\id DEU - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h দ্বিতীয় বিবরণ \toc1 দ্বিতীয় বিবরণ \toc2 দ্বিতীয় বিবরণ \toc3 দ্বিতী \mt1 দ্বিতীয় বিবরণ \c 1 \s1 হোরেব পাহাড় ছেড়ে যাওয়ার আদেশ \p \v 1 মোশি জর্ডন নদীর পূর্বদিকের মরুএলাকায় অর্থাৎ অরাবাতে সূফের সামনে, পারণ ও তোফল, লাবন, হৎসেরোৎ ও দীষাহবের মাঝখানে ইস্রায়েলীদের কাছে এসব কথা বলেছিলেন। \v 2 (হোরেব থেকে সেয়ীর পাহাড়ের রাস্তা ধরে কাদেশ-বর্ণেয় পর্যন্ত যেতে এগারো দিন লাগে।) \p \v 3 সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সম্বন্ধে মোশিকে যেসব নির্দেশ দিয়েছিলেন তা তিনি চল্লিশতম বছরের একাদশ মাসের প্রথম দিনে তাদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। \v 4 ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে এবং ইদ্রিয়ীতে বাশনের রাজা ওগকে হারিয়ে দেবার পর এই ঘটনা ঘটেছিল। সীহোন রাজত্ব করতেন হিষ্‌বোনে এবং ওগ রাজত্ব করতেন অষ্টারোতে। \p \v 5 জর্ডনের পূর্বদিকে মোয়াব দেশে মোশি এই বিধান ব্যাখ্যা করতে লাগলেন, তিনি বললেন: \b \p \v 6 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হোরেবে আমাদের বলেছিলেন, “তোমরা অনেক দিন পাহাড়ে থেকেছ। \v 7 এখন তোমরা ছাউনি তুলে নিয়ে ইমোরীয়দের পাহাড়ি এলাকা এবং তার নিকটবর্তী জায়গার লোকদের কাছে যাও যারা অরাবাতে, উঁচু পাহাড়ি এলাকায়, পশ্চিম প্রদেশের নিচের পাহাড়ি এলাকায়, নেগেভে এবং সমুদ্রের তীরে, মহানদী ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত কনানীয়দের দেশে ও লেবাননে বসবাস করে। \v 8 দেখো, আমি তোমাদের এই দেশ দিয়েছি। তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোব এবং তাঁদের বংশধরদের কাছে যে দেশ দিতে সদাপ্রভু শপথ করেছিলেন তোমরা সেখানে গিয়ে সেই দেশ অধিকার করো।” \s1 নেতা নিয়োগ \p \v 9 সেই সময় আমি তোমাদের বলেছিলাম, “আমার একার পক্ষে তোমাদের ভার বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। \v 10 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের এত বৃদ্ধি করেছেন যে আজকে তোমরা আকাশের তারার মতো অসংখ্য হয়ে উঠেছ। \v 11 তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সংখ্যা আরও হাজার গুণ বাড়িয়ে দিন এবং তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারেই তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করুন! \v 12 কিন্তু আমি একা কী করে তোমাদের সব সমস্যা ও তোমাদের বোঝা এবং তোমাদের ঝগড়া বহন করব? \v 13 তোমরা তোমাদের প্রত্যেকটি গোষ্ঠী থেকে কয়েকজন করে জ্ঞানবান, বুদ্ধিমান ও সম্মানীয় লোক বেছে নাও, আমি তাদের উপর তোমাদের দেখাশোনার ভার দেব।” \p \v 14 তোমরা আমাকে উত্তর দিয়েছিলে, “আপনি যা বলেছেন তাই করা ভালো।” \p \v 15 সেইজন্য আমি তোমাদের গোষ্ঠীর প্রধানদের, জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোকদের নিয়ে তোমাদের উপরে নিযুক্ত করেছিলাম—সহস্রপতি, শতপতি, পঞ্চাশৎপতি, দশপতি এবং গোষ্ঠীগত কর্মকর্তাদের। \v 16 আর সেই বিচারকদের তখন আমি বলেছিলাম, “তোমরা ঝগড়া-বিবাদের সময়ে দুই পক্ষের কথা শুনে ন্যায়পূর্বক বিচার করবে, সেই ঝগড়া ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্যেই হোক কিংবা ইস্রায়েলী এবং ভিন্ন জাতির লোকদের মধ্যেই হোক। \v 17 বিচারের ব্যাপারে তোমরা কারও পক্ষ নেবে না এবং বড়ো-ছোটো সবার কথাই শুনবে। কোনো মানুষকে ভয় পাবে না, কেননা বিচার ঈশ্বরের। যদি কোনো বিচার তোমাদের কাছে কঠিন বলে মনে হয় তবে তোমরা তা আমার কাছে নিয়ে আসবে, আমি সেই বিচার করব।” \v 18 আর তোমাদের যা করতে হবে তাও আমি তখন তোমাদের বলে দিয়েছিলাম। \s1 গুপ্তচর পাঠানো হল \p \v 19 এরপর, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে, আমরা হোরেব ছেড়ে ইমোরীয়দের পাহাড়ি এলাকার দিকে যাওয়ার পথে তোমরা সেই বড়ো ও ভয়ংকর মরুএলাকা দেখেছিলে, এবং আমরা কাদেশ-বর্ণেয় পৌঁছালাম। \v 20 তারপর আমি তোমাদের বলেছিলাম, “তোমরা ইমোরীয়দের পাহাড়ি এলাকায় এসে গিয়েছ, যেটি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের দিচ্ছেন। \v 21 দেখো, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দেশ তোমাদের দিয়েছেন। উঠে গিয়ে সেটি অধিকার করো যেমন সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের বলেছিলেন। ভয় পেয়ো না; হতাশ হোয়ো না।” \p \v 22 তখন তোমরা সবাই এসে আমাকে বলেছিলে, “কয়েকজন লোককে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হোক যেন তারা দেশটি দেখে এসে আমাদের বলতে পারে কোন পথে আমাদের সেখানে যেতে হবে এবং কোন কোন নগর আমাদের সামনে পড়বে।” \p \v 23 তোমাদের কথাটি আমার ভালো মনে হয়েছিল; সেইজন্য আমি তোমাদের মধ্যে বারোজনকে মনোনীত করেছিলাম, একজন করে প্রত্যেক গোষ্ঠীর। \v 24 তারা যাত্রা করে পাহাড়ি এলাকায় উঠে গেল এবং ইষ্কোল উপত্যকায় গিয়ে ভালো করে সবকিছু দেখে আসল। \v 25 তারা সেই দেশের কিছু ফল সঙ্গে করে নিয়ে এসে বলেছিল, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশটি আমাদের দিচ্ছেন তা সত্যিই চমৎকার।” \s1 সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ \p \v 26 কিন্তু তোমরা সেই দেশে যেতে চাইলে না; তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে। \v 27 তোমাদের তাঁবুতে তোমরা দোষারোপ করে বলেছিল, “সদাপ্রভু আমাদের ঘৃণা করেন; সেইজন্য তিনি ইমোরীয়দের হাতে তুলে দিয়ে ধ্বংস করার জন্য আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন। \v 28 আমরা কোথায় যাব? আমাদের ভাইয়েরা আমাদের মন ভেঙে দিয়েছে। তারা বলেছে, ‘সেখানকার লোকেরা আমাদের থেকে শক্তিশালী এবং লম্বা; নগরগুলি খুব বড়ো ও তাদের প্রাচীর গগনচুম্বী। আমরা সেখানে অনাকীয়দেরও দেখেছি।’ ” \p \v 29 তখন আমি তোমাদের বলেছিলাম, “আতঙ্কগ্রস্ত হোয়ো না; তাদের ভয় পেয়ো না। \v 30 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের আগে যাচ্ছেন, তিনি তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন, যেমন তিনি তোমাদের হয়ে মিশরে করেছিলেন, তোমাদের চোখের সামনে, \v 31 মরুএলাকায়। সেখানে তোমরা দেখেছিলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কেমন করে তোমাদের বহন করেছিলেন, যেমন করে একজন বাবা তার ছেলেকে বহন করে, তেমনি করে তিনি নিয়ে এসেছেন যতক্ষণ না তোমরা এই জায়গায় পৌঁছেছ।” \p \v 32 তবুও তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে বিশ্বাস করোনি, \v 33 যিনি যাত্রাপথে রাতে আগুনের মধ্যে ও দিনে মেঘের মধ্যে তোমাদের আগে আগে গিয়েছিলেন, তোমাদের তাঁবু ফেলার জায়গার খোঁজে এবং পথ দেখাবার জন্য যেখান দিয়ে তোমাদের যেতে হবে। \p \v 34 তোমরা যা বলেছ তা সদাপ্রভু যখন শুনলেন, তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং এই শপথ করলেন \v 35 “এই দুষ্ট বংশের কোনো লোক সেই চমৎকার দেশ দেখতে পাবে না যা আমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, \v 36 কেবল যিফূন্নির ছেলে কালেব ছাড়া। সে তা দেখবে, এবং আমি তাকে ও তার বংশধরদের সেই জায়গা দেব যেখানে সে পা রেখেছিল, কেননা সে পুরোপুরিভাবে সদাপ্রভুর কথা অনুসারে চলেছে।” \p \v 37 তোমাদের দরুন সদাপ্রভু আমার উপরেও ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়ে বলেছিলেন, “তোমারও, ওই দেশে ঢোকা হবে না। \v 38 কিন্তু তোমার সাহায্যকারী নূনের ছেলে যিহোশূয় ঢুকবে। তাকে উৎসাহ দাও, কারণ সেই ইস্রায়েলকে দেশটি অধিকার করতে নেতৃত্ব দেবে। \v 39 যেসব ছেলেমেয়েকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে বলে তোমরা বলেছিলে তোমাদের সেইসব ছেলেমেয়ে, যাদের ভালোমন্দের জ্ঞান হয়নি তারাই সেই দেশে ঢুকবে। আমি দেশটি তাদেরই দেব এবং তারা তা অধিকার করবে। \v 40 কিন্তু তোমরা ফেরো এবং সূফসাগরের পথ দিয়ে মরুএলাকার দিকে যাও।” \p \v 41 তখন তোমরা উত্তর দিয়েছিলে, “আমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি। আমরা উঠে যাব এবং যুদ্ধ করব, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের যেমন আদেশ করেছেন।” অতএব তোমরা সবাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়েছিলে, ভেবেছিলে পাহাড়ি এলাকায় উঠে যাওয়া খুব সহজ। \p \v 42 কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তাদের বলো, ‘উপরে উঠে যুদ্ধ কোরো না, কেননা আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব না। তোমরা শত্রুদের দ্বারা পরাজিত হবে।’ ” \p \v 43 আমি তোমাদের সেই কথা জানালাম, কিন্তু তোমরা শুনলে না। তোমরা সদাপ্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে এবং অহংকারের সঙ্গে পর্বতে অবস্থিত নগরে উঠে গেলে। \v 44 সেই পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী ইমোরীয়েরা তোমাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে এসে এক ঝাঁক মৌমাছির মতো তোমাদের তাড়া করে সেয়ীর থেকে হর্মা পর্যন্ত মারতে মারতে নিয়ে গিয়েছিল। \v 45 তোমরা ফিরে এসে সদাপ্রভুর কাছে কেঁদেছিলে, কিন্তু তিনি তোমাদের কান্নায় কোনও মনোযোগ দিলেন না এবং তিনি কান বন্ধ করেছিলেন। \v 46 আর তোমরা অনেক দিন কাদেশে থাকলে—সেখানেই তোমাদের সময় কাটল। \c 2 \s1 মরুভূমির মধ্যে বিচরণ \p \v 1 পরে সদাপ্রভু যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেইভাবে আমরা পিছন ফিরে সূফসাগরের পথ ধরে মরুএলাকার দিকে রওনা হয়েছিলাম। সেয়ীরের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে যেতে আমাদের অনেক দিন কেটে গেল। \p \v 2 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, \v 3 “তোমরা পাহাড়ি এলাকায় অনেক দিন ধরে ঘুরছ; এখন উত্তর দিকে ফের। \v 4 লোকদের এই আদেশ করো: ‘সেয়ীরে বসবাসকারী এষৌর বংশধর তোমাদের আত্মীয়দের রাজ্যের মধ্যে দিয়ে এখন তোমাদের যেতে হবে। তোমাদের দেখে তারা ভয় পাবে কিন্তু তোমরা খুব সাবধানে থেকো। \v 5 তাদের যুদ্ধের উসকানি দেবে না, কারণ তাদের দেশের কোনও অংশই আমি তোমাদের দেব না, এমনকি পা রাখার জায়গা পর্যন্ত দেব না। আমি সেয়ীরের এই পাহাড়ি এলাকা এষৌকে তার নিজের দেশ হিসেবে দিয়েছি। \v 6 তাদের কাছ থেকে খাবার ও জল তোমাদের রুপো\f + \fr 2:6 \fr*\ft মূল ভাষায় রুপো\ft*\f* দিয়ে কিনে খেতে হবে।’ ” \p \v 7 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সবকাজেই তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন। এই বিশাল মরুএলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তোমাদের দেখাশোনা করেছেন। এই চল্লিশ বছর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গেই থেকেছেন, এবং তোমাদের কোনও অভাব হয়নি। \p \v 8 অতএব আমরা সেয়ীরে বসবাসকারী এষৌর বংশধর আমাদের আত্মীয়দের রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেলাম। আমরা অরাবার যে পথটি এলৎ ও ইৎসিয়োন-গেবর থেকে বের হয়ে এসেছে সেই পথ ছেড়ে মোয়াবের মরুএলাকার পথে গেলাম। \p \v 9 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “মোয়াবীয়দের তোমরা বিরক্ত কোরো না কিংবা তাদের যুদ্ধের উসকানি দিয়ো না, কারণ তাদের দেশের কোনও অংশই আমি তোমাদের দেব না। আমি সম্পত্তি হিসেবে আর্ অঞ্চলটি লোটের বংশধরদের দিয়েছি।” \p \v 10 (এমীয়েরা—আগে সেখানে থাকত তারা শক্তিশালী ও অসংখ্য ছিল, এবং অনাকীয়দের মতো লম্বা। \v 11 অনাকীয়দের মতো এমীয়দেরও রফায়ীয় বলা হত, কিন্তু মোয়াবীয়রা তাদের বলত এমীয়। \v 12 হোরীয়েরাও সেয়ীরে বসবাস করত, কিন্তু এষৌর বংশধরেরা তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। তারা হোরীয়দের তাদের সামনেই ধ্বংস করে, তাদের অধিকারে থাকা জায়গায় বসবাস করতে লাগল, যেমন ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দেওয়া জায়গায় করেছিল।) \p \v 13 আর সদাপ্রভু বললেন, “এখন তোমরা উঠে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে যাও।” সুতরাং আমরা উপত্যকা পার হলাম। \p \v 14 কাদেশ-বর্ণেয় ছেড়ে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে আসতে আমাদের আটত্রিশ বছর কেটে গিয়েছিল। তার মধ্যে, তাঁবুতে যেসব সৈন্য ছিল তারা সবাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, যেমন সদাপ্রভু তাদের কাছে শপথ করেছিলেন। \v 15 তাঁবু থেকে তাদের সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত সদাপ্রভুর হাত তাদের বিরুদ্ধে ছিল। \p \v 16 লোকদের মধ্য থেকে সেই সমস্ত সৈন্য মারা যাবার পর, \v 17 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, \v 18 “আজ তোমরা মোয়াবের এলাকা আর্ পার হয়ে যাবে। \v 19 তোমরা যখন অম্মোনীয়দের মধ্যে আসবে, তোমরা তাদের বিরক্ত কোরো না কিংবা তাদের যুদ্ধের উসকানি দিয়ো না, কারণ মোয়াবীয়দের দেশের কোনও অংশই তোমাদের দেব না। লোটের বংশধরদের আমি সেটি সম্পত্তি হিসেবে দিয়ে রেখেছি।” \p \v 20 (সেই দেশও রফায়ীয়দের দেশ বলে মনে করা হত, কারণ সেখানে তারা আগে বসবাস করত; কিন্তু অম্মোনীয়েরা তাদের সম্‌সুম্মীয় জাতির লোক বলত। \v 21 তারা শক্তিশালী ও অসংখ্য ছিল, এবং অনাকীয়দের মতো লম্বা। সদাপ্রভু তাদের অম্মোনীয়দের আগে ধ্বংস করেছিলেন, যারা তাদের তাড়িয়ে দিয়ে সেই জায়গায় বসবাস করছিল। \v 22 সদাপ্রভু এষৌয়ের বংশধরদের প্রতিও সেইরকম করেছিলেন, যারা সেয়ীরে বসবাস করত, যখন তিনি হোরীয়দের তাদের আগে ধ্বংস করেছিলেন। \v 23 আর অব্বীয়েরা যারা গাজা পর্যন্ত সমস্ত গ্রামে বসবাস করত, তাদের কপ্তোর থেকে আসা কপ্তোরীয়েরা ধ্বংস করে তাদের জায়গায় বসবাস করছিল।) \s1 হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের পরাজয় \p \v 24 “তোমরা বের হয়ে পড়ো এবং অর্ণোন উপত্যকা পার হও, আমি হিষ্‌বোনের রাজা ইমোরীয় সীহোনকে ও তার দেশ তোমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। তোমরা দেশটি দখল করতে শুরু করে তাকে যুদ্ধে নামতে বাধ্য করো। \v 25 আজ থেকে আমি পৃথিবীর সমস্ত জাতির মধ্যে তোমাদের সম্বন্ধে একটি ভয়ের ভাব ও কাঁপুনি ধরাতে শুরু করব। তারা তোমাদের কথা শুনলে কাঁপতে থাকবে এবং তোমাদের দরুন তাদের মনে ভীষণ দুশ্চিন্তা জাগবে।” \p \v 26 এরপর আমি কদেমোৎ মরুএলাকা থেকে হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের কাছে শান্তি বজায় রাখার জন্য দূত পাঠালাম এই বলে, \v 27 আপনাদের দেশের মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা প্রধান রাস্তাতেই থাকব; আমরা ডানদিকে কিংবা বাদিকে যাব না। \v 28 আপনাদের খাবার ও জল রুপোর মূল্য দিয়ে আমাদের কাছে বিক্রি করুন। আমাদের কেবল পায়ে হেঁটে পার হতে দিন, \v 29 যেমন সেয়ীরে বসবাসকারী এষৌর বংশধরেরা এবং আর্-এ মোয়াবীয়েরা আমাদের প্রতি করেছিল—যতক্ষণ না আমরা জর্ডন পার হয়ে সেই দেশে যাই যে দেশ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের দিচ্ছেন। \v 30 হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন কিন্তু আমাদের যেতে দিতে রাজি হলেন না। কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর মন কঠিন ও তাঁর হৃদয় শক্ত করেছিলেন যেন তোমাদের হাতে তাঁকে সমর্পণ করেন, যেমন তিনি এখন করেছেন। \p \v 31 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “দেখো, আমি সীহোন ও তাঁর দেশ তোমার হাতে তুলে দিতে আরম্ভ করেছি। এখন তাঁর দেশ জয় করে অধিকার করতে শুরু করো।” \p \v 32 সীহোন যখন তাঁর সমস্ত সৈন্য নিয়ে আমাদের সঙ্গে যহসে যুদ্ধ করার জন্য বের হয়ে এলেন, \v 33 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁকে আমাদের হাতে সমর্পণ করলেন এবং আমরা তাঁকে, তাঁর ছেলেদের এবং তাঁর সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে আঘাত করলাম। \v 34 সেই সময় আমরা তাদের সমস্ত নগর অধিকার করে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করলাম—পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের। আমরা কাউকে জীবিত রাখিনি। \v 35 কিন্তু পশুপাল এবং নগর থেকে লুট করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে এলাম। \v 36 অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অরোয়ের নগর এবং সেই উপত্যকার মধ্যবর্তী নগর থেকে গিলিয়দ পর্যন্ত, কোনও নগরই আমাদের কাছে শক্তিশালী ছিল না। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সবগুলিই আমাদের দিলেন। \v 37 কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে, আমরা অম্মোনীয়দের কোনো জায়গা, এমনকি যব্বোকের সীমানার জায়গা ও পাহাড়ের পাশের নগরগুলি বলপূর্বক দখল করিনি। \c 3 \s1 বাশনের রাজা ওগের পরাজয় \p \v 1 পরে আমরা ঘুরে বাশনের পথে উঠে গেলাম। আর বাশনের রাজা ওগ তাঁর সৈন্যদল নিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ইদ্রিয়ীতে এলেন। \v 2 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তাকে ভয় পেয়ো না। আমি তাকে, তার সমস্ত সেনাবাহিনী ও তার দেশ তোমার হাতে সমর্পণ করেছি। তার প্রতি সেরকমই কোরো, যেমন তুমি ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের প্রতি করেছিলে, যে হিষ্‌বোনে রাজত্ব করত।” \p \v 3 এইভাবে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বাশনের রাজা ওগ ও তার সমগ্র সেনাবাহিনী আমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা তাদের আঘাত করলাম, কাউকে বাঁচিয়ে রাখিনি। \v 4 সেই সময় আমরা তাঁর সবগুলি নগরই দখল করলাম। তাঁর ষাটটি নগরের সবগুলোই আমরা দখল করে নিয়েছিলাম, এমন একটিও ছিল না যা আমরা নিইনি—অর্গোবের সমস্ত এলাকা, বাশনে ওগের রাজ্য। \v 5 সেইসব নগর উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল আর তাতে দ্বার ও হুড়কা ছিল, আর সেখানে অনেক গ্রামও ছিল যেগুলি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল না। \v 6 আমরা সেগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম, যেমন আমরা হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের প্রতি করেছিলাম, প্রত্যেক নগর ধ্বংস করে দিয়েছিলাম—পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের। \v 7 কিন্তু পশুপাল এবং নগর থেকে লুট করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে আসলাম। \p \v 8 সেই সময় আমরা অর্ণোন উপত্যকা থেকে হর্মোণ পর্বত পর্যন্ত জর্ডন নদীর পূর্বদিকের এলাকাটি এই দুজন ইমোরীয় রাজার হাত থেকে নিয়ে নিয়েছিলাম। \v 9 (সীদোনীয়েরা হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে আর ইমোরীয়েরা বলে সনীর) \v 10 আমরা মালভূমির সমস্ত নগর, গিলিয়দের সব এলাকা এবং বাশনের রাজা ওগের রাজ্যের সল্‌খা ও ইদ্রিয়ী প্রর্যন্ত গোটা বাশন দেশটি দখল করে নিয়েছিলাম। \v 11 (রফায়ীয়দের বাকি লোকদের মধ্যে কেবল বাশনের রাজা ওগই বেঁচেছিলেন। তাঁর লোহার তৈরি শোবার খাটটি ছিল লম্বায় তেরো ফুটের বেশি এবং চওড়ায় ছয় ফুট\f + \fr 3:11 \fr*\ft মূল ভাষায় 9 হাত লম্বা এবং 4 হাত চওড়া\ft*\f*। সেটি এখনও অম্মোনীয়দের রব্বাতে আছে।) \s1 দেশ ভাগ \p \v 12 সেই সময় আমরা যে দেশ অধিকার করেছিলাম, আমি অর্ণোন উপত্যকার কাছে অরোয়ের উত্তর দিকের এলাকা পর্যন্ত এবং গিলিয়দের পাহাড়ি এলাকার অর্ধেক ও সেখানকার সব নগর রূবেণীয়দের ও গাদীয়দের দিলাম। \v 13 গিলিয়দের বাকি অংশ এবং রাজা ওগের গোটা বাশন রাজ্যটি আমি মনঃশির অর্ধেক বংশকে দিলাম। (বাশনের মধ্যবর্তী সমস্ত অর্গোব এলাকাটিকে রফায়ীয়দের দেশ বলা হত। \v 14 যায়ীর, মনঃশির এক বংশধর, গশূরীয়দের ও মাখাথীয়দের সীমানা পর্যন্ত অর্গোবের গোটা এলাকাটি দখল করে নিজের নাম অনুসারে তার নাম রেখেছিল, আজ পর্যন্ত বাশনকে হব্বোৎ-যায়ীর বলা হয়ে থাকে) \v 15 আর আমি মাখীরকে গিলিয়দ এলাকাটি দিলাম। \v 16 কিন্তু গিলিয়দ থেকে অর্ণোন উপত্যকার (মাঝখানের সীমারেখাটি পর্যন্ত) সমস্ত এলাকা এবং সেখান থেকে অম্মোনীয়দের সীমানা যব্বোক নদী পর্যন্ত আমি রূবেণীয়দের ও গাদীয়দের দিলাম। \v 17 পশ্চিমদিকে তাদের সীমানা ছিল অরাবার জর্ডন নদী, কিন্নেরৎ থেকে অরাবা (লবণ-সমুদ্র), পিস্‌গা পাহাড়শ্রেণীর ঢালু অংশের নিচে। \p \v 18 সেই সময় আমি তোমাদের আদেশ করেছিলাম, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই দেশটি তোমাদের দখল করবার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যাদের গায়ে জোর আছে সেইসব লোককে যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়ে ইস্রায়েলী ভাইদের আগে আগে নদী পার হয়ে যেতে হবে। \v 19 তবে তোমাদের যেসব নগর আমি দিয়েছি সেখানে তোমাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর পশুপাল রেখে যেতে পারবে (আমি জানি তোমাদের অনেক পশু আছে), \v 20 যতদিন পর্যন্ত সদাপ্রভু তোমাদের মতো করে তোমাদের ভাইদেরও বিশ্রামের সুযোগ না দেন এবং জর্ডনের ওপাড়ে যে দেশটি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের দিতে যাচ্ছেন তা তারা অধিকার না করে। তারপর, যে জায়গা তোমাদের অধিকারের জন্য দেওয়া হয়েছে সেখানে প্রত্যেকে ফিরে আসবে।” \s1 মোশিকে জর্ডন পার হতে নিষেধ করা হল \p \v 21 সেই সময় আমি যিহোশূয়কে আদেশ করলাম “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই দুই রাজার কী অবস্থা করেছেন তা তো তুমি নিজের চোখেই দেখেছ। তোমরা যেখানে যাচ্ছ সেখানকার সব রাজ্যের অবস্থাও সদাপ্রভু সেইরকমই করবেন। \v 22 তাদের ভয় কোরো না; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন।” \p \v 23 সেই সময় আমি সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলাম, \v 24 “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমি যে কত মহান ও শক্তিশালী তা তোমার দাসকে দেখাতে আরম্ভ করেছ। স্বর্গে বা পৃথিবীতে এমন ঈশ্বর কে আছে যে, তুমি যেসব কাজ করেছ তা করতে পারে এবং তুমি যে শক্তি দেখিয়েছ তা দেখাতে পারে? \v 25 আমাকে ওপাড়ে গিয়ে জর্ডনের পারে সেই মনোরম জায়গাটি দেখতে দাও—সেই চমৎকার পাহাড়ি দেশ এবং লেবানন।” \p \v 26 কিন্তু তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার উপরে বিরক্ত হওয়াতে আমার কথা শুনলেন না। সদাপ্রভু বললেন, “যথেষ্ট হয়েছে, এই বিষয়ে আমাকে আর বোলো না। \v 27 তুমি পিস্‌গার চূড়ায় উঠে পশ্চিম ও উত্তর এবং দক্ষিণ ও পূর্বদিকে দেখো। তুমি নিজের চোখে সেই দেশ দেখো, কেননা তুমি জর্ডন পার হতে পারবে না। \v 28 কিন্তু যিহোশূয়কে দায়িত্ব দাও, এবং তাকে উৎসাহ ও সাহস জোগাও, কারণ সে এই লোকদের আগে আগে গিয়ে পার হবে এবং যে দেশটি তুমি দেখতে যাচ্ছ তা তাদের দিয়ে অধিকার করাবে।” \v 29 সেইজন্য আমরা বেথ-পিয়োরের কাছের উপত্যকায় থেকে গেলাম। \c 4 \s1 বাধ্যতা সম্বন্ধে আদেশ \p \v 1 এখন, হে ইস্রায়েল, আমি তোমাদের যেসব অনুশাসন ও বিধান শিক্ষা দিতে যাচ্ছি তা শোনো। সেগুলি মেনে চলো যেন যে দেশ, সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানে প্রবেশ করে তা অধিকার করতে পারো। \v 2 আমি তোমাদের যে আদেশ দিচ্ছি তার সঙ্গে কিছু যোগ কোরো না এবং তা থেকে কিছু বাদ দিয়ো না, কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যেসব আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি তা তোমরা মেনে চলবে। \p \v 3 সদাপ্রভু বায়াল-পিয়োরে যা করেছিলেন তা তো তোমরা নিজের চোখেই দেখেছ। তোমাদের মধ্যে যারা পিয়োরের বায়াল-দেবতার পূজা করেছিল তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের প্রত্যেককে তোমাদের মধ্য থেকে ধ্বংস করেছিলেন, \v 4 কিন্তু তোমরা যারা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরেছিলে, তোমরা সবাই এখনও বেঁচে আছ। \p \v 5 দেখো, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ মেনে আমি তোমাদের অনুশাসন ও বিধান শিক্ষা দিয়েছি, যেন যে দেশ তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে তা পালন করতে পারো। \v 6 সেগুলি সাবধানতার সঙ্গে পালন কোরো, কারণ তাতে অন্যান্য জাতির মধ্যে তোমাদের জ্ঞান ও বুদ্ধি প্রকাশ পাবে, যারা এসব অনুশাসনের বিষয় শুনে বলবে, “সত্যিই এই মহান জাতি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।” \v 7 এমন আর কোনও মহান জাতি কি আছে যাদের ঈশ্বর তাদের কাছে থাকে, যেমন করে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডাকলে তাঁকে কাছে পাওয়া যায়? \v 8 আর আমি আজ তোমাদের