\id EXO - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h যাত্রা পুস্তক \toc1 যাত্রা পুস্তক \toc2 যাত্রা পুস্তক \toc3 যাত্রা \mt1 যাত্রা পুস্তক \c 1 \s1 ইস্রায়েলীরা নিপীড়িত হয় \li4 \v 1 এই হল ইস্রায়েলের সেই ছেলেদের নাম, যাঁরা প্রত্যেকে নিজের পরিবারসহ যাকোবের সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন: \b \li1 \v 2 রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি ও যিহূদা; \li1 \v 3 ইষাখর, সবূলূন ও বিন্যামীন; \li1 \v 4 দান ও নপ্তালি; \li1 গাদ ও আশের। \b \li4 \v 5 যাকোবের বংশধররা সংখ্যায় হল মোট সত্তরজন\f + \fr 1:5 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ; \+xt আদি পুস্তক 46:27\+xt* পদও দেখুন; মৃত সাগরের স্ক্রল ও সেপ্‌টুয়াজিন্ট (\+xt প্রেরিত 7:14\+xt* পদও দেখুন) অনুসারে 75 জন\ft*\f*; যোষেফ ইতিপূর্বে মিশরেই ছিলেন। \b \p \v 6 এদিকে যোষেফ ও তাঁর সব দাদা-ভাই, এবং সেই প্রজন্মের সবাই মারা গেলেন, \v 7 কিন্তু ইস্রায়েলীরা অত্যন্ত ফলবান হল; তারা প্রচুর পরিমাণে বংশবৃদ্ধি করল, সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে এত সংখ্যক হয়ে উঠল যে সে দেশটি তাদের দিয়েই পরিপূর্ণ হয়ে গেল। \p \v 8 পরে এমন এক নতুন রাজা মিশরের ক্ষমতায় এলেন, যাঁর কাছে যোষেফের কোনও গুরুত্বই ছিল না। \v 9 “দেখো,” তিনি তাঁর প্রজাদের বললেন, “ইস্রায়েলীরা আমাদের পক্ষে বড়ো বেশি সংখ্যক হয়ে পড়েছে। \v 10 এসো, আমরা তাদের প্রতি প্রজ্ঞাপূর্বক ব্যবহার করি, তা না হলে তারা এর চেয়েও বেশি সংখ্যক হয়ে যাবে এবং, যদি যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, তারা আমাদের শত্রুদের সাথে যোগ দেবে, আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে ও দেশ ছেড়ে চলে যাবে।” \p \v 11 অতএব তারা বাধ্যতামূলকভাবে পরিশ্রম করিয়ে ইস্রায়েলীদের নিগৃহীত করার জন্য তাদের উপর কড়া তত্ত্বাবধায়কদের নিযুক্ত করে দিল, এবং তারা ফরৌণের জন্য ভাণ্ডার-নগরীরূপে পিথোম ও রামিষেষ গেঁথে তুলল। \v 12 কিন্তু যত বেশি তাদের নিপীড়িত করা হল, তত বেশি তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হল ও তারা ছড়িয়ে পড়ল; অতএব মিশরীয়রা ইস্রায়েলীদের ভয় পেতে শুরু করল \v 13 এবং তারা নির্মমভাবে তাদের খাটাতে লাগল। \v 14 ইট ও চুনসুরকির কাজে এবং চাষবাসের সব ধরনের কাজে কঠোর পরিশ্রম করিয়ে তারা তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলল; মিশরীয়রা নির্মমভাবে তাদের কাছে কঠোর পরিশ্রম দাবি করল। \p \v 15 মিশরের রাজা শিফ্রা ও পূয়া নামাঙ্কিত হিব্রু ধাত্রীদের বললেন, \v 16 “প্রসব-শয্যায় তোমরা যখন সন্তান প্রসবের সময় হিব্রু মহিলাদের সাহায্য করছ, তখন যদি তোমরা দেখো যে শিশুটি এক পুত্রসন্তান, তবে তাকে মেরে ফেলো; কিন্তু সে যদি এক কন্যাসন্তান হয়, তবে তাকে বাঁচিয়ে রেখো।” \v 17 সেই ধাত্রীরা অবশ্য ঈশ্বরকে ভয় করত ও মিশরের রাজা তাদের যা করতে বললেন, তারা তা করল না; তারা শিশুপুত্রদের বাঁচিয়ে রাখল। \v 18 তখন মিশরের রাজা সেই ধাত্রীদের ডেকে পাঠিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা এরকম কেন করলে? তোমরা শিশুপুত্রদের বাঁচিয়ে রাখলে কেন?” \p \v 19 তারা ফরৌণকে উত্তর দিল, “হিব্রু মহিলারা মিশরীয় মহিলাদের মতো নয়; তারা সবলা ও ধাত্রীরা পৌঁছানোর আগেই তারা সন্তান প্রসব করে ফেলে।” \p \v 20 অতএব ঈশ্বর সেই ধাত্রীদের প্রতি দয়ালু হলেন এবং ইস্রায়েলীরা বৃদ্ধি পেয়ে আরও বহুসংখ্যক হয়ে উঠল। \v 21 আর যেহেতু সেই ধাত্রীরা ঈশ্বরকে ভয় করত, তাই তিনি তাদের নিজস্ব পরিবার দিলেন। \p \v 22 পরে ফরৌণ তাঁর সব প্রজাকে এই আদেশ দিলেন: “সদ্যজাত প্রত্যেকটি হিব্রু পুত্রসন্তানকে তোমরা অবশ্যই নীলনদে ছুঁড়ে ফেলবে, কিন্তু প্রত্যেকটি কন্যাসন্তানকে জীবিত রাখবে।” \c 2 \s1 মোশির জন্ম \p \v 1 এদিকে লেবি বংশের একজন লোক এক লেবীয় মহিলাকে বিয়ে করলেন, \v 2 আর সেই মহিলাটি গর্ভবতী হলেন ও এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। যখন তিনি দেখলেন যে শিশুটি দেখতে খুব সুন্দর, তখন তিনি তাকে তিন মাস ধরে লুকিয়ে রাখলেন। \v 3 কিন্তু যখন তিনি তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না, তখন তিনি তার জন্য নলখাগড়া দিয়ে একটি ডালি\f + \fr 2:3 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় ডালি মানে নৌকাও বোঝায়\ft*\f* তৈরি করলেন ও সেটিতে আলকাতরা ও পিচ লেপন করে দিলেন। পরে তিনি সেই শিশুটিকে সেটির মধ্যে শুইয়ে দিয়ে সেটি নীলনদের পাড়ে নলবনের মধ্যে রেখে দিলেন। \v 4 শিশুটির দিদি একটু দূরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য রাখছিল তার ভাইয়ের প্রতি কী ঘটতে চলেছে। \p \v 5 পরে ফরৌণের মেয়ে নীলনদে স্নান করার জন্য নামলেন, এবং তাঁর পরিচারিকারা তাঁর পাশে পাশে নদীর পাড় ধরে হাঁটছিল। তিনি নলবনের মধ্যে সেই ডালিটি দেখতে পেলেন এবং সেটি তুলে আনার জন্য তিনি তাঁর ক্রীতদাসীকে পাঠালেন। \v 6 তিনি সেটি খুললেন ও সেই শিশুটিকে দেখতে পেলেন। সে কাঁদছিল, আর তার জন্য তাঁর দুঃখ হল। “এ হিব্রু শিশুদের মধ্যেই একজন,” তিনি বললেন। \p \v 7 তখন সেই শিশুটির দিদি ফরৌণের মেয়েকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি গিয়ে হিব্রু মহিলাদের মধ্যে একজনকে ডেকে আনব, যে আপনার জন্য এই শিশুটির শুশ্রুষা করবে?” \p \v 8 “হ্যাঁ, যাও,” ফরৌণের মেয়ে উত্তর দিলেন। অতএব সেই মেয়েটি গিয়ে শিশুটির মাকে ডেকে আনল। \v 9 ফরৌণের মেয়ে তাঁকে বললেন, “এই শিশুটিকে নিয়ে যাও ও আমার হয়ে এর শুশ্রুষা করো, আর আমি তোমাকে বেতন দেব।” অতএব সেই মহিলাটি শিশুটিকে নিয়ে তার শুশ্রুষা করলেন। \v 10 শিশুটি যখন বড়ো হল, তখন তিনি তাকে ফরৌণের মেয়ের কাছে নিয়ে এলেন ও সে তাঁর ছেলে হয়ে গেল। “আমি তাকে জল থেকে টেনে তুলেছি,” এই বলে তিনি তার নাম দিলেন মোশি\f + \fr 2:10 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় মোশি শব্দটি শুনলে মনে হয় টেনে তোলা\ft*\f*। \s1 মোশি মিদিয়নে পালিয়ে যান \p \v 11 একদিন, মোশি বড়ো হয়ে যাওয়ার পর, যেখানে তাঁর নিজস্ব লোকজনেরা ছিল, তিনি সেখানে গেলেন ও দেখলেন তারা কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি দেখতে পেলেন একজন মিশরীয় লোক একজন হিব্রু লোককে মারধর করছে, যে কি না তাঁর নিজস্ব লোকজনের মধ্যেই একজন। \v 12 এদিক-ওদিক তাকিয়ে, কাউকে দেখতে না পেয়ে তিনি সেই মিশরীয় লোকটিকে হত্যা করলেন ও তাকে বালিতে পুঁতে দিলেন। \v 13 পরদিন তিনি বাইরে গেলেন ও দেখতে পেলেন দুজন হিব্রু লোক মারপিট করছে। যে অন্যায় করেছিল তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেন তোমার স্বজাতীয় হিব্রু ভাইকে মারছ?” \p \v 14 সেই লোকটি বলল, “কে তোমাকে আমাদের উপর শাসক ও বিচারক নিযুক্ত করেছে? যেভাবে তুমি সেই মিশরীয় লোকটিকে হত্যা করেছিলে, সেভাবে আমাকেও কি হত্যা করার কথা ভাবছ?” তখন মোশি ভয় পেয়ে গিয়ে ভাবলেন, “আমি যা করেছি তা নিশ্চয় লোকেরা জেনে ফেলেছে।” \p \v 15 ফরৌণ যখন তা শুনতে পেলেন, তখন তিনি মোশিকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু মোশি ফরৌণের কাছ থেকে পালিয়ে মিদিয়নে বসবাস করতে চলে গেলেন, ও সেখানে গিয়ে তিনি এক কুয়োর পাড়ে বসে পড়লেন। \v 16 মিদিয়নীয় এক যাজকের সাতটি মেয়ে ছিল, এবং তারা তাদের বাবার মেষপালকে জলপান করাবার জন্য জল তুলতে ও জাবপাত্র ভরতে এসেছিল। \v 17 কয়েকজন মেষপালক সেখানে এসে তাদের তাড়িয়ে দিল, কিন্তু মোশি উঠে দাঁড়ালেন ও তাদের রক্ষাকর্তা হয়ে তাদের মেষপালকে জলপান করালেন। \p \v 18 সেই মেয়েরা যখন তাদের বাবা রূয়েলের কাছে ফিরে গেল, তখন তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আজ তোমরা কেন এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলে?” \p \v 19 তারা উত্তর দিল, “একজন মিশরীয় লোক মেষপালকদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন। এমনকি তিনি আমাদের জন্য জল তুলে দিলেন ও আমাদের মেষপালকে জলপান করালেন।” \p \v 20 “আর তিনি কোথায়?” রূয়েল তাঁর মেয়েদের জিজ্ঞাসা করলেন। “তোমরা কেন তাঁকে ছেড়ে এলে? কিছু খাওয়ার জন্য তাঁকে নিমন্ত্রণ করো।” \p \v 21 মোশি সেই লোকটির সঙ্গে থাকতে সম্মত হলেন, যিনি মোশির সঙ্গে তাঁর মেয়ে সিপ্পোরার বিয়ে দিলেন। \v 22 সিপ্পোরা এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন, ও মোশি এই বলে তার নাম দিলেন গের্শোম\f + \fr 2:22 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় গের্শোম শব্দটি শুনলে মনে হয় সেখানে এক বিদেশি\ft*\f* যে “বিদেশভূমিতে আমি এক বিদেশি হয়ে গেলাম।” \p \v 23 সুদীর্ঘ সময়কাল পার হয়ে যাওয়ার পর, মিশরের রাজা মারা গেলেন। ইস্রায়েলীরা তাদের ক্রীতদাসত্বের কারণে যন্ত্রণা পেয়ে গভীর আর্তনাদ করে উঠল, এবং তাদের ক্রীতদাসত্বের কারণে তাদের চাওয়া সাহায্যের আকুতি ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে গেল। \v 24 ঈশ্বর তাদের কান্না শুনলেন এবং অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সঙ্গে করা তাঁর নিয়মটি তিনি স্মরণ করলেন। \v 25 অতএব ঈশ্বর ইস্রায়েলীদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন ও তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হলেন। \c 3 \s1 মোশি ও জ্বলন্ত ঝোপ \p \v 1 মোশি এক সময় তাঁর শ্বশুর, মিদিয়নীয় যাজক যিথ্রোর মেষপাল চরাচ্ছিলেন, এবং সেই পালকে দূরে মরুপ্রান্তরের এক প্রান্তে চরাতে চরাতে তিনি হোরেবে সদাপ্রভুর পর্বতে পৌঁছে গেলেন। \v 2 সেখানে এক ঝোপের মধ্যে থেকে সদাপ্রভুর দূত আগুনের শিখায় মোশির কাছে আবির্ভূত হলেন। মোশি দেখলেন যে যদিও ঝোপটি জ্বলছে তবুও তা পুড়ে শেষ হচ্ছে না। \v 3 অতএব মোশি ভাবলেন, “আমি পরিদর্শনে যাব ও এই অদ্ভুত ঘটনাটি দেখব—কেন ঝোপটি পুড়ে শেষ হচ্ছে না।” \p \v 4 সদাপ্রভু যখন দেখলেন যে মোশি দেখার জন্য পরিদর্শনে গিয়েছেন, তখন ঈশ্বর সেই ঝোপের মধ্যে থেকে মোশিকে ডেকে বললেন, “মোশি, মোশি!” \p আর মোশি বললেন, “আমি এখানে।” \p \v 5 “আর কাছে এসো না,” ঈশ্বর বললেন। “তোমার চটিজুতো খুলে ফেলো, কারণ তুমি যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছ সেটি পবিত্র ভূমি।” \v 6 পরে তিনি বললেন, “আমি তোমার পৈত্রিক\f + \fr 3:6 \fr*\ft মেসোরেটিক পাঠ্যাংশ অনুসারে পূর্বপুরুষদের (\+xt প্রেরিত 7:32\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।” তখন মোশি তাঁর মুখ আড়াল করলেন, কারণ তিনি ঈশ্বরের দিকে তাকাতে ভয় পেয়েছিলেন। \p \v 7 সদাপ্রভু বললেন, “আমি সত্যিই মিশরে আমার প্রজাদের দুর্দশা দেখেছি। তাদের উপর নিযুক্ত ক্রীতদাস পরিচালকদের কারণে তারা যে কান্নাকাটি করছে তা আমি শুনেছি, এবং তাদের কায়ক্লেশের বিষয়ে আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। \v 8 তাই মিশরীয়দের হাত থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য এবং সেদেশ থেকে মনোরম ও প্রশস্ত এক দেশে, দুধ ও মধু প্রবাহিত এক দেশে—কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের স্বদেশে তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি নেমে এসেছি। \v 9 আর এখন ইস্রায়েলীদের কান্না আমার কাছে পৌঁছে গিয়েছে এবং আমি দেখেছি কীভাবে সেই মিশরীয়রা তাদের নিগৃহীত করছে। \v 10 অতএব এখন, যাও। মিশর থেকে আমার প্রজা ইস্রায়েলীদের বের করে আনার জন্য আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে পাঠাচ্ছি।” \p \v 11 কিন্তু মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “আমি কে যে আমাকে ফরৌণের কাছে যেতে হবে ও মিশর থেকে ইস্রায়েলীদের বের করে আনতে হবে?” \p \v 12 আর ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমার সঙ্গে থাকব। আর আমিই যে তোমাকে পাঠিয়েছি তার চিহ্ন হবে এই: তুমি যখন মিশর থেকে লোকদের বের করে আনবে, তখন এই পর্বতে তোমরা ঈশ্বরের আরাধনা করবে।” \p \v 13 মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “ধরে নিন আমি ইস্রায়েলীদের কাছে গেলাম ও তাদের বললাম, ‘তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন,’ এবং তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তাঁর নাম কী?’ তখন আমি তাদের কী বলব?” \p \v 14 ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “আমি যে আছি, সেই আছি\f + \fr 3:14 \fr*\ft অথবা, আমি যা হব, তা হব\ft*\f*। ইস্রায়েলীদের তোমাকে একথাই বলতে হবে: ‘আমি আছি আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন।’ ” \p \v 15 এছাড়াও ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলীদের বোলো, ‘সদাপ্রভু\f + \fr 3:15 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় সদাপ্রভু শব্দটি 14 পদে ব্যবহৃত আমি আছি-র সঙ্গে সম্পর্কিত\ft*\f*, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর—অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর—আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন।’ \q1 “এটিই আমার অনন্তকালীন নাম, \q2 যে নামে তোমরা আমায় \q2 প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ডাকবে। \p \v 16 “যাও, ইস্রায়েলের প্রাচীনদের সমবেত করো ও তাদের বলো, ‘সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর—অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর—আমাকে দর্শন দিয়ে বললেন: আমি তোমাদের পাহারা দিয়েছিলাম এবং দেখেছিলাম মিশরে তোমাদের প্রতি কী করা হয়েছে। \v 17 আর আমি তোমাদের মিশরের দুর্দশা থেকে বের করে এনে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশে—দুধ ও মধু প্রবাহিত সেই দেশে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করলাম।’ \p \v 18 “ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা তোমার কথা শুনবে। পরে তোমাকে ও সেই প্রাচীনদের মিশররাজের কাছে গিয়ে তাকে বলতে হবে, ‘সদাপ্রভু, হিব্রুদের ঈশ্বর, আমাদের দেখা দিয়েছেন। মরুপ্রান্তরে তিনদিনের পথযাত্রা করে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের বলি উৎসর্গ করে আসতে দিন।’ \v 19 কিন্তু আমি জানি যে মিশররাজ ততক্ষণ তোমাদের যেতে দেবে না, যতক্ষণ না এক বলশালী হাত তাকে বাধ্য করবে। \v 20 অতএব আমি আমার হাত বাড়িয়ে দেব ও সেইসব আশ্চর্য কাজের মাধ্যমে মিশরীয়দের আঘাত হানব, যেগুলি আমি তাদের মধ্যে সম্পন্ন করতে চলেছি। পরে, সে তোমাদের যেতে দেবে। \p \v 21 “আর এই জাতির প্রতি মিশরীয়দের আমি এত অনুগ্রহকারী হতে দেব, যে যখন তোমরা দেশ ছেড়ে যাবে, তখন তোমাদের খালি হাতে যেতে হবে না। \v 22 প্রত্যেকটি মহিলাকে তার প্রতিবেশিনী ও তার বাড়িতে বসবাসকারী যে কোনো মহিলার কাছ থেকে রুপো ও সোনার গয়নাগাটি এবং পোশাক-পরিচ্ছদ চেয়ে নিতে হবে, যেগুলি তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের গায়ে পরিয়ে দেবে। আর এইভাবে তোমরা মিশরীয়দের উপর লুঠতরাজ চালাবে।” \c 4 \s1 মোশির জন্য দত্ত চিহ্নগুলি \p \v 1 মোশি উত্তর দিলেন, “তারা যদি আমার কথা বিশ্বাস না করে বা আমার কথা না শোনে ও বলে, ‘সদাপ্রভু তোমার কাছে আবির্ভূত হননি,’ তবে কী হবে?” \p \v 2 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তোমার হাতে ওটি কী?” \p “একটি ছড়ি,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 3 সদাপ্রভু বললেন, “সেটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দাও।” \p মোশি সেটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং সেটি একটি সাপে পরিণত হল ও তিনি সেটির কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন। \v 4 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত বাড়িয়ে দাও ও সেটির লেজ ধরে ফেলো।” অতএব মোশি হাত বাড়িয়ে সাপটি ধরে ফেললেন এবং সেটি আবার তাঁর হাতে ধরা এক ছড়িতে পরিণত হল। \v 5 সদাপ্রভু বললেন, “এরকম করা হল, যেন তারা বিশ্বাস করে যে সদাপ্রভু, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর—অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর—তোমার কাছে আবির্ভূত হয়েছেন।” \p \v 6 পরে সদাপ্রভু বললেন, “তোমার আলখাল্লায় তোমার হাতটি ঢুকিয়ে নাও।” অতএব মোশি নিজের আলখাল্লায় তাঁর হাতটি ঢুকিয়ে নিলেন, ও তিনি যখন সেটি বের করে আনলেন, তখন তাঁর হাতের চামড়া কুষ্ঠরোগাক্রান্ত\f + \fr 4:6 \fr*\ft কুষ্ঠরোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হিব্রু শব্দটি বিভিন্ন চর্মরোগের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হত\ft*\f* হয়ে—সেটি বরফের মতো সাদা হয়ে গেল। \p \v 7 “এখন হাতটি আবার তোমার আলখাল্লায় ঢুকিয়ে নাও।” তিনি বললেন। অতএব মোশি আবার নিজের হাতটি তাঁর আলখাল্লায় ঢুকিয়ে নিলেন, আর যখন তিনি তাঁর হাতটি বের করে আনলেন, তখন সেটি ঠিক হয়ে গেল, তাঁর শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতোই। \p \v 8 পরে সদাপ্রভু বললেন, “তারা যদি তোমার কথা বিশ্বাস না করে বা প্রথম চিহ্নটিতে মনোযোগ না দেয়, তবে তারা হয়তো দ্বিতীয়টি বিশ্বাস করবে। \v 9 কিন্তু তারা যদি এই দুটি চিহ্নই বিশ্বাস না করে বা তোমার কথা না শোনে, তবে তুমি নীলনদ থেকে খানিকটা জল নিয়ে তা শুকনো মাটিতে ঢেলে দিয়ো। যে জল তুমি নদী থেকে আনবে তা মাটিতে রক্ত হয়ে যাবে।” \p \v 10 মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “হে প্রভু, আপনার এই দাসকে ক্ষমা করবেন। আমি কখনোই বাক্যবাগীশ ছিলাম না, না ছিলাম অতীতে আর না তখন, যখন আপনি আপনার এই দাসের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কথাবার্তায় ও জিভে আমার জড়তা আছে।” \p \v 11 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “মানুষকে কে মুখ দিয়েছে? কে তাদের কালা বা বোবা তৈরি করেছে? কে তাদের দৃষ্টিশক্তি দিয়েছে বা তাদের অন্ধ তৈরি করেছে? সে কি আমি, এই সদাপ্রভু নই? \v 12 এখন যাও; আমি তোমাকে কথা বলতে সাহায্য করব ও কী বলতে হবে তা শেখাব।” \p \v 13 কিন্তু মোশি বললেন, “হে প্রভু, আপনার এই দাসকে ক্ষমা করবেন। দয়া করে অন্য কাউকে পাঠান।” \p \v 14 তখন সদাপ্রভুর ক্রোধ মোশির বিরুদ্ধে জ্বলে উঠল ও তিনি বললেন, “তোমার দাদা, সেই লেবীয় হারোণ নেই নাকি? আমি জানি সে বেশ ভালোই কথা বলতে পারে। সে এখনই তোমার সাথে দেখা করতে আসছে এবং তোমার দেখা পেয়ে সে খুশিই হবে। \v 15 তুমি তার সাথে কথা বলবে এবং তার মুখে শব্দ বসিয়ে দেবে; আমি তোমাদের দুজনকেই কথা বলতে সাহায্য করব ও কী করতে হবে তা শিখিয়ে দেব। \v 16 সে তোমার হয়ে লোকজনের কাছে কথা বলবে, এবং সে তোমার মুখ হবে, ও তুমি তার কাছে ঈশ্বরস্বরূপ হবে। \v 17 কিন্তু এই ছড়িটি তোমার হাতে নাও যেন তুমি এটি দিয়ে চিহ্নকাজ করতে পারো।” \s1 মোশি মিশরে ফিরে এলেন \p \v 18 পরে মোশি তাঁর শ্বশুর যিথ্রোর কাছে ফিরে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “আমাকে মিশরে আমার নিজস্ব লোকজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখতে দিন যে তাদের মধ্যে কেউ এখনও বেঁচে আছে কি না।” \p যিথ্রো বললেন, “যাও, ও আমি তোমার মঙ্গলকামনা করছি।” \p \v 19 মিদিয়নে থাকাকালীনই মোশিকে সদাপ্রভু বললেন, “মিশরে ফিরে যাও, কারণ যারা তোমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল তারা সবাই মারা গিয়েছে।” \v 20 অতএব মোশি তাঁর স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে, তাদের গাধার পিঠে চাপিয়ে মিশরে ফেরার জন্য রওনা হলেন। আর তিনি ঈশ্বরের সেই ছড়িটি নিজের হাতে তুলে নিলেন। \p \v 21 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি যখন মিশরে ফিরে যাবে, তখন দেখো আমি তোমাকে যেসব আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছি, সেগুলি যেন তুমি ফরৌণের সামনে করে দেখাও। কিন্তু আমি তার হৃদয় এমন কঠিন করব যে সে লোকদের যেতে দেবে না। \v 22 পরে তুমি ফরৌণকে বোলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েল আমার প্রথম সন্তান, \v 23 আর আমি তোমাকে বলেছি, “আমার ছেলেকে যেতে দাও, যেন সে আমার আরাধনা করতে পারে।” কিন্তু তুমি তাকে যেতে দিতে অস্বীকার করলে; তাই আমি তোমার প্রথমজাত ছেলেকে হত্যা করব।’ ” \p \v 24 পথিমধ্যে এক পান্থশালায়, সদাপ্রভু মোশির\f + \fr 4:24 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “তাঁর”\ft*\f* সাথে দেখা করলেন এবং তাঁকে প্রায় হত্যা করেই ফেলেছিলেন। \v 25 কিন্তু সিপ্পোরা চকমকি পাথরের একটি ছুরি নিয়ে, তাঁর ছেলের লিঙ্গাগ্রত্বক কেটে সেটি মোশির পায়ে ঠেকিয়ে দিলেন\f + \fr 4:25 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই খণ্ডবাক্যটির অর্থ অনিশ্চিত\ft*\f*। “নিশ্চয় তুমি আমার কাছে রক্তের এক বর,” তিনি বললেন। \v 26 অতএব সদাপ্রভু মোশিকে নিষ্কৃতি দিলেন। (সেই সময় সিপ্পোরা সুন্নতের উল্লেখ করে বললেন, “রক্তের বর।”) \p \v 27 সদাপ্রভু হারোণকে বললেন, “মোশির সঙ্গে দেখা করার জন্য মরুপ্রান্তরে যাও।” তাই তিনি ঈশ্বরের পর্বতে মোশির সঙ্গে দেখা করলেন ও তাঁকে চুমু দিলেন। \v 28 পরে সদাপ্রভু মোশিকে যা যা বলতে পাঠালেন, ও এছাড়াও যেসব চিহ্নকাজ তিনি তাঁকে সম্পাদন করার আদেশ দিয়েছিলেন, সেসবকিছু মোশি হারোণকে বললেন। \p \v 29 মোশি ও হারোণ ইস্রায়েলীদের সব প্রাচীনকে একত্রিত করলেন, \v 30 এবং সদাপ্রভু মোশিকে যা যা বলেছিলেন সেসবকিছু হারোণ তাঁদের বললেন। এছাড়াও তিনি লোকজনের সামনে সেই চিহ্নকাজগুলি সম্পাদন করলেন, \v 31 এবং তাঁরা বিশ্বাস করলেন। আর তাঁরা যখন শুনলেন যে সদাপ্রভু তাঁদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছেন ও তাঁদের দুর্দশা দেখেছেন, তখন তাঁরা মাথা নত করে আরাধনা করলেন। \c 5 \s1 খড় ছাড়া ইট \p \v 1 পরে মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একথাই বলেন: ‘আমার লোকজনকে যেতে দাও, যেন তারা মরুপ্রান্তরে গিয়ে আমার উদ্দেশে এক উৎসব পালন করতে পারে।’ ” \p \v 2 ফরৌণ বললেন, “সদাপ্রভু কে, যে আমাকে তার বাধ্য হতে হবে ও ইস্রায়েলকে যেতে দিতে হবে? আমি সদাপ্রভুকে চিনি না আর আমি ইস্রায়েলকেও যেতে দেব না।” \p \v 3 তখন তাঁরা বললেন, “হিব্রুদের ঈশ্বর আমাদের দর্শন দিয়েছেন। এখন মরুপ্রান্তরে তিনদিনের পথযাত্রা করে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের বলি উৎসর্গ করে আসতে দিন, তা না হলে তিনি হয়তো আমাদের মহামারি বা তরোয়াল দিয়ে আঘাত করবেন।” \p \v 4 কিন্তু মিশররাজ বললেন, “ওহে মোশি ও হারোণ, লোকদের কেন তোমরা তাদের কাজকর্ম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছ? তোমাদের কাজে ফিরে যাও!” \v 5 পরে ফরৌণ বললেন, “দেখো, দেশের লোকজন এখন বহুসংখ্যক হয়ে গিয়েছে এবং তোমরা তাদের কাজ করা থেকে বিরত রাখছ।” \p \v 6 সেদিনই ফরৌণ লোকজনের দায়িত্বে থাকা ক্রীতদাস পরিচালকদের ও তত্ত্বাবধায়কদের এই আদেশ দিলেন: \v 7 “ইট তৈরি করার জন্য তোমরা লোকদের আর খড়ের জোগান দেবে না; তারা নিজেরাই গিয়ে খড় জোগাড় করুক। \v 8 কিন্তু আগে তারা যে পরিমাণ ইট তৈরি করত, এখনও তাদের ততটাই তৈরি করতে বলো; প্রদেয় নির্দিষ্ট ভাগ কমিয়ে দিয়ো না। তারা অলস; তাই তারা কান্নাকাটি করে বলছে, ‘আমাদের যেতে দাও ও আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করতে দাও।’ \v 9 লোকদের জন্য কাজকর্ম এত কঠিন করে দাও, যেন তারা কাজ করতেই থাকে ও মিথ্যা কথায় মনোযোগ না দেয়।” \p \v 10 তখন ক্রীতদাস পরিচালকেরা ও তত্ত্বাবধায়কেরা বাইরে গিয়ে লোকজনকে বলল, “ফরৌণ একথাই বলেছেন: ‘আমি আর তোমাদের খড় দেব না। \v 11 যাও, যেখান থেকে পারো তোমাদের খড় নিয়ে এসো, কিন্তু তোমাদের কাজকর্ম কোনোমতেই কম করা হবে না।’ ” \v 12 অতএব লোকেরা খড়ের পরিবর্তে নাড়া সংগ্রহ করার জন্য মিশরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। \v 13 ক্রীতদাস পরিচালকেরা এই বলে তাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছিল, “তোমরা প্রতিদিনের নিরূপিত কাজকর্ম শেষ করো, ঠিক যেভাবে আগে তোমাদের কাছে খড় থাকার সময় তোমরা তা করতে।” \v 14 আর ফরৌণের ক্রীতদাস পরিচালকেরা যে ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কদের নিযুক্ত করল, তারা তাদের কাছে এই দাবি জানিয়ে তাদের মারধর করত, “গতকাল বা আজ কেন তোমরা আগের মতো তোমাদের যত ইট তৈরি করার কথা, ততখানি তৈরি করোনি?” \p \v 15 তখন ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কেরা গিয়ে ফরৌণের কাছে নালিশ জানাল: “কেন আপনি আপনার এই দাসেদের সঙ্গে এরকম আচরণ করছেন? \v 16 আপনার দাসেদের কোনও খড় দেওয়া হয়নি, অথচ আমাদের বলা হয়েছে, ‘ইট তৈরি করো!’ আপনার দাসেদের মারধর করা হয়েছে, কিন্তু আপনার নিজের প্রজারাই দোষ করেছে।” \p \v 17 ফরৌণ বললেন, “তোমরা অলস, তোমরা এরকমই—অলস! সেজন্যই তোমরা বলে যাচ্ছ, ‘চলো যাই ও সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করি।’ \v 18 এখন কাজে লেগে পড়ো। তোমাদের কোনও খড় দেওয়া হবে না। তবুও তোমাদের নিরূপিত পরিমাণ ইটের পুরোটাই উৎপাদন করতে হবে।” \p \v 19 ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কদের যখন বলা হল, “প্রতিদিন তোমাদের যতগুলি করে ইট তৈরি করার কথা, তোমরা তার সংখ্যা কমাতে পারবে না,” তখন তারা বুঝতে পারল যে তারা অসুবিধায় পড়েছে। \v 20 তারা যখন ফরৌণের কাছ থেকে ফিরে এল, তখন তারা দেখল যে মোশি ও হারোণ তাদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছেন, \v 21 এবং তারা বলল, “সদাপ্রভুই আপনাদের দিকে তাকিয়ে আপনাদের বিচার করুন! আপনারা ফরৌণের ও তাঁর কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের আপত্তিকর করে তুলেছেন এবং আমাদের হত্যা করার জন্য তাদের হাতে এক তরোয়াল তুলে দিয়েছেন।” \s1 ঈশ্বর উদ্ধারদানের প্রতিজ্ঞা করেন \p \v 22 মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “কেন, হে প্রভু, কেন তুমি এই লোকদের অসুবিধায় ফেললে? এজন্যই কি তুমি আমাকে পাঠিয়েছিলে? \v 23 যখন থেকে আমি তোমার নাম করে ফরৌণের সাথে কথা বলতে গিয়েছি, তখন থেকেই তিনি এই লোকদের অসুবিধায় ফেলেছেন, এবং তুমি তোমার প্রজাদের আদৌ উদ্ধার করোনি।” \c 6 \p \v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এখন তুমি দেখবে আমি ফরৌণের প্রতি কী করব: আমার শক্তিশালী হাতের কারণে সে তাদের যেতে দেবে; আমার শক্তিশালী হাতের কারণে সে তাদের তার দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে।” \p \v 2 এছাড়াও ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “আমিই সেই সদাপ্রভু। \v 3 সর্বশক্তিমান ঈশ্বররূপে\f + \fr 6:3 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় “এল-শাদ্দাই”\ft*\f* আমি অব্রাহামের, ইস্‌হাকের ও যাকোবের কাছে আবির্ভূত হয়েছিলাম, কিন্তু সদাপ্রভু\f + \fr 6:3 \fr*\ft \+xt 3:15\+xt* পদের টীকাটি দেখুন\ft*\f*—আমার এই নামে পুরোপুরিভাবে আমি তাদের কাছে নিজের পরিচয় দিইনি। \v 4 যে কনান দেশে তারা বিদেশিরূপে বসবাস করছিল, সেটি তাদের দেওয়ার জন্য আমি তাদের সাথে আমার নিয়ম প্রতিষ্ঠিতও করেছিলাম। \v 5 এছাড়াও, আমি সেই ইস্রায়েলীদের কান্না শুনেছিলাম, যাদের মিশরীয়রা ক্রীতদাস করে রেখেছে, এবং আমি আমার নিয়ম স্মরণ করলাম। \p \v 6 “সুতরাং, ইস্রায়েলীদের বলো: ‘আমি সদাপ্রভু, এবং মিশরীয়দের জোয়ালের তলা থেকে আমি তোমাদের বের করে আনব। তাদের ক্রীতদাস হয়ে থাকার হাত থেকে আমি তোমাদের স্বাধীন করব, এবং এক প্রসারিত হাত ও মহৎ দণ্ডাদেশ সহ আমি তোমাদের মুক্ত করব। \v 7 আমার নিজস্ব প্রজারূপে আমি তোমাদের গ্রহণ করব, এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর হব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই তোমাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিশরীয়দের জোয়ালের তলা থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন। \v 8 আর উদ্যত হাত দিয়ে আমি তোমাদের সেই দেশে নিয়ে আসব, যেটি দেওয়ার প্রতিজ্ঞা আমি অব্রাহামের, ইস্‌হাকের ও যাকোবের কাছে করেছিলাম। এক অধিকাররূপে আমি সেটি তোমাদের দেব। আমিই সদাপ্রভু।’ ” \p \v 9 মোশি ইস্রায়েলীদের এই খবর দিলেন, কিন্তু তাদের আত্মবিশ্বাসহীনতা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে তারা তাঁর কথা শোনেনি। \p \v 10 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 11 “যাও, মিশররাজ ফরৌণকে তার দেশ ছেড়ে ইস্রায়েলীদের যেতে দিতে বলো।” \p \v 12 কিন্তু মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “আমি যেহেতু কম্পমান ঠোঁটে কথা বলি\f + \fr 6:12 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় আমার ঠোঁট অচ্ছিন্নত্বক\ft*\f* তাই ইস্রায়েলীরাই যখন আমার কথা শুনছে না, ফরৌণ তবে কেন আমার কথা শুনবেন?” \s1 মোশি ও হারোণের কুলের পারিবারিক নথি \p \v 13 ইস্রায়েলীদের ও মিশররাজ ফরৌণের বিষয়ে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণের সাথে কথা বললেন, এবং ইস্রায়েলীদের মিশর থেকে বের করে আনার আদেশ তিনি তাঁদের দিলেন। \b \li4 \v 14 তাঁদের কুলের\f + \fr 6:14 \fr*\ft এখানে ও 25 পদে কুলের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হিব্রু শব্দটি এমন এক এককের কথা বলে যা গোষ্ঠীর থেকে বড়ো\ft*\f* নেতা এঁরাই: \b \li1 ইস্রায়েলের প্রথমজাত সন্তান রূবেণের ছেলেরা: \li2 হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মি। \li4 এরাই হলেন রূবেণের গোষ্ঠী। \b \li1 \v 15 শিমিয়োনের ছেলেরা: \li2 যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর, ও এক কনানীয় মহিলার ছেলে শৌল। \li4 এঁরাই হলেন শিমিয়োনের গোষ্ঠী। \b \li1 \v 16 তাঁদের নথি অনুসারে এই হল লেবির ছেলেদের নাম: \li2 গের্শোন, কহাৎ, ও মরারি। \li4 (লেবি 137 বছর বেঁচেছিলেন।) \li2 \v 17 গোষ্ঠী অনুসারে, গের্শোনের ছেলেরা: \li3 লিব্‌নি ও শিমিয়ি। \li2 \v 18 কহাতের ছেলেরা: \li3 অম্রাম, যিষ্‌হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল। \li4 (কহাৎ 133 বছর বেঁচেছিলেন।) \li2 \v 19 মরারির ছেলেরা: \li3 মহলি ও মূশি। \li4 তাঁদের নথি অনুসারে এরাই লেবির বিভিন্ন গোষ্ঠী। \b \li1 \v 20 অম্রাম তাঁর পিসিমা সেই যোকেবদকে বিয়ে করলেন, যিনি অম্রামের জন্য মোশি ও হারোণের জন্ম দিলেন। \li4 (অম্রাম 137 বছর বেঁচেছিলেন।) \li1 \v 21 যিষ্‌হরের ছেলেরা: \li2 কোরহ, নেফগ ও সিখ্রি। \li1 \v 22 উষীয়েলের ছেলেরা: \li2 মীশায়েল, ইল্‌সাফন ও সিথ্রি। \li1 \v 23 হারোণ অম্মীনাদবের মেয়ে ও নহশোনের বোন ইলীশেবাকে বিয়ে করলেন, এবং তিনি হারোণের জন্য নাদব ও অবীহূ, ইলীয়াসর ও ঈথামরের জন্ম দিলেন। \b \li1 \v 24 কোরহের ছেলেরা হলেন: \li2 অসীর, ইল্‌কানা ও অবীয়াসফ। \li4 এঁরাই হলেন কোরহের বিভিন্ন গোষ্ঠী। \b \li1 \v 25 হারোণের ছেলে ইলীয়াসর পুটিয়েলের মেয়েদের মধ্যে একজনকে বিয়ে করলেন, এবং তিনি তাঁর জন্য পীনহসের জন্ম দিলেন। \b \li4 এঁরাই হলেন গোষ্ঠী ধরে ধরে লেবীয় কুলের বিভিন্ন নেতা। \b \p \v 26 এই হারোণ ও মোশিকেই সদাপ্রভু বললেন, “বিভাগ ধরে ধরে তোমরা ইস্রায়েলীদের মিশর থেকে বের করে আনো।” \v 27 তাঁরাই—এই মোশি ও হারোণই ইস্রায়েলীদের মিশর থেকে বের করে আনার বিষয়ে মিশররাজ ফরৌণের সাথে কথা বললেন। \s1 হারোণকে মোশির হয়ে কথা বলতে হবে \p \v 28 এদিকে সদাপ্রভু যখন মিশরে মোশির সাথে কথা বললেন, \v 29 তখন তিনি মোশিকে বললেন, “আমি সদাপ্রভু। আমি তোমাকে যা যা বলছি সেসব কথা মিশররাজ ফরৌণকে গিয়ে বলো।” \p \v 30 কিন্তু মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “আমি যেহেতু কম্পমান ঠোঁটে কথা বলি, তাই ফরৌণ আমার কথা শুনবেন কেন?” \c 7 \p \v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখো, আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে ঈশ্বরের সমতুল্য করে দিয়েছি, এবং তোমার দাদা হারোণ তোমার ভাববাদী হবে। \v 2 আমি তোমাকে যে আদেশ দিচ্ছি সেসব কথা তোমাকে বলতে হবে, এবং তোমার দাদা হারোণ ফরৌণকে বলুক যেন সে ইস্রায়েলীদের তার দেশ ছেড়ে যেতে দেয়। \v 3 কিন্তু আমি ফরৌণের হৃদয় কঠিন করব, ও যদিও আমি মিশরে আমার চিহ্নের ও অলৌকিক কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করব, \v 4 তবুও সে তোমাদের কথা শুনবে না। পরে আমি মিশরের উপর আমার হাত বাড়াব এবং দণ্ডের ক্ষমতাশালী কাজের মাধ্যমে আমি আমার সৈন্যসামন্তকে, আমার প্রজা ইস্রায়েলীদের বের করে আনব। \v 5 আর আমি যখন মিশরের বিরুদ্ধে আমার হাত প্রসারিত করব ও সেখান থেকে ইস্রায়েলীদের বের করে আনব তখনই মিশরীয়রা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।” \p \v 6 মোশি ও হারোণকে সদাপ্রভু যে আদেশ দিলেন তাঁরা ঠিক তাই করলেন। \v 7 তাঁরা যখন ফরৌণের সঙ্গে কথা বললেন তখন মোশির বয়স আশি ও হারোণের তিরাশি বছর। \s1 হারোণের ছড়িটি একটি সাপে পরিণত হয় \p \v 8 সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, \v 9 “ফরৌণ যখন তোমাদের বলবে, ‘একটি অলৌকিক কাজ করে দেখাও,’ তখন হারোণকে বোলো, ‘তোমার ছড়িটি নাও ও ফরৌণের সামনে সেটি নিক্ষেপ করো,’ আর সেটি একটি সাপে পরিণত হবে।” \p \v 10 অতএব মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গেলেন এবং সদাপ্রভু যেমন আদেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেরকমই করলেন। হারোণ ফরৌণের ও তাঁর কর্মকর্তাদের সামনে তাঁর ছড়িটি নিক্ষেপ করলেন ও সেটি একটি সাপে পরিণত হল। \v 11 ফরৌণ তখন পণ্ডিতদের ও গুনিনদের ডেকে পাঠালেন, এবং সেই মিশরীয় জাদুকররাও তাদের রহস্যময় শিল্পকলার মাধ্যমে একই কাজ করল: \v 12 প্রত্যেকে নিজের নিজের ছড়ি নিক্ষেপ করল এবং তা সাপে পরিণত হল। কিন্তু হারোণের ছড়িটি তাদের ছড়িগুলি গিলে ফেলল। \v 13 তবুও ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল ও তিনি তাদের কথা শুনতে চাননি, যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন। \s1 রক্তের আঘাত \p \v 14 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের হৃদয় অনমনীয়; সে লোকদের যেতে দিতে চায় না। \v 15 সকালে ফরৌণ যখন নদীর কাছে যাবে তখন তুমিও তার কাছে যেয়ো। নীলনদের তীরে তার সম্মুখীন হোয়ো, এবং তোমার সেই ছড়িটি হাতে রেখো যেটি একটি সাপে পরিণত হয়েছিল। \v 16 পরে তাকে বোলো, ‘হিব্রুদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আপনার কাছে আমাকে একথা বলতে পাঠিয়েছেন: আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা মরুপ্রান্তরে আমার আরাধনা করতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তুমি সেকথা শোনোনি। \v 17 সদাপ্রভু একথাই বলেন: এর দ্বারাই তোমরা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু: যে ছড়িটি আমার হাতে ধরা আছে সেটি দিয়ে আমি নীলনদের জলে আঘাত করব, আর তা রক্তে পরিণত হবে। \v 18 নীলনদে মাছ মারা যাবে, এবং তার ফলে নদীতে দুর্গন্ধ ছড়াবে; মিশরীয়রা এর জলপান করতে পারবে না।’ ” \p \v 19 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বোলো, ‘তোমার ছড়িটি নাও এবং মিশরের সব স্রোতোজলের উপর—নদীর ও খালের উপর, পুকুরের ও সব জলাধারের উপর—তোমার হাত বাড়াও ও সেসব রক্তে পরিণত হবে।’ মিশরে সর্বত্র রক্তই থাকবে, এমনকি কাঠের ও পাথরের পাত্রেও\f + \fr 7:19 \fr*\ft অথবা, এমনকি তাদের মূর্তির উপরও\ft*\f* থাকবে।” \p \v 20 মোশি ও হারোণ ঠিক তাই করলেন যা সদাপ্রভু তাঁদের করার আদেশ দিয়েছিলেন। ফরৌণ ও তাঁর কর্মকর্তাদের সামনে তিনি তাঁর ছড়িটি বাড়িয়ে দিলেন ও নীলনদের জলে আঘাত করলেন ও সব জল রক্তে পরিণত হল। \v 21 নীলনদে মাছ মারা গেল, এবং নদীতে এত দুর্গন্ধ ছড়াল যে মিশরীয়রা সেটির জলপান করতে পারল না। মিশরে সর্বত্র রক্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। \p \v 22 কিন্তু মিশরের জাদুকররাও তাদের রহস্যময় শিল্পকলার দ্বারা একই কাজ করল, এবং ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল; তিনি মোশি ও হারোণের কথা শোনেননি, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু বলেছিলেন। \v 23 পরিবর্তে, তিনি তাঁর প্রাসাদে ফিরে গেলেন, এবং এমনকি এতে কিছুই মনে করলেন না। \v 24 আর মিশরীয়রা সবাই পানীয় জল পাওয়ার জন্য নীলনদের পাশে কুয়ো খুঁড়েছিল, কারণ তারা নদীর জলপান করতে পারেনি। \s1 ব্যাং-এর আঘাত \p \v 25 সদাপ্রভু নীলনদের উপর আঘাত হানার পর সাত দিন কেটে গেল। \c 8 \nb \v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের কাছে যাও ও তাকে বলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা আমার আরাধনা করতে পারে। \v 2 যদি তুমি তাদের যেতে দিতে অসম্মত হও, তবে আমি তোমার সমগ্র দেশে ব্যাং দ্বারা এক আঘাত হানব। \v 3 নীলনদ ব্যাং-এ পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। সেগুলি তোমার প্রাসাদে ও শয়নকক্ষে, এবং তোমার বিছানাতে, এবং তোমার কর্মকর্তাদের বাড়িতে ও তোমার প্রজাদের উপর, এবং তোমাদের উনুনে ও কোঠাতেও উঠে আসবে। \v 4 ব্যাংগুলি তোমার গায়ে ও তোমার প্রজাদের এবং তোমার সব কর্মকর্তার গায়ে উঠে আসবে।’ ” \p \v 5 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো, ‘ছড়িসহ তোমার হাত সব জলস্রোতের ও খালের এবং পুকুরের উপর বাড়িয়ে দাও, এবং মিশর দেশের উপর ব্যাঙদের নিয়ে এসো।’ ” \p \v 6 অতএব হারোণ মিশরের স্রোতোজলের উপর তাঁর হাত বাড়িয়ে দিলেন, এবং ব্যাংগুলি উঠে এসে দেশটি ঢেকে দিল। \v 7 কিন্তু জাদুকররা তাদের রহস্যময় শিল্পকলার মাধ্যমে একই কাজ করল; তারাও মিশর দেশের উপর ব্যাঙদের নিয়ে এল। \p \v 8 ফরৌণ, মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমার ও আমার প্রজাদের কাছ থেকে ব্যাংগুলি দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করো, এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করার জন্য আমি তোমাদের লোকজনকে যেতে দেব।” \p \v 9 মোশি ফরৌণকে বললেন, “শুধু নীলনদে যেসব ব্যাং আছে, সেগুলি ছাড়া আপনি ও আপনাদের ঘরবাড়ি যেন ব্যাং-এর হাত থেকে নিষ্কৃতি পান সেজন্য আমি কখন আপনার জন্য ও আপনার কর্মকর্তাদের এবং আপনার প্রজাদের জন্য প্রার্থনা করব, সেই সময়টি ঠিক করার ভার আমি আপনার হাতেই তুলে দিচ্ছি।” \p \v 10 “আগামীকাল,” ফরৌণ বললেন। \p মোশি উত্তর দিলেন, “আপনার কথামতোই তা হোক, যেন আপনি জানতে পারেন যে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মতো আর কেউ নেই। \v 11 ব্যাংগুলি আপনার কাছ থেকে ও আপনার বাড়ি থেকে এবং আপনার কর্মকর্তাদের ও আপনার প্রজাদের বাড়ি থেকে চলে যাবে; সেগুলি শুধু নীলনদেই থাকবে।” \p \v 12 মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছ থেকে চলে যাওয়ার পর, মোশি সেই ব্যাংগুলির সম্বন্ধে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, যেগুলি তিনি ফরৌণের উপর নিয়ে এসেছিলেন। \v 13 আর মোশি যা চেয়েছিলেন সদাপ্রভু তাই করলেন। বাড়িতে, প্রাঙ্গণে ও ক্ষেতজমিতে ব্যাংগুলি মারা গেল। \v 14 সেগুলি গাদায় গাদায় স্তূপাকার করা হল, এবং সেগুলির কারণে দেশে দুর্গন্ধ ছড়াল। \v 15 কিন্তু ফরৌণ যখন দেখলেন যে মুক্তি পাওয়া গিয়েছে, তখন তিনি তাঁর হৃদয় কঠিন করলেন এবং মোশি ও হারোণের কথা শুনতে চাইলেন না, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু বলেছিলেন। \s1 ডাঁশ-মশার আঘাত \p \v 16 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো, ‘তোমার ছড়িটি বাড়িয়ে দাও এবং মাঠের ধুলোতে আঘাত করো,’ এবং মিশর দেশের সর্বত্র ধুলোবালি ডাঁশ-মশায় পরিণত হবে।” \v 17 তাঁরা তাই করলেন, এবং হারোণ যখন ছড়িসহ তাঁর হাতটি বাড়িয়ে দিয়ে মাঠের ধুলোতে আঘাত করলেন, তখন মানুষজনের ও পশুদের গায়ে ডাঁশ-মশা উঠে এল। মিশর দেশের সর্বত্র সব ধুলোবালি ডাঁশ-মশায় পরিণত হল। \v 18 কিন্তু জাদুকররা যখন তাদের রহস্যময় শিল্পকলার মাধ্যমে ডাঁশ-মশা উৎপন্ন করতে চাইল, তারা তা করতে পারল না। \p যেহেতু সর্বত্র মানুষের ও পশুদের উপর ডাঁশ-মশা ছেয়ে গেল, \v 19 তাই জাদুকররা ফরৌণকে বলল, “এ হল ঈশ্বরের আঙুল।” কিন্তু ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল এবং তিনি শুনতে চাইলেন না, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু বলেছিলেন। \s1 মাছির আঘাত \p \v 20 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “সকালে তাড়াতাড়ি উঠে যেয়ো এবং ফরৌণ যখন নদীর কাছে যাবে তখন তার সম্মুখীন হোয়ো ও তাকে বোলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা আমার আরাধনা করতে পারে। \v 21 যদি তুমি আমার প্রজাদের যেতে না দাও, তবে আমি তোমার উপর ও তোমার কর্মকর্তাদের, তোমার প্রজাদের উপর এবং তোমার বাড়ির মধ্যে মাছির ঝাঁক পাঠাব। মিশরীয়দের বাড়িগুলি মাছিতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে; এমনকি মাঠঘাটও সেগুলি দ্বারা ঢাকা পড়ে যাবে। \p \v 22 “ ‘কিন্তু সেদিন সেই গোশন প্রদেশের প্রতি আমি অন্যরকম আচরণ করব, যেখানে আমার প্রজারা বসবাস করে; সেখানে মাছির কোনও ঝাঁক থাকবে না, যেন তুমি জানতে পারো যে আমি, সদাপ্রভু এই দেশেই আছি। \v 23 আমি আমার প্রজাদের ও তোমার প্রজাদের মধ্যে এক পার্থক্য\f + \fr 8:23 \fr*\ft অথবা, নিস্তার\ft*\f* গড়ে তুলব। আগামীকাল এই চিহ্নটি ফুটে উঠবে।’ ” \p \v 24 আর সদাপ্রভু এরকমই করলেন। মাছির ঘন ঝাঁক ফরৌণের প্রাসাদে, ও তাঁর কর্মকর্তাদের বাড়িগুলিতে আছড়ে পড়ল; মিশরের সর্বত্র দেশ মাছি দ্বারা ছারখার হয়ে গেল। \p \v 25 তখন ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, “যাও, দেশের মধ্যেই তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করো।” \p \v 26 কিন্তু মোশি বললেন, “এরকম করা ঠিক হবে না। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমরা যে বলি উৎসর্গ করি তা মিশরীয়দের কাছে ঘৃণ্য হবে। আর আমরা যদি সেই বলি উৎসর্গ করি যা তাদের দৃষ্টিতে ঘৃণ্য, তবে তারা কি আমাদের উপর পাথর ছুঁড়বে না? \v 27 আমাদের অবশ্যই আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করার জন্য তিনদিনের পথ পাড়ি দিয়ে মরুপ্রান্তরে যেতে হবে, যেমনটি তিনি আমাদের আদেশ দিয়েছেন।” \p \v 28 ফরৌণ বললেন, “মরুপ্রান্তরে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করার জন্য আমি তোমাদের যেতে দেব, কিন্তু তোমরা খুব বেশি দূরে যাবে না। এখন আমার জন্য প্রার্থনা করো।” \p \v 29 মোশি উত্তর দিলেন, “আপনার কাছ থেকে চলে যাওয়ার পরই আমি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করব, এবং আগামীকাল মাছিগুলি ফরৌণকে ও তাঁর কর্মকর্তাদের এবং তাঁর প্রজাদের ছেড়ে চলে যাবে। শুধু ফরৌণ যেন নিশ্চিতরূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশে লোকদের বলি দিতে যেতে না দিয়ে প্রতারণামূলক আচরণ না করেন।” \p \v 30 পরে মোশি ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেলেন এবং সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, \v 31 এবং মোশি যেমনটি চেয়েছিলেন সদাপ্রভু তাই করলেন। মাছির ঝাঁক ফরৌণকে ও তাঁর কর্মকর্তাদের এবং তাঁর প্রজাদের ছেড়ে গেল; একটিও মাছি অবশিষ্ট রইল না। \v 32 কিন্তু এবারও ফরৌণ তাঁর হৃদয় কঠিন করলেন এবং তিনি লোকদের যেতে দিলেন না। \c 9 \s1 গৃহপালিত পশুপালের উপর নেমে আসা আঘাত \p \v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের কাছে যাও এবং তাকে বলো, ‘হিব্রুদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: “আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা আমার আরাধনা করতে পারে।” \v 2 যদি তুমি তাদের যেতে দিতে অসম্মত হও এবং ক্রমাগত তাদের আটকে রাখো, \v 3 তবে সদাপ্রভুর হাত মাঠেঘাটে থাকা তোমাদের গৃহপালিত পশুপালের উপর—তোমাদের ঘোড়া, গাধা ও উটের এবং গবাদি পশুপালের, মেষ ও ছাগলদের উপর ভয়ংকর এক আঘাত নিয়ে আসবে। \v 4 কিন্তু সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের গৃহপালিত পশুপালের এবং মিশরীয়দের গৃহপালিত পশুপালের মধ্যে এক পার্থক্য গড়ে তুলবেন, যেন ইস্রায়েলীদের অধিকারভুক্ত কোনও পশু মারা না যায়।’ ” \p \v 5 সদাপ্রভু এক সময় নির্দিষ্ট করলেন ও বললেন, “আগামীকাল সদাপ্রভু দেশে এরকম করবেন।” \v 6 আর পরদিন সদাপ্রভু তা করলেন: মিশরীয়দের সব গৃহপালিত পশু মারা গেল, কিন্তু ইস্রায়েলীদের অধিকারভুক্ত একটি পশুও মারা গেল না। \v 7 ফরৌণ তদন্ত করলেন এবং জানতে পারলেন যে ইস্রায়েলীদের একটি পশুও মারা যায়নি। তবুও তাঁর হৃদয় অনমনীয়ই থেকে গেল এবং তিনি লোকদের যেতে দিলেন না। \s1 ফোঁড়ার আঘাত \p \v 8 পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “একটি উনুন থেকে মুঠো ভর্তি করে ছাইভস্ম তুলে নাও এবং ফরৌণের সামনেই মোশি তা হাওয়ায় ছড়িয়ে দিক। \v 9 সমগ্র মিশর দেশে তা মিহি ধুলোয় পরিণত হবে, এবং দেশের সর্বত্র মানুষজনের ও পশুপালের গায়ে পুঁজ-ভরা ফোঁড়া ফুটে উঠবে।” \p \v 10 অতএব তাঁরা একটি উনুন থেকে ছাইভস্ম তুলে নিয়ে ফরৌণের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। মোশি হাওয়ায় তা ছড়িয়ে দিলেন, এবং মানুষজনের ও পশুপালের গায়ে পুঁজ-ভরা ফোঁড়া ফুটে উঠল। \v 11 জাদুকরদের ও সব মিশরীয়দের গায়ে যে ফোঁড়াগুলি ফুটে উঠল, সেগুলির কারণে জাদুকররা মোশির সামনে দাঁড়াতে পারল না। \v 12 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দিলেন এবং তিনি মোশি ও হারোণের কথা শুনতে চাইলেন না, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন। \s1 শিলাবৃষ্টির আঘাত \p \v 13 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে, ফরৌণের সম্মুখীন হয়ে তাকে বোলো, ‘হিব্রুদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা আমার আরাধনা করতে পারে, \v 14 তা না হলে এবার আমি তোমার বিরুদ্ধে ও তোমার কর্মকর্তাদের ও তোমার প্রজাদের বিরুদ্ধে আমার আঘাতগুলির পূর্ণ বল পাঠাব, যেন তুমি জানতে পারো যে সারা পৃথিবীতে আমার মতো আর কেউ নেই। \v 15 কারণ এখনই আমি আমার হাত বাড়িয়ে তোমাকে ও তোমার প্রজাদের এমন এক আঘাত দ্বারা আহত করতে পারি যা তোমাদের এই পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলতে পারে। \v 16 কিন্তু ঠিক এই উদ্দেশ্যেই আমি তোমাকে উন্নত করেছি\f + \fr 9:16 \fr*\ft অথবা, তোমাকে ছেড়ে দিয়েছি\ft*\f*, যেন আমি তোমাকে আমার ক্ষমতা দেখাতে পারি ও সমগ্র পৃথিবীতে আমার নাম প্রচারিত হয়। \v 17 তুমি এখনও আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে নিজেকে দাঁড় করিয়ে রেখেছ এবং তাদের যেতে দিচ্ছ না। \v 18 তাই, আগামীকাল এইসময় আমি এমন ভারী শিলাবৃষ্টি পাঠাব যা মিশরের প্রতিষ্ঠা-দিবস থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কখনও মিশরের উপর পড়েনি। \v 19 তুমি এখন এক আদেশ জারি করো, যেন মাঠেঘাটে তোমার যত গৃহপালিত পশুপাল ও যা যা আছে, সেসব নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়, কারণ যেসব মানুষ ও পশুকে ভিতরে আনা হয়নি ও যারা এখনও মাঠেঘাটেই আছে, তাদের প্রত্যেকের উপর শিলাবৃষ্টি নেমে আসবে, ও তারা মারা পড়বে।’ ” \p \v 20 ফরৌণের যেসব কর্মকর্তা সদাপ্রভুর বাক্যে ভয় পেয়েছিলেন, তাঁরা তাড়াতাড়ি করে তাঁদের ক্রীতদাস-দাসীদের ও তাঁদের গৃহপালিত পশুপালকে ভিতরে নিয়ে এলেন। \v 21 কিন্তু যারা সদাপ্রভুর বাক্য উপেক্ষা করল, তারা তাদের ক্রীতদাস-দাসীদের ও গৃহপালিত পশুপাল মাঠেঘাটেই ছেড়ে দিল। \p \v 22 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করো যেন মিশরে সর্বত্র শিলাবৃষ্টি নেমে আসে—মানুষজনের ও পশুপালের এবং মিশরের মাঠেঘাটে যা যা উৎপন্ন হচ্ছে, সবকিছুর উপরে নেমে আসে।” \v 23 মোশি যখন তাঁর ছড়িটি আকাশের দিকে প্রসারিত করলেন, তখন সদাপ্রভু বজ্রবিদ্যুৎ ও শিলাবৃষ্টি পাঠিয়ে দিলেন, এবং বজ্রবিদ্যুতের চমক মাটি স্পর্শ করল। অতএব সদাপ্রভু মিশর দেশের উপর শিলাবৃষ্টি বর্ষণ করলেন; \v 24 শিলাবৃষ্টিপাত হয়েছিল এবং এদিক-ওদিক বজ্রবিদ্যুৎ চমকাল। যখন থেকে মিশর এক দেশে পরিণত হয়েছিল, তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মিশর দেশে এরকম শিলাবৃষ্টি আর কখনও হয়নি। \v 25 মিশরে সর্বত্র শিলাবৃষ্টি মাঠের সবকিছুকে—মানুষজন ও পশুপাল, সবাইকেই আঘাত করল; মাঠেঘাটে যা যা উৎপন্ন হয় সেসবকিছু তা দুমড়ে-মুচড়ে দিল ও প্রত্যেকটি গাছ নেড়া করে ফেলল। \v 26 একমাত্র যেখানে শিলাবৃষ্টি পড়েনি তা হল সেই গোশন প্রদেশ, যেখানে ইস্রায়েলীরা বসবাস করত। \p \v 27 তখন ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠালেন। “এবার আমি পাপ করেছি,” তিনি তাঁদের বললেন। “সদাপ্রভু ন্যায়পরায়ণ, এবং আমি ও আমার প্রজারা অন্যায় করেছি। \v 28 সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করো, কারণ আমরা যথেষ্ট বজ্রবিদ্যুৎ ও শিলাবৃষ্টি পেয়েছি। আমি তোমাদের যেতে দেব; তোমাদের আর এখানে থাকতে হবে না।” \p \v 29 মোশি উত্তর দিলেন, “আমি যখন নগরটি ছেড়ে যাব, তখন আমি আমার হাত দুটি প্রার্থনায় সদাপ্রভুর দিকে প্রসারিত করব। বজ্রপাত থেমে যাবে এবং শিলাবৃষ্টি আর হবে না, যেন আপনি জানতে পারেন যে এই পৃথিবী সদাপ্রভুরই। \v 30 কিন্তু আমি জানি যে আপনি ও আপনার কর্মকর্তারা এখনও সদাপ্রভু ঈশ্বরকে ভয় পাচ্ছেন না।” \p \v 31 (শণগাছ ও যব ধ্বংস হল, যেহেতু যবের শিষ ফুটেছিল ও শণগাছে ফুল ধরেছিল। \v 32 গম ও বাজরা অবশ্য ধ্বংস হয়নি, কারণ সেগুলি পরে পাকে।) \p \v 33 পরে মোশি ফরৌণকে ছেড়ে নগর থেকে বাইরে চলে গেলেন। তিনি সদাপ্রভুর দিকে তাঁর হাত দুটি প্রসারিত করলেন; বজ্রবিদ্যুৎ ও শিলাবৃষ্টি পড়া বন্ধ হয়ে গেল, এবং বৃষ্টিও আর জমিতে নেমে এল না। \v 34 ফরৌণ যখন দেখলেন যে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ পড়া বন্ধ হয়েছে, তখন আবার তিনি পাপ করলেন: তিনি ও তাঁর কর্মকর্তারা তাঁদের হৃদয় কঠিন করলেন। \v 35 অতএব ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল এবং তিনি ইস্রায়েলীদের যেতে দিলেন না, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু মোশির মাধ্যমে বলেছিলেন। \c 10 \s1 পঙ্গপালের আঘাত \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের কাছে যাও, কারণ আমি তার হৃদয় ও তার কর্মচারীদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি যেন তাদের মাঝখানে আমি আমার এই চিহ্নকাজগুলি সম্পন্ন করতে পারি \v 2 ও যেন তুমি তোমার সন্তানদের ও নাতি-নাতনিদের বলতে পারো কীভাবে আমি মিশরীয়দের সঙ্গে রূঢ়ভাবে আচরণ করেছি এবং কীভাবে আমি তাদের মাঝখানে আমার চিহ্নকাজগুলি সম্পন্ন করেছি, এবং তোমরা যেন জানতে পারো যে আমিই সদাপ্রভু।” \p \v 3 অতএব মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “হিব্রুদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘আর কত কাল তুমি আমার সামনে নিজেকে নত করতে অসম্মত হবে? আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা আমার আরাধনা করতে পারে। \v 4 যদি তুমি তাদের যেতে না দাও, তবে আগামীকাল আমি তোমার দেশে পঙ্গপাল নিয়ে আসব। \v 5 সেগুলি মাঠঘাট এমনভাবে ঢেকে ফেলবে যেন তা দেখা না যায়। শিলাবৃষ্টির পর তোমাদের অল্পসল্প যা কিছু অবশিষ্ট আছে, সেগুলি ও তার পাশাপাশি তোমাদের মাঠেঘাটে যত গাছপালা বেড়ে উঠছে, সেসব সেগুলি গ্রাস করবে। \v 6 সেগুলি তোমার বাড়িঘর ও তোমার কর্মকর্তাদের এবং সমস্ত মিশরীয়ের বাড়িঘর ভরিয়ে তুলবে—তা এমন এক ঘটনা হবে যা তোমার বাবা-মায়েরা বা তোমার পূর্বপুরুষরাও এদেশে তাদের বসতি স্থাপন করা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কখনও দেখেনি।’ ” পরে মোশি ঘুরে দাঁড়ালেন ও ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেলেন। \p \v 7 ফরৌণের কর্মকর্তারা তাঁকে বললেন, “আর কত দিন এই লোকটি আমাদের পক্ষে এক ফাঁদ হয়ে থাকবে? লোকদের যেতে দিন, যেন তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা করতে পারে। আপনি কি এখনও বুঝতে পারছেন না যে মিশর ছারখার হয়ে গিয়েছে?” \p \v 8 তখন মোশি ও হারোণকে ফরৌণের কাছে ফিরিয়ে আনা হল। “যাও, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা করো,” তিনি বললেন। “কিন্তু আমায় বলো, কে কে যাবে।” \p \v 9 মোশি উত্তর দিলেন, “আমরা আমাদের শিশু ও বৃদ্ধদের, আমাদের ছেলেমেয়েদের, এবং আমাদের মেষপাল ও পশুপাল সঙ্গে নিয়ে যাব, কারণ সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের এক উৎসব পালন করতে হবে।” \p \v 10 ফরৌণ বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের সহবর্তী হোন—আমি যদি মহিলা ও শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তোমাদের যেতে দিই! এতে তোমাদের অশুভ উদ্দেশ্য প্রকাশিত হচ্ছে।\f + \fr 10:10 \fr*\ft অথবা, সাবধান, তোমরা সমস্যায় পড়তে চলেছ\ft*\f* \v 11 না! শুধুমাত্র পুরুষরাই যাক এবং সদাপ্রভুর আরাধনা করুক, যেহেতু তোমরা তো তাই চেয়েছিলে।” পরে মোশি ও হারোণকে ফরৌণের কাছ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল। \p \v 12 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “মিশরের উপর তোমার হাত প্রসারিত করো যেন পঙ্গপালেরা দেশের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে আসে ও শিলাবৃষ্টির পর যা কিছু অবশিষ্ট থেকে গিয়েছে, মাঠঘাটে বেড়ে ওঠা সেসবকিছু সেগুলি গ্রাস করে নেয়।” \p \v 13 অতএব মোশি মিশর দেশের উপর তাঁর ছড়িটি বাড়িয়ে দিলেন, আর সদাপ্রভু সারাদিন ও সারারাত দেশে পূর্বীয় বাতাস বইতে দিলেন। সকাল হতে না হতেই সেই বাতাস ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল নিয়ে এল; \v 14 সেগুলি সমগ্র মিশর দেশে হানা দিল এবং বিপুল সংখ্যায় দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে থিতুও হল। আগে কখনও পঙ্গপালের এরকম আঘাত সহ্য করতে হয়নি, আর কখনও তা করতেও হবে না। \v 15 অন্ধকার হওয়ার আগেই সেগুলি সমস্ত মাঠঘাট ঢেকে ফেলল। শিলাবৃষ্টির পর যা কিছু অবশিষ্ট থেকে গিয়েছিল—মাঠেঘাটে বেড়ে ওঠা সবকিছু এবং গাছের ফলমূল সেগুলি গ্রাস করে ফেলল। মিশর দেশের সর্বত্র গাছপালায় বা লতাপাতায় কোনও সবুজ অংশ অবশিষ্ট রইল না। \p \v 16 ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, “আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে ও তোমাদের বিরুদ্ধেও পাপ করেছি। \v 17 এখন আর একবার আমার পাপ ক্ষমা করে দাও, এবং এই মৃত্যুজনক আঘাত আমার কাছ থেকে দূর করার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করো।” \p \v 18 মোশি পরে ফরৌণকে ছেড়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে গেলেন। \v 19 আর সদাপ্রভু সেই বাতাসকে প্রচণ্ড এক পশ্চিমী বাতাসে পরিবর্তিত করে দিলেন, যা পঙ্গপালগুলিকে ধরে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে লোহিত সাগরে\f + \fr 10:19 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগরে\ft*\f* ফেলে দিল। মিশরে কোথাও আর একটিও পঙ্গপাল অবশিষ্ট রইল না। \v 20 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দিলেন, এবং তিনি ইস্রায়েলীদের যেতে দিলেন না। \s1 অন্ধকারের আঘাত \p \v 21 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আকাশের দিকে তোমার হাত প্রসারিত করো যেন মিশরের উপর অন্ধকার ছড়িয়ে পড়ে—তা এমন অন্ধকার যা অনুভব করা যায়।” \v 22 অতএব মোশি আকাশের দিকে তাঁর হাত প্রসারিত করলেন, এবং সমগ্র মিশর দেশ তিনদিনের জন্য অন্ধকারে ঢেকে গেল। \v 23 তিন দিন ধরে কেউ কাউকে দেখতে পায়নি বা চলাফেরাও করতে পারেনি। অথচ ইস্রায়েলীরা যেখানে বসবাস করত সেখানে তাদের কাছে আলো ছিল। \p \v 24 তখন ফরৌণ মোশিকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, “যাও, সদাপ্রভুর আরাধনা করো। এমনকি তোমাদের মহিলারা এবং সন্তানেরাও তোমাদের সঙ্গে যেতে পারে; শুধু তোমাদের মেষপাল ও পশুপাল এখানে রেখে যাও।” \p \v 25 কিন্তু মোশি বললেন, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার বলি এবং হোমবলি উৎসর্গ করার জন্য আপনাকে আমাদের অনুমতি দিতে হবে। \v 26 আমাদের গৃহপালিত পশুপালও আমাদের সঙ্গে অবশ্যই যাবে; একটি খুরও এখানে পড়ে থাকবে না। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনায় সেগুলির মধ্যে কয়েকটিকে আমাদের ব্যবহার করতে হবে, আর যতক্ষণ না আমরা সেখানে পৌঁছাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জানতে পারব না যে সদাপ্রভুর আরাধনার জন্য আমাদের কী কী ব্যবহার করতে হবে।” \p \v 27 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দিলেন, এবং তিনি তাঁদের যেতে দিতে চাইলেন না। \v 28 ফরৌণ মোশিকে বললেন, “আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যাও! নিশ্চিত করে নাও যে আমার সামনে তুমি আর কখনও দর্শন দেবে না! যেদিন আমার মুখদর্শন করবে সেদিনই তুমি মারা যাবে!” \p \v 29 “আপনি ঠিকই বলেছেন,” মোশি উত্তর দিলেন, “আমি আর কখনোই আপনার সামনে দর্শন দেব না।” \c 11 \s1 প্রথমজাতদের উপর নেমে আসা আঘাত \p \v 1 এদিকে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি ফরৌণের ও মিশরের উপর আরও একটি আঘাত নিয়ে আসব। পরে, সে তোমাদের এখান থেকে যেতে দেবে, এবং যখন সে তা করবে, তখন সম্পূর্ণরূপে সে তোমাদের তাড়িয়ে দেবে। \v 2 লোকদের বলো, স্ত্রী-পুরুষ সবাই যেন তাদের প্রতিবেশীদের কাছে রুপো ও সোনার তৈরি জিনিসপত্র চেয়ে নেয়।” \v 3 (সদাপ্রভু লোকজনের প্রতি মিশরীয়দের অনুগ্রহকারী করে তুলেছিলেন, এবং স্বয়ং মোশি মিশরে ফরৌণের কর্মকর্তাদের ও তাঁর প্রজাদের দৃষ্টিতে খুব শ্রদ্ধাভাজন হয়ে উঠেছিলেন।) \p \v 4 অতএব মোশি বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘মাঝরাত নাগাদ আমি মিশরের মধ্যে দিয়ে যাব। \v 5 মিশরের প্রত্যেক প্রথমজাত পুত্রসন্তান মারা যাবে, যে সিংহাসনে বসতে চলেছে, ফরৌণের সেই প্রথমজাত ছেলেটি থেকে শুরু করে, ক্রীতদাসীর যাঁতার কাছে বসে থাকা তার প্রথমজাত ছেলে, এবং গবাদি পশুপালের প্রথমজাত সব শাবকও মারা যাবে। \v 6 মিশরের সর্বত্র প্রবল হাহাকার উঠবে—এত প্রবল হাহাকার আগে কখনও শোনা যায়নি বা আর কখনও শোনাও যাবে না। \v 7 কিন্তু ইস্রায়েলীদের মধ্যে কোনও মানুষের বা পশুর বিরুদ্ধে একটি কুকুরও ঘেউ ঘেউ করবে না।’ তখন আপনি জানতে পারবেন যে সদাপ্রভু মিশরের ও ইস্রায়েলীদের মধ্যে এক পার্থক্য রচনা করেছেন। \v 8 আপনার এইসব কর্মকর্তা আমার কাছে আসবে, আমার সামনে মাথা নত করবে ও বলবে, ‘যাও, তুমি ও তোমার অনুগামী সব লোকজন চলে যাও!’ পরে আমি চলে যাব।” এরপর মোশি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে, ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেলেন। \p \v 9 সদাপ্রভু মোশিকে বলে দিয়েছিলেন, “ফরৌণ তোমার কথা শুনতে চাইবে না—যেন মিশরে আমার অলৌকিক কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়।” \v 10 মোশি ও হারোণ ফরৌণের সামনে এইসব অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করলেন, কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দিলেন, এবং তিনি তাঁর দেশ থেকে ইস্রায়েলীদের চলে যেতে দিলেন না। \c 12 \s1 নিস্তারপর্ব এবং খামিরবিহীন রুটির উৎসব \p \v 1 মিশরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, \v 2 “এই মাসটি তোমাদের জন্য প্রথম মাস, তোমাদের বছরের প্রথম মাস হবে। \v 3 ইস্রায়েলের সমগ্র জনসাধারণকে বলো যে এই মাসের দশম দিনে প্রত্যেকটি লোককে তার পরিবারের জন্য একটি করে মেষশাবক\f + \fr 12:3 \fr*\ft এখানে ব্যবহৃত হিব্রু শব্দটির অর্থ হতে পারে মেষশাবক বা ছাগলছানা; 4 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* নিতে হবে, এক-একটি পরিবারের জন্য এক-একটি মেষশাবক। \v 4 যদি কোনও পরিবার সম্পূর্ণ একটি মেষশাবক নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব ছোটো হয়ে যায়, তবে তারা তাদের নিকটতম প্রতিবেশীদের সঙ্গে সেখানকার জনসংখ্যার আধারে অবশ্যই যেন সেটি ভাগাভাগি করে নেয়। প্রত্যেকে যতখানি করে খাবে সেই অনুসারে মেষশাবকের পরিমাণ তোমরা নির্দিষ্ট করে দিয়ো। \v 5 যে পশুগুলি তোমরা বাছাই করে রাখবে সেগুলি অবশ্যই যেন খুঁতবিহীন এক বছর বয়স্ক মদ্দা হয়, এবং তোমরা সেগুলি মেষ বা ছাগপাল থেকে নিতে পারো। \v 6 মাসের সেই চতুর্দশতম দিন পর্যন্ত সেগুলির যত্ন নিয়ো, যেদিন ইস্রায়েলী জনসাধারণের অন্তর্গত সব সদস্য অবশ্যই গোধূলি লগ্নে সেগুলি বধ করবে। \v 7 পরে খানিকটা রক্ত নিয়ে তা তাদের সেই বাড়ির দরজার চৌকাঠের দুই পাশে ও উপর দিকে লাগিয়ে দিতে হবে, যেখানে তারা সেই মেষশাবকগুলি খাবে। \v 8 সেরাতেই আগুনে ঝলসে সেই মাংস তাদের তেতো শাক ও খামিরবিহীন রুটির সাথে খেতে হবে। \v 9 সেই মাংস কাঁচা বা জলে সিদ্ধ করে খেয়ো না, কিন্তু তা আগুনে ঝলসে নিও—মাথা, পা ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সমেত। \v 10 সকাল পর্যন্ত সেটির কোনো কিছুই অবশিষ্ট রেখো না; যদি কোনো কিছু সকাল পর্যন্ত অবশিষ্ট থেকে যায়, তা তোমাদের পুড়িয়ে ফেলতে হবে। \v 11 এইভাবেই তোমাদের তা খেতে হবে: তোমরা আলখাল্লা কোমরবন্ধে গুঁজে নেবে, পায়ে চটিজুতো পরে থাকবে এবং হাতে ছড়ি ধরে রাখবে। তাড়াতাড়ি করে তা খাবে; এ হল সদাপ্রভুর নিস্তারপর্ব। \p \v 12 “সেরাতেই আমি মিশরের মধ্যে দিয়ে যাব এবং মানুষ ও পশু উভয়ের প্রত্যেক প্রথমজাতকে আঘাত করব, এবং মিশরের সব দেবতাকে আমি দণ্ড দেব। আমিই সদাপ্রভু। \v 13 তোমরা যেখানে আছ, সেই ঘরগুলির উপর সেই রক্তই তোমাদের জন্য চিহ্ন হবে, এবং আমি যখন সেই রক্ত দেখব, তখন আমি তোমাদের অতিক্রম করে যাব। আমি যখন মিশরকে আঘাত করব, তখন কোনও ধ্বংসাত্মক আঘাত তোমাদের স্পর্শ করবে না। \p \v 14 “এ এমন একদিন যা তোমাদের স্মরণার্থক দিনরূপে পালন করতে হবে; আগামী বংশপরম্পরায় তোমরা এটি সদাপ্রভুর উদ্দেশে পালনীয় এক উৎসবরূপে পালন করবে—যা হবে এক দীর্ঘস্থায়ী বিধি। \v 15 সাত দিন ধরে তোমাদের খামিরবিহীন রুটি খেতে হবে। প্রথম দিনই তোমাদের বাড়িঘর থেকে খামির বিদায় করে দেবে, কারণ যে কেউ প্রথম দিন থেকে শুরু করে সপ্তম দিন পর্যন্ত খামিরযুক্ত কোনো কিছু খাবে, তাকে ইস্রায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। \v 16 প্রথম দিনে পবিত্র সমাবেশ রাখবে এবং সপ্তম দিনও আরও একটি কোরো। শুধুমাত্র সবার জন্য খাবার রান্না করা ছাড়া এই দিনগুলিতে তোমরা আর কোনও কাজকর্ম কোরো না; শুধু এটুকুই করতে পারো। \p \v 17 “খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন কোরো, কারণ ঠিক এই দিনেই আমি তোমাদের বাহিনীকে মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম। আগামী বংশপরম্পরায় এক দীর্ঘস্থায়ী বিধিরূপে এই দিনটি পালন কোরো। \v 18 প্রথম মাসে তোমাদের খামিরবিহীন রুটি খেতে হবে, চতুর্দশ দিনের সন্ধ্যাবেলা থেকে একুশতম দিনের সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত। \v 19 সাত দিন যেন তোমাদের বাড়িঘরে কোনও খামির পাওয়া না যায়। আর বিদেশি হোক বা দেশজাত, যে কেউ এইসময় খামিরযুক্ত কোনো কিছু খাবে, তাকে ইস্রায়েলের জনসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। \v 20 খামির দিয়ে তৈরি কোনো কিছুই খেয়ো না। তোমরা যেখানেই বসবাস করো না কেন, তোমরা অবশ্যই খামিরবিহীন রুটি খাবে।” \p \v 21 তখন মোশি ইস্রায়েলের সব প্রাচীনকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁদের বললেন, “এক্ষুনি যাও ও তোমাদের পরিবারগুলির জন্য পশুগুলি মনোনীত করো এবং নিস্তারপর্বীয় মেষশাবক জবাই করো। \v 22 একগুচ্ছ এসোব\f + \fr 12:22 \fr*\ft এক ধরনের সুগন্ধি লতাবিশেষ, যেটিতে পুদিনার মতো মৃদু সুগন্ধ থাকে\ft*\f* নাও, গামলায় রাখা রক্তে সেটি চুবিয়ে নাও এবং সেই রক্তের কিছুটা দরজার চৌকাঠের উপর দিকে ও দুই পাশে লাগিয়ে দাও। সকাল না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে কেউ দরজা দিয়ে বাইরে যাবে না। \v 23 সদাপ্রভু যখন মিশরীয়দের আঘাত করার জন্য দেশের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাবেন, তিনি দরজার চৌকাঠের উপর দিকে ও দুই পাশে রক্ত দেখবেন এবং দরজার সেই চৌকাঠ পার করে যাবেন, ও তিনি বিনাশকারীকে তোমাদের ঘরে ঢুকে তোমাদের আঘাত করার অনুমতি দেবেন না। \p \v 24 “তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের বংশধরদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী এক বিধিরূপে তোমরা এই নির্দেশাবলির বাধ্য হোয়ো। \v 25 যে দেশটি সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে তোমাদের দেবেন, তোমরা যখন সেখানে প্রবেশ করবে, তখন সেখানেও এই অনুষ্ঠানটি তোমরা পালন কোরো। \v 26 আর তোমাদের সন্তানেরা যখন তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের কাছে এই অনুষ্ঠানটির অর্থ কী?’ \v 27 তখন তাদের বোলো, ‘এটি সেই সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত নিস্তারপর্বীয় বলি, যিনি মিশরে ইস্রায়েলীদের বাড়িঘর অতিক্রম করে গিয়েছিলেন এবং যখন তিনি মিশরীয়দের আঘাত করেছিলেন, তখন আমাদের ঘরগুলি বাদ দিয়েছিলেন।’ ” তখন লোকেরা মাথা নত করে আরাধনা করল। \v 28 সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যে আদেশ দিয়েছিলেন ইস্রায়েলীরা ঠিক তাই করল। \p \v 29 মাঝরাতে সদাপ্রভু মিশরে সব প্রথমজাতকে, সিংহাসনে উপবিষ্ট ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান থেকে শুরু করে অন্ধকূপে থাকা বন্দির প্রথমজাত সন্তান, এবং সব গৃহপালিত পশুর প্রথমজাত শাবক পর্যন্ত সবাইকে আঘাত করলেন। \v 30 রাতের বেলায় ফরৌণ এবং তাঁর কর্মকর্তারা ও মিশরীয়রা সবাই জেগে গেল, আর মিশরে প্রবল হাহাকার শুরু হয়ে গেল, কারণ এমন কোনও বাড়ি ছিল না যেখানে কেউ মারা যায়নি। \s1 প্রস্থান \p \v 31 রাতেই ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠালেন ও বললেন, “ওঠো! তোমরা ও ইস্রায়েলীরা আমার প্রজাদের ছেড়ে চলে যাও! যাও, তোমরা যেমন অনুরোধ জানিয়েছিলে, সেই অনুসারে গিয়ে সদাপ্রভুর আরাধনা করো। \v 32 তোমরা যেমন বলেছিলে, সেভাবেই তোমাদের মেষপাল ও পশুপাল নিয়ে চলে যাও। আর আমাকে আশীর্বাদও করো।” \p \v 33 মিশরীয়রা লোকদের অনুরোধ জানাল যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা দেশ ছেড়ে চলে যায়। “কারণ তা না হলে,” তারা বলল, “আমরা সবাই মারা যাব!” \v 34 অতএব লোকেরা খামির মেশানোর আগেই তাদের আটার তালগুলি তুলে নিল, এবং কাপড়ে মুড়ে সেগুলি কেঠোয় রেখে কাঁধে তুলে নিল। \v 35 ইস্রায়েলীরা মোশির নির্দেশানুসারেই সবকিছু করল এবং তারা মিশরীয়দের কাছে রুপো ও সোনার তৈরি জিনিসপত্র এবং পোশাক-পরিচ্ছদ চেয়ে নিল। \v 36 সদাপ্রভু লোকদের প্রতি মিশরীয়দের অনুগ্রহকারী করে দিয়েছিলেন, এবং ইস্রায়েলীরা তাদের কাছে যা যা চেয়েছিল, তারা সেসবকিছু তাদের দিয়েছিল; অতএব তারা মিশরীয়দের জিনিসপত্র অপহরণ করল। \p \v 37 ইস্রায়েলীরা রামিষেষ থেকে সুক্কোতের উদ্দেশে যাত্রা করল। মহিলা ও শিশুদের বাদ দিয়ে, সেখানে প্রায় 6 লক্ষ পদাতিক পুরুষ ছিল। \v 38 অন্যান্য আরও অনেক লোকজন তাদের সঙ্গে গেল, এবং এছাড়াও গৃহপালিত পশুপালের বিশাল এক দলও গেল, তাতে মেষ ও গবাদি পশুপালও ছিল। \v 39 যে আটার তাল ইস্রায়েলীরা মিশর থেকে এনেছিল, তা দিয়ে তারা খামিরবিহীন রুটি সেঁকে নিল। আটার সেই তাল খামিরবিহীন ছিল কারণ তাদের মিশর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ও তারা নিজেদের জন্য খাবার তৈরি করার সময় পায়নি। \p \v 40 ইস্রায়েলী জনগণ মিশরে\f + \fr 12:40 \fr*\ft অথবা, মিশরে ও কনানে\ft*\f* 430 বছর ধরে বসবাস করল। \v 41 সেই 430 বছরের শেষে, সেদিনই, সদাপ্রভুর সব বাহিনী মিশর ছেড়ে এল। \v 42 যেহেতু সেরাতে তাদের মিশর থেকে বের করে আনার জন্য সদাপ্রভু সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন, তাই আগামী বংশপরম্পরায় সদাপ্রভুকে সম্মান জানানোর জন্য এরাতে ইস্রায়েলীদের সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। \s1 নিস্তারপর্বের নিষেধাজ্ঞা \p \v 43 সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “এগুলিই হল নিস্তারপর্বীয় খাদ্যের নিয়মকানুন: \p “কোনো বিদেশি লোক এটি খেতে পারবে না। \v 44 যাকে তোমরা কিনে নেওয়ার পর সুন্নত করিয়েছ, সেরকম এক ক্রীতদাস এটি খেতে পারে, \v 45 কিন্তু অস্থায়ী এক বাসিন্দা বা এক ঠিকা শ্রমিক এটি খেতে পারবে না। \p \v 46 “বাড়ির ভিতরেই এটি খেতে হবে; সেই মাংসের কিছুই বাড়ির বাইরে নিয়ে যেয়ো না। কোনও অস্থি ভেঙো না। \v 47 ইস্রায়েলীদের সমগ্র জনসমাজকে এটি পালন করতে হবে। \p \v 48 “তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী কোনো বিদেশি লোক যদি সদাপ্রভুর নিস্তারপর্ব পালন করতে চায়, তবে তাকে পরিবারের সব পুরুষ সদস্যকে সুন্নত করাতে হবে; পরেই সে দেশজাত একজনের মতো এতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। সুন্নত না করানো কোনো পুরুষ এটি খেতে পারবে না। \v 49 যারা দেশজাত ও যেসব বিদেশি তোমাদের মধ্যে বসবাস করছে, তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই একই নিয়মকানুন প্রযোজ্য হবে।” \p \v 50 ইস্রায়েলীরা সবাই ঠিক তাই করল, যা করার আদেশ সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে দিয়েছিলেন। \v 51 আর ঠিক সেদিনই সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের বাহিনী অনুসারে তাদের মিশর থেকে বের করে আনলেন। \c 13 \s1 প্রথমজাতদের পবিত্রকরণ \p \v 1 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 2 “প্রত্যেকটি প্রথমজাত পুরুষকে আমার উদ্দেশে পবিত্র করো। মানুষ হোক কি পশু, ইস্রায়েলীদের মধ্যে প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম সন্তানটি আমার।” \p \v 3 তখন মোশি লোকদের বললেন, “যেদিন তোমরা মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে, সেদিনটির স্মরণার্থে এদিন উৎসব পালন করো, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমাদের সেখান থেকে বের করে এনেছেন। খামিরযুক্ত কোনো কিছু খেয়ো না। \v 4 আজ, আবীব মাসে, তোমরা বের হয়ে যাচ্ছ। \v 5 সদাপ্রভু যখন তোমাকে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয়, ও যিবূষীয়দের দেশে—যে দেশটি তিনি তোমাকে দেওয়ার বিষয়ে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, দুধ ও মধু প্রবাহিত সেই দেশে—নিয়ে আসবেন, তখন এই মাসে তোমাকে এই পর্বটি পালন করতে হবে: \v 6 সাত দিন ধরে তুমি খামিরবিহীন রুটি খেয়ো এবং সপ্তম দিনে সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি উৎসবের আয়োজন কোরো। \v 7 সেই সাত দিন যাবৎ তুমি খামিরবিহীন রুটি খেয়ো; খামিরযুক্ত কোনো কিছু যেন তোমার কাছে দেখা না যায়, বা তোমার সীমানার মধ্যেও যেন কোথাও কোনও খামির দেখা না যায়। \v 8 সেদিন তুমি তোমার সন্তানকে বোলো, ‘আমি যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিলাম তখন সদাপ্রভু আমার জন্য যা করেছিলেন, সেজন্যই আমি এরকম করছি।’ \v 9 এই অনুষ্ঠানটি তোমার জন্য তোমার হাতে এক চিহ্নের মতো ও তোমার কপালে এক স্মৃতিচিহ্ন হয়ে থাকবে যেন সদাপ্রভুর এই বিধান তোমার ঠোঁটেই থাকে। কারণ সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমাকে মিশর থেকে বের করে এনেছেন। \v 10 বছরের পর বছর ধরে নিরূপিত সময়ে তোমাকে এই বিধিটি পালন করতে হবে। \p \v 11 “সদাপ্রভু তোমাকে কনানীয়দের দেশে নিয়ে আসার পর ও সেটি তোমাকে দেওয়ার পর, যেভাবে তিনি তোমার কাছে ও তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ নিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, \v 12 তোমার প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম সন্তান সদাপ্রভুর হাতে তুলে দিতে হবে। তোমার গৃহপালিত পশুপালের সব প্রথমজাত মদ্দা সদাপ্রভুর। \v 13 প্রত্যেকটি প্রথমজাত গাধাকে এক-একটি মেষশাবক দিয়ে মুক্ত কোরো, কিন্তু যদি সেটি মুক্ত না করো, তবে সেটির ঘাড় ভেঙে দিয়ো। তোমার ছেলেদের মধ্যে প্রত্যেক প্রথমজাতকে মুক্ত কোরো। \p \v 14 “ভবিষ্যতে, তোমার সন্তানেরা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এর অর্থ কী?’ তখন তুমি তাকে বোলো, ‘শক্তিশালী হাত দিয়ে সদাপ্রভু আমাদের মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের সেই দেশ থেকে বের করে এনেছেন। \v 15 ফরৌণ যখন একগুঁয়েমি দেখিয়ে আমাদের যেতে দিতে অস্বীকার করলেন, সদাপ্রভু তখন মিশরে মানুষ ও পশু, উভয়ের প্রথমজাতদের হত্যা করলেন। এজন্যই আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম পুং-সন্তানকে বলিরূপে উৎসর্গ করছি এবং আমার প্রথমজাত ছেলেদের মধ্যে এক একজনকে মুক্ত করছি।’ \v 16 আর এটি তোমার হাতে এই এক চিহ্নের ও তোমার কপালে এই এক প্রতীকের মতো হবে যে সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন।” \s1 সমুদ্র অতিক্রমণ \p \v 17 ফরৌণ যখন লোকদের যেতে দিলেন, ঈশ্বর তখন তাদের ফিলিস্তিনীদের দেশের মধ্যে দিয়ে স্থলপথে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাননি, যদিও সেটিই সংক্ষিপ্ত পথ। কারণ ঈশ্বর বললেন, “যদি তারা যুদ্ধের সম্মুখীন হয়, তবে তারা হয়তো তাদের মন পরিবর্তন করে ফেলবে এবং মিশরে ফিরে যাবে।” \v 18 অতএব ঈশ্বর ঘুরপথে লোকদের মরুভূমির পথ দিয়ে লোহিত সাগরের\f + \fr 13:18 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগরের\ft*\f* দিকে নিয়ে গেলেন। ইস্রায়েলীরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েই মিশর থেকে বের হয়ে গেল। \p \v 19 মোশি যোষেফের অস্থিও সাথে নিলেন কারণ যোষেফ ইস্রায়েলীদের দিয়ে এক প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলে দিয়েছিলেন, “ঈশ্বর নিঃসন্দেহে তোমাদের সাহায্য করতে আসবেন, এবং তখন তোমাদের অবশ্যই নিজেদের সাথে আমার অস্থি এখান থেকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে।”\f + \fr 13:19 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 50:25\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* \p \v 20 সুক্কোৎ ছেড়ে আসার পর তারা মরুভূমির এক প্রান্তে অবস্থিত এথমে শিবির স্থাপন করল। \v 21 সদাপ্রভু দিনের বেলায় এক মেঘস্তম্ভের মধ্যে থেকে তাদের পথ দেখানোর জন্য এবং রাতের বেলায় এক অগ্নিস্তম্ভের মধ্যে থেকে তাদের আলো দেওয়ার জন্য তাদের অগ্রগামী হলেন, যেন দিনরাত তারা যাত্রা করতে পারে। \v 22 দিনের বেলায় মেঘস্তম্ভ বা রাতের বেলায় অগ্নিস্তম্ভ, কোনোটিই লোকদের সামনে থেকে সরে যায়নি। \c 14 \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 2 “ইস্রায়েলীদের বলো, তারা যেন পিছনে ফিরে মিগ্‌দোলের ও সমুদ্রের মাঝামাঝিতে অবস্থিত পী-হহীরোতের কাছে শিবির স্থাপন করে। তাদের সরাসরি বায়াল-সফোনের বিপরীত দিকে, সমুদ্রের ধারে শিবির স্থাপন করতে হবে। \v 3 ফরৌণ ভাববে, ‘ইস্রায়েলীরা মরুভূমি দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে, ধন্দে পড়ে দেশে ইতস্তত বিচরণ করে বেড়াচ্ছে।’ \v 4 আর আমি ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দেব, এবং সে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করবে। কিন্তু আমি ফরৌণ ও তার সমগ্র সৈন্যদলের মাধ্যমে স্বয়ং গৌরব লাভ করব, এবং মিশরীয়রা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু।” অতএব ইস্রায়েলীরা এরকমই করল। \p \v 5 মিশররাজকে যখন বলা হল যে লোকেরা পালিয়েছে, তখন ফরৌণ ও তাঁর কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে নিজেদের মন পরিবর্তন করে বললেন, “আমরা এ কী করলাম? আমরা ইস্রায়েলীদের যেতে দিলাম ও তাদের পরিষেবা হারালাম!” \v 6 অতএব তিনি তাঁর রথ প্রস্তুত করলেন ও তাঁর সৈন্যদল সঙ্গে নিলেন। \v 7 সেরা রথগুলির মধ্যে থেকে তিনি 600-টি রথ নিলেন, এছাড়াও মিশরের অন্য সব রথ ও সেসবের উপর নিযুক্ত কর্মকর্তাদেরও সঙ্গে নিলেন। \v 8 সদাপ্রভু মিশরের রাজা ফরৌণের হৃদয় কঠিন করে দিলেন, যেন তিনি সেই ইস্রায়েলীদের পশ্চাদ্ধাবন করেন, যারা নির্ভীকভাবে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে যাচ্ছিল। \v 9 মিশরীয়রা—ফরৌণের সব ঘোড়া ও রথ, ঘোড়সওয়ার\f + \fr 14:9 \fr*\ft অথবা, সারথি; 17, 18, 23, 26 ও 28 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* ও সেনা—ইস্রায়েলীদের পশ্চাদ্ধাবন করল এবং তারা যখন বায়াল-সফোনের বিপরীত দিকে, পী-হহীরোতের কাছে সমুদ্রের ধারে শিবির স্থাপন করে বসেছিল, তখন তাদের নাগাল পেল। \p \v 10 ফরৌণ যেই না তাদের কাছে এগিয়ে এলেন, ইস্রায়েলীরা চোখ তুলে তাকাল, আর মিশরীয়রা তাদের পিছনে ধেয়ে আসছিল। তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল এবং সদাপ্রভুর কাছে কাঁদতে শুরু করল। \v 11 তারা মোশিকে বলল, “মিশরে কি কোনও কবরস্থান ছিল না যে তুমি মরার জন্য আমাদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এসেছ? মিশর থেকে আমাদের বের করে এনে তুমি আমাদের প্রতি এ কী করলে? \v 12 মিশরেই কি আমরা তোমাকে বলিনি, ‘আমাদের একা ছেড়ে দাও; মিশরীয়দের সেবা করতে দাও’? মরুভূমিতে মরার চেয়ে মিশরীয়দের সেবা করাই আমাদের পক্ষে ভালো ছিল।” \p \v 13 মোশি লোকদের উত্তর দিলেন, “তোমরা ভয় পেয়ো না! শক্ত হয়ে দাঁড়াও এবং তোমরা দেখতে পাবে আজ সদাপ্রভু কীভাবে তোমাদের রক্ষা করবেন। আজ তোমরা যে মিশরীয়দের দেখছ, তাদের আর কখনও দেখতে পাবে না। \v 14 সদাপ্রভু তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন; তোমাদের শুধু স্থির হয়ে থাকতে হবে।” \p \v 15 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি আমার কাছে কাঁদছ কেন? ইস্রায়েলীদের এগিয়ে যেতে বলো। \v 16 তোমার ছড়িটি উঠিয়ে নাও এবং জল ভাগ করার জন্য তোমার হাতটি সমুদ্রের উপর প্রসারিত করো যেন ইস্রায়েলীরা সমুদ্রের একদিক থেকে অন্যদিকে শুকনো জমির উপর দিয়ে চলে যেতে পারে। \v 17 আমি মিশরীয়দের হৃদয় কঠিন করে দেব, যেন তারা তাদের পশ্চাৎগামী হয়। আর আমি ফরৌণের ও তার সমগ্র সৈন্যদলের, তার রথগুলির ও তার ঘোড়সওয়ারদের মাধ্যমে গৌরব লাভ করব। \v 18 আমি যখন ফরৌণের, তার রথগুলির ও তার ঘোড়সওয়ারদের মাধ্যমে গৌরব লাভ করব, তখনই মিশরীয়রা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।” \p \v 19 ঈশ্বরের যে দূত ইস্রায়েলী সৈন্যদলের আগে আগে যাচ্ছিলেন, তিনি তখন সরে গিয়ে তাদের পিছনে চলে গেলেন। মেঘস্তম্ভও তাদের সামনে থেকে সরে গেল এবং তাদের পিছনে গিয়ে, \v 20 মিশর ও ইস্রায়েলের সৈন্যদলের মাঝখানে চলে এল। সারারাত মেঘ একদিকে অন্ধকার ও অন্যদিকে আলো নিয়ে এসেছিল; তাই সারারাত তারা কেউই অন্য দলের কাছে যায়নি। \p \v 21 পরে মোশি সমুদ্রের উপর তাঁর হাত প্রসারিত করলেন, এবং সেই সারারাত সদাপ্রভু এক প্রবল পূর্বীয় বাতাস বইয়ে সমুদ্রকে পিছিয়ে দিলেন এবং সেটিকে শুকনো জমিতে পরিণত করলেন। জল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল, \v 22 এবং ইস্রায়েলীরা শুকনো জমির উপর দিয়ে সমুদ্রের একদিক থেকে অন্যদিকে চলে গেল, আর তাদের ডানদিকে ও তাদের বাঁদিকে ছিল জলের এক প্রাচীর। \p \v 23 মিশরীয়রা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল, এবং ফরৌণের সব ঘোড়া ও রথ ও ঘোড়সওয়ার ইস্রায়েলীদের অনুগামী হয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ল। \v 24 রাতের শেষ প্রহরে সদাপ্রভু অগ্নিস্তম্ভ ও মেঘস্তম্ভ থেকে নিচে সেই মিশরীয় সৈন্যদলের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলেন। \v 25 তিনি তাদের রথগুলির চাকা আটকে দিলেন\f + \fr 14:25 \fr*\ft অথবা, অপসারিত করলেন\ft*\f* যেন রথ চালাতে তাদের অসুবিধা হয়। আর মিশরীয়রা বলল, “এসো, আমরা ইস্রায়েলীদের কাছ থেকে দূরে সরে যাই! মিশরের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুই তাদের হয়ে যুদ্ধ করছেন।” \p \v 26 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত সমুদ্রের উপর প্রসারিত করে দাও যেন মিশরীয়দের উপর এবং তাদের রথ ও ঘোড়সওয়ারদের উপর জলধারা ধেয়ে আসে।” \v 27 মোশি সমুদ্রের উপর তাঁর হাত প্রসারিত করে দিলেন, এবং ভোরবেলায় সমুদ্র স্বস্থানে ফিরে গেল। মিশরীয়রা সেদিকেই\f + \fr 14:27 \fr*\ft অথবা, সেদিক থেকে\ft*\f* পালাচ্ছিল, এবং সদাপ্রভু তাদের সমুদ্রে ভাসিয়ে দিলেন। \v 28 জলধারা ধেয়ে এসে রথ ও ঘোড়সওয়ারদের—ফরৌণের সমগ্র সেই সৈন্যদলকে ঢেকে দিল যারা ইস্রায়েলীদের অনুগামী হয়ে সমুদ্রে নেমেছিল। তাদের একজনও প্রাণে বাঁচেনি। \p \v 29 কিন্তু ইস্রায়েলীরা তাদের ডানদিকে ও বাঁদিকে জলের এক প্রাচীর সাথে নিয়ে সমুদ্রের একদিক থেকে অন্যদিকে শুকনো জমির উপর দিয়ে চলে গেল। \v 30 ইস্রায়েলকে সেদিন সদাপ্রভু মিশরীয়দের হাত থেকে রক্ষা করলেন, এবং ইস্রায়েল দেখল মিশরীয়রা সমুদ্রতীরে মরে পড়ে আছে। \v 31 আর ইস্রায়েলীরা যখন মিশরীয়দের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর শক্তিশালী হাত প্রদর্শিত হতে দেখল, তখন লোকেরা সদাপ্রভুকে ভয় করল এবং তাঁর উপর ও তাঁর দাস মোশির উপর তাদের আস্থা স্থাপন করল। \c 15 \s1 মোশি ও মরিয়মের সংগীত \p \v 1 তখন মোশি ও ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে এই গান গাইলেন: \q1 “আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে গান গাইব, \q2 কারণ তিনি অত্যন্ত মহিমান্বিত। \q1 ঘোড়া ও সওয়ার উভয়কেই \q2 তিনি সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছেন। \b \q1 \v 2 “সদাপ্রভু আমার শক্তি ও আমার সুরক্ষা\f + \fr 15:2 \fr*\ft অথবা, সংগীত\ft*\f*; \q2 তিনি হলেন আমার পরিত্রাণ। \q1 তিনি আমার ঈশ্বর, এবং আমি তাঁর প্রশংসা করব, \q2 আমার পৈত্রিক ঈশ্বর, এবং আমি তাঁকে মহিমান্বিত করব। \q1 \v 3 সদাপ্রভু এক যোদ্ধা; \q2 তাঁর নাম সদাপ্রভু। \q1 \v 4 ফরৌণের রথ ও তাঁর সৈন্যদলকে \q2 তিনি সমুদ্রে নিক্ষেপ করলেন। \q1 ফরৌণের সেরা কর্মকর্তারা \q2 লোহিত সাগরে\f + \fr 15:4 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগরে; 22 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* ডুবে গেল। \q1 \v 5 গভীর জলরাশি তাদের ঢেকে দিল; \q2 এক পাথরের মতো তারা গভীরে তলিয়ে গেল। \q1 \v 6 তোমার ডান হাত, হে সদাপ্রভু, \q2 পরাক্রমে অত্যুন্নত। \q1 তোমার ডান হাত, হে সদাপ্রভু, \q2 শত্রুকে করেছে চূর্ণবিচূর্ণ। \b \q1 \v 7 “তোমার মহত্ত্বের গরিমায় \q2 তোমার বিরোধীদের তুমি নিক্ষেপ করেছ। \q1 তোমার জ্বলন্ত ক্রোধ তুমি ছড়িয়ে দিয়েছ; \q2 তা তাদের নাড়ার মতো গ্রাস করেছে। \q1 \v 8 তোমার নাকের বিস্ফোরণে \q2 জলরাশি স্তূপাকার হল। \q1 উথাল জলরাশি, এক প্রাচীর হয়ে দাঁড়াল; \q2 গভীর জলরাশি সমুদ্র-গহ্বরে জমাট বেঁধে গেল। \q1 \v 9 শত্রু দম্ভভরে বলল, \q2 ‘আমি তাদের পশ্চাদ্ধাবন করব, তাদের ধরে ফেলব। \q1 আমি লুটের মাল ভাগাভাগি করব; \q2 আমি তাদের উপর ঘাটি গাড়ব। \q1 আমি আমার তরোয়াল টেনে আনব \q2 আর আমার হাত তাদের ধ্বংস করবে।’ \q1 \v 10 কিন্তু তুমি তোমার শ্বাস দিয়ে ফুঁ দিলে, \q2 আর সাগর তাদের ঢেকে দিল। \q1 তারা প্রবল জলরাশিতে \q2 সীসার মতো ডুবে গেল। \q1 \v 11 দেবতাদের মধ্যে কে \q2 তোমার মতো, হে সদাপ্রভু? \q1 তোমার মতো কে— \q2 পবিত্রতায় মহিমান্বিত, \q1 প্রতাপে অসাধারণ, \q2 অলৌকিক কর্মকারী? \b \q1 \v 12 “তোমার ডান হাত তুমি প্রসারিত করলে, \q2 আর পৃথিবী তোমার শত্রুদের গ্রাস করল। \q1 \v 13 তোমার চিরস্থায়ী প্রেমে করবে তুমি পরিচালনা \q2 তোমার মুক্তিপ্রাপ্ত জাতিকে। \q1 তোমার শক্তিতে তুমি তাদের পথ দেখাবে \q2 তোমার পবিত্র বাসস্থানের দিকে। \q1 \v 14 জাতিরা শুনবে ও থরথরাবে; \q2 ফিলিস্তিনী প্রজারা যন্ত্রণায় কাতর হবে। \q1 \v 15 ইদোমের নেতারা আতঙ্কিত হবে, \q2 মোয়াবের নায়কেরা হবে কম্পন-কবলিত। \q1 কনানের প্রজারা\f + \fr 15:15 \fr*\ft অথবা, শাসকেরা\ft*\f* গলে যাবে; \q2 \v 16 আতঙ্ক ও শঙ্কা তাদের উপর এসে পড়বে। \q1 তোমার বাহুবলে \q2 তারা পাথরের মতো স্থির হয়ে যাবে— \q1 যতক্ষণ না তোমার প্রজারা পেরিয়ে যায়, হে সদাপ্রভু, \q2 যতক্ষণ না সেই প্রজারা পেরিয়ে যায়, যাদের তুমি কিনে\f + \fr 15:16 \fr*\ft অথবা, সৃষ্টি করেছ\ft*\f* নিয়েছ। \q1 \v 17 তুমি তাদের ভিতরে আনবে ও রোপণ করবে, \q2 তোমার উত্তরাধিকারের পাহাড়ে— \q1 সেই স্থান, হে সদাপ্রভু, তুমি করে তোমার বাসস্থান রচেছ, \q2 হে সদাপ্রভু, তোমার দুটি হাত সেই পবিত্রস্থান প্রতিষ্ঠিত করেছে। \b \q1 \v 18 “সদাপ্রভু করলেন রাজত্ব \q2 করলেন অনন্তকাল ধরে।” \p \v 19 ফরৌণের ঘোড়া, রথ ও ঘোড়সওয়ারেরা\f + \fr 15:19 \fr*\ft অথবা, সারথিরা\ft*\f* যখন সমুদ্রে তলিয়ে গেল, তখন সদাপ্রভু তাদের উপর সমুদ্রের জলরাশি ফিরিয়ে আনলেন, কিন্তু ইস্রায়েলীরা সমুদ্রের একদিক থেকে অন্যদিকে শুকনো জমির উপর দিয়ে হেঁটে চলে গেল। \v 20 তখন মহিলা ভাববাদী মরিয়ম, হারোণের দিদি, নিজের হাতে একটি খঞ্জনি তুলে নিলেন, এবং সব মহিলা তাঁর দেখাদেখি খঞ্জনি বাজিয়ে নেচেছিল। \v 21 মরিয়ম তাদের কাছে গান গাইলেন: \q1 “সদাপ্রভুর উদ্দেশে গাও গান, \q2 কারণ তিনি অত্যন্ত মহিমান্বিত। \q1 ঘোড়া ও সওয়ার উভয়কেই \q2 তিনি করেছেন সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত।” \s1 মারা ও এলীমের জলরাশি \p \v 22 পরে মোশি লোহিত সাগর থেকে ইস্রায়েলীদের চালিত করলেন এবং তারা শূর মরুভূমিতে চলে গেল। তিন দিন ধরে তারা মরুভূমিতে জল না পেয়ে ভ্রমণ করল। \v 23 তারা যখন মারায় পৌঁছাল, তারা সেখানকার জলপান করতে পারেনি কারণ তা ছিল তেতো। (সেজন্যই সেই স্থানটির নাম রাখা হল মারা\f + \fr 15:23 \fr*\ft মারা শব্দের অর্থ তেতো\ft*\f*) \v 24 অতএব লোকেরা মোশির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলল, “আমরা কী পান করব?” \p \v 25 তখন মোশি সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে ফেললেন, এবং সদাপ্রভু তাঁকে এক টুকরো কাঠ দেখিয়ে দিলেন। তিনি সেটি জলে ছুঁড়ে দিলেন, এবং সেই জল পানের উপযুক্ত হয়ে গেল। \p সেখানেই সদাপ্রভু তাদের জন্য এক বিধিনির্দেশ ও অনুশাসন দিলেন এবং তাদের পরীক্ষায় ফেলে দিলেন। \v 26 তিনি বললেন, “তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথা যত্নসহকারে শোনো, এবং তাঁর দৃষ্টিতে যা ন্যায্য তাই করো, তোমরা যদি তাঁর আদেশগুলির প্রতি মনোযোগ দাও ও তাঁর সব হুকুম পালন করো, তবে তোমাদের উপর আমি সেইসব রোগব্যাধির মধ্যে একটিও আনব না, যেগুলি আমি মিশরীয়দের উপরে এনেছিলাম, কারণ আমি সেই সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের সুস্থ করেছেন।” \p \v 27 পরে তারা সেই এলীমে এল, যেখানে বারোটি জলের উৎস ও সত্তরটি খেজুর গাছ ছিল, এবং সেখানে তারা জলের কাছেই শিবির স্থাপন করল। \c 16 \s1 মান্না এবং ভারুই পাখি \p \v 1 ইস্রায়েলীদের সমগ্র জনসমাজ মিশর থেকে বের হয়ে আসার পর দ্বিতীয় মাসের পঞ্চদশতম দিনে এলীম থেকে বের হয়ে সেই সীন মরুভূমিতে এল, যা এলীম ও সীনয়ের মাঝখানে অবস্থিত। \v 2 সেই মরুভূমিতে সমগ্র জনসমাজ মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল। \v 3 ইস্রায়েলীরা তাঁদের বলল, “হায় আমরা কেন মিশরেই সদাপ্রভুর হাতে মারা পড়িনি! সেখানে আমরা মাংসের হাঁড়ি ঘিরেই বসে থাকতাম ও আমাদের চাহিদানুসারেই সব খাবারদাবার খেতাম, কিন্তু তোমরা সমগ্র এই জনসমাজকে অনাহারে মেরে ফেলার জন্য আমাদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এসেছ।” \p \v 4 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি তোমাদের জন্য স্বর্গ থেকে খাদ্য বর্ষণ করব। লোকদের প্রতিদিন বাইরে যেতে হবে এবং সেদিনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে তা কুড়াতে হবে। এইভাবে আমি তাদের পরীক্ষা করব ও দেখব তারা আমার নির্দেশাবলি পালন করে কি না। \v 5 ষষ্ঠ দিনে তারা যেটুকু কুড়াবে সেটুকুই রান্না করবে, এবং তা হবে অন্যান্য দিনে কুড়ানো খাদ্যের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি।” \p \v 6 অতএব মোশি ও হারোণ সব ইস্রায়েলীকে বললেন, “সন্ধ্যাবেলায় তোমরা জানতে পারবে যে সদাপ্রভুই তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, \v 7 এবং সকালবেলায় তোমরা সদাপ্রভুর মহিমা দেখতে পাবে, কারণ তাঁর বিরুদ্ধে তোমাদের গজ্‌গজানি তিনি শুনেছেন। আমরা কে, যে তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছ?” \v 8 মোশি এও বললেন, “যখন তিনি সন্ধ্যাবেলায় তোমাদের মাংস খেতে দেবেন ও সকালবেলায় তোমাদের চাহিদানুসারে সব খাদ্য দেবেন তখনই তোমরা জানতে পারবে যে তা সদাপ্রভুই দিয়েছেন, কারণ তাঁর বিরুদ্ধে করা তোমাদের গজ্‌গজানি তিনি শুনেছেন। আমরা কে? তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছ না, কিন্তু সদাপ্রভুর বিরুদ্ধেই জানাচ্ছ।” \p \v 9 তখন মোশি হারোণকে বললেন, “সমগ্র ইস্রায়েলী জনসমাজকে বলো, ‘সদাপ্রভুর সামনে এসো, কারণ তিনি তোমাদের গজ্‌গজানি শুনেছেন।’ ” \p \v 10 হারোণ যখন সমগ্র ইস্রায়েলী জনসমাজের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তারা মরুভূমির দিকে তাকাল, এবং সেখানে সদাপ্রভুর মহিমা মেঘে আবির্ভূত হল। \p \v 11 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 12 “আমি ইস্রায়েলীদের গজ্‌গজানি শুনেছি। তাদের বলো, ‘গোধূলিবেলায় তোমরা মাংস খাবে, এবং সকালবেলায় তোমরা খাদ্যে পরিপূর্ণ হবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর।’ ” \p \v 13 সেই সন্ধ্যায় ভারুই পাখির দল এল এবং শিবির ঢেকে ফেলল, এবং সকালবেলায় শিবিরের চারপাশে শিশিরের এক পরত পড়েছিল। \v 14 শিশির সরে যাওয়ার পর, মরুভূমির জমিতে হিমকণার মতো পাতলা আঁশ আবির্ভূত হল। \v 15 ইস্রায়েলীরা যখন তা দেখল, তখন তারা পরস্পরকে বলল, “এটি কী?” কারণ সেটি কী তা তারা জানতে পারেনি। \p মোশি তাদের বললেন, “এ হল সেই খাদ্য যা সদাপ্রভু তোমাদের খেতে দিয়েছেন। \v 16 সদাপ্রভু এই আদেশই দিয়েছেন: ‘প্রত্যেকে তাদের প্রয়োজন অনুসারেই কুড়াবে। তোমাদের তাঁবুতে থাকা এক একজনের জন্য এক ওমর\f + \fr 16:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1.4 কিলোগ্রাম; 18, 32, 33 ও 36 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* করে কুড়াও।’ ” \p \v 17 ইস্রায়েলীরা তাই করল যা তাদের করতে বলা হয়েছিল; কয়েকজন বেশি পরিমাণে কুড়াল এবং কয়েকজন কম পরিমাণে কুড়াল। \v 18 আর যখন তারা তা ওমর দিয়ে মাপল, তখন যে বেশি পরিমাণে কুড়িয়েছিল তার কাছে খুব বেশি ছিল না, এবং যে কম পরিমাণে কুড়িয়েছিল তার কাছে খুব কম ছিল না। প্রত্যেকে ঠিক তাদের চাহিদা অনুসারেই কুড়িয়েছিল। \p \v 19 পরে মোশি তাদের বললেন, “সকাল পর্যন্ত কেউ এর কোনো কিছুই রাখবে না।” \p \v 20 অবশ্য, তাদের মধ্যে কেউ কেউ মোশির কথায় মনোযোগ দেয়নি; তারা সকাল পর্যন্ত এর অংশবিশেষ রেখে দিয়েছিল, কিন্তু তাতে পোকা লেগে গেল এবং দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করল। অতএব মোশি তাদের উপর ক্রুদ্ধ হলেন। \p \v 21 প্রত্যেকদিন সকালবেলায় প্রত্যেকে তাদের চাহিদা অনুসারে কুড়াত, আর সূর্য যখন প্রখর হত, তখন তা গলে যেত। \v 22 ষষ্ঠ দিনে, তারা দ্বিগুণ পরিমাণে কুড়াল—প্রত্যেকের জন্য দুই ওমর\f + \fr 16:22 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 2.8 কিলোগ্রাম\ft*\f* করে—এবং সমাজের নেতারা এসে মোশিকে এই সংবাদ দিলেন। \v 23 তিনি তাঁদের বললেন, “সদাপ্রভু এই আদেশই দিয়েছেন: ‘আগামীকাল হবে সাব্বাথ বিশ্রামের দিন, সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক পবিত্র সাব্বাথ। তাই যা যা তোমরা সেঁকতে চাও তা সেঁকে নাও এবং যা যা জলে সিদ্ধ করতে চাও তা সিদ্ধ করো। যা যা অবশিষ্ট থাকবে তা বাঁচিয়ে সকাল পর্যন্ত রেখে দাও।’ ” \p \v 24 অতএব সকাল পর্যন্ত তারা তা বাঁচিয়ে রাখল, ঠিক যেমনটি মোশি আদেশ দিয়েছিলেন, এবং তাতে দুর্গন্ধ ছড়ায়নি বা তাতে কোনো পোকাও লাগেনি। \v 25 “আজ এটি খেয়ে নাও,” মোশি বললেন, “কারণ আজ সদাপ্রভুর উদ্দেশে পালনীয় এক সাব্বাথবার। মাঠে আজ তোমরা এর একটিও খুঁজে পাবে না। \v 26 ছয় দিন তোমরা এটি কুড়াবে, কিন্তু সপ্তম দিনে, সাব্বাথবারে, কিছুই থাকবে না।” \p \v 27 তা সত্ত্বেও, কয়েকজন লোক সপ্তম দিনেও তা কুড়ানোর জন্য বাইরে গেল, কিন্তু তারা কিছুই পেল না। \v 28 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আর কত দিন তুমি\f + \fr 16:28 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় শব্দটি বহুবচনে ব্যবহৃত হয়েছে\ft*\f* আমার আদেশগুলি ও আমার নির্দেশাবলি পালন করতে অস্বীকার করবে? \v 29 মনে রেখো যে সদাপ্রভুই তোমাদের সাব্বাথবার দিয়েছেন; সেজন্যই ষষ্ঠ দিনে তিনি তোমাদের দুই দিনের খাদ্য দেন। সপ্তম দিনে যে যেখানে আছে তাকে সেখানেই থাকতে হবে; কেউ যেন বাইরে না যায়।” \v 30 অতএব লোকেরা সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিল। \p \v 31 ইস্রায়েলীরা সেই খাদ্যকে মান্না\f + \fr 16:31 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় মান্না শব্দটি শুনলে মনে হয় “এটি কী?”\ft*\f* নাম দিল। এটি দেখতে সাদা রংয়ের ধনে বীজের মতো এবং স্বাদে মধু মাখানো চাকতির মতো হত। \v 32 মোশি বললেন, “সদাপ্রভু এই আদেশই দিয়েছেন: ‘এক ওমর মান্না নাও এবং সেটি পরবর্তী প্রজন্মগুলির জন্য রেখে দাও, যেন তারা সেই খাদ্যটি দেখতে পায় যা মিশর দেশ থেকে তোমাদের বের করে আনার পর, মরুভূমিতে আমি তোমাদের খেতে দিয়েছিলাম।’ ” \p \v 33 অতএব মোশি হারোণকে বললেন, “একটি বয়াম নাও এবং তাতে এক ওমর মান্না ভরে রাখো। পরে পরবর্তী প্রজন্মগুলির জন্য সেটি রক্ষা করে রাখার জন্য সদাপ্রভুর সামনে সাজিয়ে রাখো।” \p \v 34 মোশিকে দেওয়া সদাপ্রভুর আদেশানুসারে, হারোণ বিধিনিয়মের ফলকগুলি সমেত সেই মান্না সাজিয়ে রাখলেন, যেন তা সংরক্ষিত থাকে। \v 35 ইস্রায়েলীরা যতদিন না স্থায়ী এক দেশে এল, ততদিন চল্লিশ বছর ধরে মান্না খেয়েছিল; কনানের সীমানায় পৌঁছানো পর্যন্ত তারা মান্না খেয়েছিল। \p \v 36 (এক ওমর এক ঐফার এক-দশমাংশ।) \c 17 \s1 শিলাপাথর থেকে প্রবাহিত জল \p \v 1 সমগ্র ইস্রায়েলী জনসমাজ সদাপ্রভুর আদেশানুসারে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ভ্রমণ করতে করতে সীন মরুভূমি থেকে বের হয়ে এল। তারা রফীদীমে শিবির স্থাপন করল, কিন্তু সেখানে লোকজনের জন্য পানীয় জল ছিল না। \v 2 তাই তারা মোশির সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে বলল, “আমাদের পানীয় জল দাও।” \p মোশি উত্তর দিলেন, “তোমরা কেন আমার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করছ? তোমরা কেন সদাপ্রভুর পরীক্ষা নিচ্ছ?” \p \v 3 কিন্তু লোকেরা সেখানে জলের জন্য তৃষ্ণার্ত হল এবং তারা মোশির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল। তারা বলল, “কেন তুমি আমাদের ও আমাদের সন্তানসন্ততিকে এবং আমাদের গৃহপালিত পশুপালকে তৃষ্ণার্ত হয়ে মরে যাওয়ার জন্য মিশর থেকে বের করে এখানে নিয়ে এসেছ?” \p \v 4 তখন মোশি সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে বললেন, “এই লোকদের নিয়ে আমি কী করব? তারা তো প্রায় আমাকে পাথর মারার জন্য তৈরিই হয়ে আছে।” \p \v 5 সদাপ্রভু মোশিকে উত্তর দিলেন, “লোকদের সামনে চলে যাও। ইস্রায়েলের কয়েকজন প্রাচীনকে তোমার সাথে নাও ও তোমার সেই ছড়িটি হাতে তুলে নাও, যেটি দিয়ে তুমি নীলনদে আঘাত করেছিলে, এবং যাও। \v 6 আমি সেখানে তোমার সামনে হোরেবে শিলাপাথরের পাশে গিয়ে দাঁড়াব। সেই শিলাপাথরে আঘাত করো, এবং লোকজনের জন্য সেখান থেকে পানীয় জল বেরিয়ে আসবে।” অতএব মোশি ইস্রায়েলের প্রাচীনদের চোখের সামনে তা করলেন। \v 7 আর তিনি সেই স্থানটির নাম দিলেন মঃসা\f + \fr 17:7 \fr*\ft মঃসা শব্দের অর্থ পরীক্ষা\ft*\f* ও মরীবা\f + \fr 17:7 \fr*\ft মরীবা শব্দের অর্থ ঝগড়া-বিবাদ\ft*\f* কারণ ইস্রায়েলীরা ঝগড়া-বিবাদ করেছিল এবং তারা এই বলে সদাপ্রভুর পরীক্ষা নিয়েছিল, “সদাপ্রভু আমাদের মাঝে আছেন কি নেই?” \s1 অমালেকীয়রা পরাজিত হয় \p \v 8 অমালেকীয়রা রফীদীমে এসে ইস্রায়েলীদের আক্রমণ করল। \v 9 মোশি যিহোশূয়কে বললেন, “আমাদের কয়েকজন লোককে মনোনীত করো এবং অমালেকীয়দের সাথে যুদ্ধ করতে যাও। আগামীকাল আমি ঈশ্বরের সেই ছড়িটি হাতে নিয়ে পাহাড়ের উপরে দাঁড়াব।” \p \v 10 অতএব যিহোশূয় মোশির আদেশানুসারে অমালেকীয়দের সাথে যুদ্ধ করলেন, এবং মোশি, হারোণ ও হূর পাহাড়ের উপরে চলে গেলেন। \v 11 যতক্ষণ মোশি তাঁর হাত দুটি উপরে উঠিয়ে রেখেছিলেন, ইস্রায়েলীরা জিতছিল, কিন্তু যখনই তিনি তাঁর হাত দুটি নিচে নামাচ্ছিলেন, অমালেকীয়রা জিতছিল। \v 12 মোশির হাত দুটি যখন অবসন্ন হয়ে গেল, তখন তাঁরা একটি পাথর নিলেন ও সেটি তাঁর নিচে রেখে দিলেন এবং তিনি সেটির উপর বসে পড়লেন। হারোণ ও হূর তাঁর হাত দুটি—একজন একদিকে, অন্যজন অন্যদিকে—তুলে ধরে রাখলেন, যেন সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাঁর হাত দুটি অবিচলিত থাকে। \v 13 অতএব যিহোশূয় তরোয়াল দিয়ে অমালেকীয় সৈন্যদলকে পরাস্ত করলেন। \p \v 14 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “স্মরণযোগ্য করে রাখার জন্য এটি একটি গোটানো চামড়ার পুঁথিতে লিখে রাখো এবং নিশ্চিত কোরো যেন যিহোশূয় তা শোনে, কারণ আকাশের নিচ থেকে অমালেকের নাম আমি পুরোপুরি মুছে ফেলব।” \p \v 15 মোশি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন ও সেটির নাম রাখলেন “সদাপ্রভু আমার নিশান।” \v 16 তিনি বললেন, “যেহেতু সদাপ্রভুর সিংহাসনের বিরুদ্ধে\f + \fr 17:16 \fr*\ft অথবা, প্রতি\ft*\f* হাত উঠেছিল, তাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সদাপ্রভু অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাবেন।” \c 18 \s1 যিথ্রো মোশির সাথে দেখা করেন \p \v 1 ঈশ্বর মোশির ও তাঁর প্রজাদের জন্য যা যা করলেন, এবং কীভাবে সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন, সেসব কথা মিদিয়নীয় যাজক তথা মোশির শ্বশুরমশাই যিথ্রো শুনেছিলেন। \p \v 2 মোশি তাঁর স্ত্রী সিপ্পোরাকে পাঠিয়ে দেওয়ার পর, তাঁর শ্বশুরমশাই যিথ্রো সিপ্পোরাকে, \v 3 এবং তাঁর দুই ছেলেকে গ্রহণ করলেন। এক ছেলের নাম রাখা হল গের্শোম\f + \fr 18:3 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় গের্শোম শব্দটি, সেখানে এক বিদেশির মতো শোনায়\ft*\f*, কারণ মোশি বললেন, “আমি বিদেশে এক বিদেশি হয়ে গিয়েছি” \v 4 আর অন্যজনের নাম রাখা হল ইলীয়েষর\f + \fr 18:4 \fr*\ft ইলীয়েষর শব্দের অর্থ আমার ঈশ্বর সাহায্যকারী\ft*\f*, কারণ তিনি বললেন, “আমার পৈত্রিক ঈশ্বর আমার সাহায্যকারী হয়েছেন; তিনি আমাকে ফরৌণের তরোয়ালের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।” \p \v 5 মোশির শ্বশুরমশাই যিথ্রো, মোশির ছেলেদের ও স্ত্রীকে নিয়ে সেই মরুভূমিতে তাঁর কাছে এলেন, যেখানে ঈশ্বরের পর্বতের কাছে তিনি শিবির স্থাপন করেছিলেন। \v 6 যিথ্রো তাঁর কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, “আমি, তোমার শ্বশুর যিথ্রো, তোমার স্ত্রী ও তার দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তোমার কাছে আসছি।” \p \v 7 অতএব মোশি তাঁর শ্বশুরমশাই-এর সাথে দেখা করার জন্য বাইরে গেলেন এবং প্রণত হয়ে তাঁকে চুমু দিলেন। তাঁরা পরস্পরকে অভিবাদন জানালেন ও পরে তাঁবুর ভিতরে চলে গেলেন। \v 8 ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভু ফরৌণের ও মিশরীয়দের প্রতি যা যা করেছিলেন এবং পথিমধ্যে যেসব কষ্ট তাঁদের সহ্য করতে হয়েছিল ও সদাপ্রভু কীভাবে তাঁদের রক্ষা করেছিলেন, সেসব কথা মোশি তাঁর শ্বশুরমশাইকে বলে শোনালেন। \p \v 9 মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীদের রক্ষা করতে গিয়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের জন্য যেসব ভালো ভালো কাজ করেছিলেন, তার বৃত্তান্ত শুনে যিথ্রো খুব খুশি হলেন। \v 10 তিনি বললেন, “সেই সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, যিনি মিশরীয়দের ও ফরৌণের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করেছেন এবং যিনি মানুষজনকে মিশরীয়দের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। \v 11 এখন আমি জানলাম যে সদাপ্রভু অন্য সব দেবতার চেয়ে মহত্তর, কারণ তিনি তাদেরই প্রতি এরকম করেছেন, যারা ইস্রায়েলের প্রতি অহংকারী আচরণ দেখিয়েছিল।” \v 12 পরে মোশির শ্বশুরমশাই যিথ্রো, সদাপ্রভুর কাছে এক হোমবলি ও অন্যান্য নৈবেদ্য নিয়ে আসলেন, এবং হারোণ ইস্রায়েলের সব প্রাচীনকে সঙ্গে নিয়ে ঈশ্বরের উপস্থিতিতে মোশির শ্বশুরমশাই যিথ্রোর সঙ্গে এক ভোজ খেতে এলেন। \p \v 13 পরদিন মোশি লোকদের বিচারক হয়ে তাঁর আসন গ্রহণ করলেন, এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকেরা তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকল। \v 14 মোশি লোকজনের জন্য যা কিছু করছিলেন, তাঁর শ্বশুরমশাই যখন সেসবকিছু দেখলেন, তখন তিনি বললেন, “লোকজনের জন্য তুমি এ কী করছ? একা তুমিই কেন বিচারক হয়ে বসে আছ, যখন এইসব লোক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোমার চারপাশে দাঁড়িয়ে আছে?” \p \v 15 মোশি তাঁকে উত্তর দিলেন, “কারণ লোকেরা ঈশ্বরের ইচ্ছার খোঁজ নেওয়ার জন্য আমার কাছে আসে। \v 16 যখনই তারা এক দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হয়, তা আমার কাছে আনা হয়, এবং আমি দুই দলের মধ্যে মীমাংসা করি এবং ঐশ্বরিক হুকুমাদি ও নির্দেশাবলি তাদের জানিয়ে দিই।” \p \v 17 মোশির শ্বশুরমশাই তাঁকে উত্তর দিলেন, “তুমি যা করছ তা ঠিক নয়। \v 18 তুমি ও এই যেসব লোক তোমার কাছে আসছে, তোমরা সবাই অবসন্ন হয়ে পড়বে। তোমার পক্ষে এ কাজটি অত্যন্ত গুরুভার; একা তুমি এটি সামলাতে পারবে না। \v 19 এখন আমার কথা শোনো ও আমি তোমাকে কিছু পরামর্শ দেব, এবং ঈশ্বর তোমার সহবর্তী হোন। তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের সামনে লোকজনের প্রতিনিধি হতে হবে এবং তাঁর কাছে তাদের দ্বন্দ্বগুলি নিয়ে আসতে হবে। \v 20 তাঁর হুকুমাদি ও নির্দেশাবলি তাদের শিক্ষা দাও, এবং তাদের দেখিয়ে দাও কীভাবে তাদের জীবনযাপন করতে হবে ও তাদের কেমন আচরণ করতে হবে। \v 21 কিন্তু সব লোকজনের মধ্যে থেকে যোগ্য লোকদের মনোনীত করো—যারা ঈশ্বরকে ভয় করে, বিশ্বস্ত এমন সব লোক যারা অসাধু মুনাফা ঘৃণা করে—এবং কয়েক হাজার, কয়েকশো, পঞ্চাশ-পঞ্চাশ ও দশ-দশ জনের উপর তাদের কর্মকর্তারূপে নিযুক্ত করো। \v 22 সবসময় এদেরই লোকজনের বিচারক হয়ে থাকতে দিয়ো, কিন্তু প্রত্যেকটি দুরূহ মামলা তাদের তোমার কাছে আনতে দিয়ো; সহজ মামলাগুলির নিষ্পত্তি তারা নিজেরাই করে নিতে পারবে। এতে তোমার বোঝা হালকা হয়ে যাবে, কারণ তারা তোমার সঙ্গে তা ভাগাভাগি করে নেবে। \v 23 তুমি যদি এরকম করো ও ঈশ্বরও যদি এরকম আদেশ দেন, তবে তুমি ধকলটি সামলাতে সক্ষম হবে, এবং এইসব লোক তৃপ্ত হয়ে ঘরে ফিরে যাবে।” \p \v 24 মোশি তাঁর শ্বশুরমশাই যিথ্রোর কথা শুনলেন এবং তিনি যা যা করতে বললেন সেসবকিছু করলেন। \v 25 সমগ্র ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে তিনি যোগ্য লোকদের মনোনীত করলেন এবং লোকজনের নেতারূপে, কয়েক হাজার, কয়েকশো, পঞ্চাশ-পঞ্চাশ ও দশ-দশ জনের উপর কর্মকর্তারূপে তাঁদের নিযুক্ত করে দিলেন। \v 26 সবসময় তাঁরা লোকজনের জন্য বিচারক হয়ে বিচার করতেন। দুরূহ মামলাগুলি তাঁরা মোশির কাছে আনতেন, কিন্তু সহজ মামলাগুলির নিষ্পত্তি তাঁরা নিজেরাই করতেন। \p \v 27 পরে মোশি তাঁর শ্বশুরমশাইকে বিদায় দিলেন, এবং যিথ্রো তাঁর নিজের দেশে ফিরে গেলেন। \c 19 \s1 সীনয় পর্বতে \p \v 1 ইস্রায়েলীরা মিশর ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর তৃতীয় মাসের প্রথম দিনে—ঠিক সেদিনই—তারা সীনয় মরুভূমিতে এসেছিল। \v 2 রফীদীম থেকে যাত্রা শুরু করার পর, তারা সীনয় মরুভূমিতে প্রবেশ করল, এবং পর্বতের সামনের দিকে ইস্রায়েল সেখানে মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করল। \p \v 3 পরে মোশি ঈশ্বরের কাছে উঠে গেলেন এবং সদাপ্রভু পর্বত থেকে তাঁকে ডাক দিয়ে বললেন, “যাকোবের বংশধরদের কাছে এবং ইস্রায়েলের লোকজনের কাছে তোমাকে একথাই বলতে হবে: \v 4 ‘তোমরা নিজেরাই তো দেখেছ আমি মিশরের প্রতি কী করেছিলাম, এবং কীভাবে আমি তোমাদের ঈগলের ডানায় তুলে বহন করেছিলাম ও তোমাদের নিজের কাছে এনেছিলাম। \v 5 এখন তোমরা যদি পুরোপুরি আমার বাধ্য হও ও আমার নিয়ম পালন করো, তবে সব জাতির মধ্যে তোমরাই আমার নিজস্ব সম্পত্তি হবে। যদিও সমগ্র পৃথিবীই আমার, \v 6 তোমরা\f + \fr 19:6 \fr*\ft অথবা, সম্পত্তি, কারণ সমগ্র পৃথিবীই আমার\ft*\f* আমার জন্য যাজকদের এক রাজ্য এবং পবিত্র এক জাতি হবে।’ ইস্রায়েলীদের কাছে তোমাকে এইসব কথা বলতে হবে।” \p \v 7 অতএব মোশি ফিরে গেলেন এবং লোকদের প্রাচীনদের ডেকে পাঠালেন ও সদাপ্রভু তাঁকে যা যা বলার আদেশ দিয়েছিলেন সেসব কথা তাঁদের সামনে পেশ করলেন। \v 8 লোকজন সবাই একসঙ্গে উত্তর দিল, “সদাপ্রভু যা যা বলেছেন আমরা সেসবকিছু করব।” অতএব মোশি তাদের উত্তর সদাপ্রভুর কাছে ফিরিয়ে দিলেন। \p \v 9 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি এক ঘন মেঘে তোমার কাছে আসতে চলেছি, যেন লোকেরা শোনে যে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি এবং তারা সবসময় তোমার উপর তাদের আস্থা স্থাপন করে।” লোকেরা কী বলেছিল তা তখন মোশি সদাপ্রভুকে বললেন। \p \v 10 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “লোকদের কাছে যাও এবং আজ ও আগামীকাল তাদের পবিত্র করো। তারা তাদের জামাকাপড় ধুয়ে নিক \v 11 ও তৃতীয় দিনের জন্য প্রস্তুত থাকুক, কারণ সেদিনই সব লোকের চোখের সামনে সদাপ্রভু সীনয় পর্বতে নেমে আসবেন। \v 12 পর্বতের চারপাশে লোকদের জন্য সীমানা নির্দিষ্ট করে দাও ও তাদের বলো, ‘সাবধান, তোমরা কেউ যেন পর্বতের কাছে না যাও বা এর পাদদেশ স্পর্শ না করো। যে কেউ পর্বত স্পর্শ করবে তাকে মেরে ফেলতে হবে। \v 13 তাদের পাথর ছুঁড়ে বা তির নিক্ষেপ করে হত্যা করতে হবে; তাদের উপর যেন কোনও হাত না পড়ে। কোনও মানুষ বা পশুকে বেঁচে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না।’ একমাত্র যখন শিঙার সুদীর্ঘ শব্দ শোনা যাবে, তখনই তারা পর্বতের কাছে আসতে পারবে।” \p \v 14 পর্বত থেকে মোশি নিচে ইস্রায়েলীদের কাছে নেমে আসার পর, তিনি তাদের পবিত্র করলেন, এবং তারা তাদের জামাকাপড় ধুয়ে নিল। \v 15 পরে তিনি লোকদের বললেন, “তৃতীয় দিনের জন্য তোমরা নিজেদের প্রস্তুত করো। যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা থেকে বিরত থাকো।” \p \v 16 তৃতীয় দিন সকালবেলায় বজ্রপাত হল ও বিদ্যুৎ চমকাল, একইসাথে ঘন মেঘে পর্বত ঢেকে গেল ও খুব জোরে শিঙার শব্দ শোনা গেল। শিবিরের মধ্যে প্রত্যেকে কেঁপে উঠল। \v 17 তখন মোশি ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করার জন্য নেতৃত্ব দিয়ে লোকদের শিবির থেকে বের করে আনলেন, এবং তারা পর্বতের পাদদেশে এসে দাঁড়াল। \v 18 সীনয় পর্বত ধোঁয়ায় ঢেকে গেল, কারণ সদাপ্রভু অগ্নিবেষ্টিত হয়ে পর্বতের উপর নেমে এলেন। অগ্নিকুণ্ড থেকে ওঠা ধোঁয়ার মতো সেই ধোঁয়া গলগল করে সেখান থেকে উপরে উঠে গেল, এবং সমগ্র পর্বত\f + \fr 19:18 \fr*\ft ও সব লোকজন\ft*\f* থরথর করে কেঁপে উঠল। \v 19 শিঙার শব্দ ক্রমশ জোরালো হল, মোশি কথা বললেন এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর তাঁকে উত্তর দিল\f + \fr 19:19 \fr*\ft অথবা, আর ঈশ্বর বজ্রপাত সমেত তাঁকে উত্তর দিলেন\ft*\f*। \p \v 20 সদাপ্রভু সীনয় পর্বতের চূড়ায় নেমে এলেন এবং মোশিকে পর্বতের চূড়ায় ডেকে নিলেন। অতএব মোশি উপরে উঠে গেলেন \v 21 এবং সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “নিচে নেমে যাও ও লোকদের সাবধান করে দাও, পাছে তারা জোর করে সদাপ্রভুকে দেখতে যায় ও তাদের মধ্যে অনেকে প্রাণ হারায়। \v 22 এমনকি যারা সদাপ্রভুর নিকটবর্তী হয়, সেই যাজকরাও যেন নিজেদের পবিত্র করে, তা না হলে সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে সহসা আবির্ভূত হবেন।” \p \v 23 মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “লোকেরা সীনয় পর্বতে উঠে আসতে পারবে না, কারণ তুমি নিজেই আমাদের সাবধান করে দিয়েছ, ‘পর্বতের চারপাশে সীমানা নির্দিষ্ট করে রাখো এবং সেটিকে পবিত্রতায় পৃথক করে রাখো।’ ” \p \v 24 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “নিচে নেমে যাও এবং হারোণকে তোমার সঙ্গে নিয়ে উপরে উঠে এসো। কিন্তু যাজকেরা ও লোকেরা যেন জোর করে সদাপ্রভুর কাছে উঠে আসার চেষ্টা না করে, তা না হলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে সহসা আবির্ভূত হবেন।” \p \v 25 অতএব মোশি নিচে লোকদের কাছে নেমে গেলেন এবং তাদের এসব কথা বললেন। \c 20 \s1 দশাজ্ঞা \p \v 1 আর ঈশ্বর এইসব কথা বললেন: \b \li4 \v 2 “আমিই তোমার ঈশ্বর সেই সদাপ্রভু, যিনি তোমাকে মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের সেই দেশ থেকে বের করে এনেছেন। \b \li1 \v 3 “আমার সামনে\f + \fr 20:3 \fr*\ft অথবা, অতিরিক্ত\ft*\f* তুমি অন্য কোনও দেবতা রাখবে না। \li1 \v 4 নিজের জন্য তুমি ঊর্ধ্বস্থ স্বর্গের বা অধঃস্থ পৃথিবীর বা জলরাশির তলার কোনো কিছুর আকৃতিবিশিষ্ট কোনও প্রতিমা তৈরি করবে না। \v 5 তুমি তাদের কাছে মাথা নত করবে না বা তাদের আরাধনা করবে না; কারণ আমি, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, এক ঈর্ষান্বিত ঈশ্বর, বাবা-মার করা পাপের কারণে সন্তানদের শাস্তি দিই, যারা আমাকে ঘৃণা করে তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত দিই, \v 6 কিন্তু যারা আমাকে ভালোবাসে ও আমার আজ্ঞাগুলি পালন করে, হাজার প্রজন্ম পর্যন্ত তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাই। \li1 \v 7 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের অপব্যবহার কোরো না, কারণ যে কেউ তাঁর নামের অপব্যবহার করে সদাপ্রভু তাকে নির্দোষ প্রতিপন্ন করবেন না। \li1 \v 8 পবিত্রতায় বিশ্রামদিন পালন করে স্মরণ কোরো। \v 9 ছয় দিন তুমি পরিশ্রম করবে ও তোমার সব কাজকর্ম করবে, \v 10 কিন্তু সপ্তম দিনটি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামদিন। সেদিন তুমি, তোমার ছেলে বা মেয়ে, তোমার দাস বা দাসী, তোমার পশুপাল, বা তোমার নগরে বসবাসকারী কোনো বিদেশি, কেউ কোনও কাজ কোরো না। \v 11 কারণ ছয় দিনে সদাপ্রভু আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী, সমুদ্র ও সেগুলির মধ্যে থাকা সমস্ত কিছু তৈরি করেছিলেন, কিন্তু সপ্তম দিন তিনি বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তাই সদাপ্রভু সাব্বাথবারকে আশীর্বাদ করে সেটি পবিত্র করলেন। \li1 \v 12 তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো, যেন তুমি সেই দেশে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতে পারো, যে দেশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে দিচ্ছেন। \li1 \v 13 তুমি নরহত্যা কোরো না। \li1 \v 14 তুমি ব্যভিচার কোরো না। \li1 \v 15 তুমি চুরি কোরো না। \li1 \v 16 তুমি তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না। \li1 \v 17 তুমি তোমার প্রতিবেশীর ঘরবাড়ির প্রতি লোভ কোরো না। তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর, বা তার দাস বা দাসীর, তার বলদের বা গাধার, বা তোমার প্রতিবেশীর অধিকারভুক্ত কোনো কিছুর প্রতি লোভ কোরো না।” \b \p \v 18 যখন লোকেরা বজ্রপাত হতে ও বিদ্যুৎ চমকাতে দেখল এবং শিঙার শব্দ শুনল ও পর্বত ধোঁয়ায় ঢেকে যেতে দেখল, তখন তারা ভয়ে কেঁপে উঠল। তারা দূরে দাঁড়িয়ে পড়ল \v 19 এবং মোশিকে বলল, “আপনি নিজেই আমাদের সঙ্গে কথা বলুন ও আমরা তা শুনব। কিন্তু ঈশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন পাছে আমরা মারা যাই।” \p \v 20 মোশি লোকদের বললেন, “ভয় পেয়ো না। ঈশ্বর তোমাদের পরীক্ষা করতে এসেছেন, যেন পাপ করা থেকে তোমাদের বিরত রাখার জন্য ঈশ্বরভয় তোমাদের সহবর্তী হয়।” \p \v 21 লোকেরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকল, আর মোশি সেই ঘন অন্ধকারের দিকে এগিয়ে গেলেন যেখানে ঈশ্বর উপস্থিত ছিলেন। \s1 প্রতিমা এবং যজ্ঞবেদি \p \v 22 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলীদের একথা বলো: ‘তোমরা নিজেরাই দেখলে যে আমি স্বর্গ থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি: \v 23 আমার পাশাপাশি রাখার জন্য অন্য কোনও দেবতা তৈরি কোরো না; নিজেদের জন্য রুপোর দেবতা বা সোনার দেবতা তৈরি কোরো না। \p \v 24 “ ‘আমার জন্য মাটি দিয়ে একটি যজ্ঞবেদি তৈরি করো এবং সেটির উপর তোমাদের হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করো, মেষ ও ছাগল, ও তোমাদের গবাদি পশুপাল বলি দাও। আমি যেখানেই আমার নাম সম্মানিত করব, সেখানেই আমি তোমাদের কাছে আসব এবং তোমাদের আশীর্বাদ করব। \v 25 তোমরা যদি আমার জন্য পাথরের এক যজ্ঞবেদি তৈরি করো, তবে খোদিত পাথর দিয়ে তা নির্মাণ কোরো না, কারণ যদি সেটিতে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করো তবে তোমরা সেটি অশুচি করে তুলবে। \v 26 আর সিঁড়ির ধাপ বেয়ে আমার যজ্ঞবেদিতে উঠো না, পাছে তোমাদের গোপনাঙ্গগুলি অনাবৃত হয়ে যায়।’ \c 21 \p \v 1 “এগুলি সেই বিধিবিধান যা তোমাকে তাদের সামনে রাখতে হবে: \s1 হিব্রু দাস \p \v 2 “যদি তুমি কোনও হিব্রু দাসকে কিনে এনেছ, তবে সে ছয় বছর তোমার সেবা করুক। কিন্তু সপ্তম বছরে, সে স্বাধীন হয়ে চলে যাবে, তাকে কোনও অর্থ খরচ করতে হবে না। \v 3 সে যদি একা এসেছে, তবে সে একাই স্বাধীন হয়ে চলে যাক; কিন্তু আসার সময় যদি তার স্ত্রী তার সঙ্গে ছিল, তবে সেও তার সঙ্গে যাক। \v 4 তার মালিক যদি তাকে এক স্ত্রী দেন এবং সেই স্ত্রী তার জন্য ছেলে বা মেয়েদের জন্ম দেয়, তবে সেই মহিলা ও তার সন্তানেরা তার মালিকের অধিকারভুক্ত হবে, এবং শুধু সেই পুরুষটিই স্বাধীন হয়ে চলে যাবে। \p \v 5 “কিন্তু সেই দাস যদি ঘোষণা করে, ‘আমি আমার মালিককে ও আমার স্ত্রী ও সন্তানদের ভালোবাসি এবং স্বাধীন হয়ে চলে যেতে চাই না,’ \v 6 তবে তার মালিক অবশ্যই তাকে ঈশ্বরের\f + \fr 21:6 \fr*\ft অথবা, বিচারকদের\ft*\f* সামনে নিয়ে যাবেন। মালিক তাকে দরজার কাছে বা দরজার চৌকাঠের কাছে নিয়ে যাবেন এবং একটি কাঁটা দিয়ে তার কান বিদীর্ণ করে দেবেন। তখন সে সারা জীবনের জন্য তাঁর দাস হয়ে যাবে। \p \v 7 “যদি কোনও লোক তার মেয়েকে এক দাসীরূপে বিক্রি করে দেয়, তবে সে দাসের মতো স্বাধীন হয়ে চলে যেতে পারবে না। \v 8 সে যদি তার সেই মালিককে সন্তুষ্ট করতে না পারে, যিনি তাকে নিজের জন্য পছন্দ করেছিলেন\f + \fr 21:8 \fr*\ft অথবা, যে তাকে পছন্দ করেননি\ft*\f*, তবে তিনি যেন অবশ্যই তাকে মুক্ত করে দেন। তাকে বিদেশিদের কাছে বিক্রি করার তাঁর কোনও অধিকার নেই, কারণ তিনি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। \v 9 সেই মালিক যদি তাকে নিজের ছেলের জন্য পছন্দ করেছেন, তবে তিনি যেন অবশ্যই তাকে এক মেয়ের অধিকার দেন। \v 10 তিনি যদি অন্য কোনও মহিলাকে বিয়ে করেন, তবে তিনি যেন অবশ্যই প্রথমজনকে তার খাদ্য, বস্ত্র ও দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না করেন। \v 11 তিনি যদি তার প্রতি এই তিনটি কর্তব্য পালন না করেন, তবে সেই স্ত্রী কোনও অর্থ খরচ না করে, স্বাধীন হয়ে ফিরে যেতে পারবে। \s1 ব্যক্তিগত জখম \p \v 12 “যে কেউ অন্য কাউকে মারাত্মক এক ঘা দিয়ে জখম করে, তাকে মেরে ফেলতে হবে। \v 13 অবশ্য, তা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে করা না হয়, কিন্তু ঈশ্বরই তা হতে দিয়েছেন, তবে তাকে এমন এক স্থানে পালিয়ে যেতে হবে যা আমি নির্দিষ্ট করে দেব। \v 14 কিন্তু কেউ যদি চক্রান্ত করে কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে, তবে সেই লোকটিকে আমার যজ্ঞবেদি থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 15 “যে কেউ তার বাবা বা মাকে আক্রমণ\f + \fr 21:15 \fr*\ft অথবা, হত্যা\ft*\f* করে, তাকে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 16 “যে কেউ অন্য কাউকে অপহরণ করে সেই অপহৃত লোকটিকে বিক্রি করে দেয় বা তাকে নিজের দখলে রাখে, তবে সেই অপহরণকারীকে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 17 “যে কেউ তার বাবা বা মাকে অভিশাপ দেয়, তাকে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 18 “যদি মানুষজন ঝগড়া-বিবাদ করতে করতে একজন অন্যজনকে পাথর দিয়ে আঘাত করে বা তাদের মুষ্টাঘাত\f + \fr 21:18 \fr*\ft অথবা, অস্ত্র দিয়ে আঘাত\ft*\f* করে এবং সেই আঘাতপ্রাপ্ত লোকটি মারা না যায় কিন্তু শয্যাশায়ী হয়, ও \v 19 সে যদি উঠে একটি ছড়ি ধরে বাইরে এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করতে পারে, তবে যে আঘাত করল তাকে দায়ী করা হবে না; অবশ্য, সেই দোষী লোকটিকে সময়ের ক্ষতিপূরণস্বরূপ সেই আহত লোকটির জন্য খরচপত্র দিতে হবে এবং যতদিন না সে পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে ততদিন তার দেখাশোনা করতে হবে। \p \v 20 “যদি কেউ তার ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীকে একটি লাঠি দিয়ে মারে ও এর প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ সে যদি মারা যায় তবে অবশ্যই তাকে শাস্তি দিতে হবে, \v 21 কিন্তু যদি সেই ক্রীতদাস বা দাসী দুই একদিন পর সুস্থ হয়ে ওঠে তবে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না, যেহেতু সেই ক্রীতদাস বা দাসী তারই সম্পত্তি। \p \v 22 “যদি লোকজন মারামারি করার সময় কোনও গর্ভবতী মহিলাকে আঘাত করে ও সে অকালে সন্তানের জন্ম দেয়\f + \fr 21:22 \fr*\ft অথবা, তার গর্ভপাত হয়ে যায়\ft*\f* কিন্তু বড়ো ধরনের আঘাত না পায়, তবে সেই মহিলার স্বামী যা দাবি করবে এবং আদালত যেমনটি অনুমতি দেবে সেইমতোই অবশ্য অপরাধীর জরিমানা ধার্য করতে হবে। \v 23 কিন্তু সেই মহিলাটি যদি বড়ো ধরনের আঘাত পায়, তবে তোমাদের প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ, \v 24 চোখের পরিবর্তে চোখ, দাঁতের পরিবর্তে দাঁত, হাতের পরিবর্তে হাত, পায়ের পরিবর্তে পা, \v 25 দহনের পরিবর্তে দহন, ক্ষতের পরিবর্তে ক্ষত, কালশিটের পরিবর্তে কালশিটে আদায় করতে হবে। \p \v 26 “যে মালিক তাঁর ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীর চোখে আঘাত করে তা নষ্ট করে দেন, তাঁকে অবশ্যই সেই চোখের ক্ষতিপূরণ করার জন্য সেই ক্রীতদাস বা দাসীকে স্বাধীন করে দিতে হবে। \v 27 আর যে মালিক মেরে ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীর দাঁত উপড়ে ফেলেন, তাঁকে অবশ্যই সেই দাঁতের ক্ষতিপূরণ করার জন্য সেই ক্রীতদাস বা দাসীকে স্বাধীন করে দিতে হবে। \p \v 28 “একটি বলদ যদি ঢুঁ মেরে কোনও পুরুষ বা মহিলাকে মেরে ফেলে, তবে সেই বলদটিকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে, এবং সেটির মাংস অবশ্যই খাওয়া যাবে না। কিন্তু সেই বলদটির মালিক দোষী সাব্যস্ত হবে না। \v 29 অবশ্য যদি, সেই বলদটির ঢুঁ মারার অভ্যাস ছিল এবং সেই মালিককে সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সে সেটিকে খোঁয়াড়ে বেঁধে রাখেনি ও সেটি কোনও পুরুষ বা মহিলাকে মেরে ফেলেছে, তবে সেই বলদটিকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে এবং সেটির মালিককেও মেরে ফেলতে হবে। \v 30 অবশ্য, যদি খরচপত্র দাবি করা হয়, তবে সেই মালিক দাবিমতো খরচপত্র দিয়ে তার প্রাণ মুক্ত করতে পারবে। \v 31 সেই বলদটি যদি কোনও ছেলে বা মেয়েকে ঢুঁ মারে, সেক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। \v 32 সেই বলদটি যদি কোনও ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীকে ঢুঁ মারে, তবে সেই মালিককে অবশ্যই সেই ক্রীতদাস বা দাসীর মালিককে ত্রিশ শেকল\f + \fr 21:32 \fr*\ft অথবা, প্রায় 345 গ্রাম\ft*\f* রুপো দিতে হবে, এবং সেই বলদটিকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 33 “যদি কেউ একটি খানাখন্দ অনাবৃত রাখে বা সেটি ঢেকে রাখতে ব্যর্থ হয় এবং কোনও বলদ বা কোনও গাধা সেটির মধ্যে পড়ে যায়, \v 34 তবে যে সেই খন্দটি খুঁড়েছিল সে অবশ্যই সেই মালিককে ক্ষতিপূরণ দেবে ও পরিবর্তে মৃত পশুটি