\id ACT - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h প্রেরিত \toc1 প্রেরিতদের কার্যবিবরণ \toc2 প্রেরিত \toc3 প্রেরি \mt1 প্রেরিতদের কার্যবিবরণ \c 1 \s1 যীশু স্বর্গে নীত হলেন \p \v 1 হে থিয়ফিল, আমার আগের বইতে আমি সেইসব বিষয় লিখেছি, যেগুলি যীশু সম্পন্ন করতে ও শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন, \v 2 সেদিন পর্যন্ত, যখন তিনি তাঁর মনোনীত প্রেরিতশিষ্যদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশদান করার পর ঊর্ধ্বে নীত হন। \v 3 তাঁর কষ্টভোগের পর, তিনি এসব মানুষের কাছে নিজেকে দেখা দিলেন এবং বহু বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেন যে, তিনি জীবিত আছেন। চল্লিশ দিন অবধি তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্য সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন। \v 4 একবার, যখন তিনি তাদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছিলেন তখন তিনি তাঁদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা জেরুশালেম ছেড়ে যেয়ো না, কিন্তু আমার পিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া যে দানের কথা আমাকে বলতে শুনেছ, তাঁর অপেক্ষায় থেকো। \v 5 কারণ যোহন জলে বাপ্তিষ্ম দিতেন ঠিকই, কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম লাভ করবে।” \p \v 6 পরে তাঁরা যখন একত্র মিলিত হলেন, তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইস্রায়েলীদের কাছে রাজ্য ফিরিয়ে দিতে চলেছেন?” \p \v 7 তিনি তাঁদের বললেন, “পিতা তাঁর নিজস্ব অধিকারে যে সময় ও দিন নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, সেসব তোমাদের জানার কথা নয়। \v 8 কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তি লাভ করবে, আর তোমরা জেরুশালেমে ও সমস্ত যিহূদিয়ায় ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে।” \p \v 9 একথা বলার পর তাঁকে তাঁদের চোখের সামনেই স্বর্গে তুলে নেওয়া হল ও একখণ্ড মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল। \p \v 10 তিনি যখন যাচ্ছিলেন, তাঁরা অপলক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়েছিলেন, তখন হঠাৎই সাদা পোশাক পরে দুজন পুরুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। \v 11 তাঁরা বললেন, “হে গালীলীয়রা, তোমরা এখানে কেন আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ? এই একই যীশু, যাঁকে তোমাদের মধ্য থেকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হল, তাঁকে যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক সেভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।” \s1 মত্তথিয় প্রেরিতশিষ্যরূপে মনোনীত হলেন \p \v 12 এরপর তাঁরা “জলপাই পর্বত” নামক পাহাড় থেকে জেরুশালেমে ফিরে এলেন। নগর থেকে তা ছিল এক বিশ্রামদিনের হাঁটাপথ।\f + \fr 1:12 \fr*\ft অর্থাৎ, বিশ্রামদিনে যতদূর পর্যন্ত পথ চলা অনুমোদিত ছিল, প্রায় 1,100 মিটার।\ft*\f* \v 13 তাঁরা যখন নগরে পৌঁছালেন, তাঁরা উপরতলার সেই ঘরে গেলেন, যেখানে তাঁরা থাকতেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন: \b \li1 পিতর, যোহন, যাকোব ও আন্দ্রিয়, \li1 ফিলিপ ও থোমা, \li1 বর্থলময় ও মথি, \li1 আলফেয়ের ছেলে যাকোব এবং জিলট\f + \fr 1:13 \fr*\ft সমস্ত বিশ্বে ইহুদি ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়োজিত ও প্রাচীন রোমের শাসন-বিরোধী ইহুদি-গোষ্ঠীর মানুষ।\ft*\f* দলভুক্ত শিমোন ও যাকোবের ছেলে যিহূদা। \b \p \v 14 তাঁরা সকলে এবং কয়েকজন মহিলা, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইরা একযোগে প্রার্থনায় ক্রমাগত লেগে রইলেন। \p \v 15 সেই সময় একদিন পিতর বিশ্বাসীদের (প্রায় একশো কুড়ি জনের একটি দল) মধ্যে উঠে দাঁড়ালেন। \v 16 তিনি বললেন, “সকল ভাই ও বোন, যীশুকে যারা গ্রেপ্তার করেছিল, তাদের পথপ্রদর্শক যে যিহূদা, তার সম্পর্কে অনেক আগে দাউদের মাধ্যমে পবিত্র আত্মা যে কথা বলেছিলেন, সেই শাস্ত্রবাণী পূর্ণ হওয়া আবশ্যক ছিল। \v 17 সে আমাদেরই একজন ছিল এবং আমাদের এই পরিচর্যায় অংশগ্রহণ করেছিল।” \p \v 18 তার দুষ্টতার জন্য সে যে পুরস্কার পেয়েছিল, তা দিয়ে যিহূদা একটি জমি কিনেছিল। সেখানেই সে নিচের দিকে মাথা করে পড়ে গেল, তার শরীর ফেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ও তার সমস্ত অন্ত্র বেরিয়ে পড়ল। \v 19 জেরুশালেমের সকলে একথা শুনতে পেল, তাই তারা তাদের ভাষায় সেই জমির নাম দিল হকলদামা, যার অর্থ, রক্তক্ষেত্র। \p \v 20 পিতর বললেন, “বস্তুত, গীতসংহিতায় লেখা আছে, \q1 “ ‘তার বাসস্থান শূন্য হোক; \q2 সেখানে বসবাস করার জন্য যেন কেউ না থাকে,’\f + \fr 1:20 \fr*\ft \+xt গীত 69:25; 109:8\+xt*\ft*\f* \m আবার, \q1 “ ‘অন্য কেউ যেন তার নেতৃত্বের পদে নিযুক্ত হয়।’\f + \fr 1:20 \fr*\ft নেতৃত্ব বা প্রেরিতশিষ্যের পদ\ft*\f* \m \v 21 অতএব, প্রভু যীশু যতদিন আমাদের সঙ্গে বাস করেছিলেন এবং সেই সময়ে আমাদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদেরই একজনকে মনোনীত করা আবশ্যক, \v 22 অর্থাৎ, যোহনের বাপ্তিষ্ম দেওয়ার সময় থেকে শুরু করে আমাদের মধ্য থেকে যীশুর স্বর্গে নীত হওয়ার সময় পর্যন্ত। কারণ এদেরই মধ্যে একজন ব্যক্তিকে আমাদের সঙ্গে তাঁর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে।” \p \v 23 তখন তাঁরা দুজনের নাম প্রস্তাব করলেন: বার্শব্বা নামে আখ্যাত যোষেফ (ইনি যুষ্ট নামেও পরিচিত ছিলেন), ও মত্তথিয়। \v 24 তারপর তাঁরা প্রার্থনা করলেন, “প্রভু, তুমি সকলের অন্তর জানো। আমাদের দেখিয়ে দাও, এই দুজনের মধ্যে তুমি কাকে মনোনীত করেছ, \v 25 যে এই প্রৈরিতিক পরিচর্যার ভার গ্রহণ করবে, যা যিহূদা ত্যাগ করে তার যেখানে যাওয়া উচিত ছিল, সেখানে গিয়েছে।” \v 26 পরে তাঁরা গুটিকাপাত করলেন ও মত্তথিয়ের নামে গুটি উঠল। এইভাবে তিনি সেই এগারোজন প্রেরিতশিষ্যের সঙ্গে যুক্ত হলেন। \c 2 \s1 পঞ্চাশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মার আগমন \p \v 1 যখন পঞ্চাশত্তমীর\f + \fr 2:1 \fr*\ft ইহুদিদের নিস্তারপর্বের পরে পঞ্চাশতম দিনে পালিত শস্য উৎসব।\ft*\f* দিন উপস্থিত হল, তাঁরা সকলেই এক স্থানে সমবেত ছিলেন। \v 2 হঠাৎই আকাশ থেকে প্রবল বায়ুপ্রবাহের মতো একটি শব্দ ভেসে এল এবং তাঁরা যেখানে বসেছিলেন, সেই ঘরের সর্বত্র ব্যাপ্ত হল। \v 3 তাঁরা দেখতে পেলেন, যেন জিভের মতো আগুনের শিখা, যা ভাগ ভাগ হয়ে তাঁদের প্রত্যেকের উপরে অধিষ্ঠান করল। \v 4 আর তাঁরা সবাই পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন এবং আত্মা যেমন সক্ষমতা দিলেন, তাঁরা সেইরূপ অন্য অন্য ভাষায় কথা বলতে লাগলেন। \p \v 5 সেই সময় আকাশের নিচে অবস্থিত সমস্ত দেশ থেকে ঈশ্বরভয়শীল ইহুদিরা জেরুশালেমে বাস করছিলেন। \v 6 তারা যখন এই শব্দ শুনল, তারা হতচকিত হয়ে সেই স্থানে এসে ভিড় করল, কারণ তাদের মধ্যে প্রত্যেকেই নিজস্ব ভাষায় তাঁদের কথা বলতে শুনল। \v 7 অত্যন্ত চমৎকৃত হয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “এই যে লোকেরা কথা বলছে, এরা সবাই কি গালীলীয় নয়? \v 8 তাহলে কীভাবে আমরা প্রত্যেকেই তার নিজস্ব জন্মদেশীয় ভাষায় তাঁদের কথা বলতে শুনছি? \v 9 পার্থীয়, মাদীয়, এলমীয় এবং মেসোপটেমিয়া, যিহূদিয়া ও কাপ্পাদোকিয়া, পন্ত ও এশিয়ার\f + \fr 2:9 \fr*\ft অর্থাৎ, এই নামে পরিচিত রোমীয় প্রদেশগুলির (বর্তমান তুরস্কের)\ft*\f* অধিবাসীরা, \v 10 ফরুগিয়া ও পাম্ফুলিয়া, মিশর ও কুরীণের কাছাকাছি লিবিয়ার অংশবিশেষ, রোম থেকে আগত পরিদর্শকেরা, \v 11 (ইহুদি ও ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত, উভয়ই); ক্রীটিয় ও আরবীয়েরা, আমরা শুনতে পাচ্ছি, আমাদের নিজস্ব ভাষায় তাঁরা ঈশ্বরের বিস্ময়কর কীর্তির কথা ঘোষণা করছেন!” \v 12 চমৎকৃত ও হতভম্ব হয়ে তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করল, “এর অর্থ কী?” \p \v 13 কেউ কেউ অবশ্য তাদের পরিহাস করে বলল, “এরা অত্যধিক সুরাপান করে ফেলেছে।” \s1 জনসাধারণের উদ্দেশে পিতরের বক্তৃতা \p \v 14 তখন পিতর সেই এগারোজনের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে জনসাধারণকে সম্বোধন করলেন, “হে ইহুদি জনমণ্ডলী ও জেরুশালেমে বসবাসকারী আপনারা সকলে, আমাকে এই ঘটনার কথা আপনাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে দিন; আমি যা বলি, তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। \v 15 এই লোকেরা নেশাগ্রস্ত নয়, যেমন আপনারা মনে করছেন। এখন সকাল নয়টা মাত্র! \v 16 আসলে ভাববাদী যোয়েল এই ঘটনার কথাই ব্যক্ত করেছিলেন: \q1 \v 17 “ঈশ্বর বলেন, ‘অন্তিমকালে, \q2 আমি সমস্ত মানুষের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব। \q1 তোমাদের ছেলে ও মেয়েরা ভাববাণী বলবে, \q2 তোমাদের প্রবীণেরা স্বপ্ন দেখবে, \q2 তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে। \q1 \v 18 এমনকি, আমার দাস-দাসীদেরও উপরে, \q2 সেইসব দিনে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব, \q2 আর তারা ভবিষ্যদ্‌বাণী করবে। \q1 \v 19 ঊর্ধ্বাকাশে আমি দেখাব বিস্ময়কর সব লক্ষণ \q2 এবং নিচে পৃথিবীতে বিভিন্ন নিদর্শন, \q2 রক্ত ও আগুন এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী। \q1 \v 20 প্রভুর সেই মহৎ ও মহিমাময় দিনের \q2 আগমনের পূর্বে, \q2 সূর্য অন্ধকার এবং চাঁদ রক্তবর্ণ হয়ে যাবে। \q1 \v 21 আর যে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে, \q2 সেই পরিত্রাণ পাবে।’\f + \fr 2:21 \fr*\ft \+xt যোয়েল 2:28-32\+xt*\ft*\f* \p \v 22 “হে ইস্রায়েলবাসী, একথা শুনুন, নাসরতীয় যীশু অনেক অলৌকিক কাজ, বিস্ময়কর ঘটনা ও নিদর্শনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আপনাদের কাছে ঈশ্বরের দ্বারা স্বীকৃত মানুষ ছিলেন। সেইসব কাজ ঈশ্বর তাঁরই মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন, যেমন আপনারা নিজেরাই অবগত আছেন। \v 23 সেই ব্যক্তিকে ঈশ্বর তাঁর নিরূপিত পরিকল্পনা ও পূর্বজ্ঞান অনুসারে তোমাদের হাতে সমর্পণ করেছিলেন, আর তোমরা দুর্জন\f + \fr 2:23 \fr*\ft বা অধর্মীদের, অর্থাৎ যারা বিধানের অধিকারী নয়, সেই অইহুদিদের।\ft*\f* ব্যক্তিদের সহায়তায় তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছ। \v 24 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে মৃত্যুর কবল থেকে উত্থাপিত করেছেন, কারণ মৃত্যুর পক্ষে তাঁকে ধরে রাখা অসম্ভব ছিল। \v 25 দাউদ তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, \q1 “ ‘আমি প্রভুকে নিয়ত, আমার সামনে দেখেছি। \q2 কারণ, তিনি তো আমার ডানপাশে, \q2 আমি বিচলিত হব না। \q1 \v 26 তাই আমার হৃদয় আনন্দিত এবং আমার জিভ উল্লাস করে; \q2 আমার দেহ প্রত্যাশায় বিশ্রাম নেবে, \q1 \v 27 কারণ তুমি কখনও আমাকে পাতালের গর্ভে পরিত্যাগ করবে না, \q2 তুমি তোমার পবিত্রজনকে ক্ষয় দেখতে দেবে না। \q1 \v 28 তুমি আমার কাছে জীবনের পথ অবগত করেছ, \q2 তোমার সামনে আমায় আনন্দে পূর্ণ করবে।’\f + \fr 2:28 \fr*\ft \+xt গীত 16:8-11\+xt*\ft*\f* \p \v 29 “হে ইস্রায়েলবাসী, আমি আপনাদের মুক্তকণ্ঠে বলতে পারি যে, পূর্বপুরুষ দাউদ মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল; তাঁর কবর আজও এখানে আমাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। \v 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন, আর তিনি জানতেন যে, ঈশ্বর শপথপূর্বক তাঁকে প্রতিশ্রুতি দান করেছেন, তিনি তাঁর এক সন্তানকে তাঁর সিংহাসনে স্থাপন করবেন। \v 31 ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা আগেই দেখতে পেয়ে তিনি মশীহের পুনরুত্থান সম্পর্কে বলেছেন যে, তিনি পাতালের গর্ভে পরিত্যক্ত হবেন না, কিংবা তাঁর শরীর ক্ষয় দেখবে না। \v 32 এই যীশুকেই ঈশ্বর মৃত্যু থেকে জীবনে বাঁচিয়ে তুলেছেন এবং আমরা সকলেই এই ঘটনার সাক্ষী। \v 33 ঈশ্বরের ডানদিকে উন্নীত হয়ে তিনি পিতার কাছ থেকে প্রতিশ্রুত পবিত্র আত্মা লাভ করেছেন এবং আমাদের উপরে তাঁকে ঢেলে দিয়েছেন, যেমন আপনারা এখন দেখছেন ও শুনছেন। \v 34 কিন্তু দাউদ নিজে স্বর্গে যাননি, তবুও তিনি বলেছেন, \q1 “ ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, \q2 তুমি আমার ডানদিকে বসো, \q1 \v 35 যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদের \q2 তোমার পাদপীঠ করি।’\f + \fr 2:35 \fr*\ft \+xt গীত 110:1\+xt*\ft*\f* \p \v 36 “সেই কারণে, সমস্ত ইস্রায়েল এ বিষয়ে নিশ্চিত হোক: যে যীশুকে তোমরা ক্রুশে বিদ্ধ করেছ, ঈশ্বর তাঁকে প্রভু ও মশীহ, এই উভয়ই করেছেন।” \p \v 37 সকলে যখন একথা শুনল, তাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হল। তারা পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যদের বলল, “ভাইরা, আমরা কী করব?” \p \v 38 পিতর উত্তর দিলেন, “তোমরা প্রত্যেকে মন পরিবর্তন করো ও যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করো, যেন তোমাদের পাপ ক্ষমা হয়, তাহলে তোমরা ঈশ্বরের দানস্বরূপ পবিত্র আত্মা লাভ করবে। \v 39 এই প্রতিশ্রুতি তোমাদের ও তোমাদের সন্তানদের জন্য এবং যারা দূরে আছে তাদের সকলের জন্য—সকলের জন্য যাদেরকে আমাদের ঈশ্বর প্রভু আহ্বান করবেন।” \p \v 40 আরও অনেক কথায় তিনি তাদের সতর্ক করে দিলেন এবং তিনি তাদের উপদেশ দিয়ে বললেন, “এই কলুষিত\f + \fr 2:40 \fr*\ft বিপথগামী, বা সত্যভ্রষ্ট।\ft*\f* প্রজন্ম থেকে তোমরা নিজেদের রক্ষা করো।” \v 41 যারা তাঁর বাণী গ্রাহ্য করল, তারা বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করল, আর সেদিন প্রায় তিন হাজার লোক তাদের সঙ্গে যুক্ত হল। \s1 বিশ্বাসীদের সহভাগিতা \p \v 42 আর তারা প্রেরিতশিষ্যদের শিক্ষায় ও সহভাগিতায়, রুটি-ভাঙায় ও প্রার্থনায় একান্তভাবে অংশগ্রহণ করল। \v 43 প্রেরিতশিষ্যদের মাধ্যমে বহু আশ্চর্য ঘটনা ও অলৌকিক নিদর্শন সম্পন্ন হতে দেখে প্রত্যেকে ভক্তিপূর্ণ ভয়ে পূর্ণ হয়ে উঠল। \v 44 যারা বিশ্বাস করল তারা সকলেই একসঙ্গে থাকত ও একই ভাণ্ডার থেকে তাদের প্রয়োজন মেটাতো। \v 45 তাদের বিষয়সম্পত্তি ও জিনিসপত্র বিক্রি করে তাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন অনুযায়ী তা ভাগ করে দিত। \v 46 প্রতিদিন তারা একসঙ্গে মন্দির-প্রাঙ্গণে মিলিত হত। তারা নিজেদের ঘরে রুটি ভাঙত এবং আনন্দের সঙ্গে ও হৃদয়ের সরলতায় একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করত। \v 47 তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করত এবং সব মানুষ তাদের শ্রদ্ধা করত। আর যারা পরিত্রাণ লাভ করল, প্রভু দিন-প্রতিদিন তাঁদের সঙ্গে পরিত্রাণপ্রাপ্তদের যুক্ত করে তাঁদের সংখ্যা বৃদ্ধি করলেন। \c 3 \s1 জন্ম থেকে খোঁড়া এক ব্যক্তিকে পিতর সুস্থ করলেন \p \v 1 একদিন প্রার্থনার নির্দিষ্ট সময়ে, বেলা তিনটের সময়, পিতর ও যোহন একসঙ্গে মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। \v 2 এমন সময়ে জন্ম থেকে খোঁড়া এক ব্যক্তিকে মন্দিরের সুন্দর নামক দরজার দিকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যারা মন্দির-প্রাঙ্গণে যেত, তাদের কাছে ভিক্ষা চাওয়ার জন্য তাকে রোজ সেখানে বসিয়ে রাখা হত। \v 3 সে যখন পিতর ও যোহনকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখল, সে তাদের কাছে টাকাপয়সা ভিক্ষা করল। \v 4 পিতর সোজা তার দিকে তাকালেন, যোহনও তাই করলেন। তখন পিতর বললেন, “আমাদের দিকে তাকাও!” \v 5 এতে সেই ব্যক্তি তাদের দিকে তাকিয়ে দেখল। তাদের কাছ থেকে সে কিছু পাওয়ার আশা করেছিল। \p \v 6 তখন পিতর বললেন, “সোনা কি রুপো আমার কাছে নেই, কিন্তু আমার কাছে যা আছে, আমি তাই তোমাকে দান করি। তুমি নাসরতের যীশু খ্রীষ্টের নামে হেঁটে বেড়াও।” \v 7 তার ডান হাত ধরে তিনি তাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন, সঙ্গে সঙ্গে মানুষটির দু-পা ও গোড়ালি সবল হয়ে উঠল। \v 8 সে তার পায়ে লাফ দিয়ে উঠল ও চলে বেড়াতে লাগল। তারপর সে চলতে চলতে, লাফ দিতে দিতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে তাঁদের সঙ্গে মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করল। \v 9 সব লোক তাকে যখন চলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে দেখল, \v 10 তারা তাকে চিনতে পারল যে, এ সেই ব্যক্তি, যে সুন্দর নামে পরিচিত মন্দিরের দরজায় বসে ভিক্ষা চাইত। তার প্রতি যা ঘটেছে, তা দেখে তারা চমৎকৃত ও বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়ল। \s1 দর্শকদের সামনে পিতরের বক্তৃতা \p \v 11 আর সেই ব্যক্তি পিতর ও যোহনের কাছে ঘনিষ্ঠভাবে দাঁড়িয়ে থাকাতে সব লোক বিস্মিত হল। তারা সবাই শলোমনের বারান্দায়\f + \fr 3:11 \fr*\ft এটি হল মন্দিরের পূর্বদিকে স্তম্ভ সমন্বিত লম্বা বারান্দা। এখানে ইহুদি শাস্ত্রবিদরা ধর্মশিক্ষা দিতেন।\ft*\f* তাদের কাছে দৌড়ে এল। \v 12 পিতর যখন তা দেখলেন, তিনি তাদের বললেন, “হে ইস্রায়েলবাসী, এই ঘটনায় তোমরা কেন বিস্মিত হচ্ছো? কেনই বা আমাদের দিকে এমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছ, যেন আমরা নিজস্ব ক্ষমতায় বা পুণ্যবলে এই ব্যক্তিকে চলার শক্তি দিয়েছি? \v 13 অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর সেবক সেই যীশুকে গৌরবান্বিত করেছেন। তোমরা তাঁকে হত্যা করার জন্য সমর্পণ করেছিলে এবং পীলাতের বিচারালয়ের সামনে তাঁকে অস্বীকার করেছিলে, যদিও তিনি তাঁকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। \v 14 তোমরা সেই পবিত্র ও ধার্মিক জনকে অস্বীকার করে চেয়েছিলে যেন এক হত্যাকারীকে তোমাদের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। \v 15 যিনি জীবনের স্রষ্টা, তোমরা তাঁকে হত্যা করেছিলে, কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করেছেন। আমরা এই ঘটনার সাক্ষী। \v 16 তোমরা এই যে ব্যক্তিকে দেখছ ও জানো, যীশুর নামে বিশ্বাস করেই সে সবল হয়েছে। যীশুর নাম ও তাঁর মাধ্যমে যে বিশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তার দ্বারা সে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়েছে, যেমন তোমরা সবাই দেখছ। \p \v 17 “হে ইস্রায়েলবাসী, আমি জানি, তোমাদের নেতাদের মতো তোমরাও না জেনে এসব কাজ করেছিলে। \v 18 কিন্তু ঈশ্বর তা এভাবেই পূর্ণ করেছেন, যা তিনি তাঁর সব ভাববাদীর দ্বারা অনেক আগেই ঘোষণা করেছিলেন, বলেছিলেন যে তাঁর মশীহ কষ্টভোগ করবেন। \v 19 সুতরাং, এখন তোমরা মন পরিবর্তন করো ও ঈশ্বরের প্রতি ফিরে এসো, যেন তোমাদের সব পাপ মুছে ফেলা হয় ও প্রভুর কাছ থেকে পুনরুজ্জীবনের সময় উপস্থিত হয়। \v 20 তখন তিনি সেই মশীহকে, অর্থাৎ যীশুকে, আবার পাঠাবেন যাঁকে তিনি তোমাদের জন্য নিযুক্ত করেছেন। \v 21 তাঁকে সেই সময় পর্যন্ত স্বর্গে থাকতেই হবে, যতক্ষণ না সবকিছু পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঈশ্বরের সময় উপস্থিত হয়, যেমন তিনি তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুকাল আগেই প্রতিশ্রুতি দান করেছিলেন। \v 22 কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের ভাইয়ের মধ্য থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীর উত্থান ঘটাবেন। তিনি তোমাদের যা বলেন, তোমরা অবশ্যই সেইসব বিষয় মন দিয়ে শোনো। \v 23 কোনো ব্যক্তি যদি তাঁর কথা না শোনে, সে তার আপনজনদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছিন্ন হবে।’\f + \fr 3:23 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 18:15,18,19\+xt*\ft*\f* \p \v 24 “প্রকৃতপক্ষে শমূয়েল থেকে শুরু করে যতজন ভাববাদী বাণী প্রচার করেছেন, তাঁরা এই সময়ের বিষয়েই আগে ঘোষণা করেছিলেন। \v 25 আর তোমরা হলে সেই ভাববাদীদের উত্তরাধিকারী এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে স্থাপিত নিয়মের উত্তরাধিকারী। ঈশ্বর অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে।’\f + \fr 3:25 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 21:18; 26:4\+xt*\ft*\f* \v 26 যখন ঈশ্বর তাঁর দাসকে মনোনীত করলেন, তিনি তাঁকে প্রথমে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, যেন তোমাদের প্রত্যেককে নিজেদের দুষ্টতার জীবনাচরণ থেকে ফিরিয়ে আশীর্বাদ করতে পারেন।” \c 4 \s1 মহাসভার সামনে পিতর ও যোহন \p \v 1 পিতর ও যোহন যখন জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই সময় যাজকেরা, মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও সদ্দূকীরা তাদের কাছে এল। \v 2 তারা অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিল, কারণ প্রেরিতশিষ্যেরা লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং যীশুর মাধ্যমেই মৃতলোক থেকে পুনরুত্থানের কথা প্রচার করছিলেন। \v 3 তারা পিতর ও যোহনকে গ্রেপ্তার করল, আর সন্ধ্যা হয়েছিল বলে তারা পরদিন পর্যন্ত তাঁদের কারাগার বন্দি করে রাখল। \v 4 কিন্তু যারা বাক্য শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল এবং পুরুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হল প্রায় পাঁচ হাজার। \p \v 5 পরের দিন শাসকেরা, প্রাচীনবর্গ ও শাস্ত্রবিদরা জেরুশালেমে মিলিত হল। \v 6 মহাযাজক হানন সেখানে উপস্থিত ছিলেন, আর ছিলেন কায়াফা, যোহন, আলেকজান্ডার ও মহাযাজকের পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিরাও। \v 7 তাঁরা পিতর ও যোহনকে তাঁদের কাছে তলব করে প্রশ্ন করতে শুরু করলেন, “কোন শক্তিতে বা কী নামে তোমরা এই কাজ করেছ?” \p \v 8 তখন পিতর, পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁদের বললেন, “শাসকেরা ও সমাজের প্রাচীনবর্গ! \v 9 একজন পঙ্গু মানুষের প্রতি করুণা দেখানোর জন্য যদি আজ আমাদের জবাবদিহি করতে বলা হচ্ছে এবং জিজ্ঞেস করা হচ্ছে যে, সে কীভাবে সুস্থ হল, \v 10 তাহলে আপনারা ও ইস্রায়েলের সব মানুষ একথা জেনে নিন: যাঁকে আপনারা ক্রুশার্পিত করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর যাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন, নাসরতের সেই যীশু খ্রীষ্টের নামে এই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। \v 11 তিনিই \q1 “ ‘সেই পাথর যাঁকে গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করেছিলেন, \q2 তিনিই হয়ে উঠেছেন কোণের প্রধান পাথর।’\f + \fr 4:11 \fr*\ft বা, ভবনের শীর্ষপ্রস্তর \+xt গীত 118:22\+xt*\ft*\f* \m \v 12 আর অন্য কারও কাছে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না, কারণ আকাশের নিচে, মানুষের মধ্যে এমন আর কোনো নাম দেওয়া হয়নি, যার দ্বারা আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।” \p \v 13 তাঁরা যখন পিতর ও যোহনের সাহসিকতা দেখলেন ও উপলব্ধি করলেন যে তাঁরা ছিলেন অশিক্ষিত, সাধারণ মানুষ, তখন তাঁরা বিস্মিত হলেন। তাঁরা বুঝতে পারলেন যে এঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন। \v 14 কিন্তু যে ব্যক্তি সুস্থ করেছিল, তাকে তাঁদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, তাঁদের বলার মতো আর কিছুই ছিল না। \v 15 সেই কারণে তাঁরা তাঁদের মহাসভা\f + \fr 4:15 \fr*\ft বিচার পরিষদ।\ft*\f* থেকে বাইরে যেতে বললেন এবং তারপর একত্রে শলাপরামর্শ করতে লাগলেন। \v 16 তাঁরা বলাবলি করলেন, “এই লোকগুলিকে নিয়ে আমরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করব? জেরুশালেমে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই জানে যে, তাঁরা এক নজিরবিহীন অলৌকিক চিহ্নকাজ সম্পন্ন করেছে, আর আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না। \v 17 কিন্তু এই বিষয় লোকদের মধ্যে যেন আর ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য আমরা অবশ্যই তাঁদের সতর্ক করে দেব, যেন তাঁরা এই নামে আর কারও কাছে আর কোনো কথা না বলে।” \p \v 18 তাঁরা তখন আবার তাঁদের ভিতরে ডেকে পাঠালেন ও আদেশ দিলেন, যেন তাঁরা যীশুর নামে আদৌ আর কোনো কথা না বলে, বা শিক্ষা না দেয়। \v 19 কিন্তু পিতর ও যোহন উত্তর দিলেন, “আপনারা নিজেরাই বিচার করুন, ঈশ্বরের কথা শোনার চেয়ে আপনাদের কথা শোনা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ন্যায়সংগত কি না। \v 20 কারণ আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি, তা না বলে থাকতে পারছি না।” \p \v 21 পরে আরও অনেকভাবে ভয় দেখানোর পর তাঁরা তাঁদের যেতে দিলেন। তাঁরা ঠিক করতে পারলেন না, কীভাবে তাঁদের শাস্তি দেবেন, কারণ যা ঘটেছিল, সেই কারণে সব মানুষই ঈশ্বরের প্রশংসা-স্তব করছিল। \v 22 আর যে মানুষটি অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়েছিল, তার বয়স ছিল চল্লিশ বছরের বেশি। \s1 বিশ্বাসীদের প্রার্থনা \p \v 23 মুক্তিলাভের পর, পিতর ও যোহন, তাঁদের নিজেদের লোকজনের কাছে ফিরে গেলেন এবং প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনবর্গ, যা কিছু তাঁদের বলেছিলেন, সেই সংবাদ তাঁদের দিলেন। \v 24 তাঁরা যখন একথা শুনলেন, তখন তাঁরা সম্মিলিতভাবে উচ্চকণ্ঠে প্রার্থনায় ঈশ্বরের উদ্দেশে বলতে লাগলেন, “হে সার্বভৌম\f + \fr 4:24 \fr*\ft বা সর্বাধিপতি।