\id 1KI - Biblica® Open Bengali Contemporary Version (Updated 2021) \usfm 3.0 \ide UTF-8 \h 1 রাজাবলি \toc1 রাজাবলির প্রথম পুস্তক \toc2 1 রাজাবলি \toc3 1রাজা \mt1 রাজাবলির প্রথম পুস্তক \c 1 \s1 আদোনিয় রাজা হয়ে বসে \p \v 1 রাজা দাউদ যখন খুব বৃদ্ধ হয়ে গেলেন, তখন এমনকি তাঁর শরীর প্রচুর কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলেও গরম থাকত না। \v 2 তাই তাঁর পরিচারকেরা তাঁকে বলল, “মহারাজের সেবা করার ও তাঁর যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা একজন অল্পবয়স্ক কুমারী মেয়েকে খুঁজে আনি। সে আপনার পাশে শুয়ে থাকবে, যেন আমাদের প্রভু মহারাজের শরীর গরম থাকে।” \p \v 3 পরে তারা ইস্রায়েলের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত সুন্দরী এক যুবতীর খোঁজ করল এবং শূনেমীয়া অবীশগকে পেয়ে তাকে রাজার কাছে নিয়ে এসেছিল। \v 4 মেয়েটি অপরূপ সুন্দরী ছিল; সে মহারাজের দায়িত্ব নিয়েছিল ও খুব যত্নআত্তি করল, কিন্তু রাজা তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেননি। \p \v 5 এদিকে হগীতের ছেলে আদোনিয়\f + \fr 1:5 \fr*\ft যে দাউদের ঔরসে, হগীতের গর্ভে জন্মেছিল\ft*\f* আগ বাড়িয়ে বলে বেড়াচ্ছিল, “আমিই রাজা হব।” তাই সে রথ ও ঘোড়া\f + \fr 1:5 \fr*\ft অথবা, “অশ্বারোহী”\ft*\f* সাজিয়েছিল, ও তার আগে আগে দৌড়ানোর জন্য 50 জন লোক জোগাড় করল। \v 6 (তার বাবা কখনও এই বলে তাকে তিরস্কার করেননি, “তুমি কেন এরকম আচরণ করছ?” সেও দেখতে খুব সুন্দর ছিল ও অবশালোমের পরেই তার জন্ম হল।) \p \v 7 আদোনিয় সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে আলোচনা করল, এবং তারা তাকে তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন। \v 8 কিন্তু যাজক সাদোক, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, ভাববাদী নাথন, শিমিয়ি ও রেয়ি এবং দাউদের বিশেষ রক্ষীদল আদোনিয়ের সঙ্গে যোগ দেননি। \p \v 9 আদোনিয় পরে ঐন-রোগেলের কাছে অবস্থিত সোহেলৎ পাথরে কয়েকটি মেষ, গবাদি পশু ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুর বলি দিয়েছিল। সে তার সব ভাইকে, অর্থাৎ রাজার ছেলেদের, ও যিহূদার সব কর্মকর্তাকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল, \v 10 কিন্তু সে ভাববাদী নাথনকে বা বনায়কে বা বিশেষ রক্ষীদলকে অথবা তার ভাই শলোমনকে নিমন্ত্রণ জানায়নি। \p \v 11 তখন শলোমনের মা বৎশেবাকে নাথন জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি শোনেননি যে হগীতের ছেলে আদোনিয় রাজা হয়েছে, এবং আমাদের মনিব দাউদ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না? \v 12 তবে এখন, কীভাবে আপনি নিজের ও আপনার ছেলে শলোমনের প্রাণরক্ষা করবেন, সে বিষয়ে আমি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি। \v 13 রাজা দাউদের কাছে যান ও তাঁকে গিয়ে বলুন, ‘হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি আপনার দাসীর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেননি: “তোমার ছেলে শলোমন অবশ্যই আমার পরে রাজা হবে, ও সেই আমার সিংহাসনে বসবে”? তবে আদোনিয় কেন রাজা হল?’ \v 14 মহারাজের সঙ্গে আপনার কথাবার্তা শেষ হওয়ার আগেই আমি সেখানে পৌঁছে যাব ও আপনার বলা কথার সঙ্গে আমার নিজের কথাও যোগ করব।” \p \v 15 অতএব বৎশেবা বৃদ্ধ রাজামশাইকে দেখতে তাঁর ঘরে গেলেন। সেখানে তখন শূনেমীয়া অবীশগ তাঁর যত্নআত্তি করছিল। \v 16 বৎশেবা মহারাজের সামনে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। \p “তুমি কী চাও?” রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন। \p \v 17 বৎশেবা তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে আপনি নিজেই আপনার এই দাসী—আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন: ‘তোমার ছেলে শলোমন আমার পরে রাজা হবে, ও সে আমার সিংহাসনে বসবে।’ \v 18 কিন্তু এখন আদোনিয় রাজা হয়ে গিয়েছে, এবং আপনি, আমার প্রভু মহারাজ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। \v 19 সে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু, হৃষ্টপুষ্ট বাছুর ও মেষ বলি দিয়েছে, এবং রাজার ছেলেদের সবাইকে, যাজক অবিয়াথরকে ও সেনাপতি যোয়াবকে নিমন্ত্রণ করেছে, অথচ আপনার দাস শলোমনকে নিমন্ত্রণ করেননি। \v 20 হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনার পরে আমার প্রভু মহারাজের সিংহাসনে কে বসবে তা জানার জন্য ইস্রায়েলে সবার চোখের দৃষ্টি আপনার উপর স্থির হয়ে আছে। \v 21 তা না হলে, আমার প্রভু মহারাজ যেই না তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হবেন, আমার সঙ্গে ও আমার ছেলে শলোমনের সঙ্গে তখন অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হবে।” \p \v 22 তিনি তখনও রাজার সঙ্গে কথা বলছিলেন, এমন সময় ভাববাদী নাথন সেখানে পৌঁছেছিলেন। \v 23 রাজামশাইকে বলা হল, “ভাববাদী নাথন এখানে এসেছেন।” অতএব তিনি রাজার সামনে গিয়ে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। \p \v 24 নাথন বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি ঘোষণা করেছেন যে আপনার পরে আদোনিয়ই রাজা হবে ও সেই আপনার সিংহাসনে বসবে? \v 25 আজই সে নিচে নেমে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু, হৃষ্টপুষ্ট বাছুর ও মেষ বলি দিয়েছে। সে রাজার ছেলেদের সবাইকে, সৈন্যদলের সেনাপতিদের ও যাজক অবিয়াথরকে নিমন্ত্রণ করল। ঠিক এই মুহূর্তে তারা তার সঙ্গে বসে ভোজনপান করছে ও বলছে, ‘রাজা আদোনিয় চিরজীবী হোন!’ \v 26 কিন্তু আপনার এই দাস আমাকে, যাজক সাদোককে, ও যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এবং আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করেননি। \v 27 আমার প্রভু মহারাজের পরে তাঁর সিংহাসনে কে বসবে সে বিষয়ে তাঁর দাসদের কিছু না জানিয়ে কি আমার প্রভু মহারাজ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?” \s1 দাউদ শলোমনকে রাজা করলেন \p \v 28 তখন রাজা দাউদ বললেন, “বৎশেবাকে ডেকে আনো।” অতএব তিনি রাজার কাছে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। \p \v 29 রাজামশাই তখন একটি শপথ নিয়েছিলেন: “যিনি আমাকে সব বিপত্তি থেকে রক্ষা করেছেন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, \v 30 আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে তোমার কাছে যে প্রতিজ্ঞাটি করলাম, সেটি আমি অবশ্যই পালন করব: তোমার ছেলে শলোমনই আমার পরে রাজা হবে, আর আমার স্থানে আমার সিংহাসনে সেই বসবে।” \p \v 31 তখন বৎশেবা মাটিতে উবুড় হয়ে রাজামশাইকে প্রণাম করে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজ দাউদ, চিরজীবী হোন!” \p \v 32 রাজা দাউদ বললেন, “যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে ডেকে আনো।” তারা রাজার সামনে আসার পর \v 33 তিনি তাদের বললেন: “তোমরা তোমাদের মনিবের দাসদের সঙ্গে নাও ও আমার ছেলে শলোমনকে আমার নিজস্ব খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে তাকে নিয়ে গীহোন জলের উৎসে নেমে যাও। \v 34 সেখানে গিয়ে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাকে ইস্রায়েলের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করুক। তোমরা শিঙা বাজিয়ে চিৎকার করে বোলো, ‘রাজা শলোমন দীর্ঘজীবী হোন!’ \v 35 পরে তোমরা তার সঙ্গে থেকে উপরে উঠে যেয়ো ও সে এসে আমার সিংহাসনে বসে আমার স্থানে রাজত্ব করুক। আমি তাকে ইস্রায়েল ও যিহূদার উপর শাসক নিযুক্ত করলাম।” \p \v 36 যিহোয়াদার ছেলে বনায় রাজামশাইকে উত্তর দিলেন, “আমেন! আমার প্রভু মহারাজের ঈশ্বর সদাপ্রভুও এরকমই ঘোষণা করুন। \v 37 সদাপ্রভু যেমন আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, তিনি যেন সেভাবেই শলোমনেরও সঙ্গে সঙ্গে থাকেন ও তাঁর সিংহাসন আমার প্রভু মহারাজ দাউদের সিংহাসনের চেয়েও বড়ো করলেন!” \p \v 38 অতএব যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয়রা ও পলেথীয়রা শলোমনকে রাজা দাউদের খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে, তাঁর সমগামী হয়ে তাঁকে গীহোনে নিয়ে গেলেন। \v 39 যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবু থেকে তেলের সেই শিং নিয়ে এসে শলোমনকে অভিষিক্ত করলেন। পরে তারা শিঙা বাজিয়েছিলেন ও সব লোকজন চিৎকার করে উঠেছিল, “রাজা শলোমন দীর্ঘজীবী হোন!” \v 40 সব লোকজন তাঁর পিছু পিছু বাঁশি বাজিয়ে ও মহানন্দে এমনভাবে ছুটতে শুরু করল, যে সেই শব্দে মাটি কেঁপে উঠেছিল। \p \v 41 আদোনিয় ও তার সঙ্গে থাকা সব অতিথি ভোজসভার ভোজনপান প্রায় শেষ করে এসেছে, এমন সময় তারা সেই শব্দ শুনতে পেয়েছিল। শিঙার শব্দ শুনতে পেয়ে যোয়াব জিজ্ঞাসা করলেন, “নগরে কী এত চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে?” \p \v 42 তিনি একথা বলতে না বলতেই যাজক অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন সেখানে পৌঁছে গেলেন। আদোনিয় বলল, “আসুন, আসুন। আপনার মতো গুণীজন নিশ্চয় ভালো খবরই নিয়ে এসেছেন।” \p \v 43 “একেবারেই না!” যোনাথন আদোনিয়কে উত্তর দিলেন। “আমাদের প্রভু মহারাজ দাউদ শলোমনকে রাজা করেছেন। \v 44 মহারাজ তাঁর সঙ্গে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়দেরও পাঠালেন, এবং তারা শলোমনকে মহারাজের খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে দিলেন, \v 45 এবং যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন গীহোনে তাঁকে রাজপদে অভিষিক্ত করেছেন। সেখান থেকে তারা হর্ষধ্বনি করতে করতে চলে গিয়েছেন, এবং নগরেও তার প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে। তোমরা এই চিৎকারই শুনেছ। \v 46 এছাড়াও, শলোমন রাজসিংহাসনে বসে পড়েছেন। \v 47 আবার, রাজকর্মচারীরা এই বলে আমাদের প্রভু মহারাজ দাউদকে অভিনন্দন জানাতে এসেছে যে, ‘আপনার ঈশ্বর, শলোমনের নাম আপনার নামের চেয়েও বিখ্যাত করে তুলুন এবং তাঁর সিংহাসন আপনার সিংহাসনের চেয়েও বড়ো করে তুলুন!’ মহারাজ নিজের বিছানাতেই আরাধনা করে \v 48 বলেছেন, ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, যিনি আজ আমাকে নিজের চোখেই আমার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী দেখে যাওয়ার সুযোগ দিলেন।’ ” \p \v 49 একথা শুনে আদোনিয়ের অতিথিরা সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। \v 50 কিন্তু আদোনিয় শলোমনের ভয়ে গিয়ে যজ্ঞবেদির শিংগুলি আঁকড়ে জড়িয়ে ধরেছিল। \v 51 তখন শলোমনকে বলা হল, “আদোনিয় রাজা শলোমনের ভয়ে যজ্ঞবেদির শিংগুলি আঁকড়ে ধরে আছে। সে বলছে, ‘রাজা শলোমন আজ আমার কাছে শপথ করে বলুন যে তিনি তাঁর দাসকে তরোয়ালের আঘাতে হত্যা করবেন না।’ ” \p \v 52 শলোমন উত্তর দিলেন, “সে যদি নিজেকে অনুগত প্রমাণিত করতে পারে, তবে তার মাথার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না; কিন্তু যদি তার মধ্যে দুষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়, তবে তাকে মরতেই হবে।” \v 53 পরে রাজা শলোমন লোক পাঠালেন, ও তারা তাকে যজ্ঞবেদি থেকে নামিয়ে এনেছিল। আদোনিয় এসে রাজা শলোমনের কাছে নতজানু হল, ও শলোমন বললেন, “তোমার ঘরে ফিরে যাও।” \c 2 \s1 শলোমনকে দাউদের শেষ নির্দেশদান \p \v 1 যখন দাউদের মৃত্যুর সময়কাল ঘনিয়ে এসেছিল, তাঁর ছেলে শলোমনকে তিনি তখন কিছু নির্দেশ দিলেন। \p \v 2 “পৃথিবীতে সবাই যে পথে যায়, আমিও সেই পথেই যাচ্ছি,” তিনি বললেন। “তাই বলবান হও, একজন পুরুষের মতো আচরণ করো, \v 3 এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যা চান, তা লক্ষ্য করো: তাঁর প্রতি বাধ্য হয়ে চলো, আর মোশির বিধানে তাঁর যে হুকুম ও আদেশ, তাঁর বিধান ও বিধিনিয়ম লেখা আছে, তা পালন করো। এরকমটি করো, যেন তুমি যা যা করো ও যেখানে যেখানে যাও, সবেতেই সফল হতে পারো \v 4 এবং সদাপ্রভু যেন আমার কাছে করা তাঁর সেই প্রতিজ্ঞাটি রক্ষা করতে পারেন: ‘যদি তোমার বংশধররা তাদের জীবনযাপনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারে, ও যদি তারা আমার সামনে তাদের সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বস্ততাপূর্বক চলে, তবে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসার জন্য তোমার কোনও উত্তরাধিকারীর অভাব হবে না।’ \p \v 5 “এখন তুমি নিজেই তো জানো সরূয়ার ছেলে যোয়াব আমার প্রতি কী করল—ইস্রায়েলী সৈন্যদলের দুই সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনের ও যেথরের ছেলে অমাসার প্রতি সে কী করল। সে তাদের হত্যা করল, শান্তির সময়েও সে এমনভাবে তাদের রক্তপাত করল, যেন মনে হয় যুদ্ধেই তা হয়েছে, এবং সেই রক্তে সে তার কোমরের কোমরবন্ধ ও পায়ের চটিজুতো রাঙিয়ে নিয়েছিল। \v 6 তোমার প্রজ্ঞা অনুসারেই তার মোকাবিলা কোরো, কিন্তু পাকাচুলে তাকে শান্তিতে কবরে যেতে দিয়ো না। \p \v 7 “কিন্তু গিলিয়দীয় বর্সিল্লয়ের ছেলেদের প্রতি দয়া দেখিয়ো এবং তারা যেন সেইসব লোকজনের মধ্যেই থাকে, যারা তোমার টেবিলে বসে ভোজনপান করবে। আমি যখন তোমার দাদা অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে গেলাম, তখন তারাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। \p \v 8 “আরও মনে রেখো, তোমার কাছে বহুরীমের অধিবাসী গেরার ছেলে বিন্যামীনীয় শিমিয়ি আছে। যেদিন আমি মহনয়িমে গেলাম, সেদিন সে আমাকে সাংঘাতিক অভিশাপ দিয়েছিল। সে যখন জর্ডন নদীর পারে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, আমি সদাপ্রভুর নামে শপথ করে তাকে বললাম: ‘আমি তরোয়ালের আঘাতে তোমাকে হত্যা করব না।’ \v 9 কিন্তু এখন, তাকে আর নির্দোষ বলে মনে কোরো না। তুমি একজন বিচক্ষণ লোক; তুমি জেনে নিয়ো, তার প্রতি কী করতে হবে। রক্তশুদ্ধ পাকাচুলে তাকে কবরে পাঠিয়ো।” \p \v 10 পরে দাউদ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। \v 11 তিনি ইস্রায়েলে চল্লিশ বছর—সাত বছর হিব্রোণে ও তেত্রিশ বছর জেরুশালেমে—রাজত্ব করলেন। \v 12 অতএব শলোমন তাঁর বাবা দাউদের সিংহাসনে বসেছিলেন, ও তাঁর শাসনকাল স্থিতিশীল হল। \s1 শলোমনের সিংহাসন সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হল \p \v 13 এদিকে হগীতের ছেলে আদোনিয় শলোমনের মা বৎশেবার কাছে গেল। বৎশেবা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি শান্তিপূর্ণভাবে এসেছ?” \p সে উত্তর দিয়েছিল, “হ্যাঁ, শান্তিপূর্ণভাবেই এসেছি।” \v 14 সে আরও বলল, “আপনাকে আমার কিছু বলার আছে।” \p “তুমি বলতে পারো,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 15 “আপনি তো জানেনই,” সে বলল, “রাজ্যটি আমারই ছিল। ইস্রায়েলে সবাই আমাকেই তাদের রাজারূপে দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে পরিস্থিতি বদলে গেল, ও রাজ্যটি আমার ভাইয়ের হাতে চলে গিয়েছে; কারণ সদাপ্রভুর দিক থেকেই এটি তার কাছে এসেছে। \v 16 এখন আমি আপনার কাছে একটি অনুরোধ রাখছি। আমাকে প্রত্যাখ্যান করবেন না।” \p “তুমি বলতে পারো,” তিনি বললেন। \p \v 17 অতএব সে বলে গেল, “দয়া করে রাজা শলোমনকে বলুন—তিনি আপনার কথা অগ্রাহ্য করবেন না—তিনি যেন আমার স্ত্রী হওয়ার জন্য শূনেমীয়া অবীশগকে আমার হাতে তুলে দেন।” \p \v 18 “ঠিক আছে,” বৎশেবা উত্তর দিলেন, “আমি তোমার হয়ে রাজার সঙ্গে কথা বলব।” \p \v 19 বৎশেবা যখন আদোনিয়ের হয়ে কথা বলার জন্য রাজা শলোমনের কাছে গেলেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য রাজা উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁকে প্রণাম করলেন ও নিজের সিংহাসনে বসে পড়েছিলেন। তিনি রাজমাতার জন্য একটি সিংহাসন আনিয়েছিলেন, ও বৎশেবা তাঁর ডানদিকে গিয়ে বসেছিলেন। \p \v 20 “তোমার কাছে আমার একটি ছোটো অনুরোধ জানানোর আছে,” তিনি বললেন। “আমাকে প্রত্যাখ্যান কোরো না।” \p রাজা উত্তর দিলেন, “মা, বলে ফেলো; আমি তোমাকে প্রত্যাখ্যান করব না।” \p \v 21 অতএব বৎশেবা বললেন, “তোমার দাদা আদোনিয়ের সঙ্গে শূনেমীয়া অবীশগের বিয়ে দিয়ে দাও।” \p \v 22 রাজা শলোমন তাঁর মাকে উত্তর দিলেন, “আদোনিয়ের জন্য তুমি কেন শূনেমীয়া অবীশগকে চাইছ? তুমি তো তার জন্য রাজ্যটিও চাইতে পারো—যাই হোক না কেন, সে তো আমার বড়ো দাদা—হ্যাঁ, তার ও যাজক অবিয়াথর ও সরূয়ার ছেলে যোয়াবের জন্যও তো চাইতে পারো!” \p \v 23 পরে রাজা শলোমন সদাপ্রভুর নামে দিব্যি করে বললেন: “এই অনুরোধ জানানোর জন্য আদোনিয়কে যদি তার প্রাণ হারাতে না হয়, তবে যেন ঈশ্বর আমাকে কঠোর থেকে কঠোরতর দণ্ড দেন! \v 24 আর এখন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি—যিনি আমাকে পাকাপাকিভাবে আমার বাবা দাউদের সিংহাসনে বসিয়েছেন এবং তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে এক সাম্রাজ্য স্থাপন করেছেন—আজই আদোনিয়কে মেরে ফেলা হবে!” \v 25 অতএব রাজা শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে আদেশ দিলেন, ও তিনি আদোনিয়কে আঘাত করলেন ও সে মারা গেল। \p \v 26 যাজক অবিয়াথরকে রাজা বললেন, “আপনি অনাথোতে আপনার ক্ষেতে ফিরে যান। আপনি মরারই যোগ্য, তবে এখন আমি আপনাকে মারছি না, কারণ আমার বাবা দাউদের কাছে থেকে আপনি সার্বভৌম সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি বহন করলেন এবং আমার বাবার সব কষ্টের সাথী হলেন।” \v 27 অতএব শীলোতে এলির বংশের বিষয়ে সদাপ্রভু যা বলেছিলেন, তা সত্য প্রমাণিত করে শলোমন অবিয়াথরকে যাজক পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। \p \v 28 এই খবরটি যখন সেই যোয়াবের কাছে পৌঁছেছিল, যিনি অবশালোমের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে শামিল না হলেও আদোনিয়ের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে শামিল হলেন, তখন তিনি সদাপ্রভুর আবাস তাঁবুতে পালিয়ে গিয়ে যজ্ঞবেদির শিংগুলি আঁকড়ে জড়িয়ে ধরলেন। \v 29 রাজা শলোমনকে বলা হল যে যোয়াব সদাপ্রভুর আবাস তাঁবুতে পালিয়ে গিয়েছেন ও যজ্ঞবেদির পাশেই আছেন। তখন শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে আদেশ দিলেন, “যাও, তাঁকে গিয়ে আঘাত করো!” \p \v 30 অতএব বনায় সদাপ্রভুর আবাস তাঁবুতে ঢুকে যোয়াবকে বললেন, “রাজামশাই বলছেন, ‘বেরিয়ে আসুন!’ ” \p কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন, “তা হবে না, আমি এখানেই মরব।” \p বনায় রাজাকে খবর দিলেন, “যোয়াব এভাবেই আমার কথার উত্তর দিয়েছেন।” \p \v 31 তখন রাজামশাই বনায়কে আদেশ দিলেন, “তাঁর কথামতোই কাজ করো। তাঁকে আঘাত করে মেরে কবর দিয়ে দাও, ও এভাবেই যোয়াব যে নির্দোষ রক্তপাত করলেন তার দোষ থেকে আমাকে ও আমার পরিবারকে মুক্ত করো। \v 32 তিনি যে রক্তপাত করলেন, তার প্রতিফল তাঁকে সদাপ্রভুই দেবেন, কারণ আমার বাবা দাউদের অজান্তেই তিনি দুজন মানুষকে আক্রমণ করে তরোয়ালের আঘাতে তাদের মেরে ফেলেছিলেন। তারা দুজনই—নেরের ছেলে, তথা ইস্রায়েলী সৈন্যদলের সেনাপতি অবনের, এবং যেথরের ছেলে, তথা যিহূদা সৈন্যদলের সেনাপতি অমাসা—ভালো লোক ছিলেন এবং তাঁর তুলনায় বেশি সৎ ছিলেন। \v 33 তাদের রক্তপাতের অপরাধ চিরকাল যেন যোয়াব ও তাঁর বংশধরদের মাথার উপরেই বর্তায়। কিন্তু দাউদ ও তাঁর বংশধরদের, তাঁর পরিবার ও তাঁর সিংহাসনের উপর যেন চিরকাল সদাপ্রভুর শান্তি বিরাজমান থাকে।” \p \v 34 অতএব যিহোয়াদার ছেলে বনায় গিয়ে যোয়াবকে আঘাত করে তাঁকে হত্যা করলেন, এবং তাঁকে গ্রামাঞ্চলে তাঁর ঘরের উঠোনে কবর দেওয়া হল। \v 35 রাজামশাই যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে যোয়াবের স্থানে সৈন্যদলের সেনাপতি নিযুক্ত করলেন এবং অবিয়াথরের পরিবর্তে যাজক সাদোককে নিযুক্ত করলেন। \p \v 36 পরে রাজামশাই শিমিয়িকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে বললেন, “জেরুশালেমে একটি বাড়ি তৈরি করে সেখানে গিয়ে থাকো, কিন্তু আর কোথাও যেয়ো না। \v 37 যেদিন তুমি নগর ছেড়ে কিদ্রোণ উপত্যকা পার করবে, সেদিন নিশ্চিত জেনো, তুমি মরবেই মরবে; তোমার রক্তপাতের অপরাধ তোমার মাথাতেই বর্তাবে।” \p \v 38 শিমিয়ি রাজাকে উত্তর দিয়েছিল, “আপনি যা বলেছেন, ভালোই বলেছেন। আমার প্রভু মহারাজ যা বলেছেন, আপনার দাস তাই করবে।” আর শিমিয়ি বেশ কিছুকাল জেরুশালেমে থেকে গেল। \p \v 39 কিন্তু তিন বছর পর শিমিয়ির দাসদের মধ্যে দুজন দাস, মাখার ছেলে তথা গাতের রাজা আখীশের কাছে পালিয়ে গেল, এবং শিমিয়িকে বলা হল, “তোমার দাসেরা গাতে আছে।” \v 40 একথা শুনে সে তার গাধার পিঠে জিন চাপিয়ে, তার দাসদের খোঁজে গাতে আখীশের কাছে গেল। অতএব শিমিয়ি গিয়ে গাত থেকে তার দাসদের নিয়ে এসেছিল। \p \v 41 শলোমনকে যখন বলা হল যে শিমিয়ি জেরুশালেম থেকে গাতে গিয়ে আবার ফিরেও এসেছে, \v 42 রাজামশাই শিমিয়িকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে বললেন, “আমি কি সদাপ্রভুর নামে তোমাকে শপথ করাইনি ও সাবধান করে দিইনি, ‘যেদিন তুমি অন্য কোথাও যাওয়ার জন্য পা বাড়াবে, তুমি নিশ্চিত থেকো, তোমাকে মরতেই হবে’? সেসময় তুমি আমাকে বললে, ‘আপনি যা বলেছেন, ভালোই বলেছেন। আমি এর বাধ্য হব।’ \v 43 তবে কেন তুমি সদাপ্রভুর কাছে করা শপথ রক্ষা করোনি এবং আমার দেওয়া আদেশের বাধ্য হওনি?” \p \v 44 রাজামশাই শিমিয়িকে আরও বললেন, “আমার বাবা দাউদের প্রতি তুমি যে অন্যায় করলে তা তো তুমি বিলক্ষণ জানো। এখন সদাপ্রভুই তোমার অন্যায় কাজের প্রতিফল দেবেন। \v 45 কিন্তু রাজা শলোমন আশীর্বাদধন্য হবেন, এবং সদাপ্রভুর সামনে দাউদের সিংহাসন চিরকাল সুরক্ষিত থাকবে।” \p \v 46 পরে রাজামশাই যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে আদেশ দিলেন, এবং তিনি বাইরে গিয়ে শিমিয়িকে আঘাত করলেন ও সে মারা গেল। \p অতএব শলোমনের হাতে রাজ্য সুস্থির হল। \c 3 \s1 শলোমন প্রজ্ঞা চাইলেন \p \v 1 শলোমন মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করলেন ও তাঁর মেয়েকে বিয়ে করলেন। তাঁর প্রাসাদ ও সদাপ্রভুর মন্দির এবং জেরুশালেমের চারপাশের প্রাচীর তৈরির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর স্ত্রীকে এনে দাউদ-নগরেই রেখেছিলেন। \v 2 লোকজন তখনও অবশ্য উঁচু পীঠস্থানগুলিতেই বলি উৎসর্গ করে যাচ্ছিল, কারণ সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে তখনও কোনও মন্দির তৈরি করা হয়নি। \v 3 শলোমন তাঁর বাবা দাউদের দেওয়া নির্দেশানুসারে চলে সদাপ্রভুর প্রতি তাঁর প্রেম-ভালোবাসা দেখিয়েছিলেন, এছাড়া অবশ্য তিনি উঁচু পীঠস্থানগুলিতে বলি উৎসর্গ করতেন ও ধূপও পোড়াতেন। \p \v 4 রাজামশাই গিবিয়োনে বলি উৎসর্গ করতে গেলেন, কারণ সেটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উঁচু পীঠস্থান, এবং শলোমন সেই যজ্ঞবেদিতে এক হাজার হোমবলি উৎসর্গ করলেন। \v 5 গিবিয়োনে রাতের বেলায় সদাপ্রভু এক স্বপ্নে শলোমনের কাছে আবির্ভূত হলেন, এবং ঈশ্বর বললেন, “আমার কাছে তোমার যা চাওয়ার আছে তুমি তা চেয়ে নাও।” \p \v 6 শলোমন উত্তর দিলেন, “তুমি তো তোমার দাস, আমার বাবা দাউদের প্রতি অসাধারণ দয়া দেখিয়েছো, যেহেতু তিনি তোমার প্রতি বিশ্বস্ত এবং অন্তরে ন্যায়পরায়ণ ও সৎ ছিলেন। তুমি তাঁর প্রতি এই অসাধারণ দয়া দেখিয়েই গিয়েছ ও ঠিক এই দিনটিতেই তাঁর সিংহাসনে বসার জন্য তাঁকে এক ছেলে দিয়েছ। \p \v 7 “এখন, হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি আমার বাবা দাউদের স্থানে তোমার এই দাসকে রাজা করেছ। কিন্তু আমি তো ছোটো এক শিশুর মতো ও কীভাবে আমার দায়িত্ব পালন করব, তাও জানি না। \v 8 তোমার দাস এখানে তোমার সেই মনোনীত লোকজনের মাঝখানেই আছে, যারা এমন এক বিশাল জনতা, যাদের গুনে শেষ করা যায় না। \v 9 তাই তোমার প্রজাদের পরিচালনা করার ও ভালোমন্দ বিচার করার জন্য তোমার দাসকে দূরদর্শিতাসম্পন্ন এক অন্তঃকরণ দিয়ো। কারণ তোমার এই বিশাল প্রজাদলকে পরিচালনা করার ক্ষমতা কারই বা আছে?” \p \v 10 শলোমনকে এই বিষয়টি চাইতে দেখে প্রভু সন্তুষ্ট হলেন। \v 11 তাই ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “যেহেতু তুমি নিজের জন্য দীর্ঘায়ু বা ধনসম্পদ না চেয়ে এই বিষয়টি চেয়েছ, বা তুমি তোমার শত্রুদের মৃত্যু কামনা না করে ন্যায়ের শাসন কায়েম করার জন্য দূরদর্শিতা চেয়েছ, \v 12 তাই তুমি যা চেয়েছ, আমি তাই করব। আমি তোমাকে সুবিবেচক ও দূরদর্শিতাসম্পন্ন এমন এক অন্তঃকরণ দেব, যেমনটি তোমার আগেও কেউ পায়নি, আর তোমার পরেও কেউ পাবে না। \v 13 এছাড়াও, আমি তোমাকে সেসবকিছু দেব, যা তুমি চাওনি—ধনসম্পদ ও সম্মানও দেব—যেন তোমার জীবনকালে তোমার সমতুল্য কোনও রাজা না থাকে। \v 14 আর যদি তুমি আমার প্রতি বাধ্যতা দেখিয়ে চলো ও তোমার বাবা দাউদের মতো আমার বিধিনিয়ম ও আদেশগুলি পালন করো, তবে আমি তোমাকে দীর্ঘায়ু দেব।” \v 15 পরে শলোমন জেগে উঠেছিলেন—আর তিনি অনুভব করলেন যে তা ছিল এক স্বপ্ন। \p তিনি জেরুশালেমে ফিরে গেলেন, সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন। পরে তিনি তাঁর রাজসভাসদদের জন্য এক ভূরিভোজনের আয়োজন করলেন। \s1 এক সুবিবেচনাপ্রসূত রায়দান \p \v 16 এদিকে দুজন বারবনিতা রাজার কাছে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিল। \v 17 তাদের মধ্যে একজন বলল, “হে আমার প্রভু, আমায় ক্ষমা করবেন। এই মহিলাটি ও আমি একই বাড়িতে থাকি, ও সে আমার সঙ্গে থাকতে থাকতেই আমার একটি সন্তান হল। \v 18 আমার সন্তান হওয়ার তিন দিন পর এরও একটি সন্তান হল। আমরা তো একাই ছিলাম; সেই বাড়িতে আর কেউ ছিল না, শুধু আমরা দুজনই ছিলাম। \p \v 19 “সেদিন রাতে এই মহিলাটির ছেলে মারা গেল কারণ সে তার উপর শুয়ে পড়েছিল। \v 20 তাই মাঝরাতে আপনার এই দাসী যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন এ ঘুম থেকে উঠে আমার পাশ থেকে আমার ছেলেকে সরিয়ে নিয়েছিল। এ আমার ছেলেকে নিজের বুকের কাছে রেখে তার মৃত ছেলেকে আমার বুকের কাছে শুইয়ে দিয়েছিল। \v 21 পরদিন সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে যেই না আমার ছেলেকে দুধ খাওয়াতে গিয়েছি—দেখি সে মরে পড়ে আছে! কিন্তু আমি যখন সকালের আলোয় খুব কাছ থেকে তাকে দেখলাম, তখন বুঝলাম যে এ সেই ছেলে নয় যাকে আমি জন্ম দিয়েছিলাম।” \p \v 22 অন্য মহিলাটি বলে উঠেছিল, “তা নয়! জীবিত ছেলেটি আমার ছেলে; মৃত ছেলেটি তোমার।” \p কিন্তু প্রথমজন জোর দিয়ে বলল, “তা নয়! মৃত ছেলেটি তোমার; জীবিত ছেলেটি আমার।” আর তারা রাজার সামনেই তর্কাতর্কি শুরু করল। \p \v 23 রাজামশাই বললেন, “একজন বলছে, ‘আমার ছেলে জীবিত আর তোমার ছেলে মৃত,’ আবার অন্যজন বলছে, ‘তা নয়! তোমার পুত্র মৃত আর আমার ছেলে জীবিত।’ ” \p \v 24 পরে রাজামশাই বললেন, “আমার কাছে একটি তরোয়াল নিয়ে এসো।” তখন তারা রাজার জন্য একটি তরোয়াল নিয়ে এসেছিল। \v 25 পরে তিনি আদেশ দিলেন: “জীবিত শিশুটিকে দু-টুকরো করে অর্ধেকটা একজনকে ও অর্ধেকটা অন্যজনকে দিয়ে দাও।” \p \v 26 যে মহিলাটির ছেলে বেঁচে ছিল, সে ছেলেস্নেহে আকুল হয়ে রাজামশাইকে বলল, “হে আমার প্রভু, দয়া করে জীবিত শিশুটিকে ওর হাতেই তুলে দিন! শিশুটিকে হত্যা করবেন না!” \p কিন্তু অন্যজন বলল, “একে আমিও পাব না, তুমিও পাবে না। একে দু-টুকরো করে ফেলা হোক!” \p \v 27 তখন রাজামশাই তাঁর রায় দিলেন: “জীবিত শিশুটিকে প্রথম মহিলাটির হাতেই তুলে দাও। ওকে হত্যা কোরো না; এই ওর মা।” \p \v 28 যখন ইস্রায়েলে সবাই রাজার দেওয়া রায়ের কথা শুনেছিল, তারা রাজাকে সমীহ করতে শুরু করল, কারণ তারা দেখতে পেয়েছিল যে ন্যায়বিচার সম্পন্ন করার জন্য তাঁর কাছে ঈশ্বরদত্ত সুবিবেচনা আছে। \c 4 \s1 শলোমনের কর্মকর্তারা ও শাসনকর্তারা \p \v 1 অতএব রাজা শলোমন সমস্ত ইস্রায়েল জুড়ে রাজত্ব করলেন। \b \li4 \v 2 এরাই ছিলেন তাঁর প্রধান কর্মকর্তা: \b \li1 সাদোকের ছেলে অসরিয় ছিলেন যাজক; \li1 \v 3 শীশার ছেলে ইলীহোরফ ও অহিয় ছিলেন সচিব; \li1 অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ছিলেন লিপিকার; \li1 \v 4 যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন প্রধান সেনাপতি; \li1 সাদোক ও অবিয়াথর ছিলেন যাজক; \li1 \v 5 নাথনের ছেলে অসরিয় জেলাশাসকদের উপর ভারপ্রাপ্ত ছিলেন; \li1 নাথনের ছেলে সাবূদ ছিলেন একজন যাজক ও রাজার পরামর্শদাতা; \li1 \v 6 অহীশার ছিলেন রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক; \li1 অব্দের ছেলে অদোনীরাম বেগার শ্রমিকদের উপর ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। \b \p \v 7 সমস্ত ইস্রায়েলে শলোমন বারোজন জেলাশাসক নিযুক্ত করলেন, যারা রাজা ও রাজপরিবারের জন্য খাদ্যসম্ভার জোগান দিতেন। এক একজনকে বছরে এক এক মাসের জন্য খাদ্যসম্ভার জোগান দিতে হত। \b \li4 \v 8 এই তাদের নাম: \b \li1 ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে বিন-হূর; \li1 \v 9 মাকস, শালবীম, বেত-শেমশ ও এলোন-বেথ-হাননে বিন-দেকর; \li1 \v 10 অরুব্বোতে বিন-হেষদ (সোখো ও সমস্ত হেফর প্রদেশ তাঁর অধীনে ছিল); \li1 \v 11 নাফৎ-দোরে বিন-অবীনাদব (শলোমনের মেয়ে টাফতের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হল); \li1 \v 12 তানক ও মগিদ্দোতে, এবং সর্তনের কাছাকাছি ও যিষ্রিয়েলের নিচে অবস্থিত বেথ-শানের সমস্ত অঞ্চলে, এবং বৈৎ-শান থেকে যকমিয়াম পার করে আবেল-মহোলা পর্যন্ত অহীলূদের ছেলে বানা; \li1 \v 13 রামোৎ-গিলিয়দে বিন-গেবর (গিলিয়দে মনঃশির ছেলে যায়ীরের গ্রামগুলি, তথা বাশনে অর্গোবের অঞ্চলটি এবং সেখানকার ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি অর্গলসুদ্ধ প্রাচীরবেষ্টিত ষাটটি বড়ো বড়ো নগর তাঁর অধীনে ছিল); \li1 \v 14 মহনয়িমে ইদ্দোর ছেলে অহীনাদব; \li1 \v 15 নপ্তালিতে অহীমাস (তিনি শলোমনের মেয়ে বাসমৎকে বিয়ে করলেন); \li1 \v 16 আশেরে ও বালোতে হূশয়ের ছেলে বানা; \li1 \v 17 ইষাখরে পারূহের ছেলে যিহোশাফট; \li1 \v 18 বিন্যামীনে এলার ছেলে শিমিয়ি; \li1 \v 19 গিলিয়দে ঊরির ছেলে গেবর। (ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের দেশ ও বাশনের রাজা ওগের দেশও তাঁর অধিকারে ছিল) ওই জেলায় তিনিই একমাত্র জেলাশাসক ছিলেন। \s1 শলোমনের দৈনিক খাদ্যসম্ভার \p \v 20 যিহূদা ও ইস্রায়েলের জনসংখ্যা সমুদ্রতীরের বালুকণার মতো বহুসংখ্যক ছিল; তারা ভোজন করত, পান করত ও তারা খুশিই ছিল। \v 21 শলোমন ইউফ্রেটিস নদী থেকে শুরু করে ফিলিস্তিনীদের দেশ পর্যন্ত, অর্থাৎ একেবারে মিশরের সীমানা পর্যন্ত, সব রাজ্যের উপর শাসন চালাতেন। শলোমন যতদিন বেঁচেছিলেন, এই দেশগুলি তাঁকে কর দিত ও তাঁর শাসনাধীন হয়েই ছিল। \p \v 22 শলোমনের দৈনিক খাদ্যসম্ভার ছিল ত্রিশ কোর\f + \fr 4:22 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 5.5 টন বা, প্রায় 5 মেট্রিক টন\ft*\f* মিহি ময়দা ও ষাট কোর\f + \fr 4:22 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 11 টন বা, প্রায় 10 মেট্রিক টন\ft*\f* যবের আটা, \v 23 গোশালায় জাবনা খাওয়া দশটি গবাদি পশু, বাইরে চরে খাওয়া কুড়িটি গবাদি পশু এবং একশোটি মেষ ও ছাগল, তথা হরিণ, গজলা হরিণ, কৃষ্ণসার হরিণ ও বাছাই করা বড়ো বড়ো কিছু জলচর পাখি। \v 24 যেহেতু তিনি তিপসহ থেকে গাজা পর্যন্ত ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিমদিকের সব রাজ্য শাসন করতেন, তাই সবদিকেই শান্তি বজায় ছিল। \v 25 শলোমন যতদিন বেঁচেছিলেন, দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত যিহূদা ও ইস্রায়েলে প্রত্যেকে নিজের নিজের দ্রাক্ষাক্ষেতের ও ডুমুর গাছের নিচে নিরাপদে বসবাস করত। \p \v 26 শলোমনের কাছে রথের ঘোড়াগুলি রাখার জন্য চার\f + \fr 4:26 \fr*\ft অথবা, চল্লিশ (\+xt 2 বংশাবলি 9:25\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* হাজার আস্তাবল, এবং 12,000 ঘোড়া\f + \fr 4:26 \fr*\ft অথবা, অশ্বারোহী\ft*\f* ছিল। \p \v 27 জেলাশাসকেরা প্রত্যেকে তাদের নিরূপিত মাসে রাজা শলোমন ও রাজার টেবিলে বসে যারা ভোজনপান করতেন, তাদের জন্য খাদ্যসম্ভার জোগান দিতেন। তারা খেয়াল রাখতেন যেন কোনো কিছুরই অভাব না হয়। \v 28 রথের ঘোড়া ও অন্যান্য ঘোড়াগুলির জন্য তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ যব ও বিচালিও নির্দিষ্ট স্থানে এনে রাখতেন। \s1 শলোমনের প্রজ্ঞা \p \v 29 ঈশ্বর শলোমনকে প্রজ্ঞা ও প্রচুর পরিমাণে অর্ন্তদৃষ্টি এবং সমুদ্রতীরের বালুকণার মতো অগাধ বোধবুদ্ধি দিলেন। \v 30 প্রাচ্যের সব লোকজনের প্রজ্ঞা থেকে, এবং মিশরের সব প্রজ্ঞার তুলনায় শলোমনের প্রজ্ঞা ছিল অসামান্য। \v 31 তিনি অন্য যে কোনো লোকের, এমনকি ইষ্রাহীয় এথনের চেয়েও বেশি বিচক্ষণ ছিলেন—মাহোলের ছেলে হেমন, কলকোল ও দর্দার চেয়েও বেশি বিচক্ষণ ছিলেন। আর তাঁর সুখ্যাতি পার্শ্ববর্তী সব দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। \v 32 তিনি তিন হাজার প্রবাদবাক্য বললেন এবং এক হাজার পাঁচটি গানও লিখেছিলেন। \v 33 লেবাননের দেবদারু থেকে শুরু করে প্রাচীরের গায়ে উৎপন্ন এসোব\f + \fr 4:33 \fr*\ft পুদিনার মতো মৃদু গন্ধবিশিষ্ট এক ধরনের সুগন্ধি লতাগুল্ম\ft*\f* পর্যন্ত সব গাছপালার বিষয়ে তিনি কথা বললেন। এছাড়াও তিনি পশুদের ও পাখিদের, সরীসৃপদের ও মাছেরও বিষয়ে কথা বললেন। \v 34 সব দেশ থেকে সেইসব লোকজন শলোমনের প্রজ্ঞার কথা শুনতে আসত, যাদের পৃথিবীর সেইসব রাজা পাঠাতেন, যারা তাঁর প্রজ্ঞার বিষয়ে খবর পেয়েছিলেন। \c 5 \s1 মন্দির নির্মাণের প্রস্তুতি \p \v 1 সোরের রাজা হীরম যখন শুনেছিলেন যে শলোমন তাঁর বাবার স্থানে রাজপদে অভিষিক্ত হয়েছেন, তখন শলোমনের কাছে তিনি তাঁর প্রতিনিধিদের পাঠালেন, কারণ দাউদের সঙ্গে সবসময় তাঁর এক সুসম্পর্ক বজায় ছিল। \v 2 শলোমন হীরমের কাছে এই খবর দিয়ে পাঠালেন: \pm \v 3 “আপনি জানেন, যেহেতু সবদিক থেকেই আমার বাবা দাউদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো হল, তাই যতদিন না সদাপ্রভু তাঁর শত্রুদের তাঁর পদতলে এনেছিলেন, তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে এক মন্দির নির্মাণ করতে পারেননি। \v 4 কিন্তু এখন আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সবদিক থেকেই আমাকে বিশ্রাম দিয়েছেন, এবং এখন আর কোনও প্রতিপক্ষ বা দুর্বিপাক নেই। \v 5 তাই আমি সংকল্প করেছি, সদাপ্রভু আমার বাবা দাউদকে যা বললেন, সেই অনুসারেই আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে একটি মন্দির নির্মাণ করব। কারণ সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, ‘যাকে আমি তোমার স্থানে সিংহাসনে বসাব, তোমার সেই ছেলেই আমার নামের উদ্দেশে মন্দির নির্মাণ করবে।’ \pm \v 6 “তাই আদেশ দিন, যেন আমার জন্য লেবাননের দেবদারু গাছগুলি কাটা হয়। আমার লোকজন আপনার লোকজনের সঙ্গে থেকে কাজ করবে, এবং আপনার ঠিক করে দেওয়া বেতনই আমি আপনার লোকজনকে দেব। আপনি তো জানেনই যে সীদোনীয়দের মতো আমাদের কাছে কাঠ কাটার কাজে এত নিপুণ কোনও লোক নেই।” \p \v 7 শলোমনের কাছ থেকে এই খবর পেয়ে হীরম খুব খুশি হয়ে বললেন, “আজ সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, কারণ তিনি দাউদকে এই বিশাল দেশটি শাসন করার জন্য বিচক্ষণ এক ছেলে দিয়েছেন।” \p \v 8 তাই হীরম শলোমনের কাছে এই খবর পাঠালেন: \pm “আপনি আমায় যে খবর পাঠিয়েছেন, তা আমি পেয়েছি এবং দেবদারু ও চিরহরিৎ গাছের কাঠ জোগানোর সম্বন্ধে আপনি আমার কাছে যা যা চেয়েছেন, আমি সেসবকিছু করব। \v 9 আমার লোকজন লেবানন থেকে সেগুলি ভূমধ্যসাগরে টেনে নামাবে, এবং আমি সমুদ্রের জলে সেগুলি ভেলার মতো করে ভাসিয়ে ঠিক সেখানেই পৌঁছে দেব, আপনি যে স্থানটি নির্দিষ্ট করে দেবেন। সেখানে আমি সেগুলির বাঁধন খুলিয়ে দেব এবং আপনাকেও আমার রাজপরিবারের জন্য খাবারদাবারের জোগান দেওয়ার মাধ্যমে আমার ইচ্ছা পূরণ করতে হবে।” \p \v 10 এইভাবে হীরম শলোমনের চাহিদানুসারে তাঁকে দেবদারু ও চিরহরিৎ গাছের কাঠ সরবরাহ করে যাচ্ছিলেন, \v 11 এবং শলোমন হীরমের পরিবারের জন্য খাদ্যসম্ভাররূপে 20,000 বাত\f + \fr 5:11 \fr*\ft অথবা, কুড়ি কোর কিংবা বর্তমান যুগের মাপ অনুসারে 1,20,000 গ্যালন বা 4,40,000 লিটার (\+xt 2 বংশাবলি 2:10\+xt* পদ দেখুন)\ft*\f* মাড়াই করা জলপাই তেলের পাশাপাশি 20,000 কোর\f + \fr 5:11 \fr*\ft অর্থাৎ, খুব সম্ভবত প্রায় 3,600 টন বা 3,250 মেট্রিক টন\ft*\f* গম তাঁকে দিলেন। বছরের পর বছর শলোমন হীরমের জন্য এমনটি করে গেলেন। \v 12 সদাপ্রভু তাঁর নিজের করা প্রতিজ্ঞানুসারে শলোমনকে সুবিবেচনা দিলেন। হীরম ও শলোমনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, এবং তারা দুজন এক চুক্তি স্বাক্ষরিত করলেন। \p \v 13 রাজা শলোমন সমস্ত ইস্রায়েল থেকে ত্রিশ হাজার লোককে বাধ্যতামূলকভাবে কাজে লাগালেন। \v 14 প্রতি মাসে পালা করে দশ-দশ হাজার লোককে তিনি লেবাননে পাঠাতেন, ফলস্বরূপ এক মাস তারা লেবাননে ও দুই মাস ঘরে কাটাত। অদোনীরাম বেগার শ্রমিকদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। \v 15 শলোমনের কাছে সত্তর হাজার ভারবহনকারী ও পাহাড়ে আশি হাজার পাথর ভাঙার লোক ছিল, \v 16 এছাড়াও শলোমনের 33,000\f + \fr 5:16 \fr*\ft অথবা, 36,000 (\+xt 2 বংশাবলি 2:2 ও 18\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* সর্দার-শ্রমিকও ছিল, যারা প্রকল্পটির তত্ত্বাবধান করত ও শ্রমিকদের পরিচালনা করত। \v 17 রাজার আদেশে তারা পাথর খাদান থেকে উৎকৃষ্ট মানের বড়ো বড়ো পাথরের চাঙড় কেটে তুলত, যা দিয়ে মন্দিরের জন্য আকর্ষণীয় ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি হতে যাচ্ছিল। \v 18 শলোমনের ও হীরমের কারিগররা এবং গিব্‌লীয় শ্রমিকেরা মন্দির নির্মাণের জন্য কাঠ ও পাথর কেটে সেগুলি তৈরি করে রাখত। \c 6 \s1 শলোমন মন্দির নির্মাণ করলেন \p \v 1 ইস্রায়েলীরা মিশর থেকে বের হয়ে আসার পর 480 তম\f + \fr 6:1 \fr*\ft অথবা, 440তম\ft*\f* বছরে, ইস্রায়েলের উপর শলোমনের রাজত্বের চতুর্থ বছরে, বছরের দ্বিতীয় মাসে, অর্থাৎ সিব মাসে তিনি সদাপ্রভুর মন্দির নির্মাণ করতে শুরু করলেন। \p \v 2 যে মন্দিরটি রাজা শলোমন নির্মাণ করলেন, সেটি প্রায় সাতাশ মিটার লম্বা, নয় মিটার চওড়া ও চোদ্দো মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট\f + \fr 6:2 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, ষাট হাত লম্বা, কুড়ি হাত চওড়া ও ত্রিশ হাত উচ্চতাবিশিষ্ট\ft*\f* হল। \v 3 সেই মন্দিরের মূল ঘরের সামনের দিকের দ্বারমণ্ডপটি মন্দিরের প্রস্থের মাপ নয় মিটার\f + \fr 6:3 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, কুড়ি হাত; \ft*\xt 16|link-href="1KI 6:16"\xt* ও \xt 20|link-href="1KI 6:20"\xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\f* বাড়িয়ে দিয়েছিল, এবং মন্দিরের সামনের দিকের মাপ প্রায় সাড়ে-চার মিটার\f + \fr 6:3 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দশ হাত; \ft*\xt 23-26|link-href="1KI 6:23-26"\xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\f* বাড়িয়ে দিয়েছিল। \v 4 মন্দিরের দেয়ালের উপরদিকে তিনি কয়েকটি জানালা তৈরি করলেন। \v 5 মূল ঘরের দেয়ালগুলির ও ভিতরদিকের পবিত্রস্থানের গা ঘেঁসে তিনি ভবনটির চারপাশে এমন একটি কাঠামো গড়েছিলেন, যেটিতে কয়েকটি পার্শ্ব-ঘর ছিল। \v 6 সবচেয়ে নিচের তলাটি ছিল প্রায় 2.3 মিটার\f + \fr 6:6 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পাঁচ হাত; \ft*\xt 10|link-href="1KI 6:10"\xt* ও \xt 24|link-href="1KI 6:24"\xt* পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\f* চওড়া, মাঝের তলাটি প্রায় 2.7 মিটার\f + \fr 6:6 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, ছয় হাত\ft*\f* ও তৃতীয় তলাটি প্রায় 3.2 মিটার\f + \fr 6:6 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, সাত হাত\ft*\f* চওড়া ছিল। তিনি মন্দিরের বাইরে চারপাশে ভারসাম্য বজায়কারী সরু তাক তৈরি করলেন, যেন আর অন্য কোনো কিছু মন্দিরের দেয়ালে গাঁথা না যায়। \p \v 7 মন্দির নির্মাণের সময় শুধুমাত্র পাথর খাদানে কেটেকুটে প্রস্তুত করা পাথরের চাঙড়ই ব্যবহার করা হল, এবং মন্দির নির্মাণস্থলে সেটি গড়ে ওঠার সময় কোনও হাতুড়ি, ছেনি বা লোহার অন্য কোনও যন্ত্রপাতির শব্দ শোনা যায়নি। \p \v 8 সবচেয়ে নিচের\f + \fr 6:8 \fr*\ft অথবা, মাঝের\ft*\f* তলার প্রবেশদ্বারটি ছিল মন্দিরের দক্ষিণ দিকে; সেখান থেকে একটি সিঁড়ি মাঝের তলা হয়ে তৃতীয় তলায় উঠে গেল। \v 9 এইভাবে তিনি কড়িকাঠ ও দেবদারু কাঠের তক্তা দিয়ে মন্দিরের ছাদ বানিয়ে সেটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করলেন। \v 10 তিনি মন্দিরের দৈর্ঘ্য বরাবর কয়েকটি পার্শ্ব-ঘর তৈরি করলেন। প্রত্যেকটির উচ্চতা ছিল পাঁচ হাত, এবং সেগুলি দেবদারু কাঠের কড়িকাঠ দিয়ে মন্দিরের সাথে জুড়ে দেওয়া হল। \p \v 11 সদাপ্রভুর এই বাক্য শলোমনের কাছে এসেছিল: \v 12 “তুমি যদি আমার বিধিবিধান অনুসরণ করো, আমার নিয়মকানুন পালন করো ও আমার আদেশগুলি মেনে সেগুলির বাধ্য হও, তবে তোমার তৈরি করা এই মন্দিরের বিষয়ে আমি তোমার বাবা দাউদের কাছে যে প্রতিজ্ঞাটি করলাম, তা তোমার মাধ্যমেই আমি পূরণ করব। \v 13 আর আমি ইস্রায়েলীদের মাঝখানে বসবাস করব ও আমার প্রজা ইস্রায়েলকে ত্যাগ করব না।” \p \v 14 অতএব শলোমন মন্দির নির্মাণ করে সেটি সম্পূর্ণ করলেন। \v 15 তিনি মন্দিরের ভিতরদিকের দেয়ালগুলি দেবদারু কাঠের তক্তা দিয়ে মুড়ে দিলেন, মন্দিরের মেঝে থেকে ছাদের ভিতরের দিক পর্যন্ত দেয়ালে খুপি তৈরি করে দিলেন, এবং মন্দিরের মেঝেটি চিরহরিৎ কাঠের তক্তা দিয়ে ঢেকে দিলেন। \v 16 মন্দিরের ভিতরে এক অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থান অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থান গড়ার জন্য তিনি মন্দিরের মধ্যেই পিছন দিকে দেবদারু তক্তা দিয়ে কুড়ি হাত এলাকা আলাদা করে দিলেন। \v 17 এই ঘরটির সামনের দিকের মূল ঘরটি ছিল দৈর্ঘ্যে প্রায় 18 মিটার।\f + \fr 6:17 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, চল্লিশ হাত\ft*\f* \v 18 মন্দিরের ভিতরদিকে দেবদারু কাঠ খোদাই করে লাউ-এর মতো ফলের ও প্রস্ফুটিত ফুলের আকার গড়ে দেওয়া হল। সেখানে সবকিছুই ছিল দেবদারু কাঠের; কোনো পাথর দেখা যাচ্ছিল না। \p \v 19 সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি রাখার জন্যই তিনি মন্দিরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ পবিত্র স্থানটি প্রস্তুত করলেন। \v 20 অভ্যন্তরীণ পবিত্র স্থানটি ছিল প্রায় 9.2 মিটার\f + \fr 6:20 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, কুড়ি হাত\ft*\f* করে লম্বা, চওড়া ও উঁচু। ভিতরদিকটি তিনি পাকা সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং দেবদারু কাঠের যজ্ঞবেদিটিও তিনি পাকা সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 21 শলোমন মন্দিরের ভিতরদিকটিও পাকা সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং তিনি সেই অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থানের সামনের দিক পর্যন্ত সোনার শিকল টেনে নিয়ে গেলেন, যেটি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। \v 22 অতএব তিনি সেই ভবনের ভিতরদিকটি পুরোপুরি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। এছাড়াও সেই যজ্ঞবেদিটিও তিনি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, যেটি অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থানের অন্তর্গত ছিল। \p \v 23 অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থানের জন্য তিনি জলপাই কাঠের এক জোড়া করূব তৈরি করলেন, যেগুলির এক একটির উচ্চতা ছিল প্রায় 4.6 মিটার।\f + \fr 6:23 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দশ হাত করে\ft*\f* \v 24 প্রথম করূবটির একটি ডানার উচ্চতা ছিল প্রায় 2.3 মিটার\f + \fr 6:24 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পাঁচ হাত\ft*\f*, ও অন্য ডানাটিরও উচ্চতা ছিল প্রায় 2.3 মিটার\f + \fr 6:24 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পাঁচ হাত\ft*\f*—এক ডানার ডগা থেকে অন্য ডানার ডগার দূরত্ব প্রায় 4.6 মিটার\f + \fr 6:24 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দশ হাত; \ft*\xt 25|link-href="1KI 6:25"\xt* ও \xt 26|link-href="1KI 6:26"\xt* পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য\f*। \v 25 দ্বিতীয় করূবটির মাপ ছিল প্রায় 4.6 মিটার, কারণ দুটি করূবই মাপে ও আকারে সমান ছিল। \v 26 প্রত্যেকটি করূবের উচ্চতা ছিল প্রায় 4.6 মিটার করে। \v 27 তিনি করূব দুটি মন্দিরের একদম ভিতরের ঘরে রেখেছিলেন, এবং সে দুটির ডানাগুলি ছড়ানো ছিল। একটি করূবের ডানা একটি দেয়াল ছুঁয়েছিল, আবার অন্য করূবটির ডানা অন্য একটি দেয়াল ছুঁয়েছিল, এবং তাদের ডানাগুলি ঘরের মাঝখানে পরস্পরকে ছুঁয়েছিল। \v 28 তিনি করূব দুটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \p \v 29 ভিতরের ও বাইরের ঘরগুলিতে, মন্দিরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দেয়াল জুড়ে তিনি করূবের, খেজুর গাছের ও প্রস্ফুটিত ফুলের ছবি খোদাই করে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। \v 30 এছাড়াও তিনি মন্দিরের ভিতরের ও বাইরের ঘরগুলির মেঝে সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন। \p \v 31 অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থানে প্রবেশ করার জন্য তিনি জলপাই কাঠের এমন এক জোড়া দরজা তৈরি করলেন যার মাপ পবিত্রস্থানের প্রস্থের এক-পঞ্চমাংশ। \v 32 আবার জলপাই কাঠের তৈরি দরজার দুটি পাল্লায় তিনি করূবের, খেজুর গাছের ও প্রস্ফুটিত ফুলের ছবি খোদাই করে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, এবং করূব ও খেজুর গাছগুলি তিনি সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 33 একইরকম ভাবে, মূল ঘরে প্রবেশ করার জন্য তিনি জলপাই কাঠ দিয়ে দরজার এমন চৌকাঠ তৈরি করলেন, যার মাপ ছিল মূল ঘরের প্রস্থের এক-চতুর্থাংশ। \v 34 এছাড়াও তিনি চিরহরিৎ গাছের কাঠ দিয়ে দরজার এমন দুটি পাল্লা তৈরি করলেন, যেগুলি কব্জা দিয়ে পাক খাওয়ানো যেত। \v 35 সেগুলির উপর তিনি করূবের, খেজুর গাছের ও প্রস্ফুটিত ফুলের ছবি খোদাই করে ফুটিয়ে তুলেছিলেন এবং খোদাইয়ের কাজের উপর সোনার পাত দিয়ে সমানভাবে সেগুলি মুড়ে দিলেন। \p \v 36 আবার কেটেকুটে প্রস্তুত করা পাথরের তিন পর্বে ও দেবদারু কাঠের পরিচ্ছন্ন কড়িকাঠের এক পর্বে তিনি ভিতরদিকের উঠোন তৈরি করলেন। \p \v 37 চতুর্থ বছরের সিব মাসে সদাপ্রভুর মন্দিরের ভিত্তিমূল গাঁথা হল। \v 38 একাদশ বছরের অষ্টম মাসে, অর্থাৎ বূল মাসে মন্দিরের নকশা অনুসারে অনুপুঙ্খভাবে সেটি সম্পূর্ণ হল। সেটি নির্মাণ করার জন্য তিনি সাত সাতটি বছর কাটিয়ে দিলেন। \c 7 \s1 শলোমন তাঁর প্রাসাদ নির্মাণ করলেন \p \v 1 তাঁর প্রাসাদের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ করতে অবশ্য শলোমনের তেরো বছর লেগে গেল। \v 2 লেবাননের অরণ্যে যে প্রাসাদটি তিনি নির্মাণ করলেন, সেটি দৈর্ঘ্যে ছিল প্রায় 45 মিটার, প্রস্থে প্রায় 23 মিটার ও উচ্চতায় 14 মিটার,\f + \fr 7:2 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, 100 হাত লম্বা, পঞ্চাশ হাত চওড়া ও ত্রিশ হাত উঁচু\ft*\f* এবং দেবদারু কাঠে তৈরি চারটি থাম দেবদারু কাঠেই তৈরি পরিচ্ছন্ন কড়িকাঠগুলি ধরে রেখেছিল। \v 3 কড়িকাঠের উপরের ছাদ তৈরি হল দেবদারু কাঠে এবং কড়িকাঠগুলি থামের উপর বসানো ছিল—এক এক সারিতে পনেরোটি করে মোট পঁয়তাল্লিশটি কড়িকাঠ ছিল। \v 4 সেটির জানালাগুলি উপরের দিকে মুখোমুখি তিন তিনটি করে রাখা হল। \v 5 সব দরজায় আয়তাকার চৌকাঠ ছিল; সামনের দিকে মুখোমুখি সেগুলি তিন তিনটি করে রাখা হল।