নিয়ে নেবে। \p \v 35 “যদি কোনও লোকের বলদ অন্য কোনও লোকের বলদকে আহত করে ও সেটি মারা যায়, তবে দুই পক্ষই জীবিত বলদটিকে বিক্রি করবে এবং সেই অর্থ ও মৃত পশুটিকে সমপরিমাণে ভাগ করে নেবে। \v 36 অবশ্য, যদি জানা ছিল যে সেই বলদটির ঢুঁ মারার অভ্যাস ছিল, অথচ মালিক সেটিকে খোঁয়াড়ে বেঁধে রাখেনি, তবে সেই মালিক অবশ্যই পশুর জন্য পশু দেবে, এবং পরিবর্তে মৃত পশুটি নিয়ে নেবে। \c 22 \s1 বিষয়সম্পত্তির সুরক্ষা \p \v 1 “যে কেউ একটি বলদ বা একটি মেষ চুরি করে সেটি জবাই করে বা বিক্রি করে দেয়, তবে তাকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণস্বরূপ সেই বলদটির পরিবর্তে পাঁচটি গবাদি পশু ও সেই মেষটির পরিবর্তে চারটি মেষ দিতে হবে। \p \v 2 “রাতের বেলায় যদি কোনও চোর চুরি করতে এসে ধরা পড়ে এবং মারাত্মক আঘাত পেয়ে মারা যায়, তবে রক্ষক রক্তপাতের দোষে দোষী হবে না; \v 3 কিন্তু তা যদি সূর্যোদয়ের পর ঘটে, তবে সেই রক্ষক রক্তপাতের দোষে দোষী হবে। \p “যে কেউ চুরি করেছে, তাকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কিন্তু তার কাছে যদি কিছুই না থাকে, তবে চৌর্যবৃত্তির ক্ষতিপূরণের জন্য তাকে অবশ্যই বিক্রীত হতে হবে। \v 4 চুরি যাওয়া পশুটিকে যদি তার সম্পত্তির মধ্যে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়—তা সে বলদ বা গাধা বা মেষ যাই হোক না কেন—তাকে অবশ্যই দ্বিগুণ অর্থ ফিরিয়ে দিতে হবে। \p \v 5 “কেউ যদি তার গৃহপালিত পশুপাল জমিতে বা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরাতে নিয়ে যায় ও সেগুলি পথভ্রষ্ট হয়ে অন্য একজনের জমিতে চরতে চলে যায়, তবে সেই অপরাধীকে অবশ্যই তার নিজস্ব জমি বা দ্রাক্ষাক্ষেতের সেরা ফলন দিয়ে ক্ষতিপূরণ করতে হবে। \p \v 6 “যদি আগুন লেগে তা কাঁটাঝোপে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে তা কাঁচা বা পাকা শস্য অথবা সমগ্র ক্ষেতজমি পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়, তবে যে প্রথমে সেই আগুন লাগিয়েছিল, তাকেই ক্ষতিপূরণ করতে হবে। \p \v 7 “কেউ যদি তার প্রতিবেশীর কাছে রুপো বা সোনা গচ্ছিত রাখে এবং সেগুলি সেই প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায়, এবং চোর যদি ধরা পড়ে যায়, তবে তাকে অবশ্যই দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। \v 8 কিন্তু সেই চোরকে যদি খুঁজে পাওয়া না যায়, তবে সেই বাড়ির মালিককে বিচারকদের সামনে দাঁড়াতে হবে, এবং তাঁদেরই স্থির করতে হবে\f + \fr 22:8 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াতে হবে, এবং তাঁকেই স্থির করতে হবে\ft*\f* সেই বাড়ির মালিক সেই অন্যজনের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করেছে, কি না। \v 9 বলদ, গাধা, মেষ, পোশাকের, বা অন্য যে কোনো হারিয়ে যাওয়া সম্পত্তির বিষয়ে যদি কেউ বলে, ‘এটি আমার,’ সেগুলির অবৈধ দখলদারির সব ক্ষেত্রে দুই পক্ষকেই তাদের মামলাগুলি বিচারকদের\f + \fr 22:9 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরের\ft*\f* সামনে আনতে হবে। যাকে বিচারকেরা\f + \fr 22:9 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বর\ft*\f* দোষী সাব্যস্ত করবেন, সেই অন্যজনকে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেবে। \p \v 10 “যদি কেউ তার প্রতিবেশীর কাছে গাধা, বলদ, মেষ বা অন্য কোনো পশু গচ্ছিত রাখে এবং সেটি মারা যায় বা আহত হয় বা মানুষের অগোচরে চুরি হয়ে যায়, \v 11 তবে তাদের মধ্যে উৎপন্ন সমস্যাটির সমাধান হবে সদাপ্রভুর সামনে এই শপথ নেওয়ার মাধ্যমে, যে সেই প্রতিবেশী অন্যজনের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করেনি। মালিককে তা মেনে নিতে হবে, এবং কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। \v 12 কিন্তু সেই পশুটি যদি সেই প্রতিবেশীর কাছ থেকে চুরি গিয়েছে, তবে তাকে মালিকের ক্ষতিপূরণ করতে হবে। \v 13 সেটি যদি কোনও বন্যপশু দ্বারা বিদীর্ণ হয়েছে, তবে সেই প্রতিবেশী প্রমাণস্বরূপ সেটির দেহাবশেষ আনবে এবং সেই বিদীর্ণ পশুটির জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। \p \v 14 “যদি কেউ তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে কোনও পশু ধার নেয় এবং মালিকের অনুপস্থিতিতে সেটি আহত হয় বা মারা যায়, তবে তাকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। \v 15 কিন্তু মালিক যদি পশুটির সাথে থাকে, তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। সেই পশুটি যদি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, তবে ভাড়াবাবদ দেওয়া অর্থেই ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে। \s1 সামাজিক দায়দায়িত্ব \p \v 16 “যদি কোনও লোক, যার বাগদান হয়নি এমন এক কুমারীর সতীত্ব হরণ করে ও তার সাথে শোয়, তবে সে অবশ্যই কন্যাপণ দেবে এবং সেই কুমারী তার স্ত্রী হয়ে যাবে। \v 17 সেই কুমারীর বাবা যদি তাকে তার হাতে তুলে দিতে নিছক অস্বীকার করে, তা হলেও, তাকে কুমারীদের জন্য ধার্য কন্যাপণ দিতেই হবে। \p \v 18 “কোনও ডাকিনীকে বেঁচে থাকতে দিয়ো না। \p \v 19 “যে কেউ পশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে মেরে ফেলতে হবে। \p \v 20 “যে কেউ সদাপ্রভু ছাড়া অন্য কোনো দেবতার কাছে বলি উৎসর্গ করে তাকে অবশ্যই ধ্বংস করে ফেলতে হবে\f + \fr 22:20 \fr*\ft হিব্রু শব্দটি প্রভুর প্রতি বস্তু বা ব্যক্তিসমূহের অনড় দানের ইঙ্গিতবাহী, প্রায়ই তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়ার মাধ্যমে যা সম্পন্ন হত\ft*\f*। \p \v 21 “কোনও বিদেশির প্রতি মন্দ ব্যবহার বা জুলুম কোরো না, কারণ তোমরা মিশরে বিদেশিই ছিলে। \p \v 22 “বিধবা বা অনাথদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ো না। \v 23 তোমরা যদি তা করো ও তারা আমার কাছে কেঁদে ওঠে, তবে আমি নিঃসন্দেহে তাদের কান্না শুনব। \v 24 আমার ক্রোধ জাগ্রত হবে, এবং আমি তরোয়াল দিয়ে তোমাদের হত্যা করব; তোমাদের স্ত্রীরা বিধবা হয়ে যাবে ও তোমাদের সন্তানেরা পিতৃহীন হবে। \p \v 25 “তুমি যদি তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী আমার প্রজাদের মধ্যে অভাবগ্রস্ত কাউকে অর্থ ধার দাও, তবে তা এক ব্যবসায়িক চুক্তিরূপে গণ্য কোরো না; সুদ ধার্য কোরো না। \v 26 তোমার প্রতিবেশীর আলখাল্লাটি যদি তুমি বন্ধকরূপে নিয়েছ, তবে সূর্যাস্তের আগেই তা ফিরিয়ে দিয়ো, \v 27 কারণ সেই আলখাল্লাটিই তোমার প্রতিবেশীর কাছে থাকা একমাত্র আচ্ছাদন। তারা আর কীসে শোবে? তারা যখন আমার কাছে কেঁদে উঠবে, আমি তা শুনব; কারণ আমি করুণাময়। \p \v 28 “ঈশ্বরনিন্দা কোরো না\f + \fr 22:28 \fr*\ft অথবা, বিচারকদের গালিগালাজ কোরো না\ft*\f* বা তোমাদের লোকজনের শাসককে অভিশাপ দিয়ো না। \p \v 29 “তোমার শস্যাগারে বা তোমাদের ভাঁটিতে অর্ঘ্য আটকে রেখো না। \p “তোমার ছেলেদের মধ্যে প্রথমজাতকে আমার হাতে অবশ্যই তুলে দিতে হবে। \v 30 তোমার গবাদি পশুপালের ও তোমার মেষের ক্ষেত্রেও তুমি তাই কোরো। মায়েদের সাথে সেগুলি সাত দিন থাকুক, কিন্তু অষ্টম দিনে তুমি সেগুলি আমাকে দিয়ো। \p \v 31 “তোমাদের আমার পবিত্র প্রজা হতে হবে। অতএব বুনো পশুদের দ্বারা বিদীর্ণ কোনও পশুর মাংস খেয়ো না; কুকুরদের কাছে তা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ো। \c 23 \s1 ন্যায়বিচার ও দয়া-সংক্রান্ত নিয়মকানুন \p \v 1 “মিথ্যা গুজব ছড়িয়ো না। এক বিদ্বেষপরায়ণ সাক্ষী হওয়ার দ্বারা কোনও দোষী লোককে সাহায্য কোরো না। \p \v 2 “অন্যায় করার ক্ষেত্রে জনসাধারণের অনুগামী হোয়ো না। কোনো মামলায় তুমি যখন সাক্ষ্য দাও, তখন জনসাধারণের পক্ষ নিয়ে ন্যায়বিচার বিকৃত কোরো না, \v 3 এবং কোনো মামলায় কোনও দরিদ্র লোকের প্রতি পক্ষপাতিত্ব কোরো না। \p \v 4 “তোমার শত্রুর বলদ অথবা গাধাকে যদি তুমি পথভ্রষ্ট হয়ে চরতে দেখো, তবে নিঃসন্দেহে সেটি ফিরিয়ে দেবে। \v 5 যে তোমাকে ঘৃণা করে, এমন কোনও লোকের গাধাকে যদি তুমি সেটির ভারের তলায় চাপা পড়তে দেখো, তবে সেটিকে সেখানে পড়ে থাকতে দিয়ো না; তুমি নিঃসন্দেহে সেটিকে ভারমুক্ত হতে সাহায্য করবে। \p \v 6 “তোমাদের মধ্যবর্তী দরিদ্র লোকজনের মামলায় তাদের প্রতি যেন ন্যায়বিচার অস্বীকার করা না হয়। \v 7 মিথ্যা দোষারোপ করা থেকে দূরে সরে থেকো এবং কোনও নির্দোষ বা সৎলোককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ো না, কারণ আমি সেই দোষীকে বেকসুর খালাস হতে দেব না। \p \v 8 “ঘুস নিয়ো না, কারণ যাদের দৃষ্টিশক্তি আছে, ঘুস তাদের অন্ধ করে তোলে এবং নির্দোষ লোকদের কথা পরিবর্তন করে। \p \v 9 “কোনও বিদেশির উপর জোরজুলুম কোরো না; তোমরা নিজেরাই জানো বিদেশি হয়ে থাকতে কেমন লাগে, কারণ তোমরাও মিশরে বিদেশিই হয়ে ছিলে। \s1 সাব্বাথ-সংক্রান্ত নিয়মকানুন \p \v 10 “ছয় বছর ধরে তুমি তোমার জমিতে বীজ বুনবে এবং শস্য কাটবে, \v 11 কিন্তু সপ্তম বছরে সেই জমিটি অকর্ষিত ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেবে। তখন তোমাদের লোকজনের মধ্যবর্তী দরিদ্র লোকেরা সেখান থেকে হয়তো খাদ্যশস্য পাবে, এবং যা অবশিষ্ট থেকে যাবে তা হয়তো বন্যপশুরা খেতে পারবে। তোমার দ্রাক্ষাক্ষেতের ও জলপাই বাগানের ক্ষেত্রেও তুমি তাই কোরো। \p \v 12 “ছয় দিন তুমি কাজ কোরো, কিন্তু সপ্তম দিন কাজ কোরো না; যেন তোমার বলদ ও গাধা বিশ্রাম নিতে পারে, এবং তোমার পরিবারে জন্মানো ক্রীতদাস ও তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশি যেন চাঙ্গা থাকতে পারে। \p \v 13 “আমি তোমাকে যা যা বলেছি সেসবকিছু করার ক্ষেত্রে সাবধান থেকো। অন্যান্য দেবতাদের নাম ধরে ডেকো না; তোমার মুখে যেন তাদের কথা শোনাও না যায়। \s1 তিনটি বাৎসরিক উৎসব \p \v 14 “বছরে তিনবার তোমাকে আমার উদ্দেশে উৎসব পালন করতে হবে। \p \v 15 “খামিরবিহীন রুটির উৎসব উদ্‌যাপন কোরো; সাত দিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খেয়ো, যেমনটি আমি তোমাকে আদেশ দিয়েছি। আবীব মাসের নির্দিষ্ট সময়ে এরকমটি কোরো, কারণ সেই মাসেই তোমরা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে। \p “কেউ যেন খালি হাতে আমার সামনে এসে না দাঁড়ায়। \p \v 16 “তোমার জমিতে বোনা ফসলের প্রথম ফল দিয়ে শস্যচ্ছেদনের উৎসব উদ্‌যাপন কোরো। \p “বছর-শেষে, জমি থেকে যখন তুমি তোমার শস্য সংগ্রহ করবে, তখন শস্য সংগ্রহের উৎসব উদ্‌যাপন কোরো। \p \v 17 “বছরে তিনবার সব পুরুষকে সার্বভৌম সদাপ্রভুর সামনে এসে দাঁড়াতে হবে। \p \v 18 “খামিরযুক্ত কোনো কিছু সমেত আমার উদ্দেশে বলির রক্ত উৎসর্গ কোরো না। \p “আমার উৎসব-বলির মেদ যেন সকাল পর্যন্ত রেখে দেওয়া না হয়। \p \v 19 “তোমার জমির সেরা প্রথম ফলটি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে এসো। \p “ছাগ-শিশুকে তার মায়ের দুধে রান্না কোরো না। \s1 ঈশ্বরের দূত পথ প্রস্তুত করবেন \p \v 20 “দেখো, পথে তোমাকে রক্ষা করার জন্য ও যে স্থানটি আমি তৈরি করে রেখেছি, সেখানে তোমাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি তোমার আগে আগে এক দূত পাঠাচ্ছি। \v 21 তাঁর কথায় মনোযোগ দিয়ো এবং তিনি যা কিছু বলেন তা শুনো। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কোরো না; তিনি তোমার বিদ্রোহ ক্ষমা করবেন না, যেহেতু তাঁর মধ্যে আমার নাম আছে। \v 22 তিনি যা বলেন তা যদি তুমি সযত্নে শোনো এবং আমি যা কিছু বলি সেসব করো, তবে আমি তোমার শত্রুদের শত্রু হব ও যারা তোমার বিরোধিতা করে তাদের বিরোধিতা করব। \v 23 আমার দূত তোমার আগে আগে যাবেন এবং ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিব্বীয়, ও যিবূষীয়দের দেশে তোমাকে নিয়ে আসবেন, এবং আমি তাদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলব। \v 24 তাদের দেবতাদের সামনে মাথা নত কোরো না বা তাদের আরাধনা কোরো না অথবা তাদের রীতিনীতি পালন কোরো না। তোমরা অবশ্যই তাদের ধ্বংস করবে এবং তাদের পুণ্য পাথরগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবে। \v 25 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা কোরো, এবং তাঁর আশীর্বাদ তোমার খাদ্যে ও জলে বজায় থাকবে। তোমার মধ্যে থেকে আমি সব রোগব্যাধি দূর করে দেব, \v 26 এবং তোমার দেশে কারোর গর্ভপাত হবে না বা কেউ বন্ধ্যা থাকবে না। আমি তোমার আয়ুর পরিমাণ পূর্ণ করব। \p \v 27 “তোমার আগে আগে আমি আমার আতঙ্ক পাঠিয়ে দেব এবং যেসব জাতি তোমার সম্মুখীন হবে, তাদের প্রত্যেককে আমি বিশৃঙ্খল করে তুলব। তোমার সব শত্রুকে আমি পিছু ফিরে পালাতে বাধ্য করব। \v 28 তোমার সামনে থেকে হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়দের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমি তোমার আগে আগে ভিমরুল পাঠিয়ে দেব। \v 29 কিন্তু এক বছরের মধ্যেই আমি তাদের তাড়িয়ে দেব না, কারণ দেশটি জনশূন্য হয়ে যাবে এবং বন্যপশুরা তোমার পক্ষে অত্যধিক বহুসংখ্যক হয়ে যাবে। \v 30 তোমার সামনে থেকে আমি তাদের একটু একটু করে তাড়িয়ে দেব, যতক্ষণ না পর্যন্ত তুমি সংখ্যায় যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে দেশের দখল নিতে পারছ। \p \v 31 “লোহিত সাগর\f + \fr 23:31 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগর\ft*\f* থেকে ভূমধ্যসাগর\f + \fr 23:31 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় ফিলিস্তিনীদের সমুদ্র।\ft*\f* পর্যন্ত, এবং মরুভূমি থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত আমি তোমার সীমানা স্থাপন করব। যারা সেই দেশে বসবাস করে তাদের আমি তোমার হাতে তুলে দেব, এবং তোমার সামনে থেকে তুমি তাদের তাড়িয়ে দেবে। \v 32 তাদের সঙ্গে বা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনও নিয়ম স্থির কোরো না। \v 33 তোমার দেশে তাদের বসবাস করতে দিয়ো না, তা না হলে আমার বিরুদ্ধে তারা তোমাকে দিয়ে পাপ করাবে, কারণ তাদের দেবতাদের আরাধনা নিঃসন্দেহে তোমার পক্ষে এক ফাঁদ হয়ে উঠবে।” \c 24 \s1 নিয়মটি সুনিশ্চিত হয় \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ও হারোণ, নাদব, ও অবীহূ, এবং ইস্রায়েলের সত্তরজন প্রাচীন, তোমরা সদাপ্রভুর কাছে উঠে এসো। তোমরা একটু দূরে থেকেই আরাধনা করবে, \v 2 কিন্তু মোশি একাই সদাপ্রভুর কাছে আসবে; অন্যেরা কাছাকাছি আসবে না। আর লোকেরাও যেন তার সঙ্গে উপরে উঠে না আসে।” \p \v 3 মোশি যখন লোকদের কাছে গিয়ে সদাপ্রভুর সব কথা ও বিধি তাদের বলে শোনালেন, তখন তারা একস্বরে উত্তর দিল, “সদাপ্রভু যা যা বলেছেন, আমরা সেসবকিছু করব।” \v 4 মোশি তখন সদাপ্রভু যা যা বলেছিলেন সেসবকিছু লিখে রাখলেন। \p পরদিন ভোরবেলায় মোশি ঘুম থেকে উঠলেন ও সেই পর্বতের পাদদেশে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বমূলক পাথরের বারোটি স্তম্ভ খাড়া করলেন। \v 5 পরে তিনি ইস্রায়েলী যুবকদের পাঠালেন, এবং তারা হোমবলি উৎসর্গ করল ও মঙ্গলার্থক বলিরূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এঁড়ে বাছুরগুলি উৎসর্গ করল। \v 6 মোশি অর্ধেক পরিমাণ রক্ত নিয়ে তা গামলাগুলিতে রাখলেন, এবং বাকি অর্ধেকটি তিনি যজ্ঞবেদির উপর ছিটিয়ে দিলেন। \v 7 পরে তিনি নিয়মের সেই গ্রন্থটি নিলেন এবং লোকদের কাছে তা পড়ে শোনালেন। তারা উত্তর দিল, “সদাপ্রভু যা যা বলেছেন আমরা সেসবকিছু করব; আমরা বাধ্য হব।” \p \v 8 মোশি তখন সেই রক্ত নিলেন, লোকদের উপর তা ছিটিয়ে দিলেন এবং বললেন, “এ হল সেই নিয়মের রক্ত, যে নিয়মটি সদাপ্রভু এসব কথার আধারে তোমাদের সঙ্গে স্থির করেছেন।” \p \v 9 মোশি ও হারোণ, নাদব ও অবীহূ এবং ইস্রায়েলের সেই সত্তরজন প্রাচীন উপরে উঠে গেলেন \v 10 এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বরের দর্শন পেলেন। তাঁর পায়ের তলায় আকাশের মতো উজ্জ্বল নীল রংয়ের নীলকান্তমণি দিয়ে তৈরি শান-বাঁধান মেঝের মতো কিছু একটা ছিল। \v 11 কিন্তু ঈশ্বর ইস্রায়েলীদের এইসব নেতার বিরুদ্ধে তাঁর হাত ওঠাননি; তাঁরা ঈশ্বরের দর্শন পেলেন, এবং তাঁরা ভোজনপান করলেন। \p \v 12 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “পর্বতে আমার কাছে উঠে এসো ও এখানে থাকো, এবং আমি তোমাকে সেই পাথরের ফলকগুলি দেব, যেগুলিতে আমি তাদের নির্দেশদানের উদ্দেশে বিধি ও আদেশগুলি লিখে রেখেছি।” \p \v 13 তখন মোশি তাঁর সহায়ক যিহোশূয়কে সঙ্গে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেন, এবং মোশি ঈশ্বরের পর্বতে উঠে গেলেন। \v 14 তিনি প্রাচীনদের বললেন, “যতক্ষণ না আমরা তোমাদের কাছে ফিরে আসছি, ততক্ষণ এখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করো। হারোণ ও হূর তোমাদের সঙ্গে আছেন, এবং যে কেউ কোনও বিবাদে জড়িয়ে পড়ে, সে তাদের কাছে যেতে পারে।” \p \v 15 মোশি যখন পর্বতের উপরে চলে গেলেন, তখন তা মেঘে ঢেকে গেল, \v 16 এবং সদাপ্রভুর গৌরব সীনয় পর্বতের উপর বসতি স্থাপন করল। ছয় দিন পর্বত মেঘে ঢাকা পড়ে গেল, এবং সপ্তম দিনে সদাপ্রভু মেঘের মধ্যে থেকে মোশিকে ডাক দিলেন। \v 17 ইস্রায়েলীদের কাছে সদাপ্রভুর গৌরব পর্বতচূড়ায় অবস্থিত গ্রাসকারী এক আগুনের মতো দেখাচ্ছিল। \v 18 পরে মোশি পর্বতে চড়তে চড়তে সেই মেঘে প্রবেশ করলেন। আর সেই পর্বতের উপর তিনি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত থেকে গেলেন। \c 25 \s1 সমাগম তাঁবুর জন্য প্রদত্ত নৈবেদ্যসমূহ \p \v 1 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 2 “ইস্রায়েলীদের আমার কাছে এক নৈবেদ্য আনতে বলো। আমার জন্য তোমাকে সেই প্রত্যেকজনের কাছ থেকে নৈবেদ্য গ্রহণ করতে হবে যারা আন্তরিকভাবে দান দিতে ইচ্ছুক। \b \li4 \v 3 “এই নৈবেদ্যগুলি তোমাকে তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করতে হবে: \b \li1 “সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ; \li1 \v 4 নীল, বেগুনি, ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি মসিনা; \li1 ছাগলের লোম; \li1 \v 5 লাল রং করা মেষের ছাল এবং অন্য এক ধরনের টেকসই চামড়া\f + \fr 25:5 \fr*\ft খুব সম্ভবত বৃহদাকার জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর চামড়া\ft*\f*; \li1 বাবলা কাঠ; \li1 \v 6 আলোর জন্য জলপাই তেল; \li1 অভিষেক করার উপযোগী তেলের জন্য ও সুগন্ধি ধূপের জন্য মশলাপাতি; \li1 \v 7 এবং এফোদ\f + \fr 25:7 \fr*\ft প্রাচীনকালে ইহুদি যাজকেরা যে এক ধরনের হাতকাটা আনুষ্ঠানিক পোশাক পরতেন\ft*\f* ও বুকপাটার উপরে বসানোর জন্য স্ফটিকমণি ও অন্যান্য মণিরত্ন। \b \p \v 8 “পরে আমার জন্য এক পবিত্রস্থান তৈরি করতে তাদের দিয়ো, এবং আমি তাদের মধ্যে বসবাস করব। \v 9 আমি তোমাদের যে নমুনাটি দেখিয়ে দেব ঠিক সেই অনুসারেই এই সমাগম তাঁবু ও সেটির সব আসবাবপত্র তৈরি কোরো। \s1 নিয়ম-সিন্দুক \p \v 10 “প্রায় 1.1 মিটার লম্বা এবং 68 সেন্টিমিটার করে চওড়া ও উঁচু\f + \fr 25:10 \fr*\ft অথবা, প্রাচীনকালের মাপানুসারে, আড়াই হাত লম্বা, দেড় হাত চওড়া ও দেড় হাত উঁচু; 17 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য;\ft*\f* বাবলা কাঠের একটি সিন্দুক তাদের তৈরি করতে দিয়ো। \v 11 ভিতরে ও বাইরে, দুই দিকেই এটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো, এবং এটির চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি কোরো। \v 12 এটির জন্য সোনার চারটি কড়া ঢালাই কোরো এবং সেগুলি এটির চারটি পায়াতে আটকে দিয়ো, দুটি কড়া একদিকে ও দুটি কড়া অন্যদিকে। \v 13 পরে বাবলা কাঠের খুঁটিগুলি তৈরি কোরো এবং সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো। \v 14 সিন্দুকটি বহন করার জন্য সেটির দুই পাশে থাকা কড়াগুলিতে সেই খুঁটিগুলি ঢুকিয়ে দিয়ো। \v 15 এই সিন্দুকের কড়ার মধ্যে যেন সেই খুঁটিগুলি থাকে; সেগুলি সরানো যাবে না। \v 16 পরে সেই সিন্দুকটিতে বিধিনিয়মের সেই ফলকগুলি রেখো, যেগুলি আমি তোমাদের দেব। \p \v 17 “খাঁটি সোনা দিয়ে প্রায় 1.1 মিটার লম্বা এবং 68 সেন্টিমিটার চওড়া একটি প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন তৈরি কোরো। \v 18 আর সেই আচ্ছাদনের শেষ প্রান্তের দিকে পিটানো সোনা দিয়ে দুটি করূব\f + \fr 25:18 \fr*\ft ঈশ্বরের উপস্থিতিতে বিরাজমান ডানাওয়ালা স্বর্গদূতবিশেষ, যারা নিরন্তর ঈশ্বরের সেবা করে যায়\ft*\f* তৈরি কোরো। \v 19 একটি করূব এক প্রান্তে এবং দ্বিতীয়টি অন্য প্রান্তে তৈরি কোরো; দুই প্রান্তেই আবরণসহ একটি করে করূব তৈরি কোরো। \v 20 করূবেরা তাদের ডানা উপর দিকে ছড়িয়ে রেখে, সেই আবরণটির উপরে নিজেদের দেহ দিয়ে ছায়া ফেলবে। করূবেরা পরস্পরের দিকে মুখ করে, সেই আবরণের দিকে তাকিয়ে থাকবে। \v 21 আবরণটি সিন্দুকের চূড়ায় রাখবে এবং সিন্দুকে সেই বিধিনিয়মের ফলকগুলি রাখবে, যেগুলি আমি তোমাদের দেব। \v 22 সেখানে, সেই দুই করূবের মাঝখানে বিধিনিয়মের সিন্দুকের উপরে রাখা সেই আবরণের উপরেই আমি তোমার সঙ্গে দেখা করব ও ইস্রায়েলীদের জন্য তোমাকে আমার সমস্ত আজ্ঞা দেব। \s1 টেবিল \p \v 23 “বাবলা কাঠ দিয়ে প্রায় 90 সেন্টিমিটার লম্বা, 45 সেন্টিমিটার চওড়া ও 68 সেন্টিমিটার উঁচু একটি টেবিল তৈরি কোরো\f + \fr 25:23 \fr*\ft অথবা, প্রাচীনকালের মাপানুসারে, দু-হাত লম্বা, এক হাত চওড়া ও দেড় হাত উঁচু\ft*\f*। \v 24 খাঁটি সোনা দিয়ে সেটি মুড়ে দিয়ো এবং সেটির চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি কোরো। \v 25 এছাড়াও সেটির চারপাশে প্রায় 7.5 সেন্টিমিটার চওড়া\f + \fr 25:25 \fr*\ft অথবা, প্রাচীনকালের মাপানুসারে, চার আঙুল মাপের\ft*\f* চক্রবেড় তৈরি করে সেই চক্রবেড়ের উপর সোনার এক ছাঁচ রেখো। \v 26 টেবিলের জন্য সোনার চারটি কড়া তৈরি কোরো ও যেখানে সেই চারটি পায়া আছে, সেই চার প্রান্তে সেগুলি বেঁধে দিয়ো। \v 27 কড়াগুলি যেন সেই চক্রবেড়গুলির কাছাকাছি থাকে ও সেই টেবিলটি বহন করার উপযোগী খুঁটিগুলি যেন সেগুলি ধরে রাখতে পারে। \v 28 বাবলা কাঠ দিয়ে খুঁটিগুলি তৈরি কোরো, সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো এবং সেগুলির সাথে সাথে টেবিলটিও বহন কোরো। \v 29 আর খাঁটি সোনা দিয়ে এটির থালা ও বাসন, এছাড়াও নৈবেদ্য ঢেলে দেওয়ার জন্য এটির কলশি ও গামলাও তৈরি কোরো। \v 30 সবসময় আমার সামনে রাখার জন্য এই টেবিলে দর্শন-রুটি সাজিয়ে রেখো। \s1 দীপাধার \p \v 31 “খাঁটি সোনার এক দীপাধার তৈরি কোরো। এটির ভিত ও দণ্ড পিটিয়ে নিতে হবে, এবং সেগুলির সাথে সাথে এতে একই টুকরো দিয়ে ফুলের মতো দেখতে পানপাত্র, কুঁড়ি ও মুকুলগুলিও তৈরি কোরো। \v 32 সেই দীপাধারের পাশ থেকে ছয়টি শাখা বেরিয়ে আসবে—একদিকে তিনটি এবং অন্যদিকে তিনটি। \v 33 একটি শাখায় কুঁড়ি ও মুকুল সহ কাগজি বাদামের আকৃতিবিশিষ্ট তিনটি পানপাত্র থাকবে, পরবর্তী শাখাতে তিনটি, এবং সেই দীপাধার থেকে বেরিয়ে আসা ছয়টি শাখার সবকটিতে একইরকম হবে। \v 34 আর সেই দীপাধারে কুঁড়ি ও মুকুল সহ কাগজি বাদামফুলের মতো আকৃতিবিশিষ্ট চারটি পানপাত্র থাকবে। \v 35 সেই দীপাধার থেকে বেরিয়ে আসা মোট ছয়টি শাখার মধ্যে প্রথম জোড়া শাখার নিচে একটি কুঁড়ি থাকবে, দ্বিতীয় জোড়া শাখার নিচে দ্বিতীয় একটি কুঁড়ি থাকবে, এবং তৃতীয় জোড়ার নিচে তৃতীয় একটি কুঁড়ি থাকবে। \v 36 সেই দীপাধারের সাথে একই টুকরো দিয়ে সেই কুঁড়ি ও শাখাগুলিও পিটানো খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি করতে হবে। \p \v 37 “পরে এর সাতটি প্রদীপ তৈরি কোরো ও সেগুলি সেটির উপর এমনভাবে সাজিয়ে রেখো যেন সেগুলি সেটির সামনের দিকের প্রাঙ্গণে আলো ফেলে। \v 38 এর পলতে ছাঁটার যন্ত্র ও বারকোশগুলিও খাঁটি সোনার হবে। \v 39 দীপাধার ও এইসব আনুষঙ্গিক উপকরণের জন্য এক তালন্ত\f + \fr 25:39 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* খাঁটি সোনা ব্যবহার করতে হবে। \v 40 দেখো, পর্বতের উপরে তোমাকে যে নকশা দেখানো হয়েছিল, সেই অনুযায়ী সবকিছু নির্মাণ কোরো। \c 26 \s1 সমাগম তাঁবু \p \v 1 “একজন দক্ষ কারিগরকে দিয়ে মিহি পাকান মসিনা ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতোয় তৈরি দশটি পর্দায় করূবদের নকশা ফুটিয়ে তুলে সমাগম তাঁবুটি তৈরি কোরো। \v 2 সব পর্দা একই মাপের—13 মিটার লম্বা ও 1.8 মিটার চওড়া\f + \fr 26:2 \fr*\ft অথবা প্রাচীনকালের মাপানুসারে, 28 হাত লম্বা ও 4 হাত চওড়া\ft*\f* হবে। \v 3 পাঁচটি পর্দা একসঙ্গে জুড়ে দিয়ো, এবং অন্য পাঁচটির ক্ষেত্রেও একই কাজ কোরো। \v 4 এক পাটি পর্দায় এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত কিনারা ধরে ধরে নীল কাপড়ের ফাঁস তৈরি কোরো, এবং অন্য পাটি পর্দাতেও এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত একই কাজ কোরো। \v 5 একটি পর্দায় পঞ্চাশটি ফাঁস তৈরি কোরো এবং অন্য পাটি পর্দাতেও কিনারা ধরে ধরে পঞ্চাশটি ফাঁস তৈরি কোরো, যেন ফাঁসগুলি পরস্পরের বিপরীত দিকে থাকে। \v 6 পরে সোনার পঞ্চাশটি আঁকড়া তৈরি কোরো এবং পর্দাগুলি একসঙ্গে সংলগ্ন করে রাখার জন্য সেগুলি ব্যবহার কোরো, যেন এক এককরূপে সমাগম তাঁবুটি অক্ষুণ্ণ থাকে। \p \v 7 “সমাগম তাঁবুটি ঢেকে রাখার জন্য ছাগ-লোমের পর্দা তৈরি কোরো—মোট এগারোটি। \v 8 এগারোটি পর্দার সবগুলিই একই মাপের হবে—13.5 মিটার লম্বা ও 1.8 মিটার চওড়া।\f + \fr 26:8 \fr*\ft অথবা প্রাচীনকালের মাপানুসারে, 30 হাত লম্বা ও 4 হাত চওড়া\ft*\f* \v 9 পাঁচটি পর্দা একসঙ্গে এক পাটিতে জুড়ে দিয়ো, এবং অন্য ছয়টি অন্য পাটিতে জুড়ে দিয়ো। ষষ্ঠ পর্দাটি দুই ভাঁজ করে তাঁবুর সামনের দিকে রেখে দিয়ো। \v 10 এক পাটি পর্দায় এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত কিনারা ধরে ধরে পঞ্চাশটি ফাঁস তৈরি কোরো এবং অন্য পাটি পর্দাতেও এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত তা কোরো। \v 11 পরে ব্রোঞ্জের পঞ্চাশটি আঁকড়া তৈরি কোরো এবং এক এককরূপে একসঙ্গে তাঁবুটি বেঁধে রাখার জন্য সেগুলি ফাঁসগুলির মধ্যে আটকে দিয়ো। \v 12 তাঁবুর পর্দাগুলির বাড়তি দৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে, যে অর্ধেক পর্দাটি বাড়তি থেকে যাবে, সেটি সমাগম তাঁবুর পিছন দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে। \v 13 তাঁবুর পর্দাগুলি দুই দিকেই 45 সেন্টিমিটার\f + \fr 26:13 \fr*\ft অথবা প্রাচীনকালের মাপানুসারে, এক হাত\ft*\f* করে বেশি লম্বা হবে; যেটুকু বাড়তি থাকবে তা সমাগম তাঁবুটি ঢেকে রাখার জন্য তাঁবুর এপাশে ওপাশে ঝুলতে থাকবে। \v 14 তাঁবু ঢেকে রাখার জন্য মেষের চামড়া লাল রং করে, তা দিয়ে একটি আচ্ছাদন তৈরি কোরো, এবং সেটির উপর অন্য এক টেকসই চামড়া\f + \fr 26:14 \fr*\ft খুব সম্ভবত বৃহদাকার সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর চামড়া\ft*\f* দিয়ে আরও একটি আচ্ছাদন তৈরি কোরো। \p \v 15 “সমাগম তাঁবুর জন্য বাবলা কাঠ দিয়ে খাড়া কাঠামো তৈরি কোরো। \v 16 প্রত্যেকটি কাঠামো 4.5 মিটার করে লম্বা ও 68 সেন্টিমিটার করে চওড়া\f + \fr 26:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 15 ফুট লম্বা ও সোয়া 2 ফুট চওড়া\ft*\f* হবে, \v 17 এবং কাঠামোর বেরিয়ে থাকা অংশ দুটি পরস্পরের সমান্তরাল করে বসাতে হবে। এভাবেই সমাগম তাঁবুর সব কাঠামো তৈরি কোরো। \v 18 সমাগম তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য কুড়িটি কাঠামো তৈরি কোরো \v 19 এবং সেগুলির তলায় লাগানোর জন্য রুপোর চল্লিশটি ভিত তৈরি কোরো—প্রত্যেকটি কাঠামোর জন্য দুটি করে ভিত, এক-একটি অভিক্ষেপের তলায় একটি করে। \v 20 অন্য দিকের জন্য, সমাগম তাঁবুর উত্তর দিকের জন্য, কুড়িটি কাঠামো \v 21 এবং প্রত্যেকটি কাঠামোর তলায় দুটি করে ভিত লাগানোর জন্য চল্লিশটি রুপোর ভিত তৈরি কোরো। \v 22 দূরবর্তী প্রান্তের জন্য, অর্থাৎ, সমাগম তাঁবুর পশ্চিম প্রান্তের জন্য ছয়টি কাঠামো তৈরি কোরো, \v 23 এবং দূরবর্তী প্রান্তে কোণার জন্য দুটি কাঠামো তৈরি কোরো। \v 24 এই দুটি কোনায় সেগুলি যেন অবশ্যই নিচ থেকে একদম চূড়া পর্যন্ত দ্বিগুণ মাপের হয় এবং একটিই বলয়ে লাগানো থাকে; দুটিই একইরকম হবে। \v 25 অতএব সেখানে আটটি কাঠামো ও প্রত্যেকটি কাঠামোর তলায় দুটি করে—মোট ষোলোটি রুপোর ভিত থাকবে। \p \v 26 “এছাড়াও বাবলা কাঠ দিয়ে অর্গল তৈরি কোরো: সমাগম তাঁবুর একদিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি, \v 27 অন্য দিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি, এবং সমাগম তাঁবুর শেষ প্রান্তে, পশ্চিমদিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি। \v 28 মাঝখানের অর্গলটি কাঠামোগুলির মাঝখানে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। \v 29 কাঠামোগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো এবং অর্গলগুলি ধরে রাখার জন্য সোনার আংটা তৈরি কোরো। আর অর্গলগুলিও সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো। \p \v 30 “পর্বতের উপরে তোমার কাছে যেমনটি প্রদর্শিত হল, ঠিক সেই পরিকল্পনা অনুসারেই সমাগম তাঁবুটি প্রতিষ্ঠিত কোরো। \p \v 31 “নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো ও মিহি পাকান মসিনা দিয়ে একটি পর্দা তৈরি কোরো, এবং দক্ষ কারিগর দিয়ে তাতে করূবদের নকশা ফুটিয়ে তোলো। \v 32 সোনা দিয়ে মোড়া এবং রুপোর চারটি ভিতের উপর দাঁড়ান বাবলা কাঠের চারটি খুঁটির উপরে এটি সোনার আঁকড়া দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়ো। \v 33 পর্দাটি আঁকড়া থেকে নিচে ঝুলিয়ে দিয়ো এবং বিধিনিয়মের সিন্দুকটি পর্দার পিছন দিকে রেখে দিয়ো। পর্দাটিই পবিত্র স্থানটিকে মহাপবিত্র স্থান থেকে পৃথক করবে। \v 34 মহাপবিত্র স্থানে, বিধিনিয়মের সিন্দুকটির উপরে প্রায়শ্চিত্ত-আবরণটি রেখে দিয়ো। \v 35 সমাগম তাঁবুর উত্তর দিকে পর্দার বাইরে টেবিলটি রেখে দিয়ো এবং সেটির বিপরীতে দক্ষিণ দিকে দীপাধারটি রেখে দিয়ো। \p \v 36 “তাঁবুর প্রবেশদ্বারের জন্য নীল, বেগুনি, টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে একটি পর্দা তৈরি কোরো—যা হবে একজন সূচিশিল্পীর হস্তকলা। \v 37 এই পর্দাটির জন্য