\id 1SA - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \ide UTF-8 \h 1 শমূয়েল \toc1 শমূয়েলের প্রথম পুস্তক \toc2 1 শমূয়েল \toc3 1শমূ \mt1 শমূয়েলের প্রথম পুস্তক \c 1 \s1 শমূয়েলের জন্ম \p \v 1 ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকায় রামাথয়িম-সোফিম নগরে ইল্‌কানা নামে ইফ্রয়িম গোষ্ঠীভুক্ত এক ব্যক্তি বসবাস করতেন। তাঁর বাবার নাম যিরোহম, যিরোহম ইলীহূর ছেলে, ইলীহূ তোহের ছেলে এবং তোহ ছিলেন সূফের ছেলে। \v 2 ইল্‌কানার দু্‌ই স্ত্রী ছিল; একজনের নাম হান্না, অন্যজনের নাম পনিন্না। পনিন্না সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, কিন্তু হান্নার কোনও সন্তান ছিল না। \p \v 3 প্রত্যেক বছর ইল্‌কানা নিজের নগর থেকে শীলোতে গিয়ে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর আরাধনা করতেন ও বলিদান সম্পন্ন করতেন। সেখানে এলির দুই ছেলে, হফনি ও পীনহস সদাপ্রভুর যাজকের কাজ করত। \v 4 বলিদানের নিরূপিত দিন এলে ইল্‌কানা তাঁর স্ত্রী পনিন্না ও তাঁর সব ছেলেমেয়েকে বলিকৃত মাংসের ভাগ দিতেন। \v 5 কিন্তু হান্নাকে তিনি দ্বিগুণ অংশ দিতেন, যেহেতু তিনি তাঁকে ভালোবাসতেন, এবং সদাপ্রভু হান্নাকে বন্ধ্যা করে রেখেছিলেন। \v 6 যেহেতু সদাপ্রভু হান্নাকে বন্ধ্যা করে রেখেছিলেন তাই তাঁর সতীন তাঁকে বিরক্ত করার জন্য অনবরত তাঁকে প্ররোচিত করে যেত। \v 7 বছরের পর বছর এরকম হয়েই চলেছিল। যখনই হান্না সদাপ্রভুর মন্দিরে যেতেন, তাঁর সতীন তাঁকে প্ররোচিত করত এবং তিনি অশ্রুপাত করতেন ও ভোজনপানও করতেন না। \v 8 তাঁর স্বামী ইল্‌কানা তাঁকে বলতেন, “হান্না, তুমি কেন অশ্রুপাত করছ? তুমি ভোজনপান করছ না কেন? তুমি মন খারাপই বা করে আছ কেন? তোমার কাছে দশ ছেলের চেয়ে আমি কি বেশি নই?” \p \v 9 একবার শীলোতে তাঁদের ভোজনপান শেষ হয়ে যাওয়ার পর হান্না উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। যাজক এলি তখন সদাপ্রভুর গৃহের দ্বারে, তাঁর আসনে বসেছিলেন। \v 10 গভীর মনোবেদনা নিয়ে হান্না অশ্রুপাত করে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। \v 11 তিনি শপথ করে বললেন, “হে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু, যদি তুমি শুধু তোমার এই দাসীর দুর্দশা দেখে আমাকে স্মরণ করো, এবং তোমার এই দাসীকে ভুলে না গিয়ে আমাকে একটি ছেলে দাও, তবে আমি তাকে সারাটি জীবনের জন্য সদাপ্রভুর হাতে সমর্পণ করে দেব, এবং তার মাথায় কখনও ক্ষুর ব্যবহার করা হবে না।” \p \v 12 তিনি যখন সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করেই যাচ্ছিলেন তখন এলি তাঁর মুখটি নিরীক্ষণ করছিলেন। \v 13 হান্না মনে মনে প্রার্থনা করছিলেন, এবং তাঁর ঠোঁট দুটি কাঁপছিল কিন্তু তাঁর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছিল না। এলি ভেবেছিলেন, হান্না মদ্যপান করেছেন। \v 14 তিনি তাঁকে বললেন, “আর কত কাল তুমি মদ্যপ অবস্থায় থাকবে? মদ্যপান করা বন্ধ করো।” \p \v 15 হান্না উত্তর দিলেন, “হে আমার প্রভু, এমনটি নয়; আমি এমন এক নারী, যে বড়োই দুঃখিনী। আমি দ্রাক্ষারস পান করিনি বা মদ্যপানও করিনি; আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমার অন্তর উজাড় করে দিচ্ছিলাম। \v 16 আপনার এই দাসীকে বদ মহিলা বলে মনে করবেন না; আমি গভীর দুঃখ ও মনস্তাপ নিয়ে এখানে প্রার্থনা করে চলেছি।” \p \v 17 এলি উত্তর দিলেন, “শান্তিপূর্বক চলে যাও, এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে তুমি যা চেয়েছ, তিনি তা তোমাকে দান করুন।” \p \v 18 হান্না বললেন, “আপনার এই দাসী আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহপ্রাপ্ত হোক।” পরে তিনি ফিরে গিয়ে ভোজনপান করলেন, এবং তাঁর মুখ আর বিষণ্ণ থাকেনি। \p \v 19 পরদিন ভোরবেলায় তাঁরা উঠে সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন এবং পরে রামায় তাঁদের বাড়িতে ফিরে গেলেন। ইল্‌কানা তাঁর স্ত্রী হান্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেন, এবং সদাপ্রভু হান্নাকে স্মরণ করলেন। \v 20 যথাসময়ে হান্না গর্ভবতী হলেন এবং এক ছেলের জন্ম দিলেন। তিনি এই বলে ছেলের নাম রাখলেন শমূয়েল\f + \fr 1:20 \fr*\ft অর্থাৎ, ঈশ্বর শুনেছেন\ft*\f* যে, “আমি সদাপ্রভুর কাছ থেকে তাকে চেয়ে নিয়েছি।” \s1 হান্না শমূয়েলকে উৎসর্গ করেন \p \v 21 হান্নার স্বামী ইল্‌কানা যখন তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারসহ সদাপ্রভুর উদ্দেশে বাৎসরিক বলিদান উৎসর্গ করতে ও তাঁর মানত পূরণ করতে গেলেন, \v 22 হান্না সঙ্গে যাননি। তিনি তাঁর স্বামীকে বললেন, “বালকটির স্তন্য-ত্যাগ করানোর পরই আমি তাকে নিয়ে গিয়ে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত করব, এবং সে আজীবন সেখানে বসবাস করবে।” \p \v 23 তাঁর স্বামী ইল্‌কানা তাঁকে বললেন, “তোমার যা ভালো বলে মনে হয়, তুমি তাই করো। তার স্তন্য-ত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তুমি এখানে থাকো; সদাপ্রভু শুধু যেন তাঁর বাক্য সুস্থির করেন।” অতএব হান্না ঘরে থেকে গিয়ে ছেলেটি স্তন্য-ত্যাগ না করা পর্যন্ত তাকে স্তন্যদান করে যেতে লাগলেন। \p \v 24 সে স্তন্য-ত্যাগ করার পর তিনি একটি তিন বছর বয়স্ক বলদ, এক ঐফা\f + \fr 1:24 \fr*\ft প্রায় 16 কিলোগ্রাম\ft*\f* ময়দা, এবং এক মশক দ্রাক্ষারস সমেত ছেলেটিকে শীলোতে সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে গেলেন। \v 25 বলদটিকে বলি দেওয়ার পর তাঁরা ছেলেটিকে এলির কাছে নিয়ে গেলেন, \v 26 এবং হান্না তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আমায় ক্ষমা করবেন। আপনার জীবনের দিব্যি, আমিই সেই নারী, যে এখানে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করছিল। \v 27 আমি এই শিশুটির জন্য প্রার্থনা করেছিলাম, এবং সদাপ্রভুর কাছে আমি যা চেয়েছিলাম, তিনি আমাকে তাই দিয়েছেন। \v 28 অতএব, এখন আমি একে সদাপ্রভুর হাতে সমর্পণ করছি। সারাটি জীবনের জন্য সে সদাপ্রভুর হয়েই থাকবে।” পরে তাঁরা সেখানে সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। \c 2 \s1 হান্নার প্রার্থনা \p \v 1 পরে হান্না প্রার্থনা করে বললেন: \q1 “মম অন্তর সদাপ্রভুতে আনন্দিত রয়; \q2 মম শৃঙ্গ\f + \fr 2:1 \fr*\ft “শৃঙ্গ” শব্দটি এখানে শক্তির প্রতীক; 10 পদের ক্ষেত্রেও যা প্রযোজ্য।\ft*\f* সদাপ্রভুতে উন্নত হয়। \q1 মম মুখ শত্রুদের পরে গর্বিত হয়, \q2 তব উদ্ধারে আমি আনন্দিত হই। \b \q1 \v 2 “সদাপ্রভুর মতো পবিত্র কেউ যে আর নেই; \q2 মোদের ঈশ্বরের মতো শৈল যে আর নেই। \b \q1 \v 3 “এত গর্বভরে তোমরা কথা বোলো না \q2 তব মুখ এত অহংকারে ভরা কথা না বলুক \q1 কারণ সদাপ্রভু এমন ঈশ্বর যিনি সব জানেন, \q2 আর তিনি কাজের হিসেব ওজন করে রাখেন। \b \q1 \v 4 “যোদ্ধাদলের ধনুসকল ভগ্ন হয়েছে, \q2 কিন্তু যারা ঠোকর খেয়েছে তারা সুসংলগ্ন হয়েছে। \q1 \v 5 ক্ষুধার জ্বালায় পূর্ণ-উদর বেতনজীবী হয়েছে, \q2 কিন্তু যাদের ক্ষুধা ছিল তারা আজ তৃপ্ত হয়েছে। \q1 যিনি বন্ধ্যা ছিলেন তিনি সপ্ত সন্তান জন্ম দিলেন, \q2 কিন্তু যে বহু পুত্রের জননী সে আজ দুর্বলভারলব্ধা। \b \q1 \v 6 “সদাপ্রভু মৃত্যু আনেন ও তিনি জীবনও দেন \q2 তিনি কবরস্থানে পাঠান ও বাঁচিয়ে তোলেন। \q1 \v 7 সদাপ্রভু দারিদ্র ও সম্পদ পাঠিয়ে দেন; \q2 তিনিই নত করেন আবার উন্নতও করেন। \q1 \v 8 তিনি ধুলো থেকে দরিদ্রকে উত্তোলন করেন \q2 আর ভস্মস্তূপের মধ্য থেকে অভাবীকে তোলেন; \q1 তাদের তিনি রাজাধিরাজদের সাথে বসিয়ে দেন \q2 আর তাদের সম্মানের রাজাসনে বসিয়ে দেন। \b \q1 “কেননা ধরাধামের বনেদগুলি সদাপ্রভুরই অধিকার; \q2 তিনি সেগুলির উপরে এই চরাচর ধরে রেখেছেন। \q1 \v 9 তিনি তাঁর ভক্তজনের চরণগুলি রক্ষা করবেন, \q2 কিন্তু দুরাচারী আঁধারে ঘেরা স্থানে নির্বাক হবে। \b \q1 “বলবীর্যে কেউ যুদ্ধে বিজয়শ্রী হয় না; \q2 \v 10 যারা সদাপ্রভুর বিরোধিতা করে তারা চুরমার হবে। \q1 স্বর্গ হতে পরাৎপর বজ্রাঘাত করবেন; \q2 সদাপ্রভু সমগ্র মর্ত্যলোকের বিচার করবেন। \b \q1 “তিনিই তাঁর রাজাকে শক্তি সামর্থ্য দেবেন \q2 আর অভিষিক্ত-জনের শৃঙ্গ উন্নত করবেন।” \p \v 11 পরে ইল্‌কানা রামায় তাঁর ঘরে ফিরে গেলেন, কিন্তু ছেলেটি যাজক এলির অধীনে থেকে সদাপ্রভুর পরিচর্যা করতে থাকলো। \s1 এলির দুরাচারী ছেলেরা \p \v 12 এলির ছেলেরা ছিল একেবারে অমানুষ; সদাপ্রভুকে তারা আদৌ শ্রদ্ধা করত না। \v 13 সেখানে যাজকদের এই প্রথা প্রচলিত ছিল যে, যখনই কেউ উপহার বলি উৎসর্গ করতে আসত, বলির মাংস সিদ্ধ হওয়ার সময় যাজকের দাস হাতে ত্রিফলাযুক্ত এক কাঁটাচামচ নিয়ে চলে আসত \v 14 এবং সেই কাঁটাচামচটি চাটু বা কেটলি বা কড়াই বা রান্নার পাত্রে সজোরে নিক্ষেপ করত। কাঁটাচামচের সঙ্গে যা উঠে আসত যাজক তা নিজের জন্য রেখে দিত। শীলোতে যেসব ইস্রায়েলী আসত, তাদের প্রতি তারা এরকমই আচরণ করত। \v 15 কিন্তু মেদ দহনের আগেই, যাজকের দাস এসে বলি উৎসর্গকারী ব্যক্তিকে বলত, “ঝলসানোর জন্য যাজককে কিছুটা মাংস দাও; তিনি তোমার কাছ থেকে সিদ্ধ মাংস নেবেন না, কিন্তু শুধু কাঁচা মাংসই নেবেন।” \p \v 16 যদি সেই লোকটি তাকে বলত, “আগে মেদ দহন হয়ে যাক, পরে তোমার যা ইচ্ছা তা নিও,” তখন দাসটি উত্তর দিত, “তা হবে না, এখনই সেটি আমার হাতে তুলে দাও; যদি না দাও, আমি তবে জোর করে তা কেড়ে নেব।” \p \v 17 সদাপ্রভুর দৃষ্টিগোচরে যুবকদের এই পাপটি অত্যন্ত ভয়াবহ বলে গণ্য হল, কারণ তারা সদাপ্রভুর উপহার বলিকে তুচ্ছজ্ঞান করে যাচ্ছিল। \p \v 18 কিন্তু কিশোর শমূয়েল মসিনার এফোদ\f + \fr 2:18 \fr*\ft এক পবিত্র পোশাক, যা মূলত মহাযাজক পরিধান করতেন এবং সেটি নিপুণ শিল্পীর হাতে স্বর্ণখোচিত হত ও নীল, বেগুনি, লাল ও সাদা রংয়ের সুতোয় বোনা মসিনা কাপড়ে তৈরি হত।\ft*\f* গায়ে দিয়ে সদাপ্রভুর সামনে থেকে পরিচর্যা করে যাচ্ছিল। \v 19 প্রতি বছর তার মা তার জন্য একটি করে আকারে ছোটো, লম্বা ঢিলেঢালা বর্হিবাস তৈরি করে যখন তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাৎসরিক বলিদান সম্পন্ন করতে আসতেন, তখন সেটি তার কাছে নিয়ে আসতেন। \v 20 এলি ইল্‌কানা ও তাঁর স্ত্রীকে আশীর্বাদ করে বলতেন, “এই স্ত্রীলোকটি প্রার্থনা করে সন্তান পেয়েও যাকে সদাপ্রভুর হাতে তুলে দিয়েছিল, তার স্থান নেওয়ার জন্য সদাপ্রভু তোমাকে তার মাধ্যমে আরও সন্তান দান করুন।” পরে তাঁরা ঘরে ফিরে যেতেন। \v 21 সদাপ্রভু হান্নার প্রতি অনুগ্রহ দেখিয়েছিলেন; হান্না তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম দিলেন। এদিকে, কিশোর শমূয়েল সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে বেড়ে উঠছিল। \p \v 22 ইতিমধ্যে এলি অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে গেলেন, ও তাঁর ছেলেরা সব ইস্রায়েলী মানুষজনের প্রতি যা যা করত ও যেসব স্ত্রীলোক সমাগম তাঁবুর প্রবেশদ্বারে সেবাকাজে লিপ্ত থাকত, কীভাবে তারা তাদের সঙ্গে যৌন মিলনে মিলিত হত, সেসব কথা তিনি শুনতে পেয়েছিলেন। \v 23 অতএব তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কেন এরকম কাজ করছ? আমি সব মানুষজনের কাছ থেকে তোমাদের এইসব কুকর্মের কথা শুনতে পাচ্ছি। \v 24 না না, বাছা; সদাপ্রভুর প্রজাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া যে খবর আমি শুনতে পাচ্ছি, তা ভালো নয়। \v 25 একজন ব্যক্তি যদি অন্যজনের বিরুদ্ধে পাপ করে, তবে ঈশ্বর হয়তো অপরাধীর হয়ে মধ্যস্থতা করবেন; কিন্তু কেউ যদি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধেই পাপ করে বসে, কে তার হয়ে মধ্যস্থতা করবে?” যাই হোক না কেন, তাঁর ছেলেরা তাদের বাবার তিরস্কারে কান দেয়নি, কারণ সদাপ্রভুই তাদের মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। \p \v 26 কিশোর শমূয়েল ক্রমাগত দৈহিক উচ্চতায় এবং সদাপ্রভুর ও মানুষজনের অনুগ্রহে বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছিল। \s1 এলির পরিবারের বিরুদ্ধে ঘোষিত ভাববাণী \p \v 27 ইত্যবসরে, ঈশ্বরের একজন লোক এলির কাছে এসে তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু একথা বলছেন: ‘তোমার পূর্বপুরুষের পরিবার যখন মিশরে ফরৌণের অধীনে ছিল, তখন কি আমি নিজেকে স্পষ্টভাবে তাদের কাছে প্রকাশ করিনি? \v 28 ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে আমি তোমার পূর্বপুরুষকে বেছে নিয়ে তাকে আমার যাজক করেছিলাম, আমার বেদিতে যাওয়ার, ধূপদাহ করার, ও আমার উপস্থিতিতে এফোদ গায়ে দেওয়ার অধিকারও দিয়েছিলাম। ইস্রায়েলীদের উপহার দেওয়া সব ভক্ষ্য-নৈবেদ্যও আমি তোমার পূর্বপুরুষের পরিবারকে দিয়েছিলাম। \v 29 তোমরা কেন তবে আমার সেই নৈবেদ্য ও উপহার অশ্রদ্ধেয় জ্ঞান করছ, যা আমি আমার বাসস্থানের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছি? আমার প্রজা ইস্রায়েলের দেওয়া প্রত্যেকটি উপহারের বাছাই করা অংশগুলি দিয়ে নিজেদের পুষ্ট করার দ্বারা কেন তুমি আমার তুলনায় তোমার ছেলেদের বেশি সম্মান জানাচ্ছ?’ \p \v 30 “অতএব, সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন: ‘আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে তোমার পরিবারের সদস্যরা আমার সামনে চিরকাল পরিচর্যা করে যাবে।’ কিন্তু এখন সদাপ্রভু একথা বলেন: ‘আর তা হবে না! যারা আমাকে সম্মান করে আমি তাদের সম্মানিত করব, কিন্তু যারা আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে তারা উপেক্ষিত হবে। \v 31 সময় আসছে যখন আমি তোমার শক্তি ও তোমার যাজকীয় পরিবারের শক্তি এভাবে খর্ব করব, যেন এই পরিবারের কেউ বৃদ্ধাবস্থায় পৌঁছাতে না পারে, \v 32 এবং তুমি আমার বাসস্থানে চরম দুর্দশা দেখবে। যদিও ইস্রায়েলের প্রতি মঙ্গল বর্ষিত হবে, তোমার বংশে কেউ কখনও বৃদ্ধাবস্থায় পৌঁছাবে না। \v 33 তোমাদের মধ্যে যাকে আমি আমার বেদিতে সেবাকাজ করার জন্য না মেরে বাঁচিয়ে রাখব, সে শুধু তোমার দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করার ও তোমার শক্তি নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্যই বেঁচে থাকবে, এবং তোমার সব বংশধর যুবাবস্থাতেই মারা যাবে। \p \v 34 “ ‘তোমার দুই ছেলে, হফনি ও পীনহসের প্রতি যা ঘটবে, তা তোমার পক্ষে এক চিহ্নস্বরূপ হবে: তারা দুজন একই দিনে মরবে। \v 35 আমার জন্য আমি এক বিশ্বস্ত যাজক গড়ে তুলব, যে আমার অন্তর ও মনের বাসনানুসারে কাজ করবে। আমি তার যাজকীয় পরিবারকে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করব, এবং তারা অভিষিক্ত ব্যক্তিরূপে চিরকাল আমার সামনে পরিচর্যা করবে। \v 36 তখন তোমার পরিবারের বাদবাকি প্রত্যেকে তাঁর সামনে এসে একখণ্ড রুপো ও এক টুকরো রুটির জন্য নতজানু হয়ে অনুরোধ জানিয়ে বলবে, “আমাকে কোনও যাজকীয় কাজে নিযুক্ত করুন যেন আমি কিছু খেতে পাই।” ’ ” \c 3 \s1 সদাপ্রভু শমূয়েলকে ডাক দিলেন \p \v 1 কিশোর শমূয়েল এলির অধীনে থেকে সদাপ্রভুর পরিচর্যা করে যাচ্ছিল। সেকালে সদাপ্রভুর বাক্য বিরল ছিল; দর্শনও খুব একটা দেখতে পাওয়া যেত না। \p \v 2 এলির দৃষ্টিশক্তি এতই ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছিল যে তিনি প্রায় দেখতেই পেতেন না। এই অবস্থায় রাতের বেলায় একদিন তিনি সেখানে শুয়েছিলেন, যেখানে সচরাচর তিনি শুয়ে থাকতেন। \v 3 সদাপ্রভুর প্রদীপ তখনও নেভানো হয়নি, এবং শমূয়েল সদাপ্রভুর সেই গৃহে শুয়েছিলেন, যেখানে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুক রাখা থাকত। \v 4 তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে ডাক দিলেন। \p শমূয়েল উত্তর দিল, “আমি এখানে।” \v 5 আর সে দৌড়ে এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” \p কিন্তু এলি বললেন, “আমি তোমায় ডাকিনি; ফিরে গিয়ে তুমি শুয়ে পড়ো।” অতএব সে ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। \p \v 6 সদাপ্রভু আবার ডাক দিলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েলও এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” \p “ওহে বাছা,” এলি বললেন, “আমি তোমায় ডাকিনি; ফিরে গিয়ে তুমি শুয়ে পড়ো।” \p \v 7 তখনও পর্যন্ত শমূয়েল সদাপ্রভুর পরিচয় পায়নি: সদাপ্রভুর বাক্য তখনও তার কাছে প্রকাশিত হয়নি। \p \v 8 তৃতীয়বার সদাপ্রভু ডাক দিলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েলও উঠে এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” \p তখন এলি অনুভব করলেন যে সদাপ্রভুই ছেলেটিকে ডাকছিলেন। \v 9 অতএব এলি শমূয়েলকে বললেন, “তুমি ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়ো, আর যদি তিনি আবার তোমায় ডাকেন, তুমি বোলো, ‘সদাপ্রভু, বলুন, কারণ আপনার দাস শুনছে।’ ” অতএব শমূয়েল ফিরে গিয়ে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ল। \p \v 10 সদাপ্রভু এসে, সেখানে দাঁড়িয়ে অন্যান্যবারের মতো এবারও ডাক দিয়ে বললেন, “শমূয়েল! শমূয়েল!” \p তখন শমূয়েল বলল, “বলুন, কারণ আপনার দাস শুনছে।” \p \v 11 সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন: “দেখো, ইস্রায়েলের মধ্যে আমি এমন কিছু করতে যাচ্ছি যা শুনে প্রত্যেকের কান ভোঁ ভোঁ করবে। \v 12 আমি এলির পরিবারের সম্বন্ধে যা যা বলেছি, সেই সময় আমি এলির প্রতি—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক তাই ঘটাব। \v 13 কারণ আমি তাকে বলেছি যে তার জানা পাপের কারণে আমি চিরতরে তার পরিবারের বিচার করতে চলেছি; তার ছেলেরা ঈশ্বরনিন্দা করেছে, আর সে তাদের শাসন করতে ব্যর্থ হয়েছে। \v 14 তাই আমি এলির বংশের উদ্দেশে শপথ করে বলেছি, ‘এলির বংশের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত, বলি বা নৈবেদ্য দ্বারা হবে না।’ ” \p \v 15 শমূয়েল সকাল পর্যন্ত শুয়ে থাকল ও পরে সদাপ্রভুর গৃহের দরজাগুলি খুলে দিল। এলিকে দর্শনটির কথা বলতে তার ভয় হচ্ছিল, \v 16 কিন্তু এলি তাকে ডেকে বললেন, “বাছা শমূয়েল।” \p শমূয়েল উত্তর দিল, “আমি এখানে।” \p \v 17 “তিনি তোমাকে কী বলেছেন?” এলি প্রশ্ন করলেন। “আমার কাছে তা লুকিয়ে রেখো না। তিনি তোমাকে যা বলেছেন তার কোনো কিছু যদি তুমি আমার কাছে লুকিয়ে রাখো, তবে যেন ঈশ্বর তোমাকে কড়া শাস্তি দেন।” \v 18 তখন শমূয়েল তাঁকে সবকিছু বলে দিল, তাঁর কাছে কিছুই লুকিয়ে রাখল না। পরে এলি বললেন, “তিনি সদাপ্রভু; তাঁর দৃষ্টিতে যা ভালো বলে মনে হয়, তিনি তাই করুন।” \p \v 19 শমূয়েল যখন বেড়ে উঠেছিলেন সদাপ্রভু তখন তাঁর সহবর্তী ছিলেন, আর তিনি শমূয়েলের কোনও কথা ব্যর্থ হতে দিতেন না। \v 20 আর দান থেকে শুরু করে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলীরা সবাই স্বীকার করে নিল যে শমূয়েল সদাপ্রভুর এক ভাববাদীরূপে স্বীকৃতি পেয়েছেন। \v 21 সদাপ্রভু শীলোতে দর্শন দিতে থাকলেন, এবং সেখানে তিনি তাঁর বাক্যের মাধ্যমে নিজেকে শমূয়েলের কাছে প্রকাশিত করলেন। \c 4 \p \v 1 আর শমূয়েলের বাক্য সব ইস্রায়েলীর কাছে পৌঁছে গেল। \s1 ফিলিস্তিনীরা নিয়ম-সিন্দুক কব্জা করল \p ইস্রায়েলীরা তখন ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করল। ইস্রায়েলীরা এবন-এষরে সৈন্যদলের শিবির স্থাপন করল, এবং ফিলিস্তিনীরা অফেকে তাদের শিবির স্থাপন করল। \v 2 ইস্রায়েলের সঙ্গে সম্মুখসমরে নামার জন্য ফিলিস্তিনীরা তাদের সৈন্যদল সাজিয়েছিল, এবং যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েল ফিলিস্তিনীদের কাছে পরাজিত হল। যুদ্ধক্ষেত্রে ফিলিস্তিনীরা তাদের প্রায় 4,000 সৈন্যকে হত্যা করল। \v 3 সৈনিকরা শিবিরে ফিরে আসার পর ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা তাদের প্রশ্ন করলেন, “সদাপ্রভু কেন ফিলিস্তিনীদের সামনে আজ আমাদের পরাজিত হতে দিলেন? এসো, শীলো থেকে আমরা সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি নিয়ে আসি, যেন তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে যান এবং শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেন।” \p \v 4 অতএব লোকেরা কয়েকজনকে শীলোতে পাঠিয়ে দিল, এবং তারা সেই সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি ফিরিয়ে নিয়ে এল, যিনি করূবদ্বয়ের মধ্যে বিরাজমান। এলির দুই ছেলে, হফনি ও পীনহস, ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকের সঙ্গে সেখানে ছিল। \p \v 5 সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক যখন সৈন্যশিবিরে এল, ইস্রায়েলীরা সবাই এত জোরে চিৎকার করে উঠল যে ধরাতল কেঁপে উঠেছিল। \v 6 কোলাহল শুনে, ফিলিস্তিনীরা প্রশ্ন করল, “হিব্রুদের শিবিরে এত চিৎকার শোনা যাচ্ছে কেন?” \p ফিলিস্তিনীরা যখন জানতে পারল যে সদাপ্রভুর সিন্দুক শিবিরে এসেছে, \v 7 তখন তারা ভয় পেয়ে গেল। “শিবিরে একজন দেবতা এসে পড়েছেন,” তারা বলল। “আরে না! এর আগে এমনটি কখনও ঘটেনি। \v 8 আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল! এইসব শক্তিশালী দেবতার হাত থেকে কে আমাদের রক্ষা করবে? তারা সেইসব দেবতা, যারা মরুপ্রান্তরে সব ধরনের উপদ্রব দিয়ে মিশরীয়দের আঘাত করেছিলেন। \v 9 ফিলিস্তিনীরা, শক্তপোক্ত হও! পুরুষত্ব দেখাও, তা না হলে হিব্রুরা যেভাবে তোমাদের বশীভূত হয়েছিল, তোমরাও তাদের বশীভূত হয়ে পড়বে। পুরুষের মতো যুদ্ধ করো!” \p \v 10 অতএব ফিলিস্তিনীরা যুদ্ধ করল, আর ইস্রায়েলীরা পরাজিত হয়ে প্রত্যেকে নিজের নিজের তাঁবুতে ফিরে গেল। হত্যালীলা চরম শিখরে পৌঁছাল; ইস্রায়েল 30,000 পদাতিক সৈন্য হারাল। \v 11 সদাপ্রভুর সিন্দুকটি শত্রুদের হস্তগত হল, এবং এলির দুই ছেলে, হফনি ও পীনহস মারা গেল। \s1 এলির মৃত্যু \p \v 12 ঠিক সেদিনই বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত একজন লোক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ছিন্নবস্ত্রে ও ধূলিধূসরিত মস্তকে শীলোতে পালিয়ে গেল। \v 13 সে যখন সেখানে পৌঁছাল, এলি তখন পথের ধারে তাঁর আসনে বসে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন, কারণ ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য তাঁর অন্তর ব্যাকুল হয়েছিল। যখন সেই লোকটি নগরে প্রবেশ করে যা যা ঘটেছিল, তা সবিস্তারে বলে শোনাল, তখন গোটা নগরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেল। \p \v 14 এলি সেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, “এত গোলমাল হচ্ছে কেন?” \p লোকটি তৎক্ষণাৎ এলির কাছে দৌড়ে গেল। \v 15 তাঁর বয়স তখন আটানব্বই বছর এবং তাঁর দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়ায় তিনি দেখতেও পাচ্ছিলেন না। \v 16 লোকটি এলিকে বলল, “আমি এইমাত্র যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এসেছি; আজই আমি সেখান থেকে পালিয়ে এসেছি।” \p এলি জিজ্ঞাসা করলেন, “বাছা, কী হয়েছে?” \p \v 17 সংবাদবাহক লোকটি উত্তর দিল, “ইস্রায়েল ফিলিস্তিনীদের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়েছে, এবং সৈন্যদল ভারী ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া আপনার দুই ছেলে, হফনি ও পীনহসও মারা গিয়েছে, এবং ঈশ্বরের সিন্দুকও শত্রুদের করায়ত্ত হয়েছে।” \p \v 18 সে ঈশ্বরের সিন্দুকের কথা বলামাত্র, এলি দরজার পাশেই তাঁর আসন থেকে পিছন দিকে উল্টে পড়ে গেলেন। তাঁর ঘাড় ভেঙে গেল এবং তিনি মারা গেলেন, কারণ তাঁর বয়স হয়েছিল, ও তাঁর শরীরও ভারী ছিল। তিনি চল্লিশ বছর ধরে ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।