\id 2KI - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h 2 রাজাবলি \toc1 রাজাবলির দ্বিতীয় পুস্তক \toc2 2 রাজাবলি \toc3 2রাজা \mt1 রাজাবলির দ্বিতীয় পুস্তক \c 1 \s1 সদাপ্রভু অহসিয়কে দণ্ড দেন \p \v 1 আহাবের মৃত্যুর পর, মোয়াব ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল। \v 2 ইত্যবসরে অহসিয় শমরিয়ায় তাঁর প্রাসাদের উপরের ঘরের জাফরি ভেঙে পড়ে গেলেন ও গুরুতরভাবে আহত হলেন। তাই তিনি দূতদের বলে পাঠালেন, “তোমরা গিয়ে ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে জেনে এসো, আমি এই আঘাত থেকে সুস্থ হব, কি না।” \p \v 3 কিন্তু সদাপ্রভুর দূত তিশবীয় এলিয়কে বললেন, “শমরিয়ার রাজার পাঠানো দূতদের কাছে গিয়ে তুমি তাদের একথা জিজ্ঞাসা করো, ‘ইস্রায়েলে কি কোনও ঈশ্বর নেই যে তোমরা ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে পরামর্শ চাইতে যাচ্ছ?’ \v 4 তাই সদাপ্রভু একথা বলেন: ‘যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেটি ছেড়ে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মরবে!’ ” এই বলে এলিয় চলে গেলেন। \p \v 5 দূতেরা রাজার কাছে ফিরে আসার পর তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন ফিরে এলে?” \p \v 6 “একজন আমাদের সাথে দেখা করতে এলেন,” তারা উত্তর দিয়েছিল। “আর তিনি আমাদের বললেন, ‘যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, তোমরা সেই রাজার কাছে ফিরে যাও এবং তাঁকে গিয়ে বলো, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েলে কি কোনও ঈশ্বর নেই যে তুমি ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের পরামর্শ নেওয়ার জন্য তার কাছে দূত পাঠিয়েছ? তাই যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেটি ছেড়ে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মারা যাবে!” ’ ” \p \v 7 রাজামশাই তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যিনি তোমাদের সাথে দেখা করতে এলেন ও তোমাদের এইসব কথা বললেন, তাঁকে দেখতে কেমন?” \p \v 8 তারা উত্তর দিয়েছিল, “তাঁর গায়ে ছিল লোমের এক পোশাক\f + \fr 1:8 \fr*\ft অথবা, “তিনি একজন লোমশ পুরুষ”\ft*\f* এবং তাঁর কোমরে বাঁধা ছিল চামড়ার এক কোমরবন্ধ।” \p রাজামশাই বললেন, “তিনি তিশবীয় এলিয় ছিলেন।” \p \v 9 পরে এলিয়র কাছে তিনি পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত একজন সেনাপতিকে পাঠালেন। এলিয় যখন একটি পাহাড়ের চূড়ায় বসেছিলেন, তখন সেই সেনাপতি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজামশাই বলেছেন, ‘আপনি নিচে নেমে আসুন!’ ” \p \v 10 এলিয় সেই সেনাপতিকে উত্তর দিলেন, “আমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের লোক, তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলুক!” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে সেই সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলেছিল। \p \v 11 এই অবস্থা দেখে রাজামশাই অন্য আরেকজন সেনাপতিকে তাঁর পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত এলিয়র কাছে পাঠালেন। সেই সেনাপতিও এলিয়কে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা একথা বলেছেন, ‘আপনি এক্ষুনি নিচে নেমে আসুন!’ ” \p \v 12 “আমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের লোক,” এলিয় উত্তর দিলেন, “তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলুক!” তখন আকাশ থেকে ঈশ্বরের আগুন নেমে এসে তাঁকে ও তাঁর পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলেছিল। \p \v 13 অতএব রাজামশাই তৃতীয় একজন সেনাপতিকে তাঁর পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত সেখানে পাঠালেন। তৃতীয় এই সেনাপতি সেখানে গিয়ে এলিয়র সামনে নতজানু হলেন। “হে ঈশ্বরের লোক,” তিনি ভিক্ষা চেয়েছিলেন, “দয়া করে আপনার দাস—আমার ও এই পঞ্চাশ জন লোকের প্রাণের মর্যাদা রক্ষা করুন! \v 14 দেখুন, আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে প্রথম দুজন সেনাপতি ও তাদের লোকজনকে গ্রাস করল। কিন্তু এখন আমার প্রাণের মর্যাদা রক্ষা করুন!” \p \v 15 সদাপ্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “এর সাথে তুমি নিচে নেমে যাও; একে ভয় পেয়ো না।” অতএব এলিয় উঠে তাঁর সাথে রাজার কাছে চলে গেলেন। \p \v 16 তিনি রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েলে তোমাকে পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও ঈশ্বর কি ছিলেন না, যে তুমি পরামর্শ নেওয়ার জন্য ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে দূত পাঠিয়েছিলে? যেহেতু তুমি এই কাজ করেছ, তাই যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেখান থেকে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মরবে!” \v 17 তাই এলিয় যা বললেন, সদাপ্রভুর সেই কথানুসারে তিনি মারা গেলেন। \p যেহেতু অহসিয়ের কোনও ছেলে ছিল না, তাই যিহোশাফটের ছেলে যিহূদার রাজা যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে রাজারূপে যোরাম\f + \fr 1:17 \fr*\ft অথবা, হিব্রুতে ভিন্ন বানানুসারে “যিহোরাম”\ft*\f* অহসিয়ের স্থলাভিষিক্ত হলেন। \v 18 অহসিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \c 2 \s1 এলিয়কে স্বর্গে তুলে নেওয়া হয় \p \v 1 সদাপ্রভু যখন ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে দিয়ে এলিয়কে এবার স্বর্গে প্রায় তুলে নেবেন, এমন সময় এলিয় ও ইলীশায় গিল্‌গল থেকে যাত্রা শুরু করলেন। \v 2 এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “তুমি এখানে থাকো; সদাপ্রভু আমাকে বেথেলে পাঠিয়েছেন।” \p কিন্তু ইলীশায় বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি এবং আপনারও প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” অতএব তারা বেথেলের দিকে নেমে গেলেন। \p \v 3 বেথেলে ভাববাদী সম্প্রদায়ের লোকেরা ইলীশায়ের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি জানেন যে সদাপ্রভু আপনার মনিবকে আজ আপনার কাছ থেকে তুলে নেবেন?” \p “হ্যাঁ, আমি তা জানি,” ইলীশায় উত্তর দিলেন, “তাই চুপ করে থাকুন।” \p \v 4 তখন এলিয় তাঁকে বললেন, “ইলীশায়, তুমি এখানেই থাকো; সদাপ্রভু আমাকে যিরীহোতে পাঠিয়েছেন।” \p তিনি উত্তর দিলেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও আপনারও প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” অতএব তারা যিরীহোতে চলে গেলেন। \p \v 5 যিরীহোতেও ভাববাদী সম্প্রদায়ের লোকেরা ইলীশায়ের কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি জানেন যে সদাপ্রভু আপনার মনিবকে আজ আপনার কাছ থেকে তুলে নেবেন?” \p “হ্যাঁ, আমি তা জানি,” তিনি উত্তর দিলেন, “তাই চুপ করে থাকুন।” \p \v 6 তখন এলিয় তাঁকে বললেন, “তুমি এখানে থাকো; সদাপ্রভু আমাকে জর্ডনে পাঠিয়েছেন।” \p তিনি উত্তর দিলেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও আপনারও প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” অতএব তারা দুজন হাঁটতেই থাকলেন। \p \v 7 ভাববাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে পঞ্চাশ জন লোক একটু দূরে গিয়ে, এলিয় ও ইলীশায় জর্ডনের পাড়ে যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন, সেদিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। \v 8 এলিয় তাঁর ঢিলা আলখাল্লাটি খুলে, গোল করে গুটিয়ে নিয়ে সেটি দিয়ে জলে আঘাত করলেন। জল ডাইনে ও বাঁয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল, এবং তারা দুজন শুকনো জমির উপর দিয়ে নদী পার হয়ে গেলেন। \p \v 9 নদী পার হওয়ার পর এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “আমায় বলো, তোমার কাছ থেকে আমাকে তুলে নেওয়ার আগে আমি তোমার জন্য কী করতে পারি?” \p “আমি যেন আপনার আত্মার দ্বিগুণ অংশ পাই,” ইলীশায় উত্তর দিলেন। \p \v 10 “তুমি দুঃসাধ্য জিনিস চেয়ে বসলে,” এলিয় বললেন, “তবুও যদি তোমার কাছ থেকে আমাকে তুলে নেওয়ার সময় তুমি আমাকে দেখতে পাও, তবে তুমি সেটি পাবে—তা না হলে নয়।” \p \v 11 পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে যখন তারা দুজন কথা বলছিলেন, হঠাৎ অগ্নিময় একটি রথ ও কয়েকটি ঘোড়া আবির্ভূত হল ও তাদের দুজনকে আলাদা করে দিল, এবং ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে দিয়ে এলিয় স্বর্গে উঠে গেলেন। \v 12 এই দৃশ্য দেখে ইলীশায় চিৎকার করে উঠেছিলেন, “হে আমার বাবা! হে আমার বাবা! ইস্রায়েলের রথ ও অশ্বারোহীরা!” ইলীশায় আর তাঁকে দেখতে পাননি। তখন তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়ে দু-টুকরো করে ফেলেছিলেন। \p \v 13 ইলীশায় পরে এলিয়র গা থেকে পড়ে যাওয়া আলখাল্লাটি কুড়িয়ে নিয়ে ফিরে গেলেন এবং জর্ডন নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালেন। \v 14 এলিয়র গা থেকে পড়ে যাওয়া আলখাল্লাটি নিয়ে তিনি সেটি দিয়ে জলে আঘাত করলেন। “এলিয়র ঈশ্বর সদাপ্রভু এখন কোথায়?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। জলে আঘাত করায় তা ডাইনে ও বাঁয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল, এবং তিনি নদী পার হয়ে গেলেন। \p \v 15 যিরীহোর ভাববাদী সম্প্রদায়ের যে লোকেরা কড়া নজরদারি রেখেছিলেন, তারা তখন বললেন, “এলিয়র আত্মা ইলীশায়ের উপর ভর করেছে।” আর তারা ইলীশায়ের সাথে দেখা করতে গেলেন ও তাঁর সামনে মাটিতে মাথা ঠেকিয়েছিলেন। \v 16 “দেখুন,” তারা বললেন, “আপনার এই দাসেদের, অর্থাৎ আমাদের কাছে পঞ্চাশ জন যোগ্য লোক আছে। তারা আপনার মনিবের খোঁজ করতে যাক। হয়তো সদাপ্রভুর আত্মা তাঁকে নিয়ে গিয়ে কোনও পর্বতে বা উপত্যকায় দাঁড় করিয়ে রেখেছেন।” \p “না,” ইলীশায় উত্তর দিলেন, “তাদের পাঠাবেন না।” \p \v 17 কিন্তু তারা তাঁকে পীড়াপীড়ি করে এমন অপ্রস্তুতে ফেলে দিলেন যে তিনি আর প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি। তাই তিনি বললেন, “ওদের পাঠিয়ে দিন।” আর তারাও পঞ্চাশ জনকে পাঠিয়ে দিলেন। তারা তিন দিন ধরে খোঁজ চালিয়েছিল, কিন্তু এলিয়কে খুঁজে পায়নি। \v 18 ইলীশায় যিরীহোতে ছিলেন এবং তারা যখন সেখানে তাঁর কাছে ফিরে এসেছিল, তিনি তাদের বললেন, “আমি কি তোমাদের যেতে বারণ করিনি?” \s1 জল শুদ্ধ করা হয় \p \v 19 সেই নগরের লোকজন ইলীশায়কে বলল, “হে আমাদের প্রভু, আপনি তো দেখতেই পাচ্ছেন যে এই নগরটি বেশ ভালো স্থানতেই অবস্থিত, কিন্তু এখানকার জল খুব খারাপ ও জমিও অনুৎপাদক।” \p \v 20 “আমার কাছে একটি নতুন গামলা নিয়ে এসো,” তিনি বললেন, “এবং তাতে একটু লবণ রাখো।” অতএব তারা তাঁর কাছে গামলাটি এনেছিল। \p \v 21 পরে তিনি জলের উৎসের কাছে গিয়ে এই বলে তাতে কিছুটা লবণ ঢেলে দিলেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘আমি এই জল শুদ্ধ করলাম। আর কখনও এই জল মৃত্যুর কারণ হবে না বা জমিকেও অনুৎপাদক হয়ে থাকতে দেবে না।’ ” \v 22 ইলীশায়ের বলা কথানুসারে আজও পর্যন্ত সেই জল শুদ্ধই আছে। \s1 ইলীশায়কে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করা হয় \p \v 23 যিরীহো থেকে ইলীশায় বেথেলে চলে গেলেন। তিনি পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন, এমন সময় কয়েকটি ছেলে নগর থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করতে শুরু করল। “ওহে টাকলু, এখান থেকে পালাও!” তারা বলল। “ওহে টাকলু, এখান থেকে পালাও!” \v 24 তিনি ঘুরে তাদের দিকে তাকিয়েছিলেন এবং সদাপ্রভুর নামে তাদের অভিশাপ দিলেন। তখন বন থেকে দুটি ভালুক বেরিয়ে এসে সেই ছেলেদের মধ্যে বিয়াল্লিশ জনকে তুলোধোনা করল। \v 25 তিনি কর্মিল পাহাড়ে চলে গেলেন ও সেখান থেকে শমরিয়ায় ফিরে গেলেন। \c 3 \s1 মোয়াবের বিদ্রোহ \p \v 1 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের অষ্টাদশ বছরে আহাবের ছেলে যোরাম\f + \fr 3:1 \fr*\ft অথবা, যিহোরাম (6 পদও দেখুন)\ft*\f* শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি বারো বছর রাজত্ব করলেন। \v 2 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে তিনিও যা মন্দ, তাই করলেন, তবে তাঁর বাবা ও মায়ের মতো করেননি। তাঁর বাবার তৈরি করা বায়ালের পুণ্য পাথরটিকে তিনি ফেলে দিলেন। \v 3 তা সত্ত্বেও নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তিনি সেগুলির প্রতি আসক্ত হয়েই ছিলেন; তিনি সেগুলি ছেড়ে ফিরে আসেননি। \p \v 4 ইত্যবসরে মোয়াবের রাজা মেশা মেষের বংশবৃদ্ধি করে যাচ্ছিলেন, এবং কর-বাবদ ইস্রায়েলের রাজাকে তিনি এক লক্ষ মেষশাবক ও এক লক্ষ মদ্দা মেষের লোম দিতেন। \v 5 কিন্তু আহাব মারা যাওয়ার পর, মোয়াবের রাজা ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিলেন। \v 6 অতএব সেই সময় রাজা যোরাম শমরিয়া থেকে বের হয়ে যুদ্ধের জন্য সমস্ত ইস্রায়েলকে একত্রিত করলেন। \v 7 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের কাছেও তিনি এই খবর পাঠালেন: “মোয়াবের রাজা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। আপনি কি মোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমার সাথে যাবেন?” \p “আমি আপনার সাথে যাব,” তিনি উত্তর দিলেন। “আমি—আপনি, আমার লোকজন—আপনার লোকজন, আমার ঘোড়া—আপনার ঘোড়া, সবই তো এক।” \p \v 8 “কোনও পথ ধরে আমরা আক্রমণ করব?” যোরাম জিজ্ঞাসা করলেন। \p “ইদোমের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে,” যিহোশাফট উত্তর দিলেন। \p \v 9 অতএব ইস্রায়েলের রাজা যিহূদার রাজা ও ইদোমের রাজাকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। সাত দিন ঘুরপথে কুচকাওয়াজ করার পর, সৈন্যদের কাছে, নিজেদের জন্য বা তাদের সাথে থাকা পশুদের জন্য আর জল ছিল না। \p \v 10 “হায় রে!” ইস্রায়েলের রাজা হঠাৎ জোরে চেঁচিয়ে উঠেছিলেন। “সদাপ্রভু মোয়াবের হাতে আমাদের সঁপে দেওয়ার জন্যই কি আমাদের—এই তিনজন রাজাকে ডেকে এনেছেন?” \p \v 11 কিন্তু যিহোশাফট জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে কি সদাপ্রভুর কোনও ভাববাদী নেই, যাঁর মাধ্যমে আমরা সদাপ্রভুর কাছে একটু খোঁজখবর নিতে পারি?” \p ইস্রায়েলের রাজার একজন কর্মকর্তা উত্তর দিলেন, “শাফটের ছেলে ইলীশায় এখানে আছেন। তিনি এলিয়র হাতে জল ঢালার কাজ করতেন।\f + \fr 3:11 \fr*\ft অর্থাৎ, তিনি এলিয়র ব্যক্তিগত দাস ছিলেন\ft*\f*” \p \v 12 যিহোশাফট বললেন, “সদাপ্রভুর বাক্য তাঁর কাছে আছে।” অতএব ইস্রায়েলের রাজা ও যিহোশাফট এবং ইদোমের রাজা তাঁর কাছে গেলেন। \p \v 13 ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “আপনি কেন আমাকে এই ব্যাপারে জড়াতে চাইছেন? আপনার বাবার ও আপনার মায়ের ভাববাদীদের কাছে যান।” \p “না,” ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “কারণ সদাপ্রভুই আমাদের—এই তিনজন রাজাকে একসঙ্গে মোয়াবের হাতে সঁপে দেওয়ার জন্য ডেকে এনেছেন।” \p \v 14 ইলীশায় বললেন, “আমি যাঁর সেবা করি, সেই সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি যদি যিহূদার রাজা যিহোশাফটের উপস্থিতিকে মর্যাদা না দিতাম, তবে আমি আপনার কথায় মনোযোগই দিতাম না। \v 15 তবে এখন আমার কাছে বীণা বাজায়, এমন একজন লোক নিয়ে আসুন।” \p সেই লোকটি যখন বীণা বাজাচ্ছিল, তখন সদাপ্রভুর হাত ইলীশায়ের উপর নেমে এসেছিল \v 16 এবং তিনি বলে উঠেছিলেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি এই উপত্যকা জলভরা পুকুরে পরিণত করব। \v 17 কারণ সদাপ্রভু একথাই বলেন: তোমরা বাতাস বা বৃষ্টি, কিছুই দেখতে পাবে না, তবু এই উপত্যকা জলে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে, আর তোমরা, তোমাদের গবাদি পশুরা ও তোমাদের অন্যান্য পশুরাও জলপান করবে। \v 18 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে এ তো তুচ্ছ এক ব্যাপার; তিনি তোমাদের হাতে মোয়াবকেও সঁপে দেবেন। \v 19 তোমরা প্রত্যেকটি বড়ো বড়ো সুরক্ষিত নগর ও প্রত্যেকটি মুখ্য নগর উৎপাটিত করবে। তোমরা প্রত্যেকটি ভালো ভালো গাছ কেটে ফেলবে, জলের উৎসগুলি বুজিয়ে ফেলবে, ও প্রত্যেকটি ভালো ভালো ক্ষেতজমিতে পাথর ফেলে সেগুলি নষ্ট করে দেবে।” \p \v 20 পরদিন সকালে, বলিদান উৎসর্গ করার সময় নাগাদ, দেখা গেল—ইদোমের দিক থেকে জল বয়ে আসছে! আর জমি জলে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। \p \v 21 ইত্যবসরে মোয়াবীয়রা সবাই শুনেছিল যে রাজারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন; তাই যুবক হোক কি বৃদ্ধ, যে কেউ অস্ত্রশস্ত্র বহন করতে পারত, সবাইকে ডেকে দেশের সীমানায় মোতায়েন করে দেওয়া হল। \v 22 তারা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠেছিল, সূর্য তখন জলের উপর চকচক করছিল। মোয়াবীয়দের কাছে পথের ওপারে, জল রক্তের মতো লাল দেখাচ্ছিল। \v 23 “এ যে রক্ত!” তারা বলে উঠেছিল। “সেই রাজারা নিশ্চয় নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে একে অপরকে মেরে ফেলেছেন। হে মোয়াব, এখন তবে লুটপাট চালাও!” \p \v 24 কিন্তু মোয়াবীয়রা যখন ইস্রায়েলের সৈন্যশিবিরে এসেছিল, ইস্রায়েলীরা উঠে এসেছিল ও যতক্ষণ না মোয়াবীয়রা পালিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেল। ইস্রায়েলীরা দেশে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে মোয়াবীয়দের খতম করে দিয়েছিল। \v 25 তারা নগরগুলি ধ্বংস করে দিয়েছিল, এবং প্রত্যেকটি লোক সেখানে যত ভালো ভালো ক্ষেতজমি ছিল, তার প্রত্যেকটিতে পাথর ফেলে সেগুলি ঢেকে দিয়েছিল। তারা প্রত্যেকটি জলের উৎস বুজিয়ে দিয়েছিল ও প্রত্যেকটি ভালো ভালো গাছ কেটে দিয়েছিল। একমাত্র কীর-হরাসতে, সেখানকার পাথরগুলি যথাস্থানে ছেড়ে দেওয়া হল, কিন্তু গুলতিধারী কয়েকজন লোক নগরটি ঘিরে ধরে সেখানে আক্রমণ চালিয়েছিল। \p \v 26 মোয়াবের রাজা যখন দেখেছিলেন যে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি তাঁর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে, তখন তিনি সাতশো তরোয়ালধারী সৈন্য সাথে নিয়ে শত্রুপক্ষের ব্যূহভেদ করে ইদোমের রাজার দিকে এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা ব্যর্থ হল। \v 27 তখন যিনি রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছিলেন, তিনি তাঁর সেই বড়ো ছেলেকে নিয়ে তাঁকে নগরের প্রাচীরের উপর এক বলিরূপে উৎসর্গ করে দিলেন। ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড রাগে সবাই ফুঁসছিল; তাই তারা পিছিয়ে এসে নিজেদের দেশে ফিরে গেল। \c 4 \s1 বিধবার জলপাই তেল \p \v 1 ভাববাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন লোকের স্ত্রী ইলীশায়ের কাছে এসে কেঁদে বলল, “আপনার দাস—আমার স্বামী মারা গিয়েছে, আর আপনি তো জানেন যে সে সদাপ্রভুকে গভীর শ্রদ্ধা করত। কিন্তু এখন তার পাওনাদার এসে আমার দুটি সন্তানকে তার ক্রীতদাস করে নিয়ে যেতে চাইছে।” \p \v 2 ইলীশায় তাকে উত্তর দিলেন, “আমি কীভাবে তোমাকে সাহায্য করব? আমায় বলো, তোমার ঘরে কী আছে?” \p “আপনার এই দাসীর কাছে বলতে গেলে কিছুই নেই,” সে বলল, “শুধু ছোটো একটি বয়ামে কিছুটা জলপাই তেল আছে।” \p \v 3 ইলীশায় বললেন, “আশেপাশে গিয়ে তোমার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কয়েকটি খালি বয়াম চেয়ে আনো। শুধু অল্প কয়েকটি বয়াম চাইলেই হবে না। \v 4 পরে ঘরের ভিতরে গিয়ে তুমি ও তোমার ছেলেরা দরজা বন্ধ করে দেবে। সবকটি বয়ামে তেল ঢালতে থেকো, এবং একটি করে বয়াম ভর্তি হবে, আর তুমিও এক এক করে সেগুলি এক পাশে সরিয়ে রাখবে।” \p \v 5 সে তাঁর কাছ থেকে চলে গেল এবং ছেলেদের নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা তার কাছে বেশ কয়েকটি বয়াম নিয়ে এসেছিল এবং সে সেগুলিতে তেল ঢেলে যাচ্ছিল। \v 6 সবকটি বয়াম ভর্তি হয়ে যাওয়ার পর, সে তার এক ছেলেকে বলল, “আরও বয়াম নিয়ে এসো।” \p কিন্তু সে উত্তর দিয়েছিল, “আর কোনও বয়াম অবশিষ্ট নেই।” তখনই তেলের স্রোত বন্ধ হয়ে গেল। \p \v 7 সে ঈশ্বরের লোককে গিয়ে সব কথা বলল, এবং তিনি বললেন, “যাও, তেল বিক্রি করে তোমার দেনা শোধ করো। আর যতটুকু তেল থেকে যাবে, তা দিয়ে তুমি ও তোমার ছেলেরা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকবে।” \s1 শূনেমীয়ার ছেলে প্রাণ ফিরে পায় \p \v 8 একদিন ইলীশায় শূনেমে গেলেন। সেখানে বেশ সম্পন্ন এমন এক মহিলা ছিলেন, যিনি তাঁকে ভোজনপান করে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাই যখনই তিনি সেখানে আসতেন, ভোজনপান করার জন্য তিনি কিছুক্ষণ সময় থেকে যেতেন। \v 9 সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বললেন, “আমি জানি, যিনি প্রায়ই আমাদের এখানে আসেন, তিনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র লোক। \v 10 আমরা তাঁর জন্য ছাদের উপর একটি ছোটো ঘর বানিয়ে দিই এবং সেখানে একটি খাট, একটি টেবিল, একটি চেয়ার ও একটি লম্ফ রেখে দিই। তবে যখনই তিনি আমাদের কাছে আসবেন, তিনি সেখানে থাকতে পারবেন।” \p \v 11 একদিন ইলীশায় সেখানে এসে তাঁর সেই ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছিলেন। \v 12 তিনি তাঁর দাস গেহসিকে বললেন, “শূনেমীয়াকে ডেকে আনো।” তাই সে তাঁকে ডেকেছিল, ও তিনি এসে ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 13 ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “তাঁকে বলো, ‘তুমি আমাদের জন্য খুব অসুবিধা ভোগ করছ। এখন বলো, তোমার জন্য কী করতে হবে? তোমার হয়ে কি আমরা রাজার বা সৈন্যদলের সেনাপতির সাথে কথা বলব?’ ” \p শূনেমীয়া উত্তর দিলেন, “নিজের লোকজনের মধ্যে তো আমার একটি ঘর আছে।” \p \v 14 “তাঁর জন্য কী করা যেতে পারে?” ইলীশায় জিজ্ঞাসা করলেন। \p গেহসি বললেন, “তাঁর কোনও ছেলে নেই, আর তাঁর স্বামীও বৃদ্ধ।” \p \v 15 তখন ইলীশায় বললেন, “তাঁকে ডাকো।” অতএব গেহসি তাঁকে ডেকেছিলেন, ও তিনি দরজার কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 16 “পরের বছর মোটামুটি এসময়,” ইলীশায় বললেন, “তুমি ছেলে কোলে নিয়ে থাকবে।” \p “না, প্রভু না!” তিনি প্রতিবাদ করে উঠেছিলেন। “হে ঈশ্বরের লোক, আপনার দাসীকে বিভ্রান্তিকর খবর দেবেন না!” \p \v 17 কিন্তু মহিলাটি অন্তঃসত্ত্বা হলেন, এবং ইলীশায়ের বলা কথানুসারে, পরের বছর মোটামুটি সেই একই সময়ে তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। \p \v 18 শিশুটি বড়ো হয়ে উঠেছিল, এবং একদিন তার বাবা যখন সেই লোকজনের সাথে ক্ষেতে গেলেন, যারা ফসল কাটতে এসেছিল, তখন সেও তাঁর কাছে গেল। \v 19 সে তার বাবাকে বলল, “আমার মাথা! আমার মাথা!” \p তার বাবা একজন দাসকে বললেন, “ওকে ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও।” \v 20 সেই দাস তাকে কোলে তুলে নিয়ে তার মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর, ছেলেটি দুপুর পর্যন্ত মায়ের কোলে বসেছিল ও পরে সে মারা গেল। \v 21 সেই মহিলাটি উপরে গিয়ে ছেলেটিকে ঈশ্বরের লোকের বিছানায় শুইয়ে দিলেন, পরে দরজা বন্ধ করে বের হয়ে গেলেন। \p \v 22 তিনি তাঁর স্বামীকে ডেকে বললেন, “দয়া করে তোমার দাসদের মধ্যে একজনকে ও একটি গাধা আমার কাছে পাঠিয়ে দাও, যেন আমি তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছে গিয়ে ফিরে আসতে পারি।” \p \v 23 “আজ তাঁর কাছে যাবে কেন?