সোনার আঁকড়া এবং সোনায় মোড়া বাবলা কাঠের পাঁচটি খুঁটিও তৈরি কোরো। আর এগুলির জন্য ব্রোঞ্জের পাঁচটি ভিত ঢালাই করে দিয়ো। \c 27 \s1 হোমবলির বেদি \p \v 1 “বাবলা কাঠ দিয়ে 1.4 মিটার\f + \fr 27:1 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় তিন হাত\ft*\f* উঁচু একটি বেদি নির্মাণ কোরো; এটি যেন 2.3 মিটার লম্বা ও 2.3 মিটার চওড়া\f + \fr 27:1 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় পাঁচ হাত করে লম্বা ও চওড়া\ft*\f* বর্গাকার হয়। \v 2 চার কোণার প্রত্যেকটিতে একটি করে, চারটি শিং তৈরি কোরো, যেন সেই শিংগুলি বেদির সাথে অখণ্ড হয়, এবং বেদিটি ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিয়ো। \v 3 এটির সব বাসনপত্র—ছাই ফেলার হাঁড়ি, ও বেলচা, ছিটানোর গামলা, মাংস তোলার কাঁটাচামচ এবং আগুনে সেঁকার চাটু, সবই ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি কোরো। \v 4 এটির জন্য একটি জাফরি, ব্রোঞ্জের পরস্পরছেদী একটি জাল তৈরি কোরো, এবং সেই জালের চার কোণার প্রত্যেকটিতে একটি করে ব্রোঞ্জের আংটা তৈরি কোরো। \v 5 এটি বেদির তাকের নিচে রেখে দিয়ো যেন এটি বেদির অর্ধেক উচ্চতায় অবস্থিত থাকে। \v 6 বেদির জন্য বাবলা কাঠের খুঁটি তৈরি কোরো এবং সেগুলি ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিয়ো। \v 7 খুঁটিগুলিকে আংটাগুলির মাঝে মাঝে ঢুকিয়ে দিতে হবে যেন বেদিটি বহন করার সময় সেগুলি বেদির দুই পাশে থাকে। \v 8 তক্তা দিয়ে, বেদিটি ফাঁপা করে তৈরি কোরো। এটি ঠিক সেভাবেই তৈরি করতে হবে যেমনটি পর্বতের উপরে তোমার কাছে প্রদর্শিত হয়েছিল। \s1 প্রাঙ্গণ \p \v 9 “সমাগম তাঁবুর জন্য একটি প্রাঙ্গণ তৈরি কোরো। দক্ষিণ দিকটি 45 মিটার\f + \fr 27:9 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 100 হাত\ft*\f* লম্বা হবে এবং সেখানে মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি পর্দা থাকবে, \v 10 এবং কুড়িটি খুঁটি ও ব্রোঞ্জের কুড়িটি ভিত তথা খুঁটিগুলির উপরে রুপোর আঁকড়া ও শেকলও থাকবে। \v 11 উত্তর দিকটিও 45 মিটার লম্বা হবে এবং সেখানে পর্দা, তথা কুড়িটি খুঁটি ও ব্রোঞ্জের কুড়িটি ভিত এবং খুঁটিগুলির উপরে রুপোর আঁকড়া ও শিকল থাকবে। \p \v 12 “প্রাঙ্গণের পশ্চিমপ্রান্তটি 23 মিটার\f + \fr 27:12 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 50 হাত\ft*\f* চওড়া হবে, এবং সেখানে পর্দা, তথা দশটি খুঁটি ও দশটি ভিত থাকবে। \v 13 সূর্যোদয়ের দিকে, পূর্বপ্রান্তেও, প্রাঙ্গণটি 23 মিটার চওড়া হবে। \v 14 6.8 মিটার\f + \fr 27:14 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 15 হাত\ft*\f* লম্বা পর্দাগুলি প্রবেশদ্বারের একদিকে থাকবে, ও সাথে থাকবে তিনটি খুঁটি ও তিনটি ভিত, \v 15 এবং 6.8 মিটার লম্বা পর্দাগুলি অন্যদিকে থাকবে, ও সাথে থাকবে তিনটি খুঁটি ও তিনটি ভিত। \p \v 16 “প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের জন্য, নীল, বেগুনি এবং টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি 9 মিটার\f + \fr 27:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 20 হাত\ft*\f* লম্বা একটি পর্দার জোগান দিয়ো—তা হবে এক সূচিশিল্পীর হস্তকলা—সাথে চারটি খুঁটি ও চারটি ভিতও দিয়ো। \v 17 প্রাঙ্গণের চারপাশের সব খুঁটির শিকল ও আঁকড়াগুলি রুপোর এবং ভিতগুলি ব্রোঞ্জের হবে। \v 18 প্রাঙ্গণটি হবে 45 মিটার লম্বা ও 23 মিটার চওড়া\f + \fr 27:18 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 100 হাত লম্বা ও 50 হাত চওড়া\ft*\f*, এবং পর্দাগুলি মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি 2.3 মিটার\f + \fr 27:18 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 5 হাত\ft*\f* উচ্চতাবিশিষ্ট হবে, এবং সাথে ব্রোঞ্জের ভিতগুলিও থাকবে। \v 19 সমাগম তাঁবুর সেবাকাজে ব্যবহৃত অন্য সব জিনিসপত্র, তা তাদের কাজ যাই হোক না কেন, সাথে সাথে সেটির এবং প্রাঙ্গণের সব তাঁবু-খুটা, ব্রোঞ্জের হবে। \s1 দীপাধারের জন্য তেল \p \v 20 “আলোর জন্য নিংড়ে নেওয়া স্বচ্ছ জলপাই তেল তোমার কাছে নিয়ে আসার জন্য ইস্রায়েলীদের আদেশ দাও যেন প্রদীপগুলি সবসময় জ্বলতেই থাকে। \v 21 সমাগম তাঁবুর ভিতরে, যে পর্দাটি বিধিনিয়মের সিন্দুকটি আড়াল করে রাখে, সেটির বাইরের দিকে, হারোণ ও তার ছেলেরা সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে প্রদীপগুলি জ্বালিয়ে রাখবে। আগামী বংশপরম্পরায় ইস্রায়েলীদের মধ্যে এটি একটি চিরস্থায়ী বিধিনিয়ম হয়েই থাকবে। \c 28 \s1 যাজকীয় পোশাক-পরিচ্ছদ \p \v 1 “ইস্রায়েলীদের মধ্যে থেকে তোমার দাদা হারোণকে এবং তার ছেলে নাদব ও অবীহূ, ইলীয়াসর ও ঈথামরকে তোমার কাছে ডেকে আনো, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \v 2 তোমার দাদা হারোণকে মর্যাদা ও সম্মান দিতে তার জন্য পবিত্র পোশাক তৈরি কোরো। \v 3 যাদের আমি এই বিষয়ে প্রজ্ঞা দিয়েছি, সেইসব দক্ষ কারিগরকে বোলো, তারা যেন হারোণের জন্য, তার অভিষেকের জন্য পোশাক তৈরি করে, সে যেন যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \v 4 এইসব পোশাক-পরিচ্ছদ তারা তৈরি করবে: একটি বুকপাটা, একটি এফোদ, একটি আলখাল্লা, হাতে বোনা একটি নিমা\f + \fr 28:4 \fr*\ft হাঁটু পর্যন্ত ঝুলে থাকা মূলত হাতকাটা ঢিলেঢালা এক ধরনের পোশাক, যা প্রাচীনকালে মানুষজন ব্যবহার করত\ft*\f*, একটি পাগড়ি ও একটি উত্তরীয়। তোমার দাদা হারোণ ও তার ছেলেদের জন্য তাদের এইসব পবিত্র পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করতে হবে, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \v 5 তাদের সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি মসিনা ব্যবহার করতে দিয়ো। \s1 এফোদ \p \v 6 “সোনা, এবং নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে এফোদটি তৈরি কোরো—যা দক্ষ হস্তকলা হবে। \v 7 এতে কোণাগুলির সাথে যুক্ত দুটি কাঁধ-পটি থাকবে, যেন এফোদটি বেঁধে রাখা যায়। \v 8 দক্ষতার সাথে বোনা এটির কোমরবন্ধটিও এরই মতো হবে—এটি এফোদের সাথেই জুড়ে থাকা একই ভাগ হবে এবং সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি করা হবে। \p \v 9 “তুমি দুটি স্ফটিকমণি নাও এবং সেগুলির উপর ইস্রায়েলের ছেলেদের নাম খোদাই করে দাও। \v 10 তাদের জন্মের ক্রমানুসারে—একটি মণিতে ছয়টি নাম এবং অন্যটিতে বাকি ছয়টি নাম খোদাই করো। \v 11 যেভাবে একজন রত্নশিল্পী একটি সিলমোহর খোদাই করে, সেভাবেই সেই মণি দুটিতে ইস্রায়েলের ছেলেদের নামগুলি খোদাই করে দিয়ো। পরে মণিগুলি সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালরে চড়িয়ে দিয়ো \v 12 এবং ইস্রায়েলের ছেলেদের জন্য স্মরণার্থক মণিরূপে সেগুলি সেই এফোদের কাঁধ-পটিগুলিতে বেঁধে দিয়ো। সদাপ্রভুর সামনে এক স্মারকরূপে হারোণ তার কাঁধে সেই নামগুলি বহন করবে। \v 13 সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালর \v 14 এবং খাঁটি সোনা দিয়ে দড়ির মতো দেখতে দুটি পাতা-কাটা শিকল তৈরি কোরো, ও সেই শিকলটি ঝালরে জুড়ে দিয়ো। \s1 বুকপাটা \p \v 15 “সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি বুকপাটা গড়ে দিয়ো—যা হবে দক্ষ হস্তকলা। এটিকে এফোদের মতো করেই: সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি কোরো। \v 16 এটি বর্গাকার, 23 সেন্টিমিটার\f + \fr 28:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় এক বিঘত\ft*\f* লম্বা ও চওড়া হবে এবং তা দুই ভাঁজ করে রাখতে হবে। \v 17 পরে এটির উপর মূল্যবান মণিরত্নের চারটি সারি চড়িয়ে দিয়ো। প্রথম সারিতে থাকবে চুণী, গোমেদ ও পান্না; \v 18 দ্বিতীয় সারিতে থাকবে ফিরোজা, নীলা ও পান্না; \v 19 তৃতীয় সারিতে থাকবে নীলকান্তমণি, অকীক ও নীলা; \v 20 চতুর্থ সারিতে থাকবে পোখরাজ, স্ফটিকমণি ও সূর্যকান্তমণি\f + \fr 28:20 \fr*\ft এইসব মূল্যবান মণিরত্নের মধ্যে কয়েকটির সম্পূর্ণ নির্ভুল শনাক্তকরণ করা সম্ভব নয়\ft*\f*। এগুলি সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালরে চড়িয়ে দিয়ো। \v 21 ইস্রায়েলের ছেলেদের এক একজনের নামের জন্য বারোটি মণি থাকবে, প্রত্যেকটি মণির উপরে বারোটি গোষ্ঠীর মধ্যে এক এক গোষ্ঠীর নাম এক সিলমোহরের মতো খোদাই করে দিয়ো। \p \v 22 “বুকপাটার জন্য খাঁটি সোনা দিয়ে দড়ির মতো পাতা-কাটা শিকল তৈরি কোরো। \v 23 এটির জন্য সোনার দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি সেই বুকপাটার দুই কোনায় বেঁধে দিয়ো। \v 24 সেই বুকপাটার কোনায় থাকা আংটাগুলিতে সোনার সেই শিকল দুটি বেঁধে দিয়ো, \v 25 এবং সেই শিকলগুলির অন্য প্রান্তগুলি সেই দুটি ঝালরে বেঁধে দিয়ে এফোদের সামনের দিকের কাঁধ-পটিতে জুড়ে দিয়ো। \v 26 সোনার দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি এফোদের পাশে থাকা ভিতরদিকের বুকপাটার অন্য দুই কোনায় জুড়ে দিয়ো। \v 27 সোনার আরও দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি এফোদের সামনের দিকের কাঁধ-পটির তলায়, এফোদের কোমরবন্ধের ঠিক উপরে, দুই প্রান্তের জোড়ের কাছে জোড়া দিয়ে দিয়ো। \v 28 বুকপাটার আংটাগুলিকে কোমরবন্ধের সাথে যুক্ত করে নীল দড়ি দিয়ে এফোদের আংটাগুলির সাথে এমনভাবে বেঁধে দিতে হবে, যেন বুকপাটাটি দোল খেয়ে এফোদ থেকে সরে না যায়। \p \v 29 “হারোণ যখনই পবিত্রস্থানে প্রবেশ করবে, সদাপ্রভুর সামনে চিরস্থায়ী এক স্মারকরূপে সিদ্ধান্তের সেই বুকপাটায় সে তার হৃদয়ের উপরে ইস্রায়েলের ছেলেদের নামগুলি বহন করবে। \v 30 এছাড়াও সেই বুকপাটায় ঊরীম ও তুম্মীম রেখো, যেন হারোণ যখনই সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে প্রবেশ করে, সেগুলি তার হৃদয়ের উপরেই থেকে যায়। এইভাবে হারোণ সবসময় সদাপ্রভুর সামনে ইস্রায়েলীদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাধন তার বুকের উপরে বয়ে বেড়াবে। \s1 অন্যান্য যাজকীয় পোশাক-পরিচ্ছদ \p \v 31 “এফোদের আলখাল্লাটি আগাগোড়াই নীল কাপড় দিয়ে তৈরি করে, \v 32 মাথা ঢোকানোর জন্য মাঝখানে একটি ফাঁক রেখো। এই ফাঁকের চারপাশে গলাবন্ধের\f + \fr 28:32 \fr*\ft মূল হিব্রু শব্দটির অর্থ স্পষ্ট নয়\ft*\f* মতো হাতে বোনা একটি ধারি থাকবে, যেন এটি ছিঁড়ে না যায়। \v 33 সেই আলখাল্লার আঁচলের চারপাশে নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো দিয়ে ডালিম তৈরি করে, সেগুলির মাঝে মাঝে সোনার ঘণ্টা ঝুলিয়ে দিয়ো। \v 34 সোনার ঘণ্টা ও ডালিমগুলি আলখাল্লার আঁচলের চারপাশে পর্যায়ক্রমে বসানো থাকবে। \v 35 পরিচর্যা করার সময় হারোণকে অবশ্যই এটি পরে থাকতে হবে। সে যখন পবিত্রস্থানে সদাপ্রভুর সামনে প্রবেশ করবে এবং যখন সে বাইরে বেরিয়ে আসবে, তখন সেই ঘণ্টার শব্দ শোনা যাবে, যেন সে মারা না যায়। \p \v 36 “খাঁটি সোনা দিয়ে একটি ফলক তৈরি করে তাতে সিলমোহরের মতো করে খোদাই করে দিয়ো: \pc সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র। \m \v 37 এটিকে পাগড়ির সাথে জুড়ে রাখার জন্য এতে একটি নীল সুতো বেঁধে দিয়ো; এটি পাগড়ির সামনের দিকে থাকবে। \v 38 এটি হারোণের কপালের উপরে থাকবে, এবং সে ইস্রায়েলীদের উৎসর্গ করা পবিত্র নৈবেদ্যগুলির সাথে যুক্ত অপরাধ বহন করবে, তাদের নৈবেদ্যগুলি যাই হোক না কেন। অবিচ্ছিন্নভাবে এটি হারোণের কপালে থাকবে যেন তারা সদাপ্রভুর কাছে গ্রাহ্য হয়। \p \v 39 “মিহি মসিনা দিয়ে নিমা বুনো এবং পাগড়িও তৈরি কোরো। উত্তরীয়টি হবে দক্ষ এক সূচিশিল্পীর হস্তকলা। \v 40 হারোণের ছেলেদের মর্যাদা ও সম্মান দিতে তাদের জন্য নিমা, উত্তরীয় ও টুপি তৈরি কোরো। \v 41 তোমার দাদা হারোণ ও তার ছেলেদের এইসব পোশাক পরিয়ে দেওয়ার পর তুমি তাদের অভিষিক্ত ও নিযুক্ত কোরো। তাদের পবিত্র কোরো যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \p \v 42 “শরীর ঢেকে রাখার জন্য মসিনা দিয়ে অন্তর্বাস তৈরি কোরো, যা কোমর থেকে ঊরু পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। \v 43 হারোণ ও তার ছেলেরা যখনই সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে বা পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করার জন্য বেদির নিকটবর্তী হবে, তখনই তাদের সেগুলি পরতে হবে, যেন তারা অপরাধের ভাগী হয়ে মারা না যায়। \p “হারোণ ও তার বংশধরদের জন্য এটি চিরস্থায়ী এক বিধি হবে। \c 29 \s1 যাজকদের পবিত্রকরণ \p \v 1 “তারা যেন যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে, সেজন্য তাদের পবিত্র করার ক্ষেত্রে তোমাকে এরকম করতে হবে: নিখুঁত একটি এঁড়ে বাছুর ও দুটি মেষ নিও। \v 2 আর গমের মিহি আটায় জলপাই তেল মিশ্রিত করে খামিরবিহীন গোলাকার রুটি, খামিরবিহীন মোটা মোটা রুটি এবং জলপাই তেল মাখানো পাতলা পাতলা রুটি তৈরি কোরো। \v 3 সেগুলি একটি ঝুড়িতে রেখো এবং সেগুলি সেই এঁড়ে বাছুর ও মেষ সমেত উপহার দিয়ো। \v 4 পরে হারোণ ও তার ছেলেদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে এনো এবং জল দিয়ে তাদের গা ধুয়ে দিয়ো। \v 5 পোশাকগুলি নিয়ে হারোণকে নিমা, এফোদের আলখাল্লা, এফোদ ও বুকপাটাটি পরিয়ে দিয়ো। দক্ষতার সঙ্গে বোনা কোমরবন্ধ দিয়ে তার গায়ে এফোদটি বেঁধে দিয়ো। \v 6 তার মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দিয়ো এবং সেই পাগড়িতে পবিত্র প্রতীক জুড়ে দিয়ো। \v 7 অভিষেক-তেল নিয়ে তা তার মাথায় ঢেলে দিয়ে তাকে অভিষিক্ত কোরো। \v 8 তার ছেলেদের নিয়ে এসে তাদেরও নিমা পরিয়ে দিয়ো \v 9 এবং মাথায় টুপি বেঁধে দিয়ো। পরে হারোণ ও তার ছেলেদের গায়ে\f + \fr 29:9 \fr*\ft অথবা, তাদের গায়ে\ft*\f* উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ো। দীর্ঘস্থায়ী এক বিধি দ্বারা যাজকত্ব তাদেরই অধিকারভুক্ত হয়েছে। \p “পরে তুমি হারোণ ও তার ছেলেদের যাজকপদে নিযুক্ত কোরো। \p \v 10 “সেই বাছুরটিকে তুমি সমাগম তাঁবুর সামনে এনো, এবং হারোণ ও তার ছেলেরা সেটির মাথায় তাদের হাত রাখবে। \v 11 সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে সেটি বধ কোরো। \v 12 সেই বাছুরটির রক্ত থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ো ও তোমার আঙুল দিয়ে তা সেই বেদির শিং-এ মাখিয়ে দিয়ো, এবং বাদবাকি রক্ত সেই বেদির তলায় ঢেলে দিয়ো। \v 13 পরে অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সব চর্বি, কলিজার বড়ো পালি, ও চর্বি সমেত কিডনি দুটি নিয়ে সেগুলি বেদির উপর পুড়িয়ে ফেলো। \v 14 কিন্তু বাছুরটির মাংস ও সেটির চামড়া ও অন্ত্রগুলি শিবিরের বাইরে পুড়িয়ে দিয়ো। এ হল এক পাপার্থক বলি\f + \fr 29:14 \fr*\ft অথবা, শুদ্ধিকারক বলি\ft*\f*। \p \v 15 “মেষগুলির মধ্যে একটিকে নিয়ো, এবং হারোণ ও তার ছেলেরা সেটির মাথায় তাদের হাত রাখবে। \v 16 সেটিকে বধ কোরো ও রক্ত নিয়ে তা বেদির উপরে চারপাশে ছিটিয়ে দিয়ো। \v 17 মেষটিকে টুকরো টুকরো করে কেটো এবং সব অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও পা ধুয়ে দিয়ো, এবং সেগুলি মাথা ও অন্যান্য টুকরোগুলির সাথেই রেখো। \v 18 পরে সমগ্র মেষটি বেদিতে রেখে পুড়িয়ে ফেলো। এ হল সদাপ্রভুর উদ্দেশে দত্ত এক হোমবলি, প্রীতিকর সৌরভ, সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিবেদিত এক ভক্ষ্য-নৈবেদ্য। \p \v 19 “অন্য মেষটিকেও নিও, এবং হারোণ ও তার ছেলেরা সেটির মাথায় তাদের হাত রাখবে। \v 20 সেটিকে বধ কোরো, সেটির রক্ত থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ো এবং তা হারোণ ও তার ছেলেদের ডান কানের লতিতে, তাদের ডান হাতের বুড়ো আঙুলে ও তাদের ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে লাগিয়ে দিয়ো। পরে বেদির উপরে চারপাশে রক্ত ছিটিয়ে দিয়ো। \v 21 আর বেদি থেকে কিছুটা রক্ত ও কিছুটা অভিষেক-তেল নিও এবং হারোণের ও তার পোশাকের উপরে এবং তার ছেলেদের ও তাদের পোশাকের উপরে ছিটিয়ে দিয়ো। তখন সে ও তার ছেলেরা এবং তাদের পোশাকগুলিও শুচিশুদ্ধ হবে। \p \v 22 “এই মেষটি থেকে চর্বি, মোটা লেজ, অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিতে লেগে থাকা চর্বি, কলিজার বড়ো পালি, দুটি কিডনি ও সেগুলিতে লেগে থাকা চর্বি, এবং ডানদিকের ঊরুটি নিও। (এ হল যাজকপদে নিযুক্তিমূলক মেষ) \v 23 সদাপ্রভুর সামনে রাখা খামিরবিহীন রুটির ঝুড়ি থেকে একটি গোলাকার রুটি, জলপাই তেল মিশ্রিত একটি মোটা রুটি, এবং একটি পাতলা রুটি নিও। \v 24 এসব কিছু হারোণ ও তার ছেলেদের হাতে দিয়ো এবং এক দোলনীয়-নৈবেদ্যরূপে সদাপ্রভুর সামনে সেগুলি তাদের দোলাতে দিয়ো। \v 25 পরে তাদের হাত থেকে সেগুলি নিয়ে নিও এবং হোমবলির সাথে সাথে সেগুলিও সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক প্রীতিকর সৌরভরূপে, সদাপ্রভুর কাছে নিবেদিত এক ভক্ষ্য-নৈবেদ্যরূপে বেদিতে পুড়িয়ে দিয়ো। \v 26 হারোণের নিযুক্তির জন্য তুমি মেষের বক্ষটি নেওয়ার পর, সেটি এক দোলনীয়-নৈবেদ্যরূপে সদাপ্রভুর সামনে দুলিয়ো, এবং এটি তোমার অংশ হবে। \p \v 27 “যাজকপদে নিযুক্তিমূলক মেষের সেই অঙ্গগুলি শুচিশুদ্ধ কোরো, যেগুলি হারোণ ও তার ছেলেদের অধিকারভুক্ত: সেই বক্ষঃস্থল, যা দোলানো হল এবং সেই ঊরু, যা উপহার দেওয়া হল। \v 28 এটি সবসময় হারোণ ও তার ছেলেদের জন্য ইস্রায়েলীদের কাছ থেকে নেওয়া চিরস্থায়ী অংশ হবে। এ হল ইস্রায়েলীদের সেই উপহার, যা সদাপ্রভুর উদ্দেশে দত্ত মঙ্গলার্থক বলি থেকে তারা দিয়ে থাকে। \p \v 29 “হারোণের পবিত্র পোশাকগুলি তার বংশধরদের অধিকারভুক্ত হবে যেন তারা সেগুলি পরে অভিষিক্ত ও নিযুক্ত হয়। \v 30 তার যে ছেলে যাজকরূপে তার স্থলাভিষিক্ত হবে এবং পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করার জন্য সমাগম তাঁবুতে আসবে, তাকে সাত দিন ধরে সেগুলি পরে থাকতে হবে। \p \v 31 “যাজকপদে নিযুক্তিমূলক মেষটি নিও এবং পবিত্র এক স্থানে সেই মাংস রান্না কোরো। \v 32 সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে, হারোণ ও তার ছেলেদের সেই মেষের মাংস ও ঝুড়িতে রাখা রুটি খেতে হবে। \v 33 তাদের যাজকপদে নিযুক্তি ও অভিষেকের জন্য যে যে প্রায়শ্চিত্ত বলি উৎসর্গ করা হল, সেগুলির আধারেই তাদের এই নৈবেদ্যগুলি খেতে হবে। কিন্তু অন্য কেউ সেগুলি খেতে পারবে না, কারণ সেগুলি পবিত্র। \v 34 আর যাজকপদে নিযুক্তিমূলক সেই মেষের কিছুটা মাংস বা কয়েকটি রুটি যদি সকাল পর্যন্ত অবশিষ্ট থেকে যায়, তবে সেগুলি পুড়িয়ে ফেলো। তা যেন অবশ্যই খাওয়া না হয়, কারণ তা পবিত্র। \p \v 35 “তোমাকে দেওয়া আমার আদেশানুসারে তুমি হারোণ ও তার ছেলেদের প্রতি সবকিছু কোরো, যাজকপদে তাদের নিযুক্ত করার জন্য সাত দিন সময় নিও। \v 36 প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য এক পাপার্থক বলিরূপে প্রতিদিন একটি করে বলদ বলি দিয়ো। বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করার দ্বারা সেটি শুচিশুদ্ধ কোরো, এবং সেটি পবিত্র করার জন্য তা অভিষিক্ত কোরো। \v 37 সাত দিন ধরে বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত কোরো এবং সেটি পবিত্র কোরো। তখন সেই বেদিটি মহাপবিত্র হয়ে যাবে এবং যা কিছু সেটিকে স্পর্শ করবে তাও পবিত্র হবে। \p \v 38 “প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সেই বেদির উপরে তোমাকে যা যা উৎসর্গ করতে হবে, তা হল এই: এক বছর বয়স্ক দুটি মেষশাবক। \v 39 একটি সকালে ও অন্যটি গোধূলিবেলায় উৎসর্গ কোরো। \v 40 প্রথম মেষশাবকটির সাথে সাথে হিনের এক-চতুর্থাংশ\f + \fr 29:40 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1 লিটার\ft*\f* নিংড়ানো জলপাই তেল মিশ্রিত ঐফার এক-দশমাংশ\f + \fr 29:40 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1.6 কিলোগ্রাম\ft*\f* মিহি আটা এবং পেয়-নৈবেদ্যরূপে হিনের এক-চতুর্থাংশ দ্রাক্ষারসও উৎসর্গ কোরো। \v 41 গোধূলিবেলায় অন্য মেষশাবকটিও সকালবেলার মতো একই শস্য-নৈবেদ্য ও পেয়-নৈবেদ্য সহযোগে সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিবেদিত এক প্রীতিকর সৌরভ, এক ভক্ষ্য-নৈবেদ্যরূপে উৎসর্গ কোরো। \p \v 42 “বংশপরম্পরায় সদাপ্রভুর সামনে, সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে নিয়মিতভাবে এই হোমবলিটি উৎসর্গ করতে হবে। সেখানে আমি তোমার সাথে দেখা করব ও তোমার সাথে কথা বলব; \v 43 এছাড়াও সেখানেই আমি ইস্রায়েলীদের সাথে দেখা করব, এবং সেই স্থানটি আমার মহিমা দ্বারা পবিত্র হবে। \p \v 44 “অতএব আমি সেই সমাগম তাঁবু ও বেদিটি পবিত্র করব এবং যাজকরূপে আমার সেবা করার জন্য হারোণ ও তার ছেলেদেরও পবিত্র করব। \v 45 পরে আমি ইস্রায়েলীদের মধ্যে বসবাস করব এবং তাদের ঈশ্বর হব। \v 46 তারা জানতে পারবে যে আমিই তাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি তাদের মধ্যে বসবাস করার জন্য মিশর থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন। আমিই তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু। \c 30 \s1 ধূপবেদি \p \v 1 “ধূপ জ্বালানোর জন্য বাবলা কাঠ দিয়ে একটি বেদি তৈরি কোরো। \v 2 এটি 45 সেন্টিমিটার করে লম্বা ও চওড়া, এবং 90 সেন্টিমিটার উঁচু\f + \fr 30:2 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় এক হাত করে লম্বা ও চওড়া এবং দু-হাত উঁচু\ft*\f* বর্গাকার হবে—এর শিংগুলি এর সাথে একই টুকরো দিয়ে গড়া হবে। \v 3 এর চূড়া ও সবদিক এবং শিংগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো, এবং এর চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি কোরো। \v 4 সেই ছাঁচের তলায় বেদিটির জন্য সোনার দুটি আংটা তৈরি কোরো—বেদিটি বহন করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য বিপরীত দিকগুলির প্রত্যেকটিতে দুটি দুটি করে আংটা তৈরি কোরো। \v 5 বাবলা কাঠ দিয়ে খুঁটিগুলি তৈরি কোরো এবং সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ো। \v 6 যে পর্দাটি বিধিনিয়মের সিন্দুকটিকে আড়াল করে রাখে, সেটির সামনের দিকে—যে প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদনটি বিধিনিয়মের ফলকগুলির উপরে থাকে, সেটির সামনে—সেই বেদিটি রেখো, যেখানে আমি তোমার সাথে দেখা করব। \p \v 7 “প্রতিদিন সকালে হারোণ যখন প্রদীপগুলি পরিষ্কার করবে তখন তাকে বেদিতে সুগন্ধি ধূপ জ্বালাতে হবে। \v 8 আবার গোধূলিবেলায় সে যখন প্রদীপগুলি জ্বালাবে তখনও তাকে ধূপ জ্বালাতে হবে, যেন আগামী বংশপরম্পরায় সদাপ্রভুর সামনে নিয়মিতভাবে ধূপ জ্বলে। \v 9 এই বেদিতে আর অন্য কোনো ধূপ বা কোনো হোমবলি বা শস্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ কোরো না, এটির উপরে কোনো পেয়-নৈবেদ্য ঢেলো না। \v 10 বছরে একবার হারোণ বেদির শিংগুলির উপরে প্রায়শ্চিত্ত সাধন করবে। এই বাৎসরিক প্রায়শ্চিত্তটি আগামী বংশপরম্পরায় প্রায়শ্চিত্তকারক পাপার্থক বলির\f + \fr 30:10 \fr*\ft অথবা, শুদ্ধিকারক নৈবেদ্যর\ft*\f* রক্ত দিয়ে করতে হবে। সদাপ্রভুর উদ্দেশে এটি অতি পবিত্র।” \s1 প্রায়শ্চিত্তকারী অর্থ \p \v 11 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 12 “ইস্রায়েলীদের সংখ্যা গণনা করার জন্য যখন তুমি তাদের জনগণনা করবে, তখন গণিত হওয়ার সময় প্রত্যেককে তার জীবনের জন্য সদাপ্রভুকে এক মুক্তিপণ দিতে হবে। তুমি তাদের সংখ্যা গণনা করার সময় তখন আর তাদের উপর কোনও আঘাত নেমে আসবে না। \v 13 যারা ইতিমধ্যেই গণিত হয়ে গিয়েছে, সেই লোকজনের মধ্যে যে কেউ আসবে, তাকে পবিত্রস্থানের শেকল অনুসারে আধ শেকল\f + \fr 30:13 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 5.8 গ্রাম\ft*\f* দিতে হবে, এক শেকলের ওজন কুড়ি গেরা। এই আধ শেকল সদাপ্রভুর উদ্দেশে দত্ত এক উপহার। \v 14 এদিকে আসা যাদের বয়স কুড়ি বছর বা তার বেশি, তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে। \v 15 তোমাদের জীবনের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে তুমি যখন সদাপ্রভুর উদ্দেশে নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে, তখন ধনবান লোক আধ শেকলের বেশি দেবে না এবং দরিদ্রও কম দেবে না। \v 16 ইস্রায়েলীদের কাছ থেকে প্রায়শ্চিত্তকারী অর্থ গ্রহণ কোরো এবং সেই অর্থ সমাগম তাঁবুর সেবাকাজে ব্যবহার কোরো। সদাপ্রভুর সামনে ইস্রায়েলীদের জন্য এক স্মারক হয়ে থেকে তা তোমাদের জীবনের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে।” \s1 ধোলাই-গামলা \p \v 17 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 18 “ধোয়াধুয়ি করার জন্য ব্রোঞ্জের একটি গামলা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে সেটির মাচাও তৈরি কোরো। সমাগম তাঁবুর ও বেদির মাঝখানে সেটি রেখো, এবং সেটিতে জল ভরে দিয়ো। \v 19 সেখান থেকে জল নিয়ে হারোণ ও তার ছেলেদের তাদের হাত পা ধুতে হবে। \v 20 যখনই তারা তাঁবুর ভিতরে প্রবেশ করবে, তারা জল দিয়ে নিজেদের ধুয়ে ফেলবে, যেন তারা মারা না যায়। এছাড়াও, যখন তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক ভক্ষ্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ করার মাধ্যমে পরিচর্যা করার জন্য সেই বেদির নিকটবর্তী হবে, \v 21 তখনও তারা তাদের হাত পা ধুয়ে নেবে, যেন তারা মারা না যায়। আগামী বংশপরম্পরায় হারোণ ও তার বংশধরদের জন্য এ এক দীর্ঘস্থায়ী বিধি হবে।” \s1 অভিষেক-তেল \p \v 22 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 23 “তুমি এই সুন্দর সুন্দর মশলাগুলি নিও: 500 শেকল\f + \fr 30:23 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 5.8 কিলোগ্রাম; 24 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* তরল গন্ধরস, এর অর্ধেক পরিমাণ (অর্থাৎ 250 শেকল) সুগন্ধি দারুচিনি, 250 শেকল\f + \fr 30:23 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 2.9 কিলোগ্রাম\ft*\f* সুগন্ধি বচ, \v 24 500 শেকল নীরসে ধরনের দারুচিনি—সবই পবিত্রস্থানের শেকল অনুসারে—এবং এক হিন\f + \fr 30:24 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 3.8 লিটার\ft*\f* জলপাই তেল। \v 25 এগুলি দিয়ে সুগন্ধি দ্রব্যাদির প্রস্তুতকারকের হস্তকলার মতো করে পবিত্র এক অভিষেক-তেল, সুগন্ধি এক মিশ্রণ তৈরি কোরো। \v 26 পরে সমাগম তাঁবু, বিধিনিয়মের সিন্দুক, \v 27 টেবিল ও তার সব জিনিসপত্র, দীপাধার ও তার আনুষঙ্গিক উপকরণ, ধূপবেদি, \v 28 হোমবলির বেদি ও তার সব বাসনপত্র, এবং গামলা ও তার মাচাটি অভিষিক্ত করার জন্য তা ব্যবহার কোরো। \v 29 সেগুলি তুমি পবিত্র করবে, যেন সেগুলি অতি পবিত্র হয়ে যায় এবং যা কিছু সেগুলির সংস্পর্শে আসবে সেগুলিও পবিত্র হয়ে যাবে। \p \v 30 “হারোণ ও তার ছেলেদের অভিষিক্ত এবং পবিত্র কোরো, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \v 31 ইস্রায়েলীদের বোলো, ‘আগামী বংশপরম্পরায় এটিই হবে আমার পবিত্র অভিষেক-তেল। \v 32 অন্য কোনো মানুষের দেহে এটি ঢেলো না এবং একই প্রস্তুতপ্রণালী ব্যবহার করে অন্য কোনো তেল তৈরি কোরো না। এটি পবিত্র, আর তোমাদের এটি পবিত্র বলেই গণ্য করতে হবে। \v 33 যে কেউ এটির মতো সুগন্ধি তৈরি করে এবং একজন যাজক ছাড়া অন্য কোনো মানুষের গায়ে ঢেলে দেয়, তাকে তার লোকজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে। ’ ” \s1 ধূপ \p \v 34 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি সমপরিমাণে সুগন্ধি মশলাপাতি—আঠা রজন, নখী, কুন্দুরু—এবং খাঁটি গুগগুল নিয়ো, \v 35 এবং একজন সুগন্ধি দ্রব্যাদি প্রস্তুতকারকের হস্তকলার মতো করে ধূপের এক সুগন্ধি মিশ্রণ তৈরি কোরো। এটি যেন লবণাক্ত এবং খাঁটি ও পবিত্র হয়। \v 36 তা থেকে কিছুটা পিষে গুঁড়ো করে নিও এবং তা সমাগম তাঁবুতে বিধিনিয়মের সেই সিন্দুকটির সামনে এনে রেখো, যেখানে আমি তোমার সাথে দেখা করব। এটি তোমাদের কাছে অতি পবিত্র হবে। \v 37 এই প্রস্তুতপ্রণালী দিয়ে নিজেদের জন্য তোমরা কোনো ধূপ তৈরি কোরো না; সদাপ্রভুর উদ্দেশে এটি পবিত্র বলে গণ্য কোরো। \v 38 যে কেউ এটির সুগন্ধ উপভোগ করার জন্য এটির মতো ধূপ তৈরি করবে, তাকে তার লোকজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে।” \c 31 \s1 বৎসলেল এবং অহলীয়াব \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 2 “দেখো, আমি যিহূদা গোষ্ঠীভুক্ত হূরের নাতি তথা ঊরির ছেলে বৎসলেলকে মনোনীত করেছি, \v 3 এবং আমি তাকে ঈশ্বরের আত্মায়, প্রজ্ঞায়, বুদ্ধিতে, জ্ঞানে এবং সব ধরনের দক্ষতায় পরিপূর্ণ করেছি— \v 4 যেন সে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ দিয়ে চারুশিল্পসম্মত নকশা ফুটিয়ে তুলতে, \v 5 পাথর কেটে তা বসাতে, কাঠের কাজ করতে, এবং সব ধরনের কারুশিল্পের কাজে লিপ্ত হতে পারে। \v 6 এছাড়াও, তাকে একাজে সাহায্য করার জন্য আমি দান গোষ্ঠীভুক্ত অহীষামকের ছেলে অহলীয়াবকেও নিযুক্ত করেছি। \b \li4 “যা যা করার আদেশ আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, সেসবকিছু তৈরি করার দক্ষতা আমি সব দক্ষ কারিগরকে দিয়েছি: \b \li1 \v 7 “সমাগম তাঁবু, \li1 বিধিনিয়মের সিন্দুক এবং সেটির উপরের প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন, \li1 এবং তাঁবুর অন্যান্য সব আসবাবপত্র— \li2 \v 8 টেবিল এবং সেটির সব জিনিসপত্র, \li2 খাঁটি সোনার দীপাধার এবং সেটির সব আনুষঙ্গিক উপকরণ, \li2 ধূপবেদি, \li2 \v 9 হোমবলির বেদি এবং সেটির সব পাত্র, \li2 গামলা এবং সেটির মাচা— \li1 \v 10 আর এছাড়াও হাতে বোনা পোশাক-পরিচ্ছদ, \li2 যাজক হারোণের জন্য সেই পবিত্র পোশাক \li2 এবং তার ছেলেদের জন্যও সেই পোশাক, যেগুলি তারা যাজকরূপে সেবাকাজ করার সময় গায়ে দেবে, \li1 \v 11 এবং পবিত্রস্থানের জন্য সেই অভিষেক-তেল ও সুগন্ধি ধূপ। \b \li4 “আমি তোমাকে যেমন আদেশ দিয়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই তারা যেন সেগুলি তৈরি করে।” \s1 সাব্বাথ \p \v 12 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 13 ইস্রায়েলীদের বলো, “তোমাদের অবশ্যই আমার সাব্বাথ পালন করতে হবে। আগামী বংশপরম্পরায় এটি আমার ও তোমাদের মধ্যে এক চিহ্ন হবে, যেন তোমরা জানতে পারো যে আমিই সেই সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের পবিত্র করেছেন। \p \v 14 “সাব্বাথ পালন কোরো, কারণ তোমাদের কাছে এই দিনটি পবিত্র। যে কেউ এই দিনটিকে অপবিত্র করবে, তাকে মেরে ফেলতে হবে; যারা সেদিন কোনও কাজ করবে, তাদের অবশ্যই তাদের লোকজনের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে। \v 15 ছয় দিন কাজ করা যেতে পারে, কিন্তু সপ্তম দিনটি সাব্বাথ বিশ্রামের দিন, যা সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র। যে কেউ সাব্বাথবারে কোনও কাজ করবে, তাকে মেরে ফেলতে হবে। \v 16 আগামী বংশপরম্পরায় দীর্ঘস্থায়ী এক নিয়মরূপে সাব্বাথবার উদ্‌যাপন করার মাধ্যমে ইস্রায়েলীদের তা পালন করতে হবে। \v 17 চিরকালের জন্য এটি আমার ও ইস্রায়েলীদের মধ্যে এক চিহ্ন হয়ে থাকবে, কারণ ছয় দিনে সদাপ্রভু আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী তৈরি করেছিলেন, এবং সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিয়েছিলেন ও চাঙ্গা হয়েছিলেন।” \p \v 18 সীনয় পর্বতে মোশির সঙ্গে সদাপ্রভুর কথা বলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর, তিনি মোশিকে ঈশ্বরের আঙুল দিয়ে খোদাই করা পাথরের ফলকগুলি, বিধিনিয়মের সেই দুটি ফলক দিলেন। \c 32 \s1 সোনার বাছুর \p \v 1 লোকেরা যখন দেখেছিল যে মোশি পর্বত থেকে নিচে নামতে খুব দেরি করছেন, তখন তারা হারোণের চারপাশে একত্রিত হয়ে বলল, “আসুন, আমাদের জন্য এমন সব দেবতা\f + \fr 32:1 \fr*\ft অথবা, এক দেবতা; 23 ও 31 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* তৈরি করে দিন, যারা\f + \fr 32:1 \fr*\ft অথবা, যিনি\ft*\f* আমাদের অগ্রগামী হবেন। যে মোশি আমাদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছেন, তার কী হল তা আমরা জানি না।” \p \v 2 হারোণ তাদের উত্তর দিলেন, “তোমাদের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েরা যেসব সোনার কানের দুল পরে আছে, সেগুলি খুলে ফেলো ও আমার কাছে নিয়ে এসো।” \v 3 অতএব সব লোকজন তাদের সোনার কানের দুল খুলে ফেলল ও হারোণের কাছে এনে দিল। \v 4 তারা তাঁর হাতে যা সঁপে দিল, সেগুলি তিনি গ্রহণ করলেন এবং ঢালাই করে এক যন্ত্রের সাহায্যে তিনি বাছুরের আকৃতিবিশিষ্ট একটি প্রতিমা তৈরি করে দিলেন। তখন তারা বলল, “হে ইস্রায়েল, এরাই তোমাদের সেই দেবতা\f + \fr 32:4 \fr*\ft অথবা, এই তোমাদের সেই দেবতা; 8 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f*, যারা\f + \fr 32:4 \fr*\ft অথবা, যিনি\ft*\f* মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন।” \p \v 5 হারোণ যখন তা দেখলেন, তখন তিনি সেই বাছুরের সামনে একটি বেদি নির্মাণ করে দিলেন ও ঘোষণা করলেন, “আগামীকাল সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি উৎসব হবে।” \v 6 অতএব লোকজন পরদিন ভোরবেলায় উঠে পড়ল এবং হোমবলি উৎসর্গ করল ও মঙ্গলার্থক বলি নিবেদন করল। পরে তারা ভোজনপান করার জন্য বসে পড়ল, তারপর উঠে পরজাতীয়দের মতো হুল্লোড়ে মত্ত হল। \p \v 7 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “নিচে নেমে যাও, কারণ তোমার যে লোকদের তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ, তারা নীতিভ্রষ্ট হয়ে পড়েছে। \v 8 আমি তাদের যে আদেশ দিয়েছিলাম তা থেকে তারা খুব তাড়াতাড়ি বিপথগামী হয়ে পড়েছে এবং নিজেদের জন্য তারা ঢালাই করে বাছুরের আকৃতিবিশিষ্ট একটি প্রতিমা তৈরি করেছে। সেটির সামনে তারা নতজানু হয়েছে এবং সেটির উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করে বলেছে, ‘হে ইস্রায়েল, এরাই তোমার সেইসব দেবতা, যারা মিশর থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন।’ \p \v 9 “আমি এই লোকদের দেখেছি,” সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আর এরা খুব একগুঁয়ে লোক। \v 10 এখন আমার কাজে হস্তক্ষেপ কোরো না, যেন এদের বিরুদ্ধে আমি ক্রোধে ফেটে পড়তে পারি ও যেন এদের আমি ধ্বংস করে ফেলতে পারি। পরে আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব।” \p \v 11 কিন্তু মোশি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর অনুগ্রহ চাইলেন, “হে সদাপ্রভু,” তিনি বললেন, “তুমি কেন তোমার সেই প্রজাদের বিরুদ্ধে ক্রোধে ফেটে পড়বে, যাদের তুমি মহাশক্তিতে ও বলশালী এক হাত দিয়ে মিশর থেকে বের করে এনেছ? \v 12 মিশরীয়রা কেন বলবে, ‘মন্দ উদ্দেশ্য নিয়ে, পাহাড়-পর্বতে তাদের হত্যা করার এবং পৃথিবীর বুক থেকে তাদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্যই তিনি তাদের বের করে এনেছেন’? তোমার প্রচণ্ড ক্রোধ প্রশমিত করো; কোমল হও ও তোমার এই প্রজাদের উপর বিপর্যয় ডেকে এনো না। \v 13 তোমার সেই দাস অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে স্মরণ করো, যাদের কাছে তুমি নিজের নামে শপথ করে বলেছিলে: ‘আমি তোমার বংশধরদের আকাশের তারার মতো অসংখ্য করে তুলব এবং আমি তোমার বংশধরদের এই সমগ্র দেশটি দেব, যেটি আমি তাদের দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করলাম, এবং চিরকালের জন্য এই দেশটি তাদের উত্তরাধিকার হবে।’ ” \v 14 তখন সদাপ্রভু কোমল হলেন এবং তাঁর প্রজাদের উপর যে বিপর্যয় ডেকে আনার হুমকি তিনি দিয়েছিলেন, তা আর আনেননি। \p \v 15 মোশি ঘুরে দাঁড়ালেন এবং বিধিনিয়মের সেই দুটি ফলক হাতে নিয়ে পাহাড় থেকে নিচে নেমে এলেন। সেই ফলকগুলির সামনে ও পিছনে, দুই দিকেই বিধিনিয়ম খোদাই করা ছিল। \v 16 ফলকগুলি ছিল ঈশ্বরের কাজ; রচনাটি ছিল ফলকগুলির উপর খোদাই করা ঈশ্বরের রচনা। \p \v 17 যিহোশূয় যখন লোকজনের চিৎকার শুনলেন, তখন তিনি মোশিকে বললেন, “শিবিরে যুদ্ধের শব্দ হচ্ছে।” \p \v 18 মোশি উত্তর দিলেন: \q1 “এটি জয়ধ্বনির শব্দ নয়, \q2 এটি পরাজয়ের শব্দ নয়; \q2 আমি গানের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।” \p \v 19 মোশি যখন শিবিরের কাছাকাছি এলেন, এবং সেই বাছুরটিকে ও নাচানাচি\f + \fr 32:19 \fr*\ft লোকদের নাচানাচি\ft*\f* দেখলেন, তখন তিনি ক্রোধে ফেটে পড়লেন এবং তিনি ফলকগুলি হাত থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পর্বতের পাদদেশে সেগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিলেন। \v 20 আর তিনি লোকদের তৈরি করা সেই বাছুরটি নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিলেন; পরে তিনি সেটি পিষে গুঁড়ো করে, তা জলের উপর ছড়িয়ে দিলেন এবং ইস্রায়েলীদের তা পান করতে বাধ্য করলেন। \p \v 21 তিনি হারোণকে বললেন, “এই লোকেরা তোমার কী করেছিল, যে তুমি তাদের দিয়ে এত বড়ো পাপ করালে?” \p \v 22 “হে আমার প্রভু, ক্রুদ্ধ হবেন না,” হারোণ উত্তর দিলেন। “আপনি তো জানেন এই লোকেরা কত দুষ্টতাপ্রবণ। \v 23 তারা আমাকে বলল, ‘আমাদের জন্য এমন সব দেবতা তৈরি করে দিন, যারা আমাদের অগ্রগামী হবেন। যে মোশি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, তার কী হয়েছে তা আমরা জানি না।’ \v 24 তাই আমি তাদের বললাম, ‘যার যার কাছে সোনার অলংকার আছে, সেগুলি খুলে ফেলো।’ তখন তারা আমাকে সেই সোনা দিয়েছিল, আর আমি সেগুলি আগুনে ফেলে দিয়েছিলাম, ও সেখান থেকে এই বাছুরটি বেরিয়ে এসেছে!” \p \v 25 মোশি দেখলেন যে, লোকেরা যা খুশি তাই করছে এবং হারোণও তাদের লাগামছাড়া হতে দিয়েছেন ও এভাবে তাদের শত্রুদের কাছে উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছেন। \v 26 অতএব তিনি শিবিরের প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে বললেন, “যে কেউ সদাপ্রভুর স্বপক্ষে, সে আমার কাছে চলে এসো।” আর লেবীয়রা সবাই তাঁর কাছে এসে একত্রিত হল। \p \v 27 তখন তিনি তাদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘প্রত্যেকে নিজের নিজের দেহের পাশে একটি করে তরোয়াল বেঁধে নিক। শিবিরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সে আসা যাওয়া করুক, এবং প্রত্যেকে তার ভাই ও বন্ধু ও প্রতিবেশীকে হত্যা করুক।’ ” \v 28 লেবীয়রা মোশির আদেশানুসারেই কাজ করল, আর সেদিন প্রায় 3,000 লোক মারা গেল। \v 29 তখন মোশি বললেন, “আজ তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে পৃথক হলে, কারণ তোমরা তোমাদের নিজের ছেলে ও ভাইদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছ, এবং এই দিনে তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন।” \p \v 30 পরদিন মোশি লোকদের বললেন, “তোমরা মহাপাপ করেছ। কিন্তু আমি সদাপ্রভুর কাছে যাব; হয়তো আমি তোমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারব।” \p \v 31 অতএব মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “হায়, হায়, এই লোকেরা কী মহাপাপই না করেছে! তারা নিজেদের জন্য সোনার দেবতা তৈরি করেছে। \v 32 কিন্তু এখন, দয়া করে এদের পাপ ক্ষমা করো—কিন্তু যদি না করো, তবে তোমার লেখা বই থেকে আমার নামটি মুছে ফেলো।” \p \v 33 সদাপ্রভু মোশিকে উত্তর দিলেন, “যে কেউ আমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, তারই নাম আমি আমার বই থেকে মুছে ফেলব। \v 34 এখন যাও, যে স্থানের কথা আমি বলেছিলাম, লোকদের সেখানে নিয়ে যাও এবং আমার দূত তোমার অগ্রগামী হবেন। অবশ্য, যখন শাস্তি দেওয়ার সময় আসবে, তখন তাদের পাপের জন্য আমি তাদের শাস্তি দেব।” \p \v 35 আর হারোণের তৈরি করা সেই বাছুরটিকে নিয়ে লোকেরা যা করেছিল সেজন্য সদাপ্রভু এক সংক্রামক মহামারি দ্বারা লোকদের আঘাত করলেন। \c 33 \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ও যাদের তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ, তারা সবাই এই স্থান ত্যাগ করে সেই দেশে যাও, যে দেশের বিষয়ে আমি অব্রাহাম, ইস্‌হাক, ও যাকোবের কাছে শপথ নিয়ে প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলাম, ‘এটি আমি তোমার বংশধরদের দেব।’ \v 2 তোমার আগে আগে আমি এক দূত পাঠাব এবং কনানীয়, ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের তাড়িয়ে দেব। \v 3 দুধ ও মধু প্রবাহিত সেই দেশে চলে যাও। কিন্তু আমি তোমাদের সাথে যাব না, কারণ তোমরা একগুঁয়ে লোক এবং পাছে পথে আমি তোমাদের ধ্বংস করে ফেলি।” \p \v 4 লোকেরা যখন এই অসুখকর কথা শুনল, তখন তারা দুঃখ প্রকাশ করল এবং কেউই কোনও অলংকার পরল না। \v 5 কারণ সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলীদের বলো, ‘তোমরা একগুঁয়ে লোক। এক মুহূর্তের জন্যও যদি আমি তোমাদের সাথে যাই, তবে হয়তো আমি তোমাদের ধ্বংসই করে ফেলব। এখন তোমাদের অলংকারগুলি খুলে ফেলো এবং আমিই ঠিক করব তোমাদের নিয়ে কী করতে হবে।’ ” \v 6 অতএব হোরেব পর্বতে ইস্রায়েলীরা তাদের গা থেকে অলংকারগুলি খুলে ফেলেছিল। \s1 সমাগম তাঁবু \p \v 7 আর মোশি একটি তাঁবু নিয়ে শিবিরের বাইরে কিছুটা দূরে তা খাটিয়ে দিলেন, ও সেটির নাম দিলেন “সমাগম তাঁবু।” যে কেউ সদাপ্রভুর কাছে কিছু জানতে চাইত, সে শিবিরের বাইরে সমাগম তাঁবুর কাছে যেত। \v 8 আর যখনই মোশি সেই তাঁবুর কাছে যেতেন, সব লোকজন উঠে তাদের তাঁবুগুলির প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে পড়ত, ও যতক্ষণ না মোশি সেই তাঁবুতে প্রবেশ করতেন, ততক্ষণ তাঁর উপর নজর রাখত। \v 9 মোশি যেই না সেই তাঁবুর ভিতরে প্রবেশ করতেন, মেঘস্তম্ভ নেমে আসত ও যতক্ষণ সদাপ্রভু মোশির সাথে কথা বলতেন, ততক্ষণ তা সেই প্রবেশদ্বারে অবস্থান করত। \v 10 যখনই লোকেরা সেই মেঘস্তম্ভটিকে তাঁবুর প্রবেশদ্বারে অবস্থান করতে দেখত, তখনই তারা প্রত্যেকে নিজেদের তাঁবুর প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে আরাধনা করত। \v 11 একজন বন্ধু যেভাবে তার বন্ধুর সাথে কথা বলে, সদাপ্রভুও মোশির সাথে সেভাবে মুখোমুখি কথা বলতেন। পরে মোশি নিজের তাঁবুতে ফিরে আসতেন, কিন্তু নূনের ছেলে যিহোশূয়—তাঁর তরুণ সহায়ক, সেই তাঁবু ত্যাগ করতেন না। \s1 মোশি এবং সদাপ্রভুর মহিমা \p \v 12 মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “তুমি আমাকে বলে চলেছ, ‘এই লোকদের নেতৃত্ব দাও,’ কিন্তু তুমি আমাকে জানতে দাওনি আমার সাথে তুমি কাকে পাঠাবে। তুমি বলেছ, ‘আমি তোমাকে নাম ধরে চিনি এবং তুমি আমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করেছ।’ \v 13 আমি যদি তোমাকে খুশি করতে পেরেছি, তবে তোমার পথের বিষয়ে আমাকে শিক্ষা দাও যেন আমি তোমাকে জানতে পারি ও অবিরতভাবে তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেতেই থাকি। মনে রেখো যে এই জাতি তোমারই প্রজা।” \p \v 14 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “আমার উপস্থিতি তোমার সাথেই যাবে, এবং আমি তোমাকে বিশ্রাম দেব।” \p \v 15 তখন মোশি তাঁকে বললেন, “তোমার উপস্থিতি যদি আমাদের সাথে না যায়, তবে এখান থেকে আমাদের পাঠিয়ো না। \v 16 তুমি যদি আমাদের সাথে না যাও তবে কেউ কীভাবে জানবে যে আমি ও তোমার প্রজারা তোমাকে খুশি করতে পেরেছি? আর কী-ই বা আমাকে ও তোমার প্রজাদের এই পৃথিবীর অন্যান্য সব মানুষজনের থেকে ভিন্ন করে তুলবে?” \p \v 17 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি যা চেয়েছ, আমি ঠিক তাই করব, কারণ তুমি আমাকে খুশি করেছ এবং আমি তোমাকে নাম ধরে চিনি।” \p \v 18 তখন মোশি বললেন, “তোমার মহিমা এখন আমাকে দেখাও।” \p \v 19 আর সদাপ্রভু বললেন, “আমি আমার সব চমৎকারিত্ব তোমার সামনে দিয়ে পার হতে দেব, এবং তোমার উপস্থিতিতে আমি আমার সেই সদাপ্রভু নামটি ঘোষণা করব। যার প্রতি আমি দয়া দেখাতে চাই, তার প্রতি আমি দয়া দেখাব, এবং যার প্রতি করুণা করতে চাই, তার প্রতি করুণা করব। \v 20 কিন্তু,” তিনি বললেন, “তুমি আমার মুখ দেখতে পাবে না; কারণ কেউ আমাকে দেখে বেঁচে থাকে না।” \p \v 21 পরে সদাপ্রভু বললেন, “আমার কাছাকাছি একটি স্থান আছে যেখানে তুমি পাষাণ-পাথরের উপরে গিয়ে দাঁড়াতে পারো। \v 22 আমার মহিমা যখন পার হবে, তখন আমি তোমাকে সেই পাষাণ-পাথরের এক ফাটলে রেখে দেব এবং যতক্ষণ না আমি পার হয়ে যাচ্ছি ততক্ষণ তোমাকে আমি আমার হাত দিয়ে ঢেকে রাখব। \v 23 পরে আমি আমার হাত সরিয়ে নেব ও তুমি আমার পিঠ দেখতে পাবে; কিন্তু আমার মুখ দেখা যাবে না।” \c 34 \s1 পাথরের নতুন ফলকগুলি \p \v 1 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “প্রথম দুটির মতো আরও দুটি পাথরের ফলক খোদাই করো, এবং তুমি যে ফলকগুলি ভেঙে ফেলেছিলে, সেগুলিতে যা যা লেখা ছিল আমি এগুলিতেও সেসব কথা লিখে দেব। \v 2 সকালবেলায় তৈরি থেকো, ও পরে সীনয় পর্বতে উঠে এসো। সেই পর্বতের চূড়ায় সেখানে আমার কাছে উপস্থিত হোয়ো। \v 3 কেউ যেন তোমার সাথে না আসে বা সেই পর্বতে কোথাও যেন কাউকে দেখা না যায়; এমনকি সেই পর্বতের সামনে মেষপাল ও পশুপালও যেন না চরে।” \p \v 4 অতএব মোশি সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে প্রথম দুটি ফলকের মতো আরও দুটি পাথরের ফলক খোদাই করলেন এবং খুব সকালবেলায় সীনয় পর্বতে উঠে গেলেন; এবং তিনি সেই পাথরের ফলক দুটিও হাতে করে তুলে নিয়ে গেলেন। \v 5 তখন সদাপ্রভু মেঘে নিচে নেমে এলেন এবং মোশির সাথে সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে, সদাপ্রভু—তাঁর এই নাম ঘোষণা করলেন। \v 6 আর তিনি একথা ঘোষণা করতে করতে মোশির সামনে দিয়ে পার হয়ে গেলেন, “সদাপ্রভু, সদাপ্রভু, তিনি করুণাময় ও অনুগ্রহকারী ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর, প্রেম ও বিশ্বস্ততায় সমৃদ্ধ, \v 7 হাজার হাজার জনের প্রতি প্রেম প্রদর্শনকারী, এবং দুষ্টতা, বিদ্রোহ ও পাপ ক্ষমাকারী। তবুও অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে তিনি ছেড়ে দেন না; তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত তিনি বাবা-মার পাপের জন্য তাদের সন্তানদের ও নাতি-নাতনিদের শাস্তি দেন।” \p \v 8 মোশি তৎক্ষণাৎ মাটিতে মাথা নত করে আরাধনা করলেন। \v 9 “হে প্রভু,” তিনি বললেন, “আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে প্রভু যেন আমাদের সাথে যান। এরা যদিও একগুঁয়ে লোক, তাও আমাদের দুষ্টতা ও আমাদের পাপ ক্ষমা করো, এবং আমাদের তোমার উত্তরাধিকার করে নাও।” \p \v 10 তখন সদাপ্রভু বললেন: “আমি তোমার সঙ্গে এক নিয়ম স্থির করছি। তোমার সব লোকজনের সামনে আমি এমন সব আশ্চর্য কাজ করব যা সমগ্র পৃথিবীতে কোনও জাতির মধ্যে আগে কখনও করা হয়নি। যেসব লোকজনের মধ্যে তুমি বসবাস করছ, তারা দেখবে আমি, সদাপ্রভু তোমার জন্য যে কাজ করব, তা কতই না অসাধারণ। \v 11 আজ আমি তোমাকে যে আদেশ দিচ্ছি, তা পালন কোরো। আমি তোমার সামনে থেকে ইমোরীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের তাড়িয়ে দেব। \v 12 সাবধান, যে দেশে তুমি যাচ্ছ, সেখানে বসবাসকারী লোকদের সঙ্গে কোনও চুক্তি কোরো না, তা না হলে তারা তোমাদের মধ্যে এক ফাঁদ হয়ে যাবে। \v 13 তাদের বেদিগুলি ভেঙে দিয়ো, তাদের পবিত্র পাথরগুলি চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ো ও তাদের আশেরা-খুঁটিগুলি\f + \fr 34:13 \fr*\ft অর্থাৎ, দেবী আশেরার কাঠের মূর্তিগুলি\ft*\f* কেটে নামিয়ে দিয়ো। \v 14 অন্য আর কোনও দেবতার আরাধনা কোরো না, কারণ যাঁর নাম ঈর্ষাপরায়ণ, সেই সদাপ্রভু ঈর্ষান্বিত ঈশ্বর। \p \v 15 “সাবধান, সেই দেশে বসবাসকারী লোকদের সঙ্গে চুক্তি কোরো না; কারণ তারা যখন তাদের দেবতাদের কাছে বেশ্যাবৃত্তি করবে ও তাদের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করবে, তখন তারা তোমাকে আমন্ত্রণ জানাবে ও তুমি তাদের বলি দেওয়া প্রসাদ খেয়ে ফেলবে। \v 16 আর তুমি যখন তোমার ছেলেদের জন্য স্ত্রীরূপে তাদের মেয়েদের মধ্যে কয়েকজনকে মনোনীত করবে এবং সেই মেয়েরা তাদের দেবতাদের কাছে বেশ্যাবৃত্তি করবে, তখন তারা তোমার ছেলেদেরও একই কাজ করতে বাধ্য করবে। \p \v 17 “কোনও প্রতিমা তৈরি কোরো না। \p \v 18 “খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন কোরো। তোমাকে দেওয়া আদেশানুসারে, সাত দিন খামিরবিহীন রুটি খেয়ো। আবীব মাসের নির্দিষ্ট সময়ে এরকম কোরো, কারণ সেই মাসেই তুমি মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিলে। \p \v 19 “প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম সন্তানটি আমার, এবং তোমার গৃহপালিত পশুপালের প্রথমজাত সব মদ্দাও আমার, তা সে গোপাল বা মেষপাল, যাই হোক না কেন। \v 20 প্রথমজাত গাধাকে এক মেষশাবক দিয়ে মুক্ত কোরো, কিন্তু যদি তা মুক্ত না করো, তবে সেটির ঘাড় ভেঙে দিয়ো। তোমার সব প্রথমজাত ছেলেকে মুক্ত কোরো। \p “কেউ যেন খালি হাতে আমার সামনে উপস্থিত না হয়। \p \v 21 “ছয় দিন তুমি পরিশ্রম কোরো, কিন্তু সপ্তম দিন বিশ্রাম নিয়ো; এমনকি চাষ করার ও ফসল কাটার সময়েও তোমাকে বিশ্রাম নিতে হবে। \p \v 22 “কাটা গমের অগ্রিমাংশ নিয়ে সাত সপ্তাহের উৎসব, এবং বছর ঘুরে এলে\f + \fr 34:22 \fr*\ft অর্থাৎ, শরৎকালে\ft*\f* ফল সংগ্রহের উৎসবও পালন কোরো। \v 23 বছরে তিনবার তোমাদের সব পুরুষকে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সার্বভৌম সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হতে হবে। \v 24 আমি তোমার সামনে থেকে জাতিদের তাড়িয়ে দেব এবং তোমার এলাকা সম্প্রসারিত করব, এবং তুমি যখন বছরে তিনবার তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হতে যাবে, তখন কেউ তোমার জমিজায়গার উপর লোভ করবে না। \p \v 25 “খামিরযুক্ত কোনো কিছু সমেত আমার উদ্দেশে বলির রক্ত উৎসর্গ কোরো না, এবং নিস্তারপর্বীয় উৎসবের কোনও নৈবেদ্য সকাল পর্যন্ত পড়ে থাকতে দিয়ো না। \p \v 26 “তোমার জমির সেরা প্রথম ফলটি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে এসো। \p “ছাগ-শিশুকে তার মায়ের দুধে রান্না কোরো না।” \p \v 27 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এসব কথা লিখে ফেলো, কারণ এই কথাগুলির আধারে আমি তোমার সাথে ও ইস্রায়েলের সাথে এক নিয়ম স্থির করেছি।” \v 28 রুটি না খেয়ে ও জলপান না করে মোশি সেখানে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সাথে ছিলেন। আর সেই ফলকের উপর তিনি নিয়মের সেই কথাগুলি—দশাজ্ঞাটি লিখলেন। \s1 মোশির উজ্জ্বল মুখ \p \v 29 মোশি যখন বিধিনিয়মের সেই দুটি ফলক হাতে নিয়ে সীনয় পর্বত থেকে নেমে এলেন, তখন তিনি জানতেই পারেননি যে যেহেতু তিনি সদাপ্রভুর সাথে কথা বলেছিলেন তাই তাঁর মুখটি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। \v 30 হারোণ ও ইস্রায়েলীরা সবাই যখন মোশিকে দেখেছিল, তখন তাঁর মুখটি উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল, এবং তারা তাঁর কাছে আসতে ভয় পেল। \v 31 কিন্তু মোশি তাঁদের ডাক দিলেন; অতএব হারোণ ও সমাজের নেতারা সবাই তাঁর কাছে ফিরে এলেন, এবং মোশি তাঁদের সাথে কথা বললেন। \v 32 পরে ইস্রায়েলীরা সবাই তাঁর কাছে এল, এবং সদাপ্রভু সীনয় পর্বতে তাঁকে যেসব আদেশ দিয়েছিলেন তা তিনি তাদের জানালেন। \p \v 33 মোশি তাদের কাছে সব কথা বলে শেষ করার পর, তিনি তাঁর মুখে একটি আবরণ দিলেন। \v 34 কিন্তু যখনই তিনি সদাপ্রভুর সাথে কথা বলার জন্য তাঁর উপস্থিতিতে প্রবেশ করতেন, বের হয়ে না আসা পর্যন্ত তিনি সেই আবরণ সরিয়ে রাখতেন। আর যখনই তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীদের বলতেন তাঁকে কী কী আদেশ দেওয়া হয়েছে, \v 35 তখনই তারা দেখত যে তাঁর মুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে। তখন মোশি যতক্ষণ না সদাপ্রভুর সাথে কথা বলার জন্য ভিতরে যেতেন ততক্ষণ তাঁর মুখে একটি আবরণ দিয়ে রাখতেন। \c 35 \s1 সাব্বাথ-সংক্রান্ত নিয়মকানুন \p \v 1 মোশি সমগ্র ইস্রায়েলী সমাজকে একত্রিত করলেন এবং তাদের বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের এরকম করার আদেশ দিয়েছেন: \v 2 ছয় দিন কাজ করা যাবে, কিন্তু সপ্তম দিনটি তোমাদের জন্য পবিত্র দিন, সদাপ্রভুর উদ্দেশে সাব্বাথের এক বিশ্রামবার হবে। যে কেউ এদিন কোনও কাজ করবে তাকে মেরে ফেলতে হবে। \v 3 সাব্বাথবারে তোমাদের কোনও বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ো না।” \s1 সমাগম তাঁবুর জন্য উপকরণ \p \v 4 মোশি সমগ্র ইস্রায়েল সমাজকে বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের এরকম করার আদেশ দিয়েছেন: \v 5 তোমাদের কাছে যা আছে তা থেকে সদাপ্রভুর জন্য এক উপহার নিয়ো। যে কেউ ইচ্ছুক, সে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক উপহাররূপে এগুলি আনুক: \b \li1 “সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ; \li1 \v 6 নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি মসিনা; \li1 ছাগলের লোম; \li1 \v 7 লাল রং করা মেষের ছাল এবং অন্য এক ধরনের টেকসই চামড়া\f + \fr 35:7 \fr*\ft খুব সম্ভবত বৃহদাকার জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর চামড়া\ft*\f*; \li1 বাবলা কাঠ; \li1 \v 8 আলোর জন্য জলপাই তেল; \li1 অভিষেক করার উপযোগী তেলের জন্য ও সুগন্ধি ধূপের জন্য মশলাপাতি; \li1 \v 9 এবং এফোদ ও বুকপাটার উপরে বসানোর জন্য স্ফটিকমণি ও অন্যান্য মণিরত্ন। \b \p \v 10 “তোমাদের মধ্যে যারা দক্ষ কারিগর, তাদের এগিয়ে আসতে হবে ও সদাপ্রভুর আদেশানুসারে সবকিছু করতে হবে: \b \li1 \v 11 “আবাস এবং সেটির তাঁবু ও সেটির আচ্ছাদন, আঁকড়া, কাঠামো, আগল, খুঁটি ও ভিতগুলি; \li1 \v 12 সিন্দুক ও সেটির খুঁটিগুলি এবং প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন ও সেটিকে আড়াল করে থাকা পর্দা; \li1 \v 13 টেবিল ও সেটির খুঁটিগুলি এবং সেটির সব উপকরণ ও দর্শন-রুটি; \li1 \v 14 আলো দেওয়ার জন্য দীপাধার ও সেটির আনুষঙ্গিক উপকরণ, প্রদীপ ও আলোর জন্য তেল; \li1 \v 15 ধূপবেদি ও সেটির খুঁটিগুলি, অভিষেক-তেল ও সুগন্ধি ধূপ; \li1 সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে দরজার জন্য পর্দা; \li1 \v 16 হোমবলির বেদি ও সেটির ব্রোঞ্জের জাফরি, সেটির খুঁটিগুলি ও সেটির সব পাত্র; \li1 ব্রোঞ্জের গামলা ও সেটির মাচা; \li1 \v 17 প্রাঙ্গণের পর্দাগুলি ও সেখানকার খুঁটি ও ভিতগুলি, এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের জন্য পর্দা; \li1 \v 18 সমাগম তাঁবুর ও প্রাঙ্গণের জন্য তাঁবু-খুটা এবং সেগুলির দড়াদড়ি; \li1 \v 19 হাতে বোনা যে পোশাক পরে পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করতে হত, সেগুলি ও যাজক হারোণের জন্য পবিত্র পোশাক এবং যাজকরূপে সেবা করার সময় তাঁর ছেলেদের যে পোশাকগুলি পরে, সেই পোশাকগুলিও।” \b \p \v 20 পরে সমগ্র ইস্রায়েলী সমাজ মোশির কাছ থেকে চলে গেল, \v 21 এবং যে যে ইচ্ছুক হল ও যাদের অন্তর তোলপাড় হল, তারা প্রত্যেকে এগিয়ে এল এবং সমাগম তাঁবুর জন্য, সেখানকার সব সেবাকাজের জন্য, ও পবিত্র পোশাকগুলির জন্য সদাপ্রভুর কাছে এক উপহার নিয়ে এল। \v 22 পুরুষ-স্ত্রী নির্বিশেষে যারা যারা ইচ্ছুক হল, তারা এগিয়ে এল এবং সব ধরনের সোনার অলংকার নিয়ে এল: বালা, কানের দুল, আংটি ও গয়নাগাটি। তারা সবাই তাদের সোনাদানা সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক দোলনীয়-নৈবেদ্যরূপে উৎসর্গ করল। \v 23 যার যার কাছে নীল, বেগুনি বা টকটকে লাল রংয়ের সুতো অথবা মিহি মসিনা, বা ছাগলের লোম, লাল রং করা মেষচর্ম অথবা অন্যান্য টেকসই চামড়া ছিল, তারা প্রত্যেকে সেগুলি নিয়ে এল। \v 24 যারা যারা রুপো বা ব্রোঞ্জের উপহার উৎসর্গ করল, সদাপ্রভুর উদ্দেশেই তারা সেটি নিয়ে এল, এবং যাদের কাছে যে কোনো কাজে ব্যবহারের উপযোগী বাবলা কাঠ ছিল তারা প্রত্যেকেই তা নিয়ে এল। \v 25 এক একজন দক্ষ মহিলা নিজের হাতে সুতো কেটেছিল ও নীল, বেগুনি বা টকটকে লাল রংয়ের সুতো অথবা মিহি মসিনা—যা কেটেছিল তাই আনল। \v 26 আর যেসব মহিলা ইচ্ছুক হল ও যাদের সেই দক্ষতা ছিল, তারা ছাগলের লোম দিয়ে সুতো কেটেছিল। \v 27 নেতারা এফোদ ও বুকপাটায় বসানোর জন্য স্ফটিকমণি ও অন্যান্য মণিরত্ন আনলেন। \v 28 এছাড়াও তারা আলোর জন্য এবং অভিষেক-তেলের জন্য ও সুগন্ধি ধূপের জন্য মশলাপাতি ও জলপাই তেল আনলেন। \v 29 যেসব ইস্রায়েলী স্ত্রী-পুরুষ ইচ্ছুক হল, তারা মোশির মাধ্যমে সদাপ্রভু তাঁর জন্য তাদের যেসব কাজ করার আদেশ দিয়েছিলেন, তা করার জন্য সদাপ্রভুর কাছে স্বেচ্ছাদান নিয়ে এল। \s1 বৎসলেল এবং অহলীয়াব \p \v 30 পরে মোশি ইস্রায়েলীদের বললেন, “দেখো, সদাপ্রভু যিহূদা গোষ্ঠীভুক্ত হূরের নাতি তথা ঊরির ছেলে বৎসলেলকে মনোনীত করেছেন, \v 31 এবং তিনি তাকে ঈশ্বরের আত্মায়, প্রজ্ঞায়, বুদ্ধিতে, জ্ঞানে এবং সব ধরনের দক্ষতায় পরিপূর্ণ করেছেন— \v 32 যেন সে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ দিয়ে শিল্পবোধসম্পন্ন নকশা ফুটিয়ে তোলে, \v 33 মণিরত্ন কেটে বসায়, কাঠের কাজ করে এবং সব ধরনের শিল্পবোধসম্পন্ন কারুশিল্পের কাজে লিপ্ত হয়। \v 34 আর তিনি তাকে ও দান গোষ্ঠীভুক্ত অহীষামকের ছেলে অহলীয়াব, এই দুজনকেই অন্যান্য মানুষজনকে শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন। \v 35 তিনি তাদের ও তাঁতিদের খোদাইকারী, নকশাকার ও সূচিশিল্পীরূপে নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো ও মিহি মসিনা দিয়ে সব ধরনের কাজ করার দক্ষতায় পরিপূর্ণ করেছেন—তারা সবাই দক্ষ কারিগর ও নকশাকার। \c 36 \nb \v 1 অতএব ঠিক কীভাবে সদাপ্রভুর আদেশানুসারে পবিত্রস্থান নির্মাণ-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে তা জানার জন্য সদাপ্রভু বৎসলেলকে, অহলীয়াবকে ও প্রত্যেক দক্ষ লোককে দক্ষতা ও সামর্থ্য দিলেন।” \p \v 2 পরে মোশি সেই বৎসলেল ও অহলীয়াব এবং দক্ষ এক একজন লোককে ডেকে পাঠালেন, যাদের সদাপ্রভু সামর্থ্য দিয়েছিলেন ও যারা এসে কাজ করতে ইচ্ছুক হল। \v 3 পবিত্রস্থান নির্মাণ-সংক্রান্ত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ইস্রায়েলীরা যেসব উপহার এনেছিল, মোশির হাত থেকে তাঁরা সেগুলি গ্রহণ করলেন। আর লোকেরা প্রতিদিন সকালবেলায় অব্যাহতভাবে স্বেচ্ছাদান এনেই যাচ্ছিল। \v 4 অতএব যেসব দক্ষ কারিগর পবিত্রস্থানের সব কাজকর্ম করছিল, তারা নিজেদের কাজ থামিয়ে \v 5 মোশির কাছে এসে বলল, “সদাপ্রভু যে কাজ করার আদেশ দিয়েছেন তা করার জন্য যা দরকার, লোকেরা তার চেয়েও বেশি উপকরণ নিয়ে এসেছে।” \p \v 6 তখন মোশি এক আদেশ জারি করলেন এবং তারা শিবিরের সর্বত্র একথা ঘোষণা করে দিলেন: “কোনও স্ত্রী বা পুরুষ যেন পবিত্রস্থানের জন্য এক উপহাররূপে আর কিছু না আনে।” আর তাই লোকেরা আরও বেশি কিছু আনা থেকে ক্ষান্ত হল, \v 7 যেহেতু তাদের কাছে ইতিমধ্যেই যা ছিল, তা সব কাজ করার পক্ষে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্তই ছিল। \s1 সমাগম তাঁবু \p \v 8 কারিগরদের মধ্যে যাঁরা দক্ষ ছিলেন, তাঁরা পাকা হাতে মিহি পাকান মসিনা ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতোয় তৈরি দশটি পর্দায় করূবদের নকশা ফুটিয়ে তুলে সমাগম তাঁবুটি তৈরি করলেন। \v 9 সব পর্দা একই মাপের—13 মিটার লম্বা ও 1.8 মিটার চওড়া\f + \fr 36:9 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 28 হাত লম্বা ও 4 হাত চওড়া\ft*\f* হল। \v 10 তাঁরা পাঁচটি পর্দা একসাথে জুড়ে দিলেন ও অন্য পাঁচটির ক্ষেত্রেও একই কাজ করলেন। \v 11 পরে তাঁরা এক পাটি পর্দায় এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত কিনারা ধরে ধরে নীল কাপড়ের ফাঁস তৈরি করলেন, এবং অন্য পাটি পর্দাতেও এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত একই কাজ করলেন। \v 12 এছাড়াও তাঁরা একটি পর্দায় পঞ্চাশটি ফাঁস ও অন্য পাটির শেষ প্রান্তের পর্দায় পঞ্চাশটি ফাঁস তৈরি করে দিলেন, এবং ফাঁসগুলি পরস্পরের মুখোমুখি ছিল। \v 13 পরে তাঁরা সোনার পঞ্চাশটি আঁকড়া তৈরি করলেন এবং দুই পাটি পর্দা একসাথে বেঁধে রাখার জন্য সেগুলি ব্যবহার করলেন, যেন সমাগম তাঁবুটি অক্ষুণ্ণ থাকে। \p \v 14 তাঁরা সমাগম তাঁবুটি ঢেকে রাখার জন্য ছাগ-লোমের মোট এগারোটি পর্দা তৈরি করলেন। \v 15 এগারোটি পর্দার সবকটি একই মাপের—14 মিটার লম্বা ও 1.8 মিটার চওড়া\f + \fr 36:15 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 30 হাত লম্বা ও 4 হাত