\f + \fr 4:18 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচার করেছিলেন\ft*\f* \p \v 19 তাঁর পুত্রবধূ, তথা পীনহসের স্ত্রী, গর্ভবতী ছিল ও তার প্রসবকালও ঘনিয়ে এসেছিল। ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের করায়ত্ত হয়েছে এবং তার শ্বশুরমশাই ও স্বামী মারা গিয়েছেন, এই খবর শুনে তার প্রসববেদনা শুরু হল ও সে এক সন্তানের জন্ম দিল, কিন্তু প্রসববেদনায় সে অবসন্ন হয়ে পড়েছিল। \v 20 সে যখন মারা যাচ্ছিল, তার শুশ্রুষাকারী স্ত্রীলোকেরা বলল, “হতাশ হোয়ো না; তুমি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছ।” কিন্তু সে উত্তর দেয়নি বা তাদের কথায় মনোযোগও দেয়নি। \p \v 21 সে এই বলে ছেলেটির নাম ঈখাবোদ\f + \fr 4:21 \fr*\ft ঈখাবোদ শব্দের অর্থ হীনপ্রতাপ\ft*\f* রেখেছিল যে, “ইস্রায়েল থেকে প্রতাপ চলে গিয়েছে,” যেহেতু ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের করায়ত্ত হয়েছে এবং তার শ্বশুরমশাই ও স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। \v 22 সে বলল, “ইস্রায়েল থেকে প্রতাপ চলে গিয়েছে, কারণ ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের করায়ত্ত হয়েছে।” \c 5 \s1 সিন্দুকটি অস্‌দোদ এবং ইক্রোণে স্থানান্তরিত হয় \p \v 1 ফিলিস্তিনীরা ঈশ্বরের সিন্দুকটি করায়ত্ত করার পর, তারা সেটিকে এবন-এষর থেকে অস্‌দোদে এনেছিল। \v 2 পরে তারা সিন্দুকটিকে দাগোন দেবতার মন্দিরে এনে দাগোনের মূর্তির পাশেই রেখে দিয়েছিল। \v 3 অস্‌দোদের অধিবাসীরা পরদিন সকালে উঠে দেখল, সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে দাগোন মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে! তারা দাগোনকে তুলে এনে আবার স্বস্থানে বসিয়ে দিল। \v 4 কিন্তু পরদিন সকালে উঠে তারা দেখল, আবার সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে দাগোন মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে! সেটির মাথা ও হাত দুটি ভাঙা অবস্থায় দোরগোড়ায় লুটিয়ে পড়েছে; শুধু দেহের মূল অংশটি অবশিষ্ট রয়েছে। \v 5 ঠিক এই কারণে আজও পর্যন্ত না দাগোনের যাজকেরা আর না অন্য কেউ, অস্‌দোদে দাগোনের মন্দিরে প্রবেশ করে চৌকাঠ মাড়ায়। \p \v 6 অস্‌দোদ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজনের উপর সদাপ্রভুর হাত ভারী হল; তাদের উপর তিনি প্রলয় নিয়ে এলেন এবং আব\f + \fr 5:6 \fr*\ft দেহের কোনো অংশে (টিশু বা দেহকলার) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা স্ফীতি।\ft*\f* দিয়ে তাদের দৈহিক যন্ত্রণাগ্রস্ত করলেন। \v 7 যা যা ঘটছিল, তা দেখে অস্‌দোদের মানুষজন বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটি এখানে আমাদের সঙ্গে যেন না থাকে, কারণ তাঁর হাত আমাদের ও আমাদের দেবতা দাগোনের উপর ভারী হয়ে পড়েছে।” \v 8 অতএব তারা ফিলিস্তিনীদের সব শাসনকর্তাকে একত্রিত করে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটি নিয়ে আমরা কী করব?” \p তারা উত্তর দিল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটি গাতে পাঠিয়ে দেওয়া যাক।” অতএব তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটি সেখানে পাঠিয়ে দিল। \p \v 9 কিন্তু তারা সেটিকে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ার পর, সদাপ্রভুর হাত সেই নগরটির বিরুদ্ধেও প্রসারিত হল, সেখানেও মহা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। ছোটো-বড়ো নির্বিশেষে, নগরের সব মানুষজনের শরীরে আব\f + \fr 5:9 \fr*\ft \+xt 5:6\+xt* পদের টীকা লক্ষণীয়।\ft*\f* ফুটিয়ে তিনি তাদের দৈহিক যন্ত্রণা দিলেন। \v 10 তাই তারা ঈশ্বরের সিন্দুকটিকে ইক্রোণে পাঠিয়ে দিল। \p ঈশ্বরের সিন্দুকটি যখন ইক্রোণে প্রবেশ করছিল, তখন ইক্রোণের অধিবাসীরা চিৎকার করে বলে উঠল, “এরা আমাদের ও আমাদের মানুষজনকে হত্যা করার জন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটি আমাদের কাছে নিয়ে এসেছে।” \v 11 অতএব তারা ফিলিস্তিনীদের সব শাসনকর্তাকে একত্রিত করে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটিকে এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান; এটি স্বস্থানে ফিরে যাক, তা না হলে এটি\f + \fr 5:11 \fr*\ft অথবা, তিনি\ft*\f* আমাদের ও আমাদের লোকজনকে মেরে ফেলবে।” কারণ মৃত্যুর আতঙ্ক গোটা নগরে ছড়িয়ে পড়েছিল; ঈশ্বরের হাত নগরটির উপরে খুব ভারী হয়ে গেল। \v 12 যারা মারা যায়নি, তারাও আবের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিল, এবং নগরটির আর্তনাদ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেল। \c 6 \s1 সিন্দুকটি ইস্রায়েলে ফিরে এল \p \v 1 সদাপ্রভুর সিন্দুকটি সাত মাস ফিলিস্তিনী এলাকায় থাকার পর, \v 2 ফিলিস্তিনীরা যাজক ও গণৎকারদের ডেকে পাঠিয়ে বলল, “সদাপ্রভুর সিন্দুকটিকে নিয়ে আমরা কী করব? আমাদের বলুন, কীভাবে আমরা এটিকে স্বস্থানে ফেরত পাঠাব?” \p \v 3 তারা উত্তর দিল, “তোমরা যদি ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকটিকে ফেরত পাঠাতেই চাও, তবে একটি উপহার না দিয়ে সেটিকে তাঁর কাছে ফেরত পাঠিয়ো না; যে করেই হোক না কেন, তাঁর কাছে একটি দোষার্থক-নৈবেদ্য পাঠাও। তখনই তোমরা সুস্থ হবে, এবং তোমরা জানতে পারবে কেন তাঁর হাত তোমাদের উপর থেকে সরে যায়নি।” \p \v 4 ফিলিস্তিনীরা জিজ্ঞাসা করল, “তাঁর কাছে আমরা কী রকম দোষার্থক-নৈবেদ্য পাঠাব?” \p তারা উত্তর দিল, “ফিলিস্তিনী শাসনকর্তাদের সংখ্যানুসারে পাঁচটি সোনার আব এবং পাঁচটি সোনার ইঁদুর, কারণ একই আঘাত তোমাদের উপর ও তোমাদের শাসনকর্তাদের উপরও নেমে এসেছে। \v 5 তোমরা দেশ ধ্বংসকারী আব ও ইঁদুরের ছাঁচ গড়ে তোলো, এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করো। হয়তো তিনি তোমাদের, তোমাদের দেবদেবীদের ও তোমাদের দেশের উপর থেকে তাঁর হাত সরিয়ে নেবেন। \v 6 মিশরীয়দের ও ফরৌণের মতো তোমরাও কেন তোমাদের অন্তর কঠোর করছ? ইস্রায়েলের ঈশ্বর যখন তাদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করেছিলেন, তারা কি ইস্রায়েলীদের যেতে দিতে বাধ্য হয়নি? \p \v 7 “তবে এখন, নতুন একটি গাড়ি সমেত দুটি এমন গরু প্রস্তুত রাখো, যেগুলির বাছুর আছে ও যেগুলির ঘাড়ে কখনও জোয়াল চাপেনি। গরু দুটিকে গাড়ির সঙ্গে জুড়ে দিয়ো, কিন্তু তাদের বাছুরগুলিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে খোঁয়াড়ে পুরে দিয়ো। \v 8 সদাপ্রভুর সিন্দুকটিকে নিয়ে সেটিকে গাড়ির উপরে রেখো, এবং সেটির পাশে একটি কাঠের বাক্সের মধ্যে সেইসব সোনার বস্তু রেখে দিয়ো, যেগুলি তোমরা দোষার্থক-নৈবেদ্যরূপে তাঁর কাছে পাঠাচ্ছ। গাড়িটিকে নিজের মতো করে যেতে দিয়ো, \v 9 তবে সেটির উপর নজর রেখো। সেটি যদি নিজের এলাকায়, বেত-শেমশের দিকে যায়, তবে জানবে যে সদাপ্রভুই আমাদের উপর এই মহা দুর্বিপাক এনেছেন। কিন্তু যদি সেটি সেদিকে না যায়, তবে আমরা জানব যে তাঁর হাত আমাদের আঘাত করেনি কিন্তু হঠাৎ করেই তা আমাদের প্রতি ঘটে গিয়েছে।” \p \v 10 অতএব তারা এরকমই করল। তারা এ ধরনের দুটি গরু নিয়ে সেগুলি গাড়িতে জুড়ে দিল ও বাছুরগুলিকে খোঁয়াড়ে পুরে দিল। \v 11 সদাপ্রভুর সিন্দুকটি তারা গাড়িটির উপর বসিয়ে দিল এবং সেটির পাশাপাশি তারা কাঠের বাক্সের মধ্যে সোনার ইঁদুর ও আবের ছাঁচও রেখে দিল। \v 12 গরুগুলি তখন সোজা পথের মাঝখান দিয়ে হাম্বা হাম্বা ডাক ছেড়ে বেত-শেমশের দিকে এগিয়ে গেল; সেগুলি ডাইনে বা বাঁয়ে, কোনোদিকেই ঘোরেনি। বেত-শেমশের সীমান্ত পর্যন্ত ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা সেগুলির পশ্চাদ্ধাবন করে গেল। \p \v 13 বেত-শেমশের\f + \fr 6:13 \fr*\ft বেত-শেমশ শব্দের অর্থ সূর্যের বাড়ি\ft*\f* মানুষজন তখন উপত্যকায় ক্ষেতের গম কাটছিল, আর চোখ তুলে চেয়ে তারা সিন্দুকটি দেখতে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠল। \v 14 গাড়িটি বেত-শেমশের অধিবাসী যিহোশূয়ের ক্ষেতে পৌঁছে বিশাল এক পাষাণ-পাথরের পাশে এসে দাঁড়াল। সেখানকার মানুষজন গাড়িটির কাঠ কেটে গরুগুলি হোমবলিরূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করে দিল। \v 15 লেবীয়রা সোনার বস্তুগুলি দিয়ে ভরা বাক্সটি সমেত সদাপ্রভুর সিন্দুকটিকে নামিয়ে এনে সেগুলি সেই বিশাল পাষাণ-পাথরটির উপর সাজিয়ে রাখল। সেইদিন বেত-শেমশের লোকজন সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমবলি ও উপহার উৎসর্গ করল। \v 16 ফিলিস্তিনীদের পাঁচজন শাসনকর্তা এসব দেখার পর সেদিনই ইক্রোণে ফিরে গেল। \p \v 17 সদাপ্রভুর উদ্দেশে দোষার্থক-নৈবেদ্যরূপে ফিলিস্তিনীরা যে সোনার আবগুলি পাঠিয়েছিল সেগুলি হল—অস্‌দোদ, গাজা, অস্কিলোন, গাৎ ও ইক্রোণের জন্য এক-একটি করে পাঠানো সোনার আব। \v 18 সোনার ইঁদুরের সংখ্যা নিরূপিত হল পাঁচজন শাসনকর্তার অধিকারে থাকা ফিলিস্তিনী নগরের—গ্রাম্য এলাকা সমেত প্রাচীরবেষ্টিত নগরের সংখ্যানুসারে। যে বিশাল পাষাণ-পাথরটির উপর লেবীয়রা সদাপ্রভুর সিন্দুকটিকে রেখেছিল, সেটি আজও পর্যন্ত বেত-শেমশের অধিবাসী যিহোশূয়ের ক্ষেতে সাক্ষ্য-স্তম্ভ হয়ে আছে। \p \v 19 কিন্তু ঈশ্বর বেত-শেমশের অধিবাসীদের মধ্যে কয়েকজনকে আঘাত করলেন, তাদের মধ্যে সত্তর জনকে\f + \fr 6:19 \fr*\ft অধিকাংশ হিব্রু পাণ্ডুলিপি অনুসারে, সংখ্যাটি হল 50,070 জন।\ft*\f* মেরে ফেললেন কারণ তারা সদাপ্রভুর সিন্দুকের ভিতরে তাকিয়েছিল। সদাপ্রভু লোকজনের উপর এই ভীষণ আঘাত হেনেছিলেন বলে তারা শোকপ্রকাশ করল। \v 20 বেত-শেমশের অধিবাসীরা প্রশ্ন করল, “এই পবিত্র ঈশ্বরের, সদাপ্রভুর সামনে কে দাঁড়াতে পারে? এখান থেকে সিন্দুকটি কাদের কাছে যাবে?” \p \v 21 পরে তারা কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের অধিবাসীদের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, “ফিলিস্তিনীরা সদাপ্রভুর সিন্দুকটি ফেরত পাঠিয়েছে। তোমরা নেমে এসো এবং সেটি তোমাদের নগরে নিয়ে যাও।” \c 7 \nb \v 1 তাই কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের অধিবাসীরা এসে সদাপ্রভুর সিন্দুকটি নিয়ে গেল। তারা সেটিকে পাহাড়ের উপর অবস্থিত অবীনাদবের বাড়িতে এনে তুলল এবং সদাপ্রভুর সিন্দুকটি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য তাঁর ছেলে ইলিয়াসরকে উৎসর্গীকৃত করল। \v 2 সিন্দুকটি বেশ কিছুকাল—প্রায় কুড়ি বছর কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে রাখা ছিল। \s1 মিস্‌পাতে শমূয়েল ফিলিস্তিনীদের প্রশমিত করলেন \p সেই সময় ইস্রায়েলী জনগণ সদাপ্রভুর দিকে ফিরে এসেছিল। \v 3 অতএব শমূয়েল সব ইস্রায়েলীকে বললেন, “যদি তোমরা সর্বান্তঃকরণে সদাপ্রভুর দিকে ফিরে আসতে চাও, তবে তোমাদের মধ্যে থেকে ভিনদেশী দেবতাদের ও অষ্টারোৎ দেবীদের দূর করে দাও এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিজেদের সমর্পণ করো ও একমাত্র তাঁরই সেবা করো, তবে দেখবে তিনি ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবেন।” \v 4 অতএব ইস্রায়েলীরা তাদের বায়াল-দেবতাদের ও অষ্টারোৎ দেবীদের দূর করে দিল, এবং একমাত্র সদাপ্রভুরই সেবা করল। \p \v 5 তখন শমূয়েল বললেন, “ইস্রায়েলের সব লোকজনকে মিস্‌পাতে সমবেত করো, আর আমি তোমাদের জন্য সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ জানাব।” \v 6 তারা মিস্‌পাতে সমবেত হয়ে, জল সংগ্রহ করে সদাপ্রভুর সামনে তা ঢেলে দিল। সেদিন তারা উপবাস রেখে, সেখানে পাপস্বীকার করে বলল, “সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে আমরা পাপ করেছি।” শমূয়েল তখন মিস্‌পাতে থেকে ইস্রায়েলের নেতা\f + \fr 7:6 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচারক; 15 পদের ক্ষেত্রেও যা প্রযোজ্য।\ft*\f* হয়ে সেবাকাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। \p \v 7 ফিলিস্তিনীরা যখন শুনল যে ইস্রায়েল মিস্‌পাতে সমবেত হয়েছে, তখন ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা ইস্রায়েলীদের আক্রমণ করতে উঠে এল। ইস্রায়েলীরা তা শুনে ফিলিস্তিনীদের কারণে ভয় পেয়ে গেল। \v 8 তারা শমূয়েলকে বলল, “আমাদের জন্য আপনি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আর্তনাদ করা বন্ধ করবেন না, যেন তিনি আমাদের ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে পারেন।” \v 9 তখন শমূয়েল একটি দুগ্ধপোষ্য মেষশাবক নিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে সেটিকে এক অখণ্ড হোমবলিরূপে উৎসর্গ করলেন। ইস্রায়েলের হয়ে তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশে আর্তনাদ করলেন, এবং সদাপ্রভু তাঁকে উত্তরও দিলেন। \p \v 10 শমূয়েল যখন হোমবলি উৎসর্গ করছিলেন, তখন ফিলিস্তিনীরা ইস্রায়েলীদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য এগিয়ে এল। কিন্তু সেদিন ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু প্রচণ্ড গর্জনে বজ্রপাত করলেন এবং তাদের মধ্যে এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে দিলেন যে তারা ইস্রায়েলীদের সামনে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল। \v 11 ইস্রায়েলীরা মিস্‌পা থেকে ছুটে এসে ফিলিস্তিনীদের পিছু ধাওয়া করল, ও তাদের হত্যা করতে করতে বেথ-করের তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছে গেল। \p \v 12 তখন শমূয়েল একটি পাথর নিয়ে সেটিকে মিস্‌পা ও শেনের মাঝখানে প্রতিষ্ঠা করলেন। তিনি এই বলে সেটির নাম রাখলেন এবন-এষর\f + \fr 7:12 \fr*\ft এর অর্থ, সাহায্যের পাথর\ft*\f* যে, “এযাবৎ সদাপ্রভু আমাদের সাহায্য করেছেন।” \p \v 13 অতএব ফিলিস্তিনীরা বশীভূত হল এবং তারা ইস্রায়েলের এলাকায় সশস্ত্র আক্রমণ করা বন্ধ করল। শমূয়েলের সমগ্র জীবনকালে, সদাপ্রভুর হাত ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে প্রসারিত হয়েই ছিল। \v 14 ইক্রোণ থেকে গাৎ পর্যন্ত যেসব ছোটো ছোটো নগর ফিলিস্তিনীরা ইস্রায়েলের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছিল, সেগুলি আবার ইস্রায়েলের কাছে ফিরিয়ে দিতে হল, এবং ইস্রায়েলীরা পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিও ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে মুক্ত করল। ইস্রায়েল ও ইমোরীয়দের মধ্যেও শান্তি বলবৎ ছিল। \p \v 15 শমূয়েল আজীবন ইস্রায়েলের নেতা হয়েই থেকে গেলেন। \v 16 বছরের পর বছর তিনি বেথেল থেকে শুরু করে গিল্‌গল থেকে মিস্‌পা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে সেইসব স্থানে ইস্রায়েলের বিচার করে বেড়াতেন। \v 17 কিন্তু সবসময় তিনি সেই রামাতে ফিরে যেতেন, যেখানে তাঁর ঘরবাড়ি ছিল, এবং সেখানে তিনি ইস্রায়েলের জন্য বিচারসভারও আয়োজন করতেন। সেখানে তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি বেদিও নির্মাণ করলেন। \c 8 \s1 ইস্রায়েলীরা একজন রাজা দাবি করল \p \v 1 শমূয়েল যখন বৃদ্ধ হয়ে গেলেন, তখন তিনি তাঁর ছেলেদের ইস্রায়েলের নেতারূপে\f + \fr 8:1 \fr*\ft ঐতিহ্যগতভাবে, বিচারক\ft*\f* নিযুক্ত করলেন। \v 2 তাঁর প্রথমজাত ছেলের নাম যোয়েল ও দ্বিতীয়জনের নাম অবিয়, এবং তারা বের-শেবায় সেবাকাজে লিপ্ত ছিল। \v 3 কিন্তু তাঁর ছেলেরা তাঁর পথে চলত না। তারা অসাধু উপায়ে অর্থলাভের পথে গেল এবং ঘুস নিত তথা ন্যায়বিচার বিকৃত করত। \p \v 4 তাই ইস্রায়েলের সব প্রাচীন একজোট হয়ে রামাতে শমূয়েলের কাছে এলেন। \v 5 তারা তাঁকে বললেন, “আপনার বয়স হয়েছে, আর আপনার ছেলেরাও আপনার পথে চলে না; এখন তাই আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার\f + \fr 8:5 \fr*\ft অথবা, বিচার করার; 6 ও 20 পদের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য\ft*\f* জন্য একজন রাজা নিযুক্ত করুন, যেমন অন্য সব জাতিরও রাজা আছে।” \p \v 6 “আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একজন রাজা দিন,” তাদের বলা এই কথাটি কিন্তু শমূয়েলকে অসন্তুষ্ট করল; তাই তিনি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। \v 7 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন: “লোকেরা তোমায় যা যা বলছে তুমি তা শুনে নাও; তারা যে তোমায় প্রত্যাখ্যান করেছে তা নয়, কিন্তু তাদের রাজারূপে তারা আমাকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। \v 8 যেদিন আমি তাদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলাম, সেদিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তারা যেভাবে আমাকে ছেড়ে অন্যান্য দেবদেবীর সেবা করে এসেছে, সেরকম আচরণ তারা তোমার প্রতিও করছে। \v 9 এখন তুমি তাদের কথা শোনো; কিন্তু শপথপূর্বক তুমি তাদের সতর্ক করে দাও এবং তারা জানুক, যে রাজা তাদের উপর রাজত্ব করতে চলেছেন, তিনি তাঁর অধিকাররূপে কী দাবি জানাবেন।” \p \v 10 যারা শমূয়েলের কাছে একজন রাজা চেয়েছিল, তাদের তিনি সদাপ্রভুর বলা সব কথা বলে শোনালেন। \v 11 তিনি বললেন, “যে রাজা তোমাদের উপর রাজত্ব করবেন, তিনি তাঁর অধিকাররূপে তোমাদের কাছে এই দাবি জানাবেন: তিনি তোমাদের ছেলেদের নিয়ে তাঁর রথ ও অশ্বগুলির পরিচর্যাকাজে লাগাবেন, ও তারা তাঁর রথের সামনে সামনে দৌড়াবে। \v 12 তাদের মধ্যে কয়েকজনকে তিনি সহস্র-সেনাপতি ও পঞ্চাশ-সেনাপতি পদে নিযুক্ত করবেন, এবং অন্য কয়েকজনকে তিনি তাঁর জমি চাষ করার ও ফসল কাটার কাজে লাগাবেন, এবং অন্য আরও কয়েকজনকে যুদ্ধাস্ত্র ও তাঁর রথের সাজসরঞ্জাম তৈরির কাজে লাগাবেন। \v 13 তিনি তোমাদের মেয়েদের নিয়ে তাদের সুগন্ধি-প্রস্তুতকারিনী, রাঁধুনী ও রুটিওয়ালী করে ছাড়বেন। \v 14 তিনি তোমাদের সেরা চাষযোগ্য জমি, দ্রাক্ষাক্ষেত ও জলপাই-এর বাগানগুলি কেড়ে নিয়ে, সেগুলি তাঁর পরিচারকদের হাতে তুলে দেবেন। \v 15 তিনি তোমাদের ফসলের ও মরশুমী দ্রাক্ষারসের দশমাংশ আদায় করে তা তাঁর কর্মকর্তা ও পরিচারকদের হাতে তুলে দেবেন। \v 16 তোমাদের দাস-দাসীদের ও সেরা পশুপাল\f + \fr 8:16 \fr*\ft অথবা, যুবকদের\ft*\f* ও গাধার পাল তিনি নিজের ব্যবহারের জন্য দখল করে নেবেন। \v 17 তিনি তোমাদের পশুপালের দশমাংশ ছিনিয়ে নেবেন, ও তোমরা নিজেরাই তাঁর ক্রীতদাস-দাসীতে পরিণত হবে। \v 18 এমন একদিন আসতে চলেছে, যেদিন তোমরা তোমাদেরই মনোনীত রাজার হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য আর্তনাদ করবে, কিন্তু সেদিন সদাপ্রভু তোমাদের কোনও উত্তর দেবেন না।” \p \v 19 কিন্তু লোকেরা শমূয়েলের কথা শুনতেই চায়নি। তারা বলল, “আরে ধুর! আমরা একজন রাজা চাই। \v 20 তবেই তো আমরা অন্য সব জাতির মতো হতে পারব, একজন রাজা আমাদের উপর রাজত্ব করবেন এবং তিনিই আমাদের অগ্রগামী হবেন ও আমাদের হয়ে যুদ্ধও করবেন।” \p \v 21 শমূয়েল লোকদের সব কথা শোনার পর তিনি সদাপ্রভুর কাছে আবার তা বলে শোনালেন। \v 22 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “তাদের কথা শোনো ও তাদের জন্য একজন রাজা ঠিক করে দাও।” \p পরে শমূয়েল ইস্রায়েলীদের বললেন, “তোমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের নগরে ফিরে যাও।” \c 9 \s1 শমূয়েল শৌলকে রাজপদে অভিষিক্ত করলেন \p \v 1 সেখানে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত বিন্যামীন বংশীয় একজন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁর নাম কীশ। কীশ অবীয়েলের ছেলে, অবীয়েল সরোরের ছেলে, সরোর বখোরতের ছেলে, বখোরত বিন্যামীন বংশীয় অফিয়ের ছেলে ছিলেন। \v 2 কীশের এক ছেলে ছিল, যাঁর নাম শৌল। তিনি এত সুদর্শন ছিলেন যে ইস্রায়েল দেশে কোথাও তাঁর মতো একজনও যুবক খুঁজে পাওয়ার উপায় ছিল না, এবং তিনি অন্য সবার চেয়ে বেশ কিছুটা লম্বা ছিলেন। \p \v 3 শৌলের বাবা কীশের কয়েকটি গাধি হারিয়ে গিয়েছিল, তাই কীশ তাঁর ছেলে শৌলকে বললেন, “দাসদের মধ্যে একজনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে গাধিগুলির খোঁজ করো।” \v 4 তাই তিনি ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকা হয়ে শালিশা অঞ্চলে এক চক্কর ঘুরে এলেন, কিন্তু সেগুলির খোঁজ পেলেন না। তখন তাঁরা শালীম প্রদেশ পর্যন্ত গেলেন, কিন্তু গাধিগুলি সেখানেও ছিল না। পরে তিনি বিন্যামিনীয়দের এলাকাতেও গেলেন, কিন্তু সেগুলির খোঁজ পাওয়া যায়নি। \p \v 5 তাঁরা যখন সূফ জেলায় পৌঁছালেন, শৌল তখন তাঁর সঙ্গে চলা দাসকে বললেন, “এসো, আমরা ফিরে যাই, তা না হলে আমার বাবা গাধিগুলির জন্য চিন্তা করা বন্ধ করে দিয়ে আমাদের জন্যই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন।” \p \v 6 কিন্তু সেই দাস উত্তর দিল, “দেখুন, এই নগরে ঈশ্বরের একজন লোক আছেন; তাঁকে সবাই খুব সম্মান করে, এবং তিনি যা যা বলেন, সব সত্যি হয়। চলুন না, সেখানে একবার যাওয়া যাক। হয়তো তিনি আমাদের বলে দেবেন কোন পথে যেতে হবে।” \p \v 7 শৌল তাঁর দাসকে বললেন, “আমরা সেখানে গিয়ে ভদ্রলোককে কী-ই বা দিতে পারব? আমাদের থলিতে রাখা সব খাবারদাবার শেষ হয়ে গিয়েছে। ঈশ্বরের লোকের কাছে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো উপহারও আমাদের কাছে নেই। আমাদের কাছে কিছু আছে কি?” \p \v 8 দাস আবার তাঁকে উত্তর দিল। সে বলল, “দেখুন, আমার কাছে এক শেকলের\f + \fr 9:8 \fr*\ft প্রায় তিন গ্রাম\ft*\f* চার ভাগের এক ভাগ রুপো আছে। আমি সেটি ঈশ্বরের লোককে দিয়ে দেব যেন তিনি আমাদের বলে দেন, কোন পথে আমাদের যেতে হবে।” \v 9 (প্রাচীনকালে ইস্রায়েল দেশে, যদি কেউ ঈশ্বরের কাছে কোনো কিছুর খোঁজ নিতে যেত, তখন তারা বলত, “এসো, দর্শকের কাছে যাওয়া যাক,” কারণ বর্তমানে যাদের ভাববাদী বলা হয়, আগে তাদের দর্শক বলা হত।) \p \v 10 শৌল তাঁর দাসকে বললেন, “ঠিক আছে, চলো, সেখানে যাওয়া যাক।” অতএব তাঁরা সেই নগরটির উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলেন, যেখানে ঈশ্বরের লোক তখন ছিলেন। \p \v 11 পাহাড় পেরিয়ে যখন তাঁরা নগরটির দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁরা এমন কয়েকজন যুবতী মহিলার দেখা পেলেন যারা জল ভরতে যাচ্ছিল। তাঁরা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “দর্শক কি এখানে আছেন?” \p \v 12 তারা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, তিনি আপনাদের থেকে একটু আগেই আছেন। তাড়াতাড়ি যান; তিনি একটু আগেই আমাদের নগরে এসেছেন, কারণ টিলার উপর আজ লোকেরা এক বলি উৎসর্গ করবে। \v 13 তিনি টিলায় ভোজনপান করতে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে যাওয়ার আগে, নগরে প্রবেশ করলেই আপনারা তাঁর দেখা পাবেন। তিনি না আসা পর্যন্ত লোকেরা ভোজনপান শুরু করবে না, কারণ প্রথমে তাঁকেই বলির নৈবেদ্যটিতে আশীর্বাদ বর্ষণ করতে হবে; পরে নিমন্ত্রিত লোকেরা ভোজনপান করবে। এখনই চলে