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। “আজ তো অমাবস্যা নয়, বা সাব্বাথবারও নয়।” \p “সে ঠিক আছে,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 24 তিনি গাধায় জিন চাপিয়ে তাঁর দাসকে বললেন, “টেনে নিয়ে চলো; আমি না বলা পর্যন্ত গতি কম কোরো না।” \v 25 এইভাবে তিনি বের হয়ে কর্মিল পাহাড়ে ঈশ্বরের লোকের কাছে পৌঁছে গেলেন। \p দূর থেকে তাঁকে দেখতে পেয়ে ঈশ্বরের লোক তাঁর দাস গেহসিকে বললেন, “দেখো! সেই শূনেমীয়া আসছে! \v 26 দৌড়ে গিয়ে তাঁর সাথে দেখা করো ও তাঁকে জিজ্ঞাসা করো, ‘তুমি ঠিক আছ? তোমার স্বামী ঠিক আছে? তোমার ছেলে ঠিক আছে?’ ” \p “সব ঠিক আছে,” তিনি বললেন। \p \v 27 পর্বতে ঈশ্বরের লোকের কাছে পৌঁছে তিনি তাঁর পা জড়িয়ে ধরেছিলেন। গেহসি তাঁকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিল, কিন্তু ঈশ্বরের লোক বললেন, “ওকে একা থাকতে দাও! ও মর্মান্তিক যন্ত্রণাভোগ করছে, কিন্তু সদাপ্রভু তা আমার কাছে লুকিয়ে রেখেছেন এবং কেন তাও আমাকে বলেননি।” \p \v 28 “হে আমার প্রভু, আমি কি আপনার কাছে ছেলে চেয়েছিলাম?” তিনি বললেন। “কি আপনাকে বলিনি, ‘আমার আশা জাগিয়ে তুলবেন না?’ ” \p \v 29 ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “তোমার আলখাল্লাটি কোমরবন্ধ দিয়ে বেঁধে নাও, হাতে আমার ছড়িটি তুলে নাও ও দৌড়াতে থাকো। যে কোনো লোকের সাথেই দেখা হোক না কেন, তাকে শুভেচ্ছা জানিও না, এবং যদি কেউ তোমাকে শুভেচ্ছা জানায়, তবে তুমি তার কোনও উত্তর দিয়ো না। ছেলেটির মুখের উপর আমার ছড়িটি রেখে দিয়ো।” \p \v 30 কিন্তু শিশুটির মা বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও আপনারও প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” তাই ইলীশায় উঠে সেই মহিলাটিকে অনুসরণ করলেন। \p \v 31 গেহসি তাদের আগে এগিয়ে গিয়ে ছেলেটির মুখের উপর ছড়িটি রেখে দিয়েছিল, কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তাই গেহসি ইলীশায়ের সাথে দেখা করার জন্য ফিরে গিয়ে তাঁকে বলল, “ছেলেটি জাগেনি।” \p \v 32 ইলীশায় যখন সেই বাড়িতে পৌঁছেছিলেন, ছেলেটি তাঁরই খাটে মরে পড়েছিল। \v 33 তিনি ভিতরে ঢুকে, তাদের দুজনকে বাইরে রেখে দরজা বন্ধ করে দিলেন এবং সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। \v 34 পরে তিনি বিছানায় উঠে ছেলেটির মুখের উপর মুখ, চোখের উপর চোখ, হাতের উপর হাত রেখে শুয়ে পড়েছিলেন। ছেলেটির উপর তিনি যখন নিজেকে বিছিয়ে দিলেন, তখন ছেলেটির শরীর গরম হয়ে গেল। \v 35 ইলীশায় ফিরে এসে ঘরের মধ্যেই আগে পিছে একটু পায়চারি করে আবার বিছানায় উঠে ছেলেটির উপর নিজেকে বিছিয়ে দিলেন। ছেলেটি সাতবার হাঁচি দিয়ে নিজের চোখ খুলেছিল। \p \v 36 ইলীশায় গেহসিকে ডেকে বললেন, “শূনেমীয়াকে ডেকে আনো।” সে তা করল। মহিলাটি সেখানে আসার পর ইলীশায় বললেন, “এই নাও তোমার ছেলে।” \v 37 তিনি ভিতরে এসে ইলীশায়ের পায়ে পড়ে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। পরে তিনি তাঁর ছেলেকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। \s1 হাঁড়িতে মৃত্যু \p \v 38 ইলীশায় গিল্‌গলে ফিরে গেলেন এবং তখন সেই এলাকায় দুর্ভিক্ষ চলছিল। ভাববাদী সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন তাঁর সাথে দেখা করতে গেলেন, তিনি তাঁর দাসকে বললেন, “উনুনে বড়ো হাঁড়িটি চাপিয়ে এই ভাববাদীদের জন্য একটু তরকারি রান্না করো।” \p \v 39 তাদের মধ্যে একজন শাক সংগ্রহ করার জন্য ক্ষেতে গেলেন এবং সেখানে বুনো শশার লতা দেখতে পেয়ে কাপড়ে ভরে যত শসা আনা যায়, ততগুলিই তুলে নিয়েছিলেন। ফিরে আসার পর তিনি সেগুলি কেটে তরকারির হাঁড়িতে ঢুকিয়ে দিলেন, যদিও কেউই জানত না সেগুলি ঠিক কী। \v 40 লোকজনের পাতে তরকারি ঢেলে দেওয়া হল, কিন্তু যেই তারা খেতে শুরু করলেন, তারা চিৎকার করে কেঁদে উঠেছিলেন, “হে ঈশ্বরের লোক, হাঁড়িতে মৃত্যু আছে!” আর তারা সেই তরকারি খেতে পারেননি। \p \v 41 ইলীশায় বললেন, “আমার কাছে কিছুটা ময়দা নিয়ে এসো।” তিনি হাঁড়িতে ময়দা রেখে বললেন, “এবার লোকদের কাছে খাবার পরিবেশন করো।” হাঁড়িতে ক্ষতিকারক আর কিছুই ছিল না। \s1 একশো জনকে খাওয়ানো হয় \p \v 42 বায়াল-শালিশা থেকে একজন লোক ঈশ্বরের লোকের কাছে থলিতে করে নবান্নরূপী যবের কুড়িটি সেঁকা রুটি, এবং নবান্নের কিছু ফসল-দানা নিয়ে এসেছিল। “লোকদের এগুলি খেতে দাও,” ইলীশায় বললেন। \p \v 43 “একশো জন লোকের সামনে আমি কীভাবে এটি পরিবেশন করব?” তাঁর দাস জিজ্ঞাসা করলেন। \p কিন্তু ইলীশায় উত্তর দিলেন, “এগুলিই লোকদের খেতে দাও। কারণ সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তারা খাবে ও আরও কিছু বেঁচেও যাবে।’ ” \v 44 তখন সে তাদের সামনে সেগুলি পরিবেশন করল, এবং সদাপ্রভুর কথানুসারে, তারা খাওয়ার পরেও আরও কিছু খাবার বেঁচে গেল। \c 5 \s1 কুষ্ঠরোগী নামান সুস্থ হন \p \v 1 ইত্যবসরে নামান ছিলেন অরামের রাজার সৈন্যদলের সেনাপতি। যেহেতু তাঁর মাধ্যমে সদাপ্রভু অরামকে বিজয় দান করলেন, তাই তাঁর মনিবের দৃষ্টিতে তিনি মহান এক ব্যক্তি ছিলেন ও তাঁকে খুব সম্মান করা হত। তিনি অসমসাহসী এক যোদ্ধা ছিলেন, কিন্তু তাঁর কুষ্ঠরোগ\f + \fr 5:1 \fr*\ft ত্বকসংক্রান্ত বিভিন্ন চর্মরোগের ক্ষেত্রে হিব্রু ভাষায় “কুষ্ঠরোগ” শব্দটি ব্যবহৃত হত; 3, 6, 7, 11 ও 27 পদও দেখুন\ft*\f* হল। \p \v 2 অরাম থেকে একদল হামলাকারী ইস্রায়েলে গিয়ে সেখান থেকে ছোটো একটি মেয়েকে বন্দি করে এনেছিল, এবং সে নামানের স্ত্রীর সেবাকাজে নিযুক্ত হল। \v 3 সে তার মালকিনকে বলল, “যিনি শমরিয়ায় আছেন, সেই ভাববাদীর কাছে গিয়ে যদি আমার মনিব একবার তাঁর সাথে দেখা করতে পারতেন! তিনি তবে তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিয়ে দিতেন।” \p \v 4 ইস্রায়েল থেকে আসা সেই মেয়েটি যা বলল, নামান তাঁর মনিবের কাছে গিয়ে সেকথা তাঁকে বলে শুনিয়েছিলেন। \v 5 “অবশ্যই যাও,” অরামের রাজা উত্তর দিলেন। “আমি ইস্রায়েলের রাজার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেব।” অতএব নামান সাথে দশ তালন্ত\f + \fr 5:5 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 340 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো, 6,000 শেকল\f + \fr 5:5 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 69 কিলোগ্রাম\ft*\f* সোনা ও দশ পাটি পোশাক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। \v 6 ইস্রায়েলের রাজার কাছে তিনি যে চিঠিটি নিয়ে গেলেন, তাতে লেখা ছিল: “এই চিঠি সমেত আমি আমার দাস নামানকে আপনার কাছে পাঠাচ্ছি, যেন আপনি তার কুষ্ঠরোগ সারিয়ে দেন।” \p \v 7 ইস্রায়েলের রাজা সেই চিঠি পড়ামাত্রই নিজের রাজবস্ত্র ছিঁড়ে বলে উঠেছিলেন, “আমি কি ঈশ্বর? আমি কি কাউকে মেরে আবার তার জীবন ফিরিয়ে দিতে পারি? কেন এই লোকটি একজনকে তার কুষ্ঠরোগ সারাবার জন্য আমার কাছে পাঠিয়েছে? দেখো দেখি, কীভাবে সে আমার সাথে ঝগড়া বাধাবার চেষ্টা করছে!” \p \v 8 ঈশ্বরের লোক ইলীশায় যখন শুনতে পেয়েছিলেন যে ইস্রায়েলের রাজা তাঁর রাজবস্ত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন, তখন তিনি তাঁর কাছে এই খবর দিয়ে পাঠালেন: “আপনি কেন আপনার রাজবস্ত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন? সেই লোকটিকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন, সে জেনে যাবে যে ইস্রায়েলে একজন ভাববাদী আছে।” \v 9 অতএব নামান তাঁর সব ঘোড়া ও রথ নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 10 তাঁকে একথা বলার জন্য ইলীশায় এক দূত পাঠালেন, “যান, জর্ডন নদীতে গিয়ে সাতবার স্নান করুন, আর আপনার মাংস স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে ও আপনি শুচিশুদ্ধও হয়ে যাবেন।” \p \v 11 কিন্তু নামান রেগে চলে গেলেন ও বললেন, “আমি ভেবেছিলাম তিনি অবশ্যই আমার কাছে বেরিয়ে আসবেন ও দাঁড়িয়ে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম ধরে ডাকবেন, ছোপের উপর হাত বোলাবেন ও আমার কুষ্ঠরোগ সারিয়ে তুলবেন। \v 12 দামাস্কাসের অবানা ও পর্পর নদী কি ইস্রায়েলের সব জলাশয়ের থেকে ভালো নয়? আমি কি সেখানে স্নান করে শুচিশুদ্ধ হতে পারতাম না?” তাই তিনি মুখ ফিরিয়ে রেগে চলে গেলেন। \p \v 13 নামানের দাসেরা তাঁর কাছে গিয়ে বলল, “হে প্রভু, সেই ভাববাদী যদি আপনাকে কোনও বড়সড় কাজ করতে বলতেন, তবে কি আপনি তা করতেন না? তবে তিনি যখন আপনাকে বলেছেন, ‘স্নান করে শুচিশুদ্ধ হয়ে যান,’ তখন কি আরও বেশি করে আপনার তা করা উচিত নয়!” \v 14 তাই ঈশ্বরের লোকের কথানুসারে, তিনি জর্ডন নদীতে গিয়ে সাতবার স্নান করলেন, এবং তাঁর দেহ আগের অবস্থায় ফিরে এসেছিল ও ছোটো ছেলের দেহের মতো সুস্থসবল হয়ে গেল। \p \v 15 তখন নামান ও তাঁর সহচররা সবাই ঈশ্বরের লোকের কাছে ফিরে গেলেন। নামান তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “এখন আমি জানলাম যে ইস্রায়েল ছাড়া জগতে আর কোথাও কোনও ঈশ্বর নেই। তাই আপনার এই দাসের কাছ থেকে দয়া করে একটি উপহার গ্রহণ করুন।” \p \v 16 ভাববাদীমশাই উত্তর দিলেন, “আমি যাঁর সেবা করি, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি একটি জিনিসও গ্রহণ করব না।” নামান তাঁকে পীড়াপীড়ি করা সত্ত্বেও তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করলেন। \p \v 17 “আপনি যদি গ্রহণ না করলেন,” নামান বললেন, “দুটি খচ্চর পিঠে যতখানি মাটি বহন করতে পারে, ততখানি মাটি দয়া করে আমাকে—আপনার এই দাসকে দেওয়ার অনুমতি দিন, কারণ আপনার এই দাস আর কখনও সদাপ্রভু ছাড়া আর কোনও দেবতার কাছে হোমবলি ও নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে না। \v 18 কিন্তু এই একটি ব্যাপারে যেন সদাপ্রভু আপনার দাসকে ক্ষমা করেন: আমার মনিব যখন রিম্মোণের মন্দিরে প্রবেশ করে মাথা নত করবেন এবং আমার হাতে ভর দেবেন ও আমাকেও সেখানে মাথা নত করতে হবে—আমি যখন রিম্মোণের মন্দিরে মাথা নত করব, তখন যেন সদাপ্রভু আপনার এই দাসকে এর জন্য ক্ষমা করেন।” \p \v 19 “শান্তিতে চলে যাও,” ইলীশায় বললেন। \p নামান কিছু দূর চলে যাওয়ার পর, \v 20 ঈশ্বরের লোক ইলীশায়ের দাস গেহসি মনে মনে বলল, “নামান যা যা নিয়ে এসেছিলেন, তা গ্রহণ না করে আমার মনিব এই অরামীয় নামানকে এমনিই ছেড়ে দিলেন। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি তাঁর পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু বাগিয়ে আনব।” \p \v 21 অতএব গেহসি নামানের পিছনে দৌড়ে গেলেন। নামান যখন তাকে তাঁর পিছনে দৌড়ে আসতে দেখেছিলেন, তিনি তার সাথে দেখা করার জন্য রথ থেকে নেমে এলেন। “সবকিছু ঠিক আছে তো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p \v 22 “সবকিছু ঠিকই আছে,” গেহসি উত্তর দিয়েছিল। “আমার মনিব এই কথা বলার জন্য আমাকে পাঠিয়ে দিলেন যে, ‘ভাববাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে এইমাত্র দুজন যুবক আমার কাছে ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে এসে পড়েছে। দয়া করে তাদের এক তালন্ত\f + \fr 5:22 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো ও দুই পাটি পোশাক দিন।’ ” \p \v 23 “অবশ্যই, দুই তালন্ত নাও,” নামান বললেন। সেগুলি নেওয়ার জন্য তিনি গেহসিকে পীড়াপীড়ি করলেন, এবং পরে দুটি থলিতে দুই তালন্ত রুপো এবং দুই পাটি পোশাক বেঁধে দিলেন। তিনি সেগুলি তাঁর দুজন দাসের হাতে দিলেন, ও তারা গেহসির আগে আগে সেগুলি বয়ে নিয়ে গেল। \v 24 গেহসি সেই পাহাড়ে পৌঁছে জিনিসগুলি সেই দাসদের হাত থেকে নিয়ে বাড়িতে রেখে দিয়েছিল। সে সেই লোকদের পাঠিয়ে দিয়েছিল ও তারাও চলে গেল। \p \v 25 সে ভিতরে গিয়ে তার মনিবের সামনে দাঁড়াতেই ইলীশায় তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “গেহসি, তুমি কোথায় গিয়েছিলে?” \p “আপনার এই দাস কোথাও যায়নি তো,” গেহসি উত্তর দিল। \p \v 26 কিন্তু ইলীশায় তাকে বললেন, “সেই লোকটি যখন তোমার সাথে দেখা করার জন্য রথ থেকে নেমেছিলেন, আমার আত্মা কি তোমার সাথেই ছিল না? অর্থ বা পোশাক, অথবা জলপাই বাগান ও দ্রাক্ষাক্ষেত, বা মেষ-গরুর পাল, বা দাস-দাসী নেওয়ার এই কি সময়? \v 27 নামানের কুষ্ঠরোগ চিরকাল তোমার ও তোমার বংশধরদের শরীরে লেগে থাকুক।” পরে গেহসি ইলীশায়ের সামনে থেকে চলে গেল এবং তার ত্বকে কুষ্ঠরোগ ফুটে উঠেছিল—তা বরফের মতো সাদা হয়ে গেল। \c 6 \s1 কুড়ুলের ফলা ভেসে ওঠে \p \v 1 ভাববাদী সম্প্রদায়ের লোকেরা ইলীশায়কে বললেন, “দেখুন, আপনার সাথে আমরা যেখানে দেখা করি, সেই স্থানটি আমাদের জন্য খুবই ছোটো। \v 2 আমাদের জর্ডন নদীর পাড়ে যেতে দিন, যেন সেখান থেকে আমরা প্রত্যেকে এক-একটি খুঁটি নিয়ে আসতে পারি; এবং সেখানে আমাদের জন্য দেখাসাক্ষাৎ করার একটি স্থান তৈরি করা যাক।” \p তিনি বললেন, “যাও।” \p \v 3 তখন তাদের মধ্যে একজন বললেন, “আপনিও কি দয়া করে আপনার এই দাসেদের সাথে আসবেন না?” \p “আমিও আসব,” ইলীশায় উত্তর দিলেন। \v 4 আর তিনি তাদের সাথে গেলেন। \p তারা জর্ডন নদীর পাড়ে গেলেন ও গাছ কাটতে শুরু করলেন। \v 5 তাদের মধ্যে একজন যখন একটি গাছ কাটছিলেন, কুড়ুলের লোহার ফলাটি জলে পড়ে গেল। “না! না! হে আমার প্রভু!” তিনি চিৎকার করে উঠেছিলেন। “সেটি যে আমি ধার করে এনেছিলাম!” \p \v 6 ঈশ্বরের লোক জিজ্ঞাসা করলেন, “সেটি কোথায় পড়েছে?” তিনি যখন তাঁকে সেই স্থানটি দেখিয়ে দিলেন, ইলীশায় তখন গাছের একটি সরু ডাল ভেঙে নিয়ে সেটি জলে ফেলে দিলেন, ও লোহার ফলাটি ভাসিয়ে তুলেছিলেন। \v 7 “ফলাটি তুলে আনো,” তিনি বললেন। তখন সেই লোকটি হাত বাড়িয়ে সেটি তুলে এনেছিলেন। \s1 ইলীশায় অন্ধ অরামীয়দের ফাঁদে ফেলেন \p \v 8 ইত্যবসরে অরামের রাজা ইস্রায়েলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করার পর তিনি বললেন, “এসব স্থানে আমি সৈন্যশিবির করব।” \p \v 9 ঈশ্বরের লোক ইস্রায়েলের রাজার কাছে খবর দিয়ে পাঠালেন: “সেই স্থানটি পেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সাবধান, কারণ অরামীয়রা সেখানে যাচ্ছে।” \v 10 তাই ঈশ্বরের লোক যে স্থানটির বিষয়ে ইঙ্গিত দিলেন, ইস্রায়েলের রাজা সেটি যাচাই করে নিয়েছিলেন। বারবার ইলীশায় রাজাকে সাবধান করে দিলেন, যেন তিনি এসব স্থানে সতর্ক পাহারা বসিয়ে রাখতে পারেন। \p \v 11 এতে অরামের রাজা খুব রেগে গেলেন। তিনি তাঁর কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, “আমায় বলো দেখি! আমাদের মধ্যে কে ইস্রায়েলের রাজার পক্ষে গিয়েছে?” \p \v 12 “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমাদের মধ্যে কেউই যায়নি,” তাঁর কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন বলে উঠেছিল, “কিন্তু ইস্রায়েলে যে ভাববাদী আছেন, সেই ইলীশায় আপনি শোবার ঘরে যা যা বলেন, তার এক-একটি কথা ইস্রায়েলের রাজাকে বলে দেন।” \p \v 13 “যাও, গিয়ে খুঁজে বের করো, সে কোথায় আছে,” রাজা আদেশ দিলেন, “যেন আমি লোক পাঠিয়ে তাকে বন্দি করতে পারি।” খবর এসেছিল: “তিনি দোথনে আছেন।” \v 14 রাজা তখন ঘোড়া, রথ ও বেশ বড়সড় এক সৈন্যদল সেখানে পাঠালেন। রাতের অন্ধকারে তারা গিয়ে নগরটি ঘিরে ফেলেছিল। \p \v 15 পরদিন সকালে ঈশ্বরের লোকের দাস যখন ঘুম থেকে উঠে বাইরে গেল, তখন দেখা গেল একদল সৈন্য, ঘোড়া ও রথ নিয়ে নগরটি ঘিরে ফেলেছে। “না! না! হে আমার প্রভু! আমরা কী করব?” সেই দাস জিজ্ঞাসা করল। \p \v 16 “ভয় পেয়ো না,” ভাববাদী উত্তর দিলেন। “যারা আমাদের সাথে আছেন, তাদের সংখ্যা, ওদের সাথে যারা আছে, তাদের চেয়ে অনেক বেশি।” \p \v 17 আর ইলীশায় প্রার্থনা করলেন, “হে সদাপ্রভু, এর চোখ খুলে দাও, যেন এ দেখতে পারে।” তখন সদাপ্রভু সেই দাসের চোখ খুলে দিলেন, এবং সে তাকিয়ে দেখেছিল ইলীশায়ের চারপাশের পাহাড়গুলি ঘোড়া ও রথে ছেয়ে আছে। \p \v 18 শত্রুরা যখন ইলীশায়ের দিকে এগিয়ে এসেছিল, তিনি তখন সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “এই সৈন্যদলকে তুমি অন্ধ করে দাও।” তাই ইলীশায়ের প্রার্থনানুসারে সদাপ্রভু তাদের আঘাত করে দৃষ্টিশক্তিহীন করে দিলেন। \p \v 19 ইলীশায় তাদের বললেন, “এ সেই পথ নয় ও এ সেই নগরও নয়। আমাকে অনুসরণ করো, আমি তোমাদের পথ দেখিয়ে তোমরা যার খোঁজ করছ, সেই লোকটির কাছে নিয়ে যাব।” আর তিনি পথ দেখিয়ে তাদের শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন। \p \v 20 তারা নগরে প্রবেশ করার পর ইলীশায় বললেন, “হে সদাপ্রভু, এদের চোখ খুলে দাও, যেন এরা দেখতে পারে।” তখন সদাপ্রভু তাদের চোখ খুলে দিলেন ও তারা তাকিয়ে দেখেছিল, শমরিয়ার মাঝখানে তারা দাঁড়িয়ে আছে। \p \v 21 ইস্রায়েলের রাজা তাদের দেখতে পেয়ে ইলীশায়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আমার প্রভু, আমি কি এদের মেরে ফেলব? আমি কি এদের মেরে ফেলব?” \p \v 22 “এদের মেরে ফেলো না,” তিনি উত্তর দিলেন। “নিজের তরোয়াল বা ধনুক দিয়ে তুমি যাদের বন্দি করেছ, তাদের কি তুমি হত্যা করবে? তাদের সামনে খাবার ও জল রাখো, যেন তারা ভোজনপান করে তাদের মনিবের কাছে ফিরে যেতে পারে।” \v 23 তাই রাজা তাদের জন্য এক মহাভোজের ব্যবস্থা করলেন, এবং তারা ভোজনপান করার পর তাদের মনিবের কাছে ফিরে গেল। অতএব অরামের সৈন্যদল ইস্রায়েলী এলাকায় হামলা চালানো বন্ধ করে দিয়েছিল। \s1 অবরুদ্ধ শমরিয়ায় দুর্ভিক্ষ নেমে আসে \p \v 24 কিছুকাল পরে, অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমগ্র সৈন্যদল সমাবেশিত করে শমরিয়া অবরোধ করলেন। \v 25 নগরে ভীষণ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল; এত দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধ চলছিল যে এক-একটি গাধার মুণ্ডু বিক্রি হচ্ছিল আশি শেকল\f + \fr 6:25 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 920 গ্রাম\ft*\f* রুপো দিয়ে, এবং এক কাবের চার ভাগের এক ভাগ\f + \fr 6:25 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 100 গ্রাম\ft*\f* রেশমগুটির বীজ\f + \fr 6:25 \fr*\ft অথবা, “পায়রার মল”\ft*\f* বিক্রি হচ্ছিল পাঁচ শেকল\f + \fr 6:25 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 58 গ্রাম\ft*\f* রুপো দিয়ে। \p \v 26 ইস্রায়েলের রাজা যখন প্রাচীরের উপর দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন একজন মহিলা চিৎকার করে তাঁকে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমায় সাহায্য করুন!” \p \v 27 রাজামশাই উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু যদি তোমায় সাহায্য না করলেন, তবে আমি কোথা থেকে তোমায় সাহায্য করব? খামার থেকে? দ্রাক্ষাপেষাই কল থেকে?” \v 28 পরে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কী হয়েছে?” \p সে উত্তর দিয়েছিল, “এই মহিলাটি আমায় বলল, ‘তোমার ছেলেকে দাও, যেন আজ আমরা ওকে খেতে পারি, আর আগামীকাল আমরা আমার ছেলেকে খাব।’ \v 29 তাই আমরা আমার ছেলেকে রান্না করে খেয়েছিলাম। পরদিন আমি তাকে বললাম, ‘এবার তোমার ছেলেকে দাও, যেন আমরা তাকে খেতে পারি,’ কিন্তু সে তাকে লুকিয়ে রেখেছে।” \p \v 30 রাজা যখন সেই মহিলাটির কথা শুনেছিলেন, তখন তিনি তাঁর রাজবস্ত্র ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তিনি যখন প্রাচীরে হাঁটছিলেন, লোকজন তাকিয়ে দেখছিল, ও তারা দেখতে পেয়েছিল যে রাজার রাজবস্ত্রের নিচে তিনি গায়ে চট বেঁধে রেখেছেন। \v 31 রাজা বললেন, “আজ যদি শাফটের ছেলে ইলীশায়ের মুণ্ডু তার কাঁধের উপর স্বস্থানে থেকে যায়, তবে যেন ঈশ্বর আমাকে কঠোর থেকে কঠোরতর দণ্ড দেন!” \p \v 32 ইত্যবসরে ইলীশায় তাঁর বাড়িতে বসেছিলেন, এবং প্রাচীনেরাও তাঁর সাথে বসেছিলেন। রাজামশাই ইতিমধ্যে একজন দূত পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু সে এসে পৌঁছানোর আগেই ইলীশায় সেই প্রাচীনদের বলে দিলেন, “আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন না এই হত্যাকারী আমার মুণ্ডু কেটে ফেলার জন্য একজনকে পাঠাচ্ছে? দেখুন, সেই দূত যখন আসবে, আপনারা দরজাটি বন্ধ করে দেবেন এবং তাকে ঢুকতে দেবেন না। তার পিছু পিছু, তার মনিবের পায়ের শব্দও কি শোনা যাচ্ছে না?” \v 33 তাদের সাথে তখনও তিনি কথা বলছেন, এমন সময় সেই দূত তাঁর কাছে চলে এসেছিল। \p রাজামশাই বললেন, “এই বিপর্যয় তো সদাপ্রভুর কাছ থেকেই এসেছে। তবে আমি আর কেন সদাপ্রভুর অপেক্ষায় থাকব?” \c 7 \p \v 1 ইলীশায় উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভুর বাক্য শুনুন। সদাপ্রভু একথাই বলেন: আগামীকাল মোটামুটি এসময়, শমরিয়ার সিংহদুয়ারে এক পসুরি\f + \fr 7:1 \fr*\ft অর্থাৎ প্রায় সাড়ে 5 কিলোগ্রাম; 16 ও 18 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* মিহি ময়দা এক শেকলে\f + \fr 7:1 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 12 গ্রাম\ft*\f* এবং দুই পসুরি\f + \fr 7:1 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 9 কিলোগ্রাম; 16 ও 18 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* যব এক শেকলে বিক্রি হবে।” \p \v 2 যে কর্মকর্তার হাতে ভর দিয়ে রাজা দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি ঈশ্বরের লোককে বললেন, “দেখুন, সদাপ্রভু আকাশের রুদ্ধদ্বার যদি খুলেও দেন, তাও কি এরকম হতে পারে?” \p “আপনি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবেন,” ইলীশায় উত্তর দিলেন, “কিন্তু আপনি তার কিছুই খেতে পারবেন না!” \s1 অবরোধ উঠে যায় \p \v 3 ইত্যবসরে নগরের প্রবেশদ্বারে কুষ্ঠরোগগ্রস্ত\f + \fr 7:3 \fr*\ft ত্বকসংক্রান্ত বিভিন্ন চর্মরোগের ক্ষেত্রে হিব্রু ভাষায় “কুষ্ঠরোগ” শব্দটি ব্যবহৃত হত; 8 পদও দেখুন\ft*\f* চারজন লোক দাঁড়িয়েছিল। তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এখানে দাঁড়িয়ে থেকে মরতে যাব কেন? \v 4 যদি বলি, ‘নগরে যাব,’ সেখানে তো দুর্ভিক্ষ চলছে, আর সেখানে গেলে তো আমাদের মরতে হবে। আর যদি এখানে দাঁড়িয়ে থাকি, তাও তো মরব। তাই অরামীয়দের সৈন্যশিবিরে গিয়ে আত্মসমর্পণ করাই ভালো। তারা যদি আমাদের ছেড়ে দেয়, তবে আমরা বাঁচব; তারা যদি আমাদের হত্যা করে, তবে মরব।” \p \v 5 গোধূলিবেলায় তারা উঠে অরামীয়দের সৈন্যশিবিরে চলে গেল। যখন তারা শিবিরের ধারে পৌঁছেছিল, সেখানে কেউ ছিল না, \v 6 কারণ সদাপ্রভু অরামীয়দের রথ, ঘোড়া ও বিশাল এক সৈন্যদলের শব্দ শুনিয়েছিলেন, তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “দেখো, ইস্রায়েলের রাজা আমাদের আক্রমণ করার জন্য হিত্তীয় ও মিশরীয় রাজাদের ভাড়া করেছেন!” \v 7 অতএব তারা গোধূলি বেলাতেই উঠে পালিয়ে গেল এবং তাদের তাঁবু, ঘোড়া ও গাধাগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেড়ে গেল। শিবির যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় ফেলে রেখে, প্রাণ হাতে করে তারা দৌড় লাগাল। \p \v 8 কুষ্ঠরোগগ্রস্ত লোকগুলি শিবিরের ধারে পৌঁছে একটি তাঁবুতে ঢুকে ভোজনপান করল। পরে তারা রুপো, সোনা ও পোশাক-আশাক নিয়ে সেখান থেকে চলে গেল ও সেগুলি লুকিয়ে রেখেছিল। তারা ফিরে এসে অন্য একটি তাঁবুতে ঢুকে সেখান থেকেও কিছু জিনিসপত্র নিয়ে সেগুলি লুকিয়ে রেখেছিল। \p \v 9 পরে তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “আমরা যা করছি, তা ভালো নয়। আজ সুখবরের একদিন আর আমরা তা নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি। দিনের আলো ফোটা পর্যন্ত যদি আমরা অপেক্ষা করি, তবে শাস্তি আমাদের উপর নেমে আসবেই। তাই এক্ষুনি রাজপ্রাসাদে গিয়ে খবর দেওয়া যাক।” \p \v 10 তাই তারা গিয়ে নগরের দারোয়ানদের খবর দিয়ে বলল, “আমরা অরামীয়দের সৈন্যশিবিরে গেলাম এবং সেখানে কেউ ছিল না—একজন লোকেরও শব্দ পাওয়া যায়নি—শুধু দড়ি দিয়ে বাঁধা ঘোড়া ও গাধার শব্দ শুনেছিলাম, এবং তাঁবুগুলি যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থাতেই তারা ছেড়ে গিয়েছে।” \v 11 দারোয়ানরা জোরে চিৎকার করে তাঁকে সেই খবরটি জানিয়েছিল, এবং প্রাসাদের ভিতরে খবর পৌঁছে গেল। \p \v 12 রাজামশাই রাতেই উঠে তাঁর কর্মকর্তাদের বললেন, “অরামীয়রা আমাদের প্রতি কী করেছে, তা আমি তোমাদের বলছি। তারা জানে যে আমরা অনাহারে আছি; তাই এই ভেবে তারা শিবির ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে লুকিয়েছে, ‘তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসবে, এবং পরে আমরা তাদের জ্যান্ত ধরব ও নগরের মধ্যে ঢুকে পড়ব।’ ” \p \v 13 তাঁর কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন উত্তর দিলেন, “নগরে যে কটি ঘোড়া অবশিষ্ট আছে, সেগুলির মধ্যে পাঁচটি ঘোড়া কয়েকজন লোকের হাতে তুলে দেওয়া যাক। তাদের দুরাবস্থা এখানকার বাদবাকি সব ইস্রায়েলীর মতোই হবে—হ্যাঁ, তারা শুধু এইসব ইস্রায়েলীর মতোই হবে, যাদের সর্বনাশ হয়েই গিয়েছে। তাই কী হয়েছে তা জানার জন্য তাদের পাঠিয়ে দেওয়া যাক।” \p \v 14 অতএব তারা ঘোড়া সমেত দুটি রথ বেছে নিয়েছিলেন, এবং রাজামশাই অরামীয় সৈন্যদলের খোঁজে তাদের পাঠিয়ে দিলেন। তিনি সারথিদের আদেশ দিলেন, “যাও, গিয়ে খুঁজে বের করো, কী হয়েছে।” \v 15 জর্ডন নদী পর্যন্ত তারা অরামীয়দের অনুসরণ করল, এবং তারা খুঁজে পেয়েছিল যে অরামীয়রা তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে যেসব পোশাক-আশাক ও যন্ত্রপাতি ফেলে দিয়েছিল, সেগুলি পথের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। অতএব দূতেরা ফিরে এসে রাজামশাইকে খবর দিয়েছিল। \v 16 তখন লোকেরা বাইরে গিয়ে অরামীয়দের সৈন্যশিবিরে লুঠতরাজ চালিয়েছিল। তাই সদাপ্রভুর বলা কথানুসারে এক পসুরি মিহি ময়দা এক শেকলে, এবং দুই পসুরি যব এক শেকলে বিক্রি হল। \p \v 17 ইত্যবসরে রাজামশাই যে কর্মকর্তার হাতে ভর দিয়ে দাঁড়াতেন, তাঁকেই সিংহদুয়ার সামলানোর দায়িত্ব দিলেন, এবং লোকজন সিংহদুয়ারেই সেই কর্মকর্তাকে পায়ের তলায় পিষে দিয়েছিল, ও তিনি মারা গেলেন, ঠিক যেমনটি রাজামশাই যখন ঈশ্বরের লোকের বাড়িতে গেলেন, তখন ঈশ্বরের লোক তাঁকে আগাম বলে দিলেন। \v 18 রাজামশাইকে বলা ঈশ্বরের লোকের কথানুসারে ঘটনাটি ঘটেছিল: “আগামীকাল মোটামুটি এই সময়ে শমরিয়ার সিংহদুয়ারে এক পসুরি মিহি ময়দা এক শেকলে এবং দুই পসুরি যব এক শেকলে বিক্রি হবে।” \p \v 19 সেই কর্মকর্তা ঈশ্বরের লোককে বললেন, “দেখুন, সদাপ্রভু যদি আকাশের রুদ্ধদ্বার খুলেও দেন, তাও কি এরকম হতে পারে?” ঈশ্বরের লোক উত্তর দিলেন, “আপনি নিজের চোখেই তা দেখবেন, কিন্তু আপনি তার কিছুই খেতে পারবেন না!” \v 20 আর তাঁর দশা ঠিক সেরকমই হল, কারণ লোকজন তাঁকে সিংহদুয়ারেই পায়ের তলায় পিষে দিয়েছিল, এবং তিনি মারা গেলেন। \c 8 \s1 শূনেমীয়া তাঁর জমি ফেরত পেয়েছিলেন \p \v 1 ইত্যবসরে যাঁর ছেলের প্রাণ ইলীশায় ফিরিয়ে দিলেন, সেই মহিলাটিকে তিনি বললেন, “তোমার পরিবার সাথে নিয়ে তুমি কিছু সময়ের জন্য যেখানেই হোক, গিয়ে থাকো, কারণ সদাপ্রভুর বিধানমতে এই দেশে এক দুর্ভিক্ষ আসতে চলেছে, যা সাত বছর স্থায়ী হবে।” \v 2 সেই মহিলাটি ঈশ্বরের লোকের কথানুসারে কাজ করার জন্য অগ্রসর হলেন। তিনি ও তাঁর পরিবার ফিলিস্তিনীদের দেশে গিয়ে সাত বছর কাটিয়েছিলেন। \p \v 3 সাত বছর পার হওয়ার পর তিনি ফিলিস্তিনীদের দেশ থেকে ফিরে এলেন এবং তাঁর বাড়ি ও জমি ফেরত পাওয়ার জন্য রাজার কাছে আবেদন জানাতে গেলেন। \v 4 রাজামশাই ঈশ্বরের লোকের দাস গেহসির সাথে কথা বলছিলেন, এবং তিনি বললেন, “ইলীশায় যেসব বড়ো বড়ো কাজ করেছেন সে বিষয়ে আমায় কিছু বলো।” \v 5 ঠিক যে মুহূর্তে গেহসি রাজাকে বলছিল, কীভাবে ইলীশায় মৃত মানুষকে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন, সেই মুহূর্তে, সেই মহিলাটি তাঁর বাড়ি-জমি ফেরত পাওয়ার জন্য রাজার কাছে আবেদন জানাতে এলেন, যাঁর ছেলের প্রাণ ইলীশায় ফিরিয়ে দিলেন। \p গেহসি বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, এই সেই মহিলা, আর এই তাঁর সেই ছেলে, যার প্রাণ ইলীশায় ফিরিয়ে দিলেন।” \v 6 রাজামশাই মহিলাটিকে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এবং তিনি তাঁকে সব কথা বলে শুনিয়েছিলেন। \p পরে তিনি মহিলার ব্যাপারটি দেখার দায়িত্ব একজন কর্মকর্তার হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে বললেন, “এই মহিলাটির কাছে যা যা ছিল, সব তাকে ফিরিয়ে দাও, এবং যেদিন সে এই দেশ ছেড়ে গেল, সেদিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তার জমি থেকে যা কিছু আয় হয়েছে, সেসবও তাকে ফিরিয়ে দাও।” \s1 হসায়েল বিন্‌হদদকে হত্যা করলেন \p \v 7 ইলীশায় দামাস্কাসে গেলেন, এবং অরামের রাজা বিন্‌হদদ তখন অসুস্থ ছিলেন। রাজাকে যখন বলা হল, “ঈশ্বরের লোক এখানে এত দূর পর্যন্ত এসেছেন,” \v 8 তিনি হসায়েলকে বললেন, “হাতে একটি উপহার নিয়ে তুমি ঈশ্বরের লোকের সাথে দেখা করতে যাও। তাঁর মাধ্যমে সদাপ্রভুর কাছে পরামর্শ চেয়ে নিয়ো; তাঁকে জিজ্ঞাসা কোরো, ‘আমি কি এই রোগ থেকে সুস্থ হব?’ ” \p \v 9 হসায়েল সাথে করে চল্লিশটি উটের পিঠে চাপিয়ে দামাস্কাসের ভালো ভালো পণ্যসামগ্রীসমৃদ্ধ উপহার নিয়ে ইলীশায়ের সাথে দেখা করতে গেলেন। তিনি ভিতরে ঢুকে ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আপনার ছেলে অরামের রাজা বিন্‌হদদ আমাকে এই প্রশ্ন করতে পাঠিয়েছেন, ‘আমি কি এই রোগ থেকে সুস্থ হব?’ ” \p \v 10 ইলীশায় উত্তর দিলেন, “তাঁকে গিয়ে বলুন, ‘আপনি অবশ্যই সুস্থ হবেন।’ তা সত্ত্বেও,\f + \fr 8:10 \fr*\ft অথবা, বাক্যটি এভাবেও পড়া যায়: তাঁকে গিয়ে বলুন, আপনি কোনোমতেই সুস্থ হবেন না\ft*\f* সদাপ্রভু আমার কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন যে আসলে তিনি মারা যাবেন।” \v 11 হসায়েল অপ্রস্তুতে না পড়া পর্যন্ত ইলীশায় একদৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকিয়েছিলেন। পরে ঈশ্বরের লোক কাঁদতে শুরু করলেন। \p \v 12 “আমার প্রভু কাঁদছেন কেন?” হসায়েল জিজ্ঞাসা করলেন। \p “যেহেতু আমি জানি আপনি ইস্রায়েলীদের কত ক্ষতি করবেন,” তিনি উত্তর দিলেন। “আপনি তাদের সুরক্ষিত স্থানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেবেন, তরোয়ালের যন্ত্রণায় তাদের যুবক ছেলেদের হত্যা করবেন, তাদের ছোটো ছোটো শিশুদের মাটিতে আছড়ে ফেলে দেবেন, এবং তাদের অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের টান মেরে চিরে ফেলবেন।” \p \v 13 হসায়েল বললেন, “আপনার এই দাস, যে কি না এক কুকুরমাত্র, সে কীভাবে এই কৃতিত্ব দেখাবে?” \p “সদাপ্রভু আমায় দেখিয়ে দিয়েছেন যে আপনি অরামের রাজা হবেন,” ইলীশায় উত্তর দিলেন। \p \v 14 তখন হসায়েল ইলীশায়কে ছেড়ে তাঁর মনিবের কাছে ফিরে গেলেন। বিন্‌হদদ যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইলীশায় তোমাকে কী বলেছেন?” হসায়েল উত্তর দিলেন, “তিনি আমায় বলেছেন, আপনি অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবেন।” \v 15 কিন্তু তার পরের দিন তিনি মোটা একটি কাপড় জলে ভিজিয়ে নিয়ে রাজার মুখে সেটি এমনভাবে চেপে ধরেছিলেন যে রাজা মারা গেলেন। পরে রাজারূপে হসায়েল তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা যিহোরাম \p \v 16 আহাবের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যোরামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে যিহোশাফট যখন যিহূদার রাজা ছিলেন, তখনই যিহোশাফটের ছেলে যিহোরাম যিহূদার রাজারূপে রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 17 বত্রিশ বছর বয়সে তিনি রাজা হলেন, এবং আট বছর তিনি জেরুশালেমে রাজত্ব করলেন। \v 18 আহাবের বংশের মতো তিনিও ইস্রায়েলের রাজাদের পথেই চলেছিলেন, কারণ তিনি আহাবের এক মেয়েকে বিয়ে করলেন। সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তিনি তাই করলেন। \v 19 তা সত্ত্বেও, সদাপ্রভু তাঁর দাস দাউদের খাতিরে যিহূদাকে ধ্বংস করতে চাননি। দাউদ ও তাঁর বংশধরদের জন্য এক প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা তিনি করলেন। \p \v 20 যিহোরামের রাজত্বকালে, ইদোমীয়েরা যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল ও নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করে নিয়েছিল। \v 21 তাই যিহোরাম\f + \fr 8:21 \fr*\ft অথবা, যোরাম; 23 ও 24 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* তাঁর সব রথ নিয়ে সায়ীরে গেলেন। ইদোমীয়রা তাঁকে ও তাঁর রথগুলির দায়িত্বে থাকা সেনাপতিদের ঘিরে ধরেছিল, কিন্তু তিনি রাতের অন্ধকারে উঠে শত্রুপক্ষের ব্যূহভেদ করে চলে গেলেন; অবশ্য তাঁর সৈন্যদল ঘরে পালিয়ে গেল। \v 22 আজও পর্যন্ত ইদোম যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েই আছে। সেই একই সময়ে লিব্‌নাও বিদ্রোহ করে বসেছিল। \p \v 23 যিহোরামের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, আর তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 24 যিহোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাদেরই সাথে তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে অহসিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা অহসিয় \p \v 25 আহাবের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যোরামের রাজত্বের দ্বাদশ বছরে যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 26 অহসিয় বাইশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি এক বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম অথলিয়া। তিনি ইস্রায়েলের রাজা অম্রির নাতনি ছিলেন। \v 27 অহসিয় আহাব কুলের পথেই চলেছিলেন এবং আহাব কুলের মতো তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন, কারণ বিয়ের সূত্র ধরে তিনি আহাব কুলের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কে বাঁধা পড়েছিলেন। \p \v 28 আহাবের ছেলে যোরামের সাথে মিলে অহসিয় রামোৎ-গিলিয়দে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। অরামীয়রা যোরামকে ক্ষতবিক্ষত করল; \v 29 তাই অরামের রাজা হসায়েলের সাথে যুদ্ধ করার সময় রামোৎ-এ\f + \fr 8:29 \fr*\ft অথবা, রামায়\ft*\f* অরামীয়রা রাজা যোরামকে যে আঘাত দিয়েছিল, সেই যন্ত্রণা থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য তিনি যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন। \p পরে যিহোরামের ছেলে যিহূদার রাজা অহসিয় আহাবের ছেলে যোরামকে দেখতে যিষ্রিয়েলে নেমে গেলেন, কারণ তিনি আহত অবস্থায় পড়েছিলেন। \c 9 \s1 ইস্রায়েলের অভিষিক্ত রাজা যেহূ \p \v 1 ভাববাদী ইলীশায় ভাববাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে একজন লোককে ডেকে বললেন, “তোমার কোমরবন্ধে তোমার আলখাল্লাটি গুঁজে নাও, তোমার সাথে এই এক বোতল জলপাই তেল নাও ও রামোৎ-গিলিয়দে চলে যাও। \v 2 সেখানে পৌঁছে, নিমশির নাতি, তথা যিহোশাফটের ছেলে যেহূর খোঁজ করো। তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে তাঁর সঙ্গীসাথীদের কাছ থেকে একটু দূরে সরিয়ে ভিতরের একটি ঘরে নিয়ে যেয়ো। \v 3 পরে সেই বোতলের তেলটুকু তাঁর মাথায় ঢেলে দিয়ে ঘোষণা কোরো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি তোমাকে ইস্রায়েলের উপরে রাজপদে অভিষিক্ত করছি।’ পরে দরজা খুলে দৌড়ে বেরিয়ে যেয়ো; দেরি কোরো না!” \p \v 4 অতএব সেই অল্পবয়স্ক ভাববাদী রামোৎ-গিলিয়দে গেলেন। \v 5 সেখানে পৌঁছে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন সেনা-কর্মকর্তারা একসাথে বসে আছেন। “হে সেনাপতি, আপনার জন্য আমি একটি খবর নিয়ে এসেছি,” তিনি বললেন। \p “আমাদের মধ্যে কার জন্য?” যেহূ জিজ্ঞাসা করলেন। \p “হে সেনাপতি, আপনার জন্যই,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 6 যেহূ উঠে বাড়ির ভিতরে চলে গেলেন। তখন সেই ভাববাদী যেহূর মাথায় সেই তেল ঢেলে দিয়ে ঘোষণা করলেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘সদাপ্রভুর প্রজা ইস্রায়েলের উপর আমি তোমাকে রাজপদে অভিষিক্ত করছি। \v 7 তুমি তোমার মনিব আহাবের কুল ধ্বংস করবে, এবং ঈষেবল আমার দাস সেই ভাববাদীদের ও সদাপ্রভুর সব দাসের যে রক্তপাত করল, আমি তার প্রতিশোধ নেব। \v 8 আহাবের কুলে সবাই মারা যাবে। আমি ইস্রায়েলে আহাবের কুলে শেষ পুরুষ পর্যন্ত, এক একজনকে শেষ করে ফেলব—তা সে ক্রীতদাসই হোক কি স্বাধীন।\f + \fr 9:8 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েলের প্রত্যেক শাসনকর্তা বা নেতাকে\ft*\f* \v 9 আমি আহাবের কুলকে নবাটের ছেলে যারবিয়ামের কুলের এবং অহিয়র ছেলে বাশার কুলের মতো করে ফেলব। \v 10 আর ঈষেবলকে যিষ্রিয়েলের জমিতে কুকুরেরা ছিঁড়ে খাবে, ও কেউ তাকে কবরও দেবে না।’ ” এই বলে তিনি দরজা খুলে দৌড়ে চলে গেলেন। \p \v 11 যেহূ যখন তাঁর সঙ্গীসাথীদের কাছে ফিরে গেলেন, তাদের মধ্যে একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সবকিছু ঠিক আছে তো? ওই উন্মাদটি কেন তোমার কাছে এসেছিল?” \p “আরে, তোমরা তো ওকে আর ও কী ধরনের কথা বলে, তাও জান,” যেহূ উত্তর দিলেন। \p \v 12 “একথা সত্যি নয়!” তারা বললেন। “আমাদের বলে ফেলো।” \p যেহূ বললেন, “সে আমাকে বলে গেল: ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েলের উপর আমি তোমাকে রাজপদে অভিষিক্ত করছি।’ ” \p \v 13 তারা তাড়াতাড়ি নিজেদের আলখাল্লাগুলি খুলে নিয়ে সেগুলি তাঁর পায়ের নিচে খোলা সিঁড়ির উপর বিছিয়ে দিলেন। পরে শিঙা বাজিয়ে তারা চিৎকার করে উঠেছিলেন, “যেহূ রাজা হলেন!” \s1 যেহূ যোরাম ও অহসিয়কে হত্যা করলেন \p \v 14 অতএব নিমশির নাতি, তথা যিহোশাফটের ছেলে যেহূ যোরামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। (ইত্যবসরে যোরাম ইস্রায়েলের সব লোকজনকে সাথে নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে রামোৎ-গিলিয়দ রক্ষা করছিলেন, \v 15 কিন্তু অরামের রাজা হসায়েলের সাথে যুদ্ধ চলাকালীন অরামীয়রা রাজা যোরামকে\f + \fr 9:15 \fr*\ft অথবা, যিহোরামকে; \ft*\xt 17|link-href="2KI 9:17"\xt* ও \xt 21-24|link-href="2KI 9:21-24"\xt* পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\f* যে আঘাত দিয়েছিল, তা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য তিনি যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন) যেহূ বললেন, “তোমরা যদি আমাকে রাজা করতে চাও, তবে দেখো, কেউ যেন নগর থেকে পালিয়ে যিষ্রিয়েলে গিয়ে এই খবর দেওয়ার সুযোগ না পায়।” \v 16 এই বলে তিনি রথে চড়ে যিষ্রিয়েলের দিকে চলে গেলেন, কারণ যোরাম সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ও যিহূদার রাজা অহসিয় তাঁর সাথে দেখা করতে গেলেন। \p \v 17 যিষ্রিয়েলের মিনারে দাঁড়িয়ে থাকা পাহারাদার যখন যেহূর সৈন্যদলকে আসতে দেখেছিল, সে চিৎকার করে বলে উঠেছিল, “আমি একদল সৈন্য আসতে দেখছি।” \p “একজন অশ্বারোহী পাঠাও,” যোরাম আদেশ দিলেন। “সে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করে জিজ্ঞাসা করুক, ‘তোমরা শান্তিতে এসেছ তো?’ ” \p \v 18 সেই অশ্বারোহী সৈনিক গিয়ে যেহূর সাথে দেখা করে বলল, “রাজামশাই একথাই বলেছেন: ‘আপনারা শান্তিতেই এসেছেন তো?’ ” \p “শান্তির ব্যাপারে তোমার খোঁজ নেওয়ার কী দরকার?” যেহূ উত্তর দিলেন। “আমার পিছনে এসে দাঁড়াও।” \p পাহারাদার খবর দিয়েছিল, “সেই দূত তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, কিন্তু সে ফিরে আসছে না।” \p \v 19 তাই রাজামশাই দ্বিতীয় এক অশ্বারোহীকে পাঠালেন। সে তাদের কাছে এসে বলল, “রাজামশাই একথাই বলেছেন: ‘আপনারা শান্তিতেই এসেছেন তো?’ ” \p যেহূ উত্তর দিলেন, “শান্তির ব্যাপারে তোমার খোঁজ নেওয়ার কী দরকার? তুমি আমার পিছনে এসে দাঁড়াও।” \p \v 20 পাহারাদার খবর দিয়েছিল, “সে তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, কিন্তু সে ফিরে আসছে না। রথ চালানো দেখে মনে হচ্ছে সে হয়তো নিমশির সন্তান যেহূ—কারণ সে উন্মাদের মতো রথ চালায়।” \p \v 21 “আমার রথটি হ্যাঁচকা টান মেরে তোলো,” যোরাম আদেশ দিলেন। আর যখন রথটি হ্যাঁচকা টান মেরে তোলা হল, ইস্রায়েলের রাজা যোরাম ও যিহূদার রাজা অহসিয় নিজের নিজের রথে চড়ে যেহূর সাথে দেখা করতে বের হয়ে গেলেন। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের অধিকারভুক্ত জমিতেই যেহূর সাথে তাদের দেখা হল। \v 22 যেহূকে দেখতে পেয়ে যোরাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যেহূ, তুমি কি শান্তিতে এসেছ?” \p “শান্তি থাকবে কী করে,” যেহূ উত্তর দিলেন, “যতদিন আপনার মা ঈষেবলের প্রতিমাপুজো ও ডাইনিবিদ্যা দেশে উপচে পড়ছে?” \p \v 23 যোরাম উল্টোদিকে ফিরে পালিয়ে যেতে যেতে অহসিয়কে বলে যাচ্ছিলেন, “অহসিয়, এ যে বিশ্বাসঘাতকতা!” \p \v 24 তখন যেহূ তাঁর ধনুকে টান দিয়ে যোরামের কাঁধের মাঝামাঝি স্থানে তির ছুঁড়ে মেরেছিলেন। তিরটি তাঁর হৃদপিণ্ডে গিয়ে বিঁধেছিল ও তিনি ধপ করে তাঁর রথে বসে পড়েছিলেন। \v 25 যেহূ তাঁর রথের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিদকরকে বললেন, “ওকে তুলে নিয়ে এসে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের জমিতে ছুঁড়ে ফেলে দাও। মনে করে দেখো, তুমি-আমি যখন ওর বাবা আহাবের পিছু পিছু রথে চড়ে যাচ্ছিলাম, তখন সদাপ্রভু আহাবের বিরুদ্ধে এই ভাববাণী করেছিলেন: \v 26 ‘সদাপ্রভু ঘোষণা করছেন, গতকাল আমি নাবোত ও তার ছেলেদের রক্তপাত হতে দেখেছি, এবং সদাপ্রভু ঘোষণা করছেন, আমি অবশ্যই এই জমির উপরেই তোমাকে এর দাম চোকাতে বাধ্য করব।’\f + \fr 9:26 \fr*\ft \+xt 1 রাজাবলি 21:19\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* তবে এখন, সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে ওকে তুলে নিয়ে এসে সেই জমিতেই ছুঁড়ে ফেলে দাও।” \p \v 27 যা ঘটেছিল, তা দেখে যিহূদার রাজা অহসিয় বেথ-হাগ্গনের\f + \fr 9:27 \fr*\ft অথবা, বাগান-বাড়ির\ft*\f* পথ ধরে পালিয়ে গেলেন। যেহূ এই বলে চিৎকার করতে করতে তাঁর পিছু ধাওয়া করলেন, “ওকেও মেরে ফেলো!” যিব্‌লিয়মের কাছাকাছি অবস্থিত গূরে যাওয়ার পথে তারা রথের মধ্যেই তাঁকে আঘাত করল, কিন্তু তিনি মগিদ্দোতে পালিয়ে গেলেন ও সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল। \v 28 তাঁর দাসেরা রথে করে তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে এসেছিল এবং দাউদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথেই তাঁর কবরে তাঁকে কবর দিয়েছিল। \v 29 (আহাবের ছেলে যোরামের রাজত্বের একাদশ বছরে অহসিয় যিহূদার রাজা হলেন।) \s1 ঈষেবলকে হত্যা করা হয় \p \v 30 পরে যেহূ যিষ্রিয়েলে চলে গেলেন। ঈষেবল সেকথা শুনতে পেয়ে চোখে কাজল দিয়ে, পরিপাটি করে চুল বেঁধে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছিল। \v 31 যেহূ সিংহদুয়ার দিয়ে ঢুকতে না ঢুকতেই সে জিজ্ঞাসা করল, “ওরে সিম্রি, তোর মনিবের হত্যাকারী, তুই কি শান্তিতে এসেছিস?”\f + \fr 9:31 \fr*\ft অথবা, যে তার মনিবকে হত্যা করল, সেই সিম্রি কি শান্তি পেয়েছিল?\ft*\f* \p \v 32 যেহূ জানালার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন, “কে আমার পক্ষে আছে? কে আছে?” দু-তিনজন খোজা নিচে তাঁর দিকে তাকিয়েছিল। \v 33 “ওকে নিচে ফেলে দাও!” যেহূ বললেন। অতএব তারা ঈষেবলকে নিচে ফেলে দিয়েছিল, এবং কয়েকটি ঘোড়া যখন তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছিল, তখন দেয়ালে ও ঘোড়াদের গায়ে তার রক্তের ছিটে লাগল। \p \v 34 যেহূ ভিতরে গিয়ে ভোজনপান করলেন। “অভিশাপগ্রস্ত ওই মহিলাটির কিছু ব্যবস্থা করো,” তিনি বললেন, “আর ওকে কবর দাও, কারণ ও এক রাজার মেয়ে ছিল।” \v 35 কিন্তু যখন তারা তাকে কবর দিতে গেল, তখন তারা তার মাথার খুলি, তার পা ও হাত ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পায়নি। \v 36 তারা ফিরে গিয়ে যেহূকে সেকথা বলল, ও তিনি বললেন, “এ সদাপ্রভুর সেই কথা যা তিনি তাঁর দাস তিশবীয় এলিয়র মাধ্যমে বললেন: যিষ্রিয়েলের জমিতে কুকুরেরা ঈষেবলের মাংস ছিঁড়ে খাবে।\f + \fr 9:36 \fr*\ft \+xt 1 রাজাবলি 21:23\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* \v 37 গোবরসারের মতো পড়ে থাকবে যে কেউ বলতেই পারবে না যে ‘এ হল ঈষেবল।’ ” \c 10 \s1 আহাবের পরিবারের হত্যা \p \v 1 ইত্যবসরে শমরিয়ায় আহাব কুলের সত্তরজন ছেলে ছিল। তাই যেহূ কয়েকটি চিঠি লিখে সেগুলি শমরিয়ায়: যিষ্রিয়েলের\f + \fr 10:1 \fr*\ft অথবা, “নগরের”\ft*\f* কর্মকর্তাদের, প্রাচীনদের ও যারা আহাবের সন্তানদের অভিভাবক ছিলেন, তাদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, \v 2 “আপনাদের কাছে আপনাদের মনিবের ছেলেরা আছে, এবং রথ ও ঘোড়া, সুরক্ষিত নগর ও অস্ত্রশস্ত্রও আছে। এখন যেই না এই চিঠি আপনাদের কাছে পৌঁছাবে, \v 3 আপনাদের মনিবের ছেলেদের মধ্যে যে সেরা ও সবচেয়ে উপযুক্ত, তাকে তক্ষুনি তার বাবার সিংহাসনে বসিয়ে দেবেন। পরে আপনারা আপনাদের মনিবের কুলের হয়ে যুদ্ধ করুন।” \p \v 4 কিন্তু তারা ভয় পেয়ে বললেন, “দুজন রাজা যখন তাঁকে বাধা দিতে পারেননি, তখন আমরা কীভাবে তাঁকে বাধা দেব?” \p \v 5 তাই রাজপ্রাসাদের প্রশাসনিক কর্তা, নগরের শাসনকর্তা, প্রাচীনেরা ও অভিভাবকেরা যেহূকে এই খবর পাঠালেন: “আমরা আপনারই দাস এবং আপনি আমাদের যা যা বলবেন, আমরা তাই করব। আমরা কাউকে রাজা নিযুক্ত করব না; আপনার যা ভালো বলে মনে হয়, তাই করুন।” \p \v 6 পরে যেহূ তাদের কাছে দ্বিতীয় একটি চিঠি লিখে বললেন, “আপনারা যদি আমার পক্ষে আছেন ও আমার কথার বাধ্য হতে চান, তবে আপনাদের মনিবের ছেলেদের মুণ্ডুগুলি নিয়ে আগামীকাল ঠিক এই সময়ে যিষ্রিয়েলে আমার কাছে চলে আসুন।” \p ইত্যবসরে রাজপুত্রদের মধ্যে সত্তরজন, নগরের সামনের সারির লোকদের সাথে ছিল ও তারাই তাদের দেখাশোনা করতেন। \v 7 সেই চিঠি সেখানে পৌছানোমাত্র তারা সেই রাজপুত্রদের ধরে সত্তর জনকেই হত্যা করলেন। তারা তাদের মুণ্ডুগুলি ঝুড়িতে ভরে যিষ্রিয়েলে যেহূর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \v 8 একজন দূত সেখানে পৌঁছে যেহূকে বলল, “রাজপুত্রদের মুণ্ডুগুলি আনা হয়েছে।” \p তখন যেহূ আদেশ দিলেন, “সকাল পর্যন্ত সেগুলি দুটি স্তূপে ভাগ করে নগরের সিংহদরজার মুখে সাজিয়ে রাখো।” \p \v 9 পরদিন সকালে যেহূ উঠে বাইরে গেলেন। তিনি সব লোকজনের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমরা তো নির্দোষ। আমিই আমার মনিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মেরে ফেলেছিলাম, কিন্তু এদের কে হত্যা করেছে? \v 10 তাই জেনে রাখো, আহাব কুলের বিরুদ্ধে বলা সদাপ্রভুর একটি কথাও ব্যর্থ হবে না। সদাপ্রভু তাঁর দাস এলিয়র মাধ্যমে যা যা ঘোষণা করলেন, সব সেইমতোই করেছেন।” \v 11 অতএব যিষ্রিয়েলে আহাব কুলের অবশিষ্ট সকলকে, তথা তাঁর সব মুখ্য লোকজনকে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও যাজকদের যেহূ হত্যা করলেন, এবং তাঁর কোনও বংশধরকে ছাড় দেননি। \p \v 12 পরে যেহূ বের হয়ে শমরিয়ার দিকে চলে গেলেন। রাখালদের গ্রাম বেথ-একদে \v 13 তিনি যিহূদার রাজা অহসিয়ের কয়েকজন আত্মীয়স্বজনের দেখা পেয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কারা?” \p তারা বলল, “আমরা অহসিয়ের আত্মীয়স্বজন, এবং আমরা রাজার পরিবারের লোকজনকে ও রাজমাতাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি।” \p \v 14 “ওদের জ্যান্ত অবস্থায় ধরো!” যেহূ আদেশ দিলেন। তাই তারা তাদের জ্যান্ত অবস্থায় ধরেই তাদের মধ্যে বিয়াল্লিশ জনকে বেথ-একদের কুয়োর পাশে মেরে ফেলেছিল। একজন বংশধরকেও তিনি অবশিষ্ট রাখেননি। \p \v 15 সেই স্থানটি ছেড়ে তিনি রেখবের ছেলে সেই যিহোনাদবের কাছে এলেন, যিনি তাঁর সাথে দেখা করতে আসছিলেন। যেহূ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, “আমি যেমন আপনার সাথে ঐকমত্যে আছি, আপনিও কি আমার সাথে ঐকমত্যে আছেন?” \p “হ্যাঁ, আছি,” যিহোনাদব উত্তর দিলেন। \p “যদি তাই হয়,” যেহূ বললেন, “তবে আপনার হাত বাড়িয়ে দিন।” তিনি তা করলেন, ও যেহূ তাঁকে নিজের রথে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। \v 16 যেহূ বললেন, “আমার সাথে আসুন ও সদাপ্রভুর জন্য আমার যে উদ্দীপনা আছে তা দেখে যান।” এই বলে তিনি তাঁকে পাশে বসিয়ে রথে চড়ে এগিয়ে গেলেন। \p \v 17 শমরিয়ায় পৌঁছে যেহূ আহাব কুলের অবশিষ্ট সবাইকে হত্যা করলেন; এলিয়কে সদাপ্রভু যা বললেন, সেই কথানুসারে তিনি তাদের শেষ করে ফেলেছিলেন। \s1 বায়ালের সেবকদের হত্যা \p \v 18 পরে যেহূ সব লোকজনকে একত্র করে তাদের বললেন, “আহাব বায়ালের সেবা অল্পই করলেন; যেহূ তার সেবা বেশ ভালোমতোই করবে। \v 19 এখন তোমরা বায়ালের সব ভাববাদীকে, তার সব সেবককে ও সব যাজককে ডেকে আনো। দেখো যেন কেউ বাদ পড়ে না যায়, কারণ আমি বায়ালের জন্য বেশ বড়সড় এক যজ্ঞের ব্যবস্থা করতে চলেছি। যে কেউ অনুপস্থিত থাকবে, সে আর বাঁচবে না।” কিন্তু বায়ালের সেবকদের শেষ করে ফেলার জন্যই আসলে যেহূ ছল করে অভিনয় করছিলেন। \p \v 20 যেহূ বললেন, “বায়ালের সম্মানে এক সভা আহ্বান করো।” তাই তারা সভা আহ্বান করল। \v 21 পরে তারা ইস্রায়েলে সর্বত্র যেহূর এই খবর পাঠিয়ে দিয়েছিল, এবং বায়ালের সব সেবক চলে এসেছিল; একজনও অনুপস্থিত থাকেনি। যতক্ষণ না বায়ালের মন্দিরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ভরে উঠেছিল, তারা ভিড় জমিয়েই যাচ্ছিল। \v 22 যেহূ রাজপ্রাসাদের পোশাক বিভাগের রক্ষীকে বললেন, “বায়ালের সব সেবকের জন্য পোশাক নিয়ে এসো।” তাই সে তাদের জন্য পোশাক বের করে এনেছিল। \p \v 23 পরে যেহূ ও রেখবের ছেলে যিহোনাদব বায়ালের মন্দিরে গেলেন। যেহূ বায়ালের সেবকদের বললেন, “ভালো করে দেখে নাও, যেন এখানে তোমাদের সাথে এমন কোনও লোক না থাকে যে সদাপ্রভুর সেবা করে—শুধু বায়ালের সেবকরাই যেন থাকে।” \v 24 অতএব তারা বলিদান ও হোমবলি উৎসর্গ করার জন্য ভিতরে গেলেন। ইত্যবসরে যেহূ মন্দিরের বাইরে আশি জন লোককে মোতায়েন করে এই বলে তাদের সতর্ক করে দিলেন: “আমি যাদের ভার তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছি, যদি তোমাদের মধ্যে কেউ এদের একজনকেও পালিয়ে যেতে দাও, তবে সেই পালিয়ে যাওয়া লোকের প্রাণের বদলে তারই প্রাণ যাবে।” \p \v 25 যেহূ হোমবলি উৎসর্গ করার পরই রক্ষী ও কর্মকর্তাদের আদেশ দিলেন: “ভিতরে গিয়ে ওদের হত্যা করো; কেউ যেন পালাতে না পারে।” অতএব তারা তরোয়াল দিয়ে তাদের কেটে ফেলেছিল। সেই রক্ষী ও কর্মকর্তারা তাদের দেহগুলি বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল এবং পরে বায়ালের মন্দিরে দেবতার অভ্যন্তরীণ পীঠস্থানে ঢুকে পড়েছিল। \v 26 তারা সেই পবিত্র পাথরটিকে বায়ালের মন্দিরের বাইরে বের করে সেটি পুড়িয়ে দিয়েছিল। \v 27 তারা বায়ালের পবিত্র পাথরটিকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ও বায়ালের মন্দিরটিও ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছিল, এবং লোকেরা সেই স্থানটি আজও পর্যন্ত এক শৌচাগাররূপেই ব্যবহার করে চলেছে। \p \v 28 অতএব যেহূ ইস্রায়েলে বায়ালের পুজো বন্ধ করে দিলেন। \v 29 অবশ্য তিনি নবাটের ছেলে যারবিয়ামের সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসতে পারেননি, ইস্রায়েলকে দিয়ে যারবিয়াম যেসব পাপ করিয়েছিলেন—অর্থাৎ, বেথেল ও দানে তিনি সোনার বাছুরের পুজো করলেন। \p \v 30 সদাপ্রভু যেহূকে বললেন, “যেহেতু আমার দৃষ্টিতে যা উপযুক্ত তা করে তুমি ভালোই করেছ, এবং মনে মনে আমি যা করতে চেয়েছিলাম, আহাবের কুলের প্রতি তুমি সেসব করে দিয়েছ, তাই তোমার বংশধররা চার পুরুষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে।” \v 31 তবুও যেহূ মনপ্রাণ দিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিধান পালনের ক্ষেত্রে মনোযোগী হননি। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, তিনি সেই পাপগুলি থেকে ফিরে আসেননি। \p \v 32 সেই সময় থেকেই সদাপ্রভু ইস্রায়েলের মাপ ছোটো করতে শুরু করলেন। ইস্রায়েলী এলাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত হসায়েল তাদের দমন করে রেখেছিলেন— \v 33 জর্ডন নদীর পূর্বপারে গিলিয়দের সব এলাকায় (গাদ, রূবেণ ও মনঃশির অধিকারভুক্ত অঞ্চলে), অর্ণোন গিরিখাতের পাশে অবস্থিত অরোয়ের থেকে শুরু করে গিলিয়দ হয়ে বাশন পর্যন্ত সর্বত্র। \p \v 34 যেহূর রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন, তাঁর সব কীর্তি, সেসবের বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \p \v 35 যেহূ তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও শমরিয়ায় তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোয়াহস রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \v 36 আটাশ বছর শমরিয়ায় যেহূ ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করলেন। \c 11 \s1 অথলিয়া ও যোয়াশ \p \v 1 অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখেছিলেন তাঁর ছেলে মারা গিয়েছেন, তখন তিনি গোটা রাজপরিবার ধ্বংস করে দিতে প্রবৃত্ত হলেন। \v 2 কিন্তু রাজা যিহোরামের\f + \fr 11:2 \fr*\ft অথবা, যোরামের\ft*\f* মেয়ে ও অহসিয়ের বোন যিহোশেবা অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে সেই রাজপুত্রদের মধ্যে থেকে চুরি করে এনেছিলেন, যাদের অথলিয়া হত্যা করতে যাচ্ছিলেন। তিনি যোয়াশকে অথলিয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তাকে ও তার ধাত্রীকে শোবার ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন; তাই তাকে হত্যা করা যায়নি। \v 3 একদিকে যখন তাকে ও তার ধাত্রীকে সদাপ্রভুর মন্দিরে ছয় বছর লুকিয়ে রাখা হল, অন্যদিকে অথলিয়া দেশ শাসন করে যাচ্ছিলেন। \p \v 4 সপ্তম বছরে যিহোয়াদা শত-সেনাপতিদের, এবং করেয় ও রক্ষীদলের সেনাপতিদের সদাপ্রভুর মন্দিরে নিজের কাছে ডেকে পাঠালেন। তাদের সাথে তিনি একটি চুক্তি করলেন ও সদাপ্রভুর মন্দিরে তাদের দিয়ে একটি শপথ করিয়ে নিয়েছিলেন। পরে তিনি তাদের সেই রাজপুত্রকে দেখতে দিলেন। \v 5 তিনি এই বলে তাদের আদেশ দিলেন, “তোমাদের এরকম করতে হবে: তোমরা যারা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে সাব্বাথবারে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছ—তোমাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রাজপ্রাসাদ পাহারা দেবে, \v 6 এক-তৃতীয়াংশ থাকবে সূর-দুয়ারে, এবং এক-তৃতীয়াংশ থাকবে সেই রক্ষীর পিছন দিকের দুয়ারে, যে মন্দির পাহারা দেওয়ার জন্য ঘুরতে থাকে— \v 7 আর তোমরা, যারা অন্য দুটি দলে আছ, যারা সাব্বাথবারে সাধারণত কাজ করো না, তোমরা সবাই রাজার জন্য মন্দির পাহারা দিয়ো। \v 8 তোমরা প্রত্যেকে হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাজাকে ঘিরে রেখো। যে কেউ তোমাদের সৈন্যশ্রেণীর\f + \fr 11:8 \fr*\ft অথবা চৌহদ্দির\ft*\f* কাছাকাছি আসবে, তাকে মেরে ফেলতে হবে। রাজা যেখানেই যাবেন, তোমরা তাঁর কাছাকাছি থেকো।” \p \v 9 শত-সেনাপতিরা হুবহু যাজক যিহোয়াদার আদেশানুসারেই কাজ করল। প্রত্যেকে তাদের লোকজন নিয়ে—যারা সাব্বাথবারে কাজ করত ও যারা সাব্বাথবারে কাজ করা থেকে বিরত থাকত, সবাই—যাজক যিহোয়াদার কাছে এসেছিল। \v 10 পরে তিনি শত-সেনাপতিদের হাতে সেইসব বর্শা ও ঢালগুলি তুলে দিলেন, যেগুলি ছিল রাজা দাউদের এবং সদাপ্রভুর মন্দিরে রাখা ছিল। \v 11 যজ্ঞবেদি ও মন্দিরের কাছে, রক্ষীরা প্রত্যেকে হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে, মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে শুরু করে উত্তর দিক পর্যন্ত রাজাকে ঘিরে রেখেছিল। \p \v 12 যিহোয়াদা রাজপুত্রকে বাইরে বের করে এনে তাঁর মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দিলেন; তিনি রাজপুত্রকে পবিত্র নিয়ম-সমৃদ্ধ একটি অনুলিপি উপহার দিয়ে তাঁকে রাজা ঘোষণা করে দিলেন। তারা তাঁকে অভিষিক্ত করল, ও প্রজারা হাততালি দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠেছিল, “রাজা দীর্ঘজীবী হোন!” \p \v 13 রক্ষী ও প্রজাদের সেই চিৎকার শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর মন্দিরে প্রজাদের কাছে গেলেন। \v 14 তিনি তাকিয়ে দেখেছিলেন, প্রথানুসারে রাজা থামের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কর্মকর্তা ও শিঙাবাদকেরা রাজার পিছনে দাঁড়িয়েছিল, ও দেশের প্রজারা সবাই আনন্দ করতে করতে শিঙা বাজাচ্ছিল। তখন অথলিয়া তাঁর রাজবস্ত্র ছিঁড়ে বলে উঠেছিলেন, “রাজদ্রোহ! রাজদ্রোহ!” \p \v 15 সৈন্যদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শত-সেনাপতিদের যাজক যিহোয়াদা আদেশ দিলেন: “সৈন্যশ্রেণীর\f + \fr 11:15 \fr*\ft অথবা, চৌহদ্দির\ft*\f* মাঝখান দিয়ে তাঁকে বের করে আনো এবং যে কেউ তাঁর অনুগামী, তাকে তরোয়ালের আঘাতে তাকে হত্যা করো।” কারণ যাজকমশাই বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরের মধ্যে তাঁকে হত্যা করা ঠিক হবে না।” \v 16 তাই তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে সেই স্থানে নিয়ে গেল, যেখান থেকে ঘোড়াগুলি প্রাসাদ-সংলগ্ন মাঠে প্রবেশ করে, এবং সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হল। \p \v 17 যিহোয়াদা পরে এই বলে সদাপ্রভু এবং রাজা ও প্রজাদের মধ্যে এক পবিত্র নিয়ম স্থাপন করে দিলেন, যে তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়েই থাকবে। এছাড়াও তিনি রাজা ও প্রজাদের মধ্যেও এক পবিত্র নিয়ম স্থাপন করে দিলেন। \v 18 দেশের প্রজারা সবাই বায়ালের মন্দিরে গিয়ে সেটি ভেঙে ফেলেছিল। তারা যজ্ঞবেদি ও প্রতিমার মূর্তিগুলিও ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল এবং বায়ালের যাজক মত্তনকে যজ্ঞবেদির সামনেই হত্যা করল। \p পরে যাজক যিহোয়াদা সদাপ্রভুর মন্দিরে পাহারাদার বসিয়ে দিলেন। \v 19 তিনি শত-সেনাপতি, করেয়, রক্ষীদল ও দেশের সব প্রজাকে সাথে নিয়ে রাজাকে সদাপ্রভুর মন্দির থেকে বের করে এনে রক্ষীদলের দুয়ার দিয়ে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেলেন। রাজা পরে রাজসিংহাসনে বিরাজমান হলেন। \v 20 দেশের প্রজারা সবাই আনন্দ করল, ও নগরে শান্তি বিরাজিত হল, যেহেতু প্রাসাদে অথলিয়াকে তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলা হল। \p \v 21 যোয়াশ\f + \fr 11:21 \fr*\ft অথবা, যিহোয়াশ\ft*\f* যখন রাজত্ব করতে শুরু করলেন, তখন তাঁর বয়স সাত বছর। \c 12 \s1 যোয়াশ মন্দির মেরামত করলেন \p \v 1 যেহূর রাজত্বকালের সপ্তম বছরে যোয়াশ\f + \fr 12:1 \fr*\ft অথবা, যিহোয়াশ; 2, 4, 6, 7 ও 18 পদও দেখুন\ft*\f* রাজা হলেন, এবং তিনি জেরুশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া; তিনি বের-শেবা নগরে থাকতেন। \v 2 যতদিন যাজক যিহোয়াদা যোয়াশকে উপদেশ দিলেন, ততদিন তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ঠিক, তাই করে গেলেন। \v 3 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি অবশ্য সরানো হয়নি; লোকজন সেই স্থানগুলিতে তখনও বলিদান উৎসর্গ করেই যাচ্ছিল ও ধূপও পুড়িয়ে যাচ্ছিল। \p \v 4 যোয়াশ যাজকদের বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরে যত অর্থ—জনগণনার মাধ্যমে, ব্যক্তিগত মানত পূরণের জন্য এবং স্বেচ্ছায় মন্দিরে আনা হয়—তা সংগ্রহ করে রাখুন। \v 5 কোষাধ্যক্ষদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে প্রত্যেক যাজক অর্থ নিয়ে মন্দির যেখানে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই স্থানগুলি মেরামত করান।” \p \v 6 কিন্তু যোয়াশের রাজত্বকালের তেইশ বছর পর্যন্ত যাজকেরা সেই মন্দির মেরামত করেননি। \v 7 তাই রাজা যোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কেন মন্দিরের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলি মেরামত করছেন না? কোষাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আর অর্থ নেবেন না, কিন্তু মন্দির মেরামতের জন্য তাদের হাতে অর্থ তুলে দিন।” \v 8 যাজকেরা রাজি হলেন যে তারা লোকজনের কাছ থেকে আর অর্থ সংগ্রহ করবেন না এবং তারা নিজেরাও মন্দির মেরামত করবেন না। \p \v 9 যাজক যিহোয়াদা একটি সিন্দুক নিয়ে সেটির ঢাকনায় একটি ফুটো করে দিলেন। তিনি সেটি নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন যজ্ঞবেদির পাশে, ডানদিকে ঠিক সেখানে, যেখান দিয়ে লোকজন সদাপ্রভুর মন্দিরে ঢোকে। যত অর্থ সদাপ্রভুর মন্দিরে আনা হত, মন্দিরের প্রবেশদ্বার পাহারা দেওয়ার কাজে নিযুক্ত যাজকেরা সেইসব অর্থ সিন্দুকে এনে রাখতেন। \v 10 যখনই তারা দেখতেন সিন্দুকে অনেক অর্থ জমে গিয়েছে, তখন রাজার সচিব ও মহাযাজক এসে সদাপ্রভুর মন্দিরে জমা পড়া অর্থ গুনে তা থলিতে ভরে রাখতেন। \v 11 মেরামতিতে কত খরচ হবে তা স্থির হয়ে যাওয়ার পর তারা সেই পরিমাণ অর্থ মন্দিরের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা লোকদের হাতে তুলে দিতেন। সেই অর্থ দিয়ে তারা সদাপ্রভুর মন্দিরে যারা কাজ করত, অর্থাৎ ছুতোর ও ঠিকাদার, \v 12 রাজমিস্ত্রি ও যারা পাথর কাটার কাজ করত, তাদের বেতন দিত। সদাপ্রভুর মন্দির মেরামতির জন্য তারা কাঠ ও মাপজোপ করে কাটা পাথরের চাঙড় কিনেছিল, এবং মন্দিরটি আগের দশায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সব খরচপত্র করল। \p \v 13 মন্দিরে যত অর্থ আনা হল, তা সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য রুপোর গামলা, পলতে ছাঁটবার যন্ত্র, জল ছিটানোর বাটি, শিঙা অথবা সোনা বা রুপোর অন্য কোনো কিছু তৈরির কাজে খরচ করা হয়নি; \v 14 সেই অর্থ সেইসব কাজের লোককে দেওয়া হল, যারা মন্দির মেরামতির কাজে তা ব্যবহার করল। \v 15 কাজের লোকদের দেওয়ার জন্য তারা যাদের সেই অর্থ দিলেন, তাদের কাছে তাদের অর্থের কোনও হিসেব নিতে হয়নি, কারণ তারা সম্পূর্ণ সততা নিয়ে কাজ করল। \v 16 দোষার্থক-নৈবেদ্য ও পাপার্থক বলি থেকে সংগৃহীত অর্থ সদাপ্রভুর মন্দিরে আনা হয়নি; তা যাজকদেরই হল। \p \v 17 মোটামুটি এসময় অরামের রাজা হসায়েল গিয়ে গাত আক্রমণ করে তা দখল করে নিয়েছিলেন। পরে তিনি জেরুশালেম আক্রমণ করার জন্যও মুখ ঘুরিয়েছিলেন। \v 18 কিন্তু যিহূদার রাজা যোয়াশ তাঁর পূর্বসূরীদের—যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয়ের—দ্বারা উৎসর্গীকৃত সব পবিত্র জিনিসপত্র এবং তিনি নিজে যেসব উপহারসামগ্রী উৎসর্গীকৃত করলেন, সেগুলি এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের কোষাগারে ও রাজপ্রাসাদে যত সোনাদানা ছিল, সব নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, এবং তিনি তখন জেরুশালেম থেকে সরে এলেন। \p \v 19 যোয়াশের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, আর তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 20 তাঁর কর্মকর্তারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল এবং সিল্লা যাওয়ার পথে বেথ-মিল্লোতে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে হত্যা করল। \v 21 যে কর্মকর্তারা তাঁকে হত্যা করল, তারা হল শিমিয়তের ছেলে যোষাখর ও শোমরের ছেলে যিহোষাবদ। তিনি মারা গেলেন ও দাউদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 13 \s1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহস \p \v 1 অহসিয়ের ছেলে যিহূদার রাজা যোয়াশের রাজত্বের তেইশতম বছরে যেহূর ছেলে যিহোয়াহস শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি সতেরো বছর রাজত্ব করলেন। \v 2 নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, সেইসব পাপ করে যিহোয়াহসও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন, এবং সেই পাপগুলি থেকে তিনি ফিরে আসেননি। \v 3 তাই সদাপ্রভুর ক্রোধ ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছিল, এবং দীর্ঘকাল তিনি তাদের অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর ছেলে বিন্‌হদদের ক্ষমতার অধীনে রেখে দিলেন। \p \v 4 তখন যিহোয়াহস সদাপ্রভুর অনুগ্রহ চেয়েছিলেন, এবং সদাপ্রভুও তাঁর কথা শুনেছিলেন, কারণ তিনি দেখতে পেয়েছিলেন অরামের রাজা কত নির্মমভাবে ইস্রায়েলের উপর অত্যাচার চালাচ্ছিলেন। \v 5 সদাপ্রভু ইস্রায়েলের জন্য একজন উদ্ধারকর্তা জোগাড় করে দিলেন, এবং ইস্রায়েলীরা অরামের ক্ষমতার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। অতএব ইস্রায়েলীরা আগের মতোই নিজের নিজের ঘরে বসবাস করল। \v 6 যারবিয়ামের কুল ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিল, তারা কিন্তু সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসেনি; তারা সেইসব পাপ করেই যাচ্ছিল। এছাড়াও, আশেরার সেই খুঁটিও\f + \fr 13:6 \fr*\ft অর্থাৎ, কাঠের তৈরি দেবী আশেরার এক প্রতীক-চিহ্ন\ft*\f* শমরিয়ায় দাঁড় করানো ছিল। \p \v 7 যিহোয়াহসের সৈন্যদলে শুধু পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী, দশটি রথ ও দশ হাজার পদাতিক সৈন্য ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট ছিল না, কারণ অরামের রাজা বাদবাকি সবকিছু ধ্বংস করে ফেলেছিলেন এবং সেগুলি সেই ধুলোর মতো করে দিলেন, যা ফসল মাড়াই করার সময় উড়তে থাকে। \p \v 8 যিহোয়াহসের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন ও তাঁর সব কীর্তি, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 9 যিহোয়াহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাঁকে শমরিয়ায় কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোয়াশ\f + \fr 13:9 \fr*\ft অথবা, যোয়াশ; \+xt 12-14|link-href="2KI 13:12-14"\+xt* ও \+xt 25|link-href="2KI 13:25"\+xt* পদও দেখুন\ft*\f* রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ \p \v 10 যিহূদার রাজা যোয়াশের রাজত্বের সাঁইত্রিশতম বছরে যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি ষোলো বছর রাজত্ব করলেন। \v 11 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তিনি তাই করলেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তিনি তার একটিও থেকে ফিরে আসেননি; তিনি সেই পাপগুলি করেই গেলেন। \p \v 12 যিহোয়াশের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন ও তাঁর সব কীর্তি, এছাড়াও যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে করা তাঁর যুদ্ধের বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 13 যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন, এবং যারবিয়াম সিংহাসনে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। ইস্রায়েলের রাজাদের সাথেই যিহোয়াশকে শমরিয়ায় কবর দেওয়া হল। \p \v 14 ইত্যবসরে ইলীশায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, এবং সেই অসুখেই তিনি মারা গেলেন। ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ তাঁকে দেখতে গেলেন ও তাঁকে দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন। “হে আমার বাবা! হে আমার বাবা!” তিনি চিৎকার করে উঠেছিলেন। “ইস্রায়েলের রথ ও অশ্বারোহীরা!” \p \v 15 ইলীশায় বললেন, “একটি ধনুক ও কয়েকটি তির নিয়ে আসুন,” আর তিনি তা এনেছিলেন। \v 16 “ধনুকটি হাতে তুলে নিন,” তিনি ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন। তিনি তা হাতে তুলে নেওয়ার পর, ইলীশায় নিজের হাত রাজার হাতের উপর রেখেছিলেন। \p \v 17 “পূর্বদিকের জানালাটি খুলুন,” তিনি বললেন ও রাজাও জানালাটি খুলেছিলেন। “তির ছুঁড়ুন!” ইলীশায় বললেন, ও তিনি তির ছুঁড়েছিলেন। “এ সদাপ্রভুর বিজয়-তির, অরামের উপর বিজয়লাভের তির!” ইলীশায় ঘোষণা করে দিলেন। “আপনি অফেকে অরামীয়দের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবেন।” \p \v 18 পরে তিনি বললেন, “তিরগুলি হাতে তুলে নিন,” আর ইস্রায়েলের রাজাও সেগুলি হাতে তুলে নিয়েছিলেন। ইলীশায় তাঁকে বললেন, “জমিতে আঘাত করুন।” তিনি তিনবার আঘাত করেই ক্ষান্ত হলেন। \v 19 ঈশ্বরের লোক তাঁর উপর রেগে বলে উঠেছিলেন, “জমিতে পাঁচ-ছয়বার আঘাত করতে হত; তবেই আপনি অরামকে পরাজিত করে পুরোপুরি তাদের ধ্বংস করতে পারতেন। কিন্তু এখন আপনি শুধু তিনবার অরামকে পরাজিত করতে পারবেন।” \p \v 20 ইলীশায় মারা গেলেন ও তাঁকে কবর দেওয়া হল। \p ইত্যবসরে প্রতি বছর বসন্তকালে মোয়াবীয় আক্রমণকারীরা দেশে ঢুকত। \v 21 একবার যখন কয়েকজন ইস্রায়েলী লোক একজনকে কবর দিচ্ছিল, হঠাৎ করে তারা একদল আক্রমণকারীকে দেখতে পেয়েছিল; তাই তারা সেই লোকটির মৃতদেহটি ইলীশায়ের কবরে ফেলে দিয়েছিল। সেই মৃতদেহে যখন ইলীশায়ের অস্থির ছোঁয়া লাগল, লোকটি প্রাণ ফিরে পেয়েছিল ও নিজের পায়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 22 যিহোয়াহসের রাজত্বকালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অরামের রাজা হসায়েল ইস্রায়েলের উপর অত্যাচার চালিয়ে গেলেন। \v 23 কিন্তু সদাপ্রভু অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সাথে যে পবিত্র নিয়ম স্থাপন করলেন, তার খাতিরে তাদের প্রতি অনুগ্রহকারী হলেন এবং তাদের করুণা দেখিয়েছিলেন ও তাদের যত্নও নিয়েছিলেন। আজও পর্যন্ত তিনি তাদের ধ্বংস করতে বা তাঁর উপস্থিতি থেকে তাদের নির্বাসিত করতে অনিচ্ছুক হয়েই আছেন। \p \v 24 অরামের রাজা হসায়েল মারা গেলেন, এবং তাঁর ছেলে বিন্‌হদদ রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \v 25 তখন যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ হসায়েলের ছেলে বিন্‌হদদের হাত থেকে সেই নগরগুলি আবার দখল করে নিয়েছিলেন, যেগুলি তিনি যুদ্ধের সময় তাঁর বাবা যিহোয়াহসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তিনবার যিহোয়াশ তাঁকে পরাজিত করলেন, এবং এইভাবে তিনি ইস্রায়েলী নগরগুলি পুনরুদ্ধার করলেন। \c 14 \s1 যিহূদার রাজা অমৎসিয় \p \v 1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের\f + \fr 14:1 \fr*\ft অথবা, যোয়াশ; 13, 23 ও 27 পদও দেখুন\ft*\f* রাজত্বকালের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 2 তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি উনত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম যিহোয়দ্দন; তিনি জেরুশালেমে বসবাস করতেন। \v 3 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ঠিক, অমৎসিয় তাই করতেন, কিন্তু তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতো করতেন না। সবকিছুতেই তিনি তাঁর বাবা যোয়াশের আদর্শ অনুসরণ করতেন। \v 4 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি অবশ্য সরানো হয়নি; লোকজন তখনও সেখানে বলি উৎসর্গ করত ও ধূপ জ্বালাতো। \p \v 5 রাজপাট তাঁর হাতে সুস্থির হওয়ার পর তিনি সেই কর্মকর্তাদের প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করে বধ করলেন, যারা তাঁর বাবা, অর্থাৎ রাজাকে হত্যা করেছিল। \v 6 তবুও মোশির বিধানপুস্তকে লেখা সেই কথানুসারে, যেখানে সদাপ্রভু আদেশ দিয়েছিলেন: “ছেলেমেয়েদের পাপের জন্য বাবা-মাকে কিংবা বাবা-মায়ের পাপের জন্য ছেলেমেয়েদের মেরে ফেলা যাবে না; প্রত্যেককেই তার নিজের পাপের জন্য মরতে হবে।”\f + \fr 14:6 \fr*\ft \+xt দ্বিতীয় বিবরণ 24:16\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* তিনি সেই গুপ্তঘাতকদের ছেলেমেয়েদের হত্যা করেননি। \p \v 7 তিনিই লবণ উপত্যকায় 10,000 ইদোমীয়কে যুদ্ধে পরাজিত করে সেলা দখল করে নিয়েছিলেন, এবং তার নাম রেখেছিলেন যক্তেল। আজও পর্যন্ত সেখানকার সেই নামই বজায় আছে। \p \v 8 পরে ইস্রায়েলের রাজা যেহূর নাতি, তথা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের কাছে দূত পাঠিয়ে অমৎসিয় বললেন: “আসুন, যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের মুখোমুখি হই।” \p \v 9 কিন্তু ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে উত্তর দিলেন: “লেবাননের শিয়ালকাঁটা লেবাননেরই এক দেবদারু গাছকে খবর দিয়ে পাঠিয়েছিল, ‘তুমি তোমার মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দাও।’ পরে লেবাননের বুনো এক জন্তু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ের তলায় পিষে দিয়েছিল। \v 10 ইদোমকে পরাজিত করে এখন সত্যিই আপনার অহংকার হয়েছে। বিজয় নিয়েই আপনি মেতে থাকুন, কিন্তু ঘরেই বসে থাকুন! কেন ঝামেলা ডেকে আনছেন এবং আপনার নিজের ও যিহূদারও পতন ত্বরান্বিত করছেন?” \p \v 11 অমৎসিয় অবশ্য কোনও কথা শুনতে চাননি, তাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ তাঁকে আক্রমণ করলেন। যিহূদার বেত-শেমশে তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় পরস্পরের মুখোমুখি হলেন। \v 12 ইস্রায়েলের হাতে যিহূদা পর্যুদস্ত হল, এবং প্রত্যেকে নিজের নিজের ঘরে পালিয়ে গেল। \v 13 বেত-শেমশে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ অহসিয়ের নাতি, তথা যোয়াশের ছেলে যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে বন্দি করলেন। পরে যিহোয়াশ জেরুশালেমে গিয়ে ইফ্রয়িম দুয়ার থেকে কোণের দুয়ার পর্যন্ত প্রায় 180 মিটার\f + \fr 14:13 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, 400 হাত\ft*\f* লম্বা প্রাচীর ভেঙে দিলেন। \v 14 সদাপ্রভুর মন্দিরে ও রাজপ্রাসাদের কোষাগারে যত সোনা, রুপো ও জিনিসপত্র ছিল, সব তিনি নিয়ে গেলেন। এছাড়াও তিনি কয়েকজনকে পণবন্দি করে শমরিয়ায় ফিরে গেলেন। \p \v 15 যিহোয়াশের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন ও তাঁর সব কীর্তি, এছাড়াও যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে করা যুদ্ধের বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 16 যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও শমরিয়ায় তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের সাথেই কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যারবিয়াম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 17 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের মৃত্যুর পর যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচেছিলেন। \v 18 অমৎসিয়ের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \p \v 19 জেরুশালেমে কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল, ও তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা লাখীশেও তাঁর পিছনে লোক পাঠিয়ে দিয়েছিল ও সেখানেই তাঁকে হত্যা করল। \v 20 তাঁর মৃতদেহ ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে ফিরিয়ে আনা হল এবং জেরুশালেমে দাউদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। \p \v 21 তখন যিহূদার প্রজারা সবাই ষোলো বছর বয়স্ক অসরিয়কে\f + \fr 14:21 \fr*\ft উষিয় নামেও তিনি পরিচিত\ft*\f* রাজারূপে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের স্থলাভিষিক্ত করল। \v 22 রাজা অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হওয়ার পর তিনিই এলৎ নগরটি নতুন করে গেঁথে আরেকবার যিহূদার অধীনে নিয়ে এলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা দ্বিতীয় যারবিয়াম \p \v 23 যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়ের রাজত্বকালের পনেরোতম বছরে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়াম শমরিয়ায় রাজা হলেন, এবং তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 24 তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করতেন, এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তার একটিও পাপ থেকে তিনি ফিরে আসেননি। \v 25 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু অমিত্তয়ের ছেলে, তথা তাঁর দাস গাৎ-হেফরীয় ভাববাদী যোনার মাধ্যমে যে কথা বললেন, সেই কথানুসারে যারবিয়াম লেবো-হমাৎ থেকে মরুসাগর\f + \fr 14:25 \fr*\ft অথবা, অরাবা সাগর\ft*\f* পর্যন্ত ইস্রায়েলের সীমা আরেকবার নিজের অধিকারে ফিরিয়ে এনেছিলেন। \p \v 26 সদাপ্রভু দেখেছিলেন, ক্রীতদাস হোক কি স্বাধীন, ইস্রায়েলে প্রত্যেকে কীভাবে ভয়ানক কষ্ট পাচ্ছিল;\f + \fr 14:26 \fr*\ft অথবা, ইস্রায়েল কষ্ট পাচ্ছিল। তাদের কোনও শাসনকর্তা বা নেতা ছিল না, এবং\ft*\f* তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না। \v 27 আর যেহেতু সদাপ্রভু বলেননি যে তিনি আকাশের তলা থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে দেবেন, তাই যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়ামের হাত দিয়েই তিনি তাদের রক্ষা করলেন। \p \v 28 যারবিয়ামের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন, এবং তাঁর সামরিক কীর্তি, এছাড়াও যিহূদার অধিকারে থাকা দামাস্কাস ও হমাৎ কীভাবে তিনি ইস্রায়েলের অধিকারভুক্ত করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 29 যারবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষ, ইস্রায়েলের রাজাদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে সখরিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 15 \s1 যিহূদার রাজা অসরিয় \p \v 1 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বকালের সাতাশতম বছরে যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের ছেলে অসরিয়\f + \fr 15:1 \fr*\ft উষিয় নামেও যিনি পরিচিত; 2, 6, 7, 8, 7, 23 ও 27 পদও দেখুন\ft*\f* রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 2 তিনি ষোলো বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে বাহান্ন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম যিখলিয়া; তিনি জেরুশালেমে বসবাস করতেন। \v 3 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ঠিক, তিনি তাই করতেন, ঠিক যেমনটি তাঁর বাবা অমৎসিয়ও করতেন। \v 4 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি অবশ্য সরানো হয়নি; লোকজন তখনও সেখানে বলি উৎসর্গ করত ও ধূপ জ্বালাতো। \p \v 5 আমৃত্যু সদাপ্রভু তাঁকে কুষ্ঠরোগাক্রান্ত\f + \fr 15:5 \fr*\ft চর্মরোগ সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও হিব্রু ভাষায় “কুষ্ঠরোগ” শব্দটি ব্যবহৃত হত\ft*\f* করে রেখেছিলেন, এবং তিনি আলাদা একটি বাড়িতে বসবাস করতেন।\f + \fr 15:5 \fr*\ft অথবা, এমন একটি বাড়িতে তিনি বসবাস করতেন যেখানে তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছিলেন\ft*\f* রাজপুত্র যোথম প্রাসাদ দেখাশোনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং তিনিই দেশের প্রজাদের শাসন করতেন। \p \v 6 অসরিয়র রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 7 অসরিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাদের কাছেই তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যোথম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা সখরিয় \p \v 8 যিহূদার রাজা অসরিয়র রাজত্বকালের আটত্রিশতম বছরে যারবিয়ামের ছেলে সখরিয় শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি ছয় মাস রাজত্ব করলেন। \v 9 তাঁর পূর্বসূরীদের মতো তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তিনি সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসেননি। \p \v 10 যাবেশের ছেলে শল্লুম সখরিয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। প্রজাদের সামনেই\f + \fr 15:10 \fr*\ft অথবা “ইব্লীয়মে”\ft*\f* শল্লুম তাঁকে আক্রমণ করে হত্যা করলেন, এবং রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \v 11 সখরিয়ের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনার বিবরণ ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা আছে। \v 12 এইভাবে যেহূকে বলা সদাপ্রভুর সেই কথা ফলে গেল: “চার পুরুষ ধরে তোমার বংশধররা ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে।”\f + \fr 15:12 \fr*\ft \+xt 2 রাজাবলি 10:30\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* \s1 ইস্রায়েলের রাজা শল্লুম \p \v 13 যিহূদার রাজা উষিয়র রাজত্বকালের ঊনচল্লিশ বছরে যাবেশের ছেলে শল্লুম রাজা হলেন, এবং তিনি শমরিয়ায় এক মাস রাজত্ব করলেন। \v 14 পরে গাদির ছেলে মনহেম তির্সা থেকে শমরিয়ায় উঠে গেলেন। শমরিয়ায় তিনি যাবেশের ছেলে শল্লুমকে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যা করলেন এবং রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 15 শল্লুমের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, ও যে ষড়যন্ত্রে তিনি নেতৃত্ব দিলেন, তার বিবরণ ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা আছে। \p \v 16 সেই সময় মনহেম তির্সা থেকে শুরু করে তিপসহ নগর ও সেখানকার সব বাসিন্দাকে তথা আশপাশের সব লোকজনকে আক্রমণ করলেন, কারণ তারা তাদের নগরের সিংহদুয়ারগুলি খুলে দিতে রাজি হয়নি। তিনি তিপসহ নগরটির উপর লুটপাট চালিয়েছিলেন এবং সব অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেট চিরে দিলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা মনহেম \p \v 17 যিহূদার রাজা অসরিয়র রাজত্বকালের ঊনচল্লিশ বছরে গাদির ছেলে মনহেম ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি দশ বছর শমরিয়ায় রাজত্ব করলেন। \v 18 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তিনি তাই করলেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সমগ্র রাজত্বকালে তিনি সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসেননি। \p \v 19 পরে আসিরিয়ার রাজা পূল\f + \fr 15:19 \fr*\ft “তিগ্লৎ-পিলেষর” নামেও তিনি পরিচিত\ft*\f* ইস্রায়েলে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছিলেন, এবং মনহেম তাঁর সাহায্য পাওয়ার ও রাজ্যে নিজের অধিকার শক্তপোক্ত করার জন্য তাঁকে 1,000 তালন্ত\f + \fr 15:19 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 38 টন বা 34 মেট্রিক টন\ft*\f* রুপো উপহার দিলেন। \v 20 মনহেম এই অর্থ ইস্রায়েল থেকে জোর করে আদায় করলেন। আসিরিয়ার রাজাকে দেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি অবস্থাপন্ন লোককে পঞ্চাশ শেকল\f + \fr 15:20 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 575 গ্রাম\ft*\f* করে রুপো দিতে বাধ্য করা হল। তাই আসিরিয়ার রাজা সেখান থেকে সরে গেলেন এবং দেশে আর থাকেননি। \p \v 21 মনহেমের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 22 মনহেম তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে পকহিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা পকহিয় \p \v 23 যিহূদার রাজা অসরিয়র রাজত্বকালের পঞ্চাশতম বছরে মনহেমের ছেলে পকহিয় শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। \v 24 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, পকহিয় তাই করলেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তিনি সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসেননি। \v 25 তাঁর প্রধান কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন, রমলিয়ের ছেলে পেকহ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। পঞ্চাশ জন গিলিয়দীয় লোককে সাথে নিয়ে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করে শমরিয়ায় রাজপ্রাসাদের দুর্গে অর্গোব ও অরিয়ি ও পকহিয়কে একসাথে হত্যা করলেন। অতএব পকহিয়কে হত্যা করে পেকহ রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 26 পকহিয়ের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা আছে। \s1 ইস্রায়েলের রাজা পেকহ \p \v 27 যিহূদার রাজা অসরিয়র রাজত্বকালের বাহান্নতম বছরে রমলিয়ের ছেলে পেকহ শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি কুড়ি বছর রাজত্ব করলেন। \v 28 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তিনি তাই করলেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যেসব পাপ করিয়েছিলেন, তিনি সেইসব পাপ থেকে ফিরে আসেননি। \p \v 29 ইস্রায়েলের রাজা পেকহের রাজত্বকালেই আসিরিয়ার রাজা তিগ্লৎ-পিলেষর এসে ইয়োন, আবেল বেথ-মাখা, যানোহ, কেদশ, ও হাৎসোর দখল করে নিয়েছিলেন। তিনি গিলিয়দ এবং গালীল, তথা নপ্তালির সব এলাকাও দখল করে নিয়েছিলেন, ও লোকজনকে বন্দি করে আসিরিয়ায় নিয়ে গেলেন। \v 30 পরে এলার ছেলে হোশেয় রমলিয়ের ছেলে পেকহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। তিনি পেকহকে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যা করলেন, এবং উষিয়র ছেলে যোথমের রাজত্বকালের কুড়িতম বছরে রাজারূপে পেকহের স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 31 পেকহের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \s1 যিহূদার রাজা যোথম \p \v 32 রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহের রাজত্বকালের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা উষিয়ের ছেলে যোথম রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 33 তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি ষোলো বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম যিরুশা। তিনি ছিলেন সাদোকের মেয়ে। \v 34 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ঠিক, যোথম তাই করলেন, ঠিক যেভাবে তাঁর বাবা উষিয়ও করেছিলেন। \v 35 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি অবশ্য সরানো হয়নি; লোকজন তখনও সেখানে বলি উৎসর্গ করত ও ধূপ পোড়াত। যোথম সদাপ্রভুর মন্দিরের উপর দিকের দরজাটি আবার তৈরি করে দিলেন। \p \v 36 যোথমের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 37 (সেই দিনগুলিতেই সদাপ্রভু অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে পেকহকে যিহূদার বিরুদ্ধে পাঠাতে শুরু করলেন।) \v 38 যোথম তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং দাউদ-নগরে তাঁকে তাঁদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে আহস রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 16 \s1 যিহূদার রাজা আহস \p \v 1 রমলিয়ের ছেলে পেকহের রাজত্বকালের সতেরোতম বছরে যিহূদার রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 2 আহস কুড়ি বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি ষোলো বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতো তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ভালো, তা করেননি। \v 3 তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন এবং এমনকি সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সামনে থেকে যেসব জাতিকে দূর করে দিলেন, তাদের ঘৃণ্য লোকাচারে লিপ্ত হয়ে তাঁর ছেলেকেও তিনি আগুনে উৎসর্গ করে দিলেন। \v 4 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলিতে, পাহাড়ের চূড়ায় ও ডালপালা বিস্তার করা প্রত্যেকটি গাছের তলায় তিনি বলি উৎসর্গ করলেন ও ধূপ জ্বালিয়েছিলেন। \p \v 5 পরে অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে আহসকে অবরুদ্ধ করলেন, কিন্তু তারা তাঁকে বশে আনতে পারেননি। \v 6 সেই সময় অরামের রাজা রৎসীন যিহূদার লোকজনকে তাড়িয়ে দিয়ে এলৎ নগরটি আরেকবার অরামের অধিকারে নিয়ে এলেন। ইদোমীয়রা পরে এলতে গিয়ে আজও পর্যন্ত সেখানেই বসবাস করে চলেছে। \p \v 7 আহস এই কথা বলার জন্য আসিরিয়ার রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের কাছে দূত পাঠালেন, “আমি আপনার দাস ও কেনা গোলাম। আপনি এখানে এসে, যারা আমাকে আক্রমণ করছে, সেই অরামের রাজা ও ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করুন।” \v 8 আহস সদাপ্রভুর মন্দিরে ও রাজপ্রাসাদের কোষাগারে যত রুপো ও সোনা ছিল, সব নিয়ে উপহার রূপে সেগুলি আসিরিয়ার রাজার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \v 9 আসিরিয়ার রাজা দামাস্কাস আক্রমণ ও দখল করে এই অনুরোধে সাড়া দিলেন। সেখানকার অধিবাসীদের তিনি বন্দি করে কীরে পাঠালেন এবং রৎসীনকে হত্যা করলেন। \p \v 10 পরে রাজা আহস আসিরিয়ার রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের সাথে দেখা করার জন্য দামাস্কাসে গেলেন। দামাস্কাসে তিনি একটি যজ্ঞবেদি দেখেছিলেন এবং যাজক ঊরিয়ের কাছে তিনি সেই যজ্ঞবেদির একটি নকশা এবং সেটি কীভাবে বানাতে হবে, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা পাঠিয়ে দিলেন। \v 11 তাই দামাস্কাস থেকে রাজা আহসের পাঠানো সব পরিকল্পনা অনুসারেই যাজক ঊরিয় একটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন এবং রাজা আহস ফিরে আসার আগেই সেটি সম্পূর্ণ করে ফেলেছিলেন। \v 12 রাজামশাই দামাস্কাস থেকে ফিরে এসে সেই যজ্ঞবেদিটি দেখে সেটির দিকে এগিয়ে গেলেন ও সেটির উপরে চড়ে বলি উৎসর্গ করলেন। \v 13 তিনি তাঁর হোমবলি ও দানা শস্যের বলি উৎসর্গ করলেন, পেয়-নৈবেদ্য ঢেলে দিলেন, এবং তাঁর মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের রক্ত বেদিতে ছিটিয়ে দিলেন। \v 14 সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদিটি তিনি মন্দিরের সামনে থেকে সরিয়ে এনে—নতুন বেদি ও সদাপ্রভুর মন্দিরের মাঝখান থেকে—সেটি নতুন বেদির উত্তর দিকে রেখে দিলেন। \p \v 15 রাজা আহস পরে যাজক ঊরিয়কে এই আদেশগুলি দিলেন: “এই নতুন বড়ো বেদিটির উপর সকালে হোমবলি ও সন্ধ্যায় দানা শস্যের বলি, রাজার হোমবলি ও তাঁর দানা শস্যের বলি, এবং দেশের সব প্রজার হোমবলি, ও তাদের দানা শস্যের বলি ও তাদের পেয়-নৈবেদ্য উৎসর্গ কোরো। সব হোমবলি ও পশুবলির রক্ত এই বেদিতে ছিটিয়ে দিয়ো। কিন্তু ব্রোঞ্জের বেদিটি আমি নির্দেশনা চাওয়ার জন্য ব্যবহার করব।” \v 16 রাজা আহসের আদেশানুসারেই যাজক ঊরিয় সবকিছু করলেন। \p \v 17 রাজা আহস ধারের খুপিগুলি কেটে বাদ দিলেন এবং সরানোর উপযোগী তাকগুলি থেকে গামলাগুলি সরিয়ে দিলেন। ব্রোঞ্জের তৈরি বলদমূর্তিগুলির উপর বসানো সমুদ্রপাত্রটি সেখান থেকে সরিয়ে তিনি পাথরের একটি বেদিতে বসিয়ে দিলেন। \v 18 আসিরিয়ার রাজার প্রতি সম্মান দেখিয়ে, মন্দিরে সাব্বাথবারে (বিশ্রামবারে) ব্যবহারযোগ্য যে শামিয়ানাটি\f + \fr 16:18 \fr*\ft অথবা, “তাঁর সিংহাসনের বেদিটি”\ft*\f* তৈরি করা হল, তিনি সেটি খুলে দিলেন এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের বাইরের দিকে রাজার যে প্রবেশদ্বারটি ছিল, সেটিও সরিয়ে দিলেন। \p \v 19 আহসের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 20 আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাদের সাথেই তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 17 \s1 ইস্রায়েলের শেষ রাজা হোশেয় \p \v 1 যিহূদার রাজা আহসের রাজত্বকালের দ্বাদশতম বছরে এলার ছেলে হোশেয় শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি নয় বছর রাজত্ব করলেন। \v 2 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তিনি তাই করলেন, তবে ইস্রায়েলে তাঁর পূর্বসূরি রাজাদের মতো তা করেননি। \p \v 3 আসিরিয়ার রাজা শল্‌মনেষর সেই হোশেয়কে আক্রমণ করতে এলেন, যিনি আগে শল্‌মনেষরের কেনা গোলাম ছিলেন এবং তাঁকে রাজকরও দিতেন। \v 4 কিন্তু আসিরিয়ার রাজা আবিষ্কার করলেন যে হোশেয় একজন বিশ্বাসঘাতক, কারণ তিনি মিশরের রাজা সো-র\f + \fr 17:4 \fr*\ft “সো” খুব সম্ভবত ওসোরকোনের এক সংক্ষিপ্ত রূপ\ft*\f* কাছে দূত পাঠালেন, এবং আগে যেমন বছরের পর বছর তিনি আসিরিয়ার রাজাকে রাজকর দিয়ে যেতেন, এখন তিনি আর তা দিচ্ছিলেন না। তাই শল্‌মনেষর তাঁকে অবরুদ্ধ করে জেলখানায় পুরে দিলেন। \v 5 আসিরিয়ার রাজা গোটা দেশে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছিলেন, শমরিয়ার দিকে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেলেন এবং তিন বছর নগরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। \v 6 হোশেয়ের রাজত্বকালের নবম বছরে আসিরিয়ার রাজা শমরিয়া দখল করে নিয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলীদের বন্দি করে আসিরিয়ায় পাঠিয়ে দিলেন। হলহে, হাবোর নদীতীরের গোষণে এবং মাদীয়দের বিভিন্ন নগরে তিনি তাদের উপনিবেশ গড়ে দিলেন। \s1 পাপের কারণে ইস্রায়েল নির্বাসিত হয় \p \v 7 যিনি ইস্রায়েলীদের মিশর থেকে, ও মিশরের রাজা ফরৌণের অধীনতা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন, তাদের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যেহেতু তারা পাপ করল, তাই এসব ঘটনা ঘটেছিল। তারা অন্যান্য দেবতাদের পুজো করল \v 8 এবং তাদের সামনে থেকে সদাপ্রভু যেসব জাতিকে দূর করে দিলেন, তারা তাদের লোকাচার তথা ইস্রায়েলের রাজাদের শুরু করা লোকাচার অনুসারে চলেছিল। \v 9 ইস্রায়েলীরা গোপনে তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে এমন সব কাজ করল, যা আদৌ ঠিক নয়। নজরমিনার থেকে শুরু করে সুরক্ষিত দুর্গ পর্যন্ত সর্বত্র তারা তাদের সব নগরে প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি তৈরি করল। \v 10 প্রত্যেকটি উঁচু উঁচু পাহাড়ের উপর ও ডালপালা ছড়ানো গাছের তলায় তারা পবিত্র পাথর ও আশেরার খুঁটি খাড়া করল। \v 11 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলিতে তারা সেইসব পরজাতি লোকজনের মতো ধূপ জ্বালাতো, যাদের সদাপ্রভু তাদের সামনে থেকে দূর করে দিলেন। তারা এমন সব মন্দ কাজ করল, যা সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিল। \v 12 তারা প্রতিমাপুজো করল, যদিও সদাপ্রভু বললেন, “তোমরা এরকম করবে না।”