চওড়া\ft*\f* হল। \v 16 তাঁরা পর্দাগুলির মধ্যে পাঁচটি একসাথে জুড়ে এক পাটি করলেন এবং অন্য ছটি জুড়ে আর এক পাটি করলেন। \v 17 পরে তাঁরা এক পাটি পর্দায় এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত কিনারা ধরে ধরে পঞ্চাশটি ফাঁস তৈরি করলেন এবং অন্য পাটি পর্দাতেও এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত তা করলেন। \v 18 তাঁবুটি একসাথে অক্ষুণ্ণ অবস্থায় বেঁধে রাখার জন্য তাঁরা ব্রোঞ্জের পঞ্চাশটি আঁকড়া তৈরি করলেন। \v 19 পরে তাঁরা সেই তাঁবু ঢেকে রাখার জন্য মেষের চামড়া লাল রং করে, তা দিয়ে একটি আচ্ছাদন তৈরি করলেন, এবং সেটির উপর অন্য এক টেকসই চামড়া\f + \fr 36:19 \fr*\ft খুব সম্ভবত বৃহদাকার জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর চামড়া\ft*\f* দিয়ে আরও একটি আচ্ছাদন তৈরি করলেন। \p \v 20 তাঁরা সমাগম তাঁবুর জন্য বাবলা কাঠ দিয়ে খাড়া কাঠামো তৈরি করলেন। \v 21 প্রত্যেকটি কাঠামো 4.5 মিটার করে লম্বা ও 68 সেন্টিমিটার করে চওড়া\f + \fr 36:21 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 10 হাত করে লম্বা ও দেড় হাত করে চওড়া\ft*\f* হল, \v 22 এবং কাঠামোর বেরিয়ে থাকা অংশ দুটি পরস্পরের সমান্তরাল করে বসানো হল। এভাবেই তাঁরা সমাগম তাঁবুর সব কাঠামো তৈরি করলেন। \v 23 সমাগম তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য তাঁরা কুড়িটি কাঠামো তৈরি করলেন \v 24 এবং সেগুলির তলায় দেওয়ার জন্য—প্রত্যেকটি কাঠামোর জন্য দুটি করে, ও প্রত্যেকটি বেরিয়ে থাকা অংশের তলায় একটি করে মোট চল্লিশটি রুপোর ভিত তৈরি করলেন। \v 25 অন্য দিকের, সমাগম তাঁবুর উত্তর দিকের জন্য তাঁরা কুড়িটি কাঠামো \v 26 এবং প্রত্যেকটি কাঠামোর তলায় দুটি করে মোট চল্লিশটি রুপোর ভিত তৈরি করলেন। \v 27 শেষ প্রান্তের, অর্থাৎ, সমাগম তাঁবুর পশ্চিম প্রান্তের জন্য তাঁরা ছয়টি কাঠামো তৈরি করলেন, \v 28 এবং শেষ প্রান্তে সমাগম তাঁবুর কোণাগুলির জন্যও দুটি কাঠামো তৈরি হল। \v 29 এই দুই কোনায় কাঠামোগুলি নিচ থেকে একদম চূড়া পর্যন্ত দ্বিগুণ মাপের হল এবং একটিই চক্রে সেগুলি লাগানো হল; দুটি কোনা একইরকম ভাবে তৈরি করা হল। \v 30 অতএব সেখানে আটটি কাঠামো ও প্রত্যেকটি কাঠামোর তলায় দুটি করে—মোট ষোলোটি রুপোর ভিত ছিল। \p \v 31 এছাড়াও তাঁরা বাবলা কাঠের আগল তৈরি করলেন: সমাগম তাঁবুর একদিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি, \v 32 অন্য দিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি, এবং সমাগম তাঁবুর শেষ প্রান্তে, পশ্চিমদিকের কাঠামোগুলির জন্য পাঁচটি। \v 33 তাঁরা এমনভাবে মধ্যবর্তী আগলটি তৈরি করলেন যে সেটি কাঠামোর মাঝখানে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সম্প্রসারিত হল। \v 34 কাঠামোগুলি তাঁরা সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং আগলগুলি ধরে রাখার জন্য সোনার আংটা তৈরি করলেন। আগলগুলিও তাঁরা সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \p \v 35 তাঁরা নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো ও মিহি পাকান মসিনা দিয়ে একটি পর্দা তৈরি করলেন, এবং দক্ষ কারিগর দিয়ে তাতে করূবদের নকশা ফুটিয়ে তুললেন। \v 36 সেটির জন্য তাঁরা বাবলা কাঠের চারটি খুঁটি তৈরি করলেন এবং সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। সেগুলির জন্য তাঁরা সোনার আঁকড়া তৈরি করলেন এবং সেগুলির চারটি রুপোর ভিতও ঢালাই করে দিলেন। \v 37 তাঁবুর প্রবেশদ্বারের জন্য নীল, বেগুনি, টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে একটি পর্দা তৈরি করলেন—যা হল একজন সূচিশিল্পীর হস্তকলা; \v 38 এবং তাঁরা পাঁচটি খুঁটি ও সেগুলির জন্য আঁকড়াও তৈরি করলেন। তাঁরা খুঁটিগুলির চূড়া ও বেড়ীগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং ব্রোঞ্জ দিয়ে সেগুলির পাঁচটি ভিত তৈরি করলেন। \c 37 \s1 নিয়ম-সিন্দুক \p \v 1 বৎসলেল বাবলা কাঠ দিয়ে 1.1 মিটার লম্বা, 68 সেন্টিমিটার চওড়া, ও 68 সেন্টিমিটার উঁচু\f + \fr 37:1 \fr*\ft অর্থাৎ, আড়াই হাত লম্বা ও দেড় হাত করে চওড়া ও উঁচু\ft*\f* সিন্দুকটি তৈরি করলেন। \v 2 ভিতরে ও বাইরে, দুই দিকেই তিনি সেটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং সেটির চারপাশে সোনা দিয়ে একটি ছাঁচ তৈরি করলেন। \v 3 সেটির জন্য তিনি সোনার চারটি কড়া ঢালাই করে দিলেন এবং সেগুলি সেটির চারটি পায়ায় বেঁধে দিলেন—দুটি আংটা একদিকে ও দুটি আংটা অন্যদিকে রাখলেন। \v 4 পরে তিনি বাবলা কাঠ দিয়ে খুঁটি তৈরি করলেন ও সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 5 আর সিন্দুকটি বহন করার জন্য তিনি সেটির দুই পাশে রাখা আংটায় খুঁটিগুলি ঢুকিয়ে দিলেন। \p \v 6 খাঁটি সোনা দিয়ে তিনি 1.1 মিটার লম্বা ও 68 সেন্টিমিটার চওড়া প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন তৈরি করলেন। \v 7 পরে তিনি সেই আচ্ছাদনের দুই কিনারায় পিটানো সোনা দিয়ে দুটি করূব তৈরি করলেন। \v 8 একদিকের কিনারায় তিনি একটি করূব ও অন্যদিকে দ্বিতীয় করূবটি তৈরি করলেন; দুই কিনারায় আবরণ সমেত তিনি সেগুলি অখণ্ডিত রূপ দিয়েই তৈরি করলেন। \v 9 করূবেরা তাদের ডানাগুলি উপরের দিকে ছড়িয়ে দিয়েছিল, ও সেগুলি দিয়ে আবরণটি আড়াল করে রেখেছিল। করূবেরা পরস্পরের দিকে মুখ করে সেই আবরণের দিকে তাকিয়েছিল। \s1 টেবিল \p \v 10 তাঁরা\f + \fr 37:10 \fr*\ft অথবা, তিনি; \+xt 11-29|link-href="EXO 37:11-29"\+xt* পদে সর্বত্র এভাবেই পড়তে হবে\ft*\f* বাবলা কাঠ দিয়ে 90 সেন্টিমিটার লম্বা, 45 সেন্টিমিটার চওড়া ও 68 সেন্টিমিটার উঁচু\f + \fr 37:10 \fr*\ft অর্থাৎ, দু-হাত লম্বা, এক হাত চওড়া ও দেড় হাত উঁচু\ft*\f* টেবিলটি তৈরি করলেন। \v 11 পরে তাঁরা সেটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং সেটির চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি করে দিলেন। \v 12 এছাড়াও তাঁরা সেটির চারপাশে 7.5 সেন্টিমিটার\f + \fr 37:12 \fr*\ft অর্থাৎ, চার আঙুল\ft*\f* চওড়া একটি চক্রবেড় তৈরি করলেন এবং সেই চক্রবেড়ে সোনার এক ছাঁচ বসিয়ে দিলেন। \v 13 টেবিলের জন্য তাঁরা সোনার চারটি আংটা ঢালাই করে দিলেন এবং সেগুলি সেই চার কোনায় বেঁধে দিলেন, যেখানে চারটি পায়াও ছিল। \v 14 টেবিল বহনের উদ্দেশে ব্যবহৃত খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য সেই কড়াগুলি চক্রবেড়ের কাছাকাছি রাখা হল। \v 15 টেবিল বহনকারী খুঁটিগুলি বাবলা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হল এবং সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। \v 16 আর টেবিলের জন্য খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা এইসব জিনিসপত্র—থালা ও বাটি ও গামলা ও পেয়-নৈবেদ্য ঢালার জন্য কলশিগুলি তৈরি করলেন। \s1 দীপাধার \p \v 17 তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে দীপাধার তৈরি করলেন। পিটিয়ে পিটিয়ে তাঁরা সেটির ভিত ও হাতল তৈরি করলেন, এবং সেগুলির সাথে একই টুকরো দিয়ে ফুলের মতো দেখতে পেয়ালা, কুঁড়ি ও মুকুলগুলিও তৈরি করলেন। \v 18 সেই দীপাধারের দুই ধার থেকে একদিকে তিনটি ও অন্যদিকে তিনটি—মোট ছয়টি শাখা বের করা হল। \v 19 কুঁড়ি ও মুকুল সমেত কাগজি বাদামফুলের মতো দেখতে তিনটি পেয়ালা ছিল একটি শাখায়, ও অন্য তিনটি ছিল পরবর্তী শাখায় এবং দীপাধার থেকে বের হয়ে থাকা ছয়টি শাখাই একইরকম দেখতে হল। \v 20 আর দীপাধারে কুঁড়ি ও মুকুল সমেত কাগজি বাদামফুলের মতো দেখতে চারটি পানপাত্র ছিল। \v 21 একটি কুঁড়ি ছিল দীপাধার থেকে বের হয়ে থাকা মোট ছয়টি শাখার মধ্যে প্রথম জোড়া শাখার তলায়, দ্বিতীয় কুড়িটি ছিল দ্বিতীয় জোড়ার তলায় এবং তৃতীয় কুড়িটি ছিল তৃতীয় জোড়ার তলায়। \v 22 সবকটি কুঁড়ি ও শাখা সেই দীপাধারের সঙ্গে অখণ্ড ছিল, যা খাঁটি সোনা পিটিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হল। \p \v 23 খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা সেটির সাতটি প্রদীপ, সেইসাথে সেটির পলতে ছাঁটার যন্ত্র ও বারকোশগুলিও তৈরি করলেন। \v 24 এক তালন্ত\f + \fr 37:24 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা সেই দীপাধার ও সেটির সব আনুষঙ্গিক উপকরণ তৈরি করলেন। \s1 ধূপবেদি \p \v 25 ধূপ জ্বালানোর জন্য তাঁরা বাবলা কাঠ দিয়ে একটি বেদি তৈরি করলেন। এটি ছিল বর্গাকার, 45 সেন্টিমিটার করে লম্বা ও চওড়া এবং 90 সেন্টিমিটার উঁচু\f + \fr 37:25 \fr*\ft অর্থাৎ, এক হাত করে লম্বা ও চওড়া এবং দু-হাত উঁচু\ft*\f*—এর শিংগুলি এর সাথে একই টুকরো দিয়ে গড়া হল। \v 26 তাঁরা সেই বেদির চূড়া ও সবদিক এবং শিংগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং এর চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি করলেন। \v 27 তাঁরা বেদিটি বহন করার কাজে ব্যবহৃত খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য সেই ছাঁচের তলায়—সামনাসামনি দুই দিকের জন্য দুটি দুটি করে—সোনার দুটি আংটা তৈরি করলেন। \v 28 বাবলা কাঠ দিয়ে তাঁরা খুঁটি তৈরি করলেন ও সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \p \v 29 এছাড়াও তাঁরা পবিত্র অভিষেক-তেল ও খাঁটি সুগন্ধি ধূপ তৈরি করলেন—যা হল সুগন্ধি দ্রব্যাদি প্রস্তুতকারকের হস্তকলা। \c 38 \s1 হোমবলির বেদি \p \v 1 বাবলা কাঠ দিয়ে তাঁরা\f + \fr 38:1 \fr*\ft অথবা, তিনি; \+xt 2-9|link-href="EXO 38:2-9"\+xt* পদে সর্বত্র এভাবেই পড়তে হবে\ft*\f* 1.4 মিটার\f + \fr 38:1 \fr*\ft অর্থাৎ, তিন হাত\ft*\f* উঁচু হোমবলির বেদি নির্মাণ করলেন; সেটি বর্গাকার, 2.3 মিটার করে লম্বা ও চওড়া\f + \fr 38:1 \fr*\ft অর্থাৎ, পাঁচ হাত করে লম্বা ও চওড়া\ft*\f* হল। \v 2 চারটি কোণের প্রত্যেকটিতে তাঁরা একটি করে শিং তৈরি করলেন, যেন শিংগুলি বেদির সাথে অখণ্ড হয়, এবং বেদিটি তাঁরা ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 3 সেটির সব পাত্র তাঁরা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি করলেন: হাঁড়ি, বেলচা, জল ছিটানোর গামলা, মাংস তোলার কাঁটাচামচ ও আগুনে সেঁকার চাটু। \v 4 বেদির জন্য তাঁরা একটি জাফরি, ব্রোঞ্জের পরস্পরছেদী একটি জাল তৈরি করলেন, যা বেদির মাঝামাঝিতে, সেটির তাকের নিচে বসানো হল। \v 5 ব্রোঞ্জের জাফরির চার কোণের খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য তাঁরা ব্রোঞ্জের আংটা ঢালাই করে দিলেন। \v 6 বাবলা কাঠ দিয়ে তাঁরা খুঁটিগুলি তৈরি করলেন এবং সেগুলি ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 7 খুঁটিগুলি তাঁরা আংটায় ঢুকিয়ে দিলেন, যেন বেদি বহনের জন্য সেগুলি বেদির পাশেই থাকে। তাঁরা সেগুলি তক্তা দিয়ে, ফাঁপা করে তৈরি করলেন। \s1 ধোলাই-গামলা \p \v 8 যেসব মহিলা সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে সেবাকাজ করত, তাদের ব্যবহৃত আয়নাগুলি\f + \fr 38:8 \fr*\ft ব্রোঞ্জের আয়না\ft*\f* দিয়ে তাঁরা ব্রোঞ্জের গামলা ও সেটির মাচা তৈরি করলেন। \s1 প্রাঙ্গণ \p \v 9 পরে তাঁরা প্রাঙ্গণটি তৈরি করলেন। দক্ষিণ দিকটি ছিল 45 মিটার\f + \fr 38:9 \fr*\ft অর্থাৎ, 100 হাত\ft*\f* লম্বা এবং সেখানে মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি পর্দা, \v 10 এবং কুড়িটি খুঁটি ও ব্রোঞ্জের কুড়িটি ভিত ছিল, ও খুঁটিগুলির উপরে রুপোর আঁকড়া ও বেড়ীও ছিল। \v 11 উত্তর দিকটিও ছিল 45 মিটার লম্বা এবং সেখানে কুড়িটি খুঁটি ও ব্রোঞ্জের কুড়িটি ভিত ছিল, ও খুঁটিগুলির উপরে রুপোর আঁকড়া ও বেড়ীও ছিল। \p \v 12 পশ্চিম দিকটি ছিল 23 মিটার\f + \fr 38:12 \fr*\ft অর্থাৎ, 50 হাত\ft*\f* চওড়া এবং সেখানে পর্দা, এবং দশটি খুঁটি ও দশটি ভিত, এবং খুঁটিগুলির উপরে রুপোর আঁকড়া ও বেড়ীও ছিল। \v 13 সূর্যোদয়ের দিকে, পূর্ব দিকটিও ছিল 23 মিটার চওড়া। \v 14 প্রবেশদ্বারের এক পাশে, তিনটি খুঁটি ও তিনটি ভিত সমেত 6.8 মিটার\f + \fr 38:14 \fr*\ft অর্থাৎ, 15 হাত\ft*\f* লম্বা পর্দা ছিল, \v 15 এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের অন্য দিকেও তিনটি খুঁটি ও তিনটি ভিত সমেত 6.8 মিটার লম্বা পর্দা ছিল। \v 16 প্রাঙ্গণের চারপাশের সব পর্দা মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি করা হল। \v 17 সব খুঁটির ভিতগুলি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি করা হল। খুঁটির উপরের আঁকড়া ও বেড়ীগুলি রুপো দিয়ে তৈরি করা হল, এবং খুঁটির চূড়াগুলি রুপো দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল; অতএব প্রাঙ্গণের সব খুঁটিতে রুপোর বেড়ী ছিল। \p \v 18 প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের পর্দাটি নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি করা হল—যা এক সূচিশিল্পীর হস্তকলা হল। সেটি 9 মিটার\f + \fr 38:18 \fr*\ft অর্থাৎ, 20 হাত\ft*\f* লম্বা এবং, প্রাঙ্গণের পর্দাগুলির মতো, 2.3 মিটার\f + \fr 38:18 \fr*\ft অর্থাৎ, পাঁচ হাত\ft*\f* উঁচু হল, \v 19 এবং সেটির সাথে চারটি খুঁটি ও ব্রোঞ্জের চারটি ভিতও ছিল। সেগুলির আঁকড়া ও বেড়ীগুলি রুপো দিয়ে তৈরি করা হল, এবং চূড়াগুলি রুপো দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। \v 20 সমাগম তাঁবুর ও পার্শ্ববর্তী প্রাঙ্গণের সব তাঁবু-খুটা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি করা হল। \s1 ব্যবহৃত সামগ্রী \p \v 21 মোশির আদেশানুসারে, যাজক হারোণের ছেলে ঈথামরের নেতৃত্বে লেবীয়েরা সমাগম তাঁবুতে, বিধিনিয়মের সেই সমাগম তাঁবুতে ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীর যে সংখ্যা নথিভুক্ত করলেন তা এইরকম। \v 22 (সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেইমতোই যিহূদা গোষ্ঠীভুক্ত হূরের নাতি ও ঊরির ছেলে বৎসলেল সবকিছু তৈরি করলেন; \v 23 তাঁর সাথে ছিলেন দান গোষ্ঠীভুক্ত অহীষামকের ছেলে অহলীয়াব—যিনি এক ক্ষোদক ও নকশাকার, এবং নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতোর ও মিহি মসিনার কাজ জানা এক সূচিশিল্পী ছিলেন) \v 24 পবিত্রস্থানের শেকল অনুসারে, পবিত্রস্থানের সব কাজে ব্যবহৃত দোলনীয়-নৈবেদ্য থেকে সংগৃহীত সোনার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল 29 তালন্ত ও 730 শেকল\f + \fr 38:24 \fr*\ft সোনার ওজন হল এক টনের একটু বেশি বা প্রায় 1 মেট্রিক টন\ft*\f*। \p \v 25 পবিত্রস্থানের শেকল অনুসারে, সমাজভুক্ত যাদের সংখ্যা জনগণনায় স্থান পেয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সংগৃহীত রুপোর পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল 100 তালন্ত\f + \fr 38:25 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় পৌনে 4 টন বা প্রায় 3.4 মেট্রিক টন; 27 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f* ও 1,775 শেকল\f + \fr 38:25 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 20 কিলোগ্রাম; 28 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\ft*\f*— \v 26 কুড়ি বছর ও ততোধিক বয়স্ক মোট 6,03,550 জন লোক, যারা গণিত হওয়ার জন্য পার হয়ে এসেছিল, তাদের মধ্যে প্রত্যেকের জন্য পবিত্রস্থানের শেকল অনুসারে এক বেকা, অর্থাৎ, আধ শেকল\f + \fr 38:26 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 5.7 গ্রাম\ft*\f* করে নেওয়া হল। \v 27 100 তালন্ত রুপো পবিত্রস্থানের ও পর্দার জন্য ভিত ঢালাইয়ের উদ্দেশে 100-টি ভিতের জন্য 100 তালন্ত, প্রত্যেকটি ভিতের জন্য এক এক তালন্ত রুপো ব্যবহৃত হল। \v 28 খুঁটির আঁকড়া তৈরি করার, খুঁটির চূড়া মুড়ে\f + \fr 38:28 \fr*\ft রুপো দিয়ে\ft*\f* দেওয়ার, ও সেগুলির বেড়ী তৈরি করার জন্য তাঁরা 1,775 শেকল\f + \fr 38:28 \fr*\ft রুপো\ft*\f* ব্যবহার করলেন। \p \v 29 দোলনীয়-নৈবেদ্য থেকে সংগৃহীত ব্রোঞ্জের পরিমাণ হল 70 তালন্ত ও 2,400 শেকল\f + \fr 38:29 \fr*\ft ব্রোঞ্জের ওজন হল প্রায় 2.5 টন বা প্রায় 2.4 মেট্রিক টন\ft*\f*। \v 30 সেই ব্রোঞ্জ তারা সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারের ভিত, ব্রোঞ্জের বেদি ও সেটির সাথে যুক্ত ব্রোঞ্জের জাফরি এবং সেটির সব পাত্র, \v 31 পার্শ্ববর্তী প্রাঙ্গণের ও সেটির প্রবেশদ্বারের ভিতগুলি এবং সমাগম তাঁবুর ও পার্শ্ববর্তী প্রাঙ্গণের জন্য তাঁবু-খুটা তৈরি করার কাজে ব্যবহার করলেন। \c 39 \s1 যাজকীয় পোশাক-পরিচ্ছদ \p \v 1 পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করার জন্য তারা নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো দিয়ে হাতে বোনা পোশাক তৈরি করলেন। এছাড়াও, সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই আদেশানুসারে তাঁরা হারোণের জন্য পবিত্র পোশাক তৈরি করে দিলেন। \s1 এফোদ \p \v 2 তাঁরা\f + \fr 39:2 \fr*\ft অথবা, তিনি; 7, 8 ও 22 পদেও এভাবেই পড়তে হবে\ft*\f* সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো, এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে এফোদ তৈরি করলেন। \v 3 তাঁরা সোনা পিটিয়ে পিটিয়ে সরু পাত তৈরি করলেন এবং তা থেকে সুতো কেটে নীল, বেগুনি ও লাল রংয়ের সুতোয় ও মিহি মসিনায় গেঁথে দিলেন—যা দক্ষ হস্তকলা হল। \v 4 তাঁরা এফোদের জন্য কাঁধ-পটি তৈরি করলেন, ও এমনভাবে সেগুলি এফোদের দুটি কোণে জুড়ে দিলেন যেন তা বাঁধা থাকে। \v 5 দক্ষতার সাথে বোনা কোমরবন্ধটিও এটির মতো করে তৈরি হল—এফোদের সাথেই জুড়ে থাকা একই ভাগ হবে এবং সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো, এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে, সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, সেরকমই হল। \p \v 6 সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্যে স্ফটিকমণি বসিয়ে তাঁরা তাতে ইস্রায়েলের ছেলেদের নামগুলি সিলমোহরের মতো খোদাই করে দিলেন। \v 7 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই অনুসারে পরে তাঁরা ইস্রায়েলের ছেলেদের জন্য স্মারক-মণিরূপে সেগুলি এফোদের কাঁধ-পটিগুলিতে বেঁধে দিলেন। \s1 বুকপাটা \p \v 8 তাঁরা বুকপাটাটি তৈরি করলেন—যা দক্ষ এক কারিগরের কাজ হল। এফোদের মতো করেই তাঁরা সেটি তৈরি করলেন: সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো, এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে সেটি তৈরি করা হল। \v 9 সেটি বর্গাকার—23 সেন্টিমিটার\f + \fr 39:9 \fr*\ft অর্থাৎ, এক বিঘত\ft*\f* করে লম্বা ও চওড়া হল—এবং তা দুই ভাঁজ করে রাখা হল। \v 10 পরে তাঁরা সেটির উপর চার সারি মূল্যবান মণিরত্ন বসিয়ে দিলেন। প্রথম সারিতে ছিল চুণী, গোমেদ ও পান্না; \v 11 দ্বিতীয় সারিতে ছিল ফিরোজা, নীলা ও হীরা; \v 12 তৃতীয় সারিতে ছিল নীলকান্তমণি, অকীক ও নীলা; \v 13 চতুর্থ সারিতে ছিল পোখরাজ, স্ফটিকমণি ও সূর্যকান্তমণি\f + \fr 39:13 \fr*\ft এইসব মূল্যবান মণিরত্ন অবিকলভাবে শনাক্ত করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য\ft*\f*। সেগুলি সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা নকশার উপরে বসানো হল। \v 14 ইস্রায়েলের ছেলেদের প্রত্যেকের নামে একটি করে, মোট বারোটি মণিরত্ন নেওয়া হল, এবং প্রত্যেকটি মণি বারোটি গোষ্ঠীর মধ্যে এক এক গোষ্ঠীর নামে সিলমোহরের মতো খোদাই করে দেওয়া হল। \p \v 15 বুকপাটাটির জন্য তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে দড়ির মতো দেখতে পাতা-কাটা শিকল তৈরি করলেন। \v 16 তাঁরা সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা দুটি নকশা ও সোনার দুটি আংটা তৈরি করলেন, এবং সেই আংটা দুটি বুকপাটার দুই কোণে বেঁধে দিলেন। \v 17 তাঁরা সোনার সেই দুটি শিকল বুকপাটার কোণগুলিতে রাখা আংটাগুলিতে বেঁধে দিলেন, \v 18 এবং শিকলের অন্য প্রান্তগুলি নকশা দুটিতে বেঁধে দিয়ে, সেগুলি সামনের দিকে এফোদের কাঁধ-পটিতে জুড়ে দিলেন। \v 19 তাঁরা সোনার দুটি আংটা তৈরি করলেন ও এফোদের পাশের বুকপাটার ভিতরদিকে অন্য দুই কোণে সেগুলি জুড়ে দিলেন। \v 20 পরে তাঁরা সোনার আরও দুটি আংটা তৈরি করলেন এবং এফোদের কোমরবন্ধের ঠিক উপরে, যেখানে জোড়ের মুখের সেলাই পড়েছিল, তার কাছেই এফোদের সামনের দিকে কাঁধ-পটির তলায় সেগুলি জুড়ে দিলেন। \v 21 নীল সুতো দিয়ে তাঁরা এফোদের আংটাগুলির সাথে বুকপাটার আংটাগুলি বেঁধে, সেটি কোমরবন্ধের সাথে জুড়ে দিলেন, যেন বুকপাটাটি নড়ে গিয়ে এফোদ থেকে খুলে না যায়—যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন। \s1 অন্যান্য যাজকীয় পোশাক-পরিচ্ছদ \p \v 22 তাঁরা পুরোপুরি নীল কাপড় দিয়েই তাঁতির কাজের মতো করে এফোদের আলখাল্লাটি তৈরি করলেন, \v 23 এবং সেই আলখাল্লার মাঝখানে মাথা ঢোকানোর মতো একটি ফাঁক, ও সেই ফাঁকের চারপাশে একটি বেড়ী রেখে দিলেন, যেন তা ছিঁড়ে না যায়। \v 24 সেই আলখাল্লার আঁচল ধরে ধরে তাঁরা নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো ও মিহি পাকান মসিনা দিয়ে ডালিম তৈরি করে দিলেন। \v 25 আর তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে ঘণ্টা তৈরি করলেন এবং ডালিমগুলির মাঝে মাঝে আঁচলের চারপাশে সেগুলি জুড়ে দিলেন। \v 26 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন সেই আদেশানুসারে, পরিচর্যা করার সময় যে আলখাল্লাটি পরতে হত, সেটির আঁচলের চারপাশে পর্যায়ক্রমিকভাবে ঘণ্টা ও ডালিমগুলি লাগানো হল। \p \v 27 হারোণ ও তাঁর ছেলেদের জন্য, তাঁরা মিহি মসিনা দিয়ে তাঁতির কাজের মতো করে নিমা\f + \fr 39:27 \fr*\ft \+xt 28:4\+xt* পদের টীকা দেখুন\ft*\f* \v 28 এবং মিহি মসিনা দিয়ে পাগড়ি, মসিনার টুপি ও মিহি পাকান মসিনা দিয়ে অন্তর্বাসগুলি তৈরি করলেন। \v 29 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন সেই আদেশানুসারে, একজন সূচিশিল্পীর হস্তকলার মতো করে মিহি পাকান মসিনা এবং নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো দিয়ে উত্তরীয়টি তৈরি করা হল। \p \v 30 তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে ফলক, সেই পবিত্র প্রতীকটি তৈরি করে, তাতে সিলমোহরে খোদাই করা লিপির মতো খোদাই করে লিখে দিলেন: \pc সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র। \m \v 31 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন সেই আদেশানুসারে, পরে তাঁরা পাগড়ির সাথে সেটি জুড়ে রাখার জন্য তাতে একটি নীল সুতো বেঁধে দিলেন। \s1 মোশি সমাগম তাঁবু পরিদর্শন করলেন \p \v 32 অতএব আবাসের, সমাগম তাঁবুর সব কাজ সম্পূর্ণ হল। ইস্রায়েলীরা সবকিছু সেভাবেই করল, যেমনটি করার আদেশ সদাপ্রভু মোশিকে দিয়েছিলেন। \v 33 পরে তারা সেই সমাগম তাঁবুটি মোশির কাছে নিয়ে এল: \b \li1 সেই তাঁবু ও সেটির সব আসবাবপত্র, সেটির আঁকড়া, কাঠামো, আগল, খুঁটি ও ভিতগুলি; \li1 \v 34 লাল রং করা মেষচর্মের আচ্ছাদন এবং অন্য একটি টেকসই চামড়ার\f + \fr 39:34 \fr*\ft খুব সম্ভবত বৃহদাকার জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর চামড়া\ft*\f* আচ্ছাদন ও আচ্ছাদক-পর্দা; \li1 \v 35 খুঁটি ও প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন সমেত বিধিনিয়মের সিন্দুক; \li1 \v 36 সব উপকরণ সমেত টেবিল এবং দর্শন-রুটি; \li1 \v 37 প্রদীপের সারি ও আনুষঙ্গিক উপকরণ সমেত খাঁটি সোনার দীপাধার, এবং আলোর জন্য জলপাই তেল; \li1 \v 38 সোনার বেদি, অভিষেক-তেল, সুগন্ধি ধূপ, এবং তাঁবুর প্রবেশদ্বারের জন্য পর্দা; \li1 \v 39 ব্রোঞ্জের জাফরি সমেত ব্রোঞ্জের বেদি, সেটির খুঁটি ও সব পাত্র; \li1 গামলা ও সেটির মাচা; \li1 \v 40 খুঁটি ও ভিত সমেত প্রাঙ্গণের পর্দাগুলি, এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের পর্দা; \li1 প্রাঙ্গণের জন্য তাঁবু-খুটা ও দড়াদড়ি; \li1 আবাসের, সেই সমাগম তাঁবুর জন্য সব আসবাবপত্র; \li1 \v 41 এবং হাতে বোনা যে পোশাক পরে পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করতে হত, সেগুলি ও যাজক হারোণের জন্য পবিত্র পোশাক এবং যাজকরূপে সেবা করার সময় তাঁর ছেলেদের যে পোশাকগুলি পরতে হত, সেই পোশাকগুলিও। \b \p \v 42 সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই ইস্রায়েলীরা সব কাজ করল। \v 43 মোশি সেই কাজ পরিদর্শন করলেন এবং দেখলেন যে সদাপ্রভু যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই তারা তা করেছে। তাই মোশি তাদের আর্শীবাদ করলেন। \c 40 \s1 সমাগম তাঁবু প্রতিষ্ঠিত হয় \p \v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন: \v 2 “প্রথম মাসের প্রথম দিনে সমাগম তাঁবু, সেই আবাসটি প্রতিষ্ঠিত করো। \v 3 বিধিনিয়মের সিন্দুকটি সেটির মধ্যে রেখে দাও এবং সিন্দুকটি পর্দা দিয়ে ঢেকে দাও। \v 4 টেবিলটি এনে সেটির উপরে সব জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখো। পরে দীপাধারটি এনে সেটির প্রদীপগুলি জ্বালিয়ে দাও। \v 5 বিধিনিয়মের সিন্দুকটির সামনে সোনার ধূপবেদিটি এনে রাখো এবং সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে পর্দা টাঙিয়ে দাও। \p \v 6 “সমাগম তাঁবুর, সেই আবাসের প্রবেশদ্বারের সামনে হোমবলির বেদিটি এনে রাখো; \v 7 সমাগম তাঁবু ও বেদির মাঝখানে গামলাটি এনে রাখো এবং তাতে জল ভরে দাও। \v 8 সেটির চারপাশের প্রাঙ্গণটি সাজিয়ে রাখো এবং সেই প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারে পর্দা টাঙিয়ে দাও। \p \v 9 “অভিষেক-তেল নাও এবং সমাগম তাঁবু ও সেখানকার সবকিছু অভিষিক্ত করো; সেটি ও সেখানকার সব আসবাবপত্র পবিত্র করো, এবং তা পবিত্র হয়ে যাবে। \v 10 পরে হোমবলির বেদিটি ও সেটির সব পাত্র অভিষিক্ত করো; বেদিটি অভিষিক্ত করো, এবং তা মহাপবিত্র হয়ে যাবে। \v 11 গামলা ও সেটির মাচাটি অভিষিক্ত করো এবং সেগুলি পবিত্রও করো। \p \v 12 “হারোণ ও তার ছেলেদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারের কাছে নিয়ে এসো এবং তাদের জল দিয়ে স্নান করাও। \v 13 পরে হারোণকে পবিত্র পোশাকগুলি পরিয়ে দাও, তাকে অভিষিক্ত করো এবং তাকে পবিত্র করো, যেন সে যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। \v 14 তার ছেলেদের নিয়ে এসো এবং তাদের নিমা পরাও। \v 15 যেভাবে তাদের বাবাকে অভিষিক্ত করলে, ঠিক সেভাবে তাদেরও অভিষিক্ত করো, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। তাদের এই অভিষেক এমন এক যাজকত্বের জন্য হবে, যা তাদের বংশপরম্পরা ধরে চলতে থাকবে।” \v 16 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, ঠিক সেই অনুসারেই তিনি সবকিছু করলেন। \p \v 17 অতএব দ্বিতীয় বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে সমাগম তাঁবুটি প্রতিষ্ঠিত হল। \v 18 মোশি যখন সমাগম তাঁবুটি প্রতিষ্ঠিত করলেন, তখন তিনি ভিতগুলি সঠিক স্থানে বসালেন, কাঠামোগুলি দাঁড় করালেন, আগলগুলি ঢুকিয়ে দিলেন এবং খুঁটিগুলি পুঁতে দিলেন। \v 19 পরে তিনি সমাগম তাঁবুর উপরে তাঁবু বিছিয়ে দিলেন এবং তাঁবুর উপরে আবরণ দিলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 20 তিনি বিধিনিয়মের ফলকগুলি নিলেন এবং সেগুলি সিন্দুকে রেখে দিলেন, সেই সিন্দুকের সাথে খুঁটিগুলি জুড়ে দিলেন ও সেটির উপরে প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদনটি রেখে দিলেন। \v 21 পরে তিনি সেই সিন্দুকটি সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এলেন এবং আড়ালকারী পর্দাটি ঝুলিয়ে দিলেন ও বিধিনিয়মের সেই সিন্দুকটি আড়াল করে রাখলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 22 মোশি সেই টেবিলটি সমাগম তাঁবুতে, পর্দার বাইরে, আবাসের উত্তর দিকে রেখে দিলেন \v 23 এবং সদাপ্রভুর সামনে সেটির উপরে রুটি\f + \fr 40:23 \fr*\ft দর্শন-রুটি\ft*\f* সাজিয়ে রাখলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 24 তিনি সেই দীপাধারটি সমাগম তাঁবুতে, টেবিলের বিপরীতে, আবাসের দক্ষিণ দিকে রেখে দিলেন \v 25 এবং সদাপ্রভুর সামনে প্রদীপগুলি জ্বালিয়ে দিলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 26 মোশি সোনার বেদিটি সমাগম তাঁবুতে পর্দার সামনে রেখে দিলেন \v 27 এবং সেটির উপরে সুগন্ধি ধূপ জ্বালিয়ে দিলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 28 পরে তিনি সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে পর্দা টাঙিয়ে দিলেন। \v 29 তিনি হোমবলির বেদিটি সমাগম তাঁবুর, সেই আবাসের প্রবেশদ্বারের কাছে রেখে দিলেন, এবং সেটির উপরে হোমবলি ও শস্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 30 গামলাটি তিনি সমাগম তাঁবু ও বেদির মাঝখানে রেখে দিলেন ও ধোয়াধুয়ি করার জন্য তাতে জল ভরে রাখলেন, \v 31 এবং মোশি এবং হারোণ ও তাঁর ছেলেরা সেই জল তাঁদের হাত পা ধোয়ার জন্য ব্যবহার করতেন। \v 32 যখনই তাঁরা সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করতেন বা বেদিটির কাছে যেতেন, তাঁরা নিজেদের ধোয়াধুয়ি করতেন, ঠিক যেভাবে সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 33 পরে মোশি সমাগম তাঁবুর ও বেদির চারপাশে প্রাঙ্গণ তৈরি করলেন এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারে পর্দা লাগিয়ে দিলেন। আর এইভাবে মোশি কাজটি সমাপ্ত করলেন। \s1 সদাপ্রভুর মহিমা \p \v 34 তখন মেঘ এসে সমাগম তাঁবুটি ঢেকে দিল, এবং সমাগম তাঁবুটি সদাপ্রভুর মহিমায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠল। \v 35 মোশি সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করতে পারেননি কারণ তা মেঘে ছেয়ে ছিল, এবং সদাপ্রভুর মহিমা সমাগম তাঁবুটি পরিপূর্ণ করে রেখেছিল। \p \v 36 ইস্রায়েলীদের সব যাত্রায়, যখনই মেঘ সমাগম তাঁবুর উপর থেকে সরে যেত, তখনই তারা যাত্রা শুরু করত; \v 37 কিন্তু মেঘ যদি না সরত, তবে যতদিন তা না সরত, ততদিন তারা যাত্রা শুরু করত না। \v 38 অতএব ইস্রায়েলীদের সব যাত্রায় তাদের সকলের দৃষ্টিগোচরে দিনের বেলায় সদাপ্রভুর মেঘ সমাগম তাঁবুর উপরে থাকত, এবং রাতের বেলায় সেই মেঘে আগুন থাকত।