সামনে যে বিধান দিচ্ছি, তার মতো ন্যায়নিষ্ঠ অনুশাসন ও বিধান কোনও বড়ো জাতির আছে? \p \v 9 কেবল সাবধান থেকো, এবং নিজের উপর দৃষ্টি রেখো যেন তোমরা যা দেখেছ তা ভুলে না যাও বা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তোমাদের অন্তর থেকে তা মুছে না যায়। এসব তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের এবং পরে তাদের ছেলেমেয়েদের শেখাবে। \v 10 তোমরা সেদিনের কথা মনে করো যেদিন তোমরা হোরেবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হয়েছিলে, যখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, “আমার কথা শোনার জন্য তুমি লোকদের আমার সামনে জড়ো করো যেন তারা এই পৃথিবীতে যতদিন বাঁচবে ততদিন আমাকেই ভক্তি করে চলতে শিখতে পারে এবং যেন তাদের ছেলেমেয়েদেরও শিক্ষা দিতে পারে।” \v 11 তোমরা কাছে এসে পাহাড়ের নিচে দাঁড়িয়েছিলে, তখন পাহাড়টি মেঘ ও ঘন অন্ধকারে ঘেরা ছিল আর তার মধ্যে সেটি স্বর্গ পর্যন্ত জ্বলছিল। \v 12 সেই সময় আগুনের মধ্য থেকে সদাপ্রভু তোমাদের কাছে কথা বলেছিলেন। তোমরা তাঁর কথা শুনেছিলে কিন্তু কোনও চেহারা দেখতে পাওনি; সেখানে কেবল আওয়াজ ছিল। \v 13 তিনি তোমাদের কাছে তাঁর বিধান, দশাজ্ঞা ঘোষণা করেছিলেন, যেগুলি তিনি তোমাদের পালন করতে বলেছিলেন এবং পরে দুটি পাথরের ফলকে লিখে দিয়েছিলেন। \v 14 তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে গিয়ে তোমাদের যে অনুশাসন ও বিধান পালন করে চলতে হবে তা তোমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য সদাপ্রভু আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। \s1 প্রতিমাপূজা নিষিদ্ধ হয় \p \v 15 যেদিন সদাপ্রভু হোরেবে আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সেইদিন তোমরা তাঁর কোনও চেহারা দেখোনি। সুতরাং তোমরা নিজেদের উপর দৃষ্টি রেখো, \v 16 যেন তোমরা কুপথে গিয়ে নিজেদের জন্য কোনো আকারের প্রতিমা তৈরি না করো, তা পুরুষের বা স্ত্রীলোকেরই হোক, \v 17 কিংবা মাটির উপরের কোনো জন্তুর বা আকাশে উড়ে বেড়ানোর কোনো পাখিরই হোক, \v 18 কিংবা বুকে হাঁটা কোনো প্রাণীর বা জলের নিচের কোনো মাছেরই হোক। \v 19 আর যখন তোমরা আকাশের দিকে তাকাবে এবং সূর্য, চাঁদ ও তারাদের—আকাশের সমস্ত বিন্যাস—দেখে ভ্রান্ত হয়ে তাদের প্রতি নত হোয়ো না এবং আরাধনা কোরো না কারণ এগুলি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আকাশের নিচে সমস্ত জাতিকে দিয়েছেন। \v 20 কিন্তু তোমার জন্য, সদাপ্রভু তোমাদের গ্রহণ করে লোহা গলানো হাপর থেকে বের করেছেন, মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন যেন তোমরা তাঁরই উত্তরাধিকারের লোক হতে পারো, যেমন তোমরা এখন আছ। \p \v 21 তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার উপর ক্রুদ্ধ হলেন, এবং তিনি গম্ভীরভাবে শপথ করলেন যে আমি জর্ডন পার হতে পারব না ও সেই দেশে ঢুকব না যা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের উত্তরাধিকারসূত্রে দেবেন। \v 22 আমি এই দেশেই মারা যাব; আমি জর্ডন পার হতে পারব না; কিন্তু তোমরা পার হয়ে সেই চমৎকার দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ। \v 23 সাবধান তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য যে বিধান স্থাপন করেছেন তা তোমরা ভুলে যেয়ো না; নিজেদের জন্য কোনো কিছুর মতো কোনও মূর্তি তৈরি কোরো না যা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বারণ করেছেন। \v 24 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হলেন সবকিছু পুড়িয়ে দেওয়া আগুনের মতো, যিনি নিজের গৌরব রক্ষা করতে উদ্যোগী ঈশ্বর। \p \v 25 তোমরা এবং তোমাদের সন্তানদের এবং তাদের সন্তানদের সেই দেশে অনেক দিন বসবাস করার পর—যদি তোমরা তখন কুপথে গিয়ে কোনও মূর্তি তৈরি করো, আর সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বরের চোখে যা খারাপ তাই করে তাঁকে অসন্তুষ্ট করো, \v 26 আমি আজকের এই দিনে স্বর্গ ও পৃথিবীকে তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী রেখে বলছি, তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে তোমরা অল্প দিনেই শেষ হয়ে যাবে। তোমরা সেখানে বেশি দিন বসবাস করতে পারবে না কিন্তু নিশ্চয়ই ধ্বংস হবে। \v 27 সদাপ্রভু বিভিন্ন জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন এবং যাদের মধ্যে তিনি তোমাদের তাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের খুব কম লোকই তাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে। \v 28 সেখানে তোমরা মানুষের তৈরি কাঠের ও পাথরের দেবতাদের উপাসনা করবে, যারা না পারে দেখতে, না পারে শুনতে, না পারে খেতে, না পারে গন্ধ শুঁকতে। \v 29 কিন্তু যদি তোমরা সেখান থেকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে মন ফিরাও, তোমরা তাঁকে পাবে যদি তোমরা তোমাদের সমস্ত মন ও সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর অন্বেষণ করো। \v 30 যখন তোমরা সংকটে পড়বে এবং এসব তোমাদের প্রতি ঘটবে তখন ভবিষ্যতের সেই দিনগুলিতে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসবে এবং তাঁর বাধ্য হবে। \v 31 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এক করুণাময় ঈশ্বর; তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না বা ধ্বংস করবেন না, কিংবা তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য শপথ করে যে নিয়ম স্থাপন করেছেন তা ভুলে যাবেন না। \s1 সদাপ্রভুই ঈশ্বর \p \v 32 বিগত দিনের কথা জিজ্ঞাসা করো, তোমাদের সময়ের অনেক আগে, যেদিন থেকে ঈশ্বর পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন; আকাশমণ্ডলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করো। যা ঘটেছে তার থেকে মহান কি আর কিছু ঘটেছে বা এর মতো মহান কি কিছু শোনা গেছে? \v 33 কোনও মানুষ কি আগুনের মধ্য থেকে ঈশ্বরের রব শুনেছে, যেমন তোমরা শুনেছ এবং বেঁচে আছ? \v 34 কিংবা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিশরে তোমাদের সামনে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন, আর কোনো ঈশ্বর কি কখনও সেইরকম পরীক্ষা, আশ্চর্য চিহ্ন ও কাজ, যুদ্ধ, শক্তিশালী হাত ও বিস্তারিত হাত, মহান ও ভয়ংকর কাজের মাধ্যমে অন্য জাতির মধ্যে থেকে নিজের জন্য এক জাতিকে বের করে এনেছে? \p \v 35 তোমাদের এসব বিষয় দেখানো হয়েছে যেন তোমরা জানতে পারো যে সদাপ্রভুই ঈশ্বর; আর কেউ না। \v 36 তোমাদের উপদেশ দেবার জন্য তিনি স্বর্গ থেকে তাঁর রব তোমাদের শুনিয়েছিলেন। পৃথিবীতে তিনি তোমাদের তাঁর মহান আগুন দেখিয়েছিলেন এবং তোমরা আগুনের মধ্যে তাঁর রব শুনেছিলে। \v 37 যেহেতু তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ভালোবাসতেন এবং তাদের বংশধরদের মনোনীত করেছিলেন, তিনি তোমাদের তাঁর উপস্থিতিতে ও মহাপরাক্রমে মিশর থেকে বের করে এনেছেন, \v 38 যেন তোমাদের চেয়েও শক্তিশালী জাতিগুলিকে তোমাদের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশে তোমাদের নিয়ে যেতে পারেন এবং তোমাদের অধিকার করতে দেন, যেমন আজ হয়েছে। \p \v 39 আজকে তোমরা এই কথা জানো ও মনে রেখো যে সদাপ্রভুই উপরে স্বর্গে ও নিচে পৃথিবীর ঈশ্বর। অন্য কেউ নেই। \v 40 তোমাদের ও তোমাদের পরে তোমাদের সন্তানদের যেন মঙ্গল হয় এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ চিরকালের জন্য তোমাদের দিচ্ছেন তাতে যেন তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারো সেইজন্য আমি যেসব বিধান ও আদেশ আজ তোমাদের দিচ্ছি তা তোমরা মেনে চলবে। \s1 আশ্রয়-নগর \p \v 41 এরপরে মোশি জর্ডনের পূর্বদিকের তিনটি নগর বেছে নিলেন, \v 42 যেন কেউ কাউকে মেরে ফেললে সেখানে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে অবশ্য যদি সে মনে কোনও হিংসা না রেখে হঠাৎ তা করে থাকে তবেই সে সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে। সে নগরগুলির মধ্যে একটিতে পালিয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে পারবে। \v 43 নগরগুলি হল রূবেণীয়দের জন্য মরুএলাকার সমভূমির বেৎসর; গাদীয়দের জন্য গিলিয়দের রামোৎ এবং মনঃশীয়দের জন্য বাশনের গোলন। \s1 বিধান প্রদান \p \v 44 মোশি ইস্রায়েলীদের সামনে এই বিধান তুলে ধরেছিলেন। \v 45 মিশর থেকে বের হয়ে মোশি তাদের এসব চুক্তির বিষয়, অনুশাসন ও বিধান দিয়েছিলেন \v 46 এবং তারা তখন জর্ডনের পূর্বদিকে হিষ্‌বোনের ইমোরীয় রাজা সীহোনের দেশে বেথ-পিয়োরের কাছে উপত্যকায় ছিল আর মোশি এবং ইস্রায়েলীরা মিশর থেকে বেরিয়ে এসে তাদের পরাজিত করেছিল। \v 47 তারা জর্ডনের পূর্বদিকের দুজন ইমোরীয় রাজা এবং বাশনের রাজা ওগের দেশ অধিকার করেছিল। \v 48 এই দেশ অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অরোয়ের থেকে সীওন পাহাড় (অর্থাৎ হর্মোণ) পর্যন্ত সমস্ত দেশ, \v 49 এবং জর্ডনের পূর্বদিকের সম্পূর্ণ অরাবা এলাকা, পিস্‌গা পাহাড়শ্রেণীর ঢালু অংশের নিচে অরাবার তলভূমির সূফ সাগর পর্যন্ত চলে গিয়েছে। \c 5 \s1 দশাজ্ঞা \p \v 1 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলীকে ডেকে বললেন: \p হে ইস্রায়েল, শোনো, আজ আমি তোমাদের কাছে অনুশাসন ও বিধানগুলি ঘোষণা করছি। সেগুলি শিখে নিয়ো এবং যত্নের সঙ্গে পালন কোরো। \v 2 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হোরেবে আমাদের সঙ্গে এক নিয়ম স্থাপন করেছিলেন। \v 3 সদাপ্রভু আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সেই নিয়ম স্থাপন করেননি, করেছিলেন আমাদের কাছে, আজ আমরা যারা এখানে বেঁচে আছি আমাদের সকলের কাছে। \v 4 সদাপ্রভু সেই পাহাড়ের উপরে আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের মুখোমুখি হয়ে কথা বলেছিলেন। \v 5 (সেই সময় আমিই তোমাদের সদাপ্রভুর কথা প্রকাশ করার জন্য সদাপ্রভুর ও তোমাদের মাঝে দাঁড়িয়েছিলাম, কেননা তোমরা আগুনের ভয়ে পাহাড়ের উপর ওঠোনি।) \p এবং তিনি বললেন: \b \li4 \v 6 “আমিই তোমার ঈশ্বর সেই সদাপ্রভু, যিনি তোমাকে মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের সেই দেশ থেকে বের করে এনেছেন। \b \li1 \v 7 “আমার সামনে তুমি অন্য কোনও দেবতা রাখবে না। \li1 \v 8 নিজের জন্য তুমি ঊর্ধ্বস্থ স্বর্গের বা অধঃস্থ পৃথিবীর বা জলরাশির তলার কোনো কিছুর আকৃতিবিশিষ্ট কোনও প্রতিমা তৈরি করবে না। \v 9 তুমি তাদের কাছে মাথা নত করবে না বা তাদের আরাধনা করবে না; কারণ আমি, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, এক ঈর্ষান্বিত ঈশ্বর, বাবা-মার করা পাপের কারণে সন্তানদের শাস্তি দিই, যারা আমাকে ঘৃণা করে তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত দিই, \v 10 কিন্তু যারা আমাকে ভালোবাসে ও আমার আজ্ঞাগুলি পালন করে, হাজার প্রজন্ম পর্যন্ত তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাই। \li1 \v 11 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের অপব্যবহার কোরো না, কারণ যে কেউ তাঁর নামের অপব্যবহার করে সদাপ্রভু তাকে নির্দোষ প্রতিপন্ন করবেন না। \li1 \v 12 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যেমন আদেশ করেছেন, তেমনি করে বিশ্রামদিন পালন করে পবিত্র রেখো। \v 13 ছয় দিন তুমি পরিশ্রম করবে ও তোমার সব কাজকর্ম করবে, \v 14 কিন্তু সপ্তম দিনটি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামদিন। সেদিন তুমি, তোমার ছেলে বা মেয়ে, তোমার দাস বা দাসী, তোমার বলদ বা তোমার গাধা বা অন্য কোনও পশুপাল বা তোমার নগরে বসবাসকারী কোনো বিদেশি, কেউ কোনও কাজ কোরো না, যেন তোমার দাস বা দাসী বিশ্রাম পায়, যেমন তুমিও পাও। \v 15 মনে রেখো যে তোমরা মিশরে দাস ছিলে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু বলবান হাত ও বিস্তারিত বাহু দিয়ে সেখান থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন। সেইজন্যই তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বিশ্রামদিন পালন করার আদেশ দিয়েছেন। \li1 \v 16 তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো, যেমন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আদেশ দিয়েছেন, যেন তুমি সেই দেশে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতে পারো ও তোমার মঙ্গল হয়, যে দেশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে দিচ্ছেন। \li1 \v 17 তুমি নরহত্যা কোরো না। \li1 \v 18 তুমি ব্যভিচার কোরো না। \li1 \v 19 তুমি চুরি কোরো না। \li1 \v 20 তুমি তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না। \li1 \v 21 তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর উপর লোভ কোরো না। তোমার প্রতিবেশীর বাড়ি বা জমিতে, তার দাস বা দাসীর, তার বলদের বা গাধার, বা তোমার প্রতিবেশীর অধিকারভুক্ত কোনো কিছুর প্রতি লোভ কোরো না।” \b \p \v 22 সেই পাহাড়ের উপর আগুন, মেঘ ও ঘোর অন্ধকারের মধ্য থেকে সদাপ্রভু এই আজ্ঞাগুলি তোমাদের সকলের কাছে জোরে ঘোষণা করেছিলেন; এবং তিনি আর কিছু যোগ করেননি। পরে তিনি সেগুলি দুটি পাথরের ফলকের উপর লিখে আমার কাছে দিয়েছিলেন। \p \v 23 যখন তোমরা অন্ধকারের মধ্য থেকে সেই আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলে, এবং আগুনে পাহাড় জ্বলছিল, তখন তোমাদের সব গোষ্ঠীর নেতারা ও প্রাচীনেরা আমার কাছে এসেছিলে। \v 24 আর তোমরা বলেছিলে, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের তাঁর প্রতাপ ও মহিমা দেখিয়েছেন, আর আমরা আগুনের মধ্য থেকে তাঁর রব শুনেছি। আজ আমরা দেখলাম যে মানুষের সঙ্গে ঈশ্বর কথা বললেও সে বাঁচতে পারে। \v 25 কিন্তু এখন আমরা কেন মারা পড়ব? এই আগুন আমাদের পুড়িয়ে ফেলবে, এবং আমরা যদি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রব আরও শুনি তাহলে মারা পড়ব। \v 26 মানুষের মধ্যে এমন কে আছে যে আমাদের মতো করে আগুনের মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের রব শুনবার পরেও বেঁচে আছে? \v 27 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যা বলছেন, আপনি কাছে গিয়ে তা শুনে আসুন। পরে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে যা বলবেন তা আমাদের বলবেন। আমরা তা শুনব ও বাধ্য হব।” \p \v 28 তোমরা যখন আমার সঙ্গে কথা বলছিলে তখন সদাপ্রভু তোমাদের কথা শুনেছিলেন এবং সদাপ্রভু আমাকে বলেছিলেন, “লোকে তোমাকে যা বলেছে আমি তা শুনেছি। তারা যা বলেছে সবই ভালো। \v 29 আহা, সবসময় আমাকে ভয় করতে ও আমার আজ্ঞা পালন করতে যদি তাদের এরকম মনের ইচ্ছা থাকে, তাহলে তাদের ও তাদের সন্তানদের চিরকাল মঙ্গল হবে! \p \v 30 “যাও, তাদের বলো নিজেদের তাঁবুতে ফিরে যেতে। \v 31 কিন্তু তুমি আমার সঙ্গে থাকো যেন আমি তোমাকে সমস্ত আদেশ, অনুশাসন ও বিধান দিতে পারি যেগুলি তুমি তাদের শেখাবে যেন অধিকার করার জন্য যে দেশ আমি আদের দিতে যাচ্ছি সেখানে তারা সেগুলি পালন করে।” \p \v 32 অতএব তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে আদেশ দিয়েছেন সেগুলি যত্নের সঙ্গে পালন কোরো; তার ডানদিকে বা বাঁদিকে যাবে না। \v 33 যাতে তোমরা বাঁচতে পারো এবং তোমাদের মঙ্গল হয় আর যে দেশ তোমরা অধিকার করবে সেখানে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারো সেইজন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে যে পথে তোমাদের চলবার আদেশ দিয়েছেন তোমরা সেইসব পথেই চলবে। \c 6 \s1 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো \p \v 1 তোমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে এই আজ্ঞা, অনুশাসন ও বিধান দিয়েছেন যেন জর্ডন নদী পার হয়ে তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা তা পালন করে চলো, \v 2 যেন তোমরা, তোমাদের সন্তানেরা ও তাদের পরে তাদের সন্তানেরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করে, আমি যে সকল বিধান ও আদেশ দিচ্ছি সেগুলি পালন করো যেন তোমরা বহুকাল বেঁচে জীবন উপভোগ করো। \v 3 হে ইস্রায়েল, শোনো, এ সমস্ত যত্নের সঙ্গে মেনে চলো যাতে, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, সদাপ্রভু যেমন বলেছিলেন তেমনি তোমরা দুধ ও মধু প্রবাহিত সেই দেশে যাওয়ার পরে তোমাদের মঙ্গল হয় আর তোমরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাও। \p \v 4 হে ইস্রায়েল, শোনো: আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একই প্রভু। \v 5 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে। \v 6 এসব আদেশ যা আজ আমি তোমাদের দিচ্ছি তা যেন তোমাদের অন্তরে থাকে। \v 7 তোমাদের সন্তানদের তোমরা সেগুলি বারবার শেখাবে। ঘরে বসে থাকার সময় ও যখন তোমরা পথে চলবে, শোবার সময় ও যখন ঘুম থেকে উঠবে তাদের সেই সময় বলবে। \v 8 তোমরা তা মনে রাখবার চিহ্ন হিসেবে হাতে বেঁধে রাখবে এবং তোমাদের কপালে বেঁধে রাখবে। \v 9 সেগুলি তোমাদের বাড়ির দরজার চৌকাঠে ও তোমাদের দ্বারে লিখে রাখবে। \p \v 10 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন তোমাদের সেই দেশে নিয়ে যাবেন যা তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে দেবার জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলেন—যে দেশে থাকবে বড়ো বড়ো সমৃদ্ধশালী নগর যেগুলি তোমরা তৈরি করোনি, \v 11 এমন সব জিনিসে ভরা ঘরবাড়ি যেগুলি তোমরা জোগাড় করোনি, কুয়ো যা তোমরা খোঁড়োনি, এবং আঙুরের বাগান ও জলপাই গাছ যা তোমরা লাগাওনি—তখন তোমরা সেগুলি খাবে ও তৃপ্ত হবে, \v 12 সতর্ক থেকো যেন তোমরা সদাপ্রভুকে ভুলে না যাও, যিনি মিশর দেশ থেকে, দাসত্বের দেশ থেকে, তোমাদের বের করে এনেছেন। \p \v 13 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করবে, কেবল তাঁরই সেবা করবে এবং তাঁর নামেই শপথ করবে। \v 14 অন্য দেবতাদের অনুসরণ করবে না, যারা তোমাদের চারিদিকের জাতিদের দেবতা; \v 15 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের মধ্যে আছেন, তিনি নিজের গৌরব রক্ষা করার বিষয়ে খুবই উদ্যোগী, এবং তাঁর ক্রোধের আগুন তোমাদের বিরুদ্ধে জ্বলবে, আর তিনি তোমাদের পৃথিবীর উপর থেকে ধ্বংস করবেন। \v 16 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পরীক্ষা কোরো না যেমন তোমরা মঃসাতে করেছিলে। \v 17 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া আদেশ, শর্তাবলি ও অনুশাসন যত্নের সঙ্গে পালন কোরো। \v 18 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা কিছু সঠিক এবং ভালো তাই কোরো, যেন তোমাদের মঙ্গল হয় এবং তোমরা গিয়ে সেই উত্তম দেশ অধিকার করো যার বিষয়ে সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, \v 19 এবং সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তোমরা তোমাদের শত্রুদের তাড়িয়ে দিতে পারবে। \p \v 20 ভবিষ্যতে যখন তোমার ছেলে তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই যেসব শর্তাবলি, অনুশাসন ও আদেশ তোমাদের দিয়েছেন সেইসবের মানে কী?” \v 21 তাকে বলবে “আমরা মিশরে ফরৌণের দাস ছিলাম, কিন্তু সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন। \v 22 আমাদের চোখের সামনে সদাপ্রভু—বড়ো বড়ো ও ভয়ংকর—চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ মিশর এবং ফরৌণ ও তার বাড়ির সকলের উপর করেছিলেন। \v 23 কিন্তু তিনি আমাদের সেখান থেকে বের করে এনেছিলেন যাতে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে শপথ করেছিলেন যেন তা দিতে পারেন। \v 24 সদাপ্রভু আমাদের এই সমস্ত অনুশাসন পালন করতে ও আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে আদেশ দিয়েছিলেন, যেন আমাদের উন্নতি হয় এবং বাঁচিয়ে রাখেন, যেমন আজকে আছি। \v 25 আর আমরা যদি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে, তাঁর আদেশ অনুসারে, যত্নের সঙ্গে এসব বিধান পালন করি তবে সেটিই হবে আমাদের ধার্মিকতা।” \c 7 \s1 অন্যান্য জাতিদের তাড়িয়ে দেওয়া \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সেই দেশে নিয়ে যাবেন যেটি তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ এবং তোমাদের সামনে থেকে অনেক জাতিকে তাড়িয়ে দেবেন—হিত্তীয়, গির্গাশীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়, সাতটি জাতি যারা তোমাদের থেকে বড়ো এবং শক্তিশালী \v 2 আর যখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের তোমাদের হাতে সমর্পণ করবেন এবং তোমরা তাদের পরাজিত করবে, তখন তোমরা তাদের একেবারে ধ্বংস করবে। তাদের সঙ্গে কোনও চুক্তি করবে না, এবং তাদের প্রতি করুণা দেখাবে না। \v 3 তাদের সঙ্গে অসবর্ণমতে বিয়ে করবে না। তোমাদের মেয়েদের তাদের ছেলেদের হাতে দেবে না অথবা তাদের মেয়েদের তোমাদের ছেলেদের জন্য নেবে না, \v 4 কেননা তারা তোমাদের সন্তানদের আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে অন্যান্য দেবতাদের সেবা করাবে তাতে সদাপ্রভুর ক্রোধের আগুন তোমাদের বিরুদ্ধে জ্বলবে এবং তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস করবেন। \v 5 তাদের প্রতি তোমাদের এই কাজ করতে হবে: তাদের বেদিগুলি ভেঙে দিয়ো, তাদের পবিত্র পাথরগুলি চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ো ও তাদের আশেরা-খুঁটিগুলি কেটে নামিয়ে দিয়ো এবং তাদের মূর্তিগুলি আগুনে পুড়িয়ে দিয়ো। \v 6 কেননা তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র লোক। পৃথিবীর যত জাতি আছে সে সকলের মধ্যে থেকে নিজের লোক, তাঁর অধিকারের সম্পদ করার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরই মনোনীত করেছেন। \p \v 7 অন্য জাতির চেয়ে তোমাদের লোকসংখ্যা বেশি মনে করে যে সদাপ্রভু তোমাদের স্নেহ করেছেন ও মনোনীত করেছেন তা নয়, কারণ অন্য সব জাতির চেয়ে তোমরা সংখ্যায় অল্প ছিলে। \v 8 কিন্তু এই জন্য যে, সদাপ্রভু তোমাদের ভালোবাসেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দেবেন বলে শপথ করেছিলেন তা রক্ষা করতে তিনি তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমাদের দাসত্বের দেশ ও মিশরের রাজা ফরৌণের ক্ষমতা থেকে উদ্ধার করেছেন। \v 9 অতএব তোমরা জেনে রেখো যে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই ঈশ্বর; তিনি হলেন বিশ্বস্ত ঈশ্বর, যারা তাঁকে ভালোবাসে ও তাঁর আদেশগুলি পালন করে তাদের জন্য তিনি যে ভালোবাসার বিধান স্থাপন করেছেন তা তিনি হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত রক্ষা করেন। \v 10 কিন্তু \q1 যারা তাঁকে ঘৃণা করে তাদের ধ্বংস করে তিনি তার শোধ দেন; \q2 তাঁর ঘৃণাকারীদের শোধ দিতে তিনি দেরি করেন না। \m \v 11 অতএব, আজ আমি তোমাদের যেসব আদেশ, অনুশাসন ও বিধান দিচ্ছি তা তোমরা যত্নের সঙ্গে পালন করবে। \p \v 12 যদি তোমরা এসব বিধানের প্রতি মনোযোগ দাও এবং তা যত্নের সঙ্গে পালন করো, তবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে শপথ করেছিলেন সেই অনুসারে তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর ভালোবাসার বিধান রক্ষা করবেন। \v 13 তিনি তোমাদের ভালোবাসবেন ও তোমাদের আশীর্বাদ করবেন এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করবেন। তিনি যে দেশ দিবেন বলে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন সেই দেশে তিনি তোমাদের গর্ভের ফলকে, জমির ফসলকে—তোমাদের শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেল—পশুপালের বাছুর এবং মেষদের আশীর্বাদ করবেন। \v 14 অন্য সব লোকের চেয়ে তোমরা বেশি আশীর্বাদ পাবে; তোমাদের কোনও পুরুষ বা স্ত্রীলোক নিঃসন্তান হবে না, এমনকি তোমাদের পশুদের কেউ শাবক ছাড়া থাকবে না। \v 15 সদাপ্রভু সব রোগ থেকে তোমাদের মুক্ত রাখবেন। মিশরে যেসব ভীষণ রোগ তোমরা দেখেছ তা তিনি তোমাদের উপর হতে দেবেন না, কিন্তু যারা তোমাদের ঘৃণা করবে তাদের উপর সেইসব হতে দেবেন। \v 16 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হাতের মুঠোয় যেসব জাতিকে এনে দেবেন তাদের সবাইকে তোমাদের ধ্বংস করে ফেলতে হবে। তাদের তোমরা দয়া দেখাবে না এবং তাদের দেবতাদেরও সেবা করবে না, কারণ তা তোমাদের পক্ষে ফাঁদ হয়ে দাঁড়াবে। \p \v 17 তোমরা মনে মনে বলতে পারো, “এসব জাতি আমাদের থেকে শক্তিশালী। আমরা কী করে তাদের তাড়াব?” \v 18 কিন্তু তোমরা তাদের ভয় কোরো না; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ফরৌণ ও সমগ্র মিশর দেশের উপর কী করেছিলেন তা ভুলে যেয়ো না। \v 19 তোমরা নিজের চোখে সেই সকল পরীক্ষা দেখেছ, সেই চিহ্ন এবং অদ্ভুত লক্ষণ, সেই শক্তিশালী ও বিস্তারিত হাত, যার দ্বারা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বের করে এনেছেন। তোমরা এখন যে সকল লোককে ভয় পাচ্ছ তাদের প্রতিও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেইরকম করবেন। \v 20 এর পরেও তাদের মধ্যে যারা বেঁচে যাবে এবং তোমাদের কাছ থেকে নিজেদের লুকিয়ে রাখবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের মধ্যে ভিমরুল পাঠিয়ে দেবেন আর তারা সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। \v 21 তাদেরকে ভয় পেয়ো না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের মধ্যে আছেন, তিনি মহান ও অসাধারণ ঈশ্বর। \v 22 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে ওইসব জাতিকে, অল্প অল্প করে, তাড়িয়ে দেবেন। তাদের সবাইকে তোমরা একসঙ্গে তাড়িয়ে দেবে না, কারণ তাহলে তোমাদের চারপাশে বন্যপশুর সংখ্যা বেড়ে যাবে। \v 23 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সামনে তাদের তুলে দেবেন, এবং যতক্ষণ না তারা ধ্বংস হয় ততক্ষণ তাদের ভীষণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলে দেবেন। \v 24 তাদের রাজাদের তিনি তোমাদের হাতে তুলে দেবেন, এবং তোমরা আকাশমণ্ডলের নিচ থেকে তাদের নাম মুছে ফেলবে। তোমাদের বিপক্ষে কেউ দাঁড়াতে পারবে না; তোমরা তাদের ধ্বংস করবে। \v 25 তাদের দেবতাদের মূর্তিগুলি তোমরা আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে। তোমরা তাদের গায়ের সোনারুপোর উপর লোভ করবে না, এবং সেগুলি নিজেদের জন্য নেবে না, অথবা সেগুলির দ্বারা ফাঁদে পড়বে না, কারণ সেগুলি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ঘৃণ্য দ্রব্য। \v 26 কোনো ঘৃণ্য দ্রব্য তোমাদের ঘরে আনবে না, পাছে তার মতো ধ্বংসের জন্য তোমাদের আলাদা করা হয়েছে। সেগুলিকে ভীষণ ঘৃণা ও অবজ্ঞা করবে, যেহেতু সেগুলি ধ্বংসের জন্য আলাদা করা। \c 8 \s1 সদাপ্রভুকে ভুলে যেয়ো না \p \v 1 আমি আজ তোমাদের যেসব আদেশ দিচ্ছি তার প্রত্যেকটি পালন করবার দিকে তোমরা মন দাও, যাতে তোমরা বেঁচে থাকো ও সংখ্যায় বেড়ে ওঠো আর সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেওয়ার কথা শপথ করে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেখানে ঢুকে তা অধিকার করতে পারো। \v 2 মনে করে দেখো তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই চল্লিশটি বছর প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে কীভাবে সব দিকে তোমাদের চালিয়ে এনেছেন, তোমাদের অহংকার ভেঙে দেওয়ার জন্য এবং পরীক্ষা করে জানার জন্য যে তোমাদের মনে কী আছে, তোমরা তাঁর আদেশ পালন করবে কি না। \v 3 তিনি তোমাদের নত করেছিলেন, তোমাদের ক্ষিদে দিয়ে এবং পরে তোমাদের মান্না খেতে দিয়েছিলেন, যা তোমরা বা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা জানত না, তোমাদের এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য যে মানুষ কেবলমাত্র রুটিতে বাঁচে না কিন্তু সদাপ্রভুর মুখ থেকে নির্গত প্রত্যেকটি বাক্য দ্বারাই জীবনধারণ করবে। \v 4 এই চল্লিশ বছর তোমাদের গায়ের পোশাক নষ্ট হয়নি এবং পাও ফুলে যায়নি। \v 5 এই কথা তোমাদের অন্তরে জেনে রেখো যে, বাবা যেমন ছেলেকে শাসন করেন ঠিক সেইভাবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের শাসন করেন। \p \v 6 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করবে, তাঁর পথে চলবে এবং তাঁকে ভক্তি করবে। \v 7 কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের মনোরম দেশে নিয়ে যাচ্ছেন—যে দেশে রয়েছে উপত্যকা ও পাহাড় থেকে বয়ে চলা নদী, ফোয়ারা আর মাটির তলার জল; \v 8 সেই দেশে রয়েছে প্রচুর গম ও যব, আঙুর ও ডুমুর গাছ, ডালিম, জলপাই তেল এবং মধু; \v 9 সেই দেশে তোমরা প্রচুর খাবার পাবে এবং তোমাদের কোনো কিছুরই অভাব থাকবে না; সেখানকার পাথরে রয়েছে লোহা এবং সেখানকার পাহাড় থেকে তোমরা তামা খুঁড়ে তুলতে পারবে। \p \v 10 তোমরা সেখানে খেয়েদেয়ে তৃপ্ত হওয়ার পর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে চমৎকার দেশেটি দিয়েছেন তার জন্য তাঁর গৌরব করবে। \v 11 সাবধান, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেয়ো না, আমি আজ তাঁর যেসব আদেশ, বিধান ও অনুশাসন তোমাদের দিচ্ছি তা ভুলে যেয়ো না। \v 12 নয়তো, তোমরা যখন খেয়েদেয়ে তৃপ্ত হবে, তোমরা যখন সুন্দর সুন্দর বাড়ি তৈরি করে সেখানে বসবাস করবে, \v 13 আর যখন তোমাদের পালের গরু, ছাগল ও মেষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের অনেক সোনা ও রুপো হবে, \v 14 তখন তোমরা অহংকারী হয়ে উঠবে এবং যিনি মিশর দেশ থেকে, সেই দাসত্বের দেশ থেকে, তোমাদের বের করে এনেছেন তোমাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তোমরা ভুলে যাবে। \v 15 তিনি তোমাদের এক বিরাট, ভয়ংকর, শুকনো, জলহীন এবং বিষাক্ত সাপ ও কাঁকড়াবিছেতে ভরা প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি শক্ত পাথরের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য জল বের করেছেন। \v 16 তিনি তোমাদের প্রান্তরে খাওয়ার জন্য মান্না দিয়েছিলেন, যার কথা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা কখনও জানেননি, যেন তিনি তোমাদের মঙ্গলের জন্য তোমাদের নত করতে ও তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন। \v 17 তোমরা হয়তো মনে মনে বলতে পারো, “আমার নিজের শক্তিতে, নিজের হাতে কাজ করে আমি এসব ধনসম্পত্তি করেছি।” \v 18 কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে মনে রেখো, কারণ তিনিই তোমাদের ক্ষমতা দেন এই ধনসম্পত্তি করার, আর এইভাবে তিনি তোমাদের পূর্বপুরুযদের কাছে যে নিয়মের কথা শপথ করে বলেছিলেন তা তিনি এখন পূর্ণ করতে চলেছেন। \p \v 19 তোমরা যদি কখনও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গিয়ে অন্য দেবতাদের অনুসরণ করো এবং তাদের সেবা ও পূজা করো, তবে আজ আমি তোমাদের বিরুদ্ধে এই কথা নিশ্চয় করে বলছি যে, তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে। \v 20 সদাপ্রভু তোমাদের সামনে যেসব জাতিকে ধ্বংস করেছেন তাদের মতো তোমরাও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অবাধ্য হওয়ার দরুন ধ্বংস হয়ে যাবে। \c 9 \s1 ইস্রায়েলের ধার্মিকতার জন্য নয় \p \v 1 হে ইস্রায়েল, শোনো যেসব জাতি তোমাদের থেকে লোকসংখ্যায় ও শক্তিতে বড়ো, তোমরা এখন গিয়ে তাদের গগনচুম্বী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বড়ো বড়ো নগরগুলি অধিকার করার জন্য জর্ডন নদী পার হতে যাচ্ছ। \v 2 সেখানকার লোকেরা অনাকীয়—তারা শক্তিশালী ও লম্বা! তোমরা তাদের সম্বন্ধে জানো এবং শুনেছ বলা হয়ে থাকে “অনাকীয়দের বিরুদ্ধে কে দাঁড়াতে পারে?” \v 3 কিন্তু আজ তুমি এই কথা জেনে রেখো যে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই গ্রাসকারী আগুনের মতো তোমাদের আগে আগে জর্ডন নদী পার হয়ে যাচ্ছেন। তিনি তাদের ধ্বংস করবেন; তিনি তোমাদের সামনে তাদের দমন করবেন। আর তোমরা তাদের তাড়িয়ে দেবে এবং সত্বর ধ্বংস করবে, যেমন সদাপ্রভু তোমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন। \p \v 4 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর, তোমরা কেউ মনে মনে বোলো না, “আমার ধার্মিকতার জন্য সদাপ্রভু আমাকে এই দেশ অধিকার করাতে এখানে নিয়ে এসেছেন।” তা নয়, এসব জাতির লোকদের দুষ্টতার জন্যই সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দিতে যাচ্ছেন। \v 5 তোমাদের ধার্মিকতা কিংবা সাধুতার জন্য তোমরা যে তাদের দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ তা নয়; কিন্তু এই জাতিদের দুষ্টতার জন্য, বরং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে যে কথা প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন তা পূরণ করবার জন্যই তিনি এসব জাতির দুষ্টতার দরুন তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দেবেন। \v 6 কাজেই তোমরা জেনে রেখো, তোমাদের ধার্মিকতার জন্য যে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই চমৎকার দেশটি তোমাদের অধিকার করতে দিচ্ছেন তা নয়, কারণ তোমরা তো একগুঁয়ে এক জাতি। \s1 সোনার বাছুর \p \v 7 তোমরা প্রান্তরে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ কীভাবে জাগিয়ে তুলেছিলে তা মনে রেখো, কখনও ভুলে যেয়ো না। মিশর ছেড়ে আসবার দিন থেকে শুরু করে এখানে পৌঁছানো পর্যন্ত তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারী হয়ে আসছ। \v 8 হোরেবে তোমরা এমনভাবে সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলে যে, তার দরুন তিনি তোমাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। \v 9 সদাপ্রভু যে বিধান তোমাদের জন্য স্থাপন করেছেন সেই বিধান লেখা পাথরের ফলক দুটি গ্রহণ করার জন্য আমি পাহাড়ের উপর উঠে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সেখানেই ছিলাম; আমি জল বা রুটি কিছুই খাইনি। \v 10 ঈশ্বরের আঙুল দিয়ে লেখা এমন দুটি পাথরের ফলক সদাপ্রভু আমাকে দিয়েছিলেন। তোমরা সবাই যেদিন সদাপ্রভুর সামনে জড়ো হয়েছিলে, সেদিন তিনি পাহাড়ের উপরে আগুনের মধ্য থেকে যেসব আদেশ তোমাদের কাছে ঘোষণা করেছিলেন সেগুলি ওই ফলক দুটির উপর লেখা ছিল। \p \v 11 সেই চল্লিশ দিন আর চল্লিশ রাত কেটে যাওয়ার পর সদাপ্রভু ওই বিধান লেখা পাথরের ফলক দুটি আমাকে দিয়েছিলেন। \v 12 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি এখনই নিচে নেমে যাও, কেননা যে লোকদের তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ তারা কুপথে গেছে। যে পথে চলবার আদেশ আমি দিয়েছিলাম এর মধ্যেই তারা তা থেকে দূরে সরে গেছে এবং পূজার জন্য নিজেদের জন্য একটি মূর্তি তৈরি করেছে।” \p \v 13 আর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “আমি এই লোকদের দেখেছি, এরা একগুঁয়ে এক জাতি! \v 14 তুমি আমাকে বাধা দিয়ো না, যেন আমি তাদের ধ্বংস করি এবং পৃথিবী থেকে তাদের নাম মুছে ফেলি। আর আমি তোমার মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী এবং তাদের চেয়ে আরও বড়ো একটি জাতি তৈরি করব।” \p \v 15 তখন আমি পাহাড় থেকে নেমে আসলাম যখন পাহাড় আগুনে জ্বলছিল। আর আমার হাতে বিধানের দুটি ফলক ছিল। \v 16 আমি চেয়ে দেখলাম, তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছ; পূজার জন্য তোমরা ছাঁচে ফেলে একটি বাছুরের মূর্তি তৈরি করে নিয়েছ। সদাপ্রভু তোমাদের যে পথে চলবার আদেশ দিয়েছিলেন তোমরা ঐটুকু সময়ের মধ্যেই সেই পথ থেকে সরে গিয়েছিলে। \v 17 সেইজন্য আমি পাথরের ফলক দুটি আমার হাত থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম, তাতে সেগুলি তোমাদের চোখের সামনে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। \p \v 18 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ এমন সব পাপ তোমরা করে তাঁর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলে সেইজন্য আমি আগের বারের মতো আবার চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সামনে উপুড় হয়ে পড়েছিলাম; জল বা রুটি কিছুই খাইনি। \v 19 সদাপ্রভুর ভীষণ অসন্তোষকে আমি ভয় করেছিলাম, কারণ তোমাদের ধ্বংস করে ফেলবার মতো ক্রোধ তাঁর হয়েছিল। কিন্তু এবারও সদাপ্রভু আমার কথা শুনেছিলেন। \v 20 আর হারোণকে ধ্বংস করে ফেলবার মতো ক্রোধও তাঁর হয়েছিল, কিন্তু সেই সময় আমি হারোণের জন্যও মিনতি করেছিলাম। \v 21 আর আমি তোমাদের সেই পাপময় জিনিসটি, তোমাদের তৈরি সেই বাছুরটি, নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলাম। তারপর আমি সেটি ধুলোর মতো গুঁড়ো করে পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদীর স্রোতে ফেলে দিয়েছিলাম। \p \v 22 তোমরা তবেরাতে, মঃসাতে ও কিব্রোৎ-হত্তাবাতে সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলে। \p \v 23 তারপর সদাপ্রভু তোমাদের কাদেশ-বর্ণেয় থেকে রওনা করে দেওয়ার সময় বলেছিলেন, “তোমরা উঠে যাও এবং যে দেশ আমি তোমাদের দিয়েছি তা অধিকার করো।” কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে। তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করোনি বা তাঁর বাধ্য হওনি। \v 24 আমি যখন থেকে তোমাদের জেনেছি তখন থেকেই তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে কেবল বিদ্রোহই করে চলেছ। \p \v 25 সদাপ্রভু তোমাদের ধ্বংস করার কথা বলেছিলেন বলে আমি সেই চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সামনে উবুড় হয়ে পড়েছিলাম। \v 26 আমি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তোমার লোকদের তুমি ধ্বংস করে ফেলো না, তারা তো তোমারই উত্তরাধিকারী যাদের তুমি তোমার মহাশক্তি দ্বারা মুক্ত করেছ এবং তোমার শক্তিশালী হাত ব্যবহার করে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছ। \v 27 তোমার দাস অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে স্মরণ করো। এই লোকদের একগুঁয়েমি, দুষ্টতা এবং পাপের দিকে চেয়ে দেখো না। \v 28 তা করলে যে দেশ থেকে তুমি আমাদের বের করে এনেছ সেই দেশের লোকেরা বলবে, ‘সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞাত দেশে তাদের নিয়ে যেতে পারলেন না বলে এবং তাদের ঘৃণা করেন বলে, তাদের মেরে ফেলার জন্য এই প্রান্তরে নিয়ে এসেছেন।’ \v 29 কিন্তু তারা তোমার লোক, তোমারই উত্তরাধিকারী যাদের তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দিয়ে মহাশক্তিতে বের করে এনেছ।” \c 10 \s1 প্রথমবারের মতো ফলক \p \v 1 সেই সময়ে সদাপ্রভু আমাকে বলেছিলেন, “তুমি দু-টুকরো পাথর কেটে আগের পাথরের ফলকের মতো করে নাও এবং পাহাড়ের উপরে আমার কাছে উঠে এসো। সেই সঙ্গে একটি কাঠের সিন্দুকও তৈরি কোরো। \v 2 আগের যে ফলকগুলি তুমি ভেঙে ফেলেছ, সেগুলির উপরে যে কথা লেখা ছিল তাই এই ফলক দুটির উপর লিখে দেব। তারপর তুমি সেই দুটি নিয়ে সিন্দুকটির মধ্যে রাখবে।” \p \v 3 সেইজন্য আমি বাবলা কাঠ দিয়ে একটি সিন্দুক তৈরি করলাম এবং দু-টুকরো পাথর কেটে আগের ফলক দুটির মতো করে নিলাম, তারপর সেই দুটি হাতে করে পাহাড়ের উপর উঠে গিয়েছিলাম। \v 4 সদাপ্রভু প্রথম ফলক দুটির উপরে যে কথা লিখেছিলেন এই দুটির উপরও তাই লিখলেন, সেই দশাজ্ঞা যা তিনি তোমাদের সকলের একসঙ্গে সমবেত হওয়ার দিনে পাহাড়ের উপর আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে ঘোষণা করেছিলেন। আর সদাপ্রভু সেগুলি আমাকে দিয়ে দিলেন। \v 5 তারপর, সদাপ্রভু আমাকে যেমন আদেশ করেছিলেন সেইমতো আমি পাহাড়ের উপর থেকে নেমে এসে সেই ফলক দুটি আমার তৈরি করা সিন্দুকে রেখেছিলাম, আর সেগুলি এখনও সেখানেই আছে। \p \v 6 (ইস্রায়েলীরা বেরোৎ-বেনেয়াকনের কুয়ো থেকে রওনা হয়ে মোষেরোতে পৌঁছাল। সেখানেই হারোণ মারা গিয়েছিলেন এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল, এবং তাঁর ছেলে ইলিয়াসর তাঁর জায়গায় যাজক হয়েছিলেন। \v 7 সেখান থেকে তারা গুধগোদায় এবং তারপর যট্‌বাথায় গিয়েছিল, যে দেশে অনেক জলপ্রবাহ ছিল। \v 8 সেই সময় সদাপ্রভু তাঁর নিয়ম-সিন্দুক বয়ে নেওয়ার এবং তাঁর সামনে দাঁড়াবার জন্য ও সেবাকাজের উদ্দেশ্যে আর তাঁর নামে আশীর্বাদ উচ্চারণ করবার জন্য লেবীয় বংশকে বেছে নিয়েছিলেন, যেমন তারা আজ পর্যন্ত করছে। \v 9 এই জন্য লেবীয়েরা তাদের ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্যে সম্পত্তির কোনও ভাগ বা অধিকার পায়নি; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথা অনুসারে সদাপ্রভুই তাদের উত্তরাধিকার।) \p \v 10 আগের বারের মতো, সেই বারও আমি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পাহাড়ের উপরে ছিলাম আর সেই বারও সদাপ্রভু আমার কথা শুনেছিলেন। তোমাদের ধ্বংস করার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। \v 11 সদাপ্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যাও, তুমি গিয়ে লোকদের পরিচালনা করে নিয়ে যাও, যেন তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আমি যে দেশ দেওয়ার শপথ করেছিলাম সেখানে গিয়ে তারা তা অধিকার করে নিতে পারে।” \s1 সদাপ্রভুকে ভয় করো \p \v 12 এখন হে ইস্রায়েল, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের কাছে কী চান? তিনি কেবল চান যেন তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করো, সব ব্যাপারে তাঁর পথে চলো, তাঁকে ভালোবাসো, তোমাদের সমস্ত হৃদয় ও প্রাণ দিয়ে তাঁর সেবা করো, \v 13 আর তোমাদের মঙ্গলের জন্য আজ আমি তোমাদের কাছে সদাপ্রভুর যেসব আদেশ ও অনুশাসন দিচ্ছি তা পালন করো। \p \v 14 আকাশ ও তার উপরের সবকিছু এবং পৃথিবী ও তার মধ্যবর্তী সবকিছুই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর। \v 15 তবুও তোমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি তাঁর স্নেহ ছিল এবং তিনি তাদের ভালোবাসতেন, আর তিনি সমস্ত জাতির মধ্য থেকে তাদের বংশধরদের, অর্থাৎ তোমাদের মনোনীত করেছেন—যেমন তোমরা আজও আছ। \v 16 তোমাদের হৃদয়ের সুন্নত করো, আর একগুঁয়ে হয়ে থেকো না। \v 17 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ঈশ্বরদের ঈশ্বর এবং প্রভুদের প্রভু, তিনিই মহান ঈশ্বর, ক্ষমতাশালী ও ভয়ংকর, যিনি কারোর মুখাপেক্ষা করেন না এবং ঘুষও নেন না। \v 18 পিতৃহীনদের ও বিধবাদের অধিকার তিনি রক্ষা করেন, এবং তোমাদের মধ্যে বসবাস করা বিদেশিদের খেতে পরতে দিয়ে তাঁর ভালোবাসা দেখান। \v 19 আর তোমরা বিদেশিদের ভালোবাসবে, কারণ তোমরা নিজেরাও মিশরে বিদেশি হয়েছিলে। \v 20 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করবে এবং তাঁর সেবা করবে। তাঁকেই আঁকড়ে ধরে থাকবে এবং তাঁর নামেই শপথ করবে। \v 21 তিনিই সেই জন যাঁর তোমরা প্রশংসা করবে; তিনি তোমাদের ঈশ্বর, যিনি তোমাদের জন্য সেই মহান ও ভয়ংকর কাজ করেছিলেন যেগুলি তোমরা নিজের চোখে দেখেছ। \v 22 তোমাদের যে পূর্বপুরুষেরা মিশরে গিয়েছিলেন তাদের মোট সংখ্যা ছিল সত্তর, আর এখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সংখ্যা করেছেন আকাশের তারার মতো অসংখ্য। \c 11 \s1 সদাপ্রভুকে ভালোবাসো ও তাঁর বাধ্য হও \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসবে আর তিনি যা চান তা করবে, এবং তাঁর অনুশাসন, বিধান ও আদেশ সবসময় পালন করবে। \v 2 আজ তোমরা মনে রেখো যে তোমাদের সন্তানেরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর শিক্ষার বিষয়ে দেখেনি ও তাঁর মহিমা, তাঁর শক্তিশালী হাত, তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া হাতের অভিজ্ঞতা লাভ করেনি; \v 3 যে সকল চিহ্নকাজ তিনি মিশরের মধ্যে, মিশরের রাজা ফরৌণের এবং তাঁর সমগ্র দেশের উপর করেছিলেন; \v 4 তিনি মিশরীয় সৈন্যদলের প্রতি যা করেছিলেন, তাদের ঘোড়া ও রথগুলির প্রতি, এবং তারা যখন তোমাদের পিছনে তাড়া করে আসছিল তখন কেমন করে তিনি লোহিত সাগরের জলে তাদের ডুবিয়ে দিয়েছিলেন আর কেমন করে সদাপ্রভু তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তাও তারা দেখেনি। \v 5 তোমরা এখানে এসে না পৌঁছানো পর্যন্ত তিনি প্রান্তরে তোমাদের জন্য যা করেছিলেন তা তোমাদের সন্তানেরা দেখেনি, \v 6 এবং তিনি রূবেণের ছেলে ইলীয়াবের সন্তান দাথন ও অবীরামের প্রতি যা করেছিলেন, যখন ইস্রায়েলীদের মাঝখানে পৃথিবী মুখ খুলে তাদের ও তাদের পরিবারের লোকজন, তাদের তাঁবু এবং তাদের সমস্ত জীবন্ত প্রাণীকে গিলে ফেলেছিল। \v 7 কিন্তু সদাপ্রভুর এসব বড়ো বড়ো কাজ তোমরাই নিজের চোখে দেখেছ। \p \v 8 অতএব আজ আমি তোমাদের এসব আজ্ঞা দিচ্ছি, যেন তোমরা শক্তিশালী হও এবং জর্ডন পার হয়ে যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ তা যেন দখল করতে পারো, \v 9 আর যেন সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ও তাদের বংশধরদের যে দেশ দেওয়ার জন্য শপথ করেছিলেন, সেই দুধ আর মধু প্রবাহী দেশে অনেক দিন বসবাস করতে পারো। \v 10 তোমরা যে দেশটি দখল করতে যাচ্ছ সেটি মিশর দেশের মতো নয়, যেখান থেকে তোমরা এসেছ, সেখানে তোমরা বীজ বুনতে আর সবজি ক্ষেতের মতো পা দিয়ে জল সেচতে। \v 11 কিন্তু জর্ডন পার হয়ে যে দেশটি তোমরা দখল করতে যাচ্ছ সেটি পাহাড় আর উপত্যকায় ভরা যা আকাশের বৃষ্টির জলপান করে। \v 12 সেই দেশের যত্ন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু করেন; বছরের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবসময় তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখ তার উপরে আছে। \p \v 13 অতএব আমি আজ তোমাদের যে সকল আজ্ঞা দিচ্ছি—তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো ও সমস্ত হৃদয় ও প্রাণ দিয়ে তাঁর সেবা করো \v 14 তাহলে আমি সব ঋতুতে বৃষ্টি দেব, শরৎ ও বসন্তে, যেন তোমরা শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেল সংগ্রহ করতে পারো। \v 15 আমি তোমাদের পশুদের জন্য মাঠে ঘাস হতে দেব, এবং তোমরা খাবে ও তৃপ্ত হবে। \p \v 16 তোমরা কিন্তু সতর্ক থাকো, তা না হলে তোমরা ছলনায় পড়ে সদাপ্রভুর কাছ থেকে সরে যাবে এবং অন্যান্য দেবতাদের সেবা ও পূজা করবে। \v 17 এতে তোমাদের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে এবং তিনি আকাশের দরজা বন্ধ করে দেবেন, যার ফলে বৃষ্টিও হবে না এবং জমিতে ফসলও হবে না, এবং যে চমৎকার দেশটি সদাপ্রভু তোমাদের দিচ্ছেন সেখান থেকে তোমরা অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। \v 18 তোমাদের অন্তরে ও মনে আমার এই কথাগুলি গেঁথে রাখবে; তা মনে রাখার চিহ্ন হিসেবে হাতে বেঁধে রাখবে এবং কপালে লাগিয়ে রাখবে। \v 19 সেগুলি তোমাদের সন্তানদের শেখাবে, ঘরে বসে কথা বলার সময় আর যখন তাদের সঙ্গে হাঁটবে, যখন শোবার সময় ও বিছানা থেকে উঠবার সময়। \v 20 সেগুলি তোমাদের বাড়ির দরজার চৌকাঠে ও তোমাদের দ্বারে লিখে রাখবে, \v 21 যেন সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দেওয়ার জন্য শপথ করেছিলেন সেখানে তোমরা ও তোমাদের সন্তানেরা ততকাল বেঁচে থাকো যতকাল এই পৃথিবীর উপর মহাকাশ থাকবে। \p \v 22 আমি যে সমস্ত আজ্ঞা তোমাদের দিচ্ছি সেগুলি যদি তোমরা যত্নের সঙ্গে পালন করো—তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো, তাঁর বাধ্যতায় চলো এবং তাঁকে আঁকড়ে ধরে থাকো \v 23 তাহলে তোমাদের সামনে থেকে সদাপ্রভু এসব জাতিকে তাড়িয়ে দেবেন, আর তোমরা তোমাদের থেকে বড়ো বড়ো এবং শক্তিশালী জাতিকে বেদখল করবে। \v 24 তোমরা যে জায়গায় পা ফেলবে সেই জায়গাই তোমাদের হবে: তোমাদের সীমানা বাড়বে প্রান্তর থেকে লেবানন পর্যন্ত এবং ইউফ্রেটিস নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত। \v 25 তোমাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। তোমরা সেই দেশের যেখানেই যাবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে সেখানকার লোকদের মনে তোমাদের সম্বন্ধে আতঙ্ক ও ভয় ছড়িয়ে দেবেন। \p \v 26 দেখো, আজ আমি তোমাদের সামনে আশীর্বাদ ও অভিশাপ রাখলাম, \v 27 আজ আমি তোমাদের কাছে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যে আজ্ঞাগুলি দিলাম তা যদি তোমরা পালন করো, তবে এই আশীর্বাদ তোমাদের হবে; \v 28 কিন্তু যদি তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞাগুলি অমান্য করো এবং যে পথে চলবার আদেশ আজ আমি দিয়েছি তা থেকে সরে গিয়ে তোমাদের অজানা অন্য দেবতার পিছনে যাও, তবে তোমাদের উপর অভিশাপ নেমে আসবে। \v 29 অধিকার করার জন্য তোমরা যে দেশে ঢুকতে যাচ্ছ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন সেই দেশে তোমাদের নিয়ে যাবেন তখন, তোমরা গরিষীম পর্বতের উপর থেকে সেই আশীর্বাদের কথা ঘোষণা করবে আর অভিশাপের কথা এবল পর্বতের উপর থেকে ঘোষণা করবে। \v 30 তোমরা তো জানো, এই পাহাড়গুলি জর্ডনের ওপাড়ে, পশ্চিমদিকে, যেদিকে সূর্য অস্ত যায়, মোরির বড়ো বড়ো গাছের কাছে, গিল্‌গলের কাছাকাছি অরাবায় বসবাসকারী কনানীয়দের দেশে। \v 31 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশ অধিকার করবার জন্য তোমরা জর্ডন নদী পার হতে যাচ্ছ। তোমরা যখন তা দখল করে সেখানে বসবাস করতে থাকবে, \v 