মাটিতে ফেলা হল। \q1 পূবের বাতাসে সেটি কুঁকড়ে গেল, \q2 তার ফল পড়ে গেল; \q1 তার শক্ত ডালগুলি শুকিয়ে গেল \q2 এবং আগুন সেগুলিকে গ্রাস করল। \q1 \v 13 এখন সেটি কে মরুভূমিতে, \q2 শুকনো, জলহীন দেশে লাগানো হয়েছে। \q1 \v 14 তার একটি ডাল থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ল \q2 এবং তার ফল আগুন গ্রাস করল। \q1 শাসনকর্তার রাজদণ্ড হওয়ার উপযুক্ত \q2 কোনও শক্ত ডাল আর রইল না।’ \m এটি একটি বিলাপ এবং এটি বিলাপ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।” \c 20 \s1 বিদ্রোহী ইস্রায়েলকে অভিযোগমুক্ত করা \p \v 1 সপ্তম বছরের পঞ্চম মাসের দশ দিনের দিন, ইস্রায়েলের কয়েকজন প্রাচীন সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য আমার সামনে বসলেন। \p \v 2 তখন সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল \v 3 “হে মানবসন্তান, তুমি ইস্রায়েলের প্রাচীনদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা কি আমার ইচ্ছা জানতে এসেছ? সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের আমার ইচ্ছা জানতে দেব না।’ \p \v 4 “তুমি কি তাদের বিচার করবে? হে মানবসন্তান, তুমি কি তাদের বিচার করবে? তবে তাদের পূর্বপুরুষদের ঘৃণ্য কাজের কথা তাদের জানাও \v 5 আর তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি যেদিন ইস্রায়েলকে বেছে নিয়েছিলাম, সেইদিন হাত তুলে যাকোবের বংশের লোকদের কাছে শপথ করেছিলাম ও মিশরে তাদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেছিলাম। হাত তুলে তাদের বলেছিলাম, “আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” \v 6 সেইদিন আমি তাদের কাছে শপথ করেছিলাম যে আমি তাদের মিশর দেশ থেকে বার করে তাদের জন্য যে দেশ আমি খুঁজেছি সেখানে নিয়ে যাব, দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে, সেটি সব দেশের মধ্যে সুন্দর। \v 7 আমি তাদের বলেছিলাম, “তোমরা প্রত্যেকে যেসব ঘৃণ্য মূর্তি তোমাদের ভালো লেগেছে সেগুলি দূর করো, এবং মিশরের প্রতিমাগুলি দিয়ে নিজেদের অশুচি করো না। আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” \p \v 8 “ ‘কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল আর আমার কথা শুনতে রাজি হল না; যেসব ঘৃণ্য মূর্তি তাদের ভালো লাগত তা তারা দূর করেনি এবং মিশরের প্রতিমাগুলিও ত্যাগ করেনি। সেইজন্য আমি বলেছিলাম মিশরে আমি তাদের উপর আমার ক্রোধ ও ভীষণ অসন্তোষ ঢেলে দেব। \v 9 কিন্তু আমার সুনাম রক্ষার জন্য আমি তা করিনি, যাতে তারা যে জাতিগণের মধ্যে বাস করছিল তাদের কাছে আমার নাম যেন অপবিত্র না হয় ও যাদের সামনে আমি তাদের মিশর থেকে বের করে এনে ইস্রায়েলীদের কাছে আমি আমার পরিচয় দিয়েছি। \v 10 অতএব তাদের মিশর দেশ থেকে বের করে মরুভূমিতে আনলাম। \v 11 আমি তাদের আমার নিয়ম দিলাম ও আমার আইনকানুন তাদের জানালাম, যে তা পালন করবে সে তার মধ্যে দিয়ে বাঁচবে। \v 12 আরও আমার ও তাদের মধ্যে চিহ্ন হিসেবে আমার বিশ্রাম দিনগুলি তাদের দিলাম যেন তারা জানতে পারে যে, আমি সদাপ্রভু তাদের পবিত্র করেছি। \p \v 13 “ ‘কিন্তু ইস্রায়েলের লোকেরা মরুভূমিতে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। তারা আমার নিয়ম অনুসারে চলেনি, আমার আইনকানুন অগ্রাহ্য করেছে যদিও তা পালন করলে মানুষ তার মধ্যে দিয়ে বাঁচবে এবং তারা আমার বিশ্রামবারকে ভীষণভাবে অপবিত্র করেছে। তখন আমি বলেছিলাম যে আমার ক্রোধ তাদের উপর ঢেলে দেব ও মরুভূমিতে তাদের ধ্বংস করব। \v 14 কিন্তু আমার সুনাম রক্ষার জন্য আমি তা করিনি, যাতে যে জাতিদের সামনে আমি তাদের বের করে এনেছিলাম তাদের কাছে আমার নাম অপবিত্র না হয়। \v 15 এছাড়া সেই মরুভূমিতে আমি হাত তুলে তাদের কাছে শপথ করেছিলাম তাদের যে দেশ দিয়েছি সেই দেশে নিয়ে যাব দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে, সেটি সব দেশের মধ্যে সুন্দর \v 16 কারণ তারা আমার আইনকানুন অগ্রাহ্য করেছে ও আমার নিয়ম অনুসারে চলেনি এবং আমার বিশ্রামবারকে অপবিত্র করেছে। কেননা তাদের অন্তর তাদের প্রতিমাগুলির অনুগত। \v 17 তবুও আমি তাদের করুণার চোখে দেখে মরুভূমিতে তাদের একেবারে ধ্বংস করিনি। \v 18 আমি মরুভূমিতে তাদের সন্তানদের বললাম, “তোমাদের পূর্বপুরুষদের মতো চলো না, তাদের আইনকানুন রক্ষা কোরো না ও তাদের প্রতিমাগুলি দ্বারা নিজেদের অশুচি কোরো না। \v 19 আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; আমার নিয়মগুলি পালন করো ও আমার আইনকানুন রক্ষা করতে যত্ন নিও। \v 20 আমার বিশ্রামবার পবিত্র রেখো, যেন তা আমাদের মধ্যে চিহ্নস্বরূপ হয়। তখন তোমরা জানবে আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” \p \v 21 “ ‘তবুও সেই সন্তানেরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল তারা আমার নিয়মগুলি পালন করেনি ও আমার আইনকানুন রক্ষা করতে যত্ন নেয়নি “যদিও তা পালন করলে মানুষ তার মধ্যে দিয়ে বাঁচবে” এবং তারা আমার বিশ্রামবারকে অপবিত্র করেছে। তখন আমি বলেছিলাম যে আমার ক্রোধ তাদের উপর ঢেলে দেব ও মরুভূমিতে আমার অসন্তোষ তাদের উপর ব্যয় করব। \v 22 কিন্তু আমি আমার হাত বাড়ালাম না, এবং আমার সুনাম রক্ষার জন্য আমি তা করিনি, যাতে যে জাতিদের সামনে আমি তাদের বের করে এনেছিলাম তাদের কাছে আমার নাম অপবিত্র না হয়। \v 23 এছাড়া সেই মরুভূমিতে আমি হাত তুলে তাদের কাছে শপথ করেছিলাম যে আমি তাদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেব, \v 24 কারণ তারা আইনকানুনের বাধ্য হয়নি অথচ নিয়মগুলি অগ্রাহ্য করেছে এবং আমার বিশ্রামবারকে অপবিত্র করেছে ও অগ্রাহ্য করেছে এবং তাদের চোখের লোলুপ দৃষ্টি ছিল তাদের পূর্বপুরুষদের পূজিত মূর্তির প্রতি। \v 25 যেসব নিয়ম ভালো না এবং যে আইনকানুন মধ্য দিয়ে তারা বাঁচতে পারবে না সেইসব তাদের দিলাম। \v 26 আমি তাদের উপহারকে অশুচি হতে দিলাম—তাদের প্রথমজাতকে উৎসর্গ যেন আমি আতঙ্কিত করতে পারি আর তারা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ \p \v 27 “অতএব, হে মানবসন্তান, তুমি ইস্রায়েল কুলের সঙ্গে আলাপ করে তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমাদের পূর্বপুরুষেরা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে আমার নিন্দা করেছে \v 28 আমি তাদের যে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেই দেশে যখন তাদের নিয়ে এলাম আর তারা যে কোনও উঁচু পাহাড় বা ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছ দেখল সেখানে তারা তাদের পশুবলি দিত, আমার অসন্তোষ বাড়াতে সেখানে নৈবেদ্য দিত, সুগন্ধি ধূপ রাখত এবং পেয়-নৈবেদ্য ঢালত। \v 29 তখন আমি তাদের বললাম তোমরা যে উঁচু স্থানে উঠে যাও, ওটি কি?’ ” (আজ পর্যন্ত সেই জায়গাকে বামা\f + \fr 20:29 \fr*\ft “বামা” শব্দের অর্থ “উঁচু জায়গা”\ft*\f* বলে ডাকা হয়।) \s1 নবজীবনপ্রাপ্ত বিদ্রোহী ইস্রায়েল \p \v 30 “অতএব ইস্রায়েল কুলকে বলো ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমরা কি তোমাদের পূর্বপুরুষদের মতো করে নিজেদের অশুচি করবে এবং তাদের ঘৃণ্য মূর্তিগুলির প্রতি লালসা করবে? \v 31 যখন তোমরা তোমাদের উপহার অর্পণ করো—তোমাদের সন্তানদের আগুনের মধ্য বলিদান করো—এই দিন পর্যন্ত তোমরা তোমাদের প্রতিমা দ্বারা নিজেদের অশুচি করছ। হে ইস্রায়েল কুল, আমি কি তোমাদের আমার কাছে অনুসন্ধান করতে দেব? এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের আমার কাছে অনুসন্ধান করতে দেব না। \p \v 32 “ ‘তোমরা বলে থাকো, “আমরা জগতের অন্যান্য জাতির লোকদের মতো হতে চাই যারা কাঠ ও পাথরের পূজা করে।” কিন্তু তোমাদের মনে যা আছে তা কখনও হবে না। \v 33 এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, আমার শক্তিশালী হাত ও বিস্তারিত বাহু বাড়িয়ে ক্রোধ ঢেলে তোমাদের উপরে রাজত্ব করব। \v 34 আমার শক্তিশালী হাত ও বিস্তারিত বাহু বাড়িয়ে ক্রোধ ঢেলে—বিভিন্ন জাতির মধ্য থেকে আমি তোমাদের নিয়ে আসব এবং যেসব দেশে তোমাদের ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে তোমাদের একত্র করব। \v 35 আমি তোমাদের জাতিদের মরুভূমিতে নিয়ে এসে সেখানে তোমাদের, মুখোমুখি হয়ে, বিচার করব। \v 36 মিশর দেশের মরুভূমিতে আমি যেমন তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিচার করেছিলাম, তেমনি তোমাদেরও বিচার করব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \v 37 তোমরা যখন আমার লাঠির নিচ দিয়ে যাবে তখন আমি তোমাদের পরীক্ষা করব, আমার বিধানের বাঁধন দিয়ে আমি তোমাদের বাঁধব। \v 38 তোমাদের মধ্যে যারা আমার বিরুদ্ধে থাকে ও বিদ্রোহ করে আমি তাদের দূর করে দেব। তারা যে দেশে বাস করত যদিও সেখান থেকে আমি তাদের বের করে আনব তবুও তারা ইস্রায়েল দেশে ঢুকতে পারবে না। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \p \v 39 “ ‘হে ইস্রায়েল কুল, তোমাদের জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা যাও আর প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রতিমাগুলির সেবা করো! কিন্তু পরে আমার কথা তোমরা অবশ্যই শুনবে এবং তখন তোমরা তোমাদের উপহার ও প্রতিমা দিয়ে আমার পবিত্র নাম আর অপবিত্র করবে না। \v 40 কারণ, তখন দেশের মধ্যে আমার পবিত্র পাহাড়ের উপরে, ইস্রায়েলের উঁচু পাহাড়ের উপরে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, ইস্রায়েলের সমস্ত লোক আমার সেবা করবে এবং সেখানে আমি তাদের গ্রহণ করব। সেখানে আমি তোমাদের সব পবিত্র নৈবেদ্য, দান ও ভালো ভালো উপহার দাবি করব। \v 41 আমি যখন জাতিদের মধ্য থেকে তোমাদের বের করে আনব এবং যেসব দেশে তোমরা ছড়িয়ে পড়েছ সেখান থেকে একত্র করব তখন সুগন্ধি ধূপের মতো আমি তোমাদের গ্রহণ করব। আমার পবিত্রতা তোমাদের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হবে এবং সেটি সমস্ত জাতি দেখবে। \v 42 আমি তোমাদের যে দেশ দেব বলে হাত তুলে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলাম, সেই ইস্রায়েল দেশে যখন তোমাদের নিয়ে আসব, তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 43 সেখানে তোমাদের আগের আচার ব্যবহারের কথা ও যেসব কাজের দ্বারা তোমরা নিজেদের অশুচি করেছিলে তা মনে করবে এবং তোমাদের সমস্ত মন্দ কাজের জন্য নিজেরা নিজেদের ঘৃণা করবে। \v 44 হে ইস্রায়েল কুল, সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমি যখন তোমাদের মন্দ আচার-ব্যবহার ও মন্দ কাজ অনুসারে তোমাদের সঙ্গে ব্যবহার করব না, কিন্তু নিজের সুনাম রক্ষার জন্য তোমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করব, তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ” \s1 দক্ষিণ দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 45 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 46 “হে মানবসন্তান, তোমার মুখ তুমি দক্ষিণ দিকে রেখে সেই দেশে বিরুদ্ধে কথা বলো এবং সেখানকার বনের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলো। \v 47 দক্ষিণের বনকে তুমি বলো ‘সদাপ্রভুর বাক্য শোনো। সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন আমি তোমার মধ্যে আগুন জ্বালাব, আর তা তোমার সব কাঁচা ও শুকনো গাছপালা পুড়িয়ে ফেলবে। সেই গনগনে আগুন তৃপ্ত হবে না এবং দক্ষিণ থেকে উত্তর পর্যন্ত সমস্ত লোক তাতে ঝলসে যাবে। \v 48 প্রত্যেকে দেখবে যে আমি সদাপ্রভুই তা জ্বালিয়েছি; তা নিভবে না।’ ” \p \v 49 তখন আমি বললাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু! তারা আমাকে বলছে, ‘সে কি কেবল দৃষ্টান্ত বলছে না?’ ” \c 21 \s1 ব্যাবিলন যেন ঈশ্বরের বিচারের তরোয়াল \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি জেরুশালেমের দিকে মুখ করে পবিত্রস্থানের বিরুদ্ধে প্রচার করো। ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো \v 3 আর তাকে বলো ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন আমি তোমার বিপক্ষে। আমি খাপ থেকে আমার তরোয়াল বের করে তোমার মধ্য থেকে ধার্মিক ও দুষ্ট সবাইকে মেরে ফেলব। \v 4 দক্ষিণ থেকে উত্তরের সকলকে মেরে ফেলার জন্য আমার তরোয়াল খাপ থেকে বের হবে কারণ আমি ধার্মিক ও দুষ্ট সবাইকে মেরে ফেলব। \v 5 তখন সব লোক জানবে যে, আমি সদাপ্রভুই খাপ থেকে তরোয়াল বের করেছি; তা আর ফিরবে না।’ \p \v 6 “সেইজন্য হে মানবসন্তান, তুমি কোঁকাও, ভগ্ন হৃদয়ে ও গভীর দুঃখে তাদের সামনে কোঁকাও। \v 7 আর তারা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তুমি কেন কোঁকাচ্ছ?’ তুমি বলবে, ‘খবরের জন্য, কারণ তা আসছে। প্রত্যেক হৃদয় গলে যাবে ও প্রত্যেক হাত দুর্বল হবে; প্রত্যেক আত্মা নিস্তেজ হবে ও প্রত্যেক হাঁটু জলের মতো দুর্বল হয়ে যাবে।’ তা আসছে! তা নিশ্চয় ঘটবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \p \v 8 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল: \v 9 “হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন: \q1 “ ‘একটি তরোয়াল, একটি তরোয়াল, \q2 ধার দেওয়া ও পালিশ করা, \q1 \v 10 ধার দেওয়া হয়েছে কেটে ফেলার জন্য, \q2 পালিশ করা হয়েছে যেন বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে! \p “ ‘আমার ছেলে যিহূদার রাজদণ্ডের জন্য কি আনন্দ করব? সেই তরোয়াল সেইরকম প্রত্যেক লাঠিকে তুচ্ছ করে। \q1 \v 11 “ ‘তরোয়াল পালিশ করার জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে \q2 যেন হাতে ধরা যায়; \q1 হত্যাকারীর হাতে দেবার জন্য \q2 এটি ধার দেওয়া ও পালিশ করা হয়েছে। \q1 \v 12 হে মানবসন্তান, কাঁদো ও বিলাপ করো, \q2 কারণ এটি আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে; \q2 এটি ইস্রায়েলের সমস্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। \q1 আর আমার প্রজাদের সঙ্গে \q2 তাদেরও তরোয়ালেতে ফেলা হবে। \q1 কাজেই তুমি বুক চাপড়াও। \p \v 13 “ ‘পরীক্ষা নিশ্চয়ই আসবে। যিহূদার রাজদণ্ড, যা তরোয়াল তুচ্ছ করে, যদি আর না থাকে তাতে কি? এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ \q1 \v 14 “অতএব, হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো \q2 আর হাততালি দাও। \q1 সেই তরোয়াল দু-বার, \q2 এমনকি, তিনবার আঘাত করুক। \q1 এটি হত্যা করার সেই তরোয়াল, \q2 মহাহত্যা করার এই তরোয়াল, \q2 যা তাদের উপর চারিদিক থেকে আসবে। \q1 \v 15 কেটে ফেলার জন্য তাদের সব দ্বারে দ্বারে \q2 আমি তরোয়াল বসিয়েছি \q1 যেন তাদের হৃদয় সব গলে যায় \q2 এবং অনেকে পড়ে। \q1 দেখো! সেই তরোয়াল বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে, \q2 এটি হত্যার জন্য ধার দেওয়া হয়েছে। \q1 \v 16 হে তরোয়াল, ডানদিকে আঘাত করো, \q2 তারপর বাঁদিকে করো, \q2 যেদিকে তোমার ফলা ঘুরানো যায়। \q1 \v 17 আমিও হাততালি দেব, \q2 আর আমার ক্রোধ শান্ত হবে। \q1 আমি সদাপ্রভুই এই কথা বলেছি।” \p \v 18 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল: \v 19 “হে মানবসন্তান, ব্যাবিলনের রাজার তরোয়ালের জন্য দুটি রাস্তায় চিহ্ন দাও, সেই দুটি রাস্তাই এক দেশ থেকে বের হবে। যেখানে রাস্তা ভাগ হয়ে নগরের দিকে গেছে সেখানে পথনির্দেশ করার খুঁটি দাও। \v 20 তরোয়ালের জন্য অম্মোনীয়দের রব্বা নগরের বিরুদ্ধে যাবার একটি রাস্তা এবং যিহূদা ও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যাবার অন্য একটি রাস্তায় চিহ্ন দাও। \v 21 কারণ ব্যাবিলনের রাজা পূর্বলক্ষণ জানার জন্য যেখানে দুটি রাস্তা মিশেছে সেখানে দাঁড়াবে; সে তির ছুড়বে, তার দেবতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবে ও যকৃত পরীক্ষা করবে। \v 22 তার ডান হাতে আসবে জেরুশালেমের গণনা, যেখানে সে প্রাচীর ও দ্বার ভাঙবার যন্ত্র বসাবে, হত্যা করার হুকুম দেবে, ঢালু ঢিবি ও উঁচু ঢিবি তৈরি করবে। \v 23 যারা তার আনুগত্য স্বীকার করেছে তাদের কাছে এই লক্ষণ মিথ্যা মনে হবে, কিন্তু তাদের দোষের কথা সে তাদের মনে করিয়ে দেবে এবং তাদের বন্দি করে নিয়ে যাবে। \p \v 24 “এজন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘তোমরা খোলাখুলিভাবে পাপ করে তোমাদের দোষ দেখিয়ে দিয়েছ, তোমাদের সব কাজে তোমাদের অন্যায় প্রকাশ পাচ্ছে—তার ফলে তোমাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে। \p \v 25 “ ‘ওহে অপবিত্র ও দুষ্ট ইস্রায়েলের রাজপুত্র, তোমার দিন উপস্থিত হয়েছে, তোমার শাস্তির সময় চরমসীমায় পৌঁছেছে, \v 26 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমার পাগড়ি খোলো, মুকুট নামিয়ে ফেলো। যেমন ছিল তেমন আর হবে না; ছোটোকে বড়ো আর বড়োকে ছোটো করা হবে। \v 27 ধ্বংস! ধ্বংস! আমি এসব ধ্বংস করে দেব! যাঁর সত্যিকারের অধিকার আছে তিনি না আসা পর্যন্ত এগুলি আর পুনরুদ্ধার হবে না; আমি তাঁকেই এসব কিছু দেব।’ \p \v 28 “আর তুমি, হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু অম্মোনীয়দের ও তাদের অপমানের বিষয়ে এই কথা বলেন: \q1 “ ‘একটি তরোয়াল, একটি তরোয়াল, \q2 খোলা হয়েছে হত্যা করার জন্য, \q1 পালিশ করা হয়েছে গ্রাস করার জন্য \q2 ও যেন তা বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে! \q1 \v 29 এদিকে লোকেরা তোমার বিষয়ে মিথ্যা দর্শন পেলেও \q2 এবং মিথ্যা ভবিষ্যৎ-কথনের চর্চা করলেও \q1 যাদের মেরে ফেলা হবে \q2 সেই দুষ্টদের গলার উপর তোমাকে রাখা হবে, \q1 তাদের দিন এসে পড়েছে, \q2 তাদের শাস্তির সময় চরমসীমায় পৌঁছেছে। \b \q1 \v 30 “ ‘তরোয়াল খাপে ফিরিয়ে নাও। \q2 যে জায়গায় তোমাদের সৃষ্টি, \q1 তোমাদের সেই পূর্বপুরুষদের দেশে \q2 আমি তোমাদের বিচার করব। \q1 \v 31 আমার ক্রোধ আমি তোমার উপর ঢেলে দেব \q2 এবং তোমাদের বিরুদ্ধে আমার ভীষণ অসন্তোষের আগুনে ফুঁ দেব; \q1 আমি তোমাদের এমন নিষ্ঠুর লোকদের হাতে তুলে দেব \q2 যারা ধ্বংস করতে দক্ষ। \q1 \v 32 তোমরা আগুনের জন্য কাঠের মতো হবে, \q2 তোমাদের রক্ত তোমাদের দেশের মধ্যেই পড়বে, \q1 তোমাদের আর স্মরণ করা হবে না, \q2 কারণ আমি সদাপ্রভুই এই কথা বলছি।’ ” \c 22 \s1 জেরুশালেমের পাপের বিচার \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \b \p \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি কি তার বিচার করবে? তুমি কি এই রক্তপাতের নগরের বিচার করবে? তাহলে তার জঘন্য কাজকর্মের বিষয় নিয়ে তার মুখোমুখি হও \v 3 এবং বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে নগর যে নিজের মধ্যে রক্তপাত করে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে এবং প্রতিমা তৈরি করে নিজেকে অশুচি করে, \v 4 রক্তপাত করে তুমি দোষী হয়েছ এবং প্রতিমা তৈরি করে তুমি অশুচি হয়েছ। তুমি তোমার দিন কাছে নিয়ে এসেছ এবং তোমার শেষকাল উপস্থিত হয়েছে। সেইজন্য জাতিগণের কাছে তোমাকে ঘৃণ্য করব এবং সমস্ত দেশের কাছে তোমাকে হাসির পাত্র করব। \v 5 হে জঘন্য নগর, যা অশান্তিতে পূর্ণ, যারা কাছে আছে আর যারা দূরে আছে তারা তোমাকে বিদ্রুপ করবে। \p \v 6 “ ‘দেখ ইস্রায়েলের প্রত্যেক শাসনকর্তা রক্তপাত করবার জন্য কেমন করে তার ক্ষমতা ব্যবহার করছে। \v 7 তোমাদের মধ্যেই লোকে মা-বাবাকে তুচ্ছ করেছে; বিদেশিদের অত্যাচার করেছে আর অনাথ ও বিধবাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। \v 8 তুমি আমার পবিত্র জিনিসগুলি অশ্রদ্ধা করেছ এবং আমার বিশ্রামবারগুলিকে অপবিত্র করেছ। \v 9 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা অন্যের বদনাম রটিয়ে তাদের রক্তপাত করায়; পাহাড়ের উপরের পূজার জায়গায় খাওয়াদাওয়া করে ও ঘৃণ্য কাজ করে। \v 10 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা বাবার বিছানাকে অসম্মান করে; ঋতুমতী মহিলার সঙ্গে মিলিত হয়, যখন তারা অশুচি। \v 11 তোমার মধ্যে কেউ তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ঘৃণ্য কাজ করে, আরেকজন নির্লজ্জভাবে তার ছেলের বৌকে অশুচি করে, এবং আরেকজন তার বোনের সঙ্গে ব্যভিচার করে, যে তার নিজের বাবার মেয়ে। \v 12 তোমার মধ্যে রক্তপাত করার জন্য লোকে ঘুস নেয়; তারা বাড়তি সুদ নিয়ে থাকে এবং জুলুম করে প্রতিবেশীর কাছ থেকে অন্যায় লাভ করে। এবং তুমি আমাকে ভুলে গিয়েছ, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 13 “ ‘তুমি যে অন্যায় লাভ করেছ এবং তোমার মধ্যে যে রক্তপাত করেছ তার জন্য আমি নিশ্চয়ই হাততালি দেব। \v 14 আমি যেদিন তোমার কাছ থেকে হিসেব নেব সেদিন কি তোমার সাহস থাকবে? আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম এবং আমি তা করবই। \v 15 আমি তোমার লোকদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেব এবং তোমার অশুচিতা দূর করব। \v 16 জাতিগণের চোখে তুমি যখন অপবিত্র হবে, তুমি জানবে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \p \v 17 তারপর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল: \v 18 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুল আমার কাছে খাদের মতো হয়েছে; তারা সবাই যেন রুপো খাঁটি করবার সময় হাপরের মধ্যে খাদ হিসেবে পড়ে থাকা পিতল, দস্তা, লোহা ও সীসা। \v 19 অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘তোমরা সবাই খাদ হয়ে গিয়েছ বলে আমি জেরুশালেমে তোমাদের জড়ো করব। \v 20 লোকে যেমন রুপো, পিতল, লোহা, সীসা ও দস্তা গলাবার জন্য হাপরের মধ্যে একত্র করে, তেমনি করে আমার ভীষণ অসন্তোষ ও ক্রোধে আমি তোমাদের নগরের মধ্যে রেখে গলাব। \v 21 আমি তোমাদের জড়ো করে আমার জ্বলন্ত ক্রোধে ফুঁ দেব আর তোমরা নগরের মধ্যে গলে যাবে। \v 22 হাপরের মধ্যে যেমন রুপো গলে যায় তোমরাও তেমনি তার মধ্যে গলে যাবে, আর তোমরা জানবে যে, আমি সদাপ্রভুই তোমাদের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দিয়েছি।’ ” \p \v 23 আবার সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 24 “হে মানবসন্তান, তুমি দেশকে বলো, ‘তুমি একটি দেশ যার উপর আমার ক্রোধের দিনে পরিষ্কার বা বৃষ্টি হয়নি।’ \v 25 তাদের শাসনকর্তারা\f + \fr 22:25 \fr*\ft হিব্রুতে, ভাববাদী\ft*\f* সেখানে ষড়যন্ত্র করে; তারা গর্জনকারী সিংহের মতো শিকার ছেঁড়ে; তারা লোকদের গ্রাস করে, ধনসম্পদ ও দামি দামি জিনিস নিয়ে নেয় এবং দেশের মধ্যে অনেক স্ত্রীলোককে বিধবা করে। \v 26 তার যাজকেরা আমার বিধানের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং আমার পবিত্র জিনিসগুলিকে অপবিত্র করে; তারা পবিত্র ও যা সাধারণ তাদের মধ্যে কোনও তফাৎ রাখে না; তারা শিক্ষা দেয় যে পবিত্র ও অপবিত্রের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই; এবং তারা আমার বিশ্রামদিন পালন করার ব্যাপারে চোখ বুজে থাকে সেইজন্য আমি তাদের মধ্যে অপবিত্র হচ্ছি। \v 27 সেখানকার কর্মকর্তারা নেকড়ের মতন শিকার ছেঁড়ে; তারা রক্তপাত করে এবং অন্যায় লাভের জন্য মানুষ খুন করে। \v 28 তার ভাববাদীরা মিথ্যা দর্শন এবং মিথ্যা ভবিষ্যদ্‌বাণী করে এই কাজের উপর চুনকাম করে। তারা বলে, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন,’ যখন সদাপ্রভু কোনও কথা বলেননি। \v 29 দেশের লোকেরা অন্যায় দাবি করে অত্যাচার এবং চুরি করে, তারা গরিব এবং অভাবীদের উপর অন্যায় করে এবং ন্যায়বিচার না করে বিদেশিদের উপর অত্যাচার করে। \p \v 30 “আমি তাদের মধ্যে এমন একজন লোকের খোঁজ করলাম, যে প্রাচীর গাঁথবে এবং দেশের পক্ষ হয়ে আমার সামনে প্রাচীরের ফাটলে দাঁড়াবে যেন আমাকে দেশটা ধ্বংস করতে না হয়, কিন্তু কাউকে পেলাম না। \v 31 এই জন্য আমার ক্রোধ আমি তাদের উপর ঢেলে দেব এবং আমার জ্বলন্ত ক্রোধের আগুনে তাদের পুড়িয়ে ফেলব, তারা যা করেছে তার ফল তাদের মাথার উপর দেব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।” \c 23 \s1 ব্যভিচারিণী দুই বোন \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, দুজন স্ত্রীলোক ছিল যারা একই মায়ের মেয়ে। \v 3 যৌবনকাল থেকেই তারা মিশরে গণিকা হয়েছিল। সেই দেশে তাদের বুক ধরে সোহাগ করা হত এবং তাদের কুমারী স্তন টিপত। \v 4 তাদের মধ্যে বড়টির নাম অহলা ও তার বোনের নাম ছিল অহলীবা। তারা আমার হল এবং ছেলেমেয়েদের জন্ম দিল। অহলা হল শমরিয়া এবং অহলীবা হল জেরুশালেম। \p \v 5 “অহলা আমার থাকাতেই ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল; এবং তার প্রেমিকদের প্রতি তার কামনা ছিল, আসিরীয়—সৈন্য \v 6 পরনে নীল কাপড়, শাসনকর্তা ও সেনাপতি, সকলেই সুন্দর যুবক এবং ঘোড়াসওয়ার। \v 7 সে অভিজাত আসিরীয়দের কাছে নিজেকে বেশ্যারূপে দান করেছিল এবং যাদের সে কামনা করত তাদের সমস্ত দেবতা দ্বারা নিজেকে অশুচি করেছিল। \v 8 সে মিশরে যে বেশ্যাবৃত্তি শুরু করেছিল তা ত্যাগ করেনি, যখন তার যৌবনকালে পুরুষেরা তার কাছে শুত, তার কুমারী স্তন টিপত এবং তাদের কামনা তার উপর ঢেলে দিত। \p \v 9 “সেইজন্য আমি তাকে তার প্রেমিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম, সেই আসিরীয়দের, যাদের সে কামনা করত। \v 10 তারা তাকে উলঙ্গ করে, তার ছেলেমেয়েদের কেড়ে নিয়ে তরোয়াল দিয়ে তাকে মেরে ফেলল। সে স্ত্রীলোকদের আলোচনার বিষয় হল, কারণ তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। \p \v 11 “তার বোন অহলীবা এসব দেখেছিল, তবুও তার কামনা এবং বেশ্যাবৃত্তির কারণে সে তার বোনের চেয়ে আরও বেশি চরিত্রহীন ছিল। \v 12 তারও আসিরীয়—শাসনকর্তা ও সেনাপতি, সম্পূর্ণ পোশাকে যোদ্ধা, ঘোড়াসওয়ার, সকল সুন্দর যুবকদের প্রতি কামনা ছিল। \v 13 আমি দেখলাম সেও নিজেকে অশুচি করল; দুজনই একই পথে গেল। \p \v 14 “কিন্তু সে তার বেশ্যাবৃত্তি আরও বাড়াল। সে দেয়ালের উপর লাল রংয়ে আঁকা কলদীয় পুরুষদের ছবি দেখত, \v 15 তাদের কোমর বাঁধনি এবং মাথায় উড়ন্ত পাগড়ি; তারা সবাই দেখতে ব্যাবিলীয় রথের সেনাপতিদের মতো, যারা কলদীয় দেশের অধিবাসী। \v 16 তাদের দেখামাত্র তাদের প্রতি তার কামনা জাগত, এবং কলদীয় দেশে তাদের কাছে দূত পাঠাত। \v 17 তারপর ব্যাবিলীয়রা তার কাছে এসে তার সঙ্গে বিছানায় যেত এবং ব্যভিচার করে তাকে অশুচি করত। তাদের দ্বারা অশুচি হবার পর সে তাদের ঘৃণা করতে লাগল। \v 18 সে খোলাখুলিভাবে যখন তার বেশ্যার কাজ চালাতে লাগল এবং তার উলঙ্গতা প্রকাশ করল তখন আমি তাকে ঘৃণা করলাম, যেমন আমি তার বোনকে ঘৃণা করেছিলাম। \v 19 যৌবনে সে যখন মিশরে গণিকা ছিল তখনকার দিনগুলির কথা মনে করে সে আরও বেশি ব্যভিচার করতে লাগল। \v 20 সেখানে সে তার প্রেমিকদের সাথে এমন যৌনাচার করত যাদের যৌনাঙ্গগুলি ছিল গাধার মতো ও নিঃসরণ ছিল ঘোড়ার মতো। \v 21 তোমার যৌবনকালে মিশরে যেমন তোমার বুক ধরে আদর করত এবং টিপত, তুমি আবার সেই যৌবনকালীন ব্যভিচারের আকাঙ্ক্ষা করছ। \p \v 22 “এই জন্য, অহলীবা, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমার যেসব প্রেমিকদের তুমি ঘৃণা করেছ, আমি তাদেরই তোমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করব এবং চারিদিক থেকে আমি তাদের তোমার বিরুদ্ধে নিয়ে আসব, \v 23 তারা হল ব্যাবিলীয়রা এবং কলদীয়েরা, পকোদ, শোয়া ও কোয়ার লোকেরা, এবং সমস্ত আসিরীয়রা, সুন্দর যুবকেরা, সকলেই শাসনকর্তা ও সেনাপতি, রথের কর্মচারী, উঁচু পদের লোক এবং ঘোড়াসওয়ার। \v 24 তারা তোমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, রথ ও মালবাহী শকট এবং লোকজনের মস্ত বড়ো একটি দল নিয়ে আসবে; তারা ছোটো ও বড়ো ঢাল নিয়ে মাথা ঢাকার টুপি পরে তোমাকে ঘেরাও করবে। শাস্তি পাবার জন্য আমি তোমাকে তাদের হাতে তুলে দেব এবং তারা তাদের বিচারের নিয়ম অনুসারে তোমাকে শাস্তি দেবে। \v 25 আমার অন্তর্জ্বালা আমি তোমার বিরুদ্ধেই কাজে লাগাব বলে তারা তাদের প্রকোপ তোমার প্রতি ব্যবহার করবে। তারা তোমার নাক ও কান কেটে দেবে এবং তোমার বাকি লোকদের তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলবে। তারা তোমার ছেলেমেয়েদের নিয়ে যাবে, আর তোমার বাকি লোকেরা আগুনে পুড়ে মরবে। \v 26 তারা তোমাকে বিবস্ত্র করবে এবং তোমার সুন্দর গহনা নিয়ে নেবে। \v 27 যে ব্যভিচার ও গণিকাবৃত্তি তুমি মিশরে শুরু করেছিলে তা আমি এইভাবে বন্ধ করে দেব। তাতে তুমি এই জিনিসগুলির প্রতি আকৃষ্ট হবে না অথবা মিশরকে আর মনেও রাখবে না। \p \v 28 “কেননা সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তুমি যাদের ঘৃণা করো, যাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে তুমি তাড়িয়ে দিয়েছ আমি তোমাকে তাদের হাতেই তুলে দেব। \v 29 তারা তোমার প্রতি ঘৃণার সঙ্গে ব্যবহার করবে এবং তুমি যা কিছু উপার্জন করেছ তার সবকিছু নিয়ে নেবে। তারা তোমাকে উলঙ্গিনী ও বিবস্ত্রা করে ছেড়ে চলে যাবে, এবং তোমার গণিকাবৃত্তির লজ্জা প্রকাশ পাবে। তোমার ব্যভিচার ও কুকর্মের জন্য \v 30 এই সমস্ত তোমার উপরে পড়েছে, কারণ জাতিগণের সঙ্গে ব্যভিচার করেছ এবং তাদের প্রতিমাগুলি দিয়ে নিজেকে অশুচি করেছ। \v 31 তুমি তোমার বোনের পথ অনুসরণ করেছ; এই জন্য আমি তার পানপাত্র তোমার হাতে দেব। \p \v 32 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “তুমি তোমার বোনের পাত্রে পান করবে, \q2 সেই পাত্র বড়ো ও গভীর; \q1 এটি অপমান এবং উপহাস নিয়ে আসবে, \q2 কারণ এতে অনেক ধরে। \q1 \v 33 তুমি মাতলামিতে ও দুঃখে পূর্ণ হবে, \q2 ধ্বংসের ও নির্জনতার পানপাত্র, \q2 তোমার বোন শমরিয়ার পানপাত্র। \q1 \v 34 তুমি তাতে পান করবে এবং চেটেপুটে পান করবে; \q2 তা তুমি ভেঙে চুরমার করবে \q2 এবং নিজের বুক ছিঁড়ে ফেলবে। \m সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমি বলছি। \b \p \v 35 “সুতরাং সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন যেহেতু তুমি আমাকে ভুলে গিয়েছ এবং আমার দিকে পিঠ ফিরিয়েছ বলে তোমাকে তোমার ঘৃণ্য কাজের ও বেশ্যাবৃত্তির ফলভোগ করতে হবে।” \p \v 36 সদাপ্রভু আমাকে বললেন “হে মানবসন্তান, তুমি কি অহলা এবং অহলীবার বিচার করবে? তাহলে তাদের ঘৃণ্য কাজের বিষয় তাদের সম্মুখীন হও, \v 37 কারণ তারা ব্যভিচার করেছে এবং তাদের হাতে রক্ত রয়েছে। তাদের প্রতিমাগুলির সঙ্গে ব্যভিচার করেছে; যে সন্তানদের আমার জন্য জন্ম দিয়েছিলে তাদের প্রতিমাদের খাদ্যের জন্য উৎসর্গ করেছে। \v 38 তারা এই কাজ আমার প্রতিও করেছে সেই একই সময় তারা আমার পবিত্রস্থান অশুচি করেছে এবং আমার সাব্বাথের পবিত্রতা রক্ষা করেনি। \v 39 যেদিন তারা তাদের প্রতিমাদের কাছে তাদের সন্তানদের উৎসর্গ করেছিল সেদিনই তারা আমার পবিত্রস্থানে গিয়ে তা অপবিত্র করেছে। তারা আমার গৃহের মধ্যেই এই কাজ করেছে। \p \v 40 “তারা দূর থেকে পুরুষদের নিয়ে আসার জন্য সংবাদদাতাদের পাঠিয়েছিল, আর যখন তারা এল তোমরা তাদের জন্য স্নান করেছিলে, চোখে কাজল দিয়েছিলে এবং তোমাদের অলংকার পরেছিলে। \v 41 তোমরা সুন্দর বিছানায় শুয়ে তার সামনে একটি টেবিল রেখে আমারই সুগন্ধি এবং জলপাই তেল তার উপরে রেখেছিলে। \p \v 42 “তার চারিদিকে ছিল চিন্তাহীন লোকেদের কোলাহল; উচ্ছৃঙ্খল জনতার সঙ্গে মরুভূমি থেকে মদ্যপায়ীদের আনা হয়েছিল, তারা সেই দুই বোনের হাতে চুড়ি এবং তাদের মাথায় সুন্দর মুকুট পরিয়েছিল। \v 43 তখন ব্যভিচার করে দুর্বল হয়ে যাওয়া এক স্ত্রীলোকের বিষয় আমি বলেছিলাম, ‘এখন লোকেরা গণিকা হিসেবে তার সঙ্গে ব্যবহার করুক, কারণ সে তাই।’ \v 44 আর তারা তার সঙ্গে শয়ন করল। একজন গণিকার সঙ্গে যেমন লোকে শয়ন করে, তেমনি করে তারা সেই কামুক স্ত্রীলোক, অহলা ও অহলীবার সঙ্গে শয়ন করেছিল। \v 45 কিন্তু ধার্মিক বিচারকেরা ব্যভিচার ও রক্তপাতের পাওনা শাস্তি সেই স্ত্রীলোকদের দেবে, কারণ তারা ব্যভিচারিণী আর তাদের হাতে রক্ত রয়েছে। \p \v 46 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তুমি তাদের বিরুদ্ধে একদল লোক নিয়ে যাও এবং আতঙ্ক ও লুটের হাতে তাদের তুলে দাও। \v 47 সেই জনতা তাদের পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে এবং তরোয়াল দিয়ে তাদের টুকরো টুকরো করে কাটবে; তারা তাদের ছেলেদের ও মেয়েদের মেরে ফেলবে এবং তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেবে। \p \v 48 “এইভাবে আমি দেশের মধ্যে কুকাজ শেষ করব, যেন সমস্ত স্ত্রীলোকেরা এটাকে সাবধানবাণী হিসেবে নেয় এবং তোমাদের অনুকরণ না করে। \v 49 তোমাদের কুকাজের ফল তোমাদেরই ভোগ করতে হবে এবং প্রতিমাপুজোর পাপের ফল বহন করতে হবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু।” \c 24 \s1 জেরুশালেম যেন রান্নার পাত্র \p \v 1 নবম বছরের দশম মাসের দশম দিনে, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি আজকের, আজকেরই তারিখ লিখে রাখো, কারণ আজকেই ব্যাবিলনের রাজা জেরুশালেম অবরোধ করবে। \v 3 এই বিদ্রোহী জাতির কাছে একটি দৃষ্টান্তের কথা বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: \q1 “ ‘হাঁড়ি চড়াও, হাঁড়ি চড়াও \q2 এবং তার মধ্যে জল দাও। \q1 \v 4 তার মধ্যে মাংসের টুকরো দাও, \q2 প্রত্যেকটা ভালো টুকরো—ঊরু এবং কাঁধের। \q1 ভালো ভালো হাড় দিয়ে তা ভর্তি করো; \q2 \v 5 পাল থেকে সেরা ভেড়াটা নাও। \q1 হাড়গুলির জন্য হাঁড়ির নিচে কাঠ সাজাও; \q2 তা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে \q2 হাড়গুলি তাতে রান্না করো। \b \m \v 6 “ ‘কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘ধিক্ সেই রক্তপাতকারী নগরকে, \q2 সে যেন একটি হাঁড়ি যাতে ময়লার স্তর পড়ে গেছে, \q2 যা পরিষ্কার হবে না! \q1 তাদের বিষয় গুটিকাপাত না করে \q2 একটি একটি করে মাংস বের করে খালি করো। \b \q1 \v 7 “ ‘কেননা তাদের মধ্যে তার রক্তপাত করা হয়েছে \q2 সেই রক্ত পাথরের উপর ঢালা হয়েছে; \q1 তা মাটিতে ঢালা হয়নি, \q2 যেখানে ধুলোয় তা ঢাকা পড়বে। \q1 \v 8 ক্রোধ খুঁচিয়ে তুলে যেন প্রতিশোধ নেওয়া হয় সেইজন্য \q2 আমি সেই রক্ত পাথরের উপরে রেখেছি \q2 যেন সেটি ঢাকা না পড়ে। \b \m \v 9 “ ‘অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘ধিক্ সেই রক্তপাতকারী নগরকে! \q2 আমিও কাঠ জড়ো করে উঁচু করব। \q1 \v 10 অনেক কাঠ সাজাও \q2 এবং আগুন জ্বালাও। \q1 ভালো করে মশলা মিশিয়ে মাংস রান্না করো; \q2 এবং হাড়গুলি পুড়তে দাও। \q1 \v 11 তারপর খালি হাঁড়ি কয়লার উপরে রাখো \q2 যতক্ষণ না সেটি গরম হয় আর তামা পুড়ে লাল হয় \q1 যেন তার অশুচিতা সব গলে যায় \q2 এবং ময়লার স্তর পুড়ে যায় \q1 \v 12 সব চেষ্টার কোনও ফল হয়নি; \q2 তার ময়লার পুরু স্তর পরিষ্কার করা যায়নি, \q2 এমনকি আগুন দিয়েও নয়। \p \v 13 “ ‘এখন তোমার অশুচিতা হল ব্যভিচার। কারণ আমি তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু তুমি তোমার অশুচিতা থেকে পরিষ্কার হলে না, তুমি আবার পরিষ্কার হবে না যতক্ষণ না আমার ক্রোধ তোমার উপরে ঢেলে আমি শান্ত হব। \b \p \v 14 “ ‘আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম। আমার কাজ করার জন্য সময় এসে গেছে। আমি নিজেকে আটকাব না; মমতা করব না কিংবা নরম হব না। তোমার আচরণ এবং তোমার কাজ অনুসারে তোমার বিচার করা হবে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ ” \s1 যিহিষ্কেলের স্ত্রীর মৃত্যু \p \v 15 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 16 “হে মানবসন্তান, আমি এক আঘাতেই তোমার কাছ থেকে তোমার স্ত্রী যাকে তুমি ভীষণ ভালোবাসো তাকে নিয়ে নেব। তবুও তুমি বিলাপ করো না, কেঁদো না কিংবা চোখের জল ফেলো না। \v 17 নীরবে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলো, মৃতের জন্য শোকপ্রকাশ করো না। তুমি পাগড়ি বেঁধো ও পায়ে চটি দিয়ো; শোককারীদের স্বাভাবিক রীতি মেনো না অথবা তোমার সান্ত্বনাকারী বন্ধুদের দেওয়া কোনও খাবার গ্রহণ করো না।” \p \v 18 তখন আমি সকালবেলায় লোকদের সঙ্গে কথা বললাম, আর সন্ধ্যাবেলায় আমার স্ত্রী মারা গেলেন। পরদিন সকালে আমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছিল তেমনই করলাম। \p \v 19 তখন লোকেরা আমায় জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কি আমাদের বলবেন না এসব বিষয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কি? আপনি কেন এরকম অভিনয় করছেন?” \p \v 20 তখন আমি তাদের বললাম, “সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এসেছে \v 21 ইস্রায়েল কুলকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার পবিত্রস্থান—যা তোমাদের শক্তির অহংকার, যা তোমাদের চোখে সুখ ও তোমাদের মমতার জিনিস, সেটিকেই আমি অপবিত্র করব। তোমাদের যেসব ছেলেমেয়েদের তোমরা ফেলে গিয়েছ তারা তরোয়ালের আঘাতে মারা যাবে। \v 22 তখন আমি যা করেছি তোমরাও তাই করবে। শোককারীদের স্বাভাবিক রীতি মেনো না অথবা তোমার সান্ত্বনাকারী বন্ধুদের দেওয়া কোনও খাবার গ্রহণ করো না। \v 23 তোমরা তোমাদের মাথায় পাগড়ি বাঁধবে এবং পায়ে চটি পরবে। তোমরা শোক করবে না অথবা কাঁদবে না কিন্তু নিজের নিজের পাপের জন্য দুর্বল হয়ে যাবে এবং একজন অন্যজনের কাছে কোঁকাবে। \v 24 তোমাদের কাছে যিহিষ্কেল একটি চিহ্নের মতো হবে; সে যা করেছে তোমরা ঠিক তাই করবে। যখন এটি হবে, তখন তোমরা জানবে যে আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু।’ \p \v 25 “আর তুমি, হে মানবসন্তান, যেদিন আমি তাদের সেই দুর্গ, তাদের আনন্দ ও গৌরব, তাদের চোখের সুখ, তাদের অন্তরের চাওয়া এবং তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে নেব, \v 26 সেদিন একজন পালিয়ে আসা লোক তোমাকে খবর দিতে আসবে। \v 27 সেই সময় তোমার মুখ খুলে যাবে; তুমি তার সঙ্গে কথা বলবে আর নীরব থাকবে না। এইভাবে তুমি তাদের কাছে একটি চিহ্ন হবে, এবং তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।” \c 25 \s1 অম্মোনের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি অম্মোনীয়দের দিকে তোমার মুখ রেখে তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলো। \v 3 তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভুর এই কথা শোনো। সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যেহেতু তোমরা আমার পবিত্রস্থানের উপর “বাহবা!” বলেছিলে যখন সেই জায়গা অপবিত্র হতে দেখেছিলে ও ইস্রায়েল দেশকে পতিত জমি হতে দেখেছিলে এবং যিহূদার লোকদের বন্দি হয়ে নির্বাসনে যেতে দেখেছিলে, \v 4 এই জন্য আমি তোমাদের অধিকার করার জন্য পূর্বদেশের লোকদের হাতে তুলে দেব। তারা তোমাদের দেশে তাদের তাঁবু খাটিয়ে তোমাদের মধ্যে বাস করবে; তারা তোমাদের ফল খাবে ও দুধ পান করবে। \v 5 আমি রব্বাকে উটের চারণভূমি ও অম্মোনকে মেষের বিশ্রামস্থান করব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \v 6 কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, কারণ তোমরা ইস্রায়েল দেশের অবস্থা দেখে হাততালি দিয়েছ, নেচেছ এবং অন্তরের সঙ্গে তাকে হিংসা করে আনন্দ করেছ, \v 7 এই জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে আমি আমার হাত বাড়াব এবং লুটের জিনিস হিসেবে অন্য জাতিদের হাতে তোমাদের তুলে দেব। জাতিগণের মধ্যে থেকে তোমাকে কেটে ফেলব এবং সকল দেশের মধ্যে থেকে তোমাকে উচ্ছিন্ন করব। আমি তোমাকে ধ্বংস করব, তাতে তুমি জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \s1 মোয়াবের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 8 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যেহেতু মোয়াব এবং সেয়ীর বলেছে, “দেখো, যিহূদা কুল অন্যান্য জাতিদের মতো হয়ে গেছে,” \v 9 এই জন্য আমি মোয়াবের সীমানা খুলে দেব, তার সামনের নগর থেকে শুরু করে, তাদের গৌরবের নগর—বেথ-যিশীমোৎ, বায়াল-মিয়োন ও কিরিয়াথয়িম। \v 10 আমি অম্মোনীয়দের সঙ্গে মোয়াবকেও পূর্বদেশের লোকদের হাতে তুলে দেব, যেন জাতিদের মধ্যে অম্মোনীয়দের কথা লোকে ভুলে যায়; \v 11 আর আমি মোয়াবকেও শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \s1 ইদোমের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 12 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যেহেতু ইদোম যিহূদা কুলের উপর প্রতিশোধ নিয়ে খুব অন্যায় করেছে, \v 13 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি ইদোমের বিরুদ্ধে আমার হাত বাড়াব এবং সেখানকার মানুষ ও পশুকে মেরে ফেলব। আমি সেটি ধ্বংসস্থান করে রাখব এবং তৈমন থেকে দদান পর্যন্ত তরোয়ালে মারা পড়বে। \v 14 আমি আমার লোক ইস্রায়েলের হাত দিয়ে ইদোমের উপর প্রতিশোধ নেব, আর তারা আমার ভীষণ অসন্তোষ ও ক্রোধ অনুসারে ইদোমের বিরুদ্ধে কাজ করবে; তখন তারা আমার প্রতিশোধ জানতে পারবে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’ ” \s1 ফিলিস্তিনীর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 15 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যেহেতু ফিলিস্তিনীরা হিংসার মনোভাব নিয়ে যিহূদার উপর প্রতিশোধ নিয়েছে, এবং পুরানো শত্রুতার মনোভাব নিয়ে যিহূদাকে ধ্বংস করতে চেয়েছে, \v 16 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে আমি আমার হাত বাড়াব, আর আমি করেথীয়দের কেটে ফেলব এবং সাগরের কিনারা বরাবর বাকি লোকদের ধ্বংস করব। \v 17 আমি তাদের উপর ভীষণ প্রতিশোধ নেবার জন্য আমার ক্রোধে তাদের শাস্তি দেব। আমি যখন তাদের উপর প্রতিশোধ নেব তখন তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ” \c 26 \s1 সোরের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 1 একাদশ বছরে, এগারো মাসের প্রথম দিনে, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, যেহেতু জেরুশালেম সম্বন্ধে সোর বলেছিল, ‘বাহবা! অন্যান্য জাতিগণের কাছে যাবার প্রধান ফটক ভেঙে গেছে, এবং তার দরজাগুলি আমার কাছে পুরোপুরি খুলে গেছে; এখন যখন সে ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে আমার উন্নতি হবে,’ \v 3 সেইজন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে সোর, আমি তোমার বিরুদ্ধে, আর সমুদ্র যেমন তার ঢেউ উঠায় তেমনি করে আমি অনেক জাতিকে তোমার বিরুদ্ধে নিয়ে আসব। \v 4 তারা সোরের প্রাচীর এবং উঁচু দুর্গগুলি ধ্বংস করবে; আমি তার ধুলা ময়লা চেঁচে ফেলে তাকে পাথরের মতো করে দেব। \v 5 সে সমুদ্রের বুকে জাল শুকাবার জায়গা হবে, কারণ আমি বলেছি, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। সে জাতিদের লুটের জিনিস হবে, \v 6 তার মূল ভূখণ্ডে বসতিগুলি তরোয়াল দ্বারা ধ্বংসিত হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 7 “কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে সোর, আমি উত্তর দিক থেকে ঘোড়া, রথ, ঘোড়সওয়ার ও বিরাট সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে রাজাদের রাজা ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারকে নিয়ে আসব। \v 8 সে তোমার মূল ভূখণ্ডের বসতিগুলি তরোয়াল দ্বারা ধ্বংস করবে; তোমাদের বিরুদ্ধে অবরোধ তৈরি করবে, তোমার দেওয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে একটি ঢালু ঢিবি বানাবে আর তোমার বিরুদ্ধে তার ঢাল উঁচু করবে। \v 9 সে প্রাচীর ভাঙার যন্ত্র দিয়ে তোমার প্রাচীরে আঘাত করবে তার অস্ত্রগুলি দিয়ে তোমার উঁচু দুর্গগুলি ধ্বংস করবে। \v 10 তার এত বেশি ঘোড়া থাকবে যে, সেগুলি তোমাকে ধুলোয় ঢেকে দেবে। ভাঙা প্রাচীরের মধ্য দিয়ে লোকে যেমন নগরে ঢোকে তেমনি করে সে যখন যুদ্ধের ঘোড়া, গাড়ি ও রথ নিয়ে তোমার দ্বারগুলির মধ্য দিয়ে ঢুকবে তখন তার শব্দে তোমার প্রাচীরগুলি কাঁপবে। \v 11 তার ঘোড়াগুলির খুর তোমার সব রাস্তা মাড়াবে; সে তোমার লোকদের তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলবে, এবং তোমার শক্ত শক্ত থামগুলি মাটিতে পড়ে যাবে। \v 12 তারা তোমার সম্পত্তি ও তোমার বাণিজ্যের জিনিসপত্র লুট করবে; তারা তোমার প্রাচীর ভেঙে ফেলবে ও তোমার সুন্দর বাড়িগুলি ধ্বংস করবে এবং তোমার পাথর, কাঠ ও ধুলো সমুদ্রে ফেলে দেবে। \v 13 আমি তোমার গানের শব্দ থামিয়ে দেব এবং তোমার বীণার সংগীত আর শোনা যাবে না। \v 14 আমি তোমাকে শুষ্ক পাথর করব, আর তুমি হবে জাল শুকানোর জায়গা। তোমাকে আর তৈরি করা হবে না, কেননা আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 15 “সার্বভৌম সদাপ্রভু সোরকে এই কথা বলেন, তোমার পতনের শব্দে, তোমার মধ্যে আহত লোকদের কোঁকানিতে এবং তোমার মধ্যে যে নরহত্যা হয়েছে তাতে কি উপকূল সকল কেঁপে উঠবে না? \v 16 তখন উপকূলের সমস্ত শাসনকর্তারা তাদের সিংহাসন থেকে নেমে তাদের রাজপোশাক ও কারুকাজ করা পোশাকগুলি খুলে ফেলবে। ভীষণ ভয়ে তারা মাটিতে বসবে, সবসময় কাঁপতে থাকবে, ও তোমাকে দেখে হতভম্ব হবে। \v 17 তখন তারা তোমার বিষয়ে বিলাপ করে তোমাকে বলবে: \q1 “ ‘হে নাম করা নগর, তুমি কেমন করে ধ্বংস হয়ে গেলে, \q2 তোমার লোকেরা তো সমুদ্রে চলাচল করত! \q1 সমুদ্রে তোমরা শক্তিশালী ছিলে, \q2 তুমি এবং তোমার অধিবাসীরা; \q1 যারা সেখানে বাস করত \q2 তুমি তাদের ভয় দেখাতে। \q1 \v 18 এখন তোমার পতনের দিনে \q2 উপকূল কাঁপছে; \q1 সমুদ্রের দ্বীপ সকল \q2 তোমার পতনে আতঙ্কগ্রস্ত।’ \p \v 19 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি যখন তোমাকে জনশূন্য নগর করব, অন্যান্য নগরের মতো যেখানে কেউ বাস করে না, আর যখন মহাসমুদ্রের জল তোমার উপরে আনব ও তার জলের রাশি তোমাকে ঢেকে দেবে, \v 20 তখন আমি তোমাকে মৃতস্থানে যাওয়া লোকদের সঙ্গে পুরানো দিনের লোকদের কাছে নিচে নামিয়ে দেব। আমি তোমাকে পৃথিবীর গভীরে পুরানো দিনের ধ্বংসস্থানের মধ্যে মৃতস্থানে যাওয়া লোকদের সঙ্গে বাস করাব, তুমি আর ফিরে আসবে না অথবা জীবিতদের দেশে তোমার স্থান হবে না। \v 21 আমি তোমাকে ভয়ংকরভাবে শেষ করে দেব এবং তুমি আর থাকবে না। লোকেরা তোমার খোঁজ করবে, কিন্তু তোমাকে আর কখনও পাওয়া যাবে না, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \c 27 \s1 সোরের জন্য শোকপ্রকাশ \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি সোরের বিষয়ে বিলাপ করো। \v 3 সোরকে বলো, সমুদ্রে ঢুকবার মুখে যে রয়েছে, অনেক উপকূলে জাতিগণের বণিক, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘হে সোর, তুমি বলো, \q2 “আমি সৌন্দর্যে নিখুঁত।” \q1 \v 4 সমুদ্রের মধ্যে তোমার রাজ্য; \q2 তোমার নির্মাণকারীরা তোমার সৌন্দর্যে সম্পূর্ণতা এনেছে। \q1 \v 5 তারা সনীর থেকে দেবদারু গাছ দিয়ে \q2 তোমার সমস্ত তক্তা তৈরি করেছে; \q1 লেবাননের সিডার গাছ নিয়ে \q2 তোমার জন্য মাস্তুল তৈরি করেছে। \q1 \v 6 বাশন দেশের ওক কাঠ দিয়ে \q2 তোমার দাঁড়গুলি তৈরি করেছে; \q1 সাইপ্রাসের উপকূল থেকে চিরহরিৎ গাছের কাঠ এনে \q2 তারা তোমার পাটাতন বানিয়ে হাতির দাঁত দিয়ে সাজিয়েছে। \q1 \v 7 মিশরের সুন্দর নকশা তোলা মসিনার কাপড় দিয়ে তোমার পাল তৈরি করা হয়েছিল \q2 এবং সেটি তোমার পতাকা হিসেবে ব্যবহার হত; \q1 ইলীশা থেকে আনা \q2 নীল আর বেগুনি কাপড় ছিল তোমার চাঁদোয়া। \q1 \v 8 সীদোন ও অর্বদের লোকেরা তোমার দাঁড় বাইত; \q2 হে সোর, দক্ষ লোকেরা তোমার নাবিক ছিল। \q1 \v 9 গবালের প্রাচীনেরা দক্ষ লোক হিসেবে \q2 তোমার মধ্যে মেরামতের কাজ করত। \q1 সমুদ্রের সব জাহাজ ও তাদের নাবিকেরা তোমার \q2 জিনিসপত্র দেওয়া-নেওয়া করার জন্য তোমার পাশে ভিড়ত। \b \q1 \v 10 “ ‘পারস্য, লূদ ও পূট দেশের লোকেরা \q2 তোমার সৈন্যদলে যোদ্ধার কাজ করত। \q1 তারা তাদের ঢাল ও মাথা রক্ষার টুপি তোমার দেয়ালে টাঙিয়ে \q2 তোমার জাঁকজমক বাড়িয়ে তুলত। \q1 \v 11 অর্বদ ও হেলেকের লোকেরা \q2 তোমার চারপাশের প্রাচীরের উপর পাহারা দিত; \q1 গাম্মাদের লোকেরা \q2 তোমার উঁচু দুর্গ চৌকি দিত। \q1 তোমার চারপাশের দেয়ালে তারা তাদের ঢাল টাঙিয়ে রাখত; \q2 তোমার সৌন্দর্যের সম্পূর্ণতা তারাই এনেছিল। \p \v 12 “ ‘তোমার প্রচুর ধনসম্পদের জন্য তর্শীশ তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত; রুপো, লোহা, দস্তা ও সীসার বদলে তারা তোমার জিনিস নিত। \p \v 13 “ ‘গ্রীস, তূবল ও মেশক তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত; তারা তোমার জিনিসপত্রের বদলে দিত দাস-দাসী ও ব্রোঞ্জের পাত্র। \p \v 14 “ ‘তোমার জিনিসপত্রের বদলে বৈৎ-তোগর্মের লোকেরা দিত ঘোড়া, যুদ্ধের ঘোড়া ও খচ্চর। \p \v 15 “ ‘দদানের লোকেরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত, এবং উপকূলের অনেকেই তোমার ক্রেতা ছিল; তারা হাতির দাঁত ও আবলুস কাঠ দিয়ে তোমার দাম মিটাত। \p \v 16 “ ‘তোমার তৈরি অনেক জিনিসের জন্য অরাম তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত; তোমার জিনিসপত্রের বদলে তারা দিত ফিরোজা মণি, বেগুনি কাপড়, নকশা তোলা কাপড়, মসিনা কাপড়, প্রবাল ও পদ্মরাগমণি। \p \v 17 “ ‘যিহূদা ও ইস্রায়েল তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত; তারা তোমার জিনিসের বদলে মিন্নীতের গম, খাবার জিনিস, মধু, তেল ও সুগন্ধি মলম দিত। \p \v 18 “ ‘তোমার তৈরি অনেক জিনিস ও প্রচুর ধনসম্পদের জন্য দামাস্কাস তোমার বণিক ছিল, তারা হিলবোনের দ্রাক্ষারস এবং জাহার থেকে পশম এনে ব্যবসা করত \v 19 এবং বদান ও যবন উষল থেকে লোকেরা এসে তোমার জিনিসপত্রের বদলে নিয়ে যেত পিটানো লোহা, নীরসে ধরনের দারুচিনি ও বচ। \p \v 20 “ ‘দদান তোমার সঙ্গে ঘোড়ার পিঠের গদির কাপড়ের ব্যবসা করত। \p \v 21 “ ‘আরব ও কেদরের শাসনকর্তারা ছিল তোমার ক্রেতা; তারা তোমার জিনিসের বদলে মেষের বাচ্চা, মেষ ও ছাগল দিত। \p \v 22 “ ‘শিবা ও রয়মার ব্যবসায়ীরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত; তোমার জিনিসপত্রের বদলে তারা দিত সব রকমের ভালো ভালো মশলা, দামি পাথর ও সোনা। \p \v 23 “ ‘হারণ, কন্নী, এদন ও শিবার ব্যবসায়ীরা এবং আসিরিয়া ও কিলমদ তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত। \v 24 তারা তোমার বাজারে সুন্দর সুন্দর পোশাক, নীল কাপড়, নকশা তোলা কাপড় এবং বিভিন্ন রংয়ের গালিচা দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে আনত। \q1 \v 25 “ ‘তর্শীশের জাহাজগুলি \q2 তোমার জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে আসত। \q1 সমুদ্রের মাঝখানে ভারী জিনিসপত্র \q2 নিয়ে তুমি পূর্ণ ছিলে। \q1 \v 26 যারা দাঁড় বাইত তারা তোমাকে \q2 দূর সমুদ্রে নিয়ে যাবে। \q1 কিন্তু সমুদ্রের মাঝখানে \q2 পূবের বাতাসে তোমাকে টুকরো টুকরো করে দেবে। \q1 \v 27 তোমার ধনসম্পদ, ব্যবসার জিনিস ও অন্যান্য জিনিস, \q2 তোমার নাবিকেরা, মেরামতকারীরা, \q1 তোমার ব্যবসায়ীরা ও তোমার সব সৈন্যেরা \q2 এবং তোমার জাহাজে থাকা অন্য সকলে \q1 সমুদ্রের মাঝখানে ডুবে যাবে \q2 যেদিন তোমার জাহাজডুবি হবে। \q1 \v 28 তোমার নাবিকদের চিৎকারে \q2 সমুদ্রের পাড়ের জায়গাগুলি কেঁপে উঠবে। \q1 \v 29 যারা দাঁড় টানে তারা সবাই \q2 তাদের জাহাজ ছেড়ে চলে যাবে; \q1 নাবিকেরা সকলে সমুদ্রের \q2 পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। \q1 \v 30 তারা তোমার জন্য চিৎকার করে \q2 খুব কান্নাকাটি করবে; \q1 তারা তাদের মাথায় ধুলা দেবে \q2 ও ছাইয়ের মধ্যে গড়াগড়ি দেবে। \q1 \v 31 তোমার জন্য তারা তাদের মাথা কামিয়ে ফেলবে \q2 এবং ছালার চট পরবে। \q1 তারা মনের দুঃখে তোমার জন্য \q2 বিলাপ করে করে কাঁদবে। \q1 \v 32 তারা তোমার জন্য জোরে জোরে কাঁদবে \q2 ও শোক করবে, তোমাকে নিয়ে তারা এই বিলাপ করবে \q1 “সমুদ্রে ঘেরা সোরের মতো করে আর কাউকে কি \q2 চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে?” \q1 \v 33 তোমার ব্যবসার জিনিসপত্র যখন সমুদ্রে বের হত তখন \q2 তুমি অনেক জাতিকে তৃপ্ত করতে; \q1 তোমার প্রচুর ধনসম্পদ ও জিনিসপত্র দিয়ে \q2 তুমি পৃথিবীর রাজাদের ধনী করতে। \q1 \v 34 তুমি এখন সমুদ্রের আঘাতে \q2 গভীর জলের মধ্যে চুরমার হয়েছ; \q1 তোমার জিনিসপত্র ও তোমার সব লোক \q2 তোমার সঙ্গে ডুবে গেছে। \q1 \v 35 যারা উপকূলে বাস করে \q2 তারা তোমার অবস্থা দেখে হতভম্ব; \q1 তাদের রাজারা ভয়ে কেঁপে উঠছে \q2 এবং তাদের মুখ ভয়ে বিকৃত হয়ে গেছে। \q1 \v 36 জাতিগণের মধ্যের ব্যবসায়ীরা তোমাকে দেখে টিটকারি দেয়; \q2 তুমি ভয়ংকরভাবে শেষ হয়ে গিয়েছ \q2 আর তুমি থাকবে না।’ ” \c 28 \s1 সোরের রাজার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি সোরের শাসনকর্তাকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘তোমার অন্তরের অহংকারে \q2 তুমি বলো, “আমি দেবতা; \q1 সমুদ্রের মাঝখানে \q2 আমি ঈশ্বরের সিংহাসনে বসে আছি।” \q1 কিন্তু তুমি একজন মানুষ, দেবতা নও, \q2 যদিও তুমি মনে করো যে তুমি ঈশ্বরের মতো জ্ঞানী। \q1 \v 3 তুমি কি দানিয়েলের থেকেও জ্ঞানী? \q2 তোমার কাছে কি কোনও গুপ্ত বিষয় লুকানো হয়নি? \q1 \v 4 তোমার জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে \q2 তুমি নিজের জন্য সম্পদ লাভ করেছ \q1 এবং তোমার কোষাগারে \q2 সোনা ও রুপো জমা করেছ। \q1 \v 5 ব্যবসায়ে তোমার দারুণ দক্ষতায় \q2 তুমি তোমার সম্পদ বাড়িয়েছ, \q1 এবং তোমার সম্পদের কারণে \q2 তোমার হৃদয় অহংকারে ভরে গিয়েছে। \p \v 6 “ ‘এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন \q1 “ ‘যেহেতু তুমি নিজেকে মনে করো, \q2 ঈশ্বরের মতো জ্ঞানী, \q1 \v 7 আমি তোমার বিরুদ্ধে বিদেশিদের নিয়ে আসব, \q2 জাতিদের মধ্যে সবচেয়ে নির্মম; \q1 তারা তোমার সৌন্দর্য এবং জ্ঞানের বিরুদ্ধে তাদের তরোয়াল উঠাবে \q2 এবং তোমার উজ্জ্বল ঐশ্বর্যকে বিদ্ধ করবে। \q1 \v 8 তারা তোমাকে কুয়োতে নামাবে, \q2 এবং তুমি সমুদ্রের গভীরে \q2 এক ভয়ংকর মৃত্যু ভোগ করবে। \q1 \v 9 তোমার বধকারীদের সাক্ষাতে, \q2 তুমি কি তখন বলবে, “আমি ঈশ্বর”? \q1 যাদের হাতে তুমি বধ হয়েছ, \q2 তুমি কেবল একজন মানুষ, ঈশ্বর নও। \q1 \v 10 তুমি বিদেশিদের হাতে \q2 অচ্ছিন্নত্বকের মতো মরবে। \m আমি বলেছি, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \b \p \v 11 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 12 “হে মানবসন্তান, সোরের রাজার জন্য তুমি বিলাপ করে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘তুমি ছিলে নিখুঁতের মুদ্রাংক, \q2 জ্ঞানে পূর্ণ এবং সৌন্দর্যে নিখুঁত। \q1 \v 13 তুমি ঈশ্বরের বাগান \q2 এদনে ছিলে; \q1 প্রত্যেক মূল্যবান পাথরে তুমি সজ্জিত ছিলে: \q2 পোখরাজ, পীতমণি, হীরা, \q2 বৈদূর্যমণি, গোমেদ, সূর্যকান্তমণি, \q2 নীলকান্তমণি, ফিরোজা ও পান্না। \q1 তোমার অলংকার এবং কারুকার্য সোনা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল; \q2 তুমি যেদিন সৃষ্টি হয়েছিলে সেইদিন এগুলি তৈরি করা হয়েছিল। \q1 \v 14 রক্ষাকারী করূব হিসেবে তোমাকে অভিষেক করা হয়েছিল, \q2 কারণ সেইভাবেই আমি তোমাকে অভিষিক্ত করেছিলাম। \q1 তুমি ঈশ্বরের পবিত্র পাহাড়ে ছিলে; \q2 তুমি অগ্নিময় পাথরের মধ্যে দিয়ে হাঁটাচলা করতে। \q1 \v 15 তোমার সৃষ্টির দিন থেকে \q2 তোমার চালচলনে তুমি নির্দোষ ছিলে \q2 যতক্ষণ না তোমার মধ্যে মন্দতা পাওয়া গেল। \q1 \v 16 তোমার অনেক ব্যবসার দরুন \q2 তুমি অত্যাচারী হয়ে উঠলে \q2 এবং পাপ করলে। \q1 সেইজন্য আমি তোমাকে লজ্জিত করে ঈশ্বরের পাহাড় থেকে বের করেছিলাম, \q2 এবং হে রক্ষাকারী করূব, আমি তোমাকে \q2 অগ্নিময় পাথরের মধ্যে থেকে তাড়িয়ে দিলাম। \q1 \v 17 তোমার সৌন্দর্যের কারণে \q2 তোমার হৃদয় অহংকারী হয়েছিল, \q1 এবং তোমার জাঁকজমকের জন্য \q2 তোমার জ্ঞানকে দূষিত করেছিলে। \q1 এই জন্য আমি তোমাকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম; \q2 রাজাদের সামনে আমি তোমাকে রাখলাম যেন তারা তোমাকে দেখতে পায়। \q1 \v 18 তোমার অনেক পাপ ও অসৎ ব্যবসা দিয়ে \q2 তুমি নিজের উপাসনার জায়গাগুলি অপবিত্র করেছ। \q1 এই জন্য আমি তোমার মধ্যে থেকে আগুন বের করলাম \q2 আর তা তোমাকে পুড়িয়ে দিল, \q1 এবং যারা দেখছিল তাদের চোখের সামনে \q2 আমি তোমাকে মাটির উপরে ছাই করে দিলাম। \q1 \v 19 যে সমস্ত জাতি তোমাকে জানত \q2 তারা তোমার বিষয় হতভম্ব হল; \q1 তুমি ভয়ংকরভাবে শেষ হয়ে গিয়েছ \q2 আর তুমি থাকবে না।’ ” \s1 সীদোনের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 20 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 21 “হে মানবসন্তান, তুমি সীদোনের দিকে মুখ রাখো; তার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো \v 22 এবং বলো ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘হে সীদোন, আমি তোমার বিপক্ষে, \q2 এবং আমি তোমার মধ্যে মহিমান্বিত হব। \q1 তাতে তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু, \q2 যখন আমি তোমাকে শাস্তি দেব \q2 এবং তোমার মধ্যে আমার পবিত্রতা প্রকাশ করব। \q1 \v 23 আমি তোমার মধ্যে মহামারি পাঠাব \q2 এবং তোমার রাস্তায় রক্ত বহাব। \q1 চারিদিক থেকে তরোয়ালের আক্রমণের ফলে, \q2 আহত লোকেরা তার মধ্যে পতিত হবে। \q1 তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 24 “ ‘ইস্রায়েল কুলের জন্য ব্যথা দেওয়া কোনও কাঁটাগাছ এবং সূচালো কাঁটার মতো বিদ্বেষী প্রতিবেশী আর থাকবে না। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 25 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়া ইস্রায়েলীদের আমি যখন জড়ো করব, তখন জাতিদের সামনে তাদের মধ্যে আমি নিজের পবিত্রতা প্রকাশ করব। তারা নিজেদের সেই দেশে বাস করবে, যে দেশ আমি আমার দাস যাকোবকে দিয়েছিলাম। \v 26 তারা সেখানে নিরাপদে বাস করবে এবং ঘরবাড়ি বানাবে ও আঙুর ক্ষেত করবে; তাদের বিদ্বেষী প্রতিবেশী সকল জাতিদের যখন আমি শাস্তি দেব তখন তারা নিরাপদে বাস করবে। তখন তারা জানবে যে আমিই তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।’ ” \c 29 \s1 মিশরের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \s2 ফরৌণের বিচার \p \v 1 দশম বছরের, দশম মাসের বারো দিনের দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি তোমার মুখ মিশরের রাজা ফরৌণের দিকে রেখে তার ও সারা মিশর দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলো। \v 3 তুমি এই কথা তাকে বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘হে মিশরের রাজা ফরৌণ, আমি তোমার বিপক্ষে, \q2 তুমি নিজের নদীর মধ্যে শুয়ে থাকা এক প্রকাণ্ড দানব। \q1 তুমি বলো, “এই নীলনদ আমার; \q2 আমি নিজের জন্য এটি তৈরি করেছি।” \q1 \v 4 আমি তোমার চোয়ালে বড়শি পরাব \q2 এবং তোমার স্রোতোধারার মাছগুলিকে তোমার আঁশের সঙ্গে লাগিয়ে দেব। \q1 তোমার স্রোতের মধ্যে থেকে আমি তোমাকে টেনে তুলব, \q2 তখনও তোমার স্রোতের মাছগুলি তোমার আঁশের সঙ্গে লেগে থাকবে। \q1 \v 5 তোমাকে ও তোমার স্রোতোধারার মাছগুলিকে \q2 আমি প্রান্তরে ফেলে রাখব। \q1 তুমি খোলা মাঠে পড়ে থাকবে \q2 এবং কেউ তোমাকে জড়ো করবে না বা তুলবে না। \q1 আমি খাবার হিসেবে তোমাকে \q2 ভূমির পশু এবং আকাশের পাখিদের দেব। \m \v 6 তখন মিশরে যারা বাস করে তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \b \p “ ‘তুমি ইস্রায়েল কুলের জন্য নলের লাঠি হয়েছিলে। \v 7 যখন তারা তোমাকে হাতে ধরত, তুমি ফেটে গিয়ে তাদের কাঁধে আঘাত করতে; যখন তারা তোমার উপর ভর দিত তখন তুমি ভেঙে যেতে এবং তাদের পিঠ তাতে মুচড়ে যেত। \p \v 8 “ ‘সেইজন্য, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমার বিরুদ্ধে তরোয়াল নিয়ে এসে তোমার লোকদের ও পশুদের মেরে ফেলব। \v 9 মিশর হবে একটি জনশূন্য ধ্বংসস্থান। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p “ ‘কারণ তুমি বলেছিলে, “এই নীলনদ আমার; আমি এটি তৈরি করেছি,” \v 10 এই জন্য আমি তোমার ও তোমার স্রোতোধারা সকলের বিপক্ষে, এবং আমি মিগ্‌দোল থেকে সিবেনী পর্যন্ত, অর্থাৎ কূশের সীমানা পর্যন্ত, মিশর দেশকে জনশূন্য ও ধ্বংসস্থান করব। \v 11 তার মধ্যে দিয়ে কোনও মানুষ বা পশু যাতায়াত করবে না; চল্লিশ বছর কেউ সেখানে বাস করবে না। \v 12 ধ্বংস হয়ে যাওয়া সমস্ত দেশগুলির মধ্যে আমি মিশর দেশের অবস্থা আরও বেশি খারাপ করে দেব; ধ্বংস হয়ে যাওয়া নগরগুলির মধ্যে তার নগরগুলির চল্লিশ বছর ধরে জনশূন্য হয়ে থাকবে। এবং আমি মিস্রীয়দের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব। \p \v 13 “ ‘কেননা সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, চল্লিশ বছরের শেষে আমি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা মিশরীয়দের জড়ো করব। \v 14 আমি তাদের বন্দিদশা থেকে ফিরিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের দেশ মিশরের উপরের এলাকাটি দেব। সেখানে তারা এক দুর্বল রাজ্য হবে। \v 15 সে দুর্বল রাজ্য হবে এবং অন্যান্য জাতিদের উপরে সে কখনও নিজেকে উঁচু করবে না। আমি তাকে এত দুর্বল করব যে সে আর কখনও অন্যান্য জাতিদের উপরে রাজত্ব করবে না। \v 16 ইস্রায়েলীরা আর কখনও মিশরের উপর নির্ভর করবে না, কিন্তু মিশরের অবস্থা দেখে তারা বুঝতে পারবে যে সাহায্যের জন্য মিশরের দিকে ফিরে তারা পাপ করেছিল। তখন তারা জানতে পারবে যে আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু।’ ” \s2 নেবুখাদনেজারের পুরস্কার \p \v 17 সাতাশ বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 18 “হে মানবসন্তান, ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার সোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় তার সৈন্যদলকে এত বেশি পরিশ্রম করিয়েছে যে; প্রত্যেকের মাথার চুল উঠে গিয়েছে ও কাঁধের ছালচামড়া উঠে গিয়েছে। তবুও সোরের বিরুদ্ধে সে যে যুদ্ধ চালিয়েছে তাতে তার বা তার সৈন্যদলের কোনো লাভ হয়নি। \v 19 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারকে মিশর দেশটা দেব, আর সে তার ধনসম্পদ নিয়ে যাবে। তার সৈন্যদলের বেতনের জন্য সে সেই দেশ লুটপাট করবে। \v 20 সে ও তার সৈন্যদল আমার জন্য যে পরিশ্রম করেছে তার পুরস্কার হিসেবে আমি তাকে মিশর দেশটা দিয়েছি, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 21 “সেদিন আমি ইস্রায়েল জাতিকে শক্তিশালী করব, এবং তাদের মধ্যে কথা বলার জন্য আমি তোমার মুখ খুলে দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।” \c 30 \s2 মিশরের জন্য বিলাপ \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘বিলাপ করো এবং বলো, \q2 “হায়, সে কেমন দিন!” \q1 \v 3 কারণ সেদিনটি নিকটবর্তী, \q2 সদাপ্রভুর দিনটি নিকটবর্তী, \q1 সেটি মেঘে ঢাকা দিন, \q2 জাতিদের শেষ সময়। \q1 \v 4 মিশরের উপর যুদ্ধ আসবে, \q2 আর কূশের উপর আসবে দারুণ যন্ত্রণা। \q1 যখন মিশরে লোকেরা মরে পড়ে থাকবে, \q2 তার ধনসম্পদ নিয়ে যাওয়া হবে \q2 তার ভিত্তি ধ্বংস হবে। \m \v 5 কূশ ও পূট, লূদ ও সমস্ত আরব দেশ, লিবিয়া এবং নিয়মের অধীন দেশের লোকেরা যুদ্ধে মিশরের সঙ্গে মারা পড়বে। \p \v 6 “ ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘মিশরের বন্ধু দেশের লোকেরা ধ্বংস হয়ে যাবে \q2 এবং তার শক্তির গর্ব অকৃতকার্য হবে। \q1 মিগ্‌দোল থেকে সিবেনী পর্যন্ত \q2 লোকেরা তার মধ্যেই যুদ্ধে মারা পড়বে, \q2 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \q1 \v 7 তারা জনশূন্য হবে \q2 জনশূন্য দেশের মধ্যে \q1 আর তাদের নগরগুলি পড়ে থাকবে \q2 ধ্বংস হওয়া নগরগুলি মধ্যে। \q1 \v 8 তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু, \q2 যখন আমি মিশরে আগুন লাগাব \q2 এবং তার সমস্ত সাহায্যকারী চুরমার হয়ে যাবে। \p \v 9 “ ‘সেদিন নিশ্চিন্তে থাকা কূশকে ভয় দেখাবার জন্য সংবাদ বহনকারীরা আমার আদেশে জাহাজে করে বের হয়ে যাবে। মিশরের শেষ দিনে কূশের যন্ত্রণা হবে, কারণ সেদিন তার উপরেও নিশ্চয় আসবে। \b \p \v 10 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারের হাত দিয়ে \q2 মিশরের মস্ত বড়ো দলকে আমি শেষ করে দেব। \q1 \v 11 সে এবং তার সৈন্যদলকে—জাতিগণের মধ্যে যারা সবচেয়ে নিষ্ঠুর, \q2 আনা হবে দেশকে ধ্বংস করার জন্য। \q1 তারা মিশরের বিরুদ্ধে তাদের তরোয়াল ধরবে \q2 আর নিহত লোকদের দিয়ে দেশ ভরিয়ে দেবে। \q1 \v 12 আমি নীলনদের স্রোত শুকিয়ে ফেলব \q2 এবং মন্দ জাতির কাছে দেশটা বিক্রি করে দেব; \q1 বিদেশিদের হাত দিয়ে \q2 দেশ ও তার মধ্যেকার সবকিছুকে আমি ধ্বংস করব। \m আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম। \b \p \v 13 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন \q1 “ ‘আমি প্রতিমাগুলি ধ্বংস করব \q2 এবং মেম্ফিস থেকে অবস্তু-প্রতিমাগুলি শেষ করে দেব। \q1 মিশরে আর কোনও শাসনকর্তা থাকবে না, \q2 এবং দেশের সর্বত্র আমি ভয় ছড়িয়ে দেব। \q1 \v 14 আমি মিশরের উপরের এলাকাটিকে পতিত জমি করে ফেলে রাখব, \q2 সোয়নে আগুন লাগাব \q2 এবং থিব্‌সকে শাস্তি দেব। \q1 \v 15 আমি মিশরের দুর্গ, \q2 সীন নগরের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দেব, \q2 এবং থিব্‌সের সমস্ত লোককে ছেঁটে ফেলে দেব। \q1 \v 16 আমি মিশরে আগুন লাগাব; \q2 সীন নগর যন্ত্রণায় ছটফট করবে। \q1 থিব্‌সের বিরুদ্ধে লোকেরা হঠাৎ আসবে; \q2 মেম্ফিসের নিয়মিত যন্ত্রণায় থাকবে। \q1 \v 17 আবেন ও পী-বেশতের যুবকেরা \q2 যুদ্ধে মারা যাবে, \q2 এবং নগরগুলি নিজেরাই বন্দিদশায় যাবে। \q1 \v 18 তফন্‌হেষে দিনের বেলা অন্ধকার হয়ে যাবে \q2 যখন আমি মিশরের জোয়াল ভাঙব; \q2 সেখানে তার শক্তির গর্ব শেষ হয়ে যাবে। \q1 সে মেঘে ঢেকে যাবে, \q2 তার গ্রামগুলি বন্দিদশায় যাবে। \q1 \v 19 এইভাবে আমি মিশরকে শাস্তি দেব, \q2 আর তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \s2 ফরৌণের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে \p \v 20 দশম বছরের, দশম মাসের সাত দিনের দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 21 “হে মানবসন্তান, আমি মিশরের রাজা ফরৌণের হাত ভেঙে দিয়েছি। ভালো হবার জন্য সেই হাত কাপড় দিয়ে বাঁধা হয়নি যাতে সেটি তরোয়াল ধরার জন্য উপযুক্ত শক্তি পায়। \v 22 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বিরুদ্ধে। আমি তার দুই হাতই ভেঙে দেব, ভালো ও ভাঙা উভয় হাতই, এবং তার হাত থেকে তরোয়াল ফেলে দেব। \v 23 আমি মিশরীয়দের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব। \v 24 আমি ব্যাবিলনের রাজার হাত শক্তিশালী করব এবং আমার তরোয়াল তার হাতে দেব, কিন্তু আমি ফরৌণের হাত ভেঙে দেব, তাতে সে ব্যাবিলনের রাজার সামনে আহত লোকের মতো কাতরাবে। \v 25 আমি ব্যাবিলনের রাজার হাত শক্তিশালী করব, কিন্তু ফরৌণের হাত ঝুলে পড়বে। আমি যখন আমার তরোয়াল ব্যাবিলনের রাজার হাতে দেব আর সে মিশরের বিরুদ্ধে তা চালাবে, তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \v 26 আর আমি মিশরীয়দের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।” \c 31 \s2 ফরৌণ যেন লেবাননের ফেলে দেওয়া সিডার গাছের মতন \p \v 1 এগারো বছরের, তৃতীয় মাসের প্রথম দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণ ও তার সমস্ত লোকদের বলো, \q1 “ ‘মহিমার দিক থেকে তুমি কার তুল্য? \q1 \v 3 আসিরিয়ার কথা চিন্তা করো, সে এক সময় লেবাননের সিডার গাছ ছিল, \q2 সুন্দর ডালপালা বনে ঘন ছায়া ফেলত; \q1 সে খুব উঁচু ছিল, \q2 তার মাথা যেন আকাশ ছুঁতো। \q1 \v 4 প্রচুর জল তাকে পুষ্ট করেছিল, \q2 গভীর ফোয়ারা তাকে লম্বা করেছিল; \q1 তাদের স্রোত বইত \q2 তার গোড়ার চারিদিকে \q1 এবং তার নালাগুলি \q2 বনের সব গাছকে জল দিত। \q1 \v 5 এইভাবে বনের সব গাছের চেয়ে \q2 সে উঁচু হয়ে উঠল; \q1 তার ডাল ছড়িয়ে পড়ল \q2 আর সেগুলি লম্বা হল, \q2 প্রচুর জল পাওয়ার কারণে চারিদিকে ছড়িয়ে গেল। \q1 \v 6 আকাশের সব পাখি \q2 তার ডালে বাসা বাঁধল, \q1 মাঠের সব পশু \q2 তার ডালপালা নিচে বাচ্চা দিত; \q1 সকল মহান জাতি \q2 তার ছায়ায় বাস করত। \q1 \v 7 সে ছিল সৌন্দর্যে মহিমান্বিত \q2 তার ছড়ানো ডালপালার জন্য, \q1 কারণ তার শেকড় গভীরে গিয়েছিল \q2 প্রচুর জলের কাছে। \q1 \v 8 ঈশ্বরের বাগানের সিডার গাছগুলিও \q2 তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারত না, \q1 দেবদারু গাছের সকল ডালপালা \q2 তার সমান ছিল না, \q1 প্লেইন গাছের ডালপালাগুলি \q2 তার ডালপালার সঙ্গে তুলনা করা যেত না, \q1 ঈশ্বরের বাগানের কোনও গাছই \q2 সৌন্দর্যে তার মতন ছিল না। \q1 \v 9 আমি তাকে সুন্দর করেছিলাম \q2 প্রচুর ডালপালা দিয়ে, \q1 সে ছিল এদনে ঈশ্বরের বাগানের \q2 সব গাছের হিংসার পাত্র। \p \v 10 “ ‘এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সে উঁচু হয়েছে, ঘন বনের উপরে তার মাথা উঠেছে, এবং যেহেতু সে উঁচু বলে তার অহংকার, \v 11 আমি তাকে জাতিগণের শাসনকর্তার হাতে তুলে দিয়েছি, যেন তার মন্দতা অনুসারে সে তার সঙ্গে ব্যবহার করবে। আমি তাকে অগ্রাহ্য করেছি, \v 12 এবং বিদেশি জাতিদের মধ্যে সবচেয়ে নিষ্ঠুর জাতির লোকেরা তাকে কেটে ফেলে রেখে গেছে। পাহাড় সকলের উপরে ও উপত্যকাগুলিতে তার শাখাগুলি পড়েছে; তার ডালপালাগুলি ভেঙে দেশের সব জলের স্রোতের মধ্যে পড়ে আছে। পৃথিবীর সব জাতি তার ছায়া থেকে বের হয়ে তাকে ফেলে চলে গেছে। \v 13 সেই পড়ে যাওয়া গাছে আকাশের সব পাখিরা বাস করছে, এবং বনের সব পশুরা তার ডালপালার কাছে থাকছে। \v 14 এই জন্য জলের ধারের অন্য কোনো গাছ অহংকারে উঁচু হবে না, তাদের মাথা ঘন বনের উপরে উঠবে না। আর কোনো গাছ এত ভালো জল পেয়েও কখনও এত উঁচুতে পৌঁছাবে না; তারা সবাই মানুষের মতো মৃত্যুর অধীন, তারা পৃথিবীর গভীরে পাতালে নেমে যাওয়ার জন্য ঠিক হয়ে আছে। \p \v 15 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যেদিন সে পাতালে নেমে গেল সেদিন তার জন্য শোকের চিহ্ন হিসেবে সেই গভীর ফোয়ারা আমি ঢেকে দিলাম; আমি তার সব স্রোত থামিয়ে দিলাম, তাতে তার অফুরন্ত জল বন্ধ হয়ে গেল। এই জন্য আমি লেবাননকে শোক করালাম আর তার মাঠের প্রত্যেকটা গাছ শুকিয়ে গেল। \v 16 মৃত লোকদের সঙ্গে আমি যখন তাকে পাতালে নামিয়ে দিলাম তখন তার পড়ে যাবার শব্দে জাতিরা কেঁপে উঠল। তখন এদনের সব গাছ, লেবাননের বাছাই করা ও সেরা গাছ এবং ভালোভাবে জল পাওয়া সব গাছ, পৃথিবীর গভীরে সান্ত্বনা পেল। \v 17 যারা তার ছায়াতে বাস করত, জাতিদের মধ্যে তার বন্ধুরা, তার সঙ্গে পাতালে যুদ্ধে নিহত লোকদের কাছে নেমে গেল। \p \v 18 “ ‘এদনের কোনও গাছকে তোমার প্রতাপ ও মহত্ত্বের সঙ্গে তুলনা করা যাবে? তবুও তোমাকেও এদনের গাছপালার সঙ্গে পৃথিবীর গভীরে নামিয়ে দেওয়া হবে; যারা তরোয়ালে মারা গেছে, অচ্ছিন্নত্বক লোকদের মধ্যে তুমি শুয়ে থাকবে। \p “ ‘এ সেই ফরৌণ ও তার সমস্ত লোকেরা, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \c 32 \s2 ফরৌণের জন্য বিলাপ \p \v 1 বারো বছরের, বারো মাসের প্রথম দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের জন্য বিলাপ করো আর তাকে বলো, \q1 “ ‘তুমি জাতিগণের মধ্যে একটি সিংহের মতো; \q2 তুমি সমুদ্রের মধ্যে একটি দানবের মতো \q1 নদীর মধ্যে দাপাদাপি করতে, \q2 পা দিয়ে জল তোলপাড় করতে, \q2 এবং নদীর জল ঘোলা করতে। \p \v 3 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘লোকদের একটি বড়ো দল নিয়ে \q2 আমি তোমার উপর জাল ফেলব, \q2 তারা আমার জালে তোমাকে টেনে তুলবে। \q1 \v 4 আমি তোমাকে ডাঙায় ছেড়ে দেব \q2 এবং খোলা মাঠে ছুঁড়ে ফেলব। \q1 আকাশের সব পাখিদের তোমার উপর বসাব \q2 এবং পৃথিবীর সব পশুরা তোমাকে খেয়ে তৃপ্ত হবে। \q1 \v 5 আমি পাহাড়ের উপরে তোমার মাংস ফেলব \q2 আর তোমার অবশিষ্টাংশ দিয়ে উপত্যকা সকল ভরাব। \q1 \v 6 তোমার রক্ত দিয়ে আমি সেই দেশ ভিজাব \q2 এমনকি পাহাড়-পর্বত পর্যন্ত, \q2 এবং গিরিখাতগুলি তোমার মাংসে ভরে যাবে। \q1 \v 7 তোমাকে শেষ করার সময়, আমি আকাশ ঢেকে দেব \q2 এবং তারাগুলি কালো করে দেব; \q1 আমি সূর্য মেঘ দিয়ে ঢেকে দেব \q2 এবং চাঁদ আর তার আলো দেবে না। \q1 \v 8 আকাশের সকল উজ্জ্বল আলো \q2 আমি তোমার উপরে কালো করে দেব; \q1 আমি তোমার দেশের উপর অন্ধকার নিয়ে আসব, \q2 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \q1 \v 9 আমি বহু মানুষের মনে ত্রাস নিয়ে আসব \q2 যখন তোমাকে ধ্বংস করব জাতিগণের মধ্যে, \q2 এবং যে সকল দেশের বিষয় তুমি জানো না। \q1 \v 10 আমি এমন করব যে বহু মানুষ তোমাকে দেখে হতভম্ব হবে, \q2 এবং তাদের রাজারা তোমার কারণে ভয়ে কাঁপবে \q2 যখন আমি তাদের সামনে আমার তরোয়াল ঘুরাব। \q1 তোমার পতনের দিনে \q2 তারা প্রত্যেকে কাঁপবে \q2 তাদের জীবনের প্রতি ক্ষণে। \p \v 11 “ ‘কেননা সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, \q1 “ ‘ব্যাবিলনের রাজার তরোয়াল \q2 তোমার বিরুদ্ধে আসবে। \q1 \v 12 আমি তোমার লোকদের পতন ঘটাব \q2 বীরদের তরোয়াল দ্বারা, \q2 জাতিগণের মধ্যে যারা সবচেয়ে নিষ্ঠুর। \q1 তারা মিশরের অহংকার খর্ব করবে, \q2 এবং তার সব লোকদের ধ্বংস করবে। \q1 \v 13 প্রচুর জলের কাছে থাকা \q2 সমস্ত গবাদি পশুকে আমি ধ্বংস করব \q1 সেই জল আর মানুষের পায়ে \q2 অথবা গবাদি পশুর খুরে আর ঘোলা হবে না। \q1 \v 14 তখন আমি তার জল থিতাতে দেব \q2 এবং স্রোত তেলের মতো বহাব, \q2 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \q1 \v 15 আমি যখন মিশরকে জনশূন্য করব \q2 এবং দেশের মধ্যেকার সবকিছু খালি করে ফেলব, \q1 আর সেখানকার বাসিন্দাদের আঘাত করব, \q2 তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ \p \v 16 “তারা তার জন্য এই বিলাপ-গীত করবে। বিভিন্ন জাতির মেয়েরাও এই গান করবে; তারা মিশর ও তার সব লোকদের জন্য তা গাইবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \s2 মৃতের রাজত্বে মিশরের নেমে যাওয়া \p \v 17 বারো বছরের, মাসের পনেরো দিনের দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 18 “হে মানবসন্তান, মিশরের লোকদের জন্য বিলাপ করো এবং যারা পাতালে নেমে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে তাকে ও অন্যান্য শক্তিশালী জাতিগণের লোকদের পৃথিবীর গভীরে পাঠিয়ে দাও। \v 19 তাদের বলো, ‘তুমি কি অন্যদের থেকে আরও পক্ষপাতদুষ্ট? তুমি নেমে যাও এবং অচ্ছিন্নত্বকদের সঙ্গে শুয়ে থাকো।’ \v 20 যুদ্ধে যারা মারা পড়েছে তাদের মধ্যেই তার লোকেরা পড়ে থাকবে। তরোয়ালের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে; তার সব লোকদের সঙ্গে তাকেও টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। \v 21 পাতালের মধ্যে থেকে পরাক্রমী নেতারা মিশর ও তার মিত্রশক্তিদের সম্বন্ধে বলবে, ‘তারা নিচে নেমে এসেছে এবং যাদের সুন্নত হয়নি তাদের ও যারা তরোয়াল দ্বারা মারা পড়েছে, তাদের সঙ্গে শুয়ে আছে।’ \p \v 22 “আসিরিয়া তার সমস্ত সৈন্যদলের সঙ্গে সেখানে আছে; তাকে ঘিরে রয়েছে তার সব নিহত লোকদের কবর, এরা সবাই যুদ্ধে মারা পড়েছিল। \v 23 গর্তের গভীরে তাদের কবর দেওয়া হয়েছে এবং তার সৈন্যদল তার কবরের চারপাশে শুয়ে আছে। জীবিতদের দেশে যারা ভয় ছড়িয়েছিল তাদের সকলকে যুদ্ধে মেরে ফেলা হয়েছে। \p \v 24 “এলম সেখানে আছে, তার কবরের চারপাশে রয়েছে তার সমস্ত লোক। তারা সকলে যুদ্ধে মারা গেছে। যারা জীবিতদের দেশে ভয় ছড়িয়েছিল তারা অচ্ছিন্নত্বক অবস্থায় পৃথিবীর গভীরে নেমে গেছে। তারা পাতালবাসীদের সঙ্গেই নিজেদের অসম্মান ভোগ করছে। \v 25 নিহত লোকদের মধ্যে তার বিছানা পাতা হয়েছে, তার কবরের চারপাশে তার সঙ্গে রয়েছে তার সমস্ত লোক। তারা সকলেই অচ্ছিন্নত্বক অবস্থায় যুদ্ধে মারা গেছে। যেহেতু তারা জীবিতদের দেশে ভয় ছড়িয়েছিল, কিন্তু তারা পাতালবাসীদের সঙ্গেই নিজেদের অপমান ভোগ করছে; নিহত লোকদের মধ্যে তাদের শোয়ানো হয়েছে। \p \v 26 “মেশক ও তূবল সেখানে আছে, তাদের কবরের চারপাশে রয়েছে তাদের সমস্ত লোক। তারা সকলেই অচ্ছিন্নত্বক অবস্থায় যুদ্ধে মারা গেছে কারণ তারা জীবিতদের দেশে ভয় ছড়িয়েছিল। \v 27 কিন্তু তারা শুয়ে নেই তাদের সঙ্গে যারা যুদ্ধে মারা গেছে, যারা যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কবরে গিয়েছে—যাদের তরোয়াল তাদের মাথার নিচে রাখা হয়েছে? তাদের অপরাধ তাদের হাড়গোড়ের উপর রয়েছে—যদিও এই সৈন্যরা জীবিতদের দেশে ভয় ছড়িয়েছিল। \p \v 28 “হে ফরৌণ, তোমাকেও ভাঙা হবে এবং তুমি অচ্ছিন্নত্বক লোকদের মধ্যে শুয়ে থাকবে, যাদের যুদ্ধে মেরে ফেলা হয়েছে। \p \v 29 “ইদোম সেখানে আছে, তার রাজারা ও তার সব শাসনকর্তারা সেখানে আছে; শক্তি থাকলেও যুদ্ধে নিহত লোকদের সঙ্গে তাদের শোয়ানো হয়েছে। তারা অচ্ছিন্নত্বকদের মধ্যে শুয়ে আছে যারা পাতালে নেমে গেছে। \p \v 30 “উত্তর দেশের সব শাসনকর্তারা ও সীদোনীয়েরা সকলেই সেখানে আছে; তাদের পরাক্রম ভয়ানক হলেও তারা লজ্জিত হয়ে নিহত লোকদের সঙ্গে নিচে নেমেছে। যারা যুদ্ধে মারা গেছে তাদের সঙ্গে অচ্ছিন্নত্বক অবস্থায় শুয়ে আছে এবং যারা পাতালে নেমে গেছে তাদের সঙ্গে অসম্মান ভোগ করছে। \p \v 31 “ফরৌণ—সে ও তার সৈন্যদল—তাদের দেখবে এবং তাকে সান্ত্বনা দেওয়া হবে তার লোকদের জন্য যারা যুদ্ধে নিহত হয়েছে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 32 যদিও আমি তাকে জীবিতদের দেশে ভয় ছড়াতে দিয়েছি, ফরৌণ ও তার লোকেরা অচ্ছিন্নত্বকদের মধ্যে শুয়ে থাকবে, যারা যুদ্ধে মারা গেছে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \c 33 \s1 যিহিষ্কেলকে পাহারাদার হিসেবে আহ্বানের নবীকরণ \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তোমার জাতির লোকদের বলো ‘আমি যখন কোনও দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে আসি, আর দেশের লোকেরা একজনকে মনোনীত করে তাকে তাদের পাহারাদার নিযুক্ত করে, \v 3 সে তরোয়ালকে আসতে দেখে লোকদের সতর্ক করবার জন্য তূরী বাজায়, \v 4 তখন যদি কেউ তূরীর আওয়াজ শুনেও সতর্ক না হয় আর সৈন্যেরা এসে তাকে মেরে ফেলে তবে তার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকবে। \v 5 তূরীর আওয়াজ শুনেও সে সতর্ক হয়নি বলে তার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকবে। সে যদি সতর্ক হত তবে নিজেকে রক্ষা করতে পারত। \v 6 কিন্তু সেই পাহারাদার যদি সৈন্যদলকে আসতে দেখেও লোকদের সতর্ক করবার জন্য তূরী না বাজায় এবং সৈন্যদল এসে একজনকে মেরে ফেলে, তাহলে বুঝতে হবে সেই মানুষ তার নিজের পাপের জন্যই মারা গেছে, কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি সেই পাহারাদারকে দায়ী করব।’ \p \v 7 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুলের জন্য আমি তোমাকে পাহারাদার নিযুক্ত করেছি; সুতরাং আমি যা বলছি তা শোনো এবং আমার হয়ে তাদের সতর্ক করো। \v 8 আমি যখন কোনও দুষ্ট লোককে বলি, ‘হে দুষ্টলোক, তুমি নিশ্চয়ই মরবে,’ আর তুমি তাকে তার মন্দ পথ থেকে ফিরবার জন্য সতর্ক না করো, তবে সেই দুষ্টলোক তার পাপের জন্য মারা যাবে, কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব। \v 9 কিন্তু তুমি যদি সেই দুষ্ট লোককে তার পথ থেকে ফিরবার জন্য সতর্ক করো আর যদি সে না ফেরে তবে সে তার পাপের জন্য মরবে, কিন্তু তুমি নিজের প্রাণরক্ষা করবে। \p \v 10 “হে মানবসন্তান, তুমি ইস্রায়েল কুলকে বলো, ‘তোমরা এই কথা বলছ: “আমাদের অন্যায় আর পাপের ভার আমাদের উপর চেপে আছে, তাতেই আমরা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছি। তাহলে আমরা কেমন করে বাঁচব?” ’ \v 11 তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, দুষ্টলোকের মৃত্যুতে আমি কোনও আনন্দ পাই না, বরং তারা যেন কুপথ থেকে ফিরে বাঁচে তাতেই আমি আনন্দ পাই। হে ইস্রায়েল কুল, তোমরা ফেরো, তোমাদের মন্দ পথ থেকে তোমরা ফেরো! কেন তোমরা মারা যাবে?’ \p \v 12 “সেইজন্য, হে মানবসন্তান, তুমি তোমার জাতির লোকদের বলো, ‘ধার্মিকের ধার্মিকতা তার অবাধ্যের দিনে তাকে রক্ষা করবে না, আর দুষ্টলোক যদি তার দুষ্টতা থেকে ফেরে তবে সে তার দুষ্টতার শাস্তি পাবে না। ধার্মিক লোক যদি পাপ করে তবে তার আগের ধার্মিকতা তাকে বাঁচাতে পারবে না।’ \v 13 আমি যদি ধার্মিক লোককে বলি যে সে নিশ্চয় বাঁচবে, কিন্তু পরে তার ধার্মিকতার উপর নির্ভর করে মন্দ কাজ করে, তবে সে আগে যেসব ধর্মকর্ম সে আগে করেছে তার কোনটাই মনে করা হবে না; সে যে অন্যায় করেছে তার জন্যই সে মরবে। \v 14 আর আমি যদি সেই দুষ্ট লোককে বলি, ‘তুমি নিশ্চয় মরবে,’ কিন্তু সে পরে তার পাপ থেকে ফিরে ন্যায় ও ঠিক কাজ করে। \v 15 সেই দুষ্ট যদি বন্ধক রাখা জিনিস ফিরিয়ে দেয়, সে যা চুরি করেছিল তা ফিরিয়ে দেয়, জীবনদায়ী নিয়মকানুন পালন করে এবং অন্যায় না করে—সে নিশ্চয়ই বাঁচবে; সে মারা যাবে না। \v 16 সে যেসব পাপ করেছে তার কোনটাই তার বিরুদ্ধে মনে রাখা হবে না। সে ন্যায় ও ঠিক কাজ করেছে বলে; সে নিশ্চয়ই বাঁচবে। \p \v 17 “তবুও তোমার জাতির লোকেরা বলে, ‘সদাপ্রভুর পথ ঠিক নয়।’ কিন্তু তাদের পথই ঠিক নয়। \v 18 একজন ধার্মিক লোক যদি তার ধার্মিকতা থেকে ফিরে অন্যায় করে, সে তার জন্য মরবে। \v 19 আর যদি একজন দুষ্টলোক তার দুষ্টতা থেকে ফিরে ন্যায় ও ঠিক কাজ করে তবে সে তার জন্য বাঁচবে। \v 20 তবুও, হে ইস্রায়েল কুল, তোমরা বলো, ‘সদাপ্রভুর পথ ঠিক নয়।’ সেইজন্য তোমরা যেভাবে চলছ সেই অনুসারে আমি তোমাদের প্রত্যেকের বিচার করব।” \s1 জেরুশালেমের পতনের ব্যাখ্যা \p \v 21 আমাদের নির্বাসনের বারো বছর দশ মাসের পাঁচ দিনের দিন, একজন লোক জেরুশালেম থেকে পালিয়ে আমার কাছে এসে বলল, “শত্রুরা নগর অধিকার করেছে!” \v 22 সেই লোক আমার কাছে পৌঁছাবার আগের বিকালে, সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে ছিল, এবং সেই লোক সকালে আমার কাছে আসার আগেই তিনি আমার মুখ খুলে দিলেন। সেই কারণে আমার মুখ খুলে গিয়েছিল এবং আমি আর নীরব থাকতে পারলাম না। \p \v 23 পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 24 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল দেশের ধ্বংসস্থানে যারা বাস করছে তারা বলছে, ‘অব্রাহাম মাত্র একজন মানুষ হয়েও দেশের অধিকার পেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তো অনেকজন; নিশ্চয়ই দেশটা আমাদের অধিকারের জন্য দেওয়া হয়েছে।’ \v 25 অতএব তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা রক্তশুদ্ধ মাংস খাচ্ছ, প্রতিমাগুলির প্রতি দৃষ্টিপাত করছ এবং রক্তপাত করছ, তাহলে কি তোমরা দেশের অধিকারী হবে? \v 26 তোমরা তো তরোয়ালের উপর নির্ভর করছ, তোমরা ঘৃণ্য কাজ করছ ও প্রত্যেকে নিজের প্রতিবাসীর স্ত্রীকে অশুচি করছ। তাহলে কি তোমরা দেশের অধিকারী হবে?’ \p \v 27 “তাদের এই কথা বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, যারা সেই ধ্বংসস্থানে আছে তারা যুদ্ধে মারা পড়বে, যারা মাঠে আছে তাদের খেয়ে ফেলার জন্য আমি বন্যপশুদের কাছে তাদের দেব এবং যারা দুর্গে ও গুহায় আছে তারা মহামারিতে মারা যাবে। \v 28 আমি দেশটাকে একটি জনশূন্য পতিত জায়গা করব, তার শক্তির গর্ব শেষ হয়ে যাবে এবং ইস্রায়েলের পাহাড়গুলি এত জনশূন্য হবে যে সেখান দিয়ে কেউ যাওয়া-আসা করবে না। \v 29 তাদের ঘৃণ্য কাজের জন্য আমি যখন দেশকে জনশূন্য করব তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ \p \v 30 “আর, হে মানবসন্তান, তোমার জাতির লোকেরা দেয়ালের পাশে ও ঘরের দরজায় একত্র হয়ে তোমার বিষয়ে বলাবলি করছে এবং একে অন্যকে বলছে, ‘সদাপ্রভুর কাছ থেকে যে সংবাদ এসেছে চলো, আমরা গিয়ে তা শুনি।’ \v 31 আমার লোকেরা তোমার কাছে আসে, যেমন তারা সাধারণত এসে থাকে, এবং তারা তোমার সামনে বসে ও তোমার কথা শোনে, কিন্তু তারা তা কাজে লাগায় না। মুখে তারা ভালোবাসার কথা বলে কিন্তু তাদের অন্তরে অন্যায় লাভের জন্য লোভ থাকে। \v 32 এই কথা সত্যি যে, তুমি তাদের কাছে কেবল মিষ্টি সুরে সুন্দরভাবে বাজনা বাজিয়ে ভালোবাসার গান গাওয়া একজন লোক ছাড়া আর কিছু নও, কারণ তারা তোমার কথা শোনে, কিন্তু তা পালন করে না। \p \v 33 “যখন এসব সত্যিই ঘটবে—আর তা নিশ্চয়ই ঘটবে—তখন তারা জানবে যে তাদের মধ্যে একজন ভাববাদী আছে।” \c 34 \s1 সদাপ্রভু ইস্রায়েলের মেষপালক হবেন \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েলের পালকদের বিরুদ্ধে তুমি ভাববাণী বলো; ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ধিক্ ইস্রায়েলের সেই পালকদের যারা শুধু নিজেদেরই দেখাশোনা করে! মেষপালের দেখাশোনা করা কি পালকের কর্তব্য নয়? \v 3 তোমরা তো দই খাও, পশম দিয়ে কাপড় বানিয়ে পর এবং বাছাই করা মেষ বলিদান করো, কিন্তু মেষদের যত্ন নাও না। \v 4 তোমরা দুর্বলদের সবল করোনি, অসুস্থদের সুস্থ করোনি, আহতদের ক্ষত বেঁধে দাওনি। যারা বিপথে গেছে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসোনি কিংবা যারা হারিয়ে গেছে তাদের খোঁজ করোনি। তোমরা তাদের কড়া ও নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছ। \v 5 তারা ছড়িয়ে পড়েছে কারণ তাদের পালক নেই আর ছড়িয়ে পড়ার দরুন তারা বন্যপশুদের খাবার হয়েছে। \v 6 আমার মেষেরা সমস্ত পাহাড় ও উচ্চ গিরির উপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং তাদের খোঁজ করেনি। \p \v 7 “ ‘অতএব, হে পালকেরা, সদাপ্রভুর কথা শোনো। \v 8 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, পালকের অভাবে আমার পাল লুটের জিনিস হয়েছে এবং বন্যপশুর খাবার হয়েছে, আর যেহেতু আমার পালকেরা আমার পালের খোঁজ করেনি বরং তারা নিজেদেরই দেখাশোনা করেছে আমার পালের যত্ন নেয়নি, \v 9 অতএব, হে পালকেরা, সদাপ্রভুর কথা শোনো: \v 10 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি পালকদের বিপক্ষে এবং আমার পালের জন্য তাদের কাছ থেকে হিসেব নেব। আমি তাদের পালের দেখাশোনা করা থেকে সরিয়ে দেব যেন পালকেরা আর নিজেদের জন্য খাবার না পায়। আমিই আমার পালকে তাদের গ্রাস থেকে উদ্ধার করব, এবং তাদের খাবার হতে দেব না। \p \v 11 “ ‘কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি নিজেই আমার মেষদের খুঁজব এবং তাদের যত্ন নেব। \v 12 পালক যেমন তার ছড়িয়ে পড়া পালের খোঁজ করে যখন সে তাদের সঙ্গে থাকে তেমনি আমি আমার মেষকে খুঁজব। মেঘ ও অন্ধকারের দিনে তারা যেসব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে আমি সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করব। \v 13 আমি তাদের জাতিগণের মধ্যে থেকে বের করে আনব ও বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করব এবং আমি তাদের নিজের দেশে নিয়ে আসব। আমি তাদের ইস্রায়েলের পাহাড়ে, গিরিখাতে এবং দেশের সব বসতিস্থানগুলিতে চরাব। \v 14 তাদের আমি ভালো চরানিতে চরাব, এবং ইস্রায়েলের পাহাড়গুলি তাদের চরানিস্থান হবে। ভালো চরানিতে তারা শোবে, এবং তারা ইস্রায়েলের পাহাড়ে ভালো চরানিতে খাবে। \v 15 আমিই নিজের মেষদের চরাব এবং তাদের শোয়াব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \v 16 যারা হারিয়ে গেছে তাদের আমি খোঁজ করব এবং যারা বিপথে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনব। আমি আহতদের ক্ষত বেঁধে দেব এবং দুর্বলদের বলযুক্ত করব, কিন্তু মোটাসোটা ও বলবানদের ধ্বংস করব। আমি ন্যায়বিচারে সেই পালের যত্ন নেব। \p \v 17 “ ‘আর তোমাদের বিষয়, হে আমার পাল, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি ভালো ও খারাপ মেষদের মধ্যে বিচার করব, আবার মেষ ও ছাগলের মধ্যে বিচার করব। \v 18 তোমাদের পক্ষে ভালো চারণভূমিতে খাওয়া কি যথেষ্ট নয়? আবার বাকি ঘাসগুলিও পা দিয়ে মাড়াতে হবে? তোমাদের পক্ষে পরিষ্কার জল খাওয়া কি যথেষ্ট নয়? আবার বাকি জলও কি পা দিয়ে ঘোলা করতে হবে? \v 19 তোমরা পা দিয়ে যা মাড়িয়েছ এবং যে জল ঘোলা করেছ তাই কি আমার মেষগুলিকে খেতে হবে? \p \v 20 “ ‘অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু তাদের এই কথা বলেন, দেখো, আমি নিজেই মোটা আর রোগা মেষের মধ্যে বিচার করব। \v 21 যেহেতু তোমরা দেহ এবং কাঁধ দিয়ে তাদের ঠেলছ, শিং দিয়ে দুর্বলদের গুঁতিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছ, \v 22 আমি আমার পালকে রক্ষা করব, এবং তারা আর লুটের জিনিস হবে না। আমি এক মেষের সঙ্গে আরেক মেষের বিচার করব। \v 23 আমি তাদের উপর এক পালককে নিযুক্ত করব, আমার দাস দাউদকে, যে তাদের পালন করবে; সে তাদেরকে চরাবে এবং তাদের পালক হবে। \v 24 আমি সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর হব, এবং আমার দাস দাউদ তাদের মধ্যে শাসনকর্তা হবে, আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি। \p \v 25 “ ‘আমি তাদের সঙ্গে শান্তির এক বিধান স্থাপন করব এবং দেশ থেকে হিংস্র পশুদের শেষ করব যেন তারা নিরাপদে প্রান্তরে বাস করতে পারে এবং বনে ঘুমাতে পারে। \v 26 আমি তাদের এবং আমার পাহাড়ের চারপাশের জায়গাগুলিকে আশীর্বাদ করব। আমি ঠিক সময়ে বৃষ্টি পাঠাব; সেখানে আশীর্বাদের ধারা বর্ষাবে। \v 27 মাঠের গাছে গাছে ফল ধরবে এবং মাটি ফসল দেবে; লোকেরা তাদের জায়গায় নিরাপদে থাকবে। তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু, যখন আমি তাদের জোয়ালের খিল ভেঙে ফেলব এবং যারা তাদের দাসত্ব করাচ্ছে তাদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করব। \v 28 তারা আর জাতিগণের লুটের জিনিস হবে না কিংবা বন্যপশুরা তাদের খেয়ে ফেলবে না। তারা নিরাপদে বাস করবে আর কেউ তাদের ভয় দেখাবে না। \v 29 আমি তাদের উর্বর জমি দেব, আর দেশের মধ্যে তারা দুর্ভিক্ষের হাতে পড়বে না কিংবা অন্যান্য দেশের অসম্মানের পাত্র হবে না। \v 30 তখন তারা জানবে যে আমি, সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর, তাদের সহবর্তী এবং তারা, ইস্রায়েল কুল, আমার প্রজা, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 31 তোমরা আমার মেষ, আমার চরাণির মেষ এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \c 35 \s1 ইদোমর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি তোমার মুখ সেয়ীয় পাহাড়ের বিরুদ্ধে রাখো; তার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলো, \v 3 এবং বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে সেয়ীর পাহাড়, আমি তোমার বিরুদ্ধে, আমার হাত বাড়িয়ে তোমাকে একটি জনশূন্য পতিত জমি করে রাখব। \v 4 আমি তোমার নগরগুলি ধ্বংসস্থান করব এবং তুমি হবে জনশূন্য। তখন তুমি জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 5 “ ‘কারণ তোমার প্রাচীন শত্রুভাব আছে এবং ইস্রায়েলীদের বিপদের সময় যখন তাদের শাস্তি সম্পূর্ণভাবে দেওয়া হয়েছে তখন তুমি তরোয়ালের হাতে তাদের তুলে দিয়েছ, \v 6 এজন্য, সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, আমি তোমাকে রক্তপাতের হাতে তুলে দেব এবং তা তোমার পিছনে তাড়া করবে। যেহেতু তুমি রক্তপাত ঘৃণা করোনি, রক্তপাতই তোমার পিছনে তাড়া করবে। \v 7 আমি সেয়ীর পাহাড়কে জনশূন্য করব এবং যারা সেখানে যাওয়া-আসা করে তাদের উচ্ছিন্ন করব। \v 8 আমি তোমার পাহাড়গুলিকে নিহত লোকদের দিয়ে ভরে দেব; যারা যুদ্ধে মারা গেছে তারা তোমার পাহাড়গুলিতে, উপত্যকাগুলিতে এবং তোমার সব জলের স্রোতে পড়ে থাকবে। \v 9 চিরকালের জন্য আমি তোমাকে জনশূন্য করে রাখব; তোমার নগরগুলিতে কেউ বাস করবে না। তখন তুমি জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। \p \v 10 “ ‘কারণ তুমি বলেছ, “এই দুই জাতি এবং দেশ আমাদের হবে আর আমরা সেগুলির অধিকারী হব,” যদিও আমি সদাপ্রভু সেখানে ছিলাম, \v 11 এজন্য, সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, তাদের প্রতি ঘৃণায় তুমি যেমন রাগ ও হিংসা দেখিয়েছ সেই অনুসারেই আমি তোমার সঙ্গে ব্যবহার করব এবং আমি যখন তোমার বিচার করব তখন তাদের মধ্যে আমি নিজেকে প্রকাশ করব। \v 12 তখন তুমি জানবে যে, তুমি ইস্রায়েলের সব পাহাড়ের বিরুদ্ধে যেসব অপমানের কথা বলেছ তা আমি সদাপ্রভু শুনেছি। তুমি বলেছ, “সেগুলি ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে এবং তা গ্রাস করার জন্য আমাদের দেওয়া হয়েছে।” \v 13 তুমি আমার বিরুদ্ধে গর্ব করে অনেক কথা বলেছ, আর আমি সেইসব শুনেছি। \v 14 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন সমস্ত পৃথিবী যখন আনন্দ করবে তখন আমি তোমাকে জনশূন্য করব। \v 15 ইস্রায়েল কুলের অধিকার হিসেবে যে দেশ পেয়েছে তা জনশূন্য দেখে তুমি যেমন আনন্দ করেছ তেমনি করে আমি তোমার সঙ্গে ব্যবহার করব। হে সেয়ীর পাহাড়, তুমি এবং ইদোমের বাকি সমস্ত জায়গা জনশূন্য হবে। তখন লোকে জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \c 36 \s1 ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড়ের জন্য আশা \p \v 1 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড়ের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং বলো, ‘হে ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড়, সদাপ্রভুর বাক্য শোনো। \v 2 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে বলেছে, “বাঃ! পুরানো উঁচু জায়গাগুলি আমাদের দখলে এসে গেছে।” ’ \v 3 এজন্য ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা যাতে অন্যান্য জাতিগুলির দখলে আস এবং লোকদের হিংসার ও নিন্দার পাত্র হও সেইজন্য তারা চারিদিক থেকে তোমাদের ধ্বংস ও গ্রাস করেছে, \v 4 এই জন্য, হে ইস্রায়েলের পাহাড়েরা, সার্বভৌম সদাপ্রভুর বাক্য শোনো: সার্বভৌম সদাপ্রভু পাহাড় ও ছোটো পাহাড়, খাদ ও উপত্যকাগুলি, জনশূন্য ধ্বংসস্থান ও পরিত্যক্ত নগর সকলকে এই কথা বলেন, তোমরা চারিদিকের জাতিগণের বাকি অংশের লুট ও হাসির পাত্র হয়েছ। \v 5 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আমার অন্তরের জ্বালায় আমি অন্যান্য জাতিদের ও সমস্ত ইদোমের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, কারণ তাদের মনের আনন্দে ও হিংসায় তারা আমার দেশকে নিজেদের দখলে এনেছে যেন তারা তার চারণভূমি লুট করতে পারে।’ \v 6 অতএব তুমি ইস্রায়েল দেশ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং পাহাড় ও ছোটো পাহাড়, খাদ ও উপত্যকাগুলিকে বলো ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জ্বালাপূর্ণ ক্রোধে আমি এই কথা বলছি, কারণ তোমরা অন্যান্য জাতির কাছ থেকে অপমান ভোগ করেছ। \v 7 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি হাত তুলে শপথ করে বলছি যে, তোমাদের চারপাশের জাতিরাও অপমান ভোগ করবে। \p \v 8 “ ‘কিন্তু তোমরা, হে ইস্রায়েলের পাহাড়েরা, তোমাদের গাছের ডালপালা ছড়িয়ে দিয়ে আমার লোক ইস্রায়েলীদের অনেক ফল দেবে, কারণ তারা শীঘ্রই ফিরে আসবে। \v 9 আমি তোমাদের পক্ষে আছি এবং তোমাদের দিকে মনোযোগ দেব; তাতে তোমাদের উপর চাষ করা ও বীজ বোনা হবে, \v 10 হ্যাঁ, সমস্ত ইস্রায়েল—আমি তোমার উপরে অসংখ্য মানুষকে থাকতে দেব। নগরগুলিতে লোকজন বাস করবে এবং ধ্বংসস্থানগুলি আবার গড়া হবে। \v 11 আমি তোমার উপরে বসবাসকারী মানুষ ও পশুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেব এবং তারা ফলবান ও সংখ্যায় অনেক হবে। আমি তোমাদের উপরে আগের মতোই লোকজন বাস করাব এবং আগের চেয়েও তোমাদের বেশি সফলতা দান করব। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 12 আমি তোমার উপর লোকজনকে, আমার লোক ইস্রায়েলকে, বসবাস করাব। তারা তোমাদের অধিকার করবে, এবং তোমরা তাদের উত্তরাধিকারের জায়গা হবে; তোমরা আর কখনও তাদের সন্তানহারা করবে না। \p \v 13 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যেহেতু কিছু লোক তোমাদের বলে, “তুমি মানুষকে গ্রাস করো এবং নিজের জাতিকে সন্তানহারা করো,” \v 14 সেইহেতু তুমি মানুষকে আর গ্রাস করবে না কিংবা তোমার জাতিকে সন্তানহারা করবে না, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 15 আমি তোমাকে আর জাতিগণের ঠাট্টা-বিদ্রুপ শোনাব না, এবং তাদের করা অপমান আর তোমাকে সহ্য করতে হবে না অথবা তোমার জাতি আর বিঘ্ন পাবে না, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \s1 ইস্রায়েলের পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত \p \v 16 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে আবার উপস্থিত হল: \v 17 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েলীরা নিজেদের দেশে বাস করার সময়ে তাদের আচার-ব্যবহার ও কাজকর্ম দিয়ে দেশটা অশুচি করেছিল। আমার চোখে তাদের আচার-ব্যবহার ছিল এক ঋতুকালীন স্ত্রীলোকের মতন। \v 18 সেইজন্য আমি তাদের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দিয়েছিলাম কারণ তারা দেশের মধ্যে রক্তপাত করেছিল আর তাদের প্রতিমাগুলি দিয়ে দেশটা অশুচি করেছিল। \v 19 আমি তাদের জাতিদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন করেছি আর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিয়েছি; আমি তাদের আচার-ব্যবহার ও কাজকর্ম অনুসারে বিচার করেছি। \v 20 আর তারা জাতিদের মধ্যে যেখানেই গেছে সেখানেই আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করেছে, কারণ লোকে তাদের সম্বন্ধে বলেছে, ‘এরা সদাপ্রভুর লোক, অথচ তাঁর দেশ তাদের ছাড়তে হয়েছে।’ \v 21 আমার নামের পবিত্রতা রক্ষার দিকে আমার মনোযোগ ছিল, যা ইস্রায়েল জাতি যা সব জাতির মধ্যে গেছে সেখানেই আমার নাম অপবিত্র করেছে। \p \v 22 “অতএব ইস্রায়েল কুলকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে ইস্রায়েল কুল, আমি যে তোমাদের জন্য এই কাজ করতে যাচ্ছি তা নয়, কিন্তু আমার সেই পবিত্র নামের জন্যিই করব, যা তোমরা যেখানে গিয়েছ সেখানেই জাতিগণের মধ্যে অপবিত্র করেছ। \v 23 আমি আমার মহান নামের পবিত্রতা দেখাব, যা জাতিগণের মধ্যে অপবিত্র করা হয়েছে, যে নাম তুমি তাদের মধ্যে অপবিত্র করেছ। আর জাতিগণ জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু, যখন আমি তাদের চোখের সামনে তোমাদের মধ্য দিয়ে নিজের পবিত্রতা দেখাব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \p \v 24 “ ‘আমি জাতিগণের মধ্যে দিয়ে তোমাদের বের করে আনব; সমস্ত দেশ থেকে আমি তোমাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনব। \v 25 আমি তোমাদের উপর পরিষ্কার জল ছিটিয়ে দেব, আর তাতে তোমরা শুচি হবে; তোমাদের সমস্ত নোংরামি ও প্রতিমা থেকে আমি তোমাদের শুচি করব। \v 26 আমি তোমাদের এক নতুন হৃদয় দেব ও তোমাদের অন্তরে এক নতুন আত্মা দেব। আমি তোমাদের ভিতর থেকে পাথরের হৃদয় বের করে মাংসের হৃদয় দেব। \v 27 আর আমি তোমার মধ্যে আমার আত্মা স্থাপন করব এবং এমন করব যাতে তোমরা আমার সব নিয়ম পালন করো ও আমার বিধানের বিষয়ে যত্নবান হও। \v 28 তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ আমি দিয়েছিলাম সেখানে তোমরা বাস করবে; তোমরা আমারই লোক হবে, আর আমি তোমাদের ঈশ্বর হব। \v 29 আমি তোমাদের সব অশুচিতা থেকে তোমাদের রক্ষা করব। আমি তোমাদের প্রচুর ফসল দেব এবং তোমাদের দেশে আর দুর্ভিক্ষ আনব না। \v 30 আমি গাছের ফল ও ক্ষেতের ফসল বৃদ্ধি করব, যেন দুর্ভিক্ষের দরুন তোমরা জাতিগণের মধ্যে আর অসম্মান ভোগ না করো। \v 31 তখন তোমরা তোমাদের মন্দ আচরণ ও অসৎ কাজের কথা স্মরণ করবে এবং নিজেদের পাপ ও জঘন্য কাজকর্মের জন্য নিজেরাই নিজেদের ঘৃণা করবে। \v 32 সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, তোমরা জেনে রাখো যে, আমি তোমাদের জন্য এই কাজ করছি তা নয়। হে ইস্রায়েল কুল, তোমাদের আচরণের জন্য তোমরা লজ্জিত ও দুঃখিত হও! \p \v 33 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যেদিন আমি সব পাপ থেকে তোমাদের পরিষ্কার করব সেদিনই আমি নগরগুলিতে লোকদের বাস করাব এবং ধ্বংসস্থানগুলি আবার তৈরি করা হবে। \v 34 পথিকেরা যে দেশ ধ্বংস অবস্থায় দেখত সেখানে কৃষিকাজ হবে। \v 35 তারা বলবে, “এই দেশটা আগে ধ্বংস হয়ে পড়েছিল সেটি এখন এদন উদ্যানের মতো হয়েছে; নগরগুলি ধ্বংস অবস্থায় পড়েছিল, জনশূন্য ও ভাঙাচোরা হয়েছিল, এখন সেগুলি প্রাচীরে ঘেরা ও লোকেরা সেখানে বাস করছে।” \v 36 তখন তোমাদের চারপাশের বেঁচে থাকা জাতিরা জানবে যে, আমি সদাপ্রভুই ভাঙা জায়গা আবার গড়েছি এবং পতিত জায়গায় আবার গাছ লাগিয়েছি। আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি এবং আমি তাই করব।’ \p \v 37 “সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি আর একবার ইস্রায়েল কুলকে আমার কাছে অনুরোধ জানাতে দেব এবং এই কাজ তাদের জন্য করব: আমি তাদের লোকসংখ্যা মেষপালের মতো বৃদ্ধি করব, \v 38 যেমন জেরুশালেমে পর্বের সময় উৎসর্গের জন্য মেষে ভরে যায়। তেমনি ধ্বংস হওয়া নগরগুলি মানুষে ভরে যাবে। তখন তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।” \c 37 \s1 শুকনো হাড়ের উপত্যকা \p \v 1 সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে ছিল এবং তিনি সদাপ্রভুর আত্মায় আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি উপত্যকার মাঝখানে রাখলেন; সেটি হাড়ে ভর্তি ছিল। \v 2 তিনি আমাকে তার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করালেন, আর আমি সেই উপত্যকার মধ্যে অসংখ্য হাড় দেখলাম, হাড়গুলি ছিল খুব শুকনো। \v 3 তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে মানবসন্তান, এই হাড়গুলি কি বেঁচে উঠতে পারে?” \p আমি বললাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমিই কেবল তা জান।” \p \v 4 তখন তিনি আমাকে বললেন, “এই হাড়গুলির উদ্দেশ্যে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘হে শুকনো হাড়, সদাপ্রভুর বাক্য শোনো! \v 5 এই হাড়গুলিকে সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে নিঃশ্বাস ঢুকিয়ে দেব আর তোমরা জীবিত হবে। \v 6 আমি তোমাদের উপরে শিরা দেব, তোমাদের উপরে মাংস তৈরি করব এবং চামড়া দিয়ে তা ঢেকে দেব; আমি তোমাদের মধ্যে নিঃশ্বাস দেব আর তোমরা জীবিত হবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ” \p \v 7 আমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছিল তেমনই আমি ভবিষ্যদ্‌বাণী করলাম। আর আমি যখন ভবিষ্যদ্‌বাণী করছিলাম, তখন একটি আওয়াজ হল, একটি ঘর্ঘর শব্দ, আর হাড়গুলি প্রত্যেকটা নিজের নিজের হাড়ের সঙ্গে যুক্ত হল। \v 8 আমি দেখলাম, আর তাদের উপরে শিরা হল ও মাংস উৎপন্ন হল এবং চামড়া দিয়ে তা ঢাকা পড়ল, কিন্তু তাদের মধ্যে শ্বাস ছিল না। \p \v 9 তখন তিনি আমাকে বললেন, “বাতাসের উদ্দেশ্যে ভাববাণী বলো; হে মনুষের সন্তান, ভাববাণী বলো আর তাকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে বাতাস, তুমি চারদিক থেকে এসো এবং এসব নিহত লোকদের মধ্যে শ্বাস দাও যেন তারা জীবিত হয়।’ ” \v 10 সেইজন্য তাঁর আদেশমতোই আমি ভবিষ্যদ্‌বাণী বললাম আর তখন তাদের মধ্যে শ্বাস ঢুকল; তারা জীবিত হয়ে পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াল, তারা ছিল এক বিরাট সৈন্যদল। \p \v 11 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, এই হাড়গুলি হল সমস্ত ইস্রায়েল কুল। তারা বলছে, ‘আমাদের হাড়গুলি শুকিয়ে গেছে আর আমাদের আশাও চলে গেছে; আমরা মরে গেছি।’ \v 12 এজন্য তুমি ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে আমার লোকসকল, আমি তোমাদের কবর খুলে দেব এবং তোমাদের সেখান থেকে বার করে আনব; তোমাদের আমি আবার ইস্রায়েল দেশে ফিরিয়ে আনব। \v 13 আমি যখন তোমাদের কবর খুলে তোমাদের বের করে আনব তখন আমার লোকেরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \v 14 আমি তোমাদের মধ্যে আমার আত্মা দেব এবং তোমরা জীবিত হবে ও আমি তোমাদের নিজেদের দেশে বাস করাব। তখন তোমরা জানবে যে, আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি এবং সেইমতো কাজ করেছি, সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” \s1 একজন রাজার অধীনে একটি জাতি \p \v 15 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 16 “হে মানবসন্তান, একটি কাঠের লাঠি নিয়ে তুমি তার উপর এই কথা লেখ, ‘যিহূদা ও তাঁর সঙ্গের ইস্রায়েলীদের জন্য।’ তারপর আরও একটি কাঠের লাঠি নিয়ে তার উপর লেখ, ‘যোষেফের লাঠি (মানে ইফ্রয়িমের) ও তাঁর সঙ্গের সমস্ত ইস্রায়েলীদের জন্য।’ \v 17 সেই দুটো লাঠি জোড়া দিয়ে একটি লাঠি বানাও যেন তোমার হাতে সেই দুটো একটি লাঠিই হয়। \p \v 18 “তোমার জাতির লোকেরা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তুমি কি এর মানে আমাদের বলবে না?’ \v 19 তাদের বোলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আমি যোষেফের লাঠি গ্রহণ করব—যেটি ইফ্রয়িমের হাতে আছে—এবং ইস্রায়েলীদের গোষ্ঠীগুলির যে লাঠিটি আছে আমি সেটি নিয়ে যিহূদার লাঠির সঙ্গে জোড়া দিয়ে একটি কাঠের লাঠিই বানাব, আর সেই দুই লাঠি আমার হাতে একটিই হবে।’ \v 20 যে লাঠির উপর তুমি লিখেছ সেগুলি তোমার চোখের সামনে তুলে ধরো \v 21 আর তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ইস্রায়েলীরা যেসব জাতিদের মধ্যে আছে সেখান থেকে আমি তাদের বার করে আনব এবং চারদিক থেকে তাদের জড়ো করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব। \v 22 ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির উপরে আমি তাদের একই জাতি করব। তাদের সকলের উপরে একজনই রাজা হবে এবং তারা কখনও দুই জাতি হবে না কিংবা দুই রাজ্যে বিভক্ত হবে না। \v 23 তাদের সব প্রতিমা, ঘৃণ্য মূর্তি কিংবা তাদের কোনও অন্যায় দিয়ে তারা আর নিজেদের অশুচি করবে না, কারণ আমি তাদের সব পাপ ও বিপথে যাওয়া থেকে তাদের রক্ষা করব এবং শুচি করব। তারা আমার প্রজা হবে, এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব। \p \v 24 “ ‘আমার দাস দাউদ তাদের রাজা হবে এবং তাদের পালক একজনই হবে। তারা আমার নিয়ম পালন করবে ও আমার বিধানের বিষয় যত্নবান হবে। \v 25 যে দেশ আমি আমার দাস যাকোবকে দিয়েছি, যে দেশে তাদের পূর্বপুরুষেরা বাস করেছে সেখানেই তারা বাস করবে। তারা, তাদের ছেলেমেয়েরা ও নাতিপুতিরা সেখানে চিরকাল বাস করবে এবং আমার দাস দাউদ চিরকাল তাদের রাজা হবে। \v 26 আমি তাদের সঙ্গে এক শান্তির নিয়ম স্থাপন করব; সেটি হবে একটি চিরস্থায়ী বিধান। আমি তাদের বসাব ও সংখ্যায় বাড়াব এবং আমি আমার পবিত্রস্থান চিরকালের জন্য তাদের মধ্যে স্থাপন করব। \v 27 আমার বাসস্থান তাদের মধ্যে হবে; আমি তাদের ঈশ্বর হব এবং তারা আমার প্রজা হবে। \v 28 তখন জাতিগণ জানবে যে আমিই সদাপ্রভু যে ইস্রায়েলকে পবিত্র করেছে, যখন আমার পবিত্রস্থান চিরকাল তাদের মধ্যে থাকবে।’ ” \c 38 \s1 অন্যান্য জাতির উপরে সদাপ্রভুর মহান জয়লাভ \p \v 1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, \v 2 “হে মানবসন্তান, তুমি মাগোগ দেশের মেশক ও তূবলের প্রধান শাসনকর্তা গোগের দিকে মুখ করে তার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো \v 3 এবং বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে গোগ, মেশক ও তূবলের প্রধান শাসনকর্তা, আমি তোমার বিপক্ষে। \v 4 আমি তোমাকে পিছন ঘুরিয়ে তোমার চোয়ালে বড়শি পরাব এবং তোমার গোটা সৈন্যদলের সঙ্গে—তোমার ঘোড়া সকল, সম্পূর্ণ যুদ্ধের সজ্জা পরা অশ্বারোহী সকল, বড়ো ও ছোটো ঢালধারী বিরাট সৈন্যদল যারা তরোয়াল ঘোরাচ্ছে সকলকে বাইরে আনব। \v 5 পারস্য, কূশ ও পূট তাদের সঙ্গে থাকবে, তারা সকলে ঢাল ও শিরস্ত্রাণধারী, \v 6 আর গোমর ও তার সৈন্যদল, এবং উত্তর দিকের শেষ সীমার বেৎ-তোগর্মের সব সৈন্য—ও অনেক জাতি তোমার সঙ্গী হবে। \p \v 7 “ ‘প্রস্তুত হও, তুমি ও তোমার সমস্ত লোকজন যারা তোমার চারপাশে আছে, নিজেদের প্রস্তুত করো, এবং তুমি তাদের সেনাপতি হও। \v 8 অনেক দিনের পর তোমাকে যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে। ভবিষ্যতে তুমি এমন একটি দেশ আক্রমণ করবে যে দেশ যুদ্ধ থেকে রেহাই পেয়েছে, যার লোকেরা অনেক জাতির মধ্য থেকে ইস্রায়েলের পাহাড়গুলিও জড়ো হবে, যে জায়গা অনেক দিন ধরে জনশূন্য ছিল। তাদের জাতিগণের মধ্যে থেকে বের করে আনা হয়েছে, এবং এখন তারা সকলে নিরাপদে বাস করছে। \v 9 তুমি ও তোমার সব সৈন্যেরা এবং তোমার সঙ্গের অনেক জাতি সেই দেশ আক্রমণ করতে ঝড়ের মতো এগিয়ে যাবে; তোমরা মেঘের মতো করে দেশটাকে ঢেকে ফেলবে। \p \v 10 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সেদিন তোমার মনে বিভিন্ন চিন্তা আসবে এবং তুমি একটি খারাপ মতলব আঁটবে। \v 11 তুমি বলবে, “আমি এমন একটি দেশ আক্রমণ করব যার গ্রামগুলিতে প্রাচীর নেই; আমি শান্তিতে এবং সন্দেহ করে না এমন লোকদের আক্রমণ করব—যারা সকলে এমন জায়গায় বাস করে যেখানে প্রাচীর, ফটক ও অর্গল নেই। \v 12 আমি জিনিস কেড়ে নেব ও লুট করব এবং ধ্বংসস্থান ঠিক করে নেওয়া জায়গাগুলির বিরুদ্ধে আর জাতিগণের মধ্য থেকে জড়ো হওয়া লোকদের বিরুদ্ধে আমার হাত উঠাব, যারা পশুপালে ও জিনিসপত্রে ধনী, এবং দেশটা হবে পৃথিবীর কেন্দ্র।” \v 13 শিবা, দদান এবং তর্শীশ ও তার সব গ্রামের ব্যবসায়ীরা এবং সেখানকার সব যুবসিংহরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, “তোমরা কি লুটপাট করতে এসেছ? তোমরা কি দলবল জড়ো করেছ সোনা ও রুপো, পশুপাল ও জিনিসপত্র নিয়ে যাবার জন্য আর অনেক জিনিস কেড়ে নেবার জন্য?” ’ \p \v 14 “অতএব, হে মানবসন্তান, ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং গোগকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সেদিন যখন আমার লোক ইস্রায়েল নিরাপদে বাস করবে তখন তুমি খেয়াল করবে না? \v 15 তুমি উত্তর দিকের শেষ সীমা থেকে আসবে, তোমার সঙ্গে থাকবে অনেক জাতির লোকেরা যারা ঘোড়ায় চড়ে এক বিরাট দল ও এক শক্তিশালী সৈন্যদল হয়ে আসবে। \v 16 দেশটা মেঘের মতো করে ঢেকে ফেলবার জন্য তুমি আমার লোক ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসবে। হে গোগ, ভবিষ্যতে আমি আমার দেশের বিরুদ্ধে তোমাকে আনব, তখন আমি জাতিগণের চোখের সামনে তোমার মধ্য দিয়ে নিজেকে পবিত্র বলে দেখাব যেন তারা আমাকে জানতে পারে। \p \v 17 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তুমি কি সেই সেই লোক নও যার বিষয়ে আমি আগে আমার দাসদের যারা ইস্রায়েলী ভাববাদীদের মাধ্যমে বলেছি? সেই সময় বছরের পর বছর ভাববাদীরা বলেছিল যে, আমি তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে আনব। \v 18 সেদিন যখন গোগ ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে আসবে তখন আমার ভীষণ ক্রোধ জ্বলে উঠবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 19 আমার আগ্রহে ও জ্বলন্ত ক্রোধে আমি ঘোষণা করছি যে, সেই সময়ে ইস্রায়েল দেশে ভীষণ ভূমিকম্প হবে। \v 20 তাতে সমুদ্রের মাছ, আকাশের পাখি, বনের পশু, মাটির উপরের চলমান প্রত্যেকটা প্রাণী আর পৃথিবীর সমস্ত লোক আমার সামনে কাঁপতে থাকবে। পাহাড়গুলি উল্টে যাবে, খাঁড়া উঁচু পাহাড় টুকরো টুকরো হয়ে পড়বে এবং সব প্রাচীর মাটিতে পড়ে যাবে। \v 21 আমার সমস্ত পাহাড়ে আমি গোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ডেকে আনব, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। প্রত্যেক মানুষের তরোয়াল তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে থাকবে। \v 22 আমি মহামারি ও রক্তপাত দিয়ে তাকে শাস্তি দেব; আমি ভীষণ বৃষ্টি, শিলা ও জ্বলন্ত গন্ধক তার উপর, তার সৈন্যদলের উপর ও তার সঙ্গের সমস্ত জাতির উপর ঢেলে দেব। \v 23 আর আমি আমার মহত্ত্ব ও পবিত্রতা প্রকাশ করব, আর আমি অনেক জাতির সামনে নিজের পরিচয় দেব। তখন তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ \c 39 \p \v 1 “হে মানবসন্তান, তুমি গোগের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করো আর বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে গোগ, রোশ, মেশক ও তূবলের প্রধান শাসনকর্তা, আমি তোমার বিপক্ষে। \v 2 আমি তোমাকে পিছনে ঘুরিয়ে টেনে নিয়ে যাব। আমি তোমাকে উত্তর দিকের শেষ সীমা থেকে নিয়ে এসে ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির বিরুদ্ধে পাঠাব। \v 3 তারপর আমি আঘাত করে বাঁ হাত থেকে তোমার ধনুক ও ডান হাত থেকে তোমার তিরগুলি ফেলে দেব। \v 4 ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির উপরে তুমি, তোমার সব সৈন্যেরা ও তোমার সঙ্গের জাতিরা পড়ে থাকবে। আমি তোমাকে হিংস্র পাখি ও বুনো পশুদের খাবার হিসেবে দেব। \v 5 তুমি খোলা মাঠে পড়ে থাকবে, কারণ আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 6 আমি মাগোগের উপরে এবং যারা দূরের দেশগুলিতে নিরাপদে বাস করছে তাদের উপরে আগুন পাঠাব, আর তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। \p \v 7 “ ‘আমার লোক ইস্রায়েলীদের মধ্যে আমি আমার পবিত্রতা প্রকাশ করব। আমি আর আমার পবিত্র নাম অপবিত্র হতে দেব না, তাতে জাতিগণ জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের মধ্যে পবিত্রতম। \v 8 এটি আসছে! এটি নিশ্চয়ই হবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। এই দিনের কথাই আমি বলেছি। \p \v 9 “ ‘তখন যারা ইস্রায়েলের নগরে বাস করছে তারা বাইরে গিয়ে জ্বালানি কাঠ হিসেবে অস্ত্রশস্ত্র পোড়াবে—ছোটো ও বড়ো ঢাল, তির ও ধনুক, যুদ্ধের গদা ও বল্লম। সাত বছর ধরে তারা জ্বালানি হিসেবে এগুলি ব্যবহার করবে। \v 10 তারা মাঠ থেকে কাঠ আনবে না, বনের গাছ কাটবে না, কারণ তারা সেই অস্ত্রশস্ত্র নিয়েই আগুন জ্বালাবে। এবং তাদের লুটকারীদের ধন লুট করবে ও যারা তাদের সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছিল তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 11 “ ‘সেদিন গোগকে আমি ইস্রায়েলের মধ্যে একটি কবরস্থান দেব, সেটি সমুদ্রের পূর্বদিকে পথিকদের উপত্যকা এবং এটি তাদের পথ বন্ধ করে দেবে কারণ সেখানে গোগ ও তার সমস্ত লোকদের কবর দেওয়া হবে। সেইজন্য এটাকে বলা হবে হা্মোন গোগের উপত্যকা। \p \v 12 “ ‘সাত মাস ধরে ইস্রায়েল কুল তাদের কবর দিয়ে দেশটা পরিষ্কার করবে। \v 13 দেশের সব লোক তাদের কবর দেবে, এবং যেদিন আমি গৌরবান্বিত হব সেদিন তাদের কাছে স্মরণীয় হবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 14 দেশ পরিষ্কার করার জন্য নিয়মিত লোকদের নিয়োগ করা হবে। কিছু দেশের চারিদিকে যাবে, আর তার অতিরিক্ত লোক, যা কিছু মাঠে পড়ে থাকবে তাদের কবর দেবে। \p “ ‘সাত মাস শেষ হলে তারা তাদের বিশদ খোঁজ শুরু করবে। \v 15 তারা যখন দেশের মধ্যে দিয়ে যাবে এবং একজন মানুষের হাড় দেখবে, সে তার পাশে একটি চিহ্ন গাঁথবে যতক্ষণ না কবর খোঁড়ার লোকেরা সেটি হা্মোন গোগের উপত্যকায় কবর দিচ্ছে, \v 16 হামোনা নামে এক নগরের কাছে। এইভাবে তারা দেশ পরিষ্কার করবে।’ \p \v 17 “হে মানবসন্তান, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তুমি সব রকম পাখি ও সব রকম বন্যপশুদের ডাক দিয়ে বলো, ‘তোমাদের জন্য যে বলিদানের ব্যবস্থা করছি তার জন্য তোমরা সবদিক থেকে জড়ো হও, কেননা আমি ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির উপরে মহান বলিদানের ব্যবস্থা করেছি। সেখানে তোমরা মাংস খাবে ও রক্ত পান করবে। \v 18 তোমরা শক্তিশালী লোকদের মাংস খাবে এবং পৃথিবীর শাসনকর্তাদের রক্ত পান করবে যেন তারা পুরুষ মেষ, মেষশাবক, পাঁঠা ও ষাঁড়—এরা সবাই বাশনের নধর পশু। \v 19 তোমাদের জন্য যে বলিদানের ব্যবস্থা করেছি, সেখানে তোমরা পেট না ভরা পর্যন্ত চর্বি খাবে এবং মাতাল না হওয়া পর্যন্ত রক্ত পান করবে। \v 20 আমার টেবিলে তোমরা পেট ভরে ঘোড়া, রথচালক, শক্তিশালী লোক ও সব রকম সৈন্যদের মাংস খাবে,’ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 21 “আমি জাতিদের মধ্যে আমার মহিমা প্রকাশ করব, এবং আমার হাত দিয়ে তাদের যে শাস্তি দেব তা সমস্ত জাতিই দেখবে। \v 22 সেদিন থেকে ইস্রায়েল কুল জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর। \v 23 এবং জাতিরা জানবে যে ইস্রায়েল কুল তাদের পাপের জন্য নির্বাসিত হয়েছিল, কারণ তারা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিল। সেইজন্য আমার মুখ আমি তাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে রেখেছিলাম ও শত্রুদের হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলাম আর তারা সকলে যুদ্ধে মারা পড়েছিল। \v 24 তাদের অশুচিতা ও পাপ অনুসারে আমি তাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছিলাম এবং তাদের কাছ থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে রেখেছিলাম। \p \v 25 “এজন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি এখন যাকোবকে বন্দিদশা থেকে ফিরিয়ে আনব ও সমস্ত ইস্রায়েল কুলের প্রতি করুণা করব এবং আমার নামের পবিত্রতার জন্য আগ্রহী হব। \v 26 তারা যখন তাদের দেশে নিরাপদে বাস করবে এবং কেউ তাদের ভয় দেখাবে না তখন আমার প্রতি অবিশ্বস্ততার দরুন তাদের লজ্জার কথা তারা ভুলে যাবে। \v 27 জাতিগণের মধ্য থেকে আমি যখন তাদের ফিরিয়ে আনব শত্রুদের দেশ থেকে তাদের জড়ো করব তখন অনেক জাতির চোখের সামনে আমি তাদের মধ্য দিয়ে আমার পবিত্রতা প্রকাশ করব। \v 28 তখন তারা জানবে যে, আমিই তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, কারণ বিভিন্ন জাতির মধ্যে তাদের বন্দিদশায় পাঠালেও আমি তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনব, কাউকে ফেলে রাখব না। \v 29 তাদের কাছ থেকে আমি আর আমার মুখ ফিরিয়ে রাখব না, কারণ ইস্রায়েল কুলের উপরে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \c 40 \s1 মন্দির এলাকার পুনঃসংস্কার \p \v 1 আমাদের বন্দিদশার পঁচিশ বছরে, বছরের শুরুতে, মাসের দশ দিনের দিন, নগরের পতনের চৌদ্দ বছরে, সেদিনে সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে ছিল এবং তিনি আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। \v 2 ঈশ্বরীয় দর্শনে, তিনি আমাকে ইস্রায়েল দেশে নিয়ে গিয়ে একটি উঁচু পাহাড়ের উপরে রাখলেন, যার দক্ষিণ পাশে কতগুলি দালান ছিল যেগুলি দেখতে নগরের মতো। \v 3 তিনি আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন, আর আমি এক পুরুষকে দেখলাম যার চেহারা পিতলের মতো; হাতে মসিনার দড়ি ও মাপকাঠি নিয়ে তিনি দ্বারে দাঁড়িয়েছিল। \v 4 সেই পুরুষ আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, তুমি চোখ দিয়ে দেখো ও কান দিয়ে শোনো এবং আমি তোমাকে যা দেখাব তার সব কিছুতে মনোযোগ দাও, কারণ সেইজন্যই তোমাকে এখানে আনা হয়েছে। তুমি যা কিছু দেখবে সবই ইস্রায়েল কুলকে বলবে।” \s2 বাইরের উঠানের পূর্বদিকের দ্বার \p \v 5 আমি একটি প্রাচীর দেখলাম যা মন্দিরের চারিদিক ঘিরে ছিল। লোকটির হাতের মাপের দণ্ডটি লম্বায় ছয় হাত, প্রত্যেক হাত এক হাত চার আঙুল করে লম্বা। তিনি প্রাচীরটি মাপলেন; সেটি এক মাপকাঠি মোটা আর এক মাপকাঠি উঁচু। \p \v 6 পরে তিনি পূর্বমুখী দ্বারের কাছে গেলেন। তিনি সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে দ্বারের ঢুকবার মুখটা মাপলেন; সেটির প্রস্থ ছিল এক মাপকাঠি। \v 7 দ্বারের পাহারাদারদের ঘরগুলি এক মাপকাঠি লম্বা ও এক মাপকাঠি চওড়া এবং এক ঘর থেকে আর এক ঘরের মধ্যেকার দেয়াল পাঁচ হাত মোটা ছিল। আর দ্বারের বারান্দার পাশে মন্দিরের দ্বারের ঢুকবার মুখটা ছিল এক মাপকাঠি লম্বা। \p \v 8 তারপর তিনি দ্বারের বারান্দা মাপলেন; \v 9 সেটি ছিল আট হাত লম্বা এবং তার থামগুলি দু-হাত চওড়া। দ্বারের বারান্দা মন্দিরের দিকে ছিল। \p \v 10 পূর্বদিকের দ্বারের ভিতরের দুই পাশে তিনটি করে ঘর ছিল; তিনটির মাপ একই ছিল, এবং সেগুলির মধ্যেকার দেয়ালগুলির প্রত্যেকটার মাপ একই ছিল। \v 11 তারপর তিনি দ্বারের ঢুকবার পথটা মাপলেন; সেটি লম্বায় তেরো হাত আর চওড়ায় দশ হাত ছিল। \v 12 ঘরগুলির সামনে দেয়াল এক হাত উঁচু ছিল এবং ঘরগুলি লম্বায় ও চওড়ায় ছিল ছয় হাত। \v 13 তারপর তিনি একটি ঘরের বাইরের দিক থেকে তার সামনের ঘরের বাইরের দিক পর্যন্ত মাপলেন; একটি ঘরের দেয়ালের খোলা জায়গা থেকে তার সামনের ঘরের দেয়ালের খোলা জায়গার দূরত্ব ছিল পঁচিশ হাত। \v 14 দ্বারের থাম দুটোর উচ্চতা তিনি মাপলেন—ষাট হাত। থাম দুটো থেকে দ্বারের উঠানের শুরু হয়েছে। \v 15 দ্বারে ঢুকবার মুখ থেকে দ্বারের শেষ সীমার ঘর পর্যন্ত দূরত্ব ছিল পঞ্চাশ হাত। \v 16 ঘরগুলির বাইরের দেয়ালে এবং থাম দুটোর পাশের দেয়ালে জালি দেওয়া জানালা ছিল, আর দ্বারের শেষে যে ঘর ছিল তার দেয়ালেও তাই ছিল; এইভাবে দ্বারের দেয়ালগুলিতে ওই রকম জানালা ছিল। এছাড়া থাম দুটোর গায়ে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। \s2 বাইরের উঠান \p \v 17 তারপর তিনি আমাকে বাইরের উঠানে আনলেন। সেখানে আমি দেখলাম কিছু ঘর এবং উঠানের চারিদিকে বাঁধানো জায়গা তৈরি করা হয়েছে; বাঁধানো জায়গার ধারে ত্রিশটা ঘর ছিল। \v 18 সেই বাঁধানো জায়গা প্রত্যেকটি দ্বারের দুই পাশেও ছিল এবং দ্বারের লম্বার সমান ছিল; এটি ছিল নিচের বাঁধানো জায়গা। \v 19 তারপর তিনি পূর্বদিকের বাইরের উঠানের দ্বারের শেষ সীমা থেকে ভিতরের উঠানের দ্বারে ঢুকবার মুখ পর্যন্ত মাপলেন; তার দূরত্ব ছিল একশো হাত। সেইভাবে উত্তর দিকের দূরত্বও ছিল একশো হাত। \s2 উত্তরের দ্বার \p \v 20 তারপর তিনি বাইরের উঠানের উত্তরমুখী দ্বারের লম্বা ও চওড়া মাপলেন। \v 21 তার ঘরের—দুই পাশে তিনটি করে—মাপ ও তার থামগুলি এবং তার শেষের ঘরের মাপ প্রথম দ্বারের সবকিছুর মাপের মতোই ছিল। সেটি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া। \v 22 তার জানালাগুলি, বারান্দা ও খোদাই করা খেজুর গাছ পূর্বমুখী দ্বারের মতোই ছিল। সেখানে উঠবার সিঁড়ির সাতটি ধাপ ছিল আর তার উল্টোদিকে বারান্দা ছিল। \v 23 ভিতরের উঠানের পূর্বমুখী দ্বারের মতোই তার উত্তরমুখী একটি দ্বার ছিল, আর তিনি বাইরের উঠানের দ্বার থেকে ভিতরের উঠানের দ্বার পর্যন্ত মাপলেন, তা একশো হাত হল। \s2 দক্ষিণের দ্বার \p \v 24 তারপর তিনি আমাকে দক্ষিণ দিকে নিয়ে গেলেন আর আমি বাইরের উঠানের দক্ষিণমুখী একটি দ্বার দেখলাম। তিনি চৌকাঠের বাজু এবং তার বারান্দা মাপলেন, আর তার মাপ অন্যগুলির মতো একই ছিল। \v 25 প্রবেশদ্বার এবং তার বারান্দার চারিদিকে সরু জানালা ছিল যেমন অন্যদের ছিল। এটি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া। \v 26 সেখানে উঠবার সিঁড়ির সাতটি ধাপ ছিল, আর তার উল্টোদিকে হোমবলি দানের মণ্ডপ ছিল; দ্বারের ভিতরের দুই পাশের থামগুলিতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। \v 27 ভিতরের উঠানেরও একটি দক্ষিণমুখী দ্বার ছিল, আর তিনি সেই দ্বার থেকে বাইরের উঠানের দক্ষিণমুখী দ্বার পর্যন্ত মাপলেন, তা একশো হাত হল। \s2 ভিতরের উঠানের দ্বারসকল \p \v 28 তারপর তিনি ভিতরের উঠানের দক্ষিণমুখী দ্বারের মধ্য দিয়ে আমাকে নিয়ে গেলেন, এবং তিনি দক্ষিণ দ্বার মাপলেন; সেটি অন্যগুলির মতো একই মাপের হল। \v 29 তার ঘর, থামগুলি এবং বারান্দার মাপ অন্যগুলির মতো একই হল। প্রবেশদ্বার এবং তার বারান্দার চারিদিকে সরু জানালা ছিল। এটি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া। \v 30 (ভিতরের উঠানের প্রবেশদ্বারের বারান্দার মাপ ছিল পঁচিশ হাত লম্বা ও পাঁচ হাত চওড়া) \v 31 তার বারান্দার মুখ ছিল বাইরের উঠানের দিকে; চৌকাঠের বাজুতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল, সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটি ধাপ ছিল। \p \v 32 তারপর তিনি আমাকে ভিতরের উঠানের পূর্বদিকে নিয়ে গেলেন, এবং তিনি সেখানকার দ্বার মাপলেন; সেটি অন্যগুলির মতো একই মাপের হল। \v 33 তার ঘর, থামগুলি এবং বারান্দার মাপ অন্যগুলির মতো একই হল। প্রবেশদ্বার এবং তার বারান্দার চারিদিকে সরু জানালা ছিল। এটি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া। \v 34 তার বারান্দার মুখ বাইরের উঠানের দিকে ছিল; চৌকাঠের বাজুর দুই পাশে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল, সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটি ধাপ ছিল। \p \v 35 তারপর তিনি আমাকে উত্তর দিকের দ্বারে নিয়ে গেলেন এবং তিনি সেটি মাপলেন। তার মাপ অন্যগুলির মতো একই হল, \v 36 যেমন তার ঘর, থামগুলি এবং বারান্দার চারিদিকে সরু জানালা ছিল। এটি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া। \v 37 তার বারান্দার মুখ বাইরের উঠানের দিকে ছিল; চৌকাঠের বাজুর দুই পাশে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল, সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটি ধাপ ছিল। \s2 পশু উৎসর্গের প্রস্তুতির ঘর \p \v 38 বাইরের উঠানের মধ্যে ভিতরের দ্বারের থামের পাশে একটি ঘর ছিল, যেখানে হোমবলি ধোয়া হত। \v 39 দ্বারের বারান্দায় দুদিকে দুটি করে টেবিল ছিল, তার উপরে হোমার্থক, পাপার্থক ও দোষার্থক-নৈবেদ্য বধ করা হত। \v 40 দ্বারের বারান্দার বাইরের দেয়ালের পাশে, উত্তরমুখী দ্বারের ঢুকবার পথের সিঁড়ির কাছে দুটি টেবিল এবং সিঁড়ির অন্য পাশে দুটি টেবিল ছিল। \v 41 অতএব দ্বারের এক পাশে চারটি ও অন্য পাশে চারটি টেবিল ছিল—মোট আটটি—যার উপরে বলি বধ করা হত। \v 42 হোমবলির জন্য চারটি টেবিল ছিল যেগুলি পাথর কেটে তৈরি করা, প্রত্যেকটি দেড় হাত লম্বা, দেড় হাত চওড়া এবং এক হাত উঁচু। তার উপরে হোমবলি ও অন্যান্য বলি বধ করার অস্ত্র রাখা হত। \v 43 চার আঙুল লম্বা দুই কাঁটার আঁকড়া দেয়ালের গায়ে চারিদিকে লাগানো ছিল। টেবিলগুলির উপরে নৈবেদ্যের মাংস রাখা হত। \s2 যাজকদের ঘর \p \v 44 ভিতরের দ্বারের বাইরে, ভিতরের উঠানের মধ্যে দুটো ঘর ছিল, একটি উত্তর দ্বারের পাশে দক্ষিণমুখী এবং অন্যটি দক্ষিণ-দ্বারের পাশে উত্তরমুখী। \v 45 তিনি আমাকে বললেন, “দক্ষিণমুখী ঘর যাজকদের জন্য যারা মন্দিরের দায়িত্বে আছে, \v 46 এবং উত্তরমুখী ঘর সেই যাজকদের জন্য যারা বেদির দায়িত্বে আছে। এরা হল সাদোকের ছেলেরা, কেবল তারাই একমাত্র লেবীয় যারা সদাপ্রভুর সামনে তাঁর সেবাকাজের জন্য যেতে পারে।” \p \v 47 তারপর তিনি উঠানটা মাপলেন সেটি—একশো হাত লম্বা ও একশো হাত চওড়া একটি চারকোণা জায়গা। আর বেদিটি মন্দিরের সামনে ছিল। \s1 নতুন মন্দির \p \v 48 তিনি আমাকে মন্দিরের বারান্দায় আনলেন এবং বারান্দার চৌকাঠের বাজু মাপলেন; উভয় দিকের সেগুলি পাঁচ হাত চওড়া ছিল। প্রবেশদ্বার চোদ্দ হাত এবং উভয় দিকের থামগুলি তিন হাত চওড়া ছিল। \v 49 বারান্দা কুড়ি হাত চওড়া ছিল এবং সামনে থেকে পিছন পর্যন্ত বারো হাত ছিল। সেখানে উঠবার একটি সিঁড়ি ছিল এবং সেই দুটো বাজুর সামনে ছিল একটি করে থাম। \c 41 \p \v 1 তারপর সেই ব্যক্তি মূল হল ঘরে নিয়ে গিয়ে চৌকাঠের বাজু মাপলেন; দুই দিকের বাজু চওড়ায় ছয় হাত\f + \fr 41:1 \fr*\ft প্রায় 3.2 মিটার; 3, 5, ও 8 পদেও আছে\ft*\f* ছিল। \v 2 প্রবেশস্থান ছিল দশ হাত\f + \fr 41:2 \fr*\ft প্রায় 5.3 মিটার\ft*\f* চওড়া, এবং তার দুই পাশে পাঁচ হাত\f + \fr 41:2 \fr*\ft প্রায় 2.7 মিটার; 9, 11, ও 12 পদেও আছে\ft*\f* করে ছিল। তিনি মূল হল ঘরেও মাপলেন; সেটি চল্লিশ হাত লম্বা ও কুড়ি হাত চওড়া\f + \fr 41:2 \fr*\ft প্রায় 21 মিটার লম্বা ও 11 মিটার চওড়া\ft*\f* ছিল। \p \v 3 তারপর তিনি মন্দিরের ভিতরে ঘরে গেলেন এবং প্রবেশস্থানের বাজু মাপলেন; প্রতিটি দু-হাত\f + \fr 41:3 \fr*\ft প্রায় 1.1 মিটার; 22 পদেও আছে\ft*\f* চওড়া ছিল। প্রবেশস্থান ছিল ছয় হাত চওড়া, এবং তার দুই পাশে সাত হাত\f + \fr 41:3 \fr*\ft