\ft*\f* প্রভু, তুমিই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী ও সমুদ্র ও সেগুলির মধ্যে যা কিছু আছে সেসব সৃষ্টি করেছ। \v 25 তুমি, তোমার দাস, আমাদের পিতৃপুরুষ দাউদের মাধ্যমে, পবিত্র আত্মার দ্বারা বলেছিলে, \q1 “ ‘কেন জাতিগণ চক্রান্ত করে \q2 আর লোকেরা কেন বৃথাই সংকল্প করে? \q1 \v 26 পৃথিবীর রাজারা উদিত হয় \q2 এবং শাসকেরা সংঘবদ্ধ হয়, \q1 সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে \q2 ও তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে।’\f + \fr 4:26 \fr*\ft \+xt গীত 2:1,2\+xt*\ft*\f* \m \v 27 সত্যিই হেরোদ ও পন্তীয় পীলাত পরজাতিদের ও ইস্রায়েলী জনগণের সঙ্গে এই নগরে মিলিত হয়ে তোমার সেই পবিত্র সেবক যীশু, যাঁকে তুমি অভিষিক্ত করেছিলে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। \v 28 তারা তাই করেছিল, যা তোমার পরাক্রম ও ইচ্ছা অনুসারে অবশ্যই ঘটবে বলে অনেক আগে থেকে স্থির করে রেখেছিল। \v 29 এখন হে প্রভু, ওদের ভয় দেখানোর কথা বিবেচনা করো ও সম্পূর্ণ সাহসিকতার সঙ্গে তোমার বাক্য বলার জন্য তোমার এই দাসেদের ক্ষমতা দাও। \v 30 তোমার পবিত্র সেবক যীশুর নামের মাধ্যমে রোগনিরাময় ও অলৌকিক সব নিদর্শন এবং বিস্ময়কর কাজগুলি সম্পন্ন করতে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও।” \p \v 31 তাঁদের প্রার্থনা শেষ হলে, তাঁরা যে স্থানে মিলিত হয়েছিলেন, সেই স্থান কেঁপে উঠল। আর তাঁরা সকলেই পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন এবং সাহসের সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য বলতে লাগলেন। \s1 বিশ্বাসীদের নিজস্ব সম্পত্তির অংশ-বিতরণ \p \v 32 বিশ্বাসীরা সকলেই ছিল একচিত্ত ও একপ্রাণ। কেউই তাঁর সম্পত্তির কোনো অংশ নিজের বলে দাবি করত না। কিন্তু তাদের যা কিছু ছিল, তা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিত। \v 33 প্রেরিতশিষ্যেরা মহাপরাক্রমের সঙ্গে প্রভু যীশুর পুনরুত্থান সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে লাগলেন এবং প্রচুর অনুগ্রহ তাদের সকলের উপরে ছিল। \v 34 তাদের মধ্যে কেউ অভাবগ্রস্ত ছিল না। কারণ, সময়ে সময়ে, যাদের জমি বা বাড়িঘর ছিল, তারা সেগুলি বিক্রি করে, সেই বিক্রি করা অর্থ এনে \v 35 প্রেরিতশিষ্যদের চরণে রাখত। পরে যার যেমন প্রয়োজন হত, তাকে সেই অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হত। \p \v 36 আর যোষেফ নামে সাইপ্রাসের একজন লেবীয়, যাঁকে প্রেরিতশিষ্যেরা বার্ণবা (নামটির অর্থ, উৎসাহের সন্তান) নামে ডাকতেন, \v 37 তাঁর মালিকানাধীন একটি জমি তিনি বিক্রি করে সেই অর্থ নিয়ে এলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের চরণে তা রাখলেন। \c 5 \s1 অননিয় ও সাফিরা \p \v 1 এখন অননিয় নামে একজন ব্যক্তি, তার স্ত্রী সাফিরার সঙ্গে সম্পত্তির এক অংশ বিক্রি করল। \v 2 তার স্ত্রীর সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে, সে তার নিজের জন্য অর্থের কিছু অংশ রেখে দিল, কিন্তু অবশিষ্ট অংশ এনে প্রেরিতশিষ্যদের চরণে রাখল। \p \v 3 তখন পিতর বললেন, “অননিয়, এ কী রকম হল, শয়তান তোমার অন্তরকে এমন পূর্ণ করল যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বললে এবং জমির বিক্রি করা অর্থের কিছু অংশ নিজের জন্য রেখে দিলে? \v 4 বিক্রি করার আগে তা কি তোমারই ছিল না? আর বিক্রি করার পরেও সেই অর্থ কি তোমারই অধিকারে ছিল না? এরকম একটি কাজ করার কথা তুমি কী করে চিন্তা করলে? তুমি মানুষের কাছে নয়, কিন্তু ঈশ্বরেরই কাছে মিথ্যা বললে।” \p \v 5 অননিয় একথা শোনামাত্র মাটিতে পড়ে গেল ও প্রাণত্যাগ করল। ওই ঘটনার কথা যারা শুনল, তারা সকলেই মহা আতঙ্কে কবলিত হল। \v 6 তখন যুবকেরা এগিয়ে এল, তার শরীরে কাপড় জড়ালো এবং তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল। \p \v 7 প্রায় তিন ঘণ্টা পরে তার স্ত্রী উপস্থিত হল। কী ঘটনা ঘটেছে, সে তা জানত না। \v 8 পিতর তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বলো তো, জমি বিক্রি করে তুমি ও অননিয় কি এই পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলে?” \p সে বলল, “হ্যাঁ, এই তার দাম।” \p \v 9 পিতর তাকে বললেন, “প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কীভাবে তোমরা একমত হলে? দেখো! যারা তোমার স্বামীকে কবর দিয়েছে, তারা দুয়ারে এসে পড়েছে, তারা তোমাকেও বাইরে নিয়ে যাবে।” \p \v 10 সেই মুহূর্তে সে তাঁর চরণে পড়ে প্রাণত্যাগ করল। তখন যুবকেরা ভিতরে এসে দেখল সেও মারা গেছে। তারা তাকে বাইরে বয়ে নিয়ে গেল ও তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল। \v 11 সমস্ত মণ্ডলী ও যারাই এই ঘটনার কথা শুনল, সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে উঠল। \s1 প্রেরিতশিষ্যরা অনেককে সুস্থ করলেন \p \v 12 প্রেরিতশিষ্যেরা জনসাধারণের মধ্যে অনেক অলৌকিক নিদর্শন ও বিস্ময়কর কাজ সম্পন্ন করলেন। বিশ্বাসীরা সকলে শলোমনের বারান্দায় একযোগে মিলিত হত। \v 13 অন্য কেউই তাদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না, যদিও লোকেরা তাদের অত্যন্ত সমাদর করত। \v 14 তা সত্ত্বেও, বহু পুরুষ ও মহিলা, উত্তরোত্তর প্রভুতে বিশ্বাস করে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করল। \v 15 শেষে এমন হল যে, লোকেরা অসুস্থ মানুষদের রাস্তার ধারে বয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের বিছানা ও মাদুরে শুইয়ে রাখত, যেন পিতর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছায়া অন্তত কারও কারও উপরে পড়ে। \v 16 জেরুশালেমের চারপাশের নগরগুলি থেকেও জনতা ভিড় করতে লাগল। তারা তাদের অসুস্থ মানুষদের ও যারা মন্দ-আত্মা\f + \fr 5:16 \fr*\ft বা অশুচি\ft*\f* দ্বারা যন্ত্রণা পাচ্ছিল, তাদের নিয়ে আসত এবং তারা সকলেই সুস্থ হয়ে উঠত। \s1 প্রেরিতশিষ্যরা নির্যাতিত হলেন \p \v 17 এরপর মহাযাজক ও তাঁর সমস্ত সহযোগী, যারা সদ্দূকী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন, তাঁরা ঈর্ষায় পূর্ণ হয়ে উঠলেন। \v 18 তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের গ্রেপ্তার করে সরকারি কারাগারে রেখে দিলেন। \v 19 কিন্তু রাত্রিবেলা প্রভুর এক দূত কারাগারের দরজাগুলি খুলে দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এলেন। \v 20 তিনি বললেন, “তোমরা যাও, গিয়ে মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়াও এবং জনসাধারণের কাছে এই নতুন জীবনের পূর্ণ বার্তা প্রকাশ করো।” \p \v 21 তাঁদের যেমন বলা হয়েছিল, ভোরবেলা তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেন এবং লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। \p মহাযাজক ও তাঁর সহযোগীরা যখন উপস্থিত হলেন, তাঁরা ইস্রায়েলীদের প্রাচীনবর্গের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণ জমায়েত বা মহাসভাকে\f + \fr 5:21 \fr*\ft বা সানহেড্রিন। (ইহুদি বিচার পরিষদ)\ft*\f* একত্র করলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালেন। \v 22 কিন্তু কারাগারে উপস্থিত হয়ে কর্মচারীরা তাঁদের সেখানে খুঁজে পেল না। তাই তারা ফেরত গিয়ে সংবাদ দিল, \v 23 “আমরা গিয়ে দেখলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে তালাবন্ধ, রক্ষীরাও দরজায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি খুলে ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না।” \v 24 এই সংবাদ শুনে মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও মহাযাজক বিস্ময়বিমূঢ় হলেন। তাঁরা অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন যে, এর পরিণাম কী হতে পারে। \p \v 25 তখন একজন ব্যক্তি এসে বলল, “দেখুন! যাঁদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছে।” \v 26 এতে রক্ষী-প্রধান তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এলেন। তাঁরা বলপ্রয়োগ করলেন না, কারণ লোকেরা তাঁদের উপর পাথর মারতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন। \p \v 27 প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এসে, তাঁরা তাঁদের মহাসভার সামনে উপস্থিত করলেন, যেন মহাযাজক তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। \v 28 তিনি বললেন, “আমরা তোমাদের এই নামে শিক্ষা না দেওয়ার জন্য কঠোর আদেশ দিয়েছিলাম, তবুও তোমরা তোমাদের উপদেশে জেরুশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের জন্য আমাদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে দৃঢ়সংকল্প হয়েছ।” \p \v 29 পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “মানুষের চেয়ে আমরা বরং ঈশ্বরের আদেশই পালন করব! \v 30 আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন—যাঁকে আপনারা একটি গাছের উপরে টাঙিয়ে হত্যা করেছিলেন। \v 31 ঈশ্বর তাঁকে অধিপতি ও উদ্ধারকর্তা করে তাঁর ডানদিকে\f + \fr 5:31 \fr*\ft গ্রিক: হাতে\ft*\f* উন্নীত করেছেন, যেন তিনি ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তনের পথে চালনা করতে ও পাপের ক্ষমা দিতে পারেন। \v 32 আমরা এই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী, আর পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যাঁকে ঈশ্বর, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, তাদের দান করেছেন।” \p \v 33 একথা শুনে তাঁরা ক্রোধে উন্মত্ত হলেন এবং তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিতে চাইলেন। \v 34 কিন্তু গমলীয়েল নামে একজন ফরিশী, যিনি শাস্ত্রবিদ ও সর্বসাধারণের কাছে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন, তিনি উঠে দাঁড়ালেন ও আদেশ দিলেন, যেন কিছুক্ষণের জন্য ওদেরকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। \v 35 এরপর তিনি মহাসভাকে সম্বোধন করে বললেন, “হে ইস্রায়েলী জনগণ, এই লোকেদের নিয়ে আপনারা যা করতে চলেছেন, সে সম্পর্কে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করুন। \v 36 কিছুদিন আগে, থুদা উপস্থিত হয়ে নিজেকে এক মহাপুরুষ বলে দাবি করেছিল এবং প্রায় চারশো মানুষ তার পাশে জড়ো হয়েছিল। সে নিহত হল ও তার অনুগামীরা ছত্রভঙ্গ হওয়ায় সবকিছুই ব্যর্থ হয়েছিল; কারো আর অস্তিত্ব রইল না। \v 37 তারপরে গালীলীয় যিহূদা জনগণনার সময়ে উপস্থিত হয়ে কিছু মানুষকে বিদ্রোহের পথে চালিত করল। সেও নিহত হল ও তার সমস্ত অনুগামী ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ল। \v 38 সেই কারণে, বর্তমান বিষয়টি সম্পর্কে আমি তোমাদের পরামর্শ দিই, এই লোকেরা যেমন আছে, থাকতে দাও! ওদের চলে যেতে দাও! কারণ ওদের অভিপ্রায় বা কাজকর্ম যদি মানুষ থেকে হয়, তবে তা ব্যর্থ হবে। \v 39 কিন্তু তা যদি ঈশ্বর থেকে হয়, তোমরা এদের আটকাতে পারবে না; তোমরা কেবলমাত্র দেখতে পাবে যে, তোমরা নিজেরাই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছ।” \p \v 40 তাঁরা তখন তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করল। তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের ভিতরে ডেকে এনে চাবুক মারলেন। তাঁরা তাঁদের আদেশ দিলেন, তাঁরা যেন যীশুর নামে কোনো কথা না বলেন। তারপর তাঁরা তাঁদের চলে যেতে দিলেন। \p \v 41 প্রেরিতশিষ্যেরা আনন্দ করতে করতে মহাসভা ত্যাগ করলেন, কারণ তাঁরা সেই নামের কারণে অপমান ভোগ করার জন্য যোগ্য বলে গণ্য হয়েছিলেন। \v 42 দিনের পর দিন, মন্দির-প্রাঙ্গণে ও ঘরে ঘরে, তাঁরা শিক্ষা দিতে এবং যীশুই যে সেই খ্রীষ্ট, এই সুসমাচার ঘোষণা করতে কখনও ক্ষান্ত হতেন না। \c 6 \s1 সাতজনকে মনোনীত করা \p \v 1 সেই সময় শিষ্যদের সংখ্যা যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তাদের মধ্যে যারা গ্রিকভাষী ইহুদি ছিল তারা, হিব্রুভাষী ইহুদিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে লাগল, কারণ প্রতিদিনের খাবার ভাগ করার সময় তাদের বিধবারা উপেক্ষিত হচ্ছিল। \v 2 তখন সেই বারোজন সব শিষ্যকে একত্র আহ্বান করে বললেন, “খাবার পরিবেশনের জন্য ঈশ্বরের বাক্যের পরিচর্যা অবহেলা করা আমাদের পক্ষে ন্যায়সংগত হবে না। \v 3 ভাইয়েরা, তোমাদের মধ্য থেকে এমন সাতজনকে বেছে নাও, যারা পবিত্র আত্মায় ও বিজ্ঞতায় পূর্ণ বলে সুপরিচিত। আমরা এই দায়িত্বভার তাদের উপরে দেবো \v 4 ও আমরা প্রার্থনায় ও বাক্যের পরিচর্যায় মনোনিবেশ করব।” \p \v 5 এই প্রস্তাব সমস্ত দলের কাছে সন্তোষজনক হল। তারা স্তিফানকে মনোনীত করল, যিনি বিশ্বাসে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ ছিলেন; এবং ফিলিপ, প্রখোর, নিকানর, তিমোন, পার্মেনাস ও আন্তিয়খের নিকোলাসকে, যিনি ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন। \v 6 তারা এই সাতজনকে প্রেরিতশিষ্যদের কাছে উপস্থিত করল, যাঁরা প্রার্থনা করে তাঁদের উপরে হাত রাখলেন। \p \v 7 এভাবে ঈশ্বরের বাক্য ছড়িয়ে পড়ল। জেরুশালেমে শিষ্যদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেল এবং বহুসংখ্যক যাজক বিশ্বাসের প্রতি বাধ্য হলেন। \s1 স্তিফানের গ্রেপ্তার \p \v 8 এরপর স্তিফান, যিনি ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শক্তিতে পূর্ণ ছিলেন, তিনি জনসাধারণের মধ্যে অত্যন্ত বিস্ময়কর ও অলৌকিক চিহ্নকাজ সাধন করতে লাগলেন। \v 9 এতে মুক্ত-মানুষদের (যেমন বলা হত) সমাজভবনের সদস্যরা প্রতিবাদ করল। এরা ছিল, কুরীণ ও আলেকজান্দ্রিয়া এবং সেই সঙ্গে কিলিকিয়া ও এশিয়া প্রদেশের ইহুদিরা। এই লোকেরা স্তিফানের সঙ্গে তর্ক শুরু করল। \v 10 কিন্তু তারা তাঁর প্রজ্ঞা ও যে আত্মার শক্তিতে তিনি কথা বলছিলেন, তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারল না। \p \v 11 তখন তারা গোপনে কয়েকজন মানুষকে এই কথা বলতে প্ররোচিত করল, “আমরা স্তিফানকে মোশির বিরুদ্ধে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দার কথা বলতে শুনেছি।” \p \v 12 এভাবে তারা জনসাধারণ, প্রাচীনবর্গ ও শাস্ত্রবিদদের উত্তেজিত করে তুলল। তারা স্তিফানকে গ্রেপ্তার করে মহাসভার সামনে উপস্থিত করল। \v 13 তারা মিথ্যা সাক্ষীদের দাঁড় করালো, যারা সাক্ষ্য দিল, “এই লোকটি এই পবিত্রস্থান ও বিধানের বিরুদ্ধে কথা বলতে কখনও ক্ষান্ত হয় না। \v 14 কারণ আমরা তাকে বলতে শুনেছি যে, নাসরতের যীশু এই স্থান ধ্বংস করবে ও মোশি আমাদের কাছে যেসব রীতিনীতি সমর্পণ করেছেন—সেগুলির পরিবর্তন করবে।” \p \v 15 যারা মহাসভায় বসেছিল, তারা স্তিফানের প্রতি একদৃষ্টে চেয়ে দেখল, তাঁর মুখমণ্ডল স্বর্গদূতের মুখমণ্ডলের মতো। \c 7 \s1 মহাসভায় স্তিফানের বক্তৃতা \p \v 1 তখন মহাযাজক স্তিফানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এসব অভিযোগ কি সত্যি?” \p \v 2 এর উত্তরে তিনি বললেন, “হে আমার ভাইরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, আমার কথা শুনুন। আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম, হারণে বসবাস করার পূর্বে তিনি যখন মেসোপটেমিয়ায় বাস করছিলেন, তখন প্রতাপের ঈশ্বর তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন। \v 3 ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘তুমি তোমার দেশ ও তোমার আত্মীয়স্বজন ত্যাগ করো এবং আমি যে দেশ তোমাকে দেখাব, সেই দেশে যাও।’\f + \fr 7:3 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 12:1\+xt*\ft*\f* \p \v 4 “তাই তিনি কলদীয়দের দেশ ত্যাগ করে হারণে গিয়ে বসতি স্থাপন করলেন। তাঁর পিতার মৃত্যুর পর ঈশ্বর তাঁকে এই দেশে পাঠালেন, যেখানে এখন আপনারা বসবাস করছেন। \v 5 তিনি তাঁকে এখানে কোনও অধিকার, এমনকি, পা রাখার মতো একখণ্ড জমিও দান করেননি। কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি ও তাঁর পরে তাঁর উত্তরপুরুষেরা সেই দেশের অধিকারী হবেন, যদিও সেই সময় অব্রাহামের কোনো সন্তান ছিল না। \v 6 ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে এভাবে কথা বলেছিলেন, ‘জেনে রাখো যে তোমার বংশধরেরা চারশো বছর এমন একটি দেশে অপরিচিত হয়ে বসবাস করবে, যা তাদের নিজস্ব নয়; তারা সেখানে ক্রীতদাসে পরিণত হবে এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হবে। \v 7 কিন্তু যে দেশে তারা ক্রীতদাস হয়ে থাকবে, সেই দেশটিকে আমি শাস্তি দেব।’ ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘শেষ পর্যন্ত তারা সেই দেশ থেকে বেরিয়ে আসবে ও এই স্থানে এসে আমার উপাসনা করবে।’\f + \fr 7:7 \fr*\ft \+xt আদি পুস্তক 15:13,14\+xt*\ft*\f* \v 8 তারপর তিনি অব্রাহামকে নিয়মের চিহ্নস্বরূপ সুন্নতের\f + \fr 7:8 \fr*\ft অর্থাৎ, লিঙ্গাগ্রের চামড়া ছেদ করা, ত্বকচ্ছেদ বা খতনা।\ft*\f* সংস্কার দান করলেন। আর অব্রাহাম, তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের জন্ম দিলেন ও আট দিন পরে তাঁর সুন্নত করলেন। পরে ইস্‌হাক যাকোবের জন্ম দিলেন ও যাকোব সেই বারোজন পিতৃকুলপতির জন্ম দিলেন। \p \v 9 “যেহেতু পিতৃকুলপতিরা যোষেফের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন, তারা তাঁকে মিশরে ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করে দিলেন। কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সহবর্তী ছিলেন। \v 10 তিনি তাঁকে সমস্ত সংকট থেকে উদ্ধার করলেন। তিনি যোষেফকে প্রজ্ঞা দান করলেন এবং মিশরের রাজা ফরৌণের আনুকূল্য অর্জন করতে সক্ষমতা দিলেন। সেই কারণে, ফরৌণ তাঁকে মিশর ও তাঁর সমস্ত প্রাসাদের উপরে প্রশাসকরূপে নিযুক্ত করলেন। \p \v 11 “তারপরে সমস্ত মিশরে ও কনানে এক দুর্ভিক্ষ হল এবং ভীষণ কষ্ট উপস্থিত হল। আমাদের পিতৃপুরুষেরা খাদ্যের সন্ধান পেলেন না। \v 12 যাকোব যখন শুনলেন যে মিশরে শস্য সঞ্চিত আছে, তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রথমবার সেই যাত্রায় পাঠালেন। \v 13 তাদের দ্বিতীয় যাত্রায় যোষেফ তাঁর ভাইদের কাছে আত্মপরিচয় দিলেন, আর ফরৌণ যোষেফের পরিবারের বিষয়ে জানতে পারলেন। \v 14 এরপরে যোষেফ নিজের পিতা যাকোব ও তাঁর সমগ্র পরিবারের সব মিলিয়ে পঁচাত্তর জনকে তাঁর কাছে ডেকে পাঠালেন। \v 15 তারপরে যাকোব মিশরে গেলেন। সেখানে তাঁর ও আমাদের পিতৃপুরুষদের মৃত্যু হল। \v 16 তাঁদের শবদেহ শিখিমে নিয়ে আসা হল এবং অব্রাহাম শিখিমে, হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে কিছু অর্থের বিনিময়ে যে কবর কিনেছিলেন, সেখানে তাদের কবর দেওয়া হল। \p \v 17 “ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, তা পূর্ণ হওয়ার সময় সন্নিকট হলে, মিশরে আমাদের লোকদের সংখ্যা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেল। \v 18 পরে ‘এমন এক নতুন রাজা মিশরের ক্ষমতায় এলেন, যাঁর কাছে যোষেফের কোনও গুরুত্বই ছিল না।’\f + \fr 7:18 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 1:8\+xt*\ft*\f* \v 19 তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ আচরণ করলেন এবং তিনি বলপ্রয়োগ করে তাদের নবজাত সন্তানদের বাইরে ফেলে দিতে বললেন, যেন তারা মারা যায়। এভাবে তারা আমাদের পূর্বপুরুষদের উপরে অত্যাচার করলেন। \p \v 20 “সেই সময়ে মোশির জন্ম হয়। তিনি কোনো সাধারণ শিশু ছিলেন না।\f + \fr 7:20 \fr*\ft বা, তিনি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সুন্দর ছিলেন।\ft*\f* তিন মাস পর্যন্ত তিনি তাঁর বাবার বাড়িতে প্রতিপালিত হলেন। \v 21 তাঁকে যখন বাইরে রেখে দেওয়া হল, ফরৌণের মেয়ে তাঁকে তুলে নিলেন ও তাঁর নিজের ছেলের মতো তাঁকে প্রতিপালন করলেন। \v 22 মোশি মিশরীয় সমস্ত জ্ঞান-বিদ্যায় শিক্ষিত হয়ে উঠলেন। কথায় ও কাজে তিনি পরাক্রমী ছিলেন। \p \v 23 “মোশির বয়স যখন চল্লিশ বছর, তিনি তাঁর সহ-ইস্রায়েলীদের খোঁজ করবেন বলে স্থির করলেন। \v 24 তিনি দেখলেন, তাদের একজনের প্রতি এক মিশরীয় অন্যায় আচরণ করছে। তাই তিনি তার প্রতিরক্ষায় গেলেন এবং সেই মিশরীয়কে হত্যা করে তার প্রতিশোধ নিলেন। \v 25 মোশি ভেবেছিলেন যে, তাঁর স্বজাতির লোকেরা উপলব্ধি করতে পারবে যে, তাদের উদ্ধারের জন্য ঈশ্বর তাঁকে ব্যবহার করছেন, কিন্তু তারা বুঝতে পারল না। \v 26 পরের দিন, দুজন ইস্রায়েলী যখন পরস্পর মারামারি করছিল, মোশি তাদের কাছে এলেন। তিনি এই কথা বলে তাদের পুনর্মিলনের চেষ্টা করলেন, ‘ওহে, তোমরা পরস্পর ভাই ভাই, কেন তোমাদের একজন অন্যজনকে আহত করতে চাইছ?’ \p \v 27 “কিন্তু যে লোকটি অপরজনের প্রতি অন্যায় আচরণ করছিল, সে মোশিকে এক পাশে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলল, ‘কে তোমাকে আমাদের উপরে শাসক ও বিচারকর্তা নিযুক্ত করেছে? \v 28 গতকাল সেই মিশরীয়টিকে যেমন হত্যা করেছিলে, আমাকেও কি তেমনই হত্যা করতে চাও?’\f + \fr 7:28 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 2:14\+xt*\ft*\f* \v 29 মোশি যখন একথা শুনলেন, তিনি মিদিয়ন দেশে পালিয়ে গেলেন। সেখানে তিনি প্রবাসী হয়ে বসবাস করে দুই ছেলের জন্ম দিলেন। \p \v 30 “চল্লিশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর, সীনয় পর্বতের কাছে মরুপ্রান্তরে এক প্রজ্বলিত ঝোপের আগুনের শিখায় এক স্বর্গদূত মোশিকে চাক্ষুষ দর্শন দিলেন। \v 31 তিনি যখন তা দেখলেন, সেই দৃশ্যে তিনি চমৎকৃত হলেন। আরও নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করার জন্য যেই তিনি এগিয়ে গেলেন, তিনি প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন: \v 32 ‘আমি তোমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের ঈশ্বর।’\f + \fr 7:32 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 3:6\+xt*\ft*\f* মোশি ভয়ে কাঁপতে লাগলেন, সেদিকে তাকানোর সাহস তাঁর রইল না। \p \v 33 “তখন প্রভু তাঁকে বললেন, ‘তোমার চটিজুতো খুলে ফেলো, কারণ তুমি যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছ সেটি পবিত্র ভূমি। \v 34 আমি প্রকৃতই মিশরে আমার প্রজাদের উপরে নির্যাতন লক্ষ্য করেছি। আমি তাদের আর্তনাদ শুনেছি ও তাদের মুক্ত করার জন্যই নেমে এসেছি।\f + \fr 7:34 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 3:5,7,8,10\+xt*\ft*\f* এখন এসো, আমি তোমাকে মিশরে ফেরত পাঠাই।’ \p \v 35 “ইনিই সেই মোশি, যাঁকে তারা এই কথা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল, ‘কে তোমাকে শাসক ও বিচারকর্তা নিযুক্ত করেছে’? স্বয়ং ঈশ্বর তাঁকে তাদের শাসক ও উদ্ধারকারীরূপে পাঠিয়েছিলেন সেই স্বর্গদূতের মাধ্যমে, যিনি ঝোপের মধ্যে তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন। \v 36 তিনি তাদের মিশর থেকে বের করে আনলেন এবং মিশরে, লোহিত সাগরে ও চল্লিশ বছর যাবৎ মরুপ্রান্তরে বিভিন্ন বিস্ময়কর কাজ ও অলৌকিক চিহ্নকাজ সম্পন্ন করলেন। \p \v 37 “ইনিই সেই মোশি, যিনি ইস্রায়েলীদের বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর তোমাদের ভাইয়ের মধ্য থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীর উত্থান ঘটাবেন।’\f + \fr 7:37 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 18:15\+xt*\ft*\f* \v 38 তিনি সেই মরুপ্রান্তরে জনমণ্ডলীর মধ্যে ছিলেন। তিনি ছিলেন সেই স্বর্গদূতের সঙ্গে, যিনি সীনয় পর্বতের উপরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং যিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গেও ছিলেন। তিনি জীবন্ত বাক্য আমাদের কাছে দেওয়ার জন্য গ্রহণ করেছিলেন। \p \v 39 “কিন্তু আমাদের পিতৃপুরুষেরা মোশির আদেশ পালন করতে চাইলেন না। পরিবর্তে, তাঁরা তাঁকে অগ্রাহ্য করলেন ও মনে মনে মিশরের প্রতি ফিরে গেলেন। \v 40 তাঁরা হারোণকে বললেন, ‘আমাদের আগে আগে যাওয়ার উদ্দেশে আমাদের জন্য দেবতা নির্মাণ করো। এই যে মোশি, যিনি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন, তাঁর কী হয়েছে, তা আমরা জানি না!’\f + \fr 7:40 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 32:1\+xt*\ft*\f* \v 41 সেই সময় তাঁরা বাছুরের আকৃতিবিশিষ্ট একটি মূর্তি নির্মাণ করলেন। তাঁরা তার কাছে বিভিন্ন নৈবেদ্য নিয়ে এলেন এবং তাঁদের হাতে তৈরি মূর্তির সম্মানে এক আনন্দোৎসব পালন করলেন। \v 42 কিন্তু ঈশ্বর বিমুখ হলেন এবং আকাশের সূর্য, চাঁদ ও আকাশের তারা উপাসনা করার জন্য তাদের সমর্পণ করলেন। ভাববাদীদের গ্রন্থে যা লেখা আছে, এ তারই সঙ্গে সহমত পোষণ করে: \q1 “ ‘হে ইস্রায়েলের কুল, তোমরা কি মরুভূমিতে চল্লিশ বছর, \q2 আমার কাছে বিভিন্ন বলিদান ও নৈবেদ্য নিয়ে এসেছিলে? \q1 \v 43 তোমরা তুলে ধরেছিলে মোলকের সেই সমাগম তাঁবু \q2 ও তোমাদের দেবতা রিফনের প্রতীক, তারকা— \q2 যে দুই মূর্তি তোমরা উপাসনার জন্য নির্মাণ করেছিলে। \q1 আমি তাই তোমাদের ব্যাবিলনের সীমানার ওপারে নির্বাসনে পাঠাব।’\f + \fr 7:43 \fr*\ft \+xt আমোষ 5:25-27\+xt*\ft*\f* \p \v 44 “মরুপ্রান্তরে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিল সেই সাক্ষ্য-তাঁবু। মোশি যে নকশা দেখেছিলেন, সেই অনুযায়ী তাঁকে ঈশ্বরের দেওয়া নির্দেশমতো তা নির্মিত হয়েছিল। \v 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয়ের আমলে আমাদের পিতৃপুরুষেরা যখন ঈশ্বর দ্বারা তাড়িয়ে দেওয়া জাতিকে উচ্ছেদ করে তাদের দেশ অধিকার করলেন, তখনও তাঁরা সেই সমাগম তাঁবুটি সঙ্গে নিয়ে গেলেন। সেই তাঁবু দাউদের সময় পর্যন্ত সেখানেই ছিল। \v 46 তিনি ঈশ্বরের অনুগ্রহ উপভোগ করলেন এবং যাকোবের ঈশ্বরের জন্য একটি আবাসগৃহ নির্মাণ করার জন্য অনুমতি চাইলেন। \v 47 কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শলোমন তাঁর জন্য সেই আবাসগৃহ নির্মাণ করেন। \p \v 48 “যাই হোক, পরাৎপর মানুষের হাতে তৈরি গৃহে বসবাস করেন না। ভাববাদী যেমন বলেন: \q1 \v 49 “ ‘স্বর্গ আমার সিংহাসন \q2 ও পৃথিবী আমার পাদপীঠ। \q1 প্রভু বলেন, তোমরা আমার জন্য কী ধরনের আবাস নির্মাণ করবে? \q2 অথবা, আমার বিশ্রামস্থানই বা হবে কোথায়? \q1 \v 50 আমার হাতই কি এই সমস্ত নির্মাণ করেনি?’