\f + \fr 7:5 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই পদটির অর্থ খুব একটি স্পষ্ট নয়\ft*\f* \p \v 6 তিনি প্রায় 23 মিটার লম্বা ও 14 মিটার চওড়া\f + \fr 7:6 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পঞ্চাশ হাত লম্বা ও ত্রিশ হাত চওড়া\ft*\f* এক স্তম্ভসারি তৈরি করলেন। সেটির সামনের দিকে একটি দ্বারমণ্ডপ ছিল, এবং সেটির সামনের দিকে ছিল কয়েকটি থাম ও একটি ঝুলবারান্দা। \p \v 7 তিনি সিংহাসন-দরবার, সেই বিচার-দরবারটি তৈরি করলেন, যেখানে বসে তিনি বিচার করতে যাচ্ছিলেন। সেটি তিনি মেঝে থেকে ছাদের ভিতর দিক\f + \fr 7:7 \fr*\ft অথবা, মেঝের একদিক থেকে অন্য দিক\ft*\f* পর্যন্ত দেবদারু কাঠ দিয়ে ঢেকে দিলেন। \v 8 যে প্রাসাদে তিনি থাকতে যাচ্ছিলেন, সেটি সেই একই নকশা অনুসারে বিচার-দরবারের পিছন দিকে তৈরি করা হল। শলোমন যাঁকে বিয়ে করলেন, ফরৌণের সেই মেয়ের জন্যও তিনি এই দরবারটির মতো একটি প্রাসাদ তৈরি করলেন। \p \v 9 এইসব ভবন, বাইরে থেকে শুরু করে বড়ো প্রাঙ্গণ পর্যন্ত, এবং ভিত্তি থেকে ছাঁচা পর্যন্ত, মাপ করে কাটা ও ভিতর ও বাইরের দিকে মসৃণ করা উন্নত মানের পাথরের চাঙড় দিয়ে তৈরি করা হল। \v 10 ভীত গাঁথা হল উন্নত মানের বড়ো বড়ো পাথর দিয়ে, যার কোনো কোনোটির মাপ ছিল প্রায় 4.5 মিটার\f + \fr 7:10 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দশ হাত\ft*\f*, আবার কোনো কোনোটির মাপ ছিল প্রায় 3.6 মিটার।\f + \fr 7:10 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, আট হাত\ft*\f* \v 11 উপরেও ছিল মাপ করে কাটা উন্নত মানের পাথর ও দেবদারু কাঠের কড়িকাঠ। \v 12 বড়ো প্রাঙ্গণটি ঘেরা ছিল তিন সারি পরিচ্ছন্ন পাথর ও দেবদারু কাঠের এক সারি পরিচ্ছন্ন কড়িকাঠ দিয়ে তৈরি এক প্রাচীর দিয়ে, ঠিক যেভাবে দ্বারমণ্ডপ সমেত সদাপ্রভুর মন্দিরের ভিতরদিকের প্রাঙ্গণটি তৈরি হল। \s1 মন্দিরের আসবাবপত্রাদি \p \v 13 রাজা শলোমন লোক পাঠিয়ে সোর থেকে সেই হূরমকে\f + \fr 7:13 \fr*\ft অথবা, হীরম; 40 ও 45 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য\ft*\f* আনিয়েছিলেন, \v 14 যাঁর মা নপ্তালি গোষ্ঠীভুক্ত এক বিধবা ছিলেন এবং তাঁর বাবা সোরে বসবাসকারী ব্রোঞ্জের কাজে দক্ষ এক শিল্পী ছিলেন। ব্রোঞ্জের সব ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে হূরম প্রজ্ঞা, জ্ঞানবুদ্ধিতে পরিপূর্ণ ছিলেন। তিনি রাজা শলোমনের কাছে এলেন ও তাঁর নিরূপিত সব কাজ করলেন। \p \v 15 তিনি ব্রোঞ্জের দুটি থাম ছাঁচে ঢেলে তৈরি করলেন, প্রত্যেকটির উচ্চতা ছিল প্রায় 8.1 মিটার ও পরিধি ছিল প্রায় 5.4 মিটার।\f + \fr 7:15 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, আঠারো হাত উঁচু ও বারো হাত পরিধি\ft*\f* \v 16 এছাড়াও থামের মাথায় রাখার জন্য তিনি ছাঁচে ফেলে ব্রোঞ্জের দুটি স্তম্ভশীর্ষ তৈরি করলেন; প্রত্যেকটি স্তম্ভশীর্ষ উচ্চতায় প্রায় 2.3 মিটার\f + \fr 7:16 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পাঁচ হাত\ft*\f* করে ছিল। \v 17 থামগুলির মাথায় রাখা স্তম্ভশীর্ষগুলি সাজানো হল পরস্পরছেদী জালের মতো বিন্যাসিত একত্রে গাঁথা শিকল দিয়ে, ও প্রত্যেকটি স্তম্ভশীর্ষে ছিল সাতটি করে শিকল। \v 18 থামের মাথায় রাখা স্তম্ভশীর্ষগুলি সাজানোর জন্য প্রত্যেকটি পরস্পরছেদী জাল ঘিরে দুই দুই সারি করে তিনি ডালিম\f + \fr 7:18 \fr*\ft অথবা, থাম\ft*\f* বানিয়ে দিলেন। প্রত্যেকটি স্তম্ভশীর্ষের জন্য তিনি একই কাজ করলেন। \v 19 দ্বারমণ্ডপে থামগুলির মাথায় রাখা স্তম্ভশীর্ষগুলি লিলিফুলের মতো দেখতে হল, ও সেগুলির উচ্চতা ছিল প্রায় 1.8 মিটার করে।\f + \fr 7:19 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, চার হাত করে\ft*\f* \v 20 দুটি থামেরই স্তম্ভশীর্ষে, পরস্পরছেদী জালের পাশে থাকা সরাকৃতি অংশের উপরে চারদিকে সারবাঁধা 200-টি করে ডালিম ছিল। \v 21 মন্দিরের দ্বারমণ্ডপে তিনি থামগুলি তৈরি করলেন। দক্ষিণ দিকের থামটির নাম তিনি দিলেন যাখীন\f + \fr 7:21 \fr*\ft অর্থ খুব সম্ভবত, তিনি স্থাপন করলেন\ft*\f* এবং উত্তর দিকের থামটির নাম দিলেন বোয়স।\f + \fr 7:21 \fr*\ft অর্থ খুব সম্ভবত, তাঁতেই শক্তি আছে\ft*\f* \v 22 উপর দিকের স্তম্ভশীর্ষগুলি লিলিফুলের মতো দেখতে হল। আর এভাবেই থামের কাজ সম্পূর্ণ হল। \p \v 23 ধাতু ছাঁচে ঢেলে তিনি গোলাকার এমন এক সমুদ্রপাত্র তৈরি করলেন, যা মাপে এক কিনারা থেকে অন্য কিনারা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে হল প্রায় 4.6 মিটার\f + \fr 7:23 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দশ হাত\ft*\f* ও উচ্চতায় হল প্রায় 2.3 মিটার।\f + \fr 7:23 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, পাঁচ হাত\ft*\f* সেটি ঘিরে মাপা হলে, তা প্রায় 13.8 মিটার\f + \fr 7:23 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, ত্রিশ হাত\ft*\f* হল। \v 24 কিনারার নিচে, সেটি ঘিরে ছিল প্রতি মিটারে কুড়িটি করে\f + \fr 7:24 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, প্রতি হাতে দশটি করে\ft*\f* লাউ আকৃতির কয়েকটি ফল। সমুদ্রপাত্রের সাথেই লাউ আকৃতির ফলগুলি এক টুকরোতে দুই দুই সারি করে ছাঁচে ঢেলে তৈরি করা হল। \p \v 25 সমুদ্রপাত্রটি বারোটি বলদের উপর দাঁড় করানো ছিল। সেগুলির মধ্যে তিনটি উত্তর দিকে, তিনটি পশ্চিমদিকে, তিনটি দক্ষিণ দিকে ও তিনটি পূর্বদিকে মুখ করে ছিল। সমুদ্রপাত্রটি সেগুলির উপরেই ভর দিয়েছিল, এবং সেগুলির শরীরের পিছনের অংশগুলি কেন্দ্রস্থলের দিকে রাখা ছিল। \v 26 সেটি প্রায় 7.5 সেন্টিমিটার\f + \fr 7:26 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, চার আঙুল\ft*\f* পুরু ছিল, এবং সেটির কিনারা ছিল একটি পেয়ালার কিনারার মতো, লিলিফুলের মতো। সেটির ধারণক্ষমতা ছিল 2,000 বাত।\f + \fr 7:26 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 44,000 লিটার; পুরাতন নিয়মের প্রথম গ্রিক অনুবাদে (সেপটুয়াজিন্টে) এই বাক্যটি অনুপস্থিত\ft*\f* \p \v 27 এছাড়াও তিনি ব্রোঞ্জের দশটি সরণযোগ্য তাক তৈরি করলেন; প্রত্যেকটি প্রায় 1.8 মিটার লম্বা, প্রায় 1.8 মিটার চওড়া ও প্রায় 1.4 মিটার উঁচু।\f + \fr 7:27 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, চার হাত লম্বা, চার হাত চওড়া ও তিন হাত উঁচু\ft*\f* \v 28 এভাবেই তাকগুলি তৈরি করা হল: সেগুলিতে কিনারাযুক্ত খুপি ছিল, যেগুলি খাড়া খুঁটির সাথে জুড়ে দেওয়া হল। \v 29 খাড়া খুঁটিগুলির মাঝে থাকা খুপিগুলিতে সিংহ, বলদ ও করূবের আকৃতি খোদাই করা ছিল—আর খাড়া খুঁটিগুলিতেও তা ছিল। সিংহ ও বলদের উপরে ও নিচে পিটানো পাতের মালা গাঁথা ছিল। \v 30 প্রত্যেকটি তাকে ব্রোঞ্জের চারটি করে চাকা ও ব্রোঞ্জেরই চক্রদণ্ড\f + \fr 7:30 \fr*\ft অর্থাৎ, যে দণ্ড গাড়ির দুটি চাকাকে যুক্ত করে বা, অ্যাক্সেল\ft*\f* ছিল, এবং প্রত্যেকটিতে চারটি করে খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে থাকা এক-একটি করে গামলা জাতীয় পাত্র ছিল, যেগুলির প্রতিটি দিকে ছাঁচে ঢেলে মালা গেঁথে দেওয়া হল। \v 31 তাকের ভিতরদিকে একটি ফাঁক ছিল যেখানে প্রায় পঁয়তাল্লিশ সেন্টিমিটার\f + \fr 7:31 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, এক হাত\ft*\f* পুরু গোলাকার একটি খাঁচা ছিল। এই ফাঁকটি ছিল গোল, ও এটির ভিতের কাজ সমেত এটি মাপে ছিল প্রায় আটষট্টি সেন্টিমিটার।\f + \fr 7:31 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দেড় হাত\ft*\f* সেটির ফাঁক ঘিরে করা হল খোদাইয়ের কাজ। তাকের খুপিগুলি গোল নয়, কিন্তু চৌকো ছিল। \v 32 চারটি চাকা রাখা ছিল খুপিগুলির নিচে, এবং চাকাগুলির চক্রদণ্ডগুলি তাকের সাথে জুড়ে দেওয়া হল। প্রত্যেকটি চাকার ব্যাস ছিল প্রায় আটষট্টি সেন্টিমিটার\f + \fr 7:32 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, দেড় হাত\ft*\f* করে। \v 33 চাকাগুলি, রথের চাকার মতো করে তৈরি করা হল; চক্রদণ্ড, চক্রবেড়, চাকার পাখি ও চক্রনাভিগুলি সব ছাঁচে ঢেলে ধাতু দিয়ে তৈরি করা হল। \p \v 34 প্রত্যেকটি তাকে চারটি করে হাতল ছিল, তাক থেকে এক-একটি হাতল এক এক প্রান্তে বের হয়েছিল। \v 35 তাকের মাথায় প্রায় তেইশ সেন্টিমিটার\f + \fr 7:35 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, আধ হাত\ft*\f* গভীর গোলাকার একটি বেড়ী ছিল। খুঁটি ও খুপিগুলি তাকের মাথায় জুড়ে দেওয়া হল। \v 36 যেখানে যেখানে ফাঁকা স্থান ছিল, খুঁটি ও খুপিগুলির গায়ে চারদিক ঘিরে গাঁথা মালা সমেত তিনি করূব, সিংহ ও খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করে দিলেন। \v 37 এভাবেই তিনি দশটি তাক তৈরি করলেন। সবকটি একই ছাঁচে ঢালাই করা হল এবং মাপে ও আকারে সেগুলি একইরকম হল। \p \v 38 পরে তিনি হাত ধোয়ার জন্য ব্রোঞ্জের দশটি গামলা জাতীয় পাত্র তৈরি করলেন, যার প্রত্যেকটিতে চল্লিশ বাত\f + \fr 7:38 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 880 লিটার\ft*\f* করে জল ধরে রাখা যেত এবং আড়াআড়িভাবে মাপে সেগুলি প্রায় 1.8 মিটার\f + \fr 7:38 \fr*\ft প্রাচীন মাপ অনুসারে, চার হাত\ft*\f* করে ছিল, ও এক-একটি পাত্র সেই দশটি তাকের এক একটির উপর রাখা হল। \v 39 তিনি পাঁচটি তাক মন্দিরের দক্ষিণ দিকে এবং পাঁচটি উত্তর দিকে রেখেছিলেন। তিনি সমুদ্রপাত্রটি মন্দিরের দক্ষিণ দিকে, একেবারে দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে এনে রেখেছিলেন। \v 40 এছাড়াও তিনি আরও কয়েকটি পাত্র\f + \fr 7:40 \fr*\ft অথবা, হাত ধোয়ার পাত্র (45 পদ ও \+xt 2 বংশাবলি 4:11\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f*, বেলচা ও জল ছিটানোর বাটিও তৈরি করলেন। \p অতএব সদাপ্রভুর মন্দিরে রাজা শলোমনের জন্য হূরম যা যা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তা সম্পূর্ণ করলেন: \b \li1 \v 41 দুটি স্তম্ভ; \li1 স্তম্ভের উপরে বসানোর জন্য গামলার আকারবিশিষ্ট দুটি স্তম্ভশীর্ষ; \li1 স্তম্ভের উপরে বসানো গামলার আকারবিশিষ্ট দুটি স্তম্ভশীর্ষ সাজিয়ে তোলার জন্য দুই সারি পরস্পরছেদী জাল; \li1 \v 42 দুই সারি পরস্পরছেদী জালের জন্য 400 ডালিম (স্তম্ভগুলির উপরে বসানো গামলার আকারবিশিষ্ট স্তম্ভশীর্ষ সাজিয়ে তোলার কাজে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি পরস্পরছেদী জালের জন্য দুই সারি করে ডালিম); \li1 \v 43 হাত ধোয়ার দশটি পাত্র সমেত দশটি তাক; \li1 \v 44 সমুদ্রপাত্র ও সেটির নিচে থাকা বারোটি বলদ; \li1 \v 45 অন্যান্য পাত্র, বেলচা ও কয়েকটি জল ছিটানোর বাটি। \b \p সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য শলোমনের হয়ে হূরম যা যা তৈরি করলেন, সেসবই তৈরি হল পালিশ করা ব্রোঞ্জ দিয়ে। \v 46 জর্ডন-সমভূমিতে সুক্কোৎ ও সর্তনের মাঝামাঝি এক স্থানে মাটির ছাঁচে করে রাজা সেগুলি ঢালাই করিয়েছিলেন। \v 47 সেসব জিনিস পরিমাণে এত বেশি ছিল যে শলোমন সেগুলি ওজন না করেই রেখে দিলেন; ব্রোঞ্জের ওজন ঠিক করা যায়নি। \p \v 48 সদাপ্রভুর মন্দিরে যেসব আসবাবপত্রাদি ছিল, শলোমন সেগুলিও তৈরি করিয়েছিলেন: \b \li1 সোনার যজ্ঞবেদি; \li1 দর্শন-রুটি রাখার জন্য সোনার টেবিল; \li1 \v 49 খাঁটি সোনার দীপাধার (অভ্যন্তরীণ পবিত্রস্থানের সামনে পাঁচটি ডানদিকে ও পাঁচটি বাঁদিকে); \li1 সোনার ফুলসজ্জা এবং প্রদীপ ও চিমটে; \li1 \v 50 হাত ধোয়ার খাঁটি সোনার পাত্র, পলতে ছাঁটবার যন্ত্র, জল ছিটানোর বাটি, থালা ও ধুনুচি; \li1 এবং একদম ভিতরের ঘরের দরজাগুলির, মহাপবিত্র স্থানের, ও এছাড়াও মন্দিরের মূল ঘরের দরজাগুলির জন্য সোনার কব্জা। \b \p \v 51 সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য রাজা শলোমনের করা সব কাজ সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর তিনি তাঁর বাবা দাউদের উৎসর্গ করা জিনিসপত্র—রুপো ও সোনা এবং সব আসবাবপত্রাদি—সেখানে নিয়ে এলেন এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের কোষাগারে সেগুলি রেখে দিলেন। \c 8 \s1 নিয়ম-সিন্দুকটি মন্দিরে আনা হল \p \v 1 পরে রাজা শলোমন জেরুশালেমে তাঁর কাছে দাউদ-নগর, অর্থাৎ সিয়োন থেকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি নিয়ে আসার জন্য ইস্রায়েলের প্রাচীনদের, সমস্ত গোষ্ঠীপতিকে ও ইস্রায়েলী পরিবারের প্রধানদের ডেকে পাঠালেন। \v 2 ইস্রায়েলীরা সবাই বছরের সপ্তম মাস, এথানীম মাসে উৎসবের সময় রাজা শলোমনের কাছে একত্রিত হল। \p \v 3 ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই পৌঁছে যাওয়ার পর যাজকেরা সিন্দুকটি উঠিয়েছিলেন, \v 4 এবং তারা সদাপ্রভুর সেই সিন্দুকটি ও সমাগম তাঁবুটি এবং সেখানকার সব পবিত্র আসবাবপত্রাদি নিয়ে এলেন। যাজকেরা ও লেবীয়রা সেগুলি বহন করে এনেছিলেন, \v 5 আর রাজা শলোমন ও তাঁর কাছে একত্রিত হওয়া ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজ সিন্দুকটির সামনে উপস্থিত হয়ে এত মেষ ও গবাদি পশুবলি দিলেন, যে সেগুলি নথিভুক্ত করে বা গুনে রাখা সম্ভব হয়নি। \p \v 6 যাজকেরা পরে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি মন্দিরের ভিতরদিকের পীঠস্থানে, অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থানে সেটির জন্য ঠিক করে রাখা স্থানে নিয়ে এলেন, এবং দুটি করূবের ডানার নিচে রেখে দিলেন। \v 7 করূব দুটি সেই সিন্দুক রাখার স্থানের উপর তাদের ডানা মেলে ধরেছিল এবং সেই সিন্দুক ও সেটির হাতলগুলি আড়াল করে রেখেছিল। \v 8 সেই হাতলগুলি এত লম্বা ছিল যে বের হয়ে আসা হাতলের শেষপ্রান্তগুলি ভিতরদিকের পীঠস্থানের সামনে থেকে দেখা যেত, কিন্তু পবিত্রস্থানের বাইরে থেকে দেখা যেত না; আর সেগুলি আজও সেখানেই আছে। \v 9 সেই সিন্দুকে পাথরের সেই দুটি পাথরের ফলক ছাড়া আর কিছুই ছিল না, যেগুলি ইস্রায়েলীরা মিশর দেশ থেকে বের হয়ে আসার পর সদাপ্রভু তাদের সাথে যেখানে এক নিয়ম স্থাপন করলেন, সেই হোরেবে মোশি সিন্দুকে ভরে রেখেছিলেন। \p \v 10 যাজকেরা পবিত্রস্থান থেকে সরে যাওয়ার পর সদাপ্রভুর মন্দিরটি মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। \v 11 এবং সেই মেঘের কারণে যাজকেরা তাদের পরিচর্যা করে উঠতে পারেননি, যেহেতু সদাপ্রভুর প্রতাপে তাঁর মন্দিরটি পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। \p \v 12 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু বলেছেন যে তিনি ঘন মেঘের মাঝে বসবাস করবেন; \v 13 বাস্তবিকই আমি তোমার জন্য এক দর্শনীয় মন্দির তৈরি করেছি, সেটি এমন এক স্থান, যেখানে তুমি চিরকাল বসবাস করবে।” \p \v 14 ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজ যখন সেখানে দাঁড়িয়েছিল, রাজামশাই তখন তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাদের আশীর্বাদ করলেন। \v 15 পরে তিনি বললেন: \pm “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি নিজের হাতে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করেছেন, যেটি তিনি নিজের মুখে আমার বাবা দাউদের কাছে করলেন। কারণ তিনি বললেন, \v 16 ‘যেদিন আমি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমার নামের উদ্দেশে মন্দির নির্মাণের জন্য আমি ইস্রায়েলের গোষ্ঠীভুক্ত কোনও নগর মনোনীত করিনি, কিন্তু আমার প্রজা ইস্রায়েলকে শাসন করার জন্য আমি দাউদকে মনোনীত করেছিলাম।’ \pm \v 17 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে একটি মন্দির নির্মাণ করার বাসনা আমার বাবা দাউদের অন্তরে ছিল। \v 18 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দাউদকে বললেন, ‘আমার নামে একটি মন্দির নির্মাণ করার কথা ভেবে তুমি ভালোই করেছ। \v 19 তবে, তুমি সেই মন্দির নির্মাণ করবে না, কিন্তু তোমার সেই ছেলে, যে তোমারই রক্তমাংস—সেই আমার নামে একটি মন্দির নির্মাণ করবে।’ \pm \v 20 “সদাপ্রভু তাঁর করা প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করেছেন: আমি আমার বাবা দাউদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছি এবং সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞানুসারে এখন আমি ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসেছি, এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে আমি মন্দিরটি নির্মাণ করেছি। \v 21 আমি সেখানে সেই সিন্দুকটির জন্য স্থান করে রেখেছি, যেখানে সদাপ্রভুর সেই নিয়মটি রাখা আছে, যা তিনি মিশর থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের বের করে আনার সময় তাদের সঙ্গে স্থাপন করলেন।” \s1 শলোমনের করা উৎসর্গীকরণের প্রার্থনা \p \v 22 পরে শলোমন ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজের সামনে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে উঠে দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে তাঁর দু-হাত মেলে ধরলেন \v 23 এবং বললেন: \pm “হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, উপরে স্বর্গে বা নিচে পৃথিবীতে তোমার মতো আর কোনও ঈশ্বর নেই—যারা সর্বান্তঃকরণে তোমার পথে চলতে থাকে, তোমার সেইসব দাসের প্রতি তুমি তোমার প্রেমের নিয়ম পালন করে থাকো। \v 24 আমার বাবা, তথা তোমার দাস দাউদের কাছে করা প্রতিজ্ঞাটি তুমি পূরণ করেছ; নিজের মুখেই তুমি সেই প্রতিজ্ঞাটি করলে এবং নিজের হাতেই তুমি তা রক্ষাও করেছ—যেমনটি কি না আজ দেখা যাচ্ছে। \pm \v 25 “এখন হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাস ও আমার বাবা দাউদের কাছে তোমার করা সেই প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করো। যে প্রতিজ্ঞায় তুমি বললে, ‘শুধু যদি তোমার বংশধরেরা আমার সামনে চলার জন্য একটু সতর্ক হয়ে তোমার মতো বিশ্বস্ততাপূর্বক সবকিছু করে, তবে আমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসার জন্য তোমার কোনও উত্তরাধিকারীর অভাব হবে না।’ \v 26 আর এখন, হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমার বাবা তোমার দাস দাউদের কাছে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করলে, তা যেন সত্যি হয়। \pm \v 27 “কিন্তু ঈশ্বর কি সত্যিই পৃথিবীতে বসবাস করবেন? স্বর্গ, এমন কী সর্বোচ্চ স্বর্গও তোমাকে ধারণ করতে পারে না। তবে আমার নির্মাণ করা এই মন্দিরই বা কীভাবে করবে! \v 28 তবুও হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাসের প্রার্থনায় ও দয়া লাভের জন্য তার করা আজকের দিনে এই অনুরোধের প্রতি মনোযোগ দাও। তোমার উপস্থিতিতে তোমার এই দাস যে ক্রন্দন ও প্রার্থনা করছে, তা তুমি শোনো। \v 29 এই মন্দিরের প্রতি যেন দিনরাত তোমার চোখ খোলা থাকে, যেখানকার বিষয়ে তুমি বললে, ‘আমার নাম সেখানে বজায় থাকবে,’ যেন এই স্থানটির দিকে চেয়ে তোমার দাস যে প্রার্থনা করবে তা তুমি শুনতে পাও। \v 30 তোমার এই দাস ও তোমার প্রজা ইস্রায়েল যখন এই স্থানটির দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে তখন তুমি তাদের মিনতি শুনো। স্বর্গ থেকে, তোমার সেই বাসস্থান থেকে তুমি তা শুনো; এবং শুনে তাদের ক্ষমাও কোরো। \pm \v 31 “যখন কেউ তার প্রতিবেশীর প্রতি কোনও অন্যায় করবে ও তাকে শপথ করতে বলা হবে এবং সে এই মন্দিরে রাখা তোমার এই যজ্ঞবেদির সামনে এসে শপথ করবে, \v 32 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনে সেইমতোই কাজ কোরো। তোমার দাসদের বিচার কোরো, দোষীকে শাস্তি দিয়ো ও তার কৃতকর্মের ফল তার মাথায় চাপিয়ে দিয়ো, এবং নিরপরাধের পক্ষসমর্থন করে, তার নিষ্কলুষতা অনুসারে তার প্রতি আচরণ কোরো। \pm \v 33 “যখন তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার কারণে শত্রুর কাছে পরাজিত হয়ে আবার তোমার কাছে ফিরে এসে তোমার নামের গৌরব করবে, ও এই মন্দিরে তোমার কাছে প্রার্থনা ও মিনতি করবে, \v 34 তখন স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো এবং তাদের সেই দেশে ফিরিয়ে এনো, যেটি তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে। \pm \v 35 “তোমার প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার কারণে যখন আকাশের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে ও বৃষ্টি হবে না, আর যখন তারা এই স্থানটির দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে ও তোমার নামের প্রশংসা করবে এবং তুমি যেহেতু তাদের কষ্ট দিয়েছ, তাই তারা তাদের পাপপথ থেকে ফিরে আসবে, \v 36 তখন স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো ও তোমার দাসদের, তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো। সঠিক জীবনযাপনের পথ তুমি তাদের শিক্ষা দিয়ো, এবং যে দেশটি তুমি তোমার প্রজাদের এক উত্তরাধিকাররূপে দিয়েছ, সেই দেশে তুমি বৃষ্টি পাঠিয়ো। \pm \v 37 “যখন দেশে দুর্ভিক্ষ বা মহামারি দেখা দেবে, অথবা ফসল ক্ষেতে মড়ক লাগবে বা ছাতারোগ লাগবে, পঙ্গপাল বা ফড়িং হানা দেবে, অথবা শত্রুরা তাদের যে কোনো নগরে তাদের যখন অবরুদ্ধ করে রাখবে, যখন এরকম কোনও বিপত্তি বা রোগজ্বালার প্রকোপ পড়বে, \v 38 তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মধ্যে কেউ যদি প্রার্থনা বা মিনতি উৎসর্গ করে—তাদের নিজেদের অন্তরের দুর্দশা অনুভব করে এই মন্দিরের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়— \v 39 তবে তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বাসস্থান থেকে তা শুনো। তাদের ক্ষমা কোরো, ও প্রত্যেকের সাথে তাদের কৃতকর্মানুসারে আচরণ কোরো, যেহেতু তুমি তো তাদের অন্তর জানো (কারণ একমাত্র তুমিই প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ের খবর রাখো), \v 40 যে দেশটি তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, সেখানে যতদিন তারা বেঁচে থাকবে, যেন তোমাকে ভয় করে চলতে পারে। \pm \v 41 “যে তোমার প্রজা ইস্রায়েলের অন্তর্ভুক্ত নয়, এমন কোনও বিদেশি \v 42 তোমার মহানামের ও তোমার পরাক্রমী হাতের এবং তোমার প্রসারিত বাহুর কথা শুনে যখন দূরদেশ থেকে আসবে—তারা যখন এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে, \v 43 তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার সেই বাসস্থান থেকে তা শুনো। সেই বিদেশি তোমার কাছে যা চাইবে, তা তাকে দিয়ো, যেন পৃথিবীর সব মানুষজন তোমার নাম জানতে পারে ও তোমাকে ভয় করে, ঠিক যেভাবে তোমার নিজস্ব প্রজা ইস্রায়েল করে এসেছে, এবং তারা যেন এও জানতে পারে যে এই যে ভবনটি আমি তৈরি করেছি, তা তোমার নাম বহন করে চলেছে। \pm \v 44 “তোমার প্রজারা যখন তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করবে, তুমি তাদের যেখানেই পাঠাও না কেন, ও এই যে নগর ও মন্দিরটি আমি তোমার নামের উদ্দেশে নির্মাণ করেছি, সেদিকে চেয়ে তারা সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করবে, \v 45 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও মিনতি শুনো, এবং তাদের পক্ষসমর্থন কোরো। \pm \v 46 “তারা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপ করবে—কারণ এমন কেউ নেই যে পাপ করে না—আর তুমি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হবে ও তাদেরকে তাদের সেই শত্রুদের হাতে তুলে দেবে, যারা তাদের নিজেদের দেশে বন্দি করে নিয়ে যাবে, তা সে বহুদূরে অথবা কাছেও হতে পারে; \v 47 এবং সেই দেশে বন্দি জীবন কাটাতে কাটাতে যদি তাদের মন পরিবর্তন