প্রায় 3.7 মিটার\ft*\f* করে ছিল। \v 4 আর তিনি ভিতরে উপাসনার স্থানের মাপ নিলেন; সেটি কুড়ি হাত লম্বা এবং মূল হলঘর পর্যন্ত চওড়ায় কুড়ি হাত ছিল। তিনি আমাকে বললেন, “এটাই মহাপবিত্র স্থান।” \p \v 5 তারপর তিনি মন্দিরের দেয়াল মাপলেন; সেটি ছিল ছয় হাত মোটা এবং সেই দেয়ালের চারিদিকে ঘর প্রত্যেকটা চওড়ায় চার হাত\f + \fr 41:5 \fr*\ft প্রায় 2.1 মিটার\ft*\f* ছিল। \v 6 সেই পাশের ঘরগুলি একটির উপরে আর একটি করে তিনতলা ছিল, প্রত্যেক তলাতে ত্রিশটা করে ঘর ছিল। ঘরগুলির ভার বইবার জন্য মন্দিরের দেয়ালের চারপাশে থাকো ছিল, কিন্তু সেগুলি মন্দিরের দেয়ালের মধ্যে ঢুকানো ছিল না। \v 7 মন্দিরের পাশের ঘরগুলি চওড়ায় নিচের তলা থেকে উপরের তলা পর্যন্ত পরপর বেড়ে গিয়েছিল। নিচের তলা থেকে মাঝের তলার মধ্য দিয়ে উপর তলা পর্যন্ত একটি সিঁড়ি উঠেছিল। \p \v 8 আমি দেখলাম মন্দিরটা একটি উঁচু সমান জায়গার উপরে রয়েছে, যা মন্দিরের ও পাশের ঘরগুলির ভিত্তি। সেই ভিত্তি একটি মাপকাঠি সমান ছিল যা ছয় হাত লম্বা। \v 9 ঘরগুলির বাইরের দেয়াল ছিল পাঁচ হাত মোটা। যে খোলা জায়গা মন্দিরের পাশের ঘর থেকে \v 10 যাজকদের ঘর পর্যন্ত ছিল সেটি মন্দিরের চারিদিকে ছিল কুড়ি হাত। \v 11 খোলা জায়গা থেকে পাশের ঘরগুলিতে ঢোকার পথ ছিল, একটি উত্তর দিকে আরেকটা দক্ষিণ দিকে; আর খোলা জায়গার চারিদিকের ভিত্তি পাঁচ হাত চওড়া ছিল। \p \v 12 মন্দিরের পশ্চিমদিকে খোলা জায়গার শেষ সীমায় একটি দালান ছিল যেটা সত্তর হাত\f + \fr 41:12 \fr*\ft প্রায় 37 মিটার\ft*\f* চওড়া। দালানের দেয়াল চারিদিক পাঁচ হাত মোটা এবং লম্বা নব্বই হাত\f + \fr 41:12 \fr*\ft প্রায় 48 মিটার\ft*\f* ছিল। \p \v 13 তারপর তিনি মন্দির মাপলেন; সেটি লম্বায় একশো হাত\f + \fr 41:13 \fr*\ft প্রায় 53 মিটার; 14 ও 15 পদেও আছে\ft*\f* এবং মন্দিরের উঠান আর দালানের দেয়াল পর্যন্তও একশো হাত। \v 14 পূর্বদিকে মন্দিরের উঠান থেকে মন্দিরের সামনে পর্যন্ত চওড়া ছিল একশো হাত। \p \v 15 তারপর তিনি মন্দিরের পিছনে উঠানের দিকে মুখ করে যে দালান ছিল, লম্বা বারান্দা সমেত মাপলেন; সেটি ছিল একশো হাত। \p মূল হলঘর, ভিতরের পবিত্রস্থান এবং উঠানের দিকে মুখ করা বারান্দা, \v 16 এমনকি তিনটি জায়গায় ঢুকবার মুখের দুই পাশের বাজুগুলি এবং জালি দেওয়া সরু জানালাগুলি তক্তা দিয়ে ঢাকা ছিল। মেঝে ও জানালা পর্যন্ত দেয়ালও তক্তা দিয়ে ঢাকা ছিল। \v 17 প্রবেশস্থানের বাইরে থেকে পবিত্রস্থানের ভিতর পর্যন্ত এবং পবিত্রস্থানের বাইরের ও ভিতরের দেয়ালে পরপর \v 18 করূব ও খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। খেজুর গাছের পর করূব। প্রত্যেক করূবের দুটি করে মুখ ছিল: \v 19 এক পাশের খেজুর গাছের দিকে মানুষের মুখ এবং অন্য পাশের খেজুর গাছের দিকে সিংহের মুখ। সেগুলি সম্পূর্ণ মন্দিরের চারিদিকে খোদাই করা ছিল। \v 20 মূল হলঘরের মেঝে থেকে প্রবেশস্থানের উপরের অংশের দেয়াল পর্যন্ত করূব ও খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। \p \v 21 মূল হলঘরের দ্বারের গঠন চতুষ্কোণ ছিল, এবং মহাপবিত্র স্থানের দ্বারটিও একইরকম ছিল। \v 22 সেখানে তিন হাত উঁচু, দু-হাত লম্বা ও দু-হাত চওড়া কাঠের একটি বেদি ছিল, তার কোনা, পায়া ও চারপাশ ছিল কাঠ দিয়ে তৈরি। সেই ব্যক্তি আমাকে বললেন, “এটি হচ্ছে সেই টেবিল যা সদাপ্রভুর সামনে রয়েছে।” \v 23 উভয় মূল হলঘর এবং মহাপবিত্র স্থানে একটি করে দুই পাল্লার দ্বার ছিল। \v 24 প্রত্যেক দ্বারে দুটি কবাট ছিল—দুটি দ্বারে দুটি করে কবাট। \v 25 এবং মূল হলঘরের দ্বারের কবাটে দেয়ালের মতোই করূব ও খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল আর বারান্দার সামনে কাঠের একটি ঝিলিমিলি ছিল। \v 26 বারান্দার পাশের দেয়ালে ছিল সরু জানালা যার প্রত্যেক দিকে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। মন্দিরের পাশের ঘরগুলিতেও এইরকম ঝিলিমিলি ছিল। \c 42 \s1 যাজকদের জন্য ঘর \p \v 1 পরে সেই ব্যক্তি আমাকে মন্দিরের উত্তর দিকের বাইরের উঠানে নিয়ে গিয়ে মন্দিরের উঠানের ও উত্তর দিকের বাইরের দেয়ালের উল্টো দিকের ঘরগুলিতে নিয়ে গেলেন। \v 2 উত্তরমুখী দালান ছিল একশো হাত লম্বা এবং পঞ্চাশ হাত চওড়া\f + \fr 42:2 \fr*\ft প্রায় 53 মিটার লম্বা এবং 27 মিটার চওড়া\ft*\f*। \v 3 ভিতরের উঠানের সামনে কুড়ি হাতের\f + \fr 42:3 \fr*\ft প্রায় 11 মিটার\ft*\f* সেই খোলা জায়গা এবং বিপরীত অংশে বাইরের উঠানের বাঁধানো জায়গার মধ্যে দালানটা তিনতলা ছিল। \v 4 এই ঘরগুলির সামনে ভিতরের দিকে একটি পথ ছিল দশ হাত চওড়া ও একশো হাত লম্বা\f + \fr 42:4 \fr*\ft প্রায় 5.3 মিটার চওড়া এবং 53 মিটার লম্বা\ft*\f*। তাদের সকলের দ্বার উত্তর দিকের ছিল। \v 5 উপরের ঘরগুলি সরু ছিল, কেননা লম্বা বারান্দা দালানের নিচের ও মাঝের তলার তুলনায় সেই ঘরগুলির থেকে বেশি জায়গা নিয়েছিল। \v 6 তৃতীয় তলার ঘরগুলির কোনও থাম ছিল না, যেমন উঠানের ছিল; সেই কারণে নিচের ও মাঝের তলার তুলনায় তাদের মেঝের জায়গা সংকুচিত ছিল। \v 7 সেখানে একটি বাইরের দেয়াল ছিল যেটা ঘরগুলি ও বাইরের উঠানের সমান্তরাল; এটা ঘরগুলির সামনে পঞ্চাশ হাত বাড়ান ছিল। \v 8 বাইরের উঠানের পাশে যে ঘরগুলি ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা, যে সারি পবিত্রস্থানের সবচেয়ে কাছে ছিল সেটি একশো হাত লম্বা। \v 9 বাইরের উঠানে থেকে কেউ যখন ভিতরে ঢোকে নিচের ঘরগুলির প্রবেশপথ পূর্বদিকে ছিল। \p \v 10 বাইরের উঠানের দেওয়াল বরাবর দক্ষিণ দিকে মন্দিরের উঠানের পাশে এবং বাইরের দেয়ালের উল্টোদিকে, ঘর ছিল \v 11 যেখানে তাদের সামনে একটি পথ ছিল। সেগুলি উত্তর দিকের ঘরগুলির মতন; সেগুলি লম্বায় ও চওড়ায় সমান, আর একইরকম বাইরে যাওয়ার পথ ও মাপ। উত্তরের দ্বারের পথের মতোই \v 12 দক্ষিণের ঘরগুলির দ্বারের পথ। দালানটার পূর্বদিকের আর একটি সমান্তরাল ঢুকবার পথ ছিল এবং তার সামনেও একটি দেয়াল ছিল। \p \v 13 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “মন্দিরের খোলা জায়গার উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দালান দুটো যাজকদের, যেখানে যাজকেরা সদাপ্রভুর কাছে যায় তারা সেই জায়গার অতি পবিত্রস্থানের উৎসর্গিত জিনিস ভোজন করবে। সেখানে তারা অতি পবিত্রস্থানের উৎসর্গিত জিনিসগুলি রাখবে—শস্য-নৈবেদ্য, পাপার্থক বলি ও দোষার্থক-নৈবেদ্য—কারণ জায়গাটি পবিত্র। \v 14 যাজকেরা সেবাকাজের জন্য পবিত্রস্থানে যে পোশাকগুলি পরে ঢুকবে সেগুলি এই দালান দুটিতে খুলে রাখবে এবং তারপরে বাইরের উঠানে যেতে পারবে, কারণ সেগুলি পবিত্র পোশাক। সাধারণ লোকদের জায়গায় যাবার আগে তাদের অন্য কাপড় পরতে হবে।” \p \v 15 মন্দিরের চারপাশের দেওয়ালের ভিতরের সবকিছু মাপা শেষ করার পর তিনি আমাকে পূর্বদিকের দ্বার দিয়ে বাইরে আনলেন এবং বাইরের চারপাশের এলাকাটা মাপলেন। \v 16 তিনি পূর্বদিক মাপকাঠি দিয়ে মাপলেন; সেটি ছিল পাঁচশো হাত। \v 17 তিনি উত্তর দিক মাপলেন; মাপকাঠিতে সেটি পাঁচশো হাত ছিল। \v 18 তিনি দক্ষিণ দিক মাপলেন; মাপকাঠিতে সেটি পাঁচশো হাত ছিল। \v 19 তারপর তিনি পশ্চিমদিকে ঘুরলেন এবং মাপলেন; মাপকাঠিতে সেটি পাঁচশো হাত ছিল। \v 20 এইভাবে তিনি তার চারদিক মাপলেন। সাধারণ লোকদের থেকে পবিত্রস্থান আলাদা করার জন্য তার চারিদিকে একটি প্রাচীর ছিল, যেটা পাঁচশো হাত লম্বা এবং পাঁচশো হাত চওড়া। \c 43 \s1 মন্দিরে ঈশ্বরের মহিমা ফিরে আসে \p \v 1 তারপর সেই ব্যক্তি আমাকে পূর্বমুখী দ্বারের কাছে আনলেন, \v 2 এবং আমি পূর্বদিক থেকে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা দেখলাম। তাঁর গলার স্বর ছিল জোরে বয়ে যাওয়া জলের গর্জনের মতো, এবং তাঁর মহিমায় পৃথিবী উজ্জ্বল হয়ে উঠল। \v 3 যে দর্শন আমি দেখলাম সেটি সেই দর্শনের মতো যা আমি দেখেছিলাম যখন তিনি নগর ধ্বংস করতে এসেছিলেন এবং কবার নদীর তীরে সেই দর্শনের মতো, আর আমি উপুড় হয়ে পড়লাম। \v 4 পূর্বমুখী দ্বারের মধ্যে দিয়ে সদাপ্রভুর মহিমা মন্দিরে ঢুকল। \v 5 পরে ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে ভিতরের উঠানে নিয়ে গেলেন, আর সদাপ্রভুর মহিমায় মন্দির ভরে গেল। \p \v 6 সেই ব্যক্তি যখন আমার পাশে দাড়িয়েছিলেন, আমি শুনলাম মন্দিরের মধ্যে থেকে কেউ যেন আমার সঙ্গে কথা বলছেন। \v 7 তিনি বললেন, “হে মানবসন্তান, এটাই আমার সিংহাসনের স্থান ও আমার পা রাখবার জায়গা। আমি এখানেই ইস্রায়েলীদের সঙ্গে চিরকাল বাস করব। ইস্রায়েল কুল—তারাও না বা তাদের রাজারাও না—তাদের ব্যভিচারের এবং উচ্চস্থলীতে তাদের রাজাদের মৃতদেহ দ্বারা আর কখনও আমার পবিত্র নাম অশুচি করবে না। \v 8 তারা আমার প্রবেশস্থলের পাশে তাদের প্রবেশস্থল করেছিল আর আমার চোকাঠের পাশে তাদের চৌকাঠ করেছিল এবং আমার ও তাদের মধ্যে কেবল একটি দেয়াল ছিল, তাদের ঘৃণ্য কাজ দ্বারা তারা আমার পবিত্র নাম কলঙ্কিত করেছিল। সেইজন্য আমি ক্রোধে তাদের ধ্বংস করেছিলাম। \v 9 এখন তারা তাদের ব্যভিচার এবং তাদের রাজাদের মৃতদেহ আমার সামনে থেকে দূর করুক, তাতে আমি চিরকাল তাদের মধ্যে বাস করব। \p \v 10 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুলের কাছে এই মন্দিরের বর্ণনা করো, যেন তারা তাদের পাপের জন্য লজ্জিত হয়। এর নকশাটার বিষয় চিন্তা করে দেখতে বলো, \v 11 আর তারা যদি তাদের সব কাজের জন্য লজ্জিত হয়, তবে মন্দিরের নকশার খুঁটিনাটি তাদের জানাও—তার ব্যবস্থা, তার বাইরে যাবার ও ভিতরে ঢুকবার পথ—তার সম্পূর্ণ নকশা এবং তার নিয়ম ও আইনকানুন। তার সবকিছু তাদের সামনে লেখ যাতে তারা তার নকশা অনুসারে কাজ করতে পারে এবং তার সব নিয়ম মেনে চলতে পারে। \p \v 12 “এই হল মন্দিরের ব্যবস্থা, পাহাড়ের উপরকার চারিদিকের সব এলাকা হবে মহাপবিত্র। এটাই মন্দিরের ব্যবস্থা। \s1 মহান যজ্ঞবেদির পুনঃসংস্কার \p \v 13 “মন্দিরের বেদির মাপ হাতের মাপ অনুসারে এইরকম, প্রত্যেক হাত ছিল এক হাত চার আঙুল করে। তার ভিত্তিটা এক হাত গভীর এবং এক হাত চওড়া, যার চারিদিকে এগারো ইঞ্চি এক চক্রবেড় হবে। আর এটাই বেদির উচ্চতা। \v 14 নিচের অংশটি ভিত্তি থেকে দু-হাত উঁচু ও এক হাত চওড়া, এবং ছোটো সোপানাকৃতি থেকে বড়ো সোপানাকৃতি পর্যন্ত চার হাত উঁচু ও এক হাত চওড়া। \v 15 বেদির উপরের যে অংশের উনুন চার হাত উঁচু, এবং তার উপরে চারটে শিং থাকবে। \v 16 বেদির উনুন চারকোণা হবে, বারো হাত লম্বা ও বারো হাত চওড়া। \v 17 উপরের শেলফও চারকোণা হবে, চোদ্দ হাত লম্বা ও চোদ্দ হাত চওড়া, যার চারিদিকে এক হাত বাড়ানো একটি বেড় থাকবে তার কিনারা আধ হাত উঁচু থাকবে। বেদির সিড়িগুলি হবে পূর্বমুখী।” \p \v 18 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, বেদিটা তৈরি হলে যেদিন সেটি সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে যেন তার উপরে হোমবলি ও রক্ত প্রক্ষেপ করা হয়, সেদিন এই নিয়ম পালন করা হবে। \v 19 সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, সাদোকের বংশের যে লেবীয় যাজকেরা আমার পরিচর্যা করার জন্য আমার কাছে আসে তাদের তুমি পাপার্থক বলিদানের জন্য একটি যুবা ষাঁড় দেবে। \v 20 তুমি তার কিছু রক্ত নিয়ে বেদির চারটে শিংয়ে, মাঝখানের অংশের চার কোনায় ও কিনারার সব দিকে লাগাবে, যেন বেদি শুদ্ধ হয় ও তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে। \v 21 পরে তুমি ওই পাপার্থক ষাঁড়টি নিয়ে যাবে এবং সেটি উপাসনার স্থানের বাইরে মন্দিরের নিরূপিত জায়গায় পুড়িয়ে দেবে। \p \v 22 “দ্বিতীয় দিনে তুমি পাপার্থক বলির জন্য একটি নিখুঁত পাঁঠা উৎসর্গ করবে, এবং বেদিটা শুচি করবে যেমন করে ষাঁড় দিয়ে করা হয়েছিল। \v 23 তোমার যখন সেটি শুচি করা হয়ে যাবে, তোমাকে একটি যুবা ষাঁড় ও পাল থেকে একটি মেষ উৎসর্গ করতে হবে, দুটোই নিখুঁত হতে হবে। \v 24 তুমি সেগুলি সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত করবে, এবং যাজকেরা তাদের উপরে নুন ছিটাবে আর সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমার্থে সেগুলি বলি দেবে। \p \v 25 “সাত দিন ধরে তুমি পাপার্থক বলির জন্য প্রতিদিন একটি করে পাঁঠা উৎসর্গ করবে; এছাড়াও তোমাকে একটি ষাঁড় ও পাল থেকে একটি মেষ দিতে হবে, দুটোই নিখুঁত হতে হবে। \v 26 সাত দিন ধরে বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে ও শুচি করবে; এইভাবে সেটি উৎসর্গ করবে। \v 27 এই দিনগুলি শেষ হলে পর, আট দিনের দিন থেকে, যাজকেরা সেই বেদির উপরে তোমাদের হোমার্থক ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করবে। তখন আমি তোমাদের গ্রহণ করব, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।” \c 44 \s1 শাসনকর্তা, লেবীয়েরা ও যাজকেরা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত \p \v 1 পরে সেই ব্যক্তি আমাকে উপাসনার স্থানের পূর্বমুখী বাইরের দ্বারের কাছে ফিরিয়ে আনলেন, এবং সেটি বন্ধ ছিল। \v 2 সদাপ্রভু আমাকে বলেন, “এই দ্বার বন্ধই থাকবে। এটি খোলা যাবে না; কেউ এটি দিয়ে ভিতরে ঢুকবে না। এটি বন্ধ থাকবে, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এর মধ্যে দিয়ে ঢুকেছেন। \v 3 কেবলমাত্র শাসনকর্তাই দ্বারের মধ্যে বসে সদাপ্রভুর সামনে খেতে পারবে। তিনি দ্বারের বারান্দার পথ দিয়ে ভিতরে আসবেন এবং একই পথ দিয়ে বাইরে যাবেন।” \p \v 4 তারপর সেই ব্যক্তি উত্তর দ্বারের পথে আমাকে মন্দিরের সামনে আনলেন। আমি দেখলাম সদাপ্রভুর মহিমায় সদাপ্রভুর মন্দির পরিপূর্ণ, আর আমি উবুড় হয়ে পড়লাম। \p \v 5 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, ভালো করে দেখো, ধ্যান দিয়ে শোনো এবং আমি তোমাকে সদাপ্রভুর মন্দিরের বিষয়ে সমস্ত নিয়মের কথা বলব তার প্রতি মনোযোগ দাও। মন্দিরে ঢোকার এবং উপাসনা স্থান থেকে বাইরে যাবার বিষয়ে মনোযোগ দাও। \v 6 বিদ্রোহী ইস্রায়েল কুলকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে ইস্রায়েল কুল! তোমাদের ঘৃণ্য কাজ যথেষ্ট হয়েছে। \v 7 তোমাদের সমস্ত ঘৃণ্য কাজের অতিরিক্ত, তোমরা আমার উপাসনার স্থানে মাংসে ও হৃদয়ে অচ্ছিন্নত্বক বিদেশিদের নিয়ে এসেছ, আমার মন্দিরকে অপবিত্র করেছ, তোমরা আমার উদ্দেশে খাবার, চর্বি ও রক্ত উৎসর্গ করেছ আর আমার নিয়ম ভেঙেছ। \v 8 আমার পবিত্র জিনিসগুলির প্রতি তোমাদের যে কর্তব্য করবার কথা তা না করে আমার উপাসনার স্থানের দায়িত্ব তোমরা অন্যদের হাতে তুলে দিয়েছ। \v 9 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, মাংসে ও হৃদয়ে অচ্ছিন্নত্বক কোনও বিদেশি আমার উপাসনার স্থানে ঢুকতে পারবে না, এমনকি, ইস্রায়েলীদের মধ্যে বাস করা বিদেশিরাও পারবে না। \p \v 10 “ ‘ইস্রায়েলীরা যখন বিপথে গিয়েছিল তখন তাদের সঙ্গে যে লেবীয়েরা আমাকে ছেড়ে তাদের প্রতিমাগুলির পিছনে ঘুরে বেরিয়ে আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল তাদের পাপের ফল তাদের বহন করতেই হবে। \v 11 তবুও তারা আমার উপাসনার স্থানের পরিচারক হবে, মন্দিরের দ্বারের দায়িত্বে থাকবে ও পরিচারক হবে; তারা লোকদের জন্য হোমবলি ও অন্য বলির পশু বধ করবে এবং তাদের পরিচর্যার জন্য তাদের সামনে দাঁড়াবে। \v 12 কিন্তু তারা প্রতিমাগুলির সামনে লোকদের সেবা করেছে এবং ইস্রায়েল কুলকে পাপে ফেলছে, সেইজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার হাত তুলেছি যেন তারা নিজেদের পাপের ফলভোগ করে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 13 তারা যাজক হিসেবে আমার পরিচর্যা করার জন্য আমার কাছে আসবে না কিংবা আমার কোনও পবিত্র অথবা মহাপবিত্র জিনিসের কাছে আসতে পারবে না, তাদের ঘৃণ্য কাজের লজ্জা তাদের বহন করতেই হবে। \v 14 তবুও মন্দির পাহারা দেবার জন্য ও সেখানকার সমস্ত কাজের ভার আমি তাদের উপর দেব। \p \v 15 “ ‘কিন্তু ইস্রায়েল সন্তানগণ যখন আমাকে ছেড়ে বিপথে গিয়েছিল, তখন সাদোকের সন্তান যে লেবীয় যাজকেরা আমার উপাসনার স্থানে বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাদের কর্তব্য করেছে, তারাই আমার পরিচর্যা করার জন্য আমার কাছে আসতে পারবে; আমার উদ্দেশে চর্বি ও রক্ত উৎসর্গ করার জন্য আমার সামনে দাঁড়াতে পারবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \v 16 তারাই কেবল আমার উপাসনার স্থানে ঢুকতে পারবে; তারাই কেবল আমার পরিচর্যা করার জন্য আমার টেবিলের কাছে আসতে পারবে ও আমার রক্ষণীয় রক্ষা করবে। \p \v 17 “ ‘ভিতরের উঠানের দ্বারগুলি দিয়ে তারা যখন ঢুকবে তখন তাদের মসিনার পোশাক পরতে হবে; ভিতরের উঠানের দ্বারগুলির কাছে কিংবা মন্দিরের মধ্যে পরিচর্যা করার সময় তারা কোনও পশমের পোশাক পরতে পারবে না। \v 18 তাদের মাথায় মসিনার পাগড়ি থাকবে এবং তারা মসিনার জাঙিয়া পরবে। যাতে ঘাম হয় এমন কোনও কাপড় তারা পরবে না। \v 19 তারা যখন বাইরের উঠানে থাকা লোকদের কাছে যাবে তখন পরিচর্যার জন্য তারা যে পোশাক পরেছিল তা খুলে পবিত্র ঘরে রেখে অন্য পোশাক পরবে, যাতে তাদের পোশাকের ছোঁয়ায় লোকেরা আমার উদ্দেশ্যে আলাদা না হয়ে যায়। \p \v 20 “ ‘তাদের মাথার চুল তারা কামিয়ে ফেলবে না কিংবা চুল বড়ো রাখবে না কিন্তু চুল ছোটো করে কাটবে। \v 21 ভিতরের উঠানে ঢুকবার সময় কোনও যাজক যেন সুরা পান না করে। \v 22 তারা বিধবাকে কিংবা পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করবে না; তারা কেবল ইস্রায়েল কুলের কুমারীকে অথবা যাজকের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করতে পারবে। \v 23 তারা আমার লোকদের পবিত্র ও সাধারণের পার্থক্যের বিষয়ে শিক্ষা দেবে এবং শুচি ও অশুচির মধ্যে কেমন করে পার্থক্য করতে হয় তা দেখিয়ে দেবে। \p \v 24 “ ‘কোনও বিতর্ক হলে, যাজকেরা বিচারকের ভূমিকা পালন করবে এবং আমার বিধান অনুসারে সিদ্ধান্ত নেবে। আমার সমস্ত পর্বগুলির জন্য তারা আমার বিধান ও বিধিসকল পালন করবে, এবং আমার বিশ্রামদিনগুলির পবিত্রতা রক্ষা করবে। \p \v 25 “ ‘যাজক কোনও মৃত ব্যক্তির কাছে গিয়ে নিজেকে অশুচি করবে না; কিন্তু যদি সেই মৃত ব্যক্তি তার মা অথবা বাবা, ছেলে অথবা মেয়ে, ভাই অথবা অবিবাহিত বোন হয়, তাহলে সে নিজেকে অশুচি করতে পারে। \v 26 শুচি হবার পর তাকে সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে। \v 27 পরে যেদিন সে পরিচর্যা করার জন্য মন্দিরের ভিতরের উঠানে যাবে সেদিন তাকে নিজের জন্য পাপার্থক বলি উৎসর্গ করতে হবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \p \v 28 “ ‘যাজকদের সম্পত্তি বলতে কেবল আমিই থাকব। তোমরা ইস্রায়েলের মধ্যে তাদের কোনও সম্পত্তি দেবে না; আমিই তাদের সম্পত্তি হব। \v 29 শস্য-নৈবেদ্য, পাপার্থক-নৈবেদ্য ও দোষার্থক-নৈবেদ্য তাদের খাবার হবে, এবং ইস্রায়েল দেশে সদাপ্রভুর উদ্দেশে দেওয়া প্রত্যেকটি জিনিসই তাদের হবে। \v 30 সব ফসলের অগ্রিমাংশের সবচেয়ে ভালো অংশ এবং তোমাদের সমস্ত বিশেষ উপহারগুলি যাজকদের হবে। তোমাদের নতুন ময়দার অগ্রিমাংশ তোমরা তাদের দেবে যেন তোমাদের পরিবারের উপর আশীর্বাদ থাকে। \v 31 মরে গেছে কিংবা বুনো জানোয়ার ছিঁড়ে ফেলেছে এমন কোনও পাখি অথবা পশু যাজকেরা খাবে না। \c 45 \s1 ইস্রায়েল সম্পূর্ণরূপে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত \p \v 1 “ ‘তোমরা যখন সম্পত্তি হিসেবে দেশের জমি ভাগ করে দেবে তখন 25,000 মাপকাঠি\f + \fr 45:1 \fr*\ft প্রায় 13 কিলোমিটার, \+xt 3|link-href="EZK 45:3"\+xt*, \+xt 5|link-href="EZK 45:5"\+xt* ও \+xt 6|link-href="EZK 45:6"\+xt* পদেও আছে\ft*\f* লম্বা ও 20,000\f + \fr 45:1 \fr*\ft (আরও দেখুন \+xt 3|link-href="EZK 45:3"\+xt* ও \+xt 5|link-href="EZK 45:5"\+xt* পদ ও \+xt 48:9\+xt*)\ft*\f* মাপকাঠি\f + \fr 45:1 \fr*\ft প্রায় 11 কিলোমিটার\ft*\f* চওড়া একখণ্ড জমি সদাপ্রভুকে উপহার দেবে, সেই পুরো এলাকাটাই হবে পবিত্র। \v 2 এর মধ্যে, 500 মাপকাঠি\f + \fr 45:2 \fr*\ft প্রায় 265 মিটার\ft*\f* লম্বা ও 500 মাপকাঠি চওড়া একটি অংশ উপাসনার স্থানের জন্য থাকবে, তার চারপাশে 50 মাপকাঠি\f + \fr 45:2 \fr*\ft প্রায় 27 মিটার\ft*\f* খোলা জায়গা থাকবে। \v 3 সেই পুরো পবিত্র এলাকার মধ্য থেকে 25,000 মাপকাঠি লম্বা ও 10,000 মাপকাঠি\f + \fr 45:3 \fr*\ft প্রায় 5.3 কিলোমিটার\ft*\f* চওড়া একটি অংশ মেপে রাখবে। এর মধ্যেই হবে উপাসনার স্থান, অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থান। \v 4 এটি হবে দেশের পবিত্র অংশ যেটা যাজকদের জন্য, যারা উপাসনার স্থানের পরিচর্যা করে এবং সদাপ্রভুর সেবা করার জন্য তাঁর সামনে এগিয়ে যায়। এই জায়গাতেই হবে তাদের বাসস্থান এবং উপাসনার স্থানের পবিত্রস্থান। \v 5 আবার 25,000 মাপকাঠি লম্বা ও 10,000 মাপকাঠি চওড়া জায়গা সেই লেবীয়দের অধিকারে থাকবে, যারা মন্দিরে পরিচর্যা করে, তাদের অধিকারে এই নগর থাকবে যেখানে তারা বাস করবে। \p \v 6 “ ‘পবিত্র এলাকার পাশে 5,000 মাপকাঠি\f + \fr 45:6 \fr*\ft প্রায় 2.7 কিলোমিটার\ft*\f* চওড়া ও 25,000 মাপকাঠি লম্বা একটি অংশ নগরের জন্য উপহার রূপে রাখতে হবে; এটি সমস্ত ইস্রায়েল কুলের জন্য হবে। \p \v 7 “ ‘পবিত্র এলাকা ও নগরের সীমানার উভয় পাশের জমি শাসনকর্তার হবে। শাসনকর্তার এই দুই জায়গা দেশের পশ্চিম