\f + \fr 7:50 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 66:1,2\+xt*\ft*\f* \p \v 51 “একগুঁয়ে মানুষ তোমরা, অচ্ছিন্নত্বক তোমাদের হৃদয় ও কান! তোমরাও তোমাদের পিতৃপুরুষদের মতো; তোমরা সবসময়ই পবিত্র আত্মাকে প্রতিরোধ করে থাকো! \v 52 তোমাদের পিতৃপুরুষেরা নির্যাতন করেনি, এমন কোনও ভাববাদী কি আছেন? তারা এমনকি, তাঁদেরও হত্যা করেছিল, যাঁরা সেই ধর্মময় পুরুষের আগমনবার্তা ঘোষণা করেছিলেন। আর এখন তোমরাও বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে হত্যা করেছ— \v 53 তোমরা, বিধান গ্রহণ করেছিলে, যা স্বর্গদূতদের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা পালন করোনি।” \s1 স্তিফানকে পাথর দিয়ে আঘাত \p \v 54 মহাসভার সদস্যরা যখন একথা শুনল, তারা ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে তাঁর প্রতি দন্তঘর্ষণ করতে লাগল। \v 55 কিন্তু স্তিফান, পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের প্রতি একদৃষ্টে চেয়ে রইলেন। তিনি ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পেলেন। আরও দেখলেন যে যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন। \v 56 তিনি বললেন, “দেখো, আমি স্বর্গ খোলা দেখতে পাচ্ছি ও মনুষ্যপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন।” \p \v 57 এতে তারা তাদের কান বন্ধ করল এবং উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে সকলে তাঁর দিকে এগিয়ে গেল। \v 58 তারা তাঁকে নগরের বাইরে টেনে নিয়ে গেল ও তাঁকে পাথর দিয়ে আঘাত করতে লাগল। ইতিমধ্যে, সাক্ষীরা নিজের নিজের পোশাক খুলে শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে রাখল। \p \v 59 তারা যখন তাঁকে পাথর দিয়ে আঘাত করছিল, স্তিফান প্রার্থনা করলেন, “প্রভু যীশু, আমার আত্মাকে তুমি গ্রহণ করো।” \v 60 তারপর তিনি নতজানু হয়ে চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, এদের বিরুদ্ধে তুমি এই পাপ গণ্য করো না।” একথা বলার পর তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।\f + \fr 7:60 \fr*\ft বা নিদ্রাগত হলেন।\ft*\f* \c 8 \p \v 1 আর শৌল সেখানে তাঁর মৃত্যুর অনুমোদন করছিলেন। \s1 মণ্ডলী নির্যাতিত ও বিক্ষিপ্ত হল \p সেদিন, জেরুশালেমের মণ্ডলীর বিরুদ্ধে ভীষণ নির্যাতন শুরু হল। প্রেরিতশিষ্যরা ছাড়া অন্য সকলে যিহূদিয়া ও শমরিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। \v 2 কয়েকজন ঈশ্বরভক্ত স্তিফানের কবর দিলেন এবং তাঁর জন্য গভীর শোকপ্রকাশ করলেন। \v 3 কিন্তু শৌল মণ্ডলী ধ্বংস করার কাজ শুরু করলেন। ঘরে ঘরে প্রবেশ করে তিনি নারী ও পুরুষ সবাইকে টেনে এনে তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করলেন। \s1 শমরিয়ায় ফিলিপ \p \v 4 যারা ছড়িয়ে পড়েছিল, তারা যেখানেই গেল, সেখানেই বাক্য প্রচার করল। \v 5 ফিলিপ শমরিয়ার একটি নগরে গেলেন এবং খ্রীষ্টকে সেখানে প্রচার করতে লাগলেন। \v 6 সব লোক যখন ফিলিপের কথা শুনল ও তিনি যেসব অলৌকিক চিহ্নকাজ করছিলেন, তা দেখল, তারা তাঁর কথায় গভীর মনোনিবেশ করল। \v 7 বহু মানুষের মধ্য থেকে অশুচি আত্মারা তীক্ষ্ণ চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে এল। বহু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও পঙ্গু ব্যক্তিরা আরোগ্য লাভ করল। \v 8 সেই কারণে, সেই নগরে মহা আনন্দ উপস্থিত হল। \s1 জাদুকর শিমোন \p \v 9 কিছুকাল যাবৎ সেই নগরে শিমোন নামে এক ব্যক্তি জাদুবিদ্যা অভ্যাস করত এবং শমরিয়ার সব মানুষকে চমৎকৃত করত। সে নিজেকে একজন মহাপুরুষরূপে জাহির করে গর্ববোধ করত \v 10 এবং উঁচু বা নীচ সবাই তাঁর কথা মন দিয়ে শুনত ও বলত, “এই ব্যক্তি সেই দিব্যশক্তি, যা ‘মহাশক্তি’ নামে পরিচিত।” \v 11 তারা তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনত, কারণ সে তার জাদুবিদ্যার মাধ্যমে বহুদিন ধরে তাদের মুগ্ধ করে রেখেছিল। \v 12 কিন্তু ফিলিপ যখন ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার ও যীশু খ্রীষ্টের নাম প্রচার করলেন, তারা তাঁকে বিশ্বাস করল এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করল। \v 13 শিমোন নিজেও বিশ্বাস করে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করল। আর সে সর্বত্র ফিলিপকে অনুসরণ করতে থাকল; মহান সব চিহ্নকাজ ও অলৌকিক কাজ দেখে আশ্চর্যচকিত হল। \p \v 14 জেরুশালেমের প্রেরিতশিষ্যেরা যখন শুনলেন যে, শমরিয়া ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তাঁরা পিতর ও যোহনকে তাদের কাছে পাঠালেন। \v 15 তাঁরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের জন্য প্রার্থনা করলেন, যেন তারা পবিত্র আত্মা পায়, \v 16 কারণ তখনও পর্যন্ত পবিত্র আত্মা তাদের কারোরই উপরে আসেননি, তারা প্রভু যীশুর নামে কেবলমাত্র বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করেছিল। \v 17 তখন পিতর ও যোহন তাদের উপরে হাত রাখলেন, আর তারা পবিত্র আত্মা লাভ করল। \p \v 18 শিমোন যখন দেখল যে প্রেরিতশিষ্যদের হাত রাখার ফলে পবিত্র আত্মা দেওয়া হচ্ছেন, সে তাঁদের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিল \v 19 ও বলল, “আমাকেও এই ক্ষমতা দিন, যেন আমিও যার উপরে হাত রাখি, সেও পবিত্র আত্মা পেতে পারে।” \p \v 20 পিতর উত্তর দিলেন, “তোমার অর্থ তোমার সঙ্গেই ধ্বংস হোক, কারণ তুমি ভেবেছ, অর্থ দিয়ে তুমি ঈশ্বরের দান কিনতে পারো! \v 21 এই পরিচর্যায় তোমার কোনও ভূমিকা বা ভাগ নেই, কারণ তোমার অন্তর ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সরল নয়। \v 22 এই দুষ্টতার জন্য অনুতাপ করো এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। হয়তো তোমার অন্তরের এ ধরনের চিন্তার জন্য তিনি তোমাকে ক্ষমা করবেন, \v 23 কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি, তুমি তিক্ততায় পূর্ণ ও পাপের কাছে এখনও বন্দি হয়ে আছ।” \p \v 24 তখন শিমোন উত্তর দিল, “আমার জন্য আপনারাই প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, যেন আপনারা যা বললেন, তার কিছুই আমার প্রতি না ঘটে।” \p \v 25 যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার পর ও প্রভুর বাক্য প্রচার করার পর পিতর ও যোহন বিভিন্ন শমরীয় গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন ও জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। \s1 ফিলিপ ও ইথিয়োপীয় নপুংসক \p \v 26 ইতিমধ্যে প্রভুর এক দূত ফিলিপকে বললেন, “দক্ষিণ দিকে, জেরুশালেম থেকে গাজার দিকে যে পথটি গেছে, মরুপ্রান্তরের সেই পথটিতে যাও।” \v 27 তিনি তখন যাত্রা শুরু করলেন। তাঁর যাওয়ার পথে তিনি এক ইথিয়োপীয় নপুংসক ব্যক্তির সাক্ষাৎ পেলেন। তিনি ইথিয়োপীয়দের কান্দাকি রানির সমস্ত কোষাগার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক ছিলেন। সেই ব্যক্তি উপাসনা করার জন্য জেরুশালেমে গিয়েছিলেন। \v 28 তাঁর বাড়ি ফেরার পথে, তিনি তাঁর রথে বসে ভাববাদী যিশাইয়ের পুস্তকটি পাঠ করছিলেন। \v 29 পবিত্র আত্মা ফিলিপকে বললেন, “তুমি ওই রথের কাছে গিয়ে তার কাছাকাছি থাকো।” \p \v 30 ফিলিপ তখন রথের দিকে দৌড়ে গেলেন এবং শুনলেন, সেই ব্যক্তি ভাববাদী যিশাইয়ের গ্রন্থ পাঠ করছেন। ফিলিপ জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি যা পাঠ করছেন, তা কি বুঝতে পারছেন?” \p \v 31 তিনি বললেন, “কেউ আমাকে এর ব্যাখ্যা না করে দিলে, আমি কী করে বুঝতে পারব?” সেই কারণে তিনি ফিলিপকে তাঁর কাছে উঠে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। \p \v 32 সেই নপুংসক শাস্ত্রের এই অংশটি পাঠ করছিলেন: \q1 “যেমন ঘাতকের কাছে নিয়ে যাওয়া মেষশাবককে, \q2 ও লোমচ্ছেদকদের কাছে নিয়ে যাওয়া মেষ নীরব থাকে, \q2 তেমনই তিনি তাঁর মুখ খোলেননি। \q1 \v 33 তাঁর অবমাননাকালে \q2 তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হলেন। \q2 তাঁর বংশধরদের কথা কে বলতে পারে? \q2 কারণ পৃথিবী থেকে তাঁর জীবন উচ্ছিন্ন হল।”\f + \fr 8:33 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 53:7,8\+xt*\ft*\f* \p \v 34 নপুংসক ফিলিপকে জিজ্ঞাসা করলেন, “অনুগ্রহ করে আমাকে বলুন, ভাববাদী এখানে কার সম্পর্কে একথা বলেছেন, নিজের বিষয়ে, না অন্য কারও সম্পর্কে?” \v 35 তখন তাঁর কাছে ফিলিপ শাস্ত্রের সেই অংশ থেকে শুরু করে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করলেন। \p \v 36 তাঁরা যখন পথে যাচ্ছিলেন, তাঁরা এক জলাশয়ের কাছে এসে পৌঁছালেন। নপুংসক বললেন, “দেখুন, এখানে জল আছে। আমার বাপ্তিষ্ম গ্রহণের বাধা কোথায়?” \v 37 ফিলিপ বললেন, “আপনি যদি সম্পূর্ণ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, তাহলে নিতে পারেন।” প্রত্যুত্তরে নপুংসক বললেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, যীশু খ্রীষ্টই ঈশ্বরের পুত্র।”\f + \fr 8:37 \fr*\ft প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে নয়, কিন্তু কতগুলি পরবর্তী পাণ্ডুলিপিতে এই পদের কথাগুলি পাওয়া যায়।\ft*\f* \v 38 তিনি তখন রথ থামানোর আদেশ দিলেন। পরে ফিলিপ ও নপুংসক, উভয়েই জলের মধ্যে নেমে গেলেন এবং ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিষ্ম দিলেন। \v 39 তাঁরা যখন জলের মধ্য থেকে বের হয়ে এলেন, প্রভুর আত্মা তখন হঠাৎই ফিলিপকে সেই স্থান থেকে সরিয়ে দিলেন। নপুংসক তাঁকে আর দেখতে পেলেন না। তখন তিনি আনন্দ করতে করতে তাঁর পথে চলে গেলেন। \v 40 ফিলিপকে অবশ্য আজোতাস\f + \fr 8:40 \fr*\ft বা অসদোদে\ft*\f* নগরে দেখতে পাওয়া গেল। তিনি যাওয়ার পথে সব নগরগুলিতে সুসমাচার প্রচার করতে করতে অবশেষ কৈসরিয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন। \c 9 \s1 শৌলের মন পরিবর্তন \p \v 1 এর মধ্যে শৌল তখনও তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ভয় দেখাচ্ছিলেন ও প্রভুর শিষ্যদের হত্যা করতে উদ্যত ছিলেন। তিনি মহাযাজকের কাছে গিয়ে \v 2 দামাস্কাসের সমাজভবনগুলির উদ্দেশে তাঁর কাছে কয়েকটি পত্র লিখে দিতে অনুরোধ করলেন, যেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সেই পথের\f + \fr 9:2 \fr*\ft অর্থাৎ, খ্রীষ্টে বিশ্বাস-স্থাপনকারী পথ।\ft*\f* অনুসারী যদি কাউকে দেখতে পান, তাদেরকে বন্দি করে জেরুশালেমে নিয়ে আসতে পারেন। \v 3 দামাস্কাসে যাওয়ার পথে, যখন তিনি সে নগরের কাছে পৌঁছালেন, হঠাৎই আকাশ থেকে এক আলো তাঁর চারপাশে দ্যুতিমান হয়ে উঠল। \v 4 তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন ও এক কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন তাঁকে বলছে, “শৌল, শৌল, তুমি কেন আমাকে নির্যাতন করছ?” \p \v 5 শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি কে?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “আমি যীশু, যাঁকে তুমি নির্যাতন করছ। \v 6 এখন ওঠো, আর নগরের মধ্যে প্রবেশ করো। তোমাকে যা করতে হবে, তা তোমাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।” \p \v 7 শৌলের সহযাত্রীরা নির্বাক হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে রইল। তারা সেই শব্দ শুনলেও কাউকে দেখতে পেল না। \v 8 শৌল মাটি থেকে উঠে দাঁড়ালেন, কিন্তু তিনি চোখ খুললে পর কিছুই দেখতে পেলেন না। তাই তারা তাঁর হাত ধরে তাঁকে দামাস্কাসে নিয়ে গেল। \v 9 তিন দিন যাবৎ তিনি দৃষ্টিহীন রইলেন, খাবার বা পানীয় কিছুই গ্রহণ করলেন না। \p \v 10 দামাস্কাসে অননিয় নামে একজন শিষ্য ছিলেন। প্রভু এক দর্শনের মাধ্যমে তাঁকে ডাক দিলেন, “অননিয়!” \p তিনি উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ প্রভু, দেখুন, এই আমি!” \p \v 11 প্রভু তাঁকে বললেন, “তুমি সরল নামক রাস্তায় অবস্থিত যিহূদার বাড়িতে যাও এবং তার্ষ নগরের শৌল নামে এক ব্যক্তির সন্ধান করো, কারণ সে প্রার্থনা করছে। \v 12 এক দর্শনে সে দেখেছে যে, অননিয় নামে এক ব্যক্তি এসে তার উপরে হাত রাখলেন, যেন সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।” \p \v 13 অননিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমি এই লোকটি সম্পর্কে বহু অভিযোগ এবং জেরুশালেমে তোমার পবিত্রগণের\f + \fr 9:13 \fr*\ft অর্থাৎ, বিশ্বাসীদের।\ft*\f* যে সমস্ত ক্ষতি করেছে, তা আমি শুনেছি। \v 14 আবার এখানেও যারা তোমার নামে ডাকে, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করার জন্য সে প্রধান যাজকদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে এসেছে।” \p \v 15 কিন্তু প্রভু অননিয়কে বললেন, “তুমি যাও! অইহুদি সব জাতি ও তাদের রাজাদের কাছে এবং ইস্রায়েলী জনগণের কাছে আমার নাম প্রচার করার জন্য সে আমার মনোনীত পাত্র। \v 16 আমি তাকে দেখাব যে আমার নামের জন্য তাকে কত কষ্টভোগ করতে হবে।” \p \v 17 অননিয় তখন সেই বাড়ির উদ্দেশে চলে গেলেন এবং সেখানে প্রবেশ করলেন। শৌলের উপরে হাত রেখে তিনি বললেন, “ভাই শৌল, প্রভু যীশু, যিনি তোমার আসার সময় পথে তোমাকে দর্শন দিয়েছেন, তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, যেন তুমি দৃষ্টি ফিরে পাও ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হও।” \v 18 সঙ্গে সঙ্গে, আঁশের মতো কোনো বস্তু শৌলের দু-চোখ থেকে পড়ে গেল এবং তিনি আবার দেখতে লাগলেন। তিনি উঠে বাপ্তাইজিত হলেন, \v 19 এবং পরে কিছু খাবার খেয়ে তাঁর শক্তি ফিরে পেলেন। \s1 দামাস্কাস ও জেরুশালেমে শৌল \p শৌল কয়েক দিন দামাস্কাসে শিষ্যদের সঙ্গে সময় কাটালেন। \v 20 দেরি না করে তিনি সমাজভবনগুলিতে প্রচার করতে লাগলেন যে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র। \v 21 যারা তাঁর কথা শুনল, তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “এ কি সেই ব্যক্তি নয় যে জেরুশালেমে তাদের সর্বনাশ করেছিল যারা যীশুর নামে ডাকে, এবং তাদের বন্দি করে প্রধান যাজকদের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্যই কি সে এখানে আসেনি?” \v 22 কিন্তু শৌল শক্তিতে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে লাগলেন এবং যীশুই যে মশীহ, দামাস্কাসবাসী ইহুদিদের কাছে তা প্রমাণ করে তাদের হতবুদ্ধি করে দিলেন। \p \v 23 এভাবে অনেকদিন কেটে যাওয়ার পর ইহুদিরা তাঁকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করল। \v 24 কিন্তু শৌল তাদের পরিকল্পনার কথা জানতে পারলেন। তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তারা দিনরাত নগরদ্বারগুলিতে সতর্ক পাহারা দিতে লাগল। \v 25 কিন্তু তাঁর অনুগামীরা একটি বড়ো ঝুড়িতে করে প্রাচীরের একটি ছিদ্রের মধ্য দিয়ে রাত্রিবেলা তাঁকে নামিয়ে দিলেন। \p \v 26 তিনি যখন জেরুশালেমে এলেন, তিনি শিষ্যদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তাঁরা সকলেই তাঁর সম্পর্কে ভীত হলেন, বিশ্বাস করতে চাইলেন না যে, তিনি প্রকৃতই শিষ্য হয়েছেন। \v 27 কিন্তু বার্ণবা তাঁর হাত ধরে তাঁকে প্রেরিতশিষ্যদের কাছে নিয়ে গেলেন। তিনি তাঁদের বললেন, শৌল কীভাবে তাঁর যাত্রাপথে প্রভুর দর্শন লাভ করেছেন এবং প্রভু তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন, আবার দামাস্কাসে তিনি কেমন সাহসের সঙ্গে যীশুর নামে প্রচার করেছেন। \v 28 এভাবে শৌল তাঁদের সঙ্গে থেকে গেলেন। তিনি স্বচ্ছন্দে জেরুশালেমে এদিক-ওদিক যাতায়াত করতে লাগলেন, প্রভুর নামে সাহসের সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। \v 29 তিনি গ্রিকভাষী ইহুদিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও তর্কবিতর্কে যুক্ত হলেন, কিন্তু তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করল। \v 30 বিশ্বাসী ভাইয়েরা যখন একথা জানতে পারলেন, তাঁরা তাঁকে কৈসরিয়ায় নিয়ে গেলেন এবং সেখান থেকে তার্ষে পাঠিয়ে দিলেন। \p \v 31 এরপরে যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ার সর্বত্র মণ্ডলীগুলি শান্তি উপভোগ করতে লাগল ও শক্তিশালী হতে লাগল। তারা প্রভুর ভয়ে দিন কাটিয়ে ও পবিত্র আত্মার দ্বারা প্রেরণা লাভ করে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করল। \s1 ঐনিয় ও দর্কা \p \v 32 পিতর যখন দেশের সর্বত্র যাতায়াত করছিলেন, তিনি লুদ্দায় পবিত্রগণের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। \v 33 সেখানে তিনি ঐনিয় নামে এক ব্যক্তির সন্ধান পেলেন, সে ছিল পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও আট বছর যাবৎ শয্যাশায়ী। \v 34 পিতর তাকে বললেন, “ঐনিয়, যীশু খ্রীষ্ট তোমার সুস্থ করছেন। তুমি ওঠো ও তোমার বিছানা গুটিয়ে নাও।” ঐনিয় সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াল। \v 35 লুদ্দা ও শারোণ-নিবাসী সব মানুষ তাকে সুস্থ দেখতে পেল ও প্রভুকে গ্রহণ করল। \p \v 36 জোপ্পায়\f + \fr 9:36 \fr*\ft অর্থাৎ, যাফোতে।\ft*\f* টাবিথা নামে এক মহিলা শিষ্য ছিলেন (এই নামের অনূদিত অর্থ, দর্কা\f + \fr 9:36 \fr*\ft টাবিথা (অরামীয়) ও দর্কা (গ্রিক), উভয় শব্দেরই অর্থ হরিণী।\ft*\f*); তিনি সবসময় সৎকর্ম করতেন ও দরিদ্রদের সাহায্য করতেন। \v 37 সেই সময় তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান। তাঁর শরীর ধুয়ে দিয়ে উপরতলার একটি ঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। \v 38 লুদ্দা জোপ্পার কাছেই ছিল, তাই শিষ্যেরা যখন শুনল যে, পিতর লুদ্দায় আছেন, তারা তাঁর কাছে দুজন লোককে পাঠিয়ে মিনতি করল, “অনুগ্রহ করে আপনি এখনই চলে আসুন!” \p \v 39 পিতর তাদের সঙ্গে গেলেন। তিনি সেখানে পৌঁছালে তাঁকে উপরতলার সেই ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। বিধবারা কাঁদতে কাঁদতে তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়েছিল, দর্কা তাদের সঙ্গে থাকার সময় যে সমস্ত আলখাল্লা ও অন্যান্য পোশাক তৈরি করেছিলেন, সেসব তাঁকে দেখাতে লাগল। \p \v 40 পিতর তাদের সবাইকে সেই ঘর থেকে বের করে দিলেন। তারপর তিনি নতজানু হয়ে প্রার্থনা করলেন। মৃত মহিলার দিকে ফিরে তিনি বললেন, “টাবিথা, ওঠো।” তিনি তাঁর চোখ খুললেন এবং পিতরকে দেখে উঠে বসলেন। \v 41 তিনি তাঁর হাত ধরলেন ও তাঁর দু-পায়ে ভর দিয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন। তারপর তিনি সব বিধবা ও অন্য বিশ্বাসীদের ডেকে তাদের কাছে তাঁকে জীবিত অবস্থায় উপস্থিত করলেন। \v 42 জোপ্পার সর্বত্র একথা প্রকাশ পেল, আর বহু মানুষ প্রভুর উপরে বিশ্বাস করল। \v 43 পিতর কিছুকাল জোপ্পায় শিমোন নামে এক চর্মকারের\f + \fr 9:43 \fr*\ft এঁর কাজ ছিল কাঁচা চামড়াকে বিভিন্ন রঞ্জন-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাকা চামড়ায় পরিণত করা।\ft*\f* বাড়িতে থাকলেন। \c 10 \s1 পিতরকে কর্ণীলিয়ের আমন্ত্রণ \p \v 1 কৈসরিয়াতে কর্ণীলিয় নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তিনি ইতালীয় সৈন্যবাহিনী নামে পরিচিত এক সৈন্যদলের শত-সেনাপতি ছিলেন। \v 2 তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে ভক্তিপরায়ণ ও ঈশ্বরভয়শীল ছিলেন। তিনি অভাবী লোকদের উদার হাতে দান করতেন এবং নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতেন। \v 3 একদিন বিকালে, প্রায় তিনটের সময়, তিনি এক দর্শন লাভ করলেন। তিনি ঈশ্বরের এক দূতকে স্পষ্ট দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর কাছে এসে বললেন, “কর্ণীলিয়!” \p \v 4 কর্ণীলিয় সভয়ে তাঁর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, কী হয়েছে?” \p দূত উত্তর দিলেন, “তোমার সব প্রার্থনা ও দরিদ্রদের প্রতি সব দান, স্মরণীয় নৈবেদ্যরূপে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হয়েছে। \v 5 এখন জোপ্পায় লোক পাঠিয়ে শিমোন নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে এসো, যাকে পিতর বলে ডাকা হয়। \v 6 সে শিমোন নামে এক চর্মকারের বাড়িতে আছে, যার বাড়ি সমুদ্রের তীরে অবস্থিত।” \p \v 7 তাঁর সঙ্গে যিনি কথা বলছিলেন, সেই দূত চলে যাওয়ার পর, কর্ণীলিয় তাঁর দুজন দাস ও একজন অনুগত সৈন্যকে ডেকে পাঠালেন, যে ছিল তাঁর ব্যক্তিগত পরিচারক। \v 8 তিনি তাদের কাছে সব ঘটনার কথা বলে তাদের জোপ্পায় পাঠিয়ে দিলেন। \s1 পিতরের দর্শন \p \v 9 পরের দিন, প্রায় দুপুর বারোটায়, তারা যখন পথ চলতে চলতে সেই নগরের কাছাকাছি উপস্থিত হল, সেই সময়, পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপরে উঠলেন। \v 10 তাঁর খিদে পেল এবং তিনি কিছু খাবার খেতে চাইলেন। যখন খাবার প্রস্তুত হচ্ছে, তিনি ভাবাবিষ্ট হলেন। \v 11 তিনি দেখলেন, আকাশ খুলে গেছে এবং বিশাল চাদরের মতো একটা কিছু, তার চার প্রান্ত ধরে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। \v 12 তার মধ্যে ছিল সব ধরনের চতুষ্পদ প্রাণী, সেই সঙ্গে পৃথিবীর যত সরীসৃপ ও আকাশের বিভিন্ন পাখি। \v 13 তখন একটি কণ্ঠস্বর তাঁকে বলল, “পিতর ওঠো, মারো ও খাও।” \p \v 14 পিতর উত্তর দিলেন, “কিছুতেই তা হয় না প্রভু! অশুদ্ধ বা অশুচি কোনো কিছু আমি কখনও ভোজন করিনি।” \p \v 15 সেই কণ্ঠস্বর দ্বিতীয়বার তাঁকে বলল, “ঈশ্বর যা শুচিশুদ্ধ করেছেন, তুমি তাকে অশুদ্ধ বোলো না।” \p \v 16 এরকম তিনবার হল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেই চাদরখানা আকাশে তুলে নেওয়া হল। \p \v 17 সেই দর্শনের কী অর্থ হতে পারে, ভেবে পিতর যখন বিস্মিত হচ্ছিলেন, কর্ণীলিয়ের প্রেরিত সেই লোকেরা শিমোনের বাড়ির সন্ধান পেল এবং দুয়ারের সামনে এসে দাঁড়াল। \v 18 তারা ডাকাডাকি করে জিজ্ঞাসা করল, পিতর নামে পরিচিত শিমোন সেখানে থাকেন কি না। \p \v 19 পিতর তখনও সেই দর্শনের বিষয়ে চিন্তা করছিলেন পবিত্র আত্মা তাঁকে বললেন, “শিমোন, তিনজন লোক তোমার খোঁজ করছে। \v 20 তাই ওঠো ও নিচে নেমে যাও। তাদের সঙ্গে যেতে ইতস্তত বোধ কোরো না, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি।” \p \v 21 পিতর নিচে নেমে সেই লোকদের বললেন, “তোমরা যাঁর খোঁজ করছ, আমিই সেই। তোমরা কেন এসেছ?” \p \v 22 সেই লোকেরা উত্তর দিল, “আমরা শত-সেনাপতি কর্ণীলিয়ের কাছ থেকে এসেছি। তিনি একজন ধার্মিক ও ঈশ্বরভয়শীল মানুষ। সব ইহুদিই তাঁকে শ্রদ্ধা করে। এক পবিত্র দূত তাঁকে বলেছেন, তিনি যেন আপনাকে তাঁর বাড়িতে ডাকেন ও আপনি এসে যা বলতে চান, তিনি সেকথা শোনেন।” \v 23 তখন পিতর তাদের বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলেন ও তাদের আতিথ্য করলেন। \s1 কর্ণীলিয়ের বাড়িতে পিতর \p পরের দিন পিতর তাদের সঙ্গে যাত্রা শুরু করলেন। জোপ্পার কয়েকজন ভাইও তাদের সঙ্গে গেলেন। \v 24 তার পরদিন তিনি কৈসরিয়ায় পৌঁছালেন। কর্ণীলিয় তাদের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদেরও ডেকে একত্র করেছিলেন। \v 25 পিতর বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র কর্ণীলিয় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ও সম্ভ্রমবশত তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়লেন। \v 26 কিন্তু পিতর তাঁকে তুলে ধরলেন ও বললেন, “উঠে দাঁড়ান, আমিও একজন মানুষমাত্র!” \p \v 27 তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে পিতর ভিতরে প্রবেশ করলেন এবং দেখলেন অনেক লোক একত্র হয়েছে। \v 28 তিনি তাদের বললেন, “আপনারা ভালোভাবেই জানেন যে, অইহুদি কোনো মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাকে পরিদর্শন করা, কোনো ইহুদির পক্ষে বিধানবিরুদ্ধ কাজ। কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়েছেন, আমি যেন কোনো মানুষকে অশুদ্ধ বা অশুচি না বলি। \v 29 তাই যখন আমাকে ডেকে পাঠানো হল, কোনোরকম আপত্তি না করে আমি চলে এলাম। আমি কি জিজ্ঞাসা করতে পারি, কেন আপনারা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন?” \p \v 30 কর্ণীলিয় উত্তর দিলেন, “চারদিন আগে, এরকম সময়ে, বেলা তিনটের সময়, আমি আমার বাড়িতে প্রার্থনা করছিলাম। হঠাৎই উজ্জ্বল পোশাক পরে এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। \v 31 তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয়, ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছেন এবং দরিদ্রদের প্রতি তোমার সব দান স্মরণ করেছেন। \v 32 তুমি পিতর নামে পরিচিত শিমোনকে ডেকে আনার জন্য জোপ্পাতে লোক পাঠাও। সে শিমোন নামে এক চর্মকারের বাড়িতে অতিথি হয়ে আছে। তার বাড়ি সমুদ্রের তীরে।’ \v 33 তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম, আর আপনি এসে ভালোই করেছেন। এখন আমরা সকলে এই স্থানে ঈশ্বরের সাক্ষাতে উপস্থিত হয়েছি। প্রভু আমাদের কাছে বলার জন্য আপনাকে যে আদেশ দিয়েছেন, সেই সমস্ত শোনার জন্য আমরা একত্র হয়েছি।” \p \v 34 তখন পিতর কথা বলা শুরু করলেন: “এখন আমি বুঝতে পারছি যে, একথা কেমন সত্যি যে ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না, \v 35 কিন্তু যারাই তাঁকে ভয় করে ও ন্যায়সংগত আচরণ করে, সেইসব জাতির মানুষকে তিনি গ্রহণ করেন। \v 36 ইস্রায়েল জাতির কাছে এই হল সুসমাচারের বার্তা যে যীশু খ্রীষ্ট, যিনি সকলের প্রভু, তাঁর মাধ্যমে, ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তি\f + \fr 10:36 \fr*\ft অর্থাৎ ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের শান্তি\ft*\f* স্থাপিত হয়েছে। \v 37 যোহন বাপ্তিষ্মের বিষয়ে প্রচার করার পর গালীল থেকে শুরু করে সমস্ত যিহূদিয়ায় যা যা ঘটেছে, তা আপনাদের অজানা নেই— \v 38 ঈশ্বর কীভাবে নাসরতের যীশুকে পবিত্র আত্মায় ও পরাক্রমে অভিষিক্ত করেছিলেন এবং কীভাবেই বা তিনি বিভিন্ন স্থানে সকলের কল্যাণ করে বেড়াতেন ও দিয়াবলের ক্ষমতাধীন ব্যক্তিদের সুস্থ করতেন, কারণ ঈশ্বর তাঁর সহবর্তী ছিলেন। \p \v 39 “ইহুদিদের দেশে ও জেরুশালেমে তিনি যা যা করেছিলেন, আমরা সেই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী। তারা তাঁকে ক্রুশে টাঙিয়ে হত্যা করেছিল। \v 40 কিন্তু ঈশ্বর তৃতীয় দিনে তাঁকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছিলেন এবং তাঁকে প্রত্যক্ষ হতে দিয়েছিলেন। \v 41 সব মানুষ তাঁকে দেখতে পায়নি, কিন্তু ঈশ্বর যাদের আগে থেকেই সাক্ষীরূপে মনোনীত করে রেখেছিলেন, সেই আমরাই মৃতলোক থেকে তাঁর উত্থাপিত হওয়ার পর তাঁকে দেখেছি ও তাঁর সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি। \v 42 তিনি সব জাতির কাছে প্রচার করতে ও সাক্ষ্য দিতে আমাদের এই আদেশ দিয়েছেন যে, তিনিই সেই ব্যক্তি, যাঁকে ঈশ্বর জীবিত ও মৃতদের বিচারক হওয়ার জন্য নিযুক্ত করেছেন। \v 43 ভাববাদীরা সকলে তাঁর সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন, যে তাঁকে বিশ্বাস করে, সে তাঁর নামের মাধ্যমে নিজের সব পাপের ক্ষমা লাভ করে।” \p \v 44 পিতর যখন এসব কথা বলছিলেন, সেই সময়, যত লোক সেই বাণী শুনছিল, তাদের উপরে পবিত্র আত্মা নেমে এলেন। \v 45 সুন্নতপ্রাপ্ত যে বিশ্বাসীরা পিতরের সঙ্গে এসেছিলেন, তাঁরা অইহুদিদের উপরে পবিত্র আত্মার বরদান নেমে আসতে দেখে বিস্মিত হলেন। \v 46 কারণ তাঁরা তাঁদের বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের মহিমাকীর্তন করতে শুনলেন। \p তখন পিতর বললেন, \v 47 “আমাদেরই মতো এরাও পবিত্র আত্মা লাভ করেছে বলে কেউ কি এদের জলে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করতে বাধা দিতে পারে?” \v 48 তাই তিনি যীশু খ্রীষ্টের নামে তাদের বাপ্তাইজিত হওয়ার আদেশ দিলেন। পরে তাঁরা পিতরকে অনুনয় করলেন, যেন তিনি আরও কিছুদিন তাঁদের সঙ্গে থেকে যান। \c 11 \s1 পিতর যা করেছেন তা ব্যাখ্যা করলেন \p \v 1 প্রেরিতশিষ্যেরা ও সমগ্র যিহূদিয়ার ভাইয়েরা শুনতে পেলেন যে, অইহুদিরাও ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে। \v 2 তাই পিতর যখন জেরুশালেমে গেলেন, সুন্নতপ্রাপ্ত বিশ্বাসীরা তাঁর সমালোচনা করল। \v 3 তারা বলল, “তুমি অচ্ছিন্নত্বক লোকদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গে খাবার খেয়েছ।” \p \v 4 যা যা ঘটেছিল, প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পিতর একের পর এক তাদের কাছে ব্যাখ্যা করলেন। \v 5 “আমি জোপ্পা নগরে প্রার্থনা করছিলাম। তখন ভাবাবিষ্ট হয়ে আমি এক দর্শন লাভ করলাম। আমি দেখলাম বিশাল চাদরের মতো একটি বস্তুর চার প্রান্ত ধরে আকাশ থেকে নিচে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি যেখানে ছিলাম, সেটা আমার কাছে সেখানে নেমে এল। \v 6 আমি তার উপরে দৃষ্টিপাত করে পৃথিবীর সব ধরনের চতুষ্পদ প্রাণী, বন্যপশু, বিভিন্ন সরীসৃপ ও আকাশের পাখি দেখতে পেলাম। \v 7 তারপর আমি শুনলাম, এক কণ্ঠস্বর আমাকে বলছেন, ‘ওঠো পিতর, মারো ও খাও।’ \p \v 8 “আমি উত্তর দিলাম, ‘কিছুতেই নয়, প্রভু! কখনও কোনো অশুদ্ধ বা অশুচি কিছু আমার মুখে প্রবেশ করেনি।’ \p \v 9 “দ্বিতীয়বার সেই কণ্ঠস্বর আকাশ থেকে বলে উঠলেন, ‘ঈশ্বর যা শুচিশুদ্ধ করেছেন, তুমি তাকে অশুদ্ধ বোলো না।’ \v 10 এরকম তিনবার হল। তারপর সেটাকে আবার আকাশে তুলে নেওয়া হল। \p \v 11 “ঠিক সেই সময়ে, যে তিনজন লোককে কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল, তারা সেই বাড়ির কাছে এসে দাঁড়াল, যেখানে আমি ছিলাম। \v 12 পবিত্র আত্মা আমাকে বললেন, তাদের সঙ্গে যেতে আমি যেন কোনো দ্বিধাবোধ না করি। এই ছ-জন ভাইও আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন এবং আমরা সেই ব্যক্তির বাড়িতে প্রবেশ করলাম। \v 13 তিনি আমাদের বললেন, কীভাবে তিনি এক স্বর্গদূতের দর্শন পেয়েছেন, যিনি তাঁর বাড়িতে আবির্ভূত হয়ে বলেছিলেন, ‘পিতর নামে পরিচিত শিমোনকে আনার জন্য জোপ্পাতে লোক পাঠাও। \v 14 সে তোমাদের কাছে এক বার্তা নিয়ে আসবে, যার মাধ্যমে তুমি ও তোমার সমস্ত পরিজন পরিত্রাণ লাভ করবে।’ \p \v 15 “আমি কথা বলা শুরু করলে, পবিত্র আত্মা তাঁদের উপরে নেমে এলেন, যেভাবে তিনি শুরুতে আমাদের উপরে নেমে এসেছিলেন। \v 16 তখন আমার মনে এল, যে কথা প্রভু বলেছিলেন, ‘যোহন জলে বাপ্তিষ্ম দিতেন, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম লাভ করবে।’ \v 17 সুতরাং, আমরা যখন প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে\f + \fr 11:17 \fr*\ft গ্রিক, খ্রীষ্টে\ft*\f* বিশ্বাস করেছিলাম তখন ঈশ্বর যেমন আমাদেরকে বরদান দিয়েছিলেন তেমন যদি তাঁদেরও দিয়ে থাকেন, তাহলে আমি কে যে ঈশ্বরের পথে বাধা সৃষ্টি করব?” \p \v 18 তাঁরা যখন একথা শুনলেন, তাঁদের আর কোনো আপত্তি রইল না। তাঁরা এই বলে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল, “তাহলে তো ঈশ্বর অইহুদিদেরও জীবন পাওয়ার উদ্দেশ্যে মন পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছেন।” \s1 আন্তিয়খ নগরের মণ্ডলী \p \v 19 এখন স্তিফানকে কেন্দ্র করে নির্যাতন শুরু হওয়ার ফলে যারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছিল, তারা যাত্রা শুরু করে ফিনিসিয়া, সাইপ্রাস ও আন্তিয়খ পর্যন্ত গিয়ে কেবলমাত্র ইহুদিদের কাছে সেই বার্তা প্রচার করেছিল। \v 20 অবশ্য তাদের মধ্যে কেউ কেউ, যারা ছিল সাইপ্রাস ও কুরীণের মানুষ, তারা আন্তিয়খে গিয়ে গ্রিকভাষী ইহুদিদের কাছেও কথা বলল, তাদের কাছে প্রভু যীশুর বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করল। \v 21 প্রভুর হাত তাদের সহবর্তী ছিল এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ বিশ্বাস করে প্রভুর প্রতি ফিরল। \p \v 22 এ বিষয়ের সংবাদ জেরুশালেমে স্থিত মণ্ডলীর কানে পৌঁছাল। তাঁরা বার্ণবাকে আন্তিয়খে পাঠিয়ে দিলেন। \v 23 তিনি সেখানে পৌঁছে যখন ঈশ্বরের অনুগ্রহের প্রমাণ দেখতে পেলেন, তিনি আনন্দিত হলেন ও তাদের সকলকে সর্বান্তঃকরণে প্রভুর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার জন্য প্রেরণা দিলেন। \v 24 তিনি ছিলেন একজন সৎ ব্যক্তি, পবিত্র আত্মায় ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ। আর বিপুল সংখ্যক মানুষকে সেখানে প্রভুর কাছে নিয়ে আসা হয়েছিল। \p \v 25 এরপরে বার্ণবা শৌলের সন্ধানে তার্ষ নগরে গেলেন। \v 26 তাঁর সন্ধান পেয়ে তিনি তাঁকে আন্তিয়খে নিয়ে এলেন। আর তাঁরা সম্পূর্ণ এক বছর মণ্ডলীর সঙ্গে মিলিত হলেন এবং অনেক লোককে শিক্ষা দিলেন। আর আন্তিয়খেই শিষ্যেরা সর্বপ্রথম খ্রীষ্টিয়ান নামে আখ্যাত হল। \p \v 27 এই সময়ে কয়েকজন ভাববাদী জেরুশালেম থেকে আন্তিয়খে এসে উপস্থিত হলেন। \v 28 তাঁদের মধ্যে আগাব নামে একজন উঠে দাঁড়ালেন এবং (পবিত্র) আত্মার মাধ্যমে ভবিষ্যদ্‌বাণী করলেন যে, সমগ্র রোমীয় সাম্রাজ্য দারুণভাবে দুর্ভিক্ষকবলিত হবে। (এই ঘটনা ঘটেছিল ক্লডিয়াসের রাজত্বকালে।) \v 29 শিষ্যেরা, তাদের প্রত্যেকের সামর্থ্য অনুযায়ী, যিহূদিয়া প্রদেশে বসবাসকারী ভাইবোনদের কাছে সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। \v 30 সেই অনুযায়ী তাঁরা বার্ণবা ও শৌলের মারফত তাদের দান প্রাচীনদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \c 12 \s1 অলৌকিক উপায়ে পিতরের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন \p \v 1 প্রায় এরকম সময়ে রাজা হেরোদ মণ্ডলীর কয়েকজনকে নির্যাতন করার উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার করলেন। \v 2 তিনি যোহনের ভাই যাকোবকে তরোয়ালের আঘাতে হত্যা করলেন। \v 3 এতে ইহুদিরা সন্তুষ্ট হল দেখে তিনি পিতরকেও বন্দি করার আদেশ দিলেন। খামিরশূন্য রুটির পর্বের সময়ে এই ঘটনা ঘটল। \v 4 তাঁকে গ্রেপ্তার করে তিনি কারাগারে রাখলেন। এক-একটি দলে চারজন করে সৈন্য, এমন চারটি দলের উপরে তিনি তাঁর পাহারার ভার দিলেন। হেরোদের উদ্দেশ্য ছিল, নিস্তারপর্বের পরে তাঁকে নিয়ে এসে সবার সামনে তাঁর বিচার করবেন। \p \v 5 এভাবে পিতরকে কারাগারে রেখে দেওয়া হল, কিন্তু মণ্ডলী আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিল। \p \v 6 হেরোদ সবার সামনে যেদিন তাঁর বিচারের দিন স্থির করেছিলেন, তার আগের রাতে পিতর দুজন সৈন্যের মাঝখানে দুটি শিকলে বাঁধা অবস্থায় ঘুমিয়েছিলেন। প্রহরীরা প্রবেশপথে পাহারা দিচ্ছিল। \v 7 হঠাৎই প্রভুর এক দূত সেখানে আবির্ভূত হলেন এবং কারাগারে এক আলো প্রকাশ পেল। তিনি পিতরের বুকের পাশে আঘাত করে তাঁকে জাগিয়ে তুললেন। তিনি বললেন, “তাড়াতাড়ি করো, উঠে পড়ো!” তখন পিতরের দু-হাতের কব্জি থেকে শিকল খসে পড়ল। \p \v 8 তারপর সেই দূত তাঁকে বললেন, “তুমি তোমার জামাকাপড় ও চটিজুতো পরে নাও।” পিতর তাই করলেন। দূত তাঁকে বললেন, “তোমার আলখাল্লা তোমার গায়ে জড়িয়ে নাও ও আমাকে অনুসরণ করো।” \v 9 পিতর তাঁকে অনুসরণ করে কারাগারের বাইরে এলেন, কিন্তু দূত যা করছেন, তা সত্যিই বাস্তবে ঘটছে কি না, সে বিষয়ে কোনও ধারণা করতে পারলেন না। তিনি ভাবলেন যে তিনি কোনো দর্শন দেখছেন। \v 10 তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় প্রহরীদলকে অতিক্রম করে যেখান দিয়ে নগরে যাওয়া যায় সেই লোহার দরজার সামনে এসে উপস্থিত হলেন। সেই দরজা তাঁদের জন্য আপনা-আপনি খুলে গেল, তাঁরা তার মধ্য দিয়ে পার হয়ে গেলেন। তাঁরা যখন একটি পথের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত হেঁটে পার হলেন, হঠাৎই দূত তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন। \p \v 11 তখন পিতর তাঁর চেতনা ফিরে পেলেন ও বললেন, “এখন আমি নিঃসন্দেহে বুঝতে পারছি যে, প্রভুই তাঁর দূত পাঠিয়ে আমাকে হেরোদের কবল থেকে এবং ইহুদি জনসাধারণের সমস্ত আকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ধার করেছেন।” \p \v 12 এই বিষয় তাঁর উপলব্ধি হওয়ার পর, তিনি মার্ক নামে পরিচিত সেই যোহনের মা মরিয়মের বাড়িতে গেলেন। সেখানে অনেকে একত্র হয়ে প্রার্থনা করছিল। \v 13 পিতর বাইরের দরজায় করাঘাত করলে রোদা নামে এক দাসী সাড়া দিতে দরজার কাছে এল। \v 14 সে যখন পিতরের কণ্ঠস্বর চিনতে পারল, আনন্দের আতিশয্যে দরজা না খুলেই দৌড়ে ফিরে গেল ও চিৎকার করে বলে উঠল, “পিতর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।” \p \v 15 তারা তাকে বলল, “তোমার মাথা খারাপ হয়েছে।” কিন্তু যখন সে জোর দিয়ে বলতে লাগল যে তার কথাই সত্যি, তারা বলল, “উনি নিশ্চয়ই তাঁর দূত।” \p \v 16 পিতর কিন্তু ক্রমাগত দরজায় করাঘাত করে যাচ্ছিলেন। তারা দরজা খুলে যখন তাঁকে দেখতে পেল, তারা বিস্মিত হল। \v 17 পিতর হাতের ইশারায় তাদের শান্ত হতে বললেন। তারপর বর্ণনা করলেন, প্রভু কীভাবে তাঁকে কারাগার থেকে বাইরে এনেছেন। তিনি বললেন, “তোমরা এই ঘটনার কথা যাকোবকে ও সেই ভাইদের বলো,” একথা বলে তিনি অন্য স্থানের উদ্দেশে চলে গেলেন। \p \v 18 সকালবেলা, পিতরের কী হল, ভেবে সৈন্যদের মধ্যে উত্তেজনার ঝড় বয়ে গেল। \v 19 তাঁর জন্য হেরোদ তন্নতন্ন অনুসন্ধান করার পরেও তাঁকে খুঁজে না পেয়ে তিনি প্রহরীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ও তাদের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন। \s1 হেরোদের মৃত্যু \p এরপরে হেরোদ যিহূদিয়া থেকে কৈসরিয়ায় চলে গেলেন ও সেখানে কিছুকাল থাকলেন। \v 20 টায়ার\f + \fr 12:20 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণ: \ft*\fqa সোর\fqa*\ft ।\ft*\f* ও সীদোনের জনগণের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। তারা এসময় জোটবদ্ধ হয়ে তাঁর কাছে এল যেন তিনি তাদের কথা শোনেন। রাজার শয়নাগারের একজন দাস ব্লাস্ত-এর সমর্থন আদায় করে তারা সন্ধির প্রস্তাব করল, কারণ তাদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের জন্য তারা রাজার দেশের উপরে নির্ভর করত। \p \v 21 পরে, এক নির্ধারিত দিনে হেরোদ, তাঁর রাজকীয় পোশাক পরে তাঁর সিংহাসনে বসলেন। তিনি প্রকাশ্যে জনগণের উদ্দেশে এক ভাষণ দিলেন। \v 22 তারা চিৎকার করে বলল, “এ তো এক দেবতার কণ্ঠস্বর, মানুষের নয়।” \v 23 হেরোদ ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান না করায়, সেই মুহূর্তেই, প্রভুর এক দূত তাঁকে আঘাত করলেন, ফলে তাঁর সর্বাঙ্গ পোকায় ছেয়ে গেল। পোকায় তাঁকে খেয়ে ফেলল ও তাঁর মৃত্যু হল। \p \v 24 কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে ও প্রসার লাভ করতে লাগল। \s1 বার্ণবা ও শৌলের প্রচারযাত্রা \p \v 25 যখন বার্ণবা ও শৌল তাঁদের পরিচর্যা কাজ শেষ করলেন, তাঁরা জেরুশালেম থেকে ফিরে এলেন। সঙ্গে তাঁরা যোহনকে নিয়ে এলেন যাকে মার্ক বলেও ডাকা হত। \c 13 \nb \v 1 আন্তিয়খের মণ্ডলীতে কয়েকজন ভাববাদী ও শিক্ষক ছিলেন: বার্ণবা, নিগের নামে আখ্যাত শিমোন, কুরীণ প্রদেশের লুসিয়াস\f + \fr 13:1 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণ: \ft*\fqa লুকিয়\fqa*\ft ।\ft*\f*, মনায়েন (ইনি সামন্তরাজ হেরোদের সঙ্গে প্রতিপালিত হয়েছিলেন) ও শৌল। \v 2 তাঁরা যখন প্রভুর উপাসনা ও উপোস করছিলেন, পবিত্র আত্মা বললেন, “বার্ণবা ও শৌলকে আমি যে কাজের জন্য আহ্বান করেছি, সেই কাজের জন্য আমার উদ্দেশ্যে তাদের পৃথক করে দাও।” \v 3 এভাবে তাঁরা উপোস ও প্রার্থনা শেষ করার পর, তাঁরা তাঁদের উপরে হাত রাখলেন ও তাঁদের বিদায় দিলেন। \s1 সাইপ্রাসে বাক্য প্রচার \p \v 4 এইভাবে তাঁরা দুজন পবিত্র আত্মার দ্বারা প্রেরিত হয়ে সিলুকিয়াতে গেলেন এবং সেখান থেকে জাহাজে সাইপ্রাস\f + \fr 13:4 \fr*\ft পুরোনো সংস্করণ: কুপ্র\ft*\f* গেলেন। \v 5 তাঁরা সালামিতে পৌঁছে ইহুদি সমাজভবনগুলিতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করলেন। যোহনও তাঁদের সঙ্গে সাহায্যকারীরূপে ছিলেন। \p \v 6 সম্পূর্ণ দ্বীপটির এদিক-ওদিক যাতায়াত করে তাঁরা পাফোতে পৌঁছালেন। সেখানে তাঁরা বর-যীশু নামে একজন ইহুদি জাদুকর ও ভণ্ড ভাববাদীর সাক্ষাৎ পেলেন। \v 7 সে ছিল প্রদেশপাল সের্গীয় পৌলের একজন পরিচারক। প্রদেশপাল ছিলেন একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তিনি বার্ণবা ও শৌলকে ডেকে পাঠালেন, কারণ তিনি ঈশ্বরের বাক্য শুনতে চাইছিলেন। \v 8 কিন্তু ইলুমা, সেই জাদুকর (কারণ সেই ছিল তার নামের অর্থ), তাদের বিরোধিতা করল এবং প্রদেশপালকে বিশ্বাস থেকে ফেরাতে চাইল। \v 9 তখন শৌল, যাঁকে পৌল নামেও অভিহিত করা হত, পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে ইলুমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে বললেন, \v 10 “তুমি দিয়াবলের সন্তান এবং সর্বপ্রকার ধার্মিকতার বিপক্ষ! তুমি সর্বপ্রকার ছলনা ও ধূর্ততায় পরিপূর্ণ। প্রভুর প্রকৃত পথকে বিকৃত করতে তুমি কি কখনোই ক্ষান্ত হবে না? \v 11 এখন প্রভুর হাত তোমার বিপক্ষে রয়েছে। তুমি দৃষ্টিহীন হবে এবং কিছু সময় পর্যন্ত তুমি সূর্যের আলো দেখতে পাবে না।” \p সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও অন্ধকার তাকে আচ্ছন্ন করল। সে হাতড়ে বেড়াতে লাগল, খুঁজতে লাগল, কেউ যেন তার হাত ধরে নিয়ে যায়। \v 12 যা ঘটেছে, প্রদেশপাল তা লক্ষ্য করে বিশ্বাস করলেন, কারণ তিনি প্রভুর সম্পর্কিত উপদেশে চমৎকৃত হয়েছিলেন। \s1 আন্তিয়খে প্রচার \p \v 13 পাফো থেকে পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা জাহাজে করে পাম্ফুলিয়ার পর্গা নগরে গেলেন। সেখানে যোহন তাঁদের ছেড়ে দিয়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। \v 14 পর্গা থেকে তাঁরা গেলেন পিষিদিয়ার আন্তিয়খে। বিশ্রামদিনে তাঁরা সমাজভবনে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করলেন। \v 15 বিধানশাস্ত্র ও ভাববাদী গ্রন্থ পাঠ করা হলে পর, সমাজভবনের অধ্যক্ষেরা তাঁদের কাছে বলে পাঠালেন, “ভাইরা, জনগণের জন্য আপনাদের কাছে যদি কোনও উৎসাহ দেওয়ার বার্তা থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে বলুন।” \p \v 16 পৌল উঠে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করলেন ও বললেন, “হে ইস্রায়েলবাসী ও ঈশ্বরের উপাসক অইহুদি জনগণ, আমার কথা শোনো। \v 17 ইস্রায়েল জাতির ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন, মিশরে তাদের থাকার সময়ে তিনিই তাদের সমৃদ্ধ করেছিলেন। মহাপরাক্রমের সঙ্গে তিনি সেদেশ থেকে তাদের বের করেও এনেছিলেন। \v 18 চল্লিশ বছর পর্যন্ত মরুপ্রান্তরে তিনি তাদের আচরণ\f + \fr 13:18 \fr*\ft কতগুলি পাণ্ডুলিপিতে: \ft*\fqa তাদের তত্ত্বাবধান করেছিলেন\fqa*\ft ।\ft*\f* সহ্য করেছিলেন। \v 19 কনানে সাতটি জাতিকে উৎখাত করে তিনি অধিকাররূপে তাদের দেশ তাঁর প্রজাদের দান করেছিলেন। \v 20 এসব সম্পন্ন হতে প্রায় চারশো পঞ্চাশ বছর লেগেছিল। \p “এরপর, ভাববাদী শমূয়েলের আমল পর্যন্ত ঈশ্বর তাদের জন্য বিচারকর্তৃগণ দিলেন। \v 21 তারপর প্রজারা একজন রাজা চাইল। তিনি তাদের বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত কীশের ছেলে শৌলকে দিলেন। তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 22 শৌলকে পদচ্যুত করে, তিনি দাউদকে তাদের রাজা করলেন। তিনি তাঁর সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন: ‘আমি আমার মনের মতো মানুষ, যিশয়ের ছেলে দাউদকে খুঁজে পেয়েছি। আমি যা চাই, সে আমার জন্য তাই করবে।’ \p \v 23 “তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ঈশ্বর তাঁরই বংশধরদের মধ্য থেকে পরিত্রাতা যীশুকে ইস্রায়েলের কাছে উপস্থিত করলেন। \v 24 যীশুর আগমনের পূর্বে যোহন ইস্রায়েলী প্রজাদের কাছে মন পরিবর্তন ও বাপ্তিষ্মের কথা প্রচার করলেন। \v 25 যোহন তাঁর কাজ সম্পূর্ণ করার সময় বলেছিলেন, ‘তোমরা কী মনে করো, আমি কে? আমি সেই ব্যক্তি নই। না, কিন্তু তিনি আমার পরে আসছেন, যাঁর চটিজুতোর বাঁধন খোলারও যোগ্যতা আমার নেই।’ \p \v 26 “ভাইরা, অব্রাহামের সন্তানেরা এবং ঈশ্বরভয়শীল অইহুদি তোমরা, আমাদেরই কাছে পরিত্রাণের এই বাণী পাঠানো হয়েছে। \v 27 জেরুশালেমের লোকেরা ও তাদের অধ্যক্ষেরা যীশুকে চিনতে পারেনি, তবুও তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে তারা ভাববাদীদের বাণী পূর্ণ করেছে, যা প্রতি বিশ্রামদিনে পড়া হয়। \v 28 যদিও তাঁকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার জন্য তারা কোনো যথাযথ কারণ খুঁজে পায়নি, তবুও তারা পীলাতের কাছে নিবেদন করেছিল যেন তাঁকে হত্যা করা হয়। \v 29 তাঁর সম্পর্কে লিখিত সব কথা তারা সম্পূর্ণ করলে, তারা তাঁকে ক্রুশ থেকে নামিয়ে একটি কবরে সমাধি দিল। \v 30 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করলেন। \v 31 যাঁরা তাঁর সঙ্গে গালীল থেকে জেরুশালেমে যাত্রা করেছিলেন, তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিয়েছিলেন। তাঁরা এখন জনসমক্ষে তাঁর সাক্ষী হয়েছেন। \p \v 32 “আমরা তোমাদের এই সুসমাচার বলি: ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, \v 33 যীশুকে উত্থাপিত করে তিনি তাদের বংশধরদের, অর্থাৎ আমাদের কাছে তা পূর্ণ করেছেন। দ্বিতীয় গীতে যেমন লেখা আছে, \q1 “ ‘তুমি আমার পুত্র, \q2 আজ আমি তোমার পিতা হয়েছি।’\f + \fr 13:33 \fr*\ft বা আজ তোমার পিতা হয়েছি।\ft*\f*\f + \fr 13:33 \fr*\ft \+xt গীত 2:7\+xt*\ft*\f* \m \v 34 ঈশ্বর তাঁকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন, কবরে পচে যাওয়ার জন্য ছেড়ে দেননি। এই সত্য এসব বচনে ব্যক্ত হয়েছে: \q1 “ ‘আমি তোমাকে দাউদের কাছে প্রতিশ্রুত পবিত্র ও সুনিশ্চিত সব আশীর্বাদ দান করব।’\f + \fr 13:34 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 55:3\+xt*\ft*\f* \m \v 35 অন্যত্রও এই কথার এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে: \q1 “ ‘তুমি তোমার পবিত্রজনকে ক্ষয় দেখতে দেবে না।’\f + \fr 13:35 \fr*\ft \+xt গীত 16:10\+xt*\ft*\f* \p \v 36 “কারণ দাউদ যখন তাঁর প্রজন্মে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূর্ণ করলেন, তিনি নিদ্রাগত হলেন। তিনি তাঁর পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কবরপ্রাপ্ত হলেন ও তাঁর শরীর ক্ষয় পেল। \v 37 কিন্তু ঈশ্বর যাঁকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন, তিনি ক্ষয় দেখেননি। \p \v 38 “সেই কারণে, আমার ভাইরা, আমি চাই তোমরা অবগত হও যে যীশুর মাধ্যমে সব পাপের ক্ষমা হয়, যা তোমাদের কাছে ঘোষণা করা হচ্ছে। মোশির বিধান যে সমস্ত বিষয় থেকে তোমাদের নির্দোষ করতে পারেনি, \v 39 যীশুর মাধ্যমে প্রত্যেকজন, যারা বিশ্বাস করে, তারা সেইসব বিষয় থেকে নির্দোষ গণ্য হয়। \v 40 সাবধান হও, ভাববাদীরা যা বলে গেছেন, তোমাদের ক্ষেত্রে যেন সেরকম না হয়: \q1 \v 41 “ ‘ওহে বিদ্রুপকারীর দল, \q2 তোমরা বিস্ময়চকিত হয়ে ধ্বংস হও, \q1 কারণ আমি তোমাদের দিনে এমন কিছু করব, \q2 যা তোমাদের বলা হলেও, \q2 তোমরা কখনও তা বিশ্বাস করবে না।’ ”\f + \fr 13:41 \fr*\ft \+xt হবক্‌কূক 1:5\+xt*\ft*\f* \p \v 42 পৌল ও বার্ণবা সমাজভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়, লোকেরা পরবর্তী বিশ্রামদিনে এ প্রসঙ্গে আরও কথা বলার জন্য তাঁদের আমন্ত্রণ জানাল। \v 43 সভা শেষ হওয়ার পর বহু ইহুদি ও ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত ব্যক্তিরা পৌল ও বার্ণবাকে অনুসরণ করল। তাঁরা তাদের সঙ্গে কথা বললেন এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহে অবিচল থাকার জন্য তাদের উৎসাহিত করলেন। \p \v 44 পরবর্তী বিশ্রামদিনে নগরের প্রায় সমস্ত মানুষ প্রভুর বাক্য শোনার জন্য একত্র হল। \v 45 ইহুদিরা সেই জনসমাগম দেখে ঈর্ষায় পরিপূর্ণ হল। তারা পৌলের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কটূক্তি করতে লাগল। \p \v 46 তখন পৌল ও বার্ণবা সাহসের সঙ্গে উত্তর দিলেন, “প্রথমে আপনাদের কাছে আমাদের ঈশ্বরের বাক্য বলতে হয়েছে। আপনারা যেহেতু তা অগ্রাহ্য করছেন ও নিজেদের অনন্ত জীবন লাভের জন্য অযোগ্য বিবেচনা করছেন, আমরা এখন অইহুদিদের কাছেই যাচ্ছি। \v 47 কারণ প্রভু আমাদের এই আদেশই দিয়েছেন: \q1 “ ‘আমি তোমাকে অইহুদিদের জন্য দীপ্তিস্বরূপ করেছি, \q2 যেন পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত তুমি পরিত্রাণ নিয়ে যেতে পারো।’ ”\f + \fr 13:47 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 49:6\+xt*\ft*\f* \p \v 48 অইহুদিরা একথা শুনে আনন্দিত হল। তারা প্রভুর বাক্যের সমাদর করল। যারাই অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত হয়েছিল, তারা সকলে বিশ্বাস করল। \p \v 49 প্রভুর বাক্য সেই সমস্ত অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। \v 50 কিন্তু ইহুদিরা সম্ভ্রান্ত ঘরের ঈশ্বরভয়শীল মহিলাদের ও নগরের নেতৃস্থানীয় লোকদের উত্তেজিত করে তুলল। তারা পৌল ও বার্ণবার প্রতি নির্যাতন করা শুরু করল এবং তাদের এলাকা থেকে তাঁদের বের করে দিল। \v 51 তাঁরা তখন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ তাঁদের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ইকনিয়তে চলে গেলেন। \v 52 আর শিষ্যরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে উঠল। \c 14 \s1 ইকনিয়তে প্রচার \p \v 1 ইকনিয়তে পৌল ও বার্ণবা যথারীতি ইহুদিদের সমাজভবনে গেলেন। সেখানে তারা এমনভাবে কথা বললেন যে, এক বিপুল সংখ্যক ইহুদি ও গ্রিক বিশ্বাস করল। \v 2 কিন্তু যে ইহুদিরা বিশ্বাস করতে চাইল না, তারা অইহুদিদের উত্তেজিত করে তুলল এবং ভাইদের বিরুদ্ধে তাদের মন বিষিয়ে তুলল। \v 3 তাই পৌল ও বার্ণবা সেখানে বেশ কিছুদিন কাটালেন। তাঁরা সাহসের সঙ্গে প্রভুর কথা প্রচার করতে লাগলেন। আর প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে বিভিন্ন অলৌকিক নিদর্শন দেখিয়ে ও বিস্ময়কর কাজ সম্পন্ন করে তাঁর অনুগ্রহের বার্তার সত্যতা প্রমাণ করলেন। \v 4 সেই নগরের লোকেরা দুদলে ভাগ হয়ে গেল; কিছু লোক ইহুদিদের, অন্যেরা প্রেরিতশিষ্যদের পক্ষসমর্থন করল। \v 5 অইহুদি ও ইহুদিরা, তাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক হয়ে ষড়যন্ত্র করল যে তারা তাঁদের প্রতি দুর্ব্যবহার করবে ও তাঁদের পাথর দিয়ে মারবে। \v 6 কিন্তু তাঁরা একথা জানতে পেরে লুকায়োনিয়ার লুস্ত্রা ও ডার্বি নগরে এবং পারিপার্শ্বিক অঞ্চলগুলিতে পালিয়ে গেলেন। \v 7 আর সেখানে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করতে থাকলেন। \p \v 8 লুস্ত্রায় একটি খোঁড়া মানুষ বসে থাকত। সে ছিল জন্ম থেকেই খোঁড়া। সে কখনও হাঁটেনি। \v 9 সে পৌলের প্রচার শুনছিল। পৌল সরাসরি তার দিকে তাকালেন ও দেখলেন যে সুস্থ হওয়ার জন্য তার বিশ্বাস আছে। \v 10 তিনি উচ্চকণ্ঠে বললেন, “তোমার পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াও!” এতে সেই ব্যক্তি লাফ দিয়ে উঠল ও হেঁটে বেড়াতে লাগল। \p \v 11 পৌলের এই অলৌকিক কাজ দেখে জনতা লুকায়োনীয় ভাষায় চিৎকার করে বলতে লাগল, “দেবতারা মানুষের রূপ ধরে আমাদের মধ্যে নেমে এসেছেন!” \v 12 বার্ণবাকে তারা বলল জুপিটর\f + \fr 14:12 \fr*\ft অথবা, জিউস\ft*\f* এবং পৌল প্রধান বক্তা ছিলেন বলে তাঁর নাম দিল মার্কারি\f + \fr 14:12 \fr*\ft অথবা, হার্মিস\ft*\f*। \v 13 নগরের ঠিক বাইরেই ছিল জিউসের মন্দির। সেখানকার পুরোহিত ষাঁড় ও ফুলের মালা নগরের প্রবেশপথে নিয়ে এল, কারণ সে ও সমস্ত লোক তাদের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করতে চাইল। \p \v 14 কিন্তু প্রেরিতশিষ্যেরা, বার্ণবা ও পৌল যখন একথা শুনলেন, তাঁরা তাদের পোশাক ছিঁড়লেন। তাঁরা দ্রুত জনতার কাছে ছুটে গিয়ে চিৎকার করে বললেন, \v 15 “বন্ধুগণ, আপনারা কেন এরকম করছেন? আমরাও মানুষ, আপনাদেরই মতো মানুষমাত্র। আমরা আপনাদের কাছে এই সুসমাচার নিয়ে এসেছি ও আপনাদের বলছি যে, এসব অসার বস্তু থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের প্রতি ফিরে আসতে যিনি আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী, সমুদ্র ও সেগুলির মধ্যে যা কিছু আছে সেসব সৃষ্টি করেছেন। \v 16 অতীতে, তিনি সব জাতিকেই তাদের ইচ্ছামতো জীবনাচরণ করতে দিয়েছেন। \v 17 তবুও তিনি নিজেকে সাক্ষ্যবিহীন রাখেননি। তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি ও বিভিন্ন ঋতুতে শস্য উৎপাদন করে তাঁর করুণা দেখিয়েছেন। তিনি আপনাদের প্রচুর খাদ্যসামগ্রী দান করেছেন ও আপনাদের অন্তর আনন্দে পরিপূর্ণ করেছেন।” \v 18 এসব কথা বলা সত্ত্বেও, তাঁদের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করা থেকে জনতাকে নিবৃত্ত করতে তাঁরা বেগ পেলেন। \p \v 19 এরপর আন্তিয়খ ও ইকনিয় থেকে কয়েকজন ইহুদি এসে জনতাকে প্রভাবিত করল। তারা পৌলকে পাথর দিয়ে আঘাত করল ও নগরের বাইরে টেনে নিয়ে গেল, ভাবল তিনি মারা গেছেন। \v 20 কিন্তু শিষ্যেরা তাঁর চারপাশে একত্র হলে, তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং নগরের মধ্যে ফিরে গেলেন। পরের দিন তিনি ও বার্ণবা ডার্বির উদ্দেশে রওনা হলেন। \s1 সিরিয়ার আন্তিয়খে প্রত্যাবর্তন \p \v 21 তাঁরা সেই নগরে সুসমাচার প্রচার করলেন এবং বিপুল সংখ্যক মানুষকে শিষ্য করলেন। তারপর তারা লুস্ত্রা, ইকনিয় ও আন্তিয়খে ফিরে এলেন। \v 22 তাঁরা শিষ্যদের শক্তি জোগালেন ও বিশ্বাসে স্থির থাকার জন্য তাঁদের প্রেরণা দিলেন। তাঁরা বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য আমাদের অবশ্যই বহু কষ্টভোগ করতে হবে।” \v 23 পৌল ও বার্ণবা প্রত্যেকটি মণ্ডলীতে তাঁদের জন্য প্রাচীনদের মনোনীত করলেন। যে প্রভুর উপরে তাঁরা আস্থা স্থাপন করেছিলেন, প্রার্থনা ও উপোসের মাধ্যমে তাঁরই কাছে তাঁদের সমর্পণ করলেন। \v 24 পিষিদিয়া অতিক্রম করে তাঁরা গেলেন পাম্ফুলিয়ায়। \v 25 পরে পর্গায় বাক্য প্রচার করে তাঁরা অত্তালিয়াতে চলে গেলেন। \p \v 26 অত্তালিয়া থেকে তাঁরা সমুদ্রপথে আন্তিয়খে ফিরে এলেন। তাঁরা যে প্রচারকাজ সম্পাদন করেছিলেন তার জন্য এখান থেকেই ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীনে তাঁদের সমর্পণ করা হয়েছিল। \v 27 সেখানে পৌঁছে তাঁরা মণ্ডলীকে একত্রিত করলেন। ঈশ্বর যা কিছু তাঁদের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছিলেন ও যেভাবে তিনি অইহুদিদের কাছে বিশ্বাসের দরজা খুলে দিয়েছিলেন, সেই সংবাদ তাঁদের কাছে পরিবেশন করলেন। \v 28 এরপর তাঁরা সেখানে শিষ্যদের সঙ্গে অনেকদিন কাটালেন। \c 15 \s1 জেরুশালেমের সম্মেলনে আলোচনা \p \v 1 যিহূদিয়া থেকে কয়েকজন ব্যক্তি আন্তিয়খে এসে বিশ্বাসীদের\f + \fr 15:1 \fr*\ft গ্রিক: “ভাইদের।” 