হয়, ও তারা অনুতাপ করে ও তাদের সেই বন্দিদশার দেশে থাকতে থাকতেই যদি তারা তোমাকে অনুরোধ জানিয়ে বলে, ‘আমরা পাপ করেছি, আমরা অন্যায় করেছি, দুষ্টতামূলক আচরণ করেছি’; \v 48 এবং তাদের যে শত্রুরা তাদের বন্দি করল, তাদের সেই দেশে যদি তারা তাদের সব মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে তোমার কাছে ফিরে আসে ও তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশটি দিয়েছিলে, সেই দেশের ও তুমি যে নগরটি মনোনীত করলে, সেই নগরটির তথা আমি তোমার নামের উদ্দেশে যে মন্দিরটি নির্মাণ করেছি তার দিকে তাকিয়ে যদি তারা তোমার কাছে প্রার্থনা করে; \v 49 তবে তুমি তোমার বাসস্থান সেই স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও মিনতি শুনো, ও তাদের প্রতি সুবিচার কোরো, \v 50 এবং তোমার সেই প্রজাদের ক্ষমা কোরো, যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে; তোমার বিরুদ্ধে করা তাদের সব অপরাধ ক্ষমা কোরো, এবং তাদের বন্দিকারীদের মনে এমন ভাব উৎপন্ন কোরো, যেন তারা তাদের প্রতি দয়া দেখায়; \v 51 কারণ তারা যে তোমার সেই প্রজা ও উত্তরাধিকার, যাদের তুমি মিশর থেকে, সেই লোহা গলানো চুল্লি থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে। \pm \v 52 “তোমার চোখ তোমার দাসের মিনতির প্রতি ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মিনতির প্রতিও খোলা থাকুক, এবং তারা যখনই তোমার কাছে কেঁদে উঠবে, তুমি যেন তা শুনতে পাও। \v 53 কারণ তুমি তাদের তোমার নিজস্ব উত্তরাধিকার হওয়ার জন্য জগতের সব জাতির মধ্যে থেকে আলাদা করে বেছে নিয়েছ, ঠিক যেভাবে তুমি, হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় তোমার দাস মোশির মাধ্যমে ঘোষণা করলে।” \p \v 54 সদাপ্রভুর কাছে এইসব প্রার্থনা ও মিনতি উৎসর্গ করা সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর শলোমন সদাপ্রভুর সেই যজ্ঞবেদির সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, যেখানে তিনি নতজানু হয়ে স্বর্গের দিকে দু-হাত প্রসারিত করে রেখেছিলেন। \v 55 তিনি উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় সমগ্র ইস্রায়েলী জনতাকে আশীর্বাদ করে বললেন: \pm \v 56 “সেই সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে তাঁর প্রজা ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দিয়েছেন। তিনি তাঁর দাস মোশির মাধ্যমে যত ভালো ভালো প্রতিজ্ঞা করলেন, তার একটিও ব্যর্থ হয়নি। \v 57 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, তেমনি তিনি আমাদেরও সঙ্গে সঙ্গে থাকুন; তিনি যেন আমাদের না ছাড়েন বা আমাদের পরিত্যাগ না করেন। \v 58 তাঁর প্রতি বাধ্যতায় চলার জন্য ও তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের যে যে আদেশ, বিধিবিধান ও নিয়মকানুন দিলেন, সেগুলি পালন করার জন্য তিনি যেন আমাদের অন্তর তাঁর প্রতি ফিরিয়ে আনেন। \v 59 আর আমি সদাপ্রভুর সামনে যে প্রার্থনাটি করেছি তার এক-একটি কথা যেন দিনরাত আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছাকাছি থাকে, যেন তিনি প্রতিদিনের চাহিদা অনুসারে তাঁর দাসের ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের প্রতি সুবিচার করলেন, \v 60 যেন পৃথিবীর সব লোকজন জানতে পারে যে সদাপ্রভুই ঈশ্বর ও তিনি ছাড়া আর কেউ ঈশ্বর নয়। \v 61 আর তোমাদের অন্তর যেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিধিবিধান অনুসারে চলার ও তাঁর আদেশের বাধ্য হওয়ার জন্য তাঁর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত থাকে, যেমনটি এসময় হয়েছে।” \s1 মন্দিরটি উৎসর্গ করা হয় \p \v 62 পরে রাজামশাই ও তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীরা সবাই সদাপ্রভুর সামনে বলি উৎসর্গ করলেন। \v 63 শলোমন সদাপ্রভুর কাছে এই মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন: 22,000-টি গবাদি পশু ও 1,20,000-টি মেষ ও ছাগল। এইভাবে রাজা ও ইস্রায়েলী সবাই সদাপ্রভুর মন্দিরটি উৎসর্গ করলেন। \p \v 64 সেদিনই রাজামশাই সদাপ্রভুর মন্দিরের সামনের দিকের প্রাঙ্গণের মাঝের অংশটুকুও উৎসর্গ করে দিলেন, এবং সেখানে তিনি হোমবলি, শষ্য-বলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের চর্বি উৎসর্গ করলেন, কারণ সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের যজ্ঞবেদিটি হোমবলি, শষ্য-বলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের চর্বি ধারণ করার পক্ষে বড়োই ছোটো হয়ে গেল। \p \v 65 অতএব শলোমন সেই সময় উৎসব পালন করলেন, এবং তাঁর সাথে সমস্ত ইস্রায়েলও পালন করল—সে এক বিশাল জনতা, হমাতের প্রবেশদ্বার থেকে মিশরের নির্ঝরিণী পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার লোকজন সেখানে উপস্থিত হল। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তারা সাত দিন ও আরও সাত দিন, মোট চোদ্দো দিন ধরে উৎসব উদ্‌যাপন করল। \v 66 পরদিন তিনি লোকজনকে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। তারা রাজামশাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও সদাপ্রভু তাঁর দাস দাউদ ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের প্রতি যেসব মঙ্গল করেছেন, তার জন্য খুশিমনে আনন্দ করতে করতে যে যার ঘরে ফিরে গেল। \c 9 \s1 সদাপ্রভু শলোমনের কাছে আবির্ভূত হন \p \v 1 শলোমন যখন সদাপ্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করার কাজ সমাপ্ত করলেন, এবং তাঁর যা যা করার বাসনা ছিল, সেসব অর্জন করে ফেলেছিলেন, \v 2 সদাপ্রভু তখন দ্বিতীয়বার তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন, যেভাবে একবার তিনি গিবিয়োনে তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন। \v 3 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন: \pm “তুমি আমার কাছে যে প্রার্থনা ও মিনতি জানিয়েছ, আমি তা শুনেছি; আমার নাম চিরকালের জন্য তোমার নির্মাণ করা মন্দিরে স্থাপন করে আমি সেটি পবিত্র করে দিয়েছি। আমার চোখের দৃষ্টি ও আমার অন্তর সবসময় সেখানে থাকবে। \pm \v 4 “আর তোমায় বলছি, তোমার বাবা দাউদের মতো তুমিও যদি আমার সামনে অন্তরের সততা ও ন্যায়পরায়ণতা সমেত বিশ্বস্ততাপূর্বক চলো, এবং আমি যা যা আদেশ দিয়েছি, সেসব করো ও আমার বিধিবিধান ও নিয়মকানুনগুলি পালন করো, \v 5 তবে চিরকালের জন্য আমি ইস্রায়েলের উপর তোমার রাজসিংহাসন স্থায়ী করব, ঠিক যেমনটি আমি তোমার বাবা দাউদের কাছে এই কথা বলে প্রতিজ্ঞা করলাম, ‘ইস্রায়েলের সিংহাসনে তোমার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য কোনও লোকের অভাব হবে না।’ \pm \v 6 “কিন্তু যদি তুমি\f + \fr 9:6 \fr*\ft অথবা, তোমরা\ft*\f* বা তোমার বংশধররা আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাও ও আমি তোমাকে\f + \fr 9:6 \fr*\ft অথবা, তোমাদের\ft*\f* যে যে আদেশ ও বিধিবিধান দিয়েছি, সেগুলি পালন না করো ও অন্যান্য দেবদেবীর সেবা ও আরাধনা করতে থাকো, \v 7 তবে আমি ইস্রায়েলকে যে দেশ দিয়েছি, সেই দেশ থেকে তাদের উৎখাত করব ও এই যে মন্দিরটি আমি আমার নামের উদ্দেশে পবিত্র করেছি, সেটিও অগ্রাহ্য করব। ইস্রায়েল তখন সব লোকজনের কাছে অবজ্ঞার ও উপহাসের এক পাত্রে পরিণত হবে। \v 8 এই মন্দিরটি ভাঙা ইটপাথরের এক স্তূপে পরিণত হবে। যারা যারা তখন এখান দিয়ে যাবে, তারা সবাই মর্মাহত হবে, টিটকিরি করবে ও বলবে, ‘সদাপ্রভু কেন এই দেশের ও এই মন্দিরটির প্রতি এমনটি করলেন?’ \v 9 লোকেরা উত্তর দেবে, ‘যেহেতু তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করল, যিনি মিশর থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের বের করে এনেছিলেন, এবং যেহেতু তারা অন্যান্য দেবতাদের সাগ্রহে গ্রহণ করল, ও তাদের আরাধনা ও সেবা করল—তাইতো তিনি তাদের উপর এইসব দুর্বিপাক নিয়ে এসেছেন।’ ” \s1 শলোমনের অন্যান্য কাজকর্ম \p \v 10 যে কুড়ি বছর ধরে শলোমন এই দুটি ভবন—সদাপ্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ—নির্মাণ করলেন, তা পার হয়ে যাওয়ার পর \v 11 রাজা শলোমন গালীল প্রদেশের কুড়িটি নগর সোরের রাজা হীরমকে দিলেন, কারণ হীরম তাঁর চাহিদানুসারে যাবতীয় দেবদারু ও চিরহরিৎ কাঠ এবং সোনাদানা সরবরাহ করলেন। \v 12 কিন্তু যে নগরগুলি শলোমন হীরমকে দিলেন, তিনি যখন সেগুলি দেখতে গেলেন, তখন সেগুলি তাঁর খুব একটি পছন্দ হয়নি। \v 13 “ভাইটি, আপনি আমাকে এসব কী নগর দিয়েছেন?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। আর তিনি সেগুলির নাম দিলেন কাবুল\f + \fr 9:13 \fr*\ft অথবা, ফালতু\ft*\f* দেশ, আর এই নামটিই আজও পর্যন্ত রয়ে গিয়েছে। \v 14 ইত্যবসরে হীরম রাজামশাইকে একশো কুড়ি তালন্ত\f + \fr 9:14 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় সাড়ে 4 টন বা, প্রায় 4 মেট্রিক টন\ft*\f* সোনা পাঠালেন। \p \v 15 রাজা শলোমন যেসব বেগার শ্রমিককে বাধ্যতামূলকভাবে সদাপ্রভুর মন্দির, তাঁর নিজের প্রাসাদ, উঁচু চাতাল,\f + \fr 9:15 \fr*\ft অথবা, মিল্লো; 24 পদেও আছে\ft*\f* জেরুশালেমের প্রাচীর, এবং হাৎসোর, মগিদ্দো ও গেষর গাঁথার কাজে লাগলেন, এই হল তাদের বিবরণ। \v 16 (মিশরের রাজা ফরৌণ গেষর আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আগুন ধরিয়ে দিলেন। তিনি সেখানকার কনানীয় অধিবাসীদের হত্যা করে সেটি তাঁর মেয়ে, শলোমনের স্ত্রীকে বিয়ের যৌতুকরূপে উপহার দিলেন। \v 17 আর শলোমন গেষর নগরটি পুনর্নির্মাণ করলেন) তিনি নিচের দিকের বেথ-হোরোণ, \v 18 বালৎ, ও তাঁর দেশের অন্তর্গত মরুভূমিতে অবস্থিত তামর, \v 19 তথা তাঁর সব গুদাম-নগর এবং তাঁর রথ ও ঘোড়া\f + \fr 9:19 \fr*\ft অথবা, অশ্বারোহী\ft*\f* রাখার জন্য কয়েকটি নগর—জেরুশালেমে, লেবাননে ও তাঁর শাসিত গোটা এলাকা জুড়ে সর্বত্র যা যা তিনি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, সেসব তিনি তৈরি করলেন। \p \v 20 ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের মধ্যেও কিছু লোক সেখানে অবশিষ্ট রয়ে গেল। (এইসব লোক ইস্রায়েলী নয়) \v 21 শলোমন দেশে থেকে যাওয়া এইসব লোকের বংশধরদের—যাদের ইস্রায়েলীরা উচ্ছেদ\f + \fr 9:21 \fr*\ft মূল হিব্রু শব্দটি সদাপ্রভুর উদ্দেশে অনিবার্যভাবে বস্তু বা ব্যক্তিদের দান করে দেওয়ার কথা বলে, প্রায়ই তাদের পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার দ্বারা যা করা হত\ft*\f* করতে পারেনি—বাধ্যতামূলকভাবে বেগার শ্রমিক রূপে কাজে লাগালেন, আজও পর্যন্ত যা তারা করে চলেছে। \v 22 কিন্তু শলোমন ইস্রায়েলীদের কাউকে ক্রীতদাস করেননি; তারা তাঁর যোদ্ধা, কর্মকর্তা, সেনাপতি, এবং তাঁর রথের সারথি ও অশ্বারোহীদের সেনাপতি হল। \v 23 এছাড়াও তারা শলোমনের বিভিন্ন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা হল 550 জন কর্মকর্তা এই কাজে লিপ্ত লোকজনের কাজ দেখাশোনা করত। \p \v 24 শলোমন ফরৌণের মেয়ের জন্য যে প্রাসাদটি নির্মাণ করলেন, তিনি দাউদ-নগর থেকে সেখানে চলে আসার পর শলোমন সেখানে কয়েকটি উঁচু চাতালও নির্মাণ করে দিলেন। \p \v 25 শলোমন সদাপ্রভুর উদ্দেশে যে যজ্ঞবেদিটি তৈরি করলেন, সেখানে তিনি বছরে তিনবার হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করতেন, এবং সেগুলির সাথে সাথে সদাপ্রভুর সামনে ধূপও জ্বালাতেন, আর এভাবেই তিনি মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করলেন। \p \v 26 এছাড়াও রাজা শলোমন লোহিত সাগরের\f + \fr 9:26 \fr*\ft অথবা, নলখাগড়ার সাগর\ft*\f* তীরে, ইদোমের এলতের কাছে অবস্থিত ইৎসিয়োন-গেবরে কয়েকটি জাহাজ তৈরি করলেন। \v 27 হীরম শলোমনের লোকজনের সঙ্গে থেকে নৌবাহিনীতে সেবাকাজ করার জন্য তাঁর সেইসব নাবিককে পাঠিয়ে দিলেন, যারা সমুদ্রের ব্যাপারে অভিজ্ঞ ছিল। \v 28 তারা জাহাজে চড়ে ওফীরে গেল ও সেখান থেকে 420 তালন্ত\f + \fr 9:28 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 16 টন বা, 14 মেট্রিক টন\ft*\f* সোনা এনে রাজা শলোমনের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। \c 10 \s1 শিবার রানি শলোমনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন \p \v 1 শিবার রানি শলোমনের সুনামের ও সদাপ্রভুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা শুনে কঠিন কঠিন প্রশ্ন নিয়ে তাঁকে পরীক্ষা করতে এলেন। \v 2 বিশাল দলবল নিয়ে—সুগন্ধি মশলা বহনকারী উট, প্রচুর পরিমাণ সোনা ও দামি মণিমুক্তো নিয়ে—তিনি জেরুশালেমে শলোমনের কাছে এলেন ও তাঁর মনের সব কথা তিনি শলোমনকে খুলে বললেন। \v 3 শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন; রানিকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়ার পক্ষে কোনো কিছুই রাজার কাছে কঠিন বলে মনে হয়নি। \v 4 শিবার রানি শলোমনের প্রজ্ঞা ও তাঁর নির্মিত করা প্রাসাদ, \v 5 তাঁর টেবিলে রাখা খাদ্যসম্ভার, তাঁর কর্মকর্তাদের বসার ব্যবস্থা, সেবক-দাসেদের পোশাক-পরিচ্ছদ, তাঁর পানপাত্র বহনকারীদের, এবং সদাপ্রভুর মন্দিরে তাঁর উৎসর্গ করা হোমবলি\f + \fr 10:5 \fr*\ft অথবা, “সদাপ্রভুর মন্দিরে হোমবলি উৎসর্গ করতে যাওয়ার জন্য তার তৈরি করা সিঁড়ি”\ft*\f* দেখে আবেগবিহ্বল হয়ে গেলেন। \p \v 6 তিনি রাজাকে বললেন, “নিজের দেশে থাকার সময় আমি আপনার কীর্তির ও প্রজ্ঞার বিষয়ে যা যা শুনেছিলাম, সেসবই সত্যি। \v 7 কিন্তু এখানে এসে স্বচক্ষে না দেখা পর্যন্ত আমি সেসব বিশ্বাস করিনি। আসলে, অর্ধেক কথাও আমাকে বলা হয়নি; আমি যে খবর শুনেছিলাম, আপনার প্রজ্ঞা ও ধনসম্পদ তার তুলনায় পরিমাণে অনেক বেশি। \v 8 আপনার প্রজারা কতই না সুখী! আপনার সেই কর্মকর্তারাও কতই না সুখী, যারা অনবরত আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে ও আপনার প্রজ্ঞার কথা শোনে! \v 9 আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি আপনার উপর সন্তুষ্ট হয়ে আপনাকে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসিয়েছেন। ইস্রায়েলের প্রতি সদাপ্রভুর অনন্ত প্রেমের কারণে, ন্যায় ও ধার্মিকতা বজায় রাখার জন্য তিনি আপনাকে রাজা করেছেন।” \p \v 10 আর তিনি রাজামশাইকে একশো কুড়ি তালন্ত\f + \fr 10:10 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় সাড়ে 4 টন বা, 4 মেট্রিক টন\ft*\f* সোনা, প্রচুর পরিমাণ সুগন্ধি মশলা, ও দামি মণিমুক্তো দিলেন। শিবার রানি রাজা শলোমনকে যত সুগন্ধি মশলা দিলেন, তত সুগন্ধি মশলা আর কখনও সেখানে আনা হয়নি। \p \v 11 (হীরমের জাহাজগুলি ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত; আর সেখান থেকেই তারা বড়ো বড়ো জাহাজে ভরে চন্দনকাঠ ও দামি মণিমুক্তোও নিয়ে আসত। \v 12 রাজামশাই সদাপ্রভুর মন্দিরের ও রাজপ্রাসাদের খুঁটি নির্মাণ করার জন্য, এবং সুদক্ষ বাদ্যকরদের জন্য বীণা ও সুরবাহার তৈরি করার কাজে চন্দনকাঠ ব্যবহার করতেন। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত এত চন্দনকাঠ আর কখনও আমদানি করা হয়নি বা চোখে দেখাও যায়নি।) \p \v 13 রাজা শলোমন শিবা দেশের রানির মনোবাঞ্ছা ও তাঁর চাহিদা অনুসারে তাঁকে সবকিছু দিলেন, এছাড়াও তিনি তাঁর রাজকীয় দানশীলতা দেখিয়ে আরও অনেক কিছু তাঁকে দিলেন। পরে রানি তাঁর লোকলস্কর সঙ্গে নিয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। \s1 শলোমনের ঐশ্বর্য \p \v 14 প্রতি বছর শলোমন যে পরিমাণ সোনা সংগ্রহ করতেন তার ওজন 666 তালন্ত,\f + \fr 10:14 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 25 টন বা, প্রায় 23 মেট্রিক টন\ft*\f* \v 15 এতে বণিক ও ব্যবসায়ীদের এবং আরবীয় সব রাজার ও সেই অঞ্চলের শাসনকর্তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা রাজস্ব ধরা হয়নি। \p \v 16 পিটানো সোনার পাত দিয়ে রাজা শলোমন 200-টি বড়ো বড়ো ঢাল তৈরি করলেন; প্রত্যেকটি ঢাল তৈরি করতে 600 শেকল\f + \fr 10:16 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 6.9 কিলোগ্রাম; 29 পদেও এই ওজন ধরতে হবে\ft*\f* করে পিটানো সোনা লেগেছিল। \v 17 পিটানো সোনার পাত দিয়ে তিনি আরও তিনশোটি ছোটো ছোটো ঢাল তৈরি করলেন, এবং প্রত্যেকটি ঢালে তিন মানি\f + \fr 10:17 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1.7 কিলোগ্রাম; বা হয়তো এখানে দ্বিগুণ মানির উল্লেখ হয়েছে, যার অর্থ 3:5 কিলোগ্রাম\ft*\f* করে সোনা ছিল। রাজা সেগুলি লেবাননের অরণ্য-প্রাসাদে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন। \p \v 18 পরে রাজামশাই হাতির দাঁত দিয়ে একটি বড়ো সিংহাসন বানিয়ে, সেটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। \v 19 সিংহাসনে ওঠার জন্য সিঁড়ির ছয়টি ধাপ ছিল, এবং সেটির পিছন দিকের উপরের অংশটি গোলাকার ছিল। বসার স্থানটির দুই দিকেই হাতল ছিল, এবং দুটিরই পাশে একটি করে সিংহমূর্তি দাঁড় করানো ছিল। \v 20 বারোটি সিংহমূর্তি সিঁড়ির ছয়টি ধাপের উপরে দাঁড় করানো ছিল, এক-একটি মূর্তি প্রত্যেকটি ধাপের এক এক পাশে রাখা ছিল। অন্য কোনও রাজ্যে আগে কখনও এরকম কিছু তৈরি করা হয়নি। \v 21 রাজা শলোমনের কাছে থাকা ভিত থেকে ওঠা ডাঁটিযুক্ত হাতলবিহীন সব পানপাত্র ছিল সোনার, এবং লেবাননের অরণ্য-প্রাসাদে রাখা সব গৃহস্থালি জিনিসপত্র খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি হল। কোনো কিছুই রুপো দিয়ে তৈরি করা হয়নি, কারণ শলোমনের রাজত্বকালে রুপোকে দামি বলে গণ্যই করা হত না। \v 22 হীরমের জাহাজগুলির পাশাপাশি সমুদ্রে রাজারও তর্শীশের বাণিজ্যতরির একটি নৌবহর ছিল। তিন বছরে একবার সেই নৌবহর সোনা, রুপো, হাতির দাঁত, এবং বনমানুষ ও ময়ূর\f + \fr 10:22 \fr*\ft অথবা, বড়ো আকারের বানর\ft*\f* নিয়ে ফিরে আসত। \p \v 23 পৃথিবীর অন্য সব রাজার তুলনায় রাজা শলোমন ধনসম্পদে ও প্রজ্ঞায় বৃহত্তর হলেন। \v 24 শলোমনের অন্তরে ঈশ্বর যে প্রজ্ঞা ভরে দিলেন, তা শোনার জন্য গোটা জগৎ তাঁর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার লাভের চেষ্টা করত। \v 25 বছরের পর বছর, যে কেউ তাঁর কাছে আসত, সে কোনও না কোনো উপহার—রুপো ও সোনার তৈরি জিনিসপত্র, কাপড়চোপড়, অস্ত্রশস্ত্র ও মশলাপাতি, এবং ঘোড়া ও খচ্চর নিয়ে আসত। \p \v 26 শলোমন প্রচুর রথ ও ঘোড়া একত্রিত করলেন; তাঁর কাছে এক হাজার চারশো রথ ও 12,000 ঘোড়া\f + \fr 10:26 \fr*\ft অথবা, সারথি\ft*\f* ছিল, যা তিনি বিভিন্ন রথ-নগরীতে রেখেছিলেন এবং কয়েকটিকে তিনি নিজের কাছে জেরুশালেমেও রেখেছিলেন। \v 27 জেরুশালেমে রাজা, রুপোকে পাথরের মতো সাধারণ স্তরে নামিয়ে এনেছিলেন, এবং দেবদারু কাঠকে পর্বতমালার পাদদেশে উৎপন্ন ডুমুর গাছের মতো পর্যাপ্ত করে তুলেছিলেন। \v 28 শলোমনের ঘোড়াগুলি মিশর ও কুই\f + \fr 10:28 \fr*\ft অথবা খুব সম্ভবত, কিলিকিয়া\ft*\f* থেকে আমদানি করা হত—রাজকীয় বণিকেরা বাজার দরে সেগুলি কুই থেকে কিনে আনত। \v 29 তারা মিশর থেকে এক-একটি রথ আমদানি করত ছয়শো শেকল\f + \fr 10:29 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 1.7 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো দিয়ে, এবং এক-একটি ঘোড়া আমদানি করত একশো 50 শেকলে। এছাড়াও হিত্তীয় ও অরামীয় সব রাজার কাছে তারা সেগুলি রপ্তানিও করত। \c 11 \s1 শলোমনের স্ত্রীরা \p \v 1 রাজা শলোমন অবশ্য ফরৌণের মেয়ের পাশাপাশি আরও অনেক বিদেশিনীকে—মোয়াবীয়া, অম্মোনীয়া, ইদোমীয়া, সীদোনীয়া ও হিত্তীয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন। \v 2 তারা সেইসব জাতিভুক্ত মহিলা ছিল, যাদের সম্বন্ধে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের বলে দিলেন, “তোমরা অসবর্ণমতে এদের বিয়ে কোরো না, কারণ তারা নিঃসন্দেহে তোমাদের অন্তর তাদের দেবদেবীদের দিকে সরিয়ে দেবে।” তবুও শলোমন তাদের প্রতি প্রেমাসক্ত হয়েই থেকে গেলেন। \v 3 রাজপরিবারে জন্মেছিল, এরকম সাতশো জন হল তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর উপপত্নীর সংখ্যা ছিল তিনশো জন, এবং তাঁর স্ত্রীরাই তাঁকে বিপথে পরিচালিত করল। \v 4 শলোমন বয়সে বৃদ্ধ হতে না হতেই, তাঁর স্ত্রীরা তাঁর অন্তর অন্যান্য দেবদেবীদের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল, এবং তাঁর অন্তর আর তাঁর বাবা দাউদের মতো তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি একাগ্র থাকেনি। \v 5 তিনি সীদোনীয়দের দেবী অষ্টারোতের ও অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য দেবতা মোলকের অনুগামী হলেন। \v 6 এইভাবে শলোমন সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজ করলেন; তিনি তাঁর বাবা দাউদের মতো পুরোপুরি সদাপ্রভুর অনুগামী হননি। \p \v 7 জেরুশালেমের পূর্বদিকে অবস্থিত একটি পাহাড়ে শলোমন মোয়াবের ঘৃণ্য দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য দেবতা মোলকের জন্য উঁচু পূজাবেদি তৈরি করলেন। \v 8 তিনি তাঁর সেই বিদেশিনী স্ত্রীদের জন্যও এমনটি করে দিলেন, যারা তাদের দেবদেবীদের উদ্দেশে ধূপ পোড়াতো ও বলি উৎসর্গ করত। \p \v 9 সদাপ্রভু শলোমনের উপর ক্রুদ্ধ হলেন, কারণ তাঁর অন্তর ইস্রায়েলের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে দূরে সরে গেল, যিনি দু-দুবার তাঁকে দর্শন দিলেন। \v 10 যদিও সদাপ্রভু শলোমনকে অন্যান্য দেবদেবীদের অনুগামী হতে মানা করলেন, তবুও তিনি সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি। \v 11 তাই সদাপ্রভু শলোমনকে বললেন, “যেহেতু এই তোমার মনোভাব এবং তুমি আমার আদেশমতো আমার নিয়মকানুন ও আমার বিধিবিধান পালন করোনি, তাই আমি অবশ্যই তোমার হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে সেটি তোমার অধীনস্থ একজনের হাতে তুলে দেব। \v 12 তবে, তোমার বাবা দাউদের খাতিরে আমি তোমার জীবনকালে এমনটি করব না। আমি তোমার ছেলের হাত থেকে সেটি ছিনিয়ে নেব। \v 13 তবুও আমি গোটা রাজ্য তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেব না, কিন্তু আমার দাস দাউদের খাতিরে ও আমার মনোনীত জেরুশালেমের খাতিরে আমি তাকে একটি বংশ দেব।” \s1 শলোমনের প্রতিদ্বন্দ্বীরা \p \v 14 পরে সদাপ্রভু ইদোমের রাজপরিবার থেকে ইদোমীয় হদদকে শলোমনের বিরুদ্ধে এক প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে দাঁড় করিয়ে দিলেন। \v 15 ইতিপূর্বে দাউদ যখন ইদোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন, তখন সৈন্যদলের সেনাপতি যোয়াব মৃত মানুষদের কবর দিতে গিয়ে ইদোমে সব পুরুষমানুষকে মেরে ফেলেছিলেন। \v 16 যোয়াব ও ইস্রায়েলীরা সবাই ইদোমে সব পুরুষমানুষকে মেরে না ফেলা পর্যন্ত ছয় মাস ধরে সেখানেই থেকে গেলেন। \v 17 কিন্তু হদদ তাঁর বাবার সেবক, কয়েকজন ইদোমীয় কর্মকর্তার সঙ্গে মিশরে পালিয়ে গেলেন, আর তখন তিনি একদম ছেলেমানুষ ছিলেন। \v 18 তারা মিদিয়ন থেকে যাত্রা শুরু করে পারণে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। পরে পারণ থেকে লোকজন সংগ্রহ করে তারা মিশরে, সেখানকার রাজা ফরৌণের কাছে পৌঁছে গেলেন। তিনি হদদকে জমি-বাড়ি দিলেন ও খাবারেরও জোগান দিলেন। \p \v 19 ফরৌণ হদদের উপর এত সন্তুষ্ট হলেন যে তিনি নিজের স্ত্রী, রানি তহপনেষের বোনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিলেন। \v 20 তহপনেষের বোন হদদের জন্য এক ছেলেসন্তান জন্ম দিলেন, যার নাম গনুবৎ। তহপনেষ তাকে রাজপ্রাসাদেই বড়ো করে তুলেছিলেন। সেখানে গনুবৎ ফরৌণের আপন ছেলেমেয়েদের সাথেই বসবাস করত। \p \v 21 মিশরে থাকতে থাকতেই হদদ শুনতে পেয়েছিলেন যে দাউদ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হয়েছেন এবং সৈন্যদলের সেনাপতি যোয়াবও মারা গিয়েছেন। তখন হদদ ফরৌণকে বললেন, “আমাকে যেতে দিন, আমি যেন আমার নিজের দেশে ফিরে যেতে পারি।” \p \v 22 “এখানে