\id 2SA - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h 2 শমূয়েল \toc1 শমূয়েলের দ্বিতীয় পুস্তক \toc2 2 শমূয়েল \toc3 2শমূ \mt1 শমূয়েলের দ্বিতীয় পুস্তক \c 1 \s1 দাউদ শৌলের মৃত্যুর খবর পান \p \v 1 শৌলের মৃত্যুর পর, দাউদ অমালেকীয়দের বধ করে ফিরে আসার পর সিক্লগে দু-দিন কাটিয়েছিলেন। \v 2 তৃতীয় দিনে শৌলের সৈন্যশিবির থেকে ছিন্নবস্ত্রে ও মাথায় ধুলো মেখে একটি লোক সেখানে পৌঁছেছিল। দাউদের কাছে এসে সে তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য মাটিতে উবুড় হয়ে পড়েছিল। \p \v 3 “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। \p সে উত্তর দিয়েছিল, “আমি ইস্রায়েলী সৈন্যশিবির থেকে পালিয়ে এসেছি।” \p \v 4 “কী হয়েছে?” দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন। “আমায় বলো।” \p “লোকজন যুদ্ধস্থল থেকে পালিয়েছে,” সে উত্তর দিয়েছিল। “তাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছে। শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনও মারা গিয়েছেন।” \p \v 5 যে যুবকটি দাউদের কাছে এই খবরটি এনেছিল তাকে তখন দাউদ বললেন, “তুমি কী করে জানলে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথন মারা গিয়েছেন?” \p \v 6 “ঘটনাচক্রে আমি গিলবোয় পাহাড়ে ছিলাম,” যুবকটি বলল, “আর শৌল তখন সেখানে তাঁর বর্শার উপর হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, আর রথ ও সেগুলির সারথিরা বীর-বিক্রমে তাঁর পিছু ধাওয়া করল। \v 7 তিনি যখন এদিক-ওদিক চেয়ে আমাকে দেখতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি আমায় ডাক দিলেন, ও আমি বললাম, ‘আমি কী করতে পারি?’ \p \v 8 “তিনি আমায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কে?’ \p “ ‘একজন অমালেকীয়,’ আমি উত্তর দিয়েছিলাম। \p \v 9 “পরে তিনি আমায় বললেন, ‘আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে হত্যা করো! আমি মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছি, কিন্তু আমি এখনও বেঁচে আছি।’ \p \v 10 “তাই আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে হত্যা করলাম, যেহেতু আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে পড়ে যাওয়ার পর তাঁর পক্ষে আর কোনোভাবেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আর আমি তাঁর মাথার মুকুটটি ও তাঁর হাতের বাজুটি খুলে নিয়ে সেগুলি এখানে আমার প্রভু আপনার কাছে এনেছি।” \p \v 11 তখন দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজন নিজেদের পোশাক ধরে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। \v 12 সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা শৌলের ও তাঁর ছেলে যোনাথনের, ও সদাপ্রভুর সৈন্যদলের এবং ইস্রায়েল জাতির জন্য শোকপ্রকাশ করে কেঁদেছিলেন ও উপবাস করলেন, কারণ তারা তরোয়ালের আঘাতে মারা পড়েছিলেন। \p \v 13 যে ছেলেটি দাউদের কাছে এই খবরটি এনেছিল, তিনি তাকে বললেন, “তুমি কোথাকার লোক?” \p “আমি এক বিদেশির ছেলে, একজন অমালেকীয়,” সে উত্তর দিয়েছিল। \p \v 14 দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিকে মেরে ফেলার জন্য হাত উঠাতে কেন তোমার ভয় করল না?” \p \v 15 পরে দাউদ তাঁর লোকদের মধ্যে একজনকে ডেকে বললেন, “যাও, ওকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দাও!” তখন সে তাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দিল, ও সে মারা গেল। \v 16 কারণ দাউদ তাকে বললেন, “তোমার রক্তের দোষ তুমিই তোমার মাথায় বহন করো। তোমার নিজের মুখেই তুমি তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছ, ‘আমি সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করেছি।’ ” \s1 শৌল ও যোনাথনের জন্য দাউদের শোকপ্রকাশ \p \v 17 শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের জন্য দাউদ এই বিলাপ-গীতটি গেয়েছিলেন, \v 18 এবং তিনি আদেশ দিলেন যেন যিহূদার লোকজনকেও ধনুকের এই বিলাপ-গীতটি শেখানো হয় (এটি যাশের গ্রন্থে লেখা আছে): \q1 \v 19 “হে ইস্রায়েল, তোমার চূড়ায় এক গজলা হরিণ\f + \fr 1:19 \fr*\ft “গজলা হরিণ” এখানে প্রতীকী অর্থে একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির কথা বলে\ft*\f* মরে পড়ে আছে। \q2 বীরপুরুষেরা হেথায় কেমন সব পড়ে আছেন! \b \q1 \v 20 “গাতে এ খবর দিয়ো না, \q2 অস্কিলোনের পথে পথে তা ঘোষণা কোরো না, \q1 ফিলিস্তিনীদের মেয়েরা পুলকিত হোক, \q2 বিধর্মী লোকদের মেয়েরা আনন্দিত হোক। \b \q1 \v 21 “হে গিলবোয়ের পাহাড়-পর্বত, \q2 তোমাদের উপর যেন কখনও শিশির বা বৃষ্টি না পড়ে, \q2 তোমাদের সমতল ক্ষেতেও\f + \fr 1:21 \fr*\ft অথবা, যে ক্ষেত উপহারের উপযোগী শস্য উৎপন্ন করে\ft*\f* যেন বৃষ্টি না পড়ে। \q1 কারণ সেখানে বীরপুরুষের ঢাল অবজ্ঞাত হল, \q2 শৌলের সেই ঢাল—আর তৈল-মর্দিত হবে না। \b \q1 \v 22 “নিহতের রক্ত না নিয়ে, \q2 বীরপুরুষের মাংস না পেয়ে, \q1 যোনাথনের ধনুক কখনও পিছু ফিরত না, \q2 শৌলের তরোয়াল কখনও অতৃপ্ত ফিরত না। \q1 \v 23 শৌল ও যোনাথন— \q2 জীবনকালে তারা ছিলেন প্রিয়তম ও প্রশংসিত, \q2 মরণেও তারা হননি বিচ্ছিন্ন। \q1 তারা ছিলেন ঈগলের চেয়েও দ্রুতগামী, \q2 তারা ছিলেন সিংহের চেয়েও শক্তিশালী। \b \q1 \v 24 “হে ইস্রায়েলের মেয়েরা, \q2 শৌলের জন্য কাঁদো, \q1 যিনি তোমাদের টকটকে লাল রংয়ের মিহি কাপড় পরিয়েছেন, \q2 যিনি তোমাদের পোশাক সোনা গয়নায় সাজিয়েছেন। \b \q1 \v 25 “বীরপুরুষেরা যুদ্ধে কেমন হত হলেন! \q2 তোমার চূড়ায় যোনাথন মৃত পড়ে আছেন। \q1 \v 26 হে যোনাথন, ভাই আমার; তোমার জন্য আজ আমি মর্মাহত, \q2 হে বন্ধু, আমার কাছে তুমি কত যে প্রিয় ছিলে। \q1 আমার প্রতি তোমার প্রেম যে অপরূপ ছিল, \q2 নারীদের প্রেমের চেয়েও বুঝি বেশি অপরূপ। \b \q1 \v 27 “বীরপুরুষেরা আছেন হেথায় কেমন সব পড়ে! \q2 যুদ্ধের সব হাতিয়ার যে বিনষ্ট রয়েছে পড়ে!” \c 2 \s1 দাউদ যিহূদা কুলের রাজারূপে অভিষিক্ত হন \p \v 1 কালক্রমে, দাউদ সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিয়েছিলেন। “আমি কি যিহূদার নগরগুলির মধ্যে কোনো একটিতে যাব?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p সদাপ্রভু বললেন, “চলে যাও।” \p দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায় যাব?” \p “হিব্রোণে যাও,” সদাপ্রভু উত্তর দিলেন। \p \v 2 অতএব দাউদ তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়ম ও কর্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগলকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন। \v 3 দাউদ সাথে করে পরিবার-পরিজনসহ তাঁর সঙ্গী লোকজনকেও নিয়ে গেলেন, এবং তারা হিব্রোণে ও তার পাশাপাশি গ্রামগুলিতে বসবাস করতে শুরু করল। \v 4 পরে যিহূদার লোকজন হিব্রোণে পৌঁছেছিল, ও সেখানে তারা দাউদকে যিহূদা কুলের রাজারূপে অভিষিক্ত করল। \p দাউদকে যখন বলা হল যে যাবেশ-গিলিয়দের লোকজন শৌলকে কবর দিয়েছে, \v 5 তখন তিনি একথা বলার জন্য তাদের কাছে কয়েকজন দূত পাঠালেন, “তোমরা তোমাদের প্রভু শৌলকে কবর দিয়ে তাঁর প্রতি যে দয়া দেখিয়েছ, সেজন্য সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন। \v 6 সদাপ্রভু এখন যেন তোমাদের প্রতি দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখান, এবং আমিও তোমাদের প্রতি একইরকম অনুগ্রহ দেখাব, কারণ তোমরা ভালো কাজ করেছ। \v 7 তবে এখন, সবল ও সাহসী হও, কারণ তোমাদের মনিব শৌল মারা গিয়েছেন, এবং যিহূদার লোকজন তাদের উপর আমাকে রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে।” \s1 দাউদ গোষ্ঠী ও শৌল গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় \p \v 8 ইতিমধ্যে, শৌলের সৈন্যদলের সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনের শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতকে মহনয়িমে এনে তুলেছিলেন। \v 9 তিনি তাঁকে গিলিয়দ, আশের ও যিষ্রিয়েল, তথা ইফ্রয়িম, বিন্যামীন ও সম্পূর্ণ ইস্রায়েলের উপর রাজা করে দিলেন। \p \v 10 চল্লিশ বছর বয়সে শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশত ইস্রায়েলের উপর রাজা হলেন, এবং তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। যিহূদা কুল অবশ্য দাউদের প্রতি অনুগত থেকে গেল। \v 11 যিহূদা কুলে দাউদ সাত বছর ছয় মাস হিব্রোণে রাজা হয়ে ছিলেন। \p \v 12 নেরের ছেলে অবনের শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতের লোকদের সঙ্গে নিয়ে মহনয়িম ছেড়ে গিবিয়োনে গেলেন। \v 13 সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও দাউদের লোকরাও বের হয়ে এলেন এবং গিবিয়োনের ডোবার কাছে তাদের দেখা পেয়েছিলেন। একটি দল ডোবার এপারে ও অন্য দলটি ডোবার ওপারে গিয়ে বসেছিল। \p \v 14 পরে অবনের যোয়াবকে বললেন, “আমাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন যুবক উঠে গিয়ে আমাদের চোখের সামনেই হাতাহাতি যুদ্ধ করুক।” \p “ঠিক আছে, তারা এরকমই করুক,” যোয়াব বললেন। \p \v 15 তারা উঠে দাঁড়িয়েছিল ও তাদের সংখ্যা গোনা হল—বিন্যামীন ও শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতের পক্ষে বারোজন, এবং দাউদের পক্ষে বারোজন। \v 16 পরে প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাথা জাপটে ধরে তাদের দেহপার্শ্বে ছোরা ঢুকিয়ে দিয়েছিল, ও তারা একসাথেই মারা গেল। তাই গিবিয়োনের সেই স্থানটি হিলকৎ-হৎসূরীম\f + \fr 2:16 \fr*\ft “হিলকৎ-হৎসূরীম” নামের অর্থ “ছোরা-ভূমি” বা, “শত্রুতা-ভূমি”\ft*\f* নামে আখ্যাত হল। \p \v 17 সেদিন যুদ্ধ ভয়াবহ আকার ধারণ করল, এবং অবনের ও ইস্রায়েলীরা দাউদের লোকজনের হাতে পরাজিত হল। \p \v 18 সরূয়ার তিন ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন: যোয়াব, অবীশয় ও অসাহেল। অসাহেল আবার এক গজলা হরিণের মতো ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন ছিলেন। \v 19 তিনি অবনেরের পিছু ধাওয়া করলেন, আর অবনেরের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে তিনি ডাইনে বা বাঁয়ে, কোনোদিকেই ঘুরে তাকাননি। \v 20 অবনের তাঁর দিকে পিছু ফিরে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ কি তুমি, অসাহেল?” \p “হ্যাঁ আমিই,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 21 তখন অবনের তাঁকে বললেন, “ডাইনে বা বাঁয়ে ফিরে যুবকদের মধ্যে কাউকে ধরে তার অস্ত্রশস্ত্র খুলে নাও।” কিন্তু অসাহেল তাঁর পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করেননি। \p \v 22 আরেকবার অবনের তাঁকে সাবধান করে দিলেন, “আর আমার পিছু ধাওয়া কোরো না! কেন মিছিমিছি আমি তোমাকে মারব? আর আমি তোমার দাদা যোয়াবের কাছে তখন কীভাবেই বা মুখ দেখাব?” \p \v 23 কিন্তু অসাহেল পশ্চাদ্ধাবন বন্ধ করতে রাজি হননি; তাই অবনের তাঁর বর্শার বাঁটটি অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিলেন, ও বর্শাটি তাঁর পিঠ ভেদ করে বেরিয়ে এসেছিল। অকুস্থলেই তিনি পড়ে গেলেন। যেখানে অসাহেল পড়ে মারা গেলেন, প্রত্যেকেই সেখানে এসে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। \p \v 24 কিন্তু যোয়াব ও অবীশয় অবনেরের পিছু ধাওয়া করে গেলেন, এবং সূর্য যখন অস্ত যাচ্ছিল, তখন তারা গিবিয়োনের মরুএলাকার পথে গীহের কাছাকাছি অম্মা পাহাড়ে পৌঁছেছিলেন। \v 25 তখন বিন্যামীনের লোকজন অবনেরের পিছনে জমায়েত হল। তারা দল বেঁধে পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 26 অবনের যোয়াবকে ডেকে বললেন, “তরোয়াল কি চিরকাল গ্রাসই করতে থাকবে? তুমি কি বুঝতে পারছ না যে তিক্ততা দিয়েই এর সমাপ্তি হবে? আর কখন তুমি তোমার লোকজনকে তাদের সমগোত্রীয় ইস্রায়েলীদের পিছু ধাওয়া করতে মানা করবে?” \p \v 27 যোয়াব উত্তর দিলেন, “জীবন্ত ঈশ্বরের দিব্যি, তুমি যদি কথা না বলতে, তবে লোকেরা সকাল পর্যন্ত তাদের পিছু ধাওয়া করেই যেত।” \p \v 28 অতএব যোয়াব শিঙা বাজিয়েছিলেন, এবং সৈন্যসামন্ত সবাই থেমে গেল; তারা আর ইস্রায়েলের পিছু ধাওয়া করেনি, বা তারা আর যুদ্ধও করেনি। \p \v 29 সারারাত ধরে অবনের ও তাঁর লোকজন অরাবার মধ্যে দিয়ে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেলেন। তারা জর্ডন নদী পার হয়ে সকালের দিকে মহনয়িমে এসে উপস্থিত হলেন। \p \v 30 পরে যোয়াব অবনেরের পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়ে সমগ্র সৈন্যদল একত্রিত করলেন। অসাহেলের পাশাপাশি দেখা গেল দাউদের উনিশজন লোকও কম পড়ছিল। \v 31 কিন্তু দাউদের লোকজন অবনেরের সঙ্গে থাকা 360 জন বিন্যামীনীয় লোককে হত্যা করল। \v 32 তারা অসাহেলকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বেথলেহেমে তাঁর বাবার কবরে কবর দিয়েছিল। পরে যোয়াব ও তাঁর লোকজন সারারাত ধরে কুচকাওয়াজ করে ভোরবেলায় হিব্রোণে পৌঁছে গেলেন। \c 3 \p \v 1 শৌল গোষ্ঠী ও দাউদ গোষ্ঠীর মধ্যে চলা যুদ্ধ দীর্ঘদিন স্থায়ী হল। দাউদ দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছিলেন, অথচ শৌল গোষ্ঠী দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছিল। \b \li4 \v 2 হিব্রোণে দাউদের কয়েকটি ছেলের জন্ম হল: \b \li1 তাঁর বড়ো ছেলের নাম অম্নোন, যিনি যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়মের ছেলে; \li1 \v 3 তাঁর দ্বিতীয় ছেলে কিলাব, যিনি কর্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগলের সন্তান; \li1 তৃতীয় ছেলে অবশালোম, যিনি গশূরের রাজা তলময়ের মেয়ে মাখার সন্তান; \li1 \v 4 চতুর্থ ছেলে আদোনিয়, যিনি হগীতের সন্তান; \li1 পঞ্চম ছেলে শফটিয়, যিনি অবীটলের সন্তান; \li1 \v 5 ষষ্ঠ ছেলে যিত্রিয়ম, যিনি দাউদের স্ত্রী ইগ্লার সন্তান। \b \li4 দাউদের এইসব ছেলের জন্ম হল হিব্রোণে। \s1 অবনের গিয়ে দাউদের সঙ্গে যোগ দেন \p \v 6 শৌল গোষ্ঠী ও দাউদ গোষ্ঠীর মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছিল তখন অবনের শৌল গোষ্ঠীতে নিজের পদ শক্তপোক্ত করে যাচ্ছিলেন। \v 7 ইত্যবসরে রিস্পা বলে শৌলের এক উপপত্নী ছিল। সে ছিল অয়ার মেয়ে। ঈশ্‌বোশত অবনেরকে বললেন, “আপনি কেন আমার বাবার উপপত্নীর সঙ্গে বিছানায় শুয়েছেন?” \p \v 8 ঈশ্‌বোশতের কথা শুনে অবনের খুব রেগে গেলেন। তাই তিনি উত্তর দিলেন, “যিহূদার পক্ষে আমি কি কুকুরের মুণ্ডু? আজও পর্যন্ত আমি তোমার বাবা শৌলের গোষ্ঠীর ও তাঁর পরিবারের ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে এসেছি। তোমাকে আমি দাউদের হাতেও তুলে দিইনি। অথচ এখন কি না তুমি এই মহিলাটির সঙ্গে নাম জড়িয়ে আমাকে অপবাদ দিচ্ছ! \v 9 ঈশ্বর যেন অবনেরকে দণ্ড দেন, যেন কঠোর দণ্ড দেন। সদাপ্রভু শপথ করে দাউদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করলেন, আমি যদি তাঁর হয়ে তা না করি \v 10 ও শৌল গোষ্ঠীর হাত থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েল ও যিহূদার উপরে দাউদের সিংহাসন স্থির না করি।” \v 11 ঈশ্‌বোশত অবনেরকে আর একটিও কথা বলার সাহস পাননি, কারণ তিনি তাঁকে ভয় পেয়েছিলেন। \p \v 12 পরে অবনের তাঁর হয়ে এই কথা বলার জন্য দাউদের কাছে দূত পাঠালেন, “এই দেশটি কার? আমার সঙ্গে একটি চুক্তি করুন, সম্পূর্ণ ইস্রায়েলকে আপনার পক্ষে আনার জন্য আমি আপনাকে সাহায্য করব।” \p \v 13 “ভালো,” দাউদ বললেন, “আমি আপনার সঙ্গে চুক্তি করব। কিন্তু আমি আপনার কাছে একটি দাবি জানাচ্ছি: আমার সঙ্গে দেখা করার সময় যদি শৌলের মেয়ে মীখলকে নিয়ে আসতে না পারেন, তবে আমার সামনে আর আসবেন না।” \v 14 পরে দাউদ শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতের কাছে দূত পাঠিয়ে দাবি জানিয়েছিলেন, “আমার স্ত্রী সেই মীখলকে ফিরিয়ে দাও, যাকে আমি একশো জন ফিলিস্তিনীর লিঙ্গত্বকরূপী মেয়েপণ দিয়ে বিয়ে করেছি।” \p \v 15 তখন ঈশ্‌বোশত আদেশ দিয়ে মীখলকে তাঁর স্বামী, লয়িশের ছেলে পল্‌টিয়েলের কাছ থেকে আনিয়েছিলেন। \v 16 তাঁর স্বামী অবশ্য পিছন পিছন বহুরীম পর্যন্ত কাঁদতে কাঁদতে তাঁর সঙ্গে গেলেন। তখন অবনের তাঁকে বললেন, “তুমি ঘরে ফিরে যাও!” তাই তিনি ফিরে গেলেন। \p \v 17 অবনের ইস্রায়েলের প্রাচীনদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বললেন, “বেশ কিছুদিন থেকেই আপনারা দাউদকে আপনাদের রাজা বানাতে চাইছেন। \v 18 এখনই তা করে ফেলুন! কারণ সদাপ্রভু দাউদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, ‘আমার দাস দাউদকে দিয়েই ফিলিস্তিনীদের ও আমার প্রজা ইস্রায়েলের সব শত্রুর হাত থেকে আমি তাদের উদ্ধার করব।’ ” \p \v 19 অবনের আবার আলাদা করে বিন্যামিনীয়দের সঙ্গেও কথা বললেন। পরে তিনি হিব্রোণে দাউদের কাছে সবকিছু বলতে গেলেন, যা ইস্রায়েল ও বিন্যামীনের কূলজাত সব লোকজন করতে চেয়েছিল। \v 20 অবনের যখন কুড়ি জন লোক সঙ্গে নিয়ে হিব্রোণে দাউদের কাছে এলেন, দাউদ তখন তাঁর ও তাঁর লোকজনের জন্য ভোজসভার আয়োজন করলেন। \v 21 অবনের দাউদকে বললেন, “আমাকে এখনই যেতে দিন। আমি আমার প্রভু মহারাজের জন্য সমস্ত ইস্রায়েলকে একত্রিত করব, যেন তারা আপনার সঙ্গে এক নিয়মবদ্ধ হয়, ও আপনি যেন আপনার অন্তরের বাসনানুসারে সবার উপর রাজত্ব করতে পারেন।” তখন দাউদ অবনেরকে বিদায় দিলেন, ও তিনি শান্তিতে ফিরে চলে গেলেন। \s1 যোয়াব অবনেরকে হত্যা করলেন \p \v 22 ঠিক তখনই দাউদের লোকজন ও যোয়াব কোথাও থেকে অতর্কিত আক্রমণ সেরে ফিরছিলেন ও সঙ্গে করে প্রচুর লুন্ঠিত জিনিসপত্রও নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু অবনের তখন আর হিব্রোণে দাউদের সঙ্গে ছিলেন না, কারণ দাউদ তাঁকে বিদায় দিলেন, ও তিনি শান্তিতে চলে গেলেন। \v 23 যোয়াব যখন তাঁর সঙ্গে থাকা সব সৈন্যসামন্ত নিয়ে সেখানে পৌঁছেছিলেন, তিনি খবর পেয়েছিলেন যে নেরের ছেলে অবনের রাজার কাছে এসেছিলেন এবং রাজা তাঁকে বিদায় দিয়েছেন ও তিনিও শান্তিতে চলে গিয়েছেন। \p \v 24 তখন যোয়াব রাজার কাছে গিয়ে বললেন, “এ আপনি কী করেছেন? দেখুন, অবনের আপনার কাছে এলেন। আপনি কেন তাঁকে যেতে দিলেন? এখন তো তিনি চলেই গিয়েছেন! \v 25 নেরের ছেলে অবনেরকে তো আপনি জানেনই; তিনি আপনাকে ঠকাতে ও আপনার সব গতিবিধি খুঁটিয়ে লক্ষ্য করতে তথা আপনি কী কী করছেন তার খোঁজ নেওয়ার জন্যই তিনি এলেন।” \p \v 26 যোয়াব পরে দাউদের কাছ থেকে চলে গিয়ে অবনেরের কাছে কয়েকজন দূত পাঠালেন, ও তারা সিরার জলাধারের কাছ থেকে তাঁকে ফিরিয়ে এনেছিল। কিন্তু দাউদ তা জানতে পারেননি। \v 27 অবনের যখন হিব্রোণে ফিরে এলেন, যোয়াব তখন তাঁর সঙ্গে গোপনে কথা বলার অছিলায় তাঁকে একান্তে ভিতরের একটি ঘরে নিয়ে গেলেন। সেখানে যোয়াব তাঁর ভাই অসাহেলের রক্তের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাঁর পেটে ছোরা ঢুকিয়ে দিলেন, ও তিনি মরে গেলেন। \p \v 28 পরে, দাউদ যখন সেকথা শুনেছিলেন, তিনি বললেন, “নেরের ছেলে অবনেরের রক্তপাতের বিষয়ে আমি ও আমার রাজ্য চিরকাল সদাপ্রভুর সামনে নির্দোষ থাকব। \v 29 তাঁর রক্তপাতের দোষ যোয়াব ও তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারের উপরেই বর্তুক! যোয়াবের পরিবারে যেন কখনও এমন কোনও লোকের অভাব না হয় যাদের শরীরে কাঁচা ঘা বা কুষ্ঠরোগ\f + \fr 3:29 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় কুষ্ঠরোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শব্দটি ত্বকে ক্ষতিসাধনকারী অন্যান্য সব রোগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* আছে অথবা যারা খঞ্জের লাঠিতে\f + \fr 3:29 \fr*\ft বা, পঙ্গু লোকের বগলে লাগিয়ে চলবার লাঠি\ft*\f* ভর দিয়ে চলে বা যারা তরোয়ালের আঘাতে মারা পড়ে বা খাবারের অভাবগ্রস্ত হয়।” \p \v 30 (যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় অবনেরকে হত্যা করলেন, কারণ তিনি তাদের ভাই অসাহেলকে গিবিয়োনের যুদ্ধক্ষেত্রে হত্যা করলেন।) \p \v 31 পরে দাউদ যোয়াব ও তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজনকে বললেন, “নিজেদের কাপড়গুলি ছিঁড়ে ফেলো ও চটের কাপড় পরে অবনেরের আগে আগে শোকপ্রকাশ করতে করতে হাঁটতে থাকো।” রাজা দাউদ স্বয়ং শবাধারের পিছু পিছু হেঁটেছিলেন। \v 32 তারা হিব্রোণে অবনেরকে কবর দিলেন, এবং রাজামশাই অবনেরের সমাধিস্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে কেঁদেছিলেন। সব লোকও কেঁদেছিল। \p \v 33 রাজামশাই অবনেরের জন্য এই বিলাপগাথা গেয়েছিলেন: \q1 “অবনেরকে কি বোকার মতো মরতেই হত? \q2 \v 34 তোমার হাত তো বাঁধা ছিল না, \q2 তোমার পা তো শিকলে বাঁধা ছিল না। \q1 তুমি এমন পড়লে যেভাবে কেউ দুষ্টলোকের সামনে পড়ে।” \p সব লোকজন আবার তাঁর জন্য কাঁদতে শুরু করল। \p \v 35 পরে তারা সবাই এসে দিন থাকতে থাকতেই দাউদকে কিছু খেয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল; কিন্তু এই বলে দাউদ এক শপথ নিয়েছিলেন, “যদি আমি সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে রুটি বা অন্য কিছুর স্বাদ নিই, তবে ঈশ্বর যেন আমায় দণ্ড দেন, কঠোর দণ্ড দেন!” \p \v 36 সব লোকজন তা লক্ষ্য করে সন্তুষ্ট হল; সত্যিই, রাজামশাই যা যা করলেন তা তাদের সন্তুষ্ট করল। \v 37 অতএব সেদিন সেখানকার সব লোকজন ও সমস্ত ইস্রায়েল জানতে পেরেছিল যে নেরের ছেলে অবনেরের খুন হয়ে যাওয়ার পিছনে রাজার কোনও ভূমিকা ছিল না। \p \v 38 তখন রাজা তাঁর লোকজনকে বললেন, “তোমরা কি বুঝতে পারছ না যে আজ ইস্রায়েলে এক সেনাপতি ও মহান এক ব্যক্তি পতিত হয়েছেন? \v 39 আর আজ, আমি যদিও অভিষিক্ত রাজা, তবুও আমি দুর্বল, সরূয়ার এই ছেলেরা আমার পক্ষে বড়োই শক্তিশালী। সদাপ্রভু পাপিষ্ঠকে তার পাপকাজের আধারেই প্রতিফল দিন!” \c 4 \s1 ঈশ্‌বোশত হত হলেন \p \v 1 শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশত যখন শুনেছিলেন যে অবনের হিব্রোণে মারা গিয়েছেন, তখন তিনি সাহস হারিয়ে ফেলেছিলেন, ও সমস্ত ইস্রায়েল আশঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। \v 2 শৌলের ছেলের কাছে দুজন লোক ছিল, যারা ছিল আক্রমণকারী দলের সর্দার। একজনের নাম ছিল বানা, অন্যজনের নাম রেখব; তারা ছিল বিন্যামীন বংশীয় বেরোতীয় রিম্মোণের ছেলে—বেরোৎ বিন্যামীনের অংশবিশেষ বলে বিবেচিত হত, \v 3 যেহেতু বেরোতীয়েরা গিত্তয়িমে পালিয়ে গিয়ে আজও পর্যন্ত সেখানে বিদেশিরূপে বসবাস করে চলেছে। \p \v 4 (শৌলের ছেলে যোনাথনের এক ছেলে ছিল, যে আবার দু-পায়েই খঞ্জ ছিল। যিষ্রিয়েল থেকে শৌল ও যোনাথনের বিষয়ে খবর আসার সময় তার বয়স ছিল পাঁচ বছর। তার ধাত্রী তাকে কোলে তুলে নিয়ে পালিয়েছিল, কিন্তু সেই ধাত্রী যখন দৌড়ে পালাতে যচ্ছিল, তখন শিশুটি পড়ে গিয়ে অক্ষম হয়ে যায়। তার নাম মফীবোশৎ।) \p \v 5 ইত্যবসরে বেরোতীয় রিম্মোণের দুই ছেলে রেখব ও বানা ঈশ্‌বোশতের বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হল, ও ভর-দুপুরে তিনি যখন দুপুরের বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন তারা সেখানে গিয়ে উপস্থিত হল। \v 6 তারা কিছুটা গম নেওয়ার অছিলায় বাড়ির ভিতরদিকে চলে গেল, ও সেখানে গিয়ে তারা তাঁর পেটে ছোরা বিঁধিয়ে দিয়েছিল। পরে রেখব ও তার ভাই বানা পালিয়ে গেল। \p \v 7 ঈশ্‌বোশত যখন তাঁর শোবার ঘরে বিছানার উপর শুয়েছিলেন, তখনই তারা সেই বাড়িতে ঢুকেছিল। তাঁকে ছোরা মেরে খুন করার পর তারা তাঁর মুণ্ডুটি কেটে নিয়েছিল। সেটি সঙ্গে নিয়ে তারা সারারাত অরাবার পথ ধরে হেঁটে গেল। \v 8 হিব্রোণে দাউদের কাছে তারা ঈশ্‌বোশতের মুণ্ডুটি নিয়ে গিয়ে রাজাকে বলল, “এই মুণ্ডুটি হল শৌলের সেই ছেলে ঈশ্‌বোশতের মুণ্ডু, যে আপনার শত্রু, ও যে আপনাকে খুন করতে চেয়েছিল। আজই শৌল ও তাঁর বংশধরের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু আমার প্রভু মহারাজের হয়ে প্রতিশোধ নিয়েছেন।” \p \v 9 বেরোতীয় রিম্মোণের দুই ছেলে রেখব ও তার ভাই বানাকে দাউদ উত্তর দিলেন, “যিনি আমাকে সব বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেছেন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, \v 10 যখন কেউ একজন আমাকে বলল, ‘শৌল মরেছেন,’ ও ভেবেছিল যে সে সুখবর এনেছে, আমি কিন্তু তাকে ধরে সিক্লগে হত্যা করলাম। তার দেওয়া খবরের জন্য আমি তাকে এই পুরস্কারই দিয়েছিলাম! \v 11 তোমরা, এই দুষ্ট লোকেরা যখন একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে তাঁর নিজের ঘরে, তাঁরই বিছানায় খুন করেছ—তখন আরও কত না বেশি করে আমি তাঁর রক্তের প্রতিশোধ তোমাদের কাছ থেকে নেব ও এই পৃথিবীর বুক থেকে তোমাদের উচ্ছেদ করে ছাড়ব!” \p \v 12 অতএব দাউদ তাঁর লোকজনকে আদেশ দিলেন, ও তারা তাদের হত্যা করল। তারা তাদের হাত পা কেটে দেহগুলি হিব্রোণের ডোবার পাশে ঝুলিয়ে রেখেছিল। কিন্তু তারা ঈশ্‌বোশতের মুণ্ডুটি নিয়ে গিয়ে সেটি হিব্রোণে অবনেরের কবরে কবর দিয়েছিল। \c 5 \s1 দাউদ ইস্রায়েলের উপর রাজা হন \p \v 1 ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠী হিব্রোণে দাউদের কাছে এসে বলল, “আমরা আপনারই রক্তমাংস। \v 2 অতীতে, শৌল যখন আমাদের উপর রাজা ছিলেন, আপনিই তো ইস্রায়েলের সামরিক অভিযানে তাদের নেতৃত্ব দিতেন। সদাপ্রভু আপনাকে বললেন, ‘তুমি আমার প্রজা ইস্রায়েলের পালক হবে, ও তুমিই তাদের শাসক হবে।’ ” \p \v 3 ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই যখন হিব্রোণে রাজা দাউদের কাছে এলেন, রাজা তখন সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে হিব্রোণে তাদের সাথে একটি চুক্তি করলেন, ও তারা দাউদকে ইস্রায়েলের উপর রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন। \p \v 4 দাউদ যখন রাজা হলেন তখন তাঁর বয়স তিরিশ বছর, ও তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 5 হিব্রোণে যিহূদার উপর তিনি সাত বছর ছয় মাস রাজত্ব করলেন, এবং জেরুশালেমে ইস্রায়েল ও যিহূদার উপর তিনি তেত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন। \s1 দাউদ জেরুশালেম অধিকার করলেন \p \v 6 রাজামশাই ও তাঁর লোকজন সেই যিবূষীয়দের আক্রমণ করার জন্য জেরুশালেমের দিকে যুদ্ধযাত্রা করলেন, যারা সেখানে বসবাস করত। যিবূষীয়রা দাউদকে বলল, “আপনি এখানে ঢুকতে পারবেন না; এমনকি অন্ধ ও খঞ্জ লোকরাও আপনাকে তাড়িয়ে দেবে।” \v 7 তা সত্ত্বেও, দাউদ সিয়োনের দুর্গটি দখল করলেন—যেটি হল দাউদ-নগর। \p \v 8 সেদিন দাউদ বললেন, “যে কেউ যিবূষীয়দের অধিকার করবে, তাকে সেইসব ‘খঞ্জ ও অন্ধের’ কাছে পৌঁছানোর জন্য জল-সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করতে হবে, যারা দাউদের শত্রুবিশেষ।\f + \fr 5:8 \fr*\ft বা, দাউদের ঘৃণাস্পদ\ft*\f*” এজন্যই তারা বলে, “ ‘অন্ধ ও খঞ্জেরা’ প্রাসাদে প্রবেশ করবে না।” \p \v 9 দাউদ পরে দুর্গটিকেই নিজের বাসস্থান বানিয়ে সেটির নাম দিলেন দাউদ-নগর। তিনি ভিতরের দিকে চাতাল\f + \fr 5:9 \fr*\ft বা, মিল্লো\ft*\f* থেকে সেটির চারপাশ ঘিরে দিলেন। \v 10 তিনি দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন। \p \v 11 আবার সোরের রাজা হীরম দাউদের কাছে দেবদারু জাতীয় কাঠের গুঁড়ি, ছুতোর ও রাজমিস্ত্রি সমেত কয়েকজন দূত পাঠিয়ে দিলেন, এবং তারা দাউদের জন্য এক প্রাসাদ তৈরি করল। \v 12 তখন দাউদ বুঝতে পেরেছিলেন যে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর তাঁর রাজপদ স্থির করেছেন এবং তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের জন্য তাঁর রাজ্যের উন্নতি করেছেন। \p \v 13 হিব্রোণ ছেড়ে আসার পর দাউদ জেরুশালেমে আরও কয়েকজনকে স্ত্রী ও উপপত্নীরূপে গ্রহণ করলেন, এবং তাঁর আরও কয়েকটি ছেলেমেয়ের জন্ম হল। \v 14 সেখানে তাঁর যেসব সন্তানের জন্ম হল তারা হল: শম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন, \v 15 যিভর, ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়, \v 16 ইলীশামা, ইলিয়াদা ও ইলীফেলট। \s1 দাউদ ফিলিস্তিনীদের পরাজিত করলেন \p \v 17 ফিলিস্তিনীরা যখন শুনতে পেয়েছিল দাউদ ইস্রায়েলের উপর রাজারূপে অভিষিক্ত হয়েছেন, তখন সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তারা তাঁকে খুঁজতে শুরু করল, কিন্তু দাউদ সেকথা শুনে দুর্গে নেমে গেলেন। \v 18 ফিলিস্তিনীরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়েছিল; \v 19 দাউদ তখন সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, “আমি কি গিয়ে ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করব? তুমি কি আমার হাতে তাদের সঁপে দেবে?” \p সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন, “যাও, কারণ আমি অবশ্যই তোমার হাতে ফিলিস্তিনীদের সঁপে দেব।” \p \v 20 তখন দাউদ বায়াল-পরাসীমে গেলেন, ও সেখানে তিনি তাদের পরাজিত করলেন। তিনি বললেন, “বাঁধ ফেটে জল যেভাবে বেগে বেরিয়ে যায়, সদাপ্রভুও আমার সামনে আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে সেভাবে ফাটিয়েছেন।” তাই সেই স্থানটির নাম হল বায়াল-পরাসীম।\f + \fr 5:20 \fr*\ft “বায়াল-পরাসীম” কথার অর্থ “যে প্রভু ফেটে পড়েন”\ft*\f* \v 21 ফিলিস্তিনীরা সেখানেই তাদের দেবদেবীর মূর্তিগুলি ফেলে রেখে গেল এবং দাউদ ও তাঁর লোকজন সেগুলি উঠিয়ে নিয়ে এলেন। \p \v 22 আরও একবার ফিলিস্তিনীরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়েছিল; \v 23 তাই দাউদ সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন ও তিনি উত্তর দিলেন, “সরাসরি তোমরা তাদের দিকে যেয়ো না, কিন্তু তাদের পিছন দিকে গিয়ে তাদের ঘিরে ধরো ও চিনার গাছগুলির সামনে গিয়ে তাদের আক্রমণ করো। \v 24 যে মুহূর্তে তোমরা চিনার গাছগুলির মাথায় কুচকাওয়াজের শব্দ শুনবে, তাড়াতাড়ি এগিয়ে যেয়ো, কারণ এর অর্থ হল এই যে ফিলিস্তিনী সৈন্যদলকে আক্রমণ করার জন্য সদাপ্রভুই তোমাদের আগে চলে গিয়েছেন।” \v 25 অতএব সদাপ্রভু দাউদকে যে আদেশ দিলেন, তিনি সেই অনুসারেই কাজ করলেন এবং তিনি গিবিয়োন\f + \fr 5:25 \fr*\ft বা, গেবা\ft*\f* থেকে শুরু করে গেষর পর্যন্ত ফিলিস্তিনীদের আঘাত করে গেলেন। \c 6 \s1 নিয়ম-সিন্দুকটি জেরুশালেমে আনা হয় \p \v 1 দাউদ ইত্যবসরে আবার ইস্রায়েলের 30,000 দক্ষ যুবককে একত্রিত করলেন। \v 2 তিনি ও তাঁর সব লোকজন যিহূদার বালা\f + \fr 6:2 \fr*\ft অর্থাৎ, কিরিয়ৎ-যিয়ারীম (\+xt 1 বংশাবলি 13:6\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* থেকে ঈশ্বরের সেই নিয়ম-সিন্দুকটি আনতে গেলেন, যেটি সেই নামে—সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর নামে পরিচিত, যিনি নিয়ম-সিন্দুকে দুটি করূবের মাঝখানে বিরাজমান। \v 3 তারা ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি নতুন একটি গাড়িতে তুলে দিলেন এবং সেটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত গিবিয়ায় অবীনাদবের বাড়ি থেকে নিয়ে এলেন। অবীনাদবের দুই ছেলে উষ ও অহিয়ো সেই নতুন গাড়িটি চালাচ্ছিল \v 4 ও ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি সেটির উপর রাখা ছিল, এবং গিবিয়ায় বসবাসকারী অবীনাদবের ছেলে অহিয়ো সেটির আগে আগে হাঁটছিল। \v 5 দাউদ ও সমস্ত ইস্রায়েল সদাপ্রভুর সামনে গান গেয়ে ও বীণা, খঞ্জনি, তবলা, সুরবাহার ও করতাল বাজিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছিলেন। \p \v 6 তারা যখন নাখোনের খামারে পৌঁছেছিলেন, উষ হাত বাড়িয়ে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি ধরেছিল, কারণ বলদগুলি হোঁচট খেয়েছিল। \v 7 উষের এই ভক্তিহীন আচরণ দেখে সদাপ্রভু তার উপর ক্রোধে জ্বলে উঠেছিলেন; তাই ঈশ্বর তাকে যন্ত্রণা করলেন, ও সে সেখানে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকের পাশেই পড়ে মারা গেল। \p \v 8 সদাপ্রভুর ক্রোধ উষের উপর ফেটে পড়তে দেখে দাউদ তখন ক্রুদ্ধ হলেন, এবং আজও পর্যন্ত সেই স্থানটিকে পেরস-উষ\f + \fr 6:8 \fr*\ft “পেরস-উষ” কথার অর্থ “উষের বিরুদ্ধে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ”\ft*\f* বলে ডাকা হয়। \p \v 9 সেদিন দাউদ সদাপ্রভুকে ভয় পেয়ে বললেন, “সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি তবে কীভাবে আমার কাছে আসবে?” \v 10 দাউদ-নগরে তিনি তাঁর সঙ্গে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি নিয়ে যেতে চাননি। তার পরিবর্তে তিনি সেটি গাতীয় ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে এনে রেখেছিলেন। \v 11 সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি গাতীয় ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে তিন মাস ধরে রাখা ছিল, এবং সদাপ্রভু তাকে ও তার সম্পূর্ণ পরিবারকে আশীর্বাদ করলেন। \p \v 12 রাজা দাউদকে বলা হল, “ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকের খাতিরে সদাপ্রভু ওবেদ-ইদোম ও তার সবকিছুকে আশীর্বাদ করেছেন।” তাই ওবেদ-ইদোমের বাড়ি থেকে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি দাউদ-নগরে নিয়ে আসার জন্য দাউদ আনন্দ করতে করতে সেখানে গেলেন। \v 13 সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক বহনকারী লোকেরা ছয়পা যেতে না যেতেই তিনি একটি বলদ ও একটি হৃষ্টপুষ্ট বাছুর বলি দিলেন। \v 14 মসিনার এফোদ গায়ে দিয়ে দাউদ সদাপ্রভুর সামনে তাঁর সব শক্তি নিয়ে নেচে যাচ্ছিলেন, \v 15 এবং এভাবেই তিনি ও সমস্ত ইস্রায়েল চিৎকার-চেঁচামেচি করে ও শিঙা বাজিয়ে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি নিয়ে আসছিলেন। \p \v 16 সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি যখন দাউদ-নগরে প্রবেশ করছিল, শৌলের মেয়ে মীখল জানলা থেকে তা লক্ষ্য করলেন। যখন তিনি দেখেছিলেন যে রাজা দাউদ সদাপ্রভুর সামনে লাফালাফি ও নাচানাচি করছেন, তিনি তখন মনে মনে তাঁকে তুচ্ছজ্ঞান করলেন। \p \v 17 তারা সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি সেই তাঁবুর মধ্যে এনে রেখেছিল, যেটি দাউদ সেটি রাখার জন্যই খাটিয়ে রেখেছিলেন, এবং দাউদ সদাপ্রভুর সামনে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন। \v 18 হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করার পর তিনি সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর নামে প্রজাদের আশীর্বাদ করলেন। \v 19 পরে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে, ইস্রায়েলী জনতার এক একজনকে একটি করে রুটি, খেজুরের পিঠে ও কিশমিশের পিঠে দিলেন। প্রজারা সবাই নিজেদের ঘরে ফিরে গেল। \p \v 20 পরিবারের লোকজনকে আশীর্বাদ করার জন্য যখন দাউদ ঘরে ফিরে গেলেন, শৌলের মেয়ে মীখল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে এলেন ও তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা আজ এ কীভাবে নিজেকে সম্মানিত করলেন, অন্য যে কোনো নীচ লোকের মতো আপনিও কি না আপনার দাসদের ক্রীতদাসীদের সামনে অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ালেন!” \p \v 21 দাউদ মীখলকে বললেন, “আমি সেই সদাপ্রভুর সামনেই তা করেছি, যিনি তোমার বাবা বা তাঁর পরিবারের অন্য কোনও লোককে না বেছে আমাকেই সদাপ্রভুর প্রজা ইস্রায়েলের উপর শাসনকর্তারূপে নিযুক্ত করলেন—আমি সদাপ্রভুর সামনেই আনন্দ প্রকাশ করব। \v 22 আমি এর থেকেও আরও নীচ হব, ও আমি নিজের দৃষ্টিতে হীন হব। কিন্তু তুমি যেসব ক্রীতদাসীর কথা বললে, আমি তাদের কাছে সম্মানিতই থেকে যাব।” \p \v 23 আর শৌলের মেয়ে মীখলের আমৃত্যু কোনও সন্তান হয়নি। \c 7 \s1 দাউদের কাছে করা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা \p \v 1 রাজামশাই তাঁর প্রাসাদে স্থির হয়ে বসার ও সদাপ্রভু তাঁকে তাঁর চারপাশের সব শত্রুর দিক থেকে বিশ্রাম দেওয়ার পর, \v 2 তিনি ভাববাদী নাথনকে বললেন, “দেখুন, আমি তো দেবদারু\f + \fr 7:2 \fr*\ft দেবদারু জাতীয় একটি গাছ\ft*\f* কাঠে তৈরি বাড়িতে বসবাস করছি, অথচ ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি তাঁবুতেই রাখা আছে।” \p \v 3 নাথন রাজাকে উত্তর দিলেন, “আপনার যা মনে হয়, আপনি তাই করুন, কারণ সদাপ্রভু আপনার সঙ্গেই আছেন।” \p \v 4 কিন্তু সেই রাতে সদাপ্রভুর বাক্য এই বলে নাথনের কাছে এসেছিল: \pm \v 5 “তুমি গিয়ে আমার দাস দাউদকে বলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: তুমিই কি আমার বসবাসের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করবে? \v 6 যেদিন আমি ইস্রায়েলীদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম, সেদিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমি কোনও গৃহে বসবাস করিনি। এক তাঁবুকেই আমার বাসস্থান করে নিয়ে আমি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেরিয়েছি। \v 7 সমস্ত ইস্রায়েলীর সাথে আমি যেখানে যেখানে গিয়েছি, আমি কি কখনও যাদের আমার প্রজা ইস্রায়েলকে দেখাশোনা করার আদেশ দিয়েছিলাম, তাদের সেইসব শাসনকর্তার মধ্যে কাউকে বললাম, “তোমরা কেন আমার জন্য দেবদারু কাঠের এক গৃহ নির্মাণ করে দাওনি?” ’ \pm \v 8 “তবে এখন, আমার দাস দাউদকে বলো, ‘সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি তোমাকে পশুচারণভূমি থেকে, তুমি যখন মেষের পাল চরাচ্ছিলে, তখন সেখান থেকেই তুলে এনেছিলাম, এবং তোমাকে আমার প্রজা ইস্রায়েলের উপর শাসনকর্তারূপে নিযুক্ত করলাম। \v 9 তুমি যেখানে যেখানে গিয়েছ, আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে থেকেছি, এবং তোমার সামনে আসা সব শত্রুকে আমি উচ্ছেদ করেছি। এখন আমি তোমার নাম পৃথিবীর মহাপুরুষদের মতোই মহৎ করব। \v 10 আমার প্রজা ইস্রায়েলের জন্য আমি এক স্থান জোগাব ও তাদের সেখানে বসতি করে দেব, যেন তারা তাদের নিজস্ব ঘরবাড়ি পায় ও আর কখনও যেন তাদের উপদ্রুত হতে না হয়। দুষ্ট লোকজন আর কখনও তাদের অত্যাচার করবে না, যেমনটি তারা শুরু করল \v 11 ও আমার প্রজা ইস্রায়েলের উপর আমি নেতা\f + \fr 7:11 \fr*\ft চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী, বিচারকর্তৃগণ\ft*\f* নিযুক্ত করার সময় থেকেই যেমনটি তারা করে আসছিল। আমি তোমার সব শত্রুর দিক থেকে তোমাকে বিশ্রামও দেব। \pm “ ‘সদাপ্রভু তোমার কাছে এই ঘোষণা করছেন যে সদাপ্রভু স্বয়ং তোমার জন্য এক গৃহ\f + \fr 7:11 \fr*\ft বা বংশ\ft*\f* স্থির করবেন: \v 12 তোমার দিন ফুরিয়ে যাওয়ার পর ও তোমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তুমি যখন বিশ্রাম নেবে, তখন আমি তোমার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য তোমার সেই বংশধরকে তুলে আনব, যে হবে তোমারই মাংস ও তোমারই রক্ত, এবং আমি তার রাজ্য স্থির করব। \v 13 সেই আমার নামের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করবে, ও আমি তার রাজ্যের সিংহাসন চিরস্থায়ী করব। \v 14 আমি তার বাবা হব, ও সে আমার ছেলে হবে। সে যখন ভুলচুক করবে, আমি তখন তাকে লোকজনের চালানো ছড়ি দিয়ে, মানুষের হাতে ধরা চাবুক দিয়ে শাস্তি দেব। \v 15 কিন্তু আমার প্রেম কখনও তার উপর থেকে সরে যাবে না, যেভাবে আমি সেই শৌলের কাছ থেকে তা সরিয়ে নিয়েছিলাম, যাকে আমি তোমার সামনে থেকে উৎখাত করলাম। \v 16 তোমার বংশ ও তোমার রাজ্য আমার\f + \fr 7:16 \fr*\ft বা, তোমার\ft*\f* সামনে চিরস্থায়ী হবে; তোমার সিংহাসনও চিরস্থায়ী হবে।’ ” \p \v 17 সম্পূর্ণ এই প্রত্যাদেশের সব কথা নাথন দাউদকে জানিয়েছিলেন। \s1 দাউদের প্রার্থনা \p \v 18 পরে রাজা দাউদ ভিতরে সদাপ্রভুর সামনে গিয়ে বসেছিলেন, ও বললেন: \pm “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, আমি কে, আর আমার পরিবারই বা কী, যে তুমি আমাকে এত দূর নিয়ে এসেছ? \v 19 আর বুঝি এও তোমার দৃষ্টিতে যথেষ্ট বলে বিবেচিত হয়নি, হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, যে তুমি তোমার দাসের বংশের ভবিষ্যতের বিষয়েও বলে দিয়েছ—আর হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, এই বিধানটি কি নিছক মানুষের জন্য! \pm \v 20 “দাউদ তোমার কাছে আর বেশি কী বলবে? হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমি তো তোমার দাসকে জানোই। \v 21 তোমার বাক্যের খাতিরে ও তোমার ইচ্ছানুসারে, তুমি এই মহৎ কাজটি করেছ ও তোমার দাসকে তা জানিয়েছ। \pm \v 22 “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমি কতই না মহান! তোমার মতো আর কেউ নেই, এবং তুমি ছাড়া ঈশ্বর আর কেউ নেই, যেমনটি আমরা নিজের কানেই শুনেছি। \v 23 তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মতো আর কে আছে—পৃথিবীতে বিরাজমান একমাত্র জাতি, যাদের তাঁর নিজস্ব প্রজা করার জন্য ঈশ্বর স্বয়ং তাদের মুক্ত করতে গেলেন, ও নিজের জন্য এক নাম প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, তথা তোমার প্রজাদের সামনে থেকে বিভিন্ন জাতি ও তাদের দেবদেবীদের উৎখাত করার দ্বারা মহৎ ও বিস্ময়কর আশ্চর্য সব কাজ করে যাদের তুমি মিশর থেকে মুক্ত করলে?\f + \fr 7:23 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 17:21\+xt* পদ দেখুন। তোমার দেশের জন্য ও যাদের তুমি মিশর থেকে, বিভিন্ন জাতি ও তাদের দেবদেবীদের হাত থেকে মুক্ত করেছ, তোমার সেই প্রজাদের সামনে আশ্চর্য কাজ সম্পন্ন করলে।\ft*\f* \v 24 তুমি চিরকালের জন্য তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে তোমার একান্ত আপন করে নিয়েছ, ও তুমি, হে সদাপ্রভু, তাদের ঈশ্বর হয়েছ। \pm \v 25 “আর এখন, হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তোমার দাসের ও তার বংশের সম্বন্ধে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করেছ, তা চিরকাল রক্ষা কোরো। তোমার প্রতিজ্ঞানুসারেই তা কোরো, \v 26 যেন তোমার নাম চিরতরে মহৎ হয়। লোকজন বলুক, ‘সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুই ইস্রায়েলের উপর ঈশ্বর হয়ে আছেন!’ আর তোমার দাস দাউদের বংশ তোমার দৃষ্টিতে সুস্থির হবে। \pm \v 27 “হে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এই বলে তোমার দাসের কাছে এটি প্রকাশ করে দিয়েছ, ‘আমি তোমার জন্য এক বংশ গড়ে তুলব।’ তাইতো তোমার দাস তোমার কাছে এই প্রার্থনাটি করতে সাহস পেয়েছে। \v 28 হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর! তোমার পবিত্র নিয়মটি নির্ভরযোগ্য, এবং তুমিই তোমার দাসের কাছে এইসব উত্তম বিষয়ের প্রতিজ্ঞা করেছ। \v 29 এখন তোমার দাসের বংশকে আশীর্বাদ করতে প্রীত হও, যেন তোমার দৃষ্টিতে তা চিরকাল টিকে থাকে; কারণ তুমিই, হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, একথা বলেছ, ও তোমার আশীর্বাদেই তোমার দাসের বংশ চিরতরে আশীর্বাদযুক্ত হবে।” \c 8 \s1 দাউদের যুদ্ধবিজয় \p \v 1 কালক্রমে, দাউদ ফিলিস্তিনীদের পরাজিত করে তাদের বশীভূত করলেন, ও তিনি ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে মেথগ-অম্মা\f + \fr 8:1 \fr*\ft শব্দটির অর্থ লাগাম\ft*\f* ছিনিয়ে এনেছিলেন। \p \v 2 দাউদ মোয়াবীয়দেরও পরাজিত করলেন। তিনি তাদের মাটিতে শুয়ে পড়তে বাধ্য করলেন ও তাদের এক নির্দিষ্ট মাপের দড়ি দিয়ে মেপেছিলেন। এক এক করে তাদের মধ্যে দড়ির মাপানুযায়ী দুই দড়ি বিস্তৃত এলাকার লোকজনকে হত্যা করা হল, ও পরবর্তী এক দড়ি বিস্তৃত এলাকার লোকজনকে বেঁচে থাকার সুযোগ দেওয়া হল। তাই মোয়াবীয়রা দাউদের বশীভূত হল ও তাঁর কাছে রাজকর নিয়ে এসেছিল। \p \v 3 এছাড়াও, সোবার রাজা রহোবের ছেলে হদদেষর যখন ইউফ্রেটিস নদীর কাছে তাঁর স্মৃতিসৌধটি\f + \fr 8:3 \fr*\ft বা, তাঁর কর্তৃত্ব\ft*\f* পুনরুদ্ধার করতে গেলেন, তখন দাউদ তাঁকেও পরাজিত করলেন। \v 4 দাউদ তাঁর 1,000 রথ, 7,000 অশ্বারোহী\f + \fr 8:4 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 18:4\+xt* পদ দেখুন, অথবা, 1,700 অশ্বারোহী\ft*\f* ও 20,000 পদাতিক সৈন্য দখল করলেন। রথের সঙ্গে জুড়ে থাকা 100-টি ঘোড়া বাদ দিয়ে বাকি সব ঘোড়ার পায়ের শিরা কেটে তিনি সেগুলিকে খঞ্জ করে দিলেন। \p \v 5 দামাস্কাসের অরামীয়রা যখন সোবার রাজা হদদেষরকে সাহায্য করতে এসেছিল, তখন দাউদ তাদের মধ্যে বাইশ হাজার জনকে যন্ত্রণা করে ফেলে দিলেন। \v 6 তিনি দামাস্কাসের অরামীয় রাজ্যে সৈন্যদল মোতায়েন করে দিলেন, এবং অরামীয়রা তাঁর বশীভূত হয়ে তাঁর কাছে রাজকর নিয়ে এসেছিল। দাউদ যেখানে যেখানে গেলেন, সদাপ্রভু সেখানে সেখানে তাঁকে বিজয়ী করলেন। \p \v 7 দাউদ হদদেষরের কর্মকর্তাদের অধিকারে থাকা সোনার ঢালগুলি জেরুশালেমে নিয়ে এলেন। \v 8 হদদেষরের অধিকারে থাকা টিভৎ\f + \fr 8:8 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 18:8\+xt* পদ দেখুন, অথবা, বেটহ\ft*\f* ও বেরোথা নগর দুটি থেকে রাজা দাউদ প্রচুর পরিমাণে ব্রোঞ্জ নিয়ে এলেন। \p \v 9 হমাতের রাজা তোয়ু\f + \fr 8:9 \fr*\ft বা, তয়ি—অন্য বানানে তোয়ু; 10 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* যখন শুনেছিলেন যে দাউদ হদদেষরের সম্পূর্ণ সৈন্যদলকে পরাজিত করেছেন, \v 10 তখন তিনি তাঁকে শুভেচ্ছা ও হদদেষরের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের অভিনন্দন জানানোর জন্য তাঁর ছেলে যোরামকে\f + \fr 8:10 \fr*\ft বা, অন্য বানানে হদোরাম\ft*\f* দাউদের কাছে পাঠালেন, কারণ হদদেষরের সঙ্গে তয়িরেরও অনবরত যুদ্ধ লেগেই থাকত। যোরাম সাথে করে রুপো, সোনা ও ব্রোঞ্জের তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে এলেন। \p \v 11 রাজা দাউদ এইসব জিনিসপত্র সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করে দিলেন, যেভাবে তিনি নিজের বশে আনা অন্য সব জাতির কাছ থেকে সংগ্রহ করা রুপো ও সোনার ক্ষেত্রেও করলেন: \v 12 অর্থাৎ, ইদোমীয়\f + \fr 8:12 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 18:11\+xt* পদ দেখুন, অথবা, অরামীয়\ft*\f* ও মোয়াবীয়, অম্মোনীয় ও ফিলিস্তিনী, এবং অমালেকীয়দের কাছ থেকে। তিনি সোবার রাজা রহোবের ছেলে হদদেষরের কাছ থেকে পাওয়া লুন্ঠিত জিনিসপত্রও উৎসর্গ করে দিলেন। \p \v 13 লবণ উপত্যকায় আঠারো হাজার ইদোমীয়কে\f + \fr 8:13 \fr*\ft \+xt 1 বংশাবলি 18:12\+xt* পদ দেখুন, অথবা, অরামীয়\ft*\f* শেষ করে ফিরে আসার পর দাউদ বিখ্যাত হয়ে গেলেন। \p \v 14 তিনি ইদোম দেশের সর্বত্র সৈন্যদল মোতায়েন করে দিলেন, ও ইদোমীয়রা সবাই দাউদের বশীভূত হল। দাউদ যেখানে যেখানে গেলেন, সদাপ্রভু সেখানে সেখানে তাঁকে বিজয়ী করলেন। \s1 দাউদের কর্মকর্তারা \p \v 15 দাউদ সমস্ত ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করলেন, ও তাঁর সব প্রজার জন্য যা যা ন্যায্য ও উপযুক্ত ছিল, তিনি তাই করতেন। \v 16 সরূয়ার ছেলে যোয়াব সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতি ছিলেন; অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ছিলেন লিপিকার; \v 17 অহীটূবের ছেলে সাদোক ও অবিয়াথরের ছেলে অহীমেলক ছিলেন যাজক; সরায় ছিলেন সচিব; \v 18 যিহোয়াদার ছেলে বনায় করেথীয় ও পলেথীয়দের উপর নিযুক্ত ছিলেন; এবং দাউদের ছেলেরা ছিলেন যাজক।\f + \fr 8:18 \fr*\ft অথবা, প্রধান কর্মকর্তা (\+xt 1 বংশাবলি 18:17\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* \c 9 \s1 দাউদ এবং মফীবোশৎ \p \v 1 দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন, “শৌলের বংশে এমন কেউ কি অবশিষ্ট আছে, যার প্রতি আমি যোনাথনের খাতিরে দয়া দেখাতে পারি?” \p \v 2 সীব নামে শৌলের এক পারিবারিক দাস ছিল। তাকে দাউদের সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হল, এবং রাজামশাই তাকে বললেন, “তুমিই কি সীব?” \p “আপনার দাস তাই বটে,” সে উত্তর দিয়েছিল। \p \v 3 রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন: “শৌলের বংশে আর কি কেউ জীবিত নেই, যার প্রতি আমি ঐশ্বরিক দয়া দেখাতে পারি?” \p সীব রাজাকে উত্তর দিয়েছিল, “যোনাথনের এক ছেলে এখনও অবশিষ্ট আছেন; তিনি দুই পায়েই খঞ্জ।” \p \v 4 “সে কোথায়?” রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন। \p সীব উত্তর দিয়েছিল, “তিনি লো-দবারে অম্মীয়েলের ছেলে মাখীরের বাসায় আছেন।” \p \v 5 তখন রাজা দাউদ লো-দবারে লোক পাঠিয়ে তাঁকে অম্মীয়েলের ছেলে মাখীরের বাসা থেকে আনিয়েছিলেন। \p \v 6 শৌলের নাতি ও যোনাথনের ছেলে মফীবোশৎ দাউদের কাছে এসে তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করলেন। \p দাউদ বললেন, “মফীবোশৎ!” \p “এই তো আমি, আপনার দাস,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 7 “ভয় পেয়ো না,” দাউদ তাঁকে বললেন, “কারণ নিঃসন্দেহে তোমার বাবা যোনাথনের খাতিরে আমি তোমার প্রতি দয়া দেখাব। তোমার বাবামহ শৌলের সব জমি আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব, ও তুমি সবসময় আমার টেবিলে বসে ভোজনপান করবে।” \p \v 8 মফীবোশৎ নতজানু হয়ে বললেন, “আপনার দাস এমন কে, যে আপনি আমার মতো এক মরা কুকুরকে দয়া দেখাচ্ছেন?” \p \v 9 তখন রাজামশাই শৌলের সেবক সীবকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে বললেন, “আমি তোমার মনিবের নাতিকে সেসবকিছু দিয়েছি, যা শৌল ও তাঁর পরিবারের অধিকারে ছিল। \v 10 তুমি ও তোমার ছেলেরা ও তোমার দাসেরা তাঁর জমি চাষ করবে এবং ফসল নিয়ে আসবে, যেন তোমার মনিবের নাতির কাছে খাদ্যের জোগান থাকে। তোমার মনিবের নাতি মফীবোশৎ অবশ্য সবসময় আমার টেবিলে বসে ভোজনপান করবেন।” (সেই সীবের পনেরোজন ছেলে ও কুড়ি জন দাস ছিল।) \p \v 11 তখন সীব রাজামশাইকে বলল, “আমার প্রভু মহারাজ তাঁর দাসকে যা যা আদেশ দিয়েছেন, আপনার দাস তাই করবে।” অতএব মফীবোশৎ একজন রাজপুত্রের মতোই দাউদের টেবিলে বসে ভোজনপান করতে লাগলেন। \p \v 12 মফীবোশতের এক শিশুছেলে ছিল, যার নাম মীখা, ও সীবের পরিবারের সবাই মফীবোশতের দাস-দাসী ছিল। \v 13 মফীবোশৎ জেরুশালেমে বসবাস করতেন, কারণ তিনি সবসময় রাজার টেবিলেই বসে ভোজনপান করতেন; তিনি দু-পায়েই খঞ্জ ছিলেন। \c 10 \s1 দাউদ অম্মোনীয়দের পরাজিত করলেন \p \v 1 কালক্রমে, অম্মোনীয়দের রাজা মারা গেলেন, ও তাঁর ছেলে হানূন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \v 2 দাউদ ভেবেছিলেন, “আমি নাহশের ছেলে হানূনের প্রতি সহানুভূতি দেখাব, ঠিক যেভাবে তাঁর বাবা আমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলেন।” অতএব দাউদ হানূনের বাবার প্রতি তাঁর সহানুভূতি প্রকাশ করার জন্য একদল লোককে তাঁর প্রতিনিধি করে পাঠালেন। \p দাউদের লোকজন যখন অম্মোনীয়দের দেশে এসেছিল, \v 3 অম্মোনীয় সৈন্যদলের সেনাপতিরা তাদের মনিব হানূনকে বলল, “আপনি কি মনে করছেন যে দাউদ লোকজন পাঠিয়ে আপনার বাবাকে সম্মান জানাচ্ছেন? দাউদ কি নগরের খোঁজখবর নিয়ে চরবৃত্তি করে এটি ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যই আপনার কাছে তাদের পাঠাননি?” \v 4 তাই হানূন দাউদের পাঠানো লোকজনকে ধরে, তাদের দাড়ির অর্ধেকটা করে কেটে দিয়ে, তাদের কাপড়চোপড়ও নিতম্বদেশ পর্যন্ত ছিঁড়ে দিয়ে তাদের ফেরত পাঠালেন। \p \v 5 দাউদকে যখন একথা বলা হল, তিনি তখন সেই লোকদের সাথে দেখা করার জন্য কয়েকজন দূত পাঠালেন, কারণ তারা অত্যন্ত লজ্জিত হয়েছিল। রাজামশাই বললেন, “যতদিন না তোমাদের চুল-দাড়ি না বড়ো হচ্ছে, ততদিন তোমরা যিরীহোতেই থাকো, পরে তোমরা এখানে ফিরে এসো।” \p \v 6 অম্মোনীয়রা যখন বুঝেছিল যে তারা দাউদের দৃষ্টিতে আপত্তিকর হয়ে গিয়েছে, তখন তারা বৈৎ-রহোব ও সোবা থেকে 20,000 অরামীয় পদাতিক সৈন্য, তথা মাখার রাজার কাছ থেকে এক হাজার জন, ও টোব থেকে 12 হাজার জন লোক ভাড়া করল। \p \v 7 একথা শুনতে পেয়ে, দাউদ লড়াকু লোকবিশিষ্ট সমস্ত সৈন্যদল সমেত যোয়াবকে সেখানে পাঠিয়ে দিলেন। \v 8 অম্মোনীয়রা বেরিয়ে এসে তাদের নগরের প্রবেশদ্বারে সৈন্যদল সাজিয়ে রেখেছিল, আবার সোবা ও রহোবের অরামীয়রা এবং টোব ও মাখার লোকজনও খোলা মাঠে আলাদা করে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 9 যোয়াব দেখেছিলেন যে তাঁর আগে পিছে সৈন্যদল সাজিয়ে রাখা হয়েছে; তাই তিনি ইস্রায়েলের সেরা কয়েকজন সৈন্য বেছে নিয়ে অরামীয়দের বিরুদ্ধে তাদের মোতায়েন করলেন। \v 10 বাকি সৈন্যদের তিনি তাঁর ভাই অবীশয়ের কর্তৃত্বাধীন করে রেখেছিলেন, এবং তারা অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে মোতায়েন হল। \v 11 যোয়াব বললেন, “অরামীয়রা যদি আমার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে যায়, তবে তোমরা আমাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসবে; কিন্তু অম্মোনীয়রা যদি তোমাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে যায়, তবে আমি তোমাদের রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসব। \v 12 শক্তিশালী হও, এসো—আমরা আমাদের জাতির ও আমাদের ঈশ্বরের নগরগুলির জন্য বীরের মতো লড়াই করি। সদাপ্রভুই তাঁর দৃষ্টিতে যা ভালো বোধ হয়, তাই করবেন।” \p \v 13 পরে যোয়াব ও তাঁর সৈন্যদল অরামীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এগিয়ে গেলেন, ও তারা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল। \v 14 অম্মোনীয়রা যখন বুঝতে পেরেছিল যে অরামীয়রা পালিয়ে যাচ্ছে, তখন তারাও অবীশয়ের সামনে থেকে পালিয়ে গেল ও নগরের ভিতরে ঢুকে পড়ল। তখন যোয়াব অম্মোনীয়দের ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে এলেন। \p \v 15 অরামীয়রা যখন দেখেছিল যে তারা ইস্রায়েলীদের সামনে ছত্রভঙ্গ হয়েছে, তখন তারা আবার দল বেঁধেছিল। \v 16 হদদেষর ইউফ্রেটিস নদীর ওপার থেকে অরামীয়দের আনিয়েছিলেন; তারা হেলমে গেল, ও হদদেষরের সৈন্যদলের সেনাপতি শোবক তাদের নেতৃত্বে ছিলেন। \p \v 17 দাউদকে যখন একথা বলা হল, তিনি সমস্ত ইস্রায়েলকে একত্রিত করলেন, জর্ডন নদী পার হলেন ও হেলমে গেলেন। অরামীয়রা দাউদের সামনে তাদের সৈন্যদল সাজিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। \v 18 কিন্তু তারা ইস্রায়েলের সামনে থেকে পালিয়ে গেল, ও দাউদ তাদের মধ্যে 700 সারথি এবং 40,000 পদাতিক সৈন্যকে\f + \fr 10:18 \fr*\ft (\+xt 1 বংশাবলি 19:18\+xt* পদ দেখুন), অথবা, অশ্বারোহী\ft*\f* হত্যা করলেন। এছাড়াও তিনি তাদের সৈন্যদলের সেনাপতি শোবককেও আঘাত করলেন, ও তিনি সেখানে মারা গেলেন। \v 19 যখন হদদেষরের দাসানুদাস সব রাজা দেখেছিলেন যে ইস্রায়েলের কাছে তারা ছত্রভঙ্গ হয়েছেন, তখন তারা ইস্রায়েলীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করলেন ও তাদের বশীভূত হলেন। \p তাই অরামীয়রা আর কখনও অম্মোনীয়দের সাহায্য করার সাহস পায়নি। \c 11 \s1 দাউদ ও বৎশেবা \p \v 1 বসন্তকালে, রাজারা সাধারাণত যখন যুদ্ধে যেতেন, দাউদ তখন রাজার লোকজন ও সমস্ত ইস্রায়েলী সৈন্যদলের সঙ্গে যোয়াবকেই সেখানে পাঠালেন। তারা অম্মোনীয়দের ধ্বংস করে রব্বা অবরোধ করল। কিন্তু দাউদ জেরুশালেমেই থেকে গেলেন। \p \v 2 একদিন বিকেলবেলায় দাউদ তাঁর বিছানা ছেড়ে উঠে রাজপ্রাসাদের ছাদে পায়চারি করছিলেন। ছাদ থেকে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন, একজন মহিলা স্নান করছেন। মহিলাটি অপরূপ সুন্দরী ছিলেন, \v 3 তাই দাউদ কাউকে পাঠিয়ে তাঁর বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছিলেন। লোকটি বলল, “ইনি ইলিয়ামের মেয়ে ও হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রী বৎশেবা।” \v 4 তখন দাউদ তাঁকে কাছে পাওয়ার জন্য তাঁর কাছে কয়েকজন দূত পাঠালেন। তিনি তাঁর কাছে এলেন, ও দাউদ তাঁর সঙ্গে শুয়েছিলেন।\f + \fr 11:4 \fr*\ft অথবা, যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলেন\ft*\f* (ইত্যবসরে মহিলাটি মাসিক-ধর্মের অশুচিতা থেকে নিজেকে শুচিশুদ্ধ করছিলেন) পরে তিনি ঘরে ফিরে গেলেন। \v 5 মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ায় এই বলে দাউদকে খবর পাঠালেন, “দেখুন, আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছি।” \p \v 6 তখন দাউদ যোয়াবকে একথা বলে পাঠালেন: “হিত্তীয় ঊরিয়কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।” যোয়াব তখন তাঁকে দাউদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \v 7 ঊরিয় যখন দাউদের কাছে এলেন, দাউদ তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন যোয়াব কেমন আছেন, সৈন্যরা সব কেমন আছে ও যুদ্ধ কেমন চলছে। \v 8 পরে দাউদ ঊরিয়কে বললেন, “তোমার বাসায় গিয়ে পা-টা ধুয়ে নাও।” তাই ঊরিয় রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে চলে গেলেন, ও তাঁর পিছু পিছু রাজার কাছ থেকে কিছু উপহারও পাঠানো হল। \v 9 কিন্তু ঊরিয় তাঁর মনিবের সব দাসের সঙ্গে মিলে রাজপ্রাসাদের সিংহদুয়ারেই ঘুমিয়েছিলেন ও নিজের বাসায় আর যাননি। \p \v 10 দাউদকে বলা হল, “ঊরিয় ঘরে যাননি।” তাই তিনি ঊরিয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “এইমাত্র কি তুমি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসোনি? তবে কেন তুমি ঘরে গেলে না?” \p \v 11 ঊরিয় দাউদকে বললেন, “সেই নিয়ম-সিন্দুক এবং ইস্রায়েল ও যিহূদা তাঁবুতে\f + \fr 11:11 \fr*\ft অথবা, সুক্কোতে\ft*\f* আছে, এবং আমার সেনাপতি যোয়াব ও আমার প্রভুর লোকজন খোলা মাঠে শিবির করে আছেন। তবে আমিই বা কেমন করে বাসায় গিয়ে ভোজনপান করব ও আমার স্ত্রীকে সোহাগ করব? আপনার প্রাণের দিব্যি, আমি এ কাজ করতে পারব না!” \p \v 12 তখন দাউদ তাঁকে বললেন, “আরও একদিন এখানে থাকো, আগামীকাল আমি তোমাকে ফেরত পাঠাব।” অতএব ঊরিয় সেদিন ও পরদিন জেরুশালেমে থেকে গেলেন। \v 13 দাউদ তাঁকে নিমন্ত্রণ করায় তিনি তাঁর সঙ্গে ভোজনপান করলেন ও দাউদ তাঁকে মাতাল করে ছেড়েছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যাবেলায় ঊরিয় তাঁর মনিবের দাসদের মাঝে গিয়ে মেঝেতে পাতা মাদুরে শুয়ে পড়েছিলেন; তিনি ঘরে যাননি। \p \v 14 সকালবেলায় দাউদ যোয়াবকে একটি চিঠি লিখে, সেটি ঊরিয়ের হাতে দিয়ে পাঠালেন। \v 15 সেই চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “ঊরিয়কে তুমি একদম প্রথম সারিতে রেখো, যেখানে যুদ্ধের পরিস্থিতি খুব ভয়ংকর। পরে তার পাশ থেকে সরে যেয়ো, যেন সে যন্ত্রণা পেয়ে মারা যায়।” \p \v 16 অতএব নগর অবরোধ করার সময় যোয়াব ঊরিয়কে এমন এক স্থানে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যেখানে তিনি জানতেন সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধকারীরা মজুত আছে। \v 17 নগরের লোকজন বেরিয়ে এসে যখন যোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল, তখন দাউদের সৈন্যদলের মধ্যেও কেউ কেউ মরেছিল; এছাড়া, হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গেল। \p \v 18 যোয়াব যুদ্ধের এক পূর্ণ বিবরণ দাউদের কাছে পাঠালেন। \v 19 তিনি দূতকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন: “রাজামশাইকে যুদ্ধের এই বিবরণ দেওয়ার পর, \v 20 রাজা হয়তো রাগে জ্বলে উঠতে পারেন, ও তিনি হয়তো তোমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, ‘যুদ্ধ করার জন্য তোমরা নগরের এত কাছে গেলে কেন? তোমরা কি জানতে না যে তারা প্রাচীরের উপর থেকে তির ছুঁড়বে? \v 21 কে যিরূব্বেশতের\f + \fr 11:21 \fr*\ft যিনি যিরুব্বায়াল (গিদিয়োন) নামেও পরিচিত\ft*\f* ছেলে অবীমেলককে হত্যা করেছিল? প্রাচীরের উপর থেকেই কি একজন স্ত্রীলোক জাঁতার উপরের পাটটি এমনভাবে তার উপর ফেলেনি, যে সে তেবেষেই মারা গিয়েছিল? তবে কেন তোমরা প্রাচীরের এত কাছে গেলে?’ তিনি যদি তোমাকে একথা জিজ্ঞাসা করলেন, তবে তাঁকে তুমি বোলো, ‘এছাড়া, আপনার দাস হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গিয়েছে।’ ” \p \v 22 সেই দূত বেরিয়ে পড়েছিল, এবং দাউদের কাছে পৌঁছে গিয়ে সে তাঁকে সেসব কথাই বলল, যা যোয়াব তাকে বলতে বললেন। \v 23 দূতটি দাউদকে বলল, “লোকেরা আমাদের কাবু করে ফেলেছিল ও খোলা মাঠে আমাদের বিরুদ্ধে নেমে পড়েছিল, কিন্তু আমরা তাদের নগরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। \v 24 পরে তিরন্দাজরা প্রাচীরের উপর থেকে আপনার দাসদের দিকে তির নিক্ষেপ করল, ও রাজার লোকজনের মধ্যে কয়েকজন মারা গিয়েছে। এছাড়া, আপনার দাস হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গিয়েছে।” \p \v 25 দাউদ দূতকে বললেন, “যোয়াবকে একথা বোলো: ‘এতে যেন তোমার মন খারাপ না হয়; তরোয়াল যেমন একজনকে গ্রাস করে, তেমনি তা অন্যজনকেও গ্রাস করে। নগরটির বিরুদ্ধে আক্রমণ জোরালো করো ও সেটি ধ্বংস করে দাও।’ যোয়াবকে উৎসাহিত করার জন্য একথা বোলো।” \p \v 26 ঊরিয়ের স্ত্রী যখন শুনেছিলেন যে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন, তখন তিনি তাঁর জন্য শোকপ্রকাশ করলেন। \v 27 শোকপ্রকাশকাল সম্পূর্ণ হওয়ার পর দাউদ তাঁকে নিজের বাসায় নিয়ে এলেন, ও তিনি দাউদের স্ত্রী হলেন ও তাঁর ছেলের জন্ম দিলেন। কিন্তু দাউদের এই কাজটি সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করল। \c 12 \s1 নাথন দাউদকে তিরস্কার করলেন \p \v 1 সদাপ্রভু নাথনকে দাউদের কাছে পাঠালেন। তাঁর কাছে এসে তিনি বললেন, “কোনও এক নগরে দুজন লোক ছিল, একজন ছিল ধনী ও অন্যজন দরিদ্র। \v 2 ধনী লোকটির কাছে প্রচুর মেষ ও গবাদি পশু ছিল, \v 3 কিন্তু দরিদ্র লোকটির কাছে কিনে আনা একটি ছোটো শাবক মেষী ছাড়া আর কিছুই ছিল না। সে সেটির লালনপালন করল, ও সেটি তার কাছে থেকে তার ছেলেমেয়ের সঙ্গে বড়ো হয়ে উঠেছিল। সেটি তার হাত থেকেই খাবার খেতো, তার পানপাত্র থেকেই জলপান করত ও এমন কী তার কোলেই ঘুমাতো। তার কাছে সেটি এক মেয়ের মতোই ছিল। \p \v 4 “একবার সেই ধনী লোকটির কাছে একজন পথিক এসেছিল, কিন্তু সেই ধনী লোকটি তার কাছে আসা পথিকের জন্য খাবারের আয়োজন করতে গিয়ে নিজের পাল থেকে কোনও মেষ বা পশু না নিয়ে, তার পরিবর্তে, সে দরিদ্র লোকটির অধিকারে থাকা শাবক ভেড়ীটি ছিনিয়ে এনে সেটি তার বাসায় আসা অতিথির জন্য রান্না করে দিয়েছিল।” \p \v 5 সেই লোকটির বিরুদ্ধে দাউদ রাগে জ্বলে উঠেছিলেন ও নাথনকে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, যে এ কাজটি করেছে তাকে মরতেই হবে! \v 6 সেই শাবক ভেড়ীটির চারগুণ দাম তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে, কারণ সে এরকম কাজ করেছে ও তার মনে দয়ামায়াও হয়নি।” \p \v 7 তখন নাথন দাউদকে বললেন, “আপনিই সেই লোক! ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘আমি তোমাকে ইস্রায়েলের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করলাম, আর আমি শৌলের হাত থেকে তোমাকে উদ্ধারও করলাম। \v 8 আমি তোমার মনিবের ঘরবাড়ি, ও তোমার মনিবের স্ত্রীদেরও তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। আমি তোমাকে সমস্ত ইস্রায়েল ও যিহূদার অধিকার দিয়েছিলাম। আর এসবও যদি কম হয়ে থাকে, তবে আমি তোমাকে আরও অনেক কিছু দিতে পারতাম। \v 9 তুমি কেন সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজ করার দ্বারা তাঁর বাক্য অগ্রাহ্য করেছ? তুমি হিত্তীয় ঊরিয়কে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করেছ এবং তার স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী করে নিয়েছ। তুমি তাকে অম্মোনীয়দের তরোয়াল দিয়ে হত্যা করলে। \v 10 এখন তাই, তরোয়াল কখনোই তোমার বংশ থেকে দূর হবে না, কারণ তুমি আমাকে অগ্রাহ্য করলে ও হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রীকে তোমার নিজের স্ত্রী করে নিয়েছিলে।’ \p \v 11 “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তোমার পরিবার থেকেই আমি তোমার উপর বিপর্যয় নিয়ে আসতে চলেছি। তোমার নিজের চোখের সামনেই আমি তোমার স্ত্রীদের নিয়ে এমন একজনের হাতে তুলে দেব, যে তোমার খুব ঘনিষ্ঠ, আর সে স্পষ্ট দিনের আলোতেই তোমার স্ত্রীদের সঙ্গে বিছানায় শোবে। \v 12 তুমি তো গোপনে এ কাজ করলে, কিন্তু আমি স্পষ্ট দিনের আলোতেই সব ইস্রায়েলের সামনে এমনটি করব।’ ” \p \v 13 তখন দাউদ নাথনকে বললেন, “আমি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।” \p নাথন উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভুও আপনার পাপ ক্ষমা করলেন। আপনি আর মরবেন না। \v 14 কিন্তু যেহেতু এ কাজ করে আপনি সদাপ্রভুকে চূড়ান্ত হেনস্থা করেছেন\f + \fr 12:14 \fr*\ft অথবা, সদাপ্রভুর শত্রুদের তাঁকে নিন্দা করার সুযোগ করে দিয়েছেন\ft*\f*, তাই আপনার যে ছেলেটি জন্মাবে, সে মারা যাবে।” \p \v 15 নাথন ঘরে ফিরে যাওয়ার পর সদাপ্রভু সেই শিশুটিকে আঘাত করলেন, যাকে ঊরিয়ের স্ত্রী দাউদের ঔরসে জন্ম দিলেন, ও সে অসুস্থ হয়ে পড়ল। \v 16 দাউদ শিশুটির জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি জানিয়েছিলেন। তিনি উপবাস করলেন ও কয়েকরাত মেঝের উপর চট\f + \fr 12:16 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপিতে চটের কোনও উল্লেখ করা হয়নি\ft*\f* পেতে শুয়েছিলেন। \v 17 তাঁর পরিবারের প্রাচীনেরা তাঁর পাশে বসে তাঁকে মেঝে থেকে তোলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি রাজি হননি, ও তিনি তাদের সঙ্গে ভোজনপানও করতে চাননি। \p \v 18 সপ্তম দিনে শিশুটি মারা গেল। দাউদের কর্মচারীরা তাঁকে বলার সাহস পায়নি যে শিশুটি মারা গিয়েছে, কারণ তারা ভেবেছিল, “শিশুটি যখন বেঁচে ছিল, তখনই তো তিনি আমাদের কথা শোনেননি। তবে এখন আমরা তাঁকে কীভাবে বলব যে শিশুটি মারা গিয়েছে? তিনি হয়তো চরম কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেন।” \p \v 19 দাউদ লক্ষ্য করলেন যে তাঁর কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে কানাকানি করছে, ও তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শিশুটি মারা গিয়েছে। “শিশুটি কি মারা গিয়েছে?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p “হ্যাঁ,” তারা উত্তর দিয়েছিল, “সে মারা গিয়েছে।” \p \v 20 তখন দাউদ মেঝে থেকে উঠলেন। স্নান করে, তেল মেখে ও পোশাক বদলে তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গিয়ে আরাধনা করলেন। পরে তিনি নিজের বাসায় গেলেন, ও তাঁর অনুরোধে তারা তাঁর সামনে খাবার পরিবেশন করল, ও তিনি ভোজনপান করলেন। \p \v 21 তাঁর কর্মচারীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “আপনি এরকম আচরণ করলেন কেন? শিশুটি যখন বেঁচে ছিল, তখন তো আপনি উপবাস করলেন ও কান্নাকাটিও করলেন, কিন্তু এখন শিশুটি যখন মারা গিয়েছে, আপনি উঠে ভোজনপান করলেন!” \p \v 22 তিনি উত্তর দিলেন, “শিশুটি যখন বেঁচে ছিল, তখন আমি উপবাস করে কান্নাকাটি করলাম। আমি ভেবেছিলাম, ‘কে জানে? সদাপ্রভু হয়তো আমার প্রতি করুণা দেখাবেন ও শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’ \v 23 কিন্তু এখন যেহেতু সে মারা গিয়েছে, আমি কেনই বা উপবাস করব? আমি কি তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব? আমি তার কাছে যাব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরে আসবে না।” \p \v 24 পরে দাউদ তাঁর স্ত্রী বৎশেবাকে সান্তনা জানিয়েছিলেন, ও তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করলেন। তিনি এক ছেলের জন্ম দিলেন, ও তারা তার নাম রেখেছিলেন শলোমন। সদাপ্রভু তাকে ভালোবেসেছিলেন; \v 25 আর যেহেতু সদাপ্রভু তাকে ভালোবেসেছিলেন, তাই ভাববাদী নাথনের মাধ্যমে বলে পাঠালেন, যেন তার নাম রাখা হয় যিদীদীয়।\f + \fr 12:25 \fr*\ft যিদীদীয় নামের অর্থ “সদাপ্রভুর ভালোবাসার পাত্র”\ft*\f* \p \v 26 এদিকে যোয়াব অম্মোনীয়দের রাজধানী নগর রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে সেটি দখল করে নিয়েছিলেন। \v 27 যোয়াব পরে দাউদের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমি রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সেখানকার জলের ভাণ্ডারটি দখল করে নিয়েছি। \v 28 এখন আপনি সৈন্যদল একত্র করে নগরটি অবরোধ করে তা দখল করে নিন। তা না হলে আমি নগরটি দখল করব, ও সেটি আমারই নামে পরিচিত হবে।” \p \v 29 তাই দাউদ সমস্ত সৈন্যদল একত্র করে রব্বায় গেলেন, ও সেটি আক্রমণ করে দখল করে নিয়েছিলেন। \v 30 দাউদ তাদের রাজার\f + \fr 12:30 \fr*\ft অথবা, মিলকমের (অর্থাৎ, মোলকের)\ft*\f* মাথা থেকে মুকুট কেড়ে নিয়েছিলেন, ও সেটি তাঁর মাথায় পরিয়ে দেওয়া হল। সেটি এক তালন্ত\f + \fr 12:30 \fr*\ft অথবা, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* সোনা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল, ও সেটি ছিল মনি-মুক্তো-খচিত। নগর থেকে দাউদ প্রচুর পরিমাণ লুন্ঠিত জিনিসপত্র বের করে এনেছিলেন \v 31 ও সেখানকার লোকজনকেও নিয়ে এসে তিনি তাদের করাত, লোহার গাঁইতি ও কুড়ুল চালানোর, এবং ইট তৈরির কাজে লাগিয়ে দিলেন। দাউদ অম্মোনীয়দের সব নগরের প্রতিই এরকম করলেন। পরে তিনি তাঁর সমস্ত সৈন্যদল নিয়ে জেরুশালেমে ফিরে এলেন। \c 13 \s1 অম্নোন এবং তামর \p \v 1 কালক্রমে, দাউদের ছেলে অম্নোন দাউদের অপর ছেলে অবশালোমের নিজের সুন্দরী বোন তামরের প্রেমে পড়েছিল। \p \v 2 অম্নোন তার বোন তামরের প্রতি এমন মোহবিষ্ট হয়ে গেল যে সে নিজেকে অসুস্থই করে ফেলেছিল। তামর কুমারী ছিল, ও তার প্রতি কিছু করা অম্নোনের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 3 এদিকে দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব ছিল অম্নোনের মন্ত্রণাদাতা। যোনাদব খুব ধুরন্ধর লোক ছিল। \v 4 সে অম্নোনকে জিজ্ঞাসা করল, “হে রাজার ছেলে, তোমাকে দিনের পর দিন কেন এত বিমর্ষ দেখাচ্ছে? তুমি কি আমাকে বলবে না?” \p অম্নোন তাকে বলল, “আমি আমার ভাই অবশালোমের বোন তামরের প্রেমে পড়েছি।” \p \v 5 “বিছানায় গিয়ে অসুস্থ হওয়ার ভান করো,” যোনাদব বলল। “তোমার বাবা যখন তোমাকে দেখতে আসবেন, তাঁকে বোলো, ‘আমি চাই আমার বোন তামর এসে আমাকে কিছু খেতে দিক। সে আমার সামনেই খাবার তৈরি করুক, যেন আমি তাকে দেখতে দেখতে তার হাত থেকেই তা খেতে পারি।’ ” \p \v 6 তাই অম্নোন শুয়ে পড়েছিল ও অসুস্থ হওয়ার ভান করল। রাজামশাই যখন তাকে দেখতে এলেন, অম্নোন তাঁকে বলল, “আমি চাই, আমার বোন তামর এসে আমার সামনেই কয়েকটি বিশেষ ধরনের রুটি তৈরি করে দিক, যেন আমি তার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” \p \v 7 দাউদ রাজপ্রাসাদে তামরকে খবর পাঠালেন: “তোমার দাদা অম্নোনের বাসায় যাও ও তার জন্য কিছু খাবার তৈরি করে দাও।” \v 8 অতএব তামর তার দাদা অম্নোনের বাসায় গেল। সে তখন শুয়েছিল। তামর কিছুটা আটা মেখে অম্নোনের চোখের সামনেই রুটি বানিয়ে সেগুলি সেঁকে দিয়েছিল। \v 9 পরে সে তাওয়াশুদ্ধু রুটিগুলি নিয়ে গিয়ে অম্নোনের সামনে রেখেছিল, কিন্তু সে খেতে চায়নি। \p “সবাই এখান থেকে চলে যাক,” অম্নোন বলল। তাই সবাই তাকে ছেড়ে গেল। \v 10 তখন অম্নোন তামরকে বলল, “খাবারগুলি এখানে আমার শোওয়ার ঘরে নিয়ে এসো, যেন আমি তোমার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” তামর তার তৈরি করা রুটিগুলি নিয়ে দাদা অম্নোনের শোওয়ার ঘরে গেল। \v 11 কিন্তু যখন সে তাকে খাওয়াতে যাচ্ছিল, সে তাকে জাপটে ধরে বলল, “বোন আমার, আমার সঙ্গে বিছানায় চলো।” \p \v 12 “না, দাদা না!” সে তাকে বলল। “আমার উপর জোর-জবরদস্তি কোরো না! ইস্রায়েলে এরকম হওয়া উচিত নয়! এরকম জঘন্য কাজ কোরো না। \v 13 আমার কী হবে? আমার এ কলঙ্ক আমি কোথায় গিয়ে মেটাব? আর তোমারই বা কী হবে? ইস্রায়েলে তোমার দশা হবে এক দুষ্ট নির্বোধের মতো। দয়া করে রাজামশাইকে বলো; তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে তিনি অসম্মত হবেন না।” \v 14 কিন্তু সে তার কথা শুনতে রাজি হয়নি, ও যেহেতু সে তামরের তুলনায় বেশি শক্তিশালী ছিল, তাই সে তাকে ধর্ষণ করল। \p \v 15 পরে তীব্র বিরাগ নিয়ে সে তাকে ঘৃণা করল। প্রকৃতপক্ষে, সে তাকে যত ভালোবেসেছিল, তার চেয়েও বেশি ঘৃণা করল। অম্নোন তামরকে বলল, “ওঠো ও এখান থেকে বেরিয়ে যাও!” \p \v 16 তামর তাকে বলল, “না, না! আমার প্রতি তুমি যা করেছ, আমাকে বের করে দিলে তো তার চেয়েও বেশি অন্যায় করা হয়ে যাবে।” \p কিন্তু সে তার কথা শুনতে চায়নি। \v 17 সে তার খাস চাকরকে ডেকে বলল, “এই মহিলাটিকে আমার চোখের সামনে থেকে দূর করে দাও ও দরজায় খিল দিয়ে দাও।” \v 18 তখন তার চাকরটি তামরকে বের করে দিয়ে দরজায় খিল লাগিয়ে দিয়েছিল। তামরের পরনে ছিল অলংকারসমৃদ্ধ এক পোশাক, কারণ কুমারী রাজার মেয়েরা এ ধরনের পোশাকই পরে থাকত। \v 19 তামর মাথায় ছাইভস্ম মেখে পরনের অলংকারসমৃদ্ধ পোশাকটি ছিঁড়ে ফেলেছিল। মাথায় হাত দিয়ে, জোরে কাঁদতে কাঁদতে সে বাইরে বেরিয়ে গেল। \p \v 20 তার দাদা অবশালোম তাকে বলল, “তোমার দাদা অম্নোন কি তোমার সঙ্গে ছিল? হে আমার বোন, আপাতত চুপচাপ থাকো; সে তো তোমারই দাদা। এটি নিয়ে মন খারাপ কোরো না।” সেই থেকে তামর এক নিঃসঙ্গ মহিলার মতো তার দাদা অবশালোমের বাসাতেই থাকতে শুরু করল। \p \v 21 রাজা দাউদ এসব কথা শুনে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। \v 22 অবশালোমও অম্নোনকে ভালোমন্দ—একটিও কথা বলেনি; সে অম্নোনকে ঘৃণা করতে শুরু করেছিল, যেহেতু সে তার নিজের বোন তামরকে কলঙ্কিত করল। \s1 অবশালোম অম্নোনকে হত্যা করল \p \v 23 দুই বছর পর, ইফ্রয়িমের সীমানার কাছে বায়াল-হাৎসোরে যখন অবশালোমের মেষগুলির গা থেকে লোম ছাঁটা হচ্ছিল, সে রাজার সব ছেলেকে সেখানে আসার নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। \v 24 অবশালোম রাজামশাই-এর কাছে গিয়ে বলল, “আপনার দাসের কাছে মেষের লোম ছাঁটার লোকেরা এসে গিয়েছে। রাজামশাই ও তাঁর কর্মচারীরা কি দয়া করে আমার সাথে যোগ দেবেন?” \p \v 25 “বাছা, না,” রাজামশাই উত্তর দিলেন। “আমাদের সকলের যাওয়া উচিত হবে না; আমরা শুধু তোমার বোঝাই হব।” যদিও অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তাও তিনি যেতে রাজি হননি, তবে তিনি তাকে আশীর্বাদ করলেন। \p \v 26 তখন অবশালোম বলল, “আপনি যদি না যান, তবে অন্তত আমার ভাই অম্নোনকে আমাদের সঙ্গে যেতে দিন।” \p রাজামশাই তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সে কেন তোমাদের সঙ্গে যাবে?” \v 27 কিন্তু যেহেতু অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তিনি অম্নোন ও অন্যান্য রাজার ছেলেদের তার সঙ্গে পাঠালেন। \p \v 28 অবশালোম তার লোকজনকে আদেশ দিয়েছিল, “শুনে রাখো! অম্নোন যখন দ্রাক্ষারস পান করে বেশ খোশমেজাজে থাকবে ও আমি যখন তোমাদের বলব ‘অম্নোনকে মারো,’ তখন তাকে হত্যা কোরো। ভয় পেয়ো না। আমিই কি তোমাদের এই আদেশ দিইনি? শক্ত হও ও সাহস করো।” \v 29 তখন অবশালোমের লোকজন অম্নোনের প্রতি অবশালোমের আদেশমতোই কাজ করল। পরে রাজপুত্রেরা সবাই যে যার খচ্চরের পিঠে চেপে পালিয়েছিল। \p \v 30 তারা তখনও পথেই ছিল, আর এই খবরটি দাউদের কাছে পৌঁছে গেল: “অবশালোম রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; তাদের মধ্যে একজনও বেঁচে নেই।” \v 31 রাজামশাই উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলেছিলেন ও মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলেন; আর তাঁর সব কর্মচারীও নিজেদের কাপড়চোপড় ছিঁড়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 32 কিন্তু দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব বলল, “আমার প্রভু মনে করবেন না যে তারা রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; শুধু অম্নোনই মরেছে। যেদিন অম্নোন অবশালোমের বোন তামরকে ধর্ষণ করল, সেদিন থেকেই অবশালোম এরকম করতে বদ্ধপরিকর ছিল। \v 33 আমার প্রভু মহারাজ এই খবর পেয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না যে রাজার সব ছেলে মারা গিয়েছে। শুধু অম্নোনই মারা গিয়েছে।” \p \v 34 ইতিমধ্যে, অবশালোম পালিয়েছিল। \p একজন পাহারাদার চোখ তুলে চেয়ে দেখেছিল তার পশ্চিমদিকের পথে প্রচুর লোকজন পাহাড়ের পাশ থেকে নেমে আসছে। সেই পাহারাদার গিয়ে রাজামশাইকে বলল, “আমি দেখলাম হরোনয়ীমের দিক থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে কিছু লোক নেমে আসছে।”\f + \fr 13:34 \fr*\ft কিছু কিছু প্রচীন অনুলিপিতে এই কথাগুলি অনুপস্থিত\ft*\f* \p \v 35 যোনাদব রাজামশাইকে বলল, “দেখুন, রাজপুত্রেরা ফিরে আসছে; আপনার দাস যেমনটি বলল, ঠিক তেমনটিই হয়েছে।” \p \v 36 তার কথা শেষ হতে না হতেই, রাজপুত্রেরা জোর গলায় কাঁদতে কাঁদতে সেখানে পৌঁছে গেল। রাজা ও তাঁর কর্মচারীরাও জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন। \p \v 37 অবশালোম পালিয়ে গশূরের রাজা অম্মীহূরের ছেলে তলময়ের কাছে গেল। কিন্তু রাজা দাউদ দীর্ঘদিন তাঁর ছেলের জন্য শোকপ্রকাশ করলেন। \p \v 38 অবশালোম গশূরে পালিয়ে গিয়ে তিন বছর সেখানে ছিল। \v 39 রাজা দাউদ অবশালোমের কাছে যাওয়ার জন্য খুব আকাঙ্ক্ষিত হলেন, কারণ অম্নোনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি সান্তনা পেয়েছিলেন। \c 14 \s1 অবশালোম জেরুশালেমে ফিরে এল \p \v 1 সরূয়ার ছেলে যোয়াব জানতেন যে অবশালোমের জন্য রাজার প্রাণ আকাঙ্ক্ষিত হয়ে আছে। \v 2 তাই যোয়াব তকোয়ে একজন লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে একজন চালাক-চতুর মহিলাকে আনিয়েছিলেন। তিনি মহিলাটিকে বললেন, “শোক করার ভান কোরো। শোক পালনের উপযোগী পোশাক পরে থেকো, ও কোনও সাজগোজ কোরো না বা তেলও মেখো না। এমন একজন মহিলার মতো আচরণ কোরো যে দীর্ঘদিন ধরে মরা মানুষের জন্য শোকপ্রকাশ করে চলেছে। \v 3 পরে রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে এই কথাগুলি বোলো।” এই বলে যোয়াব তার মুখে কথা বসিয়ে দিলেন। \p \v 4 তকোয়ের মহিলাটি রাজার কাছে গিয়ে, তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য মাটিতে উবুড় হয়ে পড়েছিল ও বলল, “হে মহারাজ, আমাকে সাহায্য করুন!” \p \v 5 রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার অসুবিধাটি কী?” \p সে বলল, “আমি একজন বিধবা নারী; আমার স্বামী মারা গিয়েছে। \v 6 আপনার এই দাসীর—আমার দুই ছেলে ছিল। মাঠে তারা দুজন পরস্পরের সঙ্গে মারপিট করছিল, আর কেউ তাদের ছাড়াতে পারছিল না। একজন অন্যজনকে আঘাত করল ও তাকে মেরে ফেলেছিল। \v 7 এখন সম্পূর্ণ গোষ্ঠী আপনার দাসীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে; তারা বলছে, ‘যে তার ভাইকে মেরে ফেলেছে তাকে আমাদের হাতে তুলে দাও, যেন আমরা তার সেই ভাইয়ের প্রাণের পরিবর্তে তাকে হত্যা করতে পারি, যাকে সে খুন করল; তখন আর সম্পত্তির উত্তরাধিকারীও কেউ থাকবে না।’ তারা আমার কাছে অবশিষ্ট একমাত্র জ্বলন্ত কয়লাটিকেও নিভিয়ে দিতে চাইছে, পৃথিবীর বুকে আমার স্বামীর নাম বা বংশ, কোনো কিছুই আর রাখতে চাইছে না।” \p \v 8 রাজা মহিলাটিকে বললেন, “বাড়ি ফিরে যাও, আমি তোমার স্বপক্ষে হুকুম জারি করে দিচ্ছি।” \p \v 9 কিন্তু তকোয় থেকে আসা মহিলাটি তাঁকে বলল, “আমার প্রভু মহারাজ আমায় ও আমার পরিবারকে ক্ষমা করুন, এবং মহারাজ ও তাঁর সিংহাসন নির্দোষ থাকুক।” \p \v 10 রাজামশাই উত্তর দিলেন, “কেউ যদি তোমায় কিছু বলে, তবে তাদের আমার কাছে নিয়ে এসো, তারা আর তোমায় জ্বালাতন করবে না।” \p \v 11 সে বলল, “তবে মহারাজ তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে শপথ করুন, যেন রক্তের প্রতিশোধকারী আর সর্বনাশ করতে না পারে, ও আমার ছেলেও যেন না মরে।” \p “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি,” তিনি বললেন, “তোমার ছেলের মাথার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না।” \p \v 12 তখন সেই মহিলাটি বলল, “আপনার দাসীকে আমার প্রভু মহারাজের কাছে একটি কথা বলতে দিন।” \p “বলো,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 13 মহিলাটি বলল, “তবে কেন আপনি ঈশ্বরের প্রজাদের বিরুদ্ধে এরকম এক কৌশল অবলম্বন করলেন? মহারাজ যখন এরকম বলছেন, তিনি কি তখন নিজেকেই দোষী করে তুলছেন না, কারণ মহারাজ যে নিজেই তাঁর নির্বাসিত ছেলেকে ফিরিয়ে আনেননি?” \v 14 মাটিতে ঢেলে দেওয়া জল যেমন তুলে আনা যায় না, তেমনি আমাদেরও মরতেই হবে। কিন্তু ঈশ্বর এমনটি চান না; বরং, তিনি এমন কৌশল বের করলেন যেন একজন নির্বাসিত ব্যক্তি বরাবরের জন্য তাঁর কাছ থেকে নির্বাসিত হয়ে না থাকে। \p \v 15 “এখন আমার প্রভু মহারাজের কাছে আমি একথাই বলতে এসেছি, কারণ লোকেরা আমাকে ভয় দেখিয়েছিল। আপনার দাসী ভেবেছিল, ‘আমি মহারাজের কাছে একথা বলব; হয়তো তিনি তাঁর দাসীর প্রার্থনা মঞ্জুর করবেন। \v 16 হয়তো মহারাজ তাঁর দাসীকে সেই লোকটির হাত থেকে রক্ষা করতে রাজি হবেন, যে ঈশ্বরের উত্তরাধিকার থেকে আমাকে ও আমার ছেলে—দুজনকেই বঞ্চিত করতে চাইছে।’ \p \v 17 “এখন আপনার দাসী আমি বলছি, ‘আমার প্রভু মহারাজের কথাই যেন আমার উত্তরাধিকার সুরক্ষিত করে, কারণ ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষেত্রে আমার প্রভু মহারাজ ঈশ্বরের এক দূতের মতোই। আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনার সঙ্গেই থাকুন।’ ” \p \v 18 তখন রাজামশাই মহিলাটিকে বললেন, “আমি যে প্রশ্নটি তোমাকে করতে চলেছি, সেটির উত্তর আমার কাছে লুকিয়ো না।” \p “আমার প্রভু মহারাজ বলুন,” মহিলাটি বলল। \p \v 19 রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার সঙ্গে এই সবে যোয়াবের হাত নেই তো?” \p মহিলাটি উত্তর দিয়েছিল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনার প্রাণের দিব্যি, আমার প্রভু মহারাজ যা বলেন, সেখান থেকে কেউ ডাইনে বা বাঁয়ে ফিরতে পারে না। হ্যাঁ, আপনার দাস যোয়াবই এসব করতে আমাকে নির্দেশ দিলেন ও তিনিই আপনার দাসীর মুখে এই কথাগুলি বসিয়ে দিলেন। \v 20 বর্তমান পরিস্থিতি বদলানোর জন্যই আপনার দাস যোয়াব এসব করলেন। আমার প্রভু, ঈশ্বরের একজন দূতের মতোই জ্ঞানী—দেশে যা যা হয়, তিনি সেসব জানেন।” \p \v 21 রাজামশাই যোয়াবকে বললেন, “ঠিক আছে, আমি এরকমই করব। যাও, সেই যুবক অবশালোমকে ফিরিয়ে নিয়ে এসো।” \p \v 22 তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য যোয়াব মাটিতে উবুড় হয়ে পড়েছিলেন, ও রাজাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। যোয়াব বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আজই আপনার দাস জেনেছে যে সে আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করেছে, কারণ মহারাজ তাঁর দাসের প্রার্থনা মঞ্জুর করেছেন।” \p \v 23 পরে যোয়াব গশূরে গিয়ে অবশালোমকে জেরুশালেমে ফিরিয়ে এনেছিলেন। \v 24 কিন্তু রাজামশাই বললেন, “তাকে নিজের বাসায় যেতে হবে; সে যেন আমার মুখদর্শন না করে।” অতএব অবশালোম নিজের বাসায় গেল ও রাজার মুখদর্শন করেনি। \p \v 25 সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে আর কেউ অবশালোমের মতো তার অপরূপ সুন্দর রূপের জন্য প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য হয়নি। তার মাথার তালু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত কোথাও একটুও খুঁত ছিল না। \v 26 যখনই সে তার মাথার চুল কাটাত—সে বছরে একবারই তার চুল কাটাত, কারণ সেগুলি তার পক্ষে খুব ভারী হয়ে যেত—সে সেগুলি ওজন করাতো, আর সেগুলির ওজন রাজকীয় মাপ অনুসারে হত 200 শেকল\f + \fr 14:26 \fr*\ft অথবা, প্রায় 2.3 কিলোগ্রাম\ft*\f*। \p \v 27 অবশালোমের তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ের জন্ম হল। তার মেয়ের নাম তামর, আর সে খুব সুন্দরী হল। \p \v 28 অবশালোম রাজার মুখদর্শন না করে দুই বছর জেরুশালেমে বসবাস করল। \v 29 পরে অবশালোম রাজার কাছে পাঠানোর জন্য যোয়াবকে ডেকে পাঠিয়েছিল, কিন্তু যোয়াব তার কাছে আসতে চাননি। তাই সে দ্বিতীয়বার তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল, কিন্তু তাও তিনি আসতে রাজি হননি। \v 30 তখন সে তার দাসদের বলল, “দেখো, যোয়াবের ক্ষেতটি আমার ক্ষেতের পাশেই আছে, আর সে সেখানে যব বুনেছে। যাও, সেখানে আগুন লাগিয়ে দাও।” অবশালোমের দাসেরা তখন ক্ষেতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। \p \v 31 যোয়াব পরে অবশালোমের বাসায় গেলেন, ও তিনি তাকে বললেন, “তোমার দাসেরা কেন আমার ক্ষেতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে?” \p \v 32 অবশালোম যোয়াবকে বলল, “দেখুন, আমি আপনাকে খবর পাঠিয়ে বললাম, ‘এখানে আসুন, যেন আমি আপনাকে রাজার কাছে পাঠিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পারি, “আমি কেন গশূর থেকে ফিরে এলাম? আমি সেখানে থাকলেই ভালো হত!” ’ আর এখন, আমি মহারাজের মুখদর্শন করতে চাই, ও আমি যদি দোষ করে থাকি, তিনি আমায় মেরে ফেলতে পারেন।” \p \v 33 তাই যোয়াব রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে সেকথা বললেন। তখন রাজামশাই অবশালোমকে ডেকে পাঠালেন, ও সে এসে রাজার সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়েছিল। রাজামশাই তাকে চুম্বন করলেন। \c 15 \s1 অবশালোমের ষড়যন্ত্র \p \v 1 কালক্রমে, অবশালোম নিজের জন্য একটি রথ, কয়েকটি ঘোড়া ও তার আগে আগে দৌড়ানোর উপযোগী 50 জন লোক জোগাড় করল। \v 2 সে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে নগরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত চলে যাওয়া রাজপথের ধারে দাঁড়িয়ে যেত। যখনই কেউ বিচার পাওয়ার আশায় রাজার কাছে কোনও নালিশ নিয়ে আসত, অবশালোম তাকে ডেকে বলত, “তুমি কোনও নগরের লোক?” সে হয়তো উত্তর দিত, “আপনার দাস ইস্রায়েলের অমুক বংশের লোক।” \v 3 তখন অবশালোম তাকে বলত, “দেখো, তোমার দাবি-দাওয়া তো ন্যায্য ও উপযুক্ত, কিন্তু তোমার কথা শোনার জন্য রাজার কোনও প্রতিনিধি নেই।” \v 4 আবার অবশালোম এর সঙ্গে যোগ করত, “আমাকে যদি কেউ দেশে বিচারক নিযুক্ত করত! তবে যার যার নালিশ বা মামলা আছে, তারা সবাই আমারই কাছে নিয়ে আসতে পারত ও আমি দেখতাম যেন তারা ন্যায়বিচার পায়।” \p \v 5 এছাড়াও, যখনই কেউ অবশালোমকে প্রণাম করতে যেত, সে হাত বাড়িয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করত। \v 6 যেসব ইস্রায়েলী রাজার কাছে বিচার চাইতে আসত, অবশালোম তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই এরকম আচরণ করত, ও সে ইস্রায়েল জাতির মন জয় করে নিয়েছিল। \p \v 7 চার\f + \fr 15:7 \fr*\ft অথবা, চল্লিশ\ft*\f* বছরের শেষে, অবশালোম রাজাকে বলল, “হিব্রোণে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে করা একটি মানত আমাকে পূর্ণ করে আসতে দিন। \v 8 আপনার দাস—এই আমি যখন অরামের গশূরে বসবাস করছিলাম, তখনই আমি এই মানতটি করেছিলাম: ‘সদাপ্রভু যদি আমাকে জেরুশালেমে ফিরিয়ে আনেন, তবে আমি হিব্রোণে গিয়ে\f + \fr 15:8 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপিতে “হিব্রোণে গিয়ে” কথাটি অনুপস্থিত\ft*\f* সদাপ্রভুর আরাধনা করব।’ ” \p \v 9 রাজা তাকে বললেন, “শান্তিতে যাও।” তাই সে হিব্রোণে চলে গেল। \p \v 10 পরে অবশালোম এই কথা বলার জন্য ইস্রায়েলের সব বংশের কাছে গুপ্তচর পাঠিয়ে দিয়েছিল, “যেই তোমরা শিঙার শব্দ শুনতে পাবে, তখনই বলবে, ‘অবশালোম হিব্রোণে রাজা হলেন।’ ” \v 11 জেরুশালেম থেকে 200 জন লোক অবশালোমের সঙ্গী হল। তারা অতিথিরূপে আমন্ত্রিত হল ও বেশ সরল মনে কিছু না জেনেই গেল। \v 12 অবশালোম বলি উৎসর্গ করার সময় দাউদের পরামর্শদাতা গীলোনীয় অহীথোফলকে তাঁর নিজের নগর গীলো থেকে ডেকে এনেছিল। আর তাই ষড়যন্ত্রটি বেশ জোরালো হল, ও অবশালোমের অনুগামীদের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়তে শুরু করল। \s1 দাউদ পালিয়ে গেলেন \p \v 13 একজন দূত এসে দাউদকে বলল, “ইস্রায়েল জাতির অন্তঃকরণ অবশালোমের সঙ্গী হয়েছে।” \p \v 14 তখন দাউদ জেরুশালেমে তাঁর সঙ্গে থাকা সব কর্মকর্তাকে বললেন, “এসো! আমাদের পালাতে হবে, তা না হলে আমাদের মধ্যে কেউই অবশালোমের হাত থেকে রেহাই পাব না। এক্ষুনি আমাদের এখান থেকে যেতে হবে, তা না হলে সে তাড়াতাড়ি এসে আমাদের ধরে ফেলবে ও আমাদের সর্বনাশ করে নগরটিকে তরোয়ালের আঘাতে উচ্ছেদ করবে।” \p \v 15 কর্মকর্তারা তাঁকে উত্তর দিয়েছিল, “আমাদের প্রভু মহারাজের যা ইচ্ছা, আপনার দাসেরা তাই করতে প্রস্তুত।” \p \v 16 রাজামশাই রওয়ানা হলেন, ও তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারও তাঁর অনুগামী হল; কিন্তু তিনি শুধু প্রাসাদ দেখাশোনা করার জন্য দশজন উপপত্নীকে রেখে গেলেন। \v 17 অতএব রাজামশাই রওয়ানা হলেন, ও সব লোকজন তাঁকে অনুসরণ করছিল, এবং নগরের শেষ প্রান্তে গিয়ে তারা থেমেছিলেন। \v 18 তাঁর সব লোকজন করেথীয় ও পলেথীয়দের সঙ্গে নিয়ে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেল; এবং গাত থেকে তাঁর সঙ্গী হয়ে আসা ছয়শো জন গাতীয় লোকও রাজার সামনে কুচকাওয়াজ করল। \p \v 19 রাজামশাই গাতীয় ইত্তয়কে বললেন, “তুমি কেন আমাদের সঙ্গে যাবে? ফিরে যাও ও রাজা অবশালোমের সঙ্গে গিয়ে থাকো। তুমি একজন বিদেশি, তোমার স্বদেশ থেকে আসা এক নির্বাসিত লোক। \v 20 তুমি মাত্র কালই এসেছ। আর আজ কি না আমি তোমাকে আমাদের সঙ্গে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে ঘুরে বেড়াতে দেব, যেখানে আমিই জানি না, আমি কোথায় যাচ্ছি? ফিরে যাও, আর তোমার লোকজনকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাও। সদাপ্রভু যেন তোমাকে দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখান।”\f + \fr 15:20 \fr*\ft অথবা, “দয়া ও বিশ্বস্ততা যেন তোমার সহবর্তী হয়”\ft*\f* \p \v 21 কিন্তু ইত্তয় রাজাকে উত্তর দিলেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, ও আমার প্রভু মহারাজের দিব্যি, আমার প্রভু মহারাজ যেখানে থাকবেন, তাতে জীবনই থাকুক বা মৃত্যুই আসুক, আপনার দাস সেখানেই থাকবে।” \p \v 22 দাউদ ইত্তয়কে বললেন, “তবে এগিয়ে যাও, কুচকাওয়াজ করো।” তাই গাতীয় ইত্তয় তাঁর সব লোকজন ও তাঁর সঙ্গে থাকা পরিবার-পরিজন নিয়ে কুচকাওয়াজ করলেন। \p \v 23 সব লোকজন যখন পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, তখন পল্লিঅঞ্চলের সব অধিবাসী জোর গলায় কেঁদেছিল। রাজাও কিদ্রোণ উপত্যকা পার হলেন, ও সব লোকজন মরুপ্রান্তরের দিকে এগিয়ে গেল। \p \v 24 সাদোকও সেখানে ছিলেন, ও তাঁর সঙ্গে থাকা লেবীয়রা সবাই ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। নগর থেকে সব লোকজন বেরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের সিন্দুকটি নামিয়ে রেখেছিল, ও অবিয়াথর বলি উৎসর্গ করলেন। \p \v 25 পরে রাজামশাই সাদোককে বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুকটি নগরে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। আমি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেলে তিনি আমাকে ফিরিয়ে আনবেন এবং এটি ও তাঁর বাসস্থানটিও আবার আমাকে দেখতে দেবেন। \v 26 কিন্তু তিনি যদি বলেন, ‘আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট নই,’ তবে আমি প্রস্তুত আছি; তাঁর যা ভালো লাগে তিনি আমার প্রতি তাই করতে পারেন।” \p \v 27 রাজামশাই যাজক সাদোককেও বললেন, “বুঝলে তো? আমার আশীর্বাদ নিয়ে নগরে ফিরে যাও। তোমার ছেলে অহীমাসকে সঙ্গে নাও, আর অবিয়াথরের ছেলে যোনাথনকেও নাও। তুমি ও অবিয়াথর তোমাদের দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে যাও। \v 28 যতক্ষণ না তোমরা আমাকে খবর দিয়ে পাঠাচ্ছো, আমি মরুপ্রান্তরে নদীর অগভীর অংশের কাছে অপেক্ষা করে বসে থাকব।” \v 29 অতএব সাদোক ও অবিয়াথর ঈশ্বরের সিন্দুকটি নিয়ে জেরুশালেমে ফিরে গিয়ে সেখানেই থেকে গেলেন। \p \v 30 কিন্তু দাউদ জলপাই পাহাড়ে উঠে যাচ্ছিলেন, ও যেতে যেতে তিনি কাঁদছিলেন; তাঁর মাথা ঢাকা ছিল ও তিনি খালি পায়ে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজনও তাদের মাথা ঢেকে রেখেছিল ও যেতে যেতে তারাও কাঁদছিল। \v 31 এদিকে দাউদকে বলা হল, “অহীথোফলও অবশালোমের সঙ্গে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে একজন।” অতএব দাউদ প্রার্থনা করলেন, “হে সদাপ্রভু, অহীথোফলের পরামর্শকে মূর্খতায় বদলে দাও।” \p \v 32 দাউদ যখন সেই পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন, যেখানে লোকেরা ঈশ্বরের আরাধনা করত, তখন অর্কীয় হূশয় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন। তাঁর কাপড়চোপড় ছেঁড়া ছিল ও তাঁর মাথা ছিল ধূলিধূসরিত। \v 33 দাউদ তাঁকে বললেন, “তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও, তবে তুমি আমার পক্ষে এক বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। \v 34 কিন্তু যদি নগরে ফিরে গিয়ে অবশালোমকে বলো, ‘হে মহারাজ, আমি আপনার দাস হয়ে থাকব; অতীতে আমি আপনার বাবার দাস ছিলাম, কিন্তু এখন আমি আপনার দাস হব,’ তবে অহীথোফলের পরামর্শ ব্যর্থ করে তুমি আমার উপকারই করবে। \v 35 তোমার সঙ্গে কি সেখানে যাজক সাদোক ও অবিয়াথর থাকবে না? রাজপ্রাসাদে তুমি যা যা শুনবে, সবকিছুই তাদের গিয়ে বলবে। \v 36 তাদের দুই ছেলে, সাদোকের ছেলে অহীমাস ও অবিয়াথরের ছেলে যোনাথনও সেখানে তাদের সঙ্গে আছে। তুমি যা কিছু শুনবে তারা সেসব তাদের দিয়ে আমার কাছে বলে পাঠাবে।” \p \v 37 অতএব অবশালোম যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করছিল, তখন দাউদের প্রাণের বন্ধু হূশয়ও নগরে পৌঁছেছিলেন। \c 16 \s1 দাউদ এবং সীব \p \v 1 পাহাড়ের চূড়া পার করে দাউদ অল্প একটু দূর এ গেলেন, সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য মফীবোশতের দাস সীব অপেক্ষা করে দাঁড়িয়েছিল। তার সঙ্গে ছিল একপাল গাধা, যেগুলির পিঠে বাঁধা ছিল 200-টি রুটি, কিশমিশ দিয়ে তৈরি একশোটি, ও ডুমুর দিয়ে তৈরি একশোটি পিঠে এবং একটি চামড়ার থলিতে ভরা দ্রাক্ষারস। \p \v 2 রাজামশাই সীবকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেন এগুলি এনেছ?” \p সীব উত্তর দিয়েছিল, “গাধাগুলি এনেছি মহারাজের পরিবারের লোকজনের চড়ে যাওয়ার জন্য, রুটি ও ফলগুলি এনেছি লোকদের খাওয়ার জন্য, এবং দ্রাক্ষারস এনেছি যেন মরুপ্রান্তরে যারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে, তারা চাঙ্গা হয়ে যায়।” \p \v 3 রাজামশাই তখন জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার মনিবের নাতি কোথায়?” \p সীব তাঁকে বলল, “তিনি জেরুশালেমেই আছেন, কারণ তিনি ভেবেছেন, ‘ইস্রায়েলীরা আজ আমার কাছে আমার পৈতৃক রাজ্যটি ফিরিয়ে দেবে।’ ” \p \v 4 তখন রাজামশাই সীবকে বললেন, “মফীবোশতের অধিকারে থাকা সবকিছুই এখন তোমার।” \p “আমি আপনাকে প্রণাম জানাচ্ছি,” সীব বলল। “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমি যেন আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাই।” \s1 শিমিয়ি দাউদকে অভিশাপ দেয় \p \v 5 রাজা দাউদ বহুরীমে পৌঁছালে শৌলের কুলভুক্ত একজন লোক সেখানে এসে গেল। তার নাম শিমিয়ি, ও সে ছিল গেরার ছেলে। আসতে আসতে সে অভিশাপ দিচ্ছিল। \v 6 দাউদের ডাইনে বাঁয়ে বিশেষ রক্ষীদল থাকা সত্ত্বেও সে দাউদ ও সব রাজকর্মচারীর দিকে পাথর ছুঁড়ছিল। \v 7 অভিশাপ দিতে দিতে শিমিয়ি বলল, “দূর হ, দূর হ, ওরে খুনি, ওরে বজ্জাত! \v 8 যাঁর স্থানে তুই রাজত্ব করছিস, সেই শৌলের কুলে তুই যত রক্তপাত করেছিস তার প্রতিফল সদাপ্রভুই তোকে দিয়েছেন। সদাপ্রভু রাজ্যটি তোর ছেলে অবশালোমের হাতে তুলে দিয়েছেন। তুই একজন খুনি বলেই তোর সর্বনাশ হয়েছে।” \p \v 9 তখন সরূয়ার ছেলে অবীশয় রাজাকে বলল, “এই মরা কুকুরটি কেন আমার প্রভু মহারাজকে অভিশাপ দেবে? আমাকে গিয়ে ওর মাথাটি কেটে নিয়ে আসার জন্য আমাকে অনুমতি দিন।” \p \v 10 কিন্তু রাজামশাই বললেন, “হে সরূয়ার ছেলেরা, এতে তোমাদের কী? সে যদি এজন্যই অভিশাপ দিচ্ছে যেহেতু সদাপ্রভু তাকে বলেছেন, ‘দাউদকে অভিশাপ দাও,’ তবে কে-ই বা প্রশ্ন করতে পারে, ‘তুমি কেন এমনটি করছ?’ ” \p \v 11 দাউদ পরে অবীশয় ও তাঁর সব কর্মকর্তাকে বললেন, “আমার ছেলে, আমার নিজের রক্তমাংসই আমাকে খুন করার চেষ্টা করছে। তবে এই বিন্যামীনীয় আরও কত না বেশি করে তা করবে! ওকে একা ছেড়ে দাও; ওকে অভিশাপ দিতে দাও, কারণ সদাপ্রভুই ওকে এরকম করতে বলেছেন। \v 12 হয়তো দেখা যাবে যে আজ ওর দেওয়া অভিশাপের বদলে সদাপ্রভু আমার দুর্দশা দেখে, আমার কাছে তাঁর নিয়মের অধীনে থাকা আশীর্বাদ ফিরিয়ে দেবেন।” \p \v 13 অতএব দাউদ ও তাঁর লোকজন পথে যেতে থাকলেন, অন্যদিকে শিমিয়ি তাঁর বিপরীত দিকের পাহাড়ি পথ ধরে যেতে যেতে অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছিল ও তাঁর দিকে পাথর ছুঁড়ছিল এবং ধুলোবর্ষণও করছিল। \v 14 রাজামশাই ও তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজন ক্লান্ত অবস্থায় তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছিলেন। আর সেখানে তিনি নিজের ক্লান্তি দূর করলেন। \s1 অহীথোফল ও হূশয়ের পরামর্শ \p \v 15 এদিকে, অবশালোম ও ইস্রায়েলের সব লোকজন জেরুশালেমে এসেছিল, ও অহীথোফলও তাদের সঙ্গে ছিল। \v 16 তখন দাউদের অন্তরঙ্গ বন্ধু অর্কীয় হূশয় অবশালোমের কাছে গিয়ে তাকে বললেন, “মহারাজ চিরজীবী হোন, মহারাজ চিরজীবী হোন!” \p \v 17 অবশালোম হূশয়কে বলল, “তোমার বন্ধুর প্রতি এই তোমার ভালোবাসা? তিনি যদি তোমার বন্ধু, তবে তুমি তাঁরই কাছে গেলে না কেন?” \p \v 18 হূশয় অবশালোমকে বললেন, “তা নয়, যিনি সদাপ্রভু দ্বারা, এই লোকদের দ্বারা, ও ইস্রায়েলের সব লোকজন দ্বারা মনোনীত হয়েছেন—আমি তাঁরই হব, ও তাঁর সঙ্গেই থাকব। \v 19 এছাড়াও, আমি কার সেবা করব? আমি কি তাঁর ছেলেরই সেবা করব না? আমি যেভাবে আপনার বাবার সেবা করতাম, ঠিক সেভাবে আপনারও সেবা করব।” \p \v 20 অবশালোম অহীথোফলকে বলল, “আপনি আমাদের পরামর্শ দিন। আমাদের কী করা উচিত?” \p \v 21 অহীথোফল উত্তর দিয়েছিল, “তোমার বাবা রাজপ্রাসাদ দেখাশোনা করার জন্য যেসব উপপত্নী রেখে গিয়েছেন, তুমি তাদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করো। তখন সমস্ত ইস্রায়েল শুনবে যে তুমি নিজেকে তোমার বাবার কাছে ঘৃণ্য করে তুলেছ, ও তোমার সঙ্গে থাকা প্রত্যেকে আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবে।” \v 22 তাই তারা অবশালোমের জন্য ছাদে একটি তাঁবু খাটিয়ে দিয়েছিল, ও সে সমস্ত ইস্রায়েলীর চোখের সামনে তার বাবার উপপত্নীদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করল। \p \v 23 এদিকে, সেই সময় অহীথোফলের দেওয়া পরামর্শকে মনে হত ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা পরামর্শ। দাউদ ও অবশালোম, দুজনেই অহীথোফলের সব পরামর্শকে এরকমই মনে করতেন। \c 17 \p \v 1 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “আমি 12 হাজার লোক বেছে নিয়ে আজ রাতেই দাউদের পিছু ধাওয়া করব। \v 2 তিনি যখন ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়বেন তখনই আমি তাঁকে আক্রমণ করব। আমি তাঁকে আক্রমণ করে ভয় পাইয়ে দেব, ও তাতে তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজন পালিয়ে যাবে। আমি শুধু রাজাকেই যন্ত্রণা করব \v 3 ও সব লোকজনকে তোমার কাছে ফিরিয়ে আনব। তুমি যাঁর মৃত্যু কামনা করছ, তিনি মারা যাওয়ার অর্থই হল তোমার কাছে সবার ফিরে আসা; সব লোকজন অক্ষতই থাকবে।” \v 4 এই পরিকল্পনাটি অবশালোম ও ইস্রায়েলের সব প্রাচীনের কাছে ভালো বলে মনে হল। \p \v 5 কিন্তু অবশালোম বলল, “অর্কীয় হূশয়কেও ডেকে আনো, যেন আমরা তারও বক্তব্য শুনতে পারি।” \v 6 হূশয় যখন তার কাছে এলেন, অবশালোম তাঁকে বলল, “অহীথোফল এই পরামর্শটি দিয়েছে। সে যা বলেছে আমাদের কি তা করা উচিত হবে? যদি তা না হয়, তবে তোমার মতামত কী, তা আমাদের জানাও।” \p \v 7 হূশয় অবশালোমকে উত্তর দিলেন, “এবার অহীথোফল যে পরামর্শটি দিয়েছেন, তা ভালো হয়নি। \v 8 আপনি তো আপনার বাবা ও তাঁর লোকজনকে জানেন; তারা যোদ্ধা, ও এমন এক-একটি বুনো ভালুকের মতো, যার কাছ থেকে তার শাবক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, আপনার বাবা একজন অভিজ্ঞ যোদ্ধা; তিনি সৈন্যদলের সঙ্গে রাত কাটাবেন না। \v 9 এমন কী, এখনও তিনি কোনও গুহায় বা অন্য কোথাও গিয়ে লুকিয়ে আছেন। তিনি যদি আপনার সৈন্যদলকে প্রথমে আক্রমণ করেন,\f + \fr 17:9 \fr*\ft অথবা, প্রথম আক্রমণে যখন কয়েকজন লোক মারা পড়বে\ft*\f* তবে যে কেউ তা শুনবে, সে বলবে, ‘অবশালোমের অনুগামী সৈন্যদলের মধ্যে ব্যাপক নরহত্যা সম্পন্ন হয়েছে।’ \v 10 তখন সিংহ-হৃদয়বিশিষ্ট বীরশ্রেষ্ঠ সৈনিকের প্রাণও ভয়ে গলে যাবে, কারণ সমস্ত ইস্রায়েল জানে যে আপনার বাবা একজন যোদ্ধা এবং যারা তাঁর সঙ্গে আছে, তারাও সাহসী মানুষজন। \p \v 11 “তাই আমি আপনাকে এই পরামর্শ দিচ্ছি: দান থেকে শুরু করে বের-শেবা পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েল—সাগরতীরের বালুকণার মতো যারা সংখ্যায় প্রচুর—আপনার কাছে সমবেত হোক, এবং আপনি নিজে যুদ্ধে তাদের নেতৃত্ব দিন। \v 12 তখনই আমরা তাঁকে আক্রমণ করব, তা সে তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, এবং শিশির যেভাবে মাটিতে পড়ে, আমরা তাঁকে সেভাবেই মাটিতে পেড়ে ফেলব। না তিনি, না তাঁর লোকজন, কেউই বেঁচে থাকবে না। \v 13 তিনি যদি কোনও নগরে সরে যান, তবে সমস্ত ইস্রায়েল সেই নগরে দড়ি নিয়ে আসবে, ও আমরা এমনভাবে সেটি উপত্যকার কাছে টেনে নিয়ে যাব, যেন একটি নুড়ি-পাথরও সেখানে অবশিষ্ট থাকতে না পারে।” \p \v 14 অবশালোম ও সব ইস্রায়েলী লোকজন বলল, “অর্কীয় হূশয়ের পরামর্শটি অহীথোফলের দেওয়া পরামর্শের তুলনায় ভালো।” কারণ অবশালোমের উপর বিপর্যয় আনার জন্য সদাপ্রভুই অহীথোফলের ভালো পরামর্শটি বানচাল করে দেবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। \p \v 15 হূশয়, সাদোক ও অবিয়াথর এই দুই যাজককে বললেন, “অহীথোফল অবশালোম ও ইস্রায়েলের প্রাচীনদের এই এই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে, কিন্তু আমি তাদের অমুক অমুক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি। \v 16 তোমরা এখনই দাউদের কাছে খবর পাঠিয়ে বোলো, ‘আপনি মরুপ্রান্তরে নদীর অগভীর স্থানের কাছে রাত কাটাবেন না; যে করেই হোক সেটি পার হয়ে যান, তা না হলে রাজামশাই ও তাঁর সঙ্গে থাকা সব লোকজন নিঃশেষ হয়ে যাবেন।’ ” \p \v 17 যোনাথন ও অহীমাস ঐন-রোগেলে ছিলেন। একজন দাসীর তাদের খবর দেওয়ার কথা ছিল, ও তাদের গিয়ে রাজা দাউদকে তা বলার কথা ছিল, কারণ নগরে প্রবেশ করে ধরা পড়ার ঝুঁকি তারা নিতে চাননি। \v 18 কিন্তু একজন যুবক তাদের দেখে ফেলেছিল ও অবশালোমকে খবর দিয়েছিল। তাই তারা দুজনেই তৎক্ষণাৎ পালিয়ে বহুরীমে একজনের বাসায় গিয়ে উঠেছিলেন। তার উঠোনে একটি কুয়ো ছিল, ও তারা তার মধ্যে নেমে গেলেন। \v 19 গৃহকর্তার স্ত্রী কুয়োর খোলামুখটি ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দিয়েছিল ও সেটির উপর শস্যদানা ছড়িয়ে রেখেছিল। কেউই এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি। \p \v 20 অবশালোমের লোকজন সেই বাড়িতে মহিলাটির কাছে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “অহীমাস ও যোনাথন কোথায়?” \p মহিলাটি তাদের উত্তর দিয়েছিল, “তারা ছোটো নদীটি পার হয়ে গিয়েছে।”\f + \fr 17:20 \fr*\ft অথবা, তারা জলের দিকে অবস্থিত মেষের খোঁয়াড় পার হয়ে গিয়েছে\ft*\f* সেই লোকেরা তাদের খুঁজেছিল, কিন্তু কাউকেই পায়নি, তাই তারা জেরুশালেমে ফিরে গেল। \p \v 21 তারা চলে যাওয়ার পর সেই দুজন কুয়ো থেকে উঠে এলেন ও রাজা দাউদকে খবর দেওয়ার জন্য চলে গেলেন। তারা তাঁকে বললেন, “এক্ষুনি বেরিয়ে পড়ুন ও নদী পার হয়ে যান; অহীথোফল আপনার বিরুদ্ধে এই এই পরামর্শ দিয়েছে।” \v 22 তাই দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন বেরিয়ে পড়েছিলেন ও জর্ডন নদী পার হয়ে গেলেন। সকালের আলো ফোটা অবধি এমন একজনও অবশিষ্ট ছিল না, যে জর্ডন নদী পার হয়ে যায়নি। \p \v 23 অহীথোফল যখন দেখেছিল যে তার পরামর্শ অনুসারে কাজ করা হয়নি, তখন সে তার গাধায় জিন পরিয়ে নিজের নগরে অবস্থিত তার বাসার দিকে রওয়ানা হয়ে গেল। সে তার বাসার সবকিছু ঠিকঠাক করে ফাঁসিতে ঝুলে পড়েছিল। অতএব সে মারা গেল ও তাকে তার বাবার কবরে কবর দেওয়া হল। \s1 অবশালোমের মৃত্যু \p \v 24 দাউদ মহনয়িমে গেলেন, ও অবশালোম ইস্রায়েলের সব লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে জর্ডন নদী পার হয়ে গেল। \v 25 অবশালোম যোয়াবের স্থানে অমাসাকে সৈন্যদলের সেনাপতি নিযুক্ত করল। অমাসা ছিল একজন ইশ্মায়েলীয়\f + \fr 17:25 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েলী (\+xt 1 বংশাবলি 2:17\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ব্যক্তি সেই যিথ্রর ছেলে, যে নাহশের মেয়ে ও যোয়াবের মা সরূয়ার বোন অবীগলকে বিয়ে করল। \v 26 ইস্রায়েলীরা ও অবশালোম গিলিয়দ প্রদেশে শিবির স্থাপন করল। \p \v 27 দাউদ যখন মহনয়িমে এলেন তখন অম্মোনীয়দের রব্বা নগর থেকে নাহশের ছেলে শোবি, ও লো-দবার থেকে অম্মীয়েলের ছেলে মাখির, এবং রোগলীম থেকে গিলিয়দীয় বর্সিল্লয় \v 28 বিছানাপত্র, বেশ কয়েকটি গামলা ও মাটির পাত্র নিয়ে এসেছিল। এছাড়াও তারা গম ও যব, আটা-ময়দা ও আগুনে সেঁকা শস্যদানা, সিম-বরবটি ও কিছু ডাল, \v 29 মধু ও দই, মেষ, ও গরুর দুধ দিয়ে তৈরি পনীর দাউদ ও তাঁর লোকজনের খাওয়ার জন্য এনেছিল। কারণ তারা বলল, “লোকেরা মরুপ্রান্তরে ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছে।” \c 18 \p \v 1 দাউদ তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনকে একত্র করে তাদের উপর সহস্র-সেনাপতি ও শত-সেনাপতিদের নিযুক্ত করে দিলেন। \v 2 দাউদ তাঁর সৈন্যদলকে তিন ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগ যোয়াবের, অন্য এক ভাগ যোয়াবের ভাই সরূয়ার ছেলে অবীশয়ের, ও তৃতীয় ভাগটি গাতীয় ইত্তয়ের কর্তৃত্বাধীনে রেখে, তাদের যুদ্ধে পাঠিয়ে দিলেন। রাজামশাই তাঁর সৈন্যদের বললেন, “আমি নিজেও অবশ্য তোমাদের সঙ্গে কুচকাওয়াজ করে যাব।” \p \v 3 কিন্তু লোকেরা বলল, “আপনাকে যেতে হবে না; আমাদের যদি পালাতেও হয়, তারা আমাদের নিয়ে মাথা ঘামাবে না। এমন কী আমাদের মধ্যে অর্ধেক লোকও যদি মারা যায়, তবু তারা মাথা ঘামাবে না; কিন্তু আপনার দাম আমাদের মতো 10,000 লোকের সমান।\f + \fr 18:3 \fr*\ft অথবা, “কারণ, এখানে এখন আমাদের মতো 10,000 লোক আছে”\ft*\f* ভালো হয়, যদি আপনি নগরে থেকেই আমাদের সাহায্য করে যান।” \p \v 4 রাজামশাই উত্তর দিলেন, “তোমাদের যা ভালো মনে হয়, আমি তাই করব।” \p অতএব রাজামশাই সিংহদুয়ারের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন, আর তাঁর সব লোকজন এক-একশো ও এক এক হাজার জনের দলে বিভক্ত হয়ে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেল। \v 5 রাজামশাই যোয়াব, অবীশয় ও ইত্তয়কে আদেশ দিলেন, “আমার খাতিরে সেই যুবক অবশালোমের প্রতি সদয় আচরণ কোরো।” আর সব সৈন্যসামন্ত শুনেছিল রাজামশাই অবশালোমের বিষয়ে সেনাপতিদের এক একজনকে কী আদেশ দিলেন। \p \v 6 দাউদের সৈন্যদল ইস্রায়েলীদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য কুচকাওয়াজ করে নগর ছেড়ে বেরিয়েছিল, এবং ইফ্রয়িমের অরণ্যে যুদ্ধ হল। \v 7 ইস্রায়েলের সৈন্যদল সেখানে দাউদের লোকদের হাতে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হল, এবং সেদিন প্রচুর লোকজন মারা গেল—সংখ্যায় তা হবে 20,000। \v 8 সমস্ত গ্রাম্য এলাকায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল, ও সেদিন যত না লোক তরোয়ালের আঘাতে মারা গেল, তার চেয়েও বেশি লোক মারা গেল অরণ্যের গ্রাসে। \p \v 9 এদিকে অবশালোম দাউদের লোকজনের সামনে পড়ে গেল। সে খচ্চরের পিঠে চেপে যাচ্ছিল, ও খচ্চরটি যখন বেশ বড়সড় একটি ওক গাছের ঘন ডালপালার তলা দিয়ে যাচ্ছিল, অবশালোমের মাথার চুল গাছে আটকে গেল। সে শূন্যে ঝুলে গেল, অথচ যে খচ্চরটির পিঠে চেপে সে যাচ্ছিল, সেটি এগিয়ে গেল। \p \v 10 যা ঘটেছিল, লোকদের মধ্যে একজন যখন তা দেখেছিল, সে যোয়াবকে বলল, “আমি এইমাত্র দেখলাম যে অবশালোম একটি ওক গাছে ঝুলছে।” \p \v 11 যোয়াবকে যে একথা বলল তাকে তিনি বললেন, “তাই নাকি! তুমি তাকে দেখেছ? সেখানেই তুমি কেন তাকে যন্ত্রণা করে মাটিতে পেড়ে ফেলোনি? তবে তো আমি তোমাকে দশ শেকল\f + \fr 18:11 \fr*\ft অথবা, প্রায় 115 গ্রাম\ft*\f* রুপো ও একজন যোদ্ধার কোমরবন্ধ দিতে পারতাম।” \p \v 12 কিন্তু সেই লোকটি উত্তর দিয়েছিল, “আমার হাতে যদি হাজার শেকল রুপোও\f + \fr 18:12 \fr*\ft অথবা, প্রায় বারো কিলোগ্রাম\ft*\f* ওজন করে ধরিয়ে দেওয়া হয়, তবু আমি রাজপুত্রের গায়ে হাত দেব না। আমরা শুনেছি মহারাজ আপনাকে, অবীশয়কে ও ইত্তয়কে আদেশ দিয়েছিলেন, ‘আমার খাতিরে যুবক অবশালোমকে রক্ষা কোরো।’\f + \fr 18:12 \fr*\ft এভাবেও এটি অনুবাদ করা যায়: “তোমরা যে কেউ হও না কেন, অবশালোমকে রক্ষা কোরো”\ft*\f* \v 13 আর আমি যদি আমার প্রাণের ঝুঁকিও নিয়ে ফেলি\f + \fr 18:13 \fr*\ft অন্যভাবে বলা যায়, “আমি যদি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতাও করি”\ft*\f*—মহারাজের কাছে কিছুই লুকিয়ে রাখা যায় না—আপনিই তখন আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেলবেন।” \p \v 14 যোয়াব বললেন, “আমি তোমার জন্য এভাবে অপেক্ষা করতে পারব না।” অতএব তিনি হাতে তিনটি বর্শা নিয়ে সেগুলি অবশালোমের বুকে গেঁথে দিলেন, অথচ অবশালোম তখনও ওক গাছে ঝুলেও বেঁচেছিলেন। \v 15 যোয়াবের অস্ত্র-বহনকারীদের মধ্যে দশজন অবশালোমকে ঘিরে রেখে তাকে আঘাত করে হত্যা করল। \p \v 16 পরে যোয়াব শিঙা বাজিয়েছিলেন, ও সৈন্যদল ইস্রায়েলের পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়েছিল, কারণ যোয়াব তাদের থামিয়ে দিলেন। \v 17 তারা অবশালোমকে নিয়ে অরণ্যে অবস্থিত এক বড়ো গর্তে ফেলে দিয়েছিল ও তার উপর পাথরের বড়ো এক স্তূপ সাজিয়ে দিয়েছিল। এদিকে, সমস্ত ইস্রায়েলী তাদের বাসায় পালিয়ে গেল। \p \v 18 বেঁচে থাকার সময় অবশালোম একটি স্তম্ভ বানিয়ে সেটি নিজের এক স্মৃতিসৌধরূপে রাজার উপত্যকায় স্থাপন করল, কারণ সে ভেবেছিল, “আমার নামের স্মৃতি রক্ষা করার জন্য আমার তো কোনও ছেলে নেই।” সে নিজের নামে স্তম্ভটির নামকরণ করল, এবং আজও পর্যন্ত সেটি অবশালোমের নামেই পরিচিত হয়ে আছে। \s1 দাউদের শোকপ্রকাশ \p \v 19 এদিকে সাদোকের ছেলে অহীমাস বললেন, “আমি দৌড়ে গিয়ে মহারাজের কাছে এই খবরটি নিয়ে যাব যে মহারাজের শত্রুদের হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করার দ্বারা সদাপ্রভু তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন।” \p \v 20 “আজ তুমি এ খবরটি নিয়ে যাবে না,” যোয়াব তাঁকে বললেন। “অন্য কোনও এক সময় তুমি এ খবরটি নিয়ে যেয়ো, কিন্তু আজ এরকমটি করতে যেয়ো না, কারণ রাজার ছেলে মারা গিয়েছেন।” \p \v 21 পরে যোয়াব একজন কূশীয়কে বললেন, “যাও, তুমি যা যা দেখেছ, মহারাজকে গিয়ে তা বলো।” কূশীয় লোকটি যোয়াবকে প্রণাম করে দৌড়ে চলে গেল। \p \v 22 সাদোকের ছেলে অহীমাস আরেকবার যোয়াবকে বললেন, “যা হয় হোক, আমাকে সেই কূশীয়র পিছন পিছন দৌড়ে যেতে দিন।” \p কিন্তু যোয়াব উত্তর দিলেন, “বাছা, তুমি কেন যেতে চাইছ? তোমার কাছে এমন কোনও খবর নেই যা দিয়ে তুমি পুরস্কার পাবে।” \p \v 23 তিনি বললেন, “যা হয় হোক, আমি দৌড়ে যেতে চাই।” \p অগত্যা যোয়াব বললেন, “দৌড়াও!” তখন অহীমাস সমভূমির\f + \fr 18:23 \fr*\ft অথবা, জর্ডন সমভূমির\ft*\f* পথ ধরে দৌড়ে গিয়ে কূশীয়কে পিছনে ফেলে দিলেন। \p \v 24 দাউদ যখন ভিতরের ও বাইরের দরজার মাঝামাঝিতে বসেছিলেন, পাহারাদার তখন দেয়াল বেয়ে দরজার ছাদে উঠে গেল। বাইরে তাকিয়ে সে দেখেছিল, একজন লোক একা দৌড়ে আসছে। \v 25 পাহারাদার রাজামশাইকে ডেকে সে খবর জানিয়েছিল। \p রাজামশাই বললেন, “সে যদি একা আছে তবে নিশ্চয় ভালো খবরই আনছে।” লোকটি দৌড়াতে দৌড়াতে খুব কাছাকাছি এসে পড়েছিল। \p \v 26 পরে পাহারাদার আরও একজনকে দৌড়ে আসতে দেখেছিল, আর সে উপর থেকে দারোয়ানকে ডেকে বলল, “দেখো, আরও একজন লোক একা দৌড়ে আসছে!” \p রাজামশাই বললেন, “সেও নিশ্চয় ভালো খবর নিয়ে আসছে।” \p \v 27 পাহারাদার বলল, “আমার মনে হচ্ছে যে প্রথমজন সাদোকের ছেলে অহীমাসের মতো দৌড়াচ্ছেন।” \p “সে একজন ভালো লোক,” রাজামশাই বললেন। “সে ভালো খবর নিয়ে আসছে।” \p \v 28 অহীমাস জোর গলায় রাজামশাইকে ডেকে বললেন, “সব ঠিক আছে!” তিনি মাটিতে উবুড় হয়ে রাজাকে প্রণাম করে বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক! আমার প্রভু মহারাজের বিরুদ্ধে যারা হাত তুলেছিল, তিনি তাদের ত্যাগ করেছেন।” \p \v 29 রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই যুবক অবশালোম কি সুরক্ষিত আছে?” \p অহীমাস উত্তর দিলেন, “ঠিক যখন যোয়াব মহারাজের দাসকে ও আপনার দাস—আমাকে পাঠাতে যাচ্ছিলেন, তখন খুব গোলমাল হচ্ছিল, তবে আমি জানি না ঠিক কী হল।” \p \v 30 রাজামশাই বললেন, “এক পাশে সরে গিয়ে একটু অপেক্ষা করো।” অতএব তিনি পাশে সরে গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে গেলেন। \p \v 31 পরে সেই কূশীয় লোকটি সেখানে পৌঁছে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, সুখবর শুনুন! যারা মহারাজের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, তাদের হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করার দ্বারা সদাপ্রভু তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন।” \p \v 32 রাজামশাই সেই কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই যুবক অবশালোম সুরক্ষিত আছে?” \p কূশীয় লোকটি উত্তর দিয়েছিল, “আমার প্রভু মহারাজের শত্রুদের ও যারা যারা আপনার বিরুদ্ধে উঠেছিল, তাদের সকলের দশা যেন সেই যুবকের মতোই হয়।” \p \v 33 রাজামশাই কেঁপে উঠেছিলেন। তিনি সদর-দরজার উপরের ঘরে গিয়ে কেঁদেছিলেন। যেতে যেতে তিনি বললেন: “বাছা অবশালোম! আমার ছেলে, আমার ছেলে অবশালোম! তোমার পরিবর্তে শুধু আমি যদি মরতে পারতাম—হে অবশালোম, আমার ছেলে, আমার ছেলে!” \c 19 \p \v 1 যোয়াবকে বলা হল, “রাজামশাই অবশালোমের জন্য কাঁদছেন ও শোকপ্রকাশ করছেন।” \v 2 আর সমস্ত সৈন্যদলের কাছে সেদিন সেই বিজয় শোকে পরিণত হল, কারণ সেদিন সৈন্যসামন্তরা শুনতে পেয়েছিল, “রাজামশাই তাঁর ছেলের জন্য খুব দুঃখ পেয়েছেন।” \v 3 লোকজন সেদিন নিঃশব্দে এমনভাবে নগরে প্রবেশ করল, যে মনে হচ্ছিল একদল লোক যেন লজ্জিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে চুপিচুপি নগরে প্রবেশ করছে। \v 4 রাজামশাই মুখ ঢেকে জোর গলায় কেঁদে কেঁদে বলছিলেন, “বাছা অবশালোম! হে অবশালোম, আমার ছেলে, আমার ছেলে!” \p \v 5 তখন যোয়াব প্রাসাদে রাজার কাছে গিয়ে বললেন, “আজ আপনি আপনার সেইসব লোকজনকে অপমান করেছেন, যারা এইমাত্র আপনার প্রাণ ও আপনার ছেলেমেয়েদের প্রাণ ও আপনার স্ত্রী ও উপপত্নীদের প্রাণরক্ষা করেছে। \v 6 আপনি তাদেরই ভালোবাসেন যারা আপনাকে ঘৃণা করে ও তাদেরই ঘৃণা করেন যারা আপনাকে ভালোবাসে। আজ আপনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে আপনার কাছে সেনাপতি ও তাদের লোকজন কোনো কিছুই নয়। আমি দেখতে পাচ্ছি আজ যদি অবশালোম জীবিত থাকত ও আমরা সবাই মারা যেতাম, তবেই আপনি খুশি হতেন। \v 7 এখন তাই বাইরে গিয়ে আপনার লোকজনকে উৎসাহিত করুন। আমি সদাপ্রভুর নামে শপথ করে বলছি, যদি আপনি বাইরে না যান, তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত একজনও আপনার সঙ্গে থাকবে না। আপনার যৌবনকাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আপনার উপর যত বিপর্যয় এসেছে, সেসবের তুলনায় এটি আরও মন্দ হবে।” \p \v 8 তাই রাজামশাই উঠে সিংহদুয়ারের কাছে গিয়ে বসেছিলেন। লোকজনকে যখন বলা হল, “মহারাজ সিংহদুয়ারের কাছে বসে আছেন,” তখন তারা সবাই তাঁর সামনে এসেছিল। \p এদিকে, ইস্রায়েলীরা নিজের নিজের বাসায় পালিয়ে গেল। \s1 দাউদ জেরুশালেমে ফিরে আসেন \p \v 9 ইস্রায়েলের গোষ্ঠীদের মধ্যে সর্বত্র, সব লোকজন নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি করে বলাবলি করছিল, “মহারাজ শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করলেন; তিনিই ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করলেন। কিন্তু এখন তিনি অবশালোমের হাত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন; \v 10 এবং যাকে আমরা আমাদের উপর শাসনকর্তারূপে অভিষিক্ত করলাম, সেই অবশালোমও যুদ্ধে মারা গিয়েছে। তবে তোমরা মহারাজকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনও কথা বলছ না কেন?” \p \v 11 রাজা দাউদ যাজকদ্বয় সাদোক ও অবিয়াথরের কাছে এই খবর পাঠালেন: “যিহূদার প্রাচীনদের জিজ্ঞাসা করো, ‘রাজাকে তাঁর প্রাসাদে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আপনারা কেন সবার পিছনে পড়ে থাকবেন, যেহেতু ইস্রায়েলে সর্বত্র যা বলাবলি হচ্ছে তা রাজার সৈন্যশিবিরে তাঁর কানে গিয়েছে? \v 12 আপনারা তো আমার আত্মীয়স্বজন, আমার নিজের রক্তমাংস। তাই রাজাকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আপনারা কেন পিছিয়ে থাকবেন?’ \v 13 অমাসাকেও বোলো, ‘তুমি কি আমার নিজের রক্তমাংস নও? যদি যোয়াবের স্থানে তুমি সারা জীবনের জন্য আমার সৈন্যদলের সেনাপতি না হও, তবে ঈশ্বর যেন আমাকে কঠোর দণ্ড দেন।’ ” \p \v 14 তিনি যিহূদার লোকজনের মন এমনভাবে জিতে নিয়েছিলেন যে তারা সকলে একমত হল। তারা রাজামশাইকে খবর দিয়ে পাঠিয়েছিল, “আপনি ও আপনার সব লোকজন ফিরে আসুন।” \v 15 তখন রাজামশাই ফিরে এলেন ও জর্ডন নদী পর্যন্ত চলে গেলেন। \p এদিকে যিহূদার লোকজন রাজার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জর্ডন নদী পার করিয়ে আনার জন্য গিল্‌গলে গেল। \v 16 বহুরীমের অধিবাসী গেরার ছেলে বিন্যামীনীয় শিমিয়ি রাজা দাউদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তড়িঘড়ি যিহূদার লোকজনের সাথে মিলে সেখানে এসেছিল। \v 17 তার সঙ্গে ছিল এক হাজার জন বিন্যামীনীয় লোক, শৌলের পারিবারিক দাস সীব, এবং সীবের পনেরোজন ছেলে ও কুড়ি জন দাস। রাজামশাই যেখানে ছিলেন, তারা জর্ডন নদীর সেই পারে দৌড়ে গেল। \v 18 রাজার পরিবারকে আনার ও তাঁর ইচ্ছামতো সবকিছু করার জন্য তারা নদীর অগভীর স্থানটি পার হয়ে গেল। \p গেরার ছেলে শিমিয়ি জর্ডন নদী পার করে উবুড় হয়ে রাজামশাইকে প্রণাম করল \v 19 ও তাঁকে বলল, “মহারাজ যেন আমায় দোষী সাব্যস্ত না করলেন। আমার প্রভু মহারাজ যেদিন জেরুশালেম ছেড়ে গেলেন, সেদিন আপনার দাস যে অপরাধ করেছিল, তা মনে রাখবেন না। মহারাজ যেন তা মন থেকে বের করে ফেলেন। \v 20 কারণ আপনার দাস আমি জানি যে আমি পাপ করেছি, কিন্তু আজ আমিই যোষেফের বংশ থেকে প্রথমজন হয়ে এখানে আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে দেখা করার জন্য নেমে এসেছি।” \p \v 21 তখন সরূয়ার ছেলে অবীশয় বলল, “এজন্য কি শিমিয়িকে মেরে ফেলা হবে না? সে তো সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছিল।” \p \v 22 দাউদ উত্তর দিলেন, “হে সরূয়ার ছেলেরা, এতে তোমাদের কী? তোমাদের কি অনধিকারচর্চা করার কোনও অধিকার আছে? আজ কি ইস্রায়েলে কাউকে মেরে ফেলা উচিত হবে? আমি কি জানি না যে আজ আমি ইস্রায়েলের রাজা?” \v 23 তাই রাজামশাই শিমিয়িকে বললেন, “তুমি মরবে না।” রাজামশাই শপথ করে তার কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন। \p \v 24 শৌলের নাতি মফীবোশৎও রাজার সঙ্গে দেখা করতে নেমে গেলেন। যেদিন রাজামশাই চলে গেলেন, সেদিন থেকে শুরু করে নিরাপদে তাঁর ফিরে আসার দিন পর্যন্ত মফীবোশৎ তাঁর পায়ের যত্ন নেননি বা তাঁর দাড়ি-গোঁফ ছাঁটেননি বা তাঁর কাপড়চোপড়ও ধোয়াধুয়ি করেননি। \v 25 জেরুশালেম থেকে যখন তিনি রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলেন, রাজামশাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মফীবোশৎ, তুমি কেন আমার সঙ্গে যাওনি?” \p \v 26 তিনি বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, যেহেতু আপনার দাস—আমি খঞ্জ, তাই আমি বললাম, ‘আমার গাধায় জিন চাপিয়ে, আমি তাতে চড়ে যাব, যেন আমি মহারাজের সঙ্গেই যেতে পারি।’ কিন্তু আমার দাস সীব আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। \v 27 সে আমার প্রভু মহারাজের কাছে আমার বদনামও করেছে। আমার প্রভু মহারাজ এক স্বর্গদূতের মতো মানুষ; তাই আপনার যা ইচ্ছা তাই করুন। \v 28 আমার ঠাকুরদাদার সব বংশধরই আমার প্রভু মহারাজের কাছ থেকে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই পাওয়ার যোগ্য নয়, কিন্তু আপনি সেইসব লোকের মাঝখানে আপনার দাসকে এক স্থান করে দিয়েছেন, যারা আপনার টেবিলে বসে ভোজনপান করে। তাই মহারাজের কাছে আর কোনও আবেদন জানানোর অধিকার কি আমার আছে?” \p \v 29 রাজামশাই তাঁকে বললেন, “আর কিছু বলবেই বা কেন? আমি তো তোমাকে ও সীবকে জমি ভাগাভাগি করে নেওয়ার আদেশ দিয়েই দিয়েছি।” \p \v 30 মফীবোশৎ রাজাকে বললেন, “এখন যখন আমার প্রভু মহারাজ নিরাপদে বাসায় ফিরে এসেছেন, তখন সেই সবকিছু নিয়ে নিক।” \p \v 31 গিলিয়দীয় বর্সিল্লয়ও রোগলীম থেকে রাজার সঙ্গী হয়ে জর্ডন নদী পার করে সেখান থেকে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য নেমে এলেন। \v 32 বর্সিল্লয় বয়সে বৃদ্ধ ছিলেন, তাঁর বয়স তখন আশি বছর। রাজামশাই যখন মহনয়িমে ছিলেন, তখন বর্সিল্লয় তাঁর জন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থা করলেন, কারণ তিনি খুব ধনী লোক ছিলেন। \v 33 রাজামশাই বর্সিল্লয়কে বললেন, “নদী পার হয়ে আমার সঙ্গে গিয়ে জেরুশালেমে থাকুন, আর আমি আপনার জন্য সব ব্যবস্থা করব।” \p \v 34 কিন্তু বর্সিল্লয় রাজাকে উত্তর দিলেন, “আর কয়বছরই বা আমি বাঁচব যে মহারাজের সঙ্গে আমি জেরুশালেমে গিয়ে থাকব? \v 35 আমার বয়স এখন আশি বছর। কী উপভোগ্য আর কী নয়, তার পার্থক্য কি এখন আমি করতে পারি? আপনার এই দাস কি খাদ্য বা পানীয়র স্বাদ বুঝতে পারে? আমি কি এখন আর গায়ক ও গায়িকার সুর শুনতে পারি? আপনার এই দাস কেনই বা আমার প্রভু মহারাজের কাছে অতিরিক্ত এক বোঝা হয়ে থাকবে? \v 36 আপনার এই দাস জর্ডন নদী পার হয়ে অল্প কিছু দূর মহারাজের সঙ্গে যাবে, কিন্তু কেনই বা মহারাজ এভাবে আমাকে পুরস্কৃত করবেন? \v 37 আপনার দাসকে ফিরে যেতে দিন, যেন আমি আমার নিজের নগরে আমার মা-বাবার কবরের কাছেই মরতে পারি। কিন্তু এই দেখুন আপনার দাস কিম্‌হম। একেই আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে নদী পার হয়ে যেতে দিন। আপনার যা ইচ্ছা, আপনি এর জন্য তাই করুন।” \p \v 38 রাজামশাই বললেন, “কিম্‌হম তো আমার সঙ্গে নদী পার হয়ে যাবে, এবং আপনি আমার কাছে যা চান, আমি আপনার জন্য তাই করব।” \p \v 39 অতএব সব লোকজন জর্ডন নদী পার হয়ে গেল, এবং পরে রাজা নিজে পার হলেন। রাজা বর্সিল্লয়কে চুম্বন করলেন ও তাঁকে বিদায় জানিয়েছিলেন, এবং বর্সিল্লয় নিজের ঘরে ফিরে গেলেন। \p \v 40 রাজামশাই যখন নদী পার হয়ে গিল্‌গলে গেলেন, কিমহমও তাঁর সঙ্গে নদী পার হল। যিহূদার সৈন্যদলের সমস্ত সৈন্যসামন্ত ও ইস্রায়েলের সৈন্যদলের অর্ধেক সৈন্যসামন্ত রাজামশাইকে নিয়ে এসেছিল। \p \v 41 অচিরেই ইস্রায়েলের সব লোকজন রাজার কাছে এসে তাঁকে বলল, “আমাদের ভাইরা, যিহূদার লোকজন কেন মহারাজকে চুরি করে নিয়ে গিয়ে আবার তাঁকে ও তাঁর পরিবার-পরিজনদের তাঁর সব লোকজন সমেত জর্ডন নদী পার করে নিয়ে এসেছে?” \p \v 42 যিহূদার সব লোকজন ইস্রায়েলের লোকজনকে বলল, “আমরা এরকম করেছি, কারণ মহারাজ আমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তোমরা এতে রাগ করছ কেন? আমরা কি মহারাজের কিছু খেয়েছি? আমরা কি নিজেদের জন্য কিছু নিয়েছি?” \p \v 43 তখন ইস্রায়েলের লোকজন যিহূদার লোকজনকে উত্তর দিয়েছিল, “মহারাজের উপর আমাদের দশ ভাগ অধিকার আছে; তাই দাউদের উপর তোমাদের তুলনায় আমাদের বেশি দাবি আছে। তোমরা কেন তবে আমাদের অবজ্ঞার চোখে দেখছ? আমরাই কি প্রথমে আমাদের মহারাজকে ফিরিয়ে আনার কথা বলিনি?” \p কিন্তু যিহূদার লোকজন তাদের দাবিটি ইস্রায়েলের লোকজনের তুলনায় বেশি জোরালোভাবে পেশ করল। \c 20 \s1 দাউদের বিরুদ্ধে শেব বিদ্রোহ করে \p \v 1 বিখ্রির ছেলে বিন্যামীনীয় শেব নামক এক উত্তেজনা সৃষ্টিকারী লোক সেখানে উপস্থিত ছিল। সে শিঙা বাজিয়ে চিৎকার করে বলল, \q1 “দাউদে আমাদের কোনও ভাগ নেই, \q2 যিশয়ের ছেলেতে কোনও অংশ নেই! \q1 হে ইস্রায়েল, প্রত্যেকে যে যার তাঁবুতে ফিরে যাও!” \p \v 2 তাই ইস্রায়েলের সব লোকজন দাউদকে ছেড়ে বিখ্রির ছেলে শেবের অনুগামী হল। কিন্তু যিহূদার লোকজন সেই জর্ডন থেকে জেরুশালেম পর্যন্ত তাদের রাজার সাথেই ছিল। \p \v 3 দাউদ যখন জেরুশালেমে তাঁর প্রাসাদে ফিরে এলেন, তখন তিনি যাদের সেই প্রাসাদ দেখাশোনা করার জন্য ছেড়ে গেলেন, সেই দশজন উপপত্নীকে এনে এমন একটি বাসায় রেখেছিলেন, যেখানে পাহারা বসানো ছিল। তিনি তাদের সব প্রয়োজন মিটিয়েছিলেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো যৌন সম্পর্ক রাখেননি। বিধবার মতো, আমৃত্যু তাদের বন্দিদশায় দিন কাটাতে হল। \p \v 4 পরে রাজামশাই অমাসাকে বললেন, “যিহূদার লোকজনকে তিনদিনের মধ্যে আমার কাছে আসতে বলো, ও তুমি নিজে এখানে থাকো।” \v 5 কিন্তু অমাসা যখন যিহূদার লোকজনকে ডাকতে গেলেন, তখন তিনি তাঁর জন্য রাজার নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ের থেকে কিছু বেশি সময় নিয়ে ফেলেছিলেন। \p \v 6 দাউদ অবীশয়কে বললেন, “অবশালোম আমাদের যত না ক্ষতি করল, এখন বিখ্রির ছেলে শেব তার চেয়েও বেশি ক্ষতি করবে। তোমার মনিবের লোকজনকে নিয়ে তার পিছু ধাওয়া করো, তা না হলে সে সুরক্ষিত কোনো নগর খুঁজে নিয়ে আমাদের কাছ থেকে পালিয়ে সেখানে চলে যাবে।”\f + \fr 20:6 \fr*\ft অথবা, “এবং আমাদের সাংঘাতিক অনিষ্ট করবে”\ft*\f* \v 7 তাই যোয়াবের লোকজন এবং করেথীয়রা ও পলেথীয়রা এবং সব বীর যোদ্ধা অবীশয়ের নেতৃত্বাধীন হয়ে বের হল। বিখ্রির ছেলে শেবের পশ্চাদ্ধাবন করার জন্য তারা জেরুশালেম থেকে কুচকাওয়াজ শুরু করল। \p \v 8 তারা যখন গিবিয়োনে বিশাল সেই পাথরটির কাছে ছিল, অমাসা তাদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন। যোয়াবের পরনে ছিল সামরিক পোশাক, এবং তাঁর কোমরে বাঁধা ছিল একটি কোমরবন্ধ, ও সেখানে ঝুলছিল খাপে পোরা একটি ছোরা। তিনি সামনে এগিয়ে গেলে ছোরাটি খাপ থেকে খুলে পড়ে গেল। \p \v 9 যোয়াব অমাসাকে বললেন, “ভাই, তুমি কেমন আছ?” পরে যোয়াব ডান হাতে অমাসার দাড়ি টেনে ধরে তাঁকে চুম্বন করতে গেলেন। \v 10 অমাসা যোয়াবের হাতে থাকা ছোরার কথা খেয়াল করেননি, আর যোয়াব সেটি অমাসার পেটে ঢুকিয়ে দিলেন, ও তাঁর পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে মাটিতে পড়ে গেল। দ্বিতীয়বার আর যন্ত্রণা করতে হয়নি, অমাসা মারা গেলেন। পরে যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় বিখ্রির ছেলে শেবের পশ্চাদ্ধাবন করে গেলেন। \p \v 11 যোয়াবের লোকজনের মধ্যে একজন অমাসার পাশে দাঁড়িয়ে বলল, “যে কেউ যোয়াবকে পছন্দ করে, ও দাউদের পক্ষে আছে, সে যোয়াবের অনুগামী হোক!” \v 12 পথের মাঝখানে অমাসার দেহটি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিল, ও সেই লোকটি দেখেছিল, যেসব সৈন্যসামন্ত সেখানে এসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল। সে যখন বুঝেছিল যে প্রত্যেকেই অমাসার দেহটির কাছে এসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, তখন সে তাঁর দেহটি পথের মাঝখান থেকে টেনে ক্ষেতে নিয়ে গেল ও সেটির উপর একটি কাপড় বিছিয়ে দিয়েছিল। \v 13 অমাসার দেহটি পথ থেকে সরিয়ে ফেলার পর প্রত্যেকেই বিখ্রির ছেলে শেবের পশ্চাদ্ধাবন করার জন্য যোয়াবের সাথে চলে গেল। \p \v 14 শেব ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীভুক্ত এলাকার মধ্যে দিয়ে ও বিখ্রিয়দের\f + \fr 20:14 \fr*\ft অথবা, বেরীয়দের\ft*\f* গোটা অঞ্চল দিয়ে গিয়ে আবেল-বৈৎমাখায় পৌঁছেছিল, ও বিখ্রিয়রা একত্রিত হয়ে শেবের অনুগামী হল। \v 15 যোয়াবের সব সৈন্যসামন্ত এসে আবেল বেথ-মাখায় শেবকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল। নগর পর্যন্ত তারা অবরোধকারী এক খাড়া বেষ্টন-পথ তৈরি করল, ও সেটি বাইরের দিকের প্রাচীরে উঠে গেল। তারা যখন প্রাচীর ভেঙে ফেলার জন্য বারবার সেখানে সজোরে যন্ত্রণা করছিল, \v 16 নগর থেকে একজন বুদ্ধিমতী মহিলা বলে উঠেছিল, “শোনো! শোনো! যোয়াবকে এখানে আসতে বলো, যেন আমি তাঁর সাথে কথা বলতে পারি।” \v 17 তিনি মহিলাটির দিকে এগিয়ে গেলেন, ও সে জিজ্ঞাসা করল, “আপনিই কি যোয়াব?” \p “হ্যাঁ, আমিই,” তিনি উত্তর দিলেন। \p মহিলাটি বলল, “আপনার দাসীর যা বলার আছে, তা একটু শুনুন।” \p “আমি শুনছি,” তিনি বললেন। \p \v 18 সে বলে যাচ্ছিল, “বহুকাল আগে লোকে বলত, ‘আবেলে গিয়ে উত্তরটি জেনে এসো,’ এবং সেভাবেই মামলার নিষ্পত্তি হত। \v 19 ইস্রায়েলে আমরাই শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বস্ত গোষ্ঠী। আপনি এমন এক নগরকে ধ্বংস করতে চাইছেন, যা ইস্রায়েলে এক মাতৃস্থানীয় নগর। আপনি কেন সদাপ্রভুর উত্তরাধিকার গ্রাস করতে চাইছেন?” \p \v 20 “এ কাজ আমার কাছ থেকে দূরে থাকুক!” যোয়াব উত্তর দিলেন, “গ্রাস করার বা ধ্বংস করার বিষয়টি আমার কাছ থেকে দূরে থাকুক! \v 21 ব্যাপারটি এরকম নয়। ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকা থেকে একজন লোক, বিখ্রির ছেলে শেব—মহারাজের বিরুদ্ধে, দাউদের বিরুদ্ধে হাত উঠিয়েছে। এই একটি লোককে আমার হাতে তুলে দাও, আর আমি নগর ছেড়ে চলে যাব।” \p মহিলাটি যোয়াবকে বলল, “প্রাচীরের উপর থেকেই তার মুণ্ডুটি আপনার কাছে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে।” \p \v 22 পরে সেই মহিলাটি তার বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন পরামর্শ নিয়ে সব লোকজনের কাছে গেল, ও তারা বিখ্রির ছেলে শেবের মুণ্ডু কেটে সেটি যোয়াবের কাছে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। তিনি তখন শিঙা বাজিয়েছিলেন, ও তাঁর লোকজন সেই নগরটি ছেড়ে নিজের নিজের বাসায় ফিরে গেল। যোয়াবও জেরুশালেমে রাজার কাছে ফিরে গেলেন। \s1 দাউদের কর্মকর্তারা \li1 \v 23 যোয়াব ছিলেন ইস্রায়েলের সমগ্র সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতি; \li1 যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন করেথীয় ও পলেথীয়দের প্রধান; \li1 \v 24 অদোনীরাম\f + \fr 20:24 \fr*\ft (\+xt 1 রাজাবলি 4:6 ও 5:14\+xt* পদও দেখুন) অথবা, অদোরাম\ft*\f* বেগার শ্রমিকদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন; \li1 অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ছিলেন লিপিকার; \li1 \v 25 শবা ছিলেন সচিব; \li1 সাদোক ও অবিয়াথর ছিলেন যাজক; \li1 \v 26 এবং যায়ীরীয়\f + \fr 20:26 \fr*\ft অথবা, যিত্রীয় (\+xt 23:38\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* ঈরা ছিলেন দাউদের ব্যক্তিগত যাজক। \c 21 \s1 গিবিয়োনীয়দের হয়ে দাউদ প্রতিশোধ নেন \p \v 1 দাউদের রাজত্বকালে পরপর তিন বছর দেশে দুর্ভিক্ষ হল; তাই দাউদ সদাপ্রভুর কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছিলেন। সদাপ্রভু বললেন, “শৌল ও তার পরিবারে রক্তপাতের দোষ আছে বলেই এমনটি হয়েছে; শৌল যেহেতু গিবিয়োনীয়দের হত্যা করেছিল, তাই এমনটি হয়েছে।” \p \v 2 রাজামশাই গিবিয়োনীয়দের ডেকে পাঠিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বললেন। (এদিকে গিবিয়োনীয়রা তো ইস্রায়েল জাতিভুক্ত ছিল না, কিন্তু তারা ছিল ইমোরীয়দের উত্তরজীবী; ইস্রায়েলীরা তাদের রেহাই দেওয়ার বিষয়ে শপথ করল, কিন্তু ইস্রায়েল ও যিহূদার হয়ে উদ্যোগ দেখাতে গিয়ে শৌল তাদের নির্মূল করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন) \v 3 দাউদ গিবিয়োনীয়দের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি তোমাদের জন্য কী করতে পারি? আমি কীভাবে ক্ষতিপূরণ করব যে তোমরা সদাপ্রভুর উত্তরাধিকারকে আশীর্বাদ করবে?” \p \v 4 গিবিয়োনীয়রা তাঁকে উত্তর দিয়েছিল, “শৌল বা তাঁর পরিবারের থেকে রুপো বা সোনা দাবি করার আমাদের কোনও অধিকার নেই, আর না আমাদের এই অধিকার আছে যে আমরা ইস্রায়েলে কাউকে মেরে ফেলতে পারব।” \p “তোমরা কী চাও, আমি তোমাদের জন্য কী করব?” দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন। \p \v 5 তারা রাজামশাইকে উত্তর দিয়েছিল, “যিনি আমাদের সংহার করলেন এবং যেন আমরা ধ্বংস হয়ে যাই ও ইস্রায়েলে কোথাও আমাদের কোনও স্থান না থাকে, আমাদের বিরুদ্ধে যিনি এই ষড়যন্ত্র রচনা করলেন, \v 6 তাঁর পুরুষ বংশধরদের মধ্যে থেকে সাতজনকে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক, যেন আমরা তাদের হত্যা করে দেহগুলি সদাপ্রভুর মনোনীত লোক—শৌলের নগর গিবিয়াতে সদাপ্রভুর সামনে প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দিতে পারি।” \p রাজা তখন বললেন, “আমি তাদের তোমাদের হাতে তুলে দেব।” \p \v 7 রাজা দাউদ সদাপ্রভুর সামনে তাঁর ও শৌলের ছেলে যোনাথনের মধ্যে করা শপথের খাতিরে শৌলের নাতি ও যোনাথনের ছেলে মফীবোশৎকে রেহাই দিলেন। \v 8 কিন্তু রাজামশাই অয়ার মেয়ে রিস্পার গর্ভজাত শৌলের দুই ছেলে অর্মোণি ও মফীবোশৎকে, এবং শৌলের মেয়ে মীখলের\f + \fr 21:8 \fr*\ft অথবা, মেরবের (\+xt 1 শমূয়েল 18:19\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* সেই পাঁচ ছেলেকে, যাদের সে মহোলাতীয় বর্সিল্লয়ের ছেলে অদ্রীয়েলের জন্য জন্ম দিয়েছিল, তুলে এনেছিলেন। \v 9 তিনি তাদের গিবিয়োনীয়দের হাতে তুলে দিলেন, এবং তারা তাদের হত্যা করে দেহগুলি সদাপ্রভুর সামনে একটি পাহাড়ের চূড়ায় প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দিয়েছিল। সাতজনের প্রত্যেকে একইসাথে মারা গেল; ফসল কাটার দিন আরম্ভ হওয়ামাত্র, যব কাটা মাত্র শুরু হতে চলেছে, ঠিক তখনই তাদের মেরে ফেলা হল। \p \v 10 অয়ার মেয়ে রিস্পা একটি বড়ো পাথরের উপর নিজের জন্য একটি চট বিছিয়েছিল। ফসল কাটার দিন শুরু হওয়া থেকে আরম্ভ করে যতদিন না আকাশ থেকে বৃষ্টি এসে সেই দেহগুলি ভিজিয়ে দিয়েছিল, সে না দিনে পাখিদের, না রাতে বুনো পশুদের সেগুলি স্পর্শ করতে দিয়েছিল \v 11 অয়ার মেয়ে তথা শৌলের উপপত্নী রিস্পা কী করল, তা যখন দাউদকে বলা হল, \v 12 তখন তিনি গিয়ে যাবেশ-গিলিয়দের নগরবাসীদের কাছ থেকে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের অস্থি নিয়ে এলেন। (ফিলিস্তিনীরা গিলবোয়ে শৌলকে আঘাত করে মেরে ফেলে দেওয়ার পর যখন তাদের দেহগুলি বেথ-শানের খোলা চকে টাঙিয়ে রেখেছিল, তারা সেখান থেকে দেহগুলি চুরি করে এনেছিল) \v 13 দাউদ সেখান থেকে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের অস্থি জোগাড় করে এনেছিলেন, এবং তাদেরও অস্থি সংগ্রহ করা হল, যাদের হত্যা করে টাঙিয়ে দেওয়া হল। \p \v 14 তারা বিন্যামীনের সেলায় শৌলের বাবা কীশের কবরে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের অস্থি কবর দিয়েছিল, এবং সবকিছুই রাজার আদেশমতোই করল। পরেই, ঈশ্বর দেশের জন্য করা প্রার্থনার উত্তর দিলেন। \s1 ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সংঘটিত হয় \p \v 15 আরও একবার ফিলিস্তিনী ও ইস্রায়েলীদের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গেল। দাউদ তাঁর লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে গেলেন, ও তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন \v 16 ইত্যবসরে রফার বংশধরদের মধ্যে একজন, সেই যিশবী-বনোব, যার বর্শার ফলাটি ব্রোঞ্জের ছিল ও যেটির ওজন ছিল তিনশো শেকল\f + \fr 21:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 3.5 কিলোগ্রাম\ft*\f* এবং নতুন এক তরোয়ালে যে সুসজ্জিত ছিল, সে বলল দাউদকে সে হত্যা করবে। \v 17 কিন্তু সরূয়ার ছেলে অবীশয় দাউদকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন; তিনি সেই ফিলিস্তিনীকে আঘাত করে মেরে ফেলেছিলেন। পরে দাউদের লোকজন শপথ করে তাঁকে বলল, “আপনি আর কখনও আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যাবেন না, যেন ইস্রায়েলের প্রদীপ কখনও না নেভে।” \p \v 18 কালক্রমে, গোবে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে তাদের অন্য একটি যুদ্ধ হল। সেই সময় হূশাতীয় সিব্বখয় সেই সফকে হত্যা করল, যে ছিল রফার বংশধরদের মধ্যে একজন। \p \v 19 ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে গোবে অন্য একটি যুদ্ধে বেথলেহেমীয় যায়ীরের\f + \fr 21:19 \fr*\ft অথবা, যারে-ওরগীমের (\+xt 1 বংশাবলি 20:5\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ছেলে ইলহানন গাতীয় গলিয়াতের সেই ভাইকে\f + \fr 21:19 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপিতে গলিয়াতের ভাই-এর পরিবর্তে উল্লেখ আছে, গলিয়াতকে (\+xt 1 বংশাবলি 20:5\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* হত্যা করল, যার বর্শার হাতলটি ছিল তাঁতির দণ্ডের মতো। \p \v 20 গাতে সম্পন্ন অন্য আর একটি যুদ্ধে, এক-একটি হাতে ছয়টি করে ও এক-একটি পায়ে ছয়টি করে, মোট চব্বিশটি আঙুল-বিশিষ্ট দৈত্যাকার একজন লোক যুদ্ধ করছিল। সেও রফারই বংশধর ছিল। \v 21 সে যখন ইস্রায়েলকে বিদ্রুপের খোঁচা দিয়েছিল, তখন দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাথন তাকে হত্যা করল। \p \v 22 গাতের এই চারজনই রফার বংশধর ছিল, এবং তারা দাউদ ও তাঁর লোকজনের হাতে মারা গেল। \c 22 \s1 দাউদের স্তবগান \p \v 1 সদাপ্রভু যখন দাউদকে তাঁর সব শত্রুর তথা শৌলের হাত থেকে উদ্ধার করলেন, তখন সদাপ্রভুর উদ্দেশে তিনি এই গানের কথাগুলি গেয়ে উঠেছিলেন। \v 2 তিনি বললেন: \q1 “সদাপ্রভু আমার শৈল, আমার উচ্চদুর্গ ও আমার উদ্ধারকর্তা; \q2 \v 3 আমার ঈশ্বরই আমার শৈল, যাঁতে আমি আশ্রয় নিই, \q2 আমার ঢাল\f + \fr 22:3 \fr*\ft অথবা “সম্রাট”\ft*\f* ও আমার ত্রাণশৃঙ্গ\f + \fr 22:3 \fr*\ft যা এখানে “শক্তির” প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে\ft*\f*। \q1 তিনিই আমার দুর্গ, আমার আশ্রয়স্থল ও আমার পরিত্রাতা। \q2 মারমুখী লোকদের হাত থেকে তুমিই আমাকে রক্ষা করে থাকো। \b \q1 \v 4 “আমি সদাপ্রভুকে ডাকলাম, যিনি প্রশংসার যোগ্য, \q2 এবং শত্রুদের হাত থেকে উদ্ধার পেয়েছি। \q1 \v 5 মৃত্যুর বাঁধন আমাকে আবদ্ধ করেছিল; \q2 ধ্বংসের স্রোত আমাকে বিধ্বস্ত করেছিল। \q1 \v 6 পাতালের বাঁধন আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল; \q2 মৃত্যুর ফাঁদ আমার সম্মুখীন হয়েছিল। \b \q1 \v 7 “সংকটে আমি সদাপ্রভুকে ডাকলাম; \q2 আমার ঈশ্বরের কাছে ডাকলাম। \q1 তাঁর মন্দির থেকে তিনি আমার গলার স্বর শুনলেন; \q2 আমার কান্না তাঁর কানে পৌঁছাল। \q1 \v 8 তখন পৃথিবী টলে উঠল, কেঁপে উঠল, \q2 আকাশমণ্ডলের\f + \fr 22:8 \fr*\ft অথবা, পর্বতগুলির (\+xt গীত 18:7\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ভিত্তি নড়ে উঠল; \q2 কেঁপে উঠল তাঁর ক্রোধের কারণে। \q1 \v 9 তাঁর নাক থেকে ধোঁয়া উঠল; \q2 মুখ থেকে গ্রাসকারী আগুন বেরিয়ে এল, \q2 জ্বলন্ত কয়লা প্রজ্বলিত হল। \q1 \v 10 তিনি আকাশমণ্ডল ভেদ করলেন ও নেমে এলেন; \q2 তাঁর পায়ের তলায় অন্ধকার মেঘ ছিল। \q1 \v 11 করূবের পিঠে চড়ে তিনি উড়ে গেলেন; \q2 বাতাসের ডানায় তিনি উড়ে এলেন।