\f + \fr 17:12 \fr*\ft \+xt যাত্রা পুস্তক 20:4,5\+xt* পদ দেখুন\ft*\f* \v 13 সদাপ্রভু তাঁর সব ভাববাদী ও ভবিষ্যৎদ্রষ্টার মাধ্যমে ইস্রায়েল ও যিহূদাকে এই বলে সতর্ক করে দিলেন: “তোমরা তোমাদের কুপথ থেকে ফিরে এসো। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনীয় সম্পূর্ণ যে বিধান দিয়েছিলাম ও আমার দাস সেই ভাববাদীদের মাধ্যমে তোমাদের কাছে যা সঁপে দিয়েছিলাম, সেগুলির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমার সব আদেশ ও বিধিবিধান পালন করো।” \p \v 14 কিন্তু তারা তা শোনেওনি এবং তাদের সেই পূর্বপুরুষদের মতো তারাও একগুঁয়েমি করল, যারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে বিশ্বাস করতে ব্যর্থ হল। \v 15 তাঁর সেই বিধিবিধান ও পবিত্র নিয়ম তারা প্রত্যাখ্যান করল, যা তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিলেন এবং সেই ঐশ্বরিক বিধানও তারা অগ্রাহ্য করল, যা পালন করার জন্য তিনি তাদের সতর্ক করে দিলেন। তারা অযোগ্য সব প্রতিমার অনুগামী হল এবং নিজেরাও অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। তারা তাদের চারপাশে থাকা জাতিদের অনুকরণ করল, যদিও সদাপ্রভু তাদের আদেশ দিলেন, “তোমরা তাদের মতো কাজকর্ম কোরো না।” \p \v 16 তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সব আদেশ ত্যাগ করল এবং নিজেদের জন্য বাছুরের আকৃতিবিশিষ্ট দুটি প্রতিমার মূর্তি ও আশেরার একটি খুঁটি তৈরি করে নিয়েছিল। তারা আকাশের সব তারকাদলের কাছে মাথা নত করত, ও বায়ালদেবেরও পুজো করত। \v 17 তারা তাদের ছেলেমেয়েদের আগুনে উৎসর্গ করত। তারা দৈববিচার প্রয়োগ করত এবং মঙ্গল বা অমঙ্গলসূচক লক্ষণ খুঁজে বেড়াত ও সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলে তাঁর দৃষ্টিতে কুকাজ করার জন্য নিজেদের বিকিয়ে দিয়েছিল। \p \v 18 তাই সদাপ্রভু ইস্রায়েলের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাঁর উপস্থিতি থেকে তাদের দূর করে দিলেন। একমাত্র যিহূদা বংশ অবশিষ্ট ছিল, \v 19 এবং এমনকি যিহূদাও তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি। ইস্রায়েলের শুরু করা প্রথা তারাও অনুসরণ করল। \v 20 তাই সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সব লোকজনকে প্রত্যাখ্যান করলেন; তিনি তাদের কষ্ট দিলেন এবং তাঁর উপস্থিতি থেকে তাদের ধাক্কা মেরে দূর করে না দেওয়া পর্যন্ত তিনি তাদের লুঠেরাদের হাতে সঁপে দিলেন। \p \v 21 যখন তিনি ইস্রায়েলকে দাউদের কুল থেকে ছিঁড়ে আলাদা করলেন, তখন তারা নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে তাদের রাজা করল। যারবিয়াম সদাপ্রভুর পথ থেকে সরে যেতে ইস্রায়েলকে প্রলুব্ধ করল এবং তাদের দিয়ে মহাপাপ করিয়েছিল। \v 22 ইস্রায়েলীরা নাছোড়বান্দা মনোভাব নিয়ে যারবিয়ামের করা সব পাপে লিপ্ত হল এবং সেগুলি থেকে ততদিন ফিরে আসেনি \v 23 যতদিন না সদাপ্রভু তাঁর উপস্থিতি থেকে তাদের দূর করে দিলেন, যে বিষয়ে তিনি তাঁর সব দাস ভাববাদীদের মাধ্যমে তাদের আগেই সতর্ক করে দিলেন। অতএব ইস্রায়েলী প্রজারা তাদের স্বদেশ থেকে আসিরিয়ায় নির্বাসিত হল, এবং আজও পর্যন্ত তারা সেখানেই আছে। \s1 শমরিয়া পুনরায় বসতিপূর্ণ হয় \p \v 24 আসিরিয়ার রাজা ব্যাবিলন, কূথা, অব্বা, হমাৎ ও সফর্বয়িম থেকে লোকজন এনে ইস্রায়েলীদের পরিবর্তে শমরিয়ার বিভিন্ন নগরে তাদের বসিয়ে দিলেন। তারা শমরিয়া দখল করে সেখানকার নগরগুলিতে বসবাস করতে শুরু করল। \v 25 প্রথম প্রথম সেখানে থাকার সময় তারা সদাপ্রভুর আরাধনা করেননি; তাই তিনি তাদের মধ্যে কয়েকটি সিংহ পাঠিয়ে দিলেন এবং সিংহগুলি লোকদের মধ্যে কয়েকজনকে মেরে ফেলেছিল। \v 26 আসিরিয়ার রাজাকে সেই খবর দেওয়া হল: “যে লোকজনকে আপনি শমরিয়ায় পাঠিয়ে সেখানে তাদের পুনর্বাসন দিয়েছেন, তারা জানে না, সেই দেশের দেবতা ঠিক কী চান। তিনি তাদের মধ্যে কয়েকটি সিংহ পাঠিয়েছেন, যারা লোকজনকে মেরে ফেলছে, কারণ লোকেরা তো জানেই না, তিনি ঠিক কী চান।” \p \v 27 তখন আসিরিয়ার রাজা এই আদেশ দিলেন: “তোমরা শমরিয়া থেকে যেসব যাজককে বন্দি করে নিয়ে এসেছ, তাদের মধ্যে একজনকে সেখানে ফিরে যেতে দাও। সে সেখানে থেকে লোকজনকে শিক্ষা দেবে, সেই দেশের দেবতা ঠিক কী চান।” \v 28 অতএব শমরিয়া থেকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া যাজকদের মধ্যে একজন বেথেলে বসবাস করার জন্য ফিরে এলেন এবং তিনি তাদের শিক্ষা দিলেন, কীভাবে সদাপ্রভুর আরাধনা করতে হয়। \p \v 29 তা সত্ত্বেও, বিভিন্ন নগরে উপনিবেশ গড়ে বসবাস করতে থাকা প্রত্যেকটি জাতিভিত্তিক দল সেই নগরগুলিতে নিজের নিজের দেবতা গড়ে নিয়েছিল, এবং শমরিয়ার লোকেরা আগে উঁচু উঁচু স্থানে যেসব প্রতিমাপুজোর পীঠস্থান তৈরি করল, সেখানেই তাদের দেবতাদের প্রতিষ্ঠিত করল। \v 30 ব্যাবিলন থেকে আসা লোকেরা সুক্কোৎ-বনোৎ তৈরি করল, কূথা থেকে আসা লোকেরা নের্গল, এবং হমাৎ থেকে আসা লোকেরা অশীমা; \v 31 অব্বীয়রা নিভস ও তর্ত্তক তৈরি করল, এবং সফর্বীয়রা তাদের ছেলেমেয়েদের বলিরূপে সফর্বয়িমের দেবতা অদ্রম্মেলক ও অনম্মেলকের কাছে আগুনে পোড়াতো। \v 32 তারা সদাপ্রভুর আরাধনা করত, কিন্তু এছাড়াও তারা নিজেদের সব ধরনের লোকজনকে উঁচু উঁচু স্থানগুলিতে দেবতার পীঠস্থানে পূজারির কাজে নিযুক্ত করল। \v 33 তারা সদাপ্রভুর আরাধনা করত, কিন্তু একইসাথে যেসব দেশ থেকে তাদের আনা হল, সেইসব দেশের লোকাচার অনুসারে তারা নিজেদের দেবতাদেরও সেবা করত। \p \v 34 আজও পর্যন্ত তারা তাদের আগেকার প্রথাই পালন করে আসছে। তারা না তো ঠিকঠাক সদাপ্রভুর আরাধনা করে, না তারা সদাপ্রভুর সেইসব বিধি ও নিয়মকানুন, বিধান ও আদেশের প্রতি অনুরক্ত থাকে, যেগুলি তিনি সেই যাকোবের বংশধরদের দিয়েছিলেন, যাঁর নাম তিনি ইস্রায়েল রেখেছিলেন। \v 35 ইস্রায়েলীদের সাথে সদাপ্রভু পবিত্র এক নিয়ম স্থাপন করার সময় তাদের আদেশ দিলেন: “অন্য কোনও দেবতার আরাধনা করবে না অথবা তাদের কাছে মাথা নত করবে না, তাদের সেবা করবে না বা তাদের কাছে বলি উৎসর্গ করবে না। \v 36 কিন্তু সেই সদাপ্রভুরই আরাধনা তোমাদের করতে হবে, যিনি মহাশক্তি দেখিয়ে ও প্রসারিত হাত বাড়িয়ে দিয়ে তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন। তাঁরই কাছে তোমরা মাথা নত করবে ও তাঁরই কাছে বলি উৎসর্গ করবে। \v 37 তিনি তোমাদের জন্য যেসব বিধি ও নিয়ম, তথা বিধান ও আদেশ লিখে রেখে গিয়েছেন, সেগুলি পালন করার জন্য তোমাদের সবসময় সতর্ক হয়ে থাকতেই হবে। অন্যান্য দেবদেবীর আরাধনা কোরো না। \v 38 আমি তোমাদের সাথে যে পবিত্র নিয়ম স্থাপন করেছি, তা তোমরা ভুলো না, এবং অন্যান্য দেবদেবীর আরাধনা কোরো না। \v 39 বরং, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা কোরো; তিনিই তোমাদের সব শত্রুর হাত থেকে তোমাদের মুক্ত করবেন।” \p \v 40 তারা অবশ্য তাঁর কথা শোনেনি, কিন্তু তাদের পুরোনো প্রথাই পালন করে গেল। \v 41 এমনকি এইসব লোকজন সদাপ্রভুর আরাধনা করছিল, আবার তাদের প্রতিমাগুলিরও পুজো করছিল। আজও পর্যন্ত তাদের ছেলেমেয়ে ও নাতিপুতিরা তাদের পূর্বপুরুষদের মতোই এরকম করে চলেছে। \c 18 \s1 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় \p \v 1 এলার ছেলে ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের রাজত্বকালের তৃতীয় বছরে যিহূদার রাজা আহসের ছেলে হিষ্কিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন। \v 2 তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে উনত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম অবিয়।\f + \fr 18:2 \fr*\ft অথবা, “অবী”\ft*\f* তিনি সখরিয়ের মেয়ে ছিলেন। \v 3 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতোই সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ঠিক, তাই করতেন। \v 4 তিনি প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি সরিয়ে দিলেন, পবিত্র পাথরগুলি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন এবং আশেরার খুঁটিগুলিও কেটে নামিয়ে দিলেন। মোশির তৈরি করা সেই ব্রোঞ্জের সাপটিকেও তিনি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিলেন, কারণ সেই সময় পর্যন্ত ইস্রায়েলীরা সেটির কাছেই ধূপ জ্বালাতো। (সেটির নাম দেওয়া হল নহুষ্টন।\f + \fr 18:4 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় নহুষ্টন শব্দটি ব্রোঞ্জ ও সাপ, দুটির মতোই শোনাতো\ft*\f*) \p \v 5 হিষ্কিয় ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করলেন। যিহূদার রাজাদের মধ্যে কেউ তাঁর মতো হননি, না তাঁর আগে, না তাঁর পরে। \v 6 তিনি সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরেছিলেন এবং তাঁর পথে চলা বন্ধ করেননি; সদাপ্রভু মোশিকে যেসব আদেশ দিলেন, তিনি সেগুলি পালন করে গেলেন। \v 7 সদাপ্রভু তাঁর সাথে ছিলেন; তাঁর সব কাজে তিনি সফল হলেন। তিনি আসিরিয়ার রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন এবং তাঁর সেবা করেননি। \v 8 গাজা ও সেখানকার সব এলাকা জুড়ে নজরমিনার থেকে শুরু করে সুরক্ষিত নগর পর্যন্ত, সর্বত্র তিনি ফিলিস্তিনীদের পরাজিত করলেন। \p \v 9 রাজা হিষ্কিয়ের রাজত্বকালের চতুর্থ বছরে, অর্থাৎ এলার ছেলে ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের রাজত্বকালের সপ্তম বছরে আসিরিয়ার রাজা শল্‌মনেষর শমরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে নগরটি অবরুদ্ধ করলেন। \v 10 তিন বছর পর আসিরিয়ার সৈন্যসামন্তরা সেটি দখল করে নিয়েছিল। অতএব হিষ্কিয়ের রাজত্বকালের ষষ্ঠ বছরে, অর্থাৎ ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের রাজত্বকালের নবম বছরে শমরিয়া তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। \v 11 আসিরিয়ার রাজা ইস্রায়েলকে আসিরিয়ায় নির্বাসিত করলেন এবং হলহে, হাবোর নদীতীরের গোষণে ও মাদীয়দের বিভিন্ন নগরে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। \v 12 তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হয়ে থাকেনি বলেই এই ঘটনা ঘটেছিল, বরং তারা তাঁর সেইসব পবিত্র নিয়ম লঙ্ঘন করল, যেগুলি সদাপ্রভুর দাস মোশি তাদের পালন করার আদেশ দিলেন। তারা না সেইসব আদেশে কান দিয়েছিল, না সেগুলি পালন করল। \p \v 13 রাজা হিষ্কিয়ের রাজত্বকালের চর্তুদশ বছরে আসিরিয়ার রাজা সন্‌হেরীব যিহূদার সব সুরক্ষিত নগর আক্রমণ করে সেগুলি দখল করে নিয়েছিলেন। \v 14 তাই যিহূদার রাজা হিষ্কিয় লাখীশে আসিরিয়ার রাজাকে এই খবর দিয়ে পাঠালেন: “আমি অন্যায় করেছি। আপনি আমার কাছ থেকে ফিরে যান, আর আপনি যা দাবি করবেন, আমি আপনাকে তাই দেব।” আসিরিয়ার রাজা হিষ্কিয়ের কাছ থেকে জোর করে তিনশো তালন্ত\f + \fr 18:14 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 11 টন বা প্রায় 10 মেট্রিক টন\ft*\f* রুপো ও ত্রিশ তালন্ত\f + \fr 18:14 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1 টন বা প্রায় 1 মেট্রিক টন\ft*\f* সোনা আদায় করে নিয়েছিলেন। \v 15 অতএব সদাপ্রভুর মন্দিরে ও রাজপ্রাসাদের কোষাগারে যত রুপো ছিল, হিষ্কিয় সেসব তাঁর হাতে তুলে দিলেন। \p \v 16 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় সদাপ্রভুর মন্দিরের দরজা ও চৌকাঠগুলি যত সোনা দিয়ে মুড়ে রেখেছিলেন, সেইসব সোনা খুলে নিয়ে সেই সময় তিনি তা আসিরিয়ার রাজাকে দিলেন। \s1 সন্‌হেরীব জেরুশালেমকে হুমকি দেন \p \v 17 আসিরিয়ার রাজা লাখীশ থেকে তাঁর প্রধান সেনাপতি, মুখ্য কর্মকর্তা ও সমর-সেনাপতিকে এক বিশাল সৈন্যদল সমেত জেরুশালেমে হিষ্কিয়ের কাছে পাঠালেন। তারা জেরুশালেমে এসে ধোপার মাঠে যাওয়ার পথে পড়া, উপরের দিকের পুকুরপারের কৃত্রিম জলপ্রণালীর কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। \v 18 তারা রাজাকে ডেকে পাঠালেন; এবং রাজপ্রাসাদের পরিচালক হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম, সচিব শিব্‌ন ও আসফের পুত্র লিপিকার যোয়াহ বের হয়ে তাদের কাছে গেলেন। \p \v 19 সেই সৈন্যাধ্যক্ষ তাদের বললেন, “তোমরা গিয়ে হিষ্কিয়কে বলো, \pm “ ‘মহান রাজাধিরাজ, আসিরিয়ার রাজা এই কথা বলেন: তোমাদের এই আত্মনির্ভরতা কীসের উপরে প্রতিষ্ঠিত? \v 20 তোমরা বলছ যে তোমাদের কাছে যুদ্ধ করার বুদ্ধিপরামর্শ ও শক্তি আছে—কিন্তু তোমরা আসলে শুধু শূন্যগর্ভ কথাই বলছ। কার উপর তুমি নির্ভর করছ, যে আমার বিরুদ্ধেই তুমি বিদ্রোহ করে বসেছ? \v 21 এখন দেখো, আমি জানি তোমরা মিশরের উপরে নির্ভর করেছ। সে হল থ্যাঁৎলানো নলখাগড়ার মতো লাঠি, যা কোনো মানুষের হাতকে বিদ্ধ করে! তেমনি মিশরের রাজা ফরৌণ যারা তার উপরে নির্ভর করে। \v 22 আর যদি তোমরা আমাকে বলো, “আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপরে নির্ভর করি,” তাহলে তিনি কি সেই ঈশ্বর নন, যার উঁচু পীঠস্থানগুলি ও বেদিগুলি হিষ্কিয় অপসারণ করেছেন এবং যিহূদা ও জেরুশালেমকে এই কথা বলেছেন, “তোমরা অবশ্যই এই যজ্ঞবেদির সামনে উপাসনা করবে”? \pm \v 23 “ ‘এবারে এসো, আমার মনিব আসিরিয়ার রাজার সাথে একটি চুক্তি করো: আমি তোমাদের দুই হাজার অশ্ব দেব, যদি তোমরা তাদের জন্য প্রয়োজনীয় অশ্বারোহী দিতে পারো! \v 24 তা যদি না হয়, তাহলে কীভাবে তোমরা আমার মনিবের নগণ্যতম কর্মকর্তাদের মধ্যে মাত্র একজনকেও হঠিয়ে দিতে পারবে, যদিও তোমরা রথ ও অশ্বারোহীদের\f + \fr 18:24 \fr*\ft অথবা, “সারথিদের”\ft*\f* জন্য মিশরের উপর নির্ভর করছ? \v 25 এছাড়াও, আমি কি সদাপ্রভুর অনুমতি ছাড়াই এই দেশ আক্রমণ করে ধ্বংস করতে এসেছি? সদাপ্রভু স্বয়ং আমাকে বলেছেন, এই দেশের বিরুদ্ধে সমরাভিযান করে তা ধ্বংস করতে।’ ” \p \v 26 তখন হিল্কিয়ের ছেলে ইলিয়াকীম, এবং শিব্‌ন ও যোয়াহ সেই সৈন্যাধ্যক্ষকে বললেন, “দয়া করে আপনি আপনার দাসদের কাছে অরামীয় ভাষায় কথা বলুন, কারণ আমরা তা বুঝতে পারি। প্রাচীরের উপরে বসে থাকা লোকদের কর্ণগোচরে আমাদের সঙ্গে হিব্রু ভাষায় কথা বলবেন না।” \p \v 27 কিন্তু সেই সৈন্যাধ্যক্ষ উত্তর দিলেন, “আমার মনিব কি এই সমস্ত কথা কেবলমাত্র তোমাদের মনিব ও তোমাদের কাছে বলতে পাঠিয়েছেন, কিন্তু প্রাচীরের উপরে ওই বসে থাকা লোকদের কাছে নয়—যারা তোমাদেরই মতো নিজেদের মল ভোজন ও নিজেদেরই মূত্র পান করবে?” \p \v 28 তারপরে সেই সৈন্যাধ্যক্ষ দাঁড়িয়ে জোরে জোরে হিব্রু ভাষায় বলতে লাগলেন, “তোমরা মহান রাজাধিরাজ, আসিরীয় রাজার কথা শোনো! \v 29 সেই মহারাজ এই কথা বলেন: হিষ্কিয় তোমাদের সঙ্গে প্রতারণা না করুক। সে তোমাদের উদ্ধার করতে পারবে না! \v 30 হিষ্কিয় তোমাদের এই কথা বলে যেন বিশ্বাস না জন্মায় যে, ‘সদাপ্রভু অবশ্যই আমাদের উদ্ধার করবেন; এই নগর আসিরিয়ার রাজার হাতে সমর্পিত হবে না।’ \p \v 31 “তোমরা হিষ্কিয়ের কথা শুনবে না। আসিরীয় রাজা এই কথা বলেন: আমার সঙ্গে সন্ধিচুক্তি করে তোমরা আমার কাছে বেরিয়ে এসো। তাহলে তোমরা তখন প্রত্যেকে নিজের নিজের আঙুর ও ডুমুর গাছ থেকে ফল পেড়ে খাবে ও নিজের নিজের কুয়ো থেকে জলপান করবে। \v 32 পরে আমি এসে তোমাদের এমন একটি দেশে নিয়ে যাব, যেটি তোমাদের নিজেদের দেশের মতোই—খাদ্যশস্য ও নতুন দ্রাক্ষারসে ভরা এক দেশ, রুটি ও দ্রাক্ষাক্ষেতে ভরা এক দেশ, জলপাই গাছ ও মধু ভরা এক দেশ। মৃত্যু নয়, কিন্তু জীবন বেছে নাও! \p “হিষ্কিয়ের কথা শুনো না, কারণ এই কথা বলার সময় তিনি তোমাদের বিপথে পরিচালিত করছেন, ‘সদাপ্রভু আমাদের রক্ষা করবেন।’ \v 33 কোনও দেশের দেবতা কি আসিরিয়ার রাজার হাত থেকে তার দেশকে বাঁচাতে পেরেছে? \v 34 হমাৎ ও অর্পদের দেবতারা কোথায় গেল? সফর্বয়িমের, হেনার ও ইব্বার দেবতারা কোথায় গেল? তারা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে রক্ষা করতে পেরেছে? \v 35 এই সমস্ত দেশের কোন সব দেবতা তাদের দেশ আমার হাত থেকে রক্ষা করেছে? তাহলে সদাপ্রভু কীভাবে আমার হাত থেকে জেরুশালেমকে রক্ষা করবেন?” \p \v 36 লোকেরা কিন্তু নীরব রইল। প্রত্যুত্তরে তারা কিছুই বলল না, কারণ রাজা আদেশ দিয়েছিলেন, “ওর কথার কোনো উত্তর দিয়ো না।” \p \v 37 তখন হিল্কিয়ের পুত্র, রাজপ্রসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম, সচিব শিব্‌ন ও আসফের পুত্র লিপিকার যোয়াহ, নিজের নিজের কাপড় ছিঁড়ে হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন। সেই সৈন্যাধ্যক্ষ যেসব কথা বলেছিলেন, তারা সেসবই তাঁকে বললেন। \c 19 \s1 জেরুশালেমের মুক্তিসংক্রান্ত ভাববাণী \p \v 1 রাজা হিষ্কিয় একথা শুনে নিজের কাপড় ছিঁড়লেন। তিনি শোকের পোশাক পরে সদাপ্রভুর মন্দিরে গেলেন। \v 2 তিনি রাজপ্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম, সচিব শিব্‌ন ও গুরুত্বপূর্ণ যাজকদের, আমোষের পুত্র, ভাববাদী যিশাইয়ের কাছে প্রেরণ করলেন। তারা সবাই শোকের পোশাক পরেছিলেন। \v 3 তারা গিয়ে তাঁকে বললেন, “হিষ্কিয় একথাই বলেন: আজকের এই দিনটি হল মর্মান্তিক যন্ত্রণা, তিরস্কার ও কলঙ্কময় একদিন, ঠিক যেমন সন্তান প্রসবের সময় এসে গিয়েছে, অথচ যেন সন্তান প্রসবের শক্তিই নেই। \v 4 হয়তো সদাপ্রভু, আপনার ঈশ্বর সেই সৈন্যাধ্যক্ষের সব কথা শুনে থাকবেন, যাকে তার মনিব, আসিরীয় রাজা, জীবন্ত ঈশ্বরকে বিদ্রুপ করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন। সদাপ্রভু, আপনার ঈশ্বর, যে কথা শুনেছেন, তার জন্য তিনি হয়তো তাঁকে তিরস্কার করবেন। সেই কারণে, যারা এখনও বেঁচে আছে, আপনি অবশিষ্ট তাদের জন্য প্রার্থনা করুন।” \p \v 5 যখন রাজা হিষ্কিয়ের কর্মচারীরা যিশাইয়ের কাছে গেলেন, \v 6 যিশাইয় তাদের বললেন, “তোমরা গিয়ে তোমাদের মনিবকে বলো, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আসিরীয় রাজার অধীন ব্যক্তিরা আমার সম্পর্কে যেসব নিন্দার উক্তি করেছে, যেগুলি তোমরা শুনেছ, সে সম্পর্কে ভয় পেয়ো না। \v 7 তোমরা শোনো! আমি তার মধ্যে এমন এক মনোভাব দেব, যার ফলে সে যখন এক সংবাদ শুনবে, সে তার স্বদেশে ফিরে যাবে। সেখানে আমি তাকে তরোয়ালের দ্বারা বিনষ্ট করব।’ ” \p \v 8 সেই সৈন্যাধ্যক্ষ যখন শুনতে পেলেন যে, আসিরীয় রাজার লাখীশ ত্যাগ করে চলে গেছেন, তিনি ফিরে গেলেন এবং দেখলেন, রাজা লিব্‌নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। \p \v 9 পরে সন্‌হেরীব একটি সংবাদ শুনতে পেলেন যে, মিশরের কূশ দেশের\f + \fr 19:9 \fr*\ft অর্থাৎ, নীলনদের উপরের দিকে অবস্থিত এলাকা\ft*\f* রাজা তির্হক তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সমরাভিযান শুরু করেছেন। তাই, আবার তিনি এই কথা বলে হিষ্কিয়ের কাছে দূতদের পাঠালেন: \v 10 “যিহূদার রাজা হিষ্কিয়কে গিয়ে বলো: যে দেবতার উপর আপনি নির্ভর করে আছেন, তিনি যেন এই কথা বলে আপনাকে না ঠকান যে, ‘আসিরিয়ার রাজার হাতে জেরুশালেমকে সমর্পণ করা হবে না।’ \v 11 তোমরা নিশ্চয়ই শুনেছ, সব দেশের প্রতি আসিরীয় রাজা কী করেছেন। তিনি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছেন। আর তোমরা কি তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাবে? \v 12 ওইসব জাতির দেশগুলি, যাদের আমার পিতৃপুরুষেরা ধ্বংস করেছিলেন, কেউ কি তাদের উদ্ধার করতে পেরেছে—অর্থাৎ গোষণ, হারণ, রেৎসফ ও তেল-অৎসরে বসবাসকারী এদনের লোকেদের দেবতারা? \v 13 হমাতের রাজা বা অর্পদের রাজা কোথায় গেল? লায়ীর, সফর্বয়িম, হেনা ও ইব্বার রাজারাই বা কোথায় গেল?” \s1 হিষ্কিয়ের প্রার্থনা \p \v 14 সেই দূতদের কাছ থেকে পত্রখানি গ্রহণ করে হিষ্কিয় পাঠ করলেন। তারপর তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে গেলেন এবং সদাপ্রভুর সামনে তা মেলে ধরলেন। \v 15 আর হিষ্কিয় এই বলে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন: “দুই করূবের মাঝে বিরাজমান হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একমাত্র তুমিই পৃথিবীর সব রাজ্যের ঈশ্বর। তুমিই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছ। \v 16 হে সদাপ্রভু, তুমি কর্ণপাত করো ও শোনো; হে সদাপ্রভু, তুমি তোমার দৃষ্টি উন্মোচন করো ও দেখো; জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করে সন্‌হেরীব যেসব কথা বলেছে, তা তুমি শ্রবণ করো। \p \v 17 “একথা সত্যি, হে সদাপ্রভু, যে আসিরীয় রাজারা এই সমস্ত জাতি ও তাদের দেশগুলিকে বিনষ্ট করেছে। \v 18 তারা তাদের দেবতাদের আগুনে নিক্ষেপ করে তাদের ধ্বংস করেছে, কারণ তারা দেবতা নয়, কিন্তু ছিল কেবলমাত্র কাঠ ও পাথরের তৈরি, মানুষের হাতে তৈরি শিল্প। \v 19 এখন, হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তাঁর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো, যেন পৃথিবীর সব রাজ্য জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, একমাত্র তুমিই ঈশ্বর।” \s1 সন্‌হেরীবের পতনের বিষয়ে যিশাইয় ভাববাণী করলেন \p \v 20 পরে আমোষের ছেলে যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে এই খবর দিয়ে পাঠালেন: “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আসিরিয়ার রাজা সন্‌হেরীবের বিষয়ে তোমার করা প্রার্থনাটি আমি শুনেছি। \v 21 তার বিরুদ্ধে বলা সদাপ্রভুর বাণী হল এই: \q1 “কুমারী-কন্যা সিয়োন \q2 তোমাকে অবজ্ঞা ও উপহাস করে। \q1 জেরুশালেম-কন্যা \q2 তার মাথা নাড়ায় যখন তোমরা পলায়ন করো। \q1 \v 22 তুমি কাকে অপমান ও কার নিন্দা করেছ? \q2 তুমি কার বিরুদ্ধে তোমার কণ্ঠস্বর তুলেছ \q1 ও গর্বিত চক্ষু উপরে তুলেছ? \q2 তা করেছ ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতমের বিরুদ্ধেই। \q1 \v 23 তোমার দূতদের দ্বারা \q2 তুমি প্রভুর উপরে অপমানের বোঝা চাপিয়েছ। \q1 আবার তুমি বলেছ, \q2 ‘আমার বহুসংখ্যক রথের দ্বারা \q1 আমি পর্বতসমূহের শিখরে, \q2 লেবাননের সর্বোচ্চ চূড়াগুলির উপরে আরোহণ করেছি। \q1 আমি তার দীর্ঘতম সিডার গাছগুলিকে, \q2 তার উৎকৃষ্টতম দেবদারু গাছগুলিকে কেটে ফেলেছি। \q1 আমি তার প্রত্যন্ত এলাকায়, \q2 তার সুন্দর বনানীতে পৌঁছে গেছি। \q1 \v 24 আমি বিজাতীয় ভূমিতে কুয়ো খনন করেছি \q2 এবং সেখানকার জলপান করেছি। \q1 আমার পায়ের তলা দিয়ে \q2 আমি মিশরের সব স্রোতোধারা শুকিয়ে দিয়েছি।’ \b \q1 \v 25 “তুমি কি শুনতে পাওনি? \q2 বহুপূর্বে আমি তা স্থির করেছিলাম। \q1 পুরাকালে আমি তার পরিকল্পনা করেছিলাম; \q2 কিন্তু এখন আমি তা ঘটতে দিয়েছি, \q1 সেই কারণে তুমি সুরক্ষিত নগরগুলিকে \q2 পাথরের ঢিবিতে পরিণত করেছ। \q1 \v 26 সেইসব জাতির লোকেরা ক্ষমতাহীন হয়েছে, \q2 তারা হতাশ হয়ে লজ্জিত হয়েছে। \q1 তারা হল মাঠের গাছগুলির মতো, \q2 গজিয়ে ওঠা কোমল অঙ্কুরের মতো, \q1 যেমন ছাদের উপরে ঘাস গজিয়ে ওঠে, \q2 কিন্তু বেড়ে ওঠার আগেই তাপে শুকিয়ে যায়। \b \q1 \v 27 “কিন্তু আমি জানি তোমার অবস্থান কোথায়, \q2 কখন তুমি আস ও যাও, \q2 আর কীভাবে তুমি আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করো। \q1 \v 28 যেহেতু তুমি আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করো, \q2 আর যেহেতু তোমার অভব্য আচরণের কথা আমার কানে পৌঁছেছে, \q1 আমি তোমার নাকে আমার বড়শি ফোটাব, \q2 তোমার মুখে দেব আমার বলগা, \q1 আর যে পথ দিয়ে তুমি এসেছ, \q2 সেই পথেই তোমাকে ফিরিয়ে দেব। \p \v 29 “আর ওহে হিষ্কিয়, এই হবে তোমার পক্ষে চিহ্নস্বরূপ: \q1 “এই বছরে তোমরা আপনা-আপনি উৎপন্ন শস্য, \q2 আর দ্বিতীয় বছরে তা থেকে যা উৎপন্ন হবে, তোমরা তাই ভোজন করবে। \q1 কিন্তু তৃতীয় বছরে তোমরা বীজবপন ও শস্যচ্ছেদন করবে, \q2 দ্রাক্ষাকুঞ্জ রোপণ করে তার ফল খাবে। \q1 \v 30 আরও একবার যিহূদা রাজ্যের অবশিষ্ট লোকেরা \q2 পায়ের নিচে মূল খুঁজে পাবে ও তাদের উপরে ফল ধরবে। \q1 \v 31 কারণ জেরুশালেম থেকে আসবে এক অবশিষ্টাংশ, \q2 আর সিয়োন পর্বত থেকে আসবে বেঁচে থাকা লোকের একদল। \m সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর উদ্যোগই তা সুসম্পন্ন করবে। \b \p \v 32 “সেই কারণে, আসিরীয় রাজা সম্পর্কে সদাপ্রভু এই কথা বলেন: \q1 “সে এই নগরে প্রবেশ করবে না, \q2 কিংবা এখানে কোনো তির নিক্ষেপ করবে না। \q1 সে এই নগরের সামনে ঢাল নিয়ে আসবে না, \q2 কিংবা কোনো জাঙ্গাল নির্মাণ করবে না। \q1 \v 33 যে পথ দিয়ে সে আসবে, সে পথেই যাবে ফিরে; \q2 সে এই নগরে প্রবেশ করবে না,” \q4 সদাপ্রভু এই কথা বলেন। \q1 \v 34 “আমি আমার জন্য ও আমার দাস দাউদের জন্য \q2 এই নগর রক্ষা করে তা উদ্ধার করব!” \p \v 35 সেরাতেই সদাপ্রভুর দূত আসিরীয়দের সৈন্যশিবিরে গিয়ে এক লক্ষ পঁচাশি হাজার সৈন্য মেরে ফেলেছিলেন। পরদিন সকালে যখন লোকজন ঘুম থেকে উঠেছিল—দেখা গেল সর্বত্র শুধু মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়ে আছে! \v 36 তাই আসিরিয়ার রাজা সন্‌হেরীব সৈন্যশিবির ভেঙে দিয়ে সেখান থেকে সরে পড়েছিলেন। তিনি নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানেই থেকে গেলেন। \p \v 37 একদিন, যখন তিনি তাঁর দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পুজো করছিলেন, তাঁর দুই ছেলে অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তরোয়াল দিয়ে তাঁকে হত্যা করল, এবং আরারট দেশে পালিয়ে গেল। তাঁর ছেলে এসর-হদ্দোন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 20 \s1 হিষ্কিয়ের অসুস্থতা \p \v 1 সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তা মৃত্যুজনক হয়ে গেল। আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: তুমি বাড়ির সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক করে রাখো, কারণ তুমি মরতে চলেছ; তুমি আর সেরে উঠবে না।” \p \v 2 হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন, \v 3 “হে সদাপ্রভু, স্মরণ করো, আমি কীভাবে তোমার সামনে বিশ্বস্ততায় ও সম্পূর্ণ হৃদয়ে ভক্তি প্রকাশ করেছি। তোমার দৃষ্টিতে যা কিছু মঙ্গলজনক, আমি তাই করেছি।” এই বলে হিষ্কিয় অত্যন্ত রোদন করতে লাগলেন। \p \v 4 মাঝখানের প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাওয়ার আগেই সদাপ্রভুর বাণী যিশাইয়ের কাছে উপস্থিত হল: \v 5 “তুমি ফিরে গিয়ে আমার প্রজাদের শাসনকর্তা হিষ্কিয়কে এই কথা বলো, ‘সদাপ্রভু, তোমার পিতৃপুরুষ দাউদের ঈশ্বর এই কথা বলেন: আমি তোমার প্রার্থনা শ্রবণ করেছি ও তোমার অশ্রু দেখেছি; আমি তোমাকে সুস্থ করব। আজ থেকে তৃতীয় দিনের মাথায় তুমি সদাপ্রভুর মন্দিরে যাবে। \v 6 আমি তোমার জীবনের আয়ুর সঙ্গে আরও পনেরো বছর যোগ করব। এছাড়াও আমি তোমাকে ও এই নগরটিকে আসিরীয় রাজার হাত থেকে উদ্ধার করব। আমার স্বার্থে ও আমার দাস দাউদের স্বার্থেই আমি এই নগরকে রক্ষা করব।’ ” \p \v 7 পরে যিশাইয় বললেন, “ডুমুরফল ছেঁচে একটি প্রলেপ তৈরি করে নাও।” লোকেরা সেরকমই করল এবং সেই বিষফোড়ার উপর সেটি লাগিয়ে দিয়েছিল, ও তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। \p \v 8 হিষ্কিয় এর আগে যিশাইয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভু যে আমাকে সুস্থ করবেন ও আজ থেকে তৃতীয় দিনের মাথায় আমি যে সদাপ্রভুর মন্দিরে যাব, তার চিহ্ন কী হবে?” \p \v 9 যিশাইয় উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারেই যে সবকিছু করবেন, তোমার কাছে সদাপ্রভুর এই চিহ্নই হবে তার প্রমাণ: সূর্য-ঘড়িতে ছায়াটি কি দশ ধাপ এগিয়ে যাবে, না দশ ধাপ পিছিয়ে যাবে?” \p \v 10 “ছায়াটি দশ ধাপ এগিয়ে যাওয়া তো মামুলি এক ব্যাপার,” হিষ্কিয় বললেন। “বরং, সেটি দশ ধাপ পিছিয়েই যাক।” \p \v 11 তখন ভাববাদী যিশাইয় সদাপ্রভুকে ডেকেছিলেন, এবং সদাপ্রভু আহসের সূর্য-ঘড়ি\f + \fr 20:11 \fr*\ft অথবা, “সিঁড়ি”\ft*\f* দিয়ে নেমে যাওয়া সেই ছায়াটিকে দশ ধাপ পিছিয়ে দিলেন। \s1 ব্যাবিলন থেকে আগত প্রতিনিধিদল \p \v 12 সেই সময় বলদনের পুত্র, ব্যাবিলনের রাজা মরোদক-বলদন হিষ্কিয়ের কাছে পত্র ও উপহার পাঠালেন, কারণ তিনি হিষ্কিয়ের অসুস্থতার কথা শুনেছিলেন। \v 13 হিষ্কিয় আনন্দের সঙ্গে ওইসব প্রতিনিধিকে গ্রহণ করলেন। তিনি তাঁর ভাণ্ডারগৃহের সবকিছুই তাদের দেখালেন—রুপো, সোনা, সুগন্ধি মশলা ও বহুমূল্য তেল, তাঁর অস্ত্রশস্ত্র ও তাঁর ধনসম্পদের সমস্ত কিছু তাদের দেখালেন। তাঁর রাজপ্রাসাদে বা তাঁর সমস্ত রাজ্যের মধ্যে এমন কিছুই ছিল না, যা হিষ্কিয় তাদের দেখাননি। \p \v 14 তখন ভাববাদী যিশাইয় রাজা হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন ও তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ওই লোকেরা কী বলল এবং ওরা কোথা থেকে এসেছিল?” \p হিষ্কিয় উত্তর দিলেন, “বহু দূরের এক দেশ থেকে। ওরা ব্যাবিলন থেকে এসেছিল।” \p \v 15 ভাববাদী জিজ্ঞাসা করলেন, “ওরা আপনার প্রাসাদে কী কী দেখল?” \p হিষ্কিয় বললেন, “ওরা আমার প্রাসাদের সবকিছুই দেখেছে। আমার ঐশ্বর্যভাণ্ডারে এমন কিছুই নেই, যা আমি ওদের দেখাইনি।” \p \v 16 তখন যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “আপনি সদাপ্রভুর বাক্য শ্রবণ করুন: \v 17 সেই সময় অবশ্যই উপস্থিত হবে, যখন আপনার প্রাসাদে যা কিছু আছে এবং আপনার পিতৃপুরুষেরা এ পর্যন্ত যা কিছু সঞ্চয় করেছেন, সে সমস্তই ব্যাবিলনে বহন করে নিয়ে যাওয়া হবে। কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না, বলেন সদাপ্রভু। \v 18 আর আপনার কিছু সংখ্যক বংশধর, যারা আপনারই রক্তমাংস, যাদের আপনি জন্ম দেবেন, তাদেরও সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। তারা ব্যাবিলনের রাজপ্রাসাদে নপুংসক হয়ে সেবা করবে।” \p \v 19 হিষ্কিয় উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভুর যে বাক্য আপনি বললেন, তা ভালোই।” কারণ তিনি ভাবলেন, তাঁর নিজের জীবনকালে তো শান্তি আর নিরাপত্তা থাকবে! \p \v 20 হিষ্কিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তাঁর সব কীর্তি এবং তিনি কীভাবে পুকুর ও সুরঙ্গ খুঁড়ে নগরে জল এনেছিলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 21 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে মনঃশি রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 21 \s1 যিহূদার রাজা মনঃশি \p \v 1 মনঃশি বারো বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি পঞ্চান্ন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম হিফসীবা। \v 2 ইস্রায়েলীদের সামনে থেকে সদাপ্রভু যে জাতিদের দূর করে দিলেন, তাদের ঘৃণ্য প্রথা অনুসরণ করে তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন। \v 3 তাঁর বাবা হিষ্কিয় প্রতিমাপুজোর যেসব উঁচু উঁচু স্থান ভেঙে ফেলেছিলেন, তিনি আবার সেগুলি নতুন করে গড়ে দিলেন; এছাড়াও ইস্রায়েলের রাজা আহাবের মতো তিনিও বায়ালের কয়েকটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন ও আশেরার একটি খুঁটি দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি আকাশের সব তারকাদলের সামনে মাথা নত করতেন ও তাদের পুজোও করতেন। \v 4 সদাপ্রভুর সেই মন্দিরের মধ্যে তিনি কয়েকটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন, যে মন্দিরের বিষয়ে সদাপ্রভু বললেন, “জেরুশালেমে আমি আমার নাম প্রতিষ্ঠিত করব।” \v 5 সদাপ্রভুর মন্দিরের দুটি প্রাঙ্গণে তিনি আকাশের সব তারকাদলের জন্য কয়েকটি বেদি তৈরি করে দিলেন। \v 6 তিনি নিজের ছেলেকে আগুনে বলিরূপে উৎসর্গ করলেন। তিনি দৈববিচার প্রয়োগ করতেন, শুভ-অশুভ লক্ষণের খোঁজ করতেন, এবং প্রেতমাধ্যম ও অশরীরী আত্মার কাছে পরামর্শ নিতে যেতেন। সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে প্রচুর মন্দ কাজ করে তিনি তাঁর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন। \p \v 7 তিনি আশেরার যে বাঁকা খুঁটিটি তৈরি করলেন, সেটি তিনি সদাপ্রভুর সেই মন্দিরে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন, যেখানকার বিষয়ে সদাপ্রভু দাউদ ও তাঁর ছেলে শলোমনকে বলে দিলেন, “যে মন্দির ও জেরুশালেম নগরটি আমি ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে আলাদা করে বেছে রেখেছি, সেখানেই আমি চিরকালের জন্য আমার নাম প্রতিষ্ঠিত করে রাখব। \v 8 যে দেশটি আমি ইস্রায়েলীদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম, আমি আর কখনও তাদের সেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেব না, শুধু যদি তারা সেইসব কাজ করার জন্য একটু সতর্ক হয়, যেগুলি করার আদেশ আমি তাদের দিয়েছিলাম এবং আমার দাস মোশি তাদের যে বিধান দিয়েছিল, তা যদি তারা পুরোপুরি পালন করে।” \v 9 কিন্তু লোকেরা সেকথা শোনেনি। মনঃশি এমনভাবে তাদের বিপথে পরিচালিত করলেন, যে তারা সেইসব জাতির চেয়েও বেশি পরিমাণে কুকাজ করল, যাদের সদাপ্রভু তাদের সামনেই ধ্বংস করে দিলেন। \p \v 10 সদাপ্রভু তাঁর দাস ভাববাদীদের মাধ্যমে বললেন: \v 11 “যিহূদার রাজা মনঃশি এইসব ঘৃণ্য পাপ করেছে। তার আগে যারা ছিল, সেই ইমোরীয়দের চেয়েও সে বেশি পরিমাণে কুকাজ করেছে এবং তার প্রতিমার মূর্তিগুলি দিয়ে সে যিহূদাকে পাপপথে পরিচালিত করেছে। \v 12 তাই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি জেরুশালেমে ও যিহূদায় এমন বিপর্যয় আনতে চলেছি, তা যে কেউ শুনবে, তার কান ভোঁ ভোঁ করে উঠবে। \v 13 শমরিয়ার বিরুদ্ধে মাপার যে ফিতে ব্যবহার করা হল, এবং আহাব কুলের বিরুদ্ধে যে ওলন-দড়ি ব্যবহার করা হল, আমি জেরুশালেমের উপরেও সেগুলি ছড়িয়ে দেব। মানুষ যেভাবে থালা মুছে রাখে, আমি জেরুশালেমকেও সেভাবে মুছে রাখব, সেটি মুছে উল্টো করে রাখব। \v 14 আমার উত্তরাধিকারের অবশিষ্টাংশকে আমি ত্যাগ করব এবং শত্রুদের হাতে তাদের তুলে দেব। তাদের সব শত্রুর দ্বারা তারা লুন্ঠিত হবে; \v 15 তারা আমার দৃষ্টিতে কুকাজ করেছে এবং যেদিন তাদের পূর্বপুরুষেরা মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল, সেদিন থেকে শুরু করে আজও পর্যন্ত তারা আমার ক্রোধ জাগিয়েই চলেছে।” \p \v 16 এছাড়াও, মনঃশি এত নির্দোষ লোকের রক্তপাত করলেন যে তা দিয়ে তিনি জেরুশালেমের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পূর্ণ করে ফেলেছিলেন। এর পাশাপাশি, তিনি যিহূদাকে দিয়ে এমন সব পাপ করিয়েছিলেন যে তারা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করল। \p \v 17 মনঃশির রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, এছাড়াও যেসব পাপ তিনি করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 18 মনঃশি তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাঁর প্রাসাদের বাগানে, অর্থাৎ উষের বাগানেই কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে আমোন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা আমোন \p \v 19 আমোন বাইশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম মশুল্লেমৎ। তিনি হারুষের মেয়ে; তাঁর বাড়ি ছিল ষটবায়। \v 20 আমোন তাঁর বাবা মনঃশির মতোই সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন। \v 21 তিনি পুরোপুরি তাঁর বাবার পথেই চলেছিলেন, এবং তাঁর বাবা যেসব প্রতিমার পুজো করতেন, তিনিও তাদেরই পুজো করতেন, ও তাদের সামনে মাথা নত করতেন। \v 22 তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করলেন, এবং তাঁর প্রতি বাধ্য হয়েও চলেননি। \p \v 23 আমোনের কর্মকর্তারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর রাজপ্রাসাদেই রাজাকে হত্যা করল। \v 24 তখন দেশের প্রজারা সেইসব লোককে হত্যা করল, যারা রাজা আমোনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, এবং তারা তাঁর স্থানে তাঁর ছেলে যোশিয়কে রাজা করল। \p \v 25 আমোনের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 26 উষের বাগানে আমোনের কবরেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যোশিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 22 \s1 বিধানগ্রন্থটি আবিষ্কৃত হয় \p \v 1 যোশিয় আট বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি একত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম যিদীদা, এবং তিনি ছিলেন আদায়ার মেয়ে। তাঁর বাড়ি ছিল বস্কতে। \v 2 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ঠিক, যোশিয় তাই করলেন এবং তিনি পুরোপুরি তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের পথেই চলেছিলেন, ও সেখান থেকে ডাইনে বা বাঁয়ে, কোনোদিকেই সরে যাননি। \p \v 3 রাজা যোশিয়ের রাজত্বকালের অষ্টাদশ বছরে, তিনি মশুল্লমের নাতি, অর্থাৎ অৎসলিয়ের ছেলে তথা তাঁর সচিব শাফনকে সদাপ্রভুর মন্দিরে পাঠালেন। তিনি বললেন: \v 4 “মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে গিয়ে তাঁকে বলো, যেন তিনি সেইসব অর্থ হাতে নিয়ে তৈরি থাকেন, যা সদাপ্রভুর মন্দিরে আগে আনা হয়েছিল, এবং দারোয়ানরা যা লোকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল। \v 5 সেই অর্থ যেন সেইসব লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যাদের মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা যেন সদাপ্রভুর মন্দির মেরামতের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের— \v 6 ছুতোর, ঠিকাদার ও রাজমিস্ত্রিদের বেতন দেয়। তারা যেন মন্দির মেরামতির জন্য কাঠ ও কাটছাঁট করা পাথরও কেনে। \v 7 কিন্তু তাদের হাতে যে অর্থ তুলে দেওয়া হবে, তার কোনও হিসেব তাদের দিতে হবে না, কারণ অর্থ খরচ করার ক্ষেত্রে তারা যথেষ্টই সৎ।” \p \v 8 মহাযাজক হিল্কিয় সচিব শাফনকে বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরে আমি বিধানগ্রন্থটির খোঁজ পেয়েছি।” তিনি সেই গ্রন্থটি শাফনকে দিলেন, এবং শাফন সেটি পাঠ করলেন। \v 9 পরে সচিব শাফন রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে এই খবর দিলেন: “আপনার কর্মকর্তারা সদাপ্রভুর মন্দিরে রাখা অর্থ নিয়ে তা মন্দিরের শ্রমিক ও তত্ত্বাবধায়কদের হাতে তুলে দিয়েছে।” \v 10 পরে সচিব শাফন রাজাকে জানিয়েছিলেন, “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটি গ্রন্থ দিয়েছেন।” এই বলে শাফন রাজার সামনে গ্রন্থটি থেকে পাঠ করলেন। \p \v 11 রাজামশাই যখন বিধানগ্রন্থে লেখা কথাগুলি শুনেছিলেন, তখন তিনি তাঁর রাজবস্ত্র ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। \v 12 তিনি যাজক হিল্কিয়কে, শাফনের ছেলে অহীকামকে, মীখায়ের ছেলে অক্‌বোরকে, সচিব শাফনকে এবং রাজার পরিচারক অসায়কে এইসব আদেশ দিলেন: \v 13 “এই যে গ্রন্থটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, তাতে যা যা লেখা আছে, সেসবের বিষয়ে তোমরা আমার, আমার প্রজাদের ও যিহূদার সব লোকজনের জন্য সদাপ্রভুর কাছে গিয়ে খোঁজ নাও। যেহেতু আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই গ্রন্থে লেখা কথাগুলি পালন করেননি, তাই আমাদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ অতিমাত্রায় জ্বলে উঠেছে; আমাদের সম্বন্ধে সেখানে যা যা লেখা আছে, সেই অনুযায়ী তারা কাজ করেননি।” \p \v 14 যাজক হিল্কিয়, এবং অহীকাম, অক্‌বোর, শাফন ও অসায় মহিলা ভাববাদী সেই হুলদার সাথে কথা বলতে গেলেন, যিনি রাজপ্রাসাদের পোশাক বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণকারী শল্লুমের স্ত্রী ছিলেন। শল্লুম ছিলেন হর্হসের নাতি ও তিকবের ছেলে। হুলদা জেরুশালেমের নতুন পাড়ায় বসবাস করতেন। \p \v 15 তিনি তাদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমার কাছে যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, তাঁকে গিয়ে বলো, \v 16 ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: যিহূদার রাজা যে গ্রন্থটি পাঠ করেছে, সেটিতে যা যা লেখা আছে, সেই কথানুসারে আমি এই স্থানটির ও এখানকার লোকজনের উপর বিপর্যয় আনতে চলেছি। \v 17 যেহেতু তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্যান্য দেবতাদের কাছে ধূপ পুড়িয়েছে ও তাদের হাতে গড়া প্রতিমার সব মূর্তি দিয়ে\f + \fr 22:17 \fr*\ft অথবা, তারা যা যা করেছে, সেসব দিয়ে\ft*\f* আমার ক্রোধ জাগিয়েছে। আমার ক্রোধ এই স্থানটির বিরুদ্ধে জ্বলে উঠবে ও তা প্রশমিত হবে না।’ \v 18 সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নেওয়ার জন্য যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, যিহূদার সেই রাজাকে গিয়ে বলো, ‘তোমরা যা যা শুনলে, সেই বিষয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: \v 19 এই স্থানটির ও এখানকার লোকজনের বিরুদ্ধে আমি যা বললাম—অর্থাৎ তারা এক অভিশাপে\f + \fr 22:19 \fr*\ft অর্থাৎ, অভিশাপ দেওয়ার সময় তাদের নাম ব্যবহৃত হবে (\+xt যিরমিয় 29:22\+xt* পদ দেখুন); অথবা, তারা যে অভিশাপগ্রস্ত, তা অন্যান্য লোকেরা দেখতে পাবে\ft*\f* ও পতিত এলাকায় পরিণত হবে—তা শুনে যেহেতু তোমার অন্তর সংবেদনশীল হল ও তুমি সদাপ্রভুর সামনে নিজেকে নম্র করলে, এবং যেহেতু তোমার পোশাক ছিঁড়ে ফেলে আমার সামনে কেঁদেছিলে, তাই আমিও তোমার কথা শুনলাম, সদাপ্রভু একথাই ঘোষণা করেছেন। \v 20 অতএব আমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে তোমাকে নিয়ে যাব, এবং শান্তিতেই তুমি কবরে যাবে। এই স্থানে আমি যেসব বিপর্যয় আনতে চলেছি, স্বচক্ষে তোমাকে তা দেখতে হবে না।’ ” \p অতএব তারা তাঁর এই উত্তরটি নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন। \c 23 \s1 পবিত্র নিয়মটির নবীকরণ \p \v 1 তখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সব প্রাচীনকে রাজা এক স্থানে ডেকে পাঠালেন। \v 2 যিহূদার প্রজাদের, জেরুশালেমের অধিবাসীদের, যাজক ও ভাববাদীদের—ছোটো থেকে বড়ো, সব লোকজনকে সাথে নিয়ে তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে গেলেন। সদাপ্রভুর মন্দিরে যে নিয়ম-পুস্তকটি খুঁজে পাওয়া গেল, তার সব কথা তিনি লোকদের পড়ে শুনিয়েছিলেন। \v 3 রাজামশাই থামের পাশে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর সামনে সেই পবিত্র নিয়মটির নবীকরণ করলেন—তিনি সদাপ্রভুর পথে চলার ও মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে তাঁর আদেশ, বিধিনিয়ম ও হুকুম পালন করার শপথ নিয়েছিলেন। এইভাবে সেই গ্রন্থে লেখা পবিত্র নিয়মের কথাগুলি তিনি সুনিশ্চিত করলেন। পরে প্রজারাও সবাই সেই পবিত্র নিয়মের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার শপথ নিয়েছিল। \p \v 4 রাজামশাই মহাযাজক হিল্কিয়, পদাধিকারবলে তাঁর থেকে ছোটো যাজকদের এবং দারোয়ানদের বললেন, তারা যেন সদাপ্রভুর মন্দির থেকে বায়াল, আশেরা ও আকাশের সব তারকাদলের জন্য তৈরি জিনিসপত্র সরিয়ে দেন। জেরুশালেম নগরের বাইরে অবস্থিত কিদ্রোণ উপত্যকার মাঠে নিয়ে গিয়ে তিনি সেগুলি পুড়িয়ে দিলেন এবং সেই ছাইভস্ম বেথেলে নিয়ে এলেন। \v 5 যিহূদার রাজারা ইতিপূর্বে যিহূদার বিভিন্ন নগরে ও জেরুশালেমের আশেপাশে অবস্থিত উঁচু উঁচু স্থানে ধূপ পোড়ানোর জন্য প্রতিমাপুজোর সাথে যুক্ত যেসব যাজককে নিযুক্ত করলেন—অর্থাৎ, যারা বায়ালদেব, সূর্য ও চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডল এবং তারকাদলের উদ্দেশে ধূপ জ্বালাতো, তাদের তিনি বরখাস্ত করে দিলেন। \v 6 তিনি আশেরার খুঁটিটিকে সদাপ্রভুর মন্দির থেকে বের করে জেরুশালেমের বাইরে অবস্থিত কিদ্রোণ উপত্যকায় নিয়ে গিয়ে, সেখানে সেটি পুড়িয়ে দিলেন। সেটি পিষে ধুলোর মতো গুঁড়ো করে তিনি সাধারণ লোকদের কবরস্থানে ছড়িয়ে দিলেন। \v 7 এছাড়াও তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরের মধ্যে অবস্থিত দেবদাসদের সেই বাসাগুলি ভেঙে দিলেন, যে বাসাগুলিতে বসে মহিলারা আশেরার জন্য কাপড় বুনত। \p \v 8 যোশিয় যিহূদার সব নগর থেকে যাজকদের বের করে এনেছিলেন এবং গেবা থেকে শুরু করে বের-শেবা পর্যন্ত প্রতিমাপুজোর যত উঁচু উঁচু স্থানে যাজকেরা ধূপ জ্বালাতো, সেসব তিনি কলুষিত করে দিলেন। নগরের সিংহদুয়ারের বাঁদিকে অবস্থিত নগরের শাসনকর্তা যিহোশূয়ের দুয়ারের প্রবেশদ্বারে যে সদর দরজাটি ছিল, তিনি সেটিও ভেঙে দিলেন। \v 9 যদিও প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলির যাজকেরা জেরুশালেমে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদিতে সেবাকাজে অংশগ্রহণ করত না, তারা কিন্তু তাদের সহ-যাজকদের সাথে মিলেমিশে খামিরবিহীন রুটি খেয়ে যেত। \p \v 10 তিনি বিন-হিন্নোম উপত্যকায় অবস্থিত তোফৎকে কলুষিত করলেন, যেন কেউ আর সেখানে মোলক দেবতার আগুনে তাদের ছেলেমেয়েকে বলিরূপে উৎসর্গ করতে না পারে। \v 11 সদাপ্রভুর মন্দিরের প্রবেশদ্বার থেকে ঘোড়ার সেই মূর্তিগুলি তিনি দূর করে দিলেন, যেগুলি যিহূদার রাজারা সূর্যের উদ্দেশে প্রতিষ্ঠা করলেন। সেগুলি রাখা ছিল নথন-মেলক বলে একজন কর্মকর্তার ঘরের কাছে অবস্থিত প্রাঙ্গণে।\f + \fr 23:11 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই শব্দটির অর্থ খুব একটি স্পষ্ট নয়\ft*\f* যোশিয় পরে সূর্যের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত রথগুলিও পুড়িয়ে দিলেন। \p \v 12 আহসের রাজপ্রাসাদের ছাদে অবস্থিত ঘরের কাছে যিহূদার রাজারা যে যজ্ঞবেদিগুলি তৈরি করেছিলেন, এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের দুটি প্রাঙ্গণে মনঃশি যে যজ্ঞবেদিগুলি তৈরি করেছিলেন, তিনি সেগুলিও ভেঙে নামিয়েছিলেন। তিনি সেখান থেকে সেগুলি দূর করে দিলেন, সেগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিলেন এবং সেই ভাঙাচোরা ইটপাথর কিদ্রোণ উপত্যকায় ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। \v 13 রাজামশাই জেরুশালেমের পূর্বদিকে পচন-পাহাড়ের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত প্রতিমাপুজোর সেই উঁচু উঁচু স্থানগুলিও কলুষিত করলেন—যেগুলি ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সীদোনীয়দের কদর্য দেবী অষ্টারোতের, মোয়াবের কদর্য দেবতা কমোশের, এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য দেবতা মোলকের জন্য তৈরি করলেন। \v 14 যোশিয় পবিত্র পাথরগুলি ভেঙে গুঁড়ো করে দিলেন ও আশেরার খুঁটিগুলি কেটে নামিয়েছিলেন এবং সেই স্থানটি মানুষের অস্থি দিয়ে ঢেকে দিলেন। \p \v 15 এমনকি বেথেলের যজ্ঞবেদিটি, এবং যিনি ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন, সেই নবাটের ছেলে যারবিয়াম প্রতিমাপুজোর যেসব উঁচু উঁচু স্থান তৈরি করলেন, সেগুলিও তিনি ভূমিসাৎ করে দিলেন। প্রতিমাপুজোর উঁচু স্থানটি পুড়িয়ে দিয়ে তিনি সেটি পিষে গুঁড়ো করে দিলেন, এবং আশেরার খুঁটিটিও তিনি পুড়িয়ে দিলেন। \v 16 পরে যোশিয় চারপাশে তাকিয়েছিলেন, আর যখন তিনি পাহাড়ের পাশে কয়েকটি কবর দেখতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি সেগুলি থেকে অস্থি বের করে এনে যজ্ঞবেদিটি কলুষিত করার জন্য সেটির উপরে সেগুলি পুড়িয়েছিলেন। এসবই হল সদাপ্রভুর ঘোষণা করে দেওয়া সেই কথানুসারে, যে বিষয়ে ঈশ্বরের লোক আগেই ভাববাণী করে দিলেন। \p \v 17 রাজামশাই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমি যে সমাধিস্তম্ভটি দেখতে পাচ্ছি, সেটি কার?” \p সেই নগরের লোকেরা বলল, “এটি ঈশ্বরের সেই লোকের সমাধির চিহ্নিত স্তম্ভ, যিনি যিহূদা থেকে এসে বেথেলের যজ্ঞবেদির বিরুদ্ধে একটি বাণী ঘোষণা করলেন, এবং আপনি সেটির প্রতি ঠিক তাই করেছেন।” \p \v 18 “এটি ছেড়ে দাও,” তিনি বললেন। “কেউ যেন তাঁর অস্থি নষ্ট না করে।” তাই তারা তাঁর ও শমরিয়া থেকে আসা ভাববাদীর অস্থি নষ্ট না করে ছেড়ে দিয়েছিল। \p \v 19 যোশিয় বেথেলে যেমনটি করলেন, ঠিক সেভাবেই শমরিয়ার নগরগুলির উঁচু উঁচু স্থানগুলিতে ইস্রায়েলের রাজারা দেবতার যে পীঠস্থানগুলি তৈরি করে সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন, সেগুলিও তিনি দূর করে দিলেন। \v 20 বেদিগুলির উপরেই যোশিয় প্রতিমাপুজোর সেইসব উঁচু উঁচু স্থানের যাজকদের হত্যা করলেন এবং সেগুলির উপর মানুষের অস্থি পুড়িয়েছিলেন। পরে তিনি জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। \p \v 21 রাজামশাই সব লোকজনকে এই আদেশ দিলেন: “পবিত্র নিয়ম সম্বলিত এই গ্রন্থে যেমন লেখা আছে, সেভাবেই তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিস্তারপর্ব পালন করো।” \v 22 যেসব বিচারকর্তা ইস্রায়েলকে পরিচালনা দিলেন, না তাদের আমলে, আর না ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের আমলে এ ধরনের নিস্তারপর্ব পালন করা হত। \v 23 কিন্তু রাজা যোশিয়ের রাজত্বকালের অষ্টাদশ বছরে জেরুশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এই নিস্তারপর্ব পালন করা হল। \p \v 24 এছাড়াও, যারা প্রেতমাধ্যম ও যারা অশরীরী আত্মাদের আবাহন করে, তাদের, ও ঘরোয়া দেবতাদের, প্রতিমাগুলিকে এবং যিহূদা ও জেরুশালেমে যত ঘৃণ্য জিনিসপত্র দেখা যেত, সেসব যোশিয় দূর করে দিলেন। যাজক হিল্কিয় সদাপ্রভুর মন্দিরে যে গ্রন্থটি খুঁজে পেয়েছিলেন, সেটিতে লেখা বিধানের চাহিদা পূরণ করার জন্যই তিনি এ কাজ করলেন \v 25 যোশিয়ের আগে বা পরে এমন কোনও রাজা দেখা যায়নি, যিনি তাঁর মতো মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে, ও সর্বশক্তি দিয়ে মোশির বিধান অনুসারে সদাপ্রভুর দিকে ফিরতে পেরেছিলেন। \p \v 26 তা সত্ত্বেও, মনঃশি যেহেতু সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তোলার জন্য প্রচুর মন্দ কাজ করলেন, তাই সদাপ্রভু তাঁর সেই প্রচণ্ড ক্রোধের উত্তাপ থেকে ফিরে আসেননি, যা যিহূদার বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছিল। \v 27 তাই সদাপ্রভু বললেন, “যেভাবে আমি ইস্রায়েলকে আমার সামনে থেকে দূর করে দিয়েছি, সেভাবে আমি যিহূদাকেও দূর করে দেব, এবং যে নগরটিকে আমি বেছে নিয়েছিলাম, সেই জেরুশালেমকে, এবং যেটির বিষয়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমার নাম সেখানে বজায় থাকবে,’\f + \fr 23:27 \fr*\ft \+xt 1 রাজাবলি 8:29\+xt*\ft*\f* সেই মন্দিরটিকেও আমি প্রত্যাখ্যান করব।” \p \v 28 যোশিয়ের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \p \v 29 যোশিয় যখন রাজত্ব করছিলেন, তখন মিশরের রাজা ফরৌণ নখো আসিরিয়ার রাজাকে সাহায্য করার জন্য ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত চলে গেলেন। রাজা যোশিয় তাঁর সাথে যুদ্ধ করার জন্য কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেলেন, কিন্তু নখো যোশিয়ের সম্মুখীন হয়ে মগিদ্দোতে তাঁকে মেরে ফেলেছিলেন। \v 30 যোশিয়ের দাসেরা তাঁর দেহটি রথে করে মগিদ্দো থেকে জেরুশালেমে নিয়ে এসেছিল এবং তাঁকে তাঁরই কবরে কবর দিয়েছিল। দেশের প্রজারা যোশিয়ের ছেলে যিহোয়াহসকে অভিষিক্ত করল এবং তাঁকে তাঁর বাবার পদে রাজা করল। \s1 যিহূদার রাজা যিহোয়াহস \p \v 31 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি তিন মাস রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম হমূটল। তিনি ছিলেন যিরমিয়ের মেয়ে, ও তাঁর বাড়ি ছিল লিব্‌নায়। \v 32 তিনি তাঁর পূর্বসূরীদের মতোই সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন। \v 33 ফরৌণ নখো তাঁকে শিকলে বেঁধে হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন, যেন তিনি আর জেরুশালেমে রাজত্ব করতে না পারেন। একইসাথে যিহূদার উপর তিনি জোর করে একশো তালন্ত\f + \fr 23:33 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় পৌনে 4 টন বা, প্রায় 3.4 মেট্রিক টন\ft*\f* রুপো ও এক তালন্ত\f + \fr 23:33 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* সোনা খাজনা ধার্য করলেন। \v 34 ফরৌণ নখো যোশিয়ের ছেলে ইলিয়াকীমকে তাঁর বাবা যোশিয়ের পদে রাজা করলেন এবং ইলিয়াকীমের নাম পরিবর্তন করে যিহোয়াকীম রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি যিহোয়াহসকে মিশরে তুলে নিয়ে গেলেন, এবং সেখানেই যিহোয়াহসের মৃত্যু হল। \v 35 ফরৌণ নখোর দাবি মতোই যিহোয়াকীম তাঁকে সোনা ও রুপো দিলেন। এরকম করতে গিয়ে, তিনি দেশেই রাজকর ধার্য করে বসেছিলেন এবং দেশের প্রজাদের সামর্থ্য অনুসারে তিনি তাদের কাছ থেকে সোনারুপো আদায় করলেন। \s1 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীম \p \v 36 যিহোয়াকীম পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি এগারো বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম সবীদা। তিনি ছিলেন পদায়ের মেয়ে, ও তাঁর বাড়ি ছিল রূমায়। \v 37 আর তিনি তাঁর পূর্বসূরীদের মতোই সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন। \c 24 \p \v 1 যিহোয়াকীমের রাজত্বকালে ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার দেশে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছিলেন, এবং যিহোয়াকীম তিন বছর তাঁর কেনা গোলাম হয়ে থেকেছিলেন। কিন্তু তিন বছর পর তিনি নেবুখাদনেজারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিলেন। \v 2 সদাপ্রভু, তাঁর দাস ভাববাদীদের মাধ্যমে যে কথা ঘোষণা করে দিলেন, সেই কথানুসারে সদাপ্রভু যিহূদা দেশটি ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাবিলনীয়,\f + \fr 24:2 \fr*\ft অথবা, \ft*\fqa কলদীয়\fqa*\f* অরামীয়, মোয়াবীয় ও অম্মোনীয় আক্রমণকারীদের পাঠিয়ে দিলেন। \v 3 সদাপ্রভুর আদেশানুসারেই নিঃসন্দেহে যিহূদার প্রতি এসব কিছু হল, যেন মনঃশির করা সব পাপের কারণে ও তিনি যা যা করলেন, সেসবের কারণে তাদের সদাপ্রভুর উপস্থিতি থেকে দূর করে দেওয়া যায়, \v 4 এছাড়াও মনঃশির দ্বারা নির্দোষ মানুষের রক্তপাত হওয়ার কারণেও এমনটি হল। কারণ তিনি নির্দোষ মানুষের রক্তে জেরুশালেম পরিপূর্ণ করে দিলেন, এবং সদাপ্রভুও ক্ষমা করতে চাননি। \p \v 5 যিহোয়াকীমের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 6 যিহোয়াকীম তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে যিহোয়াখীন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 7 মিশরের রাজা আর তাঁর নিজের দেশ থেকে কুচকাওয়াজ করে বাইরে যাননি, কারণ ব্যাবিলনের রাজা মিশরের নির্ঝরিণী থেকে শুরু করে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত ফরৌণের শাসনাধীন সব এলাকা দখল করে নিয়েছিলেন। \s1 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন \p \v 8 যিহোয়াখীন আঠারো বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি তিন মাস রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম নহুষ্টা। তিনি ছিলেন ইলনাথনের মেয়ে, ও তাঁর বাড়ি ছিল জেরুশালেমে। \v 9 যিহোয়াখীন তাঁর বাবার মতো সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা মন্দ, তাই করলেন। \p \v 10 সেই সময় ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারের কর্মকর্তারা জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে গিয়ে নগরটি অবরুদ্ধ করল, \v 11 এবং ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারের কর্মকর্তারা যখন নগরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছিল, তখন তিনি স্বয়ং সেখানে উপস্থিত হলেন। \v 12 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন, তাঁর মা, তাঁর পরিচারকেরা, তাঁর দরবারের অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা ও তাঁর কর্মকর্তারা সবাই নেবুখাদনেজারের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। \p ব্যাবিলনের রাজার রাজত্বকালের অষ্টম বছরে তিনি যিহোয়াখীনকে বন্দি করলেন। \v 13 সদাপ্রভুর ঘোষিত কথানুসারে নেবুখাদনেজার সদাপ্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সঞ্চিত ধনরত্ন তুলে নিয়ে গেলেন, এবং ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য সোনার যেসব জিনিসপত্র তৈরি করলেন, সেগুলিও কেটে টুকরো টুকরো করে দিলেন। \v 14 তিনি জেরুশালেমের সব লোকজনকে বন্দি করে নিয়ে গেলেন: সব কর্মকর্তা ও যোদ্ধা, এবং নিপুণ শিল্পী ও কারিগরকে—মোট দশ হাজার লোককে নিয়ে গেলেন। দেশের সবচেয়ে গরিব লোকদেরই শুধু সেখানে ছেড়ে যাওয়া হল। \p \v 15 নেবুখাদনেজার যিহোয়াখীনকে বন্দি করে ব্যাবিলনে নিয়ে গেলেন। এছাড়াও তিনি জেরুশালেম থেকে রাজার মাকে, তাঁর স্ত্রীদের, তাঁর কর্মকর্তাদের ও দেশের গণ্যমান্য লোকদেরও ব্যাবিলনে নিয়ে গেলেন। \v 16 এর পাশাপাশি, ব্যাবিলনের রাজা যুদ্ধের জন্য শক্ত-সমর্থ সাত হাজার যোদ্ধা সম্বলিত সমগ্র সৈন্যদলকে, এবং এক হাজার নিপুণ শিল্পী ও কারিগরকেও ব্যাবিলনে নির্বাসিত করলেন। \v 17 ব্যাবিলনের রাজা যিহোয়াখীনের কাকা মত্তনিয়কে তাঁর স্থানে রাজা করলেন এবং তাঁর নাম পরিবর্তন করে তাঁকে সিদিকিয় নামে আখ্যাত করলেন। \s1 যিহূদার রাজা সিদিকিয় \p \v 18 সিদিকিয় একুশ বছর বয়সে রাজা হন। তিনি এগারো বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন। তাঁর মা ছিলেন লিব্‌না নিবাসী যিরমিয়ের কন্যা হমূটল। \v 19 তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে কেবলই মন্দ কাজ করতেন, যেমন যিহোয়াকীমও করেছিলেন। \v 20 সদাপ্রভুর ক্রোধের কারণেই জেরুশালেম ও যিহূদার প্রতি এসব কিছু ঘটেছিল, এবং শেষ পর্যন্ত তিনি তাদের তাঁর উপস্থিতি থেকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিলেন। \s1 জেরুশালেমের পতন \p ইত্যবসরে সিদিকিয় ব্যাবিলনের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিলেন। \c 25 \p \v 1 তাই, সিদিকিয়ের রাজত্বের নবম বছরে, ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার, তাঁর সমস্ত সৈন্য নিয়ে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলেন। তিনি নগরের বাইরে শিবির স্থাপন করে তার চারপাশে অবরোধ গড়ে তুললেন। \v 2 রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের এগারোতম বছর পর্যন্ত নগর অবরুদ্ধ রইল। \p \v 3 চতুর্থ\f + \fr 25:3 \fr*\ft মূল হিব্রু পাঠ্যাংশের এক সম্ভাব্য পাঠ (\+xt যিরমিয় 52:6\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* মাসের নবম দিনে নগরের দুর্ভিক্ষ এত চরম আকার নিয়েছিল, যে সেখানকার লোকজনের কাছে কোনও খাবারদাবার ছিল না। \v 4 পরে নগরের প্রাচীর ভেঙে ফেলা হল, এবং রাতের বেলায় গোটা সৈন্যদল রাজার বাগানের কাছে থাকা দুটি প্রাচীরের মাঝখানে অবস্থিত দরজা দিয়ে পালিয়ে গেল, যদিও ব্যাবিলনের সৈন্যসামন্ত\f + \fr 25:4 \fr*\ft অথবা, কলদীয়েরা; 13, 25 ও 26 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* কিন্তু নগরটি ঘিরে রেখেছিল। তারা অরাবার\f + \fr 25:4 \fr*\ft অথবা, জর্ডন-উপত্যকা\ft*\f* দিকে পালিয়ে গেল, \v 5 কিন্তু ব্যাবিলনের\f + \fr 25:5 \fr*\ft অথবা, কলদীয়; 10 ও 24 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* সৈন্যদল রাজার পিছনে তাড়া করে গেল এবং যিরীহোর সমভূমিতে তাঁর নাগাল পেল। তাঁর সমস্ত সৈন্য তাঁর কাছ থেকে পৃথক হয়ে ছড়িয়ে পড়ল, \v 6 আর তিনি ধৃত হলেন। \p তাঁকে ধরে রিব্‌লাতে ব্যাবিলনের রাজার কাছে নিয়ে যাওয়া হল, এবং সেখানে তাঁর শাস্তি ঘোষণা করা হল। \v 7 সিদিকিয়ের চোখের সামনেই তাঁর ছেলেদের তারা হত্যা করল। পরে তারা তাঁর চোখ উপড়ে নিয়েছিল, ও ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বেঁধে তারা তাঁকে ব্যাবিলনে নিয়ে গেল। \p \v 8 ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারের রাজত্বকালের উনিশতম বছরের পঞ্চম মাসের সপ্তম দিনে ব্যাবিলনের রাজার এক কর্মকর্তা, রাজকীয় রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন জেরুশালেমে এলেন। \v 9 তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে, রাজপ্রাসাদে এবং জেরুশালেমের সব বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলেন। প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরবাড়ি তিনি পুড়িয়ে ছাই করে দিলেন। \v 10 রাজরক্ষীদলের সেনাপতির অধীনস্থ সমস্ত ব্যাবিলনীয় সৈন্য জেরুশালেমের চারপাশের প্রাচীর ভেঙে দিয়েছিল। \v 11 রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন নগরে থেকে যাওয়া লোকজনকে, এবং তাদের পাশাপাশি বাদবাকি জনসাধারণকে ও যারা ব্যাবিলনের রাজার কাছে পালিয়ে গেল, তাদেরও নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলেন। \v 12 কিন্তু সেনাপতি দেশের অত্যন্ত গরিব কয়েকজন লোককে দ্রাক্ষাক্ষেতে ও ক্ষেতখামারে কাজ করার জন্য ছেড়ে গেলেন। \p \v 13 ব্যাবিলনীয়েরা সদাপ্রভুর মন্দিরের পিতলের দুটি স্তম্ভ, স্থানান্তরযোগ্য গামলা বসাবার পাত্রগুলি ও পিতলের সমুদ্রপাত্রটি ভেঙে খণ্ড খণ্ড করল, আর তারা সেগুলির পিতল ব্যাবিলনে নিয়ে গেল। \v 14 এছাড়াও তারা হাঁড়ি, বেলচা, সলতে ছাঁটার যন্ত্র, থালা ও মন্দিরের সেবাকাজে যেগুলি ব্যবহৃত হত, ব্রোঞ্জের সেইসব জিনিসপত্রও তুলে নিয়ে গেল। \v 15 রাজরক্ষীদলের সেনাপতি পাকা সোনা বা রুপো দিয়ে তৈরি সব ধুনুচি ও জল ছিটোনোর গামলাগুলিও নিয়ে গেলেন। \p \v 16 সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য শলোমন যে দুটি থাম, সমুদ্রপাত্র ও সরণযোগ্য তাকগুলি তৈরি করলেন, সেগুলিতে এত ব্রোঞ্জ ছিল যে তা মেপে রাখা সম্ভব হয়নি। \v 17 প্রত্যেকটি স্তম্ভ উচ্চতায় ছিল আঠারো হাত\f + \fr 25:17 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 27 ফুট বা প্রায় 8.1 মিটার\ft*\f* করে। এক-একটি স্তম্ভের মাথায় রাখা ব্রোঞ্জের স্তম্ভশীর্ষের উচ্চতা ছিল তিন হাত\f + \fr 25:17 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় সাড়ে 4 ফুট বা প্রায় 1.4 মিটার\ft*\f* এবং সেটি পরস্পরছেদী এক জালের মতো করে সাজিয়ে দেওয়া হল ও সেটির চারপাশে ছিল ব্রোঞ্জের বেশ কয়েকটি ডালিম। অন্য থামেও একইরকম ভাবে পরস্পরছেদী জালের মতো সাজসজ্জা ছিল। \p \v 18 রক্ষীদলের সেনাপতি মহাযাজক সরায়কে, পদাধিকারবলে তাঁর পরে যিনি ছিলেন, সেই যাজক সফনিয়কে ও তিনজন দারোয়ানকে বন্দি করে নিয়ে গেলেন। \v 19 নগরে তখনও যারা থেকে গেলেন, তাদের মধ্যে যাঁর উপর যোদ্ধাদের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল, তাঁকে, ও পাঁচজন রাজকীয় পরামর্শদাতাকেও তিনি ধরেছিলেন। এছাড়াও যাঁর উপর দেশের প্রজাদের সামরিক বাহিনীতে কাজ করার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে যোগ দেওয়ানোর দায়িত্ব দেওয়া ছিল, সেই সচিবকে এবং নগরে যে ষাটজন বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্যতালিকাভুক্ত ব্যক্তি পাওয়া গেল, তাদেরও তিনি ধরেছিলেন। \v 20 সেনাপতি নবূষরদন তাদের সবাইকে ধরে রিব্‌লাতে ব্যাবিলনের রাজার কাছে নিয়ে এলেন। \v 21 হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে ব্যাবিলনের রাজা প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত এই লোকদের বধ করলেন। \p অতএব যিহূদা তার দেশ থেকে নির্বাসিত হল। \p \v 22 ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার যিহূদাতে যেসব লোকজন ছেড়ে গেলেন, তাদের উপর তিনি শাফনের নাতি, অর্থাৎ অহীকামের ছেলে গদলিয়কে শাসনকর্তা নিযুক্ত করলেন। \v 23 যখন সৈন্যদলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও তাদের লোকজনেরা শুনতে পেয়েছিলেন যে ব্যাবিলনের রাজা গদলিয়কে শাসনকর্তা নিযুক্ত করেছেন, তখন তারা—অর্থাৎ নথনিয়ের ছেলে ইশ্মায়েল, কারেহর ছেলে যোহানন, নটোফাতীয় তন্‌হূমতের ছেলে সরায়, সেই মাখাতীয়ের ছেলে যাসনিয়, এবং তাদের লোকজন মিস্‌পাতে গদলিয়ের কাছে এলেন। \v 24 তাদের ও তাদের লোকজনকে আশ্বস্ত করার জন্য গদলিয় একটি শপথ নিয়েছিলেন। “ব্যাবিলনের কর্মকর্তাদের তোমরা ভয় কোরো না,” তিনি বললেন। “দেশেই থেকে যাও ও ব্যাবিলনের রাজার সেবা করো, তাতে তোমাদেরই মঙ্গল হবে।” \p \v 25 সপ্তম মাসে অবশ্য ইলীশামার নাতি ও নথনিয়ের ছেলে, তথা শরীরে রাজরক্ত ধারণকারী সেই ইশ্মায়েল সাথে দশজন লোক নিয়ে এসে গদলিয়কে এবং মিস্‌পাতে সেই সময় তাঁর সাথে যিহূদার যে লোকেরা ছিল, তাদের ও ব্যাবিলন থেকে আসা কয়েকজন লোককেও হত্যা করলেন। \v 26 এই পরিস্থিতিতে, ছোটো থেকে বড়ো, সব লোকজন, সৈন্যদলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে মিলিতভাবে ব্যাবিলনের লোকজনের ভয়ে মিশরে পালিয়ে গেলেন। \s1 যিহোয়াখীন মুক্ত হন \p \v 27 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের বন্দিত্বের সাঁইত্রিশতম বছরে, অর্থাৎ যে বছর ইবিল-মরোদক ব্যাবিলনের রাজা হলেন, সেই বছরেই তিনি যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনকে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন। দ্বাদশ মাসের সাতাশতম দিনে তিনি এ কাজ করলেন। \v 28 তিনি যিহোয়াখীনের সাথে সদয় ভঙ্গিতে কথা বললেন এবং ব্যাবিলনে তাঁর সাথে অন্যান্য যেসব রাজা ছিলেন, তাদের তুলনায় তিনি যিহোয়াখীনকে বেশি সম্মানীয় এক আসন দিলেন। \v 29 তাই যিহোয়াখীন তাঁর কয়েদির পোশাক একদিকে সরিয়ে রেখেছিলেন এবং জীবনের বাকি দিনগুলি তিনি নিয়মিতভাবে রাজার টেবিলেই বসে ভোজনপান করলেন। \v 30 যতদিন যিহোয়াখীন বেঁচেছিলেন, রাজামশাই প্রত্যেকদিন নিয়মিতভাবে তাঁকে ভাতা দিয়ে গেলেন।