32 তখন আজ আমি তোমাদের যেসব অনুশাসন ও নির্দেশ দিলাম তা অবশ্যই তোমরা পালন করে চলবে। \c 12 \s1 উপাসনার জন্য একটি জায়গা \p \v 1 তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের অধিকার করার জন্য দিয়েছেন সেখানে—যতদিন বেঁচে থাকবে—এসব অনুশাসন ও বিধান যত্নের সঙ্গে পালন করবে। \v 2 তোমরা যেসব জাতিকে অধিকারচ্যুত করবে, তারা উঁচু পাহাড়ের উপরে ও ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নিচে যেসব জায়গায় তাদের দেবতাদের উপাসনা করে সেগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। \v 3 তাদের বেদিগুলি ভেঙে ফেলবে, তাদের পবিত্র পাথরগুলি চুরমার করে দেবে এবং আশেরার খুঁটিগুলি আগুনে পুড়িয়ে দেবে; তাদের দেবতাদের মূর্তিগুলি ভেঙে ফেলবে এবং সেই সমস্ত জায়গা থেকে তাদের নাম মুছে ফেলবে। \p \v 4 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তাদের মতো করে উপাসনা করবে না। \v 5 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজেকে প্রকাশ করার জন্য তোমাদের সব গোষ্ঠীকে দেওয়া জায়গা থেকে সেই জায়গাটি তাঁর বাসস্থান হিসেবে বেছে নেবেন। তোমরা সেখানেই তাঁর উপাসনার জন্য যাবে; \v 6 সেখানে তোমরা হোম ও বলি, তোমাদের দশমাংশ ও বিশেষ দান, যা তোমরা দেওয়ার জন্য মানত করেছ এবং স্বেচ্ছাকৃত দান, আর তোমাদের গরুর ও মেষের পালের প্রথম শাবকটি নিয়ে যাবে। \v 7 সেখানে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপস্থিতে, তোমরা ও তোমাদের পরিবারের লোকেরা খাওয়াদাওয়া করবে এবং তোমরা হাতে যা কিছু পেয়েছ তার জন্য আনন্দ করবে, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন। \p \v 8 এখানে আমরা এখন প্রত্যেকে নিজের যা মনে হয় ঠিক তাই করছি, তোমরা সেরকম করবে না, \v 9 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে বিশ্রামস্থান ও অধিকার দিচ্ছেন সেখানে তোমরা এখনও পৌঁছাওনি। \v 10 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু উত্তরাধিকার হিসেবে যে দেশ তোমাদের দিচ্ছেন তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে গিয়ে যখন সেই দেশে বসবাস করতে থাকবে তখন তিনি চারপাশের সমস্ত শত্রুর থেকে তোমাদের বিশ্রাম দেবেন যেন তোমরা নিরাপদে বসবাস করতে পারো। \v 11 তখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের জন্য এক বাসস্থান বেছে নেবেন—সেখানে তোমরা আমার আদেশ করা সব জিনিস নিয়ে আসবে তোমাদের হোম ও বলি, তোমাদের দশমাংশ ও বিশেষ উপহার, এবং তোমাদের বাছাই করা জিনিস যা তোমরা সদাপ্রভুর কাছে মানত করেছ। \v 12 আর সেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আনন্দ কোরো—তোমরা, তোমাদের ছেলেমেয়েরা, তোমাদের দাস-দাসীরা, এবং তোমাদের নগরের লেবীয়েরা যাদের নিজেদের অংশ বা অধিকার তোমাদের মধ্যে নেই। \v 13 সাবধান, তোমাদের মনের মতো কোনও জায়গায় তোমরা হোমবলি উৎসর্গ করবে না। \v 14 তোমাদের কোনও এক গোষ্ঠীকে দেওয়া জায়গা থেকে যে জায়গাটি সদাপ্রভু বেছে নেবেন সেখানেই তোমরা হোমবলি উৎসর্গ করবে, আর সেখানে তোমরা আমার আদেশ করা সবকিছু করবে। \p \v 15 তবে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করে যেসব পশু দেবেন তা তোমরা যে কোনও নগরে কেটে তোমাদের খুশিমতো মাংস খেতে পারবে, সেটি হতে পারে গজলা হরিণ কিংবা হরিণ। শুচি-অশুচি সব লোক খেতে পারবে। \v 16 কিন্তু তোমরা রক্ত খাবে না; জলের মতো করে মাটিতে ঢেলে দেবে। \v 17 তোমাদের শস্যের, নতুন দ্রাক্ষারসের ও জলপাই তেলের দশমাংশ, অথবা তোমাদের গরুর ও মেষের পালের প্রথম শাবক, অথবা তোমাদের মানত করা জিনিসপত্র, অথবা তোমাদের নিজের ইচ্ছায় করা কোনও উৎসর্গ, অথবা বিশেষ উপহার এসব তোমরা তোমাদের নগরের মধ্যে খেতে পারবে না। \v 18 তার পরিবর্তে, তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বেছে নেওয়া জায়গায় তাঁর সামনে এগুলি তোমাদের খেতে হবে—তোমরা, তোমাদের ছেলেমেয়েরা, তোমাদের দাস-দাসীরা, এবং তোমাদের নগরের লেবীয়েরা—আর তোমরা যা কিছুতেই হাত দেবে তা নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আনন্দ করবে। \v 19 সাবধান, তোমাদের দেশে তোমরা যতদিন বসবাস করবে ততদিন লেবীয়দের প্রতি তোমরা অবহেলা করবে না। \p \v 20 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদের দেশের সীমানা বাড়িয়ে দেওয়ার পরে যখন তোমরা মাংস খাবার ইচ্ছা নিয়ে বলবে, “আমি মাংস খাব,” তখন তোমরা খুশিমতো মাংস খেতে পারবে। \v 21 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের জন্য ও তাঁর নাম প্রকাশ করবার জন্য যে জায়গাটি বেছে নেবেন সেটি যদি তোমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে হয়, তবে আমার দেওয়া আদেশ অনুসারে তোমরা সদাপ্রভুর দেওয়া গরু ও মেষের পাল থেকে পশু নিয়ে কাটতে পারবে এবং যার যার নগরে খুশিমতো মাংস খেতে পারবে। \v 22 গজলা হরিণ কিংবা হরিণের মাংসের মতোই তোমরা তা খাবে। শুচি-অশুচি সব লোক খেতে পারবে। \v 23 কিন্তু সাবধান, রক্ত খাবে না, কারণ রক্তই প্রাণ, আর তোমরা মাংসের সঙ্গে সেই প্রাণ খাবে না। \v 24 তোমরা রক্ত খাবে না; জলের মতো করে মাটিতে ঢেলে দেবে। \v 25 তোমাদের ও তোমাদের পরে তোমাদের সন্তানদের যাতে মঙ্গল হয় সেইজন্য তোমরা রক্ত খাবে না, তাহলে সদাপ্রভুর চোখে যা ভালো তাই করা হবে। \p \v 26 কিন্তু তোমাদের পবিত্র জিনিসপত্র এবং মানতের জিনিসপত্র সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। \v 27 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির উপরে তোমাদের হোমবলি উৎসর্গ করবে, মাংস ও রক্ত সমেত। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির গায়ে তোমাদের উৎসর্গ করা পশুর রক্ত ঢেলে দিতে হবে। \v 28 সাবধান হয়ে আমার দেওয়া এসব আদেশ যত্নের সঙ্গে পালন করবে, কারণ তা করলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ন্যায্য এবং ভালো তাই করা হবে, তাতে তোমাদের ও তোমাদের পরে তোমাদের সন্তানদের যাতে সবসময় মঙ্গল হবে। \p \v 29 তোমরা যেসব জাতিকে অধিকারচ্যুত করতে যাচ্ছ তাদেরকে যখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে উচ্ছেদ করবেন, যখন তোমরা তাদেরকে অধিকারচ্যুত করে তাদের দেশে বসবাস করবে, \v 30 এবং তোমাদের সামনে থেকে তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর, তাদের দেবতাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে তোমরা ফাঁদে পোড়ো না এবং জিজ্ঞাসা কোরো না “এসব জাতি কেমন করে তাদের দেবতাদের সেবা করত? আমরাও তাই করব।” \v 31 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা তাদের পূজার মতো করে করবে না, কারণ তাদের দেবতাদের পূজায় তারা এমন সব জঘন্য কাজ করে যা সদাপ্রভু ঘৃণা করেন। এমনকি, তারা তাদের দেবতাদের কাছে তাদের ছেলেমেয়েদের আগুনে পুড়িয়ে উৎসর্গ করে। \p \v 32 আমি তোমাদের যেসব আদেশ দিলাম সেসব তোমরা পালন করবে; এর সঙ্গে কিছু যোগ করবে না বা এর থেকে কিছু বাদ দেবে না। \c 13 \s1 অন্য দেবতাদের উপাসনা \p \v 1 তোমাদের মধ্যে কোনো ভাববাদী বা স্বপ্নদর্শক যদি তোমাদের সামনে উপস্থিত হয় এবং তোমাদের কোনো আশ্চর্য চিহ্ন বা কাজের কথা বলে, \v 2 এবং যদি সেই আশ্চর্য চিহ্ন বা কাজ ঘটে, ও সেই ভাববাদী বলে, “চলো আমরা অন্য দেবতাদের অনুগামী হই (যে দেবতাদের সম্বন্ধে তোমরা জানো না) এবং তাদের পূজা করি,” \v 3 তোমরা সেই ভাববাদী বা স্বপ্নদর্শকের কথা শুনবে না। তোমরা তোমাদের সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো কি না তা জানার জন্য তিনি তোমাদের পরীক্ষায় ফেলেছেন। \v 4 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথামতো তোমাদের চলতে হবে এবং তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করতে হবে। তাঁর আজ্ঞা পালন করবে ও তাঁর বাধ্য হবে; তাঁর সেবা করবে এবং তাঁকে আঁকড়ে ধরবে। \v 5 সেই ভাববাদী কিংবা স্বপ্নদর্শককে প্রাণদণ্ড দেবে কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন এবং সেই দাসত্বের দেশ থেকে তোমাদের মুক্ত করেছেন, সে তাঁরই বিরুদ্ধে বিদ্রোহের উসকানি দিয়েছে। সেই ভাববাদী কিংবা স্বপ্নদর্শক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে পথে চলতে তোমাদের আদেশ করেছেন সেই পথ থেকে তোমাদের ফিরাতে চেষ্টা করেছে। তোমাদের মধ্য থেকে সেই দুষ্টতা তোমরা লোপ করে দেবে। \p \v 6 যদি তোমার নিজের ভাই, অথবা তোমার ছেলে বা মেয়ে, অথবা যে স্ত্রীকে তুমি ভালোবাসো, অথবা তোমার খুব কাছের বন্ধু গোপনে বিপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে, “চলো আমরা অন্য দেবতার আরাধনা করি” (যে দেবতাদের তোমরা বা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা জানোনি, \v 7 তোমাদের চারিদিকে, দূরে বা কাছে, দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত যে কোনও দেবতা হোক), \v 8 তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না বা তাদের কথা শুনবে না। তাদের প্রতি কোনও করুণা করবে না। তাদের নিষ্কৃতি দেবে না কিংবা রক্ষা করবে না। \v 9 তাদের অবশ্যই মেরে ফেলবে। তাদের মেরে ফেলার কাজটি তুমি নিজের হাতেই আরম্ভ করবে, তারপর অন্য সবাই মেরে ফেলবে। \v 10 যিনি তোমাকে মিশর দেশের দাসত্ব থেকে বের করে এনেছেন তোমার সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে সে তোমাকে ফিরাবার চেষ্টা করেছে বলে তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে। \v 11 তাতে ইস্রায়েলীরা সকলে সেই কথা শুনে ভয় পাবে এবং তোমাদের মধ্যে কেউ আর এরকম মন্দ কাজ করবে না। \p \v 12 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেসব নগরে তোমাদের বসবাস করবার জন্য দিতে যাচ্ছেন তার কোনো একটির সম্বন্ধে হয়তো তোমরা শুনতে পাবে যে, \v 13 সেখানকার ইস্রায়েলীদের মধ্যে কিছু দুষ্টলোক উদিত হয়েছে যারা নগরবাসী লোকদের এই বলে বিপথে টেনে নিয়ে গিয়েছে, “চলো আমরা অন্য দেবতার আরাধনা করি” (যে দেবতাদের সম্বন্ধে তোমরা জানো না), \v 14 তবে তুমি জিজ্ঞাসা করবে, অনুসন্ধান করবে ও যত্নের সঙ্গে প্রশ্ন করবে। আর সেই কথা যদি সত্যি হয় এবং প্রমাণিত হয় যে তোমাদের মধ্যে এই ঘৃণ্য কাজ সম্পন্ন হয়েছে, \v 15 তবে সেখানকার সব বাসিন্দাকে অবশ্যই তরোয়ালের আঘাতে মেরে ফেলতে হবে। সেই নগর এবং তার লোকজন ও পশুপাল তোমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেবে। \v 16 সেখানকার সব লুট করা জিনিসপত্র তোমরা নগরের চকের মাঝখানে একত্র করে সেই নগর ও সেইসব জিনিসপত্র তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আগুনে পুড়িয়ে দেবে। তাতে সেই নগর চিরকালের জন্য ধ্বংসাবশেষ হয়ে থাকবে, সেটি আর কখনও যেন তৈরি করা না হয়, \v 17 এবং এসব বর্জিত জিনিসপত্রের একটিও যেন তোমাদের হাতে দেখা না যায়। তবে সদাপ্রভু তাঁর ভীষণ ক্রোধ থেকে ফিরবেন, তোমাদের প্রতি কৃপা করবেন ও করুণাবিষ্ট হবেন। তিনি তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন, যেমন তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করে শপথ করেছিলেন, \v 18 কারণ আজ আমি তোমাদের যেসব আদেশ দিচ্ছি তা পালন করবে এবং তাঁর দৃষ্টিতে যা ভালো তাই করে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হবে। \c 14 \s1 শুচি ও অশুচি খাবার \p \v 1 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সন্তান। তোমরা মৃত লোকদের জন্য দেহের কোনও জায়গায় ক্ষত করবে না কিংবা মাথার সামনের চুল কামাবে না, \v 2 কেননা তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র প্রজা। পৃথিবীর সমস্ত জাতির মধ্য থেকে সদাপ্রভু তোমাদের বেছে নিয়েছেন যাতে তোমরা তাঁর নিজের বিশেষ সম্পত্তি হও। \p \v 3 কোনও ঘৃণ্য জিনিস খাবে না। \v 4 এসব পশু তোমরা খেতে পারো: গরু, মেষ, ছাগল, \v 5 হরিণ, গজলা হরিণ, রাই হরিণ, বুনো ছাগল, বুনো ছাগবিশেষ, কৃষ্ণসার হরিণ এবং পাহাড়ি মেষ। \v 6 যেসব পশু দ্বিখণ্ড খুরবিশিষ্ট ও জাবর কাটে তার মাংস তোমরা ভোজন করতে পারবে। \v 7 কিন্তু, যারা জাবর কাটে অথবা কেবল দ্বিখণ্ড খুরবিশিষ্ট এমন পশু যেমন উট, খরগোশ অথবা শাফন খাবে না। যদিও তারা জাবর কাটে, তাদের খুর চেরা নয়; সেগুলি তোমাদের পক্ষে অশুচি। \v 8 শূকরও অশুচি; যদিও তার খুর দ্বিখণ্ডিত, সে জাবর কাটে না। তোমরা তাদের মাংস খাবে না কিংবা তাদের মৃতদেহও ছোঁবে না। \p \v 9 জলে বাস করা প্রাণীদের মধ্যে যেগুলির ডানা ও আঁশ আছে সেগুলি তোমরা খেতে পারবে। \v 10 কিন্তু যেগুলির ডানা ও আঁশ নেই সেগুলি তোমরা খেতে পারবে না; তোমাদের জন্য সেগুলি অশুচি। \p \v 11 তোমরা যে কোনো শুচি পাখি খেতে পারো। \v 12 কিন্তু এগুলি তোমরা খাবে না যেমন ঈগল, শকুন, কালো শকুন, \v 13 লাল চিল, কালো চিল, যে কোনো বাজপাখি, \v 14 যে কোনো ধরনের দাঁড়কাক, \v 15 শিংযুক্ত প্যাঁচা, কালপ্যাঁচা, শঙ্খচিল, যে কোনোরকম বাজপাখি, \v 16 ছোটো প্যাঁচা, বড়ো প্যাঁচা, সাদা প্যাঁচা, \v 17 মরু-প্যাঁচা, সিন্ধু-ঈগল, পানকৌড়ি, \v 18 সারস, যে কোনো ধরনের কাক, ঝুঁটিওয়ালা পাখি ও বাদুড়। \p \v 19 উড়ে বেড়ায় এমন সব পোকা তোমাদের পক্ষে অশুচি; সেগুলি খাবে না। \v 20 কিন্তু যেসব প্রাণীর ডানা আছে এবং শুচি সেগুলি তোমরা খেতে পারবে। \p \v 21 মরে পড়ে থাকা কোনো প্রাণী তোমরা খাবে না। তোমাদের নগরে বসবাস করা অন্য জাতির কোনো লোককে তোমরা সেটি দিয়ে দিতে পারবে এবং সে তা খেতে পারবে, কিংবা তোমরা কোনো বিদেশির কাছে সেটি বিক্রি করে দিতে পারবে। কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কাছে পবিত্র প্রজা। \p ছাগলছানার মাংস তার মায়ের দুধে রান্না করবে না। \s1 দশমাংশ \p \v 22 প্রত্যেক বছর তোমাদের জমিতে যেসব ফসল ফলবে তার দশ ভাগের এক ভাগ তোমরা অবশ্যই আলাদা করে রাখবে। \v 23 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে যাতে তোমরা সবসময় ভক্তি করতে শেখো সেইজন্য তোমাদের শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেলের দশমাংশ এবং তোমাদের পালের গরু, মেষ ও ছাগলের প্রথম শাবক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে খাবে। তোমাদের এমন জায়গায় খেতে হবে যে জায়গাটি তিনি নিজেকে প্রকাশ করবার জন্য তাঁর বাসস্থান হিসেবে বেছে নেবেন। \v 24 কিন্তু যদি সেই জায়গাটি খুব দূরে হয় এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের এত আশীর্বাদ করে থাকেন যে সেই দশ ভাগের এক ভাগ বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় (কারণ যে জায়গাটি সদাপ্রভু তাঁর নামের জন্য মনোনীত করবেন সেটি অনেক দূরে), \v 25 তোমাদের দশমাংশ রুপোর সঙ্গে বদলে নেবে, এবং সেই রুপো সঙ্গে নিয়ে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় যাবে। \v 26 সেই রুপো ব্যবহার করে তোমরা যা ইচ্ছা কিনতে পারবে যেমন গরু, মেষ, দ্রাক্ষারস কিংবা গাঁজানো পানীয় বা তোমাদের খুশিমতো যা কিছু। তারপর তোমরা তোমাদের পরিবার নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে খাওয়াদাওয়া করে আনন্দ করবে। \v 27 যে লেবীয়েরা তোমাদের নগরে বসবাস করে তাদের অবহেলা করবে না, কারণ তাদের নিজেদের কোনও ভাগ বা উত্তরাধিকার নেই। \p \v 28 প্রত্যেক তৃতীয় বছরের শেষে, তোমাদের সেই বছরের ফসলের দশমাংশ তোমাদের নগরে জমা করবে, \v 29 যেন লেবীয়েরা (যাদের নিজেদের কোনো ভাগ বা উত্তরাধিকার নেই) এবং বিদেশিরা, পিতৃহীন ও বিধবা যারা তোমাদের নগরে বাস করে তারা এসে খেয়ে তৃপ্ত হতে পারে, এবং যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হাতের সব কাজে আশীর্বাদ করেন। \c 15 \s1 ঋণ মকুবের বছর \p \v 1 প্রতি সপ্তম বছরের শেষে তোমরা ঋণ মকুব করবে। \v 2 এইভাবে এটি করতে হবে প্রত্যেক ঋণদাতা অন্য ইস্রায়েলীকে দেওয়া ঋণ মকুব করে দেবে। ঋণ মকুব করার জন্য সদাপ্রভু যে সময় ঠিক করে দিয়েছেন তা ঘোষণা করা হয়েছে বলে তাদের নিজের লোকদের কাছ থেকে ঋণ শোধের দাবি করবে না। \v 3 বিদেশিদের কাছ থেকে ঋণ শোধের দাবি করতে পারো, কিন্তু তোমাদের ইস্রায়েলী ভাইদের ঋণ তোমাদের মকুব করে দিতে হবে। \v 4 তবে, তোমাদের মধ্যে কারোর গরিব থাকার কথা নয়, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের অধিকার করার জন্য দিচ্ছেন, তিনি তোমাদের প্রচুর আশীর্বাদ করবেন, \v 5 কেবল আজ আমি তোমাদের যে সমস্ত আজ্ঞা দিচ্ছি সেগুলি যত্নের সঙ্গে পালন করার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্পূর্ণ বাধ্য হোয়ো। \v 6 কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে তোমাদের আশীর্বাদ করবেন, এবং তোমরা অনেক জাতিকে ঋণ দেবে কিন্তু কারোর কাছ থেকে ঋণ নেবে না। তোমরা বহু জাতির উপর রাজত্ব করবে কিন্তু কেউ তোমাদের উপরে রাজত্ব করবে না। \p \v 7 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেই দেশের কোনো জায়গায় যদি তোমাদের কোনো ইস্রায়েলী ভাই গরিব হয়, তার প্রতি তোমাদের হৃদয় কঠিন কোরো না কিংবা তার জন্য তোমাদের হাত মুঠো কোরো না। \v 8 বরং, তোমরা হাত খোলা রেখো এবং তাদের প্রয়োজন অনুসারে তাদের ঋণ দিয়ো। \v 9 সাবধান, তোমাদের মনে এই মন্দ চিন্তাকে আমল দিয়ো না “সপ্তম বছর, ঋণ মকুবের বছর, প্রায় এসে গেছে,” সেইজন্য তোমাদের সেই অভাবী ইস্রায়েলী ভাইয়ের প্রতি এই মনোভাব নিয়ে তাকে খালি হাতে বিদায় কোরো না। সে তখন সদাপ্রভুর কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারে, এবং তোমরা এই পাপের জন্য দোষী হবে। \v 10 মনে অনিচ্ছা না রেখে খোলা হাতে তাকে দেবে; তাহলে এর জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সব কাজে আশীর্বাদ করবেন এবং তোমরা যাতে হাত দেবে তাতেই আশীর্বাদ পাবে। \v 11 দেশের মধ্যে সবসময়ই গরিব মানুষজন থাকবে। সেইজন্য আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি যে, তোমাদের দেশে যেসব ইস্রায়েলী ভাই গরিব এবং অভাবী তাদের প্রতি তোমাদের হাত খোলা রাখবে। \s1 দাস-দাসীদের মুক্তি \p \v 12 যদি তোমাদের কোনও মানুষ—হিব্রু পুরুষ কিংবা স্ত্রী—নিজেদেরকে তোমাদের কাছে বিক্রি করে এবং ছয় বছর তোমাদের সেবা করে, তাহলে সপ্তম বছরে তাকে অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। \v 13 আর যখন তোমরা তাকে ছেড়ে দেবে, তাকে খালি হাতে বিদায় করবে না। \v 14 তোমাদের পাল, খামার ও আঙুর মাড়াইয়ের জায়গা থেকে যথেষ্ট পরিমাণ তাকে দেবে। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে পরিমাণ আশীর্বাদ করেছেন তোমরা সেই পরিমাণেই তাকে দেবে। \v 15 মনে রেখো, মিশরে তোমরাও দাস ছিলে এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের মুক্ত করেছেন। সেইজন্য আজ আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি। \p \v 16 কিন্তু তোমার দাস যদি তোমাকে বলে, “আমি আপনাকে ছেড়ে যেতে চাই না,” কেননা সে তোমাকে ও তোমার পরিবারকে ভালোবাসে এবং সে তোমার কাছে ভালোই আছে, \v 17 তবে তুমি তার কানের লতি দরজার উপর রেখে তুরপুণ দিয়ে ফুটো করে দেবে, আর সে সারা জীবন তোমার দাস হয়ে থাকবে। তোমার দাসীর বেলায়ও তাই করবে। \p \v 18 দাস কিংবা দাসীকে মুক্ত করে দেওয়াটা তোমার কোনও কষ্টের ব্যাপার বলে মনে কোরো না, কারণ এই ছয় বছর সে তোমার জন্য যে কাজ করেছে তার দাম দুজন মজুরের মজুরির সমান। তাতে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন। \s1 প্রথমজাত পশু শাবক \p \v 19 তোমাদের গরু, মেষ ও ছাগলের প্রত্যেকটি প্রথমজাত পুরুষ শাবক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য আলাদা করে রাখবে। তোমাদের গরুর প্রথমজাত বাচ্চাকে কাজে লাগাবে না ও মেষের প্রথম শাবকের লোম ছাঁটবে না। \v 20 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় প্রত্যেক বছর তোমরা তোমাদের পরিবার নিয়ে তাঁর সামনে সেগুলির মাংস খাবে। \v 21 যদি কোনো পশুর খুঁত থাকে, খোঁড়া কিংবা অন্ধ হয়, কিংবা কোনো বড়ো ধরনের দোষ থাকে, সেটি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করবে না। \v 22 সেটি তোমরা নিজেদের নগরেই খাবে। অশুচি এবং শুচি সকলেই সেটি গজলা হরিণ বা হরিণের মাংসের মতোই খেতে পারবে। \v 23 কিন্তু তোমরা রক্ত খাবে না; জলের মতো করে মাটিতে ঢেলে দেবে। \c 16 \s1 নিস্তারপর্ব \p \v 1 আবীব মাসে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে তোমরা নিস্তারপর্ব পালন করবে, কারণ আবীব মাসেই রাতের বেলায় তিনি তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন। \v 2 সদাপ্রভু নিজের নামের জন্য যে বাসস্থান মনোনীত করবেন সেখানে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে তোমাদের গরু বা মেষের পাল থেকে পশু নিয়ে নিস্তারপর্বে উৎসর্গ করবে। \v 3 সেই পশুর মাংস তোমরা খামিরযুক্ত রুটির সঙ্গে খাবে না, কিন্তু সাত দিন খামিরবিহীন রুটি খাবে, তা দুঃখের সময়ের রুটি, কারণ তোমরা দ্রুত মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে—যেন সারা জীবন মিশর থেকে বেরিয়ে আসার সময় তোমরা মনে রাখতে পারো। \v 4 এই সাত দিন সারা দেশে তোমাদের মধ্যে যেন খামির পাওয়া না যায়। প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলা তোমরা যে মাংস উৎসর্গ করবে তা যেন সকাল পর্যন্ত পড়ে না থাকে। \p \v 5 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া আর কোনও নগরে তোমরা নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে না \v 6 যে জায়গাটি তিনি নিজেকে প্রকাশ করবার জন্য তাঁর বাসস্থান হিসেবে মনোনীত করবেন কেবল সেখানেই তা উৎসর্গ করবে। যেদিন তোমরা মিশর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছ প্রত্যেক বছর সেদিনে সেখানে তোমরা সন্ধ্যাবেলায় নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে, যখন সূর্য ডুবে যাবে। \v 7 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় সেই মাংস রান্না করে খাবে। তারপর সকালে নিজেদের তাঁবুতে ফিরে যাবে। \v 8 ছয় দিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে আর সাত দিনের দিন তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে শেষ দিনে পবিত্র সভার আয়োজন করবে এবং কোনও কাজ করবে না। \s1 সপ্তাহের উৎসব \p \v 9 মাঠের ফসলে প্রথম কাস্তে দেওয়া আরম্ভ করা থেকে তোমরা সাত সপ্তাহ গণনা করবে। \v 10 তারপর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আশীর্বাদ অনুযায়ী সংগতি থেকে নিজের ইচ্ছায় উপহার দিয়ে সপ্তাহের উৎসব পালন করবে। \v 11 আর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিজের নামের বাসস্থানের জন্য যে জায়গা মনোনীত করবেন সেখানে—তুমি, তোমার ছেলেমেয়ে, তোমার দাস-দাসীরা, তোমার নগরের লেবীয়রা ও বিদেশিরা, পিতৃহীনেরা ও বিধবারা যারা তোমাদের মধ্যে বাস করে সবাই আনন্দ করবে। \v 12 মনে রাখবে তোমরাও মিশরে দাস ছিলে, এবং এসব অনুশাসন যত্নের সঙ্গে পালন করবে। \s1 কুটিরবাস-পর্ব \p \v 13 তোমাদের খামার এবং আঙুর মাড়াই করবার জায়গা থেকে সবকিছু তুলে রাখবার পরে তোমরা কুটিরবাস-পর্ব পালন করবে। \v 14 তোমাদের উৎসবে আনন্দ করবে—তুমি, তোমার ছেলেমেয়ে, তোমার দাস-দাসীরা, তোমার নগরের লেবীয়রা ও বিদেশিরা, পিতৃহীনেরা ও বিধবারা যারা তোমাদের মধ্যে বসবাস করে সবাই। \v 15 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে জায়গা মনোনীত করবেন সেখানেই তোমরা তাঁর উদ্দেশে সাত দিন ধরে এই উৎসব পালন করবে। কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সমস্ত ফসলে ও হাতের সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন, এবং তোমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হবে। \p \v 16 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় তাঁর সামনে তোমাদের সব পুরুষ বছরে তিনবার উপস্থিত হবে খামিরবিহীন রুটির উৎসব, সপ্তাহের উৎসব এবং কুটিরবাস-পর্ব। সদাপ্রভুর সামনে কেউ খালি হাতে আসবে না \v 17 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে পরিমাণ আশীর্বাদ করছেন তা বুঝে তোমাদের প্রত্যেকেই যেন কিছু না কিছু নিয়ে আসে। \s1 বিচারকগণ \p \v 18 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যেসব নগর দিতে যাচ্ছেন তার প্রত্যেকটিতে প্রত্যেক গোষ্ঠীর জন্য তোমরা বিচারক ও কর্মকর্তা নিযুক্ত করবে, এবং তারা ন্যায়ভাবে লোকদের বিচার করবে। \v 19 অন্যায় বিচার করবে না কিংবা কারোর পক্ষ নেবে না। ঘুস নিয়ো না, কারণ ঘুস জ্ঞানীদের চোখ অন্ধ করে এবং নির্দোষ লোকদের কথা পরিবর্তন করে। \v 20 ন্যায্য কেবল ন্যায্যরই অনুগামী হবে, যেন তোমরা বেঁচে থেকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ দেবেন তা অধিকার করতে পারো। \s1 অন্য দেবতাদের উপাসনা \p \v 21 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে যে যজ্ঞবেদি তৈরি করবে তার পাশে কোনোরকম কাঠের আশেরা-খুঁটি পুঁতবে না, \v 22 এবং কোনো পবিত্র পাথর খাড়া করবে না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এসব ঘৃণা করেন। \c 17 \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে তোমরা এমন কোনও গরু কিংবা মেষ উৎসর্গ করবে না যার খুঁত আছে, কারণ তিনি তা ঘৃণা করেন। \p \v 2 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যেসব নগর দেবেন তার যে কোনো একটির মধ্যে যদি কোনও পুরুষ কিংবা স্ত্রীলোক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া বিধান অমান্য করে তাঁর দৃষ্টিতে যা মন্দ তা করে, \v 3 এবং আমার আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে অন্য দেবতাদের উপাসনা করে, তাদের কাছে কিংবা সূর্য, চাঁদ বা আকাশের তারাদের কাছে নত হয়, \v 4 এবং তা তোমাদের জানানো হয়, তবে তোমরা তা ভালো করে তদন্ত করে দেখবে। যদি তা সত্যি হয় এবং এরকম ঘৃণিত কাজ ইস্রায়েলীদের মধ্যে করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়, \v 5 তবে যে পুরুষ বা স্ত্রীলোক এরকম জঘন্য কাজ করেছে তোমরা তাকে নগরের দ্বারের কাছে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে। \v 6 কোনও মানুষকে মেরে ফেলতে হলে দুই বা তিনজন সাক্ষীর কথার উপর নির্ভর করে তা করতে হবে, মাত্র একজন সাক্ষীর কথার উপর নির্ভর করে তা করবে না। \v 7 তাকে মেরে ফেলবার জন্য সাক্ষীরাই প্রথমে পাথর ছুঁড়বে, তারপর অন্যান্য লোকেরা ছুঁড়বে। তোমাদের মধ্য থেকে দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \s1 আদালত \p \v 8 যদি এমন সব মামলা তোমাদের আদালতে আসে যেগুলি বিচার করা তোমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়—সেটি রক্তপাত, বিবাদ অথবা আঘাতের কারণে—তবে সেই মামলা নিয়ে সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় যাবে। \v 9 লেবীয় যাজকের এবং সেই সময় যে বিচারের দায়িত্বে থাকবে তাদের কাছে যাবে। তোমরা তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করবে এবং তারা রায় দেবে। \v 10 সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় তারা যে রায় দেবে, তোমরা সেই অনুযায়ী কাজ করবে। তবে সাবধান, তারা তোমাদের যা যা করতে বলবে তোমরা তার সবই করবে। \v 11 তোমাদের তারা যা শিক্ষা দেবে এবং যে রায় দেবে সেইমতোই তোমরা কাজ করবে। তারা তোমাদের যা বলবে সেই অনুযায়ী করবে, ডানদিকে বা বাঁদিকে ফিরবে না। \v 12 যদি কেউ বিচারকের কথা কিংবা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবাকারী সেই যাজকের কথা অবজ্ঞা করে তবে তাকে মেরে ফেলবে। ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে দুষ্টতা তোমাদের শেষ করতে হবে। \v 13 সমস্ত লোক সেই কথা শুনে ভয় পাবে, এবং আর অবজ্ঞা দেখাবে না। \s1 রাজা \p \v 14 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশটি তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানে গিয়ে তা অধিকার করে যখন তোমরা সেখানে বসবাস করতে থাকবে এবং বলবে, “আমাদের নিকটবর্তী জাতিগুলির মতো এসো, আমরা আমাদের জন্য একজনকে রাজা হিসেবে বেছে নিই,” \v 15 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যাকে ঠিক করে দেবেন তাকেই তোমরা নিশ্চয় করে তোমাদের রাজা করবে। সে যেন তোমাদের ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্যে একজন হয়। যে ইস্রায়েলী নয়, এমন কোনও বিদেশিকে তোমাদের উপরে রাজা করবে না \v 16 সেই রাজা যেন নিজের জন্য অনেক ঘোড়া জোগাড় না করে কিংবা আরও ঘোড়া আনার জন্য মিশরে ফেরত না পাঠায়, কেননা সদাপ্রভু তোমাদের বলেছেন, “তোমরা ওই পথে আর ফিরে যাবে না।” \v 17 তার যেন অনেক স্ত্রী না থাকে, তাতে তার মন বিপথে যাবে। সে যেন প্রচুর পরিমাণে সোনা এবং রুপো জমা না করে। \p \v 18 সে যখন নিজের সিংহাসনে বসবে তখন সে যেন নিজের জন্য গোটানো পুঁথিতে এই বিধানের কথাগুলি লিখে রাখে, যেটি লেবীয় যাজকদের বিধানের অনুলিপি। \v 19 সেটি তার কাছে থাকবে, এবং সারা জীবন তাকে সেটি পড়তে হবে যাতে সে তার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভক্তিপূর্ণ ভয় করতে শেখে এবং এই বিধানের সমস্ত কথা ও অনুশাসনের কথাগুলি মেনে চলে \v 20 এবং নিজেকে অন্যান্য ইস্রায়েলী ভাইদের থেকে ভালো মনে না করে আর সেই বিধানের ডানদিকে বা বাঁদিকে সরে না যায়। তাহলে সে এবং তার বংশধরেরা ইস্রায়েলের উপরে বহুদিন রাজত্ব করতে পারবে। \c 18 \s1 যাজকদের এবং লেবীয়দের জন্য দান \p \v 1 লেবীয় যাজকদের—বাস্তবিক, লেবির সমস্ত গোষ্ঠীর—ইস্রায়েলের সঙ্গে কোনও অংশ বা উত্তরাধিকার থাকবে না। তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে আগুন দ্বারা যে উপহার উৎসর্গ করবে তার উপরেই তারা নির্ভর করবে, কারণ সেটিই তাদের উত্তরাধিকার। \v 2 তাদের ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্যে কোনও উত্তরাধিকার থাকবে না; সদাপ্রভুই তাদের উত্তরাধিকার, যেমন তিনি তাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। \p \v 3 লোকেরা গরু বা মেষ উৎসর্গ করলে তার থেকে এগুলি হল যাজকদের প্রাপ্য: কাঁধ, পাকস্থলী এবং মাথা থেকে মাংস। \v 4 তোমরা তাদের তোমাদের শস্যের, নতুন দ্রাক্ষারসের ও জলপাই তেলের অগ্রিমাংশ, এবং তোমাদের মেষদের গা থেকে ছেঁটে নেওয়া প্রথম লোম দেবে, \v 5 কারণ সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের ও তাদের বংশধরদের মনোনীত করেছেন যেন তারা সবসময় সদাপ্রভুর নামে দাঁড়িয়ে তাঁর সেবা করে। \p \v 6 যদি কোনও লেবীয় তার বাসস্থান ছেড়ে ইস্রায়েলের যে কোনো নগরে চলে যায়, এবং সত্যিকারের ইচ্ছা নিয়ে সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় যায়, \v 7 তবে অন্যান্য লেবীয় ভাইদের মতো সেও সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে সেখানে তার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে সেবাকাজ করতে পারবে। \v 8 তার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির মূল্য পেলেও সেখানকার লেবীয়দের সঙ্গে সে সমান ভাগের অধিকারী হবে। \s1 ঘৃণ্য রীতি \p \v 9 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ দিতে যাচ্ছেন, সেখানে গিয়ে সেখানকার জাতিগুলির সব ঘৃণ্য কাজ তোমরা অনুকরণ করে শিখবে না। \v 10 তোমাদের মধ্যে যেন একজনকেও পাওয়া না যায় যারা তাদের ছেলেমেয়েদের আগুনে উৎসর্গ করে, যারা ভবিষ্যৎ-কথন বা মায়াবিদ্যা অনুশীলন করে, লক্ষণ দেখে ভবিষ্যতের কথা বলে, যাদু করে, \v 11 মন্ত্রতন্ত্র খাটায় বা আত্মার মাধ্যম বা প্রেতসাধক হয়। \v 12 যে কেউ এসব কাজ করে সে সদাপ্রভুর কাছে ঘৃণ্য; কেননা এসব ঘৃণ্য কাজের জন্যই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই সমস্ত জাতিকে তোমাদের সামনে থেকে তাড়িয়ে দেবেন। \v 13 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তোমাদের নির্দোষ থাকতে হবে। \s1 সেই ভাববাদী \p \v 14 তোমরা যে জাতিদের অধিকারচ্যুত করবে তারা গণক কিংবা মায়াবিদ্যা ব্যবহারকারীদের কথা শোনে। কিন্তু তোমাদের ক্ষেত্রে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের তা করার অনুমতি দেননি। \v 15 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্য থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীর উত্থান ঘটাবেন। তোমরা নিশ্চয়ই তাঁর কথা শুনবে। \v 16 কেননা হোরেবে যেদিন তোমরা সবাই সদাপ্রভুর সামনে সমবেত হয়েছিলে সেদিন তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে তাই চেয়েছিলে যখন তোমরা বলেছিলে, “আমরা আর আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রব শুনতে কিংবা এই মহান আগুন দেখতে চাই না, তাহলে আমরা মরে যাব।” \p \v 17 সদাপ্রভু আমাকে বলেছিলেন, “তারা ঠিকই বলেছে। \v 18 আমি তাদের ইস্রায়েলী ভাইদের মধ্য থেকে তাদের জন্য তোমার মতো একজন ভাববাদী উঠাব, এবং আমি তার মুখে আমার বাক্য দেব। তাকে আমি যা বলতে আদেশ দেব সে তাই বলবে। \v 19 সেই ভাববাদী আমার নাম করে যে কথা বলবে কেউ আমার সেই কথা যদি না শোনে, তবে আমি নিজেই সেই লোককে প্রতিফল দেব। \v 20 কিন্তু আমি আদেশ করিনি এমন কোনও কথা যদি কোনও ভাববাদী আমার নাম করে বলে কিংবা সে যদি অন্য দেবতার নামে কথা বলে, তবে তাকে মেরে ফেলতে হবে।” \p \v 21 তোমরা মনে মনে বলতে পারো, “সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন কি না তা আমরা কেমন করে জানব?” \v 22 কোনও ভাববাদী যদি সদাপ্রভুর নাম করে কোনও কথা বলে আর তা যদি অসত্য হয় কিংবা না ঘটে, তবে বুঝতে হবে সেই কথা সদাপ্রভু বলেননি। সেই ভাববাদী নিজের ধারণার উপর ভিত্তি করে বলেছে, সুতরাং ভয় পেয়ো না। \c 19 \s1 আশ্রয়-নগর \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের অধিকার করবার জন্য দেবেন সেখানকার জাতিদের যখন তিনি ধ্বংস করে ফেলবেন এবং তোমরা তাদের নগরে এবং বাড়িতে বসবাস করবে, \v 2 তখন যে দেশ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের অধিকার করবার জন্য দেবেন সেখান থেকে তিনটি নগর তোমরা আলাদা করে রাখবে। \v 3 তোমরা নিজেদের জন্য পথ প্রস্তুত করবে এবং সদাপ্রভু যে দেশের অধিকার দেবেন, তোমরা সেটি তিন ভাগ করবে, যেন যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করে তাহলে সে কোনও একটি নগরে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে। \p \v 4 যে হত্যা করেছে সে সেখানে পালিয়ে বাঁচতে পারে, তার অনুশাসন এইরকম—কোনও হিংসা না করে যদি কেউ তার প্রতিবেশীকে অনিচ্ছাবশত হত্যা করে। \v 5 যেমন, একজন লোক অন্য একজনের সঙ্গে বনে কাঠ কাটতে গেল, আর সেখানে গাছ কাটতে গিয়ে কোপ দেবার সময় কুড়ুলের ফলাটি ফসকিয়ে গিয়ে অন্য লোকটিকে আঘাত করল এবং তাতে সে মারা গেল। সেই লোকটি কোনও একটি আশ্রয়-নগরে গিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারে। \v 6 তা না হলে রক্তের প্রতিশোধ যার নেওয়ার কথা সে রাগের বশে তাকে তাড়া করতে পারে আর আশ্রয়-নগর কাছে না হলে তাকে মেরে ফেলতে পারে, যদিও মনে হিংসা নিয়ে মেরে ফেলেনি বলে মৃত্যু তার প্রাপ্য শাস্তি নয়। \v 7 সেইজন্য আমি তোমাদের নিজেদের জন্য তিনটি নগর আলাদা করে রাখবার আদেশ দিচ্ছি। \p \v 8 যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের এলাকা বৃদ্ধি করেন, যেমন তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করে শপথ করেছিলেন, এবং তাদের কাছে প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদের সম্পূর্ণ দেশটিই দেবেন, \v 9 কারণ আমি যেসব আজ্ঞা আজ তোমাদের দিচ্ছি সেগুলি যত্নের সঙ্গে পালন করবে—তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসবে এবং তাঁর বাধ্য হয়ে চলবে—তাহলে আরও তিনটি নগর আলাদা করবে। \v 10 তোমরা এটি করবে যাতে সম্পত্তি হিসেবে যে দেশটি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেই দেশের উপর নির্দোষ লোকের রক্তপাত না হয় এবং রক্তপাতের দোষে তোমরা দোষী না হও। \p \v 11 কিন্তু যদি কেউ হিংসা করে প্রতিবেশীর উপর হামলা করে মেরে ফেলবার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষায় বসে থাকে এবং তাকে আক্রমণ করে মেরে ফেলে আর তার কাছের আশ্রয়-নগরে পালিয়ে যায়, \v 12 তবে তার নগরের প্রবীণ নেতারা লোক পাঠিয়ে সেই নগর থেকে তাকে ধরে আনবে এবং রক্তের প্রতিশোধ যার নেওয়ার কথা তার হাতে তাকে মেরে ফেলার জন্য তুলে দেবে। \v 13 তাকে কোনও দয়া দেখাবে না। তোমরা ইস্রায়েলীদের মধ্য থেকে নির্দোষ লোকের রক্তপাতের দোষ মুছে ফেলবে, তাতে তোমাদের মঙ্গল হবে। \p \v 14 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ অধিকার করার জন্য তোমাদের দিচ্ছেন সেই দেশে তোমাদের পূর্বপুরুষেরা চিহ্ন দিয়ে যে সীমানা চিহ্নিত করেছে, তোমাদের প্রতিবেশীর সেই সীমানা সরাবে না। \s1 সাক্ষী \p \v 15 কেউ কোনো দোষ বা অপরাধ করলে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে তার বিরুদ্ধে মাত্র একজন সাক্ষী দাঁড়ালে হবে না। দুই বা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে কোনো বিষয় সত্যি বলে প্রমাণিত হবে। \p \v 16 যদি কোনও বিদ্বেষপরায়ণ সাক্ষী কারও বিরুদ্ধে অন্যায় কাজের নালিশ করে, \v 17 তবে সেই বিতর্কে লিপ্ত দুজনকে সেই সময়কার যাজকদের ও বিচারকদের কাছে গিয়ে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়াতে হবে। \v 18 বিচারকেরা ভালো করে তদন্ত করবে, আর যদি সে তার ইস্রায়েলী ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবার দরুন মিথ্যাবাদী বলে ধরা পড়ে, \v 19 তবে সে তার ভাইয়ের যা করতে চেয়েছিল তাই তার প্রতি করতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকে এই রকমের দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \v 20 এই কথা শুনে অন্য সব লোক ভয় পাবে এবং তোমাদের মধ্যে এরকম মন্দ কাজ আর কখনও তারা করবে না। \v 21 কোনও দয়া দেখাবে না: প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের পরিবর্তে চোখ, দাঁতের পরিবর্তে দাঁত, হাতের পরিবর্তে হাত, পায়ের পরিবর্তে পা। \c 20 \s1 যুদ্ধযাত্রা \p \v 1 তোমরা যখন তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করবে তখন তোমাদের চেয়ে বেশি ঘোড়া, রথ ও সৈন্য দেখে ভয় পাবে না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি তোমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন, তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকবেন। \v 2 তোমরা যুদ্ধযাত্রা করার আগে, যাজক সামনে এসে সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বলবেন। \v 3 তিনি বলবেন, “হে ইস্রায়েল, শোনো আজ তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করতে যাচ্ছ। দুর্বলচিত্ত হবে না বা ভয় পাবে না; তাদের দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হবে না বা ভয়ে কাঁপবে না। \v 4 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিনি তোমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন তিনি তোমাদের হয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমাদের জয়ী করবেন।” \p \v 5 পদাধিকারীরা সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বলবে “তোমাদের মধ্যে কি কেউ নতুন বাড়ি তৈরি করে তা উৎসর্গ করেনি? সে বাড়ি ফিরে যাক, পাছে সে যদি যুদ্ধে মারা যায় তাহলে অন্য কেউ তার বাড়িতে বসবাস করা শুরু করবে। \v 6 কেউ কি নতুন দ্রাক্ষাক্ষেত প্রস্তুত করেছে এবং এখনও তা উপভোগ করা শুরু করেনি? সে বাড়ি ফিরে যাক, পাছে সে যদি যুদ্ধে মারা যায় তাহলে অন্য কেউ তা উপভোগ করবে। \v 7 কারোর কি বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছে কিন্তু এখনও বিয়ে হয়নি? সে বাড়ি ফিরে যাক, পাছে সে যদি যুদ্ধে মারা যায় তাহলে অন্য কেউ সেই স্ত্রীকে বিয়ে করবে।” \v 8 তারপর পদাধিকারীরা আরও বলবে, “কেউ কি ভয় পেয়েছে কিংবা দুর্বলচিত্ত? তাহলে সে বাড়ি ফিরে যাক যেন অন্য সৈনিক ভাইদের মনোবলও নষ্ট না হয়।” \v 9 পদাধিকারীরা সৈন্যদের কাছে কথা বলা শেষ করার পর, তারা সৈন্যদের উপরে সেনাপতি নিযুক্ত করবে। \p \v 10 যখন তোমরা কোনও নগর আক্রমণ করতে তার কাছে পৌঁছাবে, সেখানকার লোকদের কাছে সন্ধির কথা ঘোষণা করবে। \v 11 তারা যদি সন্ধি করতে রাজি হয় এবং তাদের দ্বার খুলে দেয়, তবে সেখানকার সমস্ত লোক তোমাদের অধীন হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করবে। \v 12 যদি তারা সন্ধি করতে রাজি না হয় এবং তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে, সেই নগর তোমরা অবরোধ করবে। \v 13 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন সেই নগরটি তোমাদের হাতে তুলে দেবেন, তখন সেখানকার সমস্ত পুরুষকে তোমরা তরোয়ালের আঘাতে মেরে ফেলবে। \v 14 সেই নগরের স্ত্রীলোক, ছেলেমেয়ে, পশুপাল এবং অন্য সবকিছু তোমরা লুটসামগ্রী হিসেবে নিজেদের জন্য নিয়ে নেবে। শত্রুদের দেশ থেকে লুট করা যেসব জিনিস তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দেবেন তা তোমরা ভোগ করতে পারবে। \v 15 যেসব নগর তোমাদের দেশ থেকে দূরে আছে, যেগুলি তোমাদের কাছের জাতিগুলির নগর নয়, সেগুলির প্রতি তোমরা এরকম করবে। \p \v 16 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সম্পত্তি হিসেবে যেসব জাতির নগর তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানকার কাউকেই তোমরা বাঁচিয়ে রাখবে না। \v 17 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তোমরা—হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের—সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। \v 18 তা না করলে, তারা তাদের দেবতাদের পূজা করার সময় যেসব ঘৃণ্য কাজ করে তা তোমরাও শিখবে আর তাতে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করবে। \p \v 19 অনেক দিন ধরে যখন তোমরা কোনও নগর অবরোধ করবে, সেটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সেটি অধিকার করার জন্য, তখন কুড়ুল দিয়ে সেখানকার কোনো গাছ নষ্ট করবে না, কারণ তোমরা তার ফল খেতে পারবে। সেগুলিকে কেটে ফেলবে না। গাছেরা কি মানুষ, যে তোমরা সেগুলিকে অবরোধ করবে? \v 20 তবে যে গাছগুলিতে ফল ধরে না বলে তোমরা জানো সেগুলি কেটে ফেলবে এবং অবরোধ তৈরি করতে পারবে যতক্ষণ না যে নগরের বিরুদ্ধে তোমাদের যুদ্ধ হচ্ছে সেটি পতিত হচ্ছে। \c 21 \s1 অমীমাংসিত হত্যার প্রায়শ্চিত্ত \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ অধিকার করার জন্য তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানকার কোনো মাঠে হয়তো কাউকে খুন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যেতে পারে, কিন্তু কে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি, \v 2 তাহলে তোমাদের প্রবীণ নেতারা ও বিচারকেরা বাইরে গিয়ে সেই মৃতদেহ থেকে সবচেয়ে কাছের নগর কত দূর তা মেপে দেখবে। \v 3 তারপর যে নগর মৃতদেহের কাছে সেখানকার প্রবীণ নেতারা একটি বকনা-বাছুর নেবে যেটি কখনও কোনও কাজ করেনি ও যার কাঁধে কখনও জোয়াল দেওয়া হয়নি \v 4 এবং তারা সেটিকে এমন এক উপত্যকায় নিয়ে যাবে যেখানে একটি জলস্রোত আছে আর চাষ বা বীজবপন করা হয়নি। সেই উপত্যকায় তারা বকনা-বাছুরটির ঘাড় ভেঙে দেবে। \v 5 লেবীয় যাজকেরা সামনে এগিয়ে যাবে, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের মনোনীত করেছেন পরিচর্যা কাজের জন্য, সদাপ্রভুর নামে আশীর্বাদ উচ্চারণ করার জন্য এবং বিবাদের ও শারীরিক আক্রমণের বিচার করার জন্য। \v 6 তারপর মৃতদেহের সব থেকে কাছের নগরের প্রবীণ নেতারা উপত্যকায় যে বকনা-বাছুরটির ঘাড় ভাঙা হয়েছিল তার উপরে তাদের হাত ধুয়ে ফেলবে, \v 7 আর তারা ঘোষণা করবে “এই রক্তপাত আমরা নিজেরা করিনি, এবং হতেও দেখিনি। \v 8 হে সদাপ্রভু, যে ইস্রায়েলীদের তুমি মুক্ত করেছ তাদের ক্ষমা করো, এবং এই নির্দোষ লোকটির রক্তপাতের জন্য তুমি তোমার লোকদের দায়ী কোরো না।” এতে সেই রক্তপাতের দোষ ক্ষমা করা হবে, \v 9 এবং তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে নির্দোষ লোকের রক্তপাতের দোষ মুছে ফেলতে পারবে, কারণ তোমরা সদাপ্রভুর চোখে যা ভালো তাই করেছ। \s1 বন্দিনি স্ত্রীলোককে বিয়ে করা \p \v 10 তোমরা যখন শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হাতে তাদের তুলে দেবেন আর তোমরা তাদের বন্দি করবে, \v 11 তখন যদি তাদের মধ্যে কোনও সুন্দরী স্ত্রীলোককে দেখে তোমাদের কারও তাকে ভালো লাগে তবে সে তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে। \v 12 স্ত্রীলোকটিকে তোমার বাড়িতে নিয়ে যাবে আর তার মাথার চুল কামিয়ে দেবে ও তার নখ কেটে ফেলবে \v 13 এবং বন্দি হবার সময় সে যে কাপড় পরেছিল সেগুলি খুলে ফেলবে। সে যখন তোমার বাড়িতে থেকে এক মাস তার বাবা-মায়ের জন্য শোক করবে, তারপর তুমি তার কাছে যেতে পারবে ও তার স্বামী হবে এবং সে তোমার স্ত্রী হবে। \v 14 যদি তুমি তার উপর সন্তুষ্ট না হও, তাকে যেখানে তার ইচ্ছা সেখানে তাকে যেতে দেবে। তুমি তাকে বিক্রি করবে না বা তাকে দাসী করবে না, কারণ তুমি তাকে অসম্মান করেছ। \s1 প্রথমজাতকের পাওনা অধিকার \p \v 15 যদি কোনও পুরুষের দুই স্ত্রী থাকে, এবং সে একজনকে ভালোবাসে অন্যজনকে নয়, এবং তাদের দুজনেরই ছেলে হয় কিন্তু যার প্রথমে ছেলে হয় তাকে সে ভালোবাসে না, \v 16 সে যখন ছেলেদের জন্য তার সম্পত্তির উইল করবে, যে স্ত্রীকে সে ভালোবাসে না তার ছেলেকে বাদ দিয়ে অন্য স্ত্রীর ছেলেটিকে প্রথম ছেলের প্রাপ্য অধিকার দিতে পারবে না। \v 17 যে স্ত্রীকে সে ভালোবাসে না তার ছেলেকে প্রথম ছেলে বলে স্বীকার করে তাকে তার নিজের সর্বস্ব থেকে অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ দিতে হবে। সেই ছেলেই তার বাবার শক্তির প্রথম ফল। প্রথমজাতকের অধিকার তারই পাওনা। \s1 বিদ্রোহী ছেলে \p \v 18 যদি কারও ছেলে একগুঁয়ে এবং বিদ্রোহী হয় যে তার বাবা-মায়ের অবাধ্য এবং তাদের কথা শোনে না যখন তারা তাকে শাসন করে, \v 19 তার বাবা-মা তাকে তাদের নগরের দ্বারে প্রবীণ নেতাদের কাছে ধরে নিয়ে যাবে। \v 20 তারা নগরের বয়স্ক নেতাদের বলবে, “আমাদের এই ছেলে একগুঁয়ে এবং বিদ্রোহী। সে আমাদের অবাধ্য। সে আমাদের অর্থ উড়িয়ে দেয় এবং সে মাতাল।” \v 21 তখন সেই নগরের সমস্ত পুরুষ তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে। তোমাদের মধ্য থেকে সেই দুষ্টতা শেষ করতে হবে। সমস্ত ইস্রায়েল সেই বিষয় শুনবে এবং ভয় পাবে। \s1 অন্যান্য অনুশাসন \p \v 22 যদি কোনও লোক মৃত্যুর শাস্তি পাবার মতো কোনও দোষ করে এবং তাকে মেরে ফেলে গাছে টাঙিয়ে রাখা হয়, \v 23 তবে সকাল পর্যন্ত তার দেহ গাছে টাঙিয়ে রাখবে না। সেদিনই তাকে কবর দিতে হবে, কারণ যাকে গাছে টাঙানো হয় সে ঈশ্বরের অভিশপ্ত। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন তা তোমরা অশুচি করবে না। \c 22 \p \v 1 তোমার ইস্রায়েলী ভাইয়ের কোনও গরু বা মেষকে পথ হারিয়ে অন্য কোথাও চলে যেতে দেখলে তুমি চুপ করে বসে থাকবে না কিন্তু তাকে তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। \v 2 যদি তারা তোমার বাড়ির কাছে না থাকে অথবা তুমি না জানতে পারো যে আসল মালিক কে, তাহলে সেটির বাড়িতে নিয়ে যাবে আর সেখানে রাখবে যতক্ষণ না তারা সেটার খোঁজে আসে। তখন সেটি ফিরিয়ে দেবে। \v 3 গাধা কিংবা গায়ের কাপড় কিংবা হারিয়ে যাওয়া অন্য কিছুর ক্ষেত্রে একইরকম করবে। চুপ করে বসে থাকবে না। \p \v 4 তুমি যদি দেখো তোমার ইস্রায়েলী ভাইয়ের গাধা কিংবা গরু রাস্তায় পড়ে গেছে, চুপ করে বসে থাকবে না। সেটি যাতে উঠে দাড়াতে পারে তার জন্য মালিককে সাহায্য করবে। \p \v 5 কোনও স্ত্রীলোক পুরুষের পোশাক কিংবা কোনও পুরুষ স্ত্রীলোকের পোশাক পরবে না, কারণ যে তা করে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাকে ঘৃণা করেন। \p \v 6 তোমরা যদি পথের পাশে কোনও পাখির বাসা দেখো, তা গাছের উপরে কিংবা মাটিতে হতে পারে, এবং পাখির মা শাবকদের উপর বসে আছে কিংবা ডিমের উপর তা দিচ্ছে, তবে শাবক সমেত মাকে তোমরা ঘরে নিয়ে যাবে না। \v 7 তোমরা শাবকগুলি নিতে পারো, কিন্তু মাকে অবশ্যই ছেড়ে দেবে, যেন তোমাদের মঙ্গল হয় এবং তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারো। \p \v 8 তোমরা যখন নতুন বাড়ি তৈরি করবে, তার ছাদের চারপাশে দেয়ালের মতো করে কিছুটা উঁচু করে দেবে যাতে কেউ ছাদের উপর থেকে পড়লে তোমরা যেন তোমাদের বাড়িতে রক্তপাতের দোষে দোষী না হও। \p \v 9 তোমাদের দ্রাক্ষাক্ষেতে দুই জাতের বীজ লাগাবে না; যদি তোমরা তা করো, তাহলে সেই বীজের ফসল এবং দ্রাক্ষাক্ষেতের আঙুর দুই-ই উপাসনা গৃহের জন্য অপবিত্র হবে। \p \v 10 তোমরা বলদ আর গাধা একসঙ্গে জুড়ে চাষ করবে না। \p \v 11 তোমরা পশম আর মসিনা সুতো মিশিয়ে বোনা কাপড় পরবে না। \p \v 12 তোমাদের গায়ের চাদরের চার কোনায় থোপ লাগাবে। \s1 বিয়ের অনুশাসন ভাঙা \p \v 13 কোনও লোক যদি বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে শোবার পরে তাকে অপছন্দ করে \v 14 এবং তার নিন্দা ও বদনাম করে, বলে, “আমি এই স্ত্রীলোককে বিয়ে করেছিলাম, কিন্তু সে যে কুমারী তার মধ্যে সেই প্রমাণ আমি পেলাম না,” \v 15 তবে সেই স্ত্রীলোকের বাবা-মা নগরের দ্বারে প্রবীণ নেতাদের কাছে তার কুমারী অবস্থার প্রমাণ নিয়ে যাবে। \v 16 তার বাবা প্রবীণ নেতাদের বলবে, “আমি এই লোকের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু সে তাকে অপছন্দ করে। \v 17 এখন সে তার নিন্দা করে বলছে, ‘আমি আপনার মেয়েকে কুমারী অবস্থায় পাইনি।’ কিন্তু এই দেখুন আমার মেয়ের কুমারী অবস্থার প্রমাণ।” পরে তারা সেই কাপড় নগরের প্রবীণ নেতাদের সামনে মেলে ধরবে, \v 18 আর নগরের প্রবীণ নেতারা তার স্বামীকে শাস্তি দেবে। \v 19 তার কাছ থেকে তারা জরিমানা হিসেবে একশো শেকল\f + \fr 22:19 \fr*\ft প্রায় 1.2 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো আদায় করে মেয়েটির বাবাকে দেবে, কারণ এই লোকটি একজন ইস্রায়েলী কুমারী মেয়ের বদনাম করেছে। সে তার স্ত্রীই থাকবে; আর সে যতদিন বেঁচে থাকবে তাকে ছেড়ে দিতে পারবে না। \p \v 20 কিন্তু, সেই অভিযোগ যদি সত্যি হয় এবং মেয়েটির কুমারী অবস্থার কোনও প্রমাণ পাওয়া না যায়, \v 21 তবে মেয়েটিকে তার বাবার বাড়ির দরজার কাছে নিয়ে যেতে হবে আর তার নগরের পুরুষেরা সেখানে তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে। বাবার বাড়িতে থাকবার সময় ব্যভিচার করে ইস্রায়েলীদের মধ্যে মর্যাদাহানিকর কাজ করেছে। তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এরকম দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \p \v 22 কোনো লোককে যদি অন্য লোকের স্ত্রীর সঙ্গে শুতে দেখা যায়, তবে যে তার সঙ্গে শুয়েছে সেই পুরুষ ও সেই স্ত্রীলোক দুজনকেই মেরে ফেলবে। তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এরকম দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \p \v 23 বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এমন কোনও কুমারী মেয়েকে নগরের মধ্যে পেয়ে যদি কেউ তার সঙ্গে শোয়, \v 24 তোমরা দুজনকেই নগরের দ্বারের কাছে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে—মেয়েটিকে মেরে ফেলবে কারণ নগরের মধ্যে থেকেও সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেনি, আর পুরুষটিকে মেরে ফেলতে হবে কারণ সে অন্যের স্ত্রীকে নষ্ট করেছে। তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এরকম দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \p \v 25 কিন্তু বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এমন কোনও মেয়েকে মাঠে পেয়ে যদি তাকে কোনও পুরুষ ধর্ষণ করে, তবে যে লোকটি তা করবে কেবল তাকেই মেরে ফেলবে। \v 26 মেয়েটির প্রতি তোমরা কিছু করবে না; মৃত্যুর শাস্তি পাওয়ার মতো কোনও পাপ সে করেনি। এটি একজন তার প্রতিবেশীকে আক্রমণ করে মেরে ফেলবার মতোই, \v 27 কারণ লোকটি মাঠে মেয়েটিকে পেয়েছিল, আর বাগদত্তা মেয়েটি যদিও চিৎকার করেছিল, তবুও তাকে রক্ষা করবার মতো কেউ সেখানে ছিল না। \p \v 28 যদি কোনও পুরুষ অবিবাহিতা কোনও কুমারী মেয়েকে পেয়ে ধর্ষণ করে এবং তারা ধরা পড়ে, \v 29 তাকে মেয়েটির বাবাকে পঞ্চাশ শেকল\f + \fr 22:29 \fr*\ft প্রায় 575 গ্রাম\ft*\f* রুপো দেবে। মেয়েটিকে নষ্ট করেছে বলে, সেই পুরুষকে বিয়ে করতে হবে। সে আজীবন তাকে ছেড়ে দিতে পারবে না। \p \v 30 কোনও পুরুষ যেন তার বাবার স্ত্রীকে বিয়ে না করে; সে বাবার স্ত্রীর সঙ্গে শুয়ে তার বাবাকে যেন অসম্মান না করে। \c 23 \s1 সমাজ থেকে বহিষ্কার \p \v 1 যার অণ্ডকোষ থেঁৎলে দেওয়া কিংবা পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে সে সদাপ্রভুর লোকদের সমাজে যোগ দিতে পারবে না। \p \v 2 কোনও জারজ লোক বা তার বংশধর সদাপ্রভুর লোকদের সমাজে যোগ দিতে পারবে না; তার দশম পুরুষ পর্যন্তও তা করতে পারবে না। \p \v 3 কোনও অম্মোনীয় কিংবা মোয়াবীয় বা তাদের বংশধরেরা কেউ সদাপ্রভুর লোকদের সমাজে যোগ দিতে পারবে না; তার দশম পুরুষ পর্যন্তও তা করতে পারবে না। \v 4 কেননা তোমরা মিশর থেকে বের হয়ে আসবার পরে তোমাদের যাত্রাপথে তারা খাবার ও জল নিয়ে তোমাদের কাছে এগিয়ে আসেনি, বরং তোমাদের অভিশাপ দেবার জন্য তারা অরাম-নহরয়িম দেশের পথোর নগর থেকে বিয়োরের ছেলে বিলিয়মকে টাকা দিয়ে নিয়ে এসেছিল। \v 5 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বিলিয়মের কথায় সায় দেননি বরং সেই অভিশাপকে তিনি তোমাদের জন্য আশীর্বাদে পরিবর্তন করেছিলেন, কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের ভালোবাসেন। \v 6 তোমরা যতদিন বাঁচবে ততদিন এদের সঙ্গে মৈত্রীচুক্তি করবে না। \p \v 7 কোনও ইদোমীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ ইদোমীয়রা তোমাদের আত্মীয়। কোনও মিশরীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ তোমরা তাদের দেশে বিদেশি হয়ে বসবাস করেছিলে। \v 8 তাদের মধ্যে তৃতীয় পুরুষ থেকে তারা সদাপ্রভুর লোকদের সমাজে যোগ দিতে পারবে। \s1 সেনা-ছাউনিতে অশুচিতা \p \v 9 শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে ছাউনি ফেলবার পরে সমস্ত রকম অশুচিতা থেকে তোমরা দূরে থাকবে। \v 10 রাতে বীর্যপাতের দরুন যদি তোমাদের কোনও পুরুষ অশুচি হয়, তবে তাকে ছাউনির বাইরে গিয়ে থাকতে হবে। \v 11 বিকাল হয়ে আসলে তাকে স্নান করে ফেলতে হবে, এবং সূর্য ডুবে গেলে সে ছাউনিতে ফিরে যেতে পারবে। \p \v 12 শৌচকর্ম করার জন্য ছাউনির বাইরে একটি জায়গা ঠিক করবে। \v 13 তোমাদের বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে মাটি খোঁড়ার জন্য কিছু রাখবে, এবং শৌচকর্ম করার পরে, একটি গর্ত খুড়ে সেই মলে মাটি চাপা দেবে। \v 14 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের রক্ষা করার জন্য এবং তোমাদের শত্রুদের তোমাদের হাতে তুলে দেবার জন্য ছাউনির মধ্যে ঘুরে বেড়ান। তোমাদের ছাউনিকে পবিত্র রাখবে, যেন তিনি তোমাদের মধ্যে মন্দ কিছু না দেখেন এবং তোমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। \s1 বিভিন্ন রকম অনুশাসন \p \v 15 কারও দাস যদি তোমাদের কাছে আশ্রয় নেয়, তাকে তার মনিবের হাতে ফিরিয়ে দেবে না। \v 16 তারা যেখানে চায় ও যে নগর বেছে নেয় সেখানেই তাদের বসবাস করতে দেবে। তাদের উপর অত্যাচার করবে না। \p \v 17 কোনও ইস্রায়েলী পুরুষ বা স্ত্রীলোক যেন দেবদাস-দাসী না হয়। \v 18 মানত পূরণের জন্য কোনো স্ত্রীলোক বেশ্যা কিংবা পুরুষ বেশ্যার উপার্জন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে আসবে না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু উভয়কেই ঘৃণা করেন। \p \v 19 কোনও ইস্রায়েলী ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নেবে না, সেটি অর্থ কিংবা খাবার কিংবা অন্য কিছুর উপর হোক। \v 20 তোমরা বিদেশির কাছ থেকে সুদ নিতে পারো, কিন্তু ইস্রায়েলী ভাইয়ের কাছ থেকে নয়, যেন তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমরা যাতে হাত দেবে তাতেই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করেন। \p \v 21 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে যদি তোমরা কোনও মানত করো, তা পূরণ করতে দেরি কোরো না, কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিশ্চয়ই তা দাবি করবেন এবং তোমরা পাপে দোষী হবে। \v 22 কিন্তু তোমরা যদি মানত না করো, তোমরা দোষী হবে না। \v 23 তোমরা মুখ দিয়ে যে মানতের কথা উচ্চারণ করবে তা তোমাদের পূরণ করতেই হবে, কারণ তোমরা নিজের ইচ্ছায় নিজের মুখেই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে সেই মানত করেছ। \p \v 24 তোমরা যদি তোমাদের প্রতিবেশীর দ্রাক্ষাক্ষেতে যাও, তোমরা খুশিমতো আঙুর খেতে পারবে, কিন্তু তোমাদের ঝুড়িতে কিছু রাখবে না। \v 25 তোমরা যদি তোমাদের প্রতিবেশীর শস্যক্ষেত্রে যাও, তোমরা হাত দিয়ে শিষ ছিঁড়তে পারবে, কিন্তু ফসলের গায়ে কাস্তে লাগাবে না। \c 24 \p \v 1 বিয়ে করার পরে যদি কেউ তার স্ত্রীর মধ্যে কোনও দোষ দেখে তার উপর অসন্তুষ্ট হয়, আর ত্যাগপত্র লিখে তার হাতে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বিদায় করে দেয়, \v 2 আর স্ত্রীলোকটি তার বাড়ি থেকে চলে গিয়ে অন্য এক পুরুষের স্ত্রী হয়, \v 3 এবং তার দ্বিতীয় স্বামীও যদি পরে তাকে অপছন্দ করে একটি ত্যাগপত্র লিখে তার হাতে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বিদায় করে দেয়, কিংবা সে মারা যায়, \v 4 তাহলে তার প্রথম স্বামী, যে তাকে ত্যাগপত্র দিয়েছিল, সে তাকে আর বিয়ে করতে পারবে না কারণ সে অশুচি হয়ে গিয়েছে। সদাপ্রভুর চোখে সেটি ঘৃণ্য কাজ। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ অধিকারের জন্য দিচ্ছেন তোমরা এইভাবে তার উপর পাপ ডেকে আনবে না। \p \v 5 অল্পদিন বিয়ে হয়েছে এমন কোনও লোককে যুদ্ধে পাঠানো চলবে না কিংবা তার উপর অন্য কোনও কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তাকে এক বছর পর্যন্ত বাড়িতে স্বাধীনভাবে থাকতে দিতে হবে যেন সে যে স্ত্রীকে বিয়ে করেছে তাকে আনন্দ দিতে পারে। \p \v 6 ঋণের বন্ধক হিসেবে কারও জাতা নেওয়া চলবে না—তার উপরের পাথরটিও নয়—কারণ তাতে লোকটির বেঁচে থাকার উপায়টিই বন্ধক নেওয়া হবে। \p \v 7 যদি দেখা যায়, কোনও লোক এক ইস্রায়েলী ভাইকে চুরি করে নিয়ে দাস হিসেবে ব্যবহার করছে কিংবা বিক্রি করে দিয়েছে, তবে সেই চোরকে মরতে হবে। তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এরকম দুষ্টতা শেষ করে দেবে। \p \v 8 চর্মরোগ দেখা দিলে তোমাদের সতর্ক হতে হবে এবং লেবীয় যাজকেরা যে নির্দেশ দেবে তা যত্নের সঙ্গে পালন করতে হবে। আমি তাদের যে আজ্ঞা দিয়েছি তোমাদের সাবধান হয়ে সেইমতো চলতে হবে। \v 9 মিশর দেশ থেকে বেরিয়ে আসার পরে পথে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মরিয়মের প্রতি যা করেছিলেন সেই কথা মনে রেখো। \p \v 10 তোমাদের প্রতিবেশীকে কোনও রকম ধার দিলে, তোমরা বন্ধকি জিনিস নেওয়ার জন্য তার বাড়ির মধ্যে যাবে না। \v 11 বাইরে থাকবে এবং যাকে তোমরা ধার দিচ্ছ সেই বন্ধকি জিনিসটি বাইরে নিয়ে আসবে। \v 12 যদি সেই প্রতিবেশী গরিব হয়, তবে তোমরা তার বন্ধকি জিনিসটি রেখে ঘুমাতে যাবে না। \v 13 সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে তার গায়ের কাপড় তাকে ফিরিয়ে দেবে যেন তোমাদের প্রতিবেশী সেটি গায়ে দিয়ে ঘুমাতে পারে। এতে সে তোমাদের ধন্যবাদ দেবে, এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে এটি তোমাদের ধার্মিকতার কাজ হবে। \p \v 14 যে দিনমজুর গরিব বা অভাবগ্রস্ত তার কাছ থেকে সুবিধা নেবে না, সেই মজুর এক ইস্রায়েলী ভাই কিংবা একজন বিদেশি যে তোমাদের কোনও এক নগরে বাস করছে। \v 15 প্রতিদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার আগেই তার মজুরি দিয়ে দেবে, কারণ সে গরিব এবং তার উপরেই নির্ভর করে। তা না করলে সে তোমাদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর কাছে কাতর হয়ে বিচার চাইবে, আর তোমরা পাপে দোষী হবে। \p \v 16 ছেলেমেয়েদের পাপের জন্য বাবা-মাকে কিংবা বাবা-মায়ের পাপের জন্য ছেলেমেয়েদের মেরে ফেলা যাবে না; প্রত্যেককেই তার নিজের পাপের জন্য মরতে হবে। \p \v 17 বিদেশির কিংবা পিতৃহীনদের বিচারে অন্যায় করবে না, অথবা কোনও বিধবার কাছ থেকে বন্ধক হিসেবে তার গায়ের কাপড় নেবে না। \v 18 মনে রাখবে তোমরা মিশরে দাস ছিলে আর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেখান থেকে তোমাদের মুক্ত করে এনেছেন। সেইজন্যই আমি তোমাদের এসব করার আজ্ঞা দিচ্ছি। \p \v 19 তোমাদের জমির ফসল কাটবার পরে যদি শস্যের কোনও আঁটি তোমার সঙ্গে নিয়ে যেতে ভুলে যাও, তবে সেটি নেওয়ার জন্য আর ফিরে যেয়ো না। বিদেশির, পিতৃহীনের এবং বিধবার জন্য সেটি রেখে দেবে, যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সবকাজেই তোমাদের আশীর্বাদ করেন। \v 20 জলপাই পাড়বার সময় তোমরা একই ডাল থেকে দু-বার ফল পাড়তে দ্বিতীয়বার যাবে না। যা থেকে যাবে তা বিদেশির, পিতৃহীনের এবং বিধবার জন্য সেটি রেখে দেবে। \v 21 তোমাদের আঙুর ক্ষেত থেকে আঙুর তুলবার সময় তোমরা এক ডাল থেকে দ্বিতীয়বার আঙুর তুলতে যাবে না। যা থেকে যাবে তা বিদেশির, পিতৃহীনের এবং বিধবার জন্য সেটি রেখে দেবে। \v 22 মনে রাখবে তোমরা মিশরে দাস ছিলে। সেইজন্যই আমি তোমাদের এসব করার আজ্ঞা দিচ্ছি। \c 25 \p \v 1 লোকদের মধ্যে যখন ঝগড়া হবে, সেই বিষয় যেন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিচারকেরা তার বিচার করে নির্দোষকে নির্দোষ এবং দোষীকে দোষী বলে রায় দেবে। \v 2 দোষীর যদি মারধর প্রাপ্য হয়, বিচারক তাকে মাটিতে শুইয়ে দোষ অনুসারে যে কটি চাবুকের ঘা তার প্রাপ্য তা তাঁর উপস্থিতিতে দেওয়াবে, \v 3 কিন্তু বিচারক তাকে চল্লিশটির বেশি ঘা দিতে পারবে না। দোষীকে এর চেয়ে বেশি চাবুক মারলে, তোমাদের ইস্রায়েলী ভাইকে তোমার দৃষ্টিতে অসম্মান করা হবে। \p \v 4 শস্য মাড়াই করার সময় বলদের মুখে জালতি বেঁধো না। \p \v 5 ভাইয়েরা যদি একসঙ্গে বসবাস করে এবং এক ভাই অপুত্রক অবস্থায় মারা যায়, তবে তার বিধবা স্ত্রী পরিবারের বাইরে আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না। তার দেওর তাকে বিয়ে করবে এবং তার প্রতি দেওরের কর্তব্য পালন করবে। \v 6 তার যে প্রথম ছেলে হবে সে সেই মৃত ভাইয়ের নাম রক্ষা করবে আর সেই ভাইয়ের নাম ইস্রায়েলীদের মধ্য থেকে মুছে যাবে না। \p \v 7 কিন্তু, যদি কোনও পুরুষ তার বৌদিকে বিয়ে করতে না চায়, তবে সেই স্ত্রী নগরের দ্বারের কাছে প্রবীণ নেতাদের কাছে গিয়ে বলবে, “আমার দেওর ইস্রায়েলীদের মধ্যে তার দাদার নাম রক্ষা করতে রাজি নয়। আমার প্রতি দেওরের যে কর্তব্য তা সে পালন করতে চায় না।” \v 8 তখন নগরের প্রবীণ নেতারা তাকে ডেকে পাঠাবে এবং তার সঙ্গে কথা বলবে। এর পরেও যদি সে বলতে থাকে যে, “আমি তাকে বিয়ে করতে চাই না,” \v 9 তার দাদার বিধবা স্ত্রী প্রবীণ নেতাদের সামনেই লোকটির কাছে গিয়ে তার পা থেকে এক পাটি চটি খুলে নেবে, তার মুখে থুতু দিয়ে বলবে, “দাদার বংশ যে রক্ষা করতে চায় না তার প্রতি এমনই করা হোক।” \v 10 ইস্রায়েলীদের মধ্যে সেই লোকের বংশকে বলা হবে “জুতো খোয়ানোর বংশ।” \p \v 11 দুজন লোক মারামারির সময় যদি তাদের একজনের স্ত্রী তার স্বামীকে অন্যজনের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য কাছে গিয়ে অন্য লোকটির পুরুষাঙ্গ চেপে ধরে, \v 12 তবে তোমরা সেই স্ত্রীলোকের হাত কেটে ফেলবে। তার প্রতি কোনও দয়া দেখাবে না। \p \v 13 তোমাদের থলিতে যেন দুই রকম ওজনের বাটখারা না থাকে—একটি ভারী, একটি হালকা। \v 14 তোমাদের বাড়িতে যেন দুই রকম পরিমাণ মাপার পাত্র না থাকে—একটি বড়ো, একটি ছোটো। \v 15 তোমরা সঠিক মাপের বাটখারা ও পাত্র রাখবে, যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ দিতে যাচ্ছেন সেখানে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারো। \v 16 কারণ যে এসব কাজ করে, যে অসাধুতা করে, সে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র। \p \v 17 মনে রেখো, মিশর থেকে তোমরা যখন বের হয়ে আসছিলে তখন পথে অমালেকীয়েরা তোমাদের প্রতি কি করেছিল। \v 18 তোমাদের শ্রান্ত-ক্লান্ত অবস্থায় যারা পিছনে পড়েছিল তারা তাদের উপর আক্রমণ করেছিল; তারা ঈশ্বরকে ভয় করেনি। \v 19 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশটি তোমাদের অধিকারের জন্য দিতে যাচ্ছেন সেখানে তোমাদের চারপাশের শত্রুদের থেকে তোমাদের বিশ্রাম দেবেন, তোমরা তখন পৃথিবীর উপর থেকে অমালেকীয়দের চিহ্ন একেবারে মুছে দেবে। ভুলে যাবে না! \c 26 \s1 প্রথমে তোলা ফসল এবং দশমাংশ \p \v 1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের অধিকারের জন্য দিচ্ছেন সেটি অধিকার করে সেখানে তোমরা যখন বসবাস করবে, \v 2 তখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া দেশের জমিতে তোমরা যেসব ফসল ফলাবে তার প্রথম তোলা কিছু ফসল টুকরিতে রাখবে। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের জন্য যে জায়গা তাঁর বাসস্থান হিসেবে মনোনীত করবেন তোমরা সেখানে সেই ফসল নিয়ে যাবে \v 3 এবং সেই সময় যে যাজক থাকবে তাকে বলবে, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আমি স্বীকার করছি যে, তিনি যে দেশটি দেবেন বলে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন সেই দেশে আমি এসে গিয়েছি।” \v 4 যাজক তোমাদের হাত থেকে সেই টুকরি নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বেদির সামনে রাখবে। \v 5 তারপর তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে ঘোষণা করবে “আমার পিতৃপুরুষ একজন অরামীয় যাযাবর ছিলেন, এবং তিনি কয়েকজন লোক নিয়ে মিশরে গিয়েছিলেন ও সেখানে বসবাস করবার সময় তাঁর মাধ্যমে মহান, শক্তিশালী ও বহুসংখ্যক লোকের এক জাতির সৃষ্টি হয়েছিল। \v 6 কিন্তু মিশরীয়েরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিল ও কষ্ট দিয়েছিল, এবং আমাদের উপর একটি কঠিন পরিশ্রমের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল। \v 7 তখন আমরা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলাম, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে, আর সদাপ্রভু আমাদের রব শুনলেন ও আমাদের কষ্ট, পরিশ্রম এবং আমাদের উপর অত্যাচার দেখলেন। \v 8 সেইজন্য সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত, বিস্তারিত বাহু ও মহা ভয়ংকরতা এবং আশ্চর্য কাজ ও চিহ্ন দ্বারা আমাদের মিশর থেকে বের করে আনলেন। \v 9 তিনি আমাদের এখানে এনেছেন এবং দুধ আর মধু প্রবাহিত এই দেশ আমাদের দিয়েছেন; \v 10 সেইজন্য হে সদাপ্রভু, তোমার দেওয়া জমির প্রথমে তোলা ফসল আমি তোমার কাছেই এনেছি।” তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে টুকরি রাখবে এবং মাথা নত করবে। \v 11 তোমাদের এবং তোমাদের পরিবারকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেসব ভালো জিনিসপত্র দিয়েছেন তা নিয়ে তোমরা, লেবীয়েরা এবং তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশিরা আনন্দ করবে। \p \v 12 তৃতীয় বছরে, অর্থাৎ দশমাংশের বছরে, তোমাদের সব ফসলের দশমাংশ পৃথক করা শেষ করে, সেগুলি তোমরা লেবীয়, বিদেশি বসবাসকারী, পিতৃহীন এবং বিধবাদের দেবে, যেন তারা তোমাদের নগরের মধ্যে খেয়ে তৃপ্ত হয়। \v 13 তারপর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে বলবে “আমি তোমার আজ্ঞা অনুসারে আমার বাড়ি থেকে পবিত্র জিনিসপত্র বের করে লেবীয়, বিদেশি বসবাসকারী, পিতৃহীন এবং বিধবাদের দিয়েছি। তোমার আজ্ঞা আমি অমান্য করিনি কিংবা সেগুলির একটিও আমি ভুলে যাইনি। \v 14 আমার শোকের সময় আমি সেই পবিত্র অংশ থেকে কিছুই খাইনি, কিংবা অশুচি অবস্থায় আমি তার কিছুই সরাইনি, কিংবা তা থেকে কোনও অংশ মৃত লোকদের উদ্দেশে দান করিনি। আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হয়েছি; তোমার আজ্ঞা অনুসারে আমি সবকিছুই করেছি। \v 15 তুমি তোমার পবিত্র বাসস্থান থেকে, স্বর্গ থেকে দেখো, তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ করো এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে তোমার শপথ করা প্রতিজ্ঞা অনুসারে দুধ আর মধু প্রবাহিত যে দেশ তুমি আমাদের দিয়েছ সেই দেশকেও আশীর্বাদ করো।” \s1 সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন \p \v 16 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আজ তোমাদের এই সমস্ত অনুশাসন ও বিধান মেনে চলবার আজ্ঞা দিচ্ছেন; তোমরা সতর্ক হয়ে তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণ দিয়ে তা পালন করবে। \v 17 আজই তোমরা স্বীকার করেছ যে, সদাপ্রভুই তোমাদের ঈশ্বর এবং তাঁর পথেই তোমরা চলবে, তাঁর অনুশাসন, আদেশ ও বিধান তোমরা পালন করবে—তাঁর কথা শুনবে। \v 18 আর সদাপ্রভুও আজকে ঘোষণা করেছেন যে তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমরা তাঁরই প্রজা এবং তাঁর নিজের মূল্যবান সম্পত্তি হয়েছ ও তাঁর সমস্ত আজ্ঞা পালন করবে। \v 19 তিনি ঘোষণা করেছেন যে প্রশংসা, সুনাম ও গৌরবের দিক থেকে তাঁর সৃষ্ট অন্যান্য জাতিদের উপরে তিনি তোমাদের স্থান দেবেন এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমরা হবে তাঁর উদ্দেশে পবিত্র প্রজা। \c 27 \s1 এবল পর্বতের বেদি \p \v 1 মোশি ও ইস্রায়েলী প্রবীণ নেতারা লোকদের এই আদেশ দিলেন: “আজ আমি তোমাদের যেসব আজ্ঞা দিচ্ছি সেগুলি পালন করবে। \v 2 তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া দেশে গিয়ে বড়ো বড়ো পাথর খাড়া করে রাখবে এবং সেগুলি চুন দিয়ে লেপে দেবে। \v 3 তার উপরে এই বিধানের সমস্ত কথা লিখবে যখন তোমরা পার হয়ে সেই দেশে প্রবেশ করবে যেটি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দিতে যাচ্ছেন, যে দেশ দুধ আর মধু প্রবাহী, ঠিক যেমন সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। \v 4 এবং তোমরা যখন জর্ডন পার হবে, এই পাথরগুলি এবল পর্বতের উপর খাড়া করে রাখবে এবং সেগুলি চুন দিয়ে লেপে দেবে যেমন তোমাদের আমি আজ আদেশ দিয়েছি। \v 5 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে তোমরা সেখানে একটি পাথরের বেদি তৈরি করবে। সেগুলির উপরে কোনও লোহার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে না। \v 6 সদাপ্রভুর বেদি গোটা গোটা পাথর দিয়ে তৈরি করবে এবং সেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমবলি উৎসর্গ করবে। \v 7 সেখানে মঙ্গলার্থক বলিদান করবে, আর সেই জায়গায় সেগুলি খাবে এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আনন্দ করবে। \v 8 আর এই পাথরগুলি যা তোমরা খাড়া করে রেখেছ তার উপরে এই বিধানের সমস্ত কথা খুব স্পষ্ট করে লিখবে।” \s1 এবল পর্বত থেকে অভিশাপ \p \v 9 এরপর মোশি ও লেবীয় যাজকেরা সমস্ত ইস্রায়েলকে বললেন, “হে ইস্রায়েল, তোমরা চুপ করো আর শোনো! আজ তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রজা হলে। \v 10 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হবে এবং আজ আমি তোমাদের যে সমস্ত আজ্ঞা ও অনুশাসন দিচ্ছি তা তোমরা পালন করবে।” \p \v 11 সেই দিনই মোশি লোকদের এই আদেশ দিলেন: \p \v 12 তোমরা যখন জর্ডন পার হবে, এই গোষ্ঠীর লোকেরা গরিষীম পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে লোকদের আশীর্বাদ করবে: শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, যোষেফ ও বিন্যামীন। \v 13 আর এই গোষ্ঠীর লোকেরা এবল পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে অভিশাপ উচ্চারণ করবে: রূবেণ, গাদ, আশের, সবূলূন, দান ও নপ্তালি। \p \v 14 লেবীয়েরা তখন সমস্ত ইস্রায়েলীর সামনে চিৎকার করে এই কথা বলবে: \p \v 15 “সেই লোক অভিশপ্ত যে প্রতিমা তৈরি করে—সদাপ্রভুর কাছে এই জিনিস ঘৃণার্হ, এটি শুধু দক্ষ হাতে তৈরি করা—এবং গোপনে স্থাপন করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 16 “সেই লোক অভিশপ্ত যে বাবাকে কিংবা মাকে অসম্মান করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 17 “সেই লোক অভিশপ্ত যে অন্য লোকের জমির সীমানা-চিহ্ন সরিয়ে দেয়।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 18 “সেই লোক অভিশপ্ত যে অন্ধকে ভুল পথে নিয়ে যায়।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 19 “সেই লোক অভিশপ্ত যে বিদেশিদের, পিতৃহীনদের কিংবা বিধবাদের প্রতি অন্যায় বিচার করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 20 “সেই লোক অভিশপ্ত যে তার বাবার স্ত্রীর সঙ্গে শোয় কারণ তাতে সে বাবাকে অসম্মান করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 21 “সেই লোক অভিশপ্ত যে পশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 22 “সেই লোক অভিশপ্ত যে তার বোন, তার বাবার মেয়ে, কিংবা মায়ের মেয়ের সঙ্গে ব্যভিচার করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 23 “সেই লোক অভিশপ্ত যে তার শাশুড়ির সঙ্গে ব্যভিচার করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 24 “সেই লোক অভিশপ্ত যে প্রতিবেশীকে গোপনে হত্যা করে।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 25 “সেই লোক অভিশপ্ত যে নির্দোষ লোককে হত্যা করার জন্য ঘুস নেয়।