\f + \fr 22:11 \fr*\ft অথবা, প্রকাশিত হলেন (\+xt গীত 18:10\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* \q1 \v 12 তিনি অন্ধকারকে তাঁর চারপাশের আচ্ছাদন করলেন, \q2 আকাশের অন্ধকারাচ্ছন্ন মেঘ চতুর্দিকে ঘিরে রাখল তাঁকে। \q1 \v 13 তাঁর উপস্থিতির উজ্জ্বলতা থেকে \q2 বজ্রপাতে আগুন ফেটে পড়েছিল। \q1 \v 14 আকাশ থেকে সদাপ্রভু বজ্রনাদ করলেন; \q2 শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুতের মাঝে প্রতিধ্বনিত হল পরাৎপরের কণ্ঠস্বর। \q1 \v 15 তিনি তাঁর তির ছুঁড়লেন ও শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেন, \q2 বজ্রবিদ্যুতের সাথে তাদের পর্যুদস্ত করলেন। \q1 \v 16 সদাপ্রভুর আদেশে \q2 তাঁর নাকের নিঃশ্বাসের বিস্ফোরণে, \q1 সাগরের তলদেশ উন্মুক্ত হল, \q2 আর পৃথিবীর ভিত্তিমূল অনাবৃত হল। \b \q1 \v 17 “তিনি আকাশ থেকে হাত বাড়ালেন ও আমাকে ধারণ করলেন; \q2 গভীর জলরাশি থেকে আমাকে টেনে তুললেন। \q1 \v 18 আমার শক্তিশালী শত্রুর কবল থেকে তিনি আমাকে রক্ষা করলেন, \q2 যারা আমাকে ঘৃণা করত তাদের হাত থেকে, আর তারা আমার জন্য খুবই শক্তিশালী ছিল। \q1 \v 19 আমার বিপদের দিনে তারা আমার মোকাবিলা করেছিল, \q2 কিন্তু সদাপ্রভু আমার সহায় ছিলেন। \q1 \v 20 তিনি আমায় মুক্ত করে এক প্রশস্ত স্থানে আনলেন, \q2 তিনি আমায় উদ্ধার করলেন, কারণ তিনি আমাতে সন্তুষ্ট ছিলেন। \b \q1 \v 21 “আমার ধার্মিকতা অনুযায়ী সদাপ্রভু আমায় প্রতিফল দিলেন, \q2 আমার হাতের পরিচ্ছন্নতা অনুযায়ী আমাকে পুরস্কৃত করলেন। \q1 \v 22 কারণ আমি সদাপ্রভুর নির্দেশিত পথে চলেছি, \q2 আমার ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করার অপরাধী আমি নই। \q1 \v 23 তাঁর সব বিধান আমার সামনে রয়েছে, \q2 তাঁর আদেশ থেকে আমি কখনও দূরে সরে যাইনি। \q1 \v 24 তাঁর সামনে আমি নিজেকে নির্দোষ রেখেছি \q2 আর পাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছি। \q1 \v 25 যা ন্যায়পরায়ণ তা পালন করার জন্য সদাপ্রভু আমায় পুরস্কার দিয়েছেন, \q2 তাঁর দৃষ্টিতে আমার বিশুদ্ধতা\f + \fr 22:25 \fr*\ft অথবা, আমার হাতের বিশুদ্ধতা (\+xt গীত 18:24\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* দেখে। \b \q1 \v 26 “যারা বিশ্বস্ত, তাদের প্রতি তুমি বিশ্বস্ত, \q2 যারা নির্দোষ, তাদের প্রতি তুমি সিদ্ধ, \q1 \v 27 যারা শুদ্ধ, তাদের প্রতি তুমি শুদ্ধ, \q2 কিন্তু যারা কুটিল, তাদের প্রতি তুমি চতুর আচরণ করো। \q1 \v 28 তুমি নম্রকে রক্ষা করো, \q2 কিন্তু অহংকারীদের নত করার জন্য তোমার দৃষ্টি তাদের উপর আছে। \q1 \v 29 তুমি, সদাপ্রভু, আমার প্রদীপ; \q2 সদাপ্রভু আমার আঁধার আলোতে পরিণত করলেন। \q1 \v 30 তোমার সাহায্যে আমি বিপক্ষের বিরুদ্ধে অগ্রসর\f + \fr 22:30 \fr*\ft অথবা, সব বাধা টপকে যেতে পারি\ft*\f* হতে পারি; \q2 আমার ঈশ্বর সহায় হলে আমি প্রাচীর অতিক্রম করতে পারি। \b \q1 \v 31 “ঈশ্বরের সমস্ত পথ সিদ্ধ: \q2 সদাপ্রভুর বাক্য নিখুঁত; \q2 যারা তাঁতে শরণ নেয় তিনি তাদের ঢাল। \q1 \v 32 কারণ সদাপ্রভু ছাড়া আর ঈশ্বর কে আছে? \q2 আমাদের ঈশ্বর ছাড়া আর শৈল কে আছে? \q1 \v 33 ঈশ্বর আমায় শক্তি জোগান\f + \fr 22:33 \fr*\ft অথবা, ঈশ্বরই আমার দৃঢ় দুর্গ (\+xt গীত 18:32\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* \q2 আর আমার পথ সুরক্ষিত রাখেন। \q1 \v 34 তিনি আমার পা হরিণের পায়ের মতো করেন; \q2 উঁচু স্থানে দাঁড়াতে আমাকে সক্ষম করেন। \q1 \v 35 তিনি আমার হাত যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষিত করেন; \q2 আমার বাহু পিতলের ধনুক বাঁকাতে পারে। \q1 \v 36 রক্ষাকারী সাহায্য দিয়ে আমার ঢাল গড়েছ; \q2 তোমার দেওয়া সাহায্য আমায় মহান\f + \fr 22:36 \fr*\ft অথবা, নেমে এসে তুমি আমায় করেছ যে মহান\ft*\f* করেছে। \q1 \v 37 তুমি আমার চলার পথ প্রশস্ত করেছ, \q2 যেন আমার পা পিছলে না যায়। \b \q1 \v 38 “আমি শত্রুদের পিছনে ধাওয়া করে তাদের চূর্ণবিচূর্ণ করেছি; \q2 তারা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত আমি পিছু হটিনি। \q1 \v 39 আমি তাদের পুরোপুরি চূর্ণবিচূর্ণ করেছি, যেন তারা আর উঠে দাঁড়াতে না পারে; \q2 তারা আমার পায়ের তলায় পতিত হয়েছে। \q1 \v 40 যুদ্ধের জন্য তুমি আমাকে শক্তি দিয়েছ; \q2 আমার সামনে আমার বিপক্ষদের তুমি নত করেছ। \q1 \v 41 আমার শত্রুদের তুমি পিছু ফিরে পালাতে বাধ্য করেছ, \q2 আর আমি আমার প্রতিপক্ষদের ধ্বংস করেছি। \q1 \v 42 তারা সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করেছে, কিন্তু কেউ তাদের রক্ষা করেনি, \q2 তারা সদাপ্রভুকে ডেকেছে কিন্তু তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেননি। \q1 \v 43 পৃথিবীর ধূলিকণার মতো মিহি করে আমি তাদের গুঁড়ো করেছি; \q2 পথের কাদা-মাটির মতো আমি তাদের পিষ্ট করে মাড়িয়েছি। \b \q1 \v 44 “তুমি আমাকে লোকেদের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়েছ; \q2 তুমি আমাকে জাতিদের কর্তারূপে তুমি আমায় রক্ষা করেছ। \q1 আমার অপরিচিত লোকেরাও এখন আমার সেবা করে, \q2 \v 45 অইহুদিরা আমার সামনে মাথা নত হয়ে থাকে; \q2 যে মুহূর্তে তারা আমার আদেশ শোনে, তা পালন করে। \q1 \v 46 তারা সবাই সাহস হারায়; \q2 কাঁপতে কাঁপতে\f + \fr 22:46 \fr*\ft অথবা, তারা নিজেদের সুসজ্জিত করে (\+xt গীত 18:45\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* তারা তাদের দুর্গ থেকে বেরিয়ে আসে। \b \q1 \v 47 “সদাপ্রভু জীবিত! আমার শৈলের প্রশংসা হোক! \q2 আমার ঈশ্বর, আমার শৈল, আমার পরিত্রাতার গৌরব হোক! \q1 \v 48 তিনিই সেই ঈশ্বর যিনি আমার হয়ে প্রতিশোধ নেন, \q2 যিনি জাতিদের আমার অধীনস্থ করেন, \q2 \v 49 যিনি শত্রুদের কবল থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। \q1 আমার প্রতিপক্ষদের থেকে তুমি আমাকে উন্নত করেছ; \q2 মারমুখী লোকের কবল থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করেছ। \q1 \v 50 তাই, হে সদাপ্রভু, আমি জাতিদের মাঝে তোমার প্রশংসা করব; \q2 আমি তোমার নামের প্রশংসাগান করব। \b \q1 \v 51 “তিনি তাঁর রাজাকে মহান বিজয় প্রদান করেন; \q2 তাঁর অভিষিক্ত দাউদ ও তাঁর বংশধরদের প্রতি \q2 তিনি চিরকাল তাঁর অবিচল দয়া প্রদর্শন করেন।” \c 23 \s1 দাউদের শেষ সময়ে বলা কথা \p \v 1 এগুলিই হল দাউদের শেষ সময়ে বলা কথা: \q1 “যিশয়ের ছেলে দাউদের অনুপ্রাণিত উক্তি, \q2 পরাৎপর দ্বারা উন্নত ব্যক্তির এই উক্তি, \q1 যাকোবের ঈশ্বর যাঁকে অভিষিক্ত করেছেন, \q2 ইস্রায়েলের মধ্যে যিনি মধুর গায়ক: \b \q1 \v 2 “সদাপ্রভুর আত্মা আমার মাধ্যমে বলেছেন; \q2 তাঁর বাক্য আমার কণ্ঠে ছিল। \q1 \v 3 ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, \q2 ইস্রায়েলের পাষাণ-পাথর আমাকে বলেছেন: \q1 ‘ন্যায়পরায়ণতায় যখন কেউ প্রজাদের উপর রাজত্ব করে, \q2 যখন সে ঈশ্বর ভয়ে শাসন করে, \q1 \v 4 সে সূর্যোদয়ে প্রভাতি আলোর মতো \q2 মেঘশূন্য সকালে যা দেখা যায়, \q1 বৃষ্টির পরে পাওয়া উজ্জ্বলতার মতো \q2 যা দিয়ে মাটিতে ঘাস জন্মায়।’ \b \q1 \v 5 “আমার বংশ যদি ঈশ্বরের কাছে যথাযথ না হত, \q2 অবশ্যই তিনি আমার সঙ্গে এক চিরস্থায়ী নিয়ম স্থির করতেন না, \q2 যা সবদিক থেকে সুব্যবস্থিত ও সুরক্ষিত; \q1 অবশ্যই আমার পরিত্রাণ তিনি সার্থক করতেন না \q2 আর আমার প্রত্যেকটি মনোবাঞ্ছা পূরণ করতেন না। \q1 \v 6 কিন্তু দুষ্ট লোকেরা সেইসব কাঁটার মতো ছুঁড়ে ফেলার যোগ্য, \q2 যেগুলি হাত দিয়ে সংগ্রহ করা হয় না। \q1 \v 7 যে কেউ কাঁটা স্পর্শ করে \q2 সে লোহার এক যন্ত্র বা এক বর্শাফলক ব্যবহার করে; \q2 সেগুলি যেখানে পড়ে থাকে সেখানেই আগুনে ভস্মীভূত হয়।” \s1 দাউদের বলবান যোদ্ধারা \p \v 8 দাউদের বলবান যোদ্ধাদের নাম এইরকম: \p তখমোনীয়\f + \fr 23:8 \fr*\ft অথবা, হকমোনীয় (\+xt 1 বংশাবলি 11:11\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* যোশেব-বশেবৎ\f + \fr 23:8 \fr*\ft অথবা, যাশবিয়াম (\+xt 1 বংশাবলি 11:11\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f*, তিনি তিনজনের মধ্যে প্রধান ছিলেন; তিনি 800 জনের বিরুদ্ধে তাঁর বর্শা উত্তোলন করলেন, ও একবারেই তাদের মেরে ফেলেছিলেন\f + \fr 23:8 \fr*\ft অথবা, ইসনীয় আদীনোই 800 জনকে মেরে ফেলেছিলেন (\+xt 1 বংশাবলি 11:11\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f*। \p \v 9 তাঁর পরবর্তীজন ছিলেন অহোহীয় দোদয়ের ছেলে ইলিয়াসর। ফিলিস্তিনীরা যখন পস-দম্মীমে\f + \fr 23:9 \fr*\ft অথবা, সেখানে (\+xt 1 বংশাবলি 11:13\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* যুদ্ধ করার জন্য সমবেত হল, তখন যারা তাদের বিদ্রুপ করার জন্য দাউদের কাছে ছিলেন, সেই তিনজন বলবান যোদ্ধার মধ্যে তিনিও একজন। পরে ইস্রায়েলীরা পিছিয়ে এসেছিল, \v 10 কিন্তু ইলীয়াসর ততক্ষণ পর্যন্ত মাটি কামড়ে দাঁড়িয়ে থেকে ফিলিস্তিনীদের যন্ত্রণা করে গেলেন, যতক্ষণ না তাঁর হাত অবশ হয়ে তরোয়ালে জমে গেল। সেদিন সদাপ্রভু মহাবিজয় এনে দিলেন। সৈন্যসামন্তরা ইলিয়াসরের কাছে ফিরে গেল, কিন্তু শুধু মৃতদেহটির সাজপোশাক খুলে ফেলার জন্যই। \p \v 11 তাঁর পরবর্তীজন ছিলেন হরারীয় আগির ছেলে শম্ম। মসুর ক্ষেতের কাছে একটি স্থানে যখন ফিলিস্তিনীরা সমবেত হল, তখন ইস্রায়েলী সৈন্যসামন্তরা তাদের কাছ থেকে পালিয়ে গেল। \v 12 কিন্তু শম্ম ক্ষেতের মাঝখানে মাটি কামড়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি সেটি রক্ষা করলেন ও ফিলিস্তিনীদের আঘাত করে মেরে ফেলেছিলেন, এবং সদাপ্রভু এক মহাবিজয় এনে দিলেন। \p \v 13 ফসল কাটার সময়, ত্রিশজন প্রধান যোদ্ধাদের মধ্যে তিনজন অদুল্লম গুহায় দাউদের কাছে এলেন, অন্যদিকে একদল ফিলিস্তিনী রফায়ীম উপত্যকায় শিবির করে বসেছিল। \v 14 সেই সময় দাউদ দুর্গের মধ্যেই ছিলেন, এবং দুর্গ রক্ষার জন্য মোতায়েন ফিলিস্তিনী সৈন্যদল বেথলেহেমে অবস্থান করছিল। \v 15 দাউদ তৃষ্ণায় কাতর হয়ে বলে উঠেছিলেন, “হায়, কেউ যদি আমার জন্য বেথলেহেমের ফটকের কাছে অবস্থিত সেই কুয়ো থেকে একটু জল এনে দিত!” \v 16 অতএব সেই তিনজন বলবান যোদ্ধা ফিলিস্তিনী সৈন্যশিবির পার করে বেথলেহেমের সিংহদুয়ারের কাছে অবস্থিত কুয়ো থেকে জল তুলে দাউদের কাছে নিয়ে এলেন। কিন্তু তিনি তা পান করতে চাননি; তা না করে, তিনি সেই জল সদাপ্রভুর সামনে ঢেলে দিলেন। \v 17 “হে সদাপ্রভু, এমন কাজ যেন আমি না করি!” তিনি বললেন। “এ কি সেই লোকদের রক্ত নয়, যারা তাদের প্রাণ বিপন্ন করে গেল?” দাউদ তাই সেই জলপান করেননি। \p সেই তিনজন বলবান যোদ্ধার এই সেই উজ্জ্বল কীর্তি। \p \v 18 সরূয়ার ছেলে, যোয়াবের ভাই অবীশয় সেই তিনজনের\f + \fr 23:18 \fr*\ft অথবা, ত্রিশজনের (\+xt 1 বংশাবলি 11:20\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* মধ্যে প্রধান ছিলেন। তিনি তিনশো জনের বিরুদ্ধে বর্শা তুলেছিলেন ও তাদের হত্যা করলেন, এবং এভাবেই তিনিও সেই তিনজনের মতো বিখ্যাত হয়ে গেলেন। \v 19 তাঁকে কি সেই তিনজনের তুলনায় বেশি সম্মান দেওয়া হয়নি? তিনিই তাদের সেনাপতি হলেন, যদিও তাঁকে তাদের মধ্যে ধরা হত না। \p \v 20 কব্‌সীলের এক বীর যোদ্ধা, তথা যিহোয়াদার ছেলে বনায় বিশাল সব উজ্জ্বল কীর্তি স্থাপন করলেন। তিনি মোয়াবের অত্যন্ত বলশালী দুই যোদ্ধাকে মেরে ফেলেছিলেন। এছাড়াও একদিন যখন খুব তুষারপাত হচ্ছিল, তখন তিনি একটি গর্তের মধ্যে নেমে গিয়ে একটি সিংহকে মেরে ফেলেছিলেন। \v 21 এক বিশালদেহী মিশরীয়কেও তিনি আঘাত করে মেরে ফেলেছিলেন। যদিও সেই মিশরীয়র হাতে ছিল একটি বর্শা, বনায় একটি মুগুর নিয়ে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি সেই মিশরীয়র হাত থেকে বর্শাটি কেড়ে নিয়ে সেটি দিয়েই তাকে হত্যা করলেন। \v 22 যিহোয়াদার ছেলে বনায়ের উজ্জ্বল সব কীর্তি এরকমই ছিল; তিনিও সেই তিনজন বলবান যোদ্ধার মতোই বিখ্যাত হয়ে গেলেন। \v 23 সেই ত্রিশজনের মধ্যে যে কোনো একজনের তুলনায় তাঁকেই বেশি সম্মান দেওয়া হত, কিন্তু তিনি সেই তিনজনের মধ্যে গণ্য হননি। আর দাউদ তাঁকে তাঁর দেহরক্ষীদের তত্ত্বাবধায়ক করে দিলেন। \b \li4 \v 24 সেই ত্রিশজনের মধ্যে ছিলেন: \b \li1 যোয়াবের ভাই অসাহেল, \li1 বেথলেহেমের অধিবাসী দোদয়ের ছেলে ইলহানন, \li1 \v 25 হরোদীয় শম্ম, \li1 হরোদীয় ইলীকা, \li1 \v 26 পল্‌টীয় হেলস, \li1 তকোয়ের অধিবাসী ইক্কেশের ছেলে ঈরা, \li1 \v 27 অনাথোতের অধিবাসী অবীয়েষর, \li1 হূশাতীয় সিব্বখয়,\f + \fr 23:27 \fr*\ft অথবা, মবুন্নয় (\+xt 21:18\+xt*; \+xt 1 বংশাবলি 11:29\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* \li1 \v 28 অহোহীয় সল্‌মন, \li1 নটোফাতীয় মহরয়, \li1 \v 29 নটোফাতীয় বানার ছেলে হেলদ,\f + \fr 23:29 \fr*\ft অথবা, হেলব (\+xt 1 বংশাবলি 11:30\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* \li1 বিন্যামীন প্রদেশে অবস্থিত গিবিয়ার অধিবাসী রীবয়ের ছেলে ইত্তয়, \li1 \v 30 পিরিয়াথোনীয় বনায়, \li1 গাশ গিরিখাতের অধিবাসী হিদ্দয়,\f + \fr 23:30 \fr*\ft অথবা, হূরয় (\+xt 1 বংশাবলি 11:32\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* \li1 \v 31 অর্বতীয় অবি-য়লবোন, \li1 বাহরূমীয় অস্‌মাবৎ, \li1 \v 32 শালবোনীয় ইলিয়হবা, \li1 যাশেনের ছেলেরা, \li1 যোনাথন, \v 33 যিনি ছিলেন হরারীয় শম্মর ছেলে,\f + \fr 23:33 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপিতে ছেলে শব্দটি অনুপস্থিত (\+xt 1 বংশাবলি 11:34\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* \li1 হরারীয় সাররের\f + \fr 23:33 \fr*\ft অথবা, সাখরের (\+xt 1 বংশাবলি 11:35\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ছেলে অহীয়াম, \li1 \v 34 মাখাতীয় অহসবায়ের ছেলে ইলীফেলট, \li1 গীলোনীয় অহীথোফলের ছেলে ইলিয়াম, \li1 \v 35 কর্মিলীয় হিষ্রয়, \li1 অর্বীয় পারয়, \li1 \v 36 সোবার অধিবাসী নাথনের ছেলে যিগাল, \li1 হগ্রির\f + \fr 23:36 \fr*\ft অথবা, হগ্গাদির (\+xt 1 বংশাবলি 11:38\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* ছেলে গাদীয় বানী, \li1 \v 37 অম্মোনীয় সেলক, \li1 সরূয়ার ছেলে যোয়াবের অস্ত্র বহনকারী বেরোতীয় নহরয়, \li1 \v 38 যিত্রীয় ঈরা, \li1 যিত্রীয় গারেব \li1 \v 39 এবং হিত্তীয় ঊরিয়। \b \li4 সবসুদ্ধ মোট সাঁইত্রিশজন ছিল। \c 24 \s1 দাউদ যোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করলেন \p \v 1 আরেকবার সদাপ্রভুর ক্রোধ ইস্রায়েলের উপর জ্বলে উঠেছিল, এবং এই বলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে দাউদকে প্ররোচিত করলেন, “যাও, গিয়ে ইস্রায়েল ও যিহূদার জনগণনা করো।” \p \v 2 অতএব রাজামশাই যোয়াব ও তাঁর সঙ্গে থাকা সেনাপতিদের\f + \fr 24:2 \fr*\ft অথবা, সৈন্যদলের সেনাপতি যোয়াবকে (4 পদ ও \+xt 1 বংশাবলি 21:2\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* বললেন, “দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর কাছে যাও ও যোদ্ধাদের এক তালিকা তৈরি করো, যেন আমি জানতে পারি তারা সংখ্যায় ঠিক কতজন।” \p \v 3 কিন্তু যোয়াব রাজাকে উত্তর দিলেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন সৈন্যসামন্তের সংখ্যা একশো গুণ বাড়িয়ে দেন, ও আমার প্রভু মহারাজ যেন স্বচক্ষে তা দেখতে পান। কিন্তু আমার প্রভু মহারাজ কেন এমনটি করতে চাইছেন?” \p \v 4 রাজার আদেশে অবশ্য যোয়াব ও সেনাপতিদের কথা নাকচ হয়ে গেল; তাই তারা ইস্রায়েলের যোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করার জন্য রাজার সামনে থেকে চলে গেলেন। \p \v 5 জর্ডন নদী পার হওয়ার পর, তারা অরোয়ের কাছে, নগরটির দক্ষিণ দিকের গিরিখাতে শিবির স্থাপন করলেন, এবং পরে গাদের মধ্যে দিয়ে যাসেরে গেলেন। \v 6 তারা গিলিয়দে ও তহতীম-হদশি এলাকায়\f + \fr 24:6 \fr*\ft অথবা, হিত্তীয়দের দেশের গিলিয়দ ও কাদেশে\ft*\f*, ও সেখান থেকে দান-যান হয়ে ঘুরে সীদোনের দিকে চলে গেলেন। \v 7 পরে তারা সোরের দুর্গের এবং হিব্বীয় ও কনানীয়দের সব নগরের দিকে চলে গেলেন। সবশেষে, তারা যিহূদার নেগেভে অবস্থিত বের-শেবায় চলে গেলেন। \p \v 8 সম্পূর্ণ দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসে তারা নয়মাস কুড়ি দিন পর জেরুশালেমে ফিরে এলেন। \p \v 9 যোয়াব রাজার কাছে যোদ্ধাদের সংখ্যার বিবরণ দিলেন: ইস্রায়েলে তরোয়াল চালাতে সক্ষম ও সুস্বাস্থের অধিকারী আট লক্ষ, এবং যিহূদায় এরকম পাঁচ লক্ষ লোক ছিল। \p \v 10 যোদ্ধাদের সংখ্যা গণনা করার পর দাউদ বিবেকের দংশনে বিদ্ধ হলেন, ও তিনি সদাপ্রভুকে বললেন, “এ কাজ করে আমি মহাপাপ করে ফেলেছি। এখন, হে সদাপ্রভু, আমি মিনতি জানাচ্ছি, তোমার দাসের অপরাধ ক্ষমা করো। আমি মহামূর্খের মতো কাজ করেছি।” \p \v 11 পরদিন সকালে দাউদ ঘুম থেকে ওঠার আগেই সদাপ্রভুর বাক্য দাউদের দর্শক ভাববাদী গাদের কাছে উপস্থিত হল: \v 12 “যাও, দাউদকে গিয়ে বলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি তোমার সামনে তিনটি বিকল্প রাখছি। সেগুলির মধ্যে একটিকে তুমি বেছে নাও, যেন আমি সেটিই তোমার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারি।’ ” \p \v 13 অতএব গাদ দাউদের কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আপনার দেশে কি তিন\f + \fr 24:13 \fr*\ft অথবা, সাত (\+xt 1 বংশাবলি 21:12\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* বছর ধরে দুর্ভিক্ষ চলবে? অথবা আপনার শত্রুরা যখন আপনার পশ্চাদ্ধাবন করবে, তখন তিন মাস ধরে আপনি কি তাদের হাত থেকে পালিয়ে বেড়াবেন? বা আপনার দেশে কি তিন দিন ধরে মহামারি চলবে? তবে এখন এ বিষয়ে ভাবুন ও সিদ্ধান্ত নিন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে আমি কী উত্তর দেব।” \p \v 14 দাউদ গাদকে বললেন, “আমি খুব বিপদে পড়েছি। সদাপ্রভুর হাতেই পড়া যাক, কারণ তাঁর দয়া সুমহান; তবে আমরা যেন মানুষের হাতে না পড়ি।” \p \v 15 অতএব সেদিন সকাল থেকে শুরু করে নিরূপিত সময়ের সমাপ্তি পর্যন্ত সদাপ্রভু ইস্রায়েলে এক মহামারি পাঠালেন, এবং দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত সত্তর হাজার লোক মারা গেল। \v 16 স্বর্গদূত যখন জেরুশালেম ধ্বংস করার জন্য হাত বাড়িয়েছিলেন, তখন সেই দুর্বিপাকের বিষয়ে সদাপ্রভু দয়ার্দ্র হলেন ও লোকজনকে যিনি যন্ত্রণা দিচ্ছিলেন, সেই স্বর্গদূতকে তিনি বললেন, “যথেষ্ট হয়েছে! তোমার হাত সরিয়ে নাও।” সদাপ্রভুর দূত তখন যিবূষীয় অরৌণার খামারে ছিলেন। \p \v 17 যিনি লোকজনকে আঘাত করছিলেন, সেই স্বর্গদূতকে দাউদ যখন দেখতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি সদাপ্রভুকে বললেন, “আমি পাপ করেছি; আমিই, এই পালক,\f + \fr 24:17 \fr*\ft অধিকাংশ প্রাচীন অনুলিপিতে পালক শব্দটি অনুপস্থিত\ft*\f* অন্যায় করেছি। এরা তো সব মেষের মতো। এরা কী করেছে? তোমার হাত আমার ও আমার পরিবারের উপরেই এসে পড়ুক।” \s1 দাউদ একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন \p \v 18 সেদিনই গাদ দাউদের কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “যান, যিবূষীয় অরৌণার খামারে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করুন।” \v 19 অতএব সদাপ্রভু গাদের মাধ্যমে যে আদেশ দিলেন, তা পালন করতে দাউদ উঠে চলে গেলেন। \v 20 অরৌণা যখন চোখ তুলে চেয়ে দেখেছিলেন যে রাজামশাই ও তাঁর কর্মচারীরা তাঁর দিকে এগিয়ে আসছেন, তখন তিনি বাইরে গিয়ে মাটিতে উবুড় হয়ে রাজাকে প্রণাম করলেন। \p \v 21 অরৌণা বললেন, “আমার প্রভু মহারাজ কেন তাঁর দাসের কাছে এসেছেন?” \p “তোমার খামারটি কেনার জন্য,” দাউদ উত্তর দিলেন, “যেন আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করতে পারি, ও লোকজনের উপর ছড়িয়ে পড়া এই মহামারি থেমে যায়।” \p \v 22 অরৌণা দাউদকে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজের যা ইচ্ছা তাই নিয়ে বলি উৎসর্গ করুন। হোমবলির জন্য এখানে বলদগুলি রাখা আছে, এবং জ্বালানি কাঠের জন্য এখানে শস্য মাড়াই কল ও বলদের জোয়ালও রাখা আছে। \v 23 হে মহারাজ, অরৌণা\f + \fr 24:23 \fr*\ft অথবা, রাজা অরৌণা\ft*\f* এসব কিছুই মহারাজকে দিচ্ছে।” এছাড়াও অরৌণা তাঁকে বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে গ্রাহ্য করুন।” \p \v 24 কিন্তু রাজামশাই অরৌণাকে উত্তর দিলেন, “তা হবে না, আমি অবশ্যই তোমাকে এর দাম দেব। আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে এমন কোনও হোমবলি উৎসর্গ করব না, যার জন্য আমাকে কোনও দাম দিতে হয়নি।” \p অতএব দাউদ সেই খামারটি ও বলদগুলি কিনে নিয়েছিলেন এবং সেগুলির জন্য পঞ্চাশ শেকল\f + \fr 24:24 \fr*\ft অথবা, 575 গ্রাম\ft*\f* রুপো দাম দিলেন। \v 25 দাউদ সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন। তখন সদাপ্রভু দেশের হয়ে করা তাঁর প্রার্থনাটির উত্তর দিলেন, এবং ইস্রায়েলের উপর চলতে থাকা মহামারি থেমে গেল।