যান; অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর দেখা পেয়ে যাবেন।” \p \v 14 তাঁরা নগরটির দিকে যাচ্ছিলেনই, আর ঠিক যখন তাঁরা সেখানে প্রবেশ করবেন, শমূয়েল টিলায় চড়ার পথে তাঁদের দিকে এগিয়ে এলেন। \p \v 15 এদিকে শৌল আসার একদিন আগেই সদাপ্রভু শমূয়েলের কাছে একথা প্রকাশ করে দিয়েছিলেন: \v 16 “আগামীকাল প্রায় এইসময়েই আমি তোমার কাছে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত অঞ্চল থেকে একজন লোককে পাঠাব। তুমি তাকে আমার প্রজা ইস্রায়েলের উপর শাসনকর্তা পদে অভিষিক্ত করবে; সে ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে তাদের মুক্ত করবে। আমি আমার প্রজাদের দিকে দৃষ্টিপাত করেছি, কারণ তাদের আর্তনাদ আমার কাছে পৌঁছে গিয়েছে।” \p \v 17 শৌলের দিকে শমূয়েলের চোখ পড়ার সাথে সাথেই সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “এই লোকটির কথাই আমি তোমাকে বলেছিলাম; এই আমার প্রজাদের পরিচালনা করবে।” \p \v 18 সদর দরজায় গিয়ে শৌল শমূয়েলের কাছাকাছি পৌঁছে জিজ্ঞাসা করলেন, “দয়া করে আমায় জানাবেন কি, দর্শকের বাড়িটি কোথায়?” \p \v 19 শমূয়েল তাঁকে উত্তর দিলেন, “আমিই সেই দর্শক। আমার আগে আগে টিলায় চড়, কারণ আজ তোমরা আমার সঙ্গে ভোজনপান করবে, আর সকালবেলায় আমি তোমাদের বিদায় দেব ও তোমার মনে যা যা আছে সব বলে দেব। \v 20 তিন দিন আগে তোমাদের যে গাধিগুলি হারিয়ে গিয়েছিল, সেগুলির সম্বন্ধে দুশ্চিন্তা কোরো না; সেগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। আর ইস্রায়েলের সব বাসনা কার দিকে ঘুরে গিয়েছে, সে কি তোমার ও তোমার সব পরিবার-পরিজনের দিকে নয়?” \p \v 21 শৌল উত্তর দিলেন, “আমি কি সেই বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত নই, যা ইস্রায়েলের মধ্যে সবচেয়ে ছোটো গোষ্ঠী, এবং আমার বংশই কি বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত সব বংশের মধ্যে সবচেয়ে ছোটো বংশ নয়? তবে কেন আপনি আমাকে এ ধরনের কথা বলছেন?” \p \v 22 তখন শমূয়েল, শৌল ও তাঁর দাসকে বড়ো খাবার ঘরে নিয়ে এসে নিমন্ত্রিত—প্রায় ত্রিশজন অতিথির মধ্যে সম্মানজনক স্থানে তাঁদের বসিয়ে দিলেন। \v 23 শমূয়েল রাঁধুনীকে বললেন, “মাংসের যে টুকরোটি আমি তোমায় সরিয়ে রাখতে বলেছিলাম, সেটি নিয়ে এসো।” \p \v 24 অতএব রাঁধুনী রানের টুকরোটি ও সেটির সঙ্গে লেগে থাকা মাংস এনে শৌলের পাতে সাজিয়ে দিল। শমূয়েল বললেন, “এগুলি তোমারই জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। খাও, কারণ ‘আমি অতিথিদের নিমন্ত্রণ করেছি,’ একথা বলার সময় থেকে শুরু করে এখন এই উপলক্ষের জন্যই এগুলি সরিয়ে রাখা হয়েছে।” সেদিন শৌল শমূয়েলের সঙ্গে ভোজনপান করলেন। \p \v 25 টিলা থেকে তাঁরা নগরে নেমে আসার পর, শমূয়েল তাঁর বাড়ির ছাদে উঠে শৌলের সঙ্গে কথাবার্তা বললেন। \v 26 ভোর প্রায় হয়ে আসছিল, তখনই তাঁরা উঠে পড়লেন, এবং শমূয়েল শৌলকে ছাদেই ডেকে বললেন, “তৈরি হয়ে নাও, আমি তোমাদের বাড়িতে ফেরত পাঠাব।” শৌল তৈরি হওয়ার পর তিনি ও শমূয়েল একসঙ্গেই বাইরে বের হলেন। \v 27 তাঁরা নগরের প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই শমূয়েল শৌলকে বললেন, “দাসটিকে একটু এগিয়ে যেতে বলো,” আর দাসও তেমনটিই করল, “কিন্তু তুমি এখানে কিছুক্ষণ থেকে যাও, যেন আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা একটি বাণী তোমাকে দিতে পারি।” \c 10 \p \v 1 একথা বলে শমূয়েল এক কুপি জলপাইয়ের তেল নিয়ে শৌলের মাথায় তা ঢেলে দিলেন ও তাঁকে চুমু দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভুই কি তোমাকে তাঁর অধিকারের\f + \fr 10:1 \fr*\ft অথবা, প্রজা ইস্রায়েলের\ft*\f* উপর শাসনকর্তা পদে অভিষিক্ত করেননি? \v 2 আজ আমায় ছেড়ে যাওয়ার পর, বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত এলাকার সীমানায় সেলসহ বলে একটি স্থানে রাহেলের সমাধির কাছে তুমি দুজন লোকের দেখা পাবে। তারা তোমাকে বলবে, ‘যে গাধিগুলির খোঁজে আপনি গিয়েছিলেন, সেগুলি পাওয়া গিয়েছে। এখন আপনার বাবা সেগুলির কথা না ভেবে বরং আপনার কথা ভেবেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি জানতে চাইছেন, “আমার ছেলের জন্য আমি কী করব?” ’ \p \v 3 “তারপর তুমি সেখান থেকে তাবোরের ওক\f + \fr 10:3 \fr*\ft অথবা, বড়ো\ft*\f* গাছটির কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছাবে। বেথেলে আরাধনা করতে যাচ্ছে, এমন তিনটি লোকের সঙ্গে সেখানে তোমার দেখা হবে। দেখবে একজন তিনটি ছাগলছানা, অন্যজন তিনটি রুটি, আর একজন এক মশক ভর্তি দ্রাক্ষারস বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। \v 4 তারা তোমায় শুভেচ্ছা জানাবে এবং তোমাকে দুটি রুটি নিতে বলবে, যা তুমি তাদের কাছ থেকে গ্রহণও করবে। \p \v 5 “পরে তুমি ঈশ্বরের গিবিয়াতে\f + \fr 10:5 \fr*\ft হিব্রু ভাষায়, গিবিয়ৎ-এলোহিমে\ft*\f* যাবে, যেখানে ফিলিস্তিনীদের একটি সেনা-ছাউনি আছে। নগরে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই, তুমি একদল ভাববাদীকে শোভাযাত্রা করে টিলা থেকে নেমে আসতে দেখবে। তাঁদের সামনে সামনে লোকেরা দোতারা, খোল, বাঁশি ও বীণা বাজাবে, এবং তাঁরা ভাববাণী বলবেন। \v 6 সদাপ্রভুর আত্মা প্রবল পরাক্রমে তোমার উপর নেমে আসবেন, এবং তুমিও তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে ভাববাণী বলবে; আর তুমি পরিবর্তিত হয়ে গিয়ে একদম অন্যরকম মানুষ হয়ে যাবে। \v 7 একবার এই চিহ্নগুলি সার্থক হতে দাও, পরে তুমি যা যা করতে চাও, সব কোরো, কারণ ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন। \p \v 8 “আমার আগে আগেই তুমি গিল্‌গলে নেমে যাও। আমিও অবশ্যই হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য তোমার কাছে নেমে আসব, কিন্তু আমি এসে তোমাকে কী করতে হবে, তা না বলা পর্যন্ত তোমাকে সাত দিন অপেক্ষা করতেই হবে।” \s1 শৌলকে রাজা করা হল \p \v 9 শমূয়েলের কাছ থেকে চলে যাওয়ার জন্য শৌল ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই, ঈশ্বর শৌলের অন্তর পরিবর্তিত করে দিলেন, এবং সেদিনই সেইসব চিহ্ন সার্থক হল। \v 10 যখন তিনি ও তাঁর দাস গিবিয়াতে পৌঁছালেন, শোভাযাত্রা করে আসা ভাববাদীদের সঙ্গে তাঁর দেখা হল; ঈশ্বরের আত্মা প্রবল পরাক্রমে তাঁর উপর নেমে এলেন, এবং তিনিও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ভাববাণী বললেন। \v 11 যখন তাঁর পূর্বপরিচিত লোকেরা ভাববাদীদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও ভাববাণী বলতে দেখল, তারা তখন পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করল, “কীশের ছেলের হোলো-টা কী? শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” \p \v 12 সেখানে বসবাসকারী একজন উত্তর দিল, “আর এদের বাবাই বা কে?” অতএব এটি এক প্রবাদবাক্যে পরিণত হল: “শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” \v 13 শৌল ভাববাণী বলা শেষ করে, টিলায় উঠে গেলেন। \p \v 14 পরে শৌলের কাকা তাঁকে ও তাঁর দাসকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কোথায় গিয়েছিলে?” \p “গাধিগুলির খোঁজে,” তিনি উত্তর দিলেন। “কিন্তু সেগুলির খোঁজ না পেয়ে আমরা শমূয়েলের কাছে চলে গিয়েছিলাম।” \p \v 15 শৌলের কাকা বললেন, “আমায় বলো শমূয়েল তোমায় কী বলেছেন।” \p \v 16 শৌল উত্তর দিলেন, “তিনি আমাদের আশ্বস্ত করে বললেন যে গাধিগুলি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।” কিন্তু শমূয়েল রাজপদের বিষয়ে কী বলেছিলেন তা তিনি তাঁর কাকাকে বলেননি। \p \v 17 শমূয়েল লোকজনকে মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে উপস্থিত হওয়ার ডাক দিলেন \v 18 এবং তাদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথা বলেন: ‘আমি ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বাইরে বের করে এনেছি, এবং তোমাদের উপর যারা অত্যাচার করত, সেই মিশরের ও অন্য সব রাজ্যের হাত থেকে আমিই তোমাদের মুক্ত করেছি।’ \v 19 কিন্তু এখন তোমরা তোমাদের সেই ঈশ্বরকেই নাকচ করে দিয়েছ, যিনি তোমাদের সব দুর্বিপাক ও বিপর্যয়ের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন। আর তোমরা বলেছ, ‘না, আমাদের উপর একজন রাজা নিযুক্ত করে দিন।’ তাই এখন তোমাদের গোষ্ঠী ও বংশ অনুসারে সদাপ্রভুর সামনে নিজেদের পেশ করো।” \p \v 20 শমূয়েল ইস্রায়েলের সব লোকজনকে তাদের গোষ্ঠী অনুসারে কাছে ডেকে আনার পর গুটিকাপাত করে বিন্যামীনের গোষ্ঠীকে বেছে নেওয়া হল। \v 21 পরে এক-একটি বংশ ধরে ধরে তিনি বিন্যামীনের গোষ্ঠীকে কাছে ডেকে এনেছিলেন, এবং মট্রীয় বংশকে মনোনীত করা হল। সবশেষে কীশের ছেলে শৌলকে মনোনীত করা হল। কিন্তু যখন তারা তাঁর খোঁজ করল, তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেল না। \v 22 অতএব তারা আরেকবার সদাপ্রভুর কাছে জানতে চাইল, “লোকটি কি এখনও এখানে আসেনি?” \p সদাপ্রভু বললেন, “হ্যাঁ, সে মালপত্রের মধ্যে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে।” \p \v 23 তারা দৌড়ে গিয়ে তাঁকে বের করে আনল, এবং তিনি লোকজনের মাঝখানে দাঁড়ালে দেখা গেল, তিনি অন্য সবার চেয়ে বেশ কিছুটা লম্বা। \v 24 শমূয়েল সব লোকজনকে বললেন, “সদাপ্রভু যাঁকে মনোনীত করেছেন তাঁকে কি তোমরা দেখতে পাচ্ছ? সব লোকজনের মধ্যে তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।” \p তখন লোকেরা চিৎকার করে বলে উঠল, “রাজা চিরজীবী হোন!” \p \v 25 শমূয়েল লোকজনের কাছে রাজপদের অধিকার ও দায়িত্ব-কর্তব্যগুলি ব্যাখ্যা করে দিলেন। একটি পুঁথিতে\f + \fr 10:25 \fr*\ft অথবা, গোটানো চামড়ার পুঁথি\ft*\f* সেগুলি লিখে রেখে তিনি সেটি সদাপ্রভুর সামনে গচ্ছিত রাখলেন। পরে শমূয়েল নিজের নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য লোকদের অনুমতি দিলেন। \p \v 26 শৌলও গিবিয়াতে নিজের ঘরে ফিরে গেলেন, ও তাঁর সঙ্গে গেলেন এমন কয়েকজন অসমসাহসী লোক, যাদের অন্তর ঈশ্বর স্পর্শ করেছিলেন। \v 27 কিন্তু কয়েকজন নীচমনা লোক বলল, “এ ‘ব্যাটা’ কীভাবে আমাদের রক্ষা করবে?” তারা তাঁকে অবজ্ঞা করল ও তাঁর জন্য কোনও উপহার আনল না। কিন্তু শৌল নীরব থেকে গেলেন। \c 11 \s1 শৌল যাবেশ-গিলিয়দ নগরটি রক্ষা করলেন \p \v 1 অম্মোনীয় নাহশ যাবেশ-গিলিয়দ আক্রমণ করে নগরটি অবরুদ্ধ করলেন। যাবেশের সব মানুষজন তাঁকে বলল, “আমাদের সঙ্গে আপনি এক শান্তিচুক্তি করুন, আর আমরাও আপনার বশীভূত হয়ে থাকব।” \p \v 2 কিন্তু অম্মোনীয় নাহশ উত্তর দিলেন, “আমি একমাত্র এই শর্তেই তোমাদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করব: আমি তোমাদের প্রত্যেকের ডান চোখ উপড়ে নেব ও এরকম করার দ্বারা সমগ্র ইস্রায়েল জাতিকে কলঙ্কিত করব।” \p \v 3 যাবেশের প্রাচীনেরা তাঁকে বললেন, “আমাদের সাত দিন সময় দিন যেন আমরা ইস্রায়েলের বিভিন্ন প্রান্তে দূত পাঠাতে পারি; যদি কেউ আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে না আসে, তবে আমরা আপনার হাতে নিজেদের সমর্পণ করে দেব।” \p \v 4 দূতেরা যখন শৌলের নগর গিবিয়াতে এসে লোকদের কাছে এইসব শর্তের খবর দিল, তারা সবাই চিৎকার করে কান্নাকাটি করল। \v 5 ঠিক সেই সময় শৌল বলদদের পিছু পিছু ক্ষেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “কী হয়েছে? এরা কাঁদছে কেন?” তখন যাবেশের লোকেরা যা যা বলল, তা তারা আরেকবার শৌলকে বলে শোনাল। \p \v 6 শৌল তাদের কথা শোনার পর, ঈশ্বরের আত্মা সপরাক্রমে তাঁর উপর নেমে এলেন, ও তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন। \v 7 তিনি এক জোড়া বলদ নিয়ে, সেগুলি টুকরো টুকরো করে কেটে দূতদের মাধ্যমে সেই টুকরোগুলি ইস্রায়েলের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দিয়ে ঘোষণা করলেন, “যদি কেউ শৌল ও শমূয়েলের অনুসরণ না করে তবে তার বলদদের প্রতিও এরকমই করা হবে।” তখন সদাপ্রভুর আতঙ্ক লোকজনের মনে বাসা বাঁধল, ও তারা একজোট হয়ে বাইরে বের হয়ে এল। \v 8 শৌল যখন বেষকে তাদের সমবেত করলেন, তখন ইস্রায়েলের জনসংখ্যা হল 3,00,000 জন ও যিহূদার হল 30,000 জন। \p \v 9 সেখানে আসা দূতদের তারা বলল, “যাবেশ-গিলিয়দের লোকদের গিয়ে তোমরা বোলো, ‘আগামীকাল সূর্য যখন মধ্য-গগনে থাকবে, তখনই তোমাদের রক্ষা করা হবে।’ ” দূতেরা গিয়ে যখন যাবেশের লোকদের কাছে এ খবর দিল, তারা খুব খুশি হল। \v 10 তারা অম্মোনীয়দের বলল, “আগামীকাল আমরা তোমাদের হাতে নিজেদের সমর্পণ করে দেব, আর তোমরা আমাদের প্রতি যা ইচ্ছা হয়, তাই কোরো।” \p \v 11 পরদিন শৌল তাঁর লোকজনকে তিন দলে বিভক্ত করলেন; রাতের শেষ প্রহরে তারা অম্মোনীয়দের সৈন্যশিবিরে ঝাঁপিয়ে পড়ল ও রোদ প্রখর হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর হত্যার তাণ্ডব চালিয়ে গেল। যারা বেঁচে গেল, তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল, তাতে এমন দশা হল যে তাদের মধ্যে দুজনও একসঙ্গে থাকতে পারেনি। \s1 শৌল রাজার স্বীকৃতি পেলেন \p \v 12 লোকজন তখন শমূয়েলকে বলল, “তারা কারা, যারা বলেছিল, ‘শৌল কি আমাদের উপর রাজত্ব করবে?’ সেইসব লোককে আমাদের হাতে তুলে দিন যেন আমরা তাদের মেরে ফেলতে পারি।” \p \v 13 কিন্তু শৌল বললেন, “আজ আর কাউকে মারা হবে না, কারণ আজকের এই দিনেই সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে রক্ষা করেছেন।” \p \v 14 তখন শমূয়েল লোকদের বললেন, “এসো, আমরা সবাই গিল্‌গলে যাই ও সেখানে নতুন করে রাজপদটি প্রতিষ্ঠিত করি।” \v 15 অতএব সব লোকজন গিল্‌গলে গিয়ে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে শৌলকে রাজা করল। সেখানে তারা সদাপ্রভুর সামনে মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করল, এবং শৌল ও ইস্রায়েলের সব লোকজন এক বড়ো অনুষ্ঠান করলেন। \c 12 \s1 শমূয়েলের বিদায়সম্ভাষণমূলক বক্তৃতা \p \v 1 শমূয়েল ইস্রায়েলের সব লোকজনকে বললেন, “তোমরা আমাকে যা যা বলেছিলে আমি সেসব শুনেছিলাম ও তোমাদের উপর একজন রাজা নিযুক্ত করে দিয়েছিলাম। \v 2 এখন তোমাদের নেতারূপে তোমরা একজন রাজা পেয়ে গিয়েছ। আমার ক্ষেত্রে বলি কি, আমার তো বয়স হয়েছে ও আমার চুলও পেকে গিয়েছে, আর আমার ছেলেরা এখানে তোমাদের সাথেই আছে। আমার যৌবনকাল থেকে আজকের এই দিনটি পর্যন্ত আমি তোমাদের নেতা হয়ে থেকেছি। \v 3 আমি এখানেই দাঁড়িয়ে আছি। সদাপ্রভু ও তাঁর অভিষিক্ত-জনের উপস্থিতিতে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে বলো দেখি: আমি কার বলদ নিয়েছি? কার গাধা নিয়েছি? কাকে ঠকিয়েছি? কার প্রতি অত্যাচার করেছি? কার হাত থেকে ঘুস নিয়ে আমি চোখ বন্ধ করে রেখেছি? যদি আমি এগুলির মধ্যে একটিও করে থাকি, তবে বলো, আমি তার ক্ষতিপূরণ করে দেব।” \p \v 4 তারা উত্তর দিল, “আপনি আমাদের ঠকাননি বা আমাদের উপর অত্যাচারও করেননি। আপনি কারও হাত থেকে কিছু গ্রহণও করেননি।” \p \v 5 শমূয়েল তাদের বললেন, “সদাপ্রভুই তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী রইলেন, আর আজ এই দিনে তাঁর অভিষিক্ত-জনও সাক্ষী রইলেন, যে তোমরা আমার হাতে কিছুই পাওনি।” \p “তিনিই সাক্ষী,” তারা বলল। \p \v 6 তখন শমূয়েল লোকদের বললেন, “সদাপ্রভুই মোশি ও হারোণকে নিযুক্ত করেছিলেন ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। \v 7 এখন তাই, এখানে দাঁড়াও, যেহেতু আমি সদাপ্রভুর সামনেই তোমাদের ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য সদাপ্রভুর করা সব ন্যায়নিষ্ঠ কাজের প্রমাণ তোমাদের কাছে তুলে ধরছি। \p \v 8 “যাকোব মিশরে প্রবেশ করার পর, তারা সাহায্য পাওয়ার আশায় সদাপ্রভুর কাছে আর্তনাদ করেছিল, এবং সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে এনে এই স্থানেই তাদের স্থায়ীভাবে বসবাস করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। \p \v 9 “কিন্তু তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গেল; তাই তিনি তাদের হাৎসোরের সৈন্যদলের সেনাপতি সীষরার হাতে এবং ফিলিস্তিনীদের ও মোয়াবের রাজার হাতে বিক্রি করে দিলেন, যারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। \v 10 তারা সদাপ্রভুর কাছে আর্তনাদ করে বলল, ‘আমরা পাপ করেছি; আমরা সদাপ্রভুকে ছেড়ে বায়াল-দেবতাদের ও অষ্টারোৎ দেবীদের পূজার্চনা করেছি। কিন্তু এখন তুমি এই শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো, আর আমরা তোমারই সেবা করব।’ \v 11 তখন সদাপ্রভু যিরুব্বায়াল,\f + \fr 12:11 \fr*\ft অথবা, গিদিয়োন\ft*\f* বারক,\f + \fr 12:11 \fr*\ft অথবা, বদান\ft*\f* যিপ্তহ ও শমূয়েলকে\f + \fr 12:11 \fr*\ft অথবা, শিম্‌শোন\ft*\f* পাঠিয়ে দিয়ে তোমাদের চারপাশে ঘিরে থাকা শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করলেন, যেন তোমরা নিরাপদে দেশে বসবাস করতে পারো। \p \v 12 “কিন্তু যখন তোমরা দেখলে যে অম্মোনীয়দের রাজা নাহশ তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করছেন, তোমরা আমাকে বললে, ‘না, আমাদের উপর রাজত্ব করার জন্য আমাদের একজন রাজা দরকার,’ যদিও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই তোমাদের রাজা হয়ে ছিলেন। \v 13 এখন এই তোমাদের সেই রাজা, যাঁকে তোমরা মনোনীত করেছ, যাঁকে তোমরা চেয়েছিলে; দেখো, সদাপ্রভু তোমাদের উপর একজন রাজা নিযুক্ত করেছেন। \v 14 যদি তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় করো ও তাঁর বাধ্য হয়ে তাঁর সেবা করো এবং তাঁর আদেশগুলির বিরুদ্ধে যদি বিদ্রোহ না করো, তথা তোমরা ও তোমাদের উপর রাজত্বকারী রাজা, উভয়েই যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অনুসরণ করো—তবে তো ভালোই! \v 15 কিন্তু তোমরা যদি সদাপ্রভুর বাধ্য না হও, ও তোমরা যদি তাঁর আদেশগুলির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করো, তবে তাঁর হাত তোমাদের বিরুদ্ধে উঠবে, যেভাবে তা তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিরুদ্ধে উঠেছিল। \p \v 16 “তবে এখন, স্থির হয়ে দাঁড়াও এবং তোমাদের চোখের সামনে সদাপ্রভু যে মহৎ কাজ করতে চলেছেন তা দেখে নাও! \v 17 এখনই কি গম কাটার সময় নয়? আমি সদাপ্রভুকে ডেকে বজ্রবিদ্যুৎ ও বৃষ্টি পাঠাতে বলব। তখনই তোমরা বুঝতে পারবে যে রাজা দাবি করে সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে তোমরা কতই না অন্যায় করেছ।” \p \v 18 পরে শমূয়েল সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, এবং সেদিনই সদাপ্রভু বজ্রবিদ্যুৎ ও বৃষ্টি পাঠিয়ে দিলেন। তখন সব মানুষজনের মনে সদাপ্রভুর ও শমূয়েলের প্রতি সম্ভ্রম উৎপন্ন হল। \p \v 19 সব মানুষজন শমূয়েলকে বলে উঠল, “আপনার দাসদের জন্য আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, যেন আমরা মারা না পড়ি, কারণ একজন রাজা দাবি করে যে অন্যায় আমরা করেছি, তা আমাদের করা অন্যান্য পাপের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে।” \p \v 20 শমূয়েল উত্তর দিলেন, “তোমরা ভয় পেয়ো না।” তোমরা এত অন্যায় করেছ; তবু সদাপ্রভুর কাছ থেকে সরে যেয়ো না, কিন্তু সর্বান্তঃকরণে সদাপ্রভুর সেবা করো। \v 21 অসার প্রতিমাদের দিকে ঘুরে যেয়ো না। সেগুলি তোমাদের মঙ্গলও করতে পারবে না, আর তোমাদের রক্ষাও করতে পারবে না, যেহেতু তারা যে অসার। \v 22 সদাপ্রভুর মহৎ নামের খাতিরেই তিনি তাঁর প্রজাদের প্রত্যাখ্যান করবেন না, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের তাঁর নিজস্ব প্রজা করতে পেরে খুব খুশি হয়েছেন। \v 23 আমার ক্ষেত্রে, আমি একথাই বলতে পারি, আমি যেন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করতে ব্যর্থ হয়ে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করে না বসি। আমি তোমাদের সেই পথ শিক্ষা দেব যা উত্তম ও সঠিক। \v 24 কিন্তু নিশ্চিত থেকো, যেন তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় কোরো ও সর্বান্তঃকরণে বিশ্বস্ততাপূর্বক তাঁর সেবা কোরো; বিবেচনা কোরো তিনি তোমাদের জন্য কী মহৎ কাজ করেছেন। \v 25 তবুও যদি তোমরা অন্যায় করেই যাও, তবে তোমরা ও তোমাদের রাজা, সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। \c 13 \s1 শমূয়েল শৌলকে ভর্ৎসনা করলেন \p \v 1 শৌল ত্রিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং তিনি ইস্রায়েলের উপর বিয়াল্লিশ\f + \fr 13:1 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় সংখ্যাটি অসম্পূর্ণ\ft*\f* বছর রাজত্ব করলেন। \p \v 2 শৌল ইস্রায়েল থেকে 3,000 জনকে বেছে নিলেন; 2,000 জন তাঁর সঙ্গে মিক্‌মসে ও বেথেলের পার্বত্য এলাকায় ছিল, এবং 1,000 জন যোনাথনের সঙ্গে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত গিবিয়াতে ছিল। অবশিষ্ট লোকজনকে তিনি তাদের ঘরে ফিরিয়ে দিলেন। \p \v 3 যোনাথন গেবাতে অবস্থিত ফিলিস্তিনীদের সেনা-ছাউনি আক্রমণ করলেন, এবং ফিলিস্তিনীরা তা শুনতে পেল। তখন শৌল গোটা দেশ জুড়ে শিঙা বাজিয়ে বললেন, “হিব্রু মানুষজন শুনুক!” \v 4 অতএব ইস্রায়েলের সব মানুষজন খবরটি শুনতে পেল: “শৌল ফিলিস্তিনীদের সেনা-ছাউনি আক্রমণ করেছেন, এবং ইস্রায়েল এখন ফিলিস্তিনীদের কাছে আপত্তিকর হয়ে গিয়েছে।” অতএব গিল্‌গলে শৌলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য প্রজাদের ডেকে পাঠানো হল। \p \v 5 3,000\f + \fr 13:5 \fr*\ft কয়েকটি প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, সংখ্যাটি হল 30,000\ft*\f* রথ, 6,000 সারথি, এবং সমুদ্র-সৈকতের বালুকণার মতো অসংখ্য সৈন্যসামন্ত নিয়ে ফিলিস্তিনীরা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য সমবেত হল। তারা বেথ-আবনের পূর্বদিকে অবস্থিত মিক্‌মসে গিয়ে শিবির স্থাপন করল। \v 6 ইস্রায়েলীরা যখন দেখল যে তাদের অবস্থা খুব শোচনীয় ও তাদের সৈন্যদল চাপে পড়ে গিয়েছে, তখন তারা গুহায় ও ঝোপঝাড়ে, শিলাস্তূপের খাঁজে, এবং খাদে ও জলাধারে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল। \v 7 হিব্রুদের মধ্যে কয়েকজন এমনকি জর্ডন নদী পেরিয়ে গাদ ও গিলিয়দ দেশেও চলে গেল। \p শৌল গিল্‌গলে থেকে গেলেন, এবং তাঁর সঙ্গে থাকা সব সৈন্যসামন্ত ভয়ে কাঁপছিল। \v 8 শমূয়েলের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ানুসারে তিনি সাত দিন অপেক্ষা করলেন; কিন্তু শমূয়েল গিল্‌গলে আসেননি, এবং শৌলের লোকজন ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করল। \v 9 তাই তিনি বললেন, “আমার কাছে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য নিয়ে এসো।” এই বলে শৌল হোমবলি উৎসর্গ করলেন। \v 10 তিনি বলি উৎসর্গ করতে না করতেই শমূয়েল সেখানে পৌঁছে গেলেন, এবং শৌল তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বাইরে বেরিয়ে এলেন। \p \v 11 শমূয়েল জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি এ কী করলে?” \p শৌল উত্তর দিলেন, “আমি যখন দেখলাম যে লোকজন ছত্রভঙ্গ হচ্ছে, এবং আপনিও নির্দিষ্ট সময়ে এলেন না, ইত্যবসরে আবার ফিলিস্তিনীরাও মিক্‌মসে সমবেত হচ্ছে, \v 12 তখন আমি ভাবলাম, ‘এবার ফিলিস্তিনীরা গিল্‌গলে আমার বিরুদ্ধে চড়াও হবে, আর আমি সদাপ্রভুর অনুগ্রহও প্রার্থনা করিনি।’ তাই বাধ্য হয়েই আমাকে হোমবলি উৎসর্গ করতে হল।” \p \v 13 শমূয়েল তাঁকে বললেন, “তুমি মূর্খের মতো কাজ করেছ। তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা তুমি পালন করোনি; যদি তুমি তা করতে, তবে তিনি চিরতরে ইস্রায়েলের উপর তোমার রাজত্ব স্থায়ী করে দিতেন। \v 14 কিন্তু এখন তোমার রাজত্ব আর স্থায়ী হবে না; সদাপ্রভু তাঁর মনের মতো এক মানুষ খুঁজে নিয়েছেন এবং তাকে তাঁর প্রজাদের শাসনকর্তারূপে নিযুক্ত করেছেন, কারণ তুমি সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করোনি।” \p \v 15 পরে শমূয়েল গিল্‌গল ছেড়ে বিন্যামীন প্রদেশের গিবিয়াতে চলে গেলেন, এবং শৌল তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনের সংখ্যা গণনা করলেন। তাদের সংখ্যা হল প্রায় 600। \s1 ইস্রায়েলের নিরস্ত্র দশা \p \v 16 শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথন এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা লোকজন বিন্যামীন প্রদেশের গিবিয়াতে ছিলেন, অন্যদিকে ফিলিস্তিনীরা মিক্‌মসে শিবির স্থাপন করেছিল। \v 17 ফিলিস্তিনীদের শিবির থেকে আক্রমণকারী সৈন্যরা তিন দলে বিভক্ত হয়ে বেরিয়ে এল। একদল সৈন্য শূয়াল এলাকায় অবস্থিত অফ্রার দিকে গেল, \v 18 অন্য দলটি গেল বেথ-হোরোণের দিকে, এবং তৃতীয় দলটি মরুপ্রান্তরের দিকে দৃষ্টি রেখে সিবোয়িম উপত্যকা লক্ষ্য করে সীমান্ত এলাকার দিকে গেল। \p \v 19 গোটা ইস্রায়েল দেশে কোনও কামার পাওয়া যাচ্ছিল না, কারণ ফিলিস্তিনীরা বলেছিল, “পাছে হিব্রুরা তরোয়াল বা বর্শা তৈরি করে!” \v 20 তাই ইস্রায়েলের সব লোকজন তাদের লাঙলের ফাল, কোদাল, কুড়ুল ও কাস্তে ধার করার জন্য ফিলিস্তিনীদের কাছে যেত। \v 21 লাঙলের ফাল ও কোদাল ধার করার জন্য দিতে হত এক শেকলের দুই-তৃতীয়াংশ\f + \fr 13:21 \fr*\ft প্রায় আট গ্রাম\ft*\f* রুপো এবং কাঁটা-বেলচা ও কুড়ুল ধার করার তথা অঙ্কুশ শান দেওয়ার জন্য দিতে হত এক শেকলের এক-তৃতীয়াংশ\f + \fr 13:21 \fr*\ft প্রায় চার গ্রাম\ft*\f* রুপো। \p \v 22 তাই যুদ্ধের দিনে শৌল ও যোনাথনের সঙ্গে থাকা একজনও সৈনিকের হাতে কোনও তরোয়াল বা বর্শা ছিল না; শুধু শৌল ও যোনাথনের হাতেই সেগুলি ছিল। \s1 যোনাথন ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করলেন \p \v 23 ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনী সৈন্যদলের একটি অংশ মিক্‌মসের সংকীর্ণ গিরিপথে চলে গিয়েছিল। \c 14 \nb \v 1 একদিন শৌলের ছেলে যোনাথন তাঁর অস্ত্র বহনকারী যুবক ছেলেটিকে বললেন, “এসো, অন্যদিকে অবস্থিত ফিলিস্তিনীদের সৈন্যশিবিরে যাওয়া যাক।” কিন্তু একথা তিনি তাঁর বাবাকে বলেননি। \p \v 2 শৌল গিবিয়ার প্রান্তদেশে মিগ্রোণে একটি ডালিম গাছের তলায় বসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল প্রায় 600 জন, \v 3 তাদের মধ্যে ছিলেন অহিয়, যাঁর পরনে ছিল এফোদ। তিনি ছিলেন অহীটূবের ছেলে, অহীটূব ছিলেন ঈখাবোদের ভাই, ঈখাবোদ ছিলেন পীনহসের ছেলে, এবং পীনহস ছিলেন সেই এলির ছেলে, যিনি শীলোতে সদাপ্রভুর যাজক ছিলেন। কেউই বুঝতে পারেনি যে যোনাথন বের হয়ে গিয়েছেন। \p \v 4 যে গিরিপথটি পেরিয়ে যোনাথন ফিলিস্তিনীদের সৈন্যশিবিরে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন সেটির দুধারেই একটি করে খাড়া বাঁধ ছিল; একটির নাম বোৎসেস ও অন্যটির নাম সেনি। \v 5 একটি খাড়া বাঁধ উত্তর দিকে মিক্‌মসের মুখোমুখি ছিল, অন্যটি ছিল দক্ষিণ দিকে গেবার মুখোমুখি। \p \v 6 যোনাথন তাঁর অস্ত্র বহনকারী যুবকটিকে বললেন, “চলো, আমরা ইত্যবসরে সেইসব লোকজনের ঘাঁটিতে যাই, যারা নেহাতই অধার্মিক।\f + \fr 14:6 \fr*\ft মূল ভাষায়, যাদের সুন্নত করা হয়নি\ft*\f* হয়তো সদাপ্রভু আমাদের হয়ে কাজ করবেন। বেশি লোক দিয়েই হোক বা অল্প লোক দিয়েই হোক, ঈশ্বর উদ্ধার করবেনই, কোনো কিছুই তাঁকে আটকাতে পারবে না।” \p \v 7 তাঁর অস্ত্র বহনকারী বলল, “আপনার যা মনে হয় তাই করুন। এগিয়ে যান, আমি মনেপ্রাণে আপনার সঙ্গে সঙ্গে আছি।” \p \v 8 যোনাথন বললেন, “তবে, এসো; আমরা পার হয়ে ওদের দিকে যাব এবং ওরাও আমাদের দেখুক। \v 9 যদি ওরা আমাদের বলে, ‘আমরা তোমাদের কাছে না আসা পর্যন্ত ওখানে অপেক্ষা করো,’ তবে আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব ও ওদের কাছে উঠে যাব না। \v 10 কিন্তু ওরা যদি বলে, ‘আমাদের কাছে উঠে এসে লড়ো,’ তবে আমরা উপরে উঠে যাব, কারণ সেটিই আমাদের কাছে এই চিহ্ন হয়ে যাবে যে সদাপ্রভু ওদের আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।” \p \v 11 অতএব তাঁরা দুজনেই ফিলিস্তিনী সেনা-ঘাঁটির সামনে গিয়ে নিজেদের দর্শন দিলেন। ফিলিস্তিনীরা বলল, “ওই দেখো, গর্তে লুকিয়ে থাকা হিব্রুরা হামাগুড়ি দিয়ে বের হয়ে আসছে।” \v 12 সেনা-ঘাঁটির লোকজন চিৎকার করে যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র-বহনকারীকে বলল, “আমাদের কাছে উঠে এসে লড়ো, আমরা তোমাদের উচিত শিক্ষা দেব।” \p অতএব যোনাথন তাঁর অস্ত্র-বহনকারীকে বললেন, “আমার পিছু পিছু উপরে উঠে এসো; সদাপ্রভু ইস্রায়েলের হাতে ওদের তুলে দিয়েছেন।” \p \v 13 যোনাথন তাঁর হাত পা ব্যবহার করে উপরে উঠে গেলেন, এবং তাঁর অস্ত্র বহনকারী ছিল ঠিক তাঁর পিছনেই। ফিলিস্তিনীরা যোনাথনের সামনে পড়ে যাচ্ছিল, ও তাঁর অস্ত্র-বহনকারীও তাঁকে অনুসরণ করে তাদের হত্যা করে যাচ্ছিল। \v 14 প্রথম আক্রমণেই যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি কমবেশি অর্ধেক একর এলাকা জুড়ে প্রায় কুড়ি জনকে হত্যা করলেন। \s1 ইস্রায়েল ফিলিস্তিনীদের পর্যুদস্ত করে \p \v 15 তখন সমগ্র সৈন্যদলে—যারা শিবিরে ও যুদ্ধক্ষেত্রে ছিল, এবং যারা সেনা-ঘাঁটিতে ছিল ও যারা হামলা চালাচ্ছিল, তাদের মধ্যেও—আতঙ্ক ছেয়ে গেল, এবং ভূমিকম্প হল। সেই আতঙ্ক ঈশ্বরই পাঠালেন।\f + \fr 14:15 \fr*\ft এক ভয়ানক আতঙ্ক\ft*\f* \p \v 16 বিন্যামীনের গিবিয়ায় শৌলের প্রহরীরা দেখতে পেয়েছিল যে সৈন্যদল চর্তুদিকে কমে যাচ্ছে। \v 17 তখন শৌল তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, “সৈন্যদের জমায়েত করে গুনে দেখো, কে কে আমাদের ছেড়ে গিয়েছে।” যখন তারা এমনটি করল, দেখা গেল যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী সেখানে অনুপস্থিত। \p \v 18 শৌল অহিয়কে বললেন, “ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি এখানে আনুন।” (সেই সময় সেটি ইস্রায়েলীদের সঙ্গেই ছিল)\f + \fr 14:18 \fr*\ft অথবা, এফোদটি আনুন (সেই সময় তিনি ইস্রায়েলীদের সামনে এফোদ পরিধান করেছিলেন)\ft*\f* \v 19 শৌল যখন যাজকের সঙ্গে কথা বলছিলেন, ফিলিস্তিনী-শিবিরে তখন ক্রমাগত হৈ হট্টগোল বেড়েই চলেছিল। তাই শৌল যাজককে বললেন, “আপনার হাত সরিয়ে নিন।” \p \v 20 পরে শৌল ও তাঁর সব লোকজন একত্রিত হয়ে যুদ্ধে গেলেন। তাঁরা দেখেছিলেন যে ফিলিস্তিনীরা পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গিয়ে নিজেদেরই তরোয়াল দিয়ে পরস্পরকে আঘাত হেনে চলেছে। \v 21 যেসব হিব্রু লোকজন ইতিপূর্বে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে ছিল ও তাদের সাথে মিলে তাদের সৈন্যশিবিরে চলে গিয়েছিল, তারাও সেইসব ইস্রায়েলীর কাছে ফিরে এসেছিল, যারা শৌল ও যোনাথনের সঙ্গে ছিল। \v 22 ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকায় লুকিয়ে থাকা ইস্রায়েলীরা যখন শুনেছিল যে ফিলিস্তিনীরা পালিয়ে যাচ্ছে, তখন তারাও যুদ্ধে যোগ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল। \v 23 অতএব সেদিন সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে রক্ষা করলেন, এবং যুদ্ধ বেথ-আবন পার করে ছড়িয়ে পড়েছিল। \s1 যোনাথন মধু খেয়ে ফেলেন \p \v 24 সেদিন ইস্রায়েলীরা গুরুতর অসুবিধায় পড়েছিল, কারণ শৌল এই বলে লোকজনকে এক শপথের অধীনে বেঁধে দিলেন, “সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগে, আমার শত্রুদের উপর আমি প্রতিশোধ নেওয়ার আগে যদি কেউ খাবার খায়, তবে সে শাপগ্রস্ত হোক!” তাই সৈন্যদলের কেউই খাবার মুখে তোলেনি। \p \v 25 গোটা সৈন্যদল অরণ্যে প্রবেশ করল, আর সেখানে জমির উপর মধু পড়েছিল। \v 26 অরণ্যে প্রবেশ করে তারা দেখেছিল যে মধু চুঁইয়ে পড়ছে; তবুও কেউ মুখে হাত ঠেকায়নি, কারণ তারা শপথের ভয় করছিল। \v 27 কিন্তু যোনাথন শোনেননি যে তাঁর বাবা প্রজাদের শপথে বেঁধে রেখেছেন, তাই তিনি তাঁর হাতে থাকা ছড়ির ডগাটি বাড়িয়ে মৌচাকে ডুবিয়ে দিলেন। তিনি হাত বাড়িয়ে মুখে দেওয়ামাত্র তাঁর চোখদুটি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল।\f + \fr 14:27 \fr*\ft তাঁর শক্তি ফিরে এসেছিল; 29 পদেরও অর্থ একইরকম হবে\ft*\f* \v 28 তখন সৈন্যদের মধ্যে একজন তাঁকে বলল, “আপনার বাবা এই বলে সৈন্যদলকে কঠোর নিয়মানুবর্তী এক শপথে বেঁধে রেখেছেন যে, ‘আজ যে কেউ খাবার খাবে সে শাপগ্রস্ত হোক!’ তাইতো লোকেরা দুর্বল হয়ে পড়েছে।” \p \v 29 যোনাথন বললেন, “আমার বাবা দেশে কষ্ট ডেকে এনেছেন। দেখো তো, এই মধুর কিছুটা চাখাতেই কীভাবে আমার চোখদুটি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। \v 30 লোকেরা আজ যদি তাদের শত্রুদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া লুন্ঠিত জিনিসপত্রের কিছুটা খেতে পারত তবে কতই না ভালো হত। ফিলিস্তিনীদের সংহার আরও বড়ো মাপের হত নাকি?” \p \v 31 সেদিন, মিক্‌মস থেকে অয়ালোন পর্যন্ত ফিলিস্তিনীদের আঘাত করতে করতে ইস্রায়েলীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। \v 32 তারা লুন্ঠিত জিনিসপত্রের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মেষ, গবাদি পশু ও বাছুরদের ধরে ধরে জমির উপরেই সেগুলি বধ করে রক্ত সমেত খেয়ে ফেলেছিল। \v 33 তখন কেউ একজন গিয়ে শৌলকে বলল, “দেখুন, রক্ত সমেত মাংস খেয়ে লোকেরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করছে।” \p তিনি বললেন, “তোমরা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছ। এখনই এখানে একটি বড়ো পাথর গড়িয়ে আনো।” \v 34 পরে তিনি বললেন, “লোকদের মধ্যে গিয়ে তাদের বলো, ‘তোমাদের মধ্যে প্রত্যেকে আমার কাছে তোমাদের গবাদি পশু ও মেষপাল নিয়ে এসো, ও সেগুলি এখানে বধ করে খেয়ে ফেলো। রক্ত সমেত মাংস খেয়ে তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কোরো না। ’ ” \p অতএব প্রত্যেকে সেরাত্রে যে যার বলদ নিয়ে এসে সেখানে বধ করল। \v 35 তখন শৌল সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন; এই প্রথমবার তিনি এমনটি করলেন। \p \v 36 শৌল বললেন, “চলো, আজ রাতেই আমরা ফিলিস্তিনীদের পিছনে তাড়া করে ভোর পর্যন্ত তাদের উপর লুটপাট চালাই, এবং তাদের মধ্যে একজনকেও প্রাণে বাঁচিয়ে না রাখি।” \p তারা উত্তর দিয়েছিল, “আপনার যা ভালো মনে হয় তাই করুন।” \p কিন্তু যাজক বললেন, “আসুন, আমরা এখানে ঈশ্বরের কাছে খোঁজ করি।” \p \v 37 অতএব শৌল ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি ফিলিস্তিনীদের পিছনে তাড়া করব? তুমি কি তাদের ইস্রায়েলের হাতে তুলে দেবে?” কিন্তু ঈশ্বর সেদিন তাঁকে কোনও উত্তর দেননি। \p \v 38 অতএব শৌল বললেন, “তোমরা যারা সৈন্যদলের নেতা, তারা এখানে এসো, এবং খুঁজে দেখা যাক আজ কী পাপ ঘটেছে। \v 39 ইস্রায়েলের রক্ষাকর্তা সদাপ্রভুর দিব্যি, দোষ যদি আমার ছেলে যোনাথন করে থাকে, তবে তাকেই মরতে হবে।” কিন্তু তাদের কেউই কোনও কথা বলেনি। \p \v 40 শৌল তখন সব ইস্রায়েলীকে বললেন, “তোমরা সব ওখানে দাঁড়িয়ে থাকো; আমি ও আমার ছেলে যোনাথন এখানে এসে দাঁড়াব।” \p “আপনার যা ভালো মনে হয়, তাই করুন,” তারা উত্তর দিয়েছিল। \p \v 41 তখন শৌল ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “আজ তুমি কেন তোমার দাসকে উত্তর দিলে না? আমি বা আমার ছেলে যোনাথন যদি দোষ করে থাকি, তবে ঊরীমের মাধ্যমে উত্তর দাও, কিন্তু ইস্রায়েলের জনতা যদি ভুল করে থাকে,\f + \fr 14:41 \fr*\ft কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, আজ ভুল করে থাকে—এই অংশটুকু অনুপস্থিত\ft*\f* তবে তূম্মীমের মাধ্যমে উত্তর দাও।” গুটিকাপাতের মাধ্যমে যোনাথন ও শৌল ধরা পড়েছিলেন, এবং জনতা মুক্ত হল। \v 42 শৌল বললেন, “আমার ও আমার ছেলে যোনাথনের মধ্যে গুটিকাপাতের দান চালো।” তাতে যোনাথন ধরা পড়েছিলেন। \p \v 43 তখন শৌল যোনাথনকে বললেন, “তুমি কী করেছ তা আমায় বলো।” \p যোনাথন তাঁকে বললেন, “আমি আমার লাঠির ডগায় করে একটু মধু চেখেছি। এখন আমায় মরতে হবে!” \p \v 44 শৌল বললেন, “যোনাথন, তুমি যদি মারা না যাও, তবে ঈশ্বর যেন আমায় আরও বেশি শাস্তি দেন।” \p \v 45 কিন্তু লোকেরা শৌলকে বলল, “যিনি ইস্রায়েলে এমন মহা উদ্ধার এনে দিয়েছেন—সেই যোনাথন মরবেন? তা হবে না! জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তাঁর মাথার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না, কারণ ঈশ্বরের সাহায্য নিয়ে তিনিই আজ এমনটি করেছেন।” অতএব লোকেরা যোনাথনকে রক্ষা করল, এবং তাঁকে মরতে হয়নি। \p \v 46 পরে শৌল আর ফিলিস্তিনীদের পশ্চাদ্ধাবন করেননি, এবং তারাও তাদের দেশে ফিরে গেল। \p \v 47 শৌল ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করা শুরু করার পরপরই তিনি তাদের সব শত্রুর: মোয়াব, অম্মোনীয়, ইদোমীয়, সোবার রাজাদের\f + \fr 14:47 \fr*\ft অথবা, রাজার\ft*\f* ও ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন। তিনি যেদিকেই যেতেন, তাদের শাস্তি দিয়ে যেতেন।\f + \fr 14:47 \fr*\ft অথবা, তিনি বিজয়ী হতেন\ft*\f* \v 48 তিনি বীরের মতো যুদ্ধ করে অমালেকীয়দের পরাস্ত করলেন, ও ইস্রায়েলকে তাদের হাত থেকে মুক্ত করলেন, যারা তাদের উপর লুঠতরাজ চালিয়েছিল। \s1 শৌলের পরিবার \p \v 49 শৌলের ছেলেদের নাম যোনাথন, যিশবি ও মল্কীশূয়। তাঁর বড়ো মেয়ের নাম মেরব ও ছোটোটির নাম মীখল। \v 50 তাঁর স্ত্রীর নাম অহীনোয়ম, যিনি অহীমাসের মেয়ে। শৌলের সৈন্যদলের সেনাপতির নাম অবনের, তিনি নেরের ছেলে, এবং নের ছিলেন শৌলের কাকা। \v 51 শৌলের বাবা কীশ ও অবনেরের বাবা নের ছিলেন অবীয়েলের ছেলে। \p \v 52 শৌলের সমগ্র রাজত্বকাল জুড়ে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে তাদের ভীষণ যুদ্ধ লেগেই থাকত, এবং শৌল যখনই কোনও মহান বা সাহসী লোক দেখতেন, তিনি তাকে তাঁর সৈন্যদলে ভর্তি করে নিতেন। \c 15 \s1 রাজারূপে শৌলকে সদাপ্রভু প্রত্যাখ্যান করলেন \p \v 1 শমূয়েল শৌলকে বললেন, “সদাপ্রভু তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের উপর তোমাকে রাজপদে অভিষিক্ত করার জন্য আমাকেই পাঠিয়েছিলেন; তাই এখন তুমি সদাপ্রভুর বাণীটি শোনো। \v 2 সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘ইস্রায়েল যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল তখন অমালেকীয়রা তাদের উপর লুটপাট চালাবার জন্য ওৎ পেতে বসে থেকে যা যা করেছিল সেজন্য আমি তাদের শাস্তি দেব। \v 3 এখন যাও, অমালেকীয়দের আক্রমণ করো এবং তাদের যা যা আছে, সব পুরোপুরি ধ্বংস\f + \fr 15:3 \fr*\ft হিব্রু শব্দটি, সদাপ্রভুর হাতে বস্তু বা ব্যক্তিদের চূড়ান্তভাবে তুলে দেওয়ার কথা বলে, প্রায়ই যা কি না সেগুলি পুরোপুরি ধ্বংস করার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়; 8, 9, 15, 18, 20 ও 21 পদও একই অর্থ বহন করে\ft*\f* করে দাও। তাদের নিষ্কৃতি দিয়ো না; স্ত্রী-পুরুষ, সন্তানসন্ততি ও শিশু, গবাদি পশু ও মেষ, উট ও গাধাগুলি মেরে ফেলো।’ ” \p \v 4 শৌল তখন লোকজনকে ডেকে পাঠিয়ে টলায়ীমে তাদের গণনা করার জন্য একত্রিত করলেন, 2,00,000 পদাতিক সৈন্য ও যিহূদা থেকে 10,000 জন সংগৃহীত হল। \v 5 শৌল সৈন্যসামন্ত নিয়ে অমালেকীয়দের নগরে গিয়ে সরু গিরিখাতের মধ্যে ওৎ পেতে বসেছিলেন। \v 6 পরে তিনি কেনীয়দের বললেন, “তোমরা সরে যাও, অমালেকীয়দের সঙ্গ ত্যাগ করো, যেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে আমি তোমাদেরও ধ্বংস করে না ফেলি; কারণ ইস্রায়েলীরা যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল, তোমরা তাদের প্রতি দয়া দেখিয়েছিলে।” তাই কেনীয়েরা অমালেকীয়দের কাছ থেকে দূরে সরে গেল। \p \v 7 পরে শৌল হবীলা থেকে মিশরের পূর্ব-সীমানার কাছাকাছি অবস্থিত শূর পর্যন্ত অমালেকীয়দের আক্রমণ করে গেলেন। \v 8 তিনি অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে জীবিত অবস্থায় ধরে রেখে তার সব লোকজনকে তরোয়াল দিয়ে ধ্বংস করে ফেললেন। \v 9 কিন্তু শৌল ও তাঁর সৈন্যরা অগাগকে ও ভালো ভালো মেষ ও গবাদি পশুপাল, হৃষ্টপুষ্ট বাছুর\f + \fr 15:9 \fr*\ft অথবা, পূর্ণবর্ধিত বলদ।\ft*\f* ও মেষশাবকদের—যা যা ভালো বলে মনে হল, সেসব বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সেগুলি তাঁরা পুরোপুরি ধ্বংস করতে চাননি, কিন্তু যা যা তুচ্ছ ও দুর্বল ছিল, সেগুলিই তাঁরা পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলেছিলেন। \p \v 10 তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য শমূয়েলের কাছে এসেছিল: \v 11 “আমি শৌলকে রাজা করেছি বলে আমার আক্ষেপ হচ্ছে, কারণ সে আমার কাছ থেকে সরে গিয়েছে এবং আমার নির্দেশ পালন করেনি।” শমূয়েল ক্রুদ্ধ হলেন, এবং সারারাত সেদিন তিনি সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করলেন। \p \v 12 পরদিন ভোরবেলায় শমূয়েল উঠে শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, কিন্তু তাঁকে বলা হল, “শৌল কর্মিলে গিয়েছেন। সেখানে তিনি নিজের সম্মানার্থে একটি স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠা করার পর গিল্‌গলে নেমে গিয়েছেন।” \p \v 13 শমূয়েল শৌলের কাছে গিয়ে পৌঁছালে শৌল বললেন, “সদাপ্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করুন! আমি সদাপ্রভুর নির্দেশ পালন করেছি।” \p \v 14 কিন্তু শমূয়েল বললেন, “তবে আমার কানে কেন মেষের ডাক ভেসে আসছে? আমি কেন তবে গবাদি পশুর ডাক শুনতে পাচ্ছি?” \p \v 15 শৌল উত্তর দিলেন, “সৈন্যরা এগুলি অমালেকীয়দের কাছ থেকে নিয়ে এসেছে; আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি দেওয়ার জন্য তারা ভালো ভালো মেষ ও গবাদি পশু বাঁচিয়ে রেখেছে, কিন্তু বাদবাকি সবকিছু আমরা পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলেছি।” \p \v 16 “যথেষ্ট হয়েছে!” শমূয়েল শৌলকে বললেন। “গতরাতে সদাপ্রভু আমাকে যা বলেছিলেন, তা আমায় বলতে দাও।” \p “আমায় বলুন,” শৌল উত্তর দিলেন। \p \v 17 শমূয়েল বললেন, “যদিও এক সময় তুমি নিজের দৃষ্টিতেই ক্ষুদ্র ছিলে, তাও কি তুমি ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর প্রধান হওনি? সদাপ্রভু তোমাকে ইস্রায়েলের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করেছেন। \v 18 তিনিই তোমাকে একটি কাজের দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়ে বলেছিলেন, ‘যাও ও সেই দুষ্ট জাতিকে, অমালেকীয়দের পুরোপুরি ধ্বংস করে দাও; তাদের পুরোপুরি মুছে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই যাও।’ \v 19 তুমি সদাপ্রভুর বাধ্য হলে না কেন? কেন তুমি লুন্ঠিত জিনিসপত্রের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে পাপ করলে?” \p \v 20 “কিন্তু আমি তো সদাপ্রভুর বাধ্য হয়েছি,” শৌল শমূয়েলকে বললেন। “সদাপ্রভু আমায় যে কাজের দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন, আমি তো সে কাজেই গিয়েছিলাম। আমি অমালেকীয়দের পুরোপুরি ধ্বংস করেছি এবং তাদের রাজা অগাগকে ধরে এনেছি। \v 21 সৈন্যরা লুন্ঠিত জিনিসপত্র থেকে কয়েকটি মেষ ও গবাদি পশু নিয়েছে, সেগুলির মধ্যে থেকে ভালো ভালো কয়েকটিকে গিল্‌গলে আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি দেওয়ার জন্য সরিয়ে রাখা হয়েছে।” \p \v 22 কিন্তু শমূয়েল উত্তর দিলেন: \q1 “সদাপ্রভুর বাধ্য হলে তিনি যত খুশি হন, \q2 হোম ও বলি পেয়ে কি তিনি তত খুশি হন? \q1 বলি দেওয়ার থেকে বাধ্য হওয়া ভালো, \q2 মদ্দা মেষের চর্বির থেকে কথা শোনা ভালো। \q1 \v 23 কারণ বিরুদ্ধাচরণ হল ভবিষ্যৎ-কথনের মতো পাপ, \q2 এবং ঔদ্ধত্য হল প্রতিমাপূজার মতো পাপ। \q1 যেহেতু তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করেছ, \q2 তাই তিনিও তোমায় রাজারূপে অগ্রাহ্য করেছেন।” \p \v 24 তখন শৌল শমূয়েলকে বললেন, “আমি পাপ করেছি। আমি সদাপ্রভুর আজ্ঞা ও আপনার নির্দেশ অমান্য করেছি। লোকজনকে ভয় পেয়ে আমি তাদের কথানুসারে কাজ করেছি। \v 25 এখন আমি আপনাকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি, আমার পাপ ক্ষমা করুন ও আমার সঙ্গে ফিরে চলুন, যেন আমি সদাপ্রভুর আরাধনা করতে পারি।” \p \v 26 কিন্তু শমূয়েল তাঁকে বললেন, “আমি তোমার সঙ্গে ফিরে যাব না। তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করেছ, আর সদাপ্রভুও ইস্রায়েলের রাজারূপে তোমাকে অগ্রাহ্য করেছেন!” \p \v 27 শমূয়েল প্রস্থান করার জন্য ঘুরে দাঁড়াতেই শৌল শমূয়েলের আলখাল্লার আঁচল ধরে টান দিলেন, এবং সেটি ছিঁড়ে গেল। \v 28 শমূয়েল তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু আজ ইস্রায়েলের রাজ্যটি তোমার কাছ থেকে ছিঁড়ে নিলেন এবং তোমার প্রতিবেশীদের মধ্যে একজনকে—যে তোমার চেয়ে ভালো, তাকে দিয়ে দিলেন। \v 29 যিনি ইস্রায়েলের প্রতাপ, তিনি মিথ্যা কথা বলেন না বা মন পরিবর্তন করেন না; কারণ তিনি মানুষ নন যে তাঁর মন পরিবর্তন করবেন।” \p \v 30 শৌল উত্তর দিলেন, “আমি পাপ করেছি। কিন্তু দয়া করে আমার প্রজাকুলের প্রাচীনদের সামনে ও ইস্রায়েলের সামনে আমার সম্মান বজায় রাখুন; আমার সঙ্গে ফিরে চলুন, যেন আমি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা করতে পারি।” \v 31 অতএব শমূয়েল শৌলের সঙ্গে ফিরে গেলেন, এবং শৌল সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। \p \v 32 পরে শমূয়েল বললেন, “অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে আমার কাছে নিয়ে এসো।” \p শিকলে বাঁধা অবস্থায় অগাগ তাঁর কাছে এলেন। তিনি মনে করলেন, “মৃত্যুর তীব্রতা নিশ্চয় দূর হয়ে গিয়েছে।” \p \v 33 কিন্তু শমূয়েল বললেন, \q1 “তোমার তরোয়াল যেভাবে স্ত্রীলোকদের নিঃসন্তান করেছে, \q2 তোমার মা স্ত্রীলোকদের মধ্যে তেমনই নিঃসন্তান হবে।” \m শমূয়েল গিল্‌গলে সদাপ্রভুর সামনে অগাগকে হত্যা করলেন। \p \v 34 পরে শমূয়েল রামার উদ্দেশে রওনা হলেন, কিন্তু শৌল শৌলের গিবিয়ায় নিজের ঘরে ফিরে গেলেন। \v 35 আমৃত্যু শমূয়েল আর শৌলের সঙ্গে দেখা করতে যাননি, যদিও শমূয়েল তাঁর জন্য অবশ্য কান্নাকাটি করতেন। শৌলকে ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন বলে সদাপ্রভুর আক্ষেপ হয়েছিল। \c 16 \s1 শমূয়েল দাউদকে অভিষিক্ত করলেন \p \v 1 সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইস্রায়েলের রাজারূপে আমি শৌলকে অগ্রাহ্য করেছি, তাই তুমি আর কত দিন তার জন্য কান্নাকাটি করবে? তোমার শিঙায় তেল ভরে নাও ও বেরিয়ে পড়ো; আমি তোমাকে বেথলেহেমে যিশয়ের কাছে পাঠাচ্ছি। আমি তার ছেলেদের মধ্যে একজনকে রাজা হওয়ার জন্য মনোনীত করেছি।” \p \v 2 কিন্তু শমূয়েল বললেন, “আমি কীভাবে যাব? শৌল যদি শুনতে পায়, তবে সে আমাকে মেরে ফেলবে।” \p সদাপ্রভু বললেন, “তুমি সাথে করে একটি বকনা-বাছুর নিয়ে গিয়ে বলো, ‘আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান উৎসর্গ করতে এসেছি।’ \v 3 বলিদানের অনুষ্ঠানে যিশয়কে নিমন্ত্রণ কোরো, আর আমি তোমায় জানিয়ে দেব ঠিক কী করতে হবে। আমি যার দিকে ইঙ্গিত করব, তুমি তাকেই অভিষিক্ত করবে।” \p \v 4 সদাপ্রভু যা বললেন শমূয়েল ঠিক তাই করলেন। তিনি বেথলেহেমে পৌঁছালে, তাঁকে দেখে নগরের প্রাচীনেরা শিহরিত হলেন। তাঁরা প্রশ্ন করলেন, “আপনি শান্তিভাব নিয়ে এসেছেন তো?” \p \v 5 শমূয়েল উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, শান্তিভাব নিয়েই এসেছি; আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান উৎসর্গ করতে এসেছি। তোমরা নিজেদের শুচিশুদ্ধ করো ও আমার সঙ্গে বলিদান উৎসর্গ করতে চলো।” পরে তিনি যিশয় ও তাঁর ছেলেদের শুদ্ধকরণ করে বলিদান উৎসর্গ করার জন্য তাঁদের নিমন্ত্রণ জানালেন। \p \v 6 তাঁরা সেখানে পৌঁছালে, শমূয়েল ইলীয়াবকে দেখে ভাবলেন, “সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিই নিশ্চয় এখানে সদাপ্রভুর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।” \p \v 7 কিন্তু সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “এর চেহারা বা উচ্চতা দেখতে যেয়ো না, কারণ আমি একে অগ্রাহ্য করেছি। মানুষ যা দেখে সদাপ্রভু তা দেখেন না। মানুষ বাইরের চেহারাই দেখে, কিন্তু সদাপ্রভু অন্তর দেখেন।” \p \v 8 পরে যিশয় অবীনাদবকে ডেকে তাকে শমূয়েলের সামনে দিয়ে হাঁটালেন। কিন্তু শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও মনোনীত করেননি।” \v 9 যিশয় পরে শম্মকে হাঁটালেন, কিন্তু শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও মনোনীত করেননি।” \v 10 যিশয় তাঁর সাত ছেলেদের প্রত্যেককেই শমূয়েলের সামনে দিয়ে হাঁটালেন, কিন্তু শমূয়েল তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু এদের কাউকেই মনোনীত করেননি।” \v 11 অতএব তিনি যিশয়কে প্রশ্ন করলেন, “তোমার কি এই কটিই ছেলে আছে?” \p “সবচেয়ে ছোটো একজন আছে,” যিশয় উত্তর দিলেন। “সে তো মেষ চরাচ্ছে।” \p শমূয়েল বললেন, “তাকে ডেকে পাঠাও; সে না আসা পর্যন্ত আমরা খেতে বসব না।” \p \v 12 অতএব যিশয় লোক পাঠিয়ে তাকে ডেকে আনালেন। সে ছিল সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও তার চোখদুটি ছিল সুন্দর এবং দেখতেও সে ছিল রূপবান। \p তখন সদাপ্রভু বলে উঠলেন, “ওঠো ও একে অভিষিক্ত করো; এই সেই লোক।” \p \v 13 তাই শমূয়েল তেলের শিঙা নিয়ে তাকে তার দাদাদের উপস্থিতিতে অভিষিক্ত করলেন, আর সেইদিন থেকেই সদাপ্রভুর আত্মা দাউদের উপর সপরাক্রমে নেমে এলেন। পরে শমূয়েল রামায় চলে গেলেন। \s1 দাউদ শৌলের সেবাকাজে নিযুক্ত হন \p \v 14 ইত্যবসরে সদাপ্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে গেলেন, এবং সদাপ্রভুর কাছ থেকে এক মন্দ\f + \fr 16:14 \fr*\ft এবং এক ক্ষতিকারক, 15, 16 ও 23 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।\ft*\f* আত্মা এসে তাঁকে উত্যক্ত করল। \p \v 15 শৌলের পরিচারকেরা তাঁকে বলল, “দেখুন, ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা এক মন্দ-আত্মা আপনাকে উত্যক্ত করছে। \v 16 আমাদের প্রভু এখানে তাঁর দাসদের আদেশ করুন, আমরা এমন একজনকে খুঁজে আনি যে বীণা বাজাতে পারে। মন্দ আত্মাটি যখন ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনার উপর নেমে আসবে তখন সে বীণা বাজাবে, এবং আপনার ভালো লাগবে।” \p \v 17 অতএব শৌল তাঁর পরিচারকদের বললেন, “এমন কাউকে খুঁজে বের করো যে বেশ ভালো বাজাতে জানে এবং তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো।” \p \v 18 দাসদের মধ্যে একজন উত্তর দিল, “আমি বেথলেহেম নিবাসী যিশয়ের ছেলেদের মধ্যে একজনকে দেখেছি যে বীণা বাজাতে জানে। সে একজন বীরপুরুষ ও এক যোদ্ধাও। সে বেশ ভালো কথা বলে ও রূপবানও বটে। সদাপ্রভুও তার সহবর্তী।” \p \v 19 তখন শৌল যিশয়ের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমার কাছে তোমার ছেলে সেই দাউদকে পাঠিয়ে দাও, যে মেষপাল দেখাশোনা করছে।” \v 20 অতএব যিশয় একটি গাধার পিঠে কিছু রুটি ও এক মশক ভরা দ্রাক্ষারস, এবং একটি কচি পাঁঠা সমেত তাঁর ছেলে দাউদকে শৌলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। \p \v 21 দাউদ শৌলের কাছে এসে তাঁর সেবাকাজে বহাল হলেন। শৌলের তাকে খুব পছন্দ হল, এবং দাউদ তাঁর অস্ত্র-বহনকারীদের মধ্যে একজন হয়ে গেলেন। \v 22 পরে শৌল যিশয়কে বলে পাঠালেন, “দাউদকে আমার সেবাকাজে বহাল থাকতে দাও, কারণ আমার ওকে ভালো লেগেছে।” \p \v 23 যখনই ঈশ্বরের কাছ থেকে আত্মাটি নেমে আসত, দাউদ তার বীণাটি নিয়ে বাজাতে শুরু করতেন। তখনই শৌল স্বস্তি পেতেন; তাঁর ভালো লাগত, ও মন্দ আত্মাটি তাঁকে ছেড়ে চলে যেত। \c 17 \s1 দাউদ এবং গলিয়াত \p \v 1 ফিলিস্তিনীরা যুদ্ধ করার জন্য যিহূদা প্রদেশের সোখোতে তাদের সৈন্যদল একত্রিত করল। সোখো ও অসেকার মাঝখানে অবস্থিত এফস-দম্মীমে তারা সৈন্যশিবির স্থাপন করল। \v 2 শৌল ও ইস্রায়েলীরা একত্রিত হয়ে এলা উপত্যকায় শিবির স্থাপন করে ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে সৈন্য সমাবেশ করলেন। \v 3 মাঝখানে উপত্যকাটিকে রেখে ফিলিস্তিনীরা একটি টিলা এবং ইস্রায়েলীরা অপর একটি টিলা অধিকার করল। \p \v 4 ফিলিস্তিনীদের শিবির থেকে গাৎ নিবাসী গলিয়াত নামক একজন বীরপুরুষ বের হয়ে এসেছিল। সে ছিল প্রায় তিন মিটার\f + \fr 17:4 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, সাড়ে ছয় হাত\ft*\f* লম্বা। \v 5 তার মাথায় ছিল ব্রোঞ্জের শিরস্ত্রাণ ও সে অঙ্গে ধারণ করেছিল 5,000 শেকল\f + \fr 17:5 \fr*\ft অথবা, প্রায় 58 কিলোগ্রাম\ft*\f* ওজনের ব্রোঞ্জের তৈরি আঁশের মতো দেখতে এক বর্ম; \v 6 তার পায়ে ছিল ব্রোঞ্জের বর্ম ও তার পিঠে ঝুলছিল ব্রোঞ্জের একটি বল্লম। \v 7 তার বর্শার হাতলটি ছিল তাঁতির দণ্ডের মতো, ও বর্শার লোহার ডগাটিরই ওজন ছিল 600 শেকল।\f + \fr 17:7 \fr*\ft অথবা, প্রায় 6.9 কিলোগ্রাম\ft*\f* তার ঢাল বহনকারী তার আগে আগে যাচ্ছিল। \p \v 8 গলিয়াত দাঁড়িয়ে পড়ে ইস্রায়েলের সৈন্যদলের উদ্দেশে চিৎকার করে বলে উঠল, “তোমরা কেন এখানে এসে যুদ্ধ করার জন্য সৈন্য সাজিয়েছ? আমি কি একজন ফিলিস্তিনী নই, আর তোমরাও কি শৌলের দাস নও? তোমরা একজনকে বেছে নাও আর সে আমার কাছে নেমে আসুক। \v 9 সে যদি যুদ্ধ করে আমাকে মারতে পারে, তবে আমরা তোমাদের বশ্যতাস্বীকার করব; কিন্তু আমি যদি পরাজিত করে তাকে মারতে পারি, তোমরা আমাদের বশ্যতাস্বীকার করে আমাদের দাসত্ব করবে।” \v 10 পরে সেই ফিলিস্তিনী বলল, “আজ আমি ইস্রায়েলের সৈন্যদলকে দ্বন্দ্বে আহ্বান করছি! আমাকে একজন লোক দাও আর আমরা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ করি।” \v 11 সেই ফিলিস্তিনীর কথা শুনে শৌল ও ইস্রায়েলীরা সবাই বিমর্ষ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। \p \v 12 এদিকে দাউদ ছিলেন যিহূদা প্রদেশের বেথলেহেম নিবাসী ইফ্রাথীয় যিশয়ের ছেলে। যিশয়ের আটটি ছেলে ছিল, এবং শৌলের রাজত্ব চলাকালীন তিনি খুব বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। \v 13 যিশয়ের ছেলেদের মধ্যে প্রথম তিনজন শৌলের অনুগামী হয়ে যুদ্ধে গেলেন: তাঁর বড়ো ছেলের নাম ইলীয়াব; দ্বিতীয়জনের নাম অবীনাদব; ও তৃতীয় জনের নাম শম্ম। \v 14 দাউদ ছিলেন সবচেয়ে ছোটো। বড়ো তিনজন শৌলের অনুগামী হলেন, \v 15 কিন্তু দাউদ শৌলের কাছ থেকে বেথলেহেমে তাঁর বাবার মেষপাল দেখাশোনা করার জন্য যাওয়া-আসা করতেন। \p \v 16 সেই ফিলিস্তিনী চল্লিশ দিন ধরে রোজ সকালে বিকেলে এগিয়ে এসে দাঁড়িয়ে পড়ত। \p \v 17 একদিন যিশয় তাঁর ছেলে দাউদকে বললেন, “তুমি তোমার দাদাদের জন্য এই এক ঐফা\f + \fr 17:17 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 16 কিলোগ্রাম\ft*\f* সেঁকা শস্য ও এই দশ টুকরো রুটি নিয়ে তাড়াতাড়ি তাদের সৈন্যশিবিরে যাও। \v 18 এই দশ তাল পনীরও তাদের সহস্র-সেনাপতির কাছে নিয়ে যাও। দেখে এসো তোমার দাদারা কেমন আছে এবং তাদের কাছ থেকে কিছু প্রতিশ্রুতি\f + \fr 17:18 \fr*\ft অথবা, কিছু নিদর্শন; অথবা লুন্ঠিত জিনিসপত্রের কিছু প্রমাণ\ft*\f* নিয়ে এসো। \v 19 তারা শৌল ও ইস্রায়েলের সৈন্যদলের সঙ্গে থেকে এলা উপত্যকায় ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।” \p \v 20 পরদিন ভোরবেলায় দাউদ একজন রাখালের হাতে পশুপালের ভার সঁপে দিয়ে যিশয়ের নির্দেশানুসারে সবকিছু নিয়ে রওনা হয়ে গেলেন। ঠিক যখন সৈন্যরা রণহুঙ্কার দিতে দিতে সম্মুখসমরে নামতে যাচ্ছিল, তিনি সৈন্যশিবিরে গিয়ে পৌঁছালেন। \v 21 ইস্রায়েল ও ফিলিস্তিনীরা সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য পরস্পরের মুখোমুখি হল। \v 22 দাউদ তাঁর জিনিসপত্র রসদ দেখাশোনাকারী একজন লোকের কাছে ফেলে রেখে যুদ্ধক্ষেত্রে দৌড়ে গেলেন ও তাঁর দাদাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তারা কেমন আছেন। \v 23 তিনি যখন তাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন গাৎ নিবাসী ফিলিস্তিনী বীরপুরুষ গলিয়াত তার অভ্যাসমতো সামনে এগিয়ে এসে চিৎকার করে তাদের টিটকিরি দিচ্ছিল, এবং দাউদ তা শুনেছিলেন। \v 24 ইস্রায়েলীরা সেই লোকটিকে দেখামাত্র খুব ভয় পেয়ে গিয়ে সবাই তার সামনে থেকে পালিয়ে গেল। \p \v 25 ইস্রায়েলীরা বলাবলি করছিল, “দেখছ, কীভাবে এই লোকটি বারবার বের হয়ে আসছে? এ ইস্রায়েলকে টিটকিরি দেওয়ার জন্যই বের হয়ে আসছে। যে একে মারতে পারবে তাকে রাজামশাই প্রচুর ধনসম্পদ দেবেন। তিনি তাঁর মেয়ের সঙ্গে তার বিয়েও দেবেন ও তার পরিবারকে ইস্রায়েলে খাজনা দেওয়ার হাত থেকেও নিষ্কৃতি দেওয়া হবে।” \p \v 26 দাউদ তাঁর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে এই ফিলিস্তিনীকে হত্যা করবে ও ইস্রায়েল থেকে এই অপযশ দূর করবে তার প্রতি কী করা হবে? এই বিধর্মী\f + \fr 17:26 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় অচ্ছিন্নত্বক\ft*\f* ফিলিস্তিনীটি কে যে এ জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদলকে টিটকিরি দিচ্ছে?” \p \v 27 তারা যা যা বলেছিল তা আরও একবার তাঁকে বলে শোনাল এবং তাঁকে এও বলল, “যে তাকে হত্যা করতে পারবে তার প্রতি এমনটিই করা হবে।” \p \v 28 দাউদের বড়ো দাদা ইলীয়াব যখন তাঁকে লোকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুনেছিলেন, তখন তিনি তাঁর প্রতি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুই কেন এখানে নেমে এসেছিস? কার কাছেই বা তুই মরুপ্রান্তরে সেই অল্প কয়েকটি মেষ ছেড়ে এসেছিস? আমি জানি তুই কত দাম্ভিক আর তোর মন কত দুষ্টুমিতে ভরা; তুই শুধু যুদ্ধ দেখতে এসেছিস।” \p \v 29 “আমি আবার কী করলাম?” দাউদ বললেন। “আমি কি কথাও বলতে পারব না?” \v 30 এই বলে তিনি অন্য একজনের দিকে ফিরে একই বিষয় উত্থাপন করলেন, এবং লোকেরা আগেকার মতোই উত্তর দিল। \v 31 কেউ আড়ি পেতে দাউদের বলা কথাগুলি শুনেছিল ও শৌলকে গিয়ে খবর দিয়েছিল, এবং শৌল তাঁকে ডেকে পাঠালেন। \p \v 32 দাউদ শৌলকে বললেন, “এই ফিলিস্তিনীর জন্য কাউকে মন খারাপ করতে হবে না; আপনার এই দাস গিয়েই তার সঙ্গে যুদ্ধ করবে।” \p \v 33 শৌল উত্তর দিলেন, “তোমার পক্ষে এই ফিলিস্তিনীর বিরুদ্ধে গিয়ে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়; তুমি তো এক বাচ্চা ছেলে, আর সে ছেলেবেলা থেকেই যুদ্ধ করে আসছে।” \p \v 34 কিন্তু দাউদ শৌলকে উত্তর দিলেন, “আপনার এই দাস তার বাবার মেষপাল দেখাশোনা করে আসছে। যখন যখন কোনো সিংহ বা ভালুক পাল থেকে মেষ উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছে, \v 35 আমি সেগুলির পিছু ধাওয়া করেছি, আঘাত করে সেগুলির মুখ থেকে মেষটিকে উদ্ধার করে এনেছি। সেটি আমার দিকে ঘুরে দাঁড়াতেই আমি সেটির কেশর জাপটে ধরে মারতে মারতে শেষ করে ফেলেছি। \v 36 আপনার এই দাস সিংহ ও ভালুক—দুটিকেই মেরে ফেলেছে; এই বিধর্মী ফিলিস্তিনীও তো ওদের মতোই একজন হবে, কারণ সে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদলকে টিটকিরি দিয়েছে। \v 37 যে সদাপ্রভু আমাকে সিংহের থাবা থেকে ও ভালুকের থাবা থেকেও রক্ষা করেছেন তিনিই আমাকে এই ফিলিস্তিনীর হাত থেকেও রক্ষা করবেন।” \p শৌল দাউদকে বললেন, “যাও, সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন।” \p \v 38 পরে শৌল দাউদকে নিজের পোশাকটি পরিয়ে দিলেন। তিনি দাউদের গায়ে যুদ্ধের সাজ ও মাথায় ব্রোঞ্জের শিরস্ত্রাণ চাপিয়ে দিলেন। \v 39 দাউদ পোশাকের উপর তাঁর তরোয়ালটি বেঁধে চলাফেরা করার চেষ্টা করলেন, কারণ তিনি এতে খুব একটা অভ্যস্ত ছিলেন না। \p “এগুলি নিয়ে আমি চলতে পারছি না,” তিনি শৌলকে বললেন, “কারণ আমি এতে খুব একটা অভ্যস্ত নই।” তাই তিনি সেগুলি খুলে ফেললেন। \v 40 পরে তিনি হাতে নিজের লাঠিটি নিয়ে, জলস্রোত থেকে পাঁচটি মসৃণ নুড়ি-পাথর বেছে নিয়ে সেগুলি রাখালেরা যে থলি রাখে, নিজের কাছে থাকা সেরকমই একটি থলিতে রেখে দিলেন, এবং হাতে নিজের গুলতিটি নিয়ে সেই ফিলিস্তিনীর দিকে এগিয়ে গেলেন। \p \v 41 এদিকে, সেই ফিলিস্তিনী তার ঢাল বহনকারীকে সামনে রেখে দাউদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করল। \v 42 সে দাউদের দিকে ভালো করে তাকিয়ে যখন দেখল যে তাঁর বয়স খুব অল্প এবং তিনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও রূপবান, তখন সে তাঁকে অবজ্ঞা করল। \v 43 সে দাউদকে বলল, “আমি কি কুকুর নাকি, যে তুই লাঠি নিয়ে আমার কাছে এসেছিস?” আর সেই ফিলিস্তিনী নিজের দেবতাদের নাম নিয়ে দাউদকে গালাগালি দিল। \v 44 “এখানে আয়,” সে বলল, “আর আমি তোর মাংস পাখি ও বন্যপশুদের খাওয়াব!” \p \v 45 দাউদ সেই ফিলিস্তিনীকে বললেন, “তুমি তরোয়াল, বর্শা ও বল্লম নিয়ে আমার বিরুদ্ধে লড়তে এসেছ, কিন্তু আমি ইস্রায়েলের সৈন্যদলের ঈশ্বর সেই সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর নামে তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছি, তুমি যাঁর নামে টিটকিরি দিয়েছ। \v 46 আজকের এই দিনে সদাপ্রভু তোমাকে আমার হাতে সমর্পণ করে দেবেন, আর আমি তোমাকে আঘাত করে তোমার মাথা কেটে ফেলব। আজই আমি ফিলিস্তিনী সৈন্যদের মৃতদেহ পাখি ও বন্যপশুদের খাওয়াব, আর সমগ্র জগৎসংসার জানবে যে ইস্রায়েলে একজন ঈশ্বর আছেন। \v 47 এখানে যারা যারা উপস্থিত আছে তারা সবাই জানবে যে সদাপ্রভু তরোয়াল বা বর্শা দিয়ে উদ্ধার দেন না; কারণ যুদ্ধ তো সদাপ্রভুরই, আর তিনিই তোমাদের সবাইকে আমাদের হাতে সমর্পণ করে দেবেন।” \p \v 48 সেই ফিলিস্তিনী যেই দাউদকে আক্রমণ করার জন্য তাঁর দিকে এগিয়ে এল, তিনি চট করে তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য সামনে দৌড়ে গেলেন। \v 49 তিনি থলি থেকে একটি পাথর বের করে গুলতিতে ভরে সেই ফিলিস্তিনীর কপাল লক্ষ্য করে সেটি ছুঁড়ে মারলেন। পাথরটি তার কপাল ভেদ করে ভিতরে ঢুকে গেল, এবং সে উবুড় হয়ে মাটিতে পড়ে গেল। \p \v 50 অতএব দাউদ একটি গুলতি ও একটি পাথর নিয়েই সেই ফিলিস্তিনীর উপর জয়লাভ করলেন; হাতে কোনও তরোয়াল না নিয়েই তিনি সেই ফিলিস্তিনীকে আঘাত করে তাকে মেরে ফেললেন। \p \v 51 দাউদ দৌড়ে গিয়ে তার উপর উঠে দাঁড়ালেন। তিনি সেই ফিলিস্তিনীর তরোয়ালটি ধরে সেটি খাপ থেকে বের করে আনলেন। তাকে হত্যা করার পর তিনি তরোয়াল দিয়ে তার মাথাটি কেটে ফেললেন। \p ফিলিস্তিনীরা যখন দেখল তাদের বীরপুরুষ মারা পড়েছে, তখন তারা পিছু ফিরে পালালো। \v 52 পরে ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকজন প্রবল উচ্ছ্বাসে চিৎকার করে সামনে এগিয়ে গিয়ে গাতের\f + \fr 17:52 \fr*\ft অথবা, উপত্যকার\ft*\f* প্রবেশদ্বার ও ইক্রোণের ফটক পর্যন্ত ফিলিস্তিনীদের পশ্চাদ্ধাবন করল। তাদের শবগুলি গাত ও ইক্রোণ পর্যন্ত শারয়িমের পথে পথে ছড়িয়ে পড়ল। \v 53 ইস্রায়েলীরা ফিলিস্তিনীদের তাড়িয়ে দিয়ে ফিরে আসার পথে তাদের সৈন্যশিবিরে লুঠতরাজ চালাল। \p \v 54 দাউদ সেই ফিলিস্তিনীর মাথাটি তুলে এনে সেটি জেরুশালেমে নিয়ে এলেন; তিনি সেই ফিলিস্তিনীর অস্ত্রশস্ত্র এনে নিজের তাঁবুতে রেখে দিলেন। \p \v 55 শৌল দাউদকে সেই ফিলিস্তিনীর মুখোমুখি হওয়ার জন্য যেতে দেখে সৈন্যদলের সহস্র-সেনাপতি অবনেরকে বললেন, “অবনের, এই যুবকটি কার ছেলে?” \p অবনের উত্তর দিলেন, “মহারাজ, আপনার প্রাণের দিব্যি, আমি জানি না।” \p \v 56 রাজামশাই বললেন, “খুঁজে বের করো এই যুবকটি কার ছেলে।” \p \v 57 দাউদ সেই ফিলিস্তিনীকে হত্যা করে ফিরে আসার পর মুহূর্তেই অবনের তাঁকে নিয়ে শৌলের কাছে পৌঁছে গেলেন। দাউদের হাতে তখনও সেই ফিলিস্তিনীর কাটা মাথাটি ধরা ছিল। \p \v 58 “ওহে যুবক, তুমি কার ছেলে?” শৌল তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। \p দাউদ বললেন, “আমি আপনার দাস বেথলেহেম নিবাসী যিশয়ের ছেলে।” \c 18 \s1 শৌল দাউদের প্রতি ঈর্ষাকাতর হলেন \p \v 1 শৌলের সঙ্গে দাউদের কথাবার্তা শেষ হতে না হতেই যোনাথন দাউদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলেন, এবং তিনি দাউদকে নিজের মতো করে ভালোবাসলেন। \v 2 সেদিন থেকেই শৌল দাউদকে নিজের কাছে রেখে দিলেন এবং তাঁকে ঘরে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে যেতে দেননি। \v 3 যোনাথনও দাউদের সঙ্গে এক চুক্তি করলেন, কারণ তিনি তাঁকে নিজের মতো করে ভালোবেসেছিলেন। \v 4 যোনাথন তাঁর পরনের পোশাকটি খুলে দাউদকে দিলেন, সঙ্গে নিজের আলখাল্লাটি, এমনকি নিজের তরোয়াল, ধনুক ও কোমরবন্ধটিও দিয়ে দিলেন। \p \v 5 শৌল যে কোনো কাজের দায়িত্ব দিয়ে দাউদকে পাঠাতেন, তাতে তিনি এতটাই সফল হতেন যে শৌল সৈন্যদলে তাঁকে আরও উঁচু পদে নিযুক্ত করে দিলেন। এতে সৈনিকরা সবাই খুব খুশি হল ও শৌলের কর্মকর্তারাও খুব খুশি হল। \p \v 6 দাউদ সেই ফিলিস্তিনীকে হত্যা করার পর যখন লোকজন ঘরে ফিরে আসছিল, তখন ইস্রায়েলের সব নগর থেকে স্ত্রীলোকেরা নাচ-গান করতে করতে, খঞ্জনি ও সুরবাহার বাজিয়ে আনন্দগান গাইতে গাইতে রাজা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে এল। \v 7 নাচতে নাচতে তারা গাইল: \q1 “শৌল মারলেন হাজার হাজার, \q2 আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত।” \p \v 8 শৌলের খুব রাগ হল; এই গানের ধুয়া তাঁকে খুব অসন্তুষ্ট করল। “এরা দাউদকে অযুত অযুতের কথা বলে কৃতিত্ব দিয়েছে,” তিনি ভাবলেন, “কিন্তু আমার বিষয়ে শুধুই হাজার হাজার। পরে আর রাজ্য ছাড়া তার কী-ই বা পাওয়ার আছে?” \v 9 আর সেই সময় থেকেই শৌল দাউদের উপর সজাগ দৃষ্টি রাখতে শুরু করলেন। \p \v 10 পরদিনই ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি মন্দ\f + \fr 18:10 \fr*\ft অথবা, ক্ষতিকারক\ft*\f* আত্মা সবলে শৌলের উপর নেমে এল। তিনি তাঁর বাড়িতে বসে ভাববাণী বলছিলেন,\f + \fr 18:10 \fr*\ft অথবা, আবোল-তাবোল বকছিলেন\ft*\f* অন্যদিকে দাউদ সচরাচর যেমনটি করতেন, সেভাবে বীণা বাজিয়ে যাচ্ছিলেন। শৌলের হাতে ছিল একটি বর্শা \v 11 এবং “আমি দাউদকে দেওয়ালে গেঁথে ফেলব,” আপনমনে একথা বলে তিনি সেটি ছুঁড়ে দিলেন। কিন্তু দাউদ দু-দুবার তাঁর হাত ফসকে পালিয়ে গেলেন। \p \v 12 শৌল দাউদকে ভয় পেতে শুরু করলেন, কারণ সদাপ্রভু দাউদের সঙ্গে ছিলেন কিন্তু শৌলকে ছেড়ে গিয়েছিলেন। \v 13 অতএব তিনি দাউদকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে তাঁকে সহস্র-সেনাপতি পদে নিযুক্ত করলেন, এবং দাউদ যুদ্ধে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিলেন। \v 14 সবকাজেই তিনি মহাসাফল্য লাভ করলেন, কারণ সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন। \v 15 শৌল তাঁকে এত বেশি সফল হতে দেখে তাঁকে ভয় করতে শুরু করলেন। \v 16 কিন্তু ইস্রায়েল ও যিহূদার সব লোকজন দাউদকে ভালোবেসেছিল, কারণ যুদ্ধে তিনি তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। \p \v 17 শৌল দাউদকে বললেন, “এই আমার বড়ো মেয়ে মেরব। আমি এর সঙ্গে তোমার বিয়ে দেব; তুমি শুধু নির্ভীকভাবে আমার সেবা করে যাও ও সদাপ্রভুর জন্য যুদ্ধ করে যাও।” কারণ শৌল মনে মনে বললেন, “আমি এর বিরুদ্ধে হাত উঠাব না। ফিলিস্তিনীরাই এ কাজটি করুক!” \p \v 18 কিন্তু দাউদ শৌলকে বললেন, “আমি কে, আর ইস্রায়েলে আমার পরিবার বা আমার বংশই বা কী এমন, যে আমি রাজার জামাই হব?” \v 19 অবশ্য যখন শৌলের মেয়ে মেরবকে দাউদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় এল, তখন মেরবকে মহোলাতীয় অদ্রীয়েলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হল। \p \v 20 ইত্যবসরে আবার শৌলের মেয়ে মীখল দাউদের প্রেমে পড়ে গেলেন, আর শৌলকে যখন খবরটি জানানো হল, তিনি খুশিই হলেন। \v 21 “আমি মীখলকে ওর হাতে তুলে দেব,” তিনি ভাবলেন, “এতে মীখল ওর কাছে এক ফাঁদ হয়ে দাঁড়াবে এবং ফিলিস্তিনীদের হাতও ওর বিরুদ্ধে উঠবে।” অতএব শৌল দাউদকে বললেন, “এখন দ্বিতীয়বার তোমার কাছে আমার জামাই হওয়ার সুযোগ এসেছে।” \p \v 22 পরে শৌল তাঁর কর্মচারীদের আদেশ দিলেন: “তোমরা গিয়ে গোপনে দাউদকে বলো, ‘দেখো, রাজামশাই তোমাকে পছন্দ করেন, আর তাঁর সব কর্মচারীও তোমাকে ভালোবাসে; এখন তুমি তাঁর জামাই হয়ে যাও।’ ” \p \v 23 তারা এইসব কথা দাউদকে বলে শোনাল। কিন্তু দাউদ বললেন, “তোমাদের কি মনে হয় রাজামশায়ের জামাই হওয়া সামান্য ব্যাপার? আমি তো এক গরিব মানুষ ও আমাকে বিশেষ কেউ চেনেও না।” \p \v 24 শৌলের দাসেরা যখন দাউদের বলা কথাগুলি শৌলকে গিয়ে শোনাল, \v 25 শৌল তখন উত্তর দিলেন, “দাউদকে গিয়ে বলো, ‘রাজামশাই আর কোনও কন্যাপণ চান না, শুধু ফিলিস্তিনীদের 100-টি লিঙ্গত্বক্ দিলেই হবে, যেন তাঁর শত্রুদের উপর প্রতিশোধ নেওয়া যায়।’ ” শৌল পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন, যেন দাউদ ফিলিস্তিনীদের হাতেই মারা পড়েন। \p \v 26 কর্মকর্তারা যখন দাউদকে এসব কথা বলে শুনিয়েছিলেন, তিনি খুশিমনে রাজার জামাই হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেন। অতএব নিরূপিত সময় অতিবাহিত হওয়ার আগেই, \v 27 দাউদ তাঁর দলবল নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে 200 জন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করে তাদের লিঙ্গত্বক্ নিয়ে এলেন। রাজামশায়ের কাছে তারা সেগুলি পূর্ণ সংখ্যায় গুনে দিল যেন দাউদ রাজার জামাই হতে পারেন। পরে শৌল তাঁর সঙ্গে নিজের মেয়ে মীখলের বিয়ে দিলেন। \p \v 28 শৌল যখন অনুভব করলেন যে সদাপ্রভু দাউদের সঙ্গে আছেন ও তাঁর মেয়ে মীখল দাউদকে ভালোবাসেন, \v 29 তখন তিনি দাউদকে আরও বেশি ভয় করতে শুরু করলেন, এবং জীবনের বাকি দিনগুলি তিনি দাউদের শত্রু হয়েই থেকে গেলেন। \p \v 30 ফিলিস্তিনী সহস্র-সেনাপতিরা যুদ্ধ করেই যেতে থাকল, এবং যতবার তারা তা করত, শৌলের অন্যান্য কর্মকর্তাদের তুলনায় দাউদ আরও বেশি সাফল্য অর্জন করতেন, ও তাঁর নাম সুপরিচিত হয়ে গেল। \c 19 \s1 শৌল দাউদকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন \p \v 1 শৌল তাঁর ছেলে যোনাথন ও সব কর্মকর্তাকে বললেন যেন তারা দাউদকে হত্যা করেন। কিন্তু যোনাথন দাউদকে খুব পছন্দ করতেন \v 2 তাই তিনি তাঁকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “আমার বাবা শৌল তোমাকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজছেন। কাল সকালে তুমি একটু সাবধানে থেকো; গোপন এক স্থানে গিয়ে তুমি লুকিয়ে থেকো। \v 3 তুমি যেখানে থাকবে আমিও আমার বাবার সঙ্গে সেখানে গিয়ে দাঁড়াব। তোমার বিষয়ে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলব ও আমি যা জানতে পারব তা তোমাকে বলে দেব।” \p \v 4 যোনাথন তাঁর বাবা শৌলের কাছে দাউদের প্রশংসা করে বললেন, “মহারাজ, আপনার দাস দাউদের প্রতি কোনও অন্যায় করবেন না; সে তো আপনার বিরুদ্ধে কোনও অন্যায় করেনি, আর সে যা যা করেছে তাতে বরং আপনি উপকৃতই হয়েছেন। \v 5 সেই ফিলিস্তিনীকে হত্যা করার সময় সে প্রাণের ঝুঁকিও নিয়ে ফেলেছিল। গোটা ইস্রায়েল জাতির জন্য সদাপ্রভু এক মহাবিজয় ছিনিয়ে এনেছেন, এবং আপনি তা দেখে খুশিও হয়েছিলেন। অকারণে দাউদের মতো নিরপরাধ একজনকে হত্যা করার মতো অপকর্ম আপনি কেন করতে যাচ্ছেন?” \p \v 6 শৌল যোনাথনের কথা শুনে এই শপথ নিয়ে বসলেন: “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, দাউদকে হত্যা করা হবে না।” \p \v 7 অতএব যা যা কথা হল, যোনাথন দাউদকে ডেকে এনে সেসব তাঁকে বলে শোনালেন। তিনি দাউদকে শৌলের কাছে নিয়ে এলেন, এবং আগের মতোই তিনি শৌলের সঙ্গে থাকতে শুরু করলেন। \p \v 8 আরেকবার যুদ্ধ শুরু হল, এবং দাউদ গিয়ে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। তিনি এত জোরে তাদের আঘাত করলেন যে তারা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল। \p \v 9 কিন্তু শৌল যখন হাতে বর্শা নিয়ে বাড়িতে বসেছিলেন, তখন সদাপ্রভুর কাছ থেকে একটি মন্দ\f + \fr 19:9 \fr*\ft বা ক্ষতিকারক\ft*\f* আত্মা তাঁর উপর নেমে এল। দাউদ তখন বীণা বাজাচ্ছিলেন, \v 10 শৌল তাঁকে বর্শা দিয়ে দেওয়ালে গেঁথে ফেলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু শৌল যখন দেওয়ালের দিকে বর্শা ছুঁড়লেন, তখন দাউদ তাঁর হাত এড়িয়ে সরে গেলেন। সেরাতে দাউদ পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন। \p \v 11 দাউদের উপর নজর রাখার জন্য শৌল তাঁর বাড়িতে লোক পাঠালেন, যেন সকালেই তাঁকে হত্যা করতে পারেন। কিন্তু দাউদের স্ত্রী মীখল তাঁকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “আজ রাতেই যদি তুমি প্রাণ বাঁচিয়ে না পালাও তবে কাল তুমি নিহত হবে।” \v 12 অতএব মীখল দাউদকে জানালা দিয়ে নিচে নামিয়ে দিলেন, এবং তিনি পালিয়ে রক্ষা পেলেন। \v 13 পরে মীখল একটি প্রতিমা নিয়ে সেটিকে বিছানায় শুইয়ে, কাপড়চোপড় দিয়ে ঢেকে রেখে মাথার দিকে কিছুটা ছাগলের লোম রেখে দিলেন। \p \v 14 দাউদকে বন্দি করার জন্য শৌল যখন লোক পাঠালেন, মীখল বললেন, “উনি অসুস্থ।” \p \v 15 পরে আবার শৌল দাউদকে দেখার জন্য লোক পাঠিয়ে তাদের বলে দিলেন, “ওকে খাট সমেত আমার কাছে নিয়ে এসো যেন আমি ওকে হত্যা করতে পারি।” \v 16 কিন্তু লোকেরা ঘরে ঢুকে দেখল, বিছানার উপর প্রতিমা রাখা আছে, ও মাথার দিকে কিছুটা ছাগলের লোম রাখা আছে। \p \v 17 শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন আমাকে এভাবে ঠকালে ও আমার শত্রুকে পালিয়ে যেতে দিলে?” \p মীখল তাঁকে বললেন, “সে আমাকে বলল, ‘আমাকে যেতে দাও। আমি কেন তোমায় হত্যা করব?’ ” \p \v 18 দাউদ পালিয়ে নিজের প্রাণরক্ষা করার পর রামায় শমূয়েলের কাছে গেলেন ও শৌল তাঁর প্রতি যা যা করেছিলেন সেসব বলে শোনালেন। পরে তিনি ও শমূয়েল নায়োতে গিয়ে সেখানেই বসবাস করলেন। \v 19 শৌলের কাছে খবর এল: “দাউদ রামাতে অবস্থিত নায়োতে আছে” \v 20 তাই তিনি তাঁকে বন্দি করে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু যখন তারা দেখল একদল ভাববাদী ভাববাণী বলছেন, ও শমূয়েল দাঁড়িয়ে থেকে তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন ঈশ্বরের আত্মা শৌলের লোকজনের উপর নেমে এলেন, ও তারাও ভাববাণী বলল। \v 21 শৌলকে সেকথা বলা হল, এবং তিনি আরও লোকজন পাঠালেন, ও তারাও ভাববাণী বলল। শৌল তৃতীয়বার লোক পাঠালেন, আর তারাও ভাববাণী বলল। \v 22 শেষ পর্যন্ত, তিনি নিজেই রামার উদ্দেশে রওনা হয়ে সেখুতে অবস্থিত সেই বড়ো কুয়োটির কাছে পৌঁছে গেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “শমূয়েল ও দাউদ কোথায়?” \p “রামাতে অবস্থিত নায়োতে,” তারা বলল। \p \v 23 অতএব শৌল রামাতে অবস্থিত নায়োতে চলে গেলেন। কিন্তু ঈশ্বরের আত্মা তাঁর উপরেও নেমে এলেন, এবং যতক্ষণ না তিনি নায়োতে পৌঁছালেন, সারা রাস্তায় তিনি ভাববাণী বলে গেলেন। \v 24 তিনি পোশাক খুলে ফেললেন, ও শমূয়েলের উপস্থিতিতে তিনিও ভাববাণী বললেন। তিনি সারাদিন ও সারারাত উলঙ্গ হয়েই ছিলেন। এজন্যই লোকেরা বলে, “শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” \c 20 \s1 দাউদ ও যোনাথন \p \v 1 পরে দাউদ রামার নায়োত থেকে পালিয়ে যোনাথনের কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কী করেছি? আমি কী দোষ করেছি? আমি তোমার বাবার প্রতি কী এমন অন্যায় করেছি, যে তিনি আমায় হত্যা করতে চাইছেন?” \p \v 2 “কখনোই না!” যোনাথন উত্তর দিলেন। “তুমি মারা পড়বে না! দেখো, আমার বাবা, ছোটো হোক কি বড়ো, কোনো কিছুই আমাকে না জানিয়ে করেন না। তিনি আমার কাছে একথা লুকাবেন কেন? এ হতেই পারে না!” \p \v 3 কিন্তু দাউদ দিব্যি করে বললেন, “তোমার বাবা ভালোভাবেই জানেন যে আমি তোমার প্রিয়পাত্র, আর তিনি মনে মনে বলেছেন, ‘যোনাথন যেন একথা জানতে না পারে, তা না হলে সে খুব দুঃখ পাবে।’ তবুও জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও তোমার প্রাণের দিব্যি, আমার ও মৃত্যুর মাঝখানে শুধু এক পায়ের ফাঁক রয়ে গিয়েছে।” \p \v 4 যোনাথন দাউদকে বললেন, “তুমি আমাকে যা করতে বলবে, আমি তোমার জন্য তাই করব।” \p \v 5 অতএব দাউদ তাঁকে বললেন, “দেখো, আগামীকাল অমাবস্যার উৎসব, আর মহারাজের সঙ্গে আমার ভোজনপান করার কথা; কিন্তু আমি পরশু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থাকব। \v 6 যদি তোমার বাবা আমার খোঁজ করেন তবে তাঁকে বোলো, ‘দাউদ তাড়াতাড়ি তার আপন নগর বেথলেহেমে যাওয়ার জন্য আমার কাছে আন্তরিকভাবে অনুমতি চেয়েছিল, কারণ তার সম্পূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য সেখানে এক বাৎসরিক বলিদানের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।’ \v 7 যদি তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে,’ তবে তোমার দাস সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু তিনি যদি মেজাজ হারান, তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো যে তিনি আমার ক্ষতি করবেনই করবেন। \v 8 আর তুমি তোমার দাসের প্রতি দয়া দেখিয়ো, কারণ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তুমি তার সঙ্গে এক নিয়ম স্থির করেছ। আমি যদি দোষী সাব্যস্ত হই তবে তুমিই আমাকে হত্যা কোরো! তোমার বাবার হাতে তুমি কেন আমাকে সমর্পণ করবে?” \p \v 9 “কখনোই না!” যোনাথন বললেন। “আমি যদি বিন্দুমাত্র আভাস পেতাম যে আমার বাবা তোমার ক্ষতি করার জন্য মনস্থির করে ফেলেছেন, তবে কি আমি তোমাকে বলতাম না?” \p \v 10 দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার বাবা তোমাকে রুক্ষভাবে উত্তর দিয়েছেন কি না তা আমাকে কে বলে দেবে?” \p \v 11 “এসো,” যোনাথন বললেন, “আমরা মাঠে যাই।” অতএব তাঁরা দুজনে সেখানে গেলেন। \p \v 12 পরে যোনাথন দাউদকে বললেন, “আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে শপথ করে বলছি, পরশুদিন এইসময় আমি নিশ্চয় আমার বাবার সঙ্গে কথা বলব! যদি তিনি তোমার প্রতি সদয় হন, তবে কি আমি তোমাকে খবর দিয়ে পাঠাব না? \v 13 কিন্তু যদি আমার বাবা তোমার ক্ষতি করতে চান ও আমি তোমাকে তা জানিয়ে নিরাপদে ফেরত না পাঠাই, তবে সদাপ্রভু যোনাথনকে যেন কঠোর দণ্ড দেন। সদাপ্রভু যেভাবে আমার বাবার সহবর্তী ছিলেন, সেভাবে যেন তোমারও সহবর্তী হন \v 14 কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে থাকব তুমি আমার প্রতি তেমনই অপর্যাপ্ত দয়া দেখিয়ো যেমনটি দয়া সদাপ্রভু দেখান, যেন আমাকে নিহত হতে না হয়, \v 15 এবং আমার পরিবার-পরিজনের প্রতিও তোমার দয়ায় কাটছাঁট কোরো না—এমনকি যখন সদাপ্রভু পৃথিবীর বুক থেকে দাউদের এক-একটি শত্রুকে মুছে দেবেন, তখনও এমনটি কোরো না।” \p \v 16 অতএব যোনাথন এই বলে দাউদের বংশের সঙ্গে এক নিয়ম স্থির করলেন, “সদাপ্রভু যেন দাউদের শত্রুদের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন।” \v 17 যেহেতু যোনাথন দাউদকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন, তাই তাঁকে ভালোবাসার খাতিরে তিনি আরেকবার দাউদকে দিয়ে শপথ করিয়ে নিলেন। \p \v 18 পরে যোনাথন দাউদকে বললেন, “আগামীকাল অমাবস্যার উৎসব। তোমার অভাববোধ হবে, কারণ তোমার আসনটি খালি থাকবে। \v 19 এই সমস্যাটি শুরু হওয়ার সময় তুমি যেখানে লুকিয়ে ছিলে, পরশুদিন সন্ধ্যার দিকে তুমি সেখানেই চলে যেয়ো, এবং এষল নামক সেই পাথরটির পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা কোরো। \v 20 আমি এমনভাবে সেটির পাশে তিনটি তির ছুঁড়ব, যেন মনে হয় আমি বুঝি নিশানা তাক করে তির ছুঁড়ছি। \v 21 পরে আমি একটি ছেলেকে পাঠিয়ে বলব, ‘যাও, তিরগুলি খুঁজে নিয়ে এসো।’ যদি আমি তাকে বলি, ‘দেখো, তিরগুলি তোমার এদিকে আছে; সেগুলি এখানে নিয়ে এসো,’ তবে তুমি এসো, কারণ, জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তুমি নিরাপদেই আছ; কোনও বিপদ নেই। \v 22 কিন্তু আমি যদি সেই ছেলেটিকে বলি, ‘দেখো, তিরগুলি তোমার ওদিকে গিয়ে পড়েছে,’ তবে তোমাকে যেতেই হবে, কারণ সদাপ্রভু তোমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। \v 23 আর তুমি ও আমি যে বিষয়ে আলোচনা করেছি—মনে রেখো, সে বিষয়ে সদাপ্রভু তোমার ও আমার মধ্যে চিরকালের জন্য সাক্ষী হয়ে রইলেন।” \p \v 24 অতএব দাউদ মাঠে লুকিয়ে থাকলেন, ও যখন অমাবস্যার উৎসব এল, রাজামশাই খেতে বসেছিলেন। \v 25 প্রথানুযায়ী তিনি দেওয়ালের পাশে বসেছিলেন, ও যোনাথন তাঁর উল্টোদিকে বসেছিলেন,\f + \fr 20:25 \fr*\ft অথবা, যোনাথন উঠে দাঁড়িয়েছিলেন\ft*\f* এবং অবনের শৌলের ঠিক পাশেই বসেছিলেন, কিন্তু দাউদের আসনটি খালি ছিল। \v 26 শৌল সেদিন কিছু বলেননি, কারণ তিনি ভেবেছিলেন, “দাউদের এমন কিছু হয়েছে যার দ্বারা সে আনুষ্ঠানিকভাবে অশুচি হয়েছে—নিশ্চয় সে অশুচি অবস্থায় আছে।” \v 27 কিন্তু পরদিন, মাসের দ্বিতীয় দিনেও দাউদের আসন খালি পড়েছিল। তখন শৌল তাঁর ছেলে যোনাথনকে বললেন, “যিশয়ের ছেলে কেন গতকাল ও আজও খেতে আসেনি?” \p \v 28 যোনাথন তাঁকে উত্তর দিলেন, “বেথলেহেমে যাওয়ার জন্য দাউদ আমার কাছে আন্তরিকভাবে অনুমতি চেয়েছিল। \v 29 সে বলেছিল, ‘আমাকে যেতে দাও, কারণ আমাদের পরিবার সেই নগরে বলিদানের এক অনুষ্ঠান পালন করছে ও আমার দাদা আমাকে সেখানে উপস্থিত থাকার আদেশ দিয়েছেন। আমি যদি তোমার প্রিয়পাত্র হয়ে থাকি, তবে দয়া করে আমাকে আমার দাদাদের সঙ্গে দেখা করে আসতে দাও।’ এজন্যই সে আজ মহারাজের খাওয়ার টেবিলে আসেনি।” \p \v 30 শৌল যোনাথনের প্রতি ক্রোধে ফেটে পড়লেন ও তাঁকে বললেন, “ওরে স্বেচ্ছাচারিণী ও বিদ্রোহিণী নারীর ছেলে! আমি কি জানি না যে তুই নিজেকে ও তোর জন্মদাত্রী মাকে লজ্জিত করার জন্য যিশয়ের ছেলের পক্ষ নিয়েছিস? \v 31 যতদিন যিশয়ের ছেলে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে, না তুই স্থির থাকবি, না তোর রাজ্য স্থির থাকবে। এখন কাউকে পাঠিয়ে ওকে আমার কাছে ডেকে আন, কারণ ওকে মরতেই হবে!” \p \v 32 “ওকে কেন মরতে হবে? ও কী করেছে?” যোনাথন তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন। \v 33 কিন্তু শৌল তাঁর বর্শাটি যোনাথনের দিকে ছুঁড়ে তাঁকেই মেরে ফেলতে চাইলেন। তখন যোনাথন বুঝতে পারলেন যে তাঁর বাবা দাউদকে হত্যা করবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছেন। \p \v 34 যোনাথন প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে টেবিল থেকে উঠে গেলেন; উৎসবের সেই দ্বিতীয় দিনে তিনি ভোজনপান করেননি, কারণ দাউদের প্রতি তাঁর বাবার লজ্জাজনক আচরণ দেখে তিনি মনে দুঃখ পেয়েছিলেন। \p \v 35 সকালে যোনাথন দাউদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মাঠে গেলেন। তাঁর সাথে ছিল একটি ছোটো ছেলে, \v 36 আর তিনি সেই ছেলেটিকে বললেন, “দৌড়ে গিয়ে আমার ছোঁড়া তিরগুলি খুঁজে নিয়ে এসো।” ছেলেটি দৌড়াতে শুরু করলে, তিনি তাকে পার করে একটি তির ছুঁড়ে দিলেন। \v 37 যোনাথনের তিরটি যেখানে গিয়ে পড়ল, ছেলেটি সেখানে পৌঁছানোর পর যোনাথন তাকে ডেকে বললেন, “তিরটি কি তোমাকে পার করে যায়নি?” \v 38 পরে তিনি চিৎকার করে বললেন, “তাড়াতাড়ি করো! জোরে দৌড়াও! থেমো না!” ছেলেটি তিরটি সংগ্রহ করে তার মালিকের কাছে ফিরে এল। \v 39 (ছেলেটি এসব বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি; শুধু যোনাথন ও দাউদই জানতে পেরেছিলেন) \v 40 পরে যোনাথন তাঁর অস্ত্রশস্ত্র ছেলেটির হাতে দিয়ে বললেন, “যাও, এগুলি নগরে ফিরিয়ে নিয়ে যাও।” \p \v 41 ছেলেটি ফিরে যাওয়ার পর, দাউদ সেই পাথরটির দক্ষিণ দিক থেকে উঠে এসে যোনাথনের সামনে তিনবার মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। পরে তাঁরা দুজন পরস্পরকে চুমু দিয়ে একসঙ্গে কাঁদলেন—কিন্তু দাউদই বেশি করে কাঁদলেন। \p \v 42 যোনাথন দাউদকে বললেন, “নির্ঝঞ্ঝাটে চলে যাও, কারণ এই বলে আমরা সদাপ্রভুর নামে পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছি যে, ‘সদাপ্রভু তোমার ও আমার মধ্যে, এবং তোমার ও আমার বংশধরদের মধ্যে চিরকাল সাক্ষী হয়ে আছেন।’ ” পরে দাউদ বিদায় নিলেন ও যোনাথন নগরে ফিরে গেলেন। \c 21 \s1 দাউদ নোবে উপস্থিত হন \p \v 1 দাউদ নোবে যাজক অহীমেলকের কাছে চলে গেলেন। তাঁর দেখা পেয়ে অহীমেলক ভয়ে কম্পিত হয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি একা কেন? আপনার সঙ্গে আর কেউ নেই কেন?” \p \v 2 দাউদ যাজক অহীমেলককে উত্তর দিলেন, “রাজামশাই একটি কাজের দায়িত্বভার দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন এবং আমায় বলেছেন, ‘আমি তোমায় যে কাজের দায়িত্বভার দিয়ে পাঠাচ্ছি সেই বিষয়ে যেন কেউ কিছু জানতে না পারে।’ আর আমার লোকজন! আমি তাদের বলে দিয়েছি তারা যেন নির্দিষ্ট এক স্থানে এসে আমার সঙ্গে দেখা করে। \v 3 তবে এখন, আপনার হাতে কী আছে? আমাকে পাঁচ টুকরো রুটি, বা যা খুঁজে পাচ্ছেন, তাই দিন।” \p \v 4 কিন্তু যাজকমশাই দাউদকে উত্তর দিলেন, “আমার হাতে তো সাধারণ কোনও রুটি নেই; অবশ্য, এখানে কয়েকটি পবিত্র রুটি আছে—যদি লোকেরা স্ত্রীলোকদের সংস্পর্শ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে তবেই এগুলি তারা খেতে পারবে।” \p \v 5 দাউদ যাজককে উত্তর দিলেন, “যথারীতি আমি যখন কাজে বের হয়েছি\f + \fr 21:5 \fr*\ft বা, গত কয়েক দিন ধরে\ft*\f* তখন থেকেই আমরা স্ত্রীলোকদের সংস্পর্শ থেকে দূরে সরে আছি। কাজের দায়িত্বভার পবিত্র না থাকাকালীনও আমার লোকজনের দেহ শুচিশুদ্ধই থাকে। তবে আজ তা আরও কত না বেশি শুচিশুদ্ধ হয়ে আছে!” \v 6 কাজেই যাজকমশাই তাঁকে সেই পবিত্র রুটিগুলি দিলেন, যেহেতু সেখানে সেই দর্শন-রুটি ছাড়া আর কোনও রুটি ছিল না, যা সদাপ্রভুর সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে সেদিন সেটির বদলে গরম রুটি রাখা হয়েছিল। \p \v 7 ইত্যবসরে শৌলের দাসদের মধ্যে একজন সদাপ্রভুর সামনে আটকে গিয়ে সেখানে থেকে গিয়েছিল: সে হল ইদোমীয় দোয়েগ, শৌলের প্রধান রাখাল। \p \v 8 দাউদ অহীমেলককে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার কাছে এখানে কি কোনও বর্শা বা তরোয়াল নেই? আমি আমার তরোয়াল বা অন্য কোনও অস্ত্র নিয়ে আসিনি, কারণ মহারাজের কাজটি জরুরি ছিল।” \p \v 9 যাজকমশাই উত্তর দিলেন, “আপনি এলা উপত্যকায় যাকে হত্যা করেছিলেন, সেই ফিলিস্তিনী গলিয়াতের তরোয়ালটি এখানে আছে; এফোদের পিছনে সেটি কাপড়ে মোড়া অবস্থায় রাখা আছে। আপনি চাইলে সেটি নিতে পারেন; সেটি ছাড়া এখানে আর অন্য কোনও তরোয়াল নেই।” \p দাউদ বললেন, “সেটির মতো আর কিছুই হতে পারে না; আমাকে সেটিই এনে দিন।” \s1 দাউদ গাতে উপস্থিত হন \p \v 10 সেদিন দাউদ শৌলের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়ে গাতের রাজা আখীশের কাছে উপস্থিত হলেন। \v 11 কিন্তু আখীশের দাসেরা তাঁকে বলল, “এই কি দেশের রাজা দাউদ নয়? এরই বিষয়ে কি লোকেরা নাচতে নাচতে গেয়ে ওঠেনি: \q1 “ ‘শৌল মারলেন হাজার হাজার, \q2 আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত’?” \p \v 12 দাউদ সেকথা মনে রেখেছিলেন আর গাতের রাজা আখীশকে দেখে খুব ভয় পেয়ে গেলেন। \v 13 তাই তাদের উপস্থিতিতে তিনি পাগল হওয়ার ভান করলেন; আর তাদের কাছে থাকার সময় তিনি পাগলের মতো সদর-দরজার কপাটে আঁকিবুকি কাটছিলেন ও তাঁর দাড়ির উপর লালা ঝরাচ্ছিলেন। \p \v 14 আখীশ তাঁর দাসদের বললেন, “লোকটির দিকে তাকাও দেখি! এ তো পাগল! একে আমার কাছে এনেছ কেন? \v 15 আমার কাছে কি পাগলের অভাব আছে যে তোমরা আমার সামনে পাগলামি করার জন্য একে নিয়ে এসেছ? এ লোকটি আমার বাড়িতে আসবে নাকি?” \c 22 \s1 দাউদ অদুল্লম ও মিস্পীতে উপস্থিত হন \p \v 1 দাউদ গাত ছেড়ে অদুল্লম গুহাতে পালিয়ে গেলেন। তাঁর দাদারা ও তাঁর বাবার পরিবার-পরিজন যখন তা জানতে পারলেন, তখন তাঁরা সেখানে তাঁর কাছে পৌঁছে গেলেন। \v 2 যারা যারা দুর্দশাগ্রস্ত বা ঋণ-ধারে জর্জরিত অথবা অতৃপ্ত ছিল, তারা সবাই তাঁর চারপাশে একত্রিত হল, এবং তিনি তাদের সেনাপতি হয়ে গেলেন। প্রায় 400 জন তাঁর সঙ্গী হল। \p \v 3 সেখান থেকে দাউদ মোয়াবের মিস্পীতে চলে গিয়ে মোয়াবের রাজাকে বললেন, “আমি যতদিন না জানতে পারছি ঈশ্বর আমার জন্য কী করতে চলেছেন, ততদিন কি আপনি আমার মা-বাবাকে আপনার কাছে থাকতে দেবেন?” \v 4 এই বলে তিনি তাঁদের মোয়াবের রাজার কাছে রেখে গেলেন, ও দাউদ যতদিন সেই ঘাঁটিতে ছিলেন, তাঁরাও রাজার সঙ্গেই ছিলেন। \p \v 5 কিন্তু ভাববাদী গাদ দাউদকে বললেন, “ঘাঁটিতে থাকবেন না। যিহূদা দেশে চলে যান।” অতএব দাউদ সেই স্থান ত্যাগ করে হেরৎ বনে চলে গেলেন। \s1 শৌল নোবের যাজকদের হত্যা করলেন \p \v 6 ইত্যবসরে শৌল খবর পেয়েছিলেন যে দাউদ ও তাঁর লোকজনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। শৌল হাতে বর্শা নিয়ে গিবিয়ায় ছোটো একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি ঝাউ গাছের নিচে বসেছিলেন, ও তাঁর সব কর্মকর্তা তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিল। \v 7 তিনি তাদের বললেন, “ওহে বিন্যামীনীয় লোকেরা, শোনো! যিশয়ের ছেলে কি তোমাদের সবাইকে ক্ষেতজমি ও দ্রাক্ষাকুঞ্জ দেবে? সে কি তোমাদের সবাইকে সহস্র-সেনাপতি ও শত-সেনাপতি করে দেবে? \v 8 এজন্যই কি তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছ? কেউই বলোনি কখন আমার ছেলে, যিশয়ের ছেলের সঙ্গে নিয়ম স্থির করেছে। তোমরা কেউ আমার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওনি বা আমাকে বলোনি যে আমার ছেলেই আমার দাসকে আমার বিরুদ্ধে ঘাঁটি পেতে বসে থাকার জন্য উসকানি দিয়েছিল, যেমনটি সে আজ করেছে।” \p \v 9 কিন্তু শৌলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে দাঁড়িয়েছিল, সেই ইদোমীয় দোয়েগ বলল, “আমি নোবে অহীটূবের ছেলে অহীমেলকের কাছে যিশয়ের ছেলেকে আসতে দেখেছিলাম। \v 10 অহীমেলক ওর হয়ে সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিয়েছিল; সে ওকে খাদ্যদ্রব্য এবং ফিলিস্তিনী গলিয়াতের তরোয়ালটিও দিয়েছিল।” \p \v 11 তখন রাজামশাই নোবে যাঁরা যাজকের কাজ করতেন, সেই অহীটূবের ছেলে যাজক অহীমেলক ও তাঁর পরিবারের সব পুরুষ সদস্যকে ডেকে আনার জন্য লোক পাঠালেন, এবং তাঁরা সবাই রাজামশায়ের কাছে এলেন। \v 12 শৌল বললেন, “ওহে অহীটূবের ছেলে, শোনো।” \p “হ্যাঁ, প্রভু,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 13 শৌল তাঁকে বললেন, “তোমরা কেন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছ, তুমি ও যিশয়ের সেই ছেলে; তুমি তাকে রুটি দিয়েছ, তরোয়াল দিয়েছ, আবার তার হয়ে ঈশ্বরের কাছে খোঁজও নিয়েছ, যেন সে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারে ও আমার বিরুদ্ধে ঘাঁটি পেতে বসে থাকতে পারে, যেমনটি সে আজ করেছে?” \p \v 14 অহীমেলক রাজামশাইকে উত্তর দিলেন, “আপনার দাসদের মধ্যে দাউদের মতো এত অনুগত আর কে আছেন, তিনি তো মহারাজের জামাই, আপনার দেহরক্ষীদের সর্দার ও আপনার পরিবারের সমস্ত লোকজনের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত একজন ব্যক্তি? \v 15 সেদিনই কি প্রথমবার আমি তাঁর হয়ে ঈশ্বরের কাছে খোঁজ নিয়েছিলাম? তা নিশ্চয় নয়! মহারাজ যেন আপনার দাসকে বা তার বাবার পরিবারের কাউকে দোষ না দেন, কারণ আপনার দাস এই গোটা ঘটনাটির বিন্দুবিসর্গও জানে না।” \p \v 16 কিন্তু রাজামশাই বললেন, “অহীমেলক, তোমাকে মরতেই হবে, তোমাকে আর তোমার পুরো পরিবারকেই মরতে হবে।” \p \v 17 পরে রাজামশাই তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাহারাদারদের আদেশ দিলেন: “ঘুরে গিয়ে সদাপ্রভুর যাজকদের হত্যা করো, কারণ এরাও দাউদের পক্ষ নিয়েছে। ওরা জানত যে সে পালাচ্ছে, অথচ ওরা আমাকে সেকথা বলেনি।” \p কিন্তু রাজার কর্মচারীরা সদাপ্রভুর যাজকদের উপর হাত তুলতে চায়নি। \p \v 18 তখন রাজামশাই দোয়েগকে আদেশ দিলেন, “তুমি ঘুরে গিয়ে যাজকদের আঘাত করো।” ইদোমীয় দোয়েগ তখন ঘুরে গিয়ে আঘাত করে তাঁদের ধরাশায়ী করে ফেলেছিল। সেদিন সে মসিনার এফোদ গায়ে দেওয়া পঁচাশি জনকে হত্যা করল। \v 19 এছাড়াও সে যাজকদের নগর নোবের উপর তরোয়াল চালিয়ে সেখানকার স্ত্রী-পুরুষ, ছেলেমেয়ে ও শিশু সন্তানদের, এবং পশুপাল, গাধা ও মেষদেরও শেষ করে ফেলেছিল। \p \v 20 কিন্তু অহীটূবের ছেলে অহীমেলকের একমাত্র ছেলে অবিয়াথর কোনোমতে রক্ষা পেয়ে দাউদের কাছে পালিয়ে গেলেন। \v 21 তিনি দাউদকে বললেন, শৌল সদাপ্রভুর যাজকদের হত্যা করেছেন। \v 22 তখন দাউদ অবিয়াথরকে বললেন, “ইদোমীয় দোয়েগকে সেদিন যখন আমি সেখানে দেখেছিলাম, তখনই বুঝেছিলাম যে সে নিশ্চয় শৌলকে বলে দেবে। আপনার পুরো পরিবারের মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী। \v 23 আপনি আমার সঙ্গেই থাকুন; ভয় পাবেন না। যে আপনাকে হত্যা করতে চাইছে সে আমাকেও হত্যা করার চেষ্টা করছে। আপনি আমার কাছে নিরাপদেই থাকবেন।” \c 23 \s1 দাউদ কিয়ীলাকে রক্ষা করলেন \p \v 1 দাউদকে যখন বলা হল, “দেখুন, ফিলিস্তিনীরা কিয়ীলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সেখানকার খামারগুলির উপর লুটপাট চালাচ্ছে,” \v 2 তখন তিনি এই বলে সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিয়েছিলেন, “আমি কি গিয়ে এইসব ফিলিস্তিনীকে আক্রমণ করব?” \p সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন, “যাও, ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করে কিয়ীলাকে রক্ষা করো।” \p \v 3 কিন্তু দাউদের লোকজন তাঁকে বলল, “এখানে এই যিহূদাতেই আমরা ভয়ে ভয়ে আছি। তবে কিয়ীলাতে ফিলিস্তিনী সৈন্যদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেলে আমাদের আরও কত না বেশি ভয় পেতে হবে!” \p \v 4 আরও একবার দাউদ সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিয়েছিলেন, এবং সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন, “কিয়ীলাতে নেমে যাও, কারণ আমি তোমার হাতে ফিলিস্তিনীদের সঁপে দিতে চলেছি।” \v 5 অতএব দাউদ ও তাঁর লোকজন কিয়ীলাতে গিয়ে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের গবাদি পশুপাল কেড়ে নিয়ে এলেন। তিনি ফিলিস্তিনীদের প্রচুর ক্ষতিসাধন করলেন ও কিয়ীলার অধিবাসীদের রক্ষা করলেন। \v 6 (ইত্যবসরে অহীমেলকের ছেলে অবিয়াথর কিয়ীলাতে দাউদের কাছে পালিয়ে আসার সময় এফোদটিও সঙ্গে নিয়ে এলেন।) \s1 শৌল দাউদের পশ্চাদ্ধাবন করলেন \p \v 7 শৌল খবর পেয়েছিলেন যে দাউদ কিয়ীলাতে গিয়েছেন, তাই তিনি বললেন, “ঈশ্বর তাকে আমার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন, কারণ দাউদ সদর দরজা ও অর্গল দিয়ে ঘেরা একটি নগরে ঢুকে নিজেই নিজেকে বন্দি করে ফেলেছে।” \v 8 যুদ্ধ করার জন্য, এবং কিয়ীলাতে গিয়ে দাউদ ও তাঁর লোকজনকে অবরোধ করার জন্য শৌল তাঁর সৈন্যদলকে ডাক দিলেন। \p \v 9 দাউদ যখন জানতে পারলেন যে শৌল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তখন তিনি যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি আনুন।” \v 10 দাউদ বললেন, “হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাস সঠিকভাবে শুনেছে যে শৌল কিয়ীলাতে এসে আমার জন্যই নগরটি ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছেন। \v 11 কিয়ীলার নাগরিকরা কি আমাকে তাঁর হাতে তুলে দেবে? তোমার দাসের শোনা কথা অনুসারে কি শৌল এখানে নেমে আসবেন? হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমাকে বলে দাও।” \p সদাপ্রভু বললেন, “সে আসবে।” \p \v 12 আরেকবার দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কিয়ীলার নাগরিকরা কি আমাকে ও আমার লোকজনকে শৌলের হাতে তুলে দেবে?” \p সদাপ্রভু বললেন, “তারা তুলে দেবে।” \p \v 13 অতএব দাউদ ও তাঁর লোকজন, সংখ্যায় প্রায় 600 জন, কিয়ীলা ছেড়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। শৌলকে যখন বলা হল যে দাউদ কিয়ীলা ছেড়ে পালিয়েছেন, তিনি তখন আর সেখানে যাননি। \p \v 14 দাউদ মরুপ্রান্তরের ঘাঁটিতে ও সীফ মরুভূমির ছোটো ছোটো পাহাড়ে থেকে গেলেন। দিনের পর দিন শৌল তাঁকে খুঁজে বেড়িয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে শৌলের হাতে পড়তে দেননি। \p \v 15 দাউদ যখন সীফ মরুভূমির হোরেশে ছিলেন, তখন তিনি শুনতে পেলেন যে\f + \fr 23:15 \fr*\ft বা, ভয় পেয়েছিলেন কারণ\ft*\f* শৌল তাঁর প্রাণহানি করার জন্য এসে গিয়েছেন। \v 16 শৌলের ছেলে যোনাথন হোরেশে দাউদের কাছে গিয়ে তাঁকে ঈশ্বরে শক্তি লাভ করতে সাহায্য করলেন। \v 17 “তুমি ভয় পেয়ো না,” তিনি বললেন। “আমার বাবা শৌল তোমার উপর হাত উঠাতে পারবেন না। তুমিই ইস্রায়েলের রাজা হবে, ও আমি তোমার নিচেই থাকব। এমনকি আমার বাবা শৌলও একথা জানেন।” \v 18 তাঁরা দুজনেই সদাপ্রভুর সামনে এক চুক্তি করলেন। পরে যোনাথন ঘরে ফিরে গেলেন, কিন্তু দাউদ হোরেশেই থেকে গেলেন। \p \v 19 সীফীয়রা গিবিয়াতে শৌলের কাছে গিয়ে বলল, “দাউদ কি হোরেশের ঘাঁটিতে, যিশীমনের দক্ষিণ দিকে, হখীলা পাহাড়ে, আমাদের মাঝেই লুকিয়ে নেই? \v 20 এখন, হে রাজাধিরাজ, আপনার যখন ইচ্ছা তখনই নেমে আসুন, আর আমরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে আপনার হাতে তুলে দেব।” \p \v 21 শৌল উত্তর দিলেন, “আমার জন্য তোমরা উদ্বিগ্ন হয়েছ বলে সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন। \v 22 যাও, আরও তথ্য সংগ্রহ করো। খুঁজে দেখো, দাউদ সাধারণত কোথায় যায় ও সেখানে তাকে কে দেখেছে। লোকে বলে সে নাকি খুব চালাক। \v 23 সে লুকিয়ে থাকার জন্য যেসব স্থান ব্যবহার করে, সেগুলির খোঁজ নাও ও নির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে আমার কাছে ফিরে এসো। পরে আমি তোমাদের সঙ্গে যাব; সে যদি সেখানে থাকে, আমি তবে যিহূদার সব বংশের মধ্যে থেকে তাকে খুঁজে বের করবই।” \p \v 24 অতএব তারা শৌল যাওয়ার আগেই সীফের উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে গেল। ইত্যবসরে দাউদ ও তাঁর লোকজন মায়োন মরুভূমিতে, যিশীমোনের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত অরাবায় ছিলেন। \v 25 শৌল ও তাঁর লোকজন অনুসন্ধান শুরু করলেন, ও দাউদকে যখন সেকথা বলা হল, তিনি সেই বড়ো পাথরটির কাছে নেমে গেলেন ও মায়োন মরুভূমিতেই থেকে গেলেন। শৌল যখন তা শুনতে পেলেন, তিনিও দাউদের পশ্চাদ্ধাবন করার জন্য সেই মায়োন মরুভূমিতে গেলেন। \p \v 26 শৌল পাহাড়ের একদিক দিয়ে যাচ্ছিলেন, এবং দাউদ ও তাঁর লোকজন অন্যদিকে ছিলেন, শৌলের নাগাল এড়িয়ে পালাতেই তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন। শৌল ও তাঁর সৈন্যসামন্তরা যখন দাউদ ও তাঁর লোকজনকে ধরে ফেলার জন্য প্রায় তাঁদের কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন, \v 27 তখন একজন দূত এসে শৌলকে বলল, “তাড়াতাড়ি আসুন! ফিলিস্তিনীরা দেশ আক্রমণ করেছে।” \v 28 তখন শৌল দাউদের পশ্চাদ্ধাবন করা থেকে বিরত হয়ে ফিলিস্তিনীদের সামলানোর জন্য ফিরে গেলেন। এজন্যই লোকেরা এই স্থানটির নাম দিয়েছিল সেলা-হম্মলকোৎ।\f + \fr 23:28 \fr*\ft “সেলা-হম্মলকোৎ” শব্দের অর্থ হল “বিচ্ছিন্নতার পাথর”\ft*\f* \v 29 দাউদ সেখান থেকে চলে গিয়ে ঐন-গদীর ঘাঁটিতে বসবাস করতে শুরু করলেন। \c 24 \s1 দাউদ শৌলকে প্রাণে না মেরে তাঁকে ছেড়ে দেন \p \v 1 ফিলিস্তিনীদের পশ্চাদ্ধাবন করে ফিরে আসার পর শৌলকে বলা হল, “দাউদ ঐন-গদীর মরুভূমিতে আছেন।” \v 2 অতএব শৌল সমস্ত ইস্রায়েল থেকে 3,000 দক্ষ যুবক সংগ্রহ করে দাউদ ও তাঁর লোকজনের খোঁজে জংলী ছাগলদের পাহাড়ের চুড়োয় উঠে গেলেন। \p \v 3 পথিমধ্যে তিনি মেষের খোঁয়াড়ে পৌঁছে গেলেন; সেখানে একটি গুহা ছিল, ও শৌল মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য সেটির মধ্যে প্রবেশ করলেন। দাউদ ও তাঁর লোকজন গুহার একদম ভিতরের দিকে বসেছিলেন। \v 4 লোকেরা বলল, “সদাপ্রভু এই দিনটির বিষয়েই আপনাকে বললেন,\f + \fr 24:4 \fr*\ft বা, “আজ সদাপ্রভু বলছেন”\ft*\f* ‘আমি তোমার শত্রুকে তোমার হাতে তুলে দেব, যেন তুমি তার প্রতি যা ইচ্ছা হয় তাই করতে পারো।’ ” তখন দাউদ সবার অলক্ষ্যে সেখানে ঢুকে শৌলের আলখাল্লার এক কোনা কেটে নিয়ে এলেন। \p \v 5 পরে, শৌলের পোশাকের এক কোনা কেটে নেওয়াতে দাউদ বিবেকের দংশনে বিদ্ধ হচ্ছিলেন। \v 6 তিনি তাঁর লোকজনকে বললেন, “সদাপ্রভু না করুন! আমি যেন আমার প্রভুর—সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এরকম কাজ না করি, বা তাঁর উপর হাত না তুলি; কারণ তিনি তো সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তি।” \v 7 একথা বলে দাউদ তাঁর লোকজনকে জোরালো ভাষায় ধমক দিলেন ও শৌলকে আক্রমণ করার সুযোগই তাদের দেননি। শৌলও গুহা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। \p \v 8 তখন দাউদ গুহা থেকে বেরিয়ে এসে শৌলকে ডেকে বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ!” শৌল যখন পিছনে ফিরে তাকিয়েছিলেন, দাউদ তখন মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম জানিয়েছিলেন। \v 9 তিনি শৌলকে বললেন, “লোকে যখন আপনাকে বলে, ‘দাউদ আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে, তখন আপনি তাদের কথা শোনেন কেন’? \v 10 আজ তো আপনি নিজের চোখেই দেখলেন কীভাবে সদাপ্রভু সেই গুহার মধ্যে আপনাকে আমার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কয়েকজন তো আমাকে পীড়াপীড়িও করল যেন আমি আপনাকে হত্যা করি, কিন্তু আমি আপনাকে অব্যাহতি দিয়েছিলাম; আমি বললাম, ‘আমি আমার প্রভুর উপর হাত তুলব না, কারণ তিনি সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তি।’ \v 11 দেখুন, হে আমার বাবা, আমার হাতে আপনার পোশাকের এই কাটা টুকরোটি দেখুন! আমি আপনার পোশাকের কোনাটি কেটে নিয়েছিলাম কিন্তু আপনাকে হত্যা করিনি। দেখুন আমার হাতে এমন কিছু নেই যা দিয়ে বোঝা যায় আমি অপরাধ বা বিদ্রোহের দোষে দোষী। আমি আপনার বিরুদ্ধে কোনও অন্যায় করিনি, কিন্তু আপনি আমার প্রাণনাশ করার জন্য আমার পিছু পিছু তাড়া করে বেড়াচ্ছেন। \v 12 সদাপ্রভুই আপনার ও আমার বিচার করুন। সদাপ্রভুই আমার প্রতি করা আপনার অন্যায়ের প্রতিফল দিন, কিন্তু আমার হাত আপনাকে স্পর্শ করবে না। \v 13 প্রাচীন প্রবাদবাক্যে যেমন বলা হয়েছে, ‘পাষণ্ডরাই অনিষ্ট সাধন করে,’ তাই আমার হাত আপনাকে স্পর্শ করবে না। \p \v 14 “ইস্রায়েলের রাজা কার বিরুদ্ধে উঠে এসেছেন? আপনি কার পশ্চাদ্ধাবন করছেন? একটি মৃত কুকুরের? একটি মাছির? \v 15 সদাপ্রভুই যেন আমাদের বিচার করে আমাদের মধ্যে একজনের স্বপক্ষে সিদ্ধান্ত নেন। তিনিই যেন আমার উদ্দেশ্য বিবেচনা করে তা অনুমোদন করলেন; আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে তিনি যেন আমার পক্ষসমর্থন করলেন।” \p \v 16 দাউদের কথা বলা শেষ হওয়ার পর শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “বাছা দাউদ, এ কি তোমার কণ্ঠস্বর?” একথা বলে তিনি সজোরে কেঁদে ফেলেছিলেন। \v 17 “তুমি আমার তুলনায় বেশি ধার্মিক,” তিনি বললেন। “তুমি আমার সঙ্গে সদয় ব্যবহার করলে, কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। \v 18 এইমাত্র তুমি আমাকে বলেছ, তুমি আমার প্রতি কত ভালো ব্যবহার করেছ; সদাপ্রভু আমাকে তোমার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি আমাকে হত্যা করোনি। \v 19 যখন কেউ তার শত্রুকে হাতের নাগালে পায়, সে কি তাকে অক্ষত অবস্থায় ছেড়ে দেয়? আজ আমার প্রতি তুমি যে ব্যবহার করেছ, সেজন্য সদাপ্রভু তোমাকে যেন যথাযথভাবে পুরস্কৃত করেন। \v 20 আমি জানি তুমি অবশ্যই রাজা হবে ও ইস্রায়েলের রাজত্ব তোমার হাতেই সুস্থির হবে। \v 21 এখন সদাপ্রভুর নামে আমার কাছে শপথ করো যে তুমি আমার বংশধরদের হত্যা করবে না বা আমার বাবার বংশ থেকে আমার নাম মুছে ফেলবে না।” \p \v 22 অতএব দাউদ শৌলের কাছে শপথ করলেন। পরে শৌল ঘরে ফিরে গেলেন, কিন্তু দাউদ ও তাঁর লোকজন ঘাঁটিতে চলে গেলেন। \c 25 \s1 দাউদ, নাবল ও অবীগল \p \v 1 এদিকে হয়েছে কী, শমূয়েল মারা গেলেন ও সমস্ত ইস্রায়েল একত্রিত হয়ে তাঁর জন্য শোকপ্রকাশ করল; এবং তারা তাঁকে রামায় তাঁর ঘরেই কবর দিয়েছিল। পরে দাউদ পারণ মরুভূমির দিকে চলে গেলেন। \p \v 2 মায়োনে কোনো একজন লোক ছিল, কর্মিলে তার কিছু বিষয়সম্পত্তি ছিল ও সে খুব ধনীও ছিল। তার কাছে 1,000 ছাগল ও 3,000 মেষ ছিল, সে তখন কর্মিলে সেগুলির লোম ছাঁটছিল। \v 3 তার নাম নাবল ও তার স্ত্রীর নাম অবীগল। অবীগল খুব বুদ্ধিমতী ও সুন্দরী ছিলেন, কিন্তু তাঁর স্বামী ছিল অভদ্র ও বেয়াদব—সে ছিল কালেব বংশীয় একজন লোক। \p \v 4 দাউদ মরুপ্রান্তরে থাকার সময় শুনতে পেয়েছিলেন যে নাবল মেষের লোম ছাঁটছে। \v 5 তাই তিনি তার কাছে দশজন যুবককে পাঠিয়ে তাদের বলে দিলেন, “তোমরা কর্মিলে নাবলের কাছে গিয়ে তাকে আমার নামে শুভেচ্ছা জানাবে। \v 6 তাকে গিয়ে বোলো: ‘আপনি দীর্ঘজীবী হোন! আপনি কুশলে থাকুন ও আপনার পরিবারও কুশলে থাকুক! এবং আপনার সর্বস্বের কুশল হোক! \p \v 7 “ ‘আমি শুনতে পেয়েছি এখন নাকি মেষের লোম ছাঁটার সময়। আপনার রাখালরা যখন আমাদের সঙ্গে ছিল, আমরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি, আর যতদিন তারা কর্মিলে ছিল তাদের কোনো কিছুই হারায়নি। \v 8 আপনার দাসদের জিজ্ঞাসা করুন, তারাই আপনাকে বলে দেবে। অতএব আমার লোকজনের প্রতি একটু অনুগ্রহ দেখান, যেহেতু আমরা উৎসবের দিনে এলাম। আপনি যা পারেন, দয়া করে আপনার এই দাসদের ও আপনার ছেলে দাউদের হাতে তা তুলে দিন।’ ” \p \v 9 দাউদের লোকজন নাবলের কাছে পৌঁছে দাউদের নাম করে তাকে এসব কথা বলল। পরে তারা অপেক্ষা করল। \p \v 10 নাবল দাউদের দাসদের উত্তর দিয়েছিল, “কে এই দাউদ? কে এই যিশয়ের ছেলে? আজকাল বিস্তর দাস তাদের প্রভুদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে। \v 11 আমি কেন আমার মেষের পশমকর্তকদের জন্য রাখা রুটি ও জল ও মাংস নিয়ে সেইসব লোকের হাতে তুলে দেব, যাদের বিষয়ে আমি জানিই না তারা কোথা থেকে এসেছে?” \p \v 12 দাউদের লোকজন মুখ ফিরিয়ে চলে গেল। তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে তারা প্রতিটি কথা বলে শুনিয়েছিল। \v 13 দাউদ তাঁর লোকজনকে বললেন, “তোমরা প্রত্যেকে কোমরে তরোয়াল বেঁধে নাও!” তারা তেমনটিই করল, ও দাউদও নিজের তরোয়ালটি বেঁধে নিয়েছিলেন। প্রায় 400 জন দাউদের সঙ্গে গেল, আর 200 জন মালপত্র দেখাশোনা করার জন্য থেকে গেল। \p \v 14 দাসদের মধ্যে একজন নাবলের স্ত্রী অবীগলকে বলল, “দাউদ আমাদের প্রভুকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য মরুপ্রান্তর থেকে দূত পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের চূড়ান্ত অপমান করেছেন। \v 15 অথচ ওই লোকগুলি আমাদের পক্ষে বড়োই ভালো ছিল। তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি, আর যতদিন আমরা মাঠে তাদের কাছে ছিলাম, আমাদের কোনো কিছুই হারায়নি। \v 16 যতদিন আমরা তাদের কাছে থেকে আমাদের মেষগুলি চরাতাম, রাতদিন তারা আমাদের চারপাশে তখন এক দেওয়াল হয়েই ছিল। \v 17 এখন ভেবে দেখুন আপনি কী করতে পারবেন, কারণ আমাদের প্রভুর ও তার সমগ্র পরিবারের উপর সর্বনাশ ঘনিয়ে এসেছে। তিনি এমনই বজ্জাত যে কেউই তাকে কিছু বলতে পারে না।” \p \v 18 অবীগল দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তিনি 200 টুকরো রুটি, চামড়ার দুই থলি দ্রাক্ষারস, রান্নার জন্য কেটেকুটে প্রস্তুত করা পাঁচটি মেষ, পাঁচ কাঠা সেঁকা শস্যদানা, 100 তাল কিশমিশ ও 200 তাল নিংড়ানো ডুমুর নিয়ে সেগুলি গাধার পিঠে চাপিয়ে দিয়েছিলেন। \v 19 পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “তোমরা এগিয়ে যাও; আমি তোমাদের পিছু পিছু আসছি।” কিন্তু তিনি তাঁর স্বামীকে কিছু বলেননি। \p \v 20 তিনি যখন গাধার পিঠে চেপে পাহাড়ের সরু গিরিখাত ধরে আসছিলেন, তখন দাউদও তাঁর লোকজন নিয়ে অবীগলের দিকে নেমে আসছিলেন, ও তাদের সঙ্গে তাঁর দেখা হল। \v 21 দাউদ অল্প কিছুক্ষণ আগেই বলেছিলেন, “কোনও লাভ হয়নি—আমি অনর্থক এই লোকটির সম্পত্তি মরুপ্রান্তরে পাহারা দিয়েছি আর তার কোনো কিছুই হারায়নি। সে ভালোর বদলে আমাকে মন্দ উপহার দিয়েছে। \v 22 যদি কাল সকাল পর্যন্ত আমি তার পরিবারের একটিও পুরুষ সদস্যকে জীবিত রাখি, তবে যেন ঈশ্বর দাউদকে আরও কঠোর শাস্তি দেন!” \p \v 23 অবীগল দাউদকে দেখে চট করে গাধার পিঠ থেকে নেমে মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। \v 24 তিনি দাউদের পায়ে পড়ে বললেন: “হে আমার প্রভু, আপনার দাসীকে ক্ষমা করুন, আমাকে বলতে দিন; আপনার দাসী যা বলতে চায় তা একটু শুনুন। \v 25 হে আমার প্রভু, দয়া করে সেই বজ্জাত লোকটির কথায় মনোযোগ দেবেন না। তার যেমন নাম সেও ঠিক সেরকমই—তার নামের অর্থ মূর্খ, আর মূর্খতা তার সহবর্তী। আর আমার কথা যদি বলেন, আপনার এই দাসী, আমি আমার প্রভুর পাঠানো লোকদের দেখতে পাইনি। \v 26 আর এখন, হে আমার প্রভু, আপনার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও আপনার প্রাণের দিব্যি, যেহেতু সদাপ্রভু আপনাকে রক্তপাত করা থেকে ও নিজের হাতে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত রেখেছেন, তাই আপনার শত্রুদের ও যারা আমার প্রভুর ক্ষতি করতে চায়, তাদের দশা যেন নাবলের মতো হয়। \v 27 আপনার দাসী আমার প্রভুর কাছে এই যেসব উপহার নিয়ে এসেছে, সেগুলি যেন আপনার অনুগামী লোকদের দেওয়া হয়। \p \v 28 “দয়া করে আপনার দাসীর বেয়াদবি ক্ষমা করবেন। আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিঃসন্দেহে আমার প্রভুর জন্য এক স্থায়ী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করবেন, কারণ আপনি সদাপ্রভুর হয়ে যুদ্ধ করছেন, এবং আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন আপনার মধ্যে কোনও অন্যায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। \v 29 যদি কেউ আপনার প্রাণহানি করার জন্য আপনার পশ্চাদ্ধাবনও করে, তবুও আমার প্রভুর প্রাণ আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দ্বারা জীবিতদের দলে সুরক্ষিত থাকবে, কিন্তু আপনার শত্রুদের প্রাণ গুলতির থলিতে রাখা পাথরের মতো তিনি ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। \v 30 সদাপ্রভু যখন আমার প্রভুর জন্য তাঁর করা প্রতিটি মঙ্গল-প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করবেন ও ইস্রায়েলের উপর তাঁকে শাসনকর্তারূপে নিযুক্ত করবেন, \v 31 তখন আমার প্রভুকে আর তাঁর বিবেকে অনর্থক রক্তপাতের বা নিজেরই নেওয়া প্রতিশোধের হতভম্বকারী বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে না। আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন আমার প্রভুকে সাফল্য দেবেন, আপনার এই দাসীকে তখন একটু স্মরণ করবেন।” \p \v 32 দাউদ অবীগলকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি তোমাকে আজ আমার সঙ্গে দেখা করতে পাঠিয়েছেন। \v 33 তোমার সুবিবেচনার জন্য এবং আমাকে আজ তুমি রক্তপাত করা থেকে ও নিজের হাতে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত রেখেছ বলে তুমি ধন্যা। \v 34 তা না হলে, যিনি আমাকে আজ তোমার ক্ষতি করা থেকে বিরত রেখেছেন সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তুমি যদি তাড়াতাড়ি আমার সঙ্গে দেখা করতে না আসতে, তবে নাবলের পরিবারের একজন পুরুষ সদস্যও সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকত না।” \p \v 35 পরে দাউদ অবীগলের আনা সবকিছু তাঁর হাত থেকে গ্রহণ করলেন ও তাঁকে বললেন, “শান্তিতে ঘরে ফিরে যাও। আমি তোমার কথা শুনেছি ও তোমার অনুরোধ রেখেছি।” \p \v 36 অবীগল যখন নাবলের কাছে ফিরে গেলেন, সে তখন বাড়িতে ছিল ও সেখানে রাজকীয় এক ভোজসভা চলছিল। সে খোশমেজাজে ছিল ও পুরোপুরি মাতাল হয়ে পড়েছিল। তাই সকাল না হওয়া পর্যন্ত অবীগল তাকে কিছু বলেননি। \v 37 পরে সকালে নাবল যখন ভদ্রস্থ হল, তার স্ত্রী তাকে সব কথা বলে শুনিয়েছিলেন, ও সে মনমরা হয়ে পাথরের মতো স্তব্ধ হয়ে গেল। \v 38 প্রায় দশদিন পর, সদাপ্রভু নাবলকে আঘাত করলেন ও সে মারা গেল। \p \v 39 নাবলের মৃত্যুর খবর পেয়ে দাউদ বললেন, “সদাপ্রভুর গৌরব হোক, আমার প্রতি নাবল অবজ্ঞামূলক আচরণ করেছিল বলেই তিনি আমার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি তাঁর দাসকে অন্যায় করা থেকে বিরত রেখেছেন ও নাবলের অন্যায় তারই মাথায় বর্ষণ করেছেন।” \p পরে দাউদ অবীগলকে খবর পাঠালেন, তাঁকে তাঁর স্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিলেন \v 40 তাঁর দাসেরা কর্মিলে গিয়ে অবীগলকে বলল, “দাউদ তাঁর স্ত্রী করে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার কাছে আমাদের পাঠিয়ে দিয়েছেন।” \p \v 41 তিনি মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে বললেন, “আমি আপনার দাসী এবং আমি আপনার সেবা করার ও আমার প্রভুর দাসদের পা ধুয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।” \v 42 অবীগল তাড়াতাড়ি একটি গাধার পিঠে চেপে, পাঁচজন দাসী সঙ্গে নিয়ে দাউদের পাঠানো দূতদের সঙ্গে চলে গেলেন ও তাঁর স্ত্রী হলেন। \v 43 দাউদ যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়মকেও বিয়ে করলেন, ও তারা দুজনেই তাঁর স্ত্রী হলেন। \v 44 কিন্তু শৌল তাঁর মেয়ে, দাউদের স্ত্রী মীখলকে গল্লীম নিবাসী লয়িশের ছেলে পল্‌টিয়েলের হাতে তুলে দিলেন। \c 26 \s1 দাউদ আরেকবার শৌলকে প্রাণে না মেরে তাঁকে ছেড়ে দেন \p \v 1 সীফীয়েরা গিবিয়াতে শৌলের কাছে গিয়ে তাঁকে বলল, “দাউদ কি যিশীমোনের সামনে অবস্থিত হখীলা পাহাড়ে লুকিয়ে নেই?” \p \v 2 অতএব শৌল তাঁর 3,000 বাছাই করা ইস্রায়েলী সৈন্য নিয়ে দাউদের খোঁজে সীফ মরুভূমিতে নেমে গেলেন। \v 3 শৌল যিশীমোনের সামনে অবস্থিত হখীলা পাহাড়ের উপর রাস্তার ধারে তাঁর শিবির স্থাপন করলেন, কিন্তু দাউদ মরুপ্রান্তরেই থেকে গেলেন। তিনি যখন দেখলেন শৌল সেখানেও তাঁর পিছু পিছু চলে এসেছেন, \v 4 তখন তিনি গুপ্তচর পাঠিয়ে নিশ্চিত হলেন যে শৌল চলে এসেছেন। \p \v 5 পরে দাউদ উঠে শৌল যেখানে শিবির করে বসেছিলেন, সেখানে পৌঁছে গেলেন। শৌল এবং সৈন্যদলের সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনের যেখানে শুয়েছিলেন দাউদ সেই স্থানটি দেখেছিলেন। শৌল শিবিরের ভিতরে শুয়েছিলেন, এবং সৈন্যদল তাঁকে চারপাশে ঘিরে রেখেছিল। \p \v 6 দাউদ তখন হিত্তীয় অহীমেলক ও সরূয়ার ছেলে যোয়াবের ভাই অবীশয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “কে আমার সঙ্গে শিবিরে শৌলের কাছে যাবে?” \p “আমি আপনার সঙ্গে যাব,” অবীশয় বললেন। \p \v 7 অতএব দাউদ ও অবীশয় রাতের বেলায় সেখানে চলে গেলেন, যেখানে শৌল শিবিরের ভিতরে ঘুমিয়েছিলেন ও তাঁর বর্শাটি তাঁর মাথার কাছে মাটিতে পোঁতা ছিল। অবনের ও সৈন্যসামন্তরা তাঁকে ঘিরে সবাই শুয়েছিল। \p \v 8 অবীশয় দাউদকে বললেন, “আজ ঈশ্বর আপনার শত্রুকে আপনার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন। এখন আমায় অনুমতি দিন, আমি তাঁকে বর্শার এক আঘাতে মাটিতে গেঁথে ফেলি; আমি তাঁকে দু-বার আঘাত করব না।” \p \v 9 কিন্তু দাউদ অবীশয়কে বললেন, “তাঁকে মেরে ফেলো না! সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তির উপর হাত উঠিয়ে কে নির্দোষ থাকতে পারবে? \v 10 জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি,” তিনি বললেন, “সদাপ্রভু স্বয়ং তাঁকে আঘাত করবেন, বা তাঁর সময় ফুরোবে ও তিনি মারা যাবেন, অথবা তিনি যুদ্ধে গিয়েই শেষ হয়ে যাবেন। \v 11 কিন্তু সদাপ্রভু না করুন, আমি যেন সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তির উপর হাত ওঠাই। এখন তাঁর মাথার কাছে যে বর্শা ও জলের পাত্রটি রাখা আছে, সেগুলি নিয়ে এসো, ও চলো যাওয়া যাক।” \p \v 12 অতএব দাউদ শৌলের মাথার কাছে রাখা বর্শা ও জলের পাত্রটি তুলে নিয়েছিলেন, ও তাঁরা সেখান থেকে চলে গেলেন। কেউ তা দেখেনি বা সে বিষয়ে জানতে পারেনি, আর কেউ জেগেও ওঠেনি। তারা সবাই ঘুমাচ্ছিল, কারণ সদাপ্রভু তাদের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন। \p \v 13 পরে দাউদ অন্যদিকে কিছুটা দূরে গিয়ে পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে গেলেন; তাঁদের দুজনের মাঝখানে বেশ কিছুটা খালি স্থান ছিল। \v 14 তিনি সৈন্যদের ও নেরের ছেলে অবনেরকে ডেকে বললেন, “অবনের, আপনার কি কিছু বলার নেই?” \p অবনের উত্তর দিলেন, “তুমি কে যে রাজার কাছে চেঁচামেচি করছ?” \p \v 15 দাউদ বললেন, “আপনি তো একজন পুরুষ, তাই না? ইস্রায়েলে আপনার মতো আর কে আছে? তবে আপনি কেন আপনার প্রভু মহারাজকে রক্ষা করেননি? কেউ একজন আপনার প্রভু মহারাজকে মারতে এসেছিল। \v 16 আপনি যা করেছেন তা মোটেই ভালো হয়নি। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আপনাকে ও আপনার লোকজনকে মরতে হবে, কারণ আপনারা আপনাদের প্রভু, সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করেননি। চারপাশে একটু দেখুন, মহারাজের মাথার কাছে যে বর্শা ও জলের পাত্রটি রাখা ছিল, সেগুলি কোথায়?” \p \v 17 শৌল দাউদের কণ্ঠস্বর চিনতে পেরে বলে উঠেছিলেন, “বাছা দাউদ, এ কি তোমার কণ্ঠস্বর?” \p দাউদ উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ আমার প্রভু মহারাজ, এ আমারই কণ্ঠস্বর।” \v 18 তিনি এও বললেন, “আমার প্রভু কেন আমার পিছু ধাওয়া করছেন? আমি কী করেছি, ও আমি কী এমন অন্যায় করেছি? \v 19 এখন হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনার দাসের কথা একটু শুনুন। সদাপ্রভু যদি আপনাকে আমার বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে থাকেন, তবে তিনি যেন এক নৈবেদ্য গ্রহণ করেন। অবশ্য, যদি লোকেরা তা করে থাকে, তবে তারাই যেন সদাপ্রভুর সামনে অভিশপ্ত হয়! তারাই আজ সদাপ্রভুর উত্তরাধিকারে আমার যে অংশ আছে, তা থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছে ও বলেছে, ‘যাও, অন্যান্য দেবদেবীর সেবা করো।’ \v 20 এখন আমার রক্ত যেন সদাপ্রভুর উপস্থিতি থেকে দূরে মাটিতে গিয়ে না পড়ে। ইস্রায়েলের রাজা এক মাছির খোঁজে বের হয়ে এসেছেন—যেভাবে একজন পাহাড়ে তিতির পাখি শিকারে যায়।” \p \v 21 তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি। বাছা দাউদ, তুমি ফিরে এসো। যেহেতু আজ তুমি আমার প্রাণ মূল্যবান গণ্য করেছ, তাই আমি আর কখনও তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা করব না। নিঃসন্দেহে আমি এক মূর্খের মতো আচরণ করেছি ও যারপরনাই অন্যায় করেছি।” \p \v 22 “মহারাজ, এই সেই বর্শা,” দাউদ উত্তর দিলেন। “আপনার যুবকদের মধ্যে একজন এসে এটি নিয়ে যাক। \v 23 সদাপ্রভু প্রত্যেককে ধার্মিকতার ও বিশ্বস্ততার পুরস্কার দেন। সদাপ্রভু আজ আপনাকে আমার হাতে সমর্পণ করে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তির উপরে হাত তুলতে চাইনি। \v 24 যেভাবে আজ আমি আপনার প্রাণ মূল্যবান গণ্য করেছি, নিশ্চিতভাবে সদাপ্রভুও যেন আমার প্রাণটি মূল্যবান গণ্য করেন ও আমাকে সব বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন।” \p \v 25 তখন শৌল দাউদকে বললেন, “বাছা দাউদ, তুমি আশীর্বাদপ্রাপ্ত হও; তুমি বড়ো বড়ো কাজ করবে ও বিজয়ীও হবে।” \p পরে দাউদ নিজের পথে চলে গেলেন, ও শৌল ঘরে ফিরে গেলেন। \c 27 \s1 দাউদ ফিলিস্তিনীদের মাঝখানে পৌঁছে যান \p \v 1 দাউদ মনে মনে ভেবেছিলেন, “একদিন না একদিন আমাকে শৌলের হাতে মরতেই হবে। আমার পক্ষে ফিলিস্তিনীদের দেশে পালিয়ে যাওয়াই ভালো। তখন শৌল ইস্রায়েলে আর কোথাও আমার খোঁজ করবেন না, ও আমি তাঁর হাত এড়িয়ে পালিয়ে যেতে পারব।” \p \v 2 অতএব দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা 600 জন লোক দেশ ছেড়ে মায়োকের ছেলে গাতের রাজা আখীশের কাছে পৌঁছে গেলেন। \v 3 দাউদ ও তাঁর লোকজন গাতে আখীশের কাছেই থেকে গেলেন। প্রত্যেকে তাদের পরিবার সমেতই সেখানে ছিল, এবং দাউদের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী: যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়ম ও নাবলের বিধবা কর্মিলীয়া অবীগল। \v 4 শৌলকে যখন বলা হল দাউদ গাতে পালিয়ে গিয়েছেন, তখন তিনি আর তাঁর খোঁজ করেননি। \p \v 5 তখন দাউদ আখীশকে বললেন, “আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়েছি, তবে আমার থাকার জন্য যেন পল্লি-অঞ্চলে একটি স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। আপনার দাস কেন আপনার সঙ্গে রাজধানী নগরে বসবাস করবে?” \p \v 6 অতএব সেদিন আখীশ তাঁকে সিক্লগ নগরটি দান করে দিলেন, ও সেদিন থেকেই সেটি যিহূদার রাজাদের অধিকারে চলে গেল। \v 7 দাউদ ফিলিস্তিনী এলাকায় এক বছর চার মাস ধরে বসবাস করলেন। \p \v 8 ইতিমধ্যে দাউদ ও তাঁর লোকজন গিয়ে গশূরীয়, গির্ষীয় ও অমালেকীয়দের উপরে অতর্কিত আক্রমণ শানিয়েছিলেন। (প্রাচীনকাল থেকেই এইসব লোকজন শূর ও মিশর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাস করত) \v 9 যখনই দাউদ কোনো এলাকা আক্রমণ করতেন, তিনি সেখানে একটিও পুরুষ বা স্ত্রীলোককে জীবিত ছাড়তেন না, কিন্তু মেষ ও গবাদি পশু, গাধা ও উট, এবং পোশাক-পরিচ্ছদ লুট করতেন। পরে তিনি আখীশের কাছে ফিরে আসতেন। \p \v 10 আখীশ যখন জিজ্ঞাসা করতেন, “আজ তুমি কোথায় অতর্কিত আক্রমণ শানাতে গেলে?” দাউদ তখন উত্তর দিতেন, “যিহূদার নেগেভে” অথবা “যিরহমেলীয়দের নেগেভে” বা “কেনীয়দের নেগেভে।” \v 11 গাতে নিয়ে আসার জন্য তিনি কোনো পুরুষ বা স্ত্রীলোককে জীবিত রাখতেন না, কারণ তিনি ভাবতেন, “এরা হয়তো আমাদের বিষয়ে বলে দেবে, ‘দাউদ এ ধরনের কাজ করেছেন।’ ” আর যতদিন তিনি ফিলিস্তিনী এলাকায় বসবাস করলেন, ততদিন তিনি এরকমই করে গেলেন। \v 12 আখীশ দাউদকে বিশ্বাস করতেন ও মনে মনে বলতেন, “সে তার নিজের জাতি ইস্রায়েলের কাছে নিজেকে আপত্তিকর করে তুলেছে, তাই সারা জীবন সে আমার দাস হয়েই থাকবে।” \c 28 \p \v 1 তখন ফিলিস্তিনীরা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সৈন্যদল একত্রিত করল। আখীশ দাউদকে বললেন, “তোমার নিশ্চয় জানা আছে যে তোমাকে তোমার দলবল সমেত আমার সৈন্যদলের সঙ্গে যোগ দিতে হবে।” \p \v 2 দাউদ বললেন, “আপনি নিজেই দেখতে পাবেন, আপনার দাস ঠিক কী করতে পারে।” \p আখীশ উত্তর দিলেন, “ঠিক আছে, আমি আজীবন তোমাকে আমার দেহরক্ষী করে রাখব।” \s1 শৌল ও ঐনদোরের প্রেতমাধ্যম \p \v 3 শমূয়েল মারা গিয়েছিলেন, আর ইস্রায়েলীরা সবাই তাঁর জন্য শোকপ্রকাশ করে তাঁকে তাঁর নিজের নগর রামায় কবর দিয়েছিলেন। শৌল দেশ থেকে প্রেতমাধ্যম ও গুনিনদের দূর করে দিলেন। \p \v 4 ফিলিস্তিনীরা একত্রিত হয়ে শূনেমে সৈন্যশিবির স্থাপন করল, অন্যদিকে শৌল ইস্রায়েলীদের একত্রিত করে গিলবোয়ে সৈন্যশিবির স্থাপন করলেন। \v 5 ফিলিস্তিনীদের সৈন্যদল দেখে শৌল ভয় পেয়ে গেলেন; তাঁর অন্তর আতঙ্কে ভরে গেল। \v 6 তিনি সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সদাপ্রভু স্বপ্ন বা ঊরীম বা ভাববাদীদের মাধ্যমে তাঁকে উত্তর দেননি। \v 7 তখন শৌল তাঁর পরিচারকদের বললেন, “এমন একজন মহিলাকে খুঁজে নিয়ে এসো, যে একজন প্রেতমাধ্যম, যেন আমি তার কাছে গিয়ে একটু খোঁজখবর নিতে পারি।” \p তারা বলল, “ঐনদোরে এমন একজন মহিলা আছে।” \p \v 8 অতএব শৌল ছদ্মবেশ ধারণ করে, সাধারণ কাপড় পরে রাতের অন্ধকারে দুজন লোককে সঙ্গে নিয়ে সেই মহিলাটির কাছে গেলেন। তিনি বললেন, “আমার জন্য একটি প্রেতমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করো ও যাঁর নাম বলছি তাঁকে ডেকে আনো।” \p \v 9 কিন্তু মহিলাটি তাঁকে বলল, “আপনি তো জানেনই শৌল কী করেছেন। তিনি প্রেতমাধ্যম ও গুনিনদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন। তবে কেন আপনি আমাকে মেরে ফেলার জন্য ফাঁদ পাতছেন?” \p \v 10 শৌল সদাপ্রভুর নামে শপথ করে তাকে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, এজন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে না।” \p \v 11 তখন মহিলাটি প্রশ্ন করল, “আপনার জন্য আমি কাকে ডেকে আনব?” \p “শমূয়েলকে ডেকে আনো,” তিনি বললেন। \p \v 12 মহিলাটি শমূয়েলকে দেখতে পেয়ে জোর গলায় চিৎকার করে শৌলকে বলল, “আপনি কেন আমার সঙ্গে ছলনা করলেন? আপনি তো শৌল!” \p \v 13 রাজামশাই তাকে বললেন, “ভয় পেওনা। বলো তুমি কী দেখছ?” \p মহিলাটি বলল, “আমি এক ভুতুড়ে চেহারা\f + \fr 28:13 \fr*\ft বা প্রেতাত্মা; বা দেবতাকে\ft*\f* দেখতে পাচ্ছি, যিনি ভূতল থেকে উঠে আসছেন।” \p \v 14 “তিনি কার মতো দেখতে?” তিনি প্রশ্ন করলেন। \p “লম্বা আলখাল্লা পরে একজন বৃদ্ধ মানুষ এগিয়ে আসছেন,” মহিলাটি বলল। \p তখন শৌল বুঝতে পারলেন যে তিনি শমূয়েল, এবং তিনি মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। \p \v 15 শমূয়েল শৌলকে বললেন, “আমাকে তুলে এনে তুমি কেন আমাকে বিরক্ত করলে?” \p “আমি খুব বিপদে পড়েছি,” শৌল বললেন। “ফিলিস্তিনীরা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, আর ঈশ্বরও আমাকে ছেড়ে গিয়েছেন। তিনি আর আমার ডাকে সাড়া দেন না, ভাববাদীদের দ্বারাও নয় বা স্বপ্নের দ্বারাও নয়। তাই আমি আপনাকে ডেকে এনেছি যেন আপনি বলে দেন, আমাকে কী করতে হবে।” \p \v 16 শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভুই যখন তোমাকে ছেড়ে গিয়েছেন ও তোমার শত্রু হয়ে গিয়েছেন তখন আর আমার পরামর্শ চাইছ কেন? \v 17 আমার মাধ্যমে সদাপ্রভু আগে থেকে যা বলে দিয়েছিলেন তাই করেছেন। সদাপ্রভু তোমার হাত থেকে রাজ্যটি কেড়ে নিয়ে তোমার প্রতিবেশীদের মধ্যে একজনের—দাউদের হাতে তুলে দিয়েছেন। \v 18 যেহেতু তুমি সদাপ্রভুর বাধ্য হওনি বা অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে তাঁর প্রচণ্ড ক্রোধ সম্পাদন করোনি, তাই সদাপ্রভু আজ তোমার প্রতি এরকমটি করেছেন। \v 19 সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে ও তোমাকেও ফিলিস্তিনীদের হাতে সঁপে দেবেন এবং আগামীকাল তুমি ও তোমার ছেলেরা আমার সঙ্গে থাকবে। সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সৈন্যদলকেও ফিলিস্তিনীদের হাতে সঁপে দেবেন।” \p \v 20 শমূয়েলের কথা শুনে শৌল ভয় পেয়ে তৎক্ষণাৎ সটান মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে গেলেন। তাঁর শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেল, কারণ সারা দিনরাত তিনি কিছুই খাননি। \p \v 21 সেই মহিলাটি শৌলের কাছে এসে যখন দেখল তিনি খুব বিচলিত হয়ে পড়েছেন, তখন সে বলল, “দেখুন, আপনার দাসী আপনার বাধ্য হয়েছে। আমি প্রাণ হাতে নিয়ে আপনি আমাকে যা করতে বলেছিলেন তাই করেছি। \v 22 এখন দয়া করে আপনার দাসীর কথা শুনুন ও আপনাকে কিছু খাবার দিতে দিন যেন সেই খাবার খেয়ে আপনি ফিরে যাওয়ার শক্তি লাভ করেন।” \p \v 23 তিনি রাজি না হয়ে বললেন, “আমি খাব না।” \p কিন্তু তাঁর লোকজনও মহিলাটির সঙ্গে মিলিতভাবে তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, ও তিনি তাদের কথা শুনেছিলেন। তিনি মাটি থেকে উঠে খাটে গিয়ে বসেছিলেন। \p \v 24 মহিলাটির গোয়ালঘরে একটি হৃষ্টপুষ্ট বাছুর ছিল, যেটি সে তক্ষুনি বধ করল। সে কিছুটা ময়দা মেখে খামিরবিহীন কয়েকটি রুটি বানাল। \v 25 পরে সে সেগুলি শৌল ও তাঁর লোকজনের সামনে এনে রেখেছিল, ও তাঁরা ভোজনপান করলেন। রাত থাকতে থাকতেই তাঁরা উঠে চলে গেলেন। \c 29 \s1 আখীশ দাউদকে সিক্লগে ফেরত পাঠালেন \p \v 1 ফিলিস্তিনীরা অফেকে তাদের সব সৈন্য একত্রিত করল, এবং ইস্রায়েল যিষ্রিয়েলের ঝর্নার কাছে শিবির স্থাপন করল। \v 2 ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা যখন এক-একশো ও এক এক হাজার সৈন্য সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল, দাউদ তাঁর লোকজন নিয়ে আখীশের সঙ্গী হয়ে পিছন পিছন যাচ্ছিলেন। \v 3 ফিলিস্তিনী সেনাপতিরা জিজ্ঞাসা করল, “এই হিব্রু লোকগুলি কী করছে?” \p আখীশ উত্তর দিলেন, “এ কি সেই দাউদ নয়, যে ইস্রায়েলের রাজা শৌলের উচ্চপদস্থ এক সামরিক কর্মচারী ছিল? সে আমার সঙ্গে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে, এবং যেদিন সে শৌলকে ছেড়ে এসেছিল, সেদিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমি তার জীবনে কোনও দোষ খুঁজে পাইনি।” \p \v 4 কিন্তু ফিলিস্তিনী সেনাপতিরা আখীশের উপর রেগে গেল ও তাঁকে বলল, “এই লোকটিকে আপনি ফেরত পাঠিয়ে দিন, যেন সে সেখানেই ফিরে যেতে পারে যে স্থানটি আপনি তার জন্য নিরূপিত করে রেখেছেন। সে যেন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে না যায়, পাছে যুদ্ধ চলাকালীন সে আমাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। আমাদের নিজস্ব লোকজনের মুণ্ডু কেটে তার মনিবের অনুগ্রহ ফিরে পাওয়ার এমন সুযোগ সে কি আর পাবে? \v 5 এই দাউদের বিষয়েই কি লোকেরা নাচ-গান করে বলেনি: \q1 “ ‘শৌল মারলেন হাজার হাজার, \q2 আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত’?” \p \v 6 আখীশ তাই দাউদকে ডেকে তাঁকে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তুমি নির্ভরযোগ্য, এবং তোমায় আমি আমার সঙ্গে সৈন্যদলে রাখতে পারলে খুশিই হতাম। যেদিন তুমি আমার কাছে এসেছিলে সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি তোমার মধ্যে কোনও দোষ খুঁজে পাইনি, কিন্তু শাসনকর্তারা তোমাকে গ্রহণযোগ্য মনে করছে না। \v 7 এখন শান্তিতে ফিরে যাও; ফিলিস্তিনী শাসনকর্তারা অসন্তুষ্ট হয় এমন কোনও কাজ কোরো না।” \p \v 8 “কিন্তু আমি কী করেছি?” দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন। “যেদিন আমি আপনার কাছে এসেছিলাম, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আপনি আপনার দাসের বিরুদ্ধে কি কিছু খুঁজে পেয়েছেন? তবে কেন আমি গিয়ে আমার প্রভু মহারাজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারব না?” \p \v 9 আখীশ উত্তর দিলেন, “আমি জানি যে আমার নজরে তুমি ঈশ্বরের এক দূতের মতোই ভালো; তা সত্ত্বেও, ফিলিস্তিনী সেনাপতিরা বলেছে, ‘সে যেন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে না যায়।’ \v 10 এখন তাড়াতাড়ি উঠে পড়ো, তোমার মনিবের সেইসব দাসকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সকাল আলো ফোটামাত্র এখান থেকে চলে যাও, যারা তোমার সঙ্গে এখানে এসেছিল।” \p \v 11 তাই দাউদ ও তাঁর লোকজন ফিলিস্তিনীদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল উঠে পড়েছিলেন, এবং ফিলিস্তিনীরা যিষ্রিয়েলে চলে গেল। \c 30 \s1 দাউদ অমালেকীয়দের সংহার করলেন \p \v 1 দাউদ ও তাঁর লোকজন তৃতীয় দিনে সিক্লগে গিয়ে পৌঁছালেন। ইত্যবসরে অমালেকীয়রা নেগেভে\f + \fr 30:1 \fr*\ft বা, দক্ষিণাঞ্চলে\ft*\f* ও সিক্লগে হামলা চালিয়েছিল। তারা সিক্লগ আক্রমণ করে সেটি পুড়িয়ে দিয়েছিল, \v 2 এবং স্ত্রীলোকদের ও ছোটো-বড়ো সবাইকে বন্দি করল। তারা কাউকেই হত্যা করেনি, কিন্তু ফিরে যাওয়ার সময় তাদের তুলে নিয়ে গেল। \p \v 3 দাউদ ও তাঁর লোকজন যখন সিক্লগে পৌঁছেছিলেন, তখন তাঁরা দেখেছিলেন নগরটি আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ও তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা বন্দি হয়েছে। \v 4 তাই দাউদ ও তাঁর লোকজন গলা ছেড়ে কেঁদেছিলেন। শেষে এমন হল যে তাঁদের আর কাঁদার শক্তি অবশিষ্ট ছিল না। \v 5 দাউদের দুই স্ত্রী—যিষ্রিয়েলের অহীনোয়ম ও কর্মিল-নিবাসী নাবলের বিধবা অবীগল বন্দি হয়েছিলেন। \v 6 দাউদ মনে খুব দুঃখ পেয়েছিলেন কারণ লোকেরা তাঁকে পাথর মারার কথা বলছিল; ছেলেমেয়েদের জন্য প্রত্যেকের মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু দাউদ তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুতে শক্তি অর্জন করলেন। \p \v 7 পরে দাউদ অহীমেলকের ছেলে যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি আমার কাছে নিয়ে আসুন।” অবিয়াথর সেটি তাঁর কাছে এনেছিলেন, \v 8 এবং দাউদ সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, “আমি কি আক্রমণকারীদের পিছু ধাওয়া করব? আমি কি তাদের ধরে ফেলতে পারব?” \p “পিছু ধাওয়া করো,” তিনি উত্তর দিলেন। “তুমি নিঃসন্দেহে তাদের ধরে ফেলতে পারবে ও উদ্ধারকাজে সফল হবে।” \p \v 9 দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা 600 জন লোক বিষোর উপত্যকায় পৌঁছে গেলেন। কয়েকজন সেখানেই থেকে গেল। \v 10 তাদের মধ্যে 200 জন এত ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল যে তারা আর উপত্যকাটি পার হতে পারেনি, কিন্তু দাউদ ও অন্য 400 জন লোক আক্রমণকারীদের পিছু ধাওয়া করেই যাচ্ছিলেন। \p \v 11 তারা মাঠে একজন মিশরীয় লোককে খুঁজে পেয়ে তাকে দাউদের কাছে নিয়ে এসেছিল। তারা তাকে জলপান করতে ও খাবার খেতে দিয়েছিল— \v 12 সেই খাবার ছিল ডুমুরচাকের খানিকটা পিঠে ও কিশমিশ দিয়ে তৈরি দুটি পিঠে। সে সেগুলি খেয়ে শক্তি ফিরে পেয়েছিল, কারণ সে তিন দিন তিনরাত খাবার খায়নি বা জলও পান করেননি। \p \v 13 দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কার লোক? কোথা থেকেই বা এসেছ?” \p সে বলল, “আমি জাতিতে একজন মিশরীয়, আমি একজন অমালেকীয়ের দাস। তিন দিন আগে আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম তখন আমার মনিব আমাকে একা ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন। \v 14 আমরা করেথীয়দের নেগেভে, যিহূদার অধিকারভুক্ত কিছু এলাকায় ও কালেবের নেগেভে হানা দিয়েছিলাম। আবার আমরা সিক্লগও আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছি।” \p \v 15 দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি পথ দেখিয়ে আমাকে সেই আক্রমণকারীদের কাছে নিয়ে যেতে পারবে?” \p সে উত্তর দিয়েছিল, “আপনি ঈশ্বরের কাছে শপথ করে বলুন যে আপনি আমাকে হত্যা করবেন না বা আমাকে আমার মনিবের হাতে তুলে দেবেন না, তবেই আমি আপনাকে তাদের কাছে নিয়ে যাব।” \p \v 16 সে দাউদকে তাদের কাছে নিয়ে গেল, আর সেখানে তারা গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ভোজনপান ও বিশ্রাম করছিল কারণ তারা ফিলিস্তিনীদের দেশ থেকে ও যিহূদা থেকে প্রচুর পরিমাণে লুন্ঠিত জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছিল। \v 17 দাউদ সেদিন ভরসন্ধ্যা থেকে শুরু করে পরদিন সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন, ও উটের পিঠে চেপে পালিয়ে যাওয়া 400 জন যুবক ছাড়া তাদের মধ্যে আর কেউই রক্ষা পায়নি। \v 18 অমালেকীয়রা যা যা নিয়ে গেল সে সবকিছুই, এমনকি তাঁর দুই স্ত্রীকেও দাউদ ফিরিয়ে এনেছিলেন। \v 19 কোনো কিছুই হারায়নি: অল্পবয়স্ক বা বয়সে বৃদ্ধ, ছেলে বা মেয়ে, লুন্ঠিত জিনিসপত্র বা তারা নিয়ে গিয়েছিল এমন অন্য সবকিছু দাউদ ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। \v 20 তিনি সব মেষ ও পশুপাল ছিনিয়ে এনেছিলেন, এবং এই বলে তাঁর লোকজন সেগুলি অন্যান্য গবাদি পশুর আগে আগে তাড়িয়ে এনেছিল, “এসব দাউদের লুন্ঠিত জিনিসপত্র।” \p \v 21 পরে দাউদ সেই 200 জন লোকের কাছে এলেন যারা খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল বলে তাঁর অনুগামী হতে পারেনি ও তারা বিষোর উপত্যকায় থেকে গিয়েছিল। তারা দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। দাউদ ও তাঁর লোকজন সেখানে পৌঁছালে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন তারা কেমন আছে। \v 22 কিন্তু দাউদের অনুগামীদের মধ্যে সব দুষ্ট প্রকৃতির ও ঝামেলা সৃষ্টিকারী লোক বলল, “যেহেতু এরা আমাদের সঙ্গে যায়নি, তাই আমাদের ফিরিয়ে আনা লুন্ঠিত জিনিসপত্রের বখরা আমরা এদের দেব না। অবশ্য, এরা প্রত্যেকে নিজেদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যেতে পারে।” \p \v 23 দাউদ উত্তর দিলেন, “না না, হে আমার ভাইয়েরা, সদাপ্রভু আমাদের যা দিয়েছেন, তা নিয়ে তোমরা এরকম কোরো না। তিনি আমাদের সুরক্ষা জুগিয়েছেন ও সেই আক্রমণকারীদের আমাদের হাতে সঁপে দিয়েছেন, যারা আমাদের বিরুদ্ধে এসেছিল। \v 24 কে তোমাদের কথা শুনবে? যারা রসদসামগ্রী পাহারা দিয়েছিল তারাও, যারা যুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের মতোই ভাগ পাবে। সবার বখরাই সমান হবে।” \v 25 সেদিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত দাউদ ইস্রায়েলের জন্য এই নিয়ম ও বিধি স্থির করে দিয়েছেন। \p \v 26 সিক্লগে পৌঁছে দাউদ এই বলে লুন্ঠিত জিনিসপত্রের কিছুটা অংশ তাঁর বন্ধুস্থানীয় যিহূদার প্রাচীনদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন যে, “সদাপ্রভুর শত্রুদের কাছ থেকে পাওয়া লুন্ঠিত জিনিসপত্র থেকে আপনাদের জন্য সামান্য উপহার পাঠাচ্ছি।” \p \v 27 দাউদ তাঁদেরই কাছে সেগুলি পাঠালেন, যাঁরা বেথেল, নেগেভের রামোৎ ও যত্তীরে থাকতেন; \v 28 যাঁরা অরোয়ের, শিফমোৎ, ইষ্টিমোয় \v 29 ও রাখলে থাকতেন; যাঁরা যিরহমেলীয়দের ও কেনীয়দের নগরগুলিতে থাকতেন; \v 30 যাঁরা হর্মা, বোর-আশন, অথাক \v 31 ও হিব্রোণে থাকতেন; তথা অন্যান্য সেইসব স্থানে থাকতেন, যেখানে যেখানে তিনি ও তাঁর লোকজন ঘুরে বেড়াতেন। \c 31 \s1 শৌল আত্মহত্যা করলেন \p \v 1 ইত্যবসরে ফিলিস্তিনীরা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল; ইস্রায়েলীরা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল, ও অনেকেই গিলবোয় পর্বতে মারা পড়েছিল। \v 2 ফিলিস্তিনীরা বীর-বিক্রমে শৌল ও তাঁর ছেলেদের পিছু ধাওয়া করল, এবং তারা তাঁর ছেলে যোনাথন, অবীনাদব ও মল্কীশূয়কে হত্যা করল। \v 3 শৌলের চারপাশে ভীষণ যুদ্ধ চলছিল, এবং তীরন্দাজেরা তাঁর নাগাল পেয়ে তাঁকে গুরুতরভাবে আহত করে ফেলেছিল। \p \v 4 শৌল তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিকে বললেন, “তোমার তরোয়ালটি বের করে আমার উপর চালিয়ে দাও, তা না হলে সুন্নত না করা এইসব লোকজন এসে আমাকে হত্যা করে আমার অপমান করবে।” \p কিন্তু তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি ভয় পেয়েছিল ও তা করতে চায়নি; তাই শৌল নিজের তরোয়ালটি বের করে সেটির উপর নিজেই পড়ে গেলেন। \v 5 সেই অস্ত্র বহনকারী লোকটি যখন দেখল যে শৌল মারা গিয়েছেন, তখন সেও নিজের তরোয়ালের উপর পড়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গেই মারা গেল। \v 6 অতএব একই দিনে শৌল, তাঁর তিন ছেলে ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি এবং তাঁর সব লোকজন একসঙ্গে মারা গেলেন। \p \v 7 উপত্যকার ইস্রায়েলীরা ও জর্ডন নদীর ওপারে বসবাসকারী লোকেরা যখন দেখল যে ইস্রায়েলী সৈন্যদল পালিয়েছে এবং শৌল ও তাঁর ছেলেরা মারা গিয়েছেন, তখন তারাও নিজেদের নগরগুলি ছেড়ে পালিয়ে গেল। ফিলিস্তিনীরা এসে তখন সেই নগরগুলি দখল করল। \p \v 8 পরদিন ফিলিস্তিনীরা যখন মৃতদেহগুলি থেকে সাজসজ্জা খুলে নিতে এসেছিল, তারা শৌল ও তাঁর ছেলেদের গিলবোয় পর্বতে মরে পড়ে থাকতে দেখেছিল। \v 9 তারা তাঁর মাথা কেটে নিয়েছিল ও তাঁর অস্ত্র-সজ্জাও খুলে নিয়েছিল, এবং তারা ফিলিস্তিনীদের গোটা দেশ জুড়ে তাদের দেবদেবীর মন্দিরে মন্দিরে ও প্রজাদের মধ্যে এই খবর ঘোষণা করার জন্য দূতদের পাঠিয়ে দিয়েছিল। \v 10 তারা তাঁর মাথাটি নিয়ে গিয়ে অষ্টারোৎ দেবীদের মন্দিরে রেখেছিল এবং তাঁর দেহটি বেথ-শানের প্রাচীরে ঝুলিয়ে রেখেছিল। \p \v 11 যাবেশ-গিলিয়দের লোকজন যখন শুনতে পেল ফিলিস্তিনীরা শৌলের প্রতি কী করেছে, \v 12 তখন সেখানকার বীরপুরুষরা রাতারাতি কুচকাওয়াজ করে বেথ-শানে পৌঁছে গেল। তারা বেথ-শানের প্রাচীর থেকে শৌল ও তাঁর ছেলেদের শবগুলি নামিয়ে এনে যাবেশে ফিরে গেল, ও সেখানে তারা সেগুলি পুড়িয়ে দিল। \v 13 পরে তারা তাদের হাড়গুলি নিয়ে সেগুলি যাবেশে একটি ঝাউ গাছের তলায় কবর দিল, এবং সাত দিন ধরে উপবাস করল।