প্রান্তের পশ্চিমে ও পূর্ব প্রান্তের পূর্বে এবং লম্বায় পশ্চিম সীমা থেকে পূর্ব সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত অংশ হবে। \v 8 এই জায়গা ইস্রায়েল দেশের শাসনকর্তার অধিকারে থাকবে। এবং আমার শাসনকর্তারা আমার লোকদের উপর আর অত্যাচার করবে না কিন্তু ইস্রায়েল কুলকে তার নিজের নিজের বংশানুসারে দেশ দেবে। \p \v 9 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে ইস্রায়েলের শাসনকর্তারা! তোমাদের যথেষ্ট হয়েছে। এখন দৌরাত্ম্য ও নিপীড়ন করা ছেড়ে দিয়ে তোমরা যথাযথ ও ন্যায্য কাজ করো। আমার লোকদের অধিকারচ্যুত করা বন্ধ করো, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \v 10 তোমরা ন্যায্য দাঁড়িপাল্লা, ন্যায্য ঐফা\f + \fr 45:10 \fr*\ft প্রায় 22 লিটার\ft*\f* ও ন্যায্য বাৎ\f + \fr 45:10 \fr*\ft প্রায় 22 লিটার\ft*\f* ব্যবহার করো। \v 11 ঐফা ও বাৎ-এর মাপ সমান হবে, এক বাৎ হোমরের দশ ভাগের এক ভাগ এবং এক ঐফা হোমরের দশ ভাগের এক ভাগ; এই দুটোই মাপা হবে হোমরের অনুসারে। \v 12 এক শেকলে\f + \fr 45:12 \fr*\ft প্রায় 12 গ্রাম\ft*\f* থাকবে কুড়ি গেরা। কুড়ি শেকল, পঁচিশ শেকল ও পনেরো শেকলে এক মানি\f + \fr 45:12 \fr*\ft 60 শেকল, অথবা, প্রায় 690 গ্রাম\ft*\f* হবে। \s1 উৎসর্গের জিনিস ও পবিত্র দিন \p \v 13 “ ‘তোমরা এই বিশেষ উপহার উৎসর্গ করবে: গমের হোমর থেকে ঐফার\f + \fr 45:13 \fr*\ft প্রায় 2.7 কিলোগ্রাম\ft*\f* ষষ্ঠাংশ এবং যবের হোমর থেকে ঐফার\f + \fr 45:13 \fr*\ft প্রায় 2.3 কিলোগ্রাম\ft*\f* ষষ্ঠাংশ। \v 14 তেলের পরিমাণ মাপবার জন্য বাৎ-এর মাপ ব্যবহার করতে হবে যা এক কোর থেকে বাৎ\f + \fr 45:14 \fr*\ft প্রায় 2.2 লিটার\ft*\f*-এর দশমাংশ। (দশ বাৎ-এর সমান এক হোমর আর এক হোমরের সমান এক কোর) \v 15 ইস্রায়েল দেশের মধ্যে ভালো জমিতে চরে এমন প্রতি দুশো মেষের মধ্যে একটি মেষ দেবে। লোকদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য এগুলি শস্য-নৈবেদ্যের, হোমবলির ও মঙ্গলার্থক বলির জন্য ব্যবহার করা হবে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। \v 16 দেশের সব লোক ইস্রায়েলের শাসনকর্তাকে এই বিশেষ উপহার দেবে। \v 17 শাসনকর্তার কর্তব্য হবে অমাবস্যায় ও বিশ্রামবারে, সমস্ত উৎসবে হোমবলি, শস্য-নৈবেদ্য ও পেয়-নৈবেদ্য উৎসর্গ করা। তিনি ইস্রায়েল কুলের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য পাপার্থক বলি\f + \fr 45:17 \fr*\ft আরও \+xt 19|link-href="EZK 45:19"\+xt*, \+xt 22|link-href="EZK 45:22"\+xt*, \+xt 23|link-href="EZK 45:23"\+xt* ও \+xt 25|link-href="EZK 45:25"\+xt* পদে আছে\ft*\f*, শস্য-নৈবেদ্য এবং হোম ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করবেন। \p \v 18 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, প্রথম মাসের প্রথম দিনে তুমি একটি নিখুঁত যুবা ষাঁড় নিয়ে উপাসনার স্থানকে শুচি করবে। \v 19 আর যাজক সেই পাপার্থক বলির রক্তের কিছুটা নিয়ে মন্দিরের চৌকাঠে, বেদির উপরের অংশের চার কোণে এবং ভিতরের উঠানের দ্বারের বাজুতে দেবে। \v 20 যারা ভুল করে বা অজ্ঞানতাবশত মন্দিরের বিরুদ্ধে কোনো পাপ করে ফেলে তোমরা তাদের জন্য মাসের সপ্তম দিনে ওই একই কাজ করবে; অতএব তোমরা মন্দিরের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে। \p \v 21 “ ‘প্রথম মাসের চোদ্দ দিনের দিন তোমরা নিস্তারপর্ব পালন করবে, এই পর্বটা সাত দিনের, সেই সময় তোমাদের তাড়ীশূন্য রুটি খেতে হবে। \v 22 সেদিন শাসনকর্তা তার নিজের ও ইস্রায়েল দেশের সব লোকদের জন্য পাপার্থক বলি হিসেবে একটি ষাঁড় উৎসর্গ করবে। \v 23 সেই পর্বের সাত দিনের প্রত্যেকদিন নিখুঁত সাতটা ষাঁড় ও সাতটা মেষ দিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে তাকে হোমার্থক বলি, এবং প্রতিদিন একটি পুরুষ ছাগল পাপার্থক বলি জন্য উৎসর্গ করবে। \v 24 তাকে শস্য-নৈবেদ্যের জন্য প্রতি ষাঁড়ের জন্য এক ঐফা ও প্রতি মেষের জন্য এক ঐফা, ও প্রতি ঐফার জন্য এক হিন\f + \fr 45:24 \fr*\ft প্রায় 3.8 লিটার\ft*\f* জলপাই তেল উৎসর্গ করতে হবে। \p \v 25 “ ‘সাত মাসের পনেরো দিনের দিন যে সাত দিনের পর্ব আরম্ভ হয় সেই সময় শাসনকর্তা পাপার্থক বলি, হোমার্থক বলি, শস্য-নৈবেদ্য এবং তেল উৎসর্গ করবে। \c 46 \p \v 1 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ভিতরের উঠানের পূর্বমুখী দ্বার কাজের ছয় দিন বন্ধ থাকবে, কিন্তু বিশ্রামদিনে ও অমাবস্যার দিনে সেটি খোলা হবে। \v 2 শাসনকর্তা বাইরে থেকে দ্বারের বারান্দার পথ দিয়ে ঢুকে চৌকাঠের কাছে দাঁড়াবেন। যাজকেরা তাঁর হোমার্থক বলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করবেন। সে দ্বারে ঢুকবার মুখে উপাসনা করবেন এবং তারপর বের হয়ে যাবেন, কিন্তু সন্ধ্যা না হওয়া পর্যন্ত দ্বার বন্ধ করা যাবে না। \v 3 দেশের লোকেরা বিশ্রামবার ও অমাবস্যাতে সেই দ্বারের বাইরে সদাপ্রভুর উপাসনা করবে। \v 4 বিশ্রামদিনে শাসনকর্তাকে সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমবলি উৎসর্গের জন্য ছয়টা পুরুষ মেষশাবক ও একটি মেষ আনতে হবে, সবগুলিই যেন নিখুঁত হয়। \v 5 শস্য-নৈবেদ্যরূপে মেষের জন্য এক ঐফা ও মেষশাবকের জন্য তার হাতে যতটা উঠবে এবং প্রতি ঐফার\f + \fr 46:5 \fr*\ft প্রায় 16 কিলোগ্রাম; 7 ও 11 পদেও আছে\ft*\f* জন্য এক হিন\f + \fr 46:5 \fr*\ft প্রায় 3.8 লিটার; 7 ও 11 পদেও আছে\ft*\f* জলপাই তেল। \v 6 অমাবস্যার দিনে তাকে একটি যুবা ষাঁড়, ছয়টা মেষশাবক ও একটি মেষ উৎসর্গ করতে হবে, সবগুলিই যেন নিখুঁত হয়। \v 7 শস্য-নৈবেদ্যরূপে সে ষাঁড়ের জন্য এক ঐফা, মেষের জন্য এক ঐফা ও মেষশাবকের জন্য তার হাতে যতটা উঠবে এবং প্রতি ঐফার জন্য এক হিন তেল দেবে। \v 8 শাসনকর্তা যখন আসবে, তখন দ্বারের বারান্দার পথ দিয়ে আসবে, এবং সেই একই পথ দিয়ে বের হয়ে আসতে হবে। \p \v 9 “ ‘নির্দিষ্ট সব পর্বের সময়ে দেশের লোকেরা যখন উপাসনার জন্য সদাপ্রভুর সামনে আসবে তখন যে কেউ উত্তরের দ্বার দিয়ে ঢুকবে সে দক্ষিণের দ্বার দিয়ে বের হয়ে যাবে আর যে দক্ষিণের দ্বার দিয়ে ঢুকবে সে উত্তরের দ্বার দিয়ে বের হয়ে যাবে। লোকে যে দ্বার দিয়ে ঢুকবে সেই দ্বার দিয়ে বেরিয়ে যাবে না, কিন্তু প্রত্যেককে ঢুকবার দ্বারের উল্টো দিকের দ্বার দিয়ে বের হয়ে যেতে হবে। \v 10 শাসনকর্তাকে লোকদের সঙ্গে ভিতরে যেতে হবে এবং বাইরে যাবার সময় লোকদের সঙ্গেই বের হয়ে যেতে হবে। \v 11 উৎসবে ও নির্দিষ্ট পর্বে, শস্য-নৈবেদ্য একটি ষাঁড়ের জন্য এক ঐফা, মেষের জন্য এক ঐফা ও মেষশাবকের জন্য তার হাতে যতটা উঠবে এবং প্রতি ঐফার জন্য এক হিন তেল দিতে হবে। \p \v 12 “ ‘শাসনকর্তা যখন সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিজের ইচ্ছায় কোনও উৎসর্গ করতে চায়—সেটি হোমবলি অথবা মঙ্গলার্থক বলি—তখন তার জন্য পূর্বমুখী দ্বারটা খুলে দিতে হবে। বিশ্রামদিনের মতো করেই সে তার হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করবে। তারপর সে বাইরে গেলে দ্বারটা বন্ধ করা হবে। \p \v 13 “ ‘প্রতিদিন তুমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমবলির জন্য একটি এক বছরের নিখুঁত মেষশাবক উৎসর্গ করবে; প্রতিদিন সকালে তোমাদের তা করতে হবে। \v 14 এছাড়া এর সঙ্গে রোজ সকালে তোমাদের শস্য-নৈবেদ্যের জিনিসও দিতে হবে, এতে থাকবে ঐফার ষষ্ঠাংশ এবং ময়দা ভিজানোর জন্য হিনের তৃতীয়াংশ তেল। সদাপ্রভুর উদ্দেশে এই শস্য-নৈবেদ্যের অনুষ্ঠান একটি স্থায়ী নির্দেশ। \v 15 এইভাবে প্রত্যেকদিন সকালে সেই মেষশাবক ও শস্য-নৈবেদ্য এবং তেল নিয়মিত হোমবলি জন্য যোগান দিতে হবে। \p \v 16 “ ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যদি শাসনকর্তা তার সম্পত্তি থেকে তার কোনও ছেলেকে কোনও জায়গা দান করে, তবে তা তার বংশধরদেরও অধিকারে থাকবে; তারা সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। \v 17 কিন্তু যদি সে তার সম্পত্তি থেকে তার কোনও দাসকে কোনও জায়গা দান করে, তবে তা মুক্তিবছর পর্যন্ত তার থাকবে; পরে সেটি আবার শাসনকর্তার দখলে আসবে। শাসনকর্তার সম্পত্তি কেবল তার ছেলেরাই পাবে; সেটি তাদেরই হবে। \v 18 লোকদের তাড়িয়ে দিয়ে শাসনকর্তা তাদের কোনও সম্পত্তিই দখল করতে পারবে না। সে কেবল তার নিজের সম্পত্তি থেকেই তার ছেলেদের দিতে পারবে, যাতে আমার লোকদের মধ্য থেকে কেউই তার সম্পত্তির মালিকানা না হারায়।’ ” \p \v 19 তারপর সেই ব্যক্তি দ্বারের পাশের ঢুকবার পথ দিয়ে যাজকদের উত্তরমুখী ঘরগুলির সামনে আনলেন, এবং পশ্চিমদিকে পিছনে একটি জায়গা দেখালেন। \v 20 তিনি আমাকে বললেন, “এটা সেই জায়গা যেখানে যাজকেরা দোষার্থক-নৈবেদ্য ও পাপার্থক বলি রান্না করবে এবং শস্য-নৈবেদ্য সেঁকে নেবে যেন সেই পবিত্র জিনিসগুলি বাইরের উঠানে আনতে না হয় এবং লোকেরা পবিত্র হয়ে যায়।” \p \v 21 তারপর তিনি আমাকে বাইরের উঠানে এনে তার চারটি কোনা ঘুরিয়ে নিয়ে আসলেন, আর আমি প্রত্যেকটা কোনায় আরেকটা করে ছোটো উঠান দেখতে পেলাম। \v 22 উঠানের চার কোনায় চল্লিশ হাত লম্বা ও ত্রিশ হাত চওড়া\f + \fr 46:22 \fr*\ft প্রায় 21 মিটার লম্বা ও 16 মিটার চওড়া\ft*\f* প্রাচীর দিয়ে ঘেরা উঠান ছিল আর সেগুলি একই মাপের ছিল। \v 23 সেই চারটি উঠানের প্রত্যেকটির ভিতরের চারপাশে দেয়ালের সঙ্গে লাগানো পাথরের তাক ছিল, যেখানে তার নিচে চারপাশে উনুন ছিল। \v 24 তখন তিনি আমাকে বললেন, “এগুলি হল রান্নাঘর যেখানে মন্দিরের পরিচারকেরা লোকদের উৎসর্গ করা বলি রান্না করবে।” \c 47 \s1 মন্দির থেকে বের হওয়া নদী \p \v 1 তারপর সেই ব্যক্তি আমাকে মন্দিরের ঢুকবার মুখের কাছে ফিরিয়ে আনলেন, আর আমি দেখলাম মন্দিরের ঢুকবার মুখের তলা থেকে জল বের হয়ে পূর্বদিকে বইছে। (কারণ মন্দির পূর্বমুখী ছিল) সেই জল মন্দিরের দক্ষিণ পাশের তলা থেকে বেদির দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল। \v 2 পরে তিনি উত্তর দ্বারের মধ্য দিয়ে আমাকে বের করে আনলেন এবং বাইরের পথ দিয়ে ঘুরিয়ে পূর্বমুখী বাইরের দ্বারের কাছে নিয়ে গেলেন, আর সেই জল-দ্বারের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল। \p \v 3 মাপের দড়ি হাতে নিয়ে তিনি মাপতে মাপতে 1,000 হাত\f + \fr 47:3 \fr*\ft প্রায় 530 মিটার\ft*\f* পূর্বদিকে গেলেন আর আমাকে গোড়ালি-ডোবা জলের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলেন। \v 4 তারপর তিনি আর 1,000 হাত মেপে আমাকে হাঁটু জলের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলেন। তারপর তিনি আর 1,000 হাত মেপে কোমর পর্যন্ত জলের মধ্য দিয়ে আমাকে নিয়ে গেলেন। \v 5 তারপর তিনি আর 1,000 হাত মাপলেন, কিন্তু জল তখন নদী হয়ে যাওয়াতে আমি পার হতে পারলাম না, কারণ জল বেড়ে গিয়েছিল এবং সাঁতার দেবার মতো গভীর হয়েছিল, এমন নদী হয়েছিল যা কেউ হেঁটে পার হতে পারে না। \v 6 তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে মানবসন্তান, তুমি কি এটি দেখলে?” \p তারপর তিনি আমাকে আবার নদীর তীরে নিয়ে গেলেন। \v 7 সেখানে পৌঁছে আমি নদীর দুই ধারেই অনেক গাছপালা দেখতে পেলাম। \v 8 তিনি আমাকে বললেন, “এই জল পূর্বদিকে বয়ে যাচ্ছে এবং অরাবার\f + \fr 47:8 \fr*\ft জর্ডন-উপত্যকা\ft*\f* মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে। যখন সেটি গিয়ে সমুদ্রে পড়ে তখন সেখানকার নোনতা জল মিষ্টি হয়ে যায়। \v 9 যেখান দিয়ে এই নদীটা বয়ে যাবে সেখানে সব রকমের ঝাঁক বাঁধা জীবন্ত প্রাণী ও প্রচুর মাছ বাস করবে, কারণ এই জল যেখান দিয়ে বয়ে যাবে সেখানকার জল মিষ্টি করে তুলবে; সেইজন্য যেখান দিয়ে নদীটা বয়ে যাবে সেখানকার সবকিছুই বাঁচবে। \v 10 জেলেরা নদীর তীরে দাঁড়াবে; ঐন-গদী থেকে ঐন-ইগ্লয়িম পর্যন্ত জাল মেলে দেবার জায়গা হবে। ভূমধ্যসাগরের মাছের মতো সেখানেও বিভিন্ন রকমের অনেক মাছ পাওয়া যাবে। \v 11 কিন্তু জলা জায়গা ও বিলের জল মিষ্টি হবে না; সেগুলি নুনের জন্য থাকবে। \v 12 নদীর দুই ধারেই সব রকমের ফলের গাছ জন্মাবে। সেগুলির পাতা শুকিয়ে যাবে না, ফলও শেষ হবে না। প্রতি মাসেই তাতে ফল ধরবে, কারণ উপাসনার স্থান থেকে জল তার মধ্যে বয়ে আসছে। সেগুলির ফল খাবার জন্য আর পাতা সুস্থ হবার জন্য ব্যবহার করা হবে।” \s1 ইস্রায়েল দেশের সীমানা \p \v 13 সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমরা ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর মধ্যে যে দেশটি ভাগ করে দেবে, তার সীমা এইরকম, যোষেফের দুই অংশ হবে। \v 14 তোমরা তা সমান ভাগে ভাগ করে নেবে। কারণ এই দেশটি আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেব বলে হাত তুলে শপথ করেছিলাম; এই দেশটি তোমাদেরই সম্পত্তি হবে। \b \li4 \v 15 “দেশের সীমানা হবে এই: \b \li1 “উত্তর দিকের সীমানা হবে ভূমধ্যসাগর থেকে লেবোহমাৎ ছাড়িয়ে হিৎলোনের রাস্তা বরাবর সদাদ পর্যন্ত, \v 16 বরোথা\f + \fr 47:16 \fr*\ft সদাদে যাবার রাস্তা\ft*\f* এবং সিব্রয়িম (যা দামাস্কাসের ও হমাতের সীমানার মধ্যে) হৌরণের সীমানার কাছে হৎসর-হত্তীকোন পর্যন্ত। \v 17 এই সীমানা চলে যাবে ভূমধ্যসাগর থেকে দামাস্কাসের উত্তর সীমার পাশে হৎসর-ঐনন\f + \fr 47:17 \fr*\ft হিব্রুতে, ইনন\ft*\f* পর্যন্ত, অর্থাৎ উত্তর দিকের হমাতের সীমানা পর্যন্ত। এটাই হবে উত্তর দিকের সীমানা। \li1 \v 18 পূর্বদিকের সীমানা, হৌরণ ও দামাস্কাসের মধ্য দিয়ে গিলিয়দ ও ইস্রায়েল দেশের মধ্যেকার জর্ডন নদী বরাবর গিয়ে মরুসাগরের তামার পর্যন্ত। এটাই হবে পূর্বদিকের সীমানা। \li1 \v 19 দক্ষিণ দিকের সীমানা মরুসাগরের তামর থেকে কাদেশের মরীবার জল পর্যন্ত গিয়ে মিশরের মরা নদী বরাবর ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত চলে যাবে। এটিই হবে দক্ষিণের সীমানা। \li1 \v 20 পশ্চিমদিকের সীমানা হবে ভূমধ্যসাগর বরাবর লেবো হমাতের উল্টো দিক পর্যন্ত। এটিই হবে পশ্চিমদিকের সীমানা। \b \p \v 21 “ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলি অনুসারে তোমরা নিজেদের মধ্যে দেশটা ভাগ করে নেবে। \v 22 তোমাদের মধ্যে যেসব বিদেশি তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে তাদের জন্য ও তোমাদের জন্য দেশটি সম্পত্তি হিসেবে ভাগ করে দেবে। তাদের তোমরা দেশে জন্মানো ইস্রায়েলী হিসেবে ধরবে; তোমাদের সঙ্গে তারাও ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে জমির ভাগ পাবে। \v 23 যে গোষ্ঠীর মধ্যে সেই বিদেশি বসবাস করবে সেখানেই তোমরা তাকে জমির অধিকার দেবে,” সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \c 48 \s1 দেশের ভাগ \li4 \v 1 “এসব গোষ্ঠী, নাম অনুসারে তালিকা দেশের উত্তর সীমায় দান একটি অংশ পাবে; \b \li1 “সেটি ভূমধ্যসাগর থেকে হিৎলোনের রাস্তা বরাবর লেবো-হমাৎ পর্যন্ত যাবে; হৎসর-ঐনন পর্যন্ত দামাস্কাসের সীমাতে, উত্তর দিকে হমাতের পাশে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 2 আশের একটি অংশ পাবে; সেটি দানের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 3 নপ্তালি একটি অংশ পাবে; সেটি আশেরের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 4 মনঃশি একটি অংশ পাবে; সেটি নপ্তালির সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 5 ইফ্রয়িম একটি অংশ পাবে; সেটি মনঃশির সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 6 রূবেণ একটি অংশ পাবে; সেটি ইফ্রয়িমের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 7 যিহূদা একটি অংশ পাবে; সেটি রূবেণের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \b \p \v 8 “যিহূদার সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত থাকবে সেই জায়গাটা যা তোমরা বিশেষ এক উপহার রূপে আলাদা করে রাখবে। সেটি চওড়ায় হবে 25,000 হাত\f + \fr 48:8 \fr*\ft প্রায় 13 কিলোমিটার; 9, 10, 13, 15, 20 ও 21 পদেও আছে\ft*\f* এবং লম্বায় হবে অন্যান্য গোষ্ঠীর অংশের মতো দেশের পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত; সেই জায়গার মাঝখানে থাকবে উপাসনার স্থান। \p \v 9 “সেই আলাদা করা জায়গা থেকে তোমরা একটি অংশ সদাপ্রভুকে উপহার দেবে যেটা লম্বায় হবে 25,000 হাত এবং চওড়ায় 10,000 হাত\f + \fr 48:9 \fr*\ft প্রায় 5.3 কিলোমিটার; 10, 13 ও 18 পদেও আছে\ft*\f*। \v 10 এটি হবে যাজকদের জন্য পবিত্র অংশ। এটি উত্তর দিকে 25,000 মাপকাঠি, পশ্চিমদিকে 10,000 হাত, পূর্বদিকে 10,000 হাত এবং দক্ষিণ দিকে 25,000 হাত। তার মাঝখানে থাকবে সদাপ্রভুর উপাসনার স্থান। \v 11 এই অংশটি সাদোক-সন্তানদের মধ্যে পবিত্রকৃত যাজকদের জন্য হবে, তারা আমার সেবায় বিশ্বস্ত ছিল এবং ইস্রায়েলীদের সঙ্গে বিপথে যাওয়া লেবীয়দের মতো তারা বিপথে যায়নি। \v 12 দেশের পবিত্র অংশ থেকে এটি হবে তাদের জন্য এক বিশেষ উপহার, এক মহাপবিত্র অংশ, যা লেবীয়দের সীমানার পাশে। \p \v 13 “যাজকদের সীমানার পাশে, লেবীয়েরা 25,000 হাত লম্বা ও 10,000 হাত চওড়া একটি জায়গা পাবে। সম্পূর্ণ অংশ লম্বায় 25,000 হাত ও চওড়ায় 10,000 হাত। \v 14 তারা তার কিছু যেন বিক্রি অথবা বদল না করে। সেটি সবচেয়ে ভালো জমি এবং তা অন্যদের হাতে দিয়ে দেওয়া চলবে না, কারণ সেটি সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র। \p \v 15 “বাকি অংশ, 5,000 হাত\f + \fr 48:15 \fr*\ft প্রায় 2.7 কিলোমিটার\ft*\f* চওড়া ও 25,000 হাত লম্বা, নগরের সাধারণ কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে, বাসস্থান ও পশু চরানোর জন্য। নগরটি তার মাঝখানে থাকবে \v 16 আর তার মাপ এই হবে উত্তর দিকে 4,500 হাত\f + \fr 48:16 \fr*\ft প্রায় 2.4 কিলোমিটার; 30, 32, 33 ও 34 পদেও আছে\ft*\f*, দক্ষিণ দিকে 4,500 হাত, পূর্বদিকে 4,500 হাত এবং পশ্চিমদিকে 4,500 হাত। \v 17 নগরে পশু চরাবার জায়গা থাকবে যা হবে উত্তর দিকে 250 হাত\f + \fr 48:17 \fr*\ft প্রায় 135 মিটার\ft*\f*, দক্ষিণ দিকে 250 হাত, পূর্বদিকে 250 হাত এবং পশ্চিমদিকে 250 হাত। \v 18 আর পবিত্র অংশের সামনে অবশিষ্ট জায়গা লম্বায় পূর্বদিকে 10,000 হাত এবং পশ্চিমদিকে 10,000 হাত। সেই জায়গায় যে ফসল ফলবে তা নগরের কর্মচারীদের জন্য হবে। \v 19 ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠী থেকে যারা এই নগরে কাজ করবে তারা এই জমি চাষ করবে। \v 20 সেই পুরো জায়গাটা হবে 25,000 হাত করে একটি চৌকো জায়গা। পবিত্র উপহার রূপে তোমরা নগরের সম্পত্তির সঙ্গে পবিত্র অংশ আলাদা করবে। \p \v 21 “নগরের সম্পত্তির এবং পবিত্র অংশের দুই পাশের যে বাকি অংশ থাকবে তা শাসনকর্তার জন্য। সেটি পূর্বদিকের পবিত্র অংশ থেকে 25,000 হাত পূর্বপ্রান্ত পর্যন্ত, এবং পশ্চিমদিক থেকে 25,000 হাত পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। অন্য সকলের অংশের সামনে শাসনকর্তার অংশ হবে, এবং পবিত্র অংশ ও মন্দিরের উপাসনার স্থান তার মাঝখানে হবে। \v 22 এইভাবে শাসনকর্তার জায়গার মাঝখানে থাকবে লেবীয়দের জায়গা এবং নগরের জায়গা। শাসনকর্তার এই জায়গাটা যিহূদার সীমানা এবং বিন্যামীনের সীমানার মধ্যে থাকবে। \b \li4 \v 23 “বাকি গোষ্ঠীগুলির এসব অংশ হবে বিন্যামীন একটি অংশ পাবে; \b \li1 “সেটি পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 24 শিমিয়োন একটি অংশ পাবে; সেটি বিন্যামীনের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 25 ইষাখর একটি অংশ পাবে; সেটি শিমিয়োনের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 26 সবূলূন একটি অংশ পাবে; সেটি ইষাখরের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 27 গাদ একটি অংশ পাবে; সেটি সবূলূনের সীমার কাছে পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত। \li1 \v 28 গাদের অংশের দক্ষিণের সীমানার কাছে দক্ষিণপ্রান্তের দিকে তামর থেকে কাদেশের মরীবার জল পর্যন্ত গিয়ে মিশরের মরা নদী বরাবর ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত চলে যাবে। \b \li4 \v 29 “এই দেশ ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলিকে সম্পত্তি হিসেবে তোমরা ভাগ করে দেবে, আর এগুলি হবে তাদের অংশ,” সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \s1 নতুন নগরের দ্বারগুলি \li4 \v 30 “এইগুলি হবে নগর থেকে বাইরে যাবার দ্বার উত্তর দিক থেকে শুরু, \b \li1 “যেটা 4,500 হাত লম্বা, \v 31 ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির নাম অনুসারে নগরের দ্বারগুলির নামকরণ হবে। উত্তর দিকের তিনটি দ্বারের নাম হবে রূবেণের দ্বার, যিহূদার দ্বার ও লেবির দ্বার। \li1 \v 32 পূর্বদিকে, মাপ হবে 4,500 হাত, তিনটি দ্বার থাকবে যোষেফের দ্বার, বিন্যামীনের দ্বার ও দানের দ্বার। \li1 \v 33 দক্ষিণ দিকে, মাপ হবে 4,500 হাত, তিনটি দ্বার থাকবে শিমিয়োনের দ্বার, ইষাখরের দ্বার ও সবূলূনের দ্বার। \li1 \v 34 পশ্চিমদিকে, মাপ হবে 4,500 হাত, তিনটি দ্বার থাকবে গাদের দ্বার, আশেরের দ্বার ও নপ্তালির দ্বার। \b \li4 \v 35 “পরিধি হবে 18,000 হাত\f + \fr 48:35 \fr*\ft প্রায় 9.5 কিলোমিটার\ft*\f*। \b \p “সেই সময় থেকে নগরের নাম হবে: সদাপ্রভু সেখানে আছেন।”