32 পদেও।\ft*\f* শিক্ষা দিতে লাগল যে, “মোশি যে প্রথার বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী সুন্নত না করলে, তোমরা পরিত্রাণ পাবে না।” \v 2 এই ঘটনায় পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে তাদের তুমুল মতবিরোধ ও তর্কবিতর্ক দেখা দিল। সেই কারণে ঠিক হল, এই প্রশ্নের নিষ্পত্তির জন্য পৌল ও বার্ণবা আরও কয়েকজন বিশ্বাসীর সঙ্গে জেরুশালেমে যাবেন এবং প্রেরিতশিষ্যবর্গ ও প্রাচীনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। \v 3 মণ্ডলী তাঁদের যাত্রাপথে পাঠিয়ে দিলেন। ফিনিসিয়া ও শমরিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় কীভাবে অইহুদি মানুষেরা পরিবর্তিত হয়েছিল, তাঁরা সেকথা বর্ণনা করলেন। এই সংবাদে সব ভাইয়েরা আনন্দিত হলেন। \v 4 তাঁরা যখন জেরুশালেমে এলেন, মণ্ডলী প্রেরিতশিষ্যবর্গ ও প্রাচীনদের সঙ্গে তাঁদের স্বাগত জানালেন। ঈশ্বর তাঁদের মাধ্যমে যে সমস্ত কাজ সাধন করেছিলেন, তাঁরা সেকথা তাঁদের জানালেন। \p \v 5 তখন ফরিশী-দলভুক্ত কয়েকজন বিশ্বাসী উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “অইহুদিদের অবশ্যই সুন্নত করতে হবে এবং তাদের মোশির বিধানও পালন করা প্রয়োজন।” \p \v 6 প্রেরিতশিষ্যবর্গ ও প্রাচীনেরা এই প্রশ্নের আলোচনার জন্য মিলিত হলেন। \v 7 বহু আলোচনার পর, পিতর উঠে দাঁড়িয়ে, তাঁদের উদ্দেশে বললেন, “ভাইরা, তোমরা জানো যে, কিছুদিন আগে ঈশ্বর তোমাদের মধ্য থেকে আমাকে মনোনীত করেছিলেন, যেন অইহুদিরা আমার মুখ থেকে সুসমাচারের বার্তা শুনে বিশ্বাস করে। \v 8 ঈশ্বর, যিনি অন্তর্যামী, তিনি তাদের গ্রহণ করেছেন প্রমাণ করার জন্য, আমাদের ক্ষেত্রে যেমন করেছিলেন, তেমনই তাদেরও পবিত্র আত্মা দান করলেন। \v 9 আমাদের ও তাদের মধ্যে তিনি কোনও বিভেদ রাখেননি, কারণ তিনি বিশ্বাসের দ্বারা তাদের হৃদয় শুচিশুদ্ধ করেছেন। \v 10 তাহলে এখন, কেন তোমরা শিষ্যদের কাঁধে সেই জোয়াল চাপিয়ে দিয়ে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করার চেষ্টা করছ, যা আমরা বা আমাদের পিতৃপুরুষেরাও বহন করতে পারিনি? \v 11 না! আমরা বিশ্বাস করি, প্রভু যীশুর অনুগ্রহের মাধ্যমেই আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি, ঠিক যেমন তারাও পেয়েছে।” \p \v 12 সমস্ত মণ্ডলী নীরব হয়ে রইল; আর বার্ণবা ও পৌলের মাধ্যমে ঈশ্বর অইহুদিদের মাঝে যেসব অলৌকিক নিদর্শন ও বিস্ময়কর কাজ সম্পাদন করেছিলেন সেসব বর্ণনা তারা শুনল। \v 13 তাঁদের কথা শেষ হলে, যাকোব বলে উঠলেন, “ভাইয়েরা, আমার কথা শোনো। \v 14 শিমোন\f + \fr 15:14 \fr*\ft গ্রিক \ft*\fqa শিমিয়োন\fqa*\ft —এর এক ভিন্ন রূপ; অর্থাৎ, পিতর।\ft*\f* আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে ঈশ্বর কীভাবে তাঁর নিজের নামের গৌরবের জন্য অইহুদিদের পরিদর্শন করেছেন ও তাদের মধ্য থেকে একদল লোক বেছে নিয়েছেন। \v 15 ভাববাদীদের বাণীর সঙ্গে এর মিল আছে, যেমন লেখা আছে: \q1 \v 16 “ ‘এরপর আমি ফিরে আসব ও \q2 দাউদের পতিত হওয়া তাঁবু পুনরায় গাঁথব। \q1 এর ধ্বংসাবশেষকে আমি পুননির্মাণ করব এবং \q2 তা আমি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব, \q1 \v 17 যেন লোকেদের অবশিষ্টাংশ এবং \q2 আমার নাম বহনকারী সমস্ত অইহুদি জাতি \q1 প্রভুর অন্বেষণ করতে পারে, \q2 একথা বলেন প্রভু, যিনি এ সমস্ত সাধন করেন’\f + \fr 15:17 \fr*\ft \+xt আমোষ 9:11,12\+xt*\ft*\f* \q1 \v 18 বহুকাল আগে যা তিনি ব্যক্ত করেছেন। \p \v 19 “অতএব আমার বিচার এই, যে সমস্ত অইহুদি ঈশ্বরের দিকে ফিরে এসেছে, আমরা তাদের জন্য কোনো কিছু কঠিন করব না। \v 20 বরং আমরা পত্র লিখে তাদের জানিয়ে দেব, যেন তারা প্রতিমার কাছে উৎসর্গ করা খাবার যা কলুষিত, অবৈধ যৌন-সংসর্গ, শ্বাসরোধ করে মারা প্রাণীর মাংস এবং রক্ত পান করা থেকে দূরে থাকে। \v 21 কারণ প্রাচীনকাল থেকে প্রতিটি নগরেই মোশির বিধান প্রচার করা হয়েছে এবং প্রতি বিশ্রামবারে তা সমাজভবনগুলিতে পড়া হয়েছে।” \s1 অইহুদি বিশ্বাসীদের কাছে পরিষদের পত্র \p \v 22 তখন প্রেরিতশিষ্যবর্গ ও প্রাচীনেরা, সমস্ত মণ্ডলীর সঙ্গে স্থির করলেন যে তাঁদের মধ্য থেকে নিজস্ব কয়েকজন ব্যক্তিকে মনোনীত করে, পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে তাঁদের আন্তিয়খে পাঠাবেন। তারা ভাইদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় দুজনকে মনোনীত করলেন যাদের নাম যিহূদা (বার্শব্বা নামেও ডাকা হত) ও সীল। \v 23 তাদের মারফত তাঁরা নিম্নলিখিত পত্র পাঠালেন: \pmo আন্তিয়খ, সিরিয়া ও কিলিকিয়ার অইহুদি বিশ্বাসীদের প্রতি \pmo সব প্রেরিতশিষ্য, প্রাচীনগণ ও \pmo আমরা ভাইয়েরা তোমাদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি। \pm \v 24 “আমরা শুনলাম যে, আমাদের অনুমোদন ছাড়াই আমাদের মধ্য থেকে কয়েকজন, তাদের কথাবার্তার দ্বারা তোমাদের মনকে অস্থির ও বিক্ষুদ্ধ করে তুলেছে। \v 25 তাই আমরা সর্বসম্মতিক্রমে কয়েকজনকে মনোনীত করে আমাদের প্রিয় বন্ধু বার্ণবা ও পৌলের সঙ্গে তোমাদের কাছে পাঠাচ্ছি \v 26 যাঁরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামের জন্য তাঁদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েছেন। \v 27 অতএব, আমরা যা লিখছি, তা মুখে তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্য আমরা যিহূদা ও সীলকে পাঠাচ্ছি। \v 28 পবিত্র আত্মা ও আমাদের কাছে এ বিষয়ে বিহিত মনে হয়েছে যে নিম্নলিখিত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি ছাড়া আমরা আর কোনো বোঝা তোমাদের উপর চাপাতে চাই না। \v 29 তোমরা প্রতিমার কাছে উৎসর্গ করা খাবার, রক্ত, শ্বাসরোধ করে মারা প্রাণীর মাংস এবং অবৈধ যৌন-সংসর্গ থেকে দূরে থাকবে। এই সমস্ত বিষয় এড়িয়ে চললে তোমাদের মঙ্গল হবে। \pmc বিদায়।” \p \v 30 তখন তাঁদের বিদায় দেওয়া হল ও তাঁরা আন্তিয়খে উপস্থিত হলেন। তাঁরা সেখানে মণ্ডলীকে সমবেত করে সেই পত্র দিলেন। \v 31 তা পাঠ করে তাঁরা সেই উৎসাহজনক বার্তার জন্য আনন্দিত হল। \v 32 যিহূদা ও সীল, যাঁরা নিজেরাও ভাববাদী ছিলেন, বিশ্বাসীদের উৎসাহ দান ও শক্তি সঞ্চার করার জন্য অনেক কথা বললেন। \v 33 কিছুকাল সেখানে কাটানোর পর, বিশ্বাসীরা শান্তি কামনা করে আশীর্বাদ দিয়ে তাঁদের বিদায় দিলেন, যেন যাঁরা তাঁদের পাঠিয়েছিলেন তাঁদের কাছে ফেরত যান। \v 34 কিন্তু সীল সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।\f + \fr 15:34 \fr*\ft কয়েকটি পাণ্ডুলিপি 34 পদের এই কথাগুলি যুক্ত করেনি\ft*\f* \v 35 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খে থেকে গেলেন, যেখানে তাঁরা এবং অন্য আরও অনেকে প্রভুর বাক্য শিক্ষা দিলেন ও সুসমাচার প্রচার করলেন। \s1 পৌল ও বার্ণবার মতবিরোধ \p \v 36 কিছুদিন পর পৌল বার্ণবাকে বললেন, “যে সমস্ত নগরে আমরা প্রভুর বাক্য প্রচার করেছি, চলো সেখানে ফিরে গিয়ে সেই ভাইদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং দেখি, তারা কেমন আছে।” \v 37 বার্ণবা চাইলেন যোহনকে সঙ্গে নিতে, যাকে মার্ক বলেও ডাকা হত। \v 38 কিন্তু পৌল তাঁকে নেওয়া উপযুক্ত হবে বলে মনে করলেন না, কারণ তিনি পাম্ফুলিয়ায় তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করে চলে গিয়েছিল, তাদের কাজে সহায়তা করেনি। \v 39 এতে তাঁদের মধ্যে মতবিরোধ এমন তীব্র আকার ধারণ করল যে, তাঁরা পৃথকভাবে যাত্রা করলেন। বার্ণবা মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে সাইপ্রাসের পথে যাত্রা করলেন, \v 40 কিন্তু পৌল, সীলকে মনোনীত করে সেখানকার ভাইদের দ্বারা প্রভুর অনুগ্রহে সমর্পিত হয়ে রওনা হলেন। \v 41 সিরিয়া ও কিলিকিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি মণ্ডলীগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুললেন। \c 16 \s1 পৌল ও সীলের সঙ্গে তিমথির যোগদান \p \v 1 পৌল ডার্বিতে গেলেন ও পরে লুস্ত্রায় এলেন। সেখানে তিমথি নামে একজন শিষ্য বসবাস করতেন। তাঁর মা ছিলেন একজন বিশ্বাসী ইহুদি, কিন্তু পিতা ছিলেন গ্রিক। \v 2 লুস্ত্রা ও ইকনিয়ের ভাইরা তাঁর সম্পর্কে সুখ্যাতি করতেন। \v 3 পৌল চাইলেন যাত্রায় তাঁকেও সঙ্গে নিতে। তাই সেই অঞ্চলে বসবাসকারী ইহুদিদের জন্য তিনি তাঁকে সুন্নত করালেন, কারণ তারা সকলে জানত যে, তাঁর পিতা ছিলেন একজন গ্রিক। \v 4 এক নগর থেকে অন্য নগরে যাওয়ার সময়, তাঁরা জেরুশালেমের প্রেরিতশিষ্যবর্গ ও প্রাচীনদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি তাদের জানালেন, যেন তারা সেসব পালন করে। \v 5 এভাবে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসে বলীয়ান হতে ও প্রতিদিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকল। \s1 পৌলের ম্যাসিডোনিয়া যাত্রার আহ্বান \p \v 6 পবিত্র আত্মা তাঁদের এশিয়া প্রদেশে সুসমাচার প্রচার করতে বাধা দেওয়ায়, পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা ফরুগিয়া ও গালাতিয়া অঞ্চলের সর্বত্র পরিভ্রমণ করলেন। \v 7 মুশিয়া প্রদেশের সীমান্তে এসে তাঁরা বিথুনিয়ায় প্রবেশ করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু যীশুর আত্মা তাঁদের অনুমতি দিলেন না। \v 8 তাই তাঁরা মুশিয়াকে পাশ কাটিয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন। \v 9 রাত্রিবেলা পৌল এক দর্শন পেলেন, তিনি দেখলেন ম্যাসিডোনিয়ার একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে তাঁর কাছে অনুনয় করছেন, “আপনি ম্যাসিডোনিয়ায় এসে আমাদের সাহায্য করুন।” \v 10 পৌলের এই দর্শন পাওয়ার পর আমরা তখনই ম্যাসিডোনিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত হলাম। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে, তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার জন্য ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন। \s1 ফিলিপীতে লিডিয়ার মন পরিবর্তন \p \v 11 ত্রোয়া থেকে আমরা সরাসরি সামোথ্রেসের উদ্দেশে সমুদ্রপথে পাড়ি দিলাম। পরের দিন সেখান থেকে গেলাম নিয়াপলিতে। \v 12 সেখান থেকে আমরা যাত্রা করলাম ফিলিপীতে। ফিলিপী নগরটি ছিল একটি রোমীয় উপনিবেশ এবং ম্যাসিডোনিয়া প্রদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নগর। আমরা বেশ কিছুদিন সেখানে থাকলাম। \p \v 13 বিশ্রামদিনে আমরা নগরদ্বারের বাইরে নদীতীরে গেলাম। সেখানে প্রার্থনা করার কোনও উপযুক্ত স্থান পাওয়া যাবে বলে আশা করেছিলাম। আমরা সেখানে বসে পড়লাম ও সমবেত মহিলাদের সঙ্গে কথা বললাম। \v 14 যারা আমাদের কথা শুনছিলেন তাদের মধ্যে লিডিয়া নামে এক মহিলা ছিলেন। থুয়াতীরা নগরের বেগুনি কাপড়ের ব্যবসায়ী এই মহিলাটি ছিলেন ঈশ্বরের উপাসক। পৌলের বার্তায় মনোনিবেশ করার জন্য প্রভু তাঁর হৃদয় খুলে দিলেন। \v 15 যখন তিনি ও তাঁর পরিজনেরা বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করলেন, তিনি আমাদের তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানালেন। তিনি বললেন, “আপনারা যদি আমাকে প্রভুতে বিশ্বাসী বলে মনে করেন, তাহলে এসে আমার বাড়িতে থাকুন।” তিনি আমাদের বুঝিয়ে রাজি করালেন। \s1 কারাগারে পৌল ও সীল \p \v 16 একদিন যখন আমরা প্রার্থনা-স্থানে যাচ্ছিলাম, এক ক্রীতদাসীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হল। সে ভবিষ্যৎ বলতে পারে এমন আত্মার প্রভাবে ভবিষ্যতের কথা বলতে পারত। ভবিষ্যতের কথা বলে সে তার মনিবদের জন্য প্রচুর অর্থ উপার্জন করত। \v 17 সেই মেয়েটি পৌল ও আমাদের সকলকে অনুসরণ করতে লাগল। সে চিৎকার করে বলতে লাগল, “এই লোকেরা পরাৎপর\f + \fr 16:17 \fr*\ft অর্থাৎ, সর্বোচ্চ স্থানে বসবাসকারী।\ft*\f* ঈশ্বরের দাস, তোমাদের কাছে পরিত্রাণের উপায়ের কথা বলছেন।” \v 18 বহুদিন যাবৎ সে এরকম করতে থাকল। শেষে পৌল এত উত্যক্ত হয়ে উঠলেন যে, তিনি ফিরে সেই আত্মার উদ্দেশে বললেন, “আমি যীশু খ্রীষ্টের নামে তোমাকে আদেশ দিচ্ছি, ওর মধ্য থেকে বেরিয়ে এসো।” সেই মুহূর্তেই সেই আত্মা তাকে ছেড়ে চলে গেল। \p \v 19 সেই ক্রীতদাসীর মনিবেরা যখন বুঝতে পারল যে, তাদের অর্থ উপার্জনের আশা শেষ হয়েছে, তারা পৌল ও সীলকে ধরে টানতে টানতে বাজারে কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থিত করল। \v 20 তারা নগরের প্রশাসকদের সামনে তাঁদের নিয়ে এসে বলল, “এই ব্যক্তিরা ইহুদি। এরা আমাদের নগরে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করেছে। \v 21 এরা এমন সব রীতিনীতির কথা বলছে, যা আমাদের, রোমীয়দের পক্ষে গ্রহণ বা পালন করা ন্যায়সংগত নয়।” \p \v 22 জনসাধারণ পৌল ও সীলের বিরুদ্ধে আক্রমণে যোগ দিল। প্রশাসকেরা তাদের পোশাক খুলে তাদের চাবুক মারার আদেশ দিলেন। \v 23 চাবুক দিয়ে তাঁদের অনেক মারার পর কারাগারে বন্দি করা হল। কারারক্ষককে আদেশ দেওয়া হল যেন তাঁদের সতর্কভাবে পাহারা দেওয়া হয়। \v 24 এই ধরনের আদেশ পেয়ে, সে তাঁদের কারাগারের ভিতরের ঘরে নিয়ে গেল এবং কাঠের বেড়ির মধ্যে তাঁদের পা আটকে দিল। \p \v 25 প্রায় মাঝরাতে পৌল ও সীল প্রার্থনা এবং ঈশ্বরের উদ্দেশে স্তবগান করছিলেন। অন্য কারাবন্দিরা তা শুনছিল। \v 26 হঠাৎই সেখানে এমন এক ভয়ংকর ভূমিকম্প হল যে, কারাগারের ভিত পর্যন্ত কেঁপে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল এবং বন্দিদের শিকল খসে পড়ল। \v 27 কারারক্ষক জেগে উঠল। সে যখন কারাগারের দরজাগুলি খোলা দেখল, তখন সে তার তরোয়াল কোষ থেকে বের করে আত্মহত্যায় উদ্যত হল, কারণ সে ভেবেছিল যে বন্দিরা পালিয়ে গেছে। \v 28 কিন্তু পৌল চিৎকার করে বললেন, “তুমি নিজের ক্ষতি কোরো না! কারণ আমরা সবাই এখানেই আছি!” \p \v 29 কারারক্ষক আলো আনতে বলে দ্রুত ভিতরে প্রবেশ করল। সে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে লুটিয়ে পড়ল। \v 30 তারপর সে তাঁদের বাইরে এনে জিজ্ঞাসা করল, “মহাশয়েরা, পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে?” \p \v 31 তাঁরা উত্তর দিলেন, “প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করো, তাহলে তুমি ও তোমার পরিবার পরিত্রাণ পাবে।” \v 32 তারপর তাঁরা তার কাছে ও তার বাড়ির অন্য সকলের কাছে প্রভুর বাক্য প্রচার করলেন। \v 33 রাত্রির সেই প্রহরেই, কারারক্ষক তাঁদের নিয়ে গিয়ে তাঁদের ক্ষত ধুয়ে দিল। তারপর দেরি না করে সে ও তার সমস্ত পরিবার বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করল। \v 34 সেই কারারক্ষক তার বাড়ির ভিতরে তাঁদের নিয়ে গেল ও তাদের সামনে খাবার পরিবেশন করল। সে ও তার পরিবারের সকলে আনন্দে পরিপূর্ণ হল, কারণ তারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিল। \p \v 35 দিনের আলো দেখা দিলে, প্রশাসকেরা কারারক্ষকের কাছে তাঁদের কর্মচারীদের পাঠিয়ে দিয়ে আদেশ দিলেন, “ওই লোকদের মুক্ত করে দাও।” \v 36 কারারক্ষক পৌলকে বললেন, “প্রশাসকেরা আপনাকে ও সীলকে মুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। এখন আপনারা চলে যেতে পারেন। শান্তিতে প্রস্থান করুন।” \p \v 37 কিন্তু পৌল সেই কর্মচারীদের বললেন, “আমরা রোমীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা বিনা বিচারে সবার সামনে আমাদের মেরেছে ও কারাগারে বন্দি করেছে। এখন তাঁরা গোপনে আমাদের থেকে অব্যাহতি পেতে চাইছেন? না, তাঁরা নিজেরা এখানে এসে আমাদের বের করে নিয়ে যান।” \p \v 38 কর্মচারীরা একথা গিয়ে প্রশাসকদের জানাল। তাঁরা যখন শুনলেন যে, পৌল ও সীল রোমীয় নাগরিক, তাঁরা আতঙ্কিত হলেন। \v 39 তাঁরা এসে তাঁদের শান্ত করলেন এবং কারাগার থেকে সঙ্গে করে তাঁদের বের করে এনে অনুরোধ করলেন, তাঁরা যেন নগর ছেড়ে চলে যান। \v 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বের হয়ে আসার পর, তাঁরা লিডিয়ার বাড়ি চলে গেলেন। সেখানে তাঁরা বিশ্বাসী ভাইদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের উৎসাহিত করলেন। তারপর তারা সেখান থেকে চলে গেলেন। \c 17 \s1 থিষলনিকাতে প্রচার \p \v 1 তাঁরা পরে অ্যাম্ফিপলি ও অ্যাপল্লোনিয়ার মধ্য দিয়ে যাত্রা করে থিষলনিকায় পৌঁছালেন। সেখানে একটি ইহুদি সমাজভবন ছিল। \v 2 পৌল তাঁর প্রথা অনুসারে সমাজভবনে গেলেন এবং তিনটি বিশ্রামদিনে যুক্তিসহ তাদের কাছে শাস্ত্রব্যাখ্যা করলেন। \v 3 তিনি তাদের কাছে প্রমাণ করে দেখালেন যে, খ্রীষ্টের কষ্টভোগ করা ও মৃতলোক থেকে উত্থাপিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল। তিনি বললেন, “এই যে যীশুর কথা আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি, তিনিই সেই মশীহ।” \v 4 এতে কয়েকজন ইহুদি বিশ্বাস করে পৌল ও সীলের সঙ্গে যোগ দিল। সেই সঙ্গে বহুসংখ্যক ঈশ্বরভয়শীল গ্রিক ও বেশ কিছু বিশিষ্ট মহিলাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন। \p \v 5 কিন্তু ইহুদিরা ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল। তাই তাঁরা বাজার-চত্বর থেকে কিছু খারাপ চরিত্রের লোককে একত্র করে একটি দল গঠন করল এবং তারা নগরে দাঙ্গাহাঙ্গামা শুরু করে দিল। তারা পৌল ও সীলের সন্ধানে যাসোনের বাড়ির দিকে ছুটে গেল, যেন তাদের সেই জনসাধারণের সামনে নিয়ে আসা যায়। \v 6 কিন্তু তারা যখন তাঁদের খুঁজে পেল না, তারা যাসোন ও অন্য কয়েকজন বিশ্বাসীকে\f + \fr 17:6 \fr*\ft গ্রিক: “ভাইকে”\ft*\f* নগরের প্রশাসকদের কাছে টেনে নিয়ে গেল। তারা চিৎকার করে বলল, “এই লোকেরা সমস্ত জগৎ ওলট-পালট করে দিয়ে এখন এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে, \v 7 আর যাসোন তার বাড়িতে এদের আতিথ্য করেছে। এরা সবাই কৈসরের শাসন অস্বীকার করে, বলে যে যীশু নামে আর একজন রাজা আছেন।” \v 8 তারা যখন একথা শুনল, সেই জনসাধারণ ও নগর-প্রশাসকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠল। \v 9 তখন যাসোন ও অন্যান্যদের কাছে জামিন আদায় করে, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হল। \s1 বিরয়াতে প্রচার \p \v 10 রাত্রি নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বাসী ভাইয়েরা পৌল ও সীলকে বিরয়াতে পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে পৌঁছে তাঁরা ইহুদিদের সমাজভবনে গেলেন। \v 11 বিরয়াবাসীরা থিষলনিকার ইহুদিদের চেয়ে উদার চরিত্রের মানুষ ছিল, কারণ তারা ভীষণ আগ্রহের সঙ্গে সুসমাচার গ্রহণ করেছিল। পৌল যা বলছিলেন, তা প্রকৃতই সত্য কি না, তা জানবার জন্য তারা প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করে দেখত। \v 12 অতএব, অনেক ইহুদি বিশ্বাস করল, বেশ কিছু বিশিষ্ট গ্রিক মহিলা ও অনেক গ্রিক পুরুষও বিশ্বাস করলেন। \p \v 13 থিষলনিকার ইহুদিরা যখন জানতে পারল যে, পৌল বিরয়াতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করছেন, তারা সেখানেও গেল। তারা গিয়ে সবাইকে বিক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত করে তুলল। \v 14 বিশ্বাসী ভাইয়েরা তৎক্ষণাৎ পৌলকে সমুদ্র উপকূলের দিকে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু সীল ও তিমথি বিরয়াতে থেকে গেলেন। \v 15 পৌলের সঙ্গী যারা ছিল, তারা তাঁকে এথেন্সে নিয়ে এল এবং সীল ও তিমথিকে যত শীঘ্র সম্ভব পৌলের সঙ্গে মিলিত হওয়ার নির্দেশ নিয়ে ফিরে গেল। \s1 এথেন্সে প্রচার-অভিযান \p \v 16 পৌল যখন এথেন্সে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন নগরটি প্রতিমায় পরিপূর্ণ দেখে অত্যন্ত মর্মাহত হলেন। \v 17 তাই তিনি সমাজভবনে ইহুদিদের ও ঈশ্বরভয়শীল গ্রিকদের সঙ্গে এবং বাজারে যাদের সঙ্গে তাঁর দিনের পর দিন সাক্ষাৎ হত, তাদের কাছে এ নিয়ে আলোচনা করতেন। \v 18 একদল এপিকুরীয়\f + \fr 17:18 \fr*\ft ভোগবাদ সমর্থনকারী। এপিকুরিয়স নামে একজন গ্রিক দার্শনিক শিক্ষা দিতেন যে, সুখভোগই হল সব থেকে বেশি মঙ্গলজনক।\ft*\f* ও স্তোয়িকীয়\f + \fr 17:18 \fr*\ft সংযমবাদ সমর্থনকারী।\ft*\f* দার্শনিক তাঁর সঙ্গে তর্কবিতর্কে করতে লাগল। তাদের মধ্যে কয়েকজন জিজ্ঞাসা করল, “এই বাচাল লোকটি কী বলতে চাইছে?” অন্যেরা মন্তব্য করল, “একে বিদেশি দেবতাদের প্রচারক বলে মনে হচ্ছে।” তাদের একথা বলার কারণ হল, পৌল যীশুর সুসমাচার ও পুনরুত্থানের কথা প্রচার করছিলেন। \v 19 তখন তারা তাঁকে ধরে আরেয়পাগের\f + \fr 17:19 \fr*\fq আরেয়পাগ\fq*\ft —এটি এথেন্সের একটি পাহাড়ের নাম। এখানে আগে নিয়মিতরূপে নগর-পরিষদের সভা বসত। পাহাড়টির কারণেই নগর-পরিষদের নাম হয়ে গিয়েছিল আরেয়পাগ।\ft*\f* সভায় নিয়ে গেল। সেখানে তারা তাঁকে বলল, “আমরা কি জানতে পারি, আপনি যে নতুন শিক্ষা প্রচার করছেন, সেটি কী? \v 20 আপনি কতগুলি অদ্ভুত ধারণার কথা আমাদের কানে দিচ্ছেন, আমরা সেগুলির অর্থ জানতে চাই।” \v 21 (এথেন্সের অধিবাসীরা ও সেখানকার প্রবাসী বিদেশিরা কেবলমাত্র নতুন সব চিন্তাধারা সম্পর্কে আলোচনা করা বা সেসব শোনা ছাড়া আর কোনো কিছুতে কালক্ষেপ করত না)। \p \v 22 পৌল তখন আরেয়পাগের সভায় উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “এথেন্সের জনগণ! আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমরা সর্বতোভাবে অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। \v 23 কারণ আমি যখন চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম, তোমাদের আরাধনা করার বস্তু সতর্কভাবে দেখছিলাম। তখন আমি এমন একটি বেদি দেখতে পেলাম, যার উপরে লেখা আছে: \pc এক অজ্ঞাত দেবতার উদ্দেশে। \m এখন, তোমরা যাকে অজ্ঞাতরূপে আরাধনা করো, তাঁরই কথা আমি তোমাদের কাছে বলতে চাই। \p \v 24 “ঈশ্বর, যিনি এই জগৎ ও তার অন্তর্গত সমস্ত বস্তু রচনা করেছেন, তিনিই স্বর্গ ও মর্ত্যের প্রভু। তিনি হাত দিয়ে তৈরি দেবালয়ে বাস করেন না। \v 25 তাঁর কোনো কিছুর প্রয়োজন আছে বলে মানুষের হাতে তাঁর সেবা গ্রহণের প্রয়োজন হয় না। কারণ তিনি স্বয়ং সমস্ত মানুষকে জীবন ও শ্বাস এবং সবকিছুই দান করেন। \v 26 তিনি একজন ব্যক্তি থেকে সব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তারা সমস্ত পৃথিবীতে বসবাস করে। তিনি আগেই তাদের নির্দিষ্ট কাল ও বসবাসের জন্য স্থান স্থির করে রেখেছিলেন। \v 27 ঈশ্বর এ কাজ করেছেন, যেন মানুষ তাঁর অন্বেষণ করে এবং সম্ভব হলে অনুসন্ধান করে তাঁর সন্ধান পায়, যদিও তিনি আমাদের কারও কাছ থেকে দূরে নেই। \v 28 কারণ তাঁর মধ্যেই আছে আমাদের প্রাণ, আমাদের জীবনাচরণ ও আমাদের অস্তিত্ব। যেমন তোমাদেরই কয়েকজন কবি বলেছেন, ‘আমরা তাঁর বংশ।’ \p \v 29 “অতএব, আমরা যখন ঈশ্বরের বংশ, তখন আমাদের এরকম চিন্তা করা উচিত নয় যে ঈশ্বর মানুষের কলাকুশলতা ও কল্পনাপ্রসূত সোনা, রুপো বা পাথরের তৈরি করা কোনো প্রতিমূর্তি। \v 30 অতীতকালে ঈশ্বর এই প্রকার অজ্ঞতাকে উপেক্ষা করেছেন, কিন্তু এখন তিনি সর্বস্থানের সব মানুষকে মন পরিবর্তনের আদেশ দিচ্ছেন। \v 31 কারণ তিনি একটি দিন নির্ধারিত করেছেন, যখন তিনি তাঁর নিযুক্ত এক ব্যক্তির দ্বারা ন্যায়ে জগতের বিচার করবেন। মৃত্যু থেকে তাঁকে উত্থাপিত করে সব মানুষের কাছে তিনি তার প্রমাণ দিয়েছেন।” \p \v 32 যখন তারা মৃতদের পুনরুত্থানের কথা শুনল, তাদের মধ্যে কয়েকজন উপহাসসূচক মন্তব্য করল। কিন্তু অন্যেরা বলল, “আমরা আপনার কাছ থেকে এ বিষয়ে আবার শুনতে চাই।” \v 33 একথা শুনে পৌল সভা ত্যাগ করে চলে গেলেন। \v 34 অল্প কয়েকজন ব্যক্তি পৌলের অনুসারী হলেন ও বিশ্বাস করলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন আরেয়পাগের সদস্য দিয়নুষিয়, দামারি নামে এক মহিলা এবং আরও অনেক ব্যক্তি। \c 18 \s1 করিন্থে প্রচার-অভিযান \p \v 1 এরপরে পৌল এথেন্স ত্যাগ করে করিন্থে গেলেন। \v 2 সেখানে আক্বিলা নামে এক ইহুদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল। তিনি পন্তের অধিবাসী। ক্লডিয়াস সব ইহুদিকে রোম পরিত্যাগ করার আদেশ জারি করায়, তিনি তাঁর স্ত্রী প্রিষ্কিল্লাকে নিয়ে সম্প্রতি ইতালি থেকে এসেছিলেন। পৌল তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন। \v 3 তিনি যেহেতু তাঁদের মতো তাঁবু-নির্মাতা ছিলেন, তিনি তাঁদেরই সঙ্গে থেকে কাজ করতে লাগলেন। \v 4 প্রতি বিশ্রামবারে তিনি সমাজভবনে গিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন, ইহুদি ও গ্রিকদের বিশ্বাসে নিয়ে আসার চেষ্টা করতেন। \p \v 5 যখন সীল ও তিমথি ম্যাসিডোনিয়া থেকে উপস্থিত হলেন, পৌল সস্পূর্ণরূপে নিজেকে প্রচারকাজে উৎসর্গ করলেন। তিনি ইহুদিদের কাছে সাক্ষ্যদান করতে লাগলেন যে, যীশুই ছিলেন মশীহ। \v 6 কিন্তু ইহুদিরা পৌলের বিরোধিতা ও কটুভাষায় তাঁর নিন্দা করায়, তিনি প্রতিবাদস্বরূপ তাঁর পোশাক ঝেড়ে তাদের বললেন, “তোমাদের রক্তের দায় তোমাদেরই মাথায় থাকুক। আমি আমার দায়িত্ব থেকে মুক্ত। এখন থেকে আমি অইহুদিদের কাছে যাব।” \p \v 7 পৌল তখন সমাজভবন ত্যাগ করে পাশেই তিতিয়-যুষ্টের বাড়িতে গেলেন। তিনি ছিলেন ঈশ্বরের একজন উপাসক। \v 8 সমাজভবনের অধ্যক্ষ ক্রীষ্প ও তাঁর সমস্ত পরিজন প্রভুকে বিশ্বাস করলেন। করিন্থীয়দের মধ্যেও বহু ব্যক্তি তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করল ও বাপ্তাইজিত হল। \p \v 9 এক রাত্রে, প্রভু পৌলকে এক দর্শনের মাধ্যমে বললেন, “তুমি ভয় পেয়ো না, প্রচার করতে থাকো, নীরব থেকো না। \v 10 কারণ আমি তোমার সঙ্গে আছি, কেউই তোমাকে আক্রমণ বা তোমার ক্ষতি করবে না, কারণ এই নগরে আমার অনেক প্রজা আছে।” \v 11 তাই পৌল সেখানে দেড় বছর থেকে গেলেন এবং তাদের ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দিলেন। \p \v 12 গাল্লিয়ো যখন আখায়ার প্রদেশপাল ছিলেন, ইহুদিরা একজোট হয়ে পৌলকে আক্রমণ করল এবং তাঁকে বিচারালয়ে নিয়ে গেল। \v 13 তারা অভিযোগ করল, “এই ব্যক্তি বিধানশাস্ত্রের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের আরাধনা করার জন্য জনসাধারণকে প্ররোচিত করছে।” \p \v 14 পৌল কথা বলতে উদ্যত হলে, গাল্লিয়ো ইহুদিদের বললেন, “তোমরা ইহুদিরা, যদি কিছু অপকর্ম বা গুরুতর অপরাধ সম্পর্কে অভিযোগ করতে, তাহলে তোমাদের কথা শোনা আমার পক্ষে যুক্তিযুক্ত হত। \v 15 কিন্তু যেহেতু এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কতগুলি শব্দ, নাম ও তোমাদের বিধানসম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্ন, তোমরা নিজেরাই বিষয়টির নিষ্পত্তি করে নাও, আমি এসব বিষয়ের বিচারক হতে চাই না।” \v 16 তাই তিনি বিচারালয় থেকে তাদের বের করে দিলেন। \v 17 তখন তারা সকলে সমাজভবনের অধ্যক্ষ সোস্থিনিকে আক্রমণ করে বিচারালয়ের সামনেই তাঁকে মারতে লাগল। কিন্তু গাল্লিয়ো এ বিষয়ে কোনোরকম ভ্রূক্ষেপ করলেন না। \s1 প্রিষ্কিল্লা, আক্বিলা ও আপল্লো \p \v 18 পৌল আরও কিছু সময় করিন্থে থাকলেন। তারপর তিনি ভাইবোনেদের\f + \fr 18:18 \fr*\ft গ্রিক: ভাইদের। 27 পদেও।\ft*\f* বিদায় জানিয়ে জাহাজে করে সিরিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করলেন। সহযাত্রীরূপে তিনি নিলেন প্রিষ্কিল্লা ও আক্বিলাকে। তিনি মানত করেছিলেন বলে যাত্রার আগে কিংক্রিয়া নগরে তাঁর মাথা ন্যাড়া করলেন। \v 19 তাঁরা ইফিষে উপস্থিত হলেন। সেখানে পৌল প্রিষ্কিল্লা ও আক্কিলাকে রেখে দিলেন, কিন্তু তিনি নিজে সমাজভবনে গিয়ে ইহুদিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে লাগলেন। \v 20 তারা যখন তাঁকে আরও কিছু সময় তাদের সঙ্গে কাটাতে বললেন, তিনি রাজি হলেন না। \v 21 কিন্তু বিদায় নেওয়ার সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন, “ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি আবার ফিরে আসব।” তারপর তিনি ইফিষ থেকে সমুদ্রপথে যাত্রা করলেন। \v 22 যখন তিনি কৈসরিয়ায় পৌঁছালেন, তিনি জেরুশালেম গেলেন ও মণ্ডলীকে শুভেচ্ছা জানালেন ও সেখান থেকে আন্তিয়খে চলে গেলেন। \s1 পৌলের তৃতীয় সুসমাচার প্রচার-অভিযান \p \v 23 আন্তিয়খে কিছুকাল থাকার পর, পৌল সেখান থেকে পুনরায় যাত্রা শুরু করলেন। সমস্ত গালাতিয়া ও ফরুগিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে তিনি শিষ্যদের সুদৃঢ়\f + \fr 18:23 \fr*\ft বিশ্বাসে\ft*\f* করতে লাগলেন। \s1 আপল্লোর বিবরণ \p \v 24 ইতিমধ্যে আপল্লো নামে এক ইহুদি ইফিষে এসে উপস্থিত হলেন। তিনি ছিলেন আলেকজান্দ্রিয়ার অধিবাসী। তিনি শিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন, শাস্ত্র সম্পর্কে তাঁর পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান ছিল। \v 25 তাঁকে প্রভুর পথ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তিনি আত্মার উদ্দীপনায়\f + \fr 18:25 \fr*\ft বা, মহা আগ্রহভরে।\ft*\f* কথা বলতেন এবং যীশুর বিষয়ে নিখুঁতরূপে শিক্ষা দিতেন, যদিও তিনি কেবলমাত্র যোহনের বাপ্তিষ্মের কথা জানতেন। \v 26 তিনি সমাজভবনে সাহসের সঙ্গে প্রচার করতে লাগলেন। প্রিষ্কিল্লা ও আক্বিলা তাঁর প্রচার শুনে তাঁদের বাড়িতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানালেন। তাঁরা ঈশ্বরের পথের বিষয়ে তাঁর কাছে আরও সঠিকরূপে ব্যাখ্যা করলেন। \p \v 27 আপল্লো যখন আখায়ায় যেতে চাইলেন, বিশ্বাসী ভাইয়েরা তাঁকে উৎসাহিত করলেন এবং তাঁকে স্বাগত জানানোর উদ্দেশে সেখানকার শিষ্যদের পত্র লিখলেন। যখন তিনি সেখানে পৌঁছালেন তিনি তাদের, যারা অনুগ্রহ দ্বারা বিশ্বাস করেছিল, অনেক সাহায্য করলেন। \v 28 প্রকাশ্য বিতর্কে তিনি দৃঢ়ভাবে ইহুদিদের যুক্তি খণ্ডন করলেন, শাস্ত্র থেকে প্রমাণ দিতে লাগলেন যে, যীশুই ছিলেন সেই মশীহ। \c 19 \s1 ইফিষে পৌল \p \v 1 আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন, পৌল তখন দেশের ভিতরের পথ দিয়ে ইফিষে পৌঁছালেন। সেখানে তিনি কয়েকজন শিষ্যের সন্ধান পেলেন। \v 2 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা যখন বিশ্বাস করেছিলে, তখন কি পবিত্র আত্মা লাভ করেছিলে?” \p তারা উত্তর দিল, “না, এমনকি কোনো পবিত্র আত্মা যে আছেন, সেকথা, আমরা শুনিনি।” \p \v 3 তখন পৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে তোমরা কোন বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করেছিলে?” \p তারা উত্তর দিল, “যোহনের বাপ্তিষ্ম।” \p \v 4 পৌল বললেন, “যোহনের বাপ্তিষ্ম ছিল মন পরিবর্তনের বাপ্তিষ্ম। তিনি লোকদের বলেছিলেন, যিনি তাঁর পরে আসছেন, সেই যীশুর উপরে তারা যেন বিশ্বাস করে।” \v 5 একথা শুনে তারা প্রভু যীশুর নামে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করল। \v 6 পৌল যখন তাদের উপরে হাত রাখলেন, পবিত্র আত্মা তাদের উপরে নেমে এলেন। তারা ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা ও ভাববাণী বলতে লাগল। \v 7 সেখানে মোট বারোজন পুরুষ ছিল। \p \v 8 পরে পৌল সমাজভবনে প্রবেশ করে সেখানে তিন মাস যাবৎ সাহসের সঙ্গে প্রচার করলেন। তিনি যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে তাদের বিশ্বাস করতে অনুপ্রেরণা দিলেন। \v 9 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন জেদি মনোভাবাপন্ন হল। তারা বিশ্বাস করতে চাইল না এবং সেই পথ সম্পর্কে প্রকাশ্যে নিন্দা করতে লাগল। তাই পৌল তাদের ত্যাগ করে চলে গেলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে শিষ্যদের নিয়ে গেলেন এবং তুরান্নের বক্তৃতা দেওয়ার স্থানে প্রতিদিন আলোচনা করতে লাগলেন। \v 10 এভাবে দুই বছর অতিক্রান্ত হল। ফলে এশিয়া প্রদেশে বসবাসকারী ইহুদি ও গ্রিক সবাই প্রভুর বাক্য শুনতে পেল। \p \v 11 ঈশ্বর পৌলের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সব অলৌকিক কাজ সাধন করতেন। \v 12 এমনকি, তাঁর স্পর্শ করা রুমাল ও পোশাক অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছে নিয়ে গেলে তারা সুস্থ হত এবং মন্দ-আত্মা তাদের ছেড়ে যেত। \p \v 13 কয়েকজন ইহুদি ওঝা, যারা এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে মন্দ-আত্মাদের তাড়ানোর কাজ করত, তারা মন্দ-আত্মাগ্রস্তদের উপরে প্রভু যীশুর নাম প্রয়োগ করতে চেষ্টা করল। তারা বলত, “পৌল যাঁকে প্রচার করেন, সেই যীশুর নামে আমরা তোমাদের বেরিয়ে আসার জন্য আদেশ করছি।” \v 14 স্কিবা নামে এক ইহুদি প্রধান যাজকের সাত ছেলে এই কাজ করে যাচ্ছিল। \v 15 তাতে সেই মন্দ-আত্মা তাদের উত্তর দিল, “আমি যীশুকে জানি, পৌলের বিষয়েও জানি, কিন্তু তোমরা কারা?” \v 16 তখন যে ব্যক্তির মধ্যে মন্দ-আত্মা ছিল, সে তাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের সবাইকে পর্যুদস্ত করে তুলল। সে তাদের এমন মার দিল যে, তারা পোশাক ফেলে রক্তাক্ত ও নগ্ন দেহে সেই বাড়ি থেকে ছুটে পালিয়ে গেল। \p \v 17 ইফিষে বসবাসকারী ইহুদি ও গ্রিকেরা একথা জানতে পেরে সবাই ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে পড়ল এবং প্রভু যীশুর নাম মহিমান্বিত হয়ে উঠল। \v 18 যারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের অনেকেই তখন এসে প্রকাশ্যে তাদের সব অপকর্মের কথা স্বীকার করল। \v 19 যারা জাদুবিদ্যার অনুশীলন করছিল, তাদের মধ্যে অনেকে তাদের পুঁথিপত্র নিয়ে এসে একত্র করে সেগুলি প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে দিল। পুঁথিগুলির মূল্য নির্ধারণ করে তারা দেখল, সেগুলির মোট মূল্য পঞ্চাশ হাজার দ্রাকমা\f + \fr 19:19 \fr*\ft রুপোর মুদ্রাবিশেষ। এক দ্রাকমা সেই সময়ের একদিনের মজুরির সমান ছিল।\ft*\f*। \v 20 এইভাবে প্রভুর বাক্য ব্যাপক আকারে বিস্তার লাভ করল এবং পরাক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকল। \s1 ভবিষ্যতে যাত্রার পরিকল্পনা \p \v 21 এই সমস্ত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পৌল ম্যাসিডোনিয়া ও আখায়া পরিক্রমা করে জেরুশালেম যাবেন বলে স্থির করলেন। তিনি বললেন, “সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর আমি অবশ্যই রোম-ও পরিদর্শন করতে যাব।” \v 22 তিনি তাঁর দুই সাহায্যকারী, তিমথি ও ইরাস্তকে ম্যাসিডোনিয়ায় পাঠিয়ে দিলেন এবং স্বয়ং এশিয়া প্রদেশে আরও কিছুকাল থেকে গেলেন। \s1 ইফিষে রুপোর কারিগরদের বিক্ষোভ \p \v 23 প্রায় সেই সময়ে, সেই পথের বিষয়ে এক মহা গোলযোগ দেখা দিল। \v 24 দিমিত্রীয় নামে একজন রুপোর কারিগর, যে আর্তেমিসের\f + \fr 19:24 \fr*\ft অথবা, ডায়ানার\ft*\f* মন্দিরের মতো রুপোর ছোটো ছোটো মন্দির নির্মাণ করত ও শিল্পীদের প্রচুর কাজের জোগান দিত, \v 25 সে তার সহকর্মীদের ও একই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য শ্রমিকদের ডেকে একত্র করল ও বলল, “জনগণ, আপনারা জানেন, এই ব্যবসা থেকে আমরা ভালোরকম অর্থ উপার্জন করি। \v 26 আর আপনারা দেখছেন ও শুনতে পাচ্ছেন, এই পৌল কেমনভাবে লোকদের প্রভাবিত করছে এবং এখানে ইফিষের, বস্তুত সমগ্র এশিয়া প্রদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। সে বলে যে, মানুষের হাতে তৈরি দেবতারা আদৌ কোনো দেবতা নয়। \v 27 এর ফলে এই বিপদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, এতে কেবলমাত্র আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট হবে তা নয়, মহাদেবী আর্তেমিসের মন্দিরেরও অখ্যাতি হবে এবং যিনি সমগ্র এশিয়া প্রদেশে, এমনকি সারা পৃথিবীতে পূজিত হন, তারও অখ্যাতি হবে এবং তিনি তার মহিমা হারাবেন।” \p \v 28 একথা শুনে তারা ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠল ও চিৎকার করতে লাগল, “ইফিষীয়দের আর্তেমিস-ই মহাদেবী!” \v 29 এর পরেই সমস্ত নগরে হট্টগোল ছড়িয়ে পড়ল। জনসাধারণ ম্যাসিডোনিয়া থেকে আগত পৌলের দুই ভ্রমণের সঙ্গী গায়ো ও আরিষ্টার্খকে ধরে একযোগে রঙ্গমঞ্চে নিয়ে গেল। \v 30 পৌল জনসাধারণের সম্মুখীন হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শিষ্যেরা তাঁকে যেতে দিলেন না। \v 31 এমনকি, পৌলের বন্ধুস্থানীয় কয়েকজন প্রাদেশিক কর্মকর্তা তাঁর কাছে বার্তা পাঠিয়ে অনুনয় করলেন, রঙ্গমঞ্চে গিয়ে তিনি যেন বিপদের ঝুঁকি না নেন। \p \v 32 তখন সভার মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিল। কিছু লোক এক বিষয়ে, আবার কিছু লোক অন্য বিষয়ে চিৎকার করছিল। এমনকি, অধিকাংশ লোকই জানত না, কেন তারা সেখানে সমবেত হয়েছে। \v 33 ইহুদিরা আলেকজান্ডারকে সামনে এগিয়ে দিল। জনসাধারণের একাংশ চিৎকার করে তাকে নির্দেশ দিতে লাগল। এতে সে সকলের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হাত নেড়ে নীরব হওয়ার জন্য ইঙ্গিত করল। \v 34 কিন্তু যখন তারা তাকে ইহুদি বলে জানতে পারল, তারা প্রায় দুঘণ্টা ধরে একস্বরে চিৎকার করে গেল, “ইফিষীয়দের আর্তেমিস-ই মহাদেবী!” \p \v 35 নগরের ভারপ্রাপ্ত কর্মচারী সবাইকে শান্ত করে বললেন, “ইফিষের জনগণ, সমস্ত পৃথিবীর মানুষ কি জানে না যে, এই ইফিষ নগরই মহাদেবী আর্তেমিসের মন্দিরের ও তাঁর প্রতিমার রক্ষক, যা আকাশ থেকে পতিত হয়েছিল? \v 36 সেই কারণে, যেহেতু এই বিষয়টি কেউ অস্বীকার করতে পারে না, তোমাদের শান্ত থাকাই উচিত, হঠকারিতার বশে কিছু করা উচিত নয়। \v 37 তোমরা এই লোকগুলিকে এখানে নিয়ে এসেছ, এরা তো মন্দির লুট করেনি, আমাদের দেবীরও অবমাননা করেনি। \v 38 তাহলে, যদি দিমিত্রীয় ও তার সহযোগী শিল্পীদের কোনো অভিযোগ থাকে, আদালতের দরজা খোলা আছে, সেখানে প্রদেশপালেরাও আছেন। তারা সেখানে অভিযোগ দাখিল করতে পারে। \v 39 এছাড়া, আরও যদি অন্য কোনো বিষয় তোমাদের উত্থাপন করার থাকে, তাহলে বৈধ সভায় অবশ্যই তা নিষ্পত্তি করা হবে। \v 40 আজকের ঘটনার জন্য দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে আমরা অভিযুক্ত হওয়ার বিপদে পড়তে পারি। সেক্ষেত্রে, এই বিক্ষোভের পক্ষে আমরা কোনও যুক্তি দেখাতে পারব না।” \v 41 এই কথা বলে তিনি সভা ভেঙে দিলেন। \c 20 \s1 ম্যাসিডোনিয়া ও গ্রীসে যাত্রা \p \v 1 হট্টগোল সমাপ্ত হলে পৌল শিষ্যদের ডেকে পাঠালেন। তাদের উৎসাহিত করে তিনি বিদায়সম্ভাষণ জানালেন ও ম্যাসিডোনিয়ার পথে যাত্রা শুরু করলেন। \v 2 সেই অঞ্চল অতিক্রম করার সময় তিনি লোকদের উৎসাহ দেওয়ার অনেক কথাবার্তা বলে শেষে গ্রীসে উপস্থিত হলেন। \v 3 সেখানে তিনি তিন মাস থাকলেন। তিনি জলপথে সিরিয়া যাওয়ার আগে ইহুদিরা তাঁর বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র রচনা করায়, তিনি ম্যাসিডোনিয়ার মধ্য দিয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। \v 4 তাঁর সহযাত্রী হলেন বিরয়া থেকে পুর্হের ছেলে সোপাত্র, থিষলনিকা নিবাসী আরিষ্টার্খ ও সিকুন্দ, ডার্বি নগর থেকে গায়ো, সেই সঙ্গে তিমথি, এশিয়া প্রদেশের তুখিক ও ত্রফিম। \v 5 এরা আমাদের আগেই যাত্রা করে ত্রোয়াতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করলেন। \v 6 কিন্তু খামিরশূন্য রুটির পর্বের পর আমরা ফিলিপী থেকে জলপথে যাত্রা করলাম এবং পাঁচদিন পরে অন্যান্যদের সঙ্গে ত্রোয়াতে মিলিত হলাম। সেখানে আমরা সাত দিন থাকলাম। \s1 ত্রোয়াতে উতুখের পুনর্জীবন লাভ \p \v 7 সপ্তাহের প্রথম দিনে আমরা রুটি-ভাঙার জন্য একত্র হলাম। পৌল লোকদের সঙ্গে কথা বললেন। পরদিন তিনি সেই স্থান ত্যাগ করার মনস্থ করেছিলেন বলে মাঝরাত পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কথা বললেন। \v 8 উপরতলার যে ঘরে আমরা সমবেত হয়েছিলাম, সেখানে অনেক প্রদীপ জ্বলছিল। \v 9 উতুখ নামে একজন যুবক জানালায় বসেছিল। পৌল যখন ক্রমেই কথা বলে গেলেন, সে গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে পড়ল। সে যখন গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল, সে তিনতলা থেকে নিচে, মাটিতে পড়ে গেল। লোকেরা তাকে তুলতে গিয়ে দেখল যে সে মারা গেছে। \v 10 পৌল নিচে গেলেন, নিচু হয়ে তিনি তাঁর দু-হাত দিয়ে যুবকটিকে জড়িয়ে ধরলেন। তিনি বললেন, “তোমরা আতঙ্কিত হোয়ো না, এর মধ্যে প্রাণ আছে!” \v 11 পরে তিনি আবার উপরতলায় গিয়ে রুটি ভেঙে ভোজন করলেন। তারপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত কথা বলে তিনি বিদায় নিলেন। \v 12 লোকেরা সেই যুবককে জীবিত অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে গেল ও দুশ্চিন্তামুক্ত হল। \s1 ইফিষের প্রাচীনদের প্রতি বিদায়সম্ভাষণ \p \v 13 আমরা আগেই গিয়ে জাহাজে উঠলাম এবং আসোস অভিমুখে যাত্রা করলাম। কথা ছিল যা সেখানে আমরা পৌলকে জাহাজে তুলে নেব। তিনি এই ব্যবস্থা করেছিলেন কারণ তিনি সেখানে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। \v 14 তিনি যখন আসোসে আমাদের সঙ্গে মিলিত হলেন, আমরা তাঁকে জাহাজে তুলে নিলাম ও মিতুলিনীতে গেলাম। \v 15 পরের দিন আমরা সেখান থেকে জাহাজে যাত্রা করে খী-দ্বীপের তীরে পৌঁছালাম। তার পরদিন আমরা সমুদ্র অতিক্রম করে সামো দ্বীপে এবং পরের দিন মিলেতা পৌঁছালাম। \v 16 পৌল মনস্থির করেছিলেন জলপথে ইফিষ পাশ কাটিয়ে যাবেন, যেন এশিয়া প্রদেশে সময় নষ্ট না হয়। কারণ তিনি জেরুশালেমে ফিরে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন, যেন সম্ভব হলে পঞ্চাশত্তমীর দিনে জেরুশালেমে উপস্থিত থাকতে পারেন। \p \v 17 পৌল মিলেতা থেকে ইফিষে লোক পাঠিয়ে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডেকে পাঠালেন। \v 18 তাঁরা এসে পৌঁছালে তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা জানো, এশিয়া প্রদেশে আমি উপস্থিত হওয়ার পর প্রথম দিন থেকেই তোমাদের মধ্যে থাকাকালীন আমি কীভাবে জীবনযাপন করেছি। \v 19 আমি অত্যন্ত নম্রতার সঙ্গে ও চোখের জলে প্রভুর সেবা করে গেছি, যদিও ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের কারণে আমি অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলাম। \v 20 তোমরা জানো যে আমি তোমাদের পক্ষে কল্যাণকর কোনো কিছুই প্রচার করতে ইতস্তত করিনি, বরং প্রকাশ্যে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষা দিয়েছি। \v 21 ইহুদি ও গ্রিক, উভয়েরই কাছে আমি ঘোষণা করেছি যে, মন পরিবর্তনের মাধ্যমে তাদের অবশ্যই ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসতে হবে এবং আমাদের প্রভু যীশুর উপরে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। \p \v 22 “আর এখন পবিত্র আত্মার দ্বারা বাধ্য হয়ে আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি, জানি না, সেখানে আমার প্রতি কী ঘটবে। \v 23 আমি শুধু জানি যে, পবিত্র আত্মা আমাকে সচেতন করছেন, প্রতিটি নগরে আমাকে বন্দিদশা ও কষ্টের সম্মুখীন হতে হবে। \v 24 কিন্তু, আমি আমার প্রাণকেও নিজের কাছে মূল্যবান বিবেচনা করি না, শুধু চাই যে আমি যেন সেই দৌড় শেষ করতে পারি এবং প্রভু যীশু যে কর্মভার আমাকে দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ করতে পারি—সেই কাজটি হল, ঈশ্বরের অনুগ্রহের সুসমাচার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেওয়া। \p \v 25 “এখন আমি জানি, আমি যাদের মধ্যে সেই রাজ্যের কথা প্রচার করেছি, সেই তোমরা কেউই আর আমাকে দেখতে পাবে না। \v 26 সেই কারণে, আমি তোমাদের কাছে আজ ঘোষণা করছি যে, সব মানুষের রক্তের দায় থেকে আমি নির্দোষ। \v 27 কারণ তোমাদের কাছে ঈশ্বর যা চান, আমি সেইসব ইচ্ছা ঘোষণা করতে দ্বিধাবোধ করিনি। \v 28 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান থাকো ও পবিত্র আত্মা যে মেষদের উপরে তোমাদের তত্ত্বাবধায়করূপে\f + \fr 20:28 \fr*\ft এর সমরূপ প্রতিশব্দগুলি হল, বিশপ, প্রাচীন, অধ্যক্ষ।\ft*\f* নিযুক্ত করেছেন, তাদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখো। ঈশ্বরের যে মণ্ডলীকে তিনি তাঁর রক্তের দ্বারা কিনেছেন, তার প্রতিপালন করো। \v 29 আমি জানি, আমার চলে যাওয়ার পর, তোমাদের মধ্যে হিংস্র নেকড়েদের আবির্ভাব হবে, তারা মেষপালকে নিষ্কৃতি দেবে না। \v 30 এমনকি, তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকেই তাদের উত্থান হবে। তারা সত্যকে বিকৃত করবে, যেন তাদের অনুগামী হওয়ার জন্য শিষ্যদের টেনে নিয়ে যেতে পারে। \v 31 তাই তোমরা সতর্ক থাকো! মনে রেখো যে, সেই তিন বছর আমি তোমাদের প্রত্যেকজনকে দিনরাত চোখের জলে সাবধান করে এসেছি, কখনও ক্ষান্ত হইনি। \p \v 32 “এখন আমি ঈশ্বর ও তাঁর অনুগ্রহের বাক্যের কাছে তোমাদের সমর্পণ করছি, যা তোমাদের গঠন করতে ও যারা পবিত্র তাঁদের মধ্যে অধিকার দান করতে সমর্থ। \v 33 আমি কোনো মানুষের রুপো, সোনা বা পোশাকের প্রতি লোভ করিনি। \v 34 তোমরা নিজেরা জানো যে, আমার এই দু-হাত আমার ও আমার সঙ্গীদের সব প্রয়োজন মিটিয়েছে। \v 35 আমার সমস্ত কাজের মাধ্যমে আমি তোমাদের দেখিয়েছি যে, এই ধরনের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই দুর্বলদের সাহায্য করতে হবে। স্বয়ং প্রভু যীশুর বলা বাক্য আমাদের মনে রাখতে হবে, ‘গ্রহণ করার চেয়ে দান করাতেই বেশি আশীর্বাদ।’ ” \p \v 36 একথা বলার পর তিনি তাদের সবার সঙ্গে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন। \v 37 তাঁরা সবাই তাঁকে জড়িয়ে ধরল ও চুমু খেয়ে কাঁদতে লাগল। \v 38 তাঁরা আর কখনও তাঁর মুখ দেখতে পারবেন না—পৌলের এই কথায় তাঁরা সবচেয়ে দুঃখ পেলেন। এরপর তাঁরা সবাই জাহাজ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে গেলেন। \c 21 \s1 জেরুশালেমের পথে পৌল \p \v 1 তাদের কাছ থেকে আমরা বহুকষ্টে বিদায় নেওয়ার পর, সমুদ্রপথে সরাসরি কোস নামক দ্বীপ অভিমুখে যাত্রা করলাম। পরদিন আমরা রোডসে এবং সেখান থেকে পাতারায় গেলাম। \v 2 সেখানে আমরা ফিনিসিয়াগামী একটি জাহাজ পেলাম। আমরা সেই জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম। \v 3 সাইপ্রাস দেখা দিলে আমরা তার দক্ষিণ দিক দিয়ে অতিক্রম করে সিরিয়ার দিকে চললাম। টায়ারে\f + \fr 21:3 \fr*\ft পুরোনো. স. সোরে।\ft*\f* এসে আমরা নামলাম। সেখানে আমাদের জাহাজের মালপত্র নামানোর কথা ছিল। \v 4 সেখানে কয়েকজন শিষ্যের সন্ধান পেয়ে আমরা তাঁদের সঙ্গে সাত দিন থাকলাম। পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁরা পৌলকে জেরুশালেমে না যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করলেন। \v 5 কিন্তু আমাদের সময় হয়ে এলে, আমরা সেই স্থান ত্যাগ করে আমাদের পথে এগিয়ে চললাম। সব শিষ্য, তাদের স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিসহ আমাদের সঙ্গে নগরের বাইরে পর্যন্ত এল। সেখানে সমুদ্রতীরে আমরা নতজানু হয়ে প্রার্থনা করলাম। \v 6 পরস্পরকে বিদায়সম্ভাষণ জানিয়ে আমরা জাহাজে উঠলাম, আর তাঁরা ঘরে ফিরে গেলেন। \p \v 7 টায়ার থেকে আমাদের সমুদ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে আমরা তলোমায়িতে নামলাম। সেখানে ভাইবোনেদের\f + \fr 21:7 \fr*\ft গ্রিক: ভাইদের; 17 পদেও।\ft*\f* অভিনন্দন জানিয়ে আমরা একদিন তাদের সঙ্গে থাকলাম। \v 8 পরদিন সেই স্থান ছেড়ে আমরা কৈসরিয়ায় পৌঁছালাম ও সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের বাড়িতে থাকলাম। তিনি ছিলেন জেরুশালেমে মনোনীত সাতজনের অন্যতম। \v 9 তাঁর ছিল চারজন অবিবাহিত মেয়ে, যাঁরা ভাববাণী বলতেন। \p \v 10 সেখানে আমরা বেশ কিছুদিন থাকার পর, যিহূদিয়া থেকে আগাব নামে এক ভাববাদী এসে পৌঁছালেন। \v 11 আমাদের কাছে এসে তিনি পৌলের বেল্ট নিয়ে নিজের হাত ও পা-দুটি বেঁধে বললেন, “পবিত্র আত্মা বলছেন, ‘এই বেল্ট যে ব্যক্তির, জেরুশালেমের ইহুদিরা তাঁকে এভাবে বাঁধবে, আর তাঁকে পরজাতিদের হাতে তুলে দেবে।’ ” \p \v 12 যখন আমরা একথা শুনলাম, তখন আমরা ও সেখানে উপস্থিত সবাই পৌলকে জেরুশালেম পর্যন্ত না যাওয়ার জন্য অনুনয় করলাম। \v 13 তখন পৌল উত্তর দিলেন, “তোমরা কেন কাঁদছ ও আমার মনোবল ভেঙে দিচ্ছ? আমি যে শুধু বন্দি হওয়ার জন্যই তৈরি তা নয়, বরং প্রভু যীশুর নামের জন্য আমি জেরুশালেমে মৃত্যুবরণ করতেও প্রস্তুত।” \v 14 তিনি কিছুতেই সম্মত হবেন না দেখে, আমরা হাল ছেড়ে দিলাম ও বললাম, “প্রভুরই ইচ্ছা পূর্ণ হোক।” \s1 শান্তি স্থাপনের জন্য পৌলের অনুনয় \p \v 15 এরপর আমরা প্রস্তুত হয়ে জেরুশালেমের দিকে যাত্রা করলাম। \v 16 কৈসরিয়া থেকে আসা কয়েকজন শিষ্য আমাদের সঙ্গী হলেন এবং আমাদের ম্নাসোনের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। এখানেই আমাদের থাকার কথা ছিল। তিনি ছিলেন সাইপ্রাসের মানুষ ও প্রাথমিক শিষ্যদের অন্যতম। \p \v 17 আমরা জেরুশালেমে পৌঁছালে ভাইবোনেরা আমাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন। \v 18 পরদিন পৌল ও আমরা সবাই যাকোবের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। সেখানে সব প্রাচীন উপস্থিত ছিলেন। \v 19 পৌল তাঁদের নমস্কার জানিয়ে, ঈশ্বর তাঁর পরিচর্যার মাধ্যমে অইহুদিদের মধ্যে কী কাজ করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ দিলেন। \p \v 20 একথা শুনে তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন। তারপর তারা পৌলকে বললেন, “দেখুন ভাই, কত সহস্র ইহুদি বিশ্বাস করেছে, তারা সকলেই শাস্ত্রের বিধান সম্পর্কে অত্যন্ত উদ্যমী। \v 21 তারা সংবাদ পেয়েছে যে, অইহুদি জাতিদের মধ্যে প্রবাসী সব ইহুদিকে তুমি মোশির পথ ত্যাগ করার শিক্ষা দাও, বলে থাকো, তারা যেন শিশুদের সুন্নত না করে বা আমাদের প্রথা অনুযায়ী না চলে। \v 22 আমরা কী করব? তারা নিশ্চয়ই তোমার আসার কথা শুনতে পাবে। \v 23 তাই তুমি আমাদের কথামতো কাজ করো। আমাদের মধ্যে চারজন ব্যক্তি আছে, যারা এক মানত করেছে। \v 24 তুমি এসব ব্যক্তিকে নিয়ে যাও, তাদের শুদ্ধকরণ-সংস্কারে যোগ দাও ও তাদের মাথা ন্যাড়া করার ব্যয়ভার বহন করো। তখন প্রত্যেকে জানতে পারবে যে, তোমার সম্পর্কিত এই সংবাদের কোনও সত্যতা নেই, বরং তুমিও নিজে বিধানের প্রতি অনুগত জীবনযাপন করছ। \v 25 কিন্তু অইহুদি বিশ্বাসীদের সম্পর্কে, আমরা আমাদের সিদ্ধান্তের কথা তাদের লিখেছি, তারা যেন প্রতিমার কাছে উৎসর্গ করা খাবার, রক্ত, শ্বাসরোধ করে মারা প্রাণীর মাংস এবং অবৈধ যৌন-সংসর্গ থেকে নিজেদের দূরে রাখে।” \p \v 26 পরের দিন পৌল সেই ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে নিলেন এবং তাদের সঙ্গে তিনি নিজেও শুচিশুদ্ধ হলেন। তারপর, শুদ্ধকরণ অনুষ্ঠানের সময় কখন শেষ হবে এবং তাদের প্রত্যেকের জন্য কবে নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হবে, সেকথা জানানোর জন্য তিনি মন্দিরে প্রবেশ করলেন। \s1 পৌলের গ্রেপ্তার \p \v 27 সাত দিন যখন প্রায় শেষ হতে চলেছে, সেই সময় এশিয়া প্রদেশ থেকে আসা কয়েকজন ইহুদি পৌলকে মন্দিরে দেখতে পেল। তারা সমস্ত জনতাকে উত্তেজিত করে পৌলকে পাকড়াও করল। \v 28 তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, “হে ইস্রায়েলবাসী, আমাদের সাহায্য করো। এই সেই লোক, যে সব স্থানের সব মানুষকে আমাদের জাতি, আমাদের বিধান ও এই স্থানের বিরুদ্ধে শিক্ষা দিয়ে থাকে। এছাড়াও ও মন্দির এলাকায় গ্রিকদের নিয়ে এসে এই পবিত্র স্থানকে কলুষিত করেছে।” \v 29 (তারা ইফিষের ত্রফিমকে ইতিপূর্বে পৌলের সঙ্গে নগরে দেখে মনে করেছিল, পৌল হয়তো তাঁকে মন্দির অঞ্চলে নিয়ে এসেছেন।) \p \v 30 সমস্ত নগর উত্তেজিত হয়ে উঠল এবং লোকেরা সবদিক থেকে ছুটে এল। পৌলকে পাকড়াও করে তারা মন্দির থেকে তাঁকে টেনে বের করল। সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল। \v 31 তারা যখন তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত, সেই সময়ে রোমীয় সৈন্যদলের অধিনায়কের কাছে সংবাদ পৌঁছাল যে, সমস্ত জেরুশালেম নগরে গণ্ডগোল শুরু হয়েছে। \v 32 তিনি সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন শত-সেনাপতি ও সৈন্যকে নিয়ে দ্রুত জনতার কাছে ছুটে গেলেন। হাঙ্গামাকারীরা যখন সেনাপতি ও সৈন্যদের দেখতে পেল, তারা পৌলকে মারা বন্ধ করল। \p \v 33 সেনাপতি এগিয়ে এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করলেন ও দুটি শিকল নিয়ে তাঁকে বাঁধার আদেশ দিলেন। তারপর তিনি তাঁর পরিচয় ও তিনি কী করেছেন, তা জিজ্ঞাসা করলেন। \v 34 জনতার মধ্য থেকে কেউ এক রকম, কেউ আবার অন্যরকম কথা বলে চিৎকার করতে লাগল। হট্টগোলের জন্য সেনাপতি প্রকৃত সত্য বুঝতে না পারায়, তিনি পৌলকে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিলেন। \v 35 পৌল সিঁড়ির কাছে পৌঁছালে জনতা এত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল যে, সৈন্যদের তাঁকে বয়ে নিয়ে যেতে হল। \v 36 অনুসরণকারী জনতা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে দূর করে দাও!” \s1 জনতার উদ্দেশে পৌলের ভাষণ \p \v 37 সৈন্যরা পৌলকে সেনানিবাসের ভিতরে নিয়ে যেতে উদ্যত হলে, তিনি সেনাপতিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি আপনাকে কিছু বলতে পারি?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “তুমি কি গ্রিক বলতে পারো? \v 38 তুমিই কি সেই মিশরীয় নও, যে একটি বিদ্রোহের সূচনা করেছিল এবং চার হাজার সন্ত্রাসবাদীকে কিছুকাল আগে মরুপ্রান্তরে নিয়ে গিয়েছিল?” \p \v 39 প্রত্যুত্তরে পৌল বললেন, “আমি একজন ইহুদি, কিলিকিয়া তার্ষ নগরের মানুষ, কোনও সাধারণ নগরের নাগরিক নই। দয়া করে আমাকে লোকদের সঙ্গে কথা বলতে দিন।” \p \v 40 সেনাপতির অনুমতি লাভ করে পৌল সিঁড়ির উপরে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে জনতার দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা সকলে নীরব হলে তিনি হিব্রু ভাষায় বলতে শুরু করলেন: \c 22 \nb \v 1 “হে ভাইয়েরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, আমার আত্মপক্ষ সমর্থনের কথা এখন আপনারা শুনুন।” \p \v 2 পৌলকে হিব্রু ভাষায় কথা বলতে শুনে তারা আরও শান্ত হয়ে গেল। \p তখন পৌল বললেন, \v 3 “আমি একজন ইহুদি, কিলিকিয়ার তার্ষ নগরে আমার জন্ম, কিন্তু এই নগরে বড়ো হয়েছি। গমলীয়েলের অধীনে আমি আমাদের পিতৃপুরুষদের বিধান সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ শিক্ষা লাভ করেছি। আজ আপনারা যেমন, একদিন আমিও আপনাদেরই একজনের মতো ঈশ্বরের পক্ষে উদ্যমী ছিলাম। \v 4 আমি এই পথের অনুসারীদের অত্যাচার করে অনেককে হত্যা করেছি, নারী ও পুরুষ সবাইকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি করেছি। \v 5 এ বিষয়ে মহাযাজক ও সমস্ত বিচার পরিষদ আমার সাক্ষী। এমনকি আমি তাদের কাছ থেকে কয়েকটি পত্র নিয়ে তাদের ইহুদি ভাইদের কাছে দামাস্কাসে যাচ্ছিলাম, যেন এই সমস্ত লোককে গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করি। \p \v 6 “প্রায় দুপুরবেলায়, যেই আমি দামাস্কাসের কাছে পৌঁছালাম, হঠাৎই আকাশ থেকে একটি উজ্জ্বল আলো আমার চারপাশে ঝলসে উঠল। \v 7 আমি মাটিতে পড়ে গেলাম ও একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম, আমাকে বলছে, ‘শৌল, শৌল, তুমি কেন আমাকে নির্যাতন করছ?’ \p \v 8 “ ‘প্রভু, আপনি কে?’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম। \p “ ‘আমি নাসরতীয় যীশু, যাঁকে তুমি নির্যাতন করছ।’ তিনি উত্তর দিলেন। \v 9 আমার সঙ্গীরা সেই আলো দেখতে পেল, কিন্তু যিনি আমার উদ্দেশে কথা বলছিলেন, তারা তাঁর সেই কণ্ঠস্বর বুঝতে পারল না। \p \v 10 “ ‘প্রভু, আমি কী করব?’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম। \p “ ‘উঠে পড়ো,’ প্রভু বললেন, ‘ও দামাস্কাসে প্রবেশ করো। তোমাকে কী করতে হবে, সেখানে তোমাকে বলে দেওয়া হবে।’ \v 11 আমার সঙ্গীরা হাত ধরে আমাকে দামাস্কাসে নিয়ে গেল, কারণ সেই আলোর তীব্র ঔজ্জ্বল্য আমাকে দৃষ্টিহীন করে দিয়েছিল। \p \v 12 “এরপর অননিয় নামে একজন ব্যক্তি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে বিধান পালন করতেন এবং সেখানকার অধিবাসী সব ইহুদির কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। \v 13 তিনি আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টিশক্তি লাভ করো!’ আর সেই মুহূর্তে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম। \p \v 14 “তখন তিনি বললেন, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমাকে মনোনীত করেছেন, যেন তুমি তাঁর ইচ্ছা জানতে পারো ও সেই ধর্মময় ব্যক্তির দর্শন লাভ করো এবং তাঁর মুখের বাণী শুনতে পাও। \v 15 তুমি যা দেখেছ বা শুনেছ, সব মানুষের কাছে সেইসব বিষয়ে তাঁর সাক্ষী হবে। \v 16 আর এখন তুমি কীসের প্রতীক্ষা করছ? ওঠো, বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করো ও তাঁর নামে আহ্বান করে তোমার সব পাপ ধুয়ে ফেলো।’ \p \v 17 “জেরুশালেমে ফিরে এসে আমি যখন মন্দিরে প্রার্থনা করছিলাম, আমি ভাবাবিষ্ট হলাম। \v 18 আমি দেখলাম, প্রভু কথা বলছেন, ‘তাড়াতাড়ি করো!’ তিনি আমাকে বললেন, ‘এই মুহূর্তে জেরুশালেম ছেড়ে চলে যাও, কারণ তারা আমার বিষয়ে তোমার সাক্ষ্য গ্রাহ্য করবে না।’ \p \v 19 “আমি উত্তর দিলাম, ‘প্রভু, এই লোকেরা জানে, যারা তোমাকে বিশ্বাস করে তাদের মারধোর ও বন্দি করার জন্য আমি এক সমাজভবন থেকে অন্য সমাজভবনে গিয়েছি। \v 20 আর তোমার শহিদ\f + \fr 22:20 \fr*\ft যার সাক্ষ্য অমর।\ft*\f* স্তিফানের যখন রক্তপাত করা হয়, আমি সেখানে দাঁড়িয়ে আমার সমর্থন দিচ্ছিলাম ও যারা তাঁকে হত্যা করছিল, তাদের পোশাক পাহারা দিচ্ছিলাম।’ \p \v 21 “তারপর প্রভু আমাকে বললেন, ‘যাও, আমি তোমাকে বহুদূরে, অইহুদিদের কাছে পাঠাব।’ ” \s1 রোমীয় নাগরিক পৌল \p \v 22 লোকেরা এই পর্যন্ত পৌলের কথা শুনল। তারপর তারা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে পৃথিবী থেকে দূর করো! ও বেঁচে থাকার যোগ্য নয়!” \p \v 23 তারা যখন চিৎকার করে তাদের পোশাক খুলে ফেলছিল ও বাতাসে ধুলো ছড়াতে শুরু করেছিল, \v 24 তখন সেনাপতি পৌলকে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিলেন। তিনি নির্দেশ দিলেন যেন তাঁকে চাবুক মারা হয় এবং প্রশ্ন করে যেন জানতে পারা যায় কেন তাঁর বিরুদ্ধে লোকেরা এরকম চিৎকার করছে। \v 25 তারা তাঁকে টান-টান করে বেঁধে চাবুক মারতে উদ্যত হলে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা শত-সেনাপতিকে পৌল বললেন, “যার অপরাধ সাব্যস্ত হয়নি, এমন কোনও রোমীয় নাগরিককে চাবুক মারা কি আপনাদের পক্ষে আইনসংগত?” \p \v 26 শত-সেনাপতি একথা শুনে সেনানায়কের কাছে গেলেন ও এই সংবাদ দিলেন। তিনি বললেন, “আপনি কী করতে চলেছেন? এই ব্যক্তি তো একজন রোমীয় নাগরিক!” \p \v 27 সেনানায়ক পৌলের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বলো, তুমি কি একজন রোমীয় নাগরিক?” \p তিনি উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমি তাই।” \p \v 28 তখন সেনানায়ক তাঁকে বললেন, “আমার নাগরিকত্ব লাভের জন্য আমাকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে।” \p পৌল উত্তর দিলেন, “কিন্তু আমি জন্মসূত্রেই নাগরিক\f + \fr 22:28 \fr*\ft রোমীয়\ft*\f*।” \p \v 29 যারা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল, তারা তক্ষুনি পিছিয়ে গেল। সেনানায়ক যখন উপলব্ধি করলেন যে, যাঁকে তিনি শিকলে বন্দি করেছেন, সেই পৌল একজন রোমীয় নাগরিক, তিনি নিজেই আতঙ্কিত হলেন। \s1 মহাসভার সামনে পৌল \p \v 30 পরদিন, সেনানায়ক অনুসন্ধান করতে চাইলেন, পৌলের বিরুদ্ধে ইহুদিদের সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ আছে। তিনি তাঁকে মুক্ত করলেন ও প্রধান যাজকদের এবং মহাসভার সমস্ত সদস্যকে একত্র হওয়ার আদেশ দিলেন। তারপর তিনি পৌলকে এনে তাঁদের সামনে দাঁড় করালেন। \c 23 \p \v 1 পৌল সরাসরি মহাসভার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আজকের এই দিন পর্যন্ত আমি সৎ বিবেকে ঈশ্বরের প্রতি আমার কর্তব্য পালন করেছি।” \v 2 এতে মহাযাজক অননিয়, যারা পৌলের কাছে দাঁড়িয়েছিল, তাদের আদেশ দিলেন যেন তাঁর মুখে আঘাত করা হয়। \v 3 তখন পৌল তাঁকে বললেন, “চুনকাম করা দেওয়ালের মতো তুমি, ঈশ্বর তোমাকেও আঘাত করবেন! বিধানসম্মতভাবে আমার বিচার করার জন্য তুমি ওখানে বসেছ, কিন্তু তবুও আমাকে আঘাত করার আদেশ দিয়ে তুমি স্বয়ং বিধান লঙ্ঘন করছ!” \p \v 4 যারা পৌলের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিল, তারা বলল, “তুমি কি ঈশ্বরের মহাযাজককে অপমান করার দুঃসাহস দেখাচ্ছ?” \p \v 5 পৌল উত্তর দিলেন, “ভাইয়েরা, আমি বুঝতে পারিনি যে, উনিই মহাযাজক। আমি জানি যে, এরকম লেখা আছে, ‘তোমার স্বজাতির অধ্যক্ষ সম্পর্কে কটূক্তি কোরো না।’\f + \fr 23:5 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 22:28\+xt*\ft*\f*” \p \v 6 তারপর পৌল যখন বুঝতে পারলেন যে, তাদের একাংশ সদ্দূকী ও একাংশ ফরিশী, তখন মহাসভার মধ্যে চিৎকার করে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আমি ফরিশী, একজন ফরিশীর সন্তান। মৃতদের পুনরুত্থান সম্পর্কে আমার প্রত্যাশার জন্যই আমার বিচার করা হচ্ছে।” \v 7 তিনি একথা বলার পর ফরিশী ও সদ্দূকীদের মধ্যে বিতর্ক বেধে গেল, সভা দুদলে ভাগ হয়ে গেল। \v 8 (সদ্দূকীরা বলে যে পুনরুত্থান নেই, স্বর্গদূতেরা বা আত্মারাও নেই, কিন্তু ফরিশীরা সেসব স্বীকার করে থাকে।) \p \v 9 তখন প্রচণ্ড কোলাহল শুরু হল। কয়েকজন শাস্ত্রবিদ যারা ফরিশী-দলভুক্ত ছিল, উঠে দাঁড়িয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু করল। তারা বলল, “আমরা এই লোকটির কোনো অন্যায় খুঁজে পাচ্ছি না। কোনো আত্মা বা স্বর্গদূত যদি এর সঙ্গে কথা বলে থাকে, তাহলে তাতেই বা কী?” \v 10 বিতর্ক এমন হিংস্র আকার ধারণ করল সেনানায়ক ভয় পেলেন যে তারা হয়তো পৌলকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলবে। তিনি সৈন্যবাহিনীকে আদেশ দিলেন, নিচে নেমে গিয়ে তাঁকে তাদের কাছ থেকে জোর করে নিয়ে আনতে ও সেনানিবাসে নিয়ে যেতে। \p \v 11 সেই দিনই রাত্রিবেলায় প্রভু পৌলের পাশে এসে দাঁড়ালেন ও বললেন, “সাহসী হও! তুমি যেমন জেরুশালেমে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনই তুমি রোমেও সাক্ষ্য দেবে।” \s1 পৌলকে হত্যার ষড়যন্ত্র \p \v 12 পরের দিন সকালবেলা ইহুদিরা এক ষড়যন্ত্র করল এবং একটি শপথে নিজেদের আবদ্ধ করল যে, যতদিন পর্যন্ত তারা পৌলকে হত্যা না করে, ততদিন পর্যন্ত তারা খাওয়াদাওয়া বা পান করবে না। \v 13 চল্লিশজনেরও বেশি লোক এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। \v 14 তারা প্রধান যাজকদের ও প্রাচীনবর্গের কাছে গিয়ে বলল, “আমরা এক গুরু-অঙ্গীকার করেছি যে, পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমরা কিছুই খাবো না। \v 15 তাহলে এখন, মহাসভাকে সঙ্গে নিয়ে আপনারা সেনানায়কের কাছে এই অজুহাতে আবেদন করুন যে, তার সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য তাকে যেন আপনাদের সামনে নিয়ে আসা হয়। সে এখানে আসার আগেই তাকে আমরা হত্যা করার জন্য প্রস্তুত আছি।” \p \v 16 কিন্তু পৌলের ভাগ্নে যখন এই ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পেল, সে সেনানিবাসে গিয়ে পৌলকে সেকথা বলল। \p \v 17 পৌল তখন একজন শত-সেনাপতিকে ডেকে বললেন, “এই যুবককে সেনানায়কের কাছে নিয়ে যান, সে তাঁকে কিছু বলতে চায়।” \v 18 তাই তিনি তাকে সেনানায়কের কাছে নিয়ে গেলেন। \p শত-সেনাপতি বললেন, “বন্দি পৌল আমাকে ডেকে এই যুবককে আপনার কাছে নিয়ে আসতে বলল, কারণ আপনার কাছে এর কিছু বক্তব্য আছে।” \p \v 19 সেনানায়ক যুবকটির হাত ধরে তাকে এক পাশে নিয়ে গেলেন ও জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি আমাকে কী বলতে চাও?” \p \v 20 সে বলল, “ইহুদিরা একমত হয়েছে, আগামীকাল পৌলের বিষয়ে আরও তথ্য অনুসন্ধান করবে, এই অজুহাতে তাঁকে মহাসভার কাছে হাজির করার জন্য তারা আপনার কাছে আবেদন জানাবে। \v 21 আপনি তাদের কথায় সম্মত হবেন না, কারণ তাদের চল্লিশজনেরও বেশি লোক তাঁর জন্য গোপনে ওত পেতে আছে। তারা শপথ করেছে যে, তাঁকে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করবে না। তারা এখনই প্রস্তুত আছে, তাদের অনুরোধের প্রত্যুত্তরে আপনার সম্মতির অপেক্ষা করছে।” \p \v 22 সেনানায়ক যুবকটিকে বিদায় করার সময় সতর্ক করে দিলেন, “তুমি যে এই সংবাদ আমাকে দিয়েছ, একথা কাউকে বোলো না।” \s1 পৌলকে কৈসরিয়ায় পাঠানো হল \p \v 23 এরপর তিনি তাঁর দুজন শত-সেনাপতিকে ডেকে তাদের আদেশ দিলেন, “আজ রাত্রি নয়টার সময় দুশো জন সেনা, সত্তরজন অশ্বারোহী ও দুশো বর্শাধারী সেনা কৈসরিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত থেকো। \v 24 পৌলের জন্য আরও কয়েকটি ঘোড়ার ব্যবস্থা কোরো, যেন তাকে নিরাপদে প্রদেশপাল ফীলিক্সের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।” \p \v 25 তিনি এভাবে একটি পত্র লিখলেন: \pmo \v 26 ক্লডিয়াস লিসিয়াসের তরফে, \pmo মহামান্য প্রদেশপাল ফীলিক্স সমীপেষু, \pmo শুভেচ্ছা। \pm \v 27 ইহুদিরা এই ব্যক্তিকে পাকড়াও করে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছিল, কিন্তু আমি আমার সৈন্যবাহিনীসহ গিয়ে একে উদ্ধার করি, কারণ আমি জানতে পেরেছিলাম যে, সে একজন রোমীয় নাগরিক। \v 28 আমি জানতে চেয়েছিলাম, কেন তারা এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তাই আমি একে তাদের মহাসভার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। \v 29 আমি দেখলাম যে, তাদের অভিযোগ ছিল তাদের বিধানসম্পর্কিত বিষয়ে, কিন্তু এর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বা কারাদণ্ডের যোগ্য কোনো অভিযোগ ছিল না। \v 30 এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তা যখন আমাকে জানানো হল, আমি তক্ষুনি একে আপনার কাছে পাঠিয়ে দিলাম। আমি এর বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদেরও আদেশ দিলাম, তারা যেন তাদের অভিযোগ আপনার কাছে উপস্থাপিত করে। \p \v 31 অতএব সৈন্যরা তাঁর আদেশ পালন করে রাত্রিবেলা পৌলকে সঙ্গে নিয়ে সুদূর আন্তিপাত্রিতে নিয়ে গেল। \v 32 পরের দিন অশ্বারোহী সেনাদের সঙ্গে তাঁকে পাঠিয়ে দিয়ে পদাতিকেরা সেনানিবাসে ফিরে গেল। \v 33 অশ্বারোহী সেনারা কৈসরিয়ায় পৌঁছে, তারা সেই পত্র প্রদেশপালকে দিল ও পৌলকে তাঁর হাতে সমর্পণ করল। \v 34 সেই পত্র পড়ে প্রদেশপাল জানতে চাইলেন, তিনি কোন প্রদেশের লোক। পৌল কিলিকিয়ার অধিবাসী জানতে পেরে, \v 35 তিনি বললেন, “তোমার অভিযোগকারীরা এখানে এসে উপস্থিত হলে আমি তোমার কথা শুনব।” এরপর তিনি পৌলকে হেরোদের প্রাসাদে পাহারাধীন রাখার আদেশ দিলেন। \c 24 \s1 ফীলিক্সের সাক্ষাতে পৌলের বিচার \p \v 1 পাঁচদিন পরে মহাযাজক অননিয় কয়েকজন প্রাচীন ও তর্তুল্ল নামে এক উকিলকে সঙ্গে নিয়ে কৈসরিয়ায় পৌঁছালেন। তাঁরা প্রদেশপালের কাছে পৌলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন। \v 2 পৌলের ডাক পড়লে, তর্তুল্ল ফীলিক্সের কাছে তাঁর অভিযোগ উপস্থাপন করলেন, “আপনার অধীনে আমরা দীর্ঘকাল শান্তি উপভোগ করে আসছি; আপনার দূরদর্শিতার গুণে এই জাতির বিভিন্ন প্রকার সংস্কার সাধিত হয়েছে। \v 3 হে মহামান্য ফীলিক্স, সর্বত্র এবং সর্বতোভাবে আমরা এই সত্য গভীর কৃতজ্ঞতাসহ স্বীকার করছি। \v 4 কিন্তু বেশি কথা বলে আপনাকে বিরক্ত করতে চাই না তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করি, অনুগ্রহ করে আপনি আমাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুনুন। \p \v 5 “আমরা দেখেছি, এই ব্যক্তি গণ্ডগোল সৃষ্টি করে ও সমস্ত পৃথিবীতে ইহুদিদের মধ্যে দাঙ্গাহাঙ্গামা বাধানোর জন্য প্ররোচনা দেয়। সে নাসরতীয় দলের একজন হোতা। \v 6 সে এমনকি, মন্দিরও অপবিত্র করতে চেয়েছিল; তাই আমরা তাকে ধরে এনেছি, এবং আমাদের বিধান অনুসারে তার বিচার করতে চেয়েছিলাম। \v 7 কিন্তু সেনানায়ক লিসিয়াস এসে বলপ্রয়োগ করে আমাদের হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নিলেন এবং \v 8 তার অভিযোগকারীদের কাছে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিলেন।\f + \fr 24:6–8 \fr*\ft কয়েকটি প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে \+xt 6-8|link-href="ACT 24:6-8"\+xt* পদের কথাগুলি যুক্ত করা হয়নি\ft*\f* যেসব বিষয়ে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে, আপনি স্বয়ং একে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার সত্যতা জানতে পারবেন।” \p \v 9 ইহুদিরাও এসব বিষয় সত্য বলে সেই অভিযোগ সমর্থন করল। \p \v 10 প্রদেশপাল পৌলকে তাঁর বক্তব্য জানানোর ইঙ্গিত করলে, পৌল উত্তর দিলেন: “বহু বছর যাবৎ আপনি এই জাতির বিচারক হয়ে আছেন জানতে পেরে আমি সানন্দে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি। \v 11 আপনি সহজেই যাচাই করতে পারেন যে, বারোদিনেরও বেশি হয়নি, আমি উপাসনা করার জন্য জেরুশালেমে গিয়েছিলাম। \v 12 আমার অভিযোগকারীরা আমাকে মন্দিরে কারও সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতে বা সমাজভবনে, কিংবা নগরের অন্যত্র, কোথাও কোনো জনগণকে উত্তেজিত করতে দেখেনি। \v 13 আর তারা এখন আমার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করছে, সেগুলি আপনার কাছে প্রমাণ করতেও পারে না। \v 14 তবুও, আমি স্বীকার করছি, এরা যাকে ‘দল’ বলছে, সেই ‘পথের’ অনুসারীরূপে আমি আমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করি। যেসব বিষয় বিধানসম্মত এবং যা কিছু ভাববাদীদের গ্রন্থে লেখা আছে, আমি সে সমস্তই বিশ্বাস করি। \v 15 আর এসব লোকের মতোই আমারও ঈশ্বরে একই প্রত্যাশা আছে যে, ধার্মিক ও দুর্জন, উভয়েরই পুনরুত্থান হবে। \v 16 তাই ঈশ্বর ও মানুষের কাছে আমার বিবেক নির্মল রাখার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করি। \p \v 17 “কয়েক বছর অনুপস্থিত থাকার পর, আমি স্বজাতীয় দরিদ্রদের জন্য কিছু দানসামগ্রী নিয়ে ও নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য জেরুশালেমে যাই। \v 18 যখন তারা আমাকে মন্দির-প্রাঙ্গণে এ কাজ করতে দেখেছিল আমি সংস্কারগতভাবে শুচিশুদ্ধ ছিলাম। আমার সঙ্গে কোনো লোকজন ছিল না, কোনো গণ্ডগোলের সঙ্গেও আমি জড়িত ছিলাম না। \v 19 কিন্তু এশিয়া প্রদেশ থেকে আগত কিছু ইহুদি সেখানে ছিল। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে, তা নিয়ে এখানে আপনার কাছে তাদের উপস্থিত হওয়া উচিত ছিল। \v 20 অথবা, এখানে যারা উপস্থিত আছে, তারাই বলুক, যখন আমি মহাসভার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম, তারা আমার মধ্যে কোন অপরাধ পেয়েছিল— \v 21 শুধু একটি ছাড়া? তাদের উপস্থিতিতে আমি দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছিলাম, ‘মৃতদের পুনরুত্থান সম্পর্কে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে।’ ” \p \v 22 তখন ফীলিক্স, সেই পথ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলেন বলে, শুনানি মুলতুবি রাখলেন। তিনি বললেন, “যখন সেনানায়ক লিসিয়াস আসবেন, আমি তোমাদের বিচার নিষ্পত্তি করব।” \v 23 তিনি শত-সেনাপতিকে আদেশ দিলেন পৌলকে পাহারায় রাখার জন্য, কিন্তু তাঁকে যেন কিছুটা স্বাধীনতা দেওয়া হয় ও তাঁর বন্ধুদেরও যেন তাঁকে সেবা করার অনুমতি দেওয়া হয়। \p \v 24 বেশ কয়েক দিন পর ফীলিক্স, তাঁর ইহুদি স্ত্রী দ্রুষিল্লাকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। তিনি পৌলকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁর মুখ থেকে খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস স্থাপনের কথা শুনলেন। \v 25 আলোচনাকালে পৌল ন্যায়পরায়ণতা, আত্মসংযম ও সন্নিকট বিচারের কথা বললে, ফীলিক্স ভীত হয়ে বললেন, “এখন এই যথেষ্ট। তুমি যেতে পারো। পরে সুবিধেমতো আমি তোমাকে ডেকে পাঠাব।” \v 26 একইসঙ্গে, তিনি পৌলের কাছে কিছু ঘুস পাওয়ারও আশা করেছিলেন, সেই কারণে, তিনি তাঁকে বারবার ডেকে পাঠাতেন ও তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন। \p \v 27 দুই বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল, পর্কীয় ফীষ্ট ফীলিক্সের পদে বসলেন। কিন্তু ফীলিক্স যেহেতু ইহুদিদের সন্তুষ্ট করতে চেয়েছিলেন, তিনি পৌলকে কারাগারেই রেখে দিলেন। \c 25 \s1 ফীষ্টের সাক্ষাতে পৌলের বিচার \p \v 1 সেই প্রদেশে উপস্থিত হওয়ার তিন দিন পর ফীষ্ট কৈসরিয়া থেকে জেরুশালেমে গেলেন। \v 2 সেখানে প্রধান যাজকেরা ও ইহুদি নেতৃবৃন্দ তাঁর নিকটে উপস্থিত হয়ে পৌলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করলেন। \v 3 তাঁরা ফীষ্টের কাছে জরুরি অনুরোধ জানালেন যে, তাঁদের প্রতি অনুগ্রহ দেখিয়ে পৌলকে যেন জেরুশালেমে স্থানান্তরিত করা হয় কারণ তাঁরা পথের মধ্যেই পৌলকে হত্যা করার জন্য ওত পাতার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। \v 4 ফীষ্ট উত্তর দিলেন, “পৌল কৈসরিয়াতে বন্দি আছে, আমিও স্বয়ং শীঘ্রই সেখানে যাচ্ছি। \v 5 তোমাদের কয়েকজন নেতা আমার সঙ্গে আসুক, সেই লোকটি কোনো অন্যায় করে থাকলে, তোমরা সেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করবে।” \p \v 6 সেখানে তাঁদের সঙ্গে আট-দশদিন কাটিয়ে, তিনি কৈসরিয়ায় চলে গেলেন। পরের দিনই তিনি বিচারসভা আহ্বান করলেন এবং আদেশ দিলেন যেন পৌলকে তাঁর সামনে নিয়ে আসা হয়। \v 7 পৌল উপস্থিত হলে, জেরুশালেম থেকে আগত ইহুদিরা তাঁর চারপাশে দাঁড়াল। তারা তাঁর বিরুদ্ধে বহু গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করতে লাগল, কিন্তু কোনো প্রমাণ দিতে পারল না। \p \v 8 তখন পৌল আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন: “আমি ইহুদিদের বিধানের বিরুদ্ধে বা মন্দিরের বিরুদ্ধে বা কৈসরের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় করিনি।” \p \v 9 ফীষ্ট ইহুদিদের প্রতি সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশে পৌলকে বললেন, “তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে এসব অভিযোগের জন্য আমার সামনে বিচারের জন্য দাঁড়াতে চাও?” \p \v 10 পৌল উত্তর দিলেন, “আমি এখন কৈসরের বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে আছি, আমার বিচার এখানেই হওয়া উচিত। আপনি স্বয়ং ভালোভাবেই জানেন যে, আমি ইহুদিদের প্রতি কোনও অন্যায় করিনি। \v 11 তা সত্ত্বেও, যদি আমি মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য কোনো অপরাধ করে থাকি, তাহলে মৃত্যুবরণ করতে অস্বীকার করি না। কিন্তু ইহুদিদের দ্বারা নিয়ে আসা এসব অভিযোগ যদি সত্যি না হয়, তাহলে আমাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমি কৈসরের কাছে আপিল করছি।” \p \v 12 ফীষ্ট তাঁর মন্ত্রণা-পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই রায় ঘোষণা করলেন, “তুমি কৈসরের কাছে আপিল করেছ, তুমি কৈসরের কাছেই যাবে।” \s1 রাজা আগ্রিপ্পের সঙ্গে ফীষ্টের পরামর্শ \p \v 13 কয়েক দিন পর রাজা আগ্রিপ্প ও বার্নিস, ফীষ্টকে তাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য কৈসরিয়ায় উপস্থিত হলেন। \v 14 সেখানে তাঁরা বেশ কিছুদিন কাটানোর সময়, ফীষ্ট রাজার সঙ্গে পৌলের বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, “এখানে এক ব্যক্তি আছে, যাকে ফীলিক্স বন্দি রেখে গেছেন। \v 15 আমি যখন জেরুশালেমে গেলাম, প্রধান যাজকেরা ও ইহুদিদের প্রাচীনেরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তার শাস্তি চেয়েছিল। \p \v 16 “আমি তাদের বললাম যে, কোনো মানুষকে সমর্পণ করা রোমীয়দের প্রথা নয়, যতক্ষণ না সে তার অভিযোগকারীদের সম্মুখীন হয় ও তাদের উত্থাপিত অভিযোগের বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করে। \v 17 তারা যখন এখানে আমার সঙ্গে এল, আমি মামলাটি নিয়ে দেরি করলাম না, পরের দিনই বিচারসভা আহ্বান করে সেই ব্যক্তিকে নিয়ে আসার আদেশ দিলাম। \v 18 অভিযোগকারীরা কথা বলতে উঠে দাঁড়ালে, আমি যে রকম আশা করেছিলাম, তারা সে ধরনের কোনও অভিযোগ উত্থাপন করল না। \v 19 বরং, তারা তাদের নিজস্ব ধর্ম-সংক্রান্ত বিষয় এবং যীশু নামে এক মৃত ব্যক্তি যাকে পৌল জীবিত বলে দাবি করে, সেই নিয়ে তার সঙ্গে তর্কবিতর্কের প্রসঙ্গ উত্থাপন করল। \v 20 এ ধরনের বিষয় কীভাবে অনুসন্ধান করতে হবে, তা বুঝতে না পেরে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এসব অভিযোগের বিচারের জন্য সে জেরুশালেম যেতে ইচ্ছুক কি না। \v 21 পৌল যখন সম্রাটের সিদ্ধান্ত লাভের জন্য আপিল করল, কৈসরের কাছে না পাঠানো পর্যন্ত আমি তাকে বন্দি করে রাখারই আদেশ দিলাম।” \p \v 22 তখন আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, “আমি নিজে এই লোকটির কথা শুনতে চাই।” \p তিনি উত্তর দিলেন, “আগামীকালই আপনি তার কথা শুনবেন।” \s1 আগ্রিপ্পের সামনে পৌল \p \v 23 পরদিন আগ্রিপ্প ও বার্নিস, মহাসমারোহের সঙ্গে সেখানে এলেন ও উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদের ও নগরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সভাকক্ষে প্রবেশ করলেন। ফীষ্টের আদেশে পৌলকে সেখানে নিয়ে আসা হল। \v 24 ফীষ্ট বললেন, “মহারাজ আগ্রিপ্প ও আমাদের সঙ্গে উপস্থিত সকলে, আপনারা এই ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছেন! সমস্ত ইহুদি সম্প্রদায় জেরুশালেমে ও এখানে এই কৈসরিয়ায় আমার কাছে এর বিরুদ্ধে আবেদন করেছে, চিৎকার করে বলেছে যে এর আর বেঁচে থাকা উচিত নয়। \v 25 আমি দেখেছি, এ মৃত্যুদণ্ড পেতে পারে এমন কোনো অপরাধ করেনি, কিন্তু যেহেতু সে সম্রাটের কাছে তার আপিল করেছে, আমি তাকে রোমে পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। \v 26 কিন্তু মাননীয় সম্রাটের কাছে তার সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে লেখার কিছু নেই। সেই কারণে, তাকে আমি আপনাদের সকলের কাছে, বিশেষভাবে মহারাজ আগ্রিপ্প, আপনার কাছে নিয়ে এসেছি, যেন এই তদম্তের ফলে আমি তার বিষয়ে লেখার মতো কিছু পাই। \v 27 কারণ আমি মনে করি, কোনো বন্দির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া তাকে রোমে পাঠানো যুক্তিসম্মত নয়।” \c 26 \p \v 1 তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, “তোমার স্বপক্ষে বক্তব্য পেশ করার জন্য তোমাকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।” \p তখন পৌল তাঁর হাত প্রসারিত করে তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থন শুরু করলেন: \v 2 “মহারাজ আগ্রিপ্প, ইহুদিদের সমস্ত অভিযোগের বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করার উদ্দেশ্যে, আজ আপনার সামনে দাঁড়াতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। \v 3 আর বিশেষ করে এজন্য যে, আপনি ইহুদিদের সমস্ত রীতিনীতি ও মতবিরোধগুলির সঙ্গে বিশেষভাবে পরিচিত। সেই কারণে, ধৈর্যের সঙ্গে আমার বক্তব্য শোনার জন্য আমি আপনাকে অনুরোধ করছি। \p \v 4 “শৈশবকাল থেকে, আমার জীবনের প্রথমদিকে, আমার নিজের নগরে ও জেরুশালেমে আমি কীভাবে জীবনযাপন করেছি ইহুদিরা তা সকলেই জানে। \v 5 দীর্ঘকাল যাবৎ তারা আমাকে জানে ও ইচ্ছা করলে সাক্ষ্যও দিতে পারে যে, আমাদের ধর্মের মধ্যে পরম নিষ্ঠাবান সম্প্রদায়, একজন ফরিশীরূপে আমি জীবনযাপন করতাম। \v 6 আর এখন, ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দান করেছিলেন, তারই উপর আমার প্রত্যাশার জন্য, আজ আমি বিচারের সম্মুখীন হয়েছি। \v 7 আমাদের বারো গোষ্ঠী সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হওয়ার প্রত্যাশায় আগ্রহভরে দিনরাত ঈশ্বরের সেবা করে আসছে। মহারাজ, এই প্রত্যাশার জন্যই ইহুদিরা আমাকে অভিযুক্ত করেছে। \v 8 ঈশ্বর মৃতজনকে উত্থাপিত করেন, কেন একথা বিশ্বাস করা আপনাদের কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়? \p \v 9 “আমারও দৃঢ় বিশ্বাস ছিল এই যে, নাসরতের যীশুর নামের প্রতিরোধে যা কিছু করা সম্ভবপর, সে সবকিছু করাই আমার কর্তব্য। \v 10 আর জেরুশালেমে ঠিক সেই কাজই আমি করেছিলাম। প্রধান যাজকদের দেওয়া অধিকারবলে আমি অনেক পবিত্রগণকে কারাগারে বন্দি করেছি। যখন তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত, তখন আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার মত দিয়েছি। \v 11 অনেক সময় আমি এক সমাজভবন থেকে অন্য সমাজভবনে তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য গিয়েছি, তাদের উপরে বলপ্রয়োগ করেছি, যেন তারা ঈশ্বরনিন্দা করে। তাদের বিরুদ্ধে ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে আমি তাদের অত্যাচার করার জন্য পরজাতীয় নগরগুলি পর্যন্তও গিয়েছিলাম। \p \v 12 “এরকমই এক যাত্রাকালে, আমি প্রধান যাজকদের কাছ থেকে অধিকার ও অনুমতিপত্র নিয়ে দামাস্কাসে যাচ্ছিলাম। \v 13 মহারাজ, প্রায় দুপুরবেলায়, যখন আমি মাঝপথে ছিলাম, আকাশ থেকে এক আলো দেখলাম। তা ছিল সূর্য থেকেও উজ্জ্বল, আমার ও আমার সঙ্গীদের চারপাশে তা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। \v 14 আমরা সবাই মাটিতে পড়ে গেলাম। আমি একটি কণ্ঠস্বর শুনলাম, যা হিব্রু ভাষায় আমাকে বলছিল, ‘শৌল, শৌল, তুমি কেন আমাকে নির্যাতন করছ? কাঁটার মুখে লাথি মারা তোমার পক্ষে কঠিন।’ \p \v 15 “তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’ \p “ ‘আমি যীশু, যাঁকে তুমি নির্যাতন করছ,’ প্রভু উত্তর দিলেন। \v 16 ‘এখন ওঠো ও তোমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও। আমি তোমাকে আমার সেবক নিযুক্ত করার জন্য তোমাকে দর্শন দিয়েছি। আমার বিষয়ে তুমি যা দেখেছ ও আমি তোমাকে যা দেখাব, তুমি তার সাক্ষী হবে। \v 17 আমি তোমার স্বজাতি ও অইহুদিদের হাত থেকে তোমাকে উদ্ধার করব। আমি তোমাকে তাদের কাছে পাঠাচ্ছি, \v 18 তুমি তাদের চোখ খুলে দেবে, অন্ধকার থেকে তাদের আলোয় ফিরিয়ে আনবে, শয়তানের পরাক্রম থেকে নিয়ে আসবে ঈশ্বরের কাছে, যেন তারা সব পাপের ক্ষমা লাভ করে এবং আমার উপরে বিশ্বাসের মাধ্যমে যারা পবিত্র হয়েছে, তাদের মধ্যে স্থান লাভ করতে পারে।’ \p \v 19 “সেই কারণে, মহারাজ আগ্রিপ্প, আমি স্বর্গীয় এই দর্শনের অবাধ্য হইনি। \v 20 প্রথমে দামাস্কাসবাসীদের কাছে, পরে জেরুশালেম ও সমগ্র যিহূদিয়ার অধিবাসীদের কাছে এবং অইহুদিদের কাছেও আমি প্রচার করলাম, যেন তারা মন পরিবর্তন করে ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসে ও তাদের কাজ দিয়ে তাদের অনুতাপের প্রমাণ দেয়। \v 21 এই কারণেই ইহুদিরা আমাকে মন্দির চত্বরে পাকড়াও করে ও আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। \v 22 কিন্তু আজ, এই দিন পর্যন্ত, আমি ঈশ্বরের সহায়তা লাভ করে এসেছি। সেই কারণেই আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে ছোটো-বড়ো নির্বিশেষে সব মানুষের কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছি। ভাববাদীরা ও মোশি যা ঘটবার কথা বলে গেছেন, তার বাইরে আমি কোনো কথাই বলছি না— \v 23 মশীহকে কষ্টভোগ করতে হবে এবং মৃতলোক থেকে সর্বপ্রথম উত্থাপিত বলে, তিনি তাঁর স্বজাতি ও অইহুদিদেরও কাছে আলোর বার্তা ঘোষণা করবেন।” \p \v 24 এই সময়ে ফীষ্ট পৌলের আত্মপক্ষ সমর্থনে বাধা দিয়ে বললেন, “পৌল, তোমার বুদ্ধিভ্রম হয়েছে। তোমার অত্যধিক জ্ঞান তোমাকে পাগল করে তুলেছে।” \p \v 25 পৌল উত্তর দিলেন, “মহামান্য ফীষ্ট, আমি পাগল নই। আমি যা বলছি, তা সত্য ও যুক্তিগ্রাহ্য। \v 26 রাজা এসব বিষয়ে পরিচিত ও তাঁর কাছে আমি স্বচ্ছন্দে কথা বলতে পারি। আমি দৃঢ়রূপে বিশ্বাস করি, এর কোনো কিছুই তাঁর দৃষ্টি এড়ায়নি, কারণ তা কোণে\f + \fr 26:26 \fr*\ft ঘরের\ft*\f* করা হয়নি। \v 27 মহারাজ আগ্রিপ্প, আপনি কি ভাববাদীদের বিশ্বাস করেন? আমি জানি, আপনি করেন।” \p \v 28 আগ্রিপ্প তখন পৌলকে বললেন, “তুমি কি মনে করো যে, এই অল্প সময়ের মধ্যেই তুমি আমাকে খ্রীষ্টিয়ান করে তুলবে?” \p \v 29 পৌল উত্তর দিলেন, “অল্প সময়ে হোক, বা বেশি—আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, শুধুমাত্র আপনি নন, কিন্তু যারা আজ আমার কথা শুনছেন, কেবলমাত্র এই শিকলটুকু ছাড়া তারা সবাই যেন আমারই মতো হতে পারেন।” \p \v 30 রাজা উঠে দাঁড়ালেন ও তাঁর সঙ্গে প্রদেশপাল, বার্নিস ও তাদের সঙ্গে বসে থাকা সকলে উঠলেন। \v 31 তাঁরা সেই ঘর ত্যাগ করলেন ও পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করার সময়ে বললেন, “এই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা কারাগারে বন্দি হওয়ার যোগ্য কিছুই করেনি।” \p \v 32 আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, “কৈসরের কাছে আপিল না করলে এই ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া যেত।” \c 27 \s1 রোমের উদ্দেশে পৌলের যাত্রা \p \v 1 যখন স্থির হল যে আমরা জাহাজে করে ইতালি যাত্রা করব, পৌল ও আরও কয়েকজন বন্দিকে সম্রাট অগাস্টাসের সৈন্যদলের একজন শত-সেনাপতি জুলিয়াসের হাতে সমর্পণ করা হল। \v 2 আমরা আদ্রামুত্তিয়ামের একটি জাহাজে উঠলাম, যেটা এশিয়া প্রদেশের উপকূলবর্তী বিভিন্ন বন্দরে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত ছিল। আমরা সমুদ্রযাত্রা শুরু করলাম। থিষলনিকা থেকে আসা আরিষ্টার্খ নামে একজন ম্যাসিডোনিয়াবাসী আমাদের সঙ্গে ছিলেন। \p \v 3 পরের দিন, আমরা সীদোনে পৌঁছালাম। জুলিয়াস পৌলের প্রতি দয়া দেখিয়ে বন্ধুদের কাছে তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দিলেন, যেন তারা তাঁর সব প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাতে পারে। \v 4 সেখান থেকে আমরা আবার সমুদ্রযাত্রা শুরু করলাম এবং বাতাস যেহেতু আমাদের প্রতিকূলে বইছিল, আমরা সাইপ্রাস দ্বীপের আড়ালে আড়ালে যেতে লাগলাম। \v 5 যখন আমরা কিলিকিয়া ও পাম্ফুলিয়া উপকূলের সম্মুখবর্তী সমুদ্র অতিক্রম করলাম, আমরা লুসিয়া প্রদেশের ম্যুরা নামক স্থানে পৌঁছালাম। \v 6 সেখানে একটি আলেকজান্দ্রীয় জাহাজকে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করতে দেখে শত-সেনাপতি আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন। \v 7 বহুদিন যাবৎ ধীর গতিতে চলার পর আমরা কষ্টের সঙ্গে ক্নীদের কাছে এসে পৌঁছালাম। বাতাস যখন আমাদের নির্ধারিত পথে যাত্রা করতে দিল না, আমরা সলমোনির বিপরীত দিকে ক্রীট দ্বীপের আড়ালে আড়ালে পাড়ি দিলাম। \v 8 কষ্ট করে উপকূল বরাবর যেতে যেতে, আমরা লাসেয়া নগরের কাছে সুন্দর পোতাশ্রয় নামে একটি স্থানে এসে পৌঁছালাম। \p \v 9 এভাবে অনেক সময় নষ্ট হয়েছিল। উপবাস-পর্ব\f + \fr 27:9 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায়শ্চিত্তের দিন। (হিব্রু: ইয়ম-কিপ্পুর)\ft*\f* শেষ হওয়ার পরে সমুদ্রযাত্রা বিপদসংকুল হয়ে উঠেছিল। তাই পৌল তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, \v 10 “মহাশয়েরা, আমি দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সমুদ্রযাত্রা দুর্দশাজনক হবে, জাহাজ ও মালপত্রের প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি হবে, আবার আমাদেরও প্রাণসংশয় হতে পারে।” \v 11 কিন্তু শত-সেনাপতি, পৌলের কথায় কান না দিয়ে, নাবিকের ও জাহাজের মালিকের পরামর্শ মেনে চললেন। \v 12 যেহেতু বন্দরটি শীতকাল কাটানোর জন্য উপযুক্ত ছিল না তাই অধিকাংশ লোকই সমুদ্রযাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। তারা আশা করছিল যে ফিনিক্সে পৌঁছে সেখানে শীতকাল কাটাবে। সেটা ছিল ক্রীটের একটি বন্দর, যার দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দুই দিকই ছিল খোলা। \s1 ঝড়ের কবলে \p \v 13 যখন দক্ষিণ দিক থেকে হালকা এক বাতাস বইতে লাগল, তারা ভাবল যে তারা যা চেয়েছিল তাই হয়েছে। ফলে তারা নোঙর তুলে ক্রীটের উপকূল বরাবর যাত্রা করল। \v 14 কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই উরাকুলো\f + \fr 27:14 \fr*\ft শব্দটি গ্রিক, যার অর্থ, ঈশান-কোণ (উত্তর-পূর্ব) থেকে প্রবাহিত বাতাস।\ft*\f* নামে প্রচণ্ড এক ঘূর্ণিঝড় দ্বীপের দিক থেকে আছড়ে পড়ল। \v 15 জাহাজটি ঝড়ের মুখে পড়ল এবং বাতাসের মধ্য দিয়ে যেতে পারল না। তাই আমরা তা ভেসে যেতে দিলাম। \v 16 যখন আমরা কৌদা নামের ছোটো একটি দ্বীপের আড়াল দিয়ে যাচ্ছিলাম, আমরা অনেক কষ্টে জাহাজের জীবন-রক্ষাকারী নৌকাটি নিজেদের আয়ত্তে আনতে পারলাম। \v 17 মাঝিমাল্লারা যখন সেটাকে পাটাতনের উপরে তুলল, তারা নিচ থেকে দড়ি দিয়ে সেটাকে জাহাজের সঙ্গে বাঁধল। সূর্তির বালির চড়ায় আটকে পড়ার ভয়ে তারা সমুদ্রে নোঙর নামিয়ে দিল এবং জাহাজটিকে ভেসে যেতে দিল। \v 18 আমরা ঝড়ের এমন প্রচণ্ড দাপটের মুখে পড়লাম যে পরের দিন তারা জাহাজের মালপত্র ফেলে দিতে লাগল। \v 19 তৃতীয় দিনে তারা নিজের হাতে জাহাজের সাজসরঞ্জাম জলে ফেলে দিল। \v 20 যখন অনেকদিন পর্যন্ত সূর্য বা আকাশের তারা দেখা গেল না এবং ঝড়ের তাণ্ডব অব্যাহত রইল, আমরা বেঁচে থাকার সব আশা ছেড়ে দিলাম। \p \v 21 লোকেরা অনেকদিন অনাহারে থাকার পর, পৌল তাদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “মহাশয়েরা, আমার পরামর্শ গ্রহণ করে ক্রীট থেকে আপনাদের যাত্রা না করাই উচিত ছিল; তাহলে আপনাদের এই ক্ষয়ক্ষতি হত না। \v 22 কিন্তু এখন আমি আপনাদের অনুনয় করছি, আপনারা সাহস রাখুন, কারণ আপনাদের কারও প্রাণহানি হবে না, কেবলমাত্র জাহাজটি ধ্বংস হবে। \v 23 আমি যে ঈশ্বরের দাস ও আমি যাঁর উপাসনা করি, তাঁর এক দূত গত রাত্রে আমার পাশে দাঁড়িয়ে \v 24 বললেন, ‘পৌল, তুমি ভয় পেয়ো না। তোমাকে কৈসরের সামনে বিচারের জন্য উপস্থিত হতেই হবে। আর ঈশ্বর দয়া করে যারা তোমার সঙ্গে সমুদ্রযাত্রা করছে, তাদের সকলের জীবন তোমায় দান করেছেন।’ \v 25 সেই কারণে মহাশয়েরা সাহস রাখুন, কারণ ঈশ্বরের উপরে আমার বিশ্বাস আছে যে, তিনি আমার কাছে যেমন ব্যক্ত করেছেন, তেমনই ঘটবে। \v 26 তবুও, আমাদের কোনো দ্বীপে গিয়ে উঠতেই হবে।” \s1 জাহাজডুবি \p \v 27 চোদ্দো দিন পরে রাত্রিবেলায়, আমরা তখনও আদ্রিয়া সমুদ্রের উপর দিয়ে ভেসে চলেছি, এমন সময়ে, প্রায় মাঝরাতে, নাবিকরা অনুমান করল যে তারা কোনও ডাঙার কাছাকাছি এসে পড়েছে। \v 28 তারা মেপে দেখল যে, জলের গভীরতা একশো কুড়ি ফুট\f + \fr 27:28 \fr*\ft গ্রিক, 20 অর্গিয়াস। (প্রায় 37 মিটার)\ft*\f*। অল্প কিছুক্ষণ পরে তারা আবার মেপে দেখল, জলের গভীরতা নব্বই ফুট\f + \fr 27:28 \fr*\ft গ্রিক, 15 অর্গিয়াস। (প্রায় 27 মিটার)\ft*\f*। \v 29 পাথরের গায়ে আছড়ে পরার ভয়ে তারা জাহাজের পিছন দিক থেকে চারটি নোঙর ফেলে দিয়ে দিনের আলোর জন্য প্রার্থনা করতে লাগল। \v 30 আর জাহাজ থেকে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে নাবিকেরা জাহাজের সামনের দিকে কয়েকটি নোঙর নামিয়ে দেওয়ার ছল করল ও সমুদ্রে জীবন-রক্ষাকারী নৌকাটিকে নামিয়ে দিল। \v 31 পৌল তখন শত-সেনাপতি ও সৈন্যদের বললেন, “এই লোকেরা জাহাজে না থাকলে আপনারা কিছুতেই রক্ষা পাবেন না।” \v 32 তখন সৈন্যরা নৌকার দড়ি কেটে দিয়ে সেটাকে জলে পড়ে যেতে দিল। \p \v 33 ভোরের ঠিক আগে, পৌল তাদের সবাইকে কিছু খেয়ে নেওয়ার জন্য অনুনয় করলেন। তিনি বললেন, “গত চোদ্দো দিন যাবৎ আপনারা ক্রমাগত উদ্বেগের মধ্যে আছেন এবং অনাহারে কাটিয়েছেন, আপনারা কিছুই আহার করেননি। \v 34 এখন কিছু খাওয়ার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। বেঁচে থাকার জন্য আপনাদের খাবার প্রয়োজন আছে। আপনাদের একজনের মাথার একটি চুলও নষ্ট হবে না।” \v 35 একথা বলার পর, তিনি কিছু রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর তা ভেঙে তিনি খেতে লাগলেন। \v 36 এতে তারা সকলেই উৎসাহিত হয়ে কিছু কিছু খাবার গ্রহণ করল। \v 37 জাহাজে আমরা সর্বমোট দুশো ছিয়াত্তর জন ছিলাম। \v 38 তারা যখন নিজেদের ইচ্ছামতো পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করল, তারা খাদ্যশস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজের ভার হালকা করল। \p \v 39 দিনের আলো ফুটে উঠলে তারা জায়গাটা চিনতে পারল না। কিন্তু তারা একটি উপসাগর দেখতে পেল, যার তীর বালিতে ভর্তি ছিল। তারা স্থির করল, সম্ভব হলে তারা জাহাজটিকে চড়ায় আটকে দেবে। \v 40 নোঙরগুলি কেটে দিয়ে তারা সেগুলি সমুদ্রে ফেলে দিল। সেই সঙ্গে তারা হালের সঙ্গে বাঁধা দড়িগুলিও খুলে দিল। এরপর তারা বাতাসের অনুকূলে পাল তুলে দিয়ে তীরের দিকে এগিয়ে চলল। \v 41 কিন্তু জাহাজ একটি বালির চড়ায় ধাক্কা মারল এবং আটকে গেল। জাহাজের সামনের দিকটি জোরে ধাক্কা মারল ও তা অচল হয়ে গেল। কিন্তু পিছনের দিকটি ঢেউয়ের প্রবল আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। \p \v 42 বন্দিরা কেউ যেন সাঁতার কেটে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য সৈন্যরা তাদের হত্যা করার পরামর্শ করল। \v 43 কিন্তু শত-সেনাপতি পৌলের প্রাণ বাঁচানোর ইচ্ছায় তাদের সেই পরিকল্পনা কার্যকর হতে দিলেন না। তিনি আদেশ দিলেন, যারা সাঁতার জানে, প্রথমে তারাই যেন জলে ঝাঁপ দিয়ে তীরে ওঠে। \v 44 অবশিষ্ট সকলে যেন তক্তা বা জাহাজের ভাঙা অংশ নিয়ে সেখানে পৌঁছায়। এভাবে প্রত্যেকেই নিরাপদে তীরে পৌঁছে গেল। \c 28 \s1 মাল্টা দ্বীপে পৌল \p \v 1 এভাবে নিরাপদে তীরে পৌঁছানোর পর, আমরা জানতে পারলাম যে সেই দ্বীপের নাম মাল্টা। \v 2 সেই দ্বীপের অধিবাসীরা আমাদের প্রতি অসাধারণ সহানুভূতি দেখাল। সেই সময় বৃষ্টি পড়ছিল এমনকি শীতও পড়েছিল, তাই তারা আগুন জ্বেলে আমাদের সবাইকে অভ্যর্থনা জানাল। \v 3 পৌল এক বোঝা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে ওই আগুনে দেওয়ামাত্র, আগুনের তাপে একটি বিষধর সাপ বেরিয়ে এসে তাঁর হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। \v 4 দ্বীপের অধিবাসীরা যখন দেখল যে সাপটি তাঁর হাতে ঝুলছে, তারা পরস্পরকে বলতে লাগল, “এই ব্যক্তি নিশ্চয়ই একজন খুনি। কারণ সমুদ্রের কবল থেকে এ রক্ষা পেলেও দেবতার বিচারে ও প্রাণে বাঁচবে না।” \v 5 কিন্তু পৌল সাপটিকে আগুনে ঝেড়ে ফেলে দিলেন, আর তাঁর কোনো ক্ষতি হল না। \v 6 লোকেরা ভাবছিল, তিনি ফুলে উঠবেন বা হঠাৎই মারা গিয়ে মাটিতে পড়ে যাবেন, কিন্তু দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করেও কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা তাঁর প্রতি ঘটতে না দেখে, তারা তাদের মত বদল করে বলল যে, তিনি একজন দেবতা। \p \v 7 কাছেই ছিল সেই দ্বীপের প্রধান কর্মকর্তা পুব্লিয়ের জমিজায়গা। তিনি আমাদের তাঁর বাড়িতে স্বাগত জানালেন এবং তিন দিন যাবৎ আমাদের অতিথি আপ্যায়ন করলেন। \v 8 তাঁর বাবা জ্বর ও আমাশয়রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন। পৌল তাঁকে দেখতে ভিতরে গেলেন এবং প্রার্থনা করার পর তাঁর উপরে হাত রেখে তাঁকে সুস্থ করলেন। \v 9 এ ঘটনা ঘটার পর, সেই দ্বীপের অন্যান্য রোগীরাও এসে সুস্থতা লাভ করল। \v 10 তারা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের সমাদর করল এবং যখন আমরা সমুদ্রযাত্রার জন্য প্রস্তুত হলাম, আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু তারা সরবরাহ করল। \s1 পৌল রোমে পৌঁছালেন \p \v 11 তিন মাস পরে আমরা একটি জাহাজে করে যাত্রা শুরু করলাম। সেই জাহাজ ওই দ্বীপেই শীতকাল কাটাচ্ছিল। সেটা ছিল একটি আলেকজান্দ্রীয় জাহাজ, যার সামনে খোদাই করা ছিল ক্যাস্টর ও পোল্লাক্স, দুই যমজ দেবতার মূর্তি। \v 12 আমরা সুরাকুষে জাহাজ লাগিয়ে সেখানে তিন দিন থাকলাম। \v 13 সেখান থেকে আমরা সমুদ্রযাত্রা করে রিগিয়ামে পৌঁছালাম। পরের দিন দক্ষিণ দিক থেকে বাতাস বইতে লাগল এবং তার পরের দিন আমরা পুতিয়লিতে পৌঁছালাম। \v 14 সেখানে আমরা কয়েকজন বিশ্বাসীর\f + \fr 28:14 \fr*\ft গ্রিক: ভাইয়ের\ft*\f* সন্ধান পেলাম, তাঁরা তাঁদের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটানোর জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানালেন। এভাবে আমরা রোমে পৌঁছালাম। \v 15 সেখানকার ভাইবোনরা\f + \fr 28:15 \fr*\ft গ্রিক: ভাইয়েরা\ft*\f* আমাদের আসার খবর শুনতে পেয়েছিলেন, তাই আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য তাঁরা সুদূর আপ্পিয়ের হাট ও ত্রি-পান্থনিবাস পর্যন্ত এলেন। তাঁদের দেখে পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন ও উৎসাহিত হলেন। \v 16 যখন আমরা রোমে পৌঁছালাম, পৌলকে স্বতন্ত্রভাবে বাস করার অনুমতি দেওয়া হল যদিও একজন সৈন্য তাঁকে পাহারা দিত। \s1 রোমে পাহারাধীন অবস্থায় পৌলের প্রচার \p \v 17 তিন দিন পরে তিনি ইহুদিদের নেতৃবৃন্দকে একত্র হওয়ার জন্য আহ্বান করলেন। তাঁরা সমবেত হলে পৌল তাঁদের বললেন, “হে আমার ভাইয়েরা, যদিও স্বজাতির বিরুদ্ধে বা আমাদের পিতৃপুরুষদের রীতিনীতির বিরুদ্ধে আমি কিছুই করিনি, তবুও আমাকে জেরুশালেমে গ্রেপ্তার করে রোমীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। \v 18 তারা আমাকে জেরা করার পর মুক্তি দিতে চেয়েছিল, কারণ মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য কোনো অপরাধই আমি করিনি। \v 19 কিন্তু ইহুদিরা যখন আপত্তি করল, আমি কৈসরের কাছে অনুরোধ জানাতে বাধ্য হলাম। এমন নয় যে স্বজাতির লোকদের দোষারোপ করার মতো আমার কোনও অভিযোগ ছিল। \v 20 এই কারণে, আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ও কথা বলতে চেয়েছি। ইস্রায়েলের প্রত্যাশার জন্যই আমি এই শিকলে বন্দি হয়েছি।” \p \v 21 তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা আপনার সম্পর্কে যিহূদিয়া থেকে কোনও পত্র পাইনি। সেখান থেকে আসা কোনও ব্যক্তি\f + \fr 28:21 \fr*\ft গ্রিক: ভাই\ft*\f* আপনার বিষয়ে কোনো খারাপ সংবাদ দেয়নি বা কোনো খারাপ কথা বলেনি। \v 22 কিন্তু আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী প্রকার তা আমরা শুনতে চাই, কারণ আমরা জানি, সর্বত্র লোকেরা এই দলের বিরুদ্ধে কথা বলে।” \p \v 23 পৌলের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তাঁরা একটি দিন স্থির করলেন। পৌল যেখানে বসবাস করছিলেন, তাঁরা আরও বেশি সংখ্যায় সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তাঁদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা ও প্রচার করলেন। তিনি মোশির বিধান ও ভাববাদীদের গ্রন্থ থেকে যীশুর বিষয়ে তাঁদের মনে বিশ্বাস জাগানোর চেষ্টা করলেন। \v 24 তিনি যা বললেন, তা শুনে কেউ কেউ বিশ্বাস করলেন, কিন্তু অন্যরা বিশ্বাস করলেন না। \v 25 তাঁদের নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ হওয়ায় তাঁরা সেই স্থান ত্যাগ করতে লাগলেন, যখন পৌল তাঁর সর্বশেষ মন্তব্য করলেন, “পবিত্র আত্মা আপনাদের পিতৃপুরুষদের কাছে সত্য ঘোষণা করেছিলেন, যখন তিনি ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে বলেছিলেন, \q1 \v 26 “ ‘তুমি এই জাতির কাছে যাও ও বলো, \q1 “তোমরা সবসময়ই শুনতে থাকবে, \q2 কিন্তু কখনও বুঝতে পারবে না; \q2 তোমরা সবসময়ই দেখতে থাকবে, কিন্তু কখনও উপলব্ধি করবে না।” \q1 \v 27 কারণ এই লোকেদের হৃদয় অনুভূতিহীন হয়েছে, \q2 তারা কদাচিৎ তাদের কান দিয়ে শোনে, \q2 তারা তাদের চোখ মুদ্রিত করেছে। \q1 অন্যথায়, তারা হয়তো তাদের চোখ দিয়ে দেখবে, \q2 তাদের কান দিয়ে শুনবে, \q2 তাদের মন দিয়ে বুঝবে, \q2 ও ফিরে আসবে \q1 যেন আমি তাদের আরোগ্য দান করি।’\f + \fr 28:27 \fr*\ft \+xt যিশাইয় 6:9,10\+xt*\ft*\f* \p \v 28 “সেই কারণে, আমি আপনাদের বলতে চাই যে, ঈশ্বরের পরিত্রাণ অইহুদিদের কাছে পাঠানো হয়েছে, আর তারা তা শুনবে।” \v 29 তিনি একথা বলার পর, ইহুদিরা নিজেদের মধ্যে তুমুল তর্কবিতর্ক করতে করতে সেই স্থান ত্যাগ করল।\f + \fr 28:29 \fr*\ft কয়েকটি প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে 29 পদের কথাগুলি যুক্ত করা হয়নি\ft*\f* \p \v 30 সম্পূর্ণ দু-বছর পৌল সেখানে তাঁর নিজস্ব ভাড়াবাড়িতে রইলেন। যারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসত, তাদের সকলকে তিনি স্বাগত জানাতেন। \v 31 সাহসের সঙ্গে তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে প্রচার করতেন এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে শিক্ষা দিতেন। কেউ তাঁকে বাধা দিত না।