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \p \v 26 “সেই লোক অভিশপ্ত যে বিধানের কথাগুলি পালন করে না।” \pi1 তখন সমস্ত লোক বলবে, “আমেন!” \c 28 \s1 বাধ্যতার জন্য আশীর্বাদ \p \v 1 তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্পূর্ণ বাধ্য হও এবং আমি আজ তাঁর যেসব আদেশ তোমাদের দিচ্ছি তা পালন করো, তাহলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীর সব জাতির উপরে তোমাদের স্থান দেবেন। \v 2 তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হও তবে এসব আশীর্বাদ তোমরা পাবে আর তা তোমাদের সঙ্গে থাকবে \pm \v 3 তোমরা নগরে আশীর্বাদ পাবে এবং দেশে আশীর্বাদ পাবে। \pm \v 4 তোমাদের গর্ভের ফলে, ক্ষেতের ফসলে এবং পশুধনের ফলে আশীর্বাদ পাবে—তোমাদের পশুপালের বাছুর ও মেষীদের শাবক। \pm \v 5 তোমাদের ঝুড়ি এবং ময়দা মাখার পাত্রে আশীর্বাদ পাবে। \pm \v 6 ভিতরে আসবার সময় তোমরা আশীর্বাদ পাবে এবং বাইরে যাওয়ার সময় তোমরা আশীর্বাদ পাবে। \p \v 7 যারা শত্রু হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে সদাপ্রভু এমন করবেন যাতে তারা তোমাদের সামনে হেরে যায়। তারা একদিক থেকে তোমাদের আক্রমণ করতে এসে সাত দিক দিয়ে পালিয়ে যাবে। \p \v 8 তোমাদের গোলাঘরের উপর সদাপ্রভুর আশীর্বাদ থাকবে এবং যে কাজে তোমরা হাত দেবে তাতেই তিনি আশীর্বাদ করবেন। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর দেওয়া দেশে তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। \p \v 9 তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করো ও তাঁর পথে চলো তাহলে তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞার উপর শপথ অনুসারে তোমাদের তাঁর পবিত্র প্রজা হিসেবে স্থাপন করবেন। \v 10 তখন পৃথিবীর সমস্ত জাতি দেখতে পাবে যে, সদাপ্রভুর নামেই তোমাদের পরিচয়, আর তাতে তারা তোমাদের ভয় করে চলবে। \v 11 সদাপ্রভু তোমাদের খুব সমৃদ্ধ করবেন—তোমাদের গর্ভের ফলে, পশুধনের ফলে এবং ক্ষেতের ফসলে—সেই দেশে যা তিনি দেবেন বলে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন। \p \v 12 তোমাদের সময়মতো বৃষ্টি দিয়ে তোমাদের হাতের সব কাজে আশীর্বাদ করবার জন্য সদাপ্রভু তাঁর দানের ভাণ্ডার, আকাশ খুলে দেবেন। তোমরা অনেক জাতিকে ঋণ দেবে কিন্তু তোমরা নিজেরা কারোর কাছ থেকে ঋণ নেবে না। \v 13 সদাপ্রভু এমন করবেন যাতে তোমরা সকলের মাথার উপরে থাকো, পায়ের তলায় নয়। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যেসব আদেশ আজ আমি তোমাদের দিচ্ছি তাতে যদি মনোযোগ দাও এবং যত্নের সঙ্গে পালন করো, তবে সবসময় তোমরা উন্নত হবে, কখনোই অবনত হবে না। \v 14 আজ আমি তোমাদের যেসব আদেশ দিচ্ছি, অন্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে এবং তাদের সেবা করার জন্য তার ডানদিকে কিংবা বাঁদিকে যাবে না। \s1 অবাধ্যতার জন্য অভিশাপ \p \v 15 কিন্তু তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথায় কান না দাও এবং আজকে দেওয়া আমার এসব আদেশ ও অনুশাসন যত্নের সঙ্গে পালন না করো, তাহলে এসব অভিশাপ তোমাদের উপর নেমে আসবে এবং তোমাদের সঙ্গে থাকবে \pm \v 16 তোমরা নগরে অভিশপ্ত হবে এবং দেশে অভিশপ্ত হবে। \pm \v 17 তোমাদের ঝুড়ি এবং ময়দা মাখার পাত্র অভিশপ্ত হবে। \pm \v 18 তোমাদের গর্ভের ফল, ক্ষেতের ফসল এবং বাছুর ও মেষীদের শাবক অভিশপ্ত হবে। \pm \v 19 ভিতরে আসবার সময় তোমরা অভিশপ্ত হবে এবং বাইরে যাওয়ার সময় তোমরা অভিশপ্ত হবে। \p \v 20 মন্দ কাজ করে সদাপ্রভুকে ত্যাগ করার অপরাধে তোমাদের সমস্ত কাজে তিনি তোমাদের অভিশাপ দেবেন, বিশৃঙ্খলায় ফেলবেন ও তিরস্কার করবেন, যতক্ষণ না তোমরা হঠাৎ ধ্বংস হয়ে নির্মূল না হও। \v 21 তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেখান থেকে যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও ততক্ষণ সদাপ্রভু তোমাদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের মহামারি আনবেন। \v 22 সদাপ্রভু তোমাদের ক্ষয়রোগ, জ্বর, জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও তরোয়াল, তার সঙ্গে উদ্ভিদের রোগ ও ছত্রাক দ্বারা মহামারি আনবেন যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও। \v 23 তোমাদের মাথার উপরের আকাশ ব্রোঞ্জের মতো, আর পায়ের তলার মাটি লোহার মতো হবে। \v 24 সদাপ্রভু তোমাদের দেশে বৃষ্টির বদলে ধুলো আর বালি বর্ষণ করবেন; সেগুলি আকাশ থেকে তোমাদের উপরে পড়বে যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও। \p \v 25 সদাপ্রভু এমনটি করবেন যাতে তোমরা তোমাদের শত্রুদের সামনে হেরে যাও। তোমরা একদিক থেকে তাদের আক্রমণ করবে কিন্তু তাদের সামনে থেকে পালিয়ে যাবে সাত দিক দিয়ে, এবং পৃথিবীর অন্য সব রাজ্যের লোকেরা তোমাদের অবস্থা দেখে ভয়ে আঁতকে উঠবে। \v 26 তোমাদের মৃতদেহ হবে পাখি এবং বন্যপশুদের খাবার, আর তাদের তাড়িয়ে দেবার জন্য কেউ থাকবে না। \v 27 সদাপ্রভু তোমাদের মিশরীয়দের সেই ফোঁড়া, আব, ফোস্কা এবং চুলকানি দিয়ে যন্ত্রণা দেবেন, যা তোমরা ভালো করতে পারবে না। \v 28 সদাপ্রভু তোমাদের পাগলামি, অন্ধতা দিয়ে এবং চিন্তাশক্তি নষ্ট করে যন্ত্রণা দেবেন। \v 29 অন্ধ লোক যেমন অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ায় তেমনি করে তোমরা দিনের বেলাতেই হাতড়ে বেড়াবে। তোমরা যে কাজ করবে তাতেই বিফল হবে; দিনের পর দিন তোমরা অত্যাচারিত ও লুন্ঠিত হবে, তোমাদের উদ্ধার করার জন্য কেউ থাকবে না। \p \v 30 তোমার বিয়ে একজন স্ত্রীলোকের সঙ্গে ঠিক হবে, কিন্তু অন্যজন তাকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করবে। তুমি বাড়ি তৈরি করবে, কিন্তু সেখানে বসবাস করতে পারবে না। তুমি দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরি করবে, কিন্তু তার ফলভোগ করতে পারবে না। \v 31 তোমাদের সামনেই তোমাদের গরু কাটা হবে, কিন্তু তোমরা তা খেতে পাবে না। তোমাদের গাধাকে জোর করে তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হবে, কিন্তু তা আর ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। তোমাদের মেষদের তোমাদের শত্রুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, আর কেউ তাদের উদ্ধার করবে না। \v 32 তোমাদের ছেলেদের এবং মেয়েদের অন্য এক জাতির কাছে দেওয়া হবে, আর দিনের পর দিন তাদের আসবার পথ চেয়ে তোমাদের চোখ অন্ধ হয়ে যাবে, কিন্তু তোমাদের হাতে কোনও শক্তি থাকবে না। \v 33 যে লোকদের তোমরা জানো না তারা তোমাদের জমির ফসল ও পরিশ্রমের ফলভোগ করবে, এবং তোমরা সারা জীবন ধরে অত্যাচার ভোগ করবে কিন্তু তোমাদের কিছুই করার থাকবে না। \v 34 তোমরা যা দেখবে তা তোমাদের পাগল করে দেবে। \v 35 সদাপ্রভু তোমাদের হাঁটুতে ও পায়ে এমন সব কষ্টদায়ক ফোঁড়া দেবেন যা কখনও ভালো হবে না, আর সেই ফোঁড়া তোমাদের পায়ের তলা থেকে মাথার তালু পর্যন্ত সব জায়গায় হবে। \p \v 36 তোমরা যাকে তোমাদের উপরে রাজা করে বসাবে সদাপ্রভু তাকে এবং তোমাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য এমন এক জাতির হাতে দেবেন যাদের তোমরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষেরা জানে না। সেখানে তোমরা অন্য দেবতাদের সেবা করবে, যে দেবতারা কাঠ এবং পাথরের তৈরি। \v 37 সদাপ্রভু তোমাদের যেসব জাতির মধ্যে তাড়িয়ে দেবেন তারা তোমাদের অবস্থা দেখে ভয়ে আঁতকে উঠবে, আর তোমরা তাদের কাছে বিদ্রুপের পাত্র হবে। \p \v 38 তোমরা জমিতে অনেক বীজ বুনবে কিন্তু অল্প সংগ্রহ করবে, কারণ পঙ্গপালে ফসল খেয়ে ফলবে। \v 39 তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরি করবে এবং তার যত্নও নেবে কিন্তু পোকায় তার ফল খেয়ে ফেলবে বলে তোমরা দ্রাক্ষারস খেতে পারবে না কিংবা আঙুর সংগ্রহ করতে পারবে না। \v 40 তোমাদের সারা দেশে জলপাই গাছ থাকবে কিন্তু তোমরা তেল ব্যবহার করতে পারবে না, কারণ জলপাই ঝরে পড়বে। \v 41 তোমাদের ছেলেমেয়ে হবে কিন্তু তাদেরকে নিজের কাছে রাখতে পারবে না, কারণ তারা বন্দি হয়ে যাবে। \v 42 ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল তোমাদের দেশের সমস্ত গাছ ও ফসল অধিকার করবে। \p \v 43 তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির লোকেরা দিন দিন তোমাদের উপরে উন্নতি করবে, কিন্তু তোমরা নিচে নামতে থাকবে। \v 44 তারা তোমাদের ঋণ দেবে, কিন্তু তোমরা তাদের ঋণ দিতে পারবে না। তারা থাকবে তোমাদের মাথার উপরে, কিন্তু তোমরা থাকবে তাদের পায়ের তলায়। \p \v 45 এই সমস্ত অভিশাপ তোমাদের উপরে নেমে আসবে। তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য না হওয়ার দরুন এবং তিনি যেসব আজ্ঞা ও অনুশাসন দিয়েছেন তা পালন না করার দরুন এসব অভিশাপ তোমাদের পিছনে তাড়া করে আসবে ও তোমাদের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও। \v 46 এই সমস্ত তোমাদের ও তোমাদের বংশধরদের কাছে চিরকাল আশ্চর্য চিহ্ন এবং আশ্চর্য কাজ হিসেবে থাকবে। \v 47 যেহেতু তোমাদের সমৃদ্ধির সময়ে তোমরা আনন্দের সঙ্গে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করোনি, \v 48 সেইজন্য ক্ষুধায় ও তৃষ্ণায়, উলঙ্গতায় ও দারিদ্র্যে তোমরা তোমাদের শত্রুদের সেবা করবে যাদের সদাপ্রভু তোমাদের বিরুদ্ধে পাঠাবেন। যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও তিনি তোমাদের ঘাড়ে লোহার জোয়াল চাপিয়ে রাখবেন। \p \v 49 সদাপ্রভু দূর থেকে, পৃথিবীর শেষ সীমানা থেকে এমন এক জাতিকে তোমাদের বিরুদ্ধে নিয়ে আসবেন, যেমন ঈগল পাখি উড়ে আসে, আর তোমরা তাদের ভাষা বুঝবে না। \v 50 সেই জাতি হিংস্র চেহারার যারা বয়স্কদের সম্মান করবে না কিংবা ছোটদের প্রতি করুণা দেখাবে না। \v 51 তারা তোমাদের পশুপালের শাবকগুলি ও ক্ষেতের ফসল খেয়ে ফেলবে যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও। তারা তোমাদের কোনও শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস কিংবা জলপাই কিংবা গরুর বাছুর বা মেষশাবক অবশিষ্ট রাখবে না যতক্ষণ না তোমরা ধ্বংস হও। \v 52 তারা তোমাদের নগরগুলি ঘিরে রাখবে আর শেষ পর্যন্ত তোমাদের উঁচু প্রাচীরগুলি ভেঙে পড়বে যার উপর তোমরা এত ভরসা করছ। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেই দেশের সমস্ত নগর তারা ঘেরাও করে রাখবে। \p \v 53 শত্রুরা নগরগুলি ঘিরে রাখবার সময় এমন কষ্ট দেবে যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সন্তানদের খাবে, অর্থাৎ তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া ছেলেমেয়েদের মাংস খাবে। \v 54 এমনকি তোমাদের মধ্যে সব থেকে নম্র ও সংবেদনশীল লোকেরও তার নিজের ভাই কিংবা স্ত্রী যাকে সে ভালোবাসে কিংবা তার জীবিত সন্তানদের প্রতি কোনও দয়ামায়া থাকবে না, \v 55 আর সে যে সন্তানের মাংস খাবে তার একটুও সে অন্যদের দেবে না। শত্রুরা যখন তোমাদের নগর ঘেরাও করে রেখে তোমাদের কষ্ট দেবে তখন এছাড়া আর কোনও খাবারই তার কাছে থাকবে না। \v 56 তোমাদের মধ্যে সব থেকে নম্র ও সংবেদনশীল স্ত্রীলোক—সংবেদনশীল ও নম্র যারা নিজের পা মাটিতে ফেলতে চাইবে না—সেও তার প্রিয় স্বামী ও তার ছেলেমেয়েদের প্রতি রুষ্ট হবে যে \v 57 তার গর্ভের ফল এবং যাদের সে জন্ম দিয়েছে। কারণ তার ভীষণ প্রয়োজনে সে গোপনে তাদের খাবে যেহেতু শত্রুরা তোমাদের নগর ঘিরে রেখে তোমাদের কষ্টের মধ্যে ফেলবে। \p \v 58 এই পুস্তকে যে সমস্ত বিধানের কথা লেখা আছে, সেগুলি যদি যত্নের সঙ্গে পালন না করো, এবং—তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর—গৌরবময় ও চমৎকার নামকে সম্মান ও ভয় না করো \v 59 সদাপ্রভু তোমাদের ও তোমাদের বংশধরদের প্রতি ভয়ানক মহামারি, কঠোর ও দীর্ঘস্থায়ী দুর্যোগ এবং গুরুতর এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা পাঠাবেন। \v 60 মিশরে যে সমস্ত অসুখ দেখে তোমরা ভয় পেতে সেগুলি তিনি তোমাদের মধ্যে দেবেন এবং সেগুলি তোমাদের আঁকড়ে থাকবে। \v 61 এই বিধানপুস্তকে লেখা নেই এমন সব রোগ ও আঘাত তোমরা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত সদাপ্রভু তোমাদের উপরে আনবেন। \v 62 তোমাদের লোকসংখ্যা আকাশের তারার মতো হলেও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি অবাধ্যতার দরুন তোমরা তখন মাত্র অল্প কয়েকজনই বেঁচে থাকবে। \v 63 যে আনন্দে সদাপ্রভু তোমাদের মঙ্গল করেছেন এবং তোমাদের লোকসংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন, তেমনি তিনি তোমাদের সর্বনাশ ও ধ্বংস করে আনন্দ পাবেন। যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেখান থেকে তোমরা নির্মূল হবে। \p \v 64 তারপর সদাপ্রভু তোমাদের সমস্ত জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। সেখানে তোমরা অন্যান্য দেবতাদের উপাসনা করবে—কাঠ এবং পাথরের তৈরি দেবতা, যাদের তোমরা কিংবা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা জানতে না। \v 65 সেই জাতিদের মধ্যে তোমরা শান্তি পাবে না, আর তোমাদের পায়ের গোড়ালি রাখার কোনও জায়গা থাকবে না। সেখানে সদাপ্রভু তোমাদের মনে দুশ্চিন্তা, আশা করে চেয়ে থাকা চোখ এবং এক হতাশার হৃদয় দেবেন। \v 66 তোমরা নিয়মিত উদ্বেগে থাকবে, দিন এবং রাত উভয় সময়ই ভয় পাবে, তোমাদের জীবন নিয়ে কখনও নিশ্চিত হবে না। \v 67 সকালে তোমরা বলবে, “যদি এখন সন্ধ্যা হত!” এবং সন্ধ্যায় বলবে, “যদি এখন সকাল হত!” কারণ আতঙ্কে তোমাদের মন ভরে থাকবে এবং তোমরা যে দৃশ্য স্বচক্ষে দেখবে। \v 68 মিশরে যাওয়ার সম্বন্ধে আমি তোমাদের বলেছিলাম যে, সেই পথে আর তোমাদের যেতে হবে না, কিন্তু সদাপ্রভু জাহাজে করে তোমাদের মিশরে ফেরত পাঠাবেন। সেখানে তোমরা তোমাদের শত্রুদের কাছে নিজেদের দাস এবং দাসী হিসেবে বিক্রি করতে চাইবে, কিন্তু কেউ তোমাদের কিনবে না। \c 29 \s1 বিধানের নবীকরণ \p \v 1 সদাপ্রভু হোরেব পাহাড়ে যে বিধান দিয়েছিলেন তার অতিরিক্ত বিধানের এসব নিয়মাবলি তিনি মোয়াব দেশে ইস্রায়েলীদের কাছে মোশিকে দিতে আদেশ দিয়েছিলেন। \p \v 2 মোশি সব ইস্রায়েলীকে ডেকে বললেন: \b \p সদাপ্রভু মিশরে ফরৌণ ও তাঁর সমস্ত কর্মচারী এবং সম্পূর্ণ দেশের প্রতি যা করেছিলেন তা তোমরা নিজেরাই দেখেছ। \v 3 তোমরা নিজের চোখে সেই সমস্ত মহাপরীক্ষা, চিহ্ন এবং মহা আশ্চর্য লক্ষণ দেখেছ। \v 4 কিন্তু আজ পর্যন্ত সদাপ্রভু সেই মন যে বুঝতে পারে কিংবা চোখ যে দেখতে পায় কিংবা কান যে শুনতে পায় তা তোমাদের দেননি। \v 5 তবুও সদাপ্রভু বলেন, “আমি চল্লিশ বছর তোমাদের প্রান্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছি, তোমাদের কাপড় ছেঁড়েনি কিংবা তোমাদের পায়ের চটি নষ্ট হয়নি। \v 6 তোমরা কোনও রুটি খাওনি এবং কোনও দ্রাক্ষারস কিংবা কোনও গাঁজানো পানীয় পান করোনি। আমি এরকম করেছিলাম যেন তোমরা জানতে পারো যে আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” \p \v 7 তোমরা এই জায়গায় পৌঁছানোর পর, হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়ে এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদের হারিয়ে দিয়েছি। \v 8 আমরা তাদের দেশ নিয়ে অধিকারের জন্য তা রূবেণীয়, গাদীয় এবং মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে দিয়েছি। \p \v 9 তোমরা এই বিধানের নিয়মাবলি যত্নের সঙ্গে পালন কোরো, যেন তোমরা যা কিছু করো তাতেই উন্নতি করতে পারো। \v 10 তোমরা সবাই এখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছ—তোমাদের নেতারা ও প্রধান লোকেরা, তোমাদের প্রবীণ নেতারা ও কর্মকর্তারা, এবং ইস্রায়েলের সব লোকজন, \v 11 তাদের সঙ্গে তোমাদের সন্তানেরা ও তোমাদের স্ত্রীরা, এবং বিদেশিরা যারা তোমাদের ছাউনিতে বসবাস করে তোমাদের জন্য কাঠ কাটে ও জল তোলে। \v 12 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য আজ নিশ্চয়তার শপথ করে যে বিধান স্থাপন করেছেন সেই শপথ ও বিধান মেনে নেবার জন্য তোমরা এখানে এসে দাঁড়িয়েছ, \v 13 যেন তিনি আজ তোমাদের নিজের প্রজারূপে স্থাপন করেন, যেন তিনি তোমাদের ঈশ্বর হন যেমন তিনি তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে প্রতিজ্ঞা করে শপথ করেছিলেন। \v 14 আমি এই নিয়ম স্থাপন ও তার সঙ্গে শপথ করছি, কেবল তোমাদের সঙ্গে নয় \v 15 যারা এখানে আমাদের সঙ্গে আজ দাঁড়িয়ে আছ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে কিন্তু যারা আজ এখানে নেই তাদের জন্যও করছি। \p \v 16 তোমরা নিজেরা জানো আমরা মিশরে কীভাবে বসবাস করেছি এবং এখানে আমরা কেমন করে বিভিন্ন দেশের মধ্য দিয়ে এসেছি। \v 17 কাঠ, পাথর, রুপো ও সোনার তৈরি ঘৃণ্য মূর্তি এবং প্রতিমা তোমরা তাদের মধ্যে দেখেছ। \v 18 সেই জাতিগুলির দেবতাদের সেবা করবার জন্য আজ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ফেলে এমন কোনও পুরুষ বা স্ত্রীলোক, কোনও বংশ বা গোষ্ঠী তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে; কোনও তীব্র বিষাক্ত মূল যেন তোমাদের মধ্যে না থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত হবে। \p \v 19 যখন কোনও ব্যক্তি এই শপথ করা কথাগুলি শোনার সময় নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করে এবং মনে মনে ভাবে, “নিজের ইচ্ছামতো চলতে থাকলেও আমি নিরাপদে থাকব,” তারা উর্বর জমি এমনকি শুষ্ক জমির উপর বিপর্যয় নিয়ে আসবে। \v 20 সদাপ্রভু কখনও তাদের ক্ষমা করতে রাজি হবেন না; তাদের বিরুদ্ধে তাঁর ক্রোধ এবং অন্তর ঈর্ষায় জ্বলে উঠবে। এই পুস্তকে যেসব অভিশাপের কথা লেখা আছে তা সবই তাদের উপরে পড়বে, এবং সদাপ্রভু পৃথিবী থেকে তাদের নাম মুছে ফেলবেন। \v 21 বিধানপুস্তকে লেখা নিয়মের সমস্ত অভিশাপ অনুসারে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে অমঙ্গলের জন্য তাদেরই পৃথক করবেন। \p \v 22 সেই দেশের উপরে সদাপ্রভু যেসব বিপর্যয় ও রোগ পাঠিয়ে দেবেন তা তোমাদের বংশধরেরা আর দূরদেশ থেকে আসা বিদেশিরা দেখবে। \v 23 সমগ্র দেশটি নুন আর গন্ধকে পুড়ে পড়ে থাকবে—তাতে কোনও গাছ লাগানো যাবে না, কোনও বীজ অঙ্কুরিত হবে না, কোনও গাছপালা জন্মাবে না। এই দেশের অবস্থা হবে সদোম, ঘমোরা, অদ্‌মা ও সবোয়িমের মতো, যেগুলি সদাপ্রভু তাঁর ভয়ংকর ক্রোধে জ্বলে উঠে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। \v 24 সমস্ত জাতি জিজ্ঞাসা করবে “সদাপ্রভু কেন এই দেশটির এই দশা করেছেন? কেন তাঁর এই ভয়ংকর জ্বলন্ত ক্রোধ?” \p \v 25 আর তার উত্তর হবে “কারণ এই জাতি তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম ত্যাগ করেছে, যে নিয়ম মিশর দেশ থেকে তাদের বের করে আনবার পর তিনি তাদের জন্য স্থাপন করেছিলেন। \v 26 তারা গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছে এবং তাদের সামনে মাথা নত করেছে, যে দেবতাদের তারা জানত না, যাদের সদাপ্রভু তাদের দেননি। \v 27 সেইজন্য সদাপ্রভুর ক্রোধ এই দেশের প্রতি জ্বলে উঠেছিল, আর তিনি এই পুস্তকে লেখা সমস্ত অভিশাপ ঢেলে দিয়েছিলেন। \v 28 ভীষণ ক্রোধে এবং ভয়ংকর জ্বলন্ত ক্রোধে সদাপ্রভু তাদের নিজেদের দেশ থেকে উপড়ে নিয়ে তাদের অন্য দেশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন, আর আজও তারা সেখানে আছে।” \p \v 29 গোপন সবকিছু আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অধিকার, কিন্তু প্রকাশিত সবকিছু চিরকালের জন্য আমাদের ও আমাদের সন্তানদের অধিকার, যেন এই বিধানের সব কথা আমরা পালন করতে পারি। \c 30 \s1 সদাপ্রভুর কাছে ফিরে এসে সমৃদ্ধিলাভ \p \v 1 আমি তোমাদের সামনে যে আশীর্বাদ ও অভিশাপগুলি তুলে ধরলাম তার সমস্ত কথা যখন তোমাদের উপরে ফলবে আর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেসব জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন তাদের মধ্যে বসবাস করবার সময় এসব কথায় তোমরা মন দেবে, \v 2 সেই সময় তোমরা ও তোমাদের সন্তানেরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসবে এবং সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর বাধ্য হবে আর আমি আজ তোমাদের যেসব আদেশ দিচ্ছি তা পালন করবে, \v 3 তাহলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের ধন ফিরিয়ে দেবেন। তিনি তোমাদের প্রতি করুণা করবেন এবং যেসব জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন তাদের মধ্য থেকে তিনি আবার তোমাদের সংগ্রহ করবেন। \v 4 পৃথিবীর শেষ সীমানায়ও যদি তোমাদের দূর করে দেওয়া হয় সেখান থেকেও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সংগ্রহ করবেন। \v 5 তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেশেই তিনি তোমাদের ফিরিয়ে আনবেন আর তোমরা তা আবার অধিকার করবে। তিনি তোমাদের আরও সমৃদ্ধিশালী করবেন ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের থেকেও তোমাদের লোকসংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। \v 6 তোমরা যাতে তোমাদের সমস্ত মন ও তোমাদের সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁকে ভালোবেসে বেঁচে থাকো সেইজন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের ও তোমাদের বংশধরদের হৃদয়ের সুন্নত করবেন। \v 7 এসব অভিশাপ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের শত্রুদের উপর আনবেন যারা তোমাদের ঘৃণা ও অত্যাচার করবে। \v 8 তখন তোমরা আবার সদাপ্রভুর বাধ্য হয়ে চলবে আর তাঁর যেসব আদেশ আজ আমি তোমাদের দিচ্ছি তা মেনে চলবে। \v 9 তখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হাতের সব কাজে, গর্ভের ফলে, পশুধনের ফলে এবং ক্ষেতের ফসলে আশীর্বাদ করবেন। তোমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি তাঁর যে আনন্দ ছিল, তোমাদের উপরে আবার তাঁর সেই আনন্দ হবে এবং তিনি তোমাদের সমৃদ্ধিশালী করবেন, \v 10 যদি তোমরা এই বিধানপুস্তকে লেখা তাঁর সব আজ্ঞা ও অনুশাসন পালন করে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হও, আর তোমাদের সমস্ত মন ও তোমাদের সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর প্রতি ফের। \s1 জীবন অথবা মৃত্যু, কোনটি? \p \v 11 আজ আমি তোমাদের যে আদেশ দিচ্ছি তা পালন করা তোমাদের পক্ষে তেমন শক্ত নয় কিংবা তোমাদের নাগালের বাইরেও নয়। \v 12 তা স্বর্গে নয়, যে তোমাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, “কে স্বর্গে গিয়ে তা এনে আমাদের শোনাবে যাতে আমরা তা পালন করতে পারি?” \v 13 এটি সমুদ্রের ওপাড়েও নয়, যে তোমাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, “কে সমুদ্র পার হয়ে গিয়ে তা এনে আমাদের শোনাবে যাতে আমরা তা পালন করতে পারি?” \v 14 না, সেই বাক্য তোমাদের খুব কাছেই আছে; তা তোমাদের মুখে ও তোমাদের হৃদয়ে রয়েছে, যেন তোমরা তা পালন করতে পারো। \p \v 15 দেখো, আজ আমি তোমাদের সামনে জীবন ও সমৃদ্ধি, মৃত্যু ও বিনাশ রাখলাম। \v 16 এজন্য আজ আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি যে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো, তাঁর পথে বাধ্য হয়ে চলো, এবং তাঁর আজ্ঞা, অনুশাসন ও বিধান পালন করো; তাহলে তোমরা বাঁচবে ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে, এবং যে দেশ তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ যেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। \p \v 17 কিন্তু তোমাদের হৃদয় যদি তাঁর কাছ থেকে সরে যায় এবং তোমরা তাঁর বাধ্য না হও, আর যদি তোমরা অন্য দেবতাদের কাছে গিয়ে তাদের প্রণাম করো এবং সেবা করো, \v 18 তবে আজ আমি তোমাদের বলে দিচ্ছি যে, তোমরা নিশ্চয়ই ধ্বংস হবে। জর্ডন নদী পার হয়ে যে দেশ তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারবে না। \p \v 19 তোমাদের বিরুদ্ধে মহাকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে আমি আজ বলছি যে, আমি তোমাদের সামনে জীবন ও মৃত্যু, আশীর্বাদ ও অভিশাপ রাখছি। এখন জীবন বেছে নাও, যেন তোমরা ও তোমাদের সন্তানেরা বেঁচে থাকো \v 20 এবং যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসো, তাঁর রব শোনো, আর তাঁতে আসক্ত হও। কেননা সদাপ্রভুই তোমাদের জীবন, এবং তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে যে দেশ দেবেন বলে শপথ করেছিলেন সেখানে তোমরা বহু বছর বসবাস করতে পারো। \c 31 \s1 যিহোশূয় মোশির উত্তরাধিকারী হলেন \p \v 1 পরে মোশি বাইরে গিয়ে সমস্ত ইস্রায়েলীর সামনে এই কথা বললেন \v 2 “আমার বয়স এখন 120 বছর, এবং আমি আর তোমাদের পরিচালনা করতে পারছি না। সদাপ্রভু আমাকে বলেছেন, ‘তুমি জর্ডন পার হতে পারবে না।’ \v 3 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজেই নদী পার হয়ে তোমাদের আগে আগে যাবেন। তোমাদের সামনে তিনি এই জাতিদের ধ্বংস করবেন, এবং তোমরা তাদের দেশ অধিকার করবে। সদাপ্রভুর কথা অনুসারে যিহোশূয়ই নদী পার হয়ে তোমাদের আগে আগে যাবে। \v 4 ইমোরীয়দের রাজা সীহোন এবং ওগ আর তাদের দেশ যেমন সদাপ্রভু ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তেমনি তিনি সেইসব জাতিকেও ধ্বংস করবেন। \v 5 তাদের তিনি তোমাদের হাতে তুলে দেবেন, আর আমি তাদের প্রতি যা করবার আদেশ দিয়েছি তোমরা তাদের প্রতি তাই করবে। \v 6 তোমরা বলবান হও ও সাহস করো। তাদের তোমরা ভয় পেয়ো না কিংবা আতঙ্কগ্রস্ত হোয়ো না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে যাবেন; তিনি কখনও তোমাদের ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না।” \p \v 7 এরপর মোশি যিহোশূয়কে ডাকলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েলীর সামনে তাঁকে বললেন, “বলবান হও ও সাহস করো, কারণ তোমাকেই এই লোকদের সঙ্গে সেই দেশে যেতে হবে যে দেশটি এদের দেবার শপথ সদাপ্রভু এদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলেন। তোমাকেই সেই দেশটি সম্পত্তি হিসেবে এদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। \v 8 সদাপ্রভু নিজেই তোমার আগে আগে যাবেন এবং তোমার সঙ্গে থাকবেন; তিনি কখনও তোমাকে ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না। তুমি ভয় পেয়ো না; নিরাশ হোয়ো না।” \s1 সকলের সামনে বিধান পাঠ \p \v 9 পরে মোশি এই বিধান লিখলেন এবং লেবি গোষ্ঠীর যাজকদের, যারা সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক বয়ে নিয়ে যেতেন, তাদের ও ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ নেতাদের হাতে দিলেন। \v 10 তারপর মোশি আদেশ দিলেন: “প্রত্যেক সপ্তম বছরের শেষে, ঋণ মকুবের বছরে, কুটিরবাস-পর্বের সময়, \v 11 যখন সমস্ত ইস্রায়েলী তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাঁর বেছে নেওয়া জায়গায় যাবে তখন তোমরা এই বিধান সকলের সামনে পাঠ করবে যেন সবাই শুনতে পায়। \v 12 লোকদের একত্র করো—পুরুষ, স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়ে এবং তোমাদের নগরে বসবাসকারী বিদেশিদের—যেন তারা শোনে এবং শিক্ষাগ্রহণ করে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় পায় এবং এই বিধানের সমস্ত কথা যত্নের সঙ্গে পালন করে। \v 13 তাদের ছেলেমেয়েরা, যারা এই বিধান জানে না, তাদের শুনতে হবে এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে শিখতে হবে যতদিন তোমরা সেই দেশে বসবাস করবে যে দেশ জর্ডন পার হয়ে অধিকার করবে।” \s1 ইস্রায়েলের বিদ্রোহের ভবিষ্যদ্‌বাণী \p \v 14 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার মৃত্যুর দিন কাছে এসে গেছে। যিহোশূয়কে ডেকে নিয়ে তুমি সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হও, সেখানে আমি তাকে নিয়োগ করব।” তাতে মোশি ও যিহোশূয় সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হলেন। \p \v 15 তখন সদাপ্রভু মেঘস্তম্ভের মধ্যে সেই তাঁবুতে উপস্থিত হলেন এবং সেই স্তম্ভ তাঁবুর দরজার উপরে দাঁড়াল। \v 16 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে বিশ্রাম করতে যাবে, কিন্তু যে দেশে এই লোকেরা ঢুকতে যাচ্ছে সেখানে খুব তাড়াতাড়ি তারা বিজাতীয় দেবতাদের কাছে নিজেদের বিক্রি করবে। তারা আমাকে ত্যাগ করবে এবং আমি তাদের জন্য যে নিয়ম স্থাপন করেছি তা ভেঙে ফেলবে। \v 17 আর সেদিন ক্রোধে আমি তাদের ত্যাগ করব; আমি তাদের কাছ থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে নেব আর তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের উপরে অনেক বিপর্যয় ও দুঃখকষ্ট নেমে আসবে আর সেদিন তারা জিজ্ঞাসা করবে, ‘আমাদের ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে নেই বলেই কি এই বিপর্যয় আমাদের উপরে এসেছে?’ \v 18 তারা অন্য দেবতাদের দিকে ফিরে যেসব মন্দ কাজ করবে সেইজন্য আমি নিশ্চয়ই সেদিন আমার মুখ ফিরিয়ে নেব। \p \v 19 “এখন তোমরা এই গানটি লিখে নাও আর ইস্রায়েলীদের শেখাবে এবং তাদের দিয়ে গাওয়াবে, যেন তাদের বিরুদ্ধে এটি আমার পক্ষে এক সাক্ষী হয়ে থাকে। \v 20 তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আমার শপথ করা সেই দুধ আর মধু প্রবাহী দেশে যখন আমি তাদের নিয়ে যাব আর যখন তারা পেট পুরে খেয়ে সুখে থাকবে তখন তারা আমাকে তুচ্ছ করে আমার বিধান ভেঙে অন্য দেবতাদের দিকে ফিরে তাদের সেবা করবে। \v 21 আর যখন অনেক বিপর্যয় ও দুঃখকষ্ট তাদের উপরে নেমে আসবে, এই গান তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে, কেননা তাদের বংশধরেরা গানটি ভুলে যাবে না। আমার শপথ নিয়ে প্রতিজ্ঞা করা দেশে নিয়ে যাওয়ার আগেই আমি জানি যে, তারা কী করতে যাচ্ছে।” \v 22 সুতরাং মোশি সেদিন গানটি লিখে ইস্রায়েলীদের শিখিয়েছিলেন। \p \v 23 নূনের ছেলে যিহোশূয়কে সদাপ্রভু এই আদেশ দিলেন: “বলবান হও ও সাহস করো, কারণ যে দেশ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা আমি শপথ করে ইস্রায়েলীদের কাছে করেছিলাম সেখানে তুমিই তাদের নিয়ে যাবে, এবং আমি নিজেই তোমার সঙ্গে থাকব।” \p \v 24 মোশি এই বিধানের সব কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটি পুস্তকে লেখা শেষ করার পর \v 25 তিনি সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক বহনকারী লেবীয়দের এই আদেশ দিলেন: \v 26 “তোমরা এই বিধানপুস্তক নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকের পাশে রাখো। এটি সেখানে তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হয়ে থাকবে। \v 27 কেননা তোমরা কেমন বিদ্রোহী ও একগুঁয়ে তা আমি জানি। আমি তোমাদের মধ্যে বেঁচে থাকতেই যখন তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছ, তখন আমি মারা যাওয়ার পরে আরও কত বেশি করেই না বিদ্রোহী হবে। \v 28 তোমরা তোমাদের গোষ্ঠীর প্রবীণ নেতাদের ও কর্মকর্তাদের আমার সামনে একত্র করো, যেন আমি তাদের শুনবার জন্য এসব কথা বলি এবং তাদের বিরুদ্ধে মহাকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী করি। \v 29 কেননা আমি জানি যে, আমার মৃত্যুর পরে তোমরা একেবারেই মন্দ হয়ে যাবে এবং যে পথে আমি তোমাদের চলবার নির্দেশ দিয়েছি তোমরা তা থেকে সরে যাবে। ভবিষ্যতে তোমাদের উপরে বিপর্যয় নেমে আসবে কারণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই তোমরা করবে এবং তোমাদের নিজের হাতের কাজ দিয়ে তোমরা তাঁকে অসন্তুষ্ট করে তুলবে।” \s1 মোশির গান \p \v 30 তারপর সমস্ত ইস্রায়েলী যারা সমবেত হয়েছিল মোশি তাদের এই গানের কথাগুলি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শোনালেন: \c 32 \q1 \v 1 হে আকাশমণ্ডল, শোনো, আর আমি কথা বলব; \q2 হে পৃথিবী, আমার মুখের কথা শোনো। \q1 \v 2 আমার শিক্ষা বৃষ্টির মতো করে ঝরে পড়ুক \q2 আর আমার কথা শিশিরের মতো করে নেমে আসুক, \q1 নতুন ঘাসের উপর পড়া বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির মতো, \q2 কোমল চারাগাছের উপর পড়ুক ভারী বৃষ্টির মতো। \b \q1 \v 3 আমি সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করব, \q2 তোমরা আমাদের ঈশ্বরের মহিমাকীর্তন করো! \q1 \v 4 তিনিই শৈল, তাঁর কাজ নিখুঁত, \q2 আর তাঁর সমস্ত পথ ন্যায্য। \q1 একজন বিশ্বস্ত ঈশ্বর যিনি কোনও অন্যায় করেন না, \q2 তিনি ন্যায়পরায়ণ ও সঠিক। \b \q1 \v 5 তারা অসৎ এবং তাঁর সন্তান নয়; \q2 তাদের লজ্জা হল তারা পক্ষপাতদুষ্ট এবং কুটিল বংশ। \q1 \v 6 এই কি তোমাদের সদাপ্রভুর ঋণ পরিশোধ করার পদ্ধতি, \q2 হে মূর্খ এবং অবিবেচক লোকসকল? \q1 তিনি কি তোমার বাবা, সৃষ্টিকর্তা নন, \q2 যিনি তোমাকে নির্মাণ ও গঠন করেছেন? \b \q1 \v 7 পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করো; \q2 বহুকাল আগের পূর্বপুরুষদের কথা বিবেচনা করো। \q1 তোমার বাবাকে জিজ্ঞাসা করো আর তিনি তোমাকে বলবেন, \q2 তোমার প্রবীণ নেতাদের করো, তারা তোমাকে বুঝিয়ে দেবেন। \q1 \v 8 পরাৎপর যখন জাতিদের উত্তরাধিকার দিলেন, \q2 যখন তিনি সমস্ত মানুষকে তা ভাগ করে দিলেন, \q1 তিনি লোকদের জন্য সীমানা ঠিক করে দিলেন \q2 ইস্রায়েলের ছেলেদের সংখ্যা অনুসারে। \q1 \v 9 কেননা সদাপ্রভুর প্রাপ্য ভাগই হল তাঁর লোকেরা, \q2 যাকোবই তাঁর বরাদ্দ উত্তরাধিকার। \b \q1 \v 10 তিনি তাকে এক মরুএলাকায় পেলেন, \q2 অনুর্বর এবং গর্জন ভরা স্থানে। \q1 তিনি তাকে ঘিরে রাখলেন ও তার যত্ন নিলেন; \q2 তিনি তাকে চোখের মণির মতো পাহারা দিলেন, \q1 \v 11 ঈগল যেমন তার বাসাকে জাগায় \q2 আর তার বাচ্চাদের উপর ওড়ে, \q1 যে তার ডানা মেলে তাদের ধরে \q2 এবং তাদের উপরে তুলে নেয়। \q1 \v 12 সদাপ্রভু একাই তাকে চালিয়ে নিয়ে আসলেন; \q2 কোনও বিজাতীয় দেবতা তার সঙ্গে ছিল না। \b \q1 \v 13 তিনি দেশের এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে তাকে নিয়ে গেলেন \q2 এবং তাকে ক্ষেতের ফসল খেতে দিলেন। \q1 তিনি পাহাড়ের ফাটল থেকে মধু দিয়ে তাকে পুষ্ট করলেন, \q2 এবং পাথুরে পাহাড় থেকে তেল দিয়ে, \q1 \v 14 পশুপাল থেকে দই ও দুধ দিয়ে \q2 এবং স্বাস্থ্যবান মেষ ও ছাগল দিয়ে, \q1 বাশনের বাছাই করা মেষ দিয়ে \q2 এবং পরিপুষ্ট গম দিয়ে। \q1 তোমরা গেঁজে ওঠা আঙুরের রস পান করলে। \b \q1 \v 15 যিশুরূণ হৃষ্টপুষ্ট হয়ে লাথি মারল; \q2 অতিরিক্ত খেয়ে, তারা ভারী ও চকচকে হয়ে। \q1 যে ঈশ্বর তাদের নির্মাণ করেছেন তাঁকে পরিত্যাগ করেছে \q2 এবং তাদের পরিত্রাতা সেই শৈলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। \q1 \v 16 তাদের বিজাতীয় দেবতাদের দরুন তাঁকে ঈর্ষান্বিত করেছ \q2 এবং তাদের ঘৃণ্য মূর্তি দ্বারা তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছ। \q1 \v 17 তারা মিথ্যা দেবতাদের কাছে বলিদান করেছে, যারা ঈশ্বর নয়, \q2 যে দেবতাদের তারা জানত না, \q2 যে দেবতারা কিছুদিন আগে সম্প্রতি হাজির হয়েছে, \q2 যে দেবতাদের তোমাদের পূর্বপুরুষেরা ভয় করত না। \q1 \v 18 তোমরা সেই শৈল, যিনি তোমাদের বাবা তাঁকে পরিত্যাগ করেছ; \q2 তোমরা সেই ঈশ্বরকে ভুলে গিয়েছ যিনি তোমাদের জন্ম দিয়েছেন। \b \q1 \v 19 তা দেখে সদাপ্রভু তাদের অগ্রাহ্য করেছেন \q2 কারণ তিনি তাঁর ছেলে ও তাঁর মেয়েদের দ্বারা অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। \q1 \v 20 তিনি বললেন, “আমি তাদের থেকে আমার মুখ লুকাব, \q2 এবং তাদের শেষ দশা কী হয় তা দেখব; \q1 কেননা তারা এক বিপথগামী বংশ, \q2 সন্তানেরা যারা অবিশ্বস্ত। \q1 \v 21 যারা ঈশ্বর নয় তাদের দ্বারা আমাকে ঈর্ষান্বিত করেছে \q2 এবং তাদের মূল্যহীন মূর্তি দ্বারা আমার ক্রোধ জাগিয়েছে। \q1 যারা প্রজা নয় তাদের দ্বারা আমি তাদের পরশ্রীকাতর করব; \q2 যে জাতি কিছু বোঝে না তাদের দ্বারা আমি তাদের অসন্তুষ্ট করব। \q1 \v 22 কেননা আমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে, \q2 যা পাতাল পর্যন্ত পুড়িয়ে দেবে। \q1 যা পৃথিবী ও তার ফসল গ্রাস করবে \q2 এবং পাহাড়ের ভিতে আগুন জ্বালাবে। \b \q1 \v 23 “আমি তাদের উপরে বিপর্যয় স্তূপাকার করব \q2 এবং তাদের উপরে আমার সব তির ছুঁড়ব। \q1 \v 24 আমি তাদের বিরুদ্ধে দেহ ক্ষয় করা দুর্ভিক্ষ আনব, \q2 ধ্বংসকারী মহামারি ও কষ্ট ভরা রোগ পাঠিয়ে দেব; \q1 আমি তাদের বিরুদ্ধে বন্য দাঁতাল পশুদের \q2 আর বুকে ভর দিয়ে চলা বিষাক্ত সাপ পাঠাব। \q1 \v 25 রাস্তায় তরোয়াল দ্বারা তারা সন্তানহীন হবে; \q2 বাড়ির ভিতরে ভয়ের রাজত্ব চলবে। \q1 তাদের যুবক ও যুবতীরা, \q2 শিশুরা ও বৃদ্ধরা ধ্বংস হবে। \q1 \v 26 আমি বলেছিলাম আমি তাদের ছড়িয়ে দেব \q2 এবং মানুষের স্মৃতি থেকে তাদের নাম মুছে দেব, \q1 \v 27 কিন্তু আমি শত্রুদের বিদ্রুপ ভয় করেছিলাম, \q2 পাছে বিপক্ষেরা ভুল বোঝে \q1 আর বলে, ‘আমাদের শক্তি জয় করেছে; \q2 সদাপ্রভু এই সমস্ত করেননি।’ ” \b \q1 \v 28 তারা এক বোধশক্তিহীন জাতি, \q2 তাদের মধ্যে কোনও সূক্ষ্ম বুদ্ধি নেই। \q1 \v 29 তারা যদি জ্ঞানী হত ও এটি বুঝতে পারত \q2 আর উপলব্ধি করত যে তাদের শেষ পরিণতি কী হবে! \q1 \v 30 একজন লোক কেমন করে হাজার জনকে তাড়াবে, \q2 কিংবা দুজনকে দেখে দশ হাজার পালাবে, \q1 যদি তাদের শৈল তাদের বিক্রি না করেন, \q2 যদি সদাপ্রভু তাদের তুলে না দেন? \q1 \v 31 কেননা তাদের শৈল আমাদের শৈলের মতো নয়, \q2 যা আমাদের শত্রুও স্বীকার করে। \q1 \v 32 তাদের দ্রাক্ষালতা সদোমের দ্রাক্ষালতা থেকে \q2 এবং ঘমোরার ক্ষেত থেকে এসেছে। \q1 তাদের আঙুর বিষে ভরা, \q2 এবং তাদের আঙুরের গোছা তেতো। \q1 \v 33 তাদের দ্রাক্ষারস হল সাপের বিষ, \q2 কেউটের ভয়ংকর বিষ। \b \q1 \v 34 “আমি কি এটি সঞ্চয় করে রাখিনি \q2 এবং আমার ভাণ্ডার ঘরে সিলমোহর দিইনি? \q1 \v 35 প্রতিশোধ নেওয়া আমারই কাজ; আমি প্রতিফল দেব। \q2 সময় হলেই তাদের পা পিছলে যাবে; \q1 তাদের বিপর্যয়ের দিন নিকটবর্তী \q2 তাদের জন্য যা নিরূপিত তা তাড়াতাড়ি আসবে।” \b \q1 \v 36 সদাপ্রভু তাঁর প্রজাদের বিচার করবেন \q2 এবং তাঁর দাসদের প্রতি সদয় হবেন \q1 যখন তিনি দেখবেন যে তাদের শক্তি চলে গিয়েছে \q2 এবং দাস অথবা মুক্ত, কেউ বাকি নেই। \q1 \v 37 তিনি বলবেন: “তাদের দেবতারা এখন কোথায়, \q2 সেই শৈল কোথায় যার কাছে তারা আশ্রয় নিয়েছিল, \q1 \v 38 সেই দেবতারা যারা তাদের বলির মেদ খেয়েছিল \q2 এবং তাদের পেয়-নৈবেদ্যের দ্রাক্ষারস পান করেছিল? \q1 তারা উঠে তোমাদের সাহায্য করুক! \q2 তারা তোমাদের আশ্রয় দিক! \b \q1 \v 39 “এখন দেখো, আমি, আমিই তিনি! \q2 আমি ছাড়া আর কোনও ঈশ্বর নেই। \q1 আমি মৃত্যু দিই এবং আমিই জীবন দিই, \q2 আমি আঘাত করেছি এবং আমিই সুস্থ করব, \q2 আমার হাত থেকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। \q1 \v 40 আমি স্বর্গের দিকে আমার হাত তুলে শপথ করে বলছি: \q2 আর বলি, আমি অনন্তজীবী, \q1 \v 41 যখন আমি আমার ঝকঝকে তরোয়ালে শান দিই \q2 এবং বিচারের জন্য আমার হাতে তা ধরি, \q1 আমার শত্রুদের আমি শাস্তি দেব \q2 এবং যারা আমাকে ঘৃণা করে আমি তার প্রতিফল দেব। \q1 \v 42 নিহত আর বন্দিদের রক্ত খাইয়ে, \q2 আমার তিরগুলিকে মাতাল করে তুলব, \q1 আমার তরোয়াল মাংস খাবে, \q2 শত্রু সেনাদের মাথার মাংস খাবে।” \b \q1 \v 43 জাতিরা, তার লোকদের সঙ্গে আনন্দ করো, \q2 কেননা তিনি তাঁর দাসদের রক্তের প্রতিফল দেবেন; \q1 তাঁর শত্রুদের প্রতিশোধ নেবেন \q2 এবং নিজের দেশ ও লোকদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবেন। \p \v 44 মোশি নূনের ছেলে যিহোশূয়কে সঙ্গে নিয়ে এই গানের সব কথা লোকদের শোনালেন। \v 45 সমস্ত ইস্রায়েলীর কাছে মোশি যখন এসব কথা শেষ করলেন, \v 46 তিনি তাদের বললেন, “আমি আজ তোমাদের কাছে সাক্ষ্য হিসেবে যা কিছু বললাম, তোমরা সেই সমস্ত কথায় মনোযোগ দাও, আর তোমাদের সন্তানেরা যেন এই বিধানের সব কথা যত্নের সঙ্গে পালন করে এজন্য তাদের সেই আদেশ দাও। \v 47 এগুলি নিরর্থক কথা নয়—এগুলি তোমাদের জীবন। তোমরা যে দেশ অধিকার করতে জর্ডন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে এই কথাগুলি পালন করে বহুদিন বাঁচবে।” \s1 নেবো পর্বতে মোশির মৃত্যু \p \v 48 সেদিনই সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, \v 49 “তুমি যিরীহোর উল্টোদিকে মোয়াব দেশের অবারীম পর্বতমালার মধ্যে নেবো পর্বতে গিয়ে ওঠো এবং অধিকার হিসেবে যে কনান দেশটি আমি ইস্রায়েলীদের দিচ্ছি তা একবার দেখে নাও। \v 50 তোমার দাদা হারোণ যেমন হোর পাহাড়ে মারা গিয়ে তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে তেমনি করে তুমিও যে পাহাড়ে উঠবে সেখানে তুমি মারা যাবে এবং তোমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে মিলিত হবে। \v 51 এর কারণ হল, সীন মরুভূমিতে কাদেশের মরীবার জলের কাছে ইস্রায়েলীদের সামনে তোমরা দুজনেই আমার প্রতি অবিশ্বস্ততার কাজ করেছিলে এবং ইস্রায়েলীদের সামনে আমাকে পবিত্র বলে মান্য করোনি। \v 52 সেইজন্য যে দেশটি আমি ইস্রায়েলীদের দিতে যাচ্ছি তা তুমি কেবল দূর থেকে দেখতে পাবে কিন্তু সেখানে তোমার ঢোকা হবে না।” \c 33 \s1 মোশি গোষ্ঠীদের আশীর্বাদ করেন \p \v 1 ঈশ্বরের লোক মোশি মৃত্যুর আগে ইস্রায়েলীদের এই বলে আশীর্বাদ করেছিলেন: \v 2 তিনি বলেছিলেন: \q1 “সদাপ্রভু সীনয় থেকে আসলেন \q2 তিনি সেয়ীর থেকে তাদের উপর আলো দিলেন; \q2 পারণ পাহাড় থেকে নিজের উজ্জ্বলতা প্রকাশ করলেন। \q1 অসংখ্য পবিত্রজনেদের কাছ থেকে আসলেন \q2 দক্ষিণ থেকে, তাঁর পাহাড়ের ঢাল থেকে। \q1 \v 3 সত্যিই তুমিই যে লোকদের ভালোবাসো; \q2 সকল পবিত্রজন তোমার হাতে। \q1 তোমার পায়ের নিচে তারা নত হয়, \q2 এবং তোমার কাছ থেকে নির্দেশ নেয়, \q1 \v 4 মোশি আমাদের যে বিধান দিয়েছিলেন, \q2 সেটি হল যাকোব গোষ্ঠীর ধন। \q1 \v 5 লোকদের নেতারা যখন একত্র হল, \q2 ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সাথে, \q2 তখন তিনি ছিলেন যিশুরূণের রাজা। \b \q1 \v 6 “রূবেণ যেন বেঁচে থাকে ও না মরে, \q2 তার লোকসংখ্যা যেন কম না হয়।” \p \v 7 এবং তিনি যিহূদার বিষয়ে এই কথা বলেছিলেন: \q1 “হে সদাপ্রভু, তুমি যিহূদার কান্না শোনো; \q2 তার লোকদের কাছে তাকে আনো। \q1 সে নিজের হাতে তার উদ্দেশ্য রক্ষা করে। \q2 শত্রুর বিরুদ্ধে তুমি তার সাহায্যকারী হও!” \p \v 8 লেবির বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “তোমার তুম্মীম ও ঊরীম আছে \q2 তোমার বিশ্বস্ত দাসের কাছে। \q1 মঃসাতে তুমি তার পরীক্ষা করেছিলে; \q2 মরীবার জলের কাছে তুমি তার সঙ্গে ঝগড়া করেছিলে। \q1 \v 9 সে তার বাবা-মায়ের সম্বন্ধে বলেছিল, \q2 ‘তাদের প্রতি আমার কোনও সম্মান নেই।’ \q1 সে তার ভাইদের চিনতে পারেনি \q2 বা সে তার নিজের সন্তানদের স্বীকার করেনি, \q1 কিন্তু সে তোমার বাক্য পাহারা দিয়েছিল \q2 এবং তোমার নিয়ম রক্ষা করেছে। \q1 \v 10 তোমার আদেশ সে যাকোবকে \q2 এবং তোমার বিধান ইস্রায়েলকে শিক্ষা দেয়। \q1 সে তোমার সামনে ধূপ জ্বালায় \q2 এবং তোমার বেদির উপরে পূর্ণাহুতি রাখে। \q1 \v 11 সদাপ্রভু, তার সকল দক্ষতাতে আশীর্বাদ করো, \q2 এবং তার হাতের কাজে খুশি হও। \q1 যারা তার বিরুদ্ধে যাবে তাদের আঘাত করো, \q2 যেন তার শত্রুরা আর উঠতে না পারে।” \p \v 12 বিন্যামীনের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “সদাপ্রভু যাকে ভালোবাসেন সে নিরাপদে তাঁর কাছে থাকবে, \q2 তিনি সবসময় তাকে আড়ালে রাখেন, \q2 এবং সদাপ্রভু যাকে ভালোবাসেন তাঁরই কাঁধের উপরে তার স্থান।” \p \v 13 যোষেফের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, \q1 “সদাপ্রভু যেন তার দেশ আশীর্বাদ করেন \q2 আকাশের মহামূল্য শিশির দিয়ে \q2 এবং মাটির নিচের জল দিয়ে; \q1 \v 14 সূর্যের সেরা দান দিয়ে \q2 এবং চাঁদের সেরা ফসল দিয়ে; \q1 \v 15 পুরোনো পাহাড়ের সম্পদ দিয়ে \q2 এবং চিরকালীন পাহাড়ের উর্বরতা দিয়ে; \q1 \v 16 পৃথিবীর ভালো ভালো জিনিস দিয়ে \q2 আর জ্বলন্ত ঝোপে যিনি ছিলেন তাঁর দয়া দিয়ে। \q1 যোষেফের মাথায় এসব আশীর্বাদ ঝরে পড়ুক, \q2 ভাইদের মধ্যে যে রাজকুমার তার মাথার তালুতে পড়ুক। \q1 \v 17 তার মহিমা প্রথমজাত ষাঁড়ের মতো; \q2 তার শিং বন্য ষাঁড়ের শিং। \q1 তা দিয়ে সে জাতিদের গুঁতাবে, \q2 এমনকি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। \q1 এরকমই হবে ইফ্রয়িমের লক্ষ লক্ষ লোক; \q2 এরকমই হবে মনঃশির হাজার হাজার লোক।” \p \v 18 সবূলূনের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “সবূলূন, তোমার নিজের বাইরে যাওয়াতে আনন্দ করো, \q2 আর তুমি, ইষাখর, নিজের তাঁবুতে আনন্দ করো। \q1 \v 19 তারা লোকদের পাহাড়ে ডাকবে \q2 আর সেখানে ধার্মিকতার বলি উৎসর্গ করবে; \q1 সমুদ্র থেকে তারা প্রচুর ধন তুলবে, \q2 আর বালি থেকে তুলে আনবে বালির তলার ধন।” \p \v 20 গাদের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “ধন্য তিনি, যিনি গাদের রাজ্যের সীমানা বাড়াবেন! \q2 গাদ সেখানে সিংহের মতো বসবাস করে, \q2 সে হাত ও মাথা ছিঁড়বে। \q1 \v 21 সে নিজের জন্য সব থেকে ভালো স্থান নিয়েছে; \q2 নেতার অংশ তার জন্য রাখা আছে। \q1 লোকদের প্রধানেরা যখন একত্র হয়, \q2 সে সদাপ্রভুর ধার্মিকতার ইচ্ছা পালন করেছে, \q2 এবং ইস্রায়েল সম্বন্ধে তার বিচার পালন করেছে।” \p \v 22 দানের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “দান সিংহশাবক, \q2 সে যেন বাশন থেকে লাফিয়ে আসে। \p \v 23 “নপ্তালির বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 “নপ্তালি সদাপ্রভুর করুণায় তৃপ্ত \q2 আর তাঁর আশীর্বাদে পরিপূর্ণ; \q2 সে সমুদ্র ও দক্ষিণ অধিকার করবে।” \p \v 24 আশেরের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: \q1 আশের অন্যদের চেয়ে বেশি আশীর্বাদ পাবে; \q2 সে যেন ভাইদের কাছে প্রিয় হয়, \q2 তার পা-দুটি যেন তেলের মধ্যে ডুবে থাকে। \q1 \v 25 তোমার দ্বারের হুড়কাগুলি লোহা ও ব্রোঞ্জের হবে, \q2 এবং তোমার যেমন দিন তেমন শক্তি হবে। \b \q1 \v 26 “যিশুরূণের ঈশ্বরের মতো আর কেউ নেই, \q2 যিনি তোমাকে সাহায্য করার জন্য আকাশপথে চলেন, \q2 ও নিজের মহিমায় মেঘরথে চড়েন। \q1 \v 27 যিনি আদিকালের ঈশ্বর তিনিই তোমার আশ্রয়, \q2 এবং তার নিচে তাঁর অনন্তস্থায়ী হাত। \q1 তিনি তোমাদের সামনে তোমাদের শত্রুদের তাড়িয়ে দেবেন, \q2 আর বলবেন, ‘এদের ধ্বংস করো!’ \q1 \v 28 তাই ইস্রায়েল নিরাপদে থাকবে; \q2 যাকোব বিপদ সীমার বাইরে বসবাস করবে \q1 শস্যের ও নতুন দ্রাক্ষারসের দেশে \q2 যেখানে আকাশ থেকে শিশির পড়বে। \q1 \v 29 হে ইস্রায়েল, তুমি ধন্য! \q2 তোমার মতো কে, \q2 যে জাতিকে সদাপ্রভু রক্ষা করেছেন? \q1 তিনি তোমার ঢাল ও সাহায্যকারী \q2 এবং তোমার গৌরবজনক তরোয়াল। \q1 তোমার শত্রুরা তোমার সামনে ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকবে, \q2 আর তুমি তাদের উচ্চস্থলী পদদলিত করবে।” \c 34 \s1 মোশি মৃত্যু \p \v 1 এরপর মোশি মোয়াবের সমতল থেকে যিরীহোর উল্টোদিকে পিস্‌গা পর্বতমালার মধ্যে নেবো পর্বতে উঠলেন। সেখান থেকে সদাপ্রভু তাঁকে সমগ্র দেশটি দেখালেন—গিলিয়দ থেকে দান পর্যন্ত, \v 2 নপ্তালির সমস্ত স্থান, ইফ্রয়িম ও মনঃশির দেশ, যিহূদার দেশ ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত, \v 3 নেগেভ এবং খেজুর নগর যিরীহোর তলভূমির সমস্ত অঞ্চল থেকে সোয়র পর্যন্ত। \v 4 তারপর সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “এই সেই দেশ যা আমি অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে শপথ করে বলেছিলাম, ‘দেশটি আমি তোমার বংশধরদের দেব।’ আমি সেটি তোমাকে নিজের চোখে দেখতে দিলাম, কিন্তু তুমি পার হয়ে সেই স্থানে যাবে না।” \p \v 5 তখন সদাপ্রভুর দাস মোশি মোয়াব দেশে মারা গেলেন, যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন। \v 6 মোয়াব দেশের বেথ-পিয়োরের সামনের উপত্যকাতে সদাপ্রভুই তাঁকে কবর দিলেন, কিন্তু তাঁর কবরটি যে কোথায় তা আজ পর্যন্ত কেউ জানে না। \v 7 মারা যাবার সময় মোশির বয়স হয়েছিল 120 বছর, তবুও তাঁর দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়নি কিংবা তাঁর গায়ের জোরও কমে যায়নি। \v 8 ইস্রায়েলীরা মোয়াবের সমভূমিতে মোশির জন্য সেই ত্রিশ দিন শোক পালন করল, যতক্ষণ না কান্নাকাটি ও দুঃখপ্রকাশের সময় শেষ হল। \p \v 9 আর নূনের ছেলে যিহোশূয় বিজ্ঞতার আত্মায় পরিপূর্ণ হয়েছিলেন, কারণ মোশি তাঁর উপরে হাত রেখেছিলেন। সেইজন্য ইস্রায়েলীরা তাঁর কথা শুনত এবং সদাপ্রভু মোশিকে যে আজ্ঞা দিয়েছিলেন সেই অনুসারে কাজ করত। \p \v 10 আজও পর্যন্ত ইস্রায়েলীদের মধ্যে মোশির মতো আর কোনও ভাববাদী জন্মাননি যার সঙ্গে সদাপ্রভু বন্ধুর মতো সামনাসামনি কথা বলতেন, \v 11 যিনি সেইসব চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ করেছিলেন যেগুলি সদাপ্রভু তাঁকে দিয়ে করাবার জন্য মিশরে পাঠিয়েছিলেন—ফরৌণের ও তার কর্মচারীদের এবং তার সমস্ত দেশের কাছে। \v 12 কেননা কেউ এমন পরাক্রম কিংবা ভয়ংকর কাজ করেনি যা মোশি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে করেছিলেন।