তোমার কীসের অভাব হচ্ছে যে তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?” ফরৌণ জিজ্ঞাসা করলেন। \p “কোনও অভাব নেই,” হদদ উত্তর দিলেন, “কিন্তু তাও আমাকে যেতে দিন!” \p \v 23 ঈশ্বর শলোমনের বিরুদ্ধে আরও একজন প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি ইলিয়াদার ছেলে সেই রষোণ, যিনি তাঁর মনিব, সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন। \v 24 দাউদ যখন সোবার সৈন্যদল ধ্বংস করলেন, রষোণ তখন তাঁর চারপাশে একদল লোক জুটিয়ে তাদের নেতা হয়ে গেলেন; তারা দামাস্কাসে গিয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করলেন ও সেখানকার নিয়ন্ত্রণভার হাতে তুলে নিয়েছিলেন। \v 25 শলোমন যতদিন বেঁচেছিলেন, হদদের দ্বারা উৎপন্ন অসুবিধার পাশাপাশি রষোণও ইস্রায়েলের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই ছিলেন। অতএব রষোণ অরামে রাজত্ব করছিলেন ও তিনি ইস্রায়েলের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ছিলেন। \s1 যারবিয়াম শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন \p \v 26 এছাড়া, নবাটের ছেলে, সরেদার অধিবাসী ইফ্রয়িমীয় যারবিয়ামও রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন। তিনি ছিলেন শলোমনের কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন। তাঁর মায়ের নাম সরূয়া, ও তিনি এক বিধবা মহিলা ছিলেন। \p \v 27 তিনি কীভাবে রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হলেন, তার বিবরণ এইরকম: শলোমন কয়েকটি উঁচু চাতাল\f + \fr 11:27 \fr*\ft অথবা, মিল্লো\ft*\f* তৈরি করলেন ও তাঁর বাবা দাউদের নামাঙ্কিত নগরের প্রাচীরের ফাটল সারিয়েছিলেন। \v 28 ইত্যবসরে যারবিয়াম সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন একজন লোক ছিলেন, এবং শলোমন যখন দেখেছিলেন সেই যুবকটি কত ভালোভাবে তাঁর কাজকর্ম করছিলেন, তখন তিনি তাঁর হাতে যোষেফের বংশভুক্ত সমগ্র মজুরদলের দায়িত্ব সঁপে দিলেন। \p \v 29 সেই সময় একদিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেমের বাইরে যাচ্ছিলেন, তখন পথে শীলো থেকে আসা ভাববাদী অহিয়র সঙ্গে তাঁর দেখা হল। অহিয়র পরনে ছিল নতুন এক ঢিলা আলখাল্লা। সেই গ্রামাঞ্চলে তারা দুজন একাই ছিলেন, \v 30 আর অহিয় নিজের পরনে থাকা নতুন আলখাল্লাটি নিয়ে সেটি বারো টুকরো করে ফেলেছিলেন। \v 31 পরে তিনি যারবিয়ামকে বললেন, “নিজের জন্য তুমি দশটি টুকরো তুলে নাও, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘দেখো, আমি শলোমনের হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে তোমাকে দশটি বংশ দিতে যাচ্ছি। \v 32 কিন্তু আমার দাস দাউদের খাতিরে ও যে জেরুশালেম নগরটি আমি ইস্রায়েলের সব বংশের মধ্যে থেকে মনোনীত করে রেখেছি, সেটির খাতিরে তার হাতে একটি বংশ থাকবে। \v 33 আমি এরকম করব, কারণ তারা\f + \fr 11:33 \fr*\ft অথবা, সে; এই পদের শেষ দিকেও আরেকবার তারার স্থানে সে পড়া যেতে পারে\ft*\f* আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং সীদোনীয়দের দেবী অষ্টারোতের, মোয়াবীয়দের দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের দেবতা মোলকের পূজার্চনা করেছে, তথা আমার প্রতি বাধ্যতা দেখিয়ে চলেনি, বা আমার দৃষ্টিতে যা ভালো তা করেননি, অথবা শলোমনের বাবা দাউদ যেভাবে আমার বিধিবিধান ও নিয়মকানুন পালন করত, তারা সেভাবে তা করেননি। \p \v 34 “ ‘কিন্তু আমি শলোমনের হাত থেকে গোটা রাজ্যটি ছিনিয়ে নেব না; যাকে আমি মনোনীত করলাম এবং যে আমার আদেশ ও বিধিবিধান পালন করে গিয়েছে, আমার দাস সেই দাউদের খাতিরেই আমি তাকে সারা জীবনের জন্য শাসনকর্তা করেছি। \v 35 আমি তার ছেলের হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে তোমাকে দশটি বংশ দেব। \v 36 আমি তার ছেলেকে একটি বংশ দেব, যেন সেই জেরুশালেমে সবসময় আমার দাস দাউদের এক প্রদীপ জ্বলতে থাকে, যে নগরে আমার নাম বজায় রাখার জন্য আমি সেটি মনোনীত করেছি। \v 37 অবশ্য, তোমার ক্ষেত্রে আমি বলছি, আমি তোমাকে গ্রহণ করব, ও তোমার মনোবাঞ্ছানুসারে তুমি সবকিছুর উপর শাসন চালাবে; তুমি ইস্রায়েলের উপর রাজা হবে। \v 38 তুমি যদি আমার দাস দাউদের মতো আমার আদেশানুসারে সবকিছু করো ও আমার প্রতি বাধ্য হয়ে চলো এবং আমার বিধিবিধানের ও আদেশের বাধ্য হয়ে আমার দৃষ্টিতে যা যা ভালো, তাই করো, তবে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকব। আমি তোমার জন্য এমন এক স্থায়ী রাজবংশ গড়ে তুলব, যেমনটি আমি দাউদের জন্য গড়ে তুলেছিলাম এবং ইস্রায়েলকে আমি তোমার হাতেই তুলে দেব। \v 39 এই কারণে আমি দাউদের বংশধরদের অবনত করব, কিন্তু চিরকালের জন্য নয়।’ ” \p \v 40 শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যারবিয়াম মিশরে, রাজা শীশকের কাছে পালিয়ে গেলেন, এবং শলোমনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থেকে গেলেন। \s1 শলোমনের মৃত্যু \p \v 41 শলোমনের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা—তিনি যা যা করলেন ও যে প্রজ্ঞা দেখিয়েছিলেন—সেসব কি শলোমনের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 42 শলোমন জেরুশালেমে সমগ্র ইস্রায়েলের উপর চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 43 পরে তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাঁর বাবা দাউদের নগরেই কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে রহবিয়াম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 12 \s1 ইস্রায়েল রহবিয়ামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে \p \v 1 রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ সমগ্র ইস্রায়েল তাঁকে রাজা করার জন্য সেখানে পৌঁছেছিল। \v 2 নবাটের ছেলে যারবিয়াম যখন সেকথা শুনলেন (রাজা শলোমনের কাছ থেকে পালিয়ে তিনি সেই যে মিশরে চলে গেলেন, তখনও পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন), তখন তিনি মিশর থেকে ফিরে এলেন।\f + \fr 12:2 \fr*\ft অথবা, তিনি মিশরেই থেকে গেলেন\ft*\f* \v 3 তাই ইস্রায়েলীরা লোক পাঠিয়ে যারবিয়ামকে ডেকে এনেছিল, এবং তিনি ও সমস্ত ইস্রায়েলী সমাজ রহবিয়ামের কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন: \v 4 “আপনার বাবা আমাদের উপর এক ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিলেন, কিন্তু এখন আপনি সেই কঠোর পরিশ্রম ও ভারী জোয়ালের ভার লঘু করে দিন, যা আপনার বাবা আমাদের উপর চাপিয়ে দিলেন, আর আমরাও আপনার সেবা করব।” \p \v 5 রহবিয়াম উত্তর দিলেন, “এখন তোমরা যাও, তিন দিন পর আবার আমার কাছে ফিরে এসো।” তাই লোকজন চলে গেল। \p \v 6 পরে রাজা রহবিয়াম সেইসব প্রাচীনের সঙ্গে শলাপরামর্শ করলেন, যারা তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে তাঁর সেবা করতেন। “এই লোকদের কী উত্তর দিতে হবে সে বিষয়ে আপনারা আমাকে কী পরামর্শ দিতে চান?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p \v 7 তারা উত্তর দিলেন, “আজ যদি আপনি এই লোকদের দাস হন ও তাদের সেবা করে উপযুক্ত এক উত্তর দেন, তবে তারা সবসময় আপনার দাস হয়েই থাকবে।” \p \v 8 কিন্তু সেই বয়স্ক লোকজন রহবিয়ামকে যে পরামর্শ দিলেন, তিনি তা অগ্রাহ্য করলেন এবং সেই কমবয়সি যুবকদের সাথে শলাপরামর্শ করলেন, যারা তাঁর সাথেই বেড়ে উঠেছিল ও যারা তাঁর সেবা করত। \v 9 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী পরামর্শ দিতে চাও? সেই লোকদের আমরা কী উত্তর দেব, যারা আমাকে বলেছে, ‘আপনার বাবা আমাদের উপর যে জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, তা আপনি লঘু করে দিন’?” \p \v 10 তাঁর সাথে বেড়ে ওঠা যুবকেরা উত্তর দিয়েছিল, “এই লোকেরা আপনাকে বলেছে, ‘আপনার বাবা আমাদের উপর ভারী এক জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু আপনি এখন আমাদের জোয়াল হালকা করে দিন।’ এখন আপনি তাদের বলুন, ‘আমার কড়ে আঙুল আমার বাবার কোমরের চেয়েও মোটা। \v 11 আমার বাবা তোমাদের উপর ভারী এক জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন; আমি সেটি আরও ভারী করে তুলব। আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিয়েছেন; আমি তোমাদের শাস্তি দেব কাঁকড়াবিছের কামড় দিয়ে।’ ” \p \v 12 “তিন দিন পর আমার কাছে তোমরা ফিরে এসো,” রাজার বলা এই কথামতো তিন দিন পর যারবিয়াম ও সব লোকজন রহবিয়ামের কাছে ফিরে এলেন। \v 13 রাজামশাই কর্কশভাবে লোকদের উত্তর দিলেন। প্রাচীনেরা তাঁকে যে পরামর্শ দিলেন, তা অগ্রাহ্য করে, \v 14 তিনি যুবকদের পরামর্শ মতো তাদের বললেন, “আমার বাবা তোমাদের জোয়াল ভারী করে দিলেন; আমি সেটি আরও ভারী করে তুলব। আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিলেন; আমি কাঁকড়াবিছের কামড় দিয়ে তোমাদের শাস্তি দেব।” \v 15 এইভাবে রাজা, প্রজাদের কথা শুনলেন না, কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মাধ্যমে সদাপ্রভুর যে বাক্য নবাটের ছেলে যারবিয়ামের কাছে এসেছিল, সেটি পূর্ণ করার জন্য ঈশ্বরের কাছ থেকেই ঘটনার মোড় এভাবে ঘুরে গেল। \p \v 16 সমগ্র ইস্রায়েল যখন দেখেছিল যে রাজা তাদের কথা শুনতে চাইছেন না, তখন তারা রাজাকে উত্তর দিয়েছিল: \q1 “দাউদে আমাদের আর কী অধিকার আছে, \q2 যিশয়ের ছেলেই বা কী অধিকার আছে? \q1 হে ইস্রায়েল তোমাদের তাঁবুতে ফিরে যাও! \q2 হে দাউদ, তুমিও নিজের বংশ দেখাশোনা করো!” \m এই বলে ইস্রায়েলীরা ঘরে ফিরে গেল। \v 17 কিন্তু যেসব ইস্রায়েলী যিহূদার বিভিন্ন নগরে বসবাস করছিল, রহবিয়াম তখনও তাদের উপর রাজত্ব করে যাচ্ছিলেন। \p \v 18 রাজা রহবিয়াম বেগার শ্রমিকদের উপর দায়িত্বপ্রাপ্ত অদোনীরামকে\f + \fr 12:18 \fr*\ft অথবা, অদোরাম (\+xt 4:6\+xt* ও \+xt 5:14\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* তাদের কাছে পাঠালেন, কিন্তু ইস্রায়েলীরা সবাই পাথর ছুঁড়ে মেরে তাকে হত্যা করল। রাজা রহবিয়াম অবশ্য নিজের রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। \v 19 এইভাবে, আজও পর্যন্ত ইস্রায়েল, দাউদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই চলেছে। \p \v 20 ইস্রায়েলীরা সবাই যখন শুনেছিল যে যারবিয়াম ফিরে এসেছেন, তখন তারা লোক পাঠিয়ে তাঁকে সমাজে ডেকে এনেছিল ও সমস্ত ইস্রায়েলের উপর তাঁকে রাজা করল। শুধুমাত্র যিহূদা বংশই দাউদ কুলের প্রতি অনুগত থেকে গেল। \p \v 21 জেরুশালেমে পৌঁছে রহবিয়াম যিহূদা ও বিন্যামীন বংশ থেকে এমন কিছু লোকজন—এক লাখ আশি হাজার সক্ষম যুবক—একত্রিত করলেন, যারা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ও শলোমনের ছেলে রহবিয়ামের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে দিতে পারত। \p \v 22 কিন্তু ঈশ্বরের এই বাক্য ঈশ্বরের লোক শময়িয়ের কাছে পৌঁছেছিল: \v 23 “শলোমনের ছেলে, যিহূদার রাজা রহবিয়ামকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীনের সব লোকজনকে তথা বাকি সব লোকজনকেও একথা বলো, \v 24 ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: তোমাদের ভাইদের সঙ্গে—ইস্রায়েলীদের সঙ্গে তোমরা যুদ্ধ করতে যেয়ো না। তোমাদের প্রত্যেকজন ঘরে ফিরে যাও, কারণ আমিই এমনটি করেছি।’ ” তাই সদাপ্রভুর কথার বাধ্য হয়ে তারা ঘরে ফিরে গেল, যেমনটি সদাপ্রভু আদেশ দিলেন। \s1 বেথেল ও দানে সোনার বাছুরের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয় \p \v 25 পরে যারবিয়াম ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের শিখিম নগরটি সুরক্ষিত করে গড়ে, সেখানে গিয়েই বসবাস করলেন। সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে তিনি পনূয়েলও গড়ে তুলেছিলেন। \p \v 26 যারবিয়াম ভেবে নিয়েছিলেন, “রাজ্যটি এখন হয়তো দাউদ কুলের হাতেই ফিরে যাবে। \v 27 এইসব লোকজন যদি জেরুশালেমে সদাপ্রভুর মন্দিরে বলি উৎসর্গ করতে যায়, তবে হয়তো আবার তারা তাদের মনিব যিহূদার রাজা রহবিয়ামের প্রতি তাদের আনুগত্য দেখিয়ে ফেলতে পারে। তারা আমাকে হত্যা করে আবার রাজা রহবিয়ামের কাছেই ফিরে যাবে।” \p \v 28 শলাপরামর্শ করে রাজামশাই সোনার দুটি বাছুর তৈরি করলেন। তিনি প্রজাদের বললেন, “জেরুশালেমে যাওয়া তোমাদের পক্ষে খুব কষ্টকর ব্যাপার। হে ইস্রায়েল, এই দেখো তোমাদের সেই দেবতা, যিনি মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন।” \v 29 একটিকে তিনি বেথেলে, ও অন্যটিকে তিনি দানে প্রতিষ্ঠিত করলেন। \v 30 আর এটি পাপ বলে বিবেচিত হল; লোকজন বেথেলে এসে একটির পূজার্চনা করত, এবং অন্যটির পূজার্চনা করার জন্য তারা দান পর্যন্ত চলে যেত।\f + \fr 12:30 \fr*\ft মূল হিব্রু পাঠ্যাংশটি খুব সম্ভবত এভাবেও পড়া যায়: লোকজন একটির কাছে দান পর্যন্ত চলে যেত\ft*\f* \p \v 31 যারবিয়াম উঁচু উঁচু স্থানে দেবতার পীঠস্থান তৈরি করে সব ধরনের লোকদের মধ্যে থেকে যাজক নিযুক্ত করে দিলেন, যদিও তারা লেবীয় ছিল না। \v 32 যিহূদায় যেমনটি হত, ঠিক সেভাবেই তিনি অষ্টম মাসের পনেরোতম দিনে একটি উৎসবের সূচনা করলেন, এবং যজ্ঞবেদিতে বলি উৎসর্গ করলেন। বেথেলে, তাঁর তৈরি করা বাছুরগুলির কাছেই তিনি বলি উৎসর্গ করলেন। আর বেথেলেও তাঁর তৈরি করা উঁচু উঁচু স্থানে তিনি যাজক নিযুক্ত করে দিলেন। \v 33 তাঁর পছন্দমতো মাসে, অর্থাৎ অষ্টম মাসের পনেরোতম দিনে তিনি বেথেলে তাঁর তৈরি করা যজ্ঞবেদিতে বলি উৎসর্গ করলেন। অতএব তিনি ইস্রায়েলীদের জন্য উৎসবের সূচনা করলেন এবং বলি উৎসর্গ করার জন্য যজ্ঞবেদিতে উঠে গেলেন। \c 13 \s1 যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোক \p \v 1 যারবিয়াম যখন একটি পশুবলি উৎসর্গ করার জন্য যজ্ঞবেদির কাছে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন সদাপ্রভুর কথামতো ঈশ্বরের একজন লোক যিহূদা থেকে বেথেলে এলেন। \v 2 সদাপ্রভুর কথামতো তিনি যজ্ঞবেদির বিরুদ্ধে চিৎকার করে বলে উঠেছিলেন: “ওহে যজ্ঞবেদি, ওহে যজ্ঞবেদি! সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘দাউদের কুলে এক ছেলে জন্মাবে, যার নাম হবে যোশিয়। তোমার উপর সে উঁচু উঁচু স্থানের সেইসব যাজককে বলি দেবে, যারা এখানে বলি উৎসর্গ করছে, এবং একদিন তোমার উপর মানুষের অস্থি জ্বালানো হবে।’ ” \v 3 সেই একই দিনে ঈশ্বরের লোক একটি চিহ্নও দিলেন: “এই চিহ্নের কথাই সদাপ্রভু ঘোষণা করে দিয়েছেন: যজ্ঞবেদিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে এবং সেটির উপরে রাখা ছাইভস্ম গড়িয়ে পড়বে।” \p \v 4 ঈশ্বরের লোক বেথেলে যজ্ঞবেদির বিরুদ্ধে চিৎকার করে যা বললেন, তা শুনে রাজা যারবিয়াম যজ্ঞবেদি থেকেই তাঁর হাত বাড়িয়ে বলে উঠেছিলেন, “ওকে ধরো!” কিন্তু সেই লোকটির দিকে তিনি যে হাতটি বাড়িয়ে দিলেন সেটি এমনভাবে শুকিয়ে বিকৃত হয়ে গেল, যে তিনি আর সেটি টেনে আনতে পারেননি। \v 5 এছাড়া, সদাপ্রভুর কথামতো ঈশ্বরের লোকের দেওয়া চিহ্ন অনুসারে যজ্ঞবেদিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল ও ছাইভস্মও গড়িয়ে পড়েছিল। \p \v 6 তখন রাজামশাই ঈশ্বরের লোককে বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আমার হয়ে অনুরোধ জানান ও আমার জন্য প্রার্থনা করুন, যেন আমার হাতটি ঠিক হয়ে যায়।” অতএব ঈশ্বরের লোক তাঁর হয়ে সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, এবং রাজার হাতটি আগের মতো ঠিকঠাক হয়ে গেল। \p \v 7 রাজামশাই ঈশ্বরের লোককে বললেন, “আমার ঘরে এসে একটু ভোজনপান করুন, আর আমি আপনাকে কিছু উপহার দেব।” \p \v 8 কিন্তু ঈশ্বরের লোক রাজাকে উত্তর দিলেন, “আপনি যদি আমাকে আপনার সম্পত্তির অর্ধেকও দেন, তবু আমি আপনার সাথে যাব না, বা এখানে রুটিও খাব না ও জলও পান করব না। \v 9 কারণ সদাপ্রভুর কথামতো আমি এই আদেশ পেয়েছি: ‘তুমি রুটি খাবে না বা জলপান করবে না অথবা যে পথ দিয়ে এসেছ, সে পথে ফিরে যাবে না।’ ” \v 10 অতএব তিনি অন্য পথ ধরেছিলেন ও যে পথ ধরে বেথেলে এলেন, সে পথে আর ফিরে যাননি। \p \v 11 ইত্যবসরে বেথেলে একজন বৃদ্ধ ভাববাদী বসবাস করতেন। তাঁর ছেলেরা এসে সেদিন ঈশ্বরের সেই লোক যা যা করলেন, তা তাঁকে বললেন। তিনি রাজাকে যা যা বললেন, তারা তাদের বাবাকে সেসবও বলে শুনিয়েছিল। \v 12 তাদের বাবা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি কোনও পথে গিয়েছেন?” যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোক যে পথে গেলেন, তা তাঁর ছেলেরা তাঁকে দেখিয়ে দিয়েছিল। \v 13 অতএব তিনি তাঁর ছেলেদের বললেন, “আমার জন্য গাধায় জিন চাপাও।” আর যখন তারা তাঁর জন্য গাধায় জিন চাপিয়েছিল, তখন তিনি সেটির পিঠে চড়ে \v 14 ঈশ্বরের লোকের সন্ধানে গেলেন। তিনি তাঁকে বিশাল একটি গাছের তলায় বসে থাকতে দেখে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনিই কি ঈশ্বরের সেই লোক, যিনি যিহূদা থেকে এসেছেন?” \p “আমিই সেই লোক,” তিনি উত্তর দিলেন। \p \v 15 তখন সেই ভাববাদী তাঁকে বললেন, “আমার সাথে ঘরে চলুন ও কিছু খেয়ে নিন।” \p \v 16 ঈশ্বরের লোক বললেন, “আমি আপনার সাথে ফিরে যেতে পারব না, অথবা এই স্থানে আপনার সাথে রুটি খেতে বা জলপান করতেও পারব না। \v 17 সদাপ্রভুর কথামতো আমাকে বলা হয়েছে: ‘সেখানে তুমি রুটি খেতে বা জলপান করতে পারবে না অথবা যে পথ ধরে এসেছ, সেই পথে আর ফিরে যেতে পারবে না।’ ” \p \v 18 সেই বৃদ্ধ ভাববাদী উত্তর দিলেন, “আমিও আপনার মতোই একজন ভাববাদী। আর সদাপ্রভুর কথামতো একজন স্বর্গদূত আমাকে বলেছেন: ‘তুমি সাথে করে তাকে তোমার বাড়িতে নিয়ে এসো, যেন সে রুটি খেতে ও জলপান করতে পারে।’ ” (কিন্তু তিনি তাঁর কাছে মিথ্যা কথা বললেন) \v 19 অতএব ঈশ্বরের সেই লোক তাঁর সাথে ফিরে গেলেন এবং তাঁর বাড়িতে ভোজনপান করলেন। \p \v 20 তারা যখন টেবিলে বসেছিলেন, তখন সদাপ্রভুর বাক্য সেই বৃদ্ধ ভাববাদীর কাছে উপস্থিত হল, যিনি তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। \v 21 তিনি যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোকের কাছে চিৎকার করে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অমান্য করেছ এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে আদেশ দিলেন তা তুমি পালন করোনি। \v 22 যেখানে তিনি তোমাকে ভোজনপান করতে বারণ করলেন, সেখানেই ফিরে এসে তুমি রুটি খেয়েছ ও জলপান করেছ। তাই তোমার দেহ তোমার পূর্বপুরুষদের সমাধিস্থলে কবর দেওয়া হবে না।’ ” \p \v 23 ঈশ্বরের লোক ভোজনপান শেষ করার পর যে ভাববাদী তাঁকে ফিরিয়ে এনেছিলেন, তিনি তাঁর জন্য গাধায় জিন চাপিয়ে দিলেন। \v 24 তিনি পথে যাচ্ছিলেন, এমন সময় একটি সিংহ এসে পথের উপরেই তাঁকে মেরে ফেলেছিল, এবং তাঁর দেহটি পথের উপর পড়েছিল, আর সেই গাধা ও সিংহটি সেই দেহের পাশে দাঁড়িয়েছিল। \v 25 পথ দিয়ে যাওয়া কয়েকটি লোক যখন দেখেছিল সেই দেহটি পড়ে আছে, ও সেটির পাশে একটি সিংহ দাঁড়িয়ে আছে, তখন তারা সেই নগরে গিয়ে এই খবর দিয়েছিল, যেখানে সেই বৃদ্ধ ভাববাদী বসবাস করতেন। \p \v 26 যিনি তাঁকে তাঁর যাত্রাপথ থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন, সেই ভাববাদী যখন এই খবর পেয়েছিলেন, তিনি বললেন, “তিনি ঈশ্বরের সেই লোক, যিনি সদাপ্রভুর বাক্য অমান্য করলেন। সদাপ্রভু যে কথা বলে তাঁকে সতর্ক করে দিলেন, সেইমতোই তাঁকে সিংহের হাতে তুলে দিয়েছেন, ও সিংহ তাঁকে ক্ষতবিক্ষত করে মেরে ফেলেছে।” \p \v 27 সেই ভাববাদী তাঁর ছেলেদের বললেন, “আমার জন্য গাধায় জিন চাপাও,” আর তারাও তেমনটি করল। \v 28 পরে তিনি গিয়ে সেই দেহটি পথে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন, এবং গাধা ও সিংহটি সেটির পাশে দাঁড়িয়েছিল। সিংহ দেহটিও খায়নি বা গাধাটিকেও ক্ষতবিক্ষত করেননি। \v 29 অতএব সেই ভাববাদী ঈশ্বরের লোকের দেহটি তুলে এনে সেটি গাধার পিঠে চাপিয়েছিলেন ও তাঁর উদ্দেশে শোকপ্রকাশ করার ও তাঁকে কবর দেওয়ার জন্য দেহটি নিজের নগরে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। \v 30 পরে তিনি দেহটি তাঁর নিজের কবরে শুইয়ে রেখেছিলেন, এবং তারা ঈশ্বরের লোকের জন্য শোকপ্রকাশ করে বললেন, “হায়, আমার ভাই!” \p \v 31 তাঁর দেহটি কবর দেওয়ার পর সেই ভাববাদী তাঁর ছেলেদের বললেন, “যে কবরে ঈশ্বরের লোককে কবর দেওয়া হয়েছে, আমি মারা যাওয়ার পর তোমরা আমাকে সেই কবরেই কবর দিয়ো; তাঁর অস্থির পাশেই আমার অস্থিও রেখে দিয়ো। \v 32 কারণ বেথেলের যজ্ঞবেদির বিরুদ্ধে ও শমরিয়ার নগরগুলিতে উঁচু উঁচু স্থানে স্থাপিত দেবতাদের সব পীঠস্থানের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর কথামতো তিনি যে বাণী ঘোষণা করলেন, তা নিঃসন্দেহে সত্যি হতে চলেছে।” \p \v 33 এর পরেও যারবিয়াম তাঁর কুপথ পরিবর্তন করেননি, কিন্তু আরও একবার সব ধরনের লোকজনের মধ্যে থেকে উঁচু উঁচু স্থানগুলির জন্য যাজক নিযুক্ত করলেন। যে কেউ যাজক হতে চাইত, তিনি তাকে উঁচু উঁচু স্থানগুলির জন্য যাজকরূপে উৎসর্গ করে দিতেন। \v 34 এটি মহাপাপরূপে গণ্য হল এবং যারবিয়াম কুলের পতনের ও পৃথিবীর বুক থেকে সেটি লুপ্ত হয়ে যাওয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। \c 14 \s1 যারবিয়ামের বিরুদ্ধে করা অহিয়র ভাববাণী \p \v 1 সেই সময় যারবিয়ামের ছেলে অবিয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, \v 2 এবং যারবিয়াম তাঁর স্ত্রীকে বললেন, “যাও, ছদ্মবেশ ধারণ করো, যেন কেউ তোমাকে যারবিয়ামের স্ত্রী বলে চিনতে না পারে। পরে শীলোতে চলে যাও। সেখানে সেই ভাববাদী অহিয় আছেন—যিনি আমাকে বললেন যে আমি এই লোকজনের উপর রাজা হব। \v 3 দশটি রুটি, কয়েকটি পিঠে ও এক বয়াম মধু সাথে নিয়ে তাঁর কাছে যাও। তিনি তোমাকে বলে দেবেন, ছেলেটির কী হবে।” \v 4 তাই যারবিয়ামের কথানুসারেই তাঁর স্ত্রী কাজ করলেন এবং শীলোতে অহিয়র বাড়িতে চলে গেলেন। \p ইত্যবসরে অহিয় আবার চোখে দেখতে পেতেন না; বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে তাঁর দৃষ্টিশক্তি চলে গেল। \v 5 কিন্তু সদাপ্রভু অহিয়কে বলে দিলেন, “যারবিয়ামের স্ত্রী তোমার কাছে তার ছেলের বিষয়ে জানতে আসছে, কারণ সে অসুস্থ আছে, এবং তুমি তাকে অমুক উত্তর দিয়ো। সে এখানে পৌঁছে এমন ভান করবে, যেন সে অন্য কেউ।” \p \v 6 তাই অহিয় যখন দরজায় তাঁর পায়ের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি বলে উঠেছিলেন, “ওহে যারবিয়ামের স্ত্রী, ভিতরে এসো। এরকম ভান করছ কেন? খারাপ খবর শোনানোর জন্য আমাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে। \v 7 যাও, যারবিয়ামকে গিয়ে বলো যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘আমি প্রজাসাধারণের মধ্যে থেকে তোমাকে তুলে এনে আমার প্রজা ইস্রায়েলের উপর রাজপদে বসিয়েছিলাম। \v 8 আমি দাউদ কুলের হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে এনে তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমার দাস সেই দাউদের মতো হতে পারোনি, যে আমার আদেশ পালন করল ও মনপ্রাণ দিয়ে আমার অনুগামী হল, এবং শুধু সেইসব কাজই করল, যা আমার দৃষ্টিতে ন্যায্য। \v 9 যারা তোমার আগে বেঁচে ছিল, তাদের সবার তুলনায় তুমিই সবচেয়ে বেশি মন্দ কাজ করেছ। তুমি নিজের জন্য অন্যান্য দেবদেবী—অর্থাৎ ধাতব প্রতিমা তৈরি করেছ; তুমি আমার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছ ও আমার দিকে পিঠ ফিরিয়েছ। \p \v 10 “ ‘এজন্য আমি যারবিয়ামের কুলে সর্বনাশ ঘটাতে চলেছি। যারবিয়াম বংশে ইস্রায়েলের অবশিষ্ট এক-একটি পুরুষকে—তা সে ক্রীতদাসই হোক বা স্বাধীন,\f + \fr 14:10 \fr*\ft অথবা ইস্রায়েলের এক একজন শাসনকর্তা বা নেতাকে\ft*\f* আমি শেষ করে দেব। যেভাবে মানুষ শেষ পর্যন্ত ঘুঁটে পোড়ায়, আমিও যারবিয়ামের কুলকে পুড়িয়ে ছাই করে দেব। \v 11 যারবিয়াম কুলের যে কেউ নগরে মারা যাবে, কুকুরেরা তাদের খেয়ে ফেলবে, এবং যারা গ্রামাঞ্চলে মারা যাবে, পাখিরা তাদের ঠুকরে ঠুকরে খাবে। সদাপ্রভুই একথা বলেছেন!’ \p \v 12 “আর তোমাকে বলছি, ঘরে ফিরে যাও। তুমি নগরে পা রাখামাত্র ছেলেটি মারা যাবে। \v 13 ইস্রায়েলীরা সবাই তার জন্য শোকপ্রকাশ করবে ও তাকে কবর দেবে। যারবিয়াম কুলে একমাত্র তাকেই কবর দেওয়া হবে, কারণ যারবিয়াম কুলে একমাত্র এর মধ্যেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু কিছুটা হলেও সদ্ভাব দেখতে পেয়েছেন। \p \v 14 “সদাপ্রভু নিজের জন্য ইস্রায়েলে এমন একজন রাজা উৎপন্ন করবেন, যে যারবিয়ামের পরিবারটিকে শেষ করে ফেলবে। এমনকি এখনই তা শুরু হয়ে গিয়েছে।\f + \fr 14:14 \fr*\ft হিব্রু ভাষায় এই বাক্যটির অর্থ খুব একটি স্পষ্ট নয়\ft*\f* \v 15 আর সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে আঘাত করবেন, যেন তা জলের মধ্যে দুলতে থাকা নলখাগড়ার মতো হয়ে যায়। এই যে সুন্দর দেশটি তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিলেন, সেখান থেকে তিনি ইস্রায়েলকে উৎখাত করবেন ও ইউফ্রেটিস নদীর ওপারে তাদের ইতস্তত ছড়িয়ে দেবেন, কারণ তারা আশেরার খুঁটি\f + \fr 14:15 \fr*\ft অর্থাৎ, দেবী আশেরার কাঠের মূর্তি; এখানে ও 1 রাজাবলির অন্যান্য স্থানতেও এভাবেই পড়তে হবে\ft*\f* পুঁতে সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছে। \v 16 আর যেহেতু যারবিয়াম নিজে পাপ করেছে ও ইস্রায়েলকে দিয়েও পাপ করিয়েছে, তাই তিনি ইস্রায়েলকে ত্যাগ করতে চলেছেন।” \p \v 17 তখন যারবিয়ামের স্ত্রী উঠে সেখান থেকে তির্সাতে চলে গেলেন। ঠিক যখন তিনি বাড়ির চৌকাঠে পা দিলেন, ছেলেটি মারা গেল। \v 18 সদাপ্রভু তাঁর দাস ভাববাদী অহিয়ের মাধ্যমে যে কথা বললেন, ঠিক সেইমতো তারা ছেলেটিকে কবর দিয়েছিল ও তার জন্য শোকপ্রকাশ করল। \p \v 19 যারবিয়ামের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তাঁর যুদ্ধবিগ্রহ ও তাঁর শাসনব্যবস্থা, সেসব ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা আছে। \v 20 তিনি বাইশ বছর রাজত্ব করলেন এবং পরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে নাদব রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা রহবিয়াম \p \v 21 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম যিহূদায় রাজা হলেন। তিনি একচল্লিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপন করার জন্য ইস্রায়েলের সব বংশের মধ্যে থেকে আলাদা করে যে নগরটিকে মনোনীত করলেন, সেই জেরুশালেমে তিনি সতেরো বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম নয়মা; তিনি ছিলেন একজন অম্মোনীয়া। \p \v 22 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যিহূদা মন্দ কাজ করল। তাদের করা পাপকাজের দ্বারা তারা তাদের আগে যারা বেঁচে ছিল, সেইসব লোকের চেয়েও বেশি পরিমাণে তাঁর জ্বলন্ত ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিল। \v 23 এছাড়াও তারা নিজেদের জন্য প্রত্যেকটি উঁচু পাহাড়ে ও ডালপালা মেলে ধরা গাছের নিচে দেবতাদের পীঠস্থান, পবিত্র পাথর ও আশেরার খুঁটি খাড়া করল। \v 24 এমনকি দেশের মন্দিরগুলিতে দেবদাস ও দেবদাসীরা ছিল; প্রজারা অন্যান্য জাতিভুক্ত সেইসব লোকের মতোই সব ধরনের ঘৃণ্য কাজকর্মে লিপ্ত হল, যাদের সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সামনে থেকে এক সময় তাড়িয়ে দিলেন। \p \v 25 রাজা রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে মিশরের রাজা শীশক জেরুশালেম আক্রমণ করলেন। \v 26 তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরের ও রাজপ্রাসাদের ধনসম্পদ তুলে নিয়ে গেলেন। শলোমনের তৈরি করা সোনার সব ঢাল সমেত তিনি সবকিছু নিয়ে চলে গেলেন। \v 27 তাই সেগুলির পরিবর্তে রাজা রহবিয়াম ব্রোঞ্জের কয়েকটি ঢাল তৈরি করলেন এবং যারা রাজপ্রাসাদের সিংহদুয়ারে মোতায়েন ফৌজি পাহারাদারদের সেনাপতি ছিলেন, তাদের হাতে সেগুলি তুলে দিলেন। \v 28 যখনই রাজা সদাপ্রভুর মন্দিরে যেতেন, ফৌজি পাহারাদাররাও সেই ঢালগুলি বহন করে নিয়ে যেত, এবং পরে তারা আবার সেগুলি ফৌজি পাহারাদারদের কক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে যেত। \p \v 29 রহবিয়ামের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, সেসব কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 30 রহবিয়াম ও যারবিয়ামের মধ্যে অনবরত যুদ্ধ লেগেই ছিল। \v 31 আর রহবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং দাউদ-নগরে তাদের কাছেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর মায়ের নাম নয়মা; তিনি একজন অম্মোনীয়া। পরে তাঁর ছেলে অবিয়\f + \fr 14:31 \fr*\ft অথবা, অবিয়াম (\+xt 2 বংশাবলি 12:16\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \c 15 \s1 যিহূদার রাজা অবিয় \p \v 1 নবাটের ছেলে যারবিয়ামের রাজত্বের অষ্টাদশতম বছরে অবিয়\f + \fr 15:1 \fr*\ft অথবা, অবিয়াম (\+xt 2 বংশাবলি 12:16\+xt* পদও দেখুন); 7 এবং 8 পদেও\ft*\f* যিহূদার রাজা হলেন, \v 2 এবং জেরুশালেমে তিনি তিন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম মাখা, ও তিনি অবীশালোমের\f + \fr 15:2 \fr*\ft অথবা, অবশালোমের (10 পদও দেখুন)\ft*\f* মেয়ে। \p \v 3 তিনি সেইসব পাপ করলেন, যা তাঁর বাবা তাঁর আগে করে গেলেন; তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের অন্তর যেমন তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত ছিল, অবিয়র অন্তর কিন্তু সেভাবে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত ছিল না। \v 4 তা সত্ত্বেও, দাউদের খাতিরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এক ছেলে দেওয়ার ও জেরুশালেমকে মজবুত করার মাধ্যমে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু জেরুশালেমে তাঁকে এক প্রদীপ দিলেন। \v 5 একমাত্র হিত্তীয় ঊরিয়র নজিরটি বাদ দিলে—দাউদ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা উপযুক্ত, তাই করলেন এবং তাঁর সম্পূর্ণ জীবনকালে সদাপ্রভুর কোনও আদেশ পালন করতে ব্যর্থ হননি। \p \v 6 অবিয়\f + \fr 15:6 \fr*\ft অথবা, রহবিয়াম\ft*\f* ও যারবিয়ামের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হল, অবিয় যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন তা চলেছিল। \v 7 অবিয়র রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? অবিয় ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই ছিল। \v 8 অবিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে আসা রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা আসা \p \v 9 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের বিংশতিতম বছরে আসা যিহূদার রাজা হলেন, \v 10 এবং জেরুশালেমে তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর ঠাকুমার নাম মাখা, তিনি অবীশালোমের মেয়ে ছিলেন। \p \v 11 আসা তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতো, সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ন্যায্য, তাই করলেন। \v 12 মন্দির-সংলগ্ন দেবদাসদের তিনি দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের তৈরি করা প্রতিমার মূর্তিগুলিও দূর করলেন। \v 13 এমনকি তিনি রাজমাতার পদ থেকে তাঁর ঠাকুমা মাখাকে সরিয়ে দিলেন, কারণ আশেরার পুজো করার জন্য মাখা জঘন্য এক মূর্তি তৈরি করলেন। আসা সেটি কেটে ফেলে দিলেন এবং কিদ্রোণ উপত্যকায় সেটি জ্বালিয়ে দিলেন। \v 14 যদিও তিনি পূজার্চনার উঁচু স্থানগুলি উপড়ে ফেলেননি, তবুও আজীবন আসার অন্তর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিতই ছিল। \v 15 সদাপ্রভুর মন্দিরে তিনি রুপো ও সোনা এবং সেইসব জিনিসপত্র এনে রেখেছিলেন, যেগুলি তিনি ও তাঁর বাবা উৎসর্গ করলেন। \p \v 16 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার মধ্যে তাদের অধিকারভুক্ত এলাকার সর্বত্র যুদ্ধ লেগেই ছিল। \v 17 ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে উঠে গেলেন এবং রামা নগরটি সুরক্ষিত করে সেখানে ঘাঁটি গেড়েছিলেন, যেন যিহূদার রাজা আসার এলাকা থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে না পারে বা সেখানে ঢুকতেও না পারে। \p \v 18 আসা তখন সদাপ্রভুর মন্দির থেকে ও তাঁর নিজের প্রাসাদের কোষাগারে পড়ে থাকা সব রুপো ও সোনা নিয়ে তাঁর কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিলেন এবং সেগুলি অরামের রাজা সেই বিন্‌হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, যিনি হিষিয়োণের নাতি ও টব্রিম্মোণের ছেলে ছিলেন, এবং তখন যিনি দামাস্কাসে রাজত্ব করছিলেন। \v 19 “আপনার ও আমার মধ্যে এক চুক্তি হোক,” তিনি বললেন, “যেমনটি আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল। দেখুন, আমি আপনার কাছে রুপো ও সোনার কিছু উপহার পাঠাচ্ছি। এখন আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে করা আপনার চুক্তিটি ভেঙে ফেলুন, তবেই সে আমার কাছ থেকে পিছিয়ে যাবে।” \p \v 20 বিন্‌হদদ আসার কথায় রাজি হলেন এবং ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতিদের পাঠালেন। নপ্তালি ছাড়াও তিনি ইয়োন, দান, আবেল বেথ-মাখা ও সম্পূর্ণ কিন্নেরৎ দখল করে নিয়েছিলেন। \v 21 বাশা যখন একথা শুনতে পেলেন, তিনি রামা নগরটি গড়ে তোলার কাজ বন্ধ করে দিলেন এবং তির্সার দিকে পিছিয়ে গেলেন। \v 22 তখন রাজা আসা যিহূদার সর্বত্র এক আদেশ জারি করলেন—কেউ এর এক্তিয়ার থেকে অব্যাহতি পায়নি—এবং তারা রামা থেকে সেইসব পাথর ও কাঠ তুলে নিয়ে এসেছিল, যেগুলি বাশা সেখানে ব্যবহার করছিলেন। সেগুলি দিয়েই রাজা আসা বিন্যামীনে গেবা, ও পাশাপাশি মিস্‌পাও গেঁথে তুলেছিলেন। \p \v 23 আসার রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তাঁর সব কীর্তি, তিনি যা যা করলেন ও যেসব নগর তিনি তৈরি করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? বৃদ্ধ বয়সে অবশ্য তাঁর পায়ে রোগ দেখা দিয়েছিল। \v 24 পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের নগরে তাদের কাছেই কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোশাফট রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা নাদব \p \v 25 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যারবিয়ামের ছেলে নাদব ইস্রায়েলে রাজা হলেন, এবং ইস্রায়েলে তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। \v 26 তাঁর বাবার পথ অনুসরণ করে ও তাঁর বাবা ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করে তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন। \p \v 27 ইষাখর-কুলভুক্ত অহিয়র ছেলে বাশা নাদবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন, এবং নাদব ও সমস্ত ইস্রায়েল যখন ফিলিস্তিনী এক নগর গিব্বথোনের চারদিকে অবরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তখন সেখানেই বাশা তাঁকে আঘাত করে মেরে ফেলেছিলেন। \v 28 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে বাশা নাদবকে হত্যা করলেন ও রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 29 রাজত্ব শুরু করামাত্রই তিনি যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে হত্যা করে ফেলেছিলেন। সদাপ্রভু তাঁর দাস শীলোনীয় অহিয়র মাধ্যমে যে কথা বললেন, সেই কথানুসারে তিনি যারবিয়ামের পরিবারে শ্বাস নেওয়ার জন্যও কাউকে অবশিষ্ট রাখেননি, কিন্তু তাদের সবাইকে মেরে ফেলেছিলেন। \v 30 যারবিয়াম যেহেতু স্বয়ং পাপ করলেন ও ইস্রায়েলকে দিয়েও পাপ করিয়েছিলেন, এবং যেহেতু ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ তিনি জাগিয়ে তুলেছিলেন, তাই এরকমটি হল। \p \v 31 নাদবের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যেসব কাজ করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 32 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার মধ্যে তাদের অধিকারভুক্ত এলাকার সর্বত্র যুদ্ধ লেগেই ছিল। \s1 ইস্রায়েলের রাজা বাশা \p \v 33 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে অহিয়র ছেলে বাশা তির্সায় সমস্ত ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি চব্বিশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 34 যারবিয়ামের পথ অনুসরণ করে ও যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করে তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন। \c 16 \p \v 1 পরে বাশার বিষয়ে সদাপ্রভুর এই বাক্য হনানির ছেলে যেহূর কাছে এসেছিল: \v 2 “আমি তোমায় ধুলো থেকে তুলে এনে আমার প্রজা ইস্রায়েলের উপর রাজপদে নিযুক্ত করলাম, কিন্তু তুমিও যারবিয়ামের পথে চলেছ ও আমার প্রজা ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়ে, তাদের সেই পাপের মাধ্যমে আমার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছ। \v 3 তাই আমি বাশা ও তার কুলকে অবলুপ্ত করতে চলেছি, ও আমি তোমার কুলকেও নবাটের ছেলে যারবিয়ামের কুলের মতো করে দেব। \v 4 বাশার কুলভুক্ত যে কেউ নগরে মরবে, তাকে কুকুরেরা খাবে এবং যে কেউ গ্রামাঞ্চলে মরবে, তাকে পাখিরা ঠুকরে ঠুকরে খাবে।” \p \v 5 বাশার রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন ও তাঁর সব কীর্তির বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 6 বাশা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাঁকে তির্সায় কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে এলা রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 7 এছাড়াও, হনানির ছেলে ভাববাদী যেহূর মাধ্যমেও সদাপ্রভুর বাক্য বাশা ও তাঁর কুলের কাছে এসেছিল, যেহেতু সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে তিনি প্রচুর মন্দ কাজ করলেন, ও সেইসব কাজ করার দ্বারা তাঁর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন, অর্থাৎ যারবিয়ামের কুলের মতোই হয়ে গেলেন—তথা তিনি সেই কুল ধ্বংসও করে দিলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা এলা \p \v 8 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের ষষ্ঠবিংশতিতম বছরে বাশার ছেলে এলা ইস্রায়েলে রাজা হলেন, এবং তির্সায় তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। \p \v 9 তাঁর কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সিম্রি। এলার অধিকারে থাকা রথের অর্ধেক সংখ্যক রথের উপর তিনি সেনাপতি পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনিই এলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। এলা সেই সময় তির্সায় রাজপ্রাসাদের প্রশাসক অর্সার ঘরে মাতাল হয়ে পড়েছিলেন। \v 10 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের সপ্তবিংশতিতম বছরে সিম্রি এসে এলাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে তাঁকে হত্যা করলেন। পরে তিনি রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \p \v 11 রাজত্বের শুরুতে সিংহাসনে বসেই তিনি বাশার কুলের সবাইকে হত্যা করলেন। আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব, তা সে যেই হোক না কেন, তিনি কোনো পুরুষমানুষকেই নিষ্কৃতি দেননি। \v 12 অতএব ভাববাদী যেহূর মাধ্যমে সদাপ্রভু যে কথা বললেন, সেই কথানুসারে, সিম্রি বাশার সম্পূর্ণ কুল ধ্বংস করে দিলেন— \v 13 বাশা ও তাঁর ছেলে এলা যেসব পাপ করলেন ও ইস্রায়েলকে দিয়েও যা করিয়েছিলেন, সেগুলির কারণেই এমনটি হল, এবং তারা তাদের নির্গুণ প্রতিমার মূর্তিগুলি দিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন। \p \v 14 এলার রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \s1 ইস্রায়েলের রাজা সিম্রি \p \v 15 যিহূদার রাজা আসার সপ্তবিংশতিতম বছরে সিম্রি সাত দিন তির্সায় রাজত্ব করলেন। সৈন্যদল ফিলিস্তিনী এক নগর গিব্বথোনের কাছে শিবির করে ছিল। \v 16 সৈন্যশিবিরের ইস্রায়েলীরা যখন শুনতে পেয়েছিল যে সিম্রি রাজার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে খুন করেছেন, তখন তারা সেদিনই সৈন্যশিবিরের মধ্যে সৈন্যদলের সেনাপতি অম্রিকে ইস্রায়েলের রাজা বলে ঘোষণা করে দিয়েছিল। \v 17 পরে অম্রি ও তাঁর সাথে থাকা ইস্রায়েলীরা সবাই গিব্বথোন থেকে পিছিয়ে এসে তির্সার বিরুদ্ধে অবরোধ গড়ে তুলেছিলেন। \v 18 সিম্রি যখন দেখেছিলেন যে নগরটি বেদখল হয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি রাজপ্রাসাদের দুর্গের ভিতর চলে গিয়ে প্রাসাদে নিজের চারপাশে আগুন ধরিয়ে দিলেন। এইভাবে \v 19 তাঁর করা পাপের কারণে, সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজ করার এবং যারবিয়ামের পথানুগামী হওয়ার ও যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করার কারণে তাঁকে মরতে হল। \p \v 20 সিম্রির রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও যে বিদ্রোহ তিনি সম্পাদন করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \s1 ইস্রায়েলের রাজা অম্রি \p \v 21 তখন ইস্রায়েলী জনতা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল; অর্ধেক লোক গীনতের ছেলে তিবনিকে রাজা করতে চাইছিল, ও অর্ধেক লোক অম্রিকে রাজা করতে চাইছিল। \v 22 কিন্তু অম্রির অনুগামীরা গীনতের ছেলে তিবনির অনুগামীদের তুলনায় বেশি শক্তিশালী প্রতিপন্ন হল। তাই তিবনি মারা গেলেন ও অম্রি রাজা হয়ে গেলেন। \p \v 23 যিহূদার রাজা আসার একত্রিশতম বছরে অম্রি ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি বারো বছর রাজত্ব করলেন, যার মধ্যে ছয় বছর তিনি তির্সায় রাজত্ব করলেন। \v 24 তিনি দুই তালন্ত\f + \fr 16:24 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 68 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপোর বিনিময়ে শমরিয়া পাহাড়টি শেমরের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন ও সেটির উপরে একটি নগর নির্মাণ করেছিলেন এবং সেই পাহাড়টির পূর্বতন মালিক শেমরের নামানুসারে সেটির নাম রেখেছিলেন শমরিয়া। \p \v 25 কিন্তু অম্রি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন এবং তাঁর আগে যারা রাজা হলেন, তাদের সবার তুলনায় আরও বেশি পাপ করলেন। \v 26 তিনি পুরোপুরি নবাটের ছেলে যারবিয়ামের পথানুগামী হলেন, অর্থাৎ যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করে তিনিও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন, যেমনটি তারা তাদের অকেজো প্রতিমার মূর্তিগুলির দ্বারা করল। \p \v 27 অম্রির রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন এবং যা যা অর্জন করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 28 অম্রি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাঁকে শমরিয়ায় কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে আহাব রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 আহাব ইস্রায়েলের রাজা হলেন \p \v 29 যিহূদার রাজা আসার আটত্রিশতম বছরে অম্রির ছেলে আহাব ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি শমরিয়ায় ইস্রায়েলের উপর বাইশ বছর রাজত্ব করলেন। \v 30 অম্রির ছেলে আহাব, তাঁর আগে যতজন রাজা হলেন, তাদের তুলনায় সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে আরও বেশি মন্দ কাজ করলেন। \v 31 নবাটের ছেলে যারবিয়াম যে পাপ করলেন, তা করাকেই যে শুধু তিনি নগণ্য বলে মনে করলেন, তা নয়, কিন্তু তিনি আবার সীদোনীয়দের রাজা ইৎবায়ালের মেয়ে ঈষেবলকেও বিয়ে করলেন, এবং বায়ালদেবের সেবা ও পূজার্চনা করতে শুরু করলেন। \v 32 শমরিয়ায় তিনি বায়ালদেবের একটি মন্দির তৈরি করে সেখানে বায়ালের একটি যজ্ঞবেদিও খাড়া করে দিলেন। \v 33 এছাড়াও আহাব একটি আশেরা-খুঁটি তৈরি করলেন এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তোলার জন্য তাঁর আগে ইস্রায়েলে যতজন রাজা হলেন, তাদের তুলনায় আরও বেশি মন্দ কাজ করলেন। \p \v 34 আহাবের রাজত্বকালে, বেথেলের হীয়েল যিরীহো নগরটির পুনর্নির্মাণ করল। সদাপ্রভু, নূনের ছেলে যিহোশূয়ের মাধ্যমে যা বললেন, সেই কথানুসারে নগরটির ভিত্তি গাঁথার জন্য হীয়েলকে তার প্রথমজাত ছেলে অবীরামকে হারাতে হল, এবং ছোটো ছেলে সগূবকে বিসর্জন দিয়ে তিনি ফটকগুলি খাড়া করলেন। \c 17 \s1 এলিয় বিশাল এক খরার কথা ঘোষণা করলেন \p \v 1 ইত্যবসরে গিলিয়দের তিশবী থেকে আসা\f + \fr 17:1 \fr*\ft অথবা, গিলিয়দ-প্রবাসী\ft*\f* তিশবীয় এলিয় আহাবকে বললেন, “আমি যাঁর সেবা করি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি না বলা পর্যন্ত পরবর্তী কয়েক বছর দেশে শিশির বা বৃষ্টি, কিছুই পড়বে না।” \s1 দাঁড়কাকেরা এলিয়কে খাবার খাইয়েছিল \p \v 2 পরে এলিয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য এসেছিল: \v 3 “এই স্থানটি ছেড়ে চলে যাও, পূর্বদিকে ফিরে জর্ডন নদীর পূর্বপারে করীতের সরু গিরিখাতে গিয়ে লুকিয়ে থাকো। \v 4 তুমি সেই স্রোতের জল পান করবে, এবং আমি দাঁড়কাকদের নির্দেশ দিয়ে রেখেছি, তারা সেখানে তোমাকে খাবার জোগাবে।” \p \v 5 সদাপ্রভু তাঁকে যা বললেন, তিনি তাই করলেন। তিনি জর্ডন নদীর পূর্বপারে করীতের সরু গিরিখাতের দিকে গিয়ে সেখানেই থেকে গেলেন। \v 6 দাঁড়কাকেরা সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে রুটি ও মাংস নিয়ে আসত, এবং তিনি সেই স্রোতের জল পান করতেন। \s1 এলিয় এবং সারিফতের বিধবা মহিলা \p \v 7 দেশে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কিছুদিন পর সেই স্রোতটি শুকিয়ে গেল। \v 8 তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য তাঁর কাছে এসেছিল: \v 9 “এক্ষুনি তুমি সীদোনের এলাকাভুক্ত সারিফতে চলে যাও ও সেখানে গিয়েই থাকো। আমি সেখানে একজন বিধবাকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছি, সে তোমাকে খাবার জোগাবে।” \v 10 অতএব তিনি সারিফতে চলে গেলেন। তিনি যখন নগরের সিংহদুয়ারে পৌঁছালেন, একজন বিধবা সেখানে তখন কাঠকুটো সংগ্রহ করছিল। তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমার জন্য এক পাত্র জল এনে দিতে পারবে, যেন আমি তা পান করতে পারি?” \v 11 সে যখন জল আনতে যাচ্ছিল তখন তিনি আবার তাকে ডেকে বললেন, “আর দয়া করে আমার জন্য এক টুকরো রুটিও এনো।” \p \v 12 “আপনার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি,” সে উত্তর দিয়েছিল, “আমার কাছে কোনও রুটি নেই—আছে শুধু একটি পাত্রে পড়ে থাকা একমুঠো ময়দা আর একটি বয়ামে পড়ে থাকা সামান্য একটু জলপাই তেল। আমি ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি কাঠকুটো কুড়াচ্ছি, যেন আমার ও আমার ছেলের জন্য একটু খাবার তৈরি করে আমরা তা খেয়ে মরি।” \p \v 13 এলিয় তাকে বললেন, “ভয় পেয়ো না। ঘরে গিয়ে তোমার কথামতোই কাজ করো। কিন্তু তোমার কাছে যা আছে তা দিয়ে প্রথমে আমার জন্য ছোটো এক টুকরো রুটি তৈরি করে সেটি আমার কাছে নিয়ে এসো, পরে তোমার নিজের ও তোমার ছেলের জন্য কিছু তৈরি কোরো। \v 14 কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘যতদিন না সদাপ্রভু দেশে বৃষ্টি পাঠাচ্ছেন, ততদিন ময়দার এই পাত্র শূন্য হবে না ও তেলের বয়ামও শুকিয়ে যাবে না।’ ” \p \v 15 সে গিয়ে এলিয়ের কথামতোই কাজ করল। তাতে প্রতিদিন সেখানে এলিয়ের এবং সেই মহিলা ও তার ছেলের জন্য খাবারের ব্যবস্থা হল। \v 16 কারণ এলিয়ের মাধ্যমে বলা সদাপ্রভুর সেই কথা সত্যি প্রমাণিত করে ময়দার সেই পাত্র শূন্য হয়নি এবং তেলের বয়ামও শুকিয়ে যায়নি। \p \v 17 পরে কোনও এক সময় সেই বাড়ির কর্ত্রী মহিলাটির ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তার অবস্থা ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছিল, এবং শেষ পর্যন্ত তার শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। \v 18 সেই মহিলাটি এলিয়কে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, আমি আপনার কী ক্ষতি করেছি? আপনি কি আমার পাপের কথা মনে করাতে ও আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে এখানে এসেছেন?” \p \v 19 “তোমার ছেলেকে আমার হাতে তুলে দাও,” এলিয় উত্তর দিলেন। তিনি তার হাত থেকে ছেলেটিকে নিয়ে উপরের সেই ঘরটিতে চলে গেলেন, যেখানে তিনি থাকার জন্য উঠেছিলেন, এবং ছেলেটিকে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিলেন। \v 20 পরে তিনি সদাপ্রভুর কাছে চিৎকার করে বললেন, “হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি কি এই বিধবা মহিলাটির ছেলেকে মেরে ফেলে তার জীবনে বিপর্যয় আনতে চাইছ, যার ঘরে আমি এখন এসে থাকছি?” \v 21 একথা বলে তিনি তিনবার ছেলেটির উপর শুয়ে পড়েছিলেন ও চিৎকার করে সদাপ্রভুকে বললেন, “হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, এই ছেলেটির শরীরে প্রাণ ফিরে আসুক!” \p \v 22 সদাপ্রভু এলিয়ের আর্তনাদ শুনেছিলেন, এবং ছেলেটির শরীরে তার প্রাণ ফিরে এসেছিল, ও সে বেঁচে উঠেছিল। \v 23 এলিয় ছেলেটিকে কোলে তুলে নিয়ে সেই ঘর থেকে নিচে বাড়িতে নেমে এলেন। তাকে তার মায়ের হাতে তুলে দিয়ে তিনি বললেন, “এই দেখো, তোমার ছেলে বেঁচে আছে!” \p \v 24 তখন সেই মহিলাটি এলিয়কে বলল, “এখন আমি বুঝলাম যে আপনি ঈশ্বরের লোক এবং আপনার মুখ থেকে বেরিয়ে আসা সদাপ্রভুর বাক্যই সত্যি।” \c 18 \s1 এলিয় এবং ওবদিয় \p \v 1 বেশ কিছু সময় পার হয়ে যাওয়ার পর, তৃতীয় বছরে সদাপ্রভুর এই বাক্য এলিয়ের কাছে এসেছিল: “যাও, নিজেকে আহাবের সামনে উপস্থিত করো, আর আমি দেশে বৃষ্টি পাঠাব।” \v 2 অতএব এলিয় নিজেকে আহাবের সামনে উপস্থিত করতে গেলেন। \p ইত্যবসরে শমরিয়ায় দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করল, \v 3 এবং আহাব তাঁর প্রাসাদের প্রশাসক ওবদিয়কে ডেকে পাঠালেন। (ওবদিয় সদাপ্রভুর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ এক বিশ্বাসী ছিলেন। \v 4 ঈষেবল যখন সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মেরে ফেলছিল, ওবদিয় তখন একশো জন ভাববাদীকে নিয়ে গিয়ে দুটি গুহায়—এক একটিতে পঞ্চাশ জন করে—লুকিয়ে রেখেছিলেন, এবং তাদের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করেছিলেন)। \v 5 আহাব ওবদিয়কে বললেন, “দেশে যত জলের উৎস ও উপত্যকা আছে, তুমি সেসব স্থানে যাও। হয়তো আমাদের ঘোড়া ও খচ্চরগুলি বাঁচিয়ে রাখার উপযোগী কিছু ঘাসপাতা আমরা পেয়েও যেতে পারি, সেক্ষেত্রে আমাদের কোনও পশু আর হয়তো আমাদের মারতে হবে না।” \v 6 অতএব দেশের যে এলাকাগুলিতে তাদের যেতে হত, সেগুলি তারা দুই ভাগে বিভক্ত করে নিয়েছিলেন। আহাব একদিকে গেলেন ও ওবদিয় অন্যদিকে গেলেন। \p \v 7 ওবদিয় পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় তাঁর সঙ্গে এলিয়ের দেখা হল। ওবদিয় তাঁকে চিনতে পেরে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে বললেন, “হে আমার প্রভু এলিয়, এ কি সত্যিই আপনি?” \p \v 8 “হ্যাঁ, আমিই,” তিনি উত্তর দিলেন। “যাও, গিয়ে তোমার মনিবকে বলো, ‘এলিয় এখানেই আছেন।’ ” \p \v 9 “আমি কী দোষ করেছি,” ওবদিয় জিজ্ঞাসা করলেন, “যে আপনি আপনার এই দাসকে মেরে ফেলার জন্য আহাবের হাতে তুলে দিচ্ছেন? \v 10 আপনার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, এমন কোনও দেশ বা রাজ্য বাকি নেই, যেখানে আমার মনিব আপনার খোঁজে লোক পাঠাননি। আর যখনই কোনও দেশ বা রাজ্য দাবি করেছে আপনি সেখানে নেই, তখনই তিনি তাদের দিয়ে শপথ করিয়ে নিয়েছিলেন, যে সত্যিই তারা আপনাকে খুঁজে পায়নি। \v 11 কিন্তু এখন আপনি আমায় বলছেন, আমি যেন গিয়ে আমার মনিবকে বলি, ‘এলিয় এখানে আছেন।’ \v 12 আমি জানি না, আপনার কাছ থেকে আমি চলে যাওয়ার পর সদাপ্রভুর আত্মা আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে। আমি যদি আহাবকে গিয়ে বলি এবং তিনি আপনাকে খুঁজে না পান, তবে তিনি আমাকেই হত্যা করবেন। অথচ আপনার এই দাস আমি আমার যৌবনকাল থেকেই সদাপ্রভুর আরাধনা করে আসছি। \v 13 হে আমার প্রভু, আপনি কি শোনেননি ঈষেবল যখন সদাপ্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিল তখন আমি কী করেছিলাম? আমি সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মধ্যে একশো জনকে দুটি গুহায়—এক একটিতে পঞ্চাশ জন করে—লুকিয়ে রেখে তাদের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। \v 14 আর এখন কি না আপনি আমাকে আমার মনিবের কাছে গিয়ে একথা বলতে বলছেন, ‘এলিয় এখানে আছেন।’ তিনি তো আমায় মেরে ফেলবেন!” \p \v 15 এলিয় বললেন, “আমি যাঁর সেবা করি, সেই সর্বশক্তিমান জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি অবশ্যই আজ আহাবের সামনে নিজেকে উপস্থিত করব।” \s1 এলিয় কর্মিল পাহাড়ে চড়েন \p \v 16 অতএব ওবদিয় গিয়ে আহাবের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সব কথা বললেন, এবং আহাবও এলিয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। \v 17 এলিয়ের দেখা পেয়ে আহাব তাঁকে বললেন, “ওহে ইস্রায়েলের অসুবিধা সৃষ্টিকারী লোক, এ কি তুমি?” \p \v 18 “আমি ইস্রায়েলে অসুবিধা সৃষ্টি করিনি,” এলিয় উত্তর দিলেন। “কিন্তু আপনি ও আপনার বাবার কুলই তা করেছেন। আপনারা সদাপ্রভুর আদেশ পরিত্যাগ করে বায়াল-দেবদের অনুগামী হয়েছেন। \v 19 এখন ইস্রায়েলের সর্বত্র খবর পাঠিয়ে লোকদের ডেকে আনুন, যেন তারা কর্মিল পাহাড়ে আমার সাথে দেখা করে। আর বায়ালের সেই 450 জন ও আশেরার সেই 400 জন ভাববাদীকেও নিয়ে আসুন, যারা ঈষেবলের টেবিলে বসে ভোজনপান করে।” \p \v 20 অতএব আহাব সমস্ত ইস্রায়েলে খবর পাঠিয়ে ভাববাদীদের কর্মিল পাহাড়ে সমবেত করলেন। \v 21 এলিয় লোকদের সামনে গিয়ে বললেন, “আর কত দিন তোমরা দুটি অভিমতের মাঝে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে থাকবে? সদাপ্রভু যদি ঈশ্বর হন, তবে তাঁর অনুগামী হও; কিন্তু বায়াল যদি ঈশ্বর হয়, তবে তারই অনুগামী হও।” \p কিন্তু লোকেরা কিছুই বলেনি। \p \v 22 তখন এলিয় তাদের বললেন, “সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মধ্যে এখানে একমাত্র আমিই আছি, কিন্তু বায়ালের ভাববাদীরা সংখ্যায় 450 জন। \v 23 আমাদের জন্য দুটি বলদ নিয়ে এসো। বায়ালের ভাববাদীরা নিজেদের জন্য একটি বলদ বেছে নিক, ও সেটি কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের উপর সাজিয়ে রাখুক কিন্তু তাতে যেন তারা আগুন না ধরায়। আমিও অন্য বলদটি প্রস্তুত করে সেটি কাঠের উপর সাজিয়ে রাখব কিন্তু তাতে আগুন দেব না। \v 24 পরে তোমরা নিজেদের দেবতার নাম ধরে ডেকো, ও আমিও সদাপ্রভুর নাম ধরে ডাকব। যিনি আগুনের দ্বারা উত্তর দেবেন, তিনিই ঈশ্বর।” \p তখন সব লোকজন বলে উঠেছিল, “আপনি ভালো কথাই বলেছেন।” \p \v 25 এলিয় বায়ালের ভাববাদীদের বললেন, “একটি বলদ বেছে নিয়ে তোমরা প্রথমে সেটি প্রস্তুত করো, যেহেতু সংখ্যায় তোমরাই বেশি। তোমাদের দেবতার নাম ধরে ডাকো, কিন্তু আগুন জ্বালিয়ো না।” \v 26 অতএব যে বলদটি তাদের দেওয়া হল, সেটি তারা প্রস্তুত করে রেখেছিল। \p পরে তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বায়ালের নাম ধরে ডেকেছিল। “হে বায়ালদেব, আমাদের উত্তর দাও!” এই বলে তারা চিৎকার করছিল। কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি; কেউ উত্তর দেয়নি। তারা আবার তাদের তৈরি করা যজ্ঞবেদি ঘিরে নাচতেও লাগল। \p \v 27 দুপুর হতে না হতেই এলিয় তাদের বিদ্রুপের খোঁচা দিতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, “আরও জোরে চিৎকার করো! সে তো অবশ্যই একজন দেবতা! হয়তো সে গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে আছে, হয়তো বা সে খুব ব্যস্ত, বা কোথাও বেড়াতে গিয়েছে। হতে পারে সে হয়তো ঘুমাচ্ছে আর তাকে জাগাতে হবে।” \v 28 তাই তারা আরও জোরে চিৎকার করতে শুরু করল এবং তাদের লোকাচার অনুসারে, রক্তের ধারা প্রবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তরোয়াল ও বর্শা দিয়ে নিজেদের শরীর ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছিল। \v 29 দুপুর গড়িয়ে গেল, তবু তারা সন্ধ্যাকালীন বলিদানের সময় পর্যন্ত তাদের ক্ষিপ্ত ভাববাণী আউড়ে গেল। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি, কেউ উত্তর দেয়নি, কেউ তাতে মনোযোগ দেয়নি। \p \v 30 তখন এলিয় সব লোকজনকে বললেন, “এখানে আমার কাছে এসো।” তারা তাঁর কাছে এসেছিল, ও তিনি ভেঙে পড়ে থাকা সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদিটি মেরামত করলেন। \v 31 সেই যাকোব থেকে উৎপন্ন বংশের সংখ্যানুসারে এলিয় বারোটি পাথর হাতে তুলে নিয়েছিলেন, যাঁর কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হল, “তোমার নাম হবে ইস্রায়েল।” \v 32 সেই পাথরগুলি দিয়ে তিনি সদাপ্রভুর নামে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন, এবং সেটির চারপাশে দুই কাঠা\f + \fr 18:32 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 11 কিলোগ্রাম\ft*\f* বীজ ধারণ করতে পারে, এত বড়ো একটি নালা কেটে দিলেন। \v 33 তিনি কাঠ সাজিয়ে, বলদটি টুকরো টুকরো করে কেটে কাঠের উপর সাজিয়ে রেখেছিলেন। পরে তিনি তাদের বললেন, “চারটি বড়ো বড়ো বয়ামে জল ভরে সেই জল বলির পশু ও কাঠের উপর ঢেলে দাও।” \p \v 34 “আবার এরকম করো,” তিনি বললেন, ও তারা আবার তা করল। \p “তৃতীয়বারও এরকম করো,” তিনি আদেশ দিলেন, ও তারা তৃতীয়বার তা করল। \v 35 বেদি উপচে জল গড়িয়ে পড়েছিল ও এমনকি নালাও ভরিয়ে তুলেছিল। \p \v 36 বলিদান উৎসর্গ করার সময় ভাববাদী এলিয় এগিয়ে এসে প্রার্থনা করলেন: “হে সদাপ্রভু, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর, লোকেরা আজ জানুক যে ইস্রায়েলে তুমিই ঈশ্বর এবং আমি তোমার দাস ও আমি তোমার আদেশেই এসব কাজ করেছি। \v 37 আমায় উত্তর দাও, হে সদাপ্রভু, আমায় উত্তর দাও, যেন এইসব লোক জানতে পারে যে তুমি তাদের অন্তর আবার ফিরাতে চলেছ।” \p \v 38 তখন সদাপ্রভুর কাছ থেকে আগুন নেমে এসেছিল এবং বলির পশু, কাঠ, পাথর ও মাটি পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল, এবং নালার জলও নিকেশ করে ফেলেছিল। \p \v 39 সব লোকজন যখন এই দৃশ্য দেখেছিল, তারা মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে চিৎকার করে উঠেছিল, “সদাপ্রভুই ঈশ্বর! সদাপ্রভুই ঈশ্বর!” \p \v 40 তখন এলিয় তাদের আদেশ দিলেন, “বায়ালের ভাববাদীদের ধরে ফেলো। কেউ যেন পালাতে না পারে!” তারা তাদের ধরে ফেলেছিল, ও এলিয় তাদের কীশোন উপত্যকায় নামিয়ে এনে সেখানে তাদের হত্যা করলেন। \p \v 41 আর এলিয় আহাবকে বললেন, “যান, ভোজনপান করুন, কারণ প্রবল বৃষ্টির শব্দ শোনা যাচ্ছে।” \v 42 অতএব আহাব ভোজনপান করতে চলে গেলেন, কিন্তু এলিয় কর্মিল পাহাড়ের চূড়ায় উঠে গিয়ে, মাটিতে হাঁটু মুড়ে, নিজের মুখটি দুই হাঁটুর মাঝখানে রেখে বসেছিলেন। \p \v 43 “যাও, সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকো,” তিনি তাঁর দাসকে বললেন। আর সে গিয়ে তাকিয়ে থেকেছিল। \p “সেখানে কিছুই নেই,” সে বলল। \p সাতবার এলিয় বললেন, “তুমি ফিরে যাও।” \p \v 44 সপ্তমবারে সেই দাস এসে খবর দিয়েছিল, “মানুষের হাতের মতো ছোটো একখণ্ড মেঘ সমুদ্র থেকে উঠে আসছে।” \p অতএব এলিয় বললেন, “যাও, আহাবকে গিয়ে বলো, ‘হ্যাঁচকা টান মেরে আপনার রথটি ওঠান ও বৃষ্টি বাধ সাধার আগেই আপনি চলে যান।’ ” \p \v 45 এদিকে, আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেল, বাতাস উঠেছিল, প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হল এবং আহাব রথে চড়ে যিষ্রিয়েলে চলে গেলেন। \v 46 সদাপ্রভুর শক্তি এলিয়ের উপর নেমে এসেছিল, এবং নিজের আলখাল্লাটি কোমরবন্ধে গুঁজে নিয়ে তিনি আহাবের আগেই দৌড়ে যিষ্রিয়েলে পৌঁছে গেলেন। \c 19 \s1 এলিয় হোরেবে পালিয়ে যান \p \v 1 ইত্যবসরে এলিয় যা যা করলেন এবং কীভাবে তিনি ভাববাদীদের সবাইকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করলেন, সেসব কথা আহাব ঈষেবলকে বলে দিলেন। \v 2 তাই ঈষেবল এলিয়ের কাছে একথা বলার জন্য একজন দূত পাঠালেন, “আগামীকাল এই সময়ের মধ্যে আমি যদি তোমার দশা সেই ভাববাদীদের একজনের মতোও না করি, তবে যেন দেবদেবীরা আমাকে কঠোর থেকে কঠোরতর দণ্ড দেন।” \p \v 3 এলিয় ভয় পেয়ে গেলেন\f + \fr 19:3 \fr*\ft অথবা, এলিয় তা দেখে\ft*\f* এবং প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড় লাগালেন। যিহূদার বের-শেবায় পৌঁছে তিনি তাঁর দাসকে সেখানে রেখে \v 4 নিজে একদিনের পথ পাড়ি দিয়ে মরুপ্রান্তরে চলে গেলেন। একটি খেংরা\f + \fr 19:4 \fr*\ft উজ্জ্বল হলুদ ফুল-ধরা, সরু, খাড়া ডালওয়ালা গুল্মবিশেষ\ft*\f* ঝোপের কাছে এসে, সেটির তলায় বসে তিনি নিজের মৃত্যু কামনা করে প্রার্থনা করলেন। “হে সদাপ্রভু, যথেষ্ট হয়েছে,” তিনি বললেন। “আমার জীবন নিয়ে নাও; আমার পূর্বপুরুষদের চেয়ে আমি কোনোমতেই ভালো নই।” \v 5 এই বলে তিনি খেংরা ঝোপের তলায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। \p হঠাৎ করে একজন স্বর্গদূত তাঁকে স্পর্শ করে বলে উঠেছিলেন, “উঠে পড়ো ও খেয়ে নাও।” \v 6 তিনি চারপাশে তাকিয়েছিলেন, আর দেখতে পেয়েছিলেন যে তাঁর মাথার কাছে গরম কয়লার আগুনে সেঁকা কয়েকটি রুটি ও এক বয়াম জল রাখা আছে। তিনি ভোজনপান করে আবার শুয়ে পড়েছিলেন। \p \v 7 সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয়বার ফিরে এসে তাঁকে স্পর্শ করে বললেন, “উঠে পড়ো ও খেয়ে নাও, কারণ এই যাত্রাটি তোমার পক্ষে বড়ো বেশি লম্বা হতে চলেছে।” \v 8 অতএব তিনি উঠে ভোজনপান করলেন। খাবার খেয়ে শক্তি লাভ করে তিনি সদাপ্রভুর পর্বত হোরেবে না পৌঁছানো পর্যন্ত চল্লিশ দিন চল্লিশ রাত হেঁটে গেলেন। \v 9 সেখানে একটি গুহায় ঢুকে তিনি রাত কাটিয়েছিলেন। \s1 সদাপ্রভু এলিয়ের কাছে আবির্ভূত হন \p আর সদাপ্রভুর এই বাক্য তাঁর কাছে এসেছিল: “এলিয়, তুমি এখানে কী করছ?” \p \v 10 তিনি উত্তর দিলেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য দারুণ উদ্যোগী হয়েছি। ইস্রায়েলীরা তোমার নিয়ম বাতিল করে দিয়েছে, তোমার যজ্ঞবেদিগুলি ভেঙে ফেলেছে, এবং তোমার ভাববাদীদের তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছে। একমাত্র আমিই অবশিষ্ট আছি, আর এখন তারা আমাকেও হত্যা করতে চাইছে।” \p \v 11 সদাপ্রভু বললেন, “পর্বতের উপর সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে গিয়ে দাঁড়াও, কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই সদাপ্রভু ওখান দিয়ে পার হবেন।” \p পরে প্রচণ্ড শক্তিশালী বাতাসের এক ঝাপটায় সদাপ্রভুর সামনে পর্বতমালা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং পাষাণ-পাথরগুলিও ভেঙে চুরমার হয়ে গেল, কিন্তু সদাপ্রভু সেই বাতাসে ছিলেন না। বাতাস বয়ে যাওয়ার পর ভূমিকম্প হল, কিন্তু সদাপ্রভু সেই ভূমিকম্পেও ছিলেন না। \v 12 ভূমিকম্প হয়ে যাওয়ার পর সেখানে আগুন জ্বলে উঠেছিল, কিন্তু সদাপ্রভু সেই আগুনেও ছিলেন না। আগুনের পর সেখানে মৃদুমন্দ ফিসফিসানির শব্দ শোনা গেল। \v 13 সেই শব্দ শুনে এলিয় নিজের আলখাল্লা দিয়ে মুখ ঢেকে বাইরে বের হয়ে গুহার মুখে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। \p তখন এক কণ্ঠস্বর তাঁকে বলল, “এলিয়, তুমি এখানে কী করছ?” \p \v 14 তিনি উত্তর দিলেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য দারুণ উদ্যোগী হয়েছি। ইস্রায়েলীরা তোমার নিয়ম বাতিল করে দিয়েছে, তোমার যজ্ঞবেদিগুলি ভেঙে ফেলেছে, এবং তোমার ভাববাদীদের তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছে। একমাত্র আমিই অবশিষ্ট আছি, আর এখন তারা আমাকেও হত্যা করতে চাইছে।” \p \v 15 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “যে পথ দিয়ে এসেছিলে, সেই পথ ধরেই দামাস্কাসের মরুভূমিতে চলে যাও। সেখানে পৌঁছে হসায়েলকে অরামের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করো। \v 16 এছাড়াও, নিমশির ছেলে যেহূকে ইস্রায়েলের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করো, এবং ভাববাদীরূপে তোমার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য আবেল-মহোলার অধিবাসী শাফটের ছেলে ইলীশায়কে অভিষিক্ত করো। \v 17 যে কেউ হসায়েলের তরোয়ালের হাত থেকে রেহাই পাবে, যেহূ তাকে হত্যা করবে, আর যে কেউ যেহূর তরোয়ালের হাত থেকে রেহাই পাবে, ইলীশায় তাকে হত্যা করবে। \v 18 তবে ইস্রায়েলে আমি এমন 7,000 লোককে সংরক্ষিত করে রেখেছি, যারা বায়ালের কাছে মাথা নত করেনি ও তাকে চুমুও দেয়নি।” \s1 ইলীশায়ের আহ্বান \p \v 19 অতএব সেখান থেকে গিয়ে এলিয় শাফটের ছেলে ইলীশায়কে খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি বারো জোড়া বলদ জোয়ালে জুড়ে জমি চাষ করছিলেন, আর তিনি স্বয়ং শেষ জোড়া বলদ দিয়ে হাল চালাচ্ছিলেন। এলিয় তাঁর কাছে গিয়ে নিজের আলখাল্লাটি তাঁর গায়ে ছুঁড়ে দিলেন। \v 20 ইলীশায় তখন তাঁর বলদগুলি ছেড়ে এলিয়ের কাছে দৌড়ে গেলেন। “আমাকে অনুমতি দিন, আমি আমার মা-বাবাকে চুমু দিয়ে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি,” তিনি বললেন, “পরে আমি আপনার সাথে আসব।” \p “তুমি ফিরে যাও,” এলিয় উত্তর দিলেন। “আমি তোমার প্রতি কী করেছি?” \p \v 21 অতএব ইলীশায় তাঁকে ছেড়ে ফিরে গেলেন। তিনি তাঁর হালের বলদগুলি নিয়ে সেগুলি বধ করলেন। তিনি লাঙল-জোয়ালের কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে মাংস রান্না করলেন ও লোকজনকে দিলেন ও তারা তা খেয়েছিল। পরে তিনি এলিয়ের অনুগামী হয়ে, তাঁর দাস হয়ে গেলেন। \c 20 \s1 বিনহদদ শমরিয়া আক্রমণ করলেন \p \v 1 ইত্যবসরে অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমগ্র সৈন্যদল একত্রিত করলেন। বত্রিশজন রাজা ও তাদের ঘোড়া ও রথ সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তিনি চারদিক থেকে শমরিয়া নগরটিকে ঘিরে ধরে সেখানে আক্রমণ চালিয়েছিলেন। \v 2 তিনি এই কথা বলার জন্য নগরে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের কাছে দূত পাঠালেন, “বিনহদদ এই কথা বলেন: \v 3 ‘আপনার রুপো ও সোনাদানা সব আমার, এবং আপনার বাছাই করা স্ত্রী ও সন্তানেরাও আমার।’ ” \p \v 4 ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমি ও আমার সবকিছুই আপনার।” \p \v 5 দূতেরা আরেকবার এসে বলল, “বিন্‌হদদ একথাই বলেন: ‘আমি আপনার রুপো ও সোনাদানা, আপনার স্ত্রী ও সন্তানদের চেয়ে নেওয়ার জন্য লোক পাঠিয়েছিলাম। \v 6 কিন্তু আগামীকাল মোটামুটি এসময় আপনার রাজপ্রাসাদে ও আপনার কর্মকর্তাদের বাড়িতে তল্লাসি চালানোর জন্য আমি আমার কর্মকর্তাদের পাঠাতে যাচ্ছি। আপনার কাছে যা যা মূল্যবান, সেসবকিছু তারা বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে চলে যাবে।’ ” \p \v 7 ইস্রায়েলের রাজা আহাব দেশের সব প্রাচীনকে ডেকে পাঠালেন এবং তাদের বললেন, “দেখুন কীভাবে এই লোকটি অনিষ্ট করার চেষ্টা করছেন! তিনি যখন আমার স্ত্রী ও সন্তানদের, আমার রুপো ও সোনাদানা চেয়ে পাঠালেন, আমি তাঁর কথা অমান্য করিনি।” \p \v 8 প্রাচীনেরা ও সব লোকজন উত্তর দিয়েছিল, “তাঁর কথা শুনবেন না বা তাঁর দাবি মানবেন না।” \p \v 9 অতএব তিনি বিনহদদের দূতদের জবাব দিলেন, “আমার প্রভু মহারাজকে গিয়ে বলো, ‘আপনি প্রথমবার যে যে দাবি জানিয়েছিলেন, আপনার দাস সেসব মানবে, কিন্তু আপনার এই দাবিটি আমি মানতে পারছি না।’ ” তারা এই উত্তর নিয়ে বিন্‌হদদের কাছে ফিরে গেল। \p \v 10 পরে বিন্‌হদদ আহাবের কাছে অন্য একটি খবর দিয়ে পাঠালেন: “আমার লোকজনের হাতে দেওয়ার মতো ধুলোও যদি শমরিয়ায় পড়ে থাকে, তবে যেন দেবদেবীরা আমায় কঠোর থেকে কঠোরতর দণ্ড দেন।” \p \v 11 ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “তাঁকে গিয়ে বলো: ‘যিনি রক্ষাকবচ ধারণ করলেন, তাঁর এমন কোনও লোকের মতো অহংকার করা উচিত নয়, যিনি তা খুলে ফেলেছেন।’ ” \p \v 12 বিনহদদ ও অন্যান্য রাজারা যখন তাঁবুতে\f + \fr 20:12 \fr*\ft অথবা, “সুক্কোতে”\ft*\f* বসে মদ্যপান করছিলেন, তখনই তিনি এই খবরটি পেয়েছিলেন, এবং তিনি তাঁর লোকজনকে আদেশ দিলেন: “আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হও।” অতএব তারা নগরটি আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হল। \s1 আহাব বিনহদদকে পরাজিত করলেন \p \v 13 এদিকে একজন ভাববাদী ইস্রায়েলের রাজা আহাবের কাছে এসে ঘোষণা করলেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তুমি কি এই বিশাল সৈন্যদল দেখছ? আজই আমি এদের তোমার হাতে তুলে দেব, আর তখনই তুমি জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \p \v 14 “কিন্তু কে এ কাজ করবে?” আহাব জিজ্ঞাসা করলেন। \p ভাববাদীমশাই উত্তরে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘প্রাদেশিক সেনাপতিদের অধীনে থাকা নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারা এ কাজ করবে।’ ” \p “আর যুদ্ধ কে শুরু করবে?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। \p ভাববাদীমশাই উত্তর দিলেন, “আপনিই করবেন।” \p \v 15 অতএব আহাব প্রাদেশিক সেনাপতিদের অধীনে থাকা 232 জন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠালেন। পরে তিনি অবশিষ্ট মোট 7,000 ইস্রায়েলী লোক একত্রিত করলেন। \v 16 বিন্‌হদদ ও তাঁর মিত্রপক্ষের বত্রিশজন রাজা যখন দুপুরবেলায় তাঁবুতে মাতাল হয়ে পড়েছিলেন, তখনই তারা রওনা হল। \v 17 প্রাদেশিক সেনাপতিদের অধীনে থাকা নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারাই প্রথমে রওনা হল। \p ইত্যবসরে বিন্‌হদদ শত্রুপক্ষের খবর নেওয়ার জন্য লোক পাঠালেন, এবং তারা খবর দিয়েছিল, “শমরিয়া থেকে লোকজন এগিয়ে আসছে।” \p \v 18 তিনি বললেন, “তারা যদি সন্ধি করার জন্য আসছে, তবে তাদের জ্যান্ত অবস্থায় ধরো; যদি তারা যুদ্ধ করার জন্য আসছে, তাও তাদের জ্যান্ত অবস্থায় ধরো।” \p \v 19 প্রাদেশিক সেনাপতিদের অধীনে থাকা নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারা নগর ছেড়ে কুচকাওয়াজ করে বের হয়ে এসেছিল। সৈন্যদল ছিল তাদের পিছনে \v 20 এবং এক একজন তাদের প্রতিপক্ষকে আঘাত করল। তাতে অরামীয়রা পালিয়ে গেল, এবং ইস্রায়েলীরা তাদের পিছু ধাওয়া করল। কিন্তু অরামের রাজা বিন্‌হদদ কয়েকজন অশ্বারোহী সৈন্য সাথে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে চেপে পালিয়ে গেলেন। \v 21 ইস্রায়েলের রাজা এগিয়ে গিয়ে ঘোড়া ও রথগুলি কাবু করলেন এবং অরামীয়দের উপর ভারী ক্ষয়ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে দিলেন। \p \v 22 পরে, সেই ভাববাদী ইস্রায়েলের রাজার কাছে এসে বললেন, “নিজের অবস্থান মজবুত করুন এবং দেখুন কী করতে হবে, কারণ আগামী বছর বসন্তকালে অরামের রাজা আবার আপনাকে আক্রমণ করবেন।” \p \v 23 এদিকে, অরামের রাজার কর্মকর্তারা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিল, “ওদের দেবদেবীরা পাহাড়ের দেবদেবী। এজন্যই ওরা আমাদের তুলনায় বেশি শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমরা যদি সমতলে নেমে ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি, নিঃসন্দেহে আমরা ওদের তুলনায় বেশি শক্তিশালী হব। \v 24 আপনি এক কাজ করুন: রাজাদের সরিয়ে দিয়ে তাদের স্থানে অন্যান্য কর্মকর্তাদের কাজে লাগান। \v 25 যে সৈন্যদল আপনি হারিয়েছেন, সেটির মতো আরও একটি সৈন্যদল গড়ে তুলুন—ঘোড়ার পরিবর্তে ঘোড়া এবং রথের পরিবর্তে রথ—তবেই আমরা সমতলে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারব। তখন নিঃসন্দেহে আমরা ওদের তুলনায় বেশি শক্তিশালী হয়ে যাব।” তিনি তাদের কথায় রাজি হয়ে সেইমতোই কাজ করলেন। \p \v 26 পরের বছর বসন্তকালে বিন্‌হদদ অরামীয়দের একত্রিত করে অফেকে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। \v 27 ইস্রায়েলীদেরও যখন একত্রিত করে সবকিছুর জোগান দেওয়া হল, তারা কুচকাওয়াজ করে অরামীয়দের সম্মুখীন হতে গেল। ইস্রায়েলীরা ছোটো দুটি ছাগপালের মতো তাদের বিপরীত দিকে শিবির স্থাপন করল, অন্যদিকে অরামীয়দের দ্বারা গ্রামাঞ্চলের সম্পূর্ণ এলাকা ঢাকা পড়ে গেল। \p \v 28 ঈশ্বরের সেই লোক এসে ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘যেহেতু অরামীয়রা মনে করেছে সদাপ্রভু পাহাড়ের দেবতা এবং তিনি উপত্যকার দেবতা নন, তাই আমি এই বিশাল সংখ্যক সৈন্যদল তোমাদের হাতে সমর্পণ করব, এবং তোমরা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।’ ” \p \v 29 সাত দিন পর্যন্ত তারা পরস্পরের বিপরীতে শিবির স্থাপন করে বসেছিল, এবং সপ্তম দিনে যুদ্ধ বেধে গেল। একদিনেই ইস্রায়েলীরা অরামীয়দের এক লক্ষ পদাতিক সৈন্য মেরে ফেলেছিল। \v 30 অবশিষ্ট সৈন্যরা সেই অফেক নগরে পালিয়ে গেল, যেখানে সাতাশ হাজার সৈন্যের উপর প্রাচীর ভেঙে পড়েছিল। বিন্‌হদদ সেই নগরে পালিয়ে গিয়ে ভিতরের একটি ঘরে লুকিয়েছিলেন। \p \v 31 তাঁর কর্মকর্তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা শুনেছি যে ইস্রায়েলের রাজারা নাকি খুব দয়ালু। আসুন, আমরা সবাই কোমরের চারপাশে চট ঝুলিয়ে ও মাথার চারপাশে দড়ি বেঁধে ইস্রায়েলের রাজার কাছে যাই। হয়তো তিনি আপনার প্রাণভিক্ষা দেবেন।” \p \v 32 কোমরের চারপাশে চট ঝুলিয়ে ও মাথার চারপাশে দড়ি বেঁধে তারা ইস্রায়েলের রাজার কাছে গিয়ে বলল, “আপনার দাস বিন্‌হদদ বলছেন: ‘দয়া করে আমাকে বাঁচতে দিন।’ ” \p রাজামশাই উত্তর দিলেন, “তিনি কি এখনও বেঁচে আছেন? তিনি তো আমার ভাই।” \p \v 33 লোকেরা এটি ভালো লক্ষণ বলে মনে করল এবং তৎক্ষণাৎ তাঁর কথা ধরে বলে উঠেছিল, “হ্যাঁ, আপনারই ভাই বিনহদদ!” \p “যাও, তাঁকে নিয়ে এসো,” রাজামশাই বললেন। বিন্‌হদদ যখন বের হয়ে এলেন, আহাব তাঁকে নিজের রথে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। \p \v 34 “আমার বাবা আপনার বাবার কাছ থেকে যেসব নগর ছিনিয়ে নিয়েছিলেন, আমি সেগুলি ফিরিয়ে দেব,” বিনহদদ প্রস্তাব দিলেন। “আমার বাবা যেভাবে শমরিয়ায় বাজারঘাট বসিয়েছিলেন, আপনিও দামাস্কাসে আপনার নিজস্ব বাজারঘাট বসাতে পারেন।” \p আহাব বললেন, “একটি সন্ধিচুক্তির শর্তস্বাপেক্ষে আমি আপনাকে মুক্ত করে দেব।” অতএব তিনি বিন্‌হদদের সঙ্গে একটি সন্ধিচুক্তি করলেন, এবং তাঁকে যেতে দিলেন। \s1 একজন ভাববাদী আহাবকে দোষারোপ করলেন \p \v 35 সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে ভাববাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন তাঁর সহচরকে বললেন, “তোমার অস্ত্র দিয়ে আমাকে আঘাত করো,” কিন্তু তিনি রাজি হননি। \p \v 36 অতএব সেই ভাববাদীমশাই বললেন, “যেহেতু তুমি সদাপ্রভুর কথার বাধ্য হওনি, তাই যে মুহূর্তে তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে, একটি সিংহ তোমাকে মেরে ফেলবে।” সেই লোকটি চলে যাওয়ার পর মুহূর্তেই একটি সিংহ তাকে পেয়ে মেরে ফেলেছিল। \p \v 37 সেই ভাববাদীমশাই অন্য একজনকে পেয়ে তাকে বললেন, “দয়া করে আমাকে আঘাত করো।” তাই সে তাঁকে আঘাত করে তাঁকে ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছিল। \v 38 তখন সেই ভাববাদীমশাই সেখান থেকে চলে গিয়ে পথে দাঁড়িয়ে রাজার আসার অপেক্ষা করছিলেন। তিনি মাথার পাগড়ি দিয়ে চোখ ঢেকে ছদ্মবেশ ধারণ করলেন। \v 39 রাজামশাই যেই না পথ দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছিলেন, সেই ভাববাদীমশাই তাঁকে ডেকে বলে উঠেছিলেন, “আপনার এই দাস আমি যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝামাঝি চলে গেলাম, এবং কেউ একজন আমার কাছে একজন বন্দিকে নিয়ে এসে বলল, ‘এই লোকটিকে পাহারা দাও। যদি একে খুঁজে পাওয়া না যায়, তবে এর প্রাণের পরিবর্তে তোমার প্রাণ যাবে, অথবা তোমাকে এক তালন্ত\f + \fr 20:39 \fr*\ft অর্থাৎ, প্রায় 34 কিলোগ্রাম\ft*\f* রুপো দিতে হবে।’ \v 40 আপনার এই দাস যখন এদিক-ওদিক একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, লোকটি উধাও হয়ে গেল।” \p “তোমাকে ওই শাস্তিই পেতে হবে,” ইস্রায়েলের রাজা বললেন। “তুমি নিজেই নিজের শাস্তি ঘোষণা করেছ।” \p \v 41 তখন সেই ভাববাদীমশাই তাড়াতাড়ি তাঁর চোখের উপর থেকে পাগড়িটি সরিয়ে ফেলেছিলেন, এবং ইস্রায়েলের রাজা চিনতে পেরেছিলেন যে তিনি ভাববাদীদের মধ্যেই একজন। \v 42 তিনি রাজামশাইকে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তুমি এমন একজন লোককে মুক্ত করে দিয়েছ, যাকে মরতে হবে বলে আমি স্থির করে রেখেছিলাম।\f + \fr 20:42 \fr*\ft হিব্রু বাক্যশৈলী অনুসারে কথাটির অর্থ হল “কোনও বস্তু বা ব্যক্তিকে সদাপ্রভুর উদ্দেশে চূড়ান্তরূপে দান করে দেওয়া, প্রায়ই সেগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়ার দ্বারা যা করা হত”\ft*\f* অতএব তার প্রাণের পরিবর্তে তোমার প্রাণ যাবে, তার লোকজনের পরিবর্তে তোমার লোকজন যাবে।’ ” \v 43 বিষণ্ণ-গম্ভীর ও ক্রুদ্ধ হয়ে ইস্রায়েলের রাজা শমরিয়ায় তাঁর প্রাসাদে চলে গেলেন। \c 21 \s1 নাবোতের দ্রাক্ষাক্ষেত \p \v 1 কিছুকাল পর একটি দ্রাক্ষাক্ষেতকে কেন্দ্র করে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেটি ছিল যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের। দ্রাক্ষাক্ষেতটি অবস্থিত ছিল যিষ্রিয়েলে, শমরিয়ার রাজা আহাবের প্রাসাদের খুব কাছেই। \v 2 আহাব নাবোতকে বললেন, “যেহেতু তোমার দ্রাক্ষাক্ষেতটি আমার প্রাসাদের কাছেই রয়েছে, তাই আমায় সেটি নিতে দাও; আমি সেখানে সবজির বাগান করব। সেটির পরিবর্তে আমি তোমাকে সেটির চেয়েও ভালো একটি দ্রাক্ষাক্ষেত দেব, আর তা না হলে, তুমি যদি চাও, আমি সেটির দাম চুকিয়ে দেব।” \p \v 3 কিন্তু নাবোত উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু যেন আমার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া উত্তরাধিকার আপনাকে দিতে না দেন।” \p \v 4 তাই আহাব মনক্ষুণ্ণ ও ক্রুদ্ধ হয়ে ঘরে চলে গেলেন, কারণ যিষ্রিয়েলীয় নাবোত বললেন, “আমি আমার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া উত্তরাধিকার আপনাকে দেব না।” তিনি গোমড়ামুখে বিছানায় শুয়ে পড়েছিলেন ও ভোজনপানও করতে চাননি। \p \v 5 তাঁর স্ত্রী ঈষেবল এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি মনক্ষুণ্ণ হয়ে আছ কেন? তুমি ভোজনপান করছ না কেন?” \p \v 6 তিনি ঈষেবলকে উত্তর দিলেন, “আমি যিষ্রিয়েলীয় নাবোতকে বললাম, ‘তোমার দ্রাক্ষাক্ষেতটি আমার কাছে বিক্রি করে দাও; তা না হলে, তুমি যদি চাও, আমি সেটির পরিবর্তে তোমাকে অন্য একটি দ্রাক্ষাক্ষেত দেব।’ কিন্তু সে বলল, ‘আমি আমার দ্রাক্ষাক্ষেতটি আপনাকে দেব না।’ ” \p \v 7 তাঁর স্ত্রী ঈষেবল বলল, “ইস্রায়েলের রাজা হয়ে তুমি এ কী আচরণ করছ? উঠে ভোজনপান করো! চাঙ্গা হও। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের দ্রাক্ষাক্ষেতটি আমিই তোমাকে দেব।” \p \v 8 এই বলে, আহাবের নাম করে সে কয়েকটি চিঠি লিখে, সেগুলিতে রাজার সিলমোহর দিয়ে নাবোতের নগরে তাঁর সাথে বসবাসকারী প্রাচীনদের ও অভিজাত পুরুষদের কাছে সেই চিঠিগুলি পাঠিয়ে দিয়েছিল। \v 9 সেইসব চিঠিতে সে লিখেছিল: \pm “একদিনের উপবাস ঘোষণা করে আপনারা নাবোতকে গুরুত্বপূর্ণ এক স্থানে লোকজনের মাঝে বসিয়ে দিন। \v 10 কিন্তু তার মুখোমুখি এমন দুজন বজ্জাত লোককে বসিয়ে দিন, যারা তার বিরুদ্ধে এই বলে অভিযোগ জানাবে যে সে ঈশ্বর ও রাজা, দুজনকেই অভিশাপ দিয়েছে। পরে তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথরের আঘাতে মেরে ফেলবেন।” \p \v 11 অতএব নাবোতের নগরে বসবাসকারী প্রাচীন ও অভিজাত পুরুষেরা তাদের উদ্দেশে ঈষেবলের লেখা চিঠির নির্দেশানুসারেই কাজ করলেন। \v 12 তারা উপবাস ঘোষণা করে নাবোতকে গুরুত্বপূর্ণ এক স্থানে লোকজনের মাঝে বসিয়ে দিলেন। \v 13 পরে দুজন বজ্জাত লোক এসে তাঁর মুখোমুখি বসেছিল এবং লোকজনের সামনে নাবোতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলল, “নাবোত ঈশ্বর ও রাজা, দুজনকেই অভিশাপ দিয়েছে।” অতএব লোকেরা তাঁকে নগরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথরের আঘাতে মেরে ফেলেছিল। \v 14 পরে তারা ঈষেবলকে খবর পাঠালেন: “নাবোতকে পাথরের আঘাতে মেরে ফেরা হয়েছে।” \p \v 15 নাবোতকে পাথরের আঘাতে মেরে ফেলা হয়েছে, এই খবর পেয়েই ঈষেবল আহাবকে বলল, “ওঠো ও যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের সেই দ্রাক্ষাক্ষেতটির দখল নাও, যেটি সে তোমাকে বিক্রি করতে চায়নি। সে আর বেঁচে নেই, কিন্তু মারা গিয়েছে।” \v 16 নাবোতের মারা যাওয়ার খবর শুনে আহাব উঠে নাবোতের দ্রাক্ষাক্ষেতটি দখল করার জন্য সেখানে চলে গেলেন। \p \v 17 তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য তিশবীয় এলিয়ের কাছে এসেছিল: \v 18 “যে শমরিয়াতে রাজত্ব করছে, ইস্রায়েলের সেই রাজা আহাবের সঙ্গে তুমি দেখা করতে যাও। এখন সে নাবোতের সেই দ্রাক্ষাক্ষেতে আছে, যেটি দখল করার জন্য সে সেখানে গিয়েছে। \v 19 তাকে গিয়ে বোলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: তুমি কি একজন লোককে খুন করে তার সম্পত্তি দখল করে নাওনি?’ পরে তাকে বোলো, ‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: যেখানে কুকুরেরা নাবোতের রক্ত চেটে খেয়েছে, সেখানে তোমারও রক্ত কুকুরেরা চেটে খাবে, হ্যাঁ, তোমারই রক্ত!’ ” \p \v 20 আহাব এলিয়কে দেখে বললেন, “তবে ওহে আমার শত্রু, তুমি আমাকে খুঁজে পেলে!” \p “হ্যাঁ, আমি আপনাকে খুঁজে পেয়েছি,” তিনি উত্তর দিলেন, “কারণ আপনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজ করার জন্য নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছেন। \v 21 তিনি বলেন, ‘আমি তোমার উপর বিপর্যয় আনতে চলেছি। আমি তোমার বংশধরদের অবলুপ্ত করে দেব এবং ইস্রায়েলে আহাবের বংশের শেষ পুরুষটিকে পর্যন্ত—তা সে ক্রীতদাসই হোক বা স্বাধীন\f + \fr 21:21 \fr*\ft অথবা, প্রত্যেক শাসনকর্তা বা নেতাকে\ft*\f*—শেষ করে ফেলব। \v 22 আমি তোমার কুলকে নবাটের ছেলে যারবিয়ামের এবং অহিয়র ছেলে বাশার কুলের মতো করে ফেলব, কারণ তুমি আমার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছ ও ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছ।’ \p \v 23 “এছাড়াও ঈষেবলের বিষয়ে সদাপ্রভু বলেন: ‘কুকুরেরা যিষ্রিয়েলের প্রাচীরে\f + \fr 21:23 \fr*\ft অথবা, ক্ষেতে (\+xt 2 রাজাবলি 9:26\+xt* পদও দেখুন)\ft*\f* ঈষেবলকে গোগ্রাসে গিলে খাবে।’ \p \v 24 “আহাবের কুলে যারা নগরে মরবে, কুকুরেরা তাদের খাবে; আর যারা গ্রামাঞ্চলে মরবে, পাখিরা তাদের ঠুকরে ঠুকরে খাবে।” \p \v 25 (স্ত্রী ঈষেবলের উসকানিতে কান দিয়ে আহাব যেভাবে সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজকর্ম করলেন, সেভাবে তাঁর মতো আর কেউ কখনও করেননি। \v 26 যে ইমোরীয়দের সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিলেন, তাদের মতো তিনিও প্রতিমাপূজায় লিপ্ত হয়ে জঘন্যতম কাজ করলেন।) \p \v 27 এইসব কথা শুনে আহাব নিজের পোশাক ছিঁড়ে, চট গায়ে দিয়ে উপবাস করলেন। তিনি চটের বিছানায় শুয়েছিলেন ও নম্রভাবে চলাফেরা করতে শুরু করলেন। \p \v 28 তখন তিশবীয় এলিয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য এসেছিল: \v 29 “তুমি কি লক্ষ্য করেছ, আহাব কীভাবে নিজেকে আমার সামনে নম্র করেছে? যেহেতু সে নিজেকে নম্র করেছে, আমি তার জীবনকালে এই বিপর্যয়টি আনব না, কিন্তু তার ছেলের জীবনকালে আমি তার কুলে সেটি আনব।” \c 22 \s1 আহাবের বিরুদ্ধে মীখায়ের ভাববাণী \p \v 1 তিন বছর অরাম ও ইস্রায়েলের মধ্যে কোনও যুদ্ধ হয়নি। \v 2 কিন্তু তৃতীয় বছরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সাথে দেখা করতে গেলেন। \v 3 ইস্রায়েলের রাজা তাঁর কর্মকর্তাদের বললেন, “তোমরা কি জানো না যে রামোৎ-গিলিয়দ আমাদেরই, আর তাও আমরা অরামের রাজার হাত থেকে সেটি পুনরাধিকার করার জন্য কিছুই করছি না?” \p \v 4 তাই তিনি যিহোশাফটকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি আমার সাথে রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করতে যাবেন?” \p যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে উত্তর দিলেন, “আমি, আপনারই মতো, আমার প্রজারাও আপনার প্রজাদেরই মতো, তথা আমার ঘোড়াগুলি আপনার ঘোড়াগুলির মতোই।” \v 5 কিন্তু যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে এও বললেন, “প্রথমে সদাপ্রভুর কাছে পরামর্শ চেয়ে নিন।” \p \v 6 অতএব ইস্রায়েলের রাজা ভাববাদীদের—প্রায় চারশো জনকে—একত্রিত করলেন, এবং তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি বিরত থাকব?” \p “যান,” তারা উত্তর দিয়েছিল, “কারণ সদাপ্রভু সেটি মহারাজের হাতে তুলে দেবেন।” \p \v 7 কিন্তু যিহোশাফট জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে কি সদাপ্রভুর এমন কোনও ভাববাদী আর নেই, যাঁর কাছে আমরা খোঁজখবর নিতে পারব?” \p \v 8 ইস্রায়েলের রাজা, যিহোশাফটকে উত্তর দিলেন, “আরও একজন ভাববাদী আছেন, যার মাধ্যমে আমরা সদাপ্রভুর কাছে খোঁজখবর নিতে পারি, কিন্তু আমি তাকে ঘৃণা করি, যেহেতু সে কখনোই আমার বিষয়ে ভালো কিছু ভাববাণী করে না, কিন্তু সবসময় খারাপ ভাববাণীই করে। সে হল যিম্লের ছেলে মীখায়।” “মহারাজ এরকম কথা বলবেন না,” যিহোশাফট উত্তর দিলেন। \p “মহারাজ এরকম কথা বলবেন না,” যিহোশাফট উত্তর দিলেন। \p \v 9 তখন ইস্রায়েলের রাজা কর্মকর্তাদের মধ্যে একজনকে ডেকে বললেন, “এক্ষুনি গিয়ে যিম্লের ছেলে মীখায়কে ডেকে আনো।” \p \v 10 রাজপোশাক পরে ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট, দুজনেই শমরিয়ার সিংহদুয়ারের কাছে খামারবাড়িতে তাদের সিংহাসনে বসেছিলেন, এবং ভাববাদীরা সবাই তাদের সামনে ভাববাণী করে যাচ্ছিল। \v 11 ইত্যবসরে কেনান্নার ছেলে সিদিকিয় লোহার দুটি শিং তৈরি করল এবং সে ঘোষণা করল, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘অরামীয়রা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এগুলি দিয়েই আপনি তাদের গুঁতাবেন।’ ” \p \v 12 অন্যান্য সব ভাববাদীও একই ভাববাণী করল। “রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করুন এবং বিজয়ী হোন,” তারা বলল, “কারণ সদাপ্রভু সেটি রাজার হাতে তুলে দেবেন।” \p \v 13 যে দূত মীখায়কে ডাকতে গেল, সে তাঁকে বলল, “দেখুন, অন্যান্য ভাববাদীরা সবাই কোনও আপত্তি না জানিয়ে রাজার পক্ষে সফলতার ভাববাণী করছে। আপনার কথাও যেন তাদেরই মতো হয়, এবং আপনিও সুবিধাজনক কথাই বলুন।” \p \v 14 কিন্তু মীখায় বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, সদাপ্রভু আমাকে যা বলেছেন, আমি তাঁকে শুধু সেকথাই বলতে পারব।” \p \v 15 তিনি সেখানে পৌঁছানোর পর রাজামশাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মীখায়, আমরা রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করব, কি না?” \p “আক্রমণ করে জয়ী হোন,” তিনি উত্তর দিলেন, “কারণ সদাপ্রভু মহারাজের হাতে সেটি তুলে দেবেন।” \p \v 16 রাজা তাঁকে বললেন, “কতবার আমি তোমাকে দিয়ে শপথ করাব যে তুমি সদাপ্রভুর নামে আমাকে সত্যিকথা ছাড়া আর কিছুই বলবে না?” \p \v 17 তখন মীখায় উত্তর দিলেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি, ইস্রায়েলীরা সবাই পাহাড়ের উপর পালকবিহীন মেষের পালের মতো হয়ে আছে, এবং সদাপ্রভু বলেছেন, ‘এই লোকজনের কোনও মনিব নেই। শান্তিতে যে যার ঘরে ফিরে যাক।’ ” \p \v 18 ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমি কি আপনাকে বলিনি যে সে আমার বিষয়ে কখনও ভালো কিছু ভাববাণী করে না, কিন্তু শুধু খারাপ ভাববাণীই করে?” \p \v 19 মীখায় আরও বললেন, “এজন্য সদাপ্রভুর এই বাক্য শুনুন: আমি দেখলাম, সদাপ্রভু তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন এবং স্বর্গের জনতা তাঁর চারদিকে, তাঁর ডানদিকে ও বাঁদিকে দাঁড়িয়ে আছে। \v 20 সদাপ্রভু বললেন, ‘রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করে সেখানে মরতে যাওয়ার জন্য কে আহাবকে প্ররোচিত করবে?’ \p “তখন কেউ একথা, কেউ সেকথা বলল। \v 21 শেষে, একটি আত্মা এগিয়ে এসে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আমি তাকে লোভ দেখাব।’ \p \v 22 “কিন্তু কীভাবে? সদাপ্রভু জিজ্ঞাসা করলেন। \p “ ‘আমি গিয়ে তার সব ভাববাদীর মুখে বিভ্রান্তিকর এক আত্মা হব,’ সে বলল। \p “ ‘তাকে লোভ দেখাতে তুমি সফল হবে,’ সদাপ্রভু বললেন। ‘যাও, ওরকমই করো।’ \p \v 23 “তাই এখন সদাপ্রভু আপনার এইসব ভাববাদীর মুখে বিভ্রান্তিকর এক আত্মা দিয়েছেন। সদাপ্রভু আপনার জন্য বিপর্যয়ের বিধান দিয়েছেন।” \p \v 24 তখন কেনান্নার ছেলে সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের গালে চড় মেরেছিল। “সদাপ্রভুর কাছ থেকে আসা আত্মা\f + \fr 22:24 \fr*\ft অথবা, “সদাপ্রভুর সেই আত্মা”\ft*\f* তোর সাথে কথা বলার জন্য কোন পথে আমার কাছ থেকে গেলেন?” সে জিজ্ঞাসা করল। \p \v 25 মীখায় উত্তর দিলেন, “সেদিনই তুমি তা জানতে পারবে, যেদিন তুমি ভিতরের ঘরে গিয়ে লুকাবে।” \p \v 26 ইস্রায়েলের রাজা তখন আদেশ দিলেন, “মীখায়কে নগরের শাসনকর্তা আমোন ও রাজপুত্র যোয়াশের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দাও \v 27 এবং তাদের বোলো, ‘রাজা একথাই বলেছেন: একে জেলখানায় রেখে দাও এবং যতদিন না আমি নিরাপদে ফিরে আসছি, ততদিন একে রুটি ও জল ছাড়া আর কিছুই দিয়ো না।’ ” \p \v 28 মীখায় ঘোষণা করলেন, “আপনি যদি নিরাপদে কখনও ফিরে আসেন, তবে জানবেন, সদাপ্রভু আমার মাধ্যমে কথা বলেননি।” পরে তিনি আরও বললেন, “ওহে লোকজন, তোমরা সবাই আমার কথাগুলি মনে গেঁথে রাখো!” \s1 আহাব রামোৎ-গিলিয়দে নিহত হন \p \v 29 অতএব ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট রামোৎ-গিলিয়দে চলে গেলেন। \v 30 ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমি ছদ্মবেশ ধারণ করে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করব, কিন্তু আপনি আপনার রাজপোশাক পরে থাকুন।” এইভাবে ইস্রায়েলের রাজা ছদ্মবেশ ধারণ করে যুদ্ধে গেলেন। \p \v 31 ইত্যবসরে অরামের রাজা তাঁর রথের বত্রিশজন সেনাপতিকে আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন, “একমাত্র ইস্রায়েলের রাজা ছাড়া, ছোটো বা বড়ো, কোনো লোকের সাথে যুদ্ধ করবে না।” \v 32 রথের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখে ভেবেছিল, “ইনিই নিশ্চয় ইস্রায়েলের রাজা।” তাই তাঁকে আক্রমণ করার জন্য তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু যিহোশাফট যখন চিৎকার করে উঠেছিলেন, \v 33 রথের সেনাপতিরা যখন দেখেছিল যে তিনি ইস্রায়েলের রাজা নন, তারা তাঁর পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়েছিল। \p \v 34 কিন্তু কেউ একজন আন্দাজে ধনুক চালিয়ে ইস্রায়েলের রাজার দেহে যেখানে বর্মের ঘেরাটোপ ছিল না, সেখানেই আঘাত করে বসেছিল। রাজামশাই তাঁর রথের সারথিকে বললেন, “রথের মুখ ঘুরিয়ে আমাকে যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে নিয়ে যাও। আমি আহত হয়েছি।” \v 35 সারাদিন ধরে তুমুল যুদ্ধ চলেছিল, এবং অরামীয়দের দিকে মুখ করে রাজামশাইকে তাঁর রথে ঠেস দিয়ে খাড়া করে রাখা হল। তাঁর ক্ষতস্থান থেকে ঝরে পড়া রক্তে রথের মেঝে ভেসে গেল, এবং সেই সন্ধ্যায় তিনি মারা গেলেন। \v 36 সূর্য যখন অস্ত যাচ্ছিল, তখন সৈন্যদলে এই হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছিল, “প্রত্যেকে নিজের নিজের নগরে ফিরে যাও। প্রত্যেকে নিজের নিজের দেশে ফিরে যাও!” \p \v 37 অতএব রাজামশাই মারা গেলেন ও তাঁর দেহ শমরিয়ায় আনা হল, এবং লোকেরা তাঁকে সেখানেই কবর দিয়েছিল। \v 38 তারা শমরিয়ার একটি পুকুরে রথটি ধুয়েছিল (যেখানে বারবণিতারা স্নান করত),\f + \fr 22:38 \fr*\ft অথবা, “ও অস্ত্রশস্ত্রও পরিষ্কার করল”\ft*\f* আর সদাপ্রভুর ঘোষিত কথানুসারে কুকুরেরা তাঁর রক্ত চেটে খেয়েছিল। \p \v 39 আহাবের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, এছাড়াও তিনি যা যা করলেন, যে প্রাসাদ তিনি তৈরি করলেন ও হাতির দাঁত দিয়ে সাজিয়ে তুলেছিলেন, এবং যেসব নগর তিনি সুরক্ষিত করলেন—তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 40 আহাব তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন। তাঁর ছেলে অহসিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 যিহূদার রাজা যিহোশাফট \p \v 41 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের রাজত্বের চতুর্থ বছরে আসার ছেলে যিহোশাফট যিহূদায় রাজা হলেন। \v 42 যিহোশাফট পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি পঁচিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম অসূবা। তিনি শিলহির মেয়ে ছিলেন। \v 43 সবকিছুতেই তিনি তাঁর বাবা আসার পথে চলেছিলেন এবং সেগুলি থেকে সরে যাননি; সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ন্যায্য, তিনি তাই করলেন। অবশ্য প্রতিমাপূজার উঁচু উঁচু স্থানগুলি সরানো হয়নি, এবং লোকজন তখনও সেগুলিতে পশুবলি উৎসর্গ করে যাচ্ছিল ও ধূপও জ্বালিয়ে যাচ্ছিল। \v 44 ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গেও যিহোশাফটের শান্তি বজায় ছিল। \p \v 45 যিহোশাফটের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা অর্জন করলেন ও তাঁর সামরিক উজ্জ্বল সব কীর্তি—তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? \v 46 তাঁর বাবা আসার রাজত্বকালে দেবদাসদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার পরেও দেশে যেসব দেবদাস থেকে গেল, যিহোশাফট তাদেরও দূর করে দিলেন। \v 47 ইদোমে তখন কোনও রাজা ছিল না; একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তা সেখানে শাসন চালাচ্ছিলেন। \p \v 48 ইত্যবসরে ওফীর থেকে সোনা আনার জন্য যিহোশাফট বাণিজ্যতরির\f + \fr 22:48 \fr*\ft অথবা, “তর্শীশের জাহাজের”\ft*\f* এক নৌবহর তৈরি করলেন, কিন্তু সেগুলির আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি—কারণ ইৎসিয়োন-গেবরে সেগুলি সমুদ্রে ডুবে গেল। \v 49 সেই সময় আহাবের ছেলে অহসিয় যিহোশাফটকে বললেন, “আমার লোকজন আপনার লোকজনের সাথে সমুদ্রে পাড়ি দিক,” কিন্তু যিহোশাফট এতে রাজি হননি। \p \v 50 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাদেরই সাথে তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোরাম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন। \s1 ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় \p \v 51 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের সতেরতম বছরে আহাবের ছেলে অহসিয় শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি দুই বছর ইস্রায়েলে রাজত্ব করলেন। \v 52 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তিনি তাই করলেন, কারণ তিনি তাঁর বাবা, মা, ও নবাটের ছেলে সেই যারবিয়ামের পথেই চলেছিলেন, যারা ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন। \v 53 তিনি তাঁর বাবার মতোই বায়ালের সেবা ও পুজো করলেন, এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন।